JustPaste.it

>> ইসলামিক বই, অডিও-ভিডিও লেকচার সিরিজ সহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের লিংকগুলো পাবেন এখানে
https://justpaste.it/48f6m

>> বিবাহের কিছু আমল ও দু‘আ এবং সুখী দাম্পত্যজীবনের জন্য ১০টি করণীয়, স্বামী ও স্ত্রীকে বশ করে রাখার টোটকা
https://justpaste.it/58k7y

>> দুআ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ লেখাসমূহ, দুআ কবুলের সময় শর্তাবলী ও আদবসমূহ, দুআ কবুলের গল্পগুলো
https://justpaste.it/7ttq6

>> দুশ্চিন্তা ও ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির ১০ আমল
https://justpaste.it/8gmtk

.

>> মহান আল্লাহর নাম ও তার অর্থ (আসমাউল হুসনা/ইসমে আজম)
https://www.hadithbd.com/99namesofallah/

.

দু'আ করতে কখনোই ভুলবেন না। যদিও যা নিয়ে দু'আ করছেন বিষয়টি খুব সহজ হয় এবং আপনি কোন অসুবিধা ছাড়াই এটি করতে সক্ষম হন- তাও দু'আ করুন। এমনকি বিপদে না পড়লেও দু'আ করুন।
যে ব্যক্তি স্বাচ্ছন্দ্যের সময় এবং সাধারণ বিষয়ে প্রচুর দু'আ করে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা তাকে কঠিন সময়ে দু'আ করার তাওফিক দান করেন।
নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন—
"সহজ সময়ে আল্লাহকে স্মরণ করো, তিনি তোমাকে কঠিন সময়ে স্মরণ করবেন।"
:
-Dawah

 

> আপনি আপনার ঈমান নিয়ে সচেতন আছেন তো? (https:// www.youtube.com/watch?v=JRz2Y-U9Of8)

> কখনো হাল ছেড়ে দেবেন না (https:// www.youtube.com/watch?v=pfdOFUrdBds)

> মানসিক কষ্টে আছেন? তাহলে আপনার জন্য এই ভিডিও (https:// www.youtube.com/watch?v=xRHB_HWF0VA)

> যে দুআ সকল মুশকিল আহসান করে দেয় (https:// www.youtube.com/watch?v=w2ELr136Ms8)

> আল্লাহকে আঁকড়ে ধরুন (https:// www.youtube.com/watch?v=bVcXL0Y2nwU)

> ঈমান কিভাবে বাড়ে || শাইখ আহমাদুল্লাহ (https:// www.youtube.com/watch?v=1SW-CmCrAxc)

> কবরের আযাবের কারণ সমূহ এবং মুক্তি লাভের ৪টি আমল -শাইখ আহমাদুল্লাহ (https:// www.youtube.com/watch?v=7NJWfyULm-E)

> রিযিক ও হায়াত চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত, তাহলে নেক আমলে হায়াত বা রিযিক বাড়ে কিভাবে? (https:// www.youtube.com/watch?v=FnqDKMBDyNo)

> আল্লাহর ব্যাপারে সুধারণা । শাইখ খালিদ আর রাশিদ (https:// www.youtube.com/watch?v=kMpeNim2bNM)

> আল্লাহর উপর ভালো ধারণা রাখার কারণে লোকটার শেষ পর্যন্ত কি হলো? (https:// www.youtube.com/watch?v=Z26zhMXklRA)

> কুরআন মাজীদ পাঠকারীদের কোন ভয় নেই (https:// www.youtube.com/watch?v=cFVIGtp-08k)

> আপনার দুঃখ-দুর্দশা কী কারণে? জবাব জানতে ভিডিওটি মনযোগ দিয়ে দেখুন৷ (https:// www.youtube.com/watch?v=HtlGA8tKkyw&t=195s)

> সুসংবাদ গুরাবাদের জন্য । শাইখ খালিদ আর রাশিদ (https:// www.youtube.com/watch?v=Xzx-TCquDtc)

> ডিপ্রেশনে ডুবে থাকা আল্লাহর বান্দাদের প্রতি নসীহত (https:// www.youtube.com/watch?v=Hgma0ZgLLac)

> আল্লাহ কারো উপর কোন কিছু চাপিয়ে দেন না । মুহাম্মাদ হবলস (https:// www.youtube.com/watch?v=PBlG6N42eqQ)

> আল্লাহ কেন মানুষকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলেন? (https:// www.youtube.com/watch?v=01kvNBji9d4)

> দু'আর শক্তি - মুফতি মেঙ্ক (https:// www.youtube.com/watch?v=oSJwgxSSm5k)

> সম্পদের কারণে দ্বীন বিচ্যুতি ║ শায়খ বেলাল আসাদ (https:// www.youtube.com/watch?v=jqT1hPTymX4)

> বিয়ের জন্য পাত্র-পাত্রী নির্বাচন || শাইখ আহমাদুল্লাহ (https:// www.youtube.com/watch?v=KNrJYco28YQ)

> পাত্র-পাত্রী নির্বাচনে যে ভুলের মাশুল পরে দিতে হয় ।। শাইখ আহমাদুল্লাহ (https:// www.youtube.com/watch?v=8m3Xc4x2X9o)

> দুঃখ- কষ্ট, দুশ্চিন্তা ও হতাশা থেকে মুক্তির সহজ উপায় (https:// www.youtube.com/watch?v=-H3MnO2b7Go)

> আল্লাহর নৈকট্য লাভের শ্রেষ্ঠ সময় (https:// www.youtube.com/watch?v=_HOStsKvDdA)

> দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী | Shaikh Tamim Al Adnani (https:// www.youtube.com/watch?v=caiSq3F6V7s)

.

>> কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক Apps, YouTube Video, Quran Recitation, YouTube channel.

https://justpaste.it/islamicappvideo

>> সাকানা মাওয়াদ্দাহ রহমাহ!

https://justpaste.it/5szoc

.

> বিবাহের পূর্বে ৭টি প্রস্তুতি নিন, ইন শা আল্লাহ সুখী দাম্পত্য লাভ করবেন
https:// www.youtube.com/watch?v=A65AcOmnNiA

> বাবা মা বিবাহে বিলম্ব করলে বা অপাত্রে বিয়ে করতে বাধ্য করলে করণীয়
https:// www.youtube.com/watch?v=I4-fa6pnH9E

> বিয়ের উদ্দেশ্যে প্রেম করলে কি গুনাহ হবে? প্রেম করে বিয়ে করলে প্রেমের গুনাহ কি মাফ হয়ে যায়?
https:// www.youtube.com/watch?v=6TlaSmtRzL0

> স্বামী স্ত্রীর মিল মুহাব্বত সৃষ্টির ৬ টি অব্যর্থ আমল

https:// www.youtube.com/watch?v=2Ne6BNf7IvI&t=408s

.

>> উত্তম ও পবিত্র জীবনসঙ্গী পাওয়ার জন্য আমরা কি করব।

সবাই নিজের জীবনে উত্তম-পবিত্র জীবনসঙ্গী চাই, কিন্তু তা কখনো নিজ ইচ্ছায় চাইলেই পাওয়া যায় না, আল্লাহ যদি চাই তাহলেই পাওয়া যায়। আল্লাহর পক্ষে আপনার ধারণা থেকেও উত্তম কিছু দেওয়া কোন ব্যাপার না। তাই শুধু তাঁরই অভিমুখি হোন। তাঁর কাছেই চাইতে থাকুন। শুধু শুধু অকারণেই চিন্তা করে কোনো লাভ হবে না।

মনে রাখবেন, আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া'তায়ালা যদি না চান করেন, তাহলে তা কখনোই ঘটবে না। আবার, আল্লাহ্ তা'আলা যদি চান তাহলে কেউই তা রুখতে পারবে না, যতোই প্রতিকূলতা থাক না কেন। তাই, যিনি দিতে পারবেন, তাঁর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করুন, শুধু তাঁর রহমতের জন্য নিজের জীবনকে প্রস্তুত করেন,রবের আদেশ পালনে সর্বদা নিজের নফসকে(আত্মা) নিয়োজিত রাখেন।

আর যেহেতু দু'আর মাধ্যমে ভাগ্য পরিবর্তন হওয়ার সুযোগ রয়েছে, তাই আমাদের উচিত সর্বদা দোয়া করে আল্লাহর কাছে চাওয়া এবং সেই অনুযায়ী আমল করা। এই যেমন, নেককার জীবনসঙ্গী পাওয়ার দোয়া, উত্তম স্বামী পাওয়ার দোয়া, নেককার স্ত্রী পাওয়ার দোয়া ইত্যাদি।

১.
অতিদ্রুত হালাল, উত্তম ও সম্মানজনক রুজি এবং উত্তম ও দ্বীনদার স্ত্রী পাওয়ার জন্য বেশি করে মুসা 'আলাইহিস সালাম এর দোয়াটি পড়তে পারেন:

َ رَبِّ اِنِّیۡ لِمَاۤ اَنۡزَلۡتَ اِلَیَّ مِنۡ خَیۡرٍ فَقِیۡرٌ
অর্থ: হে আমার পালনকর্তা, তুমি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ নাযিল করবে, আমি তার মুখাপেক্ষী। - (আল-কাসাস ২৮:২৪)

২.
উত্তম জীবনসঙ্গী, নেককার সন্তান-সন্ততির জন্য নিচের দোয়টি গুরুত্বপূর্ণ একটি :

رَبَّنَا هَبۡ لَنَا مِنۡ اَزۡوَاجِنَا وَذُرِّیّٰتِنَا قُرَّۃَ اَعۡیُنٍ وَّاجۡعَلۡنَا لِلۡمُتَّقِیۡنَ اِمَامًا .
হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ কর। - (আল ফুরকান ২৫:৭৪)

৩.
বেশি বেশি তাওবা ও ইস্তিগফার করুন। কারণ এটা রিজিক বৃদ্ধির অন্যতম একটি আমল। আর, আপনার জীবনের প্রতিটি নিয়ামত ও প্রশান্তি আপনার রিজিকেরই অন্তর্ভুক্ত।

৪.
সবসময় তাহাজ্জুদ পড়ে আল্লাহর নিকট সাহায্য চান। কারণ এটা দ্রুত বিয়ে ও দ্বীনদার স্বামী/স্ত্রী পাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ আমল।

৫.
বিবাহ প্রয়োজন এমন মুসলিম ভাইবোনদের জন্য দোয়া করুন ও তাদের জন্য চেষ্টা করুন। কারণ কোন মুসলিম ভাইয়ের জন্য দোয়া করলে ফেরেশতারা‌ও আপনার জন্য দোয়া করবেন। আর তাদেরকে সাহায্য করলে, আল্লাহ্ তা'আলা আপনাকে সাহায্য করবেন।

৬.
দুনিয়া ও আখিরাতের সমস্ত কল্যাণের জন্য এবং সমস্ত অকল্যাণ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বেশি বেশি নিচের দোয়াটি পড়ুন:

'রব্বানা আতিনা ফিদ্ দুন‌ইয়া 'হাসানাহ ওয়া ফিল আখিরতি 'হাসানাহ ওয়াকিনা আযাবান নার'।

সর্বোপরি আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল রেখে হালাল পন্থায় ভালো স্বামী/স্ত্রী পাওয়ার চেষ্টা করতে থাকুন। কারণ এক্ষেত্রে দোয়া,আমল ও আল্লাহর প্রতি আস্থা রাখাই মূল বিষয়। এছাড়া পবিত্র ও দ্বীনদার স্বামী/স্ত্রী পেতে নিজেকেও পবিত্র রাখতে হবে।

অর্থাৎ উওম জীবনসঙ্গী পেতে আল্লাহর নিকট দোয়া করাই ‌সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। কারণ আমাদের সকল সমস্যা সমাধানে দোয়া খুবই কার্যকরি।দোয়ার মাধম্যেই আমরা আমাদের জীবনে উওম জীবনসঙ্গী পেতে পারি।
"আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া'তায়ালা আমাদেরকে বেশি বেশি দোয়া করা এবং সেই অনুযায়ী আমল করার তৌফিক দান করুক।"
(আমিন)

-------------------------------

 

দ্রুত বিয়ের আমল

দ্রুত বিয়ের আমল
১. বেশি বেশি ইস্তেগফার করা। যথাসম্ভব সার্বক্ষণিক এস্তেগফার করা। উঠতে বসতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে থাকা।
২. সুরা ফুরকানের ৭৪ নং আয়াতটা পড়তে পারি। প্রতি ফরজ নামাজের পর তো বটেই, সুযোগ পেলেই দোয়াটি গভীর আবেগ নিয়ে পড়তে পারি।
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
৩. সুরা কাসাসের ২৪ আয়াতে বর্ণিত দোয়াটাও বেশি বেশি পড়তে পারি,
رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنْزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ
এই দোয়ায় বিয়ে, বিবিবাচ্চা, চাকুরি, ঘরবাড়ি সবকিছুর ব্যবস্থা হয়ে যাবে। ইন শা আল্লাহ।
৪. বেশি বেশি দোয়া করা। বিশেষ করে দুয়া কবুল হওয়ার সময়গুলো একটাও দোয়াবিহীন না যায়।
৫. আমল-দোয়ার পাশাপাশি হালাল পন্থায় পাত্র/পাত্রীর খোঁজ করাও জরুরী।
৬. অনেক সময় জাদু-সিহর করে বিয়ে আটকে রাখা হয়। এজন্য রুকইয়া করা।
৭. নিয়মিত সদকা করা।
৮. অন্য মুসলিম ভাইবোনের জন্য বিয়ের দোয়া করা।
৯. মা-বাবার সাথে ভালো সম্পর্ক রাখাও জরুরি।

---------------

রি‌যিক ও চাকুরী পাওয়ার বি‌শেষ আমল 
প্রশ্ন : 
আমি ব্যাংকার হিসেবে কর্মরত ছিলাম। উচ্চতর পড়াশোনার জন্য এবং মূলত হারাম উপার্জন থেকে দূরে থাকার জন্য এ চাকরি টি স্ব-ইচ্ছায় ছেড়ে দেই। এখন আমি সম্পূর্ণ কর্মহীন অবস্থায় আছি। কোন কাজ ই জুটাতে পারছিনা। হালাল রুজি/ জীবিকার কোন আমল থাকলে জানাবেন।
জবাব : 
ইন্না লিল্লা‌হি ওয়াইন্না ইলাই‌হি রা‌জেউন!
আল্লাহ তাআলা আপনার জন্য দ্রুত হালাল রু‌জির ব্যবস্থা ক‌রে‌ দিন।
আপ‌নি কয়েক‌টি কাজ কর‌তে থাকুন : 
১) জামাআ‌তের সা‌থে সুন্দর ক‌রে ফরয নামাযগু‌লো আদায় করুন।
২) চাকু‌রিকে উ‌দ্দেশ্য ক‌রে সালাতুল হাজত নফল নামায পড়ুন। 
কারণ, নামাযের এহতেমাম দ্রুত রি‌যিক আনয়ন ক‌রে।
৩) কো‌নো বড় গোনাহর বদ অভ্যাস থাকলে প‌রিত্যাগ ক‌রুন। কারণ, গোনাহ যথাসম‌য়ে রি‌যি‌ক পৌঁছ‌তে বাধা সৃ‌ষ্টি ক‌রে।
৪) বে‌শি বে‌শি ই‌স্তিগফার করুন। ই‌স্তিগফার পে‌রেশানী দূর ক‌রে এবং রি‌যিক সুপ্রসন্ন ক‌রে।
৫) মা-বাবা আত্মীয় স্বজন‌দের খোঁজখবর নিন। কারণ, হায়াত ও রি‌যিক বৃ‌দ্ধি‌তে এর শ‌ক্তিশালী প্রভাব র‌য়ে‌ছে।
এর সবই কুরআন সুন্নাহয় ব‌র্ণিত আমল। 
৬) সর্বাত্মক হালাল রোযকারের তালাশে লে‌গে থাকুন। 
৭) আর এ দুআ নিয়‌মিত করুন : 
رَبِّ إِنِّی لِمَاۤ أَنزَلۡتَ إِلَیَّ مِنۡ خَیۡرࣲ فَقِیرࣱ.
"‌হে আল্লাহ, তু‌মি আমার জন্য যে রি‌যিক না‌যিল ক‌রেছ, আ‌মি তার খুব মুখা‌পেক্ষী।" 
হযরত মূসা আ. মিশর ছে‌ড়ে যখন কেনান গমন ক‌রেন, তখন তি‌নি এ দুআ ক‌রে‌ছি‌লেন। এ‌তে তাঁর জন্য আল্লাহ তাআলা ১০বছ‌রের চাকুরির ব্যবস্থা ক‌রে দি‌য়ে‌ছি‌লেন। সা‌থে একটা বউ, তথা হযরত শুআইব আ. কন্যা!
পূর্ণ বিশ্বা‌স ও আন্থার সা‌থে আমলগু‌লো কর‌তে থাকুন। ইনশাআল্লাহ, দ্রুত রি‌যি‌কের ব্যবস্থা হ‌বে। 
আর হাঁ, কিছু সময় তাবলীগ জামাআ‌তের সা‌থে আল্লাহর রাস্তায় লা‌গি‌য়ে আসুন। অথবা কো‌নো আল্লাহওয়ালার কা‌ছে থে‌কে আসুন।
আল্লাহ তাআলা আপনার সহায় হোন।
-Saifuddin Gazi

.

যে চৌদ্দটি আমলে রিযিক বাড়ে! দেখুন নিচের দিকে দেয়া আছে।

--------------------

 

>> কাউকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়ার জন্য দোয়া করা

কোন ছেলে অথবা মেয়ে একে অন্যকে পছন্দ করে, ভালো লাগে এবং তারা কোন রকম হারাম সম্পর্কে জড়ানো ছাড়া শুধুমাত্র আল্লাহর কাছে দোয়া করেন সেই কাঙ্ক্ষিত ও পছন্দ হওয়া মানুষটিকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়ার জন্য। তার সঙ্গে বিবাহ যেনো আল্লাহ রব্বুল আলামীন সহজ করে দেন, ব্যবস্হা করে দেন। এরকম দোয়া করা তাদের জন্য জায়েজ আছে কিনা??
এই প্রশ্নের উত্তরে আমরা সহীহ মুসলিমের একটা হাদিস উল্লেখ করতে পারি যেখানে রসূল (ﷺ) বলেছেন, “ বান্দার দোয়া আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করতে থাকেন যতক্ষণ না —
• বান্দা পাপ কাজের জন্য দোয়া করে, 
• তাড়াহুড়া না করে, 
• আত্নীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন না করে।
তাহলে এখান থেকে বুঝা গেল এই তিনটি বিষয় ছাড়া আল্লাহর কাছে যেকোন দোয়া করা যেতে পারে। এই হাদিসের আলোকে আমরা বলতে পারি সুনির্দিষ্ট করে কাউকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করায় ইসলামি শরীয়তে মৌলিকভাবে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। এভাবে দোয়া করা যেতে পারে। 
তবে সেক্ষেত্রে ইসলামি শরীয়াহ একজন মুসলিমকে পরামর্শ দেয় তিনি যেনো আল্লাহর কাছে কিছুটা শর্ত জুড়ে দিয়ে কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়ার দোয়া করেন। অর্থাৎ আল্লাহ ওমুক ব্যক্তিকে আমার জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়াটা যদি সার্বিকভাবে কল্যাণকর হয় তাহলে তাঁকে পাওয়াটা সহজ করে দিন। এভাবে দোয়া করাটা তাঁর নিজের জন্য সার্বিকভাবে ভালো এবং উপকারী। 
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বলেন - “ আর হতে পারে কোন বিষয় তোমরা পছন্দ করছ অথচ তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আর আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না ”। [সূরা বাকারা : ২১৬] 
সহীহ বুখারীর একটি হাদিসে আল্লাহর রসূল (ﷺ) ইস্তিখারা করার শিক্ষা দিয়েছেন যার অর্থ দুনিয়াবি যেকোন কাজে আল্লাহর কাছে মঙ্গল ও কল্যাণ কামনা করা। সেই দোয়াটির একটি অংশ হল - “ দুনিয়ায় আমার বর্তমান ও ভবিষ্যতের দিক দিয়ে আপনি আমার জন্য অমঙ্গলজনক মনে করেন, তবে আপনি তা আমা হতে ফিরিয়ে নিন। আমাকেও তা হতে ফিরিয়ে রাখুন। আর যেখানেই হোক, আমার জন্য মঙ্গলজনক কাজ নির্ধারিত করে দিন। তারপর আমাকে আপনার নির্ধারিত কাজের প্রতি তৃপ্ত রাখুন ”। [বুখারী : ৬৩৮২]
অতএব নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তিকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়ার জন্য দোয়া করাতে ইসলামি শরীয়তে কোন বাঁধা নেই। তবে শর্ত জুড়ে দিয়ে এভাবে দোয়া করা হয় আল্লাহ তার সাথে বিবাহে যদি আমার কল্যাণ লিখা থাকে তাহলে তা সহজ করে দিন, অন্যথায় আমার মন থেকে তাঁকে মুছে দিন। এরকম দোয়া করাটা বেশি উপকারী ও কল্যাণকর। 
আর কোন অবস্থাতেই তার সাথে হারাম সম্পর্কে জড়ানোর জন্য দোয়া করা যাবে না। তাহলে সেটি গুনাহের কারণ হবে। 
[বি.দ্র : কাউকে পছন্দ হলে তার বাসায় দ্রুত বিয়ের প্রস্তাব পাঠানোটাই কল্যাণকর, না হয় সেখানে ফিতনার দ্বার উন্মোচিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল ]
.
|| কাউকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়ার জন্য দোয়া 
করা ||
মূল : শায়খ আহমাদুল্লাহ

---------------------------------

 

>> পছন্দের কাউকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন? আপনার জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা।

.
জীবনসঙ্গী নির্বাচন করতে গিয়ে আমরা অনেকেই একটি বড় ভুল করি। সেটি হলো, কারো বাহ্যিক দ্বিনদারি/ভালোমানুষী দেখে তার ব্যাপারে প্রচণ্ড মুগ্ধ হয়ে যাওয়া। এ প্রসঙ্গে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা:
.
এক.
যে ছেলেকে বাহ্যিকভাবে দেখে আপনি দুর্বল হয়ে গেছেন, তার অভ্যন্তরীণ দ্বিনদারির অবস্থা তেমন ভালো না-ও হতে পারে। হতে পারে, সে নামাজের ব্যাপারে উদাসীন। বিশেষত ফরজের বাইরে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামাজের ব্যাপারে তার মধ্যে হয়ত তেমন সিরিয়াসনেস নেই। হতে পারে, সে দৃষ্টির হেফাজত করে না। এমনও হতে পারে, সে আসলে প্রচণ্ড অহংকারী—স্ত্রীর মতামতকে ভবিষ্যতে পাত্তাও দেবে না। অপরদিকে এমনও হতে পারে: আপনার বাছাইকৃত মেয়েটি গায়রে মাহরাম মেন্টেইন করে না। হয়ত সে গিবত করাকে নিজের অভ্যাসে পরিণত করেছে। হতে পারে, সে বিভিন্ন সিরিয়াল দেখায় আসক্ত। এমনও হতে পারে, সে বাবা-মারই আনুগত্য করে না; ভবিষ্যতে আপনার কথা শুনবে, তারও নিশ্চয়তা নেই। এমন অনেক অজানা সমস্যা থাকতে পারে, যেগুলো জানতে পারলে তার প্রতি আপনার মুগ্ধতা হাওয়া হয়ে যাবে।
.
দুই.
এ-তো গেলো, তার অভ্যন্তরীণ দ্বীনদারির অবস্থা। তার দুনিয়ার জীবনেও হয়তো বড় কোনো দুর্বলতা আছে, যা আপনি বাহ্যিকভাবে বুঝতে পারছেন না। হতে পারে, তার চোখ দুটো দুনিয়াবি কামনা-বাসনায় পরিপূর্ণ, যা সে অন্যকে বুঝতে দেয় না। তার মধ্যে থাকতে পারে বিরক্তিকর কোন বদ-অভ্যাস, যা তার সাথে গভীরভাবে না মেশা পর্যন্ত কেউ বুঝতে পারবে না।
.
তিন.
শুরুর কথাগুলোতে ফিরে যাই। যার বাহ্যিক দ্বীনদারি দেখে আপনি মুগ্ধ, তার অজানা অনেক সমস্যা আপনি জানেন না। ফলে আপনার মুগ্ধতা দিনে দিনে এতটাই বেড়ে যাচ্ছে যে, আপনি ভাবতেও পারছেন না—আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা তার চেয়েও দ্বিনদার এবং বেটার কাউকে আপনার জন্য মিলিয়ে দিতে পারেন। ব্যক্তিবিশেষের প্রতি মুগ্ধতার কারণে আপনি নিজেকে এক পর্যায়ে খুবই সস্তা ভাবতে শুরু করবেন। এমনকি আপনার ভেতর থেকে আত্মমর্যাদাবোধের মতো গুরুত্বপূর্ণ গুণটি নিঃশেষ হতে থাকবে।
.
চার.
তাহলে সমাধান কী?
ইসলামই সমাধান। ইসলাম আমাদের শিক্ষা দিয়েছে, ব্যক্তিবিশেষের জন্য পাগলপারা হওয়া যাবে না; বরং চক্ষুশীতলকারী (قُرَّةُ أَعْيُنْ) কাউকে জীবনসঙ্গী করার জন্য আল্লাহর কাছে চাইতে হবে।
.
চক্ষুশীতলকারী মানে কি? এর মানে, যাকে দেখলে আপনার চোখ শীতল হয়ে যাবে! আপনি তাকে দেখলে তৃপ্তি পাবেন। তার সাহচর্যকে নিয়ামত মনে করবেন। ‘চক্ষুশীতলকারী’ এমন একটি ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ, যা ব্যক্তির মধ্যে দ্বিনি ও দুনিয়াবি কল্যাণসমূহকে অন্তর্ভুক্ত করে। এক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তিবিশেষকে নয়, সাধারণভাবে এই গুণবিশিষ্ট কাউকে আল্লাহর নিকট চাইতে হবে বেশি করে। মাথা থেকে এই ধারণা সরাতে হবে যে, ‘অমুকের চেয়ে ভালো কীভাবে পাব? অমুক তো আমার পরীক্ষিত’ ইত্যাদি। আল্লাহর কাছে বলুন, ‘আল্লাহ! আমার জন্য যে উত্তম হবে, তাকেই মিলিয়ে দাও।’ আরো বলবেন, ‘এমন কাউকে মিলিয়ে দাও, যার উপর তুমি সন্তুষ্ট এবং আমরা পরস্পরের উপর সন্তুষ্ট থাকবো।’ এভাবে কাউকে নির্দিষ্ট না করে ব্যাপকভাবে আল্লাহর কাছে চান। নিজে চেয়ে নিজেই পরে আফসোস করার দরকার নেই।
.
প্রশ্ন আসতে পারে : তাহলে কি ‘নির্দিষ্ট’ কাউকে আল্লাহর কাছে চাওয়া জায়েয নেই? উত্তরে আলিমগণ বলেন, হ্যাঁ জায়েয। বিশেষত, কারও ব্যাপারে খুব ভালো জানাশোনা থাকলে, তাকে আল্লাহর কাছে চাওয়াতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু সমস্যা হলো, আমরা অনেকেই এক্ষেত্রে আবেগের কাছে হেরে যাই। বাহ্যিক কিছু বৈশিষ্ট দেখে ফিদা হয়ে যাই। তাই, নিরাপদ হলো, আল্লাহর কাছেই নিজের পছন্দকে সোপর্দ করে দেওয়া। তার মানে কিন্তু এই না যে, আমরা খোঁজখবর নেবো না। নেবো।
.
পাঁচ.
আল্লাহর নির্ধারিত তাকদিরকে কেউ অতিক্রম করতে পারবে না। স্বাভাবিক দৃষ্টিতে যতই সম্ভাবনাময় মনে হোক-না কেনো, তাকদিরের ফয়সালা না থাকলে নির্দিষ্ট কাউকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়া সম্ভব নয়। এমতাবস্থায়, আমরা যখন কাউকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করি, আর সেই স্বপ্নটা ভাগ্যের বাস্তবতায় এসে ভেঙে যায়, তখন হতাশ হয়ে পড়ি। এজন্য আমাদের কখনই উচিত নয়, নির্দিষ্ট কাউকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা বা তার জন্য মালিকের দরবারে দু‘আ করা; বরং আমরা সাধারণভাবে ‘চক্ষুশীতলকারী’ কাউকে কামনা করবো এবং সেই অদেখা-অচেনা চক্ষুশীতলকারীর জন্য আল্লাহর নিকট ফরিয়াদ জানাবো। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা‘আলা বান্দাকে পরিতৃপ্ত করেন। এটুকু বিশ্বাস রাখতে হবে যে, আল্লাহর জন্য এটা কোনো ব্যাপারই না যে, তিনি উত্তম কাউকে মুহূর্তের মধ্যেই মিলিয়ে দিতে পারেন। অতএব, আল্লাহ্ ‘আযযা ওয়া জাল্লার উপর পূর্ণ ভরসা রাখতে হবে।
.
হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, ‘‘আমার ব্যাপারে বান্দা যেমন ধারণা রাখে, আমি তার সাথে তেমনই (আচরণ করি)। আর সে যখন আমার নিকট দু‘আ করে, তখন আমি তার সাথেই থাকি।’’ [মুসলিম, আস-সহিহ: ২৬৭৫; তিরমিযি, আস-সুনান: ২৩৮৮; আহমাদ, আল-মুসনাদ: ৯৭৪৯]
.
অতএব, আল্লাহর সক্ষমতার সামনে নিজের মুগ্ধতা, বাস্তবতা—সবকিছুকে তুচ্ছজ্ঞান করতে হবে এবং তাঁর (আল্লাহর) ব্যাপারে সর্বোত্তম ধারণা রেখে উত্তম জীবনসঙ্গীর জন্য অবিরত দু‘আ করে যেতে হবে। পাশাপাশি, নিজেকেও সেভাবে প্রস্তুত করতে হবে। নেককার জীবনসঙ্গী চাওয়ার বিভিন্ন দু‘আ কুরআন-হাদিসে আছে। সেগুলো আমল করতে হবে। পাশাপাশি সকল গুনাহ, অবৈধ চ্যাটিং, কথা-বার্তা, কুদৃষ্টি থেকে বেঁচে থাকতে হবে। আল্লাহ্ আমাদের নেক মনোবাসনা পূর্ণ করুন। আমিন।
.
------------------------------

 

"বিয়ে, রিজিক লাভ, ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি"

.
আমি তখন জালালাইন জামাতের ছাত্র। জালালাইন (একটি তাফসীরগ্রন্থ) এর দারসে আমাদের উস্তাদে মুহতারাম মুফতী শাফিকুল ইসলাম একটি ঘটনা শেয়ার করলেন তার নিজের জীবন থেকে। দীর্ঘদিন তার সন্তান হয় না। (তিনি সময়টা বলেছিলেন সম্ভবত ১৭ বছর) একদিন তিনি হাদিসে পেলেন এস্তেগফার এর ফজীলত। আমল শুরু করলেন। দীর্ঘকাল পর যখন স্বামী স্ত্রী প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন সকল চেষ্টা-প্রচেষ্টার পর, তাদের হয়ত সন্তান হবেই না। তখন এই আমলের বরকতে তাদের কোলজুড়ে সন্তান এলো।
.
আমি আমার ব্যক্তিজীবনের নানা পেরেশানি ও মুসিবত থেকে মুক্তি পেয়েছি এই এস্তেগফার এর সুবাদেই। এতো গেলো একজন গোণাহগারের জীবনের কথা। এবার শুনুন সোনালি যুগের (সাহাবী ও তাবেয়ীনদের যুগ) এর একটি ঘটনা। 
.
একবার হাসান বসরী রাহ. এর কাছে এক ব্যক্তি জানালো “ আমার ফসলে খরা লেগেছে। আমাকে আমল দিন” হাসান বসরী তাকে বললেন এস্তেগফার করো। কিছুক্ষণ পর আরেক ব্যক্তি এসে অভিযোগ পেশ করল “আমি গরীব। আমাকে রিজক এর আমল দিন” হাসান রহ. তাকেও বললেন, "এস্তেগফার করো"। এমনিভাবে অপর এক ব্যক্তি এসে সন্তান হওয়ার আমল চাইলে তিনি বললেন, "এস্তেগফার করো।" উপস্থিত ছাত্ররা জিজ্ঞেস করল, “সবাইকে এক পরামর্শই দিলেন যে?” বিখ্যাত তাবেয়ী হাসান বসরী রহ. বললেন “আমি নিজের পক্ষ থেকে কিছুই বলিনি। এটা বরং আল্লাহ তায়ালা তার কুরআনে শিখিয়েছেন । তারপর তিনি সুরা নুহ এর আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন। (তাফসীরে কুরতুবী ১৮/৩০৩)
.
فَقُلْتُ اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ إِنَّهُ كَانَ غَفَّارًا. يُرْسِلِ السَّمَاءَ عَلَيْكُمْ مِدْرَارًا. وَيُمْدِدْكُمْ بِأَمْوَالٍ وَبَنِينَ وَيَجْعَلْ لَكُمْ جَنَّاتٍ وَيَجْعَلْ لَكُمْ أَنْهَارًا
.
নুহ আ. বললেন “তোমরা তোমাদের রবের কাছে এস্তেগফার করো। ( ক্ষমা চাও) নিশ্চয় তিনি অতি ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের উপর অজস্র বারিধারা বর্ষণ করবেন। তিনি তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বৃদ্ধির মাধ্যমে তোমাদের সাহায্য করবেন। তোমাদের জন্যে উদ্যান তৈরি করবেন, তোমাদের জন্যে নদীনালা প্রবাহিত করবেন।” (সুরা নূহ- ১০-১২)
.
এই আয়াতের দ্বারা আমরা এস্তেগফার এর যেসব উপকারিতা জানতে পারলাম। তার মধ্যে দুটি হচ্ছে ১- রিজক বৃদ্ধি ২- সন্তান লাভ। যেহেতু সন্তান বিয়ের মাধ্যমেই হয়। সুতরাং এস্তেগফারের দ্বারা বিয়ের ব্যবস্থাও আল্লাহ করে দিবেন।
.
এছাড়া অন্য আয়াতে বলেন, لَوْلَا تَسْتَغْفِرُونَ اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ 
.
সালেহ আ. বলেন “তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কেন করছ না, যাতে করে তোমরা রহমতপ্রাপ্ত হও।’’ (সুরা নমল-৪৬)
.
যারা পেরেশানি, হতাশা, ডিপ্রেশন, sadness, loneliness ইত্যাদি নানা সমস্যার সম্মুখীন, তারা এস্তেগফারকে ‘লাযেম’ করে নিন। লাযেম মানে হচ্ছে, আপনি দিনে রাতে যথাসম্ভব এস্তেগফারকে নিজের অবিচ্ছেদ্য অংশ বানিয়ে নিন। উঠতে বসতে এস্তেগফার করতে থাকুন। আল্লাহ তায়ালা সকল পেরেশানি ও মানসিক কষ্ট দূর করে দিবেন ইনশা আল্লাহ।
.
ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা। বলেন “যে ব্যক্তি নিজের জন্যে এস্তেগফারকে লাযেম করে নিল, আল্লাহ তায়ালা তাকে যে কোন সংকটে পথ দেখাবেন। যে কোন ধরনের পেরেশানী ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত করবেন। এবং তাকে এমন উৎস থেকে রিযিক দান করবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারবে না।"
.
লিখেছেনঃ শায়খ Abdullah Al Mahmud

-------------------------------

 

>> আল্লাহর কাছে প্রচুর দোয়া ও কান্না করতাম

আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ্! আপু আমি আসলে আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা আপনার সাথে শেয়ার করছি আশা করি আপনার কিছুটা হলেও উপকার হবে ইনশাআল্লাহ্! আমার মা নেই আজ ৫ বছর।বাবা বিয়ে করেছেন। আমি যখন ডিগ্রি ফাস্ট ইয়ারে পড়ি তখন আম্মা মারা যান।আমার চলার পথটা সহজ ছিল না।আম্মা থাকাকালীন সময় থেকেই আমার জন্য প্রচুর বিয়ে আসত ও আম্মা মারা যাওয়ার পর তো এর মাত্রা আরো বেড়ে যায়।আমি খুবই ক্লিয়ারলি কথা বলি সবসময়। যখন থেকে দ্বীন মানা শুরু করি তখন থেকেই বিয়ের কথা হলে বলতাম দ্বীন মানে এমন কারো জীবনসঙ্গিনী হতে চাই অন্য কোন প্রস্তাব মানা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। এমনিতেই মা নেই তারপর আবার বিয়ে প্রচুর ঝড় গেছে আমার উপর দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ! একেকটা ঝড় একেকটা নসিহত ছিল আমার জন্য আলহামদুলিল্লাহ্! আমার বিয়েটা আমাকে দেয়া আল্লাহর অন্যতম একটা বেস্ট নিয়ামত।ছোট বেলাতে শোনতাম মা-বাবা মরা মেয়েদের বিয়ে হয় না। আমার ক্ষেত্রে উল্টো হল।এত পরিমান বিয়ে আসত ডাক্তার, ইন্জ্ঞিনিয়ার, ব্যাংকার,ব্যবসায়ী, চাকুরীজীবি কোন প্রস্তাবই বাকি নাই আর আমি সব রিজেক্টে করতাম দুনিয়াবি হওয়ার কারণে।সবাই বলত এই মেয়েকে কে বিয়ে করবে সবার মুখের উপর কথা বলে।এমনও হয়েছে মানুষ বলত কৈ বিয়ে হয় দেখব। আর আমি তাদের কথা কানে না দিয়ে আল্লাহর কাছে প্রচুর দোয়া ও কান্না করতাম।আমি দুনিয়া চাই নি আমি শুধু আল্লাহর ভালবাসা ও তার সান্নিধ্য চেয়েছি।আমার আল্লাহ আমাকে নিরাশ করেনি।আমি যা চেয়ে এর চেয়ে কোটিকোটি গুণ বেশি কিছু পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ! আমার ফুফির বাড়িতে আমি ওয়াজ শুনতে যাই। তার এক জা আমাকে দেখেন ও উনার ছোট বোনের বরের মাধ্যমে আমার বিয়ের ঘটকালি করেণ।এক শুক্রবারে আমায় আমার বরে দেখে যান সবাইকে তাক লাগিয়ে পরের শুক্রবারই আমার বিয়ে হয়ে যায় পুরো সুন্নত তরিকায় মসজিদে।আমাদের এলাকার সবাই অবাক হয়ে যায় আমার বিয়ে দেখে।জানেন আমি আমার বাবার বাড়ি থেকে কোন একটা সুতার নালও নেই নাই।আর বিয়ের আগে আমার বাবাকে বলি যে আমাকে কোনকিছু দেয়ার চেষ্টা করলে আমার বিয়ের দরকার নেই।আমার বরও ক্লিয়ারলি কিছু নিবে না বলে বিয়ে করেছেন আমাকে।আলহামদুলিল্লাহ্! আল্লাহ্ আমাকে অনেক সুখ দিয়েছেন। মা হারিয়েছি ঠিক কিন্তু মায়ের মত এক শাশুড়ি পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ্! আল্লাহ পাক বলেন 'লা তাহ্জান'হতাশ হবেন না।আপু মনোবল দৃঢ় রাখুন।আপনার আচার - আচরণ ও চাল-চলনে বুঝিয়ে দিন আপনি সত্যিই দ্বীন মেনে চলার চেষ্টা করছেন। আর গলায় ছুরি দিলেও বদদ্বীন কারো জীবনসঙ্গীনী হতে চান না সেটাও আপনার মাকে বলুন।এখন ওয়াজ শোনার মৌসুম চলছে বাসার আশেপাশে ওয়াজ হলে সেটা শুনতে চলে যান ছোট ভাই-বোনকে সাথে করে নিয়ে মাকেও নিয়ে যেতে পারেন মন নরম হবে ইনশাআল্লাহ্! টিভি দেখার অভ্যাস থাকলে একেবারে ছেড়ে দেন। ভাল কিতাব গুলো পড়েন কিনে। বিভিন্ন দোয়া যেমন বাইরে-ঘরে যাওয়ার,টয়লেটে যাওয়ার,ঘুমাতে যাওয়ার ইত্যাদি লিখে দেয়ালে টানিয়ে দিতে পারেন এতে নিজেরও পড়তে সুবিধা হবে আর অন্যের জন্য নসিহা। আযানে দুয়া কবুল হয়,নামাযের সিজদায় দোয়া কবুল হয়,নামাযের শেষ বৈঠকে দোয়া কবুল হয়,তাহাজ্জুদে দোয়া কবুল হয়,কোরানের তেলাওয়াতে দোয়া কবুল হয় ইত্যাদি স্থানে কান্না করে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকুন। নেককার স্বামীর জন্য সূরা ফুরকানের ৭৪ নং আয়াতটা অবশ্যই দোয়াতে পড়বেন। ইস্তেগফারটা তো অবশ্যই পড়বেন। পারলে সারাদিন।

-Zinnat Khan

-------------------------------

 

#দোয়া_যে_কতটা_পাওয়ারফুল সেটা আমরা চিন্তাও করতে পারি না

 

#দোয়া_যে_কতটা_পাওয়ারফুল সেটা আমরা চিন্তাও করতে পারি না। বিয়ের আগে আমি আল্লাহর কাছে এত এত দোয়া করেছি যা আমার নিজেরও এখন ভাবলে অবাক লাগে। আমি আমার এক্সপেক্টেশন্স ডায়েরিতে লিখে রাখতাম যাতে দোয়া করার সময় বলতে ভুলে না যাই।

যদিও আল্লাহ অন্তরের বিষয়ও জানেন, তারপরও নিজের ইচ্ছেগুলো আল্লাহর সামনে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করলে চাওয়ার আন্তরিকতা বাড়ে। এমন কোন তাহাজ্জুদ বাদ যায়নি আমি সিজদায় পড়ে আল্লাহর কাছে উত্তম স্বামী ও উত্তম শ্বশুরবাড়ির জন্য চাইনি। চাইতে চাইতে ঘুমিয়ে গেছি, ঘুম ভেঙ্গে গেলে আবার চেয়েছি।

আমার এত এত দোয়া বিফলে যায়নি।
আমাকে এটা মানতেই হবে, যতটুকু আমি আমার রাব্বে করিমের কাছে চেয়েছি, আমার রব তার থেকে অনেক অনেক বেশি আমাকে দিয়েছেন, আলহামদুলিল্লাহ।
আবারও বলছি, দোয়া যে কতটা পাওয়ারফুল তা আমরা কল্পনাও করতে পারি না।
আপনার সমস্ত চাওয়া পূরণ করার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলারই আছে।
তাই আল্লাহর কাছে চাইতে কখনো কার্পণ্য করবেন না, চাইতেই থাকুন। আল্লাহ আপনার চাওয়ার চাইতেও বেশি দিয়ে আপনাকে খুশি করে দিবেন।
✍ MarJaana IsRaat

-------------------------------

 

#দ্রুত_মনের_ইচ্ছা_পূরনের_জন্যে_কিছু_গুরুত্বপূর্ণ_আমল


# আউয়াল ওয়াক্তে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ুন‌।
# সকল হারাম কাজ পরিহার করুন।
# বেশি বেশি তওবা করুন।
# বেশি বেশি ইস্তেগফার করুন।(আসতাগফিরুল্ল-হ)
# তাহাজ্জুদ নামাজে সেজদায় গিয়ে, আল্লাহ তাআলার কাছে আপনার মনের সব ইচ্ছা প্রকাশ করুন।আরবিতে না পারলে বাংলায় বলুন, কোনো সমস্যা নাই।
# সালাতুল হাযতের নামায পড়ুন।
# সম্ভব হলে, সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রেখে, সেহরির সময় এবং ইফতার সামনে রেখে দুআ করুন।
# কুরআন তিলাওয়াত করে, দুআ করুন।
# বেশি বেশি দরুদ পাঠ করুন।
# বৃষ্টির সময় দুআ করুন।
# আযান এবং ইকামতের মাঝে দুআ করুন।
# সামর্থ্য অনুযায়ী দান করুন।
{বিশেষ ভাবে মনে রাখতে হবে যে, দুআ করার আগে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করুন।
দুআ করার আগে ও পরে অবশ্যই দরুদ পাঠ করতে ভুলবেন না।}

# সূরা ফাতিহা, বাকারার শেষ ২ আয়াত, ইসমে আজম দিয়ে দুআ করুন।

# আল্লাহর তাআলার উপর পূর্ণ ভরসা রাখুন।
নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা আপনার মনের ইচ্ছা পূরন করবেন। ইন-শা-আল্লাহ।
(যদি তিনি আপনার জন্য তা ভালো মনে করেন)।
আর না হলে- আপনি যা চেয়েছেন, তার চাইতে ও উত্তম প্রতিদান আপনি অবশ্যই আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে পাবেন, ইন-শা-আল্লাহ।
{লিখেছেন-মুনিয়া মমিন (আল্লাহ তাআলা তাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।আ-মিন।)}

-------------------------------

 

>> সে দ্বীনদার,আরব, নীল চোখ ওয়ালা সুন্দর যুবক চায় আল্লাহর কাছে

.

❤❤❤
আমি তখন আল-খানসা হিফজোখানায় পড়ি, বয়স ১৫/১৬ হবে,আমাদের হালাকায় এক মাঝ বয়সী মহিলা ছিলেন,আফ্রিকান মহিলা,একদিন দুয়া কবুলের তালীম চলছিল,তখন সেই মহিলা কান্না করতে করতে বলেন- “ আমার মেয়ে অনেক জিদ্দি,সে এমন কিছুর আবদার করছিল যা আমরা সবাই বুঝতাম যে বিষয়টা অসম্ভব। তার বয়স হচ্ছিল,তার জন্য আমাদের গোত্রীয় ছেলেদের কত প্রস্তাব আসে কিন্তু সে রাজি হয়না, সে কালো চামড়ার,সে অনেক লম্বা আর অনেক স্বাস্থ্যবতী,আমাদের গোত্রে এমন মেয়ে মানে অনেক সুন্দরী, কিন্তু এই আরবে তো কালো স্বাস্থ্যবতী মেয়েরা সুন্দরী না,আরবরা সাদা চামড়ার পাতলা ফিনফিনা মেয়ে পছন্দ করে। তো আমার মেয়ের ইচ্ছে সে আরবের সুন্দর ফর্সা চামড়ার ছেলের বউ হবে।আমরা তাকে অনেক বকা দিতাম,বুঝাতাম, যে এমন আশা করলে জীবনেও বিয়ে হবে না,মেয়ে বলতো আমার বিয়ে তোমরা দিবা নাকি আমার আল্লাহ দিবেন? কদিন পর আমার বড় ছেলে এক আরবের পক্ষ থেকে প্রস্তাব আনলো,আমরা সবাই খুশি হয়েছি অনেক, কিন্তু আমার মেয়ে না করে দিলো,কারণ সেই আরব লোকটা বৃদ্ধ ছিল আর তার আগের ৩ বউ ছিল। আমার মেয়ে খুব রাগ হলো আর আমাদেরকে সাফ জানিয়ে দিলো সে দ্বীনদার,আরব, নীল চোখ ওয়ালা সুন্দর যুবক চায় আল্লাহর কাছে। তার জন্য যেন আমরা কেউ পেরেশান না হই। আল্লাহই এনে দিবে তার এই স্বপ্নের রাজপুত্র।

আমরা বুঝেছিলাম ওর আর বিয়েই হবেনা,একে তো ও কালো চামড়া, চেয়ে বসছে সুন্দর সাদা চামড়ার আরব,আমরা নিচু বংশীয় গরিব মানুষ, আর আরবরা সেই ধনী আর উঁচু বংশীয়, সব নাহয় মানলাম,কিন্তু নীল চোখ? এ আবার কোন পাগলামি? আরবদের বেশি থেকে বেশি খয়েরি চোখ হয়,কালো আর খয়েরি,নীল তো ইংলিশদের হয়!আমাদের তখন মনে হচ্ছিল ও আসলে বিয়েই করতে চায়না তাই এমন সব আবদার করে। একদিন ওকে অনেক বকা দিয়েছি,গায়েও হাত তুলেছি। আমার মেয়ে কান্না করতে করতে বলছে এক সপ্তাহের ভিতরেই সে এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে তার নীল চোখা আরব জামাইর সাথে।

আমরা খুব রাগ হলাম, মেয়ে পাগল হয়ে গেছে,মেয়ে বেয়াদব হয়ে গেছে এসব বলে বলে ওকে বকা দিচ্ছিলাম।

সেই এক সপ্তাহ আমার মেয়ে অনেক কান্না করেছে জায়নামাজ বিছিয়ে,সারাক্ষণ সারা রাত সে কান্না করে করে তার রবের নিকট দুয়া করেছে। ঠিক ৭ দিনের দিন তার জন্য এক নীল চোখ ওয়ালা সুদর্শন আরব যুবকের পক্ষ থেকে বিয়ের প্রস্তাব এসেছে। আমরা সবাই এতো বেশি খুশি হয়েছিলাম ভাষায় প্রকাশ করার মত না। ওয়াল্লাহি যদি মানুষকে সিজদা করা জায়িজ থাকতো,শিরক না হতো সেদিন আমরা সবাই আমার সেই আল্লাহওয়ালা মেয়েকে সিজদা করতাম। আমি অবাক হয়েছি আমার মেয়ের ইয়াকিন দেখে,ওর তাওয়াক্কুল দেখে আর ওর দুয়ার ক্ষমতা দেখে।

আমি বিয়ের দিন আমার মেয়েকে বলছিলাম কী বলে সে আল্লাহর কাছে দুয়া করতো? মেয়ে বললো আমি সারাদিন ইস্তেগফার করতাম আর সারারাত আমার পছন্দ ব্যক্ত করে দুয়া করতাম।আর আমার ইয়াকিন ছিল আল্লাহর কাছে সবই সম্ভব।

আজ ৮/১০ বছর আমার মেয়ে অনেক সুখেই সংসার করছে। ওদের বাচ্চা গুলাও অনেক সুন্দর সুন্দর। কেউ সাদা কেউ কালো কেউ মাঝামাঝি। কিন্তু মজার বিষয় ওদের সবার চোখের রঙ নীল।”

আমরা সবাই একটা ঘোরের মাঝে চলে গিয়েছিলাম এই গল্প শুনে। মহিলা প্রচুর কান্না করতে করতে বলছিলেন,আর আমরা মারাত্মক রকমের ইমোশনাল হয়ে পড়েছিলাম।

এই গল্প সেইদিন ঐ মজলিশের সবাইকেই এমন নাছোড়বান্দা বানিয়ে ছাড়ছিল। রাতের তাহাজ্জুদ আর ইসতেগফারের কি ক্ষমতা তা এই দুইটা না করে বোঝা যাবেনা !

#Zain

-------------------------------

 

>> দীর্ঘ ত্রিশ বছরের বৈবাহিক জীবনে আমাদের মধ্যে একবারও ঝগড়া-বিবাদ হয়নি

.

ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. যখন বিয়ে করতে
মনস্থির করেন তখন তার চাচিকে বলেন,
ওই শায়েখের বাড়িতে দু'জন বিবাহযোগ্য মেয়ে আছে, আপনি তাদের দেখে আসুন এবং তাদের সম্পর্কে আমাকে জানান।

চাচি মেয়ে দুটিকে দেখে আসার পর ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের কাছে তাদের বর্ণনা দিতে শুরু করলেন।

তিনি বাড়ির ছোট মেয়ের ব্যপারে অনেক প্রশংসা করলেন।
ফর্সা চেহারা, তার চোখ ও চুলের সৌন্দর্য,
দীর্ঘতা বর্ণনায় পঞ্চমুখ হলেন।

ইমাম আহমদ তখন তাকে বড় মেয়েটির ব্যাপারে বলতে বললেন।

বড় মেয়েটির ব্যাপারে তিনি অনেকটা তাচ্ছিল্যের সঙ্গে কথা বললেন। অবিন্যস্ত চুল, খর্বকায় উচ্চতা, শ্যাম বর্ণ এবং একটি চোখে ক্রটি থাকার কথা উল্লেখ করলেন।

এরপর ইমাম আহমদ তাকে দুজনের দ্বীনদারির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলেন। জবাবে চাচি বললেন, বড় মেয়েটি দীনদারির দিক থেকে ছোট মেয়ের তুলনার বেশ এগিয়ে।

একথা শুনে ইমাম আহমদ বললেন,
তাহলে আমি বড় মেয়েটিকেই বিয়ে করব।

বিয়ের ত্রিশ বছর কেটে যাওয়ার পর
ইমাম আহমদের স্ত্রী মৃত্যুবরণ করলেন।

দাফনের সময় ইমাম আহমদ বললেন, ইয়া উম্মে আবদুল্লাহ! তোমার কবর শান্তিময় হোক। দীর্ঘ ত্রিশ বছরের বৈবাহিক জীবনে আমাদের মধ্যে একবারও ঝগড়া-বিবাদ হয়নি।

একথা শুনে তাঁর এক ছাত্র অবাক হয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া শায়েখ! এটা কিভাবে সম্ভব?

জবাবে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল বললেন, যখনই আমি তার প্রতি রেগে যেতাম তখন তিনি চুপ থাকতেন, আর যখন তিনি আমার প্রতি রেগে যেতেন তখন আমি চুপ থাকতাম। তাই আমাদের মধ্যে কখনোই ঝগড়া-বিবাদ হয়নি।

[ আল ইলমু ওয়াল উলামা : ৩৩৬ ]

-------------------------------

 

>> স্ত্রীকে বশ করে রাখার টোটকা!

কোনো সম্পর্কের মিষ্টতা আপনা-আপনি টিকে থাকতে পারে না। এতে দুজন মানুষের একে অপরের প্রতি যত্ন-আত্তির প্রয়োজন রয়েছে। নারীরা জীবনে একজন ভালোবাসার মানুষ চায়। যার সাথে সে সুখ-দুঃখের কথা বলবে ও কষ্টের সময়ে পাশে পাবে। সেই পুরুষের পাঞ্জাবীর বাটনে সে নিজের স্বপ্ন বুনবে। মাঝে মাঝে সেই পুরুষ আলো-আঁধারিতে এসে খোঁপায় একগুচ্ছ বেলিফুল গুঁজে দেবে। নারী চায় তার পুরুষ তাকে নিরাপত্তা দেবে, নিষ্ঠুর এই অন্ধকার পৃথিবীতে তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে মশাল হাতে সুপথ দেখাবে। এটাই নারীদের কাছে ভালোবাসার প্রকাশ। নারী চায় তার প্রিয়তম তার ভালোবাসার এই সংজ্ঞাকে নিজের মননে প্রোথিত করে নিক। তাই স্ত্রীকে বশে আনতে সামান্য কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে :
⬖ স্ত্রীর সাথে উত্তম আচরণ করা, তার অধিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়া, বেশি বেশি কথা বলা, তার প্রশংসা করা, তার আনন্দে আনন্দিত হওয়া ও তার কষ্টে মর্মাহত হওয়া;
⬖ নারীরা উপহার পছন্দ করে। তাই স্ত্রী কী ভালোবাসে সেটা জেনে নিয়ে তাকে উপহার দেয়া।
⬖ তার কখন কী প্রয়োজন তা খেয়াল রাখা, মাসিক ভিত্তিতে কিছু টাকা হাতে দেয়া যাতে সে তার পছন্দমতো কিছু কিনে নিতে পারে।
⬖ তার সামনে নিজেকে আকর্ষণীয় ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা।
⬖ নারী চায় তার সঙ্গী ধৈর্যশীল হোক, দয়ালু হোক। তাই যথাসময়ে ধৈর্য ধরুন, অন্যের ওপর দয়া করুন যাতে স্ত্রীও আপনার থেকে শিখতে পারে।
⬖ এ ছাড়া স্ত্রীরা স্বামীদেরকে শিক্ষক হিসেবে মেনে নেয়। তাই তাদেরকে সময় পেলেই প্রয়োজনীয় বিষয়াদি শিক্ষা দেয়া।
⬖ সহবাসের পূর্বে ফোরপ্লে করা ও সহবাসের সময় তার সুখের বিষয়ে খেয়াল রাখা।
⬖ সহবাস ব্যতীতও প্রতিনিয়ত আদর, আলিঙ্গন ও চুমু দেয়া।
⬖ তার কল্পনার জগতে নিজেকে অংশীদার করা, তার প্রতিটি কথার মূল্য দেয়া।
⬖ শয়তান চাইবে পরিবার ভাঙার উদ্দেশ্যে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ফাসাদ সৃষ্টি করতে। কারণ, দ্বীন কায়েমের প্রথম ক্ষেত্রই হচ্ছে পরিবার। তাই স্ত্রীর সাথে মনোমালিন্য হয় এমন কোনো কাজ করা যাবে না, যেহেতু এতে শয়তান খুশি হয় এবং আল্লাহ নারাজ হন।
⬖ স্ত্রীর আবেগের প্রাধান্য দিতে হবে। আবার স্ত্রী ভুল করলে তাকে আবেগ দিয়েই বোঝাতে হবে। নারীদেরকে বোঝানোর ক্ষেত্রে যুক্তির চেয়ে আবেগ অধিক কার্যকর।
⬖ নারীদের কাছে কর্মের চেয়ে মৌখিক স্বীকারোক্তি অধিক কার্যকর। স্বামী মুখ দিয়ে কিছু ব্যক্ত করলে তা স্ত্রী অনেক গুরুত্ব দেয়। এ কারণেই সব সময় বলা উচিত যে, আপনি আপনার স্ত্রীকে ভালোবাসেন। এতে লজ্জার কিছু নেই। স্ত্রীর রূপের প্রশংসা করতে হবে, তার রান্না, পোশাক, সুগন্ধি, তার সবকিছুর প্রশংসা করুন। মিথ্যা প্রশংসা হলেও করা উচিত। কিন্তু মিথ্যা যাতে সম্পর্ক ভালো রাখার জন্যে বলা হয়।
সাইকোলজি - নারীদের মনস্তত্ত্ব, পৃষ্ঠা- ২০৬-২০৭
বই- মুহসিনীন (উত্তম পুরুষদের পাঠশালায়)
সম্পাদনা- আব্দুল্লাহ ইবনে জা'ফর ও বারিয়াহ বিনতে আতিয়ার
শরঈ সম্পাদনা- শাইখ আব্দুল্লাহ আল মামুন
--------------------------------

 

>> স্বামীকে বশ করার উপায়

.
অনেকেই অভিযোগ করেন স্বামী তার কথা শুনে না বা পরনারীতে আসক্ত। এজন্যও বিভিন্ন রুকইয়াহও চেয়ে বসেন। কিন্তু আপনি কি জানেন সম্পূর্ণ হালাল ভাবেই আপনি আপনার স্বামীকে যাদু করতে পারেন? এর জন্য দরকার একটু সচেতনতা। 
.
আমাদের সমাজে স্বামী-স্ত্রী অমিলের পিছনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একে অপরের প্রতি দায়িত্ব, অধিকার ও ভালোবাসার অভাব কাজ করে। বেশিরভাগ দম্পত্তিই জানেন না তাদের এই “বিবাহ বন্ধনের উদ্দেশ্য কি”।
.
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা সূরাতুর রুম এর ২১ নং আয়াতে বলেনঃ
.
“এবং তার নিদর্শনাবলীর মধ্যে হচ্ছে তিনি তোমাদের মধ্যে থেকে তোমাদের জন্য সঙ্গী সৃষ্টি করেছেন, যেন তোমরা তাদের মাঝে প্রশান্তি (সুকুন) খুঁজে পাও এবং তিনি তোমাদের মাঝে দয়া ও ভালোবাসা সৃষ্টি করেছেন।”
.
এই আয়াতে আল্লাহ আমাদেরকে বিয়ের উদ্দেশ্য বলে দিয়েছেন। আল্লাহ আমাদের সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন যেন আমরা একে অপরের মাঝে “প্রশান্তি” খুঁজে পাই। এই প্রশান্তি বলতে শারিরীক ও মানসিক দুইধরণের প্রশান্তিকেই অন্তর্ভুক্ত করে। শারিরীক প্রশান্তির কথা সবাইই বুঝি, কিন্তু মানসিক প্রশান্তির ব্যাপারে কতজনই বা সচেতন।
.
আপনি চিন্তা করুন খাদিজাহ বিনতে খুইয়ালিদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহার কথা। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন হিরা গুহাতে জিব্রীল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে প্রথম দেখে ভীত সন্ত্রস্ত ছিলেন, জীবনের প্রথম তিনি এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলেন, একজন মালাকের সম্মুখীন হলেন, সেই মালাক তাঁকে বুকে করে তিনবার চাপ দিলেন। আপনি চিন্তা করুন, একজন না জানা মানুষের জন্য এটি কতটা ভীতিকর অভিজ্ঞতা। এই মূহুর্তে কে তাঁকে সান্তনা দিয়েছিলেন? তিনি হলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সম্মানিতা স্ত্রী, খাদিজাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা। তিনিই তাঁকে শান্ত করেছিলেন। বুঝিয়েছিলেন যে তিনি মানুষের সাথে সদাচরণ করেন তাই আল্লাহ তার অমঙ্গল করবেন না। এটাই হচ্ছে সুকুন। যখন আপনার স্বামী বাইরে থেকে হন্তদন্ত হয়ে ফিরে আসবেন, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত আর চরম ব্যস্ততময় দিন পার করে ঘরে ফিরবেন, তখন যেন তিনি আপনার কাছে ফিরে প্রশান্তি পান। তখন যেন তিনি আপনাকে আস্থাভাজন ভেবে সব খুলে বলতে পারেন। তখন যেন তিনি তার প্রয়োজনীয় সামগ্রী হাতের কাছে তৈরী পান। আপনি সমস্যার সমাধান করতে না পারুন, তাকে তো মানসিক ভাবে শান্ত করতে পারেন। আপনি যদি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর মতন স্বামী চান, তাহলে আপনাকে হতে হবে খাদিজাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহার মত। 
.
এই বোধটারই চরম অভাব আজকের দম্পত্তিরদের মাঝে। এছাড়াও বোনেরা আরো কিছু ভুল করেন যার কারণে স্বামীরা দূরে সরে যায়। সংক্ষেপে এমনঃ 
-------------------
→→ স্বামী হিসেবে একজন পুরুষ তার স্ত্রীর কাছ থেকে আনুগত্য কামনা করে। এবং এই আনুগত্যই হচ্ছে “মূল অস্ত্র” যেটা দিয়ে স্ত্রী তার স্বামীকে পুরোপুরি নিজের করে পেতে পারে। শরীয়াহ অনুমোদিত সমস্ত কাজে স্বামীর আনুগত্য করা ওয়াজিব। শাইখ আল আলবানী তার আদাবুল যিফাফ গ্রন্থে বলেনঃ 
.
“স্বামীর কামনা পূরণ করার ক্ষেত্রে স্বামীর আনুগত্য করা স্ত্রীর জন্য ওয়াজিব। তাই এটা আরো বেশি জরুরী যে স্বামীর কামনা পূরণ করার চেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ কাজ যেমন তার সন্তান লালন পালন করা, তার পরিবারের হিফাযত করা ও অন্যান্য দায়িত্বগুলো পালন করার ক্ষেত্রে স্বামীর আনুগত্য করা।”
.
স্বামীর প্রতি আনুগত্য কোন পর্যায়ের হওয়া উচিত ইবনে মাজাহতে বর্ণিত একটি হাদীসে থেকেই বুঝা যায়। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ 
.
“যদি আমাকে আল্লাহ ব্যাতীত অন্য কাউকে সিজদাহ করার আদেশ দেওয়া হতো, তাহলে আমি স্ত্রীদের নির্দেশ দিতাম তাদের স্বামীকে সিজদাহ করতে। ” (আলবানি হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন।)
.
→→বিয়ে নামক সামাজিক বন্ধনের অন্যতম মূল উদ্দেশ্যই হল নিজের কামনা বাসনাকে হালাল উপায়ে পূরণ করা। এক্ষেত্রেও ইসলাম নারীদেরকে স্বামীর আনুগত্য জরুরী করেছে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, 
.
“সেই স্বত্তার কসম যার হাতে আছে মুহাম্মাদের (ﷺ) প্রাণ। কোন নারী আল্লাহর প্রতি দায়িত্ব সম্পূর্ণ করতে পারে না, যতক্ষণ না সে তার স্বামীর প্রতি দায়িত্ব পূর্ণ করে। যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে আহবান করে, আর স্ত্রী যদি উটের জিনের উপরও থাকে তার (স্ত্রীর) প্রত্যাখ্যান করা উচিত নয়। ”
.
→→বোনদের মাঝে যে ঘাটতি ভয়াবহ আকারে দেখা যায় সেটি হচ্ছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করা। ইউনিভার্সিটিতে আমাদের স্যার বলতেন, “পৃথিবীর বুকে এমন কোন স্বামী নেই, যে কিনা এ কথা শুনেনি যে আমি বলেই তোমার সংসার করেছি। অন্য কেউ হলে কবেই চলে যেত।”
.
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একটি হাদীসে নারীদের বেশি জাহান্নামী হওয়ার পিছনে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন (ভাবানুবাদ) “তারা স্বামীদের প্রতি অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। দশটা জিনিস পাওয়ার পর, একটি জিনিস না পেলেই তারা অকৃতজ্ঞতা স্বরূপ বলে বসে আমি কিছুই পাইনি।”
.
শাইখ ওয়াহিদ বিন আবদুস সালাম তাঁর “কুর’আনিক চিকিৎসা” বইতে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার উল্লেখ করেন। সেটির ভাব কথা এমনঃ 
.
“এ পর্যায়ে আমি মুসলিম নারীদের জন্য একটি উপদেশ পেশ করছি। আর তা হল সে ইচ্ছা করলে তার স্বামীকে হালাল যাদু করতে পারে। নারী স্বামীকে আকৃষ্ট করার জন্য অধিক সৌন্দৰ্য্য ও সাজ-সজ্জা করবে, তাহলে তার স্বামীর দৃষ্টি অসুন্দর ও কুশ্রী বস্তুর প্রতি যাবে না। এমনিভাবে মুচকি হাসি, উত্তম কথা, কোমল আচরণ, স্বামীর সম্পদ সংরক্ষণ, তার সন্তানাদির প্রতি অত্যধিক যত্নবান হওয়া এবং আল্লাহর নাফরমানী ব্যতিত সকল ক্ষেত্রে স্বামীর আনুগত্য করা ইত্যাদি দ্বারা সে স্বামীর উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
.
পরিতাপের বিষয় যে, আমরা যদি আমাদের আধুনিক সমাজের দিকে তাকাই তাহলে এর সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থা দেখতে পাই। বর্তমান সমাজে নারীরা তাদের উত্তম পোষাক-পরিচ্ছদ ও শাড়ি-গহনা ইত্যাদি পরিধান করে কোন অনুষ্ঠানে বা কোন বন্ধু-বান্ধবের সাক্ষাতের সময় বা বিশেষ কোন কমিউনিটি সেন্টারে কোন আয়োজনে। সে এমনভাবে নিজেকে সাজায় যেন আজকেই তার বাসর উদযাপনের দিন। আর যখন সে তার স্বামীর ঘরে ফিরে আসে তার সকল সৌন্দর্য ও অলংকারাদি খুলে এবং আরেকটি অনুষ্ঠানের জন্য রেখে দেয় ।
.
অথচ তার অসহায় যে স্বামী তাকে এসব পোষাক ও অলংকার ক্রয় করে দিল, সে তাকে একটি দিনের জন্যও এগুলো পরিহিত অবস্থায় দেখতে পায় না। তার সামনে সর্বদা এমন পুরাতন কাপড় পরিধান করে যা থেকে ঘাম, পেয়াজ ও রসূনের দূর্গন্ধ বের হয়। এই নারীর যদি সামান্য বিবেক থাকত তাহলে সে বুঝতে পারত যে, তার স্বামীই এ সৌন্দর্যের অধিক উপযোগী।
.
হে নারী! তোমার স্বামী যখন তার কর্মে বেরিয়ে পড়ে তুমি ঘরের কাজকর্ম জলদি গুছিয়ে ফেল । অতঃপর গোসল করে নিজেকে সৌন্দর্যমণ্ডিত কর এবং স্বামীর অপেক্ষা কর । যখন তোমার স্বামী তার কাজ হতে ঘরে ফিরে সুন্দর স্ত্রী, প্রস্তুতকৃত খাবার, পরিচ্ছন্ন পরিবেশ দেখতে পাবে তখন তোমার প্রতি তার ভালবাসা ও আন্তরিকতা বৃদ্ধি পাবে। বিশেষত এসব যখন তুমি স্বামীর জন্য সৌন্দর্যের ব্যাপারে আল্লাহর হুকুম পালন করবে ও তাকে হারাম হতে রক্ষা করার নিয়তে করবে। 
.
কেননা উদরপূর্ণ লোক খাবারের প্রতি আসক্ত থাকে না। খাবারের প্রতি আকর্ষণ থাকে একমাত্র তারই, যে খাবার হতে বঞ্চিত হয়েছে।”
.
আলহামদুলিল্লাহ কতই না উত্তম নসীহাহ দিয়েছেন শাইখ!!
---------------------------

 

>> রেফারেন্স সহ দোয়া কবুলের ২৮ টি স্থান বা ক্ষেত্র বা পাত্র, বিভিন্ন হাদিস দ্বারা জানা যায় সেইগুলি হলোঃ--
=====================

১) অনুপস্থিত ব্যক্তির জন্য দুয়া (কোন মুসলিমের পিছনে বা অগোচরে অন্য মুসলিমের দুয়া)।(মুসলিম ৬৮২২)
২) জালিমের বিরুদ্ধে মাজলুম ব্যক্তির দুয়া।(জামে আত তিরমীযি ৩৪৪৮)
৩) বাবা তার সন্তানের জন্য দুয়া (নেক দুয়া বা বদ দুয়া)
((তিরমীযি ৩৪৪৮))
৪) নেককার সন্তানের দুয়া (তার বাবা মায়ের জন্য তাদের মৃত্যুর পর)( আবু দাউদ ২৮৮০)
৬) আরাফাতের ময়দানে দুয়া।(তিরমীযি ৩৫৮৫)
৬) বিপদগ্রস্ত অসহায় ব্যক্তির দুআ (সূরা নামাল ৬২,৫৭ ও সূরা ইসরার ৬৭ নাম্বারর আয়াত)
৭) সেজদায় দুয়া।(নাসায়ী ১০৪৫)
৮) হজ্জের স্থানসমূহে দুয়া (যেমন: আরাফা, মুজদালিফা, মিনা...)(ইবনে মাজাহ২৮৯২)
০৯) হাজ্জীর দুয়া (হজ্জ করা অবস্থায়)।(ইবনে মাজাহ২৮৯৩)
১০) উমরাহকারীর দুয়া (উমরাহ করার সময়)।(নাসায়ী ২৬২৫
১১) আযানের পর দুয়া।(তিরমীযি ২১০)
১২) যুদ্ধ চলাকালীন সময় দুয়া।(আবু দাউদ২৫৪০)
১৩) বৃষ্টি বর্ষণকালে দুয়া।(আবু দাউদ ২৫৪০)
১৪) শেষ রাতের দুয়া,তাহাজ্জুদ(বুখারী ১১৪৫)
১৫) জুম্মার দিনে দুয়া,,আছরের শেষ দিকে তালাশ করার জন্য নির্দেশ আছে।(নাসায়ী১৩৮৯)
১৬) লাইলাতুল কদর এর দুয়া।(বুখারী ও মুসলিম)
১৭) আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময় দুয়া।(আহমাদ ১৪৬৮৯)মুসলিম ৬৬৮
১৮)ফরয স্বলাতের শেষ অংশে দুয়া( সালাম ফিরানোর আগে)।(রিয়াদুস স্বালেহিন ১৫০৮,তিরমিযি ৩৪৯৯)
১৯) মুসাফির ব্যক্তির দুয়া (সফর অবস্থায়)।(তিরমী
যি ৩৪৪৮)
২০) রোজাদার ব্যক্তির দুয়া (রোজা অবস্থায়)।(ইবনে মাজাহ ১৭৫২)
২১) ন্যায়পরায়ণ শাসকের দুয়া।(তিরমীযি ২৫২৬)
২৩) দুয়া ইউনুস পাঠ করে দুয়া করলে কবুল হয়।(তিরমিযি৩৫০৫)
২৪) ইসমে আযম পড়ে দুয়া করলে কবুল হয়।(ইবনে মাজাহ ৩৮৫৬)
২৫) বিপদে পতিত হলে যে দুয়া পড়া হয়(ইন্না লিল্লা-হি......রাজিউন)
এবং
(আল্লা-হুম্মা আজিরনি ফি মুসিবাতি ওয়া ওয়াখলিফলী খইরাম মিনহা...) তখন দুয়া কবুল হয়।(মিশকাতুল মাসীবাহ ১৬১৮,মুসলিম ৯১৮)
২৬) জমজমের পানি পান করার পর দুয়া।(ইবনে মাজাহ ৩০৬২,আহমদ ৩/৩৫৭)
২৭) নির্যাতিতের দুয়া (তিরমিযি৩৪৪৮)
২৮) দু হাত তুলে দোয়া করা,আল্লাহ বান্দার খালি হাত ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন(আবু দাউদ ১৪৮৮)

-Saheeh Amal page

 

>> দুনিয়া একটি পরীক্ষাকেন্দ্রের মতো

 

দুনিয়া একটি পরীক্ষাকেন্দ্রের মতো। এই পরীক্ষাকেন্দ্র কোনো আরাম আয়েশের স্থান নয়। এই কক্ষে থাকা মানুষগুলো যতই জ্ঞানী হোক, ধনী হোক, যতই সুখী হোক, আর সমাজের মর্যাদাবান ব্যক্তি হোক, আল্লাহর এই পরীক্ষা থেকে পালাবার জো নেই কারও। এই পরীক্ষা দ্বারা তিনি জেনে নেবেন, কে শোকর-গুজার হয়, আর কে না-শোকর।

‘এ আমার প্রতিপালকের অনুগ্রহ; যাতে তিনি আমাকে পরীক্ষা করতে পারেন, আমি কৃতজ্ঞ, না অকৃতজ্ঞ। যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, সে তা নিজের কল্যাণের জন্য করে এবং যে অকৃতজ্ঞ, সে জেনে রাখুক যে, নিশ্চয় আমার প্রতিপালক অভাবমুক্ত, মহানুভব।’ [সূরা নামল, ২৭: ৪০]
.
দুনিয়ার বৈশিষ্ট্যই এমন—পরকাল পর্যন্ত এটি একটি পরীক্ষাকেন্দ্র হয়ে থাকবে। যে এই বিষয়টি বুঝবে, অনুধাবন করবে, সে অবশ্যই সন্তুষ্ট থাকতে পারবে, প্রশান্তির জীবন লাভ করবে, পূর্ণতার পিছু ছোটার প্রতিযোগিতা থেকে বের হয়ে আসবে। কারণ, সে জানে এই দুনিয়ায় পূর্ণতা বলে কিছু নেই। এখানে সবকিছুই ত্রুটিপূর্ণ। বরং আল্লাহ তাআলা মুমিনকে তার ঈমান অনুপাতে এখানে পরীক্ষা করেন। নবীজি (ﷺ)-কে যখন এই পরীক্ষা সম্বন্ধে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কারা সবচেয়ে বেশি পরীক্ষাগ্রস্ত হয়, তিনি বলেছিলেন,

‘নবীগণ। এরপর (অনুসরণের দিক দিয়ে) যারা তাদের নিকটবর্তী। ব্যক্তিকে তার দ্বীনদারি অনুযায়ী পরীক্ষা করা হয়। তার দ্বীনদারি যদি শক্ত হয়, তাহলে পরীক্ষাও কঠিন হয়। আর যদি দ্বীনদারি দুর্বল হয়, তাহলে তার দ্বীনের অবস্থা অনুপাতে পরীক্ষা করা হয়। এভাবে বান্দার পরীক্ষা চলতে থাকে এবং একটা পর্যায় তাকে এই অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়া হয় যখন তার আর কোনো পাপ অবশিষ্ট থাকে না।’ [তিরমিযী (২৩৯৮), সনদ: হাসান]

আল্লাহর রাসূল এখানে ইঙ্গিত দিচ্ছেন, বান্দাদের ওপর বিপদাপদ এবং পরীক্ষা আসার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে তাদেরকে পাপমুক্ত করা।
.
আল্লাহ তাআলা পরীক্ষাকে মানব জীবনে পাপের ঔষধ হিসেবে বানিয়েছেন। এ দ্বারা তিনি তাদের পবিত্র করেন, তাদের উচ্চ মর্যাদা আসীন করেন এবং জান্নাতের পথ সহজ করে দেন। কাজেই মুমিন যখন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়, সে এটাকে আল্লাহর একটি নেয়ামত হিসেবে গণ্য করে। তিনি সুযোগ করে দিয়েছেন তাঁর কৃতজ্ঞ আদায়ের, ধৈর্য ধরার। এ দিকে ইসলাম বিপদ থেকে মুক্তির বহুবিধ উপায়ও বাতলে দিয়েছে। যেমন:
.
(১) তাকওয়া অবলম্বন করা
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যে কেউ আল্লাহকে ভয় করবে, আল্লাহ তার নিষ্কৃতির পথ করে দেবেন এবং তাকে তার ধারণাতীত উৎস হতে রুযী দান করবেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর নির্ভর করবে, তার জন্য তিনিই যথেষ্ট হবেন। নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর ইচ্ছা পূরণ করবেনই। আল্লাহ সবকিছুর জন্য স্থির করেছেন নির্দিষ্ট মাত্রা।’ [সূরা তালাক, ৬৫: ২-৩]
.
(২) দুআয় অবিচল থাকা
ইমাম ইবনুল-কাইয়্যিম (রহ.) বলেন, ‘দুআ সবচেয়ে উপকারী ঔষধসমূহের একটি। সে বিপদের শত্রু, বিপদকে হটিয়ে বিদায় করে; অবতীর্ণ হতে বাধা দেয়, ওপরে পাঠিয়ে দেয়, অথবা অবতীর্ণ হওয়ার মাত্রা কমিয়ে আনে। নিশ্চয়ই দুআ মুমিনের হাতিয়ার।’ [আত্মার ওষুধ, ইমাম ইবনুল-কাইয়্যিম, সমর্পণ প্রকাশন]
.
(৩) খুশু-খুযুর সাথে সালাত আদায়
নবীজি (ﷺ) অসিয়ত করে গেছেন, যখন সূর্যগ্রহণ কিংবা চন্দ্রগ্রহণ হয়, আমরা যেন সালাত আদায় করি, যাতে আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এ থেকে উদ্ধার করেন। এছাড়া অপছন্দনীয় যে কোনো কিছু থেকে নিষ্কৃতি পেতে নবীজি আমাদের সালাত আদায় করতে বলেছেন। [দেখুন, সহীহ মুসলিম, হাদীস: ৯০১]
.
(৪) দান সদকা চালিয়ে যাওয়া
ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) বলেন, ‘বিভিন্ন প্রকারের বিপদ-আপদ দূরীকরণে দান-সদাকার প্রভাব আশ্চর্যদায়ক; যদিও দানকারী পাপী, জালিম কিংবা কাফির।’
মুনাওয়ি (রহ.) বলেন, ‘আল্লাহর সৌভাগ্যবান (বান্দাগণ দানের) বিষয়টি প্রয়োগ করে এমন আধ্যাত্মিক সমাধান পেয়েছেন, যা অতি কার্যকরী ঔষধও দিতে পারে না। আর এর সত্যতা কেবল সে ব্যক্তিই অস্বীকার করবে, যে নিজেকে সত্য দেখা থেকে আড়াল করে রাখে।’ [বিস্তারিত জানতে পড়ুন: কলবুন সালীম (নির্মল অন্তর, নির্মল জীবন), সমর্পণ প্রকাশন]
.
(৫) আল্লাহর প্রতি সুধারণা রাখা
মানুষ পরীক্ষার সম্মুখীন হলে আল্লাহর প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করে। হতাশ হয়ে যায়, ভেঙে পড়ে। রবের প্রগাঢ় হিকমত বুঝতে না পেরে সে ভাবে এই বিপদ দ্বারা তিনি তাকে কষ্ট দিচ্ছেন। কিন্তু আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী, সুধারণা পোষণকারী মুমিন এর বিপরীত হয়। মানুষ যখন সর্বত্র হতাশার কালো অন্ধকার দেখে, মুমিন তখন আশার আলো খুঁজে পায়।

বনী ইসরাঈলের কথাই চিন্তা করুন। তারা যখন মূসা (আ.)-এর সাথে বের হলো এবং সামনে সাগর আর পেছনে ফিরআউনের বিশাল সৈন্যদল—এমন কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হলো, তখন তারা কী বলেছিল? তারা বলেছিল, ‘আমরা এবার নির্ঘাত ধরা খেয়ে গেছি।’ কিন্তু মূসা (আ.) বললেন, ‘কক্ষনো নয়, বরং আমার রব আমার সাথেই আছেন, তিনি আমাকে পথ দেখাবেন।’ [সূরা শুআরা, ৬১-৬২]

হ্যাঁ, সেদিন আল্লাহ তাদের সবাইকে পথ দেখিয়েছিলেন। এমনভাবে পথ দেখিয়েছেন, কিয়ামত পর্যন্ত সকলের জন্য নজীর হয়ে থাকবে।
.
(৬) আল্লাহর প্রজ্ঞায় বিশ্বাস করা
মুসলিম মাত্রই বিশ্বাস করে আল্লাহ তাআলা যা নির্দেশ দেন, সবকিছুর পেছনে তাঁর গভীর উদ্দেশ্য রয়েছে। জীবনের প্রতিটি নেয়ামত, প্রতিটি বিপদাপদ, সবকিছু মহান আল্লাহর প্রজ্ঞানুযায়ী হয়। তাই পরীক্ষার সম্মুখীন হলে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো আমরা স্মরণ রাখবো:

ক) আল্লাহ তাআলা পরীক্ষার দ্বারা বান্দাদের পাপরাশি মুছে দেন। ঘাড় ভেঙে দেয়া দুঃখ-কষ্ট থেকে শুরু করে পায়ে কাঁটা বেঁধার মতো সামান্য ব্যথা দ্বারাও আল্লাহ তাআলা বান্দাদের মাফ করেন।

(খ) পরীক্ষা মুমিনের মর্যাদা বাড়িয়ে দেয়। আমরা ওপরে বলেছি, নবীগণ সবচেয়ে বেশি পরীক্ষার সম্মুখীন হতেন। এরপর নেককার বান্দারা। তাই আলিমগণ বলেন, ‘নবীদের ওপর পরীক্ষা আসে তাদের প্রতিদান বাড়িয়ে দিতে। তেমনিভাবে যেসব মুমিন তাদের পায়ে পায়ে চলে, তাদের ন্যায় সবর করে এবং তাদের শিক্ষার ওপর অবিচল থাকে, তারাও মহা পুরস্কার প্রাপ্ত হয়।’

গ) আল্লাহ তাআলা পরীক্ষাকে একটি স্কেলের মতো বানিয়েছেন। আর তা হলো, মুনাফিকদের ভিড় থেকে খাঁটি মুমিনদের আলাদা করে নেয়া। তিনি বলেন, ‘আর আমি অবশ্যই এদের পূর্ববর্তীদেরকেও পরীক্ষা করেছিলাম; সুতরাং আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন, কারা সত্যবাদী এবং কারা মিথ্যাবাদী।’ [সূরা আনকাবূত, ২৯: ৩]

ঘ) আল্লাহর হিকমতের একটি অংশ হচ্ছে বান্দাদেরকে পরীক্ষায় ফেলে তাদের কিছু শাস্তি দুনিয়াতেই চুকিয়ে দেন। যেন পরকালের চিরস্থায়ী এবং যন্ত্রণাদায়ক আযাব থেকে তারা নিরাপদ থাকে, যেন বান্দারা পাপ থেকে ফিরে আসে, রবের দয়া অনুভব করে এবং তাঁর প্রতি বিনম্র হয়। আমরা যেন বুঝতে পারি, জীবনের পরতে পরতে রবের কতটা প্রয়োজন, কতটা মুখাপেক্ষী আমরা তাঁর রহমতের।
.
আল্লাহ তাআলা আমাদের বিপদাপদ দূর করে দিক। যাবতীয় বালামুসিবতকে আমাদের পাপমোচনের মাধ্যম বানিয়ে দিক এবং ধৈর্যের ওপর অবিচল রাখুক। এ দ্বারা আমাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করে দিক, আর জান্নাতে নবীদের প্রতিবেশী হবার তাওফীক দান করুক।
#Wafilife

-------------------------------

 

>> আপনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ রূপসী মেয়েটিকে বিয়ে করলেন

 

আপনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ রূপসী মেয়েটিকে বিয়ে করলেন। বিয়ের পর সবাই আপনাকে হিংসা করে, ঈর্ষামিশ্রিত প্রশংসা করে (জিতসেন ভাই, জিতসেন!) আর আপনিও সেই মেয়েটিকে নিয়ে খুবই খুশি; স্বপ্নের মতো দিন কাটাচ্ছেন তার সাথে।
.
ভেবে দেখুন! যদি আল্লাহ্ হঠাৎ আপনার চোখ এবং অন্তর থেকে এই মেয়েটির প্রতি আপনার ভালোবাসা তুলে নেন, তাহলে কি কোনোভাবে তাকে জোর করে ভালোবাসা সম্ভব? তার প্রতি মুগ্ধ থাকা? হতে পারে, সকলের চোখে এখনো সে বিশ্বসুন্দরী, অপ্সরা এবং গুণবতী, কিন্তু আপনার কাছে তখন তাকে স্রেফ পেইন লাগবে; বিরক্তিকর মনে হবে। এমনটি কিন্তু অহরহ হচ্ছে। আমার কথাকে আপনি মোটেও অতিরঞ্জিত ভাববেন না।
.
তার মানে কী দাঁড়ালো? মূল চাবিকাঠিটা কার হাতে? নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার হাতে। বিয়ের আগে এবং পরে—সবসময়ই আল্লাহর নিকট ফকিরের মত পড়ে থাকতে হবে। সবকিছু ঠিকঠাক রাখার জন্য আল্লাহর নিকটই বলে যেতে হবে। সকল ফরিয়াদ কেবল তাঁর নিকটই উপস্থাপন করতে হবে।
.
কুরআনুল কারিমে আল্লাহ্ আমাদের কত সুন্দর দু‘আ শিক্ষা দিয়েছেন—
.
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ
.
হে আমাদের রব! আমাদের স্ত্রী এবং সন্তানদের থেকে আমাদের জন্য চোখের শীতলতা দান কর। [সূরা আল ফুরক্বান, আয়াত: ৭৪]
.
‘চোখের শীতলতা’ শব্দ দুটো অসাধারণ সব গুণাবলীকে অন্তর্ভুক্ত করে। সকল ভালো এবং সুন্দর যার মধ্যে থাকবে, কেবল তাকে দেখেই তো চোখ শীতল হবে!
.
হাদিসেও প্রায় একই কথা এসেছে। নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তম স্ত্রীর গুণাবলী বর্ণনায় একটি গুণ বলেছেন, ‘‘সেই স্ত্রীর দিকে তাকালে স্বামী আনন্দিত হয়।’’ [নাসাঈ, আস-সুনান: ৩২৩১]
.
সুতরাং, বিয়ের আগে বা পরে—সবসময় এভাবে দু‘আ করে যেতে হবে— ‘হে আল্লাহ্! মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাকে (স্বামী/স্ত্রী) তুমি আমার চক্ষুশীতলকারী বানিয়ে রাখো। তার চেহারায় বয়সের ছাপ ও বার্ধক্য ভর করলেও সেটাকে আমার চোখে দৃশ্যমান করো না।’ কিংবা এভাবে— ‘হে আল্লাহ! ওর মানবিক ত্রুটিগুলো এবং বিরক্তিকর অভ্যাসগুলো (যেগুলো সরাসরি কোনো গুনাহ না) আমার চোখ থেকে আড়াল করে দাও, ওর প্রতি আমার ভালবাসা কখনই কেড়ে নিও না’ ইত্যাদি।
.
আর বিয়ের পূর্বে এভাবে সংক্ষেপে ব্যাপক অর্থবোধক দু‘আ করা যায়—‘হে আল্লাহ্! এমন একজনকে তুমি আমার সঙ্গী করো, যার উপর তুমি সন্তুষ্ট এবং আমাদের উভয়কেই একে অপরের উপর সন্তুষ্ট করে দাও চিরদিনের জন্য।’
.
এগুলো কেবলই উদাহরণ হিসেবে পেশ করা হলো। আপনারা এগুলো নিয়ে ভাবুন। আন্তরিকতার সাথে দু‘আ করুন। সহিহ হাদিসেই এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনেক দু'আ আছে, সেগুলো পড়ুন।
.
[Collected & Edited]
#Tasbeeh

-------------------------------

 

>> দাম্পত্য জীবনকে সুখনীয় করে তুলতে স্বামী-স্ত্রী প্রত্যেকেরই করণীয় রয়েছে

 

নাহমাদুহু ওয়ানুসল্লি আলা রসূলিহিল কারিম। আম্মাবাদ-

একটি সুখি ও সমৃদ্ধ দাম্পত্য জীবনের স্বপ্ন সবাই দেখেন। কিন্তু সবার জীবন কি সুখি হয়!

অনেক সময় দাম্পত্যজীবনে নেমে আসে হাজারো দুঃখ, অশান্তি ও হতাশা। এর অন্যতম কারণ দাম্পত্যজীবন সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান, প্রস্তুতি ও আয়োজনের অভাব।

দাম্পত্য জীবনকে সুখনীয় করে তুলতে স্বামী-স্ত্রী প্রত্যেকেরই করণীয় রয়েছে।

আজ আমরা বোনদের সাথে আলোচনা করবো, দাম্পত্য জীবনকে সুন্দরভাবে সাজানোর প্রাথমিক একটি মূলনীতি নিয়ে। যা আপনার দাম্পত্য জীবনকে অনেকাংশে নির্মল ও পরিচ্ছন্ন করে তুলবে ইন শা আল্লাহ।

প্রিয় বোন! দাম্পত্যজীবনকে সুন্দর পরিচ্ছন্ন ও সুখময় করে তুলতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মূলনীতি হলো, স্বামীর আনুগত্য।

আমরা সাধারণত মনে করি স্বামীর আনুগত্য মানে স্বামীর আদেশ পালন করা। আসলে এখানে স্বামীর আনুগত্য কথাটির পরিধি আরো ব্যাপক।

স্ত্রী তার কথাবার্তা, কাজকর্ম, বেশভূষা আচার-ব্যবহার সবকিছু আপন স্বামীর চাহিদা মতো সাজিয়ে নিবে। এটি হচ্ছে স্বামীর আনুগত্যের প্রকৃত মর্ম।

একজন বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমতী স্ত্রী দাম্পত্য জীবনের শুরুর দিকেই স্বামীর স্বভাব-চরিত্র, প্রিয়-অপ্রিয়, পছন্দ-অপছন্দ সবকিছু জেনে নেয়। কিছু সরাসরি জিজ্ঞেস করে শিখে নেয় আর কিছু তার দৈনন্দিন জীবনকে পর্যবেক্ষণ করে জেনে নেয় ; তারপর সে নিজেকে সেই ভাবে সাজিয়ে তোলে।

এ প্রসঙ্গে প্রিয় বোনদের আমার একটি ঘটনা শোনাতে চাই যেখান থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারবো ইনশাআল্লাহ।

ইমাম শা'বী রাহিমাহুল্লাহ, একবার কাজী শুরাইম রাহিমাহুল্লাহ এর সঙ্গে সাক্ষাত করেন। তিনি শুরাইম রাহিমাহুল্লাহ এর কাছে তাঁর পরিবারের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান। শুরাইম রাহিমাহুল্লাহ বলেন, আজ ২০ বছর হয়ে গেল আমার পরিবারে কোনো অশান্তি; কোনো অসঙ্গতি আমি দেখি নি। এমনকি কোনদিন আমাকে রাগান্বিত হতে হয়নি।

শা'বি রাহিমাহুল্লাহ জানতে চাইলেন, এটি কিভাবে সম্ভব হলো! তিনি বলেন, বাসর রাতে যখন আমি আমার স্ত্রীর ঘরে প্রবেশ ঢুকলাম তাঁর অপূর্ব সুন্দর চেহারা দেখে আমি মুগ্ধ হলাম, মনে মনে ভাবলাম আমার উচিত পবিত্র হয়ে দুই রাকাত সালাতুশ শোকর আদায় করা। সালাত যখন শেষ হলো বুঝতে পারলাম আমার স্ত্রীও আমার সঙ্গে সালাত আদায় করেছেন। আমার সাথেই সালাম ফিরিয়েছেন।

ওই দিন বাসর রাতেই আমার বুদ্ধিমতী স্ত্রী আমাকে বলল, আমি আপনার কাছে একজন অপরিচিত নারী! আপনার রুচি ও স্বভাব এর ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। আপনার পছন্দনীয় বিষয়গুলো বলুন যাতে সেগুলো আমি নিয়মিত করতে পারি। আর আপনার অপছন্দনীয় বিষয় গুলো আমাকে জানিয়ে দিন যাতে আমি সেগুলো ত্যাগ করতে পারি।

স্ত্রীর এমন সুন্দর কথার জবাবে আমি বললাম, তুমি এমন কিছু কথা বলেছো-যার উপর অটল থাকতে পারলে তুমি পরিপূর্ণ কল্যাণ লাভ করবে। আর এর বিপরীত কিছু করলে তোমার কথাই তোমার বিপক্ষে দলিল হবে। তারপর আমি তাকে আমার পছন্দ - অপছন্দ গুলো একে এক খুলে বললাম।

সে জানতে চাইলো, আপনার প্রতিবেশীদের মধ্য থেকে কারা ঘরে আসলে আপনি খুশি হন এবং কাদের আসা আপনি অপছন্দ করেন?

আমি বললাম, অমুক অমুক আমার বাড়িতে আসুক তা আমি চাইনা আর অমুক অমুক বাড়িতে এলে আমার কোন সমস্যা নেই।

আমি আরো বললাম অমুক অমুক পরিবারের লোকেরা ভালো সুতরাং তুমি চাইলে তাদেরকে ঘরে আনতে পারো। আর অমুক অমুক পরিবারের লোকগুলো খারাপ তাদের ঘরে আসার অনুমতি দেয়া ঠিক হবেনা।

আমার সব কথা আমার স্ত্রী মনে গেঁথে নিল।

আল্লাহর কসম! সে রাত ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে সুখময় রাত।

তারপর! একে একে পুরো বিশটি বছর যেনো খুশি ও আনন্দের হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো ; এই দীর্ঘ সময়ে তার মাঝে কেবল কল্যাণ ও সন্তুষ্টি খুঁজে পেয়েছি।

একটি বারের জন্যও এমন কিছু করেনি যা আমি অপছন্দ করি। হ্যাঁ, শুধু একবার তার একটি কাজ আমি অপছন্দ করেছিলাম তবে, পরে আমি বুঝতে পারি ভুলটি মূলত আমারই ছিল। এই অবস্থাতেই সে আমাকে ছেড়ে আল্লাহর ডাকে সাড়া দেয়। আল্লাহ তাঁর উপর রহম করুন।

প্রিয় বোন! এই ঘটনা থেকে নিশ্চয়ই আপনি বুঝতে পেরেছেন স্বামীর আনুগত্য কিভাবে একটি মধুর ও সুখময় দাম্পত্য জীবন গঠনে কার্যকর ভূমিকা পালন করে! নেককার মুমিন নারীরা অনেক বুদ্ধিমতী ও বিচক্ষণ হয়ে থাকে। পরিবারের স্বামীর কর্তৃত্বের ব্যাপারটি তারা সহজেই বুঝতে পারে।

কেননা পবিত্র কুরআনে এসেছে:-
ٱلرِّجَالُ قَوَّٰمُونَ عَلَى ٱلنِّسَآءِ
‘‘পুরুষরা নারীর ওপর কর্তৃত্বশীল’’
[আন নিসা ৪:৩৪]

হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন পুরুষরা স্ত্রীদের অভিভাবক তারা স্বামীর আদেশ মান্য করবে, তার পরিবারের সাথে সদাচার করবে এবং তাঁর সম্পদের হেফাজত করবে।

প্রিয় বোন! পরিবার একটি জাহাজের মতো জীবনের স্রোত ঢেলে যেটি সামনের দিকে এগিয়ে যায়, জাহাজের জন্য যেমন একজন কাপ্তান চাই; তেমনি ভাবে পরিবারের জন্য চাই একজন অভিভাবক। অন্যথায় তার অগ্রগতি ব্যাহত হবে, এমনকি সমুদ্রের অবস্থা নাজুক হলে ডুবেও যেতে পারে। আর সে অভিভাবক হলেন আপনার স্বামী।

প্রিয় বোন! আপনি হয়তো ভাবছেন তাহলে সব সময় স্বামীর পছন্দের কথা ভাবতে হবে! তার সব কথা মানতে হবে! আমারও তো একটা মন আছে; আমারও তো কিছু পছন্দ-অপছন্দ আছে! আমার কি কোনো অধিকার নেই?

প্রিয় বোন! আপনি নিঃসন্দেহে ঠিক বলেছেন। নিঃসন্দেহে আপনারও নিজস্ব পছন্দ অপছন্দ আছে। আপনারও আছে স্বতন্ত্র অধিকার, কিন্তু উভয়ের অধিকার একই পদ্ধতিতে আদায় করা যাবে না।

এখানে স্বামীর আনুগত্য মানে নিজের সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়া নয়। আনুগত্য মানে স্বামীর সঙ্গে মানিয়ে চলা। স্বামী তাঁর পুরুষসুলভ কর্তৃত্ব ব্যবহার করে পরিবার পরিচালনা করবে। আর আপনি আপনার নারীসুলভ আবেগ ও ভালোবাসা দিয়ে আপনার স্বামী কে পরিচালনা করবেন।

পুরুষ যত বাহাদুর, যত ক্ষমতাসীন কিংবা যত বদমেজাজিই হোক না কেন সে কখনও তার প্রেমময়ী স্ত্রীর পছন্দের বাইরে পা রাখতে পারে না।

আবেগ ও ভালবাসার শক্তির কাছে পৃথিবীর সব শক্তি হার মানে। সুতরাং উভয়ই আপন আপন পদ্ধতিতে তার ব্যক্তিগত সুখ, স্বাতন্ত্র্য ও অধিকার বজায় রাখবে।

কিন্তু বোন! আপনি যদি আবেগ ও ভালোবাসার পরিবর্তে, কর্তৃত্বের সূরে কথা বলতে শুরু করেন তাহলে মনে রাখবেন, আপনার দাম্পত্য জীবনে আপনিই আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন। আপনি কখনো এই জীবনে সুখ শান্তির আশা করতে পারেন না।

চলুন এই ব্যাপারে প্রিয় নবী সাল্লিল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদিস শোনা যাক।

ইমাম তাবরানী রহিমাহুল্লাহ্ সংকলিত ‘আল মু'জামুল আওসাত’ গ্রন্থে বর্ণিত একটি সহীহ হাদিসে এসেছে, একবার রাসূলুল্লাহ্ সল্লিল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবাদের এক মজলিসে বলেন,
ألا أخبركم بنسائكم في الجنة﴾
"আমি কি তোমাদেরকে জান্নাতি স্ত্রীদের সংবাদ দেবনা?"
সাহাবারা বললেন, "অবশ্যই দেবেন হে আল্লাহর রাসূল!
তিনি বললেন,
﴿ولؤد ودود، إذا غضبت، أو أسيء إليها أو غضب زوجها، قالت: هذه يدي في يدك لا أكتحل بغمض حتى ترضى﴾

"অধিক সন্তান জন্মদানকারী প্রেমময় স্ত্রী - যে রাগান্বিত হলে বা তার প্রতি কোন খারাপ আচরণ করা হলে কিংবা স্বামী তার সঙ্গে রাগ করলে সে বলে: এই যে আমার হাত আপনার হাতে রাখলাম—আপনি আমার উপর সন্তুষ্ট হওয়া পর্যন্ত আমি ঘুমাব না।”

প্রিয় বোন! আশা করি বুঝতে পেরেছেন হাদিসে
কি বলা হয়েছে! আবেগ ও ভালোবাসা এমন এক চাবি যা দিয়ে স্বামীর অন্তরের শেষ দরজাটি পর্যন্ত আপনি অনায়াসে খুলে ফেলতে পারবেন। প্রিয়তম স্বামীর কাছ থেকে আপনার সব দাবী মানিয়ে নিতে পারবেন।

আরো একটি হাদীস বলে আজকের এই আলোচনা শেষ করছি:
﴿أيما امرأة ماتت وزوجها عنها راض ، دخلت الجنة﴾

"যে স্ত্রী স্বামীকে সন্তুষ্ট রেখে মৃত্যুবরণ করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। "
[সুনানুত তিরমিজি : ১১৬১]

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সকল বোনকে আমল করার তৌফিক দিন, সবাইকে সুখি ও সমৃদ্ধ দাম্পত্যজীবন দান করুন। আমিন ইয়া রব্বাল আ'লামিন।

- শাইখ তামিম আল আদনানি হাফিজাহুল্লাহ্

-----------------------------------------

>> দু’জন মোটামুটি অপরিচিত মানুষ কীভাবে সারাটা জীবন একসাথে কাটিয়ে দিতে পারে?

.

কিশোর বয়স থেকে বিয়ের ব্যাপারে আমার একটা প্রশ্ন ছিলো মনে, সেই প্রশ্নটা যাদের করেছিলাম, তাদের উত্তর কিছু খুবই নিম্নমানের। তাই আদতে আমার কৌতুহল নিবৃত্ত হয়নি। প্রশ্নটি ছিলো, দু’জন মোটামুটি অপরিচিত মানুষ কীভাবে সারাটা জীবন একসাথে কাটিয়ে দিতে পারে? মোটামুটি অপরিচিত বললাম এই কারণে যে, বিয়ের আগে থেকে আসলে তেমন একটা জানাজানি একদমই সম্ভব না। একসাথে থাকতে গেলে তখন টের পাওয়া যায় যে অনেকে অনেক ছোট-ছোট বিষয়েই বিরক্ত হয়। আর তার উপরে যখন একটা বয়স পরে অনেকের শরীরে রোগবালাই ভর করে, তখন তো অপরজন অপার ভালোবাসায় আর যত্নে তার দেখাশোনা করেন- এমনটাই বা কী করে সম্ভব?

.

অবশেষে আমি আমার প্রশ্নের উত্তর পেলাম। তাও পেয়েছি পবিত্র কুরআনুল কারীমের আয়াত থেকে। নুমান আলী খানের আলোচনা থেকে শেখা সেই আয়াতটির ব্যাখ্যা এখানে উল্লেখ করছি-

আল্লাহ বলছেনঃ “আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সংগিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে”। [সূরা আর-রুমঃ ২১]

.

এই আয়াতটিতে আল্লাহ্‌ স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের অতুলনীয়, সংক্ষিপ্ত এবং সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা দিয়ে এই সম্পর্ককে তাঁর (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা) একটি নিদর্শন (আয়াত) বলে উল্লেখ করেছেন। আসুন এই পবিত্র সম্পর্ক সম্বন্ধে আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কি বলেছেন সেটা জানি। সম্পর্কটির বিভিন্ন পর্যায় তিনি তিনটি শব্দের দ্বারা ব্যাখ্যা করেছেন।

“..যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে (আরবি শব্দটি হচ্ছে – তাসকুনু) থাক…”

.

১) এই ‘তাসকুনু’ শব্দটির মূল হচ্ছে সুকুন । সুকুন = প্রশান্তি।

যে কেউ ই তার ভালবাসার ব্যক্তির সাথে থাকার সময় প্রশান্তির এই অনুভূতি তীব্রভাবে অনুভব করে । আনন্দ, সন্তুষ্টি আর প্রশান্তির এই অনুভূতি স্বামী বা স্ত্রীর প্রতি ভালবাসাকে আরো তীব্র ও গাঢ় করে তোলে। আর এই সুকুন এগিয়ে নিয়ে যায় সম্পর্কের দ্বিতীয় ধাপের দিকে। সম্পর্কের প্রথম পর্যায়টি সুকুনের মাধ্যমে তুলে ধরার পর দ্বিতীয় পর্যায়টি বর্ণনা করেন এইভাবে:

“… তিনি তোমাদের মধ্যে সৃষ্টি করেছেন পারস্পরিক সম্প্রীতি (মাওয়াদ্দাহ)…”

.

২) মাওয়াদ্দাহ= গভীর আবেগের উচ্ছ্বাস মিশ্রিত ভালবাসা / কারো জন্য বা কোন কিছুর প্রতি তীব্র আকর্ষণ

অর্থাৎ, স্বামী বা স্ত্রী — অপরজনের সাথে থাকার সময় প্রশান্তি অনুভব করে তার প্রতি আবেগের উচ্ছ্বাস অনুভব করে।

অনলাইনে নিরাপদ থাকতে ব্যাবহার করুন "Brave ব্রাউজার"। ডাউনলোড করতে এইখানে ক্লিক করুন . এভাবে স্বামী স্ত্রীর এই যাত্রা যতই এগিয়ে যেতে থাকে আবেগের উচ্ছ্বাস ক্রমশ কমতে থাকে। দুজনেই আরো পরিণত হয় এবং তাদের কল্পনার স্বপ্নগুলো ফিকে হতে শুরু করে। এই পথচলায় অনিবার্যভাবেই কিছু বাধা-বিপত্তি আসে। প্রথম দিকে উভয়েই আবেগে অন্ধ থাকলে ও ধীরে ধীরে একে অপরের দোষ-ত্রুটিগুলো খুঁজে পেতে শুরু করে। আল্লাহ্‌ আয়াতটিতে এরপরে বলেছেনঃ “… এবং তিনি তোমাদের মধ্যে সৃষ্টি করেছেন দয়া (রাহমা)…”

.

৩) রাহমা = দয়া/ মমতা/ কোমল স্নেহময় ভালবাসা। . এখন সময়ের সাথে সাথে আবেগের উচ্ছ্বাসে ভাটা পড়তে শুরু করেছে এটা-সেটা নিয়ে খুনসুটি আর ঝগড়ার কারণে আগের সেই অখন্ড প্রশান্তি ও হয়ত সবসময় থাকেনা তাই আল্লাহ্‌ বললেন যে তিনি উভয়ের হৃদয়ে দিয়েছেন একে অপরের জন্য ‘রাহমা’ । যাতে করে মান-অভিমানে জড়িয়ে পড়লেও তারা যেন একে অপরকে গভীর মমতায় ক্ষমা করে দিতে পারে। এই ‘রাহমা’ ই সম্পর্কে এগিয়ে নিয়ে যায় কারণ যত কিছুই হোক না কেন বুকের গভীরে আমরা কখনোই চাইনা আমাদের ভালবাসার মানুষটা কষ্ট পাক।

.

আয়াতটির শেষে আল্লাহ বলেছেনঃ “… নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে” সুবহানাল্লাহ !!

সুন্দর এই নিদর্শন নিয়ে আপনি চিন্তা করেছেন কি? এই অসাধারণ বাণী জানার পরে কোন মুসলিম-মুসলিমাহর উচিত নয় ‘কেয়ারিং আর শেয়ারিং’ এর নামে হারাম সম্পর্ক করতে যাওয়া বরং আল্লাহর উপরে তাওয়াক্কুল করে বিয়েটা করেই ফেলা।

.

বিয়ে করার ব্যাপারে সবকিছুই প্রতিকূল খুঁজে পাচ্ছেন? এখন উপায়? আল্লাহর নির্দেশ মানার নিয়াত করে হাত দু’খানি তুলে দুআ করে সাহায্য চাইতে পারেন। কোন কঠিন কিছুকে সহজ করে দেয়ার মালিক আল্লাহ। কিন্তু নিয়াত করার এবং দুআ করার কাজটা আমাদেরকেই করতে হবে। . কোন হারাম সম্পর্ক নয়, কোন হারাম দৃষ্টি নয়, হারাম কোন যোগাযোগ নয় ইনশাআল্লাহ। বরং চলমান সমাজের এইসব কলুষতাকে এড়িয়ে পবিত্র সম্পর্কটিতে দু’জনার সম্পর্কের প্রতিটি মূহুর্ত যেন ইবাদাত হয় সেই ইচ্ছা পোষণ করে দুআ করা দরকার। আল্লাহর দেওয়া সুকুন, মাওয়াদ্দাহ আর রাহমাহ অর্জনের অভিপ্রায় বুকে নিয়ে ক্রমাগত চাইতে থাকা উচিত। চাওয়ার আবেগ আর তীব্রতা বেশি থাকলে কেঁদে কেঁদে জায়নামাজ ভিজিয়ে ফেলে চাইতে হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সমস্ত দু’আ শুনেন। আল্লাহ অবশ্যই সবকিছু সুন্দর, শান্তিময় আর সহজ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ, যদি তাঁর কাছে আমাদের চাওয়া হয় সুন্দর।

.

নিশ্চয়ই আল্লাহ এই বিশ্বজগতের প্রতিপালক, যিনি সমস্ত ক্ষমতার অধিকারী, যিনি হও বললেই হয়ে যায়, যিনি অসীম করুণাময়, পরম দয়ালু, যিনি আমাদের সমস্ত দুআ শোনেন। আমাদের রব আল্লাহর কাছে ছাড়া আমরা আর কার আছে যাবো? দু’হাত রিক্ত-শূণ্য আমরা চেয়ে চেয়েই একদিন সম্পদে পূর্ণ হয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ। . আল্লাহ তা’আলা আমাদের জানিয়ে দিয়েছেনঃ “যারা প্রার্থনা করে, তাদের প্রার্থনা কবুল করে নেই, যখন আমার কাছে প্রার্থনা করে”

[সূরা বাকারাহ : ১৮৬]

▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂

.

লেখাঃ স্বপ্নচারী (আল্লাহ্‌ তাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন!)

.

 

>> সুখী দাম্পত্য!


-
১: একজন প্রশ্ন করল,
-আমাকে স্রেফ দুই শব্দে সুখী দাম্পত্য জীবন লাভের উপায় বাতলে দিন তো! লম্বাচওড়া বয়ান মনে থাকে না।
-দাম্পত্য জীবনে সুখী হতে চাইলে দুই শব্দই যথেষ্ট। আল্লাহ তা‘আলাই দুই শব্দে সুখী দাম্পত্যের রূপরেখা এঁকে দিয়েছেন।
১: মাওয়াদ্দাহ (مَوَدَّة)। প্রগাঢ় ভালবাসা।
২: রহমাহ (رَحْمَة)। অনুকম্পা। দয়া।
পরস্পরের আচার-আচরণে এ-দু’টি বিষয় বিদ্যমান থাকলে কী হবে?
-সেটাও আল্লাহ তা‘আলা এক শব্দে প্রকাশ করেছেন।
সাকান (سَكَن) আরাম, প্রশান্তি আসবে।
২: আমি রাগ-বিরাগ-অনুরাগ সবসময় মনে রাখব, স্বামী হলে স্ত্রী বা স্ত্রীদের প্রতি মাওয়াদ্দাহ ও রহমাহপূর্ণ আচরণ করছি তো?
৩: স্ত্রী হলে মনে রাখব, আমার আচরণেও রহমাহ বা মাওয়াদ্দাহ থাকছে তো?

.

 

>> সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য নাসীহাহ্

.

আমাদের দাম্পত্য জীবন কোনরূপ অসহনশীল পরিস্থিতির মোকাবেলা কিংবা তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়াই তেরোটি বছর পেরিয়ে গিয়েছে আলহামদুলিল্লাহ্!

দাম্পত্য জীবনের সুখ নির্ভর করে মূলতঃ দু’জন মানুষের পারস্পরিক বিশ্বাস, শ্রদ্ধাবোধ, ভালোবাসা, আন্তরিকতার ও সহনশীলতার উপর। এজন্য আমরা স্বামী-স্ত্রী উভয়েই দাম্পত্য জীবনের সুকুনের জন্য কিছু বাস্তবভিত্তিক নাসীহাহ্ মেনে চলি। সেগুলো শেয়ার করলে আশা করছি বিবাহিতদের দাম্পত্য জীবনে কল্যাণ ও শান্তির সুবাতাস বইয়ে দিতে সহায়ক হতে পারে। আমাদের অনুসরণীয় নাসীহাহ গুলো:

-
যত বিরক্তই লাগুক একই সময়ে স্বামী-স্ত্রী দু'জন একসাথে রেগে যাবেন না।
-
দোষে গুণেই মানুষ। সুতরাং সমালোচনা যদি করতেই হয় মুহব্বত আর আন্তরিকতা দিয়ে বলতে চেষ্টা করুন।
-
চব্বিশ ঘন্টার যে কোন সময় অন্তত একবার একসাথে সালাত আদায় করার চেষ্টা করুন। এরপর রব্বে করীমের দরবারে একসাথে হাত তুলে অন্তরের আকুলতা ব্যকুলতা পেশ করুন।
-
সবসময় আপনার যে কোন সফলতার জন্য স্ত্রীর শ্রান্ত পরিশ্রান্ত ঘর্মাক্ত সময়গুলোর অবদান কৃতজ্ঞতার সাথে প্রকাশ করুন।
-
নিজেদের মতানৈক্য নিজেরাই মিমাংসা করার চেষ্টা করি। প্রয়োজনে চূড়ান্ত ছাড় দিয়ে হলেও তৃতীয় পক্ষের আগমন ঠেকিয়ে দিবেন। কারণ তৃতীয় পক্ষের আগমন মানেই অন্যের সামনে নিজেদের কোন একজনকে ছোট হওয়া।
-
মনোমালিন্য নিয়ে কখনোই ঘুমোতে যাবেন না, যে কোন একজন ছাড় দিয়ে সমাধান করে তবেই ঘুমোতে যান।
-
তৃতীয় কোন পক্ষ একজনের সম্পর্কে আরেকজনকে কোন নেগেটিভ কথা বললে তা আমলে নিবেন না এবং এজন্য একে অপরকে চার্জ করবেন না।
-
কোনভাবেই দু’জনের বাইরে নিজেদের ব্যক্তিগত ত্রুটির কথা প্রকাশ না করবেন না।
-
নতুন কোন মানুষের সাথে পরিচয় হলে একে অন্যের কাছে তার সম্পর্কে অবহিত করা উচিত।
-
একজন আরেকজনকে সাধ্যমত গিফট বা সারপ্রাইজ দিতে চেস্টা করা। এবং সেটা ততটা পছন্দ না হলেও আন্তরিকতার সাথে তা গ্রহণ করা।
-
স্বামী বা স্ত্রী অসুস্থ্য হলে তার সুস্থ্যতার জন্য নফল সিয়াম পালন করা।
-
মাঝে মধ্যে রান্না করে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে খাওয়া।
-
স্ত্রী যতোই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দিক থেকে দুর্বল হোক, তাকে তার মতো করে বুঝিয়ে স্বামীর সাফল্যে আনন্দ পেতে সহায়তা করা।
-
কখনোই একে অপরকে এক চোঁখে দেখবেন না। এতে আপনি তার প্রতি ইনসাফ করতে পারবেন না। তাই যদি আপনার এক চোঁখে তার কোন দোষ ধরা পড়ে তবে আরেক চোঁখে তার কোন গুণের প্রতিচ্ছবি দেখে তাকে ক্ষমা করে দিয়ে সংশোধন হওয়ার সুযোগ দিন।
-
স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মান-অভিমান থাকবেই। এটাই দাম্পত্যের অন্যতম সৌন্দর্য। কাটা আছে বলে গোলাপের সৌন্দর্য ম্লান হয়ে যায়নি বরং কাটার আঘাত সয়ে গোলাপের সৌন্দর্য উপভোগ করাটাই এর সৌন্দর্য পিপাসুদের কাছে স্বাভাবিক।
-
কারো কোন অতীত থাকলে তা খুঁচিয়ে বর্তমানে আনার বোকামি ভুলেও করবেন না। এতে নিজেদের ভালোবাসার সম্পর্কটা আরও বিশ্বস্ততা ও নির্ভরতা পাবে, আর জীবন পাবে গতিময়তা।

পরিশেষে বলতে চাই, আল্লাহ্ পাক আমার বিয়ের মাধ্যমে আমার দ্বীনের অর্ধেক পূরণ করে দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ্! বাকী অর্ধেক তাক্বওয়া অর্জনের মাধ্যমে পূরণ করার জন্য নিরন্তর চেষ্টা সাধনা করে যাচ্ছি। তাই যারাই পরিকল্পিত ও সংরক্ষিত জীবন যাপন করবেন তারাই বিয়ে পরবর্তী দাম্পত্য মূহূর্তগুলো চমকপ্রদভাবে কাটাতে পারবেন আর আমৃত্যু সুকুনের সাথে বসবাস করে যেতে পারবেন ইনশাআল্লাহ্! যার চূড়ান্ত গন্তব্য হবে জান্নাত।

আল্লাহ্ আমাদের ভাইদের বিবাহিত দাম্পত্য জীবনকে আরো সুন্দর বরকতময় করে দিন এবং আমাদের মাঝে যারা অবিবাহিত আছেন তাদের দ্রুত বিবাহ সম্পাদনের মাধ্যমে দ্বীনের অর্ধেক পূরণ করার তাওফিক দিন।

#Akik_Russel

 

>> কিন্তু এখনো আমার দু‘আ কবুল হয়নি

 

একেকসময় মনের অবস্থা একেকরকম থাকে। আমার একটা অভ্যাস আছে। মন বেশি বিক্ষিপ্ত থাকলে, মনের সে অনুভূতি একবাক্যে লিখে তার সাথে IslamQA জুড়ে দিয়ে সার্চ দেই। ধরা যাক, মন খারাপ। তাহলে লিখে ফেলি-
Feeling depressed ISlamQA.
এভাবে লিখলে অসংখ্য ফতোয়া চলে আসে। একটার পর একটা পড়তে থাকি। মনে হয় যেন কোনো এক জ্ঞানসমুদ্রে এসে পড়েছি। পড়তে পড়তে একসময় মন খারাপের অনুভূতিটা চলে যায়।
.
ফতোয়া ঘাটতে ঘাটতে দুইটি প্রশ্নে চোখ পড়ে গেলো। দুইটা প্রশ্নই দুইজন মেয়ে করেছে। একজন লিখেছে-
“শায়খ! আমার বয়স ২৯ হয়ে গেছে। এখনো বিয়ে হয়নি। আমি সবসময় আল্লাহ্‌র কাছে একজন ভালো স্বামী চাই। ….. কিন্তু এখনো আমার দু‘আ কবুল হয়নি। মাঝে মধ্যে মনে হয় আমি গুনাহগার বলেই হয়তো আল্লাহ্‌ আমার দু‘আ কবুল করছেন না। শায়খ! আমার জন্য একটু দু‘আ করে দিন না, যাতে আল্লাহ্‌ আমাকে একজন ভালো স্বামী দেন।”
.
আরেকজন প্রশ্ন করেছে-
“আল্লাহ্‌ সুন্দর। তিনি সুন্দর ভালোবাসেন। কিন্তু কালো চেহারা, ব্রণে ভরা মুখ আর এবড়ো-থেবড়ো দাঁতের কারণে আমি নিজেকে কুৎসিত মনে করি। আচ্ছা! আমি তো সুন্দর না। তার মানে কি আল্লাহ্‌ আমাকে ঘৃণা করেন?... বাসায় সবাই আমাকে বোঝা মনে করে। ইসলামে তো সুন্দর মেয়ে বিয়ে করতে বলা হয়েছে। আর আমি পুরুষদের দোষও দেই না। তারা তো কুরআন-সুন্নাহ মেনেই চলছে। কিন্তু আমার দোষ কী? আমি তো কুৎসিত হতে চাইনি! কাউকে সামাজিকভাবে মেনে নেয়া হচ্ছে না, চাকরী দেয়া হচ্ছে না, এমনকি বিয়েও করা হচ্ছে না -শুধু সে সুন্দর না বলে! এটা একজন মেয়ে কীভাবে মেনে নিবে?”
শায়খ দুইজনকে এতো সুন্দর উত্তর দিলেন! উত্তর শুনেই মন ভরে গেলো। সংক্ষেপে তুলে ধরছিঃ
.
হে আল্লাহ্‌র বান্দী! কুরআনের এই আয়াত নিয়ে ভাবো-
“হয়তো তোমরা কোন একটি বিষয় পছন্দ করো, যা তোমাদের জন্য ভালো না। আবার একটি বিষয় অপছন্দ করো, যা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আসলে, আল্লাহই জানেন আর তোমরা জানো না।” [সূরা বাকারা ২:২১৬]
কাজেই, আমাদের জন্য কোনটা ভালো, কোনটা খারাপ, সেটা আল্লাহই ভালো জানেন। তিনি আমাদের জন্য জীবনটাকে সেভাবেই সাজিয়েছেন।
.
হাঁ, দুনিয়ার পরীক্ষার জন্য হয়তো আমাদের কাছে সেটা অবিচার মনে হতে পারে। কিন্তু যদি ধৈর্য ধরতে পারি, তবে তার জন্য আল্লাহ্‌ আমাদেরকে উত্তম প্রতিদান দিবেন। রাসূল (সা) বলেছেন, “মুমিনের ব্যাপারটা বড়ই আজব। যখন তার সাথে ভালো কিছু ঘটে, সে ধৈর্য ধরে আর তা তার জন্য উত্তম। আর যখন খারাপ কিছু ঘটে, সে সবর করে। আর এটাও তার জন্য উত্তম।” (মুসলিম, হাদিস নংঃ ২৯৯৯)
.
তাই আল্লাহকে ধন্যবাদ দাও। যদি তিনি তোমাকে কিছু থেকে দূরে রাখেন, তবে তা তোমার কল্যাণের জন্যেই। শয়তানকে ওয়াসওয়াসা দেয়ার সুযোগ দিয়ো না। বরং, আল্লাহ্‌ যেমন চান, তেমন একজন বান্দী হয়ে যাও। তাঁর ফয়সালা হাসিমুখে মেনে নাও। কাদরকে গ্রহণ করতে শিখো। আল্লাহ্‌র ইবাদত দিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখো। সালাত-সিয়াম, আল্লাহ্‌র যিকিরে নিবিষ্ট হও।
নিজের প্রতি সদয় হও। তাকিয়ে দেখো, তোমার মতো লক্ষ লক্ষ মেয়ে বিয়ে করতে পারছে না। কিন্তু তারা অনেক বিবাহিত দম্পতির চেয়ে সুখে আছে।
.
কখনো কোনো দম্পতিকে একসাথে দেখলে কি তোমার মন খারাপ হয়ে যায়? মনে হয় আল্লাহ্‌ তোমাকে এই সুখ থেকে বঞ্চিত করেছেন? এক মিনিট দাঁড়াও! তুমি তো কেবল জীবনের একটা দিকই দেখলে!
যদি তুমি সেই স্ত্রীকে দেখতে যে তার স্বামীকে ঘৃণা করে, স্বামীকে একটুও ভালোবাসে না, যার মুখ থেকে কেবল স্বামীর অত্যাচারের রোমহর্ষক বর্ণনাই পাওয়া যায়, তাহলে হয়তো বিয়ে থেকে তোমাকে দূরে রাখার জন্য তুমি আল্লাহকে ধন্যবাদ দিতে।
এরপর থেকে নিজেকে হতভাগী মনে হলে, তোমার সেই বান্ধবীর কথা মনে করবে, যাকে সারাক্ষণ তার স্বামীর বকা হজম করতে হয়। স্মরণ করবে তোমার সেই প্রতিবেশীর কথা, যাকে স্বামী মেরে বাসা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে।
.
আজ তুমি অসুন্দর হওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ করছো। কিন্তু যদি আল্লাহ্‌ তোমাকে যে নি'আমত দিয়েছেন সেটা গুনতে শুরু করো, তবে গুনে শেষ করতে পারবে না।
“যদি তোমরা আল্লাহর নি‘আমত গণনা করো, তবে তার সংখ্যা গুনে শেষ করতে পারবে না। মানুষ বড়ই যালিম। বড়ই অকৃতজ্ঞ।” (সূরা ইব্রাহীম ১৪:৩৪)
.
আজ যদি সবাই তোমার মতো কথা বলতে শুরু করে, তবে যারা অসুস্থ তারা বলবে, “আল্লাহ্‌ কেন আমাকে অসুস্থ রেখেছেন আর সবাইকে সুস্থ রেখেছেন?”
যারা গরীব তারা বলবে, “আল্লাহ্‌ কেন আমাকে গরীব বানিয়েছেন আর অন্যদেরকে ধনী বানিয়েছেন?”
যারা ক্লান্ত তারা বলবে, “আল্লাহ্‌ কেন আমাকে দৌড়ের ওপর রেখেছেন আর সবাইকে এতো ভালো রেখেছেন?”
.
তুমি কেন এভাবে ভাবছো না যে, আল্লাহ তোমাকে দেখার জন্য দুইটা চোখ দিয়েছেন, অথচ কোটি কোটি মানুষ চোখে দেখতে পায় না।
তুমি পা দিয়ে হাঁটতে পারো অথচ লাখ লাখ মানুষ আজ পঙ্গু।
আল্লাহ তোমাকে ইসলাম দিয়েছেন অথচ কোটি কোটি মানুষ ইসলামের সৌন্দর্য থেকে বঞ্চিত।
.
একবার ভেবে দেখো, সেসব অমুসলিম মেয়েদের কথা, যাদেরকে আল্লাহ্‌ নজরকাড়া সৌন্দর্য ঢেলে দিয়েছেন। কাল যদি তারা কুফরের ওপর মারা যায়, তবে তারা কোথায় থাকবে? এই সৌন্দর্য তাদের কী কাজে লাগবে? বরং তারা যদি তাদের অন্তরটাকে ইসলাম দিয়ে সুন্দর করতো, তবে তা তাদের কাজে লাগতো। আমি তোমাকে প্রশ্ন করি, কোনটা তোমাকে খুশি করে? একজন সুন্দরী অমুসলিম হিসেবে থাকা নাকি একজন অসুন্দর মুসলিমা হিসেবে থাকা?
“তুমি কখনো চোখ খুলে তাকিও না ঐ সবের প্রতি যা আমি তাদের বিভিন্ন দলকে পার্থিব জীবনে উপভোগের জন্য সৌন্দর্য স্বরূপ দিয়েছি। যাতে আমি সে বিষয়ে তাদেরকে পরীক্ষা করে নিতে পারি। আর তোমার রবের দেয়া রিযিকই হলো সবচেয়ে উত্তম। সবচেয়ে বেশি স্থায়ী।” (সূরা ত্ব-হা ২০:১৩১)
.
মুহাম্মাদ রশীদ একটি বই লিখেছেন। নাম ‘গাইরে মুতাযাওজিয়াত ওয়ালাকিন সা’ঈদাত (বিয়ে না করলেও সুখী)। তিনি সেখানে এক বোনের গল্প এনেছেন। যে বিয়ে করতে না পারায় খুব হতাশ থাকলেও পরবর্তীতে কুরআনের মাধ্যমে জীবনের অর্থ খুঁজে পেয়েছে। তিনি লিখেছেন,
সকল মেয়েরই বোঝা উচিত, তাদের জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে, জীবনের সবক্ষেত্রে আল্লাহ্‌ তা‘আলার ইবাদত করতে পারা। তার যদি ঘর-সংসার করার সুযোগ আসে, তবে সে ইসলাম অনুযায়ী ছেলেমেয়েদেরকে বড়ো করবে। আর যদি সুযোগ না হয়, তবে সে যেন সেসব বোনদেরকে নিজের মেয়ে হিসেবে নিয়ে নেয়, যারা আল্লাহ্‌র পথ থেকে দূরে সরে গিয়েছে। সে তাদেরকে আল্লাহ্‌র রাস্তায় আনার চেষ্টা করবে। তাদের ভালো কাজের অংশীদার সে নিজেও হবে। এভাবে পৃথিবীর সকল মুসলিমকে সে নিজের করে নিবে।
.
নিজেকে গড়ে তুলবে একজন ভালো মানুষ হিসেবে। যাকে সবাই অনুসরণ করবে। শ্রদ্ধা করবে। ভালোবাসবে। আর-
“আল্লাহ ভালো মানুষদের প্রতিদান নষ্ট করেন না।” [সূরা তওবা, ৯:১২০]

-Shihab Ahmed Tuhin

 

 

যে নারী দেরীতে বিয়ে হওয়ার ভয় করছে এবং যখনই তার কোন বান্ধবীর বিয়ে হয় তখনই সে বিষণ্ণ হয়ে পড়ে

 

প্রশ্ন
আমি সবসময় দেখি যে, আমার বান্ধবীদের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। কারো কারো এনগেজমেন্ট হচ্ছে। এতে আমি বিষণ্ণ হই এবং অনুভব করি যে, আমার বিয়ে হতে দেরী হবে। যেহেতু আমাকে কেউ দেখে না। আমি থাকি ঘরের ভেতরে। তাই আমার মনে হয় যে, কখনও আমার বিয়ে হবে না। কিভাবে আমার জন্য ছেলে আসবে; আমি তো ঘরের ভেতরে। ঘর থেকে বের হই না। আমাকে কেউ দেখে না এবং আমি চাকুরীও করি না। আমি যদি ছেলেদের সাথে সম্পর্ক না রাখি তাহলে ভবিষ্যতে যে ছেলে আমাকে বিয়ে করবে সে কোথা থেকে আসবে? এ বিষয়ে আপনারা আমাকে কী উপদেশ দিবেন? এ ক্ষেত্রে কি কি সঠিক পদক্ষেপ অনুসরণ করা উচিত? সর্বদা আমার চিন্তা হচ্ছে: বিয়ের আগে ছেলেটিকে ভালভাবে জানা উচিত এবং তাকে জানার জন্য কিছুদিন তার সাথে কথাবার্তা বলা উচিত; যাতে করে পরবর্তীতে সে খারাপ বা এ ধরণের কিছু না পড়ে। এ দৃষ্টিভঙ্গি কি সঠিক? নাকি সরাসরি বিয়ে করতে হবে?
 
উত্তর
আলহামদু লিল্লাহ।.
 
আলহামদু লিল্লাহ্‌।
এক:
 
যদি একজন মুসলিম এ আয়াতে কারীমাটি একটু ভেবে দেখে: "দুনিয়ার জীবনে আমিই তো তাদের মধ্যে তাদের জীবিকা বণ্টন করি এবং মর্যাদায় তাদের কাউকে কাউকে অন্যদের ওপরে উঠাই।"[সূরা যুখরুফ, আয়াত: ৩২] তাহলে জানতে পারবে যে, মানুষ ধনী হওয়া ও গরীব হওয়া, শক্তিশালী হওয়া ও দুর্বল হওয়া, সুস্থ হওয়া ও অসুস্থ হওয়া, বিবাহিত হওয়া ও অবিবাহিত থাকা, সন্তানধারী হওয়া ও নিঃসন্তান হওয়া... এ বণ্টন আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে; মানুষের পক্ষ থেকে নয়— তখন তার অন্তর প্রশান্ত হবে। কাউকে আল্লাহ্‌ বিশেষ কোন নেয়ামত দিলে সে ব্যক্তির প্রতি তার অন্তরে হিংসা হবে না। তার মনে দুশ্চিন্তা ও বিষণ্ণতা আসবে না; এই ভেবে যে, অমুকে এ নেয়ামত পেল সে পেল না কেন। কারণ সে জানে যে, সবকিছু আল্লাহ্‌র নির্দেশে ও তাঁর ইচ্ছায় ঘটে। আল্লাহ্‌ যা চান তা ঘটে; তিনি যা চান না তা ঘটে না।
 
একজন মুসলিম যখন এ বিষয়টি জানবে তখন ভবিষ্যৎ নিয়ে তার দুশ্চিন্তা আসবে না। বরং সে জানবে যে, তার দায়িত্ব হচ্ছে— আল্লাহ্‌র নির্দেশের ওপর অবিচল থাকা এবং তার গোটা জীবন আল্লাহ্‌র জন্য ও আল্লাহ্‌র আনুগত্যের সাথে যাপন করা। এরপর আল্লাহ্‌ যা খুশি তাকে রিযিক (জীবিকা) দান করবেন। অচিরেই আল্লাহ্‌ তার জন্য যে জীবিকা বণ্টন করেছেন সেটার ওপর তাকে সন্তুষ্টি ও পরিতুষ্টি দান করবেন।
 
মানুষের রিযিক নির্ধারিত। আল্লাহ্‌ তার জন্য যে রিযিক নির্ধারণ করে রেখেছেন সেটা কোন বৃদ্ধি বা ঘাটতি ছাড়া আসবেই আসবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: "কোন আত্মা তার চূড়ান্ত রিযিক ও আয়ু ভোগ করা ছাড়া কখনও মৃত্যুবরণ করবে না। সুতরাং আল্লাহ্‌কে ভয় করুন এবং রিযিক সন্ধানকে সুন্দর করুন।"[আলবানী 'সিলসিলাতুল আহাদিসিস সাহিহা' গ্রন্থে (৬/৮৬৫) হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন] অর্থাৎ মানুষের রিযিক আসবেই আসবে। মানুষের কর্তব্য হচ্ছে—আল্লাহ্‌কে ভয় করা এবং তাঁর নির্দেশের গণ্ডিতে অবিচল থাকা। আর সুন্দরভাবে রিযিক সন্ধান করা। অর্থাৎ সীমানার ভেতরে থেকে রিযিক সন্ধান করা। সুতরাং হারাম উপায়ে রিযিক তালাশ না করা। কারণ সে যত যা করুক না কেন আল্লাহ্‌ তার জন্য যতটুকু রিযিক লিখে রেখেছেন এর বেশি সে পাবে না।
 
সুতরাং আপনার বাসা থেকে বের হওয়া, ছেলেদের সাথে সম্পর্ক রাখা, ইত্যাদি ইত্যাদি... এগুলো কিছুই না। এগুলোও সব করলে আপনার বিয়ের রিযিক আসবে— তা নয়। "সুতরাং আল্লাহ্‌কে ভয় করুন এবং রিযিক সন্ধানকে সুন্দর করুন"। আপনি ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না। শয়তান আপনার অন্তরে দুশ্চিন্তা নিক্ষেপ করছে; যাতে করে আপনাকে আল্লাহ্‌র পথ থেকে দূরে সরিয়ে নিতে পারে। বর্তমানে আল্লাহ্‌ আপনার কাছে কী চাচ্ছেন সেটা নিয়ে মশগুল থাকুন এবং আল্লাহ্‌র নির্দেশের ওপর অবিচল থাকুন। অচিরেই আল্লাহ্‌ আপনার জন্য যে রিযিক নির্ধারণ করে রেখেছেন সেটা আসবেই আসবে; এর ব্যতিক্রম হবে না।
 
দুই:
 
জানাশুনার উদ্দেশ্যে বিয়ের কিছুদিন আগে থেকে পাত্রের সাথে পরিচিত হওয়া ও তার সাথে কথাবার্তা বলা:
 
বাস্তবতা হচ্ছে—বিয়ের আগে পরিচিত হওয়ার মধ্যে কোন লাভ নেই। এ পরিচিতি সফল দাম্পত্য জীবনের কোন গ্যারান্টি দেয় না। আরও বেশি জানতে 84102 নং প্রশ্নোত্তরটি দেখুন। সে প্রশ্নোত্তরে রয়েছে যে, পূর্ব পরিচিতি ও প্রেম-ভালবাসার কাহিনীর পর সংঘটিত অধিকাংশ বিবাহ ব্যর্থ হয় এবং সেগুলোর শেষ পরিণতি হয়— তালাক।
 
বরং এ পরিচিতি একজন মেয়ের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ ছেলেটি মিথ্যাবাদী প্রতারক হতে পারে। তখন সে মেয়েটি থেকে তার মনের ইচ্ছা পূর্ণ করে নিবে। মেয়েটি সবকিছু হারাবে; কিছুই পাবে না। প্রত্যেক মেয়ে এ কথাই বলে: 'আমি অন্যদের মত নই। আর যে ছেলেটিকে আমি ভালবাসি ও যার সাথে আমি ঘুরতে বের হই, সেও অন্য ছেলেদের মত নয়'। এই প্রতারণা দিয়ে শয়তান তাকে প্রতারিত করে। এক পর্যায়ে সে শয়তানের জালে পড়ে সবকিছু হারায়। পরিশেষে, মেয়েটির কাছে এটাই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, তার অবস্থাও অন্য মেয়েদের মত। আরও জানতে দেখুন: 84089 নং প্রশ্নোত্তর।
 
কোন ছেলেকে জানাশুনার জন্য এইটুকু যথেষ্ট যে— তার  দ্বীনদারি, তার আখলাক এবং যে পরিবারে সে বড় হয়েছে ও থেকেছে সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা। কোন কোন সমাজে শিক্ষাগত যোগ্যতা ও সামাজিক অবস্থান জানাও খুব গুরুত্বপূর্ণ; যেটাকে উপেক্ষা করা চলে না। এরপর কিছুদিন 'খিতবা' (প্রস্তাবনা)-র সময় অতিবাহিত হবে। এরপর বিয়ের আকদ হবে। জেনে রাখুন, স্বামী-স্ত্রীর প্রকৃত জানাশুনা তারা উভয়ে ঘর সংসার শুরু করে একই ছাদের নীচে বাস করার আগে সম্ভবপর নয়। এর আগে প্রস্তাবনা-কালীন সময় কিংবা আকদ-কালীন সময়ে প্রত্যেকে প্রত্যেকের ভাল দিকটা প্রকাশ করে; খারাপ দিকটা করে না। প্রত্যেক পক্ষ বিপরীত পক্ষকে তুষ্ট করার জন্য কৃত্রিমতা অবলম্বন করে। সংসার শুরু হওয়ার পর আসল রূপ প্রকাশ হয়। তখন মানুষ কৃত্রিমতা বাদ দিয়ে তার স্বরূপ প্রকৃতিতে ফিরে আসে।
 
এ কারণে বিয়ের আগের সময়টা যত দীর্ঘই হোক না কেন এটি দাম্পত্য জীবনের সফলতা ও ব্যর্থতা সম্পর্কে জানার জন্য যথেষ্ট নয় এবং এ সময়ের চরিত্র আসল চরিত্র নয়।
 
আমরা আল্লাহ্‌র কাছে প্রার্থনা করছি তিনি যেন আপনাকে সঠিক বুঝ দান করেন, আপনাকে তার পছন্দনীয় ও সন্তুষ্টির পথ ধরার তাওফীক দেন।
 
আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।
---------------------------

 

 

▌কষ্ট ও পুরস্কার!

“আর (স্মরণ কর) আইয়ুবের (আ) কথা, যখন সে তাঁর প্রতিপালককে আহ্বান করে বলেছিলেন: আমি দুঃখ-কষ্টে পড়েছি, আপনি তো দয়ালুদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু”। (সূরা আম্বিয়া ২১:৮৩)
কুরআনে বর্ণিত সকল নবীর মাঝে এমন একজন নবী আছেন যার দাওয়াতী কার্যক্রম ও অনুসারীদের ব্যাপারে কুরআনে কোনো উল্লেখ নেই। সেই নবী হলেন হযরত আইয়ুব (আ), ইংরেজিতে তিনি ‘জব (Job)’ নামে পরিচিত। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসতে পারে যে, আল্লাহর বাণী প্রচার করাই যদি নবীদের কাজ হয় তাহলে একজন নবীর দাওয়াতী কাজের কথা উল্লেখ না করার পেছনে যুক্তি কী? এর জবাব হচ্ছে কুরআনে যেকোনো কিছুই বর্ণিত হওয়ার পিছনে একটি কারণ আছে, কোনো কিছুই অনাবশ্যক নয়। আইয়ুব (আ) এর বিশেষত্ব হল তার সাবর, ধৈর্য ও দৃঢ়তা, যার থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়ার বিষয় আছে। প্রশ্ন হচ্ছে কী সেই কাহিনী?
আল্লাহ আইয়ুব(আ) কে দু হাত ভরে স্বাস্থ্য, সম্পদ ও সন্তান দিয়েছিলেন, এবং এগুলো ফিরিয়ে নেবার মাধ্যমে তিনি তাঁকে পরীক্ষা করতে চাইলেন। তাঁর সন্তানেরা প্রাণ হারালো, তাঁর গবাদিপশু মরে গেল, খামার ধ্বংস হয়ে গেল এবং তিনি সব রকম রোগে আক্রান্ত হলেন। এর মধ্যে একটি অসুখ ছিল এমন যে, পোকামাকড় তার শরীরের ক্ষতস্থান ভক্ষণ করতে লাগলো। বছরের পর বছর এভাবেই পেরিয়ে গেল। তাঁর আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব এবং সমাজের লোকেরা একে একে তাঁকে বর্জন করল। রোগ সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে তারা তাঁকে দেখতে যাওয়া বন্ধ করে দিল। স্বামীর ছোঁয়াচে রোগ স্ত্রীকেও আক্রান্ত করতে পারে এই আশঙ্কায় তাঁর স্ত্রীকেও (যিনি নিজের ও স্বামীর জন্য অর্থ উপার্জনে বাইরে যেতেন) এই ভয়ে সামাজিকভাবে বয়কট করা হল। এত কিছুর পরেও আইয়ুব (আ) ছিলেন ধৈর্যশীল এবং কৃতজ্ঞ।"
·
একদিন তাঁর স্ত্রী এই দুঃখ-কষ্টের ভার সহ্য করতে না পেরে কেঁদে উঠে বললেন, “আর কতদিন এই দুর্দশা চলবে? কখন এই দুঃসময় শেষ হবে? কেন আপনি আপনার রবকে বলছেন না এই কষ্ট থেকে আমাদের মুক্তি দিতে?” আইয়ুব (আ)এটি শুনে রাগান্বিত হয়ে স্ত্রীকে বললেন, “এই কষ্টের আগে কত দিন যাবত আমরা আল্লাহর অনুগ্রহ উপভোগ করেছি?”
তাঁর স্ত্রী জবাবে বললেন, “৭০ বছর”।
আইয়ুব(আ)তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, “আর কত বছর ধরে আল্লাহ আমাদের এভাবে পরীক্ষা করেছেন?”
তাঁর স্ত্রী উত্তর দিলেন, “৭ বছর।” (অন্য বর্ণনাতে আছে তিন বা আঠার বছর, যাই হোক না কেন মূল বিষয় হচ্ছে এর মেয়াদ ছিল ৭০ এর অনেক কম)
আইয়ুব (আ) প্রত্যুত্তরে বললেন, “৭০ বছর ধরে আল্লাহর নি’আমত ভোগ করেছি, আর মাত্র ৭ বছর হল তিনি আমাদের পরীক্ষা নিচ্ছেন, এ ব্যাপারে আল্লাহকে নালিশ করতে আমার লজ্জা হচ্ছে। নিশ্চয়ই তোমার ঈমান দুর্বল হয়ে পড়েছে। যাও অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও।”
·
অতঃপর বহুদিন পর আইয়ুব (আ) তাঁর সেই বিখ্যাত দু’আটি করেন, তবে সেটাও ছিল পরোক্ষভাবে এবং বিনয়ের সাথে, তাতে অনুযোগের কোন সুর ছিল না। যা কুরআনের ২১ নং সূরার ৮৩ নং আয়াতে আছে
“আর (স্মরণ কর) আইয়ুবের (আ )কথা, যখন সে তাঁর প্রতিপালককে আহ্বান করে বলেছিলেনঃ আমি দুঃখ-কষ্টে পড়েছি, আপনি তো দয়ালুদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।”
আল্লাহ তাঁর দু’আর জবাব দেন এবং তাঁর স্বাস্থ্য, সম্পদ ও সন্তান ফিরিয়ে দেন। তদুপরি, তাঁর ধৈর্যের জন্য তাঁর জন্য নি’আমত আরও বাড়িয়ে দেন।
হে আল্লাহর পথের বন্দী, কতদিন ধরে আপনি কারাগারে? এক বছর? পাঁচ বছর? দশ বছর? বিশ বছর? আর আল্লাহর অনুগ্রহ ভোগ করেছেন আপনি কত বছর ধরে?
কত বছর আপনি স্বাধীনভাবে রাস্তায় হেঁটেছেন? কতগুলো বছর আপনি পরিবার-পরিজন আর বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গ উপভোগ করছেন? কত বছর ধরে সুস্বাদু সব খাবার খেয়েছেন, সবচেয়ে উত্তম পানীয় পান করেছেন, সুন্দর সব পোশাক পরেছেন? আপনি দেখবেন আপনি যতদিন কারাগারে আছেন তার থেকে বেশি সময় ধরে আপনি আল্লাহর নিয়ামতরাজি ভোগ করেছেন। এরপরেও কোন সাহসে আপনি অন্যদের কাছে আল্লাহর জন্য কারাভোগ নিয়ে অনুতাপ আর অভিযোগ করছেন? আপনি কি মানুষের কাছে নিজের অবস্থা সম্পর্কে মাতম করে লজ্জিত হন না? আপনি কি সেসব বছরের কথা ভুলে গেছেন যা আল্লাহর অনুগ্রহের মধ্যে কাটিয়েছেন?
“মানুষ অবশ্যই অতি মাত্রায় যালিম, অকৃতজ্ঞ।”(সূরা ইবরাহীম ১৪:৩৪)
·
মহা আরশের অধিপতির শপথ, আপনি যদি আল্লাহর রাহে ১০০০ বছরও একাকী কক্ষে বন্দীদশায় কাটিয়ে দেন, তা আপনার বুড়ো আঙ্গুলের কৃতজ্ঞতা আদায়ের জন্য যথেষ্ট হবে না, যা দিয়ে আপনি খান, পড়েন, লেখেন, কুড়ান, আঁকড়ে ধরেন, জিনিস পত্র সামলান। রাসুল(সাঃ) কি বলেননি, “যদি একজন মানুষের মুখকে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মাটিতে ফেলে ছ্যাঁচড়ানো হয় তবুও পুনরুত্থান দিবসে সে আফসোস করবে এই ভেবে যে সে যথেষ্ট ভালো কাজ করে নি”।
আপনার ব্যাপারে আল্লাহর ফায়সালার উপর সন্তুষ্ট থাকুন। যখন আপনি আপনার বন্দীত্বের প্রতিটি দিনকে অনুগ্রহ ও দয়া না ভেবে নির্যাতন ও শাস্তি হিসেবে মনে করবেন, তখন প্রতিটি মুহূর্ত আপনি ব্যথা অনুভব করবেন। আইয়ুব (আ) যদি তাঁর অবস্থার ব্যাপারে তাঁর রব্বের কাছে অনুযোগ করতে লজ্জিত বোধ করেন, তবে আপনার কী কারন থাকতে পারে মানুষের কাছে পরিবার পরিজনের ব্যাপারে অভিযোগ করতে? সেসব সুস্বাদু খাবারের কথা ভাবুন যা আপনি খেয়েছেন, সেসব অসাধারণ স্থানের কথা ভাবুন যেখানে আপনি ভ্রমন করেছেন। আল্লাহর অনুগ্রহের ব্যাপারে কৃতজ্ঞ হতে শিখুন, তিনি আপনাকে আরো দেবেন।
“যখন তোমাদের প্রতিপালক ঘোষণা করেনঃ তোমরা কৃতজ্ঞ হলে তোমাদেরকে অবশ্যই অধিক দিব, আর অকৃতজ্ঞ হলে অবশ্যই আমার শাস্তি হবে কঠোর”। (সূরা ইবরাহীম ১৪:৭)
আপনি যদি সাম্যের ভিত্তিতে সবকিছু হিসেব করেন তবে অন্তত আপনার কারাগারের বাইরে যতদিন কেটেছে ঠিক ততদিন কারবাসের আগ পর্যন্ত আল্লাহর কাছে এ অবস্থা থেকে মুক্তি চাওয়ার কথা না! তাই আপনি যদি কারাগারের বাইরে ৩০ বছর কাটান, তাহলে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করার আগে অন্তত ৩০ বছর কারাবাস করা উচিত! কিন্তু না, আল্লাহ তার চেয়ে দয়ালু। আপনার যদি সহ্য করতে না পারেন, তবে তাঁর কাছে, একমাত্র তাঁর কাছেই অভিযোগ করুন। তারপর ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন, যতক্ষণ না তিনি সাড়া দেন। মনকে প্রবোধ দিন ইয়াকুব (আ) এর দুআর মাধ্যমে যা তিনি তার পুত্রের জন্য করেছিলেন,
·
“আমি আমার বেদনা ও আমার দুঃখ শুধু আল্লাহর নিকট নিবেদন করছি…” (সূরা ইউসুফ ১২:৮৬)

লেখা : বাবর আহমাদ

 

এই ১০টি ফজিলতপূর্ণ আমল যা আপনার সারাবছরের_ই দৈনন্দিন রুটিনে থাকা উচিত

 

★আমলঃ- ১
প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে "আয়াতুল কুরসি' পাঠ করা।

ফজিলতঃ-
আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসূল সল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ সলাতের পর আয়াতুল কুরসী পাঠ করে, মৃত্যু ছাড়া আর কোন কিছুই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখতে পারবে না।”

[নাসাঈ, ইবনু হিব্বান, হাদীসটি সহীহ, শায়খ আলবানী]

.

★আমলঃ- ২
মাত্র বারো রাকাত; প্রতিদান হল "জান্নাতের মহল"

আম্মাজান আয়েশা (রাযিঃ) হইতে বর্নিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ১২ রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ নিয়মিত আদায় করবে তার জন্য আল্লাহতায়ালা জান্নাতে মহল নির্মান করবেন।
৪ রাকাত যোহরের পূর্বে, ২ রাকাত যোহরের পর, ২ রাকাত মাগরিবের পর, ২ রাকাত ইশার পর, ২ রাকাত ফজরের পূর্বে।
[সুনানে নাসায়ী, তিরমিযী]

.

★আমলঃ- ৩
প্রত্যেক ওযুর পর কালেমা শাহাদাত পাঠ করা।

"উচ্চারনঃ-আশহাদু আল্লাহ ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু ওয়াশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়ারাসুলূহু'

ফজিলতঃ-
"যে ব্যাক্তি ওযু করার পড় কালিমায়ে শাহাদাত পাঠ করবে ঐ ব্যাক্তির জন্য জান্নাতের ৮টি দরজা খুলে দেওয়া হয় এবং যে কোন দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে:
[সহিহ মুসলিম, হাদিস নং-২৩৪]

.

★আমলঃ- ৪
প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষেঃ-

৩৩ বার সুবহানাল্লাহ,
৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ্,
৩৩ বার আল্লাহু আকবার

এবং ১বার এই দোয়াটি পড়া লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন কাদীর পাঠ করে সর্ব মোট ১০০বার পূর্ণ করবে তার সমস্ত গুনাহ মাফ হইয়া যাবে যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমতুল্য হয় (মুসলিম, মিশকাত তাহকীক ৯৬৭/৩০৫)

.

★আমলঃ- ৫
প্রত্যেক সকাল ও সন্ধ্যায় সাইয়িদুল ইস্তিগফার পড়া। ক্ষমার শ্রেষ্ঠ দুয়া।
~~~~~
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এই দো‘আ পাঠ করবে, দিনে পাঠ করে রাতে মারা গেলে কিংবা রাতে পাঠ করে দিনে মারা গেলে, সে জান্নাতী হবে’।
ﺍَﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺃَﻧْﺖَ ﺭَﺑِّﻰْ ﻵ ﺇِﻟﻪَ ﺇﻻَّ ﺃَﻧْﺖَ ﺧَﻠَﻘْﺘَﻨِﻰْ ﻭَﺃَﻧَﺎ ﻋَﺒْﺪُﻙَ ﻭَﺃَﻧَﺎ ﻋَﻠﻰ ﻋَﻬْﺪِﻙَ ﻭَﻭَﻋْﺪِﻙَ ﻣَﺎ ﺍﺳْﺘَﻄَﻌْﺖُ، ﺃَﻋُﻮْﺫُﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﺷَﺮِّﻣَﺎ ﺻَﻨَﻌْﺖُ، ﺃﺑُﻮْﺀُ ﻟَﻚَ ﺑِﻨِﻌْﻤَﺘِﻚَ ﻋَﻠَﻰَّ ﻭَﺃَﺑُﻮْﺀُ ﺑِﺬَﻧْﺒِﻰْ ﻓَﺎﻏْﻔِﺮْﻟِﻰْ، ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻻَﻳَﻐْﻔِﺮُ ﺍﻟﺬُّﻧُﻮْﺏَ ﺇِﻻَّ ﺃَﻧْﺖَ -
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা আনতা রববী লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খলাক্বতানী, ওয়া আনা ‘আবদুকা ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাসতাত্বা‘তু, আ‘ঊযুবিকা মিন শাররি মা সানা‘তু। আবুউলাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়া ওয়া আবূউ বি যাম্বী ফাগফিরলী ফা ইন্নাহূ লা~ ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা।
[সহীহ বুখারী ৬৩০৬]

.
.

★আমলঃ- ৬
সুরা ইখলাস পাঠ করা – ১০ বার, না পারলে অন্তত ৩ বার।

ফজিলতঃ- আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, জনৈক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিকে রাতে বারবার সুরা আল-ইখলাস পড়তে শুনেছেন। অতঃপর সকালে মহানবী (সা.)-কে এ বিষয়টি অবহিত করা হলো। মহানবী (সা.) তখন বলেন, ওই সত্তার শপথ, যার কুদরতের হাতে আমার জীবন, অবশ্যই এ সুরা কোরআন মাজিদের এক-তৃতীয়াংশের সমান। (সহিহ বুখারি : ৫০১৩, আবু দাউদ : ১৪৬১, নাসায়ি : ২/১৭১, মুআত্তা মালেক : ১/২০৮

.

★আমলঃ- ৭
১০০ বার সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি
যে ব্যাক্তি সকালে ও সন্ধ্যায় ১০০ বার করে ‘সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহী’ পড়বে।তার গোনাহ মাফ হইয়া যাইবে,যদিও তা সাগরের ফেনা থেকেও বেশী হয়’। (বুখারী ও মুসলিম)

.

★আমলঃ- ৮
প্রতিরাতে সূরা মুলক পাঠ করুণ এতে কবরের শাস্তি থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন।
[সহিহ তারগিব,হাকিম ৩৮৩৯]

.

★আমলঃ- ৯
সুরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াত পড়া – রাতে ঘুমানোর আগে ১ বার (বিঃ দ্রঃ অনেকে মুখস্ত করেন নি। দ্রুত করে নিবেন। লিখে দিচ্ছি, বাংলা উচ্চারণে। আরবী ফন্ট অনেকের কাজ করেনা।
.
"আ-মানার-রাসুলু বিমা- উনজিলা ইলাইহি মির রাব্বিহি ওয়াল মু’মিনুন। কুল্লুন আমানা বিল্লাহি ওয়া মালা-ইকাতিহি ওয়া কুতুবিহি ওয়া রুসুলিহি, লা নুফার-রিকু বাইনা আহা’দিম-মির রুসুলিহ। ওয়া 'ক্বলু সামি’না, ওয়া আতা’ না, গুফরা নাকা, রব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাসির।
লা~ ইউ কাল্লিফুল্লাহু নাফসান ইল্লা উস-আ’হা। লাহা মা কাসাবাত ওয়া আ’লাইহা মাক তাসাবাত। রব্বানা লা~ তু আখিজনা- ইন্ নাসিনা- আও আখত্বা’না। রাব্বানা ওয়ালা তাহ’মিল আ’লাইনা ইসরান কামা হা’মালতাহু আ’লাল্লাজিনা মিন ক্ববলিনা। রব্বানা ওয়ালা তুহা’ম্মিল না মা-লা~ ত্ব কতালানা বিহ। ওয়া আ’ফু আ’ন্না, ওয়াগ ফিরলানা, ওয়ার হা’মনা। আনতা মাওলানা, ফানসুরনা আ’লাল ক্বওমিল কা-ফিরিন"

(এটার ফজিলত তাহাজ্জুদ নামায পড়ার সমতুল্য!!! আর কি চাই বলুন! এত মর্যাদাপূর্ণ ইবাদাত, না করতে পারলেও করার সমান সওয়াব হয়ে যাবে এটা পড়লেই!! সুবহান আল্লাহ্। কতই না বরকতময় এই দুই আয়াত! )

.

★আমলঃ- ১০
রাতের_বেলা_একশত_আয়াত_তেলাওয়াত

ফজিলত :
তামীম দারী রা.থেকে বর্ণিত , নবী(সা:)বলেছেন,
যে ব্যক্তি একরাতে ১০০টি আয়াত তেলাওয়াত করবে,সেই ব্যক্তিরর আমলনামায় ঐ রাতের ইবাদত বন্দেগী ও নফল সলাত এর সোয়াব লিপিবদ্ধ করা হবে।

সূত্র আহমদ:১৬৯৫৮,নাসাঈ কুরবা:১০৫৫৩, ত্বাবারানী:১২৩৮,সিলসিলাহ সহীহ :৬৪৪

Option 1 :
সুরা ইখলাস (ক্বুলহু আল্লাহ) ২৫ বার পরলে ১০০ আয়াত পড়া হয়,,
এই ফজিলত পূর্ণ আমল টি করবেনতো??

OPTION 2 :
১.সূরা মুলক--------------------৩০ আয়াত।
২.সূরা কাহাফ-------------------প্রথম১০আয়াত।
৩.সূরা ফাতিহা-------------------৭আয়াত।
৪.সূরা কাফিরুন-----------------৬আয়াত।
৫.সূরা ইখলাস(৩বার)--------------১২আয়াত।
৬.সূরা ফালাক(৩বার) --------------১৫ আয়াত।
৭.সূরা নাস(৩বার)--------------------১৮আয়াত।
৮.বাকারার শেষ (২আয়াত)--------২ আয়াত।
--------------------------------------------------------------------------
সর্বমোট =১০০আয়াত

✪বি:দ্র: যেকোনো সূরার যেকোনো আয়াত হলেই হবে।উপরের আয়াত গুলো দেওয়ার কারণ হলো ঐগুলোর আলাদা কিছু ফজিলতও আছে তাই একসাথে দুই ফজিলত ই পাওয়া যাবে সেজন্য পিক এর চার্ট টা ফল করা অধিকফল প্রসু হবে ইন শা আল্লাহ।

(কপি/পেস্ট,শেয়ার যা ইচ্ছা সদকায়ে জারিয়া হিসেবে করতে পারেন, কোন প্রকার ক্রেডিট লাগবে না)

সবশেষে #১০টি_আমলই রিপিট করা যাক এবং আপনারা রিমাইন্ডার হিসেবে নিচের অংশটুকু স্ক্রিনশট ও তুলতে পারেন :

১।আয়াতুল কুরসি
২।বারো রাকাত সুন্নাত নামাজ
৩।কালেমায়ে শাহাদত
৪।৩৩ বার সুবহানাল্লাহ;৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ ;৩৩ বার আল্লাহু আকবার; এবং ১ বার লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন কাদীর ।

৫।সকাল ও সন্ধ্যায় সাইয়িদুল ইস্তিগফার
৬।সুরা ইখলাস
৭।১০০ বার সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি
৮।রাতে সূরা মুলক
৯।রাতে সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত
১০।রাতের বেলা ১০০ আয়াত তেলাওয়াত

জাযাকুমুল্লাহু খাইরান পুরো পোস্টটি পড়ার জন্যে।

.

 

যে চৌদ্দটি আমলে রিযিক বাড়ে!

.
মুসলিম মাত্রেই বিশ্বাস করেন যে তার আয় ও উপার্জন, জীবন ও মৃত্যু, এবং সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্য ইত্যাদি র্নিধারণ হয়ে যায়, যখন তিনি মায়ের পেটে শিশু অবস্থায় থাকেন তখনই। আর এসব তিনি লাভ করেন তার জন্য বরাদ্দ উপায়-উপকরণগুলোর মাধ্যমে। তাই আমাদের কর্তব্য হলো হাত গুটিয়ে বসে না থেকে রিযিকের জন্য র্নিধারিত উপায়-উপকরণ সংগ্রহের চেষ্টা করা। যেমন চাষাবাদ, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-চারু, চাকরি-বাকরি বা অন্য কিছু। আল্লাহ তাআ’লা বলেন,
“তিনিই তো তোমাদের জন্য যমীনকে সুগম করে দিয়েছেন, কাজেই তোমরা এর পথে-প্রান্তরে বিচরণ কর এবং তাঁর দেওয়া রিযক থেকে তোমরা আহার কর। আর তাঁর নিকটেই তোমরা প্রত্যাবর্তন করবে।” সুরা আল-মুলকঃ ১৫।
• আজ আমরা রিজিক বৃদ্ধির উপায়সমূহের মধ্যে কুরআন ও হাদীস রোমন্থিত ১৪টি আমলের কথা আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।
_____________________
প্রথম আমলঃ তাকওয়া ও তাওয়াক্কুল অবলম্বন করা
আল্লাহর ভয় তথা তাক্বওয়া অবলম্বন করা, অর্থাৎ আল্লাহর নির্দেশাবলী পালন করা এবং হারাম বা নিষিদ্ধ বিষয়গুলো বর্জন করা। পাশাপাশি আল্লাহর ওপর অটল আস্থা রাখা, তাওয়াক্কুল করা এবং রিজিক তালাশে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা। কারণ, যে আল্লাহর ওপর ভরসা করে তিনিই তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। আল্লাহ তাআ’লা ইরশাদ করেন,
“আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের পথ তৈরী করে দেন। এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিযিক দিবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারবে না। আর যে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল (ভরসা) করে আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তাঁর উদ্দেশ্য পূর্ণ করবেনই। নিশ্চয় আল্লাহ প্রত্যেক জিনিসের জন্য একটি সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন।” সুরা আত-তালাকঃ ২-৩।
সুতরাং, যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করবে এবং তাঁর আনুগত্য করবে, আল্লাহ তার সকল সংকট দূর করে দেবেন এবং তার কল্পনাতীত স্থান থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। আর যে কেউ তার উদ্দেশ্য হাসিলে একমাত্র আল্লাহর শরণাপন্ন হয়, তিনিই তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। বলাবাহুল্য এই তাকওয়ার পরিচয় মেলে হালাল উপার্জনের চেষ্টা এবং সন্দেহযুক্ত উপার্জন বর্জনের মধ্য দিয়ে।
_____________________
দ্বিতীয় আমলঃ তাওবা ও ইস্তেগফার করা
অধিক পরিমাণে ইস্তেগফার এবং বেশি বেশি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলেও রিজিক বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ তাআ’লা তাঁর অন্যতম নবী ও রাসুল নূহ আ’লাইহিস সালামের ঘটনা তুলে ধরে ইরশাদ করেন,
“আর আমি (নূহ) বলেছি, তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও; নিশ্চয় তিনি পরম ক্ষমাশীল। (তাঁর কাছে ক্ষমা চাইলে) তিনি তোমাদের উপর মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, আর তোমাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দিয়ে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের জন্য বাগ-বাগিচা দেবেন আর দেবেন নদী-নালা।” সুরা নূহঃ ১০-১২।
একটি হাদীসে বিষয়টি আরেকটু খোলাসা করে বলা হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিআল্লাহু আ’নহুমা কর্তৃক বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা) করবে আল্লাহ তার সব সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের সংস্থান করে দেবেন।” আবু দাউদঃ ১৫২০, ইবন মাজাঃ ৩৮১৯, তাবরানীঃ ৬২৯১। (শায়খ মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল-উসাইমীন রাহিমাহুলাহ বলেন, “সনদগত দিক থেকে এই হাদীসটি জয়িফ বা দুর্বল, কিন্তু এই হাদীসের মর্ম ও বক্তব্য সহীহ বা সঠিক। কুরআনের আয়াত ও হাদীসে এই বক্তব্যের সমর্থন বিদ্যমান।” এই হাদীস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার পর শায়খ আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায রাহিমাহুল্লাহ বলেন, “সর্বোপরি হাদীসটি তারগীব ও তারহীব তথা, মানুষকে আখিরাতের আগ্রহ বা ভয় দেখানোর ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য। কারণ, এ ব্যাপারে কুরআন ও সুন্নাহে একাধিক বক্তব্য পাওয়া যায়।” ফাতাওয়া নূর আলাদ-দারবি, হাদীসের ব্যাখ্যা ও তার হুকুম।
অন্য হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইস্তেগফার করবে, আল্লাহ তার সব সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।” বায়হাকীঃ ৬৩৬, হাকেম, মুস্তাদরাকঃ ৭৬৭৭ সহীহ সূত্রে বর্ণিত।
_____________________
তৃতীয় আমলঃ আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা
আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং তাদের হক আদায়ের মাধ্যমেও রিজিক বাড়ে। যেমনঃ আনাস ইবন মালেক রাদিআল্লাহু আ’নহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি ইরশাদ করেছেন, “যে ব্যক্তি কামনা করে যে, তার রিজিক প্রশস্ত করে দেওয়া হোক এবং তার আয়ু দীর্ঘ করা হোক, তাহলে সে যেন তার আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে।” বুখারীঃ ৫৯৮৫, মুসলিমঃ ৪৬৩৯।
_____________________
চতৃর্থ আমলঃ নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরূদ পড়া
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ পাঠেও রিজিকে প্রশস্ততা আসে। যেমনটি অনুমিত হয় নিম্নোক্ত হাদীস থেকে। তোফায়েল ইবন উবাই ইবন কা’ব রাদিআল্লাহু আ’নহু কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল, আমি আপনার প্রতি অধিকহারে দরূদ পড়তে চাই, অতএব আমার দুয়ার মধ্যে আপনার দরূদের জন্য কতটুকু অংশ রাখব? তিনি বললেন, তুমি যতটুকু চাও। কা’ব বলেন, আমি বললাম, এক চতুর্থাংশ। তিনি বললেন, তুমি যতটুকু চাও। তবে যদি তুমি আরো বেশি দরুদ পড়, তা তোমার জন্য উত্তম হবে। আমি বললাম, অর্ধেক? তিনি বললেন, তুমি যতটুকু চাও। তবে তুমি যদি আরো বেশি পড়, তা তোমার জন্য উত্তম হবে। কা’ব বলেন, আমি বললাম, তাহলে দুই তৃতীয়াংশ? তিনি বললেন, তুমি যতটুকু চাও। তবে তুমি যদি বেশি পড় তা তোমার জন্য উত্তম হবে। আমি বললাম, আমার দুয়ার পুরোটা জুড়েই শুধু আপনার দরূদ রাখব। তিনি বললেন, তাহলে তা তোমার ঝামেলা ও প্রয়োজনের জন্য যথেষ্ট হবে এবং তোমার গুনাহ ক্ষমা করা হবে। তিরমিযীঃ ২৬৪৫, হাকেম, মুস্তাদরাকঃ ৭৬৭৭। ইমাম তিরমিযী বলেন, হাদীসটি ‘হাসান সহীহ’।
_____________________
পঞ্চম আমলঃ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা
আল্লাহর রাস্তায় কেউ ব্যয় বা দান করলে তা বিফলে যায় না। সে সম্পদ ফুরায়ও না। বরং তা বাড়ে বৈ কি। আল্লাহ তাআ’লা ইরশাদ করেছেন, “(হে নবী!) আপনি বলুন, নিশ্চয় আমার রব তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিযক প্রশস্ত করেন এবং সঙ্কুচিত করেন। আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় কর তিনি তার বিনিময় দেবেন এবং তিনিই উত্তম রিযকদাতা।” সুরা আস-সাবাঃ ৩৯।
_____________________
ষষ্ঠ আমলঃ বারবার হজ-উমরা করা
হজ ও উমরা পাপ মোচনের পাশাপাশি হজকারী ও উমরাকারী ব্যক্তির অভাব-অনটন দূর করে এবং তার সম্পদ বাড়িয়ে দেয়। আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রাদিআল্লাহু আ’নহুমা কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমরা হজ ও উমরা পরপর করতে থাক। কেননা তা অভাব ও গুনাহ দূর করে দেয়, যেমন দূর করে দেয় কামারের হাপর লোহা, সোনা ও রুপার ময়লাকে।” তিরমিযীঃ ৮১৫, নাসাঈঃ ২৬৩১।
_____________________
সপ্তম আমলঃ দুর্বলের প্রতি সদয় হওয়া বা সদাচার করা
মুসআ’ব ইবন সা’দ রাদিআল্লাহু আ’নহু একবার যুদ্ধ জয়ের পর মনে মনে কল্পনা করলেন, তিনি বোধ হয় তাঁর বীরত্ব ও শৌর্য-বীর্য হেতু অন্যদের চেয়ে নিজেকে বেশি মর্যাদাবান। সেই প্রেক্ষিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তোমাদের মধ্যে থাকা দুর্বলদের কারণে কেবল তোমাদের সাহায্য করা হয় এবং রিজিক প্রদান করা হয়।” সহীহ বুখারীঃ২৮৯৬।
_____________________
অষ্টম আমলঃ ইবাদতের জন্য ঝঞ্ঝাটমুক্ত হওয়া
আল্লাহর ইবাদতের জন্য ঝামেলামুক্ত হলে এর মাধ্যমেও অভাব দূর হয় এবং প্রাচুর্য লাভ হয়। যেমনটি বর্ণিত হয়েছে আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আ’নহু কর্তৃক। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ তা’আলা বলেন, হে আদম সন্তান, আমার ইবাদতের জন্য তুমি ঝামেলামুক্ত হও, আমি তোমার অন্তরকে প্রাচুর্য দিয়ে ভরে দেব এবং তোমার দারিদ্র ঘুচিয়ে দেব। আর যদি তা না কর, তবে তোমার হাত ব্যস্ততায় ভরে দেব এবং তোমার অভাব দূর করব না।” তিরমিযীঃ ২৬৫৪, মুসনাদ আহমদঃ ৮৬৮১, ইবন মাজাঃ ৪১০৭।
_____________________
নবম আমলঃ আল্লাহর রাস্তায় হিজরত করা
আল্লাহর সন্তুষ্টির নিমিত্তে হিজরত তথা স্বদেশ ত্যাগ করলে এর মাধ্যমেও রিজিকে প্রশস্ততা ঘটে। যেমনটি অনুধাবিত হয় নিচের আয়াত থেকে। আল্লাহ তাআ’লা বলেন, “আর যে আল্লাহর রাস্তায় হিজরত করবে, সে যমীনে বহু আশ্রয়ের জায়গা ও সচ্ছলতা পাবে। আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের উদ্দেশ্যে মুহাজির হয়ে নিজ ঘর থেকে বের হয় তারপর তাকে মৃত্যু পেয়ে বসে, তাহলে তার প্রতিদান আল্লাহর উপর অবধারিত হয়। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” সূরা আন-নিসাঃ ১০০। এই আয়াতের ব্যাখ্যা আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস প্রমুখ সাহাবী রাদিআল্লাহু আ’নহুমা বলেন, স্বচ্ছলতা অর্থ রিজিকে প্রশস্ততা।
_____________________
দশম আমলঃ আল্লাহর পথে জিহাদ
একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিলের জন্যে জিহাদ করলে এর দ্বারা সম্পদের ব্যপ্তি ঘটে। গনীমত বা যুদ্ধলব্ধ সম্পদের মাধ্যমে সংসারে প্রাচুর্য আসে। যেমন ইবন উমর রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “আর আমার রিজিক রাখা হয়েছে আমার বর্শার ছায়াতলে।” মুসনাদ আহমদঃ ৫৬৬৭; বায়হাকীঃ ১১৫৪, শুআ’বুল ঈমানঃ ১৯৭৮৩।
_____________________
একাদশ আমলঃ আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা
সাধারণভাবে আল্লাহ যে রিজিক ও নিয়ামতরাজি দান করেছেন, তার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া করা এবং তাঁর প্রশংসা করা। কারণ, শুকরিয়ার ফলে নেয়ামত বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ তাআ’লা ইরশাদ করেন, “আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, যদি তোমরা আমার শুকরিয়া আদায় কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব। আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আযাব বড় কঠিন।” সুরা ইবরাহীমঃ ৭।
আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা শুকরিয়ার বদৌলতে নেয়ামত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। আর বলাবাহুল্য আল্লাহর বাড়ানোর কোনো সীমা-পরিসীমা নাই।
_____________________
দ্বাদশ আমলঃ বিয়ে করা
আজকাল মানুষের দুনিয়ার প্রাচুর্য ও বিলাসের প্রতি আসক্তি এত বেশি বেড়েছে, তারা প্রচুর অর্থ নেই এ যুক্তিতে প্রয়োজন সত্ত্বেও বিয়ে বিলম্বিত করার পক্ষে রায় দেন। তাদের কাছে আশ্চর্য লাগতে পারে এ কথা যে বিয়ের মাধ্যমেও মানুষের সংসারে প্রাচুর্য আসে। কারণ, সংসারে নতুন যে কেউ যুক্ত হয়, সে তো তার জন্য বরাদ্দ রিজিক নিয়েই আসে। আল্লাহ তাআ’লা ইরশাদ করেন,
“আর তোমরা তোমাদের মধ্যকার অবিবাহিত নারী-পুরুষ ও সৎকর্মশীল দাস দাসীদের বিবাহ দাও। তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী।” সুরা আন-নূরঃ ৩২।
উমর ইবন খাত্তাব রাদিআল্লাহু আ’নহুমা বলতেন, “ওই ব্যক্তির ব্যাপার বিস্ময়কর, যে বিয়ের মধ্যে প্রাচুর্য খোঁজে না। কারণ, স্বয়ং আল্লাহ বলেছেন, তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন।”
_____________________
ত্রয়োদশ আমল: অভাবের সময় আল্লাহমুখী হওয়া এবং তার কাছে দুয়া করা
রিজিক অর্জনে এবং অভাব দূরীকরণে প্রয়োজন আল্লাহর কাছে দুয়া করা। কারণ, তিনি প্রার্থনা কবুল করেন। আর আল্লাহ তাআ’লাই রিজিকদাতা এবং তিনি অসীম ক্ষমতাবান। আল্লাহ তাআ’লা বলেন, “আর তোমাদের রব বলেছেন, “তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব।” সুরা আল-মু’মিনঃ ৬০।
এ আয়াতে আল্লাহ দুয়া করার নির্দেশ দিয়েছেন আর তিনি তা কবুলের জিম্মাদারি নিয়েছেন। যতক্ষণ না দুয়া কবুলে জন্য কোনো বাঁধা বা অন্তরায় না হয়। যেমন ওয়াজিব তরক করা, হারাম কাজে জড়ানো, হারাম আহার গ্রহণ বা হারাম পোশাক পরা ইত্যাদি এবং, দুয়া কবুলের জন্যে খানিক বিলম্বিতকরণ। আল্লাহর কাছে এইভাবে দুয়া করা যেতে পারে,
“হে রিজিকদাতা আমাকে রিজিক দান করুন, আপনি সর্বোত্তম রিজিকদাতা। হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে পবিত্র, প্রশস্ত রিজিক চাই। হে সেই সত্তা, যার দানের ঢল সত্ত্বেও যার ভাণ্ডারে কোন কমতি হয় না। হে আল্লাহ, আমাকে আপনি আপনার হালাল দিয়ে আপনার হারাম থেকে যথেষ্ট করে দিন। আর আপনার দয়া দিয়ে আপনি ছাড়া অন্যদের থেকে যথেষ্ট হয়ে যান। হে আল্লাহ আপনি আমাকে যে রিজিক দিয়েছেন তা দিয়েই সন্তুষ্ট বানিয়ে দিন। আর যা আমাকে দিয়েছেন তাতে বরকত দিন।”
অভাবকালে মানুষের কাছে হাত না পেতে আল্লাহর শরণাপন্ন হলে এবং তাঁর কাছেই প্রাচুর্য চাইলে অবশ্যই তার অভাব মোচন হবে এবং রিজিক বাড়ানো হবে। আবদুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদিআল্লাহু আ’নহু কর্তৃক বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“যে ব্যক্তি অভাবে পতিত হয়, অতপর তা সে মানুষের কাছে সোপর্দ করে (অভাব দূরীকরণে মানুষের ওপর নির্ভরশীল হয়), তার অভাব মোচন করা হয় না। পক্ষান্তরে যে অভাবে পতিত হয়ে এর প্রতিকারে আল্লাহর ওপর নির্ভরশীল হয় তবে অনিতবিলম্বে আল্লাহ তাকে তরিৎ বা ধীর রিজিক দেবেন।” তিরমিযীঃ ২৮৯৬, মুসনাদ আহমদঃ ৪২১৮।
_____________________
চতুর্দশ আমলঃ গুনাহ ত্যাগ করা, আল্লাহর দ্বীনের ওপর অটল থাকা এবং নেকীর কাজ করা গুনাহ ত্যাগ করা, আল্লাহর দ্বীনের ওপর অটল থাকা এবং নেকীর কাজ করা, এসবের মাধ্যমেও রিজিকের রাস্তা প্রশস্ত হয়, যেমন পূর্বোক্ত আয়াতগুলো থেকে অনুমান করা যায়।
_____________________
তবে, সর্বোপরি আমাদের মনে রাখতে হবেঃ আমরা দুনিয়াতে চিরদিন থাকার জন্য আসি নি। তাই দুনিয়াকে প্রাধান্য না দিয়ে উচিত হবে আখিরাতকে অগ্রাধিকার ও প্রাধান্য দেয়া। আমাদের এদেন অবস্থা দেখে আল্লাহ তাআ’লা বলেন, “বরং তোমরা দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দিচ্ছ। অথচ আখিরাত সর্বোত্তম ও স্থায়ী।” সুরা আল-আ’লাঃ ১৬-১৭।
আর পরকালের মুক্তি ও চিরশান্তিই যার প্রধান লক্ষ্য, তার উচিত হবে রিজিকের জন্য হাহাকার না করে অল্পে তুষ্ট হতে চেষ্টা করা। যেমনঃ হাদীসে এসেছে আবদুল্লাহ ইবন আমর ইবন আ’স রাদিআল্লাহু আ’নহুম থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “সেই ব্যক্তি প্রকৃত সফল, যে ইসলাম গ্রহণ করেছে, আর তাকে জীবন ধারণে (অভাবও নয়; বিলাসও নয়) পর্যাপ্ত পরিমাণ রিজিক দেয়া হয়েছে এবং আল্লাহ তাকে যা দিয়েছেন তাতে তুষ্টও করেছেন।” মুসলিমঃ ২৪৭৩, তিরমিযীঃ ২৩৪৮, আহমদঃ ৬৫৭২।
পরিশেষে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদের এসব উপায়-উপকরণ যোগাড় করে রিজিক তথা হালাল উপার্জনে উদ্যোগী ও সফল হবার তাওফীক দান করেন। তিনি যেন আপনাদের রিজিক ও উপার্জনে প্রশস্ততা দান করেন। আমীন।
.
.
📑সংকলনঃ আলী হাসান তৈয়ব,
📖সম্পাদনাঃ ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া।
----------------------------

 

Masud Alimi
আমার এক মুসল্লী আছেন। তার ছোট ছোট চারটা সন্তান। আছে এক পুণ্যবতী স্ত্রী। এলাকার কোনো পুরুষ তাকে দেখেননি। এক রুমের বাসায় থাকেন। খুবই সীমিত ইনকাম!  অন্য অনেক মুসল্লী তার দারিদ্র্য অবস্থা নিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। করুণা প্রকাশ করে। কিন্তু এই আল্লাহর বান্দাকে দেখিনি কখনো হা-হুতাশ করতে। আল্লাহর কসম! কক্ষনো না। সদা হাস্যজ্বল। অতিথিপরায়ণ। একদিন কথাপ্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলাম, 
: আপনার দারিদ্র‍্য অবস্থা নিয়ে অনেকেই আফসোস করেন! আচ্ছা আপনার কি কখনো খারাপ লাগে না? 
:: "হুজুর! কি যে বলেন। আমার তো আরও করুণা হয় তাদের নিয়ে। কারণ আমি যে বিবি সাহেবা পাইছি, সে হিসেবে তো তারা কিছুই পায়নি। কিছুই না। 
হুজুর! বিশ্বাস করবেন না! বিবি সাহেবার দিকে তাকাইলে মনে হয় জান্নাতে আছি। আজ দশ বছর সংসার করি। কখনো তার আচরণে মনে হয়নি আমরা অভাবে আছি।"
আমার আগের বাসার মু'আজ্জিন একদিন বলেছিলেন, "আমি যে রাতে বরিশাল থেকে রওনা হয়, লঞ্চে উঠি, সারাটা রাত আমার স্ত্রী জায়নামাজে কাটিয়ে দেন৷ ভাই! যেদিন বাড়ি যাই, আমার আগমনে তার আনন্দ দেখে মনে হয় সব ছেড়েছুড়ে বাড়িতেই থেকে যাই।
সত্যিই! কোটি টাকার বাড়ি-গাড়ির চেয়ে, একটা নেক বিবি অনেক দামি। 
নবীজি ﷺ নিদারুণ সত্য বলেছেন- 
'দুনিয়ার সব কিছুই একেকটা সম্পদ। তন্মধ্যে সর্বোত্তম সম্পদ হল নেক স্ত্রী'। 
[ সহিহ মুসলিমঃ ১৪৬৭] 
আফসোস সেসব যুবকদের নিয়ে, যারা সামান্য ইস্যু বা ঠুনকো অজুহাতে এমন সম্পদ হাত ছাড়া করে। সত্যিই আফসোস! পরে কিন্তু ঠিকই কপাল চাপড়ায়!

 

>> কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক বইয়ের (৪০০+) pdf লিংক
https://justpaste.it/4ne9o

>> কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক Apps, YouTube Video, Quran Recitation, YouTube channel.
https://justpaste.it/islamicappvideo

>> রবের_কাছে_ফেরার_গল্পগুলো
https://justpaste.it/deen_a_ferar_golpo

>> "বিয়ে, রিজিক লাভ, ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি"
https://justpaste.it/5gol5

>> র‍্যান্ড, মডারেট ইসলাম, মডার্নিস্ট মুভমেন্ট
https://justpaste.it/76iwz

>> কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক Apps, YouTube Video, Quran Recitation, YouTube channel.
https://justpaste.it/islamicappvideo

>> ফেসবুক ও ইউটিউবের উপকারী সব পেইজ, গ্রুপ, আইডি এবং চ্যানেলের লিংক
https://justpaste.it/facebook_page_grp_link

>> তাকদির আগে থেকে নির্ধারিত হলে মানুষের বিচার হবে কেন? যাদের কাছে ইসলামের দাওয়াহ পৌঁছেনি তাদের কী হবে?
https://justpaste.it/6q4c3

>> কুরআন এবং আপনি
https://justpaste.it/5dds8

>> কখনও ঝরে যেও না …
https://justpaste.it/3bt22

>> ফজরে আমি উঠতে পারি না
https://justpaste.it/6kjl6

>> এই ১০টি ফজিলতপূর্ণ আমল যা আপনার সারাবছরের_ই দৈনন্দিন রুটিনে থাকা উচিত
https://justpaste.it/9hhk1

>> ইস্তিগফার অপার সম্ভাবনার দ্বার
https://justpaste.it/6ddvr

>> দাম্পত্যজীবন, অজ্ঞতা ও পরিণাম
https://justpaste.it/7u5es

>> বিপদাপদে ধৈর্যধারণ : ফজিলত, অর্জনের উপায় ও করণীয়
https://justpaste.it/8dccj

>> মহান রবের আশ্রয়ে সিরিজের সকল পর্ব
https://justpaste.it/6ttuf

>> স্বার্থক মুনাজাত
https://justpaste.it/1xf0t

>> রাসূলের উপর দরুদ ও সালাম পাঠ-সংক্রান্ত ৭ পর্বের একটি সিরিজ
https://justpaste.it/4hhtd

>> তাহাজ্জুদ সিরিজ
https://justpaste.it/4ja0n

>> মহিমান্বিত কুরআন সিরিজের সকল পর্ব
https://justpaste.it/3dxi7

>> ধ্বংসাত্মক দৃষ্টি (বদ নজর সিরিজের সকল পর্ব)
https://justpaste.it/7056k

>> বিশুদ্ধ ঈমান সিরিজ
https://justpaste.it/7fh32

>> ইমান ভঙ্গের ১০ কারণ
https://justpaste.it/9icuq

>> দুশ্চিন্তা ও ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির ১০ আমল
https://justpaste.it/8gmtk

>> পর্দায় প্রত্যাবতন: পর্দায় ফেরার গল্প
https://justpaste.it/3lqzf

>> নফসের জিহাদ -শায়খ আহমাদ মুসা জিবরীল (হাফিজাহুল্লাহ)
https://justpaste.it/8vnly

>> রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর সকাল-সন্ধ্যার দু'আ ও যিকর
https://justpaste.it/sokalsondharjikir

>> সালাফদের আত্মশুদ্ধিমূলক বাণী
https://justpaste.it/9e6qh

>> সন্তান লাভের ৭ টি গুরুত্বপূর্ণ আমল
https://justpaste.it/9hth5

>> Rain Drops, Baseera, Hunafa, Mubashshireen Media ও Ummah Network থেকে প্রকাশিত গুরুত্বপূর্ণ সিরিজগুলোর (তাওহীদ সিরিজ, আকিদা সিরিজ, তাহাজ্জুদ, সালাত, আল্লাহর গুণবাচক নামসমূহ নিয়ে আলোচনা, ধূলিমলিন উপহার রামাদান, আলোর পথে যাত্রা, পরকালের পথে যাত্রা, শ্রেষ্ঠ মানুষেরা(নবীদের জীবনী), জীবন-মৃত্যু-জীবন, সীরাহ(রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জীবনী), কুরআনের কথা, কোরআনের বিভিন্ন সূরার তাফসীর, আমি তাওবা করতে চাই কিন্তু, সাহাবীদের ঈমানদীপ্ত জীবনী, বোনদের প্রতি উপদেশ) অডিও ডাউনলোড লিংক
https://justpaste.it/4kes1

>> পাপ থেকে বাঁচার ১০ উপায়: যা সকল মুসলিমের জানা আবশ্যক
https://justpaste.it/3ob7j

>> রমজানের প্রস্তুতি : মুমিনের পথ ও পাথেয়
https://justpaste.it/5tziy

>> কাফির ও ইসলামের শত্রুদের মৃত্যু বা বিপদে আনন্দ প্রকাশ
https://justpaste.it/6ksvm

>> মহিমান্বিত রজনী (লাইলাতুল কদর) সিরিজ, লাইলাতুল কদরের জন্য ১২ টি সহজ আমল এবং ইতিকাফের গুরুত্ব, ফজিলত, উদ্দেশ্য, আমল।
https://justpaste.it/1q3bs

>> বিশেষ নফল নামাজ সিরিজ (ইশরাক, দোহা, চাশত, আওয়াবিন, যাওয়াল, সালাতুল হাজত, সালাতুত তাসবিহ)
https://justpaste.it/9n0kf

>> হাদিসের শিক্ষা সিরিজ
https://justpaste.it/4fywd

>> ইস্তিখারা সিরিজ
https://justpaste.it/2i736

>> আমাদের নবীজি (সাঃ) সিরিজ
https://justpaste.it/4c1tt

>> Words With Nusus সিরিজ
https://justpaste.it/6h968

>> বছরের শ্রেষ্ঠ দশ দিন (জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন)
https://justpaste.it/1s2vv

>> আশুরা দিবস : বাস্তবতা, পালনীয় ও বর্জনীয়
https://justpaste.it/3kn8w

>> বিবাহের কিছু আমল ও দু‘আ এবং সুখী দাম্পত্যজীবনের জন্য ১০টি করণীয়, স্ত্রীকে বশ করে রাখার টোটকা
https://justpaste.it/58k7y

>> দুআ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ লেখাসমূহ, দুআ কবুলের সময় শর্তাবলী ও আদবসমূহ, দুআ কবুলের গল্পগুলো
https://justpaste.it/7ttq6

.

>> ইসলামিক বই, অডিও-ভিডিও লেকচার সিরিজ সহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের লিংকগুলো পাবেন এখানে। সবগুলো বিষয়ের লিংক এক জায়গায় রাখা হয়েছে। এই লিংকটা শেয়ার করতে পারেন। 
https://justpaste.it/48f6m