নাজিমুদ্দীন সামাদ - সত্য উন্মোচন
বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহীম
শাহবাগী ইসলামবিদ্বেষী ব্লগারদের দ্বারা সংঘটিত নবী সঃ এর অবমাননার প্রতিবাদে ২০১৩ সালের ৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয় হেফাযতে ইসলামের ঐতিহাসিক লংমার্চ। নবী সঃ এর অবমাননাকারীদের বিচারের ইস্যুতে পুরো বাংলাদেশ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পরে। একদিকে এই ভউমির উলামায়ে কেরাম ও তালিবুল ‘ইলমসহ ইসলামপ্রেমী জনতা, অন্যদিকে শাহবাগী রাম-বাম-নাস্তিক-মুরতাদ, প্রগতিশীল ও সেক্যুলারিসমের ধারক-বাহকরা। বাংলাদেশের প্রিন্ট ও ভিযুয়াল মিডিয়া ও সরকার এ সময় শাহবাগী ইসলামবিদ্বেষীদের পক্ষে অবস্থা নেয়। পাশ্চাত্যের ক্রুসেডার-যায়নবাদী শক্তি এবং তাদের অনুগত মিডিয়া এবং প্রতিবেশী দেশের ব্রাহ্মণ্যবাদী মুশরিক শক্তিও এসময় শাহবাগী ইসলামবিদ্বেষীদের পক্ষে নেয়। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের ‘উলামায়ে কেরাম ও তালিবুল ‘ইলমদের নবীপ্রেমী আন্দোলনকে অস্ত্রের জোরে শাপলা চত্বরে কবর দেয়ার চেষ্টা করা হয়। হত্যা করা হয় নবীপ্রেমীদের।
কিন্তু তারা চক্রান্ত করে এবং আল্লাহ কৌশল করেন এবং আল্লাহই সর্বোত্তম কৌশলী।
দেশী-বিদেশী ইসলামবিদ্বেষী শক্তির সমর্থন শাহবাগীদের কোন কাজে আসে নি। শাপলা চত্বরের চেতনাকে কবর দেওয়া যায় নি। বরং বারবার নবীপ্রেমী যুবারা, মুহাম্মদ ইবনে মাসলামা রাঃ ও আব্দুল্লাহ ইবনে আতিক রাঃ এর সন্তানেরা প্রমাণ করে দিয়েছে, যতোবারই এ ভূমিতে থাবাবাবা রাজীবরূপী কাব বিন আশরাফ, আর আবু রাফেরূপী অভিজিৎ রায়দের বাড় বাড়বে, ততোবারই তাদেরকে উচিত শিক্ষা দেওয়া হবে। ২০১৩ এর পরের তিন বছরে শাহবাগী ইসলামবিদ্বেষীদের জন্য দুনিয়া সংকীর্ন হয়ে এসেছে, কিছু শাহবাগী দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়েছে, কিছু শাহবাগী ইঁদুরের মতো আত্মগোপন করে আছে আর কিছু শাহবাগীকে জাহান্নামের টিকিট কেটে দেওয়া হয়েছে –নিজেদের ঘর, কর্মস্থল কিংবা তাদের কেন্দ্র টিএসসি বা শাহবাগে কোথাও তারা মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে পারেনি। আর সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর। তিনি দিনসমূহকে এভাবে আবর্তিত করেন। ২০১৩ এর প্রবল শক্তিশালী শাহবাগ আজ একটি নিকৃষ্ট গালিতে পরিণত হয়েছে।
২০১৩ এর ৬ এপ্রিলের ঠিক তিন বছর পর, ২০১৬ এর ৬ এপ্রিল ঢাকার সূত্রাপুরে হত্যা করা হয় নাজিমুদ্দীন সামাদ নামে এক যুবককে।
মিডিয়ার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নিহত নাজিমুদ্দীন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সান্ধ্যকালীন ছাত্র। দেশী ও বিদেশি মিডিয়াতে ইতিমধ্যে নাজিমুদ্দীনকে মুক্তচিন্তক, ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে কলমধারী লেখক ও যোদ্ধা হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। পাশাপাশি গণজাগরন মঞ্চের সাথে তার সম্পৃক্ততার কথাও উঠে এসেছে। এসব মিডিয়ার বক্তব্য অনুযায়ি মুক্তচিন্তা, ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনা ও ইসলামপন্থী ও জঙ্গিবাদের বিরোধিতা করার কারণে নাজিমুদ্দীনকে হত্যা করা হয়েছে।
নিইয়র্ক টাইমস তাদের রিপোর্টে বলছে ইসলামপন্থীদের বিরোধিতা করার জন্য নাজিমুদ্দীনকে হত্যা করা হয়েছে।
ব্রিটেনের গার্ডিয়ান বলছে, ইসলামপন্থীদের সমালোচনা করার কারণে ধর্মনিরপেক্ষ মুক্তচিন্তার অধিকারী নাজিমুদ্দীনকে হত্যা করা হয়েছে।
বিবিসির ভাষ্য হলঃ ধর্মনিরপেক্ষ মতপ্রকাশের কারণে ছাত্র নাজিমুদ্দীনকে হত্যা করা হয়েছে
ফক্স নিউয, ডেইলি মিররসহ অন্যান্য বৈশ্বিক গণমাধ্যমেও এভাবেই বিষয়টি উপস্থাপন করা হচ্ছে। আর বাংলাদেশের শাহবাগী মিডিয়ার ভূমিকা তো সহজেই অনুমেয়। তারা এরই মধ্য নাজিমুদ্দীনকে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের “শহীদ” হিসেবে প্রমানে আদাজল খেয়ে লেগে গেছে।
এ পরিচয়গুলো দ্বারা শাহবাগী ও ক্রুসেডার-যায়নবাদী ইসলামবিদ্বেষী মিডিয়া নাজিনুদ্দীনকে এক মহান সেক্যুলার বীর হিসেবে চিত্রায়িত করতে চাইছে। তারা সাধারণ মানুষকে বোঝাতে চাচ্ছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবি এবং ধর্মান্ধন্তা ও ইসলামপন্থার বিরোধিতা করা, এবং ব্যক্তিগতভাবে নাস্তিক হবার কারণেই নাজিমুদ্দীনকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু বরাবরের মতোই তারা মিথ্যার আড়ালে আসল ঘটনাকে চাঁপা দিতে চাইছে। নাজিমুদ্দীনের প্রকৃতরূপকে তারা ধাপা দিতে চাইছে। নাজিমুদ্দীনের মুখে পতাকা আঁকা সস্তা বিপ্লবী ইমেজের আড়ালে লুকিয়ে আছে আরেকটি অন্ধকার দিক, যা এই ইসলামবিদ্বেষী মিডিয়াগুলো চেপে যাচ্ছে। আসুন দেখা যাক নাজিমুদ্দীন আসলে কে।
কে এই নাজিমুদ্দীন?
মহান শাহবাগী মুক্তচিন্তক ও কলমযোদ্ধা নাজিমুদ্দীন
তার পূর্বসুরী থাবা বাবা রাজীব, অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর বাবু, অনন্ত বিজয়, নীলয় নীলের মতোই নাজিমুদ্দীন ছিল তীব্র ইসলামবিদ্বেষী। বিজ্ঞানমনস্কতা ও মুক্ত চিন্তার নামে সে ইসলামবিদ্বেষের বিষবাষ্প ছড়াতো, যার প্রচুর প্রমাণ তার ফেসবুক আইডিতে বিদ্যমান।
আইডি লিঙ্কঃ https://www.facebook.com/profile.php?id=100001090271428
শাহবাগী মুক্তমনা নাজিমুদ্দীনের ভয়ঙ্কর ইসলামবিদ্বেষের নমুনাঃ
নাজিমুদ্দীন তাঁর ফেসবুক আইডির বিভিন্ন লেখা এবং পোষ্টে ক্রমাগত, মহান আল্লাহ, তাঁর কিতাব, নবী সঃ, এবং ইসলামের বিধিবিধানকে অশ্রাব্য-অশ্লীল ভাষায় আক্রমণ করেছে। এই “মহান” কলমযোদ্ধা শাহবাগী বিপ্লবীর ইসলামবিদ্বেষের কিছু নমুনা পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলঃ
কুসংস্কারকে আক্রমণের ছুতোয় নবী সঃ -এর অবমাননা
অগাস্ট ৬, ২০১৫ এর এই পোষ্টে ইসলামের প্রতি নাজিমুদ্দীনের তীব্র বিদ্বেষের কদর্য রূপ অত্যন্ত স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। বলা যায় তার এই একটি পোষ্ট দেখেই বোঝা যায় আসলেই কি ইসলামপন্থা কিংবা জঙ্গিবাদের বিরোধিতা , কিংবা যুদ্ধাপরাধের বিচার চাওয়ার কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছিলে? নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছিল নবী সঃ এর অবমাননার কারণে। এই একটি ছবির পর আর কোন প্রমানের দরকার থাকে না, তবুও আরও কিছু প্রমাণ দেওয়া হল –
চাপাতি হাতে মহান মুক্তচিন্তক নাজিমুদ্দীন। বিস্ময়কর ব্যাপার হল মিডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী এমনি কোন চাপাতির আঘাতেই তার বিকৃত চিন্তার বিকৃত মগজ মগজ ছিটকে বেরিয়ে সূত্রাপুরের রাস্তায় পড়ে ছিল।
এভাবে বারবার অকারনে, অপ্রাসঙ্গিকভাবে এই অভিশপ্ত নাজিমুদ্দীন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার নাম বিকৃত করেছে। যখন তাকে ভদ্র ভাবে শোধরানোর চেষ্টা করা হইয়েছে তখন সে দ্বিগুণ ঘৃণা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে মুসলিমদের ও ইসলামকে আক্রমণ করতে।
এছাড়া সে মরিয়ম আলাইহিস সালাম সম্পর্কে চরম ঘৃণ্য মন্তব্য করেও পোস্ট করেছে, যা মুসলিমদের পাশাপাশি বাংলাদেশের খ্রিষ্টান নাগরিকদের ধর্মবিশ্বাসের উপরেও চরম আক্রমণের শামিল-
পাশপাশি পর্দা-রোযাসহ ইসলামের বিধিবিধান ও উলামা ও তালিবুল ‘ইলমদের প্রতি তাঁর তীব্র ঘৃনার পরকাশ ঘটেছে বিভিন্ন পোষ্টে –
প্রচন্ড ইসলামবিদ্বেষী ব্লগ ধর্মকারীর ছবি পোস্ট করে নারী স্বাধীনতার মেসেজের ছুতোয় আল্লাহ-র নাম বিকৃতি ও ইসলাম অবমাননা
অর্ধ উলঙ্গ এই নারীর ছবি দিয়ে নারীস্বাধীনতার মেসেজের ছুতোয় পর্দাকে আক্রমণ
নগ্ন নারীর ছবি দিয়ে রোযাকে আক্রমন
উলামায়ে কেরাম ও তালিবুল 'ইলমদের "বেশ্যা-মাগী" বলে সম্বোধন
সর্বোপরি নাজিমুদ্দীনের সমস্ত চিন্তা-চেতনা ও আদর্শ ছিল ইসলাম ও মুসলিমদের ঘৃণা করা ও ইসলাম ও মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানো, যেমন নিচের ছবিতে দেখা যাচ্ছে –
এমনকি চরম ইসলামবিদ্বেষী ডোনাল্ড ট্রাম্পও নাজিমুদ্দীনের মতো এরকম চরমবিদ্বেষপ্রসূত উক্তি করতে দ্বিধা করবে।
তার এহেন পোষ্ট ও আচরণ থেকে স্পষ্ট ভাবে বোঝা যায় এ ব্যক্তি ছিল চরম ইসলামবিদ্বেষী। আর বিবিসি, নিউইয়র্ক টাইমস, গার্ডিয়ান আর দেশীয় শাহবাগী মিডিয়ার সংজ্ঞায় ইসলামবিদ্বেষ মানেই মুক্তচিন্তা। তাই থাবা বাবা, অভিজিৎ, ওয়াশিকুর, অনন্ত বিজয়, নিলয় নীল, দীপন আর নাজিমুদ্দীন সব ইসলামবিদ্বেষীই তাদের কাছে ধর্মনিরপেক্ষ চিন্তাবিদ, মুক্তচিন্তার হিরো। একারণেই জাফর ইকবাল, শাহরিয়ার কবীর, আনিসুজ্জামান, সুলতানা কামাল, প্রথম-আলো, ডেইলি স্টার, ৭১ সহ অন্যান্য সকল মিডিয়াকে আপনি দেখবেন বারবার নাজিমুদ্দীনের মতো জানোয়ারদের সমর্থনে, এদের ঘৃণ্য অপকর্ম হোয়াইটওয়াশ করতে ছুটে আসতে। একারণেই পশ্চিমা মিডিয়া আর মানবাতার ধারক বাহক এজেন্সীগুলো এসব ইসলামবিদ্বেষী জানোয়ারদের হিরো বানায়। কারণ এদের সবার উদ্দেশ্য একই, আর তা হল ইসলাম ও মুসলিমদের আক্রমণ করা। ১৪০০ বছর ধরে ইসলামের বিরুদ্ধে য যুদ্ধ কাফিররা চালিয়ে আসছে নাজিমুদ্দীনসহ উপরোক্ত সকলেই আসলে সে যুদ্ধেরই সৈনিক। প্রকৃত সত্য অভিজিৎ-থাবাব বাবা-নাজিমুদ্দীনরা হল আধুনিক ক্রুসেডার ও প্রাচ্যবিদদের আদর্শিক জারজ সন্তান, আর জাফর ইকবাল থেকে শুরু করে ৭১ এর জন্মও একই ঔরসে। আর তাই একজন সেনার অপকর্ম প্রকাশ হবার সম্ভাবনা দেখা দিলেই তারা সকলে এসে তাকে বীর প্রমানে লেগে পরে।
অতএব এর পর থেকে মিডিয়াতে থাবা বাবা, অভিজিৎ, নাজিমুদ্দীন কিংবা এদের মতো এই জাহান্নামের কাফেলায় যারাই শামিল হবে, তাদের ব্যাপারে কোন কথা শুনবেন, তখন মনে রাখবেন এরা সবাই এক দলের লোক। আর তাই এরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সত্যকে গোপন করছে। কোন ইসলামপন্থী দল, “কিংবা জঙ্গিদের বিরোধিতার জন্য না, নিছক নাস্তিক হবার কারণে না, বরং ইসলাম অবমাননার কারণে নাজিমুদ্দীনকে হত্যা করা হবার সম্ভাবনাই অধিক যুক্তিযুক্ত।
এরপর থেকে মিডিয়া যখন কোন ব্যক্তির ব্যাপারে “মুক্তচিন্তা”, “ধর্মনিরপেক্ষ”, “প্রগতিশীল”, “কুসংস্কার বিরোধী” – এই শব্দগুলো ব্যবহার করবে, বুঝে নেবেন তারা আসলে বোঝাচ্ছে সে লোকটি হল চরম ইসলামবিদ্বেষী, নবী সঃ এর অবমাননাকারী ও ঘৃণার ক্যানভাসার।
সকল প্রশংসা আল্লাহ-র যিনি এই ইসলামবিদ্বেষী অভিশপ্ত জীবকে হত্যা করেছেন, এবং বিশ্বাসীদের অন্তরসমূহকে শীতল করেছেন। শান্তি বর্ষিত হোক ঐ নাম না জানা আল্লাহ-র সৈনিকদের উপর যাদের মাধ্যমে আল্লাহ এই নাজিমুদ্দীনকে হত্যা করেছেন। যে চাপাতির ছবি দিয়ে সে আল্লাহর দ্বীনকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতে চেয়েছিল সে চাপাতির আঘাতেই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তার মৃত্যু নির্ধারিত করে রেখেছেন। নিশ্চয় আল্লাহ সকল কিছুর উপর শক্তিশালী।
নিশ্চয় শাপলা চত্বরের স্মৃতি এ ভূমি থেকে মুছে যাবে না, নিশ্চয় মুসলিমদের শরীরে এক ফোটা রক্ত থাকা পর্যন্ত নবী সঃ এর কোন রকম অবমাননা এই ভূমিতে মেনে নেওয়া হবে না।