আন নাসর মিডিয়া পরিবেশিত
আহলুল হারামের আন্দোলনে খাইরুল উমামের নেতৃত্ব
মজলিস: ৪
সৌদি রাজপরিবার ও
ব্রিটেনের গোপন আঁতাতের ইতিহাস
- শাইখ হামযা উসামা বিন লাদেন হাফিজাহুল্লাহ
الحمد لله الكريم الذي أسبغ نعمه علينا باطنةً وظاهرةً، العزيز الذي خضعت لعزّته رقاب الجبابرة، وأشهد أن لا إله إلا الله وحده لا شريك له شهادةً نرجو بها النجاة في الدار الآخرة، وأشهد أنّ محمدًا عبده ورسوله صلى الله عليه وعلى آله وصحبه وسلّم تسليمًا كثيرًا.
হামদ ও সালাতের পর...
হারামাইনের অধিবাসী ও সকল মুসলিম ভাইয়েরা!
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ
বিগত মজলিসে ইবনে সৌদের ক্রুসেডারদের সাথে পারস্পারিক বন্ধুত্বের চুক্তি, মুসলিমদের বিরুদ্ধে পরিচালিত যুদ্ধে তাদের সাহায্য-সহযোগিতা, উসমানী খেলাফতের প্রতি শত্রুতা ও তার বিরুদ্ধে আক্রমণ এবং বাইয়াত ভঙ্গ করা, ক্রুসেডারদের সাথে জোটবদ্ধ হওয়া নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। এসব কিছুই ইবনে সৌদ করেছে, যাতে খেলাফতের আনুগত্য থেকে বের হয়ে ইংরেজদের আনুগত্য প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।
আমি আরো বর্ণনা করেছিলাম যে, এ সকল পূর্ববর্তী বিশ্বাসঘাতকতা করাকেও ইবনে সৌদ যথেষ্ট মনে করেনি। আর সে এগুলিকে ইতিহাসের পাতায় নথিভুক্ত করার ব্যাপারে বদ্ধপরিকর ছিল, যেহেতু ইতিহাস কারো পক্ষালম্বন করে না। এভাবেই সে নিজের জন্য অজ্ঞতাসারে এক কালো অধ্যায় লিপিবদ্ধ করেছে এবং আল-উকাইর চুক্তিগুলি বাস্তবায়ন করতে শুরু করেছে ...!
আপনারা কি জানেন আল উকাইরের চুক্তিগুলি কী?
তা হল- কাফিরদের সাথে বন্ধুত্ব এবং মু‘মিনদের থেকে দায়মুক্তি ও দেশকে ক্রুসেডারদের কাছে হস্তান্তরের চুক্তির নাম। পরোক্ষভাবে ও আনুষ্ঠানিকভাবে এটি রাষ্ট্র দখল করার নামান্তরই বটে!
আপনাদের সমীপে এ চুক্তির কিছু উদাহরণ তুলে ধরছি-
প্রথম চুক্তিটি সম্পাদিত হয় ১৩৩২ হিজরী মোতাবেক ১৯১৪ ইংরেজী সালে। তাতে আব্দুল আজিজ উসমানি খিলাফতের বিরুদ্ধে ব্রিটেনকে সম্ভাব্য সকল প্রকার সহায়তা প্রদানের ব্যাপারে সম্মত হয়। অপরদিকে ব্রিটেনও অঙ্গীকার করে যে, তারা যে কারো পক্ষ থেকে আসা সকল প্রকার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আব্দুল আজিজকে রক্ষা করবে।
***
আর দ্বিতীয় চুক্তিটি ছিল দারিন কনভেনশন, তা ছিল ক্রুসেডারদের কাছে দেশ বিক্রির চুক্তি। দিনটি ছিল ১৮ই সফর ১৩৩৪ হিজরী মোতাবেক ১৯১৫ সালের ২৬ ডিসেম্বর। উপসাগরীয় অঞ্চলে ব্রিটিশ স্বীকৃত প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন পার্সি কক্স ও জন ফিল্বি ...! আর সৌদি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন ইবনে সৌদ নিজে...!
উক্ত কনভেনশনের প্রস্তাবনায় উভয় পক্ষের মাঝে দীর্ঘদিন যাবত চলমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দৃঢ়ভাবে স্থাপন ও উন্নীত করার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়, যাতে করে তাদের পারস্পারিক স্বার্থ জোরদার হয়।
এবার আসুন! কনভেনশনে উত্থাপিত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি লক্ষ করি:
১.
ব্রিটিশ সরকার ইবনে সৌদ শাসিত অঞ্চলগুলোকে স্বীকৃতি দেবে এবং ইবনে সৌদকে তার নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের স্বাধীন শাসক হিসাবেও স্বীকৃতি দেবে। যদি তার অথবা তার পরবর্তী শাসক দ্বারা নির্বাচিত উত্তরাধিকারী কোন ব্যক্তি কোনভাবে বৃটিশ সরকারের বিরোধী না হয়, বিশেষত: এ চুক্তির শর্তাবলীর বিপরীত না হয়, তবে তিনি তার জাতির রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে বিবেচিত হবেন এবং তার পরে তার পুত্র/নাতী তার উত্তরাধিকারী হবেন।
সহজ ভাষায় শাসক হতে হলে ব্রিটেনের সন্তুষ্টি আবশ্যক। অথচ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা পবিত্র কুরআনে বলেন:
} وَلَنْ تَرْضَى عَنْكَ الْيَهُودُ وَلَا النَّصَارَى حَتَّى تَتَّبِعَ مِلَّتَهُمْ {
অনুবাদ: “ইয়াহুদী ও খৃষ্টানরা আপনার প্রতি কখনও সন্তুষ্ট হবে না যতক্ষণ না আপনি তাদের ধর্মাদর্শ অনুসরণ করেন” (সূরা বাকারাহ- ১২০)
২.
যদি কোন বিদেশী রাষ্ট্র কর্তৃক ইবনে সৌদের নিয়ন্ত্রিত কোন রাষ্ট্র বা তার মিত্র কোন রাষ্ট্র ব্রিটিশ সরকারের পর্যালোচনা ছাড়াই আক্রান্ত হয়, তাহলে ব্রিটিশ সরকার ইবনে সৌদের সহযোগিতা করবে।
আর তা হল মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুশরিকদের সাহায্য প্রার্থনা করা, কেননা, এই চুক্তির প্রথম টার্গেট হচ্ছে উসমানি খিলাফত এবং তাঁর মিত্রগণ।
শাইখ মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব (রহ.) ঈমান ভঙ্গের দশটি কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে অষ্টম নাম্বার কারণ বলেছেন:
الثامن: مظاهرة المشركين ومعاونـــتهم على المسلمين، والدليل قوله تعالى: { وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ {
অনুবাদ:- ঈমান ভঙ্গের অষ্টম কারণ: “মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুশরিকদের সাহায্য-সহযোগিতা করা।” আর এর স্বপক্ষে দলীল হচ্ছে: “তোমাদের মধ্যে কেউ তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহন করলে, সে তাদেরই একজন হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না”। (সূরা: আল মায়েদাহ-৫১)
৩.
ইবনে সৌদ এই কথার উপর সম্মত হয় যে, অন্য কোন বিদেশী জাতি-গোষ্ঠি বা রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক অথবা চুক্তি করা থেকে বিরত থাকবে। উপরন্তু ইবনে সৌদের নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রে অন্য যে কোন রাষ্ট্র কর্তৃক অনুপ্রবেশের চেষ্টা করা হলে অবশ্যই সাথে সাথে ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত রাজনৈতিক প্রতিনিধিদেরকে অবহিত করবে।
আর এখানেই... ইবনে সৌদ তার সক্ষমতার সীমা অতিক্রম করে মুসলিম উম্মাহর প্রতি যে আনুগত্য করেছিল তা ভঙ্গ করেছে। নিজেকে ক্রুসেডারদের প্রতিনিধি এবং তাদের প্রহরী হিসাবে দাড় করিয়েছে!
অথচ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা পবিত্র কুরআনে বলেছেন:
} وَالْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ {
অনুবাদ: “মু’মিন পুরুষ ও মু’মিন নারীগণ একে অপরের বন্ধু।” (আত তাওবাহ-৭১)
আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
أوثق عرى الإيمان: الموالاة في الله والمعاداة في الله والحبّ في الله والبغض في الله عزّ وجلّ.
অনুবাদ: ঈমানের অন্যতম ঘনিষ্ঠ শাখা হচ্ছে; “(কারো সাথে) বন্ধুত্ব ও শত্রুতা করা শুধুমাত্র আল্লাহ তায়ালার জন্যই, এমনিভাবে ভালোবাসা ও ঘৃণাও একমাত্র আল্লাহ্ তায়ালার জন্যই হবে।”
৪.
ইবনে সৌদ বৃটিশ সরকারের সম্মতি ব্যতিত তার অঞ্চলের কোন অংশকে কোন বিদেশী রাষ্ট্র অথবা কোন বিদেশী রাষ্ট্রের অধিবাসীর কাছে অর্পণ, বিক্রয়, বন্ধক বা ভাড়ায় দেয়া, ভাগ করা অথবা কোনভাবে তা ছেড়ে দেয়া ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতে চুক্তিবদ্ধ থাকবে এবং কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সর্বদা বৃটিশ সরকারের পরামর্শ মেনে চলবে, এ শর্তের ভিত্তিতে যে, তাতে বৃটিশ সরকারের নিজস্ব স্বার্থের কোন ক্ষতি করা ব্যতীত।
এভাবে ইবনে সৌদ দেশকে শত্রুদের কাছে সোনার তশতরীতে করে সমর্পণ করেছে এবং এই চুক্তিতে প্রাঞ্জল ও কার্যকর ভাষা দান করেছে। আরেকটি ব্যাপার হলো: ইবনে সউদের নিয়ন্ত্রনাধীন অঞ্চলগুলো বৃটিশ সরকারের সম্পত্তি বলে বিবেচিত হবে, সুতরাং তারা তাদের চাহিদা অনুযায়ী তা ব্যবহার করতে পারবে। তবে এই শর্তে যে, ইবনে সৌদ তাতে বৃটিশদের প্রতিনিধিত্বকারী এবং তাদের বসানো শাসক বলে বিবেচিত হবে।
উভয়পক্ষ তড়িঘরি করে চুক্তি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্তে উপনীত হয় এবং ইবনে সৌদ আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেকে বৃটিশদের পক্ষ অবলম্বনকারী হিসাবে ঘোষনা করে এবং সুনিশ্চিতভাবে এই অঙ্গীকার করে যে, সে বৃটিশদের মিত্রদেরকে আক্রমন করবে না এবং তাদের শত্রুদেরকে সহায়তা করবে না।
অপরদিকে ইংল্যান্ড অঙ্গীকার করে যে, উসমানী সাম্রাজ্য বিভাজনের পর এই রাষ্ট্র ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে আর কোন আলোচনায় বসবে না। তখন আব্দুল আজিজ স্পষ্টভাবে তা অনুমোদন করে। এই চুক্তি স্বাক্ষর করার সময় সে ১০০০ রাইফেল, ২০,০০০ অষ্ট্রেলিয়ান পাউন্ড পেয়েছে। এমনিভাবে বৃটেন মাসিক ভাতা হিসাবে আরো ৫,০০০ অষ্ট্রেলিয়ান গোল্ড পাউন্ড, মেশিনগান ও রাইফেলের চালান নিয়মিত প্রদান করবে বলে অঙ্গীকার করে।
এটাই হল তৃতীয় সৌদি রাষ্ট্রের প্রথম প্রতিষ্ঠাতা ইবনে সউদের অবস্থা!
লক্ষ করুন- (আল্লাহ আপনাদেরকে রহম করুন) কিভাবে ইবনে সউদ নিজেকে বৃটিশ ঔপনিবেশিক শক্তির এক অনুগত প্রতিনিধি এবং তাদের দালালে পরিণত হয়েছে। উসমানী খিলাফতের মিত্রদের সঙ্গে লড়াই করার জন্য এবং বৃটিশদের পক্ষ থেকে সম্পদ ও অস্ত্র পাওয়ার বিনিময়ে সে সব কিছু ছেড়ে দিয়েছে!
এই সব কিছু করার পরেও কি সে মুসলিম উম্মাহর জন্য আদর্শ হতে পারে?
কক্স এবং ইবনে সৌদের মধ্যে এ সম্পর্ক অব্যাহত থাকে তৃতীয় আল উকাইর চুক্তিতে স্বাক্ষর করা পর্যন্ত, যা স্বাক্ষরিত হয় আল উকাইর বন্দরে ১৩৪১ হিজরী রবিউসসানী মাস মোতাবেক ০২ ডিসেম্বর ১৯২২ সালে। শেষবার যখন কক্স আল উকাইর বন্দরে আসে, তখন তার সাথে সম্পাদিত চুক্তির ব্যাপারে সম্পর্কের প্রকৃতি প্রকাশ করতে গিয়ে ইবনে সৌদ একাধিকবার এভাবে বলেছে যে:
“আমরা এ চুক্তির পুনরাবৃত্তি করতে পারতাম না, যদি না আমাদের মাঝে আমাদের বন্ধু ও উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন প্রতিনিধি না থাকত”
তাছাড়া সে “স্যার” পার্সি কক্সকে ভালোবাসে এবং তাকে সম্মান করে।
***
যখন ইবনে সৌদ স্পষ্টভাবে প্রকাশ করে যে, কক্সের জন্য তার অন্তরে ভালোবাসা রয়েছে, তখন ব্রিটেন ইবনে সৌদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যায়। আর ইবনে সৌদ তার আন্তরিকতার প্রমান দেখাতে গিয়ে মুসলিম উম্মাহর প্রতি আনুগত্য করাকে বাদ দিয়েছে, উম্মাহকে বলিদান করে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ক্রুসেডার ব্রিটেনকে সাহায্য করেছে। সুতরাং ইবনে সৌদ তাদের প্রহরী হয়ে গিয়েছিলেন এবং পুরস্কার হিসাবে মুসলিমদের বিরুদ্ধে পরিচালিত যুদ্ধে তাদেরকে বিপুল সাহায্য করেছিলেন।
***
উপরে উল্লেখিত ডারেন কনভেনশনকে পরবর্তী সময়ে ইবনে সৌদ হারামাইনের ভূমির বাকি অংশে বিস্তৃত করে, অন্যান্য আভ্যন্তরীণ অনেক কারণ থাকা সত্বেও বৃটিশ সাহায্য-সহযোগিতা অব্যাহত রাখা ছিল এর একটি প্রধান কারণ, যাতে করে ইবনে সৌদ রাষ্ট্রের অধিকাংশ ক্ষেত্রে তার শক্ত নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। আর সে নিজেকে অন্য আমীরদের তুলনায় শ্রেষ্ঠত্বের আসনে সমাসীন করতে পারে। আব্দুল আজিজের প্রভাব বিস্তার করার ক্ষেত্রে এটার একটি বিশেষ ভূমিকা ছিল, যার কারণে ইবনে সৌদের অভিযানে সে বিশেষভাবে অবদান রাখে এবং তার বিজয় লাভ হয়...!
আজ এই পর্যন্তই, এটা নিয়ে আমরা পরবর্তী পর্বে আরো আলোচনা করার চেষ্টা করবো। ইনশাআল্লাহ.
رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِي أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ.
رَبَّنَا لَا تَجْعَلْنَا فِتْنَةً لِلْقَوْمِ الظَّالِمِينَ وَنَجِّنَا بِرَحْمَتِكَ مِنَ الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ.
অনুবাদ: হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের পাপ এবং আমাদের কাজে সীমালংঘন আপনি ক্ষমা করুন এবং আমাদের পা সুদৃঢ় রাখুন এবং কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন। (সূরা আলে ইমরান-১৪৭)
হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে যালিম সম্প্রদায়ের উৎপীড়নের পাত্র করিও না; এবং আমাদেরকে আপনার অনুগ্রহে কাফির সম্প্রদায় হতে রক্ষা করুন। (সূরা ইউনূস-৮৫,৮৬)
وآخر دعوانا أن الحمد لله ربّ العالمين
ডাউনলোড করুন