সোমালিয়ায় আল-কায়েদার শাখা আল-শাবাবের দীর্ঘ জিহাদ এবং শরী’আহ কায়েমের ঈমানদীপ্ত কিছু তথ্য ।
(যা প্রত্যেক মুমিনকে আনন্দিত করবে ইনশাআল্লাহ্।)
আল-কায়েদার সবচেয়ে দুর্ধর্ষ শাখা আল-শাবাব,যার পুরো নাম হারাকাতুশ-শাবাব আল-মুজাহিদীন। আই আল-শাবাব আমেরিকান ক্রুসেডার ও তার সহযোগী কুফফার-মুরতাদদের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ধরে জিহাদ চালিয়ে যাচ্ছে এবং সোমালিয়ার এক বিরাট অংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আল্লাহর যমীনে আল্লাহর দ্বীন কায়েম করেছেন,আলহামদুলিল্লাহ।
*** আল-শাবাবের নিয়ন্ত্রিত ভূমির পরিমাণঃ
আমেরিকা,জাতিসংঘ,আফ্রিকান ইউনিয়নের সম্মিলিত কুফফার-মুরতাদ জোট বাহিনীর কর্তৃক ঠেক দিয়ে রাখা সোমালিয়ার মূল ভূখণ্ডের প্রায় ৮০ ভাগ এলাকা এখন আল-শাবাব মুজাহিদদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আলহামদুলিল্লাহ্।
স্বায়ত্বশাসিত পুন্টল্যান্ড এবং সোমালিল্যান্ড বাদ দিয়ে বর্তমান সোমালিয়ার আয়তন প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার। আর তার ৮০ ভাগ মানে ২ লাখ ৫০ হাজার বর্গকিলোমিটারের অধিক এলাকা এখন আল-কায়েদার এই দূর্ধর্ষ শাখার নিয়ন্ত্রণে, বি-ইযনিল্লাহিল ‘আযীয।
২০১৬ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত বিবিসির ম্যাপটি সোমালি সাংবাদিকের টুইটার থেকে দেখুন....
http://tinyurl.com/jb4s7f3
বিবিসির ওয়েবসাইট থেকে নিউজসহ ম্যাপটি দেখুন..... http://tinyurl.com/klml38f
নভেম্বর মাসের পর আল-শাবাব মুজাহিদরা আরো বিভিন্ন এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন,আলহামদুলিল্লাহ। গত নভেম্বরে প্রকাশিত আল-জাযিরার একটি ভিডিও রিপোর্টে বলা হয়, মাত্র ৫ মাসে আল-শাবাব মুজাহিদরা ১০ টি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে,যেগুলো ক্রুসেডার ইথিউপিয়ার দখলে ছিলো।
বিশেষ করে গত পরশুদিন সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু থেকে ৩০ কিঃমিঃ দূরে অবস্থিত আফগোয়ী এলাকার বিস্তীর্ণ ভূমি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে রাজধানীর একেবারে কাছাকাছি চলে এসেছেন মুজাহিদরা।
সর্বশেষ ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ #Nors_Study নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সোমালিয়ার একটি আপডেইট ম্যাপ প্রকাশ করেছে। ম্যাপটিতে আল-শাবাব মুজাহিদদের নিয়ন্ত্রিত এলাকা দেখুন,আর ঈমানী শক্তিতে বলীয়ান হোন।
লিংক.... http://norsforstudies.org/2019/02/9022/
এখানে দেখুন সেই ম্যাপ......
*** কবে থেকে আল-শাবাব এসব এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে ??
সোমালিয়ায় আল-কায়েদার এই শাখা আল-শাবাব হঠাৎ করে এসব এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয়নি বরং ২০০৬ সাল থেকেই সোমালিয়ার বিশাল এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেখানে আল্লাহর শরী’আহ কায়েম করে আসছেন,আলহামদুলিল্লাহ।
২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে বিবিসি প্রকাশিত ম্যাপ অনুযায়ী তখনও আল-শাবাব মুজাহিদরা প্রায় ৫০ ভাগ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতেন।
ম্যাপের লিংক.... http://tinyurl.com/z2tca88
উদাহরণস্বরুপঃ সোমালিয়ার মকোকরী শহরটি আল-শাবাব মুজাহিদদের নিয়ন্ত্রণে ছিলো প্রায় ৭/৮ বছর। অতঃপর মাত্র ১৩ মাস দখলে রেখেছিলো ইথিউপিয়ান কুফফার বাহিনী।
আলহামদুলিল্লাহ,পুনরায় গত নভেম্বর,২০১৬ তে আবারো শহরটি আল-শাবাব মুজাহিদদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে,আলহামদুলিল্লাহ্। শহরের মানুষের মুখে শুনুন তারা আল-শাবাব মুজাহিদদের অধীনে কত নিরাপত্তা ও শান্তিতে বসবাস করছিলো !
আল-জাযিরার ভিডিওতে দেখুন..... https://bit.ly/2TJDnDv
*** আল-শাবাব কাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে ?
আফ্রিকান ইউনিয়নের অধীন সবগুলো রাষ্ট্র বিশেষ করে সৈন্য পাঠিয়ে কেনিয়া,ইথিউপিয়া,উগান্ডা,জিবুতি, বুরুন্ডি,নাইজেরিয়া, ঘানা,গাম্বিয়া,ক্যামেরুন,জিম্বাবুয়ে এবং সিয়েরা লিউন AMISOM নামক একটি সামরিক অপারেশনের আওতায় ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আল-শাবাব মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাচ্ছে।
জাতিসংঘ নামক কুফফার সংঘ আফ্রিকান ইউনিয়নের এই বাহিনীকে সরাসরি সহায়তা করছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি সৈন্য পাঠিয়ে বিমান হামলাসহ আল-শাবাবের বিরুদ্ধে কুফফার-মুরতাদদের এই যুদ্ধে সবধরণের সহায়তা করে যাচ্ছে।
তুরষ্ক এবং অস্ট্রেলিয়া সামরিক,অর্থনৈতিকসহ বিভিন্নভাবে সোমালিয়ার দালাল মুরতাদ বাহিনীকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
এছাড়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এই ক্রুসেডার-মুরতাদ জোটকে আর্থিকভাবে ব্যাপক সহায়তা করে থাকে।
বিদেশী এসব কুফফার-মুরতাদ বাহিনী ছাড়া সোমালিয়ার মুরতাদ ফেডারেল সরকারের বাহিনী, পুন্টল্যান্ড এবং সোমালিল্যান্ডের মুরতাদ বাহিনী, আহলুস-সুন্নাহ ওয়াল-জামা’আত নামে একটি সুফিবাদী মুরতাদ দল এবং ইসলামের নামে গণতন্ত্র করা বিভিন্ন দল সরাসরি আল-শাবাব মুজাহিদদের নিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।
*** আল-কায়েদার অধীনে আল-শাবাবঃ
আল-শাবাব শুরু থেকেই আল-কায়েদার অধীনে থাকলেও ২০১২ সালে প্রকাশ্যে অফিসিয়াল বার্তার মাধ্যমে আল-শাবাবের তৎকালীন আমীর শাইখ মুখতার আবু যুবাইর রাহিঃ হাকীমুল উম্মাহ শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ কে বাই’আতের ঘোষণা দেন। এরপর থেকে আল-কায়েদার অত্যন্ত অনুগত শাখা হিসেবে আল-শাবাব ক্রুসেডার আমেরিকা ও তার দোসরদের বিরুদ্ধে নিরবচ্ছিন্ন জিহাদ ও বিস্তীর্ণ ভূমিতে আল্লাহর শরী’আহ কায়েমে নিয়োজিত রয়েছেন।
*** আল্লাহর যমীনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের অপূর্ব দৃষ্টান্তঃ
আলহামদুলিল্লাহ্, সোমালিয়ার বিশাল ভূমিতে নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সাথে সাথেই আল-শাবাব মুজাহিদরা তাদের এলাকায় পূর্ণাঙ্গভাবে আল্লাহর দ্বীন কায়েম করেছেন।
২০১৩ সালে ব্রিটিশ মিডিয়া ‘চ্যানেল ফোর’ এর আল-শাবাব মুজাহিদদের নিয়ে করা ডকুমেন্টারিটি দেখুন। সেখানে উনাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকার বিভিন্ন বিষয় দেখানো হয়েছে।
লিংক....
এছাড়া ২০১৪ সালে ‘Vice News’ এর করা ভিডিও ডকুমেন্টারিতে আল-শাবাব মুজাহিদদের শরী’আহ কায়েমের দৃশ্য দেখানো হয়েছে। এই ডকুমেন্টারিতে আল-শাবাবের বিরোধিতা করা সাংবাদিকও স্বীকার করেছে, আল-শাবাব সোমালিয়ায় তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় নিরাপত্তা ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে।
দেখুন....
*** আল-শাবাবের শরী’আহ কায়েমের ব্যাপারে শাইখ আনওয়ার আল-আওলাকী রাহিঃ
সোমালিয়ায় আল-শাবাব মুজাহিদদের শরী’আভিত্তিক রাষ্ট্র কায়েমের ব্যাপারে শাইখ আনওয়ার আল-আওলাকী রাহিঃ এর সাক্ষাৎকারের একটি অংশ দেখুন...............
“ আল-মালাহিমঃ আমেরিকানরা আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে যে সোমালিয়ার মুজাহিদীনদের সাথে, বিশেষ করা শাবাব আল-মুজাহিদীনদের সাথে আপনার যোগাযোগ আছে,মূলত আপনার ওয়েব সাইটে আপনি যখন তাঁদেরকে তাদের বিজয় লাভের পর অভিনন্দন জানিয়ে একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন। শাবাব আল-মুজাহিদীনদের সাথে আপনার সম্পর্কের বাস্তবতা কি? আর সোমালিয়ার জিহাদ ও মুজাহিদীন সম্পর্কে আপনার অভিমত কি?
শাইখ আনোয়ার আল-আওলাকিঃ সোমালিয়ার শাবাব আল-মুজাহিদীনদেরকে অভিনন্দন জানিয়ে আমি একটি চিঠি লিখেছিলাম এবং তারাও অভিনন্দন জানিয়ে উত্তর দিয়েছিল। এরপর আমেরিকানরা এই কথা বলেছে।
সোমালিয়ায় জিহাদি অভিজ্ঞতা নিয়ে বলতে হবে এটি আসলেই একটি অভিজ্ঞতা। আমার মতে, এবং আল্লাহই ভাল জানেন,এ কারণেই ইসলামী আন্দোলন,আলিম আর ইসলামী দলগুলির সোমালিয়ায় দূত পাঠানো উচিত, যাতে তারা এই মুজাহিদীনদের থেকে (জিহাদের)অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে এবং ফিরে গিয়ে এই অভিজ্ঞতাকে অন্যান্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারে।
ইসলামী আন্দোলনগুলি এই উম্মাহর সমস্যার সমাধান খুঁজছে যেমনিভাবে আলিমগণও খুঁজছেন। এই ইসলামী আন্দোলনগুলি যে সমাধানগুলি গ্রহণযোগ্য মনে করে সেগুলো তুলে ধরে। এবং একইভাবে অনেক আলিম যে সমাধানগুলি গ্রহণযোগ্য মনে করেছিলেন সেগুলো তুলে ধরেছেন। এখন আমরা আমাদের চোখের সামনে সমাধান দেখছি সোমালিয়ায়। এই মুজাহিদ দল সামান্য কিছু সামর্থ্য নিয়ে একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্টা করেছে যেখানে তারা সর্বশক্তিমান আল্লাহ্র আইন অনুসারে শাসন করতে পারছে। এখন তারা মানুষের সামনে সমাধান তুলে ধরেছে। এখন মুজাহিদীনদের নিয়ন্ত্রনাধীন এলাকাগুলোতে মানুষ শান্তিতে বসবাস করছে, অর্থনীতি উন্নতি সাধন করছে।কেননা যখন শান্তি প্রতিষ্টা হয় তখন ব্যবসা বাণিজ্য আর কৃষিতে সমৃদ্ধি অর্জন করা যায়। সুতরাং এই অভিজ্ঞতা পথ দেখাচ্ছে যে, অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের উপকৃত হওয়া উচিত। এখন তারা বাস্তবতার সাথে টিকে আছে আর ইসলামী শারী’আহ থেকে তারা এই সমাধানের বাস্তবতা তুলে ধরছে। এজন্যই আমি বলেছি এই অভিজ্ঞতা স্বতন্ত্র আর জাতিগুলোর উচিত এখান থেকে উপকৃত হওয়া।”
আল-মালাহিম মিডিয়ার সাথে শাইখ আনওয়ার আল-আওলাকী রাহিঃ এর সাক্ষাৎকারের লিংক.........
বাংলা অনুবাদ……… https://justpaste.it/f9k9
ইংরেজি টেক্সট............ http://tinyurl.com/hs79p52
মূল সাক্ষাৎকারের ভিডিও(লগইন করতে হবে).........
*** আল-শাবাবের তুলনায় আইএস !!!
আইএস নামক দলটির অধীনে আল-শাবাবের অর্ধেক ভূমিও আছে কিনা সন্দেহ ! ইরাকেতো মসূল শহরেরও অর্ধেক ইতোমধ্যে হারিয়ে ফেলেছে।এছাড়া ইরাকে আইএসের আর কোনো বৃহৎ এলাকাই নেই। আবার অনেক ক্ষেত্রে আজ দখল করে তো কাল নেই !!
অথচ এই আইএস নিজেদের মনগড়া মানহাজ তৈরি করে আজ সারা দুনিয়ার মুজাহিদদেরকে মুরতাদ আখ্যা দিয়েছে,না’উযুবিল্লাহ !! এই দলটির খারিজী মতবাদের ইতিহাস এবং তাদের পথভ্রষ্টতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমার লেখা আর্টিকেলটি পড়ুন।
লিংক.... https://justpaste.it/takfir_is
আল-শাবাব মুজাহিদদের থেকে হাতেগোনা কয়েকজন ব্যক্তি আইএসকে বাই’আত দিয়েছে,যাদের অধীনে সোমালিয়ায় কোনো ভূমিতো দূরের কথা ঠিকমতো অস্তিত্বই নেই। আল-শাবাব স্পষ্টভাবে এই খারিজী দল আইএস থেকে দূরে থাকার জন্য সকলকে বার্তা জানিয়ে দিয়েছে।
পরিশেষে বলবো, আল-শাবাব যারা দীর্ঘদিন ধরে ক্রুসেডার আমেরিকা ও তার লেজ কুফফার-মুরতাদদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে এবং বিস্তীর্ণ ভূখণ্ডে আল্লাহর শরী’আহভিত্তিক রাষ্ট্র কায়েম করে চলেছেন,তারা আল-কায়েদার সবচেয়ে অনুগত শাখাগুলোর একটি।
আইএসের অন্ধকারে থাকা সমর্থকদের জেনে রাখা দরকার, আল-কায়েদার একটি শাখার অর্ধেকও আইএস নয়,আলহামদুলিল্লাহ। পুরো আল-কায়েদার হিসাব-কিতাব আলাদা রেখে দিলাম।
সুতরাং শাইখ উসামা বিন লাদেন রাহিঃ এর রেখে যাওয়া গ্লোবাল জিহাদ আল-কায়েদার অধীনে সঠিক মানহাজে আল্লাহর শরী’আহ কায়েম করেই এগিয়ে চলছে,আলহামদুলিল্লাহ।আল-কায়েদা কুফফার-মুরতাদদের বারুদের মোকাবেলা করেই আত-ত্বয়িফাতুল মানসূরার দায়িত্ব পালন করে যাবে বি-ইযনিল্লাহ। আল্লাহ্ তা’আলা আমাদেরকে এই মুবারক জামা’আতের সাথে যুক্ত থেকে জিহাদ করার তাউফীক্ব দান করুন।
.
ফেইসবুকে বর্তমান আইডি.... https://www.facebook.com/AbdullahHasan2001