JustPaste.it

বিসমিল্লাহির রাহামানির রাহিম

গ্লোবাল ইসলামিক মিডিয়া ফ্রন্ট (GIMF) এর বাংলা শাখা GIMF বাংলা টিম (জিবিটি) পরিবেশিত

শামের জিহাদ খিলাফাত সম্পর্কে মূল্যবান ফতোয়ার বাংলা অনুবাদ

  

শিরোনামঃ
"সিরিয়ার বিজ্ঞ আলেমদের পক্ষ থেকে ইসলামিক ফতোয়া" পার্ট-

  

সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেনঃ আমর আবু মাজিদ

ফতোয়া প্রদান করেছেনঃ শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক আল মাহদি (হাঃ)

 

১০ই রজব, ১৪৩৭ হিঃ

১৭ই এপ্রিল, ২০১৬ খ্রিঃ

৪ ই বৈশাখ, ১৪৩২ বাঃ

 

 

আমর আবু মাজিদঃ আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু। আমি আমর আবু মাজিদ বলছি। আমরা আবার ও আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি “সিরিয়ান আলেম পরিযদ কর্তৃক ইসলামি ফতওয়া"

আমাদের সাথে আজ ও উপস্থিত আছেন আমাদের সম্মানিত শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক আল মাহদি (হাঃ)। তিনি আজ আমাদের এমন কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে যাচ্ছেন যেটা আমরা বিগত পর্বে করি নাই। আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু ইয়া শেইখ!

 

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক আল মাহদি (হাঃ)ঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম ওরাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু। আপনাকে স্বাগতম

 

আমর আবু মাজিদঃ কেমন আছেন আপনি?

 

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক আল মাহদি (হাঃ)ঃ আলহামদুলিল্লাহ্‌।

 

আমর আবু মাজিদঃ শায়েখ আজ আমরা আপনাকে এমন কিছু প্রশ্ন করব যেটা আমরা বিগত পর্বে করি নাই

 

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক আল মাহদি (হাঃ)ঃ জি আপনি শুরু করুন। আল্লাহ আপনার ও সকল ভাইয়ের প্রতি রফম করুন

 

আমর আবু মাজিদঃ আমরা শুনেছি যে সিরিয়ার ইসলামী আলেম পরিযদ সিরিয়া তে জিহাদের জন্য আহবান করেছে। তারা কারা যাদেরকে এই জিহাদের জন্য আহবান করা হয়েছে? তারা কি শুধু সেই সমস্ত মুসলিম যারা সিরিয়ান নাকি সমগ্র বিশ্বের মুসলিম এর আওতাভুক্ত?

 

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক আল মাহদি (হাঃ)ঃ আমার প্রিয় ভাই, প্রকৃতপক্ষে আজ আমরা একটি আত্মরক্ষামুলক জিহাদরত আছি। আত্মরক্ষামুলক জিহাদ তখনি সংগঠিত হয় যখন একটি মুসলিম ভুখন্ডে মুজাহিদিন ও বিদ্রোহীরা এক পক্ষে এবং দখলদারেরা ও তাদের দালাল গোষ্ঠী অপরপক্ষে থাকে। যেটা এই মুহুর্তে সংগঠিত হচ্ছে সিরিয়ার ভুমিতে। আমার প্রিয় ভাই,এই মুহুর্তে  আমরা একটি আত্মরক্ষামুলক জিহাদে রত আছি। জিহাদ মুসলিমদের উপর সেইভাবেই ফরয যেইভাবে নামায ও রোজা প্রত্যেক সক্ষম মুসলিম যুবক ও সাধারণ মুসলিমদের উপর ফরয। সিরিয়ায় প্রত্যক মুসলিমদের অবশ্য্য জিহাদের ময়দানে থাকা উচিত। আমি এই সুযোগে প্রত্যেক সক্ষম মুসলিম যুবক ও সাধারণ মুসলিমদের আহবান করব যারা যোগ্যতা রাখেন তারা যুদ্ধক্ষেত্রে  ঝাপিয়ে পড়ুন যেন এই শাসনব্যবস্থার পতন হয়। আমি সিরিয়াতে দেখতে পাচ্ছি অনেক যুবক ও সাধারণ মানুষ জিহাদকে বর্জন করেছে এবং তারা নিজেদেরকে দুনিয়াবি কাজকর্মে ব্যস্ত রেখেছে। এর চেয়েও খারাপ অবস্থা এই যে,আমরা দেখতে পাচ্ছি,এই সাধারণ মানুষ ও যুবকদের মধ্যে অনেকে রিফিউজি ক্যাম্পে বসে আছেন এবং কিছুই করছে না,এমনকি দুনিয়াবী কাযকর্ম ও । তাদের মধ্যে অনেকেই সক্ষম ও সুস্বাস্থের অধিকারি,তথাপি তারা মহিলা ও বাচ্চাদের সাথে রিফিউজি ক্যাম্পে বসে থাকাকেই বেছে নিয়েছেন এবং এতি একটি বড় ধরনের ভুল। আমরা ভয় পাই তারা রাসুল (সা:) এর স্বীকারোক্তির মধ্যে পড়েছে যেটা সিহাহ সিত্তাহ এ বর্নিত আছে। আবু হুরাইরা কর্তৃক বর্নিত। রাসুল (সাঃ) বলেন,সাতটা জিনিস বর্জন কর যা তোমাদের ধ্বংসের মধ্যে ফেলে দিবে। সাহাবীরা জিজ্ঞেস করল “হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ), সেগুলা কি ?” রাসুল (সাঃ) বললেন, আল্লাহর সাথে শিরক করা ...... তারপর আরো কিছু বললেন, তারপর বললেন জিহাদের ময়দান থেকে পালানো। আমরা আশংকা করি যে,এই হাদীস এই সমস্ত লোকের উপর বাস্তবায়ন যোগ্য যারা রিফিউজি ক্যাম্পে অথবা বাড়ি বসে থাকাকেই বেছে নিয়েছেন যখন জিহাদ চলছে । এই কারনে আমি এই সমস্ত সাধারণ মানুষ ও যুবকদের আহবান জানাই এবং তাদেরকে প্রশিক্ষন কেন্দ্রে বা এমন জায়গায় অগ্রসর হতে বলছি যেখানে তারা সশস্ত্র হতে । পারবে এবং তারা যেন জিহাদে ঝাপিয়ে পড়ে। এই ঘোষণা সেই সকল সিরিয়ানদের জন্য। এছাড়া এই বার্তা আমি সিরিয়ান কিংবা নন-সিরিয়ান সবার কাছেই দিচ্ছি সে যেই দেশেরি হোক না কেন। যে কেউ অস্ত্র ধারণ করতে পারে তার উচিত সিরিয়াতে অগ্রসর হয়ে এই অত্যাচারী ও অপরাধী শাসক এর পতন ঘটাতে সহায়তা করা

 

আমর আবু মাজিদঃ আপনার কথা থেকে আমারা বুঝলাম, সিরিয়ার এই জিহাদের আহবান সারা বিশ্বের সকল মুসলিমদের প্রতি এবং এর প্রতি সাড়া দেওয়া ও সকলের উপর ফরজ

 

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক আল মাহদি (হাঃ)ঃ হ্যা, ঠিক তাই

 

আমর আবু মাজিদঃ আমাদের পরবর্তি প্রশ্ন সেই এলাকা সম্পর্কে যেটা মুজাহিদিনদের নিয়ন্ত্রনে, সেখানে কি শরীয়াহ বাস্তবায়ন সম্ভব? সেই এলাকা সম্পর্কে যেটা মুজাহিদিনদের নিয়ন্ত্রনে, সেখানে কি শরীয়াহ বাস্তবায়ন করা যাবে? আপনি কি বিশ্বাস করেন যে, মুজাহিদিনদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাতে কি শরীয়াহ বাস্তবায়ন সম্ভব? এবং সেখানে কি ইসলামী আইন অনুসারে কি শাস্তি বাস্তবায়ন করা যাবে? এবং যদি আপনার উত্তর না হয় তবে কেন এই শরীয়াহ বাস্তবায়ন সম্ভব নই

 

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক আল মাহদি (হাঃ)ঃ প্রকৃতপক্ষে অপরাধের শাস্তি সমুহ যা আল্লাহের আইন ও কিসাস এবং যা সমাধান করেছে মানুষের মধ্যে বিতর্ক সেটা মুক্ত এলাকাতে বিরাজ করবে। এখানে শরীয়াহ এর আদালত বিদ্যমান থাকবে। আদালত মানুষের মধ্যকার সমস্যার সমাধানের জন্য কাজ করবে যখন তারা আদালতের কাছে তাদের সমস্যার সমাধান চাইবে। সেখানে এমন কিছু অপরাধী ও থাকতে পারে যারা জিনা বা মদ্যপান এর মত বা সমতুল্য অপরাধ করেছে। ইসলামি অপরাধের শাস্তি সাধারনত স্বাধীন এলাকাতে বাস্তবায়ন করা যায় এবং কিসাস ও। আমি এটা বলছি সাধারন ভাবে, কারণ বিষয় গুলোই স্থান ভেদে পরবর্তিত হয়, যে এলাকাগুলো ইসলামিক দল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সেখানে এর বাস্তবায়ন এর ধারা ভাল অন্য এলাকাগুলোতে এর ঘাটতি হতে পারে কারন তাদের কিছু বিচ্যুতি থাকতে পারে । সাধারন ভাবে বলতে গেলে ইসলামি আইন অনুসারে শাস্তি বাস্তবায়িত হয়। তবে কিছু অপরাধ থাকতে পারে যেগুলো নগ্ণ্য উদাহরণস্বরুপঃ কোন মদের দোকান,পতিতালয়,সুদি ব্যাংক,জুয়া খেলার ঘর এ ধরনের কিছু থাকবে না। এগুলা স্বাধীন এলাকাগুলাতে মটেই থাকতে পারে না। এগুলো এমন জিনিস যেগুলার ইসলামি সমাজের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। হয়তো কিছু মহিলা বাইরে বের হয়েছে কিছু সৌন্দ্রর্য প্রকাশিত করে বা তারা পরিপুর্ণ ইসলামি পোষাক পরিধান করে নি অথবা তারা চোখ আকিয়েছে,তথাপি এগুলা আংশিক ও সীমাবদ্ধ। যাইহোক,মহিলারা যদি অশালীন ভাবে তাদের শরীর প্রদর্শন করে যেটা বেশিরভাগ দেশগুলোতেই বর্তমান,সেটা বিদ্যমান থাকতে পারে না। আমাদের সম্প্রদায়গুলো সাধারণ ও ইসলাম ধর্মীয় এবং ইসলামকে ভালোবাসে এবং এজন্য আমরা আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ। জটিলতর সমস্যাগুলো যেগুলো আপনি উল্লেখ করেছেন সেগুলোতে কি ইসলামি দন্ডবিধি বাস্তবায়িত সম্ভব? যেমন হত্যা, চুরি, অপহরণ ইত্যাদি যা আমরা আপনার কথা থেকে বুঝলাম, এখানে কি ইসলামি দন্ডবিধি বাস্তবায়িত সম্ভব? হ্যা, আমরা এজন্য আল্লাহর নিকট শুকরিয়া জানাই । তাছাড়া সাধারনভাবে প্রত্যেক মানুষি সমান, এখানে নেতা বা অনুসারী কিংবা ধণী বা গরীব বলে কোন ভেদাভেদ নাই, কোন উচ্চ পদস্থ বা নিম্ন পদস্থ ব্যাক্তি বলে কোন কথা নেই। সুতরাং, ইসলামি বিরোধি দলের উপর ও শরীয়াহ বাস্তবায়নের সামঞ্জস্য আছে

 

আমর আবু মাজিদঃ আমাদের একটি দৃশ্যকল্প আছে যদি ও এটি গতানুগতিক না,তারপরও আমাদের এই প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। আমাদের একজন বোন যিনি শামের বাইরে বসবাস করেন এবং যিনি ইসলামি আকিদাহ বিষয়ে জ্ঞান রাখেন। সে বলেছে যে সে শামের ময়দানে সংগঠীত জিহাদে অংশ নিতে চাই। শামে তার সাথী বোনদেরকে আকিদাহ বিষয়ে শিক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে। তথাপি তাঁর কোন মাহরাম পুরুষ নাই যার সাথে সে আসতে পারে। শামের সীমান্তে তীব্র শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশের কারনে সে আসতে পারে না। সিরিয়াতে তার একজন বান্ধবী আছে যে তাকে সীমান্ত পার হতে সহায়তা করবে। যাতে করে সেই বোন তাঁর শামের মুসলিম বোনদের প্রতি তাঁর জিহাদী দায়িত্ব পালিত হয়। তার কোন মাহরাম পুরুষ ছাড়া তার উক্ত বান্ধবীর সাথে সিরিয়াতে গমন করা কি জায়েজ হবে? এবং এই মুহুর্তে তার কি জিহাদের ময়দানে তার কোন মাহরাম পুরুষ ছাড়া থাকা ঠিক হবে?

 

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক আল মাহদি (হাঃ)ঃ প্রিয় ভাই, প্রথমে আমরা আল্লাহর কাছে এই বোনের জন্য দোয়া করি আল্লাহ তাঁকে উত্তম বদলা দান করুন,যিনি সিরিয়ার বোনদের ব্যাপারে এতটা সচেতন। তথাপি আমরা তাঁকে বলব যে,সিরিয়া এবং স্বাধীন ভুমি গুলোতে পুরুষ ও মহিলা উভয় প্রকার ইসলামি জ্ঞানিদের (আলেমদের) সংখ্যা যথেষ্ট। এছাড়া ও এখানে ইসলামি আহবায়ক দ্বারা পরিপুর্ণ, মহিলা ও পূরুষ উভয়ই। এবং এখানে এমন অনেক লোক আছে যারা সক্রিয়ভাবে জ্ঞান ছড়াচ্ছে এবং দাওয়াত দিচ্ছে। এবং সেটা আমাদের ভাই ও বোন উভয়য়ের পক্ষ থেকেই, যেটি আমি আগেই উল্লেখ করছি। আমরা এই বোনকে বলব তিনি যেন তাঁর নিজ ভুমিতেই মানুষ কে আল্লাহর দিকে ডাকে ও ইসলামি আকিদাহ শিক্ষা দেই। আল্লাহ তার উপর এই প্রকার কষ্ট চাপিয়ে দেন নি এবং নিজেকে এই রকম ঝুকির মধ্যে ফেলতেও অনুমতি দেন নি। বিশেষভাবে তাঁর কোন পুবুষ অভিভাবক নেই, যেমন স্বামী বা ভাই। তার বিষয়ে যেটি অগ্রাধিকার সেইটা হলো ,সে নিজ দেশে অবস্থান করবে এবং সেখানেই ইসলাম শিক্ষা দিবেন। আবু হুরাইরাহ কর্তৃক বর্নিত,বুখারি ও মুসলিমে একটি হাদীস আছে  সেখানে রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “মহিলা যে আল্লাহ ও বিচার দিবসে বিশ্বাস রাখে তার জন্য এইটা অনুমোদনযোগ্য নয় যে, তার কোন মাহরাম ব্যাতীত এক রাত বা এক দিনের পথ একাকি সফর করে। তার মাহরাম বলতে তার স্বামী, বাবা, ভাই বা ছেলে। এক কথাই, বিবাহ যোগ্য নয় এমন সকল পুরুষ ই তাঁর মাহরাম। যেহেতু এই বোনের কোন মাহরাম নাই তাই, তার উচিত নিজ দেশে অবস্থান করে আল্লাহর দিকে বোনদের ডাকা

 

আমর আবু মাজিদঃ শায়খ আল্লাহ আপনাকে উত্তম বদলা দিন এই সুন্দর উত্তরের জন্য। ভাইয়ের নামাজ সংক্রান্ত একটি প্রশ্ন ছিল? সে বলে যে “আমি একজন মুহাজির এবং নিজেকে একজন সফরকারী বলে গণ্য করি। আমি জিহাদের জন্য মুসাফিরের ন্যায় চারিদিকে বিভিন্নরুপে ঘুরাঘুরি করি। কোন নির্দিষ্ট একটি শহরে বসবাস করার উদ্দেশ্য ছাড়াই আমি বিভিন্ন জিহাদের ময়দানে উপস্থিত থাকতে এক শহর থেকে অন্য শহরে স্থান পরিবর্তন করি। যখন সেই ভাই এক শহর থেকে অন্য শহরে যাই সে আযান শুনতে পাই। এটা কি তার জন্য অনুমোদনযোগ্য যে সে নিজেকে একজন মুসাফির বলে গ্ণ্য করবে ফলে যেখানে সে আযান শুনেছে সেখানে নামায আর আদায় করবে না। এটি কি তার জন্য অনুমোদনযোগ্য যে সে অন্যত্র নামাজ আদায় করে নিবে? অথবা তার মসজিদে নামাজ আদায় না করা কি সঠিক হচ্ছে যেহেতু সে নিজেকে একজন মুসাফির বলে গণ্য করে?

 

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক আল মাহদি (হাঃ)ঃ যেহেতু এই প্রশ্নটি একজন মুহাজির সম্পর্কিত, যে তার নিজ দেশ ছেড়ে শামে এসেছে। যদি এই ব্যাক্তি শহর থেকে শহর এবং নগর থেকে নগর অধিক সংখ্যকবার যাতায়াত করে তথা সফর করে। আর যেহেতু সে বলেছে যে তাকে ইদলিবে ২-৩ দিন এবং তারপরে অলেপ্পোতে ২-৩ দিন থাকতে হতে পারে। এই দৃশ্যকল্পে এটি তার জন্য প্রজোয্য যে সে নীজেকে একজন মুসাফির বলে গণ্য করবে। সুতরাং,এখানে  তার জন্য স্থায়ী অনুমতি আছে যে, নামাজ সংক্ষিপ্ত (কসর) ও একত্রে আদায় করতে পারবে। এছাড়াও তার অনুমতি আছে যোহর ও আসর একসাথে এবং মাগরিব ও এশা একসাথে করার। এতি সাধারনত যদি সে অনেক বেশি ভ্রমণ করে এবং নির্দিষ্ট কোন স্থানে কয়েক দিনের জন্য থাকার উদ্দেশ্য না থাকে। আমরা একি সাথে এই ভাই কে বলব, চার মাজহাবের চার ইমাম এ ব্যাপারে কি বলেছেন “যদি কোন ব্যাক্তি কোন স্থানে চার দিনের বেশী থাকার উদ্দেশ্য রাখে সে যেন অবশ্যয় সম্পুর্ন নামাজ আদায় করে” কিন্তু আপনি যেভাবে উল্লেখ করেছেন, সে যদি সেই অবস্থায় থাকে তবে তার নামাজ সংক্ষেপ ও একত্রে আদাই করার অনুমতি আছে। যদি সে আযান শুনে তবে এটা তার জন্য জরুরী নয় যে তাকে জামাতে অংশ নিতে হবে যেহেতু সে একজন মুসাফির, যদি সে এটা করতে চাই। কিন্তু যদি সে ইমামের পিছনে নামাজ আদায় করতে চায় তবে তাকে সম্পুর্ণ নামাজ আদায় করতে হবে যেহেতু,রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “বাস্তবিকেই ইমাম নির্ধারিত হয়েছে তাকে অনুসরনের জন্য” যার অর্থ ইমাম কে সর্বত্রই অনুসরণ করতে হবে, তবে আল্লাহ ই ভাল জানেন

 

আমর আবু মাজিদঃ কিছু ভাই বলেন যে রাসুল (সাঃ) সফরকালে কখন ও নামাজ আদায় করেন নি। তারা কি এটার উপর আমল করতে পারে? 

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক আল মাহদি (হাঃ)ঃ যখন রাসুল (সাঃ) সফরে থাকতেন তখন তিনি নামাজ সংক্ষেপ করতেন অথবা যদি তিনি এক জায়গাই ২-৩ দিন অবস্থান করতেন তখন তিনি নামাজ সংক্ষেপ করতেন। বেশিরভাগ ইমামের মত এটা যে, যদি কোন ব্যাক্তি কোন স্থানে ৪ দিনের বেশী অবস্থান করে তবে তাকে সম্পুর্ণ নামাজ আদায় করতে হবে।

 

আমর আবু মাজিদঃ সাধারণ মুসলিম গ্ণ যখন আযান দেওয়া হয় তখন তারা বিশেষ ভাবে মুহাজিরিনদের দিকে তাকিয়ে থাকেন। তারা বলে যে, মুহাজিরিনরা নিজেদের দ্বীণদার বলে দাবি করেন অথচ তারা এমনকি মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করে না। আমরা কি তাদের এর ওজর দেখাতে পারি না এবং যেহেতু মুহাজিরিনদের এই ব্যাপারে অনুমতি আছে তাই তাদের নামাজে অংশ গ্রহণ করাই তাদের সম্পর্কে খারাপ ধারণা না করি। এটা কি অনুমোদিত যে আমরা তাদের ব্যাপারে সন্দেহ করব এবং বলব যে তারা আযান শোনার পর ও মসজিদে গমণ করে না?

 

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক আল মাহদি (হাঃ)ঃ এটি মসজিদের ইমামসমুহ ও প্রচারকদের দায়িত্ব যা তারা এই বিষয়ে সাধারণ মানুষকে অবহিত করাবে এবং এটি ও তাদের কাছে পরিষ্কার করা যে, মুহাজিরিনদের মসজিদে না যাওয়ার ব্যাপারে অনুমতি আছে। তাদের উচিত এই বিষয়টকে সাধারণ মানুষের নিকট খোলাসা করা যেন তারা অহেতুক মুহাজিরিনদের বিষয়ে সন্দেহ না করে, ইহা সত্য।

 

আমর আবু মাজিদঃ আমরা আশা করি আল্লাহ আমাদের কে এই উত্তর থেকে উপকৃত করুন। আমিন। এখন আমরা আপনার কাছে একটি দল সম্পর্কে জানতে চাই যাদেরকে “শিয়া” বলা হয়। কিছু লোক বলে যে তারা মুসলিম আর কিছু লোক বলে যে তারা কাফির। তারা কি আমাদের ধর্মীয় ভাই? জাতি গত ও শাসন গত দিক দিয়ে তাদের ও আমাদের মধ্যে পার্থক্যসমুহ কি? নাকি এই পার্থক্যের ভিত্তি বিশ্বাস ও ভিণ্ণ মাজহাবের? অথবা আমদের পার্থক্য সমুহ এই পর্যায় পর্যন্ত চলে গেছে যে তাদের আমারা আমদের বিরোধী বলে বিবেচনা করব।

 

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক আল মাহদি (হাঃ)ঃ শিয়াদের বিষয়ে বলতে গেলে আমি তাদের আকিদা, উৎপত্তি, কিতাব এবং সম্প্রদায় সম্পর্কীয় জ্ঞাণ রাখি। আমি তাদের মুল কিতাবসমুহ পড়েছি। তাদের চারটি এমন কিতাব আছে যেগুলোকে তারা তাদের নির্ভরযোগ্য কিতাব হিসেবে দেখে। তাদের বই আল রাফি যেটার লেখক আল কুলানি তাহথীব আল আহকাম যেটার লেখক জাফর আল তুসি। তাছাড়া তাদের আরেকটি কিতাব মান লা ইয়াহ দুরুহ, যেইটার লেখক আবি জাফর বিন বাব্বাওয়েহ। এই ৩ টি  কিতাব সহ আরো ৭ টি কিতাব কে তারা তাদের নির্ভরযোগ্য কিতাব বলে বিবেচনা করে। আমি এই সমস্ত কিতাব পড়েছি। তাদের সেই নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে আমরা যা পেয়েছি তার উপর ভিত্তি করে আমরা তাদের নিয়ে বিচার বিবেচনা করতে পারি। আমরা তাদের কে আমাদের কিতাব দ্বারা বিচার করব না কারন এতে তারা এই অভিযোগ করতে পারে যে আমরা মিথ্যা বলছি। আমরা তাদের বিচার করব যেমন তারা আমাদের বিচার করে, এটা আমাদের অধিকার। তাদের  নির্ভরযোগ্য কিতাব যেমন আল  কুলানির আল কাফি, মুহাম্মাদ বাকির আল মাজলিসির;বেহার আল আনোয়ার, নি'মাতুল্লাহ আল জাজাহিরির আল আনোয়ার আল নমানেইয়াহ। এছাড়াও আল কাসানির আল সাফি, আল খুইই ও অনন্যাও। এই সমস্ত লোকেরা সুন্নিদেরকে নওয়াসিব বলে আখ্যায়িত করে। এটা দ্বারা তারা বোঝায় যে আমরা সুন্নিরা রাসুল (সাঃ) এর পরিবারবর্গের তথা আহলে বাইয়্যাতদের প্রতি বিদ্বেষ রাখি। তারা সুন্নিদেরকে কাফির এর শ্রেণীতে ভাগ করে এবং এটা তাদের কিতাব দ্বারা স্বীকৃত। তারা শুধু এতটুকুই দাবি করে থেমে থাকে নি বরং তারা এটি ও দাবি করে যে সাহাবী (রাঃ) রা ও কাফির। (নাউযুবিল্লাহ) তারা দাবি করে যে রাসুল (সঃ) এর সাহাবিদের থেকে মাত্র ৫ থেকে ৭ জন ছিল বিশ্বাসী। তাদের মতে রাসুল (সঃ) এর সাহাবিদের মধ্যে ৭ থেকে ১৭ জন মোটামুটি গ্রহণযোগ্য,তার মানে তারা মোটামুটিভাবে ভালো আছে। তারা এই সাহাবিদের অপমান করে না কিন্তু তাই বলে এদের পুরাপুরি বিশ্বাস ও করে না। তারা তাদের উক্তিগুলো ও গ্রহণ করে না। তারা তাদের সেই সমস্ত উক্তিগুলো গ্রহণ করে যেগুলা রাসুল (সাঃ) থেকে বর্নিত। তারা রাসুল (সাঃ) এর কিছু সাহাবিদের কে গ্রহণযোগ্য বলে মনে কয়েক জন যেমন জুবাইর বিন আব্দুল্লাহ , আবু সাইদ খুদরি, আবু আইউব আল আনসারি (রাঃ) প্রমুখ। আর তারা গ্রহণযোগ্য মানে শুধুমাত্র সঠিক বলে ধরে নিয়েছে। না তারা বিশ্বাসযোগ্য আর না তারা পুরোপুরি নীতিভ্রস্ট। উল্লেখিত এই ১৭ জন সাহাবি ব্যতীত রাসুল (সঃ) এর বাকি সমস্ত সাহাবিরা এবং বিশেষভাবে খোলাফায়ে রাশেদীন এর আলি (রাঃ) বাদে সকলকে যেমন আবু বকর, উমার, উসমান, তালহা, জুবাইর, সা’দ, সায়ীদ, এবং বাকি সমস্ত সাহাবি (রঃ) কে ঘৃণা করে। তাদের কাউকে কাফির, কাউকে মুরতাদ, কাউকে আংশিক বা সম্পুর্ণ পথভ্রষ্ট বলে গ্ণ্য করে। নূণ্যতম খারাপ বলতে গেলে ও তাদের মতে সাহাবীরা হল ফাসেক। এটি ১৭ জন সাহাবি বাদে; যাদেরকে তারা মোটামুটি ভাবে সঠিক ভাবে। এর উপর ভিত্তি করেই তারা আমাদের ও সাহাবিদের কে কাফির বলে থাকে। আবু বকর (রাঃ) থেকে কিয়ামত পর্যন্ত।

 

আমর আবু মাজিদঃ এটি কি তাদের কিতাব, বিশেষ করে গ্রহণযোগ্য কিতাবে উল্লেখ আছে?

 

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক আল মাহদি (হাঃ)ঃ হ্যা, ভাই। হয়তো অন্য কোন সাক্ষাতে আমি এই বিষয়ে আর ও স্পষ্ট আলচনা করব্‌ ইনশাআল্লাহ। আমি তখন তাদের আকিদা সম্পর্কে বলব ও তাদের কিতাব থেকেই উদ্ধৃতি দিব। তাদের গ্রহণযোগ্য কিতাব থেকেই উদ্ধৃতি দিয়েই আমি তাদের বিষয় আরোও স্পষ্ট করব ইনশাআল্লাহ। এবং সে সমস্ত কিতাব থেকেই যেগুলাকে তারা শক্তিশালী দলিল রুপে গণ্য করে। যেমনটি উল্লেখ করলাম তারা আমাদেরকে এবং রাসুল (সাঃ) এর সাহাবিদের কে কাফির বলে গ্ণ্য করে, ঠিক আবু বকর রাঃ থেকে কিয়ামত পর্যন্ত আসা সবাইকে। যদি তারা আমাদেরকে মুরতাদ বলে গণ্য করে তেমন ভাবে আমাদের ও তাদেরকে মুরতাদ বললে সমস্যা কোথায়? এটি হলো প্রথম সমস্যা, দ্বিতীয় সমস্যা হলো তারা নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন দলে বিভক্ত। আল শাহরাস্তান্নি তার কিতাব আল্ মিনাল ওয়াল নিহাই এ তাদের ৫০ বা তার চেয়ে ও বেশী দলের উল্লেখ করেছেন। তাদের কিছু যারা অন্যদের তুলনায় অনেক বেশী চরম্পন্থী এবং কিছু যারা সুন্নিদের নিকতবর্তী তারা জাইদিয়াহ। আমরা এই মুহুর্তে এত গভীরে যেতে চাই না। দ্বিতীয় সমস্যা হলো যেটি আমদের অনুমতি দেই তাদেরকে কাফির বলে বিবেচনা করতে সেটি হলো। তাদের আটল,কঠোর ও বলিষ্ঠ বিশ্বাস যে কুরআন পরিবর্তিচ হয়েছে, নবরুপ পেয়েছে ও অকেজো হয়েছে। (নাঊযুবিল্লাহ)। যেটি আল-কুলানি পরিস্কারভাবে প্রণীত করেছে যিনি শিয়াদের বেশীরভাগ ভয়ংকর কিতাবের লেখক । তাছাড়া বিহার আল আনোয়ার এর লেখক মুহাম্মাদ বাকির মাজলিসি এবং আল খুইই, আল আমিলি, এবনসহ অন্যান্যরা একই কথা বলে। তারা বলে তারা শিয়ারা বিশ্বাস করে যে ১২ জন ইমাম অকাট্য। তাদের প্রথম হচ্ছে আলি (রাঃ) ও শেষ হচ্ছে মুহাম্মাদ ইবন হাসান আল আসকারী। সে এমন একজন তাকে তারা ইমাম মাহদি বলে, যে রাসুল (সাঃ) এর পরিবারবার্গ ও অন্যান্য সবকিছু দেখাশোনা করে। হ্যা, তারা বলে যে, তিনি (মাহদি) সামামার ভুগর্ভের সুড়ঙ্গের ভেতর আটকা পড়ে আছে। এই সমস্ত মানুষ বিশ্বাস করে যে কুরআন পরিবর্তিত হয়েছে। এর প্রমাণ হলো তারা ফাতেমা (রাঃ) এর সহিফা তে বিশ্বাসী বলে দাবি করে। তারা এটি ও বিশ্বাস করে যে, আসল কুরআন ১২ জন ইমামের ভেতরই আছে এবং এটি বর্তমানে সুড়ঙ্গের ভেতর আছে। তাদের সেই আটকেপড়া গায়েবী ইমামদের কাছে। আরেকটি বিষয় হলো যেটি নির্দেশ করে যে তারা দাবি করে উসমান (রাঃ) ও অন্যান্য সাহাবিরা (রাঃ) কাফির। তাদের মতের দিক দিয়ে কোন পার্থক্য নেই যে তারা বিশ্বাস করে উসমান (রাঃ) একজন কাফির ও সে একজন মিথ্যাবাদি ও। না তার উক্তি গ্রহণযোগ্য আর না সে একজন বিশ্বস্ত সাক্ষী, তাহলে তারা কিভাবে কূরআন গ্রহণ করবে যেটা উসমান (রাঃ) ও অন্যান্য সাহাবিরা সংগ্রহ করেছে। এ বিষয়ে বিশ্বাসের অবকাশ নেই যে কোরআন পরিবর্তিত হয়েছে বা ওকেজো হয়েছে বা এতে কিছু সংযোজিত বা বিযোজিত হয়েছে। একটি বিখ্যাত উক্তি আছে “মুসলিম রাষ্ট্রে বসবাসরত অবস্থায় ধর্মের ব্যাপারে অবহেলার কোন অবকাশ নেই” বিশেষ ভাবে সে সমস্ত বিষয়াদি যেগুলোর উপর ধর্মের ভিত্তি প্রস্তর গঠিত উদাহরনস্বরুপ, আল্লাহর প্রতি, তার ফেরেশতার প্রতি, তার কিতাবসমুহের প্রতি, তার রাসুলগণের প্রতি, তাকদিরের প্রতি, আখিরাতের প্রতি ও তদ্রূপ বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস। অব্যাহতি হতে পারে ইবাদতের ক্ষেত্রে কিছু মাসয়ালা মাসায়েল এর বিষয়ে। কিন্তু সেখানে কারো জন্য অব্যাহতি নেই যে, এ কথা বিশ্বাস করা যে কোরআন বিকৃত হয়ে গেছে। এটিই হলো এই বিষয়ের সঠিক মাসয়ালা। যেহেতু তাদের অভিযোগ এই যে আমরা কাফির, তাহলে আমরা তাদের পাল্টা কথা বলতে পারি যে তারা কাফির? হ্যা, যেহেতু তারা আমদের ও সাহাবিদের কাফির বলে। আমরা বলব, তোমরাই কাফের; সাহাবীরা নন। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর হতে বর্নিত, যেটি সহিহ বুখারী ও মুসলিমে আছে। রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “যদি কোন মুসলিম তার অপর মুসলিম ভাইকে কাফির বলে, তাহলে তাদের মধ্যে যে কোন একজন অবশ্যয়ই কাফির।” তারাই নিশ্চিতভাবে কাফির, সাহাবিরা নন। বিষয়টিকে এ ভাবেই দেখা সঠিক হবে ইনশাআল্লাহ

 

আমর আবু মাজিদঃ আমরা এতক্ষন কথা বলেছি শিয়াদের সম্পর্কে। এখন আমরা কথা বলব তাদের শাসক (আসাদ) সম্পর্কে যদি ও আমরা এ বিষয়ে বেশ কিছু সময় কথা বলেছি। আমরা এখন সেই শাসকের সম্পর্কে কথা বলব যে একজন শিয়া মতবাদের অনুসারী। এবং সেই (শিয়া/শিয়াপন্থী) শাসকের পক্ষ থাকা সুন্নিদের ব্যাপারে বিধান কি। এবং সেই সমস্ত মানুষ সম্পর্কে বিধান কি যারা সুন্নিদের সমর্থক করে এবং যারা (শিয়া/শিয়াপন্থী) শাসকগোষ্ঠীর ভিতরে করে। আমাদের পক্ষ থেকে কি আপনি এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিবেন? কেননা সাধারণ মুসলিমদের অনেকেই আমদেরকে এই ধরনের প্রশ্ন করে থাকে?

 

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক আল মাহদি (হাঃ)ঃ এই শাসকের সম্পর্কে বলি যে মুসলিমদের ক্ষতি করে থাকে যেমন ব্যাপক পরিমাণে হত্যা, মহিলাদের ধর্ষণ, এবং এই ধরণের কাজ। আপনি যেভাবে বুঝাচ্ছেন আমি কি “আলাওয়িতি” (শিয়াদের একটি উপদল) উপদল সম্পর্কে বলব?

 

আমর আবু মাজিদঃ হ্যাঁ

                               

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক আল মাহদি (হাঃ)ঃ তাদের উৎস হলো শিয়াদের চরম্পন্থীদের থেকে। তারা বারজন ইমামি মতবাদ থেকেই এসেছে কিন্তু তাদের চরম্পন্থার জন্য শিয়া উপদল থেকে বিচ্যূত। ইমামি মতবাদি শিয়ারা জোর করে এটা নির্দেশ করে যে তাদের নিকত আলাওয়াইতরা মুরতাদ ও কাফির। আলাওয়াইত রা “নুসাইরিয়াহ” নামে পরিচিত। এমন কি খোমেনি বলেছে যে, তারা (আলাওয়িতিরা) কাফির ও মুরতাদ। সে ধারাবাহিক ভাবে এটা পরিষ্কার করেছে যে, তারা মুরতাদ । তবে আল খোমেনি এটা পরিবর্তন করল যখন সে সুন্নিদের বিরুদ্ধে আলাওয়িতিদের সাথে একটি রাজনৈতিক জোট গঠণ করল। খোমেনির অনুসরন করাই এই শাসকদের সম্পর্কে মতবাদ পরিবর্তিত হল যেটা কিনা শিয়াদের শত বছরের বিশ্বাস ছিল

 

আমর আবু মাজিদঃ তারা তাদের রাজনৈতিক স্বার্থে তাদের ধর্ম পরিবর্তন করল?

 

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক আল মাহদি (হাঃ)ঃ হ্যা, অবশেষে ফলাফল এই, শিয়ারা এটাকে মেনে নিল। আমরা আলাওয়িতি ব্যাপারে কথা বললাম, তবে সেই মুসলিমদের ব্যাপারে কি অবস্থা যারা আলাওয়িতিদের শাসন ব্যাবস্থাকে প্রতিরক্ষা করছে? আপনি যেটা উল্লেখ করলেন যে, তারা আলাওয়িতিদের সাথে যুদ্ধ করছে এবং তাদের প্রতিরক্ষা করছে। এটি একটি বন্ধুত্ব স্থাপনকৃত একটি রুপ। মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করা প্রকৃতপক্ষে মুরতাদ হওয়ার শামিল। যে ব্যাক্তি কাফিরদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করে প্রকৃতপক্ষে সে তাদের সাহায্য করছে এবং তাদের সাফল্য দান করছে । তাদের সামরিক বিষয়ে এবং তাদের বিশ্বাস ও অনুরুপ বিষয়াদি তুলে ধরতে সহায়তা করছে। সে মুরতাদ বলে গণ্য, যদিও সে এটা জেনেই করুক বা না জেনেই করুক। আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা বলেছেন,“ওহে মুসলিম তোমরা ইহুদি ও খৃস্টানদের বন্ধু রুপে গ্রহণ করো না। তারা প্রত্যেকে একে অন্যের বন্ধু। এবং তোমাদের মধ্যে যে তাদেরকে বন্ধু রুপে গ্রহণ করে সে তাদের মধ্যেই গণ্য হবে।” এ বিষয়ে আল্লাহই ফয়সালা করেছেন। আমি, আপনি কিংবা কোন আলেম কেঊই না। যে আলাওয়িতিদের বন্ধু (শাসক) রুপে গ্রহণ করে তখন তার বিধান সেই (আলাওয়িতি) শাসকের ন্যায় হবে। তবে এটি ব্যতিক্রম হতে পারে তার জন্য যাকে কোন চেইকপয়েণ্টে অপহরণ করা হয়েছে অথবা তাদের জোর করে সৈণ্যবাহিনীতে যোগ দান করা হয়েছে। অথবা যাকে একটি কেন্দ্র বা কোন জায়গা থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে এবং সৈণ্যবাহিনিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এবং সে পালিয়ে যেতে চাই কিন্তু সে পারে না। তাকে কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়েছে এবং তার জন্য বিষয়গুলো খুবই কঠিন করে রাখা হয়েছে অথবা অনুরুপ কিছু করা হয়েছে। আমরা এ ধরনের অনেক দৃশ্যকল্প শুনে থাকি এবং তাদের অনেকেই যারা পালানোর চেস্টা করে, হয় তাদের হত্যা করা হয় নতুবা তাদেরকে নির্যাতন করা হয়। যদি তাদের জোর করা হয় তবে সে মুরতাদ হবে না। অর্থ্যাৎ, যদি তার এই শাসন কে বর্জন করার ইচ্ছা থাকে। হ্যা, যদি সে এই শাসনের অধীনে থাকতে চাই না কিন্তু তাকে বাধ্য করা হয়েছে ।

 

আমর আবু মাজিদঃ আমাদের এক বোন সিরিয়াতে এসেছিল তার স্বামীর সাথে জিহাদের উদ্দেশ্যে । সে তার ধর্মীয় দায়িত্ত্ব পালনে আল্লাহ্‌র ডাকে সাড়া দিয়ে এবং তার স্বামী জিহাদের ময়দাণে লড়তে এসেছে। একদিন তার স্বামী যুদ্ধে শহীদ হয়ে যান এবং দীর্ঘ সময় ধরে সে তার স্বামীর আকাঙ্খা ও তার অনুপস্থিতি অনুভব করে। সে সর্বদাই তার স্বামীকে স্মরণ করে এবং কোন মতেই যেন তার স্বামীকে ভুলতে পারে না। এমনকি যে ভাইয়েরা তার স্বামীর সহযোদ্ধা ছিল তারা ও তার পরিবারকে ভুলে যায়নি। এমনকি সেই সহযোদ্ধা ভাইয়েরা এই বোনকে আর্থিকভাবে সাহায্য করে তথাপি সে তার স্বামীকে ভুলতেই পারে না। বলা হয় যে এই বোন এখন পর্যন্ত ও তার স্বামীর অনুপস্থিতি অনুভব করে এবং তার চোখের সামনে যেন তার স্বামীকে দেখতে পাই। সে এ বিষয়ে উপদেশ চাই আপনার কাছ থেকে এবং আপনি কি তাকে কোন উপদেশ দিবেন?

 

শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক আল মাহদি (হাঃ)ঃ আমরা এই মুহাজির বোনকে বলব যার স্বামী জিহাদে শহীদ হয়েছেন, আপনার পুরস্কার অনেক বড়। ইনশাআল্লাহ। আমরা উপদেশ দিব এই বোনকে আল্লাহর রাহে ধৈর্যশীলা হতে। আমি আরো তাকে উপদেশ দিব এই বোন কে সে যেন তার স্বামীর ব্যাপারে তার অতীত কে ভুলে যাওয়ার চেস্টা করে। যেন এটা আপনাকে দীর্ঘসময় কস্ট ও বিষণ্যতার মধ্যে না পতিত করে। তাকে অবশ্যয় এই অবস্থা থেকে ভালো একটি অবস্থানের দিকে আসতে হবে। তিনি নিজেকে দাওয়াহ ও শিক্ষাদানের মধ্য আর ও বেশি শামিলের মাধ্যমে এই কস্ট কাটিয়ে উঠতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। তাছাড়া আমি তাকে বলব সে যেন একজন সৎ, নেককার ও উত্তম চরিত্রের অধিকারি কোন ব্যক্তি কে বিয়ে করেন। যে তাকে দ্বীন ও দুনিয়ার উভয় বিষ্যয়ে সাহায্য করবেন। সে নিশ্চয় অনেক বড় পূরস্কার পাবেন ইনশাআল্লাহ তবে তাকে ধৈর্যধারণ করতে হবে।

 

আমর আবু মাজিদঃ আমরা আশা করি যে আল্লাহ তার উপর রহম করুন এবং তাকে ধৈর্য ও সহ্য ক্ষমতা দানের মাধ্যমে এবং তাকে তার অতীত ভুলতে সহায়তা করুন। আমরা ধন্যবাদ জানাই আমাদের ভাই ও বোনদেরকে যারা আমাদের এই প্রোগ্রাম দেখছেন। ইনশাআল্লাহ আবার ও আপনাদের সাথে দেখা হবে আমাদের পরবর্তী। আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাতাহু