বই আকারে পিডিএফ ডাউনলোড লিংক
{মুমিনগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও।}
[আল-হুজুরাত: ৬]
দৃষ্টি আকর্ষণ
প্রশ্ন এবং উত্তর সম্বলিত এই প্রজেক্টটি দাওলাতুল ইসলামের কোন অফিসিয়াল প্রজেক্ট নয় বরং তা আমাদের (বাক্বিয়্যাহ মিডিয়া স্ট্রাইক) নিজস্ব একটি প্রজেক্ট। আমরা এই প্রশ্নগুলো উত্তরের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি উত্তরগুলো দাওলাতুল ইসলামের অফিসিয়ালি প্রকাশিত প্রকাশনা সমূহের অনুসরণ করতে। তদুপরি, যদি আমাদের কোন বক্তব্যে সাথে দাওলাতুল ইসলামের কোন অফিসিয়াল বক্তব্যের পার্থক্য ধরা পড়ে, সেক্ষেত্রে দাওলাতুল ইসলামের মতামতই সঠিক বলে গণ্য হবে। ওয়াল্লাহু আলেম... আল্লাহ আমাদের এই কাজকে মানুষের জন্য হিদায়াহ আর আমাদের জন্য জান্নাতের জারিয়া বানিয়ে দিন। আমিন।
১. দাওলাহ কি?
উত্তর: দাওলাহ হলো দাওলাতুল খিলাফাহ আল ইসলামিয়্যাহ অর্থাৎ ইসলামী খিলাফত রাষ্ট্র।
২. এটি কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: এর নিয়ন্ত্রিত ভূমি রয়েছে ইরাক, শাম, লিবিয়া, সোমালিয়া, আফগানিস্তান এবং ফিলিপিনে। তাছাড়া এর গোপন যোদ্ধা ইউনিট রয়েছে অনেকগুলো দেশে, সে গুলোর মধ্যে বাংলাদেশও একটি।
৩. দাওলাহ রাষ্ট্র হলে অন্যান্য রাষ্ট্র একে স্বীকৃত দেয় না কেন?
উত্তর: দাওলাহ রাষ্ট্র ইসলামের নিয়মানুসারে, অন্যান্যদের স্বীকৃতির পরোয়া তারা করে না, কারণ খিলাফাহ রাষ্ট্র হতে হলে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাগবে এমন কথা কোরআন সুন্নাহর কোথায় লেখা নেই।
৪. দাওলাহ কেন যুদ্ধ করে?
উত্তর: দাওলাহ যুদ্ধ করে আল্লাহর কালিমাকে বুলন্দ করতে এবং কুফরের কালিমাকে পদদলিত করতে।
৫. দাওলাহ কোন মাজহাব অনুসরণ করে?
উত্তর: মাযহাব নিয়ে আমরা বাড়া বাড়ি কাটা কাটি মারা মারি করি না। শায়খ আদনানী তাক্বাব্বালাহুল্লাহ তার বক্তব্যে বলেছেন, "এখানে হানাফী-হাম্বলী-শাফেয়ী-মলেকে সবাই সমবেত হয়েছে।" এটাই দাওলাহর একমাত্র অফিসিয়াল বক্তব্য বা প্রকাশনা যেখানে মাজহাবের উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু দাওলার দাবিক ম্যাগাজিনে তাক্বলীদের নিন্দা করা হয়েছে। তাই আমরা বলতে পারি দাওলাহ ঢালাও ভাবে মাযহাবের বিরোধী না আবার অন্ধ তাকলীদকেও সমর্থন করে না।
৬. আইএস কি ভাবে অস্ত্র শস্ত্রের যোগান করছে? এরা অস্ত্র কোথায় পায়?
উত্তর: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আমার রিজিক আমার বর্শার ছায়ার রাখা হয়েছে।” অস্ত্র-শস্ত্র এবং অন্যান্য সকল সম্পদ রিজিকের আওতায় পড়ে। যুগ যুগ ধরে গণিমতই হল মর্দে মুজাহিদিনগণের অস্ত্রশস্ত্রের প্রধান উৎস। ইরাক এবং সিরিয়ার ব্যাপাক এলাকা দখল করার সময় আল্লাহর অনুমতিক্রমে মুজাহিদিনগণের হাতে বিশাল পরিমাণ অস্ত্র আর গোলাবারুদ জব্দ হয়। তাছাড়া, দাওলাতুল ইসলাম নিজে অস্ত্রশস্ত্র উৎপাদন করে।
৭. আইএস কে কেন ইহুদি দালাল বলা হয়?
উত্তর: কেন বলা হয় জানি সেটার উত্তর দেয়া আমাদের কাজ নয়। যারা বলে তারাই ভালো জানে। তবে, এমন কোন আম্বিয়া নেই যাকে কাফির মুনাফিকরা অপবাদ দেয় নি। দাওলাতুল ইসলামই যাই করে তার দলীল কোরআন সুন্নাতে পরিষ্কার। কোরআন সুন্নাহ অনুসরণ করার পরও কেউ যদি ইহুদীদের দালাল বলে আখ্যায়িত করে এর অর্থ হলো কোরআন সুন্নাহ ইহুদীদের তৈরি। যারা জেনে শুনে এমন দাবি করবে তারা কুফরে পতিত হবে।
৮. আতংঘাতি হামলার বৈধতা আদৌ আছে কি? তারা কেন ইসতিশহাদী ও ইনগ্বীমাসি হামলা চালায়? এটা কি আত্নহত্যার শামিল নয়?
উত্তর: ইসতিশহাদী এবং ইনগ্বিমাসী হামলার কোরআন এবং সুন্নাহ ভিত্তিক দলীল রয়েছে। এ ব্যাপারে বহু কিতাব এবং জিহাদী শায়খগণের বর্ণনা রয়েছে। সংক্ষেপে বলতে পারবো উলাইয়াত বারাকাহ হতে প্রকাশিত ভিডিও “ইনগ্বিমাসিয়্যিান- ফাখরুল উম্মাহ” দেখতে পারেন। সেখানে দলীল প্রমাণ উল্লেখ করা হয়েছে।
৯. দাওলাহর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে যে তারা মুসলিমদের হত্যা করে। বিষয়টি পরিষ্কার করুন।
উত্তর: এমন কোন আম্বিয়া আসেন নি যার বিরুদ্ধে কুফফার আর মুনাফিকদের মিডিয়া মিথ্যা রটায় নি। এগুলো মিথ্যা দাবী। তাছাড় একটি বিষয় হলো বর্তমানে মুসলিমদের মাঝে হাজার হাজার মুরতাদ মিশে আছে। যারা নিজেদের মুসলিম দাবি করলেও কোরআন আর সুন্নাহর দলীল অনুসারে তারা মুরতাদ। এ বিষয়ে পরিষ্কার হওয়ার জন্য “নাওক্বিদ আল ইসলাম” বা ইসলাম বাতিলকারী বিষয় সমূহের ব্যাপারে পড়াশুনা করুন।
১০. আইএস কে নিয়ে একটা কথা আছে যে তারা নারী বেচে কেনা করে বিশেষ করে তারা নাকি ইয়াজিদি নারীদের বেশি অত্যাচার করে?
উত্তর: কথা সত্য। দাওলাহ মুশরিক নারী শিশুদের দাসী বানায় এবং বাজারে বিক্রি করে। ইয়াজিদিরা শয়তানের পূজারী এবং হারবি মুশরিক। তাদের ব্যাপারে কোরআন সুন্নাহর বিধান হল তারা হয় ইসলাম গ্রহণ করবে নতুবা তাদের পুরুষদের হত্যা করা হবে এবং তাদের নারী শিশুদের দাসী বানানো হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিজের দাসী ছিল। সাহাবীগণও দাসী ক্রয় বিক্রয় করেছেন। দাসী বানানো কোন অত্যাচার নয়, যদি কেউ এমন দাবি করে তাহলে সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে কাফিরে পরিণত হবে কারণ এমন দাবি করার মানে হল আল্লাহর রাসূল এবং কোরআনের তিরষ্কার করা।
১১. অনেক সময় শুনা যায় তারা নাকি নারীদের কে জোর করে যোদ্ধাদের সাথে বিয়ে দেয়। কথা কি সত্য?
উত্তর: কথা মিথ্যা। এসব সংবাদ প্রচার করে কুফফার মিডিয়া। তাদের সংবাদ বিশ্বাস করা আর দশ তলা বিল্ডিং থেকে লাফ দিয়ে পড়ে মরা এক কথা। মুসলিমরা অবশ্যই কুফফারদের বিশ্বাস করে না।
১২. আইএস এর মানুষ জবাই করা, পুড়িয়ে ফেলা, ছাদ থেকে ফেলে দেয়া, ট্যাংকের নিচে ফেলে মানুষ পিষে ফেলা এসব কোন ধরনের হত্যা। এগুলো কি ইসলামে বৈধ?
উত্তর: দাওলাহ জবাই করে কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বনু কুরাইজার ইহুদীদের সাত থেকে আট শ’জনকে (সংখ্যার ব্যাপারে মতভেদ আছে) শিরশ্ছেদ করেছিলেন, পুড়িয়ে মারার ব্যাপারে বিস্তারিত আছে “ন্যায়ের অগ্নিশিখা” নামক আর্টিকলে, ছাদ থেকে ফেলে দেয়া মানে উঁচু থেকে ফেলা দেয়া হল সমকামীদের শাস্তির ব্যাপারে শরঈ বিধান, ট্যাংক দিয়ে পিষা হয়েছে কারণ তারা মুজাহিদদের ট্যাংক দ্বারা পিষেছিল। “আল-বিদায়াহ ওয়ান-নিহায়াহ” কিতাবের রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অফাতের পর থেকে “হারবুর রিদ্দা” (দ্বীনত্যাগীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ) এর ঘটনা পর্যন্ত পড়ে যান মোটামোটি সব কিছু দলীল পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।
১৩. আপনি আইএস নিয়ে কতটা আত্মবিশ্বাসী তারা কি তাদের দখল কৃত ভূমি ধরে রাখতে পারবে?
উত্তর: আমার (উত্তর প্রদানকারী) আত্মবিশ্বাসের ব্যাপারে জিজ্ঞাস করার জন্য আমরা প্রশ্ন আবেদন করি নি, কারণ আমার আত্মবিশ্বাসের সাথে দাওলাহর কোন সম্পর্ক নেই। দাওলাহ আমি, আপনি আরও দশজনের চেয়েও বড় একটি বিষয়। যাই হোক, যদি প্রশ্ন এমন হয়ে থাকে যে দাওলাহ কি তাদের দখলকৃত ভূমি ধরে রাখতে পারবে? তাহলে উত্তর হলো, এটা ভবিষ্যতের কথা, ইলমুল গ্বাইব। যেটা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না। আর আল্লাহ আমাদের জানার দায়ভার প্রদান করেন নি। আল্লাহ মুসলিমদের “সাধ্য অনুযায়ী” প্রস্তুতি গ্রহণের এবং নিজের জান মাল দিয়ে যুদ্ধ করার আদেশ করেছেন। আমাদের কাজ এতটুকুই, এর পরে জয় পরাজয় আল্লাহর হাতে। অবশ্যই, আমরা আল্লাহর ব্যাপারে সুধারণা পোষণ করি এবং বিজয়ের ব্যাপারে তাঁর প্রতিশ্রুতিকে সত্য এবং আসন্ন বলে পূর্ণ ইয়াক্বিন রাখি। এতটুকুই আমাদের কাজ, আমরা সেটাই করছি।
১৪. তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তারা নাকি ব্লাক মার্কেট এ তেল ক্রয় বিক্রয় করে?
উত্তর: ব্লাক মার্কেট আর হোয়াইট মার্কেট বলতে কি বুঝায়? তাগ্বুতের অভিধান অনুসারে তাদের কর বা ট্যাক্স না দিয়ে যাই করা হয় তা ব্লাক, আর ইসলামের অভিধান হিসেবে তাদের কর দেয়া হারাম মানে তারা যেটাকে ব্লাক বলে সেটাই ইসলামে হোয়াইট মার্কেট। আমরা তাদের অভিধানের পরোয়া করি না। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
১৫. আইএস কে কেন কোন দেশ সমর্থন দেয় না? এমন কি মুসলিম দেশ ও।
উত্তর: মুসলিম দেশ বলতে ইসলামে কিছু নেই। এইটা হলো এই জামানার দরবারি আলেমদের মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য আবিষ্কৃত একটি শব্দ। ইসলামের আছে “দারুল ইসলাম” এবং “দারুল কুফর”। দারুল ইসলাম হল একমাত্র সেই ভূমি যাতে আল্লাহর শরীয়ত কোন ব্যতিক্রম ব্যতীত শতভাগ প্রতিষ্ঠিত এবং দারুল কুফর হল এমন ভূমি যেখানে আল্লাহ শরীয়ত শতভাগ প্রতিষ্ঠিত নয় এমনকি ৯৯% শরীয়ত বলতেও ইসলামে কিছু নেই। হয় ১০০% অথবা ০%। সেই হিসেবে দাওলাতুল ইসলাম ছাড়া বর্তমান পৃথিবীতে কোন দারুল ইসলাম নেই। তাই তাদের সমর্থন আমাদের দরকার নেই। আমরা আল্লাহর কাছে এমন সমর্থনের ব্যাপারে পানাহ চাই।
১৬. আইএস এর ভূমিতে নারীদের স্বাধীনতা কেমন? তাদের কি ঘর থেকে বের হওয়ার অনুমতি আছে?
উত্তর: “স্বাধীনতা” শব্দটির সাতে ইসলামের মৌলিক দ্বন্দ্ব রয়েছে। ইসলাম এসেছে তাসলিম থেকে। অর্থাৎ আত্মসমর্পণ থেকে। এর মানে হল আমরা আমাদের সকল স্বাধীনতা থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর আদেশ নিষেধের সামনে তাসলিম বা আত্মসমর্পণ করলাম। তাই দাওলাতুল ইসলামের নারী পুরুষ কেউই স্বাধীন নয়। সবাই আল্লাহর বিধানের গণ্ডিতে আবদ্ধ। এই ব্যাপারে কারও কোন দ্বিমত থাকলে সেই মুসলিম নয়, কাফির।
১৭. তাদের ভূমিতে কি অন্য ধর্মের লোকেরা বাস করে? যদি করে না তাহলে কেন করে না?
উত্তর: এই ব্যাপারে “হাত্তা তা’তিয়া হুমুল বাইয়্যিনাহ” ভিডিওটি দেখুন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত উত্তর দেয়া আছে।
১৮. রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনায় মুনাফেকদের চিনা সত্যেও হত্যা করেননি, বরং সাহাবীগনের কয়েকবার অনুমতি চাইলেও তাদেরকে অনুমতি দেননি, অথচ তারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফেরদের সহায়তা করা সহ সব জঘন্য কাজই করতো! তাহলে দাওলাহ কেন মুনাফিকদের হত্যা করছে?
উত্তর: প্রথম কথা হল রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুনাফিকদের চিনতেন ওহীর মাধ্যমে, কিন্তু আমাদের ওহী নেই তাই আমরা বলতে পারবো না অমুক ব্যক্তি মুনাফিক। দাওলাহ আজ পর্যন্ত কাউকে এই বলে হত্যা করে নি যে এই লোক মুনাফিক। দাওলাহ এক মাত্র তখনই হত্যা করে যখন কোন লোক দ্বীনত্যাগী কোন কাজ করে এবং সে ব্যাপারে অকাট্য প্রমান পাওয়া যায়। প্রশ্নকারীকে চ্যালেঞ্জ করা হলো যে, পারলে একটি উদাহরণ আমাদের ইনবক্সে সেন্ড করুন যেখানে দাওলাহ কাউকে মুনাফিক দাবি করে হত্যা করেছে।
১৯. দাওলাহ কেনো মুসলিম দেশগুলাতে হামলা চালায়? এবং মুসলিম দেশগুলাতেই যুদ্ধ করে কেনো?
উত্তর: ১৫ নাম্বার প্রশ্নের উত্তরে এই প্রশ্নের উত্তর দেয়া আছে।
২০. শত্রুদের শক্তি অনেক বেশি, তাদের পারমানবিক বোমা আছে। তাদের বিরুদ্ধে কেমন করে দাওলাহ যুদ্ধ করবে?
উত্তর: ১৩ নাম্বার প্রশ্নের উত্তরে এই প্রশ্নের উত্তর দেয়া আছে।
২১. দাওলাতুল ইসলাম কেন শুধু মুসলিম দেশে হামলা করে? কেন শুধু মুসলিম দেশ গুলো তে শুধু যুদ্ধ করে? অন্য দেশে করে না কেন?
উত্তর: "মুসলিম দেশ" নামক ধারণাটির উত্তর দেয়া আছে ১৫ নাম্বার প্রশ্নের উত্তরে। আর দাওলাতুল ইসলাম শুধু তথাকথিত মুসলিম দেশ গুলোতে যুদ্ধ করে, এমন কথা ভিত্তিহীন। দাওলাতুল ইসলামের সৈনিকগণ নাইজেরিয়া, নাইজার, কলম্বিয়ার মত খ্রিস্টান রাষ্ট্রের কুফফার তাগ্বুতদের মধ্যেও ত্রাস সৃষ্টি করছেন। তাছাড়া খিলাফাহর সৈনিকগণ ৯/১১ এর টুইন টাওয়ারে হামলার পর সবচেয়ে নজিরবিহিন হামলা চালিয়েছেন ক্রুসেডারদের প্রাণকেন্দ্র প্যারিসে। তাছাড়া বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসও বাকি থাকে নি। যাই হোক সেটা কথা নয়। এই হামলাই প্রথম হামলা নয়, আর শেষও হবে না আল্লাহ চাইলে। আর সাহাবাগণের ইজমা অনুসারে আসলি কুফফার অর্থাৎ ইহুদী নাসারাদের সাথে যুদ্ধের চেয়ে মুরতাদ অর্থাৎ মুসলিম নামধারী তাগ্বুত, মুজাহিদ নামধারী সাহাওয়াতদের সাথে যুদ্ধ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত। ঈমান এবং ঈমান ভঙ্গকারী বিষয় সমূহ ও যারা ঈমান ত্যাগ করে তাদের সাথে আমাদের মুয়ামালাত অর্থাৎ ব্যবহার কেমন হবে এই বিষয় নিয়ে নিজে পড়াশুনা করুন, সব বুঝে যাবেন ইনশাআল্লাহ।
২২. আল কায়দা কোন দোষ এর ভিত্তি করে দাওলাতুল ইসলাম কে খারেজী বলে?
উত্তর: যে দোষের ভিত্তিতে মক্কার কোরাইশরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পাগল আর জাদুকর বলেছিল সেই একই দোষের ভিত্তিতে নব্য আল কায়দার অন্ধ অনুসারীরা দাওলাহকে খাওয়ারিজ বলে দোষারোপ করে। যারা এই বিষয় নিয়ে ইখলাস সহকারে জানার চেষ্টা করছেন তাদের জন্য আমাদের নসিহাহ হলো খারেজী সম্পর্কিত সহীহ হাদিসগুলো একটু পড়ে দেখুন। ইনশাআল্লাহ সকল সন্দেহ দূর হয়ে যাবে। আর যারা এমন দাবি করে তাদের চ্যালেঞ্জ করা হল যে তারা কিয়ামত পর্যন্ত প্রমাণ করতে পারবে না দাওলাহর আক্বিদাহ খাওয়ারিজ। তারা যদি এই ব্যাপারে আমাদের সাথে মুবাহালাহ করতে চায় তাহলে আমরা (বাক্বিয়াহ মিডিয়া স্ট্রাইকের এডমিন) এতে রাজি আছি। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
২৩. দাওলাতুল ইসলাম কি উসামা বিন লাদেনকে অমান্য করে?
উত্তর: প্রথমত কথা হলো শায়খ উসামা বিন লাদেন (আল্লাহ তাকে কবুল করুন) হলেন জিহাদে আমাদের পূর্বপুরুষ, এই জামানার মুজাদ্দিদ মুজাহিদ ইমাম। যার উসিলায় আল্লাহ নতুন যুগের জিহাদকে জাগ্রত করেছেন। আল্লাহ শায়খকে জান্নাতের আলা দারাজা দান করুন এবং জান্নাতে তার সাথে আমাদেরও সমবেত করুন। তদুপরি, শায়খ উসামা বিন লাদেন একজন মানুষ। উনি ব্যক্তি হিসেবে কোন দলীল নন, না কখনও তিনি তার দাবি করেছেন, কিন্তু অনেক গোমরাহ দল বা ব্যক্তি আজ সেটাই প্রমাণ করতে চায়। তারা এসে আপনাকে এই কথা জানতে চাইবে না যে আপনার ঈমান আক্বিদাহ ইসলাম সম্মত কিনা, তাদের প্রশ্ন আজব, আপনারা কি শায়খ উসামার মানহাজের উপর আছেন? আল্লাহ তাদের কুটচাল ধ্বংস করুন। তাই সহজ কথা হলো আমরা শায়খ উসামাকে সম্মান করি, কিন্তু কোন ব্যক্তি বা দলকে ইসলামের মানদণ্ড মনে করি না, আমাদের কাছে ইসলামের মানদণ্ড হলো কোরআন এবং সুন্নাহ। আর এই প্রশ্ন নিয়ে এর চেয়ে বেশি ঘাটাঘাটি কাটাকাটির আমরা পক্ষপাতী নই। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
২৪. ইসলামে তো বলা হয়েছে প্রকৃত হত্যাকারিকে শাস্তি দিতে কিন্তু সরকার এর শাস্তি কেন জনগণ এর উপর হয়? ফ্রান্স এট্যাক গুলশান এট্যাক এটা কি ভাবে ইসলাম কায়েম?
উত্তর: “ইসলামে তো বলা হয়েছে” এই কথা শুনতে শুনতে আমরা ত্যক্ত বিরক্ত। ইসলামে কোথায় বলা হয়েছে একটু নিয়ে আসেন। বাংলাদেশে মুফতিদের অভাব নেই। সবাই নিজ নিজ মত বলেই বলে দেয় “ইসলামে তো বলা হয়েছে”। কিন্তু যদি আবার জিজ্ঞাস করেন কোথায় বলা হয়েছে। বাস, কেল্লা ফতেহ। এই উত্তরের মাধ্যমে আমরা প্রশ্নকারীকে ছোট করছি না বরং একটি বড় সমস্যাকে তুলে ধরছি। এই হামলাগুলো কেমন করে ইসলাম সম্মত সে ব্যাপারে “কাফিরদের রক্ত হালাল, তাই তা প্রবাহিত করুন” আর্টিকলটি পড়ুন বা শুনুন (এর অডিও ভার্সনও তামকীনে দেয়া আছে)। সেখানে এর সকল দলীল দস্তাবেজ দেয়া আছে। আশা করি পরিষ্কার হয়ে যাবেন।
২৫. শায়েখ বাগদাদী খলিফা হিসাবে কি রকম যোগ্য?
উত্তর: একজন খলিফাহ হওয়ার জন্য যা যা যোগ্যতা দরকার তা ছাড়াও শায়খ বাগদাদীর (আল্লাহ তাকে হক্বের উপর প্রতিষ্ঠিত রেখে হেফাজত করুন) অনেক এডিশনাল বা এক্সট্রা যোগ্যতা আছে। সেই ব্যাপারে বলতে গেলে একটি কিতাব লিখতে হবে। তাই এই প্রশ্নে সহজ উত্তর হলো, যারা দাবি করে তিনি খালিফাহ হওয়ার যোগ্য না তাদেরকে জিজ্ঞাস করুন কেন যোগ্য না? যদি তারা কিয়ামত পর্যন্ত কোন কারণ নিয়ে আসতে পারে তাহলে আমাদের জানাবেন আমরা সেটার উত্তর দিয়ে দিবো ইনশাআল্লাহ।
২৬. বড় বড় ইমামরা যেমন কাবা শরীফ এর ইমামরা এবং আর বিখ্যাত ইমামরা শায়খ বাগদাদীকে মানছে না কেন?
উত্তর: বড় বড় আর বিখ্যাত ইমাম বলতে আপনি কি বুঝিয়েছেন আল্লাহু আলেম। তবে ভাষাতাত্বিক দিক দিয়ে এর সোজা উত্তর হলো যাদের টিভিতে বেশি দেখা যায় তারাই বড় বড় বিখ্যাত ইমাম। যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে জেনে রাখুন কাবা শরীফের বর্তমান ইমাম বিখ্যাত মুরতাদ যে তাগ্বুত বাদশাহ সালমানকে মুসলিমদের হত্যার করা জন্য ফতোয়া বানিয়ে দেয়। তারা উম্মতের সবচেয়ে বড় দুশমন। এই বিষয় যদি আপনার কাছে আশ্চর্যজনক মনে হয় তাহলে আপনাকেও পূর্বে উল্লেখিত একই নসিহত প্রদান করবো “ঈমান এবং ঈমান ভঙ্গকারী বিষয় সমূহ ও যারা ঈমান ত্যাগ করে তাদের সাথে আমাদের মুয়ামালাত অর্থাৎ ব্যবহার কেমন হবে এই বিষয় নিয়ে নিজে পড়াশুনা করুন, সব বুঝে যাবেন ইনশাআল্লাহ।”। আর বড় ইমাম হতে হলে বেশি বেশি টিভিতে আসতে হবে এমন কোন দলীল কোরআন সুন্নাতে খুঁজে পেলে আমাদের সেন্ড করবেন, উপকৃত হবো।
২৭. আমার দুই দল (আল কায়দা এবং দাওলাহ) কে ভাল লাগে, এখন আমি কোন দল কে হক মনে করবো?
উত্তর: প্রথম কথা হলো দাওলাতুল ইসলাম একটি বৃহৎ জামায়াহ, যার একটি রাষ্ট্র রয়েছে এবং তার একজন আমিরুল মুমিনিন তথা খলিফাহ রয়েছেন। আর এগুলো কোনটিই ভুয়া দাবি সর্বস্ব কিছু বিষয় নয় বরং সবগুলোই বাস্তবতা এবং জমিনে প্রতিষ্ঠিত। অন্য দিকে আল কায়দা একটি তানযীম। তাই এখানে দুই দল কথাটা সঠিক নয়। এখন আসা যাক আপনার প্রশ্নে উত্তরের ক্ষেত্রে, আল কায়দা হলো এমন একটি তানযীম যারা প্রকাশ্য কুফরে লিপ্ত এবং কুফরপন্থিদের সাথে আতাতের ক্ষেত্রে আপনি প্রশ্ন করতে লজ্জাবোধ করলেও তারা তা প্রকাশ্যে দাবি করতে লজ্জাবোধ করে না। আমরা আমাদের পেজে তাদের কুফর আর গোমরাহির বাস্তবিক দলীল প্রদান করেছি ডজন খানেকবার। তারা এর একটিরও রদ করাতো দূরের কথা এগুলো মিথ্যা বলেও দাবি করতে পারে নি। অপর দিকে দাওলাতুল ইসলাম এমন এক রাষ্ট্র যার দ্বীনের প্রতি তাওয়াজ্জু এবং আল্লাহর শরীয়তের প্রতি এর দৃঢ়তার কথা বন্ধুদের আগে শত্রুরাই স্বীকার করে। তাই আমরা আপনাকে নসিহত করবো আপনার “ভালো লাগার” মানদণ্ড পরিষ্কারে করে নিন। তারপর দেখবেন কাজটি সহজ হয়ে গেছে, বিইদনিল্লাহ।
২৮. ইসলামিক স্টেট ও আল কায়েদার মধ্যে সংঘর্ষ কোথায়?
উত্তর: ২৭ নাম্বার প্রশ্নের উত্তরে এই প্রশ্নের উত্তর দেয়া আছে।
২৯. দাওলাতুল ইসলাম কবে প্রতিষ্ঠিত হয়, এর ইতিহাস কি জানতে পারি?
উত্তর: দাওলাতুল ইসলামের ইতিহাস জানতে হলো “ওয়ালাও কারিহাল কাফিরুন” ভিডিওটি দেখতে পারেন।
৩০. দাওলাতুল ইসলাম কি সকল খ্রিষ্টানকে ক্রুসেডার মনে করে?
উত্তর: জ্বী, দাওলাতুল ইসলাম সকল খ্রিষ্টানকে ক্রুসেডার মনে করে একমাত্র তাদের ছাড়া যারা খিলাফাহকে জিজিয়া দিয়ে খিলাফতের ভূমিতে বসবাস করে। দাওলাতুল ইসলামের উলাইয়াত রাক্কায় কিছু খ্রিষ্টান পরিবার জিজিয়া দিয়ে বসবাস করে। “হাত্তা তা’তিয়া হুমুল বাইয়্যিনাহ” ভিডিওতে কয়েক জনের সাক্ষাৎকার আছে। এখন কথা হলো “ইসলামে বলা আছে” মানুষ তিন শ্রেণীর। মুসলিম, মুসালিম (জিজিয়া প্রদান করে বশ্যতা স্বীকারকারী) আর হারবি (বিদ্বেষী যুদ্ধংদেহী কাফির)। এখানে “ইসলামে বলা আছে” বলে আমরা ফাকা গুলি মারছি না, কোথায় বলা আছে সেটা দেয়া আছে “কাফিরদের রক্ত হালাল, তাই তা প্রবাহিত করুন” আর্টিকলে। পড়ুন বা শুনুন, আশা করি পরিষ্কার হয়ে যাবেন। ইনশাআল্লাহ সেখানে আরও পরিষ্কার হবেন যে ইসলামের “নিরপরাধ কাফির” বলতে কিছু নেই। আল্লাহ আমাদের হৃদয়কে সঠিক পথে পরিচালিত করুন।
৩১. খিলাফাহ তো আহলে কিতাবদের থেকে জিজিয়া আদায় করে কিন্তু হিন্দু বা এইরকম মুশরিকদের বিষয়ে দাওলাহর আক্বিদাহ কি? মানে আল্লাহর ইচ্ছায়, খিলাফাহ যদি বাংলা তথা হিন্দুস্থানে তামকীন লাভ করে তাহলে হিন্দুদের ব্যাপারে বিধান কি হবে?
উত্তর: আহলে কিতাবদের ছাড়া অন্যান্য মুশরিক আসলিদের কাছ থেকে জিজিয়া আদায় করা না করা নিয়ে উলামাদের মধ্যে মত পার্থক্য আছে। আমরা বর্তমান খিলাফাহকে আহলে কিতাবদের কাছ থেকে জিজিয়া নিতে দেখেছি কিন্তু তারা “ইয়াজিদি” মুশরিকদের কাছ থেকে জিজিয়া আদায় করেন নি। “ইয়াজিদিরা” মুশরিক আসলি যারা শয়তানের আর আগুনের পূজা করে। সর্বশেষ, আমরা বলবো এই বিষয়ে উত্তর দেয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ইনশাআল্লাহ, অচিরেই বাংলার ভূমিতে খিলাফাহ তামকীন লাভ করবে, তখনই আমরা দেখতে পারবো আসলে খলিফাহ কি সিদ্ধান্ত নেন।
৩২. ‘রাফিদি', ‘নুসাইরি', ‘সাহাওয়াত' কাদের বলে একটু বিস্তারিত জানাবেন।
উত্তর: “রাফিদি” এবং “নুসাইরি” এই দুটি নামই শিয়াদের জন্য ব্যবহার করা হয়। এই দুটি নামের ইতিহাস অনেক লম্বা। আমরা সংক্ষেপে লিংক দিয়ে দিচ্ছি, পড়ে নিবেন।
রাফিদি এর ব্যাপারে আর্টিকল লিংক:
https://en.wikipedia.org/wiki/Rafida
নুসাইরিয়্যাহদের ব্যাপারে আর্টিকল লিংক:
http://www.philtar.ac.uk/encyclopedia/islam/shia/nusay.html
তবে সাহাওয়াতদের ইতিহাস এখানে হালকা আলোচনা করাকে আমরা জরুরি মনে করছি। সাহাওয়াত আরবি শব্দ, যার বাংলা করলে এর অর্থ দাড়ায় “জাগরণ”। অর্থাৎ বাংলাদেশের মুরতাদ “জাগরণ মঞ্চ” টাইপের একটি সংগঠন। কিন্তু তাদের ইতিহাস হলো বিশ্বাসঘাতকরা আর দ্বীনত্যাগের উপর প্রতিষ্ঠিত। আমেরিকা ইরাকে যখন অনুপ্রবেশ করে তখন তারা কয়েক দিনেই তাগ্বুত সাদ্দামকে হটিয়ে তাদের পোষা কুকুর শিয়া রাফিদাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেয়। তাদের প্লান শুরুতে ভালই যাচ্ছিল, কিন্তু তারা আল্লাহর কৌশল টের পায় নি। ইরাকের অস্থিরতাকে পুঁজি করে মুজাহিদিনগণ নিজেদের শক্তি অর্জন শুরু করেন। তাদের হামলায় মার্কিন বাহিনী দিশেহারা হয়ে পড়ে। তাদের হতাহতের সংখ্যা তাদের সহ্য সীমানা অতিক্রম করে। আল্লাহর ইচ্ছায় দাওলাতুল ইসলাম ফিল ইরাক প্রতিষ্ঠিত হয়। এদিকে নিজেদের ছেলেদের হারিয়ে আমেরিকার জনগণ বুশের উপর ক্ষেপে যায়। তারপর বুশ বিদায় নেয়ার সময় ক্ষমতা আসার জন্য বারাক ওবামা আমেরিকানদের প্রতিশ্রুতি দেয় যে সে সকল মার্কিন সেনাদের দাওলাতুল ইসলামের মুজাহিদিনদের হাত থেকে রক্ষা করে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। তখন ওবামা প্রশাসন নতুন এক ফন্দি আটে। তারা ইরাকের বিভিন্ন গোত্র আর নামধারী জিহাদী দলগুলোকে বিপুল টাকা দিয়ে কিনে নেয়। তাদের ক্ষমতার লোভ দেখায় এবং তৈরি করে নতুন একটি দল। সুন্দর করে তার নাম দেয় “সাহাওয়াত” অর্থাৎ “জাগরণ”। এভাবে আমেরিকা নিজেদের সৈন্যদের হটিয়ে এই মূর্খ সাহাওয়াতদের বলির পাঠার মত দাওলাতুল ইসলামের ছুরির সামনে ঠেলে দেয়। সেই থেকেই এই সাহাওয়াত শব্দের উৎপত্তি। তারপর থেকে যারাই এই মূর্খ সাহাওয়াতদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে দাওলাতুল ইসলাম তাকেও তাদের পূর্বসূরি সাহাওয়াতদের নামে নামকরণ করে। আর কিয়ামত পর্যন্ত যারাই কুফফারদের এই ফাঁদে পা দিবে তারা সবাই এই নামেই অভিহিত হবে এবং আল্লাহ চাইলে তাদেরকেও ইরাকের মূর্খ সাহাওয়াতদের মত কচুকাটা করা হবে। সকল প্রশংসা আল্লাহর। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
৩৩. দাওলাতুল ইসলাম ছাড়া দারুল কুফর-এ জুমার সালাত এবং খুতবা কি বৈধ?
উত্তর: এই প্রশ্ন তালিবুল ইলমদের কাছে করুন। দাওলাতুল ইসলাম এ ব্যাপারে অফিসিয়াল কোন মতামত প্রকাশ করে নি এবং আমাদেরও এই ব্যাপারে বিস্তারিত জ্ঞান নেই। তাই শুধু শুধু নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে চাচ্ছি না। আল্লাহু আলেম।
৩৪. দাওলা আর আল কায়দার মধ্যে এত ভেদাভেদ টা কিসের? আর সবাই কি একসাথে মিলে কাজ করা যায় না? একে অপরের দিকে কেন এত কাদা ছোড়াছুড়ি?
উত্তর: ২৭ নাম্বার প্রশ্নে উত্তর দেখুন। কিছুদিন আগে আমরা দুটি আর্টিকল লিখেছি সেগুলোও পড়তে পারেন:
১. https://justpaste.it/mubahalahbn এই আর্টিকলে তাদের কুফরের প্রমাণ উল্লেখ করা হয়েছে এবং তাদেরকে মুবাহালাহর জন্য আহ্বান করা হয়েছে। কিন্তু তারা তাদের উত্তর দেয় নি। কেন দেয় নি? আপনাকে আল্লাহ যে বোধশক্তি দিয়ে অনুগ্রহ করেছেন সেই অনুগ্রহকে কাজে লাগিয়ে চিন্তা করে দেখুন।
২. https://justpaste.it/democraticAQ এই আর্টিকলে শামে আল কায়দার ধীরে ধীরে গণতন্ত্রের দিকে অগ্রসর হওয়ার কিছু নগ্ন প্রমাণ দেয়া হয়েছে। যা তারা আপনাদের কাজে গোপন করে। তদুপরি তারা এই কাজ থেকে তাওবাহও করে নি আর এর কোন উত্তর দেয় নি। কেন? আবারও বলবো আল্লাহর অনুগ্রহের শুকরিয়া আদায় করুন।
আমাদের আর তাদের মধ্যে পার্থক্য ঈমান আর কুফরের। তাই তাদের সাথে এক হয়ে কাজ করার প্রশ্নই উঠে না। তারা হয় তাদের কুফর থেকে তাওবাহ করে আমাদের ভাই হয়ে ফিরে আসবে, না হয় আল্লাহর ইচ্ছায় তাদের সাথে কিয়ামত পর্যন্ত আমাদের শত্রুতা বাকি থাকবে।
৩৫. খলিফা কেন আরাকানের উদ্ধার এ আসছে না?
উত্তর: দাওলাতুল খিলাফাহ আজ পৃথিবীর প্রায় সকল কুফফারদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত। তাই ইচ্ছা থাকা সত্যেও পৃথিবীর সর্বত্র থাকা মুসলিমদের সাহায্যে তারা এগিয়ে আসতে পারছেন না। খলিফাহ তার বক্তব্যে আরাকানে মুসলিমদের সাহায্যে কথা উল্লেখ করছেন। ইনশাআল্লাহ, আল্লাহর ইচ্ছায় অচিরেই খিলাফাহ পৃথিবীতে মাথা তুলে দাঁড়াবে এবং সকল মুসলিমদের জন্য ঢালে পরিণত হবে।
তদুপরি, এই প্রশ্নে সুবাদে আমরা আল্লাহর দুশমন মুনাফিকদের তৈরি একটি অহেতুক সন্দেহের পরিষ্কার উত্তর প্রদান করতে চাই। তারা দাবি করে যে পৃথিবীর সকল মুসলিমদের সাহায্য করতে পারে না এ কেমন খলিফাহ? তাদের কাছে চ্যালেঞ্জ হলো তারা কোরআন সুন্নাহ থেকে দলীল নিয়ে আসুক যে খলিফাহ হতে হলে পৃথিবীর সকল মুসলিমদের সাহায্যের ক্ষমতা থাকতে হবে। তাদের এই বক্তব্য এমন এক বক্তব্য যার উত্তর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং খুলাফায়ে রাশিদিনগণের জীবনীতে অহরহ আছে। মদিনায় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার পর মক্কার নির্যাতিত মুসলিমদের সাহায্য করতে সক্ষম ছিলেন না। এই মুনাফিকরা আল্লাহর রাসূলের জামানায় থাকলে নিশ্চয়ই বলতো, এ কেমন নবী তার নিজের অনুসারীদেরই বাচাতে পারে না। খলিফাতুর রাসূলুল্লাহ আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহুর জামানায় যখন অধিকাংশ আরব গোত্র ইসলাম ত্যাগ করে মুরতাদ হয়ে যায় তখন তারা বিভিন্ন এলাকায় বাকি থাকা মুসলিমদের উপর অত্যাচার চালায়। তদুপরি খলিফাহ তাদের সাহায্য করতে সক্ষম ছিলেন না। এই মুনাফিকরা তখন নিশ্চয়ই বলতো, খলিফাহ হলেন উম্মতের ঢাল, আবু বকর তো কিছুই করছেন না, এই বা কোন খলিফাহ? তারপর আমরা শেষ উদাহরণ দিবো উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু, যিনি তার জীবনের শেষ দিনগুলো খারেজিদের অবরোধে কাটিয়েছেন। উম্মতকে সাহায্য করাতো দূরের কথা (আপাতদৃষ্টিতে) তিনি তার নিজেকে সাহায্য করতে পারেন নি, তিনি অবরোদ্ধ অবস্থায় খারেজিদের হাতে নিহত হয়েছেন। তাহলে এই মুনাফিকদের মতে তিনি তখন খলিফাহ ছিলেন না? মুনাফিকদের উপর আল্লাহর লানত। আর সেই আল্লাহ কতই না সুবিচারক যিনি জাহান্নামের সর্ব নিম্ন স্তরকে এই মুনাফিকদের চিরস্থায়ী ঠিকানা বানিয়েছেন। এবং আল্লাহই সর্ব বিষয়ে অবগত। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
৩৬. আইএস কেন আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে মারে?
উত্তর: “ন্যায়ের অগ্নিশিখা” আর্টিকলটি পড়ুন অথবা শুনুন। সেখানে বিস্তারিত দলিল দেয়া আছে।
৩৭. আইএস কেন হত্যার ভিডিও প্রকাশ করে?
উত্তর: কাফিরদের মনে ভীতির সৃষ্টি করা মুসলিমদের উপর ফরজ। তাই দাওলাহ তাদের হত্যার ভিডিও প্রকাশ করে। যাতে কাফিরদের উত্তরসূরিরা তাদের এহেন কৃত কর্ম থেকে বিরত থাকে।
৩৮. বাংলাদেশে সর্বক্ষেত্রে মুশরিক আধিপত্য এর ব্যাপারে দাওলা কি মনে করে?
উত্তর: দাওলাতুল ইসলাম বাংলাদেশের মুশরিকিনদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করেছে। বাংলাদেশে দাওলাতুল ইসলামের হামলাগুলো পর্যবেক্ষণ করলেই তা বুঝতে পারবেন। হামলা প্রায় ৭০% হলো হিন্দু, বৌদ্ধ আর খ্রিস্টান মুশরিকদের বিরুদ্ধে। এই হামলাগুলো আল্লাহর ইচ্ছায় চলতে থাকবে এবং দিন দিন এর তীব্রতা বৃদ্ধি পাবে ইনশাআল্লাহ, যতক্ষণ না বাংলার ভূতি মুশরিকদের থেকে পবিত্র হয়। আল্লাহ আমাদের ভাইদের শক্তি আর সংহতি দান করুন।
৩৯. দাওলা কি মাযহাব থেকে সালাফিয়াত কে প্রাধান্য দেয়? আর ইহার উদ্দেশ্য কি?
উত্তর: আমাদের এই প্রশ্নত্তোর পর্বে আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করছি নিজেদের কোন মত প্রকাশ না করে দাওলাতুল ইসলামের মতামত বা কর্মের উপর ভিত্তি করে উত্তর দিতে। মাযহাবের ক্ষেত্রে বলতে গেল শায়খ আবু মোহাম্মাদ আল আদনানী (আল্লাহ তাকে কবুল করুন) তার একটি বক্তব্যে বলেছিলেন “এখানে (অর্থাৎ খিলাফায়) হানাফী, শাফেয়ী, হাম্বলি, মালিকি সবাই সমবেত হয়েছে।” তদুপরি দাবিক ম্যাগাজিনে একটি আর্টিকলে তাক্বলিদ বা অন্ধ অনুকরণের নিন্দা করা হয়েছে। তাই এই ব্যাপারে আমরা বলতে পারি দাওলাহ গণহারে মাযহাবকে অস্বীকারও করে না আবার তাক্বলিদ বা অন্ধ অনুসরণকেও সমর্থন করে না। এই ব্যাপারে এর চেয়ে বেশি আর কিছু আমাদের বলার নেই। আল্লাহই ভালো জানেন। তবে দাওলাতুল ইসলাম কোন নির্দিষ্ট মাযহাবের অনুসরণ করে না। দাওলাতুল ইসলামের অফিসিয়াল প্রকাশনা সংস্থা “মাকতাবাতুল হিম্মাহ” থেকে প্রকাশিত কিতাব সমূহে সব মাযহাবের ইমামগণের মতামতই প্রকাশ করা হয়। আর দাওলাতুল ইসলামের উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর কলিমাকে উন্নত করা এবং কুফরের কলিমাকে পদদলিত করা।
৪০. আইএসআইএস আর দাওলাহর মধ্যে পার্থক্য কি? কোনটা হক্বের উপর আছে? তাদের চিনার উপায় কি?
উত্তর: ISIS হলো Islamic State in Iraq and Syria অর্থাৎ ইরাক এবং সিরিয়ায় ইসলামিক রাষ্ট্র, খিলাফত প্রতিষ্ঠার পর Islamic State in Iraq and Syria থেকে in Iraq and Syria এই অংশ বাদ দেয়া হয়। এবং নামকরণ করা হয় শুধু Islamic State, কারণ তা এখন শুধু ইরাক এবং সিরিয়ায় না বরং পুরো পৃথিবীর অনেক এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।
তাদের চিনার উপায় হলো, কোরআন সুন্নাহর জ্ঞান অর্জন করা। যদি আপনি এমন কাউকে পান যারা অক্ষরে অক্ষরে কোরআন সুন্নাহ অনুসরণ করে, কুফফারদের সাথে যুদ্ধ করে এবং মানুষের পছন্দ অপছন্দের পরোয়া করে, একমাত্র আল্লাহর পছন্দকে গুরুত্ব দেয়। তাহলেই বুঝে যাবেন তারাই আইএস এর লোক।
প্রচারে: বাক্বিয়্যাহ মিডিয়া স্ট্রাইক
ফেসবুকে আমাদের ফোলো করুন: https://www.facebook.com/BaqiyyahMS/