সমকালিন প্রসঙ্গ •
জাফর নাকি মীর জাফর
মুসাল্লাহ কাতিব
বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় জ্ঞানপাপী, মুক্তিযুদ্ধ ব্যবসায়ী, বিশিষ্ট ‘চুল্কানিষ্ট’ লেখক ও চেতনার ফেরিওয়ালা, ইসলাম ও মুসলিম জনসাধারণের চিন্তা-চেতনা সম্পর্কে অত্যন্ত নিকৃষ্ট মানসিকতা ধারণকারী ব্যক্তি হচ্ছেন মিস্টার জাফর ইকবাল। যার লেখা থেকে শুধু পঁচা মগজের তেজস্ক্রিয়তা ছড়ায়। ইসলাম নিয়ে তার এলার্জি অনেক পুরাতন। তিনি তার চুলকানি মার্কা লেখা প্রসব করে একের পর এক ব্যঙ্গাত্মক আঘাত ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে করে যাচ্ছেন। তার এই সমস্ত বর্জ্য সম লেখা দ্বারা তার পশ্চিমা প্রভুও এদেশীয় নাস্তিক ভাব শিষ্যরা বেজায় খুশি। এ রকম প্রজন্ম বিধ্বংসী লেখাতে তিনি অত্যন্ত চতুরতার সাথে ইসলামি পোশাক, দাড়ি, ধর্মীয় বিশ্বাস ও ধার্মিক ব্যক্তি ইত্যাদিকে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে হেয় করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। দেশের তরুণ প্রজন্মকে সেক্যুলার ও নাস্তিক্যবাদ এর চেতনায় কনভার্ট করতে তিনি শিশুতোষ উপন্যাস রচনার মাধ্যমে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি ‘একুশে বইমেলা ২০১৭’তে তার সবচেয়ে দৃষ্টান্ত প্রদর্শনকারী বই “ভূতের বাচ্চা সুলাইমান” প্রকাশ করে মুমিনদের অন্তরে আঘাত দিয়েছেন। তার লেখালেখির ধরন একমাত্র ‘কাব বিন আশরাফ’ নামক ইহুদির লিখার সাথে তুলনা করা যায়। যে ইসলাম ও রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে কষ্ট দিত। সেই ‘কাব বিন আশরাফ’কে যেভাবে শিক্ষা দেয়া হয়েছিল; জমানার এই ‘কাব বিন আশরাফ’কেও ঠিক একই পদ্ধতিতে আদব-কায়দা শিক্ষা দেয়ার বিকল্প নেই। এই নাস্তিক গুরু অত্যন্ত কপট ও ধূর্ত। সে প্রকাশ্যে তার নাস্তিকতা ও ইসলাম বিদ্বেষী আকিদা স্বীকার করে না। কিন্তু, সে তার সাহিত্যে পর্দা, দাড়ি সহ ইসলামি বিভিন্ন নিদর্শন–সমূহকে কটাক্ষ ও বিদ্রুপসূচক বাক্য উপস্থাপন করে কোমলমতি শিশু-কিশোরদের হৃদয়ে সূক্ষ্ম কৌশলে ইসলাম বিদ্বেষ ঢুকিয়ে দিচ্ছে। এই নাস্তিক গুরুর শিক্ষা বা দর্শন কতটা ভয়ংকর ও নিকৃষ্ট; তা তার শাহবাগী শিষ্য নাস্তিক-শাতিমদের উগ্র নোংরা লেখা থেকেই প্রমাণ পাওয়া যায়। যদিও এই নাস্তিকরা নিজেদের সুশীল ও মুক্তমনা দাবি করে; কিন্তু, তাদের নিকৃষ্ট রুচি ও অশ্লীল ভাষা প্রয়োগের ধরন এতই নিচু যে, কোন ভদ্র সমাজের মানুষের পক্ষে তাদের লেখা পড়া সম্ভবই হবে না। এই জন্য একজন বিশেষজ্ঞ বলেছিলেন যে, “জাফর স্যার শুধু নাস্তিক নয়, সে নাস্তিক তৈরির কারখানা।”
সে বা তার অনুসারীরা মনে করে যে, ইসলামের মৌলিক চিন্তা-চেতনা লালন করা বা প্রচার করা এটা ধর্মান্ধতা। শরিয়াহ এর বিধান–এটা অন্ধকার যুগের কথা। আর ইসলামের শাশ্বত বিধানাবলীর বিরুদ্ধে তাদের চরম কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য বা লেখালেখি হল মুক্তমনা বা মুক্তচিন্তার চর্চা। তাদের কলমের কালি থেকে কেবল ড্রেনের কালো দুর্গন্ধময় ময়লা পানির গন্ধই আসে; যা একমাত্র নর্দমার কীটরাই গোগ্রাসে গিলে থাকে। এই সমস্ত ভদ্রবেশী ভন্ড নাস্তিকরা আসল কাফের থেকেও নিকৃষ্ট। কারণ, এরা মুসলিম সমাজে বসবাস করে ইসলামের দুশমনদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। তাদের মা-বাবারা কত সুন্দর করে নামের সাথে মুহাম্মদ যুক্ত করেছিল; কিন্তু তারা কি জানত?–তাদের কুলাঙ্গার সন্তানরা একসময় ‘কাব বিন আশরাফের’ মত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার আনীত দ্বীনের বড় দুশমন হয়ে দাঁড়াবে। তারা তাদের মা-বাবার স্বপ্নের সাথে, সাধারণ মানুষের সাথে এবং ইসলামের সাথে গাদ্দারি বা ‘মীর জাফরি’ করে হিন্দুত্যবাদ ও পাশ্চাত্য সভ্যতার ফেরি করে বেড়াচ্ছে আর তাদের দূষিত সংস্কৃতি মুসলিম সমাজে ছড়াচ্ছে। সবচেয়ে পরিতাপের বিষয় হল–উম্মাহর রাহবার আলেম সমাজ মাতৃভাষা বাংলা চর্চা না করায় বাংলাভাষা এখন একচেটিয়া হিন্দু ও নাস্তিক বুদ্ধিজীবীদের হাতে অপব্যবহৃত হচ্ছে। এমনকি জাতীয় সিলেবাস নির্ধারণ ও রচনার ক্ষেত্রে এই হিন্দুও নাস্তিকদের দায়িত্ব দেয়া এই জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধ্বংসের জন্য সবচেয়ে বড় চক্রান্ত। তাদের আক্রমণাত্মক লেখালেখির বিরুদ্ধে আমাদের ইসলামপন্থীদের লেখা সাধারণত; সাহিত্যের মান তো দূরের কথা বানান শুদ্ধির পর্যায়ে পড়াটাই অপ্রতুল। তবে বর্তমানে আলহামদুলিল্লাহ, অনেক দ্বীনি ভাইদের লেখালেখি ও সাহিত্য চর্চায় আত্মনিয়োগ করা আমাদের জন্য আশার
প্রদীপ জ্বেলেছে। তবে, বাস্তব কথা হল–এই ধরনের মাস্টারমাইন্ড নাস্তিকদের মোকাবেলা শুধুকলম দিয়ে করলেই যথেষ্ট নয়; বরং চাপাতির ভূমিকাই অধিক কার্যকর। আর এটাই আমরা সিরাত থেকে শিক্ষা লাভ করি–মুরতাদ, শাতিম ও ‘মীর জাফর’দের উচিত পাওনা চাপাতি দিয়েই মিটাতে হয়। আল্লাহ কালেমার সূর্যকে আলোকিত করুন! আর সমস্ত চামচিকাদের জাহান্নামের অন্ধ গহ্বরে নিক্ষেপ করুন! আমীন!
█
আল বালাগ
ম্যাগাজিন ইস্যু-২