JustPaste.it

 

নয়ন চ্যাটার্জির নির্বাচিত রচনা

 

 

 

 

 

 

 

 

 

https://www.facebook.com/noyonchatterjee5

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

# বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ ঘোষণা করার জন্য ২০১৫ সাল থেকে জাতিসংঘে দেনদরবার করে আসছে আওয়ামী সরকার। এটা অনেকটা পলিটিকাল কারণ হতে পারে। কারণ নির্বাচনের আওয়ামীলীগ বলবে, “আমরা বাংলাদেশকে স্বল্প উন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করেছি।

কিন্তু আওয়ামীলীগের এই নির্বাচনী বক্তব্য দেয়ার জন্য বাংলাদেশে কত মানুষকে পশ্চাৎদেশ দিয়ে বাশ নিতে হবে সেটা বাংলাদেশের মানুষ জানে না। ১টা টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট খেলায় জিতে আনন্দে ভাসছে পুরো বাংলাদেশ, কিন্তু আগামী ২২ মার্চ দেশে কি হতে যাচ্ছে, তার খবর কি জনগণের আছে ?

মধ্যম আয়ের দেশ ঘোষণা করলে আওয়ামী সরকারের কি লাভ হবে ?
উত্তর দুটো
১) সরকার বিদেশ থেকে আরো অনেক ঋণ আনতে পারবে, ফলে সেখান থেকে আরো অনেক মারতে পারবে।
২) আমরা বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশের পরিণত করেছি”- এটা আগামী নির্বাচনী শ্লোগান হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে।

মধ্যম আয়ের দেশ ঘোষণা করলে জনগণের কি ক্ষতি হবে ?
উত্তর : অনেকগুলো।

প্রথমত, সরকার বেশি ঋণ পাবে এটা ঠিক, কিন্তু স্বল্প উন্নত দেশ হিসেবে ঋণের সুদ ও শর্তগুলো কিছুটা হলেও সহজ ছিলো। কিন্তু মধ্যম আয়ের দেশ হলে সুদ ও শর্ত বাড়বে। ফলে দেশ আরো বিদেশী ঋণের শিকলে বদ্ধ হবে, দেশ আরো বেশি সম্রাজ্যবাদীদের পেটের মধ্যে ঢুকবে।

দ্বিতীয়ত, স্বল্প উন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশে বিদেশে শুল্কক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় পেতো। কিন্তু মধ্যম আয়ের দেশ ঘোষণা করলে বাংলাদেশে ১৮ হাজার কোটি টাকার বাজার হারাবে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে। ইইউ বর্তমানে বাংলাদেশের ৯৭ দশমিক ৮ শতাংশ পণ্যকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়। এই সুবিধা হারালে আমাদের রফতানি আয়ে বড় প্রভাব পড়বে। কর্পোরেটোক্রেসিরি সূত্র অনুসারে, বাংলাদেশের উৎপাদন খাতকে আরো বেশি গলাটিপে ধরা হবে। ফলে ইচ্ছা-অনিচ্ছায় দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত বা দরিদ্র হবে।

তৃতীয়ত , স্বল্প উন্নত দেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো পেটেন্ট লাইসেন্স ছাড়াই ওষুধ উৎপাদন করতে পারে। কিন্তু এ ঘোষণার ফলে পেটেন্টের জন্য আলাদা টাকা দিতে হবে। ফলে ওষুদের দাম বেশ বৃদ্ধি পাবে। আমার জানা মতে, মিডলইস্টে ওষুদের দাম অনেক বেশি। বাংলাদেশে যে ওষধ ২ টাকা, মিডল ইস্টে ঐ ওষুধ ২০-৩০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়। বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ ঘোষণা করলে ওষুধের দাম লাফ দিয়ে বাড়বে। ফলে অনেকে ওষুধ না খেতে পেয়ে মারা যাবে।

স্বল্প উন্নত দেশথেকে মধ্যম আয়ের দেশহলে আমার দৃষ্টিতে কি হবে ?
আমি যেটা বুঝলাম- কর্পোরেটোক্রেসিপলিসির একটা সিস্টেম এটা। অর্থাৎ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে একটা দেশকে ধাপে ধাপে অক্টোপাসের মত চুষে খাবে সম্রাজ্যবাদীরা। প্যাটেন্ট, জলবায়ু, হাজারো নিয়মনীতি মাধ্যমে দেশের উৎপাদনশীল খাতকে আরো গলাটিপে ধরবে, দরিদ্র মানুষকে আরো দরিদ্র বানাবে। মানুষ না খেতে পেয়ে, না চিকিৎসা পেয়ে মারা যাবে। কিন্তু সম্রাজ্যবাদীরা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নীলকরদের মত রক্ত চুষে খাবে। সোজাভাষায় ধাপে ধাপে দেশ বিক্রি হবে।
তবে এক্ষেত্রে ঐ দেশের ক্ষমতাসীন সরকারকে দুর্নীতি করে পকেট ভরার আরো সুযোগ দেয়া হবে। তবে এসময় সম্রাজ্যবাদীরা বাংলাদেশকে ৪ বছর অবজারভেশনে রাখবে, তাদের কথামত কাজ করলে সূচকস্থায়ী করবে। এ অবজারভেশনের সময় দুর্নীতিবাজ সরকার ওদের কাছে সবকিছু বিলিয়ে দিতে কার্পন্য করবে না।

মধ্যম আয়ের দেশকথাটা শুনতে ভালো লাগলেও বাস্তবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির দরুণ চালের দাম ৭১ টাকা কেজি হওয়ায় জনগণ ভাত খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে, বাজারে গিয়ে দেখুন- বেচা-বিক্রি কমে গেছে। এ অবস্থায় তো দেশে প্রচ্ছন্ন দুর্ভিক্ষ দৃশ্যমান, ঠিক সে সময় অর্থনৈতিক সূচক অগ্রগতি রাজনৈতিক মোটিভ ছাড়া অন্য কারণে হতে পারে না।

তথ্যসূত্র:
১) http://bit.ly/2teLmNh
২) http://bit.ly/2Fz5UBC
৩) http://bit.ly/2DfRjcp

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

# আওয়ামী সরকার দেশজুড়ে ব্যাপক উন্নয়ন হাতে নিয়েছে, এমন কোন রাস্তা-চিপা নাই যেখানে ফ্লাইংওভার নির্মাণ করতেছে না। অতিসম্প্রতি রাজধানীতে শুরু হতে যাচ্ছে ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। ঢাকার যেসব এলাকায় ফ্লাইংওভার আছে, এই এক্সপ্রেসওয়ে তার উপর দিয়ে যাবে। এই এক্সপ্রেসওয়ে আবার যুক্ত হবে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে এর সাথে। বলাবাহুল্য ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারণে ঢাকার ব্যস্ততম ৩৫ কিলোমিটার লম্বা রাস্তা খোড়া হলে ঢাকাবাসী কি পরিমাণ হেনস্তা হবে, সে কথা নাইবা বললাম। তবে জনগণ যতই কষ্ট করুক, এই এক্সপ্রেসওয়েতে উঠতে কিন্তু জনগণকে গুনতে হবে মোটা টোল।

বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশের জনগণকে কষ্ট দিয়ে এখন যত ফ্লাইংওভার-সেতু নির্মাণ হচ্ছে, কোনটাই জনগণের জন্য তৈরী হচ্ছে না, হচ্ছে বিদেশীদের জন্য। একটি ফ্লাইংওভার থেকে আরেকটি ফ্লাইংওভার, ফ্লাইংওভার থেকে এক্সপ্রেসওয়ে, সেখানে থেকে পদ্মা সেতু, পদ্মা সেতু থেকে পায়রা বন্দর। এগুলো যত তৈরী হচ্ছে কোনটাই জনগণের জন্য হচ্ছে না, হচ্ছে এশিয়ান হাইওয়ের অংশ হিসেবে, যেন বিদেশীরা বাংলাদেশে যানজট এড়িয়ে তাদের লুটের প্রজেক্টে সহজেই পৌছাতে পারে।

একইভাবে যশোরে গাছ কেটে যে ৬ লেন রাস্তার কথা বলা হচ্ছে, সেটাও কিন্তু জনগনের দরকার নেই। ভারতের সীমানার ঐ পাড়ে ৬ লেন রাস্তা আছে, তাই বাংলাদেশে ৬ লেন রাস্তা করতে হবে, যেন ভারতীয় মালামাল একই ফ্লোতে বাংলাদেশে ঢুকতে পারে। যশোরে যে রাস্তা আছে, তা দুইপাশে একটু মোটা করলেই যথেষ্ট, আলাদা করে ৬ লেন করা অপচয় ছাড়া কিছু নয়।

আমি আফ্রিকার এমন রাষ্ট্র চিনি, যাদের রাস্তাঘাট খুব উন্নত, কিন্তু ঐ দেশের মানুষ খেতে পায় না। বাংলাদেশে এখন একই সিস্টেম চলছে। বাংলাদেশের জনগণের টাকা দিয়ে, জনগণকে কষ্ট দিয়ে তৈরী করা হচ্ছে ফ্লাইংওভার, এক্সপ্রেসওয়ে, সেতুর মত ভৌত কাঠামো। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষকে চাল কিনতে হচ্ছে ৭৭ টাকা কেজি। গতকালকে খবর এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে দ্রব্যমূল্য আরো বাড়বে। (http://bit.ly/2FZWkIH) তাহলে খুব শিঘ্রই বাংলাদেশের চালের মূল্য ১০০ টাকায় পৌছাবে এটা নিশ্চিত।

আমি আগেও বলেছি, অর্থনৈতিক ঘাতকরা এই সিস্টেমের নাম দিয়েছে কর্পোরেটোক্রেসি। কর্পোরেটোক্রেসি পলিসির মাধ্যমে সম্রাজ্যবাদীরা বাংলাদেশের মত রাষ্ট্রগুলোকে তাদের গোলাম বানায়। এই সিস্টেমের মাধ্যমে বিদেশী ঋণ দিয়ে বানানো হবে ফ্লাইংওভার, সেতুর মত ভৌত কাঠামো, আর ঋণের বোঝায় ঐ দেশটি হয়ে পড়বে দরিদ্র। দেশের জনগণের টাকায় বানানো সেই সব ভৌতকাঠামো ব্যবহার করে বিদেশীরা, লুটে নেবে দেশের সম্পদ। অপরদিকে উৎপাদনশীল খাতে সরকার কোন বিনিয়োগ করবে না। ফলে মানুষ হতে থাকবে দরিদ্র। মুক্তিযুদ্ধের পর উৎপাদনশীল খাতে সরকারের অবস্থান ছিলো ৫০% এর উপরে। কিন্তু এখন তা নেমে এসেছে ১% এ ( http://bit.ly/2FD79Az)সরকার উৎপাদন বা জিডিপি নিয়ে যে অহংকার করে তাদের সে হিসেবে সরকারের অবদান ১%ও নেই।

বাংলাদেশের জনগণ বুঝছে না, তারা কত বড় ষড়যন্ত্রের কবলে পড়েছে। ব্রিটিশরা এ অঞ্চলে ক্ষমতা নেয়ার পর বেশ কয়েকটি দুর্ভিক্ষ ঘটায়। দুর্ভিক্ষে মারা যায় কয়েক কোটি মানুষ। দুর্ভিক্ষ ঘটানোর কারণ, মানুষ পেট নিয়ে এত ব্যস্ত হয়ে পড়বে, তাদের দেশের সম্পদ কে লুটে নিয়ে গেলো তা টের পাবে না। বাংলাদেশের সম্পদের দিকেও এখন চোখ পড়েছে বিদেশী শত্রুদের, তাই দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে বাংলাদেশেও সৃষ্টি করা হচ্ছে কৃত্তিম দুর্ভিক্ষ। উদ্দেশ্য ১০০টাকায় চাল কিনতে না পেরে জনগণ হয়ে পড়বে হাড্ডিসার, এসুযোগে দেশের সম্পদ লুটতে পারবে বিদেশী শত্রুরা।

 

 

# ক্ষেতের টমেটো ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে, কেজি প্রতি দাম মাত্র ২ টাকা। তাই সেই টমেটো না তুলে ক্ষেতেই রেখে দিচ্ছে কৃষক। (http://bit.ly/2F9vnS3) অথচ এই টমেটোগুলো যদি সরকারিভাবে কোল্ড স্টোরেজে সংরক্ষণ করা হতো, তবে সারা বছর টমেটো কমমূল্যে খাওয়া যেতো। আবার কৃষকও ক্ষতিগ্রস্ত হতো না।

আপনারা জানেন, বাংলাদেশের বাজারে সারা বছর ৬০ টাকা কেজি দরে ভারত থেকে আসা টমেটো বিক্রি হয়। এবার শীতে সেই টমেটোর দাম পৌছে ১৬০ টাকা কেজিতে। তারমানে বাংলাদেশের বাজারে সারা বছর টমেটোর চাহিদা আছে, যেই চাহিদার সুযোগ নিচ্ছে ভারত। ভারতীয় টমেটো খেয়ে একদিকে যেমন বাংলাদেশের অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে, অন্যদিকে ধ্বংস হচ্ছে দেশের কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা।

আজ থেকে প্রায় ৩ মাস আগে কোল্ড স্টোরেজ নিয়ে একটা লেখা লিখেছিলাম (http://bit.ly/2FosgJC)। বলেছিলাম, ফ্লাইওভার-এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে এত এত ইনভেস্ট করে জনগণের কোন লাভ নেই, জনগন ফ্লাইওভার-এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে খাবে না, জনগণ খা্বে খাবার। তাই সরকারীভাবে পর্যাপ্ত কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণ ছাড়া দ্রব্যমূল্য হ্রাস করা কখন সম্ভব নয়।

 

 

 

 

 

তিন বেলা পেট ভরতে চাল লাগে, ফ্লাইওভার-মেট্রোরেল, সেতু, রাস্তা কিংবা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পেট ভরায় না। দেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে বলে শুধু কতগুলো ইট-সিমেন্টের কাঠামো দেখানো হয়, কিন্তু চালের দাম বাড়ায় নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী যে ভাত খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে সে খবর সরকারের নেই।

আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে কর্পোরেটোক্রেসিষড়যন্ত্রের শিকার । কর্পোরেটোক্রেসি বাস্তবায়নের তিনটি ধাপ- প্রথমত: পূজিপতি বা সম্রাজ্যবাদী কর্পোরেট, মাঝের ধাপ : ব্যাংক, শেষের ধাপ : দুর্নীতিগ্রস্ত গণতান্ত্রিক সরকার। অক্সফামবলছে বিশ্বের ৮২ শতাংশ সম্পদ আছে মাত্র ১% ধনীর হাতে। কর্পোরেটোক্রেসি এমন এক পলিসি যার মাধ্যমে পুরো সামান্য সামান্য কিছু লোকের হাতে চলে আসবে, বাকিরা না খেয়ে মরে যাক, তাতে সমস্যা নাই।

যেমন : পৃথিবীর শীর্ষ ৫ ধনীর মধ্যে দুইজন হচ্ছে স্পেনের ব্যবসায়ী আমানচিও ওরতেগা (সম্পদ ৬৭ বিলিয়ন ডলার) এবং মেক্সিকোর ব্যবসায়ী কার্লোস স্লিম হেলু (সম্পদ ৫০ বিলিয়ন ডলার)। এদের সম্পদের দিকে তাকালে কিন্তু আপনি স্পেন ও মেক্সিকোর অর্থনৈতিক অবস্থা বুঝবেন না। স্পেনের প্রায় ৪০% এবং মেক্সিকোতে প্রায় ৫০% লোক চরম দরিদ্র অবস্থায় জীবন যাপন করে। (https://goo.gl/cqeJWc, https://goo.gl/EHHejt)

হিসেবটা খুব সোজা, রাষ্ট্র উচু উচু ফ্লাইওভার বানাবে, সেটা বানানোর খরচ নেয়া হবে আপনার পকেট থেকে। সেই খরচ যোগাতে গিয়ে আপনার চালের দাম বেড়ে ৫ গুন হবে। সেই ফ্লাইওভার বানানোর সময় আপনাকেই রাস্তায় যানজট সহ্য করতে হবে। আপনার সারা দিনের রুটি-রোজগার কমে যাবে। কিন্তু ফ্লাইওভার বানানোর পর আপনি সেই ফ্লাইওভারে উঠতে পারবেন না। কারণ আপনি রিকশায় চড়েন, লোকাল বাসে চড়েন। সেই ফ্লাইওভারে উঠবে যাদের প্রাইভেট কার আছে তারা। তারা দ্রুত কর্মস্থলে যাবে, তাদের সাশ্রয় হবে। তাদের ব্যবসা বাণিজ্য ভালো হবে। আর এভাবেই একটা দেশের গবীরদের টাকা ধনীদের পকেটে চলে যায়। ধনীরা ফুলে-ফেপে আরো ধনী হয়, আর গরীবরা না খেতে পেয়ে মারা যায়। বলাবাহুল্য বাংলাদেশের গরীবদের টাকা শুধু বাংলাদেশের ধনী নয়, আন্তর্জাতিক কর্পোরেট বা ধনীদের পকেটে যাওয়া শুরু করেছে। আর এটাকেই বলা হচ্ছে কর্পোরেটোক্রেসি’।

 

 

 

 

 

 

 

কর্পোরেটোক্রেসি আসলে পূজিবাদী বা কর্পোরেটদের স্বার্থ। ২০১৭ সালে অক্সফাম বলছে, পৃথিবীর ৩৬০ কোটি লোকের সমান সম্পদ রয়েছে মাত্র শীর্ষ ৮ ধনী ব্যক্তির হাতে। সত্যিই বলতে গরীব লোকদের সম্পদ গুটি কয়েক ধনীদের হাতে তুলে দেয়ার নামই হচ্ছে কর্পোরেটোক্রেসি। কর্পোরেটোক্রেসির অনেক ধাপ আছে। ফ্লাইওভার-সেতু বা ভৌতকাঠামো বানিয়ে সম্পদ চুষে নেয়া একটা ধাপ, এর আরো ধাপ আছে। ১৬শথেকে ১৯শশতাব্দী পর্যন্ত ইউরোপে যে দাসপ্রথা চালু ছিলো বর্তমান কর্পোরেটোক্রেসি হচ্ছে সেই দাসপ্রথার আধুনিক রূপ। আরো সহজভাষায় বলতে, পৃথিবীর শত শত কোটি লোককে ঐ গুটি কয়েক কর্পোরেট মালিকের দাস বানানাই হচ্ছে কর্পোরেটোক্রেসি।

কর্পোটেক্রেসির একটি বড় শিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ জনগণ। এর শিকার হলে একটি দেশের লিভিং কস্ট বা জীবন নির্বাহের খরচ বেড়ে যায়। এ কারণে দেখা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি সাধারণ পরিবারকে জীবন নির্বাহ করতে হলে মা-বাবা-ভাই-বোন সবাইকে চাকুরী করতে হয়। সবাই ইনকাম না করলেই ঐ পরিবার টিকে থাকতে পারে না। বাংলাদেশে এতদিন এ সিস্টেম ছিলো না। বাংলাদেশে শুধু বাবা ইনকাম করলেই মা-সন্তান এমনকি অনেক আত্মীয়ের বাসার খরচ মেটানো সম্ভব ছিলো। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্য বা জীবন নির্বাহ খরচ বৃদ্ধি পাওয়া বাবা ছাড়াও মা-সন্তানদের চাকুরীতে নামতে বাধ্য করবে। হয়ত বলতে পারেন, বাংলাদেশে তো পুরুষ মানুষের চাকুরী নাই, নারী-শিশুরা চাকুরী পাবে কিভাবে? উত্তর- পাবে। চেয়ার টেবিলে বসা কাজ না হোক, শ্রমিক শ্রেণীর কাজ পাবে। বাংলাদেশে ঐ সব কর্পোরেটরা বিভিন্ন কলকারখানা স্থাপন করবে (এ কারণে বাংলাদেশে নতুন ১০০টি নতুন ইপিজেড হতে যাচ্ছে), ঐ কলকারখানায় শ্রমিক লাগবে, ঐ সব শ্রমিক পাবে কোথা থেকে ? দরিদ্র বেকার পুরুষ, নারী-শিশুরা দেবে। আবার সে সব কলকারখানা বা ইন্ডাস্ট্রিতে যেন তারা সহজে পৌছাতে পারে, সে জন্যই তৈরী হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার, সেতু। যেগুলোর টাকা নেয়া হচ্ছে ঐ দরিদ্র শ্রেণীর পকেট থেকেই।

বাংলাদেশে বিদেশীদের কর্পোটেক্রেসির একটি বড় ফল হচ্ছে গার্মেন্টস শিল্প। বাংলাদেশের নারীরা ইউরোপ-আমেরিকার মানুষদের জামা-কাপড় সস্তায় বানিয়ে দিচ্ছে। বাংলাদেশে কৃষি বা উৎপাদনশীল ব্যবস্থা যদি ভালো হতো, পুরুষের ইনকাম যদি বেশি হতো, তবে নিশ্চয় সামান্য কটা টাকার জন্য বাংলাদেশের নারীদের গার্মেন্টেসে এত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করতে হতো না। তারাই নিজেদের কাপড় সস্তায় পাওয়ার জন্য বাংলাদেশে উৎপাদনশীলতায় সঙ্কট তৈরী করে কৃত্তিম দরিদ্রতা সৃষ্টি করেছে, যা পোষাতে গার্মেন্টেসে চাকুরী করতে বাধ্য হয়েছে নারীরা।

অনেকে হয়ত বলতে পারেন, “ভাই চাকুরী তো করছে। ইনকাম তো করছে।

ঠিক আছে। তবে চাকুরী শব্দটা এসেছে চাকর থেকে। চাকর মানে দাস, গোলাম।

আধুনিক ভাষায় সেই দাসত্ব গ্রহণ করাকে বলা হয় ‘জব’। কারো দাস লাগলে মালিক যে ঘোষণা দেয়, তাকে বলে জব সার্কুলার’। একটি কোম্পানির মালিক আপনার মত দাসকে মাস শেষে ১০ টাকা বেতন দেয়, কিন্তু আপনার দ্বারা ১০০ টাকা কামিয়ে নেয়। আন্তর্জাতিক কর্পোরেটদের হাতে যেহেতু প্রচুর কাজ, তাই তারা প্রচুর দাস চায়, যত বেশি দাস, তত বেশি ইনকাম। এজন্য শুধু পুরুষ দিয়ে হয় না, তারা নারীদেরকেও নামাতে চায়। কারণ নারীদের স্বল্প মজুরী দিয়ে দাস বানানো যায়।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যখন জাতিসংঘে ভাষণ দিতে যায়, তখন দেখবেন বলে- আমরা নারীর ক্ষমতায়ন (women empowerment) করছি, লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছি।

শুধু প্রধানমন্ত্রী নয়, অন্যান্য মন্ত্রী যেমন শিক্ষামন্ত্রীও বিদেশী মিডিয়াগুলোর সাথে সাক্ষাৎকার দিতে একই বিষয়গুলো পাঠ্যপুস্তকে ঢুকানো হয়েছে বলে জানায়। এবং বলে- লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছি।

কিন্তু কি সেই লক্ষ্যমাত্রা?

নারীর ক্ষমতায়ন (women empowerment) এর মধ্যে কি লক্ষ্যমাত্রা আছে ? বিদেশী সম্রাজ্যবাদীদের কাছে কেন এটা গুরুত্বপূর্ণ ?

ঐ যে বলেছি, সম্রাজ্যবাদীদের চাহিদা হচ্ছে স্বল্পমজুরীতে দাস। একজন নারী যদি ঘরে থাকে তবে তার থেকে কর্পোরেটরা দাসত্ব গ্রহণ করতে পারবে না, এজন্য নারীর ক্ষমতায়ন (women empowerment) নাম করে নারীকে ঘরের বাইরে বের করে নিয়ে আসে এবং নারীকে তাদের দাসত্বে নামায়। একজন নারী যদি ঘরে বসে থাকে তবে সে সংসারের দেখাশোনা করে। সংসারের দেখাশোনা করলে তো আর কর্পোরেটদের স্বার্থ হাসিল হবে না। কর্পোরেটদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য নারীদের ঘর থেকে বের করে কাজে লাগাতে হবে। আর সে কারণে সরকার প্রধানদের বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা দেয়া থাকে, যে এতদিনের মধ্যে এত কোটি নারীকে দাস বানাতে হবে। এটাই সে লক্ষ্যমাত্রা।

আসলে কর্পোটেক্রেসি একটা বিশাল সাইকেল বা চক্র । এদের হাতের অভাব নাই। এর থেকে বের হওয়া খুব সহজে সম্ভব না। তবে প্রাথমিকভাবে যেটা করা যায়, সেটা হলো নতুন প্রজন্ম চাকুরীর দিকে না ঝুকে ব্যবসা-বাণিজ্যের দিকে ঝোকা এবং নিজস্ব উৎপাদনশীল খাতগুলো উন্নয়ন করা। কর্পোরেটদের সাইকেল থেকে বেড়িয়ে নিজস্ব সাইকেল তৈরী করতে না পারলে ওদের দাসত্ব থেকে বাড়িযে আসা কখনই সম্ভব নয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

সারা বাংলাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বা ইকোনোমিক জোন হচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরে খবর আসছে।

একটি সূত্র মতে এ পর্যন্ত ৫৯টি ইকোনোমিক অঞ্চল বরাদ্দ হয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশী কোম্পানিগুলো পেয়েছে মাত্র ১১টি এবং বাকি ৪৮টি পেয়েছে বিদেশী কোম্পানি। সরকার বিদেশী কোম্পানিগুলোকে এ ইনোনোমিক জোনগুলোতে ইনভেস্ট করার জন্য বেশ কিছু সুযোগ সুবিধাও ঘোষণা করেছে। যেমন : কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশের ট্যাক্স মওকুফ, বিদেশীকর্মীদের আয়কর ও গাড়ীর ট্যাক্স মওকুফ ইত্যাদি। আওয়ামী সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এই ইকোনোমিক জোনগুলো দেশে ১ কোটি লোকের কর্মসংস্থান করবে।

এসব খবর দেখার পর, আমার মনে কেবল একটি প্রশ্ন জাগ্রত হয়- বাংলাদেশে ইকোনোমিক জোন হলে সেখানে দেশী উদ্যোক্তাদের দিয়ে শিল্পকারখানা তৈরী করা হোক। প্রয়োজনে ঋণ দেয়া হোক। কিন্তু বিদেশীদের কেন বাংলাদেশের ইকোনোমিক জোন বর্গা দেয়া হচ্ছে ? তাও প্রায় ৮০% ! এর কারণ কি ?

আমি গত কয়েকদিন ধরে সম্রাজ্যবাদীদের দেশ দখলের একটা পলিসির নাম শুনিয়েছি, যাকে বলা হচ্ছে- কর্পোরেটোক্রেসি’। মূলতঃ কর্পোটেক্রেসি পলিসি বাস্তবায়নের জন্যই এ ইকোনোমিক জোন বিদেশীদের বর্গা দেয়া। বিদেশীরা এসব ইকোনোমিক জোনে তাদের কলকারখানা স্থাপন করবে, বাংলাদেশে উৎপাদিত বিদ্যুৎ পানি গ্যাস ব্যবহার করবে, বাংলাদেশের সস্তা শ্রমিক নেবে, এরপর পন্য বানানোর পর সেই পন্য বাংলাদেশেই বিক্রি করবে। বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহার করে সারা বিশ্বে রফতানি করবে। এসব বিজনেস করার জন্য প্রায় তাদের বাংলাদেশে আসতে হবে, এজন্য তাদের যাতায়তের সুবিধার্থে ফ্লাইওভার, সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে লাগবে। তাই সেগুলো বানাতে তারা ঋণ দেবে, এরপর সেই ঋণ সুদে আসলে পাবলিকের থেকে তুলে নেবে। আর সেই সুদ আসলে শোধ করতে গিয়ে জনগণে চালের দাম ৭২ টাকা ক্রস করবে। অর্থাৎ আমাদের গাছের কাঠাল আমাদের মাথায় ভেঙ্গে খাবে।

অনেকে বলে, ‘যানজট দূর করতে ফ্লাইওভার বানানো হচ্ছে’। এটা ভুল কথা। বাংলাদেশে এখন যেসব রাস্তা ফ্লাইওভার, সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বানানো হচ্ছে সেগুলো সব হচ্ছে এশিয়ান হাইওয়ের অংশ, যা ১৯৫৯ সালের প্ল্যান, ঐ সময় মানুষ যানজটের কথা চিন্তাও করতে পারে নাই। মূলত এসব ফ্লাইওভার, সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করা হচ্ছে বিদেশীদের জন্য, যেন তারা সহজে বাংলাদেশে বিজনেস করতে পারে। যদি বাংলাদেশের জনগণের জন্যই তা করা হতো, তবে এত দ্রুত এগুলো করার দরকার ছিলো না। (পুরো ব্যবস্থাটা ভিয়েতনামের মত)

আরেকটি কথা, সম্প্রতি বাংলাদেশে শিক্ষা ব্যবস্থাকে যে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে সেটাও কিন্তু কর্পোরেটোক্রেসির অংশ। কারণ সম্রাজ্যবাদীরা বাংলাদেশে সস্তায় শ্রমিক চায়। বাংলাদেশে জনগণ যদি ভালো লেখাপড়া করে তবে তারা উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু সেটা তারা পছন্দ করছে না, তারা চায় সবাই শ্রমিক হিসেবে থাকুক। পুরো জাতিকে চিরস্থায়ী দাস (শ্রমিক) হিসেবে তৈরী করার জন্যই বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে টার্গেট নিযে ধ্বংস করা হচ্ছে।

এমনকি কৃষিতে গোল্ডেন রাইস তথা জিএমও ফুডও কর্পোরেটোক্রেসি’র অংশ। বাংলাদেশের পুরো কৃষি সেক্টরকে ইহুদী কর্পোরেট মনসান্টো বা সিনজেন্টা মত কোম্পানির কুক্ষিগত করতেই এ গোল্ডেন রাইস নামক চাল নিয়ে আসা হয়েছে।

একটি বিষয় স্পষ্ট, বাংলাদেশ দ্রুত বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। স্রমাজ্যবাদী কর্পোরেটরা তা কিনে নিচ্ছে এবং আওয়ামী সরকার দেশটা বিক্রি করে দিচ্ছে। বিক্রির বিনিময়ে সরকার একদিকে বিদেশীদের থেকে টাকা পাচ্ছে, অন্যদিকে অবাধ দুর্নীতি করার পরও সম্রাজ্যবাদীদের সমর্থন হারাচ্ছে না। তবে দেশ বিক্রি শেষ হতে হয়ত আর বেশি দিন নাই, দেশবিক্রি শেষ হলে আওয়ামী সরকার হয়ত বিদেশে চম্পট দেয়ার রাস্তাও খালি রেখেছে।

 

 

 

 

 

গত বেশ কিছু পোস্টে কর্পোরেটোক্রেসি পলিসি নিয়ে আলোচনা করেছি। কর্পোরেটোক্রেসি হচ্ছে কোন একটি দেশকে অর্থনীতি ও চূক্তি দিয়ে দখল করে নেয়া। কর্পোরেটোক্রেসির একটা লক্ষণ হচ্ছে- যে দেশে কর্পোরেটোক্রেসি শুরু হয়, সে দেশে অসম্ভব রকম ভৌত কাঠামো বৃদ্ধি পায় এবং উৎপাদনশীল খাতগুলোকে বন্ধ করে দেয়া হয়।

গত কয়েকদিন এরকম দুটি খবর আমার চোখে পড়েছে, যা দেখে স্পষ্ট বোঝা যায় বাংলাদেশ কর্পোরেটোক্রেসির মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে। যেমন-

প্রথম খবর :

আখ বন্ধ করে তুলা চাষের পরামর্শ অর্থমন্ত্রীর (http://bit.ly/2ETNWcI)

আখ চাষ বন্ধ করে দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ চিনি খাত সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে চাইছে সরকার। যে খাতের সাথে যুক্ত আছে প্রায় ৫০ লক্ষ কৃষক।

দ্বিতীয় খবর :

জনপ্রতিনিধিদের সুপারিশের ২ হাজার সেতু , নির্বাচনের আগেই শুরু হচ্ছে ৮০ সেতুর নির্মাণকাজ

(http://bit.ly/2oyzkZI)

গণহারে তৈরী হচ্ছে সেতু-ফ্লাইওভার-এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। বাজেটের সব টাকা ঢুকিয়ে ফেলা হচ্ছে ইট-কাঠের ভৌত কাঠামোতে।

কর্পোটোক্রেসির ফলাফল :

ক) দ্রব্যমূল্য উচ্চহারে বৃদ্ধি, মানুষের এক বেলার খাবার ইনকাম করতে ঘাম ঝড়ে যাবে। আগে ঘরের পিতা ইনকাম করলে পুরো পরিবার চলতে পারতো, এখন মা-ভাই-বোন সবাইকে ইনকামের জন্য নামতে হবে। সবার ইনকাম দিয়ে টেনে টুনে পরিবারের জীবন নির্বাহ করতে হবে।

খ) ধিরে ধিরে মূল্যস্ফিতি চরম মাত্রায় পৌছাবে। আফ্রিকার অনেক রাষ্ট্রে এক বস্তা টাকা দিয়ে এক পিস পাউরুটি কিনতে হয়। বাংলাদেশও সেই দিকে এগিয়ে যাবে।

গ) দেশের রাস্তাঘাট-যাতায়াত ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নতি হবে। উন্নতবিশ্বের রাস্তাঘাটের মত বাংলাদেশের রাস্তাঘাট হবে। দেশে প্রচুর পরিবাণে ফাইভ স্টার হোটেল হবে, যেখানে বিদেশীরা এসে থাকতে পারবে।

ঘ) দেশের উৎপাদনশীল খাত বন্ধ হয়ে যাবে, দেশের মানুষ খাবারের জন্য বিদেশীদের উপর নির্ভর করবে। দেশে উৎপাদিত হয় এমন বস্তুও বিদেশীদের থেকে কিনে খেতে হবে।

ঙ) দেশের সম্পদ বিদেশীদের জিম্মায় দেয়া হবে। তারা দেশের সম্পদ নিয়ে যাবে, এজন্য উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা দরকার, সেটা আগে দ্রুত তৈরী করা হবে। কিন্তু সেটা দ্রুত করতে গিয়ে দেশের অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়বে, মানুষের খাদ্যমূল্য বেড়ে যাবে। তবুও বিদেশীদের সুবিধার্থে তা করা হবে।

চ) দেশে বহুজাতিক কোম্পানির কলকারাখানা স্থাপিত হবে। দেশের মানুষ কৃষি কাজ ফেলে দিয়ে বহুজাতিক কোম্পানিতে শ্রমিক হিসেবে ঢুকবে।

ছ) শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙ্গে দিয়ে পুরো জাতিকে মেধাবী শূণ্য করা হবে। সবাই শ্রমিক হবে, কিন্তু উপরের পদে বিদেশী নিয়োগ দেয়া হবে। দেশ শ্রমিক রাষ্ট্র পরিণত হবে, কিন্তু কখনও মাথা উচু করে দাড়াতে পারবে না।

জ) দেশের মানুষকে অন্ধকারে রাখার জন্য ব্যাপক হারে সংস্কৃতি, নাটক, সিনেমা, সিরিয়াল, নাচ, গান, ক্রিকেট, ফুটবল টাইপের এন্টারটেইনমেন্ট চালু করতে হবে।

ঝ) পুরো সিস্টেমের মধ্যস্থতা করবে দুর্নীতিবাজ সরকার। সে দুর্নীতি করে অনেক সম্পদ লুটবে, কিন্তু দেশকে তুলে দেবে বিদেশীদের হাতে।

কর্পোরেটোক্রেসির আটকানোর সহজ উপায় হচ্ছে, তারা যে ষড়যন্ত্রগুলো করছে তার প্রত্যেকটির বিরুদ্ধচারণ করা, প্রতিবাদ করা। সবাই একযোগে প্রতিবাদ করলে তারা পিছু হটতে বাধ্য। বিশেষ করে অর্থমন্ত্রী আখ চাষ বন্ধ করে দেয়ারবক্তব্যের বিরুদ্ধে সবাইকে শক্ত প্রতিবাদ করা উচিত। তার পদত্যাগ চাওয়া উচিত।

 

 

 

 

 

# গত ১লা মার্চ মস্কোতে রাশিয়া-বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে রুপপুর পরমাণু প্রকল্প নিয়ে একটি চূক্তি সাক্ষরিত হয়েছে। এ চূক্তি অনুসারে ভারত সরকারের মালিকানাধীন নিউক্লিয়ার পাওয়ার কো-অপারেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড (এনপিসিআইএল) রুপপুর পারমানবিক প্রকল্পের যাবতীয় মালামাল ও কনসালটেন্সি সরবরাহ করবে। (http://bit.ly/2FgC8ok)

 

ভারত সরকারের মালিকানাধীন ‘এনপিসিআইএলবাংলাদেশের রূপপুর পরমাণু কেন্দ্রে সহায়তা দেবে ভালো কথা, কিন্তু নিজ দেশের পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো নিয়ন্ত্রণে তাদের পারফর্মমেন্স কেমন ?

 

এ লিঙ্কে (http://bit.ly/28KDftJ) গেলে দেখবেন, ভারতের বিভিন্ন পরমাণু কেন্দ্রগুলোতে ১০ বছরে ১৬টি পরমাণু দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে, এক্ষেত্রে ভারত সরকারের মালিকানাধীন এনপিসিআইএল এর দক্ষতা সত্যিই প্রশ্নবিদ্ধ।

 

কিন্তু সেই এনপিসিআইএল’কে যখন বাংলাদেশের পরমাণু প্রকল্পের দায়িত্ব দেয়া হয়, তখন সত্যিই মারাত্মক ধরনের ভীতি সৃষ্টি হয়। কারণ রাশিয়া বাংলাদেশের তুলনায় ১১৬ গুন বড়, ভারত বাংলাদেশের তুলনায় ২১ গুন বড়। ভারত বা রাশিয়ায় পরমাণু দুর্ঘটনা ঘটনা খুব বিশাল জনগোষ্ঠী নিশ্চয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, খুব বড় এলাকায় তার প্রভাব পড়বে না। কিন্তু বাংলাদেশের আয়তনই তো খুব ছোট। খুব ছোট এলাকায় অনেক মানুষ বসবাস করে। পাবনার রুপপুরে যদি একটা পরমাণু দুর্ঘটনা ঘটেই যায়, তবে তার প্রভাব কতদূর পর্যন্ত ছড়াবে ? অনেকে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে, কিন্তু রামপালে কোন ঘটনা ঘটলে শুধু খুলনা বিভাগের আবহাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত হবে, কিন্তু রূপপুরে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে তার প্রভাব পুরো বাংলাদেশের উপর এটা নিশ্চিত। তখন কত কোটি মানুষ বাস্তচ্যূত হবে তার কোন হিসেব আছে তো ? ঐ মানুষগুলো তখন কোথায় যাবে ?

 

আমরা জানি, যেসব বাংলাদেশী শাসক বিদেশীদের এসব জিনিস বাংলাদেশে আমদানি করছে, তাদের প্রায় সবারাই আত্মীয় স্বজন সবাই বিদেশে থাকে, দেশের টাকা লুটে তারা বিদেশে অনেক সম্পত্তি কিনে নিয়েছে। দেশে কিছু একটা ঘটে গেলে তারা খুব সহজেই বিদেশে চলে যেতে পারবে, কিন্তু বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ তখন যাবে কোথায় ? তাদের তো বাংলাদেশ ছাড়া যাওয়ার যায়গা নেই।

 

 

 

 

 

 

সরকার যেটা করে, সেটা হলো কর্পোটেক্রেসিকে সমর্থন করে। অর্থাৎ সাধারণ জনগণের টাকা বিদেশী কর্পোরেটদের হাতে তুলে দেয়, মাঝ থেকে সে কমিশন পায়।

যেমন ধরুন ‘উবার’ । উবারের মাধ্যমে বাংলাদেশের কিছু লোক হয়ত কিছু ইনকাম করতে পারছে। কিন্তু ভাড়ার একটা অংশ কিন্তু চলে যাচ্ছে মার্কিন কোম্পানি উবারের কাছে। উবার যে সফটওয়্যার এনেছে এটা বাংলাদেশে বানানো কোন ব্যাপারই না। বাংলাদেশে এ সফটওয়্যার বানিয়ে দেশের টাকা দেশেই রাখা যায়। এতে ভাড়া আরো হ্রাস করা সম্ভব। কিন্তু সেটা না করে বিদেশী কোম্পানির কাছে বখরা দিয়ে বাংলাদেশে ট্যাক্সি চালাতে হয়। এর পেছনের ঘটনা খুজতে গিয়ে পেলাম অবশ্য ভিন্ন কিছু, মানে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় নাকি উবারের পেছনে তদরিব করেছে। স্বাভাবিকভাবে অনুধাবন করা যায়, উবার একটা কমিশন মানিজয়ের এ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেয়।

মিডিয়ায় মাঝে মাঝে খবর আসে, বিদেশী কোম্পানির নকল লোশন, পাউডার, অমুক-তমুক। পুলিশ গিয়ে সেগুলোতে ধরপাকড় করে, এরপর সে সব কোম্পানি বন্ধ করে দেয়। আসলে একটা জনবান্ধব সরকার কখন এমন করতে পারে না। যে লোকটা বিদেশী কোম্পানির নকল করে স্নো-পাউডার বানাচ্ছে, সে নিশ্চয়ই বিদেশী কোম্পানির কাছে গিয়ে ট্রেনিং নিয়ে বানাচ্ছে না, তার অবশ্যই কিছু না কিছু যোগ্যতা আছে ঐ পন্যগুলো বানানোর জন্য। আর বিদেশী কোম্পানিরা তো আর আকাশ লোশন-পাউডার বানি নিয়ে আসে না, তাই তাদের মত বানানোও অসম্ভব নয়। সরকারের বরং উচিত বাংলাদেশের সে সব নকলকারীদের পৃষ্ঠপোষকতা করা, তাদের প্রতিভাকে কাজে লাগানো। সরকার যদি নিজ উদ্যোগ নিয়ে সে সব ব্যক্তিদের পৃষ্ঠপোষকতা করতো, সরকারীভাবে কলকারখানা বানিয়ে দিতো, তবে এসব প্রসাধনীর জন্য বাংলাদেশের মানুষকে বিদেশের মুখ পানে চেয়ে থাকতে হতো না, বরং বাংলাদেশে উৎপাদিত প্রসাধনী বাংলাদেশে ব্যবহার করে বিদেশেও রপ্তানি করা যেতো। একবার শুনেছিলাম, সিঙ্গাপুর নামক দেশটি নাকি বাংলাদেশের কেরানীগঞ্জের জিঞ্জিরার মত ছিলো। সেখানে নাকি সব পন্যের নকল তৈরী হতো। একবার তাদের দেশের সরকার সে সব নকলবাজকে পৃষ্ঠপোষকতা করে, তাদের পন্য বানানোর জন্য টাকা, যায়গা, কলকারখানা দেয়, স্বীকৃতি দেয়। ব্যস, তাদের প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে বেড়ে উঠে সিঙ্গাপুরের অর্থনীতি।

আজ থেকে ৫-৭ বছর আগে হবে। বাংলাদেশের এক লোক নকল প্রাডো গ্রাড়ি বানাতে গিয়ে র‌্যাবের কাছে ধরা পড়ে, যে ইতিমধ্যে কয়েকটা প্রাডো গাড়ি বিক্রি করে বাজারেও ছাড়ে। যেই প্রাডো গাড়ির মার্কেটে মূল্য ৮০ লক্ষ টাকা, সেটা সে ৪০ লক্ষ টাকা দিয়ে বাজারে ছাড়ছিলো। র‌্যাব খবর পেয়ে তাকে গ্রেফতার করে কারখানা সিলগালা করে দেয়। আমার কথা হলো, একটা লোকের প্রতিভা থাকলে তাকে কেন জেলে যেতে হবে ? কেন তার প্রতিভার মূল্যায়ন করা হবে না ? সরকার ঐ লোকটাকে গ্রেফতার না করে তাকে দেশেই কারখানা করে দিক, সে দেশেই গাড়ি বানাক। আমার তো মনে হয় ঢাকার ধোলাইখাল খুঁজলে শত শত গাড়ির তৈরীর ইঞ্জিনিয়ার পাওয়া সম্ভব। আমি নিশ্চিত তাদেরকে যদি সরকারীভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়, তবে তারা বিশ্বমানের গাড়ি বানাতে পারবে। কিন্তু সরকার সেটা করবে না। এর একটি কারণ বিদেশ থেকে গাড়ি আমদানির কারণে ঐ বিদেশী রাষ্ট্রটির সাথে সরকারের অঘোষিত কোন চুক্তি থাকে। এবং অপর কারণ প্রতিটি গাড়ির থেকে সরকার মোটা ট্যাক্স নেয়।

আসলে “বাংলাদেশ দরিদ্র রাষ্ট্র”, “বাংলাদেশের মানুষ কষ্টে থাকে”, এগুলো মিথ্যা কথা। দুর্নীতিবাজদের বানোয়াট কথা। এগুলো বললে জনগণের সম্পদ লুটতে সুবিধা হয়। দেশ যদি গরীরই হতো তবে তাদের পানামা পেপাস আর প্যারাইডাইস পেপারে এত এত টাকা পাওয়া যায় কেন ?

আসলে কোন সমস্যাই সমস্যা না, যদি সেটা সারাতে সরকারের সদিচ্ছা থাকে। সদিচ্ছা থাকলে যে কোন মুহুর্তে দেশকে সমৃদ্ধশালী করে ফেলা সম্ভব। সরকার যেটা করে, সে দেশী উৎপাদনশীল খাতগুলোকে বন্ধ করে, বিদেশীদের থেকে আমদানি করে । এর ফলে দেশের প্রতিভাগুলো মরে যায়, বিদেশ থেকে আমদানি করার কারণে দেশে কৃত্তিম সংকট তৈরী হয়, মানুষের জীবন ব্যয় বেড়ে যায় এবং দেশে বেকারত্ব তৈরী হয়।

লেখা শুরু করেছিলাম, কর্পোরেটোক্রেসি পলিসির কথা বলে। বাংলাদেশে এখন সাড়ে ৪ কোটি শিক্ষিত বেকার। এই বেকারত্ব এক নিমিষেই দূর করা সম্ভব, যদি কর্পোরেটোক্রেসি পলিসির বিরুদ্ধে কাজ করা যায়, দেশের প্রতিভা ও জনবল কাজে লাগিয়ে উৎপাদনশীল খাত বৃদ্ধি করে বিদেশী নির্ভরতা কমানো যায় । আমার মনে হয়, এই কর্পোটেক্রেসি পলিসির বিরুদ্ধে সবাইকে সচ্চার হওয়া উচিত। বিশেষ করে এ পলিসির শিকার দেশের সাড়ে ৪ কোটি শিক্ষিত বেকার। তাদেরকেই আগে এগিয়ে আসতে হবে এ আন্তর্জাতিক আগ্রাসণ রুখতে।

 

 

 

 

খবর ও মন্তব্য :

(১) খবর : বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সর্বকালের সর্বসেরা প্রবৃদ্ধি অর্জন : মাথাপিছু আয় ১৭৫১ ডলার (https://bit.ly/2xtkEzl)

মন্তব্য : দাড়ান, দাড়ান। মাথাপিছু আয় ১৭৫১ ডলার বা ১৪৫৩৩৩ টাকা দেখিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করে লাভ হবে না। আসুন আরেকটু হিসেবে কষে নেই-

বর্তমানে বাংলাদেশে মাথাপিছু ঋণ ৬০০০০ টাকা। (https://bit.ly/2JpG2yc)

তাহলে প্রকৃত মাথাপিছু আয় হিসেব করতে ঋণ হিসেব করা জরুরী।

ঋণ বাদ দিলে হবে, ১৪৫৩৩৩ - ৬০০০০ = ৮৫৩৩৩ টাকা ।

এবার আসুন, বাংলাদেশে ৫% ধনীর আয় হচ্ছে মোট আয়ের ২৮% (https://goo.gl/xDmtsy)

সেটা বাদ দিয়ে বাকি ৯৫% সাধারণ জনগণের মাথাপিছু আয় হলো = ৬০ হাজার টাকা বা ৭২২ ডলার

স্বাভাবিকভাবে তাই মাথাপিছু আয় ধরা যায় ৭২২ ডলার হিসেব করা উচিত, অতিরিক্ত ১ হাজার ডলার দেখানোর দরকার নাই।

(২)

খবর : দেশে শিগগিরই অনেক পরিবর্তন হবে: মওদুদ (https://bit.ly/2QC4Raa)

মন্তব্য : পরিবর্তন অবশ্যই হবে। তবে সেই পরিবর্তনে যেন খোদ বিএনপি নিজেই অস্তিত্ব হারিয়ে ইতিহাসের পাতা থেকে ভ্যানিশ না হয়ে যায়। বিএনপি নেতৃত্বে থেকে জোট করুক সমস্যা নাই। কিন্তু ড. কামালের অধিনে থেকে বিএনপি নির্বাচনে গেলে জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করবে বিএনপি। বিপুল জনসমর্থনযুক্ত বিএনপির মাথায় কাঠাল ভাঙ্গবে তারা, পুরো দেশজুড়ে সাংগঠনিক কাঠামোকে ব্যবহার করবে, কিন্তু দিন শেষে বিএনপির হাতে লোটা ধরিয়ে দিবে, এটা নিশ্চিত থাকতে পারে।

(৩)

খবর : আটকে পড়া বাঙালিদের নাগরিকত্ব দেবে পাকিস্তান (https://bit.ly/2NlSiSw)

মন্তব্য : খুব ভালো কথা। কিন্তু আটকে পড়া পাকিস্তানীদের (বিহারীদের) জন্য কি করেছিলো বাংলাদেশ ? কেন তাদের সঠিক দেখাশোনা করেনি ? কেন মেইনস্ট্রিমে মিশিয়ে দেয়নি ? যার ফলশ্রুতিতে দরিদ্র পাকিস্তানীরা (বিহারীরা) বিপথে গিয়েছে। আজকে মেইনস্ট্রিমে মিশতে না পারায় দরিদ্রের কারণে মদ-গাজা ইয়াবা ব্যবসা আর সন্ত্রাসীপনা করে বিহারীরা। একইসাথে বিহারী ক্যাম্পগুলোকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে সম্রাজ্যবাদীদের বিভিন্ন সংস্থা (জাতিসংঘ)। রাষ্ট্র যখন তার ভেতরে অবস্থান করা মানুষগুলোর সাথে বৈষম্য করে তখন বিদেশীরা তো সুযোগ নেবেই। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ভেতরে পাকিস্তানীরা ছিলো দুই ভাগে বিভক্ত। ধনী ও দরিদ্র। ধনীরা আটকানোর পরও সামলে উঠে হয়েছে ক্রিকেটার তামিম ইকবাল, আর গরীবরা হয়েছে মুহম্মদপুরের জেনেভাক্যাম্পের ইয়াবা ব্যবসায়ী।

(৪) এশিয়ার সবচেয়ে কম উদ্ভাবনশীল রাষ্ট্র বাংলাদেশ (https://bit.ly/2Oz3Myr)

মন্তব্য : ঠিকই তো আছে। বাংলাদেশ মেধাবীদের জন্য কি করেছে ?

সব তো করেছে কোটাধারীদের জন্য। কোটার যখন রাজত্ব, তখন মেধাবীরা ড্রেইন করে চলে যাচ্ছে বিদেশে। বাংলাদেশের মেধাবীরা গুগল, ইউটিউব, অ্যাপল, নাসা চালাচ্ছে, আর বাংলাদেশ তখন ভারত-চীনের ইঞ্জিনিয়ার ভাড়া করে এনে ফ্লাইওভার-সেতু বানাচ্ছে। research and development (R&D) লিস্টে অনেক হাভাতে দেশের নাম থাকলেও বাংলাদেশের যায়গাই হয়নি। (https://bit.ly/2dLjLeE)

(৫)

খবর: ফলমূল-শাকসবজি-মাছকে বিষমুক্ত করতে কার্বন গ্রিন (https://bit.ly/2Mplanv)

মন্তব্য : ফলমূল বা শাকসবজী ফরমালিন বা রাসায়নিক সারের ক্রিয়ামুক্ত করার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখা। পানিতে ভিজিয়ে রাখলেই এই সব রাসায়নিক উপাদান এমনিতেই চলে যায়। কিন্তু এর মধ্যে মানুষের আবেগকে কাজে লাকিয়ে ‘শক্তি রঞ্জন পালনামক এক হিন্দু কর্পোরেট ডাক্তার লাইফ অ্যান্ড হেলথ লিমিটেডনামক কোম্পানির নাম দিয়ে কার্বন গ্রিননামক একটি প্রডাক্ট মার্কেটে আনছে। কার্বন গ্রিনে থাকে ৮৫% সোডিয়াম বাই কার্বনেট বা খাবার সোডা আর ১৫% থাকে অ্যাক্টিভেটেড কার্বন। এই অ্যাক্টিভেটেড কার্বন এর কিন্তু অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। অ্যাক্টিভেটেড কার্বন ব্যবহারে ডাইরিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা বমি হতে পারে। আর কার্বন যদি ভালোভাবে রিফাইন না করা হয়, তবে তা ব্যবহারে ক্যান্সারও হতে পারে। তাই পানি দিয়ে ধুয়েই ফলমূল শাক সবজীর ফরমালিন ও সার দূর করুন, অযথা খরচ করে কার্বন গ্রিন ব্যবহারের দরকার দেখি না।

[অনেকদিন না লেখায়, লেখা অগোছালো। চেষ্টা করছি গুছিযে নিতে। সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখিত]

 

 

 

 

 

কাঁচা চামড়া রফতানির কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। কারণ কাঁচা চামড়া রফতানি করা হলে দেশের চামড়াশিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে: তোফায়েল

(https://bit.ly/2wsl2xE)

ঠাকুর ঘরে কে রে ?

আমি কলা খাই না।

চামড়া আমরা ভারত পাঠাবো না !!!

চামড়ার ট্যানারিগুলো হাজারিবাগ থেকে সাভারের হেমায়েতপুরে স্থানান্তরের পর মন্ত্রী তোফায়েল গিয়েছিলো ট্যানারিমালিকদের সাথে দেখা করতে। সরকারের অসহযোগীতার কারণে হেমায়েতপুরের ট্যানারিগুলো চামড়া প্রসেসিং এর জন্য উপযুক্ত হয়ে উঠেনি। এ নিয়ে ট্যানারি মালিকরা মন্ত্রীর কাছে তাদের দুঃখ বর্ণনা করছিলো। তাদের দুরবস্থার সমাধান দেয়া তো দূরের কথা, উল্টা বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল তখন বলেছিলো: চামড়ার ব্যবসা করতে না পারেন, চানাচুরের ব্যবসা করেন। আপনারা চামড়া না নিবেন, আমরা সব চামড়া ভারত পাঠিয়ে দেবো।

আসলে সরকার এই আচরণ বহু দিন ধরেই করছে। তারা মিডিয়ার সামনে বলছে একটা, কিন্তু করছে আরেকটা। সরকার চামড়া নিয়ে ফুল সেট-আপ এমনভাবে করেছে যেন বাংলাদেশের চামড়া ভারত চলে যায়, ভারতের চামড়া শিল্প দাড়িয়ে যায় এবং বাংলাদেশের চামড়া শিল্প ধ্বংস হয়ে যায়। মুখে বলছে- চামড়া শিল্পের উন্নতি করা হবে, কিন্তু বাস্তবে চামড়া শিল্পকে আরো মাটির সাথে মিটিয়ে দিচ্ছে। যেমন- চামড়া শিল্পকে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের (বিসিক) অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। অথচ চামড়া শিল্প হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য পোষাক শিল্পের পর বড় সবচেয়ে বড় শিল্প। যদিও বিসিকের (ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প) মোটেও ক্ষমতা নাই, চামড়ার মত একটি বড় শিল্পকে নেতৃত্ব দেয়ার। কিন্তু এর কোন পরিবর্তন নাই।

মন্ত্রী তোফায়েল নিজ মুখে স্বীকার করছে, এ বছর চামড়ার দাম কমানো সঠিক ছিলো। (https://bit.ly/2MYhgWX)

উল্লেখ্য চামড়ার পণ্যের মূল্য আকাশ ছোয়া হলেও সরকার বছর বছর চামড়ার দাম কমিয়ে যাচ্ছে। যেমন: প্রতিবর্গফুটের দাম

২০১৩ সালে ৮৫ -৯০ টাকা।

১০১৪ সালে ৭৫-৮০ টাকা

২০১৫ সালে ৫০ টাকা,

২০১৬ ৫০-৫৫ টাকা

২০১৭ সালে ৫০-৫৫ টাকা এবং

২০১৮ ৪৫-৫০ টাকা। (https://bit.ly/2MsMxB6)

বাংলাদেশের চামড়ার মূল্যগুলো সাধারণ যায় মাদ্রাসা বা ইসলামী শিক্ষালয়গুলোতে। যদি চামড়ার দাম কমিয়ে দেয়া যায়, তবে অটোমেটিক মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থাকে অর্থের অভাবে বসিয়ে দেয়া সম্ভব। চামড়ার মূল্য কমানোর একটি অন্যতম কারণ এটি ।

এছাড়া আরেকটি কারণ হলো, এবারের চামড়াগুলো ভারতে পাচার করা। উল্লেখ্য, চামড়ার ট্যানারিগুলো হেমায়েতপুরে স্থানাস্তর করা হলেও সরকারের অবহেলার কারণে সেগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়নি। ফলে ট্যানারিমালিকরা চামড়া কিনতে পারছে না। এতে চামড়াগুলো ভারতে পাচার হওয়া সহজ হয়ে যায়। (https://bit.ly/2MAGATx)

সরকার পুরো বিষয়টি মধ্যস্থতা করেছে, কারণ তার ব্রোকারি মানি আছে। সরকারী ঘোষণা মাধ্যমে যদি চামড়ার দাম কমিয়ে দেয়া যায়, তবে পুরো লাভটা আওয়ামী সরকারের পকেটে আছে। তোফায়েল নিজেই বলছে- চামড়া পাচার হলে বাংলাদেশের ট্যানারি শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে, কিন্তু সে ও তার দল বাস্তবেই চায়, বাংলাদেশের চামড়া ও ট্যানারি শিল্প ধ্বংস হয়ে যাক। এবং ভারতের ট্যানারি শিল্প দাড়িয়ে যাক। বেড়া নিজেই যদি গাছ খেয়ে ফেলে, তবে সেই বেড়া দিয়ে গরু-ছাগল ঠেকাবেন কিভাবে ?

 

 

 

 

এর কারণ ভারতীয় পেঁয়াজকে শুল্কমুক্ত করে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এতে ভারতীয় পেয়াজের দাম অনেক কমে গেছে। ফলে বড় হয়ে গেছে ভারতীয় ও দেশী পেঁয়াজের দামের পার্থক্য।

এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই বাংলাদেশ ও ভারতের মাঝে এখনও একটা বর্ডার আছে। বাংলাদেশ ও ভারত এক দেশ নয়। ভারত থেকে যখন কোন পণ্য বাংলাদেশে আসবে তখন বাংলাদেশ সরকারের শুধু ভারতীয় পণ্যের দামের দিকে তাকালে হবে না, তাকাতে হবে বাংলাদেশে তৈরীকৃত ঐ পন্যের অবস্থার দিকে। বাংলাদেশের নিজস্ব ঐ পণ্যের দাম কত সেটা বিবেচনা করে শুল্ক আরোপ করতে হয়। এই বিষয়টিকে বলে ট্রেড ব্যারিয়ার’। একটা দেশে যখন ট্রেড ব্যারিয়ার উঠে যায় আর ঐ দেশ দেউলিয়া হয়ে যাওয়া একই কথা।

কিন্তু সরকার যদি নিজেই সেই ট্রেড ব্যারিয়ারের গুরুত্ব হারিয়ে ফেলে, মানে শুল্ক ফ্রি করে দেয়, তখন তা দেশের জন্য হুমকি হয়ে দাড়ায়। কমমূল্যের জিনিস প্রবেশ করলে হয়ত দৃশ্যত কিছু মানুষ উপকৃত হবে। কিন্তু পুরো প্রেক্ষাপট বিবেচেনায় দেশের ক্ষতি হবে। কারণ দেশের কৃষকরা বসে যাবে, আমরা ঐ পণ্যের জন্য পুরোপুরি তাদের উপর নির্ভরশীল হয়ে যাবো। এবং নির্ভরশীল হয়ে গেলো পরবর্তীতে তারা একচেটিয়া আমাদের উপর বিজনেস খাটাবে।

ছোট বেলায় এক হিন্দু শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তাম, সে আমাকে মাঝে মাঝে ভারতের বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় পলিসি সম্পর্কে ধারণা দিতো। একদিন সে বলেছিলো, ভারত সরকার চালের পেছনে অনেক ভর্তুকি দেয় এবং সেই সেই ভতুর্কি দেয়া চাল কমমূল্যে বাংলাদেশে পাঠায়। উদ্দেশ্য বাংলাদেশে অপেক্ষাকৃত কমমূল্যের ভারতীয় চাল প্রবেশ করাতে হয়। এভাবে ২০-৩০ বছর ভর্তুকি অব্যাহত রেখে কমমূল্যে ভারতীয় চাল প্রবেশ করলে এক সময় বাংলাদেশের কৃষকরা ধান চাষ পরিহার করবে, তখন একচেটিয়া বাংলাদেশের চালের মার্কেট কন্ট্রোল করবে ভারত। তখন আগের ক্ষতি সুদে-আসলে পুষিয়ে নেবে।

আমি সময় সময় একটা কথা বলি, মুসলমানরা ব্যক্তি স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দেয়, কিন্তু জাতিগত স্বার্থকে গুরুত্ব দেয় না। এ কারণে মুসলমানদের আজ এই অবস্থা।

ভারতীয় পেয়াজের দাম কম, এই কারণে হয়ত বাংলাদেশের মানুষ ভারতীয় পেয়াজকে গ্রহণ করছে। কিন্তু ক্ষণিকের লাভ পেতে গিয়ে, দীর্ঘমেয়াদীভাবে সে যে তার দেশকে অন্যের উপর নির্ভর করে দিচ্ছে বা নিজের স্বাধীনতা হারাচ্ছে এটা সে অনুধাবন করতে পারছে না।

অপরদিকে পুরো সিস্টেমটাতে জনগণকে প্রলুব্ধ করছে এক শ্রেণীর আমদানিকারী ব্যবসায়ী। আমার জানা মতে, আমদানিকারী গোষ্ঠিটি বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের রাজনৈতিক দলের লোকজনই। তারা প্রত্যেক ক্ষেত্রে আমদানি করতে চায়। কারণ আমদানি করলে সহজে লাভ পাওয়া যায়। এজন্য তারা প্রথমে যেটা করে, দেশীয় জিনিসের স্বল্পতা তৈরী করে বা দাম বৃদ্ধি করে। এটা তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সাহায্যেই করে। এরপর সেই শূণ্য স্থানে তারা বিদেশী আমদানি করা জিনিস নিয়ে আসে। এতে খুব সহজেই হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হওয়া যায়।

যেমন,

-দেশের ফল আম’কে সিস্টেম করে আটকে রেখে ভারতীয় আম প্রবেশ করানো।

অথবা

- বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগ দেয়া হবে না কিংবা গ্যাসের দাম দ্বিগুন করে, বিদেশ থেকে এলপি গ্যাস আমদানি করা হচ্ছে। অর্থাৎ দেশের মানুষকে নিজের দেশেরটা রেখে বিদেশীটা খাওয়াতে বাধ্য করা।

একই জিনিস ঘটেছে পেয়াজের বেলায়ও। দেশের পেয়াজের মৌসুমেও পেয়াজ আটকে রেখে দাম বাড়িয়ে ভারত থেকে শুল্কমুক্ত করে পেয়াজ আমাদানি করা হয়েছে।

বর্তমানে ভারতে পেয়াজের দাম বাংলাদেশী টাকায় ৫ টাকা কেজি, সেই পেয়াজ শুল্কমুক্তভাবে বাংলাদেশে আনা হচ্ছে ১৩ টাকায় এবং খুচরা বিক্রি করা হচ্ছে ৩০ টাকায়। অর্থাৎ বিরাট ব্যবসা করছে ঐ বিশেষ শ্রেণীটি। মাঝখান দিয়ে পথে বসিয়ে দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশী কৃষকশ্রেণীকে।

আরেকটি কথা আপনারা সবসময় মনে রাখবেন, ভারতীয় পণ্য হলে বাংলাদেশীদের অনেক যাচাই করে খাওয়া উচিত। কারণ ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশ সরকার কোন ধরনের পরীক্ষা ছাড়াই প্রবেশ করায়, যেটা অন্য দেশ করে না। এমনিতেই ভারতীয় পেয়াজ খুব নিম্নমানের হয়। তার উপর ভারতীয়রা সেই পণ্যে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কিছু প্রবেশ করায় তবে সেটা ধরার জন্য বাংলাদেশে কোন ব্যবস্থা নেই। আপনাদের মনে থাকার কথা, কয়েকবছর আগে এক ইন্ডিয়ান ফেসবুকে বলেছিলো, তারা ভারতীয় পণ্যের মাধ্যমে ক্রনিকরোগের জীবাণূ বাংলাদেশে প্রবেশ করায়, এতে তারা ব্যবসাও করে, আবার সেসব রোগের চিকিৎসা করতে বাংলাদেশের মানুষ ভারতেরই যায়। এতেও তাদের লাভ হয়। তবে খুব ভয়ের বিষয় অতি সম্প্রতি পৃথিবীতে সুপারবাগ ও ডিজিস-এক্স নামক দুটো মৃত্যুরোগ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে এমন আশঙ্কা করছে অনেকে। আমার ধারণা ইহুদীবাদীরা এই রোগ দুটি ছড়িয়ে বড় ধরনের ব্যবসা ফাদ করচে। আর ভারত যেহেতু ইসলাইল ও আমেরিকার বড় দালাল তাই বাংলাদেশে যদি এমন কিছু প্রবেশ করে তবে সেটা ভারত তথা ভারতীয় পণ্যের মাধ্যমেই বাংলাদেশে ডোর টু ডোর আসা সম্ভব। তাই সব ধরনের ভারতীয় পণ্য (চাল, ফল, পেয়াজ, গরু, ঔষধ, কাপড় ইত্যাদি) থেকে বাংলাদেশীদের সাবধান থাকা জরুরী।

তথ্যসূত্র:

১) বেনাপোল বন্দরে বেড়েছে তিনগুন পেয়াজ আমদানি : https://bit.ly/2IGPOM4

 

২) বেনাপোল দিয়ে ৭ দিনে ১০ হাজার ৭৫ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি :https://bit.ly/2GMTSVf

 

৩) শুল্কমুক্ত ভারতীয় পেঁয়াজ : https://bit.ly/2LpuKY8

 

৪) ভারতে ৪ রুপির পেঁয়াজ বাংলাদেশে ৩০ টাকা : https://bit.ly/2LrSBGT

 

৫) সুপারবাগ আতঙ্ক : https://bit.ly/2IG4I56

 

৬) আসছে ডিজিজ এক্স : https://bit.ly/2FI9V7f

 

 

 

 

 

 

 

আম নিয়ে আগের পোস্টটি (https://bit.ly/2KDQQF9) দেয়ার পর বিষয়টি নিয়ে আবারও চিন্তা করতে বসলাম,

বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জানতে দেশেও বেশ কয়েক যায়গায় ফোন দিয়েছি।

কারণ একটা বিষয় বিস্তারিত জানা ও সমাধানে না আসা পর্যন্ত আমার আবার ভালো লাগে না।

 

কয়েকজন আম ব্যবসায়ী ও কৃষকের সাথে আলাপ করলাম, আম পাড়ায় সরকারের বেধে দেয়া সময় নিয়ে মতভেদ আছে। একদল কৃষক সরকারের বেধে দেয়া সময়ে খুশি, অন্যদল বলছে সরকারের বেধে দেয়া সময়ের আগেই ফল পেকে যায়। সাতক্ষীরায় আম আগে পাকে, চাপাইনবাবগঞ্জে আম পরে পাকে। একটি ফল পরিপক্ক না হওয়ার আগে গাছ থেকে পারা ঠিক নয়, কিন্তু অনেক এলাকার আম আগে পেকে গেলে কৃষকরা কি করবে সেটা নিয়েও সরকারের চিন্তা করা উচিত। এজন্য শুধু আমের প্রকারভেদে সময় নয়, এলাকা ভিত্তিক আম পাকার সময় জানার দরকার আছে। এবং সে অনুসারেই আম পাড়ার সময় নির্ধারণ করা জরুরী। কিছু আম যদি আগে পেকেও যায়, তবে সেটা লোকাল মার্কেটে বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু সরকার যদি ফল ধ্বংসে মেতে উঠে, তবে সেই আগে পেকে যাওয়া আম তো লোকাল মার্কেটেও উঠতে পারবে না। এসব বিষয় জানার জন্য, ফিল্ডে কৃষকের অবস্থাটা জানার প্রয়োজন আছে। কিন্তু আমাদের দেশে কৃষক আর সরকারের মধ্যে এখন বিস্তর তফাৎ। সরকার চলে বাইরের বুদ্ধি বা মিডিয়ার বুদ্ধিতে। কিন্তু কৃষকের কি প্রয়োজন বা কৃষক কি চায় সেটা সম্পর্কে সরকারের কোন মাথা ব্যথা নেই। জেলা-থানা-ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে কৃষি অফিসারদের যদি উন্নত ট্রেনিং দেয়া যায়, এবং সেটা যদি কৃষক পর্যন্ত পৌছে দেয়া যায়, তবে দেশী ফলন আরো উন্নত এবং কৃষকদের চিন্তামুক্ত করা সম্ভব

আরেকটি বিষয়,

সব আম যখন এক সাথে পাড়া হবে, তখন আম নষ্ট হওয়া বা মার্কেটে দাম পরে যাওয়ার ভয় থাকে। এতে সরকারের পক্ষ থেকে কোল্ডস্টোরেজের সুবিধা থাকতে হবে। যদি সরকারীভাবে কোল্ডস্টোরেজের সুবিধা দেয়া হয়, তখন অনেক আম নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা পাবে এবং জনগণ আরো বহুদিন দেশী আমের স্বাদ পাবে।

আমার আগের পোস্টে আমি হরমোন ইথোফেন দিয়ে পাকানোর কথা বলেছি। আমার মূল কথা ছিলো- “ইথোফেন দিয়ে পাকানো আমে ক্ষতিকারক নেই, ফলে যাত্রাবাড়ি-মিরপুরে ২২০০ মন আম ধ্বংস করা মোটেও ঠিক হয়নি।তবে আমি নিজেও চাই পুরোপুরি প্রাকৃতিক উপায়েই ফল পাকানো হোক। কিন্তু ইথোফেনে ক্ষতি আছে, এমন মিথ্যা কথা বলে ১০-২০ জন ব্যবসায়ীকে পথে বসিয়ে দেয়া বা ৬ জনকে জেল দেয়া মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।্ঐ সময় RAB ্এর কাছে ইথোফেন মাপার কোন যন্ত্র ছিলো না, এমনকি RAB নিজেও অবগত নয় ইথোফেন ভালো না মন্দ । শুধু ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করে ব্যস এতটুকু মুখে শুনেই বুলডোজার দিয়ে ধ্বংস করা হয় কোটি টাকার দেশের সম্পদ (https://bit.ly/2IxuR6c)।

আমার কথা হলো, সরকারের পক্ষ থেকেই ইথোফেন ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা যেতে পারে, কিন্তু কেউ ব্যবহার করে ফেললে (যেহেতু ক্ষতি নেই) সেটা ধ্বংস করার মোটেও ঠিক হবে না। এতে দেশের সম্পদই ধ্বংস হবে।

 

আসলে মূল সমস্যা হলো ভারতীয় আম নিয়ে। দেশী আমের জন্য সরকার সময় নির্ধারণ করে দিছে, কিন্তু মার্কেটে তো ভারতীয় আম ছেয়ে গেছে। তাহলে আমার গাছের আম কেমিকেল/হরমোন দিয়ে আনতে সমস্যা কোথায় ? তখনই অপরিপক্ক আমে কেমিকেল দিয়ে পাকানো হচ্ছে। কিন্তু মার্কেটে যদি ভারতীয় আম না-ই থাকতো, তবে নির্দ্দিষ্ট তারিখের আগে আমই থাকতো না, ফলে আমের মার্কেট কেউ দখল করে ফেলছে কৃষক বা ব্যবসায়ীর সেই টেনসনও থাকতো না। কৃষকও চাইতো তার আম আরো বড় হোক। ফলে এত অরজাকতা আর টেনশনও থাকতো।

আমার মনে হয়, জনগণকেই এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে। দোকানে গিয়ে জিজ্ঞেস করতে হবে ভারতীয় আম কি না? যদি ভারতীয় আম হয় তবে সেটা বর্জন করতে হবে। আম খেলে দেশী আম খেতে হবে। কয়েকবছর যদি এভাবে ভারতীয় আমকে বাঁশ দেয়া যায়, তবে ব্যবসায়ীরা ভারতীয় আম তুলবে না। ফলে দেশী আমের স্বাদেই দেশের মানুষ থাকতে পারবে, দেশের সম্পদ দেশেই থাকবে।

 

 

 

 

 

 

# খবরে এসেছে,

যাত্রাবাড়িতে ইথোফেন যুক্ত আম, ১ হাজার মন আম ধ্বংস (https://bit.ly/2k97KQS)

মিরপুরে ইথোফেনযুক্ত ১২শ’ মন আম ধ্বংস (https://bit.ly/2IxQijC)

 

বাপরে বাপ ! কত বিষাক্ত রাসায়নিক ইথোফেন, আর সেটাই নাকি ফলের মধ্যে মিশিয়ে খাওয়াচ্ছে আমাদের । মার শালারে। শালার সব আম গুড়িয়ে দে, ব্যাটা যেন আর কখন ফলের বিজনেস না করতে পারে।

 

আমার ছোট বেলার একটা কবিতা মনে পড়ে গেলো,

 

এই নিয়েছে ঐ নিল যাঃ! কান নিয়েছে চিলে,

চিলের পিছে মরছি ঘুরে আমরা সবাই মিলে।

.............................................

নেইকো খালে, নেইকো বিলে, নেইকো মাঠে গাছে;

কান যেখানে ছিল আগে সেখানটাতেই আছে।”

 

আম ইথোফেন দিয়ে পাকানো হয়েছে, ব্যস এতটুকু শুনেই ব্যবসায়ীদের হাজার হাজার মন আম ধ্বংস করে ফেলেছে RAB, জেলে পুড়েছে আধা ডজনকে । কিন্তু ইথোফেন জিনিসটা কি, কিংবা সেটা কি আদৌ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক কি না, সেটা জানার দরকার মনে করেনি কেউ।

 

ইথোফেন বা ২-কোরোইথাইল ফসফনিক এসিড দিয়ে ফল পাকানো কিন্তু মোটেও স্বাস্থ্যবিরোধী কোন পদ্ধতি নয়, বরং স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতি কারণ কোন ফল পাকানোর জন্য ইথোফেন দেওয়ার পর তা দ্রুত ইথিলিন গ্যাসে পরিণত হয়, যা ন্যাচারাল সিস্টেমেই ফলকে পাকায়, ফলে ক্ষতির কোন আশঙ্কা থাকে না। এ কারণে বিশ্বের ৬০টি দেশে স্বাস্থ্য সম্মত উপায় হিসেবে ফল পাকানোর জন্য ইথোফেনকে ব্যবহার করা হয়।

 

পড়তে পারেন:

১) https://bit.ly/2IxuR6c

 

 

২) https://bit.ly/2rYckVE

 

 

৩) https://bit.ly/2wXIu9d

 

 

 

আমার মনে পড়ে গেলো, আজ থেকে ৪ বছর আগের কথা। তখন আমের ভেতর ফরমালিন আছেটাইপের খবর দিয়ে মিডিয়া ছেয়ে গেলো। তখন প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রচুর পরিমাণে আমসহ অন্যান্য ফল নষ্ট করা হয়। পরবর্তীতে খবর আসে যেই যন্ত্র দিয়ে ফরমালিন পরীক্ষা করা হয়েছে সেটার মধ্যেই গলদ ছিলো। কিন্তু ইতিমধ্যে ধ্বংস করা হয়েছে ৬০ হাজার টন ফল ও মাছ । (তথ্যসূত্র: দৈনিক কালেরকণ্ঠ, ২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪,https://bit.ly/2GyFEHB)

 

শুধু আম নয়, কলা-আনারসসহ অনেক ফলই পাকানোর জন্য বহু আগে থেকে বাংলাদেশে ইথোফেন ব্যবহার হয়ে আসছে। কিন্তু সেগুলো তো RAB নষ্ট করেনি, কিংবা মিডিয়াও সেটা নিয়ে খবর করেনি। কিন্তু আম আসার আগেই কেন প্রশাসন এভাবে দেশী ফল নষ্ট করে ? আর মিডিয়া সেটা নিয়ে উস্কানি দেয় ?

 

ইথোফেন ব্যবহার করে আম পাকা জুজু দেখিয়ে আসলে সরকার-প্রশাসন কৃষকদের গাছ থেকে আম পাড়তে বাধা দেয়। এবং গত কয়েকবছর যাবত সরকারের পক্ষ থেকে আম পাড়ার জন্য সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়। এ বছরের জন্য সময় হলো,

২০ মে গুটি জাত, ১ জুন হিমসাগর, ক্ষীরসাপাতি ও লক্ষ্মণভোগ, ৬ জুন ল্যাংড়া, ১৬ জুন আম্রপালি ও ফজলি এবং ১ জুলাই আশ্বিনা এর আগে কোন কোন গাছের আম নামানো যাবে না। আম পাড়ার ৭২ ঘণ্টা আগে চেকপোস্ট বসানো হবে। সেখানে তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট পালাক্রমে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করবে। (https://bit.ly/2IDCSCF)

 

অথচ কৃষকদের বক্তব্য হচ্ছে, আম কখন সময় নিদ্দিষ্ট করে পাকে না। কোন কোন আম আগেই পেকে যায়। কিন্তু সরকার কেমিকেলের নাম দিয়ে আম নষ্ট করায় কোন ব্যাপারী কৃষকের কাছে যায় না, ফলে গাছের মধ্যেই পেকে নষ্ট হচ্ছে হাজার কোটি টাকার আম। শুধু তাই নয়, একবারে সব আম নামায় মার্কেটে আমের রেট অনেক কমে যায়, ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষকরা। আমে বিষাক্ত রাসায়নিক মেশানো হচ্ছে কি না, এটার সমাধান কখন আম পাড়ার জন্য সময় বেধে দেয়া হতে পারে না, বরং এটা মূর্খের সিস্টেম।

 

গত কয়েকবছর যাবত সরকারের বানানো এ সিস্টেম সম্পর্কে কৃষকরা অনেক প্রতিবাদ করেছে। এমনকি এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বারি) এক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জানান, আম পাড়ার সময় বেঁধে দেয়া সঠিক কোনো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি নয়। (https://bit.ly/2LivvSD)

 

অর্থাৎ দেশী আমকে আটকে রাখা হচ্ছে কৌশলে । কিন্তু এদিকে ভারত থেকে আম এসে দখল করে নিচ্ছে বাংলাদেশের মার্কেট। এ সম্পর্কে গত কয়েকদিনে খবর এসেছে-

 

১) বাজারে ভারতীয় আম (https://bit.ly/2LbIJRn)

২) মৌসুমের আগেই ভারতীয় আম (https://bit.ly/2rWY93L)

৩) ভারতীয় আম দিয়ে মধুমাস শুরু (https://bit.ly/2wZngYR)

৪) আমের রাজধানী রাজশাহী ছেয়ে গেছে ভারতীয় আম (https://bit.ly/2ITkpp8)

 

অর্থাৎ দেশী আম ধ্বংস করে, ভারতীয় আমকে প্রবেশ করাতে হবে। এ পলিসি শুধু আমে নয়, কোরবানীর গরু নিয়েও হয়। দেশী গরুতে অ্যানথ্র্যাক্স আছে, দেশী গরু মোটাতাজার নামে বিষ দেয়া হয়, এমন নানা অপপ্রচার করে ভারতীয় গরু বাংলাদেশে ঢুকানো হয়।

 

আচ্ছা, দেশী আমে সমস্যা আছে দেখে সরকার হাজার হাজার মন আম ধ্বংস করছে। কিন্তু যে ভারতীয় আমে বাংলাদেশের মার্কেট ভরে যাচ্ছে, সেই ভারতীয় আম কি সরকার একবার পরীক্ষা করেছে ? নাকি ভারতের আম হলে তার সাত খুন মাফ ? তা পরীক্ষা করাও নাজায়েজ ।

 

উল্লেখ্য,

-ক্ষতিকারক থাকায় ২০১৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভারতীয় আম নিষিদ্ধ করে। কিন্তু সেই আম তারা বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেয়। (https://bit.ly/2Leptm6)

-২০১৬ সালে আরব আমিরাতও ভারতীয় আমে বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতি টের পেয়ে তা প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করে (https://bit.ly/2rWZcRf)

 

বাংলাদেশের আম নিয়ে ষড়যন্ত্র এ বছরই প্রথম নয়। গত বেশ কয়েক যাবত ফলের রাজা আমকে ধ্বংস করতে দেশী-বিদেশী মহল উঠে পড়ে লেগেছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক কানেকটেড কিছু মিডিয়া (ডেইলি স্টার, প্রথম আলো) সেই ২০১৩-১৪ সাল থেকে সরকারকে দিক নির্দেশনা দিচ্ছে এ ধরনের আজগুবি সিস্টেম জারি করার জন্য।

 

আসলে বাংলাদেশের মানুষ সচেতন নয়, হুজুগে। মিডিয়া যেদিকে যেতে বলে তারা সেদিকেই যায়, আর সরকারও সেই সুযোগে দুর্নীতি করার সুযোগ পায়।

 

তাই ফলের রাজা আম ধ্বংস করার বহুমুখী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দেশের জনগন-কৃষক-ব্যবসায়ী একত্র হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলাই এখন সময়ের দাবি।

 

 

 

 

 

# গত কয়েকদিন আগে, হঠাৎ একটা খবর ছড়িয়ে পড়ে, যার শিরোনাম-

দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে মেয়ে বিয়ে ছাড়াও একসাথে থাকতে পারবে -সুপ্রিম কোর্ট

খবরটি জুলাই ২১, ২০১৮, ১:০৩ পূর্বাহ্ণ সময়ে প্রকাশ করে দৈনিক আমাদের সময়ের অনলাইন পোর্টাল।

যদিও কয়েক ঘন্টা পর খবরটি সরিয়ে নেয় আমাদের সময়, এ জন্য ঐ লিঙ্কে ঢুকলে খবরটা পাবেন না (https://bit.ly/2mHFgi9)। কিন্তু তারপর যদি কেউ সেই লেখাটা পড়তে চান, তবে ওয়েবক্যাশে (https://bit.ly/2Lm30rf) লেখাটা পাবেন।

 

তবে খবরটা ‘আমাদের সময়সরিয়ে নিলেও কয়েকঘণ্টার মধ্যে তা কপি করে অসংখ্য নিউজ পোর্টালে ছড়িয়ে পড়েছে এবং ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেছে, “বাংলাদেশে সুপ্রীম কোর্টের রায়ে লিভ-টুগেদার বৈধ”।

 

খবরটি পড়লে বুঝতে পারবেন, খবরটির মধ্যে ঝামেলা আছে। প্রথমত, লিভ-টুগেদার নিয়ে আসলে কোন সরাসরি কোন রায় নেই। কোন একটি মামলা পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর বিতাড়িত প্রধান বিচারপতি সিআইএ এজেন্ট এসকে সিনহা কিছু বলেছিলো দাবি করা হচ্ছে, এবং হঠাৎ করে তা মিডিয়ায় নিয়ে আসা হলো এবং কিছুক্ষণ পর তা গায়েবও করে দেয়া হলো।

 

আমি একটা কথা প্রায় আপনাদের বলি,

কোন ঘটনা দেখলে আগে আপনার লাভ বা ক্ষতি খুজবেন না,

বরং দেখবেন ঘটনাটা কে ঘটালো এবং তার নিজের উদ্দেশ্য/লক্ষ্য কি ?

 

এই খবরটি মিডিয়ার সামনে আনলো দৈনিক আমাদের সময় অনলাইন, যার সম্পাদক নাইমুলের স্ত্রী নাসিমা খান মন্টি। তসলিমা নাসরিনের সাবেক স্বামী নাইমুল ইসলাম খান একটা সময় বাংলাদেশ যেন ইসরাইলের স্বীকৃতি দেয় তা নিয়ে প্রচুর লেখালেখি করে (লেখাটা আমার পেইজ থেকে সরিয়ে দিয়েছে বিধায়, অন্য একটি ফেসবুক পেইজে পেলাম-https://goo.gl/BHg4eF)

 

যাই হোক কোন অপকীর্তি ঢাকতে সে আমাদের সময়ের সম্পাদকের পদ থেকে আড়াল হয়ে তার বর্তমান স্ত্রী নাসিমা খান মন্টিকে বসায়। এখন তার স্ত্রীর মাধ্যমে সেই দালালিপনা অব্যাহত রাখছে।

 

আমাদের সময়ে এ খবর হঠাৎ করে ছড়ানোর উদ্দেশ্য সম্ভবত ‘টেস্ট কেস’।

অর্থাৎ টেস্ট করে দেখা- পাবলিক প্রতিক্রিয়া কি ?’

যদি পাবলিক প্রতিক্রিয়া নিশ্চুপ হয়, তবে হয়ত সরকারের কাছে পশ্চিমা এজেন্টরা আবদার জানাবে বাংলাদেশে লিভ-টুগেদার বৈধ করার জন্য একটা আইন জারি করতে। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে ভারতে সুপ্রীম কোর্টের মাধ্যম দিয়ে লিভ-টুগেদার বৈধ বলে স্বীকৃতি নিয়েছে পশ্চিমা এজেন্টরা। এখন বাংলাদেশেও করতে চাইছে। নির্বাচন যেহেতু সামনে, তাই মার্কিনপন্থীদের অনেক দাবী-দাওয়া পূরণ করবে শেখ হাসিনা। তাই সুযোগ বুঝে কোপ মারতে চেয়েছিলো পশ্চিমা দালালরা। তবে সেই কোপ মারার আগে একটা টেস্ট কেস করে চেখে নিলো, এই আরকি।

 

আসলে এরকম আরো অনেক টেস্ট কেস চলে, কিন্তু সাধারণ মানুষ বুঝে না।

যেমন গতকালকে একটা ছবি ছড়াইছে ফেসবুকে, একটা ছেলে-মেয়ে বৃষ্টিতে বসে টিএসসিতে পরষ্পর পরষ্পরকে চুমু খাচ্ছে (https://bit.ly/2NAwE8s )। এই ছবি নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। কিন্তু আমি বার বার বলছি, কোন ঘটনা দেখলে আগে খুজবেন কে ঘটনা ঘটাইলো এবং তার নিজের উদ্দেশ্য কি?

 

এই ছবিটা তুলছে পূর্বপশ্চিম বিডি’র এক ফটোগ্রাফার, নাম জীবন আহমেদ। পূর্ব পশ্চিম বিডি কিন্তু সেই পীর হাবিবুরের রহমানের পোর্টাল, যে এক সময় আমাদের সময়ের নাইমুলের সহযোগী ছিলো। পীর হাবিবুর রহমান বেশি সমালোচিত হয়েছে কিছুদিন আগে, ভারতের একটি নিউজের অনুবাদ করে শেখ হাসিনা, এসএসএফ ও বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে প্যাচ লাগিয়ে দেয়ার জন্য। এর জের ধরে তার পোর্টালের এক হিন্দু সাংবাদিককে বেশ কিছুদিন যাবত গুমও থাকতে হয়েছে। এক সময় ছাত্র ইউনিয়ন করা পীর হাবিবুর রহমান এ ঘটনায় মার্কিনপন্থীদের হয়ে কাজ করেছে, এটা স্পষ্ট।

 

যাই হোক, সেই পূর্বপশ্চিমবিডির জীবন আহমেদ সেই কিসএর ছবিটা তুললো, যার ফেসবুক আইডি ঘাটলে বোঝা যায়, সে ঐ পশ্চিমাপন্থী নাস্তিক গ্রুপটার সাথে সম্পর্কিত (https://www.facebook.com/jibon.ahmed.4)। আসলে ২০১৫ সালে যখন যখন অভিজিত টিএসসিতে কোপানি খায় তখন এই ফটোগ্রাফার জীবন আহমেদ অভিজিত আর তার বউয়ের সাহায্যে এগিয়ে আসছিলো, সেই থেকে ওদের গ্রুপের নিয়মিত সদস্য। (https://bit.ly/2LALrCO)

 

যাই হোক, এবার বলি এ ছবির পেছনে কারণ কি ?

কারণ ঐ একটাই, মার্কিনপন্থী (নাস্তিকবেশধারী) ঐ গ্রুপটা চায় বাংলাদেশে প্রকাশ্যে নারী-পুরুষ কিস করুক এবং মানুষ সেটা অভ্যস্থ হোক। আপনাদের মনে থাকার কথা, কয়েক বছর আগে কথিত ভ্যালেন্টাইন ডের সময় সবাইকে প্রকাশ্যে কিস করার আহবান জানিয়ে ফেসবুক গ্রুপ খুলছিলো হনুমান আজাদের পোলা আর চিকনি শাম্মী (https://bit.ly/2OemjjJ)। কিন্তু পাবলিকের হুমকি খেয়ে কেউ আর সেইদিন ঐ সাহস পায়নি। কিন্তু এখন আবার নতুন করে পাবলিককে অভ্যস্থ করতে চাইছে বিষয়টিতে। তাই ভিন্ন ছুরতে তাদের গ্রুপের অন্য লোক দিয়ে ছবি তুলে প্রচার করছে, আর বেকুব বাংলাদেশীরা সেটা প্রচার করছে। মার্কিনপন্থীদের সাথে আওয়ামীলীগের দ্বন্দ্ব এখন চরমে থাকায় এ ঘটনা আরো দূর গড়াতে পারে।

 

এ বিষয়গুলো যেন আপনারাও সহজে বুঝতে পারে, সেজন্য আমি একটা অ্যানালিস্ট ক্লাসতৈরী করছি। আপনারা অপেক্ষা করুন, ‘সবুরে মেওয়া ফলে’।

 

 

 

 

 

বৈশাখী মেলায় গ্রাম-গঞ্চে শুরু হয়েছে নগ্ন নৃত্য, জুয়া খেলা আর অশ্লীল যাত্রাপালা। কথিত দেশী সংস্কৃতির অজুহাত দিয়ে অবাধে একটি গোষ্ঠী এসব করে উঠতি বয়সে ছেলেপেলের থেকে টাকা কামাচ্ছে, বিনিময়ে ধ্বংস করছে সমাজের নৈতিকতা।

গত কয়েকদিন ধরে গাজীপুরের শ্রীপুরে বৈশাখী মেলায় অশ্লীলতা আর জুয়ার আসর চালাচ্ছিলো একটি গোষ্ঠী। এটা দেখে স্থানীয় জনগণ প্রতিবাদমূখর হয়ে উঠলে শ্রীপুর পুলিশ আর প্রশাসন মেলা বন্ধ করে মেলার প্যান্ডেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

(সূত্র: https://bit.ly/2IYSP61)

 এদিকে, লক্ষীপুর জেলার সদরেও বৈশাখের নামে নগ্ন নৃত্য আর জুয়ার আসর শুরু হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছে:

মেলায় জাদু, পুতুল খেলার নামে টিকিট বিক্রি করে দর্শকদেরকে উপভোগ করানো হচ্ছে অশ্লীল নৃত্য। এ নৃত্য প্রদর্শন করছে যুবতি মেয়েরা। হিন্দি সিনেমার নায়িকাদেরকে হার মানিয়ে খোলামেলা দৃশ্যে নৃত্য প্রদর্শণ করা হচ্ছে এ মঞ্চে। তরুণ, যুবক ও মধ্য বয়সীরা এ নৃত্য উপভোগ করতে গিয়েও অনেক সময় হট্টগোল করছে।..... প্রতক্ষ্যদর্শী বলেছে রাজনীতিক নেতারা ও চেয়ারম্যানের অনুমতি ছাড়া এ ধরনের মেলার আয়োজন সম্ভব নয় । (https://bit.ly/2IVYklS)

শুধু গাজীপুর বা লক্ষীপুর নয় –গত বছরের অনেকের ফেসবুক আইডি থেকে পাওয়া তথ্য মতে:

বরগুনা (https://bit.ly/2qCHild), ময়মনসিংহ (https://bit.ly/2HDjjKW), এবং নাটোরেও (https://bit.ly/2qCyaxg) বৈশাখী মেলায় অশ্লীল নৃত্য আর জুয়ার আসর বসছে।

এদিকে, লক্ষীপুরের রামগঞ্জে এ ধরনের একটি বৈশাখী মেলা বন্ধ করায় মসজিদের ইমাম হাফেজ জয়নাল আবেদীনের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করেছে অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪ ডট কম (https://goo.gl/729gPV)। পোর্টালটির দাবি করে, ধর্মীয় অপব্যাখ্যা দিয়ে কান্নাকাটি করে নাকি মসজিদের ইমাম সাহেব মেলাটি বন্ধ করেছে। জাগো নিউজের সাংবাদিক মেলা বন্ধ করায় ইমাম সাহেবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় আওয়ামী নেতাদের সাথে যোগাযোগ করে। (https://bit.ly/2IYUloJ)

 অথচ লক্ষীপুরের রামগঞ্জে বৈশাখী মেলাকে ঘিরে যে অশ্লীল নৃত্য আর জুয়ার আসর বসে সেটা গত বছরের অনেকের ফেসবুক আইডি থেকে পাওয়া যায়:

১) https://bit.ly/2HrVYhv

২) https://bit.ly/2vgXHle

৩) https://bit.ly/2EOJmfe

৪) https://bit.ly/2qBrAYF

আমার মনে হয়, অনলাইনে সবার উচিত হবে জাগোনিউজ২৪ এই প্রতিবেদনের (https://goo.gl/729gPV) বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করা। এবং প্রত্যেক এলাকায় অশ্লীলতা বিস্তার করা এসব বৈশাখী মেলা বন্ধ করে দেয়া এবং গাজীপুর প্রশাসনের অনুকরণে প্যান্ডেলগুলো আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া।

 

 

 

 

 

 

ছোটবেলায় যে স্কুলে পড়তাম, সেখানে ছেলে-মেয়ে আলাদা শিফটে ছিলো। মেয়েরা সকালে, ছেলেরা দুপুরে। যে স্কুলগুলোতে ছেলে-মেয়ে একসাথে (কম্বাইন্ড) পড়তো, সেগুলোকে সবাই ভালো বলতো না। বলতো- ছেলে-মেয়েরা নাকি কম্বাইন্ড পড়লে নষ্ট হয়ে যায়।

মাঝে মাঝে কম্বাইন্ড স্কুলে পড়া কিছু বন্ধু-বান্ধবের সাথে কথা হতো, দেখতাম খুব পাকা। মেয়েদের সম্পর্কে ছোট বেলায় এমন কথা বলতো, আমরা লজ্জা পেতাম। এক বন্ধু ছিলো, ঢাকার ডব্লিউআদ্যক্ষরের নামের এক স্কুলের ছাত্র। কম্বাইন্ড পড়তো। বলতো ওদের স্কুলের উপরের তলায় নাকি বড় বড় রুম আছে। সেই তলায় ক্লাস হয় না, স্যাররাও যায় না। সেখানে ছেলেরা মেয়েরা পছন্দমত যা খুশি তাই করে। আমি বলতাম-অন্যরা দেখে ফেলে না ?” সে বলতো- সমস্যা কি, সবাই করতেছে। যে যার মত করতেছে, কেউ কারো দিকে তাকায় না, যে যার মত ব্যস্ত।আমার কাছে ওর কথাগুলো স্বপ্নের মত শোনাতো, কিন্তু সত্য-মিথ্যা যাচাই করার সুযোগ পেতাম না।

কলেজ লাইফটা কম্বাইন্ড ছিলো। কিন্তু শিক্ষকরা ছিলো খুব কড়া। ছাত্র-ছাত্রীরা অনেক উল্টা পাল্টা করতো, কিন্তু সব কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে, ভেতরে করার সাহস কারো ছিলো না।

ভার্সিটি লাইফটা ছিলো অনেক স্বাধীন। ছেলে-মেয়ে এক সাথে। কিন্তু তারপরও একটা অনুশাসন কাজ করতো। অনেক ছেলে-মেয়ে প্রেম করতো, কিন্তু ডিপার্টমেন্টের ভেতর কাউকে কিছু করতে দেখিনি। দারোয়ান আমাদের ডিপার্টমেন্টের গেট খুলতো সকাল বেলা। তারও এক-দুই ঘণ্টা পর ক্লাস শুরু। বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্র ক্লাস শুরুর ১৫ মিনিট আগে আসতো। কিন্তু যেগুলো ইয়েকরতো, তারা ডিপার্টমেন্ট খোলার সাথে সাথে, মানে সকাল সকাল আসতো। কারণ পুরো ডিপার্টমেন্ট তখন ফাঁকা, কেউ নাই। শুনেছিলাম, একদিন সকাল বেলায় এ রকম এক জোড়া নাকি বিশেষ অবস্থায়কট খাইছিলো, কেউ ছিলো না, সেই সুযোগটা তারা নিছিলো।

যাই হোক, এবার কাজের কথায় আসি। গত কয়েকদিন আগে একটা খবরে দেখলাম- সরকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে, যার নাম- কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রকল্প”। সরকার সারা দেশে ইউনিয়ন ও পৌরসভা পর্যায়ে কিশোর-কিশোরীদের জন্য প্রায় ৫ হাজার ক্লাব স্থাপন করে দেবে। দাবি করা হচ্ছে, এর মাধ্যমে নাকি কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে লিঙ্গ বৈষম্য দূর হবে। কিশোর-কিশোরীরা নাকি সেখানে পরষ্পরের বয়ঃসন্ধির পরিবর্তনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে। সরকারীভাবে সেসব ক্লাবে কিশোর-কিশোরীদের জন্য নাস্তাও সরবরাহ করা হবে। পুরো প্রকল্পের খরচ প্রায় সাড়ে পাচঁশকোটি টাকার মত। (https://bit.ly/2JrvvPy, https://bit.ly/2GF8evL)

সম্ভবত, শেখ হাসিনা ইহুদীসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রানামক ১৭টি বিষয়ে সই করে এসেছে। এর মধ্যে ৫ম চূক্তিটি ছিলো সমাজে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে হবে, যার একটি কার্যক্রম হচ্ছে এই কিশোর-কিশোরী ক্লাব। (https://bit.ly/2Ju5ora)

একটু খেয়াল করে দেখুন সিস্টেমটা-

১) প্রথমে ছাত্র-ছাত্রী আলাদা ক্লাস, যেখানে তারা পরষ্পরের সাথে মেলামেশার সুযোগ পাচ্ছে না।

২) এরপর পরষ্পরের সাথে মেশার সুযোগ করে দিয়ে ছাত্র-ছাত্রী এক করে কম্বাইন্ড ক্লাস শুরু। সেখানে ছাত্র-ছাত্র অনেক কিছু করছে, কিন্তু শিক্ষকদের চোখের আড়ালে, সামনে করতে পারছে না।

৩) এবার যেটা করা হলো, স্কুল থেকে বাইরে, শিক্ষক গার্জিয়ান সবার নিয়ন্ত্রণের বাইরে আলাদা ক্লাব খুলে দেয়া হলো, যেখানে তারা নিজেরাই রাজা। এমনকি তাদের সুবিধার জন্য নাস্তার ব্যবস্থা করে দেয়া হচ্ছে। আমি হলফ করে বলতে পারি, প্রথম প্রথম ঐসব ক্লাবে ফ্রি নাস্তা বিলি হবে, কিন্তু কয়েকদিন পর সেই ক্লাবে ফ্রি কনডম বিলি করা হবে। কারণ তখন সেটাই জরুরী হয়ে দাড়াবে।

সত্যিই বলতে, ইহুদীরা চায় সকল সমাজ ব্যবস্থা ভেঙ্গে যাক, তাহলে তাদের রাজত্ব দীর্ঘায়িত হবে। আপনি দেখুন, পশ্চিমে কিন্তু সমাজ ব্যবস্থা নেই, আমাদের সমাজ ব্যবস্থা তাদের কাছে হিংসার কারণ।

বাংলাদেশে যে সমাজ ব্যবস্থা টিকে আছে সেটা তারা ভেঙ্গে দিতে সরকার প্র্রধানকে দিয়ে ইহুদীসংঘের মাধ্যম দিয়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার নামক চুক্তি সই করেছে। ইহুদীসংঘের দেখিয়ে দেয়া পথে হেটে বাংলাদেশ সরকার তাদের পলিসিগুলো বাস্তবায়ন করছে, এতে হয়ত তাদের বিদেশী ঋণ ও নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সুবিধা হবে, কিন্তু দেশের মানুষের পারিবারিক বন্ধন ভেঙ্গে গেলে তাদের কি ? মুখে বলছে লিঙ্গ বৈষম্য দূর, কিন্তু বাস্তবতা মূল্যবোধ সমৃদ্ধ দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা সমাজ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়া ছাড়া কিছু নয়।

একটু চিন্তা করে দেখুন, আমাদের প্রত্যেকের মা-বাবা স্কুল লাইফে ছাত্র-ছাত্রী আলাদা ক্লাস করেছে। এই বাবা-মায়েদের সংসারই কিন্তু এখন আমাদের সমাজ ব্যবস্থা। কিন্তু স্কুল লাইফে যারা কম্বাইন্ড পড়েছে তাদের দিয়ে যখন সংসার হবে (বা হচ্ছে), সেই নতুন সমাজ ব্যবস্থা কেমন হবে ? পরকীয়া, খুন, ডিভোর্স, গর্ভপাত, বৃদ্ধাশ্রমযুক্ত সে সমাজ ব্যবস্থা নিয়ে এখনই কিন্তু আমরা চিন্তিত।

কিন্তু যেসব ছেলে মেয়েদের জন্য স্কুল লাইফে ক্লাব খুলে দেয়া হচ্ছে, তারা যখন বড় হবে, তখন তাদের দিয়ে যে সমাজ ব্যবস্থা হবে সেটা কেমন হবে, একবার ভেবে দেখেছেন ? আদৌ কি তখন সমাজে বাবা-মা-ভাই-বোন-দাদা-দাদী নানীর সম্পর্ক থাকবে ? নাকি সবাই হবে বাধন হারা, মা সন্তান জন্ম দিবে, কিন্তু বাবা কোন বয় ফ্রেন্ড তার জন্য ডিএনএ টেস্ট করাতে হবে। সন্তান বাবা-মায়ের কাছে লালিত-পালিত হবে না, সরকারের কাছে লালিত পালিত হবে। বাবার নামই যখন অরাধ্য তখন দাদার নাম হবে স্বপ্নের বিষয়। পশুর জীবন আর মানুষের জীবনের মধ্যে তখন তফাৎ থাকবে না।

সত্যি করে বলুন তো, আপনি কি সেরকম সমাজ ব্যবস্থা চান ? যদি নাই চান, তবে এই যে কৌশল করে কিশোর-কিশোরী ক্লাব খুলে’ ‘বৈষম্য দূর করার নাম দিয়ে সমাজ ব্যবস্থা ভেঙ্গে দেয়া হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে কি একবারও প্রতিবাদ করেছেন ? নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করুন।

 

 

 

# অমঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে চারুকলার পোস্টারে লালনের গান আর ছবি দেখে আমার ক্রিপ্টোগ্রাফীর কথা মনে পড়লো। ক্রিপ্টোগ্রাফী হচ্ছে "সাঙ্কেতিক উপায়ে তথ্য আদান বা প্রদানের ব্যাবস্থা"। এটা করা হয় এজন্য যে, ৩য় কোন ব্যাক্তি দুজন ব্যাক্তির সঞ্চালিত তথ্য ধরে ফেললেও যেন তথ্যের মর্মদ্ধার না করতে পারে। অর্থাৎ যে তথ্য পাঠাবে এবং এবং যে তথ্য পাবে তাদের একটা আলাদা ডিকশেনারী থাকবে। সেটা অন্যরা জানবে না, ফলে মাঝ দিয়ে তথ্য ফাঁস হলেও বোঝার উপায় নেই আসলে সে কি বলতে চেয়েছে। কিন্তু যার কাছে তাদের ডিকশেনারী থাকবে সেই কেবল ধরতে পারবে। যেমন ধরুন- পোস্টারে ব্যবহৃত লালনের কথা মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবিহচ্ছে এক ধরনের ক্রিপ্টোগ্রাফী। যে বাউল বলছে এবং যে শীষ্যের উদ্দেশ্যে বলা হচ্ছে, তারা উভয়ই বিষয়টি বুঝতে পারছে, কারণ তারা উভয়ই বাউল ডিকশেনারীর সম্পর্কে জানে। কিন্তু সাধারণ মানুষ বিষয়টি বুঝতে পারছে না, এবং যে যার মত ব্যাখ্যা করছে। কিন্তু বাউল ডিকশেনারী (ড. আবদুল করিম মিঞা রচিত বাউল-লালন পরিভাষাhttps://bit.ly/2GqhfbH))ঘেটে দেখা যাচ্ছে, বাউলদের বানানো এই ক্রিপ্টোগ্রাফীর মধ্যে অশ্লীল এবং কুরুচিপূর্ণ যৌনতার ইঙ্গিত আছে।

 

চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রার সেই পোস্টারে লালনের শ্লোগানের নিচে চারটি পাখির ছবি এঁকেছে চারুকলার শিল্পী তরুণ ঘোষ। খুব ভালোভাবে খেয়াল করলে দেখা যায়, চারটি পাখির মাঝখানে ৪টি নারী জননাঙ্গের ছবি দেখা যায়্। লালনের গান- মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি”-এর অর্থও কিন্তু সেটা। অর্থাৎ একজন পুরুষ বাউলকে আহবান করা হচ্ছে নারীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করে বাউল সাধণা বা বীর্য ধরে রাখার কৌশল রপ্ত করার জন্য। ছবির সাথে শ্লোগান হুবুহু মিলে যায়।

 

উল্লেখ্য, হিন্দু ও বাউল শ্রেণীর মধ্যে নারী জননাঙ্গ পূজার করার রীতি বেশ পুরাতন।

 

 

 

 

#  “ধর্ষণের জন্য যদি পোষাকই দায়ী হতো, ৫ বছরের শিশু আর হিজাব পরিহিতা নারী কেন ধর্ষিত হলো?”

এর উত্তর আমি আগেই দিয়েছি, বলেছি- বর্তমানে পুরুষকে নানভাবে (অশ্লীল মুভি, পর্নোগ্রাফী) যৌন উন্মাদ বানিয়ে দেয়া হচ্ছে, আর সেই যৌন উন্মাদনার কারণেই সে সবকিছুকে সেক্স অবজেক্ট ভাবা শুরু করেছে, এবং যেখানে-সেখানে তার উন্মাদনা প্রশমনের চেষ্টা চালাচ্ছে। এবং সে কারণেই ধর্ষিত হচ্ছে ৫ বছরের শিশু কিংবা হিজাব পরিহিতা নারী।

ভারতীয় এই মুভির নাম ‘মাত্রুভূমি’। মুভিতে একটি দৃশ্যে দেখতে পাচ্ছেন, গ্রামের পুরুষরা সবাই টাকা দিয়ে এক রুমের ভেতর পর্নোগ্রাফী দেখছে। পর্নোগ্রাফি দেখার এক পর্যায়ে একটি ছেলের মাথায় আগুন উঠে যায়। কি করবে, বুঝে উঠতে পারছে না। সে যৌনউন্মাদ হয়ে রুম থেকে বেরিয়ে একটি গোয়াল ঘরের দিকে ছুটে যায়। চতুর্দিকে তাকিয়ে আটকে দেয় গোয়াল ঘরের দরজা। উন্মাদনা প্রশমন করতে একটি গরুকে ধর্ষণ করতে থাকে, নির্যাতিত গরুটি ব্যাথায় হাম্বা হাম্বা ডাক দিতে থাকে।

হিন্দু ধর্মে গরু নিঃসন্দেহে একটি পবিত্র জিনিস। কিন্তু পর্নোগ্রাফী দর্শণের পর অতিরিক্ত উত্তেজিত হয়ে গরুকেও ছাড়তে চাইছে না তারা। এ বিষয়টিকেই বলা হচ্ছে যৌন উন্মাদনা। এবং এই যৌন উন্মাদনার কারণেই বর্তমানে সমাজে নারী নির্যাতন, শিশু নির্যাতন আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে।

পুরো মুভিটি দেখতে: https://youtu.be/tH-VAhrABFU

 

 

 

 

 

 

# আমি আগেই বলেছি, ইহুদীবাদীরা বাংলাদেশে যতগুলো থিউরী প্রতিষ্ঠিত করতে চায় তার মধ্যে অন্যতম: ধর্ষণের জন্য পোষাক দায়ী নয়।এ থিউরী বাস্তবায়নের তাদের অন্যতম উদ্যোগ ছিলো মোশারফ করিমের সেই টকশো। মোশারফ করিমের অনুষ্ঠানে সেই বিশেষ থিউরী পুরোপুরি ডেস্ট্রয় হয়ে যায় আমার দেয়া যৌন উন্মাদথিউরীর কাছে। এবার আমি অপেক্ষা করছিলাম, আমার যৌন উন্মাদ থিউরী খণ্ডানোর জন্য ইহুদীবাদীরা নতুন কোন থিউরী আনে। যাক এবার সেটা পাওয়া গেলো একাত্তর টিভির টকশোতে পূর্নিমা-মিশার সেই অনুষ্ঠানকে নিয়ে করা টকশোতে।

 

আমি আগেও বলেছি আবারও বলছি, মিশা-পূর্নিমার টকশোটি ছিলো পুরো কন্ট্রোভার্সিয়াল। তাদের আলোচনার মধ্যে ধর্ষণের বিষয়টি আনা অবশ্যই এমনি এমনি ছিলো না। পেছনে অবশ্যই কয়েকটি উদ্দেশ্য ছিলো। এর মধ্যে একটি মিশা সওদাগরের সাথে কারো ব্যক্তিগত রেশারেশি থাকতে পারে। তবে আরেকটি উদ্দেশ্য ছিলো সম্ভবত মিডিয়াতে এসব দেখে মানুষ যৌনউন্মাদ হয় কি না?” মানে আমি যৌন উন্মাদনামক যে থিউরীটা দিয়েছিলাম, সেটা খণ্ডন করা। তারা যেটা করেছে একটি বিষয়কে নেগেটিভ ভাবে নিয়ে এসে পজিটিভভাবে বর্ণনা করে ডিজলভ করে দেয়া।

 

একাত্তর টিভির পুরোটা টকশো যদি আপনি শুনেন, তবে দেখবেন, তারা কেউ বলেনি- সমাজে ধর্ষন বন্ধে বাংলা সিনেমায় ধর্ষণের দৃশ্য বা অশ্লীল দৃশ্য নিষিদ্ধ করতে হবে। বরং একাত্তরের উপস্থাপিকা মিথিলা ফারজানা বেশ আক্ষেপ করেই বলেছে, “বাংলা সিনেমায় রোমান্স নেই” । আন্তর্জাতিক ভাবে রোম্যান্স বলতে বোঝায়, মুভির নায়ক-নায়িকার মধ্যে বিশেষ দৃশ্য, যা সফট পর্নোগ্রাফী বা ২এক্স রেটের মধ্যে পরে। তারমানে মুভিতে অশ্লীল দৃশ্য বন্ধ হোক এটা খোদ একাত্তর টিভি চায় না।

 

আমি যে অংশটুকু কেটে দিয়েছি, তা ভালোভাবে শুনলে বুঝবেন, একাত্তর টিভি গং বুঝাতে চাইছে, মুভিতে ধর্ষণ দৃশ্য বা অশ্লীল দৃশ্য হলেই সেটার প্রভাব সমাজে পড়বে না, এবং সে ধারণা করাটা অনুমান নির্ভর। বরং সমাজে তার প্রভাব নির্ভর করবে পুরুষের মানসিকতার উপর। এবং একজন পুরুষ নিজেকে কতটুকু নিয়ন্ত্রণ করতে পারলো সেটার উপর। বিষয়টি নিয়ে কথা উঠতেই একজন শিক্ষক আলোচক (সম্ভবত সে পুরোপুরি একাত্তর গংয়ের সদস্য না) মিডিয়া ইফেক্টের থিউরী দিয়ে সাধারণ মানুষের উপর মিডিয়ার প্রভাবের বিষয়টি বলতে চাইলেও একাত্তর টিভির উপস্থাপিকা মিথিলা ফারজানা ও অনলাইনে সংযুক্ত হওয়া সিআইএপন্থী শিক্ষক ফাহমিদুল হক কৌশলে সেটা ঘুরিয়ে দেয় এবং যে এসব অশ্লীল দৃশ্য দেখছে তার যৌনতাকে দমিয়ে রেখে মানসিকতা পরিবর্তনের উপর বেশি গুরুত্ব দেয়। এবং শেষের অংশে উপস্থাপিকা মিথিলা ফারজানা ও অনলাইনে সংযুক্ত হওয়া ফাহমিদুল হক নিজেদের আসল পরিচয় (নারীবাদী পরিচয়) ফাঁস করে বলে দেয়, “ধর্ষণের জন্য এসব মুভি দায়ী না, দায়ী নারীর প্রতি পুরুষের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা (নারীবাদী থিউরী)।

 

এই টকশো দেখলে সাধারণ মানুষ বুঝতে পারবে না, এদের আসল উদ্দেশ্য কি,

 

কিন্তু খুব সূক্ষভাবে একাধিকবার দেখলে বুঝতে পারবেন এই টকশোতে সাইকোলোজিকালী মোটিভেশন দেয়া হয়েছে। ধর্ষণে টিভি পর্দায় অশ্লীল দৃশ্যের প্রভাব রয়েছে, এটা না স্বীকার করে পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তনের দাবী আবারও আওড়ানো হয়েছে। একাত্তর টিভি যদি ভালোই হতো, তবে সে মুভিতে অশ্লীল দৃশ্য বন্ধের দাবি তুলতো, কিন্তু সেটা সে ভুলেও করেনি। বরং রোম্যান্সের নামে সফট পর্নোগ্রাফী আমদানির কথা খুব ভালোভাবেই বলেছে।

 

 

 

 

 

 

#  “ধর্ষণ জিনিসটা কি ?” এটা সম্ভবত ৯৯% বাংলাদেশী শিখে বাংলা সিনেমা থেকে। ছোট বেলায় ছুটি দিনে বাবা-মায়ের সাথে বসে টিভিতে বাংলা সিনেমা দেখছে, সিনেমার এক দৃশ্যে ভিলেন দৌড়ে আসলো সহকারী নায়িকার দিকে। দাত-মুখ খিচিয়ে নানান ভঙ্গীমা করলো। পুরো-আধো দৃশ্য দেখিয়ে লাস্ট সিনে দেখানো হলো ঘটনা ঘটিয়ে ভিলেন খুবই পরিতৃপ্ত হয়েছে। যৌনতা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি, কিন্তু ৯০ এর দশক থেকে বাংলা মুভি দেখে আসা প্রজন্ম সম্ভবত মনে করে, যৌনতা মানেই ধর্ষণ।

শুধু ধর্ষণ নয়, ‘নারী উত্যক্ত করাযেটাকে বলা হয় যৌনহয়নারী তার শিক্ষাও মুভিতে দেয়া হয়। শুধু তাই নয়, মুভিতে এটাও দেখানো হয়, নায়ক মাত্রই ইভটিজিং করে এবং যে মেয়েকে ইভটিজিং করা হয়, সে এক সময় ঐ নায়কের নায়িকা হতে বাধ্য। অর্থাৎ প্রায় সকল মুভির নায়ক হচ্ছে একজন যৌন নিপীড়ক।

প্রসঙ্গটা আসলো গত কয়েকদিন আগে আর-টিভিতে একটি অনুষ্ঠান নিয়ে। যেখানে নায়িকা পূর্ণিমা ও ভিলেন মিশা সওদাগর দুইজন ‘ধর্ষণদিয়ে বেশ মজার আলাপ করছে। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে পূর্ণিমা হাসতে হাসতে সহ অভিনেতা মিশাকে প্রশ্ন করেন, মিশা চলচ্চিত্রে কতবার ধর্ষণ করেছেন? কোন নায়িকার সঙ্গে ধর্ষণের দৃশ্যে অভিনয় করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন? উত্তরে মিশা সওদাগর জানায়, 'মৌসুমী ও পূর্ণিমার সাথে' উপস্থাপিকা পূর্ণিমা হা হা হা করে হেসে ওঠে।

বক্তব্য যদি এতটুকু থাকতো তবে সমস্যা ছিলো না। সমস্যা হলো, এই টকশোর পর বাংলাট্রিবিউনে একটি সাক্ষাৎকারে নায়িকা পূর্ণিমা দাবি করেছে, “মুভিতে ধর্ষণের দৃশ্য সমাজে ধর্ষণ বৃদ্ধি করে না, বরং সচেতন করে

সাক্ষাৎকারে পূর্ণিমা বলে, “আমরা ফিল্মে এসব সিন করি বলেই কি বাংলাদেশে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে? তা তো নয়। সিনেমায় তো রেপ সিন করার পর সেটার বিচার হয়, ভিলেন মার খায়, শাস্তি হয়। সিনেমার রেপ সিন তো মানুষকে কখনও প্রভাবিত করেনি। আরও সচেতন করে। আর সেটা নিয়ে একটি ফিল্মের টকশোতে কথা বলতে গেলে অপরাধ!

(https://bit.ly/2GNlNZi)

কি বুঝলেন ? এতদিন দাবী হচ্ছিলো- নারী ধর্ষণের জন্য পোষাক দায়ী না, নতুন করে যোগ হলো- নারী ধর্ষণের জন্য মুভির ধর্ষণের দৃশ্যও দায়ী না।

এ সম্পর্কে আমেরিকার প্যারেন্টস টেলিভিশন কাউন্সিল এক গবেষণায় বলেছে, মুভিতে দর্শন দৃশ্য মানুষের কাছে ধর্ষণকে এন্টারটেইনমেন্ট হিসেবে প্রকাশ করেছে। আর সমস্যাটা সেখানেই। এন্টারটেইনমেন্ট মানেই স্বাভাবিক। একজন মানুষ নানাভাব এন্টারটেইনমেন্ট করতে পারে। ধর্ষণ দৃশ্যকে যখন এন্টারটেইনমেন্ট হিসেবে উপস্থাপন করা হলো, তখন সব মানুষের কাছে ধর্ষণ বিষয়টা খুব স্বাভাবিক হয়ে গেলো। আর যে অপরাধ স্বাভাবিক হয়ে গেছে, তার বিরুদ্ধে জনপ্রতিরোধ গড়বেন কিভাবে ? (https://bit.ly/2H2AHbQ)

আমার মতে, পূর্নিমা-মিশা ধর্ষণ দৃশ্য নিয়ে হাস্যরস করে যতটুকু অপরাধ করেছে, তার ঢের বেশি অপরাধ হয়েছে, “মুভির ধর্ষণ দৃশ্যের কারণে সমাজে ধর্ষণ বৃদ্ধি পায় না”- এমন অপব্যাখা দিয়ে। মোশারফ করিমের পর মিশা-পূর্ণিমার এ ধরনের বক্তব্য দেখে অনুমান করা যাচ্ছে, উপর থেকে একটি বিশেষ শ্রেণী বাংলাদেশের মানুষের মনে কিছু ফলস বিলিভবা ভ্রান্ত বিশ্বাসপ্রবেশ করাতে চাইছে এবং এরজন্য তারা সাহায্য নিচ্ছে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের। মানুষের মনে নারীর পোষাক’, ‘ধর্ষণনিয়ে এসব ভ্রান্ত বিশ্বাস ঢুকানোর পেছনে ঐ বিশেষ শ্রেণীর কি উদ্দেশ্য সেটাও চিন্তার বিষয়।

 

 

 

 

 

 

 

# বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটে আগুন লাগার সাথে সাথে আমার একটা কথা মনে পড়ে গেলো। ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছি, বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটের একতলায় বিশাল সিডি-ভিসিডির দোকান। যত ধরনের দেশী বিদেশী মুভি ও গানের সিডি ক্যাসেট আছে তা বায়তুল মোকাররম মসজিদের এক তলার মার্কেটে পাওয়া যায়। একটা সূত্রে শুনেছিলাম, ঐ সব মুভির সিডির আড়ালে সেসব দোকানে নাকি অশ্লীল সিডিও পাওয়া যায়।

 

আমার জানামতে মুসলমানদের ধর্মে এগুলো বৈধ নয়। কিন্তু মসজিদ মার্কেটের যে ইনকাম সেটা অবশ্যই মসজিদের ফান্ডে জমা হয়। মুসলমানদের ধর্মে যদি এগুলো বৈধ-ই না হয়, তবে মসজিদ মার্কেটে এসব সিডি-ভিসিডি আর মিউজিকের দোকান ভাড়া দেয়া হলো কেন ? আর যদি হলোই, তবে কোন মুসলমান সেটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে না কেন ?

 

 

 

 

# আপনি কি জানেন ?

১৪ই ফেব্রুয়ারী তারিখ অনেকে ভালেন্টাইন ডে করে ।

কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ই ফেব্রুয়ারী ‘ন্যাশনাল কনডম ডেপালিত হয়।

তবে আন্তর্জাতিকভাবে কনডম দিবস ১৩ই ফেব্রুয়ারী।

এ দিবসের উদ্যোক্তাদের বক্তব্য- ১৪ই ফেব্রুয়ারী মানুষ ব্যাপক আনসেফ (!) সেক্স করায় ১৩ই ফেব্রুয়ারীতে তারা আন্তর্জাতিক কনডম দিবস পালন করতে বাধ্য হয়েছে।

তারমানে বুঝতেই পারছেন, ভ্যালেন্টাইন দিবস পালনকারীরা যত ভালো কথাই বলুক, তাদের সব উদ্দেশ্য শেষে কনডম পর্যন্তই গড়ায়।

তথ্যসূত্র:

১) http://bit.ly/2o4zIPe

২) http://bit.ly/2BYdO9x

৩) http://bit.ly/2BXkm8H

 

 

 

 

# সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে এই ইভেন্টগুলো যথেষ্ট বিতর্ক তৈরী করছে। অধিকাংশ মানুষ বলছে, এসব ইভেন্টের দ্বারা বাংলাদেশে সংস্কৃতির উপর আঘাত এবং তরুণ সমাজকে বিপথগামী করা হচ্ছে। যে কোম্পানিটি এসব ইভেন্টের আয়োজন করছে, তার নাম ইউনিলিভার বাংলাদেশ।

 

মূলত কোম্পানি তার পণ্যের বিজ্ঞাপন করার জন্য এসব ইভেন্টের আয়োজন করে এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে তার প্রচারণা চালায়। কিন্তু বাংলাদেশের সম্প্রচার ও বিজ্ঞাপন নীতিমালা অনুসারে এসব ইভেন্ট অবশ্যই আইনত অবৈধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই বাংলাদেশের সচেতন মহলের উচিত হবে, কামরান বকরের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেয়া, যেন এসব অপংস্কৃতিমূলক ইভেন্ট তারা পরিহার করে।

 

কামরান বকরের ঠিকানা:

 

Company Name: Unilever Bangladesh Limited (ubl)

Representative: Mr. Kamran Bakr

Designation: Chairman & Managing Director

Address: Z. N. Tower, Plot No. 2, Road No. 8 Gulshan-1, Dhaka-1212

Phone: 9888452

facebook id : https://www.facebook.com/kamran.bakr

 

 

 

 

একদিকে ঢাকায় চলতেছে ইসলামিক কনফারেন্স অব টুরিজম মিনিস্টার্সসম্মেলন । ঢাকাকে নাকি ইসলামী টুরিজম সিটি ঘোষণা করা হবে। শেখ হাসিনাকে ইসলামী টুরিজমের কোন কমিটিতে যেন চেয়ারপার্সন করা হইছে। (http://bit.ly/2nN0Wtt, http://bit.ly/2E2PXDb)

আবার সেই ঢাকার শিল্পকলা একাডেমীতে চলছে ‘ঢাকা আর্ট সামিট’, যেখানে চলছে ন্যাংটো নারী দেহ প্রদর্শন। সেই অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী ইনু ন্যাংটো নারী শরীর প্রদর্শনী উপকারিতা বর্ণনা করে এসেছে। (https://goo.gl/GNf7Qr)

আমার কথা হলো-

ইসলামী টুরিজম সিটিতে ন্যাংটো নারীর ছবি প্রদর্শণী একদম বিপরীত হয়ে গেলো না ?

 

 

 

 

 

# পোড়ামন-২ নামক একটা সিনেমায় পূজা চেরী রায় নামের এই মেয়েটাকে নায়িকা বানাইছে। মেয়েটার সার্টিফিকেট জন্মদিন ২০০৪ সালের ২০শে আগস্ট। সার্টিফিকেট অনুযায়ী এখন বয়স ১৩ বছর ৫ মাস। বাংলাদেশে ১৮ বছরের নিচে বিয়ে আইনত নিষিদ্ধ, কিন্তু ১৩ বছরের মেয়েকে নায়িকা বানিয়ে আবেদন তৈরী করা হচ্ছে । উল্লেখ্য এর আগে যৌথ প্রযোজনার মুভি নূর জাহান’-সোনা বন্ধু তুই আমারেগানে এ কিশোরী মেয়েটিকে দিয়ে এডাল্ট সিন তৈরী করা হয়েছিলো।

১৮ বছরের নিচে বিয়ে যদি নিষিদ্ধ হয়, তবে ১৮ বছরের আগে নায়িকা হওয়াও নিষিদ্ধ করা উচিত। ১৮ বছরের বয়সী মেয়ের বিয়ে বন্ধ করবেন, কিন্তু ১৩ বছরের মেয়েকে নিয়ে এডাল্ট সিন বানিয়ে সরকারের তথ্যমন্ত্রনালয় থেকে বৈধ সার্টিফিকেট দিয়ে উপভোগ করবেন, সেটাতো হবে না।

 

১৮ বছরের নিচে বিয়ে হলে যদি কাজী সাহেব, বাবা-মাকে জেলে দেয়া হয়, তবে ১৩ বছরের মেয়েকে নায়িকা বানানো এবং এডাল্ট সিন তৈরী এবং সেগুলোকে বৈধতা দেয়ার জন্য সিনেমার পরিচালক প্রযোজক, এফডিসির ডিজি এবং তথ্যমন্ত্রী ইনুর জেল হওয়া উচিত।

 

 

 

 

# উল্লেখ্য কিছুদিন আগে মাদ্রাসায় জাতীয় সঙ্গীত পাঠ করতে সার্কুলার জারি করে সরকার। সেই সার্কুলারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করে কুড়িগ্রাম জেলার একটি মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক মো. নুরুল ইসলাম মিয়া ও এবং মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর অভিভাবক মনির হোসেন স্বাধীন শেখ। রিটকারীদের দাবি ছিলো, “১৯৭৮ সালের বিধান অনুসারে কেবল স্কুলেই দিনের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হবে, মাদ্রাসায় নয়। মাদ্রাসা শরিয়ত মোতাবেক চলে। এখানে কোনো প্রকার সঙ্গীতের প্রতিযোগিতা অনুমোদন করে না।

 

রিটটি খারিজ করার যুক্তি হিসেবে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বলে, “‘আপনি দেখান পবিত্র কোরানের কোথায় আছে, জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া যাবে না? পবিত্র কোরানের কোথাও নেই যে, জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া যাবে না। আগে তো মাদ্রাসার সিলেবাসে অংক, ইংরেজি, বিজ্ঞান বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল না। যুগের চাহিদা অনুযায়ী সে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। প্রকারান্তরে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করার জন্যই এ রিট করা হয়েছে।

আদালত আরও বলে, ‘স্কুলের শিক্ষার্থীরা জাতীয় সঙ্গীত গাইবে, আর মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা গাইবে না, এটা তো হতে পারে না। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা দেশের বাইরে গেলে যখন বিদেশিরা জাতীয় সংগীতের বিষয় জানতে চাইবে, তখন শিক্ষার্থীরা কী জবাব দেবে? ব্রিটিশ আমলে আমরা ইংরেজি না শিখে পিছিয়ে পড়েছিলাম। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের পিছিয়ে দিতে এ ধরনের রিট করা হয়েছে।

(সূত্র: https://bit.ly/2GyCaZC)

 

রিট নিয়ে বিচারপতির বক্তব্য সত্য না মিথ্যা আমি সেই তর্কে যাব না। তবে পুরো খবরটা পড়ে আমার বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে কিছু ভাবনা উদয় হলো। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যে ‘মাশব্দটা বেশ কিছুবার ব্যবহৃত হয়েছে। বাংলাদেশের যারা জাতীয় সঙ্গীতের পক্ষে তাদের দাবি, ‘এখানে মা শব্দটা দ্বারা মাতৃভূমিকে বুঝানো হয়েছে। তাই এখানে ধর্মীয়করণে সুযোগ নেই।

 

পাঠক ! আমার জানা মতে নিজেদের দেশ বা ভূমির ক্ষেত্রে ‘মাশব্দটা নিয়ে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিশ্বাসগত কিছু তফাৎ আছে।

 

হিন্দুদের ক্ষেত্রে নিজভূমি বা দেশকে সরাসরি ‘মাবা মাতাবলে চিহ্নিত করায় কিছু নিজস্ব বিশ্বাস রয়েছে। হিন্দুদের ক্ষেত্রে স্বদেশ বা মাতৃভূমি একটি নারী লিঙ্গ বলে বিবেচিত হয়। এ ক্ষেত্রে, তারা মাতৃভূমি বলতে নারী লিঙ্গে কোন অবয়বকে কল্পনা করে। এবং অনেক ক্ষেত্রে সেই নারী লিঙ্গে অবয়বও তা অঙ্কন করে। যেমন ভারত মাতাবলতে ভারতীয় হিন্দুরা একটি আলাদা দেবীকে কল্পনা করে। এ কারণে ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে ভারত মাতা কি জয় বলাকে ইসলামবিরোধী বলে ফতওয়া দেয়া হয়েছে। এবং বিষয়টি নিয়ে ভারতের মাদ্রাসাগুলো বেশ কয়েক বার কোর্টের দারস্ত হয়েছে। (https://bit.ly/2pKXm4a)

 

অপরদিকে মুসলমানদের ক্ষেত্রে বিশ্বাসটা একটু ভিন্ন। মুসলমানরা মাতৃভূমি বলতে কোন লিঙ্গ নির্দেশিত কিছু চিহ্নিত করে না, বরং গর্ভধারিনী মায়ের আবাস ভূমিকে বুঝায়। মুসলমানরা মাতৃভূমি বলতে কোন নারী লিঙ্গের কোন অবয়ব কল্পনা করে না।

 

এ কারণে হিন্দুরা যদি দেশকে মা বা মাতা বলে বুঝতে হবে সেখানে তারা কোন দেবীকে কল্পনা করেছে। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত রচয়িতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার স্বদেশ নামক গানে স্বদেশের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছে,

ডান হাতে তোর খড়্গ জ্বলে,

বাঁ হাত করে শঙ্কাহরণ,

দুই নয়নে স্নেহের হাসি

ললাটনেত্র আগুনবরণ।

কবি স্বদেশকে তুলনা করে দেবী দূর্গার সাথে। তারমানে রবীন্দ্রনাথ যে স্বদেশকে হিন্দু ধর্মীয় দেবীর সাথে তুলনা করে এটা স্পষ্ট।

 

বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের শেষের কিছু লাইন-

ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে,....ও মা, গরিবের ধন যা আছে তাই দিব চরণতলে,.....মা, তোর ভূষণ ব'লে গলার ফাঁসি । ” (https://bit.ly/2Gh9Lnt)

আপনি যতই বলেন, এখানে মা নিয়ে ধর্মীয়করণে সুযোগ নেই, কিন্তু এখানে স্পষ্ট রবীন্দ্রনাথ মা বলতে কোন দেবীকে কল্পনা করেছে। এই তিনটি লাইন স্পষ্ট - এখানে রবীন্দ্রনাথ মাতৃভূমিকে দূর্গা, অথবা কালী, অথবা অন্নপূর্ন্না, অথবা কোন দেবীর সাথে তুলনা করেছে। মায়ের চরণে মাথা পাতা (দেবীর পূজা), চরনে ধন-সম্পদ দেয়া (দেবীর মূর্তির সামনে ভোগ বা অন্য সম্পদ দেয়া) এবং মাকে ভূষণ (বস্ত্র, অলংকার বা অস্ত্র) দেয়া তিনটি বিষয়ের সাথে দূর্গা বা কালীর পূজা সময় লক্ষ্যনীয় অনুষ্ঠানাদি।

 

তাই আপনি ‘আমার সোনার বাংলাগানকে যতই অসাম্প্রদায়িক বলে জাতীয় সঙ্গীত বানাতে চান, মাদ্রাসা ছাত্রদের দিয়ে সুর করে পড়ান, লাভ হবে না। হিন্দুদেবী বন্দনা, বন্দনাই থাকবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

# আবিদ আহমেদ লিটন নামক এক কারা কর্মকর্তা স্ট্যাটাস দিয়েছে, যার সারমর্ম:

 

পহেলা বৈশাখ হিন্দুদের অনুষ্ঠান, মঙ্গল শোভাযাত্রা শিরক... এ দিন হিন্দুরা অনুষ্ঠান করুক...সেটা তাদের ব্যাপার.....কিন্তু মুসলমানদের অনুষ্ঠান করা উচিত হবে না।

 

এই স্ট্যাটাস দেয়ার পর তাকে নাকি বদলী করেছে সরকার এবং তার বিরুদ্ধে নাকি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

(https://bit.ly/2HqCmdW, https://bit.ly/2IYEdDH)

 

আমরা জানি বর্তমান আধুনিক বিশ্ব মূর্তি পূজাকে সাপোর্ট করে না, কিন্তু তারপরও হিন্দু-বৌদ্ধরা প্রকাশ্যে মূর্তি পূজার কথা প্রচার করে। মানুষের মৃত্যুর পর নৈতিকভাবে মানুষের দেহকে আগুনে পুড়ানো সাপোর্ট করে না, কিন্তু তারপরও হিন্দুরা তা করে এবং প্রচার করে। আধুনিক মানবাধিকার নারী-পুরুষের সম্পত্তির অধিকারের কথা বলে, কিন্তু তারপরও হিন্দুদের ধর্মীয় আইন নারীকে বাবার সম্পত্তির ভাগ দেয়নি। শুধু তাই নয়, এর বিরুদ্ধে আইন করতে গেলে হিন্দুরা তার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে। দেশের সব মানুষ গরুর মাংশ খায়, কিন্তু হিন্দুরা গরুর মাংশ খাওয়ার বিরুদ্ধে বলে। দেশের ৯৫% মানুষ কষ্ট পাবে জেনেও তারা সেটা করে। কারণ এটা নাকি তাদের ধর্মীয় মত প্রকাশ তাদের অধিকার।

 

একজন হিন্দু যদি তার ধর্মীয় মত প্রকাশ করতে পারে, তবে একজন মুসলমান কি তার ধর্মীয় মত প্রকাশ করতে পারবে না ? তার ধর্ম অনুসারে কোনটা বৈধ আর কোনটা অবৈধ সেটা বলতে পারবে না ? সেটা বললে তার জেল জরিমানা দিতে হবে এই আইন কোথায় আছে ? সরকারকে সেটা দেখাতে হবে। সরকার তো মুসলমানদের ধর্মীয় মত প্রকাশে প্রকাশ্যে বাধা দিচ্ছে।

 

বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক অধিকারের বিভাগ এর-

 

-২৮ এর (১) অনুচ্ছেদে বলা আছে:

 

কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারীপুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবেন না।

 

-৩৯ এর (১) অনুচ্ছেদে বলা হচ্ছে: চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তাদান করা হইল।

 

এই ধারা অনুযায়ী একজন হিন্দু নাগরিক তার ধর্ম প্রচার করতে পারবে, কিন্তু মুসলিম নাগরিক তার ধর্মীয় মত প্রকাশ করলে সরকার শাস্তি দেবে, এটা কিন্তু হবে না।

 

সংবিধানের ২৬ এর (২) অনুচ্ছেদে স্পষ্ট বলা আছে:

 

রাষ্ট্র এই ভাগের কোন বিধানের সহিত অসমঞ্জস কোন আইন প্রণয়ন করিবেন না এবং অনুরূপ কোন আইন প্রণীত হইলে তাহা এই ভাগের কোন বিধানের সহিত যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ততখানি বাতিল হইয়া যাইবে।

 

তারমানে সরকার শুধু মুসলমানদের মত প্রকাশের বাধা দিয়ে কোন আইনও পাশ করতে পারবে না, করলে সেটা সংবিধান অনুসারে বাতিল হবে।

 

পহেলা বৈশাখ হিন্দুদের অনুষ্ঠান এটা তো হিন্দুরাই বলে। হিন্দুদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান মুসলমানরা করতে পারবে না, এটা কি একজন মুসলমান বলতে পারবে না ?

 

ঐ কারা কর্মকর্তা তো হিন্দুদেরকে তাদের ধর্ম পালনে বাধা দেয় নাই, সে নিজ ধর্মের মানুষকে সতর্ক করেছে। এটা অবশ্যই তার রাষ্ট্রীয় মৌলিক অধিকার এবং কোনভাবেই তাতে হস্তক্ষেপ করার অধিকার রাখে না।

 

আমি সবাইকে আহবান জানাবো, মুসলমানদের ধর্মীয় মতপ্রকাশে সরকার বাধা দিচ্ছে এবং তাকে হেনস্তা করছে। এর বিরুদ্ধে সবাই আন্দোলন গড়ে তুলুন। যে আওয়ামী সরকার ধর্মীয় মত প্রকাশের কারণে কারা কর্মকর্তাকে শাস্তি দিতে পারে, সে আওয়ামী সরকার খুব শিঘ্রই বাংলাদেশের ইসলাম নিষিদ্ধ করে দেবে । এবার মাদ্রাসায় মঙ্গল পূজা করিয়েছে, আগামীবার মাদ্রাসায় দূর্গা পূজা করাবে, মসজিদে কালী মূর্তি স্থাপন করে সবাইকে মাথা নত করতে বাধ্য করবে। আওয়ামী সরকার কর্তৃক ধর্মীয় বাক স্বাধীনতা হরণের স্বৈরাচারী স্বভাবের বিরুদ্ধে সবাইকে একজোট হয়ে আন্দোলন করা এখন জরুরী।

 

 

 

 

 

খবর : (১)

নতুন প্রজন্মের মধ্যে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে গুরুত্বারোপ রাষ্ট্রপতির (https://bit.ly/2LBSUyL)

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বহুদিন ধরে জোকার রাষ্ট্রপতি হিসেবে বহুল প্রচারিত। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে দর্শকদের হাসানোই তার একমাত্র কাজ। কিন্তু সেই রাষ্ট্রপতি হঠাৎ করে কেন নতুন প্রজন্মকে অসাম্প্রদায়িক বানানোর প্রজেক্টে নেমেছেন ?

আজকে খবরে দেখলাম, ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রনব ঘোষ কট্টর হিন্দুত্ববাদী আরএসএসর অনুষ্ঠানে যোগদান করেছে। (https://bit.ly/2L5RzyY)

 

আমার বিশ্বাস রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ এখনও নিজেকে প্রনবের মত অসাম্প্রদায়িক বলে দাবি করতে পারবে না। কিন্তু সেই প্রনব নিজেই যখণ হিন্দুত্ববাদে যোগদান করছে, সেখানে আব্দুল হামিদ কেন তরুন প্রজন্মকে অসাম্প্রদায়িকতার দিকে ঝুঁকাতে চাইছে ? উগ্রহিন্দুত্বের বিপরীতে অসাম্প্রদায়িকতা কতটুকু গ্রহণযোগ্য ? আমরা জানি, ভারতের মুসলমান কিংবা মায়ানমারের রোহিঙ্গারা হিন্দুত্ববাদ বা বৌদ্ধবাদের বিপরীতে ৭০ বছর ধরে অসাম্প্রদায়িকতা দেখিয়েছে। কিন্তু কি ফল পেয়েছে ? মার তো খেয়েছেই, এখন নিজ ভূমিটাও হারাতে বসেছে। আব্দুল হামিদ কি বাংলাদেশের মুসলমানদেরও রোহিঙ্গা বা অসমীয় মুসলমানদের মত বানাতে চায় ?

 

 

খবর: (২)

ভারতকে যা দিয়েছি সারা জীবন মনে রাখবে: শেখ হাসিনা (https://bit.ly/2kz0MVi)

 

এই খবরের পর আনন্দবাজার পত্রিকায় রিপোর্ট এসেছে-

মোদীর কাছে প্রতিদানচান হাসিনা” (https://bit.ly/2smgZBu

)

প্রথম খবরে শেখ হাসিনা ভারতকে ‘যা দিয়েছেনবলতে নিজের কিছু দেননি, দিয়েছেনে দেশ ও দেশের সম্পদ। কিন্তু পরের খবরে স্পষ্ট শেখ হাসিনা নিজের জন্য চাইতে গিয়েছেন।

অর্থাৎ দেশ বিলিয়ে নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে চান শেষ হাসিনা, বিষয়টি শেখ হাসিনা ও ভারতীয় মিডিয়ার বক্তব্যে মোটামুটি পরিষ্কার। এতদিন কথাগুলো হয়ত ভিন্ন ভিন্ন মহল থেকে আসছিলো, কিন্তু এখন খোদ শেখ হাসিনা ও ভারতের পক্ষ থেকে বিষয়টি পরিষ্কার করা হলো।

বঙ্গবন্ধু যে দেশ স্বাধীন করেছিলেন, তার কন্যা সেই দেশকে ভারতের কাছে ক্ষমতার জন্য বিক্রি করে দিচ্ছে, অবতীর্ণ হয়েছে লেন্দুপ দর্জি বা মীর জাফরের ভূমিকায়। দেশ পুরোপুরি বিক্রির আগে বিশ্বাসঘাতকদের তাড়ানো ছাড়া অন্য কোন উপায় দেখছি না।

 

খবর : (৩)

বিদেশী পতাকা উড়ানো নিয়ে রিট খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্টের দুই বিচারক

বিশ্বকাপ ফুটবলকে কেন্দ্র করে মুক্তিযোদ্ধা মুহম্মদ নুরুল আমিনের করা সেই রিট আজকে শুনানির সময় খারিজ করেছে হাইকোর্টের বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও কেএম কামরুল কাদের। রিটকারীর বক্তব্য ছিলো, বিদেশী পতাকা ওড়ানো রাষ্ট্রের আইনবিরোধী। কিন্তু দুই বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও কেএম কামরুল কাদেরের সরাসরি দাবি হচ্ছে, ‘আইনবিরোধী বলে কিছু নেই। যেই আইন জনগণের বিনোদনের বিরুদ্ধে যায় সেই আইন-ই থাকা উচিত নয়।অর্থাৎ দুই বিচারপতিও রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন সংরক্ষেণের স্থান হাইকোর্টে বসে দেশের আইনকে সরাসরি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখালেন। সাবাস।

 

রাষ্ট্রের শীর্ষস্তরে যখন বিশ্বাসঘাতকতা, আইনলঙ্ঘন আর শত্রুর এজেন্ডা বাস্তবায়ন প্রকাশ্যেই হয়, তখন সেই রাষ্ট্রের পতন অত্যাসন্ন, তা বুঝতে বিজ্ঞানী হতে হয় না।

 

 

 

 

 

 

 

এই দুইজন বিচারপতিকে চিনে রাখুন সবাই-

একজনের নাম বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম, অন্যজনের নাম বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের। এরা দেশের সর্বোচ্চ আইন প্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হাইকোর্টে বসে নিজেরাই আইনের বিরুদ্ধাচরণ করছে। বিদেশী পতাকা ওড়ানোর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইন আছে (https://bit.ly/2J9VLRK)।

 “বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষে সারা দেশে বিদেশী পতাকা ছেয়ে গেছেযা আইনের বিরুদ্ধচারণ, এই মর্মে গত কয়েকদিন আগে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়। কিন্তু বিশ্বকাপ উন্মাদনার বিরুদ্ধে এ ধরনের আইন-ই থাকা উচিত নাএধরনের আইন বহির্ভূত কথা বলে রিট খারিজ করে দেয় বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের বেঞ্চ।

যাদের উপর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে দেশের আইন রক্ষা করা, তারাই যখন আইন বহির্ভূত হয়ে উঠে তখন দেশের জনগণ যাবে কোথায় ?

রাষ্ট্রের আইন বহির্ভূত কাজ করায়, আইন অনুযায়ী এই দুই বিচারপতির কি শাস্তি হওয়া উচিত, আমি সেই বিচার-ই দাবী করছি।

 

 

 

 

 

 

# গত ৯ই জুলাই আইনমন্ত্রী বলেছে, বিচারাধীন মামলার সংখ্যা নাকি ৩৪ লক্ষ । মামলা মোকাদ্দমায় চলছে বড় জট। এর মধ্যে একটা বড় অংশ আছে সুপ্রীম কোর্ট ও হাইকোর্টে।

(https://bit.ly/2ueMkHB)

 

সুপ্রীম কোর্টে মামলার জটের প্রধান কারণ সুপ্রীম কোর্টে অতিরিক্ত ছুটি। আপনারা শুনলে অবাক হবেন, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিচারবিভাগ সুপ্রিম কোর্ট বছরে ৬ মাস খোলা থাকে, আর ৬ মাস বন্ধ থাকে। সুপ্রীম কোর্টের বিচারকরা শুক্র-শনিবারের ছুটি এবং সরকার নির্ধারিত ছুটি ছাড়াও অতিরিক্ত ছুটি পায় ৫১ দিন, যা অন্য কোন চাকুরীজীবি পায় না। (https://bit.ly/2N30ylx/)

 

এই অতিরিক্ত ছুটি পাওয়ার পেছনে অবশ্য একটা কারণ আছে। বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্ট চলে পুরোপুরি ব্রিটিশ আমলের সিস্টেমে। ব্রিটিশ আমলে সুপ্রীমকোর্টের বিচারপতিরা আসতো সুদূর ব্রিটেন থেকে। তাই বাংলাদেশে (তৎকালীল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া) এক নাগারে থাকা তাদের পক্ষে সম্ভব হতো না। ফলে ব্রিটেনে পরিবারপরিজনের থাকে থাকার জন্য তাদের লম্বা ছুটির প্রয়োজন হতো। বলাবাহুল্য, ব্রিটিশ আমলের পর পাকিস্তান আমল শেষ হয়ে গেছে, বাংলাদেশের বয়সও ৪৭ বছর চলছে। কিন্তু ব্রিটিশ আমলের সেই ছুটির দিনগুলো শেষ হয়নি, যার খেসরত দিতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে মামলার জটে পড়ে।

 

ব্রিটিশ আমল শেষ হয়েছে ৭১ বছর হয়ে গেলো, বাংলাদেশের প্রধান বিচারবিভাগের ভাষা এখনও ইংরেজী রয়ে গেছে !!! এখনও আইনজীবি আর বিচারপতি যখন কথা বলে তখন বিচারপ্রার্থী তা বুঝতে সক্ষম হয় না, সক্ষম হয় না মামলার নথিতে কি লেখা হয়েছে। ভাষা হচ্ছে মানুষের ভাব-আবেগ প্রকাশের মাধ্যম। একজন মানুষ যদি তার ভাব-আবেগই প্রকাশ করতে না পারে, তবে সে বিচার চাইবে কিভাবে ? আর সঠিক বিচার প্রত্যাশাই বা করবে কিভাবে?

সরকার বাংলাভাষাকে জাতিসংঘের দাফতরিকভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে দাবি তুলেছে (https://bit.ly/2NDZJ3K)। কিন্তু তারা কি নিজের দেশের বিচার দফতরের ভাষাকে বাংলা করতে পেরেছে ?

 

এখনও দেখবেন, বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্টের প্রধানবিচারপতি মাথার মধ্যে ভেড়ার উলের টুপিপড়ে থাকে। ব্রিটিশ ধারণা হলো, মা ভেড়ার কাছে সব বাচ্চা যেমন সমান, তেমনি প্রধান বিচারপতির কাছে সবাই সমান। সেই ধারণা থেকে প্রধান বিচারপতিকে ভেড়া সেজে থাকতে হয়। বাংলাদেশে এখনও সেই ব্রিটিশ কালচার চলছে।

 

উকিল-আইনীজীবীরা ব্রিটিশ সিস্টেমে পড়ে থাকে কোর্ট-গাউন। ব্রিটেন শীতের দেশ, তাই সেটা তারা পড়তে পারে, কিন্তু বাংলাদেশ তো শীতের দেশ না, এখানে কেন উকিল আইনজীবীকে শীতের দেশের পোষাক পড়তে হবে ? এ জন্য কোর্ট এলাকায় একটা কথা প্রচলিত আছে, “গরমের দিনে কোর্ট পড়ে দুই প্রকার লোক, উকিল আর পাগল”।

 

সুপ্রীম কোর্টের মধ্যে এখনও উকিল ও বিচারপ্রার্থীরা বিচারপতিদের ‘মাই লর্ডশব্দ দ্বারা সম্বোধন করে। মাই লর্ড শব্দের অর্থ আমার প্রভু’। বিচারপতির আসনে ব্রিটিশরা বসতো, তারা দাবি করতো তারা হলো মালিক’। আর এদেশীয়রা হচ্ছে ‘দাস’। এই ধারণা থেকেই মাই লর্ড শব্দের উৎপত্তি। কিন্তু স্বাধীনতার ৭১ বছর পরও কি আমরা সেই দাসত্বের শিকল থেকে বের হতে পারবো না ?

 

উল্লেখ্য পার্শ্ববর্তী ভারতে আজ থেকে ১৩ বছর আগে উকিলদের প্রতিবাদের মুখে ‘মাইলর্ডপ্রথা উঠে গেছে (https://bit.ly/2L2YFoi)। বাংলাদেশের উকিলরা নিজেদের অনেক পণ্ডিত বলে জাহির করে, কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ মাইলর্ড প্রথা নিয়ে প্রশ্ন তুলেনি।

 

শুধু তাই না, এখনও কোর্টে শুরু ও শেষে সম্বোধনস্বরূপ বিচারপতিদের সামনে উকিলদের মাথা নত করতে হয়। আমার জানা মতে ইসলামধর্মে এভাবে মাথা নত করা নিষিদ্ধ, কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানের দেশে এই ব্রিটিশ কুপ্রথা অব্যাহত রয়েছে। মাউন্ট ব্যাটেন বলেছিলো, ব্রিটিশরা চলে যাচ্ছে, কিন্তু এমন এক জাতি রেখে যাচ্ছে, তারা দেহতে এদেশী হলেও মনেপ্রাণে হবে ব্রিটিশ। কোর্টের দিকে তাকালে যেন যার সত্যতা ১০০% দেখা যায়।

 

বাংলাদেশ ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে মুক্ত হয়েছে ৭১ বছর। এরমধ্যে বাংলাদেশের যে একটি স্বতন্ত্র সিস্টেম দাড় করানোর যোগ্যতা হয়নি বিষয়টি সেরকম নয়।কিন্তু তারপরও মান্ধাতার সিস্টেম কপি করে চলেছে সবাই। আমরা যারা বাংলাদেশ নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখি, বিচারবিভাগে এহেন মাছি মারা কেরানীসিস্টেম আমাদের সত্যিই কষ্টে ফেলে দেয়।

 

 

 

 

 

 

 

# ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড, ইতালি, সুইজারল্যান্ডসহ অনেক রাষ্ট্রে মুসলমান মহিলাদের বোরখা বা নেকাব নিষিদ্ধ। তাদের দাবি, মুসলমান মহিলারা এসব পোষাক পরে সারা শরীর ঢেকে রাখে, সেটা নাকি নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

 

অথচ শীতের দিনে ঐসব দেশের মহিলা-পুরুষ সবাই এমনভাবে শরীর ঢেকে রাখে যা বোরখার থেকেও আবদ্ধ। কিন্তু ঐ পোষাক তাদের কাছে হুমকি বলে মনে হয় না।

 

মজার ব্যাপার হচ্ছে, বোরকা নিষিদ্ধকারীদেশগুলো অধিকাংশ শীতপ্রধান অঞ্চলে এবং সেখানে অধিকাংশ মানুষ অমুসলিম। অর্থাৎ অমুসলিম মানুষগুলো বেশিরভাগ সময় শরীর ঢেকে রাখে শুধুমাত্র শীতের জন্য। সে হিসেবে গুটি কয়েক মুসলিম নারীর বোরখা তাদের জন্য কিছুই না। তারপরও সেটাই তাদের চুলকানির কারণ।

 

কিন্তু ওরা যখন বাংলাদেশে আসে তখন সাজে অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তমনা। তারমানে বাস্তবতা হচ্ছে, ওরা অসাম্প্রদায়িকতার বুলি যতই আওড়াক, তাদের বোরখা বিদ্বেষ মুসলমান বিদ্বেষ তথা উগ্র সাম্প্রদায়িকতারই অংশ।

 

 

 

 

 

 

 

# চিকেনস নেকর ভারতের অন্যতম দুর্বলতা ধরা হয়। ভারত কোন দেশের বিরুদ্ধে যাওয়ার পূর্বে তার চিকেনস নেকের কথা স্মরণ রাখে। চিকেনস নেকের এক পা বাংলাদেশের মাটিতে, অন্য পা নেপালের মাটিতে। স্বাভাবিক কথা হচ্ছে, বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে যদি ভালো সম্পর্ক থাকে, তবে চিকেনস নেক সুযোগ নেয়ার কথা চিন্তাও করতে পারে কেউ। বিশেষ করে নেপাল ও বাংলাদেশে চীনের বলয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারতের চিকেনস নেক নিয়ে অবশ্যই চিন্তা থাকার কথা।

 

তবে এক্ষেত্রে একমাত্র সমাধান যদি নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ করা যায়। যদি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হয়, তবে চিকেনস নেক ব্লক করার কথা হয়ত কেউ চিন্তাও করবে না। ফলে অবধারিত নিরাপদ থাকবে ভারত।

 

নেপালে বাংলাদেশী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার পর একটি কথা আমার বার বার মনে হয়েছে, এর ঘটনা ঘটিয়ে নেপালের কি সুবিধা থাকতে পারে ? কারণ নেপালের পর্যটকদের একটি বিরাট অংশ বাংলাদেশ থেকে আগত, পাশাপাশি নেপালীদের একটা বড় অংশ বাংলাদেশে আসছে পড়ালেখা করার জন্য। ঐ বিমানে নেপালেরও বেশ কিছু ভবিষ্যত ডাক্তার ছিলো। বাংলাদেশের অনেক শিক্ষিত ব্যক্তি নেপালের সেমিনার-সিম্ফোজিয়াম করে দুদেশের মধ্যে সু-সম্পর্কই রাখছিলো।

 

যদিও এ বিমান হামলা স্যাবোটেজ হয়, তবে এ ঘটনায় নেপাল ক্ষতিগ্রস্ত-ই হবে, লাভবান হবে না্ মোটেও। কিন্তু হিসেব মতে কেবল লাভবান হবে ভারত। কারণ দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব লাগলে চিকেনস নেক থাকবে নিরাপদ। সে দিক বিবেচনা করলে, নেপাল এভিয়েশনের ভেতর ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার লোক ঢুকে থাকা একদম অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু নেপাল চক্ষু লজ্জায় সেটা কখনই প্রকাশ করতে পারবে না। কারণ নিজ দেশের পর্যটন সেক্টরের সুনাম নষ্টের ভয়ে বাংলাদেশের ক্যাপ্টেনকে দোষারোপ করা ছাড়া অন্য উপায় তার থাকছে না।

 

 

 

 

 

 

 

 

# ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্সনিয়ে আলোচনা করতে গেলে আমার প্রথম মাথায় আসে মেয়েদের চুলের বেণীর কথা, চুলের বেণীতে যেমন একপ্যাচের পর অন্য প্যাচ দিয়ে লম্বা করা হয়, বর্তমানে ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্সের অবস্থা ঠিক সেই চুলের বেণীর মত প্যাচের পর প্যাচ লেগে গেছে।

 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যখন আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থা সিস্টেম তৈরী হলো, তখন সেই নীতির আবির্ভাব। যুদ্ধ দিয়ে নয়, বরং পলিটিক্স বা কৌশলগত সিদ্ধান্ত দিয়ে হবে ঘায়েল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একদল অ্যানালিস্ট তৈরী করে যখন কাজ শুরু করলো, তখন রাশিয়া দেখলো তাদেরও একদল অ্যানালিস্ট লাগবে মার্কিন নীতিকে সামাল দিতে। শুরু হয়ে গেলো পাল্টাপাল্টি কূটনীতি-যুদ্ধ। দেয়া হলো এক প্যাচের উপর অন্য প্যাচ। প্যাচ লাগতে লাগতে এখন সেটা নারীদের বেণীর মত হয়ে গেছে। বর্তমান কালে আমরা যে প্যাচ দেখি সেটা বেনীর ৯ নম্বর প্যাচ, একটু বুদ্ধিমানরা হয়ত ৯ নম্বরটা খুলতে পেরে খুশি। কিন্তু সেই প্যাচের পর আরো ৮টি প্যাচ রয়ে গেছে। একটার পর একটা খুলতে পারলেই মূল যায়গায় যাওয়া সম্ভব।

 

ইহুদীরা উপরে বসে থাকে। এরপর দুই পক্ষ হয়ে একপক্ষ একদিকে মার্কিনব্লকের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে, আরেক পক্ষ অন্যদিকে রাশিয়ানব্লকের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে। ইহুদীরা দুইপক্ষ এক সাথে বসে চা খায়, কিন্তু নিচ দিয়ে প্যাচ লাগিয়ে ফায়দা নেয়। নিচ দিয়ে আমেরিকান ব্লকে অনেক রাষ্ট্র ও রাজনীতিক যোগ হয়, আবার রাশিয়ান ব্লকেও যোগ হয় অনেক রাষ্ট্র ও রাজনীতিক। বিশ্বব্যাপী চলে আন্তর্জাতিক রাজনীতি।

 

মুসলমানরা এখন বিশ্বজুড়ে নির্যাতিত ও নিপীড়িত। মুসলমানরা যদি এই অবস্থা থেকে উত্তরণ চায়, তবে মুসলমানদেরকে প্রথমে এই আন্তর্জাতিক রাজনীতি বুঝতে হবে, প্যাচগুলো ধরতে হবে। অনেক মুসলমান কিন্তু এই প্যাচের মধ্যে ঢুকে বিলীন হয়ে যায়। এটা হলে চলবে না। নিজেই পৃথক প্যাচ তৈরী করতে হবে আর সেই প্যাচে শত্রুদেরকে ঘায়েল করতে হবে।

 

বর্তমানে বাংলাদেশের নির্বাচন সন্নিকটে। এ মুহুর্তে জাতীয় সেক্টরে আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিষয়গুলো অবলোকন করা সহজ। বাংলাদেশের জনগণ হয়ে গেছে ফুটবলের মত। একবার এক পক্ষ লাথি মেরে একদিকে পাঠায়, আরেকবার আরেকপক্ষ লাথি মেরে অন্যদিকে পাঠায়। দুই পক্ষ জনগণকে নিয়ে খেলে, কিন্তু জনগণের নিজের কোন অবস্থান নাই। সে ব্যবহৃত হয়, কিন্তু নিজে কিছু করতে পারে না। বাংলাদেশের জনগণকে সেই জ্ঞান দিতে আমি অ্যানালিস্ট ক্লাস শুরু করেছিলাম। প্রথম ক্লাসে ঘটনার আড়ালে এক্টরস বা প্লেয়ার কতজন’, ‘রিয়েল ফেস ও আর্টিফিসিয়াল ফেসটার্মগুলো এনেছিলাম। প্রথম ক্লাস নেয়ার পর দীর্ঘ ১ মাস ব্যক্তিগত কাজে আমি ব্যস্ত থাকায় সময় নিয়ে অ্যানালিস্ট ক্লাসএর জন্য ফেসবুকে বসতে পারিনি। এজন্য অনেকে কষ্ট পেয়েছেন। একারণে আমি আন্তারিকভাবে দুঃখিত।

 

এবার ঠিক করেছি ২য় ক্লাসটি নিবো। ২য় ক্লাসটি হবে ‘জাতীয় রাজনীতির সাথে আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্পর্ক রক্ষা করে কিভাবে ?’ ২য় ক্লাসের স্ট্যাটাস লেখা শেষ, খুব শিঘ্রই রিলিজ হবে।

 

 

 

 

 

 

# জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির মধ্যে সম্পর্ক ধরতে হলে প্রথমে আপনাকে বুঝতে হবে লোকাল (থানা বা ইউনিয়ন পর্যায়ে রাজনীতি) রাজনীতির সাথে জাতীয় রাজনীতির সম্পর্ক। লোকাল রাজনীতির সাথে জাতীয় রাজনীতির সম্পর্ক যেমন, জাতীয় রাজনীতির সাথে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ঠিক সেকরম। একটি সম্পর্ক বুঝলে, অন্যটি বোঝা সহজ।

 

বিষয়গুলো খেয়াল করুন:

 

(১) জাতীয় রাজনীতিতে যেমন দুটি বড় দল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে (উদাহরণ আওয়ামীলীগ-বিএনপি), ঠিক তেমনি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে দুটি বড় ব্লক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। একটি মার্কিন ব্লক, অন্যটি রুশ ব্লক।

 

(২) লোকাল রাজনীতি করা একজন চেয়্যারম্যান, তার এলাকায় হয়ত খুব জনপ্রিয় হতে পারে। কিন্তু জাতীয়ভাবে তার কোন অবস্থান নেই। জাতীয়ভাবে আসতে হলে ঐ চেয়ারম্যানকে জাতীয় রাজনৈতিক দল যেমন- আওয়ামীলীগ বা বিএনপির পরিচয়ে আসতে হবে। তখন যদি তাকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়, “অমুক এলাকার আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান বা অমুক এলাকার বিএনপির চেয়ারম্যান। তাহলে জাতীয় পর্যায়ে রাজনীতিবিদরা তাকে সহজেই চিনতে পারে। ঠিক তেমনি, বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ যখন জাতীয় পর্যায়ে রেখে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যায়, তখন যদি তাকে বলা হয় আওয়ামীলীগ/বিএনপির নেতা। তবে কিন্তু চেনা যায় না। কারণ আন্তর্জাতিক রাজনীতির পরিমণ্ডলে আওয়ামীলীগ বা বিএনপির কোন অবস্থান নেই । তখন ঐ রাজনীতিবিদকে যোগ দিতে হয় আমেরিকা বা রাশিয়ান ব্লকে। তখন তার পরিচয় হয় অমুক দেশের রাশিয়ান বা মার্কিন ব্লকের সদস্য। যেমন: ড. কামাল হোসেন বাংলাদেশে মার্কিন ব্লকের সদস্য।

 

(৩) প্রশ্ন আসতে পারে, একজন জাতীয় রাজনীতিবিদের সাথে কেন বিদেশী ব্লকের সাথে সম্পর্ক তৈরী হয়?

 

উত্তর হবে: দুই দিকেরই স্বার্থ আছে। লোকাল রাজনীতির সাথে জাতীয় রাজনীতির সম্পর্ক বুঝলে, জাতীয় রাজনীতির সাথে আন্তর্জাতিক রাজনীতির সম্পর্ক বুঝা সম্ভব।

 

ক) একজন লোকাল চেয়ারম্যানের উপর লোকাল ও জাতীয় লেভেলে নানা রকম হুমকি বা থ্রেট থাকতে পারে। সেই থ্রেট এড়ানোর জন্য সে জাতীয়ভাবে যারা রাজনীতি করে তাদের সাথে গাট বাধে। তার সাথে জাতীয় রাজনীতিবিদদের সম্পর্ক থাকায় এলাকার প্রতিপক্ষরা তাকে কিছু করতে পারে না। পাশাপাশি লোকাল লেভেলে তার প্রভাব বিস্তার এবং প্রতিপক্ষ থেকে এগিয়ে থাকতে জাতীয় রাজনীতিবিদরা সর্বাত্মক হেল্প করে।

একইভাবে জাতীয় ক্ষেত্রে রাজনীতিবিদদের জন্য অনেক ন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল থ্রেট থাকে। এজন্য তাকে বিদেশী রাজনীতিক ব্লকের সাথে সম্পর্ক মেইনটেইন করতে হয়, নয়ত তার প্রতিপক্ষরা তাকে শেষ করে দিতে পারে। পাশাপাশি জাতীয় লেভেলে প্রভাব বিস্তার ও প্রতিপক্ষ থেকে এগিয়ে থাকতে আন্তর্জাতিক লেভেল থেকে হেল্প করা হয়।

যেমন: শেখ হাসিনা রুশব্লক মেইনটেইন করে। এটা করে তারা ভারতীয় কংগ্রেসের মাধ্যম দিয়ে (ভারতের কংগ্রেস রুশব্লকের সদস্য)। এ কারণে ওয়ান ইলেভেনের সময় মাইনাস টু করে যখন আমেরিকা শেখ হাসিনাকে হটিয়ে দিতে চাইছিলো, তখন রুশব্লকের ভারতীয় কংগ্রেস শেখ হাসিনাকে রক্ষার জন্য সর্বাত্মক কাজ চালায়। পাশাপাশি প্রতিপক্ষ বিএনপি থেকে এগিয়ে থাকতে রুশব্লকের ভারতীয় কংগ্রেস সব সময় শেখ হাসিনাকে সাহায্য করে।

 

(খ) আবার, একজন লোকাল চেয়্যারমানের দ্বারা জাতীয় রাজনৈতিক দল বা রাজনীতিবিদ ফায়দা নেয়। যেমন জাতীয় দলগুলো লোকাল রাজনীতিবিদদের উপর নির্ভর করে লোকাল পর্যায়ে তাদের প্রচার-প্রসার বা স্বার্থ উদ্ধার করে। একই ঘটনা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিবিদদের মধ্যেও হয়। জাতীয় রাজনীতিবিদদের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক শক্তিগুলো ঐ দেশে তাদের মতবাদ/প্রচার প্রসারসহ বিভিন্ন স্বার্থ উদ্ধার করে।

 

৪) তবে অনেক ক্ষেত্রে দুইজনের ইন্টারেস্ট বা স্বার্থ এক নাও হতে পারে বা পরিবর্তিত হতে পারে। তখন স্বাভাবিকভাবে দেখা যায়, পরপষ্পর সমঝোতা করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালায়। তবে কিছু কিছু সেটা নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে দল পরিবর্তনের ঘটনা ঘটে। যেমন একসময় চীন সোভিয়েত ব্লকে ছিলো। এরপর দল পরিবর্তন করে মার্কিন ব্লকে যোগ দেয়। এরপর আবার মার্কিনব্লক ত্যাগ করে রুশব্লকে যোগ দেয়।

 

(৫) জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে কিছু আ্ঞ্চলিক দল থাকে, যাদের অবস্থান পুরো দেশব্যাপী বিস্তৃত নয়। যেমন: জাতীয় পার্টি, জাসদ ইত্যাদি। এ দলগুলোর পৃথক অবস্থান থাকলেও জাতীয়পর্যায়ে কোন ঘটনার সময় (উদহারণ:নির্বাচন) তারা বড়দলগুলোর (যেমন: আওয়ামীলীগ বা বিএনপি) সাথে জোট বাধে (আবার নিজেদের মধ্যেও জোট তৈরী করতে পারে)। অনুরূপ আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রেও এরকম আঞ্চলিক শক্তি থাকে। তারা আঞ্চলিক রাষ্ট্রগুলো নিয়ে জোট বাধে বা বড় শক্তিগুলোর সাথে জোট বেধে কাজ চালায়। যেমন: এশিয়ায় চীন রাশিয়ার সাথে, ভারত আমেরিকার সাথে। মিডলইস্টে সৌদি আরব আমেরিকার সাথে, ইরান রাশিয়ার সাথে জোট বাধে ইত্যাদি।

 

৬) উপরের দিকে যখন দুই দলের সাথে জোট হয়, তখন নিচের দিকেও জোট বা সু-সম্পর্ক লক্ষ্য করা যায়। আবার উপরের দিকে বিপরীতজোটে চলে গেলে নিচের দিকে শত্রুতা লক্ষ্য করা যায়। যেমন- আওয়ামীলীগ আর জাসদ যখন উপরের দিকে জোট বাধে তখন লোকাল পর্যায়ে আওয়ামীলীগ ও জাসদের চেয়্যারম্যানের মধ্যে জোট বা সুসম্পর্ক গড়ে। আবার আওয়ামীলীগ ও জাসদ প্রতিপক্ষ হয়ে গেলে লোকাল চেয়্যারম্যানদের মধ্যে সম্পর্ক ভেঙ্গে যায়। অনুরূপ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কোন জোট হলে, জাতীয় পর্যায়ে ঐ ব্লকের সদস্যদের মধ্যে জোট বা বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। ভেঙ্গে গেলে শত্রুতা বা প্রতিপক্ষতা তৈরী হয়। যেমন: এক সময় আমেরিকা আর চীন একব্লকে ছিলো, তখন বাংলাদেশে মার্কিন ও চীনব্লকের রাজনীতিবিদদের মধ্যে জোট বা সুসম্পর্ক লক্ষ্য করা যায়। এখন চীন মার্কিন ব্লক ত্যাগ করে রুশ ব্লকে যোগ দিয়েছে। তাই এখন বাংলাদেশে চীন ও মার্কিনপন্থীদের মধ্যে শত্রুতা বা বিপরীতপক্ষতা লক্ষ্য করা যায়।

 

আজকের পাঠের পর আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন থাকে, কিংবা কোন অংশ যদি বুঝতে না পারেন, তবে তা কমেন্ট করুন। আমি সুযোগ-সময় করে তার উত্তর দিবো।

 

(১ম পর্ব- রিয়েল ফেস ও আর্টিফিসিয়াল ফেস-https://bit.ly/2PKbc2S)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

# এবারের নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকারের উপর শেখ হাসিনা কতটা আস্থা রাখতে পারে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। শেখ হাসিনা সরকারের মূল ভিত্তি রুশব্লকের ভারতীয় কংগ্রেস, এটা নিয়ে কোন সন্দেহ নাই। কিন্তু মার্কিনপন্থী বিজেপি সরকার আওয়ামীলীগের কতটুকু সহায়ক হবে তা নিয়ে যথেষ্ট ভাববার বিষয় আছে।

 

আমেরিকা এ অঞ্চলে চীনের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলতে চায়। কিন্তু এ অঞ্চলে সরাসরি আসা আমেরিকার জন্য কঠিন। তাই এ অঞ্চলে আমেরিকা ভর করেছে ভারতের বিজেপি’র উপর। আমেরিকাই ভারতকে এ অঞ্চলে আঞ্চলিক সুপার পাওয়ার হিসেবে গড়ে তুলবে, যারা চীনের শক্তিকে খর্ব করবে। সে দিক বিবেচনা করলে ভারত এখন চীনের বিপরীতে আঞ্চলিক শক্তি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। কিন্তু আমেরিকার মূল অংশের সাথে বিরোধ আওয়ামী সরকারের। সে দিক বিবেচনা করলে বাংলাদেশ এখন ভারতের বিজেপির বাবার শত্রু।

 

ভারতীয় রাজনীতির দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই, বিজেপি কংগ্রেসকে চারদিক দিয়ে ঘিরে ধরছে। কংগ্রেসকে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব দিক থেকে ফেলে দিতে তৎপর বিজেপি। ভারতীয় কংগ্রেস যদি আওয়ামীলীগের বাবা হয়, তবে সেদিক বিবেচনা করলে বিজেপিও আওয়ামীলীগের বাবার (কংগ্রেস) শত্রু।

 

বাবার শত্রু হলেও আওয়ামীলীগ প্রথম থেকে চেয়েছে বিজেপি’র সাথে সম্পর্ক সুন্দর রাখতে, এটা-ওটা দিয়ে বুঝ দিয়ে বিজেপিকে ঠাণ্ডা রাখতে। এজন্য দেশীয় সম্পদ, চুক্তি অনেক কিছু দিয়ে বিজেপির মন জয় করতে চেয়েছে। কিন্তু যত কিছুই দিক, বাবা আমেরিকার কথা রাখতে বিজেপি কতক্ষণ আওয়ামীলীগের সাথে নরম থাকে সেটাও দেখার বিষয়। তাছাড়া আওয়ামীলীগের থেকেও ভালো কোন অপশন আছে, তবে বিজেপি সে সুযোগ নেবে না কেন ?

 

বিজেপির সাথে বিএনপি’র তারেক জিয়া প্যানেলের সম্পর্ক খারাপ, কিন্তু ড. কামালের সাথে মোটেও সম্পর্ক খারাপ না, বরং ভালো। তাই বিএনপি যদি কামাল হোসেনের লিডিং এ যায় এবং বাবা আমেরিকার যেহেতু সেখানে পূর্ণ সমর্থন আছে, তখন সন্তান বিজেপির সেখানে সমর্থন জানানোই স্বাভাবিক।

 

একটি কথা মনে রাখতে হবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলে চীনের ক্ষমতা খর্ব করার জন্য পিভট টু এশিয়াপলিসি নিয়েছে, আর ভারতের বিজেপি সরকার সেই নীতি বাস্তবায়ন করতে নিয়েছে লুক ইস্টপলিসি। আর পিভট টু এশিয়াআর লুক ইস্টপলিসি উভয় বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশে মার্কিনপন্থী সরকার জরুরী। চীনের ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড ইস্যুতে ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগ-বিজেপি বিরোধ স্পষ্ট দেখা গেছে।

 

এটা ঠিক, রুশব্লকের আওয়ামী সরকার হয়ত ভারতবিদ্বেষী বাংলাদেশীদের বকাঝকা দিয়ে চূক্তির নামে ভারতকে অনেক কিছু দেবে, কিন্তু আমেরিকা তো ভারতকে পুরো অঞ্চলের খলিফা বানিয়ে দেবে। সুতরাং ১০ টাকার জন্য ১০০ টাকা কেন হাত ছাড়া করবে ভারত ? তাছাড়া পিভট টু এশিয়া সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশকে নিজের ৩০ তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে ভারত। পুরোটার ক্ষমতা যখন হাতছানি দিচ্ছে, তখন আওয়ামীলীগ থেকে খণ্ডিত সুযোগ সুবিধা নিয়ে লাভ কি ??

 

তাই স্বাভাবিক হিসেবে, এবারের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ভারতের বিজেপি সরকারের উপর ভরসা রাখা তো দূরের কথা বাস্তবদৃষ্টিতে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবাই শ্রেয়।

 

 

 

 

 

# কিন্তু উল্টাভাবে যদি চিন্তা করেন, তবে ভারতের নৌপথগুলো সমুদ্র সংযোগ করতে ভারত বাংলাদেশের উপর নির্ভরশীল।

ম্যাপের দিকে ভালোভাবে খেয়াল করুন, ভারতের ভেতর দিয়ে আসা বড় নদীগুলো বাংলাদেশ ছেদ করে সমুদ্রপথে মিশেছে।

 

তারমানে আন্তর্জাতিক ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য সমুদ্রপথে যদি ভারত কোন মালামাল আনা-নেয়া করতে চায় এবং সেটা যদি স্বল্পমূল্যের নৌপথ ব্যবহার করে ভারতের ভেতর ছড়িয়ে দিতে চায়, তবে বাংলাদেশ ভিন্ন ভারতের আর কোন উপায় নাই।

তবে, ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন, বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেষে হুগলি নদীও ভারতের ভেতর দিয়ে বঙ্গপোসাগরে মিশেছে। যেখানে অবস্থিত কলকাতা বন্দর। কিন্তু কলকাতা বন্দরের বর্তমানে অনেক সমস্যা তৈরী হয়েছে, বিশেষ করে হুগলি নদীতে অসংখ্য নদীবাক তৈরী হয়েছে যেগুলো বড় বড় জাহাজ চলাচলের জন্য অসুবিধাজনক। মূল কথা হলো, গঙ্গা নদীর মূল অংশযুক্ত হয়েছে পদ্মার সাথে, হুগলি নদী সে হিসেবে শাখা নদী। তাই সমুদ্র পর্যন্ত পৌছাতে বাংলাদেশের ভেতর নদীপথের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে ভারতকে।

 

এখানে একটু আন্তর্জাতিক রাজনীতি বুঝার দরকার আছে।

চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু আমেরিকা চাচ্ছে চীনের এই প্রভাব দমন করতে। চীনের প্রভাব বিস্তারের মূল হাতিয়ার হচ্ছে ব্যবসা । চীন তার বিপুল জনগোষ্ঠীকে ব্যবহার করে অতি সস্তায় পণ্য উদপাদন করে বিশ্বজুড়ে সরবরাহ করছে, এতে সারাবিশ্ব চীনা পণ্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনাদের এই প্রভার হ্রাস করতে বেছে নিয়েছে ভারতকে। ভারতেরও রয়েছে শতকোটি জনসংখ্যা, রয়েছে সন্তায় শ্রম। ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতে প্রচুর পরিমাণে ইনভেস্ট করছে, তৈরী হচ্ছে অসংখ্য ইপিজেড। এর মাধ্যমে পন্য উৎপাদন ও সরবরাহে চীনের বিকল্প হিসেবে খুব শিঘ্রই ভারতকে দাড় করাতে চাইছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ব্যবসা বাণিজ্যের পরিবহন সহজ করতে সমুদ্র বন্দর ও নদী পথ ব্যবহারের বিকল্প নাই। সেদিক বিবেচনা করলে চীনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ভারতকে দাড় হতে বাংলাদেশের সহযোগীতা চাই ভারতের।

 

আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, গত সপ্তাহে বাংলাদেশের মন্ত্রীসভায় একটি চূক্তির খসড়া অনুমোদন হয়েছে, যে চূক্তি অনুসারে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার করে পণ্য আমদানির সুযোগ পাচ্ছে ভারত।(https://bit.ly/2pvVywb)

শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের নৌপথ ব্যবহারের বুদ্ধি ভারতের অনেক আগে থেকে। এবং কয়েক বছর আগেই সে রাস্তা পরিষ্কার করতে বাংলাদেশের সাথে ভারত একটি চূক্তি করেছে ৪৭০ কিলোমিটার নৌপথ ড্রেজিং করার জন্য, যার ৮০% খরচ দেবে ভারত এবং ২০% খরচ দেবে বাংলাদেশ। (https://bit.ly/2yMQGt2)

 

একটি কথা বলতেই হয়, বর্তমানে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে তৈরীকৃত উত্তেজনার মূল কারণ হলো নদী। ভারত বাংলাদেশের সাথে অভিন্ন নদীর ৫৪টি মধ্যে ৪৭টি বাধ দিয়েছে (https://bit.ly/2zqb0Q0)। এতে নদীগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। নদী বাচাও আন্দোলনের ভাস্য অনুযায়ী আজ থেকে ৪৭ বছর আগে বাংলাদেশের নদীর সংখ্যা ছিলো ১৩০০। কিন্তু বর্তমানে কাগজে কলমে নদী আছে মাত্র ৩০০, যার বেশিরভাগের অবস্থা সংকটাপূর্ণ। (https://bit.ly/2QVah0i)

আমরা শুনেছি, বিজেপি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছে, আওয়ামীলীগ আর ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্বর্ণযুগে পৌছেছে (https://bit.ly/2PZq1xO)। কিন্তু তারপরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই তিস্তার পানি নিয়ে কোন চূক্তি করতে পারেনি এবং আক্ষেপ করেছে।(https://bit.ly/2pxw5mc)

 

তাহলে ভারত যখন পানি ছাড়তে বিন্দুমাত্র রাজী হচ্ছে না, তখন পানির বাকিঅংশটুকু ব্যবহার নিয়ে কেন বাংলাদেশ দরকষাকষিতে যাচ্ছে না ? তারা যদি পানি না ছাড়ে, তবে আমরা তাদের সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করতে দেবো কেন ? আমরা কেন বলছি না, “আগে পানি ছাড়ো, তারপর সমুদ্র বন্দর ব্যবহার ।কিন্তু সেটা না করে কোন যুক্তিতে আওয়ামীলীগ সরকার মংলা ও চট্টগ্রাম ব্যবহারের অনুমুতি দিয়ে দিলো ?

 

আমরা জানি, সারা বিশ্বজুড়ে সবাই সবার ভৌগলিক অবস্থান নিয়ে প্রতিপক্ষ থেকে অধিকার বা সুবিধা আদায় করে নেয়। যেমন, তুরষ্কের আছে বসফরাস প্রণালী’। এর মধ্য দিয়ে দিয়ে ইউরোপ-এশিয়ার মধ্য দিয়ে সংযোগ স্থাপন হয়েছে। ইউরোপ যদি তুরষ্কের সাথে বিরোধ হয়, তবে তুরষ্ক বসফরাস প্রণালী বন্ধ করে তার দাবী আদায় করে নেয়। একইভাবে হরমুজ প্রণালীদিয়ে আমেরিকা-সৌদির তেল বাণিজ্য চাপের মুখে রাখে ইরান। এর কারণে ইরানের বিরুদ্ধে একেবারে এক্সট্রিম পর্যায়ে যেতে পারে না আমেরিকা। তারা যখন তাদের ভৌগলিক অবস্থান দিয়ে প্রতিপক্ষ থেকে সুবিধা আদায় করে নিতে পারে, তাহলে বাংলাদেশ কেন সমুদ্র বন্দর সুবিধা দিয়ে নদীর পানি আদায় করে নিতে পারবে না ? কেন পানি না আদায় করে মংলা-চট্টগ্রাম বন্দরের সুবিধা ছেড়ে দেয়া হবে ??

 

আমার মনে হয়, সরকারের উচিত বিষয়টির দিকে কঠোর দৃষ্টিপাত দেয়া। আর জনগণেরও উচিত, তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা, যেন শতভাগ পানি আদায় করে তারপর বন্দর ব্যবহার করতে দেয়া হয় এবং অবশ্যই সেটা আন্তর্জাতিক শর্ত ও খরচ মেনে।

 

 

 

 

 

গতকাল প্রাইভেট ভার্সিটিগুলোতে পুলিশ আর ছাত্রলীগের সম্মিলিত হামলার পর আমার ধারণা ছিলো, আওয়ামীলীগের মধ্যে আবার কোন থার্ডপার্টি ঢুকে পড়েছে নাকি, যারা এমনটা করে গোলযোগ বাড়াচ্ছে। কিন্তু খবর নিয়ে অবাক হলাম, এই হামলার বিষয়টি নাকি সরাসরি শেখ হাসিনার নির্দেশ ছিলো।

আমি একটা জিনিস বুঝি না, শেখ হাসিনা এত ভীত কেন ?

তার রিয়্যাক্ট কি মাত্রাতিরিক্ত হচ্ছে না ?

ছোট বাচ্চারা রাস্তায় নেমেছে আন্দোলন করতে,

যদি তিনি ধারণা করেন, কেউ তাদের মাঠে নামিয়েছে, তবে পেছনের লোকগুলোর তো উদ্দেশ্যই ছিলো পুলিশ বা ছাত্রলীগ যেন তাদের উপর হামলা করে। সেই হামলাটাই ছিলো তাদের সবচেয়ে বড় চাওয়া। কারণ হামলা করলেই ফুল পাবলিক সেন্টিমেন্ট শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চলে যাবে। এটা একটা ছোট বাচ্চাও বোঝে। কিন্তু শেখ হাসিনা বোকার মত সেই কাজটাই করে বসলো।

আমি যদি প্রধানমন্ত্রী হতাম, তবে আমি নিজেই ছাত্রদের সাথে মাঠে নামতাম। আর গাড়ির লাইসেন্স চেক করতাম। আন্দোলনের নেতৃত্ব অন্য কেউ নেবে কেন ? আমি নিজেই নিয়ে নিতাম। কিন্তু শেখ হাসিনার ব্যবহার যেন ঠিক সতীনের মত। হিংসুটে। যে ছাত্রগুলো আন্দোলনে নামলো, তিনি তাদের বন্ধু না বানিয়ে পিটিয়ে শত্রু বানিয়ে দিলেন। স্কুল-কলেজের এই বিরাট ছাত্র সমাজ যতদিন বাচবে ততদিন তারা আওয়ামীলীগকে চিনবে জানের শত্রু হিসেবে।

তিনি একবারও ভাবলেন না, যে পুলিশ-আর্মি আর প্রশাসনের উপর তিনি ভরসা করে আছে, এই ছাত্ররা হয়ত কোন পুলিশ আর্মি বা প্রশাসন কর্তারই ছেলে-মেয়ে। সরকারী চাকুরেদের বেতন যতই ডবল করে দেন, ছেলে-মেয়ের গায়ে হাত তুললে কোন বাবা-মাই পছন্দ করবে না।

কোটা আন্দোলনের সময়ও একই ঘটনা, কোটা নিয়ে তিনি এক মুখে দুই কথা বললেন। এরপর ছাত্রলীগ দিয়ে ছাত্রদের পিটিয়ে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করালেন। অথচ কোটা আন্দোলনকারীদের কিছু কিছু দাবী মেনে তিনি পুরো পরিস্থিতি শান্ত করে দিতে পারতেন। কিন্তু করলেন উল্টোটা। এতো গেলো পাবালিক ভার্সটির উপর আক্রমণ, এখন আবার আক্রমণ হানছেন প্রাইভেট ভার্সিটির উপর। যেন সমাজের কোন সেক্টরই বাদ না যায়, শেখ হাসিনার থাবা থেকে।

শেখ হাসিনার আচরণটা হচ্ছে ঠিক সাপের মত। সাপ কিন্তু আক্রমণ করার জন্য ছোবল মারে না, সে ভয় পায়, বোধহয় তাকে আক্রমণ করা হচ্ছে, সেই ভয় থেকেই ছোবল মারা। শেখ হাসিনার অবস্থা হয়েছে একইরকম, এখন তিনি সবাইকেই শত্রু ভাবছেন। এজন্য সবাইকে ধরে ধরে পিটাচ্ছেন। এতদিন বলতেন বিএনপি-জামায়াত তার রাজনৈতিক শত্রু, কিন্তু এখন পুরো দেশের জনগণকে তিনি শত্রু বানিয়ে ফেলেছেন, পিটাচ্ছেন। এটা কিন্তু এক ধরনের মানসিক রোগ, যার নাম সিজোফ্রেনিয়া’। এই মানসিক রোগে আক্রান্ত রোগী সব সময় ভাবে, সবাই তার শত্রু, সবাই তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে !

কথা হলো-

একজন মানসিক রোগী কি দেশ চালানোর জন্য উপযুক্ত ?

তিনি তো সবাইকে শত্রু ভাবছেন।

এক শত্রু তো অন্য শত্রুর কখনই ভালো চাইতে পারে না,

জনগণ যেহেতু শেখ হাসিনার শত্রু, তাই তিনি কখনই জনগণের ভালো চাইবেন না, এটাই স্বাভাবিক।

আমার মনে হয়, শেখ হাসিনার মানসিক সু-চিকিৎসা করা জরুরী। সুইজারল্যান্ড, ব্রিটেন বা আমেরিকার মানসিক হাসপাতালগুলোতে ভালোমানের সাইক্রিয়াটিক ট্রিটমেন্ট হয়। তিনি সেখানে দ্রুত যোগাযোগ করতে পারেন। আশা করা যায় বছর খানেক চিকিৎসা নিলেই তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।

 

 

 

 

 

 

আমি চলমান ছাত্র আন্দোলনকে সমর্থন জানাই,

এটা নিরাপদ সড়ক আন্দোলন থেকে সরকার পতনের আন্দোলন হয়ে উঠলে সেটাতেও সমর্থন জানাই।

আমি জানি, এ আন্দোলনে সিআইএর বড় ইন্ধন আছে, তবুও আমি এ আন্দোলনকে সমর্থন জানাই।

কারণ শেখ হাসিনা, দেশের সাথে বেঈমানি করেছে।

সে বঙ্গবন্ধু নাম বিক্রি করে, দেশের সম্পদ নিজ পকেটে পুড়েছে।

চলমান আন্দোলনে যতই বিদেশী ইন্ধন থাকুক এবং সেটা যতই আওয়ামীলীগ প্রচার করুক।

লাভ হবে না।

কারণ এই আন্দোলন আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে জনগণের চরম ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।

- কোটার নামে অযোগ্য লোককে চাকুরী দেয়া।

- দেশের উৎপাদনশীল খাত বন্ধ করে, দেশকে আমদানি নির্ভর করা।

- রূপপুর পারমানবিককেন্দ্র, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মত দেশবিধ্বংসী প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করা।

- ইহুদীবাদী কর্পোরেটদের হাতে দেশ তুলে দেয়ার জন্য কর্পোরেটোক্রেসি পলিসি বাস্তবায়নে কাজ করা।

- পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সিআইএ এবং র’ এর পাঠ্য অন্তর্ভূক্ত করা।

- টাকার লোভে সিআইএ’র (ইউএসজিএলসি) এনজিওগুলোকে বাংলাদেশে অবাধে কার্যক্রম করতে দেয়া।

- জনগণের টাকা অবাধে লুটপাট করা।

- ধর্মবিরোধী অবস্থান নেয়া, মসজিদ ভাঙ্গতে আইন করা, মাদ্রাসা পাঠ্যবইগুলোতে ধর্মগ্রন্থের মনগড়া ব্যাখ্যা প্রবেশ করানো।

- সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের ছুড়ে ফেলে সংখ্যালঘু হিন্দুদের প্রাধান্য দেয়া, ভিআইপি পর্যাদা দেয়া, অধিক চাকুরী, সুযোগ-সুবিধা দেয়া।

বহুদিনের জমে থাকা ক্ষোভ বিষ্ফোরণ আকারে বের হয়েছে।

১০ বছরের স্বেচ্ছাচারিতা আর বেপরোয়া সিদ্ধান্ত ডিনামাইট হয়ে সংরক্ষিত ছিলো

এবং যা আজকে বিষ্ফোরণ ঘটা শুরু করেছে।

আজ থেকে বছর খানেক আগে, তুরস্কে সেনাবিদ্রোহের সময় আমি একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম।

সেখানে শেখ হাসিনাকে বলেছিলাম- এরদোগানের পলিসি খেয়াল করুন।

সে জনগণের পক্ষে কাজ করছে। তাই বিপদে পড়লে জনগণ তাকে সেভ করবে।

সিআইএ তুর্কি সেনাবাহিনীর উপর চেপে বসে বিদ্রোহ করলো, উদ্দেশ্য এরদোগানের পতন ঘটানো।

কিন্তু এরদোগান সোশাল মিডিয়ায় জনগণকে ডাকলো, কারণ সে এতদিন জনগণের পক্ষ কাজ করেছে।

জনগণ তখন সেনাবাহিনীর ট্যাঙ্কের সামনে শুয়ে পড়ে সেনাবাহিনীকে থামিয়ে দিলো।

আর আপনি জনগণকে লাত্থি মেরে বিদেশীদের হয়ে কাজ করেন, এই বিদেশীরা কিন্তু আপনি রক্ষা করবে না,

উল্টা বিপদে পড়লে তারাই জনগণের উপর চেপে বসে আপনার পতন ঘটাবে,

আজকে কিন্তু সেটাই হচ্ছে।

আওয়ালীমীলীগের মাথা ভারতীয় কংগ্রেস নিজেই এখন বিজেপির চাপের মধ্যে।

ওর প্রাণই ওষ্ঠাগত। এই বিপদে সে আপনাাকে রক্ষা করবে কিভাবে ?

আর চীন টাকা দিয়ে গোলাম কিনে, তাই কোন গোলাম আসলো, আর গোলাম গেলো সেটা তাদের দেখার বিষয় না।

একটা দেশ চালানোর জন্য দরকার প্রচুর মেধাবী ও যোগ্যলোকের । আর আপনি বেছে বেছে গণ্ডমূর্খদের দিয়ে সরকার সাজিয়েছেন, যারা ক্লাস ৫ এর বাচ্চাদের মত রিডিংও পড়তে পারে না। তারা এ বিপদে আপনাকে সুবুদ্ধি দিবে কিভাবে ?

তাছাড়া আওয়ামীলীগের নিজের অবস্থাই টালমাটাল, আওয়ামীলীগের শত্রু আওয়ামীলীগের ভেতরেই। নিজে মার্কিনবিরোধী হওয়ার পরও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীত্ব পদে (শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ এবং অর্থমন্ত্রনালয়) সিআইএ ঘেষা লোককে মন্ত্রীত্ব দেয়া হয়েছে। হিন্দুপ্রেমে দিওয়ানা হয়ে সিআইএর পাক্কা এজেন্ট সিনহাকে প্রধানবিচারপতি বানানোর কি শিক্ষা হয়েছে সেটাতেও তার শিক্ষা হয়নি।

উগ্রহিন্দুরা সিআইএ’র নেটওয়ার্কের হয়, এটা জানার পরও পুরো প্রশাসন উগ্রহিন্দু দ্বারা ভরপুর করেছে বোকা হাসিনা। তারা প্রকাশ্যে বিষ্ফোরণ ঘটালে কি অবস্থা হবে ?

শেখ হাসিনা ১০ বছর বাংলাদেশের ক্ষমতায় আছে এটা ঠিক। কিন্তু সে অবশ্যই গাদ্দাফি’র মত শক্তিশালী হয়নি। গাদ্দাফি টানা ৪২ বছর ক্ষমতায় ছিলো এবং দেশের অর্থনীতিরও অনেক উন্নয়ন করেছিলো। কিন্তু সিআইএ আরব বসন্তের নাম দিয়ে গাদ্দাফির পতন ঘটায়, গুলি করে হত্যা করে। এরপর মাত্র ৯ মাস পর (মে, ২০১২) হলিউডে রিলিস করে দেয় দ্য ডিক্টেটর নামক মুভি। মানুষ গাদ্দাফির জন্য কাদবে বা সিআইএকে ভৎর্সনা করা তো দূরের কথা, উল্টা আলাদ্দিন মাদারফাকারগান গেয়ে গাদ্দাফিকে ব্যঙ্গ করে। একইভাবে এই আন্দোলনে শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও যদি একই ঘটনা ঘটে তবে অবাক হওয়ার কিছু দেখি না।

আন্দোলন চলুক, সমস্যা নেই। তবে শেষে ফলাফলটাও যেন জনগণ পায়, অন্য কেউ নিতে না পারে সেটাও মাথায় রেখে কাজ করতে হবে।

 

 

 

 

 

# ‘পদ্মবতমুভি সম্পর্কে জানাতে হলে আপনাকে আগে জানতে হবে, ২০১৩ সালে বাংলাদেশের ক্লাস ৯-১০ এর পাঠ্যবইয়ে রঙ্গলাল বন্দোপাধ্যায়ের লেখা স্বাধীনতানামক একটি কবিতা ছিলো, যা মুসলমানদের তীব্র প্রতিবাদের মুখে ২০১৭ সালে বাদ দেয়া হয়। ঐ স্বাধীনতা কবিতা আর এই পদ্মাবত মূভি একই জিনিস। স্বাধীনতা কবিতাটি পদ্মিনী উপাখ্যানকাব্য থেকে সংকলন করা হয়েছিলো। ঐ সময় স্বাধীনতানামক কবিতার বিরুদ্ধে লিখতে গিয়ে আমি একটা আর্টিকেল লিখেছিলাম, যা

 

পেইজ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আর পাওয়া যাচ্ছে না, তবে গুগল সার্চ করে এ লিঙ্কে (http://bit.ly/2rSOiyD) লেখাটা পেলাম। সেখানে মুল ঘটনা বিস্তারিত পাবেন।

 

পদ্মবত মুভি আসলে কি?

 

হিন্দুরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে তাদের স্বগোত্রীয়দের উস্কানি দিতে নানান ভ্রান্ত গল্প বানায়। এসব ভ্রান্ত গল্পকে পূজি করে তারা যুগে যুগে মুসলমানদের বিরুদ্ধচারণ করেছে, ‍মুসলমানদের বিরুদ্ধে দাঙ্গাকে বৈধতা দিয়েছে। যেমন বাবরী মসজিদের স্থানটি হচ্ছে রামের জন্মস্থান, তাই সেটা ভাঙ্গতে হবে।কিংবা তাজমহল হিন্দু মন্দির ছিলো তাই তা ভাঙ্গতে হবে”, “আরবের কাবা ঘর মূলত শিব মন্দির”। এ ধরনের বহু আজগুবি গল্প বা হিন্দু নির্যাতনের ঘটনা তারা যুগে যুগে বানিয়ে হিন্দুদেরকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে উস্কাতো। বাংলাদেশে ভুয়া সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা সাজানোও একই বিষয়। বাস্তবে যার কোন অস্তিত্ব নেই। মূলত পদ্মাবত মুভি বা পদ্মিনী উপখ্যান সেই স্বভাব থেকেই উদ্ভব।

 

পদ্মবত মুভির ঘটনায় হিন্দুরা গল্প সাজিয়ে বলে, ‘পদ্মিনীহচ্ছে একজন রাজপুত রানী। ১৪শশতাব্দীতে দিল্লীর সুলতান আলাউদ্দিন খিলজি নাকি ঐ নারীর রুপের কথা শুনে পাগল হয়ে যান এবং চিতোর আক্রমণ করে। হিন্দুরা আরো গল্প সাজায়, ঐ সময় মুসলিম শাসক আলাউদ্দিন খিলজি ও তার বাহিনী থেকে নিজেদের সম্ভ্রম বাচাতে নাকি পদ্মিনীসহ ১৩ হাজার হিন্দু নারী আগুনে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলো।

 

মুসলমানরা আসার আগে ভারত কত অনুন্নত ছিলো সে ইতিহাস সবার জানা। প্যাগান গোষ্ঠীদের অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ থেকে মুসলমানরা উদ্ধার করে আলোর পথ দেখায়। বিজেপি মাত্র ৪ বছর ক্ষমতা পেয়ে বলে সমস্ত মুসলমানকে বের করে দেয়া হবে। অথচ মুসলমানরা ভারত ৬০০ বছর একচেটিয়া শাসন করে যদি সত্যিই হিন্দুদের উপর নির্যাতন করতো, তবে ভারত বর্ষে এখন একটা হিন্দুও যেতো না। উল্লেখ্য, হিন্দুরা যে সাম্প্রদায়িক ইনটেনশন নিয়ে কাজ করে, তার প্রমাণ- মুসলমানদের আসার আগে হিন্দুরা বৌদ্ধ ধর্মের বিলুপ্তি ঘটায় (http://bit.ly/2rPR6w8)

 

তারপরও এখন সারা ভারত জুড়ে মুসলিমবিরোধী সেন্টিমেন্ট বিশেষ করে দাঙ্গা উস্কে দিতে এসব ইতিহাস বিকৃত সিনেমা তৈরী করা হচ্ছে। কথিত ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের দেশ ভারতে কত উগ্র সাম্প্রদায়িক পরিবেশ বিরাজ করছে তার নিকৃষ্ট প্রমাণ এ পদ্মাবত মুভি। উল্লেখ্য, এ মুভির বিরুদ্ধে উগ্রহিন্দুদের একটি গোষ্ঠী শুরু থেকে বিরোধীতা করে। এ বিরোধ থেকে হয়ত অনেকে ভেবেছে মুভিটি মনে হয় এন্টি-হিন্দু। আসলে তা না। মুভির কাহিনীর প্রয়োজনে একটি দৃশ্যে কথিত পদ্মবতীকে কথিত আলাউদ্দিন খিলজীর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে দেখানো হয়, আর তাতেই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে উগ্রহিন্দুরা। যদিও পুরো মুভির এন্টি মুসলিম সেন্টিমেন্ট ঠিক আছে। তবে আমার খারাপ লেগেছে অন্য কারণে। হিন্দুরা বানোয়াট চরিত্র পদ্মবতীর জন্য মাঠে নামলো, কিন্তু মুভিটিতে যে মুসলমানদের সুলতান আলাউদ্দিন খিলজীকে মিথ্যা ইতিহাস দিয়ে বিকৃত করে (পশুর মত) উপস্থাপন করা হলো তার প্রতিবাদ কোন মুসলমান করলো না। বর্তমানে মুসলমানদের কঠিন অবস্থার জন্য মুসলমানদের বোবা থাকা একটি কারণ।

 

তবে একই সাথে আলোচনা করা যায়, এ ধরনের একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক ঘটনা কিভাবে বাংলাদেশের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠ্য করা হলো ? কেন ৪ বছর (২০১৩-১৬) তাদের এ ইসলামবিদ্বেষী পড়তে বাধ্য করা হয়েছিলো ? শিক্ষামন্ত্রী নাহিদের এ কারণে কেন বিচার হলো না ??

 

মজার ব্যাপার হচ্ছে, এ ধরনের একটি সাম্প্রদায়িকতা উস্কে দেয়ার ঘটনা যখন পাঠ্যবই থেকে বাদ দেয়া হলো, তখন বাংলাদেশের কথিত অসাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী মাঠে নেমে বললো- বাংলাদেশের পাঠ্যবই নাকি সাম্প্রদায়িক করা হয়েছে !! আশ্চর্য !!!

 

 

 

 

# আমরা যে বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারছি, লিখতে পারছি, এর পেছনে কার অবদান বেশি ? হিন্দুদের না মুসলমানদের ?? এই প্রশ্ন উত্থাপিত হওয়া অস্বাভাবিক নয়। আসলে প্রাচীন আমলে বাংলাভাষা ছিলো আঞ্চলিক ভাষার মত, ভাষাটি এত বেশি সমৃদ্ধ ছিলো না যে একটি বিরাট জাতি তা সাচ্ছন্দে ব্যবহার করতে পারে। প্রাচীন বাংলা ভাষায় সাহিত্য চর্চার খুব একটা নিদর্শনও পাওয়া যায় না (শুধু চর্যাপদ ছাড়া)। এরপর মধ্যযুগে বাংলাভাষা কৈশরে উপনিত হয়। কিন্তু দুঃখজনক, সেই ক্ষুদ্র বয়সে হিন্দুরা বাংলাভাষাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। হিন্দু সেন রাজত্বের আমলে ব্রাহ্মণরা বলা শুরু করল সংস্কৃত হচ্ছে দেবভাষা আর বাংলা হচ্ছে মনুষ্য সৃষ্ট ভাষা। বাংলা ভাষা মর্যাদায় অনেক নিচু।

এ সম্পর্কে ইতিহাস বলে- "ব্রাক্ষ্মণ্যবাদী সেন রাজারা বাংলা ভাষা চর্চা নিষিদ্ধ করেছিল। আর হিন্দু পুরোহিতরা এ কথা বলে বেড়াতো যে, যে ব্যক্তি বাংলা ভাষায় কথা বলবে সে নরকে যাবে। [ সুত্র : খন্দকার কামরুল হুদা, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও শেখ মুজিব, ১৯৯৫ পৃ. ৩২] "

ডক্টর দীনেশ চন্দ্র সেন অত্যন্ত সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছে। তার ভাষায়, ‘ইতরের ভাষা বলিয়া বঙ্গ ভাষাকে হিন্দু পন্ডিত মন্ডলী দূর দূরকরিয়া তাড়াইয়া দিতেন। (সওগাত, চৈত্র, ১৩৩৫)

অপরদিকে ১২০৫ খ্রিষ্টাব্দে মুসলিম সেনাপতি মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজি বাংলা দেশে মুসলিম রাজত্ব কায়েমের ফলে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের নবজন্ম ঘটে। মুসলমান শাসক হুসেন শাহ, গৌড়ের সামসুদ্দিন ইউসুফ শাহ এবং অপরাপর মুসলমান সম্রাটেরা বাংলাদেশে বাংলা ভাষাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে আমাদের সাহিত্যে এক নতুন যুগ সৃষ্টি করেছিলেন। আর সে কারণেই দিনেশ চন্দ্র সেন মন্তব্য করে, "মুসলমান সম্রাটগণ বর্তমান বঙ্গ সাহিত্যের জন্মদাতা এইরূপ বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। বঙ্গ সাহিত্য মুসলমানদেরই সৃষ্ট, বঙ্গভাষা বাঙ্গালী মুসলমানের মাতৃভাষা। [ সুত্র : দীনেশ চন্দ্র সেন - প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান, (১৯৪০) কলকাতা।]"

দীনেশ চন্দ্র সেন আরো বলে- কয়লার খনির মধ্যে থাকিয়া হীরা যেমন জহুরির আগমনের প্রতীক্ষা করে, শুক্তির ভেতর মুক্তা লুকাইয়া থাকিয়া যেরূপ ডুবুরির অপেক্ষা করিয়া থাকে, বাংলা ভাষা তেমনই কোনো শুভদিন শুভক্ষণের জন্য প্রতীক্ষা করিতেছিল। মুসলিম বিজয় বাংলা ভাষার সেই শুভদিন শুভক্ষণের সুযোগ আনয়ন করিল।’ [দ্রষ্টব্য : বাংলা ভাষার ওপর মুসলমানের প্রভাব : শ্রী দীনেশ চন্দ্র সেন]।

বিশিষ্ট গবেষক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানবাংলার সামাজিক ও সংস্কৃতির ইতিহাসগ্রন্থের ভূমিকায় বলেন, “যদি বাংলায় মুসলিম বিজয় ত্বরান্বিত না হতো এবং এদেশে আরো কয়েক শতকের জন্য পূ্র্বের শাসন অব্যাহত থাকতো, তবে বাংলা ভাষা বিলুপ্ত হয়ে যেত এবং অবহেলিত ও বিস্মৃত-প্রায় হয়ে অতীতের গর্ভে নিমজ্জিত হতো।

"বাংলা হলো মুসলমানদের প্রানের ভাষা - আর এ কারণেই আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ ১৯০৩ সালে "আল ইসলাম" পত্রিকায় সর্বপ্রথম বাংলাকে মুসলমানদের মাতৃভাষা রূপে তুলে ধরেন। [ সুত্র : ড. ইফতেখারউদ্দিন চৌধুরী, দৈনিক ইত্তেফাক, সোমবার ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৩]" আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ ১৩২৫ বঙ্গাব্দে - 'আল-ইসলামে' প্রকাশ্যে নির্ভীকচিত্তে উচ্চকণ্ঠে ঘোষণা দেন যে, 'বাঙলা বাঙালী মুসলিমের কেবল মাতৃভাষাই নয়, জাতীয় ভাষাও।'

উপরের আলোচনা দ্বারা এটি স্পষ্ট- হিন্দুরা চেয়েছিলো বাংলা ভাষাকে জন্মলগ্নেই গলা টিপে হত্যা করতে, সেখানে মুসলমানরা বাংলাভাষাকে দিয়েছিলো পুনর্জন্ম। সে হিসেবে বাংলা ভাষায় কার অবদান বেশি, হিন্দু না মুসলমানের, ধরনের প্রশ্ন করা অবান্তরই বলা চলে।

মূলত বাংলাভাষা প্রাথমিক অবস্থায় ছিলো আঞ্চালিক ভাষার মত। ভাষাটি বিরাট জনগোষ্ঠীর জাতীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য যথেষ্ট সমৃদ্ধ ছিলো না। এ জন্য দরকার ছিলো- বাংলাভাষার ব্যাপক চর্চা, যা ঘটে সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে, মধ্যযুগে সেই কাজটি করেছিলো মুসলিম কবি-সাহিত্যিকরা। মুসলিম সাহিত্যিকরা বাংলা ভাষায় ব্যাপক চর্চার মাধ্যমে ভাষাটি সমৃদ্ধ করে। যেহেতু মুসলিম কবি-সাহিত্যিকদের মধ্যে আরবী ও ফারসীর ব্যাপক প্রভাব ছিলো, তাই বাংলা ভাষায় প্রচুর পরিমাণে আরবী ও ফারসী শব্দ প্রবেশ করে, যা বাংলাভাষাকে সমৃদ্ধ করে একটি বিরাট জনগোষ্ঠীর ব্যবহারের উপযোগী করে তোলে। আসুন জেনে নেই, সে সময় কোন কোন মুসলিম সাহিত্যিক বাংলাভাষাকে চর্চা করে বাংলাভাষাকে পরিপূর্ণতা দান করেছিলেন-

মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যিক
-
শাহ মুহম্মদ সগীর (১৪শশতাব্দী), -জৈনুদ্দীন (১৫শশতাব্দী), -মুজাম্মিল (১৫শশতাব্দী),-দোনাগাজী: (১৬শশতাব্দী), -শেখ ফয়জুল্লাহ (১৬শশতাব্দী),- দৌলত উজির বাহরাম খান: (১৬শশতাব্দী), - মুহম্মদ কবীর (১৬শশতাব্দী),-সৈয়দ সুলতান (১৬শশতাব্দী), - শেখ পরান (১৬শশতাব্দী), -হাজী মুহাম্মদ (১৬শশতাব্দী), -মীর মুহাম্মদ শফী (১৬শশতাব্দী), -নসরুল্লাহ্ খাঁ (১৬শশতাব্দী), -মুহম্মদ খান, - সৈয়দ মর্তুজা, -শেখ মুত্তালিব, -আবদুল হাকীম।
১৬০০ থেকে ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আরও কয়েকজন হলেন
-
নওয়াজিশ খাঁ,-কমর আলী, -মঙ্গল (চাঁদ),-আবদুন নবী, -মুহম্মদ ফসীহ,-ফকির গরীবুল্লাহ্, -মুহম্মদ ইয়াকুব,-শেখ মনসুর,
-
শেখ চাঁদ, -মুহম্মদ উজীর আলী, -শেখ সাদী, -হেয়াত মামুদ, -দৌলত কাজী।
১৭শশতাব্দীতে আরকান (বর্তমানে বার্মার রাখাইন রাজ্য) রাজসভায় মহাকবি আলাওল, দৌলত কাজী, এবং কোরেশী মাগন ঠাকুর এর মতো বাংলা কবিদের সাধনা আর পৃষ্ঠপোষকতায় সেখানে বাংলা সাহিত্যের প্রভূত উন্নতি হয়। উল্লেখ্য, বর্তমানেও চট্টগ্রামের অনেক লাইব্রেরীতে আরকান রাজসভার বাংলা সাহিত্য চর্চার দলিলগুলো রাখা আছে। যদিও আজকাল মিডিয়া বা পাঠবই বিষয়গুলো এড়িয়ে যায় বললেই চলে। দু:খজনক হলেও সত্য, বাংলাভাষা মূল গোড়া অনুসন্ধান করতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এমনকি অনেক মুসলমানও না জেনে বোকার মত বলছে- বাংলাভাষা নাকি হিন্দুদের ভাষা, যদিও ভাষাটি এ অবস্থানে এসেছে মুসলমানদের হাত ধরেই।

বাংলা ভাষায় মুসলমানদের ব্যাপক সাহিত্য চর্চার ফলে বাংলা ভাষা একটি সমৃদ্ধ ভাষা হয়ে উঠে এবং একটি পরিপূর্ণ ভাষা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বলাবাহুল্য সেই সময় বাংলাভাষায় আরবী ও ফার্সী ভাষার ব্যাপক প্রভাব ছিলো। কিন্তু সমস্যা ঘটে ব্রিটিশরা আসার পর। ব্রিটিশরা দেখলো বাংলা ভাষা চর্চা মানেই মুসলমানদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চা । এই বিষয়টি যদি চলতে দেয়া হয়, তবে আগামীতে বাংলাসংস্কৃতি মানেই মুসলমানি সংস্কৃতি হবে। এটার অবশ্যই পরিবর্তণ করতে হবে। এ লক্ষ্যে ১৮০০ সালে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করে ব্রিটিশরা কলকাতার হিন্দু সাহিত্যিকদের (যেমন: বঙ্গিম, ঈশ্বরচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ) পৃষ্ঠপোষকতা করে ভিন্নমাত্রার সাহিত্য রচনা করতে থাকে, এর মাধ্যমে তারা এক নতুন বাংলা ভাষার জন্ম দেয়, যা আরবী-ফার্সী বিবজির্ত, জটিল ও দুর্বধ্য সংস্কৃতি শব্দবহুল। (এ সম্পর্কে জানতে গোলাম মোর্তজার ইতিহাসের ইতিহাস বইটি পড়তে পারেন)

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সূচনাও হয়েছিলো তমদ্দুন মজলিস নামক একটি ইসলামী সংগঠনের পক্ষ থেকে। ১৯৪৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরে তমদ্দুন মজলিস একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে যার নাম ছিল পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা বাংলা না উর্দু? এই পুস্তিকার লেখক কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল মনসুর আহমেদ এবং অধ্যাপক আবুল কাসেম (তমদ্দুন মজলিসের সাধারণ সম্পাদক) বাংলা ভাষাকে পূর্ব বাংলায় ভাব বিনিময়, অফিস ও আদালতের একমাত্র ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার পক্ষে জোরালো মতামত তুলে ধরেন। তাঁরা বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষেও জোরালো দাবি জানান। (bn.wikipedia.org/wiki/তমদ্দুন_মজলিস)

উপরের আলোচনা থেকে একটি বিষয় প্রমাণিত বাংলাভাষা মূলত মুসলমানদেরই ভাষা। এবং হিন্দুরা প্রথম থেকেই এ ভাষাকে নিগৃহিত করে এসেছে। কখন নিজেরা করেছে, কখনও বা ইংরেজদের প্ররচণায় করেছে।

 

 

 

 

 

 

 

# মুসলমানদের দ্বিতীয় খলিফা ওমর বিন খত্তাব খিলাফত হাতে নেন ২৩শে আগস্ট ৬৩৪ খ্রিস্টাব্দ (উইকি)। আরবী সন হিসেবে সেই তারিখটা হয় ১৩ হিজরী সনের ২২ জমাদিউস ছানী (http://bit.ly/2p6RdPl)।

 

আজকে তারিখ হচ্ছে ১৪৪০ হিজরী সনের ২২শে জমাদিউস ছানী। অর্থাৎ আজ থেকে ১৪২৭ বছর পূর্বে এই দিনে মুসলমানদের দ্বিতীয় খলিফা খিলাফত হাতে নেন। এ্ই তারিখটা যদি মুসলমানরা স্মরণ রাখতো এবং এই দিনে মুসলমানদের দ্বিতীয় খলিফা ওমর বিন খত্তাবের খিলাফত সম্পর্কে আলোচনা করতো তবে অবশ্যই মুসলমানদের মধ্যে জেনারেশন গ্যাপ ও হীনমন্যতা দূর হতো। এবং বুঝতে পারতো খিলাফত শাসন ব্যবস্থাটা আসলে কেমন ? কারণ আমার ধারণা অনেকের মধ্যে প্রচার আছে, খিলাফত মানে মনে হয় মারামারি আর হাতকাটা আর পাথর ছুড়ে হত্যা করা। কিন্তু আসলে খিলাফত ব্যবস্থা কিভাবে পরিচালিত হতো সেটা কিন্তু মুসলমানরাও বলতে পারবে না।

 

সত্যিই বলতে বর্তমান যুগের প্রায় মুসলমানই ভাবে বর্তমান সভ্যতা ও নিয়ম কানুন মনে হয় অমুসলিমদের থেকে এসেছে। কিন্তু মুসলমানরা জানেই না, পৃথিবীর বেশিরভাগ সভ্যতার আগমন ‍মুসলমানদের হাত ধরে, বিশেষ করে দ্বিতীয় খলিফা ওমরের হাত ধরে। এজন্য দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির প্রতিষ্ঠাতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছিলো – “খলীফা ওমরের (ইসলামের দ্বিতীয় খলীফা) শাসনব্যাবস্থা আমাকে দারুনভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। আমি জনসাধারনের উন্নতির লক্ষ্যে তার এই শাসনব্যাবস্থা অনুসরণ করার চেষ্টা করব।” (http://bit.ly/2IenfBT)

 

পাঠক ! একটু চিন্তা করে দেখুন, কেজরিওয়াল অমুসলিম হয়েও খলিফা ওমরের শাসন ও নিয়মনীতি সম্পর্কে জ্ঞাত এবং তার শাসন ব্যবস্থায় সেটা কাজে লাগাচ্ছে। কিন্তু আপনি মুসলমান হয়েও কি খলিফা ওমরের শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে কিছু জানেন ? আসুন আজকে খলিফা ওমর বিন খত্তাবের খিলাফত প্রাপ্তির দিবস (২২শে জমাদিউস ছানী) এর এই দিনে ইতিহাস থেকে তার খিলাফত সম্পর্কে কিছু জানি-

 

 

মুসলমানদের দ্বিতীয় খলিফা ওমর বিন খত্তাবের খিলাফতকাল ছিলো মাত্র ১০ বছর ৬ মাস। আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে এ স্বল্প সময়ে তিনি খিলাফতি শাসন ব্যবস্থায় সামরিক, প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক এবং আইন বিভাগসহ পরিচালনার জন্য সে সমস্ত নিয়মনীতি চালু করেন, তাই বর্তমান আধুনিক বিশ্ব চোখ বন্ধ করে অনুসরণ করে। যেমন :

 

 

 

(১) মজলিসে সূরা বা উপদেষ্টা বিভাগ চালু :

 

মুসলমানদের দ্বিতীয় খলিফা ওমর শাসনব্যবস্থাকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সর্বোচ্চ ইসলামী আদর্শের ব্যক্তিদ্বারা মজলিসে শূরা বা উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেন। এই উপদেষ্টা পরিষদ আবার দু’ভাগে বিভক্ত করেছিলেন। যথা- উচ্চপরিষদ ও সাধারণ পরিষদ ।

 

 

 

(২) প্রদেশে বিভক্তীকরণ ও শাসনকর্তা নিয়োগ:

 

খলিফা ওমর শাসনব্যবস্থাকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিশাল মুসলিম সাম্রাজ্যকে ১৪টি প্রদেশে বিভক্ত করেন। যথা: মক্কা, মদীনা, সিরিয়া, আলজেরিয়া, বসরা, কূফা, মিসর, প্যালেস্টাইন, ফারস, কিরমান, মাকরান, খোরাসান, সিজিস্তান ও আজরবাইজান। শাসনব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণের ফলে দূরবর্তী অঞ্চলেও সুষ্ঠুভাবে শাসনব্যবস্থার নিশ্চয়তা প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিটি প্রদেশকে জেলা ও মহকুমায় বিভক্ত করা হয়। প্রদেশের শাসনকর্তাকে ওয়ালী বা আমীরে শোবা এবং জেলার শাসনকর্তাকে আমীন বলা হতো। তাছাড়া প্রাদেশিক সরকারের কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিভিন্ন কর্মচারী নিযুক্ত করতেন। যেমন কাজী (বিচারক), কাতিব (প্রধান উপদেষ্টা), কাতিব উল দিওয়ান (প্রধান সামরিক উপদেষ্টা), ছাহিব উল খারাজ (রাজস্ব উপদেষ্টা), ছাহিব উল আহদাত (পুলিশ উপদেষ্টা), ছাহিব উল বাইতুল মাল (কোষাধ্যক্ষ) ইত্যাদি।

 

 

 

(৩) বেতন- ভাতা ও বয়স্ক ভাতা বিভাগ:

 

খলিফা ওমর প্রশাসনিক কাঠামো গঠন করেই ক্ষান্ত ছিলেন না। বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, মেধা এবং ধর্মপালন অনুসারে বেতন-ভাতা নির্ধারণ করে দেন। তিনি বয়স্ক ভাতারও প্রচলন করেন। এজন্য আলাদা একটা বায়তুলমাল বিভাগ করেছিলেন, যেখান থেকে সবাইকে বেতন-ভাত দেয়া হত। তাছাড়া দুর্নীতি এবং অনিয়ম প্রতিরোধের জন্যও তিনি কার্যকর পদক্ষেপ নেন। প্রাদেশিক শাসনকর্তাকে সর্বোচ্চ ৫০০০ দিরহাম পর্যন্ত বেতন-ভাতা দিতেন। এমন বেতন-ভাতা দিতেন যে সবাই সবার বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট থাকে, কেউ যেন দুর্নীতি করতে বাধ্য না হয়।

 

 

 

(৪) সামরিক বিভাগ:

 

তিনি সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী ও সুসংহত করার জন্য ৯টি সামরিক বিভাগ বা জুনদ বা ক্যান্টমেন্ট প্রতিষ্ঠা করেন। এগুলো হলো- মদীনা, কূফা, বসরা, ফুসতাত, মিসর, দামেস্ক, হিমস, প্যালেস্টাইন ও মসুল। এই ৯টি সামরিক ঘাঁটিতে সর্বদা ৪০০০ অশ্ব এবং ৩৬০০০ অশ্বারোহী সৈন্য প্রস্তুত রাখা হতো।

 

একটি সৈন্যবাহিনী কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করেছিলেন এবং এক একটি ‘কায়দ’-এর বা ব্রিগ্রেড-এর অধীনে যুদ্ধ করতেন। এভাবে এক একটি সৈন্যবাহিনীতে দশটি কায়েদের বাহিনী রাখাতেন। প্রতিটি কায়েদের বাহিনীতে একশত সৈন্য কর্মরত রেখেছিলেন। প্রতিটি কায়েদ আবার কয়েকটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপদলে বিভক্ত করেছিলেন। দশজন সৈন্য নিয়ে গঠিত এ উপদলটির নেতৃত্ব দিতেন এক একজন আমীর উল আশ-রাহ। সৈন্যদের প্রারম্ভিক বেতন ছিল প্রথম বৎসরে ২০০ এবং পরে ৩০০ দিরহাম। খোরাক ও জিহাদীপোশাক বিনামূল্যে পেতেন এবং সৈন্যদের পরিবারও কোষাগার থেকে ভাতা লাভ করতো। সৈন্যদের ফ্রি চিকিৎসা ও সাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাসের জন্য সর্বপ্রকার সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রাখতেন।

 

 

 

(৫)বিচার বিভাগ ও ক্বাযী নিয়োগ:

 

খলিফা ওমর বিচার বিভাগের গঠন এবং উন্নতি বহুলাংশে প্রশাসনিক মেধার জন্য সম্ভবপর করেছিলেন। বিচারব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য তিনি প্রত্যেক প্রদেশে একজন প্রধান ক্বাযী (ক্বাযী-উল কুযাত বা প্রধান বিচারক) এবং প্রত্যেক জেলায় একজন ক্বাযী নিযুক্ত করেন। পূর্বে প্রাদেশিক গভর্নর (ওয়ালী) বিচার বিভাগের কার্যাবলীর পরিচালনা করতেন। ইসলামী আদর্শে আদর্শবান, নিষ্কলুষ চরিত্র, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন নৈতিক শক্তিকে বলীয়ান, সুস্থ, শিক্ষিত ও ধর্মীয় বিষয়ে সম্যক জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের খলীফা মজলিসে শূরার সাথে পরামর্শ করে বিচারক বা ক্বাযী নিযুক্ত করতেন। কাজী বা বিচারকদের দুর্নীতি ও প্রলোভন থেকে দূরে রাখার জন্য যোগ্যতানুসারে উচ্চাহারে বেতন দিতেন এবং নির্ভয়ে ও নিরপেক্ষভাবে বিচারকার্য পরিচালনার জন্য খলীফা সর্বপ্রকার আশ্বাস প্রদান করতেন। বিচারের জন্য কোনো প্রকার ফি প্রদান করতে হতো না এবং মসজিদে সাধারণত মজলিশের সভা অনুষ্ঠিত হতো।

 

কুফা, বসরা, দামেস্ক ও হিমসের জন্য বিশেষ বিচারক নিযুক্ত করেছিলেন। খলীফা বিচার বিভাগের সর্বময় ব্যক্তি ছিলেন এবং প্রয়োজনে নিম্ন আদালতের রায় পুনর্বিবেচনা করতেন। বিধর্মীদের বিচারকার্য তাদের নিজস্ব অনুশাসনে পরিচালিত করার ব্যবস্থা রেখেছিলেন। খলিফা ওমরের কাছে ধনী-দরিদ্র, উচু-নীচু-আত্মীয়-স্বজন সকলেই সমান ছিলেন।

 

 

 

(৬) পুলিশ বিভাগ:

 

ইসলামের প্রথম দিকে কোন পুলিশ বিভাগ ছিলো না। তবে অপরাধমূলক কার্যকলাপ রোধ করে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য খলিফা ওমর সর্বপ্রথম একটি সুগঠিত পুলিশ বাহিনী প্রতিষ্ঠা করেন। এই বাহিনীর কার্যকলাপকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য দিওয়ান আল আহদাত নামে একটি পুলিশ বিভাগের সূচনা করেন। চুরি, ডাকাতি বন্ধ করা, ওজন পরীক্ষা, মাদকদ্রব্য বিক্রয় বন্ধ ও অবৈধ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা পুলিশ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব ছিল। পুলিশ প্রধানের নাম রেখেছিলেন ছাহেব উল আহদাত।

 

 

 

(৭) কারাগার প্রতিষ্ঠা:

 

মুসলমানদের দ্বিতীয় খলিফার শাসনের অন্যতম প্রধান কৃতিত্ব ছিল কারাগার প্রতিষ্ঠা। গাফওয়ান বিন উমাইয়া নামক এক মুসলিমের বাসস্থান ৪০০ দিরহামে ক্রয় করে তিনি একে প্রথম জেলখানায় রূপান্তরিত করেন। মদীনায় কেন্দ্রীয় কারাগার বা জেলখানা ব্যতীত প্রত্যেক প্রাদেশিক রাজধানী ও জেলায় একটি করে কারাগার নির্মাণ করেন। সেখানে পর্যাপ্ত প্রহরী, খাবার, উপাসনার জায়গাসহ দরকারী সব জিনিস মজুদ রাখতেন। কোনোও অপরাধী প্রাপ্যের অতিরিক্ত কষ্ট যাতে পেতে না হয়ে তার সব ব্যবস্থা রেখেছিলেন। তার খিলাফতকালে সর্বপ্রথম নির্বাসন দণ্ড প্রবর্তিত হয়।

 

 

 

(৮) গোয়েন্দা বিভাগ:

 

মুসলমানদের দ্বিতীয় খলিফা শাসন ব্যবস্থাকে ইসলামী আদর্শযুক্ত, শত্রুমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, সঠিক বিচার-ব্যবস্থার জন্য গোয়েন্দা বিভাগ প্রবর্তন করেন। প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞান লাভ করার জন্য গোয়েন্দা নিযুক্ত করেন এবং তাদের মাধ্যমে খলীফা খিলাফতী কর্মচারীদের উপর কঠোর দৃষ্টি রাখতে সক্ষম হন। কোথাও কোনো অনিয়ম বা অসুবিধা সৃষ্টি হলে সাথে সাথে খলীফাকে অবহিত করতো গোয়েন্দারা।

 

 

 

(৯) রাজস্ব আদায় ও হিসাব বিভাগ:

 

মুসলমানদের দ্বিতীয় খলিফা খিলাফতের অর্থনীতিকে শক্তিশালী ও মজবুত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠা করার জন্য রাজস্ব ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন সাধন করেন। সুষ্ঠু কর প্রদানের মাধ্যমে খিলাফতের অর্থনৈতিক অচলাবস্থা দূর করে স্থিতিশীল ও বলিষ্ঠ প্রাশাসনিক কাঠামো গঠনের জন্য তিনিই প্রথম দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। খিলাফতের আয়-ব্যয়ের হিসেব ঠিক রাখার জন্য তিনি ‘দিওয়াননামে একটি রাজস্ব বিভাগ প্রবর্তন করেন। খিলাফতের রাজস্ব উৎস ছিল যাকাত, খারাজ, জিজিয়া, ফসলের উশর, আলফে, গনিমাহ, আল উশর ও হিমা।

 

 

 

(১০) কৃষিকাজ :

 

মুসলমানদের দ্বিতীয় খলিফা কৃষির উন্নতির জন্য অগ্রিম ঋণ দেয়ার প্রথা প্রবর্তন করেন। তিনি কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির জন্য অগ্রিম খিলাফতী ঋণ দেয়ার প্রথা প্রবর্তন করেন। তিনি কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির উন্নতিকল্পে আইন বিন্যস্ত করে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করার ব্যাপক প্রয়াস চালান। কৃষির উন্নতির জন্য তিনি খাল খনন ও বাঁধ নির্মাণ করেন। তিনি কৃষিকাজ, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের জন্য আরব ও মিসরের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করেন এবং বাণিজ্য শুল্ক লাঘব করেন। পারসিক ও রোমান শাসনামলে যারা জমিজমা হতে বঞ্চিত হয়েছিল খলীফা তাদের সেসব জমিজমা ফিরিয়ে দিয়ে তাদের কৃষিকাজ করার সুযোগ দান করেন। যেখানে ফসল উৎপদন কম হতো সেখানে বেশি উৎপদিত এলাকা থেকে দ্রত খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা রাখতেন। যার জন্য কোথাও খাদ্য সঙ্কট হতো না।

 

 

 

(১১) আদমশুমারি ও জরিপ:

 

মুসলমানদের দ্বিতীয় খলিফা জাতীয় অর্থের সুষ্ঠু বণ্টনের জন্য সর্বপ্রথম লোকগণনা বা আদমশুমারি ও জরিপের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। মূলত সব বিষয়ে সুষম বণ্টনকার্য সম্পন্ন করার জন্য একটি আদমশুমারির প্রয়োজন হয় এবং পৃথিবীর ইতিহাসে রাজস্ব বণ্টনের ক্ষেত্রে এটাই সর্বপ্রথম লিপিবদ্ধ আদমশুমারি। আদমশুমারির মূল উদ্দেশ্য ছিলো:

 

ক. কোথায় কি পরিমাণ খাদ্য উৎপাদন হয়, কোথায় খাদ্য কম বা বেশি আছে, কি পরিমাণ খাদ্য দরকার প্রভৃতি নির্ণয় করা।

 

খ. মোট চাষাবাদের জমির পরিমাণ কতটুকু, বর্তমানে চাষবাদ কতটুকু করা হচ্ছে, বাকিগুলো জমিতে চাষাবাদ না হওয়ার কারণ, কি পরিমাণ ফসল উৎপাদন করা সম্ভব এবং এখন কি পরিমাণ দরকার প্রভৃতি নির্ণয় করা।

 

গ. মোট জনসংখ্যা কত, কোন কোন প্রদেশে, জেলায়, মহকুমায় কি পরিমাণ মানুষ বেশি/কম আছে বা জন বসতি বেশি/কম আছে, কেন বেশি/কম, সুষম বণ্টন করতে কি কি দরকার প্রভৃতি নির্ণয় করা।

 

ঘ. কোন প্রদেশে, জেলায়, মহকুমায় মসজিদ-মাদ্রাসা কি পরিমাণ বা বেশি বা কম আছে, কতগুলো কোথায় লাগবে, ইমাম-মুয়াজ্জিন-মুয়াল্লিম বেশি, না কম আছে প্রভৃতি নির্ণয় করা।

 

ঙ. রাস্তা-ঘাট-পুল-খাল বা নদী-নালা কোথায় কি পরিমাণ বেশি/কম আছে প্রভৃতি নির্ণয় করা।

 

চ. শিক্ষা ও চিকিৎসাকেন্দ্র, প্রশাসনিক ভবন, বিভিন্ন মজলিসে সূরার ভবন, কাজীর ভবন প্রভৃতি কি পরিমাণ বেশি বা কম আছে তা নির্ণয় করা।

 

ছ. খিলাফতের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ কোথায় কি পরিমাণ বা বেশি/কম আছে তা নির্ণয় করা।

 

জ. খিলাফতের আওতায় কি পরিমাণ অমুসলিম আছে, কোন কোন ধর্ম কি পরিমাণ লোক পালন করে তা নির্নয় করা।

 

ঝ. জাকাত-ওশর, কর বা জিযিয়া কর কোথায় কি পরিমাণ আদায় হয় বা হয় না তা নির্ণয় করা।

 

ঞ. কোন প্রদেশে, জেলায়, মহকুমায় শিক্ষার হার শিক্ষিত, মূর্খ বা অশিক্ষিত কি পরিমাণ আছে তা নির্নয় করা।

 

এরকম শত শত বিষয়ে পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম আদমশুমারি ও জরিপ ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন মুসলমানদের ২য় খলিফা। খিলাফতের রাজধানী বা প্রাণকেন্দ্র হিসেবে প্রশাসনিক কাজে মদীনাকে কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করতেন। অন্যান্য বিষয় প্রদেশ, জেলা, মহকুমায় প্রায় সমহারে রাখতেন। প্রশাসনির কাজে এক প্রদেশ, জেলায়, মহকুমায় সবাই ভিড় লাগাতে পারতো না। প্রয়োজনও হতো না। কেননা সব জায়গায় সমান হারে সব কিছু রেখেছিলেন তিনি। যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিকেন্দ্রীকরণ শাসন ব্যবস্থার একক এবং অদ্বিতীয়। বলাবাহুল্য ১৪০০ বছর পর বর্তমানে বাংলাদেশও বিকেন্দ্রীকরণ শাসন ব্যবস্থা চালু করতে পারে নাই, সব কিছু ঢাকা কেন্দ্রীক হওয়ায় জনসংখ্যা বেড়ে ঢাকা পরিণত হয়েছে অযোগ্য নগরীতে।

 

 

 

(১২) জনহিতকর কাজ:

 

জনহিতকর কার্যাবলী ছিল মুসলমানদের ২য় খলিফার শাসনব্যবস্থার একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য। তার শাসনামলে অসংখ্য মসজিদ, জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র তথা মাদরাসা-মক্তব, লঙ্গরখানা, হাম্মামখানা, খাল, রাস্তা, সেতু, দুর্গ, হাসপাতাল প্রভৃতি জনকল্যাণমূলক ও প্রশাসনিক ভবন বিভিন্ন জেলায় জেলায় এমনকি মহল্লায় মহল্লায় গড়ে উঠে। সব জায়গায় প্রায় সমহারে সব বিষয়গুলি রাখতেন। কিছু দূর দূর রাস্তার পথচারীর জন্য পানি এবং বিশ্রাম নেয়ার মতো ব্যবস্থা রেখেছিলেন পুরো খিলাফতী এলাকা জুড়ে। জনগণের পানির অসুবিধা দূর করার জন্য তিনি টাইগ্রীস নদী হতে বসরা পর্যন্ত দীর্ঘ ৯ মাইল খাল খনন করেন। এছাড়া সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য খাল ছিল আমিরুল মুমেনীন খাল। লোহিত সাগর থেকে নীলনদের সংযোগ রক্ষাকারী এ খাল ব্যবসা-বাণিজ্যের পথকে সুগম করেছিলেন। তিনি কুফা, বসরা ও ফুসতাত নামে তিনটি নতুন শহরের ভিত্তি স্থাপন করেন। এই তিনটি শহর পরবর্তীকালে বিশ্বের জ্ঞান-বিজ্ঞানের শ্রেষ্ঠ কেন্দ্রে পরিণত হয়। উদাহরণস্বরূপ: সেসময় ফুসতাত শহরে ৩৬টি মসজিদ, ৮০০ সড়ক এবং ১১৭০টি গোসলখানা (হাম্মামখানা) করেছিলেন।

 

 

(১৩) হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা :

 

তিনি প্রতিটি শহরে চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য হাসপতাল গড়ে তুলেছিলেন।

 

 

(১৪) জনসাধারণের খোঁজে রাতের আঁধারে মরু পথে:

 

জনগণের কল্যাণে তিনি সর্বদাই নিয়োজিত থাকতেন। জনসাধারণের অবস্থা চাক্ষুস দেখার জন্য তিনি অলিতে গলিতে রাতের আঁধারে ঘুরে বেড়াতেন এবং অসহায় মানুষের কাছে নিজ হাতে সাহায্য পৌঁছে দিতেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এর কোনোও নজির নেই। পারবে না কোনোও রাজা-বাদশাহ এই কাজের উদাহরণ হতে।

 

 

(১৫) হিজরী সন গণনা শুরু:

 

মুসলমানদের শেষ নবীর হিজরত ১ম সন ধরে মুসলমানদের ২য় খলিফা সর্বপ্রথম হিজরী সনের প্রবর্তন করেন। হিসাব-নিকাশ ও অন্যন্য কাজের জন্য যা অত্যন্ত দরকারী বিষয়।

 

 

(১৬) মুসলমানদের জন্য সংরক্ষিত আরবভূমি :

 

মুসলমানদের ২য় খলিফার শাসনব্যবস্থার অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল আরব ভুমিকে (জাজিরাতুল আরব) অক্ষুন্ন রাখা। আরব জাতির বৈশিষ্ট্য ইসলামী আদর্শের প্রতি দৃঢ়তা বজায় রাখার জন্য তিনি প্রধানত দুটি নীতি অনুসরণ করেন। প্রথমত, আরব উপদ্বীপকে সম্পূর্ণরূপে আরব মুসলমাদের বাসভূমিতে পরিণত করার জন্য শত্রুভাবাপন্ন ইহুদি ও খ্রিস্টানদেরকে আরব দেশের বাইরে বসবাসের নির্দেশ দেন। দ্বিতীয়ত, খলিফা ওমরের নির্দেশ ছাড়া আরবদেশের বাইরে মুসলিম সৈন্যদের জমি ক্রয় এবং চাষাবাদ নিষিদ্ধ করেছিলেন।

 

 

 

মজার ব্যাপার হচ্ছে, বর্তমানে মুসলমানদের তাদের প্রাথমিক যুগের ইতিহাস হিসেবে এমন কিছু বিষয় পাঠ করতে দেয়া হয়, যেন মুসলমানরা ধারণা করে- প্রাথমিক খিলাফতের যুগে মুসলমানরা মনে হয় শুধু নিজেদের মধ্যে মারামারি কাটাকাটি করে দিন পার করতেন। এবং খিলাফত বলতে বুঝে, হাতকাটা আর পাথর ছুড়ে হত্যা। কিন্তু প্রাথমিক খিলাফতি যুগে মুসলমানরা কি এমন করলেন যে প্রায় ১২০০ বছর পৃথিবী জুড়ে একচেটিয়া মুসলমানরা সুপার পাউয়ার হিসেবে কর্তৃত্ব করেছেন, সেটা কিন্তু আলোচনা হয় না। আমার মনে হয়, বিভিন্ন উপলক্ষ বা দিবসকে টার্গেট করে এসব ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করলে মুসলমানদের হীনমন্যতা ও জেনারেশন গ্যাপ প্রায় পুরোটা দূর করা সম্ভব।

 

আরেকটি কথা, উপরের ইতিহাসগুলো যে একেবারে দুর্লভ তা কিন্তু নয়। মুসলমানদের দ্বিতীয় খলিফা ওমরের অধিকাংশ জীবনীগ্রন্থগুলোতেই এসব ইতিহাস পাওয়া যায়। তবে এখন যেটা দরকার সেটা হলো মুসলমানদের শিক্ষাক্ষেত্র বা পাঠ্যপুস্তকে এই ইতিহাসগুলো সংযুক্ত করা। একজন শিশুকে যদি ছোটবেলা থেকে এই ইতিহাসগুলো সম্পর্কে ধারণা দেয়া যায়, তবে মুসলমান বাচ্চারা ছোটবেলা থেকেই সঠিক চেতনা, ইতিহাস-ঐতিহ্য জেনে বেড়ে উঠতে পারবে, যা আগামীতে সচেতন মুসলিম তৈরীকে বিরাট ভূমিকা রাখবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কাউকে কাউকে দাবি করতে দেখলাম:

আকবর হিজরী সন থেকে বাংলা সন চালু করায়, বাংলা সনের সাথে নাকি ইসলামী ঐতিহ্যের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।

যারা এ ধরনের উদ্ভট দাবি করছে, তারা আসলে এ সম্পর্কে স্ট্যাডি করে নাই। এ সম্পর্কে ইতহিাস বলছে:

'আকবর বাদশাহর রাজত্বকালে হিন্দু সম্প্রদায় বাদশাহের কাছে জ্ঞাপন করে, আমাদের ধর্মকর্ম সম্পর্কীয় অনুষ্ঠানে হিজরী সন ব্যবহার করতে ইচ্ছা করি না। আপনি আমাদের জন্য পৃথক সন নির্দিষ্ট করে দিন। আকবর হিন্দু প্রজার মনোরঞ্জনার্থে হিজরি সন থেকে এলাহি সন নামে একটি সনের প্রচলন করেন। যা আমাদের বঙ্গদেশের সন বলে চলে আসছে।[' সুত্রঃ বারভূঁইয়া, লেখক আনন্দরায়।]

এখান থেকে দুটি বিষয় বের হয়ে আসে।

প্রথমত, কথিত বাংলা সনের উদ্ভব হিন্দু কর্তৃক হিজরী সনের বিরোধীতার মনমানসিকতা নিয়ে।

দ্বিতীয়ত, তঃক্ষণাত সনটি নাম ছিলো এলাহী সন, যা বাদশাহ আকবর কর্তৃক চালুকৃত ধর্ম দ্বীন-এ-এলাহী থেকে আগত।

এখন আপনারাই বিচার করুন, কথিত বাংলা সনের আগমন ইসলামী ঐতিহ্যের সাথে সম্পর্কিত নাকি ইসলাম বিরোধীতার সাথে সম্পর্কিত ?

আরেকজন লেখককে বলতে দেখলাম:

আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি আমাদের গ্রহণ করতে হবে। আরবরের সংস্কৃতি আমাদের সংস্কৃতি না।

স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন জাগে, আপনি নিজস্ব সংস্কৃতি বলতে কত বছর আগের সংস্কৃতির কথা বলছেন ?

২০০, ৩০০, ৫০০ বছর আগের সংস্কৃতি কি আপনার সংস্কৃতি না ? ও বুঝেছি, ৮০০ বছর পূর্বে এ অঞ্চলে মুসলমানরা আসার আগের সংস্কৃতির কথা বলছেন ? মানে হিন্দু সংস্কৃতি ?

তাহলে তো আরবের সংস্কৃতিরও প্যাগান সংস্কৃতি । কারণ আরবে মুসলমানরা আসার আগে সেখানে মূর্তিপূজকরা ছিলো। তারা সূর্যের পূজা করতো। গ্রহ-নক্ষত্রের পূজা করতো। আপনি আজকে মঙ্গল পূজার সময় সূর্যের মূর্তি নিয়ে দৌড়ান, গানের মধ্যে বিশাখা দেবীর কাছে প্রার্থনা করেন, এগুলোতো আরবের প্রাচীন সংস্কৃতির অংশ বিশেষ

আসলে যারা এ ধরনের কথা বলে, তাদের কথার মধ্যেই দ্বিচারিতা থাকে। তারা এ অঞ্চলের সংস্কৃতি বলতে ৮০০ বছর আগে মুসলমানরা আসার আগের সংস্কৃতি বোঝায়। কিন্তু মুসলমান-খ্রিস্টান ও ইহুদীদের ধর্মবিশ্বাস অনুসারে সর্ব প্রথম মানব আদম এ অঞ্চলে আসেছিলেন। তাহলে তাদের হিসেবে সর্বপ্রথম মানবের সংস্কৃতি আগে গ্রহণ করা উচিত। আর সেই সংষ্কৃতি তো মূর্তি পূজা বিরোধী।

তাই যারা এ ধরনের কথা বলে, তাদের সময় নির্দ্দিষ্ট করে কথা বলা উচিত, কোন অঞ্চলে কোন সময়ের সংস্কৃতির তারা পক্ষে এবং কোন সময়ের বিপক্ষে।

 

 

 

 

 

 

 

গত ১৯শে মে থেকে আন্তর্জাতিক মিডিয়া ব্রিটেনের কথিত রাজ পরিবারের এক বিয়ে নিয়ে খুব উচ্ছ্বসিত ভূমিকায় অবর্তীণ হয়েছে। ভাবখানা এমন, “আমার তোমার সবার রাজা- ব্রিটিশ রাজা-ব্রিটিশ রাজা”। বাংলাদেশের মিডিয়াও কম যায় না, পারলে মাথা নুয়ায় প্রণাম করে ব্রিটিশ রাজ পরিবারকে, আর জনগনকেও উৎসাহিত করে ব্রিটেনের কথিত রাজ পরিবারের সামনে মাথা নুয়াতে। বাংলাদেশ এক সময় পাকিস্তানের অংশ ছিলো, সেই পাকিস্তানের সামনে মাথা নুয়াতে বললে কি বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেবে ? তাহলে যে ব্রিটিশরা বহিরাগত হয়ে আমাদের ২০০ বছর লুটেপুটে খেলো সেই ব্রিটিশদের নিয়ে এত মাতামাতি কেন ?

আসলে আন্তর্জাতিক মিডিয়া কন্ট্রোল করে ইহুদীরা। বাংলাদেশের মিডিয়াগুলোও তাদের মতাদর্শ অনুসারে পরিচালিত হয়। তারাই কোন বিশেষ কারণবশত: ব্রিটিশ ফ্যামিলিকে হাইলাইট করে। তারমানে ইহুদীদের অন্যতম কাজ হচ্ছে সাধারণ জনগণকে ব্রিটেনের কথিত রাজ পরিবারের দিকে ঝুকিয়ে রাখা। আপনাদের মনে থাকার কথা, বাংলাদেশ থেকে একটি হিন্দু ছেলে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হয়ে কাজ করছে বলে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো রিপোর্ট প্রকাশ করেছিলো। ছেলেটির নাম শিপান কুমার বসু। তার ফেসবুক আইডি থেকে দেখুন (https://bit.ly/2IA0H2p)

অধিকাংশ পোস্ট ব্রিটিশ রাজ পরিবারের প্রশংসা করে করা। এর পেছনে কি কারণ?

 

এর পেছনে মূল কারণ সম্ভবত ব্রিটেনের কথিত রাজ পরিবারের মাধ্যমে ইহুদী সম্রাজ্যবাদের উত্থান ঘটেছে। ১৭শ’ শতাব্দীর আগে ইহুদীদের কোন পাওয়ার ছিলো না, খ্রিস্টানরাও মুসলমানদের কাছে ছিলো কোনঠাসা। সারা বিশ্বে তখন একচেটিয়া ক্ষমতা মুসলমানদের। ইউরোপ-রাশিয়া(তাতার), এশিয়া, আফ্রিকা, ভারত পুরো বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা তখন ক্ষমতাবান। সে সময় ইহুদীরা ব্রিটেনের কথিত রাজ পরিবারের সাথে চূক্তি করে। ব্রিটেনের রাজা আসলে দস্যূ রাজা। ওরা ছিলো পানিদস্যুদের নেতা। যে যত বেশি জাহাজ লুটপাট করে আনতে পারবে, সে তত বড় স্যার’। সব টাকা জমা দিতে হতে ব্রিটিশ রাজ পরিবারকে। মানুষের মাংশ খাওয়া ছিলো তাদের নিয়মিত কাজ (https://bit.ly/2KC7IfC)

তাছাড়া তারা খ্রিষ্টানদের বড় কোন ফেরকা’ও না, তারা খ্রিস্টানদের Anglican ফেরকার অন্তভূক্ত। কথা হলো, ঐ সময় ইউরোপে আরো অনেক অগ্রগামী জাতি ছিলো, কিন্তু ইহুদীরা অপেক্ষাকৃত ভালো লোক না নিয়ে, মানুষ খেকো ডাকাতদের সাথে কেন চূক্তি করলো ?

 

আসলে এটা ইহুদীদের একটা স্বভাব। ওরা সব সময় সমাজের নিচু শ্রেণীর লোক থেকে তাদের দালাল বানায় উপরে তুলে। এতে অনেক সুবিধা। সমাজের নিচু শ্রেণীর লোকেদের মধ্যে মানবতাবোধ থাকে না, তারা ছোট-বড় পার্থক্য করতে পারে না, নিচু শ্রেণীর হাতে ক্ষমতা গেলে তারা ছোট-বড় সবার সাথে দুর্বব্যবহার করে স্বার্থ আদায় করতে পারে। অপরদিকে নিচু শ্রেণী হিসেবে জাতে ওঠায় তারা তাদের পোষক ইহুদীদের কাছে অনুগত থাকে।

ইহুদীরা ব্রিটেনের সেই দস্যু নেতাদের সাথে চুক্তি করে এবং তখন-ই আসলে ফিল্ড পর্যায়ে ইহুদীদের উত্থান ঘটে। ইহুদীদের বুদ্ধি আর ব্রিটিশ দস্যুদের দস্যুপনা, দুই মিলে হয় ব্রিটিশ উপনিবেশ।

আমাদের এ এলাকায় যারা প্রথমে এসেছিলো ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। এটা একটা প্রাইভেট কোম্পানি। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মালিক ছিলো ইহুদী রথচাইল্ড পরিবার (http://bit.ly/2FI5ayd)

 তারা এ অঞ্চলে এসে আরেক নিচু শ্রেণী মানে হিন্দুদের সাথে গাট বাধে এবং মুসলমানদের বিরোধীতা করে। ১৭৫৭ সালে বাংলায় সিরাজ-উদ-দৌল্লাহ’র পতন-ই ছিলো মূলত ইহুদীদের উত্থান। ঐ সময় ভারত ছিলো সম্পদের ভূমি। ভারতের ডাকা হতো স্বর্ণের পাখি (Sone Ki Chidiya) নামে। আর ভারতের কেন্দ্র ছিলো তখন বাংলা। বাংলার পতনের পর সেই সম্পদ নিয়ে গিয়ে রথচাইল্ড হয় সবচেয়ে ধনী পরিবার। বর্তমানেও আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভের মালিক এই রথচাইল্ড ফ্যামিলি। মজার ব্যাপার হচ্ছে তাদের সম্পদের শুরু কিন্তু এই বাংলাকে লুট করেই।

 

মুসলমানদের প্রাথমিক যুগ থেকে প্রায় সতেরশ’ শতাব্দী পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১১শবছর বিশ্বজুড়ে একচেটিয়া সুপার পাউয়ার ছিলো মুসলমানরা। কিন্তু ব্রিটিশদের কাধে ইহুদীরা গাট বাধার পরই তাদের উত্থান ঘটে। এক্ষেত্রে ভুলটা অবশ্য মুসলমানদেরই। কারণ বাগদাদ ও স্পেনের পতনের পর মুসলমানদের হাজার বছরের জ্ঞান চর্চা ইহুদীরা লুটে নিয়ে যায়। নলেজ ইজ পাওয়ার, ইহুদীরা কৌশল ও কূটকৌশলে সেটাই কাজে লাগায়। যেমন : ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া ক্ষমতা দখলের পরও প্রশাসনে মুসলমান কর্মকর্তারাই সব পরিচালনা করতো। কারণ একটি সভ্য এলাকা কিভাবে চালাতে হয় তার শিক্ষা পানিদস্যুদের ছিলো না। সেটা শিখতে তারা ১০০ বছর সময় নেয়।

ইহুদীরা ব্রিটিশদের পর এক এক করে জামার্নি, সোভিয়েত ইউনিয়ন, এবং বর্তমানে আমেরিকার উপরও ভর করেছে। কিন্তু ব্রিটেনের দস্যু পরিবারের মাধ্যমে তাদের ক্ষমতার সূচনায় হওয়ায় তারা সম্ভবত সেটা সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবেই দেখে। উসমানি খেলাফতের পতন এবং ফিলিস্তিনে ইহুদী পুনর্বাসন ব্রিটিশদের দ্বারাই ঘটে। মুসলমানদের দুর্বল করতে মুসলমানদের মধ্যে অধিকাংশ দলাদালি ও ফেরকাবাজি শুরু হয় ব্রিটিশদের হাত ধরেই।

কমনওয়েলথ সংগঠনটি করাই হয়েছে ঐ ভূক্ত দেশগুলো এক সময় তাদের অধিনস্ত ছিলো এটা স্মরণ করিয়ে দেয় এবং তাদেরকে ‘রাজাহিসেবে মেনে নিতে বলা। উল্লেখ্য বর্তমানেও ব্রিটেনের এই দস্যু পরিবারের সদস্যরা ইহুদীবাদীদের সিক্রেট সোসাইট ফ্রি মেসনের নেতৃস্থানীয় সদস্য। স্বাভাবিক তাদের অনুষ্ঠানে অনেক ফ্রি-মেসন সদস্যকে ডাকা হয় (ভারতীয় নায়িকা প্রিয়াংকা চোপড়াকে আমার ফ্রি-মেসন মনে হয়)।

সোজা ভাষায়, মানুষখেকো দুস্য এই ব্রিটিশ পরিবারকে রাজা হিসেবে মেনে নেয়া মানে নিজেকে ইহুদী সম্রাজ্যবাদের প্রজা হিসেবে মেনে নেয়া। তারা তো চায়, আমাদের মন-মগজে তাদের প্রজা বানিয়ে রাখতে। তাই এসব মানুষ খেকো পানিদস্যুদের লুটেরাদের রাজাউপাধি দেয়া ও তাদের কাজে উৎসাহ দেখানো থেকে আমাদের বিরত থাকা উচিত।

 

 

 

 

 

 

 

 

গতকালকে একটা খবর চোখে পড়লো-

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেছে, “বাংলাদেশে ইসকনের কর্মকাণ্ডে সহায়তা করছে ভারত।” (http://bit.ly/2HKOkMM)

খবরের ভেতরে আছে, ঢাকার পাশে সাভারে এবং সিলেটে ইসকনের দুইটি বহুতল ছাত্রবাস/আশ্রম নির্মাণ করতে প্রায় ১৩ কোটি টাকা দিচ্ছে ভারত সরকার। সেই টাকা দিতে গিয়েই হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা এ বক্তব্য দিয়েছে।

মনে পড়ে গেলো, গত অক্টোবরে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ঢাকায় এসে বেশ কিছু প্রকল্পের উদ্বোধণ করেছিলো। সেই প্রকল্পগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য-

১) ঢাকার রমনা কালি মন্দিরের ভেতরে ৫ তলা গেস্ট হাউস

২) সাভারের ইস্কন মন্দিরের ভেতরে বহুতল আশ্রম ভবন নির্মাণ

৩) ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনের ভেতরে হোস্টেল নির্মাণ

৪) সিলেটে ইস্কন মন্দিরে ৫ তলা হোস্টেল নির্মাণ

৫) ময়মনসিংহের রামকৃষ্ণ মিশনে ৫ তলা বিশিষ্ট হোস্টেল নির্মাণ

(http://bit.ly/2BPDtjV)

পাঠক প্রকল্পগুলোর দিকে লক্ষ্য করুণ, এতদিন নির্মাণ করা হতো মন্দির। কিন্তু হঠাৎ নির্মাণ করা হচ্ছে বহুতল ছাত্রবাস, বহুতল আশ্রম, গেস্ট হাউস যেখানে একসাথে থাকতে পারবে হাজার হাজার হিন্দু। কিন্তু কেন হঠাৎ করে বাংলাদেশে বিভিন্ন এলাকায় ছাত্র/যুব বয়সী হিন্দুদের নিয়ে হোস্টেল/আবাসিক ভবন তৈরী করা হচ্ছে, যেখানে একত্র থাকবে হাজার হাজার হিন্দু ?

বাংলাদেশে আমরা দেখি, ভার্সিটির হলগুলোই হলো শক্তির আধার। কোন মারামারি/সংঘর্ষ করতে হলে হলগুলো থেকে দলকে দল ছাত্র নিয়ে আসা হয়। হলের ভেতরেই থাকে অস্ত্র মজুদ। যার কাছে একটা হল আছে, তার কাছে ৫-১০ হাজার ছাত্র আছে। সেই তুলনা করলে ভারত বাংলাদেশ হঠাৎ করে কেন হিন্দু ধর্মীয় আবাসিক প্রকল্প তৈরী করছে তা সত্যিই ভাববার বিষয়। এসব বহুতল ছাত্রবাস/হোস্টেল/আশ্রমগুলোকে একত্রে অবস্থান করা হাজার হাজার হিন্দু যুবক দিয়ে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ভেতর ভারত কি করতে চায় ? কি তাদের উদ্দেশ্য ? চিন্তা করে দেখুন...

 

 

 

 

 

 

 

 

# ইরাক সিরিয়া লিবিয়া দিকে যদি যদি তাকান, তবে দেখবেন, যুদ্ধটা কিন্তু শুরু করেছিলো মুসলমান-মুসলমান মিলে। এক মুসলমান অন্য মুসলমানকে দেখতে পারে না,

একজন অন্যজনের কথা ভালো লাগে না,

একজনের ক্ষমতা অন্যজনের পছন্দ হয় না,

ব্যস শুরু করে দিলো নিজেদের মধ্যে মারামারি,

এরপর তাদের মধ্যে অস্ত্র সরবরাহ করে যুদ্ধ বাড়িয়ে দেয়া হলো

সর্বশেষ তৃতীয় পক্ষ হয়ে পশ্চিমারা ঢুকে দেশগুলো তছনছ করলো।

মুসলমানরা নিজেই যদি নিজেদের পশ্চাৎদেশে আঘাত না করতো, তবে তৃতীয় পক্ষ আসতো কিভাবে ?

 

বাংলাদেশে নির্বাচন আসতে আর মাত্র ১ মাস আছে,

এটা একটা ক্রিটিকাল সময়।

সব শক্তি-ই এ সময় একটা ঘটনা ঘটিয়ে তার থেকে সুবিধা আদায় করার চেষ্টা করে।

 

গতকালকে বাংলাদেশে ‘তাবলিগ জামাতনামক একটি সংগঠনের দুদলের মধ্যে যা ঘটলো, তা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। মুসলমানরা নিজেরাই যদি এত বোকা হয়ে যায়, তবে তারা অন্যজাতির ষড়যন্ত্র রূখবে কিভাবে ?

 

আমার কাছে বিষয়টি সিরিয়াস লেগেছে এ কারণে-

মাত্র ১ দিন আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কংগ্রেসে বাংলাদেশের দুটি ইসলামী সংগঠনের নাম উল্লেখ করে, তাদের মত সকল ইসলামী সংগঠনগুলো নিষিদ্ধ চেয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাব করেছে রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান জিম ব্যাঙ্কস এবং ডেমোক্রেটের হিন্দু কংগ্রেসম্যান টুলসি গ্যাবার্ড। (https://bit.ly/2AI053T)

এই প্রস্তবের মাত্র ১ দিন পরেই তাবলীগের মধ্যে ঘটে যাওয়া এই মারামারি সত্যিই চিন্তা উদ্রেক করে।

 

আপনারা জানেন, আমেরিকার বহুদিনের ইচ্ছা, বাংলাদেশের আইএস বা জঙ্গীবাদ আছে, এটা প্রমাণ করে তারা বাংলাদেশে ঢুকবার একটা সুযোগ নিবে। এজন্য তারা বহুবার চেষ্টাও করেছে, যদিও সফল হয় নাই। কিন্তু এইবার যেটা দেখা যাচ্ছে, মুসলমানদের মধ্যে ধর্মীয় সংগঠনগুলো নিজেদের মধ্যে প্রকাশ্যে মারামারি-কাটাকাটি করে, সেই দৃশ্য নিজেরাই প্রচার করে প্রমাণ করে দিচ্ছে মুসলমানরা সন্ত্রাসী, আমেরিকা তুমি আসো”।

 

আপনারা হয়ত জানেন, আমি মুসলিম সমাজের প্রতি সব সময় আহবান করি, তারা যেন নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাদ দেয়। এখন অমুসলিমরা বাংলাদেশ দখলের জন্য ওৎ পেতে আছে। সব মুসলমানের এক হয়ে উচিত অমুসলিম শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়া। আপাতত বিশ্বাসগত দ্বন্দ্ব, ক্ষমতাগত দ্বন্দ্ব এগুলো বাদ দিয়ে একটা প্ল্যাটফর্মে আসতে হবে, দেশ সীমানা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক মুসলমান কমিউনিটির সাথে প্রয়োজনে ঐক্য করতে হবে। নয়ত বিরোধী শক্তি মুসলমানদের বিনা বাধায় শেষ করে দিবে। যারা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরী করে, ক্ষমতা নিয়ে কামড়াকামড়ি করে, তাদের সাথে তর্ক না করে এড়িয়ে যেতে হবে। যতটা পারা যায় নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ভুলে ঐক্য তৈরী করতে হবে। সব মুসলমান একাত্মতা ঘোষণা করতে হবে, নয়ত বাংলাদেশ সিরিয়া,লিবিয়া বা ইরাক হতে বেশি সময় লাগবে না। যদিও এ কথাগুলো বিভিন্ন সময় বলার পর কমেন্টেই অনেকেই নিজেদের মধ্যে গালাগালি আর তর্কযুদ্ধ করেছে। তবুও আমি আবারও একই কথা বলতে চাই।

 

যাই হোক, এবার একটা তালিকা দেই, যেখানে বিভিন্ন দলে হিন্দুসহ বিভিন্ন সংখ্যালঘু প্রার্থীর মনোনয়ন নেয়া প্রার্থীদের নাম দেখা যাবে। এ তালিকা দেয়ার উদ্দেশ্য, মুসলমানরা যখন নিজেরা নিজেদের পশ্চাতে আঙ্গুল ঢুকাচ্ছে, সেখানে উগ্র হিন্দু ও অন্যান্যরা সুকৌশলে বিভিন্ন দলের মধ্যে ঢুকে বাংলাদেশে হিন্দুত্ববাদ জারি ও ইসলাম বাদ দেয়ার প্ল্যানে নেমেছে।

 

আওয়ামী লীগের মনোনীত হিন্দু তথা সংখ্যালঘু প্রার্থীদের নামের তালিকা-

১. রমেশ চন্দ্র সেন (ঠাকুরগাঁও-১)

২. মনোরঞ্জন শীল গোপাল (দিনাজপুর ১)

৩. সাধন চন্দ্র মজুমদার (নওগাঁ-১)

৪. রণজিৎ কুমার রায় (যশোর-৪)

৫. স্বপন ভট্টাচার্য্য (যশোর-৫)

৬. বীরেন শিকদার (মাগুরা-২)

৭. পঞ্চানন বিশ্বাস (খুলনা-১)

৮. নারায়ণ চন্দ্র চন্দ (খুলনা-৫)

৯. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু (বরগুনা-১)

১০. পংকজ দেবনাথ (বরিশাল-৪)

১১. মৃণাল কান্তি দাস (মুন্সীগঞ্জ-৩)

১২. মানু মজুমদার (নেত্রকোনা-১)

১৩. অসীম কুমার উকিল (নেত্রকোণা-৩)

১৪. জয়া সেনগুপ্তা (সুনামগঞ্জ-২)

১৫. জুয়েল আরেং (ময়মনসিংহ-১)

১৬. দীপংকর তালুকদার (রাঙ্গামাটি)

১৭. কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (খাগড়াছড়ি)

১৮. বীর বাহাদুর উ শৈ সিং (বান্দরবান)

.

বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের মনোনীত হিন্দু তথা সংখ্যালঘু প্রার্থীদের নামের তালিকা-

১. অধ্যাপক পরিতোষ চক্রবর্তী (রংপুর-২)

২. রমেশ দত্ত (রাজশাহী-৬)

৩. অ্যাডভোকেট জন গোমেজ (নাটোর-৪)

৪. অমলেন্দু দাস অপু (যশোর-৬)

৫. অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী (মাগুরা-২)

৬. জয়ন্ত কুমার কুন্ডু (ঝিনাইদহ-১)

৭. মিল্টন বৈদ্য (মাদারীপুর-২)

৮. অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী (টাঙ্গাইল-৬)

১০. সুখরঞ্জন ঘোষ (কিশোরগঞ্জ-৪)

১১. গয়েশ্বর চন্দ্র রায় (ঢাকা-৩)

১২. তরুন দে (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২)

১৩. দীপেন দেওয়ান (রাঙ্গামাটি)

১৪. সাচিং প্রু জেরী (বান্দরবান)

১৫. মাইনরিটি জনতা পার্টির সাধারণ সম্পাদক সুকৃতি কুমার মন্ডল (যশোর-৪)

১৬. গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী (ঢাকা-৬)

১৭. গণফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাডভোকেট শান্তিপদ ঘোষ

.

জাতীয় পার্টির মনোনীত হিন্দু তথা সংখ্যালঘু প্রার্থীদের নামের তালিকা-

১. সুনীল শুভ রায় (খুলনা-১)

২. সোমনাথ দে (বাগেরহাট-৪)

৩. তপন চক্রবর্তী (চট্টগ্রাম-১৩)

৪. সন্তোষ শর্মা (কক্সবাজার-৩)

.

বাম গণতান্ত্রিক জোটের অন্যতম শরিক দল সিপিবির মনোনীত হিন্দু তথা সংখ্যালঘু প্রার্থীদের নামের তালিকা-

১. উপেন্দ্র দেবনাথ (কুড়িগ্রাম-২)

২. মিহির ঘোষ (গাইবান্ধা-২)

৩. যজ্ঞেশ্বর বর্মণ (গাইবান্ধা-৫)

৪. সন্তোষ পাল (বগুড়া-৫)

৫. ফণিভূষণ রায় (ঝিনাইদহ-২)

৬. অশোক সরকার (খুলনা-১)

৭. চিত্ত গোলদার (খুলনা-৫)

৮. সুভাষ ছানা মহিম (খুলনা-৬)

৯. ডা. তপন বসু (পিরোজপুর-১)

১০. দিলীপ পাইক (পিরোজপুর-৩)

১১. ডা. দিবালোক সিংহ (নেত্রকোণা-১)

১২. জলি তালুকদার (নেত্রকোণা-৪)

১৩. সমর দত্ত (মুন্সিগঞ্জ-১)

১৪. লীনা চক্রবর্তী (ঢাকা-১৯)

১৫. মানবেন্দ্র দেব (গাজীপুর-৪)

১৬. অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ (নারায়ণগঞ্জ-৫)

১৭. সুশান্ত ভাওয়াল (শরীয়তপুর-৩)

১৮. নিরঞ্জন দাশ খোকন (সুনামগঞ্জ-২)

১৯. পীযুষ চক্রবর্তী (হবিগঞ্জ-৩)

২০. মৃণাল চৌধুরী (চট্টগ্রাম-৯)

২১. দিপক বড়ুয়া (কক্সবাজার-৩)

.

বাম গণতান্ত্রিক জোটের অন্যতম শরিক দল বাসদের মনোনীত হিন্দু তথা সংখ্যালঘু প্রার্থীদের নামের তালিকা-

১. উৎপল দেব (জয়পুরহাট-২)

২. মঙ্গল কিসকু (নওগাঁ-১)

৩. দেবলাল টুডু (নওগাঁ-২)

৪. নব কুমার কর্মকার (সিরাজগঞ্জ-২)

৫. জনার্ধন দত্ত নান্টু (খুলনা-৩)

৬. নিত্যানন্দ সরকার (সাতক্ষীরা-২)

৭. প্রকৌশলী শম্পা বসু (ঢাকা-৮)

৮. সৌমিত্র দাস (ঢাকা-১৬)

৯. ডা. হারাধন চক্রবর্তী (ফেণী-৩)

১০. অ্যাডভোকেট মিলন মন্ডল (লক্ষ্মীপুর-৪)

.

বাম গণতান্ত্রিক জোটের অন্যতম শরিক দল বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টি ও গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির মনোনীত হিন্দু তথা সংখ্যালঘু প্রার্থীদের নামের তালিকা-

১. শিপন কুমার রবিদাস (বগুড়া-১)

২. সজিব সরকার রতন (নেত্রকোণা-২)

৩. প্রশান্ত দেব ছানা (মৌলভীবাজার-২)

৪. সুকোমল বিশ্বাস (ঠাকুরগাঁও-৩)

৫. জুঁই চাকমা (রাঙ্গামাটি)

 

হিসেব খুব সোজা, বাংলাদেশে ইসলামী সংগঠন নিষিদ্ধ চাইছে আমেরিকা, অথচ বিভিন্ন দলে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে উগ্র হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-উপজাতিদের । পাশাপাশি মুসলমানরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করে সাধারণ মানুষের মধ্যে নিজেদের অবস্থান করছে প্রশ্নবিদ্ধ । মুসলমানদের ধর্মীয় চেতনা এবং দেশের স্বাধীনতা উভয়ই এখন হুমকির মুখে। হিসেব খুব সহজ সমীকরণের দিকে যাচ্ছে, একটু মিলিয়ে নিলেই হয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ব্রাদার লুসিও বেনিনাতি,

খুব ভালো মানুষ। পথশিশুদের নিয়ে তার কাজ। আমরা বাংলাদেশে থেকে যেখানে পথশিশুদের জন্য কিছু করতে পারি না, সেখানে সুদূর ইতালি থেকে লুসিও বেনিনাতি বাংলাদেশে এসেছেন পথশিশুদের টানে, তাদের ভালোবাসায়। পথশিশুদের জন্য গড়ে তুলেছেন, ‘পথশিশু সেবা সংসঠন’। এর মাধ্যমে তিনি রাস্তার শিশুদের খোজ খবর নেন, হাত-পায়ের নোখ কেটে দেন, অসুস্থ হলে চিকিৎসা দেন, ক্লাসের মাধ্যমে বিনোদন দেন, নাচ-গান শেখান। অনেক মিডিয়া তার প্রশংসা করে নিউজ করেছে। তার সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। তিনি সুন্দর বাংলা কথা বলতে পারেন, তিনি চান তার লাশ যেন বাংলাদেশে থাকে, এই বাংলাদেশের মাাটিতে তিনি মরতে চান। আহ ! তার মত ভালো মানুষ আর দুইটা নেই।

এই যে আপনি, একজন ভালো মানুষকে নিয়ে খারাপ চিন্তা শুরু করলেন। আপনি নিজে ভালো কাজ করতে পারেন না, তাই বলে অন্যকে ভালো কাজ করতে দিবেন না ? হিংসে হয় বুঝি ?? কখন কোন পথশিশুর খবর নিয়েছেন ? মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছেন, এত বেলা ভাত খেতে দিয়েছেন ? অথচ এই লোকটা ইতালিতে কত ভালো জীবন ত্যাগ করে বাংলাদেশে এসে কত কষ্ট করছে। তাকে এপ্রিশিয়েট করুন, নিন্দা নয়।

কি বললেন, এরা মিশনারী, খ্রিস্টান বানায় ?

কোথায় সেরকম তো কিছু দেখলাম না। শুধু দেখলাম, সে মানব সেবা করছে। মানব সেবা পরম ধর্ম এটা তো সত্য। সকল ধর্মই তো তা বলে। তিনি তার ধর্মের কথা প্রচার করেছেন বলে জানি না, কিন্তু সেবা করেছেন। আপনি যখন এতটা ধার্মীক, তখন নিজ ধর্ম মেনে পথশিশুদের সেবা করুন পারলে।

------০---------

আমি জানি, লুসিও নিয়ে কথা বললে একদল মানবতাবাদী বের হবে। লুসিওর পক্ষে ওকালতি করবে। আমাকে খারাপ বলবে। নিন্দুক বলবে, আমি ভালো জিনিসের নিন্দা করি, হিংসা করি, সবকিছুর মধ্যে খারাপ খুজি, তাও বলবে। কিন্তু সত্য কথা কি জানেন ? আমি চাই, মানুষ ধোঁকায় না পড়ুক, কোন খোলস পড়িয়ে কেউ যেন সাধারণ মানুষকে খারাপ মাল গছিয়ে না দিতে পারে।

আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্লাস করানোর সময় আমি আপনাদের বলেছিলাম, এ ধরনের ক্রিটিকাল প্রত্যেক বিষয় বা মানুষের দুইটি ফেস থাকে। একটা রিয়েল ফেস, অন্যটা আর্টিফিসিয়াল ফেস। মানবসেবা’, পথশিশু সেবা এগুলো হলো লুসিওদের আর্টিফিসাল ফেস, এটা তাদের চাকরী, তাদের চাকুরীর স্বার্থে তারা এমন পরিচয় প্রকাশ করে। লুসিওর রিয়েল ফেস হলো, সে মার্কিন খ্রিস্টান মিশনারী Pontifical Institute for Foreign Missions (PIME) এর সদস্য (https://bit.ly/2Q1Vnbs )। পাইমের ওয়েবসাইটে ঢুকলে পাবেন, তাদের মূল উদ্দেশ্য বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচার করা। (https://www.pimeusa.org/about-pime)

এমনকি ব্রাদার লুসিও বেনিনাতি নিজেই বলছে, তারমূল উদ্দেশ্য কাজের মাধ্যমে বাইবেল-গসপেলের প্রচার । (https://bit.ly/2FO8J6B)

আমার কথা হলো, মানবসেবা করুন, ভালো কথা, কিন্তু সেটা ধর্ম প্রচারের শর্তে কেন হবে ? আমাদের দেশের মসজিদের হুজুররা যদি একটা খ্রিস্টান/হিন্দুকে বাসায় ডেকে এনে ভাত খাওয়ায় মুসলমান বানাতে চায় তখন তো খ্রিস্টান/হিন্দুরা চিল্লাচিল্লি শুরু করে দিবে, তাহলে খ্রিস্টানরা যখন করবে, তখন কেন সেটার প্রতিবাদ করা যাবে না ? কেন সেটাকে মানবতার তোয়ালে জড়িয়ে বৈধতার দেয়ার চেষ্টা করা হবে ? মানবতার নাম করে ধর্ম প্রচার করা কি ধোঁকাবাজি নয় ?

------০--------

১) ব্রাদার লুসিও ছোট ছোট ধর্মজ্ঞানহীন বাচ্চাদের নিয়ে খ্রিস্টীয় কায়দায় প্রার্থনা শেখায় (https://bit.ly/2Ayzcz6)

২) ব্রাদার লুসিওদের সাথে বাংলাদেশে সিআইএ’র অত্যতম এজেন্ট সুলতানা কামাল চক্রবর্তী এবং ডাক্তার জাফরুল্লাদের সম্পর্ক আছে। যেহেতু পাইম মিশন,ইউএসর অংশ, তাই এতে সিআইএর আলাদা প্ল্যান থাকা স্বাভাবিক। (https://bit.ly/2P8dN55)

৩) বিশ্বজুড়ে খ্রিস্টান ফাদার-ব্রাদারদের দ্বারা শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন খুব স্বাভাবিক বিষয়। একেক জন খ্রিস্টান পাদ্রী হাজার হাজার শিশুকে বলাৎকার করে এবং পোপের পক্ষ থেকে তার সাফাই গাওয়া হয়। এমনিক পাইম মিশনের থাইল্যান্ডে এক যাজক ছিলো নাম এন্ড্রিয়ানো পেলোসিন। সে লুসিওর মত থাই পথশিশুদের নিয়ে কাজ করতো, তাদের দেখাশোনা করতো। কিন্তু তার কাছে আশ্রিত সেই পথশিশুদের উপর সে যৌন নির্যাতন করে, এমন রিপোর্ট থাই পত্রিকায় ছাপা হয়।

৪) পথশিশুদের নিয়ে মিশনারীরা কাজ করার পেছনে আরেকটি হতে পারে, তা হলো সেসব শিশুর মা-বাবার টান থাকবে না, তাদের পাচার করা, বিদেশে যে সব পতিতালয়ে শিশুদের চাহিদা বেশি সেখানে তাদের বেচে দেয়া এবং তাদের অঙ্গপ্রতঙ্গ বিক্রি করা।

পথশিশুদের ভালো হোক, তারা ভালো থাকুক, এটা আমরা সবাই চাই। কিন্তু সে ভালো চাইতে গিয়ে মার ছেয়ে মাসির দরদ বেশিটাইপের কেউ যদি হাজির হয়, তবে কেন আবেগের বশে দেশের সম্পদ কে বিদেশী শকুনের হাতে ছেড়ে দিতে হবে ? এবারে দেশের জনগণ ও সরকার-প্রশাসনের সঠিক দৃষ্টি কামনা করছি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সিন্ডিকেট বা কমিউনিটি এক বড় জিনিস।

যার সিন্ডিকেট বা নিজস্ব কমিউনিটি আছে,

অন্য সবাই তার কাছে ধরা।

ইহুদীরা এক্ষেত্রে সব থেকে এগিয়ে ।

অন্যান্যরা যেখানে সর্বোচ্চ এক বা দুই সিন্ডিকেট তৈরী করতে পেরেছে, সেখানে ইহুদীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সর্বমূখী সিন্ডিকেট করে রাজত্ব তৈরী করে ফেলেছে।

উদাহরণ দিলে বুঝতে সহজ হবে। যেমন ধরুন, কোন সংগঠন বা দলের হয়ত:

১) ব্যবসায়ী সংগঠন বা সিন্ডিকেট আছে,

২) কারো আছে রাজনৈতিক সিন্ডিকেট

৩) কারো আছে প্রশাসনিক সিন্ডিকেট

৪) কারো আছে মিডিয়া সিন্ডিকেট

৫) কারো আছে বিচারবিভাগীয় সিন্ডিকেট

৬) কারো ব্যাংক সিন্ডিকেট

৭) কারো আছে সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট

৮) কারো আছে গোয়েন্দা বাহিনীর সিন্ডিকেট

৯) কারো আছে এনজিও সিন্ডিকেট

১০) কারো আছে প্রযুক্তি সিন্ডিকেট

১১) কারো আছে বিজ্ঞানী সিন্ডিকেট

১২) কারো আছে্ ঔষধ সিন্ডিকেট

১৩) কারো আছে লেখক/বুদ্ধিজীবি সিন্ডিকেট

১৪) কারো আছে অভিনেতা-অভিনেত্রী-খেলোয়াড়-পরিচালক সিন্ডিকেট

১৫) কারো আছে ধর্মীয় গুরু সিন্ডিকেট

১৬) কারো আছে বিভিন্ন সংগঠনভিত্তিক সিন্ডিকেট (উদা: পরিবেশবাদী, মানবাধিকার ইত্যাদি)

১৭) কারো আছে এনালিস্ট সিন্ডিকেট

১৮) কারো আছে মাদক সিন্ডিকেট

১৯) কারো আছে শ্রমিক ইউনিয়ন সিন্ডিকেট

২০) কারো আছে সামরিক বাহিনী বা অস্ত্রের সিন্ডিকেট

একের জনের একেকটা আছে। কারো কাছে একাধিকও থাকতে পারে। কারো শুধু নিজ দেশে আছে। কিন্তু ইহুদীদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সব সিন্ডিকেট আছে, অথবা সবগুলো সিন্ডিকেটে তাদের লোক ঢুকানো আছে, অথবা সে সব সংগঠনকে তারা ফান্ড দেয় বা বুদ্ধি দেয়। এই আন্তর্জাতিক মাল্টি সিন্ডিকেট পাওয়ার একটা বড় পাওয়ার। কারণ অন্য এক বা একাধিক সিন্ডিকেটের মালিককে তারা তুলোধুনো করতে সময় লাগে না, আবার কোন ব্যক্তি, যত বড় ক্ষমতার মালিক হোক, এর কাছে সে পাত্তাই পাবে না। এটা অবশ্যই ইহুদীরা একদিনে করেনি, এ সিন্ডিকেট দাড় করাতে তারা হাজার বছর চেষ্টা করতে হয়েছে।

যীশু খ্রিস্টের জীবন কাহিনী পড়লে স্পষ্ট হয়, ইহুদীদের সাথে খ্রিস্টানদের দ্বন্দ্ব ছিলো।

মুসলমানদের শেষ নবীর জীবন ঘটনা পড়লে দেখা যায়, ইহুদীদের সাথে মুসলমানদের দ্বন্দ্ব হয়।

এই দ্বন্দ্ব-মানসিকতা সৃষ্টি হয় সাম্প্রদায়িকতা বা জাতীয়তাবোধ থেকে, যা থেকে তাদের মনে ধারণা সৃষ্টি হয়, আমাদের খ্রিস্টান ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে জয়ী হতে হবে (মুসলমানদের মনে অবশ্য এখন সেই মানসিকতাই নেই, বীজ যদি না থাকে তবে গাছ হবে কিভাবে? )।

এই মানসিকতা পূজি করে ইহুদীরা এগিয়ে যায়, যাওয়ার পথে তারা কম বাধার সম্মুক্ষিন হয়নি। খ্রিস্টানরা বহুবার তাদের মার দিয়েছে, মুসলমানরাও তাদের মার দিয়ে বের করে দিয়েছে। কিন্তু তারা পিছু হটেনি। তারা তাদের মূল নীতিতে দৃঢ় ছিলো। বাবা মারা যাওয়ার আগে সন্তানকে বলে গেছে,

বাবা আমি পারলাম না, তুমি আমার রেখে যাওয়া কাজ সমাপ্ত করো।

ঐ ছেলে মারা যাওয়ার সময় তার সন্তানকে বলে গেছে, একই কথা

ঐ ছেলে মারা যাওয়ার সময় তার সন্তানকে বলে গেছে একই কথা।

এভাবে চলেছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম, কিন্তু মূলনীতি থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়নি। বর্তমান কালে ইহুদীরা যতটুকুই সফল, এর পেছনে প্রজন্মের পর প্রজন্মে তাদের দৃঢ়চেতা থাকা অবশ্যই মূল কারণ।

উপরের আলোচনা থেকে দুটি বিষয় বের হয়ে আসে-

ক) মান্টি সিন্ডিকেট

খ) দীর্ঘ সময়

আমি জানি, অনেক মুসলমান মনে করে, তারা একা একা অনেক কাজ করে ফেলবে, বা করতে পারবে। এটা সম্পূর্ণ ভুল, ইহুদী মাল্টি সিন্ডিকেটের সামনে সে একটা ধূলাবালির সমানও না।

আবার অনেকে মনে করে, ১ দিনে সে অনেক কিছু করে ফেলবে। এটাও ভুল। কারণ শত শত বছর ধরে যে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা জমা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে লড়তে হলেও ইহুদীদের মত অত বড় না হলেও মোটামুটি একটা সময় দরকার। তাই ইহুদীদের সাথে লড়তে হলে মুসলমানদের সেভাবেই চিন্তা করা উচিত।

 

 

 

 

 

 

 

ইহুদীরা হিসেব করে দেখেছে পৃথিবীর সমস্ত শক্তি ৩টি জিনিস : টাইম-নলেজ-মানিদ্বারা নির্ধারিত হয়-

১) টাইম বা সময় : কারো কাছে যখন টাইম বা সময় আছে তখন সে অনেক কাজ করতে পারবে। এজন্য ইহুদীরা নিজেরা তো সময় দেয়ই, এমনকি অন্যকে চাকুরীর দেয়ার মাধ্যমে সময় কিনে নেয়। ওরা চায় সবাই ওদের অধীনে চাকুরী করুক, এতে সবার সময় ওদের কাছে চলে আসবে।

২) নলেজ বা জ্ঞান : কারো কাছে যখন নলেজ বা জ্ঞান আছে তখন সেটা দিয়ে অপরের উপর কর্তৃত্ব করা যায়। ইহুদীরা মূল মূল জ্ঞানগুলো করায়ত্ব করার চেষ্টা করে। তারা ব্রেইন ড্রেইন করে সকল দেশ থেকে মেধাবীদের কিনে নিয়ে যায়। এবং মেধাবীদের নিজেদের কাজে লাগায়।

৩) মানি বা অর্থ : ইহুদীরা অর্থ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেষ্টা করে। অর্থ অন্যতম শক্তি হিসেবে কাজ করে।

অর্থাৎ এই ৩টি বিষয় আবার প্রত্যেকে অপর দুই বিষয়ে কনভার্ট হতে পারে। যেমন-

- সময় কাজে লাগিয়ে জ্ঞান চর্চা করা/করানো যায়, আবার সেই জ্ঞান বিক্রি করে টাকাও কামানো যায়।

- জ্ঞান কাজে লাগিয়ে আপনি সময় বাচানো/পাওয়ায় যায়, টাকাও কামানো যায়।

- আবার মানি বা অর্থ কাজে লাগিয়ে অপরের সময় কেন যায় (চাকুরি দিয়ে) এবং মেধাবীর মেধা বা জ্ঞানও ক্রয় করা যায়।

ইহুদীরা সারা বিশ্বে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য এই তিনটি জিনিস নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেষ্টা করে। আর অপর জাতিগুলোর যেন এই তিনটি জিনিসের মালিক না হতে পারে সে জন্য সজাগ থাকে। তারা চায়, অপর জাতিগুলোর যেন এই তিনটি জিনিস মানে- টাইম-নলেজ-মানিনষ্ট হয়ে যায়।

গত বেশকিছুদিন যাবত দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বকাপ ফুটবল নামক খেলায় খুব মেতে উঠেছে।

-ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা করে বিরাট সময় অপচয় করছে। অনেকে পুরো জীবনটা শেষ করে দিচ্ছে। নরসিংদীতে পতাকা টাঙ্গাতে গিয়ে ফয়সাল নামক এক ব্যক্তি বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা গেলো। টাঙ্গাইলে পতাকা টাঙ্গাতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়েছে একজন , নারায়নগঞ্জে আর্জেন্টিনা সমর্থকদের কুপিয়েছে ব্রাজিল সমর্থকরা।

-তরুণ প্রজন্মের যত জ্ঞান বুদ্ধি সব নষ্ট করছে ফুটবল ফুটবল করে। কে কত ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার নিয়ে গবেষণা করতে পারে সেটা ফেসবুক খুললে দেখা যায়। তারা যদি এই জ্ঞানের কিঞ্চিৎও দেশ ও জাতির কল্যাণ্যে ব্যয় করতো, তবে দেশের এতটা করুণ অবস্থা হতো না।

- টাকার অপচয় যে কত হচ্ছে তার হিসেব করে পারা যাবে না। সারা দেশজুড়ে ব্রাজিল আর্জেন্টিনার পতাকা, জার্সি লাগিয়ে অপচয় করা হচ্ছে অগণিত টাকা। মাগুরায় এক ৫ কিলোমিটার লম্বা পতাকা বানিয়েছে, বাগেরহাটে ৮০০ ফুট লম্বা পাতাকা, কেউ ব্রাজিল আজেন্টিনার পতাকার মত করে পুরো বাড়ি রং করছে। আরো কত কি।

মুসলমানরা যদি ইহুদীবাদীদের খপ্পর থেকে বের হয়ে পৃথক শক্তি তৈরী করতে যায়, তবে টাইম-নলেজ-মানিফের নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে হবে। ওরা যতভাবে তিনটি জিনিসের অপচয় ঘটাতে চায়, সবগুলো রোধ করতে হবে। মুসলমানদের টাইম-নলেজ-মানির মূল্য বুঝতে হবে এবং এ তিনটি জিনিসকে পুরোপুরি মুসলমানদের কাজে লাগতে হবে। তখনই মুসলমানদের উত্থান ঘটবে, এর আগে না।

 

 

 

 

 

 

সারা বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা নানাভাবে নির্যাতনের শিকার। এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে হয়ত তারা অনেক যায়গায় প্রতিরোধ-বিক্ষোভ-সংগ্রাম গড়ে তুলছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত সফলতার মুখ দেখছে না। এই ঘটনার পেছনে আমি মূল দুটি কারণ আমার দৃষ্টিতে এসেছে,

প্রথম কারণ, নিজেদের মধ্যে বিশ্বাসঘাতকতা । অথবা বিশ্বাসঘাতক কাউকে নেতা হিসেবে মানা ।

দ্বিতীয় কারণ, নিজস্ব চেতনা থেকে দূরে সরে যাওয়া।

মুসলমানদের মধ্যে এখন অনেক সমস্যা, এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। কিন্তু সমস্যা উত্তরণে অনেক বিষয়ের দিকে না তাকিয়ে আপাতত মূল দুটি বিষয়ের দিকে আলোকপাত করছি।

প্রথম উদাহরণ হিসেবে দেয়া যায় কাশ্মীরকে। কাশ্মীরের বিশ্বাসঘাতকতা মূলে ছিলো তাদের নেতা শেখ আব্দুল্লাহ। শেখ আব্দুল্লাহ’র উত্থান হয়েছিলো হিন্দু রাজার বিরুদ্ধে মুসলিম আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। কিন্তু পরবর্তীকালে সেই শেখ আব্দুল্লাহ-ই সেক্যুলার হয়ে যায়। সে মুসলমানদের সাথে না, হিন্দুদের সাথে মিলে দেশ গঠন করতে বেশি ইচ্ছুক হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী পদের বিনিময়ে হিন্দুদের সাথে সমঝোতা করে এবং তার বিশ্বাসঘাতকতার কারণে কাশ্মীর চলে যায় ভারতের হাতে। প্রায় ৭০ বছর ধরে নির্যাতিত হতে থাকা কাশ্মীরকে অনেক জীবন ও নারীর সম্ভ্রমকে মূল্য হিসেবে দিতে হয়েছে। কিন্তু তারপরও তারা সফলতার মূখ দেখেনি, কারণ কাশ্মীরের নেতৃত্বে ঘুড়ে ঘুড়ে সেই বিশ্বাসঘাতকরাই এসেছে। বিশ্বাসঘাতককে নেতৃত্বে রেখে আপনি নিশ্চয়েই জয়ী হতে পারবেন না।

এরপর যদি ফিলিস্তিনের দিকে তাকান তবে দেখবেন একই অবস্থা। ৭০ বছর ধরে তারা নির্যাতিত। ৬৭ সালে মাত্র ৬ দিনের যুদ্ধে বিরাট এলাকা দখল করে নেয় ইহুদীরা। সমস্যা হলো, এ যুদ্ধগুলোতে মুসলমানদের হয়ে যারা নেতৃত্ব দেয় তারা নিজেরাই মুসলমান না। ৬৭ সালের যুদ্ধে মুসলমানদের তিন নেতা ছিলো যথাক্রমে মিশরের জামাল আব্দেল নাসের, সিরিয়ার হাফিজ আল আসাদ আর মরোক্কোর বাদশাহ হুসাইন। অথচ জামাল আব্দেল নাসের ছিলো কট্টর ইসলামবিদ্বেষী (ইখওয়ানিদের হত্যাকারী), হাফিজ আল আসাদ ছিলো বামপন্থী আর মরক্কোর হুসাইন নিজেই ছিলো ইসরাইলি এজেন্ট, যা পরবর্তীতে ফাঁস হয়। পরবর্তীকালে ফিলিস্তিনিরা নেতা হিসেবে নেয় ইয়াসির আরাফাতকে, যে একজন বামপন্থী। এই যখন মুসলমান নেতাদের অবস্থা তখন মুসমানদের পরাজয় ঘটবে এটাই তো স্বাভাবিক।

বিশ্বাসঘাতকতার পর আসছি নিজস্ব চেতনা নিয়ে। এখানেও সমস্যা। মুসলমানরা আজকাল তাদের ধর্মীয় পরিচয় থেকে জাতীয়তাবাদী পরিচয় দিতে বেশি সাচ্ছন্দ্য বোধ করে। যেমন:

- বাংলাদেশের মুসলমানরা নিজেদের আগে বাঙালী, পরে মুসলমান ভাবে,

-ভারতীয় মুসলমানরা নিজেদের আগে ভারতীয় পরে মুসলমান মনে করে;

-আরবের মুসলমানরা নিজেদের আগে আরবীয়, পরে মুসলমান হিসেবে পরিচয় দিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।

আর সমস্যা সেখানেই হয়। কারণ মুসলমানরা নিজেদের জাতীয়তাদী পরিচয় দিলেও মুসলমানদের শত্রুরা নিজেদের সাম্প্রদায়িক পরিচয় দিয়ে যুদ্ধ করতে এগিয়ে আসে। ২০০১ সালে টুইন টাওয়ারের ঘটনার পর বুশ মুসলমান দেশে হামলাকে ক্রুসেড বলে ঘোষণা করেছিলো, ইহুদীরা ইসরাইল-ফিলিস্তিনে যেটা করছে সেটা তারা তাদের ধর্মীয় যুদ্ধ মনে করে, ভারতে হিন্দুরা যেটা করছে সেটা তাদের কাছে হিন্দুত্ববাদ এবং মায়ানমারে যেটা হয়েছে সেটাও বুদ্ধবাদ বলেই করা হয়েছে। এবং এটা খুব স্বাভাবিক বিষয় সাম্প্রদায়িক চেতনার কাছে জাতীয়বাদী চেতনা কখনই টিকবে না, এবং সেটা সম্ভবও নয়। কিন্তু তারপরও মুসলমানরা বছরের পর বছর একই ভুল করে চলেছে।

এই সূত্র শুধু কাশ্মীর-ফিলিস্তিন নয়, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের জন্য, ছোট থেকে বড় সব আন্দোলন বিক্ষোভের জন্য প্রযোজ্য। এই সমস্যা সমাধানের জন্য সাধারণ মুসলমানদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। সাধারণ মুসলমানরা যদি সচেতন হয়, তখন বিশ্বাসঘাতক বা চেতনাহীন কোন আন্দোলনকে তারা সাপোর্ট দেবে না। ফলে একই ভুল বার বার হওয়ার আশঙ্কাও কমে যাবে।

 

 

 

 

 

 

 

যেমন ধরুন-

-প্রথমত, এরা কোন সমস্যাকে চিহ্নিত করে অথবা নিজেরাই অন্যদিক দিয়ে সমস্যা তৈরী করে।

-দ্বিতীয়ত, এরা সেটাকে তাদের মিডিয়ায় ব্যাপক কচলায়। কচলাতে কচলাতে এমন অবস্থা হয় যেন মানুষ সেটা থেকে পরিত্রাণের জন্য পাগল হয়ে যায়।

-তৃতীয়ত, মানুষকে উত্তেজিত করে তারা সমস্যার সমাধাণ দেয়। কিন্তু যেটা দেয় সেটা আসলে ঐ সমস্যার সমাধান নয় (অথবা পরিপূর্ণ সমাধান নয়) । ঐ সমাধানের আড়ালে থাকে তাদের নিজের কোন উদ্দেশ্য। যেটাতে তারা লাভবান হবে কিন্তু সাধারন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এখন আপনি যদি তার ধোকাবাজিতে বাধা দেন, তবে সে নিজেকে আড়াল করে ঐ সমস্যাটাকে ঢাল স্বরূপ সামনে এনে ধরবে। এবং দাবি করবে-আপনি ঐ সমস্যার সমাধান চান না, অথবা আপনি ঐ সমস্যা তৈরীকারী লোক।

যেমন ধরুন:

১) ‘নারী নির্যাতন হচ্ছে, ধর্ষণ হচ্ছে’। এটা নিয়ে তারা প্রচুর কচলাবে। কচলাতে কচলাতে শেষে গিয়ে বলে বসবে “নারী নির্যাতনের জন্য পোষাক দায়ী না”। নারী নির্যাতন বন্ধে তার কারণগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করাই আসল কথা। কিন্তু পোষাক দায়ী কি দায়ী না, এটা কিন্তু ধর্ষণ বন্ধ করার উপায় না। কিন্তু তারা ধর্ষণকে সামনে এনে পোষাক উন্মুক্ত চায়। কিন্তু আপনি যদি তার ধোকাবাজি ধরে ফেলেন, তখন সে নিজেকে আড়াল করে ঐ সমস্যা দিয়ে আপনাকে প্রতিরোধ করবে, বলবে- তোমাদের মত পুরুষরাই ধর্ষণ করে।

২) যানজট বন্ধে ফ্লাইওভার-এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ। কিন্তু ফ্লাইওভার-এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কখনই যানজটের সমাধান নয় বা মূল সমাধান নয়। এগুলো হচ্ছে ১৯৫৯ সালে তৈরী করা এশিয়ান হাইওয়ে প্রজেক্টের অংশ। তখন তো যানজট ছিলো না। কিন্তু যানজটের কথা বলে তারা দ্রুত তাদের কাজ সেরে নিয়েছে, অথচ এত দ্রুত এগুলো দরকার ছিলো না। দ্রুত এতগুলো অবকাঠামো করার কারণে দেশের অর্থনীতির বারোটা বেজে গেছে। এখন আপনি যদি তাদের কাজের বিরোধীতা করেন, তবে সে নিজেকে আড়াল করে উল্টো বলবে- আপনি দেশের উন্নয়নের বিরোধীতা করছেন।

৩) “ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী গড়াকিংবা ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ” “কৃষিতে প্রযুক্তিইত্যাদি কথাগুলো বলে তারা জিএমও ফুড গোল্ডেন রাইস বাজারে আনতেছে। কিন্তু ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী গড়তে কিংবা ভিটামিন এ পেতে গোল্ডেন রাইস একমাত্র সমাধান ব্যাপারটা সেরকম নয়। কিন্তু দেখাচ্ছে একটা, কিন্তু করতেছে আরেকটা, যেটাতে তার স্বার্থ হাসিল হয়, এবং সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আপনি তাদের ধোকাবাজি ধরে ফেললেই তারা আপনাকে প্রযুক্তিবিরোধী’, ‘ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গড়তে বাধাইত্যাদি ট্যাগ দিয়ে আপনাকে আটকানোর চেষ্টা করবে।

৪) কোরবানী ঈদ আসলেই তারা যানজট, পরিবেশদূষণ ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে লাফালাফি শুরু করে। এমনভাবে প্রচার করবে, যেন মনে হবে কোরবানীর হাট আর গরুর রক্তই বুঝি যানজট আর পরিবেশ দূষণের জন্য একমাত্র দায়ী। এগুলো দূর করতে পারলেই যানজট আর পরিবেশ দূষণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। কিন্তু আপনি তাদের ধোকাবাজি ধরে ফেললেই, বলবে- আপনি একরোখা, পরিবেশবিরোধী ইত্যাদি।

এজন্য ঐ গোষ্ঠীটি কোন ভালো কথা বললেই আপনি লাফ দিয়ে পড়বেন না। তারা যে সমাধানটা দিচ্ছে সেটা নিয়ে যাচাই-বাচাই করবেন। মনে রাখবেন, এদের মুখে হলো মধু, কিন্তু কাজের মধ্যে বিষ। তাই সাবধান।

 

 

 

 

 

বতর্মান সময়ে চলমান একটি আন্দোলনের নাম হচ্ছে কোটা বিরোধী আন্দোলন। আমি ব্যক্তিগতভাবে ১% কোটারও পক্ষে নই, কোটা বাদ দিলে পুরোটা বাদ দিতে হবে। ১% কোটাও রাখা যাবে না। কোটা মানে অত্যাচার, কোটা মানে নিপীড়ন, কোটা মানে মেধাবীর গলায় ফাঁস।

আমার এ পোস্টটি অবশ্য কোটা নিয়ে নয়, এ ধরনের আন্দোলনগুলো নিয়ে। বর্তমান সময়ে দুই ধরনের আন্দোলনের দিকে চোখ দেয়া যাক-

১) ব্যক্তি স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আন্দোলন : যেমন- কোটা বিরোধী আন্দোলন, শিক্ষকদের চাকুরীর আন্দোলন, ছাত্রদের ভ্যাট বিরোধী আন্দোলন ইত্যাদি। এ আন্দোলনকারীরা পার্থিব কিছু পাওয়ার জন্য আন্দোলন করতেছে।

২) জাতিগত বা ধর্মীয় আন্দোলন : অপার্থিব কিছুর জন্য আন্দোলন, যেমন ধর্মীয় ইস্যুতে আন্দোলন। যেখানে সরাসরি কোন স্বার্থ দেখা যায় না। যেমন: রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখার আন্দোলন, বোরকা বা পর্দার পক্ষে আন্দোলন, ধর্ম নিয়ে কটূক্তি বিরোধী আন্দোলন। যারা এ আন্দোলন করতেছে, তারা পার্থিব জগতে কতটুকু লাভবান হলো, সেটা হিসেব নিকেষ করার যাচ্ছে না।

সাধারণত যারা প্রথম শ্রেণীর আন্দোলন করে তারা দ্বিতীয় শ্রেণীর আন্দোলনে কখন আসে না। কারণ প্রথম শ্রেণীরা ব্যক্তিস্বার্থ তথা ক্যারিয়ারকে বেশি গুরুত্ব দেয়, ধর্মীয় বা জাতিগত বিষয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই।

এখানে একটি ক্যালকুলেশনের দরকার আছে। আমরা সব সময় বলি- ইহুদীবাদীরা মুসলমানদের ক্ষতি চায়, ষড়যন্ত্র করে, হত্যা করে । কিন্তু কেন ? ইহুদীবাদীদের কি ঠেকা পড়েছে তারা ইসলাম ও মুসলমানদের পিছনে লাগবে ? মুসলমানদের হত্যা করবে, ইসলাম ধর্ম নষ্ট করতে ষড়যন্ত্র করবে ? কেন ? তাদের কি স্বার্থ আছে ?

আসলে বিশ্বজুড়ে ইহুদীবাদীরা একটা সিস্টেম বা মতবাদ বা সিন্ডিকেট দাড় করিয়েছে, যার মাধ্যমে তারা পুরো বিশ্বকে কন্ট্রোল করে । তারা জানে তাদের এই সিস্টেমের একমাত্র ও শুধুমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছে ইসলাম। ইসলাম ছাড়া আর কোন মতবাদ অবশিষ্ট নাই, যেটা তাদের বিরোধীতা করতে পারে। ইসলামের সকল সিস্টেমগুলো তাদের সিস্টেমের সাথে রিভার্স। যদি ইসলামীক পলিসিগুলো আনা যায়, তবে তাদের পুরো সিস্টেম ক্র্যাশ করবে, ক্ষমতার পতন হবে। এজন্য তারা সব সময় ইসলামের বিরুদ্ধে বলে, ইসলাম ধর্মীয় অনুশাসনগুলো ভেঙ্গে দিতে চায় এবং ইসলামের ধারক মুসলমানদের উপর নির্যাতন করে।

অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করে, “আচ্ছা দাদা আপনি কি মুসলমান , নয়ত আপনি ইসলামের পক্ষে এত কথা বলেন কেন ?”

আমার উত্তর হলো- আমি ইহুদীবাদের বিরুদ্ধে, ইহুদীবাদের সকল সিস্টেমের বিরুদ্ধে, তাদের সম্রাজ্যবাদ পতনের পক্ষে। এবং আমি এও জানি, ইসলাম ছাড়া কোন সিস্টেম বা মতবাদ অবশিষ্ট নাই, যেটা দিয়ে ইহুদীবাদদের পতন ঘটানো সম্ভব। যেমন: খ্রিস্টধর্ম অনেক আগেই তারা শেষ করে দিয়েছে। খ্রিস্ট মতবাদ দিয়ে ইহুদীবাদের পতন ঘটানো সম্ভব নয়। এজন্য ইহুদীবাদের বিরুদ্ধে বলতে গেলে, আমাকে ইসলামের পক্ষেই বলতে হবে।

আগের আলোচনায় ফিরে আসি, বর্তমান প্রজন্ম যেটা করতেছে, তারা মূল কেন্দ্রীয় সমাধানে না গিয়ৈ ডালপালায় হাতরাচ্ছে। যেমন ধরুন- সবাই ধর্ষণের বিরুদ্ধে। এটা নিয়ে অনেক আন্দোলন হচ্ছে। কিন্তু অনেক দিন আগে যখন বাংলাদেশের হাইকোর্টে রুল দিলো, পর্দা করতে বাধ্য করা যাবে না, তখন কিন্তু এ গোষ্ঠীট মাঠে নামতেছে না। বলতেছে- পর্দা নিয়ে আন্দোলন তো শুধু হুজুরদের আন্দোলন। আমরা সাধারণ মানুষ কেন সেখানে যোগ দিবো ?

কিন্তু ইসলাম পর্দার অনুশাসন শিখিয়েছে সেটা যদি মেনে চলা হতো, তবে কিন্তু সমাজে এতটা অনৈতিকতা বিস্তার হতো না। সঠিক পর্দা মানলে পুরুষও নারীকে শ্রদ্ধা করতো এবং টিভি-চ্যানেল-ডিশ এন্টেনা-ইন্টারনেটে পর্নোগ্রাফীর বিস্তার হতো না। কিন্তু মূল পর্দাসিস্টেম যখন ভেঙ্গে দিয়েছে, তখন সব অনৈতিকতায় সয়লাভ হয়ে গেছে। যার ফলশ্রুতি আজকে ধর্ষণে সব একাকার। সাধারণ মানুষ যদি তখন পর্দা প্রথা নিয়ে আন্দোলন করতো, তবে অবশ্যই আজকে তাকে ধর্ষণ নিয়ে আন্দোলন করতে হতো না।

আবার ধরুণ, আজকে সবাই কোটা নিয়ে আন্দোলন করতেছে। এটা ইহুদীবাদীদের দেয়া পলিসি। এ পলিসির কারণে বাংলাদেশের মেধাবীরা তাদের কাছে ড্রেইন হয়ে যায়। আর বাকিগুলো দেশে পচে মরে। আর ক্ষমতাসীনরাও ইহুদীবাদীদের কোটা পলিসির গ্রহণ করে, কারণ মেধাহীন ও সুযোগসন্ধানী লোককে চাকুরী দিলে তাদের ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতে সহজ হয়।

কোটা মানে বৈষম্য। ইসলাম কিন্তু সাম্যের ধর্ম, সবার জন্য সবকিছু সমান। ইসলামের ইতিহাসে আছে, খলিফা ওমরের ছেলেকেও খলিফা ওমর বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করিয়েছেন। ইসলামের নিয়মগুলো, অনুশাসনগুলো যখন সমাজে প্রচলিত হতো, তবে কিন্তু সাম্যের কথা আসতো। কিন্তু ইসলামের কথা সমাজে প্রচলিত নাই। দেখা যায়- ইসলাম নিয়ে যখন কটূক্তি হয়, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম যখন বাতিল করতে চায়, তখন কিন্তু কোটা আর ভ্যাট বিরোধীরা মাঠে নামে না। তারা ভাবে- এটা তো হুজুদের কাজ।

আসলে এটা ভুল। ঐ সময় সব মানুষ যদি এক সাথে মাঠে নামতো, তখন কিন্তু দেশে ইসলামী চেতনাটা আরো শক্তিশালী হতো, ইসলাম মানে সাম্যের চেতনা। কোটা বিরোধীরা যতই নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী দাবি করুক, লাভ হবে না। কারণ বর্তমানে প্রচলিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মধ্যে তো সাম্য নাই। আর যে চেতনার মাঝে সাম্য নাই, সে চেতনার মাধ্যম দিয়ে সাম্য খোঁজাও বোকামি। কিন্তু আজকে যদি দেশে ইসলামী চেতনা সমুন্নত হতো, সে ইসলামী চেতনার দাবি তুলেই কোটা প্রথা বিলুপ্ত করা সম্ভব ছিলো।

এজন্য আপনি যাই বলেন, যে কোন ন্যায্য আন্দোলনের একমাত্র সমাধান ইসলাম’। মানুষ হয়ত ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে আন্দোলন করতে পারে, কিন্তু লাভ হবে না। কারণ ইহুদীবাদীরা এক ধরনের সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের সাথে নির্যাতিতরা পেরে উঠবে না। এবং সেই পেরে উঠার জন্য তাদের কাছে পৃথক কোন মতবাদ বা পলিসিও নেই, যার সাহায্যে ইহুদীবাদী মতবাদ মোকাবেলা করা যায়। এক্ষেত্রে তাদের একমাত্র এবং শুধুমাত্র আশ্রয়স্থল হচ্ছে ইসলাম।

আমার জানা মতে গোটা কয়েক ইহুদীবাদীদের দ্বারা সারা বিশ্বে খ্রিস্টান, হিন্দু, বৌদ্ধসহ সাধারণ ইহুদীরা পর্যন্ত নির্যাতিত হচ্ছে। কারণ ইহুদীবাদীরা চায়, ক্ষমতা শুধু তাদের কয়েকজনের হাতে থাকবে, বাকিরা মরে যাক, তাতে তাদের কিচ্ছু যায় আসে না। এ কারণে বর্তমানে সাধারণ ইহুদী, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ বা হিন্দুদের ইসলামকেন্দ্রীক আন্দোলন করা ছাড়া উপায় নাই।

 

 

 

 

 

 

 

# সাকিবের টাকা নিয়ে একটা পোস্ট করাতে অনেকেই বলছে,

আমেরিকার অমুক অমুক এন্টারটেইনার মিলিয়ন-বিলিয়ন ডলারের মালিক। আমেরিকা তো অনেক ধনী রাষ্ট্র, তাহলে আপনার থিউরী ভুল।

যারা এ ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন, তাদের বলছি, আমার স্ট্যাটাসটা পড়ে দেখুন, সেখানে আমি বলেছি, “যদি আপনি দেখেন, কোন দেশের এন্টারটেইনারের হাতে এরকম শত শত কোটি টাকা, তবে বুঝতে পারবেন ঐ দেশকে কর্পোরেটোক্রেসিগ্রাস করে নিচ্ছে বা নিয়েছে।

কর্পোরেটোক্রেসিনিয়ে আমার আগের পোস্টগুলো যদি পড়েন, তবে দেখবেন, আমি বলেছি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে কর্পোরেটোক্রেসির সবচেয়ে বড় শিকার।

আমার এ কথা শুনে যদি আপনি ভাবেন- আমেরিকা যদি কর্পোরেটোক্রেসির শিকার হয়ে এত ধনী হতে পারে, তবে আমাদের দেশে কর্পোরেটোক্রেসি আসতে সমস্যা কোথায় ?

আপনার এ বক্তব্যের কয়েক ধরনের উত্তর আছে। আমি সবগুলো দেয়ার চেষ্টা করতেছি।

১) কর্পোরেটোক্রেসি চালু হলে আপনার পকেটে টাকা আসবে এটা ঠিক, কিন্তু আপনার পারিবারিক বন্ধন, শান্তি ও সামাজিক মূল্যবোধ সব ধ্বংস হয়ে যাবে। আগে আপনার বাবা ইনকাম করে সংসার চালাতো, কর্পোরেটোক্রেসির কারণে আপনার মা-ভাই-বোন সবাইকে ইনকাম করতে মাঠে নামতে হবে। পারিবারিক বাধন বলে কিচ্ছু থাকবে না, সবাই যান্ত্রিক হয়ে যাবেন। ফলে ধ্বংস হবে সামাজিক মূল্যবোধ।

২) বর্তমানে ইহুদীবাদী কর্পোরেটরা চেপে বসেছে আমেরিকার উপর। একটা সময় তারা রাশিয়ার উপর চেপেছিলো, তারও আগে তারা ব্রিটেনের উপর চেপেছিলো, ভবিষ্যতে সম্ভবত চীনের উপর চাপবে। তারা যে রাষ্ট্রের উপর চাপবে, সেই পোষকের অবস্থাটা দেখতে ভালো হবে এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু তারা যখন অন্য রাষ্ট্র, যেমন- দক্ষিণ আমেরিকা বা আফ্রিকার দেশগুলোর উপর চেপেছে তখন তাদের করুণ অবস্থা দেখেছেন ? তারা খ্রিস্টান জাতির উপর চেপেই তাদের অবস্থা ছাড়খার করে দিয়েছে, তাহলে যখন মুসলমান দেশের উপর চাপবে তখন মুসলমানদের অবস্থা কতটুকু করুণ হবে একবার চিন্তা করেছেন ?

৩) কর্পোরেটোক্রেসি হচ্ছে ‘ইহুদীবাদী কর্পোরেটদের বানানো সিস্টেম, যেখানে ওরা থাকে মালিক আর আপনি হোন ওদের দাস”। আপনাকে যদি অনেক টাকা দেয়া হয় এবং বলা হয়, “আপনাকে ইহুদীবাদীদের দাসত্ব মেনে নিতে হবে।টাকা পেলেই কি আপনি ওদের দাসত্বকে মেনে নিবেন ? যদি মেনে নেন, তবে আপনার সাথে তর্কে না জড়ানোই উত্তম। আর যদি ভাবেন গত দেড় হাজার বছরের ইতিহাসে ৮০% সুপার পাওয়ারে ছিলো যে মুসলিম জাতি, সেই মুসলিম জাতিকে আবার সুপার পাওয়ারে ফিরিয়ে আনতে চান, তবে ওদের প্রতিটি সিস্টেম বা থিউরীর বিরোধীতা করতে হবে। মুসলমানরা যদি ওদের প্রতিটি সিস্টেমের বিপরীত সিস্টেম তৈরী করতে পারে, তবেই মুসলমানরা পুনরায় সুপার পাওয়ার হতে সক্ষম।

 

 

 

 

 

 

 

# আমি আগেই বলেছি, অমুসলিমরা বিভিন্ন উপলক্ষ বা দিবসকে টার্গেট করে তাদের সংস্কৃতি বা চেতনার বিস্তার ঘটায়। আর সেই ফাঁদে আটকা পড়ে মুসলমানরা। অথচ এই কাজটি কিন্তু মুসলমানই করতে পারতো। মুসলমানরাও বিভিন্ন দিবসকে টার্গেট করে তাদের চেতনা বা সংস্কৃতির বিস্তার ঘটাতে পারতো, এতে একদিকে যেমন মুসলমানরা নিজেদের সংস্কৃতি নিয়ে ব্যস্ত থাকতো, অপরদিকে অমুসলিমরাও মুসলিম সংষ্কৃতির দিকে আকৃষ্ট হতো।

 

বস্তুত সংস্কৃতি বা কালচার এমন একটি জিনিস, সেটা যত বেশি আলোচনা হবে, তত সেটা ডালপালা মেলে মানুষের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করবে। কিন্তু মুসলমানদের পূর্ববর্তী চেতনা ও সংস্কৃতি অত্যধিক সমৃদ্ধশালী থাকার পরও মুসলমানরা সেটা ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়। মুসলমানদের নিষ্ক্রিয়তায় সুযোগেই মুসলমানদের মধ্যে তৈরী হয় জেনারেশন গ্যাপ, ফলে মুসলমানরা হয়ে যায় চেতনাশূণ্য, পিছিয়ে পড়ে মুসলমানরা।

যেমন ধরুন- আগামীকাল হচ্ছে ৮ই মার্চ। বিশ্বনারী দিবস। এই দিবসটি এসেছে ‘ক্লারা জেটকিননামক জার্মানির এক ইহুদী নাস্তিক মহিলার দ্বারা। কিন্তু এখন ঐ দিবসটি মুসলিম-অমুসলিম সব নারীরাই পালন করছে। স্বাভাবিকভাবে এ দিবসের পালনের মাধ্যমে ইহুদীবাদের বিভিন্ন স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে এবং ইহুদীবাদীরা তাদের মতবাদ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিচ্ছে। মুসলিম নারীরা এ দিবস পালন করে হচ্ছে বিভ্রান্ত।

 

কিন্তু এ বছর খ্রিস্টাব্দ ৮ই মার্চ তারিখের দিনে হিজরী তারিখ হচ্ছে ২০ জমাদিউস সানি (সন্ধা থেকে)। এই তারিখ হচ্ছে মুসলমানদের শেষ নবীর ৪র্থ কন্যা ফাতেমাতুজ জাহরা’র জন্মদিন। এই ২০ জুমাদাল ছানীতারিখটা যদি মুসলমানরা বিশ্ব নারী দিবসহিসেবে ঘোষণা করতো, ঐ দিন নবী কন্যার জীবনী নিয়ে আলোচনা করতো, সভা-সেমিনার করতো, বই বের করতো, তবে ইচ্ছা-অনিচ্ছায় মুসলিম নারী তো অবশ্যই, অমুসলিম নারীরাও সেই দিকে আকৃষ্ট হতে পারতো। মুসলিম মনিষীদের জীবনী, কালচার ও ইতিহাস নিয়ে আলোচনার কারণে মুলসমানদের জেনারেশন গ্যাপ দূর হতো এবং পূর্ববর্তী চেতনা ফিরে আসতো।

 

আমার কাছে মুসলিম পুরুষদের তুলনায় মুসলিম নারীদের বেশি অরক্ষিত মনে হয়, কারণ মুসলিম নারীদের মধ্যে নারী মনিষীদের জীবনী নিয়ে খুব একটা আলোচনা নাই। মুসলিম নারীরা আজকাল পথিকৃৎ বলতে এমন সব নারীর নাম নিয়ে আসে যারা বেশিরভাগ নারীবাদী বা অসৎ চরিত্রসম্পন্ন। মুসলিম নারীদের জন্য যদি এ ধরনের দিনকে কেন্দ্র করে ইতিহাস-সংস্কৃতি আলোচনা করা যেতো, তবে মুসলিম নারীরা তাদের ধর্মীয় চেতনায় আরো উব্ধুদ্ধ হতো।

 

অনেকে হয়ত ভাবতে পারেন, “দিবসকে টাগের্ট করার দরকার কি ? এমনি আলোচনার করলেই তো হয়।

কিন্তু আমার মনে হয়- দিবস বা উপলক্ষ টার্গেট না করলে আপনি এ কাজে সফল হবেন না। কোন কিছু করার জন্য ‘সময়একটা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। কারণ দৈনন্দিন জীবনে মানুষ নানা কাজে ব্যস্ত থাকে। একটা সময় নিদ্দির্ষ্ট না করলে সেটা করা সম্ভব নয়। অন্তত ১টা দিনও যদি আলোচনা করা যায়, তবে তার প্রভাব সারা বছর রাখা সম্ভব।

 

আর আপনি যদি না করে চুপ থাকেন, তবে আপনার প্রতিপক্ষ কিন্তু সেই সুযোগটা ছাড়ছে না। মনে রাখবেন একটা গ্লাস কখন খালি থাকে না, পানি দিয়ে পূর্ণ না করলে তা বাতাস দিয়ে পূর্ণ হবে। মুসলিম নারীরা তখন ঠিকই ৮ই মার্চ বিশ্ব নারী দিবস পালন করবে এবং বিভ্রান্ত তথা দিকচ্যূত হবে।

 

 

 

 

 

# গতকালকে একটা খবর দৃষ্টি কাড়লো- বাজারে আসছে কৃত্তিম মাংশ

এ ধরনের খবর সাধারণ মানুষকে খুব একটা বিচলিত না করলেও আন্তর্জাতিক সচেতন মহলকে যথেষ্ট ভাবিয়ে তুলেছে।

খবর জানান দিচ্ছে, এ বছর মানে ২০১৮ সালের শেষ দিকে মার্কেটে আসছে কৃত্তিম মাংশ। (http://bit.ly/2oUIOP9)

 

অনেকে ভাবতে পারেন, ‘কৃত্তিম মাংশটা আবার কি ?

কৃত্তিম মাংশ হচ্ছে কোন প্রাণীর শরীর থেকে কোষ নিয়ে প্রাণী দেহের বাইরে টিস্যু/সেল কালচারের মাধ্যমে তা বৃদ্ধি করা।

 

কৃত্তিম মাংশ হচ্ছে কর্পোরেটোক্রেসির একটা জলন্ত উদাহরণ। যে সব ইহুদীবাদী কর্পোরেট সারা বিশ্বকে কুক্ষিগত করতে চায়, তাদের আবিষ্কার এই কৃত্তিম মাংশ। কৃত্তিম মাংশের পেছনে আছে, মাইক্রোসফটের বিল গেটস, ভার্জিন গ্রুপের রিচার্ড ব্র্যানসন কিংবা জাস্টের জোশু তেট্রিকের মত ইহুদীবাদী কর্পোরেটরা। গত কয়েকদিন আগে খবরে এসেছে চীন ও ইসরাইল কৃত্তিম মাংশ তৈরীতে একটি চূক্তি সম্পাদিত করেছে। (https://futurism.com/china-signed-a-300-million-lab-grown-meat-deal-with-israel/)

 

কর্পোরেটদের স্বভাব হচ্ছে, তার পন্যটা আপনার সামনে বিক্রির জন্য এমন সব রংচংয়ে খোলস উপস্থাপন করবে যে, আপনি পাগলের মত নিজের ভালোটা রেখে তার খারাপটা গ্রহণ করবেন। যেমন কৃত্তিম মাংশের নামই দেয়া হয়েছে পরিচ্ছন্ন মাংশ’। এছাড়া প্রচার করা হচ্ছে প্রাকৃতিক মাংশে বিভিন্ন রোগ বালাই থাকে (যেমন: সোয়াইন ফ্লু, ম্যাড কাউ ইত্যাদি), কিন্তু এ কৃত্তিম মাংশে তা থাকবে না। এমনকি এও দাবি করা হচ্ছে, এর মাধ্যমে নাকি গ্রিন হাউস গ্যাস কমবে (!)।

 

তবে কৃত্তিম মাংশের যে প্রচারণায় আমি ভীত, সেটা হলো এই মাংশ খেতে কোন প্রাণীকে হত্যা করতে হবে না।

 

আমরা জানি মুসলমানদের কোরবানী ঈদ আসলে, একটা গ্রুপ মাঠে নামে পশু জবাইয়ের বিরুদ্ধে। ইউরোপ আমেরিকায় এ ধরনের প্রাণী দরদী অনেক গ্রুপ আছে, পশু হত্যার বিরুদ্ধে বলে। আমার ধারণা, এইসব প্রাণী দরদী গ্রুপগুলোকে পেছন থেকে এতদিন ফান্ডিং করেছে ঐ বিল গেটস, রিচার্ড ব্র্যানসন বা জোশু তেট্রিরা। যারা বেশ কয়েক বছর আগে থেকে ওদের মাঠে নামিয়ে প্রাণী হত্যার বিরুদ্ধে মাঠ তৈরী করেছে। এরপর ছাড়া হচ্ছে এই কৃত্তিম মাংশ।

 

আমার আরো বিশ্বাস, ভারতে মোদি গো-হত্যা বিরোধী কার্যক্রমের পেছনে সেই সব ইহুদীবাদী কর্পোরেটদের ফান্ডিং থাকতে পারে, যারা উগ্রবাদী হিন্দুদের মাধ্যমে গরু জবাই বন্ধ করে ইহুদীবাদী কর্পোরেটদের কৃত্তিম গোশত বাজারে ছাড়বে।

 

তবে আমি যেটা ভয় পাচ্ছি, সেটা হলো, এই কৃত্তিম মাংশের মাধ্যমে পৃথিবীর ভারসাম্য নষ্ট হবে। ইকোসিস্টেম নষ্ট হবে, মানুষ প্রাণি না খাওয়ার কারণে পৃথিবীতে অন্যান্য প্রাণীর সংখ্যা অত্যাধিক হবে, ফলে মানুষের থাকা কষ্ট হয়ে যাবে। আসলে ইহুদীবাদী কর্পোরেটদের চিন্তা চেতনা হচ্ছে, বিশ্ব ধ্বংস হয়ে যাক, তাতে তাদের কিছু আসে যায় না, তাদের পকেটে টাকা আসলেই হলো।

 

অনেকে হয়ত ভাবতে পারেন, এতসবকিছু কবে হবে ?

আসলে যারা বিশ্বব্যাপী কর্পোরেট জগত নিয়ণ্ত্রণ করে তারা ২-৪ বছরের প্ল্যান করে নামে না, তারা ৫০-১০০-২০০-৩০০ বছর টার্গেট নিয়ে নামে। পুরো বিশ্বের মার্কেট মাথায় রেখে বিজনেস করে। বিশেষ করে কৃত্তিম মাংশ খুব দ্রুত বিস্তার লাভ করবে বলে মনে করছে অনেকে। এবং ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ৫.২ বিলিয়ন ডলারে কৃত্তিম মাংশের বাজার সৃষ্টি হবে (http://read.bi/2xReOqj)। তাই আগামী ১০ বছরের মধ্যে যে কৃত্তিম গোশত বিশ্বব্যাপী বিরাট প্রভাব তৈরী করবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

 

সত্যি বলতে, ইহুদীবাদী কর্পোরেটদের উদ্দেশ্য সারা বিশ্বকে নিজ মুঠোয় কুক্ষিগত করা এবং অপরকে নিজেদের দাস বানানো। মূলত: গুটি কয়েক ইহুদীবাদী কর্পোরেটদের এই কর্পোরেটোক্রেসি নিয়ন্ত্রণ করে, যার শিকার মুসলমান, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ এমনকি সাধারণ ইহুদীরাও।

 

বলাবাহুল্য, এই ইহুদীবাদী কর্পোরেটদের তখন উত্থান হয়েছে যখন মুসলমানদের পতন হয়েছে তখন। একসময় সারা বিশ্বব্যাপী সুপার পাউয়ার ছিলো মুসলমানরা। মুসলমানদের জ্ঞান বিজ্ঞান গবেষনা উচ্চ ছিলো। কিন্তু মুসলমানদের পতন হওয়ার পর সতেরশশতাব্দীতে তাদের উত্থান হয়। এইসব ইহুদীবাদী কর্পোরেটদের স্বার্থন্বেষী গবেষণা ও কথিত প্রযুক্তি মানব জাতিকেই হুমকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। মুসলমানরা এখন গবেষনা-রিসার্চ ছেড়ে দেয়ায় তারা যেটা বলে সেটাই সবাইকে সত্য বলে মুখ বুজে মেনে নিতে হয়।

 

ফেসবুকে এসে দেখি, অনেক মুসলমান জিহাদ’ ‘জিহাদকরে, বলে অস্ত্র দিয়ে শত্রুদের ধ্বংস করবে। কিন্তু আমার মনে হয়, ইহুদীবাদীরা তাদের ওয়ার্ল্ড কন্ট্রোলিং পলিসি আরো উন্নত করবে, যার প্রতিরোধ করতে হলে মুসলমানদের আগে প্রযুক্তিগত ও পলিসিগত উন্নয়নের কাজে নামতে হবে। এক্ষেত্রে মুসলমানদের মধ্যে ব্রিলিয়ান্ট সমাজকে টাকার ধান্দা বাদ দিয়ে শুধুমাত্র মুসলমানদের স্বার্থে এগিয়ে আসতে হবে নতুন পলিসি ও প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণার জন্য। এছাড়া সামনে জটিল পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।

 

 

 

 

 

 

 

# গতকালকে কৃত্তিম মাংশ নিয়ে একটা লেখা লেখার পর চিন্তা করলাম, প্রযুক্তির উন্নয়ন হচ্ছে, কিন্তু সেটা হচ্ছে কোন দিকে ?

 

কৃত্তিম মাংশের পেছনে মূল ইনভেস্ট করেছে মাইক্রোসফটের বিল গেটস এবং ভার্জিন গ্রুপের রিচার্ড ব্র্যানসনের। একজন ব্যবসায়ী যখন প্রযুক্তিতে ইনভেস্ট করে, তখণ তার মূলে থাকে ব্যবসায়ীক চিন্তা। কৃত্তিম মাংশের পেছনে তারমানে রয়ে গেছে বড় বড় কর্পোরেটদের বিলিয়ন-ট্রিলিয়ন ডলারের ব্যবসার চিন্তাভাবনা।

 

বাংলাদেশে একটা কথা প্রায় উঠে, মিডিয়া যখন ব্যবসায়ীদের দখলে তখন প্রকৃত খবর কি পাওয়া যায় ?

যেমন : প্রথম আলো-ডেইলি স্টার চালায় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ট্র্যান্সকম গ্রুপ। কালেরকণ্ঠ-বাংলাদেশ প্রতিদিন চালায় ব্যবসায়ী বসুন্ধরা গ্রুপ, একাত্তর টিভি চালায় মেঘনা গ্রুপ, যুগান্তর-যমুনা টিভি চালায় যমুনা গ্রুপ, মাছরাঙ্গা চালায় স্কয়ার, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি চালায় ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমান, চ্যানেল ২৪ চালায় হামীম গ্রুপ, আরটিভি চালায় বেঙ্গল গ্রুপ, এসএ পরিবহনের মালিক সালাউদ্দিন আহমদ চালায় এসএটিভি। একজন ব্যবসায়ী যখন মিডিয়া চালায়, তখন মিডিয়ায় তার ব্যবসায়ীক ফায়দা ও পলিসির প্রভাব পড়তে বাধ্য। আর তাই স্বাভাবিকভাবে ঐ মিডিয়ার থেকে নিরপেক্ষ খবর পাওয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

 

একইভাবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যখন ব্যবসায়ীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তখনও প্রযুক্তি শরীরে বাধন পড়িয়ে দেয়া হয় এবং ধরে নেয়া যায় প্রযুক্তি সব সময় ব্যবসায়ীদের স্বার্থই রক্ষা করবে। তখন জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রকৃত বিকাশ নিয়ে তৈরী হয় সন্দেহ।

 

একটা সময় জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চা একচ্ছত্র চালাত মুসলমানরা। মুসলমানরা খুব কম সময়ের ব্যবধানে অসংখ্য গবেষণা আবিষ্কার করেছিলো। কিন্তু মুসলমানদের গবেষণা বা বিজ্ঞান চর্চার মধ্যে কর্পোরেট দৃষ্টিভঙ্গি ছিলো না। মুসলমানরা কখনো চিন্তা করেনি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চর্চার মাধ্যমে তারা ব্যবসা করে খাবে। কিন্তু মুসলমানরা জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চা ছেড়ে দেয়ার পর সেই জ্ঞানটা আয়ত্ব করে ইহুদীরা । এবং তারা সেই জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চা ব্যবসার কাজে ব্যয় করে। তারা চিন্তা করে তত প্রযুক্তি জ্ঞানই বাইরে ছাড়া হবেযা তাদের ব্যবসার পক্ষে যায়, কিন্তু ততটুকু ছাড়া যাবে না যা তাদের ব্যবসাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ইহুদীদের এ পলিসির কারণে বিজ্ঞান ও গবেষণার গায়ে শিকল আটকে যায়।

 

উদারহণ দিলে বুঝতে সহজ হবে। ধরুন, এখন মাঝে মাঝে অনেক সাধারণ বিজ্ঞানীও পানিতে চালিত গাড়ি বা ইঞ্জিন আবিষ্কার করে। কিন্তু এই প্রযুক্তিগুলো মুখে মুখে থেকে যায়, কিন্তু বাস্তবে এগুলো পন্য হিসেবে আসে না। কারণ পানি চালিত গাড়ি যদি মার্কেটে আসে, তবে তেল মার খাবে। আর বিশ্বব্যাপী ইহুদীরা তাদের অর্থনীতি তৈরী করেছে তেলের দ্বারা। মার্কিন ডলার টিকে আছে আরবের তেলের উপর ভিত্তি করে। এখন তেলের বদলে যদি পানি চালিত গাড়ি চলা শুরু করে, তবে তেল বিক্রি বন্ধ হবে, ফলে ইহুদীদের ব্যবসা ও তথা ইহুদী সম্রাজ্যের পতন হবে। তাই তারা ইচ্ছে করেই তেল ভিন্ন অন্য কিছু জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের প্রযুক্তির গবেষণা ফাইল বন্ধ করে রাখে। এরকম আরো বহু উদাহরণ আছে, দেখা যাবে ঐ জিনিসটা আবিষ্কার বা প্রচারিত হলে ইহুদীদের অনেক পন্য বিক্রিতে ধস নামবে, তাই তারা ইচ্ছা করেই সেই সব আবিষ্কারের রাস্তা বন্ধ করে রাখে তারা।

 

শুধু তাই নয়, অন্যদের অজ্ঞতা ও গবেষণাহীনতার সুযোগ নিয়ে তারা মিথ্যা গবেষণাও প্রচার করে শুধু কর্পোরেট স্বার্থে। যেমন: আগে একটা সময় বাংলাদেশের মানুষ সরিষার তেল খেতো। সরিষার তেল দেশেই উৎপাদিত হয় এবং স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি। তখন বাংলাদেশের মানুষের শরীরে গ্যাস্ট্রিক ও হার্টের সমস্যা এত এভেইলএবল ছিলো না। কিন্তু আমেরিকান বিজ্ঞানীরা ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত তিনটি গবেষণা প্রচার করে, যেখানে দেখানো হয়, ইদুরের উপর সরিষার তেলের অন্যতম উপাদান ইউরেসিক অ্যাসিড (একটি ফ্যাটি অ্যাসিড) এর ক্ষতিকর প্রভাব আছে। ফলে সরিষার তেল নিষিদ্ধ হয়। অথচ ইউরেসিক অ্যাসিড ইদুরের জন্য ক্ষতিকারক হলেও মানুষের জন্য ক্ষতিকারক নয়। কিন্তু সেই ভুয়া গবেষণা দিয়েই বাংলাদেশে সরিষার বাজারে পতন হলো, চলে আসে আমেরিকার সয়াবিন। সয়াবিন তেল বাজারে আসার পর গ্যাস্ট্রিক আর হার্টের অসুখ শুরু হলো। ব্যস গ্যাস্ট্রিক আর হার্টের অসুখের চিকিৎসার নামেও তারা ওষুধ বিক্রি করতে থাকে। মানে এক ঢিলে দুই পাখি মারা যাকে বলে’। বর্তমানে অনেক রোগই তারা ল্যাবরেটরিতে তৈরী করে, আর পরে তার ওষুধ ছাড়ে। সোজা ভাষায় যাকে বলে, প্রযুক্তির অপব্যবহার।

 

একটা জিনিস চিন্তা করে দেখুন, ইহুদীরা অনেক বিজ্ঞান-প্রযুক্তি চর্চা করছে ভালো কথা। কিন্তু সেটা শুধু অন্যের পকেটের টাকা খসানোর জন্য। কিন্তু টাকা ছাড়া অন্য বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে তারা চিন্তায় ছাড় দেয়নি। কিন্তু মুসলমানরা যখন বিজ্ঞান চর্চা করেছে, তখন তারা বিজ্ঞান চর্চা ব্যবসায়ীক স্বার্থে তা ব্যবহার করতো না, বরং মানুষের কল্যাণে সেসব গবেষণা করা হয়েছে। তাই মানব জাতির কল্যাণের জন্যই আবার মুসলমানদের বিজ্ঞান ও গবেষণা চর্চায় ফিরে আসতে হবে। নয়ত ইহুদীদের হাতে বিজ্ঞান প্রযুক্তি থাকলে তো অপব্যবহারে বিশ্বকে ধ্বংস করে ছাড়বে।

 

বি:দ্র: অনেকে বলতে পারেন “ইহুদীদের প্রযুক্তি ব্যবহার করে লিখতেছেন, আবার তাদের প্রযুক্তির বিরুদ্ধে কথা ?” তাদের জানার জন্য বলছি বছর খানেক আগে সমুদ্রের নিচে মোবাইল সদৃশ্য বস্তু পাওয়া যায়, যার আনুমানিক বয়স ৮০০ বছর (http://bit.ly/2FpLVIW)। তারমানে ৮০০ বছর পূর্বেও হয়ত অনেক প্রযুক্তি ছিলো । এটা সবার জানা ৮০০ বছর আগে জ্ঞান বিজ্ঞানের শীর্ষে আরোহণ করছিলেন মুসলমানরা, তাই ঐ সময় মোবাইল থাকলে সেটা মুসলমানদের আবিষ্কারই হওয়ার কথা। কিন্তু ঐ সময় মুসলমানরা প্যাটেন্টবা স্বত্ব্সিস্টেমবের করার কথা চিন্তাও করে নাই। তাই মুসলমানরা নিজেদের নামে সেসব আবিষ্কার কুক্ষিগত করে রাখে নাই । কিন্তু ইহুদীদের মাথায় আবিষ্কার দখলর চিন্তা আগে থেকেই ছিলো। দখলতার মাথায় আসে, যে তার মালিক না। তাই মাত্র ২০০-৩০০ বছর আগে প্রযুক্তি চর্চার নামে এসে ইহুদীরা সেসব আবিষ্কার দখল করতে প্যাটেন্টসিস্টেম তৈরী করে নেয়।

 

 

 

 

 

 

 

ইসলাম সুদ পছন্দ করে না, আর ইহুদীবাদীরা সুদ পছন্দ করে।

বর্তমানে বিশ্বে চলতেছে ইহুদীবাদী অর্থনীতি। এই অর্থনীতিতে সুদ আছে।

এই অর্থনীতির বিশেষ বৈশিষ্ট্য ধনী কেবল ধনী হবে, আর গরীব আরো গরীব হবে।

আমরা যে কর্পোরেটোক্রেসি নিয়ে আলোচনা করি, সেটা হচ্ছে অর্থনীতিকে কুক্ষীগত করা।

মানে, আপনাকে তারা উৎপাদক হতে দেবে না। সুদব্যবস্থা দিয়ে সেটাকেই সহজে করা যায়।

যেমন ধরুন, ব্যাংকে টাকা জমা রাখলে সুদ পাওয়া যায়। তাই কেউ ব্যবসা না করে ব্যাংকে টাকা জমা রাখাটাকেই বেশি ভালো মনে করে। এতে সাধারণ জনগন উৎপাদক হতে পারে না,

অপরদিকে ব্যাংকে টাকা রাখলেও আলটিমেটলি জনগণ উপকৃত হয় না,

কারণ সুদ হচ্ছে ‘টাকায় টাকামানে একটা অনুৎপাদনশীল সিস্টেম, এতে মূল্যস্ফিতি হয়।

যেমন, ধরুন, কেউ ব্যাংকে ১০০ টাকা রাখলো, সেটা ১ বছর পর সুদ আসলে ১১৫ টাকা হইলো।

কিন্তু যে পন্যটার দাম ১০০ টাকা ছিলো, সেটা ১ বছর পর বেড়ে ১১৫ টাকা হয়ে গেছে।

তারমানে ব্যাংকে টাকা রেখে সুদে টাকা বৃদ্ধি করে আলটিমেটলি কোন উপকার হচ্ছে না,

বরং জনগণের ক্ষতি হচ্ছে। মাঝখান দিয়ে বড় বড় কর্পোরেটরা জনগণের টাকা নিয়ে ইচ্ছেমত ব্যবহার করছে, আর ব্যবসায় প্রতিন্দ্বন্দ্বী না থাকায় মনোপলি ব্যবসা করে জনগণকে লুটেপুটে খাচ্ছে। আর এটাই হচ্ছে কর্পোরেটোক্রেসি।

ইসলামী ব্যবস্থায় মানুষকে ঋণ দেয়া হবে, এবং ঋণের সাথে পলিসি ও পুরো কাজ তদারকী করতে ব্যাংকের লোক থাকবে। লাভ হলে লাভ নেবে এবং লস হলে লস নেবে। যদি দুর্নীতি না হয়, তবে ৯৫% কাজে সফল হওয়া যায়, তাই কোন কোন সেক্টরে লস হলেও গড়পড়তা ঋণ দিয়ে লাভই হয়। তাই সুদহীন ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থায় আসলে কোন ক্ষতি নাই।

সুদ বাদ দিলে প্রথম যে সুবিধাটা হবে মানুষের দ্রব্যমূল্য স্থির হবে, মূল্যস্ফিতি হবে না।

এরপর জনগণের মধ্যে উৎপাদন খাত বাড়িয়ে দিলে জীবনব্যয় অনেক হ্রাস পাবে। দেখা যাবে, আগে যে লোকটা মাসে খাবার খরচ লাগতো ৪ হাজার টাকা, এখন একই খাবার খেতে লাগছে ২ হাজার টাকা।

হযরত উমরের সিস্টেমে যদি আদমশুমারী করে দেশে উৎপাদনশীল খাত বৃদ্ধি করা যায়, তবে দেশে বেকারত্ব সমস্যা তো দূর হবেই, সাথে বিদেশে যে প্রবাসী লোক গেছে তাদের ফেরত নিয়ে আসতে হবে। কারণ দেশেই তখন অনেক শ্রমিক লাগবে। জনসংখ্যাকে তখন বোঝা নয়, বরং সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। প্রত্যেকের অধিক সন্তান হোক, এটাই চাওয়া হবে। কারণ যত জনসংখ্যা তত শক্তিশালী হওয়া যাবে। হযরত উমরের সিস্টেমে যদি শহর ডিন্ট্রোলাইজ করে দেয়া যায়, তবে ঢাকায় জীবনযাত্রার ব্যয় বিশেষ করে বাড়িভাড়া ও গাড়িভাড়া কমে যাবে এবং প্রত্যেক জেলা শহরে ঢাকার মত উন্নত জীবনযাত্রা পাওয়া যাবে।

সুদ সিস্টেমে গরীবের থেকে ধনীর কাছে টাকা আসে, কিন্তু ইসলামী জাকাত সিস্টেমে ধনীর থেকে গরীবের কাছে টাকা যায়। ফলে দারিদ্রতা হ্রাস পায়। প্রাথমিক যুগে ইসলামী অর্থনীতি দ্বারা মানুষ এতটাই সমৃদ্ধশালী হয়ে পড়েছিলো যে, তৃতীয় খলিফা হযরত ওসমানের যুগে জাকাত নেয়ার মত আর লোক খুজে পাওয়া যেতো না। আজকাল ইহুদীবাদী এনজিওগুলো দারিদ্রবিমচন কর্মসূচির নামে উচ্চসুদে ঋণ দেয়। তাদের মূল উদ্দেশ্য দারিদ্র বিমোচন নয়, বরং দরিদ্রজনগোষ্ঠীকে সুদের মাধ্যমে চুষে খেয়ে নিঃশেষ করা।

এরপর রয়ে গেছে, দেশের খনিজ তথা প্রাকৃতিক নিচে সম্পদ। আমাদের দেশে এখন কত প্রাকৃতিক আরহণ হচ্ছে তার কোন হিসেব নেই। এগুলো কিন্তু জনগণের সম্পদ। মাটির নিচ থেকে যত সম্পদ উঠবে তার ভাগ কিন্তু জনগণ পাবে। যেমন, মাটির নিচ থেকে কোন সম্পদ পাওয়া গেলো, সেটা জনগণের বিভিন্ন চাহিদার জন্য ব্যয় হবে। মাটির নিচ থেকে যত সম্পদ পাওয়া যাবে, সেটা দিয়ে মানুষের বিভিন্ন মৌলিক জীবন চাহিদা যেমন: শিক্ষা, চিকিৎসা, জ্বালানি ইত্যাদির খরচ হ্রাস করতে করতে ফ্রি করে দেয়া হবে।

ইসলামী শাসন ব্যবস্থা ও ইহুদীবাদী শাসন ব্যবস্থার মৌলিক পার্থক্যগুলো আবার লক্ষ্য করুন-

১) উৎপাদনশীল ব্যবস্থা কুক্ষিগত করা হবে না, বরং জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া হবে।

২) সুদ না থাকায় এবং উৎপাদনশীল ব্যবস্থা ছড়িয়ে দেয়ায় জীবন নির্বাহ ব্যয় অনেক কমে যাবে।

৩) জাকাতের কারণে দারিদ্রতা হ্রাস পাবে।

৪) প্রাকৃতিক বা খনিজ সম্পদ সরাসরি জনকল্যাণে ব্যয় হওয়ায় জনগণ সরাসরি তা থেকে উপকৃত হবে।

আমি আপনাদের প্রায় বলি, মানুষের অধিকার যদি সত্যিই প্রতিষ্ঠা করতে চান, তবে সব অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সাথে ইসলামী নিয়ম কানুনগ্রুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করুন। একেবারে নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে যদি দেখেন, তবে দেখবেন- ইসলামী নিয়মগুলো হচ্ছে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার নীতি। তাই জনগণের অর্থনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে মুসলমান ছাড়াও ইহুদী, খ্রিস্টান, হিন্দু, বৌদ্ধদেরও এ সিস্টেম গ্রহণ করা উচিত।

 

 

 

 

ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার

কথাটা শুনতে সুন্দর শোনা গেলেও এর ভেতরে একটা গোমর আছে।

ধর্ম যার যার, অর্থাৎ ধর্ম পারসোনাল ম্যাটার। মানে তুমি ধর্ম পালন করো সেটা ঘরের ভেতরে, যত খুশি সেখানে ধর্ম পালন করো, যতভাবে ইচ্ছা ততভাবে পালন করো। কিন্তু ধর্মের কোন কথা তুমি ঘরের বাইরে কিছুতেই আনতে পারবা না।

অপর শ্লোগানটি হচ্ছে- রাষ্ট্র সবার।

মানে রাষ্ট্র হবে সেক্যুলার। সেখানে ধর্মের কোন স্থান নাই, সেটা হবে নাস্তিকতা, অথবা সম্রাজ্যবাদীরা সেক্যুলারিজমের নামে তাদের কোন কৃষ্টি কালচারও যদি আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়, তবে সেটাই মেনে নিতে হবে।

ধর্ম যার যারবলে ইসলাম ধর্মকে সমাজ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে।

অপরদিকে ‘রাষ্ট্র সবারবলে তাদের বানানো একটা সিস্টেমকে সামাজিককরণ করা হচ্ছে।

মেনে নিলাম। তাদের শ্লোগান।

আচ্ছা, বাংলাদেশের এখন মূল মূল সমস্যা কি ?

দুর্নীতি, সুদ, ঘুষ, ধর্ষন, দারিদ্রতা, বেকারত্ব, মাদক, সন্ত্রাস।

আচ্ছা, তারা যে সিস্টেম দাড় করিয়েছে, সেটা কি এসব সমস্যার সমাধান করতে পারছে ?

গত ৪৭ বছর তো তারা এই শ্লোগান দিয়েছে, এরপরও কি এ সমস্যাগুলো দূর করতে পেরেছে?

হয়ত কিছু আইন করেছেন, কিন্তু এ সব কথিত আইন কি এসব সামাজিক সমস্যার দমন বা হ্রাস করতে পেরেছে ?

পারেনি। এবং কখনও পারবেও না। কারণ তাদের বানানো কথিত সেক্যুলার সিস্টেম আর যাই পারুক, সবকিছুর সমাধান দিতে পারে না।

যারা ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার বলে শ্লোগান দেয়-

আমি তাদের বলবো-

৪৭ বছর তো এই শ্লোগান দিলেন- ধর্মকে ঘরের ভেতর ভরে, আপনাদের কথিত সিস্টেম নিয়ে নাড়াচাড়া করলেন। কিন্তু সমাধান তো দিতে পারলেন না। এবার না হয় সামান্য সময়ের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ধর্মকে ঘর থেকে বের করে সামাজিক করুন। ধর্ম দিয়ে এসব সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করুন। দেখুন সমস্যার সমাধান হয় কি না ?

দেখুন-

ধর্ম দিয়ে ঘুষ-দুর্নীতি দমন হয় কি না ? (দুদকের গেটে একবার দেখেছিলাম ধর্মীয় আয়াত লেখা)

ধর্ম দিয়ে ধর্ষন দূর হয় কি না ? (ধর্ষকের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ধর্মে আগে থেকেই ছিলো)

ধর্ম দিয়ে বেকারত্ব দূর হয় কি না ?

ধর্ম দিয়ে দারিদ্রতা দূর হয় কি না ?

ধর্ম দিয়ে সন্ত্রাস দূর হয় কি না ?

ধর্ম দিয়ে মাদক সমস্যা দূর হয় কি না ?

আমি নিশ্চিত, ওরা ৪৭ বছর চেষ্টা করে যে সমাধান পায়নি তা সামান্য সময় চেষ্টা করলেই ধর্ম দিয়ে দেখিয়ে দেয়া সম্ভব। সুতরাং ইসলাম ধর্মকে ঘরের গোপন প্রকষ্ঠ থেকে সমাজে টেনে আনুন, দেখবেন, এক নিমিষেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

(বি:দ্র: আমেরিকা মানুষের মধ্যে ইসলামফোবিয়া তৈরী করতে নিজেরাই বিভিন্ন ফেইক ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র তৈরী করেছে এবং তার মাধ্যম দিয়ে সমাজে ইসলাম ধর্মের প্রয়োগের ভীতি তৈরী করেছে, যা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণদিত ও মিথ্যা। সুতরাং মার্কিন যোগসূত্রে তৈরী হওয়া সে সব ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রের দলিল এক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হবে না।)

 

 

 

 

 

 

 

মাদ্রাসা শব্দটা আরবী শব্দ। পারিভাষিকভাবে মাদ্রাসা বলতে, ‘যে প্রতিষ্ঠানে ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করা হয়তাকেই বুঝানো হয়। স্বাভাবিকভাবে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক ইসলাম ধর্মের হওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে বাংলাদেশে অনেক মাদ্রাসায় শিক্ষক এখন হিন্দু !

বিষয়টা যে খুব স্পর্শকাতর তা বুঝতে পারলাম কয়েকদিন আগের এক খবরে। ঝালকাঠিতে এক মাদ্রাসার ছোট বাচ্চারা দেয়া ‘আল্লাহশব্দটি লিখেছিলো, এতে এক হিন্দু শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে ঐ ছাত্রদের বেদম প্রহার করে। পরে বিষয়টা সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ঐ এলাকায় ব্যাপক আন্দোলন হয়। যার কারণে অনেক বাধ্য হয়েই ঐ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ । (https://bit.ly/2OzYhiN)

পাঠক ! বর্তমানে হিন্দু মানেই ইসলামবিদ্বেষী ও সাম্প্রদায়িক। ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করার তাদের জন্য খুব স্বাভাবিক বিষয়। ফেসবুক ঘুড়লে যা ভালোভাবে চোখে পড়ে। নারায়নগঞ্জের শ্যামল কান্তির কথা আমরা ভুলে যায়নি। স্কুলের শিক্ষক হয়ে ছাত্রদের ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করার কারণে কত বড় তুলকালাম ঘটে যায়। এরকম বহু উদাহরণ আছে স্কুলগুলোতে হিন্দু শিক্ষক কর্তৃক ইসলাম ধর্ম অবমাননার। সব মিডিয়াতেও আসে না।

এতদিন যে বিষয়গুলো স্কুলে দেখা গেলো, তাই এখন দেখা যাচ্ছে মাদ্রাসায়। এবং সেটা মাদ্রাসায় হিন্দু শিক্ষক থাকার কারণেই সম্ভব হয়েছে। কিছুদিন আগে সচিবালয়ের এক নেমপ্লেটের ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়, যেখানে দেখা যায়, শিক্ষামন্ত্রনালয়ের মাদ্রাসা বিভাগের উপসচিবের নাম, সুবোধ চন্দ্র ঢালি।

আওয়ামী সরকার হিন্দুদের অনেক ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিয়েছে, এটা স্পষ্ট। কিন্তু ইসলামের সাথে হিন্দুত্ববাদ এক করার চেষ্টা তো ষ্পষ্ট সাম্প্রদায়কতা। তাদের সর্বশেষ আক্রমণ হচ্ছে মাদ্রাসাগুলোতে, যেখানে তারা হিন্দু ও হিন্দুত্ববাদ চালু করতে চায়, এটা খুব স্পষ্ট একটা বিষয়। মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের দিয়ে বৈশাখী পূজা বা অমঙ্গল পূজা করানো কিংবা জাতীয় সঙ্গীতের নামে রবীন্দ্রনাথের দেবী বন্দনা পাঠ করানোর প্রতিযোগীতা অন্তত সেটাই বলে।

আমার মনে হয়, মাদ্রাসা ছাত্রদের এ ব্যাপারে এক হওয়া উচিত, একটা আন্দোলন গড়ে তোলা উচিত।সোজা আঙ্গুলে ঘি উঠবে না। আন্দোলনের মাধ্যমে একটা নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে, যারা মাদ্রাসার হিন্দুশিক্ষকদের বের করতে কাজ করবে। এক দফা এক দাবি হবে, মাদ্রাসা শিক্ষা থেকে হিন্দু ও হিন্দুত্ববাদ উভয়কেই দূর করতে হবে।

 

 

 

 

 

# ১-নম্বর ছবিটা নেদারল্যান্ডের এমপি গ্রিট ওয়াইল্ডার্সের। গ্রিট ওয়াইল্ডার্স কিছুদিন আগে মুসলমানদের শেষ নবীর ব্যঙ্গচিত্র প্রতিযোগীতার করার ঘোষণা দেয় (https://ind.pn/2JME22D)। যদিও তার এই কর্মকাণ্ড এই প্রথম না। এর আগেও এমন ঘটনা সে ঘটিয়েছে। তবে লক্ষণীয় হলো, এর আগে বাংলাদেশে এ বিষয়টি নিয়ে বেশ প্রতিবাদ দেখা গিয়েছিলো। কিন্তু এবার তেমন কোন প্রতিবাদ চোখে পড়লো না।

 

২- নম্বর ছবিটা বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে চলা কোটা আন্দোলনের নেতা নুরুর উপর ছাত্রলীগের হামলার ছবি। ছবি বলে দিচ্ছে, কতটা নৃশংস ও জনবিরোধী হয়ে উঠেছে সরকার । আসলে কোটা নিয়ে আন্দোলনে ছিলো গণমানুষের আন্দোলন, আর নুরু ছিলো সেই গণমানুষের আন্দোলনের নেতা। কিন্তু গণমানুষের আন্দোলনের নেতা হওয়ার পরও গণমানুষ তার নেতার সাহায্যে এগিয়ে আসবে না। তার নেতাকে মারা হলো কিন্তু গণমানুষ তার প্রতিবাদে কিছু করবে না, কারণ গণমানুষের সে শক্তি নেই। পাশাপাশি ক্ষমতাসীনরা এ ধরনের সাহসও পেয়েছে, কারণ তারা জানে, বর্তমানে গণমানুষ বা তার ইচ্ছার কোন দাম নাই। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য গণমানুষের কোন দরকার নাই। আছে বিদেশী ইহুদীবাদীদের দরকার। তাদেরকে খুশি রাখলেই হলো। আর গণমানুষকে ধিরে ধিরে মেরে ফেললেই হলো। গণমানুষ কিছুই করতে পারবে না।

 

৩- নম্বর ছবিটা আজকে ব্রাজিলের জয়ের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে তোলা (https://bit.ly/2lNaJz2)। যে টিএসসিতে সকাল বেলা কোটা আন্দোলনের নামা ছাত্ররা সংখ্যালঘু হয়ে পিটুনি খেলো, সেই টিএসসিতেই ব্রাজিলের খেলা দেখতে জমা হয়েছে অনেক ছাত্র। তাদের উল্লাসও দেখে কে !!

 

কিছু বিষয় জেনে রাখুন:

 

----মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্রে দেখা যায়, ১৯৭১ সালে অনেক সময় মুক্তিযুদ্ধকে জিহাদ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের উব্ধুদ্ধ করতে ধর্মীয় চেতনা ব্যবহার করেছে নেতৃস্থানীয়রা। মুক্তিযোদ্ধারা নিয়মিত ধর্মচর্চা করতো এবং সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করতো। এ থেকে বোঝা যায়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্য ধর্মীয় চেতনা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ধর্মীয় চেতনা মানুষকে নিজ স্বার্থকে ক্ষুদ্র করে জাতিকেন্দ্রীক চিন্তাভাবনা দান করে । অপরদিকে ধর্মীয় চেতনাহীনতা মানুষকে ব্যক্তিকেন্দ্রীক করে তোলে এবং জাতিগত চেতনা ভুলিয়ে নিজ আনন্দ-খুশি-স্বার্থকে বড় করে দেয়।

 

----আজ থেকে ১০-১২ বছর আগে যখন মুসলমানদের ধর্ম নিয়ে ব্যঙ্গচিত্রের বিষয়টি ব্যাপকভাবে শুরু হয়, তখন বিষয়টির মূল কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করেছিলাম। মুসলমানদের ধর্ম নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র করে ইহুদীবাদীদের কি লাভ ? ” এটা নিয়ে স্ট্যাডি করেছি। অনুসন্ধানে বের হয়ে আসে কয়েকটি মূল কারণ। এর মধ্যে অন্যতম একটি কারণ ছিলো: এই সব ব্যঙ্গচিত্রের মাধ্যমে তারা মুসলমানদের ধর্মীয় চেতনা পরিমাপ করে। মুসলমানদের শেষ নবী হচ্ছে মুসলমানদের ধর্মের মূল, তাকে নিয়ে ব্যঙ্গ করলেও যখন মুসলমান চুপ থাকে, বা অনুভূতিহীন হয়, তখন বুঝতে হবে মুসলমানদের ধর্মীয় চেতনা শূণ্যের কোঠায়। ইহুদী্বাদীরা চায় সারা বিশ্ব করায়ত্ব করতে। কিন্তু এর প্রধান বাধা ইসলাম’। কারণ ইসলাম ধর্ম ও তার চেতনাই পারে ইহুদীবাদ ঠেকিয়ে দিতে। সেই চেতনা যখন শূণ্যের কোঠায় পৌছাতে থাকে, তখন বুঝতে হবে মুসলমানদের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে, এবং এখন খুব সহজেই তাদের উপর দখল, নির্যাতন, সম্পদ লুটপাট করা যায়। মুসলমানরা হয়ে ওঠে ঢাল তলোয়ার বিহীন সৈণ্যের মত, তাকে যা খুশি তাই করা যায়।

 

--কোটা আন্দোলনে লোক কমে যাওয়া এবং ফুটবল খেলায় লোক বৃদ্ধি পাওয়া হচ্ছে, মোরালি ডেস্ট্রয় হওয়ার রেসাল্ট। শাসক শ্রেণী ইহুদীবাদীদের শেল্টারে জনগণ শোষণ করে স্বার্থ নিবে এবং একটা অংশ ইহুদীবাদীদের নিকট পৌছাবে। এজন্য প্রয়োজনে জনগণের উপর নির্যাতন চালানো লাগতে পারে। কিন্তু একবারে সবার উপর নির্যাতন করা কঠিন, তাই তাদের ডিভাইড করতে হবে। তারা এক দলকে নিপীড়ন করবে, আর বাকিদের প্যাথিডিন (খেলা) দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখবে, যেন তারা প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ না করতে পারে। আজকে যাদের প্যাথিডিন (খেলা) দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে তারাও যে বাঁচবে বিষয়টি সেরকম না। একে একে সবাইকে ধরা হবে। কিন্তু কেই কারো সাহায্যে এগিয়ে আসবে না। কারণ একদলকে ধরা হবে, অন্যদলকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হবে। তাই তারা একত্র হতে পারবে না।

মনে রাখবেন, ইহুদীবাদী ও তাদের দোসররা একটা সিন্ডিকেট। তারা আপনার উপর ফিজিক্যাল ও সাইকোলোজিক্যাল আক্রমণ চালাবে। আপনার পক্ষ-বিপক্ষ হয়ে আক্রমণ করবে। আপনি নিজে যদি তাদের সম্পর্কে ভালো ধারণা না রাখেন এবং পাল্টা সিন্ডিকেট তৈরী করে তাদের প্রতিহত না করতে পারেন, তবে খুব সহজেই তাদের কাছে ধরা খাবেন এবং সেটাই হয়।

 

 

 

 

 

 

কয়েকদিন আগে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী শেরপুরের গরিবদের মাঝে বস্ত্র বিতরণকালে কাপড় নিতে আসা বোরকায় মুখ ঢাকা এক নারীকে দেখে বলেছে, “‘আপনারা খুব পর্দানশিন, আমরাও বেহায়া বেশরম না। আপনি মুখ ঢাকতে হলে বাড়িতে গিয়ে ঢাকবেন। পাবলিক প্লেসে এলে মুখ খোলা রাখতে হবে। শেখ হাসিনা যে ড্রেস পরেন, উনি তো মুখ ঢাকেন না। উনার কি পর্দা হয় না? (http://archive.is/oYiHd)

এ বক্তব্য অনুসারে, মতিয়া চৌধুরী পর্দার পথিকৃৎ হিসেবে মানেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। তার দৃষ্টিতে শেষ হাসিনা যতটুকু পর্দাকরেন সেটাই যথেষ্ট।

কথায় বলে, যেমন গুরু, তেমন তার শিষ্য।

কয়েকদিন আগে্ একটা ভিডিও চোখে পড়লো। শেখ হাসিনা কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সাথে দেখা করতে গিয়ে গালে গাল লাগিয়ে চুমু খাচ্ছে। (https://youtu.be/50CB47oinxs)

এই হলো গুরুর পর্দা।

এবার আসি শিষ্যের কথায়। মতিয়া চৌধুরীর মত প্রত্যেক রাজনৈতিক দলে কিছু নারী থাকে, যাদের বিভিন্ন রাজনৈতিক মিছিলে সামনে দেয়া হয় প্রতিপক্ষের পুরুষের সাথে ঠেলাঠেলি আর মারামারি করার জন্য। এতে সুবিধা, ঐ নারীটি পুরুষকে মারতে পারে, টানাটানি করতে পারে। কিন্তু প্রতিপক্ষের পুরুষটি ভুলেও ঐ নারী কর্মীকে কিছু করতে পারে না, করলেই নারী নির্যাতন, নারী হেনস্তা ইত্যাদি হয়ে যায়। কোন রাজনৈতিক মিছিলের সময় সময় সৌভাগ্যক্রমে যদি মতিয়ার মত শরমযুক্ত নারীদের গায়ে হাত লেগেই যায় কিংবা তাদের কাপড় ছিড়ে যায় তবে সেটার ছবি তুলে মিডিয়ায় ব্যাপক সাড়া পাওয়া সম্ভব। বলাবাহুল্য মতিয়া চৌধুরীর ব্লাউজ ছিড়ে অন্তর্বাস দৃশ্যমান করে রাস্তায় শুয়ে থাকা একটি ছবি তার দলীয় নেতাকর্মীরাই গৌরবের সহিত প্রচার করে থাকে।

গুরু শেখ হাসিনা যেমন পরপুরুষকে জড়িয়ে ধরে গালে গাল লাগিয়ে চুমু খেতে পারে, ঠিক তেমনি তার শিষ্য মতিয়া চৌধুরী ছেড়া ব্লাউজে অন্তর্বাস দৃশ্যমান করে হাজারো মানুষের সামনে শুয়ে থাকতে পারে। এটা তাদের জন্য সমস্যা নয়, বেহায়া, বেশরমও নয়, এটা আমাদের মানতেই হবে। কিন্তু মুসলিম নারীরা তো আর শেখ হাসিনা-মতিয়া চৌধুরীকে অনুসরণ করে পর্দা করে না। তারা পর্দা করে তাদের ধর্মীয় মত-পথ মেনে।

মতিয়া চৌধুরীদের বলবো, নিজেদের শরমযুক্ত পর্দা (!) সামনে এনে মুসলিম নারীদের পর্দার পথিকৃত হওয়ার চেষ্টা দয়া করে করবেন না।

 

 

 

 

 

 

লতিফ সিদ্দিকী হজ্জের বিরুদ্ধে বলায় মুসলমানদের মধ্যে আলেম সমাজ ঝাপায় পড়েছিলো। রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছিলো। যার ফলে পতন ঘটেছিলো লতিফ সিদ্দিকীর।

কিন্তু কয়েকদিন আগে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী মুসলমান নারীদের বোরকা নিয়ে চরম কটূক্তি করলো (http://archive.is/oYiHd), আর মদের পক্ষে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন নিলর্জ্জ দালালি করলো। (https://goo.gl/GShqFZ)

কিন্তু তারপরও মুসলমানদের মধ্যে তেমন কোন প্রতিক্রিয়া দেখা গেলো না, কোন ইসলামী দল এর বিরুদ্ধে মাঠে নেমে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করলো না।

এর কারণ কি ?

কারণ-

লতিফ সিদ্দিকীর সময় নির্বাচন ছিলো না, কিন্তু এখন সামনে নির্বাচন, তাই !

তারমানে সবাই নির্বাচন নিয়ে চিন্তিত।

সবাই কি আওয়ামীলীগের সাথে কোয়ালিশন করতে চায় ?

এ কারণেই মুখে কুলুপ এটে রাখা ?

ইসলামী দলগুলোর যদি এত করুণ অবস্থা হয়, তবে বাংলাদেশের মুসলমানরা কার দিকে তাকিয়ে থাকবে ?

আমি ইসলামী দলগুলোর প্রতি আহবান জানাবো,

নির্বাচন আর ক্ষমতার কথা বাদ দিয়ে ধর্মের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিন। তাহলে আপনারা ধর্মীয় নেতা হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পাবেন।

মতিয়া চৌধুরী আর ইঞ্জিনিয়ার মোশারফের মন্ত্রীত্ব বাতিল আর ফাঁসির দাবিতে রাস্তায় নামুন।

বোরকা আর মদের মত স্পষ্ট বিষয় নিয়ে যদি কথা না বলতে পারেন, প্রতিবাদ করতে না পারেন, তবে ভবিষ্যতে কিছু নিয়েই কথা বলতে পারবেন না।

সাথে এটাও মনে রাখবেন, এসব বিষয় নিয়ে যদি প্রতিবাদ না করেন, তবে ভবিষ্যত সচেতন মুসলিম প্রজন্মের কাছে আপনারা গ্রহণযোগ্যতা হারাবেন। আপনাদেরকে কেউ ইসলামী নেতা ভাববে না, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দালাল হিসেবেই ট্রিট করবে।

 

 

 

 

 

 

রাজধানীর সদরঘাটে মসজিদ ভাঙ্গতে এসেছে, জনগণ প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করেছে,(https://bit.ly/2rmYtsf)

সিরাজগঞ্জে হিন্দু শিক্ষক বোরকা নিষিদ্ধ করেছে, জনগণ প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করেছে,(https://bit.ly/2rq2jRm)

ঝালকাঠিতে এক হিন্দু মুসলমানদের নবীকে নিয়ে কটূক্তি করেছে, জনগণ প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করেছে, (https://bit.ly/2IfdPZK)

লক্ষ্য করুণ, জনগণ প্রতিবাদ বিক্ষোভ করছে, কিন্তু সমস্যা মিটছে, বরং বাড়ছে। এ ঘটনা শুধু এখন না, গত ৮-১০ বছর যাবত বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তারমানে সমাধান শুধু প্রতিবাদ-বিক্ষোভ না।

বর্তমানে মুসলমানদের এত দূরাবস্থার মূল কারণ মুসলমানরা অতি ভদ্র হয়ে গেছে।

আর অতি ভদ্র লোকের দুনিয়াতে ভাত নেই।

প্রতিপক্ষ গোষ্ঠী মুসলমানদের আঘাত করবে খুব নির্ভয়ে, কারণ তারা জানে মুসলমানদের শেষ দৌড় মৌখিক প্রতিবাদ বিক্ষোভ, কিন্তু ধর্ম বিধান অনুযায়ী শাস্তি তারা দিতে পারবে না।

সম্প্রতি সরকার মাদ্রাসার পাঠ্যবই থেকে জিহাদ অধ্যায়গুলো বাদ দিচ্ছে। ‘জিহাদঅর্থ শুধু যুদ্ধ নয়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার ধর্মীয় পলিসি। মুসলমানদের শত্রুরা চায়, মুসলমানরা যেন ঐ জিনিসটা না শিখতে পারে এবং না দেখাতে পারে।

দেশব্যাপী একই ধরনের অবমাননা বার বার হওয়া মানে, যারা ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে তারা বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়েই ঘটাচ্ছে। এবং মুসলমানরা এখন যে ঔষধ দিচ্ছে, আসলে সেটা তার প্রকৃত ঔষধ নয়। জ্বর বেশি হয়ে গেলে প্যারাসিটামল অনেক সময় ২টা দেয়, এন্টিবায়োটিকও দেয়, তারপর জ্বর সারে।

যে কোন ধরনের ধর্ম অবমাননা, সেটা মসজিদ ভাঙ্গা হোক, কটূক্তি হোক কিংবা বোরকার বিরুদ্ধচারণ হোক, মুসলমানদের শুধু মৌখিক চিল্লাপাল্লা করে কাজ হবে না। সবাই এক হয়ে দায়ীদের গণপিটুনি দিয়ে জীবনাবসান করাতে হবে, মসজিদ ভাঙ্গতে আসলে যে ভাঙ্গতে আসবে আর যে মেশিন দিয়ে ভাঙ্গতে আসবে দুটাই ভেঙ্গে নদীতে ফেলে দিতে হবে আর পুলিশ আসলে পুলিশের অস্ত্র দিয়ে দুই চারটা পুলিশকে এ জগতের মায়া ত্যাগ করে দিতে হবে। সবাই একযোগে একবার এ ঔষধ দিয়ে দেখুন, গত ৮-১০ বছর ধরে চলা তাদের বিশেষ প্রজেক্টবন্ধ হতে বাধ্য। কারণ যাদের দিয়ে উপর মহল কাজটি করাবে, তারা ভয় পেয়ে বলবে, “বাবারে আমি যাবো না, কারণ এ কাজ করতে গেলে মুসলমানরা একবারে মিটিয়ে দেয়।

আবার বলছি, সঠিক মাত্রায় ঔষধ দেন, ৮-১০ বছর ধরে চলা অসুখ একবারে ভালো হয়ে যাবে।

 

 

 

 

 

 

# দেশী দশর এক অনুষ্ঠানে বিবিয়ানার মালিক ও ডিজাইনার লিপি খন্দকারের সাথে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ঘনিষ্টতা ছিলো চোখে পড়ার মত। আপনারা জানেন, গতকালকে থেকে ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে বগুড়ায় পহেলা বৈশাখের এক শাড়ির ভেতর আল্লাহুলেখা পাওয়া গেছে। শাড়িটি দেশী দশ শোরুমের বিবিয়ানার শাড়ি। (https://bit.ly/2JCn6sw)। এটা চিরন্তন সত্য, বিশ্বব্যাপী আমেরিকা নিজেই সন্ত্রাসী তৈরী করে, আবার নিজেই সেটা দমন করার নামে মুসলমানদের ক্ষতি করে। বগুড়ায় বিবিয়ানার শাড়িতে আল্লাহুলেখা কোন স্বাভাবিক বিষয় হতে পারে না। যারা এটা করেছে তারা বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়েই কাজটা করেছে। কারণ তারা জানে, বর্তমান সময়ে মুসলমানরা পহেলা বৈশাখ ও মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ধর্মবিরোধী মনে করে আর আল্লাহু শব্দটাকে যদি মঙ্গল শোভাযাত্রার শাড়ির মধ্যে দেয়া যায়, তবে মুসলমানদের মধ্যে একটা তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হবে, যা থেকে বিশেষ কোন ফায়দা লুটতে পারবে আমেরিকা। নির্বাচনের আগে আমেরিকা বাংলাদেশে কোন অরাজকতা সৃষ্টি করতে চাইবে এটার সম্ভাবনা শতভাগ। লিপি খন্দকারের মাধ্যমে শাড়ির মধ্যে আল্লাহু লিখে সেই ধরনের কোন প্রজেক্ট আমেরিকা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলো কি না, তা বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের খতিয়ে দেয়া উচিত।

 

 

 

 

 

 

বগুড়ায় শাড়িতে আল্লাহুলেখা কোম্পানির নাম বিবিয়ানা’। বিবিয়ানার মালিক ও ডিজাইনারে নাম লিপি খন্দকার। লিপি খন্দকারকে জিজ্ঞেস করা উচিত, সে শাড়ির মধ্যে আল্লাহ শব্দ লিখে কেন বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে ?

লিপি খন্দকারের ফেসবুক আইডি: https://www.facebook.com/lipi.khandker

বগুড়ায় বিবিয়ানার পহেলা বৈশাখের শাড়িতে আল্লাহু লেখা : https://bit.ly/2JCn6sw

 

 

 

 

খবর : মাদ্রাসাগুলোতে জাতীয় সংগীত প্রতিযোগিতা বন্ধে হাইকোর্টে রিট মামলা দায়ের করা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) আওতাধীন দেশের সব মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে গত জানুয়ারিতে দলগত জাতীয় সঙ্গীত প্রতিযোগিতা আয়োজনের নির্দেশ দিয়ে পরিপত্র জারি করেছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সেই পরিপত্রকে চ্যালেঞ্জ করে গতকাল হাইকোর্টে রিট মামলা দায়ের করেছেন কুড়িগ্রামের শুখদেব ফাজিল মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক মুহম্মদ নুরুল ইসলাম মিঞা ও ঢাকার কদমতলা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর অভিভাবক মুহম্মদ মনির হোসেন স্বাধীন শেখ। রিটকারীদের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। মামলাটি হাইকোর্টের রিট শাখায় জমা দেয়া হয়েছে। রিট পিটিশনে বলা হয়েছে, মাদ্রাসা হলো ইসলামী জ্ঞান শিক্ষার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। গান ও বাদ্যযন্ত্র ইসলামে নিষিদ্ধ। তাই মাদ্রাসায় জাতীয় সংগীত প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রিটকারীদের ধর্মপালনের মৌলিক অধিকার খর্ব করেছে। মামলাটি আগামী রবিবার ২৫ মার্চ শুনানির কথা রয়েছে। (http://bit.ly/2u9xBzV)

মন্তব্য : খুবই ভালো উদ্যোগ। ইসলাম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ইসলাম ধর্মীয় কাজ হবে। সেখানে জোর করে ধর্মবিরুদ্ধ কাজ চাপিয়ে দেয়া কখনই সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

 

 

 

 

ভারতের হায়দারাবাদে ইহুদী কোম্পানি প্রক্টর এন্ড গ্যাম্বেলের বাচ্চাদের ডায়পারে (প্যামপারস)কৌশলে মুসলমানদের শেষ নবীর নাম লিখে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে হায়দারাবাদের মুসলমানরা ব্যাপক আন্দোলন-বিক্ষোভ করছে।

কিছুদিন আগে সবাই বহুজাতিক ইহুদীবাদী কোম্পানি ইউনিলিভারের পন্য বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো, এখন প্রক্টর এন্ড গ্যাম্বেলের পন্যগুলো (প্যানটিন, জিলেট, প্যামপারস, হেড এন্ড শোল্ডার, হুইসপার আলট্রা)বর্জন করা উচিত।

খবরের সূত্র:

১)http://dailym.ai/2BOKlyi

২)http://bit.ly/2CHhvwd

৩) http://bit.ly/2BKVH6m

 

 

 

 

 

খবর: চোখ মারার ভিডিওতে ইসলামি সংগীতের ব্যবহার! (http://bit.ly/2BXhus9)

 

ভারতের মালয়লাম চলচ্চিত্র ‘অরু আধার লাভ’- এর নায়িকা প্রিয়া প্রকাশ ওয়ারিয়রের চোখ মারার ভিডিও নিয়ে সামাজিকমাধ্যমে মাতামাতি চলছে। মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে- প্রিয়ার চোখের পলক ও অভিনয়ের প্রশংসা।

 

কিন্তু যে ‘মানিক্কে মালারায়া পুভিগানে অভিনয় করে আলোচনার ঝড় তুলছেন প্রিয়া, সেই গানটি মূলত একটি ইসলামি সংগীত। এতে আল্লাহর রাসুল (সা.) এবং তার প্রথম স্ত্রী খাদিজাতুল কোবরার (রা.) মধ্যকার পবিত্র ভালোবাসার কথা বলা হয়েছে।

শুরুতে প্রিয়ার চোখ মারার দৃশ্যের প্রশংসা করলেও নবীজির (সা.) প্রশংসা করে লেখা গানের এমন দৃশ্যায়নের সমালোচনা করেছেন অনেকেই।

এ নিয়ে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে বাংলাদেশের তরুণরাও সোচ্চার হয়েছেন। এমন একজন হলেন আরজু আহমেদ। ফেসবুকে প্রকাশিত তার একটি লেখা তুলে ধরা হল-

চোখ টিপ দেওয়ার যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে তা মূলত কেরালায় নির্মিত মালয়াম ভাষার চলচ্চিত্র ‘অরু আধার লাভ’- এর। ছবিটির এই দৃশ্যে যে গানটি ব্যবহার করা হয়েছে সেটি কিন্তু এ সিনেমাটির জন্য লেখা নয়। মূলত এটি একটি ইসলামি লোক-সংগীত। যা কেরালার ম্যাপিলা মুসলিম সমাজে বেশ জনপ্রিয়। এগুলোকে ম্যাপিলা গানবলা হয়। মানিক্কে মালারায়া পুভি/মাহদিয়া কা খাদিজা বিবি’। শিরোনামের গানটা মূলত আল্লাহ্‌র রাসুল (সা.) এবং উম্মুল মুমিনিন খাদিজা (রা.) এর মধ্যকার পবিত্র ভালোবাসা সম্পর্কে লেখা।

ছোট্ট এই গানে ৩ বার খাদিজা রা.-এঁর নাম এসেছে, আল্লাহ্‌র রাসুলের নাম মোহাম্মদএসেছে ২ বার, ‘রাসুলুল্লাহ১ বার, ‘খাতামুন-নাবিয়্যিনশব্দটা এসেছে ১ বার, পবিত্র নগরি মক্কাশব্দটা আছে বার।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে এমন একটি দৃশ্যপটের সঙ্গে এই গানটি জুড়ে দেওয়া হয়েছে, যা কেবল জঘন্যই নয় বরং অসহনীয়। আরও মন্দ ব্যাপার হচ্ছে, মুসলমানরা সেটিকে কেবল গ্রহণই করেনি, জ্ঞাতে হোক অজ্ঞাতে হোক, এর সর্বাত্মক প্রচারও করে চলেছে।

ম্যাপিলা শব্দটা মূলত এসেছে দ্রাবিরিয়ান ‘মহা+পিলাথেকে। মহা বলতে মহান, আর পিলা অর্থ পুত্র। অর্থাৎ মহানদের পুত্র, মানে আরবদের সন্তান। যে কয়টা ঐতিহাসিক লোক বর্ণনা পাওয়া যায়, তাতে উপমহাদেশের প্রথম ইসলাম আসে কেরালার এ অঞ্চলে।

নবুওয়তের ১০ বছরের মাথায় ত্রিশুরের দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর কদুংগাল্লুরে মসজিদ নির্মিত হয়। সর্বশেষ ‘ছেঁড়া সম্রাজ্যেরশাসক ইসলাম গ্রহণ করেন এবং এখানে এই মসজিদ নির্মাণ করেন।

এটি বিশ্বাসযোগ্য এ জন্য যে, মালাবার উপকূল দিয়ে আরবদের সঙ্গে এ অঞ্চলের সমুদ্র যোগাযোগ ইসলামের আগমনের বহু পূর্বের। ফলত এ অঞ্চলের মুসলমানদের ভাষায় আরবির আধিক্য বেশি।

উপমহাদেশের অন্যসব মুসলমানের সঙ্গে নানাবিধ দিকে তফাত আছে। যেমন পুরো উপমহাদেশ ফিকহে হানাফির অনুসরণ করলেও এ অঞ্চলের মানুষ শাফেয়ি মাজহাবের অনুসরণ করেন। ইবনে বতুতা যা নিয়ে বিস্ময়ের কথা লিখে গেছেন।

কেরালায় প্রখ্যাত বুযুর্গ তাবিয়ি মালিক দিনার (রহ.) এঁর মাজার রয়েছে এখনও। তিনি এসেছিলেন ইসলামের প্রচারে। ডাচরা কেরালায় ষোড়শ শতকে পৌঁছালে শায়খ জায়নুদ্দিন আল মাখদুম রহ. জিহাদ ঘোষণা করেন। এই জিহাদ ডাচরা বিদায় হবার পূর্ব পর্যন্ত চালু ছিল।

তিনিই উপমহাদেশের প্রথম আলিম যিনি ইউরোপিয়ানদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেন। উনিশ শতকে ইংরেজদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেন কুতুবে জামান শায়খ আলাভি, উমর কাজী, শায়খ ফজল (রহ.)। ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তামাম অঞ্চলে মুসলমানদের অবদানই প্রধানতম।

কিন্তু আধুনিক কেরালার ইতিহাসে বহু কাটছাঁট পড়েছে। ভারতে মুসলমানদের অবদানকে যেমন অস্বীকার করা হয়েছে, তেমনি ৮০০ বছরের শাসনের ইতিহাসকে ইচ্ছেমতো বিকৃত করেছে। সর্বশেষ চলচ্চিত্রে সিনেমায় নাটকে তা করা হচ্ছে।

প্রথমে তারা আমাদের সিনেমামুখী করল, এবার দাঁড় করাচ্ছে ইসলামের সঙ্গে মুখোমুখি! পদ্মাবতী থেকে অরু আদার লাভ- ইসলাম আর মুসলমানের সঙ্গে তামাশা চলছে। আর মুসলমান তা কেবল উপভোগ করছে!

আমাদের স্মরণ রাখা উচিত, রাসুল (সা.) এঁর স্ত্রীগণ উম্মুল মুমিনিনঅর্থাৎ উম্মতের জন্য সাংবিধানিকভাবে মা। আর আল্লাহ্‌র রাসুলের মর্যাদা তো বর্ণনার অতীত! তাঁদের মধ্যকার পবিত্র যে ভালোবাসা তাকে ইসলামের দৃষ্টিতে যে প্রেম হারাম তার সঙ্গে উপস্থাপন!

আর সেটিকে আমাদের প্রশ্রয় প্রদান- ওয়াল্লাহি, এ ব্যাপারে আমাদের কিন্তু আল্লাহ্‌র কাছে অবশ্যই জবাব দিতে হবে! এ ভুলের জন্য তওবা করা আবশ্যক! আর রাসুলের শানে যা বেয়াদবি তা থেকে দূরে থাকা ঈমানের প্রধানতম দায়িত্ব।

 

 

 

 

 

 

 

 

এক বক্তব্যে তারা বলেছে, আরেক ইসলামী দলের বিরুদ্ধে (সম্প্রতি তাদের সাথে বিরোধ হয়েছে), যদি আওয়ামী সরকার ব্যবস্থা না নেয়, তবে তাদের সাথে আর কোন কথা নয়।

যেহেতু নির্বাচন কাছে, তাই আওয়ামীলীগের সাথে তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখতে আওয়ামীলীগ যেন কাজটি দ্রুত করে সেই ইঙ্গিত দেয়া।

বিষয়টি নিয়ে আমি অবাক হচ্ছি, কারণ নির্বাচনী শেষ সময়ে এখন কি নিজেদের মধ্যে গুগাগুতি করার সময় ?

নির্বাচন যত কাছে আসছে, প্রত্যেকটি গোষ্ঠী তার স্ব স্ব স্বার্থ রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে উপস্থাপন করছে। যেমন:

১) যারা কোটা আন্দোলনকারী, তারা তারুণ্যের ইশতেহার ভাবনা নামক একটি দাবী তৈরী করেছে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে দিয়েছে। (https://bit.ly/2zN0sue) অনেক রাজনৈতিক দল এ দাবীগুলো পূরণ হবে বলে ইতিমধ্যে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে (https://bit.ly/2AMbdMV)।

২) হিন্দুরা বেশ কিছুদিন যাবত, বিভিন্ন নির্বাচনী দাবী তৈরী করেছে। এবং বলছে কে তাদের দাবি দাওয়া পূরণ করবে, হিন্দুরা তাদের ভোট দেবে। প্রকাশ্য দরকষাকষি। অনেক দল তাদের ইশতেহারে হিন্দুদের সেই দাবীগুলোও সম্বলিত করেছে। (দুইটি হিন্দু দলের আলাদা দাবী, https://bit.ly/2B18U97, https://bit.ly/2AZIPHm)

৩) নাস্তিক জাফর ইকবাল সেও একটা দাবি তৈরী করে প্রকাশ করেছে (https://bit.ly/2BYGkqA), উদ্দেশ্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যেন তার সেই সেক্যুলার হওয়ারদাবিগুলো তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে সংযুক্ত করে এবং পরবর্তীতে সেই দাবীগুলো নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির কথা বলে অন্তত আদায় করা যাবে।

অর্থাৎ নির্বাচন কাছে আসলে রাজনৈতিক দলগুলো সফট হয়ে যায়, যারা প্রত্যেক গোষ্ঠীর দাবী দাওয়া নিয়ে কথা বলে এবং নির্বাচনে জিতলে তা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেয়। আমি কোন ইসলামী দলকে দোষারোপ করছি না, কিন্তু বলছি, বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে এখন উচিত ছিলো, এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিকদলগুলোর কাছে মুসলমানদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবী দাওয়া পাঠানো, যা দিয়ে দেশ ও জাতির উপকার হয়। অথচ মুসলমানদের পক্ষ থেকে ইশতেহার না দিয়ে মুসলমানরা উল্টো নিজেদের মধ্যে গুতাগুতিকে ইশতেহার বানিয়ে দিয়েছে। আমি সমস্ত ইসলামী দলগুলোর প্রতি হাতজোড় করে অনুরোধ করবো, দয়া করে এ ধরনের মানসিকতা থেকে সরে আসুন। আমরা মুখে বলি কোন সরকার ইসলামের জন্য কোন কাজ করে না, কিন্তু বাস্তবে আমরা কি আমাদের দাবীগুলো সঠিক করে তাদের কাছে পৌছাতে পেরেছি ? কথায় আছে, “না কানলে মাও দুধ দেয় না।মুসলমানরা যদি তাদের দাবি-দাওয়াগুলো উপযুক্ত সময় পৌছাতে না তবে ক্ষমতাসীনদের দোষ দিয়ে লাভ কি ?

যাই হোক, আমি অনলাইনে একটা উদ্যোগ নিয়েছি। দেশ ও জাতির কল্যানে আমরা যারা অনলাইনে সচেতনমহল আছি, তারাও একটা ইশতেহার ভাবনা প্রণয়ন করবো। আমি আপনাদের কাছে আহবান করছি, দেশ ও জাতির কল্যাণ্যে ক্ষমতায় আসলে নতুন সরকারের কি করা উচিত, সেই ভাবনা নিয়ে আপনাদের মতামত জানান। সেই মতামতগুলো যাচাই-বাছাই করে একসাথে প্রকাশ করবো। এরপর আমরা সেই দাবীগুলো গণহারে সবাই প্রচার করবো, ভাইরাল করবো, যেন রাজনৈতিকগুলোর দৃষ্টিগোচর হয় এবং তারা তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে সেগুলো অন্তর্ভূক্ত করে। আপাতত আপনারা কমেন্টে আপনাদের নির্বাচনী দাবী দাওয়াগুলো প্রকাশ করুন। সময় ২৪ ঘণ্টা।

 

 

 

 

 

 

আমার কথা হলো, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে চাকুরী দিয়ে আগাতে হবে কেন ? তাকে অন্য কোনভাবে সাহায্য করুন।

আপনি যখন নিজের কোম্পানিতে চাকুরী দেন, তখন কি মেধাবী রেখে অনুপযুক্ত লোককে চাকুরী দেন ?

তখন তো ভাবেন, সবচেয়ে যোগ্যতাবান লোকটা আসুক, তাহলে আমার লাভ হবে।

এর জন্য দশবার ইন্টারভিউ নেন, মেধা, যোগ্যতা যাচাই করেন।

তখন কেন অনুপযুক্ত বা প্রতিবন্ধী লোককে চাকুরী দেন না?

আপনি নিজের জন্য যেটা পছন্দ করছেন না, সেটা কেন দেশের জন্য পছন্দ করেন ?

তারমানে দেশ ডুবুক, তাতে আমার কি ? আমার কোম্পানি তো ভালো আছে, তাহলেই হবে।

আসলে, এ ধরনের চিন্তাধারা আমাদেরকে খেয়ে ফেলছে। আমি আগেও বলেছি, মুসলমানদের পতনের মূল কারণ মুসলমানরা জাতিগত স্বার্থগুলো বাদ দিয়ে ব্যক্তি স্বার্থ নিয়ে বেশি ব্যস্ত হয়ে গেছে। এ কারণে হয়ত কিছু লোক সম্পদের মালিক হয়েছে, জাতিগতভাবে মুসলমানরা পরাধীন হয়ে গেছে, তাদেরকে এখন বিভিন্ন দেশ থেকে মাইর দিয়ে বের করে দেয়া হয়।

আমার কথা হলো, পার্বত্য এলাকায়, উপজাতিরা ভিন্ন রাষ্ট্র তৈরীর চেষ্টা করছে এটা তো ওপেন সিক্রেট

বাংলাদেশের সেনাপ্রধান যখন ঐ এলাকায় সেনাসদস্যের উদ্দেশ্যে কোন বক্তব্য দেয়, তখন স্পষ্ট করে বলে, “উপজাতিরা পূর্ব তীমুর বা দক্ষিণ সুদানের মত দেশকে বিছিন্ন করতে চাইছে, আমাদেরকে সেটা রক্ষা করতে হবে।বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর টনকে টন ওজনের ফাইল আছে, উপজাতিদের রাষ্ট্রদ্রোহী কার্যক্রম নিয়ে। কিন্তু তারপরও কেন তাদের কোটা দিয়ে সুযোগ দেয়া হবে ? বিশেষ ব্যবস্থা দিয়ে সুযোগ দেয়া হবে ? এটা তো জাতির সাথে স্পষ্ট বিশ্বাসঘাতকতা করা। কোন স্ট্যাফ যদি আপনার কোম্পানির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, তখন তাকে কি প্রমশন দিয়ে উপরের পদে নিয়োগ দেন ?

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাপতি ক্লাইভ বলেছিলো, “পলাশীর প্রান্তরে যখন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও নবাব বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ চলছে, তখন দুইপ্রান্তে অসংখ্য বাঙালী জনগণ ভীড় করেছিলো যুদ্ধ দেখার জন্য। আমরা ভেবেছিলাম, ভীড় করা জনগণ যদি একটা করে ইটের ঢেলা ছুড়তো তবে আমরা পিষ্ট হয়ে যেতাম। কিন্তু আমরা অবাক হয়ে গেলাম, উপস্থিত বাঙালীরা শুধু হা করে তামাসা দেখলো, কিন্তু নবাবের পক্ষে বা আমাদের বিরুদ্ধে কোন অবস্থান নিলো না।

পাঠক ! ঐ সময় বাঙালীদের নির্লিপ্ত থাকা আমাদের ২০০ বছরের পরাধীনতার শিকলে আবদ্ধ করেছে। এখনও মন-মগজে আমাদের ব্রিটিশ গোলামি রয়ে গেছে।

আজকেও কিন্তু একই অবস্থা। বিদেশী ইন্ধনে বিভিন্ন দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র চলছে, কিন্তু জনগণ একেবারে নির্লিপ্ত। পলাশী প্রান্তরের মত তারাও সব কিছু দেখছে-শুনছে, কিন্তু দেশের জন্য কিছুই যেন বলার নেই। তিন পার্বত্য এলাকা দেশ থেকে ভাগ হয়ে গেলে যাক, তাতে আমার ক্ষতি কি ? আমার ক্যারিয়ার/লাইফ তো ঠিক আছে, তাহলেই হবে। অথচ বেকুব গুলো বুঝতেছে না, ফেনী নদী থেকে চট্টগ্রামসহ তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে রয়েছে বিপুল সম্পদ, রয়েছে সমুদ্র সম্পদ। অবশ্যই এ সব সম্পদ সঠিক ব্যবহার করলে বাংলাদেশ একসময় পৃথিবীর অন্যতম ধনী রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারবে। আর সেই সম্পদের লোভে সম্রাজ্যবাদীদের এত প্ল্যান ও কার্যক্রম। কিন্তু চুলকানি কি আর এত সহজে গন্ডারের ভেতরে পৌছায় ?

ফেনী পর্যন্ত দখল করার প্ল্যান নিয়ে আরো কয়েকটি লেখা:

১) https://bit.ly/2qWAFuz

২) https://bit.ly/2hHW2ek

৩) https://bit.ly/2hEdmRq

 

 

 

 

 

# বর্তমানে পার্বত্য উপজাতিদের তাদের নিজস্ব মাতৃভাষায় রচিত পাঠ্যবই দেয়া হচ্ছে। প্রাইমারি স্কুলগুলোতে শিশুদের তাদের নিজস্ব মাতৃভাষায় পাঠ্যবই দেয়া হচ্ছে। যে পাঁচটি ভাষায় বই ছাপানো হচ্ছে সেগুলো হলো চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও ওঁরাও। (https://bit.ly/2HVndPC)

 

কিন্তু আমার কথা হলো- এই ৫টি ভাষা কি বাংলাদেশের মধ্যে সার্বজনিন ?

 

এই ভাষাগুলো তো ৩ পার্বত্য জেলার মধ্যে সার্বজনিন নয়। এক উপজাতির ভাষা অন্য উপজাতি গোষ্ঠী বুঝে না। তারমানে উপজাতি ভাষায় শিক্ষিত ছেলে-মেয়েরা তাদের নিজের এলাকা থেকে বের হতে পারবে না, দেশব্যাপী চাকুরী-ব্যবসা করতে পারবে না, এতে তারা আরো অনুন্নত হয়ে যাবে।

 

সরকার সংবিধানে বর্ণিত অনগ্রর নাগরিক হিসেবে উপজাতিদের কোটা সুবিধা দিতে চায়, কিন্তু উপজাতি ভাষায় পাঠ্যপুস্তক রচনা করা মানে তো ঐ উপজাতিদের আরো অনগ্রসর করে দেয়া। লক্ষ্ লক্ষ্ শিশুকে উপজাতি ভাষায় পাঠ্যবই দিয়ে আপনি অনগ্রসর করছেন, আবার ৫% কোটা দিয়ে তাদের অগ্রসর করতে চাইছেন, দুটোই তো পরষ্পর বিরোধী সিস্টেম।

 

আসলে যারা এগুলো করছে, তারা ইচ্ছা করেই কাজগুলো করছে, সম্রাজ্যবাদী আমেরিকার প্ল্যান বাস্তবায়ন করছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য- তিন পার্বত্য জেলাকে বাংলাদেশ থেকে পৃথক করে ভিন্ন রাষ্ট্র গঠন করা। কিন্তু উপজাতিরা যদি বাংলা ভাষা শিখে পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ে, তবে ঐ তিন জেলায় তাদের আধিক্য কমে যাবে, ফলে তাদের স্বাধীনতার জন্য পৃথক ভূমি দাবির বিষয়টি আসবে না। কিন্তু তাদের নিজস্ব ভাষা-সংস্কৃতি যদি টিকিয়ে রাখা যায় তবে অবশ্যই একটা সময় তাদের পৃথক ভূমির দাবি তোলা যাবে। শুনেছি তারা নাকি ইতিমধ্যে জাতিসংঘে গিয়ে তাদের পৃথক রাষ্ট্র জুম্মল্যান্ডের জন্য আবেদনও করেছে।

 

পাশাপাশি, উপজাতি কোটাটাও উদ্দেশ্যমূলক। কারণ কোটার মাধ্যমে উপজাতিদের প্রশাসন ও সরকারী চাকুরীতে ঢুকিয়ে তারপর তাদের পার্বত্য এলাকায় নিয়ে আসা হবে। এরপর প্রশাসন দিয়ে তাদের বিদ্রোহী কার্যক্রমের পৃষ্ঠপোষকতা চলবে। গত ৬ মাস আগে বান্দরবানের প্রশাসন ও সরকারীকর্মকর্তাদের তালিকা নিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম (https://bit.ly/2qWAFuz)। ঐ লিস্ট দেখলেই বুঝবেন, তাদের উদ্দেশ্যটা কি।

 

যাই হোক, উপজাতি কোটা বাতিল করতে সারা বাংলাদেশের মানুষের আন্দোলন করা উচিত। কারণ ৭১ সালে মু্ক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করা হয়েছে, অবশ্যই ৩ জেলাকে উপজাতিদের হাতে তুলে দেয়ার জন্য নয়। তাই সাবধান।

 

 

 

 

 

# এবার কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে ড. জাফর ইকবালের ভূমিকা ছিলো সন্দেহজনক। কোটা বিরোধী আন্দোলনের চূড়ান্ত মুহুর্তে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন এবং আন্দোলন শেষ পাওয়ার পর তার বক্তব্য ছিলো পরষ্পর বিরোধী। আমার আজকের এ লেখা, কোটা আন্দোলন নিয়ে জাফর ইকবালের এই ভোল পাল্টানো ভূমিকা নিয়ে।

 

প্রথমেই গত ৯ই এপ্রিল জাফর ইকবালের বক্তব্য প্রমাণ করে তিনি কোটা আন্দোলনের পক্ষে। কোটা আন্দোলন যখন তুঙ্গে (শেষ হওয়ার মাত্র একদিন আগে) তিনি এ আন্দোলনের পক্ষে থাকার ঘোষণা দিলেন এবং ‘কোটা সংষ্কার যৌক্তিকবললেন। অর্থাৎ তিনি কোটা সংস্কার চান (কিন্তু পুরো বাতিল নয়)।

 

(https://bit.ly/2JPBrlI)

 

এরপর ১৩ই এপ্রিল, তারিখ কোটা আন্দোলন শেষ হওয়ার দুইদিন পর বিডিনিউজ২৪ এ প্রকাশিত তার কলামে তিনি সম্পূর্ণ ইউটার্ন নেন। তিনি এমন একটা ভাব দেখান যে তিনি কিছুই জানেন না। এবং কোটা বিরোধী আন্দোলনে রাস্তাঘাট কেন বন্ধ হইছে এটাই তার কাছে বড় হয়ে গেলো। (https://bit.ly/2EQv0uD)

 

পাঠক ! সময় দুটো খেয়াল করুন-

 

ছাত্র-ছাত্রীরা রাস্তা কেন বন্ধ করছেএটা জাফর ইকবালের বলা দরকার ছিলো ৯ই তারিখ। কারণ তখন সারা দেশ বন্ধ করার ঘোষণা উঠছিলো। কিন্তু সেটা তিনি আন্দোলন শেষ হওয়ার দুইদিন পর করলেন। কারণ কোটা সংস্কারের সিদ্ধান্ত তার মনঃপুত হয়নি। তিনি চেয়েছিলেন, কোটা সংস্কার মানে ১০%, কিন্তু কোটা সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করার ঘোষণা দেয় সরকার। যেহেতু এই আন্দোলনের ফলাফল তার মনপুত হয়নি, এজন্য তিনি ছাত্রদের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কলাম লিখলেন ! (এই ছাত্ররাই কিন্তু জাফর স্যার জাফর স্যার করে পাগল হয় !)

 

পাঠক ! যারা আমার লেখা সব সময় পড়েন, তারা হয়ত আমার কোন কথা বিশ্বাস করেন, আবার কোন কথা বিশ্বাস করেন না, বা বুঝেন না। আমি কিন্তু শুরু থেকেই একটা কথা বলে এসেছি-

 

১) মার্কিনপন্থী বা সিআইএপন্থীরা কোটা বাতিল চায় না, তারা ১০% কোটা চায় (বিশেষ করে উপজাতি কোটা)। কারণ এগুলোর সাথে তাদের স্বার্থ জড়িত।

 

২) ড. জাফর ইকবাল সিআইএ’র এজেন্ট।

 

যেহেতু কোটা সম্পূর্ণ বাতিল হয়েছে বা সিআইএ’র স্বার্থ তথা উপজাতি কোটা বাতিল হয়েছে তাই সিআইএর এজেন্ট ড. জাফর ইকবাল হুক্কা হুয়া করে ডাক দিয়েছে।

 

ড. জাফর ইকবালের এখানে স্বার্থ কি ?

 

সিআইএ’র যা স্বার্থ ড. জাফর ইকবালেরও সেই স্বার্থ। বিশেষ করে পার্বত্য তিন জেলাকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে পূর্ব তীমুর বা দক্ষিণ সুদানের মত নতুন রাষ্ট্র গড়তে চায় সিআইএ’। এই প্ল্যান বাস্তবায়নে তাদের যে সংগঠন শীর্ষে কাজ করছে তার নাম ‘সিএইচটি কমিশন’। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ড. জাফর ইকবাল এবং তার স্ত্রী ইয়াসমিন হক সেই সিএইচটি কমিশনের সদস্য বা মেম্বার (http://www.chtcommission.org/page.php?idn=10)।

 

এখন আপনি বলতে পারেন, সিএইচটি কমিশন যে পার্বত্য তিন জেলাকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়, তার দলিল কি ?

 

সিএইচটি কমিশনে বেশ কয়েকজন সদস্য আছে। এর মধ্যে তিন সদস্য- মিখায়েল সি. ভন ওয়াল্ট ভন প্রাগ, হুর্স্ট হননুম এবং এরিক এভাব্যুরি নিয়ে বলতে চাই।

 

-মিখায়েল সি. ভন ওয়াল্ট ভন প্রাগ কিন্তু ইন্দোনেশিয়া থেকে ইস্ট তীমুর পৃথক করার সাথে জড়িত (সিএইচটি কমিশনের সাইটে তার প্রোফাইলে কিছু ইঙ্গিত পাবেন: (http://www.chtcommission.org/page.php?idn=10))। এছাড়া আমেরিকা চায় দালাইলামার মাধ্যমে তীব্বতকে চীন থেকে পৃথক করতে। সেই দালাইলামার উপদেষ্টও এই মিখায়েল সি. ভন ওয়াল্ট ভন প্রাগ।

 

-আরেক সদস্য হুর্স্ট হননুম নামক ব্যক্তিও পূর্ব তীমুরের বিচ্ছিন্ন হওয়ার সাথে জড়িত (সিএইচটি ওয়েবে তার প্রোফাইল দেখুন)।

 

-এরিক এভাব্যুরি সাবেক সদস্য, সে গত ১৪ই ফেব্রুয়ারী, ২০১৬ মারা যায়। এই ব্যক্তি সুদান থেকে দক্ষিণ সুদান পৃথক করার জন্য কাজ করেছে। এ সম্পর্কে Sudan Democratic Gazette, 1997 বইতে তথ্য পাওয়া যায়।

 

অর্থাৎ পার্বত্য চট্টগ্রামের সিএইচটি কমিশন এমন একটি সংগঠন যেখানে এমন সব সদস্য রয়েছে যারা ইন্দোনেশিয়া থেকে পূর্ব তীমুর এবং সুদান থেকে দক্ষিণ সুদান পৃথক করার জন্য এক সময় কাজ করেছে। এখন সিএইচটি কমিশন নামক সংগঠনের ব্যানারে তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ থেকে তিন পার্বত্য জেলাকে পৃথক করতে। এবং বলাই বাহুল্য পুরো কাজটি সিআইএ’র প্রজেক্ট।

 

তাহলে সেই সিএইচটি কমিশনের সদস্য ড. জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন হকও যে সিআইএ’র সম্পর্কিত সেটাও একই সূত্রে সহজে বলা যায়। আর যেহেতু, উপজাতি কোটা ছিলো সিআইএপ্রজেক্ট, আর সেই কোটা বাতিল হলে সিআইএএজেন্ট ড. জাফর ইকবালের গায়ে লাগবে এটাই স্বাভাবিক। এবং সে কারণেই কোটা বিরোধী আন্দোলন নিয়ে ইউটার্ন মেরেছে জাফর ইকবাল।

 

 

 

 

 

 

 

# এতদিন সরকারী চাকুরীতে ৩০% মুক্তিযোদ্ধা কোটা ছিলো। কিন্তু সেই কোটা এখন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যখন কোটা বিরোধী আন্দোলন চলছিলো, তখন মুক্তিযেদ্ধা কোটার পক্ষে কেউ কেউ বলেছে- তবে কি মুক্তিযোদ্ধা কোটা বন্ধ করে রাজাকার কোটা চালু করা হবে ?”

 

গতকালকে প্রধানমন্ত্রী কোটা ব্যবস্থা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু কোন কোন যায়গায় উপজাতিদের বিশেষ ব্যবস্থায় সুযোগের কথা বলা হচ্ছে। অথচ ১৯৭১ সালে উপজাতি গোষ্ঠীগুলো স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধীতা করেছিলো। বিশেষ করে সবচেয়ে বড় উপজাতি গোষ্ঠী চাকমা (মোট উপজাতি’র অর্ধেকেরও বেশি) এর তৎকালীল প্রধান বা রাজা ত্রিদিব রায় ছিলো চিহ্নিত রাজাকার। তার রাজাকারগিরিতে পাকিস্তান এত খুশি হয়েছিলো যে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর সে পাকিস্তান পালিয়ে গেলে তাকে মন্ত্রীত্ব দিয়ে সম্মানিত করা হয়। সেই চাকমা রাজার ছেলে বর্তমান চাকমাদের প্রধান। আসলে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান-চীন-আমেরিকা একজোট ছিলো। সে কারণেই বাংলাদেশে সকল উপজাতি গোষ্ঠীগুলো স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এর একটি বিশেষ উদহারণ হতে পারে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা। সেও কিন্তু মনিপুরী উপজাতি, যে নিজ মুখেই স্বীকার করেছে সে একজন শান্তি কমিটির মেম্বার এবং পরবর্তীতে আওয়ামী সরকারও স্বীকার করে নেয় সিনহার স্বাধীনতা বিরোধী অবস্থানের কথা।

 

সে দিক বিবেচনা করে, যদি এখন উপজাতিদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা চালু করা হয়, তবে বিষয়টি দাড়াবে, মুক্তিযোদ্ধা কোটা বন্ধ করে রাজাকারদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা চালু করা। হতে পারে এটা হয়ত গায়ের জোরে করা হবে। কিন্তু এর মাধ্যমে কিন্তু একটি কালো ইতিহাস রচিত হবে। আজীবন সবাই বলে যাবে- আওয়ামী সরকার মুক্তিযোদ্ধা কোটা বন্ধ করে, রাজাকারদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা চালু করে গেছিলো।

 

 

 

 

 

মোটামুটি বিশ্বজুড়ে রাজনীতিতে এটাই এখন স্বীকৃত। যে মুখের কথা ও বাস্তব কাজের যত বেশি দূরত্ব সৃষ্টি করতে পারবে, সে জনগণকে তত বেশি ধোকায় ফেলতে পারবে এবং সে তত বড় রাজনীতিবিদ।

সম্প্রতি দেখবেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছে, তার নাকি টাকা নাই। সে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরও তার ছেলেকে লেখাপড়া করাতে পারে নাই, কারো কাছে লোন চাইতে পারে নাই। হাবিজাবি।

শেখ হাসিনা যখন এ ধরনের কথা বলেন, তখন বুঝতে হবে তিনি আন্তর্জাতিক বড় বড় রাজনীতিবিদদের ফলো করার চেষ্টা করছেন। এ কারণে তিনি উল্টো কথা বলা শুরু করেছেন। ব্রিটেণে বিলিয়ন ডলার দিয়ে দ্বীপ ক্রয় করে এখন বাংলাদেশের মানুষকে শোনাচ্ছেন নূন আনতে তার পান্তা ফুরোয়।

আমি আগেই বলেছি, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এই উল্টা অবস্থানটা খুব কমন একটি বিষয়। এবং যে যত বেশি এ ধরনের অবস্থা প্রকাশ করতে পারছে, সে তত রাজনীতিবিদ হতে পারছে।

যেমন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে,

মুখে বলছে সন্ত্রাস দমন, কিন্তু নিজেরাই সন্ত্রাস করছে

মুখে বলছে ‘আপনার দেশে জনগণের ক্ষমতা দেখতে চাই’, কিন্তু চাইছে নিজ সমর্থিত সরকার,

মুখে বলছে শান্তিপ্রতিষ্ঠা, কিন্তু নিজেরাই অশান্তি সৃষ্টি করছে,

মুখে বলছে নারীকে অধিকার দিতে হবে, কিন্তু বাস্তবে নারীর অধিকার আরো হরণ করছে,

মুখে বলছে বাক স্বাধীনতা, কিন্তু বাস্তবে অপরের সকল স্বাধীনতা হরণ করছে,

এ ধরনের চরম পর্যায়ের বিপরীতমুখী নীতির কারণে্ই আমেরিকা এখন সুপার পাওয়ার। কারণ তারা মানুষকে সবচেয়ে বেশি ধোকা দিতে পারে|

বাংলাদেশে যতগুলো পশ্চিমা এনজিও আছে, তার সবগুলো প্রায় নিয়ন্ত্রিত হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় অংশের USGLC থেকে। ইউএসজিএলসি অর্থ U.S. Global Leadership Coalition।

লক্ষ্য করবেন, বাংলাদেশের যতগুলো পশ্চিমা এনজিও কাজ করছে, তারা সবাই মুখে বলছে- তারা বাংলাদেশের জনগণের উপকার করতে আসছে।

অথচ ঐ এনজিওগুলো যে ইউএসজিএলসি চালাচ্ছে, তারা কিন্তু বলছে ভিন্ন কথা। তাদের ওয়েবসাইটে ঢুকলে দেখবেন তারা বলছে, মার্কিন ক্ষমতা শক্তিশালী করতে বিশেষ পলিসি বাস্তবায়ন করা তাদের মূল উদ্দেশ্য। (http://www.usglc.org/about-us/)

আবার মানুষ হলো দুই ধরনের-

এক প্রকার হলো idealist বা আদর্শবাদী। এ ধরনের মানুষ সব কিছু আদর্শের চোখ দিয়ে দেখে। মার্কিন এনজিও এসেছে তারা তো ভালো কাজ করতেই এসেছে”- idealist দের চিন্তা ভাবনাগুলো এধরনের। অধিকাংশ মানুষ এভাবেই চিন্তা করে। এ কারণেই অধিকাংশ মানুষকে ধোকা দেয়া সম্ভব।

আরেক শ্রেণী হলো realist বা বাস্তবমুখী। এরা বাস্তব ও পক্ষবিপক্ষ চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেয়। এ ধরনের মানুষের সংখ্যা কম এবং তাদের দেখলে idealist রা বলে, “আপনারা সব কিছুর মধ্যে খারাপ খুজেন”।

 সত্যি বলতে, এখন আমাদের একঝাক realist বা বাস্তবমুখী লোক দরকার যারা সব কিছু বাস্তবতার ভিত্তিকে চিন্তা করবে। আমার কভার ফটোটা দেখুন, একটা ইদুর ঝুলে আছে উল্টাভাবে। এই উল্টোভাবে ঝুলে থাকার একটা মিনিং আছে। উল্টোভাবে ঝুলে থাকার সুবিধাটা হলো, যারা উল্টাভাবে কথা বলছে, তাদের উল্টাটা সে সোজা করে দেখছে বা তার কাছে ধরা পড়ছে।

এনালিস্টতৈরীর ক্লাসে এ ব্যাপারগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

 

 

 

 

 

 

# গত এক সপ্তাহের খবর :

 

১) সিলেটে ধানে ব্লাস্ট রোগ, ব্যাপক ফসলহানীর আশঙ্কা :https://bit.ly/2qyPsw2

 

২) জামালপুরে ধানে ব্লাস্ট রোগ, ধান বিক্রি হচ্ছে খড় হিসেবে :https://bit.ly/2EOJ4EX

 

৩) গোপালগঞ্জে ব্লাস্ট রোগ, ফসল বিপর্যয়ের আশঙ্কায় কৃষক :https://bit.ly/2qzNThk

 

৪) খুলনা, বাগেরহাট ও নড়াইলে ব্লাস্ট রোগ:https://bit.ly/2HzNMcN

 

৫) লালমনিরহাটে ধানে ব্লাস্ট মহামারি :https://bit.ly/2GZwUzk

 

৬) ময়মনসিংহে ধানে ব্লাস্ট রোগ, দিশেহারা কৃষক :https://bit.ly/2qxDD8s

 

৭) সুনামগঞ্জে ধানে ব্লাস্ট রোগ আক্রান্তে আতংকিত কৃষক :https://bit.ly/2JMtBJn

 

৮) সাতক্ষীরায় ব্লাস্ট রোগে দিশেহারা কৃষক :https://bit.ly/2HmIxzA

 

৯) যশোরে ব্লাস্টে ধানে বিপর্যয় : https://bit.ly/2qA0Wi5

 

১০) চাঁদপুরে ইরি-বোরো ধানের ক্ষেত নেক ব্লাস্ট রোগে :https://bit.ly/2HDc4mr

 

১১) মৌলভীবাজার জেলায় ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ :https://bit.ly/2H1ufF0

 

১২) ঝিনাইদহে ব্লাস্ট রোগে সর্বস্বান্ত বোরোচাষি :https://bit.ly/2H3Y2wT

 

১৩) বগুড়ায় ব্লাস্ট রোগ : https://bit.ly/2ITr1jx

 

ধানের ব্লাস্ট রোগ খুবই ভয়ঙ্কর এবং দ্রুত ছড়িয়ে পরা এক রোগ। এতে আক্রান্ত ফসলের ৮০-১০০% পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

 

কিভাবে হঠাৎ ছড়িয়ে পড়লো এই ব্লাস্ট রোগ ?

 

সুনামগঞ্জে হাওর এলাকার কৃষকরা জানিয়েছে, গত বছর বন্যায় হাওরের ফসল নষ্ট হয়ে যায়। এতে তারা বীজ সংরক্ষণ করতে পারেনি। সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া ফ্রি বীজ লাগানোর পরই শুরু হয় ব্লাস্ট রোগ। (https://bit.ly/2H1yLUe)

 

গত দুই-তিন বছর ধরে বাংলাদেশে শুরু হয়েছে এই ব্লাস্ট রোগ। কিন্তু এ বছর তা ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে ।

 

এই ব্লাস্ট রোগ কোথা থেকে এলো ? কিভাবে এলো ?

 

এই রোগ প্রথম দেখা যায় ব্রাজিলে ১৯৮৫ সালে। বাংলাদেশের কৃষিবিজ্ঞানীদের মতে, একটি বীজ অামদানীকারক কোম্পানির মাধ্যমে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আনা গম বীজের মাধ্যমে এ রোগটি বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। (https://bit.ly/2vn6h1w)

 

কি কারণে বাংলাদেশের ধানের মড়ক ঘটানো হতে পারে ?

 

আমার আশঙ্কা : ১৯৮৫ সালে ব্রাজিলে এই ব্লাস্ট রোগের কারণে ব্যাপক ফসলহানী ঘটতে থাকে। কৃষকরা হয়ে পড়েছে দিশেহারা। কৃষকের এই হতাশাকে পূজি করে ১৯৯৫-৯৬ এর দিকে দেশটিতে জিএমও প্রবেশ করায় বহুজাতিক কর্পোরেট কোম্পানিগুলো। বর্তমানে ব্রাজিল পৃথিবীর বৃহত্তম জিএমও উৎপাদক।

 

একইভাবে এবার বাংলাদেশের কৃষিখাতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই রোগ ছড়িয়ে দেয়া হতে পারে। এবং তা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় করা হতে পারে। এই রোগের ব্যাপক বিস্তারে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়বে এবং সেই সুযোগে জিএমও বা গোল্ডেন রাইস অফার করা হবে। বলা হবে “গোল্ডেন রাইসে কোন রোগ হয় না।আর এই সুযোগে বাংলাদেশের কৃষি সেক্টর চলে যাবে বহুজাতিক কর্পোরেটদের দখলে। জিএমও বীজ বিক্রি করে বহুজাতিক কর্পোরেটরা ব্যবসা করবে, আর সেই চাল খেয়ে জনগণের মধ্যে ক্যান্সার বাড়বে, তখন ক্যান্সার চিকিৎসার মাধ্যমেও তারা টাকা কামাতে পারবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

# জিএমও বা জেনেটিকালি মোডিফাইডি ফুড নিয়ে অনেক আলোচনা করেছি।

কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ কি কি জিএমও ফুড ইতিমধ্যে খাচ্ছে বা খুব শিঘ্রই বাংলাদেশে আসছে সেটা নিয়ে এখনও আলোচনা করি নাই, এ পোস্ট এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবো।

 

১) বেগুন : প্রথমে বাংলাদেশে জিএমও ফুড যেটা প্রবেশ করেছে সেটা হলো বিটি বেগুন। ২০১৩ সালে সেটা প্রবেশ করে। অনেকে হয়ত ভাবতে পারেন, জিএমও ফুড মনে হয় দেখতে ব্যতিক্রম কিছু। না ! জিএমও ফুডে ফসলের বীজের জিনের ভেতর পরিবর্তণ করা হয়। আপনি যখন সবজী কিনতে যান, তখন নিশ্চয়ই সবজীওয়ালাকে জিজ্ঞেস করেন না, “এটা জিএমও কি না ?” আর যদি করেনও তবে সেটা সবজীওয়ালা কেন, খোদ কৃষক পর্যন্ত জানে কিনা তাতে সন্দেহ। জিএমও ফসল অন্য ফসলের থেকে সুন্দর ও সতেজ হয়। সুতরং সে ফসলটাই বরং আপনি সবজীর বা খাবারের দোকানে গিয়ে আগে ক্রয় করেন।

 

২) তেলাপিয়া মাছ: বাংলাদেশে কয়েক বছর যাবত জেনেটিকাল মোটিফাইড তেলাপিয়া চাষ হচ্ছে । এগুলো দেখতে বড় । (http://bit.ly/2GNe8I6) কয়েকটি সূত্র মতে, এগুলো সম্ভবত বাজারে মনোসেক্স তেলাপিয়া নামে পরিচিত।

 

৩) সয়াবিন তেল: বাংলাদেশের সয়াবিন তেলের বেশিরভাগ আমদানি করা হয় ব্রাজিল থেকে। আর ব্রাজিলের সয়াবিনের পুরোটাই জিমএমও।

 

৪) সাদা চিনি : এগুলো আখ নয়, বীট থেকে উৎপাদিত। বীটগুলো জিএমও, আমদানি করা হয় ব্রাজিল থেকে। তবে ব্রাজিল থেকে আমদানি হোক বা ভারত থেকে আনা হোক, এটা সাদা বা পরিষ্কার করতে যে উপাদান ব্যবহার করা হয় তা ক্যান্সারের জন্যা দায়ী। বিশ্বব্যাপী সাদা চিনিকে ক্যান্সার তৈরীর অন্যতম কারণ হিসেবে গন্য করা হয়।

 

৫) গম ও ভূট্টা : যদি আমদানিকৃত হয়, তবে জিএমও হওয়ার সম্ভবতা ১০০%।

 

৬) আলু : জিএমও আলু এখনও বাজারে আসে না। তবে খুব শিঘ্রই তা বাজারে আনার জন্য চেষ্টা করছে সরকার। এ আলুর নাম থ্রি আর জিন আলু বা লেট ব্রাইট রেজিসট্যান্টন পটেটো। খুব শিঘ্রই বাংলাদেশের আলুর মধ্যে ঢুকে যাবে জিএমও আলু। (http://bit.ly/2GJngx7)

 

৭) ক্যানোলার তেল : এটা এক ধরনের সরিষার তেল। বাংলাদেশের সরিষার তেল হয় কালচে, কিন্তু ক্যানোলার তেল হয় স্বচ্ছ্ব। ক্যানোলার তেল জিএমও, চাষ হয় প্রধানত কানাডায়। এটি বাংলাদেশে চাষ করার জন্য কানাডার একটি প্রতিনিধি দল বেশ কয়েক বছর যাবত চেষ্টা করেছে। ২০০৬ সালে তারা কানাডা হাইকমিশনের উদ্যোগে বাংলাদেশে সেমিনারের আযোজন করে। (http://bit.ly/2psh5pb) কিন্তু বাংলাদেশ আবহাওয়ায় এটা চাষ করা যায় না। তবে তারা এখন ঐ তেলটি বাংলাদেশে আমদানি করতে চাইছে। এজন্য ট্যাক্স কমানোর জন্য আবেদনও করেছে। (http://bit.ly/2FXZxrW)

 

৮) গোল্ডেন রাইস বা ভিটামিন এ সমৃদ্ধ চাল : এ চাল ২০১৮ সালের মধ্যে বাংলাদেশের বাজারে আসবে। সম্ভবত প্রাণ কোম্পানির মাধ্যমে এ চালটি প্রথমে মার্কেটে আসতে পারে। গত ৬ই মার্চ, ২০১৮ তারিখে কৃষিমন্ত্রী গোল্ডেন রাইস আসার ব্যাপারে ঘোষণা দিয়েছে। (http://bit.ly/2FOb1lU)

 

জিএমও থেকে বাচতে কি করবেন ?

প্রথমত, কৃষকদেরকে জিএমওর বিরুদ্ধে সচেতন হতে হবে। তাদের কিছুতেই জিএমও বীজ নিতে দেয়া যাবে না। হাইতিতে কৃষকরা ৬০ হাজার বস্তা জিএমও বীজ জ্বালিয়ে দিয়ে জিএমওর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে। (http://bit.ly/2FUOq2R) বাংলাদেশে কৃষকদেরও এভাবে প্রতিবাদী হতে হবে।

 

দ্বিতীয়ত, শুধু কৃষক নয়, সকল জনগণ এর বিরুদ্ধে গণহারে প্রতিবাদ করুন। সেমিনার করুন, লেখালেখি করুন। বলুন আমরা জিএমও খাবো না। আমরা ক্যান্সারের বাসা হবো না। আমার শরীর নিয়ে ক্যান্সার ব্যবসা বন্ধ করো।

 

তৃতীয়ত, দেশীবীজগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ নিতে হবে। সেগুলো যেন জিএমওর সাথে মিক্স না হয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

 

চর্তুথত, বিদেশী খাবার এড়িয়ে চলবেন। দেশী ফসল, ফলের উপর জোর দেবেন।

 

পঞ্চমত, কর্পোরেটদের জিএমও প্রযুক্তি ছাড়া দুনিয়াতে কি আর কোন সমাধান নেই ? অবশ্যই আছে। জৈব/অর্গানিক সিস্টেমে কিভাবে কৃষি ক্ষেত্রে সৃষ্ট সমস্যার (কীট/আগাছা/সার) সমাধান করা যায় সে চেষ্টা করতে হবে, গবেষণা বৃদ্ধি করতে হবে। মনে রাখবেন, তারাই এতদিন কৃষককে কীটনাশকে অভ্যস্ত করেছে, এখন তারাই কীটনাশক থেকে বাচতে জিএমও অফার করছে। তাদের খপ্পর থেকে বাচতে তাদের সবকিছু বর্জন করা ছাড়া উপায় নেই। এজন্য পুনরায় আদি পদ্ধতি বা অর্গানিক ফুডের দিকে সবাইকে যেতে হবে।

 

 

 

 

# ক্যান্সার কি আদৌ কোন অসুখ ? নাকি ঔষধ কোম্পানিগুলোর ব্যবসার ফাঁদ ?--এ প্রশ্নের উত্তর দিতে , বই লিখেছিলো জি. এডওয়ার্ড গ্রিফিন । তার বইয়ের নাম ওয়ার্ল্ড উইদাউট ক্যান্সার’। বইটির ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাওয়া সত্ত্বেও বইটি অন্য ভাষায় অনুবাদ করতে দেওয়া হয়নি। কারণ বইটিতে তিনি ক্যান্সার নিয়ে ব্যবসা না করে বরং বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতিকে উৎসাহিত করতে বলেছেন। বইয়ে তিনি বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ক্যান্সার নিয়ে ব্যবসা শুরু হয় ব্যাপক আকারে। আর একে পুঁজি করে পশ্চিমা ওষুধ কম্পানিগুলো প্রচুর পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। সুতরাং একে একটি ব্যবসার পুঁজিও বলা যায়। (http://bit.ly/2HOfMbu)

 

উপরের তথ্য থেকে এটা অনুধাবনযোগ্য- ক্যান্সার নামক রোগকে পূজি করে বিরাট ব্যবসা করে নিচ্ছে ঔষধ কোম্পানিগুলো। ক্যান্সারের চিকিৎসাদানের নামে কেমোথেরাপি বা রেডিয়েশনের নামে তুলে নেয়া হচ্ছে মোটা অর্থ। উল্লেখ্য বর্তমান বিশ্বে ঔষধ কোম্পানিগুলোর ৮০% নিয়ন্ত্রণ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রকফেলার পরিবার এবং ক্যান্সার চিকিৎসাও তাদের নিয়ন্ত্রণে।

(http://bit.ly/2HNHoO2,

http://bit.ly/2fDbSYd,

http://bit.ly/1K0llBC,

http://bit.ly/2FO9KeC)

 

গত কিছুদিন আগে বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছে, “আমাদেরকে জিএমও ফসলের দিকেই যেতে হবে।

(http://bit.ly/2u3NlUV)

 

মতিয়া চৌধুরীর কথার প্রেক্ষিতে একটা কথা বলতে হয়, বাংলাদেশকে কেন জিএমওর দিকেই যেতে হবে ? শত-সহস্র বছর ধরে এ অঞ্চলের মানুষ জিএমও ফসল খায় নাই বলে কি তারা না খেয়ে মারা গেছে ? তাহলে হঠাৎ করে কেন জিএমও নাম আসতেছে ?

 

বিজ্ঞানীরা জিএমও ফসলের সাথে ক্যান্সারের সম্পর্ক বেরে করেছেন বেশ কয়েক বছর আগেই।

(এটা পড়তে পারেন-http://bit.ly/2prwuGe)।

 

জিএমও যে ক্যান্সারের জন্য দায়ী, এটা নিয়ে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. এ ফয়েজ এম জামাল উদ্দিন একটা আর্টিকেল লিখেছিলেন। আর্টিকেলের শিরোনাম ছিলো:

জিএমও শস্যকে 'না' বলুন : জিএম খাদ্য খেলে ব্রেস্ট, প্রোস্টেট এবং কোলন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়

আর্টিকেলটিতে বলা হয়- “গবেষণায় প্রতীয়মান হয়েছে যে, জিএম ফসলের অন্য জীব থেকে ঢোকানো জেনেটিক ইনফরমেশন, মানুষের স্টোমাক ও ইনস্টেস্টাইনের মাধমে হজম হতে পারে না বা কখনো কখনো রক্তের মাধ্যমে সাধারণ ডিএনএ সাথে মিশে যেতে পারে। আচরণের পরিবর্তন আনে। এর ফলে ব্রেস্ট ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার এবং কোলন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ ভাগ বেড়ে যায়। এছাড়া সেক্স ক্রোমোজোমে প্রভাব ফেলতে পারে, এতে সেক্স ইনফার্টিলিটি বা বন্ধাত্মতা দেখা দিতে পারে। আমাদের দেশে অতি সমপ্রতি ক্যান্সার প্রবণতা বেড়ে গেছে। এর পেছনে পরিবেশ দূষণ, অপরিকল্পিতভাবে রাসায়নিক সার, রোগ ও কীটনাশকের অপব্যবহার এবং পানি সরাসরি দায়ী। আর তার সাথে যুক্ত হয়েছে জিএম খাবার।

প্রশ্ন আসতে পাবে ক্যান্সার কেন হয়? আসলে কোনো কারণে যদি দেহের ডিএনএ অর্থাৎ নিউক্লিওটাইড সিকুয়েন্সের কোনো এক বা একাধিক নিউক্লিওটাইডের মিউটেশনে ঘটে গেলে, ওই ডিএনএ খুব দ্রুত অস্বাভাবিক ক্যান্সার সেল তৈরি করতে থাকে। মানুষের দেহের ইমিওন সিস্টেমে ক্যান্সার সেলগুলোকে শনাক্ত করে এবং কোনো প্রকার ক্ষতি ছাড়াই ধ্বংস করে দেয়। কিন্তু যদি দেহের ইমিওন সিস্টেম দুর্বল হয় বা ক্যান্সার সেল সংখ্যায় বেশি হলে তখন খুব দ্রুত ক্যান্সার বাড়তে থাকে। আর এ ধরনের মিউটেশন সাধারণত বিষাক্ত টক্সিক রাসায়নিক পদার্থ, বিভিন্ন প্রকার রেডিয়েশন (এক্সরে, অতিবেগুনী-রে) এবং বায়োলজিক্যাল কারণে। আর এ বায়োলজিক্যাল কারণগুলোর মধ্যে প্রধান হচ্ছে জিএমও ।” (http://bit.ly/2FMOVAa)

 

যারা জিএমও’র পক্ষে বলে, তাদের প্র্রধানযুক্তি হলো, “আমেরিকার মানুষ জিএমও খায়। তারা কি মরে গেছে ?”

 

উত্তর হবে : অবশ্যই তাদের ক্ষতি হয়েছে । খবর নিয়ে দেখুন: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বহু লোক ক্যান্সারে আক্রান্ত। ২০১২ সালে দেশটিতে নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে ১৬ লক্ষ লোক এবং মারা গেছে ৬ লক্ষ। ২০১০ সালে তাদের সরকারিভাবে ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যয় ছিলো ১২৫ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২০ এ বৃদ্ধি পেয়ে ১৫৬ বিলিয়ন ডলার হবে

(http://bit.ly/2iTYNrX)।

 

আর্জেন্টিনায় যেসব এলাকায় জিএমও’র ফসলের চাষ হয় তার চর্তুপাশে ক্যান্সার আক্রান্তের হার দ্বিগুন (http://bit.ly/1pej0ny)

 

বলাবাহুল্য এই জিএমও বিশেষ করে গোল্ডেন রাইসের পেছনেও কিন্তু রয়েছে এই রকফেলার পরিবারের ইনভেস্ট। ((http://bit.ly/2pqWuBv, goo.gl/GnYdQk))

 

তারমানে কি সমীকরণ মিলিয়ে বলা যায় না, বাংলাদেশে জিএমও আনার মধ্যে অন্যতম কারণ হচ্ছে, যেন মানুষের ক্যান্সার বৃদ্ধি পায়। আর ক্যান্সার বৃদ্ধি পেলে মানুষ ব্যয়বহুল ক্যান্সারের চিকিৎসা গ্রহণ করবে। জিএমওর পেছনে রয়েছে রকফেলার পরিবার এবং ক্যান্সারের চিকিৎসার পেছনে রয়েছে রকফেলার পরিবার। মানে তারা সাপ হয়ে দংশন করছে, আর ওঝা হয়ে ছাড়বে। বাংলাদেশে ক্যান্সার যত বাড়বে, রকফেলার পরিবারের ক্যান্সারের ওষুধ তত বিক্রি হবে। এখানে পুরো প্ল্যান বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বাংলাদেশের দুর্নীতিবাজ সরকারের মাধ্যমে। তারা ইহুদীবাদী কর্পোরেটদের থেকে টাকা খেয়ে পুরো জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছে।

 

একটি কথা সত্যিই আমাকে ভাবিয়ে তুলেছে, ২০১৪-১৫ সালে যখন বাংলাদেশে জিএমও বিটি বেগুন প্রবেশ করে তখন কিন্তু তার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে অনেক আন্দোলন ও লেখালেখি হয়েছিলো। কিন্তু এখণ প্রায় প্রতিদিন জিএমও গোল্ডেন রাইসের পক্ষে বক্তৃতা দিচ্ছে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। গত ৬ই মার্চ, ২০১৮ তারিখে গোল্ডেন রাইস নিয়ে এক অনুষ্ঠানে মতিয়া চৌধুরী বলেছে, তারা জিএমও ফসল আনবেই। (http://bit.ly/2FOb1lU)

 

অথচ বেগুনের থেকে চাল অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বেগুন মানুষ কতটুকু খায় ? না খেলেও চলে। কিন্তু চাল তো মানুষকে খেতেই হবে। ফলে চালের ইমপ্যাক্ট অনেক বেশি ভয়ঙ্কর। কিন্তু চালের বিরুদ্ধে ঐ গ্রুপটি আর লেখালেখি করছে না কেন ?

 

এর একটি কারণ হতে পারে, যারা বিটি বেগুনের বিরোধীতা করেছিলো তারা ছিলো মূলত ছিলো চীনপন্থী। হয়ত ঐ গ্রুপটিকে টাকা দিয়ে মেনেজ করে ফেলেছে জিএমও কর্পোরেটরা। আবার আরেকটি কারণ হতে পারে, ঐ সময় বিটি বেগুন বিরোধী গ্রুপটির নেতৃত্ব দিয়েছিলো ফরহাদ মাজহার। আমরা জানি কিছুদিন পূর্বে ফরহাদ মাজহারকে অজ্ঞাত কারণে গুম করা হয়েছিলো। এমনও তো পারে, ফরহাদ মাজহারকে গুম করে এমন শর্ত দিয়ে ছাড়া হয়েছে হয়েছে, “আমরা খুব শিঘ্রই চালের মধ্যে জিএমও করবো, তখন তুমি চুপ থাকবা, কোন বিরোধীতা করতে পারবে না।

 

 

 

 

 

 

 

১) গত ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৭ তারিখে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছে,“পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জিএম ফসলের চাষ হচ্ছে। জিএম ফসল কোথাও কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে তা জানা যায় নি। আমাদের অধিক জনসংখ্যার খাদ্য ঘাটতি মোকাবেলায় জিএম ফসলের দিকে যেতে হবে।” (http://bit.ly/2pilE5i)

২) গত ১১মার্চ, ২০১৮ তারিখে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলে, “অজ্ঞানেরাই সবচেয়ে বেশি বিজ্ঞানের বিরোধিতা করে। একসময় ওরা নয়া কৃষির নামে হাইব্রিডের বিরোধিতা করেছিল। এখন জিএমও নিয়ে কথা তুলছে। ওরা মনে করে আমরা দেশকে ভালবাসিনা। ওরাই দেশকে ভালবাসে। মার থেকে মাসির দরদ বেশি হলে তাকে ডাইনি বলে।” (http://bit.ly/2p6P1s1) উল্লেখ্য, নতুন কৃষিনীতি -২০১৮ এর খসড়ায় জিএমও প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়টিকে বৈধ করা হয়েছে।

৩) ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাস, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ৫ লাখ ৪১ হাজার ২০১ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে ৫৮ কোটি ৭৭ লাখ ১৯ হাজার ৩১৫ টাকার বীজ ও রাসায়নিক সার দেয়ার ঘোষণা দেয়। এই বীজের মধ্যে জিএমও ফুড বা বিটি বেগুনও আছে। (http://bit.ly/2eWG2bb)

৪) ২০১৮ সালে বাংলাদেশের বাজারে আসছে জিএমও গোল্ডেন রাইস। (goo.gl/HKQSi8)।

তারমানে বোঝা যাচ্ছে, আওয়ামী সরকার বাংলাদেশে জিএমও আনার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। কিন্তু কেন ?

আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, জিএমও চাষ মানে বাংলাদেশের কৃষি সেক্টরকে ইহুদীবাদী কর্পোরেটদের কাছে বিক্রি করে দেয়া। আমার আজকের এ পোস্ট জিএমও চাষ করলে কিভাবে কৃষি সেক্টর বিক্রি করে দেয়া হয়, তার ব্যাখ্যা নিয়ে।

জিএমও –এর বিষয়টা সহজে বুঝানোর জন্য আমি ট্যাক্সবা করসিস্টেমটা নিয়ে আসছি। যেমন ধরুন, আমরা আগে যেকোন স্থান থেকে যে কোন কিছু কিনতে পারতাম, বিক্রি করতে পারতাম, যাতায়াত করতে পারতাম, খাদ্য খেতে পারতাম। এজন্য মূল্ খরচের বাইরে কাউকে কিছু দিতে হতো না। কিন্তু ধিরে ধিরে ট্যাক্স বা কর নিয়ে আসা হলো। এখন আপনি কোন কিছু কিনলে আলাদা করে নির্দ্দিষ্ট এ্যামাউন্টের ট্যাক্স বা ভ্যাট দিতে হয়। কিছু বিক্রি করতে গেলে ট্যাক্স দিতে হয়। খাবার খেতে গেলে ১৫% ভ্যাট দিতে হয়, দোকান থেকে কিনতে গেলে ভ্যাট দিতে হয়। এভাবে দশ যায়গায় আপনার থেকে ট্যাক্স বা ভ্যাট আদায় করা হচ্ছে। জিএমও প্রযুক্তিটা হচ্ছে সেরকম। এটা ব্যবহার করলে একজন কৃষক আর স্বাভাবিক উপায়ে সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে পারবে না। তাকে ধাপে ধাপে আটকে রাখবে ইহুদীবাদী কর্পোরেটরা। তাদেরকে টাকা দিয়ে নতুন সিস্টেম নিয়ে কাজ করতে হবে। উল্লেখ্য গত কয়েক বছর আগে ভারতে জিএমও বিটি তুলা চাষের কারণে বার বার খরচ করতে করতে ঋণ জর্জরিত হয়ে প্রায় ২ লক্ষ ২৭ হাজার কৃষক আত্মহত্যা করেছিলো (http://bit.ly/2HIQrzS )।

জিএমও’র প্রথম লোভনীয় ধাপ হচ্ছে- রাউন্ড আপ রেডিফসল

এ ফসলের বিজ্ঞাপনে বলা হয়- জিএমও প্রযুক্তিতে যেহেতু উদ্ভিদ নিজের অভ্যন্তরেই কীটনাশক উৎপাদন করবে, তাই আলাদাভাবে কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন পড়বে না। আর তাতে কৃষকের উৎপাদন খরচ কমে আসবে, লাভবান হবেন কৃষক। একইসাথে বলা হয়, জিএমও প্রযুক্তির ফসল আগাছানাশক। জিএমও প্রযুক্তি ব্যবহারে আগাছা দমন হবে।

এটা ঠিক প্রথম কয়েক বছর পোকার আক্রমণ ও আগাছা কম থাকে। কিন্তু কয়েক বছর থেকে ব্যতিক্রম দেখা যায়। আগাছা ও কীটের পরিমাণ বহুগুন বেড়ে যায়, ফলে কীটনাশন ও আগাছানাশকের পরিমানও বহুগুন বৃদ্ধি করতে হয়। এবং সেগুলো কিনতে হবে ঐ নির্দ্দিষ্ট বহুজাতিক কোম্পানির কাছ থেকেই, কারণ তারাই কেবল জানে, কোন কীটনাশক ও আগাছানাশক কাজ করবে ? (সম্পূর্ণ জানতে- http://bit.ly/2IxI0bN )

আবার ‘টার্মিনেটর প্রযুক্তিতে জেনেটিকাল মোডিফিকেশণ করে বীজ এমনভাবে আটকে দেয়া হয়, যেন ঐ ফসল থেকে কৃষক নতুন বীজ না পায়। এই বীজ ব্যবহারের একটা পর্যায়ে কৃষক বলবে- কি বীজ দিলেন, এখান থেকে নতুন বীজ পাওয়া যায় না।

তখন কৃষককে বলা হবে- ‘ভার্মিনেটর প্রযুক্তিনেয়ার জন্য। এটা এমন এক রাসায়নিক, যা ব্যবহার করলে বীজের বন্ধাত্ব কাটে। কিন্তু এটা নিতে হবে ঐ নির্দ্দিষ্ট কোম্পানির থেকেই। এ প্রযুক্তিতে উদ্ভিদ জীবনের মূল ঘটনাগুলো নিয়ন্ত্রিত হবে রাসায়ানিক ব্যবহারে। যেমন অঙ্কুরোদগম, পাতা গজানো, ফুল ফোটানো, ফল পাঁকানো সহ যাবতীয় সবকিছুই নিয়ন্ত্রিত হবে ভার্মিনেটর প্রযুক্তিতে। ততদিনে কৃষকের উৎপাদিত শষ্য স্তরে স্তরে আটকে থাকবে! ধাপে ফুল আসবে, কিন্তু দানা আসবে না। আসবে যখন ওদের থেকে কেনা সার দিবেন। আপনি বীজ সংগ্রহ করবেন, কিন্তু বীজ থেকে ধান গাছ হবে না, হবে যখন আপনি তাদের দেয়া রাসায়নিক দেবেন। অর্থ্যাৎ টার্মিনেটর আর ভার্মিনেটর প্রযুক্তির যাঁতাকলে পিষ্ট হবে কৃষি, কৃষক, খাদ্য নিরাপত্তা, প্রকৃতি। খাদ্যের দাম বাড়বে বহুগুন। তৈরী হবে মনোপোলি বিজনেস।

কৃষককে যদি ৩-৪ বার জিএমও প্রযুক্তি ব্যবহার করানো যায়, তবে আগের জমানো বীজও নষ্ট হয়ে যাবে, তখন বাংলাদেশের পুরো কৃষি সেক্টর ইহুদীবাদী কর্পোরেট কোম্পানির কাছে আটকে থাকবে। ওরা চাইবে তো ফসল হবে, ওরা চাইবে তো ফসল হবে না। আর পুরো সিস্টেম ওদের প্রযুক্তির কাছে আটকে থাকার কারণে কৃষককে বার বার ওদের টাকা দিয়ে ফসলে দেখা পেতে হবে।

বর্তমানে যে যে ফসলগুলোতে সরকার জিএমও আনছে বা আনতে চাইছে- ধান, আলু, গম, বেগুন, তুলা, সরিষার তেল।

ব্রিটিশ আমলে এ অঞ্চলে নীল চাষের কথা আপনাদের মনে থাকার কথা। এ অঞ্চলের কৃষকদের ঐ সময় নীল চাষে বাধ্য করতো ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মূলে ছিলো ইহুদীবাদী রথচাইল্ড ফ্যামিলি (http://bit.ly/2FI5ayd )। আর বর্তমানে জিএমও প্রযুক্তির মুলে রয়েছে ইহুদীবাদী রকফেলার ফ্যামিলী (http://bit.ly/2HIUSus )।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য বিদেশীদের কাছে বিভিন্ন সম্পদ বিক্রি করে দিচ্ছে। আর বাংলাদেশের মানুষকে বিদেশীদের থেকে সেটা উচ্চমূলে কিনে নিতে হচ্ছে। যেমন- বাংলাদেশে প্রচুর গ্যাস আছে, কিন্তু বিদেশী কোম্পানির কাছে সেই গ্যাস ফিল্ডগুলো দিয়ে তাদের থেকে উচ্চমূল্যে গ্যাস কিনতে হচ্ছে। ঠিক একইভাবে বাংলাদেশের কৃষি সেক্টরটাও সরকার বিদেশীদের কাছে বিক্রি করে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। জিএমও প্রযুক্তি হচ্ছে সেই বিক্রির চূড়ান্ত দলিল।

 

 

 

 

 

 

# টিভিতে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, স্বচ্ছ সয়াবিন তেল। এত স্বচ্ছ আপনি বাপের জন্মেও দেখেননি। স্বচ্ছ সয়াবিন তেলের মধ্যে খারাপ কিছু আছে, সেটাও আপনার মনে আসতে পারে না। একইভাবে সাদা চিনি, এত ফ্রেস, দেখতেই ভালো লাগে। বর্তমানে তীর, ফ্রেশ, প্রাণ বিভিন্ন কোম্পানি এসব স্বচ্ছ তেল ও সাদা চিনি বাজারজাত করছে। কিন্তু কথা হলো এই সয়াবিন তেল ও সাদা চিনি আসছে কোথা থেকে ?

 

প্রথম কথা হচ্ছে, সয়াবিন তেল ও সাদা চিনি কোনটাই বাংলাদেশী পন্য নয়। দুটো দক্ষিণ আমেরিকান রাষ্ট্র ব্রাজিল থেকে আমদানি করা হয়। সরকারী বা বেসরকারীভাবে প্রধানত এদেশটি থেকে এ খাদ্যপণ্য আমদানি করে। কখনও কখনও গমও আমাদানি করা হয় ব্রাজিল থেকে। (http://bit.ly/2G3l8yF)

 

এখন কথা হলো, ব্রাজিল থেকে আমদানি করলে সমস্যা কোথায় ?

 

সমস্যা হলো এই ফসলগুলো হচ্ছে জিএমও ফুড বা জেনেটিকাল মোডিফাইড ফুড।

 

যেমন, তথ্যসূত্র বলছে-

 

ব্রাজিলের মোট সয়াবিন উৎপাদনের ৯৬% হচ্ছে জিএমও (http://bit.ly/2nT61RK)

 

এবং

 

ব্রাজিলে এখন যে আখ চাষ হচ্ছে, তাও হচ্ছে জিএমও (http://reut.rs/2nVY6m0)

 

বাংলাদেশে এখন সম্ভবত সবচেয়ে বড় দুটি স্বাস্থ্য সমস্যা হচ্ছে গ্যাস্ট্রিক ও ডায়বেটিস।

 

ব্রাজিলের জিএমও সয়াবিন তেল ও সাদা চিনি সেবন করিয়ে বাংলাদেশের মানুষের উপর জীবানু অস্ত্র প্রয়োগ হচ্ছে নাকি, তা খতিয়ে দেখা জরুরী।

 

 

 

 

 

 

# প্রথমেই বলে রাখি, এ বছর (২০১৮ এর মার্চ) থেকে বাংলাদেশে গোল্ডেন রাইস বা ভিটামিন সমৃদ্ধ চাল বা জিএমও চালের বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন হওয়ার কথা রয়েছে। তাই আমার এ লেখা।(http://bit.ly/2DZvoYm)

 

যারা জিএমও ফুড বা জেনেটিকাল মোডিফাইড ফুড বা গোল্ডেন রাইসের পক্ষে, তাদের প্রধান যুক্তি হচ্ছে, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জিএমও ফুড চলছে। এটা যদি ক্ষতিকারক হতোই, তবে বিশ্বের উন্নত এ রাষ্ট্রটি এটি নিশ্চয়ই ব্যবহার করতো না।

 

এ প্রসঙ্গে বলতে হয়,

 

বিজ্ঞানিরা গবেষণা করে বের করেছে, জিএমও ফুডের কারণে স্থূলতা হয়। (http://bit.ly/2nH6t4D)

 

অপরদিকে, মার্কিন যু্ক্তরাষ্ট্রে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে স্থূলতার পরিমাণ ৭৪.১%। (http://bit.ly/1Sm99Qr)

 

তারমানে আমেরিকানরা যে জিএমও ফুড খেয়ে খুব ভালো আছে তা নয়, তাদের উপর ভর করেছে স্থূলতা নামক অভিশাপ। স্থূলতা বা অত্যধিক মোটা হওয়া যে কত ভয়ঙ্কর রোগ, যার না হয়েছে সে বুঝতে পারবে না। স্থূলদের জীনটাই অর্থহীন ও কষ্টকর হয়ে দাড়ায়। এমন কোন দূরারোগ্য ব্যধি নেই যেটাতে তারা আক্রান্ত হয় না।

 

তাই কেউ যদি দাবি করে, আমেরিকানরা জিএমও খায়, আমরা খেলে সমস্যা কোথায় ?

 

তাদের এ কথাটা আসলে অর্থহীন, কারণ আমেরিকানরা বিষ খেলে আমরা তো আর বিষ খেতে পারি না। তাই আসুন সবাই একযোগে জিএমও ফুড (গোল্ডেন রাইস, বিটি বেগুন) এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলি।

 

 

 

 

 

আমি বলবো সবচেয়ে বড় ভুল দুটি।

একটি বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর আগে পলিসিগত ভুল, যার খেসারত দিতে হয় বঙ্গবন্ধুর জীবন দিয়ে।

আরেকটি ভুল ‘কোটা বিরোধী আন্দোলন পিটুনী-আক্রমণ-গ্রেফতার দিয়ে দমন করার মাধ্যমে।

প্রথম ভুলে নেতা বঙ্গবন্ধুর জীবন দিয়েও ১৫ বছর পর হয়ত সম্মুখে আসতে পেরেছে আওয়ামীলীগ। কিন্তু দ্বিতীয় ভুল এমন এক ভুল, যার মাধ্যমে আওয়ামীলীগ নামক সংগঠনটিরই হয়ত অস্তিতই বিলীন হতে পারে।

কোটা বিরোধী আন্দোলনের মত একটি গণমানুষের আন্দোলনকে বিএনপি-জামায়াত ট্যাগ দিতে গিয়ে গণমানুষকেই আওয়ামীলীগ বিএনপি-জামায়াত তথা বিরোধী দল বানিয়ে দিয়েছে।

একটি রাজনৈতিক দল প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলকে যতটুকু ঘৃণা করে, এখন সাধারণ মানুষগুলো আওয়ামীলীগকে ততটুকু ঘৃণা করা শুরু করেছে। এ ঘটনার পর খোদ সাধারণ আওয়ামীলীগ-ছাত্রলীগের অনেকে দলটির প্রতি নৈতিক সমর্থন হারিয়েছে। হতে পারে আওয়ামীলীগ গায়ের জোরে হয়ত আর কিছুদিন ক্ষমতায় থাকবে, ব্যস এতটুকুই। কিন্তু সেটা বেশিদিন নয়, কারণ মানুষের নৈতিক সমর্থন হারিয়ে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকা যাবে না। আর একবার পতন হলেই আওয়ামীলীগনামটা চলে যাবে ইতিহাসের যাদুঘরে, এর বাইরে তার ও তার সদস্যের কোন অস্তিত্ব থাকবে না।

 

 

 

 

বাংলাদেশে এখন বাড়ির ছাদে ডিজে একটা কালচার হয়ে দাড়িয়েছে,

গায়ে হলুদ, বিয়ে, জন্মদিন, থার্টিফাস্টলাইট, গেট-টুগেদার, সাকরাইন, পহেলা বৈশাখ, ঈদ, পূজা নানান নাম দিয়ে বিভিন্ন বাড়ির ছাদে এই ডিজে পার্টির আয়োজন করা হয়। সন্ধা নাই, রাত নাই অবিরাম চলে এই পার্টি। রাত ৩টার সময় বাড়ির বিশাল ডেক সেট বাজিয়ে নেচে-গেয়ে এলাকা মাথায় তুলেছে তারা। হয়ত তাদের ধারণা রাত ৩টার সময় হয়ত পুরো এলাকায় তাদের সাথে নাচছে।

এসব অনৈতিকতাও যে মানুষের জন্য কষ্টদায়ক, সেটা বুঝাতে রাজধানী ঢাকার গোপীবাগের নাজিমুল ইসলাম নমের এক বৃদ্ধ। কিন্তু তাতেই ক্ষেপে গেছে ডিজে প্রজন্ম। পিটিয়ে হত্যা করেছে বৃদ্ধকে।

অবিলম্বের ছাদে এই ডিজে পার্টি বন্ধ হোক।

 

 

 

 

 

আজকে (২৫ মার্চ) বাংলাদেশ সময় রাত ৯:০০টা থেকে ৯:০১ মিনিটে সবার লাইট বন্ধ রাখতে বলেছে সরকার। সাথে সবাই করবে ১ মিনিট নিরবতা পালন।

১ মিনিট নিরবতা পালনকে ইংরেজীতে বলে Moment of silence। এই কালচারটা মূলত খ্রিস্টাদের উপসনালয় চার্চ ও ইহুদীদের উপসনালয় সিনাগগ থেকে আগত। খ্রিস্টানদের চার্চ ও ইহুদীদের সিনাগগে Silent prayer বা নিরবে প্রার্থনা বলে একটা ধর্মীয় রীতি আছে। ঐ কালচারটা সবার জন্য চালু করতে এই ১ মিনিট নিরবতা। তবে প্রথম দিকে এ কালচারটা শুধু কমনওয়েলথভূক্ত মানে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদীরা এক সময় যে দেশগুলো শাসন করেছে সেখানে (১ মিনিট নিরবতা কালচার) ছড়িয়ে দেয়া হয়। তারমানে ১ মিনিট নিরবতা পালন শুধু ইহুদী ও খ্রিস্টান ধর্মের কালচার বহন করে না, বরং বাংলাদেশ এক সময় ব্রিটিশদের অধীন ছিলো, এই গোলামির ইতিহাসও স্মরণ করিয়ে দেয়।

একইভাবে, ২৫শে মার্চ কালোরাতকে স্মরণ করতে যদি লাইট বন্ধ করতে হয়, তবে ঐ দিন গণহত্যাকে স্মরণ করতে তো আজকে গণহত্যাও চালাতে হবে। আসলে যে কোন কিছু স্মরণ করতে হয় যার যার অবস্থান থেকে। মানে আপনি একাত্তর সালকে স্মরণ করবেন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে, পাকিস্তানী বাহিনী হয়ে নয়। ২৫শে মার্চ কালোরাত্রী এনেছিলো পাকিস্তানীরা , বাংলাদেশীরা পুলিশ লাইন থেকে শুরু করে বিভিন্ন এলাকায় তার প্রতিরোধ গড়েছিলো। ২৫শে মার্চ যদি স্মরণ করতে হয়, তবে সেই প্রতিরোধের কথা স্মরণ করতে হবে। কিন্তু আপনি যদি পাকিস্তানীদের মত কালোরাত্রীকে নিয়ে আসেন, তবে সিস্টেমরা তো উল্টো হয়ে যাবে। মানে আপনি তো পাকিস্তানী গণহত্যাকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন।

আসলে আওয়ামী সরকার এখন মুক্তিযুদ্ধকে পূজি করে ব্যবসা চালাচ্ছে। তারা ধিরে ধিরে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনানামের সিস্টেম দাড় করিয়েছে, এরপর নিজেদের সে চেতনাভূক্ত দাবি করে অতিরিক্ত সুবিধা নেবে, আর বিরোধীদের তার বিরুদ্ধ দাবি করে শায়েস্তা করবে।

মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশীদের অহংকার। দয়া করে এর অপব্যবহার করবেন না, একে নিয়ে ব্যবসা করবেন না। মনে রাখবেন, মুক্তিযুদ্ধ-স্বাধীনতা নিয়ে ব্যবসা করলে তার ব্যবসায়ীর মূল্য তৈরী হবে, আর যা বাজারে উঠে তার নেতিবাচক হতেও সময় লাগে না। ইতিমধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে অবশ্যই মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবসায়ীক মূল্য তৈরী হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধার বর্তমান নাম হয়েছে সুবিধাবাদী, কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা কি আদৌ সুবিধা পাওয়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছিলো ? এটা কি মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা নয় ?

 

 

 

 

 

এটা তারা খুব ধুমধাম করে। যদিও তাদের ধর্মীয় কালচারের সাথে সাংঘর্ষিক, তবুও জাতীয় উৎসব দেখে তারা খুব গুরুত্ব দিয়ে পালন করে। নেচে গেয়ে ছেলে-মেয়ে এক সাথে আনন্দ করে তারা সেটা পালন করে। এ ভিডিওটা সম্ভবত জাপানে। জাপানে প্রবাসী সিরিয়ানরা তাদের জাতীয় কালচার ঠিকঠাক মত পালন করছে।

সিরিয়ায় যুদ্ধ শুরু হয় ২০১১ সালে। তাই এখন সেখানে তেমন অনুষ্ঠান পালনের ভিডিও দেখা যায় না। তবে যুদ্ধের আগে ২০০৯ সালে তাদের নববর্ষ পালনের ভিডিও পাওয়া যায় : https://youtu.be/neTzeFnR6ZA, https://youtu.be/T-NmqiR9qqc

আমার মনে হয়, বাংলাদেশীদের সিরিয়াবাসীদের থেকে শেখার অনেক কিছু আছে। আহ ! নববর্ষ পালনে কি শান্তি, কি সুখ, আন্দন্দ আর ধরে না। আজকে নববর্ষের দিনে বাংলাদেশীদেরও উচিত সিরিয়াবাসীর মত ধর্মীয় কালাকানুন ছুড়ে ফেলে জাতীয় উৎসব পালন করা। তাহলেই বাংলাদেশীরা আগামীতে সিরিয়ার মত সুখ-শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।

 

 

 

 

 

# গত কয়েকবছর ধরে পহেলা বৈশাখের বটমূলের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানটা ছিনতাই করতে চাইতেছে আওয়ামী লীগ। এজন্য রেজওয়ানা বন্যাকে দিয়ে ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পৃথক অনুষ্ঠান করাইতেছে। এ বছর সেই অনুষ্ঠান যেন আরো বড় হয়, সে জন্য আগে থেকেই রেহানা ও পুতুল গিয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছে। (https://bit.ly/2q5uKTl)

 

মার্কিনপন্থীদের সাথে আওয়ামীলীগের লড়াইটা বেশ আগে থেকেই। তবে নির্বাচন যত কাছে আসবে, দ্বন্দ্বটা তত স্পষ্ট হবে। সেক্ষেত্রে উভয় পক্ষই উভয় পক্ষের থেকে সুযোগ নিতে চাইবে। আসছে পহেলা বৈশাখে আওয়ামীলীগ-মার্কিনপন্থীদের দ্বন্দ্বে তাই নতুন কিছু ঘটে কি না, সেটা এখন দেখার বিষয়।

 

আপনাদের মনে থাকার কথা, কিছুদিন আগে একুশের টিভির সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন এক ফেবু স্ট্যাটাসে বলেছিলেন, গণজাগরণ মঞ্চের রাজীব হায়দার শোভন ওরফে থাবা বাবা মৃত্যুর একদিন আগেই একজন র‌্যাব কর্মকর্তা তাকে জানিয়েছিলেন, “আগামীকাল গণজাগরণ মঞ্চের একটা উইকেট পড়বে।” (https://bit.ly/2GAdqNs)

 

আবার কিছুদিন আগে মার্কিন কূটনীতিকের বাংলাদেশ সফরের মুহুর্তে মার্কিনপন্থী শিক্ষক জাফর ইকবালের উপর হামলা নিয়ে অনেকেই বলেছেন, সরকারই পরিস্থিতি ঘুড়িয়ে দিতে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।

 

সেদিক থেকে ক্যালকুলেশন করলে,

 

আগামী পহেলা বৈশাখেও যে, রমনার বটমূল বা বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে সাজানো বোমা হামলা হবে না, সেটা তো বলা যায় না। কারণ যে কোন গ্রুপ (আওয়ামীলীগ এবং মার্কিনপন্থী) ফলস ফ্ল্যাগ করে তার দিকে থেকে সুযোগ নিতে চাইবে। আর বলির পাঠা হবে সাধারণ জনগণ। আর ঘটনা শেষে অমুক-তমুক জঙ্গী সংগঠনের নাম দিলেই তো হলো, কে খোঁজ নিতে যাবে ? সেই অজুহাতে পহেলা বৈশাখ বিরোধী মুমিনদেরও সাইজ করা যাবে আবার নিজের গ্রুপের অবস্থান শক্ত করা যাবে।

 

সত্যিই দুনিয়াটা এখন চিটারের রাজ্য হয়ে গেছে। একটু চেতনাবাজি করবে, সেটার মধ্যেও চিটারি।

 

 

 

 

 

 

 

 

আসছে পহেলা বৈশাখে চারুকলার থেকে যে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হবে তার শ্লোগান হিসেবে দেয়া হয়েছে মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবিবাক্যটি। এ বাক্যটি দেহতত্ত্বে বিশ্বাস লালন বাউলের একটি গানের প্রথম লাইন, যার মূল অর্থ অত্যান্তু কুৎসিত ও বিকৃত যৌনাচারের আহবান।

পুরো গানটি হচ্ছে:

মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি ।

মানুষ ছাড়া খ্যাপা রে তুই মূল হারাবি ।।

এই মানুষে মানুষ গাঁথা

গাছে যেমন আলেক-লতা

জেনে শুনে মুড়াও মাথা

ও মন যাতে তরবি ।।

দ্বিদলের মৃণালে

সোনার মানুষ উজলে

মানুষগুরু নিষ্ঠা হলে

তবে জানতে পাবি ।।

এই মানুষ ছাড়া মন আমার

পড়বি রে তুই শূন্যাকার

লালন বলে মানুষ আকার

ভজলে তারে পাবি ।।

মূলত: বাউলদের প্রতিটি শব্দের আলাদা পরিভাষা থাকে, যা সাধারণ মানুষের সাথে মিলে না। এজন্য বাউল শব্দের অর্থগুলো ডিকশেনারী থেকে জানতে হয়। এ সম্পর্কে ড. আবদুল করিম মিঞা রচিত বাউল-লালন পরিভাষাবইটি কিনতে পারেন। (https://bit.ly/2GqhfbH) আসুন এ বইটির নিরিখে গানটির মূল অর্থ বের করি।

(১) গানের দ্বিতীয় লাইন রয়েছে মূলশব্দ। ড. আবদুল করিম মিঞা রচিত বাউল-লালন পরিভাষাবইতে রয়েছে- মূল অর্থ শুক্র’। বাউলরা যৌনতার সময় শুক্রকে ধরে রাখার সাধনা করে, এবং সেটিই আসলে বাউল সাধনা।

(২) এ গানে খ্যাপাশব্দের অর্থ বাউল-লালন পরিভাষাবইতে বলা আছে:

হিন্দু বাউলকে খ্যাপাবলা হয়। যারা ভগবানকে পাওয়ার জন্য দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়ায় তারাই খ্যাপা’। একতারা, পরিধেয় বস্ত্র আর সাধনসঙ্গিনীই এদের একমাত্র সঙ্গী। ভিক্ষালব্ধ অন্নই গ্রাসাচ্ছাদনের উপায়।

(৩) দ্বিদলে মৃণালে সোনার মানুষ উজলে।এই দ্বিদলে মৃণালেপদটিই এখানে সোনার মানুষশব্দটির অর্থ নির্দেশ করছে। এ প্রসঙ্গে বাউল-লালন পরিভাষাবইতে রয়েছে- দুই ভ্রু ও নাকের গোড়ার মধ্যে অবস্থিত জায়গার নাম দ্বিদল’। পতন্নোমুখ শুক্রকে কুম্ভক সাধনার মাধ্যমে সুষুম্না নাড়ির মধ্য দিয়ে ‘উর্ধগামীকরা হয়। এই উর্ধগামী শুক্রকে দ্বিদলে নিয়ে সাধক অসাধারণ পুলক অনুভব করে, এই পুলক অনুভবকেই বাউলরা সোনার মানুষবা অধর মানুষবলেছে।

(বইয়ের স্ক্রীনশট: http://bit.ly/2GtnlYY) - তথ্যগুলো সংগৃহিত ।

অর্থাৎ চারুকলার এবারের শ্লোগান “মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবিএর আসল অর্থ দাড়াচ্ছে সঙ্গীনির সাথে বিকৃত যৌনাচারের মাধ্যমে শুক্র ধরে রাখা শিখতে হবে।

বাউলদের এসব্ গানের মধ্যে যে বিকৃত যৌনতার আহবান আছে এটা যদি কেউ অস্বীকার করতে চান, তবে দয়া করে দুটো মুভি দেখে নেবেন।

ক) কসমিক্স সেক্স : https://youtu.be/a64dhbW7aA0

খ) ডিভাইন সেক্স : https://youtu.be/BA4-9wRHCqU

এছাড়া বাউলদের মুখে শুনুন তাদের সাধণার মূল তত্ত্ব কি : https://youtu.be/v8dZ9jmSb34

ভিডিওগুলো দেখলেই বুঝবেন বাউলের প্রতিটি কথার আড়ালে কিভাবে বিকৃত যৌনচার আহবান করা হচ্ছে, আর সেটাই এবার মঙ্গল শোভাযাত্রার শ্লোগান

 

 

 

 

 

 

 

 

পহেলা বৈশাখ ও মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে গত কয়েক বছরে আমার ৫০টি লেখার লিঙ্ক, সংগ্রহে রাখতে পারেন।

 

 

১) মঙ্গল শোভাযাত্রা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অনুষ্ঠান : https://bit.ly/2pYT4XO

২) মঙ্গল শোভাযাত্রায় পেচা, বাঘ, সিংহের মুখোশ ব্যবহার করা হয় কেন : https://goo.gl/QfpHL4

৩) মঙ্গল শোভাযাত্রা কি আদৌ বাঙালী সংস্কৃতির অংশ : https://goo.gl/PRKVeh

৪) ভুল তথ্যের উপর ভিত্তি করে মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ইউনেস্কোর ঐতিহ্য নির্ধারণ : https://goo.gl/qL4r35

৫) বছরের শুরুতে মঙ্গলের আশায় মঙ্গলশোভা যাত্রা : মঙ্গলটা পাচ্ছি কোথায় ? : https://goo.gl/k3NsYP

৬) প্র্রধানমন্ত্রী যতই বলুক- নববর্ষ সেক্যুলার, হিন্দু ধর্মগ্রন্থ কিন্তু তা স্বীকার করছে না : https://bit.ly/2q2tPTI

৭) প্রথম আলুও প্রথম পৃষ্ঠায় স্বীকার করে নিলো, এবার (গতবার) পহেলা বৈশাখ জমেনি : https://bit.ly/2H4uZWQ

৮) পহেলা বৈশাখ কি ক্লিনিক্যালী ডেড ? : https://bit.ly/2GOpu0N

৯) হিন্দু ধর্মগ্রন্থ মহাভারতে মঙ্গল শোভাযাত্রার কথা : https://bit.ly/2InR6XD

১০) ১৩-১৫ই এপ্রিল বিভিন্ন দেশে বর্ষবরণ সাম্প্রদায়িক বা ধর্মীয় উতসব, বাংলাদেশে কেন অসাম্প্রদায়িক উৎসব : https://bit.ly/2GusuMn

১১) গ্র্যান্ডমুফতি ইনুর ফতওয়া : পহেলা বৈশাখ পালন করলে মুসলমানিত্ব যায় না : https://bit.ly/2q05Y7J, https://bit.ly/2q0PwV5

১২) সংষ্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের ফতওয়া- মঙ্গল শোভাযাত্রার সাথে ধর্মের কোন সম্পর্ক নাই। : https://bit.ly/2Jb1eUR

১৩) ‘মঙ্গলশব্দ নিয়ে শেখ হাসিনার যুক্তি খন্ডন : https://bit.ly/2uHatZL

১৪) পহেলা বৈশাখ ক্রেজ হতে পারে, কিন্তু কখনই বাঙালী সংস্কৃতি না : https://bit.ly/2EfdDDq

১৫) রবীন্দ্রনাথ পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতো হিন্দু ধর্মীয় অনুষ্ঠান হিসেবেই : https://bit.ly/2GTJTPI

১৬) নববর্ষ বা নওরোজ কিভাবে এলো ?? : https://bit.ly/2Gt9Ft6

১৭) পহেলা বৈশাখ নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর : https://bit.ly/2In6xiQ

১৮) পহেলা বৈশাখ : বাঙালী চেতনার আড়ালে ধর্ষকের হাসি : https://bit.ly/2JceSHg

১৯) মঙ্গল শোভাযাত্রা সরকারি আদেশ বাতিল চেয়ে আইনী নোটিশ : https://bit.ly/2uKbT5K

২০) বৈশাখের গান : বিশাখা দেবীর কাছে প্রার্থনা : https://bit.ly/2q06YrO

২১) পহেলা বৈশাখ পালন: হিন্দুদের ব্রিটিশ আনুগত্যের চেতনার অংশ : https://bit.ly/2IlYtPy

২২) পহেলা বৈশাখের অসাম্প্রদায়িকতার নামে খাওয়ানো হচ্ছে সাম্প্রদায়িক হিন্দুত্ববাদ : https://bit.ly/2q5VoM3

২৩) পান্তাভাত কি বাঙালী জাতির প্রতিনিধিত্ব করে (আমার লিঙ্ক হারায় গেছে) ? : https://bit.ly/2q0Jwvj

২৪) পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ইসলাম ধর্ম কি বলে (শেয়ার) : https://bit.ly/2H7QRAs

২৫) পহেলা বৈশাখ পালনকারীদের সম্পর্কে ইসলাম ধর্ম কি বলে (শেয়ার) : https://bit.ly/2EfxrXA

২৬) সম্রাট আকবর চালু করলেই কি নববর্ষ মুসলমানদের অনুষ্ঠান হয়ে যায় : https://bit.ly/2GvQnHC

২৭) বাঙালী চেতনার আড়ালে চারুকলার হিন্দুত্ববাদীদের গোমর ফাঁস : https://bit.ly/2GS2ONg

২৮) মঙ্গলশোভাযাত্রা মানেই চারুকলার গাঁজাখোরদের টাকা কামানোর ধান্ধা : https://bit.ly/2uFXOXd

২৯) পহেলা বৈশাখ পালনকারীরা কি আইনের ঊর্ধ্বে : https://bit.ly/2q15hLL

৩০) পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে কিছু অপ্রিয় সত্য : https://bit.ly/2uMwqH8

৩১) জরিপ : পহেলা বৈশাখের বোনাস বাদ দেওয়ার পক্ষে অধিকাংশ বাংলাদেশী :https://bit.ly/2GtIoeb

৩২) বাংলাদেশের পহেলা বৈশাখ শুরুর ইতিহাস : https://bit.ly/2GwZun6

৩৩) পহেলা বৈশাখের বোনাস ও বাঙালীর সর্বনাশ : https://bit.ly/2Ef5xel

৩৪) পহেলা বৈশাখ: ইসলাম ধর্ম ঠেকানোর উৎসব : https://bit.ly/2GtLKxt

৩৫) পহেলা বৈশাখের কারণে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি হাসপাতালের সড়ক বন্ধ : https://bit.ly/2InW1I5

৩৬) পহেলা বৈশাখ মানেই বাঙালীর বজ্জাতি, হুজ্জাতি আর লুইচ্চামির দিন : https://bit.ly/2Gt7HNk

৩৭) মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য হিন্দু সংগীত - 'আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্য সুন্দর : https://bit.ly/2EfvLgH

৩৮) ইহুদীরা সব সময় লোকাল মূর্তিপূজক বা প্যাগানদের প্রমোট করে : https://bit.ly/2nDG8af

৩৯) এ বছর চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রার শ্লোগানে বিকৃত যৌনাচারের আহবান : https://bit.ly/2Eft8LY

৪০) পহেলা বৈশাখের দিন কেন আপনার সন্তানকে স্কুলে পাঠাবেন না : https://goo.gl/S4Xu9f

৪১) ৯ম-১০ম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ে পহেলা বৈশাখ নিয়ে মিথ্যা তথ্য : https://bit.ly/2q1Bod7

৪২) মঙ্গল শোভাযাত্রার মঙ্গল শব্দের উৎপত্তি : https://goo.gl/SNajKn

৪৩) বাংলা নববর্ষ হিন্দুদের একান্ত ধর্মীয় উৎসবের দিন : https://bit.ly/2Gx7vbV

৪৪) পহেলা বৈশাখের ছুটি কেন বাতিল নয় ? : https://bit.ly/2Ir3FS5

৪৫) কারা সৃষ্টি করলো আজকের পহেলা বৈশাখ ?? : https://bit.ly/2Jfx17l

৪৬) অমঙ্গল শোভাযাত্রায় এগুলো কিসের মূর্তি ? : https://bit.ly/2q0P2hv

৪৭) পহেলা বৈশাখ বিরুদ্ধে ইসলামী দলগুলোর বিবৃতি : https://bit.ly/2uHXsiL, https://bit.ly/2GxQiyS

৪৮) অমঙ্গলশোভাযাত্রা হিন্দুদের বিশেষ ধর্মীয় অনুসঙ্গ : https://bit.ly/2EfWb1L

৪৯) ভাত দে হারামজাদা, নইলে মূর্তি খাবো : https://bit.ly/2q3qtjd

৫০) কারো চাই এক মুঠো ভাত, কারো চাই অমঙ্গল পূজায় বিশাল মূর্তি : https://bit.ly/2Eg7uXP

 

 

 

 

 

 

 

# চ্যানেল ২৪ এ জাগো বাংলাদেশনামক একটা প্রোগ্রাম হয়। প্রোগ্রামটিতে উপস্থাপনা করে টিভি অভিনেতা মোশাররফ করিম। মোশররফ করিম অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বলে, “মেয়েরা কি স্বাধীনভাবে পোষাক পড়বে না ? পোষাকের কারণেই যদি নারী নির্যাতিত হতো, তবে ৫ বছরের শিশু কেন নির্যাতিত হয়, বোরকা পরা মেয়ে কেন ধর্ষিত হয় ?” (http://bit.ly/2HNcS6X)

 

প্রোগ্রামটি দেখে আমার একটা কথা মনে পড়লো। ইহুদীবাদীদের একটা সিস্টেম হলো, প্রথমে কাউকে সেলিব্রেটি বানায়, এরপর সেলিব্রেটিকে নিজস্ব মতবাদ প্রচারে কাজে লাগায়। মোশাররফ করিমকে টিভি নাটকে অভিনয় করিয়ে বড় সেলিব্রেটি বানানো হয়েছে, এখন তাকে দিয়ে প্রচার করা হচ্ছে বিশেষ একটি মতবাদ।

 

বিষয়টা বুঝতে আপনাকে লোকাল পলিসি গুলো বুঝতে হবে। যেমন আওয়ামীলীগ ক্রিকেটে মাশরাফি বা সাকিববে প্রমোট করেছে। তারা এখন বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে সেলিব্রেটি। হয়ত দেখা যাবে খুব শিগ্রই এ দু’জনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে আওয়ামলীগ। হয়ত তারা আওয়ামীলীগের হয়ে প্রচারে নামবে কিংবা এমপি পদে দাড়াবে।

 

যাই হোক, আগের আলোচনায় ফিরে আসি- মোশররফ করিমের বক্তব্য : পোষাক যদি নারী নির্যাতনের জন্য দায়ী হতো, তবে ৫ বছরের শিশু বা বোরকা পরা নারী নির্যাতিত হচ্ছে কেন ?”

পাঠক, আমরা সবাই নারী নির্যাতন বিরোধী। আমরা চাই সমাজে নারী নির্যাতন কমে যাক।

একটি গোষ্ঠীকে প্রায় দেখা যায়, প্রথমে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে বলে,

কিন্তু পরের কথায় বলে, পোষাক নারী নির্যাতনের জন্য দায়ী না।

 

আসলে এ গোষ্ঠীর উদ্দেশ্যে সাধারণ মানুষকে সাইকোলাজিক্যালী ডিরেইল করা। এক প্রসঙ্গ তুলে অন্য স্বার্থ হাসিল করা। সাইকোলোজির ভাষায় ফলস বিলিভ প্রবেশ করানো।

 

প্রথম প্রসঙ্গ, - “নারী নির্যাতন কেন বাড়ছে”, “কিভাবে নারী নির্যাতন কমানো যায় ?”

আগে এ বিষয়দুটি সুরাহা করা দরকার । এরপর আসবে- নারী কোন পোষাক পরবে ?

 

এই বিষয়ে সাইকোলোজির এক শিক্ষকের সাথে একবার কথা বলছিলাম, তিনি আমাকে একটা শব্দবলেছিলেন, আমার কাছে শব্দটা অনেকগুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। শব্দটা ছিলো যৌনউন্মাদ’। তিনি বলেছিলেন, ইহুদীবাদীরা চায়- সব মানুষ যৌনউন্মাদ হয়ে যাক”।

যৌনউন্মাদটার্মটা আমার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। আমি এ শব্দটার উপরে গবেষনা করেছি। আমার কাছে মনে হয়েছে, বর্তমানে নারী নির্যাতন বৃদ্ধি, পারিবারিক অশান্তি, পারিবারিক কাঠামো ভেঙ্গে যাওয়া, সমাজের অবক্ষয়ের পেছনে যত কারণ আছে তার কারণ এই যৌনউন্মাদশব্দটা রয়েছে।

(ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি সবার কাছে-এ বিষয়গুলো আলোচনার করার প্রয়োজন বলেই করছি । কারো এতটুকু খারাপ লাগলে বাকি অংশ নাও পড়তে পারেন)

 

যৌনউন্মাদ কাকে বলে ? কিভাবে তা হয়?

যৌনতা মানুষের স্বাভাবিক শারীরিক ক্রিয়া ও চাহিদা। প্রত্যেক মানুষ সৃষ্টিগতভাবে যৌনতা নিয়ে জন্মায় এবং এই যৌনতার একটি নির্দ্দিষ্ট পরিমাপ থাকে। মানুষ বড় হয়, বিয়ে করে, এর মধ্যে তার সেই চাহিদা পূরণ হয়। সৃষ্টিগতভাবে তার যতটুকু চাহিদা আছে সেটা সমাজ বিয়ে, ঘরসংসারের মাধ্যমে পূরণ করার জন্য যথেষ্ট।

কিন্তু কোন কৃত্তিম উপায়ে যদি ঐ মানুষটির যৌনআকাঙ্খা বাড়িয়ে দেয়া যায় তখন ? ঠিক যেভাবে একজন মানুষকে ওষুধ খাওয়ায় তার ক্ষুধা বৃদ্ধি করে দেয়া হয়। সে ১০ টাকার যায়গায় ২০ টাকার খেলেও পেট ভরে না, সেকরম। যৌনউন্মাদ হচ্ছে সে ধরণের একটি বিষয়, যেখানে কৃত্তিম উপায়ে মানুষের যৌন আকাঙ্খা বৃদ্ধি করে দেয়া হয়।

 

উদহারণস্বরুপ পর্নোগ্রাফির ক্যাটাগরিগুলোর দিকে খেয়াল করুন। অফিসে নারী কর্মজীবি আসলে বস কিভাবে সুযোগ নেবে, পুরুষ কর্মজীবি নারী বসের থেকে কিভাবে সুযোগ নেবে, ঘরে কাজের মহিলা আসলে ঘরের পুরুষ কিভাবে সুযোগ নেবে, ছাত্র কিভাবে শিক্ষিকার থেকে সুযোগ নেবে, ছাত্রী প্রাইভেট পড়তে আসলে শিক্ষক কিভাবে সুযোগ নেবে, ড্রাইভার/দারোয়ান কিভাবে ঘরের মহিলার সুযোগ নেবে, ডাক্তার কিভাবে রোগিনীর থেকে সুযোগ নেবে, রোগি কিভাবে মহিলা ডাক্তারের থেকে সুযোগ নেবে, ফেরিওয়ালা কিভাবে ঘরের গৃহিনীর থেকে সুযোগ নেবে, বাসে গেলে কিভাবে নারী যাত্রীর থেকে সুযোগ নেবে, ভাবীর থেকে দেবর কিংবা শালীর থেকে দুলাভাই সুযোগ নেবে, মেসের ব্যাচেলররা কিভাবে পাশের বাড়ির বিবাহিত নারীর থেকে সুযোগ নেবে, বন্ধুর মায়ের থেকে কিভাবে সুযোগ নেবে, এমনকি ইনসেস্ট (মা-ছেলে, বাবা-কন্যা), সমকামীতা বা শিশু বাচ্চাদের প্রতি কিভাবে আসক্ত হতে হয় সেটাও শেখানো হচ্ছে। ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলো আজকাল সেই পর্নের অনুকরণে সফট পর্নোসমৃদ্ধ শর্ট মুভি তৈরী করছে। টিভি চ্যানেল কিংবা ইন্টারনেটের সুযোগ মানুষ এগুলো দেখছে আর সবকিছু তার কাছে সেক্স অবজেক্ট মনে হচ্ছে। আগে শিক্ষিকা বা বন্ধু মাকে নিজের মায়ের মত সম্মান করতো একটা ছেলে, কিন্তু ঐসব সিরিয়াল-মুভি দেখে তারা কতটুকু হট সেটা পরিমাপ করছে। সারাদিন তার মাথায় শুধু সেক্স আর সেক্স চিন্তা। ঘরের নারী, কাজের মহিলা, শিক্ষিকা, নারী বাসযাত্রী এমনকি শিশু বাচ্চা সবকিছু দেখলে তার ব্রেনে ডোপানিম নিঃসরণ ঘটছে এবং সে তার আকাঙ্খা পূরণ করতে চাইছে। এটাকেই বলা হচ্ছে যৌনউন্মাদ’ । মানুষকে যৌন উন্মাদ বানানোর জন্য সর্বপ্রথম ১৯৪৯ সালে ইহুদী হিউগ হফনার প্লেবয় ম্যাগাজিন বের করে। হিউগ হফনারের দেখানো সেই পথ এখন অনেক দূর বিস্তৃত।

 

মোশররফ করিম যে বললো- ৫ বছরের শিশু বা বোরকা পরা নারীরা কেন নির্যাতিত হয় ? এর উত্তর হবে মানুষকে যে কৃত্তিমভাবে যৌনউন্মাদ বানানো হচ্ছে, তার ফলশ্রুতিতেই ৫ বছরের শিশু বা বোরকা পরিহিতা নারী নির্যাতিত হচ্ছে। আর মোশাররফ করিমরা নারীকে শর্ট পোষাক পরিয়ে সেই যৌনউন্মাদদের রান্না করা খাদ্য সরবরাহ করতে চাইছে। এর আলটিমেট এফেক্ট নারী নির্যাতন আরো বাড়বে, কখনই কমবে না।

 

মোশাররফ করিমদের বলবো-

দয়া করে- “আপনার মানসিকতা পরিবর্তণ করুণ, নারী পোষাক নয়”-এইসব মুখরোচক কথা বাদ দিন। আপনি, ইমাম গাজ্জালির বক্তব্যের অর্ধেক কথা প্রচার করে নিজেকে টাউট বলে প্রমাণ করেছেন। ইমাম গাজ্জালি মানুষের মনও পরিষ্কার করতে বলেছেন, আবার নারীদের বোরকাও পড়তে বলেছেন। কিন্তু আপনি শুধু একটা অংশ প্রচার করছেন।

 

বাস্তবতা হলো- টিভিচ্যানেল আর ইন্টারনেটে সুরসুরি দেয়া ছবি দেখবেন, আর মন পরিষ্কার করতে বলবেন, এটাতো ছেলের হাতের মোয়া নয়। হয়ত উপর দিয়ে সুশীল সাজতে পারবেন, নারী স্বাধীনতার পক্ষেও বলবেন, কিন্তু সুযোগ পেলে যৌন উন্মাদনা জাহির করতে কেউ ছাড়বেন না।

 

আমি আবার বলছি, নারী নির্যাতনের কথা বলে নারী পোষাক ফ্রি করার ভুয়া তত্ত্ব ছড়ানো বাদ দিন। যদি সত্যিই নারী নির্যাতন হ্রাস করতে চান, তবে আগে পর্নোগ্রাফী আর ভারতীয় টিভি চ্যানেলের বিরুদ্ধে বলুন, মানুষের যৌনউন্মাদ হওয়া বন্ধ করুন। যদি আপনি পর্নোগ্রাফি ও ভারতীয় টিভি চ্যানেল বন্ধের কথা আগে না বলেন, তবে বুঝতে বাকি নাই আপনি নিজেই সেই ধর্ষক দলের পক্ষের লোক।

 

 

 

 

 

 

 

#

 

যারা আজকে সাকরাইন উৎসব করেছে, তারা হইলো বেস্ট, বাকিরা সব ফালতু। এই বেস্ট লোকগুলা এই দিনে পটকা ফুটায়, ডিজে পার্টি করে। ভারতে শাহরুখ ঘুড়ি উড়ায়ছে আর ওগো পাছায় হাওয়া লাগছে।  দুইদিন পর বিদেশীরা আইয়া যখন বিমান দিয়ে বোমা ফালাইবো, তখন এরা রোহিঙ্গাগো মত পালাইবো।

 

 

 

 

 

 

 

বি: দ্র:

 

 

 

 

 

 

 

সাকরাইন বা পৌষ সংক্রান্তি হিন্দু ধর্মের উৎসব। হিন্দু ধর্মের লোকদের স্ট্যাটসে দেখুন : (http://archive.is/sqpoQ, http://bit.ly/2mGuhpJ)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

#  (১)

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা : “সমাজকে সন্ত্রাস থেকে দূরে রাখার মাধ্যম হচ্ছে খেলাধূলা”। (http://bit.ly/2BiQTRD)

বাস্তবতা : ক্রিকেট খেলা নিয়ে বিরোধের জের ধরে চট্টগ্রামে কলেজ ছাত্র আদনান খুন। (http://bit.ly/2mYhY8x)

(২)

নাট্যমেলার উদ্বোধন করতে গিয়ে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর : “জঙ্গিবাদ নির্মূলে সংস্কৃতি চর্চা বৃদ্ধি করতে হবে।” (http://bit.ly/2mI4uj4)

বাস্তবতা : নাটকের প্রেম ভালোবাসার সংস্কৃতি শিখে ইডেন ছাত্রী কোপালো প্রেমিককে (http://bit.ly/2rmrGGs)। সিলেটে বদরুল কোপালো প্রেমিকাকে। (http://bit.ly/2DTucX1)

(৩)

শাহরিয়ার কবির : “যে সব শিশু ছোট বেলায় গান-বাজনাকে হারাম জানে, তারা বড় হয়ে হলি আর্টিসানে হামলা চালায়।” (https://youtu.be/dliA9nKz32o)

বাস্তবতা : রাজধানীর ওয়ারীতে উচ্চস্বরে গানবাজনার প্রতিবাদ করায় বৃদ্ধ খুন। (http://bit.ly/2DuLn3H)

 

এতদিন প্রচার করা হয়েছে, ধর্মের কারণে নাকি জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসাবাদ বাড়ছে। এ কারণে পাঠ্যবই থেকে পর্যন্ত ধর্মচর্চা বাদ দিয়ে সংস্কৃতি দিয়ে পূর্ণ করা হয়েছে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে সংস্কৃতিচর্চা, গানবাজনা, নাটক-সিনেমা এবং খেলাধূলার কারণেই খুন-খারাপি, কোপাকুপি ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে, সমাজ হয়ে পড়েছে কলুষিত। তাহলে এখন কেন কেউ বলছে না, “সংস্কৃতি চর্চায় সন্ত্রাস বাড়ে, তাই তা বর্জন করা উচিত।

 

 

 

 

 

 

 

 

নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে চলছে গোলটেবিল আলোচনা। সেই আলোচায় বিশেষ অতিথি ঢাবি শিক্ষক মেজবাহ কামাল। আলোচনার সিদ্ধান্ত : নারী নির্যাতন বন্ধে প্রয়োজন সাংস্কৃতিক জাগরণ’ (https://goo.gl/6wnuzy)।

একটু আগে একটা স্ট্যাটাস পড়লাম, সেখানে নুরুন নবী নামক একজন বললেন-

মেসবাহ কামাল যৌন কেলেংকারীতে জড়িত। একদিন আমার সামনেই সম্ভবত ২০০২ অথবা ২০০৩ সালের দিকে তার রুম থেকে এক ছাত্রী কাদতে কাদতে বের হয়ে দৌড়াচ্ছিল আর স্যার পেছনে পেছনে দৌড়াচ্ছিল, আমিও তাদের পেছনে দৌড়ানো শুরু করলাম-আমার পেছনে আরো কয়েকজন দৌড়ানো শুরু করলো, আমরা স্যারকে থামালাম-জানতে চাইলাম কি হইছে? স্যার বললো 'তেমন কিছু না-আমি একটু উত্তেজিত ছিলাম'। এই ঘটনাটি সে সময়ের সকল জাতীয় পত্রিকায় এসেছিল।” (http://bit.ly/2nrJxqN)

স্কুলে থাকতে আমিও বিষয়টা দেখেছিলাম। আমাদের স্কুলে একটা লুইচ্চা টাইপের স্যার ছিলো। ঐ স্যারটা খালি মেয়েদের সংস্কৃতি, মানে নাচ-গান-নাটকের কথা বলতো। আমি তখন ছোট থাকায় বিষয়টা বুঝতাম না। একদিন কালচার রুমে গিয়ে বুঝলাম, লুইচ্চা স্যারগুলো কেন মেয়েদের সংস্কৃতির কথা বলে কালচার রুমে ডাকে। মেয়েগুলো নাচ-গানের সময় নড়াচড়া করে, আর সেগুলো দেখে লুইচ্চা স্যারগুলো চোখের আরাম নেয়। শুধু তাই না, ক্লাস ছাড়াও তারা আরো বাড়তি সময় নেয়, সেই বাড়তি সময় তারা কি সুবিধা পায়, সেটা হয়ত সাধারণদের অজানা।

আসলে এসব সংস্কৃতিবাদীগুলো হচ্ছে নারী নিপীড়নের ভাগাড়। ইউরোপে গিয়ে দেখুন, সংস্কৃতিবাদীরা অনেক নারীমূর্তি বানিয়েছে, কিন্তু সবগুলো নারী মূর্তি ন্যাংটো। তারমানে নারীদের ন্যাংটো বানানো তাদের আসল সংস্কৃতি। কিছুদিন আগে লাক্স সুন্দরী ফারিয়া শাহরিন মিডিয়ায় সংস্কৃতির নামে মেয়েদের কিভাবে বেশ্যা হতে হয় সেটা প্রকাশ করেছিলো।(http://archive.is/vKtkn) এতে হয়ত তার উপর অনেকেই ক্ষেপেছে, কিন্তু তার কথা যে মিথ্যা সেটা কেউ বলতে পারেনি।

আমি আসলেই এসব সংস্কৃতিবাদীদের বিরুদ্ধে, কারণ যারা বেশি সংস্কৃতি সংস্কৃতি করে, তারাই নারীদের উপর বেশি নিপীড়ন চালায়। এসব সংস্কৃতিবাদীগুলো সমাজ থেকে ঝেটিয়ে বিদায় করতে পারলেই সমাজে নারী নির্যাতন বন্ধ করা সম্ভব বলে মনে করি।

 

 

 

 

 

 

 

 

একটা খবর দেখলাম, আগামী ২৫শে মার্চ রাতে নাকি ১ মিনিট বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখবে সরকার। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ পাকিস্তানীবাহিনীর গণহত্যাকে স্মরণ করতে নাকি এই কর্মসূচি। ২৬শে মার্চ তারিখ স্মরণ করতেও সরকার নিয়েছে উদ্যোগ। সারা দেশব্যাপী স্কুল-মাদ্রাসাগুলোতে রবীন্দ্রের কথিত জাতীয় সঙ্গীত প্রতিযোগীতা করে ২৬শে মার্চ তার ফাইনাল হবে।

আওয়ামী সরকারের অবস্থান এখন প্রতিকী হয়ে গেছে। ‘১ মিনিট অন্ধকার’, ‘রবীন্দ্র প্রতিযোগীতা’, ‘স্বাধীনতার ভাস্কর্যএখন স্বাধীনতার চেতনা ধারণ করছে । ভারতীয় বিএসএফ প্রতিদিন সীমান্তে গুলি করে ১ জন বাংলাদেশী মারলো কিংবা মায়ানমারের সামরিক বাহিনী সীমান্তে এসে মহড়া দিলো কিংবা পশ্চিমবঙ্গের খাদ্যমন্ত্রী ২০ বছরের মধ্যে দুই বাংলা এক হয়ে যাবেবলে ঘোষণা দিলে আমাদের স্বাধীনতার কোন ক্ষতি হয় না।

বাংলাদেশের রিজার্ভ থেকে ৮০৮ কোটি টাকা চুরি গেলে আমাদের খুব একটা গায়ে লাগে না, অর্থমন্ত্রীর কাছে তো কয়েক হাজার কোটি টাকা খুব সামান্য বিষয়। রাষ্ট্রয়াত্ব ৮ ব্যাংকের ২০ হাজার কোটি টাকার মুলধন লুটপাটে ঐ স্বাধীনতার ফেরিওয়ালারাই নেতৃত্ব দেয়। ৭১ টাকায় চাল কিনে আমরা স্বাধীনতার চেতনায় উব্ধুদ্ধ হই। প্রশ্নফাঁস এখন বৈধ বিষয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নিজেই প্রশ্নফাঁসে কোন ক্ষতি দেখতে পান না। শিক্ষামন্ত্রী নিজেই বুক ফুলিয়ে বলেন, “আমি চোর, সব মন্ত্রীরা চোর”। কৃষিমন্ত্রী ইতিমধ্যে বহুজাতিক সিনজেন্টার কাছে বাংলাদেশের কৃষকের ধান বিক্রি করে ‘গোল্ডেন রাইস নিয়ে চুক্তি সেড়ে ফেলেছে। তথ্যমন্ত্রী বিবস্ত্র নারীর শরীরে সৌন্দর্য খুজে পান, আর সংস্কৃতিমন্ত্রী বহুজাতিক লাক্সের দেখিয়ে দাও অদেখা তোমায়বিজ্ঞাপনে ভয়েস দিয়ে নারী দেহ উন্মুক্ত করতে উৎসাহিত করে। যে দেশ গ্যাসের উপর ভাসছে, সে দেশে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে এলপি গ্যাস আমদানির প্ল্যান করে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী। সারা দেশের মানুষ যখন পুলিশের দুর্নীতি আর অত্যাচারে অতিষ্ট, পুলিশের আইজি সাহেব তখন দেশব্যাপী সিনেমা হলগুলোতে ঢাকা অ্যাটাকমুভি দেখে বেড়াচ্ছেন। আহ !

শুনেছিলাম, বঙ্গবন্ধু নাকি ১ মিনিট নিরবতা পালনকালচার পছন্দ করতেন না, তিনি মুসলমানী কায়দায় মৃতদের জন্য দোয়া-মোনাজাত করতেন। কিন্তু সেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বিক্রি করে যারা খাচ্ছে, তারা সেই এক মিনিট নিরবতাআর এক মিনিট অন্ধকারনামক বিদেশী কালচার নিয়ে আসছে।

আসলে সরকার চায়, জনগণকে একটা চমক দেখাতে। কারণ চমকিত মানুষ তার স্বাভাবিক অবস্থা হারায়, কিছু সময়ের জন্যও ভুলে থাকে তার দেহের বেদনা। তাইতো কখন রোবট সোফিয়া, কখন ৩ টাকায় ডিম, কখন বা ১ মিনিট অন্ধকার নিয়ে আসে সরকার।

কিন্তু মাত্র ১ মিনিট অন্ধকার দিয়ে আওয়ামী সরকারের হাজারো অন্ধকার ঢাকা যাবে তো ?

 

 

 

# গত কয়েকদিন আগে খবর এসেছে, ঢাকাস্থ যাত্রবাড়িতে টাকা না দেয়ায় ১৫ দিনের শিশুকে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করেছে হিজরারা। আসলে বাংলাদেশে হিজরাদের উৎপাত হঠাৎ করে বেড়ে গেছে এটা কেউই অস্বীকার করতে পারবেন না। হিজরা উৎপাত বলতে হিজরাদের চাদাবাজি বলা উত্তম। নতুন বাচ্চা হলে টাকা দেয়া, রাস্তায় হঠাৎ মানুষ আটকে টাকা নেয়া, দোকান থেকে চাদা নেয়, আরো অনেক ধরন আছে।

 

ছোট বেলায় হিজরাদের দেখতাম, দোকান বা বাজার থেকে চাদা তুলতো। তখন বিষয়টি এত আলোচিত হতো না। কিন্তু হিজরাদের নিয়ে আলোচনা শুরু হয়, যখন তারা বাসাবাড়িতে ঢুকে চাদাবাজি শুরু করে। নতুন বাচ্চা হয়েছে গোপন তথ্যসূত্রে (সম্ভবত বাসায় বুয়ারা দেয়) এমন খবর পেলে তারা ঐ বাসায় হানা দেয় এবং ৫-১০ হাজার টাকা দাবি করে। এই হানা দেয়ার সময়টা এমন হয়, যখন ঐ বাড়িতে কোন পুরুষ মানুষ থাকে না, গৃহকত্রী বাসায় একা থাকেন। এ সুযোগে বাসার বাচ্চাকে জিম্মি করে এই টাকা আদায় করে। কখনও নগ্ন হয়ে, কখন ঘরে পায়খানা করে তারা ঐ বাসায় বিশৃঙ্খলতা সৃষ্টি করে। এমনকি সদ্যজন্ম নেয়া নবজাতককে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েও তারা টাকা আদায় করে। যার ফল আমরা দেখলাম, যাত্রাবাড়িতে ঐ ১৫ দিনের বাচ্চার করুণ মৃত্যু।

 

আমার লেখার শুরুতেই আমি হেডিং দিয়েছি- “হঠাৎ কেন এত বেপরোয়া হিজরা জনগোষ্ঠী ?”

 

তারমানে আমি বলতে চেয়েছি, হিজরা জনগোষ্ঠী আগেও ছিলো, কিন্তু হঠাৎ করে তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে । কিন্তু কেন এই অবস্থা ?

 

একটি উদাহরণ দিলে বুঝতে পারবেন। যেমন ধরুন কয়েকদিন আগে যাত্রাবাড়িতে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি নিয়ে খবর করে ‘সময়টিভি’। কিন্তু অজ্ঞাত কারণবশতঃ তারা ঐ খবরটি রিমুখ করে দেয় (http://bit.ly/2GJkOGN), যা ওয়েবক্যাশে এখনও পাওয়া যাচ্ছে (http://bit.ly/2BR33RX)। তারমানে মিডিয়া চাচ্ছে না, পাবলিকের মধ্যে হিজরাদের বিরুদ্ধ সেন্টিমেন্ট তৈরী হোক। তাই খবর প্রচার হলেও পরবর্তীতে তারা তা সরিয়ে দেয়া হচ্ছে।

 

সত্যিই বলতে, কোন ব্যক্তি তখনই লাগামহীন হয়, যখন সে জানে কোন আইন বা নিয়মকানুন তার উপর কাজ করবে না। সে যা ইচ্ছা তাই করুক, তার সমস্যা নেই, তখনই সে বেপরোয়া হয়ে উঠে।

 

বর্তমানে হিজরারা বেপরোয়া হয়ে ওঠার কারণ তাদের এমন নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে, তারা যাই করুক, তাদের সব ধরনের ব্যাকিং বা আইনী সহায়তা দেয়া হবে। এবং সেই নিশ্চয়তা দিচ্ছে দেশি-বিদেশী কিছু এনজিও। এর মধ্যে সবার উপরে আছে ড. কামাল হোসেনের মেয়ে সারা হোসেনের (ডেভিড বার্গম্যানের বউ) এনজিও ব্লাস্ট’ (বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট)। এই ব্ল্যাস্টের পক্ষ থেকে নিশ্চয়তা পেয়েই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে হিজরা জনগোষ্ঠী। বিষয়টা এতটাই সিরিয়াস অবস্থায় পৌছেছে, হিজরারা চাদাবাজি এবং দৈহিক অপকর্ম এত বাধাহীনভাবে করতে পারছে যে, অনেক পুরুষ হিজরা সেজে চাদাবাজিতে যোগ দিয়েছে, এসব গ্রুপে আসল হিজরা কতজন আছে, সেটা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।

 

কেন হিজরাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে এনজিওগুলো ? কি তাদের উদ্দেশ্য ??

 

আপনারা জানেন, আন্তর্জাতিক ইহুদীবাদীরা বিশ্বজুড়ে সমকামীতা প্রচলন করতে চায়। এজন্য খোদ জাতিসংঘ বা ইহুদীসংঘের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে সমকামীতা আইনত বৈধতা দেয়ার জন্য বার বার চাপ দেয়া হয়। (http://bit.ly/2BT02kl)

 

তারা এ কার্যক্রমের নাম দিয়েছে এলজিবিটি(LGBT)। এল’তে বোঝায় লেসবিয়ান বা নারীসমকামী, জি-তে গে বা পুরুষ সমকামী, বিতে বাইসেক্সুয়াল বা উভকামী এবং টিতে ট্র্যান্সজেন্ডার বা রূপান্তরকামী। যারা বাংলাদেশে এলজিবিটিবৈধতা তৈরী করতে চায়, তারা নারী সমকামী, পুরুষ সমকামী, উভকামী কিংবা রূপান্তরকামীর কোন প্রতিনিধিকে বাংলাদেশে জনসম্মুখে উপস্থাপন করতে পারে না। যেহেতু তাদের প্রকাশ্য কোন উপস্থিতি নেই, তাই তাদের অধিকার দেয়ার প্রয়োজনীয়তাও নেই। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে সহজ হচ্ছে হিজরা জনগোষ্ঠী। এরা দাবি করে, হিজরারা সমকামী ও উভকামী। এ কারণে এলজিবিটি প্যারেডগুলোতে হিজরাদের সামনে রাখা হয় (ছবিতে পহেলা বৈশাখে মঙ্গলশোভাযাত্রায় মার্কিন দূতাবাসের পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত এলজিবিটি প্যারেডে হিজরা)। অর্থাৎ বাংলাদেশে কতজন এলজিবিটি সদস্য আছে, এটা প্রমাণ করতে তারা হিজরা জনগোষ্ঠীকে দাড় করিয়ে দেয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, হিজরারা সমকামী বা উভকামী কোনটাই নয়। হিজরাদের সেক্সুয়ার পাওয়ার নেই, এজন্য হিজরাদের বলা হয় যৌন প্রতিবন্ধী। তাদের যদি সেক্সুয়াল পাওয়ার থাকতোই, তবে তারা সমাজের মেইন স্ট্রিমের অংশ হতো, তা নেই বলেই তাদের হিজরা নামে ডাকা হচ্ছে। কিন্তু তাদের এ অক্ষমতার সুযোগটাকে কুচক্রী গোষ্ঠী নিজ হীন স্বার্থে ব্যবহার করছে। বাস্তবে আমরা সমাজে যে হিজরাদেখি তাদের ছাড়াও আরো অনেক হিজরা বা যৌন প্রতিবন্ধী আছে, যারা পরিবারের সাথে এট্যাচ আছে, স্বাভাবিক কাজকর্ম করছে। কিন্তু আমরা যাদের হিজরা বলে চিনি তারা আসলে হিজরা পতিতাবা হিজরা অপরাধী’। স্বাভাবিক কাজকর্ম না করে এরা দিনের বেলায় চাদাবাজি করে আর রাতের বেলায় একশ্রেণী কুরুচিপূর্ণ লোকের কুরুচি মেটায়। আমাদের সমাজে কিন্তু নারীদের মধ্যে ‘পতিতাশ্রেণীও আছে। ঐ নারী পতিতা কিংবা হিজরাদের মধ্যে আসলে কোন তফাৎ তেই। কিন্তু সেই হিজরা পতিতাবা হিজরা অপরাধীদেরকেই সমাজের হিজরাবলে পরিচয় করিয়ে দেয়া হচ্ছে, যা বাস্তবতার সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ।

 

আসলে সম্রাজ্যবাদীদের কাজ হচ্ছে সমাজে সংখ্যালঘুদের ব্যবহার করে সংখ্যাগুরুদের সাইজ করা। এজন্য তারা ডুয়েল রোল প্লে করে। তারা সংখ্যালঘুদের বলে তোমরা সংখ্যাগুরুদের বিরুদ্ধচারণ করো, আর সংখ্যাগুরুদের মাথায় হাত বুলিয়ে বুঝায়- আহারে ! সংখ্যালঘুরা কত দুর্বল, তারা কত নির্যাতিত, তারা কত অবহেলিত, তাদের বিরুদ্ধচারণ করা যাবে না। আসো সবাই অসাম্প্রদায়িক হয়ে সংখ্যালঘু প্রেমিক হই” । একই সূত্রে তারা ‘কমন জেন্ডারটাইপের মুভি তৈরী করে সমাজের মানুষের মনে হিজরাদের জন্য সহানুভূতি তৈরী করে, হিজরাদের জন্য মানুষের চোখ পানি বের করে, মনকে নরম করে। আবার তারাই হিজরাদের বলে তোরা বেপরোয়া হ, সংখ্যাগুরুদের কাছে চাদাবাজি কর। যা খুশি তাই কর, তোদের সব ধরনের ব্যাকিং দেয়া হবে, আইনী সহায়তা বিনামূল্যে দেয়া হবে, এমনকি মিডিয়ায় বিরুদ্ধে খবর আসলে তা ডিলিটও করে দেয়া হবে। কোন সমস্যা নাই ।এ কারণেই হিজরারা এত বেপরোয়া।

 

 

 

 

 

 

 

#

 

ফয়জুর বলছে, “ভুতের বাচ্চা সোলায়মানলেখায় জাফর ইকবালকে হামলা করেছি”। (http://bit.ly/2oMZnw8) এ কথাটা আমি বিশ্বাস করিনি। কারণ জাফর ইকবালএ বইটা লিখেছে গত বছর বইমেলায়। ১ বছর গত হয়েছে, এ বছর বইমেলাও শেষ, কিন্তু এখন কেন হঠাৎ করে ফয়জুরের ঐ বইয়ের জন্য প্রতিশোধ নেয়ার কথা মনে পড়লো? পয়েন্ট : সময়।

 

 

 

 

 

 

 

দ্বিতীয় প্রশ্ন যেটা জাগ্রত হয়, অনলাইন-ফেসবুক যারা ইউজ করে তারা সবাই জানে, এখানে মুসলমানদের ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে কটূক্তি কম হয় না। মুসলমানদের শেষ নবীকে নিয়ে ফেসবুকে হিন্দুরা প্রায়শঃ মন্দ কথা বলে। কিন্তু তখন কেন ফয়জুরদের ধর্ম চেতনাজাগ্রত হয় না ? হঠাৎ আগেরকার নবীসম্পর্কে এত কেন প্রবল ধর্মচেতনা জাগ্রত হলো ?? পয়েন্ট : ফয়জুরের গ্রহণযোগ্যতা।

 

 

 

 

 

 

 

ফয়জুরের ধর্মচেতনা জেগে উঠছে খুব ভালো কথা। কিন্তু সে এত অপরিপক্ষ হামলা চালালো কেন ? ছুরি না ব্যবহার করে সে বন্দুক বা আরো ভালো কোন অস্ত্র ব্যবহার করতে পারতো, যা ব্যবহারে জাফর ইকবালের মৃত্যু নিশ্চিত হতে পারতো। কিন্তু জাফর ইকবালের কন্ডিশন দেখে যা বোঝা যাচ্ছে, সে খুব গুরুতর কোন আঘাতপ্রাপ্ত হয় নাই, হলে অন্তত জ্ঞান হারাতো। কিন্তু সেটা হয় নাই। সে হিসেবে ফয়জুর অবশ্যই হত্যার উদ্দেশ্যে জাফর ইকবালকে আঘাত করে নাই। কিন্তু ধর্মীয় চেতনা দিয়েই যদি ফয়জুর হামলা করতো, তবে অবশ্যই জাফর ইকবালকে সে হত্যা করতে চাইতো। কিন্তু কেন ফয়জুর জাফর ইকবালকে হত্যা করতে না চেয়ে শুধু নূন্যতম আহত করতে চেয়েছে ? এর পেছনে কারণ কি ?

 

 

 

 

 

 

 

হামলাকারী ফয়জুর জাফর ইকবালের স্টেজ পর্যন্ত উঠেছে। সেখানে অপেক্ষা করেছে এবং সময় বুঝে হামলা করেছে। কারো সাহায্য ছাড়া এতদূর পর্যন্ত আসা স্বাভাবিক নয়। ধরে নিলাম কেউ তাকে এতদূর পর্যন্ত আসতে সাহায্য করেছে, কিন্তু তারা কে ? আমার হিসেবে, হামলার পর যে অতি উৎসাহি ছাত্ররা ফয়জুরকে গণপিটুনি দেয়এদের ভূমিকা সন্দেহজনক। কারণ এটা চুরি বা ছিনতাই নয় যে, ধরা পরার পর গণপিটুনি দেবে। একজন শিক্ষকের উপর হামলা করা হয়েছে এবং হামলাকারীর অবশ্যই বিশেষ মোটিভ আছে। কিন্তু ভার্সিটির ছাত্ররা এত বোকা নয় যে, হামলকারীর মোটিভ জানতে না চেয়ে তাকে গণপিটুনি দেবে। কিন্তু এমনভাবে গণপিটুনি দেয়া হলো, যেন সে মারাও যেতে পারতো। এক্ষেত্রে যারা গণপিটুনি দিলো তারা হয়ত চেয়েছে ক) সে যেন তার মোটিভ বলার সুযোগ না পায়, খ) কে তাকে এতদূর পর্যন্ত নিয়ে এসেছে তাদের নাম বলতে না পারে, গ) ফয়জুর যেন নিরপেক্ষ কোন ব্যক্তির সাহচার্যে না আসে। পয়েন্ট : ফয়জুরকে ভাড়া করে আনলো কে ?

 

 

 

 

 

 

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছে, জাফর ইকবালের ওপর হামলা ধর্মন্ধতার বহিপ্রকাশ। তিনি আরো বলেন, যারা এ ঘটনাগুলো ঘটায়, তারা মনে করে যে একটা মানুষ খুন করলেই বুঝি তারা বেহেশতে চলে যাবে। তারা কোন দিন বেহেশেতে যাবে না, তারা দোযকের আগুনে পুড়বে।  (http://bit.ly/2oNVQxK)

 

 

 

শেখ হাসিনার বক্তব্য দ্বারা একটি বিষয় ক্লিয়ার, ফয়জুর কোন বিচ্ছিন্ন ব্যক্তি না, সে একটি কমিউনিটির সদস্য। কারণ তিনি স্পষ্ট করে তারা’ ‘এরাশব্দগুলো ব্যবহার করেছেন। তারমানে শেখ হাসিনাও বুঝাতে চাইছেন, কোন একটি ধর্মান্ধ কমিউনিটিআছে, যারা কথিত প্রগতিশীলদের হত্যা করতে চায়।

 

 

 

 

 

 

 

আমার জানামতে, জাফর ইকবাল একজন মার্কিনপন্থী শিক্ষাবিদ। সে এবং তার ওয়াইফ সিআইএর পরিচালিত পাবর্য্ সংগঠন সিএইচটি কমিশনের সাথে যুক্ত। আরেকটি খবর, সম্ভবত ট্রাম্পের উপদেষ্টা লিসা কার্টিস এখন বাংলাদেশে। লিসা কার্টিস বাংলাদেশে আসার পূর্বে তারসাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির প্রতিনিধিদল অবশ্যই যোগাযোগ করেছে। হয়ত অনুরোধও করেছে, রাজনৈতিকভাবে বিএনপির পক্ষে এবং আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে কিছু করার জন্য। কিন্তু জাফর ইকবালের হামলা দ্বারা দেখা গেলো, কোন একটি গোষ্ঠী বাংলাদেশে মার্কিন কূটনীতিক থাকা অবস্থায় এক মার্কিনপন্থী শিক্ষাবিদের উপর হামলা করলো। ইতিমধ্যে অবশ্য আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলে দিয়েছে, এ হামলা বিএনপি করেছে। তারমানে বিএনপি লিসা কার্টিসকে দিয়ে যে গেম খেলতে চেয়েছিলো তার উল্টো গেম খেলা হয়েছে ফয়জুরকে দিয়ে। আমেরিকাকে উল্টো মেসেজ দিতে চেয়েছে, “বিএনপি তোমার লোকের উপর হামলা করে। বিএনপি উগ্রবাদী। ট্র্যাম্পের অবস্থানবিরোদী.. ..।ইত্যাদি”।

 

 

 

 

 

 

 

আরেকটি কথা, জাফর ইকবালকে রাখা হয়েছে ঢাকা সিএমএইচ-এ এবং ফয়জুরকে রাখা হয়েছে সিলেট সিএমএইচ-এ। সুতরাং কোন গোযেন্দা সংস্থাটা দিয়ে কর্তাব্যক্তিরা প্ল্যান সাজিয়েছেন তা আর মুখ ফুটে আমি বলতে চাইছি না।

 

 

 

 

 

 

 

পাঠকদের জন্য বলছি। এ ধরণের হামলাকে আন্তর্জাতিকভাবে বলে ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপরেশন’। ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন হলো এমন ধরনের মিলিটারী অথবা ইন্টেলিজেন্স অপারেশন যেখানে দুনিয়ার সবাইকে বিভ্রান্ত করতে কোনো একটি পক্ষ তার বিরুদ্ধ পক্ষের ছদ্মবেশ ধারন করে নিজ দলের বা নিজ সমর্থকদের উপরে এক বা একাধিক সহজে দৃশ্যমান আক্রমন পরিচালনা করে। এই আক্রমন গুলির প্রধান উদ্দ্যেশ্যই হলো সবার সামনে প্রতিপক্ষকে হীন প্রমান করে প্রতিপক্ষের উপরে আক্রমনের বিশ্বাসযোগ্য অজুহাত পাওয়া। সামরিক ও ইন্টেলিজেন্স ইতিহাসে ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশনের অসংখ্য নজির পাওয়া যায়।

 

 

 

 

 

 

 

তবে সরকারদল প্রতিপক্ষ দমন করুক, সেটা আমার সমস্যা নয়। কারণ রাজনীতিতে একপক্ষ অন্যপক্ষকে দমন করতেই পারে। কিন্তু তিনি প্রতিপক্ষকে দমন করতে ধর্মকে কেন ব্যবহার করবেন ? কেন ধর্মকে খারাপভাবে সবার সামনে উপস্থাপন করবেন ? তার ব্যক্তি রাজনৈতিক স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করার ফলে, আজকে মুসলমান দেখলে সবাই জঙ্গী বলবে, দাড়ি-টুপি দেখলেই সন্দেহ করে বসবে। আমার মনে হয়, এসব ফলস ফ্ল্যাগ অপরেশনখুব কমন হয়ে গেছে, সময় এসেছে মুসলমানদের এর বিরুদ্ধে বলার। মুসলমানদের উচিত নিরপেক্ষভাবে এ কাজের প্রতিবাদ করা, এবং বলা- তোমরা রাজনৈতিকদলগুলো রাজনীতি দিয়ে বিরোধীদের যত ইচ্ছা দমন করো, কিন্তু ধর্মকে এভাবে মিথ্যা ব্যবহার করে মুসলমানদের বদনাম করতে পারবে না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

# গত এপ্রিল মাসে আমি একটা লেখা লিখেছিলাম। লেখার ভেতর দুটি বিষয় তুলে আনি, একটি হলো ব্যক্তি স্বার্থ, আরেকটি হলো জাতিগত বা ধর্মীয় স্বার্থ। সে লেখায় আমি বলেছিলাম, বর্তমান মুসলমানরা ব্যক্তি স্বার্থের দিকে বেশি করে ঝুঁকে আছে। সবাই ব্যক্তিগতভাবে উপকৃত হতে চায়, ব্যক্তিগতভাবে উপকৃত হলেই ভাবে সব হয়ে গেলো। কিন্তু জাতিগত বা ধর্মীয় স্বার্থকে কেউ প্রাধান্য দেয় না। ভাবে ব্যক্তি স্বার্থ উদ্ধার হলেই হলো, ধর্মীয় স্বার্থ গেলে কি বা আসে যায় ?”

 

কিন্তু মুসলমানরা এখানেই ভুল করে, কারণ ব্যক্তিস্বার্থ তাকে সাময়িকভাবে উপকৃত করতে পারে, কিন্তু জাতিগত বা ধর্মীয় স্বার্থ দীর্ঘমেয়াদী প্রটেকশন দেবে। প্রায় সাড়ে ১২শবছর সুপার পাওয়ার থাকা মুসলমানরা ব্যক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে ইহুদীদের অধীনে চলে গেছে, আর ইহুদীরা জাতিগত স্বার্থকে আড়কে ধরে থাকায় ৫শবছর খ্রিস্টানদের এবং সাড়ে ১২শবছর মুসলমানদের অধীনে থেকেও ফের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে।

 

ছবিতে দেখুন, ডিগ্রি পরীক্ষার রূটিন। পুরো রমজান মাস ধরে ১ম বর্ষের পরীক্ষা চলবে। এই রুটিন নিয়ে ফেসবুকে দেখলাম মুসলমানদের মধ্যে দুইভাগ হয়ে গেছে। একদল বলছে, “রমজান মাসে রোজা, তারাবী, কোরআন পাঠ ইত্যাদি করে পরীক্ষা দেয়া সম্ভব না। অনেকেই রোজা ভঙ্গ করবে।

আরেকদল মুসলমান বলছে: পরীক্ষা যত তাড়াতাড়ি হয়, তত লাভ। পরীক্ষা পেছানো মানে সময় নষ্ট, সেশনজট হওয়া। তাই রমজানের কারণে পরীক্ষা পেছানোর পক্ষপাতি তারা নয়।

 

আমার যতদূর মনে পরে:

১) সরস্বতী পূজা থাকায় হিন্দুদের আন্দোলনের কারণে ২০১৭ সালের অনার্স ২য় বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

২) পূজার কারণে ২৯ সেপ্টেম্বর (মূল ছুটি ৩০ তারিখ) বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড এর পরীক্ষা স্থগিত হয়।

৩) পূজার কারণে ২৯ সেপ্টেম্বর (মূল ছুটি ৩০ তারিখ) চট্টগ্রাম বন্দরের পরীক্ষা স্হগিত করা হয়।

৪) পূজার কারণে গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৭ কলেজের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

 

অনেকেই বলে, আওয়ামী সরকার হিন্দুদের অনেক সুযোগ সুবিধা দেয়। কিন্তু মুসলমানদের নির্যাতন করে। আমি তাদের বলবো- এ কারণেই তারা বেশি সুবিধা পায়। কারণ তারা সম্মিলিতভাবে জাতিগত শক্তিকে বেশি ফুটিয়ে উঠায়। এজন্য সরকার হিন্দুদেরকে একটা শক্তি হিসেবে কাউন্ট করে। অপরদিকে মুসলমানরা নিজেদের স্বার্থই চায় না, তাই মুসলমানদের দুইটাকা দিয়ে পাত্তা দেয় না সরকার। একই কারণে ভারতে হিন্দুরা এখন ক্ষমতায় আর মুসলমানরা বেকুবের মত মার খাচ্ছে।

 

মুসলমানরা যতদিন ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে, জাতিগত স্বার্থকে প্রাধান্য না দিতে পারবে, ততদিন তারা নির্যাতিত হবে, মার খাবে, অপমানিত হবে। মনে রাখতে হবে, ব্যক্তিস্বার্থের জণ্য মীর জাফর ব্রিটিশদের সহায়তা করেছিলো, কিন্তু ব্রিটিশরা সময়মত মীর জাফরকের সরিয়ে দিয়েছে। যে সব মুসলমান নিজস্ব স্বার্থের কথা চিন্তা করে ধর্মীয় বা জাতিগত স্বার্থ ত্যাগ করতে চায়, তাদের অবস্থাও একই হবে।

 

রমজান মাসে তাই সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা-অ্যাসাইনমেন্টের বিরুদ্ধে বলুন। দেশে ধর্মীয় চেতনা বৃদ্ধিতে সমর্থন করুন। মনে রাখবেন, ধর্মীয় চেতনা-ই আপনাকে জাতিগতভাবে রক্ষা করবে, কিন্তু ধর্মীয় চেতনা দূরে ঢেলে ব্যক্তি (ক্যারিয়ারের) স্বার্থ নিয়ে লাফালাফি করে কোন লাভ হবে না। বরং ধর্মীয় চেতনা শেষ করতে পারলেই ওরা আপনার ঘাড় মটকে ধরবে। তাই সাবধান।

 

 

 

 

 

# গতকালকে ভিকারুননিসা স্কুলের এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে।

এ আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে একেক মিডিয়ায় একেক ধরনের বক্তব্য এসেছে,

তবে আমার কাছে অধিক গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে-

টিসির হুমকি, ভিকারুন্নেসার ছাত্রীর আত্মহত্যাএই শিরোনামটি। (https://bit.ly/2AU0YpU)

 

এ ঘটনার পর অনেকেই অনেকের শাস্তি, বিচার দাবি করছে। সেটা হতে পারে, তবে সেটা ক্ষুদ্র অংশের সমাধান। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে, সমস্যার কারণ আরো গভীরে।

 

আপনি যদি মিডিয়ার দিকে তাকান, তবে দেখবেন, গতকাল (সোমবার) বাংলাদেশে আরো কয়েকটি আত্মহত্যার খবর মিডিয়ায় এসেছে-

১) উত্তরায় স্বামীর সাথে ঝগড়া বেধে স্ত্রীর আত্মহত্যা (https://bit.ly/2EdRbz0)

২) বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পেরে ঝালকাঠিতে ছাত্রীর আত্মহত্যা (https://bit.ly/2QBZs5C)

৩) নওগায় ট্রেনের নিচে ঝাপ দিয়ে যুবতির আত্মহত্যা (https://bit.ly/2rjQk7F)

 

গতকয়েকদিন যাবত মিডিয়ায় আসা আরো কিছু খবর -

-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১ মাসে ৯ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা (https://bit.ly/2BQzYth)

-ঢাবিতে আত্মহত্যা ঠেকাতেগ্রুপ ট্যুরের ওপর বিধিনিষেধ (https://bit.ly/2AneZwh)

 

মিডিয়া এনলাইসিস করতে গিয়ে আমি দেখেছি, প্রতিদিন বাংলাদেশের অনেক মানুষ আত্মহত্যা করে, এবং বিষয়টি সত্যিই উদ্বেগজন। তবে তরুণ প্রজন্ম মানে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে আত্মহননের ঘটনা ব্যাপকহারে বেড়ে যাওয়া এখন বেশি দৃশ্যমান হচ্ছে। হঠাৎ করে এই আত্মহত্যা প্রবণতা বৃদ্ধিতে কারো এককদোষ না দিয়ে, আমার কাছে পুরো সিস্টেমটাকেই সমস্যা মনে হয়। এবং সেই সিস্টেমে যদি আমুল পরিবর্তন না আনা হয়, তবে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে আত্মহত্যার মহামারি দেখতে প্রস্তুত থাকতে হবে।

 

বাংলাদেশে যে আত্মহত্যার মহামারি আসন্ন, এটা আমি এমনি এমনি বলি নাই। বাংলাদেশের মানুষ ও সরকার সংষ্কৃতিসহ বিভিন্ন পলিসিতে যে সব দেশকে ফলো করে, তাদের আত্মহত্যার খবরগুলো দেখুন, তখন বুঝবেন, আত্মহত্যার সংখ্যাবৃদ্ধি বাংলাদেশে এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

ক) ভারতে প্রতি ঘণ্টায় একজন স্কুল শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে (https://bit.ly/2Rwit6P)

খ) ব্রিটেনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতা (https://bbc.in/2zCMefm)

গ) ব্রিটেনে আত্মহত্যা প্রতিরোধ বিষয়ক মন্ত্রী নিয়োগ (https://bit.ly/2KVluLm)

ঘ) যুক্তরাষ্ট্রে আত্মহত্যার হার ১৭ বছরে ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি (https://bbc.in/2RDQTow)

 

আত্মহত্যার কেন হয় ? এই কথা যদি কোন চিকিৎসককে করেন, তবে সে বলবে, এটা একটা মানসিক সমস্যা বা রোগ। অর্থাৎ কোন এলাকায় যখন বিশেষ কিছু মানসিক রোগ বৃদ্ধি পায়, তখন সেখানে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়াও স্বাভাবিক। যেহেতু বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যা বাড়ছে, তাহলে কি বলা যায় না, বাংলাদেশে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে মানসিক সমস্যা বাড়ছে ? অথবা বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাতেও কি এমন কিছুর গ্যাপ হয়েছে, যাতে ছাত্র-ছাত্রীরা মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে ? যার প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি হচ্ছে আত্মহত্যার প্রবণতা ??

 

পৃথিবীতে আধুনিক পড়ালেখার সিস্টেমগত দিক থেকে এগিয়ে থাকা দেশ ধরা হয় ব্রিটেনকে। সেই ব্রিটেনে ২৫% তরুণী মানসিকভাবে অসুস্থ বলে সম্প্রতি খবর বেড়িয়েছে (https://bit.ly/2Stld4W)। এ থেকেও একটি বিষয় পরিষ্কার তথাকথিত আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা বলে আমরা যাকে সর্বোচ্চ স্বীকৃতি দিচ্ছি, সেটাও কিন্তু আত্মহত্যা প্রবণতা হ্রাস করতে পারে না।

 

আত্মহত্যার পেছনে মূল মানসিক সমস্যা হিসেবে ধরা হয় ‘হতাশা’, বিষন্নতা, অবসাদ বা ডিপ্রেশনকে। এক সমীক্ষার রিপোর্ট, বিশ্বের ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীদের আত্মহত্যার প্রধান কারণ এই হতাশা। (https://bit.ly/2EbCZ9X)

 

কথা হলো, মানুষ তার প্রার্থিত বিষয় না পেলেই হতাশ হয়, কিন্তু সেটা আত্মহত্যা পর্যন্ত গড়ায় কখন ?

তখন গড়ায়, যখন ঐ মানুষটি ঐ বিষয়টিকেই জীবনের মূল ভেবে বসে। যখন সে বিষয়টি পায় না, তখন সে ভাবে, এ জীবন রেখে লাভ কি ?

 

একটা উদহারণ দিলে বোঝা সহজ হবে,

ভালো একটা স্কুলে চান্স পাওয়া, কারো কাছে জীবনের মূল।

স্কুলে চান্স পাওয়ার পর জেএসসি-পিএসসিতে ভালো রেজাল্ট করতে হবে, এটাই জীবনের মূল।

এসএসসিতে ভালো জিপিএ পেতে হবে, এটাই জীবনের মূল।

ভালো একটা কলেজে চান্স পেতে হবে, এটাই জীবনের মূল।

এইচএসসিতে ভালো জিপিএ পেতে হবে, এটাই জীবনের মূল।

ভালো ভার্সিটিতে চান্স পেতে হবে, এটাই জীবনের মূল।

ভার্সিটিতে ভালো রেজাল্ট করতে হবে, এটাই জীবনের মূল।

বিসিএস’এ টিকতে হবে, এটাই জীবনের মূল।

ভালো একটা চাকরী পেতে হবে, এটাই জীবনের মূল।

 

আমি আগেই বলেছি, কেউ যখন কোন বিষয়কে জীবনের মূল বিষয় বলে মনে করে, এবং কোন কারণে যদি সেটা হারিয়ে ফেলে, তবে তার কাছে বেচে থাকা মূল্যহীন মনে হয়ে পড়ে। আর তখনই ঘটে আত্মহত্যা। বর্তমানে ভোগবাদী জীবন ব্যবস্থায়, প্রতিযোগীতায় টিকতে জীবনে ঘটে যাওয়া ছোট ছোট বিষয়গুলোকে জীবনের মূল হিসেবে স্বীকৃতি দেয় সমাজ। কিন্তু যারা সেটা না পায়, তাদের জীবনে ঘটে যায় বিপর্যয়।

আজ থেকে ১৫-২০ বছর আগে আমি যখন ছাত্র ছিলাম, তখন এসএসসিতে ভালো লেখাপড়া করার পরও জিপিএ কম আসলো, মন খারাপ করে বাসায় শুয়ে রইলাম। তখন আমার মা আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলবো, “বাবা এটাই জীবনের শেষ নয়, শুরু। তাই এই রেজাল্টে হতাশ হইয়ো না। সামনে ভালো করার চেষ্টা করো।মায়ের এই সান্ত্বনা শুনে আমার বুকে বল আসলো। আমি নতুন করে শুরু করলাম। ভালো কলেজে চান্স পেলাম না, আবারও মন খারাপ। মা যথারীতি বলবো- বাবা এটাই শেষ নয়, শুরু। তাই সামনে ভালো করার চেষ্টা করো।

ভার্সিটিতে ভালো রেজাল্ট হলো না, মা তখনও সান্ত্বনা দিয়ে বললো, “বাবা, এটাই শেষ নয়। এখন অনেক পথ বাকি আছে। তাই নতুন করে ভালো করার চেষ্টা করে।এখন মায়ের সেই কথাগুলো মনে আসলে ভাবি, কথাগুলো কতটা সত্য। আসলে ঐ বিষয়গুলো জীবনের কিছুই নয়। আরো বহুপথ, বহুকিছু পাড়ি দিতে হবে। জীবনে জয়লাভ করতে হলে এসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশের বাস্তবে কোন দাম-ই নেই। জীবনটা আরো অনেক বড়, আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সমস্যা হলো আমাদের বাবা-মায়ের প্রজন্ম শেষ হয়েছে, এখন আমাদের প্রজন্ম বাবা-মা হচ্ছে। তারা কিন্তু তাদের সন্তানদের আমার মায়ের মত সান্ত্বনা দিতে পারছে না। কয়েকদিন আগে শুনলাম আমাদের পাশের বাসার এক ছাত্রী এসএসসি পরীক্ষার পর আত্মহত্যা করেছে। কারণ শুনলাম, রেজাল্ট খারাপ করার কারণে বাবা-মায়ের বকুনি খেয়ে মেয়ের আত্মহত্যা ।

আমাদের প্রজন্মের বাবা-মার’ও দোষ দেয়া যায় না, কারণ ছেলে-মেয়ের ভালো রেজাল্ট তার যতটা না দরকার, তার থেকে বেশি দরকার লোক দেখানোর জন্য, মানে ছেলে ভালো স্কুলে চান্স না পেলে প্রতিবেশীর সামনে মুখ দেখাবে কিভাবে ? ভালো রেজাল্ট না করলে আত্মীয় স্বজনকে কি বলবে ? বিসিএসসে চান্স না পেলে কলিক-বন্ধুমহলে সামনে মুখ থাকবে না। এভাবে ভোগবাদী সমাজের চাপ এসে পড়ে বাবা-মাউপর, যা সে চাপিয়ে দেয় সন্তানের উপর, আর সন্তানও চাহিদা মাফিক সেই সাময়িক বিষয়টিকে জীবনের মূল বানিয়ে নেয় (ঢাবিসহ বিভিন্ন ভার্সিটিতে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে কথিত ক্যারিয়ার জীবনের মূল পূজনীয়)। আর মূলটা হারালেই জীবনের মূল্য শেষ।

 

এখানে আমাদের পাঠ্যবই ও সিলেবাস, মিডিয়া ও সমাজের প্রভাব শতভাগ দেয়া যায়। ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার’, একথা বলে আমরা সমাজ থেকে ধর্ম তুলে দিয়েছি। ধর্মহীন সমাজ ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা, আইন ব্যবস্থা, মিডিয়া প্রণয়ন করেছি। আর ধর্মহীন মানেই কিন্তু বস্তুবাদ বা বস্তুপূজা। যে সমাজে মানুষ সৃষ্টিকর্তা বাদ দিয়ে সৃষ্টি বা বস্তুপূজার শুরু করে, বস্তুকে জীবনের মূল করে নেয়, সেই সমাজে হতাশা বেড়ে যায়। কারণ বস্তু ক্ষণস্থায়ী, তার ক্ষয় আছে। বস্তুর উপর ভরসা রাখা যায় না। বস্তুকে জীবনের মূল করা হলে, তার পতনের মাধ্যম দিয়ে জীবনেরও পতন হতে পারে। আমার জীবনে যখন কোন আশার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটতো, তখন আমার মা আমাকে বলতো, “সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা রাখো, সৃষ্টিকর্তা যা করেন ভালোর জন্য করেন। এমনও তো হতে পারে, এর মাধ্যমে তোমার ভালো কিছু হবে, যা তুমি জানে না।

 

আমি আমার মায়ের কথাগুলো তখন বুঝতাম না। এখন বুঝি, আমি যখন জীবনের দৃশ্যত খারাপ জিনিসগুলোকেও নিয়তি মনে করে ভালো হিসেবে ধরে নিলাম , তখন আমি মানসিকভাবে অনেক শক্তিশালী হয়ে গেলাম এবং সেই শক্তিটাই আমাকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেলো। এমনকি আমার বন্ধুবান্ধব (যারা আমার থেকে পড়ালেখায় অনেক ভালো ছিলো) তাদের থেকে বাস্তবে জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমি অনেক এগিয়ে, যার সাথে তারা তুলনা করতে পারবে না।

 

তাই আমার মনে হয়, আত্মহত্যা মহামারি তৈরীর আগেই সামাজিক পরিবর্তন হওয়া জরুরী । ডালপালায় নয়, আঘাত হানতে হবে গোড়ায়। বস্তুবাদ পরিহার করে শিক্ষাসহ সমাজের সর্বত্র ধর্মীয় ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে, তবেই সমাধান।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

# কোটা পদ্ধতি আর প্রশ্নফাঁসের মধ্যে তফাৎ কোথায় বলতে পারেন ?

প্রশ্নফাঁস হলে আমাদের মধ্যে একটা মহল ছি: ছি: করে। বলে- “শিক্ষাক্ষেত্র গেলো, গেলো।আরো বলে-মেধা নষ্ট হচ্ছে, মেধাবী ও দুর্বল ছাত্র একাকার হচ্ছে। কিন্তু ঐ গোষ্ঠীটা কিন্তু কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে বলে না।

 

কিন্তু একটু চিন্তা করে দেখুন তো,

প্রশ্নফাঁস আর কোটা পদ্ধতির মধ্যে তফাৎটা কোথায় ?

প্রশ্নফাঁসে যেমন মেধাবী ও দুর্বল একাকার হয়ে যায়, ঠিক কোটা পদ্ধতিতেও তো একই অবস্থা। বরং কোটা পদ্ধতিতে একধাপ এগিয়ে মেধাবীকে বসিয়ে দুর্বলকে পুরষ্কৃত করা হয়।

 

এজন্য দেখবেন, যারা এগুলো নিয়ন্ত্রণ করে তাদের কাছে কিন্তু কোনটাই খারাপ লাগে না। প্রশ্নফাঁসও খারাপ লাগে না, কোটা পদ্ধতিও খারাপ লাগে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ মুখে বলেছেন, তিনি প্রশ্নফাঁসে বড় কোন সমস্যা দেখছেন না। আবার দেখা যাচ্ছে, কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের পিটুনি খেতে হয়েছে, ৮০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে।

 

আসলে সত্যিই বলতে-

যারা প্রশ্নফাঁস করে, তারাই কোটা সিস্টেম প্রণয়ন করে,

তাদের কাছে কখনই এগুলো খারাপ লাগে না, বরং ভালো লাগে। তারাই এগুলো করে। তারা চায়, দেশের মেধাবীরা ধ্বংস হয়ে যাক, মূর্খ শ্রেণী টিকে থাকুক।

কারণ মেধাবীরা বেশি বুঝবে, তারা চাকুরী পেলে বলবে- যোগ্যতায় চাকুরী পেয়েছি।মেধাবীরা মাথা খাটাবে, এতে চোর-চ্ছ্যাচ্চরদের সমস্যা হবে।

অপরদিকে মুর্খদের পুরষ্কার স্বরূপ চাকুরী দিলে তারা সারা জীবন মাথা নত করে থাকবে। উঠতে বসতে ‘জি হুজুর’ ‘জি হুজুরবলবে। চুরিতে তো বাধা দেবে না, বরং সাহায্য করবে। আর মেধা না থাকায়, নতুন কিছু চিন্তাও করতে পারবে না। মাছি মারা কেরানী হবে। এক ফাইলে মরা মাছি দেখলে, অন্য ফাইলে নিজ থেকে মাছি মেরে লাগায় দিবে।

 

আসলে এগুলো সবগুলো আন্তর্জাতিক ইহুদীবাদী সম্রাজ্যবাদীদের ষড়যন্ত্র তথা কর্পোরেটোক্রেসির অংশ। তাদের দিকনিদের্শনা অনুসারেই দেশের দুর্নীতিবাজ শাসকরা তাদের দেয়া প্ল্যান বাস্তবায়ন করে।

সত্যি বলতে, একটা দেশে মেধার মূল্যায়ন মানে ঐ দেশ জ্ঞান ও প্রযুক্তিতে উন্নতি হওয়া। কিন্তু ইহুদীবাদী কর্পোরেটরা তাদের ক্ষমতা ধরেই রেখেছে প্রযুক্তি আর জ্ঞানেরমোড়কে। সেটা মুসলমানদের কাছে চলে আসলে সমস্যা। তবে হ্যা, মুসলমানদেশগুলো যখন তাদের মেধাবীদের মূল্যায়ন না করবে, তখন মেধাবীদের কিনে নেবে সম্রাজ্যবাদীরা। ৫-১০ লক্ষ টাকা বেতনের চাকুরী দিয়ে নিজের দেশে নিয়ে আসবে। পরিভাষায় যাবে বলে, ব্রেইন ড্রেইন ।

এরপর মুসলমানদের মেধা দিয়ে তারা যে প্রযুক্তি তৈরী করবে, সেটা দিয়ে উল্টো মুসলমানদেরই শাসন করবে। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার কামাবে, সারা বিশ্বে সম্রাজ্যবাদ টিকিয়ে রাখবে।

 

এই তো কিছুদিন আগে কাজী আইটি সেন্টার লিমিটেড’র মালিক মাইক কাজী বলেছিলেন, “আমি আমেরিকায় প্রায় ৩০ বছর ধরে কাজ করেছি। আর বাংলাদেশে ৮ বছর ধরে। আমেরিকানদের মধ্যে অনেক মেধাবী আছে। কিন্তু আমাদের বাঙ্গালী ভাই-বোনেরা আরও বেশি মেধাবী।” (http://bit.ly/2FJMj5W)

এ কথা শুনে স্বাভাবিক একটা প্রশ্ন উদিত হয়, সম্রাজ্যবাদীদের জন্য মুসলমানদের মেধা আসলে কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ ?

 

কিছুদিন আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্র্যাম্প মুসলমান দেশগুলো থেকে অভিবাসী নেয়ার বিরুদ্ধে আইন করেছিলো। তখন কিন্তু এর প্রতিবাদ করেছিলো ফেসবুক, গুগল ও অ্যাপলসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শতাধিক বড় বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। কারণ তাদের কোম্পানি টিকে আছে মুসলমানদের মেধার উপর ভিত্তি করে। মুসলমান আসা বন্ধ হয়ে যাওয়া মানে তাদের কোম্পানিগুলো মেধাশূণ্য হয়ে যাবে। আর মেধাশূণ্য হওয়া মানে তাদের পথে বসে যাওয়া। (http://bit.ly/2GFR3qD)

 

যাই হোক, কথা বলছিলাম কোটা পদ্ধতি আর প্রশ্নফাঁস নিয়ে। শেষে একই কথা আবার বলবো-

ইহুদীবাদীদের সিস্টেমই হলো, তারা মুসলমান দেশেই মুসলমানদের মেধার অবমূল্যায়ন করবে। মেধার মূল্যায়ন না পেয়ে শেষে মেধাবীরা ইহুদীবাদীদের কাছে নিজের মেধা বিক্রি করতে যাবে। এতে এক কাজে দুই কাজ হবে। মানে- মেধাহীন মুসলমানদেশগুলো কখনও মাথা উচু করে দাড়াতে পারবে না। আর মুসলমানদের মেধা ক্রয় করে ইহুদীবাদীরা উল্টা মুসলমানদের উপরেই সেটা প্রয়োগ করবে। ইহুদীবাদী ভালো করেই জানে, স্ট্রাইকার (মেধাবী) শত্রুর কোটে না রেখে, নিজ কোটে নিয়ে আসাই সফলতার চাবিকাঠি।

 

 

 

 

 

একটা মানুষ বাচে কত দিন ?

৫০, ৬০, ৭০ ?

পড়ালেখা করতে চলে যায় ২৫-২৬ বছর,

চাকুরী পেতে চলে যায় ৩০ বছর

বিয়ের টাকা জমাতে চলে যায় ৩৫ বছর ।

এরপর বিয়ে, ঘরসংসার, বাচ্চা-কাচ্চা হওয়া।

অথচ একটা পুরুষ বয়ঃপ্রাপ্ত হয় ১৫ বছর,

২০ বছর তাকে শারীরিক চাহিদা পুষে রাখতে হয়।

স্কুল-কলেজ-ভার্সিটিতে হাবিজাবি পড়িয়ে ২৫-২৬ বছর পার করে ।

কেউ কি বলতে পারবেন, কর্মক্ষেত্রে শিক্ষা জীবনের কতটি বিষয় কাজে লাগে ?

এত এত পরীক্ষা, এ্যাসাইন্টমেন্ট, ল্যাব, কিন্তু বাস্তব জীবনে এগুলো কতটুকু দরকার লাগে ?

আর যদি দরকারই না লাগে, তবে এত গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো অপচয় কেন ?

মানুষের জীবন তো একটাই, তাই না ?

এই যে অযথাই মানুষের সময়গুলো অপচয় করা হচ্ছে,

পড়ালেখার সিস্টেমটা কি আরো শর্ট করে আনা যায় না ?

১৮-২০ বছরে জরুরী পড়ালেখা শেষ, চাকুরী পাবে ২২ বছরে, সবগুছিয়ে বিয়ে করবে ২৫ বছরে।

আর যার সামর্থ আছে, সে সুযোগ পেলেই বিয়ে করে ফেলবে।

বিয়ের ব্যাপারটা গুরুত্ব দিচ্ছি, কারণ শিক্ষাক্ষেত্রে দেখে এসেছি সবাইকে।

পোলাপাইন শারীরিক কষ্টে একেকটা মানসিক রোগি হয়ে গেছে।

সারা দিন এসব আলোচনা, হাই হুতাশ। অনেকে তো সেই খেয়ালে পড়ালেখা মনযোগ দিতে পারে না।

হুশ হারিয়ে ফেলে।

এই আজকাল মোটিভেশনাল স্পিচ এত মার্কেট পেয়েছে তার কারণ কি ?

সত্য হলো অধিকাংশ পোলাপাইন সেক্সুয়াল ফ্রাস্টেটেড, আর কিছু না।

কিছু একটা উল্টাপাল্টা করতে গিয়ে পড়ালেখায় মনযোগ হারাইছে।

মনযোগ আনতে এখন মোটিভেশনাল স্পিচ নিচ্ছে।

আগে গ্রাম দেশে একটা কথা প্রচলিত ছিলো,

বাদাইম্মা পোলারে বিয়া দাও, দেখবে সব ঠিক হইয়া যাইবো”।

দেখা যায়, সমাজ সংসারে মনোযোগ নাই, কিন্তু বিয়ের পর সংসার বাচ্চা নিয়ে বেশ দায়িত্বশীল হয়ে উঠেছে ছেলে-মেয়েটি।

আমার মনে হয়, যদি শিক্ষাব্যবস্থায় এমন পরিবর্তন আনা যায়,

মূল শিক্ষাটা আরো সংক্ষিপ্ত সময় লাগবে, প্রফেশনাল ক্ষেত্রে আরো কম বয়সে ঢুকতে পারবে।

একইসাথে বিয়ে সুবিধামত করতে পারবে, কোন ধরাবাধা থাকবে না,

তবে পুরো সমাজ ব্যবস্থায় আরো অনেক গতিশীলতা আনা সম্ভব।

আমি আবারও বলছি, বর্তমানে যে সমাজ ব্যবস্থা চালু আছে, তাতে শুধু কর্পোরেটদের স্বার্থই আদায় হবে, কিন্তু মানুষের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হবে না।

তাই যদি পুরো সমাজ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে চান, তবে নতুন করে চিন্তা করুন।

নিরপেক্ষ তরুণ সমাজকেই চিন্তা করতে হবে, আগামী সমাজ ব্যবস্থা কেমন হবে ?

 

 

 

 

 

 

 

 

# একটা খবরে দেখলাম-

স্বীকৃতির পর ১০১০ জন কওমি আলেমকে সরকারি চাকরী

প্রশ্ন হচ্ছে সরকারি চাকুরীটা কওমী আলেমরা পাচ্ছেটা কোথায় ?

উত্তর : ইফা পরিচালিত ‘দারুল আরকামনতুন মাদ্রাসা প্রজেক্টে। (http://bit.ly/2tkZvsu)

 

সরকারের নতুন মাদ্রাসা সিস্টেম ‘দারুল আরকামনিয়ে আজ থেকে ৩ মাস আগে আমি একটা লেখা লিখেছিলাম (http://bit.ly/2Fnj6Nj)। এই মাদ্রাসা সিস্টেমটাকে বলা হচ্ছে ‘মুক্তচিন্তার মাদ্রাসা’। অর্থাৎ এ প্রজেক্টের মাধ্যমে মাদ্রাসা শিক্ষার নামে মুক্তচিন্তা, নাস্তিক্যবাদ বা সেক্যুলারিজম প্রমোট করা হবে। আর সেই শিক্ষা দেয়ার জন্য নিয়োগ দেয়া হচ্ছে ১০১০ জন কওমী আলেমকে !

তারমানে “স্বীকৃতি দান করবো, কিন্তু আমার নাস্তিক্যবাদপ্রচারে সাহায্য করতে হবে ।

তাহলে এই স্বীকৃতি বা সরকারী চাকুরীর মূল্য থাকলো কতটুকু ?

 

 

 

 

তিনি ৯ বছর ধরে শিক্ষামন্ত্রী,

ক্ষমতায় এসেই তিনি নতুন কুক্ষিগত শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছেন,

পাঠ্যবইয়ে হিন্দুত্ব ও নাস্তিক্যবাদী লেখা দিয়ে ভরপুর করেছেন,

ছাত্র-ছাত্রীদের দিয়ে মঙ্গলশোভা যাত্রা বাধ্যতামূলক করেছেন,

স্কুলে স্কুলে সরস্বতী পূজা জারি করেছেন,

স্কুল-মাদ্রাসায় রবীন্দ্রের গান দিয়ে প্রতিযোগিতা চালু করেছেন,

শত নিয়ম-নীতি চালু করে ছাত্র-ছাত্রীদের উপর গিনিপিগের মত পরীক্ষা করেছেন,

ভারত থেকে ১ বার, ইউনেস্কো থেকে দুই বার পুরষ্কার পেয়েছেন।

কিন্তু প্রশ্নফাঁস বন্ধ করতে সক্ষম হন নাই।

ফলশ্রুতিতে ছাত্রছাত্রীরা তার উপর ক্ষেপে গিয়ে তার পদত্যাগ চেয়েছে,

কিন্তু তিনি পদত্যাগ করতে রাজি নন।

এখন তিনি ‘ট্যাবদিয়ে নতুন পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

আহারে ট্যাব দিয়ে পরীক্ষা, শুনতে কত সুন্দর।

বাস্তবে ২০ লক্ষ পরীক্ষার্থীকে ট্যাব দিয়ে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব কি অসম্ভব সেটা পরে বিষয়,

কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশ্য সম্ভবত ভিন্ন, ট্যাব নামক মুলা দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভকে প্রশমিত করা।

শুনেছি একই ঘটনা নাকি এরশাদ সরকারও দেখিয়েছিলো।

আন্দোলনরত ছাত্র সমাজকে থামাতে বিশ্বকাপ ফুটবল টিম নামক মুলা দেখিয়েছিলো।

কিন্ত যেই মুলাই দেখাক,

তিনি যে বার বার নিয়ম-নীতি পরিবর্তন করে যাচ্ছেন, এটা কি স্বাভাবিক কোন বিষয় ?

এটা কি পুতুল খেলা, যে ইচ্ছে হলে ভেঙ্গে দিলাম, আবার নতুন করে গড়লাম ?

বাংলাদেশে চাকুরী ক্ষেত্রে ৫-৬ শিক্ষাবছর ব্যবধানের ছাত্র-ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করে। ধরে নিলাম, পরীক্ষা প্রশ্নফাঁসের ক্ষতি তারা পুষিয়ে নিলো, কিন্তু এইযে বারং বার শিক্ষা পদ্ধতি চেঞ্জ করা হচ্ছে, এতে চাকুরী সেক্টরে দিয়ে দুই নিয়মের শিক্ষার্থীদের তুলনা হবে কিভাবে ?

যে লোক ৯ বছর শিক্ষামন্ত্রী থাকার পরও আবার নতুন করে শিক্ষাপদ্ধতি চালু করতে চায়, তাকে কোন যোগ্যতায় শিক্ষামন্ত্রী পদে রাখা হয়, তা সত্যিই হাস্যকর।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

# আজকে প্রশ্নফাঁসের পক্ষে অনেক ওকালতি করছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । তিনি অনেকগুলো প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন। সেই প্রশ্নের উত্তর অনেকেই দিতে পারবেন, আমি আলাদা করে সেই উত্তর দিতে যাবো না। শুধু একটা কথা বলবো, বাংলাদেশের মানুষ অনেক বোকা, আমি অনেক আগেই বলেছি, বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে টার্গেট দিয়ে ভেঙ্গে দেয়া হচ্ছে। তারা চাইছে-ই শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে যাক, সুতরাং শিক্ষা ব্যবস্থাকে জোড়া লাগানোর জন্য যতকিছুই দেখানো হোক, সব লোক দেখানো।

বাংলাদেশ ধাপে ধাপে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, মানুষ যেন সেগুলো বুঝতে না পারে সে জন্য-

১) মানুষকে নাচ-গান-মুভি-খেলাধূলা দিয়ে মত্ত রাখা হচ্ছে।

২) মানুষ শিক্ষিত হলে সব বুঝতে পারে, সেজন্য শিক্ষাও শেষ করে দেয়া হচ্ছে,

৩) দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে মানুষকে সারাদিন পেটের চিন্তায় মত্ত রাখা হচ্ছে, যেন সে অন্য চিন্তা করতে না পারে,

৪) ধর্মীয় চর্চায় বাধা দেয়া হচ্ছে যেন তাদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় চেতনা জাগ্রত না হরে পারে,

৫) বাংলাদেশের উৎপাদনশীল খাতগুলো ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে। দেশীয় কলকারাখানা-শিল্প ধ্বংস করা হচ্ছে, কৃষিতে বাধা দেয়া হচ্ছে। বিদেশীদের ডেকে আনা হচ্ছে।

৬) ব্যাংক ও শেয়ারমার্কেটে জনগণের টাকা লুটপাট করা হচ্ছে ।

 

প্রধানমন্ত্রী যদি সেই ষড়যন্ত্র থেকে আলাদা কেউ হতেন, তবে অন্তত আজকের বক্তব্য দিতে পারতেন না। কিন্তু তিনি সেই ষড়যন্ত্র থেকে আলাদা কেউ নন, বরং তার অংশ। শুধুমাত্র ক্ষমতার মোহে এবং সামান্য কিছু অর্থের লোভে তিনি দেশের সাথে বেঈমানি করছেন। আমার মনে পড়ছে, ‘মতিউর রহমান রেন্টুর আমার ফাঁসি চাই বইয়ের কিছু অংশ, যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্ভবত বলেছিলেন, যারা তার পিতা ও পরিবারকে হত্যা করেছে তাদের তিনি ছাড়বেন না, ধ্বংস করবেন। বাংলাদেশের মানুষের উপর সম্ভবত তিনি সেই আক্রোশের প্রতিশোধ নিচ্ছেন।

 

খবরের ভিডিও লিঙ্ক- https://www.youtube.com/watch?v=7v6nO8mB3eI

 

 

 

 

 

 

নাহিদ মন্ত্রী হওয়ার পর শিক্ষানীতি-২০১০ প্রণয়ন করে। সেই শিক্ষানীতি-২০১০ কে এখন শিক্ষা আইনে রূপান্তর করা হবে বলে কাজ চলছে। শিক্ষানীতি-২০১০ যদি আপনি পড়েন (http://bit.ly/2ChxfWL), তবে বুঝতে পারবেন- শিক্ষানীতি-২০১০ হচ্ছে মূলত শিক্ষাকে কুক্ষিগত করার নীতি’। মানে, সরকার যে বই দিবে ছাত্রছাত্রীরা শুধু সেই বই পড়বে, যে শিক্ষক দিবে শুধু সেই শিক্ষকের কাছেই পড়বে, যে প্রতিষ্ঠানকে অনুমুতি দেবে শুধু তারাই পড়াতে পারবে। কোন বাড়তি পড়া, কোচিং করা কিছুই চলবে না।

সোজাভাষায় শিক্ষাকে কুক্ষিগত করার যত সিস্টেম আছে সবগুলো সেখানে অ্যাপ্ল্যাই করা হয়েছে।

মানুষের মৌলিক চাহিদা বলা হয়, ৫টি । খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা। সরকারের পক্ষ থেকে যদি ঘোষণা দেয়া হয়, এখন থেকে সরকার সবগুলো মৌলিক চাহিদা মেটাবে, তখন কেমন হবে ?

- সরকার সবাইকে খাওয়াবে, কেউ নিজ খেকে চাষবাস বা রান্না করতে পারবে না।

- সরকার সবাইকে বাড়ি বানিয়ে দিবে, কেউ নিজ থেকে বাড়ি বানাতে পারবে না।

- সরকার সবার কাপড় বানিয়ে দেবে, কেউ নিজ থেকে কাপড় বানাতে পারবে না।

- সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে হবে, কেউ প্রাইভেট ক্লিনিক বা ওষুধ কিনতে ডিসপেনসারিতে বা ডাক্তারের চেম্বারে যেতে পারবে না।

বিষয়গুলো একটু চিন্তা করুন- উপরের বিষয়গুলো কি আদৌ সম্ভব ?

যদি সম্ভব্ই না, হয়, তবে সরকার কোন সাহসে শিক্ষানীতি-২০১০ এর মাধ্যমে পুরো শিক্ষা সেক্টরকে কুক্ষিগত করতে চায় ? যার সামান্য একটা প্রশ্নফাঁস ঠেকানোর যোগ্যতা নাই, সে কিভাবে শিক্ষার মত একটি মৌলিক চাহিদার পুরো বিষয়টাকে একা সরবরাহ করার ঘোষণা দেয় ?

আমি আগেও বলেছি, এখন বলছি, শিক্ষামন্ত্রী নাহিদকে বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রনালয়ে বসানোই হয়েছে বিশেষ এজেন্ডা দিয়ে। বাংলাদেশের সম্পদ লুটপাটের জন্য সম্রাজ্যবাদীদের রয়েছে বিশাল প্ল্যান। সেই প্ল্যান বাস্তবায়ন করতে চাই, একটি মূর্খ প্রজন্ম ও অদক্ষ জনগোষ্ঠী। শিক্ষামন্ত্রী ক্ষমতা নেয়ার পর ধারবাহিক প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে আইএম জিপিএ৫ প্রজন্মতৈরী হচ্ছে। এ প্রজন্মের যোগ্যতা না থাকলেও গ্রেডিং পয়েন্ট নিয়ে চলে যাচ্ছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সব পদে, ফলে অদক্ষ প্রজন্ম নিয়ে দেশে তৈরী হবে নতুন সঙ্কট। সেই সঙ্কটের সুযোগে সহজে কাজ সারবে বিদেশী সম্রাজ্যবাদীরা।

সোভিয়েত রাষ্ট্রপতি মিখাইল গর্বাচেভ ছিলো সিআইএ’র দালাল। তার অর্ধ শতাব্দীর ক্যারিয়ারে কেউ ধরতে পারেনি তার সিআইএর দালালির কথা। কিন্তু ক্ষমতা পেয়েই সে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে দিয়ে জানান দিলো তার মার্কিন যোগাযোগের কথা। সোভিয়েতবাসী যখন বুঝলো, গর্বাচেভ একজন দালাল, তখন তাদের করার কিছুই ছিলো না। শিক্ষামন্ত্রীকে এখনও অনেকে মিখাইল গর্বাচেভের মত ইনোসেন্ট বানাতে চাইছেন, কিন্তু যখন হাতেনাতে বুঝবেন তিনি কারো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন, তখন কিন্তু কিছুই করার থাকবে না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মাদ্রাসার ছাত্রদের দাড় করিয়ে গাওয়ানো হচ্ছে রবীন্দ্রনাথের সেই হিন্দুয়ানী গান। এই হিন্দুয়ানী গান যে যত ভালো গাইতে পারবে, তাদের মধ্যে থেকে শীর্ষ বাছাই করে ২৬শে মার্চ ঢাকা স্টেডিয়ামে এই গান গাওয়ানো হবে। এ কারণে শিক্ষামন্ত্রনালয়ের নিদের্শনা অনুসারে এই গানের প্রতিযোগীতা চলছে। (http://bit.ly/2EiEUWC)

একটা বিষয় লক্ষ্যণীয়-

মাদ্রাসা ইসলাম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। সেই প্রতিষ্ঠানে হিন্দুয়ানী গান গাইতে বলেছে শিক্ষামন্ত্রনালয়। এক্ষেত্রে মাদ্রাসা শিক্ষকদের উচিত ছিলো এই কার্যক্রমে বাধা দেয়া বা প্রতিবাদ করা। কিন্তু মাদ্রাসা শিক্ষক বা ধর্মীয় নেতা এখন পর্যন্ত এর বিরুদ্ধে কোন বিবৃতি বা প্রতিবাদ করেনি। উল্লেখ্য, এই প্রতিবাদের জন্য মাদ্রাসা শিক্ষকদের ভালো গ্রাউন্ডও ছিলো। বিশেষ করে, বাংলাদেশ ন্যাশন্যাল এন্থেইম রুলস ২০০৫ এর ৫ এর ২ ধারায় স্পষ্ট করে বলা আছে এইটি স্কুলে দিনের কার্যক্রম শুরুর আগে এই গান গাইতে হবে । এই আইন অনুসারেই মাদ্রাসায় জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া বাধ্যতামূলক নয়। কারণ আইনে মাদ্রাসার উল্লেখ নাই। এই আইনের উপর নির্ভর করে মাদ্রাসা শিক্ষক বা ধর্মীয় নেতারা আইনী প্রক্রিয়ায় এ গানের বিরুদ্ধচারণ করতে পারতো।

কিছুদিন আগে দেখা গেছে, একদল মাদ্রাসা শিক্ষক তাদের মাদ্রাসা জাতীয়করণে দাবিতে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে, বেতন-ভাতা পাওয়ার জন্য মানববন্ধন করেছে। কিন্তু এখন যে তাদের মাদ্রাসায় হিন্দু সঙ্গীত পড়ানো হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে কেন মাদ্রাসা শিক্ষক বা ধর্মীয় নেতারা দাড়াচ্ছে না ? কেন তাদের ছোট ছোট ছাত্রদের হিন্দুয়ানী গান শেখাচ্ছে ?

মাদ্রাসায় অধর্ম চাপিয়ে দিতে চাইলে তার শিক্ষক-ছাত্ররাই যদি না দাড়ায় তবে কে তাদের জন্য দাড়াবে? মুসলমানরা আসলে এখন বোবা হয়ে গেছে, তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে না। দুই টাকার জন্য ঠিকই মাঠে নামে, কিন্তু ধর্ম বাচানোর জন্য মাঠে নামে না। এ কারণেই বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের এত করুণ অবস্থা। আজকে যদি মাদ্রাসার ২০০ শিক্ষক-ছাত্র প্রেসক্লাবে দাড়িয়ে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতো, তবে কি সরকার এই আইন জারি করতে পারতো ? কখনই পারতো না।

 

 

 

 

 

শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পদত্যাগ করার ইচ্ছা প্রকাশ করতেই, শেখ হাসিনা বলেছে, “১০০ অর্জন আছে, দুএকটি ঘটনায় সর্ব অর্জন নষ্ট হতে দেয়া যাবে না।

(http://bit.ly/2G9FJBG)

শেখ হাসিনার এ ধরনের কথাবার্তায় আমি খুব হতাশ হয়েছি। আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে, তিনি ১০০% অর্জন বলতে কি বুঝাতে চাইছেন? এবং এও জানতে ইচ্ছা করছে, প্রশ্নফাঁসের ঘটনাকে তিনি দুএকটা ঘটনা বলে তাচ্ছিলো করতে চাইলেন কেন ? তারমানে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্নফাঁসের ঘটনা বিশাল কিছু নয়? তার কাছে ২০ লক্ষ শিক্ষার্থীর ১০ বছরের লেখাপড়ার গুরুত্ব ১%ও নেই ?

আসলে সত্যিই তো, বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার গুরুত্ব শেখ হাসিনার কাছে থাকবেই বা কি করে ? কারণ শেখ হাসিনার নাতি-নাতনীরা বাংলাদেশে লেখাপড়া করে না, তারা ইউরোপ-আমেরিকায় লেখাপড়া করে। সুতরাং প্রশ্ন ফাঁস হলে সমস্যা কোথায় ?

আপনাদের মনে থাকার কথা, ২০১৫ সালে খালেদা জিয়া যখন হরতাল দিচ্ছিলো, তখন তার নাতনী (কোকোর মেয়ে) পরীক্ষা থাকায় মালয়েশিয়া ফেরত গিয়েছিলো। তখন মিডিয়ায় বিষয়টি আলোচিত হয়েছিলো, “‘তারা ম্যাডামের নাতনি, হরতাল অবরোধ জনগণের জন্য” ।

(http://bit.ly/2o5tY7E)

গত কয়েকদিন যাবত আমরা পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস এবং তা সামাল দেয়ার নামে যে প্রহসন দেখছি, তা পৃথিবীর কোন সভ্য দেশে আছে বলে মনে হয় না । শিক্ষামন্ত্রী প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে যে আইন-কানুন ও গ্রেফতারী সিস্টেম দেখাচ্ছে, দাগী আসামীদের উপর বর্তানো সিস্টেমকেও ফেল করেছে। তার যত আইন-কানুন সব পরীক্ষার্থীদের উপর, শিশু-কিশোরদের উপর। কিন্তু শিক্ষাসেক্টরের যে প্রাপ্তবয়স্করা প্রশ্নফাঁস করছে তাদেরকে তিনি ধরতে পারেন নাই, তাদের নিয়ে নতুন আইনও দেন নাই। শিক্ষাসেক্টরে এ ধরনের জোরজবরদস্তিমূলক পুলিশি সিস্টেম সহ্য করা যায় না, আপনি বাচ্চাদের শিখাতে এসেছেন, তাদের উপর জোরজবরদস্তিমূলক পুলিশি সিস্টেম চাপিয়ে দিতে পারেন না।

একটা বাচ্চা যখন পরীক্ষা দিতে যায়, তখন তাকে নানা ভাবে অভয় দিতে হয়। তার মনকে শান্ত করা হয়। আমাদের সময় মনে আছে, আমাদের শিক্ষক ও গার্জিয়ানরা আমাদের নানাভাবে সাহস দিতেন, যেন আমরা ভয় না পাই। একটা ছাত্র নিজ প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যখন অন্য এলাকায় আসছে, তখন এমনি তার ভয় পাওয়ার কথা। তখন তার মনমানসিকতা যেন সুস্থ থাকে এবং সঠিক উত্তর দিয়ে আসতে পারে, এজন্য তাকে অভয় দেয়া জরুরী। কিন্তু এখন যে জোরজরদস্তিমূলক পুলিশি সিস্টেম দেখানো হচ্ছে, যেন এটা পরীক্ষাক্ষেত্র না, যুদ্ধক্ষেত্র বলা জরুরী।

প্রশ্নফাঁস হওয়া আপনাদের অপরাধ, এটা ঢাকতে ছাত্রছাত্রীদের গ্রেফতার করছেন কেন ? আপনারা প্রশ্নফাঁস বন্ধ করতে না পারেন, পদত্যাগ করুন, নয়ত পরীক্ষা বন্ধ করে দিন। দরকার নাই আপনাদের ফালতু সিস্টেমের পরীক্ষা দেয়া। দয়া করে ছোট ছোট বাচ্চাদের গ্রেফতার করে তাদের মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবেন না। তাদের উপর পুলিশি সিস্টেম চাপিয়ে দেবেন না, তাদের অপরাধী বানাবেন না। বাচ্চার সামনে চকলেট ধরবেন, আর চকলেটে হাত দিলেই অপরাধী বানাবেন, গ্রেফতার করবেন, এটা কেমন কথা ? আপনার ঘুষ খাওয়া বন্ধ করতে পারেন না, সহনশীল মাত্রায় ঘুষ খাওয়ার অনুমতি দেন, আর শিশু-কিশোরদের হাতে নিজেরাই প্রশ্ন তুলে দিয়ে, নিজেরাই তাদের গ্রেফতার করেন, এটা কিছুতেই সহ্য করা যায় না।

বাংলাদেশের শিশু-কিশোর অধিকার কর্মীরা এখনও কেন বিষয়টা নিয়ে সোচ্চার হচ্ছে না, তা আমার মোটেও বোধগম্য নয়।

 

 

 

 

 

একটি সূত্র দ্বারা প্রমাণিত হয়, শিক্ষামন্ত্রী নিজেই প্রশ্নফাঁসে জড়িত এবং অবশ্যই সেটা কারও কাছ থেকে পাওয়া টাকার বিনিময়ে হয়।

সূত্রটা হলো-

কেন এ বছর থেকে সব বোর্ডে এক প্রশ্নে পরীক্ষা হচ্ছে ?

হয়ত বলবেন-

১) শিক্ষার্থীদের ফলাফলের তারতম্য দূর করা,

২) উচ্চশিক্ষায় ভর্তিতে পরীক্ষার্থীদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা।

(http://bit.ly/2ES2QkB)

কিন্তু এই সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করা দরকার ছিলো, যখন শিক্ষামন্ত্রনালয় ১০০% শিওর হয়েছে তার প্রশ্নপত্র ফাঁস হবে না। কিন্তু যদি শিক্ষামন্ত্রনালয় শিওর না হলো এবং অবধারিতভাবে প্রশ্নফাঁস হতো থাকলো, তবে এ সিদ্ধান্তটি ভয়ানক হয়ে দাড়ালো, এবং প্রশ্নফাঁসে ক্ষতি ৮ বোর্ডের জন্য ৮০০% বেড়ে গেলো।

আরেকটু ডিপ চিন্তা করেন-

১টি সিন্ডিকেট দিয়ে যদি ১টি প্রশ্ন ফাঁস হয়, তাহলে ৮টি সিন্ডিকেট দিয়ে ৮টি প্রশ্নফাঁস হয়।

ধরে নিলাম টাকার বিনিময়ে ৮টি সিন্ডিকেট থেকে আলাদা আলাদা ভাবে প্রশ্নফাঁস হলো।

কিন্তু কেউ ভাবছে, ৮ সিন্ডিকেটের টাকা আলাদা আলাদাভাবে তার কাছে নাও আসতে পারে। তাহলে যদি পুরো দেশে প্রশ্নপত্র ১টি করে দেয়া যায়, তবে ৮ সিন্ডিকেটের টাকা কেন্দ্রে আসতে বাধ্য। যেহেতু ৮ বোর্ডে এক প্রশ্নের সিদ্ধান্তটি শিক্ষামন্ত্রনালয় থেকে নেয়া হয়েছে এবং শিক্ষামন্ত্রনালয়ের কেন্দ্রে যেহেতু শিক্ষামন্ত্রী বসা, সুতরাং প্রশ্নফাঁসে জড়িত সিন্ডিকেটগুলো সে নিজেই টাকা নেয়।

বাংলাদেশে বহুবছর ধরে পরীক্ষিত পদ্ধতি হচ্ছে ভিন্ন বোর্ডে ভিন্ন প্রশ্ন হওয়া।

কিন্তু এই প্রথম এই সিদ্ধান্ত নেয়া হলো, কিন্তু যখন নেয়া হলো তখন দেশে গণহারে প্রশ্নফাঁস হচ্ছে।

সুতরাং এ সময় এ ধরনের একটি আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত সেই নিতে পারে,

যে প্রশ্নফাঁসের দ্বারা উপকৃত হয় এবং ৮ বোর্ডে এক প্রশ্ন হলে তার জন্য ৮ গুন সুবিধা।

এই একটি সূত্র, দ্বারা খুব নির্ভুলভাবে প্রমাণিত স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী টাকার বিনিময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস করছে। একইসাথে এটাও বলা যায়, বর্তমানে শিক্ষামন্ত্রী যে প্রশ্নফাঁস বন্ধে কার্যক্রম নিচ্ছে তা পুরোটাই নাটক ও পাবলিকের সামনে ইনোসেন্ট সাজার জন্য আইওয়াশ। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে বাচাতে চাওয়ায় বিষয়টি (http://bit.ly/2Evw77c) নিয়ে সন্দেহ তৈরী হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর কাছে সেই সিন্ডিকেটের দেয়া অর্থের কোন ভাগ গেছে কি না ?

 

 

 

 

# নতুন মন্ত্রীসভায় শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে রাজবাড়ি-১ আসনের এমপি কাজী কেরামত আলীকে, দেয়া হয়েছে কারিগরি ও মাদ্রাসা বোর্ডের দায়িত্ব।

 

কোন একটি বিষয়ে দায়িত্ব দেয়ার আগে ঐ লোকটি সে বিষয়ে কতটুকু উপযুক্ত সেটা যাচাই করা জরুরী। কারণ সে যদি উপযুক্ত-ই না হয়, তবে সে পুরো জাতিকে চালাবে কিভাবে ?

 

মাদ্রাসা বোর্ডের দায়িত্ব যাকে দেয়া হবে তাকে অবশ্যই ধর্মীয় জ্ঞান সম্পন্ন হওয়া উচিত। কিন্তু কাজী কেরামত আলীকে কোন দিক বিবেচনা করে মাদ্রাসা বোর্ডের দায়িত্ব দেয়া হলো সেটা বোঝার কোন উপায় নেই।

 

কাজী কেরামত আলী একজন গান-বাজনা করা লোক। ২০০৮ সালের এমপি নির্বাচিত হবার পর তাকে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সংস্কৃতি বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি করা হয়। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান-বাজনা করাই তার কাজ। এমনকি মন্দির বা পূজার অনুষ্ঠানে গিয়ে হিন্দুদের ধর্মীয় গানও সে গায় ।

 

এমনিতেই বামপন্থী চোর শিক্ষামন্ত্রীর কারণে শিক্ষা ব্যবস্থার করুন হাল, এর মধ্যে নতুন করে ঢোকানো হলো আরেক গানবাজনাওয়ালা প্রতিমন্ত্রীকে, যাকে আবার দেয়া হলো মাদ্রাসা বোর্ডের দায়িত্বে !

 

নাস্তিক শিক্ষামন্ত্রী দিয়ে সাধারণ বোর্ডের শিক্ষার্থীদের বানানো হচ্ছে নাস্তিক,

 

এখন গানবাজনাওয়ালা প্রতিমন্ত্রী দিয়ে কি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কি গানবাজনাওয়ালা বানানো হবে ?

 

প্রশ্ন- সবার কাছে.....

 

 

 

 

 

# সরস্বতী পূজার কারণে ২০১৭ সালের অনার্স ২য় বর্ষের ২২/১/২০১৮ তারিখের পরীক্ষা স্থগিত করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যতদূর মনে পড়ে গত রোজার মাসে পরীক্ষা ও ক্লাস বাতিল করার জন্য বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি ও টেকনিক্যাল কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছিলো। (http://bit.ly/2B9bKa3) কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাতে কান দেয়নি। ২৭ রোজা পর্যন্ত পরীক্ষা ফেলেছিলো। বাধ্য হয়ে বুয়েটে ছাত্র ক্লাস বর্জন করে। সেখান থেকে তাদের শিক্ষা হয়নি।

 

উল্লেখ্য বাংলাদেশে যেমন অধিকাংশ মানুষ মুসলমান, তাই এখানে রমজান মাসে ছুটি পাওয়া স্বাভাবিক। আবার পশ্চিমবঙ্গে (যেখানে অর্ধেক মুসলমান, অর্ধেক হিন্দু) দূর্গা পূজা উপলক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ১ মাস ছুটি দেয় । (http://bit.ly/2mDWoFe)

 

২-৩% হিন্দুর ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য যদি ন্যাশনাল ভার্সিটির পরীক্ষা বাতিল করতে হয়, তবে ৯৫% মুসলমানদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য কেন পরীক্ষা-ক্লাস বাতিল করতে হবে না ?

 

 

 

 

 

 

 

ধর্ম শিক্ষা তুলে দিয়ে অসাম্প্রদায়িক শিক্ষার নামে এখন শেখানো হচ্ছে i wanna kiss kiss । আবার সেই গানের সাথে কিভাবে ছাত্রীরা নাচবে তাও শিখিয়ে দিচ্ছে শিক্ষকরা। চট্টগ্রাম নগরীর গরিবে নেওয়াজ উচ্চ বিদ্যালয়ে অ্যাসেম্বলি এভাবেই চলছে শিক্ষাদান। সত্যিই বাংলাদেশ শিক্ষাক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে গেছে, এত আগানো আর আগে কখন দেখা যায়নি।

খবরের সূত্র: http://bit.ly/2F6wNwq

 

 

 

 

# শুদ্ধভাবে দলগতভাবে জাতীয় সঙ্গীত চর্চার নির্দেশ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) আওতাধীন দেশের সব মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দলগত জাতীয় সঙ্গীত প্রতিযোগিতা আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছে। (http://bit.ly/2E14TVK)

 

আমার জানা মতে, মাদ্রাসা তৈরী হয়েছে মুসলমানদের ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া স্থান। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ এমন এক ব্যক্তি যে নিজেই মুসলমানদের ধর্ম সম্পর্কে নাক শিটকিয়েছে। এ সম্পর্কে মোতাহার হোসেন চৌধুরী শান্তি নিকেতনেকবি রবীন্দ্রনাথকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “আপনার লেখায় ইসলাম ওবিশ্বনবী সম্পর্কে কোনো কথা লেখা নেই কেন? উত্তরে কবি বলেছিলো, 'কোরআন পড়তে শুরু করেছিলুম কিন্তু বেশিদূর এগুতেপারিনি আর তোমাদের রসুলের জীবন চরিতও ভালো লাগেনি। [তথ্যসূত্র: বিতণ্ডা, লেখক সৈয়দ মুজিবুল্লা, পৃ -২২৯ ]"

 

যেখানে রবীন্ত্রনাথ মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কিংবা নবীর জীবনী অস্বীকার করে, অনাগ্রহ প্রকাশ করে, সেখানে ধর্মীয় শিক্ষালয়গুলোকে কেন রবীন্দ্রনাথের গান গাইতে বাধ্য করা হবে ? সেখানে রবীন্দ্রনাথের গান গাওয়া কতটুকু যৌক্তিকতা থাকতে পারে ?

 

একটু আগে খবর দেখলাম, শিক্ষামন্ত্রনালয়ের দুর্নীতির সাথে শিক্ষামন্ত্রীর স্ত্রী জোহরা জেসমিনও জড়িত (http://bit.ly/2GvfGpq) । তারমানে জামাই-বউ মিলে একত্রে দুর্নীতি করে এরা দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন শেষে এসেছে ধর্মীয় শিক্ষালয়ের ধর্মটুকুও তুলে দিতে।

 

সত্যিই বলতে এই চোরগুলোর আসলে লজ্জা নেই। কথায় বলে- “ন্যাংটার নেই বাটপারের ভয়।টাকলা নাহিদ এতটা লজ্জাহীন হয়ে গেছে, তার আর কিছুতেই লজ্জা লাগছে না। এ চোরগুলোকে জনতার আদলতে তুলে গণপিটুনি দিয়ে নুড করে পাবলিকলি শুলে চড়ানো উচিত। তবে এদের দেখে যদি বাকিদের কিছুটা হলেও লজ্জা পয়দা হয়।

 

 

 

 

# লজ্জা নাকি মানুষ আর পশুর মধ্যে তফাৎ। মানুষের লজ্জা আছে, তাই সে পোষাক পরে, কিন্তু পশুর কোন লজ্জা নাই সে পোষাক পরে না এবং পোষাক পরার গুরুত্বও অনুধাবন করে না।

 

আমাদের সামনে যদি কোন নগ্নদেহের শিশু আসে, আমরা সাথে সাথে ছি: ছি:বলে বলি- তাড়াতাড়ি কাপড় পরো”। কারণ সে তো মানুষ, আর মানুষ মাত্রই লজ্জা থাকা উচিত। কিন্তু সামনে দিয়ে যদি কোন নগ্ন পশু যায়, তখন কিন্তু তাকে আমরা কিছু বলিনা। কারণ আমারা জানি, সে একটা পশু, তার তো লজ্জাই নেই, তাকে হাজারো লজ্জা দিয়ে লাভ নেই, তাকে পোষাক পরতে বলাটাও বৃথা।

 

সত্যিই বলতে, প্রশ্নফাঁস এমন একটা ইস্যু যেখানে কম্প্রোমাইজ করার কোন সুযোগ নাই। আপনি ২০ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রীর শিক্ষাজীবনের ১২টা বাজায় দিবেন, আর আপনি ইনোসেন্টকিংবা অপারগহয়ে বসে থাকবেন সে সুযোগ নাই। আপনি পারেন না, পদ ছেড়ে দেন। হাবিজাবি বলে তো লাভ নেই। যে কাজ ৯ বছরে পারেন, আর বাকি কয়েক মাসে জগৎ উল্টে ফেলাবেন বলে মনে হয় না।

 

আমার তো মনে হয়, প্রশ্নফাঁস এমন একটা ভয়াবহ বিষয়, ১ বার ফাঁস হলেই শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত, আর পর পর দুইবার শিক্ষামন্ত্রী ব্যর্থ হইলে খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ করার উচিত। কেন তার মন্ত্রীসভা পারছে না? তারা জনগণের টাকার বেতনে চাকুরী নিয়েছে জনগণকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য। তার মন্ত্রীসভা যখন ব্যর্থ, তখন তার দায় প্রধানমন্ত্রীত্ব উপরও বর্তায়।

 

আপনি অপারগ’, কিংবা ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে’, এসব বলে লাভ নাই। জনগণ নাহিদকে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে নির্বাচন করে নাই, করেছে শেখ হাসিনা। তাই শিক্ষামন্ত্রী ব্যর্থ মানে তার নির্বাচক প্রধানমন্ত্রী ব্যর্থ। আমি বলবো, এই ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে পুরো মন্ত্রী পরিষদের পদত্যাগ করা উচিত। আর যদি তারা সেটা না করে, তবে, পুরো দেশে পড়ালেখা বন্ধ করে দেয়া উচিত। কারণ ফাঁস হওয়া প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা হওয়ার থেকে না হওয়া ভালো। ফাঁস হওয়া প্রশ্নের পরীক্ষা নিয়ে বরং শিক্ষাকে অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে।

 

ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন, শিক্ষার্থীরা নেমেছে শিক্ষামন্ত্রীর পতত্যাগের দাবিতে।

 

ছি:। এমন ছবিও দেখতে হচ্ছে।

 

তবে এ ছবি মানুষকে লজ্জা দিলেও পশুদের লজ্জা দিবে না।

 

একটা প্রবাদ পড়েছিলাম, ‘ন্যাংটার নাই বাটপারের ভয়’, মানে যার ইজ্জতই নাই, তার আবার ইজ্জত হারানোর ভয় কিসের ?

 

 

 

 

 

 

 

 

 

# ইশতেহার : জেগে ওঠো বাংলাদেশ ২০১৮

 

১. সংবিধান, আইন ও বিচার ব্যবস্থা

১.১) সংবিধানে আল্লাহ’র উপর আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে।

১.২) সংবিধানের রাষ্ট্রধর্ম অবমাননার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড আইন করতে হবে। রাষ্ট্রধর্মবিরোধী সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।

১.৩) সংবিধানে বর্ণিত রাষ্ট্রধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক কোন মূলনীতি করা যাবে না, থাকলে বাদ দিতে হবে।

১.৪) রাষ্ট্রধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক আইন বাতিল করে, রাষ্ট্রধর্মের সাথে সমন্বয়পূর্ণ আইন চালু করতে হবে।

১.৫) সুপ্রীম কোর্টে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে।

১.৬) দেশের প্রতি থানায় ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট এবং প্রতিবিভাগে হাইকোর্টের শাখা থাকতে হবে।

১.৭) হাইকোর্টের অতিরিক্ত ছুটি বাতিল করে সরকারী নিয়ম অনুসারে ছুটি দিতে হবে।

১.৮) শুধু আইন দিয়ে নয়, বরং সর্বত্র ধর্ম ও নৈতিকতার মাধ্যমে অপরাধ হ্রাসের উদ্যোগ নিতে হবে।

১.৯) শুধু মুখে নয়, বাস্তবে সকল মাদক নিষিদ্ধ করতে হবে। এমনকি ধূমপানের ব্যাপারেও কড়াকড়ি করতে হবে। প্রকাশ্যে ধূমপান করলে জরিমানা’, যদি কোন নাগরিক কোন ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে ধূমপানে ধরিয়ে দেয়, তবে ঐ জরিমানাকৃত অর্থের অর্ধেক তাকে দিতে হবে। মদ, জুয়াসহ যাবতীয় অবরাধ নিয়ে সংবিধানের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবে জারি করতে হবে।

 

২. শিক্ষা ও গবেষণা:

২.১) শিক্ষা ও গবেষণাখাতে অর্থ বরাদ্দ বাড়াতে হবে। সববিষয়ে গবেষণা চালু করতে হবে, বিদেশী গবেষণা নির্ভর থাকলে চলবে না।

২.২) অবাস্তবমুখী ও সময় অপচয়কারী শিক্ষাপদ্ধতি বাতিল করে বাস্তবমুখী শিক্ষা, যা বাস্তব জীবনে কাজে লাগে তা প্রণয়ন করতে হবে। শিক্ষা গ্রহণে সময় কার্যকরীপদ্ধতি দিতে হবে। একজন ছাত্র যেন ২০ বছরের মধ্যে সাধারণ শিক্ষা সময় পার করে চাকুরী পেতে পারে সে ব্যবস্থা রাখতে হবে।

২.৩) অপরাধ, দুর্নীতি, ঘুষ, অনিয়ম, নারী নির্যাতন, সন্ত্রাস হ্রাসের জন্য সেক্যুলার শিক্ষাব্যবস্থা বাদ দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে। ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমে নৈতিকতা বৃদ্ধি করতে হবে।

২.৪) ধর্মীয় গবেষণার জন্য আলাদা বরাদ্দ দিতে হবে, ধর্মীয় বিষয়গুলো নিয়ে কেউ গবেষনা করতে চাইলে সরকারি বরাদ্দ পাবে।

২.৫) একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে। একটি নির্দ্দিষ্ট ক্লাস পর্যস্ত সবাই একসাথে লেখাপড়া করবে। এর মধ্যে কমপক্ষ ৩০% ধর্মীয় শিক্ষা থাকবে। বাকিগুলোও ধর্মের আলোকে হবে। এই নির্দ্দিষ্ট সংখ্যক ক্লাস শেষ করার পর চাহিদা অনুযায়ী কেউ ধর্মীয় উচ্চতর, কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং উচ্চতর, কেউ ডাক্তার বা কেউ অর্থনীতি নিয়ে লেখাপড়া করবে।

২.৬) ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত চলমান ‘পরীক্ষা পদ্ধতিবাতিল করতে হবে।

২.৭) ছাত্র-ছাত্রীদের ধর্ম পালনের সুবিধা দিতে হবে। রুটিন এমনভাবে করতে হবে যেন, ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোতে ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকে।

২.৮) মেধাপাচার রোধ করতে হবে। দেশের মেধাবীরা যেন দেশেই থাকে সে জন্য তাদের সুযোগ করে দিতে হবে।

২.৯) দেশজুড়ে সার্টিফিকেটহীন দেশজুড়ে অনেক মেধাবী/প্রতিভাধর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। সমাজ থেকে এদের তুলে আনতে হবে। তাদের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা দিয়ে রাষ্ট্রের কাজে লাগাতে হবে।

২.১০) দেশের সবচেয়ে মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় নিয়ে আসতে হবে। শিক্ষক নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্কতা বজায় রাখতে হবে। ভিন্ন সম্প্রদায়ের শিক্ষক দিয়ে ছাত্রদের মধ্যে গোলযোগ তৈরী করা যাবে না।

২.১১) ইতিহাস নিয়ে লুকোচুরি/কাটছাট বাদ দিতে হবে। শুধু ৭১’র চেতনা নয়, ৪৭র চেতনা, অর্থাৎ বাংলাদেশ প্রকৃতপক্ষে কিভাবে সৃষ্টি হলো তা পড়াতে হবে।

২.১২) মুসলমানদের ইতিহাস/সভ্যতার জন্য গবেষণা, তা উৎঘাটন এবং প্রচারে আলাদা বরাদ্দ করতে হবে।

২.১৩) মুসলিম কবি সাহিত্যিকদের বইসমূহ পুনঃমুদ্রণ করতে।

২.১৪) ‘লাইব্রেরীএকটি স্বতন্ত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মর্যাদা পাবে । দেশে যত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে, সেই অনুপাতে লাইব্রেরীও থাকবে, যেখানে সকল বয়সের মানুষ প্রবেশ করে জ্ঞান চর্চা করতে পারবে। এতে একজন ব্যক্তি ছোটবেলা থেকেই গবেষণাভিত্তিক মনন নিয়ে বেড়ে উঠবে।

২.১৫) প্রত্যেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক নামাজের স্থান রাখতে হবে।

 

৩.চাকুরী/ব্যবসা:

৩.১) সরকার বেকার জনগোষ্ঠীকে কর্মসংস্থানের সুযোগ (চাকুরী/ব্যবসা) করে দিতে বাধ্য থাকবে।

৩.২) শুধু চাকুরী নয়, তরুণ প্রজন্মকে উদ্যোক্তা হতে বা ব্যবসা করতে উৎসাহ দিতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় ট্রেনিং দিতে হবে এবং সরকারকেই বিনিয়োগ করতে হবে। কেউ বৈধ ব্যবসা করতে চাইলে সরকার তাকে সব ধরনের সহায়তা করবে। কারণ তার মাধ্যমে অনেকের চাকুরী হবে তথা বেকারত্ব দূর হবে।

৩.৩) ব্যবসা করার জন্য সরকারের থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। তবে এই লাইসেন্স নেয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি কোর্স করা বাধ্যতামূলক থাকবে। ঐ কোর্সে ঐ নির্দ্দিষ্ট ব্যবসা করার জন্য প্রয়োজনীয় ধর্মীয় নীতিমালার শিক্ষা দেয়া হবে। যে সেই কোর্সে পাশ করবে, সেই লাইসেন্স পাবে। যে পাশ করবে না সে লাইসেন্স পাবে না। উদহারণস্বরূপ, একজন দোকানদার দোকানব্যবসা শুরুর আগে ঐ কোর্সে গিয়ে শিখবে- দোকানদারের জন্য ধর্মীয় নীতিমালা কি ? যেমন: মাপে কম দিলে, মানুষকে মিথ্যা বলে পণ্য দিলে ধর্মে কি বলা হয়েছে। এরফলে সকল পেশার মানুষের মধ্যে একটি নৈতিকতা কাজ করবে এবং তার পেশাকে সমাজের জন্য আমানতমনে করবে।

৩.৪) বিদেশীদের চাকুরী নয়, দেশের মানুষকে আগে চাকুরী দিতে হবে। দেশের বেকারদের চাহিদা পূরণ হওয়ার পর বিদেশীদের দিতে চোখ দিতে হবে। দেশীয় কোন কাজের টেন্ডার পাওয়ার ক্ষেত্রে একই রকম দেশীয় কোম্পানিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। কোন কাজ দেশের লোক না পারলে, তাদের বিদেশ থেকে ট্রেনিং দিয়ে নিয়ে এসে সেই কাজ করানো যায় কি না, সে চেষ্টা করতে হবে।

৩.৫) মসজিদের ইমাম/খতিবদের চাকুরীকে প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা দিতে হবে।

৩.৬) চাকুরীতে কোন ধরনের কোটা থাকবে না, যোগ্যতা অনুসারে সবাই চাকুরী পাবে। প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকার আলাদা ভাতার ব্যবস্থা করবে।

৩.৭) সরকারী চাকুরীতে এখনও কয়েক লক্ষ পদ খালি আছে। সেগুলো দ্রুত পূরণ করতে বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। সরকারী চাকুরীর সংখ্যা আরো কয়েকগুন বাড়াতে হবে।

৩.৮) সরকারী চাকুরীর বেতন এতটুকু উন্নীত করতে হবে, যেন জীবন নির্বাহের জন্য তাকে অসুদপায় অবলম্বন করতে না হয়।

৩.৯) চাকুরীতে যোগদানের বয়স বৃদ্ধি, অবসর গ্রহণের বয়স বৃদ্ধি এবং চাকুরী শেষে সংশ্লিষ্ট স্থানে উপদেষ্টা/পরামর্শদাতা হিসেবে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে।

 

৪.অর্থনীতি:

৪.১) সুদের গ্রাস থেকে মানুষকে রক্ষা করতে হবে, সুদবিহীন অর্থনীতির প্রণয়ন করতে হবে। ব্যাংকগুলো থেকে বৈধ ব্যবসায় ঋণের বদলে বিনিয়োগ করতে হবে।

৪.২) রিজার্ভ ডলারে না রেখে স্বর্ণে নিয়ে আসতে হবে। এতে মূদ্রাস্ফীতি কমে আসবে । আন্তর্জাতিকভাবে অনেক রাষ্ট্র বর্তমানে ডলার ব্যতিত নিজস্ব মুদ্রায় লেনদেন করছে। ডলারের পরিবর্তে স্বর্ণ করলে আগামীতে আমাদের রিজার্ভের উপর কোন হুমকি আসবে না।

৪.৩) অযথা বিদেশী ঋণের বোঝা না বাড়িয়ে দেশের সম্পদ দিয়ে কাজ পূরণ করতে হবে। সরকারী/বেসরকারীভাবে চেষ্টা করতে হবে। প্রকল্প প্রয়োজন অনুসারে অনুমোদন পাবে, অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প হ্রাস করতে হবে।

৪.৪) চলমান ট্যাক্স ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে, জাকাত ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

৪.৫) বর্তমানে জনগণের থেকে আদায় করা ট্যাক্স/মাসুল হচ্ছে সরকারের আয়ের একমাত্র উৎস। জনগণের থেকেই আয় করা টাকা দিয়েই জনগণের জন্য উন্নয়ন করে সরকার। কিন্তু জনগণের টাকা জনগণের জন্য ব্যয় করলে সেটা উন্নয়ন বলা যায় না, বিনিময় বলা যেতে পারে।

৪.৬) জনরফতানির থেকে কোম্পানি/প্রতিষ্ঠান রফতানি (বিদেশে গিয়ে প্রতিষ্ঠানিক ব্যবসা) অনেক বেশি লাভজনক। এ কারণে বাংলাদেশ সরকারকে জনরফতানির থেকে বিভিন্ন কোম্পানিকে বিদেশে রফতানি (বিদেশে গিয়ে ব্যবসা) করতে বেশি সুযোগ করে দিতে হবে।

৪.৭) বিদেশীরা বাংলাদেশে এসে চাকুরী করলে যত ক্ষতি হয়, তার থেকে বেশি ক্ষতি হয় বিদেশী কোম্পানি এসে কাজ করলে (কাজ আমদানি)। বিদেশী কোম্পানির কাজের লাগাম টেনে ধরতে তাদের উপর শক্ত ট্যাক্স বসাতে হবে।

৪.৮) সরকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দেশে-বিদেশে ব্যবসা করতে বিনিযোগ করবে এবং তাদের ব্যবসায় অংশীদার হয়ে ইনকাম করবে।

৪.৯) কাউকে ফ্রি ট্রানজিট দেয়া যাবে না। পৃথিবীর অনেক রাষ্ট্র ট্র্রানজিটের বিনিয়য়ে অর্থ সংগ্রহ করে অনেক ধনী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ যদি বিদেশী কোন রাষ্ট্রকে ট্র্রানজিট দেয়ও, তবে সেখান থেকে আন্তর্জাতিক রেট মেনে অর্থ আদায় করতে হবে। এবং সেই টাকাও সরকারের সোর্স অব ইনকাম হবে। ট্রানজিট দেয়ার ক্ষেত্রে নৌ ও রেল ট্র্যানজিট দেয়া যেতে পারে, তবে নিরাপত্তার জন্য সড়ক ট্র্যানজিট এড়িয়ে যাওয়া ভালো।

৪.১০) সাধারণভাবে কোরবানির হাট বরাদ্দ দেয়ার সময় যে সর্বোচ্চ টেন্ডারমূল্য দেয়, তাকে হাট ইজারা দেয়া হয়। এই পদ্ধতি বাতিল করতে হবে। এর বদলে যে ইজারাদার কাস্টমারদের থেকে সবচেয়ে কম হাসিল নিবে এবং সর্বোচ্চ পাবলিক সার্ভিস দেওয়ার নিশ্চয়তা দিবে, তাকেই হাট ইজারা দিতে হবে। কোরবানি ঈদের ছুটি আরো দুইদিন (জিলহ্জ্জ মাসের ৭ ও ৮ তারিখ) বাড়িয়ে ৫ দিন করতে হবে, এতে গ্রামীন অর্থনীতি শক্তিশালী হবে।

৪.১১) ইকোনোমিক জোনগুলোতে বিদেশী কোম্পানি আসতে পারে, তবে শর্ত দিতে হবে, শুধু শ্রমিক নয়, বরং মূল প্রসিসেং বা গবেষণা বিভাগে বাংলাদেশীদের চাকুরী দিতে হবে।

৪.১২) ব্লু’ইকোনমি বা সমুদ্র সম্পদ নিয়ে তাড়াহুড়া করে বিদেশীদের কাছে বর্গা নয়। দেশীয় সক্ষমতা অর্জন করে দেশের সম্পদ দেশে কিভাবে সর্বোচ্চ রাখা যায়, সে চেষ্টা করতে হবে।

 

৫. কৃষি:

৫.১) কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। উৎপাদন খরচ হ্রাস এবং মান উন্নয়নের জন্য গবেষণা বাড়াতে বাজেট বরাদ্দ করতে হবে । কৃষকদের বিনাশর্তে ঋণ দিতে হবে। কৃষকের ফসল যেন নষ্ট না হয়, সেজন্য দেশজুড়ে পর্যাপ্ত হিমাগার তৈরী করতে হবে।

৫.২) জিএমও’র এখন চূড়ান্ত গবেষায় পৌছায়নি, তাই এখনই এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা ঠিক হবে না। কৃষিযন্ত্র নিয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। এতে উৎপাদন খরচ কমবে।

৫.৩) বিদেশী বিজের উপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে, দেশী বীজের বৈশিষ্ট্য ঠিক রাখতে সরকারি উদ্যোগে আলাদা বীজগার তৈরী করতে হবে।

৫.৪) রাসায়নিক সার ও কিটনাশকের ব্যবহার বাদ দিয়ে অর্গানিক ফুডের উপর জোর দিতে হবে।

৫.৫) দেশে যে সকল ফসল পর্যাপ্তহারে উৎপাদিত হয়, সেসব ফসল আমদানির উপর উচ্চহারে ট্যাক্স বসাতে হবে।

৫.৬) কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়াতে হবে।

৫.৭) কৃষি ক্ষেত্রে কৃষকের সহায়তার জন্য ২৪ ঘন্টা কল সেন্টারের সার্ভিস রাখতে হবে। যেখানে কৃষিবিগণ কৃষকের যে কোন সমস্যার সমাধান দিবেন। কৃষক সমস্যায় পড়লে ১২ ঘন্টার মধ্যে কোন কৃষিবিদকে মাঠে গিয়ে পরামর্শ দিতে হবে। , এতে পরামর্শের নাম দিয়ে আন্তর্জাতিক বহুজাতিক কোম্পানিগুলো কৃষকদের প্রতারণা করে ব্যবসা করার সুযোগ পাবে না।

৫.৮) সরকারের একটি জরিপ বিভাগ থাকবে, যার মাধ্যমে জানা যাবে, কোন ফসল কতটুকু চাষের প্রয়োজন। সেই প্রয়োজন অনুসারে কৃষকরা চাষ করবে এবং অনলাইনে চাষের তথ্য আপডেট করবে। একটি পূরণ হয়ে গেলে অন্যটির চাষের উপর জোর দিবে। এই তথ্য ও জরিপের কারণে কোন ফসল অতিরিক্ত হারে উৎপাদনের কারণে নষ্ট হওয়ার সুযোগ হ্রাস পাবে।

৫.৯) জনগণের জন্য রেশন সিস্টেম চালু করতে হবে।

৫.১০) সরকারী উদ্যোগে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতেহবে। পানি বিশুদ্ধকরণ জটিল কোন প্রযুক্তি নয়, তাই পানি পরিশোধনের কথা বলে বিদেশী কর্পোরেট কোম্পানির হাতে দেশের পানি ব্যবস্থাকে তুলে দেয়া যাবে না, দেশীয় কোম্পানির মাধ্যমে কাজ করাতে হবে।

৫.১১) খাদ্যে ভেজালের সাথে সংযুক্ত ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড/যাবজ্জীবন বিধান রেখে আইন পাশ করা।

 

৬. খনিজ সম্পদ ও শিল্প-কারখানা:

৬.১) গ্যাস আমদানি না করে, গ্যাস উত্তোলন করতে হবে। সক্ষমতা বাড়িয়ে দেশীয় কোম্পানি দিয়ে গ্যাস উত্তোলনে জোর দিতে হবে।

৬.২) রিনিউয়েবল এনার্জি বা নবায়নযোগ্য শক্তি, বিশেষ করে সৌর শক্তির উপর জোর দিতে হবে, গবেষণা বাড়াতে হবে।

৬.৩) কারাখানাগুলোতে প্রয়োজন মাফিক গ্যাস-বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

৬.৪) অব্যবস্থাপনার কারণে গার্মেন্টস, রিয়েল স্টেট বা চামড়ার মত বড় শিল্পগুলো যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সরকারী অব্যবস্থাপনার কারণে চামড়াজাত পন্য গার্মেন্টস পণ্যের মত বড় রফতানির উৎস হয়ে উঠতে পারেনি। এদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

৬.৫) শিল্পাঞ্চলগুলো নদীর কাছাকাছি হতে হবে। নদীপথকে পণ্য পরিবহনে ব্যবহার করতে হবে। শিল্প বর্জ্যের কারণে নদীগুলো যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিকতা আনতে হবে।

৬.৬) সঠিক আদমশুমারি করে সে অনুপাতে প্রত্যেক এলাকার মানুষের কি কি চাহিদা লাগবে, তার তালিকা তৈরী করতে হবে। যেগুলোর সরবারহ ইতিমধ্যে আছে, সেগুলো বাদে বাকিগুলো দেশীয় উদ্যোগে কলকারখানা নির্মাণ করে তা তৈরী করার উদ্যোগ নিতে হবে। এতে দেশে প্রচুর কলকারখানা বৃদ্ধি পাবে, সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান।

৬.৭) জনগণ একটি বিরাট সম্পদ। দেশে শিল্পাঞ্চল তৈরী করে, সেখানে বিদেশীদের কলকারখানা নির্মাণ করলে, দেশের জনসম্পদ বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়া হয়। এজন্য দেশের শিল্পাঞ্চলে দেশীয় শিল্পকারখানা নির্মাণে বেশি জোর দিতে হবে।

৬.৮) বিদেশী সংস্থা ও বিদেশি পুঁজির জাতীয় স্বার্থবিরোধী অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে। এমন কোন বিদেশী পুঁজি প্রবেশ করানো যাবে না, যার কারণে দেশী শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

৬.৯) দেশের রফতানি খাতকে এক শিল্প নির্ভর না করা। রফতানি সেক্টরকে বহুমুখী করা, যেন ভবিষ্যতে কোন রাষ্ট্র অর্থনৈতিক অবরোধ তৈরী করে দেশের অর্থনীতিতে খুব বেশি প্রভাব বিস্তার না করতে পারে।

৬.১০) দেশে প্রয়োজন মাফিক পণ্য তৈরীতে উদ্যোগ নেয়া এবং জনগণকে দেশীয় পণ্য ব্যবহারে উব্ধুদ্ধ করা। বিদেশী পণ্য ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে হবে।

৬.১১) কোন রফতানিকারকের প্রাপ্য অর্থ বিদেশী কোন ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান আটকে দিলে রাষ্ট্রীয়ভাবে সর্বোচ্চ সহযোগীতা প্রদান করতে হবে।

 

৭. সরকার ও প্রশাসন:

৭.১) উপজেলা চেয়্যারম্যান ও কমিশনার পদে দাড়াতে নূন্যতম এইচএচসি, এমপি/মেয়র হওয়ার জন্য নূন্যতম স্নাতক পাশ হতে হবে।

৭.২) এমপিদের থেকে ৯০% মন্ত্রী হবে, সংবিধানের এই ধারা পরিবর্তন করতে হবে। কোন মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী হতে ঐ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ বা বিশেষ অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

৭.৩) শুধু ভোটের আগে জনগণের পাশে, এই সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে। নির্বাচিত হওয়ার ২ বছর পর একটি নিরপেক্ষ জরিপ করা, “এমপিরা কত পার্সেন্ট জনগণের পাশে থাকলো”। সেই জরিপে ফলাফল কম আসলে এমপি পদ বাতিল হওয়ার নিয়ম করতে হবে।

৭.৪) সংসদে অপ্রয়োজনীয় আলাপ, রাজনৈতিক চাটুকারিতা নিষিদ্ধ করতে হবে। যারা প্রয়োজন ছাড়া সংসদে অপ্রয়োজনীয় কথা বলবে, তাদের শাস্তির ব্যবস্থা রাখতে হবে। যার সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে সংসদ সদস্য পদবাতিল।

৭.৫) আন্তর্জাতিক চুক্তির ক্ষেত্রে সরকার একা সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। অবশ্যই চূক্তির প্রতিটি ধারা জনগনের সামনে উন্মুক্ত করে তারপর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

 

৮. সমাজ ও সংস্কৃতি:

৮.১) ধর্মকে ব্যক্তির মধ্যে আটকে রাখার কূট-পরিকল্পনা বাদ দিতে হবে। সমাজের প্রতিটি সেক্টরে ধর্মীয় নিয়ম-প্রথার চর্চা করতে দিতে হবে।

৮.২) বিজাতীয় সংস্কৃতি প্রমোট করে এমন মিডিয়া নিষিদ্ধ করতে হবে। মিডিয়ায় অশ্লীলতা বন্ধে কঠোর কার্যক্রম প্রণয়ন করতে হবে।

৮.৩) ধর্ম যার যার উৎসব সবার, এই শ্লোগান বাদ দিতে হবে। ধর্ম যার যার উৎসবও তার তার, এই শ্লোগান চালু করতে হবে। এক ধর্মের অনুষ্ঠানকে সেক্যুলার অনুষ্ঠান নাম দিয়ে সকল ধর্মের উপর চাপিয়ে দেয়া যাবে না।

৮.৪) বিজাতীয় দিবস পালন নিষিদ্ধ করে, ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন উৎসব পালন করতে সর্বোচ্চ সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা দিতে হবে।

৮.৫) বিয়ের জন্য কোন বয়স নির্ধারণ করা যাবে না। কেউ উপযুক্ত হলে বিয়ে করতে পারবে। সরকারীভাবে বিয়েতে সাহায্য করতে হবে। তবে প্রেম/ব্যাভিচারে ধরা পড়লে আইনত দণ্ড দেয়া হবে।

৮.৬) মিশনারীর নামে কেউ রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম করলে ফাঁসির ব্যবস্থা রাখতে হবে।

৮.৭) উপনেবেশিক আমলে ব্রিটিশ দালালদের নামে যে সমস্ত জেলা/উপজেলা/গ্রাম/শহর/শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ যে সব নামকরণ হয়েছে, তার সবগুলো পরিবর্তন করতে হবে। এদেশীয় চেতনায় নামকরণ করতে হবে।

৮.৮) অন্যদেশের জাতীয় কবি নয়, বরং বাংলাদেশের জাতীয় কবির সংগীতকে জাতীয় সংগীত করতে হবে।

৮.৯) ছোট নয় বড় ও যৌথ পরিবার সুখ ও নিরাপত্তার কারণ, এই ধারণার তৈরী করতে হবে।

৮.১০) সমাজে বিশৃঙ্খলতা তৈরী হতে পারে বা অন্যকে অন্যায়ে উব্ধুদ্ধ করতে পারে এমন কোন পোশাক-পরিচ্ছদ পরিধান করা যাবে না। সমাজে সুশৃঙ্খলতা বজায় থাকে, এমন পোশাক-পরিচ্ছেদ নারী-পুরষকে পরিধান করতে বলতে হবে।

 

৯. জনসংখ্যা, শহরায়ন, নগরায়ন ও আবাসন:

৯.১) যানজট সমস্যা নিরসনে ঢাকা শহরের মধ্যে জনসংখ্যা জড়ো না করে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। অন্য বিভাগ ও জেলাশহরগুলো উন্নত করতে হবে। গার্মেন্টস কারখানাসহ বিভিন্ন কর্মক্ষেত্র দেশজুড়ে ছড়িয়ে দিতে হবে।

৯.২) গণহারে ফ্লাইওভার, এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। দুর্ঘটনাপ্রবণ সড়ক ও আকাশ যোগাযোগের বদলে নৌ ও রেলপথকে যাতায়তের মূল মাধ্যমে হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

৯.৩) নতুন করে সিএনজি অটোরিকশার রেজিস্টেশন চালু করতে হবে।

৯.৪) দুর্যোগে গৃহহীনদের জন্য সরকারী উদ্যোগে স্থায়ী বাসস্থান নির্মাণ করে দিতে হবে। রাজনৈতিক নেটওয়ার্কে নয়, প্রকৃতভূমিহীনদের মধ্যে খাস জমি বিতরণ করতে হবে।

৯.৫) বিভাগগুলোকে প্রদেশে রূপান্তর করতে হবে। এবং প্রদেশ ভিত্তিক নিয়ম অনুসারে প্রশাসন পরিচালনা করতে হবে।

৯.৬) শহরের যাবতীয় স্থাপনা কমপক্ষে ১০০ বছরের প্ল্যান নিয়ে করতে হবে। রাস্তায় সুয়ারেজ লাইন, পাানির লাইন, গ্যাসের লাইন, টেলিফোন লাইন যাবতীয় কাজ একসা

থে করতে হবে, যেন বছর বছর রাস্তা খুড়তে না হয়।

৯.৭) পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট ব্যবস্থা, বিশেষ করে নারীদের জন্য আলাদা পাবলিক টয়লেট তৈরী করতে হবে।

৯.৮) শহর সাজাতে এমন ভাস্কর্য তৈরী করা যাবে না, যা জনগণের মধ্যে অস্থিরতা তৈরী করে। শাপলা চত্বরের শাপলা, বিজয় স্মরণীর প্লেন বা হোটেল সোনারগাও মোড়ের ঝরনার মত ভাস্কর্য বা স্থাপত্য তৈরী করে শহর সাজাতে হবে। দেশের বিভিন্ন ভার্সিটির চারুকলা বিভাগে abstract art বা বিমূর্ত শিল্প এর উপর জোর দিতে হবে। চীনের মত রাষ্ট্রগুলো abstract art আর্টের কাজ করে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার কামাচ্ছে। বাংলাদেশের চারুকলাকে আর্থিক উৎপাদনশীল খাতের দিকে নিয়ে যেতে হবে।

 

১০. নদী ও পরিবেশ:

১০.১) নদীগুলো দ্রুত খনন করতে হবে। ভারতের সাথে দরকষাকষিতে যেতে হবে, যেন তারা নদীর পানি ছাড়ে। এব্যাপারে প্রয়োজনে কঠোর হতে হবে। নদীমাতৃক দেশে নদীমাতৃকতা ফিরিয়ে আনতে হবে।

১০.২) নদী ভাঙ্গন রোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। ঘুমিয়ে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জাগাতে হবে।

১০.৩) বাংলাদেশে কৃষি নির্ভর দেশ, কিন্তু নেদারল্যান্ড কৃষি নির্ভর নয়।। দুইদেশ ব-দ্বীপ হলেও ভৌগলিক ক্ষেত্রে অনেক কিছুই মিলে না। তাই নেদারল্যান্ডের বুদ্ধিতে নতুন করে অত্যন্ত ব্যয়বহুল প্রকল্প গ্রহণ না করে, দেশীয় বাস্তবসম্মত জ্ঞানের আলোকে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

১০.৪) পরিবেশের সাথে সাংঘর্ষিক এমন কোন স্থাপনা করা যাবে না।

১০.৫) বাংলাদেশের মত ছোট দেশে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের মত ঝুকিপূর্ণ কাজ ব্ন্ধ করতে হবে।

১০.৬) দেশজুড়ে এখনও কৃষির জন্য ক্ষতিকর লক্ষ লক্ষ ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছ আছে। সেগুলো চিহ্নিত করে কেটে ফেলা।

১০.৭) ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের উপর আলাদা জোর দেয়া। এতে অতিরিক্ত লোকবলকে চাকুরী দিতে হবে। ইনোভেটিভ ডাস্টবিন সম্পর্কে জনগণকে ধারণা দিতে হবে। রিসাইকেলিং এর মাধ্যমে আবর্জনাকে সম্পদে রুপান্তর করতে হবে ।

 

১১. চিকিৎসাখাত:

১১.১) চিকিৎসাখাতকে আরো সমৃদ্ধ করতে হবে। দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। প্রত্যেক জেলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন করতে হবে। বিভাগগুলোতে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে, গবেষনা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোতে আধুনিক প্রযুক্তির চিকিৎসা, স্বল্পমূল্য এবং চিকিৎসক-নার্সের ভালো ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিদেশে ছুটতে হবে না। প্রয়োজনে চিকিৎসক-নার্সদের কাস্টমার সার্ভিস ট্রেনিং দিতে হবে।

১১.২) মায়েদের অহেতুক সিজার (সি-সেকশন) অপারেশন হ্রাস করতে হবে। হাসপাতালে যেকোন ধরনের বানিজ্য বন্ধ করতে কঠোর নজরদারী করতে হবে।

১১.৩) শুধু অ্যালোপ্যাথি নয়, হোমিও, আয়ুর্বেদ, দেশীয় ভেষজ চিকিৎসা ব্যবস্থাগুলোর মধ্যেও গবেষণা বাড়াতে বরাদ্দ দিতে হবে।

১১.৪) গর্ভপাত নিষিদ্ধ, এই আইন বাস্তবে কার্যকর করতে হবে। ব্যাঙের ছাতার মত দেশজুড়ে গজিয়ে ওঠা কথিত মেটারনিটি ক্লিনিকগুলোতে নজরদারী বাড়াতে হবে, কেউ অবৈধ গর্ভপাত করলে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।

১১.৫) বিদেশ থেকে আসা ফ্রি ওধুষ/টিকা/ক্যাপসুল শিশুদের দেয়া বন্ধ করতে হবে। কেউ অনুদান দিতে চাইলে নগদ অর্থ দিবে, সেই অর্থ দিয়ে বাংলাদেশে তৈরী ঔষধ জনগণের কাছে পৌছাতে হবে।

 

১২. সামরিক বাহিনী:

১২.১) সামরিক বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে বিদেশ থেকে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র আমদানি করতে হবে। দেশে অস্ত্র কারখানা তৈরী করে নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

১২.২) আন্তর্জাতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে সামরিক অফিসারদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে অ্যানালিস্ট ট্রেনিং দিতে হবে। গোয়েন্দা বাহিনীর কার্যক্রম বৃদ্ধি, ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করতে হবে । সামরিক অফিসারদের মাঝে গবেষণা বাড়তে হবে । এতে বহিঃবিশ্বে প্রভাব বাড়বে।

১২.৩) খেলাধূলা নামক সময় অপচয়কারী বিষয়গুলো বাদ দিতে হবে। তরুণ সমাজকে বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে হবে।

 

১৩. বহির্বিশ্বের সাথে সম্পর্ক:

১৩.১) বিশ্বের মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন করতে হবে, কোনরূপ বিরুপ সম্পর্ক করা যাবে না। বিশ্বের কোন দেশে মুসলমানরা আক্রান্ত হলে সবাই এক হয়ে ঐ দেশের মুসলমানদের সাহায্য করার উদ্যোগ নিতে হবে।

১৩.২) কোন বিদেশী রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক করতে গেলে দেশের স্বার্থ সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে, নিজ দলের রাজনৈতিক স্বার্থ নয়। এমন ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া যাবে না, যাতে দেশের জন্য ক্ষতিকর হয়। প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করে নিজ দেশের স্বার্থ আদায় করতে হবে

১৩.৩) বিদেশে গিয়ে নিজ দেশের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর সম্পর্কে বিচার দেয়ার সংষ্কৃতি বন্ধ করতে হবে। শত্রুকে হাসতে দেয়া যাবে না। দেশের স্বার্থে সবাই এক, এই নীতিতে অটল থাকতে হবে। নিজেদের মধ্যে যতই দ্বন্দ্ব থাক, দেশের স্বার্থে সবাই এক হতে হবে।

১৪.৪) প্রবাসীদের অর্থ ও পরিবারের নিরাপত্তা দিতে হবে। বিদেশে গিয়ে বাংলাদেশের একজন নাগরিকও যদি বিপদে পড়ে তবে রাষ্ট্রের শীর্ষমহল থেকে তার সহায়তায় এগিয়ে আসতে হবে।

১৪.৫) তুরষ্কের সাথে ‘হালাল পর্যটন শিল্পবিস্তারে যে চূক্তি হয়েছে, তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।

 

১৪. মিডিয়া ও আইটি:

১৪.১) গণমাধ্যমকে প্রকৃত অর্থেই জনগণের মাধ্যম বানাতে হবে। জনগণ যা চায় গণমাধ্যম সেটা প্রচার করে কি না, সেটা খেয়াল রাখতে হবে। যারা নিজেদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যকে গণমানুষের চাওয়া হিসেবে প্রচার করবে, সেসব মিডিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

১৪.২) বাংলাদেশের বিভিন্ন ভার্সিটির সাংবাদিকতা ও মিডিয়া স্ট্যাডি বিভাগসমূহকে বিদেশী সম্রাজ্যবাদীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সংযোগ থেকে রক্ষা করতে হবে।

১৪.৩) পর্নগ্রাফী নিষিদ্ধ এবং এইজরেস্ট্রিকডেট সকল পেইজ-সাইট বন্ধ করতে হবে।

১৪.৪) প্রত্যেক উপজেলায় সরকারি উদ্যোগে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌছাতে হবে। এবং সরকারী বা বেসরকারী উদ্যোগে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট জনগণের ঘরে ঘরে পৌছাতে হবে।

 

১৫. সংখ্যালঘু:

১৫.১) গৃহহীন বাঙালীদের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় পুনর্বাসন করতে হবে। উপজাতি গোষ্ঠীগুলোকে এক এলাকায় জড়ো না করে পুরো দেশে কর্মসংস্থান দিয়ে ছড়িয়ে দিতে হবে। উপজাতিদের বাংলাভাষা ও সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ দিতে হবে। উপজাতিরা শুধু একস্থানে তাদের ভাষা ও সংষ্কৃতির উপর আটকে থাকলে তাদের ব্যবহার করে শত্রু রাষ্ট্র বাংলাদেশকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র করার সুযোগ পাবে। রাষ্ট্রবিরোধী কোন সংগঠন বা গোষ্ঠীকে কোনরূপ প্রশ্রয় দেয়া যাবে না।

১৫.২) সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় ছুটি শুধুমাত্র সংখ্যালঘুরাই ভোগ করবে, সংখ্যাগুরুরা নয়।

১৫.৩) সাম্প্রদায়িকতা এড়ানোর জন্য সংখ্যালঘুরা নিজেদের ভূমি/যায়গায় ধর্মীয় রীতি/অনুষ্ঠান পালন করবে, সংখ্যাগুরুদের যায়গায় নয়।

১৫.৪) দেশে গোলযোগ তৈরীকারী অর্পিত সম্পত্তি আইন বাতিল করতে হবে।

 

১৬. মানবাধিকার:

১৬.১) শিশুদের উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। স্কুলগুলোতে বেত ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে।

১৬.২) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হল/সিট ভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। র‌্যাগিংনিষিদ্ধ করতে হবে।

১৬.৩) প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের বৃদ্ধা পিতামাতাকে লালন/পালন বাধ্যতামূলক করতে হবে। সন্তানহীন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের লালন পালনের জন্য সরকারী উদ্যোগে বৃদ্ধনিবাস করতে হবে।

১৬.৪) আত্মহত্যা রোধে ধর্মীয় চেতনা বৃদ্ধি করতে হবে।

১৬.৫) বস্তিবাসী ও হকারদের উচ্ছেদ নয়, বরং তাদের স্থায়ী পুনবার্সন করতে হবে।

১৬.৬) বিধবা বা ডিভোর্সী নারীদের বিয়ে নিয়ে সামাজিক কু-ধারনা পরিবর্তন করতে হবে। সরকারী উদ্যোগে প্রয়োজনে তাদের দ্রুত বিয়ের ব্যবস্থা করতে হবে ।

১৬.৭) সমাজে বিবাহ বিচ্ছেদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সমস্যা হ্রাস করতে পশ্চিমা নারীবাদী ধারণা নিষিদ্ধ করে, ধর্মীয় নীতির ভিত্তিতে নারী-পুরুষের মাঝে সহমর্মিতা বৃদ্ধি করতে হবে।

১৬.৮) নারী নির্যাতন বন্ধ করতে নারীদের জন্য আলাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শপিং কমপ্লেক্স, যানবাহন, হাসপাতাল, তৈরী করতে হবে। নারীদের জন্য পৃথক প্রতিষ্ঠানে নারীরা কাজ করবে, ফলে অনেক নারীর নিরাপদ কর্মসংস্থান হবে।

১৬.৯) সিনেমা, বিজ্ঞাপন, মডেলিং, পোস্টার যে কোন স্থানে নারীকে পণ্য বানানোর মাধ্যমে অবমাননা নিষিদ্ধ করতে হবে। কেউ করলে তাকে কঠোর শাস্তির ব্যবহার করতে হবে ।

১৬.১০) ফ্ল্যামিলি প্ল্যানিং নামক শিশু হত্যা নিষিদ্ধ করতে হবে।

১৬.১১) বিদেশে পুরুষ শ্রমিক যেতে পারবে, তবে নারী শ্রমিক রফতানি নিষিদ্ধ করতে হবে।

১৬.১২) কারাগারগুলোতে আরও সুযোগ সুবিধা তৈরী করা। অমানবিকতা বন্ধ করতে হবে। কারাগার শুদ্ধ হওয়ার স্থান, সেখানে গিয়ে যেন মানুষ উল্টা আরো অপরাধপ্রবণ না হয়ে উঠে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ধর্মীয় পরিবেশ ও মনোচিকিৎসার মাধ্যমে অপরাধীকে ভালো করতে হবে। থানার হাজতগুলোতেও অমানবিকতা বন্ধ করতে হবে। রিমান্ডে নির্যাতন নিষিদ্ধ করতে হবে।

১৬.১৩) পতিতাবৃত্তি সর্বাধিক অমানবিক কাজ। সংবিধানে ‘পতিতাবৃত্তি নিষিদ্ধএই আইন দেশজুড়ে জারি করতে হবে। পতিতাদের বিয়ে ও পুনর্বাসানের ব্যবস্থা করতে হবে

১৬.১৪) হিজড়াদের আলাদা কর্মের ব্যবস্থা করতে হবে। সমাজে বিশৃঙ্খলা/চাঁদাবাজি করতে দেয়া যাবে না।

১৬.১৫) ভিক্ষুকদেরও পুনর্বাসন করতে হবে। যদি বৃদ্ধ-বৃদ্ধা হয় তবে সরকারী বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাতে হবে। যদি শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়, সরকারের তরফ থেকে তৈরী প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠাতে হবে।

১৬.১৬) পথশিশুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় শিক্ষা এবং তাদের পুনর্বাসন করতে হবে। এদেরকে মাদক, মিশনারী ও বিদেশী মদদপুষ্ট এনজিওদের খপ্পর থেকে রক্ষা করতে হবে। মা-বাবাহীন সন্তানদের নিঃসন্তান ভালো দম্পত্তিদের মাঝে তাদের বণ্টন করে দিতে হবে।

 

পিডিএফ আকারে পেতে : https://bit.ly/2A2Kb4p

 

 

 

 

 

 

 

# কয়েকদিন আগে এক চলচ্চিত্র অভিনেত্রী টকশোতে এসে আওয়ামী সরকার অর্থনীতির অনেক উন্নয়ন করেছে, এর উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেছে, গ্রামের নারীরা আগে ব্লাউজ পড়তো না, এখন পরে। এই ব্লাউজ শেখ হাসিনার অবদান।

 

ব্লাউজ দিয়ে অর্থনীতিতে শেখ হাসিনার অবদান যাচাই করা যায় কি না, তা আমার জানা নাই। কিন্তু আমি যেটা বুঝি, কোন একটা দেশের উৎপাদন খাতের বৃদ্ধি ঐ দেশের অর্থনীতির বৃদ্ধি নির্দেশ করে। দেশের উৎপাদন বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্য-শিল্পখাতে যখন বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়, তখনই বুঝতে হবে দেশের অর্থনীতিতে বৃদ্ধি হচ্ছে।

 

ব্যবসা-বাণিজ্যের কি অবস্থা ? এই কথা আপনি যে কোন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে নিরপেক্ষভাবে জিজ্ঞেস করেন, আমি নিশ্চিত, সে উত্তর দিবে, “আগের মত ভালো না।

গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের কাছে জিজ্ঞেস করেন, বলবে- আগের মত ভালো না।

চামড়া ব্যবসায়ীদের জিজ্ঞেস করেন, বলবে- আগের মত ভালো না।

রিয়েলস্টেট ব্যবসায়ীদের জিজ্ঞেস করেন, বলবে- আগের মত ভালো না।

ঔষধ ব্যবসায়ীদের জিজ্ঞেস করেন, বলবে- আগের মত ভালো না।

শেয়ার ব্যবসায়ীদের জিজ্ঞেস করেন, বলবে- আগের মত ব্যবসা নেই।

মৎস ব্যবসায়ীদের জিজ্ঞেস করেন, বলবে- আগের মতো নেই।

শপিং কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ীদের জিজ্ঞেস করেন, বলবে- আগের মত বেচা বিক্রি নেই।

 

এই যদি হয়, সকল উৎপাদকের অবস্থা, তাহলে দেশের অর্থনীতিতে উন্নয়ন হচ্ছে এটা কে বলতে পারবে? যে অভিনেত্রী অঞ্জনা গ্রামের নারীদের ব্লাউজ নিয়ে উৎফুল্ল হইতেছে, তাকে জিজ্ঞেস করেন তো, “আপনি যে সিনেমা শিল্পে কাজ করেন, তার কি অবস্থা?” আমি নিশ্চিত সে বলবে, “খুব খারাপ অবস্থা, নূন আনতে পান্তা ফুরোয়।

কয়েকদিন আগে যুগান্তরে একটা খবর আসে, “ঢালিউডে বাড়ছে বেকারত্ব”। খবরের ভেতরে আছে, চলচ্চিত্র শিল্পীদের অবস্থা এখন এতটাই খারাপ যে, তাদের এফডিসিতে আসার গাড়ি ভাড়া পর্যন্ত নেই। এ থেকে অবশ্য অনুমান করা যায়, অঞ্জনার মত অভিনেতা-অভিনেত্রীরা সংসার চালাতে বাধ্য হয়েছে এফডিসির সীমানা পার হয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে টু-পাইস কামাতে।

 

কথা বলছিলাম, উৎপাদনশীল খাতসমূহ নিয়ে। এটা ঠিক বাংলাদেশে ব্যবসা বাণিজ্য কৃষি ক্ষেত্রে অবস্থা খারাপ হয়েছে, তবে যারা সরকারি চাকুরীজীবি তাদের অবস্থা কিন্তু ভালো হয়েছে। কারণ ১৬ কোটি জনগণের ট্যাক্সের টাকা বাগিয়ে ১০ লক্ষ লোকের বেতন ডবল করে দিয়েছে সরকার। এতে সরকারী চাকুরী করা মাত্র ০.৬% লোকের জন্য উপকার হয়েছে এটা ঠিক, কিন্তু তার প্রভাব গিয়ে পড়েছে দেশের বাকি ৯৯.৪% লোকের দ্রব্যমূল্যে। একইসাথে মেধাবীরা ব্যবসায় না গিয়ে চাকুরীর দিকে ঝুকছে, এটাও খারাপ লক্ষণ।

 

তেলে দাম বাড়ছে, গ্যাসের দাম বাড়ছে, বিদ্যুতের দাম বাড়ছে। সরকার দেশের জ্বালাানি উত্তোলন না করে বিদেশ থেকে আমদানি করার উদ্যোগ নিয়েছে, এতে খুব শিঘ্রই দেশের জ্বালানি খাতে খরচ আরো বাড়বে, আর জ্বালানি খাতে খরচ বৃদ্ধি মানে দ্রব্যমূল্য আরো কয়েকগুন বৃদ্ধি হওয়া।

 

আমি আপনাদের জন্য ‘কর্পোরেটোক্রেসিনিয়ে অনেকগুলো লেখা লিখেছিলাম। শেখ হাসিনা তার সময়ের অর্থনীতির উন্নয়ন বলে যে গপ্পো প্রচার করছে, সে আসলে কর্পোরেটোক্রেসির উন্নয়ন। এবং সেই উন্নয়ন দেখানোর জন্য কিছু ফেক ডামিআছে, যার গোপন কৌশল বুঝা সাধারণ মানুষের বোধগম্য নয়।

আপনি নিজেই চিন্তা করে দেখুন, একমাত্র আওয়ামীলীগ বলতেছে, দেশের অর্থনীতির উন্নতি হচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে মানুষ দেখতেছে অর্থনীতি আরো সংকুচিত হচ্ছে। কিন্তু আওয়ামীলীগের বানানো গপ্পো আর বাস্তবতার মধ্যে ফারাকটা কোথায় সেটা কেউ ধরতে পারতেছে না, অথবা যারা ধরতে পারবে তারাও বিশেষ কারণে তা প্রকাশ করতেছে না।

 

কর্পোরেটোক্রেসির বিষয়টি বুঝতে হলে, জন পার্কিন্সের লেখা একজন অর্থনৈতিক ঘাততের স্বীকারক্তি বইটা পড়তে পারেন। সেখানে দেখবেন, ভৌত অবকাঠামো, মানে ফ্লাইওভার-এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে-মেট্রোরেল এগুলো আসলে উন্নয়ন নয়, বরং জাতিকে ঋণের চাপায় ফেলা, বিদেশী অর্থনৈতিক ঘাতকদের শর্তের বেড়াজালে ফাঁসানো এবং সরকারের লুটপাটের উপলক্ষ মাত্র।

 

উৎপাদনশীল খাত ঝুকিপূর্ণ হওয়ার কারণে মানুষ ব্যবসার থেকে চাকুরীর দিকে ঝুকছে। ফলে উৎপাদন খাত আরো হ্রাস পাওয়ার অবস্থা হচ্ছে। দেশী ব্যবসা বন্ধ হয়ে বিদেশী থেকে আমদানি নির্ভর অর্থনীতি তৈরী হচ্ছে, এটা যে দেশের অর্থনীতির জন্য কত ভয়ঙ্কর লক্ষণ সেটা কিন্তু মানুষ বুঝতেছে না।

৯৯টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বানিয়ে সেগুলোকে বিনা ট্যাক্সে বিদেশীদের কাছে বর্গা দেয়া হচ্ছে (লুকায়িত কমিশন থাকা অস্বাভাবিক নয়)। ঐসব কলকারখানাতে বিদ্যুৎ সার্ভিস দিতে দেশজুড়ে রূপপুর-রামপালের মত পরিবেশবিধ্বংসী বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলা। দেশের ইপিজেডগুলোতে বিদেশীরা কারাখানা বানিয়ে অতিস্বল্পমূল্যের শ্রমিক সুবিধা নিয়ে যাচ্ছে, অথচ বাংলাদেশের মানুষ নির্ভরতার অভাবে ব্যাংকগুলোতে অলস অর্থ ফেলে রাখছে, বিনিয়োগ করার সাহস পাচ্ছে না। স্বল্পমূল্যের শ্রমিক সুবিধা বিদেশীরা নিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা নিতে পারছে না।

 

পৃথিবীতে যে সব রাষ্ট্র কর্পোরেটোক্রেসির স্বীকার হয়েছে, তাদের দেশে অনেক উন্নত রাস্তাঘাট, বিমানবন্দর, সেতু ফ্লাইওভার, পাচ তারকা হোটেল আছে। কিন্তু সেসব দেশে অধিকাংশ মানুষ দুইবেলা দুমুঠো খাবার পায় না, এটাই হলো কর্পোরেটোক্রেসি। অর্থনৈতিক ঘাতকরা তাদের শর্ত অনুসারে চললে জিডিপির বৃদ্ধি দেখিয়ে দেবে, যা দিয়ে মূর্খ মানুষকে ধোকা দেয়া অনেক সহজ। কারণ সাধারণ মানুষ বুঝে না- জিডিপি খায়, না মাথায় দেয়। তারা বুঝে না, এই জিডিপির মধ্যে মারপ্যাচটা কি ? তারা বুঝে না, খাদ্যসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি পেলেও জিডিপি বাড়ে, বিভিন্ন প্রকল্পের নামে লুটপাটের ক্ষেত্র বাড়ালেও জিডিপি বাড়ে। এই জিডিপি বৃদ্ধিতে পানামা পেপারস আর প্যারাডাইস পেপারসে সরকারদলীয় লোকজনের নাম বাড়বে, কিন্তু জনগনের ভাগ্যের চাকার কোন পরিবর্তণ হবে না।

 

তাই আওয়ামীলীগ ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা কখনই বলতে পারে না, তাদের কারণে দেশের অর্থনীতি উন্নত হয়েছে, বরং তারা বলতে পারে- জনগণ দেশ-দেশান্তরে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দেশের অর্থনীতিকে যতটুকু সমৃদ্ধ করেছে, তারা ব্যাপক লুটপাট চালিয়ে সেটাকে পুরোপুরি ধ্বসিয়ে দিতে পারেনি, কেড়ে নিতে পারেনি গ্রামের নারীর ব্লাউজ।

তবে হা! সুযোগ দিলে আগামী ৫ বছরে সেই শেষ সম্বল ‘ব্লাউজটাও কেড়ে নেয়া হবে

 

 

 

 

 

 

আজ থেকে ২৩শবছর পূর্বে গণতন্ত্রকে মূর্খের শাসন বলে অ্যাখ্যায়িত করেছিলো প্লেটো।

প্লোটো কোন দিক লক্ষ্য করে কথাটা বলেছিলো তা আমার জানা নাই,

কিন্তু গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটের মাধ্যমে যে জন প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়, বাস্তবে সে সিস্টেমটাই মূর্খ ব্যক্তিকে সামনে নিয়ে আসে।

ধরুন, দেশ বা রাষ্ট্র হচ্ছে একটা বড় কোম্পানি।

কোম্পানি সিইও আছে, এমডি আছে, ডিরেক্টর আছে, ম্যানেজার আছে, দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মচারি আছে, তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারি আছে, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারি আছে, কারখানা হলে অসংখ্য শ্রমিক আছে। এখন সবাই মিলে ভোট করলো, কে হবে কোম্পানির প্রধান, যে সবচেয়ে বেশি সমর্থন পাবে সেই হবে। দেখা গেলো কারখানা কোন এক শ্রমিক সবচেয়ে বেশি জনসমর্থন পেলো। ব্যাস তাকে বানিয়ে দেয়া হলো পুরো কোম্পানির প্রধান, সে কি এখন কোম্পানি চালাতে পারবে ??

বাস্তবে বাংলাদেশে বিভিন্ন সরকারী অফিসে নির্বাচন হয়, কিন্তু সেটা হয় শ্রেণী ভিত্তিক। মানে প্রথম শ্রেণী কমিটি নির্বাচন , দ্বিতীয় শ্রেণী কর্মচারি নির্বাচন, তৃতীয় শ্রেনী কর্মচারি নির্বাচন, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারি নির্বাচন। একটা অফিসে যদি শ্রেণী ভিত্তিক নির্বাচন হয়, তবে দেশে কেন সাধারণভাবে নির্বাচন হয়? মানে একজন পিএইচডি ডিগ্রিধারীর ভোটের মান যেখানে একজন নিরক্ষর ব্যক্তির ভোটের মান সমান। দুইজনের বুঝ বা সমঝ বা চিন্তাধারা কি এক ? দুইজন কি সমভাবে প্রতিনিধি নির্বাচন করার যোগ্যতা রাখে ?

বর্তমানে এমপি পদে গায়ক, গায়িকা, নায়ক নায়িকা, খেলোয়ারের আধিক্য দেখা যাচ্ছে। তাদের নির্বাচনে দাড়ানোর মূল কারণ তাদের অনেক লোক চিনে-জানে। ব্যস এতটুকু ?

কথা হলো কি হিসেবে চিনে ?

নায়ক হিসেবে, গায়ক হিসেবে, খেলোয়ার হিসেবে।

কিন্তু আইন প্রণেতা বা এমপি হিসেবে চিনে কি ?

অশিক্ষিত মানুষ তো আইন প্রণেতা আর গায়ক-নায়ক-খেলোয়ারের যোগ্যতার প্রার্থক্য করতে পারে না।

তাই সে যাকে বেশি চিনে, তাকেই সমর্থন দেয়, সে হয়ে যায় এমপি। এমনকি সে যদি শারীরকভাবে প্রতিবন্ধীও হয় তবুও সে নির্বাচনে দাড়াতে পারে (কিছুদিন আগে হাজী সেলিম স্ট্রোক করে বাক ও বুঝ শক্তি হারিয়েছেন, তবুও সে নির্বাচনে দাড়িয়েছে)।

সম্প্রতি সুজন নামক একটি এনজিও এমপি প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে একটা জরিপ পরিচালনা করেছে। সেখানে তারা দেখিয়েছে আওয়ামীলীগ বা মহাজোটের ৫০% প্রার্থী এবং বিএনপি বা ঐক্যফ্রন্টের ৫৮% প্রার্থী হচ্ছে আন্ডার এসএসসি, এসএসসি বা এইচএসসি পাশ। এরা কেউ স্নাতক পাশ করতে পারেনি।(https://bit.ly/2SkZXyL)

বিষয়টি আপনারা যেভাবেই দেখেন, আমার কাছে এটা কিন্তু খুব ভয়ের কথা। কারণ এইসব এমপিদের থেকে বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী হবে। দেখা যাবে শিক্ষামন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পাবে একজন আন্ডার এসএসসি, অর্থমন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পাবে একজন এসএসসি, কিংবা শিল্প মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পাবে এইচএসসি পাশ কেউ । শিক্ষা সেক্টরে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রকৃত শিক্ষা প্রদান, অর্থনীতির কঠিন কঠিন সূত্র বা শিল্প মন্ত্রনালয়ের আন্তর্জাতিক মারপ্যাচ তারা বুঝবে কিভাবে ? এই সব অশিক্ষিত মূর্খরা দায়িত্ব নিয়ে একদিকে যেমন উল্টা-পাল্টা কাজ করবে, অন্যদিকে সম্রাজ্যবাদীরা তাদের বুদ্ধি দেয়ার নাম করে খুব সহজেই তাদের দ্বারা দেশ ও জাতিবিরোধী কাজগুলো বাস্তবায়ন করবে।

আপনারা যাই বলেন, আমি কিছুতেই এই গণতান্ত্রিক সিস্টেমটা পছন্দ করি না। প্লেটো গণতন্ত্রকে যে মূর্খের শাসন বলে অ্যাখায়িত করেছিলো, বাস্তবে আমার কাছে বার বার সেটাই মনে হয়। যোগ্যতা আর পরিচিত মুখ কখনই এক জিনিস না। কোম্পানির দারোয়ানের চেহারা সবাই চিনে, তাই বলে দারোয়ান কখন কোম্পানির প্রধান হতে পারে না। কথাটা শুনতে খারাপ মনে হলেও বাস্তবতা এটাই।

আমরা চাই আমাদের দেশ এগিয়ে যাক। জ্ঞান, বিজ্ঞান, মনন-মানসিকতায় এগিয়ে যাক। কিন্তু সেটার ড্রাইভিং ফোর্স হিসেবে যাদের কাছে আমরা দায়িত্ব দিচ্ছি, তাদের কাছে নিজেদের ড্রাইভার হওয়ার লাইসেন্স থাকা চাই। মনে রাখবেন-যতদিন মূর্খের হাতে থাকবে দেশ, পথ হারাবে বাংলাদেশ

দাবি: “ উপজেলা চেয়্যারম্যান ও কমিশনার পদে দাড়াতে নূন্যতম এইচএচসি, এমপি/মেয়র হওয়ার জন্য নূন্যতম স্নাতক পাশ হতে হবে।” (সূত্র- ইশতেহার : জেগে ওঠো বাংলাদেশ ২০১৮’-https://bit.ly/2T8iLRK)

 

 

 

 

 

এক পোস্ট আগে আমি বলেছিলাম,

বাংলাদেশের মুসলমানরা যেহেতু বহুদলে বিভক্ত, তাই তারা কোন নেতাকে কেন্দ্র করে একত্রিত না হয়ে, একটা পলিসির উপর একত্রিত হোক, তাহলে দ্রুত কাজ হবে। কোন ইসলামী রাজনৈতিক দল থাকতে পারে, কিন্তু সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। আসলে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে, দুটি প্রধান রাজনৈতিক দল অধিকাংশ স্থান দখল করে আছে এবং তৃতীয় কোন দল তৈরী হলে (যদি তার ব্যাপক জনসমর্থন বা গ্রহনযোগ্যতা থাকে) হয় সেটাকে তারা নিজের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করার চেষ্টা করবে, নয়ত দমন করার চেষ্টা করবে। তাই অন্তর্ভূক্তি বা দমন, এই দুইয়ের মধ্যে না গিযে কিভাবে নিজের স্বার্থ সর্বোচ্চ আদায় করা সেদিকে লক্ষ্য দেয়া সবচেয়ে জরুরী।

আমি আগেও বলেছি, রাজনৈতিক দল গঠন না করেও দাবি তাড়াতাড়ি আদায় করা সম্ভব,

এর উদাহরণ- কোটামুক্ত আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন কিংবা হেফাজতে ইসলাম।

এ আন্দোলনগুলো যে যে উদ্দেশ্য নিয়ে শুরু হয়েছিলো, তাদের প্রাথমিক দাবীগুলো কিন্তু ঠিকই আদায় হয়েছে।

কিন্তু- এ আন্দোলনগুলো ততক্ষণ সফল থাকে, যতক্ষণ আন্দোলনটা অরাজনৈতিক থাকে।

সমস্যা তৈরী হয় তখন, যখন এ ধরণের অরাজনৈতিক আন্দোলনে রাজনৈতিক অনুপ্রবেশ ঘটে এবং অরাজনৈতিক দাবী ছাপিয়ে তৃতীয় কোন রাজনৈতিক পক্ষ তা ব্যবহার করতে চায়। ফলশ্রুতি পতন ঘটতে পারে সুন্দর একটি আন্দোলনের। শুনেছিলাম, সাপ নাকি তখনই ছোবল মারে, যখন সে মনে করে কেউ তার ক্ষতি করতে এসেছে। তাই আন্দোলনগুলো যেন নির্দ্দিষ্ট দাবীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে এবং অন্য কোন রাজনৈতিক দলের দাবী (প্রতিপক্ষকে দমনের) যেন আন্দোলনের দাবী না হয়ে উঠতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরী।

ধরে নিলাম, মুসলমানরা প্রাথমিকভাবে একটা দাবীর উপর এক হলো। ধরুন, দাবীটি হতে পারে, “সংবিধানে ২০১১ সালে আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস অংশটা তুলো ধর্মনিরপেক্ষতা যোগ করা হয়েছে, সেটা পরিবর্তন করে আগের অবস্থা ফিরিয়ে নিয়ে আসা।

যদি দাবীটির ধর্ম সংক্রান্ত হয় তবে ইসলামী দলগুলোর সবাইকে সেই দাবীর প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করতে হবে। সমস্যা হলো বাংলাদেশের ইসলামী দলগুলোর মধ্যে তো চরম বিভেদ, তারা একজন অন্যজনকে মারাকেই জিহাদ বলে ফতওয়া দেয়, তাহলে তারা এক হবে কিভাবে ?

উত্তর হলো, প্রত্যেক দল থেকে কিছু কিছু তরুণকে এগিয়ে আসতে হবে।

এ তরুণ প্রজন্ম হচ্ছে তারা, যারা চায় সারা বিশ্বে মুসলমানরা আবার এক হোক, মুসলমানদের পুরাতন ঐতিহ্য আবার ফিরে আসুক, মুসলমানরা অমুসলিমদের জুলুম নির্যাতন থেকে রক্ষা পাক, এরাই এক্ষেত্রে অগ্রগামী হবে। অবশ্যই এক দলের সদস্যের অন্য অন্য দলের মধ্যে বন্ধু-বান্ধব-আত্মীয়তা আছে। তারা নিজেদের মধ্যে আলাপ করুক- আজকে থেকে আমরা নিজেদের মধ্যে অন্তদ্র্বন্দ্ব তৈরী হতে পারে এমন বিষয়গুলো এড়িয়ে যাবো, যে যারা পন্থা অবলম্বন করবো, কিন্তু একটি দাবীর উপর একত্রিত হবো, দাবীটি হলো, “সংবিধানে ২০১১ সালে আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস অংশটা তুলো ধর্মনিরপেক্ষতা যোগ করা হয়েছে, সেটা পরিবর্তন করে আগের অবস্থা ফিরিয়ে নিয়ে আসা।” এই দাবী ছাড়া অন্য কোন বিষয় আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু হবে না। এই দাবীর উপর আমরা একত্র হলাম এবং এই দাবীর পক্ষে আমরা বন্ধু হয়ে আন্দোলন গড়ে তুলবো। আমার মনে হয়, এভাবে বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনগুলোর মধ্যে তরুণরা একটা দাবীকে কেন্দ্র করে যদি চেইন বা শিকল তৈরী করতে পারে, তবে দাবী আদায়ে বেশি সময় লাগবে না।

আমার জানা মতে,

-কওমী মাদ্রাসা ও আহলে হাদীসদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হচ্ছে মাজহাব নিয়ে। তাহলে দুই দল একত্র হোন ঐ সংবিধান পরিবর্তনের দাবী নিয়ে, কিন্তু আপাতত মাজহাব নিয়ে আলোচনা এড়িয়ে যান।

-সুন্নী আর কওমী মাদ্রাসা ও আহলে হাদীসদের মধ্যে দ্বন্দ্ব মিলাদ বা মীলাদুন্নবী নিয়ে। এ বিষয়টি এড়িয়ে যান, শুধু সংবিধান পরিবর্তনের দাবীনিয়ে একত্মতা ঘোষণা করুন।

-পীরকেন্দ্রীক ও পীর বিরোধী দলের দ্ব্ন্দ্বমূলক বিষয়গুলো এড়িয়ে যান, শুধু সংবিধান পরিবর্তনের দাবীনিয়ে একত্মতা ঘোষণা করুন।

হতে পারে আপনাদের দলের কোন মুরব্বী বা বয়ঃবৃদ্ধ বলতে পারেন, “এটা কিভাবে সম্ভব, এতদিন আমরা আমাদের বিশ্বাসের উপর এক ছিলাম, এখন কিভাবে ভিন্ন বিশ্বাসের সাথে এক হবো?”

আপনি উত্তর দিবেন, “অবশ্যই সম্ভব। আমরা তো আমাদের বিশ্বাস নিয়ে কাড়াকাড়ি করছি না। আমরা যে বিশ্বাস বা দাবীর প্রতি একতাবদ্ধ হয়েছি, সেটা তো ঠিক আছে, তাহলে সমস্যা কোথায় ? আর এত দলাদলি করে কি লাভই বা হলো ? দল-উপদলের সংখ্যা তো দিনে দিনে বাড়ছেই। কওমী, আহলে হাদীস, সুন্নীদের মধ্যে কি অভ্যন্তরীণ দলাদলি বা গ্রুপিং নেই? বরং মুসলমানদের দলে দলে বিভক্ত করে অমুসলিমরা তো ঠিকই মুসলমানদের ঘাড়ে বসে ছড়ি ঘুড়াচ্ছে।

আমার মনে হয়,

প্রত্যেক দল থেকে যদি কিছু তরুণ সদস্য পরিবর্তনের শপথে এগিয়ে আসে,

মুসলমানদের এক করে অমুসলিম ষড়যন্ত্র রুখে দেয়ার চেষ্টা করে,

বিশ্বাসগত দ্বন্দ্ব নিয়ে আপাতত চুপ থেকে ‘বিশেষ দাবীর উপর একত্র হতে থাকে এবং বিভন্ন দলের মধ্যে চেইন বা শিকল তৈরী করে, তবে খুব দ্রুত মুসলমানদের আসল অধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব এবং সেটা খুব দ্রুত-ই সম্ভব ।

ইচ্ছা শুধু আপনার।

 

 

 

 

 

 

# নির্বাচনী প্রচারণা যখন শুরু হয়, তখন এক উগ্রহিন্দু ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়, “আওয়ামীলীগ-বিএনপি যেই হোক, হিন্দু প্রার্থীকে ভোট দেয়া চাই।

অর্থাৎ হিন্দুরা সংখ্যায় কম হওয়ায় তারা ভিন্ন পলিসি গ্রহণ করে, তারা কোন একদলকে সাপোর্ট দেয় না, দুই দলের মধ্যে ঢুকে নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে। হিন্দুদের স্বার্থ রক্ষা করে, আর মুসলমানদের বিরোধীতা করে। যদি আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসে তবে তাদের কি করতে হবে, আর যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে তবে তাদের কি করতে হবে, সেই প্ল্যান আগে থেকেই তারা করে রাখে।

হিন্দু যে দল করুক বা যে দলের সমর্থন করুক, সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার, সমস্যা হলো যখন তারা প্রকাশ্যে বাংলাদেশ ও সংখ্যালগরিষ্ঠ মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। অথচ এতকিছু করার পরও তা লুকিয়ে মুসলমানদের থেকে সুবিধা তালাশ করে।

গত কয়েক বছর যারা সংবাদের খবর রাখেন, তারা জানেন, অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের সংসদ সদস্য মেন্দি সাফাদি বেশ কিছুদিন যাবত বাংলাদেশ বিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। এই ড্রুজ ধর্মাবলম্বী সিরিয়ায় মুসলমানদের মধ্যে গৃহযুদ্ধ বাধাতে ভূমিকা রেখেছিলো, এখন সেই মিশন শেষ করে এসেছে বাংলাদেশ নিয়ে খেলতে। বাংলাদেশের আওয়ামীলীগ থেকে মাগুরা-২ আসনে মনোনিত এমপি পদপ্রার্থী বীরেন শিদকারের সাথে তার ঘনিষ্ট ছবি মিডিয়ায় পাওয়া যায়। আওয়ামীলীগের ক্ষমতায় গেলে বীরেন শিকদারের মাধ্যমে সাফাদি চাল চালবে না, সেটা কিন্তু বলা যায় না।

বিএনপির পক্ষ থেকে ঢাকা-৬ আসনে দাড়ানো সুব্রত চৌধুরীও উগ্রহিন্দুত্ববাদী কার্যক্রমের সাথে জড়িত। কয়েক বছর আগে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিতে প্রধান আইনজীবি হিসেবে কাজ করেছিলো সে, যদিও মুসলমানদের তৎপরতায় সফল হয়নি। এই উগ্রহিন্দুত্ববাদী ব্যক্তি যদি সংসদে যায়, তবে নির্ঘাৎ ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড করতে পিছুপা হবে না।

বিএনপির পক্ষ থেকে মাদারীপুর-২ আসন থেকে দাড়িয়েছে মিল্টন বৈদ্য নামক এক হিন্দু। ইসরাইলী গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট শিপন কুমার বসু (যে আওয়ামীলীগের সংরক্ষিত মহিলা আসনের প্রার্থী হেপি বড়ালের ভাতিজা)- এর সাথে মিল্টন বৈদ্যের ঘণিষ্ট ও পারিবারিক ছবি ফেসবুকে পাওয়া যায়। একজন এমপি পদ মনোনিত প্রার্থী রাষ্ট্রবিরোধী মোসাদ এজেন্টের সাথে সম্পর্ক থাকায় তাকে কিছুতেই সমর্থন করা স্বাভাবিক হতে পারে না।

 

আপনাদের মনে থাকার কথা, ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার বড়দল সরকারপাড়া গ্রামে সাঁওতাল হিন্দু ও স্থানীয় মুসলমানদের মধ্যে এক সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে হিন্দুদের ছোড়া তীরের আঘাতে শাফিউল ইসলাম (২০) নামের এক মুসলিম তরুণ নিহত হন। এ ঘটনায় হিন্দুদের পক্ষে পেছন থেকে কাজ করেছিলো দিনাজপুর-১ আসনের এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপাল, যে এবারও একই আসন থেকে আওয়ামীলীগ পদপ্রার্থী।

 

আমি সব সময় বলি, মুসলমানরা এক হউন, নয়ত নির্যাতিত হতেই থাকবেন। কিন্তু মুসলিম হয়ে অমুসলিম প্রার্থীকে ভোট দিলে কখনই সেই লক্ষ্য সফল হবে না। আপনারা আওয়ামীলীগকে ভোট দেন, কিংবা বিএনপিকে ভোট দেন বা পছন্দের অন্যদলকেও ভোট দিতে পারেন, সেটা আপনাদের ব্যাপার। কিন্তু বিভিন্ন দল থেকে দাড়ানো হিন্দু, খ্রিস্টান ও উপজাতি প্রার্থীদের বয়কট করুন। মনে রাখবেন আপনি মুসলমান হয়ে ভিন্ন ভিন্ন দলকে সাপোর্ট করতে পারেন, কিন্তু তারা ভিন্ন ভিন্ন দলে দাড়ালেও তাদের সকলে এজেন্ডা এক, মুসলিম বিরোধীতা ও ইসলাম ধ্বংস। তাই আওয়ামীলীগ-বিএনপি সকল দল থেকে হিন্দুদের প্রার্থীতা বাতিলে জোর দাবি তুলুন।

 

 

 

 

নির্বাচন উপলক্ষে ইশতেহার ভাবনা (https://bit.ly/2T39p9P) নিয়ে একটা পোস্ট দেয়ার পর, অনেকেই এ ধরনের মন্তব্য করেছেন। ভালো নির্বাচনী ইশতেহার কেউ বাস্তবায়ন করবে না কিংবা মার্কা ছাড়া ইশতেহার বাস্তবায়ন করা যায় না, আমি এ ধরনের ধারনার পক্ষে নই। আমি বিশ্বাস করি, নিজে নির্বাচনে না দাড়িয়েও গুরুত্বপূর্ণ ইশতেহার বা দাবিসমূহ পূরণ করা সম্ভব।

আপনারা যদি খেয়াল করেন, তবে দেখবেন হিন্দুদের মধ্যে বিভিন্ন গোষ্ঠী বেশ কয়েক মাস যাবত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দরবারে দৌড়া-দৌড়ি করছে। তারা দাবী-দাওয়ার একটা লিস্ট তৈরী করেছে এবং সেটা নিয়ে একবার আওয়ামীলীগের কাছে যায়, একবার বিএনপির কাছে যায়। বলে, “আমাদের কাছে ১ কোটি হিন্দু ভোটার আছে, যদি আমাদের এ দাবিগুলো পূরণের প্রতিশ্রুতি দেন, তবে আপনাদের ভোট দেবো।অর্থাৎ দুই দলের মধ্যে দরকষাকষি করে।

হিন্দুদের ১ কোটি ভোটার আদৌ আছে কি নেই, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। কিন্ত বাংলাদেশে এবার ১০ কোটি ৪১ লক্ষ ভোটারের মধ্যে কমপক্ষে ৯ কোটির উপর ভোটার যে মুসলমান তাতে কোন সন্দেহ নাই। এটা কি সম্ভব ছিলো না, মুসলমানরা একটি ইশতেহার প্রণয়ন করবে এবং সেটা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে দিয়ে বলবে, “এগুলো পূরণ করলে আপনাদের সমর্থন দেবো, আর যদি না মানেন তবে সমর্থন দেবো না। যদি ক্ষমতায় গিয়ে না ঠিক মত না চলেন, তখন আমরা সমর্থন তুলে নেবো, ফলে আপনার পতন হবে। এভাবে দুদলের মধ্যে দরকষাকষি করবে। এটা মনে রাখতে হবে, আওয়ামীলীগ-বিএনপি হচ্ছে ক্ষমতার পাগল। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যে শর্ত দেয়া হবে, সেটা তারা মাথা পেতে নিবে। যদি বলায় হয়, “মাথা নিচে, পা উপরে দিয়ে সারা দিন দাড়িয়ে থাকতেতবুও তারা রাজী। সুতরাং ক্ষমতা ঠিক থাকলে দাবী পূরণ কোন বিষয় নয়।

বিষয়টি ঘোড়ার লাগামের সাথে তুলনা করা যায়। ঘোড়া (আওয়ামীলীগ/বিএনপি) গাড়ি (দেশ) টেনে নিয়ে যাবে। তবে ঘোড়ার গলায় লাগাম সঠিক উপায়ে টেনে ধরতে হবে আপনাকে। আপনি যত শক্ত ও সুন্দর করে সেই লাগাম ধরতে পারবেন, ঘোড়া তত বেশি আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। বাংলাদেশে রাজনৈতিকদলগুলোর উপর বিদেশী শক্তিগুলো এভাবে লাগাম টেনে ধরে। রাজনৈতিক পলিসি দিয়ে, সমর্থন দিয়ে, গোপন তথ্য ব্ল্যাকমেইল করে, অবৈধ টাকা কামানো ও লুকানোর সুযোগ করে দিয়ে, মিডিয়া দিয়ে পক্ষ/বিপক্ষ হয়ে, অপকর্মের বৈধতা দিয়ে লাগাম টেনে ধরে। যে দলের উপর যে বিদেশী শক্তির লাগাম যত দৃঢ়, ঐ রাজনৈতিক দলের উপর ঐ বিদেশী শক্তির প্রভাব ততবেশি। ফলে ঐ রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় গেলে ঐ বিদেশী শক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে বেশি। আপনি মুখে যতই বলেন, “সরকার কেন জনগণের জন্য কাজ করে না”, এতে লাভ হবে না। কারণ সরকারের গলায় তো আপনার লাগাম নেই, আছে ঐ বিদেশীদের লাগাম, সুতরাং তাদের কথাই সরকার বেশি শুনবে।

এখানে লক্ষ্যনীয়,

যেহেতু বাংলাদেশে দুটি বড় রাজনৈতিক দল অনেকদিন ধরেই ক্ষমতায় আছে,

এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের ভোটগুলো তাদের কাছেই যায়, সেহেতু বাংলাদেশে মুসলমানদের পক্ষ হয়ে যারা দরকষাকষি করবে প্রাথমিকভাবে তাদের নিরপেক্ষ হওয়া জরুরী।

তবে সে যদি দুই দলের এক পক্ষকে সমর্থন দেয় বা নিজেই নির্বাচনে দাড়িয়ে যায়, তবে সে নিরপেক্ষতা হারাবে, তার কথা কেউ শুনবে না।

পাশাপাশি, যে বা যেসব নেতা নিরপেক্ষ হয়ে মুসলমানদের পক্ষে কাজ করবে, তাদের দৃষ্টিভঙ্গী বর্ধিত করতে হবে। তাদের চিন্তা করতে হবে পুরো মুসলিম সমাজকে নিয়ে, দাবীগুলো হতে হবে সেরকম। কিন্তু নিজের গোষ্ঠীগত সুবিধা নিয়ে যদি সে পক্ষ-বিপক্ষ অবলম্বন করে বসে, তবে সে মুসলমানদের নিরপেক্ষ গোষ্ঠীর নেতা হতে পারবে না। যতক্ষণ সে নিরপেক্ষ থাকবে, ততক্ষণ তার মধ্যে আওয়ামীলীগ-বিএনপির সমর্থকরাও আসতে থাকবে। একই সাথে, নির্বাচনে না দাড়ানোয়, রাজনৈতিকদলগুলো মুসলমানদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ভাববে না এবং দমনও করবে না। বরং সব সময় সমর্থন আদায়ের চেষ্টায় থাকবে।

আমি জানি, আমার দেয়া এ পলিসি অনুসারে যদি কেউ কাজ করতে চায়, তবে প্রথম যে কথাটা উঠবে সেটা হলো, “একজন নেতা লাগবে, নেতা ছাড়া সবাই এক হবে কিভাবে?”

বাংলাদেশের যদি সবাইকে কোন এক মুসলিম নেতার আন্ডারে আসতে বলি, তবে মুসলমানদের মধ্যে মারামারি-কাটাকাটি লেগে যাবে। একজন বলবে, আমরা ধর্মীয় দলের নেতা শ্রেষ্ঠ, আরেকজন বলবে আমার জন শ্রেষ্ঠ। একজন অন্যজনের হুজুরকে মানবে না। এজন্য নেতা/হুজুরের প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। তার থেকে বরং নেতার বদলে একটি পলিসি তৈরী করা যেতে পারে, যার মধ্যে সকল মুসলমান সাধারণভাবে এক হবে। এরপর সেই পলিসি অনুসারে দরকষাকষি হবে।

আরেকটি কথা। অনেকে হয়ত বলবে, আরে দূর, “এসব করে লাভ হবে না। নির্বাচনে তো অমুক দল জিতে যাবে।

যারা এসব কথা বলবে, সম্ভবত তাদের নিজের কোন রাজনৈতিক পক্ষ আছে, আসছে নির্বাচনে তারা বিপক্ষকে দমন করার জন্য তাড়াহুড়ো করছে। তাদের পালে হাওয়া লাগিয়ে লাভ নেই। সাধারণ জনগণের পক্ষ তৈরী করতে সময় লাগবে। কারণ আওয়ামীলীগ-বিএনপির রাজনৈতিক সুচনা অনেক আগে থেকে। তাদের পেছনে যারা কাজ করছে, তাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা অর্ধ শতাব্দীর বেশি পুরোনো। আমি আপনাদেরকে জনগণের পক্ষ নামক শক্তি দাড় করানোর জন্য যে বুদ্ধি দিচ্ছি, সেটা জনগণের জন্য একেবারেই নতুন। এই নতুন তত্ত্ব নিয়ে সামান্য সময়ের মধ্যে তাদের সাথে পেরে যাবো, এটা ভুল। তাই তাড়াহুড়ো করার কারণ নেই। ধিরে সুস্থে আগাতে হবে। উদাহরণ স্বরূপ, আজকে তুরস্কে যে এরদোয়ানকে দেখা যাচ্ছে, সেটা ১০০ বছরের কষ্টের কারণে সৃষ্ট চেষ্টার ফসল। বাংলাদেশের মুসলমানদেরও সেরকম কিছু চিন্তা করতে হবে। ভুল পলিসিতে ৭১ বছরেও (১৯৪৭ থেকে) কিছু হয়নি। তাই তাড়াহুড়ো না করে সঠিক পলিসিতে এগোতে হবে।

শেষে আমি পুরো বিষয়টি আবারও সংক্ষেপে বুঝানোর চেষ্টা করছি,

ক) বাংলাদেশের মুসলমানদের নিজেদের একটি পলিসি থাকবে, যে পলিসির উপর তারা একমত হবে।

খ) যে সমস্ত রাজনৈতিক দল মুসলমানদের সেই পলিসির পক্ষে কাজ করবে, তাকেই সাপোর্ট দেয়া হবে।

গ) যতক্ষণ কাজ করবে, সাপোর্টও ততক্ষণ থাকবে। কাজও বন্ধ করবে, সাপোর্ট বন্ধ করে উল্টো বিরোধীতা করা হবে।

ঘ) মনে রাখতে হবে, সাপোর্ট দেয়া অর্থ মিশে যাওয়া নয়। উদাহরণস্বরূপ, আওয়ামীলীগ বা বিএনপি মুসলমানদের একটি পলিসির পক্ষে কাজ করলো। তাহলে ঐ ইস্যুতে আওয়ামীলীগ/বিএনপির পক্ষ নিতে হবে। কিন্তু এরমানে এই নয় যে আওয়ামীলীগ বা বিএনপির সাথে মিশে যেতে হবে। ঐ সময় আওয়ামীলীগ/বিএনপি মুসলমানদের পলিসির বিপরীত যতগুলো কাজ করবে, তার শক্তভাবে বিরোধীতা করতে হবে, সমর্থন তুলে নিতে হবে। অর্থাৎ সমর্থন হবে ইস্যু ভিত্তিক এবং বিরোধীতা হবে ইস্যু ভিত্তিক। অর্থাৎ যে যত পলিসি পালন করবে, তার দিকে সমর্থন ততবেশি যাবে। যে দল বেশি পলিসির বিপরীত করবে, তার দিকে বিরোধীতাও তত বেশি যাবে। এতে দুইটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে প্রতিযোগীতা লাগবে কে কত বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের দাবী দাওয়া বেশি পূরণ করতে পারে।

আমি জানি, অনেক মুসলমান হয়ত বলবে, “এত পলিসির কি আছে, একবারে খিলাফত জারি করে ফেললেই তো হয়।

আমি তাদের বলবো, আস্তে ভাই আস্তে। যে ময়লা শত-সহস্র বছর ধরে জমা হয়েছে, সেটা কি এক নিমিষেই সাফ করতে পারবেন ? কখনই না। ময়লা পরিষ্কার করতে সময় লাগবে, তবে পলিসি ও নিরপেক্ষতা যেন সঠিক থাকে, সেখানে যেন কোন ভুল না হয়, তাহলেই হবে।

 

 

 

 

 

প্রক্সিওয়্যার শব্দটার সাথে জনগণ পরিচিত নয়। যদিও জনগণ প্রতিনিয়ত পরিচালিত হচ্ছে প্রক্সিওয়্যারের মাধ্যমেই। প্রক্সিশব্দের শাব্দিক অর্থ অন্যের পরবর্তিরূপে কাজ করাবা বদলি কাজ’, ওয়্যার শব্দের অর্থ যুদ্ধ’। ছোট বেলায় ক্লাসে উপস্থিত না হয়ে বন্ধুদের বলতাম, ‘দোস্ত আমার হয়ে প্রক্সি দিয়ে দিস’ । মানে আমি উপস্থিত থাকবো না, তুই আমার হয়ে হাজিরা দিয়ে দিস। আন্তর্জাতিক সম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো প্রতিনিয়ত নিজের স্বার্থ নিয়ে কামড়াকাড়িতে ব্যস্ত। সারা বিশ্বজুড়ে চলে তাদের এই যুদ্ধ। কিন্তু সাধারণভাবে সেটা দেখা যায় না, কারণ তারা নিজেরা কখন মাঠে নেমে যুদ্ধ করে না, তারা ভিন্ন একটি দেশকে ব্যাটলফিল্ড বা যুদ্ধক্ষেত্রে বানিয়ে সে দেশের জনগণ দিয়ে সেই যুদ্ধের প্রক্সি দেয়। কিন্তু এরমধ্যে চাতুরতা এত বেশি থাকে যে, সাধারণ মানুষ সেটা ধরতে পারে না। সে ভাবে, সে নিজের জন্য যুদ্ধ করছে, কিন্তু বাস্তবে সে সম্রাজ্যবাদীদেশগুলো স্বার্থের জন্য প্রক্সিওয়্যারে ব্যবহৃত হচ্ছে।

৪৭ এ বহু কাঠখড় পুড়িয়ে পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর, সেটা ভাঙ্গার প্রথম পরিকল্পনা ছিলো আমেরিকার। সেই প্রথম ঘি ঢালে জাতীয়বাদ থিউরী ছড়িয়ে। পাকিস্তানী শাসকদের মাথামোটা বক্তব্যে আমেরিকার থিউরী সফল হয়, সৃষ্টি হয় ৫২র ভাষা আন্দোলন। ৬৬-৬৯ পাকিস্তান ভাগ করার পর্যায়গুলো মোটামুটি আমেরিকার নিয়ন্ত্রণেই থাকে, কিন্তু বিপত্তি ঘটে ৭০ এর নির্বাচনে এসে। আমেরিকার বদলে পাকিস্তান ভাগ করার আন্দোলন নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে চেষ্টা করে রাশিয়া। পাকিস্তানী শাসকদের মাথামোটা সিদ্ধান্তের দরুণ ২৫ মার্চের নির্মম গণহত্যা এবং বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার যদি না করা হতো, তবে আদৌ বাংলাদেশ নামক কোন দেশ জন্ম নিতো কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন কনফেডারেশনটাইপের পূর্ব পাকিস্তান, কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে চালকের আসনে বসে পড়ে পাক্কা রাশিয়ান এজেন্ট তাজউদ্দিন আহমেদ। আরেক রাশিয়ান ব্লকের সদস্য ভারতীয় কংগ্রেসের ইন্দিরা গান্ধী তখন ক্ষমতায়, মিলে যায় ক্ষাপে ক্ষাপ। আমেরিকার এতদিনের সখের সূচ রাজার চোখের সূচসরানোর উদ্যোগ নিয়ে নেয় রাশিয়া। স্বাধীন হয়ে যায় বাংলাদেশ। রাশিয়ান ব্লকের নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে, আমেরিকা তো বসে থাকার পাত্র নয়। তাদের এজেন্ট জাসদসহ নাস্তিকগুলো দিয়ে দেশে তৈরী করতে থাকে বিশৃঙ্খলা। ভাত দে, নয় মানচিত্র খাবো”, শ্লোগান দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভের সেন্টিমেন্টকে ঘুড়িয়ে এন্টি আওয়ামীলীগবিরোধী সেন্টিমেন্ট উস্কাতে থাকে। সিরাজ শিকদার হত্যা কিংবা বাকশাল প্রতিষ্ঠা সবাই ছিলো আমেরিকার বিরুদ্ধে রুশ প্ল্যানের অংশ। মার্কিনীদের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর একের পর এক একশনে ক্ষেপতে থাকে আমেরিকা। বঙ্গবন্ধুরও মার্কিন বিরোধী প্ল্যান নিজ দেশ ছেড়ে বাইরে বর্ধিত হতে থাকে। পূর্বের বন্ধু ভুট্টোর সাথে ফের খাতির করে নতুন নতুন প্ল্যান নিতে থাকে বঙ্গবন্ধু। ক্ষেপে যায় সিআইএ। বাংলাদেশে কথিত সেনা অভ্যুথানের নাম দিয়ে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুকে, পাকিস্তানে ভুট্টোকে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সিআইএপন্থীরা ট্যাঙ্কে চড়ে উল্লাস করে। এরপর বাংলাদেশে সিআইএপন্থী ও রুশপন্থী সেনাসদস্যের মধ্যে ক্যু-পাল্টা ক্যু চলতে থাকে। টানা ৮ বছর চলে সেনাসদস্যদের মধ্যে সেই আত্মঘাতি প্রক্সিওয়্যার। হাজার হাজার সেনাসদস্য মারা যায়, যার মধ্যে অধিকাংশ মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিলেন। ৮৩ সালে এসে ক্ষমতা নিয়ে নেয় সুযোগ সন্ধানী এরশাদ। এরশাদ ব্যক্তিগতভাবে চালাক ছিলো। সে নিজের জন্য অনেক কিছু-ই করতো, কিন্তু সম্রাজ্যবাদীদের কথা ডাইরেক্ট শুনতো না। এতে ক্ষেপে যায় সম্রাজ্যবাদীরা। মিডিয়ার মাধ্যমে স্বৈরশাসকট্যাগ লাগিয়ে মার্কিনপন্থী, চীনপন্থী আর রুশপন্থী সব এক হয়ে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে, ক্ষমতা থেকে নামাতে চায়। ১৯৯০ সালে ক্ষমতা থেকে নেমে যায় এরশাদ। ১৯৯১ সালে ফের মার্কিন-চীন ব্লকের (তখন মার্কিন-চীন জোট ছিলো) দল ক্ষমতায় চলে আসে। ইতিমধ্যে শেখ হাসিনাকে রুশব্লকের কংগ্রেস ট্র্রেনিং দিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে তার ১০ বছর হয়ে গেছে, যদিও আওয়ামীলীগ ঠিক তখনও গুছিয়ে উঠতে পারেনি। তবে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ফিরে আসায় আওয়ামীলীগের আসার সম্ভবনা তৈরী হয়। তাছাড়া সম্রাজ্যবাদীরাও চায় গণতন্ত্র দিয়ে দেশ চলুক, কারণ সেনা শাসকরা সব সময় তাদের কথা শুনে না, এরশাদের মাধ্যমে তাদের সেই শিক্ষা হয়ে গেছে। আমেরিকা পাকিস্তান ভাগ করতে প্রথম জাতীয়তাবাদের চেতনাউস্কে দিয়েছিলো, সেই আমেরিকা এবার নতুন মোড়কে নিয়ে আসে নতুন চেতনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’। কারণ আমেরিকার ভয় ছিলো শেখ হাসিনাকে দেশে নিয়ে এসেছে রুশব্লক। বঙ্গবন্ধূ কন্যা হওয়ায় রাশিয়া তাকে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নিয়ন্ত্রণ নেয় নাকি, তখন ফের ক্ষমতা রাশিয়ার হাতে চলে যাবে। তাই ১৯৯২ সালে আমেরিকাই তার সদস্য জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে কিছু মার্কিনপন্থী নাস্তিকদের নিয়ে তৈরী করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণ আদালত’। শুরু হয়ে যায় চেতনা ব্যবসা। তবে জাহানারা ইমাম খুব তাড়াতাড়ি ক্যান্সারে মারা যাওয়ায় হাফ ছেড়ে বাচে শেখ হাসিনা। যে কথাটা সাবেক এপিএস মতিয়ুর রহমান রেন্টুর লেখা `আমার ফাঁসি চাই বইয়ে আছে- জাহানারা ইমাম মারা যাওয়ার পর শেখ হাসিনা আনন্দে নাচতে থাকে আর বলতে থাকেন মিষ্টি খাও, মিষ্টি। আমার একটা প্রতিদ্বন্দ্বী দুনিয়া থেকে বিদায় হয়েছে। আল্লাহ বাঁচাইছে। নেত্রী হতে চেয়েচিল। আমার জায়গা দখল করতে চেয়েছিল। জাহানারা ইমাম মারা গেলেও মার্কিন ব্লক সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে চেতনা তৈরী অব্যাহত রাখে। চেতনা তৈরীবলছি এ কারণে, মুক্তিযুদ্ধ একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, এই ঘটনার বিচার হবে ইতিহাসের ভিত্তিতে, কিন্তু মার্কিনপন্থীরা বানোয়াট গল্প কবিতা রচনা করতে থাকে, যার নেতৃত্বে থাকে হুমায়ুন আহমেদ, জাফর ইকবাল আর শাহরিয়ার কবিররা। সাথে ডিজিটাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ডকুমেন্টারি নিয়ে আসে মার্কিন এজেন্ট তারেক মাসুদ আর ক্যাথরিন মাসুদরা। বলাবাহুল্য, মার্কিনীদের চেতনা চর্চার সহরাওয়ার্দী উদ্যানের সেই গণ আদালত২০১৩ তে হয়ে যায় শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ’। শুরুতে সেটার নিয়ন্ত্রন থাকে মার্কিনী এজেন্ট ইমরান এইচ সরকার ও কথিত ব্লগার এন্ড অনলাইন এক্টিভিস্টদের হাতে, কিন্তু পরে সেটা রুশব্লকের আওয়ামীলীগ হাইজ্যাক করে তা ব্যবহার করতে চায়। , ২০১৮ তে এসে শাহবাগ আন্দোলনের মূল মূল মার্কিনপন্থীদের জেলের ভাতও খাওয়া রুশব্লকের আওয়ামীলীগ, কিছুকে বিদেশ আর কিছুকে পরপারে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

যাইহোক, আবার পেছনের ইতিহাসে ফেরত যাই। ৯৬ এ রুশব্লকের আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় চলে আসে, ২০০১ এ মার্কিন-চীনব্লকের বিএনপি। ২০০৬ এ গিয়ে ফের আমেরিকা দেখে তাদের বিএনপি দিয়ে ঠিক পোষাচ্ছে না, তাদের আরো অনুগত সরকার দরকার, কারণ ততদিনে চীনের সাথে আমেরিকার সম্পর্কে ফাটল ধরে গেছে, চীন-আমেরিকা শত্রুতা শুরু হয়ে গেছে। ফলে এ অঞ্চলে তাদের তাদের পলিসি চেঞ্জ করতে হবে। তাই তারা উদ্যোগ নেয় হাসিনা-খালেদাকে মাইনাস-টু করে হিলারী বন্ধু ড. ইউনুসকে বসাবে। ভর করা হয় কিছু সেনা অফিসারের উপর। তাদের দিয়ে রাজনৈতিকদলগুলোর উপর উপর শক্তি প্রয়োগ করাও হয়। কিন্তু সে সময় হাল ধরে শেখ হাসিনার মূল চ্যানেল রুশব্লকের ভারতীয় কংগ্রেস। গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ মনমোহন সিং তার আত্মজীবনীমূলক বই ওয়ান লাইফ ইজ নট এনাফ' স্পষ্ট লিখে কিভাবে সে শক্ত হস্তে শেখ হাসিনাকে ২০০৮ এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় বসিয়েছে। ওয়ান ইলেভেনের পর মার্কিনপন্থীরা কিছু সেনা অফিসার দিয়ে তাদের যে প্ল্যান বাস্তবায়ন করতে উদ্দত হয়েছিলো, তার খেসারত দিতে হয় রুশব্লকের শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার সাথে সাথে। কয়েক মাসের মধ্যে অর্থাৎ ২০০৯ সালে ঘটে যায় বিডিআর বিদ্রোহ। ঝরে যায় দেশের মহামূল্যবান অনেকগুলো সেনা অফিসারের প্রাণ। মার্কিনপন্থীদের উপর প্রতিশোধ নেয় রুশব্লক।

এখন ২০১৮ সালের নির্বাচন উপস্থিত। এখনও একটা দলের উপর ভর করেছে রুশব্লকের ভারতীয় কংগ্রেস। অন্য দলের উপর আমেরিকার সিআইএ। মাঝখানে দুইপক্ষের মাঝে সক্রিয় আছে সুপার পাওয়ার হতে চলা চীন। ১

১৯৪৭ থেকে ২০১৮ হয়েছে, ৭১ বছরের ইতিহাস। সম্রাজ্যবাদীরা নিজেদের মধ্যে স্বার্থ নিয়ে দ্বন্দ্ব করেছে, কিন্তু তারা ফিল্ডে নামেনি। নামিয়ে দিয়েছে আমাদের। তাদের কোন ক্ষতি হয়নি, কেউ বলতে পারবে না, এখানে একজন মার্কিন সৈণ্য বা রাশিয়ার সৈণ্য মারা গেছে। মারা গেছে অসংখ্য বাংলাদেশী, এক ভাই আরেকভাইকে মেরেছে, ভাইয়ের রক্তে রক্তাক্ত করেছে নিজের হাত। বলি হয়েছে সম্রাজ্যবাদীদের প্রক্সিওয়্যারের।

বহুদিন তো হলো, আর কত ? বহু রক্ত তো গেলো, আর কত আপন ভাইয়ের রক্ত চাই ?

জাতি আজ আওয়ামীলীগ-বিএনপিতে বিভক্ত। আসলে আওয়ামীলীগ আমাদের শত্রু নয়, বিএনপিও আমাদের শত্রু নয়। শত্রু হলো তাদের উপর যারা ভর করেছে তারা।

আমরা জনগণ যে দিন আওয়ামীলীগ-বিএনপি’র পর্দা ভেদ করে উপরের শত্রুদের দিকে তাকাতে পারবো, সেই দিন আমদের সামনে সব উন্মোচিত হবে। আমরা বুঝবো আওয়ামী-বিএনপি মারামারি নয়, আমাদের মারামারি করতে হবে পর্দার অন্তরালে দাড়িয়ে থাকা শত্রুদের সাথে, স্বার্থ নিয়ে টানাটানি করতে হবে তাদের সাথে। তখন তৈরী হবে জনগনের পক্ষ বা তৃতীয় পক্ষ।

গত দুইদিনে রাজনৈতিকদলগুলো তাদের ইশতেহার দিয়েছে। কিন্তু আমার মনে হয়েছে, সে ইশতেহারগুলোতে খুব সামান্যই আছে জনগণের চাওয়া-পাওয়া। বেশিরভাগ হলো সম্রাজ্যবাদীদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন এবং প্রতিপক্ষকে দমন করার কৌশল। কিন্তু কিভাবে জনগণের ভালো হবে, জনগণের উন্নতি হবে, সেটা খুব কমই বর্ণিত আছে সেই ইশতেহারগুলোতে। তবে এটার দোষ রাজনৈতিকদলগুলোকে আমি দেবো না, দেবো জনগণকে। জনগণ যেদিন প্রকৃতঅর্থেই নিজের ভালো বুঝবে,বুঝতে পারবে সম্রাজ্যবাদীদের প্রক্সিওয়্যারে হাওয়া না লাগিয়ে জনগণের পক্ষে হাওয়া লাগনো উচিত, সেদিন তৈরী হবে জনগণের পক্ষ বা তৃতীয় পক্ষ, সেই সময়ের অপেক্ষায়।

বি: দ্র:

আমি একটা ইশতেহার দাবি তুলেছি, যার নাম ইশতেহার : জেগে ওঠো বাংলাদেশ ২০১৮”। যেখানে আমি চেষ্টা করেছি শুধু জনগণের পক্ষ হয়েই দাবি তুলতে।

(লিঙ্ক: https://goo.gl/nLuUMC, পিডিএফ আকারে পেতে : https://bit.ly/2A2Kb4p)

 

 

 

 

 

এক বক্তব্যে তারা বলেছে, আরেক ইসলামী দলের বিরুদ্ধে (সম্প্রতি তাদের সাথে বিরোধ হয়েছে), যদি আওয়ামী সরকার ব্যবস্থা না নেয়, তবে তাদের সাথে আর কোন কথা নয়।

যেহেতু নির্বাচন কাছে, তাই আওয়ামীলীগের সাথে তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখতে আওয়ামীলীগ যেন কাজটি দ্রুত করে সেই ইঙ্গিত দেয়া।

বিষয়টি নিয়ে আমি অবাক হচ্ছি, কারণ নির্বাচনী শেষ সময়ে এখন কি নিজেদের মধ্যে গুগাগুতি করার সময় ?

নির্বাচন যত কাছে আসছে, প্রত্যেকটি গোষ্ঠী তার স্ব স্ব স্বার্থ রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে উপস্থাপন করছে। যেমন:

১) যারা কোটা আন্দোলনকারী, তারা তারুণ্যের ইশতেহার ভাবনা নামক একটি দাবী তৈরী করেছে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে দিয়েছে। (https://bit.ly/2zN0sue) অনেক রাজনৈতিক দল এ দাবীগুলো পূরণ হবে বলে ইতিমধ্যে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে (https://bit.ly/2AMbdMV)।

২) হিন্দুরা বেশ কিছুদিন যাবত, বিভিন্ন নির্বাচনী দাবী তৈরী করেছে। এবং বলছে কে তাদের দাবি দাওয়া পূরণ করবে, হিন্দুরা তাদের ভোট দেবে। প্রকাশ্য দরকষাকষি। অনেক দল তাদের ইশতেহারে হিন্দুদের সেই দাবীগুলোও সম্বলিত করেছে। (দুইটি হিন্দু দলের আলাদা দাবী, https://bit.ly/2B18U97, https://bit.ly/2AZIPHm)

৩) নাস্তিক জাফর ইকবাল সেও একটা দাবি তৈরী করে প্রকাশ করেছে (https://bit.ly/2BYGkqA), উদ্দেশ্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যেন তার সেই সেক্যুলার হওয়ারদাবিগুলো তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে সংযুক্ত করে এবং পরবর্তীতে সেই দাবীগুলো নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির কথা বলে অন্তত আদায় করা যাবে।

অর্থাৎ নির্বাচন কাছে আসলে রাজনৈতিক দলগুলো সফট হয়ে যায়, যারা প্রত্যেক গোষ্ঠীর দাবী দাওয়া নিয়ে কথা বলে এবং নির্বাচনে জিতলে তা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেয়। আমি কোন ইসলামী দলকে দোষারোপ করছি না, কিন্তু বলছি, বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে এখন উচিত ছিলো, এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিকদলগুলোর কাছে মুসলমানদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবী দাওয়া পাঠানো, যা দিয়ে দেশ ও জাতির উপকার হয়। অথচ মুসলমানদের পক্ষ থেকে ইশতেহার না দিয়ে মুসলমানরা উল্টো নিজেদের মধ্যে গুতাগুতিকে ইশতেহার বানিয়ে দিয়েছে। আমি সমস্ত ইসলামী দলগুলোর প্রতি হাতজোড় করে অনুরোধ করবো, দয়া করে এ ধরনের মানসিকতা থেকে সরে আসুন। আমরা মুখে বলি কোন সরকার ইসলামের জন্য কোন কাজ করে না, কিন্তু বাস্তবে আমরা কি আমাদের দাবীগুলো সঠিক করে তাদের কাছে পৌছাতে পেরেছি ? কথায় আছে, “না কানলে মাও দুধ দেয় না।মুসলমানরা যদি তাদের দাবি-দাওয়াগুলো উপযুক্ত সময় পৌছাতে না তবে ক্ষমতাসীনদের দোষ দিয়ে লাভ কি ?

যাই হোক, আমি অনলাইনে একটা উদ্যোগ নিয়েছি। দেশ ও জাতির কল্যানে আমরা যারা অনলাইনে সচেতনমহল আছি, তারাও একটা ইশতেহার ভাবনা প্রণয়ন করবো। আমি আপনাদের কাছে আহবান করছি, দেশ ও জাতির কল্যাণ্যে ক্ষমতায় আসলে নতুন সরকারের কি করা উচিত, সেই ভাবনা নিয়ে আপনাদের মতামত জানান। সেই মতামতগুলো যাচাই-বাছাই করে একসাথে প্রকাশ করবো। এরপর আমরা সেই দাবীগুলো গণহারে সবাই প্রচার করবো, ভাইরাল করবো, যেন রাজনৈতিকগুলোর দৃষ্টিগোচর হয় এবং তারা তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে সেগুলো অন্তর্ভূক্ত করে। আপাতত আপনারা কমেন্টে আপনাদের নির্বাচনী দাবী দাওয়াগুলো প্রকাশ করুন। সময় ২৪ ঘণ্টা।

 

 

 

 

 

কয়েকদিন অগে দেখলাম, হিরো আলম মনোনয়নপত্র তুলেছে। বিষয়টি নিয়ে মিডিয়া বেশ সরগরম। কয়েকটি চ্যানেল তো হিরো আলমকে স্টুডিওতে ডেকে এন সাক্ষাৎকার নিলো, সেখানে হিরো আলম বেশ আবেগঘন উত্তর দিলো। সেই উত্তর শুনে অনেকেই হয়ত হিরো আলমকে এমপি হওয়ার যোগ্যতার সার্টিফিকেট দিয়ে দিয়েছেন।

একটা বিষয়, আমি সব সময় দেখি। বাঙালীরা সব কিছু আবেগ দিয়ে জাজ করে। এটা ভুল। আবেগ দিয়ে সব কিছুর বিচার করা যায় না। একটা উদহরণ দেই-

কিছুদিন আগে ঘটে গেলো নিরাপদ সড়ক আন্দোলন। সব পাবলিক মাঠে নামলো। সবাই ড্রাইভারের লাইসেন্স চায়, গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট চায়। ধরুন, তখন যদি কোন ড্রাইভার বলতো-

আমি গরীব মানুষ, ছোট বেলায়ে আমার মা আমাকে মানুষের বাড়িতে কাজ করে খাওয়াইছে, আমি যদি পড়ালেখার সুযোগ পাইতাম তবে ড্রাইভিং সার্টিফিকেট নিতাম, ভালোভাবে গাড়ি চালাতে পারতাম, ফিটনেস সার্টিফিকেট নিতাম। এই বলে সে কেন্দে দিলো।

ড্রাইভারের এত সুন্দর আবেগঘন কথা শুনে কি আপনি লাইসেন্স-ফিটনেসের দাবি তুলে নিতেন ?

গাড়ি ছেড়ে দিতেন ?

অবশ্যেই নয়। কারণ গাড়ি ড্রাইভিং সিটে যে বসে থাকে তার ইতিহাস-কাহিনী শুনে লাভ নেই। সে যদি সঠিকভাবে গাড়ি চালাতে না পারে, তবে শত শত মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়বে, তাই এ ধরনের লোকদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়াটাই উচিত।

তাহলে একটা গাড়ি চালতে যদি এত যোগ্যতা লাগে, আবেগের মূল্য না থাকে, তবে একটা এলাকার জনগণের ড্রাইভার মানে এমপি হতে গেলে কেন যোগ্যতা লাগবে না ? কেন সেখানে আবেগ দিয়ে কুপোকাত হতে হবে ?

কোন কাজ করতে গেলে দুটো যোগ্যতা লাগে-

১) জ্ঞান

২) দক্ষতা

হিরো আলমকে যদি প্রশ্ন করা হতো- “আচ্ছা এমপি শব্দের অর্থ কি ?”

কিংবা পার্লামেন্ট মেম্বার বানান করে বলেন তো ?

কিংবা একজন এমপি’র কাজ কি ?

কিংবা আপনার কাজ হবে আইন প্রণয়ন করা, এই আইন বলতে আপনি কি বুঝেন ?

যদি হিরো আলম এ প্রশ্নগুলোর উত্তর না দিতে পারতো, তখন বলতে পারতেন, আপনার এমপিখায় না মাথায় সে বিষয়ে কোন জ্ঞান নেই, তাহলে আপনি এমপি মনোনয়ন নিলেন কিভাবে ?

সত্যিই বলতে হিরো আলমকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। এক দৃষ্টিতে সে ঠিক কাজই করেছে।

বাস্তবে হিরো আলম হচ্ছে একটা জোকার, যার অভিনয় দেখে, কথা শুনে মানুষ হাসির খোরাক পায়,

কিন্তু সেই হিরো আলাম যখন টিভিতে সংসদে এমপি-মন্ত্রীদের কার্যক্রম দেখে, এমপি-মন্ত্রীদের লাগামহীন জোকারিপনা দেখে, তখন সে নিজেই ভাবে, “এখানে তো আমার থেকে আরো বড় বড় জোকার আছে, তাহলে আমার এমপি হতে সমস্যা কোথায় ?

একটি বিষয় আপনাকে মানতে হবে,

ঢাবির ফর্ম তুলতে গেলে নূণ্যতম জিপিএ লাগে

বুয়েট ফর্ম তুলতে গেলে নূণ্যতম জিপিএ লাগে

বিসিএস ফর্ম তুলতে গেলে নূণ্যতম যোগ্যতা লাগে

তাহলে এমপি ফর্ম তুলতে গেলে কেন নূণ্যতম যোগ্যতা লাগবে না ?

যে-

আইন কি ? শাসন ব্যবস্থা কেমন ? আইন ও বিচার ব্যবস্থার মধ্যে সম্পর্ক কি ? আইন প্রণয়ন কিভাবে করতে হয়, প্রতিনিধিত্ব কিভাবে করতে হয়, নির্বাহীর দায়িত্বশীলতা কিভাবে দাবি করতে হয়, স্বচ্ছ সিদ্ধান্ত-প্রক্রিয়া ও তদারকব্যবস্থা কিভাবে করতে হয়, এগুলো সম্পর্কে যাদের স্বচ্ছ ধারণা না থাকবে তারা কিভাবে মনোনয়ন পত্র তুলবে ?

আমি একটা কথা সব সময় বলি,

মূর্খ বন্ধুর থেকে শিক্ষিত শত্রু ভালো।

আমরা যারা দেশ দেশ করে মুখে ফেনা তুলি, অমুক পলিসি করলে দেশ ভালো হবে, তমুক পলিসি করলে দেশ খারাপ হবে বলে চিল্লাই,

কিন্তু যারা দেশ চালায়, তারা কি আদৌ সেগুলো বুঝে ? তাদের কি সেসব সম্পর্কে নূণ্যতম জ্ঞান আছে ? সে সব এমপি-মন্ত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা কি ?

যদি নূন্যতম যোগ্যতা থাকেও তবে মন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে তৎসংশ্লিষ্ট এক্সপার্ট হওয়ার মত কোন যোগ্যতা আছে কি না ?

যেমন, বর্তমানে ইংরেজী সাহিত্যে লেখাপড়া করে অর্থমন্ত্রী, সার্টিফিকেটহীন হয়ে শিক্ষামন্ত্রী, মৃত্তিকা বিজ্ঞানে পড়ে বাণিজ্যমন্ত্রী হওয়া গেছে, এ লোকগুলো তাদের স্ব স্ব মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব কতটুকু বুঝবে ?

আসলে, সবকিছুর জন্য যোগ্যতা বেধে দেয়া আছে। শুধু নেই এমপি-মন্ত্রী হওয়ার জন্য যোগ্যতা। এতে রাজনীতির খুটির জোরে আসা অযোগ্য লোকে দেশের ড্রাইভিং সিট হয়েছে সয়লাব। এই সমস্যা নিরসরে এমপি হওয়ার জন্য যেমন নির্দ্দিষ্ট যোগ্যতা বেধে দেয়া উচিত, ঠিক তেমনি মন্ত্রী হওয়ার জন্য তৎসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হওয়ার যোগ্যতা বেধে দেয়া জরুরী। যত দ্রুত সম্ভব এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে, নয়ত অদূর ভবিষ্যতে সংসদ ভবনের নাম পরিবর্তিত হয়ে জোকার ভবনহওয়া স্বাভাবিক।

সব শেষে বলবো, প্রতিক্রিয়াশীল তরুণ প্রজন্মকে এ ব্যাপারে চুপ থাকলে হবে না, জোরালো আওয়াজ তুলতে হবে। মনে রাখতে হবে, “আমরা যদি না জাগি মা, কেমনে সকাল হবে?” চুপ থাকলে অন্ধকার দিনে দিনে ঘণিভূত হতেই থাকবে, তাই অন্ধকার দূর করতে কিছু কিছু দাবী তোলা জরুরী ।

 

 

 

 

# আওয়ামীলীগ হিন্দুদের পক্ষ নেয়ায় আর ভারতীয় দালালি করায় বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামীলীগের উপর ক্ষেপে গেছে। এজন্য বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ আওয়ামীলীগের পতন চায়। কিন্তু পতনের লোভ যারা দেখাচ্ছে তারা কে ?

 

গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি হচ্ছে এ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ।

 

যে কি না চরম সাম্প্রদায়িক সংগঠন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য।

(https://bit.ly/2Q5NOMy)

 

যে সংগঠনটি কয়েক বছর আগে বাংলাদেশে গরু জবাই নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছিলো।

(https://bit.ly/2R2mvnU)

 

এই সুব্রত চৌধুরী হচ্ছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম থেকে ইসলামকে বাতিল করার প্রধান আইনজীবি ।

(https://bit.ly/2OQGkg9)

 

বাংলাদেশের জনগণ হিন্দুপ্রেমী আওয়ামীলীগ থেকে মুক্তি চায়, এটা গণচেতনা।

 

কিন্তু সেটার ফসল কেন উগ্রহিন্দুদের হাতেই জমা হবে ?

 

আমি এর জবাব চাই !!

 

ছবিতে উগ্রহিন্দু বেশে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি এ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী।

 

 

 

 

 

ট্র্যাম্প নির্বাচন করার সময় তার জনসমর্থন দেখে অনেকেই বুঝতে পারেনি, সে রাষ্ট্রপতি হতে যাচ্ছে।

কিন্তু ট্র্যাম্পের পলিসি ছিলো প্রতিপক্ষের তুলনায় হাই, তাই সেটা সবার মাথার উপর দিয়ে গেছে, হয়ে গেছে প্রেসিডেন্ট।

ঠিক তেমনি ড. কামাল হোসেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনের যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর তার লুকানো পলিসি কি হবে সেটা নিয়েও জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়ে গেছে।

আপাত দৃষ্টিতে যেটা বোঝা যাচ্ছে, মার্কিন নেটওয়ার্কে আসা ড. কামাল হোসেন নতুন করে সেটাই করতে চাচ্ছে, যেটা ১/১১ এর সময় আমেরিকা করতে পারেনি । মাইনাস-টুমানে খালেদা-হাসিনা বাদ। ১১ বছর আগের চেষ্টা ফের আমেরিকা নতুন করে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে অবশ্য মাইনাস ওয়ানহয়ে গেছে। মানে জোট গঠনের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়া বাদ হয়ে গেছে। ড. কামালের নেতৃত্বে আসায় বাস্তবে রবীন্দ্রনাথের সোনার তরীর মত ঘটনা ঘটেছে। বিএনপি জনসমর্থনটা শুধু গ্রহণ করা হয়েছে, কিন্তু অসুস্থ খালেদা আর দেশান্তরী তারেক জিয়াকে বাদ দেয়া হয়েছে। এখন বাকি আছে, ‘হাসিনাপার্টটা বাদ দেয়া।

ইতিমধ্যে ভারতের বিজেপি সরকার আওয়ামীলীগ সরকারকে সমর্থন দেয়া নিয়ে হা-হু শুরু করে দিয়েছে। বাংলাদেশে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার পিনার রঞ্জনের লেখায় সেটা স্পষ্ট (https://bit.ly/2xPomDx)। সুষমা স্বরাজ বাংলাদেশে এসে খালেদা জিয়াকে প্রশ্ন করেছিলো, “আপনার ছেলেকে নিয়ে কি ভাবছেন” (https://bit.ly/2NG8T3B)। ছেলে তারেক যদি দূরে থাকে, তবে নতুন জোটকে বিজেপির সমর্থন না দেয়ারও কোন কারণ দেখি না।

তবে বাংলাদেশে চীনপন্থী (রুশব্লক) একটি গ্রুপ, যারা সাধারণত বাংলাদেশের ইসলামপন্থীদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে, তারাও হাসিনার পতনের জন্য আপাতত মার্কিনপন্থী ড. কামালকে সমর্থন দিয়েছে। তাদের প্রকাশ্য বক্তব্যে ইতিমধ্যে কিছু বিষয় স্পষ্ট। তাদের ভাষ্য, তারা আপাতত চায় হাসিনার পতন হোক, তবে ড. কামাল শেষ কথা নয়। কামাল হোসেন আসার পর তারা নতুন করে চিন্তা করবে এবং সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে তারা ক্ষমতায় যাবে। অর্থাৎ মার্কিনপন্থী ড. কামাল যেহেতু ইসলামপন্থীদের পছন্দ করে না, তাই সে ক্ষমতায় আসার পর ইসলামপন্থী ও ড. কামালের মধ্যে একটি সংঘাত তৈরী করবে চীনপন্থীরা, এবং বিষয়টিকে তারা সামাল দেবে চীনপন্থী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যম দিয়ে। যাকে তারা বলছে আবারও সিপাহী-জনতার বিপ্লব।

তবে চীনপন্থীদের বুদ্ধির সামনে মার্কিনীদের বুদ্ধিও এত খাটো ভাবা ঠিক না। ঐ সময় আমেরিকা ঠিক কি করবে তা বুঝা মুশকিল। তবে সিরিয়ার সাথে তুলনা করলে বুঝা যায়, এমন পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর বিপরীতে সাধারণ জনতার মধ্যে একটি দলের হাতে অস্ত্র তুলে দেয় আমেরিকা। তৈরী হয় সিভিল ওয়ার বা গৃহযুদ্ধ। ইতিমধ্যে আমার কাছে যতটুকু তথ্য আছে, মোসাদের সাথে সংযুক্ত হওয়া উগ্র হিন্দুদের একটি গ্রুপ ইসরাইলি অস্ত্র কোম্পানির ডিলারশীপ নিয়েছে, বাংলাদেশে সেরকম কোন ঘটনা ঘটলে তারা অস্ত্র সরবরাহ করে লাভবান হবে বলে। এসব ক্ষেত্রে পাবর্ত চট্টগ্রামে উপজাতিরা, চট্টগ্রামে হিন্দুরা, বা অন্যান্য সংখ্যালঘুরা স্বসস্ত্র বিদ্রোহ করতে পারে। আরো কেউ করতে পারে, যা আমার এ্যানালিস্ট জ্ঞানে এখনও তা আসেনি। এছাড়া, নতুন করে রোহিঙ্গা সমস্যা তৈরী, ‘আসাম থেকে মুসলমান বিতাড়নসহ আরো কিছু অস্ত্র আমেরিকার হাতে আছে। ইতিমধ্যে দুইবার তারা ছাত্রদের মাঠে নামাতে ইন্ধন দিয়েছে, নতুন করে যে নামাবে না তা বলা যায় না। বাংলাদেশে পুরো মিডিয়ার শক্তি আমেরিকার হাতে। এটা তাদের জন্য একটা বড় প্লাস পয়েন্ট। তবে সবকিছু সম্ভব হবে, যদি শেখ হাসিনা পলিসিগতভাবে মার্কিনপন্থীদের কাছে পরাজিত হয়। এক্ষেত্রে শেখ হাসিনার ভরসা ভারতীয় কংগ্রেসের নীতি নির্ধারকরা কি করে, সেটাই দেখার বিষয়।

আমি এতক্ষন যে কথাগুলো বললাম, সেগুলো যে কোন গোপন খবর তা নয়। প্রতিদিন ইন্টারনেট-ফেসবুক . নিউজসাইট, আন্তর্জাতিক অ্যানালিস্টদের সাইটগুলো ঘাটলে খুব সহজেই বোঝা যায়। কিন্তু আমি যেটা চাচ্ছিলাম, বাংলাদেশে সাধারণ জনতার মধ্য থেকে একটা দল বের হোক, যারা রুশব্লকের (চীনপন্থী)ও হবে না, আবার মার্কিনপন্থীও হবে না। তাদের নিজস্বপলিসি থাকবে। কিন্তু অতি দুঃখের বিষয়, আমি সেরকম কিছুই দেখছি না। নিজস্ব পলিসি তো অনেক পরের কথা, তারা আসল ঘটনাই বুঝে না। যতই মুখে মুখে নিরপেক্ষ দাবী করুক, ঘুরে ফিরে ঐ দুই ব্লক (মার্কিন-রুশ) এর সাথেই যুক্ত হয়, এরা অল টাইম থাকে ফ্যান্টাসির মধ্যে। একটি জিনিস বুঝতে হবে, অনলাইন-ফেসবুকে শুধু সরকারের বিরোধীতা করলেই আজীবনেরও সাফল্য আসবে না, বরং প্রতিপক্ষের তুলনায় জনগণের পক্ষের শক্তির আলাদা ও উন্নত পলিসি থাকতে হবে, আছে কি সেরকম কিছু ?

 

 

 

 

# যদিও পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে, তবুও দাম বাড়ছে।

কিন্তু কেন ?

ছোট ব্যবসায়ীরা বলছে, সিন্ডিকেটের কারণে দাম বাড়ছে,

ক্রেতাদের অভিযোগ, সরকারের মনিটরিং নাই।

কিন্তু সরকার বলছে, তাদের বাজার মনিটরিং রয়েছে,

তাহলে সমস্যা কোথায় ?

আসলে সমস্যা হচ্ছে শর্ষের মধ্যে ভুত।

সিন্ডিকেট বলে কিছু নাই, সিন্ডিকেটের কথিত বড় ব্যবসায়ীরা সরকারের পকেটের মধ্যে থাকে। সরকারই আসলে ওদের বলছে, জিনিসপত্রের দাম বাড়াতে, আর মিডিয়ার সামনে মিথ্যা বলছে, বাজার মনিটরিং আছে। আসলে কথিত বাজার মনিটরিং পুরোটাই নাটক। কারণ সেই দামবৃদ্ধির লভ্যাংশ তো সরকারই আগে ব্যবসায়ীদের থেকে তুলে নিয়ে গেছে।

তবে রোজার মাস আসলে এই আলৌকিক দাম বৃদ্ধি পেছনে সরকারের পেছনে আন্তর্জাতিক সম্রাজ্যবাদীদের দিক নির্দেশনা আছে। আন্তর্জাতিক ইহুদীবাদীদের পরামর্শেই সরকার রোজার মাসে পন্যের দাম বাড়িয়ে দেয়।

মনে রাখবেন, ইহুদীবাদীদের কাজ হচ্ছে, মুসলমানদের ঠিক উল্টা করা। যেমন:

ইসলাম ধর্মে মূর্তি বানানো নিষেধ, এজন্য ওরা বলবে বেশি করে মূর্তি বানাতে;

ইসলাম ধর্মে আছে সুদ খাওয়া খারাপ, ওরা সুদকেই বেশি প্রমোট করবে।

ইসলাম ধর্মে আছে পর্দা করতে, তাই ওরা পর্দা প্রথার বিরুদ্ধে বলবে।

ঠিক একইভাবে ইসলাম ধর্মে আছে, রোজা আসলে মুসলমানদের সব কিছু সহজ করে দিতে। তাই ওরাও তার উল্টা, মানে মুসলমানদের সবকিছু কঠিন করে দিতে চাইবে। এজন্য দেখবেন-

-রোজা আসলে পন্যদ্রব্যের দাম বাড়ে, যেন মুসলমানরা কষ্ট পায়।

-রোজা আসলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা ফেলানো হয়, যেন ছাত্ররা কষ্ট পায়।

-রোজা আসলে দেশে দেশে মুসলিম গণহত্যা শুরু হয়, যেন মুসলমানরা শান্তি না পায়।

এগুলো আন্তর্জাতিক ইহুদীবাদীদের পলিসির অংশ। মূলত এগুলো প্রত্যেক দেশের বিশ্বাসঘাতক শাসক ও তাদের এজেন্টদের মাধ্যমে করানো হয়। ।

তবে সমস্যা মুসলমানদেরকে নিয়ে। কারণ তারা এত মার খেয়েও এখন শত্রুকেই চিনতে পারেনি। তার শত্রু যে তাকে ধ্বংস করতে মরিয়া, এই সত্যটা সে এখনও অনুধাবন করতে পারেনি। আর শত্রুকে চিনতে না পরলে যেটা হওয়ার সেটাই হবে, তাই অবাক হওয়ার কিছু নেই।

 

 

 

 

# অ্যাংলো ইন্ডিয়ান শব্দটার সাথে আমরা বেশ পরিচিত। ব্রিটিশরা ভারত শাসন করার সময় অনেক ভারতীয় নারীর সাথে মেলামেশা করে। তখন ভারতীয় নারীদের গর্ভে জন্ম নেয় অসংখ্য অবৈধ সন্তান। এই অবৈধ সন্তানদের ডাকা হয় অ্যাংলো ইন্ডিয়ান নামে। (https://bit.ly/2wkIe49)

 

ব্রিটিশরা এ অঞ্চলে আসার পর অবৈধ সন্তানের হার এতটাই বেড়ে যায় যে, তারা এত সংখ্যক সন্তানের দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃত জানায়। এ অবস্থায় ১৮৮১ সালে তারা একটি আইন পাশ করে, যেখানে বলা হয়, পিতা যদি খ্রিস্টান হয়, এবং মা যদি হিন্দু ভারতীয় হয়, তবে সন্তানও হিন্দু ভারতীয় হবে। [(১৮৮১) ৮ এম আই এ ৪০০ ]

 

ঐ সময় হিন্দু নারীরা বিদেশীদের বিছানায় যাওয়াকে ডাকতো ‘কালীর আশির্বাদনামে । এ সম্পর্কে বজ্রকলম গ্রন্থে গোলাম আহমদ মোর্তজা লিখেছেন: ব্রিটিশ শাসনামলে পূর্বের প্রথা মতো বহুবিবাহের উপেক্ষিতা বিবাহিতা স্ত্রীলোকেরা কালীর আশীর্বাদ লাভের নাম করে জব চার্ণকের প্রতিষ্ঠিত কলকাতার বউবাজার নামক নিষিদ্ধপল্লীতে গমন করতো। এরা কালীর নিকট ধর্ণা দেবার নাম করে বউবাজারের খালি কুঠিতে ইংরেজ আর্মি, নেভি ও রাজকর্মচারীদের কাছে দেহ বিলিয়ে দিয়ে শ্বেতাঙ্গ আর্য কুলীনসমাজ গঠন করে। হিন্দু মহিলাদের গর্ভজাত এসব অবৈধ ইংরেজ সন্তানেরা ইংরেজি শিক্ষালাভ করে ব্রিটিশদের অনুগ্রহে বড় বড় পদ লাভ করে কলকাতার অভিজাত শ্রেণী গঠন করে।

 

অর্থাৎ ইতিহাস স্বাক্ষী, হিন্দুদের ব্রিটিশ অনুগ্রহ লাভের অন্যতম কারণ ছিলো তাদের নারীদের ব্রিটিশদের বিছানায় পাঠানো, যে কাজটি মুসলমানরা কখনই করতে পারেনি।

 

তবে ইংরেজরা ভারতে আসার আগে কিন্তু এসেছিলো পতুর্গিজরা। পর্তুগিজরাও ভারতীয় হিন্দু নারীদের সাথে সম্পর্ক করে অনেক অবৈধ সন্তান তৈরী করে। ইংরেজ-ভারতীয় মিলে হয় অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান আর পর্তুগিজ-ইন্ডিয়ান মিলে তৈরী হয় 'লুসো ইন্ডিয়ান'।(https://bit.ly/2InIAeS) আগেরকার গ্রন্থে অনেকেই বলেছে, রবীন্দ্রনাথ মূলত লুসো ইন্ডিয়ান।

 

এ সম্পর্কে নিরোদ সি চৌধুরী বিশ শতকের দিকে কলকাতার একটি পত্রিকার রেফারেন্স দিয়ে বলে, “রবীন্দ্রনাথ পিওর বাঙালী নয়, তার শরীরে পর্তুগিজ রক্ত আছে।” (From The Archives of Nirad C, Page 386)

 

প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের 'রবীন্দ্রজীবনী' ১ম খন্ডের ৩য় পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে ররীন্দ্রনাথের পূর্বপুরুষ ছিলো বিদেশী জাহাজের মালামাল বহনকারী কুলির সর্দার। কিন্তু হঠাৎ করে কোন আর্শিবাদ পেয়ে রবীন্দ্রপরিবার আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হলো ? এটা কি সেই কালীর আশির্বাদ’ ? উল্লেখ্য রবীন্দ্রনাথের দাদার কলকাতায় ছিলো ৪৩টি পতিতালয়, আর সেই পরিবারে লুসো-অ্যাংলো সংকর থাকবে না, এটা তো হতে পারে না।

 

আপনারা যাই বলেন, রবীন্দ্রনাথের চেহারা আমার কখনই ১০০% বাঙালী বলে মনে হয় না, তাছাড়া রবীন্দ্রনাথকে ফ্রি-মেসন ক্লাবের সদস্য করাও সন্দেহের সৃষ্টি করে। কারণ রক্তে ওদের সংযোগ না থাকলে কাউকে খাটি দালাল বা ফ্রি-মেসন হিসেবে স্বীকৃত দেয় না ইহুদীরা।

 

আগামীকাল ২৫শে বৈশাখ, রবীন্দ্রনাথের জন্মদিন। এদিনকে উপলক্ষ করে হয়ত অনেকে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে আলোচনা করবে। আমি তাদের বলবো, জন্মদিনে দয়া করে রবীন্দ্রনাথের জন্মপরিচয় নিয়েও আলাপ কইরেন। আমরা কারো অন্ধবিশ্বাসযুক্ত আলোচনা পছন্দ করি না, ইতিহাসে সবকিছুই আলোচিত হোক, কোন কিছু গোপন নয়, সব সত্য উন্মোচিত হোক। সবাইকে ধন্যবাদ।

 

পড়তে পারেন, রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে আমার ১৬টি লেখা : https://bit.ly/2I2VZ8I

 

 

 

 

 

#

(১)

১৯৪১ সালের ৭ই আগস্ট রবীন্দ্রনাথ মারা গেলে ৮ই আগস্ট ইহুদীদের ‘জিউইশ টেলিগ্রাফিক এজেন্সিনামক একটি পত্রিকায় তাকে নিউজ করে, যার শিরোনাম, “Tagore, Friend of Jews and Zionism Dies in Calcutta” যার অর্থ: ইহুদী ও জায়ানিস্টদের বন্ধু ঠাকুর কলকাতায় মারা গেছে।

রিপোর্টটির ভেতরে আছে :

``Tagore, who had world-wide fame as a poet and philosopher, frequently expressed his opposition to the Nazi atrocities against the Jews. He also expressed “deep sympathy for the aims and aspirations of Zionism.”

অর্থ : কবি ও দাশর্নিক হিসেবে পরিচিত ঠাকুর নাজি বাহিনীর বিরুদ্ধে এবং জায়ানিস্টদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও সমর্থন ছিলো। (আর্কাইভ লিঙ্ক :https://bit.ly/2GYwTbE, ঐ দিনের পত্রিকার পিডিএফ লিঙ্ক :https://bit.ly/2pU2Auj)

 

(২)

আমার সোনার বাংলা গানটি ১৯০৫ সালে ছাপা হয় রবীন্দ্রনাথ সম্পাদিত বঙ্গদর্শন পত্রিকায়, বাংলা ১৩১২ সনের আশ্বিন সংখ্যায়। ঐ পত্রিকার পিডিএফটি ডাউনলোড করতে পারেন (https://bit.ly/2GkJrNl)। রবীন্দ্রনাথ সম্পাদিত ঐ সংখ্যায় ‘আমার সোনার বাংলাগানটি ছাড়াও আরো অনেক প্রবন্ধ ও কবিতা ছাপা হয়। তার মধ্যে একটি প্রবন্ধের নাম রাজা ও প্রজা’। প্রবন্ধটির এক পর্যায়ে (পৃষ্ঠা:২৭৩) বলা আছে-

১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের ইতিহাসে এক মহাপ্রলয় উপস্থিত হইতো। সে দেশব্যাপী দাবানল নির্বাণ করা ইংরেজদের পক্ষে কোন মতেই সম্ভব হইতো না। ভারতের প্রজামণ্ডলীর আনুকূল্যেই সেই দুর্দিনে এদেশে ইংরেজ পনার প্রভুশক্তিকে অটুট রাখিতে পারিয়াছিলো।...প্রজার আনুকূল্যের মূল্য তখন সম্ভবতই ইংরেজরা বেশ ভাল করিয়া বুঝিত। সিপাহি বিদ্রোহের সময় শ্বেতাঙ্গ নরনারী ও শিশুদিগের প্রতি যে নির্দয় আচরণ করা হয়েছিলো, তাহা ইংরেজরা বহুদিন ভুলিতে পারিবে না। কি জানি ভুলিয়া যায়, এই জন্য সে যত্নপূর্বক স্থানে স্থানে তাহার স্মৃতি চিহ্ন পর্যন্ত রাখিয়া দিয়াছে। কিন্তু সেই সকল নৃশংস ব্যাপারের তীব্র যন্ত্রনা কিঞ্চিমাত্রও প্রশমিত হইতে না হইতেই ইংরেজরা ভারতের প্রজাসাধারণের প্রতি যে সদ্ভাব ও উদারতা প্রকাশ করিয়াছিলো, মানুষের কথা দূরে থাকুক দেবতার পক্ষেও তাহা দুঃসাধ্য বলিয়াই মনে হয়।” (পেইজের আলাদা ভিউ : https://bit.ly/2GCSQPx )

 

পাঠক, ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ আমাদের ইতিহাসের অংশ। আমার তার পক্ষে এবং ইংরেজ সম্রাজ্যবাদের বিপক্ষে। কিন্তু সে সময় কলকাতাভিত্তিক হিন্দু জমিদার শ্রেণীরা ছিলো ইংরেজদের পক্ষে তথা রাজাকার। তাদের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহ নস্যাৎ হয় এবং এ আর্টিকেলে সেটাকে বিরাট মহত্বের সাথে বর্ননা করেই ক্ষান্ত হয় নাই, বরং ইংরেজদের দয়ামায়া দেবতার থেকেও একধাপ উপরে বলে বর্ণনা করা হয়েছে। কোন শ্রেণীর দালাল হলে এটা করা সম্ভব, আপনারাই চিন্তা করুন।

 

অথচ সেই রবীন্দ্রনাথের গান গেয়ে আজকে সকলের এমনকি মাদ্রাসা ছাত্রদেরও দেশপ্রেমের পরিচয় দিতে হচ্ছে। আশ্চর্য !! কেউ সেই গানের বিরুদ্ধে বললে তাকে দেশদ্রোহী বলে হেনস্থা করা হচ্ছে। তবে এগুলো সব হচ্ছে গায়ের জোরে। এটা ঠিক ! আপনি গায়ের জোরে অনেক কিছু চাপিয়ে দিতে পারেন, কিন্তু ইতিহাস কিন্তু পরিবর্তন করতে পারবেন না। সত্য একদিন না একদিন প্রকাশিত হবেই। ইতিহাস স্বাক্ষী রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাসঘাতক ছিলো, রাজারকার ছিলো, ব্রিটিশ দালাল ছিলো, ইহুদী ও জায়ানিস্টদের পক্ষে ছিলো, ফ্রি-মেসন বা নিউওয়ার্ল্ড অর্ডার তৈরীতে কাজ করেছিলো। সেই রবীন্দ্রনাথের গান গেয়ে আপনি যদি দেশপ্রেমের সৃষ্টি করতে চান, তবে সেটা হবে শূণ্যের উপর ভিত্তি করে দালান নির্মাণ করা। মনে রাখবেন, ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না। একদিন সত্য ইতিহাস সবাই জানবেই জানবে। তখন রবীন্দ্রনাথসহ তাকে নিয়ে মিথ্যা ইতিহাস তৈরীকারীরা নিক্ষিপ্ত হবে আস্তাকুড়েতে।

 

 

 

 

না এটা আমার কথা নয়। উইকিপিডিয়ায় ফ্রি-মেসন সদস্যদের লিস্টে T বর্ণের ৩ নম্বরে পাবেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (rabindranath tagore) এর নাম (https://bit.ly/2nDpWFR)। উইকিপিডিয়া আবার এ তথ্যটি সংযুক্ত করেছে William R. Denslow এবং Harry S. Truman এর লেখা 10,000 Famous Freemasons from A to J Part One বইয়ের সূত্র ধরে। বইটি অ্যামজন থেকে কিনতে ক্লিক করুণ (https://amzn.to/2uypsVU)।

আমার ভাবতেই অবাক লাগছে, এক ফ্রি-মেসনারীর লেখা বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। প্রতিদিন সকাল বেলায় বাংলাদেশের স্কুল-মাদ্রাসার শিশুরা সেই ফ্রি-মেসনারীর গান গেয়ে তাদের জীবন শুরু করে। প্রত্যেক রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের শুরুতে ফ্রি-মেসনারীর গান দিয়ে শুরু হয়। আবার সেই ফ্রি-মেসনারীর লেখা গান শুনে আমাদের দেশপ্রেম জাগ্রত হয় এবং যে ফ্রি-মেসনারীর গান গাইতে অস্বীকার করে তাকে দেশদ্রোহী/রাজাকার/পাকি ফতওয়া দিয়ে হেনস্তা করি। সত্যিই অদ্ভূত ফ্রি-মেসনারী পূজারী আমরা।

 

 

 

 

উপাধিদাতা আওয়ামী চাটুকার গোলাম সারওয়ারের পত্রিকা দৈনিক সমকাল।

তাদের দাবি- মঙ্গল শোভাযাত্রার মূর্তি-ফূর্তি নাকি ভাংচুর হয়েছে।

জানি না গোলাম সারওয়ারের উদ্দেশ্য কি ?

কিন্তু আন্দোলনরত ছাত্রদের দুইভাগে ভাগ করে তাদের শক্তি হ্রাস করাও উদ্দেশ্য থাকতে পারে।

তবে আমার কথা হলো মঙ্গল শোভাযাত্রার বয়স তো কম হলো না, ৩৩ বছর ধরে বহু খরচ করে মঙ্গল শোভাযাত্রা করা হয়েছে। কিন্তু কি মঙ্গল এনেছে এই মঙ্গল শোভাযাত্রা ? দেশে ৫ কোটি বেকারকে চাকুরী দিতে পেরেছে ? এখন যখন মেধাবীদের সুযোগ দিতে কোটা বিরোধী আন্দোলন বাড়ছে, তখন তাদের মঙ্গল শোভাযাত্রার কুড়কুড়ানি উঠছে !

একবার বলুন তো, মঙ্গল শোভাযাত্রা না করলে কি ক্ষতি হবে ?

কি লাভ, বড় বড় মূর্তি বানিয়ে অপচয় করার।এই টাকাগুলো গরীবদের মাছে বণ্টন করে দিলেও তো তাদের অভাব ঘুচে, দুমুঠো খাবার পায়।

আমার মনে হয়, সাধারণ মানুষ এসব চেতনা ব্যবসার কাছে জিম্মি হয়ে যাচ্ছে। স্বাধীনতার চেতনা, সংস্কৃতির চেতনা, পহেলা বৈশাখের চেতনা, মঙ্গলপূজার চেতনা, ক্রিকেটীয় চেতনা, থার্কিফাস্টের চেতনা এরকম হাজারো চেতনা দিয়ে জনগণকে ভুলিয়ে রাখা হয়েছে, যেন জনগণকে তার অধিকার আদায়ে প্রতিবাদী হতে না পারে। আর এই সুযোগে জনগণের ন্যায্য অধিকার মেরে খাচ্ছে ক্ষমতাশালীরা। আসলে এগুলো চেতনা নয়, চেতনানাশক। হাসপাতালে চেতনানাশক দিয়ে যেমন রোগীর ব্যাথ্যা ভুলিয়ে রাখা হয়, ঠিক তেমনি এসব চেতনা-ফেতনা দিয়ে সাধারণ জনগণকে ভুলিয়ে রেখেছে উপরওয়ালারা। সময় এসেছে, এইসব চেতনা-ফেতনা ছুড়ে ফেলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার।

খবরের সূত্র: https://bit.ly/2GS9EyM

 

 

 

 

 

 

# ) ত্রিপুরায় লেনিন মূর্তি বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া,

২) কলকাতায় শ্যামাপ্রসাদের মূর্তিতে কালো রঙ করা,

৩) তামিলনাড়ুতে পেরিয়ারের মূর্তি ভাঙা,

৪) উত্তরপ্রদেশে আম্বেদকরের মূর্তি ভাঙ্গা,

৫) কেরালায় গান্ধীর মূর্তি ভাঙ্গা,

 

খবরের সূত্রমতে মূর্তিগুলো ভাঙ্গছে উগ্রহিন্দুত্ববাদী এবং বামপন্থী সংগঠনগুলো।

পাঠক ! একটু চিন্তু করুণ,

কোন মুসলমান যদি কোন মূর্তি বা কথিত ভাস্কর্য্যের বিরোধীতা করে বা সরিয়ে ফেলতে বলে তখন ঐ হিন্দুত্ববাদী এবং বামপন্থী নাস্তিকরাই কিন্তু মুসলমানদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে এবং মুসলমানদের মৌলবাদী বলে ট্যাগ দেয়। অথচ এখন ভারতে তারাই মূর্তি ভাঙ্গার মহোৎসব চালাচ্ছে।

ভারত একটি হিন্দু রাষ্ট্র, সেখানে কিছু কিছু রাজ্যের ক্ষমতায় নাস্তিকরাও আছে। সেই হিন্দু নাস্তিকরাই যদি মূর্তি ভাঙ্গতে পারে, তবে ৯৫% মুসলমানের দেশ বাংলাদেশে মূর্তি/ভাস্কর্য সরিয়ে ফেলতে সমস্যা কোথায় ?

খবরের সূত্র:

ক) http://bit.ly/2G5dIw1

খ) http://bit.ly/2FzO6cY

গ) http://bit.ly/2G4DWio

 

 

 

 

 

সাংবাদিক আনিস আলমগীর সরস্বতী মূর্তিকে সেক্সিবলায় গায়ে আগুন লেগে গেছে একুশে টিভির অঞ্জন রায়ের। ঐ পোস্টকে সাম্প্রদায়িকআখ্যা দিয়ে আনিস আলমগীরকে ক্ষমা চাইতে বলেছে অঞ্জন। (http://bit.ly/2E1Gyg1)

আনিস আলমগীর সত্য বলেছে, কি মিথ্যা বলেছে, সেই তর্কে যাওয়ার পক্ষপাতি আমি নই।

-আমি পক্ষপাতি নই, সরস্বতী পূজা মন্ত্রে দেবীর বিশেষ অঙ্গের প্রশংসা বাক্য (কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে) নিয়ে কথা বলতে।

-আমি পক্ষপাতি নই, ‘অর্ধেক জীবনউপন্যাসে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সরস্বতী দেবীমূর্তি দর্শনে কি প্রতিক্রিয়া করেছিলো, তা বর্ণনায়।

-আমি পক্ষপাতি নই, ‘প্রজাপতিউপন্যাসে সমারেশ বসু সরস্বতীর দেহের বর্ণনায় কি বলেছিলো, তা উল্লেখ করতে।

-আমি পক্ষপাতি নই, সরস্বতীর সাথে তার পিতা ব্রহ্মা, স্বর্গের দেবতা বা অসুরদের সাথে কি সম্পর্ক ছিলো তা প্রকাশ করতে।

আমি কেবল বলতে চাই, এই অঞ্জন রায়রা তো এতদিন ধর্মবিদ্বেষীদের পক্ষে টিভি-চ্যানেলগুলোতে ওকালাতি করেছিলো। একের পর এক টক শোতে অসাম্প্রদায়িক সেজে ইসলামবিদ্বেষ ছড়িয়েছিলো।।

এই অঞ্জন রায়রা তো অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলে, ইসলামবিদ্বেষী ব্লগার, বৈশাখী পূজা আর গ্রিক দেবীমূর্তির পক্ষে বলেছিলো।,

এই অঞ্জন রায়ের বোন বৃত্বা রায় দীপা-ই তো বলেছিলো : “হিজাবমুক্ত বাংলাদেশ চাই, সর্বত্র হিজাব সংষ্কৃতি বন্ধ হোক।” (http://bit.ly/2DDlTB0)

কোথায় ? তখন তো অঞ্জন রায়ের কাছে সেগুলো সাম্প্রদায়িক মনে হয়নি। কিন্তু এখন কেন তাদের ঘরোনার লোক সরস্বতী নিয়ে কথা বলায় সেটাকে সাম্প্রদায়িক বলে মনে হচ্ছে ?

কিছুদিন আগে একই ঘটনা ঘটেছিলো, ওয়েম্যান চ্যাপ্টারের সম্পাদক সুপ্রীতি ধরের ক্ষেত্রে। সারাদিন অসাম্প্রদায়িকতার লেবেল এটে সুপ্রীতি ধর ইসলাম ধর্মকে গালি দিতো, অন্যকে গালি দিতে উৎসাহিত করতো। একদিন এক মুসলিম পরিবার থেকে আগত নাস্তিক টয়লেটে হিন্দুদের দেবতার মূর্তি রাখায় সুপ্রীতির হিন্দুত্ববাদ জেগে উঠে। সে ঐ নাস্তিককে নাজেহাল করার চেষ্টা করে। কিন্তু ততক্ষণে ফাঁস হয়ে যায়, সুপ্রীতির উগ্রহিন্দুত্ববাদী চেহারা।। ঠিক একই ঘটনা ঘটলো সাংবাদিক আনিস আলমগীর আর অঞ্জন রায়ের ক্ষেত্রে।

অঞ্জন রায়রা বাস্তবেই শিব সেনা, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং আরএসএস সদস্য। শুধু স্থান আর কালের প্রয়োজনে ভিন্ন লেবেল এটে রেখেছে, এই আরকি।

 

 

 

 

 

সরস্বতী মূর্তিকে সাংবাদিক আনিস আলমগীর সেক্সিবলায় ক্ষেপেছে হিন্দুরা। হিন্দুদের দাবি, “যারা মাটির মূর্তির মধ্যে যৌনতা খুজে পায়, তাদের কাছে তাদের মা, বোন নিরাপদ নয়।” (http://bit.ly/2Ee7cop)

হিন্দুদের দাবিটা একটু খেয়াল করুন- ‘মাটির মূর্তি বা পুতুলের মধ্যে যৌনতা খোঁজাকে তারা অনৈতিক বা অস্বাভাবিক বলে দাবি করছে।

অথচ সারা বিশ্বে এখন সেক্স ডলের বিজনেস তুঙ্গে। চীন, জাপান ছাড়াও ইউরোপের অনেক দেশের মানুষ এ সেক্স ডল ব্যবহার করছে। চীন তো ঘোষণা দিয়েছে, তাদের নারী-পুরুষের সংখ্যায় যে তারতম্য আছে, তা পুরণের জন্য তারা সেক্স ডল ব্যবহার করবে। পুরুষরা নারীদের বিয়ে না করে, ঘরে এসব পুতুল কিনে নিয়ে যাবে, এবং শারীরিক কাজ সারবে। (http://bit.ly/2GLnkML)

লক্ষণীয় ‘সেক্স ডলবা পুতুলের মধ্যে যৌন অনুভূতিখুজে পাওয়া এ রাষ্ট্রগুলো কিন্তু কোনটাই মুসলমানদের নয়। তারমানে পুতুল বা মূর্তির মধ্যে যৌন অনুভূতি খুজে পাওয়াটা শুধু আনিস আলমগীরের দোষ নয়, অনেকের মধ্যেই এ লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।

তবে এখানে প্রশ্ন উঠছে, হিন্দুরা কেন দাবি করলো- পুতুলের মধ্যে যৌন অনুভূতি পাওয়াটা অবান্তর !

তারমানে কি পুতুল বা মূর্তি দর্শণে তাদের যৌন অনুভূতি জাগে না ?

নাকি তাদের যৌন অনুভূতি-ই নাই ???

এ সম্পর্কে হিন্দুদের দেশ ভারতে কিছু খবর উল্লেখ্যযোগ্য। আসুন সেগুলো দেখি-

১) জরিপ : ভারতে বিবাহ বিচ্ছেদের মূল কারণ ‘যৌন অক্ষমতা’ (http://bit.ly/2s4K8DT)

২) ভারতীয় ডাক্তারের দাবি : ভারত যৌন অক্ষমদের রাজধানী (http://bit.ly/2E0GiB7)

৩) ইন্ডিয়ান পুরুষের লিঙ্গ আর্ন্তজাতিক কনডম সাইজ থেকে ছোট (http://bit.ly/2EhdinQ)

উপরের খবরের আলোকে বলা যায়-

যেহেতু হিন্দুদের যৌন অনুভূতি-ই নাই, তাই মাটির মূর্তি দেখেও তাদের যৌন অনুভূতি জাগে না।

তবে হ্যা, সব হিন্দুকে আপনি ঢালাওভাবে যৌন অক্ষম বলতে পারেন না। অবশ্যই কিছু কিছু হিন্দু আছে, যাদের যৌন সক্ষমতা আছে। এবং তাদের অবশ্যই মাটির মূর্তি দেখে যৌন অনুভূতি জাগবে। সেরকমই একজন ছিলো, বিশিষ্ট ভারতীয় লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়’। তাইতো সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তার ‘অর্ধেক জীবননামক বইয়ের ৯১ পৃষ্ঠায় মাটির মূর্তি দর্শণে যৌন অনুভূতি সৃষ্টি হওয়া নিয়ে বলেছিলো-

মণিমেলায় প্রথমবারের স্বরসতী পূজোর আগের রাত্রিটি আমার কাছে চিরস্মরণীয়। একটু বিস্তৃতভাবেই বলতে হবে।...........................নিঃশব্দ, নিবিড় রাত্রি, আমি বসে আছি, আমার সামনে একটি মাটির মূর্তি ছাড়া আর কিছু নেই। .................প্রতিমার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে এক সময় সর্বাঙ্গে শিহরণ হল। কী অপূর্ব সুন্দর..........ভরাট, বর্তুল দুটি স্তন। সরু কোমর, প্রশস্ত উরুদ্বয়।....................তার অভিঘাতে তছনছ হয়ে যেতে লাগলো আমার কৈশোর, জেগে উঠল পুরুষার্থ। অল্প অল্প শীতে উষ্ণ হয়ে উঠল শরীর।.....................চোরের মতন সতর্কভাবে একবার এদিক ওদিক তাকিয়ে আমি হাত রাখলাম দেবী মূর্তির বুকে। ................আমার শরীর আরো রোমাঞ্চিত হলো, কানদুটিতে আগুনের আচ। আমি প্রতিমার ওষ্ঠ চুম্বন করলাম। আমার জীবনের প্রথম চুম্বন।

এ লেখায় একটি বিষয় নির্দ্বিধায় প্রমাণিত,

যাদের যৌন অনুভূতি আছে, মাটির মূর্তিকে বিশেষ আকৃতিতে দেখে তাদের মাঝেও যৌন অনুভূতি জাগবে। এবং জাগাটাই স্বাভাবিক। আর যদি না জাগে তবে বিষয়টা অস্বাভাবিক ঠেকবে এবং ধরে নিতে হবে, ঐ লোকটি নিজেই আসলে যৌন অক্ষম। এ কারণেই তার মাঝে যৌন অনুভূতি জাগেনি।

 

 

 

 

 

#

ছবিগুলো দেখে ভয় পাবেন না

এগুলো কিচ্ছু না। রংপুর মেডিকেল কলেজের ছোট ভাইদের উপর একটু প্র্যাকটিস করেছে ছাত্রলীগের সিনিয়র ভাইরা, লোহার রড দিয়ে পরীক্ষা করে দেখছে ছোট ভাইদের টিস্যু কতটুকু শক্ত। ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ছিলো শিবসেনার আদর্শ অনুকরণে ডান হাতে লাল সূতা পরা ছাত্রলীগ সেক্রেটারি গৌরাঙ্গ চন্দ্র সাহা।

ছোট ভাইদের অন্যায় ছিলো, তারা কেন হলের বাইরে থাকবে ?

কেন তারা গৌরাঙ্গ দাদাকে নিয়মিত চাদা দিবে না ?

কেন তাদের র‌্যাগিং সহ্য করবে না ?

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দেশ, বাংলাদেশ গৌরাঙ্গদের দেশ।

ওদের বাপ-দাদারা এই দেশটা কিনেছিলো।

তাই তোরা যদি এই দেশে থাকতে চাস, তবে ওদের মাইর খেয়ে, চাদা দিয়েই থাকতে হবে।

আর যদি ভালো না লাগে, তবে সোজা পাকিস্তানে চলে যা, এই বাংলার মাটি তোদের জন্য না।

শালা রাজাকারের বাচ্চা, পাকিস্তানের প্রেতাত্বা।

লেখার বিস্তারিত: https://goo.gl/xmKffi, আর্কাইভ : http://archive.is/Vla5W

 

 

 

 

 

 

#

লন্ডনে মকরম আলী নামক এক বাঙালী মুসলমানকে হত্যায় ড্যারেন ওসবন নামক এক ব্রিটিশ নাগরিককে দোষী সাব্যস্ত করেছে দেশটির এক আদালত। ২০১৭ সালের ১৯শে জুন উত্তর লন্ডনের ফিন্সবারি পার্ক এলাকায় একটি মসজিদের সামনে দাঁড়ানো মুসলমানদের উপর গাড়ি চালিয়ে হামলা চালায় ওসবর্ন। এতে ৫১ বছরের মকরম আলী নিহত হন। এ সময় অন্যদেরও হত্যার চেষ্টা করে ওয়েলসের রাজধানী কার্ডিফের বাসিন্দা ওসবর্ন। (http://bit.ly/2E15ask)

তবে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে,

ওসবর্নে মুসলিমবিদ্বেষীতে পরিণত হওয়া ঘটনাটি। সূত্র বলছে, হামলার একমাস পূর্বে বিবিসিতে থ্রি গার্লসনামক একটি নাটক দেখে মুসলিমবিদ্বেষীতে পরিণত হয় ওসবর্ন। উল্লেখ্য নাটকটিতে দেখানো হয়, উত্তর ইংল্যান্ডে একটি শিশু নিপীড়ক যৌনচক্রকে, যার প্রত্যেক সদস্যকে মুসলিম চরিত্রে দেখানো হয়। এ লিঙ্কে (https://youtu.be/UK6Jc9Jsl7A) নাটকটির একটি অংশ দেখুন, যেখানে দেখানো হচ্ছে, দাড়ি-টুপিওয়ালা মুসলিমরা কিভাবে ব্রিটিশ শিশুদের যৌন নিপীড়ন করছে।

পাঠক ! লক্ষ্য করুণ-

বিবিসি বাংলা প্রায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিয়ে সবক দেয়, অসাম্প্রদায়িকতা প্রতিষ্ঠা করতে বলে। কিন্তু সে তার নিজ দেশে কি করলো ?

বিবিসি নিজ দেশ ব্রিটেনে এমন এক সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক নাটক প্রচার করলো, যা দেখে তার দেশের নাগরিকরা সংখ্যালঘু জাতিকে হত্যা করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলো!

এ নাটক প্রচারের মাধ্যমে প্রমাণ হয়, বিবিসি নিজেই একটা বড় সাম্প্রদায়িক কীট ।

তাই সেই বিবিসি যদি বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িকতার সবক দিতে আসে, তা কি আর গ্রহণযোগ্য হবে ?

 

 

 

 

 

 

এক পোস্ট আগে আমি বলেছিলাম,

বাংলাদেশের মুসলমানরা যেহেতু বহুদলে বিভক্ত, তাই তারা কোন নেতাকে কেন্দ্র করে একত্রিত না হয়ে, একটা পলিসির উপর একত্রিত হোক, তাহলে দ্রুত কাজ হবে। কোন ইসলামী রাজনৈতিক দল থাকতে পারে, কিন্তু সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। আসলে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে, দুটি প্রধান রাজনৈতিক দল অধিকাংশ স্থান দখল করে আছে এবং তৃতীয় কোন দল তৈরী হলে (যদি তার ব্যাপক জনসমর্থন বা গ্রহনযোগ্যতা থাকে) হয় সেটাকে তারা নিজের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করার চেষ্টা করবে, নয়ত দমন করার চেষ্টা করবে। তাই অন্তর্ভূক্তি বা দমন, এই দুইয়ের মধ্যে না গিযে কিভাবে নিজের স্বার্থ সর্বোচ্চ আদায় করা সেদিকে লক্ষ্য দেয়া সবচেয়ে জরুরী।

আমি আগেও বলেছি, রাজনৈতিক দল গঠন না করেও দাবি তাড়াতাড়ি আদায় করা সম্ভব,

এর উদাহরণ- কোটামুক্ত আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন কিংবা হেফাজতে ইসলাম।

এ আন্দোলনগুলো যে যে উদ্দেশ্য নিয়ে শুরু হয়েছিলো, তাদের প্রাথমিক দাবীগুলো কিন্তু ঠিকই আদায় হয়েছে।

কিন্তু- এ আন্দোলনগুলো ততক্ষণ সফল থাকে, যতক্ষণ আন্দোলনটা অরাজনৈতিক থাকে।

সমস্যা তৈরী হয় তখন, যখন এ ধরণের অরাজনৈতিক আন্দোলনে রাজনৈতিক অনুপ্রবেশ ঘটে এবং অরাজনৈতিক দাবী ছাপিয়ে তৃতীয় কোন রাজনৈতিক পক্ষ তা ব্যবহার করতে চায়। ফলশ্রুতি পতন ঘটতে পারে সুন্দর একটি আন্দোলনের। শুনেছিলাম, সাপ নাকি তখনই ছোবল মারে, যখন সে মনে করে কেউ তার ক্ষতি করতে এসেছে। তাই আন্দোলনগুলো যেন নির্দ্দিষ্ট দাবীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে এবং অন্য কোন রাজনৈতিক দলের দাবী (প্রতিপক্ষকে দমনের) যেন আন্দোলনের দাবী না হয়ে উঠতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরী।

ধরে নিলাম, মুসলমানরা প্রাথমিকভাবে একটা দাবীর উপর এক হলো। ধরুন, দাবীটি হতে পারে, “সংবিধানে ২০১১ সালে আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস অংশটা তুলো ধর্মনিরপেক্ষতা যোগ করা হয়েছে, সেটা পরিবর্তন করে আগের অবস্থা ফিরিয়ে নিয়ে আসা।

যদি দাবীটির ধর্ম সংক্রান্ত হয় তবে ইসলামী দলগুলোর সবাইকে সেই দাবীর প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করতে হবে। সমস্যা হলো বাংলাদেশের ইসলামী দলগুলোর মধ্যে তো চরম বিভেদ, তারা একজন অন্যজনকে মারাকেই জিহাদ বলে ফতওয়া দেয়, তাহলে তারা এক হবে কিভাবে ?

উত্তর হলো, প্রত্যেক দল থেকে কিছু কিছু তরুণকে এগিয়ে আসতে হবে।

এ তরুণ প্রজন্ম হচ্ছে তারা, যারা চায় সারা বিশ্বে মুসলমানরা আবার এক হোক, মুসলমানদের পুরাতন ঐতিহ্য আবার ফিরে আসুক, মুসলমানরা অমুসলিমদের জুলুম নির্যাতন থেকে রক্ষা পাক, এরাই এক্ষেত্রে অগ্রগামী হবে। অবশ্যই এক দলের সদস্যের অন্য অন্য দলের মধ্যে বন্ধু-বান্ধব-আত্মীয়তা আছে। তারা নিজেদের মধ্যে আলাপ করুক- আজকে থেকে আমরা নিজেদের মধ্যে অন্তদ্র্বন্দ্ব তৈরী হতে পারে এমন বিষয়গুলো এড়িয়ে যাবো, যে যারা পন্থা অবলম্বন করবো, কিন্তু একটি দাবীর উপর একত্রিত হবো, দাবীটি হলো, “সংবিধানে ২০১১ সালে আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস অংশটা তুলো ধর্মনিরপেক্ষতা যোগ করা হয়েছে, সেটা পরিবর্তন করে আগের অবস্থা ফিরিয়ে নিয়ে আসা।এই দাবী ছাড়া অন্য কোন বিষয় আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু হবে না। এই দাবীর উপর আমরা একত্র হলাম এবং এই দাবীর পক্ষে আমরা বন্ধু হয়ে আন্দোলন গড়ে তুলবো। আমার মনে হয়, এভাবে বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনগুলোর মধ্যে তরুণরা একটা দাবীকে কেন্দ্র করে যদি চেইন বা শিকল তৈরী করতে পারে, তবে দাবী আদায়ে বেশি সময় লাগবে না।

আমার জানা মতে,

-কওমী মাদ্রাসা ও আহলে হাদীসদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হচ্ছে মাজহাব নিয়ে। তাহলে দুই দল একত্র হোন ঐ সংবিধান পরিবর্তনের দাবী নিয়ে, কিন্তু আপাতত মাজহাব নিয়ে আলোচনা এড়িয়ে যান।

-সুন্নী আর কওমী মাদ্রাসা ও আহলে হাদীসদের মধ্যে দ্বন্দ্ব মিলাদ বা মীলাদুন্নবী নিয়ে। এ বিষয়টি এড়িয়ে যান, শুধু সংবিধান পরিবর্তনের দাবীনিয়ে একত্মতা ঘোষণা করুন।

-পীরকেন্দ্রীক ও পীর বিরোধী দলের দ্ব্ন্দ্বমূলক বিষয়গুলো এড়িয়ে যান, শুধু সংবিধান পরিবর্তনের দাবীনিয়ে একত্মতা ঘোষণা করুন।

হতে পারে আপনাদের দলের কোন মুরব্বী বা বয়ঃবৃদ্ধ বলতে পারেন, “এটা কিভাবে সম্ভব, এতদিন আমরা আমাদের বিশ্বাসের উপর এক ছিলাম, এখন কিভাবে ভিন্ন বিশ্বাসের সাথে এক হবো?”

আপনি উত্তর দিবেন, “অবশ্যই সম্ভব। আমরা তো আমাদের বিশ্বাস নিয়ে কাড়াকাড়ি করছি না। আমরা যে বিশ্বাস বা দাবীর প্রতি একতাবদ্ধ হয়েছি, সেটা তো ঠিক আছে, তাহলে সমস্যা কোথায় ? আর এত দলাদলি করে কি লাভই বা হলো ? দল-উপদলের সংখ্যা তো দিনে দিনে বাড়ছেই। কওমী, আহলে হাদীস, সুন্নীদের মধ্যে কি অভ্যন্তরীণ দলাদলি বা গ্রুপিং নেই? বরং মুসলমানদের দলে দলে বিভক্ত করে অমুসলিমরা তো ঠিকই মুসলমানদের ঘাড়ে বসে ছড়ি ঘুড়াচ্ছে।

আমার মনে হয়,

প্রত্যেক দল থেকে যদি কিছু তরুণ সদস্য পরিবর্তনের শপথে এগিয়ে আসে,

মুসলমানদের এক করে অমুসলিম ষড়যন্ত্র রুখে দেয়ার চেষ্টা করে,

বিশ্বাসগত দ্বন্দ্ব নিয়ে আপাতত চুপ থেকে ‘বিশেষ দাবীর উপর একত্র হতে থাকে এবং বিভন্ন দলের মধ্যে চেইন বা শিকল তৈরী করে, তবে খুব দ্রুত মুসলমানদের আসল অধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব এবং সেটা খুব দ্রুত-ই সম্ভব ।

ইচ্ছা শুধু আপনার।

 

 

 

 

 

 

কয়েকদিন আগে ইউটিউবে একটা ভিডিও দেখছিলাম। কাজী নজরুল ইসলামের লিখিত ও মোর রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদগানটির উপর নির্মিত একটি মিউজিক ভিডিও। গানটিকে রিমিক্স করা হয়েছে, গানের সাথে জুড়ে দেয়া হয়েছে উদ্দাম আর অশ্লীল নৃত্য। নৃত্যের সাথে গানের কোন কথার কোন মিল নাই। বাংলাদেশে অধিকাংশ স্থানে এই গান দিয়ে শুরু হয় ঈদের আনন্দ। কিন্তু গানটির মধ্যে কবি কাজী নজরুল ইসলাম আসলে কি বলতে চেয়েছেন, এটা বোধহয় শতকরা ৯৯.৯৯% লোকই জানে না। আসুন গানটিতে একবার চোখ বুলাই-

ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশীর ঈদ।

তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে শোন্‌ আসমানী তাগিদ।।

তোর সোনা-দানা বালাখানা সব রাহেলিল্লাহ্‌।

দে জাকাত মুর্দ্দা মুসলিমের আজ ভাঙাইতে নিদ্‌।।

আজ পড়বি ঈদের নামাজ রে মন সেই সে ঈদ গাহে।

যে ময়দানে সব গাজী মুসলিম হয়েছে শহীদ।।

আজ ভুলে যা তোর দোস্ত ও দুশমন হাত মিলাও হাতে।

তোর প্রেম দিয়ে কর বিশ্ব নিখিল ইসলামে মুরীদ।।

ঢাল হৃদয়ের তোর তশতরীতে শির্‌নী তৌহিদের।

তোর দাওয়াতে কবুল করবে হজরত হয় মনে উম্মীদ।।

তোরে মারল' ছুঁড়ে জীবন জুড়ে ইট পাথর যারা

সেই পাথর দিয়ে তোলরে গড়ে প্রেমেরই মসজিদ।

১৯৩১ সালে লেখা এই গানটি মুসলমানদের অনেক কিছু শিক্ষা দেয়। আমি যতটুকু বুঝতেছি-

(১) ঈদে খুশি করতে হবে ধর্মীয় পন্থা মেনে

(২) ঘুমন্ত মুসলমানদের জাগিয়ে তুলতে জাকাত দিতে বলা হচ্ছে,

(৩) ঈদের জামাতের মাধ্যমে জিহাদ-গাজি-শহীদের চেতনা জাগিয়ে তুলতে হবে।

(৪) মুসলমানদের নিজস্ব বিভেদ ভুলে এক হতে হবে।

কাজী নজরুল ইসলাম আমার অন্যতম পছন্দের কবি। তার লেখার মধ্যে অনেক শিক্ষা আছে। ঈদ মুসলমানদের ধর্মীয় দিবস। আর সেখান থেকে মুসলমানদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। পহেলা বৈশাখ থেকে সংস্কৃতির চেতনাবাজরা শিক্ষা নেয়, দূর্গা পূজা থেকে হিন্দুরা শিক্ষা নেয়, ভ্যালেন্টাইনস ডে থেকে প্রেমিকরা শিক্ষা নেয়। তাহলে ঈদের থেকে মুসলমানদের শিক্ষা নেওয়া বা চেতনা জাগ্রত হওয়া কোথায় ?

বর্তমান কালে আমরা ঈদ বলতে দেখি, ভারতীয় অনুকরণে পোষাক, ছেলেদের ধূতির মত পায়জামা, সেলফিবাজি, জোরে গান বাজানো, নৃত্য আর মোজমাস্তি। আর টিভিতে হয় ঈদের নাটক, ঈদের সিনেমা, ঈদের নাচ, ঈদের ব্যান্ডশো আর ঈদের ফ্যাশন শো, জুয়েল আইচ ওরফে গৌরাঙ্গ লাল রায়ের যাদুবাজি। কিন্তু এগুলোর কোনটাই ঈদের আসল শিক্ষা নয়। অন্তত কাজী নজরুল ইসলামের লিখিত ও মোর রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদগানটি তা বলে না।

ধর্ম হচ্ছে একটা জাতির নিজস্ব পরিচয়গত সংস্কৃতি। সেই সংস্কৃতিতে যখন ভাঙ্গন ধরানো যায়, তখন ঐ জাতির অস্তিত্বতেও ভাঙ্গন ধরানো সম্ভব। আমরা ইতিহাসে দেখতে পাই, ইহুদীরা কৌশল করে খ্রিস্টানদের ধর্মটা শেষ করে দিছে। খ্রিস্টান ধর্মটা সেক্যুলার করে দিয়ে তাদের পরিচয়হীন করে তুলেছে। এরপর সেই খ্রিস্টান জাতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে ইহুদীরা।

বর্তমানে মুসলমানদের ঈদের মত ধর্মীয় বিষয়গুলো যেভাবে সেক্যুলার বা অধর্ম দিয়ে পূর্ণ করা হচ্ছে তাতে খ্রিস্টানদের মত নিজ ধর্মেরও বিলীনের দিকে যাচ্ছে মুসলমানরা। আর ধর্ম যত বিলীন হবে, মুসলমানরা তত বেশি কোনঠাসা হতে থাকবে। মুসলমানরা যদি নিজের অবস্থান ধরে রাখতে চায়, তবে ধর্মের নামে অধর্ম বন্ধ করার বিকল্প নাই।

 

 

 

 

 

কয়েকদিন আগে আমি বলেছিলাম,

ইহুদীরা তিনটা জিনিসকে জমা করে বর্তমানে ক্ষমতাসীন হয়েছে-

এগুলো হলো: টাইম-নলেজ-মানি।

কেউ যদি এ তিনটি জিনিস জমা করতে পারে, তবে সেও ক্ষমতার মালিক হতে পারবে।

আমার মনে হয়,

মুসলমানদের জনসংখ্যার অভাব নাই, সুতরাং টাইমেরও অভাব হবে না।

আবার মুসলমানদের টাকা পয়সাও আছে।

কিন্তু মুসলমানদের আসল অভাব হইলো নলেজের। মুসলমানদের মধ্যে জ্ঞানের অভাব। কারো কারো জ্ঞান আছে, কিন্তু সঠিক ও পূর্ণ জ্ঞানটা নাই। যদি নলেজ পাওয়া যায় এবং প্রচুর নলেজ গ্যাদার করা যায়, তবে সেটা আশ্রয় করে টাইম ও মানিও গ্যাদার করা সম্ভব। আর সেখান থেকেই মুসলমানদের স্বকীয় ক্ষমতা তৈরী সম্ভব।

একটা উদহারণ দিলে বুঝতে সহজ হবে। যেমন ধরুন-

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে উপনিবেশ শাসন চলছিলো। তখন সম্রাজ্যবাদীরা বিভিন্ন দেশ দখল করতো। দেশ দখল করা হতো মূলত দুটি উদ্দেশ্যে।

১) শাসন ।

২) শোষন।

কিন্তু তারা অনেক হিসেব করে দেখলো- একটা এলাকায় সৈন্যবাহিনী পাঠায় অনেক কষ্ট করে তা দখলে নিতে হয়। দখলে নেয়ার পর অনেক কষ্ট করে বহু কাঠ-খড় পুড়িয়ে তাকে শাসন-শোষন করতে হয়। কিন্তু তারা যদি এমন একটা পলিসি বের করে, যার মাধ্যমে নিজের ঘরে বসে থেকে অন্যদেশকে শাসন শোষণ করা যায়, তবে এত কষ্ট করার দরকার কি ? কাজ হলেই হলো। তখন তারা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থাটা চালু করলো। যেই বুদ্ধি, সেই কাজ। দেখা গেলো, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিভিন্ন দেশ ভেঙ্গে গেলো এবং অনেক রাষ্ট্রের জন্ম হলো। আগে কিন্তু এত রাষ্ট্র ছিলো না। আপনি একটু হিসেব করে দেখুন, ব্রিটিশরা এ এলাকা এত কষ্ট করে দখল করলো এবং দুইশবছর শাসন করলো। কিন্তু কি এমন হলো যে তারা ১৯৪৭ এ দেশ ছেড়ে চলে গেলো ? ঐ সময় তো তাদের বিরুদ্ধে বড় কোন বিদ্রোহও হয়নি। আসলে মূল হলো, তারা পলিসিতে চেঞ্জ করেছে, শাসন ও শোষণে নতুন পদ্ধতি বেছে নিয়েছে। কিন্তু সমস্যা হয়েছে, মুসলমানদের মধ্যে তেমন কোন গোষ্ঠী তৈরী হয়নি যারা এ পলিসিগুলো ভালো করে বুঝে। ইহুদীরা যে পলিসিগুলো তৈরী করেছে, সেটা যদি মুসলমানরা নাই বুঝতে পারে, তবে সেগুলোর বিরোধীতা করবে কিভাবে?

আমার মনে হয়, যদি মুসলমানরা চায় ইহুদীবাদীদের খপ্পর থেকে বের হয়ে আসতে এবং মুসলমানদের পুরাতন শক্তি ফিরিয়ে নিয়ে আসতে, তবে অবশ্যই মুসলমানদের নলেজঅর্জন করতে হবে এবং প্রথম নলেজ হতে পারে, ইহুদীবাদীরা আন্তর্জাতিকভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার যে বলয় তৈরী করেছে, সেই বলয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা।

যারা এ ধরনের জ্ঞান লাভ করবে, তাদের বলা যেতে পারে এ্যানালিস্ট’। ‘এ্যানালিস্টএমন একজন ব্যক্তিত্ব হবে, তারা মুসলমানদের নলেজসার্ভিস দিবে। আমার বিশ্বাস যদি বাংলাদেশে মাত্র ১০০ জন রিয়েল এ্যানালিস্টথাকে, তবে তা দিয়ে শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বজুড়ে রেভুলেশন ঘটিয়ে ফেলা সম্ভব। রিয়েলশব্দটা ব্যবহার করলাম শুধু এ কারণে, এ ধরনের এ্যানালিস্টরা দল-মত-পথের উপরে থেকে শুধু মুসলমানদের জন্য চিন্তা করবে। তারা দল কানা হবে না, তারা নিজেদের মধ্যে কাটাকাটি-দলাদলি-মারামারি করবে না। তাদের চিন্তাধারা হবে শুধু মুসলমানদের জন্য, নিজ দেশ ও জাতির কল্যানের জন্য। এরা কোন ঘটনা ঘটার আগেই বুঝতে পারবে, এবং ভবিষ্যতে কি ঘটবে তাও বুঝতে পারবে এবং ভবিষ্যত সম্পর্কে জাতিকে নলেজ দিবে এবং ইহুদীবাদী পলিসি ব্রেক করে নতুন পলিসি দিতে সক্ষম হবে।

কিছু সূত্র আছে, এগুলো শিখিয়ে দিলেই বিষয়গুলো ধরে ফেলা সম্ভব। তাই আমি চিন্তা করছি, অনলাইনে এ বিষয়ের উপর ক্লাস নেয়া শুরু করবো। ফেসবুকে স্ট্যাটাসের মাধ্যমেই ক্লাস হবে। কমেন্টের মাধ্যমে প্রশ্ন-উত্তর হবে। আপনারা যারা আগ্রহী তারা কমেন্ট করতে পারেন।

 

 

 

 

 

 

#  ‘এনালিস্টহতে হলে প্রথম যেটা দরকার, সেটা হলো বিশ্বক্ষমতা কিভাবে পরিচালিত হয়, তা সম্পর্কে ধারণা রাখা। কোন একটি রোগ কোন জীবাণুর কারণে হচ্ছে সেটা জানা যেমন জরুরী, ঠিক তেমনি কোন একটি ঘটনা কার দ্বারা হচ্ছে সেটা বোঝায়ও তেমনি জরুরী। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, আমরা বুঝতে পারি কাজটা খারাপ, কিন্তু পেছন থেকে কাজটা কে করছে, তার গোড়া সম্পর্কে জানি না। আর যতদিন আমরা মূল গোড়া অনুসন্ধান না করতে পারবো, ততদিন ঐ কুচক্রীরা আড়াল থেকে কাজ করেই যাবে। তাই একটা ঘটনা ঘটলে কারা কাজটি করছি সে সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান থাকা জরুরী। অনেকে আন্দাজে কথা বলে, বিভিন্ন সিস্টেম দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বক্তব্য দেয়। একজন এনালিস্ট কখনই সেটা করতে পারে না। একজন এনালিস্টের কাছে আবেগের কোন মূল্য নেই, রেফারেন্স তার সবচেয়ে বড় শক্তি।

অনেকে সামান্য কিছু জেনেই হয়ত কোন ঘটনা সম্পর্কে মন্তব্য করা শুরু করে। একটা বিষয় আপনাকে বুঝতে হবে, ইঞ্জিনিয়ার হতে গেলে ৪ বছরের বিএসসি কোর্স করতে হয়, ডাক্তার হতে গেলে ৫ বছরের এমবিবিএস কোর্স করতে হয়, কত রাতদিন পড়ালেখা করে তারা গ্রাজুয়েট হয়। অথচ একজন রিয়েল এনালিস্ট আন্তর্জাতিক বড় বড় রাজনৈতিক দল বা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কেন্দ্রীয় সেলে নলেজ পাওয়ার হিসেবে বসে থাকে। তাহলে এ বিষয়ে তাকে কত নলেজ-স্কিল, কত বছর ধরে অর্জন করতে হয় এবং পরবর্তীতে তার ভ্যালু কতটা হয়, সেটা চিন্তার বিষয়।

এনালিস্ট হতে গেলে ধৈর্য ধারণ করা জরুরী, স্ট্যাডি করা জরুরী। অধৈর্য হয়ে এনালিস্ট হওয়া যায় না। জ্ঞান অর্জনের পর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে আপনার সঠিক দিক নির্দেশনাই জানান দেবে আপনি একজন রিয়েল এনালিস্ট।

আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, মুসলমানদের সঠিক নলেজের অভাব প্রচুর। মুসলমানরা নিজে অবস্থান থেকে চিন্তা করতে পারে না। এটা একটা বিরাট সমস্যা। ইহুদী-খ্রিস্টান বা আমেরিকা-রাশিয়ান এনালিস্টরা একটা চিন্তার সফটওয়্যার তৈরী করে দেয়, আর মুসলমানরা সেই সফটওয়্যার দিয়ে চিন্তা করে।আমি চাই মুসলমানদের মধ্যে একটা রিয়েল এনালিস্ট টিম থাকবে, যারা নিরপেক্ষভাবে চিন্তা করে, তার ফলাফলটা নিরেটভাবে শুধু দেশ ও জাতির কল্যাণে ব্যয় করবে।

ক্লাসের বিস্তারিত বিষয় রেডি করতে সময় লাগছে। আমি প্রস্তুতি নিচ্ছি, আপনারাও নিন।

 

 

 

 

দেশের গুম হত্যা আর জোরজবরদস্তিমূলক খবর-ভিডিও দেখে আর চিন্তিত হই না

আবার বাংলাদেশের জনগণ যখন এরদোয়ানের বিজয় দেখে উল্লাস করে, তা দেখেও হাসি চাপিয়ে রাখতে পারি না

কোন একটা ঘটনা ঘটলে তার থেকে শিক্ষা নেয়াটাই আসলে বড় প্রাপ্তি, কিন্তু আমরা প্রত্যেকটা ঘটনা দেখে আবেগী হই,

এন্টারটেইনড হই, হাসি-কান্না-উল্লাস-রাগ করি। শুধু মূল ঘটনার অনুসন্ধান করে শিক্ষা নেই না।

উসমানি সালতানাতের পতন হওয়ার পর কম কষ্ট করতে হয়নি তুর্কীদের। কামাল আতাতুর্ক পাশা এসে শতভাগ সেক্যুলারিজম জারি করে। ইসলামী শিক্ষা নিষিদ্ধ, শরীয়া কাউন্সিল বিলুপ্ত, শরীয়া আদালত অবৈধ ঘোষণা করে সকল কাজীকে বরখাস্ত, ধর্মীয় পোষাক নিষিদ্ধ করা (এমনকি ইমাম সাহেবদের ক্ষেত্রেও), হিজাব নিষিদ্ধ করা, হিজরী ক্যালেন্ডারের পরিবর্তে গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার প্রচলণ করা, আরবীর পরিবর্তে তুর্কী ভাষায় আজান চালু করা, শুক্রবারের পরিবর্তে শনি-রবিবার ছুটি দেয়া, রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে সংবিধান বাদ দিয়ে সেক্যুলারিজম চালু করা, আলেমদের কার্যালয়গুলো বন্ধ করে দেয়া, আরবী হরফের পরিবর্তে ল্যাটিন হরফ চালু করা। প্রায় ৮০-৯০ বছর সেক্যুলারিজম দিয়ে তুর্কীয়দের ওয়াশ করার পর বেহাল অবস্থা হয়ে যায় তুর্কিদের। ইখওয়ানী ভাবধারা দ্বারা উব্ধুদ্ধ এরদোয়ান যখন ক্ষমতায় আসে তখন সে মুখে দাড়ি রাখতে পারে না, সুদের বিরুদ্ধে বললে বলতে হয়: জনগণ যদি চায়, তবে আমি সুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবো”। তবুও ধর্মের দোহাই দিয়ে বলতে পারে না। কারণ জনগণের মধ্যে সেক্যুলারিজম এত অধিক মাত্রায় বিদ্যমান যে, সরাসরি ধর্মের কথা বললে জনগণই রিয়্যাক্ট করে বসবে।

তবুও আশার কথা, এরদোয়ানরা প্রায় ১০০ বছরের কালো যুগ শেষ করতে পেরেছে। কিন্তু এর পেছনে কম কষ্ট তাদের করতে হয়নি। কম কাঠ-খড় তাদের পোড়াতে হয়নি। অনেক জীবন শেষ করতে হয়েছে। কয়েক প্রজন্ম ধরে মার খেয়ে শেখা, প্রজন্ম ধরে শিক্ষা অর্জন, অতঃপর কৌশল করে চেষ্টা। আজকে এরদোয়ান রাশিয়ার প্লেন ফেলে দেয়, আবার আমেরিকাকেও হুমকি দেয়। দেখতে ভালোই লাগে। সিআইএ সেনাবাহিনীকে দিয়ে ক্যু করালে জনগণকে দিয়ে সেই ক্যু প্রতিরোধ করে এরদোয়ান। আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর বিপরীতে নিজস্ব শক্ত অবস্থান, অপরদিকে নিজের দেশে জনগণের আশা-আকাঙ্খা পুরণ, অর্থনৈতিক মুক্তি দেয়া। অর্থাৎ একটি মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব রাজনীতিতে নিজের পৃথক অবস্থান তৈরী করা, যে সরাসরি আমেরিকাও মুখাপেক্ষী না আবার রাশিয়ারও মুখাপেক্ষী না।

লেখা শুরু করেছিলাম, বাংলাদেশে গুম-হত্যা নিয়ে। আজ থেকে বেশ কিছুদিন আগে সুবোধ তুই পালিয়ে যাদেয়াল ছবি প্রকাশ হওয়ার পর আমি বলেছিলাম: খুব শিঘ্রই বাংলাদেশে আওয়ামীলীগ-বাংলাদেশের সিআইএ নেটওয়ার্কের মধ্যে দ্বন্দ্ব হবে, কেউ গুম হবে, কেউ নিহত হবে। নির্বাচন যত কাছে আসবে, বিষয়টি তত প্রকট হবে। তখন হয়ত কেউ বিষয়টি বুঝেছিলেন, আবার কেউ বুঝেননি। (https://bit.ly/2yHSlRs, https://bit.ly/2tvmTBb)

বাংলাদেশে এখন যেটা চলছে, সেটাকে তুরষ্কের মাঝখানে সেই কুখ্যাত ৮০-৯০ বছরের সাথে তুলনা করা যায়, যখন দেশটির নেতারা চলতো আন্তর্জাতিক ইহুদীবাদী নেটওয়ার্কের প্রভাবে। এরদোয়ান ও তার সহযোগীরাও একটা সময় বাংলাদেশের জনগণের মার খেতো। কিন্তু বহুদিন চেষ্টা করে তারা ইহুদীবাদীদের রাজনৈতিক নেটওয়ার্ক সম্পর্কে নলেজ অর্জন করে, অতঃপর সেই অনুসারে তৈরী করে নিজস্ব পলিসি। এরপর সেই পলিসি নিয়ে কৌশলে ক্ষমতায় আসার পর ভোল পাল্টায়। তৈরী করে নিজস্বতা। পুরো জিনিসটি করার জন্য তাদের ছিলো ইহুদীবাদবিরোধী স্বতন্ত্র পলিসি। এবং বলাবাহুল্য তাদের সেই স্বতন্ত্র পলিসি তৈরী হয়েছিলো রাষ্ট্রীয় রাজনীতির উপর আন্তর্জাতিক ইহুদীবাদী নেটওয়ার্কের সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম অবস্থান ধরতে পারার কারণে। আর এজন্য যে জ্ঞানটির প্রয়োজন তা বর্তমানে বাংলাদেশের জনগণের নেটওয়ার্কের বাইরে। আমি গত কয়েকদিন ধরে এ ধরনের একটি স্ট্যাডি রেডি করছি, তা আপনাদের সামনে ক্লাস হিসেবে উপস্থাপন করবো বলে। আশাকরা যায়, সেই জ্ঞানটি সঠিকভাবে অর্জন করতে পারলে বাংলাদেশের জনগণও একদিন তুরষ্কের মত মুক্তি পাবে।

 

 

 

 

 

 

কোরবানী ঈদ আসলেই একটা কথা বাংলাদেশের সরকার-প্রশাসন ঘোষণা করে। বলে, “রাস্তা বন্ধ করে কোরবানী করা যাবে না”। যদিও, কোরবানীর ঈদে সরকারি ছুটি থাকুক এবং কোরবানী করতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা সময় লাগুক না কেন। তবুও এ ধরনের একটা ঘোষণা প্রতি বছর আমরা মিস করি না।

অথচ রাস্তা বন্ধ ৫দিন ব্যাপী পূজা হচ্ছে, এখন কিন্তু সরকার প্রশাসন একেবারেই চুপ। বরং তারা পুলিশ নিয়োগ করেছে, কেউ যদি বিরক্ত ফিল করে ভাব প্রকাশ করে, তবে তাকে যেন গ্রেফতার করা হয়। ঢাকার ফার্মগেটের খামারবাড়িসহ অনেক স্থানে ৫দিন ধরে রাস্তা বন্ধ করে পূজা হচ্ছে, পূজার কারণে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট, কিন্তু তারপরও সবার চোখ-কান-মুখ বন্ধ।

আওয়ামী সরকারের হিন্দুয়ানী সব পর্যায় ছাড়িয়ে গেছে। শেখ হাসিনা নিজেই পারলে ‘কলেমাভুলে হরে কৃষ্ণ হরে রামবলে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করে। হিন্দু রাষ্ট্র ভারতের থেকে বাংলাদেশে পূজা বেশি হয়, ভারতীয় হিন্দুরা বাংলাদেশে আসে জমজমাট পূজা দেখতে।

খোদ মোদি দূর্গা মূর্তি চেনে না, আজকে টুইটারে দূর্গা পূজা শুভেচ্ছা দিতে গিয়ে কালী মূর্তির ছবি পোস্ট করেছে মোদি। অথচ বাংলাদেশে দূর্গামূর্তিকে আদাব দিয়ে তাকে সার্বজনিন হিসেবে ঘোষণা করেছে শেখ হাসিনা।

ভারতে মূর্তি সাইজ প্রশাসন নির্ধারণ করে দিছে, বাংলাদেশে অবাধে মূর্তির সাইজ বড় করতে পারে। ভারতে সব নদীতে মূর্তি ডুবানো যায় না, বাংলাদেশে হিন্দুরা যত খুশি তত মূর্তি যেখানে খুশি সেখানে ডুবাতে পারে। বাংলাদেশের রাস্তায় রাস্তায় বানানো হয়েছে পূজার গেট, সেখানে রয়েছে বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তির ছবি। আর বাংলাদেশের মুসলিমরা সেই মূতির পায়ের নিচে দিয়ে আসা যাওয়া করছে অবাধে, যদিও ইসলাম ধর্মবেত্তাদের মতে হিন্দুমূর্তির পায়ের নিচ যাওয়া চরম ধর্মবিরোধী।

ভারতে দূর্গা পূজা উপলক্ষে ১ দিন ছুটি, আর বাংলাদেশে হিন্দুরা ৩ দিন ছুটি চায়, নয়ত অস্ত্র হাতে তুলে নেয়ার হুমকি দেয় (কয়েক বছর আগে প্রেসক্লাকে এই হুমকি দেয় গোবিন্দ্র প্রামাণিক)। সুপ্রীম কোর্ট দূর্গা পূজায় বন্ধ থাকে ২ দিন। স্কুল-কলেজ-ভার্সিটি বন্ধ থাকে ২ সপ্তাহ।

এক কথায় বলতে, ভারতের থেকে বাংলাদেশকে অধিক হিন্দুরাষ্ট্র বানিয়ে ফেলতে শেখ হাসিনার আষ্কারার তুলনা নেই।

কিন্তু যত যাই করুক, হিন্দুরা কিন্তু শেখ হাসিনাকে মারতে ওত পেতে আছে। আমি ৩ বছর আগেই বলেছিলাম এসকে সিনহাকে প্রধান বিচারপতি বানানো হচ্ছে শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় ভুল, কারণ সে সিআইএর এজেন্ট। কিন্তু আমার কথা না শুনে শেখ হাসিনা অতি হিন্দুপ্রীতিতে সিনহাকে প্রধানবিচারপতি বানিয়ে দেয়। যার ফল এখন সবাই দেখতে পাচ্ছে।

এখনও শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় শত্রু গণফোরাম। সেই গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি হচ্ছে উগ্রহিন্দু সুব্রত চৌধুরী।

হেপী বড়াল নামক এক হিন্দু নম:শূদ্র মহিলাকে বাগেরহাটের এমপি বানিয়েছে শেখ হাসিনা। অথচ তার ভাতিজা শিপন কুমার বসু সকাল বিকাল শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেয়, যোগ দিয়েছে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থার মোসাদের সঙ্গে।

আপনি হিন্দুদের যত তোষণ করবেন, তারা তত আপনার ঘাড়ে চড়বে এটাই নিয়ম।

আর হিন্দুদের একটা জাত স্বভাব হচ্ছে, তারা যেই পাতে খায়, সেই পাতে হাগে”।

পোষকের সাথে বেঈমানি করা হিন্দুদের ইউনিভার্সাল স্বভাব।

অনেকে হয়ত ভাবে,

হিন্দুদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা কিছু করলে ভারত না-খুশি হবে।

এটা ভুল কথা এবং আওয়ামীলীগের মিথ্যা বিশ্বাস।

হাসিনার নেটওয়ার্ক ভারতীয় কংগ্রেসের সাথে, যা রুশ-চীন ব্লকের সাথে জড়িত।

আর বাংলাদেশের উগ্রহিন্দুরা কন্ট্রোল হয় আমেরিকার নেটওয়ার্কে।

তাই আওয়ামীলীগ যদি হিন্দুদের বিরুদ্ধে কোন একশনে যায়, তবে মার্কিনপন্থী নাস্তিক দমনের সময় আমেরিকা যতটুকু চিল্লাচিল্লি করছিলো, ঠিক ততটুকু চিল্লাচিল্লি হবে, এর বেশি কিছু না।

আর যদি শেখ হাসিনা হিন্দুদের তোষণ করতে থাকে, তবে তা হবে শত্রুকে তোষণ করে শক্তি আরো বৃদ্ধি করা। আর তার ফলাফল একসময় হিন্দুরাই শেখ হাসিনার ঘাড় মাটকাবে।

শিপন কুমার যে ফাঁসিতে ঝুলানোর হুমকি শেখ হাসিনাকে বার বার দিচ্ছে, সেটাই এক সময় কার্যকর হবে।

আমি যা বললাম, সত্য হয় কিনা লিখে রাখেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

রাস্তার ওপর পশু কোরবানি দেবেন না : স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছে, আমরা ১১টি সিটি কর্পোরেশনে মোট দুই হাজার ৯৩৬টি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। পশু কোরবানীর জন্য এ সংখ্যা যথেষ্ট। কোন রকম খোলা স্থানে কুরবানী করাকে আমরা মোটেই উৎসাহিত করি না।

(https://bit.ly/2MnSAaL, https://bit.ly/2MpM4Az)

মদখোর মন্ত্রী বেয়াই মোশাররফের কথাগুলো খেয়াল করুন-

১) রাস্তায় কোরবানি দেবেন না। অথচ সিটি কর্পেরেশন থেকে নির্ধারিত স্পটগুলো দেখুন ৯৯% স্পটই হচ্ছে রাস্তা। এর কারণও আছে ঢাকা শহরে রাস্তা আর খালি যায়গা কোথায় ? (https://bit.ly/2MXzF33)

২) ১১ সিটিতে স্পট হইছে ২৯৩৬টা, তারভাষ্য মতে এটা নাকি কোরবানি করার জন্য যথেষ্ট। ধরে নিলাম ১১ সিটি কোরবানি হয় ১ কোটি। তাহলে প্রতি স্পটে কোরবানি করতে হবে ৩ হাজারের মত। অথচ সিটি কর্পোরেশন থেকে সামিয়ানার সাইজ দেখুন, সর্বোচ্চ একটি স্পটে ১০টি কোরবানী করা যাবে (https://bit.ly/2BnFQMq)।

তাহলে বাকি ২৯৯৫টি কোরবানী করবে কোথায় ?

৩) খোলা স্থানে কোরবানী করাকে আমরা মোটেই উৎসাহিত করি না : মোশাররফ

কিন্তু কেন ?

খোলা স্থানে কোরবানীতে হঠাৎ সমস্যা হচ্ছে কেন ?

বিদেশী এজেন্ডা বাস্তবায়নে কেন মুসলমানদের কোরবানীর বিরুদ্ধে বলতে হবে ?

বাংলাদেশের হিন্দুরাও তো পূজা করে ?

সারা বাংলাদেশে ৩০ হাজার মণ্ডপ হয়, পতিতালয়ের মাটি দিয়ে মূর্তি নির্মাণ করা হয়, কয়েক লক্ষ মূর্তি পানিতে ডুবিয়ে পানি দূষণ করা হয়, তখন তো মোশাররফ বলে না, আমরা উন্মুক্ত স্থানে পূজাকে সমর্থন করি না”, তাহলে উন্মুক্ত স্থানে কোরবানী করলে সমস্যা কোথায় ?

ক্ষমতার জন্য মানুষ কতটা নিচে নামতে পারে, বেয়াই মোশররফের এ বক্তব্য তার প্রমাণ। মোশররফের বোঝা উচিত, যে পশ্চিমা বিদেশী শকুনীদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে তারা বাংলাদেশের মুসলমানদের ধর্মের বিরোধীতা করছে, সেই বিদেশীরা কিন্তু তাদের পশ্চাতে বাশ দিয়ে রেখেছে কখন সুযোগ পেয়ে সবগুলোকে জেলে পুরে ফাঁসিতে ঝুলাবে। যারা জনগণের প্রাপ্য নষ্ট করে বিদেশী দালালি করে, তাদের শেষ পরিনতি মীর জাফরের মত হয়, ইতিহাস তার সাক্ষী।

 

 

 

 

 

মুসলমানদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সরকার কি এতটুকু ভর্তুকী দিতে পারে না ??

মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঈদুল আজহা। এই ঈদে মুসলমানরা পশু কোরবানী করে। এই পশু ক্রয় করা হয় হাট থেকে। এই হাটগুলোর বেশিরভাগ হয় অস্থায়ী হাট। এই অস্থায়ী হাটের স্থানগুলোতে সরকার ইজারা দেয়। এই ইজারার জন্য সরকার দরপত্র আহবান করে। এর মাধ্যমে যে খুব বেশি লাভ হয় তা নয়। ঢাকায় হাটগুলোতে সরকার ২০ কোটি টাকার মত রাজস্ব আয় করতে চায়। কিন্তু সিন্ডিকেটগুলো টেন্ডার ড্রপ আটকে রাখে, এবং নামমাত্র ইজারায় হাটগুলো নেয়। এবার ২০টি হাটের জন্য ইজারামূল্য প্রস্তাব এসেছে মাত্র ১২কোটি টাকার মত। (https://bit.ly/2NW3AcN)

আমার কথা হলো, সরকার তো অনেক যায়গায় ভতুর্কি দেয়-

পূজা মণ্ডপগুলোতে শত কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়,

বৌদ্ধ প্যাগোডাগুলোতে ভর্তুকি দেয়

তাহলে মুসলমানদের কোরবানির হাট থেকে কেন ট্যাক্স (ইজারা) আদায় করতে হবে ?

এই সামান্য করা টাকা কি ভর্তুকি দেয়া যায় না ?

সরকারের এই ইজারা নামক ট্যাক্সের কারণে হাটগুলো নেয় বিভিন্ন সন্ত্রাসী টাইপের লোকজন। এরপর প্রতি বছর সেটা নিয়ে হয় খুনোখুনি। এছাড়া প্রত্যেক পশুর বিক্রয়মূল্যের ৫-১০% পর্যন্ত হাসিল আদায় করা হয়। এই অ্যামাউন্টটা একটা বড় টাকা। সারা বাংলাদেশে হাসিলের এই মূল্য ২ হাজার কোটি টাকার মত হতে পারে। যা সরকারদলীয় যুবলীগ-আওয়ামীলীগের পকেটে যায়। এটা এক দৃষ্টিতে কোরবানীর উপর চাদাবাজি, যা সরকার তার দলীয় লোকজনকে করার সুযোগ করে দেয়।

এটা ঠিক প্রত্যেকটা হাট করতে ও রক্ষনাবেক্ষণের জন্য কিছু খরচের দরকার।

কোরবানী উপলক্ষে সরকার সেটা ভর্তুকী দিয়ে দিক।

ঢাকা শহরে যদি ২০টা হাট হয়, তবে ভর্তুকি সর্বোচ্চ ২০কোটি টাকা দিতে হবে, এর বেশি না। পুরো দেশ হিসেব করলে সর্বোচ্চ ৩০-৩৫ কোটি টাকা হবে।

কিন্তু এই টাকাটা সরকার দিলে হাসিলের নামে জনগণকে ২ হাজার কোটি টাকা দিতে হবে না,

ফলে পশুর মূল্য কমে যাবে। এবং হাটকে কেন্দ্র করে মারামারি খুনোখুনিও হবে না।

যে দেশে ৪ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকার বাজেট হয়, সে দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরা তাদের ধর্মীয় অনুসঙ্গ পালনের জন্য কেন ট্যাক্স দিবে ? হিন্দুদের মূর্তি বানাতে তো ট্যাক্স দিতে হয় না। তাহলে মুসলমানদের কোরবানীর পশু ক্রয় করতে কেন ৫-১০% ট্যাক্স/চাদা দিতে হবে ?

কোরবানীর মাধ্যমে তো পুরো দেশ লাভবান হচ্ছে, তাহলে আলাদা করে ট্যাক্স আদায় কেন ?

কোরবানীর সময় লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার লেনদেন হয়, বিদেশ থেকে প্রচুর রেমিটেন্স আসে।

২০১৬ সালে কোরবানী ঈদকে উপলক্ষ করে দেশের অর্থনীতিতে যোগ হয়েছিলো দেড় লক্ষ কোটি টাকা, যা এ বছর আরো বৃদ্ধি হওয়ার কথা। (https://goo.gl/AmESYJ)

আমার মনে হয় জনগণের দাবী তুলতে হবে,

কোরবানীর উপর ট্যাক্স নেয়া চলবে না। হাসিল/ইজারা বাতিল করতে হবে।

 

 

 

 

 

# বাংলাদেশে কোরবানীর হাট ও পশু জবাইয়ের স্থান নিয়ে প্রথম প্রকাশ্য ষড়যন্ত্র হয় ২০০৫ সালে।

বাংলাদেশে মার্কিনপন্থী উকিল মনজিল মোর্শেদ প্রথম হাইকোর্টে একটি রিট করে, হাটের সংখ্যা হ্রাস ও কোরবানীর স্থান নির্দ্দিষ্ট করতে। (https://bit.ly/2zLndkQ)

 

২০০৫ সালে করা রিটে কোর্ট থেকে রুল পায় ২০০৯ সালে।

এরপর সেই রুলের দোহাই দিয়ে সিআইএপন্থী মিডিয়া দৈনিক প্রথম আলো থেকে শুরু করে অন্যান্য মিডিয়াগুলো নিউজ করতে থাকে। সাথে থাকে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা),

বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) এর মত সিআইএপন্থী এনজিওগুলো।

 

দৈনিক প্রথম আলোর হাট বিরোধী খবরগুলো দেখুন-

১) রাজধানীর পশুর হাট শুরু হয়েছে সময়ের আগেই (https://bit.ly/2JxNhPK)

২) বিকল্প জায়গা খুঁজে বের করুন : হাসপাতালের পাশে পশুর হাট (https://bit.ly/2LfO6BX)

৩) আরমানিটোলা মাঠ : এই মাঠে কেন পশুর হাট? (https://bit.ly/2NTyMtb)

৪) বড় বিড়ম্বনা রাস্তায় পশুর হাট (https://bit.ly/2Nn6JkQ)

৫) স্কুলমাঠে গরুর হাট, শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন বন্ধ (https://bit.ly/2Nsn1cb)

৬) স্কুল ছুটি দিয়ে গরুর হাট! (https://bit.ly/2O0CuB1)

৭) ছাগলের গন্ধে স্কুল বন্ধ! (https://bit.ly/2mrxOro)

 

সিআইএপন্থীদের চাপের মুখে ২০১৫ সালে আওয়ামী সরকার কোরবানীবিরোধী দাবিদাওয়াগুলো মেনে নেয়। এবং ঐ বছর থেকে ঘোষণা দেয় হাটগুলো ঢাকার বাইরে সরিয়ে দেয়ার এবং কোরবানীর স্পষ্ট নির্দ্দিষ্ট করার।

খবর-

ক) কম জনবহুল এলাকায়যাচ্ছে অস্থায়ী পশুর হাট (https://bit.ly/2Lt7Wq6)

খ) পশুরহাট এবার মূল শহরের বাইরে (https://bit.ly/2JwXSuu)

গ) এবার রাজধানীর বাইরে কোরবানির পশুর হাট বসছে (https://bit.ly/2moC8rp)

ঘ) স্কুল-কলেজ মাঠে পশুর হাট না বসানোর নির্দেশ এলজিআরডি মন্ত্রনালয়ের (https://bit.ly/2LsOSZd)

ঙ) ব্যস্ত স্থানে কোরবানির পশুর হাট না বসাতে পুলিশের চিঠি (https://bit.ly/2L1lBIG)

 

তবে মুসলমানদের তীব্র বিরোধীতার মুখে কোরবানীর স্পষ্ট নির্দ্দিষ্ট করার সিদ্ধান্ত পুরোপুরি পণ্ড হয় , কিন্তু কোরবানির হাটগুলো বাইরে রয়ে যায়। এক্ষেত্রে তারা প্রথম টার্গেট করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন । হাটগুলো নিয়ে যাওয়া হয় বসিলা, ভাটারা, দক্ষিণখানসহ মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে (https://bit.ly/2L1pEVz)। মোটামুটি শহরের ভেতরে ছিলো আফতাবনগর হাট। প্রশাসন এবার আফতাবনগর হাট তুলে তেজগাও পলিটেকনিক মাঠে হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।(https://bit.ly/2mpzrWw)

যদিও আফতাবনগর একটি বিরাট হাট, যার সাথে অন্যহাটের তুলনা চলে না। ১০টা পলিটেকনিক মাঠ এক হলেও আফতাবনগরের হাটের সমান হবে না।

 

ঢাকা উত্তরের হাটগুলো বের করে দিতে পারলেও ঢাকা দক্ষিণের হাটগুলো এখনও বের করে দিতে পারে নাই। এখনও ঢাকা দক্ষিণের অনেক হাট শহরের মধ্যে আছে। এখন সিআইএপন্থীরা আন্দোলন শুরু করছে ঢাকা দক্ষিণের হাটগুলো বাইরে বের করে দেয়ার জন্য। সাথে পশু জবাইয়ের স্পট নির্ধারণ করতেও দাবী তুলছে তারা। (https://bit.ly/2NYy3a7)

 

তবে শুধু সিআইএপন্থীরা নয়, আওয়ামীলীগ-যুবলীগের একটি মহল এখানে ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। তারাও সিন্ডিকেট করে চায় হাটের সংখ্যা কমাতে, কারণ তারা ভাবে একটি হাট বন্ধ হলে অন্যহাটে গরু বিক্রি বাড়বে। যদিও এক হাট বন্ধ হলে অন্য হাটে পশু বিক্রি বাড়বেআসলে এটা বৃহৎ পরিসরে ভুল তত্ত্ব। কারণ যারা হাট বন্ধের উস্কানি দিচ্ছে, তাদের মূল উদ্দেশ্য কোরবানী হ্রাস বা বন্ধ করা। এতে প্রথম কয়েকদিন লাভ হলেও একটা পর্যায়ে পশু কোরবানী হ্রাস পাবে, ফলে হাটের ইজারাদারদের লাভও হ্রাস পাবে। তাই হাট বন্ধ না করে, অধিক হাট করে একাধিক হাটের ইজারা নেয়ার চেষ্টা করা উচিত আওয়ামী নেতাদের।

 

 

এ বছর আফতাবনগর হাট বন্ধের জন্য যুক্তি দেয়া হযেছে হাটকে কেন্দ্র করে খুনোখুনি। (https://bit.ly/2mpzrWw)

সত্যিই বলতে, ফুটবল খেলা নিয়ে তো এ বছর অনেক মারামারি খুনোখুনি হলো, কৈ সরকার তো ফুটবল খেলা দেখা নিষিদ্ধ করলো না, পতাকা উড়ানো নিষিদ্ধ করলো না। তাহলে হাটকে কেন্দ্র করে আওয়ামী-আওয়ামী মরছে এটা নিয়ে এত চিল্লাচিল্লি কেন ?

খুনোখুনি বন্ধ করার দায় প্রশাসনের উপর, তারা কেন খুনোখুনি বন্ধ করতে পারলো না, সে কারণে তারা পদত্যাগ করুক। অথচ সেই দায় হাটের উপর চাপিয়ে হাট বন্ধ করে জনগণকে কষ্ট দেয়া হচ্ছে।

 

আমি সবসময় একটা কথা বলি, “কোন ঘটনা/কথা দেখলে, আগে দেখো কথাটা কে বলছে এবং তার উদ্দেশ্য কি?” অথচ পাবলিক দেখে তার লাভ/ফায়দা কি। আর সেখানেই ধরা খায়। যারা হাট বন্ধ করতে চাইছে তারা নিজের উদ্দেশ্য হাইড করে, পাবলিককে যানজট/জনদুর্ভোগ হ্রাসনামট মুলা খাওয়ায় দিছে।

 

কিন্তু পাবলিকের বোঝা উচিত ছিলো, যে ঢাকা শহরে ৩৬৫ দিন যানজট থাকে, সেখানে ঈদের ৩-৪টা দিন যানজটের কথা বলে হাট কমিয়ে ফেলা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলক। তাছাড়া, দূর্গা পূজার সময় ঢাকা শহরে প্রায় ২০০ মণ্ডপ হয়। অনেক সময় ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বন্ধ করে পূজা চলে। তখন কেউ যানজটের কথা বলে না। কিন্তু, কোনবানি আসলে কেন তাদের চুলকানি শুরু হয় সেটাই সন্দেহজনক!

 

আসলে যে সিআইএপন্থীরা চাইছে হাটের সংখ্যা কমুক, তাদের মূল উদ্দেশ্য যাতাযাত ভাড়া বৃদ্ধি করা, পশুর মূল্য বৃদ্ধি করা এবং সবশেষে কোরবানি হ্রাস করা। এভাবে কোরবানীতে বাধা দিতে দিতে এক পর্যায়ে কোরবানী বন্ধ করে দেয়া। উল্লেখ্য, কোরবানীকে কেন্দ্র করে লক্ষ কোটি টাকা লেনদেন হয়। এতে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হয়। গত ২০১৬ সালে কোরবানী ঈদকে উপলক্ষ করে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যোগ হয় বাড়তি দেড় লক্ষ কোটি টাকা (https://goo.gl/AmESYJ)। তারমানে কোরবানীতে বাধা দেয়া গেলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও বিরাট প্রভাব ফেলা সম্ভব।

 

জনগণের উচিত, হাট বন্ধের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে শক্ত আওয়াজ তোলা। সাথে দাবি তোলা, ঢাকা শহরের প্রত্যেক থানায় যেন কমপক্ষে ১টা কোরবানীর হাট থাকে। আর যেসব ষড়যন্ত্রকারী হাটের সংখ্যা হ্রাস করার পেছনে কাজ করছে তাদেরও শাস্তির আওতায় আনা উচিত।

 

 

 

 

 

 

 

 

# আমি জানি অনেকেই বলবে, “ভায়া, কোরবানী হাট যত্রতত্র বন্ধ এবং পশু জবাইয়ের স্থান নির্দিষ্ট করা তো পরিবেশ ও সমাজের জন্য ভালো।

 

আমি কিন্তু আগেই বলেছি, কে আপনাকে কি লোভ দেখালো, সেটার দিকে না তাকিয়ে আগে দেখুন,

- কে কথাটা বলছে, আর

-তার উদ্দেশ্য কি ?

 

খেয়াল করে দেখুন আবুল মকসুদের গায়ে আছে সাদা কাপড় মোড়ানো। আবুল মকসুদ ২০০৩ সাল থেকে গান্ধীবাদী হয়। এ কারণে তার সাদা পোষাক ধারণ। আচ্ছা গান্ধী তো গো-রক্ষা আন্দোলনের নেতা ছিলো। তারমানে আবুল মকসুদও গো-রক্ষা আন্দোলনের অনুসারী। যার নিজের উদ্দেশ্য গো-রক্ষা করা, সে হাট হ্রাস ও জবাইয়ের স্থান নির্দ্দিষ্ট করার মাধ্যমে আসলে কি চাইছে ? গো-জবাই বন্ধ করতে ?

 

কোরবানীর হাটের সংখ্যা যদি কমিয়ে ফেলা যায়, তবে মানুষের অবশ্যই পশু কিনতে কষ্ট হবে, পশুর দাম বৃদ্ধি পাবে, পরিবহণ খরচ বাড়বে। জবাইয়ে স্থান যদি নির্দ্দিষ্ট করা হয়, তবে মানুষকে বিভিন্ন বাধা দিয়ে কোরবানীর প্রতি নিরুৎসাহিত করা যাবে, আলটিমেটলি হ্রাস পাবে কোরবানীর সংখ্যা।

 

এবার আসুন সংগঠনের ব্যবচ্ছেদ করি।

বাংলাদেশে পরিবেশে নাম দিয়ে কিছু এনজিও আছে, যাদের উদ্দেশ্য পরিবেশ রক্ষার নাম দিয়ে সম্রাজ্যবাদীদের বিভিন্ন উদ্দেশ্য সার্ভ করা। এগুলো হলো-

১)বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)

২) বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন)

৩) ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট

৪) পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)

৫) বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা)

 

আমি অনেক আগে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম, যেখানে বলেছিলাম, ইহুদীসংঘ তথা জাতিসংঘ বিভিন্ন দেশকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা বা এসডিজিনামক ১৭টি শর্ত (১৬৯টি উপশর্ত) বেধে দিয়েছে। এইসব শর্তের মাধ্যমে বাংলাদেশের মত রাষ্ট্রগুলোকে তারা নিয়ন্ত্রণ করবে (https://bit.ly/2uGRjzR)

 

উপরে যে সংগঠনগুলোর নাম দিলাম, তাদের কাযই হলো বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা নামক শর্তগুলো পালন করতে বাধ্য করা। এজন্য তারা যত আন্দোলন-সেমিনার করে সেখানে টেকইস উন্নয়ন লক্ষমাত্রা কার্যকর করার কথা বলে। (https://bit.ly/2L0k7yu)

 

কিন্ত টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রার মধ্যে ‘কোরবানীসম্পর্কে কি বলা আছে ?

 

আছে, অবশ্যই আছে।

সম্রাজ্যবাদীরা প্রাণীরক্ষার নাম দিয়ে কোরবানী বন্ধ করতে চায়, যা তাদের কথিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার-ই অংশ (https://bit.ly/2JuHiLy)

 

কিন্তু এর পেছনে সম্রাজ্যবাদীদের কি উদ্দেশ্য ?

এটা নিয়ে আমি আগেও লিখেছি। ইহুদীবাদী কর্পোরেটরা চায়, মানুষ পশু জবাই ধিরে ধিরে বন্ধ করে দিক, আর সে সুযোগে তারা সবাইকে মাংশ সার্ভিস দেবে। এজন্য তারা কৃত্তিম মাংশ নামক একটি প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। যা দিয়ে তারা সবার মাংশের চাহিদা মেটাবে ্এবং বিরাট ব্যবসা লুটবে। কৃত্তিম মাংশের পেছনে আছে, মাইক্রোসফটের বিল গেটস, ভার্জিন গ্রুপের রিচার্ড ব্র্যানসন কিংবা জাস্টের জোশু তেট্রিকের মত ইহুদীবাদী কর্পোরেটরা। এছাড়া চীন ও ইসরাইল কৃত্তিম মাংশ তৈরীতে একটি চূক্তি সম্পাদিত করেছে (https://bit.ly/2L1mL6V)

 

ষড়যন্ত্র অনেক গভীর,

কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে তারা একেবারেই বেখবর।

তাই হাটের সংখ্যা হ্রাস ও জবাইয়ের স্থান নির্ধারণের বিরুদ্ধে যে কোন উদ্দগের বিরুদ্ধে এখনই শক্ত আওয়াজ তুলুন।

 

 

 

 

# গ্রাম বাংলায় এখনও অনেক স্থানে মোরগ লড়াইখেলা দেখা যায়। দুইটা মোরগকে পরষ্পরের দিকে লেলিয়ে দেয়া হয় মারামারি করার জন্য। অবুঝ প্রাণী দুটো পরষ্পরের উপর ঝাপিয়ে পড়ে, আঘাত করে, দুই জন দুইজনকে মেরে রক্তাক্ত করে, আহত-নিহত করে। আর তাদের খুনোখুনি দেখে আনন্দিত ও বিনোদন প্রাপ্ত হয় জনগণ। অর্থাৎ জনগণকে আনন্দ দিতে নিজেরা রক্তাক্ত হতে থাকে মোরগগুলো। এ কারণে বিশ্বজুড়ে প্রাণীপ্রেমীরা মোরগ লড়াই, ষাড়ের লড়াইয়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলছে। তারা বলছে, জনগণকে সামান্য আনন্দ দেয়ার জন্য প্রাণীদের উপর এই নির্মমতা মেনে নেয়া যায় না। অবিলম্বে প্রাণীর উপর নৃশংসতা বন্ধ করতে হবে।

 

খুব সহজ অঙ্কে হিসেব –

কেউ রক্তাক্ত হবে, আর তার বিনিময়ে কেউ আনন্দিত হবে।

আপনি বর্তমানে কালের ক্রিকেট বা ফুটবল খেলার দিকে যদি তাকান তবে সেই মোরগ লড়াইয়ের ব্যতিক্রম কিন্তু দেখতে পাবেন না। শুধু ব্যতিক্রম, অবুঝ প্রাণী মুরগীর যায়গায় শ্রেষ্ঠ প্রাণী মানুষকে দেয়া হয়েছে। সামান্য একটা ঢিল ছুড়লে মানুষ যখন ভয় পায়, তখন একটা ভারি বল প্রতিপক্ষের দিকে ছুড়ে দেয়া হচ্ছে। বলের গতি ঘণ্টায় ১৪০ কিলো ছাড়িয়ে যাচ্ছে, ইচ্ছে করে দেয়া হচ্ছে বাউন্স। ব্যাটসম্যান সেটা ব্যাট দিয়ে মারছে, কিন্তু যদি মিস হয় তবে গায়ে আঘাত করছে। হাতে,পায়ে, মাথায়, বুকে, দুই পায়ের মাঝে প্যাড পড়ছে, তারপরও মিস হয়ে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে লুটিয়ে পড়ছে। কয়েকদিন আগে অস্ট্রেলিয়ার প্লেয়ার ফিলিপ হিউজ বাউন্স সামলাতে না পেরে মারা গেলো। এরপর ব্যাট দিয়ে আঘাত করার পর সেটাও কোন প্লেয়ারের গায়ে লাগতে পারে। ছোটবেলায় মনে আছে, ঢাকায় খেলতে এসে বাংলাদেশী ক্রিকেটার অপুর পুলে মিডঅনের দাড়িয়ে থাকা ভারতীয় প্লেয়ার রমনলাম্বার মাথায় বলের আঘাত লেগেছিলো। ব্রেন হেমরাজে মারা গিয়েছিলো রমনলাম্বা।

 

বাংলাদেশের মানুষ খুব আবেগী, তারা বিনোদন আর বাস্তবতাকে আলাদা করতে জানে না। একবার এক খেলার পর কিছু মানুষ প্রচার করলো, বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাদের মত। তখন মাশরাফী মোর্তজা শুধরে দিয়েছিলো। সে বলেছিলো, আমরা হচ্ছে এন্টারটেইনার। আমাদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের তুলনা করা ঠিক না।

 

এন্টারটেইনারদের কাজ মানুষকে বিনোদন দেয়া। এজন্য সে তার জীবনকে ক্ষয় করে মানুষকে আনন্দ দিতে চায়। হয়ত এর বিনিময়ে সে কিছু টাকা পায়। বিষয়টা অনেকটা পর্নো অভিনেতা অভিনেত্রীদের মত। একটা খবরে পড়েছিলাম, যারা পর্নোগ্রাফীতে অভিনয় করে তাদের আয়ু খুব কম হয়। অর্থাৎ মানুষকে বিনোদন দেয়ার জন্য তারা শরীরের উপর এমন সব মেডিসিন প্রয়োগ করে যা তাদের আয়ু হ্রাস করে।

এই আজকে সাকিব বলেন, মাশরাফি বলেন, তামীম বলেন আর মোস্তাফিজ বলেন, প্রত্যেকে কিন্তু একই কাজ করতেছে। কেউ ভাঙ্গা হাত নিয়ে, কেউ ভাঙ্গা পা নিয়ে খেলছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো তারা তাদের জীবন ক্ষয় করে মানুষকে আনন্দ দিচ্ছে। হয়ত অনেকে স্যালুটদিচ্ছেন, ভাবছেন খুব মনে হয় দেশের জন্য বিরাট কিছু নিয়ে আসছে। কিন্তু মানবিক দৃশ্যকোন থেকে একটা চরম অন্যায় করা হচ্ছে। ঠিক যেভাবে মোরগ আহত হওয়ার পরও আমরা চাই তারা মারামারি চালিয়ে যায়, ঠিক সেইভাবে ক্রিকেটারদের আমরা স্যালুট নামক পাম্পতাদের প্রতি নৃশংসতা করছি। আহত মুরগী জানে, আহত হলেও যতক্ষণ সে লড়তে পারবে, ততক্ষণ তার মালিকের কাছে তার দাম আছে। তার জন্য ভালো খাদ্য আছে। ঠিক তেমনি সাকিব-তামিম-মাশরাফি-মোস্তাফিজরা জানে, যত আহতই হোক, যতক্ষণ সে খেলতে পারবে ততক্ষণ তার দাম আছে, তার ইনকাম আছে। একটু ইনজুরিতে পড়লে তার যায়গা আরেকজন দখল করে নেবে, তখন পাবলিকও তাদের ভুলে যাবে, তাকে দু্ইটাকা দিয়েও দাম দেবে না। ইনজুরীর জন্য কত ভালো প্লেয়ার হারিয়ে যায়, কত জন শারীরিকভাবে পঙ্গু হয়ে যায়, কে কার খবর রাখে ? এই জন্য খেলার টাকা দিয়ে নামে বেনামে অন্য আয়ের পথ খুলে রাখে তারা।

 

আজকে বিশ্বে ইতর প্রাণীর প্রতি মায়া দেখিয়ে মোরগ লড়াই, ষাড়ের লড়াইয়ের বিরুদ্ধে জনমত তৈরী হচ্ছে, কিন্তু মানুষের প্রতি মানুষের মায়া দেখিয়ে কবে ক্রিকেট-ফুটবল নামক খেলাধূলা বন্ধ হবে ? মানুষকে বিনোদিত করার জন্য কেন অপর মানুষ কেন রক্তাক্ত হবে, জীবন দিবে ? মানবতার দৃষ্টিকোণ থেকে এই সব খেলাঅবিলম্বে বন্ধ হোক।

 

 

 

 

 

# গত ২৮শে সেপ্টেম্বার শুক্রবার ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছে ৭ ফিলিস্তিনি, আহত ৫০৭। (https://bit.ly/2DEyrtl)

 

বাংলাদেশী মুসলমানদের উচিত ছিলো ফিলিস্তিনী ভাইদের হত্যাকাণ্ডে দুঃখিত হওয়া এবং প্রতিবাদ করা।

কিন্তু বাংলাদেশী মুসলমানরা ব্যস্ত আছে ক্রিকেট খেলায় লিটন দাসের ভুল স্ট্যাম্পিং এর ঘটনায় দুঃখিত হতে এবং তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে।

 

আসলে খেলা নামক বিষয়টার সফলতাটা এখানেই। আসল বিষয় থেকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে অপ্রয়োজনী ও অযথা ‘খেলোবিষয়ের দিকে মনযোগ ঘুড়িয়ে নিয়ে যায়। এজন্য খেলাকে অনেকে আফিমের সাথে তুলনা করে।

আফিম দিয়ে অপরেশন থিয়েটারে আহত রোগীর ব্যাথা ভুলিয়ে রাখা হয়।

বর্তমান যুগে মুসলমানরা অনেক কষ্টে আছে, সেই কষ্ট ভুলিয়ে রাখতে এবং দৃষ্টিপাত সরিয়ে দিতেই ঠিক তেমনি ব্যবহার করা হচ্ছে হচ্ছে খেলানামক বস্তুকে।

 

আপনি দেখবেন, খেলা লাইভ চলার সময় বিভিন্ন ফেসবুক পেইজে কমেন্টে,

হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ কমেন্ট,

আল্লাহ তুমি জিতিয়ে দাও”,

আল্লাহ তুমি পারো সব কিছু করতে”,

আল্লাহ তোমার কাছে কিচ্ছু চাই না, শুধু এবার জিতিতে দাও”,

এভাবে জনগণ একবার খেলার সময় যতবার সৃষ্টিকর্তার নাম জপে, আমার তো মনে হয় ঐ লোক সারা বছরেও এতবার সৃষ্টিকর্তার নাম স্মরণ করে না।

 

একইভাবে, ক্রিকেটে ভারতের জচ্চুরী নিয়ে বাংলাদেশের মানুষ যতটা সচেতন, যতটা ক্রিয়াশীল, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড, নদীগুলোকে পানিশুন্য করাসহ যাবতীয় ভারতীয় আগ্রাসন নিয়ে বাংলাদেশের মানুষ কি ততটা সক্রিয়? যদি ক্রিকেটের মত বাস্তব আগ্রাসন নিয়ে বাংলাদেশের মানুষ সিকিভাগও সক্রিয় হতো, তবে অবশ্যই দেশটা আজকে অন্যরকম হতে পারতো। যে বাংলাদেশী লিটনের ভুল স্ট্যাম্পিং নিয়ে একের পর স্ট্যাটাস দিচ্ছে, সে কি জানে, তারমাত্র ১ দিন আগে ঢাকা-দিল্লির মধ্যে সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তিসিইপিএ-সেপা সাক্ষরিত হয়েছে, যার দরুণ বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ব্যবসা বাণিজ্যের মধ্যে অংশীদারিত্ব লাভ করছে ভারত। ক্রিকেট খেলায় অন্যায় নিয়ে সে যতটা কষ্ট পেয়েছে, দেশ ভারতের কাছে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, এই খবরে কি সে সামান্যতম কষ্ট পেয়েছে ? (https://bit.ly/2InTUFm)

 

শুধু তা্ই নয়, মাত্র একদিন আগে,

-নামাজের জন্য মসজিদ অপরিহার্য নয় বলে রায় দিয়েছে ভারতীয় আদালত

(https://bit.ly/2y7XNd9)

-বাবরি মসজিদের জমি সরকার হুকুম দখল করতে পারবে বলে রায় দিয়েছে ভারতীয় আদালত

(https://www.bbc.com/bengali/news-45666001)

এই অন্যায্য রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মুসলমানরা কি কোন প্রতিবাদ জানিয়েছে ?

 

আপনাদের মনে থাকার কথা, আগের পোস্টে আমি পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের গবেষণাখাতে বরাদ্দ নিয়ে research and development (R&D) তালিকার কথা বলেছিলাম। সাধারণত যারা, সরকারিভাবে গবেষণার জন্য ৫০ মিলিয়ন ডলার বা ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে সেই সব দেশের নাম এই তালিকায় ওঠে (https://bit.ly/2dLjLeE) ।

 

আপনি খবর নিয়ে দেখুন, ঢাকার পূর্বাচলে ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হচ্ছে। (https://bit.ly/2NOb8BL) অথচ সেই টাকার অর্ধেকও যদি গবেষণার জন্য ব্যয় করা হতো তবে অবশ্যই বাংলাদেশ একটি উন্নত রাষ্ট্র হতে পারতো। অপরদিকে এ বছর যুব ও ক্রিড়া মন্ত্রনালয়ের বাজেট দেড় হাজার কোটি টাকা, তার চারভাগের ১ ভাগও যদি গবেষণার জন্য ব্যয় করা হতো, তবুও বাংলাদেশ কিছু একটা হতো।

 

এতকিছু সমস্যার জন্য কাকে দোষ দেবেন ? সরকারকে ?

কখনই শুধু সরকারের দোষ দিতে পারবেন না। আমি সব সময় একটা কথা বলি, যে দেশের জনগণ যেমন, তার শাসক শ্রেনীও ঠিক তেমন। তাই বাংলাদেশের জনগণকে আগে লাঠি দিয়ে বলে বারিদেয়ার মত অপ্রয়োজনীয় জিনিসের মোহ ছাড়তে বলেন, এরপর দেখবেন দেশ ও জাতিকে উন্নত করা সম্ভব।

 

 

 

 

#

আমি একটা কথা সব সময় আপনাদের বলি,

আমি আজকে আপনাদের যা বলছি, তা আজকে হয়ত আপনারা নাও বুঝতে পারেন। কিন্তু একদিন না একদিন ঠিকই বুঝতে পারবেন।

আমি শুরু থেকেই খেলাধূলার বিরুদ্ধে । আমি আগেও বলেছি, এমন একটা সময় আসতে পারে, যখন কোন শত্রু রাষ্ট্র বাংলাদেশের উপর আক্রমণ করবে, আর সেই দিন বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলা পড়বে। বাংলাদেশের সব মানুষ বলবে- হামলা করলে করুক, আগে খেলা, পরে সবকিছু।

খেলার বিরুদ্ধে বলায় আমাকে কম মানুষের কটুকথা শুনতে হয়নি। কিন্তু আজকে সরকার কোটা আন্দোলনকারীদের উপর এত প্রেসার দেয়ার সুযোগ পেয়েছে বিশ্বকাপ ফুটবলকে কেন্দ্র করে। কারণ তরুণ সমাজ আজ ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা নিয়ে ব্যস্ত, তাদের মাথায় মেসি আর নেইমার ঘুড়ছে। অন্যকিছু চিন্তা করার সুযোগ কোথায় ?

আজকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অসহায়ের মত পালিয়ে এসেছে। কেন তারা কি কোন প্রতিরোধ করতে পারতো না ? এখনও কি তারা কিছু পারে না ??

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে খবর নিয়ে দেখুন, বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৬০টার মত ফুটবল ক্লাব বা টিম আছে। তারা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জার্সি, বুট, পড়ে সারাদিন ফুটবল খেলায় মত্ত। এক টিম আরেক টিমকে ফুটবল খেলায় হারানোর চেষ্টা করতেছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফুটবল খেলাই তাদের কাজ।

এই রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসার আগেও নিশ্চয়ই মায়ানমারে ফুটবল খেলতো। ওদের উপর যখন যুলুম নির্যাতন চলতো, তখন তাদের নিশ্চয়ই ঐ দিকে খেয়াল দেয়ার সুযোগ ছিলো না। কারণ খেলাটা তাদের কাছে আগে। এখন তাদের মা-বোনকে ধর্ষণ করে, বাবাকে গুলি করে হত্যা করে গলা ধাক্কা দিয়ে বাংলাদেশের পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে তারপরও নিলর্জ্জগুলো বাংলাদেশে এসে ফুটবল খেলতেছে। ছি:। খেলা এমন একটা নেশা যা পুরো জাতির চিন্তা-ভাবনা-মান-সম্মান সব নষ্ট করে দেয়।

তবে ভালো লক্ষণ, ইতিমধ্যে অনেকেই খেলার কুফল সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন। তবে আরো সচেতনতা সৃষ্টির দরকার আছে। অন্যান্য আন্দোলনের সাথে খেলানামক বিভ্রাটকেও বর্জন করতে ডাক দিতে হবে। ক্রিকেট-ফুটবলসহ সব ধরনের খেলা নিষিদ্ধ করতে হবে। আমি জানি, অনেকের খারাপ লাগতে পারে, তবুও বলবো- বাংলাদেশের নিকট ভবিষ্যতে খুব খারাপ সময় অপেক্ষা করতেছে। তাই খেলা ফেলে এখনও সময় আছে সচেতন হোন। রোহিঙ্গাদের মত নিঃস্ব হওয়ার আগে খেলা ফেলে বাস্তবে ফিরে আসুন। নয়ত পুরো জাতির ধ্বংস ছাড়া আর কিছু দেখতে পারবেন না।

 

 

 

 

 

# ইহুদীবাদী কর্পোরেটোক্রেসি নিয়ে আমি আগেও অনেক আলাপ করেছি।

বলেছি, কিভাবে আপনার টাকা শুষে নেবে ইহুদী কর্পোরেটরা

আর সামনে নাচাবে এন্টারটেইনার বা সাকিব-মেসিদের।

 

বিষয়টা তুলনা করা যায়, অনেকটা গ্রা্ম্য মেলার পুতুল নাচের সাথে।

আপনি যখন পুতুল নাচ দেখতে মেতে উঠবেন, তখন একদল পেছন থেকে আপনার পকেট কেটে টাকা নিয়ে যাবে।

 

খেলায় ঠিক এই জিনিসটা হয়, মানুষ মত্ত থাকে এন্টারটেইনারদের নিয়ে

আর সে সুযোগে ইহুদীবাদী কর্পোরেটরা মানুষের পকেটের টাকাগুলো লুটে নিতে থাকে।

সে জানেও না কিভাবে তার পকেটের টাকা চলে যাচ্ছে ইহুদী কর্পোরেটদের হাতে।

 

ছোটবেলায় ১০ টাকা দামের কোকের কাচের বোতল পাওয়া যেতো।

তখন একবার শুনেছিলাম, কোকের ভেতর যে পানিটা থাকে ওটার মূল্য নাকি মাত্র ১ টাকা, আর ৫-৬ টাকা নাকি বিজ্ঞাপন মূল্য, বাকিটা কোম্পানি-ডিলার-বিক্রেতাদের লাভ।

 

এ হিসেব সত্য মিথ্যা জানি না। তবে এতটুকু বুঝি কর্পোরেট দুনিয়ায় বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকের মনে পণ্যের ব্যাপক আকাঙ্খা তৈরী করা হয়, এতে খরচও হয় অনেক। কিন্তু গ্রাহক জানেই না ঐ বিজ্ঞাপনের টাকা তার পকেট থেকেই আদায় করছে কোম্পানিগুলো। ফলে পন্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে বহুগুনে।

 

একবার দোকানে গিয়েছিলাম প্লাস্টিকের বালতি কিনতে।

দোকানি বললো- “আরএফএল বালতি ছাড়া আর কোন কোম্পানির বালতি নেই। দাম- ১২০ টাকা।

আমি বললাম- “অন্য কোন কোম্পানির বালতি নেই কেন ?”

সে নিজেই বললো- “টিভিতে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ এত বিপুল পরিমাণে বিজ্ঞাপন দেয়, পাবলিক পুরো ব্রেইন ওয়াশড। আরএফএল যে বালতি ১২০ টাকা দিচ্ছে তার থেকে ভালো মানের বালতি অনেক কোম্পানি ৮০ টাকায় দেয়। কিন্তু পাবলিক কিনতে নারাজ। কারণ শুধু বিজ্ঞাপন।

 

ফিরে আসি, খেলার কথায়। আমি খেলোয়াড়দের তুলনা করেছি এন্টারটেইনার বা পুতুলের সাথে।

এ সম্পর্কে একটা ঘটনা মনে আছে। একবার বাংলাদেশের জনগন ক্রিকেট খেলা নিয়ে খুব মত্ত হয়ে গেলো। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে তুলনা শুরু করে দিলো।

তখন বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি জনগনের ভুল শুধরে দিলো। বললো, আমরা মুক্তিযোদ্ধা নই, আমরা হচ্ছি এন্টারটেইনার, আপনাদের আনন্দ দেই। (সূত্র: দৈনিক কালেরকণ্ঠ, ১৭ জুলাই, ২০১৫, লিঙ্ক-https://bit.ly/2s5A9uG

)

 

তারমানে দাড়াচ্ছে,

খেলোয়াড়রা হচ্ছে পুতুল, তাদের পেছন থেকে নাচাচ্ছে কর্পোরেটরা।

আর জনগণ সে পুতুল নাচ দেখতে গিয়ে ইচ্ছা-অনিচ্ছায় বিজ্ঞাপন দেখছে

তার ব্রেনের সাব-কনসাস মাইন্ডে যুক্ত হচ্ছে- অমুক পন্যটা কিনতে হবে।

পরবর্তীতে ঐ বিজ্ঞাপনের টাকা এবং পন্যচাহিদা অনুসারে লভ্যাংশ উভয় সংযুক্ত হচ্ছে পন্যের সাথে

ফলে ১ টাকার পন্য কিনতে হচ্ছে ১০ টাকা দিয়ে।

একজন মানুষ খেলা দেখে ভাবছে, - এতে আবার ক্ষতিটা কি ?

কিন্তু তাকে যে কৌশলে ফুতুর করছে কর্পোরেটরা, সেটা তার মাথার এন্টেনার বহু উপর দিয়ে যাচ্ছে।

এই যে মেসির দাম এত এত কোটি, সাকিবকে আইপিএল এত কোটি টাকা দিয়ে কিনছে,

এগুলো সব আপনার পকেটেরই টাকা। কিন্তু নেয়া হচ্ছে ধোঁকা দিয়ে। এজন্য আমি এটাকে তুলনা করেছি, পুতুল নাচের সময় পেছন থেকে পকেট মারার সাথে।

 

আমি জানি, এতটুকু পড়ে অনেকেই বলবেন- দাদা এত বড় কথা বইলেন না, টিভিতে খেলা দেখলে সমস্যা। কিন্তু আপনি যে ফেসবুক ব্যবহার করতেছেন, সে ফেসবুকেও অনেক বিজ্ঞাপন আসে। ঐ বিজ্ঞাপন কোম্পানিগুলো ফেসবুককে টাকা দেয়, আর সেই টাকা পাবলিকের থেকে কেটে নেয়।

 

মানছি আপনার কথা। তবে কথার মধ্যে একটু গ্যাপ আছে।

আপনারা রাস্তা দেখেছেন নিশ্চয়ই। রাস্তা ওয়ান ওয়ে হয়, আবার টু-ওয়েও হয়।

টিভি হচ্ছে ওয়ানওয়ে, ওরা শুধু দিবে আর আপনি গ্রহণ করবেন। ও যা দিবে, আপনাকে তাই গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু আপনি তথ্য বা মতামত এক্সচেইঞ্জচ করতে পারবেন না।

 

অপরদিকে ফেসবুক হচ্ছে টু-ওয়ে। মানে এখানে এক্সচেইঞ্জ করা যায়। সেও দিবে, আপনিও দিবেন। আর যেখানে এক্সচেইঞ্জ করা যায়, সেখানেই পাবলিকের লাভ তৈরী হয়।। ইন্টারনেটে নলেজ বা তথ্য আরো অধিন নয়, যা উপকারি, ফলে অনেক গোপন নলেজ বেড়িয়ে আসে। সোশাল মিডিয়ার কল্যানে ফিল্ড পর্যায়ের পাবলিকের মতামত জাতীয়-আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উঠছে, এতে ভুয়া সেলিব্রেটিদের পতন হয় এবং রিয়েল সেলিব্রেটিদের উত্থান হয়, সাধারণ জনগণের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পৌছে যায়, যা আগে কখন সম্ভব ছিলো না এবং মিডিয়া দ্বারাও সম্ভব নয়। তাই ফেসবুকে হয়ত কর্পোরেটদের লাভ হচ্ছে, কিন্তু জনগণেরও যে উপকার হচ্ছে, সেটা নিশ্চয়ই অস্বীকার করতে পারবেন না।

 

এ কারণে অনেক রাষ্ট্রে, টিভি মিডিয়াকে নিরুৎসাহিত করা হয়, অনলাইন মিডিয়াকে উৎসাহিত করা হয়। যেমন পশ্চিমের অনেক দেশে প্রত্যেকটি টিভি চ্যানেলের জন্য আলাদা আলাদা পে করতে হয়। ফলে টিভি মিডিয়া তাদের জন্য এক্সপেনসিভ। অপরদিকে হাইস্পিড ইন্টারনেট অনেক সস্তায় সরবরাহ করা হয়। উদ্দেশ্য জনগণের ব্রেন আপডেট করা।

 

অপরদিকে বাংলাদেশে টিভি মিডিয়াকে উৎসাহিত করা হয়, ইন্টারনেটকে নিরুৎসাহিত করাহয়। যেমন : মাত্র ২০০ টাকা দিয়ে সারা মাস এক-দেড়শটিভি চ্যানেল দেখা যায়, কিন্তু অতি উচ্চ মূল্য দিয়ে ইন্টারনেট ডাটা কিনতে হয়। ইন্টারনেট উচ্চ মূল্য হওয়ায় অনেক মানুষ এখনও সচেতন হতে পারছে না।

 

আমার মনে হয়, ইহুদীবাদী কর্পোরেটোক্রেসির পতন হতে হলে এবং মুসলমানদের উত্থানের জন্য খেলা বজর্ন করা জরুরী।

 

 

 

 

 

 

কারণ আমার দৃষ্টিতে বর্তমান প্রচলিত ইহুদীবাদী ব্যবস্থার অপর নাম যুলুমতন্ত্র’।

এই সিস্টেমে গোটাকয়েক ইহুদীর হাতে জিম্মি সকল মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এমনকি সাধারণ ইহুদীরাও।

একমাত্র ইসলাম প্রতিষ্ঠা হলে, সকল ধর্মের লোক সুখে থাকতে পারবে এবং

একমাত্র ইসলাম-ই পারে ইহুদীবাদীদের সকল কূটকৌশল ভাঙ্গতে,

এই সামর্থ কেবল ইসলামীক সিস্টেমেরই আছে, অন্য কোন সিস্টেমের নাই।

বর্তমানে ইহুদীবাদীরা যে ব্যবস্থার উপর একচেটিয়া অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে তার নাম ‘অর্থনীতি’।

অর্থনীতিতে একচ্ছত্র অধিপত্যের কারণে অন্য ব্যবস্থাগুলো খুব সহজেই তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে,

কারণ টাকা ছাড়া কিছু হয় না, মানুষ দিন শেষে সেই টাকার কাছেই ধরা।

বর্তমানে ইহুদীবাদীদের মূল পোষক হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

এই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অর্থনীতিতে এমন সিস্টেম জারি করেছে, পৃথিবীর সকল সম্পদ তার কাছে আসতে বাধ্য, এমনকি সে যদি কিছু নাও করে, তবুও আমি-আপনি তাদের কাছে বখরা দিয়ে যাচ্ছি।

এই বিষয়টি আমি আগেও আলোচনা করেছি, এখনও আলোচনা করছি,

সকল দেশ টাকা ছাপানোর আগে তার বিপরীতে কোন সম্পদ জমা রাখে

কিন্তু একমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যার ডলারের বিপরীতে কোন সম্পদ জমা রাখতে হয় না,

সে প্রয়োজন মত ডলার ছাপাতে পারে।

অপরদিকে ইহুদীবাদী সংগঠন আইএমএফ মাধ্যমে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডলারকে সারা বিশ্বের কেন্দ্রীয় মূদ্রা হিসেবে ঘোষণা করেছে। ফলে আমরা আমাদের দেশের সম্পদ টাকাকে আন্তর্জাতিকভাবে এমন এক মুদ্রা দ্বারা ওজন পরিমাপ করছি, যার বিপরীতে কোন সম্পদ নেই, অর্থাৎ সে এক হিসেবে ফাকা।

সে দিক বিবেচনা করলে, বর্তমানে আমেরিকা যে সম্পদ ব্যবহার করতেছে, সেখানে আসলে কিছুই নেই, তারা আমাদের সম্পদগুলোকেই ব্যবহার করছে, আর তাদের ব্যবহারটা আমাদের উপর মূল্যস্ফিতি হিসেবে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে।

আমি অনেক বড় বড় অর্থনীতিবিদের সাথে কথা বলেছি,

কিন্তু কথা বলে হতাশ হয়েছি। কারণ তারা সেই ইহুদীবাদীদের বানানো সিলেবাস পড়ে বড় হয়েছে।

ইহুদীবাদীদের বানানো পলিসির বাইরে নতুন কিছু চিন্তা করবে, সে বুদ্ধি তাদের মেমরিতেই নেই।

আমার চিন্তা হলো, কিভাবে ইহুদীদের বানানো অর্থনীতি সিস্টেম ভেঙ্গে খান খান করে মুসলমানদের আলাদা বলয় তৈরী করা যায়।

প্রথম যে চিন্তাটা আমার মাথায় এসেছে, তাহলো মুসলমানদের পৃথক অর্থনীতি ব্যবস্থা লাগবে।

কিন্তু সেটা কিভাবে ?

মুসলমানদের জন্য খুব সোজা, মুসলমানদের সম্পদের আড়াই শতাংশজাকাত দিতে হবে। এটা তাদের ধর্মের আবশ্যক।

সব মুসলমান যদি আড়াই শতাংশ’ করে জাকাত দেয়, তবে বাৎসরিক বিপুল পরিমান সম্পদ তৈরী হবে, যা দিয়ে মুসলমানদের আলাদা অর্থনীতির ভিত্তি তৈরী করা সম্ভব।

মুসলমানরা কিন্তু এখন ট্যাক্স দিচ্ছে। যদিও ট্যাক্স আর জাকাত এক জিনিস নয়। ট্যাক্স হচ্ছে অনেকটা সার্ভিস চার্জের মত। অর্থাৎ একজন নাগরিক রাষ্ট্রের যে বিভিন্ন সুবিধা ভোগ করছে তার জন্য খরচ। যদি ইসলামী শাসন ব্যবস্থায় সার্ভিস চার্জ এত বেশি নয়, কিন্তু বর্তমানে অতি উচ্চহারে ট্যাক্স নেয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে তো ৪০% ট্যাক্স নেয়, এছাড়া ভ্যাট-খাজনাও দিতে হয়। একটা গাড়ি কিনলে ৬০০% পর্যন্ত ট্যাক্স দিতে হয়। এটা কিন্তু যুলুমতন্ত্র। মুসলমানরা যদি তাদের নিজস্ব ব্যবস্থা চালু করতো, তবে নিশ্চয়ই এভাবে ডাকাতির শিকার হতে হতো না।

তবে আমি অনেক মুসলিম বন্ধুর সাথে আলাপ করে জেনেছি,

আজকাল মুসলমানরা নাকি জাকাত দেয় না, কেউ কেউ হয়ত দেয়, কিন্তু হিসেব করে আড়াই শতাংশ দেয় না। হয়ত হিসেবে জাকাত হয় ১ কোটি টাকা, কিন্তু মাত্র ১০ হাজার টাকার নিম্নমানের শাড়ি-লুঙ্গি কিনে গ্রামের বাড়িতে বিলি করে দিলো, ব্যস এটাই তার জাকাত।

তাদের এ কথা শুনে বুঝেছি, আসলে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হোক, এটা মুসলমানরাই চায় না।

চাইলে তো তাদের অর্থনীতির মূল ভিত্তিটা ঠিক রাখতো।

তারা ইহুদীবাদী অর্থনীতির সিস্টেম নিয়ে যতটা হিসেব করে,

ইসলামী অর্থনীতি নিয়ে ততটা হিসেব করে না।

আমার মনে হয়, মুসলমানদের এ ধরনের নিম্নমানের দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তন করা জরুরী।

জরুরী, কারণ যদি তারা চায় ইহুদীবাদের পতন ঘটুক এবং মুসলমানদের বিশ্বজুড়ে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা হোক।

আর যদি না চায়, তবে অপেক্ষা করুক, সবার ফিলিস্তিন, সিরিয়া আর মায়ানমারের পরিস্থিতি দেখতে।

মুসলমানরা বাচতে না চাইলেও ইহুদীরা কিন্তু ‘মুসলিম নিঃশেষের মাস্টারপ্ল্যানথেকে কখন সরে যাবে না।

 

 

 

 

 

# খেলা শব্দটা বিশেষ্য বা Noun

খেলা’র বিশেষন বা adjective হয় খেলো’।

অভিধান খুলে দেখবেন, খেলো শব্দের অর্থ: নিকৃষ্ট; হীন; নীচ; অপদস্থ ইত্যাদি

কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজকে অধিকাংশ মানুষ সেই খেলোবিষয় নিয়েই ব্যস্ত।

 

ছবিতে দেখুন, একজন আর্জেন্টিনার পতাকা বুকে ছড়িয়ে ছবি তুলেছে । ঘোষণা দিচ্ছে এই পতাকা খুব শিঘ্রই সে আকাশে উড়াবে। শুধু তাই নয়, সে একটা শ্লোগানও রেডি করেছে, “হৃদয়ে বাংলাদেশ, ময়দানে আর্জেন্টিনা”।

 

আহহা ! কি অপূর্ব শ্লোগান।

বাংলাদেশের যুবক সমাজ কত সুন্দর ‘খেলোকাজে মত্ত হয়ে গেছে।

ময়দানের যুদ্ধের স্বাদ সে আর্জেন্টিনাকে দিয়ে মিটাচ্ছে,

বলে লাথ্থি দেয়ার মত খেলো কাজকে সে যুদ্ধের সাথে তুলনা করছে।

কে কত বড় ভিনদেশী পতাকা ওড়াতে পারে তা নিয়েই প্রতিযোগীতা করছে।

এমন যুবক সমাজই তো চায় সম্রাজ্যবাদীরা।

 

কবি হেলাল হাফিজ,

এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়”- কবিতাটা দয়া করে নুতন করে লিখুন,

এখন যৌবন যার খেলোতে মত্ত হওয়ার তার শ্রেষ্ঠ সময়”।

 

 

 

 

ভাই এটা জাতিসংঘ বলছে, এটাতে ভুল থাকতে পারে না

ভাই এটা বিশ্বব্যাংক করতে বলছে, এটা করলে আমাদের ভালো হবে

ভাই এটা আমেরিকার বিজ্ঞানীরা টেস্ট করছে, এটায় ভুল থাকতে পারে না।

এই স্বীকৃতি জাতিসংঘের ইউনেস্কো দিছে, তাই এটা মহামূল্যবান

আমার মনে হয়, এ ধরনের চিন্তাধারা থেকে আমাদের সরে আসা উচিত। কারণ:

যে জাতিসংঘ বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের মেরে ইহুদীবাদীদের স্বার্থ রক্ষা করছে,

যে বিশ্বব্যাংক অর্থনৈতিক ঘাতক হয়ে বিভিন্ন দেশ লুটে খাচ্ছে,

যে আমেরিকা দেশে দেশে মুসলমান মারতেছে,

তারা যখন আপনাকে উপর দিয়ে ভালো কিছু বলছে, ভালো কিছু দিচ্ছে,

তখন তো ধরে নেয়া উচিত নিশ্চয়ই তার ভালোর মধ্যে খারাপ আছে। কি ‘খারাপআছে, এটা আমি এখন ধরতে পারছি না, কারণ আমার হয়ত সে প্রযুক্তি নেই, কিংবা আমার সে বিষয়ে গবেষণা এত উন্নত নয়। কিন্তু এরা আমাকে ভালো জিনিস দিলেও নিশ্চয়ই তার ভেতর এমন কিছু খারাপ লুকিয়ে আছে, যেটা আমি এখন বুঝতে পারতেছি না, হয়ত ৩০-৪০ বছর পর গিয়ে বুঝতে পারবো।

বাংলাদেশে ৮০-এর দশকের শেষের দিকে ‘বিশ্ব ব্যাংকবাংলাদেশ সরকারকে চাপ প্রয়োগ করে কৃষিক্ষেত হতে ব্যাঙধরে দেয়ার জন্য। সেই সময় কৃষিক্ষেত হতে কোটি কোটি ব্যাঙ ধরা হয়। কিছু দিন পর দেখা যায়, ধানক্ষেতে পোকার আক্রমণ মারাত্মক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং হাজার হাজার ধানক্ষেত পোকার আক্রমনে ধানশূন্য হয়ে পড়ে। এমতাবস্হায় বিশ্বব্যাংক পরামর্শ দেয় উন্নত সার ও কীটনাশক জমিতে ব্যবহার করতে। বিদেশী কোম্পানিগুলো তখন বাংলাদেশে সার ও কীটনাশক বিক্রি সুযোগ পায়। বিশ্ব ব্যাংক তখন অতিরিক্ত শর্তসাপেক্ষে ঋণ দেয় এবং বিভিন্ন চুক্তি সম্পাদন করে। অর্থাৎ একদিকে পরিবেশ বান্ধব ব্যাঙ কিনে নিলো। আমরা ভাবলাম- আহারে ওরা কত ভালো, জমিতে বিনামূল্যে পাওয়া ব্যাঙগুলো কোটি টাকা দিয়ে কিনে নিলো। কিন্তু পোকা খেকো ব্যাঙ ধরে আমরা নিজেদের যে কি ক্ষতি করলাম, তা আমরা বুঝতে পারি নাই। যার ফল অবশ্য অন্যদিক দিয়ে দিতে হলো, হাজার কোটি টাকার সার ও কীটনাশক কিনতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে ওদের থেকে।

ইহুদীসংঘ তথা জাতিসংঘ প্রায় পরিবেশ বিপর্যয়, দুর্যোগ ইত্যাদি শ্লোগান তুলে। বাংলাদেশ মরুভূমি হয়ে যাচ্ছে, তাই বনায়ন চাই। কত সুন্দর সুন্দর তাদের কথা। শুনতেই ভালো লাগে। কিন্তু তাদের এসব সুন্দর কথার আড়ালে কত কিছু লুকিয়ে আছে, তা কি আমাদের জানা ?

১৯৭০ সালের মাঝামাঝি সময়ে জাতিসংঘের UNDP-এর মাধ্যমে কিছু বিদেশী প্রজাতির গাছ বাংলাদেশে আসে। এরপর এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক, বিশ্ব ব্যাংক এবং ইউএসএইড এর অর্থায়নে উপজেলা পর্যায়ের সামাজিক বনায়ন কর্মসূচিএবং সরকারের বন বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশে গাছগুলো ছড়িয়ে দেয়া হয়। এ গাছগুলো মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছড়ানো হয় ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি নামক দুটি গাছ। ইতিমধ্যে লক্ষ লক্ষ ইউক্যালিপটাস ও আশাকমনি উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন এনজিও সরকারের বানায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে। কৃষকের থেকে মোটা দামে গাছগুলো কিনে নেয়ায় কৃষকও আগ্রহী হচ্ছে এ গাছ লাগনোয়। আমাদের শোনানো হচ্ছে, গাছ লাগানোর মাধ্যমে পরিবেশ ভালো থাকবে। কিন্তু সব গাছ কি পরিবেশ বান্ধব ? বানয়নের নামে ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছে লাগানোয় আসলেই কি পরিবেশের উন্নতি হচ্ছে ?

দেখা গেছে, এই দুইটি গাছে উপকারের থেকে অপকার অনেক বেশি। বিশেষ করে:

১) এ গাছগুলো মাাটির পানি দ্রুত শোষণ করে। একটি পূর্ণ বয়স্ক ইউক্যালিপটাস গাছ দৈনিক ৯০ লিটার পানি শোষণ করে, ফলে মাটি শুষ্কতা তৈরী হয়। বর্তমানে উত্তরাঞ্চলে যে মরুভূমি পরিবেশ তৈরী হয়েছে তার পেছনে একটি কারণ মনে করা হয় এসব ক্ষতিকারক গাছের বনায়নকে। আমি আপনাদেরকে আগেই বলেছিলাম, ইহুদীবাদীরা বাংলাদেশে পানির সংকট তৈরী করে পানিযুদ্ধ তৈরী করবে। এর একটি অংশ হিসেবে ৭০-৮০ দশক থেকে এই ক্ষতিকারক গাছের বনায়ন হতে পারে।

২) এই গাছগুলো রেনু নিঃস্বাসের সাথে গেলে এ্যালার্জি ও অ্যাজমা জাতীয় রোগের তৈরী হয়। ফলে সম্রাজ্যবাদীরা তাদের ওষুধ ‍বিক্রির নতুন মওকা পায়।

৩) এ গাছের চারপাশে অন্য কোন গাছ জন্মাতে পারে না।

৪) ইউক্যালিপটাস গাছে প্রচুর তেল থাকে, এটা দাবানল সহায়ক। অস্ট্রেলিয়ায় প্রতি বছর যে দাবানল তৈরী হয়, তার পেছনে এই ইউক্যালিপটাস গাছ দায়ী। বাংলাদেশে এ গাছ দিয়ে বনায়ন করলে বাংলাদেশেও খুব শিঘ্রই দাবানল নামক পরিবেশ দূর্যোগ দেখা দিতে পারে।

৫) ইউক্যালিপটাস গাছ প্রচুর পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ করে, ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।

ক্ষতির কথা বিবেচনা করে সরকার ২০০৮ সালে ইউক্যালিপটাস গাছের চারা উৎপাদন নিষিদ্ধ করে। কিন্তু এখনও সরকারিভাবে গাছ উচ্চমূল্যে কিনে নেয়ায় কৃষক তার চাষ বন্ধ করছে না। উপরন্তু বিদেশী অর্থপ্রাপ্ত এনজিওগুলো বিভিন্ন জেলায় বনায়নের নামে এসব গাছ লাগানো অব্যাহত রেখেছে।

এতো গেলো ব্যাঙ আর গাছ নিয়ে ষড়যন্ত্র। এখন বাংলাদেশে প্রযুক্তির নাম দিয়ে জিএমও খাদ্য যেমন গোল্ডেন রাইস নিয়ে আসা হচ্ছে, পেছনে আছে জাতিসংঘ, ইউএসএইড, বিশ্বব্যাংকের মত সম্রাজ্যবাদী সংস্থাগুলো। আমি নিশ্চিত, বিষয়গুলো এখন বোঝা যাচ্ছে না, কিন্তু ১০-২০ বছর পর এর ক্ষতি নিয়ে সবাইকে কপাল চাপড়াতে হবে।

তথ্যসূত্র:

১) https://bit.ly/2HSnJ3e

২) https://bit.ly/2JvBHFr

৩) https://bit.ly/2Jtdnno

৪) পরিবেশের রাজনীতি, ড. মাহবুবা নাসরীন

৫) https://bit.ly/2r21Zav

৬) https://bit.ly/2HrYllA

৭) https://bit.ly/2Fil2Tg

 

 

 

 

গত ৭ই মে-তে  আমি এক পোস্টে বলেছিলাম, “কেউ যদি মুসলমানদের ধর্ম অবমাননা করতে আসে, তবে যেন মুসলমানরা তাদের গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলে।

কেউ কেউ আমার এমন কথায় উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন। বলেছিলেন- এমন হলে মুসলমানদের উল্টা ক্ষতি হবে।

কিন্তু আমি বলবো, আমার তত্ত্ব মতে, মুসলমানরা যদি সত্যিই নিজ থেকে বিষয়টা করতে পারে, তবে আলটিমেটলি মুসলমানদের কোন ক্ষতি হবে না, বরং উপকার হবে। কিন্তু মুসলমানরা যদি বিষয়টি না করতে পারে, এবং অন্য কেউ যদি বিষয়টি করে দেয় তখন মুসলমানদের ক্ষতি হবে।

বিষয়টি একটু ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে। সারা বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের জঙ্গী বানানোর সিআইএ’র যত প্রজেক্ট তার সবগুলোই হলো ফলস ফ্ল্যাগ’। ‘ফলস ফ্ল্যাগহলো: সিআইএ নিজেই মুসলমান বেশধারী কিছু লোক তৈরী করে, যারা বিভিন্ন স্থানে বোমা ফুটায়, কোপায়, গুলি করে মানুষ মারে, কোপানোর সময় আল্লাহু আকবারবলে, পাসপোর্ট ফেলে যায়। এগুলো সব প্ল্যান, সিআইএ নিজে করে, অথবা তার সহযোগী কোন সংগঠন দিয়ে করায়। মূলত: এই সব ফলস ফ্ল্যাগগুলো পূজি করে মুসলমানদের জঙ্গী বানানো হয়। কিন্তু যে প্লট সিআইএ তৈরী করে না, সেই প্লটে সিআইএ হাত দেয় না বা ব্যবহার করে না। বিষয়টি বোঝার জন্য আবার বলছি- যে নাটক সিআইএসাজায় না, সেই নাটক থেকে সিআইএ ইন্টারেস্ট নিতে আগ্রহী হয় না (ভাবে : আবার কোন ফাঁদ নয়ত ?)।

এ বিষয়টি বুঝার জন্য আমি একজন অ্যাডভোকেটের সাথে আলাপ করেছিলাম। যে বলেছিলো; আপনি যদি প্রতিপক্ষকে সত্যিই ফাঁসাতে চান, তবে প্লট নিজে তৈরী করুন, তবে মামলা শক্ত হবে। অর্থাৎ বানোয়াট হোক তবুও প্রতিটা প্লট-ই আপনার দখলে, আপনি যেমন চাইবেন তেমনটা হবে। প্রতিপক্ষের হাতে কোন প্লট নাই। প্রতিপক্ষের দ্বারা ঘটে যাওয়া প্লটে (যদি সে সত্যিই খুনও করে), আপনি বেশি সুবিধা নিতে পারবেন না । প্রতিপক্ষে হাতে একটা প্লট যাওয়া মানে আপনার দুর্বলতা । সে সেটার সুযোগ নিবে, দেখা যাবে মাত্র ১টা প্লট প্রতিপক্ষের হাতে থাকায় আপনার পুরো প্ল্যান নষ্ট হবে। তাই পুরো ঘটনা নিজ থেকে সাজান, প্রতিপক্ষ সহজে ঘায়েল হবে। আর এ বিষয়টি গোয়েন্দাদের কাছে পরিচিত ফলস ফ্ল্যাগ হিসেবে। অর্থাৎ পুরো ঘটনাই তারা তৈরী করে, দোষটা শুধু প্রতিপক্ষকে দেয়।

ফলস ফ্ল্যাগের অনেক সুবিধা আছে। একটা বড় সুবিধা হলো এটা মেডিকেল সাইন্সের এন্টিবডির মত। অর্থাৎ একবার শরীরে তৈরী হলে, পরবর্তীতে রোগ হওয়ার আগেই তা নিজ থেকে দমন করবে। ঠিক একইভাবে সিআইএ একটা ফলস ফ্ল্যাগ করে জঙ্গী, জঙ্গী আবহাওয়া তৈরী করে রাখবে। তখন ঐ এলাকার কোন মুসলমান যদি কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে যায়, তবে সহজেই তাকে জঙ্গী বলে আটক করা যাবে। জঙ্গী ট্যাগ খাওয়ার ভয়ে তখন কোন মুসলমান কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারবে না।

আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, সম্রাজ্যবাদীরা আমাদের অস্ত্র দিয়ে দখল করেনি, করেছে আমাদের মন মগজে তাদের বানানো চিন্তাধারা ঢুকিয়ে দিয়ে। তারা চায়- আমরা তাদের মত করে চিন্তা করি, তাদের বানিয়ে দেয়া সীমানার মধ্যে যেন আমরা ঘুরপাক খাই, কোনভাবেই তাদের সীমানার বাইরে যেন না যাই, যদি যাই, তবে কিন্তু তাদের সম্রাজ্যবাদ থাকবে না। আমরা যতদিন তাদের মত চিন্তা করবো, তাদের মত করে ভাববো, ততদিন সম্রাজ্যবাদীদের শেকল থেকে বের হতে পারবো না। এজন্য প্রয়োজন তাদের চক্র ব্রেক করা। নিজস্ব লোক দিয়ে, নিজের পলিসিতে চলতে হবে। তখনই তারা নিজেদের গুটিয়ে নেবে, এর আগে না। আলোচ্য পোস্টে মূল থিম হচ্ছে : ওরা ফলস ফ্ল্যাগ দিয়ে মুসলমানদের মানসিকভাবে পঙ্গু করে রাখছে, ভীত করে জবাবশূণ্য করছে। ওদের চিন্তাধারা খোলস থেকে বেড়িয়ে এসে উপযুক্ত জবাব দিন, তাহলেই ওরা পিছু হটতে বাধ্য।

 

 

 

 

# গত কয়েকদিন আগে, আমি স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম: ভারতীয় মুসলমানদের উচিত পৃথক ভূমির জন্য আন্দোলন করা, স্বাধীনতার জন্য চেষ্টা করা। অনেকে পক্ষে-বিপক্ষে বলেছেন। কিন্তু আমার যে ক্যালকুলেশন, তাতে ভারতীয় মুসলমানদের অবস্থা চলমান পরিস্থিতিতে আর ভালো হবে না। দিনে দিনে খারাপ হতে থাকবে।

 

মোদি সরকার এই টার্মের পর ফের নেক্সট টার্মেও আসবে। মোদি ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক করেছে। পুরো দক্ষিণ-পূর্ব ভারতে এখন চরম এন্টি-ইসলামিক পরিবেশ বিরাজ করছে এবং আরো করবে। মায়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যা ও বিতাড়ন, শ্রীলঙ্কায় মুসলিমবিরোধী দাঙ্গা ঐ প্ল্যানের অংশ। বাংলাদেশেও ইসলামবিরোধী শক্তি মাথাচারা দিয়ে উঠবে। কিন্তু ভারতে ক্ষমতা বিজেপির হাতে থাকায় এবং মুসলমানদের আর্থ-সামাজিক অবস্থায় খারাপ হওয়ায়, সেখানে গণহারে মুসলমানরা নির্যাতিত হবে। গরুর জন্য মুসলমান মারবে, মুসলমানদের এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেবে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে দেবে, ঘরের মেয়েদের ধর্ষণ করবে, এবং ধর্মপালনে বাধা দিবে এবং হিন্দু ধর্ম পালন বাধ্য করবে। খুব শিঘ্রই ভারতে যদি ম্যাস জেনোসাইড শুরু হয় তবে আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না।

 

বলুন তো, একজন মানুষ বিদ্রোহ করে কখন ?

যখন তার জীবনের উপর হুমকি আসে,

নারীর সম্ভ্রমের উপর আঘাত আসে,

তখন ধর্মের উপর আঘাত আসে,

যখন বাসস্থানের উপর আঘাত আসে।

আচ্ছা, ভারতীয় মুসলমানদের কোনটার উপর আঘাত আসা কি বাকি আছে ?

 

আমি অনেক ভারতীয় মুসলমানের সাথে কথা বলেছি, তারা কেউ কেউ বলেছেন:

৪৭এক মুসলমানদের মধ্যে একটা অংশ আমাদের সাথে না থেকে পাকিস্তান হওয়ার পক্ষপাতি ছিলো। তাদের কারণে আমরা সংখ্যালঘু। ওরা যদি ভারতে থাকতো, তবে আমাদের এ সমস্যা হতো না। আমরাই তো এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য কাজ করেছি, অখণ্ড ভারত চেয়েছি। আমরা এখন এ দেশ ভাঙ্গবো কিভাবে ”?

 

ভারতীয় মুসলমানদের এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গী এক হিসেবে সত্য আবার এক হিসেবে মেয়াদউত্তীর্ণ। ৪৭’ এ ভারতীয় মুসলমানদের চিন্তা ছিলো সব মুসলমান যদি এক থাকে,তবে ভারতে মুসলমানরা সংখ্যাগুরু হবে। আর সংখ্যাগুরু মুসলমানরা এক সময় ভারতের কর্তৃত্ব করতে পারবে। কিন্তু তাদের কথা ততক্ষণ পর্যন্ত ঠিক, যতক্ষণ ভারত এক ছিলো। কিন্তু ভারত ভাগ হওয়ার পর তো সেই তত্ত্ব আর খাটে না। কারণ মুসলমানদের একটা অংশ পাকিস্তানে যোগ দিয়েছে। এখন তো ভারতের মুসলমানরা সংখ্যাগুরু নেই। তাই আগের চিন্তা নিয়ে বসে থেকে লাভ নেই। এখন তাদের নতুন করে চিন্তা করতে হবে। তাছাড়া ভারতীয় মুসলমানরা যে পড়ালেখা, ব্যবসা কিংবা রাজনীতি করে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা দখল করবে সেটাও সম্ভব না। কারণ গত ৭০ বছরে ভারতীয় মুসলমানদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা অনেক নেমে গেছে। তাই একই নিয়মে চলতে থাকলে আর পুরাতন চিন্তাধারা নিয়ে বসে থাকলে ধুকে ধুকে মরা ছাড়া ভারতীয় মুসলমানদের ভাগ্যে আমি আর কিছু দেখি না।

 

হয়ত ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে কেউ কেউ বলবেন: “ভাই আমরা তো এখনও কেউ কেউ ভালো আছি”।

আমি বলবো: হ্যা ভাই কিছু লোক ভালো থাকতে থাকতে ব্যবস্থা নিন, সবাই মরে গেলে কে ব্যবস্থা নিবে ? আর আজকে আপনি কিছুটা ভালো থাকলে, কালকেও যে ভালো থাকবেন এটা তো বলা যায় না। হিন্দুদের সাম্প্রদায়িকতার কাছে ভালো-মন্দ-প্রিয়-অপ্রিয়র কোন স্থান নেই। সালমান খান তাদের কম প্রিয় নায়ক ছিলো না, তারপরও তাকে জেলে পুরেছে, সাইফ আলী খান কম বড় সুপারস্টার নয়, তবুও তাদের সব সম্পত্তি কেড়ে নিয়েছে, শাবানা আজমী এত বড় নায়িকা হওয়া সত্ত্বেও শুধু মুসলমান হওয়ার কারণে তাকে হিন্দুরা বাসা ভাড়া দেয় না, এহসান জাফরী এমপি হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ তাকে সাহায্য করেনি, গুজরাট দাঙ্গার সময় হিন্দুরা তাকে নৃসংশভাবে হত্যা করে।

 

এসব সেলিব্রেটির থেকে নিশ্চয়ই আপনি বড় নন। সুতরাং আপনাকে শেষ করতেও হিন্দুদের বিন্দুমাত্র চিন্তা করতে হবে না। তাই এখনও যতটুকু পূজি আছে তাই নিয়ে নতুন করে চিন্তা করুন। পুরাতন চিন্তা ঝেড়ে ফেলে দিন। আপনি শেষ হয়েছেন, কিন্তু আপনার ভবিষ্যত প্রজন্মকে অন্তত স্বাধীনভাবে বাঁচতে দিন।

 

 

 

 

 

 

#

শ্রদ্ধেয় পশ্চিমবঙ্গবাসী সানাউল্লাহ খান, ধন্যবাদ আপনার কমেন্ট করার জন্য।

 

আপনার কমেন্টের উত্তর দেয়ার জন্য আমি কমেন্টবক্সকে যথেষ্ট মনে করিনি।

 

তাই নতুন করে পোস্ট লিখতে বসেছি।

 

আপনি কমেন্টে দুটি প্রশ্ন রেখেছেন:

 

প্রথম প্রশ্ন: অনেক লড়াই সংগ্রাম রক্তের বিনিময়ে পাকিস্তান লাভ, তারপরও পাকিস্তান ভাগের প্রয়োজন পড়লো কেন ?

 

দ্বিতীয় প্রশ্ন : ভাগ যখন হয়েই গেলো, তখন পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মানুষ এত অত্যাচারিত কেন ?

 

উত্তর :

 

আপনার কমেন্টের মধ্যে আপনার উত্তর রয়ে গেছে। আপনি কমেন্টে বলেছেন, “অনেক লড়াই সংগ্রাম রক্তের বিনিময়ে পাকিস্তান লাভ” । তারমানে পাকিস্তান সৃষ্টির জন্য যারা দায়ী তারা অন্যায় অবিচার দেখলে তার প্রতিবাদে লড়াই-সংগ্রাম পছন্দ করেন। আর আমার জানা মতে, অন্যায় অবিচার দেখলে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা, সংগ্রাম এটা মুসলমানদের ধর্মেরই নির্দেশ। আর সেই নির্দেশটা পাকিস্তান আর বাংলাদেশের মুসলমানরা পালন করলেও, ভারতের মুসলমানর পালন করেনি। তারা অন্যায় দেখলেও, মুখ বুঝে সহ্য করেছে, কাপুরুষের মত লুকিয়ে থেকেছে। কিন্তু বাংলাদেশের মুসলমানরা সেটা করেনি।

 

সানাউল্লাহ দাদা, আপনার জানার জন্য বলছি, পাকিস্তান সৃষ্টির জন্য দায়ী মুসলিমলীগের শীর্ষ নেতারা কিন্তু এক সময় কংগ্রেস করতো। কিন্তু তারা বঙ্গভঙ্গের সময় দেখলো- কংগ্রেসের হিন্দু নেতারা মুখে মুখে সেক্যুলারিজমের কথা বললেও, তারা একেকজন পাক্কা হিন্দুত্ববাদী। তারা হিন্দু-মুসলিম এক রাষ্ট্রের কথা বলে, বড় মানচিত্র পাওয়ার জন্য, কিন্তু কাজে কর্মে এমন রাষ্ট্র চায় যা হবে হিন্দু নেতৃত্বাধীন। মুসলিমলীগের নেতারা হিন্দুদের চালাকি বুঝে ফেললো। তারা ভাবলো, হিন্দুদের সাথে একত্রে আন্দোলন করলে তারা আমাদের ঠকাবে। তখন তারা পৃথক চিন্তা করলো, তৈরী করলো মুসলিম লীগ। যেই মুসলিম লীগ থেকে পরবর্তীতে বের হয়ে আসলো পাকিস্তান। আপনার জানা থাকার কথা, যে লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে পাকিস্তান ভাগ হয়েছিলো, সেই লাহোর প্রস্তাবের নেতৃত্বে ছিলো কিন্তু একজন বাংলাদেশী, যার নাম শেরে বাংলা একে ফজলুল হক। তারমানে ‍মুসলমানদের পৃথক ভূমি পাকিস্তান তৈরীর পেছনে বর্তমান বাংলাদেশীদের একটা বিরাট ভূমিকা ছিলো।

 

আমি বলেছি, বাংলাদেশীরা সংগ্রাম প্রিয়। তারা অন্যায় দেখলে সংগ্রাম করে, প্রতিবাদ করে। ৪৭-এ দেশভাগের পর বাংলাদেশীরা দেখলো- তারা যতটুকু অধিকার পাওয়ার জন্য আন্দোলন করেছে, তার সবটুকু অধিকার তারা পাচ্ছে না। সেখান থেকেই বাংলাদেশ ভাগ করার জন্য আন্দোলন।

 

তবে এখানে একটু বলে রাখি-

 

৪৭ সালে দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানীরা কতটুকু অধিকার পেয়েছে, আর ঐ একই সময় পশ্চিমবঙ্গবাসী মুসলমানরা কতটুকু অধিকার পেয়েছে ? এটা যদি তুলনা করেন তবে হিসেব মিলে যাবে।

 

পাকিস্তান আমলে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে: বুয়েট, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ বিশ্ববিদ্যালয়স, ৪টি ক্যাডেট কলেজ, ভিকারুন্নিসা নূন স্কুলের মত স্কুল। কিন্তু স্বাধীনতার ৭০ বছর পার হয়ে গেলেও পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানরা তাদের জন্য কোন ভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। ঐ এলাকার মুসলমানরা দীর্ঘদিন ধরে মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছে। মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা উঠতেই মমতার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছিলো, “মুর্শিদাবাদের মুসলমানরা আমাদের রাজমিস্ত্রী হিসেবে কাজ করে, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় হলে আমরা রাজমিস্ত্রী পাবো কোথায় ?”

 

সানাউল্লাহ দাদা, আপনার যুক্তিমতেই বলছি, পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালী মুসলমান সব সময় সংগ্রাম প্রিয়। তারা অন্যায়, অত্যাচার অবিচার দেখলেই প্রতিবাদ করে। তারা যখন বুঝলো, ৪৭-এ দেশ ভাগ হয়ে যতটুকু অধিকার পাওয়ার দরকার ছিলো, ততটুকু পাচ্ছি না, তখন তারা ফের সংগ্রাম শুরু করলো এবং বাংলাদেশের জন্ম দিলো।

 

তবে সানাউল্লাহ দাদা, আপনি যদি পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের উপর করা নির্যাতন এবং বাংলাদেশের মুসলমানদের নির্যাতন এক পাল্লাায় পাবেন, তবে ভুল করবেন। এই দুই দেশের মুসলমানদের মধ্যে কোন তুলনা করার সুযোগ নাই।

 

যেমন, ধরুন বেশকিছুদিন ধরে বাংলাদেশে কোটা নিয়ে আন্দোলন চলছে। কোটা নিয়ে তারাই আন্দোলন করছে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। যদিও যারা কোটা নিয়ে চ্যান্স পাবে, তাদের অধিকাংশ মুসলমান। এখানে আন্দোলনটা হচ্ছে মেধার ভিত্তি নিয়ে। এটা অবশ্যই অনেক আপডেট আন্দোলন। অপরদিকে, ভারতে মুসলমান মেয়েদের ঘর থেকে মেয়ে তুলে নিয়ে হিন্দুরা ধর্ষন করছে, ছেলেদের ধরে ধরে হত্যা করছে, বাড়িঘর পুড়িয়ে ‍দিচ্ছে। এই দুই আন্দোলন কি এক হলো ? ভারতীয় মুসলমানরা তো নূণ্যতম মৌলিক অধিকার পায় না, বাংলাদেশের কোটা নিয়ে আন্দোলনের সাথে কি এর কোন তুলনা চলে ?

 

বাংলাদেশের ছেলে-মেয়েরা যখন মেধার ভিত্তিকে চাকুরী নিয়ে আন্দোলন করছে, তখন পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে অবস্থানটা কোথায়, আসুন দেখি:

 

শিক্ষা:

 

১) পশ্চিমবঙ্গে সাধারণভাবে ৭০ শতাংশ অধিবাসী শিক্ষিত। সেখানে মুসলমানদের শিক্ষার হার মাত্র ৩০ শতাংশ (সরকারী হিসেবে মুসলিম জনসংখ্যা ২৮%, যদিও প্রকৃত হিসেব আরো বেশি হতে পারে)।

 

২) মাধ্যমিক পর্যায়ে মুসলিম ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৫ শতাংশ। কলেজ পর্যায়ে মুসলিম ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৩ শতাংশ। মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা অতি নগণ্য। মুসলমানদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত স্কুল মাত্র ১২টি। কলেজ নেই একটিও। পশ্চিমবঙ্গে প্রতি বছর মেধা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ৮০০ ছাত্রছাত্রী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। এর মধ্যে মুসলিম ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা মাত্র ১০ জন। অপরদিকে প্রতিবছর প্রকৌশল বিভাগে ১০০০ ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়, সেখানে মুসলমান মাত্র ১২-১৫ জন, যার হার ১ শতাংশ।

 

৩) মুসলিম ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার সুযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যে ইসলামিয়া কলেজ ও লেডি ব্রেবোর্ন কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় দেশবিভাগ পূর্বকালে অর্থাৎ ব্রিটিশ আমলে। তখন এ কলেজ দুটি শুধু মুসলিম ছাত্রছাত্রীদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। বর্তমানে ইসলামিয়া কলেজ, (মাওলানা আযাদ কলেজ) ও লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে মুসলিম ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা মাত্র ১০ শতাংশ। এ নগণ্য সংখ্যক ছাত্রছাত্রীকে অন্যান্য বিষয় থেকে বঞ্চিত করে শুধু উর্দু, ফার্সি ও আরবী বিভাগে অধ্যয়নের সুযোগ দেয়া হয়।

 

চাকুরী:

 

১) পশ্চিমবঙ্গে জনসংখ্যার প্রায় ২৮ ভাগ মুসলমান, কিন্তু সরকারি চাকুরীতে মুসলমান সংখ্যা মাত্র ৩ শতাংশ।

 

২) ২০১০ সালে ‘Secretariat of the Public Service Commission, West Bengal’ দফতরে ৩৬ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ১ জন মুসলমানও নেই।

 

৩) ২০১০ এ ক্লার্কশিপ পরীক্ষায় পাস করে মোট ২৭৮ জন। তার মধ্যে মুসলিম মাত্র ৩ জন। অর্থাৎ মুসলিম নিয়োগের হার এক শতাংশের কম।

 

৪) ২০১০ এ পিএসসির দু’দফতর মিলিয়ে মোট নিয়োগের সংখ্যা ৫৫৬ আর মুসলিম নিয়োগ মাত্র ১৩! এখানে মুসলিম নিয়োগের হার মাত্র ২.৩%।

 

৫) পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানরা মোট জনসংখ্যার ২৮% হলেও সরকারি দাবি অনুযায়ী পুলিশে শতকরা ৯ জন মুসলিম চাকরি করছেন। কিন্তু বাস্তবে তাও মেলে না।

 

মুসলিম বিরোধী দাঙ্গা: পশ্চিমবঙ্গে ২০১৩ সালে মুসলিম বিরোধী দাঙ্গার সংখ্যা ১০৬টি। এতে মুসলমানদের হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি।

 

দেশভাগ চেয়ে পাকিস্তানীরা ভালো করেছে কি খারাপ করেছে, এই প্রশ্ন যদি আপনি করেন, তবে আপনারা শুধু শিক্ষা ও চাকুরীর সেক্টরে দুই এলাকার হিসেব মিলান, আমার মনে হয় আপনি সব হিসেব পেয়ে যাবেন। বাংলাদেশের মানুষ এখন মেধার ভিত্তিতে কোটার জন্য আন্দোলন করে, আর পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ মুসলমান এখন পড়ালেখাই পারে না, ভার্সিটি পাশ করে মেধা কোটা আর মুক্তিযুদ্ধ কোটা বুঝতে পারা তো অনেক পরের কথা।

 

সানাউল্লাহ দাদাদের বলবো, আপনারা এখনও মোহের মধ্যে পড়ে আছেন, যার আদৌ কোন ভিত্তি নাই। ১৯০৫ সাল সালে মুসলিমলীগের নেতারা যে কথাটা বুঝেছিলো, আজকে ১১৩ বছর পরেও আপনারা বুঝতে পারছেন না, হিন্দুদের সাথে এক সাথে থাকলে ক্ষতিটা কি হবে। আমি বলবো, মোহ থেকে বেড়িয়ে আসুন, ভারতে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোকে স্বাধীন করার জন্য আন্দোলন করুন। মাওবাদীরা যদি আন্দোলন করতে পারে, সেভেন সিস্টার্স যদি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য আন্দোলন করতে পারে, তবে মুসলমানরা কেন পারবে না ? আমার কথা হলো, ধুকে ধুকে ইদুরের মত অপমানিত হয়ে মরার থেকে, একবারে সিংহের মত সংগ্রাম করে মরে যাওয়া অনেক ভালো।

 

    কমেন্ট বক্স থেকে সানাউল্লাহ খান সাহেবের কিছু প্রশ্নের জবাব-

 

 

Sanaullah Khan প্রিয় সাথী, নয়ন চ্যাটার্জী আমি জানি তুমি চিরকালই সত্যের পক্ষে এবং তথ্য দিয়ে সত্য তুলে ধরার জন্যই তুমি সবার প্রিয় । তোমার কথার জবাব দেওয়ার জন্য আমি কিন্তু মন্তব্য দীর্ঘায়িত করবো না । সামান্য কয়েকটি কথা বলতে চাই... এক. পাকিস্তান সৃষ্টি যে কারণে করা হয়েছিল তার অন্যতম শর্ত হল, পাকিস্তান মুসলিম রাষ্ট্র নয় ইসলামিক রাষ্ট্র হবে সেই শর্ত পূরণ করতে জিন্নাহ থেকে শুরু করে বর্তমান শরীফ সরকার কেউ কখনো সেরুপ তৎপর হয়নি কেন?

সমানভাবে মুসলিম লিগের ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ শেখ মুজিব ইসলামের নামে আওয়ামী লিগ গঠন করে আওয়াম অর্থাৎ জাতি বা বাঙালি জাতিয়তাবাদী আন্দোলনের মাধ্যমে পাকিস্তান থেকে বাংলা ভাষাভাষী অধ্যুষিত পূর্ব পাকিস্তানকে পাকিস্তান হতে বিচ্ছিন্ন করে নেয় । সেখানেও একই ফাঁকি বর্তমান না মুজিব না হাসিনা কেউ ই পরবর্তীতে বাংলাদেশকে ইসলামিক রাষ্ট্রে পরিনত করতে চাইনি বা ভারতীয় বাধ্যবাধকতা মেনে এখনো হতে দেইনি । মূখ্য কথা হলো- আমরা কি চাই? মুসলিম রাষ্ট্র না ইসলামিক রাষ্ট্র? খেলাফতি গনতন্ত্র না ধর্মনিরপেক্ষ গনতন্ত্র? যতদিন না এই প্রশ্নের উত্তর সঠিক ভাবে জানতে পারি ততদিন একে অপরকে কমজোর ইমানদার ভাবতে পারি । কিন্তু বাস্তব বড়ই কঠিন আমরা যাদের উদাহরণ তুলে এদেশে আদর্শ ইসলামিক মুভমেন্ট করবো সেই প্রতিবেশিরা যদি নিজেরাই বিপথগামী হয় তখন আমাদের করনীয় কি হবে? দুঃখজনক সত্য হলো আমাদের থেকে ইমানি আবেগে হয়তো একটু এগিয়ে আছো কিন্তু তা উদাহরণ তুলে ধরার মত নয় । চেষ্টা করবো এ ব্যাপারে ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলমানদের মুল ত্রুটি কোথায় তুলে ধরার জন্য ।

 

Noyon chatterjee 5 সানাউল্লাহ দাদা, আমি এখন যে এলাকায় আছি সেখানের দিনের কর্মচাঞ্চল্য মাত্র শুরু হলো। কর্মব্যস্ততার মাঝে আপনার কমেন্টের উত্তর দিতে দেরি হয়ে গেলো, এজন্য দুঃখিত।

আসলে দাদা, আমার মনে হয় আপনি যেদিকে আলোচনা করতে চাইছেন, সেটা আমার আলোচনার বিষয় ছিলো না। আমি বলিনি পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছে ইসলামীক মুভমেন্টের জন্য। যদি পাকিস্তান সে কারণে সৃষ্টি হতো, তবে নিশ্চয়ই সেটা জিন্নাহর মত লোকের হাতে নেতৃত্ব থাকতো না।

আমি একটা কথা স্পষ্ট করে বলেছি, তা হলো মুসলমানদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র। যেখানে রাষ্ট্রের সব সুযোগ সুবিধা মুসলমানরা ভোগ করবে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে। কিন্তু ভারতে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের কথা বলা হলেও সেখানে সব সুবিধা হিন্দুরা ভোগ করেছে। কারণ হিন্দুরা অসাম্প্রদায়িক নয়। তারা কট্টর সাম্প্রদায়িক। কংগ্রেস অসাম্প্রদায়িকতা বললেও, নেহেরু স্বাধীনতার মাত্র ১ বছর পর ১৯৪৮ সালে হায়দ্রাবাদে গণহত্যা চালায়। আপনি যে তৃণমূল করেন, সেই তৃণমূল নেত্রী মমতা কিন্তু ২০০২ সালে গুজরাট গণহত্যার সময় মোদির সাপোর্টার ছিলো।

আমি আপনাকে বলিনি, আপনাকে ইসলামী খিলাফত করতে হবে। আমি বলেছি, মুসলমানদের আর হিন্দুদের সাথে এক থাকা সম্ভব নয়। এজন্য মুসলমানরা পৃথক রাষ্ট্রের দাবি তুলুক। প্রয়োজনে সংগ্রাম করুন। কেউ কেউ বলছে, ভারতের মুসলমানরা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকে। মেনে নিলাম। এক্ষেত্রে প্রত্যেক এলাকার মুসলিম নেতা বা প্রধানরা একত্রে হয়ে মিটিং করুক, কি করা যায় প্রস্তাব দিক। নীতিগতভাবে এক হয়ে সব এলাকায় বিদ্রোহ শুরু করুক, কৌশল অবলম্বন করুক। আমি নিশ্চিত সারা বিশ্বের মুসলমানরা আপনাদের সার্পোট দিবে। আর বাংলাদেশের মুসলমানরা তো অবশ্যই দিবে। বাংলাদেশের আওয়ামী সরকার হয়ত কিছূ বাধা সৃষ্টি করতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশীদের আপনি চেনেন না, তারা প্রয়োজনে সীমান্ত পার হয়ে আপনাদের সাহায্য করবে। তাছাড়া আমার মনে হয়, ভারত সরকার নিঃসন্দেহে বিপদে। একদিকে তার পাকিস্তান, অন্যদিকে চীন। বাংলাদেশের শুধূ সরকার ভারতপন্থী। কিন্তু পুরো জনগণ এন্টি ভারত (হিন্দু)। সুতরাং আপনারা স্বাধীনতার চাইলে প্রধান সাহায্য বাংলাদেশীদের থেকেই পাবেন। কিছু লাগবে না, শুধু চিকেনস নেকটা আটকে দিলে মোদি সরকার ম্যা ম্যা শুরু করবে।

 

Sanaullah Khan বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চাইলো ভারত সর্বস্তরে সমর্থন ও সহযোগিতা করলো । কাশ্মীর গত 50 বছর ধরে স্বাধীনতা চাইছে বিনিময়ে লক্ষাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে । বিশ্ব বিবেক নিশ্চুপ । এরপরও কি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়?

 

Noyon chatterjee 5 সানাউল্লাহ দাদা, ইংরেজীতে একটা প্রবাদ আছে- নো রিস্ক, নো গেইন। আপনি রিস্ক নিবেন না, কিন্তু আরাম আয়েশে থাকতে চাইবেন সেটা হবে না। বাংলাদেশীদের যেই সাহায্য করুক, বাংলাদেশীরা আসলেই মুক্তিযুদ্ধের সময় রিস্ক নিয়েছিলো, ৩০ লক্ষ লোক রক্ত দিয়েছিলো, যার সুফল তারা আজ ভোগ করছে। তবে কাশ্মীরীদের স্বাধীনতা প্রার্থনার মধ্যে গলদ ছিলো, এ কারণে তারা সুফল পায়নি। আজকে ভারতীয় মুসলমানরা স্বাধীনতা প্রত্যাসা করুক, অনেক শক্তি দাড়িয়ে যাবে তাদের সাহায্য করার জন্য। অন্তত বর্তমান আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি তাই বলে।

আরেকটা কথা আপনাকে বলছি, ভারতে আসলে মুসলমানদের সংখ্যা কত ? ভারত সরকার বহুদিন ধরে ১৮ কোটি বলে প্রচার করছে। আমার মনে হয় এটা মিথ্যা। খবর নিয়ে দেখেন ভারতে মুসলমানদের প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি। কিন্তু তারা লুকিয়ে রেখেছে, যেন মুসলমানরা বিদ্রোহ করতে না পারে। ঠিক হাতির মত অবস্থা। হাতির বিরাট শরীর, কিন্তু তার বিরাট কান আর ছোট চোখের জন্য শরীর বুঝতে পারে না। অনেকে কথার কথা হিসেবে বলে, হাতি যদি বুঝতে পারতো, তার এত বড় শরীর তবে নাকি সে পুরো পৃথিবী গুড়িয়ে দিতো।

সানাউল্লাহ দাদা, আপনাকে অনুরোধ করবো, ভারতে মুসলমানদের প্রকৃত জনসংখ্যাটা আগে বের করেন। এটা মুসমানদের একটা রিবাট শক্তি। অপরদিকে হিন্দুরা সব হিন্দু নয়। এর মধ্যে শিখ, জৈন, অগ্নিউপাসকসহ অনেক ধর্মের লোক আছে। তাছাড়া হিন্দুরা নিজেদের মধ্যে বহু গোত্রে বিভক্ত। এছাড়া পুরো ভারতে ২ হাজারের উপর ভাষা চালু আছে, এটা তাদের জন্য বিরাট সমস্যা । ভারতে আর্মির মধ্যেও সমস্যা। তাদের মূল শক্তি গোরখা ও শিখরা। তারা উভয়ই আলাদা গোরখা ল্যান্ড ও শিখ ল্যান্ড চায়। তাই গণ্ডগোল একটা লাগলে সবাই জেগে উঠবে।

 

Noyon chatterjee 5 সানাউল্লাহ দাদা, ভারতে যদি মুসলমানরা বিদ্রোহ শুরু করে তবে আমার মনে হয় পশ্চিমবঙ্গেই প্রথম শুরু করা উচিত। এর কয়েকটি কারণ:

১) পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানদের জনসংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

২) ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন এই পশ্চিমবঙ্গের বিরাট ভূমিকা ছিলো।

৩) পশ্চিমবঙ্গ স্টেটটি এক কোনায়। ফলে তাকে সব দিক থেকে শত্রুকে মোকাবেলা করতে হবে না।

৪) পশ্চিমবঙ্গ এখনও বিজেপির হাতে যায়নি, ফলে উগ্রহিন্দুরা অন্য স্টেটগুলোর মত সক্রিয় নয়।

৫) পশ্চিমবঙ্গে ভারতের দুর্বল পয়েন্ট চিকেনস নেক অবস্থিত।

৬) বাংলাদেশী মুসলমানরা তাদের সাহায্য করবে।

৭) পশ্চিমবঙ্গের এক কোনায় দার্জেলিং অবস্থিত। দার্জেলিং এর উপজাতি গোষ্ঠীগুলোও স্বাধীন গোর্খাল্যান্ডের জন্য আন্দোলন করছে।

 

 

 

 

 

 

খবর :

১) ধর্মীয় কারণে ধর্ষণ ও হত্যা করা হলো কাশ্মীরের ৮ বছরের শিশু আসিফাকে

২) দিল্লীতে রোহিঙ্গা শিবিরে আগুন দিলো বিজেপি নেতা

৩) আসানসোলে রামনবমীতে মিছিল করে মুসলমানদের উপর আক্রমণ

৪) শুধুমাত্র মুসলমান হওয়ার কারণে পশ্চিমবঙ্গে শরিফুল নামক এক ছাত্রকে হত্যা

এ খবরগুলো আমি শুধু দেখি, কিন্তু কিছু বলি না। কারণ আমার কাছে কেউ জানতে চাইলে আমি সমাধান বলতে পারি, অযথা কথা পেচিয়ে ফেসবুকে লাইক পাওয়া আমার ইচ্ছে হয় না। যদি আমাকে কেউ বলে, “ভারতে এই সাম্প্রদায়িক সমস্যার সমাধান কি ?”

আমি সোজা উত্তর দেবো- ভারতের মুসলমানদের আলাদা রাষ্ট্রের জন্য দাবী তোলা, প্রয়োজনে সংগ্রাম করা।

এক্ষেত্রে কেউ যদি তাদের জঙ্গী, সন্ত্রাসী বলে তবে কিছু করার নাই। কারণ ওদের তো বাচতে হবে ? আসিফা বা শরিফুলের মত জঙ্গীদের তো অন্তত বাচাতে হবে ? কে কি ভাবলো, আর কে কি ট্যাগ দিলো সেটা ভেবে লাভ নাই।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মুসলমানরা বলেছিলো- তারা মুসলমানদের জন্য পৃথক ভূমি চায়। ফলে তারা পৃথক ভূমি পায়। কিন্তু ভারতের মুসলমানরা অতি সেুক্যলার হয়ে বলেছিলো হিন্দু-মুসলমান ভাই ভাই, আমরা এক সাথে থাকতে চাই। সেই গাধামির শাস্তি এখন তাদের ভোগ করতে হচ্ছে । ভারতীয় মুসলমানরা এখন তাদের দেশে নিকৃষ্ট শ্রেণীর মানুষ। শরিফুল নামক ছেলেটি যখন মৃত্যু যন্ত্র রাস্তায় কাতরাচ্ছিলো, তখন তার সহপাঠী জনগণের থেকে সাহায্য চায়। কিন্তু রাস্তার মানুষ যখন শুনে সে মুসলমান, তখন তার সাহায্যে কেউ এগিয়ে আসেনি। (https://bit.ly/2qRqNSH)

তারমানে ‍একশ্রেণীর হিন্দু মুসলমানদের উপর আক্রমণ চালাবে, আর বাকিরা সেই হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ না করলেও দূর থেকে সমর্থন, সাহায্য সব করবে। এবং অধিকাংশ হিন্দুর এটা এখন মনমানসিকতা। তাই ভারতে মুসলমানরা এখন আর হিন্দুদের সাথে স্বাভাবিক কায়দায় থাকতে পারবে না। আপনি যতই সম্প্রাতির মোয়া কচলান, ফলাফল ঐ একই।

তাই ভারতের মুসলমানদের কাপুরুষের মত বসে না থেকে, ধাপে ধাপে মার না খেয়ে, পৃথক ভূমির জন্য যা করতে লাগে সব শুরু করা উচিত। প্রয়োজনে সংগ্রাম করা উচিত। হয়ত একটা বিরাট সংখ্যক মুসলমানকে এজন্য পৃথিবীকে থেকে বিদায় নিতে হবে, তাও সমস্যা নাই। আজ হইলেও মরবা, কাল হইলেও হিন্দুদের মার খেয়ে মরবা। কাপুরুষের মত মৃত্যুর থেকে সংগ্রাম করে মরা ভালো। এর ফলাফল ভবিষ্যত প্রজন্ম পাবে স্বাধীন ভূমি। কোন জাতি-ই কষ্ট ছাড়া পৃথক ভূমি লাভ করে নাই।

 

 

 

 

 

# মাদ্রাসা শিক্ষকরা জাতীয়করণের জন্য আন্দোলন করে,

বেতন বাড়ানোর জন্য আন্দোলন করে,

প্রেসক্লাবে শুয়ে-বসে আন্দোলন করে,

স্যালাইন লাগায় অনশন করে,

সবাই একজোট হয়ে আন্দোলন করে,

দিনের পর দিন আন্দোলন করে।

 আজকে মাদ্রাসাগুলোতে মঙ্গল শোভাযাত্রার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে বলায়, একজন বললো-

কি করবো দাদা ? আমরা নিরুপায়। আন্দোলন করলে জঙ্গী ট্যাগ দিবে, চাকুরী নিয়ে টানাটানি করবে।

মানলাম আপনার কথা, কিন্তু

সবাই এক হয়ে কি আন্দোলন করতে পারতেন না ?

ধর্মের দোহাই দিয়ে কি আন্দোলন করতে পারতেন না ?

সংবিধান ৪১/২ ধারা দিয়ে কি আন্দোলন করতে পারতেন না ?

সংঘবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করলে কেউ কিছু করতে পারতো না,

বরং সাধারণ মানুষ আপনাদের সাপোর্ট করতো।

কিন্তু আপনারা সেটা করছেন না।

 আজকে শুধু চাকুরীর দোহাই দিয়ে আপনারা ধর্মের যায়গায় অধর্মকে সার্পোট করতেছেন।

এটা দিয়ে জাতির কি ক্ষতি যে আপনারা করলেন, সেটা বুঝতে পারছেন না।

এতদিন সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করতো, অন্তত মসজিদ-মাদ্রাসায় হলেও ধর্মটা টিকে আছে।

কিন্তু আজকে সেই বিশ্বাস উঠে গেছে। আজকে রবীন্দ্রের দেবী বন্দনা আর অমঙ্গল পূজা আপনারা শুরু করেছেন, কালকে যদি আপনাদের মাদ্রাসায় দূর্গা-কালী মূর্তি দিয়ে যদি বলে- সকাল বিকাল একবার করে মূর্তিকে প্রণাম করবি। নইলে তোদের চাকরী নট।আমার তো মনে হয় চাকুরীর মায়ায় আপনারা দূর্গা-কালী মূর্তিকেও প্রনাম করতেও দ্বিধা করবেন না।

যে মাদ্রাসায় দেবী বন্দনা আর পূজা হয়, দয়া করে সেগুলোকে আজকে থেকে আর মাদ্রাসা বলবেন না।

 

সেগুলোকে এখন থেকে মন্দির বলে ডাকবেন। এটাই আমার দাবি।

 

 

 

 

 

তথাকথিত সেক্যুলার গোষ্ঠী বাঙালী সংস্কৃতির নাম দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের উপর পহেলা বৈশাখ চাপায় দিতেছে, এর ফল হিসেবে জাতি কি লাভ করতেছে ? নাচ-গান আমোদ প্রমোদ আনন্দ ফূর্তি ? কিন্তু এই সব আমোদ-ফূর্তি দিয়ে জাতি কি করবে ? এই প্রজন্ম জাতির কি উপকারে লাগবে ? দেশের একটা বিপদের সময় এরা কি জাতির সাহায্যে এগিয়ে আসবে ? আমার মনে হয় না।

একটা শ্রেণীকে আমরা প্রায় দেখি, মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে এসব নাচ-গান-ফূর্তিকে চাপিয়ে দিতে চায়। কিন্তু যারা শীর্ষে থেকে এ কাজগুলো করে তারা নিজেরাই কি মুক্তিযুদ্ধ করেছিলো ?

যেমন ধরুন ড. জাফর ইকবাল। মুক্তিযুদ্ধের নামে বই লিখে কম টাকা কামাই করেনি। কিন্তু তিনি কি মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন ? ইতিহাস বলে, বয়স থাকার পরও মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযুদ্ধ করা তো দূরের কথা, উল্টো এলাকার মাদ্রাসায় ভর্তি হতে গিয়েছিলো, রাজাকারদের সমিহ অর্জন করতে। একইভাবে ড. আনিসুজ্জামান। জাতে ক্যালকেশিয়ান। হিন্দুদের পিটানী খেয়ে ৪৭ এ বাংলাদেশে এসেছিলো। কিন্তু আসার সময় সংস্কৃতির নামে হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি নিয়ে এসেছে। নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা বলে দাবি করলেও ৭১ সালে পালিয়ে গিয়েছিলো মায়ানমারে। ইনুরও একই অবস্থা। নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা বলে দাবি করে। অথচ ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় ভারতে কাটিয়েছে।

স্বাভাবিকভাবে একটা কথা উঠে, যে লোকগুলো নিজেরই মুক্তিযুদ্ধ করেনি, মুক্তিযুদ্ধের সময় পালিয়ে ছিলো, তারা যে সংস্কৃতি আমদানি করছে সেটা পালন করে নতুন প্রজন্ম কি দেশের বিপদে এগিয়ে আসতে পারবে ? আমার মনে হয় না।

একটি বিষয়ে অবশ্য সবাই একমত হবেন, পহেলা বৈশাখ এখন তারাই পালন করছে, যারা ৩১শে ডিসেম্বর রাতে থার্টিফাস্ট নাইট পালন করে। তাদের কাছে বাঙালী সংস্কৃতি আর হিন্দি সংস্কৃতির মধ্যে তফাৎ বুঝে না। আমোদ-প্রমোদ আর নাচ-গান নিয়ে মেতে থাকা তাদের কাজ। হিসেব কষলে দেখা যায়, পহেলা বৈশাখ একটা জঞ্জাল প্রজন্ম তৈরী করছে, এর বেশি কিছু না।

 

 

 

 

 

# অসম্প্রদায়িকতা চর্চায় ভারতীয় মুসলমানরা অনেক এগিয়ে। ১৯৪৭-এ দেশ ভাগের সময় বাংলাদেশী মুসলমানরা যেখানে দাবী তুলেছিলো পৃথক মুসলিম ভূমির জন্য, সেখানে ভারতীয় মুসলমানরা হিন্দুদের ভাই ডেকে একই দেশে থাকতে চেয়েছে। গত ৭১ বছর ভারতীয় মুসলমানরা কম অসাম্প্রদায়িকতার চর্চা করেনি। উত্তর প্রদেশের গনেশ পূজার প্যান্ডেলগুলোর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ডোনার হচ্ছে মুসলমানরা। সে দিক বিবেচনা করলে ধর্মনিরপেক্ষ চর্চার দিক থেকে ভারতীয় মুসলমান ধারে কাছে কেউ নেই।

 

কিন্তু এত এত অসম্প্রদায়িকতার চর্চা করে ভারতীয় মুসলমানরা আজ কি পেলো ? কেন স্বাধীনতার ৭১ বছর পরও তাদেরকে প্রমাণ করতে হয় তারা ঐ দেশের নাগরিক কি না ? কেন তাদের শুধুমাত্র মুসলিম হওয়ার কারণে সরকারীভাবে দেশ থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়? কেন সামান্য গরুর মাংশের জন্য তাদের পিটিয়ে মারা হয়, কেন কলিজা ছিড়ে নেয়া হয় ? কেন শিশু বাচ্চা ধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা পায় না ? কেন সরকারীভাবে শুনতে হয়, মুসলিম থাকলে ভারতমাতা পরিপূর্ণ না।

 

আজকে বাংলাদেশকে নিয়ে অনেকে বলে- “অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ মানে শান্তি।আরো বলে, “দেশে শান্তি-সমৃদ্ধ আনার জন্য সকল মুসলমানকে মঙ্গল পূজা করতে হবে”, “মাদ্রাসার ছাত্রদের পেচার মূর্তি নিয়ে নাচানাচি করতে হবে।

 

আমার কথা হলো, অসাম্প্রদায়িকতা চর্চায় যদি শান্তি আসতো হবে ভারতীয় মুসলমানদের ৭১ বছরের অসাম্প্রদায়িকতার চর্চার পরও কেন এত কঠিন অবস্থা ? কেন তাদের উপর এত বৈষম্য ? কেন তাদের নিকৃষ্ট চোখে দেখা হয় ? কেন তাদের বার বার হত্যা করা হয় ?

 

আমি হলফ করে বলতে পারি, ভারতীয় মুসলমানদের যেভাবে অন্য ধর্মের সংস্কৃতি দিয়ে প্রথমে মানসিকভাবে পঙ্গু করা হয়েছে, এরপর মারা হয়েছে। ঠিক একইভাবে বাংলাদেশী মুসলমানদেরও আজকে মঙ্গলপূজা করিয়ে মানসিকভাবে পঙ্গু করে দেয়া হচ্ছে। আমি নিশ্চিত এখন যেভাবে ভারতে মুসলমানরা মার খাচ্ছে, খুব শিঘ্রই বাংলাদেশেও মুসলমানরা হিন্দুদের হাতে মার খাবে। শুধু দেখতে থাকুন।

 

#একদিন_স্কুল_মাদ্রাসায়_যাবো_না,

#একদিন_স্কুল_মাদ্রাসার_গেটে_তালা_মারবো,

#শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে_অমঙ্গল_পূজা_করানো_সংবিধানের_৪১__ধারা_বিরোধী

 

 

 

 

 

 

 

 

পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে এক ইমামের ছেলের বুক চিড়ে কলিজা বের করে নিয়েছে হিন্দুরা। এ ঘটনার পর ঐ ইমাম তার পুত্র হত্যাকারীদের ক্ষমা করে দিয়েছে বলে খরব এসেছে।

সত্যিই বলতে এ ‘ক্ষমাশব্দটা আমাকে খুব ভাবিয়েছে। ক্ষমা তো সেই করতে পারে, যে প্রতিশোধ নিতে পারে। ভারতীয় মুসলমানরা কি হিন্দুদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আদৌ প্রতিশোধ নেয়ার ক্ষমতা রাখে ? যদি নাই রাখে তবে সে ক্ষমা করলো কিভাবে ?

আসলে আনুগত্যতা অনেকভাবে আসতে পারে। কারো প্রতি শ্রদ্ধার কারণে তার প্রতি আনুগত্যতা আসে। আবার কারো চাবুক মারা খেতে খেতে তার প্রতি আনুগত্যতা আসে। যেমন গাধা আর ঘোড়াকে চাবুক মেরে আনুগত্য করা হয়। সেই আনুগত্যতা দেখে যদি আপনি খুশি হন হবে ভুল করবেন। এখানে আনুগত্যতার কৃতিত্ব গাধা বা ঘোড়ার নয়, বরং চাবুকের।

গত এক-দেড়শ’ বছরের ইতিহাসে হিন্দুরা শুধু মুসলমানদের উপর চাবুকই মেরেছে, কিন্তু মুসলমানরা টু-শব্দটি করেনি। মুসলমানদের এই চুপ থাকাকে মুসলমানরা হয়ত ক্ষমাই মহৎ গুন”, “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিইত্যাদি বলে প্রচার করেছে, কিন্তু হিন্দুরা তাদের আক্রমনাত্মক অবস্থা থেকে নিবৃত হয়নি। হিন্দুদের আঘাত আর মুসলমানদের চুপ থাকা, দীর্ঘদিন এই দুই সমন্বয়ে যেটা তৈরী হয়েছে, তা হলো মুসলমানরা গাধা আর ঘোড়ার মত হিন্দুদের আনুগত্য স্বীকার করে নিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ইমাম যে কথিত ক্ষমাশব্দটা উচ্চারণ করেছে, সেটা সম্ভবত সেই আনুগত্যতারই লক্ষণ।

তবে দোষটা কিন্তু আমি হিন্দুদের দিবো না। হিন্দুরা হিন্দুদের স্বভাবজাত কাজ করেছে। সমস্যা হয়েছে মুসলমানদের নিয়ে। মুসলমানদের এই করুণ অবস্থার প্ল্যাটফর্ম মুসলমানরাই তৈরী করেছে। আসানসোলের ইমাম ইমদাদুল্লাহ’র দাদার নাম নাকি মৌলানা মোহাম্মদ আব্দুল রব এবং দাদার বাবার নাম নাকি মৌলানা মোহাম্মদ ঈশা। এরা দুজনেই নাকি ভারত প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেছে। অর্থাৎ এরা মুসলমানদের পৃথক ভূমি চায়নি, চেয়েছে হিন্দু-মুসলিম এক সাথে থাকতে। হিন্দুদের বিশ্বাস করার সেই ঋণ এখন তাদের শোধ করতে হচ্ছে নাতি-পুতিদের কলিজা দিয়ে।

বাংলাদেশেও ‍মুসলমানরা হিন্দুদের খুব বিশ্বাস করে। এবং কোন ‍মুসলমান যদি হিন্দুত্ববাদের বিরুদ্ধে বলে তাকে মুসলমানরাই একঘরে করে ফেলে। যেমন, কিছুক্ষণ আগে একজন ইনবক্সে জানালো, কিছুদিন আগে হাইকোর্টে কুড়িগ্রাম জেলার এক মাদ্রাসা শিক্ষক জাতীয় সংগীতের বিরুদ্ধে রিট করায়, ঐ মাদ্রাসার অন্য শিক্ষকরা তার উপর মনোক্ষুন্ন হয়েছে। তাকে এক ঘরে করে ফেলেছে। বিষয়টি একটু চিন্তা করুন, জাতীয় সংগীতের বিরুদ্ধে কোন মাদ্রাসা শিক্ষক তো প্রতিবাদ করেইনি, কিন্তু একজন প্রতিবাদ করায় সব মাদ্রাসার শিক্ষকরা তাকে চাপ দিচ্ছে !

গতকালকে একটা পোস্টে আমি ‘ফ্রি কৃমিনাশক ওষুধমধ্যে ক্ষতিকারক কিছু থাকতে পারে, এ মর্মে পোস্ট করেছিলাম। ঐ পোস্টে এক মাদ্রাসা শিক্ষক কমেন্টে করেছেন, “আমি আজ আমার মাদ্রাসায় সরকারের দেওয়া এই ঔষধ বিতরণ করেছি। তবে যথেষ্ট যাচাই করেছি। বাকিটা আল্লাহ হেফাজত করুক।

আমি তার উত্তরে কমেন্ট করলাম- “কিভাবে যাচাই করেছেন, আপনার মাদ্রাসায় ল্যাবরেটোরি আছে ? সেখানে টেস্ট করেছেন ? ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া, জীবানু কিংবা হরমোন থাকলে (দীর্ঘমেয়াদে কাজ করবে) সেটা কিভাবে যাচাই করলেন ?”

আসলে আমি নিজেও জানি, ঐ মাদ্রাসায় এমন ল্যাবরেটরি নেই, যেখানে ওষধের ভেতর ক্ষতিকারক কিছু যাচাই করা যাবে। কিন্তু আমার জানা মতে, মাদ্রাসাগুলো প্রতিষ্ঠা হয়েছে ধর্মীয় গ্রন্থ শিক্ষা দেবার জন্য এবং মাদ্রাসা শিক্ষক ও ছাত্রদের অন্তত ঐ গ্রন্থগুলোর উপর বিশ্বাস আছে। আমার কথা হলো- ঐ মাদ্রাসা শিক্ষকরা কি সে সব ধর্মগ্রন্থগুলো দিয়ে ঐ ওষধগুলো যাচাই করতে পারতো না ?

ঐ ধর্মগ্রন্থগুলোতে কি – অমুসলিমদের বিশ্বাস করতে বলা হয়েছে ?

বলা হয়েছে কি, অমুসলিম এনজিওগুলো ফ্রি কিছু দিলেই তা খেয়ে নিয়ো ?

আরো কি বলা হয়েছে, অমুসলিমরা যত ষড়যন্ত্র করুক, তোমরা আল্লাহ ভরসাবলে ঘুমিয়ে থাকো ?

তবে বাংলাদেশের মুসলমানদের জন্য সুখবর হচ্ছে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি দ্রুত ভারতে মত হয়ে যাচ্ছে। মানে হিন্দুরা মুসলমানদের উপর অহরহ অত্যাচার বাড়াবে, আর মুসলমানরা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে সেই অত্যাচার সহ্য করবে। ইতিহাস থেকে মুসলমানরা কেন শিক্ষা নেয় না, সেটাই আমার বুঝে আসে না।

 

 

 

 

 

 

হিজরাশব্দটার ব্যবহারিক অর্থে বিশেষ মনুষ্য শ্রেণীকে বোঝালেও, পরিভাষিকভাবে হিজরাশব্দটা কাপুরুষ বা প্রতিক্রিয়াহীন মানুষকে বোঝায়। যারা শত-সহস্র অন্যায় দেখলেও চুপ করে থাকে তাদের পরিভাষিকভাবে হিজরাবলে।

আজকে মহান ২৬শে মার্চ। মহান স্বাধীনতা দিবস। এ দিনের মূল শিক্ষা ছিলো-দেশের বিরুদ্ধে অন্যায় দেখলে অস্ত্র হাতে ঝাপিয়ে পড়তে হবে”। কিন্তু সে শিক্ষা কি আদৌ মানুষ পাচ্ছে ? আজকের দিনের মূল প্রোগ্রাম- দেশের মানুষ এক সাথে রবীন্দ্রের লেখা জাতীয় সঙ্গীত পাঠ করবে।এই গানের মাধ্যমেই নাকি স্বাধীনতার চেতনা জাগ্রত হবে।

কিন্তু যে গানে স্বাধীনতার কথা নেই, মুক্তিযুদ্ধের কথা নেই, দেশকে কিভাবে রক্ষা করতে হবে সে কথা নেই। আছে- ঘুম পাড়ানি মাসি পিসি মোদের বাড়ি এসোটাইপের সুর দিয়ে জাতিকে কিভাবে ঘুম পাড়িয়ে রাখা যায়, ডিমোরালাইজ করা যায় সেই তত্ত্ব, সে গান গেয়ে জাতির স্বাধীনতার চেতনা জাগ্রত হবে কিভাবে ?

আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত শুনবেন, রনসঙ্গীত। ওদের জাতীয় সঙ্গীত শুনলে মনে হয় দেশের জন্য যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ি, ফ্রান্সের জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যে স্পষ্ট বলা আছে- শত্রুর মাথা কেটে নেয়ার নির্দেশ। আর বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যে আছে ঘুমিয়ে থাকার চেতনা, হিজরা হওয়ার চেতনা। জাতীয় সঙ্গীতের লেখক রবীন্দ্রের কথা বেশি বলতে চাই না। শুধু বলবো বিশিষ্ট পতিতা ব্যবসায়ী রবীন্দ্রর কলকাতার ২৩৫-২৩৬ বউবাজার স্ট্রিটে ছিলো ৪৩টি বেশ্যাঘর, যার ভাড়া ১৪০ রুপি। সোনাগাছি পতিতাপল্লীতেও ছিলো দুইটি ঘর। সত্যি বলতে এই পতিতালয়ের চেতনা দিয়ে তো দেশের মানুষকে জাগ্রত করতে পারবেন না, বরং জাতিকে ডিমোরালাইজ করতে পারবেন।

ইতিমধ্যে এর প্রভাব কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি। ওমুক দেশ বাংলাদেশ দখলের হুমকি দিচ্ছে, ওমুক দেশ সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ ঘটাচ্ছে, তমুক দেশ বাংলাদেশের সম্পদ লুটে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে মানুষের মধ্যে কোন চেতনা আসছে না। চেতনা আসছে, নাগিন ড্যান্স দেয়ার মধ্যে, চেতনা আসছে পিয়ার চোখ মারার মধ্যে, চেতনা আসছে ভ্যালেন্টাইন ডে কিংবা পহেলা বৈশাখে বাঘ-ভল্লুকের মূর্তি নিয়ে নাচানাচির মধ্যে। এটাই হচ্ছে, রবীন্দ্রের জাতীয় সঙ্গীতের প্রভাব, জাতিকে ডিমোরালাইজ বা হিজরা করার ফলাফল। তাই বলতে বাধা নেই, সত্যিই বাংলাদেশ এখন হিজরাদের হাতে।

 

 

 

 

 

ভিডিওর লোকটার নাম শীতাংস গুহা। বাংলাদেশে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা, থাকে আমেরিকায়। শিতাংস গুহা হোয়াইট হাউসের সামনে আন্দোলন করছে, ট্রাম্পের প্রতি আহবান জানাচ্ছে, বাংলাদেশে ট্র্যাম্পকে আক্রমণ করার জন্য, হিন্দুদের রক্ষা করার জন্য। হিন্দুরা নাকি বাংলাদেশে খুব কষ্টে আছে।

গত কয়েকদিন আগে এ লোকটা দৈনিক ভোরের কাগজে একটা কলাম লিখছে (https://bit.ly/2G7tDsW)। তারা বুয়েটসহ প্রায় ১৪ বিঘা মুসলিম সম্পত্তি ঢাকেশ্বরী মন্দিরের জন্য চায়। , (https://bit.ly/2G6h94R)

`মগের মুল্লুকবলে একটা প্রবাদের কথা আপনাদের সবার জানা। আমরা জানি, ইতিমধ্যে ভারতে হিন্দুরা মগের মুল্লুক প্রতিষ্ঠা করেছে। বাবরী মসজিদ হিন্দুদের মন্দির’, ‘তাজমহল হিন্দুদের মন্দির’, ‘কুতুব মিনার হিন্দুদের মন্দির’, এখন তাদের দাবি, মুসলমানদের কাবাঘরও নাকি হিন্দুদের মন্দির।

ভারতের হিন্দুরা ক্ষমতায়, তাই গায়ের জোরে এ ধরনের ঠাকুর মার ঝুলিহয়ত তারা আওড়াতে পারে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশেও তারা একই টাইপের প্রলাপ বকের যাচ্ছে। যদি তাদের উদ্ভট দাবি পূরণ না করা হয়, তবে ট্র্যাম্পের ভয় দেখাচ্ছে, মোদির ভয় দেখাচ্ছে।

বাংলাদেশে হিন্দুরা খারাপ আছেএ কথা একটা পাগলেও বিশ্বাস করবে না। প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের পর থেকে সবাইকে শুনানো হয়, “ইহুদী খারাপ আছে” “ইহুদীরা খারাপ আছে”, সাইকোলোজির ভাষায় যাকে বলে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল। পরবর্তীতে সেই ইমোশনোল ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে পরাধীন হয় ফিলিস্তিনিরা।

বাংলাদেশেও মুসলমানরা হিন্দুদের আদর করে যায়গা দিয়েছিলো। এতদিন নিজের মুখে খাবার না দিয়ে হিন্দুর মুখে খাবার তুলে দিয়েছিলো। হিন্দু-মুসলিম ভাই-ভাই শ্লোগান তুলে বুকে জরিয়ে ধরেছিলো, মন্দিরে গিয়ে পূজা করেছিলো, বৈশাখী পূজায় মূর্তি নিয়ে নেচেছিলো। কিন্তু হিন্দুরা কিন্তু মুসলমানদের কখনই ভাই মনে করেনি। যদি সত্যিই হিন্দুরা মুসলমানদের ভাই মনে করতো, তবে ভুয়া দবি তুলে কখনই তারা ট্র্যাম্পের মত সম্রাজ্যবাদীকে বাংলাদেশে আসার জন্য আহ্ববান করতে পারতো না।

আমি বাংলাদেশের মুসলমানদের বলবো, এ বাংলাদেশ মুসলমানদের নয়। এ বাংলাদেশ হিন্দুদের। এ দেশ হিন্দুদের ভাইদের দেশ মুসলমানদের এ দেশে থাকার কোন অধিকার নাই। তোমরা চলে যাও, হিন্দুদের জন্য দেশ ছেড়ে দাও। ওদের কথা না শুনলে তোমাদের মোদি দিয়ে শায়েস্তা করা হবে, তোমাদের ট্র্যাম্প দিয়ে হত্যা করা হবে। তাই এখনই দেশ ছাড়ো। তোমাদের হয়ত সিরিয়ান আর রোহিঙ্গাদের মত যাওয়ার কোন যায়গা নাই, তোমরা না হয় হিন্দু ভাইদের মায়ায় বঙ্গপোসাগরেই ঝাঁপ দাও।

 

 

 

 

 

 

#  (১) সিরিয়ায় অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে। বাংলাদেশীদের তা নিয়ে ফেসবুকে কান্নাকাটির শেষ নাই। কিন্তু কিভাবে সিরিয়ায় এই মারামারি কাটাকাটি শুরু হলো ? উত্তর হবে: ইসলাম ধর্মীয় গ্রুপগুলো মধ্যে মারামারি দিয়ে। সিরিয়াতে যা চলছে, সেটাকে বলে সিভিল ওয়্যার বা গৃহযুদ্ধ। শিয়া-সুন্নী-আল কায়েদা-আইএস-কুর্দি মারামারি।সুন্নীরা শিয়াদের মেরেছে, শিয়ারা সুন্নীদের মেরেছে, আইএস সিরিয়ার মাজারগুলো ভেঙ্গে দিলো। নিজেদের মধ্যে মারামারির সুযোগ নিয়ে মাঝখান দিয়ে প্রবেশ করেছে রাশিয়া ও আমেরিকা (সিক্রেট ট্রুপস)। ব্যস যা হওয়ার তাই হলো সিরিয়া পরিণত হলো ধ্বংসস্তুপে।

(২) সোমালিয়ায় মারামারি শুরু করলো আল শাবাবআর আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাহনামক দুটি ভিন্ন বিশ্বাসের মুসলিম সংগঠন। আল শাবাব প্রথমে সোমালিয়ায় মাজারগুলো ভাঙ্গলো, এরপর আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাহনামক সংগঠনটি আল শাবাবদের গণহারে হত্যা করলো। পুরো দেশজুড়ে অরাজকতা। এর মধ্যে তৃতীয়পক্ষ হিসেবে প্রবেশ করলো আমেরিকা। সোমালিয়া পরিণত হলো যুদ্ধ বিধ্বস্ত রাষ্ট্র হিসেবে।

(৩) মালিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হলো বোকো হারামআর আজাওয়াদনামক সংগঠনের দ্বন্দ্বের মধ্য দিয়ে। দুটোই মুসলমানদের সংগঠন। বোকো হারামমাজারগুলো ভাঙ্গা শুরু করলো এরপর তাদের দমন করার জন্য দেশটির সরকার ফ্রান্স সেনাবাহিনীকে ডেকে নিয়ে আসলো। ব্যস শুরু হয়ে গেলো ৩ পক্ষের মারামারি, মুসলিম রাষ্ট্র মালি পরিণত হলো ধ্বংসস্তুপে।

(৪) সোভিয়েত ইউনিয়নকে একসাথে যুদ্ধ করে ভাগানোর পর ১৯৮৯ সালে আফগানিস্তান শুরু হয় গৃহযুদ্ধ। গৃহযুদ্ধ হয় তালেবান ও মাজারপন্থী দলের মধ্যে। এই দুইদলের গৃহযুদ্ধের সুযোগে ২০০১ সালে সেখানে প্রবেশ করে মার্কিন সেনাবাহিনী। সোভিয়েত ইউনিয়নকে সবাই একযোগে বের করতে পারলেও মার্কিনীরা যখন ঢুকে তখন বিন্দুমাত্র প্রতিরোধ গড়তে পারেনি দ্বিধাবিভক্ত আফগান মুসলমানরা।

উপরে উদহারণগুলো ভালো করে লক্ষ্য করুণ-

প্রত্যেকটা মুসলিম রাষ্ট্র ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়া শুরু করেছে মুসলিম-মুসলিম মারামারি দিয়ে। প্রথমে তারা নিজেদের ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে দ্বন্দ্ব করে, এরপর তাদের দ্বন্দ্বের সুযোগে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে প্রবেশ করে কোন সম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র। হতে পারে দুটি ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে ধর্মীয় বিশ্বাসের মধ্যে দ্বন্দ্ব আছে, এমনকি একজন সম্ভবত অন্যজনকে মুসলমান হিসেবেও ট্রিট করে না, কিন্তু তারপরও তাদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সুযোগ কিন্তু নেয় তৃতীয় পক্ষ মানে সম্রাজ্যবাদীরা।

বিষয়গুলোর অবতারণা করলাম সম্প্রতি সিলেটের জৈন্তাপুরে ঘটে যাওয়া কওমী ও মাজারপন্থী দলগুলোর বিরোধকে কেন্দ্র করে। খবরে দেখলাম, কোন একটি ওয়াজ মাহফিলে দ্বন্দ্ব থেকে সুন্নীরা ২ জন কওমী ছাত্রকে হত্যা করে। এরপর তার প্রতিশোধ নিতে ঐ এলাকায় যায় কওমী ছাত্ররা। দৈনিক নয়াদিগন্ত রিপোর্টে বলছে, কওমীদের প্রতিশোধে ৩টি গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ি পুড়ে যায়, এ সময় সাদিয়া আক্তার নামে ৩ মাসের একটি শিশু কন্যাও মারা যায়। (http://bit.ly/2oQJ55E)

ঘটনাটি এ পর্যন্ত হলেও ঠিক ছিলো। কিন্তু আমার সন্দেহ সৃষ্টি হয়, যখন শুনলাম হবিগঞ্জে মাজারপন্থীদের এক নেতাকে নাকি অজ্ঞাত মুখোশধারীরা কুপিয়ে হত্যা করেছে । এরপর শুনলাম চাদপুরে আরেক মাজারপন্থী নেতার উপর হামলা করেছে অজ্ঞাত মুশোখধারীরা। উভয় ক্ষেত্রে মাজারপন্থীদের দাবি, এ হামলা নাকি করেছে কওমী ছাত্ররা। কিন্তু আমি তা বিশ্বাস করতে পারিনি, কারণ কওমী ছাত্ররা হামলা করলেও নিশ্চয়ই মুখোশ পড়ে হামলা করবে না। সন্দেহ তৈরী হয়, তৃতীয় পক্ষ কেউ বিষয়টি আরো বড় করতে চাইছে।

এই যখন অবস্থা, ঠিক তখন কওমী নেতারাও উত্তেজিত হয়ে যান। এবং শ্রদ্ধেয় বাবুনগরী, যিনি একাধিক ইসলামী বিষয়ে (নাস্তিক ইস্যু, রাষ্ট্রধর্ম ইস্যু, পাঠ্যপুস্তক ইস্যু) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, তিনি পাল্টা আক্রমনের হুমকি দিয়ে দেশজুড়ে মাজারগুলো ভেঙ্গে দেয়ার ঘোষণা দেন। এমনকি মুফতি ইজহার সাহেবের ছেলে মুফতি হারুন ইজহারও দেশজুড়ে ব্রিটিশ আমলের মত মাজারপন্থী বিরোধী ওহাবী আন্দোলন শুরুর ঘোষণা দেন। (http://bit.ly/2tglPmS) এই দন্দ্বে আরো প্যাচ লাগিয়ে সুন্নী ও মাজারপন্থী দলগুলো তাদেরও পাল্টাপাল্টি কার্যক্রম ঘোষণা করে (http://bit.ly/2CV7JHf)

আফগানিস্তান-সিরিয়া-সোমালিয়া-মালিতে যখন এক মুসলমান অন্য মুসলমানকে মারে, তখন তারা বলে আমরা জিহাদ করতেছি”। সম্প্রতি সিলেটের জৈন্তাপুরেও মুসলমানরা যখন মুসলমানদের মারতে যাচ্ছিলো, তথন তারা বার বার বলছিলো, “আমরা জিহাদ করতে যাচ্ছি” (ভিডিও :http://bit.ly/2FOxcVO)

হা, আপনার সাথে আরেক মুসলমানের বিশ্বাসগত দ্বন্দ্ব থাকতে পারে, কিন্তু তার জন্য মুসলমান ছাত্রকে কেন হত্যা করতে হবে ? কেন আরেকদলের ঘরবাড়িতে আগুন দিতে হবে ? মুসলমান-মুসলমান মারামরি কি জিহাদ ? জিহাদের এই সংজ্ঞা আমি আগে কখন পায়নি ।

আন্তর্জাতিকভাবে ‘প্রক্সি ওয়্যার জোনবলে একটা টার্ম আছে। মানে আমেরিকা-রাশিয়া/চীনের সাথে সম্রাজ্যবাদের দ্বন্দ্ব, কিন্তু তারা নিজ ভূমিতে যুদ্ধ না করে অন্য কোথাও যুদ্ধ করবে, এটাকে বলে প্রক্সি ওয়্যার। যেমন: আমেরিকা-রাশিয়ার প্রক্সি ওয়ার চলছে আফগানিস্তান ও সিরিয়ার উপর। তাদের দ্বন্দ্বে বলি হচ্ছে নিরীহ মুসলমানরা। আমি আজ থেকে প্রায় দেড় বছর আগে এক স্ট্যাটাসে বলেছিলাম, বাংলাদেশ হচ্ছে আমেরিকা আর চীনের প্রক্সি ওয়্যার জোন’। অর্থাৎ সম্রাজ্যবাদী আমেরিকা ও চীন নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ঘটাবে বাংলাদেশের উপর, ফলে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হতে পারে বাংলাদেশ।

আমার বিশ্বাস আমার এ পেইজে ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন সংগঠনের লোকজন আসেন। কেউ সুন্নী, কেউ ওহাবী, কেউ কওমী, কেউবা মাজারপন্থী। আমার বিশ্বাস, এ পেইজের যারা আসেন, আন্তর্জাতিক সম্রাজ্যবাদীদের ষড়যন্ত্রগুলো তারা অন্যদের থেকে অনেক ভালো বুঝেন। আমি এই সচেতন মহলটিকে হাতজোর করে অনুরোধ করবো, আপনারা আপনাদের সংগঠনের প্রধান বা ওস্তাদদের কাছে যান। তাদের বুঝিয়ে বলুন, বর্তমান আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্পর্কে। তাদের বুঝিয়ে বলুন, কিভাবে বিশ্বাসগত দ্বন্দ্ব লাগিয়ে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে প্রবেশ করে সম্র্যাজ্যবাদীরা। তাদের বুঝিয়ে বলুন, এভাবে বাংলাদেশেও বিশ্বাসগত দ্বন্দ্ব বন্ধ না করলে সিরিয়া, আফগানিস্তান, মালি বা সোমালিয়ার মত অবস্থা হতে পারে আমাদেরও। দুই দলের মধ্যে মারামারি কাটাকাটি সুযোগে বিদেশে সেনারা বাংলাদেশে প্রবেশ করবে, তছনছ করবে বাংলাদেশকে। তখন কিন্তু কে সুন্নী, কে ওহাবী আর কে কওমী তা দেখবে না। সবার মা-বাবা-ভাই বোন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই জাতির স্বার্থে, দেশের স্বার্থে মুসলমানদের মধ্যে দ্বন্দ্বকে না বলুন, নিরুৎসাহিত করুন, অবসান ঘটান এই দ্বন্দ্বকে।

 

 

 

 

 

 

মুসলমানদের আগে নিজেদের মধ্যে মারামারি, কাটাকাটি ও দলাদলি বন্ধ করতে হবে।

-মুসলমানরা যদি নিজেদের মধ্যে মারামারি ও দ্বন্দ্ব করে সময় কাটায়, তবে অমুসলিমদের ষড়যন্ত্র রুখবে কখন ?

-মুসলমানরা নিজেদের মধ্যে যত দ্বন্দ্ব করবে, অমুসলিম ষড়যন্ত্রকারীরা তত সুবিধা পাবে।

-মুসলমানরা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব করে অসংখ্য দলে বিভক্ত হবে, আর সেই সুযোগে অমুসলিম ষড়যন্ত্রকারী মুসলমানদের ঘাড় মটকে খাবে।

- মুসলমানদের উচিত নিজেদের মধ্যে দলাদলি ও বিভক্তি না করে সবাই একত্র থাকা। এবং সবাই এক হয়ে অমুসলিম ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিহত করা।

সকল মুসলমানদের প্রতি বলছি- “মুসলমান-মুসলমান দলাদলিকে না বলুন।

 

 

 

 

 

 

# বর্তমানে মুসলিম সমাজ কঠিন সঙ্কটের পথে। মুসলিম সমাজ নিজেই জানে না, তাকে কোন পন্থায় এ সমস্যা উত্তরণ করতে হবে। এ সঙ্কট উত্তরণে মুসলিম বুদ্ধিজীবি মহলও যে খুব এগিয়ে এসেছেন তাও নয়, ফলে দ্রুত দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে পড়ছে মুসলমানরা।

 

আমি বিষয়টি নিয়ে অনেক চিন্তা করেছি এবং সঙ্কট উত্তরণে কিছু পথ নিয়েও ভেবেছি। প্রথমে আমার যেটা মনে হয়েছে, বর্তমানে মুসলিম সমাজের মধ্যে চেতনার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। চেতনাশব্দটা অনেকেই এখন ব্যঙ্গাত্মক অর্থে ব্যবহার করে। তারপরও বহুল প্রচলিত হওয়ায় আমি তা ব্যবহার করলাম। বর্তমানে মুসলিম বলতে কিছু নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে সীমাবদ্ধ ব্যক্তিকে বোঝায়, কিন্তু মুসলিম চেতনাবলতে যেটা বোঝায়, তার যথেষ্ট অভাব বিদ্যমান। এর কারণ হতে পারে, মুসলমানদের ধর্মীয় গুরুরা শুধু ধর্মীয় নিয়ম-কানুন শিখিয়েছে, কিন্তু সেই নিয়ম কানুনের মধ্যে দৃঢ় ও একতাবদ্ধ থাকার জন্য যে চেতনাদরকার সেটার প্র্যাকটিস করেনি। ফলশ্রুতিতে দেখবেন, অন্য চেতনাধারীরা তাদের চেতনাসমৃদ্ধ (যেমন : স্বাধীনতার চেতনা, নাস্তিক্য চেতনা, হিন্দু চেতনা ইত্যাদি) ব্যক্তি বা বস্তুর উপরে আঘাত আসলে তারা একসাথে সব ঝাপিয়ে পড়ছে, কিন্তু মুসলমানদের মধ্যে নিজস্ব চেতনার অভাব থাকায় হাজার হাজার মুসলমান মেরে ফেললেও মুসলমানদের ঘুম ভাঙ্গছে না।

 

কিন্তু কেন এই চেতনার অভাব ? আমি ৪ মাস আগে একটা আর্টিকেল লিখেছিলাম, যার শিরোনাম ছিলো- জেনারেশন গ্যাপ ও মুসলিম সমাজ” (http://bit.ly/2BvD8CQ) লেখাটা যারা পড়েননি, দয়া করে আবার পড়ে নিবেন, তবে আমার এ লেখাটা বুঝতে সহজ হবে, নয়ত পুরো লেখাটা বুঝতে পারবেন না।

 

মুসলমানদের মধ্যে যেটা ঘটেছে তা হলো ব্রিটিশ প্রিয়ডে মুসলমানদের জেনারেশন টু জেনারেশন চেতনার সংযোগটা কেটে দিয়েছে ব্রিটিশরা। এতে মুসলমানদের মধ্যে পূর্ববর্তী প্রজন্মের (যখন মুসলমানরা সুপার পাওয়ার ছিলো) চেতনার ট্র্যান্সফার হতে পারেনি। যার ফলশ্রুতিতে বর্তমানে মুসলমানরা একেবারে চেতনাশূণ্য হয়ে গেছে, অনেকে আবার অমুসলিম চেতনায় চেতনাবান হচ্ছে।

 

এখন মুসলমানদের যেটা করতে হবে, সেটা হলো চেতনার যে সংযোগটি কেটে দেয়া হয়েছে সেটা আবার পুন:সংযোগ করতে হবে। তখনই পূর্ববর্তী চেতনার ট্র্যান্সফার হবে। আর সেই চেতনার ট্র্যান্সফার হলেই কেবল বর্তমান মুসলমানরা চেতনাসমৃদ্ধ হতে পারবে এবং অমুসলিমদের ষড়যন্ত্র থেকে বাচতে পারবে।

 

এক্ষেত্রে মুসলমানরা যেটা করতে পারে, তাদের পূর্ববর্তী চেতনাসমৃদ্ধ প্রজন্মের বিভিন্ন বিশেষ ঘটনাকে টার্গেট করে একটা দিবস নির্ধারণ করতে পারে, এবং বছরে ঐদিনকে উপলক্ষ করে পূর্ববর্তী ঘটনার ব্যাপক আলোচনার মাধ্যমে তা নতুন করে ছড়িয়ে দিতে হবে।

 

যেমন, ধরুন আওয়ামীলীগ ৭ই মার্চ আসলে যায়গায় যায়গায় বঙ্গবন্ধুর ভাষণ চালিয়ে দেয়। এর মাধ্যমে কিন্তু আওয়ামীলীগ সদস্যরা নিজেদের মধ্যে চেতনা সমৃদ্ধ করে, এবং একই সাথে অন্যদের মধ্যে চেতনার বিস্তার ঘটায়। ঠিক একইভাবে ধরুন, যে তারিখে মুসলমানদের শেষ নবী বিদায় হজ্জের ভাষণ দিয়েছিলো ঐ তারিখে পৃথিবীর সব মুসলমানরা ঐ ভাষণের লিখিত রূপ পাঠ করে মাইকে ছেড়ে দিলো কিংবা ঐ ভাষণ নিয়ে গবেষণা করলো, লেখালেখি করলো। এতে দেখা যাবে, ঐ সময়কার চেতনা অটোমেটিক বর্তমান মুসলমানদের মধ্যে ট্র্যান্সফার হওয়া শুরু হয়েছে। হয়ত বলতে পারেন, ভাষণ তো লেখা আছেই, তাহলে আবার দরকার কি ? কিন্তু না, যত আলোচনা করবেন, প্রতি লাইন-দাড়ি-কমা নিয়ে গবেষণা করবেন, চেতনা তত বৃদ্ধি পাবে ও ছড়াবে, এটাই নিয়ম।

 

এভাবে করে যদি বছরে ৩০-৪০টি উপলক্ষ নির্ধারণ করে প্র্যাকটিস করা যায়, তবে মুসলমানদের পুরাতন অবস্থা ফিরিয়ে আনা খুব সহজ হবে, একইসাথে অমুসলিমদের চেতনাসমৃদ্ধ পহেলা বৈশাখ, ভ্যালেন্টাইন ডে, পহেলা ফাল্গুন, সাকরাইন ডে, হ্যালোইন উৎসব ইত্যাদি থেকে মুসলমানরা বেছে থাকতে পারবে বলে মনে হয়।

 

 

 

 

 

আমি অনেক চিন্তা করে দেখেছি, মুসলমানদের চিন্তাধারাগুলো এক রৈখিক

কেউ যদি এক গিট্টু দেয়, তবে তারা হয়ত সর্বোচ্চ ধরতে পারবে,

কিন্তু গিট্টু যদি দুইটা দেয়, তবে অধিকাংশ মুসলমান সেটা ধরতে পারবে না।

বরং উল্টো ক্রিয়া করতে পারে।

জাতীয় বা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যারা দেশ বা বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ করে,

তাদের অধিকাংশই ডবল স্ট্যান্ডার্ড, দ্বিমুখী আচরণ বা ডুয়েল রোল প্লে করে।

তারা দেখায় একটা, কিন্তু করে আরেকটা, এতে সাধারণ মানুষ ধোকা খায়।

আর এ পলিসিতে তারা খুব সহজেই সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কর্তৃত্ববাদীদের মধ্যে ইহুদী রকফেলার পরিবার অন্যতম।

এই পরিবারের একটি আন্তর্জাতিক এনজিও আছে, যার নাম Population Council ।

এ এনজিওটির মূল কাজ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা (বাংলাদেশেও এর শাখা আছে)।

যদিও এনজিওটি মানুষের মাঝে প্রচার করছে, তাদের মূল কাজ- মানুষের জীবন উন্নয়ন করা এবং এইচআইভি ও এইডস বিষয়ক সচেতনা তৈরী করা। কিন্তু বাস্তবে তাদের কাজ ইহুদী ভিন্ন অন্য জাতিগুলোর জণসংখ্যা নিয়ণ্ত্রণ করা। অর্থাৎ সামনে দিয়ে প্রচার করছে একটি, কিন্তু করবে আরেকটি।

আপনারা প্রায় দেখেন- আমেরিকা আর উত্তর কোরিয়ার মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। উত্তর কোরিয়া প্রায় ঘোষণা দেয় আমেরিকাকে উড়িয়ে দেবে। আমেরিকাও তার প্রতিক্রিয়া দেখায়। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার হুমকিকে পূজি করে আমেরিকা দক্ষিণ কোরিয়ায় ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বসিয়ে ফেলে, যা চীনের জন্য বিরাট হুমকি। অর্থাৎ কাজের কাজটি আমেরিকা ঠিক মত করে ফেলে।

গত কালকে আমি একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম, দেওয়ানবাগীকে নিয়ে। আমি জানি, দেওয়ানবাগ অনেকের কাছে বিতর্কিত। কিন্তু ইচ্ছা করেই স্ট্যাটাসটা দিয়েছিলাম দেখতে চেয়েছিলাম, সূক্ষবিচারে মানুষ তার আবেগ ধরে রাখতে পারে কি না। অনেকেই মূল মেসেজটা ধরতে পেরেছে, আবার অনেকে পারেনি। আবেগের কাছে পরাজিত হয়েছে। লেখার মেসেজ ধরতে পারেনি। এখান থেকে একটা সাইকোলোজির সূত্র বেড়িয়ে আসে- আবেগ দিয়ে মানুষকে বিচার-বিবেচনা বোধ তুলে তাকে ডিরেইল করা সম্ভব। যেমন ধরুন- বাল্যবিয়ের প্রায় দেখা যায় আবেগী বিজ্ঞাপন তৈরী করা হচ্ছে। নারী জাতির উন্নয়নে বাল্যবিয়ে বন্ধ করা জরুরী বলে প্রচার করছে। কিন্তু বাল্যবিয়ে বন্ধের আড়ালে কাজ করছে তাদের অন্য পলিসি। একইরকম- ফ্লাইওভার-মেট্রোরেল। এগুলো দিয়ে প্রচার করছে একটি, কিন্তু বাস্তবে আন্তর্জাতিক সম্রাজ্যবাদীদের বিশেষ উদ্দেশ্য সেখানে সার্ভ হচ্ছে।

এ ধরনের বেশ কিছু পলিসি নিয়ে এখন থেকে লিখবো বলে চিন্তা করেছি। হোক বিতর্ক, তবুও লিখবো। এসব বিষয় নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে আলোচনা নেই বললেই চলে।

 

 

 

 

 

খবরের প্রকাশ-

দুই সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের কাছে এমন মনোভাবের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানান, এ ধরনের অনুষ্ঠানের কারণে চলে নানা কর্মযজ্ঞ। এতে সড়কজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। বাড়ে জন ভোগান্তি।এজন্য এসব সামাজিক বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে ঢাকার বাইরে তাদের অনুষ্ঠানগুলো সরিয়ে নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আহ্বান জানিয়ে আসছে দুই সিটি করপোরেশন।” (http://bit.ly/2CXrUJd)

পাঠক ! ভালোভাবে খেয়াল করুণ-

সিটি কর্পোরেশন কর্মকর্তা বলছে- “ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে ঢাকার বাইরে তাদের অনুষ্ঠানগুলো সরিয়ে নেওয়ার কথা।উল্লেখ্য এর আগে কুতুববাগকে ফার্মগেটে অনুষ্ঠান করতে দেয়নি সরকার।

দেওয়ানবাগ বা কুতুববাগ ভালো না খারাপ আমি সে তর্কে যাবো না। আমার আলোচনার বিষয়- সিটি কর্পোরেশন কর্মকর্তার কথাটি। তারা বলছে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুষ্ঠান ঢাকার মধ্যে করতে দেয়া হবে না।

আমার ধারণা সিটি কর্পোরেশন এখানে ধর্মীয় অনুষ্ঠান বলতে শুধু মুসলমানদের অনুষ্ঠানকেই বুঝিয়েছেন। কারণ- প্রতিবছর ঢাকায় অসংখ্য রাস্তা বন্ধ করে দূর্গা পূজা করে হিন্দুরা । কুতুববাগ যেখানে অনুমতি পায়নি সেখানে বিশাল গেট করে রাস্তা বন্ধ করে অনুষ্ঠান করে হিন্দুরা। ঢাকার অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বন্ধ করে মণ্ডপ করা হয়। যার সংখ্যা প্রায় ৩শ’। মন্দির থাকার পরও মন্দিরের বাইরে মণ্ডপ বানিয়ে রাস্তাঘাট ও যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু সে সময় সিটি কর্পোরেশন বলে না, ঐ সব অনুষ্ঠান ঢাকার বাইরে নিয়ে যাওয়ার কথা। আওয়ামীলীগ-যু্বলীগ-ছাত্রলীগ প্রায় রাস্তা বন্ধ করে প্রোগ্রাম করে, তখন সেটা নিয়ে সমস্যার কথা কেউ বলে না। কিছুদিন আগে ঢাকা ধানমন্ডির আবহানী মাঠে ৫ দিন ব্যাপী ভারতীয় শিল্পীদের এনে উচ্চাঙ্গ সংগীত অনুষ্ঠান করা হয়, সে অনুষ্ঠানের কারণে ধানমন্ডি-মুহম্মদপুর-রায়েরবাগের তৈরী হয় প্রচণ্ড যানজট। যদিও সেটা নিয়ে এখন পর্যন্ত কেউ উচ্চবাচ্চ করেনি। অথচ যানজট ও পরিবেশদূষণের কথা বলে, কোরবানীর হাটগুলো ঢাকা সিটির বাইরে সরিয়ে দেয়া হয়েছে, এতে কোরবানীর পশু কিনতে তৈরী হচ্ছে মারাত্মক সমস্যা।

দেওয়ানবাগ ও কুতুববাগকে সরকার অনুষ্ঠান সরিয়ে নেয়ার কথা বলতেই সংগঠনগুলো অবনত মস্তকে তা অনুসরণ করেছে এবং বলেছে- “সরকার যে সিদ্ধান্ত দেবে আমরা তা মেনে নেবো।সরকারের সাথে তাদের অভ্যন্তরীণ কোন চূক্তি বা সমঝোতা হয়েছে কি না তা আমার জানা নাই,

কিন্তু, আমার প্রশ্ন হচ্ছে সিটি কর্পোরেশন কর্মকর্তার সেই বক্তব্য- ঢাকার সিটির ভেতরে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠান করতে দেয়া হবে না”- এর মাধ্যমে কি ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে ? সরকার তার অনুগামী কুতুববাগ ও দেওয়ানবাগের মাধ্যমে আবার টেস্ট কেস করছে না তো ? অন্য মুসলমানরাও যখন অনুষ্ঠান করতে যাবে, তখন হয়ত বলবে- দেওয়ানবাগ-কুতুববাগ সরকারের নির্দেশ মেনে অনুষ্ঠান সরিয়ে নিয়েছে, আপনারাও সরিয়ে নিন। ঢাকার ভেতর আপনাদের (মুসলমানদের) কোন অনুষ্ঠান করতে দেয়া হচ্ছে না অনেক আগে থেকেই, আপনাকেও সেই নির্দেশনা মানতে হবে।

সরকার রিসেন্ট এমন কিছু উদ্যোগ নিয়েছে, যা দেখে আমি সত্যি হতবাক হয়েছি, কারণ- তারা অতি সূক্ষভাবে কৌশল করে মুসলমানদের দুর্বল করার উদ্যোগ নিয়েছে, এজন্য তারা বেছে নিয়ে মুসলমানদের দ্বন্দ্বের বিষয়গুলোকে। এই দ্বন্দ্ব দিয়ে ঢুকে তারা একদল হয়ে অন্যদলকে ঘায়েল করছে। আর সেই ঘায়েল ঘটনাকে প্রচার করে সকল মুসলমানদের উপর বিধিনিষেধ দিচ্ছে। এসব কৌশলের কারণে মুসলমানরা নিজের ক্ষতি সম্পকের্ বুঝতেছেও না, উল্টো নিজেদের গর্ত নিজেরাই খুড়ে দিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ইসলামী দল ও সংগঠনের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও বিভক্তি বাড়ছে। এ ব্যাপারগুলো নিয়ে আরো বিস্তারিত ও গভীর আলোচনার দরকার আছে।

 

 

 

 

 

 

 

১) খবর

নির্বাচনের আগে ওয়াজ মাহফিল নয়: ইসি (https://bit.ly/2THvxbe)

মন্তব্য : সংবিধান অনুসারে বাংলাদেশের মানুষ ধর্ম পালন ও প্রচারের অধিকার রাখে। ওয়াজ মাহফিল যেহেতু সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের ধর্ম পালনের অনুসঙ্গ, তাই সেটা বন্ধ করার অধিকার ইসি কখনই রাখে না, এবং সেটা অবশ্যই সংবিধানের ২ ও ১২ ধারা বিরোধী । ইসি বলতে পারতো, ওয়াজের মধ্যে রাজনৈতিক আলাপ না করার জন্য। কিন্তু সেটা না বলে ডাইরেক্ট ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করা, অনেকটা মাথা ব্যাথা হলে মাথা কেটে ফেলার মত অবস্থা। ওয়াজের মাধ্যমে লোক জমায়েতের কথা যদি বলে, তবে কয়েকদিন পর এরা তো নির্বাচনের কারণে মসজিদের নামাজও বন্ধ করে দেবে। বলবে- নির্বাচনের কারণে মসজিদের নামাজ বন্ধ করো। এ ধরনের মাথামোটা লোকগুলোকে কেন যে এসব গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়া হয়, তা আমার মাথায় আসে না। এগুলো ঘাড় ধাক্কা দিয়ে পদ থেকে বহিষ্কার করা উচিত।

২) খবর – বিয়ে করেছে ফারজানা ব্রাউনিয়া (https://bit.ly/2DYL9lK)

মন্তব্য : এটি ফারজানা ব্রাউনিয়ার তৃতীয় বিয়ে। তবে সেটা সমস্যা নয়। সমস্যা হলো পাত্র লে. জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী, যে সাবেক এসএসএফের মহাপরিচালক ও ডিজিএফআইর পরিচালক। বাংলাদেশের বাল্যবিয়ে বন্ধ করার পশ্চিমা এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী অর্থলোভী ফারজানা ব্রাউনিয়া মার্কিন নেটওয়ার্কে চলে। অপরদিকে শেখ হাসিনার আমলে এসএসএফের মহাপরিচালক ও ডিজিএফআইর পরিচালক হওয়া হাসান সারওয়ার্দীর এন্টি-মার্কিন নেটওয়ার্কের লোক হওয়া স্বাভাবিক। সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী দুইজনের মধ্যে যখন বিয়ে হয়, তখন স্বাভাবিকভাবে একটা প্রশ্ন আসে, ফারজানা হাসান সারওয়ার্দীকে শিকার করলো ? নাকি হাসান সারওয়ার্দী ফারজানাকে ?

৩) ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিলো আওয়ামীলীগের সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী একে খন্দকার (https://bit.ly/2QfpVWI)

মন্তব্য : একে খন্দকার মার্কিনপন্থী লোক। এতদিন মার্কিনপন্থীদের ডাইরেক্ট কোন দল ছিলো না। তাই এরা আওয়ামীলীগের মধ্যে ঢুকে ছিলো। এখন মার্কিনপন্থীরা দল খুলেছে, তাই আওয়ামীজোট ছেড়ে এরা নিজের দলে ঢুকে পড়লো। শুধু একে খন্দকার না, আমি আরো আগেই বহুবার বলেছি- এরকম আরো বহু মার্কিনপন্থী আওয়ামীজোটের মধ্যে ঢুকে আছে, যারা আসলে আওয়ামীলীগের গলার কাটা, যারা কাজ করবে সুযোগ বুঝে। তথ্যমন্ত্রী ইনু, অর্থমন্ত্রী মুহিত, শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর সবগুলো মার্কিনব্লকের লোক, কিন্তু ঢুকে আছে আওয়ামী সরকারের ভেতর। এরাও সুযোগ বুঝে একে খন্দকার হয়ে যাবে, তখন আওয়ামীলীগ বুঝবে ফাটল কাকে বলে।

৪) ঢাকায় নগ্ন নারীদেহের ছবির প্রদর্শনী (https://bit.ly/2BuIiP2)

মন্তব্য : ঢাকার উত্তরায় গ্যালারি কায়ায় চলছে নগ্ন নারী দেহের ছবির প্রদর্শনী। সত্যিই বলতে ইউরোপ-আমেরিকায় শিল্প বলতে বোঝায় হয়, নগ্ন নারী দেহের ছবি-মূর্তিকে। বাংলাদেশের মত মুসলিম দেশে অবশ্য সে চর্চাটা ছিলো না। কিন্তু একটি মহল বাংলাদেশে সেই চর্চাটা শুরু করতে বেশ কিছুদিন যাবত উঠেপড়ে লেগেছিলো। বিশেষ করে গত ২রা ফেব্রুয়ারি শিল্পকলা একাডেমিতে ঢাকা আর্ট সামিট এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ইনু বলেছিলো, “নগ্ন নারীদের ছবি লিঙ্গ বৈষম্য দূর করে।” (https://bit.ly/2FADlZ8)

ইনুর বক্তব্যের পর আমি বুঝেছিলাম, খুব শিঘ্রই বাংলাদেশে নগ্ন নারীদেহের ছবির ব্যাপক প্রচলন শুরু হতে যাচ্ছে, যা একটি রেজাল্ট দেখা যাচ্ছে এখন উত্তরায়।

 

 

 

 

 

কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা আগে কোন রাজনৈতিক দল করতো কি না?

একাত্তর টিভি টকশোকারীরা সেই প্রশ্ন তুলেছে ।

এখন আমার প্রশ্ন হলো, একাত্তর টিভির মূল মালিক হলো মেঘনাগ্রুপের প্রধান মোস্তফা কামাল।

মোস্তফা কামাল তো এক সময় এলাকায় বিএনপি নেতা ছিলেন।

তিনি আওয়ামী আমলে হঠাৎ আওয়ামীলীগ সাজলেন কেন ?

আর সাজলেন তো ভালো কথা, তিনি টিভি খুলে কার চেতনা কি ছিলো তার মাপকাঠি করছেন কেন ? বিএনপির আমলে তিনি নিজে কেন বিএনপি চেতনায় ছিলেন এবং পরে কেন চেতনা চেঞ্জ করলেন, তা বুকে হাত দিয়ে একবার বলুক ? (এলাকাবাসী সব জানে)

আমাদের গ্রামের ভাষায় একটা কথা আছে, “নিজের গোয়ায় এত গু, অপরে কয় থু থু”।

একাত্তর টিভির মালিকের আসল রাজনৈতিক আদর্শ বের করা হোক। তার মেয়েরা তো হিজাবী। আর একাত্তর টিভি মত হচ্ছে হিজাবি মানেই জামায়াতি।

 

 

 

#  ‘মাদ্রাসায় জাতীয় সংগীত পাঠ করতেই হবে’, এটা সিআইএ প্রজেক্ট। এ ব্যাপারে আজ থেকে ১ বছর আগে বাংলাদেশে তিন সিআইএপন্থী ব্যক্তি জাফর ইকবাল, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এবং মুন্নী সাহা বক্তব্য দেয়। তারা যথাক্রমে সময় টিভি (https://youtu.be/FgpNcc2Mu-w), যমুনা টিভি (https://youtu.be/seIzXUcspLg) এবং এটিএন বাংলায় (https://bit.ly/2GVkjcR) মাদ্রাসায় জাতীয় সংগীত পাঠ করা নিয়ে দিকনির্দেশনা দেয়। তাদের দেয়া প্ল্যানই বাস্তবায়ন করে আওয়ামী সরকার।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মার্কিন সম্রাজ্যবাদবিরোধী ছিলেন। বিভিন্ন দলিলপত্রে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে সিআইএর’ সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। আমি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে সব সময় মার্কিন সম্রাজ্যবাদ বিরোধী ভাবতাম। কিন্তু তিনি কোন উদ্দেশ্যে সিআইএ প্রজেক্টগুলো বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন তা আমার বুঝে আসছে না। শুধু জাতীয় সংগীত নয়, পাঠ্যবইগুলোতেও সিআইএ তথা ইউনেস্কোর দিক নির্দেশনা নিয়ে বিতর্ক তৈরী করা হয়। সেটার ক্ষত না সারতেই নতুন করে কেন মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় ভাবধারাকে মার্কিন সম্রাজ্যবাদীদের প্ল্যানে নষ্ট করলেন তা সত্যিই বিষ্ময়কর।

শেখ হাসিনা নিজেই বলেছেন, “২০০১ সালে আমেরিকার কাছে গ্যাস বিক্রি করতে রাজি হয়েছিলো বিএনপি, আমি হইনি। তাই বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিলো।

এ সূত্র ধরে অনুমান করা যায়, ২০১৮ সালের নির্বাচনে মার্কিন সম্রাজ্যবাদীদের সমর্থন পাওয়ার জন্য নিশ্চয়ই শেখ হাসিনা তাদের কাছে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় অনুভূতি বিক্রি করে দিলেন। দেশের শীর্ষ পর্যায় থেকে যদি এত বড় বিশ্বাসঘাতকতা হয়, তবে ঠেকাবে কে ?

 

 

 

#

আন্তর্জাতিক নারীবাদী কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত থাকায়, আমি অপেক্ষায় ছিলাম, কবে বাংলাদেশে বৈবাহিক ধর্ষণটার্মটার আমদানি করা হয়। অবশেষে অপেক্ষার পালা শেষ হলো। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর অন্যতম বাংলাদেশী মুখপাত্র দৈনিক প্রথম আলোনিয়ে আসলো: বৈবাহিক ধর্ষণকথাটি। তাদের দাবি, বাংলাদেশে ৯০% নারী নাকি বৈবাহিক ধর্ষণের শিকার (সবার ঘরে সিসি টিভি ফিট করে দেখছিলো)। খবরটি হেডিং হয়েছে: বৈবাহিক ধর্ষণ সম্পর্কে অধিকাংশ নারীর ধারণা নেই”, মানে তাদের প্রাথমিক কাজ নারীদের মনে বৈবাহিক ধর্ষণথিউরীটা প্রবেশ করানো। (https://bit.ly/2KWMnOD)

 

বৈবাহিক ধর্ষণবলতে তারা বোঝায় স্ত্রীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে স্বামীর জোর করে যৌন সম্পর্ক’। স্বাভাবিকভাবে তখন একটা প্রশ্ন আসে, স্বামীর ইচ্ছা না হলেও স্ত্রী যদি সম্পর্ক করতে যদি চাপ দেয়, তবে সেটাও কি পুরুষ ধর্ষণ হবে ?

 

আসলে এ ধরনের প্রশ্ন অবান্তর। কারণ বিয়ের মাধ্যমে একজন নারী ও পুরুষের সম্পর্ক লিগ্যালাইজড হয়ে যায়, বাকিটা তাদের মধ্যে বোঝাপড়ার বিষয়। কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ককে যারা ধর্ষণশব্দ দ্বারা বিতর্কিত করতে চায়, তারা আসলে বিয়েনামক বিষয়টিকেই বিতর্কিত করতে চায়। আসলে বিষয়গুলো খুব স্পর্শকাতর বিষয়। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক নির্ভর বিশ্বাস ও আস্থার উপর। কিন্তু বিশ্বাস ও আস্থার বিষয়গুলো বৈবাহিক ধর্ষণটাইপের শব্দ দ্বারা নড়বড়ে করা হবে, তখন একজন স্বামীকে স্ত্রীর কাছে অপরাধী বলে মনে হতে শুরু করবে। আর অপরাধী স্বামীর সাথে তো আর ঘর করা যায় না। বৈবাহিক ধর্ষণদেখিয়ে স্ত্রীরা স্বামীকে হয়রানি করবে, আর পুরুষ অনেক সময় ভয়ে বিয়েই করবে না। অর্থাৎ নারী-পুরুষের মধ্যে চরম দ্বন্দ্ব তৈরী হবে। এ সিস্টেমে সমাজে বিয়ে উঠে যাবে, কিন্তু দুইজন নারী-পুরুষের যখন যৌন আকাঙ্খা তৈরী তখন তারা চূক্তি অনুসারে লিভ টুগেদার করবে, কিন্তু এছাড়া তাদের মধ্যে আর কোন সামাজিক সম্পর্ক থাকবে না।

 

এ বিষয়গুলো মূলত ভাইরাসের মত। এগুলো হাইপ্রোফাইল সাইকোলোজিস্ট দ্বারা সমাজে ছড়ানো হচ্ছে। প্রথমে মুভিতে ধর্ষণ দৃশ্য, পর্নমুভিতে বিডিএসএম, স্যাডিজম, ম্যাসাকিজম (মর্ষকাম) দিয়ে সমাজে পুরুষের মধ্যে বিষয়গুলো ছড়ানো, অপরদিকে নারীকে শেখানো হচ্ছে বৈবাহিক ধর্ষণ’। এগুলো ইহুদীদেরই দুইহাতের কাজ। মানুষের মনে এগুলো ঢুকে পড়লে সমাজ ব্যবস্থা ধ্বংস অনিবার্য।

 

এসব সম্পর্কে মুসলমানরা যদি এখনই সতর্ক না হয়, তবে ইহুদীরা মুসলমানদের সমাজ ব্যবস্থাকে ভেঙ্গে টুকরা টুকরা করে দেবে। তাই এখনই সাবধান।

 

খবরের সূত্র: https://bit.ly/2KWMnOD

 

 

 

 

#

সেলিব্রেটি ওরশিপ যার বাংলা করলে দাড়াবে ‘সেলিব্রেটি পূজাবা সেলিব্রেটির আরাধনা’। অভিধানগুলোতে ফিল্ম, টেলিভিশন, স্পোর্টসের নায়ক-গায়ক বা খেলোয়াড়দের প্রতি অতিমাত্রায় আবিষ্ট থাকাকে সেলিব্রেটি ওরশিপ বলে। বর্তমানে এ বিষয়টিকে অনেকে এক ধরনের মানিসিক রোগ বলেও বিবেচনা করে। যাকে বলে Celebrity worship syndrome (CWS) । বেশ কিছুদিন আগে, বাংলাদেশের এক ছেলের ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে আমি অবাক হয়েছিলাম। সে বলেছিলো, “আমি যদি কখন মেসির পায়খানাও পাই, তবে সেটা পায়েস হিসেবে খেয়ে নিবো”।

 

মানুষ সৃষ্টিগতভাবে অনুকরণ প্রিয়। আর সেই অনুকরণটা ‘সেলিব্রেটিদেরকেই তারা সহজে করে থাকে। পৃথিবীতে সেলিব্রেটি থাকতেই পারে, কিন্তু সমস্যা হলো সেই সেলিব্রেটি যখন ভাবা হয় নায়ক-গায়ক খেলোয়াড় বা বর্তমান মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের থেকে। কারণ বর্তমানে মিডিয়া চালায় ইহুদীরা। তাই তারা কথিত সেলিব্রেটির সুযোগটাও নেয়। তারাই মিডিয়া পাওয়ারকে কাজে লাগিয়ে ইচ্ছামত সেলিব্রেটি বানায় (অথবা রিক্রুট করে) এরপর নিজেদের কাজে লাগায়। সোভিয়েত রাশিয়া ভাঙ্গার পর তাদের ভেতরে ঢুকে থাকা অনেক মার্কিন গোয়েন্দার সংস্থা সিআইএর এজেন্টের নাম প্রকাশ পায়। দেখা যায়, সে সব এজেন্টের একটা বড় অংশ সিনেমা অভিনেতা-অভিনেত্রী, খেলোয়াড়, গায়ক বা গায়িকা। বাস্তবিক অর্থে এই সেলিব্রেটিরা সবাই দুইটা জিনিসের পাগল। এক- টাকা, ২-মিডিয়ায় প্রচার। ইহুদীরা এ দুইটার লোভই তাদের দেখায়, ফলে তারা সহজেই এজেন্টে পরিণত হয়। সেলিব্রেটিদের দিয়ে কর্পোরেট পন্যের প্রচার তো খুব স্বাভাবিক বিষয়, ইহুদীরা তাদের দিয়ে নিজস্ব মতবাদগুলোও প্রচার করে।

 

গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশী মিডিয়ায় ভারতীয় নায়িকা ‘প্রিয়াংকা চোপড়াকে বার বার দেখা যাচ্ছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইউনিসেফের দূত হিসেবে প্রিয়াংকা বাংলাদেশে এসেছে। ইতিমধ্যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ যায়গায় দেখা করেছে। বাংলাদেশের সকল মিডিয়া তাকে প্রাণপনে হাইলাইট করার চেষ্টা করেছে। সোজা ভাষায়, প্রিয়াংকা কোন একটি বিশেষ মেসেজ নিয়ে এসেছে এবং নায়িকা হওয়ায় তার মেসেজটা খুব সহজে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে প্রবেশ করবে এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

 

প্রিয়াংকার চোপড়া ভারতীয় হলেও সে কিন্তু লেখাপড়া করেছে আমেরিকায়। মিডিয়ায় তার শুরু ২০০০ সালে মিস ওয়ার্ল্ডে প্রথম স্থান দিয়ে। এরপর ২০০২ সালে ভারতীয় সিনেমায় অভিনয় শুরু। ২০১৭ সালে ফোর্বস বিশ্বের ১০০ জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির তালিকায় প্রিয়াংকার স্থান দেয় এবং ২০১৮ সালে টাইমস ১০০ জন শক্তিশালী ব্যক্তির তালিকায় প্রিয়াংকার স্থান দেয়। গত কিছুদিন আগে ব্রিটিশ দস্যু পরিবারের বিয়েতে প্রিয়াংকা ব্রিটিশ পোষাক পরে উপস্থিত হয়। অর্থাৎ প্রিয়াংকাকে ইহুদীবাদী মিডিয়া বার বার হাইলাইট করতে চাইছে। উদ্দেশ্য তাকে দিকে কোন কাজ করাবে। ঠিক কয়েকদিন পর দেখা গেলো সে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ইস্যুতে এসেছে। সে ঠিক কেন এসেছে হয়ত কয়েকদিন পর সেটা স্পষ্ট হবে। তবে একটি বিষয় আপনাদের বলে রাখি (সবাই বিষয়টি বুঝবেন না), সম্ভবত প্রিয়াংকা সরোস-রানিয়া-পোপ-ট্রুডো নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত।

 

কয়েকদিন আগে টিভি অভিনেতা মোশাররফ করিমকে দেখা গেছে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিশেষ মতবাদ প্রচার করতে, যদিও সে ধরা পড়ে যায়। আসলে সে কাজটি করেনি, কেউ তার সেলিব্রেটি শক্তিটাকে কাজে লাগিয়ে নিজস্ব মতবাদ প্রচার করতে চেয়েছে। শুধু এ কয়েকটি নয়, এরকম অসংখ্য কথিত সেলিব্রেটিকে ইহুদীরা রিক্রুট করছে নিজস্ব মতবাদ প্রচারের জন্য। ভারতের শচীন টেন্ডুলকারকেও দেখলাম ইউনিসেফ নিয়েছে, তার দ্বারাও সামনে কোন ঘটনা ঘটতে পারে।

বাংলাদেশে আওয়ামীলীগও ঐ একই পলিসি অবলম্বন করেছে। নিজেদের দলে নিয়েছে মমতাজ, আসাদুজ্জামান নূর, তারানা হালিম বা কবরীকে, যেন সাধারণ মানুষ তাদের প্রিয় টিভি অভিনেতা-অভিনেত্রী বা গায়ক-গায়িকাকে দেখে আওয়ামীলীগের প্রতি আকৃষ্ট হয়। এখন সামনে আসছে শমী কায়সার। খুব শিঘ্রই হয়ত দেখা যেতে পারে সাকিব আল হাসান বা মাশরাফি বিন মতুর্জাকে।

 

আমি চাই, পৃথিবীতে ইহুদীবাদী সম্রাজ্যের পতন ঘটুক। কিন্তু এর জন্য মুসলমানদের কথিত সেলিব্রেটি ওরশিপ থেকে বেড়িযে আসতে হবে। কোন অভিনেতা-অভিনেত্রী, নায়ক-নায়িকা বা ক্রিকেটার-ফুটবলারকে অন্ধ অনুকরণ বা মানা যাবে না (জাফর ইকবালও মিডিয়ার বানানো কথিত সেলিব্রেটি ছিলো)। ইহুদীবাদী মিডিয়া যাকে হাইলাইট করছে, তাকেই সন্দেহের চোখে দেখতে হবে। কি কারণে, কি উদ্দেশ্যে তাকে হাইলাইট করা হচ্ছে, তার কারণ অনুসন্ধান করতে হবে। এটা ঠিক তাদের অনেকের মধ্যে তার সেক্টরে প্রতিভা থাকবে এবং তার দ্বারাই সে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করবে। স্বাভাবিক ইহুদীরা তো ঐ প্রতিভাধারী লোকগুলোকেই দলে টানতে চাইবে, তাহলে তাদের কাজ তাড়াতাড়ি হবে। পৃথিবীতে অনেক প্রতিভা আছে, কিন্তু ঐ ব্যক্তিটিকেই কেন ইহুদী মিডিয়িা এত হাইলাইট করা হচ্ছে সেটা নিযে অনুসন্ধান করতে হবে। কারণ ইহুদী মিডিয়া কোন কিছুই এমনি এমনি হাইলাইট করে না।

 

মনে রাখবেন, ইহুদীরা কখনই সামনে আসবে না। তারা সেলিব্রেটি বানাবে এবং তাদের ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে পরিচালিত করবে। ঠিক যেভাবে একজন রাখাল লক্ষ লক্ষ ভেড়ার পালকে তাড়িয়ে নিয়ে যায়। তাই সেলিব্রেটি ওরশিপথেকে বেড়িয়ে আসা ছাড়া নিজ জাতিকে রক্ষা করার আর উপায় নাই।

 

 

 

 

 

 

# এক দেশের হিন্দু রাষ্ট্রপতি যদি অন্য দেশে যায়, তবে সেখানে হিন্দুদের মন্দিরে যায়,

এক দেশের বৌদ্ধ রাষ্ট্রপতি যদি অন্য দেশে যায়, তবে ঐ দেশের বৌদ্ধদের প্যাগোডায় যায়,

এক দেশের খ্রিস্টান রাষ্ট্রপতি যদি অন্য দেশে যায়, তবে ঐ দেশের খ্রিস্টান চার্চে যায়,

 

কিন্তু বাংলাদেশের মুসলিম রাষ্ট্রপতি যখন অন্য দেশে যায়, তখন ঐ দেশের মুসলমানদের খবর তো নেয় না, মুসলমানদের মসিজদেও যায় না, যায় হিন্দুদের কামাক্ষা মন্দিরে (http://bit.ly/2G9EL9A )। যেই মন্দির হিন্দুদের অশ্লীল আর কুরুচিপূর্ণ মূর্তির জন্য কুখ্যাত। (http://bit.ly/2FtO2bq)

 

বাংলাদেশে মোদি এসে ঠিকই ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যেতে পারে, রামকৃষ্ণ মিশনে যেতে পারে, বাংলাদেশের হিন্দুদের খবর নিতে পারে, তবে বাংলাদেশের জোকার রাষ্ট্রপতি কেন ভারতের মুসলমানদের সাথে দেখা করলো না, তাদের দুঃখ কষ্টের কথা শুনলো না ? ভারতের মুসলমানরা কি খুব সুখে আছে ? নাকি মুসলমানদের ভুলে থাকাটাই তাদের একান্ত ইচ্ছা ?

 

 

 

 

 

# শালা কি বুঝে কাউন্টার টেরোরিজম কি ?

 

মনিরুল ফতোয়া দিছে, যে রবীন্দ্রসংগীত আর গাঞ্জা লালন চর্চা করে সে নাকি জঙ্গী হইতে পারে না। (https://bit.ly/2BuycxF)

হায়রে গোবেট, দুই বছর আগে কি হইছিলো, এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেছি। তুই না কইছিলি, রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাফি হলি আর্টিসান হালমাকারীদের পক্ষে ভয়েস দিয়ে ভিডিও ছাড়ছে সাফি। (https://bit.ly/2AhzM4n)

 

উল্লেখ্য, এই সাফি ছিলো ক্লওজাপ ওয়ান তারকা, রবীন্দ্র সংগীত গাইতো ও পছন্দ করতো। এমনকি সে রবীন্দ্র সংগীতের উপর পিএইচডিও করতে চাইছিলো। (https://bit.ly/2FOhiyu)

 

টাকলা মনিরুলের এই কাউন্টার টেরোরিজমের দায়িত্বে থাকার যোগ্যতা আছে বলে মনে হয় না। আমার তো এখন সন্দেহ হইতেছে, মনিরুলের সাথে হয়ত জঙ্গীদের কোন সংযোগ আছে, নয়ত সে এরকম আজগুবি কথা বলে কেন সাফির মত জঙ্গীদের লুকাইতে চাইতেছে ?

 

অবিলম্বে টাকলা মনিরুলকে কাউন্টার টেরোরিজমের দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার করা হোক।

 

 

 

 

 

# অনেককে দেখি মেয়রকে নগরপিতা বলে ডাকে। কিন্তু আমার কাছে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনকে নগরের জোকার সুইপার বলে ডাকতে ইচ্ছা করে। বেচারা প্রতিবার এমন সব কাণ্ডকারখানা করে, না হেসে পারা যায় না। এ সুইপারের উদ্দেশ্য ঢাকাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা না, ঢাকাবাসীর সাথে তামাসা করা।

 

ঢাকা পৃথিবীর অন্যতম জনবহুল নগরী। এই নগরের মেয়র পদে তাকে দেয়া নিজের যোগ্যতায় নয়, বাবার পরিচয়ে। হাজীসেলিমের হাত-পা বেন্ধে খোকনকে জোর করে আনছে শেখ হাসিনা। তাকে আনার কারণ শেখ হাসিনাই ভালো বলতে পারবেন, কিন্তু মেয়রের পদ পাইয়া সাঈদ খোকন এমন সব কাজ শুরু করছে যা দুঃখভারাক্রান্ত ঢাকাবাসী অন্তত কিছুটা হলেও বিনোদনের খোরাক দিতে পেরেছে।

 

২০১৬ সালে ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষে সাঈদ খোকন কর্মসূচি ঘোষণা করলো- “ক্লিন ঢাকা উইথ বলিউড কুইন ক্যারিনা কাপুর”। পরবর্তীতে অবশ্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে সেই অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। (https://bit.ly/2EKdMix)

 

আমার কথা হলো, ভ্যালেন্টাইন ডেতে একজন বিদেশী নায়িকা এনে কনসার্ট করিয়ে ঢাকাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বুদ্ধি যে কতটা সিলি সেটা বোঝার ক্ষমতা সাঈদ খোকনের আছে বলে মনে হয় না। আর সেই লোককে নাকি বানানো হয়েছে রাজধানী মেয়র ?

 

এরপর ২০১৬ সালে পহেলা বৈশাখে চোখে গগলস লাগিয়ে পাগলের মত গান ‘তুমি চেয়ে আছো তাই আমি পথে হেঁটে যাই’। (https://bit.ly/2IYNbkz) এ ধরনের বৈশিষ্ট্য তো একজন দায়িত্বশীল মেয়রের হতে পারে না, পাড়ার উদভ্রান্ত মোজমাস্তি করার পোলাপাইনের বৈশিষ্ট্য তার মধ্যে বিদ্যমান।

 

কয়েকদিন আগে চিকুনগুনিয়া ছড়িয়ে পড়লে, ঘোষণা দিলেন, নর্দমায় এক্যুারিয়ামের গাপ্পি মাছ ছেড়ে চিকুনগুনিয়া দমন করা হবে। অথচ নর্দমার বিষাক্ত পানিতে এ্যাকুরিয়ামের আদুরে মাছ বাচবে কি না, সেটা নিয়ে তার কোন িচন্তা নাই। (https://bit.ly/2vfQz8D)

 

এরপর মশা বাড়তে থাকলে এক ধাপ এগিয়ে হঠাৎ ঘোষণা দিলেন, “কারো বাসায় এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র পাওয়া গেলে জেল দেয়া হবে।” (https://bit.ly/2HABv7Y)

 

এসব কথা কি আদৌ মাথা থেকে আসে, নাকি গাজার টানে আসে সেটাই আমার মাথায় আসে না।

 

একবার বললেন- “শেখ হাসিনাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হলে ঢাকাকে অচল করে দেয়া হবে। “ (https://bit.ly/2qw8O50)

 

যেটাই হোক, একজন মেয়র কি তার শহরকে অচল করে দেয়ার হুমকি দিতে পারে ?

 

এবার ১৩ই এপ্রিল সিদ্ধান্ত নিলেন, ঢাকাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করিয়ে তিনি বিশ্বরেকর্ড করবেন। এজন্য মুসলিম অধ্যুষিত ঢাকার জন্য তিনি বুদ্ধুর মত বেছে নিয়েছেন হিন্দুদের পূজার দিন চৈত্র সংক্রান্তিকে। খুব ভালো কথা। আমি তো ভেবেছিলাম পুরো ঢাকা শহর জুড়ে বুঝি এই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা চলবে। কিন্তু ম্যাপে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এলাকা থেকে আমি টাস্কি খেলাম। ৩০-৪০ মিটার যায়গাকে তিনি প্রতিকী পরিষ্কার করেই তিনি গিনেস বুকে নাম লিখাবেন। অর্থাৎ পরিস্কারটা প্রতিকী কিন্তু উদ্দেশ্যটা গিসেন বুকে নাম লেখানো। মেয়রের পক্ষ থেকে ঢাকাবাসীর জন্য এর থেকে আর বড় তামাসা কি হতে পারে ? (https://bit.ly/2qxURmS) তার এ ঘোষণা শুনে একজন এক ফেসবুক পেইজে লিখেছে, ভাই পরিষ্কার করায় গিনেস বুকে নাম লেখাতে হবে না, আগে আপনার সিটি কর্পোরেশনের পেছনের ময়লাটা পরিষ্কার করুন।

 

আমি আগেই বলেছি, সমস্যা জর্জরিত ঢাকাবাসীকে সুখ-শান্তি না দিতে পারুক অন্তত বিনোদন দিতে কখনই কার্পণ্য করেনি নগরের জোকার সুইপার সাইদ খোকন। আসলে আওয়ামীলীগের আমলে সব জোকারদের কেন বেছে বেছে মন্ত্রী-মেয়র-এমপি এমনকি রাষ্ট্রপতি বানানো হয় তা আমি বুঝি না।

 

 

 

 

#

একদিন একটা মসজিদের পাশ গিয়ে যাইতেছিলাম,

মসজিদের ভেতর উকি মেরে দেখি, মসজিদের ভেতর অনেক চেয়ার রাখা

আমি আগেও মসজিদের ভেতর দেখেছি, কিন্তু মসজিদের ভেতর কখন চেয়ার দেখি নাই

কিন্তু এখন এতগুলো চেয়ার দিয়ে মসজিদে কি করে ?

 

আমার পাশে থাকা এক মুসলিম বন্ধু বলে উঠলো, “মসজিদের ভেতর চেয়ারে দিয়ে মানুষ নামাজ পড়ে।

আমি বললাম- “নামাজ পড়তে চেয়ারের দরকার হয়, আগে তো জানতাম না।

তখন ঐ মুসলিম বন্ধু বললো. “অনেকে অসুস্থ থাকে, পায়ে সমস্যা, কোমরে সমস্যা। তারা চেয়ারে বসে নামাজ পড়ে।

 

আমি তখন ঐ বন্ধুকে প্রশ্ন বললাম, আচ্ছা, “যে লোকগুলো চেয়ারে বসে নামাজ পড়ে, তারা কি মসজিদে হুইল চেয়ার দিয়ে আসে ? নাকি হেটে হেটে আসে ?”

উত্তরে ঐ বন্ধু বললো- “তারা তো হেটে হেটে আসে।

আমি তখন বললাম, “যে লোকটা এতদূর হেটে হেটে আসতে পারলো, তখন সমস্যা হলো না। কিন্তু মসজিদে ঢুকেই সমস্যা শুরু হলো, এটা কেমন কথা ?”

এত শত শত বছর তো চেয়ারের প্রয়োজন হয়নি, মুসল্লীও বেশি ছিলো।

কিন্তু এখন মুসল্লীও কমা শুরু করছে, আবার চেয়ারও বাড়ছে। তারমানে সমস্যাটা অন্যখানে।

 

কয়েকদিন আগে রোজার সময় অর্থমন্ত্রী বাজেট ঘোষণার সময় পানি খাওয়ার ঘটনা দেখলাম। অর্থমন্ত্রী ১ ঘন্টা যাবত বক্তৃতা দেয়ার সময় পানি খায়। তার দাবি, সে বৃদ্ধ হয়ে গেছে আর বক্তৃতাও লম্বা, তাই রোজা রাখতে পারছেন না। (https://bit.ly/2yMDwNH )

খুব ভালো কথা, একজন মানুষ অসুস্থ হতেই পারেন, পানিও খেতে পারেন। কিন্তু যিনি বয়সের ভারে অসুস্থ, তিনি কিভাবে পুরো জাতির ১ বছরের অর্থনীতির রূপরেখা তৈরীর দায়িত্ব নিতে পারেন ? তিনি কিভাবে পুরো জাতির অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে পারেন ? অনেক ছোট বাচ্চাকেও রোজা রাখতে দেখেছি। অর্থমন্ত্রীর যদি রোজা রাখার মত সামান্য শারীরিক সক্ষমতা না থাকে, তবে অথর্মন্ত্রীর মত এত বড় দায়িত্ব নেয়ার অধিকার তার অবশ্যই নেই। সে অর্থমন্ত্রী হওয়ার জন্যও অক্ষম। বিভিন্ন পদে চাকুরীতে নিয়োগ দেয়ার আগে মেডিকেল টেস্ট করায় শারীরিক সক্ষমতা যাচাই করে, অর্থমন্ত্রী পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে শারীরিক যোগ্যতার সার্টিফিকেট কোথায় ?

 

ছোটবেলায় একটা কবিতা পড়েছিলাম। কবিতার নাম ছিলো ‘মজার দেশ’।

কবিতার শুরুটা ছিলো এরকম-

এক যে ছিলো মজার দেশ, সব রকমে ভালো , রাত্তিরেতে বেজায় রোদ ,দিনে চাঁদের আলো ”।

বাংলাদেশের অবস্থা হয়েছে সেই মজার দেশের মত। এই দেশে একজন সরকারী কর্মকর্তা বা কর্মচারিকে সব যোগ্যতা থাকার পরও ৫৯ বছর বয়সে বাধ্যতামূলক অবসর নিতে হয়, কিন্তু ৮৫ বছর বয়সেও শারীরিক ও মানসিক শক্তিছাড়াই মন্ত্রীত্ব করা যায়।

 

আমার অবাক লাগে যখন দেখি, এমপি পদে খেলোয়ার, গায়িকা, অভিনেতা, অভিনেত্রী রাখা হয়। এমপি অর্থ পার্লামেন্ট মেম্বার, যারা একটা দেশের জন্য আইন প্রনয়ন করবে। একজন গায়ক ভালো গাইতে পারে, অভিনেতা অভিনয় করতে পারে, কিন্তু আইন প্রণয়ন করবে কিভাবে সেটা আমার মাথায় আসে না।

 

আবার বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে, মন্ত্রীসভার ৯০% হতে হবে এমপিদের থেকে।

তাহলে এসব কোয়ালিটিহীন আবুল-ছাবুল এমপিদের থেকে সিংহভাগ মন্ত্রী হবে, যারা আমাদের দেশকে চালাবে। তাহলে দেশ আলোর পথ দেখবে কিভাবে ?

আমরা সারা দিন পড়ছি, শিক্ষা আলোর পথ দেখায়, কিন্তু দেশ যারা চালাচ্ছে তাদের শিক্ষা কোথায় ?

বিবেচনা করলে আমরা তো পুরো জাতি নিয়ে অন্ধকারে দিন কাটাচ্ছি।

 

এ দেশে:

ইংরেজী সাহিত্যে লেখাপড়া করে ১০ বছর অর্থমন্ত্রী থাকা যায়,

সার্টিফিকেটহীন মন্ত্রী হয়ে ১০ বছর শিক্ষামন্ত্রী হওয়া যায়, (https://bit.ly/2yQ7NLu)

মৃত্তিকা বিজ্ঞানে পড়ে বাণিজ্যমন্ত্রী হওয়া যায়।

পুরো একটা দেশ চালাতে যে টপ-এক্সপার্ট হওয়া দরকার সেটা যোগ্যতা তাদের কোথায় ?

 

কথায় বলে, মূর্খ বন্ধুর থেকে জ্ঞানী শত্রু নাকি ভালো।

এই কথার তত্ত্বকথা অনেক গভীরে। মূর্খকে হাজার ভালো বুঝালেও সে বুঝবে না, কারণ তার তো জ্ঞানই নেই। কিন্তু যার জ্ঞান আছে সে অবশ্যই ভালো-মন্দ বুঝতে সক্ষম।

আমরা দেশের ভালো চাই, ভালো হওয়ার জন্য অনেক উপদেশও দেই।

কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমাদের দেশ যারা চালায় তারাই মূর্খ । একজন মূর্খকে তার ভালো আপনি বুঝাবেন কিভাবে ? তাকে ভালো উপদেশ দিলেও তো সে তা খারাপ মনে করবে। মূর্খ নিজেই নিজের ভালো বুঝে না।

 

যতদিন দেশ চালনা ক্ষমতা অশিক্ষিত-মূর্খ লোকের হাতে থাকবে,

ততদিন দেশ উন্নতি করতে পারবে না।

তাই দেশ যে দলের হাতেই থাক, অন্তত মন্ত্রী পরিষদে সংশ্লিষ্ট এক্সপার্টদের আনা উচিত।

 

 

 

 

মেয়ে এখন বিয়ে করতে চায় না, নিজের পায়ে দাড়াতে চায়

খোঁজ নিয়ে দেখবেন, যে মেয়েটি এ জাতীয় কথা বলে,

সে নির্ঘাৎ সমবয়সী কোন ছেলের সাথে প্রেম করে।

পড়ালেখা শেষ করবো’, ‘নিজের পায়ে দাড়াবোএ টাইপের কথা বলে, তাদের বেশিরভাগ চায় বিয়েটাকে পিছিয়ে দিতে।

কারণ তার সময়বয়সী প্রেমিক ছেলেটা এখনও লেখাপড়া করছে। লেখাপড়া শেষ করে চাকরী নেবে, এরপর চাকুরী পেয়ে ঐ মেয়েটিকে বিয়ে করবে।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, তার পছন্দের ছেলেটি যদি তখনই বিয়ে করতে সমর্থ হতো, তবে নিশ্চয়ই ঐ মেয়েটি নিজের পায়ে দাড়াবো”, ”পড়ালেখা শেষ করবো”- এ টাইপের মুখরোচক বাক্য ঝাড়তো না।

আসলে সৃষ্টিগতভাবে একজন পুরুষ যতটা বিয়ের জন্য আগ্রহী থাকে, একজন নারী তার থেকে বেশি আগ্রহী। কিন্তু স্বভাবগত কারণে পুরুষ তার বিষয়টি যতটা সহজে প্রকাশ করতে পারে, নারী সেটা পারে না।

একটু ভালোভাবে খেয়াল করবেন, বাল্যবিবাহ বন্ধে সরকারীভাবে যেসব বিজ্ঞাপন চালু হয়েছে, তার সবগুলো হলো অভিনয়। বাস্তবিক দৃশ্যে কখনই বাল্যবিয়ে বন্ধ দেখানো হয় না। একটা বিয়ে বন্ধ করার পর ঐ মেয়েটা কতটুকু কষ্ট পায় সেটা ফিল্ডে না গেলে বোঝা সম্ভব না।

বিজ্ঞাপনগুলোতে দেখায়, “একটা মেয়ে বিয়ে বন্ধ করার পর স্কুলের মাঠে গিয়ে দৌড়াচ্ছে, আহ কি আনন্দ!

বাস্তবিক অর্থে এ ধরনের বিজ্ঞাপনগুলো একদম হাস্যকর। কারণ একজন নারী বিয়ের পর যে বিশেষ আনন্দ উপভোগ করে, সেটা নিশ্চয়ই মাঠে দৌড়ায় পাওয়া যায় না। তাই বিয়ের আনন্দ বাদ দিয়ে কেউ মাঠে দৌড়ের আনন্দ উপভোগ করছে, এটা বিশ্বাস করা যায় না।

এটা ঠিক, একটা মেয়ে অন্যের বাসায় বউ হয়ে গেলে তাকে কিছু সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। এটা ৩০ বছরের মেয়েও বিয়ে করলে হবে, ১২ বছরের মেয়েও বিয়ে করলে হবে। অনেক ক্ষেত্রে ভালোও হতে পারে, এটার সাথে বয়সের কোন সম্পর্ক নাই। বরং আজকাল যারা অধিক বয়সে বিয়ে করে তাদের মধ্যে ডিভোর্সের হার বাড়ছে, যা আগে কম বয়সীদের ক্ষেত্রে দেখা যেতো না।

বিয়ের বয়স বাড়তে থাকলে সমাজে যে সমস্যাটা প্রকট হচ্ছে সেটা হলো নিঃসন্তান দম্পত্তি। কয়েকদিন আগে মাদারীপুর জেলায় এক পাগলীর সন্তান হয়েছিলো। এ খবরে কয়েকশ’ পরিবার সেই বাচ্চাটিকে দত্তক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে। এ দ্বারা বোঝা যায়, সমাজে নিঃসন্তান পরিবারের সংখ্যা কিভাবে হু হু করে বাড়ছে, একটা পাগলির জারজ বাচ্চা হইছে, সেটাও নিতেও তারা দ্বিধা করছে না । সন্তানহীনতার পেছনে অবশ্যই দুইটি বিশেষ কারণ থাকতে পারে। বয়স বাড়লে যেমন সন্তান নেয়ার প্রবণতা হ্রাস পায়। অন্যদিকে কমবয়সে বিয়ে না করে মেয়েরা প্রেম করে বয়ফ্রেন্ডের দ্বারা প্রেগনেন্ট হয়ে পড়ে। তখন অনেকেই গোপনে এবরেশন করায়। একবার অ্যাবরেশন করালে পরবর্তী গর্ভধারণের হার হ্রাস পায়। বর্তমানে বিভিন্ন অলি-গড়ি গড়ে ওঠা কথিত মাতৃসদন বা ক্লিনিকগুলোতে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ্ নারী এবোরেশন করাচ্ছে, যাদের অধিকাংশ অবিবাহিত তরুণী।

আমার কথা হলো- “বাল্যবিয়ে বাধ্যতামূলক নয়, কিন্তু সমাজে বাল্যবিয়ের দরকার আছে। অনেকের বাল্যবিয়ের দরকার হতে পারে

বিদেশী ইহুদীবাদীদের প্ল্যানে সরকার ও এনজিওগুলো বাল্যবিয়েতে বাধা দিচ্ছে, এটা বাংলাদেশের মানুষকে বুঝতে হবে। বুঝতে হবে- ওরা ভালাকিছু বলে প্রচার করলেই সেটা বিশ্বাস করা যাবে না, ওদের মিষ্টির মধ্যেও বিষ আছে। বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থার সাথে বাল্যবিয়ে ওতঃপ্রতভাবে জড়িত, এটা হাজার বছরের সংস্কৃতি। এই বাল্যবিয়েতে হাত দিলে বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়বে । দেশে ধর্ষণ, পর্নোগ্রাফী, ইভটিজিং, মানসিক অসুস্থতা, পতিতাবৃত্তি, সন্তানহীনতা, জারজ সন্তান, এবোরেশন, বহুগামিতা, পরকীয়া, ডির্ভোস, সন্তান স্ট্যাবলিশ হওয়ার আগে বাবা-মা মারা যাওয়া এরকম নানান সমস্যা দেখা দিবে, যা আমাদের সমাজকে থাকার অযোগ্য করে তুলবে। বাল্যবিবাহ সমাজ ব্যবস্থার একটা উপাদান। এই উপাদান ধ্বংস করার মানে পুরো সমাজ ব্যবস্থার ভারসাম্য নষ্ট করে, সমাজকে বিশৃঙ্খল করা। তাই অবিলম্বে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনবাতিল করা হোক।

 

 

 

 

 

যশোরের অভয়নগরে একই দড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে দুই শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার সকালে অভয়নগর উপজেলার নলপাড়া গ্রামের খালপাড় থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃত দুই শিক্ষার্থী হলো- জয়ারাবাদ সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র সৈকত (১৮) ও সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী লিপা (১৩)। গ্রামবাসী জানায়, মৃত দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। পুলিশও প্রেমের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। (http://bit.ly/2DFkF8h, http://bit.ly/2DxEEm2)

মন্তব্য : আত্মহত্যা করুক, সমস্যা নাই। যেহেতু মেয়েটির বয়স ১৮ এর নিচে এবং ছেলেটির বয়স ২১ এর নিচে সুতরাং তারা যেন কিছুতেই বিয়ে না করতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে আগে। জীবন গেলে যাক, বাল্যবিবাহ বন্ধে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা জরুরী।

 

 

 

বাংলাদেশে এখন বাল্যবিবাহ বিরোধী যে আইন চলে তা মূলত, ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন -১৯২৯ হতে আগত’। এ আইনটিকে তখন এ নামে ডাকা হতো না। ডাকা হতো- ‘সারদা আইননামে। আইনটি তৈরী করেছিলো হরবিলাস সারদা নামক এক ব্যক্তি, যাকে ব্রিটিশরা আনুগত্যতার দরুণ দেওয়ান বাহাদুরউপাধি দিয়েছিলো।

হরবিলাস সারদা ছিলো হিন্দু হিতৈষী। সে হিন্দুদের জন্য বইও লিখেছিলো, নাম- হিন্দু শ্রেষ্ঠত্ব (Hindu Superiority)। ঐ সময় বাল্যবিবাহ নিয়ে আইন হিন্দুদের জরুরী হয়ে পড়ে, তার অন্যতম কারণ- যৌতুক প্রথা’। অনেক হিন্দু বাবা-মা আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে মেয়েকে যৌতুক দিতে পারতো না, ফলে মেয়েটি বয়ঃপ্রাপ্ত হয়ে গেলে তাকে আইবুড়োনামে ডাকা হতো এবং বিয়ে দেয়া অসম্ভব হয়ে পড়তো। এ আইনে মেয়েদের নূন্যতম বিয়ের বয়স করা হয়েছিলো ১৪ বছর। এতে হিন্দু বাবা-মায়েরা অন্তত যৌতুক রেডি করার জন্য কিছুটা সময় পেতো।

হরবিলাস সারদা মূলত ১৯২৭ সালে যে আইনটি তৈরী করেছিলো তা ‘হিন্দু বাল্যবিবাহ আইন’, পরবর্তীকালে কৌশল করে তা হিন্দু-মুসলিম সবর উপর চাপিয়ে দেয়া হয়। যাই হোক, ঐ সময় সারদা আইনের অন্যতক বেইজ ধরা হয় Age of Consent বা যৌন সম্মতির বয়স বা নারীদের বয়ঃপ্রাপ্তির সময়কে। ঐ সময় এ অঞ্চলের নারীরা সাধারণত ১৪ বছর বয়সে বয়সঃপ্রাপ্তি হতো। (https://goo.gl/cxSGYb ) উল্লেখ্য ১৯৮৪ সালে আইনটিকে সংশোধন করে মেয়েদের বিয়ের বয়ষ ১৮ এবং ছেলেদের ২১ করা হয়।

অতি সম্প্রতি বিজ্ঞানিরা আবিষ্কার করেছেন, সময় যত কাছে আসছে, ছেলে ও মেয়েরা তত তাড়াতাড়ি বয়:প্রাপ্ত হচ্ছে। কয়েক বছর আগে, জার্মান বিজ্ঞানিরা এক গবেষণায় দাবি করে-

১৮৬০ সালে মেয়েরা বয়ঃপ্রাপ্ত হতো ১৬.৬ বছর বয়সে

১৯২০ সালে তা নেমে আসে ১৪.৬ বছর বয়সে

১৯৫০ সালে তা হয় ১৩.১ বছর বয়স

১৯৮০ সালে তা আরো নেমে দাড়ায় ১২.৫ বছর বয়স

এবং ২০১০ সালে তা দাড়িয়েছে ১০.৫ বছর বয়সে

বলাবাহুল্য সূত্রমতে ২০১৮ সালে এই বয়স অবশ্যই ৯ এর ঘরে নেমে এসেছে। (https://goo.gl/hpPgvb)

লক্ষ্যণীয়, বাল্যবিবাহ নিরোধ বা সারদা আইনকরা হয়েছিলো নারীদের বয়ঃপ্রাপ্তিকে কেন্দ্র করে। তখন মেয়েদের বয়:প্রাপ্তি হতো ১৪ বছর বয়সে, কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞান বলছে বর্তমানে মেয়েদের বয়ঃপ্রাপ্তির বয়স ৯ বছরে নেমে এসেছে। সে হিসেবে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনটি ব্যাকডেটেড বা মানধাত্তার আমলের আইন, যা বর্তমান আধুনিক বিজ্ঞান সমর্থন করে না। বর্তমান অনেকে এ আইনকে আধুনিকতা হিসেবে ধারণা করতে পারেন, কিন্তু বাস্তবে এ আইন যারা সঠিক মানে তারাই ব্যাকডেটেড এবং যারা সঠিক মনে করেনা তারাই আধুনিক।

 

 

 

 

 

# গত কয়েক বছর একটা আন্দোলনের নাম শোনা যাচ্ছে, যার নাম মি-টু’। হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে এই আন্দোলনটি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যায়। ‘মি-টুমানে আমিও কোনভাবে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিএই অভিজ্ঞতা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা। মি-টু মুভমেন্টের সূচনাকারী হিসেবে ধরা হয় তারানা বুরকিনামক এক মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ মহিলাকে। ছোট বেলা থেকেই এই মহিলাটি বিভিন্ন পুরুষের দ্বারা নির্যাতিত হয়ে আসছিলো। তারানা বুরকিপ্রথম এ আন্দোলনের ধারণা দেয় এবং একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করে। সেই ধারাবাহিকতায় হলিউড অভিনেত্রী অ্যালিসা মিলানো ইহুদী প্রযোজক হার্ভে ওয়েনস্টেইনের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সোস্যাল মিডিয়ায় মি টুহ্যাশট্যাগ দিয়ে আন্দোলনের সূত্রপাত করে। এরপর একে একে মুখ খুলতে থাকে হলিউডের অনেকে। এরপর থেকে স্যোশাল মিডিয়ায় অনেক হোমরা চোমরার নামে অনেক ঘটনা বের হয়ে আসতে থাকে। ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো, বলিউডের অমিতাভ বচ্চন কিংবা বাংলাদেশের নাট্যকার সেলিম আদ দ্বীনের নাম ও বের হয়। এই লিঙ্কে- https://bit.ly/2ShQpEf ঢুকলে প্রায় ২৫২ জন পশ্চিমা সেলিব্রেটির নাম পাবেন, যারা মিটুর পর নারী যৌন হয়রানীর দায়ে অভিযুক্ত হয়েছে।

 

আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্লাস নেয়ার সময়, একটা কথা আপনাদের বলেছিলাম, কোন ঘটনা দেখলে আগে বুঝতে চেষ্টা করবেন,

-কে ঘটনা ঘটাচ্ছে এবং

-সে ঘটনার দ্বারা কার উপকার হচ্ছে ?

তাহলে মি-টু আন্দোলন কে করছে এবং তার দ্বারা কে উপকৃত হচ্ছে ?

আমি এখন পর্যন্ত এনালিস্ট ক্লাস নিয়েছি মাত্র ২টি, কিন্তু মি-টু আন্দোলন আসলে কারা ঘটাচ্ছে এবং কি উদ্দেশ্যে ঘটাচ্ছে, এটা যদি আপনাদের বুঝাতে চাই, তবে আমাকে এনালিস্ট ক্লাস ৫ বা ৬ এর দিকে যেতে হবে। তবে সংক্ষেপে যদি বলি, তবে বলতে হবে, ইহুদীরা ভর করেছে আমেরিকার উপর। তাই আমেরিকা নিজে হয়ে গেছে ইহুদীবাদী। এই ইহুদীবাদীদের নিজেদের মধ্যে আবার দ্বন্দ্ব আছে, গ্রুপ গ্রুপ আছে। মার্কিনীদের মধ্যে এই দুইভাগ ডেমোক্র্যাটএবং রিপাবলিকানদুইনামে ও দুই দলে চলে। সারা বিশ্বজুড়ে মার্কিনপন্থীরাও এই দুই নেটওয়ার্ক মেইনটেইন করে চলে। মি-টু আন্দোলনটা ছিলো বেসিক্যালি একটা রাজনৈতিক আন্দোলন, দুই দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব, একদল অন্যদলকে ফাঁসানোর জন্য, এটা ছিলো তাদের রিয়েলফেস, আর আর্টিফিসিয়াল ফেস ছিলো নারী নিপীড়ন’।

 

মি-টু’ আন্দোলন দিয়ে যেটা হবে, অনেক কথিত সেলিব্রেটির গোমর ফাঁস হবে। এটা একটা রাজনৈতিক বিষয়, যেহেতু আমি রাজনীতি করি না, সুতরাং এটা নিয়ে কথা বলারও আমার প্রয়োজন নেই। কিন্তু আমি কথা বলবো, তখন যখন কেউ কেউ মনে করবে, মিটু আন্দোলনের মাধ্যমে সমাজে একটা পরিবর্তন ঘটনো বা সমাজে নারী নির্যাতন কমানো সম্ভব, তখন।

 

আমার এ লেখার হেডিং ছিলো, “মি-টু আন্দোলন আসলে কাদের জন্য ?”

সে আলোচনা যদি করি, তবে বলতে হবে, জঙ্গল আর জনপদে কিন্তু এক আইন চলে না।

মিটু হচ্ছে জঙ্গলের আন্দোলন। মিটু, মাধ্যমে যারা নিপীড়নকারী ও অভিযোগকারী উভয় হলো পোষাক-আষাক ও চলাফেরায় বন-জঙ্গলের মত স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। হলিউড-বলিউড কিংবা বাংলাদেশের নাট্য-সিনেমা কিংবা মডেল পাড়ার আইন তো আমি-আপনি বুঝবো না। সানি লিওন কখন অভিনয় করলো আর কখন ধর্ষিত হইলো, এটা আমার আপনার পক্ষে অনুধাবন সম্ভব না, এটা সানি লিওন আর তার সমগোত্রীয়দের উপর ছেড়ে দেন।এবং তাদেরকেই মিটু আন্দোলন করতে বলেন, সাধারণ মানুষকে না।

 

এবার আসুন,

সাধারণ মেয়েরা মিটু মুভমেন্টের লেজ ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের যৌন নির্যাতনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলে সমাজ উপকৃত হবে কি না ?

এ প্রশ্নটা একটু ক্রিটিকাল। এর কয়েকটা উত্তর হতে পারে:

 

১) কোর্টে দেখেছিলাম, নারী নির্যাতন ট্রাইবুনালে সাধারণ মানুষ এমনকি সংশ্লিষ্ট উকিল ছাড়া অন্যদের ঢুকতে দেয় না। অনেক সময় বাদীনীকে বিচারক ভেতরে নিয়ে জবানবন্দি নেয়। এর পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে, তবে আমার মনে হয়েছে নারী নির্যাতনের ঘটনা প্রচারের একদিকে পজিটিভ দিকের সাথে সাতে নেগেটিভ দিকও আছে। এর মাধ্যমে অনেকের মনের ভেতরে গোপন আকাঙ্খা জাগ্রত হতে পারে এবং সুযোগ বুঝে কাজে লাগাতে পারে। মুভিতে ধর্ষণের ভিডিও ধর্ষণ হ্রাসের তুলনায় ধর্ষণ বৃদ্ধি করে বলে মনে হয়। এই সব অভিযোগ দাখিলের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে গোপন সেল থাকুক, সেখান থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অপরাধীর বিচার করা হোক, কিন্তু স্যোশাল মিডিয়ায় এসব উন্মুক্ত আলোচনার পজিটিভ থেকে নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট বেশি।

 

২) পুরুষটা দোষী হলে তো ঠিক আছে। কিন্তু যদি মহিলাটি পুরুষটিকে ফাঁসানোর জন্য করে, তখন ? ফেসবুক ওপেন মাধ্যমে, তখন যেখা যাবে, অনেক মহিলা বিভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে অসংখ্য পুরুষকে ফাঁসিয়ে দিচ্ছে। ঐ পুরুষটি এবং তার পরিবারবর্গকে তখন সমাজে নিগৃহিত হতে হবে, এর দায় কে নিবে ? আপনাদের মনে থাকার কথা, কিছুদিন আগে বাংলাদেশের সিআইএপন্থী ডা. জাফরুল্লাহর একটা ফোনালাপ ফাঁস হয়েছিলো। সেখানে ছাত্রীদের ব্যবহার করে প্রতিপক্ষে নারী নির্যাতন মামলা দেয়ার কথা বলেছিলো। (https://bit.ly/2AxcKq9)

 

৩) মিটু’তে সাধারণ মহিলাদের মধ্যে উস্কাচ্ছে নারীবাদীরা। এজন্য ফেসবুকে কিছু ফেইক্ আইডিকে তারা ব্যবহার করছে। এক্ষেত্রে বলতে হয়, ইহুদীবাদীরা নারীবাদ সৃষ্টি করেছে পুরুষ-মহিলার মধ্যে বিভেদ বাড়িয়ে সমাজে অরাজকতা সৃষ্টির জন্য। কাজী নজরুল ইসলাম বলেছিলেন, “বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।নারী ছাড়া যেমন পুরুষ নয়, তেমনি পুরুষ ছাড়া নারী নয়। কিন্তু সমাজের এই ভারসাম্য ইহুদীরা নষ্ট করে দিতে পুরুষের বিরুদ্ধে নারীদের উস্কে দেয়, বিভেদ সৃষ্টি করে। এতে সমাজে নারী-পুরুষের মধ্যে একটা হিংসাত্মক সম্পর্ক তৈরী হতে পারে। নারীর বিরুদ্ধে পুরুষ বিষেদগার হবে, পুরুষের বিরুদ্ধে নারী বিষেদগার করবে। যেহেতু নারী শারীরিকভাবে অপেক্ষকৃত দুর্বল, তাই এই হিংসা-হিংসীর আলটিমেট এফেক্ট পড়বে নারীর উপর, মানে সমাজে নারী নির্যাতন আরো বেড়ে যাবে।

 

৪) মিটু’র পরের ধাপ হলো বৈবাহিক ধর্ষণ টার্মটি। দেখা যাবে, বিষয়টি স্বাভাবিক হওয়ার পর কোন কোন স্ত্রী তার স্বামীর বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিবে, তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বামী ইয়ে করেছে। ব্যস ইহুদীবাদীদের উদ্দেশ্য পাক্কা। অর্থাৎ তখন দুইজনের সম্মতি প্রধান (লিভটুগেদার) হয়ে যাবে, বিয়ে নামক কোন সামাজিক চূক্তি নয়।

 

এখন কথা হলো, মিটু না থাকলে সমাজে নারী নির্যাতন কমবে কিভাবে ?

আহহা ! মিটু দিয়ে যে সমাজে নারী নির্যাতন কমবে, এটা আপনি বিশ্বাস করলেন কেন?

আমি আমার লেখার মধ্যে কিন্তু বলেছি, জঙ্গলের নিয়ম আর জনপদের নিয়ম এক নয়। জঙ্গলে তারা মিটু চালু করেছে করুক, কিন্তু আমরা যারা স্বাভাবিক সমাজে বাস করি, তাদের জনপদের নিয়ম খুজতে হবে।

আর সেটা তো আছেই, যার যার ধর্মীয় নিয়ম অনুসরণ করুন, ধর্মীয় নিয়ম মেনে পোষাক পরিচ্ছদ পড়ুন। নারী-পুরুষ আলাদা বাস-ট্রেন-যাতায়াত ব্যবস্থা, শপিং সেন্টার, স্কুল-কলেজ ভার্সিটি এমনকি হাসপাতাল করে দিন। নারী-পুরুষকে সঠিক সময়ে বিয়ে দিন। মিডিয়ায় উলঙ্গপনা বন্ধ করুন। দেখুন নারী নির্যাতন শূণ্যের কোঠায় নেমে আসবে।

 

আমি জানি, এ কথা শুনে অনেকের মধ্যে নারী স্বাধীনতার শ্লোগান দিয়ে চুলকানি হতে পারে, দয়া করে চুলকানি থামান দাদা । নিজের মুখে ভালো করে ছাই মাখুন। হলিউডের নারীরা তো কম স্বাধীনতা ভোগ করে না, তাহলে তারা কেন এত নির্যাতিত হচ্ছে ? কেন তাদের মিটুর আশ্রয় নিতে হচ্ছে ? তাই জঙ্গলে মিটু পালন করুন, জনপদে নয়।

 

 

 

 

উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে বাসের ভেতর নিপীড়ন করায় গত কয়েকদিন ধরে বেশ আন্দোলন করছে ছাত্র-ছাত্রীরা (https://bit.ly/2KqAGzI )। আমার কাছে বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। তবে শুধু একটি ঘটনা নয়, একটি জরিপে দেখা গেছে, বাসে নারী যাত্রীদের ৯৪% যৌন নিপীড়নের শিকার হোন। কেউ বিষয়টি মুখে প্রকাশ করতে পারেন, কেউবা চুপ করে যান । (https://bit.ly/2KoDBcf)

অনেকে বিষয়টি নিয়ে অনেক ধরনের সমাধান দিয়েছেন। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে বাসে গণহারে নারী হয়রানী বন্ধের একমাত্র সমাধান ‘নারীদের জন্য পৃথক বাসসার্ভিস চালু করা, যে বাসে শুধু ড্রাইভার ছাড়া হেলপার কন্ট্রাকটর ও যাত্রী সবাই নারী হবে।

এতদিন বাসে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন ছিলো। কিন্তু দেখা যাচ্ছে বাসে উঠতে এবং সংরক্ষিত নারী আসনে যেতে যেতে একজন নারীকে একাধিক হয়রানীর শিকার হতে হয়। এছাড়া অধিকাংশ সময় সংরক্ষিত নারী আসনের থেকেও নারীযাত্রী সংখ্যা বেশি।

কিছুদিন আগে বিআরটিসি পরীক্ষামূলকভাবে ১২টি নারী বাস চালু করেছিলো (https://bit.ly/2HDiSnh )। কিন্তু দেখা যায়, সে বাসগুলোতে নারী যাত্রী সংখ্যা কম। এর কারণও আছে। কারণ- এত বড় শহরে মাত্র ১২টা বাস, কখন কোথায় আসবে, কতক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে তার কোন ঠিক নাই। তাই নারীরা অপেক্ষা না করে সাধারণ বাসে চড়ে যাতায়াত করে। তাই নারী বাসও খালি যায়।

সমাধান কি ?

সরকারীভাবে পুরো ঢাকা শহরে একটা জরিপ করতে হবে। ঢাকা শহরে কোন রুটে, কখন, কত পার্সেন্ট নারী যাত্রী যাতায়ত করে। দেখা গেলো সময় ভেদে মোট যাত্রীর ২০%, ৩০% ৪০% নারী যাত্রী হয়। সকাল-দুপুর-সন্ধা হিসেবে এই পার্সেন্টিস উঠা-নামা করে। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বাস কোম্পানিগুলো প্রতি আইন করে দিতে হবে, প্রত্যেক রুটে নারী পার্সেন্টিস অনুসারে নারীবাস দিতে হবে। ধরে নিলাম সকালে ৩০-৪০% নারীযাত্রী থাকে, তবে ঐ রুটে প্রত্যেক বাস কোম্পানিকে বাধ্যতামূলকভাবে ১০টা বাসের মধ্যে ৪টা বাস নারীবাস দিতে হবে। দুপুরে সেটা কমে ২০% হলে গেলে ১০টা বাসে ২টা নারী বাস দিতে হবে। অফিস ছুটির টাইমে হয়ত নারীযাত্রী সংখ্যা ৩০% হয়ে গেলো, তখন নারীবাসের সংখ্যা ১০ টার মধ্যে বাধ্যতামূলক ৩টা দিতে হবে। পুরো সিস্টেম কন্ট্রোলের জন্য বিআরটিএর পক্ষ থেকে লোক থাকতে হবে, কেউ নিয়ম ভঙ্গ করলে বা নারীবাস কম দিলে তার রুট পারমিট ক্যান্সেল হবে। (জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বেতন পাওয়া বিআরটিএর কাজ শুধু বসে বসে ঘুষ খাওয়া না, জনগণের জন্য কিছু করা।)

তবে আমার ধারণা, অনেক নারী বাসে সমস্যার কারণে রিকশা বা অন্যবাহনে যাতায়াত করে (অন্যবাহনগুলোতে নারীরা হয়রানীর শিকার)। কিন্তু নারীবাস চালু হলে অনেক নারীই রিকশা বা অন্যবাহন ছেড়ে স্বাচ্ছন্দে বাসে উঠতে পারবে। তখন দেখা যাবে নারী বাসের সংখ্যা কমপক্ষে ৩০% পর্যন্ত লাগতে পারে।

কিছুদিন আগেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশ থেকে ‘গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০১৮ নিয়ে এসেছেন। নারী জাতির প্রতি অবদানের জন্যই নাকি এ পুরষ্কার। ভালো কথা। কিন্তু যে দেশের ৯৪% নারী যাতায়তের সময় যৌন হেনস্তা শিকার হন, সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার এ পুরষ্কার কতটুকু গুরুত্ব থাকতে পারে ?

আমি বলবো, নারীকে শুধু ঘরের বাইরে বের করে নিয়ে আসলেই চলবে না, নারীকে নিরাপত্তা দিতে হবে। এবং প্রধানমন্ত্রী তথা সরকারেরই সে দায়িত্ব নিতে হবে। যাতায়তের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার জন্য পৃথক বাস সার্ভিস চালু করতে হবে। এবং অবশ্যই সেটা বিচ্ছিন্নভাবে নয়, নারীর আনুপাতিক সংখ্যা মেনেই সরকারী ও বেসরকারী বাস সার্ভিসগুলোতে সে সুবিধা দ্রুত চালু করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে শুধু সরকারের সদিচ্ছার প্রয়োজন, অন্যকিছু নয়।

 

 

 

 

 

 

উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে বাসের ভেতর নিপীড়ন করায় গত কয়েকদিন ধরে বেশ আন্দোলন করছে ছাত্র-ছাত্রীরা (https://bit.ly/2KqAGzI )। আমার কাছে বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। তবে শুধু একটি ঘটনা নয়, একটি জরিপে দেখা গেছে, বাসে নারী যাত্রীদের ৯৪% যৌন নিপীড়নের শিকার হোন। কেউ বিষয়টি মুখে প্রকাশ করতে পারেন, কেউবা চুপ করে যান । (https://bit.ly/2KoDBcf)

অনেকে বিষয়টি নিয়ে অনেক ধরনের সমাধান দিয়েছেন। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে বাসে গণহারে নারী হয়রানী বন্ধের একমাত্র সমাধান ‘নারীদের জন্য পৃথক বাসসার্ভিস চালু করা, যে বাসে শুধু ড্রাইভার ছাড়া হেলপার কন্ট্রাকটর ও যাত্রী সবাই নারী হবে।

এতদিন বাসে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন ছিলো। কিন্তু দেখা যাচ্ছে বাসে উঠতে এবং সংরক্ষিত নারী আসনে যেতে যেতে একজন নারীকে একাধিক হয়রানীর শিকার হতে হয়। এছাড়া অধিকাংশ সময় সংরক্ষিত নারী আসনের থেকেও নারীযাত্রী সংখ্যা বেশি।

কিছুদিন আগে বিআরটিসি পরীক্ষামূলকভাবে ১২টি নারী বাস চালু করেছিলো (https://bit.ly/2HDiSnh )। কিন্তু দেখা যায়, সে বাসগুলোতে নারী যাত্রী সংখ্যা কম। এর কারণও আছে। কারণ- এত বড় শহরে মাত্র ১২টা বাস, কখন কোথায় আসবে, কতক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে তার কোন ঠিক নাই। তাই নারীরা অপেক্ষা না করে সাধারণ বাসে চড়ে যাতায়াত করে। তাই নারী বাসও খালি যায়।

সমাধান কি ?

সরকারীভাবে পুরো ঢাকা শহরে একটা জরিপ করতে হবে। ঢাকা শহরে কোন রুটে, কখন, কত পার্সেন্ট নারী যাত্রী যাতায়ত করে। দেখা গেলো সময় ভেদে মোট যাত্রীর ২০%, ৩০% ৪০% নারী যাত্রী হয়। সকাল-দুপুর-সন্ধা হিসেবে এই পার্সেন্টিস উঠা-নামা করে। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বাস কোম্পানিগুলো প্রতি আইন করে দিতে হবে, প্রত্যেক রুটে নারী পার্সেন্টিস অনুসারে নারীবাস দিতে হবে। ধরে নিলাম সকালে ৩০-৪০% নারীযাত্রী থাকে, তবে ঐ রুটে প্রত্যেক বাস কোম্পানিকে বাধ্যতামূলকভাবে ১০টা বাসের মধ্যে ৪টা বাস নারীবাস দিতে হবে। দুপুরে সেটা কমে ২০% হলে গেলে ১০টা বাসে ২টা নারী বাস দিতে হবে। অফিস ছুটির টাইমে হয়ত নারীযাত্রী সংখ্যা ৩০% হয়ে গেলো, তখন নারীবাসের সংখ্যা ১০ টার মধ্যে বাধ্যতামূলক ৩টা দিতে হবে। পুরো সিস্টেম কন্ট্রোলের জন্য বিআরটিএর পক্ষ থেকে লোক থাকতে হবে, কেউ নিয়ম ভঙ্গ করলে বা নারীবাস কম দিলে তার রুট পারমিট ক্যান্সেল হবে। (জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বেতন পাওয়া বিআরটিএর কাজ শুধু বসে বসে ঘুষ খাওয়া না, জনগণের জন্য কিছু করা।)

তবে আমার ধারণা, অনেক নারী বাসে সমস্যার কারণে রিকশা বা অন্যবাহনে যাতায়াত করে (অন্যবাহনগুলোতে নারীরা হয়রানীর শিকার)। কিন্তু নারীবাস চালু হলে অনেক নারীই রিকশা বা অন্যবাহন ছেড়ে স্বাচ্ছন্দে বাসে উঠতে পারবে। তখন দেখা যাবে নারী বাসের সংখ্যা কমপক্ষে ৩০% পর্যন্ত লাগতে পারে।

কিছুদিন আগেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশ থেকে ‘গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০১৮ নিয়ে এসেছেন। নারী জাতির প্রতি অবদানের জন্যই নাকি এ পুরষ্কার। ভালো কথা। কিন্তু যে দেশের ৯৪% নারী যাতায়তের সময় যৌন হেনস্তা শিকার হন, সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার এ পুরষ্কার কতটুকু গুরুত্ব থাকতে পারে ?

আমি বলবো, নারীকে শুধু ঘরের বাইরে বের করে নিয়ে আসলেই চলবে না, নারীকে নিরাপত্তা দিতে হবে। এবং প্রধানমন্ত্রী তথা সরকারেরই সে দায়িত্ব নিতে হবে। যাতায়তের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার জন্য পৃথক বাস সার্ভিস চালু করতে হবে। এবং অবশ্যই সেটা বিচ্ছিন্নভাবে নয়, নারীর আনুপাতিক সংখ্যা মেনেই সরকারী ও বেসরকারী বাস সার্ভিসগুলোতে সে সুবিধা দ্রুত চালু করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে শুধু সরকারের সদিচ্ছার প্রয়োজন, অন্যকিছু নয়।

 

 

 

 

# নারীবাদীরা সব সময় এমন কিছু করতে চায় যা পুরুষরা করে। এর দ্বারা কিন্তু প্রমাণ হয়- নারীবাদীরা নিজেরাই প্রচার করছে পুরুষরা শ্রেষ্ঠ, যদি শ্রেষ্ঠ-ই না হয়, তবে তারা পুরুষের মত হতে চাইবে কেন ?

 

যেমন:

 

১) পুরুষরা সিগেটের খায়, এখন নারীবাদীরা সিগেরেট খেতে বলছে ।

 

(বি:দ্র: আমি নারী-পুরুষ উভয়ের সিগেরেট খাওয়ার বিরোধী। ব্যক্তিগত ভাবে সিগেরেট খাওয়া তো দূরের কথা, সিগেরেটের গন্ধও আমি সহ্য করতে পারি না, দম বন্ধ হয়ে যায়।)

 

২) অনেক পুরুষ রাস্তায় দাড়িয়ে প্রস্রাব করে, এটা দেখে নারীবাদীরাও দাড়িয়ে প্রস্রাব করার যন্ত্র আবিষ্কার করে, সেটা লাগিয়ে পুরুষের মত দাড়িয়ে প্রস্রাব করে। (http://ebay.to/2D3J2Ju)

 

(বি: দ্র: নারী-পুরুষ কেউ দাড়িয়ে প্রস্রাব করুক এটা আমি পছন্দ করি না, এবং সেটা স্বাস্থ্য সম্মতও নয়। তবে হিন্দু ধর্মে নারীরা দাড়িয়ে প্রস্রাব করে)

 

৩) নারীবাদীরা পুরুষের মত বাইরে কাজ করতে চায়। চাকুরী করতে চায়, ইনকাম করতে চায়।

 

একবার খবরে দেখেছিলাম-

 

ইন্দোনেশিয়া অথবা মালয়েশিয়ার নারীরা নাকি বাংলাদেশী প্রবাসী পুরুষদের খুব পছন্দ করে। বিয়ে করতে চায়। কারণ হলো- ওদের সমাজ ব্যবস্থা মাতৃতান্ত্রিক। মেয়েরাই ইনকাম করে, পুরুষ ঘরে বসে খায়। এতে নারীদের অনেক কষ্ট। তারা বাংলাদেশের পুরুষদের খুব ভালো বলে। কারণ তারা এত কষ্ট করে স্ত্রীর জন্য ইনকাম করে আর বাড়িতে পাঠায়। এজন্য তারা বাংলাদেশী ছেলেদের বিয়ে করতে চায়, যেন ঘরে বসে খেতে পারে। বাংলাদেশে যে সব নারীবাদী (যদিও বেশিরভাগ নারীবাদী বিদেশ থেকে লেখালেখি করে), নারীদের ঘরের বাইরে কাজ করার পক্ষপাতি, আদৌ তারা নারীদের ভালো চায়, নাকি তাদের আরামের জীবন নষ্ট করে কষ্টের জীবনের দিকে ঢেলে দিতে চায় সেটা যাচাই করা উচিত। কারণ বাহিরে কাজ করে ইনকাম করা কখনই আনন্দ বা সুখকর নয়।

 

নারীবাদীরা যখন পুরুষের মত হতে চায়, তারমানে নারীরা পুরুষকে শ্রেষ্ঠ মনে করে।

 

কিন্তু নারীবাদীরা যদি নারী জাতিকে শ্রেষ্ঠ মনে করতো, তখন নারী জাতির স্বকীয় বৈশিষ্ট্যগুলো নিয়ে গর্ববোধ করতো এবং পুরুষকে আহবান করতো পারলে এমন হও দেখি!

 

যেমন-

 

ক) একজন নারী তার গর্ভে সন্তান ধারণ করতে পারে, নারীর মাধ্যমে সমস্ত প্রাণিজগত পৃথিবীতে আসে। কোন পুরুষ হাজার চেষ্টা করেও সেটা পারবে না। এমনকি সন্তান জন্ম দেয়ার পর সেই সন্তানের খাবারও মায়ের কাছে আসে, পুরুষের কাছে আসে না। সে দিক থেকে নারী জাতি অনন্য।

 

খ) নারী জাতির সাথে ‘মমতাশব্দটা যোগ আছে। একজন নারী যতটুকু মমতাময়ী হতে পারে, পুরুষ সেটা পারে না। সন্তান লালন-পালনের জন্য এই মমতার বিকল্প নাই। নারীবাদীদের উচিত পুরুষদের আহবান করা- পারলে তোমরা নারীর মত মমতাময়ী হয়ে দেখাও দেখি!

 

(হয়ত বলতে পারেন- নারীর মমতা থাকলেও, পুরুষের আছে শক্তি।”, আমি বলবো- শক্তিতো মেশিন-কলকারাখানাও আছে। কিন্তু মেশিনের মধ্যে তো মমতা নাই।)

 

গ) “মায়ের হাতে রান্না, আহ কি স্বাদ !রান্না করা নারীদের বিশেষ গুন। পুরুষ চেষ্টা করলে রান্না করতে পারে, কিন্তু নারী জাতির মত হবে না নিশ্চয়ই। খাদ্যগ্রহণ মানুষের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, আর তার নিয়ন্ত্রণ নারী জাতির হাতে। নারীবাদীদের বরঞ্চ পুরুষদের আহবান করা উচিত- পারলে নারীদের মত ভালো রান্না করে দেখাও তো”।

 

 

 

 

 

# ফেসবুকে এই মেয়ের ভিডিওটা দেখলাম-

 

মেয়েটাকে রাস্তায় কিছু ছেলে হ্যারাস করছে করেছে (http://bit.ly/2oW2GCh)। মেয়েটার কথাগুলো শুনছিলাম। সত্যিই খুব খারাপ লাগছিলো। এ ধরনের নারী নিপীড়ন আমি সহ্য করতে পারি না। চিন্তা করছিলাম প্রতিবাদ করবো। কিন্তু সমস্যা হলো, মেয়েটার পুরো ভিডিওটা দেখার পর মেয়েটির নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ তৈরী হলো।

 

মানে আমি বলতে চাইছি, একটা সাধারণ মেয়ে রাস্তায় নিপীড়িত হইছে, এরপর ফেসবুকে প্রতিবাদ করছে, এটা এক কথা। কিন্তু মেয়েটার পুরা কথা শুনে মনে হইলো, সে আসলে নারী নিপীড়ন বন্ধ করতে চায় না, সে চায় তার নিজস্ব থিউরী বাস্তবায়ন করতে। এবং সে জন্যই সে ভিডিওটা বানাইছে।

 

আসলে এখানে সাইকোলোজির অনেক থিউরী আছে। ধরুন, সমাজে কোন ঘটনা ঘটলো। প্রত্যেক ঘটনার বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। আপনি করলেন কি, ঐ প্রতিক্রিয়ার বিপরীতে নিজের পছন্দমত থিউরী বসায় দিলেন। অর্থাৎ প্রতিক্রিয়াকে কাজে লাগায় নিজস্ব থিউরী স্ট্যাবলিশ করা। এ ভিডিওটতে মেয়েটা এই কাজটাই করছে বা তাকে দিয়ে কেউ করাইছে।

 

সে যে থিউরীটা স্ট্যাবলিশ করতে চাইছে, সেটা সিআইএপন্থী নারীবাদীদের অনেক পুরাতন থিউরী-

নারীরা যেমন ইচ্ছা তেমন পোষাক পরবে, কেউ কিছু বলতে বা বাধা দিতে পারবে না।

এই থিউরীটা সিআইএপন্থী নারীবাদীরা বহু আগে থেকে বিভিন্ন রং বদলায় প্রচার করতো। যেমন এ থিউরীর আরেকটা রূপ- “ধর্ষণের জন্য দায়ী নারীর পোষাক না, পুরুষের মানসিকতা দায়ী।অর্থাৎ ধর্ষণ ঘটনাগুলোকে পূজি করে তারা মেয়েদের বল্গাহারা হওয়ার উপদেশ দিতো।

 

আসলে এ থিউরীটা গোজামিল থিউরী, বাস্তবতাকে অস্বীকার করার থিউরী। সৃষ্টিগতভাবে নারী-পুরুষ পরস্পর পরষ্পর দ্বারা আকৃষ্ট হয়। নারীর শরীর দেখে পুরুষ আকৃষ্ট হয়, আবার পুরুষের শরীর দেখে নারী আকৃষ্ট হয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দৈহিক সম্পর্ক তৈরী হয় একই আকর্ষণেরই দ্বারা। এবং এই আকর্ষণ থেকে সকল প্রাণী বংশ বৃদ্ধি করে। তবে স্বামী-স্ত্রীর মত বৈধ সম্পর্ক না হলে, এই আকৃষ্ট হওয়ার পর কেউ আবেগ সংবরণ করতে পারে, কেউ পারে না। যারা এই আবেগ সংবরণ করতে পারে না, তাদের আমরা উচ্ছৃঙ্খল বলি, বখাটে বলি, ইভটিজার বলি। আমি আমার ভার্সিটি লাইফে এমন নারীও দেখছি, যারা সুন্দর পুরুষ দেখলে সেক্স করার অফার পর্যন্ত দিয়ে বসতো। তারমানে নারী সমাজেও এমন নারী আছে। তবে নারীরা সম্ভবত নিজেদের আবেগ যতটুকু নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, পুরুষরা ততটা পারে না। এ কারণে সমাজে (উচ্ছৃঙ্খল) পুরুষদের আবেগ বেশি দৃশ্যমান হয়, নারীরটা খুব দেখা যায় না (তবে বান্ধবীরা গোপন কথা সব জানে)।

 

এখন কেউ যদি বলে, “আমি শরীর দেখাবোই, তুমি দেখবা না”- আমার মনে হয় সে বাস্তবতাকে অস্বীকার করতে চায়। নারী-পুরুষের চিরাচরিত আকর্ষনবোধকে অস্বীকার করতে চায়। সত্যকে ভুলে সবাইকে গোয়েবলস থিউরী দিয়ে মিথ্যা শেখাতে চায়। ইমোশন তৈরী করে কনসাস মাইন্ডকে ধোকা দিয়ে সাব-কনসাস মাইন্ডে তাদের বানানো থিউরী প্রবেশ করাতে চায়।

কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, তাদের থিউরী শুনলে সমাজে নারী নির্যাতন কমবে না, বরং আরো বাড়বে। পৃথিবীতে ধর্ষণে শীর্ষে অবস্থান করা ১০টি দেশের তালিকায় ১টিও মুসলিম দেশ নাই। এ থেকে প্রমাণিত হয় তাদের থিউরী আসলে ভুল। তাদের থিউরী শুনলে সামাজিক বাধন নষ্ট হবে, অরাজকতা তৈরী হবে, আপাতত তাদের উপরওয়ালাদের উদ্দেশ্য সেটাই।

 

তবে নারীবাদীদের এই অংশটা যে নিরপেক্ষ নয়, তার আরেকটা প্রমাণ আমার কাছে। দেখবেন, তারা নারীকে খাদ্য ভাববেন না”- এই টাইপের কথা প্রায় প্রচার করে, কিন্তু কর্পোরেটরা যে নারীকে খাদ্য বানিয়ে তাদের পন্য বিক্রি করছে সেটার বিরোধীতা কিন্তু তারা করে না। তারা কখনই বলে না, “এ ধরনের বিজ্ঞাপন-নাটক-মুভি-পর্নেো সমাজে নারী নির্যাতন বৃদ্ধি করছে, উস্কে দিচ্ছে, তাই এগুলো বন্ধ করুন।

তাদের এ চুপ থাকার কারণ- নারীবাদীরা উপরে গিয়ে মিলেছে সিআইএ’র সাথে, আর সেই সিআইএকে উপর থেকে পলিসি দেয় ইহুদীবাদী কর্পোরেটরা। নারীবাদীরা যদি সত্যিই নারীদের ভালো চাইতো- তবে তারা আগে বিজ্ঞাপন, মুভি, পর্নোমুভি, সিরিয়ালে নারীদের পন্য বানানোর বিরোধীতা করতো। তারা এগুলো বিরোধীতা না করে প্রমাণ করেছে, আসলে রসুনের গোড়াগুলো সব এক।

 

সবার শেষে আবার বলবো-

আমি সমাজে নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে রাজি, কি করা যায় সেটা নিয়ে আসুন চিন্তা করি। কিন্তু কারো বিশেষ এজেন্ডার ফাঁদে দয়া করে পা দেবেন না।

 

পড়তে পারেন: নারীবাদ সিআইএ’র প্রজেক্ট :http://bit.ly/2uP0hx3

 

 

 

 

 

বাংলাদেশের গোয়েন্দা বাহিনী বসে বসে যে কি করে আমি বুঝি না,

নির্বাচনের আর মাত্র ১ মাস বাকি, এর মধ্যে মার্কিনব্লকের এক ব্যক্তি ঘোষণা দিলো ৬৪ জেলায় ভ্রাম্যমান লাইব্রেরী নামক প্রোগ্রাম করবে (৮ই ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে), আর প্রশাসন অনুমুতি দিয়ে দিলো ?

তাও এমন একটি প্রকাশনী (শ্রাবন প্রকাশণী), যারা চরম বিতর্কিত, নাস্তিকতার সাথে সম্পৃক্ত-

১) নাস্তিকতা প্রচারের জন্য রোদেলা প্রকাশনী বন্ধ হওয়ার পর তা খুলে দেয়ার জন্য আন্দোলন করতে মাঠে নামে শ্রাবন প্রকাশনীর রবিন আহসান (https://bit.ly/2KIJv8q)

২) চরম ধর্মবিদ্বেষী বই বের করার জন্য বদ্বীপ প্রকাশণী বন্ধ করায় রাস্তায় নেমেছিলো রবিন আহসান, যার কারণে শ্রাবন প্রকাশনীকে ২ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে বাংলা একাডেমী। (https://bbc.in/2raon26)

৩) সিআইএ’ এজেন্ট এসকে সিনহার বানানো মূর্তি অপসারণ করায় মাঠে নেমেছিলো শ্রাবন প্রকাশনীর রবিন আহসান (https://bit.ly/2zAKAei)

৪) মার্কিন এজেন্ডা সংখ্যালঘু নির্যাতনের ধুয়া তুলতে সর্বদা মাঠে সরব ছিলো শ্রাবন প্রকাশনীর রবিন আহসান (https://bit.ly/2KJpnmP)

 

এদের মুখের ভাষা মুক্তিযুদ্ধ। কিন্তু বাস্তবতা মুক্তিযুদ্ধ ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ধর্মবিদ্বেষ ছড়ানো, দেশে অরাজকতা সৃষ্টি। এদের দৌড় সর্বোচ্চ শাহবাগ পর্যন্ত হতে পারে, কিন্তু ৬৪ জেলায় ফিল্ড পর্যায়ে গেলে এদের সাথে জনগণের সংঘর্ষ বাধা খুব স্বাভাবিক।

পোস্টারে দেখলাম, এই প্রোগ্রামের উদ্বোধন করবে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক ই ইলাহী, আর সহযোগীতা করবে সরকারের মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ। আমার মনে হয় না, এরা মূল ঘটনা বুঝে (সিআইএপন্থী সিনহাকে প্রধানবিচারপতি বানালে আর কি বাকি থাকে ?), বরং এদের নাম কৌশলে এটে পুরো প্রোগামকে একটি আওয়ামী সরকারের সিল লাগানো হয়েছে কৌশলে।

আমার কথা হলো, শ্রাবন প্রকাশনীকে আর কয়জন চেনে, কিংবা রবীন আহসান যে সরকারবিরোধী মার্কিনপন্থীদের হয়ে কাজ করছে, এটাও বা কয়জন বোঝে ? কিন্তু কিন্তু তৌফিক ই ইলাহী আর মন্ত্রী পরিষদ বিভাগকে তো সবাই চেনে। তাই কথিত ভ্রাম্যমান লাইব্রেরী ফিল্ড পর্যায়ে একটা ঘটনা ঘটিয়ে দিলে তার দায় কিন্তু পড়বে সরকারের উপর, যার সূত্র ধরে তৈরী হতে পারে বড় ধরনের সরকারবিরোধী আন্দোলন।

আমার মনে হয়, নির্বাচনের আগে, নতুন কোন অরাজকতা বন্ধ করতে, শ্রাবন প্রকাশনীর কথিত মুক্তিযুদ্ধের ভ্রাম্যমান বইমেলাআপাতত স্থগিত করাই শ্রেয়, নির্বাচন শেষ হলে পরে দেখা যাবে।

 

 

 

 

জাফর ইকবালের যোগ্যতা খুজতে গিয়ে দেখলাম সে সাইন্স ফিকশন লেখক। শতাধিক সাইন্স ফিকশন বই নাকি সে লিখেছে (যদিও সবাই বলে বইগুলো নাকি বিদেশী গল্পের অনুবাদ)। সাইন্স ফিকশন শব্দের অনুবাদ করলে দাড়ায় বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী’। ছোট বেলায় কিছু সাইন্স ফিকশন পড়েছিলাম। সেখানে দেখতাম কল্পনার জগৎ বিস্তার করতে করতে লেখকরা বলে বসেছে- “ ভিনগ্রহে এলিয়েনের বসবাস। পৃথিবীর বাইরে অমুক গ্রহে অমুক এলিয়েন বাস করে। এলিয়েনরা মানুষের থেকে উন্নত।

অথচ বর্তমান বিজ্ঞান এখনও এলিয়েন আবিষ্কার করতে পারেনি। মানুষের থেকে উন্নত প্রাণী আছে কি নাই, তাও বিজ্ঞানের ঝুলিতে লব্ধ নয়। বিজ্ঞান শব্দটির সংজ্ঞায় বলা আছে- ভৌত বিশ্বের যা কিছু পর্যবেক্ষণযোগ্য, পরীক্ষণযোগ্য ও যাচাইযোগ্য, তার সুশৃঙ্খল, নিয়মতান্ত্রিক গবেষণা ও সেই গবেষণালব্ধ জ্ঞানভাণ্ডারের নাম বিজ্ঞান।অর্থাৎ গবেষণালব্ধ সম্যক জ্ঞানই বিজ্ঞান। কিন্তু কল্পকাহিনী বা সাইন্সফিকশন কোন যুক্তিতে বিজ্ঞান বলা হচ্ছে ?

আমি দেখেছি একদল লোক আছে, যারা নিজেদের বিজ্ঞানী বলে দাবি করে আবার ধর্মের বিরোধীতা করে। বলে- সৃষ্টিকর্তা বলে কিছু নাই সব কল্পকাহিনী।যদিও তাদের এ ধরনের চিন্তা অযৌক্তিক। কারণ ধর্ম ও বিজ্ঞান সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটো বিষয়। ধর্ম হচ্ছে বিশ্বাস আর বিজ্ঞান হচ্ছে যতটুকু গবেষণা হয়েছে ঠিক ততটুকু। একজন বিজ্ঞানী যতটুকু গবেষণা করেছে, সেটাই যে শেষ তা নয়। তারপর আরেকজন আরো গবেষণা করে নতুন কিছু আবিষ্কার করবে। অর্থাৎ বিজ্ঞান নিজেই অসম্পূর্ণ। ধর্ম আর বিজ্ঞানের যেহেতু প্ল্যাটফর্ম সম্পূর্ণ ভিন্ন (একটি বিশ্বাসের সাথে, অন্যটি গবেষনালব্ধ ফলাফলের সাথে), তাই দুটোকে এক কাতারে বিচার করা মূর্খতা বৈ কিছু নয়।

কিন্তু আমার কথা হলো, যারা বিজ্ঞানের কথা বলে ধর্মের বিরোধীতা করছে, তারা কেন সাইন্স ফিকশন বা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর বিরোধীতা করছে না কিংবা তারাই কেন সাইন্স ফিকশন লেখক ?

আমার মনে হয়, যারা বিজ্ঞানের নামে কল্পকাহিনীর বিরুদ্ধে বলতে চায়, তাদের আগে উচিত সাইন্স ফিকশন লেখকদের বিরুদ্ধে বলা। বলাবাহুল্য বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কল্পকাহিনী লেখায় (নকল করায় !) জাফর ইকবাল অগ্রগণ্য।

 

 

 

 

 

# তিনি মুখে বড় বড় নীতিবাক্য আওড়ান, কিন্তু রংপুর মেডিকেল কলেজের ক্যান্টিনের বাকি টাকা মেরে দিয়েছিলেন। ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন, অজ্ঞাত কারণে তিনি ভারতীয় হাইকমিশনের অনুষ্ঠানে এতিমের মত ঘোরাঘুরি করছেন। যদিও ছবিখানা তার ফেরিফাইড পেইজ থেকে পাওয়া যায় নাই, পাওয়া গেছে সাংবাদিক পীর হাবীবুর রহমানের ফেসবুক একাউন্ট থেকে।

 

তারমানে মুখে যত নীতি কথাই বলেন, ইন্ডিয়ান হাই কমিশনের নেটওয়ার্ক ইমরান সরকারকেও মেইনটেইন করতে হয়।

 

 

 

 

#

আসাদ নূরের গ্রেফতারের পর নাস্তিক আসিফ মহিউদ্দিন লাইভে এসে নব্য নাস্তিক মুফতে মাসুদের সাথে কথা বলছিলো। আমি তাদের কথপোকথন শুনছিলাম। কথপোকথনের এক পর্যায়ে মুফতে মাসুদ বলে ফেললো-“আমাদের জন্য টাকা আসে। আমাদের টাকা আসতো আসাদ নূরের মাধ্যম হয়ে”।

আমার একটা প্রশ্ন মনের মধ্যে সব সময় কাজ করে-

আচ্ছা নাস্তিকদের এই টাকা আসে কোথা থেকে ?”

কারা নাস্তিকদের টাকা দেয় ? কি তাদের উদ্দেশ্য ?”

আমার এ লেখা, নাস্তিকদের টাকার উৎস সন্ধানে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বব্যাপী তাদের সম্রাজ্যবাদ ছড়িয়ে দিতে যে কার্যক্রম হাতে নিয়েছে, তার নাম এনজিও’। এই এনজিও কার্যক্রমের মাধ্যমে তারা সারা বিশ্বকে অক্টোপাসের মত আকড়ে ধরেছে। মার্কিন সরকারের মূল বা মাদার এনজিও’র নাম USGLC। (www.usglc.org/)

সম্পূর্ণ- U.S. Global Leadership Coalition। এই এনজিও এবাউটে লেখা- Strengthening America's leadership in the world through a strategic investment in development and diplomacy. অর্থাৎ বিশ্বব্যাপী আমেরিকার নেতৃত্ব ধরে রাখাই এর মূল উদ্দেশ্য। সংস্থাটির বর্তমান চেয়্যারম্যানের নাম দান গ্লিকম্যান, একজন ইহুদী। এই সংস্থাটির সাথে কোয়ালিশন আছে ফেসবুক, রয়টার্স, কোকাকোলা, শেভরন, মাইক্রোসফট, পিএন্ডজিসহ হাজার হাজার ওয়ার্ল্ড জায়ান্ট সংস্থা।

যাই হোক, USGLC সংস্থাটির অনেকগুলো হাত আছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে National Endowment for Democracy বা NED । (www.ned.org)

NED নিয়ন্ত্রণ করে মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। সংস্থাটির অপরেটিং বাজেট ১০৩ মিলিয়ন ডলার, যা দেয় মার্কিন মাদার কেন্দ্রীয় এনজিও সংস্থা USGLC। তবে প্রাইভেট বা অন্যান্য সহযোগী রাষ্ট্রগুলো থেকেও সেখানে ফান্ড আসে। এছাড়া মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টও NED কে পৃষ্ঠপোষকতা করে। সংস্থাটির বর্তমান প্রেসিডেন্টের নাম কার্ল গ্রার্সম্যান, সেও ধর্মে ইহুদী।

NED’র কাজ হচ্ছে বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার বিষয়টি দেখাশোনা করা। NED এর একটি হাতের এর নাম হচ্ছে IFEX বা International Freedom of Expression Exchange।(https://www.ifex.org/)

বিশ্বব্যাপী ৬৫টি দেশে ১০৪টি এনজিও নেটওয়ার্ক তৈরী করেছে তারা। এই এনজিওগুলোর কাজ হচ্ছে বিভিন্ন দেশে নাস্তিক ব্লগার/সাংবাদিক তৈরী করা, মিডিয়ায় নাস্তিব্যবাদী পরিবেশ তৈরী করা এবং কেউ বিপদে পরলে তার সাহায্যে এগিয়ে আসা। সর্বপরি পুরো মিডিয়াকে সিআইএর কন্ট্রোলে নিয়ে আসা এবং তাদের স্বার্থে ব্যবহার করা সংস্থাটির লক্ষ্য। IFEX এর প্রধান কার্যালয় কানাডায় অবস্থিত।

এবার আসুন দেখি, বাংলাদেশে IFEX কোন কোন এনজিও কাজ করছে ?

বাংলাদেশে IFEX এর তত্ত্বাবধানে দুই ধরনের এনজিও কাজ করছে, একটি আন্তর্জাতিক, আরেকটি শুধু বাংলাদেশের জন্য।

শুধু বাংলাদেশের জন্য কাজ করা এনজিও নাম হচ্ছে- Media Watch Bangladesh।

(https://www.ifex.org/ifex_members_region/#region1288)

এই এনজিওর ঠিকানায় দেয়া আছে একটি মোবাইল নম্বর 01819223309

এবং একটি মেইল আইডি- mediawatchbangladesh@gmail.com।

এ দুটো দিয়ে ফেসবুকে সার্চ করলে আসে একুশে টিভির সিইও বুলবুল আহসানের ফেসবুক আইডি- https://www.facebook.com/bulbul.ahsan

(চলবে)

 

 

 

 

#

গণ্ডমূর্খ বললেও ভুল হবে কিন্তু মুসলমানদের ইতিহাস নিয়ে বইমেলায় বই বের করে ‘জিহাদ ও খেলাফতের সিলসিলা’। ভাবখানা এমন- দুনিয়ার সব জাইনা ফালাইছে, আসলে বালটাও ফালাইতে পারেনাই (দুঃখিত)।

 

তার দাবি, যারা হাদীস বানাইছে, তারা নাকি সাহিত্যিক ছিলো, মনের মাধুরী মিশায় নাকি হাদীস বানাইছে, যোগ বিয়োগ এডিট করে বানাইছে।

 

আমি ধর্মবেত্তা নই, কিন্তু ইসলাম ধর্ম নিয়ে কিছুটা হলেও গবেষণা করেছি, হাদীস সম্পর্কে কিছুটা হলেও জ্ঞান নেয়ার চেষ্টা করেছি। হাদীস বর্ণণাকারীদের বলে রাবী। এই রাবীদের অনেক যোগ্যতা থাকতে হয়, এর মধ্যে একটি যোগ্যতা হলো দাবত’। দাবত হলো- প্রাপ্ত হাদিস হ্রাস, বৃদ্ধি ও বিকৃতি ব্যতীত অপরের নিকট পৌঁছে দেওয়া। হাদীসে সাহিত্যিকের মত মনের মাধুরী মেশানো বা হ্রাস-বৃদ্ধি করার কোন সুযোগ নাই।

 

যাই হোক, পারভেজ গাঞ্জু হাদীস বানানোর (!)যে সূত্র আবিষ্কার করেছে, সেটা গাঞ্জায় কততম টান দেয়ার পর তার মনে উদ্ভব হইছে সেটাও বর্ণনা করলে ভালো হইতো।

 

স্ট্যাটাস লিঙ্ক : http://bit.ly/2BD2UFA,http://archive.is/pDfhy

 

 

 

 

 

# জাফর ইকবাল স্যার নতুন করে কোটা আন্দোলনের বিরুদ্ধে একটা আর্টিকেল লিখছে (https://bit.ly/2Ido9y2)। আর্টিকেলটা পড়ে আমি সত্যিই হতাশ হলাম, বুঝলাম, তার বয়স হয়েছে। এখন তার রিটায়ার্ডে যাওয়া উচিত। অনেক তো হলো। তার বানানো চেতনার মসল্লা আর ছাত্ররা খাইছে না, কারণ ছাত্ররা চলে কোরআই -৯প্রসেসরে আর তিনি পড়ে আছেন পেন্টিয়াম-১ যুগে। তাই এ যুগে তিনি অচল, তার এখন গার্বেজে যাওয়াই শ্রেয়।

 

১) কোটা আন্দোলনের সময় অনেক ছাত্র বুকের মধ্যে ‘আমি রাজাকারলিখেছে দেখে তিনি মারাত্মক রাগান্বিত হয়েছেন। তিনি বলেছেন,

- “যখন দেখি একজন ছাত্র নিজের বুকে আমি রাজাকারকথাটি লিখে গর্বভরে দাঁড়িয়ে আছে, আমি সেটি বিশ্বাস করতে পারিনি। মাথায় আগুন ধরে যাওয়া বলে একটা কথা আছে, এই কথাটির প্রকৃত অর্থ কী আমি ওই ছবিটি দেখে প্রথমবার সেটি অনুভব করেছি।

-এরপর বলেছেন, “কোটাবিরোধী আন্দোলন করে যে বাংলাদেশের মাটিতে নতুন রাজাকারের পুনর্জন্ম হয়েছে, এ দেশের তরুণরা নিজেদের রাজাকার হিসেবে পরিচয় দিয়ে গর্ব করতে শিখেছে, আমাদের সংবাদমাধ্যম সেই খবরটি আমাদের কেন জানাল না?”

- “(কোন ছাত্র বলবে) আমি ২০১৮ সালে কোটাবিরোধী আন্দোলন করেছিলাম, খবরের কাগজে আমার ছবি ছাপা হয়েছিল, আমার বুকে লেখা ছিল আমি রাজাকার’। তখন আমি (জাফর স্যার) অবধারিতভাবে গলায় আঙুল দিয়ে তার ওপর হড়হড় করে বমি করে দেব।”

 

স্যার জাফর ইকবালের ভাষায়, “ছাত্ররা বুকের মধ্যে আমি রাজাকারশব্দটা গর্বভরে লিখেছিলো।

কিন্তু আসলেই কি তাই ?

ছাত্ররা ‘রাজাকারশব্দটা লিখেছিলো ক্ষোভ থেকে, রাগে-দুঃখে লিখেছিলো। অনেকে লিখেছিলো; “চাইতে গেলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকারএটা তো গর্বকরে লেখা নয়। জাফর ইকবাল ছাত্রদের অপবাদ দিয়েছেন। যদিও যে উপলক্ষ্য করে (মতিয়া চৌধুরীর বক্তব্য) ছাত্ররা এ শ্লোগান ঝুলালো সেটা তিনি কৌশলে এড়িয়ে গেছেন।

 

২) ‘আমি রাজাকারশব্দটা কেন লেখা হয়েছে এটা কোরআই-৯ প্রজন্ম ভালোভাবে বুঝে। বর্তমানে পৃথিবীতে মি-টু হ্যাশ ট্যাগ দিচ্ছে অনেকে। হলিউডের এক পরিচালক অভিনেত্রীদের যৌন নির্যাতন করতো, সেই থেকে এই ট্যাগের সূচনা। এখন পৃথিবীর অনেকেই মি-টু হ্যাশ ট্যাগ দেয়। তাই বলে সবাই যে যৌন নির্যাতিত বিষয়টি তা নয়। এর আগে বাংলাদেশে একটি প্রচারণা হয়েছিলো, ‘আমি মালউনশ্লোগান দিয়ে। মালউনমানে অভিশপ্ত। ঐ সময় জাফর ইকবাল কিন্তু এটা নিয়ে কোন ঘোষণা দেয়নি। একই ঘটনা কিন্তু ঘটেছিলো নারায়নগঞ্জের শিক্ষক শ্যামল কান্তির কান ধরে উঠবস নিয়ে। ঐ সময় তার সমগোত্রীরাও কান ধরে উঠবসা করে। ঐ সময় স্যার জাফর ইকবাল কি লিখেছিলো আসুন দেখি: আমি নিজে একজন শিক্ষক। আমি জানি, আমাদের দেশের সকল শিক্ষকের কাছে মনে হয়েছে এটি তার নিজের অপমান। শ্যামল কান্তি ভক্তকে একা কান ধরে উঠ-বস করানো হয়নি, এদেশের সকল শিক্ষককে একসঙ্গে কানে ধরে উঠ-বস করানো হয়েছে।” (https://opinion.bdnews24.com/bangla/archives/36190)

কি বুঝলেন ? তিনি কিন্তু কানে ধরে উঠবস কার্যক্রমের বিরুদ্ধে বলেননি, বরং সেই আন্দোলনকে পক্ষে বলে সব শিক্ষককে কানে ধরে দিয়েছেন।

 

৩) জাফর ইকবাল লিখেছেন, “ঢাকা শহরের মানুষকে জিম্মি করে আন্দোলন করার জন্য আমি যথেষ্ট বিরক্ত হয়ে সপ্তাহ দুয়েক আগে একটি লেখা লিখেছিলাম (সেই সময়ে আমার মেয়ে হাসপাতালে ছিল, তাই ঢাকাশহরকে জিম্মি করে ফেললে হাসপাতালে রোগীদের কী ধরনের কষ্ট হয় আমি নিজে সেটি জানতে পেরেছি)।

 

স্যারের এ ধরনের বক্তব্য পড়ে আমি বুঝলাম তিনি কতটা স্বার্থপর। ঐ সময় তার মেয়ে হাসপাতালে ছিলো বলে তিনি ঢাকাবাসীর কষ্টটা বুঝছেন। তার মেয়ে হাসপাতালে না থাকলে তিনি বিষয়টি বুঝতেন না। আহহারে। কিন্তু এই আন্দোলন আর কয়দিনের, ঢাকা শাহবাগের যখন মাসের পর পর মাস ধরে রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন চলছিলো, তখন তিনিও ঐ আন্দোলনের ছিলেন, এবং স্ত্রী পাশে নিয়ে মাইকে বক্তব্য দিয়েছেন। তখন কিন্তু ঐ এলাকায় মিডফোর্ড, বারডেম, ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো । শাহবাগে জাফর স্যারের সেই বক্তব্য দেখুন (https://youtu.be/E_tlh_AxXOQ), দৃশ্য বলে দিচ্ছে- যে পরিমাণ রাস্তায় ভীড় একজন রোগির পক্ষে ঐ রাস্তা দিয়ে যাওয়া সম্ভব না।

 

৪) জাফর স্যার আর্টিকেলের শুরুতে বলেছেন, “আমি শেষবার এই কথাটি শুনেছিলাম ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর কিংবা অক্টোবর মাসে। তাড়া খাওয়া পশুর মতো দেশের নানা জায়গা ঘুরে শেষ পর্যন্ত ঢাকায় এসে আশ্রয় নিয়েছি।

স্বাভাবিকভাবে একটা প্রশ্ন আসে, ঐ সময় তো তিনি টগবগে যুবক (সার্টিফিকেট বয়স ১৯), তাহলে তিনি মুক্তিযুদ্ধ করলেন না কেন ? কেন তিনি জীবন বাচানোর জন্য পশুর মত পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন, কেন মানুষের মত মুক্তিযুদ্ধ করলেন না ?

জাফর স্যার নিজের মুখে বলেছেন, রাজাকার একটি ঘৃণ্য শব্দ। ছাত্ররা আমি রাজাকারশব্দ লাগানোয় তিনি বোমি করবেন। আচ্ছা স্যার জাফর ইকবাল, আপনি এবং আপনার ভাই দুজনেই তো লিখেছেন, ১৯৭১ সালে যখন সারা দেশের হত্যাযজ্ঞ চলছিলো, তখন আপনি এবং আপনার ভাই আপনাদের এলাকার একটি রাজাকার মাদ্রাসায় ভর্তি হতে গিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিলো ঐ সময় যদি আপনারা আমি রাজাকারসেজে থাকেন, তবে আপনাদের জীবনটা বাচবে। (https://bit.ly/2I5prip)

জাফর ইকবাল স্যার, আপনি আর্টিকেলে বলেছেন একটি সরকারি চাকরি পাওয়ার জন্য বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া তরুণদের পচে গলে পূতিগন্ধময় রাজাকার নামক আবর্জনায় পরিণত হয়ে যাওয়া নিয়ে আমার ঘৃণাটি প্রকাশ করতাম।

তাহলে বর্তমান প্রজন্মও তো বলতে পারে: “ ১৯৭১ সালে টগবগে যুবক হয়েও মক্তিযুদ্ধ না করে রাজাকারদের মাদ্রাসায় আমি রাজাকারসাজতে যাওয়াটা কি আপনার অপরাধ হয়নি? আপনার এ ইতিহাস শুনে কি ছাত্ররা মুখে আঙ্গুল দিয়ে বমি করবে না ?

 

জাফর স্যার, আপনাদের মূল সমস্যাটা বর্তমান প্রজন্ম বুঝে। আপনারা মুখে বলেন, ছাত্ররা সৃজনশীল হোক, কিন্তু বাস্তবে চান, বর্তমান প্রজন্ম যেন অন্ধের মত আপনাদের অনুসরণ করে। আপনারা যা বলেন, তাই মুখ দিয়ে গড় গড় করে আওড়াক। নিজের বিবেক বুদ্ধি না খাটায়। তুই রাজাকারএর উৎপত্তি সম্পর্কে আপনি নিজেই বলেছেন, এই শ্লোগানটা হুমায়ুন আহমেদ টিয়া পাখির মুখ দিয়ে সর্বপ্রথম বলেছিলো, সেই থেকে তুই রাজাকারর উৎপত্তি। টিয়া পাখির কিন্তু বিবেক বুদ্ধি নেই। সে নিজ থেকে কিছু বলতে পারে না। তাকে যা মুখস্ত করানো হয়, তাই সে বলতে পারে, এর বেশি না। আপনারা চান, নতুন প্রজন্ম টিয়া পাখি হয়ে থাকুক। আপনারা যা বলে দিবেন, সেটাই তারা মুখস্ত বলুক, নিজেদের বিবেক বুদ্ধি না খাটাক। কারণ ছাত্ররা নিজেদের বিবেক বুদ্ধি খাটানো শুরু করলেই আপনাদের সমস্যা। মুখোশ খুলে যাবে আপনাদের। বের হয়ে যাবে আপনাদের ব্যবসায়ী চরিত্র। তখন উল্টো প্রমাণিত হবে জ-তে জাফর, তুই রাজাকার... তুই রাজাকার”।

 

 

 

সাংবাদিক আনিস আলমগীর সরস্বতী মূর্তিকে সেক্সিবলায় গায়ে আগুন লেগে গেছে একুশে টিভির অঞ্জন রায়ের। ঐ পোস্টকে সাম্প্রদায়িকআখ্যা দিয়ে আনিস আলমগীরকে ক্ষমা চাইতে বলেছে অঞ্জন। (http://bit.ly/2E1Gyg1)

আনিস আলমগীর সত্য বলেছে, কি মিথ্যা বলেছে, সেই তর্কে যাওয়ার পক্ষপাতি আমি নই।

-আমি পক্ষপাতি নই, সরস্বতী পূজা মন্ত্রে দেবীর বিশেষ অঙ্গের প্রশংসা বাক্য (কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে) নিয়ে কথা বলতে।

-আমি পক্ষপাতি নই, ‘অর্ধেক জীবনউপন্যাসে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সরস্বতী দেবীমূর্তি দর্শনে কি প্রতিক্রিয়া করেছিলো, তা বর্ণনায়।

-আমি পক্ষপাতি নই, ‘প্রজাপতিউপন্যাসে সমারেশ বসু সরস্বতীর দেহের বর্ণনায় কি বলেছিলো, তা উল্লেখ করতে।

-আমি পক্ষপাতি নই, সরস্বতীর সাথে তার পিতা ব্রহ্মা, স্বর্গের দেবতা বা অসুরদের সাথে কি সম্পর্ক ছিলো তা প্রকাশ করতে।

আমি কেবল বলতে চাই, এই অঞ্জন রায়রা তো এতদিন ধর্মবিদ্বেষীদের পক্ষে টিভি-চ্যানেলগুলোতে ওকালাতি করেছিলো। একের পর এক টক শোতে অসাম্প্রদায়িক সেজে ইসলামবিদ্বেষ ছড়িয়েছিলো।।

এই অঞ্জন রায়রা তো অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলে, ইসলামবিদ্বেষী ব্লগার, বৈশাখী পূজা আর গ্রিক দেবীমূর্তির পক্ষে বলেছিলো।,

এই অঞ্জন রায়ের বোন বৃত্বা রায় দীপা-ই তো বলেছিলো : “হিজাবমুক্ত বাংলাদেশ চাই, সর্বত্র হিজাব সংষ্কৃতি বন্ধ হোক।” (http://bit.ly/2DDlTB0)

কোথায় ? তখন তো অঞ্জন রায়ের কাছে সেগুলো সাম্প্রদায়িক মনে হয়নি। কিন্তু এখন কেন তাদের ঘরোনার লোক সরস্বতী নিয়ে কথা বলায় সেটাকে সাম্প্রদায়িক বলে মনে হচ্ছে ?

কিছুদিন আগে একই ঘটনা ঘটেছিলো, ওয়েম্যান চ্যাপ্টারের সম্পাদক সুপ্রীতি ধরের ক্ষেত্রে। সারাদিন অসাম্প্রদায়িকতার লেবেল এটে সুপ্রীতি ধর ইসলাম ধর্মকে গালি দিতো, অন্যকে গালি দিতে উৎসাহিত করতো। একদিন এক মুসলিম পরিবার থেকে আগত নাস্তিক টয়লেটে হিন্দুদের দেবতার মূর্তি রাখায় সুপ্রীতির হিন্দুত্ববাদ জেগে উঠে। সে ঐ নাস্তিককে নাজেহাল করার চেষ্টা করে। কিন্তু ততক্ষণে ফাঁস হয়ে যায়, সুপ্রীতির উগ্রহিন্দুত্ববাদী চেহারা।। ঠিক একই ঘটনা ঘটলো সাংবাদিক আনিস আলমগীর আর অঞ্জন রায়ের ক্ষেত্রে।

অঞ্জন রায়রা বাস্তবেই শিব সেনা, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং আরএসএস সদস্য। শুধু স্থান আর কালের প্রয়োজনে ভিন্ন লেবেল এটে রেখেছে, এই আরকি।

 

 

 

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাদ্রাসা ছাত্রদের ভর্তি হওয়ায় গা-জ্বালাতন হওয়া মেসবাহ কামালের ফেসবুক আইডি ঘেটে আমি ঠিক বুঝলাম না, সে কোন এলাকার অধিবাসী ?

কলকাতা, বার্মীজ উপজাতি নাকি বাংলাদেশ ?

তবে প্রথম দু’টোই বেশি মনে হলো।

 

আপনারও চেক করে দেখতে পারেন।

মেসবাহ কামালের ফেসবুক্ আইডি-https://www.facebook.com/mesbah.kamal.39

 

 

 

 

# গতকালকে কথিত জনসংখ্যা দিবসে দৈনিক প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদকের লেখা এক আর্টিকেলে বাংলাদেশের জনগণকে তুলনা করা হয়েছে ইদুরের সাথে। আমার কাছে এ ধরনের আর্টিকেল খুবই মানহানীকর মনে হয়েছে। (https://bit.ly/2md2e0q)

 

আর্টিকেলটিতে বাংলাদেশের জনসংখ্যার ঘনত্ব নিয়ে স্পষ্টত মানুষকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে।

আপনারা দেখবেন, বাংলাদেশে অধিক জনসংখ্যার প্রমাণ হিসেবে সব সময় ঢাকা শহরকে উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু ১টি বিষয় আপনাকে বুঝতে হবে, ঢাকা শহর কখনও পুরো বাংলাদেশের প্রমাণ হতে পারে না। পুরো বাংলাদেশের আয়তন হচ্ছে ১ লক্ষ ৪৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার, সেখানে ঢাকার আয়তন হচ্ছে মাত্র ৩৬০ বর্গ কিলোমিটার। এই ৩৬০ বর্গ কিলোমিটারে জনসংখ্যা থাকছে প্রায় ২ কোটি। ঢাকা শহরের জনসংখ্যার ঘনত্ব যদি সারা দেশে থাকতো, তখন বাংলাদেশের জনসংখ্যা হতো ৮১৬ কোটি, যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার থেকেও বেশি। তাই ঢাকার জনসংখ্যার ঘনত্ব দিয়ে আপনি পুরো দেশ মাপলে হবে না।

 

আমি আমার লেখায় বার বার বলেছি, ঢাকাকে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। ঢাকাকে বিকেন্দ্রীকরণ করলে জনসংখ্যা সারা দেশব্যাপী ছড়িয়ে যাবে। তখন যানজটসহ যাবতীয় জনজট সমস্যা দূর হবে। কিন্তু নিজেদের সমস্যা সমাধানের অনিহাকে যদি আপনি পুরো জনসংখ্যার সমস্যা বলে চালিয়ে দেন, তবে সেটা অবশ্যই ডাহা মিথ্যা কথা।

 

প্রথম আলোর আর্টিকেলটিতে ‘বাংলাদেশে কৃষি জমির সঙ্কটনামক কথিত সমস্যাকে উপস্থাপন করা হয়েছে।

আমার কাছে এটাও ভুয়া মনে হয়।

কৃষিজমির নির্দ্দিষ্ট সংখ্যা কখন জনসংখ্যার সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারে না।

কারণ যত সময় যাচ্ছে, একটি কৃষি জমিতে ফসল উৎপাদনের পরিমাণ তত বাড়ছে।

বৃটিশ আমলে ১ বিঘা কৃষি জমিতে ২-৩ মন ধান হতো, অথচ এখন ১ বিঘা জমিতে ২২ মন হয়। নতুন কিছু ধান বের হয়েছে যেটা বিঘাতে ৩০-৪৫ মন পর্যন্ত হয় (https://bit.ly/2zyQ37U)।

তারমানে কৃষি জমি নির্দ্দিষ্ট থাকলেও ফলন বেড়ে যাচ্ছে।

ব্রিটিশ আমলের শেষ দিকে বাংলাদেশের জনসংখ্যা যদি ৫ কোটি থাকে, আর ধান যদি বিঘায় ৩ মন হয়।

তবে হিসেব করলে জনসংখ্যা বেড়েছে ৩-৪ গুন, কিন্তু বিঘাতে ধান উৎপাদন বেড়েছে ১০ গুন।

শুধু ধান নয়, হিসেব করলে অনেক ফসল-ফলাদি, মাছ-মাংশ পূর্বের তুলনায় অনেক বেড়েছে, যা আগে কল্পনাও করা যেতো না।

এমনিতেই গ্রামে গঞ্জে একটি প্রবাদ হয়নি: “মুখ দিবেন যিনি, আহার দিবেন তিনি”।

অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি করেছেন, সেই সৃষ্টি অনুপাতে তিনি খাবার দিচ্ছেন, এটা তারা অস্বীকার করতে পারেনি।

 

আপনারা অনেকে জানতে পারেন, বাংলাদেশের সমুদ্রসীমানায় নতুন একটি বাংলাদেশ জাগছে, যার আয়তন বাংলাদেশের আয়তনের ১০ ভাগের ১ ভাগ। (https://bit.ly/2uestIt) সমুদ্রের মাঝে জেগে ওঠা এ এলাকাগুলো অনেক উৎপাদনশীল, তাই বাংলাদেশে খাদ্য-পানীয়ের অভাব হবে এটা কেউ বলতে পারে না।

 

প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক জাপানের বয়স্ক জনগোষ্ঠী বৃদ্ধির কথা টেনে বলেছে, বাংলাদেশেও নাকি ভবিষ্যতে এমন হবে।

কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভুয়া কথা। বরং বাংলাদেশে এখন জনসংখ্যাকে যেভাবে গলাটিপে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে, তাতেই নতুন প্রজন্ম হ্রাস পাবে আর বয়স্ক প্রজন্ম বাড়বে। ফলে জনসংখ্য হ্রাস কর্মসূচি কারণে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে জাপানের মত সমস্যা দেখা দিবে। কিন্তু জনসংখ্যা ন্যাচারাল উপায়ে বাড়তে দিলে নতুন প্রজন্ম সঠিক পরিমাপেই আসবে, তখন এ ধরনের সমস্যা তৈরী হবে না।।

 

আমি গতকালকে একটা লেখায় আপনাদের বলেছি,

কোন কথা/ঘটনা দেখলে দুইটি জিনিস খুঁজবেন-

(১) কে বলছে বা করছে :

(২) তার নিজের লক্ষ্য/উদ্দেশ্য কি ?

 

(১) নং প্রশ্নের উত্তর: দৈনিক প্রথম আলো বলছে, যে দৈনিকটি বাংলাদেশে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সবচেয়ে বড় এজেন্ট বা মূখপাত্র।

(২) নং প্রশ্নের উত্তর: মার্কিন সম্রাজ্যবাদটিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশের জনসংখ্যা হ্রাস করতে হবে, এই পলিসি ১৯৭৪ সালেই আমেরিকার ইহুদি পরামর্শদাতা কিসিঞ্জার গ্রহণ করে।

(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5/posts/580801512321516)

 

গতকালকে অনেকে প্রশ্ন করেছিলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যা কিভাবে আমেরিকার জন্য হুমকি ?

এর উত্তর অনেক রকম হতে পারে। তবে আমার মনে হয়, এর মূল কারণ ইহুদীরা, যারা এখন ভর করেছে আমেরিকার উপর। পৃথিবীতে ইহুদীদের মোট জনসংখ্যা মাত্র ১ কোটি ৪৫ লক্ষ (২০১৮)। তাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারও ঋণাত্মক। ইহুদীরা নিজেরা ছাড়া সবাইকে তাদের জন্য হুমকি মনে করে। ইহুদীরা চায় তারা ছাড়া পৃথিবীতে কেউ থাকবে না। একারণে তারা অন্যান্য ধর্মের লোকদের জনসংখ্যা হ্রাস করতে কার্যক্রম চালায়। তবে আগে অস্ত্রপাতি দিয়ে গণহত্যা চালানো হতো, কিন্তু এখন পলিসি উন্নত করে ফ্যামিলি প্ল্যানিং এর মাধ্যমে নিরবে গণহত্যা চলানো হয়।

 

আপনারা হয়ত জানেন, একটা সময় আমেরিকা-চীন বন্ধু রাষ্ট্র ছিলো। তখন ইহুদী হেনরি কিসিঞ্জার চীনকে বুদ্ধি দিয়েছিলো এক সন্তাননীতি গ্রহণ করতে। হেনরি কিসিঞ্জারের সেই পলিসিকে বলে ডি-পপুলেশন থিউরী (https://bit.ly/2zxktHA)। চীন-আমেরিকার বন্ধুত্ব যখন ভেঙ্গে যায়, তখন চীন বুঝতে পারে কত বড় কুবুদ্ধি তাদের দিয়েছিলো কিসিঞ্জার। ২০১৫ সালে চীন তাদের এক সন্তান নীতি বাতিল করেছে (https://bbc.in/2L77IYP) এবং মায়েদের অধিক সন্তান হলে তাদের পুরষ্কৃত করছে। (https://bit.ly/2N8vsch)

 

আমার মনে হয় ইহুদীদের এসব কুচক্রী প্ল্যান সম্পর্কে আমাদের সচেতন হওয়ার সময় এসেছে।

 

 

 

 

 

 

# ছোটবেলা থেকে বইয়ে পড়ে এসেছি,

বাংলাদেশে দারিদ্রতার মূল কারণ জনসংখ্যা বৃদ্ধি ।

বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এমনই লেখা হয়-

বাংলাদেশে দারিদ্র্যের মূলে রয়েছে জনসংখ্যা বৃদ্ধির উচ্চহার।” (http://bit.ly/2HZBjip)

তারমানে বাংলাদেশে দাবি হচ্ছে, জনসংখ্যা যত বাড়বে মানুষের দারিদ্রতা তত বাড়বে।

 

অথচ গত কয়েকদিন আগে আমেরিকার একটা খবর দেখলাম, যার শিরোনাম: গর্ভধারণের হার দেখে অর্থনৈতিক মন্দার পূর্বাভাস!খবরের ভেতরে বলছে- অর্থনৈতিক মন্দা শুরুর কয়েক মাস আগে থেকে নারীদের গর্ভধারণের হার কমে যায় বলে মার্কিন গবেষকদের এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। গবেষকরা বলছে, গর্ভধারণের হার দেখে অর্থনৈতিক মন্দার ধারণা পেতে সুবিধা হতে পারে।” (http://bit.ly/2Fbjnjf)

 

দুটো বিষয় একটু চিন্তা করে দেখুন।

আমাদের শেখানো হচ্ছে, জনসংখ্যা বৃদ্ধি অর্থনৈতিক মন্দা বা দারিদ্রতা আনে।

অপরদিকে, আমেরিকায় বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, জনসংখ্যা হ্রাসের পরবর্তী ধাপ হচ্ছে অর্থনৈতিক মন্দা।

তারমানে দেখা যাচ্ছে, আমাদের যা শেখানো হচ্ছে এবং আমেরিকায় বাস্তবে যা দেখা যাচ্ছে তা সম্পূর্ণ বিপরীত।

 

আমেরিকান গবেষকদের গবেষণা যদি সঠিক হয়, তবে-

জনসংখ্যা বৃদ্ধি অর্থনৈতিক মন্দা নয়, বরং অর্থনৈতিক সাফল্য নিয়ে আসে।

তাহলে কথা হলো, আমাদের এতদিন বইপুস্তক আর মিডিয়াতে কেন ভুল শেখানো হচ্ছে ?

 

 

 

 

 

১১ই জুলাই বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস’। এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘Family planning is a human right'

ফ্যামিলি প্ল্যানিংশব্দটা শুনতে খুব সুন্দর। এটা ইহুদীদের একটা বৈশিষ্ট্য। ইহুদীরা খারাপ জিনিসকে ভালো, আর ভালো জিনিসকে খারাপ নামে প্রচার করতে পারে। ফ্যামিলি প্ল্যানিংপরিভাষার মূল অর্থ হচ্ছে, আপনার অনাগত সন্তানকে হত্যা। অথচ সেই মানব হত্যাকে এখন তারা মানবাধিকার নামে চালিয়ে দিচ্ছে। বুঝুন অবস্থা।

কোন একটি ঘটনা অ্যানালাইসিস করার জন্য ২টি জিনিস প্রয়োজন:

১) ঘটনাটি কে করছে বা কার নির্দেশে বা কার পলিসিতে হচ্ছে ?

২) যে করছে বা যার নির্দেশে হচ্ছে তার ইন্টারেস্ট/স্বার্থ কি ?

একজন সাধারণ মানুষের সাথে একজন গোয়েন্দা সংস্থার লোকের এখানেই তফাৎ। একজন গোয়েন্দা সব সময় উপরের দুটি বিষয় অনুসন্ধান করে। আর সাধারণ মানুষ উপরের দুইটি বিষয় এড়িয়ে যায় এবং কোন ঘটনা ঘটলে সেখানে নিজের স্বার্থ বা ফায়দা খোঁজার চেষ্টা করে। আর ফাঁদে পা দিয়ে ভুলটা করে সেখানেই। সাধারণ মানুষের এই অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে স্বার্থবাদী মহল তার স্বার্থ হাসিল করে। এজন্য সে আবার দুইটা কাজ করে-

ক) নিজেকে আড়াল করে নিজেই তৃতীয় পক্ষ তৈরী করে, যাকে সাধারণ মানুষ নিরপেক্ষ মনে করবে। যেমন: জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, অমুক বিশেষজ্ঞ, মিডিয়া, ইত্যাদি।

খ) নিজের স্বার্থ আড়াল করে জনগণের স্বার্থ মূখ্য করে প্রচার করে। আরো স্পষ্ট করে বললে জনগনকে স্বার্থের নামে মিথ্যা স্বপ্ন দেখায়।জনগণের স্বার্থ হাসিল হোক বা না হোক, সে তার স্বার্থ ঠিকই হাসিল করে নেয়।

যেমন ধরুণ: সাবানের বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপনে দেখাচ্ছে সাবান মেখে একটা মেয়ের গায়ের ত্বক সুন্দর হচ্ছে, সে বয় ফ্রেন্ড পাচ্ছে, ভালো চাকুরী পাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে কোন মেয়ের সাবান মেখে গায়ের ত্বক সুন্দর না হলেও, বয় ফ্রেন্ড বা চাকুরী না পেলেও, সাবান কোম্পানি কিন্তু ঠিকই ব্যবসা করে পকেট ভারি করছে।

আমরা যদি একজন গোয়েন্দা সংস্থার লোকের মত চিন্তা করি, তবে

প্রথম চিন্তা করতে হবে, ফ্যামিলি প্ল্যানিং হচ্ছে কার পলিসি বা নির্দেশে ?

উত্তর হবে- ইহুদী হেনরী কিসিঞ্জারের পলিসিতে। মার্কিন প্রেসিডেন্টদের আজীবন উপদেষ্টা কিসিঞ্জার ১৯৭৪ সালে একটি পলিসি তৈরী করে যার নাম National Security Study Memorandum 200 (NSSM200) । এ পলিসিতে বলা হয়, (প্রাথমিকভাবে) ১৩টি দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি মার্কিন সম্রাজ্যবাদের জন্য হুমকি স্বরূপ। এই ১৩ দেশের মধ্যে একটি দেশ হলো বাংলাদেশ। সেই থেকে বাংলাদেশের জনসংখ্যা কমানোর জন্য মাস্টারপ্ল্যান নেয় আমেরিকা। এবং এক্ষেত্রে তারা নিজেদের আড়াল করে তৃতীয় পক্ষ বা নিউট্র্যাল ফেস তৈরী করে। হেনরী কিসিঞ্জারের পলিসির উইকি পেইজে দেখবেন তারা তিনটি সংস্থার নাম বলেছে জাতিসংঘ(UN), USIA এবং USAID। বাংলাদেশে যে অসংখ্য এনজিও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে তারা সবগুলো উপরে গিয়ে এ তিনটি সংস্থার সাথে যুক্ত হয়েছে। (https://bit.ly/1Vx0lZx, https://bit.ly/2uoLUxc)

উল্লেখ্য ১৯৭৪ সালে ২৯শে অক্টোবর ২ দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছিলো হেনরী কিসিঞ্জার। সে সময় বঙ্গবন্ধুর সাথে এক আলাপচারিতায় হেনরী কিসিঞ্জার বলেছিলো, “জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ অবশ্যই খুব গুরুত্ব পূর্ণ বিষয়।”( https://bit.ly/2uoHJ4D)

এবার দ্বিতীয় যে বিষয়টি চিন্তা করতে হবে, তা হলো: বাংলাদেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করলে আমেরিকার স্বার্থ কি ?

উত্তর আমি আগের পয়েন্টে দিয়ে দিয়েছি, বাংলাদেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করলে আমেরিকার সম্রাজ্যবাদের সুবিধা হবে, তাদের আন্তর্জাতিক পলিসিগুলো ঠিক থাকবে ও ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী হবে।

এবার যদি কিসিঞ্জারের NSSM200 পলিসি যদি উল্টা করে দেই, তখন দাড়ায়: বাংলাদেশের জনসংখ্যা যত বৃদ্ধি পাবে, আমেরিকার সম্রাজ্যবাদের জন্য তত অসুবিধা হবে”।

আমরা যদি চাই, ইহুদীবাদী সম্রাজ্যের পতন ঘটুক, তবে ইহুদী কিসিঞ্জারের বুদ্ধি থেকে পাওয়া তত্ত্ব মতে, বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পক্ষে বলতে হবে এবং ফ্যামিলি প্ল্যানিং নামক মানুষ হত্যার বিরুদ্ধে বলতে হবে। তবেই ইহুদীবাদের পতন ঘটে ঘটানো সম্ভব।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

https://noyonchatterjee5.blogspot.com