শামের জিহাদের বাস্তবতা,জাবহাতুন নুসরার স্বাধীনভাবে পথচলা, উম্মাহর কল্যাণে আল-কায়েদার নীতি ও কৌশল
নিম্নোক্ত ০৫ টি পয়েন্টে লেখাটিকে সাজানোর চেষ্টা করেছি। যথাঃ-
১। স্বতন্ত্র ইমারার অধীনে জাবহাতুন নুসরার পথচলার প্রেক্ষাপট ও কারণ
২। আল-কায়েদার নীতি ও জাবহাতুন নুসরার স্বতন্ত্র ইমারাহ
৩। ভিডিও বার্তায় শাইখ জুলানী হাফিঃ এর ৫ দফা কর্মসূচী
৪। নতুন এই পথচলায় আল-কায়েদার প্রভাব
৫। নতুন এই কৌশলের সম্ভাব্য ফলাফল
১।স্বতন্ত্র ইমারার অধীনে জাবহাতুন নুসরার পথচলার প্রেক্ষাপট ও কারণঃ
শামের বরকতময় জিহাদ সম্পর্কে যারা অবগত,তারা নিশ্চয়ই শামে আল-কায়েদার শাখা হিসেবে জাবহাতুন নুসরার বরকতময় জিহাদ সম্পর্কেও অবগত থাকার কথা।
নুসাইরী কুফফার বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে শামের মুসলিমদেরকে সুরক্ষা দেয়া এবং শামের বরকতময় ভূমিতে আল্লাহর শারী’আহ কায়েমের সুমহান লক্ষ্যে আল-কায়েদার সম্মানিত আমীর হাকীমুল উম্মাত শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এর নির্দেশে আল-কায়েদার কিছু মুজাহিদকে ইরাক থেকে শামে জিহাদের জন্য প্রেরণ করা হয়।
ইসলামের আন্তর্জাতিক দুশমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার কুফর মিত্রদের চক্রান্ত থেকে শামের মুসলিমদেরকে রক্ষা করার জন্য জাবহাতুন নুসরাহ যে আল-কায়েদার শাখা তা গোপন রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়। হাকীমুল উম্মতের নির্দেশনার আলোকে শাইখ আবু মুহাম্মাদ ফাতিহ আল-জাওলানী হাফিঃ এর নেতৃত্বে নুসাইরী কুফফার আসাদের বিরুদ্ধে তুমুল লড়াই করতে থাকে জাবহাতুন নুসরাহ। শামের মুসলিম জনতার মুক্তি ও আল্লাহর জমীনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমে জাবহাতুন নুসরার অসাধারণ সফলতা ও অসম্ভব জনপ্রিয়তা গোটা শামকে আলোড়িত করে।
এমনি এক মুহুর্তে আল-কায়েদার ইরাক শাখা ইসলামিক স্টেইট ইন ইরাক আল-কায়েদার কেন্দ্রীয় কমান্ডকে পাশ কাটিয়ে জাবহাতুন নুসরাহকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করে ইসলামিক স্টেইট ইন ইরাক এন্ড শাম(ISIS) এর ঘোষণা দেয়। অতঃপর তৎকালীন ISIS এর এই মনগড়া ঘোষণার ফলে জাবহাতুন নুসরাহ প্রকাশ করতে বাধ্য হয় যে, তারা শামে আল-কায়েদার শাখা। পরবর্তীতে শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এটি প্রকাশ করার জন্য শাইখ জুলানী হাফিঃ কে তিরস্কারও করেন। শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ একটি বক্তব্যে বলেছিলেন, শামে আল-কায়েদার উপস্থিতি প্রকাশিত হয়ে যাওয়ায় বিশ্ব-কুফফার আমেরিকা শামের মুসলিমদের উপর আল-কায়েদার অজুহাতে আগ্রাসন চালাতে পারে। এতে শামের জনগণ বলবে, এমনিতেই আমরা আসাদের নির্যাতনে পিষ্ট। তদুপরি আল-কায়েদার কারণে আমেরিকা আমাদের উপর আরো আগ্রাসন চালানোর সুযোগ পেলো।
প্রায় আড়াই বছর আগে দেয়া শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এই বক্তব্য আজ অক্ষরে অক্ষরে সত্য প্রমাণিত হল। আজ মার্কিন শ্বেত ভল্লুকদের সাথে রুশ ভেড়ার পালও শামের মুসলিমদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করে চলছে। উসিলা একটি, আর তা হচ্ছে এখানে আল-কায়েদা রয়েছে।
অতঃপর শামের জিহাদকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া সর্বগ্রাসী ফিতনা গোটা দুনিয়ার জিহাদের ময়দানগুলোকে গ্রাস করতে থাকে। যার ধারাবাহিকতায় আমরা আজ ISIS এর এই লজ্জাজনক অধঃপতন দেখতে পাচ্ছি যে, যারাই তাদের সাথে দ্বিমত পোষণ করছে,তাদেরকেই তারা তাকফীর করছে অর্থাৎ মুরতাদ বলে আখ্যা দিচ্ছে। এমনকি গ্লোবাল জিহাদের যেই সম্মানিত শাইখ যাকে এই দাওলার মুখপাত্র নিজে ‘হাকীমুল উম্মাহ’ বলে আখ্যায়িত করেছিলো, সেই শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ কে পর্যন্ত এরা তাকফির করেছে এবং হত্যার ঘোষনা দিয়েছে !
শামের জিহাদকে কেন্দ্র করে মার্কিন-রুশ-ইরানী চক্রান্ত আজ এক চরম বাস্তবতা। গোটা বিশ্ব-কুফফার আজ শামের মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। শামে যাতে আল্লাহর দ্বীন কায়েম না হয়,সেজন্য আল-কায়েদার শাখা জাবহাতুন নুসরাহকে নির্মূল করতে ইতোমধ্যে মার্কিন-রুশ ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এমতাবস্থায় কুফফার চক্রান্ত রুখতে,শামে আল্লাহর দ্বীন কায়েম করতে এবং মুসলিমদের সুরক্ষা দিতে হাকীমুল উম্মাহ শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ নির্দেশনার আলোকে নতুন আঙ্গিকে স্বাধীনভাবে স্বতন্ত্র ইমারার অধীনে ‘জাবহাতু ফাতহিশ-শাম’ নামে জাবহাতুন নুসরার পথচলা শুরু হয়েছে।
২। আল-কায়েদার নীতি ও জাবহাতুন নুসরার স্বতন্ত্র ইমারাহ(নেতৃত্ব)ঃ
আল-কায়েদার নীতির ব্যাপারে শাইখ জুলানী হাফিঃ উনার ভিডিও বার্তায় শাইখ উসামা বিন লাদেন রাহিঃ এর একটি কালজয়ী উক্তি উপস্থাপন করেন। আর তা হচ্ছে,
“ বি-আন্না মাছলাহাতাল উম্মাহ মুক্বাদ্দামাতুন ‘আলা মাছলাহাতিদ-দাওলাতিল মুসলিমাহ, ওয়া আন্না মাছলাহাতাদ দাওলাহ মুক্বাদ্দামাতুন ‘আলা মাছলাহাতিল জামা’আহ, ওয়া আন্না মাছলাহাতিল জামা’আহ মুক্বাদ্দামাতুন ‘আলা মাছালিহিল আশখাছ ”
অর্থাৎ নিশ্চয়ই মুসলিম রাষ্ট্রের কল্যাণের উপরে উম্মাহর কল্যাণ প্রাধান্য পাবে, আর নিশ্চয়ই জামা’আর কল্যাণের উপরে মুসলিম রাষ্ট্রের কল্যাণ প্রাধান্য পাবে, আর নিশ্চয়ই ব্যক্তির কল্যাণের উপরে জামা’আর কল্যাণ প্রাধান্য পাবে। (১ মিনিট ১৬ সেকেন্ড থেকে)
শাইখ উসামা রাহিঃ এর উপরোক্ত কালজয়ী বক্তব্যের আলোকেই শামে জাবহাতুন নুসরার এই নতুন আঙ্গিকে পথচলা।
এছাড়া ইতোপূর্বে শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ শামের জিহাদ নিয়ে বলতে গিয়ে বেশ কয়েকবার বলেছেন, আল-কায়েদা শামের জনগণকে শাসন করার জন্য জিহাদ করছে না বরং শামের জনগণ যাতে আল্লাহর শারী’আর অধীনে জীবন অতিবাহিত করতে পারে,সেজন্য আল-কায়েদা লড়াই করছে।
সত্যিকার অর্থে আল-কায়েদা দুনিয়ার কোথাও নিজেদের মনগড়া শাসন কায়েম করার জন্য,কিংবা নিজেরা শাসক হওয়ার জন্য লড়াই করছে না বরং আল্লাহর জমীনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের জন্যই লড়াই করছে।
গত ‘মে’ মাসের প্রথম দিকে ‘ইনফিরু..লিশ-শাম’ অর্থাৎ ‘শামের (জিহাদের) জন্য বের হোন’ শিরোনামে দেয়া অডিও বার্তায় শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ একদম স্পষ্টভাবে বলেছেন, শামে একটি ইসলামী রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে যদি জাবহাতুন নুসরাহকে আল-কায়েদার অধীন থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্র নেতৃত্বে চলার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়,তাহলে তাতে আল-কায়েদার কোনো আপত্তিতো থাকবেই না বরং আল-কায়েদা তাতে সর্বাত্মক সহায়তা করবে। এমনকি সম্ভব হলে স্বয়ং শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ উক্ত ইসলামী রাষ্ট্রের একজন অনুগত নাগরিক হওয়ার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করেছেন।
উপরোক্ত বার্তার লিংক.... http://tinyurl.com/he6g9qr
আর শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এর উপরোক্ত নির্দেশনার আলোকেই গতকাল একটি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে জাবহাতুন নুসরাহ ‘জাবহাতু ফাতহিশ-শাম’ নামে নিজস্ব ইমারার অধীনে পথচলার ঘোষণা দেয়।
৩। ভিডিও বার্তায় শাইখ জুলানী হাফিঃ এর ৫ দফা কর্মসূচীর ঘোষণাঃ
ইমামুল মুজাহিদীন শহীদ শাইখ উসামা বিন লাদেন রাহিঃ ও শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এর বক্তব্য উল্লেখ পূর্বক জাবহাতুন নুসরার আমীর শাইখ আবু মুহাম্মাদ ফাতিহ আল-জুলানী হাফিঃ পাঁচদফা কর্মসূচীসহ নতুনভাবে পথচলার ঘোষণা দেন।
উক্ত পাঁচ দফা কর্মসূচী হচ্ছে....
ক। আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা। আল্লাহর শারী’আহকে বাস্তবায়ন করা এবং সব মানুষের মাঝে ন্যায়বিচার কায়েম করা।
খ। ত্বগুত(বাশার) এর কাছ থেকে সমস্ত ভূমি মুক্ত করার লক্ষ্যে শামের সব মুজাহিদদেরকে ঐক্যবদ্ধ করা।
গ। শামের জিহাদকে রক্ষা করা এবং বৈধ সকল উপায় ব্যবহারের মাধ্যমে তা চালু রাখা।
ঘ। শামের মুসলিমদের খেদমতা করা। তাদের দৈনন্দিন কষ্ট লাঘবে সকল বৈধ উপায় অবলম্বন করা।
ঙ। সাধারণ জনগণের জন্য নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং সম্মানজনক জীবন-যাপন নিশ্চিত করা।
উপরোক্ত প্রতিটি কর্মসূচী মূলত আল-কায়েদার গ্লোবাল জিহাদেরই কর্মসূচী। সুতরাং জাবহাতুন নুসরাহ এখনো পর্যন্ত অর্থাৎ গতকালের ঘোষণার মাধ্যমে আল-কায়েদার গ্লোবাল কর্মসূচীর বাইরে এক কদমও যায়নি।
৪। নতুন এই পথচলায় আল-কায়েদার প্রভাব কতখানি ?
প্রথমতঃ এটি শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ প্রদত্ত পূর্বে দেয়া বক্তব্যের প্রতিফলন,শাম নিয়ে উনার বার্তার লিংক উপরে দিয়েছি।
দ্বিতিয়তঃ শামের জিহাদ ও মুসলিমদের কল্যাণ বিবেচনা করে আল-কায়েদার সেন্ট্রাল কমান্ডই মূলত জাবহাতুন নুসরাহকে স্বাধীনভাবে চলার সুযোগ করে দিয়েছে। এই পরিকল্পনাটি যে পুরোটাই আল-কায়েদার কেন্দ্রীয় কমান্ডের তা সরাসরি শাইখ জুলানী হাফিঃ গতকালের দেয়া বার্তায় উল্লেখ করেছেন। তিনি ভিডিওতে বলেন,
“আমি শামের জনগণ,শামের জিহাদ এবং শামের বরকতময় বিপ্লবে এই অবস্থান (স্বাধীনভাবে পথচলার সুযোগ ) নেওয়ার জন্য ‘আমভাবে আল-কায়েদার ভাইদেরকে,নেতৃত্বকে এবং বিশেষভাবে ডাঃ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ ও নায়িবে আমীর শাইখ আহমাদ হাসান আল-খাইর হাফিঃ এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। শামের জিহাদের যথাযথ কল্যাণ হাসিলে তাদের (অর্থাৎ আল-কায়েদার কেন্দ্রীয় কমান্ডের) এই অবস্থান ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ থাকবে। ”
ভিডিও বার্তার লিংক......
অর্থাৎ এই অবস্থান সরাসরি আল-কায়েদার কেন্দ্রীয় কমান্ড অর্থাৎ শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এর অনুমতি ও নির্দেশনাক্রমেই হয়েছে।
তৃতীয়তঃ জাবহাতুন নুসরার আমীরের দেয়া ভিডিও বার্তাটি প্রদানের পূর্বে আল-কায়েদার কেন্দ্রীয় কমান্ডের নায়িবে আমীর শাইখ আহমাদ হাসান আবুল খাইর হাফিঃ জাবহাতুন নুসরার নতুনভাবে পথ চলার ঘোষণা দেন এবং তাদের এই পথচলাকে স্বাগত জানিয়ে একটি অডিও বার্তা প্রদান করেন।
অডিও বার্তাটির লিংক.....(আরবী টেক্সট+ইংরেজি সারাংশসহ ).... http://tinyurl.com/hsuq9lg
সুতরাং কেউ যদি বলে জাবহাতুন নুসরাহ নিজের সিদ্ধান্তে আল-কায়েদা থেকে বের হয়ে গেছে,সে মিথ্যা ও জালিয়াতির পথ অবলম্বন করেছে। সে তার খায়েশ ও আক্রোশ মিটানোর জন্য এধরণের মিথ্যা ও প্রোপাগান্ডার নিকৃষ্ট পথ অবলম্বন করেছে। সত্য সামনে আসার পরও যে খাহেশাতের অনুসরণ করবে,তার ব্যাপারে কী আর বলার আছে !
চতুর্থতঃ আল-কায়েদার কেন্দ্রীয় কমান্ড কৌশলে আল-কায়েদার অনেক সিনিয়র শাইখদেরকে শামের জিহাদ পর্যবেক্ষণের জন্য সরাসরি প্রেরণ করেছেন। মূলতঃ তারাই এখন শামের জিহাদ পরিচালনা করছেন। উদাহরণস্বরুপঃ গ্লোবাল জিহাদের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি শাইখ আবু ফিরাস আস-সুরী রাহিঃ কে সরাসরি জাবহাতুন নুসরার কেন্দ্রীয় কমান্ডে দায়িত্ব প্রদান, শাইখ উসামা বিন লাদেন রাহিঃ এর অত্যন্ত ঘনিষ্ট শাইখ রিফাই আহমাদ ত্বহা রাহিঃ কে সিরিয়ার জিহাদ পরিচালনার জন্য প্রেরণ।
আরো বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, শাইখ জুলানী হাফিঃ এর ভিডিও বার্তায় উনার ডানপাশে সাদা পোষাক পরিহিত যে শাইখ বসে ছিলেন তিনি হচ্ছেন, শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এর দীর্ঘদিনের সঙ্গী ও গ্লোবাল জিহাদের প্রবীণ ব্যক্তি শাইখ আহমাদ সালামা মাবরুক হাফিঃ। তিনি সেই আশির দশক থেকে শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এর সঙ্গী হিসেবে জিহাদে যুক্ত রয়েছেন। তিনি বর্তমানে জাবহাতুন নুসরার কেন্দ্রীয় দায়িত্বে রয়েছেন।
আরেকটি কৌশলের বিষইয়ে না বললেই নয়, আল-কায়েদার কেন্দ্রীয় কমান্ডের নায়িবে আমীর শাইখ আহমাদ হাসান আবুল খাইর হাফিঃ বর্তমানে শামে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। জাবহাতুন নুসরার নতুনভাবে পথচলার ঘোষণা সম্বলিত শাইখ আহমাদ হাসান আবুল খাইর হাফিঃ এর অডিওটি আল-কায়েদার অফিসিয়াল শাখা আস-সাহাব থেকে না দিয়ে জাবহাতুন নুসরার অফিসিয়াল মিডিয়া ‘মানারাহ আল-বাইদ্বাহ’ থেকে প্রকাশ হওয়ায় ধারণাটি আরো মজবুত হয়েছে। আর শাইখ জুলানী হাফিঃ উনার ভিডিও বার্তায় এমন কোনো কথা বলেননি যে, আমরা আল-কায়েদার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলাম। বরং তিনি বলেছেন,
“ইলমান আন্না হাজাত-তাশকীলাল জাদীদ লাইসা লাহু ‘আলাক্বাতুন বিআইয়্যি জিহাতিন খারিজিয়্যাহ”
অর্থাৎ জানানো যাচ্ছে যে, বাহিরের কোনো সংস্থা/প্লাটফর্মের সাথে এই নতুন সংগঠনের সম্পর্ক নেই।”(ভিডিও বার্তাটির ২ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডে)
আল-কায়েদার কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যদি শামেই থাকেন,তাহলে বাহিরের কারো সাথে সম্পর্ক রাখার দরকার কী ! শামের ভেতরেইতো আল-কায়েদা রয়েছে ! (আল্লাহু আকবার !) কী অসাধারণ শব্দচয়ন !
উপরোক্ত প্রমাণাদির মাধ্যমে এটি দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট যে, জাবহাতুন নুসরার এই অবস্থান সরাসরি আল-কায়েদার তত্ত্বাবধানেই হচ্ছে। আল-কায়েদার নেতৃত্বের বাইরে শারী’আহ বহির্ভূত কোনো কিছু করলে কিংবা ভ্রষ্টতার নীতি অবলম্বন করলে আল-কায়েদার কেন্দ্রীয় কমান্ড অবশ্যই সে ব্যাপারে উম্মাহকে সতর্ক করবে এবং তাদের সাথে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করবে, যেমনটি ISIS এর ক্ষেত্রে আল-কায়েদা করেছে।
আলহামদুলিল্লাহ্,আল-কায়েদা দলের চেয়ে মুসলিম উম্মাহকে প্রাধান্য দেয়। আর তার চেয়ে অধিক প্রাধান্য দেয় শারী’আহকে। ISIS এর মতো একটি বৃহৎ শাখার ক্ষেত্রেও আল-কায়েদার এই নীতির কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। সুতরাং জাবহাতুন নুসরার ক্ষেত্রেও এই নীতির কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না ইনশাআল্লাহ্।
৫। নতুন এই কৌশলের সম্ভাব্য ফলাফলঃ
এই কৌশলের মাধ্যমে অনেকগুলো কল্যাণ হাসিলের আশা করা যায় ইনশাআল্লাহ্। যেমনঃ-
ক। মার্কিন-রাশিয়া এখন প্রকাশ্যে আল-কায়েদার শাখা হিসেবে বিমান হামলার উসিলা হারাবে। কুফফার চক্র এখন আর মানুষকে বুঝাতে সক্ষম হবে না যে, আল-কায়েদার শাখা হওয়ার কারণে আক্রমণ করা হচ্ছে। সুতরাং কুফফার চক্র এখন হামলা করলে জনগন বুঝবে আল-কায়েদার শাখা হওয়ার জন্য নয় বরং ইসলামের জন্য মার্কিন-রুশ চক্র এই সর্বাত্মক হামলা চালাচ্ছে। ফলে এখন যত হামলা হবে, তত মুজাহিদ বাড়বে ইনশাআল্লাহ্।
খ। শামের জনগণের সাথে ব্যাপকভাবে মিশে যাওয়া সম্ভব হবে। এতোদিন শামের বিভিন্ন দল,গোষ্ঠী,মিডিয়া আল-কায়েদার বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা করার কারণে অনেকে জাবহাতুন নুসরাহকে আল-কায়েদার শাখা হিসেবে বিবেচনা করে দূরে থাকতো। এখন আর তা হবে না ইনশাআল্লাহ্।
গ। নতুন এই অবস্থানের মাধ্যমে শামে কারা আল্লাহর শারী’আহ বাস্তবায়ন করতে চায়,তা একদম স্পষ্ট হবে। এতদিন আল-কায়েদার শাখা থেকে দূরে থাকার নাম করে অনেকে বিভিন্ন বাহানা দেখাতো। এখন সেসব পথ বন্ধ। আশা করি এর মাধ্যমে ঈমান ও নিফাক্ব আলাদা হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ্।
ঘ। জাবহাতুন নুসরার আমীর স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন, আমরা আল্লাহর জমীনে আল্লাহর শারী’আহ বাস্তবায়নের জন্যই এই নতুন পদক্ষেপ। সুতরাং এবার কারা শারী’আহ বাস্তবায়নে অগ্রসর হয়,আর কারা আমেরিকার দালালী করে, তা আরো অধিক স্পষ্ট হবে। যেসব দল আল্লাহর জমীনে আল্লাহর শারী’আহ বাস্তবায়ন করতে চায়না কিন্তু মুখে দাবী করে,তাদের দল থেকে সত্যপন্থী মুজাহিদগণ ব্যাপক আকারে জাবহাতুন নুসরাহ তথা ‘জাবহাতু ফাতহিশ-শাম’ এ যুক্ত হবে ইনশাআল্লাহ্।
পরিশেষে আল্লাহ তা’আলার উপর তাওয়াক্কুল করে বলবো, যেই রব্বে কায়েনাত শামের জিহাদকে ব্যাপকভাবে প্রসারিত করেছেন,সেই সুমহান রব শামে শারী’আহকে বাস্তবায়নের কুদরতী ব্যবস্থা করে দিবেন,এটাই দৃঢ় বিশ্বাস। সকল চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে বরকতময় শামের মুবারক জিহাদ তার কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌছবে ইনশাআল্লাহ্। আল্লাহ রব্বুল ইয্যত ‘জাবহাতু ফাতহিশ-শাম’ কে সেই বরকতময় গন্তব্যে পৌছার পথে কাণ্ডারির ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার তাউফীক্ব দান করুন। আমীন, ইয়া রাব্বাল ‘আরশিল কারীম।