JustPaste.it

খিলাফতের ব্যাপারে আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গি কী?

 

প্রশ্নঃ আপনারা IS এর খিলাফাহকে অস্বীকার করেন। আপনারা কি খিলাফাহ পদ্ধতির বিরোধী? ইসলামী খিলাফতের ব্যাপারে আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চাই।

 

#উত্তরঃ

তথাকথিত “ইসলামিক স্টেট (ISIS)” এর খিলাফাহর নামে অনৈসলামিক কর্মকান্ডের বিরোধিতা করার কারণে অনেকে এটা মনে করে থাকে যে ‘আল-কায়িদাহ’ (বিশেষ করে যারা আল-কায়েদার মানহাজ অনুসরণ করে) হয়তো খিলাফাহ বিরোধী।

বস্তুত এটা একটি ভুল ধারণা। আল-কায়িদাহ প্রকৃতপক্ষে ‘নবুওয়াতের আদলে খিলাফাহর’ জন্যই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। কারও স্বঘোষিত হাজ্জাজ বিন ইউসুফ বা মামলুক সুলতানের মত খিলাফাহ তাদের কাম্য নয়।

আসুন দেখে নিই, ইমামুল মুজাহিদীন ‘শাইখ আয়মান আল-জাওয়াহিরী (হাফিজাহুল্লাহ)’ এ ব্যাপারে কি বলেন।

#শাইখের_বক্তব্য…..

“আমরা এমন ইসলামী খিলাফাহ চাই, যেখানে উম্মাহর লোকেরা নিজেরাই স্বাধীনভাবে নিজেদের ইসলামী শাসক পছন্দ করে নেবে এবং তাদের সাথে ঐক্য গড়বে।

আর উম্মাহ ততক্ষণ নিযুক্ত শাসকের কথা মানবে যতক্ষণ পর্যন্ত শাসক কুরআন ও সুন্নাহর উপর থাকে।

আমরা এমন যে কোনো ব্যক্তিকেই গ্রহণ করি, যার শরীয়াহ মোতাবেক উপযুক্ত যোগ্যতা আছে আর যিনি উম্মাহ কর্তৃক পছন্দকৃত ও নিযুক্ত হয়েছেন কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী শাসন করতে। এমন বিশ্বস্ত শাসক হলে আমরা তার দাসানুদাস ও সাহায্যকারী হয়ে যাবো।

আল-কায়িদাহ এই উম্মাহর জন্য এমন একজন খলিফা চায়, যাকে কিনা উম্মাহর লোকেরা নিজেদের স্বাধীন ইচ্ছা ও ঐকমত্য সহকারে নিযুক্ত করবে।

আর এই উম্মাহ যদি কোনো একটি অঞ্চলে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়, তবে যে ব্যক্তিকেই মুসলিম উম্মাহ ঐ অঞ্চলের ইমাম হিসেবে গ্রহণ করবে যার কিনা এর যোগ্যতা আছে, তাহলে শরীয়াহ মোতাবেক আমরাই প্রথম তাকে মেনে নেব। কেননা আমরা আল্লাহর শাসন চাই, নিজেরা শাসক হয়ে চেপে বসতে চাই না।

আমরা এই বিষয়টি সাধারণভাবে উম্মতের সবার কাছে, বিশেষ করে আশ শামের লোকদের কাছে তুলে ধরতে চাই যে____

‘আল কায়িদাহ কখনোই মুসলিম উম্মাহর কাছ থেকে তাদের নিজেদের ইসলামী শাসক পছন্দ করার অধিকার ছিনিয়ে নিতে চায় না। আর আল্লাহ যদি শামে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে দেন, তাহলে উম্মাহর মানুযেরা কুরআন ও সুন্নাহর বিধান মেনে যাকেই নিজেদের শাসক নিযুক্ত করুক, সেটা আমাদেরও পছন্দ হবে।’

আমরা অর্থাৎ ‘তানজীম কায়িদাতুল জিহাদ’ খোলাফায়ে রাশিদীনের ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করতে চাই। আমরা আবু বকর (রা) এর মত খলিফা চাই।
যিনি বলেছিলেন, ‘আমাকে তোমাদের প্রধান বানানো হয়েছে, আর আমিতো তোমাদের থেকে উত্তম কেউ নই। যদি আমি সঠিক কাজ করি তাহলে আমাকে সমর্থন দিও। আর যদি আমি ভুল করি, আমাকে শুধরে দিও।’

তিনি আরও বলেন, ‘তোমরা আমাকে ততক্ষণ পর্যন্ত মান্য করবে, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি আল্লাহ ও তার রাসূলের পথে থাকি। যদি এর অন্যথা করি তাহলে তোমরা আমার
আনুগত্য করবে না।’

আমরা উমার (রা) এর মত খলিফা চাই! যিনি বলেছিলেন, ‘যে ব্যক্তিই উম্মতের সম্মতি ও শুরা ছাড়া অন্য কোনো লোকের কাছে বায়াহ দিল সেই ব্যক্তি এবং সে যাকে বায়াহ দিলো তাদের উভয়ের কাউকেই কখনো বায়াহ দেয়া চলবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘মুসলিম উম্মাহর সাথে শূরা ব্যতীতই যে বায়াহ নেয়, তার প্রতি কোনো বায়াহ নাই। আর যারা তাকে বায়াহ দিয়ে ফেলেছে তাদের উচিত ঐ ব্যক্তিকে হত্যা করা বা শাস্তি দেওয়া।’

তিনি আরও বলেন, ‘মুসলিমদের শাসন ব্যবস্থা শূরার উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত।’

আমরা উসমান (রা) এর মত খলিফা চাই। যার ব্যপারে ইমাম আহমাদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘মানুষ কখনো অন্য কারও কাছে বাইয়াতে এত একমত হয়নি, যতখানি উসমান (রা) এর ক্ষেত্রে হয়েছিল।’

আমরা আলী (রা) এর উদাহরণ দিচ্ছি, যাকে কিনা সাহাবাদের সমবেত অংশ বায়াহ দিয়েছিলেন।

এরপর হাসান (রা) এর কথা বলছি! তিনি একটি মাত্র কথার ওপর উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন আর ফিতনার অবসান ঘটিয়েছিলেন। এই ব্যাপার নিয়েইতো নাবী (স) বলেছিলেন, ‘নিশ্চয় এই ছেলেটি একজন নেতা। এর দ্বারা আল্লাহ বড় দুটি বিবাদমান মুসলিম দলকে সমঝোতায় আনবেন।’

এটাই হলো সেই খিলাফাহ, যা আমরা চাই। আর আমরা নিরীহদের হত্যাকারী হাজ্জাজ বিন ইউসুফ বা মামলুক সুলতানের মত খলিফা চাই না।

আমরা এই উম্মতের প্রতিদ্বন্দ্বী নই। বরং আমরা উম্মতেরই অংশ। আমরা উম্মাহর রক্ষার জন্য নিজেদের বুক পেতে দেই। এর স্বাধীনতা সম্মানের রক্ষার্থে রক্ত ও জীবন বিলিয়ে দিয়ে থাকি।”

এটাই হলো শাইখুল মুজাহিদীনের খিলাফাহর ব্যপারে বক্তব্য।

এরপরও যদি গ্লোবাল জিহাদের কান্ডারী ‘আল-কায়িদা’কে খিলাফাহ বিরুধী বলা হয়, তাহলে তাদের জন্য দোয়া করা ছাড়া আর কিছু করার নেই।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বুঝার তৌফিক দান করুন।


আমীন।।।