JustPaste.it

ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদেরকে সহায়তা করা কি কুফরে আকবার ও রিদ্দাহ ? নাকি অন্য কিছু ?            এ ব্যাপারে উম্মতের ইমাম ও আলিমদের বক্তব্য......  ১ম পর্ব।  

 

এপর্বে ইসলামের যে ৬ জন ইমাম ও আলিমের বক্তব্য উপস্থাপন করা হলো,  তারা হলেনঃ

১। ইমাম তাবারী রাহ.   ২। ইমাম কুরতুবী রাহ.  ৩। শাইখ মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহহাব রাহ.

৪। আল্লামা আহমাদ শাকের রাহ.   ৫। শাইখ আব্দুল আযীয বিন বা’য রাহ.  ৬। মাওলানা হুসাইন আহমদ মাদানী রাহ.

 

১। ইমাম তাবারী রাহ. বলেনঃ

القول في تأويل قوله ( لا يتخذ المؤمنون الكافرين أولياء من دون المؤمنين ومن يفعل ذلك فليس من الله في شيء إلا أن تتقوا منهم تقاة )

وهذا نهي من الله - عز وجل - للمؤمنين أن يتخذوا الكفار أعوانا وأنصارا وظهورا ، ولذلك كسر " يتخذ " لأنه في موضع جزم بالنهي ، ولكنه كسر " الذال " منه ، للساكن الذي لقيه وهي ساكنة .

ومعنى ذلك : لا تتخذوا ، أيها المؤمنون ، الكفار ظهرا وأنصارا توالونهم على دينهم ، وتظاهرونهم على المسلمين من دون المؤمنين ، وتدلونهم على عوراتهم ، فإنه من يفعل ذلك " فليس من الله في شيء " يعني بذلك : فقد برئ من الله وبرئ الله منه ، بارتداده عن دينه ودخوله في الكفر 3/228

অর্থঃ “আল্লাহ তা’আলার এই বাণীর ব্যাখ্যায় বক্তব্য (মুমিনগন যেন মুমিনদেরকে ব্যতীত কোনো কাফেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যারা এরূপ করবে আল্লাহর সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক থাকবে না। তবে যদি তোমরা তাদের পক্ষ থেকে কোনো অনিষ্টের আশঙ্কা কর, তবে তাদের সাথে সাবধানতার সাথে থাকবে... আলে-ইমরান-২৮)

সম্মানিত ও মহিমান্বিত আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে মুমিনদের জন্য কাফিরদেরকে সহযোগী, সাহায্যকারী ও পৃষ্ঠপোষক হিসেবে গ্রহণ করতে এটি নিষেধাজ্ঞা। একারণে " يتخذ " যেরযুক্ত হয়েছে। কেননা এটি নাহী বা নিষেধাজ্ঞাবাচক শব্দ হওয়ায় জযমের স্থানে রয়েছে। কিন্তু ‘জাল’ অক্ষরে যের হয়েছে তার সাথে যুক্ত পুর্বের অক্ষরে জের থাকার কারণে। 

এর অর্থ হচ্ছে, হে মুমিনগণ ! তোমরা কাফিরদেরকে পৃষ্ঠপোষক ও সাহায্যকারী হিসেবে গ্রহণ করো না তাদের দ্বীনের উপর তাদের সাথে বন্ধুত্ব করো না মুমিনদের ব্যতীত মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদের সাহায্য করো না। মুসলিমদের গোপনীয় বিষয়কে কাফিরদের কাছে প্রকাশ করে দিও না। নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি এমনটি করবে আল্লাহর সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক থাকবে না। ইহার দ্বারা অর্থ হচ্ছে, তার দ্বীন থেকে রিদ্দাহ বা তার দ্বীন পরিত্যাগের কারণে ও তার কুফরে প্রবেশের কারণে সে আল্লাহর থেকে বিচ্ছিন্ন এবং আল্লাহও তার থেকে মুক্ত। ” তাফসীরে তাবারী- ৩/২২৮

 

[ইমাম তাবারী রাহ. এই আয়াতের তাফসীরে কাফিরদেরকে সাহায্যকারী ও পৃষ্ঠপোষক হিসেবে গ্রহণ করা, তাদের দ্বীনের উপরে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করা, মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদেরকে সাহায্য করা এবং মুসলিমদের গোপনীয় বিষয়কে কাফিরদের কাছে প্রকাশ করা এই সবগুলো কাজকে রিদ্দাহ বলে সাব্যস্ত করেছেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদেরকে সাহায্য করা এবং মুসলিমদের গোপনীয় বিষয়কে কাফিরদের কাছে প্রকাশ করার সাথে কাফিরদের দ্বীনকে মুহাব্বত করা কিংবা তাদের দ্বীনের প্রতি সন্তুষ্ট থাকার শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়নি বরং স্বতন্ত্রভাবে এগুলোকে রিদ্দাহ আখ্যা দিয়েছেন।]

 

২। সূরা মায়িদার ৫১ নং আয়াতের তাফসীরে ইমাম কুরতুবী রাহঃ বলেন,  

قوله تعالى : ومن يتولهم منكم أي : يعضدهم على المسلمين . فإنه منهم [ ص: 158 ] بين تعالى أن حكمه كحكمهم ; وهو يمنع إثبات الميراث للمسلم من المرتد ، وكان الذي تولاهم ابن أبي ثم هذا الحكم باق إلى يوم القيامة في قطع الموالاة

আল্লাহ তাআলার বাণীঃ  যে ব্যক্তি তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবেঅর্থাৎ মুসলিমদের বিরুদ্ধে তাদেরকে (কাফিরদেরকে) সাহায্য-সহযোগিতা করবে, নিশ্চয়ই সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে। আল্লাহ তাআলা সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করে দিয়েছেন যে, তার হুকুম উক্ত কাফিরদের হুকুমের মতই হবে। আর তা একজন মুসলিমের জন্য মুরতাদ থেকে মিরাস প্রতিষ্ঠিত হওয়া থেকে বিরত রাখবে। আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই কাফিরদের সাথে মুওয়ালাত বা সুসম্পর্ক করেছিলো। অতঃপর কাফিরদের সাথে মুওয়ালাত বা সুসম্পর্ক ছিন্ন করার ক্ষেত্রে এই বিধান কিয়ামত পর্যন্ত বহাল থাকবে। (তাফসীরে কুরতুবী, ৮ম খণ্ড-৪৭ পৃষ্ঠা) 

 

[ইমাম কুরতুবী রাহ. উপরোক্ত আয়াতে ‘তাওয়াল্লি’র তাফসীরে কী বলেছেন আবারও দেখুন, 

قوله تعالى : ومن يتولهم منكم أي : يعضدهم على المسلمين . فإنه منهم  بين تعالى أن حكمه كحكمهم

 আল্লাহ তাআলার বাণীঃ যে ব্যক্তি তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবেঅর্থাৎ মুসলিমদের বিরুদ্ধে তাদেরকে (কাফিরদেরকে) সাহায্য-সহযোগিতা করবে, নিশ্চয়ই সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে। আল্লাহ তাআলা সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করে দিয়েছেন যে, তার হুকুম উক্ত কাফিরদের হুকুমের মতই হবে।

ইমাম কুরতুবী রাহঃ ‘তাওয়াল্লি’ বা বন্ধুত্বের তাফসীর করেছেন ‘মুসলিমদের বিরুদ্ধে তাদেরকে (কাফিরদেরকে) সাহায্য-সহযোগিতা করবে’ এবং এটিকেই তিনি পরিষ্কার ভাষায় রিদ্দাহ বলে আখ্যা দিয়েছেন।  মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদের সাহায্য-সহযোগিতার ক্ষেত্রে অন্য কোনো ধরণের শর্ত জুড়ে দেননি।

সুতরাং কোনো প্রকারের শর্ত ছাড়াই  মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদের সাহায্য-সহযোগিতা করা যে সুস্পষ্ট রিদ্দাহ তা ইমাম কুরতুবী রাহঃ এর উপরোক্ত আয়াতের তাফসীর থেকে দ্ব্যার্থহীনভাবে প্রমাণিত হয়।]

 

৩। শাইখ মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহহাব রাহঃ ঈমান ভঙ্গকারী ১০ টি বিষয়ের আলোচনায় বলেনঃ

الثامن : مظاهرة المشركين ومعاونتهم على المسلمين ، والدليل قوله تعالى : ( وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ)

ঈমান ভঙ্গকারী ৮ম বিষয়ঃ  মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুশরিকদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করা। দলীল হচ্ছে, আল্লাহ তাআলা বাণীঃ (যে ব্যক্তি তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা যালিমদেরকে হিদায়াত দান করেন না।)  (নাওয়াক্বিদ্বুল ইসলাম ,শাইখ মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল ওহহাব রাহ.)

 

[শাইখ মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহহাব রাহঃ মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুশরিকদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করাকে দ্ব্যার্থহীন ভাষায় ‘তাওয়াল্লি’ বা কাফিরদের সাথে বন্ধুত্ব বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং সরাসরি ‘তাওয়াল্লি’র আয়াতকে দলিল হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। ]

 

৪। বিংশ শতাব্দীর জগৎশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ও ফকীহ শাইখুল মুহাদ্দিসিন আল্লামা আহমাদ শাকের রাহঃ উনার কালিমাতুল হাক্বকিতাবে

بيان إلى الأمة المصرية خاصة وإلى الأمم العربية والإسلامية عامة অধ্যায়ে  ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদের সহযোগিতাকারীর ব্যাপারে সুস্পষ্ট ভাষায় যে বিস্তারিত ফাতাওয়া দেন, তার একাংশ হচ্ছে................ 

أما التعاون مع الإنجليز بأي نوع من أنواع التعاون، قلّ أو كثر، فهو الردّة الجامحة، والكفر الصّراح، لا يقبل فيه اعتذار، ولا ينفع معه تأول، ولا ينجي من حكمه عصبية حمقاء، ولا سياسة خرقاء، ولا مجاملة هي النفاق، سواء أكان ذلك من أفراد أو حكومات أو زعماء. كلهم في الكفر والردة سواء، إلا من جهل وأخطأ، ثم استدرك أمره فتاب وأخذ سبيل المؤمنين، فأولئك عسى الله أن يتوب عليهم، إن أخلصوا من قلوبهم لله لا للسياسة ولا للناس.

অর্থঃব্রিটিশদের সহযোগিতার ব্যাপারে কথা হলো- ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অথবা বড় যে কোনো ধরণের সহযোগিতা হলো চূড়ান্ত ইরতিদাদ (দ্বীনত্যাগ) ও সুস্পষ্ট কুফুরি। এতে কোনো ওযর (অজুহাত) বা ভুল ব্যাখ্যা কোনোটাই গ্রহণযোগ্য নয়। মূঢ় জাতীয়তাবাদ, ভঙ্গুর রাজনীতি এবং ভণ্ডামিপূর্ণ তোষামোদ কিছুই এ দ্বীনি বিধান থেকে কাউকে রক্ষা করবে না। তা হচ্ছে নিফাক। ব্যক্তি, সরকার বা নেতাদের মাঝে যদি তা সংঘটিত হয় তবে ইরতিদাদ (দ্বীনত্যাগ) ও কুফুরির ক্ষেত্রে এদের সবাই  সমান তবে যে ব্যক্তি জানে না এবং ভুলবশতঃ এধরণের করবে, তারপর বিষয়টি বুঝতে পারবে অতঃপর তাওবাহ করবে এবং মুমিনদের পথ আঁকড়ে ধরবে। আশা করা যায়, আল্লাহ তাদের উপর অনুগ্রহ করবেন, যদি আল্লাহর জন্য অন্তর থেকে  একনিষ্ঠভাবে (এই তাওবাহ) হয়, রাজনীতি কিংবা লোক দেখানোর জন্য নয়।  (কালিমাতুল হাক্ব, পৃষ্ঠা নং ১৩০-১৩১) 

 

আল্লামা আহমাদ শাকের রাহঃ আরো বলেন,

فهم والإنجليز في الحكم سواء, دماؤهم وأموالهم حلال في كل مكان, ولا يجوز لمسلم في أي بقعة من بقاع الأرض أن يتعاون معهم بأي نوع من أنواع التعاون, وإن التعاون معهم حكمه حكم التعاون مع الإنجليز: الردة والخروج من الإسلام جملة, أيا كان لون المتعاون معهم أو نوعه أو جنسه

সুতরাং ওরা (ফ্রান্স) ও ব্রিটিশরা হুকুমের ব্যাপারে একই, প্রত্যেকস্থানে তাদের রক্ত ও সম্পদ হালাল। বিশ্বের যেকোনো স্থানের মুসলিমদের জন্য ওদেরকে কোনো প্রকারের সহযোগিতা করা নাজায়েয। যদি কেউ সহযোগিতা করে তবে তার হুকুম তাদের মতোই যারা ব্রিটিশদের সহযোগিতা করে- তা হলো ইরতিদাদ (দ্বীনত্যাগ) যা সম্পূর্ণরুপে ইসলাম থেকে বের করে দেয়। আর এটা তাদের সাথে যেকোনো প্রকার, প্রকৃতি ও ধরণের সহযোগিতা হোক না কেনো।  (কালিমাতুল হাক্ব, পৃষ্ঠা নং -১৩১) 

 

আল্লামা আহমাদ শাকের রাহঃ আরো বলেন,

ألا فليعلم كل مسلم في أي بقعة من بقاع الأرض: أنه إذ تعاون مع أعداء الإسلام مستعبدي المسلمين, من الإنجيليز والفرنسيين وأحلافهم وأشباههم, بأي نوع من أنواع التعاون, أو سالمهم فلم يحاربهم بما استطاع, فضلا عن أن ينصرهم بالقول أو العمل على إخوانهم في الدين, إنه إن فعل شيئا من ذلك ثم صلى فصلاته باطلة, أو تطهر بوضوء أو غسل أو تيمم فطهوره باطل, أو صام فرضا أو نفلا فصومه باطل, أو حج فحجه باطل, أو أدى زكاة مفروضة, أو أخرج صدقة تطوعا, فزكاته باطلة مردودة عليه

সুতরাং বিশ্বের যেকোনো স্থানে অবস্থিত প্রত্যেক মুসলিমের অবশ্যই জেনে রাখা উচিৎ যে, কেউ যদি মুসলিমদের শত্রু, তাদের দাসে পরিণতকারী ব্রিটিশ, ফ্রান্স ও আরো যারা আছে এবং তাদের দোসরদের সহযোগিতা করে-একইভাবে যেকোনো রকমের সহযোগিতা অথবা তাদের সাথে এমন শান্তি স্থাপন করা এবং তাদের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা না করা, বিবৃতি বা কর্মের মাধ্যমে ঈমানদার ভাইদের বিরুদ্ধাচরণ করা- যদি উল্লেখকৃত যেকোনো একটি কাজ কেউ করে আর পরে সলাত আদায় করে, তবে তার সলাত বাতিল। অথবা অযু, গোসল বা তায়াম্মুমের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করে তার এই পবিত্রতা অর্জনও বাতিল অথবা ফরয কিংবা নফল সাওম রাখে তবে তার সাওমও বাতিল । অথবা হজ্জ সম্পাদন করে তবে তার হজ্জও বাতিল। অথবা ফরয যাকাত কিংবা নফল সাদাকাহ খরচ করে, তাহলে তার যাকাতও বাতিল ও তার উপরে ছুড়ে ফেলা হবে।”  (কালিমাতুল হাক্ব, পৃষ্ঠা নং ১৩২) 

এ ব্যাপারে বিস্তারিত ফাতাওয়া আল্লামা আহমাদ শাকের রাহঃ এর “কালিমাতুল হাক্ব” কিতাবের ১২৬-১৩৭ পৃষ্ঠার “যুদ্ধরত কুফফার জাতির সঙ্গে মুসলিমদের আচরণ-বিধান” শিরোনামে অনুবাদ অংশে বিস্তারিত পড়ুন.... 

লিংক.... www.pdf-archive.com/2015/01/18/declaration/declaration.pdf

.

৫। শাইখ আব্দুল আযীয বিন বায রাহিঃ উনার ফাতাওয়ায় বলেন,

وقد أجمع علماء الإسلام على أن من ظاهر الكفار على المسلمين وساعدهم عليهم بأي نوعٍ من المساعدة فهو كافر مثلهم، كما قال سبحانه: يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ لاَ تَتَّخِذُواْ الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى أَوْلِيَاءَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ [المائدة:51]

  ইসলামের আলিমগণ এ বিষয়ে ঐকমত্যে (ইজমা’) পৌছেছেন, যে ব্যক্তি মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদেরকে যেকোনো প্রকারে সাহায্য-সহযোগিতা করবে, সে ব্যক্তি তাদের মতো-ই কাফির। যেমন আল্লাহ সুবঃ তাআলা বলেছেন, (হে ঈমানদারগণ ! তোমরা ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানদেরকে বন্ধুরুপে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। যে ব্যক্তি তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা যালিমদেরকে হিদায়াত দান করেন না।) মায়িদাহ-৫১    মাজমুআল-ফাতাওয়া, ১/২৭৪)

 

৬।  ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদের সহায়তার ব্যাপারে শাইখুল ইসলাম হুসাইন আহমাদ মাদানী রহঃ এর ফাতাওয়াঃ

  “মুসলমান হত্যার তৃতীয় রূপ হচ্ছে এই কোন মুসলমান কাফেরদের পক্ষ নিয়ে তাদের সাহায্য ও বিজয়ের জন্য মুসলমানদের বিরূদ্ধে লড়াই করে, অথবা যুদ্ধে তাদের সহায়তা করে কিংবা যখন মুসলমান ও কাফেরদের যুদ্ধ চলতে থাকে তখন কাফেরদের সমর্থন জানায়, এমতাবস্থায় উপরোক্ত অপরাধটি কুফুরী ও সীমালঙ্ঘনের চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনত হয় এবং ঈমান ধ্বংস ও ইসলাম শূন্যতার এমন জঘন্য ও নিকৃষ্ট অবস্থায় পৌঁছায়, যার চেয়ে মারাত্বক কুফর ও কুফরি কর্মকান্ড কল্পনা করা যায় না।

দুনিয়ায় যে কোন মুসলমানের পক্ষে সম্পাদন করা সম্ভব অথবা কোন মুসলমানের কল্পনায় আসতে পারে এমন যাবতীয় পাপ, সকল সীমালঙ্ঘন, সকল অপবিত্রতা এবং সর্বপ্রকার অবাধ্যতা এই অপরাধের সামনে তুচ্ছ। যে মুসলমান এতে লিপ্ত হবে, সে নিশ্চিত কাফের এবং নিকৃষ্টতম কাফের। সে শুধু মুসলমান হত্যায় জড়িত হয়েছে এইটুকুই নয় বরং ইসলামের বিরুদ্ধে হক্ক এর শত্রুদের আনুগত্য ও সহায়তা করেছে এবং এটি সকলের ঐক্যমতে সর্বসম্মতিক্রমে কুফরে ছরীহ বা সুস্পষ্ট কুফর। শরীয়ত যেখানে অমুসলমানদের সাথে কোন প্রকার মহব্বতের সম্পর্কের বৈধতা দেয় না, সেক্ষেত্রে যুদ্ধে সুস্পষ্ট সহযোগিতার পরেও কি করে ঈমান ও ইসলাম বাকি থাকতে পারে?”

অধ্যায়ঃ কতলে মুসলিম, মাআরেফে মাদানী, মাওলানা হুসাইন আহমদ মাদানী রহঃ; সংকলন ও বিন্যাস মুফতী আব্দুস শাকূর তিরমিজী

 

[আল্লামা আহমাদ শাকের রাহ., শাইখ বিন বায রাহ. এবং শাইখুল ইসলাম হুসাইন আহমাদ মাদানী রহঃ এর বক্তব্যের ব্যাপারে কিছু বলা নিষ্প্রয়োজন। মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করাকে যারা কুফর মনে করে না এবং কাফিরদেরকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে তাদের দ্বীনকে ভালোবাসা কিংবা কাফিরদের বিজয়ের আকাঙ্ক্ষার শর্তারোপ করে কিংবা কুফর হলেও সেসব মুরতাদদের জন্য ওযর/হুজ্জা কায়েমের মনগড়া শর্ত আরোপ করে, তাদের এই ভ্রান্তির চূড়ান্ত জবাব উনাদের বক্তব্যে চলে এসেছে, আলহামদুলিল্লাহ্‌। অন্তরে আল্লাহর দ্বীনকে নিজেদের ইচ্ছামতো বুঝার রোগ না থাকলে, আশা করি এই ভ্রান্তি থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব। আল্লাহ তা’আলা তাউফীক্ব দান করুন। ]

 

লেখকঃ Zamil Hasan

.

২য় পর্ব.....শাইখুল ইসলাম ইমাম বিনে তাইমিয়্যাহ রাহ. এর বক্তব্য...https://justpaste.it/riddah2

 

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

 

তাওহীদ ও জিহাদের বিশুদ্ধ মানহাজের উপর গুরুত্বপূর্ণ কিছু লেখা সম্বলিত মূল পেইজ

লিংক...https://justpaste.it/tawhid_jihad