JustPaste.it

শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহ., তালিবান ও আল-কায়েদার মানহাজ নিয়ে সংশয় সৃষ্টি এবং কিছু কথা !

 

সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কেউ একজন দাবি করছে, আল-কায়েদা শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহ. এর মানহাজ থেকে সরে গেছে ! তাদের দৃষ্টিতে, শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহ. এর মানহাজ হচ্ছে মধ্যমপন্থী ও সঠিক মানহাজ। আর আল-কায়েদার মানহাজের মধ্যে বাড়াবাড়ি আছে ! বিশেষ করে তাকফীরের ক্ষেত্রে ! এমনকি শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহ.  এর মানহাজ পুনরুদ্ধারের আহবান করতেও তাকে দেখা গেছে !

 

কেউ আবার দাবি করছে, আল-কায়েদা ও তালিবানের মানহাজ এক নয় ! তালিবান মধ্যমপন্থী ! সকল ত্বগুত সরকারগুলোকে ত্বগুত সরকার বলে না ! তাদেরকে মুসলিম সরকার বলে ! কিন্তু আল-কায়েদা এক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করে !

তাদের  এসব কথা শুনলে কেউ হয়তো মনে করতে পারে, তারা শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহ.  ও তালিবানদের মানহাজকে সমর্থন করে, বাস্তবে মোটেও তা নয়।

বরং তারা এমন এক পরাজিত মানসিকতা ধারণকারী মানহাজ অনুসরণ করে, যা তাদের প্রবৃত্তি তাদের জন্য ঠিক করে দিয়েছে।

যেহেতু আল-কায়েদার মানহাজ এবং তাদের মনগড়া মানহাজের সাথে সাংঘর্ষিক এবং তফাৎ মোটা দাগে দৃশ্যমান, তাই তারা তাদের দাবি অনুযায়ী (তাদের দাবি কতটা অসার, তা তারা নিজ চোখে দেখতে পাবে ইনশাআল্লাহ্‌) শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহ.  ও তালিবানদের মানহাজের আড়ালে নিজেদের ভ্রান্তি লুকাতে চাইছে।

আমার অভিজ্ঞতা ও তাদের সাথে কথার ভিত্তিতে বুঝতে পেরেছি, শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহ.  ও তালিবানদের মানহাজ জানা ও বুঝার ক্ষেত্রে তারা জ্ঞানগত দৈন্যতা ও চিন্তার বৈকল্যের শিকার। 

 

আমরা যদি তাদেরকে অকাট্য প্রমাণসহ হাতেনাতে দেখিয়ে দেই যে, শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহ. ,তালিবান ও আল-কায়েদার মানহাজের মধ্যে কোনো মৌলিক তফাৎ নেই বরং সময় ও অঞ্চলভেদের কারণে কিছু ভিন্নতা রয়েছে এবং  শর’য়ী সীমার মধ্যে কল্যাণের বিবেচনায় লড়াইয়ের কৌশলগত ভিন্নতা আছে , তাহলে কি তারা আল-কায়েদার মানহাজকে সঠিক বলে স্বীকৃতি দিবে ? তাহলে কি তারা নিজেদের দাবির অসারতার প্রমাণ দেখে তা থেকে বেরিয়ে আসবে ?

 

আমার অভিজ্ঞতা বলছে, না। বরং তারা নতুন নতুন অজুহাত তৈরি করবে এবং নিজেদের ভ্রান্তির উপরে অটল থাকবে। (শীঘ্রই আপনারা এর প্রমাণ দেখতে পাবেন হয়তো। তবে আমি চাই, আমার এই অভিজ্ঞতা ভুল প্রমাণিত হোক।)

 

কারণ তারা আদৌ শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহ.  ও তালিবানদের মানহাজে বিশ্বাস করে না। শুধুমাত্র আল-কায়েদার মানহাজকে ভুল প্রমাণের জন্যই তারা শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহ.  ও তালিবানদের মানহাজের আবরণ ব্যবহার করছে। তারা তাদের এই দাবির ক্ষেত্রে অনেকটাই খারিজি আইএসের সমর্থকদের মতো আজিব আচরণ প্রদর্শন করে থাকে। হয়তো তাদের এই মন্তব্যও আপনাদের দেখা লাগতে পারে, তারা হয়তো বলবে, “বর্তমান তালিবান আগের তালিবান এক নয় ! আল-কায়েদার সংস্পর্শে বর্তমান তালিবান বদলে গেছে !” অগ্রীম বলে রাখলাম, মনে রাখবেন আশা করি।

 

উদাহরণস্বরূপঃ শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহ. আহমদ শাহ মাসুদকে অনেক বড় মুজাহিদ মনে করতেন। এখন দৈন্যতার শিকার কেউ এসে যদি বলে এই যে, আল-কায়েদা আহমদ শাহ মাসুদকে মুরতাদ মনে করে, আর শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহ. তাকে বড় মুজাহিদ মনে করতেন !  আশা করি, বাচ্চারাও এর হাকীকত জানে এবং বুঝে।

শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহ. যখন (১৯৭৮-১৯৮৯) আহমদ শাহ মাসুদকে বড় মুজাহিদ মনে করতেন, তখন আহমদ শাহ মাসুদ রাশিয়ার বিরুদ্ধে জিহাদরত ছিল। তখন আহমদ শাহ মাসুদ দাবি করেছিল, রাশিয়ার বিতাড়নের পর ইসলামি শরী’আহ ব্যতীত কোনো মানবরচিত মতবাদকে রাষ্ট্রীয় আইন হিসেবে মেনে নিবে না।

আর ১৯৮৯ সালে শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহ. এর ইন্তেকালের পরে আহমদ শাহ মাসুদ ইসলাম কায়েম করেনি বরং ইসলাম ও কুফর মিশ্রিত একটি কুফুরি শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছিল।

অতঃপর ১৯৯৪ সাথে তালিবানদের উত্থানের পর এই আহমদ শাহ মাসুদ আমেরিকার প্রকাশ্য সমর্থন ও মাসিক বেতন নিয়ে তালিবানদের ইসলামী শাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং আমেরিকার উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিতে তালিবানদের উৎখাত করে গণতন্ত্র কায়েমের অঙ্গীকার করে। এছাড়া শাইখ উসামা বিন লাদেনকে বন্দি করে আমেরিকার হাতে তুলে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টায় লিপ্ত থাকে এই মাসুদ। অতঃপর ২০০১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর আমেরিকার এই পেইড দালালকে আল-কায়েদার মুজাহিদগণ দুনিয়া থেকে বিদায় করে দেয়। 

 

শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহ.  ও তালিবানদের মানহাজের স্বীকৃতিদাতা কিন্তু আল-কায়েদার মানহাজের বিরোধীতাকারী এসব ব্যক্তিদের এই হেঁয়ালি প্রচারণা আমি শুধু নীরবে দেখছিলাম আর তাদের দৌড় কতটুকু তা বুঝার চেষ্টা করছিলাম। অবশ্য তাদের ভ্রান্তি ধরিয়ে দেওয়ার অল্পস্বল্প চেষ্টাও করেছি কিন্তু ভালো সাড়া মেলেনি বরং তারা তাদের দৈন্যতাকেই পাণ্ডিত্য মনে করছে এবং আটকে গেলে বাহানা বের করার কোশেশ করছে, যা বাতিলের সাধারণ বৈশিষ্ট্য। এদু’টি বৈশিষ্ট্য যাদের মধ্যে আছে, তাদের পক্ষে সত্য অনুধাবন করার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

 

তারা যদি তাদের দাবিতে সততার অধিকারী হয়ে থাকে, তাহলে যেনো শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহ. ও তালিবানদের মানহাজের সাথে আল-কায়েদার মানহাজের তফাৎ আমাদেরকে দেখিয়ে দেয়। আমরা যদি তার বিপরীতে তাদের ভ্রান্তি ধরিয়ে দিতে না পারি,তাহলে তাদের সাথে মিলে তাদের দাবিকৃত শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহ. ও তালিবানদের মধ্যমপন্থী মানহাজের পুনরুদ্ধারে নিজেকে আত্মনিয়োগ করবো ইনশাআল্লাহ্‌।

 

(শীঘ্রই শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহ., তালিবান এবং আল-কায়েদার মানহাজের মিল নিয়ে ধারাবাহিক লেখার ইচ্ছা আছে, ইনশাআল্লাহ্‌।)

 

লেখকঃ Zamil Hasan

লেখাটি ফেইসবুকে পোস্টের তারিখঃ  ০৬ অক্টোবর ২০১৮

 

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

তাওহীদ ও জিহাদের বিশুদ্ধ মানহাজের উপর গুরুত্বপূর্ণ কিছু লেখা সম্বলিত মূল পেইজ

লিংক...https://justpaste.it/tawhid_jihad