JustPaste.it

ধ্বংসাত্মক দৃষ্টি (বদ নজর সিরিজ) (Nusus)

 

.

প্রথম পর্ব: বদনজরের সত্যতা ও এ ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি
.
দ্বিতীয় পর্ব: বদনজরের ধরণ-প্রকৃতি এবং এটি যেভাবে কার্যকর হয়
.
তৃতীয় পর্ব: নিজের বদনজর থেকে নিজেকে এবং অন্যকে হেফাজত করা
.
চতুর্থ পর্ব: বদনজর থেকে বাঁচতে অগ্রীম যেসব আমল করবেন
.
পঞ্চম পর্ব: বদনজরে আক্রান্ত হওয়ার পর যেসব আমল করবেন
.
ষষ্ঠ পর্ব: বদনজরের লক্ষণ
.
সপ্তম পর্ব: বদনজরের গোসল
.
---------------------------

 

#ধ্বংসাত্মক_দৃষ্টি (প্রথম পর্ব)

ইসলামে বদনজর (evil eye) বলতে কি আদৌ কিছু আছে? থাকলে এর প্রতিকার কী?
▬▬▬▬▬▬◖❂◗▬▬▬▬▬▬
বদনজর একটি সত্য বিষয়। এর উপর বিশ্বাস রাখা ফরজ। কারণ এটি বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। বদনজরের সত্যতা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই।
.
শায়খ ড. খোন্দকার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ ‘নজর’, ‘বদনজর’ বা ‘চোখ লাগা’ (evil eye) বলতে মানুষ অথবা জিনের তীব্র ঈর্ষাবিজড়িত দৃষ্টি বুঝায়। এরূপ দৃষ্টি অনেক সময় এক ধরণের অশুভ প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে বলে বিভিন্ন হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানিয়েছেন।’ [ড. আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর, রাহে বেলায়াত, পৃষ্ঠা: ৫৭৮]
.
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তোমরা বদনজর থেকে রক্ষা পেতে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করো। কেননা বদনজর সত্য।’’ [ইমাম ইবনু মাজাহ, আস-সুনান: ৩৫০৮; হাদিসটি সহিহ]
.
আল কুরআনেও বদনজরের প্রসঙ্গ এসেছে একাধিক স্থানে। তার একটি নিচের আয়াতে—
.
নবি ইয়াকুব (আ.) তাঁর সন্তানদের বলেন—
.
وَ قَالَ یٰبَنِیَّ لَا تَدۡخُلُوۡا مِنۡۢ بَابٍ وَّاحِدٍ وَّ ادۡخُلُوۡا مِنۡ اَبۡوَابٍ مُّتَفَرِّقَۃٍ ؕ وَ مَاۤ اُغۡنِیۡ عَنۡکُمۡ مِّنَ اللّٰهِ مِنۡ شَیۡءٍ
.
‘‘হে আমার প্রিয় সন্তানেরা! তোমরা (শহরে) কোনো একটি প্রবেশপথ দিয়ে (একসাথে) সবাই প্রবেশ করো না বরং বিভিন্ন প্রবেশপথ দিয়ে প্রবেশ করো। আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা কোনো বিপদ থেকে আমি তোমাদের রক্ষা করতে পারবো না।’’ [সুরা ইউসুফ, আয়াত: ৬৭]
.
ইসলামের শ্রেষ্ঠ মুফাসসিরগণ—যেমন: কা’ব, মুজাহিদ, যাহহাক, কাতাদা এবং সুদ্দি (রাহিমাহুমুল্লাহ) এই আয়াতের তাফসিরে বলেছেন যে, ইয়াকুব (আ.) বদনজরের ভয়ে এমনটি বলেছিলেন। কেননা তাঁর সন্তানরা খুবই সুন্দর ও সুঠাম দেহের অধিকারী ছিলেন। বদনজর লাগার বিষয়টি বাস্তব। তবে, একই সাথে তিনি এটিও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, বদনজর কখনও আল্লাহর তাকদিরকে প্রতিহত করতে পারবে না। তিনি যা চাবেন তাই হবে। [ইমাম ইবনু কাসির, তাফসিরুল কুরআনিল আযিম: ২/৪৮৫]
.
বদনজর কত ভয়ানক বিষয়, তা নিচের দুটো হাদিস থেকে সহজে বুঝা যায়।
.
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘বদনজর মানুষকে কবর পর্যন্ত পৌঁছে দেয় এবং উটকে ডেগচি পর্যন্ত।’’ [ইমাম আবু নু‘আইম, হিলয়াতুল আউলিয়া: ৪০২৩; শায়খ আলবানি, সহিহুল জামি’: ১২৪৯; হাদিসটি সহিহ]
.
অর্থাৎ, মৃত্যু ঘটায়।
.
অন্যত্র তিনি বলেন, ‘‘বদনজর (এর খারাপ প্রভাব) সত্য। এমনকি যদি কোনো বস্তু তাকদিরকে অতিক্রম করতো, তবে বদনজর তা অতিক্রম করতো। সুতরাং তোমাদের যখন (এর প্রভাবমুক্ত হওয়ার জন্যে বিশেষ) গোসল করতে বলা হয়, তখন তোমরা গোসল করো।’’ [ইমাম মুসলিম, আস-সহিহ: ২১৮৮; ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ৫৭৪০]
.
আসমা বিনতু উমাইস (রা.) বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! জাফরের সন্তানদের দ্রুতই বদনজর লেগে যায়। আমি কি তাদের ঝাড়ফুঁক করতে পারি?’ তিনি বললেন, ‘‘হ্যাঁ। কেননা, কোনো জিনিস যদি তাকদিরকে অতিক্রম করতে পারতো, তাহলে বদনজরই তা অতিক্রম করতো।’’ [ইমাম ইবনু মাজাহ, আস-সুনান: ২০৫৯; হাদিসটি সহিহ]
.
বদনজরের বাস্তবতা ও এর প্রতিকার নিয়ে সিরিজ আকারে আরো পোস্ট আসবে ইনশাআল্লাহ্। আশা করি, উপকৃত হবেন।

.

#Nusus

------------------------

 

#ধ্বংসাত্মক_দৃষ্টি (দ্বিতীয় পর্ব)

বদনজর কীভাবে লাগে? এটি কি চোখের ব্যাপার, নাকি অন্তরের? হিংসা এবং বদনজরের মাঝে পার্থক্য কী?
.
প্রথমে একটি হাদিস জেনে রাখি:
.
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তোমাদের কেউ যখন নিজের মধ্যে অথবা তার সম্পদের মধ্যে বা তার ভাইয়ের (অর্থাৎ, যে কারো) মধ্যে বিস্ময়কর কিছু দেখতে পায়, তখন যেন সে আল্লাহর কাছে বরকত কামনা করে। কারণ নজর লাগার বিষয়টি সত্য।’’ [ইমাম ইবনুস সুন্নি, আমালুল ইয়াউমি ওয়া লাইলাহ: পৃষ্ঠা ১৬৮; ইমাম হাকিম, আল-মুসতাদরাক: ৪/২১৬; ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ, আল-কালিমুত ত্বইয়িব: ২৪৩; হাদিসটি সহিহ]
.
এই হাদিস থেকে বুঝা গেলো, নিজের নজর নিজের দিকেই লেগে যেতে পারে। হাফিজ ইবনুল কায়্যিম (রাহ.)-ও একই কথা বলেছেন। [যাদুল মা‘আদ: ৪/১৬৭]
.
এবার জেনে নিই, বদনজর কীভাবে লাগে? এর বাস্তবতা কী? এটি কীভাবে কার্যকর হয়?
.
হাফিজ ইবনুল কায়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ্) বলেন, ‘আল্লাহ মানুষের শরীর ও আত্মায় বিভিন্ন প্রকারের ক্ষমতা ও প্রাকৃতিক ক্রিয়াশীল বিষয় দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। আর এদের ভেতর একে অপরকে প্রভাবিত করার ক্ষমতাও দিয়েছেন। বদনজর আত্মার প্রভাবে হয়ে থাকে। যেহেতু চোখের সাথে আত্মার গভীর সম্পর্ক রয়েছে, এজন্য এটিকে ‘চোখ লাগা’ বলা হয়। কিন্তু চোখের নিজস্ব এমন কোনো প্রভাব নেই, বরং প্রতিক্রিয়া কেবল আত্মার মাধ্যমে হয়ে থাকে। বদনজর কখনও যোগাযোগে হয় আর কখনও সামনাসামনি হয়। কখনও দৃষ্টিপাতে, আবার কখনও আত্মার দ্বারা ঘায়েল করে। আর কখনও এর প্রভাব বদ-দু‘আ ও তাবিজের মাধ্যমে হয়ে থাকে। কখনও আবার ধ্যানের মাধ্যমে হয়।
.
বদনজর কেবল দৃষ্টির দ্বারাই হয় না, বরং কখনও অন্ধ ব্যক্তি থেকেও বদনজর লাগে। সেটি এভাবে যে, তার সামনে কারো প্রশংসা করা হয় আর সেটি শুনে অন্ধ ব্যক্তির আত্মা সেই প্রশংসিত ব্যক্তির উপর প্রভাব বিস্তার করে। এটি একটি বিষাক্ত তীরের ন্যায়, যা বদনজরকারী ব্যক্তির আত্মা হতে বের হয়ে অন্য ব্যক্তির উপর আঘাত হানে।
.
আর এই তীরের লক্ষ্যবস্তু কখনও সঠিক হয়, আবার কখনও হয় না। এর একটি উদাহরণ এমন, যেমন কোনো আক্রমণকারী এমন ব্যক্তির উপর যদি আক্রমণ করে, যার গায়ে সুরক্ষিত যুদ্ধবর্ম থাকে, তবে আঘাতে তার শরীর আহত হবে না। তেমনি ব্যক্তি যদি দু‘আ পড়ে সুরক্ষিত থাকে, তবে বদনজরের ক্রিয়া তার উপর কার্যকর হবে না। আর যদি খালি গায়ে থাকে (অর্থাৎ, দু‘আ না পড়ে) তবে আঘাত তার শরীরে হবে। কখনও এমন হয় যে, তীর ব্যবহারকারীর তীর শত্রুর উপর আঘাত না হেনে বরং তীর ব্যবহারকারীর শরীরকেই আঘাত করে বসে। তেমিনভাবে, কখনও বদনজর যে লাগায়, উল্টো তার উপর আঘাত হানতে পারে। আর কখনও বা অনিচ্ছায় বদনজর লেগে যায়।
.
অতএব, এর প্রকৃতি-বৈশিষ্ট্য হলো, বদনজরকারীর আশ্চর্য হয়ে চোখ লাগানো, এরপর তার নিকৃষ্ট আত্মা তার অনুসরণ করে, যা তার বিষাক্ত দৃষ্টিকে সহযোগিতা করে। কখনও মানুষ নিজেকেই বদনজর মেরে থাকে, কখনও তার ইচ্ছার বাইরেও বদনজর লেগে থাকে।’ [ইবনুল কায়্যিম রাহিমাহুল্লাহর ‘যাদুল মা’আদ’ থেকে সংক্ষিপ্তাকারে: ১/১৬৫; এই অংশটুকু hadithbd সাইট থেকে নেওয়া। কিছুটা পরিমার্জিত ও সম্পাদিত]
.
বদনজর খুব ভয়াবহ বিষয়। বদনজরের কারণে হাজার হাজার মানুষের জীবন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বদনজরের প্রভাবে মানুষ শারীরিক, মানসিক, আর্থিক—সব দিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। চোখের সামনেই জীবনটা এলোমেলো হয়ে যেতে পারে। সাধারণত, বদনজরের প্রভাবে মানুষ যখন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন তার এই ক্ষতির কারণ খুঁজে পায় না; হিসাব মেলাতে পারে না। এ যেন এক গোলক ধাঁধাঁ।
.
হিংসা এবং বদনজর একই ধাঁচের হলেও দুটোর মাঝে পার্থক্য আছে। তার একটি পার্থক্য হলো: প্রত্যেক বদ নজরকারীই হিংসুক, কিন্তু প্রত্যেক হিংসুকই বদনজরকারী নয়। ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) এমনটি বলেছেন।
.
মূলত বদনজরকারী বেশি ভয়ানক। তবে, সব সময় তার এই জঘন্য নজর ইচ্ছাকৃত হয় না। অনিচ্ছা সত্ত্বেও সে তার নজর দিয়ে মানুষের ক্ষতি করে বসে, এমনকি নিজেরও। আর হিংসুকের হিংসা তার নিজের মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকে। এর দ্বারা কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।
.
তাই, বদনজর যাতে না লাগে, সেজন্য অগ্রীম প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হয়। পরবর্তী পোস্টে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ্।
.

#Nusus

----------------------------

 

#ধ্বংসাত্মক_দৃষ্টি (তৃতীয় পর্ব)

নিজের বদনজর থেকে নিজেকে এবং অন্যকে হেফাজত করতে যে আমল করবেন (বিষয়টি প্রত্যেকের জানা দরকার)
.
আমরা গত পোস্টেই বলেছিলাম যে, বদনজর দ্বারা ব্যক্তি নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনতে পারে। অর্থাৎ, নিজের খারাপ নজর দিয়ে নিজের স্বাস্থ্য, সন্তানাদি এবং সম্পদের ক্ষতি করতে পারে! পাশাপাশি এরকম অন্যেরও ক্ষতি করতে পারে। সেজন্য নিজের বা অন্যের উন্নতি, সফলতা, সন্তানাদি, মাল-সম্পদ, ক্ষেত-খামার, বাগান, গাছ-পালা, গবাদি পশু কিংবা অন্য কোনো জীব বা জড় বস্তু দেখে/জেনে মুগ্ধ হয়ে গেলে, এর জন্য বরকতের দু‘আ করা জরুরি।
.
রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তোমাদের কেউ যখন নিজের মধ্যে অথবা নিজ সম্পদের মধ্যে বা তার ভাইয়ের (মানুষের) মধ্যে বিস্ময়কর কিছু দেখতে পায়, তখন যেন সে আল্লাহর কাছে বরকত কামনা করে। কারণ নজর লাগার বিষয়টি সত্য।’’ [ইমাম ইবনুস সুন্নি, আমালুল ইয়াউমি ওয়া লাইলাহ: পৃষ্ঠা ১৬৮; ইমাম হাকিম, আল-মুসতাদরাক: ৪/২১৬; ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ, আল-কালিমুত ত্বইয়িব: ২৪৩; হাদিসটি সহিহ]
.
আলিমগণ বলেন, বরকতের দু‘আ হিসেবে ‘বারাকাল্লাহু ফিহি/ফিহা’ পাঠ করা যায়।
.
বরকতের দু‘আ ছাড়াও বিশেষ একটি যিকর আছে, যেটি পড়া উচিত ঠিক সময়ে। সে ব্যাপারে কুরআনে এসেছে—
.
وَلَوۡ لَاۤ اِذۡ دَخَلۡتَ جَنَّتَکَ قُلۡتَ مَا شَآءَ اللّٰهُ ۙ لَا قُوَّۃَ اِلَّا بِاللّٰه
.
“যখন তুমি তোমার বাগানে প্রবেশ করলে, তখন কেন ‘মা-শা-আল্লাহ, লা ক্বুও-ওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বললে না?” [সুরা কাহফ, আয়াত: ৩৯]
.
অর্থাৎ, তুমি বাগানে প্রবেশ করে ‘মা শা আল্লাহ, লা ক্বুও-ওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বললে না কেন? তাহলে তো বদনজরের প্রভাব পড়তো না। (আলিমগণ এভাবে তাফসির বা ব্যাখ্যা করেছেন উপরের আয়াতটির)
.
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “কোনো পছন্দনীয় বস্তু দেখার পর যদি কেউ বলে—‘মা শা আল্লাহ, লা ক্বুও-ওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’, তবে কোনো কিছু সেটির ক্ষতি করতে পারবে না।” [ইমাম হাইসামি, মাজমাউয যাওয়াইদ: ৫/২১]
.
অতএব, যখন আমরা এমন কিছু দেখবো—(হোক সেটি নিজের বা অন্যের), যেটি দেখে আমাদের খুব ভালো লাগে, আমরা মুগ্ধ হয়ে পড়ি, তখন বিশেষভাবে দুটো দু‘আ ও যিকর পড়বো।
.
(১) بَارَكَ اللّٰهُ فِيْه | بَارَكَ اللّٰهُ فِيْهَا
.
◾ উচ্চারণ: বারাকাল্লাহু ফিহি অথবা বারাকাল্লাহু ফিহা
◾ অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি তার মধ্যে (তার স্বাস্থ্য, পরিবার বা সম্পদে) বরকত দান করুন।
.
▪ কোনো পুরুষের জন্য দু‘আ করলে বলতে হবে, ‘বারাকাল্লাহু ফিহি।’
▪ কোনো নারীর জন্য দু‘আ করলে বলতে হবে, ‘বারাকাল্লাহু ফিহা।’
.
তবে, সংক্ষেপে পুরুষ বা নারী উভয়ের ক্ষেত্রে কেবল ‘বারাকাল্লাহ’ বলাই যথেষ্ট। এর অর্থ, আল্লাহ বরকত দান করুন।
.
(২) مَا شَاء اللّٰهُ لَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللّٰه
.
◾ উচ্চারণ: মা শা আল্লাহ, লা ক্বুও-ওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ
◾ অর্থ: আল্লাহ যা চেয়েছেন, তাই হয়েছে; আল্লাহ্ ব্যতীত কারো কোনো শক্তি (ক্ষমতা) নেই।
.
কোনো বিস্ময়কর কিছু বা ভালো লাগার বিষয় দেখলে ‘Oh my god!’, ‘wow!’, ‘কী সুন্দর!’ ইত্যাদি না বলে বরকতের দু‘আ করা উচিত। এগুলো বললেই যে নজর লেগে যাবে, বিষয়টি তেমন না। তবে, সম্ভাবনা থেকে যায়। অতএব, আবেগ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে চাইলে, প্রথমে বরকতের দু‘আ করে নেওয়া উচিত। যেমন: বারাকাল্লাহ!—দারুণ তো! কিংবা এভাবেও বলা যায়: মা-শা-আল্লাহ! চমৎকার! কিংবা লা কুও-ওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ, দারুণ!
.
এ তো গেলো নিজের বদ নজর থেকে নিজেকে এবং অন্যকে হেফাজত করার আমল। পরবর্তী পর্বে আমরা আলোচনা করবো—কীভাবে অন্যের বদ নজর থেকে সুরক্ষিত থাকা যায়, সে ব্যাপারে— ইনশাআল্লাহ্।

.

#Nusus

------------------------------

 

#ধ্বংসাত্মক_দৃষ্টি (চতুর্থ পর্ব)

কারো বদনজর ও জাদু থেকে বাঁচতে করণীয়: অর্থাৎ, বদনজর এখনও লাগেনি, অগ্রীম সতর্কতার জন্য যেসব আমল করবেন
▬▬▬▬▬▬▬▬❂▬▬▬▬▬▬▬▬
﴾১﴿ যে ব্যক্তির কাছ থেকে নজর লাগার আশঙ্কা হবে, তার কাছে নিজের সুন্দর ও চমকপ্রদ কোনো কিছু প্রকাশ করা যাবে না; বরং সেগুলো যথাসাধ্য গোপন রাখতে হবে। [ইমাম বাগাবি, শারহুস সুন্নাহ: ১২/১৬৬]
.
পাশাপাশি, কোনো সুন্দর জিনিসের মধ্যে বদনজরের আশঙ্কা হলে, সেটিকে সামান্য একটু ত্রুটিপূর্ণ করে দেওয়া যেতে পারে। যেন সেটিতে কারও চোখ না লাগে। তবে, এটি জরুরি কিছু নয়।
.
﴾২﴿ কুরআন সুন্নাহয় বর্ণিত বদনজর ও হিংসা থেকে বাঁচার বিভিন্ন দু‘আ ও যিকর পাঠ করতে হবে এবং আল্লাহর কাছে দু‘আ করার মাধ্যমে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। যেমন: আয়িশা (রা.) বলেন, ‘নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বদনজর থেকে সুরক্ষার জন্য রুকইয়াহ (দু‘আ-যিকরের মাধ্যমে ঝাড়-ফুঁক) করতে নির্দেশ দিতেন।’ [ইমাম মুসলিম, আস-সহিহ: ৫৬১৫]
.
উত্তম হলো, অজুসহ কোনো পবিত্র স্থানে বসে দু‘আগুলো পড়া। তবে, এটি জরুরি নয়। অজু ছাড়াও যেকোনো স্থানে পড়া যাবে; এমনকি ব্যস্ততায় হেঁটে-হেঁটে পড়তেও সমস্যা নেই। দু‘আগুলো পড়ার পর, দুই হাতের তালু একত্র করে, তাতে ফুঁ দিয়ে, পুরো শরীরে যথাসম্ভব হাত বুলিয়ে নেওয়া ভালো। অন্য কারো জন্য (যেমন: সন্তানাদি, বাবা-মা, ভাই-বোন) পড়লে, তাদের মাথায় হাত রেখে পড়া ভালো।
.
❖❖ ১ নং আমল ❖❖
এই বিষয়ে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ দু‘আ এটি। দু‘আটি সকাল-সন্ধ্যা এবং ঘুমের আগে ১ বার অথবা ৩ বার পড়তে পারেন। অন্য সময়েও পড়ুন।
.
‏اَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ
.
[আ‘উযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মাহ, মিন কুল্লি শায়ত্বা-নিন ওয়া হা-ম্মাহ, ওয়া মিন কুল্লি ‘আইনিন লা-ম্মাহ]
বিশুদ্ধ উচ্চারণে দু‘আটি শিখতে ক্লিক করুন:
.
অর্থ: আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ বাক্যসমূহ দ্বারা আশ্রয় প্রার্থনা করছি—প্রতিটি শয়তান, ক্ষতিকারক প্রাণী ও প্রত্যেক হিংসুটে চোখ (বদনজর) থেকে।
.
আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই বাক্যগুলো দ্বারা (তাঁর প্রিয় দুই নাতি) হাসান ও হুসাইন (রা.)-কে (আল্লাহর) আশ্রয়ে দিতেন আর বলতেন, তোমাদের পিতা (পূর্বপুরুষ ইবরাহিম আ. তাঁর দুই সন্তান) ইসমাইল ও ইসহাককে এসব (বাক্যের) দ্বারা (আল্লাহর) আশ্রয়ে দিতেন। [ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ৩৩৭১]
.
❖❖ ২ নং আমল ❖❖
সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস পাঠ করা।
.
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিন ও মানুষের বদনজর থেকে (সুরক্ষা পেতে বিভিন্ন আমলের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে) আশ্রয় চাইতেন। অতঃপর সুরা ফালাক ও সুরা নাস অবতীর্ণ হলে তিনি এ দুটো সুরাকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দিতেন। [ইমাম ইবনু মাজাহ, আস-সুনান: ৩৫১১; ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান: ২০৫৮; হাদিসটি সহিহ]
.
তাই, আমরা সহজেই বুঝতে পারছি, বদনজর থেকে সুরক্ষায় সুরা ফালাক ও সুরা নাস কতো গুরুত্বপূর্ণ।
.
সুরা দুটো কখন পড়বো? কত বার করে পড়বো?
.
◈ সকাল-সন্ধ্যায় ৩ বার করে:
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘সকাল-সন্ধ্যায় সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস ৩ বার করে পাঠ করো; তা হলে সবকিছুর মোকাবেলায় এগুলোই তোমার জন্য যথেষ্ট হবে।’’ [ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান: ৩৫৭৫; হাদিসটি হাসান]
.
◈ রাতে ঘুমানোর আগে ৩ বার:
আয়িশা (রা.) বলেন, ‘রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি রাতে ঘুমানোর সময় তাঁর দু’হাতের তালু জড়ো করে, তাতে ফুঁ দিতেন এবং তাতে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস পাঠ করতেন। এরপর দুই হাতের তালু দিয়ে দেহের যতটুকু সম্ভব, মুছে দিতেন। শুরু করতেন মাথার উপরিভাগ দিয়ে, এরপর চেহারা ও দেহের সামনের অংশ। এই কাজ তিনি ৩ বার করতেন।’’ [ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ৫০১৭]
.
◈ প্রত্যেক ফরজ নামাজের পরে ১ বার:
উকবাহ্ ইবনু আমির (রা.) বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে প্রত্যেক (ফরজ) নামাজের শেষে সুরা ফালাক ও সুরা নাস পড়তে নির্দেশ দিয়েছেন। (অন্য হাদিসে এই দুটোর সাথে সুরা ইখলাসের কথাও এসেছে) [ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনাস: ১৫২৩; হাদিসটি হাসান]
.
❖❖ ৩ নং আমল ❖❖
বিশেষত সন্ধ্যা বেলায় এটি পড়বেন। এছাড়াও সকালে বা অন্যান্য সময়ে সুযোগ পেলেই পড়বেন।
.
اَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ
.
[আ‘উযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মা-ত, মিন শাররি মা খালাক্ব]
দু‘আটির বিশুদ্ধ উচ্চারণ জানতে ক্লিক করুন:
.
অর্থ: আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ বাক্যসমূহ দ্বারা, তিনি যা সৃষ্টি করেছেন, সেগুলোর অনিষ্ট থেকে তাঁর নিকট আশ্রয় চাই। [ইমাম মুসলিম, আস-সহিহ: ৬৭৭৩]
.
❖❖ ৪ নং আমল ❖❖
এই দু‘আটি সকাল-সন্ধ্যায় ৩ বার অবশ্যই পড়বেন। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দু‘আ। অর্থের দিকে লক্ষ রেখে পড়বেন।
.
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যদি কোনো বান্দা প্রতিদিন সকালে এবং প্রতি রাতে সন্ধ্যায় এই দু‘আ ৩ বার পাঠ করে, তাহলে কোনো অনিষ্ট তাকে স্পর্শ করতে পারবে না।’’
.
بِسْمِ اللّٰهِ الَّذِىْ لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهٖ شَيْئٌ فِيْ الْأَرْضِ وَلَا فِيْ السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ
.
[বিসমিল্লা-হিল্লাযি লা ইয়াদ্বুররু মা‘আস্‌মিহ, শাই উন ফিল আরদ্ব, ওয়া লা ফিস্‌সামা-অ্, ওয়া হুওয়াস্ সামি-‘উল ‘আলি-ম]
দু‘আটির বিশুদ্ধ উচ্চারণ জানতে ক্লিক করুন:
.
অর্থ: আল্লাহর নামে শুরু করছি, যে নামের সাথে আসমান ও জমিনে কোনো কিছুই কোনো ক্ষতি করতে পারে না। তিনি সব শুনেন ও জানেন। [ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান: ৫০৮৮; ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান: ৩৩৮৮; হাদিসটি সহিহ]
.
❖❖ ৫ নং আমল ❖❖
আয়াতুল কুরসি (সুরা বাকারার ২৫৫ নং আয়াত) পাঠ করা। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় ১ বার করে পড়বেন এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ১ বার পড়বেন। তাহলে শয়তান ও জিনের আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকা যাবে, ইনশাআল্লাহ। [ইমাম বুখারি, আত তারিখুল কাবির: ১/২৮; হাদিসটি সহিহ; ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ২৩১১]
.
❖❖ ৬ নং আমল ❖❖
সকাল-সন্ধ্যায় ৭ বার করে এই দু‘আটি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।
.
আবুদ দারদা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকাল-বিকাল ৭ বার এটি বলবে, তার দুনিয়া ও আখিরাতের দুঃখ-দুশ্চিন্তা সমাধানের জন্য আল্লাহ্ তা‘আলা যথেষ্ট হয়ে যাবেন।’’
.
ﺣَﺴْﺒِﻲَ ﺍﻟﻠّٰﻪُ ﻟَﺎ ﺇِﻟٰﻪَ ﺇِﻟَّﺎ ﻫُﻮَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺗَﻮَﻛَّﻠْﺖُ ﻭَﻫُﻮَ ﺭَﺏُّ ﺍﻟْﻌَﺮْﺵِ ﺍﻟْﻌَﻈِﻴْﻢِ
.
[হাসবিয়াল্লা-হ, লা ইলা-হা ইল্লা হু, ‘আলাইহি তাওয়াক্কালতু, ওয়া হুওয়া রাব্বুল ‘আরশিল ‘আযি-ম]
দু‘আটির বিশুদ্ধ উচ্চারণ জানতে ক্লিক করুন:
.
অর্থ: আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। তিনি ব্যতীত কোনো সত্য উপাস্য নেই। আমি তাঁর উপরই ভরসা করি। তিনি মহান আরশের রব। [ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান: ৫০৮১; হাফিয ইবনুল কায়্যিম, যাদুল মা‘আদ: ২/৩৭; মুহাক্কিক শায়খ শু‘আইব আরনাউত্ব (রাহ.) বলেন, হাদিসটির সনদ সহিহ]
.
❖❖ ৭ নং আমল ❖❖
এই তাসবিহটি প্রতিদিন ১০০ বার পড়বেন।
.
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْرٌ
.
[লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ, ওয়াহদাহু লা শারি-কা লাহ, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদ, ওয়া হুওয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদি-র]
বিশুদ্ধ উচ্চারণে দু‘আটি শিখতে ক্লিক করুন:
.
অর্থ: আল্লাহ্ ব্যতীত কোনো সত্য উপাস্য নেই। তিনি এক, তাঁর কোনো অংশীদার নেই। রাজত্ব ও প্রশংসা কেবল তাঁরই। তিনি সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
.
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি এটি দৈনিক ১০০ বার পড়বে—
• সে ১০ জন দাস মুক্ত করার সওয়াব পাবে;
• তার জন্য ১০০ সওয়াব লেখা হবে;
• তার ১০০ গুনাহ মিটিয়ে দেওয়া হবে;
• সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সে শয়তান থেকে নিরাপদ থাকবে এবং (সুনানে আবু দাউদের বর্ণনায়, সন্ধ্যায় বা রাতে পাঠ করলে সকাল পর্যন্ত নিরাপদ থাকবে)
• সেদিনের হিসেবে কেউ তার চেয়ে উত্তম সওয়াবের কাজ করতে পারবে না। তবে হ্যাঁ, সেই ব্যক্তি সক্ষম হবে, যে এর চেয়ে বেশি পড়বে।’’ [ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ৩২৯৩; ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান: ৫০৭৭]
.
১০০ বার পড়া কোনো কারণে সম্ভব না হলে, অন্তত ১০ বার পড়তে ভুল করবেন না।
.
❖ আরও যেসব বিষয়ে গুরুত্ব দেবেন:
ঘুমের আগে বিছানা ঝেড়ে নেওয়া, অজু করে মাসনুন (কুরআন-হাদিসে বর্ণিত) দু‘আগুলো পড়ে ঘুমানো, ডান কাতে শোয়া, টয়লেটে প্রবেশ করার পূর্বে মাসনুন দু‘আ পড়া, গোসলের সময় বা টয়লেটের সময় সম্পূর্ণ উলঙ্গ না হওয়ার চেষ্টা করা, কাপড় পরিধান বা খোলার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলা ইত্যাদি।
.
সর্বশেষ পরামর্শ হলো, সবাই ইস্তিগফার ও দরুদ পড়বেন বেশি বেশি। সকাল-সন্ধ্যার মাসনুন দু‘আগুলো পড়বেন। সবকিছুর সমাধানের জন্য আল্লাহর উপরই ভরসা করবেন। কারণ তিনি ইচ্ছা না করলে কেউ বা কোনো কিছু কারও ক্ষতি করতে পারবে না। তাকদিরে লেখা না থাকলে কিছুই ঘটবে না।

.

#Nusus

------------------------------

 

#ধ্বংসাত্মক_দৃষ্টি (পঞ্চম পর্ব)

বদনজর অথবা জাদুতে আক্রান্ত হলে নিচের ১০ টি দু‘আ ও কুরআনের কিছু আয়াতের মাধ্যমে নিজের ও অন্যের ঝাড়-ফুঁক করুন সঠিকভাবে।
.
✪ প্রথমে জানি, ঝাড়-ফুঁকের সঠিক নিয়ম:
.
(১) ঝাড়-ফুঁককারী ব্যক্তি রোগীর মাথায় অথবা ব্যথার স্থানে হাত রেখে সব আয়াত এবং দু‘আ পড়বেন। পড়ে পড়ে তার দুই হাতের তালু একত্র করে তাতে ফুঁ দিয়ে যথাসাধ্য পুরো শরীর স্পর্শ করবেন।
.
(২) প্রথমে এক মগ পানি এনে রাখবেন সামনে। এরপর রোগীর মাথায় অথবা ব্যথার স্থানে হাত রেখে আয়াত ও দু‘আগুলো পড়বেন। এরপর মগের পানিতে ফুঁ দেবেন। সেই পানির কিছুটা রোগী পান করবে আর বাকিটা দিয়ে গোসল করবে। জমজমের পানি হলে আরও ভালো। এটা জরুরি না।
.
(৩) অথবা কিছুটা তেল এনে রাখবেন। রোগীর মাথায় কিংবা ব্যথার স্থানে হাত রেখে আয়াত ও দু‘আগুলো পড়ার পর তেলে ফুঁ দেবেন। এরপর রোগীকে সেই তেল মালিশ করাবেন। একবারেই সব তেল মালিশ করাতে হবে না।
.
এই সবগুলো পদ্ধতিই বৈধ এবং জায়েয। মনে রাখতে হবে, পুরুষ কর্তৃক কোনো গায়রে মাহরাম নারীকে স্পর্শ করা যাবে না। সর্বোচ্চ এটুকুর অনুমতি আছে যে, প্রয়োজন সাপেক্ষে নারী রোগীর মাথায় একাধিক কাপড়ের উপর হালকা করে হাত রাখা যাবে। এরপর আয়াত ও দু‘আগুলো পড়ে তাকে স্পর্শ না করে শরীরে ফুঁ দিতে পারে অথবা পানি কিংবা তেলে ফুঁ দিয়ে দিতে পারে। এরপর রোগী সেই পানির কিছুটা পান করবে, কিছুটা দিয়ে গোসল করবে। অথবা সেই তেল মালিশ করবে।
.
✿✿ বদনজরের সবচেয়ে কার্যকর চিকিৎসা হলো, বদনজরের জন্য গোসল করা। এ সম্পর্কে বিস্তারিত থাকবে শেষ পর্বে, ইনশাআল্লাহ।
.
✿✿ রুকইয়া বা ঝাড়-ফুঁকের আয়াত ও দু‘আগুলো পড়ার আগে আল্লাহর প্রশংসা ও গুণকীর্তন এবং দরুদ পাঠ করবেন, এরপর আয়াত ও দু‘আগুলো পড়বেন, শেষে আবার দরুদ পড়বেন। এই পদ্ধতিটি সাধারণত দু‘আ কবুলের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া, ঝাড়-ফুঁক অজু অবস্থায়, পাক কোনো স্থানে বসে করা উত্তম বলেছেন আলিমগণ। তবে, এগুলো জরুরি নয়।
.
✪ কুরআন থেকে যেসব আমল করবেন:
(নিজের ঝাড়-ফুঁকের জন্য অথবা রোগীর জন্য)
.
(১) অজু করে, আয়াতুল কুরসি (সুরা বাকারার ২৫৫ নং আয়াত) পড়ে ফুঁ দেবেন। হোক সেটি শরীরে বা পানিতে কিংবা তেলে।
.
পাশাপাশি, প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায়, প্রত্যেক ফরজ নামাজের পরে এবং ঘুমাতে যাওয়ার আগে অন্তত ১ বার পড়বেন। [ইমাম বুখারি, আত তারিখুল কাবির: ১/২৮; হাদিসটি সহিহ; ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ২৩১১]
.
(২) সুরা ফাতিহা [ইমাম মুসলিম, আস-সহিহ: ৫৬২৬] ৭ বার পড়বেন, প্রতিবার পড়ে পড়ে ফুঁ দেবেন।
.
(৩) সুরা ফালাক ও সুরা নাস ৩ বার করে পড়ে ফুঁ দেবেন। এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল।
.
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিন ও মানুষের বদনজর থেকে সুরক্ষা পেতে সুরা ফালাক ও সুরা নাসকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতেন। [ইমাম ইবনু মাজাহ, আস-সুনান: ৩৫১১; ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান: ২০৫৮; হাদিসটি সহিহ]
.
পাশাপাশি, প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় এই দুটো সুরা ৩ বার করে পড়বেন, ঘুমের আগে ৩ বার পড়বেন এবং প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর অন্তত ১ বার পড়বেন।
.
এবার আমরা সহিহ হাদিসে বর্ণিত ১০ টি দু‘আ দেখে নিই, প্রতিটির বিশুদ্ধ উচ্চারণ জানতে লিংকে ক্লিক করুন। শুধু বাংলা উচ্চারণ দেখে পড়লে পড়া শুদ্ধ হয় না।
.
✪ দু‘আ নং—০১
.
যখন কেউ অন্যকে ঝাড়-ফুঁক করবেন, তখন এটি ৩ বার বলবেন ও ঝাড়-ফুঁক করবেন।
.
بِسْمِ اللّٰهِ أَرْقِيْكَ مِنْ كُلِّ شَيْئٍ يُؤْذِيْكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ اَللّٰهُ يَشْفِيْكَ بِسْمِ اللّٰهِ أَرْقِيْكَ
.
[বিসমিল্লাহি আরক্বি-কা, মিন কুল্লি শাইয়িন য়ুঅ্-যি-কা, মিন শাররি কুল্লি নাফসিন আও ‘আইনি হা-সিদিন, আল্লাহু ইয়াশফি-কা, বিসমিল্লাহি আরক্বি-কা]
.
অর্থ: আল্লাহর নামে তোমাকে ঝাড়-ফুঁক করছি—সেসব বিষয় থেকে, যা তোমাকে কষ্ট দেয়; সকল প্রাণের অনিষ্ট থেকে অথবা হিংসুকের বদনজর থেকে; আল্লাহ তোমাকে শিফা (আরোগ্য) দিন; আল্লাহর নামেই তোমাকে ঝাড়-ফুঁক করছি।
.
আর যখন নিজের ঝাড়-ফুঁক নিজেই করবেন, তখন এভাবে বলবেন—
.
بِسْمِ اللّٰهِ أَرْقِيْنِيْ، مِنْ كُلِّ شَيْئٍ يُؤْذِيْنِيْ، مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ، اَللّٰهُ يَشْفِيْنِيْ، بِسْمِ اللّٰهِ أَرْقِيْنِيْ
.
[বিসমিল্লাহি আরক্বি-নি, মিন কুল্লি শাইয়িন য়ুঅ্-যি-নি, মিন শাররি কুল্লি নাফস, আও ‘আইনি হা-সিদ, আল্লাহু ইয়াশফি-নি, বিসমিল্লাহি আরক্বি-নি]
বিশুদ্ধ উচ্চারণে দু‘আটি শিখতে শুনুন:
.
অর্থ: আল্লাহর নামে আমার ঝাড়-ফুঁক করছি—সেসব বিষয় থেকে, যা আমাকে কষ্ট দেয়; সকল প্রাণের অনিষ্ট থেকে অথবা হিংসুকের বদনজর থেকে; আল্লাহ আমাকে শিফা (আরোগ্য) দিন; আল্লাহর নামেই আমাকে ঝাড়-ফুঁক করছি।
.
জিবরিল (আ.) এই দু‘আটি পড়ে নবিজির রুকইয়াহ করেছিলেন। [ইমাম মুসলিম, আস-সহিহ: ২১৮৬]
.
✪ দু‘আ নং—০২ (৩ বার পড়বেন)
(নিজের জন্য অথবা রোগীর জন্য)
.
‏اَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ
.
[আ‘উযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মাহ, মিন কুল্লি শায়ত্বা-নিন ওয়া হা-ম্মাহ, ওয়া মিন কুল্লি ‘আইনিন লা-ম্মাহ]
বিশুদ্ধ উচ্চারণে দু‘আটি শিখতে শুনুন:
.
অর্থ: আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ বাক্যসমূহ দ্বারা আশ্রয় প্রার্থনা করছি—প্রতিটি শয়তান, ক্ষতিকারক প্রাণী ও প্রত্যেক হিংসুটে চোখ (বদনজর) থেকে।
.
নবিজি তাঁর নাতিদের উপর এই দু‘আটি পড়ে, তাঁদেরকে আল্লাহর আশ্রয়ে দিতেন। [ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ৩৩৭১]
.
প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায়ও এটি ৩ বার পড়বেন।
.
✪ দু‘আ নং—০৩ (৩ বার পড়বেন)
(নিজের জন্য অথবা রোগীর জন্য)
.
اَللّٰهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبِ الْبَاْسَ، إِشْفِ وَأَنْتَ الشَّافِيْ، لَا شِفَاءَ إِلَّا شِفَاؤُكَ، شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًا
.
[আল্লা-হুম্মা রাব্বান না-স; আযহিবিল বাঅ্স; ইশফি, ওয়া আনতাশ শা-ফি। লা শিফা-আ ইল্লা শিফা-উক; শিফা-আন লা য়ুগা-দিরু সাক্বামা]
বিশুদ্ধ উচ্চারণে দু‘আটি শিখতে শুনুন:
.
অর্থ: হে আল্লাহ—মানুষের রব! কষ্ট দূর করে দিন, সুস্থ করে তুলুন; আপনিই তো আরোগ্যদাতা। আপনার শিফা (আরোগ্য) ব্যতীত আর কোনো শিফা নেই। আপনি এমনভাবে সুস্থ করে দিন, যেন আর কোনো অসুস্থতা না থাকে।
.
নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর স্ত্রীদের এটি পড়ে হাত বুলিয়ে দিতেন এবং ঝাড়-ফুঁক করতেন। [ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ৫৭৪৩; ইমাম মুসলিম, আস-সহিহ: ৫৬০৩]
.
✪ দু‘আ নং—০৪ (৩ বার পড়বেন)
(নিজের জন্য অথবা রোগীর জন্য)
.
اَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّةِ مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِيْنِ وَأَنْ يَّحْضُرُوْنِ ‏
.
[আ‘উযু বি কালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মাহ, মিন গাদ্বাবিহি ওয়া ‘ইক্বা-বিহ, ওয়া শাররি ‘ইবা-দিহ, ওয়া মিন হামাযা-তিশ শায়া-ত্বি-ন, ওয়া আঁই ইয়াহদ্বুরু-ন]
বিশুদ্ধ উচ্চারণে দু‘আটি শিখতে শুনুন:
.
অর্থ: আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ বাক্যসমূহ দ্বারা আশ্রয় চাই—তাঁর রাগ ও শাস্তি থেকে; তাঁর বান্দাদের অনিষ্ট থেকে; শয়তানদের উসকানি থেকে এবং তাদের (শয়তানদের) উপস্থিতি থেকে।
.
বদনজরের সমস্যার পাশাপাশি, বিশেষত ঘুমের মধ্যে জিন কাউকে সমস্যা করলে এটি পড়ে ঘুমাতে যাওয়া উচিত। [ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান: ৩৫২৮; হাদিসটি হাসান]
.
প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায়ও এটি ৩ বার পড়বেন।
.
✪ দু‘আ নং—০৫
.
অন্যকে ঝাড়-ফুঁক করলে এটি ৭ বার বলবেন এবং ঝাড়-ফুঁক করবেন।
.
أَسْأَلُ اللّٰهَ الْعَظِيْمَ، رَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ، أَنْ يَّشْفِيَكَ
.
[আস আলুল্লা-হাল আযি-ম, রাব্বাল আরশিল আযি-ম, আঁই ইয়াশফিয়াক]
.
অর্থ: সুমহান আল্লাহ—মহান আরশের রবের নিকট আমি তোমার আরোগ্য প্রার্থনা করছি।
.
আর যখন এই বাক্যগুলো নিজের জন্য পড়বেন, তখন শেষ শব্দ ‘ইয়াশফিয়াক’-এর বদলে ‘ইয়াশফি-নি’ পড়বেন। বাকি অংশ হুবহু থাকবে।
.
أَسْأَلُ اللّٰهَ الْعَظِيْمَ، رَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ، أَنْ يَّشْفِيْنِيْ
.
[আস আলুল্লাহাল আযি-ম, রাব্বাল আরশিল আযি-ম, আঁই ইয়াশফি-নি]
বিশুদ্ধ উচ্চারণে দু‘আটি শিখতে শুনুন:
.
অর্থ: সুমহান আল্লাহ—মহান আরশের রবের নিকট আমি আমার আরোগ্য প্রার্থনা করছি।
.
যে রোগীর মৃত্যুর সময় এখনও আসেনি, তার সামনে এটি ৭ বার পড়ার কথা বলা হয়েছে। তাহলে ইনশাআল্লাহ ব্যক্তি সুস্থ হয়ে যাবে। [ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান: ৩১০৬; ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান: ৩০৮৩; হাদিসটি সহিহ]
.
✪ দু‘আ নং—০৬
(এই আমলটি রোগী নিজেই করবে)
.
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমার শরীরের যে স্থানে ব্যথা অনুভব হয়, সেখানে হাত রেখে প্রথমে তিনবার بِسْمِ اللّٰهِ (বিসমিল্লাহ) পড়বে। এরপর ৭ বার পড়বে—
.
اَعُوْذُ بِاللّٰهِ وَقُدْرَتِهِ مِنْ شَرِّ مَا أَجِدُ وَأُحَاذِرُ
.
[আ‘উযু বিল্লা-হি ওয়া ক্বুদরাতিহ, মিন শাররি মা আজিদু ওয়া উহা-যিরু]
বিশুদ্ধ উচ্চারণে দু‘আটি শিখতে শুনুন:
.
অর্থ: যে ব্যথা আমি অনুভব করছি এবং যেটির আশঙ্কা করছি, তা থেকে আমি আল্লাহ ও তাঁর শক্তি-সামর্থ্যের আশ্রয় প্রার্থনা করছি। [ইমাম মুসলিম, আস-সহিহ: ৫৬৩০]
.
✪ দু‘আ নং—০৭ (৩ বার পড়বেন)
(নিজের জন্য অথবা রোগীর জন্য)
.
اَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ
.
[আ‘উযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মা-তি মিন শাররি মা খালাক্ব]
বিশুদ্ধ উচ্চারণে দু‘আটি শিখতে শুনুন:
.
অর্থ: আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালিমাসমূহ দ্বারা, তিনি যা সৃষ্টি করেছেন, সেগুলোর অনিষ্ট থেকে তাঁর নিকট আশ্রয় চাই। [ইমাম মুসলিম, আস-সহিহ: ২৭০৯]
.
প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায়ও এটি ৩ বার পড়বেন।
.
✪ দু‘আ নং—০৮ (৩ বার পড়বেন)
(নিজের জন্য অথবা রোগীর জন্য)
.
بِسْمِ اللّٰهِ الَّذِىْ لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهٖ شَيْئٌ فِيْ الْأَرْضِ وَلَا فِيْ السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ
.
[বিসমিল্লা-হিল্লাযি, লা ইয়াদ্বুররু মা‘আস্‌মিহ, শাইউন ফিল আরদ্ব, ওয়ালা- ফিস্‌সামা-অ্, ওয়া হুওয়াস্ সামি-‘উল ‘আলি-ম’]
বিশুদ্ধ উচ্চারণে দু‘আটি শিখতে শুনুন:
.
অর্থ: আল্লাহর নামে শুরু করছি, যে নামের সাথে আসমান ও জমিনে কোনো কিছুই কোনো ক্ষতি করতে পারে না। তিনি সব শুনেন ও জানেন। [ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান: ৫০৮৮; ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান: ৩৩৮৮; হাদিসটি সহিহ]
.
প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায়ও এটি ৩ বার পড়বেন।
.
✪ দু‘আ নং—০৯ (৭ বার পড়বেন)
(নিজের জন্য অথবা রোগীর জন্য)
.
ﺣَﺴْﺒِﻲَ ﺍﻟﻠّٰﻪُ ﻟَﺎ ﺇِﻟٰﻪَ ﺇِﻟَّﺎ ﻫُﻮَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺗَﻮَﻛَّﻠْﺖُ ﻭَﻫُﻮَ ﺭَﺏُّ ﺍﻟْﻌَﺮْﺵِ ﺍﻟْﻌَﻈِﻴْﻢِ
.
[হাসবিয়াল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়া, ‘আলাইহি তাওয়াক্কালতু, ওয়া হুওয়া রাব্বুল ‘আরশিল ‘আযি-ম]
বিশুদ্ধ উচ্চারণে দু‘আটি শিখতে শুনুন:
.
অর্থ: আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। তিনি ব্যতীত কোনো প্রকৃত উপাস্য নেই। তাঁরই উপর আমি ভরসা করি। তিনি মহান আরশের রব।
.
এটি সকাল-সন্ধ্যা ৭ বার পড়লে, সবধরনের দুঃখ-দুশ্চিন্তার জন্য আল্লাহ যথেষ্ট হয়ে যান। [ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান: ৫০৮১; হাফিয ইবনুল কায়্যিম, যাদুল মা‘আদ: ২/৩৭; মুহাক্কিক শায়খ শু‘আইব আরনাউত্ব (রাহ.) বলেন, হাদিসটির সনদ সহিহ]
.
প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায়ও এটি ৭ বার পড়বেন।
.
✪ দু‘আ নং—১০ (১০০ বার পড়বেন)
(নিজের জন্য অথবা রোগীর জন্য)
.
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْرٌ
.
[লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ, ওয়াহদাহু লা শারি-কা লাহ, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদ, ওয়া হুওয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদি-র]
বিশুদ্ধ উচ্চারণে দু‘আটি শিখতে শুনুন:
.
অর্থ: আল্লাহ্ ব্যতীত কোনো সত্য উপাস্য নেই। তিনি এক, তাঁর কোনো অংশীদার নেই। রাজত্ব ও প্রশংসা কেবল তাঁরই; তিনি সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান। [ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ৩২৯৩; ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান: ৫০৭৭ (এর বিশাল ফজিলতের বিবরণ চতুর্থ পর্বে দেওয়া হয়েছে)]
.
প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায়ও এটি কমপক্ষে ১ বার পড়বেন, সম্ভব হলে ১০ বার অথবা ১০০ বার।
.
এছাড়া আরো কিছু কাজ করতে পারেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিসে বেশ কিছু ফল/ওষধি ও পানীয়কে যেকোনো রোগ-ব্যাধি থেকে প্রতিষেধক বলেছেন। সেগুলো গ্রহণ করা যেতে পারে। যেমন: মধু, কালোজিরা, আজওয়া খেজুর, জমজমের পানি ইত্যাদি। যেমন: উপরের দু‘আ ও আয়াতগুলো পড়ে জমজমের পানিতে বা মধুতে ফুঁ দিয়ে পান করা যেতে পারে।

.

#Nusus

---------------------------

 

#ধ্বংসাত্মক_দৃষ্টি (ষষ্ঠ পর্ব)

কীভাবে বুঝবেন—আপনি বদনজরে আক্রান্ত?
▬▬▬▬▬▬▬◖◉◗▬▬▬▬▬▬▬
এই বিষয়টি আমাদের জানা থাকা উচিত। কারণ বর্তমানে অসংখ্য মানুষ বদনজরে আক্রান্ত হচ্ছে। সুস্থতার জন্য হসপিটাল ও ডাক্তারের কাছে গিয়ে হাজার-লাখ টাকা খরচ করেও কোনো সুফল আসছে না। এমতাবস্থায় শরিয়সম্মত ঝাড়-ফুঁকের আমল করা জরুরি। সেগুলো পূর্বেই আলোচনা করেছি। আজ আমরা বদনজরে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ (symptoms) বা লক্ষণগুলো তুলে ধরবো ইনশাআল্লাহ্।
.
প্রথমে বলে নিচ্ছি, এই লক্ষণগুলো নিশ্চিত (قطعي) কোনো বিষয় নয়, বরং ধারণানির্ভর (ظني)। এসবের পক্ষে সরাসরি কোনো শরয়ি দলিল নেই, কেবল অভিজ্ঞতা থেকেই এগুলো পাওয়া গেছে।
.
শায়খ আবদুল আযিয আস-সাদহান (হাফিযাহুল্লাহ) বদনজরের কিছু লক্ষণের কথা বলেছেন। যেমন: এমন মাথা ব্যথা, যা মাথার এক পাশ থেকে আরেক পাশে মুভ করে, চেহারাটা হলদে ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, অধিক পরিমাণে ঘর্মাক্ত হওয়া, ঘনঘন প্রস্রাব করা, ক্ষুধামন্দা ভাব, শিহরিত-আতঙ্কিতবোধ করা, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ গরম বা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া, বুক ধড়ফড় করা (Palpitation), শরীরের পেছনের দিকে ও কাঁধে ব্যথা, দুঃখবোধ ও দুশ্চিন্তা, রাতে ঘুম না আসা, অস্বাভাবিকভাবে ভীত হয়ে কঠোরভাবে রিঅ্যাক্ট করা, প্রচুর পরিমাণে ঢেকুর, হাই এবং দীর্ঘশ্বাস তোলা, সবকিছু থেকে দূরে একাকী থাকতে পছন্দ করা, উদাসীনতা ও অলসতা, শারীরিক এমন সব সমস্যা ফেইস করা, যেগুলো চিকিৎসাবিজ্ঞানের কোনো কারণ (Medical cause) না হওয়া। এসব লক্ষণ বা এগুলোর কিছু লক্ষণ বদনজরে আক্রান্ত ব্যক্তির মাঝে দেখা যেতে পারে। [‘আর-রুকইয়াহ আশ-শারইয়্যাহ’ সূত্রে শায়খ মুহাম্মাদ সলিহ আল মুনাজ্জিদ পরিচালিত islamqa থেকে অনূদিত]
.
এছাড়া আরও কিছু লক্ষণ হলো: প্রচুর এলোমেলো স্বপ্ন দেখা, রুকইয়াহর আয়াত বা দু‘আ পড়লে অস্বাভাবিকতা অনুভব করা, শরীরে ঝিমুনি আসা, হাত-পা অবশ অবশ লাগা, স্বাস্থ্য অথবা ব্যবসায় অস্বাভাবিক (abnormal) রকমের ক্ষতি হওয়া ইত্যাদি।
.
এই লক্ষণগুলোর এক বা একাধিক নিজের মধ্যে থাকলেই আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই। অনেক রোগের উপসর্গ হিসেবেই এগুলোর কোনো-কোনোটি দেখা দিতে পারে। তবে, সতর্কতা কাম্য। বাহ্যিক কোনো কারণ ছাড়াই শারীরিক ও মানসিক অস্বাভাবিকতাকে (abnormality) খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। বিশেষত, যদি সেটি বেশ কিছুদিন যাবত চলতে থাকে। এমতাবস্থায় রুকইয়াহ (শরিয়াহসম্মত ঝাড়-ফুঁক) করা উচিত।
.
বদনজর সত্য। এটি সহিহ বুখারি ও অন্যান্য প্রায় সকল হাদিসগ্রন্থে এসেছে। এর উপর ঈমান রাখা আবশ্যক। তবে, বদনজর লাগা বা কার্যকর হওয়ার ব্যাপারটি সম্পূর্ণ আল্লাহর ইচ্ছাধীন। তাই, সকাল-সন্ধ্যায় নিজেকে হেফাজতের জন্য দু‘আ করতে হবে ও যিকরগুলো প্রতিনিয়ত পড়তে হবে। আল্লাহর রহমতে এগুলো ঢাল হিসেবে কাজ করবে।
.
রুকইয়াহ মানে ঝাড়-ফুঁক। শরিয়তসম্মত পন্থায় কুরআনের আয়াত বা হাদিসে বর্ণিত বিশেষ দু‘আর মাধ্যমে অন্যকে অথবা নিজেই নিজেকে ঝাড়-ফুঁক করা যায়। যিনি রুকইয়াহ্ করেন, তাকে ‘রাকি’ বলা হয়। রুকইয়াহ সেক্টরে অনেক বিশেষজ্ঞ রাকি আছেন। তাদের কাছ থেকে প্রয়োজনে পরামর্শ নিতে পারেন। তবে, নিজের রুকইয়াহ্ নিজে করা উত্তম। সম্ভব না হলে পরিবার বা কাছের কাউকে দিয়েও করানো যেতে পারে, রুকইয়াহর বিষয়গুলো যে ভালো বুঝে। সিরিয়াস সমস্যা অনুভব করলে কোনো রাকির স্মরণাপন্ন হবেন। রাকিদের মধ্যেও ভালো-মন্দের ব্যাপার আছে। এক্ষেত্রে কোন্ রাকি ভালো আর কোন রাকি মন্দ (প্রতারক, দুশ্চরিত্র অথবা অযোগ্য), তা ভালোভাবে যাচাই করে নেবেন।
.

#Nusus

-------------------------------

 

#ধ্বংসাত্মক_দৃষ্টি (৭ম ও শেষ পর্ব)

বদনজর থেকে বাঁচার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো, বদনজরের গোসল করা। আজ আমরা গোসলের পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো, ইনশাআল্লাহ্।
▬▬▬▬▬▬▬❖▬▬▬▬▬▬▬
❑ বদনজর থেকে বাঁচতে গোসলের দলিল:
.
আয়িশা (রা.) বলেন, (নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে) নজর যে ব্যক্তি লাগিয়েছে, তাকে অজু করতে বলা হতো। আর সেই অজু-করা-পানি দিয়ে নজর লাগা ব্যক্তিকে গোসল করানো হতো। [ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান: ৩৮৮০; হাদিসটি সহিহ]
.
❑ যদি বদ নজরকারীকে চেনা যায় তবে...
.
যে ব্যক্তি নজর লাগিয়েছে, তার সম্পর্কে যদি জানা যায়, তবে একটি বড় পাত্রে তাকে অজু করাবে, এরপর সেই পানি নিয়ে রোগীর পিঠে ঢেলে দেবে। তাতে আল্লাহ তা‘আলার হুকুমে সে আরোগ্য লাভ করবে।
.
সাহল বিন হুনাইফ (রা.)-এর ছেলে বলেন, আমার পিতা মদিনার খাররার নামক উপত্যকায় গোসলের জন্যে জামা খুললেন, তখন তার শরীরে আমির বিন রাবি‘আর দৃষ্টি পড়ে। যেহেতু সাহল বিন হুনাইফ সুন্দর ও সুঠাম দেহের অধিকারী ছিলেন, তাই আমির দেখামাত্র বলে ওঠেন, ‘আজকের মত এমন (সুন্দর) ত্বক আমি কখনও দেখিনি; এমন কি অন্দরমহলের কুমারীদেরও না!’ তার একথা বলার সাথে সাথে সাহল বেহুঁশ হয়ে পড়ে যান এবং কঠিনভাবে অসুস্থ হয়ে যান। এরপর নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিষয়টি জানানো হয় এবং বলা হয় যে, তিনি (সাহল) তার মাথা ওঠাতে পারছেন না, তিনি আপনার সাথে যেতে পারবেন না।
.
তখন নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে আসেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘তোমরা কি কাউকে অভিযুক্ত করছো?’’ উত্তরে লোকজন বললো, ‘হ্যাঁ, আমির বিন রাবি‘আকে।’ এটা শুনে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডেকে পাঠালেন এবং তার উপর রাগাম্বিত হয়ে বললেন, ‘‘কেন তোমাদের কেউ কেউ নিজের ভাইকে মেরে ফেলে? (অর্থাৎ বদনজর দিয়ে ধ্বংস করে দেয়) তুমি তার জন্য কেন বরকতের দু‘আ করোনি? এখন তার জন্যে অজু করো।’’ অতঃপর আমির নিজের হাত, চেহারা, দুই পা, দুই হাঁটু, দুই কনুই ও লুঙ্গির অভ্যন্তরীণ অংশ একটি পাত্রে ধৌত করলেন। অতঃপর সেই পানি সাহল বিন হুনাইফের পিঠে ঢেলে দেওয়া হলো। এরপর তিনি মুহূর্তেই সুস্থ হয়ে ওঠেন। [ইমাম মালিক, আল-মুয়াত্তা: ১৬৮৮; ইমাম ইবনু মাজাহ, আস-সুনান: ৩৫০৯; ইমাম আহমাদ, আল-মুসনাদ: ১৫৯৮০; হাদিসটি সহিহ]
.
❑ গোসলের অন্য একটি পদ্ধতি:
.
সাহাবিগণের ছাত্র, বিখ্যাত তাবিয়ি, ইমাম ইবনু শিহাব যুহরি (রাহ.) বলেন, গোসলের পদ্ধতি, যা আমরা আমাদের আলিমগণের কাছ থেকে শিখেছি তা হলো, যে ব্যক্তির কাছ থেকে নজর লেগেছে, তার সামনে এক পাত্র পানি দেওয়া হবে। এরপর সেই ব্যক্তি পানি নিয়ে পাত্রে কুলি করবে। এরপর পাত্রে নিজের মুখ ধুবে। বাম হাতে ঢেলে ডান হাতের কবজি ও ডান হাতে ঢেলে বাম হাতের কবজি পর্যন্ত একবার করে ধৌত করবে। তারপর বাম হাত দিয়ে ডান কনুই এবং ডান হাত দিয়ে বাম কনুইয়ে ঢালবে। এরপর বাম হাতে ডান পায়ে আর ডান হাতে বাম পায়ে ঢালবে। এরপর বাম হাতে ডান পায়ের হাঁটু আর ডান হাতে বাম পায়ের হাঁটুতে ঢালবে। আর এইসকল কাজ যেন সেই পাত্রেই হয়। এরপর লুঙ্গি বা পায়জামার ভেতরের অংশ পাত্রে ধৌত করবে; নিচে রাখবে না। অতঃপর সকল পানি রোগীর মাথায় একবারে ঢালবে (যাতে পুরো শরীরে পানি পৌঁছে যায়)। [ইমাম বাইহাকি, আস-সুনানুল কুবরা: ৯/২৫২]
.
❑ যদি বদ নজরকারীকে শনাক্ত করা না যায়, তবে বিশেষ পানি দিয়ে গোসল করা:
.
প্রথমে সাতটি সবুজ বরই পাতা সংগ্রহ করে পাতাগুলো গুঁড়ো করতে হবে (বরই পাতা জরুরি কিছু নয়)। এরপর গুঁড়োগুলো পানিতে মিশিয়ে সেই পানিতে বদনজরের বিভিন্ন আয়াত ও দু‘আ পড়ে ফুঁ দিতে হবে। তারপর রোগী সেই পানির কিছুটা পান করবে আর বাকিটা দিয়ে গোসল করবে।
.
❖ যেসব সুরা ও দু‘আ পড়ে পানিতে ফুঁ দেবে:
.
• দরুদে ইবরাহিম, অর্থাৎ আমরা নামাজের শেষ বৈঠকে যে দরুদ পড়ি (১ বার)
• সুরা ফাতিহা (৭ বার)
• আয়াতুল কুরসি তথা সুরা বাকারার ২৫৫ নং আয়াত (৩ বার)
• সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত (১ বার)
• সুরা কাফিরুন (১ বার)
• সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস (প্রতিটি ৩ বার করে)
• এছাড়াও আরও অন্যান্য কিছু দু‘আ পড়ে তাতে ফুঁ দেবে। সেই দু‘আগুলো আমরা এই সিরিজের ৫ নং পর্বে বিস্তারিত লিখেছি। সাথে উচ্চারণ ও অর্থও দিয়েছি।
.
------------------------------

 

দুঃস্বপ্ন দেখলে বা ঘুমের মধ্যে ভয় পেলে সুন্নাহ অনুসারে আমল করবেন; ইনশাআল্লাহ্ কোনো সমস্যা হবে না।

▬▬▬▬▬▬▬◄❖►▬▬▬▬▬▬▬
❑ দুঃস্বপ্ন দেখলে যা করতে হবে:
.
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘‘যখন তোমাদের কেউ এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে অপছন্দ করে, তখন সে যেন তার বাম দিকে তিনবার থুথু নিক্ষেপ করে এবং আল্লাহর নিকট তিনবার শয়তান থেকে আশ্রয় চায় ও (শয়নের) পার্শ্ব পরিবর্তন করে।’’ [মুসলিম, আস-সহিহ: ২২৬২]
.
অন্য বর্ণনায় আরো এসেছে, স্বপ্নটি (খারাপ হলে) কারো নিকট প্রকাশ করবে না। তাহলে সেই স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। খারাপ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে আসে। তবে, তার কোনো প্রিয় ব্যক্তির সাথে বলতে পারে। [বুখারি, আস-সহিহ: ৫৭৪৭]
.
অন্য বর্ণনায় এসেছে, সে তখন উঠে দুই রাকাত (নফল) সালাত আদায় করবে। [তিরমিযি, আস-সুনান: ২২৮০; আবু দাউদ, আস-সুনান: ৫০১৯; হাদিসটি সহিহ]
.
হাদিসের আলোকে আমরা যা করব:
.
১) দুঃস্বপ্ন দেখার পর বাম পাশে তিন বার থুথু ফেলবো। এটি প্রতীকি থুথু; মুখ ভর্তি করে থুথু ফেলতে হবে না। অনেকে ভয় পেলে নিজের বুকে যেভাবে থুথু দেয় মোটামুটি সেভাবে। (ভয় পেলে থুথু মারার কাজটি অর্থহীন)।
২) তিনবার ‘‘আ‘উযুবিল্লাহি মিনাশ শায়ত্বনির রজিম’’ পড়বো।
৩) যে পার্শ্বে ঘুমাচ্ছিলাম, সেটি পরিবর্তন করবো।
৪) খারাপ স্বপ্ন কারো নিকট বর্ণনা করবো না; তবে স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানতে প্রয়োজনে কোন বিজ্ঞ আলেমের দারস্থ হবো।
৫) সম্ভব হলে উঠে দুই রাকাত নফল সালাত আদায় করবো।
৬) ঘুমের পূর্বে কিছু আমল করে ঘুমাবো। যেমন: আয়াতুল কুরসি, সূরা ফালাক-নাস-ইখলাস, ঘুমের দু‘আ ও ঘুমের পূর্বের যিকরগুলো ইত্যাদি।
৭) সম্ভব হলে অজু করে ঘুমাবো।
.
ঘুমের পূর্বের আমলের ব্যাপারে অন্য কোনো দিন আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ্।
.
❑ ঘুমের মধ্যে হঠাৎ ভয় পেয়ে ওঠলে নিচের এই দু‘আটি পড়তে হয়।
.
اَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّاتِ مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِيْنِ وَأَنْ يَحْضُرُوْنِ ‏
.
[আ‘উযু বি কালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মা-তি, মিন গাদ্বাবিহি, ওয়া ‘ইক্বা-বিহি, ওয়া শাররি ‘ইবা-দিহি, ওয়া মিন হামাযা-তিশ শায়া-ত্বীনি, ওয়া আন ইয়াহদ্বুরুন]
.
অর্থ: আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ বাক্যসমূহ দ্বারা আশ্রয় চাই—তাঁর রাগ ও শাস্তি থেকে; তাঁর বান্দাদের অনিষ্ট থেকে; শয়তানদের উসকানি থেকে এবং আমার কাছে তাদের (শয়তানদের) উপস্থিতি থেকে।
.
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তোমাদের কেউ ঘুমের মধ্যে ভয় পেলে, সে যেন বলে (উপরের দু‘আটি)। তা হলে, তারা (জ্বীন শয়তানেরা) তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’’ [তিরমিযি, আস-সহিহ: ৩৫২৮; হাদিসটি হাসান]
.

.....................................................

 

©Tasbeeh
Page link- https://www.facebook.com/TasbeehZikr/

.

©Nusus
Page link- https://www.facebook.com/FromNusus

.

---------------------------

 

#দ্বীনে_ফেরার_গল্প_আমার_রবের_কাছে_ফেরার_গল্প
https://justpaste.it/deen_a_ferar_golpo

.

>> "বিয়ে, রিজিক লাভ, ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি"

https://justpaste.it/5gol5

.

>> ফেসবুক ও ইউটিউবের উপকারী সব পেইজ, গ্রুপ, আইডি এবং চ্যানেলের লিংক

https://justpaste.it/facebook_page_grp_link

.

>> র‍্যান্ড, মডারেট ইসলাম, মডার্নিস্ট মুভমেন্ট

https://justpaste.it/76iwz

.

>> কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক বইয়ের pdf লিংক (৪০০+ বই)

https://justpaste.it/4ne9o

.

>> কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক Apps, YouTube Video, Quran Recitation, YouTube channel.

https://justpaste.it/islamicappvideo

.

>> তাকদির আগে থেকে নির্ধারিত হলে মানুষের বিচার হবে কেন? যাদের কাছে ইসলামের দাওয়াহ পৌঁছেনি তাদের কী হবে?

https://justpaste.it/6q4c3

.

>> কুরআন এবং আপনি

https://justpaste.it/5dds8

.

>> কখনও ঝরে যেও না …

https://justpaste.it/3bt22

.

>> ফজরে আমি উঠতে পারি না

https://justpaste.it/6kjl6

.

>> এই ১০টি ফজিলতপূর্ণ আমল যা আপনার সারাবছরের_ই দৈনন্দিন রুটিনে থাকা উচিত
https://justpaste.it/9hhk1

.

>> ইস্তিগফার অপার সম্ভাবনার দ্বার
https://justpaste.it/6ddvr

.

>> দাম্পত্যজীবন, অজ্ঞতা ও পরিণাম

https://justpaste.it/7u5es

.

>> বিপদাপদে ধৈর্যধারণ : ফজিলত, অর্জনের উপায় ও করণীয়

https://justpaste.it/8dccj

.

>> মহান রবের আশ্রয়ে সিরিজের সকল পর্ব

https://justpaste.it/6ttuf

.

>> স্বার্থক মুনাজাত

https://justpaste.it/1xf0t

.

>> রাসূলের উপর দরুদ ও সালাম পাঠ-সংক্রান্ত ৭ পর্বের একটি সিরিজ

https://justpaste.it/4hhtd

.

>> তাহাজ্জুদ সিরিজ

https://justpaste.it/4ja0n

.

>> মহিমান্বিত কুরআন সিরিজের সকল পর্ব

https://justpaste.it/3dxi7

.

>> ধ্বংসাত্মক দৃষ্টি (বদ নজর সিরিজের সকল পর্ব)

https://justpaste.it/7056k

.

>> বিশুদ্ধ ঈমান সিরিজ

https://justpaste.it/7fh32

.

>> ইমান ভঙ্গের ১০ কারণ

https://justpaste.it/9icuq

.

>> দুশ্চিন্তা ও ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির ১০ আমল

https://justpaste.it/8gmtk

.

>> পর্দায় প্রত্যাবতন: পর্দায় ফেরার গল্প
https://justpaste.it/3lqzf

.

>> দ্বীনে_ফেরার_গল্প_আমার_রবের_কাছে_ফেরার_গল্প

https://justpaste.it/deen_a_ferar_golpo

.

>> নফসের জিহাদ -শায়খ আহমাদ মুসা জিবরীল (হাফিজাহুল্লাহ)

https://justpaste.it/8vnly

.

>> রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর সকাল-সন্ধ্যার দু'আ ও যিকর
https://justpaste.it/sokalsondharjikir

.

>> সালাফদের আত্মশুদ্ধিমূলক বাণী
https://justpaste.it/9e6qh

.
>> সন্তান লাভের ৭ টি গুরুত্বপূর্ণ আমল
https://justpaste.it/9hth5

.
>> Rain Drops, Baseera, Hunafa, Mubashshireen Media ও Ummah Network থেকে প্রকাশিত গুরুত্বপূর্ণ সিরিজগুলোর অডিও ডাউনলোড লিংক
https://justpaste.it/4kes1

.

>> পাপ থেকে বাঁচার ১০ উপায়: যা সকল মুসলিমের জানা আবশ্যক
https://justpaste.it/3ob7j

.

>> ইসলামিক বই, অডিও-ভিডিও লেকচার সিরিজ সহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের লিংকগুলো পাবেন এখানে। সবগুলো বিষয়ের লিংক এক জায়গায় রাখা হয়েছে। এই লিংকটা শেয়ার করতে পারেন। 
https://justpaste.it/48f6m