JustPaste.it

মুসলিমদের নিরাপত্তা বিধানে খলীফার দায়িত্ব এবং আইএসের খিলাফতের দাবি।  

 

 

*** মুসলিমদের জান-মাল ও দ্বীনের নিরাপত্তা বিধানে খলীফার দায়িত্বঃ

দলীল নং-১।

রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

إِنَّمَا الْإِمَامُ جُنَّةٌ يُقَاتَلُ مِنْ وَرَائِهِ وَيُتَّقَى بِهِ فَإِنْ أَمَرَ بِتَقْوَى اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ وَعَدَلَ كَانَ لَهُ بِذَلِكَ أَجْرٌ وَإِنْ يَأْمُرْ بِغَيْرِهِ كَانَ عَلَيْهِ مِنْهُ

 “নিশ্চয়ই ইমাম হচ্ছেন ঢালস্বরূপ। তার পিছনে থেকে লড়াই করা হয় এবং তার মাধ্যমে আত্মরক্ষা করা হয় (অর্থাৎ ইমাম/খলীফা তাদেরকে নিরাপত্তা দেন)। যদি  সে আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করার নির্দেশ দেয় এবং ইনসাফ করে; তাহলে এজন্য তার বিনিময় রয়েছে। আর যদি  সে এসব ব্যতীত অন্য কিছুর নির্দেশ দেয়; তাহলে তার দায়ভার তার উপরই বর্তাবে।” ---সহীহ বুখারী, কিতাবুল জিহাদ ওয়াস-সিয়ার, হাদীসঃ ২৯৫৭, সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ইমারাহ, হাদীস: ৪৮৭৮

 

এ হাদীসের ব্যাখ্যায় সহীহ মুসলিমের শ্রেষ্ঠতম ভাষ্যকার ইমাম নাববী রহ. বলেন,

قَوْلُهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ( الْإِمَامُ جُنَّةٌ ) أَيْ : كَالسِّتْرِ ; لِأَنَّهُ يَمْنَعُ الْعَدُوَّ مِنْ أَذَى الْمُسْلِمِينَ ، وَيَمْنَعُ النَّاسَ بَعْضَهُمْ مِنْ بَعْضٍ ، وَيَحْمِي بَيْضَةَ الْإِسْلَامِ

“রাসূলসাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী: (ইমাম হচ্ছেন ঢালস্বরূপ) অর্থাৎ আড়াল স্বরূপ। কেননা তিনি (ইমাম) মুসলিমদের কষ্ট দেওয়া থেকে শত্রুকে বাঁধা দেন। আর মানুষের একাংশকে অপর অংশের উপর (কষ্ট  দেওয়া) থেকেও তিনি বাঁধা দেন। আর তিনি ইসলামের মৌলিক বিষয়ের সুরক্ষা প্রদান করবেন।” ---শরহে নাববী ‘আলা মুসলিম

 

সহীহ বুখারীর শ্রেষ্ঠতম ভাষ্যকার ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রাহঃ এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন,

وقوله " إنما الإمام جنة " بضم الجيم أي سترة ، لأنه يمنع العدو من أذى المسلمين ويكف أذى بعضهم عن بعض ، والمراد بالإمام كل قائم بأمور الناس

অর্থঃ রাসূল সাঃ এর বাণীঃ “নিশ্চয়ই ইমাম হচ্ছেন ঢালস্বরূপ” জীমকে পেশ দিয়ে (অর্থাৎ জুন্নাহ) যার অর্থ আচ্ছাদন বা বাঁধা। কেননা তিনি (ইমাম) মুসলিমদের কষ্ট দেওয়া থেকে শত্রুকে বাঁধা দেয়। আর মানুষের একাংশকে অপর অংশের উপর কষ্ট  দেওয়া থেকেও তিনি বিরত রাখেন। আর ইমাম দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, মানুষের যাবতীয় বিষয় যিনি বাস্তবায়ন করেন। (ফাতহুল-বারী)   

 

দলীল নং-২।

রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

عن نافع عن ابن عمر عن النبي صلى الله عليه وسلم أنه قال ألا كلكم راع وكلكم مسئول عن رعيته فالأمير الذي على الناس راع وهو مسئول عن رعيته

অর্থঃ হযরত নাফে’ রাহঃ  আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাঃ থেকে বর্ণনা করেন। আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাসূল সাঃ থেকে বর্ণনা করেন। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, তোমাদের প্রত্যকেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার দায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হবে। আমীর/খলীফা যিনি জনগণের উপর দায়িত্বশীল,তাকে তার এই দায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হবে।  ---সহীহ বুখারী, কিতাবুল আহকাম, হাদীসঃ ৭১৩৮।  সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ইমারাহ, হাদীস: ৪৮২৮।  

এ হাদীসের ব্যাখ্যায় সহীহ মুসলিমের শ্রেষ্ঠতম ভাষ্যকার ইমাম নাববী রহ. বলেন,

قوله صلى الله عليه وسلم : ( كلكم راع وكلكم مسئول عن رعيته ) قال العلماء : الراعي هو الحافظ المؤتمن الملتزم صلاح ما قام عليه ، وما هو تحت نظره ، ففيه أن كل من كان تحت نظره شيء فهو مطالب بالعدل فيه ، والقيام بمصالحه في دينه ودنياه ومتعلقاته .

অর্থঃ   “রাসূল সাঃ এর বাণীঃ (তোমাদের প্রত্যকেই রক্ষক/দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার দায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হবে।) আলিমগণ বলেনঃ রক্ষক সেই ব্যক্তি যিনি তার উপর অর্পিত আমানতের নিরাপত্তা বিধানকারী, যে দায়িত্বের উপর তিনি অধিষ্ঠিত এবং তার দৃষ্টির অধীনে যা রয়েছে, তার কল্যাণ দেখাশোনা করতে বাধ্য। আর এর অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে, এমন প্রত্যেক বিষয় তার দৃষ্টির আওতায় রয়েছে, সে ব্যাপারে ন্যায়বিচার করতে এবং সে ব্যাপারে তার দ্বীন,দুনিয়া ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ের স্বার্থ বাস্তবায়ন করতে তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত ।”    ---শরহে নাববী ‘আলা মুসলিম

    

উপরোক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় الراعي এর সংজ্ঞায় সহীহ বুখারীর শ্রেষ্ঠতম ভাষ্যকার ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রাহঃ বলেন,

والراعي هو الحافظ المؤتمن الملتزم صلاح ما اؤتمن على حفظه فهو مطلوب بالعدل فيه والقيام بمصالحه

অর্থঃ الراعي বা রক্ষক হচ্ছে সেই ব্যক্তি যিনি তার উপর অর্পিত আমানতের নিরাপত্তা বিধানকারী, তার নিরাপত্তায় যে আমানত রাখা হয়েছে,তার কল্যাণ দেখাশোনা করতে বাধ্য। আর তিনি সে ব্যাপারে ন্যায়বিচার করতে এবং স্বার্থ রক্ষা করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ।  (ফাতহুল-বারী)   

 

দলীল নং-৩।

*** সাহাবীদের জীবনী থেকে দৃষ্টান্তঃ

আমীরুল মুমিনীন উমর রাঃ এর খিলাফতকালে রোমের সীমান্ত সংলগ্ন শামের খ্রিস্টান অধ্যুষিত কিছু এলাকা জিযিয়ার বিনিময়ে খিলাফতের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা চুক্তিতে খিলাফতের অধীনে আসে। অতঃপর মুসলিম বাহিনী আকস্মিকভাবে রোমের বিশাল বাহিনীর হামলা শিকার হন। এমতাবস্থায় আবু উবাইদাহ রাঃ গুরুত্বপূর্ণ শামের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকাগুলোর নিরাপত্তার জন্য খ্রিস্টান অধ্যুষিত কিছু শহর ও এলাকা ছেড়ে আসতে বাধ্য হন। তখন আবু উবাইদাহ রাঃ উক্ত এলাকার খ্রিস্টানদেরকে তাদের থেকে গৃহীত জিযিয়া এবং খারাজ ফেরত দিয়ে দেন। এসময় আবু উবাইদাহ রাঃ উল্লেখ করেন, যেহেতু তাদেরকে নিরাপত্তার বিনিময়ে জিযিয়া নেওয়া হচ্ছিল; কিন্তু এখন যেহেতু আমরা এই এলাকাগুলোর নিরাপত্তা দিতে পারছি না এবং শত্রুর হামলা মোকাবেলা করতে পারছি না,সেজন্য জিযিয়া ও খারাজ ফেরত দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

(বিস্তারিত ঘটনা দেখুন.....ইমাম আবু ইউসুফ রাঃ এর কিতাবুল খারাজ, পৃষ্ঠা-১৩৮-১৪০, فَصْلٌ: فِي الْكَنَائِسِ وَالْبِيَعِ وَالصُّلْبَانِ)

এঘটনা থেকে দিনের আলোর চেয়ে পরিষ্কার যে, খলীফা কাফিরদের থেকে জিযিয়া গ্রহণ করার বিনিময়ে তাদেরকে নিরাপত্তা দিবেন,এটা খলীফার দায়িত্ব। আর তাদের নিরাপত্তা দিতে না পারলে সেই ভূমি কিছুতেই খিলাফতের অন্তর্ভুক্ত থাকবে না।

 

একটু চিন্তা করুন ! খ্রিস্টানদের নিরাপত্তা দিতে না পারায় সেই ভূমি এবং তার অধিবাসীরা খিলাফতের অধীনে থাকে না। খিলাফতের পক্ষ জিযিয়া ও খারাজ ফেরত দেওয়া হয়েছে। পক্ষান্তরে আইএসের দাবিকৃত খিলাফত এবং তাদের খলীফা বাগদাদী মুসলিমদের প্রতি কোনো ধরণের দায়িত্ব পালন করা ছাড়াই খলীফা দাবি করে বসেছে !  তাও নাকি সারা দুনিয়ার সকল মুসলিমদের খলীফা !!  আবার যেসব মুজাহিদগণ আইএসের এই বাতিল দাবির বিরোধিতা করবে তাদের জন্য আইএসের মুখপাত্র “মগজ ভেদকারী একটি বুলেট অথবা ঘাড়ে একটি ধারালো ছুরি” ব্যবহারের হুমকি দিয়েছে।

বিস্তারিত প্রমাণাদি এখানে..... https://justpaste.it/takfir_is

 

*** ইমাম ইবনে তামিয়্যাহ রাঃ এর ক্বওলঃ

কে হবেন শাসক এবং খলীফা এ ব্যাপারে শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ রহ. বলেন,

وَهُوَ أَنَّ النَّبِيَّ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - أَمَرَ بِطَاعَةِ الْأَئِمَّةِ الْمَوْجُودِينَ [ الْمَعْلُومِينَ ] الَّذِينَ لَهُمْ سُلْطَانٌ يَقْدِرُونَ بِهِ عَلَى سِيَاسَةِ النَّاسِ لَا بِطَاعَةِ مَعْدُومٍ وَلَا مَجْهُولٍ ، وَلَا مَنْ لَيْسَ لَهُ سُلْطَانٌ ، وَلَا قُدْرَةٌ عَلَى شَيْءٍ أَصْلًا

 অর্থঃ “আর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাদের কর্তৃত্ব রয়েছে এমন বিদ্যমান (পরিচিত) আমীরদের আনুগত্যের নির্দেশ দিয়েছেন; যার মাধ্যমে তারা মানুষের বিভিন্ন বিষয়াদি পরিচালনা করতে সক্ষম হবে। অস্তিত্বহীন ও অপরিচিতকে আনুগত্যের কথা বলেননি। আর তার আনুগত্যের কথাও বলেননি, যার কর্তৃত্ব নেই এবং মূলতঃ  কোনো কিছুর উপর ক্ষমতা নেই।” -মিনহাজুস সুন্নাতিন নাবাবিয়্যাহ/ মিনহাজুস সুন্নাহ, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ১১৫

 

শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ রহ. আরো বলেন,

فَكَوْنُ الرَّجُلِ أَمِيرًا وَقَاضِيًا وَوَالِيًا................................. ، فَلَا عَمَلَ إِلَّا بِقُدْرَةٍ عَلَيْهِ ، فَمَنْ لَمْ يَحْصُلْ لَهُ الْقُدْرَةُ عَلَى الْعَمَلِ لَمْ يَكُنْ عَامِلًا

অর্থঃ  “সুতরাং কোনো বিষয়ে কোনো ব্যক্তির আমীর, কাযী এবং ওয়ালী বা অন্য কিছু হওয়ার মূলভিত্তি ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের উপর নির্ভর করে। ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের মাধ্যমে যা অর্জিত হওয়ার, যখনই তা অর্জিত হবে; তখনই উক্ত বিষয়টি হাসিল হবে, অন্যথায় নয়। যখন এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে এমন কাজগুলোর কোনো একটি কাজ ক্ষমতা ছাড়া অর্জিত হবে না। সুতরাং যখনই ক্ষমতা অর্জিত হবে, যে ক্ষমতা উক্ত কাজগুলো সম্পাদন করা সম্ভব করে তুলবে; তখন তা কার্যসম্পাদনকারী বলে গণ্য হবে, অন্যথায় নয়। এটি কোনো ব্যক্তির গবাদিপশুর রক্ষণাবেক্ষণকারী (রাখাল) হওয়ার মতো, যখনই তার প্রতি এই গবাদিপশু রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষমতা অর্পণ করা হবে; তখনই সে রক্ষণাবেক্ষণকারী (রাখাল) বলে গণ্য হবে, অন্যথায় নয়। সুতরাং এমন কোনো কর্ম নাই, যা উক্ত বিষয়ে সক্ষমতা ছাড়া হয়। আর তাই যার জন্য কোনো কাজের ক্ষমতা অর্জিত হবে না, সে উক্ত কাজের দায়িত্বশীল (কর্মী) বলে গণ্য হবে না।”    - মিনহাজুসসুন্নাহ...., ১ম খ-, ৫২৯ পৃষ্ঠা

 

আরো বিস্তারিত জানতে “তিতুমীর মিডিয়া” থেকে প্রকাশিত লিংকের দলীল সমৃদ্ধ আর্টিকেলটি পড়ুন......

শরী'আহর মানদন্ডে আইএসের খিলাফাহ !

লিংক…… https://justpaste.it/is_khilafah  

 

আইএস যখন একে একে প্রায় অধিকাংশ এলাকা হারিয়ে নিঃশেষ হওয়ার পথে,তখন তাদের কিছু চরমতম জাহেল সমর্থক শিয়াদের আকীদার মতো এই দাবি করছে যে, মুসলিমদের নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যাপারে খলীফার নাকি কোনো দায়িত্ব নেই !!! 

সুবহানআল্লাহ ! এই দাবি করে থাকে শিয়ারা যে, খলীফা/ইমামের জন্য মুসলিমদেরকে নিরাপত্তা দেওয়া দায়িত্ব নয়। এজন্য তারা দাবি করে থাকে, তাদের দাবিকৃত ১২ তম ইমাম মাহদী আঃ নাকি গুহায় লুকিয়ে আছে !!

 

আইএস সমর্থক #Abdul_Ahad এখন এই মতবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে যে, মুসলিমদের নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যাপারে খলীফার নাকি কোনো দায়িত্ব নেই !!!  

এই #Abdul_Ahad তার একটি পোস্টে লিখেছে…..

//খুবই সিম্পল এবং সহজ কথা

মুসলিমদের নিরাপত্তা দেয়ার ব্যপারে খলিফাহর কোন দায়িত্ব নেই।

 

খলিফাহ মুসলিমদের নিরাপত্তা দিতে হবে, এ রকম কোন আয়াত আল্লাহ সুবঃ নাযীল করেননি।।

খলিফাহ মুসলিমদের নিরাপত্তা দিবেন, এ রকম কোন হাদিস রসুলুল্লাহ সঃ বর্ণনা করেননি। //

 তার এই পোস্টে পাবেন.... fb.com/359318224564367

 

আমরা তার কাছে জানতে চাই, উপরে দু’টি হাদীসেই স্পষ্টভাষায় বর্ণিত হয়েছে যে, মুসলিমদের নিরাপত্তাসহ যাবতীয় বিষয় তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব খলীফার উপর। এমতাবস্থায়  // খলিফাহ মুসলিমদের নিরাপত্তা দিবেন, এ রকম কোন হাদিস রসুলুল্লাহ সঃ বর্ণনা করেননি। //  এধরণের দাবি করা উপরোক্ত হাদীসগুলোকে অস্বীকার করা এবং রাসূল সাঃ এর উপর মিথ্যারোপ করা নয় কি ???

 

রাসূল সাঃ এর হাদীসে বর্ণিত খলীফার দায়িত্ব মুসলিমদেরকে নিরাপত্তা প্রদান , জান ও মালের হেফাযত এবং ইসলামের আহকাম বাস্তবায়ন করা। কোনো ধরণের দায়িত্ব পালন না করেই বাগদাদী সারা দুনিয়ার খলীফা ??? রাসূল সাঃ বর্ণিত খলীফা দায়িত্ব পালন না করে যে খিলাফত দাবি করা হয়,তার সাথে ইসলাম ও শরীয়তের কোনো সম্পর্ক নেই।

 

এ পর্যায়ে এসে তাদের সমর্থকরা উপায়ান্তর না দেখে নতুন বক্তব্য উপস্থাপন করে। তারা তাদের অজ্ঞতা ও বাতিল মতবাদকে রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা করে থাকে ! যখন দেখে, হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মুসলিমদের যাবতীয় বিষয়ের নিরাপত্তা দেওয়া খলীফার দায়িত্ব; তখন তারা এই দাবি করতে থাকে যে, বাগদাদী তার নিয়ন্ত্রিত এলাকার লোকদেরকে নিরাপত্তা দিয়ে থাকে এবং শরী’আহ অনুযায়ী পরিচালিত করে থাকে !

 

যদি তাই হয়,তাহলে বাগদাদী কিভাবে সারা দুনিয়ার সকলস্থানের মুসলিমদের খলীফা হয় ???  কীভাবে সকল শর’য়ী ইমারতগুলো বাতিল হয়ে যায় ??? অবশ্য এখন সিরিয়ার সীমান্ত এলাকার সামান্য এলাকা তাদের অধীনে আছে।  তাহলে এখন কীসের খলীফা ???

 

আমি এর আগেও বলেছি, খারিজী আইএসের বেশিরভাগ সমর্থকরা নিজেরাই আইএসের আকীদা ও চিন্তাধারা সম্পর্কে মোটেও অবগত নয়। ফলে তাদের একটি বাতিল দাবি খণ্ডন করার পর নিজেদের বাতিল দাবিকে প্রমাণ করার জন্য নতুন নতুন মনগড়া ও অদ্ভুত দাবি উপস্থিত করতে থাকে।

তাদের এসব সমর্থকরা আদনানীর খিলাফত ঘোষণার বার্তাটি পড়েছে কি না সন্দেহ আছে। কেননা আদনানী সেখানে বাগদাদীকে “সকল স্থানের মুসলিমদের জন্য খলীফাহ ও ইমাম” বলে ঘোষণা দিয়েছে।

 

আইএসের মুখপাত্র তাদের এই খিলাফত ঘোষণার বার্তায় কী বলেছে ভালো করে দেখুন......

“অতঃপর (বিশিষ্ট) ব্যক্তি, নেতৃবৃন্দ, উমারা এবং মাজলিসে শূরার সমন্বয়ে গঠিত ‘আহলুল হাল্লি ওয়াল আক্বদ’ এর প্রতিনিধিত্ব দ্বারা পরিচালিত ইসলামিক স্টেট (আইএস) ‘ইসলামী খিলাফাহ কায়েমের ঘোষণা’ ও  মুসলিমদের জন্য খলীফাহ নির্ধারণ এবং শাইখ.......(বাগদাদী) কে বাই‘আত প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আর তিনি বাই‘আত গ্রহণ করেছেন এবং এর মাধ্যমে তিনি সকল স্থানের মুসলিমদের জন্য খলীফাহ ও ইমাম হয়ে  গেলেন। 

আমরা মুসলিমদেরকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিচ্ছি, এই খিলাফাহ ঘোষণার মাধ্যমে সকল মুসলিমের উপর ওয়াজিব হয়ে যাবে খলীফাহ ইবরাহীম হাফি. কে বাই‘আত প্রদান করা ও সাহায্য করা। আর তা (খিলাফাহ ঘোষণা) সকল ইমারত, জামা‘আত, কর্তৃত্ব ও তানযীমসমূহকে বাতিল করে দেবে।”

আইএসের মুখপাত্রের খিলাফাহ ঘোষণার পুরো বার্তার ইংরেজি অনুবাদ... http://bit.ly/1qJIT2l

আরবী টেক্সট..... http://bit.ly/2qV0uZD  

 

আইএসের মুখপাত্র স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, বাগদাদী সারা দুনিয়ার সকল স্থানের মুসলিমদের খলীফা। খলীফার দায়িত্ব পালনের সামর্থ নেই,তারপরও সকল মুসলিমদের খলীফা দাবি করবে,এটি একজন সুস্থ মানুষের কাজ হতে পারে না।

 

আইএসের মনগড়া দাবি ও নতুন শরীয়ত প্রণয়নের জবাব দেওয়ার এই পর্যায়ে আবারো সকলকে জানিয়ে রাখছি, আইএসের খিলাফত শুধু একারণে বাতিল নয় যে, তারা খিলাফতের শর্তই পূরণ করেনি বরং তারা একটি সুস্পষ্ট খারিজি ও বাতিল আকীদার পথভ্রষ্ট দল,তাই তাদের এই মনগড়া দাবি মেনে নেওয়ার শরীয়তসম্মত কোনো কারণ নেই। আর মুসলিম উম্মাহ কখনোই খারিজীদের বাতিল মতবাদকে মেনে নেয়নি।

তারা যে খারিজি ও বাতিল আকীদার একটি পথভ্রষ্ট দল,তা তাদের এই মনগড়া খিলাফত দাবির বহু আগেই গ্লোবাল জিহাদের উলামা ও উমারাগণ স্পষ্টভাষায় মুসলিম উম্মাহকে জানিয়ে দিয়েছেন।

সেসব সুস্পষ্ট বার্তাগুলো এখানে বিস্তারিত পাবেন......   https://justpaste.it/batil_khilafah