JustPaste.it

মহান রবের আশ্রয়ে

 

>> ইসলামিক বই, অডিও-ভিডিও লেকচার সিরিজ সহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের লিংকগুলো পাবেন এখানে
https://justpaste.it/48f6m

.

>> সকালের যিক্‌র

https:// www.youtube.com/watch?v=x8b7G9v0ApA

.

>> মহান আল্লাহর নাম ও তার অর্থ (আসমাউল হুসনা/ইসমে আজম)
https://www.hadithbd.com/99namesofallah/

.

 

মহান রবের আশ্রয়ে

(লিংক কাজ না করলে সমস্যা নাই। এখানেই সব লেখা দেয়া আছে)
.

আলহামদুলিল্লাহ, আপনাদের প্রিয় দু‘আ সিরিজের ৩০ টি পর্বের লিংক একত্র করা হলো এই পোস্টে। শব্দে শব্দে অর্থ ও উচ্চারণসহ সবগুলো দু‘আ খুব সহজভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এখানকার প্রতিটি দু‘আই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, জীবনঘনিষ্ঠ এবং দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য কল্যাণকর।
.
✪ ১ম পর্ব : প্রতিটি কাজে সুন্দর সমাপ্তি এবং দুনিয়ার লাঞ্ছনা ও আখিরাতে শাস্তি থেকে বাঁচতে https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2409045162529118&id=1698393090260999
.
✪ ২য় পর্ব : সাংসারিক ও পারস্পরিক মনোমালিন্য দূর করতে https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2411065055660462&id=1698393090260999
.
✪ ৩য় পর্ব : যে দু‘আটি নবীজি সর্বাধিক পরিমাণে করতেন এবং দ্বীনের উপর অটল থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই দু‘আ https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2417308728369428&id=1698393090260999
.
✪ ৪র্থ পর্ব : দুনিয়াতে অবিচ্ছিন্ন নিয়ামত, মানসিক প্রশান্তি ও আখিরাতে স্বাচ্ছন্দময় জীবনের জন্য https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2421373757962925&id=1698393090260999
.
✪ ৫ম পর্ব : ঈমানি হালতে মৃত্যুর জন্য https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2425616790871955&id=1698393090260999
.
✪ ৬ষ্ঠ পর্ব : কঠিন কোনো বিপদে পতিত হলে অথবা কোনো টার্গেট পূরণ করতে https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2429911817109119&id=1698393090260999
.
✪ ৭ম পর্ব : মূসা (আ.) ও ইউনুস (আ.)-এর দু‘আ https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2434319896668311&id=1698393090260999
.
✪ ৮ম পর্ব : ফাতিমা (রা.)-কে নবিজি যে দু‘আটি পড়ার ওসিয়ত করেছিলেন https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2438671576233143&id=1698393090260999
.
✪ ৯ম পর্ব : ঘুমের সমস্যা কাটাতে, আল্লাহর শাস্তি এবং জিনদের আক্রমণ থেকে বাঁচতে https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2442730605827240&id=1698393090260999
.
✪ ১০ম পর্ব : জীবনে গুরুত্বপূর্ণ কেউ/কিছু হারিয়ে গেলে এবং তার উত্তম বিকল্প পেতে https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2451770388256595&id=1698393090260999
.
✪ ১১ তম পর্ব : সুন্দর একটি ছোট দু‘আ https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2458024644297836&id=1698393090260999
.
✪ ১২ তম পর্ব : ঘরের মধ্যে প্রশান্তির জন্য, গুনাহ মাফের জন্য, রিযিকে বরকত লাভের জন্য https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2476662202434080&id=1698393090260999
.
✪ ১৩ তম পর্ব : কুরআন দ্বারা দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন গড়তে https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2481269948639972&id=1698393090260999
.
✪ ১৪ তম পর্ব : দারিদ্র, অপমান ও জুলুম থেকে বাঁচতে
.
✪ ১৫ তম পর্ব : দুনিয়া ও আখিরাতে নিরাপত্তা, শান্তি ও ক্ষমা লাভের জন্য
.
✪ ১৬ তম পর্ব : বিপদ ও দুশ্চিন্তায় পড়ার গুরুত্বপূর্ণ দুটো সহজ দু‘আ
.
✪ ১৭ তম পর্ব : গুনাহ থেকে বাঁচা ও নেক আমলের তাওফিক লাভ এবং আল্লাহর রহমত লাভের জন্য
.
✪ ১৮ তম পর্ব : অসাধারণ একটি দু‘আ
.
✪ ১৯ তম পর্ব : ইসমে আযমের একটি দু‘আর বাক্য
.
✪ ২০ তম পর্ব : শয়তান ও জিন থেকে নিজেকে ও অন্যকে বাঁচাতে এবং বদনজর থেকে রক্ষা পেতে
.
✪ ২১ তম পর্ব : ভালো আমলের তাওফিক লাভ ও খারাপ কাজ থেকে বেঁচে থাকার জন্য
.
✪ ২২ তম পর্ব : ঈমানের প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি ও গুনাহের প্রতি ঘৃণা তৈরি করতে
.
✪ ২৩ তম পর্ব : সৌভাগ্যবান হতে ও জীবনকে নিরাপদ রাখতে
.
✪ ২৪ তম পর্ব : কাজে ও সিদ্ধান্তে দৃঢ়তা এবং সঠিক কাজে অবিচলতা কামনায়
.
✪ ২৫ তম পর্ব : ব্যাপক অর্থবোধক দু‘আ
.
✪ ২৬ তম পর্ব : অল্প কয়েকটি বাক্যে জীবনের সকল কল্যাণ কামনা
.
✪ ২৭ তম পর্ব : কবরের আযাব এবং জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে বাঁচতে
.
✪ ২৮ তম পর্ব : হিদায়াত, তাকওয়া, চারিত্রিক শুদ্ধতা এবং অভাবহীনতা থেকে বেঁচে থাকতে
.
✪ ২৯ তম পর্ব : আত্মার পরিশুদ্ধি কামনায়
.
✪ ৩০ (শেষ) তম পর্ব : আল্লাহর সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে এবং আল্লাহর প্রিয় হতে
.
প্রতিটি পোস্টের পেছনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় গেছে। অনেক আবেগ জড়িয়ে আছে এই সিরিজটিতে। তবে, এটি সমাপ্ত করতে পেরে ভীষণ ভালো লেগেছে, আলহামদুলিল্লাহ। মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের এই সিরিজের দু‘আগুলোর উপর আমল করার তাওফিক দান করুন। ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত কোনো ভুল-ত্রুটি থাকলে ক্ষমা করুন। আমিন।
.

.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (০১ নং পর্ব)

 

অবশেষে শুরু করছি—শব্দে শব্দে অর্থ ও উচ্চারণসহ গুরুত্বপূর্ণ দু'আ সিরিজ!
.
সিজদায় পড়ুন এই মহিমান্বিত দু‘আটি। এক দু‘আতেই সবকিছু অন্তর্ভুক্ত। আমরা শব্দে শব্দে অর্থসহ উপস্থাপন করছি।
.
اَللّٰهُمَّ أَحْسِنْ عَاقِبَتَنَا فِي الأُمُورِ كُلِّهَا، وَأجِرْنَا
مِنْ خِزْيِ الدُّنْيَا وَعَذَابِ الآخِرَةِ
.
মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আ‘হসিন ‘আক্বিবাতানা, ফিল উমূরি কুল্লিহা, ওয়া আজিরনা— মিন খিযয়িদ দুনইয়া, ওয়া ‘আযাবিল আ~খিরাহ (আরবির সঠিক উচ্চারণ বাংলায় লেখা কোনোভাবেই সম্ভব নয়; তাই আরবির সাথে মিলিয়ে পড়ুন)

.
[অর্থ: হে আল্লাহ! সকল কাজে আমাদের উত্তম পরিণতি দাও। আর আমাদের রক্ষা করো—দুনিয়ার লাঞ্ছনা-অপমান থেকে ও আখিরাতের আযাব থেকে]
.
এবার শব্দে শব্দে অর্থ:
.
اَللّٰهُمَّ হে আল্লাহ
أَحْسِنْ উত্তম করো
عَاقِبَتَنَا আমাদের পরিণতি
فِي الأُمُورِ কাজের মধ্যে
كُلِّهَا সকল
وَأجِرْنَا এবং রক্ষা করো
مِنْ হতে
خِزْيِ লাঞ্ছনা-অপমান
الدُّنْيَا দুনিয়ার
وَعَذَابِ এবং আযাব
الآخِرَةِ আখিরাতের
.
এবার এভাবে সহজে মুখস্থ করুন—
.
اَللّٰهُمَّ - হে আল্লাহ

أَحْسِنْ عَاقِبَتَنَا - আমাদের উত্তম পরিণতি দাও

فِي الأُمُورِ كُلِّهَا - সকল কাজে

وَأجِرْنَا - এবং রক্ষা করো

مِنْ خِزْيِ الدُّنْيَا - দুনিয়ার লাঞ্ছনা-অপমান হতে

وَعَذَابِ الآخِرَةِ - ও আখিরাতের আযাব হতে
.
বুসর ইবনু আরতাআ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘‘আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এভাবে দু'আ পড়তে শুনেছি...(অতপর তিনি উপরের দু'আটি বর্ণনা করেন)।’’
[বুখারি, আত তারিখুল কাবির: ১/৩০, ২/১২৩, হাদিসটি হাসান]
.
আপনারা অর্থটি খেয়াল করে, বিভিন্ন অবস্থাকে অন্তরে ধারণ করে দু'আটি পড়বেন। অর্থাৎ যা আপনার চাওয়া।
.
আমাদের এই সিরিজটি কমপক্ষে ২০ পর্বে সমাপ্ত হবে—ইনশাআল্লাহ। আপনারা যদি গুরুত্বের সাথে দু‘আ ও যিকরগুলো মুখস্থ করেন এবং আমল শুরু করেন, তবেই আমাদের ভালো লাগবে। আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের সাথে সম্মিলিতভাবে আমল করলে আগ্রহ থাকবে বেশি। তাই, তাদের সাথে শেয়ার করুন। বারাকাল্লাহু ফীকুম।
.
নামাযের সিজদায় দু‘আ পড়ার নিয়ম হলো—আগে সিজদার তাসবিহ পড়ে নিবেন তিনবার। এরপর দু'আ পড়বেন। অনেক আলেমের মতে, ফরয নামাযের সিজদায় দু'আ না পড়াই উত্তম; তবে, নাজায়েয নয়। আমরা এই সিরিজে কেবল কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত বিভিন্ন দু'আ ও দু'আর অংশবিশেষ দিয়েই প্রস্তুত করতে চাই।
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (০২ নং পর্ব)

 

নামাজের সিজদাতে যেসব দু‘আ পড়তে পারেন: শব্দে-শব্দে অর্থসহ শিখুন (২য় পর্ব)
.
স্বামী-স্ত্রীর মনোমালিন্য, পারিবারিক ভুল বোঝাবুঝি ও বন্ধু-বান্ধবের মধ্যকার দ্বন্দ্ব দূর করতে এই দু'আটি পড়তে পারেন নামাজের সিজদায় অথবা সালাম ফেরানোর পূর্বে।
.
اللّٰهُمَّ أَلِّفْ بَيْنَ قُلُوبِنَا وَأَصْلِحْ ذَاتَ بَيْنِنَا وَاهْدِنَا سُبُلَ السَّلاَمِ
.
[মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আল্লিফ বাইনা ক্বুলূবিনা, ওয়া আসলিহ যা~তা বাইনিনা, ওয়াহদিনা সুবুলাস সালাম
(আরবির উচ্চারণ বাংলায় লেখা কখনই সম্ভব নয়; সুতরাং আরবি দেখে মিলিয়ে শিখুন। না হয় ভুল শিখবেন)]
———————————————————
শব্দে শব্দে মনে রাখুন—
.
اللّٰهُمَّ হে আল্লাহ
أَلِّفْ সম্প্রীতি-মহব্বত দাও
بَيْنَ মাঝে
قُلُوبِنَا আমাদের অন্তরের
وَ এবং
أَصْلِحْ সংশোধন করে দাও
ذَاتَ بَيْنِنَاআমাদের মধ্যকার(বিষয়াবলী)
وَاهْدِنَا আর দেখাও
سُبُلَ পথসমুহ
السَّلاَمِ শান্তির
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
এবার মুখস্থ করুন এভাবে—
.
[আল্লাহুম্মা]
اللّٰهُمَّ
হে আল্লাহ!
.
[আল্লিফ বাইনা ক্বুলূবিনা]
أَلِّفْ بَيْنَ قُلُوبِنَا
আমাদের অন্তরসমূহের মাঝে সম্প্রীতি ও মিল-মহব্বত দাও।
.
[ওয়া আসলিহ যা~তা বাইনিনা]
وَأَصْلِحْ ذَاتَ بَيْنِنَا
এবং আমাদের মধ্যকার বিষয়াবলী সংশোধন করে দাও
.
[ওয়াহদিনা সুবুলাস সালাম]
وَاهْدِنَا سُبُلَ السَّلاَمِ
আর আমাদের দেখাও তুমি—শান্তির পথসমূহ।
.
সাহাবি ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘সালাতে (নামাযে) বসে কী পড়ব, তা আমরা জানতাম না। আর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শেখানো হয়েছে ব্যাপক অর্থবোধক ও সর্বোত্তম বাক্যসমূহ।’ এরপর তিনি তাশাহহুদের আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাশাহহুদের মত করে আমাদের আরো কিছু বাক্য শেখাতেন। এরপর তিনি উপরের বাক্যগুলোসহ অনেকগুলো বাক্য উল্লেখ করেন। [আবু দাউদ, হাদিস: ৯৬৯; হাদিসটি সহিহ]
.
‘বিভিন্ন ক্ষেত্রে মনোমালিন্য হলে এই দু'আ পড়তে হবে’ এমন কথা নবীজি বলেননি। আমরা কেবল অর্থের দিক থেকে মিল থাকায় আপনাদের নিকট এই বাক্যগুলো তুলে ধরছি। উদ্দেশ্য দুটো: এক. সিজদায় আরবিতে দু'আ করার জন্য কিছু বাক্য উল্লেখ করা; দুই. সেই বাক্যগুলো সরাসরি সুন্নাহ্ থেকে নেওয়ার চেষ্টা করা। ইনশাআল্লাহ্, এতে বরকত হবে। আপনারা অন্তরে আপনাদের সমস্যা চিন্তা করে উপরে বর্ণিত দু'আটি সিজদায় এবং শেষ বৈঠকে সালাম ফেরানোর পূর্বে পড়তে থাকবেন।
-----------------------------------------------------
সিজদায় দু'আর ক্ষেত্রে:
.
• প্রথমে তিনবার সিজদার তাসবিহ পড়ুন।
• এরপর দু'আ করুন নিজের মত করে।
• ফরয নামাজের সিজদায় দু'আ না পড়াই উত্তম; তবে পড়লেও নামায হবে।
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (৩ নং পর্ব)

 

নামাজের সিজদায় দু'আ করার জন্য শব্দে শব্দে অর্থসহ গুরুত্বপূর্ণ দু'আ শিখুন (৩ নং পর্ব)
.
আজ আলোচনা করব দুটো ছোট দু'আ নিয়ে, কোনো অবস্থাতেই এগুলো ছাড়া উচিত নয়। কেন ছাড়া যাবে না, তা জানতে হাদিসটি পড়ুন।
.
মুমিনদের মা ও রাসূলের স্ত্রী উম্মে সালামা (রা.) বলেন—রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে দু'আটি সবচেয়ে বেশি পড়তেন, তা হলো–
.
يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوبِ ثَبِّتْ قَلْبِي عَلٰي دِيْنِكَ
.
[মোটামুটি উচ্চারণ: ইয়া মুক্বাল্লিবাল ক্বুলূব! সাব্বিত ক্বালবী ‘আলা দীনিকা (আরবি হরফের উচ্চারণ বাংলায় লেখা অসম্ভব, মূল আরবির সাথে মিলিয়ে পড়ুন। না হয় ভুল পড়বেন)]
.
[অর্থ: হে অন্তরসমূহের পরিবর্তনকারী! আপনি আমার অন্তরকে আপনার দ্বীনের (ইসলামের) উপর অটল রাখুন।]
.
এবার শব্দে শব্দে শিখে নিন—
.
يَا ইয়া [হে]
مُقَلِّبَ মুক্বাল্লিব [পরিবর্তনকারী]
الْقُلُوبِ আল-ক্বুলূব [অন্তরসমূহ]
ثَبِّتْ সাব্বিত [অটল-অবিচল রাখুন]
قَلْبِي ক্বালবী [আমার অন্তর]
عَلٰي আলা [উপরে]
دِيْنِكَ দীনিকা [আপনার দ্বীন(-এর)]
.
এভাবে মুখস্থ করুন—
.
يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوبِ ইয়া মুক্বাল্লিবাল ক্বুলূব
[হে অন্তরসমূহের পরিবর্তনকারী!]
.
ثَبِّتْ قَلْبِي عَلٰي دِيْنِكَ সাব্বিত ক্বালবী আলা দীনিকা
[আমার অন্তরকে আপনার দ্বীনের (ইসলামের) উপর অটল-অবিচল রাখুন।] [তিরমিযি, হাদিস: ৩৫২২, হাসান]
.
আরেকটি দু'আ একই ভাব ও মর্মের। তবে, সেটি আরো বেশি হৃদয়গ্রাহী। সেই দু'আটি পবিত্র কুরআনুল কারিমের সূরা আ~লে ইমরানের ৮ নং আয়াতে এসেছে।
.
رَبَّنَا لاَ تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنتَ الْوَهَّابُ
.
আরবি উচ্চারণ বাংলায় লেখা সম্ভব নয়, তবুও আমরা হাদিসের ক্ষেত্রে লেখি। কিন্তু কুরআনের ক্ষেত্রে লিখি না। কারণ এটা আলেমগণ নিষেধ করেছেন। ভুল উচ্চারণে অর্থ বিকৃতির আশঙ্কা থাকে।
.
[অর্থ: হে আমাদের রব! যখন তুমি আমাদের সঠিক পথে চালিয়েছো, তখন আর আমাদের অন্তরকে (সত্যপথ থেকে) বাঁকা করে দিও না। তোমার রহমতের ভান্ডার হতে আমাদের জন্য রহমত দাও। নিশ্চয়ই প্রকৃত দাতা তো তুমিই।]
.
رَبَّنَا হে আমাদের রব
لاَ না
تُزِغْ বাঁকা করো
قُلُوبَنَا আমাদের অন্তর
بَعْدَ পরে
إِذْ যখন
هَدَيْتَنَا সঠিক পথে চালিয়েছো
وَهَبْ দান করো
لَنَا আমাদের জন্য
مِن হতে
لَّدُنكَ তোমার নিকট
رَحْمَةً রহমত
إِنَّكَ নিশ্চয়ই তুমি
أَنتَ তুমি
الْوَهَّابُ প্রকৃত দাতা
.
মুখস্থ করুন এভাবে—
.
رَبَّنَا হে আমাদের রব
.
لاَ تُزِغْ قُلُوبَنَا আমাদের অন্তরকে (সত্যপথ থেকে) বাঁকা করে দিও না।
.
بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا যখন তুমি আমাদের সঠিক পথে চালিয়েছো
.
وَهَبْ لَنَا আমাদের জন্য রহমত দাও
.
مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً তোমার রহমতের ভান্ডার হতে রহমত
.
إِنَّكَ أَنتَ الْوَهَّابُ নিশ্চয়ই প্রকৃত দাতা তো তুমিই
.
দু'আ দুটোর গুরুত্ব:
হাদিসে এসেছে—শেষ যামানায় নিজের ঈমানকে ধরে রাখা, হাতে জ্বলন্ত অঙ্গার রাখার চেয়েও কঠিন হবে। আমরা জানি না—সেই সময়েই আমরা আছি কীনা। তবে, বর্তমান সময়েও দীনের উপর অটল-অবিচল থাকা-যে কত কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা বলাই বাহুল্য। জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ ঈমানকে হরণ করার জন্য শয়তানি তৎপরতার শেষ নেই। এমতাবস্থায় আমাদের মত দুর্বল মুমিনদের জন্য আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
.
হাদিসে এসেছে—মানুষের অন্তর আল্লাহর দুই আঙুলের মাঝে। তিনিই সেটিকে এদিক-ওদিক করেন। [আহমাদ: ৬/৩০২, সহিহ]
সুতরাং আমরা তো জানি না, আমাদের কোন্ অবাধ্যতার কারণে আল্লাহ্ রাগ করে আমাদের অন্তরকে বক্রতার দিকে ঘুরিয়ে দেন আর আমরা হয়ে যাই চিরস্থায়ীভাবে মহাক্ষতিগ্রস্ত। তাই, নিজের ঈমানকে নিরাপদ রাখতে, এই দু'আ দুটো নামাজের সিজদায়, সালাম ফেরানোর আগে, সাধারণ দু'আয় ও সদা-সর্বদা পাঠ করতে হবে খুব বেশি বেশি। এই দুটো দু'আ পাঠের সময় মনে মনে ভাবতে থাকবেন—‘‘আল্লাহ! আমি তোমার খুবই দুর্বল এক বান্দা। আমি সহজেই শয়তানের ধোঁকায় পড়ে যাই। আমার অন্তর দ্রুত পাল্টে যায়। আর তোমার হাতেই তো অন্তরের চাবি। যদি তুমি আমার অন্তরকে দ্বীনের উপর অটল না রাখো, তাহলে তো আমি ধ্বংস হয়ে যাব!’’ এভাবে নিজের মত করে ভাবতে থাকবেন আর আল্লাহর কাছে নিজের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরবেন।
.

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (৪ নং পর্ব)

 

গুরুত্বপূর্ণ তিনটি সহজ দু'আর বাক্য শব্দে শব্দে অর্থসহ শিখুন—নামাজের সিজদায় পাঠ করার জন্য এগুলো দারুণ হবে ইনশাআল্লাহ্ (৪ নং পর্ব)
.
দু'আ তিনটির মাধ্যমে দুনিয়াতে অবিচ্ছিন্ন নিয়ামত, মানসিক প্রশান্তি এবং আখিরাতে স্বাচ্ছন্দময় জীবন—সবই অন্তর্ভুক্ত আছে, আলহামদুলিল্লাহ!
.
নবীজির প্রিয় সাহাবি আম্মার ইবনু ইয়াসার (রা.) নামাজে এসব বাক্য দিয়ে দু'আ করেছিলেন আর বলেছিলেন, এগুলো তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শিখেছেন। [নাসাঈ, হাদিস: ১৩০৪, সহিহ]
.
দু'আটি ছিলো অনেক অনেক লম্বা। সেখান থেকে আমরা সহজ তিনটি বাক্য তুলে ধরছি, যাতে সবাই শিখতে পারেন।
.
اللّٰهُمَّ أَسْأَلُكَ نَعِيْماً لَا يَنْفَدُ وَأَسْأَلُكَ الرِّضٰى بَعْدَ الْقَضَاءِ وَأَسْأَلُكَ بَرْدَ الْعَيْشِ بَعْدَ الْمَوْتِ
.
[মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আসআলুকা না‘ঈমান লা ইয়ানফাদ, ওয়া আসআলুকার রিদ্বা বা‘অদাল ক্বাদ্বা, ওয়া আসআলুকা বারদাল ‘আইশি বা‘অদাল মাওত]
(আরবি ع ‘আইন’সহ বিভিন্ন হরফের উচ্চারণ বাংলায় লেখা যায় না। সুতরাং আমরা অনুরোধ করব—আপনারা আরবির সাথে মিলিয়ে পড়ুন। না হয়, নিশ্চিত ভুল শিখবেন)
.
[অর্থ: হে আল্লাহ! তোমার কাছে এমন নিয়ামত (অনুগ্রহ) চাই, যা কখনো শেষ হবে না; তোমার কাছে চাই, যেন তোমার সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট থাকতে পারি এবং তোমার কাছে মৃত্যুর পর আরামদায়ক জীবন চাই]
.
এবার শব্দে শব্দে অর্থ মুখস্থ করুন—
.
اللّٰهُمَّ আল্লাহুম্মা [হে আল্লাহ]
أَسْأَلُكَ আসআলুকা [আমি তোমার কাছে চাই]
نَعِيْماً না‘ঈমান [নিয়ামত বা অনুগ্রহ]
لَا يَنْفَدُ লা ইয়ানফাদ [শেষ হবে না]
وَأَسْأَلُكَ ওয়া আসআলুকা [তোমার কাছে চাই]
الرِّضٰى আর-রিদ্বা [সন্তুষ্টি/খুশি]
بَعْدَ বা‘অদা [পরে]
الْقَضَاءِ আল-ক্বাদ্বা [সিদ্ধান্ত]
وَأَسْأَلُكَ ওয়া আসআলুকা [তোমার কাছে চাই]
بَرْدَ বারদা [শীতল (আরাম]
الْعَيْشِ আল-‘আইশ [জীবন]
بَعْدَ বা‘অদা [পরে]
الْمَوْتِ আল-মাওত [মৃত্যু]
.
এবার মুখস্থ করুন এভাবে—
.
اللّٰهُمَّ আল্লাহুম্মা [হে আল্লাহ]
.
أَسْأَلُكَ نَعِيْماً لَا يَنْفَدُ আসআলুকা না‘ঈমান লা ইয়ানফাদ
[তোমার কাছে এমন নিয়ামত (অনুগ্রহ) চাই, যা কখনো শেষ হবে না]
.
وَأَسْأَلُكَ الرِّضٰى بَعْدَ الْقَضَاءِ ওয়া আসআলুকার রিদ্বা বা‘অদাল ক্বাদ্বা
[তোমার কাছে চাই, যেন তোমার সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট থাকতে পারি]
.
وَأَسْأَلُكَ بَرْدَ الْعَيْشِ بَعْدَ الْمَوْتِ ওয়া আসআলুকা বারদাল ‘আইশি বা‘অদাল মাওত
[তোমার কাছে মৃত্যুর পর আরামদায়ক জীবন চাই]
.
কয়েকটি কথা:
--------------------
[এক.] প্রথম বাক্যটি দিয়ে দুনিয়ার সকল নিয়ামতই সম্পৃক্ত করা যায়। অন্তত দু'আর সময় মাথায় এমনটিই রাখবেন।
.
[দুই.] আমরা বিভিন্ন খারাপ পরিস্থিতিতে পড়লে হতাশ হয়ে যাই; আল্লাহর সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাতে পারি না। এমনটি করা খুবই খারাপ অভ্যাস। তাই এ থেকে মুক্তি পেতে আমরা দু'আ করব ‘তোমার কাছে চাই, যেন তোমার সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট থাকতে পারি'। আর, যে সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপর সন্তুষ্ট থাকতে পারে, তার চেয়ে সুখী মানুষ পৃথিবীতে নেই।
.
[তিন.] তৃতীয় বাক্যে মৃত্যুর পর আরামদায়ক জীবন চাওয়া হচ্ছে। এটা তো জরুরি। কারণ কেউ সর্বাধিক আনন্দে জীবন কাটাক অথবা সর্বাধিক দুঃখী জীবন কাটাক, তাদের প্রত্যেকের মৃত্যু আছে। আসলে মৃত্যুর পরের জীবনটাই মূল জীবন। তাই, সেই জীবনটা সুন্দর হওয়ার জন্যও এখানে দু'আ করা হচ্ছে।
.
[চার.] ফেইসবুক লাইটে যের, যবর, পেশ বোঝা যায় না, অথচ আমরা এগুলো দিয়েছি।
.
[পাঁচ.] তাশদিদের উপরের হরকত যবর হয় এবং তাশদিদের নিচের হরকত যের হয় (যদিও তা হরফের উপরে হোক না কেন)
.

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (৫ নং পর্ব)

 

নামাজের সিজদায় পড়তে পারেন এই চারটি অসাধারণ বাক্য—শব্দে শব্দে অর্থসহ উপস্থাপন করছি (৫ নং পর্ব)
.
এই বাক্যগুলো এত চমৎকার, যা প্রত্যেকের দু'আর মধ্যে থাকা উচিত। আমরা শুরু করছি ইনশাআল্লাহ্—
.
اللَٰهُمَّ تَوَفَّنَا مُسْلِمِينَ، وَأَحْيِنَا مُسْلِمِينَ، وَأَلْحِقْنَا بِالصَّالِحِينَ، غَيرَ خَزَايَا وَلَا مَفْتُونِينَ
.
[মোটিমুটি উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা তাওয়াফফানা মুসলিমীন, ওয়া আ‘হয়িনা মুসলিমীন, ওয়া আলহিক্বনা বিস স-লিহীন, গায়রা খাযা-য়া ওয়া লা মাফতূ-নীন] (আরবিটা দেখে দেখে শিখুন, শুধু বাংলা শিখলে নিশ্চিত ভুল উচ্চারণ শিখবেন)
.
[অর্থ: হে আল্লাহ! মুসলিম অবস্থায় আমাদের মৃত্যু দিও; মুসলিম অবস্থায় বাঁচিয়ে রাখো; (মৃত্যুর পর) ভালো মানুষদের সাথে আমাদের জুড়ে দিয়ো; আমাদের অপদস্থ করো না এবং পরীক্ষায় ফেলো না]
.
এবার শব্দার্থগুলো শিখে নিন—
.
اللَٰهُمَّ আল্লা-হুম্মা [হে আল্লাহ]
تَوَفَّنَا তাওয়াফফানা [আমাদের মৃত্যু দিও]
مُسْلِمِينَ، মুসলিমীন [মুসলিম (অবস্থায়)]
وَأَحْيِنَا ওয়া আহয়িনা [আমাদের বাঁচিয়ে রেখো]
مُسْلِمِينَ، মুসলিমীনা [মুসলিম অবস্থায়]
وَأَلْحِقْنَا ওয়া আলহিক্বনা [আমাদের জুড়ে দিয়ো]
بِالصَّالِحِينَ، বিস স-লিহীন [ভালো মানুষদের সাথে]
غَيرَ গায়রা [ব্যতীত]
خَزَايَا খাযা-য়া [অপমান-অপদস্থতা]
وَلَا ওয়া লা [এবং নয়]
مَفْتُونِين মাফতূ-নীন [পরীক্ষায় আক্রান্ত]
.
মুখস্থ করতে পারেন এভাবে—
.
اللَٰهُمَّ আল্লা-হুম্মা [হে আল্লাহ্]
.
تَوَفَّنَا مُسْلِمِينَ তাওয়াফফানা মুসলিমীন
[মুসলিম অবস্থায় আমাদের মৃত্যু দিও]
.
وَأَحْيِنَا مُسْلِمِينَ، ওয়া আ‘হয়িনা মুসলিমীন
[মুসলিম অবস্থায় আমাদের বাঁচিয়ে রাখো]
.
وَأَلْحِقْنَا بِالصَّالِحِينَ، ওয়া আলহিক্বনা বিস স-লিহীন
[(মৃত্যুর পর) ভালো মানুষদের সাথে আমাদের জুড়ে দিয়ো]
.
غَيرَ خَزَايَا وَلَا مَفْتُونِين গায়রা খাযা-য়া ওয়া লা মাফতূ-নীন
[আমাদের অপদস্থ করো না এবং পরীক্ষায় ফেলো না]
.
উহুদ যুদ্ধের দিন মুশরিকরা চলে যাওয়ার পর, সাহাবাদেরকে পেছনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর প্রশংসা করেছিলেন ও অনেকগুলো দু'আ করেছিলেন। সেগুলো থেকে মাত্র চারটি বাক্য (দু'আ) উপরে উপস্থাপন করা হয়েছে। [বুখারি, আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদিস: ৬৯৯, সহিহ]
.
দুটো কথা:
ঈমানি হালতে চলতে পারা এবং ঈমানি হালতে মরতে পারার মত সৌভাগ্য এই পৃথিবীতে আর নেই। উপরের দু'আর মধ্যে এ দুটো চাওয়াই আছে। ভালো মানুষদের সঙ্গে থাকার দু'আর মধ্যে মনে মনে ভাববেন—নবী, সিদ্দিক, শুহাদা, সালিহিনের সাহচর্যের আকাঙ্ক্ষা। সর্বশেষ— অপদস্থতা ও পরীক্ষায় যাতে না পড়তে হয়, তার দু'আ। এটিও অত্যন্ত জরুরি। কারণ অপদস্থতা বা অপমান যেমন দুনিয়াতেও খারাপ, তেমনি আখিরাতে আরো খারাপ আর শেষ যামানায় ঈমানের পরীক্ষা হবে ভয়াবহ কঠিন, যা আমরা ইতোমধ্যে কিছুটা হলেও উপলব্ধি করতে পারছি।
.
অতএব, আমরা নামাজের সিজদায়, সালাম ফেরানোর আগে, সাধারণ দু'আর মধ্যে এবং সর্বাবস্থায় উপরের বাক্যগুলো বেশি বেশি বলতে চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ্।
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (৬ নং পর্ব)

 

আসুন, একটা সুন্দর দু'আ শিখি। আমরা কঠিন কোনো বিপদ-আপদে পড়লে নামাজের সিজদায় গিয়ে এটি পড়তে পারব। দু'আটি শব্দে শব্দে অর্থসহ উপস্থাপন করা হলো—ইনশাআল্লাহ্।
.
اللَّهُمَّ لاَ سَهْلَ إِلاَّ مَا جَعَلْتَهُ سَهْلاً وَ أَنْتَ تَجْعَلُ الْحَزْنَ إِذَا شِئْتَ سَهْلً.
.
[মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লা সাহলা ইল্লা মা জা'আলতাহু সাহলান, ওয়া আনতা তাজ'আলুল হাযনা ইযা শিঅ্তা সাহলান] আরবি দেখে উচ্চারণ শিখুন, না হয় নির্ঘাত ভুল শিখবেন!
.
[অর্থ: হে আল্লাহ্! আপনি যা সহজ করেন, তা ছাড়া কিছুই সহজ নয়। আর আপনি যখন চান, পেরেশানিকে সহজ করে দেন।]
.
[সহিহ ইবনু হিব্বান: ৩/২৫৫, সিলসিলা সহিহাহ: ৬/৯০২, হাদিসটি সহিহ]
.
শব্দে-শব্দে, ভেঙে-ভেঙে শিখুন—
.
اللَّهُمَّ আল্লাহুম্মা [হে আল্লাহ]
لاَ লা [নয়]
سَهْلَ সাহলা [সহজ]
إِلاَّ ইল্লা [ব্যতীত]
مَا মা [যা]
جَعَلْتَهُ জা‘আলতাহু [তুমি যেটিকে করো]
سَهْلاً সাহলান [সহজ]
وَ ওয়া [এবং]
أَنْتَ আনতা [তুমি]
تَجْعَلُ তাজ‘আলু [করো]
الْحَزْنَ আল-হাযন [পেরেশানি/দুশ্চিন্তা]
إِذَا ইযা [যখন]
شِئْتَ শিঅ্তা [তুমি চাও]
سَهْلً. সাহলান [সহজ]
.
এবার মুখস্থ করতে পারেন এভাবে—
.
اللَّهُمَّ لاَ سَهْلَ আল্লাহুম্মা লা সাহলা
[হে আল্লাহ! কোনো কিছুই সহজ নয়]
.
إِلاَّ مَا جَعَلْتَهُ سَهْلاً ইল্লা মা জা'আলতাহু সাহলান
[তুমি যেটি সহজ করে দাও, সেটি বাদে]
.
وَ أَنْتَ تَجْعَلُ الْحَزْنَ ওয়া আনতা তাজ'আলুল হাযনা
[আর তুমি পেরেশানিকে করে দাও]
.
إِذَا شِئْتَ سَهْلً ইযা শিঅ্তা সাহলান
[সহজ, যখন তুমি চাও]
.
ধরুন, কোনো টার্গেটে কাজ করছেন বা বিপদে পড়েছেন। সেখানে আপনার নিকট পর্যাপ্ত উপকরণ নেই, ফলে কাজটি সমাপ্ত করা কঠিন হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় নামাজের সিজদায়, সালাম ফেরানোর আগে বা যেকোনো দু'আর মধ্যে খুব দরদ দিয়ে এই দু'আটি অর্থের দিকে লক্ষ রেখে বেশি করে পড়বেন। নিজেকে আল্লাহর সামনে খুবই তুচ্ছ, মিসকিন হিসেবে উপস্থাপন করবেন, সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর উপর নির্ভরশীল হয়ে যাবেন।
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (৭ নং পর্ব)

 

দুটো প্রিয় দু‘আ আজ শব্দে শব্দে অর্থসহ উপস্থাপন করব ইনশাআল্লাহ্। দু‘আ দুটো করেছিলেন দুজন নবী। এগুলো কীভাবে পড়বেন, সেটিও ইনশাআল্লাহ্ বলা হবে।
.
প্রথম দু‘আটি পড়ার সময় আমি প্রচণ্ড আবেগাপ্লুত হয়ে যাই। অর্থ বোঝে পড়লে যে কেউ এটা অনুভব করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ্। এটি মূসা (আ.)-এর দু‘আ। তিনি এমন এক সময় এই দু‘আটি করেছিলেন, যখন তিনি ফেরারি ছিলেন। পুরো দুনিয়া তাঁর জন্য সংকীর্ণ হয়ে আসছিলো। দু‘আটি হলো—
.
رَبِّ إِنِّيْ لِمَا أَنْزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيْرٌ
.
[কুরআনের আয়াতের বাংলা উচ্চারণ লিখতে ‘আলিমগণ নিষেধ করেন। কারণ উচ্চারণের বিকৃতির কারণে এতে অর্থ বিকৃত হতে পারে।]
.
[অর্থ: (হে আমার) রব! আপনি আমার প্রতি যে-অনুগ্রহই অবতীর্ণ করবেন, আমি তারই মুখাপেক্ষী। (সূরা ক্বাসাস, আয়াত: ২৪)]
.
এবার শব্দে শব্দে অর্থসহ—
.
رَبِّ হে আমার রব (প্রতিপালক)
إِنِّيْ নিশ্চয়ই আমি
لِمَا যা
أَنْزَلْتَ আপনি অবতীর্ণ করবেন
إِلَيَّ আমার প্রতি
مِنْ হতে
خَيْرٍ অনুগ্রহ
فَقِيْرٌ মুখাপেক্ষী
.
সহজে মুখস্থ করতে পারেন এভাবে—
.
رَبِّ إِنِّيْ
[হে আমার রব! আমি]
.
لِمَا أَنْزَلْتَ إِلَيَّ
[যা আমার প্রতি অবতীর্ণ করবেন]
.
مِنْ خَيْرٍ فَقِيْرٌ
[সেই অনুগ্রহেরই মুখাপেক্ষী]
.
দু‘আর সময় নিজেকে তুচ্ছ, হীন ও ক্ষুদ্র হিসেবে উপস্থাপন করবেন আর বলতে থাকবেন উপরের দু‘আটি। কারণ প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর অনুগ্রহ ব্যতীত আমাদের একটি সেকেন্ডও চলা সম্ভব নয়। দু‘আর মধ্যে আবেগ তৈরি করতে এবং আল্লাহর প্রতি ভালবাসা অনুভব করতে দু‘আটি নামাজের সিজদায় এবং অন্যান্য সময়ে পড়তে পারেন।
.
দ্বিতীয় (যা নীচে উল্লেখ করা হচ্ছে) দু‘আটি বিশেষত যখন কোনো গুনাহ করে ফেলবেন, তখন অর্থের দিকে লক্ষ রেখে পড়বেন। এই দু‘আটি মোটামুটি প্রত্যেকেরই মুখস্থ, মাশাআল্লাহ!
.
لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّيْ كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِيْنَ
.
[অর্থ: (হে আল্লাহ!) আপনি ব্যতীত কোন সার্বভৌম সত্তা নেই। আপনি পবিত্র। আমি তো জালিমদের অন্তর্ভুক্ত। (সূরা আম্বিয়া, আয়াত: ৮৭)]
.
এবার শব্দে শব্দে অর্থ শিখে নিন—
.
لَا নেই
إِلٰهَ সার্বভৌম সত্তা
إِلَّا ব্যতীত
أَنْتَ আপনি
سُبْحَانَكَ আপনি পবিত্র
إِنِّيْ নিশ্চয়ই আমি
كُنْتُ ছিলাম
مِنَ হতে
الظَّالِمِيْنَ জালিমদের
.
সহজে মুখস্থ করতে চাইলে—
.
لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ
[আপনি ব্যতীত কোন সার্বভৌম সত্তা নেই]
.
سُبْحَانَكَ
[আপনি পবিত্র]
.
إِنِّيْ كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِيْنَ
[আমি তো জালিমদের অন্তর্ভুক্ত]
.
ইউনুস (আ.) তাঁর অবাধ্য সম্প্রদায়ের ব্যাপারে একপর্যায়ে রাগান্বিত ও বিরক্ত হয়ে তাদের ছেড়ে চলে যান। কারণ তারা আল্লাহর আযাবের অপেক্ষায় ছিলো। ইউনুস (আ.) এক্ষেত্রে একটু তাড়াহুড়ো করে ফেলেন—আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশ আসার অপেক্ষা করেননি। ফলে, আল্লাহ্ অসন্তুষ্ট হয়ে তাঁর উপর কঠিন এক মুসিবত চাপিয়ে দেন। সমুদ্রের বিশাল এক মাছ তাঁকে গিলে ফেলে! কল্পনা করে দেখুন! একজন মানুষের জীবনে এরচেয়ে বড় মুসিবত কী হতে পারে? ইউনুস (আ.) হতাশ হননি। নিজের ভুল বোঝতে পেরে নিঃশর্তভাবে আল্লাহর কাছে ভুল স্বীকার করেন।
.
এই দু‘আটিকে বলা হয় ‘দু‘আ ইউনুস’।
আমরা তিনটি পয়েন্ট উল্লেখ করতে চাই।
.
এক.
যে দু‘আর মধ্যে প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা থাকে এবং নিজের অপরাধ স্বীকার করা হয়, সেটি কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এই দু‘আর মধ্যে দুটোই আছে।
.
দুই.
দু‘আ মানেই ‘আল্লাহ্ আমাকে এই দাও সেই দাও’ এমনই হতে হবে, সেটা জরুরি নয়। অনেক সময় স্রেফ নিজের ভুলটা মন থেকে স্বীকার করাটাই যথেষ্ট হয়। বিভিন্ন নবীর ঘটনাতে এমন অনেক উদাহরণ আছে।
.
তিন.
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোনো মুসলিম যে বিষয়েই দু‘আ ইউনুস দিয়ে আল্লাহকে ডেকেছে, আল্লাহ্ তার ডাকে সাড়া দিয়েছেন। [তিরমিযি: ৩৫০৫]
.
সুতরাং, বুঝতেই পারছেন—এর গুরুত্ব কত। যেকোনো বিপদ-আপদে দু‘আর মধ্যে এবং নামাজের সিজদায় এই দু‘আটি পড়তে ভুলবেন না। কোনো গুনাহ করলেও এই দু‘আটি দিয়ে ক্ষমা চাবেন।
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (৮ নং পর্ব)

 

একটি গুরুত্বপূর্ণ দু‘আ শিখুন। দু‘আটি নবীজি তাঁর অতি প্রিয় কন্যা ফাতিমা (রা.)-কে সকাল-সন্ধ্যায় পড়ার জন্য তাগিদ দিয়ে গেছেন, ওসিয়ত করেছেন। শব্দে শব্দে অর্থসহ সেই দু‘আটি আমরা উপস্থাপন করব ইনশাআল্লাহ্।
.
يَا حَيُّ يَا قَيُّوْمُ بِرَحْمَتِكَ أَسْتَغِيْثُ أَصْلِحْ لِيْ شَأْنِيْ كُلَّهُ وَلاَ تَكِلْنِيْ إِلٰى نَفْسِيْ طَرْفَةَ عَيْنٍ
.
[মোটামুটি উচ্চারণ: ইয়া ‘হাইয়ু ইয়া ক্বাইয়ূমু বিরাহমাতিকা আসতাগীস, আসলিহ লী শাঅ্নী কুল্লাহ, ওয়া লা তাকিলনী ইলা নাফসী ত্বরফাতা ‘আইন]
.
[অর্থ: হে চিরঞ্জীব, হে চিরস্থায়ী! আমি আপনার রহমতের উসিলায় আপনার কাছে সাহায্য চাই; আপনি আমার সার্বিক অবস্থার সংশোধন করে দিন; আমাকে এক মুহূর্তের জন্যও আমার নিজের দায়িত্বে ছেড়ে দেবেন না।]
.
এবার শব্দে শব্দে শিখুন—
.
يَا ইয়া [হে]
حَيُّ হাইয়ু [চিরঞ্জীব]‘
يَا ইয়া [হে]
قَيُّوْمُ ক্বাইয়ূমু [চিরস্থায়ী]
بِرَحْمَتِكَ বিরাহমাতিকা [আপনার রহমত দ্বারা]
أَسْتَغِيْثُ আসতাগীস [আমি সাহায্য চাই]
أَصْلِحْ আসলি‘হ [সংশোধন করুন]
لِيْ লী [আমার]
شَأْنِيْ শাঅ্নী [আমার বিষয়গুলো]
كُلَّهُ কুল্লাহ [সকল]
وَلاَ ওয়া লা [এবং না]
تَكِلْنِيْ তাকিলনী [ছেড়ে দিবেন]
إِلٰى ইলা [দিকে]
نَفْسِيْ নাফসী [আমার নিজের]
طَرْفَةَ ত্বরফাতা [পলক]
عَيْنٍ আইন [চোখ]
[চোখের পলক] আমরা এর অনুবাদে বলেছি ‘এক মুহূর্ত’—মর্ম ও ভাব একই।
.
এবার মুখস্থ করুন এভাবে—
.
يَا حَيُّ يَا قَيُّوْمُ ইয়া ‘হাইয়ু ইয়া ক্বাইয়ূমু
[হে চিরঞ্জীব, হে চিরস্থায়ী!]
.
بِرَحْمَتِكَ أَسْتَغِيْثُ বিরাহমাতিকা আসতাগীস
[আমি আপনার রহমতের উসিলায় আপনার কাছে সাহায্য চাই]
.
أَصْلِحْ لِيْ আসলিহ লী
[আপনি আমার সংশোধন করে দিন]
.
شَأْنِيْ كُلَّهُ শাঅ্নী কুল্লাহ
[সার্বিক অবস্থার]
.
وَلاَ تَكِلْنِيْ ওয়া লা তাকিলনী
[আমাকে ছেড়ে দেবেন না]
.
إِلٰى نَفْسِيْ ইলা নাফসী
[আমার নিজের দায়িত্বে]
.
طَرْفَةَ عَيْنٍ ত্বরফাতা ‘আইন
[এক মুহূর্তের জন্যও]
.
নবীজির খাদেম ও একনিষ্ঠ সহচর আনাস (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাতিমা (রা.)-কে বলেন, ‘‘আমি ওসিয়ত করছি যে, তুমি সকালে ও সন্ধ্যায় এই কথা (দু'আ) বলবে।’’
.
[মুসতাদরাক হাকিম: ১/৫৪৫, সহিহ আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব: ১/২৭৩; হাদিসটি সহিহ]
.
দু'আর অর্থটি আবার পড়ুন। এত চমৎকার ভাষায় আল্লাহর কাছে দু'আ করলে আল্লাহ্ কি ফিরিয়ে দিবেন? দু'আটি পড়ার সময় অর্থের দিকে মনোযোগ রেখে পড়বেন। তাহলে পড়তেও ভালো লাগবে, ফায়দাও বেশি হবে ইনশাআল্লাহ্। নামাজের সিজদায়, সালাম ফেরানোর পূর্বে, সকাল-সন্ধ্যায়, যেকোনো দু‘আর মধ্যে (আবেগ সৃষ্টি করতে) এই দু‘আটি পড়ুন।
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (৯ নং পর্ব)

 

নামাজের সিজদায় দু‘আ করার জন্য সুন্দর একটি দু‘আ শব্দে শব্দে অর্থসহ শিখুন।
.
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّاتِ مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ ‏
.
[মোটামুটি উচ্চারণ: আ‘উযু বি কালিমা~ তিল্লা~হিত তা~ম্মা~তি, মিন গাদ্বাবিহি, ওয়া ‘ইক্বা~বিহি, ওয়া শাররি ‘ইবা~দিহি, ওয়া মিন হামাযা~তিশ শায়াত্বীনি, ওয়া আন ইয়াহদ্বুরুন] (আরবি দেখে না শিখলে নির্ঘাত ভুল শিখতে হবে। অতএব, আরবির সাথে মিলিয়ে সঠিকভাবে শিখুন)
.
[অর্থ: আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ বাক্যসমূহ দ্বারা আশ্রয় চাই—তাঁর রাগ ও শাস্তি থেকে; তাঁর বান্দাদের অনিষ্ট থেকে; শয়তানদের উসকানি থেকে এবং আমার কাছে তাদের (শয়তানদের) উপস্থিতি থেকে।]
.
এবার শব্দার্থগুলো জেনে নেওয়া যাক—
.
أَعُوذُ আ‘উযু [আমি আশ্রয় চাই]
بِكَلِمَاتِ বি কালিমা~তি [বাক্যসমূহ দ্বারা]
اللّٰهِ আল্লাহ্ [আল্লাহ]
التَّامَّاتِ তা~ম্মা~তি [পরিপূর্ণ]
مِنْ মিন [হতে]
غَضَبِهِ গাদ্বাবিহি [তাঁর রাগ]
وَعِقَابِهِ ওয়া ‘ইক্বাবিহি [তাঁর শাস্তি]
وَشَرِّ ওয়া শাররি [অনিষ্ট]
عِبَادِهِ ইবাদিহি [তাঁর বান্দাদের]
وَمِنْ ওয়া মিন [এবং হতে]
هَمَزَاتِ হামাযা~তি [উসকানি]
الشَّيَاطِينِ আশ শায়াত্বীন [শয়তানগুলো]
وَأَنْ يَحْضُرُونِ ‏ ওয়া আন ইয়া‘হদ্বুরুন
[উপস্থিত হওয়া]
.
মুখস্থ করতে পারেন এভাবে—
.
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّاتِ আ‘উযু বি কালিমা ~তিল্লা~হিত তা~ম্মা~তি
[আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ বাক্যসমূহ দ্বারা আশ্রয় চাই]
.
مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ মিন গাদ্বাবিহি, ওয়া ‘ইক্বা~বিহি
[তাঁর রাগ ও শাস্তি থেকে]
.
وَشَرِّ عِبَادِهِ ওয়া শাররি ‘ইবা~দিহি
[তাঁর বান্দাদের অনিষ্ট থেকে]
.
وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ ওয়া মিন হামাযা~তিশ শায়াত্বীনি
[শয়তানদের উসকানি থেকে]
.
وَأَنْ يَحْضُرُونِ ‏ ওয়া আন ইয়াহদ্বুরুন
[এবং (আমার কাছে) তাদের (শয়তানদের) উপস্থিতি থেকে]
.
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তোমাদের কেউ ঘুমের মধ্যে ভয় পেলে, সে যেন বলে (উপরের দু‘আটি)। তা হলে, তারা (জ্বীন শয়তানেরা) তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’’ [তিরমিযি: ৩৫২৮, হাদিসটি হাসান]
.
১. যাদের ঘুমের মধ্যে সমস্যা হয়, তারা ঘুমের পূর্বে এবং ভয়ার্ত হয়ে ঘুম ভাঙার পর এই দু‘আটি পড়বেন।
২. যারা সাধারণভাবে দু‘আ করতে চান, তারাও এটি যেকোনো দু‘আর মধ্যে পড়তে পারেন। কারণ এর অর্থটি খুবই সুন্দর এবং ব্যাপক—শুধু ঘুমের মধ্যে ভয় পাওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
৩. নামাজের সিজদায় এবং সালাম ফেরানোর পূর্বেও পড়তে পারেন।
৪. অর্থের দিকে খেয়াল রেখে দু‘আ পড়বেন। তাহলে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়—ইনশাআল্লাহ্।
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (১০ নং পর্ব)

 

জীবন থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু/কেউ চলে গেলে/হারিয়ে গেলে ভেঙে পড়বেন না। হাদিসে এ ব্যাপারে সহিহ দু‘আ বর্ণিত হয়েছে। সেটি পড়ুন—উত্তম বিকল্প পাবেন। আজ আমরা সেই দু‘আটি শব্দে শব্দে অর্থসহ তুলে ধরব ইনশাআল্লাহ্।
.
সাহাবাদের মধ্যে আবু সালামা ও উম্মে সালামা জুটি ছিলো ঈর্ষা করার মতো। দুজন স্বামী-স্ত্রী, একে অপরকে ভীষণ ভালবাসতেন। তাঁদের ভালবাসা ছিলো রূপকথার মতো। একদিন হঠাৎ আবু সালামাহ্ (রা.) মারা যান। এতে উম্মে সালামাহ (রা.) মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
.
উম্মে সালামাহ্ (রা.) বলেন, ‘‘আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি,
.
إِنَّا لِلّٰهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ، اَللّٰهُمَّ اَجُرْنِي فِي مُصِيْبَتِي ، وَأَخْلِفْ لِي خَيْرًا مِنْهَا
.
[মোটামুটি উচ্চারণ: ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রা-জি‘ঊন। আল্লাহুম্মা আজুরনি ফী মুসী-বাতি, ওয়া আখলিফ লি খাইরাম মিনহা (শুধু বাংলা উচ্চারণ দেখে শিখলে ভুল উচ্চারণ শিখবেন। সাবধান করছি সবাইকে)]
.
[অর্থ: নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য এবং তাঁর দিকেই আমাদের প্রত্যাবর্তন। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে আমার এই মুসিবতে প্রতিদান দিন। আমাকে এর পরিবর্তে এর চেয়েও উত্তম কিছু দিন।]
.
যদি কোনো মুসলিম বিপদগ্রস্ত হয়ে এ কথাগুলো বলে, তবে আল্লাহ্ তাকে অবশ্যই উক্ত ক্ষতির পরিবর্তে উত্তম বিষয় দান করবেন।’’
.
উম্মে সালামাহ্ বলেন, আমার স্বামী আবু সালামার মৃত্যুর পর আমি চিন্তা করলাম, আবু সালামার চেয়ে আর কে ভালো হতে পারে? তারপরও আমি এই (উপরে বর্ণিত) কথাগুলো বললাম। তখন আল্লাহ্ আমাকে আবু সালামার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে স্বামী হিসেবে প্রদান করেন। [সহিহ মুসলিম: ১/৬৩১-৬৩২]
.
দু‘আটির শব্দার্থগুলো জেনে নিন—
.
إِنَّا ইন্না [নিশ্চয়ই আমরা]
لِلّٰهِ লিল্লাহি [আল্লাহর জন্য]
وَإِنَّا ওয়া ইন্না [এবং আমরা]
إِلَيْهِ ইলাইহি [তাঁর দিকেই]
رَاجِعُونَ রাজি‘ঊন [প্রত্যাবর্তনকারী]
اَللّٰهُمَّ আল্লাহুম্মা [হে আল্লাহ]
اَجُرْنِي আজুরনি [আমাকে বিনিময় দিন]
فِي ফী [মধ্যে]
مُصِيبَتِي মুসীবাতি [আমার মুসিবত]
وَأَخْلِفْ ওয়া আখলিফ [এবং বদলা দিন]
لِي লি [আমার জন্য]
خَيْرًا খাইরান [উত্তম]
مِنْهَا মিনহা [তা হতে]
.
মুখস্থ করতে পারেন এভাবে—
.
إِنَّا لِلّٰهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন
[নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য এবং তাঁর দিকেই আমরা প্রত্যাবর্তনকারী]
.
اَللّٰهُمَّ أَجُرْنِي আল্লাহুম্মা আজুরনি
[হে আল্লাহ! আপনি আমাকে প্রতিদান দিন]
.
فِي مُصِيبَتِي ফী মুসীবাতী
[আমার মুসিবতে]
.
وَأَخْلِفْ لِي ওয়া আখলিফ লী
[এবং আমার জন্য বদলা দিন]
.
خَيْرًا مِنْهَا খাইরাম মিনহা
[এর চেয়েও উত্তম কিছু দিয়ে]
.
আম্মাজান উম্মে সালামাহ্ (রা.) দু'আর পুরস্কার কী চমৎকার পেয়েছেন! এই দু‘আর বরকতে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষটির জীবনসঙ্গী হয়েছেন। আমরাও যদি পূর্ণ ইয়াকিন (দৃঢ় বিশ্বাস) নিয়ে দু‘আটি পড়ি, তবে আল্লাহ্ আমাদের অপূর্ণতাকে পূর্ণতা দিবেন ইনশাআল্লাহ্।
.
হঠাৎ চাকরিটা চলে গেলে; স্ত্রী, সন্তানাদি অথবা কোন নিকটাত্মীয় মারা গেলে; কাছের বন্ধু/ভাই দূরে চলে গেলে বা মৃত্যুবরণ করলে—এমনসব মুসিবতের সময় আমাদের উচিত এই দু'আটি বারবার পড়া। বিশেষত নামাজে সিজদায় গিয়ে এবং দু'আ কবুলের বিভিন্ন সময় ও মুহূর্তগুলোতে। আশা করা যায়, আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বেটার কিছু দিয়ে আমাদেরকে সন্তুষ্ট করবেন এবং আমাদের দুঃখ-ভারাক্রান্ত মনকে প্রশান্ত করবেন।
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (১১ নং পর্ব)

 

নামাজের পরে একটি চমৎকার দু‘আ পড়ার অভ্যাস করতে পারেন। দু‘আটি আমরা শব্দে শব্দে অর্থসহ উপস্থাপন করছি।
.
প্রথমে দু'আটির প্রেক্ষাপট জেনে নেওয়া যাক; তাহলে আমল করতে আগ্রহ বাড়বে ইনশাআল্লাহ্।
.
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অত্যন্ত প্রিয় একজন সাহাবি ছিলেন মু'আয ইবনু জাবাল (রা.)। তাঁকে তিনি ইয়ামানে ইমাম ও শাসক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। সেই মু'আয (রা.) বলেন, (একদিন) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার হাত ধরে বলেন, ‘‘মু'আয! আমি তোমাকে ভালোবাসি।... মু'আয! আমি তোমাকে ওসিয়ত করছি—প্রত্যেক সালাতের পর এ দু'আটি বলা কখনো বাদ দিও না।’’ (দু'আটি হলো)—
.
اللّٰهُمَّ أَعِنِّيْ عَلٰى ذِكْرِكَ، وَشُكْرِكَ، وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ.
[মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আ‘ইন্নি '
‘আলা যিকরিকা, ওয়া শুকরিকা, ওয়া ‘হুসনি ‘ইবাদাতিকা (শুধু বাংলা উচ্চারণ দেখে শিখবেন না। তাহলে নিশ্চিতভাবে ভুল শিখতে হবে)]
.
[অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি আমাকে সাহায্য করুন—আপনার যিকর করতে, আপনার শুকরিয়া আদায় করতে এবং উত্তমরূপে আপনার ইবাদত করতে।’’
[আবু দাউদ: ১৫২২, হাকিম: ৬৭৭, সহিহ আত-তারগিব: ২/২১৯; হাদিসটি সহিহ]
.
শব্দে শব্দে মুখস্থ করে নিতে পারেন—
.
اللّٰهُمَّ আল্লাহুম্মা
[হে আল্লাহ!]
.
أَعِنِّيْ আ‘ইন্নি
[আমাকে সাহায্য করুন]
.
عَلٰى আলা
[উপরে]
.
ذِكْرِكَ، যিকরিকা
[আপনার যিকর (করতে)]
.
وَشُكْرِكَ، ওয়া শুকরিকা
[আপনার শুকরিয়া (আদায় করতে)]
.
وَحُسْنِ ওয়া হুসনি
[এবং উত্তম (ভাবে)]
.
عِبَادَتِكَ. ইবাদাতিকা
[আপনার ইবাদত (করতে)]
.
প্রথমত, হাদিসটির বর্ণনা খুবই সুন্দর। নবীজি অত্যন্ত স্নেহ করে মু'আয (রা.)-কে এই সুন্দর দু'আটি শিখিয়েছেন।
দ্বিতীয়ত, তিনি এটা ওসিয়ত করেছেন—নামাযের পরে পড়তে। সাধারণ উপদেশ এবং ওসিয়তের মধ্যে পার্থক্য অনেক। মানুষ খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারেই কেবল ওসিয়ত করে থাকে।
তৃতীয়ত, দু'আটির অর্থও খুবই সুন্দর ও ব্যাপক—গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বিষয়ের চাওয়া।
চতুর্থত, এটি শুধু প্রত্যেক ফরজ নামাজের পরই নয়, নামাজের সিজদায়, সালাম ফেরানোর পূর্বে এবং অন্যান্য যেকোনো দু‘আর মধ্যে পড়া যাবে। তবে, সারাজীবন রেগুলার আমল করতে পারেন কেবল ফরজ নামাজের পর। আর অন্যান্য ক্ষেত্রে পড়লে মাঝেমধ্যে ছেড়ে দেবেন আবার পড়বেন।
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (১২ তম পর্ব)

 

আসুন একটি চমৎকার দু‘আ শব্দে শব্দে অর্থসহ শিখি, যা আমরা নামাজের সিজদায় পড়তে পারব। দু‘আটি ছোট হলেও তাতে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি প্রার্থনা রয়েছে।
.
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজ আদায় করে বলেন—
.
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِيْ ذَنْبِيْ، وَوَسِّعْ لِيْ فِيْ دَارِيْ، وَبَارِكْ لِيْ فِي رِزْقِيْ
.
[মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগফিরলি যানবি, ওয়া ওয়াসসি‘অ্ লী ফী দা-রী, ওয়া বা-রিক লী ফী রিযক্বী (শুধু বাংলা উচ্চারণ পড়ে শিখলে নিশ্চিতভাবেই ভুল শিখতে হবে)]
.
অর্থ: হে আল্লাহ! আমার গুনাহ মাফ করে দাও, আমার ঘরে প্রশস্ততা দাও এবং আমার রিযিকে বরকত দাও।
.
সাহাবি আবু মূসা আশ‘আরী (রা.) বলেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনি এসব কী দু‘আ করলেন?’ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘এর পর আর কোনো কল্যাণ (প্রার্থনা) বাকি থাকে কি?’’ [নাসাঈ, ‘আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ, ৮০; সনদ সহিহ]
.
এবার চলুন শব্দার্থগুলো শিখে নেই—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লাহুম্মা [হে আল্লাহ]
اغْفِرْ لِيْ ইগফিরলি [আমাকে মাফ করো]
ذَنْبِيْ যানবী [আমার গুনাহ]
وَوَسِّعْ ওয়া ওয়াসসি‘অ্ [প্রশস্ত করো]
لِيْ লী [আমার জন্য]
فِيْ ফী [মধ্যে]
دَارِيْ দা-রী [আমার ঘর]
وَبَارِكْ ওয়া বা-রিক [এবং বরকত দাও]
لِيْ লী [আমার জন্য]
فِيْ ফী [মধ্যে]
رِزْقِيْ রিযক্বী [আমার রিযিক (জীবনোপকরণ)]
.
এবার মুখস্থ করা যায় এভাবে—
.
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِيْ ذَنْبِيْ আল্লাহুম্মাগফিরলি যানবি
[হে আল্লাহ্! আমার গুনাহ মাফ করে দাও]
.
وَوَسِّعْ لِيْ فِيْ دَارِيْ ওয়া ওয়াসসিঅ্ লী ফী দা-রী
[আমার ঘরকে প্রশস্ত করে দাও]
.
وَبَارِكْ لِيْ فِي رِزْقِيْ ওয়া বা-রিক লী ফী রিযক্বী
[আমার রিযিকে বরকত দাও]
.
খেয়াল করে দেখুন—এই দু‘আটিতে গুরুত্বপূর্ণ সবই চাওয়া হয়ে যাচ্ছে। প্রথমত, নিজের গুনাহের মাফ চাওয়া; দ্বিতীয়ত, ঘরে প্রশস্ততা—অর্থাৎ, ঘরের মধ্যে শান্তি-সমৃদ্ধি ও কল্যাণ থাকা এবং সেখানে কোনো ঝামেলা, মনোমালিন্য ও সংকীর্ণতা না থাকা ইত্যাদি। আবার শেষে বলা হচ্ছে, রিযিকে বরকতের কথা। রিযিক মানে শুধু খাবার-দাবার নয়, রিযিক মানে জীবনের যাবতীয় উপকরণ—অর্থ-সম্পদ, সময়ে বরকত, পেরেশানি থেকে মুক্তি, নেক সন্তান ও জীবনসঙ্গী সবই রিযিকের অন্তর্ভুক্ত।
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (পর্ব: ১৩)

 

দুশ্চিন্তা ও পেরেশানিমুক্ত জীবনযাপন করতে কুরআনের সাথে লেগে থাকুন। কুরআন পড়তে ভালো না লাগা বা কুরআনের জন্য হৃদয়ে টান অনুভব না করাটা ভয়ানক ব্যাপার। আমরা একটি সুন্দর দু‘আ শব্দে শব্দে অর্থসহ তুলে ধরছি, যা পাঠ করার মাধ্যমে কুরআনের প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে এবং কুরআন দ্বারা দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি দূর করা যাবে, ইনশাআল্লাহ—
.
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ أَنْ تَجْعَلَ الْقُرْآنَ رَبِيْعَ قَلْبِيْ، وَنُوْرَ صَدْرِيْ، وَجَلَاءَ حُزْنِيْ، وَذَهَابَ هَمِّيْ
.
[মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা আন তাজ‘আলাল কুরআ-না রাবী‘আ ক্বালবী, ওয়া নূ-রা সদরী, ওয়া জালা-আ ‘হুযনী ওয়া যাহা-বা হাম্মী (শুধু বাংলা উচ্চারণ দেখে পড়লে নিশ্চিত ভুল উচ্চারণ শিখতে হবে; আরবির সাথে মিলিয়ে শিখুন)]
.
অর্থ: হে আল্লাহ! তোমার নিকট চাই, যেন তুমি কুরআনকে করে দাও আমার হৃদয়ের বসন্ত (আগ্রহ-ভালোবাসা); আমার বক্ষের জন্য আলো; আমার দুশ্চিন্তার নির্বাসন এবং আমার পেরেশানি-দূরকারী। [মুসনাদ আহমাদ, ইবনু হিব্বান, সিলসিলা সহিহাহ: ১৯৯, হাদিসটি সহিহ]
.
একটি দীর্ঘ দু‘আর খণ্ডাংশ এটি। দু‘আটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং হৃদয়গ্রাহী। এটি সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে এই দু‘আটির কথা শুনবে, সে যেন তা মুখস্থ করে নেয়। [তথ্যসূত্র: উপরে বর্ণিত হাদিসের শেষাংশ]
.
শব্দে শব্দে দু‘আটি শেখা যায়—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লা-হুম্মা [হে আল্লাহ্]
إِنِّيْ ইন্নী [নিশ্চয়ই আমি]
أَسْأَلُكَ আসআলুকা [আমি চাই আপনার নিকট]
أَنْ আন [যেন]
تَجْعَلَ তাজ‘আলা [করেন]
الْقُرْآنَ আল কুরআ-না [আল কুরআন]
رَبِيْعَ রাবী‘আ [বসন্ত]
قَلْبِيْ، ক্বালবী [আমার অন্তর]
وَنُوْرَ ওয়া নূ-রা [আলো]
صَدْرِيْ، সদরী [আমার বক্ষ]
وَجَلَاءَ ওয়া জালা-আ [নির্বাসন]
حُزْنِيْ، হুযনী [আমার দুশ্চিন্তা]
وَذَهَابَ ওয়া যাহা-বা [দূরকারী]
هَمِّيْ হাম্মী [পেরেশানি]
.
এবার মুখস্থ করা যায় এভাবে—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লা-হুম্মা [হে আল্লাহ!]
.
إِنِّيْ أَسْأَلُكَ ইন্নী আসআলুকা
[আমি আপনার নিকট চাই]
.
أَنْ تَجْعَلَ الْقُرْآنَ আন তাজ‘আলাল কুরআনা
[যেন, আপনি কুরআনকে করে দেন]
.
رَبِيْعَ قَلْبِيْ، রাবী‘আ ক্বালবী
[আমার হৃদয়ের বসন্ত]
.
وَنُوْرَ صَدْرِيْ، ওয়া নূ-রা সদরী
[আমার বক্ষের আলো]
.
وَجَلَاءَ حُزْنِيْ، ওয়া জালা-আ হুযনী
[দুশ্চিন্তার নির্বাসন]
.
وَذَهَابَ هَمِّيْ ওয়া যাহা-বা হাম্মী
[এবং পেরেশানি-দূরকারী]
.
খেয়াল করে দেখুন—
দু‘আর অর্থটিই কেবল চমৎকার নয়, এর উচ্চারণও অত্যন্ত ছন্দময় এবং শ্রুতিমধুর। যাদের পক্ষে সম্ভব, সম্পূর্ণ দু‘আটি মুখস্থ করে নিবেন। এখানে অল্প একটু দেওয়া হয়েছে।
.
যাহোক, কুরআনের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টিতে এবং কুরআন দ্বারা দুঃখ ও দুশ্চিন্তা দূর করতে এই দু‘আটি নামাজের সিজদায়, সালাম ফেরানোর পূর্বে এবং অন্য যেকোনো সময়ে পাঠ করা যাবে।
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (১৪ তম পর্ব)

 

দারিদ্র, অপমান ও জুলুম থেকে বাঁচার একটি গুরুত্বপূর্ণ দু‘আ (এই সংক্ষিপ্ত দু‘আটি শব্দে শব্দে অর্থসহ উপস্থাপন করা হচ্ছে, যাতে নামাজের সিজদায় এবং অন্যান্য সময়ে পাঠ করা যায়)
.
আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন—
.
اَللّٰهُمَّ إنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْفَقْرِ، وَالْقِلَّةِ، وَالذِّلَّةِ، وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ أَنْ أَظْلِمَ أَوْ أُظْلَمَ
.
[মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘উ-যুবিকা মিনাল ফাক্বরি, ওয়াল ক্বিল্লাতি, ওয়ায যিল্লাতি, ওয়া আ‘উ-যুবিকা মিন আন আ(উ)যলিমা আউ উযলামা (উচ্চারণ সঠিকভাবে বাংলায় লেখা যায় না; সুতরাং আরবি টেক্সটের সাথে মিলিয়ে না শিখলে ভুল শেখা হবে]
.
অর্থ: হে আল্লাহ! তোমার কাছে আশ্রয় চাই—দারিদ্র থেকে, (নিয়ামতের) স্বল্পতা ও অপমান থেকে এবং তোমার কাছে আরো আশ্রয় চাই—কারো উপর জুলুম করা থেকে অথবা কারো জুলুমের শিকার হওয়া থেকে। [বুখারি, আল-আদাবুল মুফরাদ: ৬৭৮, হাদিসটি সহিহ]
.
দু‘আটি শব্দে শব্দে শেখা যায় এভাবে—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লা-হুম্মা [হে আল্লাহ]
إنِّيْ ইন্নী [নিশ্চয়ই আমি]
أَعُوْذُ بِكَ আ‘উ-যুবিকা [তোমার কাছে আশ্রয় চাই]
.
مِنَ الْفَقْرِ মিনাল ফাক্বরি [দারিদ্র থেকে]
وَالْقِلَّةِ ওয়াল ক্বিল্লাতি [স্বল্পতা থেকে]
وَالذِّلَّةِ ওয়ায যিল্লাতি [অপমান থেকে]
.
وَأَعُوْذُ بِكَ ওয়া আ‘উ-যুবিকা [আমি আরো আশ্রয় চাই তোমার কাছে]
.
مِنْ মিন [হতে]
أَنْ أَظْلِمَ আন আযলিমা [(কারো উপর) জুলুম করা থেকে]
.
أَوْ আউ [অথবা]
أُظْلَمَ উযলামা [জুলুমের শিকার হওয়া থেকে]
.
অতঃপর মুখস্থ করতে পারেন এভাবে—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লা-হুম্মা [হে আল্লাহ]
.
إنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ ইন্নী আ‘উ-যুবিকা
[আপনার নিকট আমি আশ্রয় চাই]
.
مِنَ الْفَقْرِ মিনাল ফাক্বরি [দারিদ্র হতে]
.
وَالْقِلَّةِ وَالذِّلَّةِ ওয়াল ক্বিল্লাতি ওয়ায যিল্লাতি
[(নিয়ামতের) স্বল্পতা ও অপমান হতে]
.
وَأَعُوْذُ بِكَ ওয়া আ‘উ-যুবিকা
[আমি আপনার নিকট আরো আশ্রয় চাই]
.
مِنْ أَنْ أَظْلِمَ মিন আন আযলিমা
[কারো উপর জুলুম করা থেকে]
.
أَوْ أُظْلَمَ আউ উযলামা
[অথবা জুলুমের শিকার হওয়া থেকে]
.
এই একটি ছোট্ট দু‘আর মধ্যে একই সাথে দারিদ্র, (নিয়ামতের) স্বল্পতা, অপমান-অপদস্থতা থেকে আশ্রয় চাওয়া হচ্ছে। আবার নিজে কারও উপর জুলুম করা অথবা কারও দ্বারা জুলুমের শিকার হওয়া থেকেও পানাহ চাওয়া হচ্ছে। সুতরাং, দু‘আটি নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ।
.
আমরা চাইলে এই দু‘আটি নামাজের সিজদায়, সালাম ফেরানোর পূর্বে বা অন্য যেকোনো সময় পড়তে পারি।
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (১৫ তম পর্ব)

 

অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দু‘আ, যার দ্বারা দুনিয়া ও আখিরাতের নিরাপত্তা এবং ক্ষমা পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ্। দু‘আটি আমরা শব্দে শব্দে অর্থসহ তুলে ধরছি।
.
আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বদা সকাল-সন্ধ্যায় এই বাক্যগুলো বলতেন—
.
​​​​​​​اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ الْعَافِيَةَ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ، اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِيْ دِيْنِيْ وَدُنْيَايَ وَأَهْلِيْ وَمَالِيْ، اَللّٰهُمَّ اسْتُرْ عَوْرَاتِي
.
[উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল ‘আ-ফিয়াতা ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আ-খিরাহ। আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল ‘আফওয়া ওয়াল-‘আ-ফিয়াতা ফী দীনী ওয়াদুনইয়া-ইয়া, ওয়া আহ্‌লী ওয়া মা-লী, আল্লা-হুম্মাসতুর ‘আওরা-তী]
.
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট দুনিয়া ও আখেরাতের নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট ক্ষমা ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি—আমার দ্বীন ও দুনিয়ার; আমার পরিবার ও সম্পদের। হে আল্লাহ! আপনি আমার গোপন ত্রুটিসমূহ ঢেকে রাখুন। [আল-আদাবুল মুফরাদ: ১২০০, হাদিসটি সহিহ]
.
এবার শব্দে শব্দে শিখে নিতে পারি—
.
​​​​​​​اَللّٰهُمَّ আল্লাহুম্মা [হে আল্লাহ]
إِنِّيْ ইন্নী [নিশ্চয়ই আমি]
أَسْأَلُكَ আসআলুকা [আপনার কাছে চাই]
الْعَافِيَةَ আল-‘আফিয়াহ [নিরাপত্তা]
فِي ফী [মধ্যে]
الدُّنْيَا আদ-দুনইয়া [দুনিয়া]
وَالْآخِرَةِ ওয়াল আ-খিরাহ [আখিরাত]
اَللّٰهُمَّ আল্লাহুম্মা [হে আল্লাহ]
إِنِّيْ ইন্নী [নিশ্চয়ই আমি]
أَسْأَلُكَ আসআলুকা [আপনার কাছে চাই]
الْعَفْوَ আল-‘আফওয়া [ক্ষমা]
وَالْعَافِيَةَ ওয়াল ‘আ-ফিয়াহ্ [এবং নিরাপত্তা]
فِيْ ফী [মধ্যে]
دِيْنِيْ দীনী [আমার দ্বীন]
وَدُنْيَايَ ওয়া দুনইয়া-ইয়া [এবং আমার দুনিয়া]
وَأَهْلِيْ ওয়া আহলী [আমার পরিবার]
وَمَالِيْ، ওয়া মা-লী [আমার সম্পদ]
اَللّٰهُمَّ আল্লাহুম্মা [হে আল্লাহ]
اسْتُرْ উসতুর [গোপন রাখুন]
عَوْرَاتِي আউরা-তি [আমার গোপন ত্রুটিগুলো]
.
এবার মুখস্থ করা যায় এভাবে—
.
​​​​​​​اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ আল্লাহুম্মা ইন্নী
[হে আল্লাহ্! নিশ্চয়ই আমি]
.
أَسْأَلُكَ الْعَافِيَةَ
আসআলুকাল আফিয়াতা
[আপনার নিকট নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি]
.
فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ،
ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আ-খিরাহ্
[দুনিয়া ও আখিরাতের]
.
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ আল্লাহুম্মা ইন্নী
[হে আল্লাহ্! নিশ্চয়ই আমি]
.
أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ আসআলুকাল ‘আফওয়া ওয়াল-‘আ-ফিয়াতা
.
[আমি আপনার নিকট ক্ষমা ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি]
.
فِيْ دِيْنِيْ وَدُنْيَايَ
ফী দীনী ওয়াদুনইয়া-ইয়া
[আমার দ্বীন ও দুনিয়ার]
.
وَأَهْلِيْ وَمَالِيْ،
ওয়া আহ্‌লী ওয়া মা-লী
[আমার পরিবার ও আমার সম্পদের]
.
اَللّٰهُمَّ اسْتُرْ عَوْرَاتِي
আল্লা-হুম্মাসতুর ‘আওরা-তী
[হে আল্লাহ! আপনি আমার গোপন ত্রুটিসমূহ ঢেকে রাখুন]
.
দু‘আটির অর্থের দিকে লক্ষ করলেই এর বিরাট গুরুত্ব সহজেই উপলব্ধি করা যায়। প্রথমত, দু‘আটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিদিন সকালে এবং সন্ধ্যায় পড়তেন। দ্বিতীয়ত, এতে দুনিয়া ও আখিরাতের যাবতীয় নিরাপত্তা ও ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়েছে। তৃতীয়ত, আমাদের গোপন ত্রুটিসমূহ ঢেকে রাখার দু‘আ করা হয়েছে, যা আমাদের সম্মানের সাথে জড়িত। সুতরাং এটি একটি চমৎকার দু‘আ—এতে কোনো সন্দেহ নেই। দু‘আটি আরো বড়; আমরা তার অর্ধেক উল্লেখ করেছি কেবল। সকলের উচিত হবে, পুরোটা মুখস্থ করে নেওয়া।
.
আমরা শুধু সকাল-সন্ধ্যায় নয়, নামাজের সিজদায়, সালাম ফেরানোর পূর্বে, লাইলাতুল কদরে এবং অন্য যেকোনো সময় এই গুরুত্বপূর্ণ দু‘আটি পাঠ করতে পারব।
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (১৬ তম পর্ব)

 

বিপদ ও দুশ্চিন্তার সময়ে পড়ার গুরুত্বপূর্ণ দুটো সহজ দু‘আ। আসুন, শব্দে শব্দে অর্থসহ শিখি এবং আমল করি।
➖➖➖➖◄❖►➖➖➖➖➖
❑ ১ নং দু‘আ:
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তোমাদের কেউ যখন দুশ্চিন্তা অথবা বিপদে পড়বে, সে যেন বলে—
.
اَللّٰهُ اَللّٰهُ ربِّيْ لَا أُشرِكُ بِهِ شَيْئًا
.
[আল্লাহু আল্লাহু রাব্বী, লা উশরিকু বিহী শাইআ]
.
অর্থ: আল্লাহ! আল্লাহই আমার রব! আমি তাঁর সাথে কোনো কিছু শরিক করি না।’’ [সহিহ ইবনু হিব্বান: ৮৬৪, সিলসিলা সহিহাহ: ২৭৫৫, হাদিসটি সহিহ]
.
শব্দে শব্দে শিখে নিতে পারেন দু‘আটি—
.
اَللّٰهُ আল্লাহু [আল্লাহ]
اَللّٰهُ আল্লাহু [আল্লাহ]
ربِّيْ রাব্বী [আমার রব]
لَا লা [না]
أُشرِكُ উশরিকু [আমি শরিক করি]
بِهِ বিহি [তাঁর সাথে]
شَيْئًا শাইআন [কোনো কিছু]
.
এই দু‘আটি যেকোনো সময়েই পড়তে পারেন। এতে শির্ক থেকে বিচ্ছিন্নতার ঘোষণা আছে এবং তাওহিদের (একত্ববাদের) স্বীকৃতি আছে। দুটোই আল্লাহর কাছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।
.
❑ ২ নং দু‘আ:
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ব্যক্তির দু‘আ হলো—
.
اَللّٰهُمَّ رَحْمَتَكَ أَرْجُوْ فَلَا تَكِلْنِيْ إِلٰى نَفْسِيْ طَرْفَةَ عَيْنٍ ، وَأَصْلِحْ لِيْ شَأْنِيْ كُلَّهُ لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ
.
[মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা রাহমাতাকা আরজূ, ফালা তাকিলনী ইলা নাফসী ত্বরফাতা ‘আইন, ওয়া আসলিহ লী শাঅ্নী কুল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লা আনতা]
.
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার রহমত কামনা করছি। এক মুহূর্তের জন্যও আমাকে আমার নিজের উপর ছেড়ে দিয়েন না। আমার সকল কাজকে আপনি সংশোধন করে দিন। আপনি ব্যতীত কোনো সার্বভৌম সত্তা নেই।’’ [বুখারি, আল আদাবুল মুফরাদ: ৭০১, সহিহ আবু দাউদ: ৫০৯০ হাদিসটি হাসান]
.
শব্দে শব্দে শিখে নেওয়া যাক—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লাহুম্মা [হে আল্লাহ]
رَحْمَتَكَ রাহমাতাকা [আপনার রহমত]
أَرْجُوْ আরজূ [আমি কামনা করছি]
فَلَا تَكِلْنِيْ ফালা তাকিলনী [আমাকে ছেড়ে দিবেন না]
إِلٰى ইলা [দিকে]
نَفْسِيْ নাফসী [আমার নফস (আত্মা)]
طَرْفَةَ ত্বরফাতা [পলক]
عَيْنٍ ، আইন [চোখ]
وَأَصْلِحْ ওয়া আসলিহ [এবং সংশোধন করে দিন]
لِيْ লী [আমার]
شَأْنِيْ শাঅ্নী [কাজ]
كُلَّهُ কুল্লাহ [সকল]
لَا লা [নেই]
إِلٰهَ ইলাহা [সার্বভৌম সত্তা]
إِلَّا ইল্লা [ব্যতীত]
أَنْتَ আনতা [আপনি]
.
এবার মুখস্থ করা যায় এভাবে—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লা-হুম্মা [হে আল্লাহ]
.
رَحْمَتَكَ أَرْجُوْ
রাহমাতাকা আরজূ
[তোমার রহমত কামনা করছি]
.
فَلَا تَكِلْنِيْ إِلٰى نَفْسِيْ
ফালা তাকিলনী ইলা নাফসী
[আমাকে আমার নিজের উপর ছেড়ে দিয়েন না]
.
طَرْفَةَ عَيْنٍ
ত্বরফাতা ‘আইন
[চোখের পলকের (এক মুহূর্তের) জন্যও]
.
وَأَصْلِحْ لِيْ
ওয়া আসলিহ লী
[আপনি সংশোধন করে দিন]
.
شَأْنِيْ كُلَّهُ
শাঅ্নী কুল্লাহ
[আমার সকল কাজকে]
.
لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ
লা ইলা ইল্লা আনতা
[আপনি ব্যতীত কোনো সার্বভৌম সত্তা নেই]
.
দুটো দু‘আই নামাজের সিজদায়, সালাম ফেরানোর আগে বা অন্যান্য সময়ে পড়া যাবে। পড়ার সময় অর্থের দিকে খেয়াল রাখবেন।
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (১৭ তম পর্ব)

 

একটি চমৎকার সহিহ দু‘আ, যা অত্যন্ত ব্যাপক অর্থবোধক; আসুন আমরা খুব সহজে শব্দে শব্দে শিখে ফেলি ইনশাআল্লাহ্
➖➖➖➖➖◄❖►➖➖➖➖➖
আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস‘ঊদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের (একটি) দু‘আ ছিলো এরূপ—
.
اَللّٰهُمَّ إنَّا نَسْأَلُكَ مُوْجِبَاتِ رَحْمَتِكَ، وَعَزَائِمَ مَغْفِرَتِكَ، وَالسَّلَامَةَ مِنْ كُلِّ إثْمٍ، وَالْغَنِيْمَةَ مِنْ كُلِّ بِرٍّ...
.
[মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্না নাসআলুকা মূ-জিবা-তি রাহমাতিক, ওয়া ‘আযা-ইমা মাগফিরাতিক, ওয়াস সালা-মাতা মিন কুল্লি ইসমিন, ওয়াল গানী-মাতা মিন কুল্লি বিররিন... (আরবি টেক্সটের সাথে মিলিয়ে না পড়লে নিশ্চিত ভুল শিখতে হবে)]
.
অর্থ: হে আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট (সেসব জিনিস) চাই, যার ফলে নিশ্চিতভাবে আপনার রহমত লাভ করা যাবে এবং (আমাদের প্রতি) আপনার ক্ষমা অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠবে। (আপনার কাছে) প্রত্যেকটি গুনাহ থেকে নিরাপত্তা চাই এবং প্রত্যেকটি ভালো কাজ আঞ্জাম দেওয়ার সুযোগ চাই...। [মুসতাদরাক হাকিম: ১/৫২৫, ইমাম নববী, আল আযকার: পৃষ্ঠা নং ৩৪০, হাদিসটি সহিহ; আমরা দু‘আটি সম্পূর্ণ উল্লেখ করিনি—সকলের সহজতার কথা ভেবে—কিছুটা বাকি রেখেছি।]
.
দু‘আটি শব্দে শব্দে শিখে নিতে পারি—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লা-হুম্মা (হে আল্লাহ)
إنَّا ইন্না (নিশ্চয়ই আমরা)
نَسْأَلُكَ নাসআলুকা (আপনার নিকট চাই)
مُوْجِبَاتِ মূ-জিবা-তি (যা আবশ্যক করবে)
رَحْمَتِكَ রাহমাতিকা (আপনার রহমত)
وَعَزَائِمَ ওয়া ‘আযা-ইমা (যা আবশ্যক করবে)
مَغْفِرَتِكَ মাগফিরাতিকা (আপনার ক্ষমা)
وَالسَّلَامَةَ ওয়াস সালা-মাতা (নিরাপত্তা)
مِنْ মিন (হতে)
كُلِّ কুল্লি (প্রত্যেক)
إثْمٍ ইসমিন (গুনাহ)
وَالْغَنِيْمَةَ ওয়াল গানী-মাতা (সুযোগ)
مِنْ মিন (হতে)
كُلِّ কুল্লি (প্রত্যেক)
بِرٍّ বিররিন (ভালো কাজ)
.
এবার খুব সহজে মুখস্থ করতে পারি—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লা-হুম্মা (হে আল্লাহ)
.
إنَّا نَسْأَلُكَ
ইন্না নাসআলুকা
[আমরা আপনার নিকট চাই (সেসব বিষয়)]
.
مُوْجِبَاتِ رَحْمَتِكَ
মূ-জিবা-তি রাহমাতিকা
(যেগুলোর ফলে নিশ্চিতভাবে আপনার রহমত লাভ করা যাবে)
.
وَعَزَائِمَ مَغْفِرَتِكَ
ওয়া ‘আযা-ইমা মাগফিরাতিকা
[এবং আপনার ক্ষমা অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠবে (আমাদের উপর)]
.
وَالسَّلَامَةَ مِنْ كُلِّ إثْمٍ
ওয়াস সালা-মাতা মিন কুল্লি ইসমিন
(প্রত্যেকটি গুনাহ থেকে নিরাপত্তা চাই)
.
وَالْغَنِيْمَةَ مِنْ كُلِّ بِرٍّ
ওয়াল গানী-মাতা মিন কুল্লি বিররিন
(এবং প্রত্যেকটি ভালো কাজ আঞ্জাম দেওয়ার সুযোগ চাই)
.
দু‘আটির অর্থের দিকে খেয়াল করলেই বুঝা যায়—এটি কত গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যাপক অর্থবোধক দু‘আ। বলা যায়—এই একটি দু‘আতে একজন মানুষের জীবনের যাবতীয় বিষয় চাওয়া হয়ে যায়।
.
দু‘আটি আমরা নামাজের সিজদায়, সালাম ফেরানোর পূর্বে, দু‘আ কবুলের বিশেষ অবস্থাগুলোতে এবং যেকোনো সময়ে পড়তে পারব। বিশেষত, এই দু‘আটি র‍্যান্ডমলি সবসময় পড়ার অভ্যাস করা উচিত।
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (১৮ তম পর্ব)

 

আজ এমন একটি দু‘আ আলোচনা করব, যেটি প্রত্যেকের ফেভারিট দু‘আ হবে ইনশাআল্লাহ্। মুখস্থের সুবিধার্তে দু‘আটি শব্দে শব্দে অর্থসহ তুলে ধরব ইনশাআল্লাহ্।
➖➖➖➖➖◄❖►➖➖➖➖➖
একবার আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস‘ঊদ (রা.) আল্লাহর প্রশংসা ও নবীজির উপর দরুদ পাঠ করেন, অতঃপর দু‘আ শুরু করেন। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানেই ছিলেন। তিনি তাকে বলেন, ‘(আল্লাহর কাছে) চাও, তোমাকে দেওয়া হবে।’ তিনি নবীজির এই কথা শুনে জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ চাওয়াটিই চেয়েছিলেন। সেটি হলো—
.
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ إِيْمَانًا لَا يَرْتَدُّ، وَنَعِيْمًا لَا يَنْفَدُ، وَمُرَافَقَةَ نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيْ أَعْلٰى جَنَّةِ الْخُلْدِ
.
[মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা ঈমা-নান লা ইয়ারতাদ্দ, ওয়া না‘ঈ-মান লা ইয়ানফাদ, ওয়া মুরা-ফাক্বাতা নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফী আ‘অ্লা জান্নাতিল খুলদ (আরবির সাথে মিলিয়ে মিলিয়ে পড়ুন, না হয় ভুল শিখতে হবে)]
.
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে এমন ঈমান চাই, যা কেউ ত্যাগ করে না; এমন নিয়ামত চাই, যা শেষ হবে না এবং চাই চিরস্থায়ী জান্নাতের উঁচু স্তরে আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহচর্য। 
.
দু‘আটি পরবর্তিতে ভালোভাবে জানার জন্য তাঁর কাছে আবু বকর (রা.) ও উমার (রা.) এসেছিলেন! [সিলসিলা সহিহাহ: ২৩০১; হাদিসটি হাসান]
.
আমরা শব্দে শব্দে দু‘আটি শিখতে পারি—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লা-হুম্মা [হে আল্লাহ]
إِنِّيْ   ইন্নী [নিশ্চয়ই আমি]
أَسْأَلُكَ আসআলুকা [তোমার নিকট চাই]
إِيْمَانًا ঈমা-নান [এমন ঈমান, যা]
لَا يَرْتَدُّ، লা ইয়ারতাদ্দ [কেউ ত্যাগ করে না]
وَنَعِيْمًا ওয়া না‘ঈ-মান [এমন নিয়ামত যা]
لَا يَنْفَدُ، লা ইয়ানফাদ [শেষ হবে না]
وَمُرَافَقَةَ ওয়া মুরা-ফাক্বাতা [এবং সাহচর্য]
نَبِيِّنَا  নাবিয়্যিনা [আমাদের নবী]
مُحَمَّدٍ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ মুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
[মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের]
فِيْ ফী [মধ্যে]
أَعْلٰى আ‘অ্লা [উঁচু (স্তরে)]
جَنَّةِ  জান্নাতি [জান্নাত]
الْخُلْدِ আল খুলদ [চিরস্থায়ী]
.
এভাবে সহজে মুখস্থ করতে পারি—
.
اَللّٰهُمَّ  আল্লা-হুম্মা [হে আল্লাহ]
.
إِنِّيْ أَسْأَلُكَ  
ইন্নী আসআলুকা
[আমি আপনার নিকট চাই]
.
إِيْمَانًا لَا يَرْتَدُّ،  
ঈমা-নান লা ইয়ারতাদ্দ
[এমন ঈমান, যা কেউ ত্যাগ করে না]
.
وَنَعِيْمًا لَا يَنْفَدُ، 
ওয়া না‘ঈ-মান লা ইয়ানফাদ
[এমন নিয়ামত, যা শেষ হবে না]
.
وَمُرَافَقَةَ نَبِيِّنَا
ওয়া মুরা-ফাক্বাতা নাবিয়্যিনা
[এবং আমাদের নবীজির সাহচর্য]

مُحَمَّدٍ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ 
মুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
[মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]
.
فِيْ أَعْلٰى 
ফী আ‘অ্লা
[উঁচুতে]
.
جَنَّةِ الْخُلْدِ 
জান্নাতিল খুলদ
[চিরস্থায়ী জান্নাতের]
.
আমি প্রথমবার হাদিসটি পড়ে দারুণভাবে পুলকিত হয়েছিলাম। আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস‘ঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহুর কত সৌভাগ্য যে, তিনি নবীজির উপস্থিতিতে এত চমৎকার একটি দু‘আ করতে পেরেছিলেন, যখন তাঁকে বলা হয়েছে, ‘চাও, তোমাকে দেওয়া হবে!’ তাঁর এই অসাধারণ দু‘আর বাক্যগুলো জানার জন্য তাঁর কাছে আবু বকর এবং উমরের মত শীর্ষ দুই সাহাবি আলাদাভাবে গিয়েছেন!
.
আমরা যদিও ঈমান-আমলের দিক থেকে দুর্বল, তবে আশাবাদী হতে তো দোষ নেই। হাদিসে এসেছে, ‘যে যাকে ভালবাসবে, সে তার সাথেই থাকবে’, আমরা তো নবীজিকে আমাদের জীবনের চেয়েও অধিক ভালোবাসি। তাই, আমরা আশা রাখতেই পারি!
.
দু‘আটি আমরাও করতে পারি নামাজের সিজদায়, সালাম ফেরানোর পূর্বে, দু‘আ কবুলের বিশেষ সময়গুলোতে অথবা যেকোনো সময়ে। আল্লাহ্ চাইলে তো আমাদের এই উচ্চ আশা পূরণ হতেই পারে! মহান রব আমাদেরকে বলিষ্ঠ ঈমান, স্থায়ী নিয়ামত এবং জান্নাতুল ফিরদাউসে নবীজির সাহচর্য লাভের তাওফিক দান করুন। আমীন। 
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (১৯ তম পর্ব)

 

ইসমে আযমের একটি দু‘আ শব্দে শব্দে অর্থসহ শিখে নিতে পারেন। ইসমে আযম দিয়ে দু‘আ করলে আল্লাহ্ কবুল করেন।
▬▬▬▬▬▬▬◄❖►▬▬▬▬▬▬▬
আনাস বিন মালিক (রা.) বলেন, একবার তিনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে বসা অবস্থায় ছিলেন। (সেখানে) এক ব্যক্তি নামাজ আদায় করছিলেন। অতঃপর দু‘আ করছিলেন— (নিচের বাক্যগুলো দিয়ে)
.
اَللّٰهُمَّ إنِّيْ أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدُ لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ الْمَنَّانُ بَدِيْعُ السَّمٰوَاتِ وَالْأَرْضِ يَا ذَا الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ يَا حَيُّ يَا قَيُّوْمُ
.
[মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা বিআন্না লাকাল ‘হামদ, লা ইলা-হা ইল্লা আনতাল মান্না-ন, বাদী-‘উস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্ব, ইয়া যাল জালা-লি ওয়াল ইকরা-ম, ইয়া ‘হাইয়ু, ইয়া ক্বাইয়ূম (অবশ্যই আরবি টেক্সটের সাথে মিলিয়ে শিখতে হবে)]
.
অর্থ: হে আল্লাহ্! আমি আপনার কাছে চাই। নিশ্চয়ই আপনার জন্যই সকল প্রশংসা। আপনি ব্যতীত উপাসনার যোগ্য কেউ নেই। (আপনি) মহান দাতা; আসমানসমূহ এবং যমিনের সৃষ্টিকর্তা। হে রাজকীয়তা ও মহানুভবতার অধিকারী! হে চিরঞ্জীব, হে চিরস্থায়ী!
.
অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘সে আল্লাহর মহান নাম দিয়ে দু‘আ করেছে, যে নাম দিয়ে ডাকলে সাড়া দেওয়া হয় এবং (কিছু) চাওয়া হলে তা প্রদান করা হয়।’’ [সহিহ আবু দাউদ: ১৪৯৫, হাদিসটি সহিহ]
.
এই গুরুত্বপূর্ণ দু‘আটি শব্দে শব্দে শিখে নিতে পারেন—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লা-হুম্মা [হে আল্লাহ]
إنِّيْ ইন্নী [নিশ্চয়ই আমি]
أَسْأَلُكَ আসআলুকা [আপনার নিকট চাই]
بِأَنَّ বিআন্না [নিশ্চয়ই]
لَكَ লাকা [আপনার জন্যই]
الْحَمْدُ আল ‘হামদ [সকল প্রশংসা]
لَا লা [নেই]
إِلٰهَ ইলাহা [উপাসনার যোগ্য কেউ]
إِلَّا ইল্লা [ব্যতীত]
أَنْتَ আনতা [আপনি]
الْمَنَّانُ আল-মান্না-ন [(আপনি) মহান দাতা]]
بَدِيْعُ বাদী-‘উ [সৃষ্টিকর্তা]
السَّمٰوَاتِ আস-সামা-ওয়া-ত [আসমানসমূহ]
وَالْأَرْضِ ওয়াল আরদ্ব [এবং যমিন]
يَا ইয়া [হে]
ذَا যা [অধিকারী]
الْجَلَالِ আল-জালা-ল [রাজকীয়তা]
وَالْإِكْرَامِ ওয়াল ইকরাম [এবং মহানুভবতা]
يَا ইয়া [হে]
حَيُّ হাইয়ূ [চিরঞ্জীব]
يَا ইয়া [হে]
قَيُّوْمُ ক্বাইয়ূম [চিরস্থায়ী]
.
.
.
এবার সহজে মুখস্থ করুন এভাবে—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লা-হুম্মা [হে আল্লাহ্]
.
إنِّيْ أَسْأَلُكَ
ইন্নী আসআলুকা
[নিশ্চয়ই আমি আপনার নিকট চাই]
.
بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدُ
বিআন্না লাকাল ‘হামদ
[নিশ্চয়ই আপনার জন্যই সকল প্রশংসা]
.
لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ الْمَنَّانُ
লা ইলা-হা ইল্লা আনতাল মান্না-ন
[আপনি ব্যতীত উপাসনার যোগ্য কেউ নেই; (আপনি) মহান দাতা]
.
بَدِيْعُ السَّمٰوَاتِ وَالْأَرْضِ
বাদী-‘উস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্ব
[(আপনি) আসমানসমূহ ও যমিনের সৃষ্টিকর্তা]
.
يَا ذَا الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ
ইয়া যাল জালা-লি ওয়াল ইকরা-ম
[হে রাজকীয়তা ও মহানুভবতার অধিকারী]
.
يَا حَيُّ يَا قَيُّوْمُ
ইয়া ‘হাইয়ু ইয়া ক্বাইয়ূম
[হে চিরঞ্জীব! হে চিরস্থায়ী!]
.
ইসমে আযম দিয়ে দু‘আ করার ক্ষেত্রে এর অর্থের দিকে গুরুত্ব দিয়ে, আন্তরিকতার সাথে পড়তে হবে। নিজেকে আল্লাহর সামনে ভিক্ষুকের মতো উপস্থাপন করতে হবে এবং আল্লাহকে রাজাধিরাজ হিসেবে ডাকতে হবে। ইনশাআল্লাহ্, এভাবে দু‘আ করলে আল্লাহ্ কবুল করবেন।
.
ইসমে ‘আযমের এরকম বেশ কয়েকটি দু‘আ আছে। ইনশাআল্লাহ্, সামনে আমরা হয়তো আরো পোস্ট দেব। ইসমে আযম দিয়ে দু‘আ করার পদ্ধতি হলো, দু‘আ শুরু করবেন স্বাভাবিক নিয়মে (আল্লাহর প্রশংসা ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দরুদ পাঠের মাধ্যমে)। এরপর ইসমে আযমের বাক্যগুলো (যেমন: উপরে আমরা যেটি উল্লেখ করলাম) পড়বেন। পড়ার পর যেকোনো ভাষায় নিজের বৈধ চাওয়াগুলো বলবেন।
.
উল্লেখ্য, উত্তম হলো, নফল নামাজের মধ্যে ইসমে আযম দিয়ে দু‘আ করা। সেক্ষেত্রে, নামাজের শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ, দরুদ ও দু‘আ মাসূরা শেষ করার পর ইসমে আযমের বাক্যগুলো পড়বেন। নামাজের শেষ বৈঠকে পড়লে তাশাহহুদ ও দরুদের মাধ্যমে আল্লাহর প্রশংসা ও নবীজির উপর দরুদ পড়া হয়ে যায়। যাহোক, ইসমে আযমের বাক্যগুলো বলার পর আরবি ভাষায় দু‘আ করবেন। হানাফি মাযহাবের ভাষ্যমতে, নামাজে আরবি ব্যতীত অন্য ভাষায় দু‘আ করা জায়েয নেই। যদিও আলেমগণের অনেকে নফল নামাজে মাতৃভাষায় দু‘আ করা বৈধ বলেছেন। তবে, এটির পক্ষে স্পষ্ট কোনো দলিল নেই। সুতরাং, সতর্কতা হিসেবে মাতৃভাষায় দু‘আ না করাই কর্তব্য। নামাজের মতো ইবাদতকে সন্দেহের ঊর্ধ্বে রাখাই উচিত।
.
সুতরাং, নামাজের বাইরে ইসমে আযম দিয়ে দু‘আ করলে যেকোনো ভাষায় নিজের চাওয়া বলতে পারেন। কোনো অসুবিধা নেই।
.
(ইসমে আযমের পরিচিতি নিয়ে আমরা একটি পোস্ট দিয়েছিলাম। নিচে দেয়া হলো)

 

‘ইসমে আযম’ দিয়ে দু‘আ করলে নিশ্চিত কবুল হয়। জানতে হবে—‘ইসমে আযম’ কী? এটি দিয়ে কীভাবে দু‘আ করতে হয়?
▬▬▬▬▬▬▬◄❖►▬▬▬▬▬▬▬
❑ ইসমে আযমের পরিচয়:
.
ইসমে আযম দুটো আরবি শব্দ; এদের সম্মিলিত অর্থ: মহান নাম, শ্রেষ্ঠ নাম। অর্থাৎ, ইসমে আযম হলো, আল্লাহর মহান ও বিশিষ্ট নাম, যে নামের উসিলায় দু‘আ করা আল্লাহ্ ভীষণ পছন্দ করেন এবং সেই দু‘আ তিনি কবুল করেন।
.
❑ ইসমে আযম কোনগুলো?
.
এ ব্যাপারে কুরআন ও হাদিসে বিভিন্ন শব্দ ও বাক্য এসেছে। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো:
.
◉ আল্লাহ্ (الله) আল্লাহ
◉ আর রাব্ব (اَلرَّبُّ) [প্রতিপালক]
◉ আল ‘হাইয়ূ (اَلْحَيُّ) [চিরঞ্জীব]
◉ আল ক্বাইয়ূম (اَلْقَيُّوْمُ) [চিরস্থায়ী]
◉ আল মান্নান (اَلْمَنَّانُ) [সীমাহীন দাতা]
◉ যুল জালালি ওয়াল ইকরাম (ذُوْ الْجَلَالِ والْإِكْرَام) [মহত্ত্ব ও মহানুভবতার অধিকারী]
◉ আসমাউল হুসনা (সুন্দর নামসমূহ) তথা হাদিসে বর্ণিত আল্লাহর সুন্দর গুণবাচক ৯৯ টি নামকেও আলিমগণ ইসমে আযম বলেছেন।
.
➤ আল্লাহ্ বলেন, “আর (সব) সুন্দর সুন্দর নাম তো আল্লাহ্‌ তা‘আলার জন্য, সুতরাং তাঁকে এসব নামেই ডাক।” [সূরা আ’রাফ, আয়াত: ১৮০]
.
➤ রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ্‌ তা‘আলার রয়েছে—১০০ থেকে ১টি কম—৯৯টি নাম; যে এগুলোর হিসাব রাখবে (মুখস্থ রাখবে), সে জান্নাতে যাবে।” [সহিহ বুখারি: ২৫৮৫, সহিহ মুসলিম: ৪/২০৬৩]
.
❑ কুরআন থেকে ইসমে আযম:
.
➤ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আল্লাহর ইসমে ‘আযম কুরআনের তিনটি সূরার মধ্যে রয়েছে: সূরা বাকারাহ, সূরা আলে ইমরান ও সূরা ত্ব-হা।’’ [ইবনু মাজাহ: ৩৮৫৬, হাদিসটি হাসান]
.
সেগুলো হলো: সূরা বাকারার ২৫৫ নং আয়াত—আয়াতুল কুরসির প্রথম বাক্যটি, সূরা আলে ইমরানের ২ নং আয়াত ও সূরা ত্ব-হার ১১১ নং আয়াত।
.
➤ অন্য একটি হাদিসে সূরা বাকারার ১৬৩ নং আয়াতকেও ইসমে আযম বলা হয়েছে। [আবু দাউদ: ১৪৯৬, হাদিসটি সহিহ]
.
➤ একটি হাদিসে ইউনুস (আ.)-এর দু‘আটিকে ইসমে আযম বলা হয়েছে। সেটি আমরা সবাই জানি: লা ইলা-হা ইল্লা আনতা সুব‘হা-নাকা ইন্নী কুনতু মিনায যোয়ালিমীন। [মুসতাদরাক হাকিম: ১/৬৮৫]
.
❑ হাদিস থেকে ইসমে আযমের একটি দৃষ্টান্ত:
.
➤ বুরাইদাহ্ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন ব্যক্তিকে বলতে শুনেন—
.
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ أَنِّيْ أَشْهَدُ أَنَّكَ أَنْتَ اللّٰهُ لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ الْأَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِيْ لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُوْلَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ
.
[মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা, আন্নী আশহাদু আন্নাকা আনতাল্লাহ্, লা ইলা-হা ইল্লা আনতাল আহাদুস সমাদ, আল্লাযী লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ, ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান আ‘হাদ (মূল আরবি টেক্সটের সাথে মিলিয়ে পড়ুন)]
.
অর্থ: হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আপনার নিকট চাচ্ছি। নিশ্চয়ই আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আপনিই আল্লাহ। আপনি ছাড়া কোনো সার্বভৌম সত্তা নেই, যিনি একক, অমুখাপেক্ষী। যিনি কাউকে জন্ম দেন নি, তার থেকে কেউ জন্ম নেয়নি এবং তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই।
.
তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তুমি আল্লাহর ওই নাম নিয়ে দু‘আ করেছো, যার মাধ্যমে কিছু চাওয়া হলে তিনি তা দান করেন এবং দু‘আ করা হলে কবুল করেন।’’ [আবু দাউদ: ১৪৯৩ তিরমিযি: ৩৪৭৫, হাদিসটি সহিহ]
.
ইসমে আযমের বিভিন্ন বাক্য বেশ কিছু সহিহ হাদিসে এসেছে। আপনাদের সুবিধার্থে আমরা সেগুলো শব্দে শব্দে অর্থসহ খুব সহজ করে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব আমাদের #মহান_রবের_আশ্রয়ে দু‘আ সিরিজে, ইনশাআল্লাহ্। ইতোমধ্যে সেখানে ১৭ টি পর্ব প্রকাশিত হয়েছে। আজ কেবল একটি দু‘আ উল্লেখ করলাম (উপরে) বুঝানোর সুবিধার্থে।
.
❑ ইসমে আযম দিয়ে দু‘আ করার নিয়ম:
.
প্রথমেই বলি: ইসমে আযম দিয়ে দু‘আ করার অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্থান হলো সালাম ফেরানোর পূর্ব মুহূর্ত। অর্থাৎ, নামাজের শেষ বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু, দরুদ, দু‘আ মাসুরা (দু‘আ মাসূরা পড়া ঐচ্ছিক) পাঠ শেষ করার পর ইসমে আযম পড়বেন, অতঃপর নিজের চাওয়াগুলো বলবেন।
.
প্রথমে আপনি উপরের দু‘আটি অর্থের দিকে লক্ষ রেখে আগ্রহ ও আন্তরিকতা নিয়ে পড়বেন। এরপর নিজের চাওয়াগুলো বলতে থাকবেন। আলেমদের বড় একটি অংশ যেহেতু নামাজে বাংলা ভাষায় দু‘আ করা নাজায়েয বলেছেন, সেহেতু নামাজের সিজদায় এবং সালাম ফেরানোর পূর্বে ইসমে আযম দিয়ে দু‘আ করতে চাইলে প্রথমে উপরের দু‘আটি পড়বেন। এরপর আরবিতে বিভিন্ন দু‘আ করবেন। বিশেষত হাদিসে বর্ণিত দু‘আ করবেন। কুরআনের দু‘আও করতে পারবেন; তবে তা তিলাওয়াত মনে করে পড়বেন না, বরং দু‘আ হিসেবে পড়বেন। এছাড়া নিজের মত আরবি ভাষায় যেকোনো বৈধ দু‘আ করতে পারেন।
.
আর, যদি সাধারণ দু‘আর মধ্যে ইসমে আযম পড়েন, তবে ইসমে আযমের পর যেকোনো ভাষায় দু‘আ করতে পারেন।
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (২০ তম পর্ব)

 

খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দু‘আ আজ শেয়ার করব—শব্দে শব্দে অর্থসহ—ইনশাআল্লাহ্। প্রত্যেকের এটি মুখস্থ করা উচিত। সন্তানাদি এবং অন্যদেরকে বদনজর, জ্বীনের আক্রমণ ও ক্ষতিকর প্রাণী থেকে হেফাজতে রাখার দু‘আ এটি।
.
আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আব্বাস (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান ও হুসাইন (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা)-কে আল্লাহর আশ্রয়ে সোপর্দ করার সময় বলতেন—
.
أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ
.
[মোটামুটি উচ্চারণ: আ‘ঊযুবি কালিমা তিল্লা-হিত তা-ম্মা-হ, মিন কুল্লি শায়ত্ব-নিন ওয়া হা-ম্মাহ, ওয়া মিন কুল্লি ‘আইনিন লা-ম্মাহ (আরবি টেক্সটের সাথে মিলিয়ে না শিখলে ভুল শেখা হবে, অতএব সাবধান!)]
.
অর্থ: আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ বাক্যসমূহ দ্বারা আশ্রয় চাচ্ছি—প্রতিটি শয়তান, ক্ষতিকারক প্রাণী ও কীটপতঙ্গ এবং প্রত্যেক হিংসুটে চোখ (বদনজর) থেকে। [সহিহ বুখারি: ৩৩৭১]
.
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, ‘‘তোমাদের পিতা (ইবরাহিম আ. তাঁর দুই ছেলে) ইসমাঈল ও ইসহাক (আলাইহিমাস সালাম)-কে এভাবে আল্লাহর আশ্রয়ে সোপর্দ করতেন।’’ [সহিহ বুখারি: ৩৩৭১]
.
দু‘আটি সন্তানাদি বা অন্যদের (যাকে আল্লাহর আশ্রয়ে দিতে চান) সামনে পড়বেন বা এটি পড়ে তাদের শরীরে ফুঁ দিতে পারেন। ১ বার, ৩ বার বা ৭ বারও পড়তে পারেন। নিজের জন্যও এই আমল করতে পারেন।
.
এবার শব্দার্থগুলো শিখে নিতে পারি—
.
أَعُوْذُ আ‘উযু [আমি আশ্রয় চাই]
بِكَلِمَاتِ বিকালিমা-তি [বাক্যগুলো দ্বারা]
اللّٰهِ আল্লাহ্ [আল্লাহর]
التَّامَّةِ আত-তা-ম্মাহ [পরিপূর্ণ]
مِنْ মিন [হতে]
كُلِّ কুল্লি [প্রত্যেক]
شَيْطَانٍ শায়ত্ব-নিন [শয়তান]
وَهَامَّةٍ، ওয়া হা-ম্মাহ [ক্ষতিকারক প্রাণী ও কীটপতঙ্গ]
وَمِنْ ওয়া মিন [এবং হতে]
كُلِّ কুল্লি [প্রত্যেক]
عَيْنٍ আইনিন [চোখ]
لاَمَّةٍ লা-ম্মাহ্ [হিংসুটে/ক্ষতিকর]
.
.
.
সহজে মুখস্থ করতে পারি এভাবে—
.
أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّةِ
আ‘ঊযুবি কালিমা তিল্লা-হিত তা-ম্মা-হ
[আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ বাক্যসমূহ দ্বারা আশ্রয় চাচ্ছি]
.
مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ
মিন কুল্লি শায়ত্ব-নিন ওয়া হা-ম্মাহ
[প্রতিটি শয়তান, ক্ষতিকারক প্রাণী ও কীটপতঙ্গ থেকে]
.
وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ
ওয়া মিন কুল্লি ‘আইনিন লা-ম্মাহ
[প্রত্যেক হিংসুটে চোখ (বদনজর) থেকে]
.
একটি মাত্র দু‘আ দিয়ে আমরা আমাদের সন্তানাদি, আত্মীয়-স্বজন ও প্রিয়জনদেরকে শয়তান (জ্বীন), ক্ষতিকারক প্রাণী ও কীটপতঙ্গ এবং বদনজর থেকে আল্লাহর আশ্রয়ে সোপর্দ করতে পারব ইনশাআল্লাহ্। সুতরাং, দু‘আটি মুখস্থ করা উচিত প্রত্যেকের।
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (২১ তম পর্ব)

 

আজ এমন একটি দু‘আ উল্লেখ করব, যেটি আল্লাহ্ নিজেই তাঁর রাসূলকে পাঠ করতে বলেছেন এবং রাসূল সবাইকে শিখতে বলেছেন। দু‘আটি আমরা শব্দে শব্দে অর্থসহ উল্লেখ করছি।
.
একদিন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের পূর্বে হঠাৎ তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। এই অবস্থায় আল্লাহর সাথে তাঁর কথোপকথন হয়, যা তিনি সজাগ হয়ে সাহাবাদের সাথে আলোচনা করেন। কথোপকথনের এক পর্যায়ে আল্লাহ্ বলেন, (আমার কাছে) চাও, বলো—
.
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ وَحُبَّ الْمَسَاكِيْنِ وَأَنْ تَغْفِرَ لِيْ وَتَرْحَمَنِيْ
.
[মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা ফি‘অ্লাল খাইরা-ত, ওয়া তারকাল মুনকারা-ত, ওয়া ‘হুব্বাল মাসাকী-ন, ওয়া আন তাগফিরা লী, ওয়া তার‘হামা নী (অবশ্যই আরবি দেখে মিলিয়ে শিখবেন, না হয় সঠিক উচ্চারণ শিখতে পারবেন না)]
.
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে চাই, যেন যাবতীয় ভালো কাজ করতে পারি, সকল খারাপ কাজ ছাড়তে পারি এবং নিঃস্ব লোকদের ভালোবাসতে পারি। আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, আমার উপর দয়া করুন।
.
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘এটি নিশ্চিত সত্য; সুতরাং এটি তোমরা শেখো, তারপর (লোকদের) শেখাও।’’ [তিরমিযি: ৩২৩৫, হাসান সহিহ]
.
এবার শব্দার্থগুলো শিখে নিতে পারি—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লা-হুম্মা [হে আল্লাহ]
إِنِّيْ ইন্নী [আমি]
أَسْأَلُكَ আসআলুকা [আপনার নিকট চাই]
فِعْلَ ফি‘অলা [কাজ করা]
الْخَيْرَاتِ আল-খাইরা-ত [সকল ভালো]
وَتَرْكَ ওয়া তারকা [এবং ত্যাগ করা]
الْمُنْكَرَاتِ আল-মুনকারা-ত [সকল মন্দ]
وَحُبَّ ওয়া ‘হুব্বা [এবং ভালোবাসা]
الْمَسَاكِيْنِ আল-মাসাকী-ন [নিঃস্বদের]
وَأَنْ تَغْفِرَ ওয়া আন তাগফিরা [ক্ষমা করুন]
لِيْ লী [আমাকে]
وَتَرْحَمَنِيْ ওয়া তার‘হামা নী [এবং দয়া করুন]
.
.
.
এবার এভাবে মুখস্থ করা যায়—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লা-হুম্মা [হে আল্লাহ]
.
إِنِّيْ أَسْأَلُكَ
ইন্নী আসআলুকা
[আমি আপনার নিকট চাই (যেন)]
.
فِعْلَ الْخَيْرَاتِ
ফি‘অলাল খাইরা-ত
[সকল ভালো কাজ করতে পারি]
.
وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ
ওয়া তারকাল মুনকারা-ত
[সকল মন্দ কাজ ছাড়তে পারি]
.
وَحُبَّ الْمَسَاكِيْنِ
ওয়া ‘হুব্বাল মাসাকী-ন
[এবং নিঃস্ব লোকদের ভালবাসতে পারি]
.
وَأَنْ تَغْفِرَ لِيْ
ওয়া আন তাগফিরা লী
[আপনি আমাকে ক্ষমা করুন]
.
وَتَرْحَمَنِيْ
ওয়া তার‘হামা নী
[এবং আমার উপর দয়া করুন]
.
যারা নিজেদের নফসের (মনের) উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন না—গুনাহ হয়ে যায়—তারা এই দু‘আটি বেশি বেশি পড়ার চেষ্টা করুন। বিশেষত নামাজের সিজদায়, সালাম ফেরানোর পূর্বে এবং দু‘আ কবুলের বিশেষ অবস্থাগুলোতে। দু‘আটি আরো দীর্ঘ, কিন্তু সবাই বড় দু‘আ শিখতে পারেন না—কষ্ট হয়—তাই গুরুত্বপূর্ণ অংশটুকু উল্লেখ করেছি।
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (২২ তম পর্ব)

 

আজ আমরা এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ দু‘আ শব্দে শব্দে অর্থসহ শিখবো, যেটি আমাদের প্রতিটি মুনাজাতে পাঠ করা অপরিহার্য হওয়ার দাবি রাখে।
➖➖➖➖➖◄❖►➖➖➖➖➖
দু‘আটি উহুদ যুদ্ধের দিনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঠ করেছিলেন। তখন সাহাবাগণ তাঁর পেছনে সারিবদ্ধভাবে ছিলেন।
.
اَللّٰهُمَّ حَبِّبْ إِلَيْنَا الْإِيْمَانَ، وَزَيِّنْهُ فِيْ قُلُوْبِنَا، وَكَرِّهْ إِلَيْنَا الْكُفْرَ وَالْفُسُوْقَ وَالْعِصْيَانَ، وَاجْعَلْنَا مِنَ الرَّاشِدِيْنَ
.
[আল্লা-হুম্মা ‘হাব্বিব ইলাইনাল ঈমান, ওয়া যায়্যিনহু ফী ক্বুলূবিনা, ওয়া কাররিহ ইলাইনাল কুফরা ওয়াল ফুসূক্বা ওয়াল ‘ইসইয়ান, ওয়াজ‘আলনা মিনার রা-শিদী-ন (সঠিক উচ্চারণের জন্য অবশ্যই আরবি দেখে শিখতে হবে।)]
.
অর্থ: হে আল্লাহ! আমাদের নিকট ঈমানকে প্রিয় করে তোলো; আমাদের অন্তরে এটিকে সুশোভিত করে দাও। আর আমাদের সামনে ঘৃণ্য করে তোলো—কুফর, পাপাচার ও অবাধ্যতাকে। আমাদের সঠিক পথের পথিক বানাও। [বুখারি, আল আদাবুল মুফরাদ: ৬৯৯, হাদিসটি সহিহ; সংক্ষেপিত দু‘আ। পুরো দু‘আটি আরো ৫/৭ গুণ বড়, যা সবাই শিখতে পারবেন না।]
.
দু‘আটির শব্দার্থগুলো জেনে নিই—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লাহুম্মা (হে আল্লাহ)
حَبِّبْ হাব্বিব (প্রিয় করে তোলো)
إِلَيْنَا ইলাইনা (আমাদের নিকট)
الْإِيْمَانَ، আল ঈমান (ঈমানকে)
وَزَيِّنْهُ ওয়া যায়্যিনহু (সুশোভিত করে দাও)
فِيْ ফী (মধ্যে)
قُلُوْبِنَا، ক্বুলূবিনা (আমাদের অন্তরে)
وَكَرِّهْ ওয়া কাররিহ (ঘৃণ্য করে তোলো)
إِلَيْنَا ইলাইনা (আমাদের নিকট)
الْكُفْرَ আল কুফর (কুফর/অস্বীকার)
وَالْفُسُوْقَ ওয়াল ফুসূক্ব (পাপাচার)
وَالْعِصْيَانَ، ওয়াল ইসইয়ান (অবাধ্যতা)
وَاجْعَلْنَا ওয়াজ‘আলনা (আমাদের বানাও)
مِنَ মিন (হতে)
الرَّاشِدِيْنَ আর রাশিদিন (সঠিক পথপ্রাপ্তগণ)
.
.
.
.
এবার আমরা এভাবে মুখস্থ করতে পারি—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লা-হুম্মা (হে আল্লাহ)
.
حَبِّبْ إِلَيْنَا الْإِيْمَانَ،
‘হাব্বিব ইলাইনাল ঈমান
(আমাদের নিকট ঈমানকে প্রিয় করে তোলো)
.
وَزَيِّنْهُ فِيْ قُلُوْبِنَا،
ওয়া যায়্যিনহু ফী ক্বুলূবিনা
(এটিকে আমাদের অন্তরে সুশোভিত করে দাও)
.
وَكَرِّهْ إِلَيْنَا الْكُفْرَ
ওয়া কাররিহ ইলাইনাল কুফরা
(আমাদের নিকট কুফরকে ঘৃণ্য করে তোলো)
.
وَالْفُسُوْقَ وَالْعِصْيَانَ،
ওয়াল ফুসূ-ক্বা ওয়াল ‘ইসইয়ান
[(ঘৃণ্য করে তোলো) পাপাচার ও অবাধ্যতাকে]
.
وَاجْعَلْنَا مِنَ الرَّاشِدِيْنَ
ওয়াজ‘আলনা মিনার রা-শিদী-ন
(আমাদের বানাও সঠিক পথের পথিক)
.
.
সুবহানাল্লাহ্! কী চমৎকার একটি দু‘আ। এটি আমাদের প্রাত্যহিক দু‘আ ও মুনাজাতে অপরিহার্য হওয়ার মতো। দু‘আটি আমরা নামাজের সিজদায়, সালাম ফেরানোর আগে বা অন্যান্য দু‘আ কবুলের বিশেষ সময়গুলোতে বিশেষ গুরুত্বের সাথে পড়তে পারি।
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (২৩ তম পর্ব)

 

সৌভাগ্যবান হতে ও জীবনকে নিরাপদ রাখতে একটি দু‘আ শিখে রাখতে পারেন। আমরা দু‘আটি শব্দে শব্দে অর্থসহ উপস্থাপন করছি।
➖➖➖➖➖◄❖►➖➖➖➖➖
আবূ হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাও—
.
(اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ) مِنْ جَهْدِ الْبَلاَءِ وَدَرَكِ الشَّقَاءِ وَسُوْءِ الْقَضَاءِ وَشَمَاتَةِ الأَعْدَاءِ
.
[আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিন জাহদিল বালা-অ্, ওয়া দারাকিশ শাক্বা-অ্, ওয়া সূ-ইল ক্বাদ্বা-অ্, ওয়া শামা-তাতিল আ‘অ্দা-অ্]
.
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট কঠিন বালা-মুসিবত, দুর্ভাগ্য, মন্দ ফায়সালা ও (আমার কষ্টে) শত্রুদের উল্লাস করা থেকে আশ্রয় চাই। [সহিহ বুখারি: ৬৩৪৭, সহিহ মুসলিম: ২৭০৭]
.
এবার শব্দে শব্দে জেনে নিই—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লাহুম্মা (হে আল্লাহ)
إِنِّيْ   ইন্নী (নিশ্চয়ই আমি) 
أَعُوْذُ আ‘উযু (আশ্রয় চাই)
بِكَ    বিকা (তোমার কাছে)
مِنْ    মিন (হতে)
جَهْدِ   জাহদি (কঠিন)
الْبَلاَءِ  আল বালা-অ্ (বালা-মুসিবত) 
وَدَرَكِ  ওয়া দারাকি (নাগাল)
الشَّقَاءِ আশ শাক্বা-অ্ (দুর্ভাগ্যের) 
وَسُوْءِ  ওয়া সূয়ি (মন্দ)
الْقَضَاءِ  আল ক্বাদ্বা-অ্ (ফয়সালা)
وَشَمَاتَةِ ওয়া শামা-তাতি (উল্লাস)
الأَعْدَاءِ  আল আ‘অ্দা-অ্ (শত্রুদের)
.
.
সহজে মুখস্থ করতে পারি এভাবে—
.
اَللّٰهُمَّ  আল্লাহুম্মা (হে আল্লাহ)
.
إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ
ইন্নী আ‘উযুবিকা
(আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই)

مِنْ جَهْدِ الْبَلاَءِ 
মিন জাহদিল বালা-অ্
(কঠিন বালা-মুসিবত থেকে)
.
وَدَرَكِ الشَّقَاءِ 
ওয়া দারাকিশ শাক্বা-অ্
(দুর্ভাগ্যের নাগাল থেকে)
.
وَسُوْءِ الْقَضَاءِ 
ওয়া সূ-ইল ক্বাদ্বা-অ্
(মন্দ ফয়সালা থেকে)
.
وَشَمَاتَةِ الأَعْدَاءِ
ওয়া শামা-তাতিল আ‘অদা-অ্
[(আমার কষ্টে) শত্রুদের উল্লাস থেকে]
.
.
.
নিঃসন্দেহে এই দু‘আটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাকদিরের কিছু অংশ অপরিবর্তনীয় আর কিছু আছে পরিবর্তনশীল। তাই, এই দু‘আটি পাঠ করার মাধ্যমে আমরা সৌভাগ্যবান হতে পারি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘দু‘আ ব্যতীত অন্য কিছুই ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারে না।’’ [সিলসিলা সহিহাহ: ১৫৪, হাদিসটি হাসান]
.
আমরা দু‘আটি নামাজের সিজদায়, সালাম ফেরানোর পূর্বে এবং অন্যান্য দু‘আ কবুলের বিশেষ সময়গুলোতে বিশেষ গুরুত্বের সাথে পাঠ করতে পারি।
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (২৪ তম পর্ব)

 

আলহামদুলিল্লাহ, চার মাস পর আবারও শুরু হলো আপনাদের প্রিয় দু‘আ সিরিজ
▬▬▬▬▬▬◄❖►▬▬▬▬▬▬▬ 
আজ আমরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দু‘আ শব্দে শব্দে অর্থ ও উচ্চারণসহ শিখবো, ইনশাআল্লাহ্। 
.
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ الثَّبَاتَ فِيْ الأَمْرِ وَالْعَزِيْمَةَ عَلَى الرُّشْدِ وَأَسْأَلُكَ شُكْرَ نِعْمَتِكَ وَحُسْنَ عِبَادَتِكَ 
.
মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাস সাবা-তা ফিল আমরি, ওয়াল ‘আযী-মাতা ‘আলার রুশদি, ওয়া আসআলুকা শুকরা নি‘অ্মাতিকা, ওয়া ‘হুসনা ‘ইবা-দাতিকা। 
.
অর্থ: হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে কাজ ও সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে দৃঢ়তা এবং সঠিক কাজে অবিচলতা চাই। আমি তোমার কাছে চাই, যেন তোমার নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে পারি এবং উত্তমভাবে তোমার ইবাদত করতে পারি। 
.
শাদ্দাদ ইবনু আউস (রা.) বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সালাতে (এসব বাক্য) বলতেন। [নাসায়ি, আস-সুনান: ১৩০৪; হাদিসটি হাসান]
.
বিশেষত, যারা নিজেদের কাজে স্থির থাকতে পারেন না এবং মানসিকভাবে দুর্বলতা অনুভব করেন, তারা এই দু‘আটি মনোযোগ দিয়ে পড়তে পারেন।
.
দু‘আটি শব্দে শব্দে অর্থসহ শিখুন—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লাহুম্মা [হে আল্লাহ্]
إِنِّيْ   ইন্নী [আমি]
أَسْأَلُكَ আসআলুকা [আপনার কাছে চাই]
الثَّبَاتَ আস-সাবাতা [দৃঢ়তা] 
فِيْ الأَمْرِ ফিল আমরি [কাজ ও সিদ্ধান্তে] 
وَالْعَزِيْمَةَ ওয়াল ‘আযীমাতা [এবং অবিচলতা]
عَلَى الرُّشْدِ আলার রুশদি [ভালো কাজে]
وَأَسْأَلُكَ ওয়া আসআলুকা [এবং আমি আপনার নিকট আরও চাই]
شُكْرَ শুকরা [শুকরিয়া] 
نِعْمَتِكَ নি‘অ্মাতিকা [আপনার নিয়ামতের]
وَحُسْنَ ওয়া ‘হুসনা [এবং উত্তম(ভাবে)]
عِبَادَتِكَ ইবাদাতিকা [আপনার ইবাদতের]
.
এবার সহজে মুখস্থ করুন এভাবে—
.
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ 
 আল্লা-হুম্মা ইন্নী
(হে আল্লাহ্! আমি)
.
أَسْأَلُكَ الثَّبَاتَ فِيْ الأَمْرِ 
আসআলুকাস সাবা-তা ফিল আমরি
(তোমার কাছে কাজ ও সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে দৃঢ়তা চাই।)
.
وَالْعَزِيْمَةَ عَلَى الرُّشْدِ
ওয়াল ‘আযী-মাতা ‘আলার রুশদি
(সঠিক কাজে অবিচলতা চাই।)
.
وَأَسْأَلُكَ شُكْرَ نِعْمَتِكَ 
ওয়া আসআলুকা শুকরা নি‘অ্মাতিকা
(আমি তোমার কাছে চাই, যেন তোমার নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে পারি)
.
وَحُسْنَ عِبَادَتِكَ 
ওয়া ‘হুসনা ‘ইবা-দাতিকা। 
(এবং উত্তমভাবে তোমার ইবাদত করতে পারি।)
.
দু‘আটি আমরা (বিশেষত নফল) নামাজের সিজদায়, সালাম ফেরানোর আগে, দু‘আ কবুলের বিশেষ সময়ে কিংবা যেকোনো দু‘আর মধ্যে পড়তে পারি। আনুষ্ঠানিক দু‘আ ছাড়াও সাধারণভাবে এসব বাক্য পড়তে পারি। 
.

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (২৫ তম পর্ব)

 

ভীষণ উপকারী একটি দু‘আ, যা হতাশা থেকে মুক্তি এবং কল্যাণকর জীবনযাপনের জন্য পড়তে পারেন। শব্দে শব্দে অর্থসহ শিখে নিতে পারেন, গুরুত্বপূর্ণ এই দু‘আটি।
▬▬▬▬▬▬▬✿▬▬▬▬▬▬▬
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন—
.
اَللّٔهُمَّ اجْعَلِ الحَيَاةَ زِيَادَةً لِّيْ فِيْ كُلِّ خَيْرٍ، وَاجْعَلِ الْمَوْتَ رَاحَةً لِّيْ مِنْ كُلِّ شَرٍّ
.
মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মাজ‘আলিল ‘হায়া-তা যিয়াদাতাল্লী ফি কুল্লি খাইরিন, ওয়াজ‘আলিল মাওতা রা-‘হাতাল্লী মিন কুল্লি শাররিন (আরবি দেখে শিখতে হবে; না হয় ভুল উচ্চারণ শেখা হবে)
.
অর্থ: হে আল্লাহ! (আমার) জীবনকে প্রতিটি কল্যাণকর কাজে আধিক্যের মাধ্যম করে দাও আর (আমার) মৃত্যুকে প্রত্যেক খারাপি থেকে প্রশান্তি (লাভের উপকরণ) বানিয়ে দাও। [মুসলিম, আস-সহিহ: ২৭২০]
.
এবার শব্দে শব্দে শিখি—
.
اَللّٔهُمَّ আল্লাহুম্মা [হে আল্লাহ] 
اجْعَلِ ইজ‘আল [করে দাও]
الحَيَاةَ আল-হায়াতা [জীবন] 
زِيَادَةً যিয়াদাতান [আধিক্য, বৃদ্ধি] 
لِّيْ লি [আমার জন্য] 
فِيْ ফি [মধ্যে]
كُلِّ কুল্লি [প্রত্যেক] 
خَيْرٍ، খাইরিন [কল্যাণ, ভালো, উত্তম]
وَاجْعَلِ ওয়াজ‘আল [এবং করে দাও]
الْمَوْتَ আল-মাওতা [মৃত্যু]
رَاحَةً রাহাতান [প্রশান্তি, আনন্দ]
لِّيْ লি [আমার জন্য]
مِنْ মিন [হতে]
كُلِّ কুল্লি [প্রত্যেক]
شَرٍّ শাররিন [খারাপি, মন্দ, অনিষ্ট]
.
.
.
এবার, সহজে মুখস্থ করতে পারি এভাবে—
.
اَللّٔهُمَّ اجْعَلِ الحَيَاةَ
আল্লাহুম্মাজ‘আলিল হায়াতা
(হে আল্লাহ! আমার জীবনকে করে দাও)

زِيَادَةً لِّيْ 
যিয়াদাতাল্লী
(আমার জন্য আধিক্য)
.
فِيْ كُلِّ خَيْرٍ، 
ফি কুল্লি খাইরিন
{প্রত্যেক কল্যাণকর (কাজে)}
.
وَاجْعَلِ الْمَوْتَ 
ওয়াজ‘আলিল মাওতা
(এবং মরণকে করে দাও)
.
رَاحَةً لِّيْ 
রা-‘হাতাল্লী
(আমার জন্য প্রশান্তি)
.
مِنْ كُلِّ شَرٍّ
মিন কুল্লি শাররিন
(প্রত্যেক খারাপি থেকে)
.
দু‘আটি আমরা (বিশেষত নফল) নামাজের সিজদায়, নামাজের সালাম ফেরানোর আগে, দু‘আ কবুলের বিশেষ সময়ে কিংবা যেকোনো দু‘আর মধ্যে পড়তে পারি। আনুষ্ঠানিক দু‘আ ছাড়াও সাধারণভাবে এসব বাক্য পড়তে পারি। 
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (২৬ তম পর্ব)

 

সহজ একটি দু‘আর মধ্যে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সকল চাওয়াই অন্তর্ভুক্ত। সেই দু‘আটি শব্দে শব্দে অর্থসহ শিখে নিতে পারেন।
▬▬▬▬▬▬◄❖►▬▬▬▬▬▬▬
আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি দু‘আ ছিলো এমন—
.
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ زَوَالِ نِعْمَتِكَ، وَتَحَوُّلِ عَافِيَتِكَ، وَفُجَاءَةِ نِقْمَتِكَ، وَجَمِيْعِ سَخَطِكَ
.
মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নী আ‘উযুবিকা মিন যাওয়া-লি নি‘অ্মাতিক, ওয়া তা‘হাউ-উলি ‘আ-ফিয়াতিক, ওয়া ফুজা-আতি নিক্বমাতিক, ওয়া জামী‘য়ি সাখাত্বিক।
.
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই—তোমার নিয়ামত চলে যাওয়া থেকে; তোমার ক্ষমা ও নিরাপত্তার মোড় ঘুরে যাওয়া থেকে; তোমার হঠাৎ শাস্তি থেকে এবং তোমার সকল ক্রোধ থেকে। [মুসলিম, আস-সহিহ: ২৭৩৯]
.
এবার শব্দে শব্দে অর্থসহ শিখি—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লাহুম্মা [হে আল্লাহ]
إِنِّيْ ইন্নী [আমি]
أَعُوْذُ আ‘উযু [আশ্রয় চাই]
بِكَ বিকা [তোমার নিকট]
مِنْ মিন [হতে]
زَوَالِ যাওয়ালি [চলে যাওয়া]
نِعْمَتِكَ নি‘অ্মাতিকা [তোমার নিয়ামত]
وَتَحَوُّلِ ওয়া তা‘হাউ-উলি [মোড় ঘুরে যাওয়া]
عَافِيَتِكَ আফিয়াতিকা [তোমার ক্ষমা ও নিরাপত্তা]
وَفُجَاءَةِ ওয়া ফুজাআতি [হঠাৎ]
نِقْمَتِكَ নিক্বমাতিকা [তোমার শাস্তি] 
وَجَمِيْعِ ওয়া জামী‘য়ি [এবং সকল]
سَخَطِكَ সাখাত্বিকা [তোমার ক্রোধ]
.
.
.
সহজে মুখস্থ করি এভাবে—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লাহুম্মা [হে আল্লাহ]
.
إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ 
ইন্নী আ‘উযুবিকা
(আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই)
.
مِنْ زَوَالِ نِعْمَتِكَ
মিন যাওয়া-লি নি‘অ্মাতিক
(তোমার নিয়ামত চলে যাওয়া থেকে)
.
وَتَحَوُّلِ عَافِيَتِكَ
ওয়া তা‘হাউ-উলি ‘আ-ফিয়াতিক
(তোমার ক্ষমা ও নিরাপত্তার মোড় ঘুরে যাওয়া থেকে)
.
وَفُجَاءَةِ نِقْمَتِكَ
ওয়া ফুজা-আতি নিক্বমাতিক
(তোমার হঠাৎ শাস্তি থেকে)
.
وَجَمِيْعِ سَخَطِك
ওয়া জামী‘য়ি সাখাত্বিক
(এবং তোমার সকল ক্রোধ থেকে)
.
দু‘আটি আমরা (বিশেষত নফল) নামাজের সিজদায়, নামাজের সালাম ফেরানোর আগে, দু‘আ কবুলের বিশেষ সময়ে কিংবা যেকোনো দু‘আর মধ্যে পড়তে পারি। আনুষ্ঠানিক দু‘আ ছাড়াও সাধারণভাবে এসব বাক্য পড়তে পারি। 
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (২৭ তম পর্ব)

 

খুব সহজ অথচ গুরুত্বপূর্ণ একটি দু‘আ শিখুন। সারাজীবন এর উপর আমল করা জরুরি। দু‘আটি আমরা শব্দে শব্দে অর্থ ও ব্যাখ্যাসহ সহজে তুলে ধরছি ইনশাআল্লাহ্।
▬▬▬▬▬▬▬◄❖►▬▬▬▬▬▬▬
আনাস ইবনু মালিক (রা.) বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন—
.
اَللّٰهُمَّ إنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ، وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ
.
মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আ‘উযুবিকা মিন ‘আযাবিল ক্বাবরি ওয়া মিন ফিতনাতিল মা‘হইয়া ওয়াল মামাত
.
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই—কবরের আযাব থেকে এবং জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে। [বুখারি, আস-সহিহ: ২৮২৩]
.
দু‘আটি শব্দে শব্দে অর্থসহ শিখি—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লাহুম্মা [হে আল্লাহ]
إنِّيْ ইন্নি [আমি]
أَعُوْذُ আ‘উযু [আশ্রয় চাই]
بِكَ বিকা [আপনার নিকট]
مِنْ মিন [হতে] 
عَذَابِ আযাবি [আযাব]‘
الْقَبْرِ আল-ক্বাবর [কবর] 
وَمِنْ ওয়া মিন [এবং হতে]
فِتْنَةِ ফিতনাহ্ [ফিতনা] 
الْمَحْيَا আল-মা‘হইয়া [জীবন]
وَالْمَمَاتِ ওয়াল-মামাত [এবং মৃত্যু]
.
.
.
এবার সহজে মুখস্থ করি এভাবে—
.
اَللّٰهُمَّ  আল্লাহুম্মা [হে আল্লাহ]
.
إنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ
ইন্নি আ‘উযুবিকা
[আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই] 
.
مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ
মিন ‘আযাবিল ক্বাবরি
[কবরের আযাব হতে]
.
وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ
ওয়া মিন ফিতনাতিল মা‘হইয়া ওয়াল মামাত
[এবং জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে]
.
.
❖ জীবন-মৃত্যুর ফিতনা কী? ফিতনা বলতে কী বুঝায়? 
.
এ ব্যাপারে প্রত্যেকের জানা জরুরি। প্রথমে বলি, ফিতনা শব্দটি অত্যন্ত ব্যাপক অর্থবোধক। এর দ্বারা অনেক কিছুই বুঝায়। ফিতনার গুরুত্বপূর্ণ কিছু অর্থ হলো: পরীক্ষা, ঝামেলা, সমস্যা, গোলযোগ, বিপদ, কষ্ট ইত্যাদি। 
.
‘জীবনের ফিতনা’ মানে জীবনে চলার পথে নিজের দ্বিন ও দুনিয়াবি বিভিন্ন বিষয়ে পরীক্ষায় নিপতিত হওয়া। আর, মৃত্যুর ফিতনা বলতে প্রধানত বুঝায় মৃত্যুকালীন সময়ের পরীক্ষাকে। তখন শয়তান তার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা ব্যায় করে মানুষের ইমান হরণ করতে চেষ্টা করে। এমনকি বিখ্যাত ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল (রাহ.)-এর মত মহান ব্যক্তিত্বকেও তাঁর মৃত্যুর পূর্বে সে পথভ্রষ্ট করতে চেয়েছে। এছাড়া, মৃত্যুর সময়ে কালিমা নসিব না হওয়াও ফিতনার অন্তর্ভুক্ত।
.
সুতরাং, আমাদের আজকের দু‘আটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। দু‘আটি আমরা (বিশেষত নফল) নামাজের সিজদায়, নামাজের সালাম ফেরানোর আগে, দু‘আ কবুলের বিশেষ সময়ে কিংবা যেকোনো দু‘আর মধ্যে পড়তে পারি। আনুষ্ঠানিক দু‘আ ছাড়াও সাধারণভাবে এসব বাক্য পড়তে পারি। 
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (২৮ তম পর্ব)

 

আজ এমন একটি সহজ দু‘আ শেয়ার করবো, যেটি সর্বদা আমাদের জিহ্বায় থাকা উচিত। দু‘আটি আমরা শব্দে শব্দে অর্থ ও উচ্চারণসহ আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।
▬▬▬▬▬▬▬▬✿▬▬▬▬▬▬▬▬
আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস‘উদ (রা.) বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন—
.
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ الْهُدَى وَالتُّقَى وَالْعَفَافَ وَالْغِنَى
.
মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল হুদা ওয়াত-তুক্বা, ওয়াল ‘আফা-ফা, ওয়াল-গিনা।
.
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে চাই হিদায়াত, তাকওয়া (আল্লাহভীতি), চারিত্রিক পবিত্রতা এবং অভাবহীনতা। [মুসলিম, আস-সহিহ: ২৭২১]
.
এবার শব্দার্থগুলো জেনে নিই—
.
اللّٰهُمَّ আল্লা-হুম্মা [হে আল্লাহ] 
إِنِّيْ  ইন্নি [আমি]
أَسْأَلُكَ আসআলুকা [তোমার কাছে চাই]
الْهُدَى আল-হুদা [হিদায়াত]
وَالتُّقَى ওয়াত-তুক্বা [আল্লাহভীতি]
وَالْعَفَافَ ওয়াল-‘আফাফা [চারিত্রিক পবিত্রতা]
والْغِنَى ওয়াল-গিনা [এবং অভাবহীনতা]
.
.
.
এবার মুখস্থ করতে পারি এভাবে—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লা-হুম্মা [হে আল্লাহ]
.
إِنِّيْ أَسْأَلُكَ الْهُدَى
ইন্নি আসআলুকাল হুদা
[আমি তোমার কাছে চাই—হিদায়াত]
.
وَالتُّقَى وَالْعَفَافَ والْغِنَى
ওয়াত-তুক্বা, ওয়াল-‘আফাফা, ওয়াল-গিনা
[তাকওয়া (আল্লাহভীতি), চারিত্রিক পবিত্রতা এবং অভাবহীনতা]
.
.
দু‘আটি আমরা (বিশেষত নফল) নামাজের সিজদায়, নামাজের সালাম ফেরানোর আগে, দু‘আ কবুলের বিশেষ সময়ে কিংবা যেকোনো দু‘আর মধ্যে পড়তে পারি। আনুষ্ঠানিক দু‘আ ছাড়াও সাধারণভাবে এসব বাক্য পড়তে পারি। 
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে (২৯ তম পর্ব)

 

আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ দু‘আ শিখবো। যেহেতু আমাদের মন সর্বদা গুনাহ করতে ভালোবাসে, তাই মনের পবিত্রতা এবং তাকওয়া অর্জনের জন্য আবেগময় দু‘আটি শব্দে শব্দে অর্থ ও উচ্চারণসহ তুলে ধরছি।
▬▬▬▬▬▬▬◖◉◗▬▬▬▬▬▬▬
যাইদ ইবনু আরকাম (রা.) বলেন, আমি তোমাদের কেবল তা-ই বলছি, যা আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন—
.
اَللّٰهُمَّ آتِ نَفْسِيْ تَقْوَاهَا، وَزَكِّهَا أَنْتَ خَيْرُ مَنْ زَكَّاهَا، أَنْتَ وَلِيُّهَا وَمَوْلَاهَا 
.
মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা আ-তি নাফসি তাক্বওয়া-হা, ওয়া যাক্কিহা, আনতা খাইরু মান যাক্কা-হা, আনতা ওয়ালিয়্যুহা ওয়া মাওলা-হা
.
অর্থ: হে আল্লাহ! আমার নফস (আত্মা)-কে তাকওয়া দাও। একে পরিশুদ্ধ করো; তুমিই সর্বোত্তম পরিশুদ্ধকারী। তুমিই তার (নফসের) বন্ধু ও অভিভাবক। [মুসলিম, আস-সহিহ: ২৭২২]
.
এবার শব্দার্থগুলো জেনে নিই—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লা-হুম্মা [হে আল্লাহ]
آتِ আ-তি [দাও] 
نَفْسِيْ নাফসি [আমার নফসকে]
تَقْوَاهَا তাক্বওয়া-হা [তার তাকওয়া]
وَزَكِّهَا ওয়া যাক্কিহা [এবং একে পরিশুদ্ধ করো] 
أَنْتَ আনতা [তুমি]
خَيْرُ খাইরু [উত্তম] 
مَنْ মান [যে]
زَكَّاهَا যাক্কা-হা [পরিশুদ্ধ করে তাকে]
أَنْتَ আনতা [তুমি]
وَلِيُّهَا ওয়ালিয়্যুহা [তার বন্ধু]
وَمَوْلَاهَا ওয়া মাওলা-হা [এবং তার অভিভাবক]
.
.

.
এবার সহজে মুখস্থ করতে পারি এভাবে—
.
اَللّٰهُمَّ আল্লা-হুম্মা (হে আল্লাহ)
.
آتِ نَفْسِيْ تَقْوَاهَا
আ-তি নাফসি তাক্বওয়া-হা
(আমার নফসকে তাকওয়া দাও)
.  
وَزَكِّهَا أَنْتَ خَيْرُ مَنْ زَكَّاهَا
ওয়া যাক্কিহা, আনতা খাইরু মান যাক্কা-হা
(একে পরিশুদ্ধ করো; তুমিই সর্বোত্তম পরিশুদ্ধকারী)
.
أَنْتَ وَلِيُّهَا وَمَوْلَاهَا 
আনতা ওয়ালিয়্যুহা ওয়া মাওলা-হা
[তুমিই তার (নফসের) বন্ধু ও অভিভাবক]
.
.
দু‘আটি আমরা (বিশেষত নফল) নামাজের সিজদায়, নামাজের সালাম ফেরানোর আগে, দু‘আ কবুলের বিশেষ সময়ে কিংবা যেকোনো দু‘আর মধ্যে পড়তে পারি। আনুষ্ঠানিক দু‘আ ছাড়াও সাধারণভাবে এসব বাক্য পড়তে পারি। 
.

 

#মহান_রবের_আশ্রয়ে [৩০ (শেষ) তম পর্ব]

 

একটি চমৎকার দু‘আর মাধ্যমে আপনাদের প্রিয় দু‘আ সিরিজ আজ সমাপ্ত হতে যাচ্ছে।শব্দে শব্দে অর্থ ও উচ্চারণসহ সুন্দর এই দু‘আটি শিখে নিতে পারেন।
▬▬▬▬▬▬▬◄❖►▬▬▬▬▬▬▬
ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন, নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু‘আয় বলতেন—
.
رَبِّ اجْعَلْنِيْ لَكَ شَكَّارًا لَكَ ذَكَّارًا لَكَ رَهَّابًا لَكَ مُطِيْعًا إِلَيْكَ مُخْبِتًا إِلَيْكَ أَوَّاهًا مُنِيْبًا
.
কাছাকাছি উচ্চারণ: রাব্বিজ‘আলনি লাকা শাক্কা-রা, লাকা যাক্কা-রা, লাকা রাহহা-বা, লাকা মুত্বী‘আ, ইলাইকা মুখবিতা, ইলাইকা আওয়া-হাম মুনীবা।
.
অর্থ: হে আমার রব! আমাকে বানিয়ে দাও—তোমার প্রতি চির কৃতজ্ঞ; তোমাকে সদা স্মরণকারী; তোমার ভয়ে সদা ভীত; তোমার অত্যন্ত অনুগত; তোমার প্রতি বিনয়ী এবং তোমার দিকে আন্তরিকভাবে প্রত্যাবর্তনকারী। [তিরমিযি, আস-সুনান: ৩৫৫১; হাদিসটি সহিহ]
.
.
এবার শব্দে শব্দে দু‘আটি শিখি—
.
رَبِّ       রাব্বি [হে আমার রব]
اجْعَلْنِيْ ইজ‘আলনি [আমাকে বানাও]
لَكَ        লাকা [তোমার প্রতি]   
شَكَّارًا    শাক্কা-রা [চির কৃতজ্ঞ]
لَكَ        লাকা [তোমার প্রতি]
ذَكَّارًا     যাক্কা-রা [সদা স্মরণকারী]
لَكَ        লাকা [তোমার প্রতি]
رَهَّابًا     রাহহা-বা [ভীত-সন্ত্রস্ত]
لَكَ        লাকা [তোমার প্রতি] 
مُطِيْعًا   মুত্বী‘আ [অনুগত]
إِلَيْكَ     ইলাইকা [তোমার দিকে]
مُخْبِتًا   মুখবিতা [বিনয়ী]
إِلَيْكَ     ইলাইকা [তোমার দিকে]
أَوَّاهًا     আওয়া-হা [আন্তরিকভাবে]
مُنِيْبًا     মুনীবা [প্রত্যাবর্তনকারী]
.
.
.
সহজে মুখস্থ করতে পারি এভাবে—
.
رَبِّ اجْعَلْنِيْ 
রাব্বিজ‘আলনি
(হে আমার রব! আমাকে বানিয়ে দাও)
.
لَكَ شَكَّارًا لَكَ ذَكَّارًا 
লাকা শাক্কা-রা, লাকা যাক্কা-রা
(তোমার প্রতি চির কৃতজ্ঞ, তোমাকে সদা স্মরণকারী)
.
لَكَ رَهَّابًا لَكَ مُطِيْعًا 
লাকা রাহহা-বা, লাকা মুত্বী‘আ
(তোমার ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত, তোমার অনুগত)
.
إِلَيْكَ مُخْبِتًا 
ইলাইকা মুখবিতা
(তোমার প্রতি বিনয়ী)
.
إِلَيْكَ أَوَّاهًا مُنِيْبًا
ইলাইকা আওয়া-হাম মুনীবা
(তোমার দিকে আন্তরিকভাবে প্রত্যাবর্তনকারী)
.
.
দু‘আটি আমরা (বিশেষত নফল) নামাজের সিজদায়, নামাজের সালাম ফেরানোর আগে, দু‘আ কবুলের বিশেষ সময়ে কিংবা যেকোনো দু‘আর মধ্যে পড়তে পারি। আনুষ্ঠানিক দু‘আ ছাড়াও সাধারণভাবে এসব বাক্য পড়তে পারি। 
.
আলহামদুলিল্লাহ, শুধু আল্লাহর ইচ্ছা ও অনুগ্রহে সমাপ্ত হলো আমাদের এই শব্দে শব্দে অর্থসহ দু‘আ সিরিজটি। কিছুদিনের মধ্যেই আমরা সবগুলো পর্বকে পিডিএফ করে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করবো, ইনশাআল্লাহ্।
.
.

©Tasbeeh
Page link- https://www.facebook.com/TasbeehZikr/

.

©Nusus
Page link- https://www.facebook.com/FromNusus

.

#দ্বীনে_ফেরার_গল্প_আমার_রবের_কাছে_ফেরার_গল্প

https://justpaste.it/deen_a_ferar_golpo

.

>> "বিয়ে, রিজিক লাভ, ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি"

https://justpaste.it/5gol5

.

>> ফেসবুক ও ইউটিউবের উপকারী সব পেইজ, গ্রুপ, আইডি এবং চ্যানেলের লিংক

https://justpaste.it/facebook_page_grp_link

.

>> র‍্যান্ড, মডারেট ইসলাম, মডার্নিস্ট মুভমেন্ট

https://justpaste.it/76iwz

.

>> কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক বইয়ের pdf লিংক (৪০০+ বই)

https://justpaste.it/4ne9o

.

>> কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক Apps, YouTube Video, Quran Recitation, YouTube channel.

https://justpaste.it/islamicappvideo

.

>> তাকদির আগে থেকে নির্ধারিত হলে মানুষের বিচার হবে কেন? যাদের কাছে ইসলামের দাওয়াহ পৌঁছেনি তাদের কী হবে?

https://justpaste.it/6q4c3

.

>> কুরআন এবং আপনি

https://justpaste.it/5dds8

.

>> কখনও ঝরে যেও না …

https://justpaste.it/3bt22

.

>> ফজরে আমি উঠতে পারি না

https://justpaste.it/6kjl6

.

>> এই ১০টি ফজিলতপূর্ণ আমল যা আপনার সারাবছরের_ই দৈনন্দিন রুটিনে থাকা উচিত
https://justpaste.it/9hhk1

.

>> ইস্তিগফার অপার সম্ভাবনার দ্বার
https://justpaste.it/6ddvr

.

>> দাম্পত্যজীবন, অজ্ঞতা ও পরিণাম

https://justpaste.it/7u5es

.

>> বিপদাপদে ধৈর্যধারণ : ফজিলত, অর্জনের উপায় ও করণীয়

https://justpaste.it/8dccj

.

>> মহান রবের আশ্রয়ে সিরিজের সকল পর্ব

https://justpaste.it/6ttuf

.

>> স্বার্থক মুনাজাত

https://justpaste.it/1xf0t

.

>> রাসূলের উপর দরুদ ও সালাম পাঠ-সংক্রান্ত ৭ পর্বের একটি সিরিজ

https://justpaste.it/4hhtd

.

>> তাহাজ্জুদ সিরিজ

https://justpaste.it/4ja0n

.

>> মহিমান্বিত কুরআন সিরিজের সকল পর্ব

https://justpaste.it/3dxi7

.

>> ধ্বংসাত্মক দৃষ্টি (বদ নজর সিরিজের সকল পর্ব)

https://justpaste.it/7056k

.

>> বিশুদ্ধ ঈমান সিরিজ

https://justpaste.it/7fh32

.

>> ইমান ভঙ্গের ১০ কারণ

https://justpaste.it/9icuq

.

>> দুশ্চিন্তা ও ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির ১০ আমল

https://justpaste.it/8gmtk

.

>> পর্দায় প্রত্যাবতন: পর্দায় ফেরার গল্প
https://justpaste.it/3lqzf

.

>> দ্বীনে_ফেরার_গল্প_আমার_রবের_কাছে_ফেরার_গল্প

https://justpaste.it/deen_a_ferar_golpo

.

>> নফসের জিহাদ -শায়খ আহমাদ মুসা জিবরীল (হাফিজাহুল্লাহ)

https://justpaste.it/8vnly

.

>> রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর সকাল-সন্ধ্যার দু'আ ও যিকর
https://justpaste.it/sokalsondharjikir

.

>> সালাফদের আত্মশুদ্ধিমূলক বাণী
https://justpaste.it/9e6qh

.
>> সন্তান লাভের ৭ টি গুরুত্বপূর্ণ আমল
https://justpaste.it/9hth5

.
>> Rain Drops, Baseera, Hunafa, Mubashshireen Media ও Ummah Network থেকে প্রকাশিত গুরুত্বপূর্ণ সিরিজগুলোর অডিও ডাউনলোড লিংক
https://justpaste.it/4kes1

.

>> পাপ থেকে বাঁচার ১০ উপায়: যা সকল মুসলিমের জানা আবশ্যক
https://justpaste.it/3ob7j

.

>> ইসলামিক বই, অডিও-ভিডিও লেকচার সিরিজ সহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের লিংকগুলো পাবেন এখানে। সবগুলো বিষয়ের লিংক এক জায়গায় রাখা হয়েছে। এই লিংকটা শেয়ার করতে পারেন। 
https://justpaste.it/48f6m