শাইখ আতিয়াতুল্লাহ (রাহিমাহুল্লাহ) এর সংক্ষিপ্ত জিবনী
তাঁর মূল নাম হলোঃ জামাল বিন ইবরাহীম বিন মুহাম্মদ বিন ইবরাহীম বিন ইশিতিভী আল লিব্বী আল মিসরাতী। তিনি হিজরী ১৩৮৮ সালে লিবিয়ার মিসরাত নামক অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ১৪০৯ হিজরীতে জিহাদের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যেন। ‘জাজী’ নামক ক্যাম্পে সামরিক প্রশিক্ষন গ্রহন করেন। তিনি প্রথম থেকেই হামানদিস্তা নিক্ষেপন এবং বোমা বিস্ফোরণে অনেক দক্ষ ছিলেন।
১৪১৫ হিজরিতে যখন আলজেরিয়ায় জিহাদ প্রতিষ্ঠিত হয় তখন তিনি শিক্ষক এবং দায়িত্বশীল হিসেবে সেখানে হিজতর করেন। অতঃপর আলজেরিয়ার জিহাদের অঙ্গনে যখন পদস্খলদ (ফিতনা) দেখা দিল তখন শাইখ সেখান থেকে প্রস্থান করেন।
তখন শাইখ মুজাহিদদের উদ্দেশ্যে দুইটি বিষয়ে খুবই গুরুত্বারোপ করতে লাগলেন। আর তা হলোঃ
প্রথমতঃ- মুজাহিদদেরকে বিরোধপূর্ন বিষয়ে উত্তম আখলাক অবলম্বনের
গুরুত্বের ব্যাপারে তরবিয়ত দেওয়া।
দ্বিতীয়তঃ- তাকফীরের ক্ষেত্রে যুবকদের তাড়াহুড়া প্রবনতা দূর করা।
তিনি বার বার বলতেন যে, বিরোধের সময় হয়তো বিরোধীদের কাছে কোন ওজর থাকতে পারে। কখনো কখনো কোন যুবক অন্যকে এই বলে তাকফীর করে বসতো যে, সে এটা করেছে- ওটা করেছে ইত্যাদি। এভাবে তাড়াহুড়া করে তাকে তাকফির করে বসে।
তাই শাইখ এই বিষয়ে তারবিয়াহ দেওয়ার ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতেন। তিনি তারবিয়াহ দেওয়াকে মুজাহিদদের উপর ওয়াজিব মনে করতেন। বরং তাঁর মতে জিহাদের প্রাঙ্গনে যত সমস্যা সংঘঠিত হচ্ছে তার মূল কারন হলো তারবিয়াহ এর স্বল্পতা।
তিনি তানযিম কায়েদাতুল জিহাদ (আল কায়েদা)এর কেন্দ্রীয় মুফতী ছিলেন। তিনি ছিলেন সকলের নিকট সমাদৃত ।
শাইখ ম্রোতানিয়ায় তাঁর বন্ধুবর শাইখ আবু ইয়াহইয়া লিব্বী এর সাথে পড়াশুনা করেছেন।
তিনি আল কায়েদার ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল পদে দায়িত্ব পালন করেন। অতঃপর কেদ্রীয় দায়ীত্বশাইল পদে অধিষ্ঠিত হন।
পরবর্তীতে শাইখ উসামা বিন লাদেন এবং মুসতফা আবুল ইয়াজিদ(রাহিঃ)এর শাহাদতের পর আল কায়েদার দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ।
তাঁর সন্তান ইবরাহীম এক বছর পূর্বেই শহীদ হয়েছেন।আর শাইখের সাথে তাঁর আরেক সন্তান ইসাম শহিদ হয়েছেন। আর আবদুর রহমান জীবিত আছে।
শাইখের জিহাদের নাম ছিল মাহমুদ হাসান। আর তিনি “আতিয়াতুল্লাহ” উপাধীতে প্রসিদ্ধ ছিলেন। আর যখন লিবিয়ায় বিপ্লব দেখা দিল তখন তিনি তাঁর আসল নাম (“জামাল”) প্রকাশ করেন। তাঁর দেশ বাসীকে একথা জানান দেওয়ার জন্যে যে, তিনি বিপ্লবীদের সাথে আছেন।
তিনি দীর্ঘ সময়জুড়ে আলজেরিয়া, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তান জিহাদের বিভিন্ন রণাঙ্গনে চষে বেড়ান। এবং অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। ফিকহুল জিহাদ এবং ‘ফিকহুল ওয়াকী’ তে ছিল তাঁর অগাধ পান্ডিত্ব। জিহাদের ময়দানে , মুজাহিদদের মাঝে আভ্যন্তরীন সমস্যার কারন উদঘাটন এবং তাঁর সমাধান বিধানে তাঁর ফয়সালা ছিল সঠিক ও অত্যন্ত কার্যকরী।
তিনি পাকিস্তানের ওয়াজিরিস্তান এর মিজান শাহ অঞ্চলে শহীদ হন।
শাইখ ১৪৩২ হিজরীর রমজানের শেষ দশকের ২৩ ই রমজান মোতাবেক ২০১১ ইং সালের অক্টোবর মাসে আমেরিকান ড্রোন বিমান হামলায় শাহাদতের সুধা পান করেন। আল্লাহ তায়ালা শাইখকে কবুল করুণ। জান্নাতের উঁচু মাকাম দান করুণ।
শাইখ আতিয়াতুল্লাহ লিব্বী এবং তাঁর বন্ধু শাইখ আবু ইয়াহইয়া লিব্বী (রাহিঃ) ইলম এবং ফিকহের দরস বা শিক্ষা দিতেন। শাইখ উম্মাহর জন্য অত্যন্ত উপকারী ও গুরুত্বপূর্ন অনেক গুলো কিতাব রচনা করেন। তাঁর সাথে রয়েছে অনেক গুলো অডিও এবং ভিডিও ভাষণ।