JustPaste.it

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আমিরুল মুমিনিন

শাইখুল হাদিস হিব্বাতুল্লাহ আখুন্দজাদাহ হাফিজাহুল্লাহ

এর পক্ষ থেকে মুসলিম উম্মাহর প্রতি

ঈদ বার্তা

 

 

 

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

الحمد لله الواحدِ الأحد، الفرد الصمَد، الذي لم يلِد ولم يولَد، ولم يكن له كفوًا أحد، تفرّد بالخلق والتدبير، وتعالى عن الشبيه والنظير، فاستحقَّ وحدَه أن يُعبد، أحمده تعالى وأشكره، هو خلقنا ورزقنا وكفانا وآوانا، وهدانا للإسلام، واختصَّنا ببعثةِ سيّد الأنام، صلى الله عليه وعلى آله وصحبه ، وأشهد أن لا إله إلا الله وحدَه لا شريك له، جعل الإسلامَ طريق الجنّة الأوحَد، وأشهد أنّ محمّدًا عبده ورسوله، من أطاعه فقد اهتدى ورشد، ومن عصاه فلن يضرَّ إلا نفسه، ولن يضرَّ الله شيئًا.

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন-

الم(۱) أَحَسِبَ النَّاسُ أَن يُتْرَكُوا أَن يَقُولُوا آمَنَّا وَهُمْ لَا يُفْتَنُونَ(۲)وَلَقَدْ فَتَنَّا الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ فَلَيَعْلَمَنَّ اللَّهُ الَّذِينَ صَدَقُوا وَلَيَعْلَمَنَّ الْكَاذِبِينَ (۳) أَمْ حَسِبَ الَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ أَن يَسْبِقُونَا سَاء مَا يَحْكُمُونَ (۴) مَن كَانَ يَرْجُو لِقَاء اللَّهِ فَإِنَّ أَجَلَ اللَّهِ لَآتٍ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ (۵) وَمَن جَاهَدَ فَإِنَّمَا يُجَاهِدُ لِنَفْسِهِ إِنَّ اللَّهَ لَغَنِيٌّ عَنِ الْعَالَمِينَ (۶)صدق الله العظیم . امابعد

আলিফ-লাম-মীম। মানুষ কি মনে করে যে, তারা একথা বলেই অব্যাহতি পেয়ে যাবে যে, আমরা বিশ্বাস করি এবং তাদেরকে পরীক্ষা করা হবে না? আমি তাদেরকেও পরীক্ষা করেছি, যারা তাদের পূর্বে ছিল। আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন যারা সত্যবাদী এবং নিশ্চয়ই জেনে নেবেন মিথ্যুকদেরকে। যারা মন্দ কাজ করে, তারা কি মনে করে যে, তারা আমার হাত থেকে বেঁচে যাবে? তাদের ফয়সালা খুবই মন্দ। যে আল্লাহর সাক্ষাত কামনা করে, আল্লাহর সেই নির্ধারিত কাল অবশ্যই আসবে। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী। যে কষ্ট স্বীকার করে, সে তো নিজের জন্যেই কষ্ট স্বীকার করে। আল্লাহ বিশ্ববাসী থেকে বে-পরওয়া সুরা আনকাবুত-১-৬

সম্মানিত দেশবাসী, মুজাহিদ, মুহাজির ও সারা বিশ্বের সকল মুজাহিদদের প্রতি-

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ!

সর্বপ্রথম ঈদুল ফিতরের মোবারকবাদ পেশ করছি। আপনাদের ঈদ মোবারক হোক। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা আপনাদের রোযা, তারাবীহ, ইবাদত, সাদাকাহ, জিহাদ ও সকল নেক আমলকে কবুল করুন। আল্লাহ তায়ালার কাছে দুয়া করছি এই বরকতময় দিনগুলোর বরকতে কাফেরদের আগ্রাসন ও ফাসাদ থেকে আমাদের প্রিয়ভুমিকে মুক্ত করুন। ক্ষতিগ্রস্ত জাতিকে ইসলামী শাসনব্যবস্থা ও নিরাপত্তার মহান নেয়ামত দ্বারা সম্মানিত করুন। আমিন ইয়া রাব্বাল আলামিন।

 

আমরা ঈদুল ফিতরের আনন্দ এমন সময় উদযাপন করছি যে তার মাত্র দেড় মাস পূর্বে একজন মুমিন, মুজাহিদ, দুঃসাহসী কমান্ডার ও ইমারাতে ইসলামী আফগানিস্তানের আমীর আমিরুল মুমিনিন মোল্লা আখতার মুহাম্মাদ মনসুর রহিমাহুল্লাহ দখলদারদের হামলায় শাহাদাত বরণ করেছেন।

শহীদ মোল্লা আখতার মুহাম্মাদ মনসুর রহিমাহুল্লাহ আল্লাহ তায়ালার দ্বীনের একজন হাকিকি ও প্রাণোৎসর্গকারী খাদেম ছিলেন। তিনি স্বীয় জীবনকে খেদমতে দিন ও আল্লাহ তায়ালার কালিমাকে বুলন্দ করার জন্য উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন। ইমারাতে ইসলামীর শাসনকালীন সময়ের মত আমেরিকার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জিহাদের কঠিন বছরগুলোতেও ইসলামকে সমুন্নত করার জন্য মহান খেদমতসমুহ আঞ্জাম দেন। ইমারাতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা জনাব আমিরুল মুমিনিন মোল্লা মুহাম্মাদ উমর রহিমাহুল্লাহর ইন্তেকালের পর উত্তম পদ্ধতিতে ইমারাতে ইসলামীর ভিত্তি মজবুতকরণ, তার অখণ্ডতা রক্ষাকরণ, জিহাদের ধারাবাহিকতার জিম্মাদারি আদায় করেন। পরিশেষে জিহাদের পথে স্বীয় জানকে নযরানা পেশ করতেও পিছপা হননি। এবং এই পথে শাহাদাতের সুউচ্চ মর্যাদায় ভূষিত হন।

 مِنَ الْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌ صَدَقُوا مَا عَاهَدُوا اللَّهَ عَلَيْهِ فَمِنْهُمْ مَنْ قَضَى نَحْبَهُ وَمِنْهُمْ مَنْ يَنْتَظِرُ وَمَا بَدَّلُوا تَبْدِيلًا   ( الأحزاب : ۲۳ )

অর্থঃ মুমিনদের মধ্যে কতক আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে। তাদের কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষা করছে। তারা তাদের সংকল্প মোটেই পরিবর্তন করেনি। সুরা আহজাব-২৩

শহীদ মোল্লা আখতার মুহাম্মাদ মনসুর রহিমাহুল্লাহর দৃঢ়তা, আত্মোৎসর্গ, গৌরবময় শাহাদাত আমাদেরকে শিক্ষা দেয় যে, আমাদের প্রিয়তম দ্বীন ও তার মহান দাওয়াতের জন্য আমীর থেকে নিয়ে রোকন পর্যন্ত প্রত্যেকের কুরবানির প্রয়োজন রয়েছে। এই দ্বীনের জন্য রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, খুলাফায়ে রাশেদিন ও উম্মাতের বড় বড় মনীষী রক্ত ঝরিয়েছেন। তাই এই কারণে আমাদের যে কোন কুরবানি প্রদান থেকে কার্পণ্য করা উচিত হবেনা বরং চলে যাওয়া প্রকৃত মুমিনদের মত শাহাদাতকে নিজেদের জন্য গর্ব মনে করতে হবে।

যদিও ইমারাতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা মুহাম্মাদ উমর মুজাহিদ রহিমাহুল্লাহর ইন্তেকাল, অতঃপর মোল্লা আখতার মুহাম্মাদ মনসুর রহিমাহুল্লাহ শাহাদাত বরণ করেছেন, তাতে আলহামদু লিল্লাহ ইসলাম ও আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন জাতি নিঃশেষ হয়ে যায়নি। মুসলিম জনসাধারণ, মুজাহিদিন, উলামায়ে কেরাম, তুলাবা ও শহীদদের উত্তরাধিকার জিহাদি জামাআত তথা ইমারাতে ইসলামী এখনো পর্যন্ত বিদ্যমান আছে ও অতিতের মত মজবুত থাকবে। ইনশা আল্লাহ।

 

অতিতের মত মুজাহিদদের পরিপূর্ণ জিহাদি নিয়ম-শৃঙ্খলা, জিহাদের প্রশস্ত ও সারগর্ভ তাশকিল এবং তাঁদের মাঝে কঠিন ও মজবুত ঐক্য বিদ্যমান রয়েছে। সেই দৃষ্টিভঙ্গি এখনো জিন্দা রয়েছে, যার আলোকে আমরা বহু বছর থেকে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা

কায়েমের জন্য জিহাদ শুরু করেছিলাম

((وكَأَيِّن مِّن نَّبِيٍّ قَاتَلَ مَعَهُ رِبِّيُّونَ كَثِيرٌ فَمَا وَهَنُوا لِمَا أَصَابَهُمْ فِي سَبِيلِ اللَّـهِ وَمَا ضَعُفُوا وَمَا اسْتَكَانُوا وَاللَّـهُ يُحِبُّ الصَّابِرِينَ ﴿آل عمران: ١٤٦﴾ 

অর্থঃ আর বহু নবী ছিলেন, যাঁদের সঙ্গী-সাথীরা তাঁদের অনুবর্তী হয়ে জেহাদ করেছে; আল্লাহর পথে-তাদের কিছু কষ্ট হয়েছে বটে, কিন্তু আল্লাহর রাহে তারা হেরেও যায়নি, ক্লান্তও হয়নি এবং দমেও যায়নি। আর যারা সবর করে, আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন। সুরা আল ইমরান-১৪৬

ইমারাতে ইসলামীর নেতৃত্বের মহান বোঝা সম্পর্কে বলছি যে, এই মহান দায়িত্ব আমার জন্য গৌরব নয় বরং একটি মহান জিম্মাদারি মনে করছি। সমস্ত মুজাহিদ ও মুখলিস মুমিনদের কাছে দরখাস্ত করছি যে, আমাকে এই মহান জিম্মাদারি আদায়, এবং তা আদায়ে দৃঢ়তা ও অবিচলতার জন্য দুয়া করবেন। এবং যতভাবে সম্ভব আমাকে সাহায্য করবেন।

ইমারাতে ইসলামী আমার ও আপনাদের সম্মিলিত ঘর। এই ঘর রক্ষায় আমিরুল মুমিনিন মোল্লা মুহাম্মাদ উমর মুজাহিদ ও আমিরুল মুমিনিন মোল্লা আখতার মুহাম্মাদ মনসুর রহিমাহুল্লাহ যেই পথের মুসাফির ছিলেন, আমিও সে পথে তাঁদের অনুসরণ করবো। যার উপর তাঁদের বিশ্বাস ও ভরসা ছিল, তাই আমার বিশ্বাস ও ভরসার যোগ্য। ইমারাতে ইসলামিয়াতে যিনি-ই খেদমত করছেন, তারা পূর্বের মত নির্বিগ্নে খেদমত করতে থাকুন। কারো সাথে-ই বিশেষ কোন আচরণ করা হবেনা। কারো কুরবানি-ই অল্প দৃষ্টিতে দেখা হবেনা

আল্লাহ তায়ালার কাছে তাওফিক চাচ্ছি এবং ওয়াদা করছি যে, পবিত্র শরীয়ত এবং ইমারাতে ইসলামীর জিহাদি টার্গেটের প্রতি সর্বোচ্চ দৃষ্টি দিবো। মুসলিম জনসাধারণের উপকারিতাকে সামনে রেখে ফায়সালা ও পদক্ষেপ পরামর্শের ভিত্তিতে করবো। মুমিন ও বিপদগ্রস্ত জনসাধারণকে পথ দেখানো, তাঁদের সৌভাগ্য ফিরে আনা, তাঁদের দাপট ফিরিয়ে আনা এবং শান্তি ও নিরাপত্তার পথে যে কোন ধরণের প্রচেষ্টা গ্রহণে কার্পণ্য করবোনা।

শরই আদালতগুলোর উত্তম উপকারিতা, কার্যকারিতা, মজলুম কয়েদিদের মুক্তি, আহতদের উত্তম সেবা, মহিলাদের শরই অধিকার প্রদান, ইয়াতিম ও অসহায় লোকদের সাহস বৃদ্ধি, নতুন প্রজন্মকে শিক্ষাদীক্ষা ও এবং রনাঙ্গনসমূহে লড়াইরত মুজাহিদদের রসদ পৌঁছানো এবং দেশের প্রতিটি অংশে জনসাধারণের কল্যাণ সাধনের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। এবং আল্লাহ তায়ালার কাছে তাওফিক চাই।

ইমারাতে ইসলামীর বর্তমান পলিসি সম্পর্কে স্পষ্ট করছি যে, ইমারাতে ইসলামীর ফৌজি এবং রাজনৈতিক উভয় অংশে স্পষ্ট পলিসি বিদ্যমান। ইমারাতে ইসলামীর দৃঢ় বিশ্বাস যে, আফগানিস্তান দখলদারদের কবজায় রয়েছে। এবং দখলদারদের মেরে ভাগানোর পবিত্র জিহাদ আমাদের উপর ফরজ।

কিন্তু ইমারাতে ইসলামীর কবজার পরিসমাপ্তি, প্রভাবশালী, একমাত্র রাষ্ট্র, এবং সেই রাষ্ট্রে পবিত্র ইসলামী শাসনব্যবস্থার প্রতিষ্ঠার জন্য স্পষ্ট রাজনৈতিক পলিসিও বিদ্যামান রয়েছে। যা ইমারাতে ইসলামীর রাজনৈতিক দফতরের পক্ষ থেকে পৃথিবী ও দেশবাসীকে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করিয়ে দেয়া হয়েছে। এবং এমনিভাবে আফগান সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে প্রচেষ্টাও জারি রাখবো।

আমেরিকান আত্মসাৎকারীরা এবং তাদের অন্যান্য বহিরাগত ও দেশীয় হোমরা চোমরাদের প্রতি আমাদের পয়গাম এই যে, আফগান মুসলিম জনসাধারণ তোমাদের শক্তি ও ধোঁকার ব্যবহারে ভীত নয়। তোমাদের মোকাবেলায় শাহাদাতকে নিজেদের জিন্দেগীর সবচেমহান মাকসাদ ও আকাঙ্ক্ষা মনে করে। চাই তোমরা আফগানিস্তানে স্বীয় ফৌজকে আরও শক্তিশালী কর বা তোমাদের যুদ্ধকৌশল আরও নতুনভাবে সাঁজাও, আফগান জনগণের হিম্মত এবং জিহাদি প্রচেষ্টাকে কমজোর করতে পারবেনা।

আরও অধিক অনর্থক শক্তি পরীক্ষার পরিবর্তে বাস্তবতাকে স্বীকার করে, এবং দখলদারিত্বকে ছেড়ে দিয়ে চলে যাও! তোমাদের বিরুদ্ধে আমাদের ও আমাদের পূর্বসূরিদের সংগ্রাম ভিত্তিগত ভাবে ইসলামের বুনিয়াদের উপর প্রতিষ্ঠিত। এখানে তোমাদের মোকাবেলা একটি দল অথবা গ্রুপের সাথে নয়। বরং একটি জাতির সাথে যাদেরকে কখনই পরাজিত করতে পারবেনা। ইনশা আল্লাহ। সুতরাং তোমাদের জন্য কল্যাণ হল, তোমরা শক্তির বদলে সমাধানের একটি উপযোগী পলিসি পেশ কর! ও আফগানিস্তান ত্যাগ করে চলে যাও! 

দখলদারদের সাহায্যকারীদের প্রতি আমাদের পয়গাম এই যে, গত হওয়া ১৫ বছরে তোমরা জেনে গেছ যে, তোমরা আমেরিকার লক্ষ্যসমুহ অর্জনের পথে ব্যবহার হয়ে আসছ দখলদারদের তোমাদের সহযোগিতাটা ওই বিশ্বাস ঘাতকদের-ই কাজ, যারা অতিতে ইংরেজ ও রুশদের সঙ্গ দিয়েছিল। ভবিষ্যত এবং আগত প্রজন্ম তোমাদের ব্যাপারেও ফায়সালা করে নিবে। সুতরাং স্বীয় ভূমির স্বাধীনতার লড়াইয়ে দখলদারদের সাহায্য থেকে হাত গুটিয়ে নাও! তোমাদের জন্য আমাদের ক্ষমা ও সহনশীলতার দরজা খোলা রয়েছে। আমেরিকার ফালতু আশা আকাঙ্ক্ষার ধোঁকায় পরবেনা! জাতি তোমাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ও সজাগ রয়েছে। আর মনে রেখ! তোমরা বহিরাগতদের ভূমিতে ও আকাশ পথে সহযোগিতা সত্ত্বেও শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন করতে পারবে, এমনটি ভাববেনা! এর দ্বারা বুঝা যায় যে, তোমরা জনসাধারণের আশা আকাঙ্ক্ষা ও দাবির বিরুদ্ধে অবস্থান করে আছ। বহিরাগতদের বানানো শাসন ব্যবস্থাকে আফগান জনগন কখনই মানবেনা।

আমাদের স্পষ্ট পয়গাম এই যে, আমরা ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা চাইনা। সকল আফগান গোষ্ঠীর একের অপরের প্রয়োজন রয়েছে। বরং ইসলামী শাসনব্যবস্থার উন্নতি, আজাদি ও শক্তি আফগান জাতির ঐক্য ও সঙ্গবদ্ধ হওয়ার সাথে সংযুক্ত। ইসলাম আমাদেরকে ভ্রাতৃত্ব, আমানতদারি এবং যথাযোগ্য ব্যক্তিদের জিম্মাদারি প্রদানের নির্দেশ দেয়। প্রত্যেক জনতার এই অধিকার রয়েছে যে, জিন্দেগীর সকল অধিকার উপভোগ করবে, এবং তাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থাকে যোগ্যতা ও তাকওয়ার ভিত্তির উপর নির্বাচন করবে। আসুন! সম্মিলিতভাবে আগ্রাসনের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে দেশের দাপট ও আবাদির জন্য কোমরবেঁধে অগ্রসর হই।


দুনিয়া মুসলমানদের কাছে কামনা করছে যে, আমরা সর্বোতভাবে আমাদের মুজাহিদ ভাইদের সাহায্য করি, সম্ভাব্য সকল সুরতে তাদের হাত শক্তিশালী করি, তাদের দুয়ার মাঝে শামিল করি। এবং চলমান জিহাদে তাঁদের সাহায্যকে জারি রাখি।

আমরা আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশসমুহকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি যে, আফগানিস্তানে আমেরিকার কবজা এবং এখানে তাদের অবস্থান আমাদের এবং তোমাদের সবার অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ করছে। এখানে তারা ফিতনা ও ফাসাদ উস্কে দিচ্ছে। এখানে তাদের ইন্টেলিজেন্স এবং ফৌজি শক্তির বৃদ্ধির দ্বারা সমগ্র ভূমিকে অশান্তিপূর্ণ করে রাখছে। তোমরাও আগ্রাসনের পরিসমাপ্তি ঘটাতে আফগান জাতির সাথে মিলিত হও! অথবা কমপক্ষে এই ধরণের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত হও, যা আফগানিস্তানে আমেরিকার অবস্থানের সময়কে আরও বৃদ্ধি করে

ওই সকল লোকদের বলছি যারা ইমারাতে ইসলামীর অর্জন ও গর্বসমূহকে পাকিস্তান, ইরান ও অন্যনায় দেশের দিকে সম্পৃক্ত করে। তোমরা এই ধরণের ভুল ও মিথ্যা ব্যাখ্যা দ্বারা কখনই মুজাহিদিন ও বোধশক্তিসম্পন্ন লোকদেরকে তাদের সফর থেকে বিমুখ করতে পারবেনা! আমাদের মুজাহিদ জনগণের স্বীয় দ্বীন ও ইসলামের জিম্মাদারি পালনের গভীর অনুভূতি রয়েছে। জনগণ দেখছে যে, তাদের ঘরে আমেরিকা ও ন্যাটো বাহিনী ঢুকে পড়েছে। ইসলামের ভূমিতে কুফুরি বাহিনীর ঝাণ্ডা উড়ছে। তাই তারা জিহাদের পথকে আপন করে নিয়ে নিয়েছে। ইমারাতে ইসলামিয়ার জিহাদি অবস্থান, শরই অবস্থান, হাক্কানিয়াত ও স্বাতন্ত্রতা অতিত থেকে-ই সূর্যের চাইতেও স্পষ্ট ও পরিষ্কার বাস্তবতা, যা আগত ইতিহাস সোনালী অক্ষরে সংরক্ষণ করে রাখবে।

দেশের উলামায়ে কেরাম, রূহানী পথপ্রদর্শক, মুদাররিসিন, জেনারেল শিক্ষিত উস্তাদগণ, তালেবে ইলমগন, জাতির পথপ্রদর্শকগণ, ব্যবসায়ী ভাইয়েরা এবং আহলে ইলম ও লেখক ভাইদের বলছি- এই সংবেদনশীল অবস্থানে স্বীয় ধর্মীয় ও জাতিগত ফরজ আদায় করুন। কুফুরি আগ্রাসন ও ফরজে আইন জিহাদকে শুধুমাত্র ইসলামের দৃষ্টিতে দেখুন! এবং এটাকে আপনার জিম্মাদারি মনে করুন। সত্যপথের মুজাহিদদেরকে একা ছেড়ে দেওয়া উচিত হবেনা। বরং কলম, জবান, এবং সম্ভাব্য সকল সুরতে তাঁদের সাহায্য করুন।

যদি আল্লাহ না করুন কোন একজন  ব্যক্তিও শত্রুদের প্রোপাগান্ডায় প্রভাবিত হয়ে যায়। এবং বিভিন্ন বাহানা ও অজুহাত দেখিয়ে মুজাহিদদের পাশ কাটিয়ে যায়, এবং কাফেরদের সঙ্গ দিতে আগ্রহী হয়, তাহলে সে দুনিয়া ও আখেরাতে আল্লাহ তায়ালার ওই ভীতির সম্মুখীন হবে, যার ব্যাপারে তিনি কুরআনুল কারিমে ইরশাদ করেছেন-

وَلَا تَرْكَنُوا إِلَى الَّذِينَ ظَلَمُوا فَتَمَسَّكُمُ النَّارُ وَمَا لَكُمْ مِنْ دُونِ اللَّهِ مِنْ أَوْلِيَاءَ ثُمَّ لَا تُنْصَرُونَ.( هود ۱۱۳)

আর পাপিষ্ঠদের প্রতি ঝুঁকবে না। নতুবা তোমাদেরকেও আগুনে ধরবে। আর আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন বন্ধু নাইঅতএব কোথাও সাহায্য পাবে না। সুরা হুদ- ১১৩

মুজাহিদ জনসাধারণ ও বিশেষ করে রণাঙ্গনে লড়াইরত মুজাহিদ ভাইদেরকে সান্ত্বনা জানাচ্ছি যে, আলহামদু লিল্লাহ ইমারাতে ইসলামীর জিম্মাদারগণ ও অন্যান্য সদস্যগণ অতিতের মত সুউচ্চ হিম্মত, পাক্কা ঈমান এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের জযবায় উজ্জীবিত আছেন। আপনাদের সুসংবাদ শোনাচ্ছি যে, আমরা যদি হাকিকি মুমিন থাকই, তাহলে পরিশেষে বিজয় আমাদেরই হবে। দুনিয়ার কোন শক্তি-ই আমাদের সফলতার পথে কাটা হয়ে থাকতে পারবেনা। এজন্যই আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন-

ولاَ تَهِنُوا وَلاَ تَحْزَنُوا وَأَنتُمُ الأَعْلَوْنَ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ (آل عمران  ۱۳۹)

আর তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দুঃখ করো না। যদি তোমরা মুমিন হও তবে, তোমরাই জয়ী হবে।  সুরা আল ইমরান-১৩৯

নিজেদের নিয়তকে পরিশুদ্ধ করে নিন। দুনিয়ার মাল, পদবী, গনিমত ও প্রসিদ্ধিকে নিজেদের মাকসাদ বানাবেননা। বরং আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টিকে নিজেদের টার্গেট বানান। এই জিহাদ একটি দীনী ইবাদত ও ফরজ কর্তব্য। নিজেদের জিহাদের কারনে না কোন মুসলমানের উপর নিজেকে বড় মনে করবেন আর না এটা মনে করবেন যে আপনি তাঁদের উপর ইহসান করছেন!

এ কথা ভালোভাবে বুঝে নিন যে, আমাদের জিহাদের মহান মাকসাদ হল, ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং ইসলামী শাসনব্যবস্থার উত্তম জিম্মাদারি তথা মুসলমানদের দ্বীন, জান, মাল, আকল, প্রজন্ম ও ইজ্জতের হেফাজত করা। এরকম কোন কথা, কাজ বা ব্যবহার করবেন না, যা মুসলমানদের এই জিহাদকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয়।

সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন যে, জিহাদে যেন মুসলমানদের কোন কষ্ট না হয়, নিজেদের জিহাদি কার্যক্রমকে অত্যান্ত সতর্কতার সাথে পালন করবেন। সাধারন জনগণের স্বার্থ জড়িত এমন স্থান তথা হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মাদরাসা, স্কুল, পুল, পানি সংরক্ষনের সকল জিনিস, জনগণের অন্যান্য স্থান ও স্থাপনার ক্ষতি করবেন না, যা তাঁদের প্রাত্যহিক জীবন যাপনে ব্যাঘাত ঘটায় বরং সেগুলো রক্ষা করুন। সকল এলাকায় বিশেষ করে ওই সকল এলাকায় যেখানে ইমারাতে ইসলামীর কন্ট্রোল রয়েছে। সেখানে নতুন প্রজন্মের জন্য দীনী ও আধুনিক শিক্ষার পথকে সুগম করুন। জনগণকে ক্ষতি করা থেকে নিজেদের কঠিনভাবে বিরত রাখুন।সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করুন। এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওই বাণীকে স্মরণ রাখুন-

من ضيق منزلا أو قطع طريقا أو آذى مؤمنا فلا جهاد له - ( رواه ابو داود) 

যে কারো জায়গা নষ্ট করে, অথবা তার রাস্তা কেটে ফেলে অথবা কোন মুমিনকে কষ্ট পৌছায়, তার জিহাদের পূর্ণ সোয়াব নেই।

পরিশেষে ধনাঢ্য ও সম্পদশালী ভাইদের কাছে আমার আহবান আপনারা ঈদের এই দিনগুলোতে নিজেদের ফকির ও অসহায় মুসলমান ভাই ও বোনদের ভুলে থাকবেন না! এবং সাধ্য অনুযায়ী ইয়াতিম, বিধবা, মাযুর, বন্দি ও মুখাপেক্ষী পরিবারগুলোকে সাহায্য করুন!

আল্লাহ তায়ালা আপনাদের সাহায্যকারী । এবং আমি দুয়া করছি যে, আসন্ন ঈদগুলো ইসলামী শাসনব্যবস্থার বাস্তবায়ন এবং পরিপূর্ণ স্বাতন্ত্র পরিবেশে আমাদের স্বাগত জানাতে পারেন।

 

ওয়াসসালাম

ইমারাতে ইসলামীর জিম্মাদার আমিরুল মুমিনিন

শাইখুল হাদিস মওলবী হিব্বাতুল্লাহ আখুন্দজাদাহ

 

২৭ রমজানুল মোবারক। ১৪৩৬ হিজরি

২ জুলাই ২০১৬ ইংরেজি

 

 

 Your Brothers at



আপনাদের নেক দুয়ায় আমাদের ভুলবেননা!