JustPaste.it

আইএস সমর্থকদের বই “খেলাফত বনাম জাহালত” এবং মিথ্যাচারের দাজ্জালি মাত্রা !

 

আইএসের এদেশীয় সমর্থকরা তাদের আল-কায়েদা ও তালিবানদের বিরুদ্ধে তাদের মিথ্যাচার প্রমাণের জন্য একটি বই লিখেছে, যার নাম “খেলাফত বনাম জাহালত” । এই বইটিতে এতোটা নির্মম ধোঁকাবাজি ও মিথ্যাচার করা হয়েছে, যা দাজ্জালকে হার মানানোর মতো !

দুনিয়ার প্রতিটি বাতিল দলের মতো আইএসও তাদের মতবাদের পথে প্রতিবন্ধকতাগুলো সরানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। যেহেতু তাদের এই মনগড়া বাতিল খারিজী মতবাদের সামনে প্রধান বাঁধা হচ্ছে গ্লোবাল জিহাদের সম্মানিত উলামায়ে কিরাম ও উমারাগণ, তাই সর্বপ্রথম তাদের বিরুদ্ধে একরাশ মিথ্যাচার করে সাধারণ মুসলিম ও গ্লোবাল জিহাদের ব্যাপারে অবুঝ ভাইদেরকে উনাদের প্রতি বিষিয়ে তোলার এক জঘন্য অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে।

 

এরই অংশ হিসেবে তাদের নেতাদের থেকে শুরু করে তাদের প্রায় সকল সকল সমর্থকরা শাইখ মাক্বদিসী হাফিঃ,শাইখ আবু কাতাদা হাফিঃ, শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ  সহ গ্লোবাল জিহাদের সর্বোচ্চ আলিম ও দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে এমনসব অপবাদ আরোপ করছে, যা দুনিয়ার কাফির-মুশরিক-মুরতাদরাও জীবনে আরোপ করতে পারেনি।

 

“খেলাফত বনাম জাহালত” নামক বইতে দাজ্জালকে হার মানানো মিথ্যাচারের সংখ্যা কত তা হিসাব করা বেশ কঠিন।

দাজ্জালিয়াতের একটি উদাহরণ আজ দিচ্ছি। আল্লাহ চাহেন তো পরবর্তীতে সময় করে আরো বৃহদাকারে জবাব দেওয়ার ইচ্ছা আছে।

শাইখ মাক্বদিসী হাফিঃ যেহেতু তাদের বিরুদ্ধে ফাতাওয়া দিয়েছেন,তাই  এই আবর্জনার স্তুপে খারিজী সমর্থকরা প্রমাণ করার অপচেষ্টা করেছে যে, শাইখ মাক্বদিসী হাফিঃ নাকি আরো ১৩ বছর আগে অর্থাৎ ২০০৫ সাল থেকেই আল-কায়েদার বিরোধী ???

এটি প্রমাণ করতে গিয়ে শাইখ মাক্বদিসী হাফিঃ ২০০৫ সালে আল-জাযিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের কোন প্রেক্ষাপটে এবং কী প্রেক্ষিতে কথা বলেছেন তা উল্লেখ না করে এবং আগ-পাছ বাদ দিয়ে মাঝখান থেকে মাঝখান থেকে কিছু অংশ তুলে ধরে অভিযোগ করেছে, শাইখ মাক্বদিসী নাকি শুধু আইএসের বিরোধী না বরং ১৩ বছর আগে থেকেই আল-কায়েদার বিরোধী  !!! 

 

মানুষ কতটা মিথ্যাবাদী ও দাজ্জালিপনা করতে পারে তা ভেবে অবাক হবেন হয়তো ! শাইখ মাক্বদিসী হাফিঃ ২০০৫ সালে যখন আল-জাযিরাকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, তখন উনার ছেলে উমর মাক্বদিসী রাহিঃ ইরাকে আল-কায়েদার অধীনে জিহাদরত ছিলেন এবং ২০১০ সালে শাইখ মাক্বদিসী হাফিঃ এর সেই ছেলে ইরাকে শহীদ হন।

শাইখ মাক্বদিসী হাফিঃ এর ছেলে যে তখন ইরাকে জিহাদ করছে এই বিষয়টি আল-জাযিরার সাংবাদিক উক্ত সাক্ষাৎকারে শাইখ মাক্বদিসী হাফিঃ কে প্রশ্নও করেছেন এবং তিনি সে ব্যাপারে উত্তরও দিয়েছেন ও সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

কিন্তু এসব বিষয় সম্পূর্ণ গোপন করে এই আবর্জনার স্তুপে অভিযোগ করা হয়েছে, শাইখ মাক্বদিসী হাফিঃ নাকি আল-কায়েদা, তালিবানদের বিরোধী ছিলেন !!!

অথচ শাইখ মাক্বদিসী হাফিঃ “তালিবান জিন্দাবাদ’ আর্টিকেলে লিখে তাতে তালিবানদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন।

 

শুধু তাই নয় ইমারতে ইসলামী আফগানিস্তান তথা তালিবানদের প্রকাশিত আরবী মাসিক ম্যাগাজিন “আস-সমূদ” শাইখ মাক্বদিসী হাফিঃ এর উক্তিকে কোটেশান হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে এবং উনাকে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে ম্যাগাজিনের এক সংখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছে।

 

খারিজী সমর্থকদের লেখা “খেলাফত বনাম জাহালত” নামক আবর্জনার দাবি অনুযায়ী যদি ধরে নেওয়া হয় (যদিও ১ কোটি পার্সেন্ট মিথ্যা) যে, শাইখ মাক্বদিসী হাফিঃ আল-কায়েদা,তালিবানের বিরুদ্ধে, তারপরও তো তালিবান, আল-কায়েদা শাইখ মাক্বদিসী হাফিঃ কে মাথায় তুলে রাখে ! 

তাহলে খারিজীদের বিরোধিতার কারণে খারিজীরাও উনাকে সম্মান করুক ! খারিজীরা উনাকে তাকফির করেছে কেনো ???

 

তাদের মিথ্যাচারের কফিনে শেষ পেরেক হিসেবে শাইখ মাক্বদিসী হাফিঃ এবং অন্যান্য হক্বপন্থী আলিমদের ব্যাপারে শামের তাদের এক বড় নেতার বক্তব্য তুলে ধরছি.......

 

২০১৪ সালের জানুয়ারির ২১ তারিখ তৎকালীন ISIS এর শামের একজন শারয়ীর(শরীআহ বিশেষজ্ঞ)  يا ليت قومي يعلمون"

رسالة من مجاهد في الدولة الإسلامية إلى العلماء الصادقين والدعاة الناصحين وإخوانه المجاهدين وسائر المسلمين 

অর্থাৎ ইসলামিক স্টেইটের মুজাহিদের পক্ষ থেকে সত্যবাদী আলিম’, নাসীহাহ প্রদানকারী  ‘দায়ীগণ, মুজাহিদ ভাই, সমস্ত মুসলিমদের প্রতি বার্তাশিরোনামে একটি বার্তা দেন।

তৎকালীন ISIS এর শারয়ীأبو عبادة المغربي محمد سموح الراشدতার উক্ত বার্তায় বলেন........

الرسالة الأولى : إلى العلماء الناصحين والدعاة الصادقين ... وعلى رأسهم المشايخ سليمان العلوان وأبي محمد المقدسي وأبي قتادة الفلسطيني فك الله أسرهم ورفع من قدرهم : ً ونعني كم ابتداء لأنكم المنارات التي بها تكشف مثل هذه الفتن فكما قال الحسن البصري رحمه الله " إن الفتنة إذا أقبلت عرفها كل عالم وإذا أدبرت عرفها كل جاهل " ، فنحن نعول بعد الله عليكم ، مشايخنا الأفاضل

প্রথম বার্তাঃ নাসীহাহ প্রদানকারীআলিমগণ ও সত্যবাদী দায়ীগণের প্রতি..... আর তাদের সর্বোচ্চে যে মাশাইখগণ রয়েছেন তারা হচ্ছেন, সুলাইমান আল-উলওয়ান,আবু মুহাম্মাদ আল-মাক্বদিসী এবং আবু ক্বাতাদা আল-ফিলিস্তিনী আল্লাহ্‌ তাদেরকে বন্দীদশা থেকে মুক্ত করুন এবং তাদের মর্যাদা সমুন্নত করুন। আমরা সর্বপ্রথম আপনাদেরকেই বিবেচনা করি, কারণ আপনারা হচ্ছেন এমন আলোকবর্তিকা যাদের মাধ্যমে এধরণের ফিতনাহ স্পষ্ট হয়। যেমনটি হাসান-আল বাসরী রাহিঃ বলেছেন...... যখন ফিতনাহ আসে,তখন প্রত্যেকআলিম তা চিনতে পারে। আর যখন ফিতনাহ চলে যায়,তখন প্রত্যেক জাহেল(মূর্খ) তা চিনতে পারে।সুতরাং আমরা আল্লাহর পরে আপনাদের উপর নির্ভর করি।

বার্তাটির লিংক.........  https://justpaste.it/e5vd 

 

“খেলাফত বনাম জাহালত” নামক আবর্জনার দাবি অনুযায়ী শাইখ মাক্বদিসী হাফিঃ নাকি ২০০৫ সাল থেকে আল-কায়েদা ও গ্লোবাল জিহাদের বিরোধী ছিলেন !! তাহলে ২০১৪ সালের ২১ জানুয়ারিতে এসে খারিজী নেতাদের কাছে সেই শাইখ মাক্বদিসী হাফিঃ কী করে সত্যবাদী দায়ীগণের সর্বোচ্চ পর্যায়ের মাশায়েখদের শীর্ষস্থানে আসীন হতে পারেন ??

২০১৪ সালের ২১ জানুয়ারিতে খারিজীদের শীর্ষস্থানীয় এক নেতা বলছে, আল্লাহ তা’আলার পরে তারা সুলাইমান আল-উলওয়ান হাফিঃ ,আবু মুহাম্মাদ আল-মাক্বদিসী হাফিঃ এবং আবু ক্বাতাদা আল-ফিলিস্তিনী হাফিঃ এর উপর নির্ভর করে। আর তাদের সমর্থকরা প্রমাণ করতে চাচ্ছে, শাইখ মাক্বদিসী হাফিঃ নাকি ২০০৫ সাল থেকেই আল-কায়েদার গ্লোবাল জিহাদের বিরোধী ???

এখানে কে মিথ্যাবাদী আমরা জানতে চাই ???

অফিসিয়ালি প্রকাশিত তার বক্তব্যের বিরুদ্ধে বাগদাদী-আদনানীরাও কখনো দ্বিমত করেনি। তাহলে নিশ্চয়ই বাগদাদী-আদনানীরাই মিথ্যার সমর্থক, আর এদেশীয় গণ্ডমূর্খ কতিপয় সমর্থক সত্যবাদী !!! 

 

সময়ের অভাবে এই বইটি নিয়ে লেখার সুযোগ পাচ্ছি না। দুয়েক পর্ব লিখলেই বুঝতে পারবেন, মিথ্যাচার ও ধোঁকাবাজিতে এরা কত নীচতম অবস্থানে চলে গেছে।

আল্লাহর কসম করে বলছি, আমি যদি এই বইয়ের পোস্ট মর্টেম করি,তাহলে দেখবেন এর অবস্থা আব্দুল আহাদের মতো হবে ইনশাআল্লাহ্‌।  

 

এই মিসকিনদের নিয়ে আর বেশি লিখতে আমার মন সায় দেয় না। কিন্তু যখন দেখি গ্লোবাল জিহাদের সত্যবাদী আলিম ও মুজাহিদ উমারাদের উপর এরা মিথ্যার অপবাদ দিচ্ছে,যাদের জন্য আমার পিতা-মাতা কোরবান হোক এবং তাদের মিথ্যাবাদী খারিজী নেতাদের সত্যবাদী বানাচ্ছে, তখন তাদের মিথ্যাচার ও ধোঁকাবাজির বালির বাঁধ গুঁড়িয়ে দেওয়াকে ঈমানী দায়িত্ব মনে করি।

 

আইএসের নেতা ও সমর্থকদের এসব মিথ্যাচার ধরিয়ে দেওয়ার পরও যারা তাদেরকে সমর্থন করবে,কিয়ামতের দিন এসব প্রমাণ তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য হিসেবে উপস্থিত হবে ইনশাআল্লাহ্‌।