দুআ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ লেখাসমূহ, দুআ কবুলের সময় শর্তাবলী ও আদবসমূহ, দুআ কবুলের গল্পগুলো
দোয়া কবুলের আরও গল্প দেয়া হবে এখানে ইন শা আল্লাহ। শেয়ার করতে পারেন।
.
>> মহান আল্লাহর নাম ও তার অর্থ (আসমাউল হুসনা/ইসমে আজম)
https://www.hadithbd.com/99namesofallah/
.
>> আল্লাহ এর কাছে কি দোয়া করবেন.. [ চলুন জেনে নেই ]
☛, নিজের গুনাহ মাফের জন্য দোয়া করবেন !
☛, গুনাহ থেকে বেঁছে থাকার জন্য দোয়া করবেন !
☛, আল্লাহর অনুগত বান্দা হওয়ার জন্য দোয়া করবেন !
☛, সুন্নাহ মেনে চলা সহজ হওয়ার জন্য দোয়া করবেন !
.
☛, অন্যের কাছে অপদস্থ না হওয়ার দোয়া করবেন !
☛, বদ নজর থাকে বাঁচার জন্য দোয়া করবেন !
☛, বিপদ বালা মছিবত থেকে বেচে থাকার জন্য দোয়া করবেন !
☛, নিজের হেদায়েতের জন্য দোয়া করবেন !
☛, ইসলামের উপর টিকে থাকার জন্য দোয়া করবেন !
☛, মুনাফিকি থেকে মুক্ত থাকার জন্য দোয়া করবেন !
.
☛, নিজের পরিবারবর্গের জন্য দোয়া করবেন !
☛, পিতামাতার জন্য দোয়া করবেন !
☛,সন্তান সন্ততির জন্য দোয়া করবেন !
☛, সন্তান সন্ততি স্বামী স্ত্রী-নিজের জন্য নয়ন তৃপ্তিকর হওয়ার জন্য দোয়া করবেন !
☛, স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য দোয়া করবেন !
☛, সমস্ত মুসলিম উম্মার জন্য দোয়া করবেন !
☛, ছেলে মেয়েদের ইসলামী শিক্ষা দেওয়া সহজ হওয়ার জন্য দোয়া করবেন !
☛, ছেলে মেয়েরা যাতে ইসলামের উপর থাকে সেজন্য দোয়া করবেন !
.
☛, আত্মীয় স্বজনদের জন্য দোয়া করবেন !
☛, যারা আপনার কাছে দোয়া চেয়েছেন তাদের জন্য দোয়া করবেন !
☛, যে সমস্ত আত্মীয় স্বজন মারা গেছেন তাদের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করবেন !
☛, ইসলামের পথে থাকা সহজ হওয়ার জন্য দোয়া করবেন !
☛, ইসলাম সম্প্রসারণের জন্য দোয়া করবেন !
☛, ইসলামের জন্য বুককে সম্প্রসারণ করার জন্য দোয়া করবেন !
☛, আপনার প্রয়োজন পূরণের জন্য দোয়া করবেন !
.
☛, রোগ মুক্তির জন্য দোয়া করবেন !
☛,হালাল রিজিক সহজ হওয়ার জন্য দোয়া করবেন !
☛,হারাম কাজ থেকে বেচে থাকার জন্য দোয়া করবেন !
☛,সহজে ঋণ পরিশোধ হওয়ার জন্য দোয়া করবেন !
☛, কাফেরদের উতপীড়ন থেকে নিরাপদ থাকার দোয়া করবেন !
☛, অন্যের উপর বোঝা স্বরূপ না হওয়ার জন্য দোয়া করবেন !
☛, বিদাত থেকে বেচে থাকার জন্য দোয়া করবেন !
.
☛,শির্ক থেকে বেচে থাকার জন্য দোয়া করবেন !
☛, লোক দেখানো ইবাদত থেকে মুক্ত থাকার জন্য দোয়া করবেন !
☛, ঈমান বৃদ্ধির জন্য দোয়া করবেন !
☛,সকল অবস্থায় খাটি ঈমানদার হয়ে থাকার জন্য দোয়া করবেন !
☛, বদ অভ্যাস থেকে মুক্ত থাকার জন্য দোয়া করবেন !
.
☛, জান্নাতুল ফেরদৌস এর জন্য দোয়া করবেন !
☛,জাহান্নাম থেকে মুক্ত থাকার জন্য দোয়া করবেন !
☛,কবরের আযাব থেকে মুক্তির জন্য দোয়া করবেন !
☛,সকল বিকাল জিকির করা সহজ হওয়ার জন্য দোয়া করবেন !
☛,প্রতিদিন কুরআন তিলওয়াত করা সহজ হওয়ার জন্য দোয়া করবেন !
☛,নবীজির শাফায়াত নসীব হওয়ার জন্য দোয়া করবেন ।
☛, দাজ্জালের ফেতনা থেকে বেচে থাকার জন্য দোয়া করবেন !
.
☛, সকল রকম ফেতনা থেকে মুক্ত থাকার জন্য দোয়া করবেন !
☛, মনে যাতে মুমিনদের প্রতি হিংসা উৎপাদন না হয় সে জন্য দোয়া করবেন।
-------------------------
--------------------------
>> অনেক গুরুত্বপূর্ণ আমল! করতে পারলে
----------------------
>> কেন আমাদের দোয়া কবুল হচ্ছে না ?
>> কীভাবে দু'আ করলে আল্লাহ কবুল করবেন?
(দু'আ কবুলের শর্তাবলী ও আদবসমূহ)
(১) দৃঢ় বিশ্বাস রেখে দু'আ করা :
রাসূল সা. বলেন, "হে মানুষেরা! তোমরা যখন আল্লাহর কাছে চাইবে তখন কবুল হওয়ার দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে চাইবে; কারণ কোনো বান্দা অমনোযোগী অন্তরে দু'আ করলে আল্লাহ তার দু'আ কবুল করেন না।" (সহিহুত তারগিব ২/১৩৩, হাসান)
:
(২) প্রথমে নিজের জন্য দু'আ করা :
আবু আইয়ূব আনসারি রা. বলেন, "নবি সা. যখন দু'আ করতেন তখন নিজেকে দিয়ে শুরু করতেন।" (আহমাদ ৫/১২১, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/১৫২, হাসান)
:
(৩) অনুপস্থিতের জন্য দু'আ করলে কবুল হয় :
রাসূল সা. বলেন, "কোনো মুসলিম যখন তার কোনো অনুপস্থিত ভাইয়ের জন্য দু'আ করে তখন আল্লাহ তার দু'আ কবুল করেন।" (মুসলিম ৪/২০৯৪)
:
(৪) আল্লাহর ইসমে আযম (মহিমান্বিত নাম) দিয়ে দু'আ করা :
এক ব্যক্তি সালাতের বৈঠকে আল্লাহর ইসমে আযম দিয়ে দু'আ করছিলেন। তখন রাসূল সা. বলেন, "নিশ্চয়ই সে আল্লাহর কাছে তাঁর ইসমে আযম ধরে দু'আ করেছে, যে নামে ডাকলে তিনি সাড়া দেন এবং যে নামে চাইলে তিনি প্রদান করেন।" (সহিহু সুনানিন নাসাঈ ১/২৭৯, সহিহ)
:
(৫) দু'আ ইউনুস দিয়ে দু'আ করা :
রাসূল সা. বলেন, যুন্নুন (ইউনুস আ.) মাছের পেটে যে দু'আ করেছিলেন - লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনায যোয়ালিমীন - এ দু'আ দ্বারা যে কোন মুসলিম যে কোন বিষয়ে দু'আ করবে, আল্লাহ অবশ্যই তার দু'আ কবুল করবেন।" (তিরমিযি ৫/৪৯৫, মাজমাউয যাওয়াইদ ৭/৬৮, সহিহ)
উল্লেখ্য, দু'আ ইউনুস এক প্রকার ইসমে আযম।
:
(৬) দু'আর প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা ও গুণ বর্ণনা করা এবং রাসূলের উপর দরুদ পাঠ :
একবার ইবনে মাস'ঊদ রা. সালাতের বৈঠকে বসে প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা ও গুণ বর্ণনা করেন, অতপর রাসূলের উপর দরুদ পাঠ করেন, তারপর নিজের জন্য দু'আ করেন। তখন রাসূল সা. বলেন, "এখন চাও, তোমার প্রার্থিত বস্তু তোমাকে দেয়া হবে।" (তিরমিযি ২/৪৮৮)
রাসূল সা. বলেন, "সকল দু'আ পর্দার আড়ালে থাকবে, যতক্ষণ না নবির উপর সালাত পাঠ করবে।" (সহিহাহ ৫/৫৪-৫৮, সহিহুত তারগিব ২/১৩৮, হাসান)
:
(৭) রাতের শেষাংশে ও ফরয সালাতের পর :
রাসূল সা. কে প্রশ্ন করা হলো, 'কোন দু'আ সবচেয়ে বেশি শোনা হয় বা কবুল করা হয়?' তিনি উত্তরে বলেন, "রাতের শেষাংশে ও ফরয সালাতের পর।" (তিরমিযি ৫/৪৯২, হাসান)
:
(৮) জিহাদের ময়দানে, আযানের সময়ে ও আযানের পরে (আযানের জবাব দেয়ার পর) দু'আ কবুল হয় :
রাসূল সা. বলেন, "দুটি দু'আ কখনো ফেরত দেয়া হয় না বা খুব কমই ফেরত দেয়া হয় : আযানের সময় দু'আ (দ্বিতীয় বর্ণনায় ইকামাতের সময়) এবং আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধের সময় দু'আ...।" (আবু দাঊদ ৩/২১, হাকিম, ইবনে খুযাইমা, ইবনে হিব্বান, সহিহুত তারগিব ১/১৮০, সহিহ)
রাসূল সা. বলেন, "মুয়াযযিনগণ যা বলে তুমি তা বল (আযানের জবাব দাও)। যখন শেষ করবে, তখন আল্লাহর কাছে চাও; তুমি যা চাইবে তোমাকে তা দেয়া হবে।" (আবু দাঊদ ১/১৪২, সহিহুত তারগিব ১/১৭৭, ১৮১, হাসান)
:
(৯) জুমু'আর দিনে বিশেষ মুহূর্তে দু'আ কবুল হয় :
অধিকাংশ আলেমের মতে সেই সময়টি সূর্যাস্তের পূর্বের মুহূর্তটি। অনেকের মতে, ইমাম খুতবা শুরুর পর থেকে সালাম ফেরানো পর্যন্ত। (বুখারি ১/৩১৬ মুসলিম ২/৫৮৪, তুহফাতুয যাকিরিন, লি শাওকানি ৪০-৪১)
:
(১০) আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময় :
রাসূল সা. বলেন, "আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে দু'আ ফেরত দেয়া হয় না। অতএব, এ সময়ে তোমরা দু'আ করবে।" (আবু দাঊদ ১/১৪১, মাজমাউয যাওয়াইদ ১/৩৩৪, সহিহুত তারগিব ১/১৮০, সহিহ)
:
(১১) এছাড়া দু'আ কবুলের বিশেষ কিছু সময়, স্থান ও মুহূর্ত হলো :
সফর অবস্থায়, হজ্বরত অবস্থায়, রমাদান মাস, ফরয/নফল সিয়াম পালনরত অবস্থায়, ইফতারের সময়, যমযমের পানি পানের সময় ইত্যাদি।ন্যায়পরায়ণ প্রশাসক, মুসাফির, পিতা-মাতা, মাযলুম ব্যক্তি প্রমূখের দু'আ কবুল হয়।
:
(১২) খাবার, পানীয় ও বস্ত্র হালাল হওয়া :
রাসূল সা. বলেন, "হে লোকেরা! আল্লাহ হলেন পূত-পবিত্র। তিনি পবিত্র ছাড়া কোনোকিছু কবুল করেন না।... কোনো মুসাফির দীর্ঘ সফর শেষে মলিন বদনে আল্লাহর কাছে দু'আ করে বলে, "ইয়া রাব্ব! ইয়া রাব্ব!" অথচ তার আহার হারাম, তার পানীয় হারাম, তার পরিধেয় পোষাক হারাম, অধিকন্তু সে হারাম দ্বারা পরিপুষ্ট হয়েছে। তাহলে কীভাবে তার দু'আ কবুল হতে পারে?" (মুসলিম, হাদিস নং ২৩৯৩)
.
সর্বশেষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি হাদিস- যা আমাদের জানতেই হবে। নয়তো আমরা হয়রান হয়ে যাব।
রাসূল সা. বলেন, "যখনি কোনো মুসলিম পাপ ও আত্মীয়তা নষ্ট করা ছাড়া অন্য যে কোন বিষয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে, তখনই আল্লাহ তার প্রার্থনা পূরণ করে তাকে তিনটি বিষয়ের একটি দান করেন : (১) হয় তার প্রার্থিত বস্তুই তাকে সঙ্গে সঙ্গে দিয়ে দেন (২) অথবা তার দু'আকে (দু'আর নেকি) তার আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করে রাখেন (৩) অথবা দু'আর পরিমাণে তার অন্য কোনো বিপদ তিনি দূর করে দেন। (তিরমিযি ৫/৫৬৬, আহমাদ ৩/১৮)
অন্য এক হাদিসে এসেছে, বান্দা যখন দু'আর বিনিময়ে সঞ্চিত সওয়াবের পরিমাণ দেখবে তখন কামনা করবে, যদি তার কোনো দু'আই দুনিয়াতে কবুল না হতো! সবই যদি আখিরাতের জন্য জমা থাকতো! (তারগিব ২/৪৭৫-৪৭৬, দ্ব'ঈফ)
.
অতএব আমরা যেন কখনো হতাশ না হই! কারণ তিনটি পদ্ধতিতে আমাদের দু'আ কবুল হয়। আমাদের রবই জানেন কোনটি কখন আমাদের বেশি জরুরি।
.
@Naseehah (দ্বীনি পরামর্শ)
>> একজন মুমিনের সম্মান তার দুআয়
>> জুমআর দিন বাদ আসর সালাফদের আমল
>> কুরআন-হাদীসে বর্ণিত সব দুআর নির্যাস ৬টি জিকির ও দুআ
=====================
১) অনুপস্থিত ব্যক্তির জন্য দুয়া (কোন মুসলিমের পিছনে বা অগোচরে অন্য মুসলিমের দুয়া)।(মুসলিম ৬৮২২)
২) জালিমের বিরুদ্ধে মাজলুম ব্যক্তির দুয়া।(জামে আত তিরমীযি ৩৪৪৮)
৩) বাবা তার সন্তানের জন্য দুয়া (নেক দুয়া বা বদ দুয়া)
((তিরমীযি ৩৪৪৮))
৪) নেককার সন্তানের দুয়া (তার বাবা মায়ের জন্য তাদের মৃত্যুর পর)( আবু দাউদ ২৮৮০)
৬) আরাফাতের ময়দানে দুয়া।(তিরমীযি ৩৫৮৫)
৬) বিপদগ্রস্ত অসহায় ব্যক্তির দুআ (সূরা নামাল ৬২,৫৭ ও সূরা ইসরার ৬৭ নাম্বারর আয়াত)
৭) সেজদায় দুয়া।(নাসায়ী ১০৪৫)
৮) হজ্জের স্থানসমূহে দুয়া (যেমন: আরাফা, মুজদালিফা, মিনা...)(ইবনে মাজাহ২৮৯২)
০৯) হাজ্জীর দুয়া (হজ্জ করা অবস্থায়)।(ইবনে মাজাহ২৮৯৩)
১০) উমরাহকারীর দুয়া (উমরাহ করার সময়)।(নাসায়ী ২৬২৫
১১) আযানের পর দুয়া।(তিরমীযি ২১০)
১২) যুদ্ধ চলাকালীন সময় দুয়া।(আবু দাউদ২৫৪০)
১৩) বৃষ্টি বর্ষণকালে দুয়া।(আবু দাউদ ২৫৪০)
১৪) শেষ রাতের দুয়া,তাহাজ্জুদ(বুখারী ১১৪৫)
১৫) জুম্মার দিনে দুয়া,,আছরের শেষ দিকে তালাশ করার জন্য নির্দেশ আছে।(নাসায়ী১৩৮৯)
১৬) লাইলাতুল কদর এর দুয়া।(বুখারী ও মুসলিম)
১৭) আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময় দুয়া।(আহমাদ ১৪৬৮৯)মুসলিম ৬৬৮
১৮)ফরয স্বলাতের শেষ অংশে দুয়া( সালাম ফিরানোর আগে)।(রিয়াদুস স্বালেহিন ১৫০৮,তিরমিযি ৩৪৯৯)
১৯) মুসাফির ব্যক্তির দুয়া (সফর অবস্থায়)।(তিরমী
যি ৩৪৪৮)
২০) রোজাদার ব্যক্তির দুয়া (রোজা অবস্থায়)।(ইবনে মাজাহ ১৭৫২)
২১) ন্যায়পরায়ণ শাসকের দুয়া।(তিরমীযি ২৫২৬)
২৩) দুয়া ইউনুস পাঠ করে দুয়া করলে কবুল হয়।(তিরমিযি৩৫০৫)
২৪) ইসমে আযম পড়ে দুয়া করলে কবুল হয়।(ইবনে মাজাহ ৩৮৫৬)
২৫) বিপদে পতিত হলে যে দুয়া পড়া হয়(ইন্না লিল্লা-হি......রাজিউন)
এবং
(আল্লা-হুম্মা আজিরনি ফি মুসিবাতি ওয়া ওয়াখলিফলী খইরাম মিনহা...) তখন দুয়া কবুল হয়।(মিশকাতুল মাসীবাহ ১৬১৮,মুসলিম ৯১৮)
২৬) জমজমের পানি পান করার পর দুয়া।(ইবনে মাজাহ ৩০৬২,আহমদ ৩/৩৫৭)
২৭) নির্যাতিতের দুয়া (তিরমিযি৩৪৪৮)
২৮) দু হাত তুলে দোয়া করা,আল্লাহ বান্দার খালি হাত ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন(আবু দাউদ ১৪৮৮)
-Saheeh Amal page
>> দোয়া কবুল হওয়ার শর্তগুলো কি কি; যাতে দোয়াটি আল্লাহ্র কাছে কবুল হয়
প্রশ্ন:
দোয়া কবুল হওয়ার শর্তগুলো কি কি; যাতে দোয়াটি আল্লাহ্র কাছে কবুল হয়?
উত্তর:
আলহামদু লিল্লাহ।.
দোয়া কবুল হওয়ার বেশকিছু শর্ত রয়েছে। যেমন:
১. আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কাউকে না ডাকা। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইবনে আব্বাস (রাঃ) কে উদ্দেশ্য করে বলেন: “যখন প্রার্থনা করবে তখন শুধু আল্লাহ্র কাছে প্রার্থনা করবে এবং যখন সাহায্য চাইবে তখন শুধু আল্লাহ্র কাছে সাহায্য চাইবে।”[সুনানে তিরমিযি (২৫১৬), আলবানী ‘সহিহুল জামে’ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন]
এটাই হচ্ছে আল্লাহ্র বাণীর মর্মার্থ “আর নিশ্চয় মসজিদসমূহ আল্লাহ্রই জন্য। কাজেই তোমরা আল্লাহ্র সাথে অন্য কাউকে ডেকো না।”[সূরা জিন্, আয়াত: ১৮] দোয়ার শর্তগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। এ শর্ত পূরণ না হলে কোন দোয়া কবুল হবে না, কোন আমল গৃহীত হবে না। অনেক মানুষ রয়েছে যারা নিজেদের মাঝে ও আল্লাহ্র মাঝে মৃতব্যক্তিদেরকে মাধ্যম বানিয়ে তাদেরকে ডাকে। তাদের ধারণা যেহেতু তারা পাপী ও গুনাহগার, আল্লাহ্র কাছে তাদের কোন মর্যাদা নেই; তাই এসব নেককার লোকেরা তাদেরকে আল্লাহ্র নৈকট্য হাছিল করিয়ে দিবে এবং তাদের মাঝে ও আল্লাহ্র মাঝে মধ্যস্থতা করবে। এ বিশ্বাসের কারণে তারা এদের মধ্যস্থতা ধরে এবং আল্লাহ্র পরিবর্তে এ মৃতব্যক্তিদেরকে ডাকে। অথচ আল্লাহ্ বলেছেন: “আর আমার বান্দারা যখন আপনাকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে (তখন আপনি বলে দিন) নিশ্চয় আমি নিকটবর্তী। দোয়াকারী যখন আমাকে ডাকে তখন আমি ডাকে সাড়া দিই।”[সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৬]
২. শরিয়ত অনুমোদিত কোন একটি মাধ্যম দিয়ে আল্লাহ্ তাআলার কাছে ওসিলা দেয়া।
৩. দোয়ার ফলাফল প্রাপ্তিতে তাড়াহুড়া না করা। তাড়াহুড়া করা দোয়া কবুলের ক্ষেত্রে বড় বাধা। হাদিসে এসেছে, “তোমাদের কারো দোয়া ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল হয় যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তাড়াহুড়া করে বলে যে: ‘আমি দোয়া করেছি; কিন্তু, আমার দোয়া কবুল হয়নি”[সহিহ বুখারী (৬৩৪০) ও সহিহ মুসলিম (২৭৩৫)]
সহিহ মুসলিমে (২৭৩৬) আরও এসেছে- “বান্দার দোয়া ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করা হয় যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্দা কোন পাপ নিয়ে কিংবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা নিয়ে দোয়া করে। বান্দার দোয়া ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করা হয় যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্দা ফলাফল প্রাপ্তিতে তাড়াহুড়া না করে। জিজ্ঞেস করা হল: ইয়া রাসূলুল্লাহ! তাড়াহুড়া বলতে কী বুঝাচ্ছেন? তিনি বললেন: বলে যে, আমি দোয়া করেছি, আমি দোয়া করেছি; কিন্তু আমার দোয়া কবুল হতে দেখিনি। তখন সে ব্যক্তি উদ্যম হারিয়ে ফেলে এবং দোয়া ছেড়ে দেয়।”
৪. দোয়ার মধ্যে পাপের কিছু না থাকা। আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা নিয়ে দোয়া না হওয়া; যেমনটি ইতিপূর্বে উল্লেখিত হাদিসে এসেছে- “বান্দার দোয়া ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করা হয় যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্দা কোন পাপ নিয়ে কিংবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা নিয়ে দোয়া করে।”
৫. আল্লাহ্র প্রতি ভাল ধারণা নিয়ে দোয়া করা। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমার বান্দা আমার প্রতি যেমন ধারণা করে আমি তেমন।”[সহিহ বুখারী (৭৪০৫) ও সহিহ মুসলিম (৪৬৭৫)] আবু হুরায়রা (রাঃ) এর হাদিসে এসেছে, “তোমরা দোয়া কবুল হওয়ার দৃঢ় বিশ্বাস (একীন) নিয়ে আল্লাহ্র কাছে দোয়া কর।”[সুনানে তিরমিযি, আলাবানী সহিহুল জামে গ্রন্থে (২৪৫) হাদিসটিকে ‘হাসান’ আখ্যায়িত করেছেন]
তাই যে ব্যক্তি আল্লাহ্র প্রতি ভাল ধারণা পোষণ করে আল্লাহ্ তার উপর প্রভুত কল্যাণ ঢেলে দেন, তাকে উত্তম অনুগ্রহে ভূষিত করেন, উত্তম অনুকম্পা ও দান তার উপর ছড়িয়ে দেন।
৬. দোয়াতে মনোযোগ থাকা। দোয়াকালে দোয়াকারীর মনোযোগ থাকবে এবং যাঁর কাছে প্রার্থনা করা হচ্ছে তাঁর মহত্ত্ব ও বড়ত্ব অন্তরে জাগ্রত রাখবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “তোমরা জেনে রাখ, আল্লাহ্ কোন উদাসীন অন্তরের দোয়া কবুল করেন না।”[সুনানে তিরমিযি (৩৪৭৯), সহিহুল জামে (২৪৫) গ্রন্থে শাইখ আলবানী হাদিসটিকে ‘হাসান’ আখ্যায়িত করেছেন]
৭. খাদ্য পবিত্র (হালাল) হওয়া। আল্লাহ্ তাআলা বলেন, “আল্লাহ্ তো কেবল মুত্তাকীদের থেকেই কবুল করেন”[সূরা মায়েদা, আয়াত: ২৭] এ কারণে যে ব্যক্তির পানাহার ও পরিধেয় হারাম সে ব্যক্তির দোয়া কবুল হওয়াকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুদূরপরাহত বিবেচনা করেছেন। হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন ব্যক্তির কথা উল্লেখ করেন, যিনি দীর্ঘ সফর করেছেন, মাথার চুল উস্কুখুস্ক হয়ে আছে; তিনি আসমানের দিকে হাত তুলে বলেন: ইয়া রব্ব, ইয়া রব্ব! কিন্তু, তার খাবার-খাদ্য হারাম, তার পানীয় হারাম, তার পরিধেয় হারাম, সে হারাম খেয়ে পরিপুষ্ট হয়েছে তাহলে এমন ব্যক্তির দোয়া কিভাবে কবুল হবে?[সহিহ মুসলিম, (১০১৫)]
ইবনুল কাইয়্যেম (রহঃ) বলেন, হারাম ভক্ষণ করা দোয়ার শক্তিকে নষ্ট করে দেয় ও দুর্বল করে দেয়।
৮. দোয়ার ক্ষেত্রে কোন সীমালঙ্ঘন না করা। কেননা আল্লাহ্ তাআলা দোয়ার মধ্যে সীমালঙ্ঘন করাটা অপছন্দ করেন। আল্লাহ্ তাআলা বলেন, “তোমরা বিনীতভাবে ও গোপনে তোমাদের রবকে ডাক; নিশ্চয় তিনি সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না।” [সূরা আরাফ, আয়াত: ৫৫] আরও বিস্তারিত জানতে দেখুন 41017 নং প্রশ্নোত্তর।
৯. ফরয আমল বাদ দিয়ে দোয়াতে মশগুল না হওয়া। যেমন, ফরয নামাযের ওয়াক্তে ফরয নামায বাদ দিয়ে দোয়া করা কিংবা দোয়া করতে গিয়ে মাতাপিতার অধিকার ক্ষুণ্ণ করা। খুব সম্ভব বিশিষ্ট ইবাদতগুজার জুরাইজ (রহঃ) এর কাহিনী থেকে এ ইঙ্গিত পাওয়া যায়। কারণ জুরাইজ (রহঃ) তার মায়ের ডাকে সাড়া না দিয়ে ইবাদতে মশগুল থেকেছেন। ফলে মা তাকে বদদোয়া করেন; এতে করে জুরাইজ (রহঃ) আল্লাহ্র পক্ষ থেকে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হন।
ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, আলেমগণ বলেছেন: এতে প্রমাণ রয়েছে যে, জুরাইজের জন্য সঠিক ছিল মায়ের ডাকে সাড়া দেয়া। কেননা তিনি নফল নামায আদায় করছিলেন। নফল নামায চালিয়ে যাওয়াটা হচ্ছে- নফল কাজ; ফরয নয়। আর মায়ের ডাকে সাড়া দেয়া ওয়াজিব এবং মায়ের অবাধ্য হওয়া হারাম....”[শারহু সহিহু মুসলিম (১৬/৮২)]
আরও অধিক জানতে মুহাম্মদ বিন ইব্রাহিম আল-হামাদ রচিত ‘আল-দুআ’ নামক বইটি দেখুন।
Link- https://islamqa.info/bn/answers/13506/
----------------------
>> দোয়া করার কিছু আদব-কায়দা
প্রশ্ন:
প্রশ্ন: দোয়া করার আদবসমূহ কি কি? এর পদ্ধতি কি? এর ওয়াজিব ও সুন্নতসমূহ কি কি? দোয়া কিভাবে শুরু করতে হয় ও কিভাবে শেষ করতে হয়? আখেরাতের বিষয়াবলির আগে দুনিয়াবী বিষয়ে দোয়া করা যায় কি? দোয়া করার সময় হাত তোলার শুদ্ধতা কি; শুদ্ধ হলে এর পদ্ধতি কি?
উত্তর:
আলহামদু লিল্লাহ।.
এক:
নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর কাছে চাওয়াটা ও সবকিছু তাঁর থেকে প্রত্যাশা করাটা পছন্দ করেন। যে ব্যক্তি তাঁর কাছে চায় না তিনি তার ওপর রাগ করেন। তিনি তাঁর বান্দাদেরকে তাঁর কাছে চাওয়া বা প্রার্থনা করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি বলেন: “আর তোমাদের রব বলেছেন, ‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব”[সূরা গাফির, আয়াত: ৬০]
ইসলামে রয়েছে দোয়ার মহান মর্যাদা। এমনকি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন কথাও বলেছেন: “দোয়া-ই ইবাদত”[সুনানে তিরমিযি (৩৩৭২), সুনানে আবু দাউদ (১৪৭৯), সুনানে ইবনে মাজাহ (৩৮২৮), আলবানী ‘সহিহুত তিরমিযি’ গ্রন্থে (২৫৯০) হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন]
আল্লাহই ভাল জানেন।
দুই:
দোয়ার আদবসমূহ:
১। দোয়াকারীকে আল্লাহর রুবুবিয়্যত, উলুহিয়্যত ও আসমা-সিফাতের প্রতি একত্ববাদী হতে হবে। আল্লাহ তাআলা কর্তৃক দোয়া কবুল করার শর্ত হচ্ছে- বান্দা কর্তৃক আল্লাহর আহ্বানে সাড়া দিয়ে নেক কাজ করা ও গুনাহ পরিত্যাগ করা। আল্লাহ তাআলা বলেন: “আর আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞেস করে, (তখন বলে দিন যে) নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই।”[সূরা বাক্বারা, আয়াত: ১৮৬]
২। একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর কাছে দোয়া করা। আল্লাহ তাআলা বলেন: আর “তাদেরকে কেবল এ নির্দেশই প্রদান করা হয়েছিল যে, তারা যেন আল্লাহ্র ইবাদত করে তাঁরই জন্য দ্বীনকে একনিষ্ঠ করে।”[সূরা বাইয়্যেনা, আয়াত: ০৫] দোয়া হচ্ছে- ইবাদত; যেমনটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন। তাই ইখলাস দোয়া কবুলের শর্ত।
৩। আল্লাহ্র সুন্দর নাম ও গুণাবলী দিয়ে তাঁকে ডাকা। আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “আর আল্লাহ্র জন্যই রয়েছে সুন্দর সুন্দর নাম। অতএব তোমরা তাঁকে সেসব নামেই ডাক; আর যারা তাঁর নাম বিকৃত করে তাদেরকে বর্জন কর।”[সূরা আরাফ, আয়াত: ১৮০]
৪। দোয়া করার পূর্বে আল্লাহর যথোপযুক্ত প্রশংসা করা। সুনানে তিরমিযিতে (৩৪৭৬) ফাযালা বিন উবায়দ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপবিষ্ট ছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে নামায আদায় করল, এরপর দু’আ করল: ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে মাফ করে দাও, তুমি আমাকে রহম কর’। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: হে নামাযী! তুমি বেশ তাড়াহুড়া করে ফেললে। তুমি নামায আদায় করে যখন বসবে তখন আগে আল্লাহর যথোপযুক্ত প্রশংসা করবে, আমার ওপর দরুদ পড়বে। এরপর আল্লাহর কাছে দু’আ করবে।” অপর এক রেওয়ায়েতে এসেছে (৩৪৭৭) “যখন তোমাদের কেউ নামায শেষ করবে তখন আল্লাহর প্রশংসা ও স্তুতি শুরু করবে। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরুদ পড়বে। অতঃপর যা ইচ্ছা দোয়া করবে” বর্ণনাকারী বলেন: এরপর অপর এক লোক নামায আদায় করল। সে ব্যক্তি আল্লাহর প্রশংসা করল, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরুদ পড়ল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: “ওহে নামাযী! দোয়া কর, আল্লাহ তোমার দোয়া কবুল করবেন”[আলবানী সহিহুত তিরমিযি গ্রন্থে (২৭৬৫), (২৭৬৭) হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন]
৫। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরুদ পড়া। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরুদ না পড়া পর্যন্ত যে কোন দোয়া আটকে থাকে”[আল-মুজাম আল-আওসাত (১/২২০), আলবানী ‘সহিহুল জামে’ গ্রন্থে (৪৩৯৯) হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন]
৬। কিবলামুখী হয়ে দোয়া করা। সহিহ মুসলিমে (১৭৬৩) উমর বিন খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেন: বদর যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুশরিকদের দিকে তাকালেন; তাদের সংখ্যা ছিল এক হাজার। আর তাঁর সাথীবর্গের সংখ্যা ছিল তিনশত উনিশ। তখন তিনি কিবলামুখী হয়ে হাত প্রসারিত করলেন, তারপর তাঁর রবকে ডাকতে শুরু করলেন: ‘হে আল্লাহ! আপনি আমাকে যে ওয়াদা দিয়েছেন সেটা বাস্তবায়ন করে দিন। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেটা দান করুন। হে আল্লাহ! আপনি যদি মুসলমানদের এ দলটিকে ধ্বংস করে দেন তাহলে পৃথিবীতে আপনার ইবাদত হবে না’। এভাবে দুই হাত প্রসারিত করে কিবলামুখী হয়ে তাঁর রবকে ডাকতে থাকলেন; এমনকি এক পর্যায়ে তাঁর কাঁধ থেকে চাদরটি পড়ে গেল...।
ইমাম নববী (রহঃ) ‘শারহু মুসলিম’ গ্রন্থে বলেন: এ হাদিসে দোয়াকালে কিবলামুখী হওয়া ও দুই হাত তুলে দোয়া করা মুস্তাহাব হওয়ার পক্ষে প্রমাণ রয়েছে।
৭। দুই হাত তোলা। সুনানে আবু দাউদ গ্রন্থে (১৪৮৮) সালমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “নিশ্চয় আপনাদের সুমহান রব হচ্ছেন লজ্জাশীল ও মহান দাতা। বান্দা যখন তাঁর কাছে দু’হাত তোলে তখন তিনি সে হাতদ্বয় শূন্য ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন।”[সহিহ আবু দাউদ গ্রন্থে (১৩২০) আলবানী হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন]
হাতের তালু থাকবে আকাশের দিকে; যেভাবে একজন নতজানু দরিদ্র সাহায্যপ্রার্থী কিছু পাওয়ার আশায় হাত পাতে। সুনানে আবু দাউদ গ্রন্থে (১৪৮৬) মালেক বিন ইয়াসার (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “যখন তোমরা আল্লাহর কাছে কোন কিছু চাইবে তখন হাতের তালু দিয়ে চাইবে; হাতের পিঠ দিয়ে নয়”[আলবানী সহিহ আবু দাউদ গ্রন্থে (১৩১৮) হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন]
হাত তোলার সময় দুই হাত কি মিলিয়ে রাখবে; না কি দুই হাতের মাঝে ফাঁক রাখবে?
শাইখ উছাইমীন (রহঃ) তাঁর ‘আল-শারহুল মুমতি’ গ্রন্থে (৪/২৫) উল্লেখ করেছেন যে, হাত দুইটি মিলিয়ে রাখবে। তাঁর ভাষায়: “দুই হাতের মাঝখানে ফাঁক রাখা ও এক হাত থেকে অন্য হাত দূরে রাখা সম্পর্কে আমি কোন দলিল পাইনি; না হাদিসে; আর না আলেমগণের বাণীতে।” [সমাপ্ত]
৮। আল্লাহর প্রতি এ একীন রাখা যে, আল্লাহ দোয়া কবুল করবেন এবং মনোযোগ দিয়ে দোয়া করা। দলিল হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “তোমরা দোয়া কবুল হওয়ার একীন নিয়ে দোয়া কর। জেনে রাখ, আল্লাহ তাআলা অবহেলাকারী ও অমনোযোগী অন্তরের দোয়া কবুল করেন না।”[সুনানে তিরমিযি (৩৪৭৯), শাইখ আলবানী ‘সহিহুত তিরমিযি’ গ্রন্থে (২৭৬৬) হাদিসটিকে ‘হাসান’ বলেছেন]
৯। বারবার চাওয়া। বান্দা আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণকর যা ইচ্ছা তা চাইবে, কাকুতি-মিনতি করবে, তবে দোয়ার ফলাফল প্রাপ্তিতে তাড়াহুড়া করবে না। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “বান্দার দোয়া ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করা হয় যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্দা কোন পাপ নিয়ে কিংবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা নিয়ে দোয়া করে। বান্দার দোয়া ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করা হয় যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্দা ফলাফল প্রাপ্তিতে তাড়াহুড়া না করে। জিজ্ঞেস করা হল: ইয়া রাসূলুল্লাহ! তাড়াহুড়া বলতে কী বুঝাচ্ছেন? তিনি বললেন: বলে যে, আমি দোয়া করেছি, আমি দোয়া করেছি; কিন্তু আমার দোয়া কবুল হতে দেখিনি। তখন সে ব্যক্তি উদ্যম হারিয়ে ফেলে এবং দোয়া ছেড়ে দেয়।[সহিহ বুখারী (৬৩৪০) ও সহহি মুসলিম (২৭৩৫)]
১০। দৃঢ়তার সাথে দোয়া করা। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “তোমাদের কেউ যেন অবশ্যই এভাবে না বলে যে, হে আল্লাহ! আপনি যদি চান আমাকে ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! আপনি যদি চান আমাকে দয়া করুন। কেননা নিশ্চয় আল্লাহর ওপর জবরদস্তি করার কেউ নেই।[সহিহ বুখারী (৬৩৩৯) ও সহিহ মুসলিম(২৬৭৯)]
১১। অনুনয়-বিনয়, আশা ও ভয় প্রকাশ করা। আল্লাহ তাআলা বলেন: “তোমরা বিনীতভাবে ও গোপনে তোমাদের রবকে ডাক”[সূরা আরাফ, আয়াত: ৫৫] তিনি আরও বলেন: “তারা সৎকাজে প্রতিযোগিতা করত, আর তারা আমাদেরকে ডাকত আগ্রহ ও ভীতির সাথে এবং তারা ছিল আমাদের নিকট ভীত-অবনত।”[সূরা আম্বিয়া, আয়াত: ৯০] তিনি আরও বলেন: “আর আপনি আপনার রবকে নিজ মনে স্মরণ করুন সবিনয়ে, ভীতচিত্তে ও অনুচ্চস্বরে, সকালে ও সন্ধ্যায়।”[সূরা আরাফ, আয়াত: ২০৫]
১২। তিনবার করে দোয়া করা। সহিহ বুখারী (২৪০) ও সহিহ মুসলিমে (১৭৯৪) আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে তিনি বলেন: “একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বায়তুল্লাহ্র কাছে নামায আদায় করছিলেন। সেখানে আবূ জেহেল ও তার সঙ্গীরা বসা ছিল। গতদিন উট জবাই করা হয়েছিল। এমন সময় আবু জেহেল বলে উঠল, ‘তোমাদের মধ্যে কে অমুক গোত্রের উটনীর নাড়ীভুঁড়ি এনে মুহাম্মদ যখন সিজদা করবে তখন তার পিঠের উপর রাখতে পারবে?’ তখন কওমের সবচেয়ে নিকৃষ্ট লোকটি দ্রুত গিয়ে উটনীর নাড়ীভুঁড়ি নিয়ে এল এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সিজদায় গেলেন তখন এগুলো তাঁর দুই কাঁধের মাঝখানে রেখে দিল। বর্ণনাকারী বলেন: তারা নিজেরা হাসতে থাকল; হাসতে হাসতে একে অন্যের ওপর হেলে পড়ল। আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম। হায়! আমার যদি প্রতিরোধ করার ক্ষমতা থাকত তাহলে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পিঠ থেকে এগুলো ফেলে দিতাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিজদায় পড়ে থাকলেন; মাথা উঠালেন না। এক পর্যায়ে এক লোক গিয়ে ফাতিমা (রাঃ) কে খবর দিল। খবর শুনে তিনি ছুটে এলেন। সে সময় ফাতেমা (রাঃ) ছিলেন ছোট বালিকা। তিনি এসে উটের নাড়ীভুঁড়ি তাঁর পিঠ থেকে ফেলে দিলেন। এরপর লোকদের দিকে মুখ করে তাদেরকে গালমন্দ করলেন। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাঁর নামায শেষ করলেন তখন তিনি কণ্ঠস্বর উঁচু করলেন এবং তাদের বিরুদ্ধে বদ দোয়া করলেন। - তিনি যখন দোয়া করতেন তখন তিনবার করতেন এবং যখন প্রার্থনা করতেন তখন তিনবার করতেন- এরপর বললেন: ইয়া আল্লাহ্! আপনি কুরাইশকে ধ্বংস করুন। এভাবে তিনবার বললেন। তারা যখন তাঁর কণ্ঠস্বর শুনতে পেল তাদের হাসি মিলিয়ে গেল এবং তারা তাঁর বদ দোয়াকে ভয় পেল। এরপর তিনি বললেনঃ ইয়া আল্লাহ্! আবূ জেহেল ইবনে হিশাম, ‘উতবা ইবনে রাবী’আ, শায়বা ইবনে রবী’আ, ওয়ালীদ ইবনে ‘উকবা, উমাইয়্যা ইবনে খালাফ ও ‘উকবা ইবনে আবু মু’আইতকে ধ্বংস করুন। (রাবী বলেন, তিনি সপ্তম ব্যক্তির নামও বলেছিলেন কিন্তু আমি স্মরণ রাখতে পারিনি।) সেই সত্তার কসম! যিনি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাদের নাম উচ্চারণ করেছিলেন, আমি বদর যুদ্ধের দিন তাদেরকে নিহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছি। পরবর্তীতে তাদেরকে টেনেহিঁচড়ে বদরের কূপের মধ্যে ফেলে দেয়া হয়।”
১৩। ভাল খাবার ও ভাল পোশাক গ্রহণ করা (ভাল হতে হলে হালাল হওয়া জরুরী)। সহিহ মুসলিমে (১০১৫) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি্ ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “হে লোকসকল! নিশ্চয় আল্লাহ ভাল। তিনি ভাল নয় এমন কিছু গ্রহণ করেন না। তিনি রাসূলদেরকে যে নির্দেশ দিয়েছেন একই নির্দেশ মুমিনদের প্রতিও জারী করেছেন। তিনি বলেন: “হে রাসূলগণ! আপনারা ভাল খাবার গ্রহণ করুন এবং নেক আমল করুন। নিশ্চয় আপনারা যা কিছু আমল করেন সে সম্পর্কে আমি সম্যক অবগত”[সূরা মুমিনূন, আয়াত: ৫১] তিনি আরও বলেন: “হে ঈমানদারেরা! তোমাদেরকে যেসব ভাল রিজিক দিয়েছি সেগুলো থেকে খাও।”[সূরা বাক্বারা, আয়াত: ১৭২] এরপর তিনি উল্লেখ করেন যে, জনৈক ব্যক্তি লম্বা সফর করে উস্কখুস্ক চুল নিয়ে ধুলিমলিন অবস্থায় দুই হাত আকাশের দিকে তুলে দোয়া করে: ইয়া রব্ব, ইয়া রব্ব! অথচ তার খাদ্য হারাম, তার পানীয় হারাম, তার পোশাক হারাম, সে পরিপুষ্ট হয়েছে হারাম খেয়ে তাহলে তার দোয়া কিভাবে কবুল হবে?” ইবনে রজব (রহঃ) বলেন: “হালাল খাওয়া, হালাল পান করা, হালাল পরিধান করা ও হালাল খেয়ে পরিপুষ্ট হওয়া দোয়া কবুল হওয়ার আবশ্যকীয় শর্ত।”[সমাপ্ত]
১৪। গোপনে দোয়া করা, শব্দ না করা। আল্লাহ তাআলা বলেন: “তোমরা বিনীতভাবে ও গোপনে তোমাদের রবকে ডাক”[সূরা আরাফ, আয়াত: ৫৫] আল্লাহ তাআলা যাকারিয়া (আলাইহি সালাম) এর প্রশংসা করে বলেন: “যখন তিনি তার রবকে ডেকেছিলেন নিভৃতে”[সূরা মারিয়াম, আয়াত: ০৩]
ইতিপূর্বেও দোয়া সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোকপাত করা হয়েছে। দোয়াকারীর দোয়া কবুল হওয়ার কারণসমূহ, দোয়ার আদবসমূহ, যেসব সময় ও স্থান ফযিলতপূর্ণ ও দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনাপূর্ণ, দোয়াকারীর অবস্থা, দোয়া কবুলের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাসমূহ ও দোয়া কবুলের প্রকারসমূহ ইত্যাদি 5113 নং প্রশ্নোত্তরে উল্লেখ করা হয়েছে।
Link- https://islamqa.info/bn/answers/36902/
-------------------
১। দোয়া কবুলের গল্প♥
এক মহিয়সী আরব মহিলার জীবন থেকে নেয়া ঘটনা। ঘটনা খুব বেশিদিন আগের নয়। এই তো বছর দুয়েক আগের। তিনি বলেছেন:
-আমার বিয়ে যখন হলো, আমার স্বামী ছিলেন একজন টগবগে তরুন। প্রাণোচ্ছল যুবাপুরুষ। সবকিছুতেই আনন্দ খুঁজে পান। মন খারাপ হওয়া বা বিষন্নতা বলতে কিছুই ছিল না তার জীবনে। তার সঙ্গ পেয়ে আমার মতো গম্ভীর মেয়েও কলকলে তরুনীতে পরিণত হলাম। দু’জনের সংসার সব সময় আনন্দে কলকল করতো।
আমরা থাকতাম শহরের ছোট্ট একটি বাসায়। দু’কামরার। ছিমছাম। নির্ঝঞ্ঝাট। নিরুপদ্রব। তার চাকরিক্ষেত্র থেকে আমাদের বাসার দূরত্ব খুব বেশি ছিল না। অফিসের গাড়ি এসে তুলে নিয়ে যেতো। সেজন্যই এখানে থাকা। তার বাবা মা থাকতেন উল্টো দিকের এক গ্রামে। প্রতি সপ্তাহে দু’তিনদিন বাবা-মায়ের কাছেও রাতে থাকতে যেতো। তার মতো বাবা-মা অন্তপ্রাণ ছেলে এ-যুগে বিরল। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা আর আন্তরিকতা দেখে অবাক হয়ে যেতাম।
বুড়ো-বুড়ির যাতে কোনও প্রকারের কষ্ট না হয় সেদিকে তার প্রখর দৃষ্টি। না পারতেই সে আমাদের নিয়ে আলাদা বাসায় থাকছে। যাতায়াত সুবিধের কারনে। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে একটা কন্যা দান করলেন। এবার একটা বড় বাসা নিয়ে বাবা-মাকেও এখানে নিয়ে এল। এভাবে বিয়ের পর চার বছর কোন ফাঁকে কেটে গেলো, টেরটিও পেলাম না। বিয়ের পঞ্চম বছরের মাথায়, অফিসে যাওয়ার পথে, তাদের গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লো।
অনেক হতাহত হলো। আমার স্বামীর অবস্থা ভীষন গুরুতরো! আমার বৃদ্ধ শ্বশুর দিশেহারা হয়ে ছোটাছুটি শুরু করে দিলেন। দৌড়ঝাঁপ করে যথাসম্ভব চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেন। অফিস থেকেও প্রয়োজনীয় সাহায্য দেয়া হলো। কিন্তু আঘাতটা মাথায় লাগাতে তার চেতনা ঠিকমতো ফিরে আসছিল না। সে প্রায় অর্ধমৃত। হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হলো। বাড়িতে নিয়ে এলাম।
শুরু হলো জীবনের কঠিনতম অধ্যায়। সংসারের খরচ জোগাড় করা, স্বামীর সেবা করা, বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়ির দেখাশোনা করা। এদিকে মেয়েটাও বড় হয়েছে। ডাক্তাররা কোনও আশাই দিলো না। আমার বাড়ি থেকে চাপ দেয়া হলো, স্বামীর ঘর ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে। আমার বয়েস কম, আবার বিয়ের ব্যবস্থা করা হবে। পাত্রও তৈরী আছে।
আমার বিবেকে বাধা দিল। এভাবেই দিন গিয়ে মাস হলো। মাস পার হয়ে বছর ঘুরল। স্বামীর কোনও উন্নতি নেই। সেই আগের মতোই আছে নির্জীব! নিস্পন্দ! নিথর! বাবা মা আর কতোদিন অপেক্ষা করবেন? তারা আমার অবস্থা বুঝতে পারছিলেন। এখানে যে কোনও ভবিষ্যত নেই সেটা একটা বালকও বুঝতে পারবে। এভাবে কেটে গেলো পাঁচটি বছর।
আব্বা একদিন মুফতির ফতোয়া নিয়ে এলেন। স্বামীকে ছেড়ে যেতে শরীয়তে কোনও বাধা নেই। বেশ জোরাজুরি করলেন। রাগারাগি করলেন। আমি কেন যেন সায় দিতে পারলাম না। মেয়ে হেফযখানায় পড়ে। হেফয প্রায় শেষ হয়ে এসেছে!
আমরা পালাক্রমে রুগীর সেবা করি। একদিন আমি রাত জাগি, আরেকদিন মেয়েটা। তার বয়েস অল্প হলেও সময়ের ফেরে অনেক কিছু শিখে ফেলেছে। বুঝতেও শিখেছে। আমরা মা মেয়ে দু’জনেই আল্লাহর কাছে হরওয়াক্ত দু‘আ করে যাচ্ছি। মানুষটাকে যেন আল্লাহ সুস্থ করে দেন। সাধ্যমতো সাদাকা করছি। শাশুড়ী তো জায়নামায থেকেই নড়েন না বলতে গেলে। শ্বশুর বুড়ো হলেও সংসারের টুকিটাকি কাজ করতে পারেন। তিনিও ছেলের জন্যে কিছু করতে মুখিয়ে থাকেন।
মেয়েটার হেফয শেষ হলো। ছোটখাট একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো। আমরা-আমরাই। ঘরের মানুষেরা মিলে। বাইরের মানুষ বলতে মেয়ের হেফযখানার শিক্ষক। তিনি এসে দু‘আ করে গেলেন। আল্লাহর কাছে দু‘আ করতে বললেন। সাদাকা চালিয়ে যেতে বললেন। বাবা মাকে দু‘আ করতে বললেন। তাদের দু‘আ অনেক কাজে লাগবে!
সেদিন রাত জাগার পালা ছিল মেয়ের। বাবাকে ওষুধ খাইয়ে খাটের বাজুতে মাথা রেখে ঘুমুচ্ছিল। মধ্যরাতে আবার ওষুধ খাওয়াবে! কী মনে করে, মাধা ঝাড়া দিয়ে উঠলো। সূরা বাকারা তিলাওয়াত শুরু করে দিল। শেষ করতে করতে আবার চোখে ঘুম নেমে এল। ঘুমন্ত অবস্থাতেই তার মনে হলো, কে একজন তার নাম ধরে ডেকে বলছে:
-ওঠো ওঠো! ঘুমিও না! তোমার দয়ালু রব জেগে আছেন, তুমি কেন ঘুমিয়ে আছো? এখন দু‘আ কবুলের সময়! ওজু করে নামায পড়ো। আল্লাহর কাছে দু‘আ করো! তুমি যা চাইবে তিনি দিয়ে দেবেন!
মেয়ে ধড়মর করে উঠে বসলো। তাড়াতাড়ি ওজু সেরে নামাযে দাঁড়াল! আল্লাহর কাছে দু’হাত তুলে দু‘আ করলো। আকুল কান্নায় ভেসে বাবার সুস্থ্যতা কামনা করলো। আবার আগের মতো বাবার খাটের পাশটিতে এসে বসলো। এক সময় ঘুম এসে গেলো। ফজরের নামাযের সময় একটা আওয়াজে ঘুম ভেঙে গেলো:
-এই মেয়ে তুমি কে? এখানে কেন ঘুমিয়ে আছো?
চোখ মেলে দেখে বাবা তার দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। চোখে প্রশ্ন। আবার প্রশ্ন করলেন: তুমি কে?
উত্তর দিবে কী, মেয়েটা আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলো। চেঁচিয়ে আমাকে ডাকল। দাদা-দাদুকে ডাকল! আব্বু আব্বু কথা বলছেন! আব্বু কথা বলছেন! সবাই ঘুম চোখে ছুটে এল। হাসি-কান্নায় একাকার! আল্লাহর আজীব কারিশমা! তার কুদরত বোঝা বান্দাহর সাধ্যে কুলোবে না! আমাদের সংসারটা আবার আগের মতো হয়ে গেলো। আনন্দ আর সুখ ফিরে এল! আল্লাহ কেন পরীক্ষা দিয়েছিলেন, কেন মাফ করে দিলেন, সেটা নিয়ে আমাদের কোনও মাথাব্যথা নেই! তিনি খুশি হলেই আমরা খুশি!
কৃতজ্ঞতাঃ শায়েখ আতীক উল্লাহ আতীক (হাফিজাহুল্লাহ্)
২। দোয়া কবুলের গল্প♥
প্রথম ছেলেটা আমার নর্মালে হলেও অনেক ধকল গিয়েছে সাইট কাটার পরিবর্তে ছিরে তা মলদ্বার পর্যন্ত যায় সেটা সেলাই শুকাতে অনেক সময় নেয় কস্ট ত আছেই,শুধু তাই না
জরায়ুতে দায়িদের নখের আচর লেগে ইনফাকশন তার পর পেকে ঘা হয়, যা আমার জিবন কে একদম তচনচ করে দিছে,১৮ বছর বয়সেই বলতে গেলে সেক্সুয়াল ব্যাপারটাকে দাফন করে দিতে হইছে,
দ্বিতীয় ছেলেটা নর্মালে চেস্টা করেও হয়নাই
সিজার করেছি,
কোন হেল্পিং হ্যান্ড নেই বাচ্চাদের জন্মের পর দুই মাস মায়ের কাছে থাকি পরে বাসায় একা আমি এক হাতে বাচ্চা সংসার সামলাই,
দ্বিতিয় ছেলে দুই মাস বয়সে ত নতুন বাসায় আসি
আমার হুজুর সব ফার্নিচার জিনিস বাসায় ঢুকে দিয়েই চলে যায় নিজের চাকরিস্থলে,দুই মাসের সিজারি আমি ছোট ভাই এর সাহায্যে খাট থেকে নিয়ে আলমারি ভারি ফার্নিচার সব রুমে সাজাই পেটে বেল্ট পরে সারাদিন কাজ করে ইফতারির সময় ভাই আমার পিঠে ওরনা দিয়ে বাবুকে বেধে দেয় তখন আমি ইফতার করি দারিয়ে থেকে, এক হাতে কোলে নিয়ে অন্য হাতে রান্না কত যে বাবুর পা পুরে গেছে তেলের ছিটায়, এভাবেই জিবন যুদ্ধে চলে আসছিলাম,
বাবুর ১২ মাস হতেই আমি ফেব্রুয়ারি তে নিজের অজানায় আবার কন্সিভ করি,এক মাস হবার আগেই টের পাই টেস্ট করি, অনেকে বলছিল নস্ট করে দিতে,এমন কি আমার সামনে কীট পর্যন্ত ও কিনে আনা হইছিল,একবার ভাবি উপায় নাই খেয়ে ফেলি একা কিভাবে সম্ভব একটারেই সামলে নিতে পারছিনা, আবার ভয় হয় না এটা করব না কিছু স্বপ্নের জন্য পিছ পা হইতাম এমন দো টানায় পরে শুধুই কাদছি সারাদিন,মার্চে ব্লিডিং হয় স্বাভাবিক মিন্সের মত, ভাবছি হয়ত সেস হয়ে গেল টেস্ট করেও পজিটিভ পাই,ডাক্তার দেখালাম,
বল্ল বাচ্চা নাই থলে আছে, অনেক সময় বাচ্চা দেরিতে আসে আরো এক মাস অয়েট করে বাচ্চা না আসলে ব্যাবস্থা নেব, রমজান মাস শরীর একদম পরে যায় রুচি নাই বমিভাব, পেট ব্যাথা ত শুরু থেকেই,মে র ৯ তারিখ রাত থেকে লেবার পেইনের মত পেইন হয় অল্প ১০ তারিখ সকাল ৯ টা থেকে ব্যাথা বারে, এমন ব্যাথা প্রায় ই হয় তাই রাতে তত টা গুরত্ব দেইনি যেহেতু সহ্যক্ষমতায় ছিল, ওদিকে হুজুর সেহরি খেয়ে দুরের শহরে চলে গেছে ৯ টায় যখন বেশি হল ফোন দিলাম
বল্ল আসছি উনার আসতে ২ ঘন্টা লাগছে, এদিকে আমি বাবু নিয়ে বাসায় একা বড় ছেলে নানু বাড়ি
বাসায় আরো তিন পরিবার ছিল উপর তলায়,
আমি চিৎকার করে কানছি, যন্ত্রনায় সাথে প্রচুর ব্লিডিং তারাতারি সালোয়ার খুলে পেটিকোট পরে বাথরুমে দারাই
ওদিকে বাবু আমায় দেখে কানতে কানছে গলা ভেংগে ফেলছে,
আর আমি সকাল থেকে না খাওয়া ব্যাথায় আর এত ব্লিডিং যে দেখেই আমি সেস
বাবু খাটের উপর বসা ছিল আমি বাথরুমেই এক সময় অজ্ঞ্যান হয়ে যাই ওই রক্তের মধ্যেই,জানিনা কতক্ষন পর কানের কাছে বাবুর চিক্কার কান্না শুনে উঠে বসি দেখি আমার চুল পুরা গায়ে শুধু রক্ত আর বাবুর ও,
খাটের উপর থেকে কানতে কানতে নিচে পরে গেছে তখন আমার কাছে চলে আসছে
এর মধ্য হুজুর আসে দরজা টা খুলতে আমার ১০ মিনিট ই লাগছে,
উনি এসে বাবুকে ধুয়ে খাটে রেখে আমাকে ধুইয়ে নিচে বাবুর কাথা দিয়ে আমাকে শুইয়ে দিয়ে আম্মুকে ফোন দেয় আমাকে সরকারি হস্পিটালে ইমার্জেন্সিতে নেয়,,তারা আল্টা আর হিমোগ্লোবিন টেস্ট করে রিপোর্ট দিতে বলে টেস্ট করতে বাইরে এক ক্লিনিকে আনলে তারা ভ্যাকুয়াম দিয়ে আমার ব্যাথা সাথে সাথে অফ করে সাথে ব্লিডিং ও অফ হয়,আল্ট্রা রিপোর্ট আসে আনকমপ্লিট এবরশন,
ক্লিনিক ওয়ালারা চাপ দেয় যেনো তাদের এখানেই ডি এন সি করায়, এতে আমি রাজি নই
কারন এগুলা ছোট ক্লিনিক ডাক্তার নেই কাজ ভাল হবে না
তখন একজন বল্ল ব্যাথা ত কিছুক্ষনের জন্য থামানো আছে আবার শুরু হবে
এটা শুনে ভয় পেয়ে যাই কতটা যন্ত্রনার ভাষায় ব্যাক্ত করা সম্ভব নয়, ক্লিনিকের যে বুয়া রা থাকে তারা বার বার চাপ দিচ্ছিল বলছি ম্যাম চলে যাবে তারাতারি করেন,
আমি বললাম হস্পিটালে ডাক্তার রিপোর্ট চাইল আগে তাকে দেখাই তখন বলে আচ্ছা যান ওখানে ছেলে ডাক্তার সব করবে তখন হুজুর আর কথা বারায় না, আর তারাও যেহেতু বল্ল ম্যাম চলে যাবে,
তাহলে ত কাজ ম্যাম ই করবে তখন আমিও রাজি হই,
যখন শুনলাম মাত্র দুই হাজার টাকা,
তখন ই বুঝলাম এরা কেমন কাজ করবে, ডাক্তারের রুমে যে বেড থাকে সেটাতে কাজ করবে,
যখন বললাম ফুল অজ্ঞ্যান না করলে করব না তখন বলে ফুল অজ্ঞ্যান করলে তিন দিন ভর্তি থাকতে হবে,
বল্ল সমস্যা নাই বুঝতে পারবেন না কোমর পর্যন্ত অবোশ করবে,
তার পর সেই দুই বুয়া রুম লক করে আমার পায়ে ইইঞ্জেকশন পুশ করে সব রেডি করছে কোন ডাক্তার নেই তখন জিজ্ঞেস করছি কাজ কি আপ্নারাই করবেন নাকি তখন চেইত্তা উঠছে বলে এত কথা কেন বলেন চুপ করে শুয়ে পরুন চাপা আছে খুব,
এমন বাজে ব্যাবহার দেখেই বুঝে ফেলি কি হতে যাচ্ছে আমাএ সাথে, কিছু বুঝে উঠার আগেই অস্ত্রপ্রয়োগ করল
আগে আমার প্রেশার দেখল না কোন মেডিসিন দিল না স্যালাইন না,
অস্ত্র দিতেই ত আমার জিবন যেন বেরিয়ে গেল এই সেনসিটিভ জায়গায় ত কাজ করতে হবে আস্তে আস্তে তারা যেন একদম হুরমুরিয়ে সব ঢুকিয়ে কিছু দিয়ে ঘুটনি দিল যেভাবে ডাল ঘুটে আর আমার মনে হচ্ছিল এখনি বুঝি দম টা চলে যাবে কলিজাটা ছিরে যেন ক্ষতবিক্ষত করল আমার চিতকারে আকাশ পাতাল ভারি তখন আমাকে ওই খান্নাস মহিলা মারধর করে আরেকজন কে বলে ওর মুখের মধ্য তুলা ভর মুখে কস্টেপ দে,
আর নোংরা ভাষায় বলে মাগি বাচ্চা নেয়া মারাইছিলা ক্যা কস্ট যদি না ই সহ্য হয়,আরেকজন মাত্র ৩ মিনিটে কাজ সেস করল লাস্টে তুলা গুজে দিল রাগের ভরে এতো জোরে দিল, চিৎকার করে কানছি,আমার চিতকারে হুজুর আম্মু ভাই দরজায় নক করছে বার বার
আমি উঠে বসি তারা ভেতরে আসলে আমার মুখে যা আসছে তাই বলে হুজুরকে বকেছি কারন আমি করতে চাইনি এখানে হুজুর জোর করে করাইছে বার বার বলছি অজ্ঞ্যান না করলে করব না তবুও করছে আর ডাক্তার দিয়ে না করিয়ে তারাই কেন করল
ওদের ও ইচ্ছামত বকছি আর চিল্লাইছি সব মানুষ জরো হয়ে গেছিল আমার চিতকারে,আমি মান সম্মান দেখিনি বকছি সবাইরে
এতে নাকি আমার বোরকার অসম্মান হইছে ওই অসভ্য দুই মহিলা বলে তোরা বোরকা খুলে যা এত খারাপ ব্যাবহার
তখন রুমে ডাক্তার আসছে বলছি কথা ছিল আপনি কাজ করবেণ ওরা কেন করল
তখন বলে কস্ট হইছে আপনাদের রুগির দোষেই শরির খিচ লেগে ছিল গা ছেরে দিলে এত কস্ট হত না,
পরে চলে
আসলাম,
চার দিন হয়ে গেল এখনো ব্লেডিং আর পেট ব্যাথা আছেই,
আমার এই অসুস্থ জরায়ুতে এভাবে ডি এন সি করল জানিনা কতটা ক্ষতি করল আমার,
আমি সন্তান কে হারালাম
আমি এত এত কস্ট পাইলাম তাতেও আফসোস হচ্ছেনা কিন্ত
আমার সাথে অন্যায় করা হইল ধোকা দিল আমাকে বোকা বানাল
মিথ্যা বলে কাজ করল কস্ট দিল খারাপ ব্যাবহার করল আমাকে মারল, এসব ভেবে ভেবে আমি মানুষিক ভাবে ভেংগে পরতেছি
থানায় যোগাযোগ করতে চেস্টা করছি অভিযোগ করব জানিনা তারা আমার অভিযোগ নেবে কিনা,অদের শাস্তি দিতে পারলে আমি শান্ত হইতাম
না হলে ওই দিনের দৃশ্য গুলা আমাকে ক্ষনে ক্ষনে পুরে মারতেছে আমি আর নিতে পারছিনা
কখনো মনে হচ্ছে পুরাই পাগল হয়ে যাব, মরে যাব আমি,
নিজের পরিবারের উপর জেদ আছে,সব মিলিয়ে আমি খাওয়া দাওয়া চলা ফেরা মন খুলে কথা বলা কিছুই করতে পারছিনা
কি করব আমি তোমরা বলো আমি কি সরাসরি থানায় যাব
কি করে অদের শিক্ষা দেব আমি😭😭
-------------------------------------
৩। দোয়া কবুলের গল্প♥
আল্লাহর ঘরে যাওয়ার স্বপ্ন কার না থাকে
তার হাবিবের রওজা মুবারক
জেয়ারতের আশা টা সবার মধ্যেজ থাকে, আর সেই স্বপ্ন আমার মধ্যেও ছিল ছোট বেলা থেকে,এমন কোন মুনাজাত নেই
এমন কোন তাহাজ্জুদ নেই আমি আল্লাহকে আমার স্বপ্ন পুরনের আকুতি জানাইনি,
আমার সামর্থ ছিল না, মাসিক আয় ছিল আমার ৬/৭ হাজার,কিন্ত তবুও আমি স্বপ্ন দেখতাম একদিন আল্লাহর ঘরে যাবই,
আল্লাহ চাইলে সব ই সম্ভব,
আমি যে এলাকায় ইমামতি করতাম, সেই এলাকার সন্তান রাজুকের চিপ্স ইঞ্জিনিয়ার হেলালী সাব,আমার দেখা সৎ একজন মানুষ,
সে গ্রামে আসত প্রতি সপ্তাহে,
কোন এক তাহাজ্জুদে আমি মুনাজাতে ছিলাম মসজিদে,
সেই মুহুর্তে উনি মসজিদে প্রবেশ করে আর আমার পেছনেই নামাযে দারিয়ে যায়, আমি ঘুনাক্ষরেও টের পাইনি,আমি আমার মত আমার রবের খুব নিকটে থেকে আমার মনের সব কথা ব্যাক্ত করি,আর তার ঘরে যাওয়ার আকুতিও করি,কান্নাকাটি করে,
উনি পেছন থেকে সব শুনে নেয়!
তার এক মাস পরেই ইদুল ফিতরের নামায শেষে, উনি আমার সাথে মোলাকাত করলেন,আর আমাকে আমার বহুদিনের স্বপ্ন বহুদিনের লালিত করা আশাটার অন্ধকার ঘরে এক আলো দিলেন আমার স্বপ্ন বাস্তবায়নের কথাটা জানালেন, ( জানালেন, আমি আপ্নাকে সম্পুর্ন বড় হজ্জের যাতায়াত সব খরচে যে টাকালাগে তার সব টাকা আপনাকে দিলাম ও আপনাকে মালিক করে দিলাম এখন আপনি এই টাকায় কি করতে চান? অপকটে বলে ফেলি আমি আগে হজ্জ ই করব সেই টাকায়)
সেদিন যে আমি কত টা খুশি ছিলাম কত টা কৃতজ্ঞ ছিলাম রবের নিকট, সেটা কেবল আমার রব ই জানে,আর কেউ না,
আমি ঘরে গিয়ে আমার আহলিয়াকে বলতে গিয়ে অঝোরে কেদে ফেলছি
এটা যেন এক অজস্র সুখের কান্না চোখের প্রতিটা ফোটায় আমি আমার সাফল্য দেখতে পাই,আর সাথে সাথে দু রাকাত শুকরানা নামায পরে রবের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই শুকরিয়াহ করি,
এর পর থেকে সকল প্রস্ততি শুরু হয়
সামনের ইদুল আজহা হবে আল্লাহর ঘরে,
এই একটা বছরে আমার ভিসা পাসপোর্ট কাগজ পত্র সব গুছাতে থাকি উনি ফোন করলেই চলে যেতাম
খুব ব্যাস্ততার মধ্যেও আমাকে সময় দিত,
আর আমি অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকি কবে আসবে সেই ক্ষন,
আমি নিজের মত প্রস্ততি নিতে থাকি,
আল্লাহ চাইলে সেই দিন চলে আসে,
আমি আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল হওয়াতে অত টাকা জমাতে পারিনি, মাত্র ১৪ হাজার টাকা নিয়ে ২০১৮ সালে ইদুল আজহার ৮ দিন আগে রওনা হই রবের ঘরের দিকে
বনানী মসজিদের ইমাম সাব সহ হেলালী সাব আরো ৭/৮ জনেএ কাফেলা আমাদের,
আলহামদুলিল্লাহ যখন পৌছে গেলাম তখনকার মুহুর্ত গুলার কথা কথা আর বলে বুঝানো সম্ভব না,
প্রথমেই শুকরানা নামায আদায় করে রবের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি,
মোট ৪৫ দিন আমরা থাকি মক্কা ও মদিনায়,
এই কয়েকদিনে আমি অনেক বিপদের সম্মুখিন হই,
আল্লাহ তায়ালা নিজ কুদরতে আমাকে উদ্ধার করেন, তার কয়েক টা ঘটনা বলি,
আমাদের কাফেলার সবাই অনেক বড়লোক,একমাত্র আমিই গরীব ছিলাম,
আমার সাথী ভাইরা ৫/৬ জন সর্বক্ষন ই বাসায় আড্ডা দিত
তাদের নামাযের সময় ছাড়া মসজিদে পাইতাম না,
কিন্ত আমি তাদের থেকে সম্পুর্ন বিপরীত ছিলাম
আমি আর সবার মত স্মার্ট না, আড্ডা আমার পছন্দ না,
বলতে গেলে আমি একজন গেয়ো ভুত, সবাই যা বলে আরকি, বর্তমান সমাজের সাথে তাল মিলে আমি চলিনা,
ত সেদিন কি মনে করে আমি তাদের রুমে আড্ডায় শামিল হই
কিন্তু বেশিক্ষন ছিলাম না
৫/১০ মিনিটের মত,আর সেখানে এক বই পেয়ে আমি তাতেই মনোনিবেশন করি আর কে কখন যার যার রুমে বা বাইরে চলে গেছে খেয়াল করিনি যখন দেখালাম রুমে একমাত্র আমিই একা, তখন বই রেখে উঠে রুমে যাই, কিছুক্ষন পরেই সেই রুমের ভাই তার টাচ দামি ফোন খুজে পাচ্ছিল না,
আর হ্যা বলে রাখা ভাল যে সবার ই টাচ ফোন ছিল শুধু আমার ই ছিল না, কারন এসব আমি বুঝিনা চালাতেও পারিনা, আর এটাকে আমার ফিতনা মনে হয় দাজ্জাল ভাবি এই ফোন কে আমি,ত সবাই সাক্ষ্য দিছে আমি রুমে একা ছিলাম ত আমিই নিছি, সবাই সমালোচোনা শুরু করছে কি করে এখন আমার থেকে ফোন চাইবে বা নেবে, এই কথা যখন আমার কানে পৌছালো এক মুহুর্তের জন্য তব্দা খেয়ে যাই
৭/৫ না ভেবে মসজিদে নববীতে চলে যাই আর সিজদায় পরে যাই,
কতক্ষন ছিলাম জানিনা, যখন কানে আসল ইয়াসিন ভাই উঠেন, তখন দারাই
দেখি তারা সবাই আমার সামনে, আর ততক্ষনাত হাত ধরে মাফ চায় আর কেদে ফেলে আমি কিছু বুঝতে না পারায় জিজ্ঞেস করলাম,
তখন বল্ল তারা খুজে খুজে হয়্রান পরে যার মোবাইল সে বালিস নিয়ে শুতেই বালিসের কাভারের মধ্য ফোন টা পায়, তখন আর কেউ আমাকে খুজে পায়না, আর সবার ই এটা জানা যে আমি ২৪: টা ঘন্টাই পাগলের মত মসজিদে নববীতে পরে থাকি, তাই তারা সোজা চলে আসছে মাফ চাইতে,
আলহামদুলিল্লাহ অনেক শুকরিয়াহ করলাম,,
আস্তে আস্তে দিন সেস হয়ে আসতে লাগল আর আমার অন্তরের ব্যাথাটাও যেন বারতে থাকলো,
আগেই বলেছি আমি বেশি অর্থ আনতে পারিনি, তাই কেনাকাটার টেনশন আমার মাথায় ছিল না,
কিন্ত মনে বড় শখ ছিল আহলিয়ারে কিছু দেব,বাট সামর্থ নাই, তবুও দুদিন জুয়েলার্সে গিয়ে ঘুরে এসেছি, টাকায় হয়না,
তাই যা ছিল জায়নামাজ তসবিহ আতর আর খেজুর নেই
আহলিয়া বলেছিল আজওয়া নিতে তখন আমরা একটা বাচ্চাও চাই আল্লাহর কাছে তার খুব ইচ্ছা ছিল অন্তঃসত্ত্বা তে আজওয়া খাবে জমজমের পানি পান করবে,
তাই এগুলা কেনাকাটা করে আমি টাকা গুলা সেস করি,
ছেলে বা আহলিয়ার জন্য বিষেশ কিছু কিনতে পারিনি,
আসার মাত্র ৭ দিন আগে আমি কিছু রিয়েল হাদিয়া পাই,পরক্ষনেই এক মিসকিন এসে চায়,আমি যা হাদিয়া পাই তার থেকে অর্ধেক মিসকিন কে দিয়ে দেই,
তার পরের দিন, নাইজেরিয়ার এক জন মোলাকাত করে মুসাফার মধ্য হাতে টাকা গুজে দেয় যেটা গুনে আমি অবাক হয়ে যাই
হিসেব করে বাংলাদেশি ১০০০০ টাকা হয়,অত্যান্ত খুশি হয়ে আহলিয়ার জন্য কিছু কিনতে জুয়েলারিতে ছুটে যাই, আর একটা রিং নেই হাতের জন্য, ৮০০০ হাজার টাকায়,
বাকি টাকা দিয়ে ছেলের জন্য গেঞ্জি চকলেট নেই,,
আরেকদিন জাবালে নূর এ উঠি আর উঠতে প্রায় সোয়া ঘন্টার মত লাগে, উঠার পরেই বুঝতে পারি আকাশের অবস্থা ভাল নয়
তারাতারি নেমে যেতে হবে, তাই আর এক মুহুর্ত দেরি না করে নামতে শুরু করি মাঝপথে শুরু হয় বাতাস, আর কালো মেঘ
আল্লাহকে ডাকতে ডাকতে নামতে থাকি সেস মুহুর্তে প্রবল বাতাস ঝড় বৃস্টি শুরু হয় সেদিন পাহার থেকে অনেক মানুষ এই চোখের সামনে গড়ে পরে মৃত্যবরন করতে দেখি তাদের জানাজায় শরীক হই, ভাগ্য ক্রমে সেদিন আমি আমার পরিচয় পত্র কোন কাফেলার তার কোন প্রমান ফিতা আমার গলায় ছিল না,
যদি সেদিন আমি মারা যেতাম
বেওয়ারিশ লাশ হয়ে সেখানের কোন এক কবস্থানে জায়গা হত,
আমি নেমে পাশেই নাইজেরিয়াদের এক তাবুতে ঢুকে পরি
ঝড় থেমে গেলে নিজের কাফেলায় ফিরে যাই, আলহামদুলিল্লাহ,
যেদিন চলে আসি,শুনেছি চেকিংে শরীরে কোন জিনিস পেলে ফেলে দেয় কিছু নিতে দেয়না,
আমার আহলিয়া খুব শখ করেছিল কাচা খেজুরের,,
তাই আসার আগ মুহুর্তে মদিনা থেকে কিছু কাচা খেজুর নেই আর সেটা হাত ব্যাগে থাকে
দুটা এহরামের কাপড় ও,
আর পকেটে ছিল আমার আহলিয়ার সেই রিং টা, আর আমি সেই ভয় ই পাচ্ছিলাম যে রিংটা পেলে নিশ্চিত তারা ফেলে দেবে, হাতের পলি ব্যাগ টাও,
সিরিয়ালে দারিয়ে সমানে জিকির করছিলাম আর আগাচ্ছিলাম,
ঠিক যখন আমার পালা আসল
তখন চেকপোস্টএর লোক বদলি হচ্ছে অন্যজন চলে আসল ডিউটিতে ত তারা দুজন মোলাকাত করতেছে আমি কাছেই দারানো হঠাত আমার পায়ে তাদের পারা লাগে, আর সাথে সাথে আমাকে বুকে টেনে নেয় মাফ চায় ব্যাথা পেয়েছি কিনা সেটা জিজ্ঞেস করে কপালে একটা চুমু দিয়ে হাত ধরে আমাকে এগিয়ে দিল আর চেক করল না
আল্লাহর কি অপার মহিমা,
আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ, এরপর চলে আসি বাংলাদেশের এয়ারপোর্ট এ, এখানে এসে আমার জমজমের পানি টা হারিয়ে যায়
৫ লিটারের এক গ্যালন, তাতে আমি আরবীতে আমার জেলার নাম আর নিজের নাম লিখি
আর ওউ গ্যালনেও সব আরবীতে লেখা ছিল
ত ভাইয়া বুঝতে পারেনি যে আমার ঠিকানা এতে লিখা আছে, উনিও হাজিদের মধ্যেই একজন ছিলেন,যখন আমার চোখে পরল আমি গ্যালন টা আর লাগেজ তুলে নিলাম
তখন ওই ভাই এসে দাবি করল এই গ্যালন আমার বললাম প্রমান?
তিনি দেখালো বাংলায় তার নাম লিখা, এতে আমার সাথী ভাই রা অবাক হয়
কারন আমি তাদের সাথে রুমে তাদের সামনে নাম লিখেছিলাম এতে দেখে ওরাও লিখেছিল
কিন্ত ইনি এটার উপরে আবার নিজের নাম ও বসিয়েছে,
তখন আমি আর কিছু বললাম না
সাথী ভাই রাই বল্ল এইযে আরবীতে উনার ঠিকানা দেখতে পাচ্ছেন না?
নাকি না দেখেই আপনার নাম টা বসিয়ে দিছেন,
পরে দিয়ে দেয়, আমাকে,
আর ৮/১০ জনের মত এয়ারপোর্ট এ আমার জন্য কেউ আসেনি রিসিভ করতে, আমি একাই ঢাকা থেকে বাসে উঠে ৬/৭ ঘন্টার পথ পেরিয়ে বাড়ি চলে আসি, রাত ৩ টায়,আলহামদুলিল্লাহ
এখন শুধু স্বপ্ন দেখি আহলিয়ারে নিয়ে কবে ওমরায় যেতে পারব,
কবে সেই ক্ষন আল্লাহ দেবেন কবুল করবেন
সেই আশায় দিন পার করা এই আমি,প্রতি মুনাজাতে রব কে বলি,
(কপি টু আমার হুজুর)
-----------------------------------------
৪। দোয়া কবুলের গল্প♥
♥♥দোয়া কবুলের গল্প♥♥
বান্দার সব কিছুর দেখভাল করার দায়িত্ব টা কার বেশি? রিজিকের মালিক আল্লাহ,তিনিই আমাদের রিজিক দেন আর তিনিই সব সময় আমাদের নিয়ে চিন্তা করেন, আমরা অযথাই টেনশন করে নিজের উপর যুলুম করি,চাওয়ার মত চাইলে আল্লাহ অবশ্যই দেন, হয়ত আমরা চাইতেই পারিনা,কিন্ত সেই চাওয়াটা তার ই কোন বান্দার কাছে চাইলে অপমানিত হতে হয় লাঞ্চিত হতে হয়, আর মালিকের কাছে চাইলে কত সস্মানে দিয়ে দেন,আহ কতই না ভালবাসেন আমাদের,
আর যখন মালিকের কাছে না চাইতেই সেটা পেয়ে যাই সে আনন্দ টা কেমন হয় ভাবা যায়?
হ্যা আজ শোনাবো সেই গল্প!
এইযে পিকে দেখতেছেন? এটা হয়ত আপনাদের নজরে সামান্য সেলাই মেশিন বলতে পারেন, কিন্ত না এটা আমার কাছে সামান্য নয়,দৈনন্দিন জিবনে এটা ছাড়া আমি অচল,
বলতে পারেন এটা আমার সংসারের প্রান,হৃৎপিন্ড, বা আমার সংসারের আয়ের উৎস,
আমার বিয়ের ৭ বছর রানিং,বিয়ের পর যখন আমার হুজুরের সাথে তার চাকরীস্থলে যাই,তখন সেখানে গিয়ে পাই একটা ছোট চৌকি দুজন বেশ কস্টেই থেকেছি চৌকিতে, আর একটা জগ একটা প্লেট আর কিচ্ছুনা বাহির থেকে উনার জন্য খানা আসত বাটিতে সেটাই দুজন ভাগ করে খেতাম,ত নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক জিনিসের ই অভাব ফিল করতে থাকি তখন একটস মেশিনের খুব দরকার ছিল আমার, কিন্ত কেনার মত সামর্থ তখন ছিলনা, আমার জায়ের একটামেশিন ঘরে পরে ছিল
সে সেলাই কাজ জানত না, তাই ভাবলাম কিছুদিনের জন্য আনি পরে দিয়ে আসব
কিন্ত সে মুখের উপর না করে দিল,অগত্যা হুজুর বহুকালের এক পুরানো মেশিন ঋন করে কিনে এনে দিল, আর আমি শুরু করে দিলাম অর্ডার নেয়া আর মহিলাদের কাজ সিখানো, বলতে গেলে তখন আমি ছোট দেখতে ছোট মানুষের মত কেউ বিশ্বাস করত না ভাল কাজ জানি বা করতে পারব তাই কেউ বেশি অর্ডার দিত না
কিন্ত যারা একবার বানাতো তাদের দ্বারাই পুরা এলাকায় অনেক সুনাম ছরায় আর আমি অনেক ইনকাম করি, মেশিনের ঋন শোধ করে সংসারের সর্ব প্রথম জিনিস আমার খাবারের র্যাক, এভাবে আস্তে আস্তে আমার স্বপ্নের সংসার সাজাতে থাকি,এভাবেই চলে আমাদের সংসার, আর এতদিনে এসে ত আমাদের জীবনে খুব একটা দু:খের সময় যাচ্ছিল,একদিকে উনার চাকরি নেই, অন্য দিকে লক ডাউন আমার বাবু হবে সব মিলিয়ে অনেক দু:স্বময় যাচ্ছিল আলহামদুলিল্লাহ এখন উনার একটা ব্যাবস্থা হইলেও আগের মত স্বাভাবিক হয়ে উঠতে এখনো পারিনি,আর এই সময় হঠাত আমার সেই পুরোনো মেশিন টা অকেজো হতে থাকে ফ্রেমটা ভেংগে যায় মেশিন টাও নস্ট হয়, খুব টেনশনে পরে যাই, আর ভাবতে থাকি এই মুহুর্তে মেশিন টা গেল এখন উপায় হবে কি আমি ত একদিন ও মেশিন ছাড়া থাকতে পারবনা আর এখন কিনবই বা কিভাবে, এসব ভাবতে ভাবতেই, হঠাত এক দিন আমার লিস্টের এক আপু মেসেজ করে তার একটা নতুন মেশিন আছে সেলাই কাজ তার কাছে কঠিন লাগে তাই মেশিন টা কাউকে হাদিয়া দিতে চাচ্ছেন তার বাসা থেকে আনতে হবে,শুনে কিছুক্ষনের জন্য ভাবনায় পরে গেলাম
আমি ত আল্লাহর কাছে এখনো চাইনি তাকে আমার এই সমস্যাটা এখনো জানানো হয়নি কিন্ত তিনি ঠিক ব্যাবস্থা করে দিলেন তাও এভাবে আমি আর কিছু না ভেবে দু রাকাত শুকরানা নামায পড়ে রব্বে কারিমের নিকট শুকরিয়া প্রকাশ করলাম,আনন্দে দু চোখের পানি আটকাতে পারিনি, যে আমার মত অকৃতজ্ঞ নাশুকরিয়া পাপি বান্দাকে আল্লাহ এভাবে সাহায্য করবে কখনই ভাবিনি
আপু কস্ট করে সেই দূর থেকে (ঢাকা থেকে বগুড়া) কুরিয়া করে আমার জন্য পাঠিয়ে দিয়েছেন,
আল্লাহ তায়ালা উনাকে জান্নাতে উচ্চ মাকামে রাখুন,
আমিন
আর কোন বান্দার কাছে চাওয়ার কি পরিনাম হয়,তাও বলছি,
নিজের পরিস্থিতি কাউকে জানানো বা কারো কাছে হেল্প চাওয়া আমার আদতে যায়না,
আর এই ব্যাপারে আমার হুজুরের ও আছে কঠিন শাষন,
বাবু হবার পর বাপের বাড়ি টানা ৪/৫ মাস পর চলে আসি ভারা বাসায়, আর তখন রমজানের শুরু,হুজুরের তখন পাচ হাজার টাকা বেতনের এক খেদমত ছিল দূরে,অনেক টা কপাল স্বিকার করে আর প্রভুর উপরে বিশ্বাস রেখে আমি তিন হাজার টাকা ভারা এক বাসায় উঠে পরলাম,
কি খাব কি রানব তার কোন চিন্তা না করেই,সামনে ঈদ অনেক সময় অনেক চিন্তাও এসে ঘুরপাক খেতো রোজার ১০/১৫ টা কিভাবে গেছে সেটা আর না ই বা বলি,সেদিন আর ইফতারি করার মত কিচ্ছুই খুজে পেলাম না ভাত ছাড়া কাচা কোন তরকারিও না আলুটাও না যাই হোক কারো কাছে ঋন চাইলেও দিতে চায়না আর এটাও আমার কাছে ভয়ের একটা ব্যাপার ঋন আমি অনেক ভয় পাই যে পরে কো থেকে টাকা দেব, অনেক দিক চিন্তা ভাবনা করে ফেসবুক ফ্রেন্ড থেকে আমি হেল্প চাই অনেক টা আশা নিয়ে যে আমি নিশ্চয় হেল্প পাবো, কিন্ত আমার আল্লাহ হয়ত নারাজ হয়েছিল আমার সেদিনের ভুলের জন্য
অনেক অপমানিত হয়েছি লাঞ্চিত হয়েছি, সে মুখে আমার জন্য শুভাকাঙ্ক্ষী প্রকাশ করলেও অনেক আচরনে আমি যে কতটা কস্ট পেয়েছি বলার মত না, কত যে কেদেছি, হুজুরের বুকে মাথা গুজে অনেক কেদেছি বলেছি আমি আর কোন দিন কোন মানুষের থেকে হেল্প চাইব না আর্থিক বিষয়ে, এত কস্ট পাওয়ার কারন, আমি কেমন?
এই প্রশ্ন টা! ২৪ টা ঘন্টা মন কুরে কুরে খাচ্ছিল আর ভাবছি সে হয়ত কত কি ভাবল আমায় নিয়ে ছি:
সে আমার সত্যতা যাচাইএর জন্য যখন আমার ই কোন ফ্রেন্ডকে জিজ্ঞেস করে কেমন লাগে তখন ভাবা যায় না, আমার এই ব্যাপারটা নিয়ে স্বাভাবিক হতে অনেক দিন লেগেছে, তার সাথে কথা বলতেও নিজেকে ছোট লাগে নিচু মনে হয়
আর মনে হয় সে আমাকে কত কিছু যে ভেবেঁে আল্লাহ মালুম,।যাই হোক আমার জিবনে এটা অনেক বড় একটা শিক্ষা,
আর মালিকের কাছে চাইলে দেখো কত সুন্দর করে ব্যাবস্থা করে দেন আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ, সেরকম আজ ও এক অলৌকিক ঘটনা ঘটেছে সেটা আর শেয়ার নাই করি,সব ই আল্লাহর ইচ্ছা
আমি শুধুই অবাক হয়ে যাই আর ভাবনায় পরি
সবাই দোয়া করবেন আর যেই প্রভু এত নিখুঁতভাবে আমাদের সাহায্য করে যান তার অনুগত্য যেন করতে পারি সারাজিবন তার পথে যেনো টিকে থাকতে পারি।
--------------------------------
৫। দোয়া কবুলের গল্প♥
এক মায়ের আত্মকাহিনি,,
(১) রাত গভীর!
চারিদিকি শুনশান নিরবতা,প্রাকৃতিক যেনো কালো চাদরে ঢেকে দিয়েছে পুরা পৃথিবি টা,
কোথাও নেই কোলাহল, আছে শুধু ঝি ঝি পোকার ডাক,বাচ্চারা অতল গভীর ঘুমে নিমগ্ন! মায়াবি তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে কত কিছুই না ভাবছি, কখন যে চোখ ভরে জল আসছে বুঝতেই পারিনি, আছি আমি কল্পনার জগতে, উনার ধাক্কায় আমার ফিরে এলাম বাস্তবে,
এই জানালাটা খুলে দাও বাতাস আসবে সুন্দর
প্রচন্ড গরম পরেছে"!
হুম দিচ্ছি! জানাটা খুলতেই আবারো হারিয়ে গেলাম প্রকৃতির মাঝে
কি সুন্দর দক্ষিনা বাতাসে পরান টা জুরায় গেল,
চারিদিকে অন্ধকারের মধ্য তারা ভরা আকাশ আর অর্ধভরাটে চাঁদ মামা, সেই সাথে অসংখ্য জোনাকিরা এক অপুর্ব দৃশ্য বাইরে,
দুজনেই নিরব কত শত চিন্তা দুজনের মাথায়,
এই শুনছেন?
:হুম বলো
: ছোট বাজান ত আজ শুধু পায়খানা করতেছে
ওর দুধ যে সেস হয়ে গেছে এহন কি করমু,?
:দীর্ঘ এক শ্বাষ নিয়ে, আমি কি করব বলো না এভাবে আর কত দিন চলবে আমার ত মাথায় কিছু ধরেনা
মাদ্রাসা টা কবে খুলবে আর মাস সেসে কয়ডা টাকা পামু, এম্নে বসে থেকে কিভাবে চলমু বলো কিছু ত করতে হইব কি করমু?
: হ আল্লাহয় আর কত পরীক্ষা নিব আমগো, নিক শুকরিয়া করি কিন্ত পোলাপাইন গুলার কস্ট ক্যাম্নে সহহ্য করি,
: তুমি বাবাই রে আর খালি সুজি দিও না দেখি আমি সকালে বের হব কিছু করতে পারি কিনা
তুমি কস্ট করে ওরে না কাল সারাদিন মিশ্রি পানি জাল করে খাওয়াও
মাওলা ঠিক এক ব্যাবস্থা করে দিব আমার আমি কাল দুধের ব্যাবস্থা করুম নি,
: আইচ্ছা
নিজেরা না খাইয়া থাকা যায় বাচ্চা মানুষ কি তাই পারে?
কি করমু উপায় নাই ত
অল্প কিছু টাকা ছিল বাজার করে সেস
কিন্ত সে বাজারে ত দুই মাস খাইলাম
আর কত খামু, সব ত সেসের দিকে সেস হইলে তখন কি হইবে?
ফ্রিজে তিন পুটলা না মাছ আছে প্রতিদিন দুপুরে রানবার যাইয়া দুই বার হাতে নিয়া আবার রাইখা দেই, এহন রানলেই ত সেস হই যাইবনি, পরে আবার কি খামুনি, এই ভেবে যে কতদিন কাটাচ্ছি তবুও মাছ গুলা রান্না হচ্ছেনা যেয়ে দুটা আলু ভাতে দেই,
বড় পোলাডা কোন দিন ডিম ছাড়া ভাত খাইত না মাসে দুই খাচি ডিম লাগত,
আর এহন ফ্রীজে দুটা ডিম আছে পোলায় আমার খালি সারাক্ষন ফ্রিজ খুলে আর ডিম নেরে চেরে আবার রেখে দেয়
কয় আম্মু পরে খাম নি
এখন খাইলে আবার পরে কি খামুনি?
বাবুর হাগু মুতু কাথা ধুব কি দিয়ে কাল সকালে? গুড়া সাবান যে নাই, টুকটাক ব্যাবসায় যা টাকা পাবে বাসা ভারা টাও শর্ট পরে যাবে,,
:আহ! এক দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে
আচ্ছা বলো তো কে বলবে আমরা এখন এত টা কঠিন মুহুর্তে আছি
কেউ আসলে দেখে বলে ইশ কি সুখি পরিবার, দুটা বাচ্চা পরিপাটি সংসার
কি মুহাব্বত, ঘরে কোন কিছুর যে অভাব নাই, বড়লোক না বল্লেও ত উচ্চ মধ্যবিত্ত এর সুখি পরিবার,
কিন্তু এই সুখি অভাবনিয় পরিবারে এত অভাব হুট করে কো থেকে আসল?
কারো কি বদ নজর লেগে গেল না ত?
আজ একটা বছর যাবত কোন খেদমত নেই
আল্লাহ কবে আমার একটা হালাল রিজিকের ব্যাবস্থা করবেন?
: থাক এত চিন্তা কইরেন না
রাত মেলা হইছে ঘুম এহন,
ফজর পড়ে রান্না ঘরে ঢুকে চাল নিতে যেয়ে যেনো কলিজায় এক হোচট লাগল
মাত্র এই কয়াডা চাল আছে? সেস হইলে কি হবে,
রান্না সেসে নিজে একটু কম কম খাই আর রাখি পোলায় খাইবনি আরেক সময়,
সিজনি একটা সময় আম কাঠালের, একটা কিনে পোলাডারে খাওয়াতে পাচ্ছিনা
এইত ওইদিন বাড়ি ওয়ালা ভাবির বাসায় খেলছিল তার বাচ্চার সাথে
সে তখন আম কেটে দিচ্ছিল বাচ্চারা খাচ্ছিল
ভাবি বলছিল তুমি ত মাশাল্লাহ অনেক আম খাও,
তখন পোলাডায় এতিমের মত বলেছিল আমার আব্বু ত আম ই কিনে না কখনো,
ভাবি যখন এভাবে বলছিল আমার
এক দিকে আমি লজ্জায় সেস হয়ে যাচ্ছিলাম
অন্য দিকে এক জলন্ত আগুনের লেলিহান শিখায় দগ্ধ হয়ে যাচ্ছিলাম
ভেতরটায় এক রকম ঝড় বইয়ে যাচ্ছিল,
আজ সকালেও বলছে আম্মু প্রতিদিন এই চাল ডাল এক সাথে করে রাধো খাইতে ইচ্ছা করে না একটু ঝোল করো মাছের,
তাই দুপুরে দুটা আলু বেশি করে ঝোল করেছি
মাছ বের করে দেখলাম চার পিছ
ভাবলাম আমরা না খাই পোলাডারে ত দিতেই হইব এক পিছ রানলাম অন্য গুলা রাখলে অন্য দিন খাওয়াতে পারব,
বিল্ডিংের সব বাচ্চারা প্রাইভেট পড়ে
পোলার বায়না আমিও পড়ব
ভাবিরা বলে কেন পড়াই না
কিন্ত মাস সেসে ৫০০ টাকা বেতন হুজুরকে দেব কোথেকে?
সাত পাচ না ভেবে প্রাইভেট দিলাম
আর ভাব্লাম অনলাইনে যদি কিছু ব্যাবসা করি হয়ত পোলার মাস সেসের৫০০ পেয়ে যাব,
কিন্ত না আমার ভাবনা টা ভুল ছিল,
সকাল সকাল খানা খেয়ে উনি বের হলেন আর বললেন তুমি যেনো চিন্তা করোনা গো, বাজানের দিকে খেয়াল রাইখো
মিশ্রি পানি ছাড়া অন্য কিছু দিওনা পায়খানা বেশি করলে হাসপাতালে নিও,
আর আমি, একজন দুই ডা অসুধ দিছে এগুলা বিক্রি করতে পারলে তারে অর্ধেক দিয়ে যা থাকব সেটা আমার, দেখি বিক্রি করতে পাই নাকি, বিক্রি হইলে আমি বাবুর দুধের কৌটা আনুম নি, যাই দরজা লাগাও,
দুপুর গরিয়ে সুর্য পশ্চিমাকাশে ঢুলে পরেছে, আনমনে জানালায় দারিয়ে ভাবছি কি হবে কি হবে?
কখন যেনো বিকেল গয়িরে গেছে
পেটের ক্ষুদা ডাক না দিলে বুঝতাম ই না এতটা সময় চলে গেছে
একা একা আর কি খাব ইচ্ছে নেই খাওয়ার,
বাজান ডা পায়খানা করে করে শরীর ডা বড্ড ক্লান্ত যে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন,
কখন আসবে উনি, তার পথ পানে চেয়ে আমি বসে,
আজ কি উনি পারবে কয়ডা টাকা রোজগার করতে?
নাকি রোজকারের মত খালি হাতে মলিন মুখে মাথা নিচু করে ঘরে ফিরবে,
পাখিরা সব নীড়ে চলে গেছে রক্তিম আভায় সুর্যটা নিভু নিভু করছে সন্ধ্যা নেমে এল অচিরেই
আবার কি উঠবে এই সুর্য?
আবার কি পাবো আমি সেই আলো সেই সুখ কর দিন গুলা
পাব আমি আমার হারানো দিন গুলা?
কত হাজার প্রশ্ন মনে
আমার জিবন টায় সন্ধ্যা নেমে অন্ধকারে আচ্ছন্ন করে রেখেছে আশায় আছি কবে উঠবে আমার সুর্য
কবে হাসবে আমার বাচ্চারা
(২) কোন এক হুজুরের অলৌকিক সাহায্য,
এই শোনো!
কি কি বাজার লাগবে আমাদের লিস্ট কইরো ত,
কেন লিস্ট দিয়ে কি করবেন, টাকা কই পাবেন, নাকি লিস্ট দেইখাই পরান জুরাইবেন,
আরে তুমি এত কথা বইল না আমিও জানি টাকা নাই
কিন্ত জরুরি কি কি লাগবে একটু দেখতাম, ব্যাবস্থা করার মালিক আল্লাহ যখন ব্যাবস্থা করে তখন করব,
আইচ্ছা এই নেন এগুলা লাগবে,
হুজুরের খেদমত বন্ধ লক ডাউনে,অন্য কোন ব্যাবস্থা হচ্ছে না
কোন পুজি নেই যে ব্যাবসা করবে
প্রতিদিন সকালে বের হয় রাতে ঘরে ফিরে, খালি হাতে, বাড়ি ওয়ালার দোকানে সারাদিন বসে থাকে,সেখানে আরো অনেকেই থাকে একজন এস আই পুলিশ ভাই প্রায় ই দোকানে থাকে তার সাথে এই কয়দিনে ভালই সখ্যতা তৈরি হয়েছে হুজুরের,
দোকানের গোমস্তাদের বলছে এই তোরা না কাল হুজুর কে আম এনে দিস বিক্রি করা শুরু করুক
লজ্জা করলে পেটে ভাত যাবে না ব্যাবসা করা সুন্নাত
বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে হুজুর মনে হয় একটু বিপদেই আছে,মাস সেসে ত বাড়ি ভারাও জমে যাচ্ছে, এভাবে বসে থাকলে হবে না,
হুজুর ঘরে এসে বউ কে বল্ল আমের ব্যাবসা করলে কেমন হয়?বউ কিছু বলার আগেই
ছেলেটা লাফ দিয়ে উঠে নেচে উঠে বলে বাবা
ভালই ত হবে সবাই আম কিনবে
আমার বাবা আম কিনবে না, আমি শুধু খাব,
আচ্ছা দেখেন কি করা যায় এটাও কিন্ত মন্দ না,,
কয়দিন হলো ত বাবুরে ভাতের মার খাওয়াচ্ছো আবার ক্ষতি হয়ে যাবে না ত?
আচ্ছা বাচানোর মালিক আল্লাহ রিজিকের মালিক ও আল্লাহ
ওর রিজিকে আল্লাহ যা রাখছে ও তাই খাচ্ছে ক্ষতি হবে কেন
,কিচ্ছু হবেনা ইনশাআল্লাহ,
আল্লাহ কবে যে একটা ব্যাবস্থা করব,
সকাল সকাল বের হবে
বউ বল্ল কিছু খাইলেন না,
কি খাব কিছুই ত নাই
একটু দারান
খুদের ভাত রানব আজ,
আচ্ছা!
খেয়ে বের হলো,
বল্ল দুপুরে আসব
আজ দুপুরে কি রান্না হবে তার কোন উপায় নাই একটা পিয়াজ ও যে আজ নাই,
সব কাজ সেরে ১২ টায় গোসল করে বউ নামাযে দারাইল,
নামায সেসে ১৫/২০ মিনিট পরেই তার হুজুর ঘরে ফিরল
কিন্ত দরজা খুলেই বউ অবাক দুই হাত ভরে বাজার
কই পেলেন?
কথা বলেনা
রেস্ট নিয়ে গোসল করে এসে দু রাকাত নামায পড়ে মসজিদে গেল,
এসে বল্ল বাজারের ঘটনা,
ওইযে তুমি ওইদিন লিস্ট দিলানা?
সেগুলাই আনলাম
কিন্ত আমি ত লিস্টে এত বাড়িয়ে লিখিনি
তুমি বাড়িয়ে না লিখলে আল্লাহ যদি বাড়িয়ে রিজিক রাখে কি করবা!
যাক আলহামদুলিল্লাহ
এবার বলেন
ত শুনো!
সকালে দোকানে বসে ছিলাম কিছুক্ষন পর এস আই পুলিশ ভাই আসল অনেক গল্প আলাপ হলো,ত আমি ফোন বের করতেই সেই লিস্ট পকেটেই ছিল সেটা পরে যায়য় আমি খেয়াল করিনি
পুলিশ ভাই তুলে নেয়
আর পড়েও
তখন হুজুরকে জিজ্ঞেস করে হুজুর মাস ত সেস বাজার ঘাটের কি অবস্থা,
ত আমিও বললাম আল্লাহ নিজ কুদরতে ব্যাবস্থা করলেই কেবল সম্ভব,ত ভাই উঠে চলে গেল আর বল্ল হুজুর আমি একটু আসি
আপনি যাইয়েন না,
আধা ঘন্টা পর সে লিস্ট দেখে সব কিনেছে সাথে বারিয়েও কিনেছে যেখানে ময়দা লিখা আছে ১ কেজি সে কিনেছে তিন কেজি,
এনে বলতেছে বাসায় যান,
আমি ত অবাক কি বলে ইনি,
চোখের কোনে জল চলে আসছে এসব বলতে বলতে, হুজুরের,
পরে একটা ভ্যান নিয়ে চলে আসলাম,,,
দেখো তুমি না বললে লিস্ট দেখে পরান জুরাইব?
আল্লাহ রিজিকের মালিক
বাবুটারে আর ভাতের মার খাওয়াইও না
সুজি কিনে দিছে খাওয়াও আচ্ছা!
ধোর্জের ফল মিস্টি হয়,!
দোয়ার ফল অবশ্যই আসে,
----------------------------------
৬। দোয়া কবুলের গল্প♥
মা হয়েছি অল্প বয়সেই,
বিয়েটা হয় ১৭ বছর বয়সেই, আর বিয়ের ৭/৮ মাস পরেই কন্সিভ করি।
আমার হুজুর কে পুরো প্রেগন্যান্সিতে সেভাবে কাছে পাইনি
পর্দার প্রবলেমের জন্য শশুরবাড়ি থাকা হত না
চাকরিস্থলে ফ্যামিলির ব্যাবস্থা না থাকায় বাবার বাড়িই থাকতাম বিয়ের পর থেকে,
প্রথম প্রেগন্যান্ট অনুভুতিগুলাও ছিল অন্যরকম
দুই মাসেই শরীর প্রচুর খারাপ হতে লাগল কিছুই খাইতে পারতাম না
কিন্তু এক্সট্রা কিছু খাইতে ইচ্ছা করত প্রচুর, যেমন মনে হত ভাত ত খেতে পাচ্ছিনা দুধ বা দই হলে মনে হয় একটু খেতে পারতাম
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কিছুই খেতে ইচ্ছা হত
কিন্তু খাওয়া হত না কিছুই
সে সময় আমার হুজুরের চাকরি চলে যায় অনেক ভোগান্তিতে থাকেন,
আমাকে হাত খরচের জন্য পুরা প্রেগনেন্সিতে টাকা দিতে পারেনি
আর মা বাবার কাছেই অনেক দিন হলো ছিলাম লজ্জার কারনেও তাদের কাছে কখন ও কিছু খেতে চাইনি, আমি টুকটাক হাতের কাজ করতাম
সুতার টুপি সেলাই করতাম ২০/৩০/৫০ এরকম দামে বিক্রি করতাম একটা টুপিই বানাতে আমার ২/৩ দিন লেগে যেত
সেই টাকা দিয়ে নিজের কিছু চাহিদা মেটাতাম
হুজুর দুই এক মাস পর আসলে যা খেতে ইচ্ছা করত বলতাম খাওয়াত,
এভাবেই নয়টা মাস কেটে যায়
কোন প্রবলেম না থাকায়
আমি কোন ডাক্তার দেখাইনি
একদিন রাতে ব্যথা
পেট একটু মোচর দিয়ে থেমে যায়, মনে করি গ্যাস্টিক প্রব রাত ১০ টায় উঠে অসুধ ও খাই
আবার শুয়ে পরি
কিন্তু আবারো ব্যাথা ক্রমে ক্রমে বারতে থাকে দুবার টয়লেটেও গেলাম
১১ টার দিকে অসহ্য পর্যায়ে গেল হালকা শীতের রাত
ব্যাথা বেরে গেলে কান্নার আওয়াজ বের হত আম্মু ও শুনে ফেল্ল
উঠে এসে জিজ্ঞেস করল কাদছি কেন
বললাম আমার কোমর চিবাচ্ছে পেট মোচরে ব্যাথা কোমর থেকে ব্যাথা পিঠের উপর দিকে উঠে আসছে একটু পর পর
তখন ও ভাবিনি একটু পরেই আমার কোল আলোকিত হবে,
আম্মু বল্ল হাটা হাটি কর শুয়ে থাকিস না
ভাবলাম
হাটলে কমে যাবে ব্যাথা উঠে হাটা শুরু করলাম
কিন্তু কই এই ব্যাথা ত আর কমার না বেরেই চলছে
আর এটা কিরম ব্যাথা গো
এত অসহ্য আর যন্ত্রনাদায়ক কেন, কি হল আমার
তখন দেখলাম আম্মু পুরাতন কাপড় বাবুর কাথা সব বের করতেছে তখন বুঝলাম আমার এটা প্রসব ব্যাথা
যন্ত্রনার মধ্যেই পুরা শরীরে এক অন্য রকম আনন্দের ঢেউ খেলে যায়, চাচি আসে পেটে তেল মালিস করে নিচের দিকে আর বুকের নিচে কাপড় দিয়ে বেধে দেয়,
যখন ১ টা বাজল আমি আর দারায়ে থাকতে পারলাম না বিছানা করে দেয়া হল ফ্লোরে শুয়ে পরলাম
কিন্তু আমি ত নিজেকে কন্ট্রল করতে পাচ্ছিনা চিল্লানি আসতেছে
হায় তখন যদি বৃস্টি হত আমি বুক ফাটিয়ে চিল্লাতাম কেউ শুনত না
কিন্তু লোকে আমার চিল্লানি শুনবে ছি ছি করবে লোক লজ্জার ভয়ে যতটা সম্ভব নিজেকে কন্ট্রল করতেছি চাচিরা কালিমা পরছে আমাকে পড়াচ্ছে একবার বসছি ত আবার শুচ্ছি আবার দারিয়ে যাচ্ছি,
চিল্লানি না দিতে পেরে মুখ থেকে এক প্রকার গোংরানির আওয়াজ বের হচ্ছে দুনিয়াবি খেয়াল নেই, সবার কথা গুলা কাছে মাছের বাজারের মত লাগছে
রাত ৪ টা বেজে যায়, তবুও কোন আলামত নেই
সব ক্লিয়ার ব্যাথাও প্রচুর তবুও কেন এত কস্ট পাচ্ছি
আর ভাবছি আল্লাহ গো মরন দাও আমি জান্নাতি হব
এই কস্টের চেয়ে বুঝি মরন কস্ট কম হবে আমি মরতে চাই
আবার কখনো কখনো মুখ দিয়ে বের হচ্ছে জোরে জোরে বলছি আল্লাহ গো বাচাও,
পরে আমাদের গ্রামেরএক ডাক্তার কে ফোন করা হলো
আমাকে বসায়ে পুরা চাদরে ঢেকে দেয়া হলো তিনি এসে আমার হাতে ইঞ্জেকশন পুশ করে বাহিরে গেল সকাল ৭ বাজবে বাজবে, ইঞ্জেকশন দেয়ার পর আমার দুনিয়াবি কোনই সেন্স ছিল না প্রচুর ব্যাথায় আমি শোয়া না বসা জানিনা
মুখ দিয়ে গোংরানি এ যেন এক মৃত্যুর ই কস্ট
জানিনা মৃত্যু যন্ত্রনা টা আরো কত গুন বেশি হবে,
৭ টায় আবার ছেলেটা দুনিয়ায় চলে আসল
আমি এক নজর দেখেই চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকলাম,
শরীর টা এত ব্যাথা হয়ে গেল যেন কত ঝড় তুফান এই শরীরে বয়ে গেছে
একটু পর বসে সোনাটাকে কোলে নিলাম, আর আমার আর হুজুরের আগেরই সিলেক্ট করা নামটা তখনি সবাইকে বলে দিলাম আব্দুল্লাহ,,,,,
আমার কস্ট গুলা ৭ টার মধ্যেই সেস হয়নি,
শুরু হলো আরেক কস্ট
প্রচুর ব্যথা বস্তে পাচ্ছিনা হাটতে পাচ্ছিনা
লজ্জায় কাউকে কিছুই বলছিওনা
আর মনে মনে ভাবছি নর্মাল ডেলিভারি হয়ত এমন পেইন হয় স্বাভাবিক,
এক সময় আম্মুকে বলেই ফেললাম আমাকে একটু ব্যাথার অসুধ আনিয়ে দেন,
আমার হুজুর তখন নতুন এক চাকরিতে জয়েন্ট করছিল তাই আমার থেকে ছিল অনেক দূরে,
আমার চলাফেরা দেখে আম্মু বুজতে পারল সব কিছু ঠিক নাই হয়ত
তাই চাচিকে খবর দিল এসে আমার অবস্থা দেখল
আর যেন তিনি আকাশ থেকে পরল দেখেই ত কান্নাকাটি বল্ল সেলাই লাগবে
অবস্থা খুবই খারাপ, আর হ্যা আমার সোনাটা হয়েছিল সারে চার কেজির মত, অনেক বড়সড় কোল ভরা,
হবার পর দিন এত এত ঝড় হলো রাতে যে পুরা বাংলাদেশে নেট প্রব্লেম
বগুড়া থেকে ঢাকায় ফোন করা যাচ্ছিল নআআ
আব্বু ও ঢাকায় চাকরি করত আমার হুজুর ও টাংগাইল ছিল,
তাই আমার অবস্থাটা কাউকেই জানানো যাচ্ছিল না
মাহরাম কেউ নেই ঘরে
আম্মু যেন দিশেহারা
আমার চাচাকে নিয়ে চাচি আমাকে হস্পিটালে নিল
বাবুকে আম্মুর কাছে রেখে গেলাম,
আব্বু আর জামাই কেউ জানল না আমার অবস্থা
পরে আমাকে দেখে ডাক্তার ও খুব করে বকাবকি
রুগির অবস্থাটাই ত খারাপ করে দিছেন
মলদ্বারের সাথে এক হয়ে গিয়েছিল ছিরে,
যাই হোক
সেলাই করে সে রাত হস্পিটালে থেকে পরদিন বাড়ি আসি আস্তে আস্তে সুস্থ হই,সব ঠিক থাকলেও
আমার ভেতরটা যেন অন্য রকম হয়ে গেল রোগা হইই কিছুই ভাল লাগেনা
খাওয়ার রুচি নেই
স্বামিকে দেখলে বিরক্ত লাগত কাছে ঘেসতে দিতাম না
সহবাস ত ছিল আমার কাছে খুবই কস্টকর আর বিরক্তের, কেন এমন হত আমি জানতাম না
তখন ছেলের দের বছর ও হয়ে গেল হঠাত আমার জরায়ু থেকে মর রক্ত আর পুজ আসে হাটতে পারিনা পেট ব্যাথা
দ্রুত ডাক্তার দেখাই
তখন ধরা পরল আমার ডেলিভারির সময় হাতে গ্লভস না পরার কারনে
আর দায়িরা হাত ভেতরে দিয়েছিল নখের আচর আর নরম জরায়ুতে লেগে যায় আর সেটাই আস্তে আস্তে ইনফেকশন তার পর ঘা আর তার পর পেকেও যায়
তখন ও ক্যান্সার হয়নি সবই আল্লাহর ইচ্ছা,
ট্রিট নেয়া শুরু হলো আর আমিও আল্লাহর রহমতে সুস্থ হয়ে যাই,,,হুজুরের চাকরিস্থলেই থাকতাম তিন জনের সংসার, ছেলেটা আমার এত শান্ত ছিল যে আমার মনেই হত না আমি মা হয়েছি আমারো এককটাছেলে আছে,
যত টুক কাজ খাওয়ান ঘুম পারান সব হুজুরের সাথেই করত সারাক্ষন হুজুরের সাথেই থাকত
তাই মন হত এখন যদি আরো একটা বাবু হয় ত অনেক ভাল হত
অনেক সুখের পরিবার আমাদের হেসে খেলে তিন জনে দিন পার করতাম আর হুজুরকে বলতাম প্রথম প্রেগনেন্সিতে আমি আপনার থেকে দূরে ছিলাম আমার খাওয়ার কস্ট ছিল অনেক আপনাকে কাছে না পাওয়ার বেদনাও ছিল অনেক একা লাগত কান্না করতাম সারাক্ষন আর এখন আল্লাহ আমাদের এক করে দিছে এক জায়গায় থাকি তাই এবার কন্সিভ করলে আমার আর কোন কস্ট থাকবেনা অসুস্থ থাকলে শুয়ে তথাকলে কেউ কথা শুনাবেনা
যা খেতে ইচ্ছা করবে আপনি খাওয়াতে পারবেন আমার দেখভাল করতে পারবেন এবারো আরেক রকম অনুভুতি থাকবে তাই
আল্লাহর কাছে আরো একজন বান্দা বান্দি চাইতাম
কিন্ত হচ্ছিল না
তাই আবারো ডাক্তারের কাছে দৌড়াদৌড়ি যে কোন প্রবলেম থেকেই গেল কিনা,
কিন্ত না সব ত ঠিকই ছিল,
ছেলেটার বয়স সারে চার হয়ে গেল,
আর আল্লাহর ইচ্ছায় দ্বিতিয়বারের জন্য আবারো কন্সিভ করলাম,
ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস,
যে মাসে কন্সিভ করলাম সে মাসেই হুজুরের চাকরিটা চলে যায়
আর আমি সেই আগের মতই আবারো শুরু থেকেই বাবার বাড়িতেই রয়ে গেলাম
হুজুরের থেকে অনেক দূরে,,
সব ই আল্লাহ তায়ালার ঈমানি পরীক্ষা,ছেলেটাকে নিয়ে এখন আমি মার সাথেই থাকি, ৬ মাস চলছে আমার
হুজুর চতুর্দিকে ছুটাছুটি করছে একটা খেদমতের জন্য আল্লাহ কোথায় রিজিক রেখেছে জানিনা
তাই কোন ফয়সালা এখন ও হয়নাই
সবাই আমার অনাগত সন্তান টার জন্য দোয়া করবে
আল্লাহ আমার সন্তান সন্ততিকে তার দ্বিনের দায়ি হিসেবে কবুল করুক
নেক সন্তান দিক
আমিও তাদের আল্লাহর রাস্তায় বিলিয়ে দিয়েছি ও দেব,
দুনিয়াটা ত মুমিনের জন্য কস্ট কর ই হবে তাই হতাশা নিরাশা হইনা
সব কিছুর বদলা এক সময় যেন পাই সেই আশাতেই থাকি।
----------------------------------
৭। দোয়া কবুলের গল্প♥
৮। দোয়া কবুলের গল্প♥
>> প্রকৃত লাভজনক ব্যবসা
>> দু'আ কবুল হওয়ার ২৯টি স্থান, ক্ষেত্র ও সময়ঃ
অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ২৫টি দোয়া যা আপনার দুনিয়া আখিরাতের জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে ইন শা আল্লাহ
৯। দোয়া কবুলের গল্প♥
আমার মত পাপী বান্দির দোয়া আল্লাহ তায়ালা ফিরিয়ে দেন নি।
আল্লাহকে ডেকে কখনোই নিরাশ হইনি আল্লাহ্ তায়ালা আমাকে কখনোই নিরাশ করেন নি। অনেক অনেক দোয়াই আল্লাহ্ তায়ালা কবুল করেছেন। আজকের দোয়া কবুলের কথা বলছি । গত কয়েকদিন ধরেই রিযিক নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম।যখনই দুশ্চিন্তা বেড়ে যেতো ইস্তেগফার করতাম আর আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতাম। কিভাবে যেনো দুশ্চিন্তা উধাও হয়ে যেতো আমার অবাক লাগতো।আবার ও দুশ্চিন্তা করতাম রিযিক নিয়ে আর দোয়া চাইতাম আল্লাহর দরবারে।আলহামদুলিল্লাহ্ আল্লাহ কল্পনাতীত উৎস হতে রিযিকের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আমি কল্পনাও করতে পারিনি আল্লাহতালা এভাবে রিযিকের ব্যবস্থা করে দিবেন, আলহামদুলিল্লাহ্ আলহামদুলিল্লাহ্ আলহামদুলিল্লাহ্। যখনই রিযিকের ব্যবস্থা হল আল্লাহ্র শুকরিয়ায় ২ চোখ ভিজে গেলো। আলহামদুলিল্লাহ্ আলহামদুলিল্লাহ্ আলহামদুলিল্লাহ্। আল্লাহ্ কাউকে নিরাশ করেন না, আগে বা পরে ঠিক আল্লাহ দেন। সবর করুন আর আল্লাহ কে ডাকুন । নিশ্চই আল্লাহর সাহায্য অতি নিকটে। আলহামদুলিল্লাহ্ আলহামদুলিল্লাহ্ আলহামদুলিল্লাহ্
১০। দোয়া কবুলের গল্প♥
১১। দোয়া কবুলের গল্প♥
কেউ হতাশ হবেন না বোন আল্লাহ সব পারে সব
১২। দোয়া কবুলের গল্প♥
.
তারুণ্যে উদ্দীপ্ত এক যুবক।
বুধবার রাতে তার কুরআনের ক্লাসে উপস্থিত হল।
পুরো ক্লাস জুড়ে তার উস্তায “আমাদের নিজেদের উপলব্ধি জ্ঞান দ্বারা আল্লাহকে শুনতে পারা” সেই সাথে “আল্লাহ’র আনুগত্য করা” এই দুই বিষয়ে বর্ণনা করলেন।
.
যুবক ছেলেটি খুবই আশ্চর্য হল। আসলেই কি আল্লাহ আমাদের সাথে কথা বলেন আর আমাদের বিবেক দ্বারা আমরা তা বুঝতে পারি?
ক্লাস শেষে সেও তার সহপাঠীরা মিলে কফিশপে ঢুকলো।
কফির আড্ডায় শুরু হলো ক্লাসের বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা।
আড্ডায় একেকজন তাদের জীবনের গল্পগুলো বলতে শুরু করলো।
কীভাবে আল্লাহ্ তা’আলা তাদের জীবনকে বিভিন্ন দিকে পরিচালিত করেছেন সেসব নিয়ে।
সেই গল্পগুলোতে হতাশা ছিল, আনন্দ ছিল, হাসি ছিল, ছিল কান্না।
তবে জীবনের একটা লম্বা সময় পাড়ি দেওয়ার পর তারা বুঝতে পেরেছে আশা-হতাশার এই দোলাচল আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার নির্দেশেই হয়েছে।
তিনি সর্বোত্তম পরিকল্পনাকারী।
একসময় গল্পের আসর শেষ হল।
.
রাত তখন দশটা বাজে।
যুবক ছেলেটি গাড়ি চালিয়ে বাড়িতে ফিরছিল।
গাড়ির সীটে বসে বসে সে দু’আ করছিল “হে আল্লাহ! তুমি যদি এখনও মানুষের সাথে কথা বলো, তাহলে আমার সাথেও কথা বল, আমি শুনবো তোমার কথা। আমার সবটুকু সামর্থ্য দিয়ে আমি তোমার ইবাদত করবো।”
.
সে যখন তার শহরের মূল রাস্তার দিকে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিল তখন তার মনে অদ্ভুত এক চিন্তা খেলে গেল।
হুট করে তার ইচ্ছা করল, গাড়ি থামিয়ে এক গ্যালন দুধ কিনবে।
কিন্তু এই অদ্ভুত চিন্তা এল কোথা থেকে?
আকাশের দিকে তাকিয়ে সে চিৎকার করে বলল, “ও আল্লাহ! এটা কি তোমার নির্দেশ ছিল?"
কিন্তু তার প্রশ্নের কোন জবাব এল না। চারপাশ একদম চুপচাপ, শুনশান।
জবাব না আসুক, ধরে নিতে সমস্যা কী এটা আল্লাহর নির্দেশ?
সে মনে মনে বলল, ‘হে আমার রব!
এই নির্দেশ যদি তোমার পক্ষ থেকেই হয়ে থাকে, আমি এই দুধ কিনবই কিনব।”
.
সে আরো ভাবল, ‘আর দুধ কেনা তো তেমন কঠিন কিছু না।
টাকাও জলে যাচ্ছে না, আবার প্রয়োজন পড়লে এই দুধ ব্যবহারও করা যাবে। নাহ! কিনেই ফেলি।’
এবার সে গাড়ি থামিয়ে গ্যালন খানিক দুধ কিনল এবং পুনরায় বাড়ির দিকে যাত্রা শুরু করল।
.
গাড়ি যখন ৭ নাম্বার রাস্তার পাশ দিয়ে যাচ্ছে, হঠাৎ করে তার মনে হল গাড়িটা ৭ নাম্বার রাস্তা দিয়ে নিতে।
ভাবনাটা মাথায় আসামাত্র সে প্রচণ্ড বিরক্ত হল।
বিড়বিড় করে বলতে লাগল, ‘আরেহ! পাগল হয়ে যাচ্ছি নাকি!
কী সব উদ্ভট চিন্তা-ভাবনা মাথায় আসছে!
কি হচ্ছে আমার সাথে?’
সে আগের রাস্তা ধরেই আগাচ্ছিল।
রাস্তা পরিবর্তন করল না।
কিন্তু মাথার ভেতর কেন যেন ৭ নাম্বার রাস্তার কথাই বারবার চলে আসছে।
কোন এক অদৃশ্য শক্তি যেন তাকে টেনে ৭ নাম্বার রাস্তায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। হঠাৎ কেন যেন সে পুরো ব্যাপারটা উপভোগ করতে শুরু করল।
মৃদু হেসে মনে মনে বলল, “আল্লাহ! তুমি যা বলবে, তাই হবে।
তুমি যেদিকে নিয়ে যাবে, আমি আজ সেদিকেই যাব।’
.
এভাবে এবড়ো-থেবড়ো রাস্তা দিয়ে কিছুক্ষণ চলার পর আবার হুট করে তার মনে হল, এখন গাড়িটা থামানো উচিত। সিদ্ধান্ত হয়েছিল, আজ তার মনে যা আসবে, সে তাই করবে।
গাড়ি যেখানে থামাতে ইচ্ছা হল, সেখানেই থামিয়ে দিল।
চারপাশে তাকিয়ে দেখল, সে এতক্ষণে শহরের একদম একপাশে চলে এসেছে। এটা ছোটখাট একটা বাণিজ্যিক এলাকা। খুব বেশি উন্নত না।
আবার একেবারে খারাপও না।
আশপাশের সব দোকানপাট বন্ধ। বাড়িঘরগুলোতেও তেমন কোন আলো দেখা গেল না।
অন্ধকার অন্ধকার।
সবমিলিয়ে কেমন যেন একটা গা ছমছমে ভাব।
সবাই হয়ত ঘুমিয়ে পড়েছে এতক্ষণে।
.
আবার মাথায় আঘাত হানলো সেই কণ্ঠস্বর,
- “রাস্তার পাশের বাড়িটির দিকে যাও আর লোকদের মাঝে দুধ বিলিয়ে দাও।”
যুবক ছেলেটা বাড়িটির দিকে তাকাল। আলোহীন সে বাড়িটা দেখে মনে হল, ভেতরে কেউ নেই।
আর থাকলেও সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে।
সে দরজায় কড়া নাড়বে কি নাড়বে না এরকম সাতপাঁচ ভেবে গাড়ীতে ফিরে এল, গাড়ির সীটে বসে সে বলে উঠল, “ওহ আল্লাহ! মানুষগুলি ঘুমাচ্ছে, যদি আমি তাদেরকে জাগিয়ে তুলি, এরা প্রচণ্ড রেগে যাবে, আমাকে নির্বোধ ভাববে।
এটা তো একটা কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজ মনে হচ্ছে আমার কাছে।”
আবার কেন জানি তার কাছে মনে হল তার এখনই যাওয়া উচিৎ আর তাদেরকে দুধও দেওয়া উচিৎ।
যা হবার হবে।
.
আবার সে মনে মনে বললো, "ঠিক আছে আল্লাহ!
এটা যদি তোমারই নির্দেশ হয়, তাহলে আমি সেখানে যাব আর তাদেরকে দুধও দিব; আজ তুমি যদি আমাকে পাগল প্রমাণ করতে চাও, না হয় একদিনের জন্য পাগলই হলাম।
তারপরেও আজ তোমার নির্দেশ আমি পালন করবই করব।
আমার মনে হচ্ছে কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে।
আর যদি কিছুই না ঘটে, তাহলে আমি সোজা বাসায় চলে যাবো।”
.
রাস্তার একপাশ দিয়ে হেঁটে সে বাসাটার দিকে এগিয়ে গেল।
দরজায় কড়া নাড়তেই ভেতর থেকে শোরগোলের শব্দ কানে এল।
গম্ভীর একটি পুরুষ কণ্ঠ জিজ্ঞেস করল, “কে? কে এসেছেন? কী চাই?”
হঠাৎ করে দরজা খুলে গেল।
বাড়ির কর্তা একজন মধ্যবয়স্ক পুরুষ। চেহারায় বিষণ্ণতার ছাপ।
দেখেই বোঝা যাচ্ছে ভদ্রলোক ভীষণরকম দুঃশ্চিন্তায় আছেন।
এরই মাঝে অচেনা আগন্তুকের মতো উটকো ঝামেলা দেখে তিনি ব্যাপক হতাশ।
মনে হচ্ছে অদ্ভুত এই আগন্তুক তার দুঃখবোধের মাত্রাটা যেন আরো কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিল।
ভদ্রলোক বেশ নিরাশ গলায় বললেন, ‘কে আপনি?’
.
‘ইয়ে মানে! আমি হলাম’...
.
হঠাৎ যুবকের হাতে থাকা দুধের প্যাকেটটির দিকে ভদ্রলোকের নজর গেল।
তিনি জিজ্ঞেস করলেন,
‘এটা কী আপনার হাতে?’
.
যুবক ছেলেটা বেশ আমতা আমতা করে বলল,
“ইয়ে মানে! কিছু দুধ.....”
.
ছেলেটা কথা শেষ করতে পারল না। লোকটা দুধের প্যাকেটটা এক প্রকার ছিনিয়ে নিয়ে দৌড়ে ঘরের ভেতরে চলে গেল।
একজন মহিলাকে দেখা গেল।
ভদ্রলোক দুধের প্যাকেট মহিলার হাতে দিতেই মহিলা সেটা নিয়ে রান্নাঘরের দিকে ছুটে গেল।
সবকিছু এতো দ্রুতই হচ্ছিল যে, ছেলেটা কিছুই বুঝে উঠতে পারছিল না।
হঠাৎ সে খেয়াল করল, ঘরের কোণার অংশটায় একটা মাদুর পাতা আছে।
সেই মাদুরে একটি ফুটফুটে বাচ্চা হাত-পা ছুড়ে কান্না করছে।
.
ভদ্রলোক দৌঁড়ে গিয়ে সেই বাচ্চাটাকে কোলে তুলে নিয়ে যুবক ছেলেটার কাছে আসল।
বাচ্চাটার কান্নার সাথে সাথে মধ্যবয়স্ক লোকটাও কাঁদছিল।
তবে সে কান্না আনন্দের।
লোকটি কাঁদো কাঁদো গলায় বলল, “আমরা মাত্রই দু’আ করছিলাম।”
.
ছেলেটি বলল, ‘দু’আ? কি জন্য?’
.
লোকটা শার্টের হাতায় চোখ মুছতে মুছতে বললো, ‘আমাদের এ মাসে অনেক বড় বড় বিল দিতে হয়েছে।
হাতে যা অবশিষ্ট টাকা ছিলো তাও শেষ হয়ে গেছে।
আমাদের সন্তানের খাবারের কোন দুধ নেই বাড়িতে।
ধার-দেনায় এতো পরিমাণ ডূবে আছি যে, কারো কাছে কোন সাহায্যও পাচ্ছিনা। আমার মাসুম বাচ্চাটা দুধের জন্য কান্না করতে করতে প্রাণ ওষ্ঠাগত।
ওর কান্না আর সহ্য করতে পারছিলাম না আমরা।
আমি মাত্রই আল্লাহ’র কাছে দু’আ করছিলাম তিনি যেন আমাকে একটা উপায় বাতলিয়ে দেন।
যেন আমরা দুধের ব্যবস্থা করতে পারি।’
.
এবার লোকটার স্ত্রী কথা বলে উঠল। বলল,
-‘আমি আল্লাহ’র কাছে চেয়েছিলাম, তিনি যেন কোন ফেরেশতাকে পাঠিয়ে দেন দুধসহ।
ভাই! আপনি কি ফিরিশতা?’
.
ঘটনার আকস্মিকতায় যুবকটি স্তম্ভিত হয়ে গেল।
তার মুখ দিয়ে যেন কোন কথাই বের হচ্ছেনা।
কি থেকে কিভাবে কি হয়ে গেল ভাবতেই যেন সে শিউরে উঠছে।
এভাবেও আল্লাহ বান্দার ফরিয়াদ শুনেন? এতোটা কাছে তিনি? এতোটা?
.
মানিব্যাগে যা টাকা ছিল সবটাই লোকটির হাতে দিয়ে বলল, ‘আশা করি আপনার ধার-দেনার কিছুটা হলেও এতে শোধ হবে।’
লোকটা কৃতজ্ঞ নয়নে তার দিকে তাকিয়ে থাকল।।
.
যখন সে বিদায় নিচ্ছিল, তখন তার মানিব্যাগ খালি।
কিন্তু বুক ভরে সে নিয়ে যাচ্ছে আল্লাহর প্রতি অগাধ বিশ্বাস আর সাক্ষী হয়ে যাচ্ছে রহমানুর রাহিমের ভালোবাসার অনুপম দৃষ্টান্তের।
প্রিয় রাজিব হাসান ভাইয়ের লেখা প্রথম বই '‘দু'আ কবুলের গল্পগুলো’’
-বইটি থেকে নেওয়া একটি গল্প...
১৩। দোয়া কবুলের গল্প♥
---------------------------
>> কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক বইয়ের (৪০০+) pdf লিংক
https://justpaste.it/4ne9o
>> কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক Apps, YouTube Video, Quran Recitation, YouTube channel.
https://justpaste.it/islamicappvideo
>> রবের_কাছে_ফেরার_গল্পগুলো
https://justpaste.it/deen_a_ferar_golpo
>> "বিয়ে, রিজিক লাভ, ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি"
https://justpaste.it/5gol5
>> র্যান্ড, মডারেট ইসলাম, মডার্নিস্ট মুভমেন্ট
https://justpaste.it/76iwz
>> কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক Apps, YouTube Video, Quran Recitation, YouTube channel.
https://justpaste.it/islamicappvideo
>> ফেসবুক ও ইউটিউবের উপকারী সব পেইজ, গ্রুপ, আইডি এবং চ্যানেলের লিংক
https://justpaste.it/facebook_page_grp_link
>> তাকদির আগে থেকে নির্ধারিত হলে মানুষের বিচার হবে কেন? যাদের কাছে ইসলামের দাওয়াহ পৌঁছেনি তাদের কী হবে?
https://justpaste.it/6q4c3
>> কুরআন এবং আপনি
https://justpaste.it/5dds8
>> কখনও ঝরে যেও না …
https://justpaste.it/3bt22
>> ফজরে আমি উঠতে পারি না
https://justpaste.it/6kjl6
>> এই ১০টি ফজিলতপূর্ণ আমল যা আপনার সারাবছরের_ই দৈনন্দিন রুটিনে থাকা উচিত
https://justpaste.it/9hhk1
>> ইস্তিগফার অপার সম্ভাবনার দ্বার
https://justpaste.it/6ddvr
>> দাম্পত্যজীবন, অজ্ঞতা ও পরিণাম
https://justpaste.it/7u5es
>> বিপদাপদে ধৈর্যধারণ : ফজিলত, অর্জনের উপায় ও করণীয়
https://justpaste.it/8dccj
>> মহান রবের আশ্রয়ে সিরিজের সকল পর্ব
https://justpaste.it/6ttuf
>> স্বার্থক মুনাজাত
https://justpaste.it/1xf0t
>> রাসূলের উপর দরুদ ও সালাম পাঠ-সংক্রান্ত ৭ পর্বের একটি সিরিজ
https://justpaste.it/4hhtd
>> তাহাজ্জুদ সিরিজ
https://justpaste.it/4ja0n
>> মহিমান্বিত কুরআন সিরিজের সকল পর্ব
https://justpaste.it/3dxi7
>> ধ্বংসাত্মক দৃষ্টি (বদ নজর সিরিজের সকল পর্ব)
https://justpaste.it/7056k
>> বিশুদ্ধ ঈমান সিরিজ
https://justpaste.it/7fh32
>> ইমান ভঙ্গের ১০ কারণ
https://justpaste.it/9icuq
>> দুশ্চিন্তা ও ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির ১০ আমল
https://justpaste.it/8gmtk
>> পর্দায় প্রত্যাবতন: পর্দায় ফেরার গল্প
https://justpaste.it/3lqzf
>> নফসের জিহাদ -শায়খ আহমাদ মুসা জিবরীল (হাফিজাহুল্লাহ)
https://justpaste.it/8vnly
>> রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর সকাল-সন্ধ্যার দু'আ ও যিকর
https://justpaste.it/sokalsondharjikir
>> সালাফদের আত্মশুদ্ধিমূলক বাণী
https://justpaste.it/9e6qh
>> সন্তান লাভের ৭ টি গুরুত্বপূর্ণ আমল
https://justpaste.it/9hth5
>> Rain Drops, Baseera, Hunafa, Mubashshireen Media ও Ummah Network থেকে প্রকাশিত গুরুত্বপূর্ণ সিরিজগুলোর (তাওহীদ সিরিজ, আকিদা সিরিজ, তাহাজ্জুদ, সালাত, আল্লাহর গুণবাচক নামসমূহ নিয়ে আলোচনা, ধূলিমলিন উপহার রামাদান, আলোর পথে যাত্রা, পরকালের পথে যাত্রা, শ্রেষ্ঠ মানুষেরা(নবীদের জীবনী), জীবন-মৃত্যু-জীবন, সীরাহ(রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জীবনী), কুরআনের কথা, কোরআনের বিভিন্ন সূরার তাফসীর, আমি তাওবা করতে চাই কিন্তু, সাহাবীদের ঈমানদীপ্ত জীবনী, বোনদের প্রতি উপদেশ) অডিও ডাউনলোড লিংক
https://justpaste.it/4kes1
>> পাপ থেকে বাঁচার ১০ উপায়: যা সকল মুসলিমের জানা আবশ্যক
https://justpaste.it/3ob7j
>> রমজানের প্রস্তুতি : মুমিনের পথ ও পাথেয়
https://justpaste.it/5tziy
>> কাফির ও ইসলামের শত্রুদের মৃত্যু বা বিপদে আনন্দ প্রকাশ
https://justpaste.it/6ksvm
>> মহিমান্বিত রজনী (লাইলাতুল কদর) সিরিজ, লাইলাতুল কদরের জন্য ১২ টি সহজ আমল এবং ইতিকাফের গুরুত্ব, ফজিলত, উদ্দেশ্য, আমল।
https://justpaste.it/1q3bs
>> বিশেষ নফল নামাজ সিরিজ (ইশরাক, দোহা, চাশত, আওয়াবিন, যাওয়াল, সালাতুল হাজত, সালাতুত তাসবিহ)
https://justpaste.it/9n0kf
>> হাদিসের শিক্ষা সিরিজ
https://justpaste.it/4fywd
>> ইস্তিখারা সিরিজ
https://justpaste.it/2i736
>> আমাদের নবীজি (সাঃ) সিরিজ
https://justpaste.it/4c1tt
>> Words With Nusus সিরিজ
https://justpaste.it/6h968
>> বছরের শ্রেষ্ঠ দশ দিন (জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন)
https://justpaste.it/1s2vv
>> আশুরা দিবস : বাস্তবতা, পালনীয় ও বর্জনীয়
https://justpaste.it/3kn8w
>> বিবাহের কিছু আমল ও দু‘আ এবং সুখী দাম্পত্যজীবনের জন্য ১০টি করণীয়, স্ত্রীকে বশ করে রাখার টোটকা
https://justpaste.it/58k7y
>> দুআ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ লেখাসমূহ, দুআ কবুলের সময় শর্তাবলী ও আদবসমূহ, দুআ কবুলের গল্পগুলো
https://justpaste.it/7ttq6
>> কুরআন কারীম নিয়ে আতিক উল্লাহ হুজুরের অসাধারন কিছু কথা ও উপদেশ
https://justpaste.it/8abde
.