JustPaste.it

আইএস সমর্থক কর্তৃক গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্নের সরল জবাব !

 

১।  আফগানে কি খিলাফা প্রতিস্টা করা হয়েছিলো..? আমার জানামতে আফগানে একটা অঞ্চলে শরিয়া কায়েম করা হয়েছিল, কিন্তু খিলাফতের ডাক দেওয়া হয়নি। আর আফগানের জিহাদ আল্লাহর শরিয়াহ কায়েমের জন্য হয়নি, আফগানের জিহাদ রাশিয়ান কুকুরদের থেকে মুক্তি ও মুসলিমদের স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য লড়াই হয়েছে। এই বিষয়ক আপনি যদি ক্লিয়ার করতেন  ! ......

উত্তরঃ  আফগানে খিলাফাহ প্রতিষ্ঠিত করা হয়নি অর্থাৎ খলীফা মনোনীত করা হয়নি। কারণ, খিলাফাহ ঘোষণা করার জন্য যেধরণের বিষয় ও ক্ষমতা থাকা দরকার,সেগুলো পূর্ণভাবে ছিলো না। খলীফার জন্য একটি শর্ত হচ্ছে, তিনি সারা দুনিয়ার মুসলিমদেরকে নিরাপত্তা প্রদানে সক্ষম হবেন। যেখানেই মুসলিমরা নির্যাতিত হবেন,সেখানেই তিনি তার বাহিনী পাঠিয়ে কাফিরদেরকে চুরমার করে দিবেন। সেধরণের সামর্থ ইসলামী ইমারত আফগানিস্তানের ছিলো না। আজকের বাগদাদীর কথিত খিলাফতের সেই সামর্থ কোথায় !!! আর খিলাফতের ডাক দেওয়ার কিছু নেই। এটি ডাকাডাকির বিষয় নয় বরং শরী’আহ বাস্তবায়ন ও সামর্থের বিষয়।  আল্লাহর শরী’আহ বাস্তবায়ন এবং কুফফারদের মোকাবেলায় সামর্থ অর্জিত হলে আহলুল হাল্লি ওয়াল-আক্বদের সম্মতিতে খলীফাহ নিযুক্ত হন আর সেই খলীফার শাসনই খিলাফাহ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে থাকে।  আফগানিস্তান একটি ইসলামী ইমারত ছিলো, এখনো আছে আলহামদুলিল্লাহ্‌। আফগান জিহাদের ইতিহাস যারা জানেন, তারা নিশ্চয়ই অবগত থাকার কথা যে, রাশিয়ার গোলাম কমিউনিস্ট মুরতাদদের থেকে ইসলাম ও মুসলিমদের হিফাযতের জন্য বীর আফগান জনতা রুশ বিরোধী জিহাদে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু রাশিয়ার বিতাড়নের পর কিছু দল ও নেতাদের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। ফলে পুরো আফগানিস্তানে চরম অস্থিরতা দেখা দেয়। আর এরই প্রেক্ষাপটে মোল্লা উমর রাহঃ এর নেতৃত্বে আল্লাহর যমীনে আল্লাহর দ্বীন কায়েম করা হয়। প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামী ইমারত।

 

২। ইমারত আর খিলাফাত কি একই না আলাদা...? যদি একই হয় তাহলে তো এই খিলাফা ১% ও গ্রহণযোগ্য নয়। তারপরেও কেন এই দলে লোক বাড়ছে এবং কুফফারদের বিপক্ষে বীজয় পাচ্ছে..?

উত্তরঃ  ইমারাত আর খিলাফাহর মধ্যে কিছু বিষয়ে তফাৎ আছে। যেমনঃ ইমারাত একাধিকও হতে পারে। কিন্তু খিলাফাহ একটিই হয়। ইমারাতের ক্ষেত্রে উক্ত এলাকার শাওকা বা শক্তি সম্পন্ন নেতৃবৃন্দের সম্মতিই যথেষ্ট কিন্তু খিলাফার ক্ষেত্রে পুরো মুসলিম উম্মাহর আহলুল হাল্লি ওয়াল-আক্বদের সম্মতি জরুরি। আইএসের বাতিল আকীদার উপর ভিত্তি করে জোর-জবরদস্তির এই দাবী করা খিলাফাহর শর’য়ী কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। লোক বাড়া যদি হক্ব হওয়ার মানদণ্ড হয়,তাহলে বর্তমানে কুফরের ধ্বজাধারীরা হক্বের উপর থাকার কথা ! কারণ, তাদের সংখ্যাই অধিক হারে বাড়ছে। আর ভূখণ্ড বিজয় কিংবা নিয়ন্ত্রণও হক্বের বৈশিষ্ট্য নয়, কিন্তু আইএস ভূখণ্ড দেখিয়েই নিজেদেরকে এতোদিন হক্ব দাবী করে আসছিলো ! আল্লাহর অপার কুদরত ! তাদের এই বাতিল দাবি এখন,নিজেদেরই গলার ফাঁস হয়ে দাড়িয়েছে !! তাদের ভূখণ্ড খিলাফাহ ঘোষণার পর ইতোমধ্যে ৪ ভাগের একভাগেরও কমে এসে দাঁড়িয়েছে !! তার মানে ! তাদের তৈরি এই উসূল অনুযায়ী তাদের দাবীকৃত খিলাফাহ যে বাতিল,এটি এখন প্রমাণিত !!! অধিকন্তু আইএস এখন সারা দুনিয়ায়ই মার খাচ্ছে এবং সর্বত্রই পরাজিত হচ্ছে।

 

৩।  মোল্লা ওমর রহঃ এর ওফাতের আগে না পরে আইএস খিলাফার ডাক দিয়েছে..? শায়েখ ওমর আল বাগদাদি রহঃ কিন্তু এই দাওলাকেই প্রতিস্টা করেছিলেন, তখন এই দাওলা কেই জাওয়াহিরি, ওসামা সবাই সবাই সমর্থন দিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে আপনার মতামত...!

উত্তরঃ  আইএস নিজেদের দলীয় খিলাফাহ ঘোষণা করেছে মুসলিমদের রক্ত হালাল করার জন্য। কারণ, তারা তাদের এই বাতিল খিলাফাহ ঘোষণার বহু আগেই মুজাহিদদেরকে মুরতাদ আখ্যা দিয়ে হত্যা করা শুরু করেছে এবং মুজাহিদ আলিমগণ তাদেরকে খারিজী আখ্যা দিয়েছেন।  সেটি মোল্লা উমার রাহঃ এর ওফাতের কিছুদিন পর। শাইখ আবু উমর আল-বাগদাদী রাহিঃ এর নেতৃত্বে শাইখ উসামা রাহিঃ এর বাই’আতের অধীনে থাকা ইসলামিক স্টেইট ইন ইরাক সঠিক পথে ছিলো,তাই প্রায়সব মুজাহিদ উমারা ও আলিমগণ তাদেরকে সমর্থন করেছিলেন। যেমনঃ সোমালিয়ায় আল-শাবাব মুজাহিদদের প্রতিষ্ঠিত ইসলামী রাষ্ট্রকে গ্লোবাল জিহাদের আলিম ও উমারাগণ সমর্থন করেছেন এখনো করছেন। যেহেতু তারা এখনো সঠিক আকীদা ও মানহাজের উপর আছে।   

 

৪।   খলিফা হিসেবে কি আবুবকর আল বাগদাদি যোগ্য নন..? এই বাগদাদিই লাদেন রহঃ এর ভালো বন্ধু ছিলো এবং তাঁর পাণ্ডিত্য এবং জাওয়াহিরি সাহেবের পাণ্ডিত্য এক জায়গায় করলে বাগদাদির পাল্লা ভারী হবে।

উত্তরঃ  মুসলিমদের রক্ত হালালকারী এবং উম্মাহর ঐক্য বিনষ্টকারী একজন ব্যক্তি খলীফাহ হওয়াতো দূরের কথা ছলাতের ইমাম হওয়ার যোগ্যও নয়;বরং উম্মাহর ঐক্য বিনষ্টের অপরাধে অপরাধী ও শাস্তি প্রাপ্য। এই বাগদাদী উসামা বিন লাদেন রাহঃ কে জীবনেও দেখেনি, বন্ধু হওয়ারতো প্রশ্নই আসে না। বাগদাদী শাইখ উসামা রাহিঃ এর কমপক্ষে ১৪ বছরের ছোট। আর পাণ্ডিত্য মাপার কোনো মিটার থাকলে বলতে পারেন !! আমিওতো দাবি করতে পারি, বাগদাদীর পাণ্ডিত্যের চেয়ে আমার পাণ্ডিত্য বেশি (বাগদাদীর ডিগ্রির চেয়ে ডিগ্রি কম হবে না আশা করি)!! গোটা দুনিয়ার মুজাহিদ উমারা ও আলিমগণ শাইখ উসামা রাহিঃ এর পর শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এর জ্ঞান,প্রজ্ঞা ও নেতৃত্বের স্বীকৃতি দিয়েছে। এমনকি আইএসের মুখপাত্র আদনানী শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ কে ‘হাকীমুল উম্মাহ’ তথা উম্মতের বিজ্ঞ ব্যক্তি বলে ঘোষণা দিয়েছিলো। আইএসের নেতারা শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ কে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ‘হাকীমুল উম্মাহ’ তথা উম্মতের বিজ্ঞ ব্যক্তি বলেছে। ২০১৪ সালের পরে হঠাৎ করে বাগদাদীর পাল্লা ভারী হলো কীভাবে বুঝলাম না !!! নাকি হাজার হাজার মুজাহিদের রক্তের বোঝা মাথায় নেওয়ার কারণে পাল্লা ভারী হয়েছে !!! 

আল্লাহ তা’আলা অবশ্যই এই ভারী পাল্লার যথাযথ বদলা দিবেন।

 

৫।  আমিরুল মুমিনীন মোল্লা ওমর রহঃ এর মৃত্যুর খবর কেন গোপন করা হয়েছিল..? তাঁর মৃত্যুর খবর প্রায় দেড় বছর গোপন ছিলো, তখন কায়েদার আমীর কে ছিলো..?

উত্তরঃ    আমীরুল মুমিনীন মোল্লা উমর রাহঃ এর মৃত্যুর খবর গোপন রাখার কারণ ছিলো সেবছর আমেরিকা আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা ছিলো। মোল্লা উমর রাহঃ এর মৃত্যুর খবর জানতে পারলে আমেরিকা হয়তো নিজেকে বিজয়ী হিসেবে প্রচার করতো,তাই কৌশলগত কারণে এটি ইমারাতের পক্ষ থেকে গোপন রাখা হয়েছিলো। উনার মৃত্যুর সময় শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ-ই আল-কায়েদার আমীর ছিলেন,এটি জিহাদের ব্যাপারে প্রাক-প্রাথমিক জ্ঞানের অধিকারীরাও জানেন।

আর ইসলামী রাষ্ট্রের আমীরের মৃত্যুর সংবাদ গোপন রাখা এটি নতুন কোনো বিষয় নয়। ইসলামের ইতিহাসে বহু মুসলিম আমীরের  মৃত্যুর সংবাদ গোপন রাখা হয়েছে। প্রায় ৩০ লক্ষ বর্গকিলোমিটার এলাকার মুসলিম আমীর আমিরুল মুসলিমীন আলী বিন ইউসুফ বিন তাশফীন রাহঃ (ইউসুফ বিন তাশফীন রাহঃ এর ছেলে) এর মৃত্যুর পর কৌশলগত কারণে ৩ মাস মৃত্যুর সংবাদ গোপন রাখা হয়েছিলো। (সূত্রঃ দাওলাতুল ইসলাম ফিল-উনদুলুস, ৩/২৪১)

শুধু তাই নয় এরকম আরো দশজন মুসলিম আমীরের মৃত্যুর খবর গোপন রাখার প্রমাণ নিয়ে শাইখ আবু মুনযির আশ-শানক্বিতী হাফিঃ এর আর্টিকেলটি এখানে পাবেন....... https://justpaste.it/mzwl 

প্রায় ৩০ লক্ষ বর্গকিলোমিটার এলাকার মুসলিম দিগ্বিজয়ী আমীর আমিরুল মুসলিমীন আলী বিন ইউসুফ বিন তাশফীন রাহঃ এর মৃত্যুর সংবাদ গোপন করা গেলে তার ৫০ ভাগের একভাগ বা তারও কম এলাকার নিয়ন্ত্রণকারী আমীরুল মুমিনীন মোল্লা উমার রাহঃ এর ইন্তেকালের সংবাদ গোপন রাখাতে সমস্যা কোথায় !!!!!  (আফগানে মোল্লা উমার রাহঃ এর ইন্তেকালের সময় বর্তমানের চেয়ে অনেক কম ভূমি নিয়ন্ত্রণ করতেন। বর্তমানে আলহামদুলিল্লাহ্‌, তালিবান মুজাহিদরা আফগানিস্তানের অর্ধেকের বেশি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছেন।) মুসলিম উম্মাহর কোনো আলিম ও ফকীহ আমিরুল মুসলিমীন আলী বিন ইউসুফ বিন তাশফীন রাহঃ এর মৃত্যুর সংবাদ গোপন করাকে হারাম বা না-জায়েয বলেনি এবং কেউ তা নিয়ে প্রশ্নও তোলেনি। তাহলে আজ আইএসের নেতা ও অনুসারীরা কোন নতুন শরীয়ত নিয়ে এসেছে,যেখানে এই বিষয়টি না-জায়েয হওয়ার প্রশ্ন তুলছে !!! তাদেরকে এই অধিকারই বা কে দিয়েছে !!  

জিহাদ ও মুজাহিদদের ব্যাপারে ওয়াসওয়াসা সৃষ্টিকারী খারিজী আইএসের সমর্থকরা এবার হয়তো বলবে, তাহলে মৃত ব্যক্তির নামে বার্তা দিলো কীভাবে ??? 

ইসলামের ইতিহাসের এক দিগ্বিজয়ী বীর তাতারদের পরাজয় ধরিয়ে দেওয়া মহান সেনাপতি রুকনুদ্দীন বাইবার্স রাহঃ এর মৃত্যুর পর উনার নায়েব তথা নায়েবে আমীর ইসলামী রাষ্ট্রের সৈনাবাহিনীকে রুকনুদ্দীন বাইবার্সের নামে নির্দেশনা প্রদান করেন এবং বাইবার্সের নামে বিভিন্ন বার্তা প্রদান করে খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত মুসলিম সেনাবাহিনীকে পরিচালিত করেন। (" السلوك لمعرفة دول الملوك (1/ 216))

তৎকালীন ইসলামী রাষ্ট্রের নায়েবে আমীরের এই কাজটিকে মুসলিম উম্মাহর আলিম ও ফুকাহায়ে কিরাম হারাম ফাতাওয়া দেননি, তাহলে ইমারাতে ইসলামী আফগানিস্তানের তৎকালীন নায়েবে আমীর মোল্লা আখতার মানসূর রাহিঃ ক্রুসেডার খ্রিস্টানদেরকে পরাজিত ও নাস্তানাবুদ করার কৌশলের অংশ হিসেবে আমীরুল মুমিনীন মোল্লা উমার রাহঃ এর মৃত্যুর সংবাদ গোপন করা নিয়ে হইচইয়ের কী আছে !!!  যারা হইচই করছে, তারা যে ইসলামের ইতিহাস সম্পর্কে চরমতম জাহেল আশা করি এটি পরিষ্কার হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ্‌।

উপরে প্রদান করা লিংকে শাইখ আবু মুনযির আশ-শানক্বিতী হাফিঃ এর আর্টিকেলে দলীলসহ বিস্তারিত লিপিবদ্ধ আছে।

 

৬। আইসিসের হামলা কি নাজায়েজ...? তারা কি জিহাদ ছেড়ে দিয়েছে...? তারা যদি জিহাদ না ছাড়ে, তারা যদি শরিয়া কায়েম করে এবং হুদুদ চালু রাখে, তাদের মাথা কিন্তু ন্যাড়া নয়... তার পরেও তারা কিভাবে জাহান্নামী হয়..? হ্যা, এটা ঠিক তারা বাড়াবাড়ি করেছে।

উত্তরঃ   কুফফারদের উপর আইএসের হামলা করা অবশ্যই ঠিক আছে,যা স্বয়ং শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃও বহুবার বলেছেন; কিন্তু মুসলিম অধিকন্তু মুজাহিদদের মুরতাদ আখ্যা দিয়ে সারা দুনিয়াব্যাপী মুজাহিদদেরকে হত্যা করা এবং মুজাহিদদের বিরুদ্ধে লড়াই করা কোন শরীয়ত অনুযায়ী জায়েয, তা আমাদের জানা নেই।  শুধুমাত্র যুদ্ধ করা আর হুদুদের কিছু বিধান কায়েম করাই পূর্ণ দ্বীন নয়। ইসলামে সর্বপ্রথম ধর্তব্য বিষয় হচ্ছে আকীদা। আর আইএসের আকীদাহ হচ্ছে খারিজীদের আকীদা। মাথা ন্যাড়া আলী রাঃ এর সময়ের খারিজীদের বৈশিষ্ট্য ছিলো। সবযুগের সকল খারিজীদের মাথা ন্যাড়া থাকবে এমন আজগুবি কথা ১৪০০ বছরের ইসলামের ইতিহাসে কোনো ইমাম ও মুহাদ্দিস বলেননি। আর স্বয়ং রাসূল সাঃ খারিজীদেরকে ‘কিলাবুন নার’ তথা জাহান্নামের কুকুর বলে আখ্যায়িত করেছেন। সুতরাং জাহান্নামের কুকুর এটি আমাদের বানানো কোনো শব্দ নয় বরং রাসূল সাঃ এর পবিত্র মুখ নিঃসৃত একটি পরিভাষা।

যদি বুঝেই থাকেন যে, তারা বাড়াবাড়ি করছে,তাহলে সেই বাড়াবাড়ি কোন মাত্রার তা অনুসন্ধানের চেষ্টা করুন, বাকীটুকুও বুঝে আসবে ইনশাআল্লাহ্‌।

যদি পাল্টা প্রশ্ন করি, আল-কায়েদা কী জিহাদ ছেড়ে দিয়েছে এক মুহূর্তের জন্য ? তাহলে আল-কায়েদা কীভাবে মুরতাদ হয় ! কীভাবে গণতন্ত্রী হয় ! আল-কায়েদার মুজাহিদরা ইয়েমেনে কী হুদুদ কায়েম করেনি !  মালিতে করেনি ! বর্তমানে সোমালিয়ায় করছে না !! অবশ্যই করেছে এবং সোমালিয়ার বিস্তীর্ণ ভূমিতে এখনো হুদুদসহ আল্লাহর শরী’আহ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন আল-কায়েদা মুজাহিদরা। তারপরেও কীভাবে মুরতাদ হয় ????????  

 

৭। খিলাফত যদি গ্লোবাল জিহাদে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে একদিন তো অবশ্যইইই খিলাফাত কায়েম হবে, তখন কি হবে গ্লোবাল জিহাদের..? শামে যে রক্তপাত হলো... তাতে কি কায়েদা আইসিস কে মারেনি...? এই লড়াইয়ে দুই দলেরই ক্ষতি হয়েছে। শামে অনেক দল আছে যারা কায়েদার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে কেন..? বাংলার কথা বললে... জেএমবির প্রায় ৫০% আইসিসের পক্ষে, এটা কি বলবেন..? এমনকি আনসারেরও কিছু ভাই আছেন যারা আইসিসের প্রতি ১০০% অসন্তুষ্ট নন।

 

উত্তরঃ  জি, একদিন  খিলাফাহ কায়েম হবে। আর তা অবশ্যই জিহাদের মাধ্যমে। খিলাফাহ কায়েমের লক্ষ্যকে সামনে রেখেই শাইখ উসামা বিন লাদেন রাহঃ এর নেতৃত্বে অতঃপর শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এর নেতৃত্বে গ্লোবাল জিহাদ সঠিক পথে এগিয়ে চলছে। সত্যিকারের খিলাফাহ হলে নিশ্চয়ই তা গ্লোবাল জিহাদের জন্য ক্ষতিকর হতো না, সুতরাং এটি একটি বাতিল দাবী তা এথেকেও বুঝা যায়। খিলাফাহ প্রতিষ্ঠিত হলে গ্লোবাল জিহাদ পূর্ণভাবে গ্লোবাল রুপ নিবে এবং ক্বিয়ামত অবধি জিহাদ চলতেই থাকবে।

আর শামে আইসিসের ব্যাপক রক্তপাতকে বাঁধা দিতে গিয়ে যতটুকু মোকাবেলা করতে হয়েছে আল-কায়েদার মুজাহিদরা ততটুকুই মোকাবেলা করেছেন(আমেরিকার এজেন্ট ও ত্বগুতদের উচ্ছিষ্টভোগীদের কথা ভিন্ন।)। আল-কায়েদা কোনোভাবেই আইএসের সাথে কোনো ধরণের সংঘর্ষে যেতে চায়নি কিন্তু খারিজী আইএস তাদের বাতিল মতবাদের কারণে সর্বত্রই ঝামেলা পাকিয়েছে। শামে আল-কায়েদার শাখাই ছিলো একটি। আর তা হচ্ছে জাবহাতুন নুসরাহ। শামের মুসলিমদের কল্যাণে তারা স্বাধীনভাবে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ নিয়ে আমার আর্টিকেলটি পড়ে নিলে বিভ্রান্তি দূর হবে আশা করি। লিংক.... https://justpaste.it/fathu_sham

 আর জেএমবির কয়জন আইএসের পক্ষে আছে কী নেই,তা দিয়ে কী একটি দল সঠিক না বাতিল, তা প্রমাণিত হয় ??? জেএমবির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আইএসের খারিজী মতবাদকে গ্রহণ করেনি বরং কিছু দলছুট আইএসকে গ্রহণ করেছে। আর আনসারের কারো ১০০% অসন্তুষ্ট হওয়া না হওয়ার সাথে তাদের হক-বাতিল হওয়ার কী সম্পর্ক, তা বোধগম্য হচ্ছে না !!!

 

৮। আমার জানা মতে শামের রক্তপাত টা একটা এক্সিডেন্ট, যেমন কারবালার ঘটনা। এখন এই বিষয়ক আপনার মতামত কি..? এটা দিমুখি হয়ে গেলো না.. একদিকে বলছেন আইসিস "কিলাবুন নার" আবার বলছেন তাদের সাথে কাজ করা লাগবে..? চুরি করবো না, কিন্তু চোর কে সাপোর্ট দেবো...!!! জামাত, তাবলিগ, পীর মাজারি, আহলে হাদিস হ্যান ত্যান আরো যত দল আছে তারাও তো সুন্নাহ অনুযায়ী দ্বীন কায়েমের লড়াই করে না, তারাও জিহাদের বিপক্ষে, তারা যদি জাহান্নামের কুকুর না হয়, তাহলে আইসিস কেন একলা জাহান্নামের কুকুর হবে..?

উত্তরঃ  আপনার মতটি মোটেও সঠিক নয় বরং শামে এবং দুনিয়াজুড়ে মুজাহিদদের রক্তপাত আইএসের বাতিল আকীদার অবশ্যম্ভাবী ফল। হাজার হাজার মুজাহিদদেরকে হত্যা করা এবং দুনিয়ার প্রায়সব মুজাহিদদেরকে মুরতাদ আখ্যা দিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া এটি কেমন এক্সিডেন্ট !!!!   কারবালায় ঘটনায় একপক্ষ আরেকপক্ষকে মুরতাদ আখ্যা দেয়নি কিন্তু আইএস দুনিয়ার প্রায়সব মুজাহিদকে মুরতাদ আখ্যা দিয়েছে। সুতরাং কারবালার ঘটনার সাথে এর কোনো মিল নেই।

আইএস যেহেতু খারিজী আকীদার তাই রাসূল সাঃ বক্তব্যের আলোকেই তাদেরকে কিলাবুন-নার বলা হয়েছে। এটি নিজে থেকে কোনো মুজাহিদ আলিম বানাননি। আর আইএসের সাথে কাজ করার কথা কেউ বলেনি বরং কুফফারদের বিরুদ্ধে আইএস যদি যুদ্ধ করে তবে তাতে মুজাহিদদের সমর্থন থাকবে এমনটা বলেছেন মুজাহিদ উমারাগণ। কারণ খারিজীরা কাফির নয় বরং সীমালংঘনকারী অপরাধী। সুতরাং ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে কেউ যদি তাদেরকে সহযোগিতা করে,তাহলে তাদের খারিজী হওয়ার সাথে এর কোনো বৈপরিত্যের কিছু নেই। 

আর জামাত,তাবলীগ,পীর-মাজারি,আহলে হাদিস এসব দলের মধ্যে যদি খারিজীদের আকীদা থাকে অর্থাৎ তারা মুসলিমদের মুরতাদ আখ্যা দেয়,তাহলে তারাও নিঃসন্দেহে খারিজী বা জাহান্নামের কুকুর বলে গণ্য হবে। কিন্তু দ্বীন-দুনিয়ার অল্পস্বল্প খোঁজখবর রাখা মুসলিমরা জানেন, এসব দল খারিজী বাতিল গোষ্ঠীর বিপরীত আরেকটি বাতিল গোষ্ঠী তথা মুরজিয়াদের আকীদার অনুসারী। আর মুরজিয়াদের ক্ষেত্রে রাসূল সাঃ কিলাবুন-নার শব্দটি বলেননি,তাই তাদের ক্ষেত্রেও তা বলা হচ্ছে না। তবে শাইখ মাক্বদিসী হাফিঃ মুরজিয়াদেরকে ত্বগুতদের কুকুর বলে আখ্যায়িত করেছেন।

 

৯। হাদিসে শুধু দু একটা লক্ষন দেখেই কোনো দল কে জাহান্নামী বলা ঠিক, বা খাওয়ারেজদের নিয়ে যত হাদিস আছে তার দু একটা মিললেও বেশিরভাগই কিন্তু আইসিসের সাথে মেলে না..! আর তালিবানরা কেনো গাঁজা চাষ করে..? শিরক বিদাত কিন্তু তালিবানেও আছে। আর আমরা জানি তালিবানরা হানাফি, আর এই হানাফিদের ভিতরে ৭০% মুশরিকি আক্বিদার। অপরদিকে আমরা আইসিসের দিকে তাকালে দেখবো, তারা একদম সহিহ আক্বিদার, কোনো শিরক বিদাত নেই।

উত্তরঃ  আহলুস-সুন্নাহর ইমাম ও আলিমগণ খারিজীদের যেসব বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করেছেন,তা সুস্পষ্টভাবে আইএসের মধ্যে বিদ্যমান। তাই গ্লোবাল জিহাদের উলামা-উমারাগণ আইএসকে খারিজী বলে আখ্যা দিয়েছেন।

তালিবানদের বিরুদ্ধে ইসলামের দুশমন মিডিয়া বিবিসি এখন থেকে প্রায় ৯ বছর আগে আফগানিস্তানের গাজার চাষের যে ছবি দিয়ে প্রোপাগান্ডা চালিয়েছিলো, আইএসের অফিসিয়াল ম্যাগাজিন দাবিক্ব গত বছর সেই ছবি দিয়েই তালিবানদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার চালিয়েছে। আমার আর্টিকেলে আইএসের এই অফিসিয়াল ধোঁকাবাজির জবাব দিয়েছি, আশা করি পড়ে নিবেন। ব্যক্তিগতভাবে তালিবানদের মধ্যে কিংবা আফগানিস্তানের মানুষের মধ্যে কোনো ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে; কিন্তু ইসলামী ইমারাত আফগানিস্তান তথা তালিবান মুজাহিদরা কোনো শিরকী আকীদা রাখে,এটা সীমালঙ্ঘনকারী খারিজীরা বলতে পারে কিন্তু উসামা বিন লাদেন রাহঃ এর মতো ব্যক্তি বলেনি। আর হানাফীদের ৭০% শিরকী আকীদার !!!!!!! এমন আজব আকীদা শুমারী আপনি কীভাবে ও কোন সূত্রে করলেন,তা জানতে পারলে বিনোদন অনুভব করতাম।

প্রশ্নকারী ব্যক্তি তালিবানদের নেতাদের সাথে কয়দিন কাটিয়েছেন আর আইএসের নেতাদের সাথে কয়দিন কাটিয়েছেন,তা জানালে এই আকীদা শুমারীর হাকীকত ভালোভাবে বুঝা যেতো। তিনি এমন কী আজব চশমা লাগিয়েছেন যা দিয়ে তালিবানদের শুধু শিরক দেখা যায়, আর আইএসের শুধু কথিত সহীহ আকীদাই দেখা যায় !!!  শাইখ উসামা বিন লাদেন রাহঃ থেকে শুরু করে আইসিসের সাবেক নেতারা কেউ কোনোদিন তালিবানদের আকীদা “শিরকী আকীদা” এমন কথা বলেনি অথচ আজ কোন সেই নাদান যে তালিবানরা “শিরকী আকীদা” পোষণ করে বলে নাচানাচি করে,তার পরিচয় ও ইলমী যোগ্যতা জানা জরুরি বোধ করছি !! 

 

১০। আইসিসের লোকেরা মরলে মুখটা হাসিভরা থাকে, শাহাদা আঙুল দেখা যায়। এটা কি জাহান্নামী দের লক্ষন..?

উত্তরঃ আইএস সমর্থকরা যেসব বিদ’আতী নীতি তৈরি করেছে, তার মধ্যে এটি একটি যে, আইএস সদস্যরা মৃত্যুর সময় হাসি দিয়ে থাকে,শাহাদাত আঙ্গুল দেখায়, তাই তারা খারিজী/বাতিল হয় কীভাবে !!!

ভালো করে শুনুন, আইএস দুনিয়ার যেসব মুজাহিদদেরকে মুরতাদ আখ্যা দেয়,তাদেরও মৃত্যুর সময় এরকম হাস্যোজ্জল চেহারা দেখা যায়,তাহলে তারা কীভাবে মুরতাদ হয় ????

দেখুন তার প্রমাণ শামের জিহাদ থেকে .....  https://m.youtube.com/watch?v=NZkto-jlMLU  

আফগানে শাহাদাতের পূর্বে তালিবান মুজাহিদদের হাস্যোজ্জ্বল ভিডিও....

https://m.youtube.com/watch?v=rN4j_vbK1xI

 

ফেইসবুকে প্রকাশের তারিখঃ ০৪/০৭/২০১৭ ইং

 

খারিজী আইএস সমর্থক #Abdul_Ahad ও অন্যান্যদের নির্মম জাহালাত,মিথ্যাচার ও ভ্রষ্টতার জবাব নিয়ে পেইজ

লিংক....  https://justpaste.it/is_jobab