JustPaste.it

তাকফীর এর ব্যাপারে নির্দেশনা – শায়খ আতিয়াতুল্লাহ আল-লিবি রহঃ

 

প্রশ্নঃ তাকফীরের ব্যাপারে একজন সাধারণ মুজাহিদের – যিনি কোন আলিম নন –  কি আচরণ হওয়া উচিৎ?

উত্তরঃ


ইসলামী শারী’য়ার স্পর্শকাতর যে বিষয়গুলো রয়েছে তাকফীর তাঁর মধ্যে অন্যতম, এর বিপদসংকুল দিকগুলোর কথা চিন্তা করে আমরা যুবক ভাইদের এই ব্যাপারে সর্বদা সতর্ক করে আসছি। আমরা আমাদের মুজাহিদ ভাইদেরকে এই কথাটিই বলব যে, তাঁরা যেন এইসব স্পর্শকাতর বিষয়গুলোর দায়িত্ব আস্থাভাজন সম্মানিত আলিমদের উপর দিয়ে দেন এবং এই বিষয়ের উপর ইচ্ছার চরিতার্থ করা তাঁদের (সাধারণ) জন্য মানানসই নয় এবং অনুমোদিতও নয়। এটি হচ্ছে সেই জ্ঞান, যার স্পর্শকাতরতা এবং বিপদের কথা বিবেচনা করে অনেক বড় বড় আলিম এবং ইমামগণ এর অনেক ব্যবহারিক প্রয়োগের আলোচনা করা থেকে বিরত থেকেছেন, এমনকি কোন ব্যক্তি বিশষের (*) উপর তা আরোপ করতে তাঁরা ভয় করতেন এবং এই ব্যাপারে সর্বদা এর নিরাপদ মাসআলাটি গ্রহন করার পথ অবলম্বন করতেন।

আমাদের সালাফরা বলতেনঃ নিজেদের দ্বীন নিরাপদ রাখা ব্যতীত অন্য কিছুই আমাদের কাছে মূল্যবান নয়।
সাধারণ মুসলিমদের এতটুকই যথেষ্ট যে তাঁরা আল্লাহ থেকে ও তাঁর রাসুলের (সাঃ) মাধ্যমে আগত ﷺজ্ঞান অর্জন করবে এবং এর উপর ঈমান আনবে এবং সাধারণভাবে তাগুতকে বর্জন করবে। আর এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এবং নির্দিষ্টভাবে কোন ব্যক্তি বা দলের ব্যাপারে জানতে, তারা কি দ্বীনের বাইরে বেরিয়ে গেছে কিনা?… অথবা একই ধরণের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে কাউকে নিজের ইলমের স্তর বুঝে আলোচনা করা করা উচিত, কারণ এসব বিষয় তো ফত’ওয়া এবং শর’ই বিচারের অধীন।

শরী’আর এইসব বিধান এর উপর যার কোন জ্ঞান নেই তাঁর উচিৎ নিরব থাকা অথবা বলা ‘এই ব্যাপারে আমার কোন জ্ঞান নেই’। এই জবাব তাঁর ঈমান কিংবা তাঁর দ্বীনকে অবনমিত করবে না, বরং এই আচরণ ঈমানের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাকফীর বিষয়ে সাধারণ (অজ্ঞ) কোন মুসলিমের কথা বলা অথবা মানুষের উপর এর হুকুম প্রয়োগ করা অথবা কোন ব্যক্তি বিশেষকে তার মতে কাফির হিসেবে সাব্যস্ত করা এবং সেই ব্যক্তির বিষয়ে স্থায়ী কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যাবে না, তবে সে যদি কোন আস্থাভাজন আলিমের ফতোয়ার অনুসরণ করে এবং তাঁর (সেই আলিমের) কথা পুনরাবৃত্তি করে তবে তা ভিন্ন।
যদি এমন কাউকে এই ব্যাপারে মতামত জানানোর জন্য জিজ্ঞাসা করা হয়, যার মধ্যে দ্বীন এর কোন জ্ঞান নেই তাহলে সে যেন বলে ‘আমি জানিনা, দয়া করে কোন আলিমকে জিজ্ঞাসা করুন’। যদি বিশ্বস্ত এবং শর’ইয়ি জ্ঞানের জন্য বিখ্যাত কোন আলিম নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা দলের নাম নিয়ে তাকফীর করেন, তাহলে সাধারণ মুসলিমদের তাঁদের অনুসরন করে সেই হুকুম পুনরাবৃত্তি করা বৈধ।
নিশ্চয়ই তিনি আল্লাহ, যিনি দয়া করে আমাদের ভাল কিছু করার সুযোগ দিয়েছেন।


অনুবাদকের কথাঃ এখানে একটি বিষয় স্পষ্ট করা প্রয়োজন যে, তাকফীরের তাত্ত্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা এবং এর হুকুম প্রয়োগ করা দুটি ভিন্ন জিনিস। অধিকাংশ বড় আলিমরা তাকফীরের শর’ইয়ী দিক বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছেন এবং স্পষ্টরুপে তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন, এবং এর শর’ইয়ী হুকুম কোন ব্যক্তি বা দলের উপর প্রয়োগ করার অধিকার একমাত্র আলিমদেরই রয়েছে।    

এটা সাধারণ মুসলিমদের জন্য বৈধ নয় যে তারা এসব হুকুমের বাস্তবিক প্রয়োগে নিজেকে নিয়োজিত করবে। উদাহরণ স্বরূপঃ সাধারণ একজন মুসলিমের জন্য এটা জানা জরুরি যে গনতন্ত্র ইসলাম বহির্ভূত আলাদা একটি জীবন ব্যবস্থা এবং এর মূলনীতির জন্য এটি পরিষ্কার কুফর। কিন্তু এই ত্বাত্তিক হুকুম নিয়ে বাস্তবিক ব্যক্তি বা দল বিশেষের উপর তাকফির করা থেকে একজন সাধারণ মুসলিমের দূরে থাকা বাধ্যতামূলক।