JustPaste.it

হাসান মির্জার নির্বাচিত লেখা

বা

 সেরা লেখাসমুহ

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

হাসান মির্জার নির্বাচিত লেখা

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

# অমুসলিমদের জন্য সংক্ষেপে ইসলাম পরিচিতি

 

প্রশ্নঃ ইসলাম কি?

 

আমাদের সৃষ্টিকর্তা যুগে যুগে নবী রসূল পাঠিয়েছিলেন যাদের দায়িত্ব ছিল মানুষকে সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে জানানো, আল্লাহর একত্ববাদ প্রচার করা। নবী রসূল তারাই হতেন যারা ছিলেন সেই জাতির সবচেয়ে সৎকর্মশীল ব্যাক্তি। তারা নবুয়তপ্রাপ্তির পর তৌহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদের প্রচার শুরু করে, মানুষকে নৈতিকতার শিক্ষা দেয়, মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকা এবং ভালো কাজ করার উপদেশ দেয়। এভাবেই যুগে যুগে জাতিতে জাতিতে নবী প্রেরিত হয়েছিলেন, আমরা ধর্মের ইতিহাস সম্পর্কে পড়লে জানতে পারবো ধর্ম না থাকলে পৃথিবী থেকে নৈতিকতা মূল্যবোধ হারিয়ে যেতো। মানবসভ্যতাকে চূড়ান্ত নৈতিক অধঃপতনের হয়ে ধ্বংসের হওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়েছে এই ধর্ম।

 

প্রতি যুগে (এখানে যুগ বলতে ১২ বছর নয়, যুগ বলতে একটা সময়কাল) নবী-রসূল এসেছিলেন, যেমন ইব্রাহিম, মুসা, ঈসা (আলাইহিস সালাম) প্রমুখ। তারা প্রাচীনকালের নবী, নিজ জাতির মাঝে সৃষ্টিকর্তার একত্ববাদ ও বিধি বিধান প্রচার করে গত হয়েছেন। সৃষ্টিকর্তার বিধি বিধান পালনের মাধ্যমে সমাজের বিশুদ্ধিকরণ হতো। তাদের মৃত্যুর পর আস্তে আস্তে মানুষ আবার পাপে লিপ্ত হতে থাকে, আল্লাহর সাথে শিরক করতে থাকে। এভাবেই সমাজ আবার অন্ধকারের দিকে এগিয়ে যায়। সমাজকে আবার বিশুদ্ধিকরণের জন্য সেই জাতির সবচেয়ে ভালো মানুষটিকে নবুয়ত দেয়া হতো, তিনি নবী হয়ে আবার সমাজকে নৈতিকতার শিক্ষা দিতেন। এটাই মূলত নবী রসূলদের মূল কার্যক্রম ছিল। ইসলামী বিশ্বাসমতে আমরা শেষ যুগে এসে উপনীত হয়েছি। আর এই যুগের নবী মনোনীত করা হয় মানব-ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ ব্যাক্তি মুহাম্মদকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। আজ থেকে প্রায় ১৪০০ বছর পূর্বে যখন পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা, পাপ, হত্যা, রাহাজানি, শিরক বেড়ে যায় তখন শেষ নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবির্ভূত হন আল্লাহর একত্ববাদ প্রচারের জন্য। অন্যান্য নবী রসূলের মত মুহাম্মদকেও (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর বানী হিসেবে একটা কিতাব দেয়া হয়। তা হচ্ছে আল কুরআন।

 

এবার ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে এক কথায় বলতে গেলে- সৃষ্টিকর্তা এক আল্লাহর উপর বিশ্বাস, এবং শেষ যুগের শেষ নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর ঈমান আনাই ইসলামের মূল কথা। নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অনুসারীদের এই দ্বীনকে বলে ইসলাম, আর অনুসারীদের বলে মুসলিম। মুসলিমরা আল্লাহর বাণী আল-কুরআন ও রসূলের বাণী আল-হাদিস মেনে চলে।

 

প্রশ্নঃ ইসলাম কি সব মানুষের জন্য, সকল জাতিগোষ্ঠীর জন্য?

 

হাঁ, ইসলাম হচ্ছে সকল মানুষের জন্য, সকল মানুষের উচিত সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে জানা, যে নিজের সৃষ্টিকর্তাকে জানলো না তার জীবনটাই বৃথা। ইসলাম পুরো মানবজাতির হেদায়েতের জন্য এসেছে। মুসলিমরা কোনো জাতিগোষ্ঠীতে আবদ্ধ নয়, আরব, আফ্রিকান, ইউরোপিয়ান, ব্রিটিশ, বাঙ্গালী বা অ্যামেরিকান যে যাই হোক না কেন সৃষ্টিকর্তা এক আল্লাহর উপর ঈমান আনা সবার কর্তব্য।

 

আধুনিক বিজ্ঞানের কল্যাণে জানতে পেরেছি পৃথিবী ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। অতএব বোঝা যাচ্ছে এটাই পৃথিবীর শেষ যুগ। আর শেষ যুগের শেষ নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যিনি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মানব-ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ মানুষ। তিনি যে শেষ নবী এর প্রমাণ পূর্ববর্তী কিতাবসমূহে রয়েছে। আল-কুরআনও মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে শেষ নবী বলে অভিহিত করেছে।

 

প্রশ্নঃ পূর্ববর্তী নবী কারা ছিলেন?

 

আমরা জেনেছি আল্লাহর একত্ববাদ প্রচারে যুগে যুগে নবী প্রেরিত হয়েছেন। পবিত্র কুরআনে ২৫ জন সম্মানিত নবীর নাম এসেছে। তবে নবী-রসূলের সংখ্যা আরো অনেক। ইহুদিদের নবী মুসা (আঃ) এবং খ্রিস্টানদের নবী ঈসা (আঃ) এর নাম পবিত্র কুরআনে এসেছে। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, হিন্দুদের রাম লক্ষণ বা বৌদ্ধদের গৌতম বুদ্ধ কি নবী ছিলেন? ইসলামী মতে, আল কুরআনে বা আল হাদিসে তাদের নাম আসে নাই তাই শিওর হয়ে বলা যায় না তারা নবী ছিলেন কিনা। তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ববিদরা বলে থাকেন, যেহেতু বিভিন্ন জাতিতে বিভিন্ন সময়ে নবী প্রেরিত হয়েছিলেন সেহেতু তারা নবী হতেও পারেন নাও হতে পারেন, নির্দিষ্ট বা নিশ্চিত করে কিছু বলা যায় না।

 

ঈসা ও মুসা নবীর অনুসারীদের অধঃপতনঃ নবীদের মৃত্যুর পর তাদের অনুসারীরা আল্লাহর একত্ববাদের শিক্ষা ভুলে গিয়ে পাপে লিপ্ত হয়, এমনকি আল্লাহর প্রেরিত কিতাবগুলোও আস্তে আস্তে বিকৃত হয়ে যায়, ফলে বিভ্রান্ত মানুষদের হেদায়েতের জন্য নবী মুহাম্মদকে প্রেরণ করা হয়। ১৪০০ বছর পূর্বে নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর নাজিল হওয়া শেষ আসমানি কিতাব আল কুরআন এই ১৪০০ বছরেও পরিবর্তন পরিবর্ধন বা বিকৃতি কিছুই হয় নি। এখনো প্রায় ১৪০০ বছর আগের কুরআন সংরক্ষিত আছে।

 

প্রশ্নঃ ইসলাম কি সত্য ধর্ম?

 

কুরআন এমন একটি কিতাব যা লক্ষ লক্ষ হাফিজরা মুখস্ত করেন, দৈনিক কোটি কোটি মানুষ তা অধ্যয়ন করে, সকল অমুসলিম ভাই বোনকে একবার হলেও এই আল-কুরআন পড়ার অনুরোধ রইলো। আমাদের নবীজি ছিলেন নিরক্ষর, তার দ্বারা এই জ্ঞানগর্ভ কিতাব লেখা অসম্ভব, অতএব এটাই প্রমাণ হয় যে আল-কুরআন আল্লাহর বানী, আমাদের মহান সৃষ্টিকর্তার বানী। ইসলাম কি সত্যধর্ম? ইসলাম সম্পর্কে একটু জেনে দেখেন পড়ে দেখেন, তাহলেই বুঝতে পারবেন। অপপ্রচারে কান দিবেন না। দৈনিক এতো অপপ্রচার সত্ত্বেও পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ধর্ম হচ্ছে ইসলাম। প্রচুর মানুষ ইসলাম গ্রহণ করছে, করবে (ইন শা আল্লাহ)। আমার পূর্বপুরুষ হিন্দু ছিল, তারাও এক আল্লাহ ও তার নবী মুহাম্মদের উপর ঈমান এনে মুসলিম হয়েছে। পারিবারিকভাবে মুসলিম হওয়ার চেয়ে ধর্মান্তরিত মুসলিম হওয়া অবশ্যই বেশি সম্মানের, কারণ মুসলিম জাতির শ্রেষ্ঠ ব্যাক্তিরা অর্থাৎ সম্মানিত সাহাবিরা সবাই ছিলেন ধর্মান্তরিত মুসলিম।

 

সকল অমুসলিমদের প্রতি আহ্বান রইলো এক আল্লাহ ও তার নবী মুহাম্মদের উপর ঈমান আনার জন্য। সৃষ্টিকর্তাকে জানা ও তার বিধি বিধান পালন করা আমাদের কর্তব্য।

 

এতো কম কথায় ইসলাম সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেয়া সম্ভব না, অনেক প্রশ্ন মনে আসতে পারে, ইসলাম সম্পর্কে জানতে যে কোনো প্রশ্ন করুন আমাকে। উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো ইন শা আল্লাহ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

# ভালো কাজে সহযোগিতা আর্থিকভাবে না পারলেও ছোট্ট একটা লাইক কিংবা শেয়ার করেও তো করা যায়, তাই না?

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

# বর্তমানে ইসলামী সাহিত্যের সবচেয়ে বড় সমস্যা অনুবাদ সাহিত্যের দিকে অতি-ঝোঁক। ১০০ টা বইয়ের ৮০ টা অনুবাদ। বাকি ২০ টা মৌলিক হইলেও এর মধ্যে মানহীন, ভালো মিক্সড থাকে।

 

অনুবাদের দিকে ঝোঁক ভালো, এতো বেশি ঝোঁক ভালো না। এমনও হয় একটা অন্য ভাষার বই ৫-৬ বার অনুবাদ হয়। যেগুলার অনুবাদ আছে সেগুলাও অনুবাদ হয়। অনেক মেধাবী লেখকরা এইসব অনুবাদের কাজ করে থাকে। অথচ তারা মৌলিকে মনোযোগ দিলে সোনা ফলাইতে পারতেন।

 

অনুবাদ সাহিত্যের দরকার আছে। কিন্তু এতো দরকার নাই যে মৌলিক সাহিত্যের অস্তিত্বই বিলুপ্ত হয়ে যায়।

 

অনুবাদ নিয়ে আমার মতামত হইতেছে যাদের দরকার তারা মূল ভাষা শিখে মূল বই পড়বে। বেশিরভাগ বই আরবি উর্দু থেকে অনুবাদ হয়। ১০০ টা আরবি-উর্দু অনূদিত বই পড়ার চেয়ে আরবি-উর্দুটা শিখা ফেল্লেই হয়।

 

অনুবাদ করলে আসলে নতুন কিছু উৎপাদন হয় না, বরং একি কথা, একি চিন্তা, একি লেখক; শুধু অন্য একটা ভাষায় রুপান্তর। একটা বইরে ১০০ টা ভাষায় রুপান্তর করলেও বই কিন্তু একটাই, মৌলিক কিন্তু একটাই।

 

সুতরাং যারা যে বিষয়ের বই অনুবাদ করতে চান, তারা সেই বিষয়ের অনেকগুলা বইয়ের সাহায্য নিয়ে নিজেই একটা মৌলিক লিখতে পারেন। তবে যারা সেই বিষয়ে একেবারেই জানেন না তাদের কথা ভিন্ন।

 

অনেকে বলবেন, ঐ কিতাবের মত আর কিতাব নাই, সুতরাং ওইটা অনুবাদ হইলেই চাহিদা পূরণ হবে, নতুন মৌলিকের কি দরকার!

 

তাহলে বলবো, পৃথিবীতে তাফসিরের কিতাব একটাই থাকতো, সিরাতের বই একটাই থাকতো। সবাই ভাবতো এই বিষয়ে একটা বই তো আছেই, নতুনের আর কি দরকার! এমন ভাবে ভাবলে নতুন আর কোনো বই আসতো না। নতুন লেখা হইলে মানহীন যেমন অনেক পাওয়া যায়, অনেক ভালো বইও আসে।

 

সুতরাং সালাফদের কিতাবাদি পড়তে চাইলে আরবি উর্দু শিখেন।

 

আর অনুবাদে অতি-ঝোঁক কমিয়ে স্বাভাবিক করেন। এতেই ইসলামী সাহিত্যের মঙ্গল।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

# নারীবাদ, নাস্তিকতা, সেকুলাঙ্গারিজম এগুলোর উৎপত্তির উৎস কিন্তু একটাই। সুতরাং ওগুলারে বাদ দিয়ে শুধু নারীবাদের সমালোচনা করলে নারীবাদের প্রকৃত অবস্থা প্রকাশ পাবে না। সেকুলাঙ্গারিজম, নাস্তিকতা এগুলা ছাড়া নারীবাদ পঙ্গু এক প্রকার।

 

নারীবাদ হইল আধুনিক যুগের বর্ণবাদ। তুমি কালো, আমি সাদা, মানে আমি শ্রেষ্ঠ; এইটা যেমন বর্ণবাদ। তেমনি তুমি পুরুষ, আমি নারী, তাই আমি শ্রেষ্ঠ; এইটাও একটা বর্ণবাদ। আর নারীবাদ সেই বর্ণবাদ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নামছে।

 

মুসলিমদের মধ্যে যারা নারীবাদী তাদের মধ্যেও নাস্তিকতা আর সেকুলারাঙ্গারিতা কমন একটা বিষয়। যেন নারীবাদী হইলেই ইসলাম নিয়ে চুলকানি থাকতে হবে। দেখা যায় সেকুলাঙ্গার আর নাস্তিকদের সাথেই নারীবাদীদের সবচেয়ে বেশি খাতির।

 

এছাড়াও মুসলিম দাবিদার একদল মহিলা 'ইসলামিক ফেমিনিজম' বা 'ইসলামী নারীবাদ' টার্ম ইউজ করে নিজেদের নারীবাদী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে, তাদের টার্গেট মুসলিম নারীরা। এই ইসলামিক ফেমিনিস্ট দাবীদারদের অনেকে হিজাবও করে (অর্থাৎ মাথায় পট্টি বাধা)। আমার কাছে এই কথিত ইসলামিক ফেমিনিস্টদের সেকুলাঙ্গারদের অনুরুপ মনে হয়। নারীবাদ যদি হয় নাস্তিকতার অনুরুপ তাহলে ইসলামিক ফেমিনিজম হচ্ছে সেকুলাঙ্গারিজমের অনুরুপ। কারণ নাস্তিকতাবাদে ভন্ডামি নাই, তারা নিজেদের অবস্থান ক্লিয়ার করে প্রকাশ করে, নারীবাদও তাই। কিন্তু সেকুলাঙ্গাররা হল নাস্তিক হওয়া সত্ত্বেও নিজেরে মুসলিম দাবিকারী, আর ইসলামিক ফেমিনিস্টরাও তাই।

 

নাস্তিকদের যেমন ইসলাম নিয়ে চুলকানি আছে, একই চুলকানি কিন্তু সেকুলাঙ্গারদেরও আছে। শুধু পার্থক্য হইতেছে- নাস্তিকরা ইসলামকে সরাসরি গালাগালি করে, আর সেকুলাঙ্গাররা সমাজের ভয়ে বা অন্য কারণে ইসলামকে সরাসরি গালাগালি করতে না পেরে ইসলামের বিভিন্ন বিধি বিধানের বিরুদ্ধে কথা বলে, আবার নিজেরে বলে মুসলিম যেন মানুষ নাস্তিক কইতে না পারে, অথচ একটা সেকুলাঙ্গার ভিতরে ভিতরে নাস্তিকের চেয়ে কুনো অংশে কম না।

 

একই ভাবে নারীবাদী আর ইসলামী নারীবাদীদের মধ্যেও একই বৈশিষ্ট্য থাকা সত্ত্বেও পার্থক্য হইতেছে - নারীবাদীরা সরাসরি যা কওয়ার কইয়া ফেলে। কিন্তু ইসলামী নারীবাদী সেইটারে ঘুরায় প্যাঁচায়া কয়, নারীবাদীদের কথাগুলারে হিজাব পড়ায়া উপস্থাপন করে, ইসলামের অপব্যাখ্যা কইরা নারীবাদের তত্ত্বগুলারে জায়েজকরণ করতে চায়। অথচ উদ্দেশ্য কিন্তু একই। অর্থাৎ সেকুলাঙ্গারদের মত কথিত ইসলামী নারীবাদীরাও এক প্রকার ভণ্ড।

 

বিশেষ দ্রষ্টব্য- ইসলামে কোনো নতুন বাদ-মতবাদের জায়গা নাই, সুতরাং ইসলামী নারীবাদ স্রেফ একটা ভণ্ডামিযুক্ত শব্দ, এইটার না বাস্তব অস্তিত্ব আছে আর না থাকা সম্ভব।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

# শিয়াদের হিরো মুখতার সাকাফির চরিত্র বিশ্লেষণ

 

 

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তায়েফে দাওয়াতি কাজে গিয়েছিলেন। তিনি বড় আশা নিয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু তায়েফবাসী তার দাওয়াত গ্রহণ তো দূরে থাক নবীকে পাথর নিক্ষেপ করে বিতারন করেন। তায়েফের এই পাথর নিক্ষেপকারী গোত্রগুলোর একটি ছিল বনু সাকিফ, খুবই প্রভাবশালি একটি গোত্র। রসূলুল্লাহ তায়েফবাসীর জন্য বদ দুয়া না করে তাদের হিদায়াতের দুয়া করেছিলেন। পরবর্তীতে এই গোত্র ইসলাম গ্রহণ করে। এই গোত্র থেকে বহু সম্মানিত সাহাবা এবং তাবেঈর জন্ম হয়েছিল। পাশাপাশি এই গোত্রের দুই ব্যক্তির দ্বারা বনু সকিফ গোত্রের বদনাম হয়েছিল। এদের দুইজনের একজন ছিল ইসলামের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় খুনি, আরেকজন সবচেয়ে বড় মিথ্যুক।

 

.

 

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

 

“ছাকীফ গোত্রে একজন মহা মিথ্যুক ও একজন বড় খুনী كذاب ومُبير সৃষ্টি হবে।” (সুনানে তিরমিযীঃ ২২২০)

 

আসমা বিনতে আবু বকর রাঃ এর মতে, এ হাদিসে মহা মিথ্যুক বলতে মুখতার সাকাফিকে এবং বড় খুনি বলতে হাজ্জাজ বিন ইউসুফকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।

 

এবং এটাই যুগের পর যুগ আলিমদের সর্বসম্মত মত।

 

.

 

ইরানিরা তাদের শিয়াবাদ প্রচারের জন্য অন্যান্য মাধ্যমের সাথে পাশাপাশি চলচ্চিত্র-নাটক ইত্যাদি মাধ্যমকেও বেছে নিয়েছে। তাদের হিরো মুখতার সাকাফিকে নিয়ে তাদের বানানো সিরিয়াল বাংলায় ডাবিং হয়ে এসএ টিভিতে সম্প্রচার হতো। এমন না এসএ টিভির কোনো ধর্মীয় আবেগ আগ্রহ আছে। তারা স্রেফ পুঁজিবাদী চিন্তা থেকে এইসব সম্প্রচার করে, এমনকি শিয়া সুন্নির পার্থক্য সম্পর্কেও এরা জ্ঞাত না। এসএ টিভির এই সেকুলাঙ্গার লোকগুলোকে যদি ধর্মব্যবসায়ী বলি ভুল হবে না, এরা ধর্মকে, নারীকে নিজেদের ব্যবসায় কাজে লাগায় অথচ আলেমদের ধর্মব্যবসায়ী বলে গালাগালি করে।

 

এই সেকুলাঙ্গারদের সম্প্রচারে শিয়াদের হিরো মহা মিথ্যুক মুখতার সাকাফিকে 'হিরো' করে দেখানো হয়েছে। আর এর ফলে প্রভাবিত হয়েছে এই সুন্নি অধ্যুষিত দেশের ইলমহীন বিশাল ধর্মপ্রাণ জনগোষ্ঠী।

 

.

 

মুখতার সাকাফি সম্পর্কে প্রথমেই একটি হাদিস উল্লেখ করেছি। মুখতার সাকাফিকে শিয়ারা হিরো বল্লেও তার সম্পর্কে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আতের অবস্থান উল্লেখ করব।

 

১- মুখতার সাকাফি মহা মিথ্যুক, ওয়াদা ভঙ্গকারী, প্রতারক ছিল এটা একেবারেই ইতিহাসের সর্বসম্মত সত্য। শিয়াদের অনেকেও স্বীকার করে মুখতারের মিথ্যাবাদীতার কথা। সে কসম ভঙ্গ করতো। এবং মনে করতো আহলে বাইতের প্রেমে যত খারাপ কাজই হোক তা করা ভালো। এজন্য সে মিথ্যা হাদিস তৈরি করতো, ওয়াদা ভঙ্গ করতো, প্রতারণা করতো ইত্যাদি।

 

২- মুখতার সাকাফি নিজেকে নবি ঘোষণা করেছিল এমন তথ্য ইতিহাসে পাওয়া যায়। তার উপর ওহী আসে সে এমন দাবি করতো। আলিমগণ ৩০ জন ভণ্ড নবীর তালিকায় মুখতার সাকাফির নাম উল্লেখ করেছেন।

 

দেখুনঃ https://bit.ly/2vhePEF

 

৩- মুখতার সাকাফি মিথ্যুক ছিল এটা যেমন সত্য, তেমনি সত্য সে কারবালার খুনিদের হত্যা করেছিল। ইতিহাসের পাতায় মুখতার সাকাফির এই প্রতিশোধ গ্রহণের কাহিনী লেখা রয়েছে। আহলে সুন্নাহ ওয়াল জাম'আহ এ ব্যাপারে মনে করে মুখতার সাকাফির এই কাজ খুবই উত্তম ছিল। কিন্তু তাই বলে সে উত্তম ছিল তা না। আল্লাহ কাফির দ্বারাও ইসলামের খিদমাত করিয়ে নিতে পারেন। ইমাম শা'বি মুখতার সাকাফির এই প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কিন্তু কোনো প্রকার প্রশংসা করেন নি। আল বিদায়া ওয়ান নিহায়াতেও কারবালার খুনিদের হত্যাকান্ডের এই এডভেঞ্চারমূলক ইতিহাস ইবনে কাসির রহঃ পূর্ণ রুপে বর্ণনা করেছেন। কারবালার খুনিদের হত্যাকান্ড ঘটানোর জন্য মুখতার সাকাফির নিন্দা করা হয়নি বরং তার নবুয়্যাত দাবি এবং মিথ্যাবাদীতার কারণে সে ছিল কাজ্জাব।

 

৪- মুখতার সাকাফির পিতা ছিলেন ইরান-বিজয়ী সম্মানিত সাহাবি আবু উবাইদ সাকাফি রাদিয়াল্লাহু আনহু। তিনি ছিলেন আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুর ঘনিষ্ঠ লোক। পরবর্তী প্রজন্মে আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুর ভালোবাসায় বাড়াবাড়ি করেই মুখতার সাকাফির মত বহু শিয়ার জন্ম হয়।

 

৫- সুন্নিদের অনেকে বলে থাকে, মুখতারের মূল উদ্দেশ্য ছিল আহলে বাইত প্রেমের নামে ক্ষমতা দখল। আসলেই সে ক্ষমতা দখল করতে পেরেছিল এবং এক স্বাধীন রাষ্ট্র কায়েম করেছিল। কিন্তু আহলে বাইতের প্রতি তার ও তার অনুসারীদের প্রেম মেকি ছিল, ভণ্ডামি ছিল, এটা সঠিক নয় বলেই নিরপেক্ষ গবেষণায় প্রতীয়মান হয়। তার আহলে বাইতের প্রতি অতি-ভালোবাসা ছিল বলেই সে আহলে বাইতের ভালোবাসায় জঘন্য কাজগুলোকে ভালো কাজ মনে করে করেছে। সুতরাং সুন্নিদের এই দাবি যথাযথ না যে মুখতারের মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতা দখল। সে ক্ষমতা দখলের পরেও কারাবালার খুনিদের হত্যা করেছিল, যদি আহলে বাইতের প্রতি সেন্টিমেন্ট ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল তার মূল উদ্দেশ্য হতো তবে ক্ষমতা দখলের পর খুঁজে খুঁজে কারবালার খুনিদের হত্যা না করলেও পারতো। বরং সে খুঁজে খুঁজে কারবালার খুনিদের হত্যা করেছে।

 

৬- মুখতার সাকাফির প্রতিশোধ গ্রহণের কাহিনী শুনে যারা তার ভক্ত হয়ে যায় তাদের ভুলে গেলে চলবে না সে ছিল নবুয়্যাত দাবিকারি, এবং রসূলের হাদিস দ্বারা প্রমাণিত এক কাজ্জাব। এই কাজ্জাবের প্রতি ভালোবাসা রাখা ঈমানের পরিপন্থী। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আতের কেউ তাকে ভালবাসতে পারে না।

 

৭- এমন না তার নবুয়্যাত দাবি করার ঘটনা অপ্রমাণিত। বরং বিশ্বস্ত সুত্রেই তা প্রমাণিত এবং ইতিহাসের পাতায় তা উল্লেখ রয়েছে। যাদের জানার দরকার তারা আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া দেখুন।

 

৮- মুখতার সাকাফির প্রথম অবস্থা ছিল আহলে-বাইতের প্রতি মাত্রাছাড়া প্রেম। এরপর তা কারবালার রক্তাক্ত ইতিহাসের ফলে তাকে আরও বেশি আহলে-বাইতের প্রেমিক করে তোলে। সে এক সময় এতো বেশি আহলে-বাইত পূজারী হয়ে উঠে যে তাদের ভালোবাসায় সকল খারাপ কাজকে সে ভালো মনে করতো। এভাবেই সে পথভ্রষ্ট হতে থাকে। আর সর্বশেষ সে নবুয়্যাত দাবি করে জাহান্নামে নিজের ঠিকানা নিশ্চিত করে।

 

.

 

.

 

.

 

মুখতার সাকাফির জাল হাদিস বানানো সম্পর্কে সম্মানিত শায়খ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গির রহঃ তার 'হাদিসের নামে জালিয়াতি' গ্রন্থে উল্লেখ করেন,

 

" প্রথম হিজরী শতকের শেষ দিকে নিজ নিজ বিভ্রান্ত মত প্রমাণের জন্য রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নামে বানোয়াট হাদীস তৈরি করার প্রবণতা বাড়তে থাকে। সাহাবীগণের নামেও মিথ্যা বলার প্রবণতা বাড়তে থাকে। পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর সতর্কতামূলক ব্যবস্থাও বৃদ্ধি পেতে থাকে।

 

মুখতার ইবনু আবু উবাইদ সাকাফী (১-৬৭ হি) সাহাবীগণের সমসাময়িক একজন তাবিয়ী। ৬০ হিজরীতে কারবালার প্রান্তরে ইমাম হুসাইন (রা) -এর শাহাদতের পরে তিনি ৬৪-৬৫ হিজরীতে মক্কার শাসক আব্দুল্লাহ ইবনু যুবাইরের (১-৭৩ হি) পক্ষ থেকে কুফায় গমন করেন। কুফায় তিনি ইমাম হুসাইনের হত্যায় জড়িতদের ধরে হত্যা করতে থাকেন। এরপর তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু যুবাইরের আনুগত্য অস্বীকার করে নিজেকে আলীর পুত্র মুহাম্মাদ ইবনুল হানাফিয়্যার প্রতিনিধি বলে দাবী করেন। এরপর তিনি নিজেকে ওহী-ইলহাম প্রাপ্ত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর বিশেষ প্রতিনিধি, খলীফা ইত্যাদি দাবী করতে থাকেন। অবশেষে ৬৭ হিজরীতে আব্দুল্লাহ ইবনু যুবাইরের বাহিনীর কাছে তিনি পরাজিত ও নিহত হন।

 

তার এ সকল দাবীদাওয়ার সত্যতা প্রমাণিত করার জন্য তিনি একাধিক ব্যক্তিকে তার পক্ষে মিথ্যা হাদীস বানিয়ে বলার জন্য আদেশ, অনুরোধ ও উৎসাহ প্রদান করেন। আবু আনাস হাররানী বলেন, মুখতার ইবনু আবু উবাইদ সাকাফী একজন হাদীস বর্ণনাকারীকে বলেন, আপনি আমার পক্ষে রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর নামে একটি হাদীস তৈরি করুন, যাতে থাকবে যে, আমি তাঁর পরে তাঁর প্রতিনিধি হিসাবে আগমন করব এবং তাঁর সন্তানের হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণ করব। এজন্য আমি আপনাকে দশহাজার দিরহাম, যানবাহন, ক্রীতদাস ও পোশাক-পরিচ্ছদ উপঢৌকন প্রদান করব। সে হাদীস বর্ণনাকারী বলেন: রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নামে কোনো হাদীস বানানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে কোনো একজন সাহাবীর নামে কোনো কথা বানানো যেতে পারে। এজন্য আপনি আপনার উপঢৌকন ইচ্ছামত কম করে দিতে পারেন। মুখতার বলে: রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর নামে কিছু হলে তার গুরুত্ব বেশি হবে। সে ব্যক্তি বলেন: তার শাস্তিও বেশি কঠিন হবে।[1]

 

মুখতার অনেককেই এভাবে অনুরোধ করে। প্রয়োজনে ভীতি প্রদর্শন বা হত্যাও করেছেন। সালামাহ ইবনু কাসীর বলেন, ইবনু রাব‘য়া খুযায়ী রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর যুগ পেয়েছিলেন। তিনি বলেন, আমি একবার কুফায় গমন করি। আমাকে মুখতার সাকাফীর কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি আমার সাথে একাকী বসে বলেন, জনাব, আপনি তো রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর যুগ পেয়েছেন। আপনি যদি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নামে কোনো কথা বলেন তা মানুষেরা বিশ্বাস করবে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নামে একটি হাদীস বলে আমার শক্তি বৃদ্ধি করুন। এ ৭০০ স্বর্ণমুদ্রা আপনার জন্য। আমি বললাম: রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নামে মিথ্যা বলার নিশ্চিত পরিণতি জাহান্নাম। আমি তা বলতে পারব না।[2]

 

সাহাবী আম্মার ইবনু ইয়াসারের (রা) পুত্র মুহাম্মাদ ইবনু আম্মারকেও মুখতার তার পক্ষে তাঁর পিতা আম্মারের সূত্রে মিথ্যা হাদীস বানিয়ে প্রচার করতে নির্দেশ দেয়। তিনি অস্বীকার করলে মুখতার তাকে হত্যা করে।[3]

 

[1] ইবনুল জাওযী, আল-মাউদূ‘আত ১/১৬-১৭।

 

[2] বুখারী, আত-তারীখুল কাবীর ৮/৪৩৮; আত-তারীখুস সাগীর ১/১৪৭।

 

[3] বুখারী, আত-তারীখুস সাগীর ১/১৪৭; ইবনু আবী হাতিম, আব্দুর রাহমান ইবনু মুহাম্মাদ (৩২৭ হি), আল-জারহু ওয়াত তা’দীল ৮/৪৩। "

 

.

 

.

 

.

 

এখন উল্লেখ করব সম্মানিত শায়খ সালিহ আল মুনাজ্জিদ হাফিযাহুল্লাহ শাইখুল ইসলামের (ইবনে তাইমিয়া) বরাতে এই মুরতাদ কাজ্জাব মুখতার সাকাফি সম্পর্কে কি লিখেছেন -

 

" এরপর শাইখুল ইসলাম ইরাকের কুফাতে বসবাসরত দুইটি পথভ্রষ্ট দল সম্পর্কে আলোচনা করেন; যারা আশুরার দিবসকে তাদের বিদআত বাস্তবায়ন করার জন্য উৎসব হিসেবে গ্রহণ করত। এ দুই দলের একদল হচ্ছে-রাফেজি; যারা আহলে বাইতের প্রতি মহব্বত দেখায়; আর ভিতরে ভিতরে তারা হয়তো ধর্মত্যাগী মুরতাদ, নয়তো কুপ্রবৃত্তির অনুসারী জাহেল। আর অপর দল হচ্ছে-নাসেবি; যারা ফিতনার সময় যে যুদ্ধ হয়েছে সে কারণে আলী (রাঃ) ও তাঁর অনুসারীদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে। সহিহ হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত হয়েছে যে, তিনি বলেন: “সাকিফ গোত্রে একজন মিথ্যাবাদী ও একজন ধ্বংসকারী জন্মাবে।” মিথ্যাবাদী লোকটি হচ্ছে- মুখতার বিন আবু উবাইদ আল-সাকাফি। সে আহলে বাইতের প্রতি মহব্বত প্রকাশ করত এবং নিজেকে তাদের পক্ষের লোক হিসেবে প্রচার করত। সে ইরাকের গভর্নর উবাইদুল্লাহ বিন যিয়াদকে হত্যা করে। যে উবাইদুল্লাহ হুসাইন বিন আলী (রাঃ) কে হত্যাকারী সৈন্যদল প্রেরণ করেছিল। পরবর্তীতে এ মুখতার তার মিথ্যা মুখোশ উন্মোচন করে এবং নবুয়ত দাবী করে; বলে যে তার উপর জিব্রাইল ফেরেশতা নাযিল হয়। এক পর্যায়ে যখন ইবনে উমর (রাঃ) ও ইবনে আব্বাস (রাঃ) কে তার ব্যাপারে জানানো হল। তাদের কোন একজনকে যখন বলা হল: মুখতার বিন আবু উবাইদ দাবী করছে যে, তার উপর জিব্রাইল নাযিল হয়। তখন তিনি বললেন: সে সত্যই বলেছে; আল্লাহ তাআলা বলেন, “আমি কি তোমাদেরকে জানাব কাদের উপর শয়তানেরা নাযিল হয়? তারা নাযিল হয় প্রত্যেক মিথ্যাবাদী, পাপীর উপর। অন্যজনকে যখন বলা হল: মুখতার দাবী করছে যে, তার উপর ওহি নাযিল হয়। তিনি বললেন: সে সত্যই বলেছে -“নিশ্চয় শয়তানেরা তাদের বন্ধুদের প্রতি ওহি (প্রত্যাদেশ) নাযিল করে যাতে তারা তোমাদের সাথে তর্ক করতে পারে।”।[সূরা আনআম, আয়াত: ১২১] আর ধ্বংসকারী হচ্ছে- হাজ্জাজ বিন ইউসুফ আস-সাকাফি। সে ছিল আলী (রাঃ) ও তাঁর অনুসারীদের বিরোধি। তাই সে ছিল নাসেবি তথা আহলে বাইতের বিদ্বেষী। আর প্রথমজন ছিল রাফেজি। এ রাফেজি লোকটি ছিল সবচেয়ে বড় মিথ্যাবাদী ও ধর্মত্যাগী। কারণ সে নবুয়ত দাবী করেছিল। "

 

দেখুনঃ https://islamqa.info/bn/downloads/answers/4033

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

# যারা ওয়াজের নামে তামাশা শেয়ার করে বলে, দেখেন হুজুররা কত খারাপ/ফানি! অথচ জীবনে ভালো কোনো বক্তব্য শেয়ার দেয় নাই তারাও এক প্রকার সেকুলাঙ্গারদের সাহায্য করে। কারণ শেয়ার দিলেই সেকুলাঙ্গাররা এসব দেখে খুশি হয়। আমরা যেমন ভালো মুসলিম, খারাপ মুসলিম, দীনী, বদ-দীনী ইত্যাদি ভাগে ভাগ করে সবাইরে দেখি, কিন্তু ওরা সব মুসলিমরে এক চোখেই দেখে। ইসলামী পোশাকে কারো খারাপ কিছু পাইলে এদের হৃদয়ে ঈদের আনন্দ শুরু হয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

# আমরা বলি আমরা আধুনিক সভ্যতায় আছি, উন্নত সভ্যতায় আছি, কিন্তু আমরা যদি হাজার হাজার বছর আগের ইতিহাস দেখি তাহলে দেখবো আমাদের চেয়ে উন্নত সভ্যতা পৃথিবীতে ছিল।

 

কয়েক হাজার বছর আগেই সামুদ জাতি পাহাড় কেটে ঘর নির্মান করতো, এখনো সেইসব ঘরের নিদর্শন রয়ে গেছে। এখনো এই আধুনিক যুগে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়েও পাহাড় কেটে ঘর নির্মাণ কোনো সহজসাধ্য কাজ না। অথচ আজ থেকে হাজার কয়েক বছর আগে পাহাড় কেটে ঘর নির্মাণ সামুদ জাতির একেবারেই স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল।

 

ইরামবাসীরা উচু স্তম্ভ নির্মাণ করতো। এরাও হাজার হাজার বছর আগের সম্প্রদায়। আল্লাহ এদের সম্পর্কে সূরা ফাজরে বলেছেন, 'যার সদৃশ সারা বিশ্বের জনপদসমূহে কোনো মানুষ সৃষ্টি হয় নি।'

 

আমরা ভাবি, আমরা এতো উন্নত সভ্যতায় আছি যে আল্লাহ এখন অপ্রয়োজনীয়। অথচ হাজার কয়েক বছর আগেই আমাদের চেয়ে উন্নত সভ্যতা, আমাদের চেয়ে শক্তিশালি মানুষ আল্লাহর অবাধ্যতার কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে। আমাদের বর্তমান সভ্যতার চেয়ে ৩-৪ হাজার বছর আগের মিসরের সভ্যতা বেশি উন্নত ছিল। এখনো আমরা অবাক হই মিসরের পিরামিড দেখে। কিভাবে সম্ভব হাজার বছর আগে এমন কিছু নির্মাণ করা? এই আধুনিক সভ্যতাতেও মিসরের মহাপিরামিডের ন্যায় কিছু নির্মাণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না।

 

আমাদের আধুনিক সভ্যতার শহরগুলোর সাথে প্রাচীন বিশ্বের শহরগুলোর তুলনা করলে বোঝা যায় আমরা হাজার বছর পরেও তুলনামূলক কত অনুন্নত সভ্যতা। অথচ আমাদের কত দাম্ভিকতা, আমাদের চেয়েও জ্ঞান, শক্তি-সামর্থ্যে উন্নত সভ্যতাসমূহ আল্লাহর অবাধ্যতার কারণে ধ্বংস হয়েছে। আদ, সামুদ বাদেও সর্বপেক্ষা নিকট অতীতের পারস্য, গ্রীক কিংবা ব্যাবিলন সভ্যতার তুলনায়ও আমরা কিছুই নাই। দুই হাজারেরও অধিক বছর আগে ব্যাবিলনে ঝুলন্ত উদ্যান, আলেকজান্দ্রিয়ার বাতিঘর, আর্টেমিসের মন্দির হ্যালিকারনেসাসের সমাধি মন্দির নির্মাণ করা হয়েছিল যা আজো সারা বিশ্বের মানুষকে হতবাক করে।

 

"হে মানুষ, কিসে তোমাকে তোমার মহামহিম পালনকর্তা সম্পর্কে বিভ্রান্ত করল?" (৮২ঃ ৬)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

# আহলে হাদিস শায়খরাই প্রথম এদেশে সুস্থ ধারার ইসলামী বক্তব্যের প্রথা চালু করেছে। এখনো আহলে হাদিস কোনো শায়খের একটা লেকচারের সমান ইলমী ও উপকারি আলোচনা ১০০ টা হানাফি ওয়াজ মাহফিলেও হয় না। যেখানে হানাফিদের প্রকৃত অবস্থা জনবিচ্ছিন্নতা, সেখানে আহলে হাদিস শায়খদের চারিদিকে ঘুরঘুর করে দাঁড়িতে কাচি না লাগানো বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েটরা। গত ১০ বছরে আহলে হাদিসরা যা করতে পেরেছে হানাফিরা সংখ্যায় কয়েকগুণ হয়েও ৫০ বছরে তা করতে পারে নি। এখন যেন হানাফিদের নামের সাথে সেঁটে গেছে পেটপূজারী শব্দটি আর আহলে হাদিসদের পরিচিতি 'দাঈ' হিসেবে। একেকজন আহলে হাদিসদের ভেতরে যেন একটা জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি। কোথায় আহলে হাদিস আর কোথায় দেওবন্দিয়াত! দেওবন্দিদের অবস্থা তো করুণ, কিছু ক্ষেত্রে আহলে হাদিসদের অবস্থাই বরং ভালো। আহলে হাদিসদের ভালো দিকগুলো বললাম। মওদুদিয়্যাতেরটাও একদিন বলব। এমন না যে তাদের গোমরাহি নেই। সেইটা তো সবাই বলে, তাই ওগুলা বললাম না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

# জুম'আ বারের সুন্নাহ সূরা কাহফ তিলাওয়াত।

 

.

 

এক বসায় যারা সূরা কাহফ তিলাওয়াত করতে পারেন না, কিংবা সময়ের কারণে সম্ভব হয় না, তাদের জন্যঃ

 

সূরা কাহফ মোট ১২ পৃষ্ঠার কম বেশি। আমার কুরআনের মুসহাফে ১২ পৃষ্ঠা। আমি ৬ ভাগে পড়ি, ২ পৃষ্ঠা করে।

 

বৃহস্পতিবার মাগরিবের পর ২ পৃষ্ঠা।

 

ইশার পর ২ পৃষ্ঠা।

 

শুক্রবার ফজরের পর ২ পৃষ্ঠা।

 

জুম'আর আগে ২ পৃষ্ঠা।

 

আছরের পর ২ পৃষ্ঠা।

 

মাগরিবের আগে ২ পৃষ্ঠা।

 

 

.

 

আপনার মুসহাফে যত পৃষ্ঠা সে হিসেবে সুবিধামত ভাগ করে পড়বেন।

 

মাগরিবের পর জুম'আর দিনের এই ফজিলতপূর্ণ আমলের সময় শেষ হয়ে যায়। এই দিন বেশি বেশি দুরুদ পাঠ করতে ভুলবেন না।

 

#জুমআ

#সূরা #কাহফ

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কাকে কি হিসেবে গ্রহণ করবেন সেটা জানা জরুরী। ইফতেখার জামিল একজন আলেম, কিন্তু তাকে আলেম হিসেবে নেয়ার চেয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক লেখক হিসেবে নেয়াটা ভালো। আবার অনেক বিখ্যাত বক্তাকে আমরা আলেম হিসেবে নেই, যেমন তারিক জামিলকেও আমরা মাওলানা মনে করি, কিন্তু তাকে দাঈ মনে করা উচিৎ। একজন মুসলিমের জানা উচিৎ কার কাছ থেকে কি নিব, কতটুক নিব, কিভাবে নিব। এতোটুকু না জানলে বিভ্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে।

 

 

 

 

 

 

 

এই দেশে একমাত্র শাইখ হারুন ইজহারই বাগদাদী এবং গোলাম আজমের শাহাদাতের কবুলিয়াতের জন্য দুয়া করতে পারেন।

           

 

 

 

 

 

 

 

বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ের উপর রিসার্চগুলো দেখলে আপনি কনফিউসড হয়ে যাবেন কোনটা সঠিক। একটা রিসার্চ যদি বলে এক কথা, আরেকটা রিসার্চ বলে এর বিপরীত কথা। বিজ্ঞান দিয়ে অনেকে কুরআন যাচাই করতে যায় যা সম্পূর্ণ ভুল। বরং বিজ্ঞান কখনো বিপরীতমুখী কথা বললে আমি কুরআন দিয়ে বিজ্ঞান যাচাই করি, এবং কোনটা সত্য তা সহজেই নির্ধারণ করতে পারি। ডারউইনবাদের কথাই বলা যাক। এর পক্ষে বিপক্ষে প্রচুর তর্ক বিতর্ক আছে। একজন নিরপেক্ষ মানুষ (যদি অমুসলিম হয়) সেও কনফিউসড হয়ে যাবে কোনটা সঠিক। অথচ আমরা কুরআন দিয়ে সঠিকটা যাচাই করতে পারি।

 

কুরআন আমাদের জন্য এন্সারপেপারের মত। গণিত বইয়ের শেষ পৃষ্ঠায় প্রতিটা অঙ্কের উত্তর দেয়া থাকে। ছাত্ররা নিয়ামানুযায়ী অঙ্ক করে এরপর উত্তর মিলিয়ে দেখে। আল্লাহ আমাদেরকে এন্সারগুলো বলে দিয়েছেন, কিন্তু পুরো অঙ্কটা করার দায়িত্ব আমাদের।

 

 

 

 

 

 

 

 

ইসরাইলী ট্যাঙ্কের বিপরীতে ফিলিস্তিনী কিশোরদের পাথর ছুড়তে দেখলে ভালো লাগে, একটা জোশ আসে শরীরে। কিন্তু ফিলিস্তিনীদের হাতে পাথরের বদলে অস্ত্র থাকলে পৃথিবীর তাবৎ মুসলমান চেচিয়ে উঠত, "ইসলামের মান সম্মান ডুবায় দিল রে!"

 

উদাহরণ দিলাম একটা। মুসলিমরা নিজেদের মজলুম দেখতে পছন্দ করে। আর কেউ প্রতিরোধ করতে গেলে কুফফারদের সাথে গলা মিলিয়ে তাকে জঙ্গি সন্ত্রাসী অভিহিত করতে দ্বিধা করে না।

 

 

 

 

 

 

           

আমরা যদি দ্বীন থেকে দূরে সরে যাই তবে আল্লাহ তা'আলা অন্য জাতিকে হেদায়েত দিবেন। আমরা যদি কাজ না করি আল্লাহ অন্য জাতিকে দিয়ে কাজ করাবেন। সাহাবীরা সবাই নওমুসলিম ছিলেন। আজকের যুগেও নওমুসলিমদের দ্বারাই আল্লাহ তা'আলা দ্বীনের কাজ করাবেন।

 

 

 

 

 

 

লগি বৈঠার ২৮ অক্টোবর নিয়ে একটি অনলাইন সংগ্রহশালা।

 

Oct28.info | A comprehensive archive on the events of October 28, 2006

oct28.info

 

http://www.oct28.info/

 

 

 

 

 

 

 

যাদের মুখে নারায়ে তাকবীর শোনার কথা ছিল তারা গাচ্ছে তাগুতের বন্দনা।

 

আপনার সন্তানকে ইসলাম শেখান। নয়তো দুনিয়া তাকে কুফর শিরক শিখাবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আইএসের শুরুর দিকে অনেকেই তাদের ব্যাপারে আশাবাদী ছিল। সুতরাং আগের কথা বলে লাভ নাই। পাকিস্তানের ফজলুর রহমান নিয়ে স্বপ্ন দেখাও ভালো, ইমরান খানকে নিয়ে স্বপ্ন দেখার চেয়ে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কম খরচে নারী ভোগের অন্য নাম বিবাহ বহির্ভূত প্রেম বা সেক্স। কম খরচে পতিতাগমন করা যায়, তবে সমাজ খারাপ বলবে এবং সমাজেই যেহেতু স্বেচ্ছাসেবিকা (সেচ্ছাপতিতা) আছে সেহেতু প্রেম করাই ভালো মনে করে অনেকে, এতে ক্লাসও ঠিক থাকলো। যৌন চাহিদাও পুরণ হয়।

 

(প্রেমিকদের কাছে বিয়ে সবচেয়ে বড় প্যারা। কারণ বউরে ভরণপোষণ দিতে হয়)।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

দায়েশী ভাই ❤️

 

আমরা তাদের ভাইই মনে করি, তারা আমাদের কাফের মনে করুক না!

 

 

 

 

 

 

দাসপ্রথা নিয়া সংক্ষেপে সবচেয়ে ভালো লেখা হচ্ছে শামসুল আরেফীন ভাইয়ের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড বইয়ের লেখাটা। পড়তে পারেন।

 

 

 

 

 

 

 

জামায়াত আর কওমিদের আলাদা করে দেখি না। ২৮শে অক্টোবরের ঘটনাকে পলিটিকাল ক্ল্যাশ বললেও সমস্যা নাই, জামায়াত পলিটিকাল পার্টি। সেকুলার এবং লীগারদের ইসলাম বিদ্বেষ এবং জামাতবিদ্বেষের এটা একটা নমুনা। এটারে বিএনপির দিকে টানলে ভুল হবে। ভুল উপায় অবলম্বন করার কারণে এটা তাদের প্রাপ্য ছিল এভাবে বলাটা ঠিক নয়, ৫ ই মের পদক্ষেপের ব্যাপারেও একই কথা বলা যায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা তো অনেক কঠিন, সবাই জানি। গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে পারলেও ইচ্ছাকৃত ভাবে বিয়ে না করে থাকাটা ভালো নয়, আমি যতটুক বুঝি।

           

 

 

 

 

 

 

বিয়ে নিয়ে ফ্যান্টাসিতে ভোগা ভালো। এতে বিয়ের আগ্রহ থাকে। সবচেয়ে ভয়াবহ হচ্ছে বিয়ের আগ্রহ নষ্ট হয়ে যাওয়া। যারা বিয়ে করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন অথচ দ্বীনদার তাদের জন্য অশনি সংকেত।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এক ফেসবুক বুদ্ধিজীবী তৌহিদী জনতাকে উন্মত্ত নির্বোধ বলে গাল দিলেন, আমি বললাম, তৌহিদী শব্দ বাদ দিয়ে শুধু 'জনতা' হলে তারা কি হিংস্র হিসেবে গণ্য হবে? এই দেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ। সেই হিসেবে এই দেশের জনতাই তৌহিদী জনতা।

 

এবার সেই বুদ্ধিজীবী প্রশ্ন ছুড়লেন, গায়ে লাগল? আমি বললাম, জি, আমি তৌহীদী জনতার একজন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যত বিখ্যাত অভিনেতা, অভিনেত্রী, গায়ক, গায়িকা, পরিচালক, প্রযোজক, সাংবাদিক, কলামিস্ট, বুদ্ধিজীবী, কবি, সাহিত্যিক আছে অধিকাংশই সেকুলার। তারা তাদের সেকুলার ধর্ম বেশ জোরেশোরে প্রচার করে। তাদের পেশা, তাদের জীবন সবকিছু আবর্তিত হয় তাদের সেকুলার ধর্মকে কেন্দ্র করে। এই ধর্মকে প্রতিষ্ঠিত করতে তারা তাদের সর্বস্ব বিলিয়ে দেয়। তাদের থেকে মুসলমানদের শেখা উচিৎ আদর্শের প্রতি কতটা আন্তরিক থাকতে হয়। সেকুলারদের মত মুসলিমরা যদি তাদের ইসলাম ধর্ম নিয়ে এতোটা আন্তরিক থাকতো তবে এই ভূমি হয়তো সেকুলারদের প্রভাবে চলত না।

 

সেকুলার হাতে টিভি মিডিয়া, পত্রিকা, সাহিত্যাঙ্গন, নাটক ও ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি, সকল সৃজনশীল জায়গাগুলো তাদের দখলে। সরকারেও তাদের প্রভাব অনেক। আমরা তাদের কিভাবে মোকাবেলা করব? ইবনে মাজহার ভাই সত্য বলেছেন, এখন সময় হয়েছে এসব সেকুলারদের সাইজ করার। নাস্তিকতা নিয়ে এতো বই বের হয় অথচ সেকুলারিজম নাস্তিকতার চেয়ে বেশি ছড়িয়ে আছে। নাস্তিকতার ধোঁকা মানুষ ধরতে পারে কিন্তু সেকুলারিজমের ধোঁকা মানুষ বুঝতে পারে না। সেকুলার ধর্মকে খণ্ডন করে বই লেখা, পাল্টা বয়ান তৈরি করা সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু সেকুলারিজম নয়, সেকুলার ধর্ম প্রচারকদের নাম ধরে ধরে খণ্ডন করা উচিৎ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বাগদাদী ইতিহাসের সেরা দুর্ধর্ষ জঙ্গিদের একজন। তিনি এমন একটি দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যে দল পৃথিবীর সকলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রত ছিল, তারা নিজেদের বাদে সবাইকে ধ্বংস করতে উদ্যত হয়ে ছিল। বিশ ও একুশ শতকের জিহাদ আন্দোলনের গর্ভে জন্ম নেয়া গ্লোবাল জিহাদের ছোট্ট একটি শাখাকে তিনি রুপান্তরিত করেছিলেন পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী দলে। শুন্য থেকে তিনি গড়েছিলেন বিশাল সাম্রাজ্য। আল্লাহ তার উপর রহম করুন। এক শতক আগের হারানো খিলাফাতকে পুনরুজ্জীবন দানের কারণে আল্লাহ তার গুনাহসমুহ যেন মাফ করে দেন। বাগদাদী অনেক নিরীহ মানুষ, অনেক মুসলিমকে হত্যা করেছে। সালাফদের পথ এজন্যই অবলম্বন করতে হয়। নতুবা বিচ্ছিন্নতাবাদী মনোভাব নিজেদের এবং উম্মাহকে ধ্বংস করে। দায়েশ থেকে একিউ এর শিক্ষা নেয়া উচিৎ। একিউ-তেও প্রচুর খারেজী বৈশিষ্ট্যের মানহাজীর আনাগোনা। যদিও কেন্দ্র অনেকটা মধ্যমপন্থী। কিন্তু অতিউৎসাহী মানহাজীরা এক সময় যদি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অস্ত্র উত্তোলন করে অবাক হবার কিছু থাকবে না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কেউ দল বা নির্দল যেখান থেকেই মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখুক, তাকে আমার চিন্তার কাছাকাছি মনে করব। হারুন সাহেব সাদপন্থী হয়ে গেলে যেমন আমার সমস্যা ছিল না, তিনি সাদপন্থীদের বিরুদ্ধে থাকাতেও আমার সমস্যা নাই। তবে যদি তিনি সাদপন্থীদের নিয়ে অযাচিত বাড়াবাড়ি করেন যেটা কিনা আমাদের অনেক ভাই করে (অর্থাৎ সাদ সাহেব এবং তার অনুসারীদের ইহুদী খ্রিস্টানদের চেয়েও অধম মনে করে, ট্রল করে, বিরোধিতার জন্যই বিরোধিতা করে) তবে ভাববো তিনি অন্যদের মতোই, অন্তত আমার চিন্তার কাছাকাছি নন। সাদ সাহেবের দল এখন একটা আলাদা দল হয়ে গেছে। তাদেরকে তাদের মত থাকতে দেয়া উচিৎ। ভুল যেগুলো মনে হয় সেগুলো খণ্ডন করা হোক, কিন্তু ভ্রাতৃত্ব নষ্ট না করা হোক।

 

এক সময় যেমন জামাতী-দেওবন্দী ব্যাপক খন্ডাখন্ডি চলত, সময়ের সাথে সাথে ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। অনেক দেওবন্দী আগের মত জামাতীদের বাতিল ফিরকা মনে করে না। (ভ্রাতৃত্ব নষ্ট না হোক, কিন্তু ভুলের খণ্ড চলুক।)

 

আমার কাছে বাতিল ফিরকা হচ্ছে, আহলে কুরআন, হেজবুত তৌহিদ, শিয়া, কাদিয়ানী, সেকুলার মুসলিমদের ফিতনা ইত্যাদি। এবং মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত মনে করি, জামাত, তাহরীরী, দায়েশী, সাদপন্থী, ইমরান নজরী, আহলে হাদিস, এদেরকে, এদের কিছু কার্যক্রম ভুল আছে, কিন্তু বাতিল মনে করি না।

 

আলি এবং মুয়াবিয়া রাঃ দুই পক্ষ যুদ্ধ করলেন, অনেক সাহাবি আলি রাঃ এর পক্ষে ছিলেন। তারা হক ছিলেন। আরেকদল সাহাবি মুয়াবিয়া রাঃ এর পক্ষে ছিলেন। তারাও হকপন্থী ছিলেন, কিন্তু যুদ্ধের পদক্ষেপে হক ছিলেন না, যুদ্ধে হক ছিলেন আলীপন্থীরা। আবার আরেকদল সাহাবী কোনো দলেই ছিলেন না। তারা যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা করেন। তারাও হক ছিলেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কেউ কেউ কাফের জানোয়ারটার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছে, তাদের কাছে প্রশ্ন, আপনারা বুঝি আবু জাহেল, আবু লাহাবের জন্যও দোয়া করেন?

 

 

 

 

 

 

 

 

এক ভাইকে দেখলাম, মোরগ আল্লাহ আল্লাহ জিকির করছে এমন একটা ভিডিও শেয়ার দিয়েছেন। আমি বললাম, এগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফেক হয়। ইসলাম আমরা এভাবে হাস্যকর বানিয়ে ফেলছি। আমাদের ওহী থাকতে আমরা মোরগের ডাক, ঘোড়ার সেজদা এসব দিয়ে ইসলামের সত্যতা প্রমাণ করতে উঠে পড়ে লেগেছি। আমাদের ইলম তো নাই নাইই, কমন সেন্সও নাই।

 

 

 

 

 

 

 

সৌদির একটা দোষের সমালোচনা করায় এক মাদখালী ভাই বললেন, নিজের দেশ নিয়া চিন্তা করতে, সৌদি নিয়া কেন পড়ে আছি সেটা জানতে চাইলেন। আমি বললাম, আপনে নিজেই সৌদির পতাকা প্র-পিকে টানিয়ে রাখছেন। নিজের দেশের পতাকা টানান আগে। এরপর আমাকে উপদেশ দিয়েন।" আমরা এভাবেই কোনো একটা দেশকে, দলকে, শাসককে ভালোবাসতে গিয়ে ভালো মন্দ উচিৎ অনুচিতের সব সীমারেখা ভুলে যাই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তারেকুজ্জামান সাহেবের 'ঈদে মিলাদ্দুন্নবীর এক্সরে রিপোর্ট' লেখাটা পড়লাম। সবই ঠিক আছে শিরোনামটা ভালো লাগে নাই। এক্সরে রিপোর্ট, পোস্ট মর্টেম, মুখোশ উন্মোচন, এসব শব্দ হাস্যকর ঠেকে। ক্যাডেট মাদ্রাসা, আইডিয়াল মাদ্রাসা, ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার মত।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ইসলামের দুশমনদের মৃত্যুতে কাফের আর মুনাফিকরা দুঃখ বোধ করে, মুমিনরা খুশি হয়। আলহামদুলিল্লাহ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

একটা বিখ্যাত গল্প অনলাইনে ঘুরে বেড়ায়, মাঝেমধ্যেই আমার কাছেও আসে। গল্পটার সাথে একটা ছবি থাকে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটা তরুণীর স্তন খোলা, বুকের দুধ খাচ্ছে এক বৃদ্ধ। গল্পটা শুরু হয় এভাবে, "আপনাদের মনে হচ্ছে এটা খুব খারাপ একটা ছবি, কিন্তু ভেতরের কাহিনী জানলে অবাক হবেন।" এরপর শুরু হয় এই গল্প। গল্পটা আপনারা অনেকেই জানেন। গল্প সত্য হোক কিংবা মিথ্যা সেদিকে যাব না। সুন্দর একটা গল্প বলার ছুতায় একটা অশ্লীল ছবিকে প্রচার করা হচ্ছে। মুসলিম হিসেবে এসব ধোঁকা থেকে বেঁচে থাকা উচিৎ। মুমিন কখনো নির্বোধ হয় না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চীনের উঘুর-নির্যাতনের পক্ষে থাকা দেশগুলোর মধ্যে সৌদি, আরব আমিরাতের সাথে পাকিস্তানও আছে। মজার ব্যাপার হইতেছে বিন সালমান আর বিন জায়েদরে যারা গালি দেয় তাদের অনেকে (জামাত-মোডারেট ভাইরা) ইমরানরে পছন্দ করে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এক ভাই এক বেরেলভী বিদআতীকে গরু বললেন। এভাবে গরু বলা ঠিক হয়নি।

 

 

 

 

 

 

 

 

ইরাকে বুশরে জুতা মারার ক্লিপটা হঠাৎ সামনে আসল। যে জুতা মারছিল দুইটাই মিস করছে। আগে থেকে ভালো করে প্র্যাকটিস করে আসা উচিৎ ছিল না? যাই হোক, চেষ্টা করছে এইটাই বেশি। তবে জুতা বুশের গায়ে না লাগলেও ওর পতাকার মধ্যে গিয়া লাগছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আহমদ শফী সাহেবকে সবচেয়ে বড় না বলে সবচেয়ে বিখ্যাত আলেম বলা উচিৎ। বা মুরুব্বি আলেমও বলা যায়। বড় আলেম আর বুড়ো আলেম এক কথা নয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

অনুগল্প, অনুকাব্য, এই পেইজটা অনেকদিন যাবত এক্টিভ না। অনেক সুন্দর একটা পেইজ ছিল।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ইবনু মাজহার ভাই বলেন,

 

নাস্তিকদের বিষয় যেমন অনেক কথা, বই লেখা হয়েছে, ঠিক সেরক করে এই সেকুলারিসম, লিবারেলিসম, ফেমিনিসম, তথাকথিত ব্যক্তিস্বাধীনতা এসবের বিরুদ্ধে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে জনগণের হাতে কিছু অন্তত তুলে দিতে হবে। যেন তারা সঠিকভাবে এরকম পরিস্থিতিতে আচরণ করতে পারে, এবং সেকুলাঙ্গারদের ন্যারেটিভকে প্রতিকার করতে পারে।

 

সহমত। নাস্তিকতার ধোঁকা মানুষ ধরতে পারে কিন্তু সেকুলারিজম, লিবারেলিজমের ধোঁকা মানুষ ধরতে পারে না।

 

 

 

 

 

 

 

 

সেকুলারদের একটা সফল প্রোপ্যাগান্ডা হচ্ছে মানুষ মাদ্রাসা, হুজুর, কওমি এইসবকে ঘৃণা করতে শিখছে।

 

 

 

 

 

 

 

একজন ইন্ডিয়ান ব্যক্তি বললেন, নেতা হওয়ার জন্য স্নাতক ডিগ্রি আবশ্যক করা উচিৎ।

 

আমি বললাম- কেউ স্বশিক্ষিত হলে? সার্টিফিকেটধারী না হলে কি শিক্ষিত বলা যায় না?

 

সার্টিফিকেটধারী হয়েও অনেকে মূর্খ থাকে।

 

আমি মনে করি নেতার কাজেকর্মে প্রকাশ পাবে তার চিন্তা চেতনা। তার কাজে কর্মে শিক্ষা কিংবা মূর্খতার প্রতিফলন থাকবে। সর্বোপরি একজন ভালো মানুষ হওয়াকে নেতা হওয়ার স্ট্যান্ডার্ড ধরা উচিৎ।

 

তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তাহলে কিভাবে বুঝব নেতা শিক্ষিত?

 

আমার উত্তর - আমি তো বললামই কাজে কর্মে প্রকাশ পাবে। নেতা যে হবে তার সার্টিফিকেট না থাকুক, স্বশিক্ষিত হতে হবে। আমি বলি নি আনপড় নেতা হোক। শিক্ষিত দুই দিকেই আছে, সার্টিফিকেটধারীদের মধ্যেও আছে, স্বশিক্ষিতদের মধ্যেও আছে। সার্টিফিকেটধারী সবাই যেমন শিক্ষিত না তেমনি সার্টিফিকেট না থাকলেই সবাই অশিক্ষিত হয় না। আনপড় নেতা হোক, তা চাই না। তবে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা থাকলে সার্টিফিকেট না থাকা স্বশিক্ষিতকে সুযোগ দেয়া উচিৎ। ধরুন একজন নেতা, যে বিশ্ববদ্যালয় থেকে ড্রপ আউট হয়ে পড়াশোনা আর করে নি। কিন্তু নিজের প্রচেষ্টায় অনেক শিক্ষিত আর উচু চিন্তার মানুষ হল, সব দিক দিয়েই ভালো, নেতৃত্বেও ভালো। তার জনসমর্থন প্রচুর। শুধু একটা সার্টিফিকেট না থাকায় সে রাজনীতিবিদ হওয়া সুযোগ পেল না, হতে পারে সে অনেক সার্টিফিকেটধারীর চেয়ে ভালো হত। স্বসিক্ষিত হওয়ার উদাহরণ তো মনীষীদের মধ্যেও অনেক আছে। আশা করি আমি বোঝাতে পেরেছি। আপনার মূল কথার সাথে দ্বিমত নই, অশিক্ষিত নেতা হোক এটা আমি বলি না।

 

 

 

 

 

 

 

 

মাওলানা ফজলুর রহমান ইমরান খান সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতেছে।

পাকিস্তানের অর্থনৈতিক দুর্গতির জন্য তিনি ইমরানকে দায়ী করছেন। মাওলানার আন্দোলন পুরোই রাজনৈতিক। তিনি একজন বিরোধী দলীয় রাজনীতিবিদের ভূমিকা পালন করছেন। যদিও মাওলানা হওয়ার কারণে অনেক মুসলিম তাকে সাপোর্ট দিচ্ছে। কিন্তু আসল কথা হচ্ছে, এটা গণতান্ত্রিক রাজনীতির একটা গেইম।

 

 

 

 

 

 

 

 

অনুবাদ কঠিন করতে পারলেই মনে হয় অনেক বড় অনুবাদক হয়ে গেছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

অনেক আহলে হাদিস ভাই আব্দুল কাদের জিলানীর আহলে হাদিসদের প্রশংসাসুচক একটা বাণী শেয়ার করতে দেখি। আমাদের আহলে হাদীস ভাইরা কি জানেন, আব্দুল কাদের জিলানী একই সাথে হাম্বলী, আহলে হাদিস এবং কাদরিয়া তরীকার পীর ছিলেন? পীর হয়ে, তরিকা মেনে, মাজহাব মেনেও যে আহলে হাদীস হওয়া যায় এটা মাজহাব-বিদ্বেষী ভাইয়েরা কবে বুঝবেন?

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এক ভাই বললেন, আওয়ামীলীগ, বিএনপি, নায়ক নায়িকা, গায়ক গায়িকারা, সেকুলার, নাস্তিকরা মরলে তাদের পাপ মোচন হয়। ঠিকই বলছেন ভাই। তারা মরলেই শোকের বাণী ছড়াতে থাকে ইসলামপন্থীরা, তাদের সব অপরাধ যেন মুছে গেছে। তাদের জন্য দোয়া করতে করতে মুনাজাত ধরা ইমামের মুখে ফেনা উঠে যায়।

 

 

 

 

 

 

পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সমাজ আর বাংলা বইতে ইসলামবিদ্বেষ বেশি থাকে।

 

 

 

 

 

 

 

অনেকে পরিবারের কারো মৃত্যু সংবাদ ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার মাধ্যমে জানান। যেহেতু সবাইকে ফোন করে জানানো সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই এই পদ্ধতি অনেকে অবলম্বন করেন, তাই বলে এটাকে নিন্দা করা ঠিক হচ্ছে না যে, পরিবারের কেউ মারা যাওয়ার দিন কিভাবে সে ফেসবুক পোস্ট দেয়!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সৌদির রেসলিং এর সংবাদ শুনে মাদখালী ভাইদের অল্প কয়েকজন এর বিরুদ্ধে হালকা ঝাপসা ভাষায় সমালোচনা করেছেন। তাদের অভিনন্দন জানাই, তারা একটু হলেও সত্য উপলব্ধি করতে পেরেছেন। অবশ্য এখনো কিছু আছে, এমবিএসের সাফাই গাচ্ছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

আরিফ আজাদ ভাই সম্প্রতি সূরা ইউসুফের সংখ্যাতাত্ত্বিক বিষয় নিয়ে একটা নিজস্ব গবেষণা পেশ করে ছোট্ট একটা পোস্ট লিখেছেন। আমি এ ব্যাপারে বলব, এভাবে চিন্তাভাবনা করে বের করা একটা সীমা পর্যন্ত ঠিক আছে। ১৯তত্ত্বে না চলে গেলেই হল।

 

 

 

 

 

 

 

 

কাঠমোল্লা একটা পজেটিভ শব্দ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সবই বুঝি, শুধু 'আসল' জিনিসটা বুঝি না। বাজার করতে গেলে ভালো জিনিসটা কিনি। খাওয়ার সময় ভালো জিনিসটা খাই। কিন্তু আখিরাতে ভালো থাকতে ভালটা বুঝি না।

 

 

 

 

 

 

 

আমার মনে হয় যারা ফেক আইডি দিয়ে লেখেন, তারা যদি আসল পরিচয়ে সিরিয়াস লেখালেখি করতেন, ভালো হত। ফেক আইডির তো ভবিষ্যৎ নাই।

 

 

 

 

 

 

 

 

দুইটা খলীফা হইলে ভালোই হয়। একজন শামের খলীফা, অন্যজন হবে আফগানিস্তানের খলীফা। (হাহাহা)

 

 

 

 

 

 

 

 

এটিএম আজহারকে হত্যা করতে যাচ্ছে সরকার। এই হবিতব্য হত্যাকান্ডের বিরোধিতা করুন।

 

 

 

 

 

 

 

সুশীল ইসলামপন্থীরা ভোলার মিছিলের ব্যাপারে বলেছিল, এই মূর্খ তৌহিদি জনতা কেন খালি ধর্মীয় ইস্যুতে আন্দোলন করে? জাতীয় ইস্যুতে কেন করে না? আবার আজকে যখন পাকিস্তানে ফজলুর রহমান জাতীয় ইস্যুতে একটি আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে তখন এই সুশীলরা বলতেছে মাওালানার খাইয়া দাইয়া কাম নাই। সুশীলদের আসল সমস্যা হচ্ছে সাধারণ মুসলিমদের এবং আলেমদের তারা মূর্খ মনে করে, নিজেদের বুদ্ধিজীবী মনে করে।

 

 

 

 

 

 

 

 

এক মাদখালী ভাইকে আমার প্রশ্ন, ভাই, আলে সাউদরা তো নবী রসুল না। তাদের ভুল স্বীকার করলে সমস্যা কোথায়! সবকিছুর পিছনে যখন আজব যুক্তি খাড়া করেন তখন আপনাদের বুটলিকার ছাড়া অন্য কিছু মনে হয় না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আব্দুস সবুর খান, আতিকুল্লাহ সাহেব ছাড়াও আরও আছেন নাজমুদ্দীন সাহেব, আব্দুল্লাহ মায়মুন সাহেব। আরও কত নাম জানা অজানা আলেম, দ্বীনদার। সেদিনও নিরীহ ৪ জন হুজুরকে ফাঁসিয়ে র‍্যাব নাটকের স্ক্রিপ্ট বানাল, সেই হুজুরদের পরিচিতদের বয়ানে জানতে পারা যায় র‍্যাবের সেগুলো ছিল নাটক, বানানো কথা, আর সেইসব মানুষদেরও জঙ্গিবাদের সাথে কোনো সম্পর্ক ছিল না।

 

 

 

 

 

 

           

হিন্দুরা কম্যুনিষ্ট হলে হিন্দু কম্যুনিষ্ট হয়, আর মুসলমানরা হলে কম্যুনিষ্ট হয়। - আব্দুল্লাহ খান।

 

আব্দুল্লাহ ভাই সহীহ কথা বলছেন। মুসলিম হইলে আসলেই কমিউনিস্ট হওয়া যায় না। অন্য কোনো মতবাদেই মুসলিম যোগ দিতে পারে না। কিন্তু খ্রিস্টান কমিউনিস্ট, ইহুদী নাস্তিক, হিন্দু নাস্তিক এসব ঠিকই হওয়া যায়।

 

 

 

 

 

 

 

জননীয়া বললেন দাড়িওয়ালা টুপিওয়ালাদের তার ভালো লাগে,

কিন্তু বেছে বেছে দাড়িওয়ালা টুপিওয়ালারাই নিখোঁজ (গুম/গ্রেফতার!) হচ্ছেন!

 

 

 

 

 

 

 

 

পাকিস্তান তাইলে দুই ভাগে ভাগ হইছে। একদিকে জমিয়ত, জামাত, পিপিপি, নওয়াজ। অন্যদিকে ইমরান, মোশাররফ, আলতাফ। (মাওলানা ফজলুর রহমানের ইমরানবিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে)

 

 

 

 

 

 

দ্বীনদার কিংবা অ-দীনদার, কারো উপরেই বেশি আশা রাখি না। তাই আশা ভঙ্গের কারণও হয় না।

 

 

 

 

 

 

 

 

ডাঃ শামসুল আরেফীন শক্তির "মানবশিল্পী" নামের লেখাটা না পড়লে বুঝতে পারবেন না আপনার মা পৃথিবীর সেরা কয়েকটা পেশার মধ্যে অন্যতম একটি পেশায় নিয়োজিত।

 

 

 

 

 

 

 

ব্রিটিশ আমল, ব্রিটিশ আইন, এক হিন্দু ব্যক্তি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কটূক্তি করল, বিচার হল না, এক মুসলিম যুবক হত্যা করে ফেললেন। তার ফাঁসি হল। শাতিমের হত্যাকারী ইলমুদ্দীনের জানাযায় অংশ নেন মহাকবি ইকবাল। তার পক্ষে ওকালতি করেন আলি জিন্নাহ। জানাযা পড়ান বিখ্যাত এক আলেম। জানাযায় বহু লোকের সমাগম হয়। সবাই তাকে স্মরণ করে।

 

বাংলাদেশ আমল। ৯০ ভাগ (!) মুসলমানের দেশ। শাতিমরা ইচ্ছেমত দ্বীন ও দ্বীনের নবীকে নিয়ে কটূক্তি করে। ধর্ম অবমাননার বিচার হয় না। ইলমুদ্দীনের মতই যুবকরা যখন শাতিম হত্যা করে তখন তারা হয়ে যায় জঙ্গি, সন্ত্রাসী। তাদের দিকে সবাই ঘৃণা ছুড়ে। তাদের পক্ষে কোনো আলি জিন্নাহ কিংবা ইকবাল নাই। আর কটূক্তিকারীকে বলা হয় শহীদ (নাউজুবিল্লাহ)।

 

এনএসইউ'র সেই ভাইদের জন্য দোয়া।

 

 

 

 

 

 

 

আইএস শেষ হয়ে গেছে বলে আমার মনে হয় না। একজন নেতা গেলে, আরেকজন নেতা আসবে। চলতে থাকবে। বরং নতুন নেতৃত্বের কারণে নতুন উদ্যমে উঠেও দাঁড়াতে পারে।

 

 

 

 

 

 

 

 

নাস্তিক কুলাঙ্গারদের জারজ সন্তান বইলেন না, কারণ জারজ কখনো পিতা-মাতার জন্য দোষী হয় না। জারজ সন্তান নিষ্পাপ হয়েই জন্ম হয়। বরং নাস্তিকদের বলুন শাতিম, মুরতাদ, ওয়াজিবুল কতল।

 

 

 

 

 

 

 

আমি মনে করি প্রতিটা মুসলিমের আরবী শেখা উচিৎ। আর উপমহাদেশের মুসলিমদের আরবির পাশাপাশি উর্দু শেখা উচিৎ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

দুধ খাওয়া বিশেষ করে গরুর দুধ বৈজ্ঞানিকভাবে উপকারী কিনা তা নিয়ে একটু ঘাঁটাঘাঁটি করার পর বুঝলাম, দুই পক্ষেই শক্তিশালী মত আছে, একদল পুষ্টিবিদের মতে এটা উপকারী। অন্য দলের মতে, তেমন উপকার নাই। এরপর বুঝলাম, ইসলাম দিয়ে সঠিকটা নির্ণয় করা সম্ভব। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গরুর দুধ পছন্দ করতেন। খাওয়াকে উৎসাহিত করতেন। এই হিসেবে দুধের উপকারিতার পক্ষে যারা তাদের মতটাই সঠিক। এটা মুসলিম হিসেবে আমার বিশ্বাস। যদি দুধ খাওয়ার উপকারিতার ব্যাপারে কোনো রিসার্চ নাও থাকতো, তবু বিশ্বাস করতাম দুধ উপকারী। যেমন স্রষ্টার অস্তিত্বের ব্যাপারে বিজ্ঞান কিছুই বলে না, তবু স্রষ্টার ব্যাপারে আমার যা বিশ্বাস, বিজ্ঞান যদি এর পক্ষে কোনো প্রমাণ উথাপন করে তখনও বিশ্বাস একই থাকবে, বাড়বেও না, কমবেও না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বিজেপি, আরএসএস এদেরকে কট্টর হিন্দু, চরমপন্থী হিন্দু, উগ্র হিন্দু, জঙ্গি হিন্দু এসব নামে ডাকবেন না। কারণ তারাই হচ্ছে আসল হিন্দু। আর যাদেরকে আপনি নরম হিন্দু মনে করেন তারা মূলত সেকুলার হিন্দু, নিজের ধর্ম ঠিক ভাবে পালন করে না তারা।

 

 

 

 

 

 

 

 

রাইহান মাহমুদ ভাইয়ের ভাইয়ের চিন্তা ও লেখা অসাধারণ। আমি তার লেখার ভক্ত। কিছুটা হারুন ইজহার সাহেবের এবং কিছুটা জামান আসাদুয (হিসাব মুযাইয়্যাফ) সাহেবের প্রভাব তার লেখায় প্রতিফলিত হয়।

 

 

 

 

 

 

 

মানুষ একদিনে ইসলাম শিখে যায় না। সময় লাগে পরিবর্তন হতে। আল্লাহ আমাদেরকে অন্যের তাকওয়া মাপতে পাঠান নি। যাই হোক আমি ব্যক্তিগত ভাবে ছোট দাড়ি কিংবা নরমাল হিজাবিদের ব্যঙ্গ করা পছন্দ করি না।

 

যারা পরিপূর্ণ রুপে পর্দা করতেছেন তাদের শুরুটা হালকা পাতলা হিজাব দিয়েই শুরু হয়েছিল। সে অন্তত ইসলামী চেতনা থেকে যেটা পড়ে এটাই অনেক বেশি।

 

           

 

 

 

 

 

৫ ই মের যেইরুপ প্রতিক্রিয়া ছিল ২৮ শে অক্টোবরের নাই কেন?

           

 

 

 

 

 

 

 

শাদা আমেরিকার আবেগের সাথে নিজের আবেগ মিলে গেলে সেই আবেগটা রুহ আফজার মতো লাগে - হিসাব মুযাইয়্যাফ

 

কি যে একটা দারুণ কথা কইলেন না ভাই!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

টিকটিকি মারার হাদিস শুনলে অনেকের ঈমান দুর্বল হয়ে যায়। ঈমানের হালত আমাদের এমন! ভালো-মন্দ শেখা উচিৎ ছিল আল্লাহর কাছ থেকে। অথচ আমরা নিজেরাই ভালো-মন্দ তৈরি করে সেটা দিয়ে ইসলামকে বিচার করি। এজন্যই ইসলামের অনেক বিষয় আমাদের কাছে যৌক্তিক মনে হয় না (নাউজুবিল্লাহ), সেগুলো শুনলে ঈমান দুর্বল হয়ে যায়!

 

আরও উদাহরণ আছেঃ চার বিয়ে, জিহাদ কিতাল, দাসপ্রথা ইত্যাদি।

 

কেউ টিকটিকি মারতে না চাইলে গুনাহ হবে এমন কিছু না। আমি নিজেও টিকটিকি মারি না, ঘর ময়লা হওয়ার ভয়ে। কিন্তু কেউ যদি হাদিসে থাকা সত্ত্বেও অস্বীকার করে তবে তার আকিদাগত ক্রুটি রয়েছে। একই কথা চার বিয়ের ব্যাপারে, কেউ যদি চার বিয়ে পছন্দ না করে তবে তা থেকে বিরত থাকুক অথবা স্বামীকে বিরত থাকুক, সমস্যা নেই। কিন্তু অস্বীকার করাটা সমস্যা, অনেক বড় সমস্যা।

 

টিকটিকি মারার ব্যাপারে হাদিসগুলো নিচে উল্লেখ করলামঃ

 

আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি প্রথম আঘাতেই টিকটিকি হত্যা করে ফেলে, তার জন্য এত এত নেকী হয়, আর যে ব্যক্তি দ্বিতীয় আঘাতে মেরে ফেলে, তার জন্য প্রথম ব্যক্তি অপেক্ষা কম এত এত নেকী হয়। আর যদি তৃতীয় আঘাতে তাকে হত্যা করে, তাহলে তার জন্য [অপেক্ষাকৃত কম] এত এত নেকী হয়।’’

 

অপর এক বর্ণনায় আছে, ‘‘যে ব্যক্তি প্রথম আঘাতেই টিকটিকি হত্যা করে, তার জন্য একশত নেকী, দ্বিতীয় আঘাতে তার চাইতে কম [নেকী] এবং তৃতীয় আঘাতে তার চাইতে কম [নেকী] হয়।’’

 

আরবী ভাষাবিদদের মতে, وزغ বড় টিকটিকিকে বলে। [পক্ষান্তরে গিরগিটির আরবীঃ حرباء। আর তাকে মারার নির্দেশ হাদীসে নেই।]

[ মুসলিম ২২৪০, তিরমিযী ১৪৮২, ইবনু মাজাহ ৩২২৯, আহমাদ ৮৪৪৫]

 

উম্মে শারীক রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম টিকটিকি মারতে আদেশ দিয়েছেন এবং বলেছেন যে, ‘‘এ ইব্রাহীম-এর অগ্নিকুণ্ডে ফুঁ দিয়েছিল।’’

 

[ সহীহুল বুখারী ৩৩০৭, ৩৩৫৯, মুসলিম ২২৩৭, নাসায়ী ২৮৮৫, ইবনু মাজাহ ৩২২৮, আহমাদ ২৬৮১৯, ২৭০৭২, দারেমী ২০০০]

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

দোয়ায় অনেক লাভ আছে। প্রতিটা মুমিনের জন্যই দুয়া করায় লাভ আছে। আর যারা শহীদ তাদের জন্যও দুয়া করা ভাগ্যবানদের লক্ষণ।

 

 

 

 

 

 

 

এক ব্যক্তি আরবদের খারাবী বর্ণনা করলেন এবং যাচ্ছেতাই ভাবে গালি দিলেন। তিনি কয়েকজন আরবের দোষ পুরো আরব জাতির ঘাড়ে দিয়ে দিলেন। আমি প্রশ্ন ছুড়লাম,

চোর ডাকাত আর ধর্ষকদের দেশ বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আপনিও কি চুরি ডাকাতি আর ধর্ষণের দায় নিবেন? প্রতিটা জাতির মধ্যেই ভালো খারাপ থাকে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আফগানিস্তান আর পাকিস্তানে উলামাদের মধ্যে কোটির খুব চল? আমি ভাবতাম কোটি হয়তো পশ্চিম থেকে আসছে। কিন্তু এখন তো দেখছি এইটা আসলে ইসলামী ঐতিহ্যবাহী পোশাক।

 

 

 

 

 

 

 

 

তানজীমপন্থী ভাইদের সালাফি ও হানাফি উলামাদের কাছাকাছি যাওয়া উচিৎ। অনেক সময় ভক্তকূলের কারণে সত্য বুঝেও সত্যটা বলতে পারেন না অনেকে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যতক্ষণ না সালাফি মানহাজ, দেওবন্দী, তাবলীগী, সাদপন্থী, জামায়াতী, একিউ কিংবা দায়েশী ইত্যাদি ঘরানার ব্যাপারে আপনি বিদ্বেষ ত্যাগ না করবেন ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি তাদের ভুল ধরা এবং সে বিষয়ে আলোচনা করার যোগ্যতা হাসিল করতে পারবেন না। প্রথমেই আপনাকে অযাচিত, অপ্রয়োজনীয় বিদ্বেষ ত্যাগ করতে হবে। এই বিদ্বেষ উম্মাহকে শত শত ভাগে বিভক্ত করে ফেলেছে। এই বিদ্বেষ আমাদের ধ্বংস করে দিচ্ছে। আমরা কুফফারদের প্রতিও এতো ঘৃণা রাখি না যতটা রাখি ভিন্নমতের মুসলিমদের উপর। সবার এমন একটা মনোভাব যেন হাতের কাছে পেলেই কল্লা ফেলে দিব। অথচ কুফফারদের বিরুদ্ধেও এতো মারাত্মক ঘৃণা রাখে না। আল্লাহ আমাদের হেদায়েত দিক।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ইসলাম হচ্ছে পরিচ্ছন্নতার ধর্ম, একই সাথে মনের এবং দেহের। আমরা ৫ বার নামাজ পড়ি মনের পবিত্রতা অর্জন করতে। আর দিনে আমাদের কমপক্ষে ৩ বার অজু করতে হয় (অনেক সময় এক ওজু দিয়ে দুই ওয়াক্ত পড়া হয়)। সপ্তাহে কমপক্ষে গোসল আমরা ৩ বারের অধিক বার করি। ১ বার হল ওয়াজিব গোসল, শুক্রবারের। আর বিবাহিত হোক বা অবিবাহিত, প্রত্যেক পুরুষেরই সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার (বিবাহিতদের আরও বেশি) গোসল ফরজ হয়। যতই শীত হোক, অন্যান্য ধর্মের মানুষ যখন মাসেও একবার গোসল করে না তখন মুসলিমরা দিনে ৩ বার অজু ছাড়াও সপ্তাহে ৩-৪ বার গোসল করে। এটা তো কমপক্ষে, বেশিপক্ষে আরও বেশি।

 

 

 

 

 

 

 

 

ভাইদের প্রতি একটা নসীহত। মন চাইলেই পেইজ খুলে ইনভাইট করা শুরু করে দিবেন না প্লিজ। আগে বুঝুন পেইজ চালানোর মত অর্থাৎ চালিয়ে যাওয়ার মত দৃঢ়তা আপনার আছে কিনা! মন চাইলেই গ্রুপ খুলে এড করে দিবেন না। গ্রুপ তো পেইজের চেয়েও বড় বিষয়। চালাতে পারবেন কিনা না বুঝেই গ্রুপ, পেইজ খোলা বুদ্ধিমানের কাজ না। আর যদি একান্তই খুলতে চান তাহলে খুলার পর কাউকে এড, ইনভাইট করবেন না, পেইজ বা গ্রুপের পারফর্মেন্স ভালো হলে নিজে থেকেই লাইক দিব, এড রিকু পাঠাবো।

 

ফ্রেন্ডলিস্টে ৫ হাজার ফ্রেন্ড আছে, সবাই যদি ৫ হাজার পেইজ আর গ্রুপে ইনভাইট করে তাহলে তো সমস্যা হয়ে যাবে। আর আপনি মন চাইলে পেইজ/গ্রুপ খুলে ইনভাইট করেন অথচ অনেক ভাইয়ের ভালো পেইজগুলো, ভালো গ্রুপগুলো আপনাদের পেইজ গ্রুপের কারণে খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই ভাইয়েরা, নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিবেন না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমাদের কিছু তাউহিদবাদী ভাই মনে করেন, উম্মাহর এই ক্রান্তিলগ্নে ছোট খাটো মাসআলা নিয়ে আলোচনা করা দোষনীয়। তাদের ভাষায় লুঙ্গি খুলে পাগড়ি বাধা। আমি কিছুটা সহমত, পুরোপুরি না। কারণ আমি জিহাদের ময়দানে আছি বলে ছোট ছোট সুন্নাতগুলো পালন করতে পারব না তা তো না। আমি জিহাদ করছি বলে ইলম চর্চা করতে পারব না, এমন কোনো কথা নাই। কোনো মাসআলা নিয়ে আলোচনা করা ভালো, ঝগড়া করা খারাপ। ঝগড়া করা তো কোনো সময়ই সমর্থনযোগ্য না। তবে গঠনমূলক আলোচনা পর্যালোচনা করা ইলম চর্চারই অংশ। আর যে কথাটা বলা হয় "উম্মাহর ক্রান্তিলগ্নে এসব নিয়ে আলোচনা করার সময় নাই", একথাটাও ভুল। উম্মাহ কোন সময়ই বা বিপদে ছিল না? গত কয়েক শতক যাবত তো বিপদের মধ্যেই আছে। তো, এই ক্রান্তিলগ্নের শত শত বছর ধরে আমরা কোনো মাসআলা নিয়ে আলোচনা করা যাবে না? বুঝবান মানুষ হলে কঠিন বিষয় বিষয় নিয়েও আলোচনা করে দীনী ভ্রাতৃত্ব ও সম্পর্ক অটুট রাখা যায়।

 

উম্মাহর ক্রান্তিলগ্নে আছেন বলে অজু করবেন না তা তো হয় না। আল্লাহ আমাদেরকে অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক থেকে হেফাজত করুন।

 

 

 

 

 

 

 

অনেক ভাই ফেসবুক সেলিব্রেটিদের মতোই সেম প্রোপিক ইউজ করেন। হয়তো প্রোপিকটা তার আসলেই ভালো লাগে। কিন্তু এভাবে বিভ্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আরিফ আজাদের প্রোপিক কেউ প্রোপিক হিসেবে ইউজ করে পোস্ট করলে প্রথম ১-২ সেকেন্ডের জন্য ভ্রম হয় আরিফ আজাদ পোস্ট করেছেন। তাই দীনী ভাইদের অনুরোধ একটা ইউনিক প্রোপিক ইউজ করতে। আরিফ আজাদ ভাই যেমন এখন পর্যন্ত একটাই ইউজ করেন। আমি যেমন প্রোপিক হিসেবে চাঁদ ব্যবহার করি, এরকম একটা ইউনিক পিক ব্যবহার করা উচিৎ সবার।

 

 

 

 

 

 

রাস্তা ঘাটে চলার সময় ঈমানদারদের দুটি আমল করা উচিৎঃ পরিচিত অপরিচিত মানুষের পাশ দিয়ে অতিক্রম করার সময় সালাম দেয়া, রিক্সাওয়ালাদেরও সালাম দেয়া। এবং কাউকে সিগারেট খেতে দেখলে সুন্দর আচরণের সাথে বাধা দেয়া, "পাবলিক প্লেসে সিগারেট খাবেন না" বলা।

 

 

 

 

 

 

 

কওমিদের অনেকেই চিন্তাগত দিক থেকে শুন্যতায় ভুগে। তাদের চেয়ে বেশি চিন্তাশীল জেনারেল থাকা আসা হেদায়েতপ্রাপ্তরা। কওমিদের চিন্তাশীল বানানোর জন্য কওমি দায়িত্বশীলদের ভাবা উচিত। এতো বিশাল জনগোষ্ঠীকে যদি কাজে লাগানো যায় অনেক কিছু করা সম্ভব। শুধু চিন্তাশীলতা না, কওমিরা তাকওয়া, ইখলাসেও পিছিয়ে আছে জেনারেলদের চেয়ে। আপনি ১০ জন কওমির ফেসবুক আইডি দেখেন আর ১০ জন জেনারেল দ্বীনদারের আইডি দেখেন, দেখবেন কওমিদের আইডিতে সেলফি আর ছবিতে ভরা। কারো আইডিতে জঘন্য সেকুলার সাহিত্যিকদের উক্তি, গুণগান। আর যারাও একটু দ্বীনদার তাদের আইডিতে পাবেন অমুক জামাতী মূর্খ, অমুক আহলে হাদিস ভন্ড, অমুক পীর শয়তান।

 

অন্যদিকে জেনারেল দ্বীনদারদের প্রোফাইলে ছবি সেলফি নাই বললেই চলে। সেকুলার সাহিত্য যারা পড়ে বড় হয়েছে তারাই এইসব জঘন্য সাহিত্যকে পা দিয়ে ঠেলে ইসলামে চলে এসেছেন, সেকুলার সাহিত্যিকদের প্রতি তাদের নাই এতটুকু ভালোবাসা। অন্য মুসলমান ঘরানাকে মূর্খ, শয়তান ইত্যাদি না বলে গঠনমূলক সমালোচনা করেন অথবা ভারসাম্যপূর্ণ চিন্তাধারা রাখেন।

 

আপনি কোনো কোনো কওমিকে দেখবেন কোনো মেয়ের ছবি শেয়ার দিতে (অর্থাৎ কোনো নিউজ হোক কিংবা অন্যকিছু), জেনারেল থেকে আসা ভাইদের থেকে এটা পাবেনই না একদম।

 

মাদ্রাসাগুলো ইলমের পাশাপাশি কেন তাকওয়া শেখাতে পারে না জানি না। তবে এইরকম কওমি বেশি হলেও আরেকদল কওমি আছেন যারা আমাদের মাথার তাজ। আল্লাহ তাদের সম্মান বাড়িয়ে দিন। তারা সংখ্যায় অল্প, এবং জেনারেলরা তাদের কাছে অনেক আশা রাখে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কিছু বিষয়ে বিপরতি লিঙ্গের সাথে তর্ক বিতর্ক থামায় দেয়া উচিত। কারণ আমাদের লিঙ্গের একটা প্রভাব আমাদের মানসিকতাতে পড়বেই। তখন বিতর্ক লুপের মত চলতে থাকবে। পুরুষের কথা শুনে নারীর মনে হবে 'পুরুষবাদী', আর নারীর কথা শুনে পুরুষের মনে হবে 'নারীবাদী'। তাই স্বাভাবিকতার সীমা ছেড়ে কেউ লিঙ্গবাদে চলে না গেলে তার সাথে এই বিষয়ে বিতর্কের দরকার নাই। স্বাভাবিকতা কতটুকু? স্বাভাবিকতা ততটুকু যেখানে শরীয়াহর কোনো সীমা লঙ্ঘন করা হয় না। তবে আরেকটা কথা, আমার এই কথা ইসলামী নারীবাদীদের জন্য প্রযোজ্য নয়, কারণ ইসলামী নারীবাদীরাও শরীয়াহর সীমার বাইরে চলে যায়।

 

নারী পুরুষকে আল্লাহ প্রতিযোগিতার জন্য পাঠান নি, একে অপরকে সহযোগিতার জন্য পাঠিয়েছেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমল না করলে যে বলা যাবে না তা নয়। যারা ইলম চর্চা করে তাদের অবশ্যই আমলদার হওয়া উচিত। কিন্তু আমল কম করলে ইলমচর্চা বন্ধ করে দেয়া সমাধান না। বরং সমাধান হচ্ছে আমলে মনোযোগী হওয়া। তাই যারা নিজে আমল না করে অন্যকে বলে তাদের উচিত আমল করার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। কিন্তু আমল না করলে যে আমলের কথা বলাও ছেড়ে দিতে হবে এমন না। জিহাদের দিকে আমাদের দাওয়াত দেয়া উচিত, কিন্তু এর মানে এই না এজন্য আমাদের সবাইকে জিহাদ করে আসতে হবে এরপর দাওয়াত দিতে হবে।

 

তাছাড়া আমলের দাওয়াত দিলে নিজে আমল করার উৎসাহ ও দৃঢ়তা বৃদ্ধি পায়। কেউ যদি নিজে আমল না করে অন্যকে বলে তাহলে নিজেকে কেমন অপরাধী অপরাধী মনে হবে, ফলে সে আমলটি না করে পারবে না। তাই আমলের দাওয়াত চালিয়ে যেতে হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ইঁদুর, মশা ইত্যাদি ক্ষতিকর প্রাণী মারার মধ্যে বিশাল সাওয়াব নিহিত আছে বলে মনে করি। এগুলাকে না মেরে ছেড়ে দিলে কাউকে না কাউকে ক্ষতি করবেই। তবে কম কষ্টে মারতে হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

লেখক ভাইদের একটা পরামর্শ দিব, জোর করে কখনো লিখবেন না। যেটা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আসে সেটাই লিখবেন। কলম নিয়ে লেখার জন্য বসে থাকতে হবে এমন ভাবলে আপনি সাহিত্যের মানেই বুঝতে পারেন নি। জোর করে লিখলে লেখা যায় তবে ভালো লেখা তৈরি হয় না। তাছাড়া আপনার ভালো লেখার প্রতিভার বিকাশের জন্যও এটা প্রতিবন্ধক হবে। এমন মুহূর্তে লিখার দরকার নাই যখন আপনার মন চাচ্ছে না। একেবারে রিলাক্স মুডে লিখবেন সবসময়। ভালো লেখা বের করতে চাইলে ভালো পরিবেশ পরিস্থিতি লাগে। আল্লাহ তৌফিক দিক।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমি সবসময় দোয়া করি, হে আল্লাহ আমাকে যুগের সালাহুদ্দীন হিসেবে কবুল কর, যেন আমার হাতেই জেরুসালেম পুনরায় বিজিত হয়। হে আল্লাহ আমাকে যুগের ইবনে তাইমিয়া হিসেবে কবুল কর। যুগের আলবানী হিসেবে কবুল কর যেন হাদিসের খেদমত করতে পারি। যুগের আবু হানিফা হিসেবে কবুল কর, যেন ফিকহের খেদমত করতে পারি। যুগের ইবনে কাসির হিসেবে কবুল কর, যেন তাফসিরশাস্ত্রে অবদান রাখতে পারি। দুয়াগুলো বাস্তব হোক বা নাহোক, দোয়া করার সুযোগ যেহেতু আছে, দোয়া করতে সমস্যা কি?

 

 

 

 

 

 

 

 

আমরা (দীনীরা) লেগে থাকি তাহেরীর পিছনে, অন্যরা (সাধারণরা) লেগে থাকে (থাকত) হিরো আলমের পিছনে! উভয়ের রুচির কোনো পার্থক্য নাই!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সত্যি বলতে অনলাইনে দীনী কমিউনিটির ভাইদের স্রেফ সময় নষ্ট হয়, অন্য কিছু না। এই একমাসে আপনি কয়টা ভালো পোস্ট দিয়েছেন বলুন তো? অথচ আমাদের সময় চলে যায় ফালতু ট্রল পোস্টে, লাইক দিয়ে, কমেন্ট করে, আর কমেন্টের রিপ্লাই দিতে দিতে। এখান থেকে শিখার মত বিষয় অল্পই, সময় নষ্ট হয় এর চেয়ে অনেক গুণ বেশি। গীবত করে করে সময় নষ্ট হয়, আলতু ফালতু টপিকে আলোচনা করে, বিরোধীদের পোস্টে হাহা দিয়ে। অথচ এর চেয়ে উত্তম ভাবে আমরা আমাদের সময়কে কাজে লাগাতে পারতাম। তাই যারা শুধু অনলাইনকে দাওয়াতি কাজে ব্যবহার করতে চান তারা শুধু দাওয়াতি পোস্ট দিতেই লগিন করুন। ফেসবুকে অযথা সময় নষ্ট না করে এই সময়টা দীনী প্রোডাক্টিভ কাজে লাগান। আল্লাহ তৌফিক দিক।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমরা লাখ টাকা খরচ করে বিয়ের অনুষ্ঠান করি, অথচ মাহরের টাকাই পরিশোধ করি না। আমরা বাচ্চা ডেলিভারির সময় সিজারে লাখ টাকা খরচ করতে রাজি, কিন্তু আকীকা করতে রাজি না। অথচ বিয়ের অনুষ্ঠানে এতো খরচ না করে মাহরের টাকা আগে পরিশোধ করা উচিৎ ছিল, বাচ্চার জন্য সবকিছু করতে রাজি অথচ ইসলামের দেয়া দায়িত্ব আকীকা করতে রাজি না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মাসজিদে লাল বাতি জ্বালানো সমস্যা না, কিন্তু এটাকে গুরুত্বের সাথে নেয়াটা সমস্যা। যেমন প্রচলন আছে, লাল বাতি জ্বলাকালীন কোনো নফল নামাজ পড়া যাবে না। এটা অবশ্যই বাড়াবাড়ি। সাধারণত জামাআত শুরুর ৩ মিনিট আগে এই লাল বাতি জ্বালানো হয়। অথচ মাসজিদে ঢুকে ২ রাকাত তাহিয়াতুল মাসজিদ পড়তে ২ মিনিটের বেশি লাগে না। কিন্তু কেউ যদি বাধা দেয় এবং বলে এখন লাল বাতি জ্বালানো, নামাজ পড়া যাবে না; এটা অবশ্যই ভুল। সতর্কতার জন্য লাল বাতি জ্বালানো হয়, এতে সমস্যা দেখি না। কিন্তু এই লালবাতিকে গুরুত্বের সাথে না নিলেই ভালো হবে। এমন লাল বাতির প্রথা সুন্নাহ নয়, বরং মাসজিদে ঢুকে দুই রাকাত নফল আদায় করাই সুন্নাহ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ডঃ আব্দুস সালাম আজাদীর সাম্প্রতিক শিয়া বিরোধী পোস্টের পর কমেন্টে দেখা গেল অনেক জামায়াতী ভাইয়ের বিরুপ প্রতিক্রিয়া। এর আগে আরও একজন জামায়াতপন্থী আলেমের শিয়াবিরোধী পোস্টেও একই অবস্থা লক্ষ্য করা গেছে। এর মানে হচ্ছে জামায়াতের অধিকাংশ সমর্থক এমন পর্যায়ের মোডারেট যে তাদের আলেমদের সাথেও তাদের চিন্তার বিচ্ছিন্নতা রয়েছে। আমার মনে হয় এই সমস্যার কারণ হচ্ছে জামায়াতের অতিরিক্ত উদারতার চর্চা। এর ভয়ঙ্কর ফলাফল এটাই যে, জামায়াতপন্থীরা শিয়াদেরকে সুন্নীদের চেয়ে বেশি আপন মনে করে। একদিকে যদি দেওবন্দী অন্যদিকে শিয়া ইরানকে রাখা হয়, তারা শিয়াদের বেছে নিবে, দেওবন্দীদের ছুড়ে ফেলবে। জামায়াত তাদের ইসলামী রক্ষণশীলতার গন্ডিতে আবদ্ধ না করার ফলাফল শেষ পর্যন্ত এটাই হল যে তারা আহলুস সুন্নাহর চেয়ে আহলুল বিদআহর প্রতি বেশি উদার। আল্লাহ তাদের হেদায়েত দিক।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পর্দা করলে ধর্ষণ বন্ধ হবে এটা একটা ভুল আর্গুমেন্ট। বরং পর্দা ফরজ করা হয়েছে সকলের উপর, নারীদের দেহের পর্দা এবং পুরুষদের চোখের পর্দা। ধর্ষণ বন্ধ হোক বা না হোক সকলের পর্দা করা ফরজ, পর্দা না করলে গুনাহগার হতে হবে। যারা সমাজে আল্লাহর বিধানের পরিবর্তে অন্য বিধান চায় তারাও এক প্রকার ছোট কুফরে লিপ্ত। আল্লাহর বিধান সবার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করে সব জুলুম মিটিয়ে দেয়। কিন্তু এটা বাস্তবায়নের উপর ডিপেন্ড করে জুলুম কতটা বন্ধ হবে, সবার অধিকার কতটুকু প্রতিষ্ঠিত হবে! ব্যাপারটা ঠিক এমন, ইসলামে কোনো ভুল নাই, কিন্তু মুসলিমরা ভুলের উর্দ্ধে না। আপনি ইসলাম কতটুকু মানছেন এর উপর নির্ভর করছে সমাজের হাল কেমন হবে! আপনি নিজে পর্দা করেন না, অথচ চাচ্ছেন ধর্ষণ বন্ধ হোক, তবে এই চাওয়া কোনো কাজে আসবে না। আপনি চাচ্ছেন ধর্ষণ বন্ধ হোক, অথচ আল্লাহর আইন সমাজে কায়েম হোক সেটা চাচ্ছেন না, তাহলে এই চাওয়ায় কোনো লাভ নেই। আম গাছ লাগিয়ে জাম আশা করে লাভ নেই। আবার কেউ পর্দা করলেই ধর্ষণ থেকে বেঁচে যাবে, এমন নাও হতে পারে। কিন্তু পর্দা করলে ধর্ষিতা হওয়ার আশঙ্কা অনেক কম। ধর্ষণ বন্ধ করতে চাইলে নিজেদেরকে ইসলাম পালন করতে হবে এবং সমাজে আল্লাহর আইন কায়েমের চেষ্টা চালাতে হবে, যারা এই দুই কাজে লেগে থাকবে তারাই প্রকৃতপক্ষে ধর্ষণ বন্ধের জন্য কাজ করছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমাদের কর্মপন্থা কেমন হবে?

 

এরুপ হবে- ইলম> ইবাদাহ> দাওয়াহ> জিহাদ।

 

প্রথমে ইলম অর্জন, এরপর ব্যক্তিগত আমল, এরপর দাওয়াত, এবং সর্বশেষ হচ্ছে জিহাদ বা ইসলামের চুড়া। জিহাদের মাধ্যমেই আমাদের জীবনের সমাপ্তি হোক। আল্লাহ কবুল করুক।

 

 

 

 

 

 

 

 

হাদিসে মোচ ছোট করতে বলা হইছে, চেছে ফেলতে না। কিন্তু অধিকাংশ মুসলিমকে দেখা যায় মোচ চেছে ফেলতে। আমি তো মনে করি ব্লেড লাগানোই উচিৎ না। তবে হারাম বা নিন্দনীয় বলছি না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সুন্নীরা মুসলিম দাবীকারীদের ৮০ পারসেন্ট। ৮০ এর মধ্যে হানাফীরা ২০, হাম্বলীরা ১৫।

 

শিয়ারা ২০ পারসেন্ট, শিয়াদের জায়েদীরা ০.৫ পারসেন্ট। জায়েদী বাদে অন্যান্য ফিরকার কিছু ভ্রান্ত, কিছু কাফের।

 

সুন্নীদের মধ্যে কাদিয়ানীদের ঢুকায় দিছে যদিও তারা কাফের।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এজন্যই বলি ভাইয়েরা, আলেমদের সম্মান করুন, নাহলে এই অবস্থা হবে। আলেমকে তার ইলমের জন্য সম্মান করুন। কেউ সরকারি হজে গেলেই ভ্রান্ত আলেম হয়ে যায় না। দুনিয়ায় মাকদিসি আর আবু কাতাদাই (হা) একমাত্র আলেম না। আলেমদের কাজ ইলমচর্চা। আলেমদের সম্মান করুন যদি তিনি মাদখালীও হয়।

 

এটা একটা নমুনা। এমন উগ্রবাদী চিন্তা মানহাজীদের মধ্যেও আছে।

 

সবচেয়ে বড় কথা আমাদের মুসলিম ভ্রাতৃত্ব নষ্ট হয়ে গেছে। মানহাজী না হলে তাকে আমরা মুসলমানই মনে করি না। মানহাজী বাদে সব আলেমকে ভ্রান্ত আলেম মনে করি। এই সমস্যা মানহাজীদের জনবিচ্ছিন্ন করবে, এবং উদ্দেশ্য সফল হতে দিবে না। কেন্দ্র জনবিচ্ছিন্ন হতে চায় না। সমর্থকরাই বরং বিচ্ছিন্নতাবাদের চর্চা করছে।

 

মানহাজী ভাইদের বলব, আলেমদের সাথে ব্যাপকভাবে যোগাযোগ বৃদ্ধি করুন। আলি হাসান উসামা সাহেব এই পন্থা অবলম্বন করছেন যার ফলাফল আমরা সামনে দেখতে পাব (ইনশাআল্লাহ), অনেক কওমি আলেম জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের পার্থক্য বুঝতে পারবেন। আলেমরা অনেক কিছু চাইলেও বলতে পারে না। আমার তো মনে হয়, আবু বকর জাকারিয়া সাহেবকে যদি মাদখালীরা ঘিরে না ধরে মানহাজীরা ঘিরে থাকতো তাহলে তিনি উলটাপালটা কথা কখনোই বলতে পারতেন না। ছোট মানুষরা বড় মানুষ দিয়ে প্রভাবিত হন, বড় আর বিখ্যাতরা প্রভাবিত হন ভক্ত আর শিষ্যদের দ্বারা।

 

(এই পোস্টের কাহিনী হচ্ছে, এক মানহাজি (বিক্রমপুরী) ভাই মাওলানা আশরাফ আলির মৃত্যুতে উৎফুল্ল হয়েছেন কারণ তিনি নাকি মুনাফিক, তিনি সরকারি হজে গিয়েছেন বলে মুনাফিক হয়ে গেছেন এমন ধারণা রাখেন সেই মানহাজী ভাইটি, এমন ধারণা অনেকেই রাখে মানহাজীদের মধ্যে যা সমস্যাযুক্ত।)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন

 

মাওলানা আশরাফ আলি ইন্তেকাল করেছেন। আল্লাহ তাকে মাফ করুক।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমিও জিলাপীর জন্য মিলাদ পড়তে বসি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

জঙ্গিদের ছবি দিলে আইডির সমস্যা হয়। তবু দিলাম। সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বৈবাহিক ধর্ষণ নামের নতুন একটা পরিভাষার উদ্ভব ঘটিয়ে কাফের ও সেকুলাররা মূলত বিবাহ নামের বন্ধনটাকেই কবর দেয়ার পাঁয়তারা করছে। বিবাহের বিরুদ্ধে তাদের ষড়যন্ত্র অনেক আগে থেকেই। বিবিসি বাংলা এর উপর রিপোর্ট করে স্পন্সর করে এসব পোস্ট সারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে আমরা দেখেছি। বৈবাহিক ধর্ষণ পরিভাষাটি কেন একটি ষড়যন্ত্রের অংশ ব্যাখ্যা করি।

 

ধর্ষণ বলতে জোর করে সেক্স করাকে বোঝায়। আমরা ধর্ষণ বলতে সাধারণ ভাবে বিবাহ বহির্ভূত জোর করে সেক্স করাকেই বুঝি। আর বিয়ে হচ্ছে সেক্স করার বৈধতার চুক্তি। এই চুক্তি মানেই দুইজনই একমত হয়েছে যে একে অপরের সাথে সেক্স করতে বাধা নাই, সুতরাং যে চুক্তিটাই সেক্স করার অনুমতি দিচ্ছে, এখানে তাহলে "জোর করা"র প্রশ্ন কিভাবে আসে? আর জোর করলেও চুক্তি অনুযায়ী বৈধতা তো রয়েছেই।

 

বৈবাহিক ধর্ষণ এই পরিভাষার ব্যাপক প্রচার চালিয়ে কাফেরদের উদ্দেশ্য কি? উদ্দেশ্য হচ্ছে বিয়ে ছাড়া জোর করে সেক্স করলেও ধর্ষণ, আবার বিয়ে করে জোর করে সেক্স করলেও ধর্ষণ। মানে বিয়ে নামের চুক্তিটা মূল্যহীন। বিয়ে করা যা কথা, না করলেও একই কথা। মূলত বিয়েহীন সংস্কৃতি অর্থাৎ লিভটুগেদার বা উভয়ের সম্মতিতে সেক্স করা, বিয়ে ছাড়াই সংসার করা, এসব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই তারা স্বামী স্ত্রীর মিলনকেও ধর্ষণ বলতে চাচ্ছে।

 

তবে এখানে তাদের কিছু পাল্টা প্রশ্নও করা যায়, যেমন, স্বামী যদি জোর করে সেক্স করে সেটা ধর্ষণ হলে, স্বামীর অনিচ্ছাসত্ত্বেও স্ত্রী যদি জোর করে তাহলে সেটা কি স্বামী-ধর্ষণ হবে কিনা?

বিয়ে নামক চুক্তি পরও যদি স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক ধর্ষণের সাথে তুলনীয় হয়, তাহলে যারা লিভটুগেদার করে, অথবা গার্লফ্রেন্ডের সাথে সেক্স করে সেক্ষেত্রে যদি জোর করা হয় তাহলে সেটা কি ধর্ষণ হবে কিনা? যদি ধর্ষণ হয় তাহলে সেই ধর্ষণের বিরুদ্ধে আপনাদের কেন কোনোরুপ চিল্লাফাল্লা নাই?

 

যারা মুসলিম তারা অন্তত বৈবাহিক ধর্ষণ পরিভাষার উপর বিশ্বাস রাখতে পারে না। কারণ, ইসলামে বিয়ে মানেই সেক্স করার বৈধতা, সেটা জোর করেই হোক না কেন। স্ত্রী যখন কবুল বলেছে তখনই সে এই বৈধতা দিয়েছে যে তার স্বামী চাইলে জোর করেও সেক্স করতে পারবে। এটা ইসলামের ক্ষেত্রে, অন্যান্য ধর্মে বিয়ের ক্ষেত্রে কিরুপ বলা হয়েছে তা আমার জানা নাই। সুতরাং যারা বৈবাহিক ধর্ষণ পরিভাষায় বিশ্বাস রাখে তাদের বরং "ইসলামের বিয়ে" করার দরকার নাই, এর চেয়ে বরং লিভটুগেদার করুক। কারণ ইসলামে বিয়ের পর সেক্স করা কোনোভাবেই 'ধর্ষণ' হয় না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

'মুখ খোলা রেখে পর্দা'র মতামতটা গ্রহণ করা খুবই বিপদজনক। এটা সাধারণ বিষয় না, যে ইখতিলাফ থাকলে সমস্যা নাই। বরং পর্দা হচ্ছে ফরজ, আওরাহর সীমা না জানলে এবং তা না ঢাকলে পর্দা হবে না, ফরজ তরক হবে। পরিবারের পুরুষেরা হয়ে যাবে দাইয়ুস। কিন্তু যারা মনে করেন পর্দার জন্য মুখ ঢাকা বাধ্যতামূলক না তাদের কথায় পর্দার অর্থই পরিবর্তন হয়ে যায়। পর্দা ফরজ হওয়ার আগের অবস্থা আর পরের অবস্থার মধ্যে পার্থক্যই হল নিকাব। নিকাব অস্বীকার করলে পর্দা ফরজ হওয়ার আগের অবস্থাতেই মূলত ফিরে যাচ্ছেন তারা।

 

আলবানী রঃ শুধু হাদিসবিশারদ ছিলেন, ফকীহ না। তার ভুলটা বর্তমানকালের বিচ্ছিন্ন মত অনুসরণকারীদের জন্য একটা বড় দলিল ছিল। আলবানীর (রঃ) এই মতকে সালাফীরাই বরং প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে জাকির নায়েক কিংবা আজহারী, তারা আলবানী সাহেবের ভুলটাকে গ্রহণ করে বড় ভুল করেছেন, আলবানী সাহেবের ভুলের জন্য এক নেকির ইজতিহাদ আশা করা গেলেও তাদের ব্যাপারে করা যায় না, কারণ তারা গবেষক না, তারা বিচ্ছিন্ন মত জানা সত্ত্বেও গ্রহণ করেছে এবং প্রচার করছে। আলবানী রঃ মুখ ঢাকা বাধ্যতামূলক মনে না করলেও তার পরিবারকে নিকাব করাতেন মুস্তাহাব হিসেবে। তবে কারজাভির কাজটা উদ্দেশ্যমূলক বলেই মনে হয়, কারণ বেছে বেছে সব বিচ্ছিন্ন মতগুলা অনুসরণ করা স্বাভাবিক ব্যাপার না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আল্লাহর বিধানগুলোর মধ্যেই সবচেয়ে বড় যৌক্তিকতা ও ইনসাফ রয়েছে। যেমন বিবাহিত যিনাকারের শাস্তি রজম (মৃত্যুদণ্ড), কিন্তু অবিবাহিত যিনাকারের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড না। অর্থাৎ যে অবিবাহিত তার তো স্ত্রী নাই, তার যিনা করা মানা যায় (বৈধ বলি নি), সে যৌবনের জ্বালা মিটাতে না পেরে অবৈধ কাজে লিপ্ত হয়েছে। কিন্তু যে বিবাহিত সে কোন যুক্তিতে যিনা করল? দুইটাই অপরাধ কিন্তু বিবাহিত ব্যক্তির অপরাধটা বড়। দুইজনের শাস্তি যদি সমান হত ইনসাফ হত না। মানুষের বানানো আইনে এরকম বেইনসাফী থেকে থাকে।

 

আল্লাহ তাআলা গরীবদের জন্য অনেক সুবিধা দিয়েছেন, দুনিয়ায় একটু কষ্টের বিনিময়ে আখিরাতে বিশাল প্রতিদান, হাদিসে তাদের অনেক ফজিলতের কথা এসেছে। যেমন জান্নাতে গরীব বেশি হবে, ধনীদের ৫০০ বছর আগেই তারা জান্নাতে চলে যাবে ইত্যাদি।

 

কিন্তু এই গরীবরাই যদি অহঙ্কার করে তবে সে ধনী(অহংকারী)দের চাইতেও আল্লাহর কাছে নিকৃষ্ট হয়ে যায়। কারণ যে ধনী, যার সম্পদ আছে, তার অহঙ্কার করা সাজে, কিন্তু যার নাই সে কিভাবে অহঙ্কার করে? হাদিসে এসেছে কিয়ামতের দিন এই অহংকারী গরীবদের সাথে আল্লাহ কথা বলবেন না, পবিত্র করবেন না। আরেক শ্রেণীর সাথেও আল্লাহ কথা বলবেন না, পবিত্র করবেন না এবং কঠিন শাস্তি দিবেন, তারা হচ্ছে বৃদ্ধ যিনাকার। কারণ যে যুবক তার যিনা করা স্বাভাবিক (বৈধ বলি নি), কিন্তু বৃদ্ধ ব্যক্তি কি কারণে যিনা করবে?

 

আল্লাহ পিতার সম্পদে কন্যার অধিকার পুত্রের অর্ধেক দিয়েছেন। এখানে সেকুলাররা বেইনসাফী খুঁজে পেলেও সত্যিকার অর্থে এটাই ইনসাফ। কারণ পুরুষ বাধ্য তার পরিবারকে ভরণ পোষণ দিতে। কিন্তু নারী বাধ্য নয়, বরং সে যা সম্পদ হিসেবে পাবে সেটা শুধুই তার থাকবে, সে নিজের মত খরচ করবে, কারণ তার ভরণপোষণ তো তার দায়িত্বশীল পুরুষ দিচ্ছে। নারী শুধু পিতার সম্পদ থেকেই পাচ্ছে না, স্বামীর সম্পদ থেকেও পাবে, এছাড়াও আছে দেনমোহর।

 

একটা উদাহরণ দিলেই বোঝা যাবে। পিতার সম্পদ থেকে একজন নারীর ভাই যদি পায় ১ লক্ষ টাকা, তবে তিনি পাবেন ৫০ হাজার। আবার তার স্বামীর সম্পদ যদি হয় ৮০ হাজার টাকা তাহলে তিনি পাবেন ১০ হাজার টাকা। দেনমোহর একদম কম ধরলাম, ১০ হাজার টাকা। তাহলে দেখা যাচ্ছে একজন পুরুষ পাচ্ছে এক লক্ষ টাকা যেটা দিয়ে তার পরিবার চালাতে হবে। আর একজন নারী মোটমাট পাচ্ছে ৭০ হাজার টাকা যেটা সে নিজের পরিবারের জন্য খরচ দিতে বাধ্য না, সেটা শুধু নিজের জন্য ব্যবহার করতে পারবে। এছাড়া পুরুষ যদি আয় করে তবে সেটা দিয়ে স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিতে হয়, কিন্তু স্ত্রী যদি আয় করে তবে সেটা শুধুই তার। অর্থাৎ নারীরা যে পিতার সম্পদে অর্ধেক, স্বামীর সম্পদে আট ভাগের এক ভাগ পাচ্ছে এগুলো বেইনসাফী না, বরং এটাই ইনসাফ, এর চেয়ে কম বেশি হলেই তা বেইনসাফী হত।

 

ইউএসের কয়েকটা স্টেটে এই নিয়ম আছে, ডিভোর্স হলে তাদের সম্পদের অর্ধেক স্ত্রীকে দিতে হয়। এর কারণ বিয়ের সময় উভয়ের সম্পদ একত্র করা হয়। কিন্তু এটা কত বড় জুলুম যে একজন এতো কষ্ট করে আয় করবে, আর ডিভোর্স হলে অর্ধেক সম্পত্তি স্ত্রী পেয়ে যাবে, অথচ স্ত্রী যদি একটাকাও আয় না করে, এবং তার সম্পদ পূর্বে কানাকড়িও না থাকে। পত্রিকায় এসেছিল এক বিলিয়নিয়ারের ডিভোর্স হওয়ায় তার সাবেক স্ত্রী পৃথিবীর শীর্ষ নারী ধনীদের কাতারে চলে এসেছে। এটা নিশ্চিত অর্থেই জুলুম সেই সাবেক স্বামীর জন্য। কিছুদিন আগে ভাইরাল হয়েছিল একটা ঘটনা, এক ব্যক্তির অর্ধেক সম্পদ দেয়া লাগবে বলে তার সব জিনিস অর্ধেক করে কেটে স্ত্রীকে দিয়ে দেয়, জিদের বশেই করেছে যেন তার স্ত্রীও সেই সম্পদ ভোগ করতে না পারে।

 

শামসুল আরেফীন ভাই ডাবল স্ট্যান্ডার্ড এ লিখেছিলেন, জাকাত যদি আড়াই পারসেন্টের বেশি হত, তাহলে সেটা ধনীদের জন্য জুলুম হত। কিন্তু আল্লাহ তো জুলুম করেন না কাফেরদের উপরও। যদি জাকাত ২০-৩০ পারসেন্ট দিতে হত তাহলে ধনীদের আয় উপার্জনের ইচ্ছাই চলে যেত। কারণ এতো কষ্ট করে ধন সম্পদ কামানোর পর জাকাত যদি এতো বেশি দিতে হয় তাহলে তো ধনী হওয়ার চেয়ে গরীব থেকে বসে বসে জাকাত গ্রহণ করাই বেশি সুবিধাজনক। আল্লাহ ধনীদের উপরও জুলুম করেন নি।

 

আল্লাহ আকবার। আল্লাহ এভাবেই ইনসাফ দিয়ে ইসলামকে সাজিয়েছেন। যারা ইসলামকে জীবনব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করে না তারা দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জায়গাতে ঠকবে/ঠকছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সবই ঠিক আছে, কিন্তু জিহাদ না করে মুজাহিদ হয় কিভাবে?

 

(প্রসঙ্গঃ মতিউর রহমান মাদানীর জীবনী লিখছেন সালাফি ভাইরা, কিন্তু তার নামের সাথে লিখছেন বীর মুজাহিদ।)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

দুনিয়ার এক সেকেন্ডের মূল্য = ইনফিনিটি

 

কারণ দুনিয়ার কাজকর্মের ফলাফল = আখিরাতের প্রতিদান।

 

আখিরাতের সময়সীমা = ইনফিনিটি বছর।

 

সুতরাং দুনিয়ার প্রতি মুহূর্তের মূল্য = ইনফিনিটি বছর।

 

(শাইখ মুশ্তাকুন্নবী দাঃবাঃর ওয়াজের সারাংশ)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

গার্ডিয়ানের প্রকাশক নূর মোহাম্মদ ভাইকে নাকি গ্রেফতার করা হইছে। আল্লাহ হেফাজত কর!

 

সবাই এর প্রতিবাদ করুন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আগামীকাল সোমবারের রোজা ইনশাআল্লাহ। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম হয়েছিল সোমবারে, তিনি নবুয়াত পেয়েছিলেন সোমবারে। প্রতি সপ্তাহে সোম ও বৃহস্পতি বার তিনি রোজা রাখতেন। আসুন আমরাও চেষ্টা করি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আসুন নতুন বছর থেকে নিজেকে নতুন ভাবে শুরু করি। কোনো ফরজ ওয়াজিব তরক করব না। গুনাহ থেকে বেঁচে থাকবো। সময়কে প্রোডাক্টিভ কাজে লাগাব। ইলম অর্জন, আয় উপার্জন (আয় উপার্জনের জন্য পড়াশোনা এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত), দীনী কাজ, ব্যক্তিগত আমল ইবাদত বাদে বেহুদা কাজে সময় নষ্ট করব না।

 

প্রতিটা সেকেন্ড হিসেব করে চলব। এক কথায় আদর্শ মুসলিম হয়ে চলার চেষ্টা করব। আল্লাহ তৌফিক দিক।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রথম কথা হচ্ছে, দায়েশ খারেজী কিনা। দায়েশ বাদে পৃথিবীর সমস্ত মুসলমানের মতে দায়েশ খারেজী। কিন্তু সালাফী, দেওবন্দী বা অন্যান্যরা যেসব কারণ দেখিয়ে দায়েশকে খারেজী বলে একই কারণে কায়েদাকেও বলে।

 

খারেজীদের ব্যাপারে আমি যতটুক বুঝি, এটা ছিল সাহাবীদের যুগের খারেজীদের জন্য খাস। কারণ খারেজীদের সিফতগুলো সব তাদের সাথেই মিলত, আর সাহাবীরাও তাদের খারেজী হিসেবে চিহ্নিত করে। কিন্তু মাঝখানে ১৩০০ বছর খারেজীদের খোঁজ নাই, এখন আবার কোথা থেকে খারেজীদের উদয় হল? সাহাবীরা যাদের খারেজী বলত তাদেরকেই আমি খারেজী বুঝি। আমি বলব খারেজীদের কিছু সিফত দায়েশের সাথে মিলে, সব না। খারেজীদের বিভ্রান্তি আকিদাগত ছিল, দায়েশের বিভ্রান্তি আকিদাগত না। তাই তাদের খারেজী নয়, বরং খারেজী সিফতওয়ালা বলা যায়। খারেজীদের কিছু সিফত তো কায়েদার অনেকের সাথেও মিলে।

 

দায়েশ আকাশ থেকে আসে নি। কায়েদা থেকেই বেরিয়েছে। দায়েশের এসব উগ্রপন্থীরা কায়েদার সাথেই ছিল এতদিন। দায়েশকে খারেজী বললে আবু মুসাব জারকাবিকেও (রঃ) খারেজী বলতে হবে, কারণ তিনিই ছিলেন এর জনক।

 

দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, খারেজী হলে খিলাফত বৈধ কিনা। আমি মনে করি বৈধ। কারণ খারেজীরা মুসলিম। তারা কাফির নয়। আর খলীফা হওয়ার শর্ত মুসলিম হতে হবে, "আহলে সুন্নাত" হওয়া শর্ত না। আব্বাসীয় খলীফা মামুন ছিলেন মুতাজিলা। তবু তাকে খলীফাই বলা হত। মুতাজিলাদের আকীদা তো খারেজীদের চেয়ে ভয়ঙ্কর ছিল।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

গোঁড়া রেখে আগা কাটার মত অবস্থা। সেকুলারিজম আর গণতন্ত্র হচ্ছে গোঁড়া। এই গোঁড়া না কেটে আগা কাটলে ফায়দা নাই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমরা বাস্তবতার মধ্যে মাহদীতত্ত্বকে ঢুকিয়ে ব্যাপারটাকে আরও জটিল করে তুলি। আমাদের অবস্থা শিয়াদের মত, ১২ তম ইমাম সাহেব মাহদী আসার পরই খিলাফত প্রতিষ্ঠা হবে, এর আগে আমরা খিলাফত প্রতিষ্ঠা করব না! আমরা মাহদীর অপেক্ষা করে বসে থাকব, তিনি এসে আমাদের বিপদ থেকে উদ্ধার করবেন!

 

আমরা একটা অনুমানভিত্তিক ধারণার উপর নির্ভর করে নিজেদের পরিকল্পনা সাজাচ্ছি। কিছু ভাই যেমন বললেন, মাহদী আসবেন, এরপর খিলাফত প্রতিষ্ঠা করবেন। এর আগে খিলাফাহ প্রতিষ্ঠা হবে না। আমি জানি না এটা কি কেন্দ্রের মত কিনা! কিন্তু আমার মনে হয় না এটা কেন্দ্রের মত, কারণ কায়দা এরকম ধারণা রাখে বলে মনে হয় না।

 

মাহদী কখন আসবেন এটা কেউ জানে না। কাজী ইব্রাহীম সাহেবের মত যদি কেউ ধারণা রাখে আজকে কালকে এসে যাবেন, তাহলে তো আমার বলার কিছু নাই। যদি মাহদী ১০০ বছর পর আসে তাহলে উম্মাহ কি ১০০ বছর খিলাফতের অপেক্ষা করে বসে থাকবে? এটা আমাদের অনুমানভিত্তিক ধারণা যে মাহদী ৫ বছরের মধ্যে আসবেন বা ১০ বছরের মধ্যে আসবেন বা ২০ বছরের মধ্যে আসবেন। ভবিষ্যতের জ্ঞান কারো কাছে নাই। ১৮০০ এর পর থেকে, এমনকি এর আগেও মানুষ ভাবত এই বুঝি মাহদী এসে যাবে। যুগে যুগে একদল মানুষ ছিল এমন যাদের ধারণা ছিল এই যুগেই বুঝি মাহদী এসে যাবে।

 

"মাহদী শীঘ্রই আসছে" এরকম প্রচারনার ফলাফল শুধু ভয়াবহ না, ঈমানবিধ্বংসী। মাহদী তো আসবেন, কিন্তু মাহদী আসার ডেট আপনি ঠিক করে দেয়ার কেউ না। মাহদী আজকে কালকে আসবেন এসব বলার ফলে মানুষ আশা নিয়ে বসে থাকে, অথচ দেখা গেল পুরো জীবন শেষ করে ফেল্ল, কিন্তু মাহদী আসলো না। তাহলে মানুষের মনে সন্দেহ ঢুকবে নাকি নয়? এটা ১৮০০ সালের পর থেকেই হয়ে আসছে। কিছু মানুষ অধৈর্য হয়ে ভন্ড মাহদীর অনুসরণ শুরু করেছে। কারণ বারবার বারবার এটা বলে মানুষের মাথায় এসব ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে, মাহদী এই বুঝি এসে যাচ্ছেন। আজকের যুগেও বহু মানুষ এসব প্রচার করছে। অথচ যদি ৫০ বছরেও মাহদী না আসে তাহলে এইসব মানুষের মাহদীর প্রতি বিশ্বাস দুর্বল হবে নাকি নয়?

 

বর্তমান পৃথিবীতে যদি খিলাফতের দাবি করার সামর্থ্য কেউ রাখে সেটা হচ্ছে আল কায়েদা। মুয়াবিয়া রাঃ খিলফতের দাবি করেছিল শুধু শামে, আব্দুল্লাহ রাঃ খিলাফতের দাবি করেছিল শুধু হেজাজে। শক্তি সামর্থ্যের দিক থেকে মুয়াবিয়া রাঃ কিংবা আব্দুল্লাহ রাঃ কারোই পুরো মুসলিম উম্মাহকে নিরাপত্তা দেয়ার, শাসন করার সামর্থ্য প্রথম অবস্থায় ছিল না। কিন্তু শুরুটা ছোট থেকেই হয়। আল কায়দার সামর্থ্য দুনিয়ার অন্য যে কোনো রাষ্ট্র, ক্ষমতাশীল, জামা'আত থেকে বেশি। তারাই সবচেয়ে হকদার ছিল খিলাফত ঘোষণার। তালেবানের মারপ্যাচে পড়ে তারা আটকে গেছে।

 

সামর্থ্য বা রাজ্যশাসন খলীফাহ হওয়ার জন্য শর্ত নয়। তাই যদি হত তাহলে কায়রোর উমাইয়া (পঙ্গু) খিলাফতকে খিলাফত বলা হত না। কারণ সেইসব খলীফা রাজ্য শাসন করত না, মামলুকদের বেতনভোগী ছিল। এই পঙ্গু খিলাফতকে ধ্বংস করে সেলিম ক্ষমতার খিলাফত ফিরিয়ে এনেছিলেন। শেষ উসমানীয় খলীফা আব্দুল মাজিদেরও কোনো ক্ষমতা ছিল না শেষ ২ বছর, শুধু নামে খলীফা ছিল। তবু কেন তাকে শেষ খলীফা বলা হয়? খলীফা জাস্ট একটা উপাধি। দয়া করে এই উপাধীকে ওলিআল্লাহ বানিয়ে দিবেন না, আগের যুগে বানানো হয় নি।

 

আরেকটা কথা বলা হয় যে, ঘোষণা করলেই খিলাফত হয় না। কিন্তু যখন খিলাফত থাকে না তখন কম সামর্থ্যবানের খিলাফতও বৈধ। আর দুইজন খিলাফত দাবী করলে, পূর্বের জনের খিলাফত অধিক বৈধ। আর একজনের উপর অন্যজন জয়ী হলে জয়ীর খিলাফত বৈধ। কায়দা খিলাফত দাবী করুক, এরপর দাওলাকে পরাজিত করুক, তখন কায়দার খিলাফত স্বীকার করতে দ্বিধা থাকবে না।

 

আর খলীফা থাকলেই মুসলিম উম্মাহ একেবারে বিপদমুক্ত হয়ে যাবে এটাও ভুল ধারণা। খিলাফাহ থাকাবস্থাতেই স্পেন থেকে মুসলিমদের বিতারন করা হয়। আরও অনেক কাহিনীই হয়েছে খিলাফত থাকাকালীন। কিন্তু আমরা ধারণা করে বসে থাকি খিলাফাহ আসলেই সমস্ত পৃথিবী শুদ্ধ হয়ে যাবে। তাই যদি হত তাহলে ১২০০ বছর খিলাফত থাকার ফলে পৃথিবীর সব মানুষ মুসলমান হয়ে যেত, ১২০০ বছরে কোনো মুসলিম নির্যাতিত হত না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কোনো খিলাফাহই ঘোষণা ছাড়া হয় নাই। সেটা উমাইয়া, আব্বাসীয়, উসমানীয় যেটাই বলি। আকাশ থেকেও ঘোষণা আসে নি অমুককে খলীফা বানানো হল। যত বড় বড় খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেগুলো জোর করে হয়েছে, নিজেই খিলাফতের দাবি করেছে। যেমন আব্বাসীয়, উসমানীয়, দুটাই জোর করে। খলীফাই নিজেকে খলীফাহ ঘোষণা করেছে। পৃথিবীর সমস্ত উম্মাহ একমত হয়ে কাউকে খলীফাহ মনোনীত করে নি। খলীফা হতে হয় জোর করেই।

 

যারা বলে ঘোষণা করলেই খিলাফত হয় না, তারা শুধু থিওরি পড়েন। বাস্তবে এসব থিওরির দাম নাই। আজকে যদি আইএস সমস্ত দুনিয়া দখল করে ১০০ বছর পর এটাকেই খিলাফত বলা হবে, তারা যতই অনাচার করুক না কেন। আব্বাসীয়রা, উসমানীয়রা এভাবেই খিলাফাহ প্রতিষ্ঠা করেছিল, প্রতিষ্ঠার সময় তাদের কেউ মানে নি। জুবাইরী খিলাফতও খিলাফতের দাবী করেছিল। তারা সফল হয়নি বলে আমরা এই খিলাফতকে গণায় ধরি না, আব্দুল্লাহ রাঃ সফল হলে জুবাইরী খিলাফতকেও আমরা গণায় ধরতাম। অথচ উমাইয়া খিলাফতের চাইতে অনেক অনেক শ্রেষ্ঠ ছিল জুবাইরী খিলাফত।

 

আব্বাসীয় খিলাফতের প্রতিষ্ঠাতা আস সাফফাহ, যার লকবের অর্থই রক্তপিপাসু। ছয় খলীফার পর শ'খানের খলীফার মধ্যে অধিকাংশই জালেম, ফাসেক। কেউ ক্বাবার উপর আক্রমণ চালিয়েছে, কেউ ছিল সমকামী, কেউ নিরপরাধ মানুষ হত্যাকারী, তবু তাদের উপাধি খলীফাই থাকে। আমরাও তাদের খলীফাই বলি। পূর্ববর্তী উলামাদের কিতাবে তাদের খলীফাই বলা হয়েছে। কেউ যদি এসব অস্বীকার করে তাহলে বলতে হবে চার খলীফার পর দুনিয়াতে আর কোনো খলীফাই ছিল না, কোনো খিলাফত ছিল না।

 

আর যারা ভাবেন খিলাফাহ হবে এমন কিছু যেখানে কোনো কালো দাগ থাকবে না, শতভাগ নিষ্পাপ হবে, সরাসরি আসমানের ফেরেস্তাদের দ্বারা পরিচালিত হবে তারাও ভুল ভাবেন, ১০০ বছর খেলাফত না থাকায় তারা খিলাফাহর ব্যাপারে মনগড়া ধারণা তৈরি করে নিয়েছেন।

 

আপনি যদি ইয়াজিদের খিলাফত বৈধ মনে না করেন তাহলে দ্বিতীয় উমরের খিলাফতও বৈধ হবে না। কারণ ইয়াজিদের উত্তরশুরিই ছিলেন দ্বিতীয় উমার।

 

খলীফা রাসুলের আধ্যাত্মিক উত্তরাধিকারী না, রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী। অতি বিশুদ্ধতাবাদী বয়ান অনুসরণ করলে চার খলীফার পর আর কোনো খলীফাই ছিল না। তাই আদর্শ হিসেবে ৪ খলীফা মানতে হবে, কিন্তু পরবর্তী উত্তরাধিকারী খিলাফতগুলোকে স্বীকার করতে হবে, সালাফ-উলামারা স্বীকার করে আসছেন।

 

খিলাফাহর ভিত্তি ক্ষমতা। পরহেজগারিতা নয়। তাই যদি হত তাহলে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস, আব্দুল্লাহ ইবনে উমার খলীফা হওয়ার অধিক উপযুক্ত ছিলেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

অধিকাংশ যুবকের উপর বিয়ে ফরজ হয়ে গেছে। কারণ আমাদের দেশের মধ্যবিত্ত সমাজের যুবকদের সচরাচর যে হাতখরচ সেটা দিয়েই বউ পালার সামর্থ্য রাখে। এমন সাহাবীও বিয়ে করেছেন যার সম্পদ বলতে কিছুই ছিল না, শেষ পর্যন্ত একটি সূরা শেখানোকে মাহর করা হয়েছে। আমাদের আর্থিক অবস্থা তো সেই সাহাবীর চেয়েও ভালো। কিন্তু আমরা সামর্থ্য বলতে বুঝি কাগজের কয়েকটা সার্টিফিকেট, একটা বড় অঙ্কের আয়, আর বিয়ের অনুষ্ঠানে ১০ লাখ টাকা খরচ করার মত সামর্থ্য।

 

ফরজ ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ পালন না করলে গুনাহগার হতে হবে। যারা বিভিন্ন পাপে লিপ্ত হয় তাদের বিয়ে করার ইচ্ছা মরে যায়। তাই বর্তমানে যারা বিয়ের ফিকির রাখে না তারা বিভিন্ন পাপেই লিপ্ত হচ্ছে না, ফরজ পালন না করার কারণেও গুনাহগার হচ্ছে। বিভিন্ন সমস্যার কারণে যদিও বিয়ে করতে পারছেন না, কিন্তু দ্রুত বিয়ের ফিকির না করলে গুনাহগার হওয়া ছাড়া উপায় নাই, যেহেতু এ যুগে পাপ থেকে বেঁচে থাকা অনেক কঠিন।

 

অনেক সাহাবীই তো গরীব ছিলেন, অথচ তারা সে অবস্থাতেই একের অধিক করে বিয়ে করেছিলেন। ক্যারিয়ারের নামে বিয়ের মত ফরজ পালনে আমরা দেরি করছি। অথচ বিয়ে করলে পড়াশোনা থেমে থাকে না, কেউ চাইলে বিয়ে করেও পড়তে পারে। এমন অনেক উদাহরণ আছে। ভার্সিটির এতো বড় অঙ্কের ফি দেয়ার সামর্থ্য রাখি অথচ বিয়ে করার সামর্থ্য রাখি না।

 

সবাই যে পাপে লিপ্ত থাকার কারণে বিয়ে করতে চান না তা না, অনেক ভাইয়ের শীঘ্রই জিহাদে যাওয়ার নিয়ত আছে, ফলে তারা ভাবেন, মরেই তো যাব, বিয়ে করে কি লাভ! জান্নাতে গিয়ে হুরকেই বিয়ে করব। অথচ হাঞ্জালা রাঃ বাসর রাতে স্ত্রীকে রেখে জিহাদে যোগ দিয়েছিলেন ফরজ গোসল ছাড়াই। সাহাবীদের জিন্দেগীতে জিহাদ যেমন ছিল সংসার জীবনও ছিল। তাই আমরা যেন সংসার জীবনকে গুরুত্বহীন মনে না করি। সাহাবীদের এতো বড় বড় সংসার ছিল, তবু তারা সব জিহাদে অংশ নিতেন, আর জিহাদে অংশ নেয়া মানেই মৃত্যুর আশঙ্কা। তাই যারা ভাবেন জান্নাতে গিয়ে হুর বিয়ে করবেন, তাদের বলব নেককার স্ত্রী বিয়ে করলে সেই জান্নাতী স্ত্রীর কাছে হুর শ্রীহীন হয়ে যাবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যারা খিলাফাহ চান তারা যেন আল কায়দার কাছে খিলাফাহ কায়েমের ব্যাপারে আশাবাদী না হন। আগেই বলে রাখলাম যেন পরবর্তীতে আশাভঙ্গ না হয়। সত্যি বলতে আল কায়দার পক্ষে এখন সম্ভব না খিলাফাহ ঘোষণার।

 

যদি শরীয়াহ শাসন চান, সবচেয়ে হকপন্থী মুজাহিদ জামাআতের খোঁজ চান তবে আল কায়দার চেয়ে উত্তম জামাআত আর নাই। কিন্তু খিলাফাহ কায়েম করা তাদের ভাগ্যে নাই।

 

কায়দার জন্মই হয়েছিল খিলাফাহ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে। কিন্তু কথায় আছে ভালো কাজ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করা উচিত, দেরি করলে অন্য কেউ আগেই করে ফেলে। কায়দার অবস্থা হয়েছে সেরকম। তাদের আগেই বাগদাদী জামাআত খিলাফাহ ঘোষণা করে দেয়। এই দশকে খিলাফাহ ঘোষণার যেটুকু সম্ভাবনাও ছিল সেটাও আইএসের উথানের পর আর থাকলো না।

 

আইএসের খিলাফতের ব্যাপারে অনেকে বলে তাদের খিলাফাহ পুরো উম্মাহর কাছে গ্রহণীয় হয় নাই। তবে একটা উত্তর দেন, আইএসের জায়গায় কায়দা যদি তখন খিলাফাহ ঘোষণা দিত তবে পুরো মুসলিম উম্মাহ সেটা মানত কিনা? বরং বাস্তবতা হচ্ছে তানজীমপন্থীরা বাদে কেউই এই খিলাফাহ মানত না।

 

কায়দা খিলাফাহ কায়েম কবে করবে? এর কোনো উত্তর নাই। আমি শুধু আমার বিশ্লেষণ প্রকাশ করছি। কায়দা আশা করেছিল তালেবান খিলাফাহ প্রতিষ্ঠা করবে। তালেবানের কাছে তো আশার কিছু নাই। কিন্তু কায়দা চাইলেই সম্ভব ছিল।

 

হয়তো কায়দা চাচ্ছিল পুরো দুনিয়া দখল করার পর খিলাফাহ কায়েম করতে! অথবা একটা স্থায়ী ঘাটি করার পর! কিন্তু এই স্থায়ী ঘাটি করতে কত বছর লাগবে? ১০০-২০০ বছর যাবত কি যুদ্ধ চালিয়ে যাবে একটা স্থায়ী ঘাটি পাওয়ার আগ পর্যন্ত?

 

রসুল সাঃ মদিনায় শাসন প্রতিষ্ঠার পর জিহাদ করেছেন নাকি আগে? অবশ্যই আগে শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন, এরপর মাদানী জীবনের জিহাদগুলো শুরু হয়। রসুলের মৃত্যুর পর জানাযা আগে হয়েছে নাকি খলীফাহ মনোনয়ন আগে হয়েছে? অবশ্যই খলীফাহ আগে মনোনীত করা হয়েছে, এরপর জানাযাহ। আগে তো নেতা, এরপরে না নেতৃত্ব, জিহাদ, শরীয়াহ শাসন।

 

কায়দার খিলাফাহ-কায়েমে বিলম্বিত করণের সুযোগ নেয় বাগদাদী জামা'আত। তারা অন্যায় অনাচার করে পুরো খিলাফাহর নাম দূষিত করেছে। তবে একটা কাজ তারা ভালো করেছে, ৯০ বছরের হারানো খিলাফাহকে ফিরিয়ে এনেছে। কারণ কায়দা এই দশকে কেন আগামী ৫০ বছরেও খিলাফাহ কায়েম করবে কিনা সন্দেহ!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এখন অধিকাংশ মানুষ ফেসবুক চালায়। ফেসবুকেই অনেকটা সময় কাটিয়ে দেয়। অথচ এখন পর্যন্ত ফেসবুক দাওয়াতকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না।

 

অনেকে ইসলামের ব্যাপারে ফেসবুক থেকে আগ্রহী হয়েছে। ভালো কথা যে ফেসবুকে ইসলাম সম্পর্কে অনেকে লেখালেখি করে। তবে সিরিয়াসলি ফেসবুককে দাওয়াতি ময়দান হিসেবে কেউ গ্রহণ করে বলে মনে হয় না।

 

আমার মনে হয় অন্তত এক দল মানুষ থাকা উচিত যারা ফেসবুক দাওয়াতকে গুরুত্বের সাথে নিবে। ফেসবুক দাওয়াতকে প্রফেশনাল পর্যায়ে নিয়ে যাবে। আপনি রাস্তাঘাটে হুট করে যাকে তাকে ইসলামের দাওয়াত দিতে পারছেন না, কিন্তু ফেসবুকে এটা অনেক সহজ। যদি সিরিয়াসভাবে আমরা ব্যাপারটাকে নিই আশা করা যায় দাওয়াতের গতি অনেক বৃদ্ধি পাবে।

 

কারণ আমাদের কোনো পরিকল্পনা, রূপরেখা ছাড়াই, বিচ্ছিন্নভাবে যে যার মত ইসলামিক পোস্ট টোস্ট দেয়ার পরও প্রচুর মানুষ ইসলামের ব্যাপারে আগ্রহী হচ্ছে। সুতরাং আমরা যদি এ ব্যাপারে পরিকল্পনা গ্রহণ করি, এক দল লোক তৈরি করার ফিকির করি তবে সেটা অফলাইন দাওয়াতের চেয়ে কোনো অংশে কম বড় কাজ হবে না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তখনই বিরক্ত লাগে যখন নাসীহাহ গ্রুপে পোস্ট দেয়ার জন্য ঢুকি, আর দেখি পোস্ট অপশন বন্ধ

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তাবলীগ কেন করবেন? (পোস্টটা নন-তাবলীগী ভাইদের জন্য)

 

১- তাবলীগ ছাড়া সরাসরি দাওয়াতের আমল বর্তমানে কোথাও পাবেন না। তাবলীগের সাথে থেকে এই মোবারক দাওয়াতি কাজে শরীক হওয়া উচিত।

 

২- আপনি মানহাজি হন কিংবা সালাফি হন, সাধারণ মানুষকে অর্থাৎ যারা বে-আমল, নামাজ পড়ে না, দ্বীন বুঝে না, তাদের কাছে গিয়ে সরাসরি দাওয়াত দেয়ার সুযোগ নাই। আর প্রথম সুযোগেই আপনি আপনার মানহাজের দাওয়াত দিতে পারবেন তাও না। ইসলামের বুঝ পরিণত হলে এসব গভীর বিষয়ের দাওয়াত দেয়া যায়। সুতরাং তাবলীগী ভাইয়েরা বে-আমল মুসলমানকে ইসলামে এনে আপনার জন্য সুযোগ করে দিচ্ছে মানহাজের দাওয়াত দেয়ার, আপনার কাজকেই তাবলীগী ভাইরা এগিয়ে দিচ্ছে। তাবলীগী থেকে মানহাজী হয়েছে এমন সংখ্যা নিতান্তই কম না।

 

৩- সবচেয়ে বড় কথা তাবলীগীরা কোনো সালাফিকে ধরে তাবলীগী বানায় না, কোনো মানহাজীকে ধরে তাবলীগী বানায় না। তারা সাধারণ বে-আমল মুসলমানকে দাওয়াত দেয়। তাদের নামাজী বানায়।

 

৪- আপনি তাবলীগের বাইরে কোনো একটা মানহাজের সাথে জড়িত। আপনার দিন ২৪ ঘণ্টা, তাবলীগীদেরও। আপনি কাউকে দাওয়াত না দিলেও আপনার সময় কাটছে, তাবলীগের সাথে মিশে দাওয়াত দিলেও সময় কাটবে। তাই সময়কে কাজে লাগানোই ভালো না? একজন বেনামাজীকে যদি নামাজী বানাতে পারেন তার বাকি জীবনের সমস্ত নামাজের সাওয়াব আপনি পাবেন ইনশাআল্লাহ।

 

৫- কিছু ভুল চুক আছে বলে মনে করেন সেগুলো ইগ্নোর করেন। তাদের সাথে মিশে থাকেন। দেখবেন আপনার থেকে তারা যেমন অনেক কিছু শিখবে, আপনিও অনেক কিছু শিখবেন। সবচেয়ে বড় কথা, ভ্রাতৃত্ব, মোহাব্বত, দ্বীনের প্রতি দরদ এসব শিখবেন।

 

৬- আপনার যদি জিহাদে যাওয়ার ইচ্ছা থাকে ৩ দিনের জামাত, চিল্লার জামাতে বের হওয়ার মাধ্যমে আপনার প্রাথমিক প্রশিক্ষণ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

 

৭- একটা শেষ কথা বলি যেটা অনেক জরুরী। আমরা ইসলামকে খণ্ড খণ্ড ভাবে চর্চা করছি। সাহাবীরা দাওয়াত, ইলমচর্চা, জিহাদ সবগুলো একসাথে করেছেন। কিন্তু আমরা প্রত্যেকটাকে দিয়ে একটা করে ঘরানা তৈরি করেছি এবং একটা কাজে লেগে আছি, বাকি কাজগুলো করছি না। কওমিরা ইলম চর্চা ও প্রচারে লেগে আছে, জিহাদ ও দাওয়াতে আগ্রহ রাখে না। তাবলীগীরা দাওয়াতে লেগে আছে, ইলম চর্চা ও জিহাদে আগ্রহ রাখে না। জিহাদীরা জিহাদ ছাড়া কিছুই বুঝে না, দাওয়াত ও ইলমচর্চারও খবর নাই। আপনি যদি পুর্ণাঙ্গ ইসলাম চর্চা করতে চান অবশ্যই ইলম শিক্ষা, দাওয়াত-তাবলীগ করতে হবে/করা উচিত এবং জিহাদের নিয়ত ও প্রস্তুতিও রাখতে হবে। আল্লাহ সবাইকে তৌফিক দিক।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

জেনারেল থেকে হেদায়েতপ্রাপ্ত ভাইদের আহবান জানাবো, আপনারা ব্যাপক ভাবে ইলমী লাইনে প্রবেশ করুন। বিভিন্ন মাদ্রাসায় জেনারেলদের আলেম হওয়ার সুযোগ আছে, ৫/৬/৭ বছরের কোর্স আছে। যারা ইন্টারে পড়ছেন তারা যদি এখন পড়া শুরু করেন মাস্টার্স শেষ হতে হতে আপনি মাওলানা হয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।

 

আমার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী কওমি ভাইদের চেয়ে জেনারেলের দীনী ভাইদের ইসলামী চেতনা ও তাকওয়া বেশি। আপনাদের ভেতরে যে আগুন আছে এটাকে কাজে লাগাতে আপনাদের ইলমী লাইনে আসা উচিত। দাঈ হওয়ার জন্যেও ইলম গুরুত্বপূর্ণ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বিতরের নামাজ সংশ্লিষ্ট ৪ টি অবহেলিত সুন্নাহ/আমলঃ

 

১- ঘুমানোর আগে পড়া। অথবা শেষ রাতে তাহাজ্জুদের পড়ে পড়া। (ঘুমানোর আগে পড়তে বলা রসুলের আদেশ, তাহাজ্জুদের পরে পড়া সুন্নাহ। ঘুম থেকে উঠতে না পারার আশঙ্কা থাকলে প্রথমটা)

 

২- বিতরের নামাজে প্রথম রাকাতে সূরা কাফিরুন, দ্বিতীয় রাকাতে ইখলাস এবং শেষ রাকাতে ফালাক-নাস একসাথে পড়া। (এটা ভিন্ন দুই হাদিসকে একত্র করে)

 

৩- নামাজ শেষে সুবহানাল মালিকিল কুদ্দুস ৩ বার পড়া। শেষ বার একটু আওয়াজ করে এবং শেষবারের সাথে "রব্বিল মালাইকাতি ওয়ার রুহ" যোগ করা।

 

৪- বিতর নামাজের পর বসে দুই রাকাত নামাজ পড়া।

 

 

 

 

 

 

 

 

আমরা গঠনমূলক সমালোচনা করতে জানি না, বদনাম ঠিকই করতে পারি। আস্তাগফিরুল্লাহ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বিয়ের আগে বউকে কন্ট্রোল করার উপর একটা কোর্স করা উচিত সবার। কিন্তু আফসোস এমন কোর্স নাই, বউয়ের মন জয় করার উপর বই পাবেন কিন্তু বউকে কন্ট্রোল করার উপর কোনো বই নাই।

 

কোমল হৃদয়ের হলে পারবে না এমন না । শক্ত হৃদয়ের মানুষেরাও বউয়ের চোখের ইশারায় কুপোকাত হয়ে যায়। রাগী মানুষ হইলেই যে কন্ট্রোল করতে পারবে এমনও না।

 

কোর্স করার কথা তো ফান করে বললাম, এই বাস্তবতা বোঝানোর জন্য যে বউ কন্ট্রোল করা কোনো সহজ কাজ নয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

অনেক ভাই ফেইক আইডি খুলেন সাহাবীদের নামে, যেমন খালিদ বিন ওয়ালিদ, উমার ইবনে খাত্তাব, ইত্যাদি। আমি মনে করি এগুলো সাহাবীদের শানে বেয়াদবী।

 

ব্যাখ্যাঃ চিন্তা করে দেখুন তো রসুলের নামে আইডি খুললেন, আইডির নাম হবে মুহাম্মাদ সাল্লাল্ললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যখন কাউকে রিকু দিব তখন মনে হবে নবী সাঃ তাকে রিকু দিছে। ব্যাপারটা কেমন দেখায়?

 

ভাই, নামের এক অংশ না, পুরো নামের কথা বলছি। রাসুলকে তো আমরা সবচেয়ে ভালোবাসি। তাহলে রাসুলের নামে আইডি খুললে কেমন দেখায়? আইডির নাম হবে মুহাম্মাদ সাল্লাল্ললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যখন কাউকে রিকু দিব তখন মনে হবে নবী সাঃ তাকে রিকু দিছে। ব্যাপারটা কেমন দেখায়?

 

নাম রাখা না, ফেইক আইডির নাম রাখার কথা বলছি। ধরেন, কেউ উমার ইবনে খাত্তাব রাখল। যখন সে কাউকে রিকু দিবে মনে হচ্ছে উমার রাঃ রিকু দিল। এটা বলছি।

 

 

 

 

 

 

 

 

তাবলীগের কিতাবগুলো এখনো সাধু ভাষায় কেন তা জানি না! হয়তো কিতাবের ভাবগাম্ভীর্য ধরে রাখার জন্য চলিত ভাষায় প্রকাশ করা হয় না। তবে চলিত ভাষায় প্রকাশ করা হলে মানুষের অনুধাবনের জন্য আরও বেশি সহজ হত।

 

সাধু ভাষায় পড়লে আলাদা একটা অনুভূতি জাগে এটা ঠিক। কিন্তু পাশাপাশি চলতি ভাষার সংস্করণ থাকলে ভালো হত।

 

তাবলীগ তো উলামাদের মেনে চলে। উলামারা যদি চলিত ভাষার পক্ষে রায় দেয় তাহলে আশা করা যায় পরিবর্তন আসবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তালিমের জন্য ফাজায়েলে আমলের চেয়ে মুন্তাখাব হাদিস বেশি উত্তম হবে বলে মনে করি। এর একটা কারণ বোধহয় এটা, মুন্তাখাব হাদিসে স্রেফ হাদিস বর্ণনা করা হয়েছে, আর হাদিসের একটা নূর তো আছেই। কিন্তু ফাজায়েলে আমলে হাদিসের চেয়ে মানুষের কথা বেশি। কেউ আহত হইয়েন না, আমি এতায়াতী, ওয়াজহাতি কোনোটাই না।

 

হ্যাঁ, ফাজায়েলে আমলে বেশি নসীহত আছে ভালো। কিন্তু তালিমের জন্য এটা উপযোগী মনে করি না। কারণ নিয়মিত তালিমে না বসলে নসীহত গুলা ধরা যায় না। আর হাদিস তো ছোট ছোট, একবার বললেই শেষ।

 

মুন্তাখাবের হাদিসগুলা এমন ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয় না। বোঝা যায়।

 

(একজন ভাই কমেন্টে বললেন ফাজায়েলে আমল সমস্যাযুক্ত, এটা পরিত্যাগ করা হোক। আমি বললাম, পরিত্যাগ করা সম্ভব না আসলে। তাহকীক সহ আসুক, এতটুকই চাই)।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ঘরে তালিম কায়েম করা অথবা জারি রাখা উচিত একটা হাদিস পড়ে হলেও।

 

রিয়াদুস সালেহীন এবং আদাবুল মুফরাদ বেস্ট কিতাব তালিমের জন্য।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আপনি আপনার সন্তানকে ইসলামের উপর বড় না করলে, সে বড় হওয়ার পর তাকে নিয়ে হা হুতাশ করলে কোনোই লাভ হবে না। সন্তানের পাপের ভার আপনাকেও বহন করতে হবে।

 

আপনাকে আমানাহ দেয়া হয়েছিল, সন্তানকে ইসলামের উপর বড় করার দায়িত্ব আপনার উপর ছিল। আপনি অবহেলা করেছেন, আল্লাহর কাঠগড়ায় আপনাকে দাঁড়াতে তো হবেই, দুনিয়ার জমিনেও লাঞ্ছিত হবেন, বৃদ্ধাশ্রমে পড়ে থেকে মরতে হবে।

 

কিছু প্রগতিশীল তথা দুর্গতিশীল মুসলিম মনে করে সন্তানকে ধর্মের ছোঁয়া ছাড়াই বড় করবে, সন্তান জেনে শুনে বুঝে ইচ্ছে হলে ইসলাম মানবে, নইলে মানবে না, অর্থাৎ ধর্মের ব্যাপারে জোর করবে না। আমার দেখা মতে, এরকম সন্তান বড় হয়ে ধর্ম থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। বাচ্চা খেতে না চাইলে জোর করে, মেরে হলেও খাওয়ান, কারণ আপনি তাকে ভালোবাসেন, তার ক্ষুধায় কষ্ট হবে ভেবে মেরে হলেও খাওয়ান, অথচ আখিরাতে বিশ্বাস রাখা সত্ত্বেও কিভাবে বাচ্চাকে আগুনের মধ্যে ছেড়ে দেন, জাহান্নামের আগুনে?

 

আপনি কি জানেন, এদেশের বিখ্যাত সব সেকুলার (কু)বুদ্ধিজীবীর পিতা-মাতারা ছিল মাওলানা, পীর, ধার্মিক, ইসলামিস্ট? নিজের সন্তানদের তারা ইংরেজি শিক্ষা দিয়ে ছেড়ে দিয়েছিলেন, ভেবেছিলেন তাদের সন্তানেরা বুঝে শুনে ইসলাম মানবে। কিন্তু আম গাছ লাগিয়ে কাঁঠালের আশা করলে হবে? ধার্মিক পরিবার থেকেই অধিকাংশ সেকুলার এসেছে। এরা সেই সেকুলার যাদের ইসলামবিদ্বেষ কাফিরদের চেয়েও বেশি।

 

সেইসব মাওলানাকে আল্লাহর কাছে অবশ্যই জবাব দিতে হবে। সন্তানকে দ্বীন না শেখানোর জন্য তাদের জবাব দিতে হবে। তবে কেউ যদি দ্বীন শেখায়, কিন্তু সন্তান নিজের দোষে বিপথগামী হয় সেক্ষেত্রে পিতাকে দোষ দেয়া যায় না। যেমন আমাদের দেশের বিখ্যাত একজন আলেমের ছেলে বিপথগামী হয়েছে, অথচ পিতা তাকে মাদ্রাসায় পড়িয়েছেন। এমন দুর্ভাগা কিছু থাকেই।

 

মাদ্রাসায় শিক্ষা দিলেই দ্বীন শিখবে এমন না। মাদ্রাসা হচ্ছে ইলম শেখার জায়গা। আমল, তাকওয়া এসব শিক্ষা পরিবার থেকে দেয়া প্রয়োজন। মাদ্রাসায় পড়া কত দাড়ি টুপিওয়ালা সেকুলার দেখেছি। তাদের পিতা-মাতার আশা ছিল ছেলে আলেম হবে, মাওলানা হবে, মাওলানা ঠিকই হয়েছে তবে সেটা সেকুলারদের মাওলানা (অভিভাবক)।

 

আল্লাহ আমাদেরকে যে আমানাহ দিয়েছেন, সেই মূল্যবান আমানাহ "সন্তান"দের উপযুক্ত ভাবে বড় করে তোলার তৌফিক দিন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

একসময় নাচ, গান, বাজনা এসব করত সমাজের পতিতারা। এদের বাঈজী বলা হত। যারা ছোট ছোট পোশাক পড়ে মনিবের সামনে নাচ গান করত, অশ্লীল অঙ্গ ভঙ্গী করত। বাঈজীরা সবাই যে অধিকারভুক্ত দাসী ছিল তা না, তারা মূলত এক প্রকার পতিতা ছিল। এদেরকে সমাজের উচু স্তরের মানুষেরা যৌন সঙ্গমেও ব্যবহার করত। তবে বাঈজীদের মূল কাজটা ছিল নাচা গানা করা। টাকার বিনিময়ে বিনোদিত করা। বিভিন্ন নাচ গানের আসর জমানো হত তাদের নিয়ে এসে।

 

বলিউডের যাত্রা শুরু হয়েছিল বাঈজীদের দিয়ে। ঢাকাতেও অভিনয় শুরু হয়েছিল নবাব পরিবারের বাঈজীদের দিয়ে। কারণ তৎকালীন কালে কোনো ভালো ঘরের মেয়েকে অভিনয় করানোর জন্য রাজি করা যেত না। অথচ তখনকার অভিনয় ছিল অনেক রক্ষণশীল এখনের তুলনায়। অভিনয় যারা করত তাদের বলা হত নট, নটী। গ্রামাঞ্চলে এখনো নটী বলতে অসৎ চরিত্রহীনা নারীকে বোঝানো হয়।

 

অথচ আজকের যুগে নারীরা স্বপ্ন দেখে বাঈজী হওয়ার। নটী হওয়ার।

 

অশ্লীল নাচা গানা আর অভিনয়ের জন্মই হয়েছে জমিদারদের পতিতালয়ে। হ্যাঁ, নিজের অধিকারভুক্ত দাসীর বাদ্যহীন গান, নাচ দেখাতে সমস্যা নাই। কিন্তু আমি বলছি বাঈজীদের কথা। দাসীরা তো শুধু তার মনিবের মনোরঞ্জন করে, আগের কালের বাঈজীরাও শুধুমাত্র তাদের মালিকের সামনে নাচা গানা করত, রাস্তায় দাঁড়িয়ে তো করত না। অথচ এখনের নটী নর্তকীরা হচ্ছে জাতীয় বাঈজী। ছেলে, বুড়ো সবাইকে তারা মনোরঞ্জিত করে। আগেকার বাঈজীরাও এতো নির্লজ্জ ছিল না।

 

লজ্জা, হায়া তো এমন জিনিস যা পুরুষ মানুষের মধ্যেও থাকতে হয়। আর নারীদের মধ্যে এটা যত বেশি থাকবে তার নারীত্ব আর সৌন্দর্য পূর্ণতা পাবে। আফসোস যে বর্তমানে একটা বাচ্চা মেয়েও বড় হয়ে জাতীয় বাঈজী, নটী হওয়ার স্বপ্ন দেখে। আমাদের ঘরেই তো বাঈজীদের আড্ডাখানা (টেলিভিশন) সাজিয়ে রেখেছি, পুরো পরিবার একসাথে বসে এসব দেখতেও লজ্জা করে না!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কারো জন্য সবচেয়ে ভালো উপহার হচ্ছে তার জন্য দুয়া করা। এই অভ্যাসটা আল্লাহর দয়ায় আছে, আমার কাউকে ভালো লাগলেই তার জন্য দুয়া করি, খারাপ লাগলেও হেদায়েতের দুয়া করি। রাস্তায় চলতে ফিরতে একটা বাচ্চাকে দেখে ভালো লাগলে দুয়া করে ফেলি, "হে আল্লাহ বাচ্চাটা যেন দ্বীনের উপর বড় হয়"। কোনো বিখ্যাত ফাসেক কিংবা কাফের সেলিব্রেটির নাম শুনলে বা স্মরণ হলেই তার হেদায়েতের দুয়া করি। আমার অমুসলিম সহপাঠীদের হেদায়েতের জন্য দুয়া করি। ফেসবুকে কারো লেখা ভালো লাগলে শেয়ার করার আগে প্রথমে তার জন্য দুয়া করি। কোনো ইসলামের দুশমনের নাম শুনলেই তার জন্য লানতের দুয়া করি।

 

এই দুয়া করা আমাকে আত্মিক প্রশান্তি দেয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমাদের কিছু ভাই হেদায়েত পাওয়ার পর নিজের প্রতিভার ব্যাপারে উদাসীন হয়ে যান। আশ্চর্য তো এটাই যে যখন ইসলামের ব্যাপারে উদাসীন ছিলেন তখন ভোগবাদী দুনিয়াকে বিনোদিত করতে নিজের প্রতিভার সর্বোচ্চ ব্যবহার করতেন। অথচ ইসলামে আসার পর সেই প্রতিভাকে ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর জন্য ব্যয় করছেন না।

 

আমি তো সেইসব দুনিয়ার গোলামদের দেখে অবাক হই, যারা দুনিয়ার জন্য কত পরিশ্রম করছে, শুধুমাত্র দুনিয়ায় ভালো থাকার জন্য কত কি করছে, মানুষের কত গালি খাওয়া সত্ত্বেও তারা পিছপা হচ্ছে না। অথচ আমরা আখিরাতের জন্যও তাদের মত এতো দৃঢ়চেতা হতে পারব? ওরা তো দুনিয়ার জন্য হলেও "মানুষ কি বলবে"-কে বুড়ো আঙ্গুল দেখাতে পেরেছে, আমরা আখিরাতের জন্য হলেও কি কনিষ্ঠ আঙ্গুল দেখাতে পারি না?

 

আগে কবিতা লিখলে ইসলামে আসার পর কবিতা লেখা ছেড়ে দিতে হবে এমন না, কেউ যদি মনে করে ইসলামচর্চার জন্য ক্ষতিকর হবে তবে ভিন্ন কথা। ইসলামে আসার পর তো বউ পরিবর্তন করেন না, বরং বউকে সংশোধনের চেষ্টা করেন। সংশোধনে একেবারেই ব্যর্থ হলে ভিন্ন কথা। যার কবিতা লেখার প্রতিভা আছে তার প্রতিভা তো শুধু অশ্লীল কবিতা লেখার জন্য আল্লাহ দেন নি, তাই না? যে নজরুল দেব দেবীর গুণকীর্তন লিখত, একই হাতে তো দারুণ সব ইসলামী কবিতা লিখত তাই না? এর মানে প্রতিভা শুধু খারাপ কাজে বেশি বেরোয় তা না, বরং প্রতিভাকে ভালো কাজে ব্যবহার করতে চাইলে করা যায়। কিন্তু আমরা হয়তো চাই না। আমরা মনে করি প্রতিভার স্রষ্টা প্রতিভা দেন শুধু খারাপ কাজে ব্যবহারের জন্য। এইজন্য প্রতিভাকেই আমরা হারাম মনে করে ফেলি।

 

ইসলামে আসার পর আপনার চিন্তাধারা যেহেতু পরিবর্তন হয়ে গেছে আশা করা যায় কবিতা লিখা অব্যাহত রাখলেও সেখানে আপনার

ইসলামী চিন্তাধারার প্রভাব থাকবেই।

 

যারা ভালো লিখতে পারেন তারা আল্লাহর জন্য হলেও এই প্রতিভাকে দাওয়াতি কাজে ব্যবহার করুন।

যাদের কণ্ঠ ভালো তারা মিউজিকবিহীন নাশীদের চর্চা করুন।

যারা কবিতা লিখতে জানেন তারা ইসলামের জন্য কবিতা লিখুন।

যারা ক্যামেরার সামনে খুব সুন্দর করে কথা বলতে পারেন তারা ইসলামিক ইউটিউবার হন।

 

আরেকটা কথা, আপনার প্রতিভা যেন ঈমান আমলের জন্য ক্ষতিকর না হয়! অনেক নাশীদ গায়কদের অধঃপতনের কথা তো আমরা জানি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই শুধুমাত্র উলামাদের সোহবত ও তাদের থেকে দীর্ঘদিন সরাসরি শিক্ষালাভের মাধ্যমেও উচু পর্যায়ের আলিম হওয়া যায়।

 

হানাফীদের মধ্যে বাংলাদেশের 'প্রফেসর হযরত' খ্যাত হামিদুর রহমান সাহেব, এবং সালাফিদের মধ্যে পাকিস্তানের ড. মুরতাজা বাকশ উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

একটা হাদিস পড়েছিলাম, হাদিসটা এরকম, একবার এক সাহাবী জিজ্ঞেস করেছিলেন স্ত্রীর সাথে যৌন সঙ্গম করলে সাওয়াব হবে কিনা? তখন আল্লাহর রসুল সাঃ বলেছিলেন, তুমি যদি হারাম উপায়ে অন্য কারো সাথে যৌন সঙ্গম করতে তাহলে কি গুনাহ হত না? সাহাবি বললেন, হা, হত। তখন আল্লাহর রসুল বললেন, তাহলে হালাল উপায়ে করলে কেন সাওয়াব হবে না?

 

এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, মুমিন তার প্রতিটি হালাল কাজের জন্য সাওয়াব পেতে থাকে। সেই হিসেবে হালাল খাদ্য আহার করলেও সাওয়াব হওয়ার কথা। আমার একটা ইচ্ছে আছে, জীবনে সব রকম হালাল গোস্ত ও খাবার টেস্ট করার।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

নিজের বংশ সম্পর্কে জানা, শিক্ষা করা, এটা ইসলামী ঐতিহ্য। সাহাবিরা বংশবিদ্যার চর্চা করতেন। আবু বকর, উমার রাঃ এর মত বড় বড় সাহাবীরা এসব চর্চা করতেন। কিন্তু আজকে আমরা বংশবিদ্যার চর্চা ছেড়ে দিয়েছি। অনেকে আবার এটাকে বংশ নিয়ে অহঙ্কার মনে করি।

 

বংশ ও আত্মীয়তার লতা পাতা সম্পর্কে জানার একটা সুবিধা হচ্ছে, অনেক দূরের আত্মীয়দের সম্পর্কেও জানা যায়।

 

আমরা বর্তমানে ৩ পুরুষের উপরে জানতে পারি না। এর একটা কারণ অবশ্য আমাদের এখানে গোত্র সিস্টেম ছিল না। আরবে গোত্র সিস্টেম থাকায় তারা একেবারে ২০-৩০ পুরুষ পর্যন্ত নাম জানে। বংশবিদ্যাকে আপনি বে-কার বিদ্যা মনে করলেও কিছু কিছু সময় এর জরুরিয়াত ভালোই বোঝা যায়। যেমন খলীফা হওয়ার জন্য কুরাইশ হওয়া শর্ত। কোনো কুরাইশ যদি নিজের বংশলতিকাই না জানে তাহলে তো এটা সম্ভব হবে না। নবীর বংশধরদের একটা আলাদা মর্যাদা আছে, বংশলতিকা রক্ষা না করলে সত্যিকারের সায়্যিদদের খোঁজ পাওয়া যাবে না। আর ভন্ড সায়্যিদদের জন্য এটা বড় সুযোগ যে বংশলতিকা ঠিক ভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি। সত্যিকারের সায়্যিদ হলেই বা কিভাবে প্রমাণ করবে যদি বংশবিদ্যা সম্পর্কে না জানে?

 

এজন্য দীনী ভাইদের বলব, আপনারা নিজের বংশ সম্পর্কে জানুন। যত ঊর্ধ্বতন পুরুষ পর্যন্ত নাম উদ্ধার করা যায়, করুন। মুরুব্বিদের থেকে তথ্য নিন। শুধু পিতার বংশ না। মায়ের বংশ, দাদীর, নানীর বংশ সম্পর্কেও জানুন। এগুলো লিখে রাখুন পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। ছেলে-মেয়েদেরকেও এসব শিক্ষা দিবেন।

 

একজন সাহাবির কওল আছে, সম্ভবত ইবনে আব্বাস হবে, তিনি বংশবিদ্যা চর্চা করতে বলেছিলেন, কারণ এর মাধ্যমে আত্মীয়তার অনেক দূর পর্যন্ত সম্পর্ক রক্ষা করা যায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সুদ

 

১- আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার শামিল।

 

২- সুদখোর, সুদদাতা, সুদের সাক্ষী ও সুদের লেখক সবার উপর রাসুলের লানত।

 

৩- সুদের ৭৩ টি স্তর, সবচেয়ে নিম্নস্তর হচ্ছে মায়ের সাথে যিনা করা।

 

৪- সুদ হারাম, সুতরাং সুদ ভক্ষণে শরীর হারাম দিয়ে গড়ে উঠে।

 

৫- হারাম ভক্ষণকারীর ইবাদত, দুয়া কিছুই কবুল হয় না।

 

# আখিরাত বরবাদ করতে চাইলে সুদের সাথে জড়িত হওয়ার চেয়ে ভালো অপশন বর্তমান সমাজে দ্বিতীয়টা নাই।

 

সুদ হচ্ছে চুরি, ডাকাতি, ব্যভিচার, ধর্ষণ, হত্যা, শুকরের গোস্ত খাওয়া এইসবগুলোর চেয়ে বড় অপরাধ। এক নাম্বারটা দেখুন, আল্লাহ ও আল্লাহর রসুল যুদ্ধের জন্য আহবান জানিয়েছেন। এর চেয়ে ভয়াবহ আর কি হতে পারে? তবু অনেকে ব্যাংকের চাকুরি জায়েজ করার জন্য কত রকমের যুক্তি দেখাবে!

 

১. আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

 

যদি তোমরা (সুদ) পরিত্যাগ না করো তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও। (সূরা বাকারা- ২৭৯)

 

২. অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

 

যারা সুদ খায় তারা ঐ ব্যক্তির ন্যয় দণ্ডায়মান হবে যাকে শয়তান স্পর্শ দ্বারা উন্মাদ করে দিয়েছে। এটা এ কারণে যে তারা বলে, ক্রয় বিক্রয় তো সুদের মত। অথচ আল্লাহ তা‘আলা ক্রয় বিক্রয়কে হালাল করেছেন আর সুদকে হারাম করেছেন। (সূরা বাকারা- ২৭৫)

 

৩. আবূ জুহাইফা রাযি. থেকে বর্ণিত,

 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি সুদ খায় এবং যে ব্যক্তি সুদ দেয় উভয়ের উপরই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন। (সহীহ বুখারী; হা.নং ৫৯৬২)

 

৪. অন্য এক হাদীসে রয়েছে,

 

যে ব্যক্তি সুদ খায়, যে ব্যক্তি সুদ দেয়, যে ব্যক্তি সুদের সাক্ষী হয় এবং যে ব্যক্তি সুদের লেখক হয় সবার উপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন। (সুনানে আবূ দাউদ; হা.নং ৩৩৩৩)

 

৫. সামুরা ইবনে জুন্দুব রাযি. বর্ণনা করেন,

 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি রাতে স্বপ্ন দেখি, দু-ব্যক্তি আমার কাছে এসে আমার হাত ধরল এবং আমাকে তারা একটি পবিত্র ভূমিতে নিয়ে গেল। আমরা হাঁটছিলাম, সহসা এক রক্ত নদীর তীরে গিয়ে উপস্থিত হলাম। নদীটির মাঝে এক ব্যক্তি দণ্ডায়মান রয়েছে। তার সম্মুখে পাথর। নদীর তীরে এক ব্যক্তিকে দেখা গেল। রক্ত নদীতে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটি যেই নদীর তীরে উঠার জন্য সামনে অগ্রসর হয় নদীর তীরে দাঁড়ানো ব্যক্তিটি অমনি তার মুখে পাথর মেরে তাকে পূর্বের জায়গায় ফিরিয়ে দেয়। এমনিভাবে যখনি সে তীরে উঠে আসতে চায় তখনি তার মুখে পাথর মেরে পেছনে পাঠিয়ে দেয়। আমি বললাম, ব্যাপারটি কি? তখন তারা বললেন, রক্ত নদীর মাঝে যে ব্যক্তিটিকে দেখছেন সে হলো সুদখোর। (সহীহ বুখারী; হা.নং ২০৮৫)

 

৬. হাদীসে আরো বর্ণিত হয়েছে,

 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সুদের তেহাত্তরটি স্তর রয়েছে। তার মধ্য হতে সর্বনিম্ন এবং সহজতম স্তর হলো, আপন মায়ের সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া। (সুনানে ইবনে মাজাহ; হা.নং ২২৬৫)

 

৭. আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত,

 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি প্রায়শই দীর্ঘ ভ্রমণে থাকে এবং কেশ থাকে এলোমেলো এবং আকাশ পানে হাত তুলে বলে, হে আমার রব! হে আমার রব! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোষাক হারাম এবং ভরণ পোষণও হারাম। এব্যক্তির দু‘আ কিভাবে কবুল হবে। (সুনানে তিরমিযী; হা.নং ২৯৮৯)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বাচ্চাদের মারধোর করা জঘন্য রকমের জাহেলিয়াত। বাচ্চারা নিষ্পাপ, অথচ তাদেরকে মার খেতে হয় পাপী বালেগদের হাতে। মার খাওয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত যদি কেউ থেকে তবে তারা হচ্ছে প্রাপ্তবয়স্ক পাপীরা, তারাই তো পুরো দুনিয়াকে পাপ আর অপরাধ দিয়ে বসবাসের অনুপযোগী করে তুলেছে। কিন্তু কে তাদের মারে?

 

হ্যাঁ, বাচ্চাদের শাসন করা দরকার আছে। অবাধ্য বাচ্চাদের ঠিক করতে হালকা করে মারেরও দরকার আছে। কিন্তু পড়ার জন্য মারা কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়। পড়া না পারুক, পড়ে থাকুক, আপনি বাচ্চার গায়ে হাত দেয়ার অধিকার রাখেন না উপযুক্ত কারণ ছাড়া।

 

অনেকবার বলা সত্ত্বেও বাচ্চা কথা না শুনলে, ফরজ তরক করলে, হারামে লিপ্ত হলে তখন আপনি বকার সাথে হালকা মাইর দিতে পারেন। রসুল সাঃ নামাজের জন্য বাচ্চাকে শাসন করতে বলছেন। কিন্তু কত বছর বয়সে? খেয়াল করুন ১০ এর পরে। কিন্তু ১০ এর পরে কতটা বাচ্চাকে মারা হয়? ১০ এর আগেই তো বেশিরভাগ বাচ্চাকে মারা হয়। ফরজ ইবাদতের জন্য যদি ১০ এর পরে মারা জায়েজ হয় (তাও আবার পাগলা পিটান না, হালকা ধরণের মাইর) তাহলে এমন কোন কারণ থাকে যে কারণে ১০ এর আগেই মারধোর করা যায়?

 

আমাদের অবস্থা উল্টা, আমরা ছোট বাচ্চাদের বেশি মারি, যখন বড় হতে থাকে, মাইরও কমতে থাকে। ১২-১৩ এর পর তেমন আর মাইরও দেয়া হয় না। অথচ তখনই মাইর দেয়ার উপযুক্ত সময়। ইচ্ছাকৃত ভাবে নামাজ না পড়া, হারামে লিপ্ত হওয়া এসব কারণে মারা যায়, মারা উচিত। কিন্তু কখনোই নফল ইলম অর্জনের জন্য মাইর দেয়া উচিত না, ছোট বাচ্চাদের তো আরোই না।

 

আমরা খুব সাধারণ কারণেই মারধোর করি। ফলে অবাধ্য বাচ্চাদের কম মাইরে কথা শোনান যায় না। কঠিন রকমের মাইর না দিলে তখন তারা আর কথা শোনে না, কারণ আমরা ছোট ছোট বিষয়ে মাইর দিয়ে তাদের মাইরে অভ্যস্ত করে তুলি। এজন্য "কারণ ছাড়াই মাইর" এর অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সালেহ আল মুনাজ্জিদও ইঞ্জিনিয়ার। বাংলাদেশের এক আলেমও বিমানবাহিনীতে ছিলেন। এছাড়াও অনেক বহু জেনারেল শিক্ষিত আলেম আমাদের উম্মাহর মাঝে রয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আপনার সহজ সরল বৈশিষ্ট্যকে আমি শ্রদ্ধা করি। কিন্তু একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, এতো সহজ সরল হবেন না যে মানুষ আপনাকে বোকা ভাবে। যে বিষয়টা বুঝবেন না সেটা নিয়ে কথা বলার দরকার নাই। বক্তার কথার অর্থ না বুঝলে, বক্তা কি বুঝাতে চেয়েছেন সেটা না বুঝলে, তার থেকে জেনে নিন সে কি বোঝাতে চায়। আপনার 'ভুল' বুঝের ভিত্তিতে তাকে বিচার করবেন না। এটা আজ অহরহ হচ্ছে বক্তা বুঝাতে চেয়েছেন একটা, শ্রোতা বুঝছে আরেকটা। এরপর ভুল বুঝের ভিত্তিতে বক্তার বিচার করা হচ্ছে। তাই নিজের সহজতা সরলতা দিয়ে অন্যকে মাপবেন না, কারণ দুনিয়াটা জিলাপীর প্যাঁচের মত।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আগে বাবা-চাচা, মা-খালার বয়সীদের চাচা, চাচাজান, খালা, খালাম্মা, খালু এসব ডাকা হত। এখন ডাকি আন্টি, আঙ্কেল এসব। ইংরেজি ও পাশ্চাত্যের প্রভাব। আরেকটা বিষয় লক্ষণীয়, আমরা রিক্সাওয়ালা, গরীব শ্রেণীর মানুষদের চাচা, মামা বেশি ডাকি, তাদের কিন্তু আঙ্কেল ডাকি না। কারণ আমরা মনে করি আঙ্কেল হওয়ার জন্য স্যুটেড বুটেড হতে হবে, শিক্ষিত হতে হবে, অন্তত শহুরে হতে হবে।

 

অর্থাৎ চাচা, মামা এসবকে ক্ষ্যাত শব্দ মনে করি। পাশ্চাত্যের কতটা প্রভাব আমাদের সমাজে পড়েছে। আমরা নিজেদের ভাষার শব্দ নিয়েও কত হীনমন্য হয়ে গেছি!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আলেম আমলদার কিনা সেটা তার বয়ান শুনলেই বোঝা যায়। মুশ্তাকুন্নবী সাহেবের বয়ান শুনতে পরামর্শ দিব।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ওয়াহাবি শব্দটা আমরা গালি মনে করলেও একসময় ওয়াহাবি বলতে কাফেরদের বিরুদ্ধে সংগ্রামরত মুসলিম মুজাহিদদের বোঝানো হইত। ইংরেজরাও এই শব্দ ব্যবহার করছে। এটা শুধু সেসব মুসলমানের জন্য ব্যবহার করত যারা ইংরেজদের বিরুদ্ধে ছিল। কারণ ইংরেজদের পক্ষেও একদল ফ্রড মাসুদ ছিল।

 

ওয়াহাবি বলতে শুধু ইবনে আব্দিল ওয়াহহাবের অনুসারীদের বোঝানো হইত তা না। বরং হানাফীদেরও বোঝানো হইত। ওয়াহাবীদের এক মরণপণ জিহাদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এক হানাফী, সাইয়িদ আহমাদ শহীদ। তীতুমীরকেও বলা হইত ওয়াহাবী, আরও অনেক প্রমাণ আছে। আজকেও ওয়াহাবী বলতে শুধু সালাফী বোঝায় না, বরং জিহাদের চেতনা রাখা সকলকেই ওয়াহাবী বলা হয়। ওয়াহাবী বলার একটা দীর্ঘ ইতিহাস আছে। ওয়াহাবী শব্দের সাথে লেপ্টে আছে জিহাদের ময়দানের ধুলাবালি।

 

মাদখালীদের ওয়াহাবী বললে ওয়াহাবী শব্দের অপমান হয়। ১০০-২০০ বছর আগের প্রত্যেক সালাফী ওয়াহাবী ছিলেন, কিন্তু প্রত্যেক হানাফী ওয়াহাবী ছিলেন না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমরা তো প্রতি জুমাবার খুৎবা শুনি। কিন্তু আমাদের মা-বোনদের সেই সুযোগটা হয় না। তাই আমাদের উচিত খুৎবার সারাংশটা যেন বাসায় এসে তাদের বলি। আরেকটা অনুরোধ, আমরা যেন প্রতি জুমার খুৎবার সারাংশ যে যতটুকু পারি ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার চেষ্টা করি। পূর্বের এক পোস্টে অডিও/ভিডিও করার কথা বলেছিলাম, কিন্তু সেটা সবার পক্ষে সম্ভব না হলেও যেটা আজকে বললাম সেটা সবার পক্ষেই সম্ভব।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

শ্বশুর বাড়ি থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন। এতো কাছেও না যে কোলে উঠে যায়, আবার এতো দূরেও না যে আত্মীয়তার হক নষ্ট হয়। # নববিবাহিত ভাইদের জন্য গোল্ডেন টিপ, ভবিষ্যৎ বিবাহিতদের জন্য ডায়মন্ড টিপ। আর বিবাহিতদের জন্য আফসোস।

 

 

ব্যাখ্যাঃ কোনো দীনী পরিবারে বিয়ে করলে ভালো কথা। আশা করা যায় দীনী পরিবারের লোকদের এসব বিষয়গুলোর বুঝ আছে। আমি সাধারণ ফ্যামিলিগুলার কথা বলছি যাদের কমনসেন্স নাই বা অনেক ঘাটতি।

 

মেয়েকে বিয়ে দিছে মানে এখন মেয়ের অভিভাবক তার স্বামী। কিন্তু শ্বশুর বাড়ির লোকেরা যদি মেয়ের পরিবারের উপরে প্রভাব সৃষ্টি করার চেষ্টা করে সেটা কোনো পুরুষই সহ্য করবে না। অন্তত আত্মসম্মানবোধওয়ালা পুরুষের জন্য এটা লজ্জার যে স্ত্রী তার স্বামীর কথা না শুনে নিজের পরিবারের কথায় বেশি মনোযোগী। এর ফলে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে শ্বশুর বাড়ির মহিলারা চায়, তাদের মেয়ে স্বামীকে বশ করে রাখুক, নিয়ন্ত্রণ করুক, এইজন্য নানা রকম বুদ্ধি প্রদান করে থাকে। (বাঙলাদেশী সাধারণ ফ্যমিলিগুলো সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে অজানা নয়)

 

আরেকটা সমস্যা হচ্ছে, বউ চায় তার বাড়ির লোকদের সাথেই শুধু আত্মীয়তা থাকুক। কিন্তু স্বামীর বাড়ির আত্মীয়রা আসলে স্ত্রী নাখোশ হয়। শেষ পর্যন্ত দেখা যায় স্বামীর বাড়ির আত্মীয়দের সাথে যোগাযোগ কমে যায়, তখন আত্মীয়তা বলতে স্ত্রীর বাড়ির আত্মীয়ই থাকে। অথচ স্বামীর ভাই বোন, মা-বাবার কোনো খোঁজ খবর নাই। এগুলো সবার ক্ষেত্রে ঘটে না, তবে বেশিরভাগই।

 

এইজন্য পুরুষদের উচিত ব্যালেন্স করে চলা। নিজের বাড়ির আত্মীয়দের গুরুত্ব দেয়া, স্ত্রী যতই নাখোশ হোক। আর স্ত্রীর পরিবারের সাথেও সম্পর্ক রেখে চলা তবে এতো ঘনিষ্ঠতা কখনোই না যে তাদের দ্বারা সে নিয়ন্ত্রিত হবে।

 

শ্বশুর বাড়ির থেকে যে কোনো প্রকার সুবিধা গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা উচিত। কারণ অনেক সময় তারা এতো বেশি সুবিধা দিতে চায় যে আপনি নিজের অজান্তেই তাদের গোলামে পরিণত হবেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমার এতো নিরীহ পোস্টেও রিপোর্ট দেয়া লাগে? শ্বশুর বাড়ির বিরুদ্ধে পোস্ট দেয়ায় কার জানি শ্বশুর বাড়ির গায়ে লাগছে, রিপোর্ট করে উধাও করে দিছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চিন্তার চর্চা বাড়াইতে হবে। চিন্তাশীল মুসলিম হতে হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যারা দাড়ি রাখতে চান কিন্তু গালে দাড়ি উঠে না তাদেরকে খুব ভাগ্যবান মনে হয়। কারণ দাড়ি না রেখেও দাড়ির সাওয়াব পেয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু যাদের দাড়ি উঠে, তাদের জন্য এটা পরীক্ষা, বিশেষ করে যারা জাহেলী পরিবার, সমাজ নিয়ে বাস করে, জাহেলী বৃত্তের মধ্যে বন্দী। শয়তানের নানা রকম ওয়াসওয়াসা আসে, মনে হয় দাড়িটা একটু সাইজ করি, একটু ছোট করি, হালকা করে ছাটি। এই হিসেবে দাড়িহীনরা অনেক অনেক ভাগ্যবান।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

জুমাবার আমাদের জন্য একটু স্পেশাল। এই দিনকে বলা হয়েছে সাপ্তাহিক ঈদ। অন্য ৬ দিনের চেয়ে একটু আলাদা ভাবে পালন করা চাই। এইদিন একটু ভালো পোশাক, একটু ভালো খানার আয়োজন থাকা চাই। অন্য ৬ দিনের চাইতে যেন একটু আলদা, একটু আনন্দের দিন মনে হয়। জুমার দিনের একটি বিশেষ আমল সূরা কাহফ। দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচতে সূরা কাহফের প্রথম ১০ আয়াত পড়ার কথা বলা হয়েছে।

 

জুমাবার আমাদের জন্য একটু স্পেশাল। এই দিনকে বলা হয়েছে সাপ্তাহিক ঈদ। অন্য ৬ দিনের চেয়ে একটু আলাদা ভাবে পালন করা চাই। এইদিন একটু ভালো পোশাক, একটু ভালো খানার আয়োজন থাকা চাই। অন্য ৬ দিনের চাইতে যেন একটু আলদা, একটু আনন্দের দিন মনে হয়। জুমার দিনের একটি বিশেষ আমল সূরা কাহফ। দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচতে সূরা কাহফের প্রথম ১০ আয়াত পড়ার কথা বলা হয়েছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আপনারা যারা শুদ্ধ করে কুরআন পড়তে পারেন, তারা মাঝেমধ্যে তিলাওয়াত অডিও ভিডিও করে ইউটিউব, ফেসবুকে আপলোড দিবেন। আপনার মৃত্যুর পরও সেখান থেকে নেকি মুনাফা পেতে থাকবেন।

 

বাংলাদেশে একজন কারী আছেন যার তিলাওয়াত মিশারী রশীদের চেয়েও উত্তম। আফসোস যে তিনি জনপ্রিয় নন, আর এদেশী মাল হলে তো দামই দেয় না কেউ।

 

আপনার মধ্যেও কোনো মিশারী রশীদ লুকিয়ে আছে কিনা দেখুন! মিশারী রশীদের কথা মাঝেমধ্যে চিন্তা করি। লোকটার কি ভাগ্য, কোটি কোটি মানুষ তার তিলাওয়াত শুনে। সাওয়াবের পাহাড় গড়ে ফেলতেছে। শুদ্ধ তিলাওয়াত না হলে আবার আপলোড দিয়েন না, আপনার গুনাহর ভাগ আমি নিতে পারব না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

নাস্তিক বা বিধর্মীদের সাথে তর্ক বিতর্ক করা সবার কাজ না। উম্মাহর একটা দল থাকবে যারা এই কাজে নিয়োজিত থাকবে। কিন্তু সবার এই কাজে যুক্ত হওয়ার প্রয়োজন নাই।

 

এমনকি নাস্তিকদের খণ্ডন করা বই পড়ারও প্রয়োজন নাই। তবে কেউ যদি দ্বিধাগ্রস্ত হয় সেই অবস্থায় এসব বই পড়বে। কিন্তু কোনো প্রয়োজন ছাড়াই এসব বই পড়া মানে সুস্থ মানুষের রোগ ছাড়াই ওষুধ খাওয়া, রোগ ছাড়া ওষুধ খেলে রিয়েকশন তো হবেই।

 

একদল মানুষ থাকবে যারা এসব কাজে নিয়োজিত হবে, যেমন আরিফ আজাদ, রাফান আহমেদ, মিনার ভাই প্রমুখ আছেন। আর কেউ যদি এই লাইনে যেতে চায় তাহলে সেভাবে নিজেকে গড়ে তুলবে।

 

অনেকাগে একবার আমাকে এক ব্যক্তি বারবার আস্তিক নাস্তিক গ্রুপে এড করে দিচ্ছে যতবার লিভ নেই ততবারই, অথচ সে মুসলিম। গ্রুপে গিয়ে দেখি নাস্তিকদের প্রশ্নের জবাব কেউ ভালো মত দিতে পারছে না।

 

আমি এমন মানুষকেও চিনি যারা এসব গ্রুপে এড হয়ে ঈমানহারা হয়েছে। ঈমান ভাই ছেলেখেলা না। আমার মত দুর্বল ঈমানের মানুষেরা সতর্ক থাকবেন এসব থেকে। কৌতূহল মেটানোরও দরকার নাই। এতো ভাব নিয়ে সাহসী হওয়ার প্রয়োজন নাই, মনের মধ্যে ওয়াসওয়াসা আসলে তওবা করে ফেলবেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বাংলার স্বাধীনতা সিরাজের পতনের মধ্য দিয়েই হয়েছিল তা আমরা জানি। মীর জাফর নিজেও জানতেন না তিনি ক্ষমতার লোভে ইংরেজদের কাছে বাংলাকে বিক্রি করে দিচ্ছেন। মীর জাফর যেটা করেছিল, খুব স্বাভাবিক ছিল তৎকালীন যুগে, ষড়যন্ত্র করে শাসককে মসনদ থেকে নামানোর উদাহরণ সব যুগে, সব রাজার আমলেই ছিল। কিন্তু একটা ব্যতিক্রম ছিল। মীর জাফর বন্ধু (ওয়ালি, অভিভাবক) হিসেবে গ্রহণ করেছিল ইংরেজ কুফফারদের। আর কাফেরদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণের ফলে, তাদের বিশ্বাস করার ফলে মীর জাফর ধোঁকা খায় এবং বাংলার ভূমি কাফেরদের হাতে চলে যায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

শাইখ আওলাকি বলেন, সাহসিকতা আয়ু কমায় না, কাপুরুষতা আয়ু বাড়ায় না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

অনেক ভাই ফেইক আইডি খুলেন সাহাবীদের নামে, যেমন খালিদ বিন ওয়ালিদ, উমার ইবনে খাত্তাব, ইত্যাদি। আমি মনে করি এগুলো সাহাবীদের শানে বেয়াদবী।

 

ব্যাখ্যাঃ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আমরা অনেক ভালোবাসি। তার নামে আইডি খোলা কেমন ভাই? আইডির নাম দেয়া হল "হযরত মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ"? আপনার কাছে কেমন মনে হবে? নবীর নাম দেয়া যদি মারাত্মক বেয়াদবী মনে হয় তাহলে সাহাবীদের নাম দেয়াও হালকা বেয়াদবী হওয়ার কথা। নামের এক অংশ দেয়ার কথা বলি নি, পুরো নাম যারা দেয়।

 

নাম রাখা না, ফেইক আইডির নাম রাখার কথা বলছি। ধরেন, কেউ উমার ইবনে খাত্তাব রাখল। যখন সে কাউকে রিকু দিবে মনে হচ্ছে উমার রাঃ রিকু দিল। এটা বলছি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বউকে যে (অনেক) ভালোবাসেন বউ যেন সেটা জানতে না পারে। জানলে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে আপনাকে কর্পদকশুন্য করে দিবে। (বিয়ে সংক্রান্ত পোস্টগুলা সব মারেফতী। বাতেনী অর্থ নিতে হবে। হেহেহে😃)

 

ব্যাখ্যাঃ বউকে তো ভালোবাসতে হবেই, বউকে ভালো না বাসলে কাকে বাসবে পুরুষ জাতি! তবে ভালোবাসার একটা লিমিট থাকা চাই। বউকে চুমা দেয়া যেমন সুন্নাহ, ঘরের মধ্যে চাবুক/লাঠি ঝুলিয়ে রাখাও সুন্নাহ। বউকে বেশি ভালোবাসা অপরাধ না, তবে বেশি ভালো যদি কেউ বেসেই ফেলে, তবে সেটা যেন বউয়ের থেকে গোপন রাখে। কারণ বেশি ভালো বাসলে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনাই বেশি। আর এই সুযোগটা বউ গ্রহণ করে। উসমানীয় সুলতান সুলাইমান তার স্ত্রীকে এতো বেশি ভালোবাসতেন যে হারাম কাজে লিপ্ত হতেও দ্বিধা করতেন না, বউয়ের হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছিলেন। তাই আবেগের আগে বাস্তবতার দিকে খেয়াল রাখা চাই। বউ চাঁদ চাইলেই স্পেশশিপে করে চাঁদ আনতে চলে গেলে হবে না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমরা জানি আমাদের মরতে হবে। কিন্তু আমাদের চাল চলন, স্বভাব ভঙ্গী দেখে মনে হয় না আমরা বিশ্বাস করি আমাদের মরতে হবে।

 

যুহদের হাদিসগুলোকে সুফিদের বাপের সম্পত্তি মনে করি। নবী ও সাহাবীদের জীবনে যে যুহদ পা থেকে মাথা পর্যন্ত আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িত ছিল সেগুলো আমাদের দ্বারা সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। সমৃদ্ধ মাদানী জীবনেও মদীনার বাদশাহ ছিলেন গরীব তা ভুলে যাই আমরা। যুহদ চর্চাকারীদের আমরা ব্যঙ্গ করি "আঙ্গুর ফল টক" বলে।

 

আমাদের সম্পদ, ক্যারিয়ার আমাদের ধোঁকায় ফেলে রাখে। আমরা বেশি আয় করতে বেশি পরিশ্রম করি, অথচ অল্প আয়েই চলত, আমাদের বেশি আয় করতে হয় কারণ আমরা বেশি ব্যয় করতে চাই, অযথা সব ব্যয়।

 

ভোগবাদী সমাজব্যবস্থার প্রতীক হিসেবে রেস্তোরাঁ, শপিং মলগুলো সগর্বে দাঁড়িয়ে আছে, আমাদের দুহাত তুলে ডাকছে। বিলাসীতা আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। ধনী মানুষের বিলাসীতা সাজে। কিন্তু ফকির যখন বিলাসীতা করে আর অহঙ্কার করে চলাফেরা করে, তখন আল্লাহর কাছে সেই গরীবের প্রতি রুষ্ট হন ধনীর চেয়েও বেশি। যার ধন সম্পদ আছে তার অহঙ্কার মানায়, কিন্তু ফকিরের আবার কিসের অহঙ্কার!

 

মৃত্যুকে স্মরণ রাখতে বলা হয়েছে। অথচ মৃত্যুর স্মরণ করলে আমাদের এমন ভোগবাদী চরিত্র প্রকাশ পেতো না।

 

নিজের জন্যই নসীহত।

 

 

 

 

 

 

 

 

মুসহাফে উসমানী।

 

আমি মুসহাফের ব্যাপারে "ক্ষেপা আল্লামা" মুহাম্মাদ বিন ইউসুফ আল কাফীর মতাদর্শী। এই ব্যাপারে একদিন পোস্ট দিব। এমন একটা বিষয় যেটা কেউ আলোচনা করে না।

 

তার মতাদর্শ না কিন্তু, মুসহাফের ব্যাপারে তার মতাদর্শ মানি। তিনি নুকতা, হরকত দিয়ে কুরআন পড়াকে নাজায়েজ বলেন। অবশ্য আমি বলি না। তবে উত্তম মনে করি এবং মুসহাফে উসমানীর হুবহু কুরআন শিক্ষার প্রসার ঘটানোর পক্ষপাতি। ইমাম মালেকও একই রকম বলতেন।

 

তবে আল্লামা কাফী বাড়াবাড়ি করেন। তিনি একজন সিরিয়ান আলেম। গত শতকের। তাকফীরী প্রকৃতির ছিলেন। মতের বিরুদ্ধে গেলেই তাকফীর করতেন। পৃথিবী ঘুরে বিশ্বাসীদের এবং নুকতা হরকত সহ কুরআন পড়ার পক্ষপাতীদের তাকফীর করতে দ্বিধা করেন নাই। আবু গুদ্দাহ রঃ ঘনিষ্ঠ মুরুব্বি ছিলেন। উনার সম্পর্কে তিনি চিরকুমার উলামায়ে কেরামে লিখেছেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যে আব্দুল মালেক সাহেব ছবি তোলা পছন্দ করেন না, তার ভক্তরা তার ছবি প্রোপিকে দিয়ে রাখে। এটা বর্তমান কালের ভক্তদের অবস্থা! ভক্ত অনুসারীরাই ব্যক্তির বিপদের জন্য যথেষ্ট, শত্রুর দরকার নাই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সেকুলার ও নাস্তিকরা বলে, প্রকৃতির দান। আমরা বলি, তোমার প্রকৃতিকে আমার আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

একসাথে দুই পতাকার ভালোবাসা হৃদয়ে স্থান পাওয়া সম্ভব না। যারা বাংলাদেশের পতাকা গায়ে পিঠে জড়িয়ে গর্ববোধ করেন তাদের কাছে কালো পতাকা বিভীষিকার নাম, আইএসের পতাকা ভাবেন। দুই পতাকা দুই আদর্শের ধারক। আপনি যতই লাল সবুজের পতাকায় ইসলামের রং মারেন, এটা আদতে ইসলামের পতাকা হবে না।

 

বিজয় দিবস কিংবা এসব দিবসের শুভেচ্ছা জানানো দূরে থাক, এগুলোকে উপলক্ষ হিসেবে নেয়ারও ঘোর বিরোধিতা করি। চট্টগ্রামে এই দিবসকে উপলক্ষ করে ইসলামী বইমেলা হচ্ছে। উপলক্ষ অন্য কিছুকে করা যেত।

 

মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মধ্যে যতই ইসলামের বয়ান ঢোকান এটা দুই মুসলিম রাষ্ট্রের দুই সেকুলার ব্যবস্থার গৃহযুদ্ধের চেয়ে বেশি কিছু হবে না। ইসলামের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করতে গেলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বের হয়ে যাবে, আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ঢুকালে ইসলামের ততটুকু চেতনা দিলে অবশিষ্ট থাকবে যতটুকু সেকুলার রাষ্ট্রব্যবস্থার জন্য হুমকি নয় অর্থাৎ সেকুলার কাঠামোর মধ্যে আবদ্ধ এক ইসলাম।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এই পোস্টের ব্যাপারে কিছু বলব না, শব্দতরু নির্ভরযোগ্য, বইয়ের তাহকীক যিনি করছেন তিনিও নির্ভরযোগ্য।

 

তবে অন্য একটা বিষয় বলি, ইসলামী বই বিপ্লবের পর অবস্থা এমন হয়েছে অনেক সুযোগসন্ধানী ব্যবসার উদ্দেশ্যে অনৈসলামী বইও ইসলামী বই নামে চালানো শুরু করছে। সামনে আরও হবে বলেই মনে হচ্ছে। ইসলামী বই নাম দিয়ে যদি রবীন্দ্রনাথের বইও বিক্রি হয় অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পিঠ বুক পেতে দেয়ার মাধ্যমে আমরা বর্তমানে সবচেয়ে বড় জিহাদটা করছি (!)

 

প্রসঙ্গঃ কোন আল্লামা নাকি বলছেন, পিঠ বুক পেতে দেয়াই সবচেয়ে বড় জিহাদ। হায় উম্মাহ, হায় উলামা!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমরা মন্দ জিনিস ভাইরাল করি। কিন্তু ভালো কিছু ভাইরাল করি না। আমরা বিতর্কিত বিষয়গুলোর স্ক্রিনশট নিই, তা পোস্ট করি। কিন্তু কখনো ভালো পোস্টের স্ক্রিনশট নেই না, প্রচার করি না।

 

আলহামদুলিল্লাহ এখন পর্যন্ত কোনো মন্দ জিনিস ভাইরাল করার কাজে অংশ নিয়েছি বলে মনে পড়ে না।

 

 

 

 

 

 

 

 

মদীনার শেষ সিপাহসালার ফখরুদ্দীন পাশা সম্পর্কে আবু আব্দুল্লাহ ভাইয়ের লেখাটি পড়তে পারেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

মাহর অত্যাধিক চাওয়ার অধিকার নারীদের আছে, আপনারও বিয়ে করা / না করার স্বাধীনতা আছে। তাই আপনার ইচ্ছা হইলে করেন নাইলে কইরেন না।

 

কারণ আপনি যদি আসলেই দ্বীনদার হন যাকে বিয়ে করতে গেছেন সে আপনার যোগ্য না। এতো অত্যাধিক মাহর দাবি করা যুহদ-পরিপন্থী।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সুন্নতী গোসলে আলাদা রকমের একটা তৃপ্তি আছে। হুট করে গায়ের মধ্যে পানি ঢেলে দিলে তৃপ্তি পাওয়া যায় না। সুন্নত মেনে প্রথমে ওজুর মত করে নিলে এরপর গায়ে পানি ঢাল্লে মনে হয় গোসল পরিপূর্ণ হয়েছে। শীতকালেও এর একটা সুবিধা আছে। প্রথমে হাত মুখ ধুয়ে নিলে শীতটা কম লাগে, এরপর গায়ে পানি ঢাল্লে তৃপ্তি পাওয়া যায়।

 

সুন্নাহ মোতাবেক গোসল করার প্রতি উৎসাহদানের উদ্দেশ্যেই এই পোস্ট, অন্য কোনো উদ্দেশ্য নয়।

 

নিয়মঃ (ফরজ গোসল হলে প্রথমে লজ্জাস্থান ধোয়া, এরপর হাত ধোয়া) প্রথমে বিসমিল্লাহ বলে ওজুর মত করে সব করে (পা ধোয়া বাদে) এরপর মাথায় পানি ঢালা, এরপর ডান কাঁধে এবং বাম কাঁধে এবং পুরো শরীরে পানি ঢালা। শেষে পা ধোয়া।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ইসলামী নাম-নীতি

 

নাম আরবি ভাষায় হতে হবে। সুন্দর অর্থ হতে হবে।

 

নাম হবে একটা। কিন্তু আমাদের উপমহাদেশে প্রচলন হচ্ছে নাম রাখা হয় দুই/তিনটা। নাম দুই/তিনটা রাখা যায়, তবে মূল নাম একটাই হবে, অন্যগুলো হবে কুনিয়াত, উপাধি ইত্যাদি।

 

ইসলামি রীতি অনুযায়ী মূল নাম হবে একটা। এক শব্দের নাম। যেমন মুহাম্মাদ, হাসান, উমার, আলি। আমরা সব নবীদের নাম, সাহাবীদের নাম, পরবর্তী যুগের সালাফ ও সালাফদের অনুসারীদের নাম খুঁজলে দেখতে পাব নাম তারা একটা রাখতেন, এক শব্দের রাখতেন।

 

আমরা তো রাখি মোঃ আরিফুল ইসলাম, মোঃ শহীদুল হক, মোঃ আলিম উদ্দিন। মোহাম্মদ তো নিজেই একটা নাম। তাহলে মোঃ যুক্ত করলে নাম হয়ে যায় দুইটা।

 

নামের আগে মোঃ লাগিয়ে নবীর দিকে নিসবত করা নাকি ভালো। তাহলে আমি প্রশ্ন রাখব, সাহাবীরা তো নবীকে অনেক ভালোবাসতেন, তারা কেন এই কাজটা করতেন না?

 

মোহাম্মদ যুক্ত করলেও একটা কথা ছিল, কিন্তু মোহাম্মদ পুরো নাম যুক্ত না করে সংক্ষেপে মোঃ লেখা হয় যা সত্যি দৃষ্টিকটু।

 

উপমহাদেশে নামের ক্ষেত্রে আরেকটা সমস্যা হচ্ছে, যেসব মূল নাম রাখা হয় সেগুলো নামের চাইতে উপাধি হিসেবে অধিক যুক্তিযুক্ত ছিল। যেমন শামস উদ্দিন। এর অর্থ দ্বীনের সূর্য। এটা উপাধি হিসেবে খাটে। কিন্তু আমাদের উপমহাদেশে নামের সাথে ইসলাম, হক, হোসেন, আলি, উদ্দিন, উল্লাহ না লাগালে নাম সম্পূর্ণ লাগে না। এইজন্য আরিফকে বানাই আরিফুল হক, জিয়াকে বানাই জিয়াউর রহমান।

 

এখন আধুনিক কালে ইসলাম, হক, উদ্দিন, উল্লাহ এসবের ব্যবহার কমেছে ঠিকই কিন্তু দুই নামের ব্যবহার এখনো যায় নি। পাকিস্তানে এটা বেশি। এদেশেও এখন বেশি। যেমন আহমাদ মুসা, হাসান জাফর। ইত্যাদি।

 

নাম কেমন হওয়া উচিৎ? সাহাবি ও তাদের পরবর্তী প্রজন্মের নামগুলো দেখবেন এক শব্দের নাম। আল্লাহর প্রিয় নাম হচ্ছে আব্দুল্লাহ এবং আব্দুর রহমান। 'আব্দ' এর পর আল্লাহর ৯৯ নামের যে কোনো নামযুক্ত নাম আল্লাহর কাছে প্রিয়। এরপর নবী ও সাহাবিদের নাম উত্তম। এরপর আরবি সুন্দর অর্থবোধক নাম।

 

সালাফদের নামগুলো কেমন ছিল? একটা উদাহরণ দিই।

 

ইবনে কাসিরের প্রকৃত নাম ইসমাইল। কুনিয়াত আবুল ফিদা। উপাধি ইমাদুদ্দিন। পিতার নাম উমার। তাহলে পুরো নাম দাঁড়ায় আবুল ফিদা ইমাদুদ্দিন ইসমাইল বিন উমার আদ দিমাশকী। দিমাশকের ছিলেন বলে দিমাশকী। এখানে তার নাম কিন্তু একটাই। অন্যান্য পরিচয়ের কারণে তার নাম বড় হয়েছে। এভাবে নাম রাখাই ইসলামী ঐতিহ্য।

 

সকল সাহাবীর একটা মাত্র মূল নাম আর একটা কুনিয়াত ছিল। যারা বিভিন্ন কারণে লকব পেয়েছিলেন তাদের লকবও ছিল। আর নিজেদের পরিচয়ের সাথে যুক্ত করতেন পিতার নাম আর অঞ্চলের নাম।

 

আবু হাফস উমার ফারুক বিন খাত্তাব আল কুরাইশি।

কুনিয়াত - মূলনাম - লকব - পিতার নাম - বংশের নাম।

 

সন্তানদের নাম রাখার ব্যাপারে এই ঐতিহ্য ফলো করতেই হবে এমন নয়। আরব ছাড়া আর সালাফিরা ছাড়া এর চর্চা আর কেউ করে না। পিতার নাম যুক্ত করার চর্চাও তেমন হয়না আরবের বাইরে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আপনার ফ্রেন্ডলিস্টে আহলেহাদিস ছাড়া কাউকে রাখেন না, আপনার বক্তৃতা আহলে হাদিস ছাড়া কেউ শুনে না, আপনার বই আহলে হাদিস ছাড়া কেউ পড়ে না, আপনার জানাযাতে আহলে হাদিস ছাড়া কেউ আসে না। সারাক্ষণ অন্যান্য মুসলমানদের সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত থাকেন। আহলে হাদিস বাদে আর কাউকে দীনী ভাই মনে করেন না। নিজের দলকে উম্মাহ বানিয়ে ফেলেন আর নিজেকে দাবি করেন উম্মাহর খাদেম?

 

(আহলে হাদিসদের জায়গায় যে কোনো মানহাজের নাম বসিয়ে নিতে পারবেন, আমার ফ্রেন্ডলিস্টে আহলে হাদিস কম, তাই তাদের উপর দিয়ে চালিয়ে দিলাম।)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যিশুই ঈশ্বর। আবার যিশু ঈশ্বরের পুত্র। (মানে নিজের পুত্রই নিজে)। যিশু জন্মগ্রহণ করছে, আবার সবার পাপ নিয়ে মারাও গেছে। মানে ঈশ্বর জন্ম নেয় আবার মারাও যায়। সবার পাপ নিয়ে মারা গেলে সবার খ্রিস্টান হওয়ার কি দরকার?

 

# খ্রিস্টধর্মত্ব হিন্দু আর গ্রীক মিথোলজির চেয়েও হাইস্যকর।

 

Hasan Mirza replied to Nafees Imtiaz's comment.

হুম, তারা যিশুকে মূল গড বলে না, তবে তাদের অন্যান্য বিশ্বাস অনুযায়ী যিশু গড বলেই প্রমাণিত হয়। অর্থাৎ ওদের বিশ্বাসে ওরাই প্যাঁচ খেয়ে যায়। ওরা নিজেরাই ওদের আকিদা নিয়ে কনফিউজড, আমরা আর কি বলব! আপনি ঠিক বলেছেন, বিধর্মীদের কর্মকাণ্ড নিয়ে যত চটকানো না যায় ততই উত্তম।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ইসলাম বিষয়ে পড়াশোনার শুরুর দিকে অনেক অপর্যাপ্ত তথ্য থাকার কারণে এক প্রকার উগ্রতা কাজ করে। এই হিসেবে আধা জানলেওয়ালার চেয়ে অশিক্ষিত আর জানলেওয়ালারা উত্তম। আমার কিংবা অনেকেরই এই অভিজ্ঞতা আছে শুরুর দিকে অনেক ভুল তথ্যের ভিত্তিতে তর্ক বিতর্কে লিপ্ত হতাম। কোনো নির্দিষ্ট মাজহাব/মানহাজে থাকার কারণে অন্য সব দলের তুলাধুনা করতাম। কেউ পড়াশোনা, জানাশোনা ২-৩ বছর চালিয়ে গেলে এই প্রি-ম্যাচিউর লেভেল অতিক্রম করা সম্ভব।

 

কিন্তু কেউ যদি আধা জানার পর পড়াশোনা বন্ধ করে দেয় তবে সে সারাজীবন ফিতনা ছড়াবে।

 

ইসলামে আলেম হওয়া ফরজ নয়, তবে ইলম অর্জন ফরজ। ততটুকু ফরজ যতটুকু জানলে দ্বীন ঈমান নিয়ে বাঁচতে পারবেন। আধা জানা এবং এর ভিত্তিতে তর্ক, মারামারি, কাটাকাটিতে লিপ্ত হওয়া ভয়ঙ্কর।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

স্বাবলম্বী করার আশায় গরীবদের "ব্যবসা করার" শর্ত দিয়ে জাকাত দেয়াটা অনুচিত মনে করি। জাকাত দিতে বলা হয়েছে, শর্ত লাগাতে বলা হয় নাই। যে জাকাত নিবে এটা তার স্বাধীনতা সে কি করবে!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আগের যুগের শাইখারাও আজকালকার শাইখদের চেয়ে বেশি শিক্ষিত ছিলেন। (একজন মুহাদ্দিসার জীবনী পড়ে অভিভূত আমি'র মন্তব্য)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আজহারীর পিছে যেভাবে মানুষ লাগছে, এটাই প্রমাণ করে আমরা হুজুগে বাঙ্গালী।

 

আরা হ্যাঁ, আমরাই সেই গুড়া বাহ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সৌদি রাষ্ট্রের দোষগুলো ডিফেন্ড করে মাদখালীরা সালাফিবাদের নাম দূষিত করছে। অথচ সৌদি রাষ্ট্রের সাথে সালাফিবাদের সম্পর্ক অল্পই। ইবনে সাউদের এই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সাথেও সালাফিবাদের সম্পর্ক ছিল না, বরং এটা ছিল ক্ষমতা দখলের লড়াই।

 

সম্পর্ক যেটা ছিল সেটা হচ্ছে ইবনে সাউদের দাদার দাদার বাবা মুহাম্মাদ ইবনে সাউদ প্রভাবিত হয়েছিল আধুনিক সালাফিবাদের জনক ইবনে আব্দিল ওয়াহহাব রঃ এর দ্বারা। সম্পর্ক এতোটুকুই। রাষ্ট্রীয়ভাবে একটা ধর্মীয় অবস্থান গ্রহণ করতে হয় এটা সব রাষ্ট্রেই স্বাভাবিক ব্যাপার। আমাদের দেশে হানাফী মাজহাব রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রচলিত, কিন্তু এর মানে এই না বাংলাদেশ হানাফী রাষ্ট্র কিংবা হানাফী মাজহাবকে রিপ্রেজেন্ট করে। সৌদিতে সালাফি/হাম্বলী আলেম বেশি, এবং প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে সালাফিদের সাথে সম্পর্কযুক্ত বলে রাষ্ট্র ধর্মীয় অবস্থান হিসেবে সালাফি মানহাজ গ্রহণ করেছে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় হানাফী মাজহাবের মতোই সৌদির সালাফি মানহাজও একটা ফাঁপা বেলুন। সেই ফাঁপা বেলুন নিয়ে গর্ব করে সালাফি মানহাজের নাম খারাপ করা হয়েছে গত দুই দশক ধরে।

 

এখনো যদি সৌদি রাজবংশের মানুষদের ব্যাপারে খোঁজ নেয়া হয় তবে দেখবেন খুব কমই এরা সালাফি বা প্রাক্টিসিং সালাফি। অন্তত দাড়ির দিকে তাকালেও তো বোঝা যায়। সালাফিরা দাড়ির ব্যাপারে যেরকম স্ট্রিক্ট আলে সাউদের মধ্যে তার ছিটেফোঁটাও নাই।

 

ইবনে সালমানের আগমনের পর যেটুকু সালাফি মানহাজের সাথে সম্পর্ক ছিল সেটাও টুটে যাচ্ছে। আমি চাই না, সৌদি রাজতন্ত্রের অবসান হোক, কারণ রাজতন্ত্র ভেঙ্গে গেলে সেখানে গণতন্ত্র আসবে, অন্য কোনো অপশন আসার সুযোগই নাই। কিন্তু ইবনে সালমানের হাত থেকে আল্লাহ সৌদিকে হেফাজত করুন। অবশ্য ইবনে সালমানই যদি আতাতুর্কের ভূমিকায় আবির্ভূত হয়ে গণতন্ত্র কায়েম করে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রিয় মশা, হাতে, পায়ে, যেখানে ইচ্ছা কামড়ায়া সব রক্ত শুষে নিয়ে যা, তবু কানের সামনে প্যানপ্যান করিস না। তোর প্যানপ্যান বউয়ের প্যানপ্যানের চাইতেও বিরক্তিকর।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এরকম একটা ননইস্যুকে এমন হাঙ্গামার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত করা হয় কেন? কারণ সিরিয়াস ইস্যুগুলো সেক্যুলার স্ট্যাবলিশমেন্টের দখলে। (কোনো ভাইয়ের পোস্টে এই লাইনটা পাইলাম, অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কোয়ান্টাম মেথড, একটি পথভ্রষ্ট+ভন্ডামি মতবাদ

 

https://www.facebook.com/abrahametry/media_set?set=a.10213641598012412&type=3

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমাদের অনেক ভাই ফটোগ্রাফি করেন। গাছ, নদী, প্রকৃতি এসবের ছবি তুলেন। আমি বলি কি, আপনারা ইসলামিক ফটোগ্রাফিও করুন। মসজিদ, মাদ্রাসার বাচ্চা, নামাজ পড়ার দৃশ্য ইত্যাদি হচ্ছে ইসলামিক ফটোগ্রাফির উদাহরণ। সেকুলাররা পর্যন্ত নামাজ পড়ার দৃশ্য, মাদ্রাসার বাচ্চাদের ছবি তুলে এওয়ার্ড টেওয়ার্ড জিতে নিচ্ছে। পিটার স্যান্ডারস একজন জনপ্রিয় ইসলামিক ফটোগ্রাফার। এখন তো মোবাইল ফটোগ্রাফিও জনপ্রিয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মুনাফিকরা কাফেরদের চেয়ে বেশি 'কাফের' হওয়ার চেষ্টা করে। আমাদের দেশীয় সেকুলারদের দিকে তাকালে বোঝা যায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

একটা বিষয় ভেবে দেখলাম। আহলেহাদিস আমীর সাহেব যদি জেলে না যেতেন আর জেল থেকে বেরিয়ে মানহাজ পরিবর্তন না করতেন তাহলে বাংলাদেশের সকল সালাফি আজকে "জিহাদী" হত। কারণ বাংলাদেশে আহলে হাদিস মত ছড়ানোর পেছনে আমীর সাহেব ও তার শিষ্যদের ভূমিকাই বেশি। বেশিরভাগ আহলে হাদীস তো তাদের দাওয়াতেই হয়েছে। আহা! আমীর সাব জেলে না গেলে ইতিহাসই ভিন্ন হত।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

শুধু মেয়েদের না, ছেলেদের ছবি তোলাও জায়েজ নাই, এই ফতোয়া দেওবন্দ এবং সালাফিদের। তবে জরুরী প্রয়োজনে জায়েজ, যেমন পাসপোর্ট, আইডি কার্ড ইত্যাদির জন্য। আমি মনে করি প্রিন্ট ছবি ছাড়া ডিজিটাল ছবি জায়েজ এবং একেবারেই বেহুদা না হলে (ইসলামিক কোনো কারণ হলে আমি উত্তম মনে করি, যেমন কোনো দাওয়াতি উদ্দেশ্যে)। আমি প্রিন্ট ছবি ফরজ কাজ ব্যাতীত কোনো কাজে জায়েজ মনে করি না, মুফতীয়ে আজম ফয়জুল্লাহ রঃ ছবি তোলা লাগবে বলে নফল হজ করেন নাই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মাদ্রাসা ব্যবস্থার অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে দুই দিন পর পর যে প্রশ্ন উঠে এগুলোর একটা খারাপ প্রভাব সমাজের উপর পড়ছে। দ্বীনদাররাই মূলত এসব প্রশ্ন তুলছে যদিও তারা শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবেই এই শিক্ষাব্যবস্থার অবস্থা নিয়ে চিন্তিত। কিন্তু সমস্যাটা অন্য জায়গায়।

 

মানুষ মাদ্রাসা শিক্ষার ব্যাপারে বীতশ্রদ্ধ হয়ে যাচ্ছে যা একটা ভয়ানক ব্যাপার। অনেকে বিকল্প হিসেবে হোমস্কুলিং এর দিকে ঝুকছে। কিন্তু সবাই কি তার সন্তানকে বাসায় রেখে পড়াবে? উত্তর হচ্ছে, 'না'। কিন্তু ঠিকই সবাই মাদ্রাসার প্রতি বীতশ্রদ্ধ হচ্ছে। ফলে স্কুল ছাড়া তাদের হাতে অন্য কোনো অপশন নেই।

 

মানুষ ইদানিং ইসলাম বুঝছে, ফলে দ্বীনদার হোক কিংবা আধা দ্বীনদার, এমনকি অনেক পুরোদস্তুর নন-প্রাক্টিসিংকেও দেখেছি সন্তানকে মাদ্রাসায় পড়ানোর ইচ্ছা পোষণ করে। কিন্তু কয়েক বছর যাবত যেভাবে মাদ্রাসা ব্যবস্থার উপর ঝড় বইছে মনে হয় না ইসলামী বই বিপ্লবের মত ইসলামী শিক্ষা বিপ্লব সম্ভব হবে। অথচ বই বিপ্লবের চেয়ে শিক্ষাবিপ্লবটা জরুরী বেশি ছিল।

 

মাদ্রাসার অভ্যন্তরীণ নানা কুকীর্তি দ্বীনদার ও ইসলামপন্থীরাই প্রকাশ করছে, ভাইরাল করছে যার সুযোগ নিচ্ছে সেকুলাররা। সেকুলাররাও প্রোপ্যাগান্ডা চালাচ্ছে মাদ্রাসা মানেই শিশু বলাৎকার, সমকাম। বরং আমরাই সেকুলারদের প্রোপ্যাগান্ডা চালাতে সহায়তা করছি। আমরা সব তথ্য তাদের হাতে তুলে দিচ্ছি।

 

এবার অন্যদিকে দৃষ্টি দিই, যখন কোনো স্কুল কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের কুকীর্তি সামনে আসে তখন কি আমরা সেটা ভাইরাল করি? করি না। কারণ আমাদের কাছে সেটা স্বাভাবিক ব্যাপার মনে হয়। কিন্তু মাদ্রাসা ব্যবস্থার জন্য যেটা লজ্জাজনক সেটা আমরা ভাইরাল করছি। ফলাফল এটাই যে আমাদের মনে এই ধারণা গেথে গেছে মাদ্রাসার চাইতে সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থাই ভালো।

 

একটা প্রতিষ্ঠানের দোষের কারণে আমরা পুরো জেনারেল শিক্ষাকে প্রশ্নবিদ্ধ করি না। কিন্তু কোনো এক মাদ্রাসার জন্য পুরো মাদ্রাসা ব্যবস্থাকে দোষারোপ করছি। শেষ পর্যন্ত আমাদের কারণেই সেকুলার শিক্ষা জয়ী হয়, মাদ্রাসা শিক্ষা হয় পরাজিত।

 

মাদ্রাসা ব্যবস্থা মানুষের তৈরি কোনো ব্যবস্থা নয়, এটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করলে ফলাফল ভয়াবহ হবে। আপনার যদি প্রচলিত মাদ্রাসা ব্যবস্থা ভালো না লাগে আপনি নিজের মত করে মাদ্রাসা তৈরি করুন যেখানে কোনো সমস্যা থাকবে না, তবু এই শিক্ষার প্রতি মানুষকে বীতশ্রদ্ধ করবেন না। আসলে, মানুষ বীতশ্রদ্ধ হচ্ছে এতে প্রচারকের চেয়ে মানুষেরই দোষ বেশি, মানুষ ভাবে আসমান থেকে ফেরেস্তারা নেমে মাদ্রাসাগুলো চালাবে। যে মানুষগুলো বলে, "মুসলিমদের দেখে ইসলামকে বিচার করবেন না", তারাই একটা মাদ্রাসাকে দেখে সব মাদ্রাসাকে বিচার করছে, এক হুজুর দেখে সব হুজুরকে বিচার করছে।

 

এখনো অনেক ভালো মাদ্রাসা আছে ভাই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ইসলাম এমন এক ধর্ম যেখানে একজন মুসলিম দুশ্চিন্তা করলেও গুনাহ মাফ হয় আর তার কিছু চুরি হলেও সে জন্য সাওয়াব পায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ফেসবুকে এমন একটা পেইজ থাকা উচিৎ যেখানে ইনবক্সে মাসআলা মাসায়েল জিজ্ঞেস করা যাবে। পেইজটার দায়িত্বে কয়েকজন থাকবে। একদল থাকবে পেইজ চালানোর দায়িত্বে, যারা ফেসবুকে অনেক বেশি সময় দিতে পারবে এবং আগে দিয়ে ফেলা প্রশ্নের উত্তরগুলোর জবাব কপি পেস্ট করবে। আরেক দলের কাজ হবে নির্ভরযোগ্য মুফতি থেকে প্রশ্নের উত্তর জোগাড় করা। পেইজেও কয়েকজন মুফতি থাকবে যারা প্রশ্নের উত্তরগুলো চেক করে দিবে।

 

পেইজের মাধ্যমে এমন একটা প্লাটফর্ম তৈরি করার সুবিধা হচ্ছে,

 

১- ইনবক্সে প্রশ্ন করার ফলে প্রশ্নকর্তা নিজের পরিচয় গোপন রাখতে পারবে। বিভিন্ন মাসআলা মাসায়েলের গ্রুপে যেটা সম্ভব হয় না।

 

২- মানুষ এতো অধৈর্য যে কোনো ফতোয়া বিভাগের কাছে প্রশ্ন পাঠানোর সময় নাই, এমনকি কোনো গ্রুপে প্রশ্ন পোস্ট দেয়ার পর উত্তর দিতে দেরি হলে অধৈর্য হয়ে যায়। এটাও সত্য অনেকের ইমারজেন্সি উত্তর জানার প্রয়োজন হয়, তাদের জন্য এটা সুবিধাজনক হবে।

 

৩- অনেক সময় অনেকের প্রশ্ন অসম্পূর্ণ থাকে, ফলে মুফতি সাহেবকে অসম্পূর্ণ প্রশ্নের উপর ভিত্তি করে উত্তর দিতে হয়, কিন্তু ইনবক্সে প্রশ্ন করা হলে দ্বিতীয়বার জিজ্ঞেস করার সুযোগ থাকবে।

 

এটা যদি করা যায় তবে সাধারণ মানুষের অনেক উপকার হবে। মানুষ জানতে যায়, কিন্তু কোথায় প্রশ্ন করতে হবে জানে না।

 

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এরকম মাসআলা মাসায়েলের পেইজ চালানোর মত হিম্মতওয়ালা একটা দল থাকা লাগবে। যে সে চালাতে পারবে না। কারণ প্রতিদিন শ'য়ের উপর প্রশ্ন আসবে। মানুষ ফ্রি পাইলে যেটা দরকার নাই সেই প্রশ্নও করবে। তবু আমি বলব, সাধারণ মানুষকে দাওয়াতের জন্য এর চেয়ে ভালো উপায় থাকতে পারে না, হোক না আজেবাজে প্রশ্ন।

 

আর এই কাজের জন্য লোকবল এবং নির্ভরযোগ্য মানুষ লাগবে। এটা যদি কোনো বাতিলপন্থী বা সুবিধাবাদীরা শুরু করে তবে অনেক ক্ষতিকর হবে।

 

কিন্তু প্রশ্নের চাপ ১০-১৫ জন এডমিন মিলেও সামলাতে পারবে কিনা সন্দেহ। যোগ্য নেতৃত্ব থাকলে সম্ভব। টার্গেট রাখা উচিৎ প্রতিদিনের প্রশ্নের জবাব সেই দিনই দিতে।

 

একটি প্রস্তাবনা মাত্র। যোগ্যরা হিম্মত করুন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ঘুমানোর আগে করণীয়ঃ

 

ঘুমের দোয়া (বিসমিকাল্লাহুম্মা আমুতু ওয়া আহইয়া)।

 

আয়াতুল কুরসি।

 

৩ কূল পড়ে ফুঁ দিয়ে ৩ বার গায়ে হাত বুলানো।

 

সুবহানাল্লাহ ৩৩, আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ এবং আল্লাহু আকবার ৩৪ বার।

 

সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার ১০০ বার করে।

 

বাকারার শেষ ২ আয়াত।

 

সূরা কাফিরুন।

 

সূরা ইখলাস।

 

বিছানা ঝেড়ে ঘুমানো।

 

ডান কাতে ঘুমানো।

 

অজু অবস্থায় ঘুমানো।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ইসলামে যে-কয়টা ক্ষেত্রে মিথ্যা বলার অনুমতি আছে তার মধ্যে অন্যতম দুজন মানুষের মধ্যে মীমাংসার উদ্দেশ্যে বলা মিথ্যা৷ মানুষে মানুষে যেন সম্প্রীতির সম্পর্ক বজায় থাকে সেজন্য ইসলামের এই নির্দেশ৷ মিথ্যে বলার মতো হারাম কাজও হালাল এই উদ্দেশ্যে৷ ঝগড়া-বিবাদ, কলহ, মনোমালিন্য ইত্যাদি থেকে দূরে থাকার জন্য আমার মনে হয় ইসলামের এই নির্দেশটিই যথেষ্ট৷

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আহলুল হাদিস ভাইরা পশ্চিম দিকে ইচ্ছাকৃত ভাবে পা দিয়ে বসেন এবং ভাবেন এর মাধ্যমে তিনি একটি প্রচলিত ভুল ধারণার উচ্ছেদ ঘটাচ্ছেন। পশ্চিম দিকে পা দেয়ার নিষেধাজ্ঞা যদি হাদিসে নাও থাকে তবে এটা তো একটা আদব যে কিবলার প্রতি সম্মান দেখানো উচিৎ। এতো দিক থাকতে কিবলার দিকে পা দিয়ে বসার কি দরকার? আদব বলেও তো কিছু একটা আছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

আমিও এই কথাই বলি। হেদায়েত পাওয়ার আগেই যারা এমন গাইরতওয়ালা, হেদায়েত পেলে তারা নিশ্চিত অনেক বড় বুজুর্গ হবে। আমরা তো হেদায়েতের আগে তাদের চেয়েও অধম ছিলাম।

 

(প্রসঙ্গঃ এক বিএফ নাকি জিএফরে পর্দা ছাড়া বাইর হইতে মানা করে, দীনী ভাইরা এটা শুনে হাসাহাসি করল, আমি তাই এটা বললাম, এবং সিরিয়াসলি বললাম।)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যে জায়গায় আসলেই মিনিংফুল কিছু করা সম্ভব তা হচ্ছে পরিবার এবং নিজে। এই জায়গায় মেহেনত বাড়ান। দুনিয়া পরিবর্তনের মেহেনতে উম্মাহর যে পরিমান ফায়দা হবে তার চেয়ে পরিবারকে যোগ্য মুসলমান বানাতে পারলে উম্মাহর ফায়দা আরও বেশি হবে।

 

(মীর সালমানের উক্তি সম্ভবত)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কাউরে স্পেসিফিকভাবে খারেজি বলা উচিৎ না, আইএসকেও না। খারেজিদের কিছু বৈশিষ্ট্য আছে এতোটুকু বলা যেতে পারে। কিন্তু আজকাল তো সবাই খারেজি, আনোয়ার আওলাকি রঃ কে লাইক করলেও খারেজি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মানুষকে হাসানোর জন্য মিথ্যা বলা গুনাহ। তবে সত্য বলে হাসালে সমস্যা নাই। রসুল সাঃ এবং সাহাবিরা সত্য কৌতুক উপস্থাপন করতেন। আর কোনো মিথ্যা ঘটনাকে সত্য হিসেবে উপস্থাপন করা গুনাহ কিন্তু গল্প বলা বা লিখা গুনাহ নয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য নিযুক্ত শয়তান স্বামীর মায়ের কাছে আর স্ত্রীর বড় বোনের কাছে এই দায়িত্ব দিয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে যায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমার ফেসবুক চালানোর অন্যতম একটা উদ্দেশ্য হচ্ছে এইসব লেখাগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করা। এতে চিন্তার আদান প্রদান ঘটবে।

 

 

 

 

 

 

 

দুনিয়ার সমস্ত নিয়ামতের চেয়ে বেশি পাইয়া আমরা বলি, আল্লাহ আমাদের কিছুই দেয় নাই।

 

এজন্যই আল্লাহ অধিকাংশ মানুষকে অকৃতজ্ঞ বলছেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমরা ভিন্নমতের মুসলিমের প্রতি যে পরিমাণ ঘৃণা রাখি কাফিরদের প্রতিও তা রাখি না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মর্ডানিস্টরা যে শুধু নির্দিষ্ট একটা দলে থাকবে এটা সঠিক নয়। বরং তারা যেকোনো দলে থাকতে পারে। জামায়াতে ইসলামীর সমর্থকদের মধ্যে এর আধিক্য থাকলেও এর জন্য পুরো দলকে দোষী করা যায় না, এই দলের সবচেয়ে বড় ভূমিকা হচ্ছে সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত যারা সেকুলার হওয়ার কথা ছিল এই দলটি তাদের ইসলামের মধ্যে ধরে রেখেছে। মর্ডানিস্ট জামাত ছাড়াও কওমি, তাবলীগী, সালাফিদের মধ্যেও থাকতে পারে। মর্ডানিস্ট বলতে বোঝাচ্ছি যারা আধুনিকতাবাদকে ইসলামের সাথে একইসাথে গ্রহণ করতে চায়। মারুফ সাহেবের মন্তব্য দিয়ে তার পুরো দলকে যাচাই করা যায় না। ইসলামী আন্দোলন কেন্দ্র থেকে এখনো অনেক রক্ষণশীল। তবে মর্ডানিস্টরা যে কোনো জায়গায় ঢুকে বসে থাকতে পারে। জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে দশকের পর দশক এর ঘাপটি মেরে বসে থেকেও যখন সুবিধা করতে পারে নি তখন জনআকাঙ্ক্ষা তৈরি করেছিল। যেটা বলতে চাচ্ছি তা হচ্ছে মারুফ সাহেবের জন্য চরমোনাইওয়ালাদের দোষারোপ করা যায় না। তবে মারুফ সাহেবের মতন (কু)বুদ্ধিজীবীদের দ্বারা চরমোনাইপন্থী অনেক তরুণ প্রভাবিত হবে এটাই বড় সমস্যা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এক সময় নারীদের কাছে বিয়ের প্রস্তাব আসতো, বিধবা নারীর ইদ্দত পালন শেষ হইতে দেরি, বিয়ের প্রস্তাব আসতে দেরি হইত না, এমনকি বৃদ্ধা হয়ে গেলেও সেই মহিলার কাছে বিয়ের প্রস্তাব আসতো। আর এখন বিজ্ঞাপন দেয়া লাগে। এর একটা বড় কারণ "তালাককে আমরা ট্যাবু বানাইছি" এবং একাধিক বিবাহের প্রতি ঘৃণা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ডাঃ জাকির নায়েক বলতেন, আমার স্কুলে এমন কোনো বাচ্চাকে এডমিশন দেই না যাদের বাসায় টিভি আছে। যদি কেউ পিস টিভি দেখার জন্যও বাসায় টিভি রাখে তবু আমি বলব পিস টিভি না দেখাই ভালো। (ভাবার্থ)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বীর্য অপচয় করবেন না। আযল জায়েজ আছে কিন্তু অনুৎসাহিত করা হয়েছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মাওলানা জনাবওয়ালা রঃ এর পরিবার বাংলা ইসলামের অনেক খেদমত আঞ্জাম দিয়েছে। এই পরিবারের উপর আল কাউসারে একটা লেখা আছে। (দাদা ইসহাক ও তার সঙ্গীরা মাওলানা জনাবওয়ালা রঃ এর অঞ্চলে ঘুরতে গিয়েছিলেন এবং মাদ্রাসা ও তার স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমুহ দেখে আসেন। সেখানে আমার কমেন্ট।)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমি কোনো হাহা দিব না। জামানার আমির সাহেব (আমিরুজ্জামান শক্তি ভাই) যেটা বলছেন সেটাই আমার কথা -

 

Abubakar Muhammad Zakaria উস্তায, আমার মনে হয়, এদের মতের একটা দালিলিক খণ্ডন আসা উচিত। পিওর কুরআন, হাদিস ও সালাফদের কওল দিয়ে। ওনাদের বেশ কিছু কিতাব আমি পড়েছি। ওদের বিপরীতে আমাদের আলিমদের মানসমপন্ন শক্তিশালী সংকলন তেমন আসেনি। পক্ষান্তরে ওদের কিতাবগুলো কেবলই কুরআন-হাদিস ও সালাফদের কওল। ফলে মনে হওয়া স্বাভাবিক যে ওরাই সালাফদের প্রকৃত বুঝের উপর আছে।

 

মারকাজুদ্দাওয়াহও কেবল 'তাহকীকের টেবিলে আসার যোগ্য না' 'বেয়াদব' এসব বলেই শেষ করেছে। আপনার পোস্টেও কেবল কিছু ' বিশেষণ'। এর ফলে তারা দালিলিকভাবে নিজেদের শক্ত মনে করছে, যা অনেক তরুণদের মনে জায়গা করে নিচ্ছে। শুধু কুরআন-হাদিস ও সালাফদের কওল, এই জামানার কওল না। এরকম একটা কিতাব আসা চাই, আপনি কি মনে করেন?

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রিয় ভাইয়েরা, আপনারা যারা ফেসবুকে লেখালেখি করেন তারা অবশ্যই লেখার কপি রাখবেন। এছাড়া সেটিংস এ 'ডাউনলোড ইয়োর ফেসবুক ইনফরমেশন' নামে একটা অপশন আছে, আপনার সব এক্টিভিটি সেখান থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন। প্রতি সপ্তাহে আমি একবার করে ডাউনলোড করি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

জীবনে কত কিছু জানা বাকি। বায়েজিদ আসলে আবু ইয়াজিদের পরিবর্তিত রুপ। এক ভাইয়ের পোস্ট থেকে জানলাম।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তোমরা যারা বেপর্দা নারীকে ব্যাভিচারী বল, অথচ ব্যাভিচারী প্রমাণ করতে ৪ জন সাক্ষী আনতে না পারলে ডান্ডা তোমার পিঠে পড়বে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ওয়াজ সংস্কৃতির পরিবর্তে খুৎবা সংস্কৃতি গড়ে তুলুন

 

আমাদের সবার হাতে হাতে মোবাইল। আমরা চাইলেই খুৎবার বয়ান, দারস এসব অডিও, ভিডিও করতে পারি। অথচ আমরা তা করি না। যদি করতাম বাংলাদেশের লাখ কয়েক মাসজিদের লাখ কয়েক খুৎবা রেকর্ড হত প্রতি সপ্তাহে। এমন কোনো ওয়াজ মাহফিল হয় না যেটা রেকর্ড হয় না, অথচ ওয়াজ মাহফিলগুলো গ্রামের সাধারণ মানুষ ব্যাতীত আর কারো কিছুই নেয়ার থাকে না। এগুলো হাস্যরসিকতায় পরিণত হয়। আলি হাসান ওসামা ভাই কিছুদিন আগে পোস্টও দিয়েছেন, বর্তমানের প্রচলিত ওয়ায়েজদের তুলনা সালাফদের যুগের কাসসাসদের সাথে চলে, যারা কিচ্ছা কাহিনী বলে বেড়াত, জাল যঈফের পরোয়া করত না, বনী ইসরাইলিদের অনেক মিথ্যা কাহিনী ইসলামের মধ্যে প্রবেশ করিয়েছে।

 

আহলে হাদিসরা খুৎবা সংস্কৃতি গড়ে তুলেছে, ফলে দেখা যায় আহলে হাদিস মাসজিদগুলোতে সকাল ১০ টার থেকে মানুষ আসা শুরু, ১১ টার মধ্যে এক তলা পূর্ণ হয়ে যায় (আলআমিন মাসজিদে দেখতে পারেন)। এটা সালাফদের যুগের আমল ছিল, একটা হাদিস আছে, এক সাহাবি বলেছিলেন তারা ফজরের পর থেকে জুমুআর প্রস্তুতি নিতেন, আগেভাগে মাসজিদে চলে যেতেন, এমনকি এজন্য দুহার নামাজের পর ঘুমাতেন (কাইলুলা করতেন) না।

 

হানাফিদের মধ্যে খুৎবা সংস্কৃতি জোরালো করা প্রয়োজন। প্রতি সপ্তাহে লাখ কয়েক মাসজিদের লাখ কয়েক খুৎবা আমরা ইউটিউবে চাই। ওয়াজের নষ্ট সংস্কৃতি মোকাবিলা করতে বেশি বেশি খুৎবা, বয়ান, দারসের ভিডিও তৈরি করা দরকার। ইউটিউবে ঢুকলে একেকটা ওয়াজের থাম্বনিল আর শিরোনাম দেখে কি যে মেজাজ খারাপ হয়।

 

এছাড়াও প্রতিটা মাসজিদে প্রতি সপ্তাহে দারস হওয়া প্রয়োজন (হয় অনেক মসজিদে), সেগুলো অডিও, ভিডিও হওয়া চাই।

 

খুৎবার বয়ান, বা দারস এজন্য উত্তম যে এখানে ইলমী কথা বেশি থাকে, ওয়াজ মাহফিলগুলোর মত হাসাহাসি কান্নাকাটি চিল্লাপাল্লা কম থাকে বা থাকে না।

 

আর ওয়াজের ময়দানেও যোগ্য মানুষদের যাওয়া প্রয়োজন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমি নাসীহাহ গ্রুপটা আনফলো দিয়ে রাখি এই কারণে যেন ওইখানে পোস্টের কমেন্টবক্সে জাহেল/সেমিজাহেলদের কমেন্ট দেখে মেজাজ খারাপ না হয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

কেউ শীতের ভয়ে পর্দা করে আর কেউ আল্লাহর ভয়ে।

 

শীতের ভয়ে করলে স্বাভাবিক (!) ব্যাপার আর আল্লাহর ভয়ে করলে পশ্চাৎপদতা (!)।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ওসামা ভাইয়ের ওয়াজ শুনে ভাইয়ের ওয়াজের ফ্যান হয়ে গেলাম। আগে ছিলাম লেখার ফ্যান, এখন ওয়াজেরও। যারা লিখতে জানে তারা নাকি ভালো বলতে জানে না, কিন্তু দেখা যাচ্ছে ওসামা ভাই ভালো বলতেও জানে। বরং লেখার চেয়েও বক্তব্যের মান অনেক ভালো।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

নিম্নোক্ত লেখাসমুহ (একেবারে শেষ পর্যন্ত) হচ্ছে বিভিন্ন জনের পোস্টে আমার কমেন্ট--

 

 

 

 

 

 

 

জামাত-দেওবন্দের বিতর্ক এক সময় মওদুদি ও নাদ্ভির মত মহান ব্যক্তিরা করতেন। এখন করে ফালতু ব্যক্তিরা। এসব বিতর্কে না জড়ানোই ভালো। আজহারী-হাফিজ ইত্যাদি প্রসঙ্গ।

 

 

 

 

 

 

 

কবিরাজ মোজাদ্দেদ আলীকে আমার বার্তাঃ না জেনে অপবাদের স্বভাব তো আপনার মধ্যেও দেখা যাচ্ছে। আপনি লা-মাজহাবি বললেন অথচ তিনি লা-মাজহাবি না।

 

আপনি যার বিরুদ্ধে পোস্ট দিয়েছেন তিনি চিকিৎসা করেন কুরআন দিয়ে, আর আপনি করেন জিন দিয়ে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে কোন চিকিৎসা পদ্ধতি উত্তম। এটা তো একটা কমনসেন্স যে জিনকে বশ করে ভালো কাজ করাও প্রশংসনীয় হতে পারে না।

 

তাবিজকে লা-মাজহাবি বাদে আর কেউ নাজায়েজ বলে না এটা আপনাদের জানার কমতি। কিন্তু তাই বলে সত্য উল্টে যাবে না। তাবিজ জায়েজ নাকি না-জায়েজ সেই আলাপে যাচ্ছি না। আপনি লা-মাজহাবি বলে যে অপবাদ দিলেন সেইটা আপনার শক্ত দলিলযুক্তিকেও দুর্বল করে দিবে। এটা বুদ্ধিহীনতারও লক্ষণ। এগুলো থেকে যদি বেঁচে থাকতে পারেন আপনার দলিল যুক্তি দুর্বল হলেও আপনি বিজয়ী হবেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

হানাফীদের সবকিছুই বিদআত, তাদের অস্তিত্বটাই বিদআত। তারা বই লিখলেও সেটা বিদাতী বই।

 

বলছিলাম শামসুল আরেফীন ভাইয়ের একটি বইয়ের কথা। এক আহলে হাদীস ভাই তার বইকে নাম দিয়েছে বিদাতী বই।

 

পায়ে পড়ে ঝগড়ার স্বভাব তো এখনো ছাড়তে পারতেছে না আহলে হাদিস ভাইয়েরা।

 

 

 

 

 

 

 

 

কাতারের ফাঁক বন্ধ করার ব্যাপারে কত হাদিস আছে, অথচ এইটার আমল সবচেয়ে কম হয়। এমনকি হানাফী ভাইয়েরা পর্যন্ত আহলে হাদিসদের সাথে মিল হওয়ার ভয়ে এর বিরোধিতা করে নাউজুবিল্লাহ।

 

একজন বললেন মিলিয়ে দাঁড়ালে নাকি খুশু খুজু আসে না, অথচ বাস্তবতা হচ্ছে মিলিয়ে দাঁড়ালেই খুশু খুজু বেশি হয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

সবার প্রতিক্রিয়া দেখে অবাক হচ্ছি। অবশ্য এটারে পুরুষতান্ত্রিকতা বলা যায় না, এটা হচ্ছে অতি-তাকওয়া+গাইরাত। এটা ব্যক্তিগভাবে নিজের জন্য হলে ঠিক আছে, কিন্তু অন্যের উপর চাপায় দেয়ার বৈধতা পাই না। তারা কি বউকে নিয়ে ঘুরতে যায় না?

 

(কিছু গাইরতওয়ালা ভাই স্ত্রীকে ২০১৯ এর ইসলামী বইমেলায় নিয়ে যাওয়ার চরম বিরোধিতা করেন। সেই প্রসঙ্গে বলা)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

দাম্ভিক ভদ্রলোকের (ইমরানের) আরও কয়েকটা লেখা পড়ে দেখুন। আপনি হয়তো পুরো লেখা পড়ে দেখেন নি। নিউটন শয়তানপূজারী ছিল কিনা সেটা ভিন্ন আলাপ হলেও সে নিশ্চিত ভাবেই কাফির ছিল। তাকে নিয়ে মুসলিমদের উচ্ছ্বসিত হওয়ার কারণ নেই। বর্তমান যুগে আমরা নাস্তিকতা নিয়ে এতো পরিমাণ ভীত যে সকল আস্তিককে আপন মনে করি, অথচ সব আস্তিক মুসলিম নয়। আস্তিকদের মধ্যেও অনেক বড় বড় ইসলামের দুশমন রয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একজন নাস্তিকের চেয়েও একজন আস্তিক ইসলামের বড় দুশমন হতে পারে। রসুলের দুশমনরা কেউ নাস্তিক ছিল না, আস্তিকই ছিল। কেউ আস্তিক হলেই ভালো হয়ে যায় না।

 

খ্রিস্টধর্ম আদি ও অবিকৃত? খ্রিস্ট ধর্ম বিকৃত হয়ে গেছে বলেই মুহাম্মাদ সাঃ এর আগমন। আদি ও অবিকৃত ধর্ম এখন কোথায় পেলেন? আর আল্লাহর অস্তিত্ব প্রমাণের জন্য আমাদের হাতে প্রমাণের এতই অভাব যে নিউটনের বিশ্বাস দিয়ে নাস্তিকতাকে মুকাবিলা করতে হবে? নিউটনের বিশ্বাস দিয়ে আস্তিকতা প্রমাণিত হয়ে যায় এমন অদ্ভুত কথা তো নাস্তিকদেরও হাসাবে। যাই হোক। আপনি ব্লগের লেখাটা পড়ে দেখেন। পুরোটা পড়লে এসব অদ্ভুত কথা বলতেন না। আপনার কথার জবাব সেখানেই আছে।

 

(একজন মর্ডানিস্ট মুসলিমকে বার্তা)

 

 

 

 

 

 

 

 

মজা করে এসব বলতে গিয়ে কখন ঈমানটাই জানি হারায়! (মীর সালমানের কুফরি টাইপ কথাবার্তাকে উদ্দেশ্য করে বলা)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বিয়ে করা তো ফরজ/ওয়াজিব/সুন্নত। চিরকুমার উলামায়ে কেরাম নামের বইয়ের কাটতি ভালোই বাজারে। সুতরাং ভয়ের কিছু নাই। যারা বই পড়ে তাদের মধ্যে এতো সংকীর্ণতা থাকে না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পড়াশোনা করলে আপনার অবস্থান থেকে দ্বীনের কাজ করতে পারবেন। ভালো পরিমাণ টাকা আয় করলে দান সাদাকা করতে পারবেন। নিজের মেধা ও ডিগ্রী দিয়ে ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর জন্য কিছু করতে পারবেন। দ্বীনের জন্য কাজ করার নিয়তে পড়াশোনা করলে ইনশাআল্লাহ পুরো পড়াশোনাই ইবাদতে পরিণত হবে (যদি ভেতরকার হারাম থেকে বেঁচে থাকা যায়)। তাই আপনাকে জাতির জন্য কিছু করতে হলে আপনাকে প্রস্তুত হতে হবে। উম্মাহর প্রতিটা যুবকের মধ্যে সুপ্ত আছে সালাহুদ্দীন আইয়ুবী (বা আপনার পছন্দের কারো নাম বসায় নেন)। শুধু বের করে আনতে হবে। উম্মাহর প্রতিটা যুবক সম্পদ। নেতৃত্বশুন্য উম্মাহ আপনার দিকে চেয়ে আছে। আপনাকে জাগতে হবে। নেতৃত্ব দিতে হবে। এজন্য দ্বীন ও দুনিয়াবী উভয় পড়াশোনার বিকল্প নাই। পড়াশোনা না করলেও দিন চলে যাবে, করলেও সময় যাবে। তাই পড়াশোনা করেই সময়টা ব্যয় করা উচিৎ।

 

(একজন ভাই দুনিয়াবি পড়াশোনার জন্য অনুপ্রেরণা চাইলেন, আমার নিজের জন্য অনুপ্রেরণাগুলা তাকে কপি করে দিলাম)

 

 

 

 

 

 

 

 

এগুলা বিশ্বাসের বিষয় না। পৃথিবী সমতল নাকি নয়, ইলুমিনাতি আছে নাকি নাই, কিংবা নাসার এগুলো ভন্ডামি নাকি নয় এগুলো বিশ্বাসের পর্যায়ে নিয়ে গেলে সমস্যা যা অনেকেই করছে। আমি এটার বিরোধিতা করছি। এগুলো বিশ্বাস করা কিংবা না করায় একজন মুসলিমের উপর তেমন প্রভাব ফেলে না। তবে গবেষণা চলুক, একজন ভাই জোরেশোরে এসব প্রচার করছেন মেইন্সট্রিম সাইন্সের বিরুদ্ধে। আমার কথা হচ্ছে, তিনি দলিল পেশ করুক আমি পড়ব, তাকে কেউ খণ্ডন করতে পারলে সেটাও পড়বো। এগুলো বিশ্বাসের পর্যায়ে নিতে রাজি নই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কেউ কওমিতে পড়েও কওমিদের উল্টো পিঠে অবস্থান নিতে পারে আবার জামায়াতঘরানার কোলে বড় হয়েও কেউ জামায়াতের উল্টো পথে চলতে পারে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ইসলামী যুগের মুসলিম বিজ্ঞানীরা অধিকাংশই ফাসেক ছিলেন। একটু ঘাঁটাঘাঁটি করলেই বুঝবেন। ইবনে সিনাকে তো ইবনে তাইমিয়া তাকফীর পর্যন্ত করেছেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যেসব কথা সেকুলার নাস্তিকরা প্রচার করে এগুলা আপনারা প্রচার করছেন। মুসলমান ভাইয়ের সাথে শত্রুতাবশত ইসলামের শত্রুদের প্রোপাগান্ডায় পা দিচ্ছেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

মীর সালমান ভাই, সানি লিউনকে দাওয়াত দিন। আপনিই এই কাজ পারবেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

হুম। একিউ নতুন খলীফা মনোনীত করলে তাকেও খলীফা আবু ইব্রাহীম হাশেমীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে হবে। অবশ্য তখন আমি বিদ্রোহকারী খলীফাকেই সাপোর্ট দিব।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কাকে বেশি ভালোবাস এরকম স্বার্থপর প্রশ্ন যেই বউ করবে তার জন্য উত্তর হচ্ছে, মাকে বেশি ভালোবাসি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

শব্দদূষণ কারো জন্যই ঠিক নয়। হিন্দু, মুসলিম ব্যাপার না। ওয়াজ একটা ইবাদত, আর পূজা হচ্ছে শিরক, কিন্তু এই দুইটাতে যদি শব্দদূষণ হয় তবে তা নিন্দনীয় হবে। এখানে শিরক বা ইবাদত মূল বিষয় না। শব্দদূষণ নিজেই একটা স্বতন্ত্র গুনাহ। উল্লেখ্য, শব্দদূষণ বলতে যেটা মানুষের সহ্যক্ষমতার বাইরে বোঝায় সেটাকে বোঝানো হচ্ছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

মানুষকে বিরক্ত করার আজব মার্কেটিং হচ্ছে, সবচেয়ে বেশি বন্ধুকে মেনশন করে বই জিতে নিন।

 

 

 

 

 

 

 

আপনার প্রিয় কোনো আলেমকে নিষিদ্ধ করলে খুশি হবেন?

 

হানাফি-সালাফি দ্বন্দ্ব এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

উনি এতো উগ্র না। বরং উনি যে পরিমাণ উদার ছিলেন আসলি দায়েশরা সেটা জানলে উনাকেই জবাই করত। (আতিকুল্লাহ হুজুরকে এক ভাই উগ্র বলায় আমার মন্তব্য)

 

 

 

 

 

 

 

 

পোস্টটার কনসেপ্ট ভালো, কিন্তু কয়েকটা পয়েন্টে সমস্যা। যেমন, মিউজিক গান বাজনা কোনো বইমেলাতেই বাজে না। হৈ হুল্লোড় করতে পারবেন না, এটাও সঠিক না। জাতীয় বইমেলাতেও কেউ হৈ হুল্লোড় করে না। আর করলেও সমস্যা নাই। ইসলামী বইমেলাতেও করলে কেউ কিছু বলবে বলে মনে হয় না। সুন্দ্রী মেয়েরা যদি বইমেলাতে আসে তাইলে দেখা যাবে, আসে না বলে দেখা যায় না, কিন্তু আসা তো নিষিদ্ধ না। ইয়ো স্টাইলে ভাব মেরে চলা কারো ব্যক্তিগত ব্যাপার, কেন পারবে না? সরাসরি দ্বীনের দাওয়াত তাবলীগী ভাইরা ছাড়া কেউ দেয় না, আর তাবলীগী ভাইরা বই পড়ে কম, সুতরাং দ্বীনের দাওয়াত সেখানে না পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ফুচকা ফাস্টফুডের দোকান থাকলে আর কেউ যদি গফ/বফ নিয়ে যায়, তবে খেতে পারবে। কেউ নিষেধ করার নাই। বাকিগুলি ঠিক আছে।

 

(বি লাইক হুজুর পেইজের একটা পোস্টের কমেন্ট, পোস্টটা সংগ্রহে নাই)

 

 

 

 

 

 

 

 

শাওনেরও বিয়ে করা উচিৎ। ইসলামের দৃষ্টিতে যুবতী বিধবার অবিবাহিত থাকাটা সমিচিন নয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

যত বিচ্ছিন্ন মত আছে সব ইয়াসির কাজীর কাছে পাবেন।

 

 

 

 

 

 

 

কওমিদের সাহিত্য চর্চাকারীদের একটা বড় অংশ সেকুলার সাহিত্য পড়তে/করতে গিয়ে হাফ-সেকুলার / ফুল-সেকুলার হয়ে গেছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

এতো তুচ্ছ কারণে তালাক চাওয়ার কারণে মেয়েপক্ষের দোষও আছে। আর ছেলে তো ভুল করছেই। এই ঘটনা সবার জন্য শিক্ষা হয়ে থাক, নিজের সামর্থ্যের বাইরে কেউ যেন মোহর নির্ধারণ না করে। (এক সিলেটী-ব্রিটিশ বিয়ের আসরে তালাক দেয়ার গল্পের ব্যাপারে আমার মন্তব্য)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

খুৎবা বাদে অন্য সময় এভাবে বসতে ( দুই পা বুকে লাগিয়ে ) নিষেধ নাই। খুৎবা নামাজ সহ ২ ঘণ্টার উপর উপর যায় না। ১ ঘণ্টাতেই খুৎবা শেষ হয়। বসার অনেক তরীকা আছে, আমি নিজেও অনেক ভাবে বদলায় বদলায় বসি, কষ্ট হয় না। এক পা খাড়া করে বসলেও হবে। আর কারো পায়ে ব্যাথা থাকলে পা ছড়িয়ে বসলেও আশা করি সমস্যা হবে না। কিন্তু স্পষ্ট হাদীস থাকার পর এভাবে বসা গর্হিত কাজ বলেই মনে করি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চলন্ত ধর্ম আর চূড়ান্ত ধর্ম বলে মাজহাব আর লা-মাজহাবকে আলাদা করে ইসলামকেই দুই ভাগ করে ফেলছেন।

আল ওয়ালা ওয়াল বারার জ্ঞান না থাকলে ভ্রষ্টতা কে ঠেকায়!

 

 

 

 

 

 

 

 

মীর সালমান, মিথিলাকে বিয়ে করে হেদায়েতের পথে আনার চেষ্টা করেন। (তখনও মুরতাদ মিথিলার বিয়ে হয় নাই ইন্ডিয়ান মুশ্রিকটার সাথে, তখনের কমেন্ট।)

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রথম আলো নামেই চলে। ইসলামপন্থীরা পর্যন্ত প্রথম আলোর উপর নির্ভর করে। এটার বিরুদ্ধে যতই বলিনা কেন। প্রথম আলো একটা ব্র্যান্ড হয়ে গেছে, শিকড় তুলে ফেলা না পর্যন্ত এটা চলতে থাকবে।

 

 

 

 

 

 

 

মানা - না মানার প্রশ্ন কেন আসবে ভাই? আমি তো আর সাদপন্থী না যে সাদপন্থীদের বিরুদ্ধে বলায় উনাকে ত্যাগ করব। আমি উনার ফ্যানবয় নই। উনাকে অন্ধভাবে মানি না। সুতরাং না-মানার প্রশ্নও আসছে না। বরং উনার চিন্তা এবং আমার চিন্তা অনেকটা কাছাকাছি। উনার ব্যাপারে পুরো লেখাটা আমার পর্যবেক্ষণ থেকে। যতটুকু জেনেছি ততটূকুর উপর ভিত্তি করে, উনি সাদপন্থীদের বিরুদ্ধে এটা আমি আগেও জানতাম, কিন্তু কিছু তাবলীগী ভাইয়ের পোস্টে/কমেন্টে উনার প্রতি ছুপা-সাদপন্থী হওয়ার ইঙ্গিত দেয়ার প্রতিক্রিয়ায় আমার এ লেখা। তিনি সাদপন্থী হলেও যেমন কিছু আসবে যাবে না, না হলেও আসবে যাবে না। তার প্রতি আমার ধারণা একই থাকবে। (হারুন ইজহারের ব্যাপারে আমার মন্তব্য)

 

 

 

 

 

 

 

 

Sabbir Ahammad Talukder, সবাই ঠিক বলতে সবাইকে মুসলিম ভাই মনে করি। তবে সবার কাজে কর্মে ভুল হয়, পদক্ষেপে ভুল হয়। সেই ভুলগুলো স্বীকার করেই তাদের ভালোবাসি, ভুলগুলোর জন্য তাদের ফেলে দেয়া যায় না। ভুলের সমালোচনা হোক, কিন্তু তারপরও যেন ভ্রাতৃত্ব টিকে থাকে। মুসলিমরা যেন এক থাকতে পারি, নেক থাকতে পারি।

 

Hasan Mirza replied to মুহাম্মদ অলিউল্লাহ's comment.

আপনার কাছে দেওবন্দী হক মনে হয় বলে সাদপন্থীদের ভ্রান্ত মনে হয়। আমার মতে হক কখনো দল হয় না। হক সব দলেই থাকে, সবার মধ্যেই থাকে। পদক্ষেপে ভুল হয় যা।

 

Hasan Mirza replied to ‎محمد حسين‎'s comment.

তিনি যে সাদপন্থীদের পক্ষে না, আমিও জানি। কিন্তু তাবলীগের ভাইরা এই কারণে তার সমালোচনা করে, কেন তিনি সাদপন্থীদের বিরোধিতা করেন না। শূরাপন্থী সাদপন্থী সমান এটা অবস্থার প্রেক্ষিতে বললাম।

 

Hasan Mirza replied to Sabbir Hossain Seefat's comment.

জী, এটাকেই বোঝাতে "পক্ষালম্বন" শব্দ প্রয়োগ করেছি। কিন্তু তার এই একটা কারণই যথেষ্ট মানহাজীদের "গ্রহণযোগ্যতার" তালিকা থেকে বাদ পড়তে। মূলত তিনি যে মানহাজীদের কাছের চিন্তার লোক হয়েও মানহাজী নন এটাই বোঝানোর উদ্দেশ্য ছিল এরদোয়ানকে টেনে।

 

Hasan Mirza replied to Sabbir Ahammad Talukder's comment.

জী, ভাই। সবার থেকেই বুঝে শুনে উপকৃত হতে হবে। কিন্তু আমরা অনেকেই নিজ ঘরানা ছাড়া অন্য আলেমদের কাছ থেকে উপকৃত হওয়ার চেষ্টা করি না। কিছু ফেসবুক-মানহাজীর মতে, এই দেশে আলি হাসান উসামা ছাড়া আর কোনো ভালো আলেম নেই বা গ্রহণযোগ্য কেউ নাই। দলীয় চিন্তা আমাদের এভাবেই সংকীর্ণ করে দেয়।

 

 

Hasan Mirza replied to Sabbir Ahammad Talukder's comment.

এটা প্রশংসাযোগ্য এই কারণে যে তিনি দেওবন্দী দলীয় বাউন্ডারির বাইরে থেকে ব্যাপারটাকে দেখেন। উনি হানাফি ফিকহের অনুসারী, কিন্তু এইজন্য দলীয় দেওবন্দী হতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা নেই, যেভাবে সালাফী হতে গেলে মাদখালী (আলেসাউদকেন্দ্রিক) হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না যদিও মাদখালীরা অ-মাদখালী সালাফীদের সালাফী বলে স্বীকার করে না।

 

আপনার কাছে সাদপন্থীরা ভ্রান্ত, কারণ আপনি শূরাপন্থী। আবার সাদপন্থীদের কাছে শূরাপন্থীরা ভ্রান্ত। সাদপন্থীদের ভুলগুলো উলামারা উন্মোচন করেছে। কিন্তু দেওবন্দীদেরটা করবে কে? সাদপন্থীদের যেমন ভুল আছে, দেওবন্দীদেরও আছে। এই হিসেবে সমান। (অবশ্যই দেওবন্দীরা উত্তম, কিন্তু সেটা ভিন্ন আলোচনা। যখন দুইটা দল হয়ে যায় তখন শুধু দুইটা দল মাত্র)। আমি নিজেও দেওবন্দী ঘরানার বাহিরের লোক, আমার কাছে সাদপন্থীদের সাথে দেওবন্দীদের বেশি পার্থক্য মনে হয় না। সুতরাং যারা দলীয় বৃত্ত ভেঙ্গে উপর থেকে দেখতে পারে তারা আমার চিন্তার কাছের লোক।

 

এখন সমস্যা হচ্ছে দেওবন্দী দলীয় চিন্তার বাহিরে গিয়ে কাজ করলে দেওবন্দীরা তাকে গ্রহণ করবে কিনা! এমন না তিনি সাদপন্থীদের সাথে মিলে গিয়েছেন। হয়তো তার কাছে এতায়াতী-ওয়াজহাতী দ্বন্দ্ব তেমন গুরুত্ব রাখে না। আমার মনে হয় তাকে তাবলীগ ইস্যু কিংবা জিহাদী-মোডারেট, বা দায়েশী-মানহাজী দ্বন্দ্ব দিয়ে বিচার করা উচিৎ না।

 

যদি সাদপন্থীদের বিরোধিতা না করার কারণে তাকে অগ্রহণযোগ্য মনে করা হয় তবে আপনাদের সাথে সেইসব মানহাজীর পার্থক্য নেই যারা এরদোয়ানকে তাকফীর না করার কারণে উনাকে অগ্রহণযোগ্য মনে করে।

 

Hasan Mirza replied to Sazzad S Parvez's comment.

পক্ষালম্বন শব্দটা হয়তো ভুল বলেছি। কিন্তু এরদোয়ানের ব্যাপারে শাইখের অবস্থান মানহাজীদের বিপরীত। তিনি এরদোয়ানকে তাকফীর তো করেন না, বরং (যতটুকু প্রয়োজন) প্রশংসাও করেন। মূলত এটাকেই "পক্ষালম্বন" শব্দ দিয়ে বুঝিয়েছি।

 

শাইখের এমন অনেক চিন্তা আছে যেগুলো মানহাজীদের বিপরীত। উনাকে কেউ চাইলেই মানহাজীদের মধ্যে শামিল করতে পারবে না।

 

বড় সমস্যা হচ্ছে মানহাজীরা সকল ঘরানার মধ্যে সবচেয়ে পরিপক্ব মেজাজের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও কারো পান থেকে চুন খসলে বয়কট করে।

 

(হারুন ইজহার সম্পর্কে আমার একটি পোস্টে আমার কমেন্ট ও রিপ্লাইসমুহ)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পহেলা বৈশাখ ও মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে নয়ন চ্যাটার্জির যে পোস্ট রিমুভ করে দেয়া হয়েছে -

 

https://blankslate.io/?note=184950

 

 

 

 

 

 

 

 

এর লিঙ্ক দিয়ে উল্টা প্রোমট করতেছেন। এসব অনেক আগের ওয়েবসাইট ও পেজ, এতো বছর ধরে ইসলামের বিরুদ্ধে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। দুএকটা রিপোর্টে কিচ্ছু হবে না। তাই কমেন্ট ডিলেট করলেই ভালো হবে।

 

(একজন ব্যক্তি নাস্তিকদের ওয়েবসাইট প্রমোট ক্রায় আমার মন্তব্য)

 

 

 

 

 

 

 

 

ইসলাম হচ্ছে আল্লাহর মনোনীত দ্বীন বা জীবনব্যবস্থা। ইসলাম মানে আত্মসমর্পণ করা। মুসলিম হল যে আল্লাহর হুকুমের কাছে আত্মসমর্পণ করে। যার আদর্শ হবে ইসলাম সে জানে ইসলাম নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ পালন করার অনুমতি দেয় না। একজন মুসলিমের মন যতই চাক সে এটা পালন করতে পারে না, কারণ আল্লাহর হুকুম, সে আল্লাহর ইচ্ছার কাছে নিজের ইচ্ছাকে সমর্পণ করেছে। কিন্তু যেসব মুসলিম পহেলা বৈশাখ পালন করে তারা কেউ জেনে করে কেউ না জেনে করে। যারা নিজেদের মুসলিম দাবি করেন আবার পহেলা বৈশাখ পালন করেন তাদের উচিৎ ইসলাম সম্পর্কে আরও বেশি জানা এবং মানা। তাহলেই এসব তর্কের অবসান হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

কিছু হুজুর বেশধারী এমন জঘন্য কাজ করার কারণে কি ইসলামকে এর দায়ভার বহন করতে হবে, পুরো মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা ও আলেম উলামাদের এই দায়ভার বহন করতে হবে?

 

যারা ধর্ষণ বা বলাৎকার করে তাদের শরিয়াহ আইন অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড দেয়ার বিধান রয়েছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যেভাবে সেকুলারিজম মানুষের ধর্ম হয়ে উঠতেছে তা কমেন্টবক্সে দেখা যাচ্ছে। ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ধর্ম কায়েম। এখন পহেলা বৈশাখ না করলেই কাফের হইয়া যাইতে হবে।

 

 

ভাই, আমি সেটা বলিনি। বললাম, এখন পহেলা বৈশাখ পালন না করলে সেকুলার ধর্মের অনুসারীরা মুসলিমদের ওদের ধর্ম থেকে কাফের বানায় দিচ্ছে।

 

তবে আপনি যদি প্রশ্ন করেন, মুসলিমরা বাদে সকলেই কি কাফের কিনা, তাহলে উত্তরে বলব, হ্যাঁ। মুসলিমরা বাদে সবাই কাফির। কাফির কোনো গালি নয়। কাফির অর্থ অবিশ্বাসী। যারা ইসলামে অবিশ্বাসী তাদের কাফির বলা হয়। এটা একটা পরিচয়, কোনো গালি নয়। আমাদের নবী সাঃ এর পিতা-মাতাও কাফির ছিলেন। ইসলাম হচ্ছে স্রষ্টা প্রদত্ত ধর্ম, সুতরাং এই ধর্ম না মানলে জাহান্নামে যেতে হবে এমনটাই ইসলাম বলে। আপনি যদি ইসলাম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই লেখাটা পড়তে পারেন -

https://www.facebook.com/hasan.mirza.16718979/posts/108872853043995 ।

 

ইসলাম সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন থাকলে ইনবক্সে করতে পারেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মরিচ, হলুদ ও লবণ বেশি হয়ে গেছে, একটু কম রাখা গেলে ভালো। সব মরিচ মুসলমানদের একে অপরের পিছনে ব্যয় হয়ে গেলে বাতিল ধর্ম-মতবাদগুলোর জন্য কিছুই থাকবে না। পোস্টের বিষয়বস্তু নিয়ে আপত্তি নেই, একটু হলুদ-মরিচ কম ব্যবহার করলে ভালো হয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

সেকুলারিজম, জাতীয়তাবাদ, নারীবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, মানবধর্ম বা বাউলধর্ম; এগুলো বাদ গেছে। শিয়াও মিস হইছে, হিদুত্ববাদ গণায় না ধরাও বড় সমস্যা।

 

মওদুদিয়্যাত আর আহলে হাদিসের সাথে ফিতনায়ে দেওবন্দিয়াত, মোডারেট ইসলামের নাম দেয়া উচিৎ ছিল।

 

 

 

 

 

 

 

 

তাকে মামা, চাচা বলবে। যে মেয়ের মা নেই তাকে ফুফু, খালা বলবে। এই কথা শামসুল আরেফিন ভাই আগের স্ট্যাটাসেই বলছেন।

যা-ই করেন, কারিকুলামটা পাবলিক কইরেন, আমাগো লাগবো

তবে একটা সাবধানীর কথা যুক্ত করে দেয়া প্রয়োজন- মা যেন ছেলেকে এসব না বলে, আর বাবারা মেয়েকে। (যৌনতা বিষয়ে বয়ঃসন্ধিকালে অভিভাবক তার সন্তানকে জানাবে সেই প্রসঙ্গে)

 

 

 

 

 

 

 

Group: Peace Freedom & Solidarity (একটি ইসলামি বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞান চর্চা কেন্দ্র)

হেজবুত তওহিদের মত পথভ্রষ্ট ফিরকার অনুসারীরাও আজকাল সব জায়গায় ঢুকে গেছে মুসলমানের ছদ্মবেশে। সদালাপে আসাদ আলি নামে এক হেজবুতি প্রচারণা চালাত, আর এইখানে আরেকজন।

 

 

 

 

 

 

 

একজন (আলেমবিদ্বেষী) বললেন, "(আলিমরা) কেউ কেউ আজ শিশু বলাৎকার, ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন সহ অনেক অনৈতিক এবং হারাম কাজে লিপ্ত হয়ে যাচ্ছে।"

 

আমার প্রশ্নঃ কেউ এসব কাজ করলে উলামা কি আর থাকে? ফাসিক ব্যক্তি কি আলিম? আলিম বা মুসলিম এই শব্দগুলো তো কোনো জাতিগত বা দলগত পরিচয় না, এটা তো আদর্শিক পরিচয়, নৃতাত্ত্বিক না। একজন বাঙালী যত অপরাধ করুক, সে তো বাঙালী থাকে, কিন্তু আলিম বা মুসলিম হওয়ার ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা কি তেমন?

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Group: Peace Freedom & Solidarity (একটি ইসলামি বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞান চর্চা কেন্দ্র)

যারা এমামুযযামান কাযযাব পন্নির অনুসরণ করে তারাই মুমিন, ঠিক না জাফর সাহেব?

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Rajib Hasan ভাই, ফেবুতে হেজবুত তওহিদের এক্টিভিটি দেখে আমি উদ্বিগ্ন, এরা কাদিয়ানিদের মতই ভয়ঙ্কর ফিতনা। আলিমদের উচিৎ প্রতিটা ফিতনার উপর আলাদা আলাদা বই লেখা, বয়ান করা, মানুষকে সচেতন করা। হানাফি সালাফি সকল আলিমদের এটা কর্তব্য। শিয়া, কাদিয়ানি, আহলে কুরআন, হেজবুত তওহিদ এই ৪ টাই ইসলামের নামে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ফিতনা।

 

ভাই Rajib Hasan, সব বাতিল ফিতনাগুলো যে পরিমাণ একটিভ, আমরাই বরং ওদের খণ্ডনে নিষ্ক্রিয়। আপনার কাদিয়ানি সিরিজ চলতে থাকুক।

 

হ্যাঁ, ফিরকায়ে বাতিলা তো অনেক আছে। শিয়া, কাদিয়ানি, আহলে কুরআন, এছাড়াও আধুনিক মতবাদগুলো। সবগুলোর বিরুদ্ধেই সোচ্চার হতে হবে। তবে কোনগুলো বেশি ক্ষতিকর আর বেশি এক্টিভ তার উপর নির্ভর করে কোনটার খণ্ডন আগে করা প্রয়োজন, কোনটার বিরুদ্ধে বেশি কথা বলা প্রয়োজন।। লালনবাদ হচ্ছে বাউলধর্ম, মানবধর্ম। আর সেকুলারদের সাথেও ওদের অনেক মিল। বাউলধর্মের এরা নিজেদেরকেই নিজেরা মুসলিম মনে করে না। এরা তো কাফির এটা নিয়ে সন্দেহ নাই। কিন্তু যারা ইসলামের নামে কুফরি ছড়াচ্ছে তারাই বেশি ভয়ঙ্কর। যেমন কাদিয়ানি, হেজবুতি, আহলে কুরআন। আমার কাছে হেজবুতিদের ফিতনা সবচেয়ে ক্ষতিকর মনে হয় এবং তারাই সবচেয়ে বেশি একটিভ। কাদিয়ানিদের পরেই এদের অবস্থান।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ভাবতাম, জামায়াতিদের সাথে শিয়াদের একটু দহরম-মহরম আছে, এতোটুকুই। এখন দেখি এদের অবস্থা শিয়াদের চেয়ে কোনো অংশে কম না। এটা মওদুদিপূজা।

 

 

 

 

 

 

 

 

বিকল্প প্রোডাক্ট থাকা প্রয়োজন। এজন্য একটা কাজ করা যেতে পারে, দেশের সকল দীনী লোকদের ব্যবসার তালিকা করা প্রয়োজন।

 

 

 

 

 

 

 

 

আরিফ আজাদ, ২ দিন পর পর ফেবুতে পোস্ট দিতে ঢুকলেই তো হয়। আপনার লেখার জন্য অনেকে অপেক্ষা করে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আওয়ামী বিম্পি জামাত আর যাই হোক দেশ তো কুনো মতে চালাতে পারছে। কিন্তু মূলধারার হুজুরদের তো ইসলাম নিয়েই কোনো পরিকল্পনা নেই, দেশ চালানো নিয়ে এদের অবস্থা কি হবে তা কি বুঝতে বাকি থাকে।

 

 

 

 

 

 

 

জি ভাই ঠিক বলছেন। আহলে হাদিস হতে হলে মাযহাব বিদ্বেষ থাকতে হবে। আলে সাউদকে ভালোবাসতে হবে। নিজেদের বাদে দুনিয়ার তাবৎ মুসলমানের পিণ্ডি চটকাতে হবে।

 

 

 

 

 

 

 

আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় রাষ্ট্রকে যত বেশি ইসলামিক করা হবে পশ্চিমাদের আক্রোশ তত বাড়বে। এমনকি দেশকে যুদ্ধক্ষেত্র বানিয়ে ফেলতে পারে। তাই সব ইসলামী গণতান্ত্রিক দলগুলা যায় যত কম ইসলামিক থেকে ক্ষমতায় যাওয়া যায়। অর্থাৎ ইসলাম শুধু নামেমাত্র ব্যবহার। অর্থাৎ কেউ যদি ইসলামী শাসন চায় গণতান্ত্রিক দলের মাধ্যমে সে নিজেই নিজেকে ধোঁকা দিচ্ছে। এরদোগানের সমালোচনা করলে অনেকে যেমন বলে সে সেকুলার রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান, অর্থাৎ গণতান্ত্রিক ইসলামিস্টরাও স্বীকার করে তাদের কাছে সবচেয়ে আদর্শবান মুসলিম নেতাও সেকুলার রাষ্ট্রকে ইসলামিক রাষ্ট্র বানাতে পারেন নি। এদিকে তার রাজত্বের মেয়াদও ফুরিয়ে আসতেছে, অথচ ইসলাম কায়েম আর হয়ে উঠল না। অর্থাৎ গণতান্ত্রিক ইসলাম কায়েম পুরাই একটা ভন্ডামি। তবে আমি কিছু কারণে কিছু ইসলামী দলের ভেতরের মানুষকে পছন্দ করি। ইসলাম কায়েমের উদ্দেশ্যে যারা গণতান্ত্রিক রাজনীতি করে তারা হয় ইসলাম বোঝে না নয়তো বিশ্বব্যবস্থা সম্পর্কে এদের ধারণা নেই। রাজনীতি করা কৌশলগত দিক থেকে ভুমিকা রাখতে পারে, তবে ইসলাম কায়েমের জন্য কখনোই না।

 

যদি কখনো কোনো ইসলামী দল ক্ষমতায় আসে কমবেশি সবাই ভিন্ন মতের মুসলিমের পিণ্ডি চটকাবে। সবচেয়ে বেশি এ কাজ করবে দেওবন্দিরা। আর সবচেয়ে কম করবে জামায়াত। যদি আহলে হাদিসদের কোনো রাজনৈতিক দল থাকতো তাহলে বলতাম তারাই সবচেয়ে বেশি করবে, কিন্তু যেহেতু তাদের দল নেই তাদের আলাপও নেই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তার ব্যাপারে সঠিক পর্যালোচনা হলে আমরা যা ভাবি এর চেয়েও বড় মুনাফিক বলে প্রতীয়মান হবে। মূলধারার বড় বড় উলামাদের নিকটজন তিনি। মূলধারার কোনো বড় আলিমের মন্তব্য কি আছে তার সম্বন্ধে? শুধু ফেবুতে তাকে নিয়ে ট্রল ছাড়া আর কিছু কি হয়? বরং তার পাওনার খুব কমই দেয়া হয় একটু ট্রল ট্রুল করে। (ফরিদ মাসুদ সম্পর্কে)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ভাই, আপনি প্রমাণ দেখান সাহাবিরা নিজেদের আহলুল হাদিস বলতেন, তাবেঈরা বলতেন, তাবে-তাবেঈরা বলতেন। ইবনু তাইমিয়া, ইবনুল কায়্যিম, ইবনু আব্দিল ওয়াহহাব বলেছেন। যারা নিজেদের আহলুল হাদিস বলে নি তাদেরকে আহলুল হাদিস বলতে পারবেন না, কারণ আপনাদের মতে আহলুল হাদিস একমাত্র মুক্তিপ্রাপ্ত দল।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মাদ্রাসার আর্থিক সমস্যা নিয়ে আমি ভেবেছি, এবং আমার মাথায় একটা আইডিয়া এসেছে, জানি না এটা বাস্তবে কতটা কার্যকর হবে। তবু বলি।

 

প্রতিটা মাদ্রাসার জন্য একটি ফান্ড গঠন করা হবে এবং সদস্য সংগ্রহ করা হবে। যারা আর্থিকভাবে সহায়তা করতে পারবে তারা সদস্য হবে। এবং সদস্য হলে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা মাসিকভাবে দিতে হবে। এর পরিমাণের ভিত্তিতে ৩ স্তরের সদস্য সংগ্রহ করা যেতে পারে। যেমনঃ (ক) ৫০০ টাকার নিচে। (খ) ১০০০ টাকা পর্যন্ত। (গ) ১০০০ এর উপরে।

 

যারা সদস্য হবে তাদেরকে প্রতি মাসের খরচের হিসাব বুঝিয়ে দিতে হবে। কেউ চাইলে সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি নিতে পারবে। প্রতি মাসে একবার (বিশেষ করে ১০ তারিখের পর, যখন মানুষের হাতে টাকা থাকে) ছোট খাটো দুয়ার অনুষ্ঠান করে চাঁদা সংগ্রহ করা যেতে পারে, সে সময় আগের মাসের টাকার হিসাবও বুঝিয়ে দেয়া সম্ভব। আবার যারা দান করবে তাদের এই দুয়ার অনুষ্ঠানে এনে একটু ছোটখাটো হেদায়েতের বয়ান করে ইসলামের কাছাকাছি আনার সুযোগ তো থাকবেই।

 

অনেকেই দান করতে চায়, কিন্তু দান করার জায়গা পায় না। এই পদ্ধতি অবলম্বন করলে আশা করি কালেকশনের জন্য ঘোরাঘুরি করার প্রথা বন্ধ হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

commented on Mojibur Rahman Monju's post.

আপনারা ভাবতেছেন আরেকটু সেকুলার হইলে দেশের মানুষ আপনাদের গ্রহণ করবে। এখন আপনাদের সেকুলাররাও গ্রহণ করতেছে না, আর ইসলামী রাজনীতি ত্যাগ করার কারণে মুসলিমরাও গ্রহণ করতেছে না। গালি খান ২ জায়গাতেই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Mostofa Manik, একজন যোগ্য ও সাহসী খলীফা তো আছেন। তাকে মানেন কি? গত ৯০ বছরে একজনই রাজনৈতিক খিলাফাতের দাবি করেছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on Abdil Karim Bin Abdul Awal's post.

আপনার উচিৎ হিজরত করে কাসিম ভাইয়ের কাছে চলে যাওয়া। যদি তিনি হক হয় তাহলে হক পাবেন, আর তা নাহলে তার ভন্ডামি অনেক দূরে গিয়ে বুঝতে পারবেন।

ভাই, আপনাকে আমি আল্লাহর জন্য ভালোবাসি। কিন্তু দুঃখ হচ্ছে আপনি মুহাম্মাদ কাসিমের ফিতনায় পড়ে গেছেন। আপনাকে আহবান জানাই এর থেকে বেরিয়ে আসতে। ইমাম মাহদি কখনো নিজের পরিচয় গোপন করে বিভিন্ন স্বপ্নের কথা প্রচার করবেন না। তিনি আসলে ডাইরেক্ট একশন শুরু করবেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on Mahdi Hasan's post.

সালাহুদ্দিন আইয়ুবি, বাইবার্স, কুতুয, মুহাম্মাদ ফাতিহ কিংবা সুলাইমান, এদেরকে ইসলামের মহানায়ক হিসেবে দেখানোটা ভালো মনে হয় না। এদের অধিকাংশ ক্ষমতার লড়াইয়ে লিপ্ত হয়েছে, এদের প্রত্যেকের জীবনে অন্ধকার দিক আছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এখন এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত। আর পূর্বে (ইংরেজ আমল) ইংরেজি শিক্ষা থেকে দূরে থাকা ছিল সঠিক সিদ্ধান্ত। উলামারাই সবচেয়ে বেশি যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে।

 

 

 

 

 

 

 

আমি কোনো পক্ষের সহিংসতাকে সমর্থন করি না। বরং ইতাতি, ওয়াজাহাতি উভয় তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে, কেউ কারো কাজে নাক না গলিয়ে। উভয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে বিশেদ্গার না করে আপন অবস্থান উপর ছেড়ে দেয়া উচিৎ। উভয়ে যেহেতু তাবলীগ থেকে তৈরি হয়েছে সুতরাং উভয়ের অধিকার আছে নিজেদেরকে তাবলীগী বলার।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সমস্যা ছিল না যদি না কারো ক্ষতি হইত। মীর ভাই তো ফেক আইডি, তাই তার সমস্যা নাই। কিন্তু মীর ভাইয়ের সব দোষ শক্তি ভাইয়ের ঘাড়ে চাপানো হয়, অনেকে মনে করে মীর হইতেছে শক্তি ভায়ের ফেক আইডি।

 

এখন দেখি মীর শক্তি নামেও আইডি আসছে। যে এই কাজ করছে এটা শরীয়াহ বহির্ভূত কাজ হইতেছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

আহা-দের নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, আহাফি বলে দূরে সরালে হবে না। (আহা মানে আহলে হাদিস)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

স্যার, ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে মানুষের মধ্যে অনেক ভুল ধারণা আছে। তাই অনেকে অনেক বিষয় নিয়ে অযৌক্তিক সমালোচনা করে। আশা করি আপনি এর দ্বারা প্রভাবিত হবেন না।

 

আমি মুসলিম হিসেবে এটা নিঃসঙ্কোচে বলতে চাই যে ইসলাম হচ্ছে সত্য ধর্ম যা স্রষ্টাপ্রদত্ত।

 

(এক হিন্দু ব্যক্তিকে দাওয়াত দেয়ার চেষ্টা)

 

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza replied to Md Foysal Ahmed's comment.

ভাই, পিডিএফ পেলে মানুষ বই কেনে না, এটা ভুল কথা। আমার ক্ষেত্রে এমন হয়েছে, পিডিএফ বই পড়ে ভালো লেগে সেই বই কিনেছি, কিছু বই এতো ভালো লেগেছিল যে অনেকগুলো কপি কিনে মানুষকে হাদিয়া দিয়েছি। কিন্তু যাদের কথা বলছেন তারা পিডিএফ না পেলেও সেই বই কিনবে না, আর যারা কিনবে তারা পিডিএফ পেলেও কিনবে। তবে যারা বই কেনার সামর্থ্য রাখে না তাদের কথা ভিন্ন। তবে আমার দর্শন হচ্ছে সকল ইসলামিক বই প্রকাশের ৫ বছর পর অফিসিয়াল ভাবে উন্মুক্ত করে দেয়া উচিৎ। চিন্তা করে দেখুন ২০০০ সালের পরেই বাংলায় হাজার হাজার বই বেরিয়েছে, এক সময় ব্যাবসা সফল ঠিকই হয়েছে, কিন্তু এখন সেগুলোর নাম গন্ধ নেই, এগুলোর কোনো কপিও আজকে খুঁজে পাওয়া যায় না। কিন্তু যদি অফিসিয়াল ভাবে পিডিএফ দেয়া হত, তবে আজকে হাজারখানেক বইয়ের জ্ঞান উন্মুক্ত থাকতো। কিন্তু ব্যবসায়িক চিন্তা করতে গিয়ে আজকে সেই বইগুলো কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না, আর মানুষও সেগুলো কেনার আগ্রহ রাখে না। এজন্যই বললাম সকল বইয়ের পিডিএফ ৫ বছরের মধ্যেই উন্মুক্ত করে দেয়া উচিৎ। এই কয়েক বছরের ব্যবসা সফল বইগুলো যেমন , সীরাত পাব্লিকেশনের কিছু বই, মুক্ত বাতাসের খোঁজে, এরকম কিছু বই আছে যার এক বছরের মধ্যেই পিডিএফ উন্মুক্ত করে দিয়েছে, ওরা এক বছরেই যা ব্যাবসা করার করে নিয়েছে। সবগুলো প্রকাশনী যদি এটা করত তবে ভালো হত।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza replied to আরিফ আজাদ's comment.

আসলে দুপুরে ঘুমানো বলতে যোহরের আগে ঘুমানো বোঝায়। সাইফুল্লাহ মাদানি এমনই বলেছেন। https://www.ntvbd.com/religion-and-life/87405

 

রসুল সাঃ তাহাজ্জুদের সময় উঠতেন। যারা ফজরে উঠে তাদের সকাল ১০ টার দিকে একটু ঘুম ঘুম আসে। রসুল সাঃ তাহাজ্জুদে উঠতেন। আর ফজরের পর ঘুমাতেন না। ১০ টার পরে দুহার নামাজ পড়ে পরিবারের সাথে কিছু সময় কাটিয়ে এরপর ঘুমাতেন। উঠতেন বিলাল রাঃ এর যোহরের আজানে। শুধু শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঘুমাতেন। কারণ জুমার নামাজের প্রস্তুতি আগে আগে নিতে হয়। কেউ যদি ফজরের পর না ঘুমায় তবে অবশ্যই তার যোহরের আগেই ঘুম আসবে। বিকালে না ঘুমালে এশার পর এমনিতেই ঘুম আসবে। এশার পর কথা বলা বলা অপছন্দনীয়। তাই এশার পর পর ঘুমানোই ভালো।

Aug 19, 2019, 1:28 PM

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমরা জাভেদ ভাইয়ের জন্য দুয়া করতে পারি, কিছু টাকা সাদকা করতে পারি, তার রেখে যাওয়া পোস্টগুলো শেয়ার করতে পারি। এর দ্বারা তিনি উপকৃত হবেন।

 

রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যখন মানুষ মৃত্যুবরণ করে তখন তার তিনটি আমল ব্যতীত সবগুলি আমল বন্ধ হয়ে যায় (১) ছাদাক্বায়ে জারিয়াহ (২) এমন জ্ঞান, যার দ্বারা অন্যরা উপকৃত হয় (৩) নেক সন্তান, যে পিতার জন্য দো‘আ করে’।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

অন্যের বাবাকে নিজের বাবা বলে পরিচয় দেয়া নিষেধ আছে হাদিসে। সা'দ ও আবু বাকরা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদীসে রাসুলুল্লুাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন- "জেনে শুনে যে নিজ পিতা ব্যতীত অন্যকে পিতা বলে পরিচয় দেয়, তার উপর জান্নাত হারাম।"

 

এই হাদিসের পিছনে হিকমাহ হল আপন পিতা মাতা ব্যাতীত আর কেউই আপন পিতা মাতার স্থান নিতে পারে না। কারণ পুরুষের জন্য মায়ের সাথে আর মহিলাদের জন্য পিতার সাথে পর্দা করতে হয় না। কিন্তু কেউ যদি অন্য কাউকে তাদের স্থলে বসায় এবং আপন পিতা মাতার মত আচরণ করতে যায় তখন পর্দার লঙ্ঘন হয়। দত্তক পুত্রকেও নিজের নামে পরিচিত করানো নিষেধ। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দত্তক পুত্র যাইদ বিন মুহাম্মাদ নামে পরিচিত ছিল, কিন্তু আল্লাহর আদেশে রসুল তার দত্তক পুত্রের নাম পরিবর্তন করে প্রকৃত পিতার নাম যুক্ত করে দেন।

 

হাদীসে এসেছে, من ادعى إلى غير أبيه وهو يعلم أنه غير أبيه فالجنة عليه حرام “যে ব্যক্তি পরের বাবাকে নিজের বাবা বলে, অথচ সে জানে যে, সে তার বাবা নয়, সে ব্যক্তির জন্য জান্নাত হারাম।” (বুখারী, ৬৩৮৫)— এ জাতীয় হাদীস দ্বারা উদ্দেশ্য হল, বংশপরিচয় প্রকাশ করার ক্ষেত্রে আসল পরিচয় গোপন রেখে নিজের বাবার নাম উল্লেখ না করে, অন্যের নাম উল্লেখ করা। যেমন-আইডি কার্ড, পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন অথবা এমন কোনো দলিল বা স্থান যেখানে কোনো ব্যক্তির জন্মদাতা বাবার নাম উল্লেখ করা জরুরি হয়, সেখানে যদি অন্য কারো নাম উল্লেখ করা হয় তাহলে তা হারাম হয়। (সুত্রঃ উমায়ের কোব্বাদি)

 

তবে কাউকে সম্মানার্থে মা কিংবা বাবা ডাকাতে সমস্যা নেই। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার চাচিকে (আলি রাঃ এর মাকে) মা বলে ডাকতেন। শ্বশুর শাশুড়িকেও মা বাবা বলতে সমস্যা নেই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আবার অন্যদিকে অনেক মাদ্রাসা পড়ুয়া ভাইয়েরাও বা ইংরেজি না জানা ভাইয়েরা ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করতে যায়, তখনও জেনারেলদের হাসির উদ্রেক ঘটে। এর চেয়ে আমরা যতটুকু জানি ততটুকুই ব্যবহার করি, এটাই ভালো না?

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ওমর ফারুক, আমরা ইসলামের অনুসারী, আমরা "শুনলাম এবং মানলাম" এর উপর আমল করি। আমরা নিজেদের নফসের গোলামি করি না আর যুক্তিকে ওহীর উপর প্রাধান্য দেই না। আল্লাহ ইবলিশকে বলেছিল সিজদাহ করতে, সে যুক্তি দেখিয়েছিল সে আগুনের তৈরি। আর আপনারা হেজবুতি ধর্মের লোকেরাও যুক্তি দেখাচ্ছেন হজে সৌদিরা টাকা মেরে খায়। শয়তান যে যুক্তি দেখিয়ে আল্লাহর বিধান অমান্য করে পথভ্রষ্ট হয়েছে আর আপনারাও যুক্তি দেখিয়ে আল্লাহর বিধান অমান্য করছেন। আমাদের রাসুল মুহাম্মাদ সাঃ এবং আপনাদের ইমাম ভন্ড পন্নি। সুতরাং দুই ধর্মের পথ আলাদা। আল্লাহ সত্য থেকে মিথ্যাকে আলাদা করেন। ইসলামের সাথে টক্কর দিতে যুগে যুগে কত নতুন নতুন ধর্ম মতবাদ তৈরি হয়েছে, কিন্তু ইসলাম ১৪০০ বছর পরেও টিকে আছে, হারিয়ে গেছে ইসলামের বিধান নিয়ে প্রশ্ন তোলা সেইসব মুতাজিলা, জাহমিয়া, কাদরিয়া, খারেজিরা। কয়েকশ বছর আগে কাদিয়ানি, আহলে কুরআন ইত্যাদি ধর্ম তৈরি হয়েছে, আর আজ তৈরি হয়েছে হেজবুত তৌহিদ নামে নতুন ধর্ম। এইসব ইসলামের নাম দিয়ে তৈরি নতুন নতুন ধর্মগুলোর মধ্যে একটা মিল খুঁজে পাওয়া যায়, প্রত্যেকেই ১৪০০ বছর ধরে চলে আসা ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রত। ইসলাম ১০০ না, কিয়ামাত পর্যন্ত জারি থাকবে যতদিন আল্লাহ চান, আর মাঝের এই সময়ের এসব ভ্রান্ত মতবাদ তো আবু জাহাল ও আবু লাহাবের রোল প্লে করছে মাত্র।

 

ইসলামে ফিরে আসুন, মুক্তি পাবেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এইটা ভালো আইডিয়া। শরিয়তুল্লাহ চরম লেভেলের ওয়াহাবি ছিলেন, কিন্তু উনার আন্দোলনরে সফল করার জন্য উনার ছেলে দুদু মিয়া পির মুরিদি শুরু করছিলেন। তিতুমীরও ওয়াহাবি হওয়া সত্ত্বেও পীর মুরিদি করতেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ভাই, কিছু মনে করবেন না। কওমিরা নাহয় শেখ হাসিনার পা চাটে, কিন্তু জামায়াত তো খালেদার পা চাটে। এখনো বিএনপির লেজ ধরে জামায়াত পড়ে আছে। শেখ হাসিনার গুণগান গাইলে দোষ, আর দুইবারের ক্ষমতাসীন জালেম খালেদা জিয়ার লেজ ধরে পড়ে থাকলে খুব খুব ইসলাম কায়েম হইছে, না? (এক জামাতি ভাইয়ের পোস্টে কমেন্ট)

 

 

 

 

 

 

 

 

এমন অন্ধ অনুসারী আহলে হাদিস কিংবা দেওবন্দিদের মধ্যেও নাই। আহলে হাদিসরাও আলবানী রঃ কিছু মত মানে না। দেওবন্দিরাও নিজেদের অনেক আকাবিরের অনেক মত মানে না। এবং যেসব আকাবির ভুল করেছে তাদের ভুল তারা স্বীকার করে। হাজী এমদাদুল্লাহ মাক্কী মিলাদ কিয়াম করতেন, এটা দেওবন্দিরা মানে না।

 

কিন্তু জামায়াতের ভাইদের এখন পর্যন্ত দেখলাম না মওদুদি রঃ এর কোনো ভুল স্বীকার করেছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পাকিস্তান একটি মুসলিম জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্র। তাদের মূল শত্রুই ভারত। সুতরাং ভারতের বিরুদ্ধে বলবে এটাই তো স্বাভাবিক। ইমরানের জায়গায় যদি আমাদের শেখ হাসিনাও থাকতো সেও ভারতের বিরুদ্ধে বক্তৃতা দিত। কেন ভুলে যাই আইয়ুব, ভুট্টোরাও ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। ইমরানের কাছে যারা অনেক আশা রাখে, কিংবা তার মধ্যে মাহদী খুঁজে পায় তাদের জন্য আফসোস, না বুঝে রাজনীতি আর না বুঝে ধর্ম।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চায়ের দোকানে কাজ করার আয় হালাল আর বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলা হারাম। কাফিরের আলাপ ভিন্ন। (মোদি বনাম ইমরান ইস্যু)

কাফিরের আলাপ ভিন্ন সেটা তো বলেই নিয়েছি। হালাল হারাম এ কারণেই বললাম বাহ্যিক দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে চায়ের দোকানে কাজ করাকে খাটো করা হচ্ছে, আর বিশ্বকাপ খেলাকে খুব বড় করে দেখা হচ্ছে। যদিও আফসার ভাই অন্য একটা বিষয়কে ফোকাস করেছেন। তিনি নেতৃত্বকে ফোকাস করেছেন। এই হিসেবে কথা ঠিক আছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza replied to his own comment.

সেকুলারদের কথা কপি পেস্ট করলে তো বলতেই হবে। সেকুলারদের কাছে সমকাম কোনো অপরাধ না, মুসলিমদের কাছে হারাম। সুতরাং বলার ভঙ্গীতে পার্থক্য থাকতে হবে। সেকুলারদের সুরে যদি কেউ কওমিদের সমকামী বলে তাহলে সেকুলারদের সাথে তার কি পার্থক্য! তাই বলার ভঙ্গীতে পার্থক্য থাকা উচিৎ। সেকুলাররা বলে ইসলামবিদ্বেষ থেকে, আর আমাদের বলা উচিৎ ইসলামের দৃষ্টিকোন থেকে।

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza replied to Abdullah Almahmud's comment.

ভাই, মুশরিক হওয়া সত্ত্বেও খ্রিস্টানরা আহলে কিতাব হওয়ার কথা। কারণ কুরআনের আয়াত যখন নাজিল হয় তখন ত্রিত্ববাদীরাই মূলধারার খ্রিস্টান ছিল।

 

 

 

 

 

 

 

জঙ্গি মানেই মুজাহিদ। জঙ্গি শব্দ নিয়ে আমাদের হীনমন্যতা থাকা উচিৎ না।

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on আতাউর রহমান বিক্রমপুরী's post.

ভাই মউদুদি রঃকে কেউ গালাগালি করলে কি কওমি আলেমদের গালাগালি জায়েজ হয়ে যায়?

 

 

 

 

 

 

 

আসলে এরেঞ্জ ম্যারেজের সাথে লাভ মেরেজের পার্থক্য নাই, মানে পরিচিত অপরিচিতের দিক থেকে। যেভাবে বর্তমান যুব সমাজ একটা যুক্তি দেয়, অপরিচিত একজনকে কিভাবে বিয়ে করা যায়, এর চেয়ে প্রেম করে কয়েক বছর পরিচিত হয়ে নিয়ে ভালো মত চিনে এরপর বিয়ে করা উচিৎ। অথচ এটা একটা ফালতু যুক্তি। প্রেম করার সময়েও একজন অপরিচিতের সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠে। তো এমন যদি হয় যাদের সাথে প্রেম করল কেউই ভালো পড়ল না, দুই বছর প্রেম করল, এরপর ব্রেকাপ হল, আবার দুই বছর প্রেম করল, আবার ব্রেকাপ হল। এদিকে বিয়ের বয়স কই গিয়ে ঠেকবে?

 

 

 

 

 

 

 

 

আহ! দলিল এখন আহলে হাদিসদের সম্পত্তি হয়ে গেছে। হানাফীদের দলিল লাগে না! দলিল চাইলে লা-মাজহাবী ট্যাগ খেতে হয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

অনুমানভিত্তিক ধারণা গুনাহ। কাফের হলেও কারো ব্যাপারে অপবাদ দিতে নাই।

 

জারজ সন্তান হওয়া দোষের না, আর তার জারজ সন্তান হওয়ার বিষয়টাও প্রমাণিত না। (শেখ মুজিবকে জারজ বলায় আমার মন্তব্য)

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on মুহাম্মাদ আরিফুল ইসলাম's post.

আপনাকে একটা বুদ্ধি দেই, আপনার মৌলিক পোস্টগুলা অন্য কোথাও সেভ করে রাখবেন, মাঝেমধ্যে পুরাতন পোস্টগুলা রিপোস্ট দিবেন। এতে পূর্বের পোস্ট কেউ না পড়ে থাকলেও পড়া হয়ে যাবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on মুর্জিয়া খারেজি এন্টিবায়োটিক's post.

কাফের এন্টিবায়োটিক কই? কাফেরদের বিরুদ্ধে আমাদের বেশি ঘৃণা রাখা উচিত। আমরা অধিকাংশই কাফেরদের চেয়ে ভিন্নমতের মুসলিমদের প্রতি বেশি ঘৃণা রাখি।

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on Islamul Haque Sagor's post.

কাঠমোল্লা হচ্ছে যাদের মধ্যে রং রস নাই, কাঠের মতোই রসহীন। যাদের রস আছে তাদের রসমোল্লা বলে হয়তো।

সেকুলাররা রসমোল্লা, যেখানে সেখানে রস ছাড়ে/ছাড়ায়। তাই হুজুরদের কাঠমোল্লা বলে।

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on ফাহিম আল হাসান's post.

পাশ্চাত্যের দেখাদেখি এখানেও স্বাভাবিক করার জন্য প্রথম পদক্ষেপ। ওরা (সেকুরা) যে সাহিত্য রচনা করে সেখানে একেকটা দাড়ি কমারও উদ্দেশ্য থাকে। আর এতো বড় একটা ঘটনার উদ্দেশ্য থাকবে না তা হয় না।

 

 

 

 

 

 

 

সপ্তাহে ২ দিন, সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা সুন্নাহ।

 

'আম্মজান আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) সর্বদা সোমবার ও বৃহস্পতিবার সাওম (রোযা) পালন করতেন।' (নাসায়ী ২৩৬১-২৩৬৪)

 

 

 

 

 

 

ভাই, হানাফী হলে হানাফী নিয়ম মানবেন আর সালাফী হলে সালাফী।

 

আমি যতটুক জানি হানাফী হলে কুনুত পড়া লাগবে, ভুলে গেলে সাহু সিজদা, ১ রাকাত বিতর হবে না। কুনুত পড়ার আগে রাফুল ইয়াদাইন।

 

আর সালাফী হলে দুয়া কুনুত ভুলে গেলে নামাজ হয়ে যাবে, ১ রাকাত হয়, তবে ১ এর আগে ২ যোগ করা উচিত বলে মনে করি। রুকুর পরে কুনুত।

 

 

 

 

 

 

 

আমরা সবাই সবাইরে খারেজী বলি, মুরজিয়া বলি। ইহুদী খ্রিস্টানের দালাল বলি। সবার কথা সঠিক হইলে দুনিয়াতে কেউই মুসলমান নাই।

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza replied to Rashed Ahmed's comment.

আমি কাউকে দাইশ সাপোর্ট করতে বলছি না। আমি তাদের কোনো একটা অপরাধকেও সমর্থন করি না। আমি জাস্ট ২ টা কথা বলছি, ১- আইএস খারেজী না, তবে খারেজী সিফতওয়ালা। ২- তাদের খিলাফত বৈধ। উভয় দাবির পেছনে আমার কাছে দলীল, যুক্তি, বুদ্ধি ও সত্য গ্রহণের মানসিকতা আছে।

 

 

 

 

 

 

 

বেশি হাই লেভেলের সার্কাজমকে সার্কাজম বলে না। সার্কাজম হইল সেইটা যেইটা বুঝা যায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

হুমকি দুই দলই, একদল আকীদার দিক থেকে, অন্যদল রাজনীতির দিক থেকে। তবু তুলনা করলে খারেজীদের চেয়ে মুতাজিলারা বেশি হুমকি ছিল।

 

 

 

 

 

মেয়েদের বিয়েতে টাকা লাগে না। জাহেলী নিয়ম পালন করে সমাজে মেয়েদের বিয়ে হয় না টাকার জন্য। আফসোস, ইসলাম মেনে না চলার কারণে দুনিয়াতেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষেরা।

 

 

 

 

 

 

ফাজায়েল ও মুন্তাখাব দুইটাই উপকারী। কোনোটাকেই অপকারী বলি নি। আমি দুইটাকেই উপকারী মনে করি, মুন্তাখাবকে একটু বেশি মনে করি। এতোটুকুই।

 

 

 

 

 

 

আইএস কিন্তু আকাশ থেকে আসে নি, কায়দা থেকেই বের হয়েছে। এতে একটা ভালো হয়েছে যে কায়দার অধিকাংশ উগ্র, চমরপন্থী এই জামাআত থেকে বেরিয়ে একে কলঙ্কমুক্ত করেছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

জি, আমি হকপন্থী দলের সাথেই আছি। তবে কোনো দলকে একমাত্র হক মনে করি না।

 

 

 

 

 

 

 

আচ্ছা, ইসলামের নামে মানুষ হত্যা করলে খারেজী, কিন্তু ক্ষমতার নামে মানুষ হত্যাকে কি বলবেন? আব্বাসীয়, উসমানীয়রা তো ক্ষমতার নামে মানুষ হত্যা করত। আর আইএসের সাথে খারেজীদের কোনো তুলনাই মিলে না। খারেজীরা আকীদার কারণে খারেজী। এরকম আকীদা আইএসের মধ্যে নাই।

 

 

 

 

 

 

 

অফলাইনের দাওয়াত আর অনলাইনের দাওয়াত দুইটা দুই লেভেলের দাওয়াত। সরাসরি দাওয়াত হল সুন্নাহ। রাসুলের সুন্নাহ-দাওয়াতের একটা আলাদা মর্যাদা তো থাকবেই। কিন্তু অনলাইন থেকে কি পরিমাণ মানুষ হেদায়েত পাচ্ছে সেসব বিবেচনায় এটাকে নিয়েও ভাবার সময় এসেছে।

 

 

 

 

 

 

 

রসুল সাঃ বিতরের পরের দু রাকাত বসে পড়তেন, উনি গাইরে মাজুর ছিলেন। সেই হিসেবে আমিও পড়ি/পড়ার চেষ্টা করি। তাছাড়া এটা তো নফল নামাজ। আর নফল বসেও পড়া যায়। তবু সন্দেহ থাকলে আলিমদের থেকে জেনে নেয়া যেতে পারে।

 

 

 

 

 

 

মানুষের চিন্তাধারার সাথে দাড়ির একটা সম্পর্ক আছে, দাড়ি কতটুক, কি রকম, এগুলো অনেক সময়, অনেকের ক্ষেত্রে তার মতাদর্শকে রিপ্রেজেন্ট করে।

 

 

 

 

 

 

 

ভুল চুক তো সব খানেই আছে।

 

তাবলীগ পথহারাদের ইসলামের পথ দেখাইতেছে এটাই বা কম কি?

 

 

 

 

 

 

 

আগামী দিনের সেকুলারিজম মাদ্রাসার থেকে বাইর হবে,

 

আর মৌলবাদ বাইর হবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মোচ রাখাকে উৎসাহিত করে এরকম হাদিস আছে বলে জানা নেই। তবে এটা একটা বীরত্বের নিশান। মুজাহিদরা এজন্য মোচ রাখে। তবে এতো বেশি বড় না। মোচকে বলা হয় মুজাহিদদের শান। একটা হাদিস আছে না, যুদ্ধের ময়দানে দম্ভভরে চলাফেরা করাও জায়েজ।

মোচে তা দেয়া তো মুজাহিদদের স্বভাব।

মোল্লা ওমরের পিক দেখতে পারেন। রঃ। সব তালেবান মোচ রাখে। এছাড়া শাইখ উসামা, যাওয়াহিরীর পিক দেখেন।

 

জিহাদীরা বাদে বেশিরভাগ মুসলিমই সাধারণত মোচ শেভ করে ফেলে। কওমি, তাবলীগী, বেরেলভি, সালাফি, এই ৪ ঘরানাই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on সাইমুম সাদী's post.

সাইমুম সাদী ভাই, আপনার আব্বার একটা জীবনী গ্রন্থ লিখুন।

 

 

 

 

 

 

 

 

জেনারেল থেকে হেদায়েতপ্রাপ্তদের ইলমী লাইনে যাওয়া খুব জরুরী, আলেম হওয়া উচিত। কওমিদের থেকে জেনারেলদের মধ্যে বেশি ইসলামী চেতনা বিদ্যমান। অনেক মাদ্রাসায় শর্ট কোর্সের মাধ্যমে আলেম হওয়ার সুযোগ আছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on Farhan Abrar's post.

আগে হয় নাই তা না। তবে আল্লাহ কুরআনকেই একমাত্র টিকিয়ে রাখবেন। ইউরোপে অথবা আমেরিকায় কারা নাকি কুরআনের মত করে (একটু সংশোধন করে, এডিট করে) নতুন কুরআন বা আধুনিক কুরআন বলে ছেড়েছিল। সেই কুরআন আছে ঠিকই কিন্তু পশ্চিমের মুসলিমরা নামাজে আসল কুরআনের সুরাই পাঠ করে, তিলাওয়াত আসল কুরআন থেকেই করে। লক্ষ লক্ষ কপি রাস্তার থেকে বিতরন করা হয় আসল কুরআনেরটাই। বিধর্মীরা কুরআনের ভুল ধরতে আসল কুরআনটা থেকেই রেফারেন্স দেয়, আধুনিক কুরআনের কোনো খোঁজও নাই।

 

(চীনের নতুন কুরআন লেখা প্রসঙ্গে আমার মন্তব্য)

 

 

 

 

 

 

 

 

সেকুলার নাস্তিকদের কেউ মুসলমানদের পক্ষে বললে তারে ইসলামিস্ট বানায় দেয়া হয়। আফসোস, মুসলমানদের বুদ্ধিবৃত্তিক করুণ হালত।

 

 

 

 

 

 

 

সম্পদ থাকলে ফিতনার আশঙ্কা থাকে, না থাকলে তো থাকে না। যার নাই সে তো বড় বাঁচা বাইচা গেছে, তাই না? দ্বীনদার বলি আর যাই বলি, ঈমানের পারদ ওঠানামা করে সবারই।

 

 

 

 

 

 

 

 

মহিলারা বাসায় বসে মসজিদের আশেপাশের বাসা না হলে খুৎবা শোনতে পাবে না। আর মাসজিদের বাইরে মাইক লাগিয়ে খুৎবা / বয়ান শোনানোটা সমর্থন করি না। এতে শব্দ দূষণ হয়।

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on his own post.

নাজমুল হুদা ইবনে মাসউদ ভাই। আরও আপলোড দিয়েন। আপনার তিলাওয়াত খুব সুন্দর মাশাআল্লাহ। ইউটিউবে দিতে পারেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

সাধারণ (অর্থাৎ প্রচলিত) ফটোগ্রাফির মধ্যে অনেক সমস্যা আছে, যেমন অপ্রয়োজনে মানুষ বা প্রাণীর ছবি তোলা, বেপর্দা নারীর ছবি তোলা ইত্যাদি। ন্যাচারাল ফটোগ্রাফি আর ইসলামিক ফটোগ্রাফি বাদে অন্যগুলোকে তেমন সমর্থন করি না।

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on আব্দুল্লাহ ফাহাদ's post.

ভাই, আগে তো যানবাহন গুলো ছিলই এমন যে একজন করে বসতে পারতো, তাই উট, ঘোড়ার উপর সওয়ার হতে হত। কিন্তু এখন যানবাহন তো আর এক জন সওয়ারের না, স্কুটির মত না। আগের কালে তো ধরেন উটকে হাটিয়ে নিতে হত, সাথে কেউ থাকতো, আর ঘোড়া দিয়ে গেলেও সাথে মাহরামও ঘোড়া দিয়ে যেত। কিন্তু স্কুটির পাশে বা পিছনে তো মাহরামকে নেয়া যাবে না। মেয়েদের স্কুটি চালানোর চিন্তা অনেক বেশি প্রগতিশীল (নেগেটিভ অর্থে) চিন্তা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পুরুষদের দাড়ি না উঠলে তারা কি পরিমাণ লজ্জিত হয় সেটা তো মেয়েরা জানে না। সুন্দর না লাগলেও দাড়ি যাদের উঠে তাদের কাটা তো জায়েজ নাই। যারা বড় (সুন্নতী) দাড়ি পছন্দ করে তারা যেন সেরকম বড় দাড়িওয়ালা স্বামী পায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

রুমী কবি তো ছিলেনই। কিন্তু বড় পরিচয় তিনি সুফীবাদী ছিলেন। আর সুফীবাদীদের নানা রকম বাতিল আকিদা থাকে। ওয়াহদাতুল উজুদের আকিদা থাকে। এসব কারণে অনেকে তাকফীর করে। আমি নিজে তাকফীর করি তা বলি নাই। সুফী ড্যান্স আমার ভালোই লাগে যদি না তা আধ্যাত্মিকতা হিসেবে হয়।

 

সালাফীদের সবাই তাকফীর করে না, একেবারে কট্টর পর্যায়ের সালাফীরা করে, সাধারণ সালফীরা করে না। রুমীর মাধ্যমেই মূলত সুফিবাদের বিকাশ। নানারকম বিদাতী কার্যকলাপ চালু করছেন। এর মধ্যে একটা হচ্ছে সুফি ড্যান্স, যেটা এখনো বিভিন্ন সুফিবাদীরা চালু রেখেছে।

 

সব সালাফীর মতেই বিদাতী, নির্দিষ্ট করে নাম বলার কিছু নাই। উপমহাদেশে সুফি প্রভাব বেশি, তাই হানাফীরাও উনাকে পছন্দ করে। তবে অনুসরণীয় মনে করে না বোধহয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on Badrul Alam Haddad's photo.

একবার তার কাউয়া কবিতার উপর পর্যালোচনা চাইছিল যেইটা দিয়া বই বানাবে, তো আমিও কাউয়া কবিতার পর্যালচনা লিখছিলাম , শেষ পর্যন্ত জমা দেই নাই। তবে পর্যালোচনার মধ্যে কাউয়া কবিতার অনুরুপ একটা কবিতা লেখছিলাম, যেখানে কাউয়ার জায়গায় রাইসুর নাম বসায় দিছিলাম। এখন ভাবি, সেইটা জমা দিলেই ভালো ছিল।

 

আরেকটা মজার ব্যাপার হইতেছে, তার সব কবিতা গালির মাধ্যমে শেষ হয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

আল্লাহর কাছে প্রতি রাকাতে সিরাতে মুস্তাকিম চাই, আল্লাহ আমাকে পথভ্রান্ত করবেন না ইনশাআল্লাহ।

 

 

 

 

 

 

 

 

উম্মাহর সবচেয়ে বড় বড় মুজাহিদরা সালাফি ছিলেন। শাইখ উসামা, শাইখ আজ্জাম। আইমান জাওয়াহিরি, কিংবা বর্তমানের জুলানী, মুহায়সিনী। সালাফি নজদী ওয়াহাবীদের দ্বারাই জিহাদের মত মৃত আমলের পুনুরজ্জীবন ঘটে।

 

 

 

 

 

 

 

গালে দাড়ি না উঠলেই ভালো। হারবাল ইউজ করবেন না।

 

দাড়িকে দাড়ির মত ছেড়ে দিবেন। অনেকে বেয়ার্ড অয়েল ইউজ করে।

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on Shareef Al Hussain's post.

এগুলো নিয়ে কিছু বলি না, ইসলামিস্টদের হাতে মাইর খাওয়ার ভয় আছে। এখন নুরুর মধ্যে তারা শেখ মুজিব খুইজা পাইছে।

 

 

 

 

 

 

 

আমি দাওলার সাপোর্টার না, তবে তাদের খিলাফতকে বৈধ মনে করি, এতটুকুই।

 

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on Muhammadulla Masum's post.

হানাফি-আলেমবিদ্বেষ জাকির নায়েক শুরু করেন নাই। তবে আহলে হাদিসদের এ ব্যাপারে ভূমিকা আছে। জাকির নায়েক হানাফি আলেমদেরও শ্রদ্ধা করেন। পিস টিভিতে তিনি মামুনুল হক, হাসান জামিল ও অন্যান্য হানাফী আলেমদের নিয়ে গেছিলেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

কাফেরদের ক্ষতি করার এইসব আইডিয়া ভালোই লাগে, অনেক জিহাদপন্থী তো কাফের দেশে ব্যাংক ডাকাতিও জায়েজ মনে করে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এগুলো কোনোভাবে জায়েজ প্রমাণ করা যাবে কিনা!

 

 

 

 

 

 

 

মেয়েদের জ্ঞান কম, তবে বুদ্ধি বেশি। পাপ কাজে বেশি যাওয়ার কারণ ইলম কম, ফলে আমলও কম বা ভুল।

 

 

 

 

 

 

 

 

পশ্চিমদিকে পা দেয়াটা কোনো একজনকে দেখি নাই। বেশিরভাগ আহলে হাদিস ভাইকেই দেখছি। ওদের সাথেই আমি বেশি মিশি। আমি ব্যক্তিগতভাবেও তাদেরকে এ ব্যাপারে বলেছি। আমি নিজেও তো আহলে হাদিস। পাবলিক পোস্ট করলাম যেন সবাই এ ব্যাপারে সচেতন হয়। অনিচ্ছাকৃত হলে ভিন্ন কথা, ইচ্ছাকৃত যেন না করি।

ইচ্ছাকৃত ভাবে পা দিয়ে বসে আরাম করাটা দীনী বুঝের অধিকারির কাছ থেকে আশা করা যায় না।

মাসজিদে খুৎবার সময় কিবলার দিকে পা দিয়ে বসে থাকা কতটা দৃষ্টিকটু তা দেখলে এটাকে ফাও বিতর্ক বলতেন না।

 

 

 

 

 

 

 

প্রশ্নঃ সবচেয়ে অবহেলিত আমল কোনটা?

-সবচেয়ে অবহেলিত আমল জিহাদ, দাসপ্রথা, মাসনা সুলাসা রুবাআ, অধিক সন্তান গ্রহণ।

 

 

 

 

 

 

 

বেশি গল্পবাজ মানুষেরা বেশি মিথ্যা বলে। চুপচাপ মানুষের মিথ্যা বলার হার কম। কারণ বেশি কথা বললে মিথ্যাও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্যই আল্লাহর রসুল বলেন, ভালো কথা বল, নতুবা চুপ থাকো।

 

 

 

 

 

 

 

 

দেওবন্দকে আজহারুল হিন্দ বল্লে দেওবন্দকে অপমান করা হয়। আজহারের যা অবস্থা। এর চেয়ে দেওবন্দ অনেক গুণে ভালো আছে।

 

 

 

 

 

 

এক অক্ষরে ১০ নেকি, এটা শুধু কুরআনের আয়াতের সাথে সম্পর্কিত। আরবি শব্দ বা বর্ণ বললেই এই ফজিলত না। কুরআনের আয়াত পড়ার সময় শুধু। আরবি অক্ষর বললেই যদি ১০ নেকি করে হত তাহলে আরবীভাষীদের সমস্ত কথাই তো ইবাদতে পরিণত হত, গালি দিলেও।

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on মোল্লা আজাদ's photo.

মোল্লা ভাই। তার ছবি প্রচার করে কি লাভ? এদের ছবি দেখলেই তো ঘিন্না লাগে। আফসোস এদের জীবদ্দশায় কেউ কতল করতে পারল না। (শাতিমদের প্রাপ্য বুঝানো প্রসঙ্গ)

 

 

 

 

 

 

 

আপু কয়েকটা বিষয় বলি। লেবাস থাকলেই হুজুর না। মাদ্রাসায় পড়লেই আলেম হয় না, অনেক বে-আমল আলেমও আছে। অনেক লেবাসধারী, ফাসেকের অপরাধের কারণে হুজুরদের নাম খারাপ হয়। তাই কোনো হুজুরকে দিয়ে সব হুজুরকে বিচার করবেন না আশা করি।

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on Mohammad Javed Kaisar's post.

মানুষ মরে যায়, রেখে যায় কর্ম। কেউ রেখে যায় ভালো কর্ম, কেউবা মন্দ। সুবহানাল্লহ, আল্লাহু আকবার।

 

 

 

 

 

 

 

যারা মাদ্রাসায় সমকাম ও অন্যান্য সমস্যা নিয়ে পাবলিকলি হৈচৈ করেন, আমি তাদের কাছে শুধু এতোটুকু জানতে চাই মাদ্রাসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়লে এর বিকল্প হিসেবে কি দিতে পারবেন? আর মাদ্রাসার মতোই সেকুলার সিস্টেমের বিরুদ্ধে প্রোপ্যাগান্ডা চালান কিনা?

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza replied to Jamil Ahmed's comment.

আমি বিবাহিত না, তবে আমি বিশিষ্ট বউগবেষক।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমি যতটুক জানি ইয়োগা হিন্দুদের একটা ইবাদত, যা বর্তমান কালে সেকুলাররা খুব গ্লোরিফাই করে প্রচার করছে। স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য হলেও একটা কথা ছিল, কিন্তু ইয়োগাকে আধ্যাত্মিক ও মানসিক সুস্থতার প্রতিষেধক হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে যা মুসলিম হিসেবে গ্রহণ করা সমস্যাজনক।

 

তবু আপনি আলিমদের থেকে জেনে নেয়া ভালো, ইয়োগা জায়েজ কিনা, হলেও কতটুকু জায়েজ!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

জিন্নাহ ইংরেজি ভাষায় কথা বলতেন, লিখতেন অথচ কেন উর্দুপন্থী এটা একটা ফাও প্রশ্ন।

 

তখনকার অর্থাৎ ব্রিটিশ আমলের প্রধান ভাষাই ছিল ইংরেজি। সুতরাং উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা বানানোর জন্য সেটা ইংরেজিতেই তো বলতে হবে।

 

তাছাড়া জিন্নাহর মাতৃভাষা উর্দু ছিল না। সে নিজেও উর্দু জানতো না। কিন্তু উর্দু মুসলমানদের ভাষা, এই ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তার অবদানকে সম্মান জানাই।

 

তার পড়াশোনা, চাকুরি জীবন সব কিছু ইংরেজি ভাষায় চলত, বক্তৃতাও ইংরেজিতে করতেন। তাই এটাই স্বাভাবিক যে ইংরেজি তিনি অন্য ভাষার চেয়ে ভালো পারতেন এবং তার সহজ ছিল।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on Muhammad Yeamin Siddique's post.

হুজুর ছেলের হিজাবী গার্লফ্রেন্ড কিভাবে সম্ভব? নিকাবী হইলে একটা কথা ছিল।

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on Meer Salman's post.

মসজিদের জানালা দিয়ে বিলবোর্ডের নারীদৃশ্য দেখা যায়, তা সত্য। আমিও দেখেছি।

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on শরিফ সাইদুর's post.

ভাই, বই পড়ার পর সেই বই থেকে শিক্ষা শেয়ার না করলে কিংবা রিভিউ না দিলে সেই বই পড়া লাভজনক হয় না। কারণ আমি ২ বছর আগে যত বই পড়েছি এর অনেক কিছুই মনে নাই। কিন্তু লিখে রাখলে সেটা কাজে দিত। পুরো বই তো আবার পড়ার মত সময় সুযোগ নেই, কিন্তু একটা সারকথা লিখে রাখলে এখন কাজে দিত। আপনাকে তাই এই পরামর্শ দিব।

 

 

 

 

 

 

 

এক মন ইলমের সাথে দশ মন আকল লাগে। কিন্তু কওমিদের অনেকের দশ মন ইলমের সাথে এক মন আকল, এর ফলে তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক করুণ হালত। তবে এখন অনেক পরিবর্তন হইছে, আশা করি আরও পরিবর্তন আসবে ইনশাআল্লাহ।

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on সাজিদ বিন আবদুল্লাহ's photo.

১- মেয়েদের আলেম বিয়ে করতে চাওয়া অনেক ভালো। কারণ অধিকাংশ দ্বীনদার হওয়া সত্ত্বেও আলেম বিয়ে করতে চায় না।

 

২- বর্তমানে যাদের আলেম লকব আছে তাদের চেয়ে জেনারেল থেকে আসারা তাকওয়াবান বেশি।

 

৩- কিন্তু যারা সত্যিকারের মুত্তাকী আলেম, হোক না তার আয় একদম কম, উচ্চ বংশ নয়, সামাজিক মর্যাদাও বেশি না। এমন আলেমকে যে মেয়েরা বিয়ে করতে তারা অবশ্যই উত্তম নারী। কিন্তু সে সেই আলেমের যোগ্য কিনা সেটাও একটা কথা। যোগ্য না হলে যোগ্যতা হাসিল করা উচিৎ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বিয়ের অনুষ্ঠানে নাশীদ গাওয়াকে সাপোর্ট করি। তবে রোমান্টিক নাশীদ তো নাই বললেই চলে। বিয়ের দিন 'মরতেই হবে যখন' এরকম নাশীদ গাইলে ভালো দেখাবে না, হে হে হে। হালাল রোমান্টিক নাশীদ, তথা বিয়ের নাশীদ বাড়াতে হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

এদেরকে এদের অবস্থার উপর ছেড়ে দেয়াই ভালো। অথচ আমরা তা না করে এদেরকে ভাইরাল করে দেই। আসুন যে কোনো সমস্যাযুক্ত বিষয়কে ভাইরাল করা হতে বিরত থাকি।

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on Meer Salman's post.

কারদাবি এই অঞ্চলের না, আজহারি এই অঞ্চলের, এটা কেমন অদ্ভুত যুক্তি! মাওলানা মওদুদিও তো এই অঞ্চলের না।

 

Hasan Mirza replied to আবদুল কাইয়ুম ফতেপুরী's comment.

কারদাভির অনেক ভক্ত তো কওমি অঙ্গনেও।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on মাসুদ শরীফ's post.

আপনার/আপনাদের সাথে আলি হাসান ওসামা ভাইদের মিলমিশ হলে ভালো হত।

 

 

 

 

 

 

 

 

Hasan Mirza commented on Muhammad Ashraful's post.

দ্বীনদারিতা না থাকলে উচ্চশিক্ষিত না হয়েও অহংকারী হবে আর দ্বীনদারিতা থাকলে উচ্চশিক্ষিত হয়েও নিরহঙ্কারী হতে পারে। এটা আমিও মনে করি যে কোনো কারণ ছাড়াই মেয়েদের উচ্চশিক্ষিত হওয়াটা অপ্রয়োজনীয়। কিন্তু যারা পড়াকালীন অবস্থায় কিংবা পড়া শেষে হেদায়েতপ্রাপ্ত হয়েছে তারা অবশ্যই ভিন্ন। উচ্চশিক্ষিত হয়েও যারা হেদায়েতপ্রাপ্ত তারা বরং অনেক মাদ্রাসাপড়ুয়া এবং অল্পশিক্ষিত মেয়েদের চেয়ে বেশি দ্বীনদার।

 

 

 

 

 

 

 

মেয়েদের বেশি মাহর চাওয়া তো জায়েজ আছে। কোনো সীমা নির্ধারণ আছে বলে আমার জানা নাই। একটা সূরা শেখানোর বিনিময়ে যেমন জায়েজ, অনেক বেশি হলেও জায়েজ হওয়ার কথা। আর যে মেয়ের পরিবার দ্বীনদার হওয়া সত্ত্বেও উপযুক্ত কারণ ছাড়াই এতো বেশি মাহর নির্ধারণ করে এমন দ্বীনদার মেয়েকে যেন আল্লাহ কোনো দ্বীনদারের ভাগ্যে না জোটায়। তাদের জন্য বরং দুনিয়াদার টাকার মেশিন পাত্ররাই উপযুক্ত যারা শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত মাহর না দিতে পেরে মাফ চেয়ে নেয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কাফিরদের প্রতি আমাদের ৪ টি হক বা অধিকার রয়েছেঃ

 

১- তাদেরকে দাওয়াত দেয়া। এবং হাল না ছেড়ে দাওয়াত চালিয়ে যাওয়া।

 

২- তাদের হেদায়েতের জন্য আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দুয়া করা। নাম ধরে খাস করে দুয়া করা।

 

৩- গোষ্ঠীগত ভাবে কাফিরদের সাথে বারা করা। অর্থাৎ তাদের সাথে বন্ধুত্ব না করা। কোনো কাফিরকেই বন্ধু হিসেবে গ্রহণ না করা। দাওয়াতের খাতিরে তাদের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে, কিন্তু এর মানে এই না বন্ধুত্ব করতে হবে। যেমন মা-বাবা কাফির হলেও তাদের সম্মান শ্রদ্ধা করতে হয়, কিন্তু কাফির হওয়ার কারণে তাদেরকে কাফির হিসেবেই দেখতে হবে।

 

৪- তাদের সাথে বারা করলেও সদ্ভাব বজায় রাখতে হবে। বারা করা মানে এই না তাদেরকে অন্যায় ভাবে মারা যাবে, গালি দেয়া যাবে, তাদের বাসায় ঢুকতে দেয়া যাবে না, এরুপ না। একজন মুসলিমের সাথে যেরুপ আচরণ করতে হয় তাদের সাথেও একই আচরণ করতে হবে। বারা বা শত্রুতা গোষ্ঠীগতভাবে। কোনো ব্যক্তি কাফির গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কারণেই শুধু বারা, এ বাদে অন্যান্য আচরণে তাদের সাথে মুসলিমদের মতোই সেইম আচরণ করতে হবে, মুসলিম মনে করতে হবে তা কিন্তু বলি নি, বলেছি মুসলিমদের ক্ষেত্রে যেসব বিধান একই বিধান তাদের ক্ষেত্রেও, এগুলো আসলে শুধু মুসলিম না বরং সকলের মানুষের ক্ষেত্রে একই বিধান, যেমন তাদের গীবত করা যাবে না, গালি দেয়া যাবে না, অপবাদ দেয়া যাবে না, অন্যায় ভাবে মারা যাবে না ইত্যাদি। কাফির গোষ্ঠীর প্রতি বারা করতে হবে এবং ঘৃণা রাখতে হবে। কিন্তু এই ঘৃণা এমন না যে কোনো কাফিরকে ঘরে ঢুকতে না দেয়া, কিংবা তাদের নিয়ে ট্রল করা, গীবত করা। ঘৃণা হবে ব্যক্তির অবস্থান ভেদে। কেউ ইসলামের দুশমন হলে তার প্রতি ঘৃণাও সেরকম রাখতে হবে, আবার কেউ ইসলামের প্রতি ভালোবাসা রাখলে তার প্রতিও ঘৃণা সবচেয়ে কম রাখতে হবে। রসুল সাঃ এর সীরাতে আমরা এ সম্পর্কে জানতে পারব, আবু তালিবের মত কাফির আর আবু জাহেলের মত কাফিরের সাথে আমাদের আচরণ কিরুপ হবে।

 

শাতিমদের প্রতি আমাদের একটা অতিরিক্ত হক রয়েছে, সেটা হচ্ছে তাদের রক্ত প্রবাহিত করা। এটা আমাদের জন্য হালাল এবং প্রশংসনীয় কাজ। তাদের প্রতি এটা আমাদের হক। এই হক আদায় না করলে তাদের প্রতি না-ইনসাফী করা হয়। ইসলাম ইনসাফের ধর্ম, সবার হক রক্ষা করা হয়। শাতিমে রসুলের প্রতিও আমাদের হক, তাদের রক্ত প্রবাহিত করা তথা জাহান্নামে পাঠিয়ে দেয়া।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ফেসবুকে যতক্ষণ থাকি মাথা হ্যাং হয়ে যায়, শুধু নেগেটিভিটি আর নেগেটিভিটি, এখানে থাকলে পজেটিভ হওয়া সম্ভব না। পজেটিভিটির কোনো প্রচার নাই। খুব কম ইসলামিস্টই পজেটিভিটি প্রচার করে। ফ্রেন্ডলিস্ট ভরা থাকলে মাথা গরম হয়ে যায়, এজন্যই সবাইরে আনফ্রেন্ড করে শুধু পজেটিভ মানুষদের ফলো দিতে ইচ্ছা করে।

 

সবার প্রতি আমার একটাই আহবান, ফেসবুককেন্দ্রিক ইসলাম চর্চা বন্ধ করতে। বাস্তব জীবনে ইসলাম চর্চা বাড়াতে, এখানে থেকে ইসলামের জন্য কাজ হবে ঠিকই, কিন্তু সেটা ইসলামের জন্য ক্ষতিকর হবে। অর্থাৎ অমুককে রদ, অমুককে খণ্ডন, অমুকের গীবত, অর্থাৎ ভুলগুলো ধরা ঠিক আছে কিন্তু ভুল ধরার পদ্ধতি ঠিক নাই। ট্রল করে কাউকে সংশোধন করা যায় না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যে মাজহাবকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে হাদিসের বিরুদ্ধে যেতে হয় সেই মাজহাব আপনার কি কাজে আসবে?

 

(আমি মাজহাব-বিরোধী না, তবে উপরের কথাটা এজন্যই বললাম, মাজহাবী ভাইদের মধ্যে এমন অনেকে আছেন যারা মাজহাবের পক্ষে বলতে গিয়ে হাদীসের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন, হাদীসকে প্রতিপক্ষ বানান, অথচ নিজের মাজহাবকে জয়ী করতে এতো বেশি কট্টর না হলেও চলত।)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমাদের অনেকেই তালিবানের ব্যাপারে অনেক বেশি আশাবাদী। অনেকেই অন্ধ ভালোবাসা রাখে। আমি তাদের বলব, এতো অন্ধ ভালোবাসা রাইখেন না যে তালিবান ভুল করলেও সেই ভুলের পিছনে যুক্তি দিতে শুরু করবেন যেভাবে গণতন্ত্রপন্থীরা করে থাকে! তালিবানের কাছে এতো আশা রাইখেন না, হতাশ হবেন। তালিবানের বিবর্তন লক্ষ্য করেন, এগুলো কেন বলছি তখন বুঝবেন। এখনের তালিবান মুল্লা উমর এর তালিবান না, অনেক পরিবর্তন এসেছে। ইসলামী খিলাফতও খুলাফায়ে রাশেদার পর ধীরে ধীরে পরিবর্তন হয়ে গেছে। তালিবানকে আমি ভালোবাসি, তাদের শুভাকাঙ্ক্ষী। তবু বলছি, তাদের হাবভাব ভালো ঠেকছে না। আল্লাহ তাদের সিরাতুল মুস্তাকিমে অটল রাখুন।

 

 

 

 

 

 

 

 

নাসিরুদ্দীন আলবানী রঃ এর একটা নাসীহাহ হচ্ছে, নামাজে অনেক রকম 'একাধিক সুন্নত' রয়েছে। যেমন সালাম ফেরানোর দুই তিন রকম পদ্ধতি হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। এছাড়া রুকু, সিজদার তাসবীহ, নামাজ শুরুর সানা কয়েক রকম রয়েছে হাদিসে। আলবানী রঃ বলতেন, সবগুলোই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পালন করতে, এতে রসুলের সুন্নাতের অনেক বেশি পাবন্দ হওয়া যায়।

 

আমরাও চেষ্টা করি হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যত রকম 'একাধিক সুন্নত' আছে সেগুলো যেন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পালন করি, তবে রসুল যেটা বেশি পালন করতেন, আমরাও সেটা বেশি পালন করব।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বিয়ের পরের কোনো মিলনকে কোনো ভাবেই ধর্ষণ বলা যায় না। যারা বিয়ের পরের সেক্সেও ধর্ষণ শব্দ ঢুকাতে চেষ্টা করছে তারা মারাত্মক উদ্দেশ্য নিয়ে এগোচ্ছে। অথচ নারীবাদপ্রভাবিত কোনো কোনো বোন সেকুলারদের পাতা ফাঁদে পা দিচ্ছেন। এটাকে তারা ধর্ষণ বলছেন। অথচ এটাকে যদি ধর্ষণ বলা হয় তাহলে বিয়ের প্রয়োজনীয়তাই উঠে যায়। এখানে জায়েজ-হারামের প্রশ্ন না। প্রশ্ন হচ্ছে উচিৎ অনুচিতের, অর্থাৎ শরীয়তের সীমার মধ্যে তবে অনুচিত। আপনি বিয়ের পরের এই অবস্থাকে কোনোভাবে হারাম বলতে পারেন না। তবে অনুচিত বলা যায়, যদি কেউ এরুপ করেও, অর্থাৎ স্ত্রী চাচ্ছে না, তবু তার উপর ঝাপিয়ে পড়লেন।

 

ঝাপিয়ে পড়াকে সমর্থন করছি না, কিন্তু এটাকে হারাম বানানোর পাঁয়তারার সমালোচনা করছি। হালালকে হারাম বানানো কুফর।

পশ্চিমাদের এইসব তত্ত্ব গেলাতে ইসলামকে ব্যবহার করবেন না দয়া করে। নিজেই বিপদে পড়বেন, ঈমান নিয়ে টানাটানি লাগবে।

 

একটা হাদিস উল্লেখ করছি, এর দ্বারা প্রমাণিত হবে কোনো বৈধ কারণ ছাড়া স্বামীর ডাক প্রত্যাখ্যান করা যাবে না।

 

“ … যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে বিছানায় ডাকে (যেমন- সঙ্গম করার জন্য), আর সে প্রত্যাখান করে ও তাকে রাগান্বিত অবস্থায় ঘুমাতে বাধ্য করে, ফেরেশতারা সকাল পর্যন্ত তাকে অভিশাপ করতে থাকে। [বুখারি, ইংরেজি অনুবাদ ভলি- ৪/বুক-৫৪/৪৬০]

 

স্বামীর যৌন চাহিদাই যদি পূরণ করতে না পারেন তাহলে আরেকটা বিয়ে করতে দেন তাকে, সেটাও তো দিবেন না, কারণ একাধিক বিবাহকেও তো আপনারা নারীবিরোধী মনে করেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ফেসবুক হচ্ছে গীবতের আড্ডাখানা, মানুষকে অপমান করা, ট্রল করা, গালি দেয়ার উন্মুক্ত ময়দান। ফেসবুক হচ্ছে চুগলখুরীর সবচেয়ে ভালো জায়গা, এখানে অপবাদ দেয়া সহজ, সমালোচনার নামে অযৌক্তিক কথাবার্তা বলা সহজ, বাস্তব জীবনে বিলাই হয়েও এখানে বাঘের মত অন্যের উপর ঝাপিয়ে পড়া সহজ। এখানে পোস্টে গীবত হয়, কমেন্টে গীবত হয়, আর ম্যাসেঞ্জারের কথা না-ই বললাম। ফেসবুক ভালো সম্পর্ককে নষ্ট করতে ওস্তাদ, এখানে ঝগড়া লাগা সহজ, গলাগলির সম্পর্ক গালাগালিতে রুপান্তর হওয়াও সহজ।

 

যে মানুষটি হুজুর হিসেবে সবার কাছে সম্মানিত, তিনিও ফেসবুকে এসে ফিতনায় পড়ে যান। কোনো না কোনো ফিতনা ধরবেই, ধরেই। যাদের ভেতরে বিন্দু পরিমাণ গীবতের অভ্যাস থাকে, ফেসবুকে চর্চা করে সেটা শিল্পের পর্যায়ে চলে যায়। এখানে প্রেম করা সহজ, বিয়ে করলে বিয়েভাঙ্গাও সহজ। ফেসবুকের ফিতনা থেকে বাঁচতে হলে গীবতের সেই বিন্দু পরিমাণ, চুগলখুরীর সেই অল্প পরিমাণ, হিংসা বিদ্বেষের সেই চিমটি পরিমাণও মুছে এরপর আসতে হবে চালাতে। নয়তো কত প্রিয় মানুষকে এসব কাজে লিপ্ত দেখেছি যারা দ্বীনের দাঈ, যাদের এসব কাজ মানায় না। যারা এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজে মনোযোগ দিতে পারতো, অথচ তারা এখানে এসে ট্রলবাজি করে মানুষের সম্মানহানিতে লেগে পড়ে।

 

অনেকে বলে গার্ডিয়ানের নূর মোহাম্মদ ভাই ভালোমানুষীর অভিনয় করে, আমি তো বলি, এই অভিনয়ও যদি আমরা করতে পারি অনেক ফিতনা থেকে বেঁচে যাব ইনশাআল্লাহ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ফেসবুক ফিতনার ব্যাপারে সবাই সতর্ক থাকুন। দীনী ভাইবোনদের প্রতি আহবান জানাবো,

 

১- পরিচিত হতে চাইলে অফলাইনে আগে হোন, এরপর চ্যাটিং করুন। সম্পর্কটাকে অফলাইনভিত্তিক বানান, অর্থাৎ ফোনে কথা বলেন, দেখা সাক্ষাৎ করেন। অনলাইনের যোগাযোগ অর্থপূর্ণ হবে। অথচ এমন যদি হয় চিনেন না, জানেন না, বছরের পর বছর চ্যাট করে যাচ্ছেন, এটা আসলে পুরাই ফাও সময় নষ্ট, যদি তার দ্বারা কোনো ক্ষতি নাও হয়। একই কথা বোনদের জন্যেও, আগে সরাসরি দেখুন, কথা বলুন, এরপর ইচ্ছে চ্যাট করবেন, এর আগে না।

 

২- দীনী বোনদের জন্য সবচেয়ে সেইফ হচ্ছে ফ্রেন্ডলিস্টে পুরুষ না রাখা। কিন্তু রাখতে চাইলে ইনবক্সে কেউ যদি জরুরী কাজেও ম্যাসেজ করে ব্লক দিবেন সাথে সাথে। সালাম দিলে মুখে জবাব দিবেন, লিখে দেয়া লাগবে না। যে যত জরুরী প্রয়োজন বলুক, কোনো উত্তর দিবেন না। কারণ একবার কনভারসেশন শুরু হয়ে গেলে সেটা চলতে থাকে। শয়তানের ফাঁদে পা দিলে ধীরে ধীরে অতলেই ডুবতে থাকবেন। একেবারেই প্রয়োজন হলে সেটা পাবলিক পোস্টের কমেন্টে সংক্ষেপে কথা সারুন।

 

৩- অপরিচিত কাউকে ছবি দিবেন না, ইনফো শেয়ার করবেন না। কেউ পরিচিত হতে চাইলে ফোন নাম্বার চাইবেন অথবা সরাসরি সাক্ষাৎ করবেন। আর যদি ফেইক আইডি চালান তাহলে কারো সাথে পরিচিত হওয়ার কি দরকার? হতে পারে আপনি যার সাথে নিয়মিত চ্যাট করছেন সে নিজেই একজন গোয়েন্দা। আইডি চালচ্ছেন জিহাদের দাওয়াত প্রচার করতে, সেটাই করুন না, মানুষকে এতো বিশ্বাস কিভাবে করেন যে অপরিচিত কাউকে নিজের ইনফো শেয়ার করছেন?

 

আমাদের ভাইদের উচিৎ অফলাইনে পরিচিত হওয়া, সবার সাথে সবার। অনলাইন তো বেলুনের মত ফাঁপা, এখানের পরিচয় কোনো পরিচয়ই না। এটা ধোঁকা আর অন্ধকারের জগত। সাবধান থাকাই ভালো। মুমিন এক গর্তে দুইবার পা দেয় না। অনলাইনের চেয়ে অফলাইন সম্পর্ককে গুরুত্ব দিন। আল্লাহ আমাদেরকে মানুষ শয়তানের ফিতনা থেকে হেফাজত করুন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মুসলিমদের মধ্যে কিছু ব্যক্তি আছে যারা মুমিনদের বিপদে খুশী হয়, মুমিনরা কোনো দুঃখ পেলে খুশী হয়, তাগুতের গোলাম কর্তৃক গ্রেফতার হলে বা গুম হলে খুশী হয়, এদের আমি মুনাফিক বলব না, তবে বৈশিষ্ট্য একদম মুনাফিকদের মত। মুনাফিক এজন্য বলব না, কারণ তারা এরুপ করে দলীয় বিদ্বেষের কারণে, যদি এরুপ করত ইসলামবিদ্বেষের কারণে তাহলে নির্দ্বিধায় মুনাফিক বলতাম। মানহাজীদের জিহাদের দাওয়াত যারা পছন্দ করতে পারে না তারা যে কোনো অযুহাতে মুমিন ভাইদের বিরোধিতা করে। তারা যে কোনো খুঁত পেলেই তা বড় করে দেখে এবং তা প্রচার করে, যা হয় নি তার চেয়েও বাড়িয়ে বলে, মুমিন ভাইদের গীবতে লিপ্ত হয়, তাদের সম্মানহানি করে, অপবাদ দেয়, বিদ্বেষের যত রকম প্রকাশ হতে পারে সবগুলোই ঘটায়।

 

উসামা নামের এক ভাই যিনি মানহাজী ছিলেন, এবং দ্বীনের উপর বহু আগে থেকে ছিলেন এমন না, এক হিসেবে নতুন বলা যায়, তিনি মানসিকভাবে খুব খারাপ অবস্থায় ছিলেন, এবং এক সময় সুইসাইড করেন। দেখা গেল এই কাহিনী নিয়ে কিছু মুনাফিক-সিফতের লোক মানহাজীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করে। অর্থাৎ মানহাজী হয়েও সুইসাইড করে! ইত্যাদি ইত্যাদি। অথচ সেই ভাই মানহাজী ছিলেন এটা যত বড় ঘটনা এর চেয়ে বড় ঘটনা হচ্ছে তিনি হিদায়াত লাভের মাধ্যমে শয়তানের রাস্তা থেকে আল্লাহর রাস্তায় এসেছিলেন। তার সুইসাইডের সাথে মানহাজী হওয়ার থোরাই সম্পর্ক। তবু কিছু লোক এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মানহাজের বিরুদ্ধে বলার সুযোগ হাতছাড়া করে নি।

 

আহিলকান্ড নিয়েও একদলকে খুব খুশী দেখা যাচ্ছে, মনে হচ্ছে তারা যেন ঈদের আনন্দ উপভোগ করছে। কারণ মানহাজী ভাইদের গীবত করার এর চেয়ে ভালো সুযোগ পাওয়া যাবে না। যারা ব্যাপারটা নিয়ে বিরক্ত এবং মানহাজী ভাইদের শুভাকাঙ্ক্ষী তাদের কথা বলছি না। যারা আসলেই খুশী, এদের মধ্যে কিছু আছে মাদখালী, কিছু দেওখালী আর কিছু মোডারেট, এরা খুশী এই কারণে যে মানহাজীরা খুব বোকা বনেছে, ভালো হয়েছে। এইসব মুনাফিক-সিফতওয়ালারা মুমিনদের ক্ষতি করার সুযোগ পেলে হাতছাড়া করবে বলে মনে হয় না।

 

কোনো মানহাজী ভাই যদি মাদখালী, মোডারেট কিংবা দেওখালীদের বিপদে খুশী হন, তবে আমি বলব সেই মানহাজীর মানহাজ সম্পর্কে কোনো বুঝই নাই। (যেমন নুমান আলির স্ক্যান্ডাল, ওমর সুলাইমানের গ্রেফতার ইত্যাদি) আমার মনেও পড়ে না এমন, তারা খুশী হয়েছেন। (তবে বিচ্ছিন্ন ভাবে কেউ কেউ হলে হতে পারে)। কারণ দীনী কমিউনিটিতে সবচেয়ে ম্যাচিউর হচ্ছেন মানহাজী ভাইরা। এর উপরেও একদল আছে (ম্যচুরিটির দিক দিয়ে) যারা নির্দিষ্ট কোনো দলে না। তবে সবচেয়ে ম্যাচিউর দল হচ্ছে মানহাজীরা, তাই যারা তাদের একটা ইম্ম্যচিউর ভুলের খুব মজা নিচ্ছে, দাঁত কেলিয়ে হাসছে, তাদের বলব, আরে তোমরা তো পা থেকে মাথা পর্যন্ত ইমম্যচিউর, ফিডার খাওয়া বাচ্চা। বড় মানুষ ভুল করতে পারে না এমন তো না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ডাঃ ফাইজুল হক ভাই যেভাবে বলছেন এটাই ঠিক আছে, এইভাবেই স্পষ্ট করে বলে দেয়া উচিৎ। যারা হস্তমৈথুন থেকে বিরত থাকবে তারা যেন রোগের ভয়ে না বরং আল্লাহর ভয়ে বিরত থাকে। মেডিক্যাল সাইন্স অনেক কিছুই বলে, পক্ষে বিপক্ষে উভয়টাই বলে। হস্তমৈথুনের পক্ষে যেমন অনেক মত পাওয়া গেছে, বিপক্ষেও পাওয়া গেছে। তবে এটা সত্যি রোগ বা সমস্যার ভয় দেখালে মানুষ বেশি ভয় পায় এবং বিরত থাকে। কিন্তু আমি মনে করি প্রচলিত বিজ্ঞানকে পুঁজি করে ইসলামের কোনো বিধান প্রচারের দরকার নাই। কারণ কিছুদিন পর যদি হস্তমৈথুনের পক্ষের গবেষণাগুলো বিপক্ষের উপর জয়ী হয় তখন সেইসব মানুষের কি হবে যারা ভাবত প্রচলিত বিজ্ঞান আর ইসলাম সামঞ্জস্যপূর্ণ? তাদের বিশ্বাস তো তখন দুর্বল হয়ে যাবে। অথচ প্রচলিত বিজ্ঞান হচ্ছে ভুলশীল মানুষের ভুল-শুদ্ধ মিশ্রিত গবেষণার ফলাফল। অথচ ইসলাম হচ্ছে নির্ভুল। তাই যারা প্রচলিত বিজ্ঞানকে ইসলামের সাথে মিলাতে চান বা মিলাতে যান তারা ইসলামের উপকার নয় বরং ক্ষতি করছেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মাসনা আনার ইচ্ছা থাকুক কিংবা না থাকুক, এইসব ব্যাপার একজন মুসলিম হিসেবে আপনার উচিৎ স্ত্রীকে জানিয়ে রাখা। না জানিয়ে মাসনা করা উচিৎ না বলে মনে করি। যদিও এটা বাধ্যতামূলক না যে দ্বিতীয় বিয়ের জন্য প্রথম স্ত্রীর অনুমতি লাগবে। তবে আমি মনে করি, দ্বিতীয় বিয়ে না করতে চাইলেও স্ত্রীকে আগেই বলে রাখা ভালো। কারণ আপনি যেহেতু মুসলিম, যেহেতু আপনার একাধিক বিয়ের সুযোগ আছে, এমন কোনো পরিস্থিতি এসে পড়তে পারে যখন আপনার মাসনা আনা লাগতে পারে। কিন্তু আপনি যদি প্রথমাকে না জানিয়ে রাখেন অথচ পরে মাসনা আনলেন তখন সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হবে। যেসব মেয়েরা সতীন কোনোভাবেই সহ্য করবে না তারা যেন এমন কাউকেই বিয়ে করে যারা কখনোই দ্বিতীয় বিয়ে করবে না। আপনার একাধিক বিয়ের ইচ্ছে থাকলে এমন একজন প্রথমা আনুন যিনি উদারমনের হবেন, একাধিক বিবাহ মেনে নিবেন। নয়তো সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হবে, তখন বউয়ের দোষ দিয়ে লাভ হবে না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আজহারী সাহেবের আগের (ভুল)গুলোর তুলনায় এটা বরং হালকা। বলার ভঙ্গিটা দেখেন, "মদ খায়া মাতলামি করতেছে।" একজন সাহাবীর ক্ষেত্রে এইভাবে বলাটা অনেক মারাত্মক যদিও ঘটনা সত্যি হয়ে থাকে। আজহারী সাহেবের সংশোধন কামনা করি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

একজন ভাই আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, কেন আমি পূর্বেকার সুলতান, বাদশাহ এদেরকে আদর্শ হিসেবে নেয়ার বিরোধিতা করি। আমি উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেছিঃ

 

তারা ক্ষমতার জন্য লড়াই করত। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য, নিজের শক্তি জাহির করার জন্য যা প্রয়োজন তাই করত। ইসলামের পতাকাকে বুলন্দ করা তাদের কাছে গৌণ বিষয় ছিল। রসুল সাঃ এর শাসনকার্যের আদর্শ তারা থোরাই কেয়ার করত।

 

সুলাইমান সম্পর্কে বলি। তিনি ইউরোপের বিরুদ্ধে জিহাদের মাধ্যমে অনেক অবদান রেখেছেন। রহিমাহুল্লাহ। কিন্তু তার দোষেরও শেষ নাই। তিনি ক্ষমতা সুসংহত করতে নিরীহ মানুষ হত্যা করতেও দ্বিধা করতেন না। নিজের পুত্রকেও হত্যা করেছিলেন। স্ত্রীর উপর অনেক বেশি নির্ভর করতেন যা একজন পুরুষের জন্য লজ্জাজনক। স্ত্রীর শত অপরাধকেও তিনি বৈধতা দিয়েছিলেন এবং স্ত্রীর কথায় কান দিয়ে সাম্রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ লোকদের হত্যা করেছিলেন, যেমন তার পুত্র এবং উজিরে আজম ইব্রাহিম।

 

দ্বিতীয় স্ত্রীকে এতো বেশি ভালোবাসতেন যে প্রথম স্ত্রীকে তিনি প্রাসাদ থেকে বের করে দেন। প্রথম স্ত্রী সারাজীবন কষ্টে কাটান। একজন মহিলা তার স্বামী থাকা সত্ত্বেও স্বামীর সাথে মিলিত হতে পারেন না, যৌবন থেকে বৃদ্ধকাল পর্যন্ত, এটা ভাবতেই খারাপ লাগে। এগুলো কোনো মুমিন ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য হতে পারে না।

 

তিনি তার মদ্যপ পুত্র সেলিমকে সমর্থন দিয়ে যোগ্য পুত্র বায়েজিদকেও হত্যা করেছিলেন। বায়েজিদের ছোট ৪ ছেলেকেও মেরেছিলেন। চিন্তা করে দেখুন তিনি কেমন মহামানব যার হাতে দুই পুত্রের রক্ত লেগে আছে। অথচ ইসলামপন্থীরা তাকে মহামানব বানানোর চেষ্টা করছে। এমন ব্যক্তিদের আদর্শ বানানো হলে তাদের উপর আরোপিত অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে কত মিথ্যা যুক্তির অবতারণা করতে হবে, অনেকে যেমন এসব হত্যাকান্ডের পক্ষে যুক্তি দেয়, তার ক্ষমতার জন্য তার ২ পুত্র বিপদজনক ছিল বিধায় তিনি হত্যা করেছেন।

 

ভ্রাতৃহত্যাকে উসমানীয়রা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল। ক্ষমতায় টিকে থাকতে ভাই ভাইকে মারত, বাবা ছেলেকে মারত, ছেলে বাবাকে মারত। এমন সাম্রাজ্যকে যদি ইসলামী লেবেল লাগিয়ে প্রচার করা হয় তাহলে তা উম্মাহর জন্য লজ্জার।

 

সালাহুদ্দীন আইয়ুবীও সামরিক দিক থেকে অনেক অবদান রেখেছেন। কিন্তু তারা আর দশজন শাসক থেকে আলাদা নয়। বাইবার্স কুতুজকে হত্যা করেছে শুনে অনেকে অবাক হয়, এমন মুজাহিদ মহামানব এই কাজ কিভাবে করল, অথচ এগুলো ছিল শাসকদের জন্য সাধারণ বিষয়। সালাহুদ্দীন আইয়ুবীর দুইটা দোষ বলি, তার যে পতাকা ছিল সেখানে ঈগলের ছবি ছিল। অথচ প্রাণীর ছবি হারাম। সে নিজের ছবি দিয়ে মুদ্রা বানিয়েছিল।

 

আইয়ুবী যদি আদর্শ হতেন তবে রাজতন্ত্র থেকে বের হওয়ার সামর্থ্য তার ছিল। আইয়ুবীর পরবর্তী শাসকরা মুনাফিকে পরিণত হয়েছিল বিশেষ করে শেষ দিকে। তিনি যদি সত্যি আদর্শ হতেন তবে শাসনব্যবস্থাকে ইসলাম দিয়ে ঢেলে সাজানো উচিৎ ছিল না? শূরা দিয়ে শাসন, রাজতন্ত্র উচ্ছেদ, সন্তানদের দ্বীনের উপর বড় করা। এই কথা মুহাম্মাদ ফাতিহ এর ব্যাপারেও প্রযোজ্য। মুসলিম সাম্রাজ্যগুলোতে এমন শাসকরা ছিল যাদের নিয়ে আমরা অহঙ্কার করি অথচ তারা ছিল হত্যাকারী, কেউ মদ্যপ, কেউ জ্যাতির্বিদ্যায় বিশ্বাসী। এদের যদি ভালো বলতে হয় আমি বলব বাগদাদী এদের চাইতে কয়েকগুণ ভালো।

 

আমরা যদি এরকম ফাসেকদেরকে ইসলামের বীর বানাই, তা দেখে কাফেররাও লজ্জা পাবে। আমাদের ধর্মেই যেখানে নিরীহ মানুষ হত্যার নিষেধাজ্ঞা আছে, অথচ আমরা হত্যাকারীদের ইসলামের বীর বানাচ্ছি জেনেবুঝে!

 

(আমি তাদের দোষগুলো নিয়েই বলেছি শুধু। তাদের গুণও ছিল অসংখ্য। সেইসব গুণ সবাই উল্লেখ করে তাই সেগুলো আর না বল্লাম। তাদের মাগফিরাতের জন্য দুয়া তো অবশ্যই করা উচিৎ।)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ইবনু মাজহার ভাই ঠিকই বলেছেন। গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে বললে আওয়ামীলীগ বিএনপির চেয়েও জামায়াতী ভাইদের বেশি ফাটে। তারা যদি গণতন্ত্র সাপোর্ট না করে তাহলে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে বললে তাদের জ্বলার কথা না। কিন্তু তাদের জ্বলার কারণ গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে বললে এরদোয়ান আর ইমরানের বিরুদ্ধে যায়, তারা জামায়াত সমর্থক হওয়ার কারণে কিন্তু জ্বলে না, বরং ইমরান আর এরদোয়ানের ফ্যান হওয়ার কারণে। অথচ ইমরান না করে ইসলামি দল বা ইসলামি আন্দোলন আর এরদোয়ান করে জনআকাঙ্ক্ষার তুর্কি ভার্সন, অথচ জামায়াতের ভাইরা তাদের সবচেয়ে বড় সাপোর্টার।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সন্তানদের কি বানাতে চাই, কেমন রেখে যেতে চাই এগুলো আমাদের আগেভাগেই পরিকল্পনা করে রাখা উচিত, এবং সেই অনুযায়ী এগোনো উচিত। জাকির নায়েক বলেন, আপনার সন্তানকে আপনি কি বানাতে চান সেটা বিয়ের আগে থেকে চিন্তা করুন, কারণ আপনার সন্তানকে কেমন দেখতে চান সেই অনুযায়ী আপনার স্ত্রী আনতে হবে। যদি নেককার দেখতে চান তবে নেককার স্ত্রী লাগবে।

 

অনেকে বেশি বয়সে বিয়ে করায় একটা টেনশনে থাকেন, আমি মরে গেলে বাচ্চাদের কি হবে? এ ব্যাপারে আমার পরামর্শ হচ্ছে- ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা তাড়াতাড়ি শেষ করায় দিতে হবে। স্কুলে পড়াইলে ক্লাস টপকায়া টপকায়া দিয়ে দেয়া। আর বয়স নিয়া বেশি ভয় থাকলে পারিবারিক ব্যবসা রেখে যাওয়া।

 

একটা বিখ্যাত ঘটনা উলামাদের কিতাবে এসেছে, উমর বিন আব্দুল আজিজ মৃত্যুর সময় তার অনেকগুলা সন্তানের জন্য সামান্য কয়েকটা দিরহাম রেখে গেছিলেন, অথচ ভবিষ্যতে তাদের বহু দান সাদকা করতে দেখা গেছে, আর অন্য এক খলীফা সন্তানদের জন্য বিশাল সম্পদ রেখে গেছিল অথচ পরবর্তীতে সেই সন্তানদের অন্যদের কাছে হাত পাততে দেখা গেছিল। এই ঘটনা থেকে বোঝা যায় আল্লাহর উপর ভরসা রাখার বিকল্প নাই। আল্লাহ গরীবকেও ধনী বানাতে পারেন আবার ধনীকেও গরীব বানাতে পারেন। তাই এতো চিন্তা না করে আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হবে আর পরিকল্পনা অনুযায়ী আগাতে হবে।

 

আমি মনে করি ছেলে-মেয়েদের ১৫-১৮ এর মধ্যে বিয়ে দিয়ে দেয়া উচিত। ছেলেদের ১৮ বছরের মধ্যে মূল পড়াশোনা শেষ করায় দিব যেন ১৮ বছর থেকে অন্তত কিছু করে খেতে পারে, ছেলেদের বিয়ে দেব ১৫-১৮ তে, বিয়ের পর ২ বছর আমার দায়িত্বে রাখব, ১৮ তে আলাদা করে দিব, পরিবার নিয়ে চলতে পারুক আর নাই পারুক। কারণ তাকে এমনভাবে তৈরি করা হবে যেন ১৮ তেই চাকুরির যোগ্যতা হাসিল করতে পারে।

 

এদেশের মেয়েদের বিবাহের বয়স ১৩-১৪ তেই হয়ে যায়। আমাদের জাহেলী সমাজে এই বয়স থেকেই মেয়েদের প্রেম শুরু করতে দেখা যায়। অবশ্য অনেকে আরও আগে থেকে শুরু করে। তবে ১৩-১৪ বিয়ের জন্য উত্তম সময়। এই বয়সটাতেই কিশোর কিশোরীর মনে অন্যরকম অনুভূতি আসা শুরু করে। হালাল পন্থা খুঁজে না পেয়ে এই বয়সের ছেলে-মেয়েরা হারামে লিপ্ত হয়। আল্লাহ হেফাজত কর। এই অবস্থা নিরসনে বাল্যবিয়ের বিকল্প নেই। বাল্যবিয়ে একটি সুন্নাহ। আমরা কেন জানি এই কথাটা সাহস করে বলতে পারি না, অথচ বেরেলভীদের দেখেছি খুব জোর গলায় এই কথাটা বলে। মা আয়েশার বিয়ে হয় বাল্যবয়সে, নবীকন্যা ফাতিমাকেও (রাঃ) ১৫ বছর বয়সে বিয়ে দেয়া হয়েছিল। আমাদের জন্য আফসোস আমরা বাল্যবিয়ের সুন্নাহ ধরে রাখা তো দূরের কথা, এটাকে এমন ভাবে ত্যাগ করেছি যে সরকার নিষিদ্ধ পর্যন্ত করে দিয়েছে।

 

আমি ইনশাআল্লাহ আমার সন্তানদের বাল্যবিয়ে দিব। আর সবাইকে বলব, ভবিষ্যৎ সন্তানদের ব্যাপারে এখনি প্ল্যানিং করতে, আর আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যারা আখেরী জমানা, দাজ্জাল, গাজওয়ায়ে হিন্দ, মাহদী, এসব নিয়ে বেশি মাথা ঘামায় তাদের মাঝেই কোনো না কোনো সমস্যা ধরা পড়ে। এর একটা কারণ আমি যা মনে করি- আখেরী জামানার বিষয়গুলো ভবিষ্যৎ, অর্থাৎ এখনো আসে নি, কিন্তু যারা এসব বিষয়ে বেশি উচ্ছ্বসিত তারা আখেরী জামানা বিষয় হাদিসগুলোর সাথে নানারকম কন্সপিরেসি থিওরি যুক্ত করতে শুরু করেন, এবং নিজেদের মন মত ব্যাখ্যা করতে শুরু করেন, এর ফলে এক সময় ভুল ভাল বকতে শুরু করেন। এইসব ভবিষ্যতের ব্যাপার নিয়ে ভবিষ্যৎবাণী করতে বলা হয় নি আমাদের, আমরা এ ব্যাপারে নসের অনুসরণ করব। যতটুকু বলা হয়েছে ততটুকু। আর যতরকম কন্সপিরেসি থিওরি আছে সেগুলো প্রত্যাখ্যান করব। এসব তত্ত্ব আমাদের মুসলিম সমাজের জন্যই সবচেয়ে ক্ষতিকর।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

অনেক ভাই এসব প্রচার করেন, পীর মানেই ভন্ড বিদাতী, মুশরিক ইত্যাদি। কিন্তু সত্য কথা হচ্ছে ব্যাপারটা এমন না। পীর বা শায়খ ধরা দোষের কিছু না, যদি না পীর বিদাতী হয়। দেওবন্দী উলামাদের মাধ্যমে যে ইলমী তাসাউফের চর্চা চলে এটাকে কোনোভাবেই বিদাতী বলা যায় না। প্রচলিত পীর ধরতে হবে বা মুরিদ হতে হবে এমন না, শায়খও ধরা যায় অর্থাৎ এমন একজন বুজুর্গ মানুষকে মেনে চলা যার মাধ্যমে আধ্যাত্মিক উন্নতি হয়। হতে পারে সেটা কোনো দীনী বড় ভাই, মুরুব্বি, বুজুর্গ মানুষ, এমনকি মাসজিদের ইমামও হতে পারে। শায়খ ধরতেই হবে এমন কিছু না, তবে ধরলে সেটা আপনার দীনী জিন্দেগীর জন্যই উপকারী হবে।

 

কারো হাতে আধ্যাত্মিকতার বাইয়াতকেও উত্তম মনে করি, তবে শর্ত হচ্ছে পীর যেন বিদাতী না হয়। আশরাফ আলী থানভী সহ বড় বড় দেওবন্দী উলামাগণ সঠিক তাসাউফের চর্চা করতেন। এই ধারা এখনো উপমহাদেশীয় উলামায়ে দেওবন্দ রক্ষা করে চলেছে। আহলে হাদীসদের দৃষ্টিতে যদিও তাদের মাঝে দুই একটা বিদআত পাওয়া যাবে কিন্তু তাই বলে তাদের বিদাতি বলা যাবে না, কারণ নাসিরুদ্দীন আলবানী রঃ এই কথা বলেছেন যে এক দুইটা বিদআত করলেই কেউ বিদাতি হয় না। তাকে বিদাতী বলা যায় না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বাস্তব জীবনেও কারো উপর এতো বিশ্বাস রাখা উচিত না বা এতো আশা রাখা উচিত না যে হতাশ হতে হয়! আর ফেসবুক ফেইক জগতে অপরিচিত কারো উপর কিভাবে বিশ্বাস রাখা যায়? ফেসবুকে দীনী কমিউনিটি যেমন বড় হচ্ছে, এখানে দেখা মিলবে দ্বীনদার ছাড়াও আরও ৩ ক্যাটাগরির লোকের, গোয়েন্দা, ফ্রড, আর দ্বীন থেকে যে দূরে সরে গেছে।

 

কোনো জীবিত মানুষই ঈমান নিয়ে মরার আগ পর্যন্ত শয়তানের ধোঁকামুক্ত নয়। বারসিসার মত আল্লাহর ওলি শয়তানের ধোঁকায় পড়ে কাফের হয়ে মৃত্যু বরণ করেছে, আর আমরা কিভাবে নিশ্চিত হই এ যুগের কেউ পথচ্যুত হবে না? নিজেকে এতোটা ম্যাচিউর রাখা উচিত, যেন বউকে অন্যের সাথে অন্তরঙ্গ মুহূর্তে ধরে ফেললেও দুঃখ পেতে না হয়।

 

ফেসবুক প্রোফাইল দেখেই কাউকে বিচার করবেন না, কাউকে বুজুর্গ ভেবে বসবেন না, ফেসবুক আর বাস্তব জীবনের মধ্যে রয়েছে আকাশ পাতাল তফাৎ।

 

আর একটা সত্য কথা বলি, মানহাজী ভাইরা খুব আবেগী। ফলে আবেগ নিয়ে তাদের সাথে খেলা করা সহজ। একটু বাস্তববাদী হন ভাইয়েরা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আপনি যদি মুসলিম হয়েও সবচেয়ে বেশি ঘৃণা আইএসের প্রতি রাখেন, তবে বুঝতে হবে আপনার দ্বীন বোঝায় সমস্যা রয়েছে। অথচ সবচেয়ে বেশি ঘৃণা কাফেরদের প্রতি এরপর কাফেরদের গোলাম ও অনুসারী মুনাফিকদের প্রতি রাখা উচিৎ। কাফেররা মুসলিমদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘৃণা রাখে মুজাহিদদের প্রতি, কাফেররা মুজাহিদদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘৃণা রাখে আইএসের প্রতি। আপনিও যদি কাফেরদের অনুসরণ করেন তবে আপনি কি দ্বীন বুঝলেন? কাফেরদের অনুসারীদের সাথে আপনার পার্থক্য কি?

 

অথচ আইএস ভুল পথেও থাকলেও তারা কাফের নয়, তাদের প্রতি বেশি ঘৃণা রাখা মানে আপনার ওয়ালা বারার জ্ঞান নাই বললেই চলে। আগে নিজের আকীদা শুদ্ধ করুন, এরপর আইএসের বিচার করতে বইসেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ইলমচর্চা এক জিনিস, দাওয়াত আরেক জিনিস। কিন্তু আমরা দুইটাকে এক বানায় ফেলি, এটা ভুল। দাওয়াত দিতে হয় নম্রভাবে, দাওয়াতের রয়েছে কৌশল ও পন্থা। দাওয়াত দিতে হলে থাকতে হয় শান্ত এবং সহনশীল, ধৈর্যশীল। কিন্তু ইলম চর্চা ও প্রচারে নেই কোনো কৌশল, হেকমতের নামে সত্য গোপনের কোনো সুযোগ নেই। ইলম চর্চা হচ্ছে স্ট্রেইট ফরোয়ার্ড, এখানে কোনো লুকোচুরি নাই, যা বর্ণিত হয়েছে তা প্রকাশ করতে হবে নির্দ্বিধায়। এখানে কোনো আমতা আমতার সুযোগ নাই।

 

একটা উদাহরণ দিই। কোনো ভ্রান্ত ব্যক্তিকে খণ্ডনের সময় একজন আলিমের দায়িত্ব হচ্ছে তার ভুলগুলোকে তুলে ধরা, নির্দ্বিধায় সেই ব্যক্তির ভুলের সমালোচনা করা, সেই ব্যক্তির ভ্রান্তি সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা, কোনো কিছুই গোপন না করা। কিন্তু যখন সেই ব্যক্তির কাছে দাওয়াত তুলে ধরা হবে তখন উত্তেজিত হওয়া যাবে না, শান্ত ও ধৈর্যশীল থাকতে হবে, তাকে সুন্দর উপায়ে দলিল ও যুক্তির সাহায্যে দাওয়াত দিতে হবে। দুইটার মধ্যে কিন্তু পার্থক্য আছে। ইলম প্রচারের সময় দেখা গেল সেই ব্যক্তির কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে, কিন্তু দাওয়াতের সময় একই ব্যক্তিকে নম্রতার সাথে ভ্রান্তি ত্যাগের আহবান জানানো হয়েছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বাচ্চা জন্মের পর কিছু করণীয়ঃ

 

১- ডেলিভারি নরমালে করানোর চেষ্টা করতে হবে, তবে প্রয়োজনে যেন সিজার করানো যায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে নরমালের ব্যবস্থা করত হবে।

 

২- বাচ্চা ও বাচ্চার মার জন্য দুয়া করতে হবে।

 

৩- বাচ্চা জন্মের পর সবার কোলে নেয়ার দরকার নাই। পরে নেয়া যাবে।

 

৪- মায়ের শরীরের সাথে লেপ্টে রাখুন বাচ্চাকে, যেন গরম পায়।

 

৫- বাচ্চার কানে আস্তে করে আজান দিবেন।

 

৬- বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ান, কোনোভাবেই এখন বা পরে কৌটার দুধ অভ্যাস করাবেন না।

 

৭- বাচ্চাকে তাহনীক করানো। খেজুর চিবিয়ে বাচ্চার মুখের সামনে ধরা, বাচ্চা চুষবে।

 

৮- ৭ম দিনে বাচ্চার চুল কাঁটা এবং এর সমপরিমাণ রৌপ্য সাদাকা করা, আকীকা করা এবং নাম রাখা। আকীকা ১৪, ২১ তম দিনেও করা যাবে। বাচ্চা ছেলে হলে ২ টা আর মেয়ে হলে ১ টা ছাগল। আকীকার মাংস পাকানো উত্তম।

 

৯- ৭ম দিনে খাতনা করানো, সম্ভব না হলে ৭ বছরের আগেই করাতে হবে।

 

সাহায্যঃ শামসুল আরেফীন ভাইয়ের কুররাতু আইয়ুন বই থেকে এবং সানাউল্লাহ নজীর আহমদের একটি প্রবন্ধ থেকে

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ইশা আর ফজর সবার জামায়াতে পড়ার চেষ্টা করা উচিত। ইশার নামাজের জামায়াত সবচেয়ে ইম্পরট্যান্ট জামায়াত। অন্য জামায়াত যদি ওজরের কারণে ছুটে যায়, ইশার নামাজ যেন না ছুটে সেদিকে খেয়াল রাখবেন, দরকার হলে রুটিন চেঞ্জ করে ফেলবেন। কিন্তু ইশার নামাজের জামায়াত মিস করবেন না। ইশার নামাজ জামায়াতে পড়ার ফজিলত হচ্ছে অর্ধ রাত নামাজ পড়ার সমান সাওয়াব। আরেকটা হাদিস আছে, মুনাফিকদের জন্য ইশা আর ফজর বেশি কষ্টকর।

 

তাছাড়া ইশার সময়টাও অন্যান্য সময় থেকে বেশি সহজ। কারণ এই টাইমে তেমন কোনো কাজ থাকে না। সবাই রিলাক্স মুডে থাকে। এমনকি মহিলাদেরও রাতের জামায়াতে অংশগ্রহণ জায়েজ করা হয়েছে, বাধা দিতে মানা করা হয়েছে। আল্লাহ তৌফিক দিক আমাদের।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

শামসুল আরেফীন ভাই একটা পোস্ট করলেন যে, দীনী ভাইদের বেশি বেশি টিচিং প্রফেশনে আসা উচিত। এ ব্যাপারে আমি যে মনতব্য করলামঃ

 

এই থিওরি আসলে কার্যকর না। কারণ হচ্ছে, একজন শিক্ষক তার বিষয়ে ছাত্রদের পড়াবে। সেখানে ইসলাম তো প্রাসঙ্গিক নয়। আর কেউ যদি নিজের সাব্জেক্ট বাদ দিয়ে ইসলাম নিয়ে কথা বলে, তবে সেটাও সঠিক হবে না, কারণ সে বেতন পায় তার সাব্জেক্ট পড়ানোর জন্য, ইসলাম নিয়ে কথা বলার জন্য না, বরং ইসলাম নিয়ে কথা বলে সে তার দায়িত্ব থেকে গাফেল হচ্ছে এবং এজন্য গুনাহগার হবে বলে মনে করি। আর মহিলাদের এই প্রফেশনে আসার উৎসাহদান তো আরও ভয়াবহ। বিস্তারিত ব্যাখ্যা করতে হবে, এখন যেটা সম্ভব না।

 

আরেকটা বিষয় হচ্ছে শিক্ষক হয়ে এভাবে দাওয়াতি কাজ অনেক দীর্ঘ মেয়াদী কিন্তু ফলপ্রসূ না। কারণ পড়াশোনা শিক্ষকতা এসবে ইসলাম প্রাসঙ্গিক না। একবার দাওয়াতের উদ্দেশ্যে এক সহপাঠী নাস্তিকের সাথে বন্ধুত্ব করলাম, কিন্তু দেখা গেল শেষ পর্যন্ত দাওয়াত দিতে পারি নাই। কারণ এই পন্থা আসলে সমস্যাযুক্ত। সিস্টেমের ভিতর ঢুকে সিস্টেম পরিবর্তনের মতোই ভুল পন্থা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ইমাম হোসাইন সাহেব যতবার জিহাদীদের বিরুদ্ধে বলেছেন ততবার মুখ ফস্কে জঙ্গিবাদকে বারবার জিহাদ বলে ফেলছিলেন। উনারাও বুঝেন, আসলে জঙ্গিবাদ আর জিহাদ একই জিনিস। তারা জেনে বুঝেই জিহাদ থুক্কু জঙ্গিবাদের বিরোধিতা করছে। না হলে মুখ ফস্কে বারবার জিহাদের কথা চলে আসতো না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমি কোনো অবৈধ তাকফীরকেই সাপোর্ট করি না, হোক সেটা শিয়াদের বিরুদ্ধে, আইএসের বিরুদ্ধে কিংবা মোডারেটদের বিরুদ্ধে। মীর সালমান এজন্যই একটা কথা সবসময় বলেন, মা তুলে গালি দেয়াও ভালো, ইহুদী খ্রিস্টানের দালাল বা কাফের বলার চেয়ে। আসলেই কথাটা যৌক্তিক। তাকফীর এতো সামান্য বিষয় না, খুবই স্পর্শকাতর।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ইসলামে নাকি মানবতা নাই, অথচ মানবতা শুধু ইসলামেই আছে, অন্য কোথাও নাই। ইসলাম মানবতার সাইনবোর্ড ইউস করে না কথিত মানবতবাদীদের মত।

 

মুসলিমরা কাফেরদের চিরস্থায়ী জাহান্নাম থেকে বাঁচানোর উদ্দেশ্যে জিহাদ ও দাওয়াতকে জীবনের মিশন করে নিয়েছে, অথচ তাদের মাঝে নাকি মানবতা নাই! যারা চায় কাফেররা চিরস্থায়ী আগুন থেকে বাচুক, তারা নাকি কাফেরদের খারাপ চায়। খারাপ যদি চাইত তবে জাহান্নাম থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করত না। কাফেরদেরকে তাদের অবস্থায় ছেড়ে দিত। দুনিয়ার আগুন থেকে কাউকে বাঁচালে সেটা অনেক বড় মানবতাবাদী কাজ হয়, কিন্তু যে জাতি ১৪০০ বছর যাবত (এর পূর্বেও অন্য নবীরা একই কাজ করতেন) কাফেরদের হেদায়েতের পথে ডাকছে, দুনিয়ার আগুন থেকে ৭০ গুণ বেশি শক্তির আগুনে কেউ যেন চিরস্থায়ী ভাবে না জ্বলে সেই ফিকির করে, প্রয়োজনে জিহাদ করে নিজেদের জীবন বাজি রেখে, শুধু এই কারণে যে সেই অঞ্চলের মানুষগুলো দীনে প্রবেশ করুক, এমন জাতির মধ্যে নাকি মানবতা নাই! তাহলে মানবতা কোথায়? সেইসব সাইনবোর্ডধারীর হাতে যারা অন্য ধর্মের নামে বিদ্বেষ ছড়িয়ে মানবতার নাম ব্যবহার করে নতুন এক ধর্মের প্রবর্তন করে?

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মাজহাব মানা, না মানার ব্যাপারে আমার মতামত।

 

আমি মনে করি যে যেই মাজহাব পছন্দ করবে সেটা পালন করবে। কেউ সালাফী থাকতে চাইলে সালাফী মাজহাব মানবে আর কেউ হানাফী হলে হানাফী মাজহাব মানবে।

 

কিন্তু কেউ যদি সুবিধাবাদের বশবর্তী হয়ে দুই মাজহাব থেকে সুবিধানুযায়ী ফতোয়া গ্রহণ করে তবে সেটা সমস্যা। এটাকে অনুমোদিত মনে  করি না। কারণ এতে ভুল মতগুলো গ্রহণের আশঙ্কা বেড়ে যায়। তবে কেউ যদি চায় দুই মাজহাব থেকে উত্তমগুলো বেছে নিতে তবে সেটা করা যায় সালাফী মানহাজের নীতি অনুযায়ী। আর এটাই প্রকৃত সালাফী মানহাজ। আমি নিজেকে এই মানহাজের অনুসারী মনে করি। কারণ আমি সালাফী শায়খদের তাকলীদ করি না। কিছু ক্ষেত্রে সালাফী ফিকহের চেয়ে হানাফী ফিকহ উত্তম মনে হয়েছে। যারা সালাফী শায়খদের তাকলীদ করে তারা প্রকৃতপক্ষে সালাফী মাজহাবের অনুসারী, তারা সালাফিয়াতকে মাজহাবে পরিণত করেছে। এটা সমস্যা নয়, সমস্যা হচ্ছে তাদের সালাফিয়াতকে তারা মাজহাব হিসেবে স্বীকার করতে নারাজ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমাদের অনেক ভাই মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর শাসককে তাকফীর করেন এই কারণে যে তারা আল্লাহর বিধান ছেড়ে অন্য বিধান দিয়ে শাসন করে। আমি তাদের তাকফীরের সাথে একমত নই। এটাকে বৈধ তাকফীর মনে করি না। তারা যে শুধু শাসককে তাকফীর করেই ক্ষান্ত হয় তা না, সেনাবাহিনী সহ তাদের সহযোগী সকলকে একইভাবে তাকফীর করে। আমি মনে করি শাসকরা এ কারণে কাফির বা মুরতাদ হয়ে যাবে না। তবে এটা আমলী কুফর, ইতিকাদী নয়। নাসিরুদ্দীন আলবানী রঃ এ ব্যাপারে লিখেছেন, তা দেখা যেতে পারে।

 

তাকফীরকে এতো সস্তা করা উচিত নয়। আর এই তাকফীরের বৈধতা উম্মাহর অধিকাংশ আলেম দ্বারা প্রমাণিত নয়। এই তাকফীর বৈধ না হলেও মানবরচিত আইনে শাসন করে কুফর করার কারণে সেইসব গোমরাহ শাসকের বিরুদ্ধে জিহাদ করা ফরজ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মুসলিমদের অনেকে সুফীদের জীবন দ্বারা প্রভাবিত হন। আমার মনে হয় এখানে একটা সমস্যা আছে। কারণ সুফিদের জীবন আমাদের জন্য আদর্শ নয় বরং আদর্শ হচ্ছে রসুলুল্লাহ সাঃ এর জীবন। সুন্নাহগুলো পালনে আমাদের বেশি আগ্রহী হওয়া উচিত। কিন্তু দেখা যায় অনেকে সুফী, আবেদ, যাহেদদের জীবন অনুসরণ করেন যেটা অনেক সময় সুন্নাহর সাথে সাঙ্ঘর্ষিক হয়ে যায়। যেমন রসুলুল্লাহ খাটে ঘুমাতেন, বালিশে ঘুমাতেন। কেউ যদি এসব ত্যাগ করে মাটিতে শোয়াকে উত্তম মনে করে সেটা একটা সমস্যা। নিজেকে ইচ্ছাকৃতভাবে কষ্ট দেয়া রসুলের সুন্নাহ নয়, বরং সুফীদের চর্চা এসব।

 

রসুল রাতে ঘুমাতেন। এখন কেউ যদি রাতে না ঘুমিয়ে সারা রাত ইবাদত করাকে উত্তম মনে করে তবে সমস্যা। কেউ যদি সারাজীবন নিরবিচ্ছিন্ন রোজা রাখাকে উত্তম মনে করে এটা তো রসুলের হাদিসের বিপরীতে চলে যায়। কেউ যদি এক দিনে কুরআন খতম করে এটাও রসুলের হাদিসের বিপরীত কাজ। কেউ যদি যুহদ বলতে ছেড়া ময়লা কাপড় পড়া বুঝে সেটাও সমস্যা। কেউ যদি ইচ্ছে করে দিনের পর দিন না খেয়ে থাকাকে যুহদ ভাবে এটাও সমস্যা। সুফীদের এরকম অনেক কার্যকলাপ রসুলের সুন্নাহ এর সাথে সাঙ্ঘর্ষিক। তাই সুফীদের জীবন নয়, অনুসরণ করুন রসুলের জিন্দেগী। রসুলের সুন্নাহগুলো পালনের পর অন্যান্য বিষয়ে পূর্ববর্তী অনুসরণীয়দের থেকে কিছু কিছু নেয়া যেতে পারে।

 

সারাদিন নামাজের মধ্যে মশগুল থাকার ইসলাম রসুল শেখান নি, রসুলের শেখানো ইসলামে আছে সামাজিকতা, দাওয়াত, জিহাদ, ইলমচর্চা ইত্যাদি। সুফীদের আমরা সম্মান করি, কিন্তু তাদের জীবনকে যেন অনুসরণীয় মনে না করে বসি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ইসলাম এমন এক ধর্ম, যেখানে শত্রুর জন্যেও হেদায়েতের দুয়া করা হয় অর্থাৎ ভালো কামনা করা হয়। (হেদায়েতের দুয়া মানে সুপথপ্রাপ্তির দুয়া, জাহান্নাম থেকে যেন রক্ষা পায় সেই দুয়া, যেন জান্নাতে যেতে পারে সেই দুয়া।)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমাদের মসজিদগুলোতে ছোট বাচ্চাদের আলাদা কোনো কাতার থাকে না, এটা দুঃখজনক। রসুল সাঃ এর যুগে মসজিদে বালকদের জন্য একটা কাতার থাকত। তারা সবার পিছে দাঁড়াত। সম্ভবত এটা আমাদের এখানে সম্ভব না হওয়ার কারণ, আমরা জামাআতে নামাজ তাকবীরে তাহরীমার সাথে ধরার ব্যাপারে সিরিয়াস না, ভাবি ২য় বা ৩য় রাকাতে গিয়ে ধরলেই তো জামাআতের সাথে আদায় হয়। দেরি করে আসায় বালকদের আলাদা কাতার তৈরি সম্ভব হয় না। যদি সবাই নামাজ শুরুর আগেই মসজিদে চলে আসতাম তাহলে কিন্তু এটা সম্ভব হত।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

অনেকের জন্য একটা নিদর্শনই যথেষ্ট হয় আল্লাহর পথে ফেরার জন্য, আল্লাহর দ্বীন গ্রহণ করার জন্য। অনেকে হাজারটা নিদর্শন দেখেও ফিরতে পারে না। আল্লাহ কারো উপর জুলুম করেন না, কাউকে ফাও ফাও আল্লাহ জাহান্নামে ফেলবেন না। হতভাগা তো তারাই যারা অহঙ্কারের কারণে ফিরতে পারে না ইসলামে। তারা নিজেরাই নিজেদের জন্য জাহান্নামকে হালাল করে নিয়েছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

আল্লাহর রসুল সাঃ গোঁফ ছোট করতে বলেছেন, আর দাড়িকে বড় করতে বলেছেন। অনেকে মোচ শেভ করে ফেলা উত্তম মনে করেন। কিন্তু রসুলের হাদিসানুযায়ী, মোচ চেছে ফেলার চেয়ে ছোট করা উত্তম। আমি মনে করি, গোঁফ শেভ না করাই উত্তম।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমরা খেলাফত খেলাফত করি ঠিকই, কিন্তু খেলাফত যখন আসলো তখন কেউ গ্রহণ করলাম না। কারণ কি? কারণ হচ্ছে আমাদের নিজেদের দলের খেলাফত চাই। অন্যদলের খেলাফত তাই ভালো লাগে না।

 

বাংলাদেশে আছে খেলাফত আন্দোলন, নামে খেলাফত, কামে গণতান্ত্রিক। হিজবুত তাহরীর, যারা খিলাফাহ কায়েমের জন্য বহু রকমের চেষ্টা প্রচেষ্টা করে আসছে। অথচ সিরিয়ায় খিলাফাহ কায়েম হয়েছে সেটা তাদের ভালো লাগে না। কায়েদাও চায় খেলাফত, কিন্তু আইএসের খেলাফত ঘোষণার পর নেতৃত্বের জলাঞ্জলি দিয়ে আইএদের আনুগত্য করার মত বড় হৃদয় এখনো তাদের হয় নাই।

 

আমরা সবাই চাই দলীয় খেলাফত। আইএসেরও দলীয় খেলাফত। এই দলীয় খেলাফত কেউ উম্মাহর খিলাফাহ হিসেবে গ্রহণ করার মত মানসিকতা রাখে না। আফসোস! সবাই খেলাফত কায়েম করতে চায়, এবং চায় সবাই যেন তাদের খেলাফত কবুল করে। দলের গণ্ডি থেকে এখনো বের হতে পারলাম না আমরা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

শিয়াদের গণহারে তাকফীর একটা সমস্যা। যদিও এদের ভ্রান্তির মাত্রা বুঝানোর জন্য এভাবে বলাতে কখনো কখনো বাধ্য হতে হয়, তবু ইনসাফের কাছে এসে ধরা খেতে হয়। কারণ সত্য হচ্ছে যে সব শিয়া কাফের না। "শিয়া-কাফের" এই থিওরি প্রচারও সমস্যাযুক্ত। হ্যাঁ, কিছু সুবিধা আছে, কিন্তু সত্যিকার অর্থে কেউ যদি সব শিয়াকে কাফের মনে করে, কোনো শর্ত ছাড়া, যাচাই বাছাই ছাড়া তবে সে নিজেই বিপদে পড়বে। কারণ আসলি কাফের ছাড়া কাউকে তাকফীর করার ক্ষেত্রে ফিকহের নীতি অবলম্বন জরুরী। রাজনীতির জন্য শিয়া-কাফের শব্দের অবৈধ ব্যবহার ইনসাফপূর্ণ নয়। যদি বলা হয় শিয়ারা দলগত ভাবে কাফের, তবে ঠিক আছে মনে কি। ফিরকাগত ভাবে কাফের হওয়া মানে সবাই কাফের এমন না। যে যার বিশ্বাস অনুযায়ী পুনুরুথিত হবে। কারণ শিয়াদের মধ্যেও অনেক মুসলিম রয়েছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বাংলা ভাষায় 'আইন' হরফের উচ্চারণ জন্য একটা বর্ণ প্রবর্তনের দাবী জানাই। এর কারণ হচ্ছে বাংলা ভাষায় লেখার সময় ইসলামী বিভিন্ন শব্দ সঠিক উচ্চারণে লেখা যায় না। একটা উদাহরণ দিই, যেমন সূরা ফাতিহায় আমরা 'আলামীন পড়ি। আসলে এখানে আলামীন লিখলে মনে হচ্ছে আ শব্দটা আলিফ দিয়ে, অথচ এটা আইন দিয়ে, যার উচ্চারণ ভিন্ন হবে। এমন অসংখ্য শব্দ আছে যা আমরা বাংলা ভাষায় পড়ার সময় সঠিক উচ্চারণ করি না।

 

কারো কাছে দাবীটা হাস্যকর মনে হতে পারে, আর সেকুলাররা তো এটা শুনলে চেতবে, এমনকি যারা ভাষার ব্যাপারে রক্ষণশীল তারাও চেতবে। কিন্তু এই সমস্যার কারণে ইসলামিক শব্দগুলোর ভুল উচ্চারণ হয় যা মুসলিম হিসেবে আমার জন্য কষ্টকর।

 

আমরা মুসলিমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালী। আর ভাষা তো এমন কিছু না যাকে পরিবর্তন করার আসমানী নিষেধ আছে। আমাদের ভাষা আমরা সংযোজন বিয়োজন করার অধিকার রাখি। আমরা মুসলিম হয়েও বাংলা ভাষায় আইনের উচ্চারণ লিখতে পারছি না এর চেয়ে দুঃখজনক আর কি আছে? অনেকে আইনের উচ্চারণ 'apostrophe' দিয়ে প্রকাশ করেন, কিন্তু আসলে এটা ভাষার নিয়ম না। আইন যেহেতু আরবীর একটি হরফ, বাংলায় উচ্চারণের জন্যেও হরফ দরকার।

 

আরবিতে যেমন সাআদ। এখানে কিন্তু আলিফ না, বরং আইন। অর্থাৎ সঠিক উচ্চারণ সা'আদ। কিন্তু লেখার সময় আমরা লিখি সাদ বা ছাদ। অর্থাৎ ভুল নাম, ভুল উচ্চারণ। কিন্তু আলাদা হরফ থাকলে এই ভুলটা হত না। আমরা যেহেতু মুসলিম জনগোষ্ঠী, আমাদের তো এসব নাম রাখতেই হবে, অথচ আমরা ভুল উচ্চারণে নাম রাখছি, এর ফলে আসল অর্থই হয়তো পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে।

 

একটা উদাহরণ দিই, যদি আইনের জন্য একটি হরফ বাংলায় থাকত, কিরকম সুবিধা হত। ধরি, 3 হচ্ছে বাংলার আইন হরফ। সা3দ। এভাবে সঠিক উচ্চারণ করা যেত।

 

অনেকে বলবে আরও অনেক শব্দই বাংলা ভাষায় উচ্চারণ করা যায় না। আমি বলব, আইন বাদে সব শব্দই উচ্চারণ করা যায়। কফ এর উচ্চারণ ক দিয়ে হয়। গাইনের উচ্চারণ গ দিয়ে হয়। রা এর উচ্চারণ র দিয়ে হয়। শুধু আইনের উচ্চারণ হয় না। যখন কুরআন শব্দটা পড়ছি তখন বারবার আলিফ দিয়ে উচ্চারণ করছি, অথচ সঠিক হচ্ছে আইন দিয়ে উচ্চারণ করা।

 

আমরা মুসলিম, আর ইসলাম তো আমরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম বহন করব, এমন তো না ইসলাম আমাদের কাছে অপ্রাসঙ্গিক। তাহলে কেন এ ব্যাপারটা নিয়ে ভাবছি না?

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

থার্টি ফার্স্ট নাইটের নামে আতশ, পটকা ফুটানো, হৈ হুল্লোড়ের সময় বেশি বেশি ইস্তিগফার করুন ভাইয়েরা। শুধু এইদিন নয়, যত জাহেলী ও শিরকি আচার অনুষ্ঠান হবে, তখন আল্লাহর কাছে বেশি বেশি ক্ষমাপ্রার্থনা করুন। হিন্দুদের পূজার সময়, খ্রিস্টানদের বড়দিনে, বাঙ্গালী সেকুদের পহেলা বৈশাখে, বিজয় ও স্বাধীনতা দিবসে, এসব দিনে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান যেন আপনার উপর আযাব এসে না পড়ে।

 

আল্লাহর রসুল মুশরিকদের পূজার সময় তা দেখার উদ্দেশ্যেও অংশ নিতে মানা করেছেন। কারণ সেখানে আল্লাহর আযাব বর্ষিত হতে থাকে।  আল্লাহ আমাদের বিজাতীয় সংস্কৃতি, শিরকি আচার অনুষ্ঠান থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দিক, পরিবার ও পরিচিতদের বাঁচিয়ে রাখার তৌফিক দিক। ঘরে বসে ইস্তিগফার করতে থাকুন। এসব অনুষ্ঠানের ধারেকাছেও যাবেন না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আসলি কাফির ছেড়ে মুসলমানদের অন্যায়ভাবে তাকফীর করে তদের পিছে লেগে থাকা একটা খারেজী বৈশিষ্ট্য। এ কাজটাই দায়েশ করে। শুধু দায়েশ না, সালাফীদের মধ্যেও এটা দেখা যায়, জারাহ ওয়া তাদিলের নামে তারা এসবে লিপ্ত থাকে। একিউয়ের মধ্যেও তা আছে।

 

দায়েশ যুক্তি দেখায়, আসলি কাফেরের চেয়ে মুরতাদ বেশি খারাপ, তাই মুরতাদদের বিরুদ্ধে আগে যুদ্ধ করতে হবে। অথচ তাকফীর সহীহ হয়েছে কিনা সেটা নিয়ে মাথা ঘামায় না, যাকে মন চায় তাকফীর করে। একই অবস্থা একিউয়ের। তারা পৃথিবীর সকল মুসলিম দাবীকারী গণতান্ত্রিক শাসক, বিচারকদের তাকফীর করে, এবং তাদের বাহিনী, সাহায্যকারী সবাইকে ঢালাও ভাবে তাকফীর করে, মুরতাদ বলে। এই তাকফীরে কিছু ফাঁকফোকর আছে।

 

তাই তাকফীর সহীহ হয়েছে কিনা এই জ্ঞান নিন আহলুল ইলম থেকে, মুজাহিদদের থেকে নিতে গেলে ভুল করবেন।

 

 

সংশোধনঃ আমার এই লেখায় একটা সমস্যা আছে, একটা ভুল শব্দ চয়নের কারণে পুরো লেখাই বিতর্কিত হয়ে গেছে। সেটা হচ্ছে, আমি লিখেছি, একিউ গণতন্ত্রপন্থীদের গণতাকফীর করে। এটা নিঃসন্দেহে অপবাদ। আমি রুজু করছি। আমার কথা ফিরিয়ে নিচ্ছি। কারণ একিউ গণতাকফীর করে না। আসলে আমি বলতে চেয়েছিলাম মানহাজীদের অনেকে গণতাকফীর করে। কেন্দ্র থেকে গণতাকফীর ছড়ানো হয় না। একিউ এর মধ্যেও এ নিয়ে মতভেদ আছে। একদলের মতে, আল্লাহর আইন ছাড়া অন্য বিধান দিয়ে শাসন করা বড় কুফর, অন্য দলের মতে, ছোট কুফর। মাকদিসি হাঃ এর মতে বড় কুফর এবং আবু হামজা মাসরির মতে ছোট কুফর। তবে কেন্দ্র থেকে এই অবস্থান সুস্পষ্ট যে, গণতন্ত্রপন্থীদের সবাই কাফের, মুরতাদ না। অর্থাৎ আইএস যেরকম গণতাকফীর করে, একিউ সেরকম করে না, পার্থক্য আছে। আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুক। আমি সত্য উদ্ঘাটন করতে চাই, কাউকে অপবাদ দিয়ে নয়। তবে আমার লেখার মূল বিষয়বস্তু ঠিক আছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ইসলামকে আল্লাহ একমাত্র দ্বীন হিসেবে দিয়েছেন পৃথিবীবাসীর জন্য। এই ইসলাম পুর্ণাঙ্গ। ইসলামে সকল কিছুর বিধান দেয়া আছে। অন্য ধর্ম, মতবাদ কিংবা জায়গা থেকে ইসলামের ধার নেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। ইসলাম মৌলিক ধর্ম।

 

দুঃখজনক হলেও সত্য আমরা ইসলামী পঞ্জিকার পরিবর্তে ইংরেজি পঞ্জিকাকে অধিক আপন করে নিয়েছি। অন্তত আমাদের উচিত ছিল ইংরেজির পাশাপাশি হিজরি পঞ্জিকায় তারিখ গণনার চর্চা রাখা।

 

যতদিন মুসলিমরা শক্তিশালী ছিল আমরা একমাত্র হিজরি পঞ্জিকা গণনা করতাম। কিন্তু পাশ্চাত্য যখন প্রভাবশালী হল আমরা তাদের পঞ্জিকাকে গ্রহণ করে নিলাম। হিজরী পঞ্জিকার হিসাব শুধু কতিপয় আলেমদের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে গেল। হায় আফসোস।

 

আমাদের মৌলিকত্ব, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, সব আমরা ভুলে গেছি। ফলে ইসলামী পোশাক পড়তে হীনমন্য হই, ইসলামী রাষ্ট্রের কথা বলতে লজ্জিত হই, ইসলামী বিচার ব্যবস্থার দাবী তুলতে ভীত হই, ইসলাম অনুযায়ী চলতে বাধাগ্রস্ত হই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মানহাজীদের (একিউপন্থী) মধ্যে সামনে মনে হচ্ছে দুইটা ধারা তৈরি হবে। একটা দল কট্টর, অন্য দল মধ্যমপন্থী। মুরসির মৃত্যুর সময় এই পার্থক্যটা গাঢ় আকারে দেখা গিয়েছিল। একদল মুরসির মৃত্যুতে শোক জানানোরও বিরুদ্ধে, কারণ মুরসিকে তাগুত মনে করে, আরেকদল মুরসিকে মুসলিম মনে করে। দেখেছিলাম তখন, বেশিরভাগ পুরাতনরাই মধ্যমপন্থী। নতুনরাই বেশি কট্টর হয়।

 

কট্টরদের কট্টরতার কারণ ফ্যান্টাসি। অবশ্য সব কট্টর যে অজ্ঞ, অনভিজ্ঞ তা না। তবে অধিকাংশ কট্টরই খারেজীদের কয়েকটা বৈশিষ্ট্য বহন করে। ভবিষ্যতে এই দুই ধারা যদি আলাদা হয়ে যায় অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কারণ আইএস, কায়েদাও আলাদা হয়েছে, অথচ এক সময় তারা কাধেকাধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছে।

 

বর্তমানের আইএসের সাথে কায়েদার কট্টরদের তেমন একটা পার্থক্য নাই। উভয়ের মধ্যেই কম বেশি খারেজী সিফত বিদ্যমান। তবে খারেজী বলব না। খারেজী বলা উচিতও না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমি আপনাদের দলহীন থাকতে বলি না। দল করলে করেন, সমস্যা নাই। তবে দলের কাছে নিজের মাথা বিক্রি কইরেন না। মাথাটা দিয়ে দলকে বিচার কইরেন। আপনার দল যে ভুল করতে পারে সেটা যদি বিশ্বাস না করেন এর মানে আপনি দলকে দ্বীন বানিয়ে ফেলছেন। এখন সবাই আমরা পরোক্ষ তাকফীরে লিপ্ত। নিজের দল বাদে অন্য দলরে সরাসরি কাফের বলি না ঠিকই কিন্তু এমন বিদ্বেষ লালন করি যেন এরা কাফেরদের চেয়েও অধম।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

দুইদিন আগেও যারা এক থালে ভাত খেত এখন একে অপরের মুখও দেখে না। কারণ তার দল থেকে বেরিয়ে গেলেই তাকে আর মুসলিম ভাবে না। দলকেই তারা ইসলাম বানিয়ে ফেলেছে। বললে তো রাগ করবেন, তবু বলি, সাদপন্থীদের সাথে শূরাপন্থীদের ঝামেলা হওয়ার পর তাদের মাঝে সম্পর্ক হয়ে গেছে সাপে-নেউলে। অথচ আগে ছিল একসাথে, কাধে কাধ মিলিয়ে। আইএস আর কায়েদার বিভেদের পর এক দল হয়ে গেল কাফের আরেক দল হয়ে গেল খারেজী। অথচ আগে তাদের মাঝে কোনো পার্থক্য ছিল না, এমন ভাবে মিলেমিশে একাকার ছিল। আর এখন একে অপরকে খারেজী আর কাফের বলছে। এর মানে কি? মানে হচ্ছে আমাদের দলই দ্বীন, আমাদের দলের ভুল থাকতে পারে না, দলের আমীর ভুল করতে পারে না। আমার দল থেকে বের হয়ে গেলে সে উম্মাহ থেকে বের হয়ে গেল, জান্নাত থেকে বের হয়ে গেল, নতুন ফিরকা হয়ে গেল।

 

হায়! আমরা যদি দলকে দ্বীন না বানাতাম!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কাফেরদের বিরুদ্ধে আমাদের বেশি ঘৃণা রাখা উচিত। অথচ বাস্তবতা বলে আমরা ভিন্নমতের মুসলিমদের প্রতি কাফেরদের চেয়েও বেশি ঘৃণা রাখি। কাফেরদের বিরুদ্ধে যদি পোস্ট দেই একটা, তাহলে অন্য মুসলিমদের বিরুদ্ধে দেই দশটা। অনেকে বলবেন, ফ্রেন্ডলিস্টে কাফের কম থাকে, কিন্তু অন্যান্য দলের মুসলিমরা বেশি থাকে, তাই দেয়া লাগে। তাহলে আমি বলব, কাফেরদের প্রতি যে আপনি বেশি ঘৃণা রাখেন, এটা কিভাবে প্রকাশ পাবে? আপনার কাজের মাধ্যমেই তো? কাফেরদের বিরুদ্ধে এমন কি কাজ করেছেন যা দ্বারা প্রমাণ হয় আপনি তাদের ঘৃণা করেন? অথচ কাফেরদের বিরুদ্ধে আমরা প্রোপ্যাগান্ডা চালালে অন্যান্য দলের মুসলিমদের সাথে আমাদের দূরত্ব কমে আসতো। তারাও আমাদের বিরুদ্ধে বলা কমিয়ে দিত, আমরাও কমিয়ে দিতাম, এবং উভয়ে মিলে কাফেরদের বিরুদ্ধে একাট্টা হতে পারতাম। কিছু মতভেদগুলো দূরে সরিয়ে রাখি না!

 

আমার ফ্রেন্ডলিস্টে এমন অসংখ্য ফ্রেন্ড আছে যাদের কেউ জামায়াতের বিরুদ্ধে পোস্ট দিচ্ছে, কেউ চরমোনাইয়ের বিরুদ্ধে, কেউ আইএসের বিরুদ্ধে, কেউ মানহাজীদের বিরুদ্ধে, কেউ সালাফীদের বিরুদ্ধে, কেউ তাবলীগীদের বিরুদ্ধে। কিন্তু এমন কাউকে পাই না যারা বুদ্ধিবৃত্তিক উপায়ে কাফেরদের বিরুদ্ধে পোস্ট করছে, কাফেরদের বিরুদ্ধে প্রোপ্যাগান্ডা চালাচ্ছে। কাফেরদের বিরুদ্ধে অন্যান্য মুসলিমদের একটা পতাকাতলে একাট্টা করছে। আমরা পরিকল্পনা করতে জানি না, এর চেয়ে তো হিন্দু নামের নয়নও বেশি প্রোপ্যাগান্ডা করতে পারে!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মানহাজী ভাইরা যতদিন না খারেজী, মুরজিয়া এসব ট্যাগ ব্যবহার করা ছাড়বেন ততদিন আপনারা বড় হতে পারবেন না, বাচ্চাই থেকে যাবেন। এসব বাচ্চাদের কাজ। বাচ্চারা ঝগড়া হলে বলে তোর লগে খেলুম না। আপনাদের অবস্থা এরকম, শুধু আপনাদের না, সব মুসলিম দলের একই অবস্থা, কিন্তু আপনাদের কাছে এটা আশা করি না, কারণ উম্মাতে মুসলিমার মধ্যে আপনারাই সবচেয়ে পরিচনত চিন্তার অধিকারী। কিন্তু বাচ্চামী কেন করেন?

 

মাদখালীরা খারেজী প্রথম আপনাদের বলত, এরপর আইএস বের হল, আর আপানারা তাদের উপর খারেজী ট্যাগ লাগিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন, "যাক, পাওয়া গেল খারেজী, আমরা আর খারেজী নই"।

 

দায়েশের অপরাধের সমালোচনা করুন, কিন্তু ট্যাগ লাগালাগি করিয়েন না। তারা খারেজী এই প্রমাণ কখনোই করতে পারবেন না ইনশাআল্লাহ। কারণ খারেজী একটা ফিরকা যা মুতাজিলা, শিয়া, এগুলোর মত আলাদা। খারেজীদের যেসব আকীদা থাকে সেগুলোর সাথে আইএসের আকীদা মিলে না। আইএসের আকীদা সুন্নী আকীদা। খারেজীদের সব বৈশিষ্ট্যও আইএসের সাথে মিলে না। আইএসের অনুসারীরা ন্যাড়া মাথার না, আর তারা অল্পবয়সীও না, আইএসের নেতাদের সবাই ৪০ এর উপর বয়স। যদি বলেন অনুসারীদের বেশিরভাগ যুবক তাহলে আমি বলব, কায়দার অনুসারীরাও তো অধিকাংশ যুবক, অল্প বয়সী। আহলে হাদীসদের অনুসারীও অল্প বয়সীর সংখ্যায় বেশি, তাবলীগেও অনেক। আইএস ইবাদতেও বেশি অগ্রগামী না, বরং তাবলীগী, সুফিদের তুলনায় ইবাদতেও তারা পিছিয়ে।

 

ভিন্নমতকে খারেজী, কাফের, ইত্যাদি প্রমাণ করতে রসুলের হাদীসের অপব্যবহার করা হয়ে থাকে যা সত্যি দুঃখজনক। এমন কাজ অন্তত মানহাজীদের কাছে আশা করা যায় না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

দায়েশ, কায়েদা উভয়েরই দোষ আছে, সাদপন্থী, শূরাপন্থী দুই দলেই ভুল আছে, সালাফি দেওবন্দী উভয়ের মধ্যেই ক্রুটি বিচ্যুতি আছে। জামায়াত, বেরেলভী এদের মধ্যেও সমস্যা আছে। তাহরীর, কিংবা চরমোনাই এরাও ভুলের উর্দ্ধে না। সবারই ভুল আছে, ভুল ধরিয়ে দেয়াও ভালো কথা, কিন্তু ঝগড়া করা ভালো কথা না।

 

এভাবে একে অপরের বিরুদ্ধে লেগে থেকে নিজেদের নিজেরাই ধ্বংস করছি। আমরা নিজেদের মধ্যে মারামারিতে অনেক বড় একটা সময় ব্যয় করি। সেই সময়গুলো কাছাকাছি আসতে ব্যয় করতে পারতাম এবং একসাথে কাফের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য একে অপরকে সহযোগিতা করতে পারতাম। কিন্তু অবস্থা এমন আমরা অন্য দলের প্রতি ঘৃণা রাখি কাফিরদের চেয়েও বেশি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমাদের একটা স্বভাব হচ্ছে একদল যদি করে ছাড়াছাড়ি, আমরা তখন করি বাড়াবাড়ি। বাড়াবাড়ির একটা নমুনা হচ্ছে সব কিছুর মধ্যে শিরক খুঁজে পাওয়া। অথচ শিরক হওয়ার জন্য উপযুক্ত কারণ লাগে। আর হারাম মানেই শিরক না। যেটা হারাম, সেটার হারাম হওয়াটাই করা থেকে বিরত থাকার জন্য যথেষ্ট, অথচ শিরক না হওয়া সত্ত্বেও আমরা সেটাকে শিরক বলতে উঠে পড়ে লাগি।

 

একটা উদাহরণ দেই, পহেলা বৈশাখ পালন করাকে অনেকে শিরক বলেন। হ্যাঁ, যারা অপবিশ্বাস নিয়ে এই দিন পালন করে তারা শিরক করে, কিন্তু এই দিন পালন করা মানেই শিরক না, কেউ পহেলা বৈশাখের মেলায় গেলেই শিরক হবে না, শোভাযাত্রায় অংশ নিলেই শিরক হবে না। তবে এটা অবশ্যই হারাম। বর্তমান কালের উলামাদের ইজমা হয়ে গেছে এটা হারাম, অনেক আলেম শিরক বলেছেন। কোনো শাহবাগী আলেম ছাড়া এটাকে জায়েজ বলতে পারে না। এটা বিজাতীয় সংস্কৃতি, হিন্দুদের অনুকরণ, এই অনুষ্ঠান ইসলামের তাওহীদবিরোধী, ইসলামের সংস্কৃতিবিরোধী। তবে, কেউ যদি বিশ্বাস রাখে শোভাযাত্রা করলে মঙ্গল আসবে তাহলে সেটা শিরক হবে। এইসব শিরকের প্রচার নাস্তিক ও সেকুলাররা করে থাকে, কি আজব নাস্তিক যারা শিরকও করে!

 

শুধু একটা উদাহরণ দিলাম যে, আমরা অনেক কিছুকেই শিরক বলি, আদৌ তা শিরক না। অনেকে দেখি এটাও বলে, লক্ষ্মীসোনা বলে ডাকলেও নাকি শিরক হবে। কারণ লক্ষ্মী হিন্দুদের দেবীর নাম। এটা অনুচিত এবং হারাম হতে পারে, কিন্তু কোন যুক্তিতে শিরক বলা হয় জানি না, আর যারা বলে তারা হিন্দু দেবীর উপর বিশ্বাস রেখে বলে না।

 

আল্লাহ আমাদের শিরক থেকে হেফাজত করুন এবং যেসব আদৌ শিরক না, সেসবকে শিরক বলে প্রচার থেকেও বিরত রাখুন। তবে আরেকটা কথা বলি, শিরক হচ্ছে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অপরাধ, সবচেয়ে বড় অপরাধ। শিরকে না বুঝে লিপ্ত হওয়ার চেয়ে এটা ভালো যে কোনো কিছুকে শিরক সন্দেহ করে এর থেকে দূরে থাকা এবং সেটাকে শিরক বলে প্রচার করা। অর্থাৎ বলতে চাচ্ছি, পহেলা বৈশাখ পালন মানেই শিরক না, কিন্তু কেউ যদি শিরক বলে তবু সমস্যা নাই, কারণ যারা না বুঝে পালন করে তাদের চাইতে এটাকে শিরক বলে প্রচার করা অনেক অনেক ভালো। আর সন্দেহযুক্ত জিনিস থেকে বেঁচে থাকাই উত্তম।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সেকুলার মুসলিমরা যে লোক দেখানো বা ভ্রমণ যে উদ্দেশ্যেই হোক, হজ করে, উমরা করে, এর একটা ভালো দিক হচ্ছে যেসব মহিলা জীবনে মাথায় ওড়নাও দেয় নি তাদেরও বোরখা পড়তে হয়। যেসব পুরুষ কোনো ইসলামী পোশাক পরিধান করে নি, তাকেও ইসলামী পোশাক পড়তে হয়।

 

ইসলাম রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকলে সেকুলারদেরও এভাবে বোরকা পড়তে হত, দাড়ি রাখতে হত। আফগানিস্তানে যেমন কয়েক যুগ আগে যারা পাশ্চাত্যের ভূগোল পোশাক পড়ত, তাদেরও বোরখা পড়ে নিজেদের আবৃত রাখতে হয়। (ভূগোল পোশাক মানে যারা বুঝেন তারা তো বুঝেনই, যারা বুঝেন না তাদের জন্যঃ ভূগোলে আমরা পড়েছি পৃথিবীর ৩ ভাগ পানি, ১ ভাগ মাটি, সেরকম ছোট পোশাক যারা পড়ে তাদের ৩ ভাগ খোলা থাকে, ১ ভাগ ঢাকা থাকে, এজন্য ছোট পোশাককে বলে ভূগোল পোশাক।)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমাদের ড্রেসকোড হচ্ছে রসুল সাঃ যেসব পরিধান করতেন, মুসলিমরা যেসব পরিধান করত। আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের সংস্কৃতি হচ্ছে জুব্বা/ছাওব, কামিজ/পাঞ্জাবি/কুর্তা, সালওয়ার/পায়জামা, লুঙ্গী/ইজার, কাবলি, টুপি, পাগড়ি, মেয়েদের সালওয়ার কামিজ, বুরকা ইত্যাদি। পাশ্চাত্য থেকে আসা পোশাক শরীয়তের শর্ত মেনে জায়েজ হলেও কখনোই প্রশংসনীয় না, এর থেকে বেচে থাকাই উত্তম।

 

অনেকে বলবে পোশাক নিয়ে বাড়াবাড়ির কি আছে? আমি বলব, মুমিন হলে পোশাকের ব্যাপারে ইসলামী ঐতিহ্য ফলো করা উচিত। কোনো প্রয়োজনে শার্ট, প্যান্ট, শাড়ি পড়ুন, মানা করি না। তবে আমাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক যেন আমরা ছেড়ে না দিই, হীনমন্যতায় না ভুগি, মানুষ কি বলবে এসব যেন না ভাবি।

 

ভারত ভাগের পর পাকিস্তান তাদের জাতীয় পোশাক হিসেবে কাবলিকে বেছে নিয়েছে, তারা মুসলিম ছিল, কিন্তু আমরা কি মুসলিম না? আমরা কেন এটাকে জাতীয় পোশাক হিসেবে নিতে পারি নি।

 

আপনাদের কেন ইসলামী পোশাক পড়তে উৎসাহিত করছি তা যদি না বুঝেন তাহলে সেকুলারদের দিকে তাকান। তারা ইসলামী পোশাক দেখলে জ্বলে পুড়ে মরে; কেন মরে? তারা নিজেদের পোশাককে প্রোমট করে, শাড়িকে উৎসাহিত করে, পাশ্চাত্যের পোশাকসংস্কৃতি এই দেশে আমদানী করে, কিন্তু ইসলামী পোশাক দেখলেই কেন জ্বলে? কারণ ইসলামী পোশাক তাওহীদবাদীদের বাহ্যিক পরিচয় বহন করে। তাদের মনে জ্বালা ধরাতে, নিজের সংস্কৃতি ঐতিহ্য আঁকড়ে ধরতে, মুসলিমদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকগুলো, সুন্নাহ পোশাকগুলো পরিধান করুন, প্রোমট করুন, শার্ট প্যান্ট কেনা ছেড়ে দেন, যেগুলো আগের আছে ওগুলোই প্রয়োজনের সময় পড়ুন। কাপড়ের ব্যবসাই যদি করতে হয় ইসলামী পোশাকের ব্যবসা করুন।

 

আল্লাহ আমাদেরকে ভিন্ন জাতির সংস্কৃতি থেকে হেফাজত করুন, মুসলিম জাতির সংস্কৃতি ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার তৌফিক দিন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বিভিন্ন বিখ্যাত গানের সুর নকল করে ইসলামী গান গাইতে সমস্যা দেখি না। তবে এটা যেন সিরিয়াসভাবে না হয়, আমাদের সিরিয়াস কাজগুলো যেন ভালো মানের হয়। জাহেলী গানের সুর নকল করে গান গাওয়া একটা বিনোদন হিসেবে নিতে পারি, এবং এখানে কোনো সমস্যা দেখি না। প্রসঙ্গঃ আজহারী সাহেব তার ওয়াজে বলিউডের একটি গানের সুর নকল করে একটি জায়েজ গান গেয়েছেন যেটা নিয়ে অনেকেই দেখলাম নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। আমি বলব, এখানে কোনো সমস্যা দেখি না। তবে ওয়াজের মধ্যে এসব করা দৃষ্টিকটু। এমনিতে সাধারণভাবে জাহেলী গানের সুর নকল করে গান গাওয়াতে সমস্যা দেখি না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যখন দেখবেন আপনার কথা সেকুলার, কাফের, মুনাফিকরা পছন্দ করবে, লাইক দিবে তখন বুঝবেন আপনার কথায় কিছু সমস্যা আছে। এমন না যে দুই একজন কাফের আপনার কথাটা পছন্দ করলেই আপনার কথাটা সমস্যাযুক্ত, বরং অধিকাংশ কাফের, অধিকাংশ মুনাফিক সেকুলাঙ্গার যদি আপনার কথা পছন্দ করে, শেয়ার করে, তাহলে বুঝবেন আপনার উথাপিত প্রসঙ্গটা সত্য হলেও প্রকাশভঙ্গী ভুল।

 

যখন আপনি তাহেরীর ভিডিও বিনোদনের উদ্দেশ্যে শেয়ার দিবেন, তখন আপনার পোস্ট সেকুলাঙ্গাররা পছন্দ করবে এবং শেয়ার দিবে। কারণ আপনার উদ্দেশ্য তাহেরীকে পচানো হলেও সেকুদের উদ্দেশ্য ইসলামকে পচানো, মুসলিমদের পচানো।

 

যখন আপনি মাদ্রাসার ভেতরকার সমস্যা যেমন সমকামের অভিযোগ কিংবা বলাৎকার এসব নিয়ে কথা বলবেন তখন আপনার পোস্ট যদি কাফেররা পছন্দ করে, শেয়ার করে, আপনার কথা দলিল হিসেবে ব্যবহার করে বুঝবেন আপনার বলার ভঙ্গীতে সমস্যা আছে, এটা এমন সমস্যা যা আপনাকে কাফেরদের বন্ধুত্ব এবং মুসলিমদের দূরত্ব এনে দিবে।

 

যখন আপনি কোনো ইসলামী লেবাসধারীর সমালোচনা করবেন, হোক সে ভন্ড, আপনাকে এমন কৌশল অবলম্বন করতে হবে যেন কাফেররা, সেকুলাররা এর থেকে সুযোগ লাভ করতে না পারে। তারা যেন আপনার কথা/লেখাকে পছন্দ করতে না পারে।

 

দুঃখজনক হলেও সত্য আমরা এমন সব কাজ করছি যা সেকুলার আর কাফেরদের সুযোগ করে দিচ্ছে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে। আমরাই কাজী ইব্রাহীম সাহেবের ক্লিপগুলো ভাইরাল করি, এরপর আমরাই হা-হুতাশ করি, "ইসলামের মান সম্মান ডুবে গেল রে!" কাজী ইব্রাহীমের ক্লিপগুলো প্রথম কোনো দ্বীনদারই নিশ্চয়ই ভাইরাল করেছে, নাহলে সেকুলাররা তো আর কাজী ইব্রাহীমের লেকচার শুনে না, তাই না?

 

মুসলমানদের ভুলগুলোর সংশোধনের উদ্দেশ্য গঠনমূলক ও যৌক্তিক সমালোচনা করা যায় কিন্তু এমন সমালোচনা নয় যেটা কাফেরদের খুশির কারণ হয়। বরং এমন ভাবে লিখুন বা বলুন যেন কাফের মুনাফিকরা সুযোগ গ্রহণ করতে না পারে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আলেমদের দাওয়াতি কাজের যে সুযোগ আছে সেটা অন্য মানুষদের নাই, তবু দেখা যায় দাওয়াতি কাজে মাওলানাদের আগ্রহ কম। তাদের এতো এতো সুযোগ, তারা কাজে লাগান না! ফলে জেনারেল অজ্ঞ মানুষদের দাওয়াতি কাজে জুড়তে হয়। মাওলানাদের এ ইলম দিয়ে কি হবে যদি সেটা দাওয়াতি কাজে না লাগান? আমি বেশিরভাগ মাওলানার কথা বলছি।

 

যারা জেনারেল দাঈ তাদের মানুষের কাছে গিয়ে দাওয়াত দিতে হয়। আর মাওলানাদের কাছে মানুষ আসে, তবু কেন তাদের দাওয়াত দেন না? খুব কষ্ট হয় প্রতি শুক্রবারের জুমার বয়ানগুলোর অপচয় দেখে। এই দিন হাজার হাজার মুসল্লী মসজিদে সমবেত হয়। সেইদিন এমন একটা খুৎবা বা বয়ান দরকার যেটা সবার জন্য উপকারী হবে, দ্বীনে ফিরতে উৎসাহিত করবে। কিন্তু প্রতি জুমার বয়ানের বিষয়বস্তুই আমাকে হতাশ করে। জুমার বয়ানে আপনি হাজারের উপর মানুষের সামনে দাওয়াত দেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন অথচ এজন্য এক ঘণ্টাও পড়াশোনা করার সময় পান না? দরকার হলে সাত দিন লাগিয়ে জুমার বয়ান তৈরি করুন, এমন একটা বয়ান যা মানুষকে দ্বীনে পরিপূর্ণ রুপে প্রবেশ করতে সাহায্য করবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কিতাব মুখস্ত করা একটা হারানো ঐতিহ্য। সালাফদের আমল থেকে এটা প্রচলিত ছিল আহলুল ইলম ও তালিবুল ইলমগণ কিতাব মুখস্ত করতেন। কিন্তু এখন আমরা হাফেজ বলতে শুধু কুরআনে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছি। অথচ পূর্ববর্তী জামানায় কুরআন ছাড়াও হাদীসের কিতাবগুলো মুখস্ত করা হত। হাদীসের কিতাব ছাড়াও অন্যান্য অনেক বিষয়ের কিতাব মুখস্ত করার প্রমাণ সালফে সালেহীনদের জীবনে লক্ষ্য করা যায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বাংলাদেশের মানুষ যে হানাফী মাজহাব এ বিষয়গুলো ব্যাপক ভাবে প্রচার না করার ফলে আহলে হাদীসদের উগ্রবাদী ধারার ফিতনা শুরু হয়। হানাফীদের ব্যাপারে উগ্র বিদ্বেষ আহলে হাদীসরা যেমন চর্চা করে, তেমনি হানাফীরাও করে। মাজহাব বিষয় বিদ্বেষপ্রসূত বয়ান নয়, সঠিক জ্ঞান ছড়ানোর মাধ্যমেই এই ফিতনার মোকাবেলা করা যেত। তাদের যুক্তি দিয়েই তাদের খণ্ডন করা যেত। আফসোস যে ওলিপুরী সাহেবের মত বিখ্যাত আলেমরা এই অবস্থাকে এমন জটিল করে তুলেছেন যে হানাফীদের ইলমী খণ্ডনগুলাই ঢাকা পড়ে যায়।

 

সালাফীদের মাজহাব হচ্ছে প্রকৃত পক্ষে হাম্বলী মাজহাবের একটি উপ-মাজহাব। এটাকে লা-মাজহাব বলা যায় না ওরা নিজেদের যতই লা-মাজহাবী বলুক না কেন। মাজহাব মানে এমন না এর ব্যানার থাকতে হবে, সালাফী মাজহাব হচ্ছে এমন মাজহাব যার কোনো ব্যানার নাই, তাই বলে এটাকে মাজহাবের বাইরে গণ্য করা যায় না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত পরিষ্কারের সুন্নাহ আদায় হবে।

মিসওয়াক দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত পরিষ্কার আর মিসওয়াক, দুইয়ের সুন্নাতই আদায় হবে।

নামাজের আগে মিসওয়াক করলে দাঁত মাজা, মিসওয়াক এবং নামাজের আগে মিসওয়াক; অর্থাৎ তিন সুন্নাহ একসঙ্গে পালন হবে।

 

মাথা যে কোনো ভাবে ঢাকলেই মাথা ঢাকার সুন্নাহ আদায় হবে।

টুপি দিয়ে মাথা ঢাকলে টুপি ও মাথা ঢাকা দুইয়ের সুন্নাহ আদায় হবে।

সাদা টুপি দিয়ে ঢাকলে তিন সুন্নাহ আদায় হবে।

টুপির উপর পাগড়ি পড়লে চার সুন্নাহ আদায় হবে।

পাগড়ির সং সাদা/কালো/সবুজ হলে পাঁচ সুন্নাহ আদায় হবে।

 

এভাবে আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাতে হবে সর্বোচ্চ সংখ্যক সুন্নাহ একইসাথে আদায় করার।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আহলে হাদীস ও সালাফীদের সমস্যা হচ্ছে তারা খুব দলকেন্দ্রিক। তাদের কথাবার্তা, চিন্তাভাবনা সব তাদের মানহাজকেন্দ্রিক। অন্যান্য মুসলমানরা যখন পুরো মুসলিম উম্মাহকে নিয়ে চিন্তা করে, তারা শুধু চিন্তা করে নিজেদের নিয়ে। যেন অন্যান্য মুসলমান মুসলমানই নয়। এটাই সত্য যে তাদের অনেকের ধারণা তারাই একমাত্র ফিরকায়ে নাজিয়াহ, তারা বাদে বাকি সব মুসলমান জাহান্নামে যাবে। আল্লাহ তাদের হেদায়েত দিক।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমাদের দেশে দেখা যায় পূর্ববর্তী আলেমদের মূল কিতাবের মুখতাছার অনুবাদ করা হয় কিন্তু মূল লেখকের নাম দিয়ে চালিয়ে দেয়া হয়। মুখতাছার অনুবাদ করা হলে মুখতাছারের লেখকের নাম দেয়া উচিত, মূল কিতাবের লেখকের নাম নয়। কারণ মূল কিতাব আর মুখতাছার এক নয়। মুখতাছার তো আর মূল কিতাবের লেখক লেখেন নি, যে লিখেছেন তার নাম না দেয়াই যৌক্তিক।

 

তাছাড়া মুখতাছার অনুবাদের সময় মূল কিতাবের নাম ও লেখকের নাম ব্যবহার করা হচ্ছে, কিন্তু যখন মূল কিতাব অনুবাদ হবে তখন কার নাম ব্যবহার করা হবে? মুখতাছারের নাম মূল কিতাবের মত দেয়ায় মানুষ মূল কিতাব মনে করে কিনছে, এতে বিভ্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। দায়িত্বশীলদের থেকে এমন আচরণ আশা করা যায় না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

অনেকে মনে করেন জুমার রাত মানে ইংরেজি তারিখে শুক্রবারের রাত। কিন্তু ইসলামিক নিয়মে জুমার রাত মানে বৃহস্পতিবার রাত। কারণ হিজরি সন চান্দ্র হিসেবে। অর্থাৎ শুক্রবার শুরু হয় মাগরিবের পর থেকে। আর শুক্রবারের রাত আসলে শনিবারের রাত।

 

জুমার রাত অন্যান্য রাতের চেয়ে উত্তম। এজন্য তাবলীগের শবগুজারী বৃহস্পতিবার তথা জুমার রাতে হয়।

 

জুমার রাতের আরেকটা মজার বিষয় হচ্ছে, স্কুল, কলেজ, অফিস-কাচারীর সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবারে। তাই বৃহস্পতিবারের রাতটা বেশি আনন্দের, কারণ শুক্রবার তো ছুটির দিন। তবে শুক্রবারের রাতটা ততটা আনন্দের না, কারণ সকাল বেলায় আবার অফিস/স্কুল।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

অনেক সময় মনে হয় সব কিছুর ইসলামাইজেশনের দরকার আছে কিনা? তৎক্ষণাৎ মনে হয়, আল্লাহ আমাদের ইবাদাতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। অর্থাৎ আমাদের সব কিছুর কেন্দ্র হতে হবে আল্লাহ। আমাদের সব কাজকে ইবাদাত বানাতে হবে। আর ইবাদাত বানানোর জন্য সব কিছুর ইসলামাইজেশন দরকার।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার।

 

বড় শয়তানের হাতে ছোট শয়তান নিহত হয়েছে। বলছিলাম, ইরানের কাসেম সুলাইমানির কথা। ইরাক ও সিরিয়ার মুসলিমদের হত্যাকারী।

 

বড় শয়তানটা হচ্ছে আম্রিকা। আমি খুশি বটে, তবে আরও বেশি খুশি হতাম যদি কোনো মুসলমানের হাতে মরত।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমি মনে করি, মসজিদ থেকে চেয়ার বের করা জরুরী হয়ে পড়েছে। চেয়ারে নামাজ পড়া অনেক শর্ত মেনে এরপর জায়েজ। কিন্তু বেশিরভাগ চেয়ারে পড়ে অভ্যস্ত মুসল্লীর এমন গুরুতর ওজর আছে বলে মনে হয় না। কারণ তারা সব কাজ করতে পারে, অথচ নামাজের সময় চেয়ার লাগে। মহিলাদের মধ্যেও এটা ছড়িয়ে গেছে।

 

এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন চেয়ারে নামাজ পড়ে অভ্যস্ত। আমি তাকে অনেক বুঝানোর পর সে মেঝেতে বসে নামাজ শুরু করে। এরপর দেখা গেল সে দাঁড়িয়েই নামাজ পড়তে সক্ষম। অথচ অভ্যাসের কারণে এতদিন ওজর ছাড়াই চেয়ারে বসে নামাজ পড়ত।

 

আমার মনে হয় যাদের ওজর আছে তারা মসজিদে চেয়ার নিয়ে যাক। আর চেয়ার নিতে না পারলে মাসজিদে যাওয়ার দরকার নাই। কারণ দেখা যাচ্ছে সত্যিকার অর্থে ওজর আছে মাত্র একজনের, অথচ মসজিদে চেয়ার থাকার ফলে চেয়ারে নামাজ পড়ছে ৭-৮ জন। অর্থাৎ একজনের কারণে ৭-৮ জনের নামাজ নষ্ট হচ্ছে। তাই মসজিদকে চার্চ বানাতে না চাইলে মাসজিদকে চেয়ারমুক্ত করতে হবে। চেয়ারসংস্কৃতি আমাদের নয়।

 

যাদের সত্যিকারের ওজর আছে তারা যদি মসজিদে চেয়ার না থাকার কারণে মসজিদে নামাজ পড়তে নাও পারে, নিয়ত রাখার কারণে বাসায় পড়েও ২৫/২৭ গুণ বেশি সাওয়াব পাবে বলে আশা করা যায়। কিন্তু একজনের জন্য যদি মসজিদে চেয়ারের ব্যবস্থা রাখা হয় তাহলে আরও অনেক সুবিধাবাদীর জন্য মসজিদে চেয়ারে নামাজ পড়ার পথ খুলে দিচ্ছে। এটা শুধু একটা মসজিদের কথা নয়, সব মসজিদের কথাই।

 

চেয়ারে নামাজ পড়ার জন্য যে অনেক শর্ত আছে এগুলোর ব্যাপক প্রচার হওয়া চাই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বাঙ্গালী মাওলানাদের চেয়েও আহলে হাদিসরা বেশি হাদিস জানে! এটা সত্য কথাই। হোক না বাংলা অনুবাদ পড়ে। কিন্তু জানে তো!

 

অথচ উচিত ছিল দুই বছর আগেও যে জাহেল ছিল সেই আহলে হাদিসের চাইতে মাওলানারা বেশি হাদিস জানবেন। আরবী জ্ঞানে হতে পারে মাওলানারা পারঙ্গম, আর আহলে হাদিসরা জাহেল, কিন্তু হাদিসের জ্ঞানে, হাদিসের চর্চায় মাওলানারা জেনারেল আহলে হাদীসীদের থেকেও পিছিয়ে।

 

মাওলানারা আমাদেরই লোক, আত্মসমালোচনা এজন্যই জরুরী, যেন আমাদের মাওলানারা হাদীসের চর্চা করেন। তারা যেহেতু আরবী পারেন, তাদের তো অনেক বেশি হাদীস জানার কথা। মাওলানাদের বয়ানে হাদীসের উদ্ধৃতির বড়ই অভাব। এখন পর্যন্ত এমন কোনো কওমি আলেম দেখি নাই যারা বয়ানে কোনো আহলে হাদীস আলেমের চেয়ে বেশি হাদীস উদ্ধৃত করতে পারেন। আহলে হাদীস আলেমদের বয়ান শুনলে দেখবেন বহু হাদীস তাদের ইবারতসহ মুখস্ত।

 

বয়ানে হাদীস ইবারতসহ উদ্ধৃত করাতে অনেক ফায়দা রয়েছে। এটা শ্রোতার দিলে গিয়ে লাগে একেবারে। হাদীস ছাড়া বয়ান যেন নূরহীন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমি চাইলে আইএসের পক্ষে প্রচারণা চালাতে পারি, এমন সব দলিল, যুক্তি দেখাতে পারি যা খণ্ডন করতে পারবেন না, কারণ সত্য কখনো খণ্ডন করা যায় না। কিন্তু আমি তা করব না। কারণ আমি চাই না কেউ আইএস হোক। আইএস হওয়া তো দূরের কথা, এদের সমর্থন দেক সেটাও চাই না। আইএস হয়ে গেলে রক্তপাত সৃষ্টি করবে, মানুষ হত্যাকে দ্বীন মনে করবে। আমি শুধু চাই উগ্র বিদ্বেষ বন্ধ করুন, অপবাদ দেয়া বন্ধ করুন, ট্যাগ লাগানো বন্ধ করুন, যেটা সত্য সেটাই মানুন। সত্য মানতে হলে তাদের সমর্থন দিতে হবে এমন না। যদি বলা হয় অমুক হিন্দু মহিলা বেশ্যা অথচ সে বেশ্যা না। কাফের হলেও কাউকে অপবাদ দেয়া জায়েজ হয়? কাফের হলেও জায়েজ না হলে আইএসকে কিভাবে অপবাদ দেয়া জায়েজ হয়?

 

সত্য বলতে অনেক মানহাজীও মিডিয়া দ্বারা ব্রেইনওয়াশড। সাধারণ মানুষের কথা আর কি বলব?

 

আমার কথা দুইটা, একঃ আইএস খারেজী না। দুইঃ আইএসের খিলাফত বৈধ যদিও সেটা খুলাফায়ে রাশেদের আদর্শে না।

 

মাদখালীদের ন্যায় মানহাজীরাও খারেজী হওয়ার হাদীসের অপব্যাখ্যা করছে যা দুঃখজনক।

 

শেষ কথা হচ্ছে, আইএসের খিলাফত বৈধ মনে করি এতোটুকুই। আমি তাদের সমর্থক নই। কেউ সমর্থক হোক বা যোগদান করুক সেটাও চাইব না, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এসব বিষয়ে বেশি কথা বললে অনেকে প্রভাবিত হতে পারে, তাই আজকের পর এসব বিষয়ে আর কথা বলব না। আমার ব্যাপারটা ক্লিয়ার করি, আইএসের চেয়ে কায়দা উত্তম। কিন্তু তালেবানের ইমারাতের চেয়ে আইএসের খিলাফত উত্তম। আইএসের সঙ্গী হয়ে কেউ যদি কাফের মুশরিকদের বিরুদ্ধে বৈধ জিহাদ করে তবে আমি তা জায়েজ মনে করি। কিন্তু এমন অবৈধ কার্যকলাপ না যেখানে অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা করা হয়। যখন মোডারেট জিহাদীদের সাথে কায়দাপন্থীদের যুদ্ধ হয় তখন অবশ্যই কায়দাপন্থীদের সাপোর্ট দেই, একই ভাবে দায়েশ যদি আক্রমণ করে এমতাবস্থায় কায়দাপন্থীদের সাপোর্ট দিব। কেউ আইএসের পক্ষে হয়ে তালেবান, কায়দার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হবে, মুসলমান হত্যা করবে তা কোনোভাবেই সমর্থন করি না। কায়দাও আক্রমণের ভয় না থাকলে ইচ্ছাকৃতভাবে দাওলার উপর আক্রমণ করে তাদের হত্যা করবে সেটাও চাই না। দাওলার বিরুদ্ধে কায়দার আক্রমণাত্মক যুদ্ধ ততক্ষণ পর্যন্ত সাপোর্ট দিব না যতক্ষণ না কায়দা খিলাফত ঘোষণা করে, কারণ কায়দা খিলাফত ঘোষণা করলে সেটা আইএসের খিলাফতের চেয়ে উত্তম ও বৈধ হবে। এই হল আমার মতামত।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কাউকে আশা দিয়ে হতাশ করবেন না, এটা খুবই খারাপ। মানুষের মনে এতে আঘাত লাগে। ধরুন, কাউকে বললেন, তোমাকে আমি ১০ টাকা দিব। কিন্তু পরে দেখা গেল আপনি কোনো কারণে দিতে পারছেন না, বা নেই। তাহলে আশা কেন দিলেন? যা দেয়ার তা সাথে সাথে দিয়ে দিবেন, আর যা দিতে পারবেন না সেটার আশা দিবেন না। আশা দিয়ে হতাশ করার চেয়ে না দেয়া না বলাই ভালো।

 

বাস্তব জীবনে অনেককে করতে দেখেছি, বাচ্চাদের সাথে এসব বেশি করা হয়। নিষ্পাপ বাচ্চাদের মনে কষ্ট দিয়ে কি লাভ? না দিতে পারেন যদি, তাহলে আশা দিতে কে বল্ল? "আমি তোমাকে দিব" এ কথাটা যেন আপনার গুনাহের কারণ না হয়। কারণ মুমিন কখনো ওয়াদা ভঙ্গ করে না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কিছু ওয়ায়েজকে আপনারা হেলিকপ্টার হুজুর বলে ব্যঙ্গ করেন কেন বুঝি না! হেলিকপ্টারে তো আর তিনি নিজের টাকায় চড়েন নি, মাহফিলের আয়োজক হেলিকপ্টারে আনার ব্যবস্থা করেছেন বলেই তিনি হেলিকপ্টারে চড়ে এসেছেন। এমনও না তিনি বলেছেন, হেলিকপ্টার ছাড়া আমি কিছুতেই ওয়াজ করতে আসবো না। আর যদি তিনি নিজের টাকায় হেলিকপ্টারে চড়ে আসেন, তবে সেটার সমালোচনাও যৌক্তিক হয় না! কারণ তার টাকা দিয়ে সে কি করবে সেটা তার ব্যাপার।

 

যদি বলেন, মাহফিল কর্তৃপক্ষ হেলিকপ্টারে আনতে চাইলে কেন মানা করেন নি কিংবা নিজের টাকায় কেন হেলিকপ্টারে চড়ে আসলেন, উত্তরে বলব, এটা নাজায়েজ কিছু না যেভাবে আপনারা সমালোচনা করছেন, যুহদের পরিপন্থী বলা যায়, কিন্তু নাজায়েজ না। হেলিকপ্টারে চড়লেই কেউ মুমিনের তালিকা থেকে বাদ যায় না, কিংবা কেউ হেলিকপ্টারে চড়লেই যাহেদ আবেদ হওয়া থেকে বাদ হয়ে যায় না।

 

আপনি নিজে সুযোগ পেলে হেলিকপ্টারে চড়ার সুযোগ হাতছাড়া করবেন? আমরা নিজেরা তো কম অপচয় করি না, অথচ কারো অপচয় চোখে পড়লে সমালোচনার সুযোগও ছাড়ি না, অথচ দেখি না সেটা সত্যি অপচয়ের মধ্যে গণ্য হয় কিনা! অনেক সময় দ্রুত পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনেই হেলিকপ্টারে আসা জরুরী হয়ে পড়ে। যদি এটাকে অপচয়ও বলি তবে দোষ মাহফিল আয়োজকদের, এখানে ওয়ায়েজের দোষ অল্পই।

 

কিসের সমালোচনা করতে হয় আর কিভাবে কতটুকু করতে হয় সেগুলো আজ পর্যন্ত শিখলাম না, হায় আফসোস!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

রোকেয়া ছিলেন ইসলামী নারীবাদী। তার হাতেই শুরু হয় এই ফিতনার, বাংলা অঞ্চলে। এখান থেকেই বাংলায় সেকুলার নারীবাদের জন্ম। শুরুটা ইসলামী নারীবাদ দিয়ে হলেও সময় যত গেছে এটা তত বেশি উগ্র নারীবাদে পরিণত হয়েছে। এখন তো পুরাই উগ্র নারীবাদ। রোকেয়াকে কিছুতেই ছেড়ে দেয়া যায় না। লক্ষ লক্ষ নারীকে জাহান্নামের পথে ডাকার পথিকৃৎ ছিলেন। আল্লাহ তাকে যথোপযুক্ত প্রতিদান (শাস্তি) দিন। দ্রষ্টব্যঃ রোকেয়াকে মুসলিম মনে করি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বাঙালী ফ্যামিলিগুলা সন্তানের বিয়ের "সঠিক সময়" বলতে যা বুঝে - "৪০ হওয়ার আগে, মাথায় টাক পড়ার আগে, দাঁত গুলা পড়ে যাওয়ার আগে, এক কথায় বুড়া হয়ে যাওয়ার আগে"।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কওমিদের মধ্যে যারা সেকুলার তাদের ৯০ ভাগ সাহিত্য পড়েই সেকুলার হয়েছে। আর এইসব সাহিত্য পড়ে যারা সেকুলার হয়েছে তারা নিজেরাও জানে না তারা সেকুলার। দাড়ি টুপিওয়ালা সেকুলার। দ্রঃ ( সাহিত্য বলতে সেকুলার সাহিত্যের কথা বলছি। ইসলামী সাহিত্য না।)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কওমি ছাত্রদের ব্যাপারে দুইটা ফ্যাক্ট বলি, দেখুন তো মিলে কিনা!

 

অধিকাংশ ছাত্র চিন্তাশীল না, ইসলামের সঠিক জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও কিভাবে উপস্থাপন করতে হয় সেই জ্ঞান নাই। এরা পরবর্তীতে ওয়াজের বক্তা হয়ে মানুষ হাসায়। আরেক প্রকার হচ্ছে চিন্তাশীল, চিন্তা করতে পারে, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এরা বেশিরভাগ সাহিত্যের দিকে ঝুকে এবং সেকুলার হয়ে যায়। এই দুয়ের বাইরে অল্প সংখ্যক (বড় মাদ্রাসাগুলাতে বেশি সংখ্যক) ছাত্র আছে যারা একই সাথে চিন্তাশীল এবং ইলমের দিকেও ভারী, তারা মাওলানা আব্দুল মালেক সাহেবের পথে চলে। এরাই প্রকৃত আলিম।

 

প্রথম দল আলিম কিন্তু এদের দ্বারা ইসলামের বড় কোনো খিদমাত হয় না যতটা তাদের ইলম অনুযায়ী আশা রাখা যেত। দ্বিতীয় দল তো ইসলামের খিদমাতের মধ্যেই থাকে না। পড়েছে খেয়েছে মাদ্রাসার, কিন্তু সেবা করে সেকুলার সাহিত্যের, সেকুলার চিন্তার।

 

প্রথম দলের ইসলামী চেতনা ও ইলম থাকে কিন্তু চিন্তাশীলতা থাকে না, দ্বিতীয় দলের চিন্তাশীলতা থাকে কিন্তু ইলম ও তাকওয়া থাকে, ইসলামী চেতনা তো থাকেই না। আর তৃতীয় দলের মধ্যে চিন্তাশীলতা, ইলম, তাকওয়া, ইসলামী চেতনা সব একীভূত হয়। তাদের থেকেই নেয়ার মত কিছু থাকে। এবং তারাই প্রকৃত নায়েবে নবী।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সাহাবিদের আমল থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত একাধিক বিবাহকারী আলেম, আবেদ ও মুমিন বান্দাদের সংখ্যা একবিবাহকারী আলেম, আবেদ মুমিন বান্দাদের সংখ্যা থেকে বেশি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

অনলাইনের নিউজ পোর্টালগুলা পড়লে মুভি দেখা লাগে না। কারণ এগুলো এমন আজগুবী সব নিউজ করে যা মূলত প্যারানরমাল, সুপারন্যাচারাল কিংবা সায়েন্স ফিকশন মুভিগুলার বিকল্প, এগুলো এমন সব হাস্যকর নিউজ করে যা কমেডি মুভির বিকল্প, এগুলো এমন সব অশ্লীল নিউজ করে যা অশ্লীল মুভিগুলোর বিকল্প।

 

যত রকমের ফালতু নিউজ পোর্টাল আছে, এগুলা বন্ধ করা গেলে দেশে মিথ্যা ও গুজব ছড়ানো ৫০ ভাগ কমে যাবে। দুঃখ লাগে এইসব পোর্টাল যা তা নিউজ করে আর সহজ সরল মানুষেরা হাজার হাজার শেয়ার দেয়! অথচ মানুষ বুঝতেছে না গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে কি ক্ষতি করা হচ্ছে!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

জামায়াতে ইসলামীর একটা বড় রকমের ভুল হচ্ছে তারা তাদের প্রতিভাগুলোর কদর করে নি। সবাই সব কাজের জন্য না। কিন্তু জামায়াত এমন লোকদের রাজনীতির ময়দানে নিয়ে এসেছেন যারা রাজনীতি করার উপযুক্ত ছিলেন না, বরং তাদের দক্ষতা ছিল অন্য ফিল্ডে। রাজনীতি তাদের সময় নষ্ট করা ছাড়া অন্য কিছু দেয় নি।

 

জামায়াতের বেশিরভাগ লোক হচ্ছে ভদ্র আর নিতান্ত ভালোমানুষ। কারণ বেশিরভাগ ক্লাসের ফার্স্টবয়, সেকেন্ডবয়রাই শিবিরের দাওয়াত গ্রহণ করত। এজন্য দেখা যায় শিবিরে প্রচুর মেধাবী ছাত্র ছিল/আছে। তাদের মেধা রাজনীতির জন্য নয় বরং অন্য কাজের জন্য উপযুক্ত ছিল। এর কারণ হচ্ছে রাজনীতির যে নোংরা প্যাঁচ সেটা মোকাবেলা করার জন্য কূটনৈতিক বুদ্ধি লাগে। এমন না জামায়াতে ভালো রাজনীতিবিদ নাই, বরং দেশের ইসলামপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে সবচেয়ে দক্ষ জামায়াতের ওরাই। কিন্তু জামায়াত সমর্থক আর কর্মীর সংখ্যার দিকে তাকালে দক্ষ রাজনীতিক বেশি বলে মনে হবে না! এতো বিশাল সংখ্যক কর্মী সমর্থককে জামায়াত ভালো কাজে লাগায় নি, লাগিয়েছে অপকাজে, অর্থাৎ রাজনীতিতে যেটা তাদের জন্য কল্যাণকর ছিল না।

 

জামায়াত যদি এসব কর্মী সমর্থককে কাজে লাগাত তবে রাজনীতির মাধ্যমে বিপ্লবের দিবাস্বপ্ন দেখতে হত না। জামায়াতেই সম্ভবত সবচেয়ে বেশি (জেনারেল) শিক্ষিত আছে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের চেয়ে। আর উচ্চশিক্ষিতের সংখ্যাও একেবারেই কম না। এদের কাজে লাগানো যেত, গবেষণা, সাহিত্য, দাওয়াত, সংস্কৃতি ইত্যাদি ফিল্ডে। এমন না এসব ফিল্ডে তারা একেবারেই কাজ করে নি, আমি সেটা বলছি না, আমি বলছি এতো বড় কর্মী-সমর্থক গোষ্ঠীর সবাইকে তারা কাজে লাগাতে পারে নি।

 

রাজনীতিতে তারা যে পরিমাণ মেধা শ্রম দিয়েছে এর এক ভাগও ইসলামী সাহিত্য আর সংস্কৃতিতে দেয় নি, তবু সেই এক ভাগের কম প্রচেষ্টাতেও তারা রাজনীতির চেয়ে সাহিত্য সংস্কৃতিতে তুলনামূলক অবদান বেশি রেখেছে। তাদের সেই অল্প একটু ছোঁয়ায় বাংলাদেশে ইসলামী সাহিত্য ও সংস্কৃতি অনেক বিকাশ লাভ করেছে। তারাই প্রথম দেশে বাংলায় নাশীদ চর্চাকে অন্য এক মাত্রায় নিয়ে যায় যেটা আগে ছিল শুধুই মিলাদ মাহফিলের গজল। তারা ইসলামী সাহিত্যকে গুরুত্বের সাথে দেখে নি, শুধু একটু আকটু প্রয়োজনের খাতিরে ছুঁয়েছে, এই ছোঁয়াটাই বাংলা ইসলামী সাহিত্যকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছে। চিন্তা করে দেখুন, তারা যদি এসবকে গুরুত্বের সাথে নিত তবে ইতিহাসই ভিন্ন হত। গবেষণাকেও তারা গুরুত্ব দেয় নি। তাও অল্প যা আগ্রহ দেখিয়েছে তাতেই অনেক ভালো গবেষক বেরিয়েছে।

 

জামায়াত পারতো তাদের মেধাগুলোকে মেধার উপযুক্ত ফিল্ডে ব্যবহার করতে। রসুল সাঃ নরম মনের এক সাহাবীকে রাজনীতির জন্য অনুমতি দেন নি, অথচ সেই সাহাবী ছিলেন অনেক উচু মর্যাদার, অনেক বড় ওলি। সবাই রাজনীতির জন্য না। জামায়াত মেধাগুলোকে ধরে ধরে রাজনীতির ময়দানে ঢুকিয়ে নষ্ট করেছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমাদের জাহেল সমাজে দেখা যায় গাইরে মাহরামের সাথে পর্দা তো করেই না, মাহরামের সাথেও যে নির্দিষ্ট পর্দা করার কথা সেটাও করে না। নাউজুবিল্লাহ। এমনও দেখা যায়, বাহিরে পর্দা করে ঠিকই কিন্তু ঘরে ছেলে, ভাই, বাবার সামনে মা, বোন, মেয়ে বুকে ওড়না দেয় না। বাপ মেয়ের সামনে লুঙ্গী হাটুর উপরে তুলে বসে থাকে। বর্তমান দুনিয়ার পরিস্থিতি যা হইছে আমার তো মনে হয় যুবকদের উচিত গাইরে মাহরামদের সাথেও সতর্ক হয়ে চলা। এটা পর্ণ আর চটির যুগ। বিকৃত যৌনতার যুগ। কোনো যুবক যদি কুচিন্তায় আক্রান্ত হয় তার উচিত মাহরাম মহিলাদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলা।

 

আর ঘরের মধ্যে মাহরামের সামনেও মহিলাদের উচিত বুকে ওড়না দেয়া, পেট খোলা না রাখা (যারা শাড়ি পড়ে); মিনিমাম ততটুকু ঢেকে চলা যতটুকু আপনার স্বামীর সামনে না ঢাকলেও চলে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ইশা আর ফজর, এই দুই নামাজের মধ্যবর্তী সময়ই সবচেয়ে বেশি অন্যান্য দুই নামাজের চেয়ে। প্রায় ১০ ঘণ্টার মত তফাৎ, ইশার ওয়াক্ত থেকে ফজরের ওয়াক্ত হতে। দ্বিতীয় সবচেয়ে বেশি সময়ের দূরত্ব হচ্ছে ফজর আর যোহরের মধ্যবর্তী সময়ে। প্রায় ৭ ঘণ্টার মত। ভেবে দেখলে দেখা যাবে এর মধ্যে রয়েছে হিকমাহ।

 

রাতকে আল্লাহ দিয়েছেন আমাদের ঘুমানোর জন্য। এজন্য রাতের ১০ ঘণ্টার মধ্যে কোনো নামাজ আল্লাহ রাখেন নি। এই ঘুমটা আমাদের জন্য জরুরী যেন পরেরদিন পুরো দিন আমরা কাজ কর্ম ইবাদত করতে পারি। একজন সাধারণ মানুষের কমপক্ষে ৫-৬ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। রাসুলও সাঃ প্রায় এরকম টাইম ঘুমাতেন, অতঃপর উঠে তাহাজ্জুদ পড়তেন।

 

ফজর আর ইশার মধ্যবর্তী সময়, প্রায় ১০ ঘণ্টার মধ্যে আর কোনো ফরজ নামাজ দেন নি, যেন আমরা ঘুমাতে পারি। আর ফজর থেকে যোহর, এখানের মধ্যবর্তী সময়ে অর্থাৎ প্রায় ৭ ঘণ্টায় কোনো ফরজ নামাজ নেই, যেন আমরা জীবিকা উপার্জনে সময় লাগাতে পারি। ফজরের পরের সময়কে আল্লাহ তাআলা রিজিক তালাশের জন্য দিয়েছেন। একদিকে ১০ ঘণ্টা বিশ্রামের জন্য, অন্যদিকে ৭ ঘণ্টার মত রিজিক অন্বেষণের জন্য। এতোটুকু উপলব্ধি করাই যথেষ্ট আল্লাহ আমাদের জন্য দ্বীনকে সহজ করেছেন। অথচ আমরা এই সহজ দ্বীনকেও কঠিন মনে করি।

 

আল্লাহ আমাদের ১০ ঘণ্টা আর ৭ ঘণ্টার যে গ্যাপ দিয়েছেন সেটা কোনো ফরজ ইবাদত না, শুধুমাত্র দুনিয়াবী চাহিদা মেটানোর জন্য দিয়েছেন। ১০ ঘণ্টার মধ্যে ঘুম আর ৭ ঘণ্টার মধ্যে জীবিকা উপার্জন, এই দুইটাই দুনিয়াবী কর্ম। তবু কেন আমরা এতো অকৃতজ্ঞ? অথচ আমাদের দুনিয়াবী সুবিধার জন্যই তিনি এই বড় দুইটা গ্যাপ রেখেছেন।

 

তবে যারা আল্লাহর অধিক প্রিয় বান্দা হতে চায় তাদের জন্যও আছে পথখোলা। এই দুই গ্যাপের মধ্যেও আছে এমন নফল নামাজ যার ফাজায়েল হাদিস দ্বারা 'অনেক অনেক' বলে প্রতীয়মান। ইশা আর ফজরের মাঝখানে তাহাজ্জুদ বা কিয়ামুল লাইল। এটা হচ্ছে ফরজ নামাজের পর শ্রেষ্ঠ নফল নামাজ। তাহাজ্জুদের ফজিলত তো অনেক, বলতে থাকলে বলে শেষ করা যাবে না। তবে আল্লাহর ওলি হওয়ার জন্য তাহাজ্জুদের বিকল্প নাই। ফজর আর যোহর, এই দুইয়ের মধ্যবর্তী নফল নামাজ হচ্ছে দুহার সালাত। এটা দুইভাগে বিভক্ত। একটা হচ্ছে, সালাতুল ইশরাক, এবং দ্বিতীয়টা চাশতের সালাত।

 

আল্লাহ তাআলা প্রত্যেকটা নামাজকে প্রত্যেক বেলার সাথে সম্পর্কযুক্ত করেছেন। আল্লাহর বিধানগুলোতে যে হিকমাহ রয়েছে তাতে ভাবার মত নিদর্শন রয়েছে ভাবুকদের জন্য। সকালবেলা ফজর, দুপুরবেলা যোহর, বিকালবেলা আসর, সন্ধ্যাবেলা মাগরীব এবং রাতের বেলা ইশা।

 

সবচেয়ে ছোট বেলা হচ্ছে দুপুর, বিকাল আর সন্ধ্যা, ফলে এই তিন বেলার মধ্যবর্তী গ্যাপও সংক্ষিপ্ত সময়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বাংলাদেশে ঈমানওয়ালা যদি ধরি ১০ কোটি মুসলমান (ফাসেকসহ), ইসলামপন্থী অন্তত অর্ধ কোটির মত হবে। ইসলামপন্থী বলতে জামায়াত, তাবলীগ, কওমি, বেরেলভী, সালাফি সব মিলিয়ে। অর্ধ কোটি ইসলামপন্থী থাকার পরেও যতটা কাজ হওয়া দরকার ছিল ততটা হচ্ছে না। অর্ধ কোটি সংখ্যাটা কম না। কিন্তু সংখ্যার তুলনায় কাজ এতই এতই নগণ্য যে হাতে গোণা যায়।

 

সংখ্যার তুলনায় কাজ কম হওয়ার কারণ অর্ধ কোটি ইসলামপন্থীর অধিকাংশ বেকার, বেকার মানে ইসলামের জন্য কাজ করে না। চিন্তাধারাই শুধু বদলেছে, ইসলামের জন্য কাজ করায় তেমন আগ্রহ তাদের নাই। যারা আগ্রহী তারাই শুধু কাজে লিপ্ত আছে, এমন কাজের কাজীর সংখ্যা অনেক কম।

 

মাঝেমধ্যে ভাবি, এসব কাজ হলে অনেক ভালো হত-

 

১- এমন একটা ওয়েবসাইট কিংবা সার্ভার, যেখানে সমস্ত আলেমের ওয়াজ, বয়ান, লেকচার, বক্তৃতা থাকবে।

 

২- এমন একটা ওয়েবসাইট যেখানে সমস্ত ইসলামিক বই পিডিএফ থাকবে। নতুন প্রকাশনীর বইগুলো প্রকাশের ৫ বছর পর পিডিএফ করা হবে (অনুমতি নিয়ে)।

 

৩- একটা লেখক-সাহিত্যিক, প্রকাশক ও অনুবাদকদের সংগঠন থাকবে। সবাই মিলে ইসলামের জন্য কাজ করার ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ হবে।

 

৪- আলেমদের একটা জাতীয় সংগঠন থাকবে যেখান থেকে নানা রকম উদ্যোগ নেয়া হবে। যে কোনো ইস্যুতে যেন খুব দ্রুত আলেমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারে সে জন্য এই সংগঠন অরাজনৈতিক ভাবে কাজ করবে।

 

৫- ওয়ায়েজদের একটা সংগঠন থাকবে, এখান থেকে ওয়াজের ব্যাপারে দিকনির্দেশনা ও বুদ্ধিবৃত্তিক আইডিয়া দিয়ে সাহায্য করবে।

 

আপাতত এই কয়েকটা মনে আসছে। বাকিগুলা মনে পড়লে বলব ইনশাআল্লাহ।

 

 

সবকিছুতে বিদআত বিদআত করা আহলে হাদিসদের একটা বড় সমস্যা। ইজতেমাকে কোন বুঝে বিদআত বলে তা আমার বুঝে আসে না। অথচ নিজেরাই আহলে হাদিস ইজতেমা করে প্রতি বছর, তাবলীগী ইজতেমার বিকল্প হিসেবে। ইজতেমার মধ্যে কোনো বিদআত হলে সেটা নির্দিষ্ট করে বলা যায়, কিন্তু তারা পুরো ইজতেমাকে বিদআত বলে। ইজতেমাকে বিদআত বললে তাদের দলীয় ইজতেমা বিদআত হবে না কেন?

 

কবে জানি মাদ্রাসায় পড়াকেও বিদআত বলে, কারণ মাদ্রাসা রসুল সাঃ এর সময়ে ছিল না। আর মাদ্রাসায় তো মানুষ সাওয়াবের নিয়তেই পড়ে। আসল কথা হচ্ছে বিদাতের সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা অনুধাবন করতে না পারাই আহলে হাদীসদের সব কিছুর মধ্যে বিদআত খুঁজে পাওয়ার মূল কারণ। কোনো মাধ্যম কখনো বিদআত হয় না। যেমন দীনে ইলম শেখার মাধ্যম মাদ্রাসা, আজান দেয়ার মাধ্যম মাইক, কুরআন পড়ার মাধ্যম কাগজ এবং এখন ডিজিটাল ডিভাইস, দ্বীন প্রচারের মাধ্যম তাবলীগ এবং ইজতেমা। না বুঝেই সবকিছুকে বিদআত বিদআত করলে তো সমস্যা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমরা বইয়ের রিভিউ দেই, বর্তমানে বইয়ের রিভিউ সাহিত্যের একটা জনপ্রিয় শাখায় পরিণত হয়েছে। একই ভাবে আমরা কি পারি না ইসলামিক লেকচার, খুৎবা, বয়ান, ওয়াজ এসবের রিভিউ দিতে? বয়ান/ওয়াজের রিভিউ দেয়ার প্রচলন আছে কিনা জানা নাই তবে আমরা শুরু করতে পারি। এতে ইসলাম প্রচারে সহযোগী হওয়া যাবে।

 

যেভাবে বয়ান বা ওয়াজের রিভিউ দিতে পারিঃ রিভিউটি লেখা কিংবা ভিডিও আকারে হতে পারে। রিভিউটি তিন অংশে বিভক্ত থাকবে। প্রথম অংশে এই বয়ানটি আপনি কোথায় শুনেছেন, কবে শুনেছেন, পুরোটা শুনেছেন কিনা, ইউটিউবে শুনলে সেটার লিঙ্ক দিতে হবে একটা অফিসিয়াল চ্যানেল থেকে যেখান থেকে প্রথম বয়ানটি আপলোড করা হয়।

 

দ্বিতীয় অংশ হবে বক্তার পরিচয়, বক্তৃতার বিষয়। বক্তা সম্পর্কে, তার বক্তৃতার মান সম্পর্কে লিখবেন। এছাড়াও অন্যান্য বিষয় আসতে পারে যেমন, সাউন্ড কোয়ালিটি কেমন ছিল, বক্তার বক্তৃতায় কোনো ভুল চোখে পড়েছে কিনা ইত্যাদি। তৃতীয় অংশ হবে বয়ানের একটা সারসংক্ষেপ।

 

এভাবে আমরা ইনশাআল্লাহ ওয়াজ/লেকচারের রিচিউ দিতে পারি এবং দাওয়াতি কাজে শরীক হতে পারি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ওহে কাফিররা, আমাদের সাথে দুশমনী করলে মাফ আছে, তোমাদের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তওবা করানোর চেষ্টা করব, ইসলামের দাওয়াত দিব, জাহান্নাম থেকে যেন রক্ষা পাও সেটার চেষ্টা চালাব। কিন্তু জেনে রাখো, আল্লাহ এবং আল্লাহর রসুলের সাথে দুশমনী করলে তোমাদের তওবা করার সুযোগও দিব না, তওবা করার আগেই জাহান্নামে পাঠিয়ে দিব (ইনশাআল্লাহ)।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

দাঈ মেজাজের অধিকারী দ্বীনদাররা আলেম হওয়ার চেষ্টা করুন। আলেমরা দাঈ মেজাজ আনার চেষ্টা করুন। দাওয়াত এমন কাজ যা আলেম, আওয়াম সবার উপর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সকল সাহাবী দাওয়াতী কাজ করেছেন যেভাবে সকল সাহাবী জিহাদ করেছেন, অথচ সব সাহাবী আলেম ছিলেন না। তবে আলেম হলে ভালো। কারণ আলেমদের জন্য দাওয়াতের সবচেয়ে বেশি সুযোগ রয়েছে। এরকম সুযোগ সাধারণ দ্বীনদারদের হয় না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আকীদার কি অবস্থা হইলে এই অবস্থা হয়! আমি বাকরুদ্ধ, শিহরিত (!)। এতদিন অমুসলিম মানেই কাফের না এসব বিনোদনমূলক পোস্টেই পেতাম। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে কুরআনের অপব্যাখ্যা করে এর দলীলও বের করা হচ্ছে।

 

শেয়ার দিলাম শুধু এটা দেখাতে, মুসলমানদের আকীদার কত খারাপ অবস্থা।

 

আমি বিভিন্ন ভ্রান্ত দলের সাথে কথা বলেছি। তাদের সবার মধ্যে যে মিলটা পেয়েছি তা হচ্ছে তারা কুরআন ও হাদিসকে নিজেদের মত ব্যবহার করে। কেউ সালাফদের অস্বীকার করে, কেউ সাহাবিদের, কেউ স্বয়ং নবীকেই (হাদিসকে)। এগুলো অস্বীকার করে এই কারণে যে কুরআনকে নিজেদের মত ব্যাখ্যার সুবিধা করতে। কিছু ব্যক্তি তো কুরআন দিয়ে ডারউইনবাদও প্রমাণ করে ছেড়েছিল।

 

কুরআন ও সুন্নাহর বুঝ গ্রহণ করতে হয় সালাফদের থেকে। নিজের মত বুঝ গ্রহণ করতে গেলে পথভ্রষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ বিশেষ করে আকীদার বিষয়গুলোতে। সকল অমুসলিমকে কাফির মনে না করলে উসুল অনুযায়ী সেই ব্যক্তি নিজেই কাফির হয়ে যায়। এর চেয়ে ভয়ঙ্কর সব আকীদা মর্ডানিস্টদের ঝুলিতে রয়েছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যখন সে জাতি ক্ষমতাশীল, তখন সেই জাতির শিক্ষাই উন্নত হওয়ার মাপকাঠি। একসময় যেমন হিন্দুরাও মৌলবি রেখে ফার্সি শিখত, ফার্সি আরবি এসব শিক্ষা করাকেই আসল শিক্ষিত মনে করা হত। ইউরোপীয়রা আরবদের অনুসরণ করত। এখনের যুগ জামানায় পাশ্চাত্যের জয়জয়কার, তাই ইংরেজি শেখা, তাদের রেখে যাওয়া শিক্ষা পদ্ধতিতে শিক্ষিত হওয়া মানে আসল শিক্ষিত, নতুবা পশ্চাৎপদ। ব্রিটিশরা যখন স্কুল কলেজ তৈরি করতে শুরু করে তখন উলামারা এর বিরোধিতা করত। তখনের অবস্থানুযায়ী এটা সঠিক ছিল, ইংরেজি শেখাকে অনুৎসাহিত করা সঠিক ছিল। কিন্তু এখন সেটা নয়, আর এখনের আলেমরা এটা বলেও না, বরং একদল মুসলিম জেনারেল শিক্ষা গ্রহণ করবে এটাই তারা বলে।

 

ব্রিটিশরা আসার আগে এখানে শিক্ষাপদ্ধতি সনদভিত্তিক ছিল না। পুরুষরা বাইরে পড়ার সুযোগ পেলেও তাদের সার্টিফিকেট ছিল না। আর মহিলারা ঘরে পড়াশোনা করত। অধিকাংশ অভিজাত পরিবারের মেয়েদেরকে তৎকালীন শিক্ষায় শিক্ষিত করা হত, যেমন আরবি, ফার্সি ইত্যাদি শিক্ষা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সবাই না, তবে অধিকাংশ আলিয়ার মন মেজাজ জেনারেল ছাত্রদের মতোই। মাদ্রাসা শুধু নামে!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

হানাফীরা যদি মামুনুল হক দাঃবাঃ কে দেখে শিক্ষা নিতো!

 

আর সালাফীরা যদি শায়খ আহমাদ উল্লাহ হাফিঃ কে দেখে শিক্ষা নিতো!

 

(প্রসঙ্গ ২০১৯ এর ইসলামী বইমেলায় মামুনুল হক সাহেব এবং আহমাদুল্লাহ সাহেব এসেছিলেন এবং সাক্ষাৎ করেছিলেন)।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

স্টাইলিশ হিজাব পড়লে সহীহ পর্দা হয়না, তাই আমি হিজাবই করি না। - মুত্তাকী নারীবাদী।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমাদের কিছু ভাই মূল বিষয় বাদ দিয়া ছোট খাটো বিষয় নিয়া টানাটানি করে। ফলে আসল বিষয়টা চাপা পড়ে যায়। এই যেমন ন ডরাইয়ের আয়েশার আলাপ। তবে গল্পে --. . -. . .-. .- .-.. / .... ..- .--- ..- .-. -.- . / .--. --- -.-. .... .- -. --- / .... --- .. .-.. . --- / -... .- ... - --- -... . / -.- .. -. - ..- / -.- --- .-- -- .. / .... ..- .--- ..- .-. .-. .- / . .-. --- -.- --- -- / .... --- -.--

 

(উপরের কথাগুলা মোর্স কোডে লেখছি)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যেই মিডিয়া আপনারে অপমান করে সেই মিডিয়ার সামনে এইভাবে ভাব নিতে হয়, শিখা রাখেন। অপমান করার জন্য টকশোতে নিয়া গেলেই দৌড়াতে দৌড়াতে যাইতে হয় না। (ভিডিওক্লিপটা ভাই মুসা সেরান্টোনিয়োর ছিল যেটাতে সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করার জন্য পিছেপিছে ঘুরে কিন্তু তিনি এমন ভাব করলেন যেন তাদের দেখতেই পাচ্ছেন না।)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

খতীবে আযম হাবিবুল্লাহ মেসবাহ রঃ অনেক বড় আলেম বিখ্যাত বক্তা ছিলেন। কোথায় যেন পড়ছিলাম তিনি নাকি জাভেদ কায়সার ভাইয়ের নানা, আপন নানা কিনা জানি না। কেউ জানেন এই ব্যাপারে? জাভেদ ভাইয়ের আপন নানা হলে তার লেখায় বা তার বোনের লেখায় এই আলাপ আসার কথা ছিল। এমন বুজুর্গের নাতী হওয়া তো ভাগ্যের ব্যাপার!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আরিফুল ইসলাম ভাই বলেন, সময়সাময়িক বইগুলোর মধ্যে দুই তিনটা 'খুব ভালো' বই, কিন্তু খুব কম আলোচিত। দুঃখজনকভাবে, 'সংবিৎ' একটি। এটা নিয়ে কেন পাঠকরা আলোচনা করেনা? অবাক হই!

 

বইটা পড়তে হবে দেখা যায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রিয় জামায়াত সমর্থক ভাইরা, সেকুলারদের শব্দ আপনারা দিয়ে সেটা কেন মুসলমানদেরই উপর নিক্ষেপ করেন? কওমিদের কাঠমোল্লা, আরও কি কি বলেন, অথচ কওমিরা আপনাদের কখনো সুদ্ধাপরাধী, রাজাকার এসব বলে না। এজন্যই মীর সালমান বলেন, মাওলানা ফজলুর যদি ডিজেল মাওলানা হয় তাহলে জামায়াতও যুদ্ধপরাধী, রাজাকার, ধর্ষক।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রিয় অদ্ধেক, যেখানেই থাকো নিজেরে (পাপ থেকে) হেফাজত করিও, আমিও করিতেছি। বাকি কথা বাসর রাতে হবে ইনশাআল্লাহ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমরাই আবার আম্রিকা, রাশিয়া, চীন, ভারতের পতন ঘটাতে পারব। যদি সালাফদের দেখানো পথে চলি। ইনশাআল্লাহ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আল্লাহ হেফাজত কর, ছোট দাজ্জালদের যুগেই আমাদের এই অবস্থা। বড় দাজ্জালের যুগে যে কি হবে! (প্রসঙ্গ এক মুসলিম ব্যক্তি এক ভণ্ড খৃষ্টানকে নবী (প্রকৃতপক্ষে ছোট দাজ্জাল) মনে করে মুরতাদ হয়ে গেছে।)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রিয় কর্পোরেট নারী, নাইট ডিউটিগুলো অফিসে না দিয়ে বাসায় দিলে স্বামী আপনাকে আপনার বসের মত ভালোবাসতো

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

শুকরের মাংস বাদে আর কোনো হারামকে মনে হয় আমরা হারাম মনে করি না। (বাঙ্গালী নামধারী মুসলমান ফ্যাক্ট)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যেভাবে মুসলমান সুলতান রাজা বাদশাহদের বড় করে দেখানো হয় এটার ফলাফল আমাদের জন্য কখনোই শুভ হতে পারে না। সালাহুদ্দীন আইয়ুবী বলেন কিংবা মুহাম্মাদ আল ফাতিহ, তাদেরকে আজ আমরা আদর্শ ধরছি অথচ শাসক হিসেবে আদর্শ ছিলেন খুলাফায়ে রাশেদ। ব্যক্তিগত ভাবে মানুষ ধর্মপ্রাণ হয়ে থাকে। অনেক বড় বড় জালেমও ধর্মপ্রাণ ছিল। সুলাইমান, মুহাম্মাদ ২ এরা নিঃসন্দেহে ফাসিক ছিলেন। প্রাচ্যবিদদের অপবাদের মোকাবেলা যেমন জরুরী তেমনি সত্য প্রকাশ করাও জরুরী। এরকম ফাসেক সুলতানদের যদি মুসলমানদের আদর্শ বানানো হয় তাহলে বাগদাদীর মত নিরীহ মানুষ হত্যাকারীদের জন্ম হওয়াই স্বাভাবিক।

 

হ্যাঁ তাদের ইতিহাস লেখা জরুরী, পড়া জরুরী, জানা জরুরী। তার মানে এই না তাদেরকে আদর্শ বানাতে হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

(বেশিরভাগ) আলিম ও মাদ্রাসাপড়ুয়াদের চেয়ে জেনারেল(হেদায়েতপ্রাপ্ত)রা বেশি মুত্তাকি (কট্টর) হয়। এটা একদম সত্য কথা। আল্লাহ কওমীদেরকেও মুত্তাকী বানিয়ে দিন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যারা খ্রিস্টান মিশনারীদের কার্যক্রম সম্পর্কে জানেন না তারা দয়া করে এসব সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। সচেতন হন, মানুষকে সচেতন করুন/ আফ্রিকায় অনেক অঞ্চলে ২০ থেকে ৩০ কোথাও ৫০ ভাগ পর্যন্ত খ্রিস্টান হয়ে গেছে। বাংলাদেশেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে একই উপায়ে তাদের কাজ চলছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

হে আল্লাহ, আতিকুল্লাহ হুজুরকে হেফাজত কর।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যে মিথ্যা বলা সাধারণভাবে কবীরা গুনাহ, সেটা স্ত্রীকে খুশি করার জন্য বললে জায়েজ, এটাই ইসলাম। (বউ)প্রেমিকদের জন্য এইটা অনেক বড় স্পেস। বুঝলে বুঝপাতা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমি আমার বউয়ের রাগ ভাঙ্গাই না। কারণ সে রাগ করে না। করলেও দেখি নাই কখনো, কারণ আমার বউই নাই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

জানোয়ারের জিন্দেগী থেকে আল্লাহ যাদের হেদায়েত দিয়েছেন তাদের কমবয়সী আবেগী ভুলের কারণে আল্লাহ তাদের ক্ষমা করুন, মৃত্যুকে শাহাদাতের মর্যাদা দিন।

 

যদি প্রশ্ন করা হয় আগের জীবনের নিবরাস উত্তম ছিল নাকি পরের জীবনের, অধিকাংশ মানুষ ভুল উত্তর দিবে। ঈমানের চেয়ে দামি জিনিস আর কিছুই হয় না এই বোধ তো মুসলিমদের স্বভাবজাত হওয়ার কথা ছিল।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আইএস সদস্যের আইএস সিম্বলের টুপি পড়ার ঘটনায় অনেকে এইখানে আইএস এবং বাংলাদেশ সরকারের সংযোগ খুঁজে পাচ্ছে। যাই হোক, আমার মতটা বলি, কোনো হুজুরকে যদি গ্রেফতার করা হয় তাকে মিডিয়ার সামনে উপস্থিত করার সময় ধর্মীয় পোশাক পড়ানো হয় যদি সেই ব্যক্তির নাও থাকে। এইখানেও আসামীর পরিচয়কে বোঝাতে সরকারের তরফ থেকে টুপিটা বানিয়ে দেয়া হয়েছে। এইটারে আবার সরকার-আইএস যৌথ নাটক মনে কইরেন না। কবে জানি কইবেন, আইএস আসলে বাংলাদেশ সরকার চালায়!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ফেব্রুয়ারির একুশে বইমেলার বিকল্প হিসেবে বাইতুল মুকাররামের মেলাকে নয় বরং কিতাবমেলাকে ধরা উচিৎ, কারণ বাইতুল মুকারমের মেলাও সরকারের উদ্যোগে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ফেসবুকে এমন হাদিয়ালোভীও আছে যারা এই ঘোষণা শোনার পর আজকেই বিয়ে কইরা বইমেলায় বই আনতে যাবে। (ইসলামী বইমেলায় স্ত্রী সহ গেলে গার্ডিয়ানের বই উপহারের ঘোষণা প্রসঙ্গে)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এতো খলীফা হইলে তো সমস্যা। কারে থুইয়া কারে বায়াত দিমু!

 

জুলানী হাফি. যখন বাগদাদীরে ধোঁকা দিছিলেন তখন দাওলা বলছিল, জুলানী যদি দাওলারে ধোঁকা দিতে পারে একিউরেও পারবে, এতো খুশি হওয়ার কিছু নাই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এতো মারাত্মক কথা মনে হচ্ছে না। তবে এর থেকে বেঁচে থাকলে আরও ভালো হত। এর চেয়েও মারাত্মক কথাবার্তা অনেক বড় আলিমদেরও মুখ ফস্কে মাঝেমাঝে বের হয়ে যায়। তবে সবাই আজহারি সাহেবের ইংরেজির উপর চেতা। শুনতেও অদ্ভুত লাগে।

 

(প্রসঙ্গঃ আজহারি সাহেব তার ওয়াজে মাক্কী জীবনকে টেস্ট ক্রিকেটের সাথে তুলনা করেন, অর্থাৎ তখন উইকেট বাঁচায় বাঁচায় খেলতে হয় আর মাদানী জীবনকে ওয়ানডের সাথে, অর্থাৎ চার ছক্কা পিটানো)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পড়ার ইচ্ছা থাকলে বিয়ে কইরাও পড়া যায়, সাত বাচ্চা নিয়াও পড়া যায়। পড়াশোনাকে মেয়েদের ক্ষেত্রে বিয়ের পথে বাধা হিসেবে দাড় করানো হয় অথচ বিষয়টা তেমন না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ওয়াজ মাহফিলের মাইকের আওয়াজ দিয়ে বিশেষ করে শহরে, মানুষকে কষ্ট দেয়ার ব্যাপারে ওয়ায়েজ সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আয়োজকদের মাথা তো এমনিতেই মোটা, তাই ওয়ায়েজদের কাছেই আবেদন রইল।

 

সারা রাত ওয়াজ চালানো, প্যান্ডেলের বাইরে মাইক লাগানো, ওয়াজে চিল্লাচিল্লি এসব থেকে বিরত থাকার নসীহত রইল।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আসলে সব নাস্তিকের প্রশ্নগুলা ঘুরেফিরে কয়েকটার মধ্যে সীমাবদ্ধ। এর বাইরে এরা চিন্তা করতে পারে না। প্রায় সবগুলার উত্তর বহুবার করে বহু মুসলিম দিয়েছে, দিয়ে যাচ্ছে, তবু তাদের ঘুরে ফিরে একই প্রশ্ন। অথচ ইসলাম সম্পর্কে একটু ভালোভাবে পড়লেই উত্তরগুলো ক্লিয়ার হয়ে যেত, নাস্তিক হওয়া লাগতো না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সন্তানের শিক্ষা দীক্ষা নিয়ে যারা চিন্তায় আছেন তারা শুনতে পারেন,

 

https://www.youtube.com/watch?v=po3If8ARqDQ&fbclid=IwAR36jRIGoKGLtmhv07rww5zaiKdLKYSlCXSESLzAFZCpxoIWnjOGBhmvnnM

 

ডাঃ জাকির নায়েক কিভাবে তার স্কুল চালান সেই বিষয়ে। শুনে ভালো লাগছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ফুটবল খেলার মাধ্যমেও নাকি নারীরা এগিয়ে যায়, হায় নারীপ্রগতি!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বাড়িতে একটা নামাজের জায়গা রাখা হচ্ছে সুন্নাহ। ফ্ল্যাট নির্মাণের সময় আপনার ইঞ্জিনিয়ারকে বলবেন, এইরকম একটা নামাযঘর যেন অবশ্যই রাখে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এটা খুব ভালো খবর। ইসলাম কোনো মানুষকেই একা থাকতে উৎসাহিত করে না। হোক সে বিধবা, ডিভোর্সী কিংবা বৃদ্ধ। যদিও তারা সেকুলার কিন্তু যে কাজটা করেছে সেটা ইসলামী।

 

(গুলতেকিনের দ্বিতীয় বিয়ে প্রসঙ্গে)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ফেবুতে বুদ্ধিবৃত্তিক পেইজগুলার মধ্যে সবচেয়ে উন্নত পেইজ হুজুর হয়ে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

নারীদের শিক্ষিত করা ইসলামী ঐতিহ্য। শিক্ষিতা মুসলিমাদের দীর্ঘ ইতিহাস (আকরাম) নাদভী সাহেব লিখেছেন। এসব বই পড়ে ইসলামে দিকে মোটিভেট হইলে ভালো। কিন্তু অনেকে এইটারে অন্যদিকে নিতে চাইবে। যে দ্বীনশিক্ষা সকলের জন্য ফরজ করা হইছে, নারীসহ; সেইটারে সেকুলার শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার বয়ানে অপব্যবহার করা হবে। সেকুলার এবং মোডারেটরা আয়েশা রাঃ এর নাম দিয়ে সেকুলার শিক্ষা আর খাদিজা রাঃ এর উদাহরণ দিয়ে মহিলাদের বাইরে কাজ করাকে গুরুত্ব সহকারে বর্ণনা করে যা স্পষ্টতই অপব্যাখ্যা।

 

 

 

 

 

 

 

 

বড় বড় লকব থাকলেই আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়া যায় না!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সরকারি হজ করা আলেমদের তালিকাটায় একবার চোখ বুলিয়ে দেখুন, অনেক বড় বড় আলেমও আছেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

যখন জোর করে মেয়েদেরকে ফুটবল খেলানো হয়, তখন বুঝবেন এগুলোর একটা উদ্দেশ্য আছে। যখন মেয়েদের প্যাড, মাসিক আরও কি কি যেন এসব বিষয়ে খোলামেলা আলোচনাকে উৎসাহিত করা হয় তখন বুঝবেন এটার একটা উদ্দেশ্য আছে। যখন বে-ঈমান বে-নামাজী সেকুলারও বলবে, মেয়েদের মসজিদে জায়গা নাই কেন, মেয়েদের মসজিদে ঢুকতে দিতে হবে, তখন বুঝবেন এটার একটা উদ্দেশ্য আছে। এগুলো নারীবাদী এজেন্ডার অংশ। আমাদের মেয়েরা যত তাড়াতাড়ি বুঝবে ততই ভালো।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আপনি ঈদের দিন ঘুমিয়ে কাটান আর ছেলের জন্মদিনে কেক এনে অনুষ্ঠান করেন, আল্লাহর দেয়া আনন্দের দিনকে ত্যাগ করে পাশ্চাত্যের আনন্দের সংস্কৃতি চর্চা করে কিভাবে দ্বীনদার পরিবার আশা করেন?

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মুয়াবিয়া রাঃ হচ্ছেন মুসলিম আর মুনাফিকের মধ্যে পার্থক্যকারী। আল্লাহ যাদের উপর সন্তুষ্ট এবং যারা আল্লাহর উপর সন্তুষ্ট - তাদের কারো একজন সম্পর্কেও বিরুপ ধারণা রাখা নিফাকি।

 

হজরত উম্মে হারাম (রা.) বলেন, 'আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, আমার উম্মতের সর্বপ্রথম সামুদ্রিক অভিযানে অংশগ্রহণকারী বাহিনীর জন্য জান্নাত অবধারিত'- (সহিহ বোখারি, হা. ২৯২৪) । এ হাদিসের ব্যাখ্যায় মুহাল্লাব (রহ.) বলেন, 'হাদিসটিতে হজরত মুয়াবিয়া (রা.)-এর ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। কেননা হজরত মুয়াবিয়া (রা.)-ই ছিলেন ওই বাহিনীর সিপাহসালার'- (ফাতহুল বারী : ৬/১০২)।

 

হজরত আবদুর রহমান ইবনে আবি উমায়রা (রা.) বলেন, 'রাসুল (সা.) মুয়াবিয়ার জন্য এ দোয়া করেছিলেন, হে আল্লাহ! মুয়াবিয়াকে সঠিক পথে পরিচালনা করুন ও তাঁকে পথপ্রদর্শক হিসেবে কবুল করুন'- (তিরমিজি, হা. ৩৮৪২) ।

 

একবার মুয়াবিয়া (রা.) রাসুল (সা.)-এর অজুতে পানি ঢেলে দিচ্ছিলেন, তখন রাসুল (সা.) তাঁকে বললেন, 'হে মুয়াবিয়া, যদি তোমাকে আমির নিযুক্ত করা হয়, তাহলে আল্লাহকে ভয় করবে এবং ইনসাফ করবে।' মুয়াবিয়া (রা.) বলেন, 'সেদিন থেকেই আমার বিশ্বাস জন্মেছিল যে, এ কঠিন দায়িত্ব আমার ওপর এসে পড়বে'- (মুসনাদে আহমাদ হা. ১৬৯৩৩)।

 

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত, একদিন জিবরাঈল (আ.) রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, 'হে মুহাম্মদ (সা.), মুয়াবিয়াকে সদুপদেশ দিন, কেননা সে আল্লাহর কিতাবের আমানতদার ও উত্তম আমানতদার'- (আল মুজামুল আওসাত, হা. ৩৯০২) ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

শিয়া ভাইরা, সহজ কথা বুঝেন-

 

১- আলি রাঃ উম্মতের চতুর্থ শ্রেষ্ঠ মানুষ। তিনি মুয়াবিয়া রাঃ এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ এতে সন্দেহ নাই।

২- রাসূল সাঃ সাহাবা জামাতের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করে গেছেন, তাদের নিন্দা করার বৈধতা নেই এইটা আমাদের আকিদা।

৩- সাহাবাদের কারো কারো ভুল ক্রুটি থাকতে পারে, কিন্তু এর জন্য তাদের নিন্দা করব না। তাদের বিচার আল্লাহ করবে, আমরা না।

৪- আহলে বাইতের প্রতি ভালোবাসা রাখা যেমন আকিদা তেমনি সাহাবাদের নিন্দা না করাও আকিদার অংশ। যে এর থেকে বিচ্যুত হবে সে ভ্রান্তির স্বীকার হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মুসলমানদের আজ কি হল! সাহাবীদের প্রতি ভালোবাসা কই গেল? গ্রুপে (কোন গ্রুপ সেটা বললাম না, এই গ্রুপে যত সব বাতিল চিন্তার লোকদের আনাগোনা) একটা পোস্টে মুয়াবিয়া রাঃ এর পক্ষে বলাতে সব শিয়া আর শিয়াপন্থীরা এসে ঘিরে ধরছে, একের পর এক কমেন্ট আর সাহাবার ব্যাপারে কটূক্তি। অথচ গ্রুপে আছেই কয়েকজন শিয়া, আর এতসব সুন্নি পোস্ট আর কমেন্ট দেখেও কোনো ফিলিংস নাই, সবাই নির্বিকার। সাহাবাদের ব্যাপারে একটু ভালোবাসা থাকলেও অন্তত প্রতিবাদ করতো।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বিবাহ বহির্ভূত প্রেম হারাম। বিবাহের পর প্রেম হালাল ও আল্লাহর রহমতের কারণ। তবে কাউকে পছন্দ হলে প্রেম না করে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া যায়। কারণ বিবাহ ছাড়া প্রেম শয়তানের পছন্দনীয় কাজ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ইসলাম বাদে ভিন্ন মতাদর্শ বা জাহেলিয়াতের প্রচার করলেই উদারমনা হয় না, পহেলা বৈশাখ পালন করলেই উদার হওয়া যায় না। সবার একটা আদর্শ থাকে। সেকুলাঙ্গাররা ইসলামী বই বিক্রি না করে তারা তাদের আদর্শের জায়গায় ঠিক আছে। আমাদেরকেও আমাদের আদর্শের জায়গায় ঠিক থাকতে হবে। একটা সহজ কথাই চিন্তা করুন- জাহেলি সাহিত্য পড়ে কেউ যদি পথভ্রষ্ট হয় তার দায়ভার কি নূর মোহাম্মদ ভাই নিবেন? অথচ উনি জাহেলিয়াতের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করবেন বলেই নেমেছেন। অথচ নিজেই এখন সেকুলার বই পত্রও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রাখবেন বলছেন, এটা কেমন যুদ্ধ জাহেলিয়াতের বিরুদ্ধে, যেখানে জাহেলিয়াতকে প্রোমট করা হয়?

 

দ্রঃ গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্সের নূর মোহাম্মদ ভাইয়ের কথা বলছি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যারা ছদ্মনামে ফেসবুক চালায় তাদের ফেইক আইডি বলা উচিত না। কারণ নাম ফেইক হইতে পারে, মানুষ ফেইক হয় কেমনে? ফেইকের আড়ালেও তো কোনো মানুষই তো চালায়। ফেইক সেইসবকে বলে যেটা এমন কারো নাম ও ছবি ব্যবহার করে চালাচ্ছে যে জীবিত এবং যার অনুমতি নাই এ ব্যাপারে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

একজন শায়খকে আমার পরামর্শঃ শায়খ, ব্যাপকভাবে দাওয়াতি কাজের জরুরিয়ত প্রকাশ পাচ্ছে। আপনারা আলিম উলামা ও দাঈদের আশা করি এ ব্যাপারে উৎসাহ দিবেন। বিভিন্ন উপায় ও পদ্ধতিতে দাওয়াতি কাজের আইডিয়া ছড়িয়ে দিতে হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মীর সালমান ভাইকে আমার পরামর্শঃ ভাই, আপনার 'ফাজায়েলে মুয়াবিয়া সিরিজ' বড় করতে থাকেন, এইটাও একটা বই হইতে পারে। তবে বই বের করলে, নিজের নাম কোনটা দিবেন এইটা একটা ভাবনার বিষয় হবে, কারণ আপনার রিয়াল নাম তো আর মীর সালমান না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমি মনে করি সকল মুসলমানের দুইটা ভাষা শেখা উচিৎ- আরবি আর উর্দু। বাংলাতে ইসলামী রিসোর্স বাড়াইলে ভিনদেশী মুসলিমরা একদিন বাংলাও শিখতে চাইবে। বাংলা ভাষাকে যদি কেউ সত্যি ভালোবেসে থাকে তাহলে এটাকে মুসলমানদের ভাষা বানাইতে চেষ্টা করুন, ভাষায় ইসলাম চর্চা বাড়ান, ইসলামী সাহিত্য বাড়ান, উৎসাহদাতা এবং সহযোগী হন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

শামসুল আরেফীন শক্তি ভাইয়ের একটা পোস্টে আমার একটা কমেন্টঃ

ভাই, আরবি ভাষা শেখার পদ্ধতি, উদ্যোগ, সাহায্য, ঠিকানা, এসব নিয়ে একটা লেখা লিখেন। এমন ছোট ছোট মোটিভেশন পোস্ট না দিয়ে একটা বড় করে বিস্তারিত পোস্ট দেন। দরকার হইলে আরবি শেখার জরুরিয়াত নিয়া একটা বই লিখা ফালান। এইটা কত জরুরী আমি বুঝি, কিন্তু শেখা হইতেছে না, কারণ একা একা আগ্রহ ধরে রাখা যায় না। ভাষা হইল শিক্ষার হাতিয়ার। আরবি ভাষা শিক্ষা ছাড়া দীনে ইলমের তালিবও হওয়া যায় না। তাছাড়া এইটা আমাদের আগত খিলাফাহর ভাষা ইনশাআল্লাহ। মুসলিম বিশ্বের আন্তর্জাতিক ভাষা। আর কুরআনের ভাষা হিসেবে এর মর্যাদাই আলাদা, প্রতিটা মুসলিমের এই ভাষা শেখা উচিৎ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কিতালপন্থিরা মুরসি রঃ এর মৃত্যুর ইস্যুকে কেন্দ্র করে দুই ভাগ হয়ে গেছে, অধিকাংশই মুরসি রঃ এর জন্য দুয়া করেছে। ইমারাহ আফগানিস্তান থেকে মুরসি রঃ এর প্রশংসায় বিবৃতি এসেছে। আরেক দল, যারা একটু কট্টর, তারা এটার গুরুতর সমালোচনা করছে, কারণ তাদের মতে, মুরসি তো মুসলিমই না, মানবরচিত আইনে শাসন করার জন্য সে কাফের হয়ে গেছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

শ্বশুরবাড়িত্তে সুবিধা লইতে যাওয়া উচিৎ নহে, এতে পুরুষত্ব কমিয়া যায়

#অনভিজ্ঞেরঅভিজ্ঞতা

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমি অনেক দ্বীনত্যাগী, জিন্দিক, মুলহিদের সাথে দাওয়াতের উদ্দেশ্যে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছি, যেমন হেজবুত তৌহিদ, কাদিয়ানী, শিয়া, মুনকিরিনে হাদীস। তাদের সাথে কথা বলে যা বুঝলাম, ইসলাম সম্পর্কে ভাসা ভাসা জ্ঞান থাকাই তাদের ভ্রান্তির কারণ। ইসলামের মৌলিক জ্ঞানটুকু থাকলে তাদের পথ হারাতে হত না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এটা তো একটা সাধারণ বিষয় যে শরীয়তের শর্তে উত্তীর্ণ হতে পারলে যে কোনো জাতির পোশাক জায়েজ, যেমন শার্ট, প্যান্ট, কোট, ক্যাপ ইত্যাদি। কিন্তু এসব পোশাককে যারা মাকরুহ না বলে সরাসরি হারাম বলেন তারা শুধু ভুল না, মস্ত বড় ভুল করেন যেটা অনেক ভয়ঙ্কর রকমের গুনাহের দিকে নিয়ে যেতে পারে। কারণ কোনো হালালকে হারাম বলা কুফর। না জেনে না বুঝে বললে ভিন্ন কথা, কিন্তু যারা বুঝে শুনে বলেন, শুধুমাত্র এসব পোশাক অনুৎসাহিত করতে এসব বলেন, তারা কিন্তু ভয়ঙ্কর রকম অপরাধে লিপ্ত হচ্ছেন। আল্লাহ হেফাজত কর।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সেকুলাররা হুজুরদের নারীলোভী বলে। অথচ এমন নারীলোভীর কথা কে কবে শুনছে যেই নারীলোভীরা চায় মহিলারা পর্দা করুক যেন তাদের না দেখতে পারে? এমন নারীলোভীর কথা কে কবে শুনছে যে নারীলোভীরা শুধু স্ত্রীর সাথে চাহিদা মেটায়। যাদের গার্লফ্রেন্ড নাই, যারা ব্যচিভার করে না, মেয়েদেরকে ব্যভিচার করতেও দেয় না, এটা কেমন নারীলোভী?

 

অথচ সেকুলাররা স্ত্রী ছাড়াও ব্যভিচার, পরকীয়া এসব করে এবং এসবে উৎসাহিত করে, বৈধ স্ত্রীর সাথে শুয়েও তাদের মন ভরে না, যারা অশ্লীলতা প্রচার করে সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে যা এক প্রকার সফটপর্ন, যারা চায় নারীরা পর্দা না করুক, নারীরা ছোট পোশাক পড়ুক যেন চোখ দিয়ে তাদের ধর্ষণ করা যায়, যারা চায় বিবাহের প্রথা উঠে যাক, ব্যভিচার যিনা সয়লাব হোক, যারা নারীকে পণ্য করে, নারীর দেহ মাপামাপিকে নারীমুক্তি নারীঅগ্রগতির প্রতীক মনে করে; তবু সেকুলাররাই নাকি নারীর শুভাকাঙ্ক্ষী, আর হুজুররা নারীলোভী।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যেসব আলেম যাকে তাকে কাফের বলে তারা আস্ত বলদ। আমি কোনো সম্মানিত আলেমকে বলদ বলি নাই। কারণ কোনো মুহাক্কিক আলেম এমন কাজ করতে পারে না। বরং মাদ্রাসার সনদধারি কিছু মূর্খ এমন কাজ করতে পারে, ওয়াজে চিল্লাপাল্লা করা, আকলহীন কাজ এসব বলদরা করতে পারে। কথায় আছে, এক মন ইলমের সাথে নয় মন আকল লাগে। এইসব বলদদের এক মন ইলম আছে কিন্তু আকল এক ছটাকও নাই। কোথায় কি বলতে হয়, কিভাবে বলতে হয়, কোন নিয়মে বলতে হয় এগুলো তারা বুঝে না। আমি কোনো যোগ্য আলেমের ব্যাপারে বলি নাই। অযোগ্য মূর্খ আর বলদদের বিরুদ্ধে বলেছি। এদের কারণে পুরো আলেমসমাজের নাম খারাপ হয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

আইএসকে আমি খারেজী বলি না। তবে তারা অনেক জুলুম করছে। তবু বাগদাদীর খিলাফত উসমানীয় এমনকি আব্বাসীদের চেয়ে উত্তম। আমাদের অনেক ভাই হাজ্জাজের দোষের পাশাপাশি গুণের স্বীকৃতি দেয়, অথচ বাগদাদীর বেলাতে এসেই কেমন যেন উল্টে যায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সব আলেম যদি উলামায়ে সু হয়ে যায় অথবা দুনিয়ায় কোনো হক আলেম না থাকে তখন গুরাবা হয়ে যেতে হবে। কিন্তু বর্তমান অবস্থা তেমন না। হকপন্থী অনেকে আছে। কুরআন হাদিস, উলামাদের বই পুস্তক এবং তাদের সোহবতে থাকলে আশা করা যায় বিভ্রান্তি হওয়ার সম্ভাবনা কম।

 

দ্বীনী সার্কেলে না থাকলে জাহেলিয়াতে ফিরে যাবার আশঙ্কা অনেক বেশি। এমন অনেককে দেখছি। গুরাবা হয়ে যাওয়ার থিওরি এখনো কার্যকর হওয়ার সময় আসে নি বলেই মনে করি। সাঞ্জির হাবিব সাহেব দলাদলির মধ্যে থাকতে চান না বলে একা থাকেন, ফলে এখন তার একমাত্র কাজ ইস্লামিস্টদের বিরোধিতা করা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

অনুবাদের দিকে আমাদের ঝোঁক বেশি। কিন্তু অনুবাদের চেয়ে সেই বিষয়ের বিভিন্ন বইয়ের সাহায্য নিয়ে মৌলিক লেখা অধিক উত্তম হত। কারণ যার বই অনুবাদ করা হচ্ছে সেখানে সমসাময়িক বিষয়গুলোর চেয়ে পূর্বের গত হওয়া বিশয়গুলো বেশি আসে, তাছাড়া তার বইয়ে ভুলও থাকতে পারে যেটা অনুবাদকের পক্ষে সুযোগ নেই সংশোধন করার। কিন্তু মৌলিক লেখা হলে সেটা ইসলামী সাহিত্যে একটা নতুন সংযোজন এবং পাশাপাশি বহু গ্রন্থের সার নির্যাস পাওয়া যায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

একজন বললেন, পৃথিবীর অর্ধেক সম্পদ কয়েকজন ধনীর মধ্যে আবদ্ধ। এরপর বললেন, তাই আয়ের উর্দ্ধ সীমা নির্ধারণ করে দেয়া উচিত।

 

আমি জবাবে বল্লামঃ মানুষের আয়ের ঊর্ধ্ব সীমা ইসলাম নির্ধারণ করে দেয় নি। বরং যাকাত ফরজ করেছে, সুদ হারাম করেছে। এই দুইটাই মানুষকে অনেক ধনী হওয়া থেকে ব্যালেন্স করে। কাফেরদের জন্যেও আয়ের উর্দ্ধ সীমা নির্ধারণ করা হয় নি, তারা বিভিন্ন হারাম পন্থাকে কাজে লাগিয়ে এরকম ধনী হয়, ইসলামী রাষ্ট্র থাকলে সেই সুযোগগুলো তারা পাবে না যার ফলে এতো ধনী হওয়া অনেক কঠিন হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

খ্রিস্টান মিশনারীদের সেবার আড়ালে খ্রিস্টান বানানোর ব্যাপারে এক মুসলিম ভাইয়ের পজেটিভ কমেন্টের জবাবঃ

 

ভাই, আপনার যুক্তি অদ্ভুত। খ্রিস্টানরা সেবা দেয়, আমরা দেই না। তাই খ্রিস্টানরা আমাদের চেয়ে উত্তম। অথচ একজন ফাসিক মুসলিম একজন বিজ্ঞানী কাফের থেকেও উত্তম। একজন কাফের যদি সারা পৃথিবীর মানুষকে তার সম্পদ থেকে খাওয়ায় পড়ায় তবু তার ব্যাপারে ইসলাম বলছে সে জাহান্নামে যাবে। অবশ্য তার ভালো কাজের প্রতিদান দুনিয়াতেই পাবে, আখিরাতে কিছু পাবেনা।

 

আপনি যুক্তি দেখাচ্ছেন আমরা কেন সেবা দিয়ে মানুষের মন জয় করছি না? অবস্থা এমন, একটা লোক দ্বীন মেনে চলে, আর আপনি তারে প্রতিদিন খোঁচান, আপনি জিহাদ করেন না কেন? দাওয়াত দেন না কেন? অথচ তার অবস্থার উপর তাকে বিচার করা লাগত। যাই হোক, আপনি যেটা বলতে চাচ্ছেন আমি বুঝেছি। আমাদেরকে সেবার মাধ্যমে মন জয় করতে হবে তাই না? হ্যাঁ, এটা দাওয়াতের একটা কৌশল হতে পারে। অনেকগুলো কৌশলের মত এটাও একটা কৌশল, কিন্তু একমাত্র না। রসুলের দাওয়াতের সুন্নাহই আমরা বেশি পালন করে থাকি। রসুল কখনো সেবা দিয়ে, মানুষকে মুসলমান বানান নি, সাহাবিরাও না, সালাফরাও না। তবে এই কৌশলটাকে নাজায়েজ বলছি না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সেকুলার মুসলিম(!)দের কাছে কুফর আর ইসলাম সমান (নাউজুবিল্লাহ)। তাই তাদের দৃষ্টিভঙ্গি এরুপ। তাই তারা বলে ভারত হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র হোক সেটা যেমন চাই না, বাংলাদেশও যেন ইসলামী রাষ্ট্র না হয়। অর্থাৎ তাদের কাছে ইসলাম আর হিন্দু ধর্ম দুইটাই সমান (নাউজুবিল্লাহ)। অথচ কেউ এই ধারণা রাখলে তার ঈমানই থাকবে না। উদার হতে গিয়ে, ধর্মনিরপেক্ষ হতে গিয়ে ঈমানহারা হচ্ছেন তারা। অথচ ইসলাম কোনো নিরপেক্ষতার নাম না, আর নিরপেক্ষতা মানেই সত্য না, মিথ্যা আর সত্যের মধ্যে নিরপেক্ষ থাকলে সেটা মিথ্যাই, কারণ সত্য সাপোর্ট না করাই মিথ্যা। আল্লাহ এদের হেদায়েত দিক।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

দাসপ্রথা রহিত কে করল? যেখানে জিহাদ আছে সেখানে এই প্রথাও চলবে, সালেহ আল ফাওজান এমনটাই বলেছেন। যারা বলছে দাসপ্রথা এখন আর চলবে না, যুগের সাথে সম্পর্কটি বিষয়, তারা কি এ ব্যাপারে ওহী পেয়েছেন? নিজের মন মত ইসলামকে ব্যাখ্যা করছেন, নিজেরাই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিচ্ছেন, কোনটা চলবে, আর কোনটা চলবে না! যারা আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে তারা আল্লাহর বিধানকে "শুনলাম এবং মানলাম" বলে মেনে নেয়। যারা এর বিপরীতে নিজের যুক্তি বুদ্ধি খাটায়, কাফেরদের কথা শুনে আল্লাহর বিধানের উপর প্রশ্ন তুলে তারা কেমন মুসলিম? তাদের আত্মসমর্পণের কি হল?

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

অবস্থা কোন পর্যায়ে চলে গেছে। কিছুদিন পর বলা হবে ইহুদী খ্রিস্টান, হিন্দুরাও উত্তম, জামাতের চেয়ে, আহলে হাদিসের চেয়ে, বেরেলভীর চেয়ে, সাদপন্থীদের চেয়ে। বলা হয়ও। শুধু দেওবন্দীদের উদ্দেশ্য করে বল্লেও বাস্তবতা হচ্ছে এই কথা সব দলের সাথেই যায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আহলে হাদিস ফেসবুক এক্টিভিস্ট এক ভাই আনিসুর রহমান তাবলীগের চিল্লার সমালোচনা করায় আমার জবাবঃ

 

চিল্লা ৪০ দিন শুধুই একটা সংখ্যা। আসল জিনিসের সমালোচনা না করে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে আপনারা(আহলে হাদিসরা) সময় নষ্ট করে। এটা আপনাদের বিদ্বেষের কারণে। যেদিন বিদ্বেষ ত্যাগ করতে পারবেন এবং তাদের মুসলিম ভাই মনে করতে পারবেন, সেদিন আপনাদের সমালোচনাগুলো তাদের সংশোধনের জন্য যথেষ্ট হবে।

 

আভ্যন্তরীণ অনেক ভুল ক্রুটি আছে। এমন এমন বিষয় আছে যেগুলোর সংশোধন হলে মানুষের অনেক ফায়দা হবে। কিন্তু আপনারা তো পুরো (প্রচলিত) তাবলীগ সিস্টেমকেই বাতিল করে দেন। আগে স্বীকার করতে হবে তাদের দ্বারা কিছু উপকারও হয়। এরপরে ভুল ক্রুটিগুলোর আলোচনা। তাদের মূল সমস্যাগুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে ইলমবিমুখতা। এর গঠনমূলক সমালোচনা করা যায়। যেমন তারা বই পুস্তক পড়ে না। অধিকাংশের জ্ঞান শোনার ভিত্তিতে। যাচাই বাছাই করার মন মানসিকতা নেই। আর এজন্যই তাদের বয়ানে জাল যইফের ছড়াছড়ি। একেবারে জ্ঞানহীন লোকদেরও কথা বলার সুযোগ দেয়া হয় এটাও একটা বড় সমস্যা। তারা দাওয়াতকে জিহাদের বিপরীত, ইলমের বিপরীত পর্যায়ে নিয়ে যায় এসবেরও সমালোচনা হতে পারে। সর্বোপরি তাদের কল্যাণের জন্য নাসীহাহ প্রদান করতে হবে। কল্যাণকামীতাই দ্বীন। কিন্তু আপনারা যা করেন তা বিদ্বেষ আর শত্রুতাই বৃদ্ধি করে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ফেসবুক হচ্ছে দিলের দুনিয়া। আমাদের মন যা বলে এখানে সেটাই প্রকাশ করি। যা ইচ্ছা করে সেটাই করি। আমাদের প্রকৃত রুপ এখানে এসে প্রকাশিত হয়ে যায়। তাই তো সামান্য বিষয় নিয়ে এখানে মারামারি করি, গালাগালি করি। যাকে ইচ্ছা, যেভাবে ইচ্ছা বলি। অথচ বাস্তবে একই ব্যক্তির সাথে কখনোই সেভাবে ঝগড়া করা সম্ভব হত না। এখানেই সম্ভব সামান্য মতবিরোধকে কেন্দ্র করে বারা করতে, অথচ বাস্তব জীবনে ফ্রেন্ডদের মধ্যে হিন্দু খ্রিস্টানও রয়েছে, সেরকম দোস্তি না থাকুক, সদ্ভাব রয়েছে, অথচ ফেসবুকের দুনিয়ায় একটা মাসআলায় মতবিরোধের কারণে কথা বলা বন্ধ করে দেই, মুসলিমই মনে করি না। পরোক্ষ তাকফীর তো ফেসবুকে ডালভাত।

 

এর কারণ কি? কারণ হচ্ছে ফেসবুক বা অনলাইন দুনিয়ায় নিজেকেই রাজা মনে করি। সবার একটা করে একাউন্ট আছে, যেন সবার একটা করে রাজ্য আছে। এই রাজ্যকে কেন্দ্র করে অন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করি, মুখে 'ইসলাম' থাকলেও মনে 'খায়েশের পূজারী' হয়ে যাই। ফেসবুক আসার পর ইসলামের চর্চা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছি ইসলাম নিয়ে ফিরকাবাজী। সবাই একটা দলের মধ্যে ইসলামকে আবদ্ধ করে অন্য সব দলের পিন্ডি চটকাই, অথচ নিজের দলের মতোই অন্যান্য দলের পুঁজিও হচ্ছে ইসলাম। অন্য দলের সামান্য ভুলকেই বিশাল করে প্রকাশ করি, যাচ্ছেতাই ভাবে গীবত করি, গালাগালি করি, অথচ নিজের দলের কারো বড় ভ্রান্তিকেও চেপে রাখি। বাস্তবে ভালোমানুষ হওয়ার অভিনয় করি সেটাও তো ভালো, ফেসবুকে তো সেটাও করি না। ইসলাম দিয়ে দল বিচার না করে দল দিয়ে ইসলাম বিচার করি। আমার দল নির্ভুল, আমাদের দলের আমীর কোনো ভুল করতে পারে না। তারাই একমাত্র ফিকায়ে নাজিয়াহ, আমাদের এসব চিন্তাভাবনা ফেসবুকে এসে প্রকাশিত হয়ে যায় যা আমাদের মনের কথা।

 

ফেসবুকে এসব দল নিয়ে মারামারি বন্ধ করার জন্য আমার, আমাদের অনেক কিছু করার আছে। সবচেয়ে জরুরী যেটা সেটা হচ্ছে আমরা বাস্তবে যেমন ভালোমানুষ হওয়ার অভিনয় করি, এখানেও যেন সেরকম করি। হোক না অভিনয়। অন্য মানুষের মনের কথা বোঝার ক্ষমতা আল্লাহ কেন দেন নি ফেসবুকে আসলে বোঝা যায়। যদি আমরা মানুষের মনে কি বলে সেটা বুঝতে পারতাম তাহলে হয়তো অনেক আত্মীয়তার বন্ধন নষ্ট হত, অনেক বন্ধুত্ব নষ্ট হত, অনেক পরিবার ভেঙ্গে যেত। ফেসবুকের কারণে এখন যেটা হচ্ছে অনেক বেশি।

 

ফেসবুক আসার পর আহলে হাদিস আর হানাফীদের মারামারি তাকফীরের পর্যায়ে চলে গেছে, অথচ আগে এমন ছিল না, আগেও আহলে হাদিস-হানাফি ছিল বঙ্গদেশে। ফেসবুকেই কওমিদের মধ্যে ভাগ বিভাগ শুরু হয়, কওমিদের মধ্য থেকে চরমোনাইকে দূরে সরিয়ে দেয়া হয়। এতায়াতী ওয়াজহাতি মারামারি যত না বাস্তবে, এর বেশি উস্কানি ফেসবুক থেকে আসে। এছাড়া যাকে তাকে তাকফীর তো আছেই। মোডারেট আর জিহাদিস্ট দুই দলের মধ্যে মারামারি তো পুরোটাই ফেসবুক কেন্দ্রিক। এমন অনেক উদাহরণ দেয়া যাবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মাহদিকে যেভাব চিনবেনঃ

 

১- তিনি হবেন কুরাইশ, মুহাম্মাদ সাঃ এর বংশে, ফাতিমা রাঃ এর বংশে। (হাসান রাঃ এর বংশে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি)

 

২- তার নাম হবে মুহাম্মাদ সাঃ এর নামে। এবং তার পিতা ও মাতার নাম হবে নবী সাঃ এর পিতা ও মাতার নামে।

 

৩- তার নাক হবে চোখা, কপাল হবে বড়/চওড়া।

 

৪- তিনি ৪০ বছর বয়সে প্রকাশিত হবেন, এর পূর্বে তাকে কেউ চিনবে না, কেউ বুঝবে না, কিংবা সন্দেহও করবে না। সে নিজেও জানবে না সে মাহদি হবে।

 

৫- ৪০ বছর হওয়ার আগের জীবন হবে তার পরের জীবনের চেয়ে ভিন্ন। এক রাতেই আল্লাহ তাকে পরিবর্তন করে দিবেন। ধারণা করা যায়, আগের জীবনে তিনি ট্র্যাডিশনাল মুসলিম হবেন, এতো বেশি ধার্মিক হবেন না, ফলে মানুষ তাকে সন্দেহও করবে না। আর যাকে সন্দেহ করা হবে সে মাহদি হবে না।

 

৬- তিনি মাদিনার অধিবাসী হবেন, এবং হজের মৌসুমে মক্কা যাবেন।

 

৭- তিনি নিজেকে মাহদি দাবি করবেন না। বরং মানুষ তাকে মাহদি হিসেবে চিনে ফেলবে এবং তাকে নেতৃত্ব নিতে বলবে কিন্তু তিনি যে মাহদি এটা অস্বীকার করবেন। যে নিজেকে মাহদি দাবি করে সে মাহদি হবে না।

 

৮- মাহদির প্রকাশের সময় বাদশাহর তিন পুত্রের মধ্যে গৃহযুদ্ধ চলবে। অর্থাৎ এমন পরিস্থিতিতে মাহদির প্রকাশ ঘটবে।

 

৯- মাহদির হাতে বাইয়াত হওয়ার পর একটি বাহিনী তাদের দমন করার উদ্দেশ্যে ক্বাবার দিকে রওনা দিবে এবং আল্লাহ তাদের ধসিয়ে দিবেন।

 

১০- খোরাসান থেকে কালোপতাকাবাহী একটি বাহিনী মাহদির সাথে যোগ দিতে রওনা হবে।

 

১১- তিনি ৭ বছর শাসন করবেন, দুনিয়াতে ইনসাফ কায়েম করবেন। অতঃপর ঈসা আঃ এর আগমন ঘটবে এবং ঈসা আঃ দাজ্জালকে হত্যা করবেন।

 

(সব ভণ্ড মাহদি এই ফিল্টারে আটকা পড়ে যাবে।)

 

ইয়াসির কাজির লেকচার থেকে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এতায়াতীরা দেওবন্দীদের উদর থেকে বেরিয়েছে, অথচ এতায়াতীদের সাথে দেওবন্দী মূলধারার আচরণ দেখে মনে হয় এতায়াতীরা কাফেরদের থেকেও অধম। পরোক্ষ তাকফীর তো হরহামেশাই হয়। সাদ সাহেবের কিছু ভুল বয়ানের লিস্ট করে বলে দেয়া হয় সাদ সাহেবের অনুসারীরা সব বাতিল। এতায়াতীদের মধ্যেও যে গালিবাজ কম তা না, কিন্তু উলামাপন্থীরা যেহেতু এক্ষেত্রে হক সেহেতু তাদের আচরণও হওয়া উচিৎ ছিল এতায়াতীদের চেয়ে উত্তম। কিন্তু বাস্তবতা হল দুই দলের আচরণই ভয়ঙ্কর রকম বাজে। এতায়াতীরা সেকুলারদের সুরে সমস্ত হুজুর এবং মাদ্রাসার বিরুদ্ধে প্রোপ্যাগান্ডা চালাচ্ছে, অন্যদিকে উলামাপন্থীরা এতায়াতীদের ইসলাম থেকেই খারিজ করে দিচ্ছে। আল্লাহ এদের দুই দলকেই হেদায়েত দাও।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ইসলাম নিয়ে যারা কাজ করে, সেই জগত সম্পর্কে যেমন আমার ভালো জানাশোনা আছে, এর বাইরে জাহেলী দুনিয়ার বিভিন্ন সেক্টরেও যারা কাজ করছে সে সম্পর্কেও আমার ভালো জানাশোনা আছে। একটা পার্থক্য আমি এখানে দেখলাম যেটা আমাকে খুব কষ্ট দিয়েছে, ইসলাম নিয়ে যারা কাজ করে তারা অতটা মেধাবী না, অতটা আন্তরিক না, তাদের ভাষা সবচেয়ে সুন্দর না, উপস্থাপনের পদ্ধতিও সুন্দর না, সব দিক থেকেই দুর্বল, বেশিরভাগের কথা বলছি, তবে সবার কথা না। অন্য দিকে যারা জাহেলী সেক্টরগুলোতে কন্ট্রিবিউট করছে তাদের ক্ষেত্রে মেধাবীর সংখ্যাই বেশি, আন্তরিকতাও অনেক বেশি অথচ এটা শুধু তারা দুনিয়ার জন্য করছে, তাদের ভাষা অনেক উত্তম, উপস্থাপনের পদ্ধতি উত্তম, সব দিক থেকেই তারা মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে। ইসলামিস্টরা যে প্রভাবিত করতে পারে না তা না, কিন্তু আমার মনে হয় মানুষ হুজুরদের ভালোবাসে শুধু ইসলামের কারণে, ইসলামের কথা বলার কারণে। অধিকাংশের এতোটুকু মেধা নাই যে তারা যদি ইসলাম বাদে অন্য কিছু নিয়ে কাজ করত তারা মানুষকে প্রভাবিত করা দূরে থাক কোনো গুরুত্বই পেতো না। এজন্যই বলা হয়, সবচেয়ে সেরা আদর্শের ধারক বাহকরা সবচেয়ে বাজে পদ্ধতিতে উপস্থাপন করছে আর সবচেয়ে বাজে আদর্শের ধারক বাহকেরা সবচেয়ে সেরা পদ্ধতিতে তাদের আদর্শ উপস্থাপন করছে, ফলে মানুষ সেরা আদর্শকে চিনতে পারছে না শুধু মাত্র উপস্থাপকদের কারণে। সময় এসেছে পরিবর্তন হওয়ার, পরিবর্তন করার। ইসলামের জন্য মেধাবী মানুষ তৈরি করার ফিকির করতে হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এক

 

গরিব দেশগুলো প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ হয়েও কেন গরিব থাকে?

 

শাসক বদলায় কিন্তু শাসন বদলায় না, বিম্পি কিংবা আওয়ামী লীগ অথবা সামরিক শাসন যেটাই আসুক, শাসন কিন্তু পশ্চিমেরই।

 

(অনুসন্ধিৎসু নামের ইউটিউব চ্যানেলের 'দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র' নামক ভিডিও) ভিডিওটা দেখুন, অতি সংক্ষেপে একটা ধারণা লাভ করা যাবে।

 

লিঙ্কঃ https://www.youtube.com/watch?v=1BEpVjG-rCY&fbclid=IwAR1UidOXo5wPsK0n4BGPyZmiI2rmCfsbL5gN24KQay_ednRgKcHgD87XqpM

 

 

 

 

 

 

 

 

দুই

 

হানাফি-সালাফি যেমন একটা তর্ক আছে, মোডারেট-এন্টি মোডারেট একটা তর্ক আছে। কোনো গ্রুপ নিয়াই আমার সমস্যা নাই, সবাই যদি সহনশীল থাকে। তবে সমস্যা হইতেছে এন্টি মোডারেটদের বুঝ গাঢ় হইলেও এরা সহনশীল না, 'মুরজিয়া' 'মোডারেট' এইসব ট্যাগ নিয়া বইসা থাকে কারে কখন লাগাবে। এইক্ষেত্রে হারুন ইযহার সাহেবের অবস্থানটাই পারফেক্ট মনে করি।

 

 

 

 

 

 

তিন

 

একজন বোন একটা গ্রুপে প্রশ্ন করলেন মহিলাদের মাসজিদে নামাজ পড়াটা কেমন? মন্তব্যে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ল এবং নানা রকম ফতোয়া দিতে থাকলো, এবং বেশিরভাগই ছিল মহিলাদের মাসজিদে অবশ্যই নামাজ পড়া উচিৎ - এর পক্ষে। আমি সেখানে বাধ্য হয়ে এই মন্তব্য করলাম।

 

প্রথম কথা হচ্ছে- ধর্মীয় প্রশ্ন অবশ্যই আলেমদের কাছে জিজ্ঞেস করা উচিৎ। অন্তত ইসলাম মেনে চলে, যদি তাকে ভালো মুসলিম মনে করেন তবে তার কাছ থেকেই নসিহত নেয়া উচিৎ। কোনো জাহেল থেকে কখনোই নয়। এই প্রশ্ন পাবলিক প্লেসে করা মানে যে যার মত ফতোয়া দিবে। আর এই বিষয়গুলোর সাথে আধুনিকতার একটা সূক্ষ্ম সংযোগ আছে, এইজন্য কিছু মানুষকে দেখা যাবে ফতোয়াকে আধুনিকতা বা সেকুলারিতার দিকে নিয়ে যাবে। ইসলাম নিজেই আধুনিকতা, এর বিধান ব্যাখ্যার জন্য ইউরোপীয়দের শেখানো আধুনিকতার প্রয়োজন নাই।

 

এবার আসি মূল কথায়। আমি এ ব্যাপারে উলামাদের অবস্থানকে বলব, নিজের থেকে কিছু বলব না। আর আপনার প্রশ্নের সাথে সেকুলারিতার সংযোগটাও ব্যাখ্যা করব।

 

রাসুলের যুগে মহিলাদের জন্য নামাজের জায়গা ছিল। মহিলারাও যে যখন পারতেন মসজিদে এসে নামাজ পড়তেন। একটা বিষয় পরিষ্কার হওয়া দরকারঃ পুরুষদের জন্য জামাতে নামাজ পড়া ওয়াজিব, মহিলাদের জন্য ফরজ বা ওয়াজিব না, বরং বাসায় পড়াই উত্তম বলে হাদিস আছে। এইটার সাথে জীবিকার ব্যাপারটা রিলেট করতে পারেন, পুরুষদের জন্য রুটি রুজির ব্যবস্থা করা ফরজ, কিন্তু মহিলাদের জন্য এইটা আবশ্যক না বা উত্তম কিছুও না, কিন্তু জায়েজ। এইখানে জায়েজ হওয়াটা কিছু মানুষের জন্য বড় ফায়দার হবে। অর্থাৎ কোনো মহিলা বিধবা হয় অথবা ভরণ পোষণের কেউ না থাকে, তখন তাকে নিজেই তার জীবিকার ব্যবস্থা করতে হয়, এইখানে আবার অনুত্তমের প্রশ্ন আসে না, যেইটা প্রয়োজন সেইটা তো আবশ্যক হয়ে যায়। কিন্তু যাদের ভরণ পোষণের জন্য অভিভাবক থাকে সেসব মহিলার জন্য জীবিকার জন্য বাইরে যাওয়াটা উত্তম না। একই ভাবে আমরা মসজিদে নামাজের ব্যাপারটাও দেখতে পারি। মহিলাদের জন্য অবশ্যই মসজিদে জায়গা রাখার দরকার আছে। কারণ অনেক মহিলা প্রয়োজনে বাইরে যায়, ওয়াক্তের সালাত কাযা না হওয়ার জন্য মসজিদে পড়তে পারে। অর্থাৎ এইখানে পার্থক্য বুঝতে হবে, যে নারী ঘরে থাকে, তার দরকার নাই মাসজিদে গিয়ে ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা। কিন্তু একজন পুরুষ ঘরে থাকলেও তাকে ৫ ওয়াক্ত নামাজ মাসজিদে গিয়ে পড়তে হবে।

 

তবে কিছু নামাযের ব্যাপারে মহিলাদের জামাতে যাওয়ার একটা গুরুত্ব দেয়া হয়েছে, যেমন ঈদের সালাত। আমাদের দেশেও ঈদগাহতে মহিলাদের জন্য জায়গা থাকে।

 

অতি সংক্ষেপে বলতে গেলে, মহিলাদের জন্য মাসজিদে নামাজ পড়া জরুরী না, বরং ঘরে পড়াই উত্তম, তবে বাহিরে গেলে কাযা না হয় সেজন্য পড়া যেতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশে মহিলাদের জন্য বেশিরভাগ মসজিদেই জায়গা রাখা হয় না। এটা বিভিন্ন কারণে হয় নি, তবে কিছু কিছু মাসজিদে থাকে। আর আমাদের দেশের মহিলারা ঐতিহ্যগত ভাবে খুব কমই মসজিদ মুখি হয়, তাই অনেকেই জায়গা রাখার প্রয়োজনবোধ করে না। আবার অন্যান্য দেশগুলোতে ঐতিহ্যগতভাবে মহিলাদের জন্য জায়গা থাকে, ফলে এখনো সেটার চর্চা রয়ে গেছে।

 

আমাদের দেশের উলামাগণ এ ব্যাপারকে অপছন্দনীয় মনে করেন। এই কারণে অনেক সময় মহিলার মসজিদমুখিতার বিরোধিতা করা হয়, এটা একটা মাযহাবি ভিন্নতা। কিন্তু এটাকে পুঁজি করে অনেকে সেকুলারিতার বয়ান শুরু করে। নারীদের মাসজিদে যাওয়া কিংবা জীবিকা নির্বাহ করা ইসলামে অনুত্তম হওয়ায় অনেকে এটাকে নারী স্বাধীনতার খেলাফ মনে করে। ফলে তারা নারী স্বাধীনতা অর্থাৎ সেকুলারিতার পক্ষে মহিলাদের মসজিদে যাওয়ার দলিলগুলোকে টেনে আনার চেষ্টা করে। অনেকে আবার ইসলাম নারী স্বাধীনতার পক্ষে এইটা দেখানোর জন্য দলিলগুলার অপব্যবহার করে। এই ক্ষেত্রে সঠিক অবস্থান হচ্ছে মহিলাদের মসজিদে নামাজ পড়া জরুরী না, তবে প্রয়োজনে জায়েজ; এটাকে যতই নারী স্বাধীনতা বা সেকুলারিতার খেলাফ মনে করা হোক ইসলাম কখনোই কোনো আদর্শ দ্বারা প্রভাবিত হয় না, কারণ এটা নিজেই একটা আদর্শ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চার

 

জোবায়ের আল মাহমুদ, অতি মাত্রায় মর্ডানিস্ট ইসলামপন্থী আমাদের এই ভাইটি বহুদিন যাবত ইসলামী রাষ্ট্র, খিলাফাহ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে একের পর এক লিখে চলছেন। বহু মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ইবনে খালদুনের বিভিন্ন বক্তব্যকে পুঁজি করে এই তত্ত্বকে ইসলামপন্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করছেন যে কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন হলেই হল, ইসলামী রাষ্ট্র বা শরিয়াহ শাসন প্রয়োজন নেই, আর তার এই তত্ত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামী বিভিন্ন দলিল আদিল্লা ব্যবহার করে চলেছেন। আমি বার বার এর বিরুদ্ধে লিখতে গিয়েও সময়ের কারণে কখনো বা অনাগ্রহের কারণে লিখতে পারে নি। এখনো যে লেখার আগ্রহ আছে তা না, বরং তার এই সেকুলারিতার বয়ান নিজেই নিজের জান কবজ করবে। তবে আমি তার পোস্টে দুয়েকবার মন্তব্য করেছিলাম, সেটাই এখানে তুলে দিচ্ছি।

 

রসুল সাঃ যদি রাষ্ট্রীয় ভাবে ইসলাম না কায়েম করে থাকেন এবং চার খলীফা যদি সেই পথ ধরে না আগান তাহলে অমুসলিমদের থেকে জিযিয়া নেয়া হত কেন? ইসলাম অনুযায়ী কেন বিচার ব্যবস্থা চলত? বলতে গেলে সবই ইসলাম মোতাবেক চলত। আর ইসলামী রাষ্ট্র হলে ব্যক্তির ধর্ম স্বাধীনতা থাকে না কে বল্ল, বরং কথিত কল্যাণ রাষ্ট্র কখনো নিরপেক্ষ হতে পারে না। কারণ তখন কি অনুযায়ী রাষ্ট্র চলবে? কোনো ধর্ম যদি ফলো না করা হয় তখন মানুষ নিজে আইন বানাবে।

 

খিলাফাহ এবং শরিয়াহ শাসন হচ্ছে ইসলামের রাজনৈতিক দর্শন। ইসলাম এসেছে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য। রাষ্ট্রকে অবশ্যই ইসলামী হতে হবে। আপনি বলছেন রাষ্ট্রের নাকি ধর্ম থাকতে পারে না, এটা ভুল কথা। রাষ্ট্রের অবশ্যই আদর্শ থাকে। ধরেন আপনার পরিবারকে আপনি ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী চালান, তবে আপনার পরিবারকে ইসলামী পরিবার বলা যায়। আবার একজন সেকুলার তার পরিবারে সেকুলারিজমের নীতি অনুযায়ী চালায়, তবে সেটা হচ্ছে সেকুলার পরিবার। একই কথা রাষ্ট্রের জন্য। আমাদের রাষ্ট্রে সেকুলারিজম ও গণতন্ত্র চলে। সুতরাং এটা সেকুলার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। রাষ্ট্র ধর্ম এবং ইসলামী রাষ্ট্র ব্যাপারটা আলাদা। কারণ রাষ্ট্র ধর্ম নির্ধারণ করা হয় রাষ্ট্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মের ভিত্তিতে। আর ইসলামী রাষ্ট্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ অমুসলিমও হতে পারে যদি শাসক শরিয়াহ সম্মত ভাবে চালায়।

 

ইসলাম একটি দ্বীন , জীবনব্যাবস্থা। ইসলামে সকল কিছুই বলা আছে কেউ যদি দাবি করে ইসলামে সমাজনীতি নাই, বা রাষ্ট্রনীতি নাই, তাহলে বুঝতে হবে ইসলাম কোনো জীবনব্যাবস্থা না। এটা শুধুই একটা ধর্ম, যে ধর্ম খালি আখিরাতের কথা বলে, দুনিয়ার কোনো কিছুতে এর উপস্থিতি নাই।

 

প্রশ্ন হচ্ছে শরিয়াহ কায়েম হলে সেই রাষ্ট্র/রাজ্য/সালতানাত বা যেটাই বলি, সেখানে কি অমুসলিমদের ধর্ম চর্চার অধিকার থাকে না? রাসূলের জমানায়, এবং চার খলিফার জমানায় কি ছিল না?

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পাঁচ

 

তিতুমির মুজাহিদ ছিলেন, কিন্তু তারে পরিচয় করাইছেও জাতীয়তাবাদীরা। তারে পরিচিত করায় দেয়াতেও ইসলামপন্থীদের ভুমিকা নাই। অন্তত সমাজ বইয়ের কল্যাণে বখতিয়ার থেকে তিতুমির পর্যন্ত কিছু কিছু নাম কিছু কিছু তথ্য এই মুসলিম জনগোষ্ঠী জানছে। নইলে ইমামুদ্দিন বাঙালির মত তিতুমীররেও চিনতাম না। #আত্মসমালোচনা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ছয়

 

শাহনেওয়াজ জিল্লু নামে এক ব্যক্তি দীনী সার্কেলে ঢুকে জাহেলিয়াত মার্কা যতসব কথা বলতে শুরু করলেন। তার ভুল চোখে আঙুল দিয়ে ধরিয়ে দেয়া জরুরী ছিল। তাকে করা আমার মন্তব্য নিম্নে দেয়া হল।

 

মাশাআল্লাহ। আপনি খুব সুন্দর করে কথা বলতে পারেন। আপনার নিয়াতও বাহ্যিক দৃষ্টিতে ভালো মনে হয়। কিন্তু আসল কথা হচ্ছে আপনি নিজের কথাকে হক ভাবলেও আপনার কথাগুলো পুরোপুরি হক না, যে বিষয়ে ইলম নেই সে বিষয়ে কথা না বলাই ভালো মনে করি। কেউ যদি বলে তখন সেটা হাস্যকর হয়। আপনার ওইদিনের কমেন্টের স্ক্রিনশট নিয়ে একজন ভাই কেন পোস্ট দিয়েছিল, বলতে পারেন? কারণ আপনার কথাটা ছিল চরম হাস্যকর। একদম মৌলিক জ্ঞান থাকলেও কেউ এরুপ কথা বলতে পারে না। এই বিষয়ে আলাপের ইচ্ছা একদমই ছিল না। তবু আপনার যেন ভুল ভাঙে এজন্য আমি আপনার ওইদিনের কমেন্টটার একটু বিশ্লেষণ করছি।

 

ওইদিনের কমেন্টে বলেছিলেনঃ

 

"ভাই আমিও আপাতত গণহারে হাদীসচর্চা বন্ধ রাখার পক্ষে। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র কোরান ও সিরাত ভিত্তিক যাচাইকৃত সহীহ হাদিসগুলোর চর্চার পক্ষে মত দিই। কারণ, এখন গ্রন্থাকারে যেসব হাদিস চর্চা হয় এগুলো হয় বেশিরভাগ ফেইক নতুবা এই সময়ের জন্য প্রযোজ্য নয়। নতুবা ব্যক্তি বিশেষে ভিন্ন ভিন্ন নির্দেশনা থাকায় বর্তমান সময়ের লোকজন গ্রুপিং সৃষ্টি করে ফেলছে।"

 

এবার আমি পরিষ্কার করি আপনার এখানে কি কি ভুল আছে।

 

১- গণহারে হাদিস চর্চা বন্ধ করতে বললেই গ্রুপিং কিংবা জাল হাদিস বানানো বন্ধ হয়ে যাবে না। কেউ যদি বলে গণহারে বিজ্ঞান চর্চা বন্ধ করতে হবে, সেটাও বাস্তবসম্মত সমাধান না। যারা বিজ্ঞান গবেষণা করে, প্রথমে কেউ ভুল তত্ত্ব দেয়, এরপরে কেউ এসে সেটা সংশোধন করে। নিত্যনতুন সংশোধন হতে হতে বিশুদ্ধ হতে থাকে। তেমনি হাদিস চর্চাও ১৪০০ বছর যাবত গবেষণা হচ্ছে। জাল, যইফ হাদিস নির্ণয়ের জন্যেও হাদিস গবেষণা ও চর্চা চালু রাখতে হবে।

 

২- আপনি কোরান ও সিরাতভিত্তিক যাচাইকৃত সহীহ হাদিসগুলোর চর্চার পক্ষে মত দিয়েছেন, কিন্তু সব সহীহ হাদিসই কোরানভিত্তিক যাচাইকৃত। কিন্তু সিরাতভিত্তিক বলে কি বোঝাতে চাচ্ছেন, ক্লিয়ার না আমার কাছে। কারণ সীরাত হচ্ছে নবীজীবনী, আর যা প্রমাণিত সুত্রে বর্ণিত তা-ই সহীহ হাদিস। সীরাতের সব বর্ণনাই হাদিস, কিন্তু সব হাদিস সীরাত বিষয়ক না। সীরাতে অনেক যইফ জাল হাদিসও থাকতে পারে, কিন্তু সহিহ হাদিসে তা থাকে না। অর্থাৎ জাল যইফ সহিহ মিক্সড সীরাত দিয়ে সহী হাদিস কিভাবে যাচাই করা যায়? একটি সহীহ হাদিস নির্ণয়ের জন্য ৫-৭ টা শাস্ত্র লাগে। সুতরাং কিসের ভিত্তিতে হাদিস নির্ণয় করতে হয় মুহাদ্দিসগণ ভালোই জানেন।

 

৩- আপনি বলেছেন, এখন গ্রন্থাকারে যেসব হাদিস চর্চা হয় এগুলো হয় বেশিরভাগ ফেইক নতুবা এই সময়ের জন্য প্রযোজ্য নয়। গ্রন্থাকারে সংরক্ষিত হাদিসগুলো আমাদের সম্পদ, সেগুলো ফেইক নাকি ফেইক না তাও নির্ণয় করার জন্য হাদিসশাস্ত্র আছে। একটা বইয়ে ভুল শুদ্ধ থাকতে পারে, এজন্য কি আপনি বলবেন যে বইটাই বাতিল করে দিতে হবে। হাদিস শাস্ত্রের মত এতো শক্তিশালী শাস্ত্র দুনিয়ায় দ্বিতীয়টি নেই। আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে প্রতিটা ব্যক্তির কথার উপর রেফারেন্স ছিল আজকের এই আধুনিক যুগে বিস্ময়কর বলে মনে হয়। হাদিস শাস্ত্র নিয়ে আপনার পড়াশোনা করা উচিৎ বলে মনে করি।

 

৪- এমন কোনো সহিহ হাদিস নেই যা অপ্রয়োজনীয়। সহিহ হাদিসও এক প্রকার ওহী। ওহী কখনো অপ্রয়োজনীয় হয় না। সময়ের জন্য সব সহিহ হাদিসই প্রযোজ্য।

 

৫- গ্রুপিং সৃষ্টি হওয়া সমস্যা না। কিন্তু গ্রুপিং এর জন্য কুরআন হাদিসের অপব্যবহার সমস্যা। গ্রুপিং কেউ জাল হাদিস দিয়ে করে না। কারো অপব্যাখ্যার নিয়ত থাকলে সহিহ হাদিস ও কুরআনের আয়াত দিয়েও অপব্যাখ্যা করতে পারে।

 

নিজেকে হকের ঠিকাদার না ভাবাই ভালো। গ্রুপিং না করলেই হক হবে এমন না। অনেকে গ্রুপিং না করেও ভ্রান্তিতে নিমজ্জিত হতে পারে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সাত

 

রবীন্দ্রনাথকে আলোচনায় আনতেই আমি পক্ষপাতি না। রবীন্দ্রনাথরাও ইসলামকে কখনো আলোচনায় আনতে পছন্দ করতেন না, বিরোধিতার খাতিরেও না। আমার কাছে পশ্চিমের কোনো ফিগার কিংবা কাফিরদের কারো সমালোচনার চেয়ে ইবনে সিনার সমালোচনা বেশি পছন্দনীয়। কারণ সমালোচনার খাতিরেও ইবনে সিনাকে নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে, অর্থাৎ ইসলামী সভ্যতার আলোচনাকে আনা হচ্ছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আট

 

ইসলামের মধ্যেই সংস্কৃতির অনেক উপাদান আছে। খুঁজে খুঁজে সেগুলার চর্চা করতে হবে। আমি প্রতিটা সুন্নাহর মধ্যেই সংস্কৃতি খুঁজে পাই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

নয়

 

একাত্তরে নিহত আলতাফ মাহমুদের মেয়ে দেখলাম ফেসবুকে দুইটা ছবির তুলনা করে কান্নাকাটি করছে। একটা ছবিতে দেখা যাচ্ছে শাড়ি পড়া, গেঞ্জি পড়া একদল নারী মুক্তিযোদ্ধাকে, আর আরেকটা চিত্রে দেখা যাচ্ছে বুরখা হিজাবে আবৃত ছাত্রীদেরকে। তিনি আফসোস করলেন, আমাদের দেশটা কত পিছিয়ে যাচ্ছে। আমি বুঝতে পারছি না, বুরখা হিজাব পরিধান করলে দেশ কিভাবে পিছিয়ে যায়? বুরখা হিজাব করা তো ইসলামের নিদর্শন, ইসলাম চর্চা করলে দেশ পিছিয়ে যায় কিভাবে আমার বুঝে আসে না। আর পর্দা না করলে নারী প্রগতি কিভাবে হয় সেটাও বুঝে আসে না। সেকুলারদের ইসলাম নিয়ে এই আজব চুলকানি বড় অদ্ভোত লাগে। এই চুলকানিতে সমস্ত জায়গা ইসলামের সাথে কোনো না কোনো সংযোগ থাকেই। যেমন দাড়ি টুপি, টাখনুর উপর কাপড় পড়া নিয়া চুলকানি, মাদ্রাসা এবং আলেমদের নিয়া চুলকানি, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়া চুলকানি। মুনাফিক চেনার সবচেয়ে সহজ উপায় হইল এই চুলকানি। বিভিন্ন সময় মুসলিম নামধারি এইসব মুনাফিকের লেঞ্জা প্রকাশ হতে দেখবেন। জাফর ষাঁড়ের লেঞ্জা, শা কবিরের লেঞ্জা, সমস্ত সেকুর লেঞ্জার কালার এক পাবেন, এমনকি ভারতীয় বলেন কিংবা ইউরোপীয়, সমস্ত ইসলাম বিদ্বেষীর লেঞ্জার এক কালার হয়। প্রত্যেকের চুলকানি হয় ইসলামের বিধি বিধান নিয়া। সমস্ত রাগ ক্ষোভ এদের ইসলাম নিয়া। ইসলামের সাথে সংযুক্ত এক টুকরা কাপড় যেইটা মহিলারা ধর্মবোধ অথবা কেউ কেউ স্টাইল কইরা মাথায় পিন্দে এইটা নিয়াও সেকুদের চুল্কানির শেষ নাই। চুল্কাইতে চুল্কাইতে চামড়া ছিলা ফেলে। এদের চুলকানি বাড়াইতে চাইলে বুরখা পাঞ্জাবি জুব্বার ব্যবসা ধরেন, এবং লিঙ্গানুযায়ি এইসব পোশাক পরিধান করায় অভ্যস্ত হন, কারণ এগুলা মুনাফিক আর মুসলিমদের পার্থক্যকারী হিসেবে বিবেচিত হইতেছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

দশ

 

এক ভাই নজরুলকে নিয়ে খুব গর্ব করল, সে নাকি ইসলামের কবি। আমি এ ব্যাপারে মন্তব্য করলাম - আপনি মনে হয় শুধু নজরুলের ইসলামী কবিতা গুলাই পড়েছেন। আর তিনি কমিউনিস্ট কোনো কালেই ছিলেন না, কমরেড মুজাফফর চেষ্টা করছিল, কিন্তু পারেন নি, কারণ নজরুল ছিল সেকুলার, সে জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেকুলার ছিল। শেষের দিকে হিন্দু ধর্ম দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। হিন্দু ধর্ম চর্চাও করতেন, অসংখ্য শ্যামা সঙ্গীত লিখেছেন, তিনি কখনোই ইসলাম দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন না। যেই হাতে তিনি দেব দেবির গুণ কীর্তি লিখেছেন, একই হাতে আল্লা রাসুলের গুণগানও লিখেছেন আগে পরে, তার ইসলামী কবিতাগুলার সময়কাল খুঁজলে দেখবেন এগুলা আগেও লেখা হয়েছিল পরেও লেখা হয়েছিল। আব্বাস উদ্দিন গান গাইলেও ধর্মবোধ ছিল, সে নজরুলরে দিয়া জোর করিয়ে ইসলামী গান লেখাইত। তবে শেষ জীবনে অর্থাৎ অসুস্থ হওয়ার কিছুদিন আগে উনি তাওবা করে একদম ইসলামে ফিরছেন বইলা মত প্রকাশ করেছেন নজরুল গবেষণার সবচেয়ে বড় পণ্ডিত গোলাম মুরশিদ। আর গোলাম মুরশিদ সেকুলার, সুতরাং আমিও বিশ্বাস করি একেবারে শেষে তিনি তাওবা করছিলেন। কিন্তু তিনি মাঝখানের জীবনে মুসলিম ছিলেন এইটা আমি বিশ্বাস করি না, অন্তত তার সম্পর্কে ভালো গবেষকদের লেখা পড়লেও এইটাই ধারণা করা যায়। কিন্তু তার অসুস্থ হওয়ার পর তারে আবার গান বাজনা আউল ফাউল কাজে তার পরিবার নিয়া গেছিল, যেহেতু তার স্ত্রী হিন্দু ছিল।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এগারো

 

শুনলাম মুরতাদ মুফা নাকি ইসলামে ফিরছে, সাথে এক গাদা কুফরি কথা বগলদাবা কইরা নিয়া আসছে। এই ব্যাপারে আমার মন্তব্য হইল - মুফা আগে ছিল মুরতাদ কাফের, এখন হইছে মুনাফিক। কাফের থেকে মুনাফিকরা বেশি ভয়ঙ্কর। আমাদের দেশে বেশিরভাগ সেকুলার মুনাফিক, এক হিসেবে কাফেরদের চেয়ে বেশি খারাপ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বারো

 

এক মুশরিক মহিলা একাত্তরের বেপর্দা কিছু নারির ছবি আর বর্তমানের কিছু পর্দাশিল ছাত্রির ছবি শেয়ার কইরা বঝাইতে চাইতাসে দ্যাশ নাকি পিছাইয়া যাইতাছে। এইটারে আবার ৭১ এ নিহত আলতাফের মেয়ে ভাইরাল করাইয়া সেও কাঁদল। তো আমি মুশরিক মহিলার পোস্টে মন্তব্য না কইরা শান্তি পাইতেছিলাম না। যা কইছি ভদ্র ভাষাতেই কইছি, এইখানে তুইলা দিলামঃ

 

আপনি হিন্দু হয়ে মাথায় সিঁদুর দেন বা পূজা করেন, কেউ কিছু বলবে না, কিন্তু একজন মুসলিমা হিজাব নিকাব করলেই দেশ পিছিয়ে যায়, স্বাধীনতার চেতনা বিনষ্ট হয়। আচ্ছা, আপনার মুসলিম নামধারি সেকুলার বন্ধু বান্ধবগুলো আজব না? হিজাব নিকাব, দাড়ি টুপি, ইসলাম সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে তাদের চুলকানি।

 

 

 

 

 

 

 

 

তেরো

 

অনেকে দেখি কিছু ইসলামী কবিতা লেখার কারণে নজরুল, জসিমউদ্দিন এদেরকে নাকি মুসলিম কবিদের রোলমডেল বানায়া ফেলে। একেকজন নজরুলকে ইসলামিক প্রমাণ করতে কি পরিমাণ কসরত যে করে।

 

কিছু ইসলামপন্থী নজরুলের কিছু ইসলামী কবিতা গুলা পড়েই তার বিরাট ভক্ত হয়ে যায়। অথচ তিনি যে কত কুফরি শিরকি কবিতা লিখছেন তার খোঁজ তারা রাখে না। অনেকে দাবি করে তিনি নাকি প্রথম জীবনে কমিউনিস্ট ছিলেন, পরে ইসলামে ফিরে এসে ইসলামী কবিতা লিখছেন। অথচ তিনি কমিউনিস্ট কোনো কালেই ছিলেন না, কমরেড মুজাফফর চেষ্টা করছিল সেদিকে নিতে, কিন্তু পারেন নি, কারণ নজরুল ছিল সেকুলার, সে জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেকুলার ছিল। শেষের দিকে হিন্দু ধর্ম দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। হিন্দু ধর্ম চর্চাও করতেন, অসংখ্য শ্যামা সঙ্গীত লিখেছেন, তিনি কখনোই ইসলাম দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন না। যেই হাতে তিনি দেব দেবির গুণ কীর্তি লিখেছেন, একই হাতে আল্লা রাসুলের গুণগানও লিখেছেন আগে পরে, তার ইসলামী কবিতাগুলার সময়কাল খুঁজলে দেখবেন এগুলা আগেও লেখা হয়েছিল পরেও লেখা হয়েছিল। আব্বাস উদ্দিন গান গাইলেও ধর্মবোধ ছিল, সে নজরুলরে দিয়া জোর করিয়ে ইসলামী গান লেখাইত। তবে শেষ জীবনে অর্থাৎ অসুস্থ হওয়ার কিছুদিন আগে উনি তাওবা করে একদম ইসলামে ফিরছেন বইলা মত প্রকাশ করেছেন নজরুল গবেষণার সবচেয়ে বড় পণ্ডিত গোলাম মুরশিদ। আর গোলাম মুরশিদ সেকুলার, সুতরাং আমিও বিশ্বাস করি একেবারে শেষে তিনি তাওবা করছিলেন। কিন্তু তিনি মাঝখানের জীবনে মুসলিম ছিলেন এইটা আমি বিশ্বাস করি না, অন্তত তার সম্পর্কে ভালো গবেষকদের লেখা পড়লেও এইটাই ধারণা করা যায়। কিন্তু তার অসুস্থ হওয়ার পর তারে আবার গান বাজনা আউল ফাউল কাজে তার পরিবার নিয়া গেছিল, যেহেতু তার স্ত্রী হিন্দু ছিল।

 

সুলতাং যারা নজরুলরে ইসলামায়ন করতে চায় অথচ নজরুল নিজেকে কখনোই সেইরুপ দাবি করে নাই, এগুলা স্রেফ ইসলামপন্থীদের আবলামি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চৌদ্দ

 

আফ্রিকার মানসা মুসা যেমন ছিল পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধনী অথচ আজকের আফ্রিকার কি অবস্থা, তেমনি আমাদের ভারত মুসলিম শাসনামলে ছিল ধন ঐশ্বর্যের অধিকারী। তৎকালীন মুঘলদের তুলনায় ইউরোপ ছিল ফকির। শুধুমাত্র তাজমহল দেখে ইউরোপীয়দের অজ্ঞান হওয়ার মত অবস্থা হয়। এরা মুঘলদের হিরা, ময়ুর সিংহাসন এবং ইত্যাদি দামি বস্তুগুলো চুরি করে ওদের দেশে নিয়ে যায়। ১৯০ বছর শাসনে এরা ইংল্যান্ডে সম্পদ পাচার করে গেছে যতক্ষণ পর্যন্ত না ভারত ফকির হয়ে যায় এবং ইংরেজদের নেয়ার মত আর কিছু থাকে না।

 

অথচ এইসব চোরা ইউরোপীয় আর তাদের সংস্কৃতি সভ্যতা আমাদের মুসলমান যুবকদের চোখ ধাধিয়ে দেয়। তারা ইউরোপ অ্যামেরিকার ভিসার জন্য মুসলমান আইডেন্টিটি বিসর্জন দিতে রাজি থাকে, এক সময়ের ফকির ইউরোপীয়দের আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া কলাগাছে উঠতে মুসলমানি লুঙ্গি, পাঞ্জাবি, শেরওয়ানি খুলে এক সময়কার সুলতান, বাদশাহ দের শাহজাদারা উলঙ্গ হচ্ছে। এটাই হচ্ছে ইসলামের ইতিহাসে মুসলমানদের অধঃপতনের সর্ব নিম্ন সীমা। যেখানে মুসলমানরা তাদের আত্মপরিচয় হারিয়ে ফেলে। তাতার ঝড়ের পরেও মুসলমানদের ঐশ্বর্য কমে যায় নি, কারণ তখন মুসলমানরা তাকওয়া হারালেও আত্মপরিচয় হারায় নি, এখনো মুসলমানদের নামটা বাদে কিছুই অবশিষ্ট নাই। খ্রিস্টান আর হিন্দুয়ানি নামের যে প্রকোপ শেষ পর্যন্ত মুসলমানদের নামটাও হয়তো থাকবে না।

 

তবে ইসলাম কখনো নিভে যাবে না, এমন সময়ও একদল গুরাবা থাকবে, যারা নিজেদের আত্মপরিচয় হারাবে না, যারা দাজ্জালি যুগে বাস করেও মনের মধ্যে ইসলামী স্বর্ণযুগের আবহ লালন করবে। আল্লাহ আমাদেরকে গুরাবাদের কাতারে শামিল করুন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পনেরো

 

কল্যাণ রাষ্ট্রের পক্ষে প্রচারণা চালানো জনাব জোবায়ের আল মাহমুদ একটা নিউজ শেয়ার করে বোঝাতে চাইছেন সৌদি খুব ভালো ইসলামী রাষ্ট্র হয়েও আলিমদের মৃত্যু দণ্ড দিচ্ছেন। সেখানে আমি মন্তব্য না করে পারলাম নাঃ

 

সৌদিতে রাজতন্ত্র চলে। সুতরাং শরিয়াহ শাসন চল্লেও, রাজতন্ত্রের কারণে পূর্ণ শরিয়াহ শাসন না, বরং রাজার ইচ্ছা মত শাসন চলে, সুতরাং এইটারে পূর্ণ ইসলামী রাষ্ট্র বলা যায় না।

 

আদর্শ ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাইতে হবে। ইসলামী রাষ্ট্রের নামে কে কি করে সেটা উদাহরণ না। আইএস কিংবা সৌদি ইসলামী রাষ্ট্র নাম দিয়ে কি করে তা কখনো ইসলামী রাষ্ট্রের বিপক্ষে দলিল হবে না। কারণ একজন মুসলিমের জন্য ইসলামকে দোষারোপ করা যায় না। খুলাফায়ে রাশিদার শাসন আমাদের জন্য আদর্শ শাসন ব্যবস্থা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ষোল

 

ইসলাম প্রতিষ্ঠা করলে একসাথে ১০ টা বিষয় কায়েম হয়, আর ইসলামী আন্দোলন না করলে হরেক অধিকারের আন্দোলন করতে হয়, যেমন শ্রমিক অধিকার, নারী অধিকার, শিশু অধিকার, পশু অধিকার। আর সব অধিকার কায়েম হবে যদি ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা যায়। সুতরাং যারা ইসলাম কায়েমের চেষ্টা করে তাদের আলাদা করে এই সেই অধিকারের আন্দোলন করা লাগে না।

 

তবে অন্য একটা দিকে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন, এটা সত্য যে ইসলামপন্থীদের অনেকে হাক্কুল ইবাদ নিয়ে সচেতন না। এইটা নিয়া বিস্তারিত সমালোচনা করা যায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সতেরো

 

মীর সালমান ভাই একটা পোস্ট করলেন যেখানে বোঝাতে চেষ্টা করছেন, কাবা নাকি গুরুত্বপূর্ণ না, এমনকি তিনি নাকি হাজ্জাজ হলে কাবা ভেঙ্গে ফেলতেন, সেখানে আমার মন্তব্যঃ

 

কাবা ভেঙ্গে ফেলার আলাপটা ভালো লাগলো না। "একজন মুসলমানের জীবন এমন হাজার কাবার চেয়ে শ্রেষ্ঠ" , মুসলমানের জীবনের সাথে ক্বাবার তুলনাও ভালো লাগলো না। এই দুইটা তুলনা হওয়ার বিষয় না। কাবা ভাঙতে চেয়েছিল আবরাহা, যা সূরা ফিলে বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহ তাকে ধ্বংস করেছিল। সুতরাং কাবা কোনো গুরুত্বহীন বিষয় না।

 

কাবা আল্লাহর জমিনে সবচেয়ে পবিত্র ভূমি। এর মর্যাদা নিয়ে অনেক দলিল আদিল্লা আছে। এটা অসম্মানের মত কোনো কিছু না। কুরআন কাগজের মধ্যে লেখা হয়, এজন্য এই না ঐ কাগজটা অমর্যাদা করা জায়েজ। আল্লাহ কাবা শরিফকে মর্যাদা দিয়েছেন, আমরাও একে মর্যাদা দিব।

 

 

 

 

 

 

আঠারো

 

জনাকাংখা প্রতিষ্ঠার পর থেকে একদল লোক ইসলামী রাষ্ট্র এর বিপরীতে কল্যাণ রাষ্ট্রের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে। প্রচারনার সুবাদে দুই নৌকায় পা দিতে চাওয়া লোকেরা হালে পানি পেল। অবস্থা এমন, ইসলামও থাকবে, আবার সেকুলারিজমও থাকবে। অনেকের দাবি তো একেবারে, ইসলামই নাকি সেকুলারিজম, আদর্শ সেকুলারিজম। তাদের দাবি তারা হচ্ছে সহি সেকুলার, আর এদেশের বামপন্থী সেকুলাররা যইফ সেকুলার বা ভ্রষ্ট সেকুলার। কোনো এক আওয়ামী সাংসদ একবার পার্লামেন্টে বলছিলেন নবি সাঃ নাকি সেকুলার ছিলেন (নাউযুবিল্লাহ), দেখা যাচ্ছে জামায়াতের (সাবেক) আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভোগা সেকুলার-ইসলামিস্ট বা সেকুস্লামিস্ট যারা সদ্য জনআকাঙ্ক্ষা ব্যানারে সামনে এসেছে তারা সেই আওয়ামী সাংসদের কওলকে মানহাজ হিসেবে গ্রহণ করে ইকামাতে দ্বীনের সহি ভার্সন ইকামাতে সেকুলারিজমের মহান খেদমতে রত হয়েছেন। তাদের কল্যাণ রাষ্ট্রের থিওরি মূলত সেকুলার রাষ্ট্রের অপর নাম, অবশ্য এটা তারা স্বীকারও করে। সেকুলার/কল্যাণ রাষ্ট্রে নাকি সব ধর্মের অধিকার দেয়া হয়, আর এজন্যই ইসলামী রাষ্ট্র তারা চান না, কারণ ইসলামী রাষ্ট্রে সব ধর্মের অধিকার দেয়া হয় না। এরা আবার ধর্মের আলখাল্লা খুলতেও রাজি না, ঠিক ইনু মেনন্দের মত। কথায় কথায় ইসলামপন্থীদের চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করেও হজ করে, সহি ইসলামের সবক দেয়, এবং তাহাজ্জুদগুজারি নেত্রীর আস্থাভাজন হয়ে থাকে।

 

জামায়াতের এই সংস্কারপন্থী ধারার থিঙ্কট্যাংক হিসেবে কাজ করে ফরিদ এ রেজা, দর্শনগবেষক মোজাম্মেল হক, শাহ আব্দুল হান্নান প্রমুখ। আর ফেসবুকে এর পক্ষে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে জোবায়ের আল মাহমুদ নামে সুফিবাদি, তুরস্কপন্থী, এরদোয়ানপন্থী, সাবেক জামায়াতি, নব্য মুতাজিলা, মর্ডানিস্ট, সাবেক ইসলামিস্ট ও বর্তমান সেকুলারিস্ট বা সেকুসলামিস্ট এক যুবক। তাদের সকলের হেদায়েত কামনা করি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

উনিশ

 

এই দেশে সেকুলারদের যেমন পাকিস্তান বিদ্বেষ তেমনি আমাদের দেশের মুসলিম, সেকুলার, হিন্দু, বৌদ্ধ নির্বিশেষে সকলের অর্থাৎ সকল বাঙালির একটা সৌদি বিদ্বেষ কাজ করে। সেকুলাররা যেমন পাকিস্তানের সাধারণ নাগরিকদেরকেও ঘৃণা করে, তেমনি বাঙ্গালিরাও দেখি সৌদি জনগনের প্রতি একটা ঘৃণা পোষণ করে। মানুষ সবসময় শাসক আর জনগণের পার্থক্য গুলিয়ে ফেলে। সৌদি শাসকদের পছন্দ না হলে তাদের জনগণকেও কেন ঘৃণা করতে হবে? এই সমস্যা তো সেকুলারদের যারা ৭১ এ কোনো এক সামরিক শাসকের যুলুমের কারণে সমস্ত পাকিস্তান আর পাকিস্তান সংশ্লিষ্টতার বিরুদ্ধে প্রোপ্যাগান্ডা চালায়। পৃথিবী সমস্ত ভূমি আমাদের, ভারতও আমাদের। শাসকের জন্য বা শাসন ব্যবস্থার জন্য সেই দেশের মানুষকে গালমন্দ করা জাতীয়তাবাদী রোগ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বিশ

 

আহলে হাদিসদের  কিছু গুণাগুণ খুবই উত্তম যে সুন্নাতের পূর্ণ অনুসরণ করে। তাদের অধিকাংশই দাড়ি রাখে। কিছু ক্ষেত্রে তারা যদি নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে যেমন মাযহাববিদ্বেষ ও মাযহাবিদের বিরোধিতা, আলে সউদের তাকলিদ না করে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান এবং জিহাদ ও ইকামাতে দ্বীনের প্রতি আগ্রহ আনয়ন, তবে অবশ্যই তারা হকপন্থী হত।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

একুশ

 

দাড়ি রাখা সুন্নাহ, কিন্তু দাড়ি না রাখলে কাউকে অপমান করা বা কথার মাধ্যমে আক্রমণ করা অনুচিত। ইসলামী সমাজে কেউ দাড়ি না রাখলে তার শাস্তি বা অন্য কিছু নির্ধারণ করা যায় না। তবে দাড়ি কাটা যেহেতু প্রকাশ্য ফিসক, তাই দাড়ি কাটা লোক ফাসেক হতে পারে, কিন্তু এজন্য নসিহত জরুরী, জোর করে দাড়ি রাখানো আবশ্যক না। বরং যে ক্ষেত্রে ইখতেলাফের সুযোগ আছে সেক্ষেত্রে স্পেস দেয়া উচিৎ। আলিমদের অনেকের মতে দাড়ি রাখা ওয়াজিব না, শুধুমাত্র সুন্নাহ। অনেকের মতে মুস্তাহাব। কিন্তু যেটাই হোক, আমরা এখান থেকে বুঝতে পারি দাড়ি রাখা এবং এর প্রতি উৎসাহ দেয়া অবশ্যই উত্তম, কিন্তু যে দাড়ি রাখে না তাকে নিজের অবস্থান দিয়ে বিচার করা যাবে না। আমি অবশ্যই দাড়ি রাখাকে ওয়াজিব মনে করি। এবং মনে করি সকল মুসলমানের দাড়ি রাখা উচিৎ, কিন্তু কতটুকু রাখবে এটাতে সকলকে স্পেস দেয়া উচিৎ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বাইশ

 

সৌদি কারাবন্দী আলেমদের নিয়ে অনেকে যেভাবে দুঃখপ্রকাশ করে বাংলাদেশের কারাগারে বন্দী, নির্যাতিত আলেম ও ইসলামপন্থীদের নিয়ে তারা অনেকে চিন্তা করে না বা করতে চায় না। এটা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড।

 

আমাদের দেশে যারা জালিমের কারাগারে আটকা আছেন, যেমন দেলোয়ার হোসেন সাইদী, জসিমুদ্দিন রহমানী, ইসহাক খান আরও নাম জানা অজানা ইসলামী আন্দোলনের কর্মী, সমর্থক সবাইকে নিজেদের দোয়াতে রাখবেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তেইশ

 

আমাদের দেশের কথিত বুদ্ধিজীবীরা সবসময় রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দ, মানিক, বঙ্কিম, শরত, বিভুতি, সুকান্ত এদের নিয়ে আলাপ তুলে; কখনোই দেখবেন না মুসলিম সাহিত্যিকদের নিয়ে তারা উৎসাহী। নজরুলকে তারা আলাপে আনে এই কারণে যে নজরুল মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও সারাজীবন ধর্মনিরপেক্ষ সাহিত্য চর্চা করেছেন, দুই হাত ভরে শ্যামা সঙ্গীত লিখেছেন, সাম্যবাদের কথা কয়েছেন। সময়কাল অনুযায়ী বিখ্যাত হিন্দু সাহিত্যিকদের একেবারে সমকালীন সাহিত্যিক এই বাংলায় অনেক মুসলমান সাহিত্যিক ছিলেন। তাদের নামের তালিকাও দীর্ঘ। কিন্তু কোনো কারণে তাদের আলাপে আনা হয় না। দেখা রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে ভারতের বাঙালী হিন্দু সাহিত্যিক জন্মবার্ষিকী, মৃত্যুবার্ষিকী ছাড়াও কারণে অকারণে তাদের জীবনী নিয়ে পত্রিকায় লেখালেখি করে থাকেন আমাদের বুদ্ধিজীবীরা, তাদের উপর আলোচনা সমালোচনা লিখেন। আমি দেখিনি তাদেরকে ইব্রাহিম খাঁ, ইসমাইল হোসাইন সিরাজি, গোলাম মোস্তফা, বরকত আলি, নজিবর রহমান সাহিত্যরত্ন, ফররুখ আহমদ তাদের সম্পর্কে কখনো লিখতে। এটা হচ্ছে বুদ্ধিজীবীদের বুদ্ধিজীবীতার নমুনা। আর একালে আল মাহমুদ নিয়ে তারা যা করল তা তো আমরা চাক্ষুষ সাক্ষী। শাহেদ আলির জিবরাইলের ডানা গল্পটিকে বলা হত বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ গল্প। অথচ আমাদের প্রজন্ম তো তার নামও জানি না। আমাদের থেকে আড়াল করা হয় 'আমাদের' সাহিত্যিক ও আমাদের ঐতিহ্যের ধারক ও বাহকদের, আর এই কুবুদ্ধিজীবীরা বিভিন্ন উপায়ে আমাদের সামনে নিয়ে আসে কাফের, মুশরিকদের ফিগারদের। তারা নিজেদের মিডিয়া ব্যবহার করে এই প্রোপ্যাগান্ডা চালিয়ে থাকে। ফলে মুসলিম জনগোষ্ঠী নিজের অজান্তেই মুশরিক ও নাস্তিক ফিগারদের কবুল করে নেয়। আল্লাহ আমাদের ভুল করা থেকে রক্ষা করুন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চব্বিশ

 

তারাবিহ কত রাকাত সেটা বিষয় না, তারাবিহ ৮, ১২, ২০, ৩৬ যত ইচ্ছা পড়বেন, এ নিয়ে বাড়াবাড়ির প্রয়োজন নেই, বিতর যেমন ১,৩,৫,৭,৯ পড়া যায় তেমনি তারাবিও পড়বেন, পড়াটা বড় কথা, সংখ্যা নয়। বিতর যেমন পড়া ওয়াজিব, এটার সংখ্যা ফ্যাক্ট নয়, তেমনি তারাবি সুন্নাহ, তাই পড়বেন, কত পড়বেন তা আপনার ইচ্ছা। যারা কম পড়তে চান তারা ৮ পড়বেন, যারা বেশি পড়তে চান তারা ১২, ২০, ৩৬ পড়বেন। আর এই নিয়ে যারা ঝগড়া করে রমাদানের ভাবমূর্তি নষ্ট করে এদের থেকে বেঁচে চলুন, কেউ ঝগড়া বাঁধাতে আসলে বলুন, আমি রোজাদার, কারণ এদের ফেতনা ঝগড়াটে মানুষদের গালাগালির চেয়ে ভয়ঙ্কর।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পঁচিশ

 

খাওয়া দাওয়া করে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে হয়, বড়লোক বা গরিব সকলকেই আল্লাহর শুক্রিয়া আদায় করতে হয়। আলহামদুলিল্লাহ বলতে হয়। এখানে খানার সাথে শুধু আল্লাহর স্মরণ নয় বরং উপলব্ধি করতে হয় যে আমি ভালো আছি তাদের চেয়ে যারা না খেয়ে আছে। যারা কম খেয়ে আছে তাদের চেয়ে আমি বেশি খেয়েছি, যারা অনেক দিন খায়নি এবং এরপর খাচ্ছে, তাদের চেয়েও আমি ভালো আছি। এই উপলব্ধি জাগাতে হবে, প্রতি খানার ওয়াক্তে স্মরণ করতে হবে নির্যাতিত মুসলিম উম্মাহর কথা। রোহিঙ্গারা কেমন আছে, খেয়ে আছে নাকি না খেয়ে, সিরিয়ার বাচ্চাগুলার কি অবস্থা, আজকে সারাদিনে কিছু খাওয়া হয়েছে তো? আর ইয়েমেনের শুকিয়া যাওয়া বাচ্চাগুলা কেমন আছে? ফিলিস্তিনের মানুষ ভালো আছে তো? আফ্রিকার গরিব মুসলমানরা খেতে পাচ্ছে তো? আমাদের দেশের গরিব গ্রামগুলোতে মুসলমানদের কি অবস্থা? কৃষক মজুরদের কি অবস্থা? প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে মিশনারিরা খাদ্যের লোভে মুরতাদ বানিয়ে ফেলছে না তো আমাদের মা, বোন, ভাইদের? এভাবে চিন্তা করুন। খানা মুখে তুলার আগে ভাবুন আফগানিস্তানের মুজাহিদিনরা  এই বেলায় রুটি পেয়ে অভিজানে যাচ্ছে তো? নাকি না খেয়ে আছে? স্মরণ করুন পৃথিবীর কোণায় কোণায় নির্যাতিত গরিব মুসলিমদের কথা। এরপর খান। এরপর আহার তুলুন। এতে হয়তো ক্ষুধার্ত মানুষদের পেট ভরবে না, কিন্তু আপনার ঈমান ও তাকওয়ার চর্চা হবে, পরিশুদ্ধ হবে হৃদয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ছাব্বিশ

 

আদব শিক্ষা, ভদ্রতা শিক্ষা, এসব শিক্ষা আজ মানুষ থেকে উঠে যাচ্ছে। মানুষ শহরের বাসিন্দা হয়েও মিনিমাম ভদ্রতাগুলো শেখে নি। গারমের মানুষ না হয় সহজ সরল, অনেক কিছুই বোঝে না, কিন্তু শহরের উচু উচু দালানে বাস করেও কেন মানুষ আদবের ব্যাপারে এতো মিস্কিন থেকে যায়? আদব বা ভদ্রতা এমন একটা বিষয় যা শুধু মুসলিম না অমুসলিমদের মধ্যেও থাকা প্রয়োজন। আর সেখানে কিনা এটা মুসলিমদের অনেকের মধ্যেও দেখা যায় না। কারো বাসায় গিয়ে কি করা উচিৎ, বা কি করলে মানুষ রাগ করতে পারে, বা কিভাবে বলতে হয়, এসব মিনিমাম সেন্সটুকু আজ শহুরে মানুষদের মধ্যেও নেই। আবার গ্রামের অশিক্ষিত মানুষদেরও অনেক সময় দেখবেন বাসায় আসলে এরা উচু জায়গায় বসতে চায় না। মাটিতে বসে যায়। এই অশিক্ষিত লোকগুলাও ভদ্রতা বুঝে, আদব বুঝে। কিন্তু কি যে হল আজকাল শহুরে কিছু মানুষও যেন ভদ্রতার ভ-ও দেখায় না। ভদ্রতা ও আদব শিক্ষা এজন্য মুসলিমদের জন্য ইলম শিক্ষার মতোই ফরজ, একটু ভালোভাবে বললে ইলম শিক্ষার একটি অংশ হচ্ছে ভদ্রতা শিক্ষা, ভদ্রতা ও আদব শিখাও একটা ইলম, অথচ কত বড় বড় ঝেড়েও আজকাল কিছু মানুষের আদব আখলাক কত নিম্নমানের হয়ে থাকে!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সাতাইশ

 

জামাতিদের পথভ্রষ্টতার হিরিক। একটা বিষয় খেয়াল করলে দেখা যাবে জামাতিদের মধ্যে প্রচুর মানুষ এমন একটা অবস্থানে থাকে যেখান থেকে পথভ্রষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। একটু খুঁজলে অনেক নাম পাওয়া যায়। এদের থেকে কেউ হয় মর্ডানিস্ট, কেউ মোডারেট, কেউ দ্বীনবিকৃতকারী, কেউ আহলে হাদিস, কেউ নব্য মুতাজিলা, কেউ আবার আহলে কুরআন। ডাঃ মতিয়ার রহমান যিনি একজন আহলে কুরআন ও নব্য মুতাজিলা, কুরআনের নতুন ব্যাখ্যার নামে যে ভ্রান্ত মতবাদ ছড়ায় সে হচ্ছে জামাতি, জামাত তাকে জনপ্রিয় করেছে আর এখন সে বিষ ছড়াচ্ছে। জামাত এখনো তাকে সমর্থন দেয়। জামাতিদের অনলাইন লাইব্রেরি পাঠাগার ডট কমে এখনো মতিয়ারের বই পিডিএফ করে প্রচার করা হচ্ছে। অবশ্য জামাতিদের আকিদার পাঠই বা কতটুকু যার মাধ্যমে বুঝবে যে ডাঃ মতিয়ার ভ্রান্ত আকিদার লালনকারী, এই জামাতিরা নিজেদের গুরু মওদুদির একটা ভুলকে ভুল বলে স্বীকার করতে রাজি না, সেই ভুলটাও যে আসলেই ভুল তারা তা বোঝার মত জ্ঞান রাখে না। এদের অবস্থা এতই নাযুক। ফলে এদের থেকে কত পথভ্রষ্ট যে বের হয়েছে ইয়ত্তা নেই। ডাঃ মতিয়ার তো একটা, আরও কত যে আছে। ফরিদ এ রেজা হচ্ছে মর্ডানিস্ট ইসলামের প্রচারক, মোজাম্মেল হক নামে দর্শন গবেষক এই লোকটাও চরম পর্যায়ের ভ্রান্ত, সে তো পুরো টিম তৈরি করে সেকুলারিজমকে ইসলামের মোড়কে ছড়াচ্ছে। জোবায়ের আল মাহমুদ হচ্ছে সেই টিমের একজন। এইচ আল বান্না হচ্ছে আরেক জামাতি যে মর্ডানিস্ট ভাবধারার বিশ্বাসী। এমন অসংখ্য না বলা যায়। আর সম্প্রতি মঞ্জু আব্দুর রাজ্জাক গং তো এক সংস্কারপন্থী সেকুলার দলই খুলে বসলো। এদের জন্য আফসোস। তবে বেশি আফসোস তাদের জন্য যারা জামাতের মূলধারার সমর্থক হয়েও এইসব সংস্কাবাদি কালপ্রিটদের সাথে থাকে, ভালোবাসে, দীনী ভাই মনে করে, অথচ এরা ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছে এটা বোঝার জ্ঞান কি জামাতিদের নেই। কিন্তু যেসব জামাতি ভাই এসব জামাতি নামের বিষাক্ত কীটের বিরুদ্ধে কথা বলেন আল্লাহ তাদের উত্তম প্রতিদান দেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আঠাশ

 

এক ভাই দেখলাম আরবদের বাহারি খানার ছবি দিয়ে বুঝাতে চাইল আরবরা অপচয় করে কিন্তু এই নিয়ে সালাফি আলেমরা কিছু বলে না কেন? তার এই অদ্ভুত প্রশ্ন আমার কাছেও অবাক লাগলো, কিন্তু তার তারের মাথা ছিরা কিনা সেটা ভাবতে বসলাম যখন তিনি বললেন, এটা নাকি শিরক, এবং এই শিরকের বিরুদ্ধে সালাফিরা কথা না বলে কেন মাযার পূজার শিরকের বিরুদ্ধে কথা বলে?

 

এই হল বিদ্বেষ পোষণ করার ক্ষতিকর দিক। বিদ্বেষ উগড়ে দিলে বুদ্ধিবৃত্তিক সমালোচনাও আর গ্রহণযোগ্য হয় না। এই জামাতি ভাইয়ের সৌদিবিদ্বেষের অন্যতম কারণ হচ্ছে সালাফিরা ইখওয়ান দেখতে পারে না। সালাফিরা যেমন ইখওয়ানের প্রতি উগ্র বিদ্বেষ পোষণ করে, সেই জামাতি ভাইও সালাফিদেরই অনুসরণ করলেন।

 

আমি সালাফি না, তবু এই জামাতি ভাইয়ের বুদ্ধিবৃত্তিক জড়তা ও দৈন্যটায় বাধ্য হয়ে এর জবাব লিখছি।

 

প্রথম কথা হচ্ছে আরবের মানুষ কি করে আর কি না করে সেটা বাঙালী সালাফি আলেম কি করে নসিহত করতে পারে? ফিনল্যান্ডের মুসলিমরা কি করে না করে সেই নসিহত যেমন আপনাদের জামাতের লোকেরা এখানে বসে নসিহত করলে লাভ নেই তেমনি বাঙালী সালাফি আলেমরাও এখানে বসে আরবদের নসিহত করলে শুনবে না। এর কারণ হচ্ছে বাঙালী সালাফি আলেমরা হচ্ছে আরবদের আলেমদের তুলনা দুগ্ধপোষ্য শিশু। শিশুর কথা আরবের লোকেরা কেন শুনবে।

 

দ্বিতীয় কথা হচ্ছে কোনো ভালো মুসলিম অপচয় করে না, অপচয় করে বিলাসি লোকেরা। আরবের আলেমরা এসব করে না। করে জাহেলরা, আর এজন্য সালাফিদের দায়ি করার কি যৌক্তিকতা? বাংলাদেশে কি কম অপচয় হয়? এদেশের ধনীরাও অপচয় করে, মধ্যবিত্তরা আরও বেশি করে, শুধু খাওয়া না, পোশাক, লাইফস্টাইল সব জায়গায় বাংলাদেশিরা অপচয় করে, এখন কি প্রশ্ন হতে পারে না জামাতি আলেমরা কেন বাংলাদেশিদের অপচয় নিয়ে বলে না। সমস্যা হচ্ছে গরীবদের একটা বিদ্বেষ থাকে ধনীদের নিয়ে। আমাদের গরিব খ্যাতমার্কা বাংলাদেশিদের একটা বিদ্বেষ আছে ধনী সউদিদের প্রতি। এজন্য এদেশীয়রা নিজেদের অপচয় না কমিয়ে আরবদের অপচয় নিয়ে জ্ঞান দেয়। আরে, আপনি নিজে ফকিরের বাচ্চা হয়েও যে পরিমাণ অপচয় করেন আরবরা ধনী হয়ে যা করে সেটা আপনার তুলনায় কম। কারণ একজন ধনী অপচয় করলে সেটা মানা যায়, কিন্তু ফকির অপচয় করলে মানা যায় না। এজন্য বিবাহিত জেনাকার আর অবিবাহিত জেনাকারের শাস্তি আলাদা। কারণ যে বিবাহ করে নি তার দ্বারা এটা স্বাভাবিক, এজন্য তার কম শাস্তি। একজন ধনী অপচয় করলে যত গুনাহ এর চেয়ে একজন গরীব করলে বেশি গুনাহ। অথচ প্রশ্ন কি আসে না জামাতিরা বাঙালিদের মধ্যবিত্তদের অপচয়ের বিরুদ্ধে কেন কথা বলে না?

 

তৃতীয় এবং শেষ কথা হচ্ছে, সালাফিদের প্রতি বিদ্বেষ বাদ দিয়ে ইনসাফের সাথে সমালোচনা করেন। অপচয়কে যেভাবে শিরক বানালেন, এটা তো নিশ্চিতভাবেই পথচ্যুতি। এজন্যই জামাতিদের আকিদার জ্ঞান জরুরী। সামান্য গুনাহকে শিরক বলাটা আকিদার কত বড় গোল্ড সেই জ্ঞান কি তাদের আছে? শিরক হচ্ছে সবচেয়ে বড় অপরাধ। শিরক করলে নিশ্চিত জাহান্নামি, কোনো ক্ষমা নাই, আর এই জামাতি ভাইয়ের ভাষায় শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করলে সব পাপই নাকি শিরক। জাহেল আর কাকে বলে! আল্লাহ এদের হেদায়েত দাও। আর বিদ্বেষ দূর করে এদের ইনসাফ স্থাপনের তৌফিক দাও।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ঊনত্রিশ

 

মুজাহিদ ও শাহাদাৎ পিয়াসীদের আমার আজব লাগে। তারা যেন জীবন্ত শহীদ হয়ে ঘুরে বেড়ায়, তাদের দেহ যেন এখানে আর মন জান্নাতে হুরদের সাথে। সেই মানুষের অবস্থা কেমন থাকে, আচরণ কেমন থাকে যে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নেয়, যে অধীর অপেক্ষায় আগ্রহ করে কখন শহীদ হবে এবং আল্লাহকে বলবে, হে আল্লাহ, আমাকে দুনিয়ায় আবার পাঠাও, আমি তোমার পথে আবার শহীদ হতে চাই। আল্লাহ আমাদেরকেও জিহাদপ্রেমি, জিহাদি, জিহাদের পথিক, মুজাহিদ, মুজাহিদদের সাহায্যকারী, মুযাহিদদের জন্য দোয়াকারী বানিয়ে দিন। আমীন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ত্রিশ

 

আমাদের ফেসবুক যুগের ইতিহাস।

 

ইন্টারনেট আসার পর থেকেই ব্লগগুলো ছিল নাস্তিকদের চারণভূমি, তারা সংঘবদ্ধভাবে বাংলা ভাষায় পুরো ইন্টারনেট জগতকে ইসলামবিদ্বেষ দিয়ে বিষাক্ত করে তুলেছিল। সেই সময়টায় নাস্তিকদের ব্লগগুলোই ছিল বাংলা ভাষায় লেখালেখির একমাত্র জায়গা। ফেসবুক তখন লেখালেখির জন্য মোটেও ব্যবহার হত না। কোনো মুসলিম ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে করতে ভুলক্রমে একবার যদি কোনো ব্লগে ঢুকে যেত তার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসতো, এতো বাজে অবস্থা ছিল সেই ব্লগযুগে। তখন মুসলিমরাও যে ইন্টারনেটে ছিল না তা কিন্তু না। কিন্তু অধিকাংশই তখন অনলাইনে নিয়মিত হওয়া বা লেখালেখি করে নাস্তিকদের জবাব দেয়া বা ইসলাম প্রচার করা কোনোটাতেই আগ্রহি ছিল না। ব্লগে ব্লগে নাস্তিকদের এই নাস্তিক্যবাদের প্রচারণা ও ইসলামবিদ্বেষ তাদের দল ক্ষুদ্র সময়ে ভারি করেছিল, এবং অনেক শিক্ষিত মানুষকে বিভ্রান্ত করেছিল। এর কারণ ছিল অনলাইনে ইসলাম নিয়ে বাংলা ভাষায় তেমন কোনো কন্টেন্ট ছিল না। ব্লগযুগ ১৩ এর আগে পরে হয়তো সমাপ্ত হয় কিন্তু শাহবাগের নাস্তিক্যবাদি আন্দোলনের পিছনে এই ব্লগযুগের বিরাট ভূমিকা ছিল।

 

১৩ এর আগে ব্লগযুগেই ইসলামের পক্ষে লেখালেখি শুরু হয়ছিল কিনা তা আমার জানা নাই, হয়তো বিচ্ছিন্ন ভাবে কেউ লিখত বা নাস্তিকদের ব্লগের কমেন্টে জবাব দিত, কিন্তু নিয়মতান্ত্রিক ধারায় ব্লগযুগে ইসলামপন্থীদের তেমন দেখা যায় না। আস্তে আস্তে ইন্টারনেট ব্যবহারকারির সংখ্যা বাড়তে থাকলে ব্লগযুগের পরিসমাপ্তি ঘটে এবং শুরু হয় ফেসবুক যুগ। ফেসবুকে ইসলাম নিয়ে লেখালেখি ফেসবুক বাংলাদেশে আসারও অনেক পরে শুরু হয়। ফেসবুকও যে লেখালেখির মাধ্যম হতে পারে সেই যুগে হয়তো চিন্তাও করা যেতো না। অথচ আজ ফেসবুক হয়ে উঠেছে বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় পাবলিক পার্লামেন্ট, সবচেয়ে বড় মিডিয়া, সবচেয়ে বড় আলোচনাসভা। এই ফেসবুক আজ কাউকে উপরে উঠাচ্ছে তো অন্যকে নিচে আছড়ে ফেলছে। এক কথায় ফেসবুক মানুষের বাস্তব জীবন বাদে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ জীবন হয়ে উঠেছে।

 

কিন্তু ফেসবুক বাংলাদেশে আসার পর এই নিয়ে তেমন মাতামাতি ছিল না, ধীরে ধীরে মানুষ আসতে শুরু করে, আর এখন তো এটা এডিকশন হয়ে গেছে। আমার ধারণা ২০১০ এর পরে ধীরে ধীরে বেড়েছে, আর ২০১২ কিংবা ১৩ এর পরে প্রচুর মানুষ ফেসবুক আসতে শুরু করে। আর এখন তো বাংলাদেশের অনলাইন জগতে বিচরণকারী খুব কম মানুষ আছে যার ফেসবুক নাই।

 

ব্লগযুগে নাস্তিকদের ইসলামবিদ্বেষী কার্যক্রমের জবাব দেয়া শুরু হতে হতে ফেসবুক যুগ এসে পড়ে, আর ফেসবুক যুগেই জবাব দেয়া শুরু হয় এবং বিকাশ লাভ করে। অর্থাৎ বোঝা যাচ্ছে আমরা মুসলিমরা কতটা অলস, ইসলাম নিয়ে কতটা অনাগ্রহি এবং কতটা গাইরাতহীন। ব্লগযুগের জবাব দিচ্ছি ফেসবুক যুগ। কচ্ছপও তো এতো স্লো না।

 

যাই হোক, ব্লগে যে একেবারে মুসলিম ছিল না, তা না। বিবাহিত লালসালু নিকে একজন ছিলেন যিনি এখনো ফেসবুকে আছেন, অনেকেই ছিলেন নামে বেনামে, সবার নাম তো জানি না, মুনিম সিদ্দিকি ছিলেন, এখনো উনি ফেসবুকে আছেন। উনি নিজেই স্বীকার করেছেন, তখনকার সময়ে উনারা যে খুব ভালো মুসলিম ছিলেন মানে প্রাক্টিসিং, তা কিন্তু না, দাড়ি টুপি তাদের কারোরই ছিল না। তবে মুসলিম পরিচয় ছিল, আর মনের গহীনে ইসলাম নিয়ে ছিল একটু ভালোবাসা। সেই ভালোবাসাই তাদেরকে বাধ্য করে নাস্তিকদের এসব কার্যকলাপের প্রতিবাদ করতে। তারা তাদের ইসলাম নিয়ে ভাসা ভাসা জ্ঞানের উপর নির্ভর করে নাস্তিকদের জবাব দিতে শুরু করে। মুনিম সিদ্দিকে ক্ষোভ করে বলেছিলেন, তখন কোনো আলেম উলামা আসে নি, যখন নাস্তিকরা মানুষকে বিভ্রান্ত বানাচ্ছিল, অথচ আজ তারা এসে আমাদের বলছে ইসলাম নিয়ে আমরা কথা বলতে পারবো না। মুনিম সিদ্দিকি সাহেবের এই কথার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাই না, বরং বোঝাতে চাচ্ছি তখনকার অবস্থা।

 

ব্লগযুগের একেবারে শেষের দিকে মুসলিমরা নিজেদের দ্বীনের প্রতি ভালোবাসা রেখে নাস্তিকদের জবাব দেয়ার উদ্দেশ্যে প্রথম একটি ব্লগসাইট খুলে, যেটার নাম হচ্ছে সদালাপ। এই হচ্ছে সদালাপের এড্রেস - shodalap.org । তখনকার সদালাপে এস এম রায়হান, শামস, সাদাত, শাহবাজ নজরুল, ফুয়াদ দীনহীন, আসম জিয়াউদ্দিন, কিংশুক, করতোয়া, মুনিম সিদ্দিকী, আবদুস সামাদ, সরোয়ার, ইমরান হাসান, তামীম এরকম কিছু ব্লগারের নাম পাওয়া যায়। এখানের অনেকেই ছিল ছদ্মনামে। শাহবাজ নজরুল, সাদাত, ফুয়াদ দীনহীন, এস এম রায়হান খুবই ভালো লেখতেন। এরাই ছিলেন নাস্তিকদের জবাব দেয়া ইন্টারনেট প্রথম মুসলিম লেখকগণ। এগুলা একটা ইতিহাসের অংশ যা পরবর্তীতে ইন্টারনেট জগতে বিপ্লব সৃষ্টি করেছে। এখন তো অবস্থা মুসলিমদের কত অনুকূলে, কিন্তু সেই সময়টায় কলম ধরার মত কেউ ছিল না।

 

বাংলাদেশে তো নাস্তিক বেশি না, কিন্তু ব্লগযুগ তাহলে এতো জমজমাট কেন ছিল, এটা প্রশ্ন হতে পারে। এর উত্তরে আমি নিজের মত করে বললে, নাস্তিকদের সেই সময়কার প্রচারণা অনেক নাস্তিকদের জন্ম দিয়েছিল। যাদেরকে বিভ্রান্ত করে নাস্তিক বানানো হয়েছিল তারা ছিল সাধারণ সেকুলার, অনেকে কবি সাহিত্যিক। এই সেকুলারদের ইসলাম নিয়ে চুলকানি তো কারো অজানা নয়। কিন্তু এই সেকুলারদের যখন নাস্তিক্যবাদে দীক্ষিত করা হয় একেক জন সেকুলার হয়ে উঠে ইসলামের বিরুদ্ধে একেকজন ফেরাউন, নমরুদ, যেন এদের জীবনের একমাত্র ইচ্ছা একমাত্র স্বপ্ন ফেরাউন, নমরুদ, আবু জাহালের মত ইসলামের দুশমন হবে। হয়তো কেউ কেউ ব্লগে কবিতা গল্প চর্চা করতো, কিন্তু সঙ্গদোষে লোহা ভাসার মতোই এরাও কবিতা গল্প ছেড়ে ইসলামের বিরুদ্ধে কলমযুদ্ধ করাই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য নির্ধারণ করে ফেলে। এই হল আমার মতে ব্লগযুগে নাস্তিক বৃদ্ধির হাকিকত। আমার কথার সত্যতার জন্য আমি দলিল হিসেবে শাহবাগ আন্দোলনকে দেখাতে পারি। শাহবাগ আন্দোলনে এতো শাহবাগি আসলো কোথা থেকে? এটা শুরু করেছিল নাস্তিকরা, আর সেকুলাররা ছিল এদের জনবল, এই দেশে নাস্তিকের সংখ্যা কম হলেও, সেকুলারদের সংখ্যা কম না। পরে অবশ্য শাহবাগ আন্দোলনে আওয়ামী হারামীরা যোগ দিয়ে আরও ভারি করে তুলে। সেকুলাররা ভিতরে ভিতরে একজন নাস্তিকের চেয়ে কোনো অংশে কম না এইটা আমি প্রায়ই বলি। শুধু উভয়ের বমি উগরানোর পদ্ধতি আলাদা। নাস্তিকরা গালাগালি করে, ইসলামকে আক্রমণ করে, আল্লাহ ও আল্লাহর নবীকে আক্রমণ করে; আর সেকুলাররা সরাসরি ইসলামকে আক্রমণ না করে ইসলামের বিভিন্ন বিধি বিধানের সমালোচনা করে, যেমন পর্দা হিজাব, দাড়ি টুপি, মাদ্রাসা আলেম হুজুর, আরব সৌদি পাকিস্তানী ইত্যাদি দেশের মুসলিমদের, ইসলামী আন্দোলনের সাথে জড়িত মানুষদের ইত্যাদি ইত্যাদি। এইজন্য সেকুলারদের বলি মুনাফেক, আর নাস্তিকরা তো এমনিতেই মুরতাদ/কাফির।

 

অনেক মধ্যপন্থী সেকুলারের পাক্কা নাস্তিক হওয়ার পথটা ছিল জামায়াত-বিরোধিতা থেকে। রাজাকার শিবির ছাগু ইত্যাদি গালিগালাজ করে বিরোধিতা করতে করতে ইসলামবিরোধিতায় কখন যে ডুবে যায় তারা নিজেরাও হয়তো বুঝতে পারে নি। এরাই শাহবাগে গিয়ে নিজেদের দেশপ্রেম জাহির করতো, দাড়ি টুপিকে অপমান করে, ইসলামী আন্দোলনকে এবং ইসলাম কায়েমকে ঘৃণা করার মাধ্যমে। এগুলো তাদেরকে কাঁচা নাস্তিক থেকে পাকা নাস্তিকে পরিণত করে।

 

ব্লগযুগে নাস্তিকদের ইসলামবিদ্বেষ যে শুধু নাস্তিক বাড়িয়েছে তা না, অনেক মুসলিম যারা ইসলামচর্চায় নিয়মিত ছিল না তারা এইসব বাজে জিনিস দেখে বিপরীত ক্রিয়া হয়ে ভালো মুসলিম হয়ে গেছে। এরকম ঘটনাও আছে। অনেকে আবার জবাব দেয়া শুরু করে ভালো মুসলিমে পরিণত হয়, ইসলাম পূর্ণ ভাবে অনুসরণ শুরু করে, হয়তো আগে নামকাওয়াস্তে মুসলিম ছিল।

 

বলছিলাম, ব্লগযুগ যখন শেষের দিকে তখন সদালাপে মুসলিমরা জবাব দেয়া শুরু করে। অনেকে আবার ফেসবুকে প্রথম প্রজন্মে এগুলোর জবাব দিতে থাকে, কিন্তু সত্যি কথা হচ্ছে এরা যে পরিমাণ ভালো লেখক ছিল এখনকার লেখকদের সাথে এদের তুলনাই চলে না। আগের লেখকদের লেখার মধ্যে আলাদা একটা ব্যাপার ছিল, হয়তো লেখকের মনের ভেতর থেকে কথাটা আসতো। নাস্তিকদের ইসলামবিদ্বেষে তাদের মধ্যে কতটা প্রতিক্রিয়া হলে জবাবি লেখাগুলো পাঠককে এতো বেশি নাড়া দিত, বোঝানো সম্ভব না! একটা আলাদা স্বাদ পাওয়া যেত।

 

মুসলিমরা এ ব্যাপারে সচেতন হতে হতে ততদিনে ব্লগযুগ শেষ হয়। শুরু হয় ফেসবুক যুগ। ইসলাম নিয়ে ধীরে ধীরে লেখালেখি শুরু হয়। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ইসলামী সার্কেল গড়ে ওঠে। সবচেয়ে ভালো বিষয় ছিল, তখন কোনো দলাদলি ছিল না। কে হানাফি, কে আহলে হাদিস, কে জিহাদি, কে জামাত এগুলা কারো মধ্যেই কাজ করতো না। যে যার মত লিখত। যে যার দল মতের প্রচার চালাত, কোনো ঝগড়াঝাটি হত না, এবং ভিন্ন দলের মুন্ডুপাতের প্রবণতাও ছিল না। এগুলা পরে শুরু হয়। জামায়াতের সমর্থকরা সাইদির ছবি দিয়ে পোস্ট করতো, আওয়ামী লীগের সমালোচনা করতো। জেনারেল লাইন থেকে হেদায়েত পাওয়া ভাইয়েরা ইসলাম নিয়ে হৃদয় ছোঁয়া পোস্ট দিতেন। সেই সময়কার লেখাগুলার কোনো তুলনা এখন আর পাওয়া যায় না। অনেকে নাস্তিকদের জবাব দিতেন। ফারাবি শফিউর রহমান ছিলেন সেই যুগের আরিফ আজাদ। তিনি নাস্তিকদের জবাব দিতে থাকতেন, এবং পরে এক মুশরিক নামধারী শাতিম কতল হলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এখনো কারাগারে আছেন, বোধহয় কিছুদিন আগে তার মুক্তির নিউজ দেখেছিলাম, আমার ঠিক স্মরণে নেই।

 

ফারাবি শফিউর রহমানের মত অনেকেই নাস্তিকদের জবাব দিতেন, অনেকে ছদ্মনামে লেখালেখি করতেন। সিরিয়ায় আইএসের উথান হলে সারা বাংলাদেশের মুসলিমদের মনে আশার সঞ্চার হয়। অনেক ইসলামপন্থী তখন তাদের সমর্থন জানিয়েছিলেন। ফেসবুকেও অনেকে তখন আইএসের সমর্থক হয়ে প্রচারণা চালাত, অনেকে ফেক আইডি ব্যবহার করে জিহাদি পোস্ট দিত। কিন্তু ধীরে ধীরে আইএসের আসল রুপ প্রকাশিত হলে সবাই আইএসকে সমর্থন করা বন্ধ করে, অনেকে আবার কোনো দীনী কারণে না, জাস্ট মিডিয়ার প্রোপাগান্ডার কারণে আইএসকে সমর্থন করা ত্যাগ করে। এরুপ সুবিধাবাদী লোককে আমরা প্রায়ই দেখতে পাই, যখন অ্যামেরিকা তালেবানের পক্ষে ছিল তখন এরা তালেবানের জিহাদ সমর্থন করতো, আর যখন অ্যামেরিকা ও মিডিয়া তাদের বিরুদ্ধে যায় তখন এরাও বিরুদ্ধে যায়। যেন এদের মানহাজি অবস্থান মিডিয়া আর অ্যামেরিকার উপর নির্ভর করে।

 

অল্প সময়ই অবশ্য সবার আইএসের প্রতি মোহ ভঙ্গ হয়। কিন্তু সত্য কথা হচ্ছে তখন আইএস মুসলিমদের মনে আসলেই আশার সঞ্চার করেছিল। আর এটাও স্বাভাবিক যে খিলাফাহ মুসলিমদের অনেক আকাঙ্ক্ষিত বিষয়। তাই প্রথম প্রথম আইএসের কার্যক্রম যেকোনো মুসলমানের জন্য অনেক খুশির বিষয় ছিল। অবশ্য অল্প সময়ই তাদের মুখোশ খুলে যায়।

 

২০১০ এর পরে ফেসবুকে অনেকে আসতে থাকে, আর ২০১২-১৩ এর পরে এটা খুব দ্রুত গতিতে হয়। অবশ্য এই তথ্যের পিছনে আমার কাছে কোনো জরিপের রেফারেন্স নেই। শুধু এ ব্যাপারে বলতে পারি, অনেককেই বলতে শুনবেন তাদের ফেসবুকে আসার সময়কাল ১২,১৩,১৪ এর দিকে। যারা তখন ইসলাম নিয়ে লিখতেন তাদের অনেকেই এখন হয়তো লিখেন না, অনেক দীনী ভাই বিয়ে করে পুরোদস্তুর সংসারী ও কর্পোরেট লাইফ গ্রহণ করে। অনেকে বেনামে লিখত, লেখা ছেড়ে দিয়েছে। কারণ এখন এতো লেখক, যে ভালো লেখা পড়ার কেউ নেই, সবাই লেখে। ২০১৩ এর আগে পরে অনেক জেনারেল লাইনে ভাইয়েরা ইসলামে আসে। এরাই মূলত লিখতেন, তখনও তেমন কোনো আলেম লেখক ছিল বলে মনে পড়ে না, অর্থাৎ ২০১৩ এর আগে।

 

সেই সময়টায় আমিন পার্টির পাশাপাশি জামায়াতের সমর্থকদের প্রচুর ভিড় ছিল। এদের একমাত্র কাজ ছিল সাইদির ছবি পোস্ট করা, তার মুক্তির জন্য আন্দোলনের ভার্চুয়াল ডাক দেয়া, সরকারের ভালো মন্দ সব কাজের বিরোধিতা করা।

 

সময় গড়িয়ে যায়। ফেসবুকে মুসলিমের সংখ্যা বাড়ে। ভালো লেখক কমে যায়। চিন্তা করার মত লোকেরা হয়ে পড়ে সংখ্যালঘু, দলাদলি করার লোক হয়ে পড়ে বেশি। একদিকে আহলে হাদিসরা হানাফিদের বিরুদ্ধে জিহাদ শুরু করে, অন্যদিকে জামাতিরা শুরু করে চরমোনাইয়ের বিরুদ্ধে। শুরু হয় ফেসবুকিয় মারামারি কাটাকাটি হানাহানি দাপাদাপি। সবার সবার গর্দান ফালাতে কীবোর্ড নিয়ে প্রস্তুত। অথচ ফেক আইডি দিয়ে যার গর্দান নামানোর ইচ্ছা করা হচ্ছে তার পাশেই হয়তো জামাতে একসাথে নামায পড়ছে। এভাবেই ফেসবুক মুসলিমদের করে তোলে অসহনশীল, দলান্ধ। আগে যদি শুধু দলীয় প্রচারণা চলত, তো সময়ের আবর্তনে শুরু হয় ভিন্ন দলের বিরুদ্ধে জিহাদ। আর এগুলো মুসলিমদের নষ্ট করে দেয়, ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বকে বিনষ্ট করে। স্পষ্ট মনে আছে কয়েক বছর আগেও এগুলা এতো বেশি ছিল না। তবে আহলে হাদিস-হানাফি এবং দেওবন্দি-জামাতি মারামারিটা ছিল ফেসবুক যুগে মুসলিমদের প্রথম দলাদলি। আহলে হাদিসরা ১৩ এর পরে খুব সক্রিয় হয়। অনলাইন তাদের মানহাজ প্রচারের প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার হয়। এদের সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে হানাফি-সালাফি ফেসবুক সিভিল ওয়ারও ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। এগুলো মুসলিমদের জন্য কতটা ক্ষতিকারক হয়েছে তা চিন্তা করার মত না। ফেসবুককে বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে ব্যাবহারের পথে এসব বাধা হয়ে দাঁড়ায়। অবশ্য তখনও জিহাদি-মোডারেট দ্বন্দ্ব শুরু হয় নি। জিহাদিরা ছিল প্রচুর, মোডারেট চিন্তারও অনেকে ছিল, এই দীনী সার্কেল একসাথে থেকেও ঝগড়ায় লিপ্ত হত না। এগুলা শুরু হল মাত্র এক-দুই বছর হবে হয়তো। মোডারেট শব্দটা তখন পরিচিতও ছিল না। এখন যারা জিহাদি আর মোডারেট নাম দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে, এদের অনেকেই এক সময় ফ্রেন্ড লিস্টে ছিল, একে অন্যের পোস্টে কমেন্ট করতো। সবার উদ্দেশ্য ছিল একটাই সেকুলারদের বিরুদ্ধে অর্থাৎ সকল কাফির ও ইসলামের দুশমনের বিরুদ্ধে একাট্টা থাকা। জিহাদি-মোডারেট দ্বন্দ্বকে উস্কে দেয়ার পিছনে দুই বছর আগে ফেসবুকে আসা এক সদ্য ফারেগ হওয়া তালেবুল ইলম এবং বর্তমানে আলিম হিসেবে পরিচিত এক যুবকের বিশেষ ভূমিকা ছিল। তার নাম উল্লেখ করছি না, আলোচনায় আসবে সামনে।

 

এইবার আর ইতিহাস বিবৃত করব না। বর্তমানের ফেসবুক অবস্থা নিয়ে আলোচনা করব।

 

২০১৭ সালে আরিফ আজাদ তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। এবং গত দুই বছরে তা অনেক বেড়েছে। তিনি এক সময় উকিল চাচা ম্যাট্রিক পাশ নামে জনপ্রিয় ফেসবুকার ছিলেন। প্রথমে সম্ভবত জামাত সমর্থক ছিলেন। তার ঐ আইডির পোস্টগুলাও ছিল সরকারবিরোধী। তিনি তখন পূর্ণ ইসলাম চর্চা যে করতেন তা না। এটা তিনি স্বীকারও করেছেন যে নাস্তিকতাবাদ বিরোধী লেখা লিখতে লিখতে তিনি হেদায়েত লাভ করেন। ২০১৮ পর্যন্ত তিনি সবার কাছে প্রিয় ছিলেন। কিন্তু শরীফ আবু হায়াত অপু ভাইদের সাথে মিশ্তে মিশ্তে আহলে হাদিস সার্কেলে ঢুকে গিয়ে তিনি আহলে হাদিস হয়ে যান। তবে ওইসব আহলে হাদিসদের মত না যাদের কাজ দলাদলি করা আর মাযহাব বিদ্বেষ ছড়ানো। অপু ভাইও তেমন আহলে হাদিস না। তবু তার আহলে হাদিস মানহাজে দীক্ষিত হওয়াটা তার জনপ্রিয়তার জন্য কল্যাণকর ছিল না। তিনি একসময় দল মত নির্বিশেষে সকল দলের কাছে যে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিলেন তা তিনি ধীরে ধীরে হারাতে শুরু করেন। তার বই ছিল মুসলিমদের ঐক্যের নিদর্শন, অথচ তিনি আহলে হাদিস হয়ে এই ঐক্য বিনষ্ট করেছিলেন। অবশ্য তিনি যে আহলে হাদিস হয়েও মাযহাবের বিরুদ্ধে জিহাদ শুরু করেন নি এটাই একজন আহলে হাদিসের কাছ থেকে উম্মাহর জন্য সবচেয়ে বড় উপহার। এর চেয়ে বড় খেদমত একজন আহলে হাদিস থেকে আর হতে পারে না। সম্ভবত তাকে সালাফিয়্যাতে দীক্ষিত করার পেছনে মঞ্জুরে এলাহি সাহেবের ভূমিকা ছিল। আল্লাহু আ'লাম।

 

আরিফ আজাদ গ্রাম থেকে আসা খুবই সাধারণ ঘরের ছেলে ছিলেন, এটা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে পড়তেন। আরিফ আজাদের জনপ্রিয়তা পাওয়াটা সত্যিই বিস্ময়কর ছিল। এরকমভাবে জনপ্রিয়তা পাওয়া, তাও আবার ইসলামী কাজ করে, এটা খুবই আশ্চর্যজনক বিষয়। আল্লাহর দয়ায় তা কল্যাণকর বলে প্রতীয়মান হয়েছে। আরিফ আজাদের ইসলাম নিয়ে লেখালেখি ইন্টারনেট জগতে মুসলিমদের মধ্যে এক বিপ্লব ঘটিয়ে দেয়। সে সময় দেখেছিলাম জামাতি, সালাফি, দেওবন্দি, রেজভি, জিহাদি নির্বিশেষে সকলে আরিফ আজাদের বইয়ের প্রচারণা চালাচ্ছে। যখন তার বই বইমেলায় হৈচৈ ফেলে দিল, সবাই এই ইস্যুকে জাগিয়ে তুলে আরিফ আজাদকে জনপ্রিয় করে তুলল। আর তার নাস্তিকতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম বহু মুসলিম যুবককে অনুপ্রাণিত করল। জাকির নায়েকের বক্তৃতা যেভাবে যুবসমাজকে তার মত দাঈ হওয়ার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল, আরিফ আজাদও বাংলাদেশে জাকির নায়েকের মত বহু মুসলিম যুবকের লেখালেখির আইডল হয়ে উঠে। অথচ সত্য কথা হল, আরিফ আজাদ কোনো আহামরি লেখক ছিলেন না, তার বইটাও ছিল সাদামাটা। এর চেয়ে কঠিন ভাষায় নাস্তিকতার খণ্ডন করা বইগুলোকে পিছনে ফেলে সবচেয়ে সহজ এবং সর্বনিম্নস্তরের যুক্তিতে খণ্ডন করা এই বইটা তুমুল জনপ্রিয় হল, সবই আল্লাহর ইচ্ছা। আল্লাহ ক্ষুদ্র মশা দিয়েও জালিমকে ধ্বংস করতে পারেন।

 

আরিফ আজাদ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে বের হতে থাকলে একের পর এক নাস্তিক্যবাদ খণ্ডন করা মাস্টারপিস বইগুলো। এর মধ্যে ডাবল স্ট্যান্ডার্ড হচ্ছে একটা ইতিহাস সৃষ্টি করা বই। যদিও এখনো এটা বিভিন্ন কারণে আশানুরূপ জনপ্রিয় হয় নি, তবে কালের আবর্তনে এটা অনেক বেশি গুরুত্ব নিয়ে হাজির হবে বলে আশা করি।

 

আরিফ আজাদের মত লেখক তৈরি হয়েছে ফেসবুকে। তিনি নিজেই বলেছেন তার বইয়ের সবগুলো লেখা তিনি টাইপ করেছেন মোবাইলে। তার লেখা পোস্টগুলা বই হবে আর বই যে তুমুল জনপ্রিয় হবে এবং এটা একটা বিপ্লব ঘটাবে লেখার সময় আরিফ আজাদ কস্মিনকালেও ভাবে নি। আল্লাহর পরিকল্পনাই শ্রেষ্ঠ।

 

আরিফ আজাদ নাস্তিকতার বিরুদ্ধে তিনটি জবরদস্ত বই লিখেছেন, দুইয়ের অধিক বই সম্পাদনা করেছেন, এবং ইসলামী লেখক তৈরিতে তিনি সবাইকে উৎসাহ দিয়েছে। একই সাথে বই লেখা ও ফেসবুক এক্টিভিটি চালিয়ে গেছেন। ফেসবুকে তার আরেকটি বড় অবদান হচ্ছে তিনি পাঠাভ্যাস গ্রুপ খুলেছেন যেটা ইসলামী বইয়ের গ্রুপ হিসেবে সবচেয়ে জনপ্রিয় দুইটির একটি। এই গ্রুপ ইসলামী বইয়ের প্রচারণায় বড় ধরণের ভূমিকা রাখে। এছাড়াও তিনি হালাল রুজির খোঁজে, তাদাব্বুরে কুরআন নামেও গ্রুপ খুলেছেন। হালাল রুজির খোঁজে গ্রুপটা এখন আর তেমন একটিভ না। তাদাব্বুরে কুরআন হচ্ছে আরিফ আজাদের কুরআনি ভাবনা শেয়ার করার গ্রুপ। এখানে অনেকেই কুরআন নিয়ে লিখছে, জানছে আলহামদুলিল্লাহ।

 

তবে আরিফ আজাদের পাঠাভ্যাস গ্রুপটা অনেক বেশি খেদমত আঞ্জাম দিচ্ছে। যদিও গ্রুপের কর্তৃপক্ষ গ্রুপটা ভালো করে চালাতে পারে না। একটা পোস্ট করলে এপ্রুভ করতে অনেক সময় পার করে ফেলে। আর বইয়ের অনলাইন শপগুলা ইচ্ছামতন কমেন্টে চিকা মারে। অথচ আরেকটা ইসলামী বইয়ের গ্রুপ যেটা শোয়াইব আহমেদ ভাইয়েরা চালায়, খুবই ডিসিপ্লিনড গ্রুপ, এটার আলাপ সামনে আসবে। পাঠাভ্যাস গ্রুপ সমকালীন প্রকাশনীর গ্রুপ হিসেবে ব্যবহার হয় এক প্রকার। এটার এডমিনদের মধ্যেও সমকালীনের কর্তৃপক্ষ আছে।

 

আরিফ আজাদ ছাড়াও নাস্তিকতা নিয়ে অনেকে লিখতেন এবং এখনো অনেকে লিখছেন। এখনো সবচেয়ে একটিভ হয়ে যিনি নাস্তিকতার বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে কাজ করছেন তিনি হচ্ছেন সম্মানিত ভাই মোহাম্মদ মুশফিকুর রহমান মিনার। তিনি কুয়েটের ছাত্র ছিলেন। অন্ধকার থেকে আলোতে নামে তার একটি বই দুই খণ্ড বেরিয়েছে। তিনি নাস্তিক ও অমুসলিমদের ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিয়ে থাকেন এবং এ বিষয়ে response-to-anti-islam.com নামে একটি ওয়েবসাইট পরিচালনা করেন। মিনার ভাইয়ের জ্ঞান ও প্রজ্ঞা অবাক করার মত। তিনি তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের উপর ভালো জ্ঞান রাখেন, বাংলাদেশে এই বিষয়ে তার মত জ্ঞান রাখা মানুষ খুব কম আছে। আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গির রহঃ এই বিষয়ক জ্ঞান রাখতেন, গবেষণা করতেন, মিনার ভাইও স্যার রহঃ এর ভাবশিষ্য। আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গির স্যারের মতই মিনার ভাইও সালাফি আকিদার অনুসরণ করেও কট্টর সালাফি না। তিনি তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব ছাড়াও ইসলামী ধর্মতত্ত্বেও ভালো জ্ঞান রাখেন, আকিদা ও ইতিহাস সম্পর্কেও তিনি জ্ঞান রাখেন। শিহাব তুহিন ভাই মিনার ভাইকে তার জ্ঞান গরিমার জন্য গুরু মানেন, যদিও মিনার ভাই শিহাব ভাইয়ের থেকে অল্পই সিনিয়র। আল্লাহ মিনার ভাইকে তার কাজের উত্তম বিনিময় দান করুন। তিনি আমাদের একজন রত্ন।

 

একবার অবশ্য আশারি মাতুরিদি আকিদার অনুসারি আলি হাসান উসামার সাথে সালাফি আকিদার অনুসারি মিনার ভাইদের তর্ক হয়েছিল, ফলে একে অন্যকে আনফ্রেন্ড করেছিলেন, এই ঘটনা ঘটেছিল তখন যখন আকিদা নিয়ে ফেসবুকে দীনী ভাইদের মধ্যে বিতর্ক শুরু হয়। একদিকে আশারি মাতুরিদি আকিদা অন্যদিকে সালাফি আকিদা। সালাফি আকিদার লোকেদের দাবি, আমরা কোনো মাযহাবের বিরুদ্ধেই বলি না, কিন্তু সালাফি আকিদার বাহিরে অন্যসব আকিদা বিদাতি। আর এর ফলে অনেকেই আশারি মাতুরিদি আকিদার ডিফেন্ডে কলম ধরে।

 

এবার একজন শক্তিমান লেখকের কথা বলব, তার নামও শক্তি, পুরো নাম শামসুল আরেফিন শক্তি, পেশায় ডাক্তার। একজন জবরদস্ত লেখক। তুলনা করলে আরিফ আজাদ কিংবা যে কোনো বাঙালী লেখকের চেয়ে অনেক শক্তিশালী লেখক। তিনি লেখক হিসেবে কড়ড়া হলেও ফেসবুক এক্টিভিস্ট হিসেবে তেমন নন। অবশ্য ফেসবুকে তিনি অন্যদের তুলনায় একেবারেই নতুন, মানে লেখালেখিতে। তিনি আগে ছাত্রলীগ করতেন। পরে তাবলীগের মাধ্যমে হেদায়েত। এভাবেই লীগ সবসময় তার সাথে জড়িত থাকে। তার ফেসবুকে একমাত্র কাজ বিভিন্ন খাবার ও রান্নার ভিডিও শেয়ার করা বা বিদেশি শিক্ষামূলক ভিডিও শেয়ার করা, আর মাঝেমাঝে কিছু দারুণ পোস্ট লিখেন কখনো নোটাকারে, আবার কখনো স্ট্যাটাসাকারে। তিনি ফানি পোস্টগুলোতে বাংলা বানানের মাদারের ফাদার করে দেন। তার বানানের নমুনা অতি শুদ্ধবাদি বাঙালিদের হৃদয়ে পোচ দিয়ে গলগলিয়ে রক্তক্ষরণ করায় নিশ্চয়ই।

 

শামসুল আরেফিন ভাইয়ের প্রথম বই ডাবল স্ট্যান্ডার্ড বাংলাদেশে নাস্তিকতার খণ্ডনে শ্রেষ্ঠ বই বললে ভুল হবে না। আর সময়ের হিসেবে আরিফ আজাদের প্রথম বই প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদের পরেই এর জন্ম। এই বই তৈরির পেছনে আরিফ আজাদের অনুপ্রেরণা ছিল। শামসুল আরেফিন এরপরে আরও কিছু দারুণ বই লিখেছেন। কষ্টিপাথর, মানসাঙ্ক, কুররাতু আইয়ুন; প্রতিটাই মাস্টারপিস।

 

শামসুল আরেফিন ভাই সময় পেলেই তার সাবেক সংগঠন ছাএলীগের (ছাত্রলীগ) গুণগানের ন্যায় বদনাম করেন। তিনি তাবলীগের সাথী হওয়ায় নরম দিল, দাওয়াতি দিলের অধিকারী। উনার পিতা জনাব শহিদুল ইসলামও তাবলীগের সাথে জড়িত, দাওয়াতি দিলের অধিকারী। শামসুল ভাইয়ের আরেকজন ছোট ভাইয়ের নাম শুভ্র সালেহ, একজন বোনও আছে উনার। শক্তি ভাই বিবাহিত, তার কন্যার নাম খাদিজা। কুররাতু আইয়ুন বইয়ে একেবারে প্রথমে তার পরিবিবার সম্পর্কে ছক দিয়ে তথ্য জানিয়েছেন। তিনি উদ্ভাসে শিক্ষকতা করতেন। এখন সরকারি চাকরি করেন।

 

মাদ্রাসায় যৌন নিপীড়নের ঘটনা চাউর হওয়ার পর শামসুল ভাই মেয়েদের জন্য হোম স্কুলিং এর প্রচারণা চালান। তিনি তার মেয়ের জন্য এবং সকলকেই এই হোম স্কুলিং এ অভ্যস্ত হতে প্রচারণা চালান। এছাড়াও ফেক আইডি নিয়ে তাকে জড়িত করে কিছু ঘটনাও ফেসবুক পাড়ায় সাড়া জাগিয়েছিল। যেমন হঠাত করে বাহলুল মাজনুন নামে একটা ফেক আইডির আবির্ভাব হয় যার লেখায় স্পষ্ট হয় যে সে তাবলীগের সাথী। তার লেখাগুলোর দরদ, শামসুল ভাইয়ের লেখার দরদের সাথে মিল পাওয়া যেত। এটা অনেককেই ভাবতে বাধ্য করে যে বাহলুল মাজনুন আইডিটি শামসুল ভাইয়ের ফেকাইডি। অবশ্য শামসুল ভাইও এটা স্বীকার বা অস্বীকার কিছু করেন নি। আমার মনে হয় না বাওহ্লুল মাজুজ আসলেই শামসুল আরেফিন ভাইয়ের আইডি ছিল। কারণ উনি খুব ব্যাস্ত মানুষ, একটা ফেকাইডি চালানোর মত সময় বা ইচ্ছা কোনোটাই শামসুল ভাইয়ের সাথে যায় না। বাহলুল মাজনুন আইডির কাজ ছিল আলেমদের সমালোচনা ও সচেতন করা। এর মাধ্যমে তিনি আলেমদের উদ্দীপিত করতে চাইতেন, বিপ্লবী হতে সবক দিতেন। বাহলুল মাজনুন নিজের নামের মাধ্যমে প্রমাণ করতে চাইতেন তিনি বাহলুল পাগল। নিজেকে পাগল বলতেন, কিন্তু তার লেখাগুলো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

 

হঠাত করেই বাহলুল মাজনুন দৃশ্যপটের বাইরে চলে গেলেন, আইডি বন্ধ করে দিলেন। অবশ্য এখনো তার নামে একটা পেজ আছে। এই আইডি অল্প সময়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে অল্প সময়েই হারিয়ে যায়। এই পাগলের পাগলামিপূর্ণ লেখাগুলোতে উম্মাহর জন্য দরদ লক্ষণীয় ছিল।

 

বাহলুল মাজনুনের নিখোঁজ হওয়ারও বছর খানেক পর আরেক পাগলের আবির্ভাব হয়, মানুষ প্রথম প্রথম তাকেও শক্তি ভাইয়ের সাথে জড়িয়ে ফেলে। তার নাম মীর সালমান। যার কাজ ফেসবুকে ইচ্ছা মতন পোস্ট দেয়া। কোনো দলের পক্ষে না, কোনো মতের পক্ষে না, যা ভালো মনে হয় তার সেইভাবেই পোস্ট দিতে থাকেন, আগুন ঝরাতে থাকেন। তার কিছু লেখা নতুন করে ভাবতে শিখায়, কিছু আবার স্রেফ গালাগালি পূর্ণ লেখা। মীর সালমানকে সবাই শামসুল আরেফিন মনে করলেও মীর কিংবা শক্তি ভাই কেউই এই ব্যাপার পরিষ্কার করে নি। মীর ছিল মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করাতে ওস্তাদ। তার উদ্দেশ্যই ছিল শক্তি ভাইয়ের নাম ব্যবহার করে নিজেকে জনপ্রিয় করা। এজন্য তিনি এমন ভাবে হেয়ালি করতেন মনে হত শক্তি ভাই আর উনি একিজন। শক্তি ভাইও এগুলো ক্লিয়ার করতেন না, কারণ এটা তিনি গুরুত্বই দিতেন না। কিন্তু মানুষ তো আর সেটা বুঝত না, সবাই ভাবতো দুইজন একই। ফলে মীর ভাইয়ের গালাগালি পোস্ট গুলো শক্তি ভাইয়ের নাম খারাপ করে। এটা শক্তি ভাইয়ের চরিত্রে খুব খারাপ ভাবে দাগ কাটে। কারণ মীর ভাইয়ের কিছু আচরণ অনেক বেশি বাজে ছিল। আর মানুষ মীর সালমানকে শক্তি ভাই মনে করে গুরুত্ব দিতে থাকে। একসময় মীর তার আকাঙ্ক্ষিত জনপ্রিয়তা পায়, তখন অবশ্য স্বীকার করে উনি শক্তি ভাই নন। আস্তে আস্তে মানুষের কাছে ক্লিয়ার হয় দুই জন আলাদা। এটা আরও বেশি পরিষ্কার হয় রমজানে, কারণ রমজানে শক্তি ভাই ইবাদতে মনোযোগী হতে ফেসবুক ছাড়েন। কিন্তু মীর এই সময়ও তার ঘণ্টায় ঘণ্টায় পোস্ট আর গালাগালি বন্ধ করে না। এটা ব্যাপক ভাবে প্রমাণ করে যে দুইজন আলাদা।

 

মীর সালমান নিয়ে আরেকটু বলি। কিছু বাঙালী শিয়া আইডির প্রোপাগান্ডার মুখে তিনি শিয়াদের উপর চরমভাবে চেতেন। শুরু করেন শিয়াদের বিরুদ্ধে লেখালেখি। শিয়া চিন্তা নামে পেজ খুলেন, আহলে বাইত নামে গ্রুপ খুলেন। শিয়াদের নিয়ে একাধারে দীর্ঘদিন লেখালেখি করতে থাকেন। তার এইসব লেখা অনেক মূল্যবান এবং বই হিসেবে বের হওয়ার উপযুক্ত। নজম খান রাফেদি, মেহমেৎ মাহিন, মোহাম্মদ সালাহ, নূর হোসাইন মাজেদি এগুলো হচ্ছে কয়েকটা শিয়া আইডি। নূর হোসাইন মাজেদি একজন শিয়া লেখক এবং এক জামাতি নেতার জামাতা। নজম খান রাফেদিও নিজেদের মতবাদ সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখে, আর বাকি দুইটা নাসেবির বাচ্চা বলে গালি দেওয়া শিয়া মুরিদ। মেহমেত মাহিন ছেলেটা তো চরম লেভেলের গালিবাজ, নিজেকে আবার তাকিয়্যা করে সুন্নি দাবি করে, আবুল হোসেন আলেগাজি নামের আরেক কওমি সুন্নি লোকের ভক্ত সে, এই আলেগাজির সম্পর্কে সামনে আসবে। সে তো আরেক চিজ।

 

মীর সালমান পাশ্চাত্যবাদ নামে একটা গ্রুপের এডমিন প্যানেলে রয়েছে। তাছাড়া সে নুরুল আহাদের ইসলামী বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞানচর্চা গ্রুপেও এডমিন প্যানেলে রয়েছে। নুরুল আহাদ সম্পর্কেও সামনে আলোচনা আসবে।

 

এবার বলব আসিফ আদনানের কথা। তিনিও ২০১৩ এর পর হেদায়েত লাভ করেন। আগে তিনি গান গাইতেন। ইসলামে আসার পর তিনি ইসলামের জন্য কাজ করতে শুরু করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করেন। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সাথে তার লিঙ্ক ছিল এবং সিরিয়ায় জিহাদের জন্য গমনের পথে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে একবার নিউজ এসেছিল, সেটা অনেক আগে। তিনি তখনও জনপ্রিয় লেখক হয়ে উঠেন নি। আসিফ আদনানের পিতা একজন জাস্টিস ছিলেন। তিনিও অভিজাত পরিবারের সন্তান, ফলে কোনো উপায়ে তাকে মুক্ত করা হয়। কিন্তু তিনি মুক্তি পাওয়ার পরও নিজের আদর্শ ত্যাগ করেন নি। এবার কলম ধরে নিজের আদর্শকে প্রচার করতে শুরু করেন। তার লেখার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, খুব ইন্টেলেকচুয়াল লেখা এবং প্রচুর ইংরেজি শব্দ ও পরিভাষার ব্যবহার। আর তিনি লেখায় ব্যক্তিজীবন খুব কম আনেন বা আনেন না বললেই চলে। তিনি সম্ভবত বিবাহিত। ব্যক্তিজীবনের আলোচনা কম আনায় তার সম্পর্কে আর কিছু জানা যায় না। তবে তার লেখালেখি সব জিহাদ ও কিতালের পক্ষে। তিনি আদর্শিক ভাবে খোরাসানি মানহাজের অনুসারি অর্থাৎ তালেবান ও কায়দা সাপোর্টার। তিনি লেখক হিসেবেও খুব ভালো যেমন করে তিনি একজন ভালো চিন্তক। আল্লাহ তাকে লিখে যাওয়ার তৌফিক দিন।

 

জিহাদ, মানহাজ, কিতাল ইত্যাদি নিয়ে আরও যারা লেখেন তাদের মাঝে ইবনু মাজহার অন্যতম। মাজহার কাকুর ছেলে বয়সে অন্যদের চাইতে জুনিয়র। কিন্তু তার লেখা, চিন্তা সব কিছুই অনেকের চাইতে বেশি পরিপক্ক। তার ইন্টারের ব্যাচ ছিল হয়তো আগের বছর বা এর আগের বছর। অর্থাৎ তিনি যখন লিখতেন তখন কলেজে পড়তেন, স্কুলে থাকতে অর্থাৎ টেন বা ম্যাট্রিকের সময়তেও লিখতেন কিনা জানি না। জিহাদিদের পক্ষে তিনি সবচেয়ে জবরদস্ত লেখক। জিহাদিদের পক্ষ ডিফেন্ড করে তার মত এতো ভালো লেখক আর কেউ নেই।

 

ইবনু মাজহার জিহাদি লেখালেখি ছাড়াও সেকুলাঙ্গারদের বিরুদ্ধেও লিখেন। সেকুলাঙ্গার নামে তার একটা পেজ আছে। এপিক স্ক্রিনশট নামে আরেকটা পেজ আছে। এরকম কয়েকটা পেজ তিনি একসাথে চালান। তিনি মিম খুব দারুণ বানান। তার ফানি মিম, ট্রল পোস্টগুলাও তার লেখার মতোই দারুণ। আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও বিশ্লেষণ নিয়ে তার ভালো জ্ঞান আছে।

 

এছাড়াও ঠিক তার মতোই আরেক জন হচ্ছেন মিফতাহ আয যামান। ইনিও ইবনু মাজহারের মতই জিহাদি বুদ্ধিবৃত্তিক লেখা লিখেন, জিহাদিদের ডিফেন্ড করেন। তিনিও একজন ভালো লেখক।

 

জিহাদি এক্টিভিস্টদের মধ্যে আরও আছেন মোঃ জামশেদ হোসাইন নাম ব্যবহারকারি একজন ব্যক্তি। তিনি নিজেকে জিহাদ বিষয়ক সাংবাদিক বলেন। বিভিন্ন জিহাদি ময়দানের নিউজ প্রচার করে থাকেন। এমনিতেই মৌলিক লেখালেখি তিনি করেন না। তার আইডি পেজ প্রায়ই উধাও হয়, অর্থাৎ ডিজেবল করে দেয়া হয়, তিনি মাঝেমধ্যে জামশেদ ছাড়াও অন্য ফেক নামেও আসেন। তবে জামশেদ নামটাই তার সবচেয়ে জনপ্রিয়। তার ব্যক্তিগত পরিচয় তো জানা যায় না, তবে ধারণা করা যায় তিনি কওমি মাদ্রাসার থেকে আসা।

 

ফেক আইডি যারা চালায় তাদের পরিচয় নির্ণয় করা যায় না এটা হচ্ছে একটা সমস্যা। এজন্য এখানে একসাথে জিহাদি কয়েকটা বিখ্যাত ফেক আইডি নিয়ে আলোচনা করব।

 

মোঃ জামশেদ হোসাইন নিউজ প্রচারে জনপ্রিয় হলেও একেবারে ভেতরের লোক হিসেবে যে সবচেয়ে ভালো লিখে তিনি আব্দুল্লাহ জামিল বা জামিল হাসান নামে পরিচিত। উল্লেখ্য, ইবনু মাযহার বা মিফতাহ আয যামান এদের কাউকেই জিহাদি কোনো দলের ভেতরের লোক মনে হয় নি। জাস্ট সমর্থক মনে হয়েছে, কিন্তু জামিল হাসান বা আব্দুল্লাহ জামিল অর্থাৎ এই জামিল নামের লোকটিকে ভেতরের লোক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক লেখক মনে হয়েছে। তিনি প্রচুর লেখা লিখেছেন জিহাদের পক্ষ হয়েছে। লেখাগুলাও মানসম্মত। জামিল নাম বাদেও অন্য কি নামে তার ফেকাইডি আছে জানা নাই।

 

এছাড়াও জাফর তাইয়্যার নামে একটি আইডি আছে যিনি জিহাদি এক্টিভিস্ট। এবার একজন বিশেষ ব্যক্তির নাম বলব, তিনি হচ্ছেন আবু ইউনুস ভাই। তিনি বহু আগে জিহাদ বিষয়ক লেখালেখি করতেন, পরবর্তীতে সম্ভবত তাগুতের বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে। ফেক আইডি ছিল বলে তার সম্পর্কে আর বিস্তারিত জানা যায় নি। মিডিয়ামে তার একাউন্টে তার কিছু লেখা এখনো পাওয়া যায়। স্যার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গিরের জীবদ্দশাতেই তিনি স্যারের জঙ্গিবাদ বিষয়ক বইয়ের খণ্ডন লেখা শুরু করেছিলেন। আর আবু ইউনুস ভাই যখন লিখতেন তার বয়সও ছিল কম, তিনি তখন মাত্র ইন্টারের স্টুডেন্ট ছিলেন, কিন্তু তার লেখা মাদখালি, আর ভণ্ড সালাফিদের ঘুম হারাম করে দিয়েছিল। তিনি যেখানেই থাকুন, আল্লাহ যেন তাকে ভালো রাখেন সুস্থ রাখেন, হেদায়েতের উপর রাখেন, আর যদি বেঁচে না থাকেন, তবে আল্লাহ যেন তাকে মাফ করে দেন। আমীন।

 

আরও প্রচুর জিহাদি আইডি আছে, ছিল, কিন্তু এখন আমার আর নাম মনে পড়ছে না। একজন আছেন মাহমুদুল হাসান, তার কাজ বিভিন্ন জায়গায় কমেন্ট করা, এবং কমেন্টে প্রতি বাক্যের মাঝে এক লাইন করে ফাঁকা রাখা। এছাড়া সিফাত কালো পতাকার সৈনিক নামে যে আইডি ছিল তাকে তো জালেম বাহিনী হত্যা করে। আল্লাহ তাকে মাফ করুন। রামজি ইউসুফ, দাউদ ইব্রাহিম এরকম আরও কয়েকজন লেখক ছিলেন। তাদের অনেকে ফেসবুক ও ব্লগে লিখতেন। রামজি ইউসুফ আবার ফেসবুকে ফিরে এসেছেন, আইডি না, পেজ খুলে লিখছেন। তিনিও খুব ভালো লেখক। অবশ্য কিছু নাম অনেকেই ব্যবহার করে। যেমন বিভিন্ন মুজাহিদ ব্যক্তিত্বের নামে অনেকে আইডি চালায়, কিন্তু তাদের আসল পরিচয় জানা যায় না।

 

এবার আলি হাসান উসামা সম্পর্কে লিখবো। তিনি কওমি মাদ্রাসা ফারেগ, তলিবুল ইলম ছিলেন কিছুদিন আগেও। লেখালেখি করেন মাত্র ২-৩ বছর হবে। কিন্তু এর মধ্যে মৌলিক ৩ টি এবং অনুবাদ ৯ টি বই প্রকাশ করেছেন। সম্পাদনা করেছেন ১৭ টির মত বই, কিছু বই করেছেন শরঈ সম্পাদনা, আবার কিছু বই ভাষা ও সাহিত্য সম্পাদনা। সাহিত্যিক হিসেবে খুব ভালো লিখেন। চিন্তক হিসেবে যতটা না এর চেয়ে সমালোচক হিসেবে বেশি পরিপক্ক। আদর্শিক ভাবে তিনি জিহাদি, বিশেষ করে খোরাসানি মানহাজের, কায়দা-তালেবান সমর্থক। তবে আল কায়দা আকিদাগত ভাবে সালাফি হলেও তিনি হানাফি হিসেবে গর্বিত। এদিক দিয়ে তালেবানের সাথে তার বেশি মিল। তার লেখালেখি শুরু হয়েছিল সমালোচনা দিয়ে, প্রসিদ্ধি পান একটা বইয়ের সমালোচনা করে। ফলে সমালোচনা যেন তার অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। জিহাদি-মোডারেট বিতর্ক তার মাধ্যমেই চাউর হয়। সম্মানিত ভাইদের মোডারেট মুরজিয়া ট্যাগ দিয়ে যে চর্চা শুরু হয় তিনি এর পেছনে ভূমিকা রাখেন। এই কালো দিকগুলো ছাড়াও আলি হাসানের অনেক খেদমত রয়েছে। তিনি জিহাদ বিধানের পক্ষে কলম তুলে নেন। আল্লাহ যে জিহাদকে ফরজ করেছেন যেই জিহাদ আজ নিষিদ্ধ বিষয়ের মধ্যে গণ্য হয় সমাজ ও রাষ্ট্রের দৃষ্টিতে। তিনি সাহসিকতার সাথে এই ইলাহি বিধানের পক্ষে লেখালেখি করেন।

 

তার প্রসিদ্ধি লাভ ঘটেছিল বি স্মার্ট উইথ মুহাম্মাদ সাঃ নামের একটি বইয়ের সমালোচনা করে। মাসুদ শরীফ অনুবাদ করেন এই বইটি যার লেখক পশ্চিমা একজন মোডারেট মুসলিম, বইটি প্রকাশ করে গার্ডিয়ান। তিনি এই বইয়ের মোডারেট চিন্তার প্রচারের সমালোচনা করে রিভিউ লেখেন এবং এটা ফেসবুক পাড়ায় বেশ সাড়া জাগিয়েছিল। কিন্তু এন্টি-মোডারেটদের জন্য তা শাপে বর হয়। কারণ বইটার এতো বেশি সমালোচনা হয় যে একটা বড় ধরণের নেগেটিভ মার্কেটিং হয়ে বইটা অনেক বেশি সেল হয়। রকমারির মতে এটা ছিল আরিফ আজাদের বইয়ের পর সবচেয়ে বেশি সেল হওয়া ইসলামী বই।

 

কিন্তু আলি হাসান উসামার এই সমালোচনার প্রতিক্রিয়ায় মাসুদ শরীফ, গার্ডিয়ান ও অন্যান্য তাদের পক্ষীয় লোকদের প্রতিক্রিয়া কল্যাণকর হয় নি। একটা দীর্ঘমেয়াদি তর্ক যুদ্ধের জন্ম দেয়। তখন থেকেই মোডারেট, মুরজিয়া ইত্যাদি ট্যাগ গুলো জনপ্রিয় হয়। জিহাদি-মোডারেট যুদ্ধ তখন থেকেই শুরু হয় যা আজো চলমান। মোডারেটদের সাপোর্ট করতে একদল জামায়াতি এবং সালাফি ঘরানার কিছু মোডারেট যোগ দেয়। কিন্তু নানা কারণে মূল জামায়াত আর আহলে হাদিস-সালাফিরাও এই তর্কে জড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত যুদ্ধের সমীকরণ হয়, জিহাদিদের বিপরীতে মর্ডানিস্ট, মোডারেট, জামায়াতি (সংস্কারপন্থী+প্রাচীনপন্থী), আহলে হাদিস, কওমি (বিশেষ করে এদের মধ্যকার সেকুলার ধারা+মোডারেট ধারা) সবাই মিলে যুদ্ধে নামে। (জামায়াতিদের এতে জড়ানোর কথা ছিল না, কিন্তু গার্ডিয়ানের প্রকাশক নূর মোহাম্মদ জামায়াত সমর্থক হওয়ায় তার সাপোর্ট করতে গিয়ে তারাও জড়িয়ে যায়।) দেখা যায় যে জিহাদিদের খণ্ডনে এরা সবাই একসাথে মিলে কাজ করছে। জিহাদিদের বিরুদ্ধে তখন সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিল সাদিদ মালিক, শেখ সাদী, হাসান জামিল (শাইখ হাসান জামিল নন), সালাহুদ্দিন জাহাঙ্গির, কবির আনোয়ার আরও অনেকে। কিন্তু এদের মধ্যে দেখা যেত কেউ জামায়াতি, কেউ কওমি আবার কেউ সালাফি। এক সময় আরিফ আজাদও অধৈর্য হয়ে তর্কে জড়ায়। অথচ এটা ভ্রাতৃত্বের জন্য অনেক ক্ষতিকর ছিল। এই তর্ক যুদ্ধ অবশ্য এখন অনেক কমেছে। বিচ্ছিন্ন ভাবে এখন এসব তর্ক চলে। 

 

আলি হাসান উসামা সম্পর্কে বলছিলাম। সত্য কথা হচ্ছে সে সহনশীল না। তার জনপ্রিয়তা ভক্তকুল তার জন্য ক্ষতিকর ছিল। সে অল্প বয়সে শাইখ, আল্লামা উপাধি পেয়ে অহঙ্কারি ও উগ্র হয়ে উঠে। অবশ্যই সে ভালো আলিম, কিন্তু অহঙ্কার ও তার কার্যক্রম তার আলিমত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

 

আলি হাসান উসামা জিহাদি-মোডারেট তর্ক উস্কে দেয়ার পর যে কাজটা করেছিলেন সেটা হচ্ছে বিরোধী পক্ষের বই ধরে ধরে সেগুলোর ভুল বের করা এবং সমালোচনা করা। মাসুদ শরীফ মানহাজগত ভাবে শরীফ আবু হায়াত অপু ভাইদের কাছাকাছি ছিলেন। আর তার বই প্রকাশ হয়েছিল গার্ডিয়ান থেকে। ফলে আলি হাসান শুরু করেন গার্ডিয়ান, সিয়ান এবং শরীফ আবু হায়াত অপু ভাইদের বইগুলো সবগুলোর সমালোচনা করা। এজন্য তিনি এইসব বই কিনতেন, এবং ব্যস্ততা সত্ত্বেও পড়ে শেষ করতেন, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে ভুল বের করতেন, এবং এরপর এ নিয়ে নাতিদীর্ঘ সমালোচনামুলক পোস্ট দিতেন। এভাবে সে একদল লোকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠে আর জিহাদি বাদে সকল দলের কাছে শত্রু হয়ে উঠে। ইসলামী ঐক্য নষ্ট করতে সে চেষ্টা চালিয়ে যায়, এবং ফেসুকের পরিবেশ নষ্ট করে। সত্য কথা হচ্ছে এর পূর্বে এরুপ মারামারি ছিল না, আগে এসব ছিল সালাফি-হানাফিদের মধ্যে। কিন্তু মোডারেট-এন্টিমোডারেট তর্ক উস্কে আলি হাসান দ্বিধাবিভক্ত মুসলিমদের আরও বিভক্ত করে। অথচ কাছে টেনেও ভুল ধরা যেত। সম্মানিত কওমি আলেম আব্দুল্লাহ আল মাসুদ নিজেও সমালোচনামুলক রিভিউ লিখেছেন, এজন্য তিনি কারো সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করেন নি। যাই হোক, সবার থেকে সবার বৈশিষ্ট্য আলাদা আলাদা, চিন্তা আলাদা আলাদা। আলি হাসান হয়তো আক্রমণাত্মক হওয়াকেই সমাধান মনে করেছিলেন। অবশ্য এটাও সত্য তার কম বয়সের রক্ত গরম তেজ এইসব বিতর্ক উস্কে দিতে ভূমিকা রেখেছিল। তার প্রথম দিককার সমালোচনামুলক লেখাগুলো ছিল আক্রমণাত্মক, এবং কিছু কিছু লেখা ইসলামী ভ্রাতৃত্বকে নষ্ট করতে যথেষ্ট।

 

এছাড়াও জিহাদপন্থীদের অনেক সাপোর্টার এক্টিভিস্ট আছেন যাদের নাম আমি জানি, কিন্তু তাদের আলোচনা সামনে আনবো ইনশাআল্লাহ।

 

এখন বলবো এম রেজাউল করিম ভুঁইয়া ভাইয়ের কথা। তিনি অ্যামেরিকা থাকেন, উচ্চ শিক্ষিত তো অবশ্যই, তার চিন্তাও খুব উন্নত। তাকে মোটিভেশনাল লেখক বললে ভুল হবে না। মেদ ভুঁড়ি কি করি সিরিজ লেখে ডায়েটের উপায় বাৎলে দিচ্ছেন ফ্রি ফ্রি। বিভিন্ন বিষয়ে তিনি প্রোডাক্টিভ লেখা পোস্ট করে থাকেন, যেমন টাইম ম্যানেজমেন্ট, প্রফেশন, স্কিল ইত্যাদি নিয়ে তার ভালো লেখা আছে। ইসলাম বিষয়েও মাঝেমাঝে লিখেন, কিন্তু তার ইসলামী লেখাগুলো তেমন একটা স্ট্রং না। আসিফ শিবগাতের মোডারেট ইসলামের বিরুদ্ধে একবার তিনি কলম ধরেছিলেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে জিহাদিরা সবাই মনে করেছিল তিনিও তাদের দলের। কিন্তু এরদোয়ান ইস্যুতে সরাসরি এরদোয়ানের প্রশংসা করে সেইসব আবেগি ছেলেদের ভুল ভেঙ্গে দেন। এরপর প্রায়ই মোডারেট ইসলামের বিরুদ্ধে একই সাথে জিহাদিদের মতের বিরুদ্ধেও তিনি লিখেছেন। ফলে তিনি ক্রমেই জিহাদিদের অপছন্দের হয়ে উঠেন। মাদ্রাসার ভেতরের যৌনতা নিয়ে চাউর হলে তিনিও এই ইস্যুতে ঘি ঢালায় আত্মনিয়োগ করেন। অন্যদিকে শামসুল আরেফিন শক্তি ভাইও এসব নিয়ে কথা বলতেন। দু'জনে মিলে মাদ্রাসার চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধারে নামেন। রেজাউল করিম ভাই খুঁজে খুঁজে মাদ্রাসার ভেতরের যৌনতার খবর বের করে তা প্রকাশ করে দিতেন। আর এর পিছনে যুক্তি দিতেন এসব বেশি প্রকাশ হলে তাড়াতাড়ি বন্ধ হবে। কিন্তু আমার তা মনে হয় না। কারণ ধর্ষণের সংবাদ যত বেশি প্রকাশ পাচ্ছে, ততই দিনদিন বাড়ছে। পাপ বন্ধ করতে পাপ প্রকাশের প্রয়োজন নেই। কিন্তু এতো কিছু না বুঝে রেজা ভাই মাদ্রাসার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করলেন। এর ফলও ছিল। তার ফলোয়ার কম ছিল না। এই ঘটনাগুলো তার মাধ্যমে অনেক ছড়িয়েছে। সেকুলার মিডিয়া এসব ঘটনা প্রচার করতে যে পরিশ্রম করছিল, রেজা ভাইরা তা অনেক সহজ করে দিল। ফল এই হল মানুষ নিয়ত করল নিজেদের সন্তানদের মাদ্রাসায় পড়াবে না, আর মাদ্রাসা নাম শুনলেই সবার মাথায় প্রথম সমকামিতা শব্দটা মাথায় ঘুরে, নাউযুবিল্লাহ।

 

এম রেজাউল করিম ভাই এমনিতে খুবই ভদ্র এবং ভালো মানুষ, হুজুরদের পছন্দ করেন, নিজেকে হুজুর বলে গর্ব করেন। তিনি দাড়িওয়ালা, দাড়িওয়ালা মুসলিমদের ভালোবাসেন। আল্লাহ তাকে ভালো রাখুন।

 

মাহমুদুর রহমান, সবার প্রিয় সাসা। আমরা সবাই তার আদরের ভাতিজা। সাসা শব্দটা চাচা থেকে এসেছে। এর হাকিকত হচ্ছে তিনি অন্যান্য দীনী ভাইদের থেকে সিনিয়র। এমন না যে তার দাঁড়িতে পাক ধরেছে, যৌবনের শেষ প্রান্ত বলা যায়। কিন্তু তার যৌবন তেজ এখনো ফুরফুরা। তবু তিনি আমাদের সাসা। জুয়ান না বুড়া সেটা তো বড় বিষয় না।

 

মাহমুদুর রহমান সাসাভাই আগে সেকুলার ছিলেন। অস্ট্রেলিয়ায় ছিলেন আগে, এখন দেশে আছেন। তিনি তার ইসলামে আসার গল্প প্রত্যাবর্তন বইয়ে লিখেছেন। এখন তিনি হুজুর, হুজুরদের সাসা। তার সাথে টম্যাটোর একটা সম্পর্ক আছে, সসের ব্যবসা করেন বোধহয়। তার দুই সন্তান, এক কন্যা এবং শেষে একজন পুত্র। সেই পুত্র জন্ম হয়েছে কয়েক বছর হল। ফেসবুকে তার একমাত্র কাজ ফানি পোস্ট দেয়া, এবং বিভিন্ন জায়াগায় ফানি কমেন্ট করা। তার ফানি কমেন্ট সর্বোচ্চ সংখ্যক হাহা রিয়েক্ট পেয়ে সবসময় জয়যুক্ত থাকে। তিনি ওমর ভাইকে নিয়ে মজার মজার পোস্ট দেন, ওমর ভাইয়ের খাওয়ার গল্প, দোকানির সাথে দামাদামি করার গল্প। হাজি সাবের বিভিন্ন পারফর্মেন্স নিয়ে তিনি ঈর্ষামূলক পোস্ট দিয়ে থাকেন। এবং এমন সব ঘটনা পোস্ট দেন 'যা শুধু তার সাথেই হয়' আর ঐ পোস্টে এই কমেন্ট করতে ভুলেন না তানভির আহমেদ আরেজল ভাই 'এইসব শুধু আপনার সাথেই হয়'। তিনি আদর করে সব ভাতিজাকে তুই করে ডাকেন। গোপালগঞ্জের প্রোডাক্ট আমাদের সাসা। তাই দিদির প্রতি সাসার অনেক মহব্বত। এছাড়া মাঝে মাঝে তিনি কিছু হৃদয়ছোঁয়া পোস্ট দেন। সেগুলো অনেক লাইক ও শেয়ার কামাই করে। অনেকে কপি করে তার নাম দেয় না। এই হল আমাদের সাসার বিবরণ। আল্লাহ সাসাকে হেদায়েতের উপর অটল রাখুন, সুস্থ ও সুন্দর রাখুন, সর্বদা হাসিখুশি রাখুন। আমীন।

 

আমাদের দীনী সাসার মানহাজি অবস্থানঃ তিনি হক ও হক্কানিদের সাথে থাকেন। কোনো দলাদলির মধ্যে যান না। তিনি না জিহাদি, আর না মোডারেট। তার মধ্যে উগ্রতা, অহসনশীলতা এসব নেই। তিনি জিহাদ ও কিতালকে নির্দ্বিধায় সাপোর্ট করেন। তিনি একই সাথে ইসলামী ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখেন।

 

এখন বলব সাইফুর রহমান ভাইয়ের কথা। তিনি সম্ভবত ক্যাম্ব্রিজের ছাত্র, (আমার সঠিক মনে পড়ছে না ক্যামব্রিজ কিনা)। তিনি নাস্তিকতার বিরুদ্ধে অনেক ভালো লিখেন। যেকুলারদের কলাবিজ্ঞানি উপাধি দিয়ে তিনিই শব্দটা জনপ্রিয় করেছেন। তিনি বিবাহিত এবং এখনো বোধহয় ইংল্যান্ডে থাকেন। একসময় খেলাধুলার ভক্ত ছিলেন। তার আইডির বহুত আগের পোস্টগুলো দেখে তাই মনে হয়। আলহামদুলিল্লাহ এখন তিনি প্রাক্টিসিং মুসলিম। কিন্তু জিহাদিদের সাথে বিভিন্ন কারণে তার লেগে যায়। এবং তিনি এন্টি-জিহাদিদের কাতারে পড়ে যান। যখন আকিদা নিয়ে তর্ক চাউর হল (হানাফি ভার্সেস সালাফি আকিদা) তিনি তখন ফেসবুকে এসব বিষয় নিয়ে তর্ক বন্ধ করার আহবান জানান, তার এই আহবান সত্যিই সময়োপযোগী ও দরকারি ছিল। তিনি যে সময় পেলেই জিহাদিদের খোঁচান না, তা না। বিভিন্ন ইস্যুতে তিনি একটু খোঁচা দেয়ার চেষ্টা করেন যেভাবে জিহাদিরাও এন্টি-জিহাদিদের খোঁচা দিয়ে থাকে। এমনিতে মানুষ হিসেবে তিনি ভদ্র। তবে কলাবিজ্ঞানী বলে সবসময় মক করা আমার পছন্দনীয় না, এটা মাঝে মাঝে ইউস করলে হয়, বারবার ইউস করলে মজাটা হারিয়ে যায়।

 

সাইফুর রহমান ভাইয়ের অনেক মূল্যবান লেখা আছে নাস্তিকতার খণ্ডনে। আরিফ আজাদের সাথে তার ভালো সম্পর্ক আছে। যখন আরিফ আজাদের প্রথম বই প্রকাশ হল তখন নাস্তিকরা এর খণ্ডন করে প্রশ্ন বা পোস্ট করলে তিনি আবার সেগুলোর জবাব দিতেন। সাইফুর রহমান ভাইয়ের ফেসবুক এক্টিভিটি নাস্তিকদের জন্য কড়া ডোজ হয়। তিনি পোস্ট যত ভালো করে লিখতে পারেন, বই তেমন লিখতে পারেন না, বহু বছর যাবত বই লেখার ইচ্ছা পোষণ করেন, অথচ এখন পর্যন্ত তার কোনো বই আলোর মুখ দেখে নি।

 

তিনি সম্ভবত পিএইচডি করছেন। বিবর্তনবাদের উপর তার দারুণ কিছু গবেষণামুলক লেখা আছে। তার ব্যাকগ্রাউন্ডও বায়োলজি। সাইফুর রহমান ভাইয়ের জন্য অনেক দোয়া রইল।

 

ফারাবি শফিউর রহমান ভাইও একসময় নাস্তিকতার বিরুদ্ধে লিখতেন। কিন্তু তিনি আদর্শিকভাবে জিহাদি ছিলেন। আর এই কারণে নাস্তিকরা তার মত মেধাবী লেখককে আইনের মারপ্যাঁচে ফেলে জেলে ঢোকায়। এক সময় মগাচিপদের চিপে মগা বানিয়ে ফেলতেন। ফারাবি ভাইয়ের জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করবেন। তাকে কারাগারে নির্যাতন করা হয়। আল্লাহ যেন তাকে ঈমানের উপর রাখেন। একবার মামুনুল হক জেল থেকে বেরিয়ে তাকে নিয়ে পোস্ট দিয়েছিলেন, সেখানে বলেছিলেন ফারাবি নাকি বোকা, তার নাকি লেখালেখি করাই উচিৎ ছিল, জিহাদি মনোভাব রাখাটা উচিৎ হয় নি। মামুনুল হক সাহেবদের জন্য আফসোস, তারা জিহাদি মনোভাব না রেখেও জেলে যায়। জামায়াতের কত নেতা কত আধুনিক চিন্তাধারার হয়েও কি রেহাই পেয়েছে জালিমের হাত থেকে? তাহলে ফারাবিরা কিভাবে বোকা হয়? বোকা তো তারা যারা জালিমের ভয়ে নিজের দ্বীনকে পরিবর্তন করে অথচ জালেমের হাত থেকেও রেহাই পায় না, আর আল্লাহর কাছেও তার মর্যাদা আর থাকে না।

 

নাস্তিকতা নিয়ে লেখালেখি করেন এমন আরেকজন ভাই হচ্ছেন রাফান আহমেদ। তার বই আগে বের হয়, ফেসবুক এক্টিভিটি পরে শুরু হয়। অবশ্য ফেসবুক এক্টিভিস্ট হিসেবে তিনি তেমন কিছু নন। বরং নাস্তিকতার খণ্ডনে তিনি পুরাই বস। উনার এখন পর্যন্ত দুইটা বই বেরিয়েছে। একটা হচ্ছে বিশ্বাসের যৌক্তিকতা এবং আরেকটি হচ্ছে অবিশ্বাসী কাঠগড়ায়। প্রথম বইয়ের নামটা দারুণ হলেও পরের বইয়ের নাম খুব বাজেও হাস্যকর, বাংলা সিনেমার নাম এরকম টাইপের হয়। যদিও তার লেখার মান অনেক উচু, অবশ্য অনেকের লেখা ভালো হলেও শিরোনাম বা ফিনিশিং ভালো হয় না। কিন্তু এমন একজন আছেন যার লেখার মানের মতোই শিরোনাম অনেক বেশি চমৎকার। তিনি হচ্ছেন শামসুল আরেফিন ভাই। ও আচ্ছা, শামসুল আরেফিন ভাইয়ের নাম নেয়াতে মনে পড়ে গেল রাফান ভাইও ডাক্তার। তিনি নাস্তিকতার খণ্ডনে অনেক শক্তিশালী লেখক। তার লেখার রীতি হচ্ছে তিনি নাস্তিকতার খণ্ডন করতে নাস্তিকদের বই থেকে রেফারেন্স দেন। নাস্তিকতার দুর্বলতা নাস্তিকদের মুখ থেকেই কোট করেন। তিনি হামযা জর্জিস এর ডিভাইন রিয়ালিটি অনুবাদ শুরু করেছিলেন। কিন্তু এক চ্যাপ্টার করে আর আগান নি। পরে শুনলাম বিখ্যাত অনুবাদক মাসুদ শরীফ ভাই এটার অনুবাদ করছেন। কিন্তু আমার মনে হচ্ছিল, এটা রাফান ভাই করলেই বেশি ভালো হত, যেহেতু তিনি নাস্তিকতার খুটি নাটি ভালো জানেন।

 

জীম তানভির ভাই, সবার খুব প্রিয়, কিন্তু তার ফেসবুক আইডির খোঁজ অনেকেই জানে না। কারণ তার ফেসবুক আইডির নাম গোলাম তানভির। তিনি সম্ভবত গোলামকে সংক্ষেপে জীম ব্যবহার করেন যেহেতু গোলাম শব্দ দিয়ে অনেক সময় ভুল বোঝার আশঙ্কা থাকে। অবশ্য এটা অনেক আগের ফতোয়া যে গোলাম দিয়ে আল্লাহর নাম বাদে অন্য কোনো নাম রাখা জায়েজ নেই, অর্থাৎ গোলাম মোস্তফা, গোলাম মুহাম্মদ; তবে লেটেস্ট ফতোয়া হচ্ছে গোলাম শব্দের অর্থ দাসত্ব বোঝানো ছাড়াও অন্যান্য ক্ষেত্রেও ব্যবহার হয়, সুতরাং গোলাম মূস্তফা বা গোলাম নবী এসব নামে সমস্যা নেই কোনো। হয়তো তানভির ভাই সন্দেহ থেকে বাঁচতে পূর্বে নিজের নামের গোলামকে সংক্ষিপ্ত করেছিলেন, অথবা নিজের আসল নাম প্রকাশ না করার জন্য এরকম করেছেন। এটা আমার স্রেফ ধারণা, উনার নামের ইতিহাস উনিই ভালো বলতে পারবেন। তবে তিনি যে কারণে সবার প্রিয় সেটা হচ্ছে তিনি প্রাচীর বইয়ের সম্পাদক। প্রাচীর হচ্ছে এমন একটা বই যেটা সবসময় বইপাড়ায় সংকট থাকে। যেটা কেউ কিনতে পেলে তাকে ভাগ্যবান বলা হয়। এই বইটা এমনই রেয়ার। জীম তানভির ভাই রেইন্ড্রপস মিডিয়া থেকে দারুণ কিছু অডিও সিরিজ প্রকাশ করেছেন। উনি সম্ভবত রেইন্ড্রপ্সের প্রধান। এছাড়াও সীরাহ বই আকারে বের করেছে, যদিও এই সীরাহ রেইন্ড্রপ্সের নামেই বিখ্যাত হয়েছে কিন্তু এটা আসলে শাইখ আনোয়ার আওলাকি রহঃ এর বক্তৃতা, তার নাম ব্যবহার করা হয় নি যেহেতু তিনি অ্যামেরিকার কাছে একজন বড় সন্ত্রাসী এবং মুসলিম বিশ্বের এক অমূল্য সম্পদ ও মুজাহিদ, নিরাপত্তার খাতিরে শাইখের নাম দেয়া হয় নি। এটাতে আমি সমস্যা দেখি না, কারো কথা বা ইলম প্রচার হওয়াটাই বড় কথা, নিরাপত্তা বা অন্য কারণে প্রয়োজনে নাম হাইড করলে বড় কোনো সমস্যা হয়ে যায় না। শাইখ জসিমুদ্দিন হাঃ এর কিছু বই তার কুনিয়াতি নামে প্রকাশ পেয়েছে, আবু আব্দুল্লাহ নামে তার সবগুলো বই শাবাব প্রকাশনী বের করেছে। আল্লাহ তাদের উত্তম প্রতিদান দিক, শাইখকে কারাগার থেকে মুক্তি দান করুন এবং সর্বাবস্থায় হেদায়েতের উপর রাখুন।

 

জীম তানভির ভাই সম্ভবত বুয়েট থেকে পড়েছেন (আমার সঠিক মনে পড়ছে না, তাই সম্ভবত বললাম), এবং মাস্টার্স করেছেন লন্ডন কুইন মেরী থেকে। তিনি সম্ভবত বাইরে থাকেন। ভাইয়ের স্ত্রীর নাম আনিকা তুবা। তিনিও ভালো লেখিকা, একটা বইয়ের প্রচ্ছদও করেছিলেন, সবুজ পাতার বন বইটার।

 

আল্লাহ দুইজনকেই ভালো রাখুন, সুস্থ রাখুন।

 

জীম তানভির ভাই চট্টগ্রামের মানুষ, চট্টগ্রামের আরেকজন ভাই হচ্ছেন সাজিদ ইসলাম। একজন প্রকাশক ও লেখক। 'বুঝতেছিনা বিষয়টা' নামে তার একটা পেজ আছে। নামটা অদ্ভুত হলেও এই পেজে তার লেখাগুলা প্রচণ্ড হৃদয় ছোঁয়া যেটাকে বলে হার্ট টাচিং। তার সীরাত নামে একটা প্রকাশনি আছে এবং পরে বুকমার্ক নামে আরও একটা চট্টগ্রামভিত্তিক প্রকাশনা খুলেন। তিনি বিভিন্ন বই সম্পাদনা ও অনুবাদের কাজেও জড়িত ছিলেন। মোহাম্মদ হবলস এর লেকচার অবলম্বনে তিনি একটি বই লিখেছেন। আল্লাহ তার ইলমে ও ব্যবসায় বারাকাহ দিন।

 

এরপরে আসে মিসবাহ মাহিন ভাইয়ের কথা। তিনি অনেক সিনিয়র, যদিও প্রথম প্রথম তারে এত সিনিয়র মনে হত না। তিনি খুব ভালো লিখেন। এম মাহবুবুর রহমান ভাইও দারুণ লেখেন। এছাড়া মুহাম্মাদ জুবায়ের ভাইও ভালো লেখেন, বই সম্পাদনার সাথেও তিনি জড়িত, তিনি বুয়েটের ছাত্র। আরমান নিলয় ভাই অনেকদিন ফেসবুকে নাই। বই সম্পাদনা আর অনুবাদে অথবা অন্য কোনো কাজে ব্যস্ততার কারণে হয়তো ফেসবুক ছেড়েছেন, সাজিদ ইসলাম ভাইয়ের প্রকাশনি সীরাত থেকে প্রকাশিত বইয়ের সম্পাদনায় আরমান নিলয় জড়িত ছিলেন।

 

সালমান সাঈদ ভাই তালেবান নিয়ে সিরিজ লিখেছেন, বলতে গেলে প্রায় শেষ, তবু এখনো মাঝেমধ্যে কোনো নতুন পর্ব লিখেন। তিনি তালেবানের ইতিহাস নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে লিখেছেন। এই লেখাটা আবার গুগল ডকে একত্র করে রেখেছেন খন্দকার সাহিল রিদওয়ান ভাই। সাহিল ভাইয়ের একটা পোস্ট আছে যা খুব উপকারি, সেটা হচ্ছে বিগিনার লেভেলে মুসলিমদের কি কি বই বা কি কি পড়া উচিৎ তা নিয়ে লিখেছিলেন। খন্দকার সাহিল রিদওয়ান ভাইয়ের কথা বলতে গিয়ে মনে পড়ে যায় আরেক খন্দকারের কথা। তিনি হচ্ছেন খন্দকার রাইত বাবুর্চি। নামে বাবুর্চি হলেও তিনি আসলে আতরচি। সম্রাট হুমায়ুনকে পানি খাওয়ানোর জন্য নিয়োজিত ছিলেন আফতাবচি যিনি পরে একটি বই লিখেছিলেন যা সম্রাট হুমায়ুনের ইতিহাসের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য বই। আফতাবচি নামের মতোই আতরচি নামটা। আতরচি ভাইয়ের আসল নাম খন্দকার হাসিফ আহমেদ। তিনি পারফিমেন্স নামের একটি আতরের ব্র্যান্ড এর কর্ণধার। হাসিফ ভাই একদা নিখোঁজ হয়েছিলেন। আল্লাহ তাকে সহি সালামতে ফিরিয়ে এনেছিলেন। তিনি অল্প বয়সেই একজন সফল উদ্যোক্তা। এখনো তিনি পড়াশোনা শেষ করেন নি। ঢাবির রসায়নের ছাত্র।

 

উদ্যোক্তা নিয়ে বলতে গিয়ে মনে পড়ল আরেক উদ্যোক্তা বান্দা রেজা ভাইয়ের কথা। তিনি খুবই জনপ্রিয় একজন মানুষ। তার বাবরি এতো বড় যে সবার থেকে তাকে আলাদা করা যায়। এতো বড় বাবরি রাখার ঐতিহ্য মুসলিম ইতিহাসে ছিল, তিনি সেটারই প্রতিচ্ছবি। বান্দা আবার তার নাম মনে করবেন না, তার পূর্ণ নাম রেজাউল কবির। নিজেকে বান্দা রেজা বলে পরিচয় দিয়ে আল্লাহর দাসত্বকে সর্বদা নামের মাধ্যমে স্বীকার করে নেন। তিনি জলপাই এর কর্ণধার। তার ফেসবুক এক্টিভিটি তো নেই বললেই চলে, তবে দীনী ভাইদের সাথে অফলাইনে তার ভালো সম্পর্ক আছে বোধহয়।

 

এছাড়া মোহাম্মদ জাভেদ কায়সার ভাইয়ের নাম মনে পড়ছে, তিনি আগে লিখতেন খুব, এখন তো পোস্ট একেবারেই দেন না। মুবাশশিরিন মিডিয়া তিনি চালান এবং এখানে তিনি এক্টিভ থাকেন। তার হজের এজেন্সি আছে সম্ভবত। আল্লাহ তার কাজে ও ইলমে বারাকাহ দিন।

 

এইবার বলব শরীফ আল হুসাইন ভাইয়ের কথা। তিনি তো এক আজিব চীজ। আল্লাহ তাকে হেদায়েতের উপর এবং কল্যাণের উপর রাখুন। তার আলোচনা আসলে জিহাদি মানহাজের প্রচারকদের সাথে অর্থাৎ ইবনু মাজহার বা মিফতাহ আয যামান ভাইদের সাথে করলে বেশি ভালো হত। যাকগে, তখন করা হয় নি, তাই এখন করছি। তিনি খুব ভালো নাশীদ গান। লেগে থাকলে আশা করি একজন খ্যাতিমান মুন্নাশিদ হবেন। শরীব্বাইয়ের আরও যে দুই নাম প্রসিদ্ধ সেগুলো হচ্ছে আবু মাইমুনাহ এবং মুবারক ইবনে আলি। তবে শরীফ আল হুসাইন নামই বেশি ব্যবহার করেন এবং এটাই তার আসল নাম বলে ধারণা হয়। আপাতত তিনি ফেসবুকের বাইরে। তিনি অবশ্য প্রায়ই ফেসবুক থেকে ছুটে পালাতে চান। কিন্তু দেখা যায় পালানোর কিছুদিন পর এসে পড়েন। এবার যেহেতু আসছেন না ভাবা যাচ্ছে আশা করি প্রডাক্টিভ কাজ ও খিদমাতের মধ্যেই ব্যস্ত আছেন।

 

শরিব্বাইয়ের একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে খুবই অস্থির চরিত্রের মানুষ। তার মধ্যে প্রচুর অস্থিরতা কাজ করে। ব্যক্তিগত জীবনে কেমন তা তো জানি না, অনলাইনে তাকে এমনই পাওয়া যায়। তার অস্থিরচিত্তে লেখা পোস্টগুলোর জন্যই হয়তো সবাই মুখিয়ে থাকে। তার পোস্ট মানেই কারো না কারো সমালোচনা। জিহাদি বনাম মোডারেট বিতর্কে তিনিও বেশ ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি সরাসরি জিহাদি মানহাজের কথা বলতেন যেটা অনেকে সরাসরি প্রকাশ করত না। কালো মেয়েদের বিয়ে না হওয়া সংক্রান্ত একটা পোস্ট লিখেছিলেনযা তার লেখা শ্রেষ্ঠ কোনো পোস্ট। এবং তার সবচেয়ে মজার পোস্ট ছিল ভাত আছে তরকারি নাই, পীরসাহেব চরমোনাই। এরকম একটা কবিতা লিখেছিলেন, এই কবিতার মজার দিক ছিল প্রথমে কিছু একটা আছে এবং পরে নাই, আর শেষে হয় পীর সাহেব চরমোনাই; এভাবে চলতে থাকে। পীর সাহেব চরমোনাইকে মানহাজি অবস্থানের কারণে পছন্দ করতেন না। এজন্যই এরকম মজা করতেন। আরিফ আজাদের বিরুদ্ধেও তিনি পোস্ট করেছিলেন, এটা ছিল মোডারেটদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের একটা অংশ। আরিফ আজাদও নাম উল্লেখ না করে শরিব্বাইয়ের বিরুদ্ধে কোথাও বলেছিলেন। জিহাদি-এন্টিজিহাদি বিতর্কে শরিব্বাই ভূমিকা রাখতেন। যেখানেই থাকুন আল্লাহ তাকে ভালো রাখুন। তবে একটা বিষয় হচ্ছে শরিব্বাই মজা করতে জানতেন না, বা তার মজা করার পদ্ধতিটা একেবারে পানসে। বিভিন্ন জায়গায় তার ফানি কমেন্ট পরে আমার একদম হাসি পায় নি।

 

শরীফ ভাই নাশীদে নিয়মিত হলেই তার জন্য ভালো হবে বলে মনে হয়, কারণ তার পোস্ট করা কল্যাণকর বলে প্রমাণিত হয় নি। একবার এক বুরখা নিকাবের অনলাইন শপের সাথে তার ঝগড়া হয়। তিনি উপাধি লাভ করেন দীনী বখাটে। এটা নিয়ে অন্যরা মজাও করত, তিনি নিজেকেও দীনী বখাটে বলে মজা পেতেন।

 

তার ঝগড়া ঝাটি সমালোচনা যেটাই হোক তিনি স্রেফ দ্বীনের জন্য খালিসভাবে করতেন। তার কোনো ফেমাস হওয়ার ইচ্ছা বা অন্যকিছু ছিল বলে মনে হয় না। তাই তার জন্য সর্বদা মন থেকে দুয়া করি।

 

শরীফ ভাইয়ের নাশীদ এডিটিং করে দিত তাহমিদ ইব্রাহিম বা রুম্মান ইবনে ইব্রাহিম ভাই। এই ভাইটি স্বাস্থ্যবান এবং সুদর্শন ফর্সা বলে কথিত আছে। মানে অনেকেই তাকে এভাবে উল্লেখ করেছে। ইনি ধনী ঘরের সন্তান। মাঝেমধ্যে তার শখ ধরলে লেখেন, আর নয়তো ফেসবুকে ফান ট্রল করে বেড়ান। শরীফ ভাইয়ের সাথে যেহেতু তার ভালো সম্পর্ক আলাদা করে তার মানহাজ বলা লাগে না।

 

আমার মনে পড়ছে আবু পুতুল ভাইয়ের কথা, রুশো করিম ভাইয়ের কথা, তারা একসময় ফেসবুকে এক্টিভ ছিল এখন তারা একেবারেই হারিয়ে গেছে। আরেকজন ছিলেন, তিনি আবু আব্দুল্লাহ নামে ছিলেন, তিনি ইতিহাস বিষয়ক পোস্ট লিখতেন, তার এক্টিভিটি বহু দিন যাবত নেই। তারা যেখানেই থাকুন, আল্লাহ যেন ভালো রাখেন, এবং কল্যাণের উপর রাখেন।

 

মোঃ নিজামুল হক (নাহিদ) ভাই একজন ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহিত এবং কন্যা সন্তানের জনক। তিনি অল্প বয়সেই বিয়ে করেছিলেন। আর এটার প্রতি তিনি উৎসাহ দিতেন। এজন্য গ্রুপও খুলেছিলেন, আর্লি ম্যারেজ ক্যাম্পেইন নামে গ্রুপ খুলে কম বয়সে বিয়ের জন্য প্রচারণা চালাতেন। এসব প্রচারণা সেকুলাঙ্গারদের একদম জ্বলিয়ে দিত, একবার এক জাতীয় পত্রিকায় নিউজও হয়েছিল যেখানে এই গ্রুপের নাম এসেছিল। নিজামুল হক ভাইয়ের সবচেয়ে বিরক্তিকর কাজ হচ্ছেন ইংরেজি অক্ষরে বাংলা লেখা যেটা পড়তে গিয়ে বিরক্তি উদ্রেক হয়। তবে তিনি খুব সহজ সরল ও ভালো মানুষ। ভালো মানুষীর মতই তিনি সুদর্শন, অবশ্য দাড়ি রাখলে কাকেই বা সুদর্শন লাগে না? একসময় নিজামুল হক ভাই বাইক কিনলেন আর বাইক নিয়ে ঘোরাঘুরি করা আর এ নিয়ে পোস্ট দেয়া তার কাজ হয়ে দাঁড়ালো।

 

নিজামুল হক ভাইকে সরল বল্লেও সরল শব্দটা দখল করে রেখেছেন আরেকজন ভাই, তিনি হচ্ছেন মোঃ রাকিবুল হাসান ওরফে সড়ল ভাইয়া। তিনি কেন সরল তা তো বিস্তারিত জানি না। তবে সরলের ভান ধরে সরল ভাইয়া বিভিন্ন জায়গা জিলাপির মত সরল কমেন্ট করে হাইস্যরসিকতা সৃষ্টি করে বেড়ান। ইনিও চামেচুমে কিছু দারুণ লেখা পোস্ট করেন। আল্লাহ ভাইদেরকে ঈমানের উপর রাখুন।

 

বলা হয় নি মাঞ্জুরুল করিম (শোভন রাজ) ভাইয়ের কথা। ইনার অনুবাদে দুইখানা মূল্যবান পুস্তকও প্রকাশিত হয়েছে। তিনি জেনারেল শিক্ষা ছাড়াও ইলম শিক্ষা করেন। তিনি বিবাহিত। তার নিজের ভাষায় তিনি বলেন, তিনি বেশিরভাগ সময় অসুস্থ থাকেন, এবং তার ঠাণ্ডার সমস্যা আছে। আল্লাহ তাকে পরিপূর্ণ শেফা দান করুন। তিনি ইসলামিক অনলাইন একাডেমীর একজন উস্তাদ।

 

ইসলামিক অনলাইন একাডেমির সাথে আরও আছেন মাইনুদ্দিন আহমাদ ভাই, তিনি সাবেক আহলে হাদিস এবং বর্তমানে সালাফি আকিদা ও হাম্বলী মাযহাবের অনুসারী। তিনিও জেনারেল পড়াশোনা ছেড়ে ইলম শিক্ষা করেন এবং একজন আলিম হন। আশা করি তার দ্বারা মানুষ উপকৃত হবে। এদেশের হাম্বলী মাযহাবের প্রচারণায় যে ব্যক্তির ভূমিকা না বললেই নয় তিনি হচ্ছেন শেখ সাদী ভাই। শেখ সাদী ভাই আরবি শেখার পর আরবি চর্চার জন্য সালাফি আলেমদের বিভিন্ন লেখা অনুবাদ করতেন। এমনিতে তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছেন বা পড়া শেষ করেছেন। তার অনুবাদ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এ কারণে আমাদের দেশে আহলে হাদিসরা মনে করে আরবের সালাফিরা বুঝি মাযহাব অস্বীকার করে, মাযহাব মানে না, মাযহাবের অনুসারীদের ভ্রষ্ট মনে করে। শেখ সাদী ভাই চেষ্টা চালান এই ভুল ধারণা নিরসনের। কিন্তু এসব দেখে কি আহলে হাদিস ভাইরা শান্ত থাকবেন, সৌদির অবস্থান অনুযায়ী নিজের মানহাজ পরিবর্তনকারী মাসুদ আল আসারি তো সরাসরি শেখ সাদী ভাইকে খারেজী বলে ছাড়ল। অবশ্য শেখ সাদী ভাই নিজেকে কখনো জিহাদি দাবি করেন নি। আইএস তো দূরের কথা, তিনি কায়দা তালেবানের সমালোচনা করতেও ছাড়েন নি। তিনি এক্ষেত্রে হকের সন্ধান করতেন, কায়দা-তালেবানের কতিপয় ক্রুটির কারণে তাদের সমর্থন করতেন না। ফলে জিহাদিদের সাথে তার দ্বন্দ্ব শুরু হয়। শেখ সাদী ভাই স্বীকার করতেন, তিনি চান এমন জিহাদি দল যারা কায়দা-তালেবানের ভুলগুলো থেকে মুক্ত থাকবে, তার এই চিন্তা অন্তত সালাফি-আহলে হাদিসদের থেকে উন্নত ছিল। এমন কথাও শুনেছি, শেখ সাদী ভাই পূর্বে জিহাদি ছিলেন, জিহাদি মানহাজ ডিফেন্স করে লেখালেখিও করতেন, দাবিটা জিহাদিদের, কিন্তু সত্যাসত্য জানি না, সত্য বলেই ধারণা করি।

 

শেখ সাদী, মাইনুদ্দিন আহমাদ ভাইদের মতোই মাযহাব বিষয়ে মধ্যপন্থার অধিকারী আরও কয়েকজন ব্যক্তি হচ্ছেন তানভির বিন আব্দুর রফিক, আবু হাফসা মোহসিন কামাল এবং আরও অন্যান্য ভাই। তানভির ভাই স্যার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গির রহঃ এর ভাবশিষ্য। আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গির রহঃ এর মানহাজের পূর্ণ অনুসারী হচ্ছেন তানভির ভাই। তিনি নিজেও খুব ভালো লেখালেখি করেন। জেনারেল থেকে পড়েছেন এবং অবশেষে ইলম শিক্ষা করেছেন। মোহসিন কামাল ভাই হচ্ছেন হানাফি মাযহাবের অনুসারী, তিনি স্যার রহঃ এর ভাবশিষ্য, তিনি সর্বদা হানাফই-সালাফিদের মধ্যে মধ্যপন্থা অবলম্বন করেন। আল্লাহ তাদেরকে ঐক্য রক্ষার পথে নিয়োজিত থাকার জন্য উত্তম বিনিময় দান করুন।

 

অবশ্য হাম্বলী মাযহাবের প্রচারণা চালানোর কারণে মাইনুদ্দিন ভাইরা দুই দিক থেকেই আক্রমণের শিকার হয়েছেন। হানাফিরা বলত, এই দেশে যেহেতু হানাফিরা বেশি, তাই হাম্বলী মাযহাব প্রচার করা ফিতনা, আর সালাফিরা বলত, এই হাম্বলিরা হচ্ছে বিদাতি হানাফিদের মতোই, এরা আহলে হাদিসদের কেউ না। এভাবে হাম্বলীদেরকে দুই দিক থেকেও ত্যাগ করা হয়। অথচ আহলে হাদিসরা জানে না তাদের বড় বড় ইমাম গণ হাম্বলী ছিলেন, আর হানাফিরাও জানে না, চার মাযহাবের এক মাযহাব যদি মানা যায়, অন্যটাও যাবে, ফিতনা হচ্ছে সেটা যেটা করার স্বাধীনতা থাকা সত্ত্বেও বাধা দেয়া হয়।

 

হাম্বলী ফিকহ নামে একটি গ্রুপ খুলে হাম্বলী মাযহাবের চর্চা শুরু করেন কিছু ভাইয়েরা। এই ভাইয়েরা মূলত হানাফি-সালাফি মারামারি দেখে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলেন। এরকম অনেকেই ছিলেন যারা এসব মারামারির কারণে মধ্যপন্থা অবলম্বন করতে শুরু করেন। ইউটিউবার ও লেখক আলি আব্দুল্লাহ ভাইও আহলে হাদিস ছিলেন, এবং আলহামদুলিল্লাহ তিনি হানাফি-সালাফি মারামারির মধ্যে থাকেন না। আলি আব্দুল্লাহ ভাই সম্পর্কে একটু পরেই বলছি, এর আগে হাম্বলী ফিকহ গ্রুপ নিয়ে কিছু বলি। এই গ্রুপে অনেক ভাই আছেন যারা হাম্বলী মাযহাবের প্রচারণা চালাচ্ছেন, কেউ কেউ ফেকাইডি ব্যবহার করায় তাদের আসল নাম জানা যায় না। শাহনেওয়াজ শামিম ভাই এই গ্রুপের এডমিনদের একজন।

 

আলি আব্দুল্লাহ ভাই হচ্ছেন প্রথম বাংলাদেশি ইসলামিক ইউটিউবার। চ্যানেলের নাম মুসলিমাইজেশন টিভি। ইউটিউব ভিডিও দিয়ে তার জনপ্রিয়তা, অতঃপর বই লেখালেখিতে আসেন। হুমায়ুনে আহমেদের হিমুর প্যারোডি 'সুবোধ' নামে বের করেন, এটা অনেক সমালোচিত হয় হুমায়ূন আহমেদের বইয়ের সাথে মিল থাকায়। এরপরে তিনি সুবোধ ২ বের করেন এবং বাচ্চাদের জন্য ভালো একটা বই বের করেন। আল্লাহ তাকে লিখে যাওয়ার তৌফিক দিন। তিনি বিবাহিত এবং দুই পুত্রের পিতা। উনার স্ত্রীও রান্নার ভিডিও ইউটিউবে পাবলিশ করেন। এক্ষেত্রে আলি ভাই হারাম থেকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করেন, তিনি নিজেই কণ্ঠ দেন। অবশ্য ভাইয়ের আহলিয়ার রান্নার ভিডিও যত ভিউ হয় আর সাবস্ক্রাইব হয় তার ১০ ভাগের ১ ভাগও ভাইয়ের চ্যানেলের ফানি ভিডিওতেও হয় না। রান্নার ভিডিও বের করাকে পজেটিভ আবে দেখি। কারণ মহিলাদের বাসার কাজ ছাড়া তেমন কিছু করার থাকে না, পুরুষদের যেমন সারাদিন বাইরে থাকা হয়। এক্ষেত্রে মহিলারা রান্নার প্রতি আগ্রহি হলে সেটা বেশ ভালো, কারণ এটা তো নারীগত ফিতরাত। এই ফিতরাতগুলো মুছে ফেলতে সেকুলার আর নারীবাদীরা কত চেষ্টা যে করে। আলি আব্দুল্লাহ ভাই একজন ভালো মানুষ। তিনি একজন বাঙালী সাহিত্যিকের নাতি, যদিও সেই সাহিত্যিকের নাম আমার মনে নেই। আলি আব্দুল্লাহ ভাই জেনারেল শিক্ষিত, ইসলাম সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখেন, ইসলাম প্রাক্টিস করেন এবং ভিডিও ও লেখালেখির মাধ্যমে দাওয়াতি কাজ করে থাকেন। তিনি এমনিতে আহলে হাদিস, কিন্তু তার মধ্যে বাড়াবাড়ি কিছু নেই। আল্লাহ তাকে কল্যাণের পথে রাখুন।

 

আলি আব্দুল্লাহ ভাইয়ের সাথে তার ছোটভাই চরিত্রে যে অভিনয় করে তার অভিনয়ও মাশাআল্লাহ খুব ভালো, তার নামটা ভুলে গেছি। তার জন্যও দুয়া।

 

কিছু আহলে হাদিস ভাইয়ের নাম এবার বলি। এদের অনেককে যদিও ফিতনাবাজ বলা যায়। কারণ এরা হচ্ছে কট্টর মতবাদ প্রচার করে নিজেদের মতকে দ্বীন বানায়, দলকে দ্বীন বানায়, বাকি সবাইকে বলে ভ্রষ্ট, যারা সবাইকে ভ্রষ্ট বলতে পারে, শুধু তাদেরকে নিশ্চয়ই ফিতনাবাজ বলায় গুনাহ হবে না। আল্লাহ ভালো জানেন।

 

আহলে হাদিস মতবাদ প্রচারে দীর্ঘসময় ধরে যে নিয়োজিত সে হচ্ছে আবু আনাস। আরও আছে আনিসুর রহমান বা আনিসুল ইসলাম (স্মরণে আসছে না কোনটা), মিল্কি ভাই। মিল্কি ভাইয়ের কাজ কিছুটা উন্নত লেভেলের। উনার কাজ অন্যদের মত স্রেফ গালাগালি না। উনি খুব সুন্দর ভিডিও তৈরি করেন, সালাফিদের সম্পর্কে দারুণ প্রচারণা চালান। আর বেশিরভাগ আহলে হাদিস প্রচারকের অবস্থা যাচ্ছেতাই, মাযহাবকে গালিগালাজ, সবাইকে গালিগালাজ করা তাদের একমাত্র কাজ। অবশ্য আহলে হাদিস ভাইদের একটা বিষয় প্রশংসনীয়, ফেসবুকেও তারা প্রচুর হাদিসের প্রচার চালায়। তাদের এই হাদিস প্রচার চালানোর ফলে মুখে মুখে অনেক হাদিস শেখা হয়ে যায়। মাসউদ শিকদার নামে একজন ভাই আছেন, ইনি অবশ্য এখন চ্যারিটির কাজ বেশি করেন। এতিমদের খাওয়ানো, মাসজিদে দান সদকা করার জন্য তিনি ভাইদের থেকে দান তুলেন। আল্লাহ তাকে উত্তম প্রতিদান দিন। সাইদুর রহমান নামে একজন শাইখ আছেন, তিনি ভিডিও পাবলিশ না করায় তেমন বিখ্যাত নন, তবে তিনি একজন ভালো আলেম। তার মধ্যেও আহলে হাদিস হিসেবে দলাদলির বৈশিষ্ট্য নেই। এই গুণটা তো আহলে হাদিসদের মধ্যে এক বিরন গুণ। যার মধ্যে থাকে সে তো অবশ্যই উত্তম ব্যক্তি।

 

আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের ছেলে আব্দুল্লাহও একজন নতুন তৈরি হওয়া আলেম ও সালাফিবাদের প্রচারক। তিনি লেখালেখি এবং বক্তৃতায় পিতার মতোই এক্টিভ। অবশ্য আহলে হাদিসদের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব শুরু হলে তিনি এতে ভূমিকা রাখেন। আহলে হাদিসরা আগে বিভক্ত করেছিল হানাফি-সালাফিদের ঐক্য, আর এখন নিজেদেরকেই বিভক্ত করছে। একদল গালিবপন্থী, আরেকদল আকরামুজ্জামানপন্থী, আরেক দল আব্দুর রাজ্জাক পন্থী। সবাইকে আল্লাহ হেদায়েত দিক। আব্দুল্লাহ দেওবন্দে পড়েছিল, মদিনাতেও পড়েছে। খুবই মেধাবী ছেলে। কিন্তু সে নিজেও মাদখালিজমের প্রচার চালায়। তাদের মতবাদ অনুযায়ী সৌদি শাসক সমালোচনার উর্দ্ধে। আহলে হাদিস মতবাদের প্রচারণা চালানো আরও অনেকের কথা সামনে আসবে।

 

জেনারেল থেকে আসা ভাইদের নিয়ে অনেক আলাপ হল, এবার কওমিদের নিয়ে একটু আলাপ করি। কওমিদের তো এখন অনেক অনেক আইডি। কোনটা থুয়ে কোনটা বলি। প্রথম শুরু করি ইমরান রাইহান দিয়ে। তিনি হচ্ছেন ফেসবুকের পীরসাব (যারা বুঝার বুঝেন, না বুঝলে নাই), তার কাজ ফেসবুকে লাইক ব্যবসা করা। তিনি রাতে ঘুমানোর আগে লাইকের দুকান বন্ধ করার আগে সবার কাছ থেকে অনাদায়ি লাইক কমেন্ট আদায় করার জন্য নির্দেশমুলক পোস্ট দিয়ে থাকেন। এগুলো বুঝাইয়ে বলতে পারবো না, এর চেয়ে বরং অন্য কথা বলি। তিনি ইতিহাস নিয়ে লেখেন, কাট্টাখোট্টা লেখা না, বরং দারুণ সব লেখা, গল্পে গল্পে ইতিহাস বর্ণনা করেন। এছাড়া তার প্রধান কাজ মজার মজার সব স্ট্যাটাস দেয়া এবং বহু বহু হাহা রিয়েক্ট অর্জন করা। তিনি নিজের মতাদর্শিক অবস্থান নিয়ে কখনোই লিখেন না বা প্রকাহ করেন না। এটা তাকে জনপ্রিয় করে রাখার ক্ষেত্রে ফলদায়ক। তার ভাষায়, 'তারিক জামিলের মত ঐক্যের আলাপ নিয়ে সবার দস্তরখানে'। দস্তরখান শব্দটা উল্লেখ করায় মনে পড়ল, ইমরান ভাইয়ের শখ ঘুরে বেড়ানো। এখান থেকে ওখান। ওখান থেকে এখান। এবং সব জায়গায় ঘুরে খুঁজে খুঁজে মানুষের দস্তরখানে বসাও তার একটা শখ। তিনি ভোজনরসিক, তবে অতিভোজন করেন বলে তার ফিগার দেখে মনে হয় না, হয়তো তিনি শুধু তার চোখকে খাওয়ান, পেটকে না।

 

ইমরান ভাই নিজেকে যামেন শহীদ রহঃ এর ভাবশিষ্য মনে করেন। যামেন শহীদ ছিলেন রসিক মানুষ। কেউ ফতোয়ার জন্য বা ইলমের জন্য বা মুরিদ হতে আসলে অন্যের কাছে পাঠিয়ে দিতেন, আর হুক্কা টানতে চাইলে বসতে বলতেন। ইমরান রাইহান কওমি ফারেগ হলেও ইলমি বা ধর্মতত্ত্ব নিয়ে একদম কলম তুলেন না। তার মূল বিষয় হচ্ছে ইতিহাস, ইথাস থেকে গভীর পাঠ তুলে আনা।

 

ইমরান ভাই শায়খ তালাতকে নিয়ে হেকিম আনোয়ার আব্দুল্লাহর মুমসেক নিয়ে অনেক এপিসোড লিখেছেন। শায়খ তালাত হচ্ছে ফ্রড মাসুদের ব্যাঙ্গ নাম। আর হেকিম আনোয়ার আব্দুল্লাহ হচ্ছে শায়খ তালাতের অনুসারী, সে হেকিমগিরি করে, মুমসেক নামে তার বানানো একটা ঔষধ আছে।

 

শায়খ তালাতকে তখনও কওমিরা আকাবির মানে। সেই সময়তেই ইমরান রাইহান ভাইরা এই ভন্ডের প্রকৃত হালত অনুধাবন করতে পারেন এবং তখন থেকে তাকে ট্রল করেন। এরপর তো আস্তে আস্তে সবার কাছেই এই ফ্রডের মুখোশ উন্মোচিত হয়। ফ্রডের বিরুদ্ধে আরেকজন লেখালেখি করতেন, তিনি ট্রলের চেয়ে বিস্তারিত লিখতেন, অবশ্য অনেক পরে শুরু করেছেন, তিনি হচ্ছেন আলি হাসান উসামা। আলি হাসান উসামা এরদোয়ানেরও তীব্র সমালোচনা করতেন। ইমরান ভাইরা অবশ্য সমালোচনার চেয়ে ট্রলে বেশি পারদর্শী ছিলেন। ফলে তিনি এরদোগানের দুইটা অদ্ভুত সুন্দর নাম আবিষ্কার করেন, যেমন উর্দু গান এবং এর দোকান। আরবিতে উচ্চারণ অবশ্য উর্দুগানই হয়।

 

ইমরান ভাই আরও যাকে নিয়ে ট্রল করেন তিনি হচ্ছেন সাহিত্যিক উবাইদুর রহমান খান নদভী। ইমরান রাইহান ট্রলাট্রলি ছাড়াও যে কাজটা করেন সেটা হচ্ছে সেলফ মার্কেটিং। তিনি নানা জায়গায় ঘুরে বেড়ান, এবং ফটোগ্রাফি করেন। মাঝেমধ্যে নিজেদের ছবিও প্রকাশ করেন এবং বহু হাসির রিয়েক্ট অর্জন করেন।

 

ইমরান রাইহান ভাইদের একটা টিম আছে, সেটা হচ্ছে মালফুজাত টিম। এই টিমের কাজ হচ্ছে ট্রল আর ফাইজলামি করা। কিন্তু এর সদস্যরা একে আর্টের পর্যায়ে নিয়ে যায়। এই টিমের অনেকের আলোচনা আসবে। এই টিমের একজন জামাত সমর্থন করায় তাকে বের করে দেয়া হয় এবং এ নিয়ে তুমুল বিতর্কও হয়। সেই জামাত সমর্থক হচ্ছেন তানভির ভাই। অবশ্য তিনি টিমের সবারই ভালো বন্ধু ছিলেন। তবু কেন এরুপ করা হল জানি না।

 

ইমরান রাইহান ভাই ইতিহাস নিয়ে দারুণ সব প্রবন্ধ নিবন্ধ গল্প লিখলেও বই প্রকাশ করতে আগ্রহি নন। এখন পর্যন্ত কোনো বই প্রকাশ করেন নি শুধু দিল্লী ইতিহাসের আয়না নামে একটা অনুবাদ ব্যতীত।

 

ইমরান ভাই ইতিহাস লেখক হিসেবে যেমন দক্ষ তেমনি রম্য লেখক হিসেবেও। মাঝেমধ্যেই বিয়ে নিয়ে পোস্ট করেন। তার বিয়ে বিষয়ক রম্য লেখাগুলো সমস্ত রেকর্ড ভেঙ্গে সবচেয়ে বেশি লাইক কমেন্ট অর্জন করে। তার বেশিরভাগ বিয়ের গল্প তার হবু শ্বশুরের সাথে সম্পর্কিত।

 

ইমরান ভাই সম্পর্কে আপাতত এইখানেই অফ যাই। উনার বন্ধু দাদা ইসহাক নিয়ে একটু বলি। দাদা ইসহাক ভাইয়ের শরীর দর্শন হয়েছে ইমরান ভাইয়ের আইডিতে প্রকাশিত বিভিন্ন গ্রুপ ফটোতে। গ্রুপ ফটো দিলেও সবার চোখ যায় দাদা ইসহাক ভাইয়ের ছবিতে। কেন যায় সেটা বললাম না, শুধু বুঝে নিন অনেকজন ছবিতে থাকলেও দাদার দিকে সবার চোখ যায় আগে। উনিও ইমরান ভাইয়ের মত সবার দস্তরখানে উপস্থিত থাকেন। তার প্রোফাইল আইডির ছবিতে একটা পাতলা বাচ্চা কিছু খাচ্ছে, এই পিক তিনি মনে হয় কখনো পরিবর্তন করেন নি। দাদা ভাইয়ের কাজ হচ্ছে ইমরান ভাই ও তাদের টিমের সাথে ঘুরে বেড়ানো। আল্লাহ তার ভালো করুন এবং আর যেন মোটা না করেন।

 

দাদার প্রোফাইলের বাচ্চার ছবির কথা বলতে গিয়ে মনে পড়ল আরেকজন ভাইয়ের প্রোফাইলের বাচ্চার ছবির কথা। অবশ্য সেই বাচ্চা ঘাড় ব্যাকা করে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। এই ছবি নাকি ভাইয়ের খুব ভালো লাগে। ভাইয়ের নাম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। ইনি হচ্ছে বাংলাদেশে রুকইয়া চর্চার ব্যাপক করে তুলতে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। রুকইয়া নিয়ে এক খানা বইও লিখেছেন। রুকইয়াহ সাপোর্ট গ্রুপের মাধ্যমে বিনা মূল্যে মানুষকে সাহায্য করে যাচ্ছেন, মানুষের জিন, যাদু, নজর ইত্যাদি সমসয়ার প্রেস্ক্রিপশন দিচ্ছেন। আল্লাহ তাকে ও তার টিমকে উত্তম প্রতিদান দিন। অবশ্য গ্রুপ নিয়ে পরে এক ডেন্টিস্ট দম্পতির সাথে তার ও তার টিমের দ্বন্দ্ব হয়। সেই ডেন্টিস্ট দম্পতি সম্পর্কেও আলোচনা করব।

 

ডেন্টিস্ট দম্পতি হচ্ছে সাইফুল আলম রনি ভাই ও তার আহলিয়া। উভয়ে ডেন্টিস্ট। রনি ভাইয়ের একটা হিজামা কাপিং সেন্টার আছে। তার আহলিয়ার নাম ইফফাত সাইফুল্লাহ। রনি ভাই হিজামা নিয়েই মূলত কাজ করেন। তিনি সর্বদা পাগড়ি পরিধান করে থাকেন, মনে হয় তাবলীগ ব্যাকগ্রাউন্ড। আল্লাহ উভয়কে ভালো রাখুন।

 

বলছিলাম কওমি সেলেবদের নিয়ে। ইমরান রাইহান ভাইয়ের মত আরেকজন রম্য লেখক হচ্ছেন সাইমুম সাদী, যদিও তার আসল নাম রুহুল আমীন সাদী। সাইমুম সাদী ভাই হুমায়ুনের মত রম্য লিখলেও তিনি একটি ইসলামী রাজনৈতিক দলের নেতা। তার রম্য অরম্য প্রায় লেখাতেই ঐক্যের কথা বলেন, মুসলিমদের ঐক্যের জন্য, ইসলামী সকল রাজনৈতিক দলের ঐক্যের জন্য লিখেন। তিনি সাইমুমের মত একটি সিরিজ লিখছেন যেটা গার্ডিয়ান থেকে আসবে। আল্লাহ তার কলমকে ইসলামের পথে কাজে লাগান।

 

এবার বোধয় শরীফ আবু হায়াত অপু ভাই সম্পর্কে বলার সময় এসেছে। তিনি হচ্ছেন বাংলাদেশে দীনী ব্যবসার পাইওনিয়ার। অনেকেই তো আছে যারা দ্বীনদার এবং ব্যবসায়ী। কিন্তু অপু ভাই তাদের থেকে আলাদা এবং দ্বীনদারীতাকে ব্যবসার ভিত্তি বানিয়ে এটার প্রতি মানুষকে উৎসাহ দিয়েছেন, হালাল আয়ের পক্ষেও তিনি ব্যাপক ক্যাম্পেইন চালান। তার সরোবর হচ্ছে একটা অসাধারণ দীনী উদ্যোগ। তিনি দুই খানা দারুণ জীবনবোধের পুস্তকের রচয়িতা। এক সময় তার সরোবর প্রকাশনীও ছিল। এখন কোন প্রকাশনী চালান জানি না, তবে কোনো একটার সাথে হয়তো জড়িত আছেন। তিনি বিদেশে পড়াশোনা করেছেন। হেদায়েত লাভের পর থেকে ইসলামের জন্য কাজ করতে থাকেন। এমনিতে তিনি আহলে হাদিস, তবে প্রচলিত যেসব আহলে হাদিসদের দেখি, তিনি তেমন নন, তিনি সালাফি আকিদার এবং মাঞ্জুরে ইলাহির মানহাজ অনুসরণ করেন। এই মানহাজে বাড়াবাড়ি নেই, আবার নেই সৌদি আরবের দালালি, দলাদলিও নেই।

 

অপু ভাইয়ের তিন ছেলে। তার আহলিয়া হচ্ছেন সিহিন্থাহ শরীফাহ আপু যিনি আগে খ্রিস্টান ছিলেন। সিহিন্থাহ আপু এবং তার বোন নাইলাহ আমাতুল্লাহ, দুই বোন মিলে তাদের ইসলাম গ্রহণের কাহিনী নিয়ে বই লিখেছেন যা বইয়ের জগতে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিল। আল্লাহ যেন অপু ভাইয়ের পরিবারকে হেদায়েতের উপর রাখেন, সুস্থ রাখেন।

 

সিহিন্থাহ আপুর বাবা ইসলাম গ্রহণ করলেও তার মা ও ভাই এখনো মুসলিম হন নি। তাদের হেদায়েতের জন্য দুয়া করতে ভুলবেন না।

 

অপু ভাই সরোবর থেকে অনেক প্রোডাক্ট বের করেছেন। অপু ভাইয়ের সাথে আরও যে দুইটা নাম এসে পড়ে তা হচ্ছে আরমান ইবনে সুলাইমান এবং সরোয়ার ইবনে আফসার। ইনারা দুইজনই সরোবরের সাথে আছেন। আরমান ভাই তো পুরা লিজেন্ড। তিনি হচ্ছেন জাত সাহিত্যিক। অসাহিত্যিকদের বইয়ের ভিড়ে তার বই বের হয় না, তবু তার পোস্টগুলা পড়লেই তার লেখার হাত বোঝা যায়। আরমান ভাই বিবাহিত, হালকা পাতলা গড়নের এবং খুবই সাহিত্যমোদী মানুষ। আল্লাহ তাদেরকে ভালো ও সুস্থ রাখুন, হেদায়েতের উপর রাখুন।

 

এবার মাসুদ শরীফ ভাইয়ের কথা বলি, ইনি প্রফেশনাল অনুবাদক, তার অনুবাদ সবসময়ই হিট হয়, বেস্টসেলার হয়। তার একটা বই তো ব্যাপক আলোচিত সমালোচিত হয়েছিল। তিনিও অপু ভাই, আরমান ভাইদের মত সালাফি আকিদার অনুসারী, তবে তার সাথে আবার ওইসব ফিরকাবাজ ফিতনাবাজ আহলে হাদিসদের সম্পর্ক নেই। মাসুদ শরীফ ভাই ভদ্র ও জেনারেল শিক্ষিত। তিনি বিবাহিত ও সন্তানের পিতা। সিয়ানের সাথে ছিলেন, এখনো সেখানে আছেন কিনা জানি না। তবে অনুবাদ আর সম্পাদনায় পুরোপুরি সময় দিচ্ছেন। তার জন্যই দোয়া।

 

আরও কত দীনী ভাইয়ের নাম মনে আসছে। একজন দীনী ভাইয়ের নাম তাওসিফ আহমেদ সিদ্দিকি, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়য়ের লেকচারার, আল নাহিয়ান খান জিশান নামে একজন ভাই আছেন। তওহিদি তিয়াশ নামে একজন ইঞ্জিয়ার ভাই আছেন। রায়হান কবির ভাই যিনি সাসার প্রিয় ভাতিজা, সবজায়গায় তিনি খাওয়া দাওয়া বিষয়ক কমেন্ট করেন, ইনার রিহলাহ নামে একটা প্রকাশনী আছে। মীর সজিব ভাইয়ের নাম পড়ছে, যিনি বহুদিন অনলাইনে একটিভ নেই, তার একটা উদ্যোগ ছিল ইসলামী বইয়ের অনলাইন লাইব্রেরি তৈরি করা, যেটা মানুষকে বই পৌঁছে দিত, অবশ্য এটার নাম মনে পড়ছে না, এটার কার্যক্রম চলে কিনা সেটাও জানি না। আবু জুওয়াইনাহ ভাই আছেন, যিনি একজন লেকচারার, তিনিও মাঝেমধ্যে দারুণ সব পোস্ট দেন। আবু জুওয়াইনাহ নাম বলতে গিয়ে মনে পড়ল আবু সুমাইয়া ভাইয়ের কথা যিনি আতরের ব্যবসা করেন, আল্লাহ ব্যবসায় বারাকাহ দিন। আতরসহ টুপিটাপির ব্যবসা করেন আরেকজন ভাই ইসমাইল হুসাইন, তার অবশ্য কওমিদের সাথে লিঙ্ক বেশি, তিনি ফানি পোস্ট দেয়া ছাড়াও বিভিন্ন উপায়ে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠা মাবিঈ শপের বিজ্ঞাপন দেন। আরেকজন ভাই আছেন যিনি আতর বনিকের সাথে সংযুক্ত, আবু সাওদাহ ভাই, তার আসল নাম ভুলে গেছি, ভুল না করলে তিনি হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যিনি আগে গান-গিটার আর আল্ট্রামর্ডান লাইফ লিড করতেন, হেদায়েতের পর দ্বীনের জন্য জান মাল দেয়া তার জীবনের উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, আল্লাহ কবুল করুন। মুহাম্মাদ কাউসারুল আলম ভাইয়ের নাম পড়ছে, ইনি আইটি বিশেষজ্ঞ, দারুল ওয়াফা নামে সম্প্রতি একটি প্রকাশনি খুলেছেন, তুফায়েল খান ভাইয়ের সংস্পর্শে এসে রুকিয়া শেখা ও চর্চা শুরু করেন, আল্লাহ তাকে যোগ্য রাকি হওয়ার তৌফিক দিন। তুফায়েল খান ভাই হচ্ছেন জেনারেলের, কিন্তু ইনি রুকইয়া প্রাক্টিসে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভাই থেকেও বেশি দক্ষ, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভাই মূলত আলিম এবং থিওরিতে উনি পক্ক, কিন্তু তুফায়েল ভাইয়ের প্র্যাকটিস বেশি, বিভিন্ন কেস স্টাদি নিয়ে উনি পোস্ট করেন, উনার এক পুত্র আছেন, উনি পাতলা গড়নের, কিন্তু জিনদের জন্য উনি যেন জম, জিনদের হত্যা, শায়েস্তা নানা কাজ করে থাকেন। আরেকজন রাকি ভাইয়ের নাম মনে পড়ছে, তিনি রাকি আব্দুস সালাম। এছাড়াও রুকিয়াহ সাপোর্ট গ্রুপে রাফায়েল হাসান, আনোয়াহ শাহ (এই ভাই ভালো লেখকও), আরিফুর রহমান, শাহরিয়ার কাউসার তৌহিদ (জাপানে থাকেন), নাইম রহমান, ফরহাদ হুসাইন এরকম অনেক ভাই কাজ করেন। আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভাইয়ের একজন ফুফুও এই বিষয়ে খুব ভালো জানেন তার নাম মাহফুজা বিনতে মুনির ওরফে উম্মে আব্দুল্লাহ।

 

এছাড়াও আরও বহু ভাইয়ের নাম মনে পড়ছে, কজনের টা বলে শেষ করতে পারি? নাফিস রায়হান রিদিত ভাই, যিনি খুবই আধুনিকমনা, এবং ভালো মুসলিমও, আল্লাহ তাকে সঠিক পথে রাখুন। আনা ফুলান ভাই যিনি খুব মেধাবী মানুষ, তার আসল নাম জানি না। আরও আছেন মোস্তফা আল মাইনুল ইসলাম ভাই। ফয়সাল ফারদিন ভাইয়ের নাম মনে পড়ছে, ফয়সাল দিয়ে আরেক ভাই হচ্ছেন ফয়সাল সোহান। তুরস্কে এক ভাই থাকেন, শাহনেওয়াজ শামিম। মোহাম্মদ তাওসিফ সালাম নামে একজন ভাই আছেন, ইনি খুবই মেধাবী মানুষ, তিনি সম্ভবত একজন বিএনপি নেতার পুত্র, তাওসিফ সালাম ভাই খুবই ভালো লেখেন, তার সবচেয়ে ভালো শভাব হচ্ছে কোথাও কমেন্ট করলেও তিনি সালাম দিয়ে কথা শুরু করেন, সালামের চর্চা তার থেকে শেখার আছে। নাজমুস সাকিব নামে এক ভাইয়ের নাম মনে আসছে, ইনি সালাফি, কিছুটা এন্টিজিহাদি হওয়ায় জিহাদিদের খোঁচাতে তিনি পছন্দ করেন, তিনিও ভালো মানুষ, সাসার মত তিনিও নাসা উপাধি পেয়েছিলেন। রাজিব হাসান ভাইয়ের নাম মনে পড়ছে, যিনি অতি সম্প্রতি দুয়া কবুলের গল্পগুলো নামে একটি বই বের করেছেন, অনুবাদ বোধয়, তিনিও খুব ভালো লেখেন, তিনিও সালাফি মানহাজের অনুসারী। ইশ্তিয়াক আহমেদ তুষার ভাইয়ের কথা তো বলাই হয় নি, তিনি কুরআন হাদিসের কোট সম্বলিত ছবি পোস্ট করে থাকেন, ইমরান রায়হান ভাইদের সার্কেলের মধ্যেও তাকে পাওয়া যায়। ইমরান রায়হান ভাইদের গ্রুপের মধ্যে আরেকজন ভাই আছেন তিনি হচ্ছেন হানিফ বিন সোহরাব ভাই, তিনি সবসময় পারবারিক জীবন সম্পর্কিত লেখা লিখে থাকেন, যদিও তিনি বিবাহিত কিনা জানি না। আরেকজন ভাই আছেন যিনি পারবিবারিক জীবন বিষয়ে লেখালেখি করেন, তিনি হচ্ছেন আল মুজাহিদ আরমান ভাই, তিনি অনেকটা মাইনুদ্দিন ভাইদের মধ্যে মাযহাবি অবস্থানে ভারসাম্য রক্ষা করে থাকেন। পারিবারিক জীবন বিষয়ে অনেকেই মাওয়াদ্দাহ গ্রুপে লেখালেখি করেন। গ্রুপ নিয়ে একটা আলাদা আলোচনা সামনে আনব ইনশাআল্লাহ।

 

মিনহাজুল আই (ইসলাম?) মাহিম ভাইয়ের নাম মনে পড়ছে যিনি ফান পোস্ট দিয়ে আমাদের হার্ট সুস্থ রাখতে ভূমিকা রাখেন, তার একমাত্র কাজ ফেসবুকে মানুষকে হাসানো। অবশ্য তিনি ফেসবুক থেকে বিস্রামে গেলেও আরেকজন ভাই আছেন যিনি আমাদের হাসিয়ে থাকেন, তিনি হচ্ছেন ফাহদ মাহফুজুর রহমান ভাই, ইনি আবার একজন ডাক্তার। মিসবাহ মাহিনের কথা আগে বলেছিলাম বোধহয়, আবার বলি, তিনি খুবই ভালো লেখালেখি করেন। তানভির রাজ ভাইয়ের কথা তো বলাই হয় নি, তার সাথে ইমরান ভাইদের ভালো সম্পর্ক আছে, তানভির রাজ ভাইয়ের রিজওয়ানুল কবির সানিন ভাই এবং প্রফেসর হযরতদের সাথে কোনো না কোনো লিঙ্ক আছে, তিনি প্রফেসর হযরতের ভাবশিষ্য, তিনি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। চুয়েটের এক ভাই আছেন, ফারহান সাদেক। মোহাম্মদ রাকিব ইবনে শিরাজ ভাইয়ের নাম মনে পড়ছে, ইনি ভালো লেখা ছাড়াও ভালো কথাও বলেন, নাস্তিকদের সাথে লাইভে তর্কও করেছেন, তিনি অভিজাত ঘরের সন্তান, খুবই স্ট্রেইট ফরোয়ার্ড কথা বলেন, কম বয়সে বিয়ে করেন। অবেক্ষমান প্রুফরিডার ভাইয়ের আসল নাম না জানলেও তিনি উমেদের সাথে জড়িত থেকে খিদমত করে যাচ্ছেন, তাবলীগের সাথী ছিলেন। খিদমতের নাম নিতেই খিদমাহ শপের নাম মনে পড়ল। খিদমাহ শপ একটি জনপ্রিয় দীনী অনলাইন শপ, বাংলাবাজার এদের দোকান আছে, মালিকের নাম জানি না, তবে রিভিউ অব ইসলামিক বুক্স পেজ থেকে প্রতি সপ্তাহে রিভিউএর পুরষ্কার প্রদান করত সেই আয়োজনে খিদমাহ শপ বই পুছে দিত, খুব ভালো একটা আয়োজন ছিল যেটা পরে বন্ধ হয়ে যায়। এই আয়োজনের পিছনে মাকসুদ ভাই ছিলেন, এতো সুন্দর আয়োজন কেন বন্ধ হল জানি না।

 

ইফতেখার সিফাত ভাইয়ের কথা বলা হয় নি যিনি আসিফ আদনান ভাইয়ের আহ্বানে ইসলামী ব্যাংকঃ ভুল প্রশ্নের ভুল উত্তর বইয়ের অনুবাদ করেছিলেন, ইফতেখার সিফাত ভাইও আসিফ আদনান ভাইয়ের মানহাজের অনুসারী, তিনিও ভালো লেখেন। শিহাবুদ্দিন ইবনে তোফায়েল নামে একজন ভাই আছেন, মাহাজে সালাফি, মাইনুদ্দিন ভাইদের মতন ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান। আবু সামিহা সিরাজুল ইসলাম ভাইয়ের কথা বলা হয় নি, ইনি হচ্ছেন সাবেক জামা'আতি, এবং বর্তমানে দলের চেয়ে হকের উপর থাকাকে বেশি প্রাধান্য দেন, দূর প্রবাসে থাকেন, ভালো আলেম। আল্লাহ সকল ভাইয়ের মঙ্গল করুন।

 

জামাতের কথা বলতেই কয়েকজন জামাত-ঘেশা ফেবু সেলেবের নাম স্মরণ হল, আমান আব্দুহু নামে এক অতি মর্ডানিস্ট জামাতি আছে, ফাইজলামি করা যার একমাত্র কাজ, অথবা অন্য কোনো দলের পাছায় আঙুল ঢুকানো। ফাইজলামি করেন আরেকজন হচ্ছেন কাউসার আলম ভাই, প্রোফাইল পিকটা তো দারুণ, একটা বাচ্চা মেয়ে, কিন্তু তার পোস্টগুলো সবই হয় ট্রল পোস্ট। ইদানিং বহু দিন পর পর এক দুই খান পোস্ট দেন, তার সবচেয়ে জনপ্রিয় পোস্ট হচ্ছে মাশরাফির নামে বিখ্যাত খেলোয়াড়দের জালকথা তৈরি করে মাশরাফির গুরুত্ব বুঝিয়ে একটা ট্রল পোস্ট করা, কিন্তু আমাদের আশ্চর্য এই মিডিয়া জগত এই পোস্ট লুফে নিল, এগুলো পত্রিকায় ছাপিয়েও দিল, হায় আমাদের সাংবাদিকতা। চিন্তিত চিন্তাফা নামে এক আফার কথা স্মরণ হচ্ছে, আফাও বেশ মজার পোস্ট দেন, নারীবাদ নিয়েও আফা ভালো পোস্ট দেন। আফা আমিই দেশপ্রেমিক নামেও একটা আইডি ছিল। জামাতিদের পক্ষে প্রতিবাদ মুলক পোস্ট দেয় ও সমালোচনা করে এমন একটি আইডি হচ্ছে কমরেড মাহমুদ। অনিরুদ্ধ অনির্বাণ নামে এক রিফর্মিস্ট আছে। আলি লা পইন্তের কথাও উল্লেখ করা যায়। আবু ইয়ালা নামে তাকিউদ্দিন নাবহানির এক অনুসারী ফেসবুকে ঘুরে বেড়ায়। জাবাল আত তারিক ভাই আছেন, যিনি প্রবাসে পিএইচডি করছেন, তিনি ভালো লেখেন জামাতের পক্ষে। রিফাত চৌধুরী ভাই তো সংস্কারপন্থীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন। কাউস কাই, যিনি সেকুলাঙ্গারদের বই থেকে তাদের চরিত্র তুলে ধরেন। নুরুল আহাদ ভাই যিনি জামাতের সমর্থক, কয়েকটা গ্রুপ খুলে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার প্লাটফর্ম তৈরি করেছেন, কিন্তু ইনি জামাত বাদে সব দলের প্রতি চেতা, সালাফি তো কথাই নাই, কওমিদেরও ছাড়েন না, চিবিয়ে খান পারলে। উনার গ্রুপে অনেক জামাতির আনাগোনা দেখা যায়। এরদোয়ান দ্যা চেঞ্জমেকার এর লেখকও জামাতি। গার্ডিয়ানের প্রকাশক নূর মোহাম্মদ ভাইও জামাত নেতার সন্তান, ইনি খুব একটিভ মানুষ, তার এক্টিভিটি অবাক করার মত, অনুপ্রেরণা দেয়ার মত। এডভোকেট ভাই রালফ রোভারের কথা তো বলাই হয় নি, তিনি ইসলামপন্থীদের সমালোচনা করে মজা পান। আতিফ আবু বকর, সবুজ কবির এদের নাম বলা হয়নি। এইচ আল বান্না নামেও এক জামাতি রিফর্মিস্ট আছে। জামাতিদের অধিকাংশই কেন জানি একটু সমস্যা যুক্ত হয়। এটা কোনো বিদ্বেষপ্রসূত মন্তব্য নয়, বাস্তব অভিজ্ঞতা। রাজিব খাজা নামে এক সুফিপন্থী, বিদ'আতপন্থী লোক আছে যিনি জামাতের মধ্যে মিশে থাকে এবং খুব পরিচিত একজন এক্টিভিস্ট।

 

জামাতি আরও ভাইদের নাম মনে পরলে বলব।

 

আব্দুল্লাহ মাহমুদ নজীব ভাই কওমি ব্যাকগ্রাউন্ডের ঢাবির ছাত্র, একজন কবি, তার সম্পর্কে কি বলব, তিনি তো এমনিতেই বিখ্যাত, গদ্য পদ্য দুটাই দারুণ লেখেন।

 

এস এম নাহিদ হাসান উস্তাযের কথা বলা হয়নি, আরবি ভাষা শিক্ষা নিয়ে বই লিখেছেন। সাইয়েদ হাসান ভাইয়ের কথাও বলা হয় নি, তার কাজ সবার ভালো ভালো পোস্ট ও লেখা শেয়ার করা। ইমরান রায়হান ভাইদের সার্কেলেও তাকে দেখা যায়। আতাউল্লাহ রাফি ভাই যিনি চট্টগ্রামের সন্তান, হারুন ইযহার তার শাইখ, তিনি অবশ্য জেনারেল স্টুডেন্ট। রাফি ভাইয়ের মত হারুন ইযহারের আরেকজন শিষ্য হচ্ছেন রায়হান মাহমুদ ভাই, ইনিও জেনারেলের। ফারহান আল হানাফি ভাইয়ের কথা বলা যায়, ইনি রায়হান মাহমুদ ভাইয়ের বন্ধু। ইমতিয়াজ ভাই যিনি দেশের বাইরে থাকেন, কাফের দেশে থেকেও তার ইসলামের বুঝ যথেষ্ট আছে। বদরুদ্দোজা টিটু ভাই যিনি পাঞ্জাবিওয়ালার মালিক। মাহফুজ আলামিন ভাই খুব ভালো লেখেন, উনি ভালো কবিতাও লেখেন। কবির আনোয়ার ভাইয়ের কথা বলা হয় নি, তিনি সালাফি মানহাজের অনুসারী এবং শাইখ মনজুরে এলাহির শিষ্য। ভাইয়ের আহলিয়া নিশাত তাম্মিম আপুও ভালো লেখেন, নিশাত আপু তাবলীগ ব্যাকগ্রাউন্ডের এবং ডাক্তার। শহিদুর রহমান শহিদ ভাই আছেন যিনি ফান পোস্ট করে মজা দেন, ইমরান ভাইদের সাথে তার লিঙ্ক আছে, উনি কওমি ব্যাকগ্রাউন্ড কিনা জানি না। মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম ভাই ভালো লিখেন, অনুবাদও করেন। আশরাফুল আলম সাকিফ, ইনি ডাক্তার, একটি বইও লিখেছেন নাস্তিকতার খণ্ডনে, তবে ডাক্তারি পেশা নিয়ে উনি খুবই সেন্সিটিভ, অর্থাৎ ডাক্তারদের বাজে বললেই চেতে যান। অবশ্য সবাই তার পেশার প্রতি নিবেদিত থাকেন, এজন্যই তো শক্তি ভাই ডাক্তারদের নিয়ে একটা সিরিজ লিখেছিলেন। সোহাইল দউলাহ ভাই আছেন, আরও আছেন দরিয়ার মাঝি নামের ভাই, মাহমুদুল হাসান ভাউ। ভিকিজ মব নামে একজন আছেন, তিনিও ফান পোস্ট দিয়ে থাকেন, একটা পেজও ছিল তার, সবাই তাকে স্যার ভিকিজ মব বলে, ভাইয়ের আসল নাম জেনেছিলাম কিন্তু মনে নাই। তাসনিম বিন সেকেন্দার ভাই আছেন যিনি ক্রিকেটপ্রেমি, এবং বইপ্রেমিকও। গাজি ভাই, নাসিফ আব্দুল্লাহ, আবু সাইদ ইবনে মুক্তার, মোহাম্মদ এম রহমান, ইমরান হোসাইন (রম্যলেখক হিসেবে খুব দারুণ), আমিরুল ইসলাম অমি, মুহাম্মাদ ইফফাত মান্নান (লেখালেখি করেন), হেল্পফুল শপের নুরুদ্দিন খন্দকার, আদনান মুসলিম, মুহাম্মাদ নাফিস নাওয়ার (লেখেন ভালো), নাফিস শাহরিয়ার (তিনিও লেখেন, কুয়েটের ছাত্র, শিহাব তুহিনের বন্ধু), আবু হাফসা খান, মোহাম্মদ শিবলু (অর্থনীতি নিয়ে কাজ করেন), সাজ্জাদ এস পারভেজ, বুয়েটের আয়াতুল্লাহ নাওয়াজ, মুহাম্মাদ ইমরান (ইমরান রায়হান ভাইয়ের সাথে সম্পর্ক আছে), গাজি মুহাম্মাদ তানজিল (একটা দাওয়াতি বইও লিখেছেন), তানভির আহমাদ ফাহিম, সাজ্জাদুর রহমান শাওন (নাসিহার এডমিন), রাইহান কাদেরি, মুহাম্মাদ আফসার, সরোবরের আসিফ আশকার, জুবায়ের হোসাইন (ভাল লেখেন), শেখ আসিফ, গোলাম মুক্তাদির (গল্পকার), ইউসুফ আহমেদ, আহমেদ শাফি, কলামিস্ট হুজুর (খুব ভালো লেখেন), তান্সির আলম, মাহমুদুল হাসান মুরাদ (ইনি কাফেরদের দেশে থাকার প্রচণ্ড বিরোধী অবশ্য নিজেই তিনি লন্ডন থাকেন), শরীফ সাইদুর, সালেহ রেজা (শরীফ সাইদুর ও সালেহ রেজা দুইজনই ইমরান রায়হান ভাইয়ের সাথে সম্পর্কিত)। ইমরান রায়হান ভাইয়ের সাথে সম্পর্কিত আরেকজনের নাম তাকরিম চৌধুরী ভাই, সম্ভবত সিলেটের সন্তান, কওমি ব্যাকগ্রাউন্ড। আবু মুহাম্মাদ, আনাস উনাইস, ইয়াসিন, (এনারা হচ্ছেন সমকালীনের সাথে সংযুক্ত), এছাড়া আরও কত ভাইয়ের নাম মনে আসছে। ইসমাইল ভাই সমর্পণের, মোদাসসের বিল্লাহ তিশাদ, মুহাম্মাদ আলিমুদ্দিন, জোশগিয়ারের মালিক সাগর হাসনাথ, ইয়াহিয়া আমিন, নাজমুস সাকিব নির্ঝর, জামান মোঃ আসাদুজ বা হিসাব মুযাইয়্যাফকে কে না চিনে, কিন্তু তার আসল নাম এখনো জানা যায় না, তাঞ্জিন দোহাই তিনি কিনা আমি জানি না, তবে ইফতেখার জামিলদের সাথে তাদের লিঙ্ক আছে। ইফতেখার জামিল হচ্ছেন কওমির একজন চিন্তক আলিম, লেখক। কওমির চিন্তকদের মধ্যে শরীফ মুহাম্মাদ, মুসা আল হাফিজ আরও অনেকে আছেন। রিজওয়ানুল কবির ভাই আর শিহাব তুহিন ভাই নিয়ে আলাদা প্যারাগ্রাফ লেখা দরকার ছিল, কিন্তু হাত আর চলছে না। তাই সংক্ষেপে বলি। শিহাব ভাই কুয়েটের ছাত্র, বাবা মারা গেছেন ছোটবেলাতেই, জবরদস্ত লেখক, বই বেরিয়েছে একটি, তার লেখার বিষয় দাওয়াতি, তার বেশিরভাগ লেখার থিম প্রেম বিয়ে। রিজওয়ানুল কবির ভাই হাফেয এবং একজন দাঈ, তার লেখা প্রচণ্ড হৃদয়ছোঁয়া, তার পিতা অধ্যাপক জনাব লুতফুল কবির, প্রফেসর হযরতদের কাছের লোক খুব। প্রফেসর হযরতের আরেকজন কাছের লোক আদম আলি সাহেব। ইনি প্রফেসর হযরতের উপর অনেক কাজ করেছেন, করছেন। জোজন আরিফ ভাই তার সাহিত্যের প্রশংসা করে বলেছেন, এতো প্রতিভাবান সাহিত্যিক থাকতে আমাদের সেকুলার সাহিত্যিকদের বই পড়ার প্রয়োজন আছে কি? আমিও এটাই বলি। আমাদের সাইমুম সাদী, আব্দুল্লাহ আল মুনিরের মত মেধাবী সাহিত্যিক থাকতে হুমায়ূন কিংবা আনিসুল হকদের দরকার আছে কি?

 

রুম্মান আকবর ভাইয়ের কথা বলা যায়, অবশ্য উনি কোনো দীনী ব্যক্তিত্ব নন, তবে তিনি একজন ভালো মুসলিম। তিনি ইতিহাস নিয়ে কাজ করেন। ইতিহাসবিদ হিসেবে অনেক উচুমানের জ্ঞানী। বাংলাদেশের বিখ্যাত ইতিহাসবিদ মাহমুদুল হাসানের ছাত্র। তিনি প্রচুর লিখেছেন এবং সব লেখা অনলাইনে উন্মুক্ত করে রেখেছেন। একবার তার লেখা থেকে ভাব নিয়ে এক কওমি লেখক এক বই লিখে যা নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড বাধে। সে বই প্রকাশ করে কালান্তর। রুম্মান আকবর ভাই তাদেরকে চোর বলে গালাগালি করেন। এমনিতে রুম্মান ভাই রাগি আর বদমেজাজি, একটুতেই রেগে যান। সেই বইটা হচ্ছে কালান্তর থেকে প্রকাশিত দ্যা প্যান্থার। বাইবার্সের ইতিহাস লিখেছিলেন রুম্মান ভাই এক পেজে, সেখান থেকে কিছু অংশ এবং কিছু চিন্তা নিয়ে ইমরান আহমেদ নামে এক ব্যক্তি বাইবার্সের জীবনী লিখেছিলেন, এটা নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়, শেষে দেখা গেল আসলেই ইমরান সাহেব রুম্মান ভাইয়ের লেখার ভাব চুরি করেছেন, যেটা না করলেও পারতেন। তবে লেখা পুরোপুরি এক না, ইমরান সাহেব চতুরতার সাথে রুম্মান ভাইয়ের লেখাকে একটু এদিক সেদিক করে প্রকাশ করেন। অবশ্য রুম্মান ভাই এমনিতেই চেতা, তিনি নানা রকম বাজে কথা বলেছেন ওদের। রুম্মান ভাই ইসলামকে ভালোবাসেন। তিনি শিয়াদের বিপক্ষেও লিখেছেন। তিনি জাকির নায়েকের বিরুদ্ধেও পোস্ট লিখেছেন। কথিত হুজুরদের উপরও তিনি মাঝেমধ্যে চটে যান। কিন্তু তিনি ইসলামের প্রতি খুব ভালোবাসা রাখেন। কিন্তু ইতিহাস গবেষণায় তার কাজ একেবারেই এপিক। আল্লাহ তাকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার তৌফিক দান করুন। তিনি বিবাহিত। তিনি সবসময় নিরপেক্ষ ইতিহাস তুলে ধরার চেষ্টা করেন। বানানের ক্ষেত্রে তার লেখার রীতি একেবারেই অন্যরকম, তিনি আরবি শব্দের আরবি বানানের অনুগামী বানান লিখেন। যেমন আব্দুর রহমানকে লিখেন আব্দ আর রাহমান। এরকম।

 

আল ইমরান ভাই যিনি ট্রুথ ইস স্ট্রেঞ্জার দেন ফিকশন পেজটা চালান। তিনি এন্টি মেইন্সট্রিম সাইন্স নিয়ে কাজ করেন। এই নিয়ে প্রচুর লিখেছেন। কিন্তু তার আইডি, পেজ এসব প্রায়ই ডিজেবল করে দেয়া হয়। তিনি সাইন্সের বিরুদ্ধে লিখেন এবং মুসলিমদেরকে কাফেরদের ধোঁকা থেকে বেঁচে থাকার জন্য উৎসাহ যোগান। ইমরান নজরের ভক্তদের নিয়ে বলা হয় নি। ইমরান নজরের ভক্তদের মধ্যে বশির মাহমুদ ইলিয়াস আছে, ইনি ইমরান নজরের মতবাদের সবচেয়ে বড় প্রচারক। আবার কায়সার আহমেদ নামে একজন ভাই আছেন, আবু মুন্তাহা ভাই আছেন। এমনকি আমাদের প্রিয় তোয়াহা আকবর ভাইও কিছুটা ইমরান নজরীয় চিন্তায় প্রভাবিত। ইমরান নজরের বিরুদ্ধে রাকি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভাই কাজ করেছেন।

 

আরও অনেকের নাম এখনো বলা হয় নি, কিন্তু আমি ক্লান্ত, তাই এক টানে সব নাম বলে যাব, ইকবাল মাহমুদ শোভন, ইস্তিয়াক আহমেদ সাইফ, অরিজিত রায় (নওমুসলিম, ইন্ডিয়ান), সুজিত সুচন্দন (নওমুসলিম), আব্দুল আজিজ (নওমুসলিম ও দাঈ), ওসমান রউফ, ওসমান হারুন সানি, মুহাম্মাদ আল ইমরান নাইম (একটি মাত্রিমনি চালান), আবু মুস'আব, তানভির পারফেকশনিস্ট, রেদওয়ান কবির শুভ্র, রাহাত বিন ইসলাম (আরবি ভাষা শিক্ষক), তাঞ্জিম ফারহাত, সুতীর্থ মুখার্জী (নওমুসলিম), কাওসার রেজওয়ান রিকো, হামিদ সিরাজি (অনুবাদক), জাহিদুল ইসলাম হৃদয়, আবির খৈয়ম ইহসান, আব্দুর রহমান মুয়ায, হোসাইন শাকিল, আমজাদ হোসাইন, তারিকুল আজিম, মোস্তাফিজুর রহমান তারেক, আহমেদ ইউনুস, মোক্তাদির বিল্লাহ হাসিব, তালহা বিন ইউসুফ, মামুনুর রশীদ কাজল, রাকিব আল হাসান, হাফিয আল মুনাদি, জিহাদ বিন মহিন, হাসান ফারদিন নাহিন, আব্দুল্লাহ আহনাফ, সাজিদ বিন আব্দুল্লাহ, নাবিউল করিম সমাজ (জমিদার পরিবারের সন্তান), সাঞ্জির হাবিব (এনার কাজ ছোট ছোট পোস্ট দেয়া, আর ভিন্ন মতের কাউকে সহ্য করতে না পারা, তাই সবাইকে ব্লক দিয়ে রাখেন, তিনি এন্টি-জিহাদি, তাই জিহাদিরা তাকে দেখতে পারেনা, জিহাদিদের দাবি তিনি একসময় আইএস সাপোর্ট করতেন), হাফিজ মুহাম্মাদ, তাহমিদ হুসাইন পিয়াস, তানভির আহমেদ আরেজেল (উনি তো এখন আর লেখেন না), এজাজ কবির, মুহাম্মাদ মাজহার (ইবনু মাজহার এবং উনি এক না সম্ভবত), আব্রাহামেট্রি (মাসুদুল আলম, স্যার, সালাফি), মুগণিউর রহমান তাবরিজ (লেখক), জাফর বিপি (লেখক), আবু জুওয়াইরিয়া, সালাফি সুফি, আলি মোস্তফা (ভারত, লেখক), তউসিফ বিন পারভেস, জোভিয়াল আনাম, আজহার মাহমুদ, সাব্বির আহমেদ, হাফিজ আসাদ, ইবনে মোস্তফা, জাকারিয়া মাসুদ আরও কত নাম জানা-অজানা ভাই যে আছে। মাহের খান (সাবেক ব্যান্ড শিল্পী) ও মাহমুদুল হাসান সোহাগ (রকমারির প্রধান, উদ্ভাসের প্রতিষ্ঠাতা) ভাই তো ফেসবুকে এক্টিভ না, কিন্তু সবাই তাদের চিনি, সাবেক ক্রিকেটার রাজিন সালেহ ভাইও দাওয়াতি কাজে জড়িত বলে শুনেছিলাম। আল্লাহ সকলকে হেদায়েতের উপর রাখুন। কওমিদের নাম তো এখনো বলিই নি, তাদের নাম বললে পুরা দুই তিন ভলিউম হয়ে যাবে। 

 

ফেসবুক জগতের কয়েকজন ফিতনাবাজের নামঃ জোবায়ের আল মাহমুদ, ইনি হচ্ছেন মোজাম্মেল হকের শিষ্য। গুরুশিষ্য উভয়ে মর্ডানিস্ট ইসলামের প্রচার চালায়, এদের ফিতনা ভয়াবহ রকমের বাজে। জোবায়ের আল মাহমুদ তো একবার পোস্ট করে ঈসা আঃ এর জীবিত থাকাকে অস্বীকার করল, নাউযুবিল্লাহ। আরেকজন মর্ডানিস্ট হচ্ছে আসিফ শিবঘাত ভুঁইয়া, সে জেনারেল থেকে আসে এবং একসময় খুব ভালো সালাফি ছিলেন, পরবর্তীতে মর্ডানিস্ট ইসলামের চর্চা ও প্রচার শুরু করেন। এন্টিমোডারেটদের কাছে তার অবস্থান শায়খ তালাতের মত। আল্লাহ এদেরকে হেদায়েত দিন। আর কওমি মোডারেটের সংখ্যাওও অগণন। কবি মুসা আল হাফিজ নিজেও মোডারেট। তুহিন খান নামে একজন কবি আছেন, সাব্বির জাদিদ নামে এক সাহিত্যিক আছে, এরা মোডারেট কিন্তু এদের চেয়ে চরম ও গরম মাত্রায় মোডারেটও আছে, একজনের নাম পড়ছে না, কালের কণ্ঠে এখন ফিচার লেখে, দাড়ি টুপি পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়য়ের মেয়েদের সাথে ঢলাঢলি করে। আর বেশিরভাগ কওমি সাহিত্যপূজারী হয় সেকুলাঙ্গার না হয় মোডারেট। আহসান জাইফের কথাও বলা যায়।

 

এবার বলব কওমিদের নাম। যত জনেরটা স্মরণে আসে বলে যাব। মিযান হারুন, আব্দুল্লাহ তালহা, আলামিন আরাফাত (রক্ত দিয়ে বেড়ান এবং ট্রল পোস্ট করেন), আতিকুল্লাহ, আব্দুল হাই (জেনারেলের)। আতিকুল্লাহ সাহেব অনেকগুলো গ্রুপ খুলেছেন যেমন মাসনা সুলাসা রুবা'আ, খিলাফাহ রাশিদাহ, রবিউ কলবি ইত্যাদি। মাসনা সুলাসা নিয়ে ইনার মাধ্যমেই ব্যাপকভাবে এই শব্দগুলো পরিচিত হয় এবং এই নিয়ে তর্ক বিতর্ক শুরু হয়। আর সাথে ছিলেন আব্দুল হাই। আব্দু হাই সাহেবের কাজ ফান পোস্ট করা, তার 'কিছু কমু না' সিরিজটা দারুণ। শাইখদের মধ্যে জিয়াউর রহমান, আব্দুল্লাহ আল মামুন, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (রাকি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ নন, ইনি নাসিহাহ গ্রুপের মুফতি), আব্দুল্লাহ আল মাসুদ (ইনি লেখক এবং অনুবাদক)। আব্দুস সাত্তার আইনি যিনি অনেক বেশি মর্ডানিস্ট কিন্তু আব্দুল্লাহ আজ্জাম রহঃ এর অনেক বই অনুবাদ করেছেন। সাদিদ মালেক, মহিউদ্দিন কাসেমি (বাংলা ও ইংলিশ), মুফতি মনোয়ার হোসাইন, আবুল কাসেম আদিল এরকম অনেকের নামই বলি নি। কয়জনের নামই বা বলা যায়? সাদিদ মালিক ভাই তো মীর সালমানের সাথে টম এন্ড জেরির মত একে অন্যের পিছে লেগে থাকেন, যদিও শিয়াদের বিরুদ্ধে দুইজন একমত হয়েছিল।

 

আব্দুল্লাহ মাহমুদ নামে এক সালাফি ভাই আছেন, আহমাদ সাইদপুরি ভাই অনেক বই অনুবাদ করেছেন, সায়েদুর রহমান একজন ভালো লেখক যার কাজ হচ্ছে সৌদি আরবের পক্ষে ডিফেন্ড করে পোস্ট করা। তরিকুল আলম নামে একজন কলামিস্ট আছেন, তিনি কওমি-ব্যাকড। হাসান আনহার নামে শফি সাহেবের এক শিষ্য আছেন। কওমিপিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতার নাম মনে পড়ছে না, তবে বৈজ্ঞানিক পাপ নামে তার একটা বই আছে। মাহবুব ওসমানী নামে একজন ভাই আছেন। মুফতি নাহিদুর রহমান মৃধা নামে একজন আলেম আছেন। আরও কত নামের ভাইয়েরা আছেন। আমি আপাতত থামতে চাই। এই লেখা এখানেই শেষ করতে চাই। আশা করি ইতিহাস বিবৃত করতে না পারলেও কিছুটা ধারণা দিতে পেরেছি। আমাদের ফেসবুক যুগ সত্যিই অনেক আনন্দের। কিন্তু সব এখনো বলে সারতে পারি নি, তাই তৃপ্তি পাচ্ছি না। তবু শেষ করতে হবে। আমি সুযোগ পেলে আমাদের ফেসবুক যুগের ইতিহাসের যে বিষয়গুলো অনালোচিত তা আবার আলাপে আনব ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের সকল ভাইকে দ্বীনের উপর রাখুন, হেদায়েতের উপর রাখুন, কল্যাণের পথে রাখুন, ভালো ও সুস্থ রাখুন, যাদের বিয়ে হয় নি তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করে দিন, যাদের সন্তান হয় নি তাদের সন্তান দান করুন, যারা মাসনা সুলাসা করতে চান আল্লাহ যেন তাদের ওয়াহিদার মনকে নরম করে দেন এবং অবস্থা অনুকূলে এনে দেন, যারা ব্যবসা বাণিজ্য করছেন তাদের ব্যবসায় বারাকাহ দিন, যারা কাজ করে তাদের সময়ে বারাকাহ দিন, যারা গরিব তাদের খাদ্যে ও অর্থে বারাকাহ দিন, যারা ধনী তাদের অপচয় থেকে রক্ষা করুন এবং বেশি বেশি দান সাদাকার তৌফিক দিন, যারা ইলম অর্জন করছেন তাদের ইলমে বারাকাহ, যারা দাঈ তাদের কর্মকে আল্লাহ কবুল করুন এবং তাদের সফলতা দান করুন, যারা লিখে যাচ্ছেন তাদের লেখার তৌফিক দিন, যারা কথা বলছেন, তাদেরকে হকের পথে কথা বলার তৌফিক দিন, যারা সত্যের জন্য জিহাদের নিয়ত করেছেন তাদের জিহাদের পথে যাবার তৌফিক দিন, যারা জিহাদি মিডিয়ার সাথে জড়িত তাদের কাজ করার তৌফিক দিন, যারা কারাবন্দী তাদের মুক্তির ব্যবস্থা করে দিন, যারা অসুস্থ তাদের সুস্থতা দিন, যাদের পরিবারের কেউ অসুস্থ তাদেরকেও সুস্থতা দিন, যাদের অর্থ সংকট ও ঋণের বোঝা, আল্লাহ তাদেরকে এর থেকে মুক্তি দিন, আল্লাহ আমাদের ভাইদেরকে এবং আমাদেরকে সর্বাঙ্গিন কল্যাণ দান করুন, দুনিয়াবি ও আখিরাতি কল্যাণ দান করুন। আল্লাহুম্মা আমীন। আল্লাহ কবুল কর।

 

 

বিদ্রঃ ফেসবুক গ্রুপ ও পেজ নিয়ে আলাপের ইচ্ছা ছিল, কিন্তু কোনো কারণে তা করা হয়ে উঠে নি, তাই একেবারে সংক্ষেপে কিছু বলব, গ্রুপের মধ্যে নাসিহাহ সবার প্রিয় একটা গ্রুপ। এছাড়া ইসলামী বই, পাঠাভ্যাস, মাওয়াদ্দাহ, মাসনা সুলাসা রুবা'আ, আর্লি ম্যারেজ ক্যাম্পেইন, তাদাব্বুরে কুরআন, ইসলামী বই পিডিএফ, বইয়ের রাজ্য, গার্ডিয়ান পাঠক ফোরাম, পাশ্চাত্যবাদ আরও অসংখ্য গ্রুপ আছে আমাদের। পেজের মধ্যে আছে হুজুর হয়ে, ভাবিয়ে তুলে, থিঙ্ক টুয়াইস, দ্যা গ্রেটেস্ট ন্যাশন, রেইন্ড্রপ্স মিডিয়া, মুবাশশিরিন মিডিয়া, নাসিহাহ অফিসিয়াল, মুসলিমস ডায়েরি, পর্নোগ্রাফি মানবতার জন্য হুমকি, ওহী প্রভৃতি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

(উল্লেখ্য, এইখানের কয়েকটা লেখার আগে আসছে, তবে এখন আরেকটু সম্পাদিত হয়েছে, যেমন চার ও আট নম্বর লেখা)

 

 

 

 

 

 

এক

 

মীর সালমান ভাই। একজন ফেসবুক এক্টিভিস্ট। তিনি শিয়াদের উপর অনেক কাজ করছেন। শিয়া চিন্তা নামে একটা পেইজ চালাচ্ছেন, আহলুল বাইত নামে গ্রুপ চালাচ্ছেন। ইত্যাদি। তার কাজের উপর আমি একটি পর্যালোচনা দিলাম।

 

১- আমাদের আলিমরা এবং সাধারণ মুসলিমরা শুধু শিয়াবাদ নিয়েই অসচেতন না, সকল বিষয়েই তারা বেখেয়াল। সবাই না। তবে অধিকাংশই। ভারতের আলিম, পাকিস্তানের আলিমদের সাথে বাংলার আলিমদের তুলনা করলেই আকাশ পাতাল তফাত বোঝা যায়। অবশ্য আমরা জাতিগত ভাবে অলস।

 

২- শিয়াবাদ নিয়ে আপনি যে এক্টিভিটি চালাচ্ছেন, তা মাশাআল্লাহ ভালো। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না অনেকগুলো ইসলামের দুশমনের মধ্যে শিয়াবাদ অন্যতম, কিন্তু একমাত্র না। কিন্তু আপনি যেভাবে কাজ চালাচ্ছেন মনে হচ্ছে এরাই একমাত্র ইসলামের দুশমন। আমার কাছে শিয়াবাদের চেয়ে কাদিয়ানি, হেজবুত তওহিদ ও আহলে কুরআন ভয়ঙ্কর ফিতনা মনে হয়। আর সেকুলারিজম, নাস্তিকতা, নারীবাদ এসব তো আছেই। সুতরাং এতসব থুয়ে একটাকে নিয়ে পড়ে থাকা এই অঞ্চলের দিক থেকে অ-গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে। এমন না আমি আপনাকে শিয়াবাদের বিরুদ্ধে কাজ বন্ধ করতে বলছি। কাজ চালিয়ে যান। তবে অন্যান্য ফিতনা সম্পর্কেও সচেতন হন ও সচেতন করুন। শিয়াবাদের চেয়ে এদেশে কাদিয়ানি, হেজবুত তওহিদ এবং নব্য মুতাজিলা ফিতনার বিরুদ্ধে কলম ধরা বেশি জরুরী। কারণঃ

 

ক- এদেশে শিয়ারা নানা কারণেই সফল হবে না। তারা মিশনারি স্টাইলে মানুষকে শিয়াও বানায় না। কিন্তু কাদিয়ানি, হেজবুতিরা তা করে। হেজবুত তওহিদের তুলনায় শিয়াদের সংখ্যা এদেশে অনেক কম, এদের প্রচারণা অনেক কম।

 

খ- এদেশের একেবারে গ্রাম গঞ্জের সাধারণ মানুষ পর্যন্ত শিয়াদের নাম জানে, জেনে বুঝে কেউ শিয়া হয় না। শিয়ারা রাজনৈতিক কারণে জামায়াতিদের মাধ্যমে এই দেশে ঢোকার চেষ্টা করে। জামায়াতিরা কিংবা বেরেলভিদের কেউ কেউ শিয়াদের কিছু বিষয়ে একমত হলেও তারা কিন্তু শিয়া হয়ে যায় নি। ফেসবুকে শিয়া কয়েকটা আইডি ঘুরে ফিরে দেখি, মেহমেদ মাহিন, সালাহ, নজম রাফেদি ইত্যাদি। ফেবুতে শিয়া এক্টিভিস্ট ২০ টা হবে কিনা সন্দেহ, অর্থাৎ বাংলাদেশে।

 

সুতরাং শিয়াদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে কাজ চালানো প্রয়োজনের তুলনায় বেশি মনে হচ্ছে। এর বদলে হেজবুতিদের বিরুদ্ধে কাজ করা অনেক জরুরী।

 

৩- তবে আপনি যেহেতু করছেন, আপনাকে না করতে বলব না। শুধু বলব, অন্যান্য ফিতনা নিয়েও একটু লিখুন। শিয়াবাদের বিরুদ্ধে কাজ গত হাজার বছর যাবত হচ্ছে, যদিও বাংলায় ভাষায় খুব কম হয়েছে।

 

৪- আমার কাছে মনে হয় নতুন নতুন ফিতনা নিয়ে কথাবলা উচিৎ। ডাঃ মতিয়ার রহমান এবং ফেসবুকে জোবায়ের আল মাহমুদ নব্য মুতাজিলা ফিতনা ছড়াচ্ছে। মোহাম্মদ কাসিম নামে পাকিস্তানের কে নাকি কি স্বপ্ন দেখে তাকে নিয়েও এদেশে নতুন ফিতনার জন্ম হচ্ছে, তাকে সম্ভবত তার ভক্তরা ইমাম মাহদি মনে করে। অর্থাৎ সামান্য বিষয় না, কাদিয়ানি টাইপ কেস। হেজবুতিদের নেতা পন্নিও নিজেকে মাহদি মনে করত, তাকিয়্যা করে শুধু ইমাম বলত, পন্নি যত না এক্টিভ ছিল, তার জামাই সেলিম এর চেয়ে কয়েক গুণ বেশি এক্টিভ। এখন হেজবুতিদের দেশের সবচেয়ে বড় বাতিল মতবাদ মনে হয় যারা ইসলামের নাম ব্যবহার করে। আর ইসলামের বিরুদ্ধে আছে এমন দুশমনদের মধ্যে সেকুলারিজম ইত্যাদি ইত্যাদি তো আছেই।

 

৫- আপনি কাজগুলো করছেন যেন আলিমরা এদিকে মনোযোগী হয়, কতটা হবে ভবিষ্যতে দেখা যাবে। ইহসান ইলাহি জহির একাই শিয়াদের বিরুদ্ধে ৪ টা বই লিখেছেন, কাদিয়ানিদের বিরুদ্ধে উর্দু ভাষায় আবুল হাসান নাদভি সহ শতাধিক আলিম বই লিখেছেন। কিন্তু এদেশে শিয়াবাদ নিয়ে এমন একটা মৌলিক কাজ হয় নি যা আরবি, উর্দু, ইংলিশে অনুবাদ হওয়া দরকার, কাদিয়ানিবাদ নিয়েও না। এমনকি প্রতিটা বিষয়ের ক্ষেত্রেই এদেশের আলিমরা উর্দুর উপর নির্ভর করে।

 

৬- আবারও বলছি, আপনাকে শিয়াদের বিরুদ্ধে কাজ বন্ধ করতে বলছি না। অন্তত খরা জমিন কয়েক ফোঁটা পানি পেলেও কম কি! আপনি শিয়াদের বিরুদ্ধে কাজ অব্যাহত রাখুন। ইনশাআল্লাহ আরও অনেককে এই কাজে সংযুক্ত করতে পারবেন। কিন্তু তবু বলছি হেজবুতি কিংবা সেকুলারিজম এসবের তুলনায় শিয়াবাদের বিরুদ্ধে কাজ অনেকটা কম প্রয়োজনীয় বিষয়ে অধিক সময় ব্যয়ের মতই মনে হয়। শিয়াদের জন্য বৈশ্বিক ভাবে কাজ হওয়ার দরকার যতটা, এই অঞ্চলে ততটাই কম প্রয়োজন।

 

৭- শিয়াবাদের বিরুদ্ধে আপনার কাজে নামাটা প্রয়োজনের ভিত্তিতে কাজ বাছাই থেকে হয় নি বরং শিয়া ফেবু এক্টিভিস্টদের প্রতিক্রিয়ায় হয়েছে বলেই মনে করি। শিয়াদের গালির বিপরীতে আপনার কাজ এগোচ্ছে। এদেশীয় শিয়ারা যদিও শুধুই গালি দিতে পারে, কিন্তু সেকুলারিজম কিংবা হেজবুতিদের কাজ অনেকটা প্ল্যানিং করে, বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে।

 

৮- আমার কাছে ফেসুক পোস্টের চেয়ে বই লেখা, অনেক বেশি স্থায়ী কাজ মনে হয়। অবশ্য অনেকদিন একটা বিষয়ের পিছনে লেগে থাকাটার ফলও ভালো হয়।

 

৯- শেষ কথা। আশা করি আপনি হেজবুতি ও সেকুলারিজম সহ বাতিল মতবাদগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনের ভিত্তিতে কাজ করবেন। বিচ্ছিন্ন কাজের চেয়ে টার্গেট করে কাজে ফায়দা বেশি।

 

জাযাকাল্লাহু খাইরান।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

দুই

 

মানুষকে জাহান্নাম থেকে বাঁচানো মুসলিমদের অন্যতম একটা দায়িত্ব। একারণেই এতো দাওয়াত, খেদমত, জিহাদ। অর্থাৎ ইসলামের এই যে তত্ত্বটি, মানুষকে দুনিয়াবি ও আখিরাতি ব্যর্থতা থেকে মুক্তি দিয়ে সফলতার দিকে নিয়ে যাওয়া, আগুন থেকে রক্ষা করা, এটা মানবতাবাদের ব্যানার ইউজ করা হিপোক্রেটদের থেকে অনেক বেশি মানবতাবাদি তত্ত্ব। কিন্তু ইসলাম কখনো মানবতাবাদের ব্যানার ইউজ করে না। কারণ মানবতার মুক্তির সমার্থক শব্দ ইসলাম। এজন্য মানবতাবাদ বা এইরকম সুন্দর সুন্দর শব্দ ইউজ করার প্রয়োজন নাই। সত্যিকারের মানবতাবাদ বলে যদি কিছু থেকে থাকে সেটাই হল ইসলাম।

 

 

 

 

 

 

 

 

তিন

 

আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক কাজের চেয়ে ট্রল, স্ক্রল করে বেশি সময় নষ্ট করি। আমিও করি। তবু আপনাদের সাথে আমি আইডিয়া শেয়ার করব, কিভাবে প্রডাক্টিভ কাজ করা যায়-

 

১- আমি হেজবুত তওহিদ বিরোধী একটা গ্রুপে আছি, নারীবাদ বিরোধী একটা গ্রুপে আছি। দুই গ্রুপে বিগত ৫০ টা পোস্ট স্ক্রল করেও একটা মৌলিক লেখা পাওয়া যাবে না, শুধু পাওয়া যাবে ট্রল আর ফাইজলামি। আমি নিশ্চিত ওইসব গ্রুপে পোস্ট করা লোকেদের কেউ নারীবাদ বা হেজবুতিদের বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াই করার মত যোগ্যতা রাখে না বা রাখলেও এ ব্যাপারে আগ্রহি না, বরং কিছু ট্রল পোস্টের মধ্যেই নিজের এক্টিভিটি সীমাবদ্ধ রাখতে চায়।

 

 

২- আপনার সময়কে আপনি কাজে লাগান। কিভাবে কাজে লাগাবেন?

 

 ফেসবুকে স্ক্রল করা বাদ দিন। বরং যার লেখায় আপনার কিছু মন্তব্য করতে ইচ্ছে করে আপনি তার পোস্টে মন্তব্য করুন। উল্লেখ্য মন্তব্যগুলো বুদ্ধিবৃত্তিক হবে। এভাবে সারাদিন মন্তব্য করার পর এগুলো এক্টিভিটিজ লগ থেকে কালেক্ট করে সংরক্ষণ করুন। কিছু পরিবর্তন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন করে সুন্দর একটা রুপ দিন। এগুলোই হচ্ছে আপনার বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ। আপনার মন্তব্যগুলো সংরক্ষণের ফলে আপনার সময়গুলো কাজে লাগলো। ভবিষ্যতে এই মন্তব্যগুলো থেকে আপনি প্রবন্ধ লেখার সাহস অর্জন করবেন।

 

 

৩- সময় তিনটি কাজে অতিবাহিত করুন।

ক- ইবাদাতে।

খ- ইসলামী বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে।

গ- টাকা উপার্জনের কাজে।

 

এখানে ইলম অর্জন ইবাদাতের অংশে অন্তর্ভুক্ত। কারণ ইলম অর্জন ইবাদাত। কিন্তু এটা বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ না। আবার বুদ্ধিবৃত্তিকতার জন্য ইলম আবশ্যকীয়।

 

আপনি দেখে নিন, এই ৩ টি কাজ ছাড়া কোনো কাজ করলেই সতর্ক হন, কারণ আপনি বেহুদা সময় নষ্ট করছেন। অবশ্য যেগুলো না করলেই নয়, যেমন বিশ্রাম, ঘুম, খানা পিনা, এগুলোর কথা ভিন্ন। অবশ্য কেউ যদি ইসলামী নিয়মে এইসব কাজ করে সেটাও তার জন্য ইবাদাতে পরিণত হয়। সুতরাং মুমিন চেষ্টা করবে তার ২৪ ঘণ্টাই ইবাদাতে পরিণত হোক।

 

 

৪- ইসলামী বই পড়লেই এর উপর রিভিউ দেয়ার চেষ্টা করুন। পর্যালোচনা লিখুন, ছোট কিংবা বড় হোক। এটাও একটা বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ।

 

৫- প্রতিদিন সময়ের সর্বোচ্চ ব্যবহার করুন। বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ করতে গিয়ে শরিয়ত অবহেলা করলে চলবে না। শরিয়ত মেনেই কাজ চালান।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চার

 

জনাব মনোয়ার শামসি সাখাওয়াত সাহেব রবীন্দ্রনাথের উপর আলোচনা করছিলেন। আমি মন্তব্য করলামঃ

 

রবীন্দ্রনাথকে আলোচনায় আনতেই আমি পক্ষপাতি না। রবীন্দ্রনাথরাও ইসলামকে কখনো আলোচনায় আনতে পছন্দ করতেন না, বিরোধিতার খাতিরেও না। আমার কাছে পশ্চিমের কোনো ফিগার কিংবা কাফিরদের কারো সমালোচনার চেয়ে ইবনে সিনার সমালোচনা বেশি পছন্দনীয়। কারণ সমালোচনার খাতিরেও ইবনে সিনাকে নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে, অর্থাৎ ইসলামী সভ্যতার আলোচনাকে আনা হচ্ছে।

 

আপনি শিরোনাম দিয়েছেন চাঁদের অন্ধকার দিক। আমার মনে হয় না রবি বাবু চাঁদ ছিলেন। একজন কাফির আলোকিত হয় না, সে হয় অন্ধকার। সুতরাং অন্ধকারের মধ্যে কিছু আলোকবিন্দু থাকলে সেটা আলোচনায় আনা যায়। কিন্তু যে পুরো অন্ধকারে মোড়া সে কিভাবে চাঁদ হয়?

 

 

 

 

 

 

 

পাঁচ

 

ইসলামের মধ্যেই সংস্কৃতির অনেক উপাদান আছে। খুঁজে খুঁজে সেগুলার চর্চা করতে হবে। আমি প্রতিটা সুন্নাহর মধ্যেই সংস্কৃতি খুঁজে পাই। ইসলামে সংস্কৃতি আলাদা কিছু না, ইসলামের ভেতরেই সংস্কৃতি আছে। এজন্য ইসলাম বোঝার মত অন্তর থাকা লাগে এবং সংস্কৃতি কিনা তা নির্ণয়ের মত জ্ঞান থাকা লাগে। এই যে দাড়ি রাখা, এটা একটা ইসলামী সংস্কৃতি। একেবারেই মৌলিক সংস্কৃতি, দাড়ি রাখা, মোচ ছোট রাখা। এছাড়া পাগড়ি পড়া, টুপি পড়া, হিজাব, নিকাব এগুলোও সংস্কৃতি, এগুলোই আমাদের চর্চা করতে হবে।

 

 

 

 

 

ছয়

 

 

এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান সাহেব একজন বিএনপন্থী বাপের লিঙ্গ কামড়ে ধরে থাকা জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক বুদ্ধিজীবী। তিনি একটি পোস্ট করেছেন একটা মসজিদে নাকি বাচ্চাদের প্রবেশ নিষেধ করা হয়েছে। আমি এ ব্যাপারে মন্তব্য করলামঃ

 

এইখানে দেখতেছি সবাই চিল্লাফাল্লা করতেছে মসজিদে কেন বাচ্চাদের নিতে নিষেধ করা হয়েছে। প্রায়ই শুনি মসজিদে নাকি বাচ্চাদের পিছনে সরিয়ে দেয়া হয়, বকাঝকা করা হয়। এগুলা শুধু ফেসবুকেই শুনি। বাস্তবে কখনো শুনি নাই। আমি ছোট বেলা থেকে মসজিদমুখী ছিলাম। আমার সাথে কখনো এমন হয় নাই, এবং এখনো কোনো বাচ্চাকে প্রথম কাতারে দাঁড়ালে দূরে সরাতে দেখি না, বকা ঝকা করা হয় বলেও দেখি না। তবে জুম'আর নামাযে সবার উপরের তালায় সমাজের গরিব পরিবারের বাচ্চারা হইহুল্লোর করে, কেউ বিরক্ত হয়ে বকা দেয়।

 

যারা কমেন্টে চিল্লাফাল্লা করছে আর হুজুরদের ১৪ গুষ্টি উদ্ধার করছে, তারাও হয়তো বাচ্চাদের নিয়ে মাসজিদে যায় না। প্রতি ওয়াক্তে ৫০-৬০ জন মানুষ হয়, তাদের প্রত্যেকের ঘরেই তো বাচ্চা থাকে, কিন্তু তারা নিয়ে আসে না কেন? নিয়ে আসলে তো ৫০-৬০ টার মত বাচ্চা হওয়ার কথা। আসল কথা হল বাচ্চারা দুষ্টামি করে এটা তার বাপই সামলাতে পারে না। এই ভয়ে নিয়ে যায় না। যারা দুষ্ট বাচ্চা নিয়ে মসজিদে গেছেন তারা ভালো করেই জানেন।

 

কিন্তু ফেসবুকে যে প্রায়ই শুনি মুরুব্বিরা নাকি বাচ্চাদের ধমকায় আমি এরকম কখনো দেখি নি। বাচ্চাদের অভিভাবক সাথে গেলে ধমকের প্রশ্নই আসে না। তবে গরিব পরিবারের বাচ্চা হলেও কেউ এটা করে। এই সমস্যাটা রেসিজম থেকে, অন্য কিছু না।

 

যারা এসব কমেন্ট বা পোস্ট দেন তারা দয়া করে আপনাদের বাচ্চাদের নিয়ে মসজিদে যাবেন। কিন্তু কথা হল যারা কমেন্ট করতেছেন কাউকেই মনে হয় না নিয়মিত মুসল্লি, আর নিয়মিত মুসল্লি হলেও বাচ্চাদের নিয়ে যদি যানও, দুষ্ট বাচ্চা হলে আপনি অতিষ্ঠ হয়ে যাবেন কয়দিন পর।

 

 

 

 

 

 

সাত

 

কিছু মানুষের মগজ বাতিল মতবাদে ভরা, তারা মাথা পরিষ্কার না করেই যখন ইসলামচর্চা শুরু করে তখন এরা নানাভাবে ইসলামের মধ্যে জাতীয়তাবাদ, সেকুলারিজম, নারীবাদ কিংবা সমাজতন্ত্র ঢুকাতে চায়। তখন তাদের উপস্থাপিত ইসলাম এক কিম্ভূতকিমাকার ধারণ করে। এদেশে জাতীয়তাবাদী ইসলাম যেটাকে অনেক 'বাঙালী মুসলমান' বলে পরিচয় করায় সেটাও একটা কিম্ভূতকিমাকার মতবাদ, যারা ইসলাম পেয়েও বাপের লিঙ্গ কামড়ে ধরার সংস্কৃতি ছাড়তে পারে না তাদের দ্বারা আর যাই হোক মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ হতে পারে না। এদেশে জাতীয়তাবাদে আক্রান্ত মুসলিমদের সংখ্যা নেহায়েত কম না। এদের এই অবস্থার জন্য জ্ঞানহীনতা, আর ঈমান সম্পর্কে বুঝের অভাব দায়ি। আল্লাহ এদের ও আমাদের হেদায়েতের রাস্তা দেখান।

 

 

 

 

 

 

 

 

আট

 

 

 

এক জাহিল ব্যক্তির কমেন্টে আমার রিপ্লাইঃ (তার কমেন্ট এখানে উল্লেখ আছে)

 

মাশাআল্লাহ। আপনি খুব সুন্দর করে কথা বলতে পারেন। আপনার নিয়াতও বাহ্যিক দৃষ্টিতে ভালো মনে হয়। কিন্তু আসল কথা হচ্ছে আপনি নিজের কথাকে হক ভাবলেও আপনার কথাগুলো পুরোপুরি হক না, যে বিষয়ে ইলম নেই সে বিষয়ে কথা না বলাই ভালো মনে করি। কেউ যদি বলে তখন সেটা হাস্যকর হয়। আপনার ওইদিনের কমেন্টের স্ক্রিনশট নিয়ে একজন ভাই কেন পোস্ট দিয়েছিল, বলতে পারেন? কারণ আপনার কথাটা ছিল চরম হাস্যকর। একদম মৌলিক জ্ঞান থাকলেও কেউ এরুপ কথা বলতে পারে না। এই বিষয়ে আলাপের ইচ্ছা একদমই ছিল না। তবু আপনার যেন ভুল ভাঙে এজন্য আমি আপনার ওইদিনের কমেন্টটার একটু বিশ্লেষণ করছি।

 

 

 ওইদিনের কমেন্টে বলেছিলেনঃ

 

"ভাই আমিও আপাতত গণহারে হাদীসচর্চা বন্ধ রাখার পক্ষে। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র কোরান ও সিরাত ভিত্তিক যাচাইকৃত সহীহ হাদিসগুলোর চর্চার পক্ষে মত দিই। কারণ, এখন গ্রন্থাকারে যেসব হাদিস চর্চা হয় এগুলো হয় বেশিরভাগ ফেইক নতুবা এই সময়ের জন্য প্রযোজ্য নয়। নতুবা ব্যক্তি বিশেষে ভিন্ন ভিন্ন নির্দেশনা থাকায় বর্তমান সময়ের লোকজন গ্রুপিং সৃষ্টি করে ফেলছে।"

 

 

এবার আমি পরিষ্কার করি আপনার এখানে কি কি ভুল আছে।

 

১- গণহারে হাদিস চর্চা বন্ধ করতে বললেই গ্রুপিং কিংবা জাল হাদিস বানানো বন্ধ হয়ে যাবে না। কেউ যদি বলে গণহারে বিজ্ঞান চর্চা বন্ধ করতে হবে, সেটাও বাস্তবসম্মত সমাধান না। যারা বিজ্ঞান গবেষণা করে, প্রথমে কেউ ভুল তত্ত্ব দেয়, এরপরে কেউ এসে সেটা সংশোধন করে। নিত্যনতুন সংশোধন হতে হতে বিশুদ্ধ হতে থাকে। তেমনি হাদিস চর্চাও ১৪০০ বছর যাবত গবেষণা হচ্ছে। জাল, যইফ হাদিস নির্ণয়ের জন্যেও হাদিস গবেষণা ও চর্চা চালু রাখতে হবে।

 

২- আপনি কোরান ও সিরাতভিত্তিক যাচাইকৃত সহীহ হাদিসগুলোর চর্চার পক্ষে মত দিয়েছেন, কিন্তু সব সহীহ হাদিসই কোরানভিত্তিক যাচাইকৃত। কিন্তু সিরাতভিত্তিক বলে কি বোঝাতে চাচ্ছেন, ক্লিয়ার না আমার কাছে। কারণ সীরাত হচ্ছে নবীজীবনী, আর যা প্রমাণিত সুত্রে বর্ণিত তা-ই সহীহ হাদিস। সীরাতের সব বর্ণনাই হাদিস, কিন্তু সব হাদিস সীরাত বিষয়ক না। সীরাতে অনেক যইফ জাল হাদিসও থাকতে পারে, কিন্তু সহিহ হাদিসে তা থাকে না। অর্থাৎ জাল যইফ সহিহ মিক্সড সীরাত দিয়ে সহী হাদিস কিভাবে যাচাই করা যায়? একটি সহীহ হাদিস নির্ণয়ের জন্য ৫-৭ টা শাস্ত্র লাগে। সুতরাং কিসের ভিত্তিতে হাদিস নির্ণয় করতে হয় মুহাদ্দিসগণ ভালোই জানেন।

 

৩- আপনি বলেছেন, এখন গ্রন্থাকারে যেসব হাদিস চর্চা হয় এগুলো হয় বেশিরভাগ ফেইক নতুবা এই সময়ের জন্য প্রযোজ্য নয়। গ্রন্থাকারে সংরক্ষিত হাদিসগুলো আমাদের সম্পদ, সেগুলো ফেইক নাকি ফেইক না তাও নির্ণয় করার জন্য হাদিসশাস্ত্র আছে। একটা বইয়ে ভুল শুদ্ধ থাকতে পারে, এজন্য কি আপনি বলবেন যে বইটাই বাতিল করে দিতে হবে। হাদিস শাস্ত্রের মত এতো শক্তিশালী শাস্ত্র দুনিয়ায় দ্বিতীয়টি নেই। আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে প্রতিটা ব্যক্তির কথার উপর রেফারেন্স ছিল আজকের এই আধুনিক যুগে বিস্ময়কর বলে মনে হয়। হাদিস শাস্ত্র নিয়ে আপনার পড়াশোনা করা উচিৎ বলে মনে করি।

 

৪- এমন কোনো সহিহ হাদিস নেই যা অপ্রয়োজনীয়। সহিহ হাদিসও এক প্রকার ওহী। ওহী কখনো অপ্রয়োজনীয় হয় না। সময়ের জন্য সব সহিহ হাদিসই প্রযোজ্য।

 

৫- গ্রুপিং সৃষ্টি হওয়া সমস্যা না। কিন্তু গ্রুপিং এর জন্য কুরআন হাদিসের অপব্যবহার সমস্যা। গ্রুপিং কেউ জাল হাদিস দিয়ে করে না। কারো অপব্যাখ্যার নিয়ত থাকলে সহিহ হাদিস ও কুরআনের আয়াত দিয়েও অপব্যাখ্যা করতে পারে।

 

 

নিজেকে হকের ঠিকাদার না ভাবাই ভালো। গ্রুপিং না করলেই হক হবে এমন না। অনেকে গ্রুপিং না করেও ভ্রান্তিতে নিমজ্জিত হতে পারে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

নয়

 

এটা একটা ঐতিহাসিক ফতোয়া, যা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মুরুব্বি আলিম জুনাইদ বাবুনগরী দামাত বারাকাতুহুম প্রদান করেছেন, হেজবুত তওহিদকে তিনি তাকফীর করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ, সুম্মা আলহামদুলিল্লাহ। ২৬ মে, ২০১৯ সালে ইসলামী আকিদা সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত এক সেমিনারে আল্লামা বাবুনগরী এই ঐতিহাসিক ফতোয়া প্রদান করেন। এটাই হেজবুতিদের বিরুদ্ধে প্রথম কোনো অফিসিয়াল তাকফীরের ফতোয়া, যা একজন মুরুব্বি আলিম প্রদান করেছেন। এদের ভ্রান্ত মতবাদ সম্পর্কে মুসলিমরা জেনে থাকলেও এর আগে এদেরকে সরাসরি তাকফীরের কোনো নজীর নেই। বছরের পর বছর আলিম উলামাগণ এদের সুযোগ দিয়েছে ফিরে আসার এবং পর্যবেক্ষণ করেছে, কিন্তু তাদের তাকফীর করা হয় নি, এমনকি তাদের ব্যাপারে বছরের পর বছর উলামাগণ নীরব থেকেছেন। কিন্তু তাদের কার্যক্রম এবং কুফরের প্রচার সীমা ছাড়িয়ে গেছে, উলামারা মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছে। আল্লাহ তাআলা এদের হেদায়েত দান করুন নতুবা ধ্বংস করুন। কাদিয়ানিদের পর এরাই দ্বিতীয় জাহান্নামের কীট যাদের ব্যাপারে উলামাগণ তাকফীর করেছেন। আশা করি এদের ব্যাপারে আরও স্পষ্ট ফতোয়া মুরুব্বি আলিমদের থেকে আসবে।

 

হেজবুতিরা এই ভ্রান্ত মতবাদের জন্মের শুরু থেকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নিজেদের বাদে সকল মুসলিমকে ইসলামের উপর থাকার কারণে তাকফীর করে আসছে। কিন্তু উলামায়ে ইসলাম এদের ব্যাপারে গবেষণা ও অনুসন্ধান করে অতঃপর প্রায় ২০ বছর পর তাদের কুফরি ও পথভ্রষ্টতার কারণে এই ফতোয়া দিয়েছেন। আমরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।

 

সতর্কতাঃ ইসলাম ধর্মে তাকফীর একটি স্পর্শকাতর বিষয়। তাই তারা কাফির নাকি নয় সেটা আরও আলোচনা পর্যালোচনা হওয়ার দাবি রাখে। তবে তারা যে পথভ্রষ্ট এটার ব্যপারে সন্দেহ রাখার অবকাশ নেই। কিন্তু কেউ তাদের কাফির মনে না করলে সেটা তার মতভিন্নতা ধরে নিতে হবে। যেহেতু কাদিয়ানীদের মত তাদের ব্যাপারে এখনো ইজমা হয়নি তাই তাকফির করা না করা নিয়ে বাড়াবাড়ি করা উচিৎ হবে না। উলামায়ে ইসলাম কি বলে সেদিকে নজর রাখি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

দশ

 

ফকির যখন অন্য ফকিররে বড়লোক হইতে দেখে তখন ফকিরদের জ্বলা শুরু হয়ে যায়। এই যেমন এক চরমোনাই বক্তার মেহমানখানা এত উন্নত কেন এইটা নিয়ে অন্যান্য ফকিরদের জলতেছে, আর এই ঈর্ষারে জায়েজ করতে যুহদের আলাপ সামনে আনে। মনে হয় নিজে যেন কত্ত বড় যাহেদ। এইটা অন্য কিছু না, ঈর্ষা। আপনে ফকির, ফকির থাকেন, অন্যে কেন ধনী হয় সেইটা নিয়া কান্না কইরেন না।

 

 

 

 

 

 

 

 

এগারো

 

মানুষ সব সময় ব্যস্ত থাকে নিজের গুনাহ, পাপ, ভুল অপরাধ কেমনে অন্যের উপর ফেলা যায়। এমনকি স্বয়ং আল্লাহকেও দোষারোপ করতে ছাড়ে না। যখন তার নিজের পাপ তার বিপদ কিংবা সুখের কারণ হয় তখন সে আল্লাহকে দোষারোপ করে। বলে, আল্লাহ কেন সবসময় আমার সাথে এমন করে? নাউযুবিল্লাহ। এছাড়া দুনিয়াবি বিষয়ে নিজের ভুল সবসময় অন্যের উপর চালান দিতে এক্সপার্ট। নিজের ভুল কখনোই মানুষ স্বীকার করতে নারাজ। নিজের সব দোষের জন্য শয়তানকে দায়ি করে। অথচ শয়তানের চেয়েও বড় শয়তান যে সে নিজেই এটা আল্লাহ তাকে রামাদান মাসে বুঝায় দেন। তবু মানুষ সবসময় সুযোগে থাকে কখন কার উপর নিজের দোষ চাপান যায়। আল্লাহ মাফ করুন।

 

 

 

 

 

 

 

বারো

 

মীর সালমান নামক আইডিটা ফেসবুকে ইসলামী সার্কেলে প্রথম গালাগালির আমদানি করে। সে মারাত্তক রকমের গালি দেয় এবং এটা ইসলামী সার্কেলে প্রভাব ফেলে, তার জবাবে অনেকে অনুরুপ গালি দেয়। এভাবেই গালাগালি হয়তো ইসলামী সার্কেলে সহজ ভাবে গ্রহণ করা হবে। আস্তাগফিরুল্লাহ। ইসলামী সার্কেলে এতো বাজে গালি আগে ছিল না। ছিল যেগুলা, কাফের বলা, মুনাফিক বলা, ইহুদী নাসারাদের দালাল বলা, এসব। কিন্তু সেকুলারদের গালিগুলা আমদানি করে মীর্সাল্মান খাপো মাচো, এর বাচ্চা, ওর বাচ্চা গালিকে সহজ করে তুলছে। আল্লাহ এর ফিতনা থেকে আমাদের হেফাযত করুন।

 

 

 

 

 

 

তের

 

প্রতিটা দলান্ধ মানুষ ইনসাফ করতে জানে না। সে জানে তার দল শ্রেষ্ঠ, বাকিদের সব ভুল। নিজের দলের সব ঠিক, অন্য দলের ভালো কাজেও খুঁত খুঁজে। আমরা যে দলেরই হই ইনসাফ শিখতে হবে। তাবলীগ, কায়দা, জামাত, দেওবন্দ, চরমোনাই, আহলে হাদিস, দায়েশ, পায়েশ সবার ভুলগুলো যেমন জানতে হবে, সঠিকগুলো সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা রাখতে হবে। স্বীকার করতে হবে এসব দলেরও অনেক ভালো কাজ আছে। এরপর আপনি যদি সমালোচনা করতে চান, তাহলে ভুল গুলো বের করুন যেগুলো আসলেই ভুল। ত্যানা পেঁচিয়ে ভুল খুঁজলে হবে না। বরং আসলেই যেটা সমালোচনা হওয়া প্রয়োজন সেটার সমালোচনা করুন। এই যেমন আহলে হাদিসদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করতে যতসব অযৌক্তিক আলাপ নিয়ে আসা হয়। যেমন, আরবরা কেন এতো বড় বড় রোস্টের পিস খায়। আচ্ছা, এটা কি সমালোচনার মত বিষয় হতে পারে? আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক দৈন্যতা কতটা বাজে অবস্থা হলে এমন কথা বলতে পারে। আগে দেখতাম আহলে হাদিস ছেলেপুলেরা তারিক জামিলের সাথে মেয়েদের ছবি দিয়ে বোঝাতে চায় তাবলীগ কত খারাপ যে একই কাজ সালাফিরা করে জাকির নায়েকের সাথে মেয়েদের ছবি দিয়ে। সুতরাং সমালোচনার নামে এসব জোকারি বন্ধ করে ভালো কিছু উপহার দিতে পারলে লিখন/বলুন নয়তো চুপ থেকে সুন্নত মানুন।

 

 

 

 

 

 

 

 

চৌদ্দ

 

যারে পছন্দ না তার সবকিছুতে দোষ ধরতে মজা লাগে।

 

সিয়ানরে পছন্দ না, তাই ওদের সব বইতে ভুল ধরি। (এমনকি ওদের বইয়ের ভুল ধরার জন্য নিজের কষ্টের টাকা থাইকা এই দামি বইগুলা কিন্না এর পর এর বিরুদ্ধে নেগেটিভ রিভিউ লেখি)

 

চরমোনাই পছন্দ না, তাই চরমোনাই ওয়ায়েজের মেহমানখানা এতো সুন্দর কেন সেইটার বিরুদ্ধে বলি।

 

সালাফিদের পছন্দ না, তাই আরবরা কেন এতো বড় বড় গোশতের পিস খায় সেইটা নিয়া সমালোচনা করি।

 

তাবলীগ পছন্দ না, তাই এরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কেন মিছিল বাইর করে না সেইটা নিয়া সমালোচনা করি।

 

জামাত পছন্দ না, তাই মওদুদির কিছুই ভালো লাগে না।

 

এরদোগান পছন্দ না, তাই ওরে কাফের বলতেও দ্বিধা করি না।

 

আর আমার নিজের দলের কোনো ভুল নাই, আমার নিজের দলের নেতা মাসুম।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পনেরো

 

হয়রানির অপর নাম প্রাঙ্ক।

 

কুলাঙ্গারের দল যেমন নগ্নতাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে তেমনি একদল বজ্জাত পোলাপান নিজেদের বজ্জাতির নাম দিছে প্রাঙ্ক। প্রাঙ্ক বলতে সহজ ভাবে বুঝালে কাউকে বোকা বানানো বুঝায়, বা ডস খাওয়ানো। অধিকাংশ প্রাঙ্ক এ দেখা যায় পাবলিককে হয়রানি করা হয় এবং হয়রানি শেষে বলা হয় 'এটা প্রাঙ্ক, ঐ দেখ ক্যামেরা'। প্রাঙ্ক শব্দ উচ্চারণ করার সাথে সাথে এতক্ষণ ধরে পাবলিকের সাথে করা বজ্জাতিগুলো সব বৈধ হয়ে গেল, পাবলিকও কিছু বলে না। বাংলাদেশেও এই বজ্জাতি প্রসার পেয়েছে।

 

অনেকে আবার ইউটিউবে এসব দেখে মজা পায়। মজা পাওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যাকে বোকা বানানো হল, হয়রানি করা হল, এটা তার জন্য মজার ছিল না। হয়রানি হওয়া লোকটার জায়গায় নিজেকে রেখে দেখুন, একটুও মজা পাবেন না। মেয়েদের সাথেও বাজে রকমের অনেক প্রাঙ্ক হয়। চিন্তা করে দেখুন, এটা যদি আপনার বোন বা স্ত্রীর সাথে হত, আপনার কেমন লাগতো?

 

অনেক প্রাঙ্ক আছে যেগুলোতে হয়রানি করা হয় না। তবুও অন্য দিক দিয়ে এই প্রাঙ্কগুলো না করা উচিৎ, অনুমতি ছাড়াই কাউকে ক্যামেরায় আনাটা ঠিক না। ফেমাস হতে, ইউটিউব ভিউ বাড়াতে মানুষকে এভাবে হয়রানি করাটা কখনোই সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। আর মিথ্যা বলে মানুষকে হাসানো, বা মানুষকে বোকা বানানো হারাম কাজ। অথচ এইগুলোকে ভিত্তি করে ইউটিউবাররা লক্ষ লক্ষ ভিউ পাচ্ছে।

 

এইসব প্রাঙ্কের বিরুদ্ধে আপনারা কথা বলুন, পাবলিক প্লেসে এসব প্রাঙ্ককে নিষিদ্ধ করা হোক। অবশ্য যেই দেশে মদ, পতিতালয় নিষিদ্ধ হয় না সেখানে প্রাঙ্ক নিষিদ্ধ করার কথা বলাটা হাস্যকর। হাস্যকর হলেও বলতে হচ্ছে। এই হয়রানি যেন আর কেউ না হয় সেদিকটা নিশ্চিত করা উচিৎ। এর বিরুদ্ধে বিপুল জনমত সৃষ্টি করা উচিৎ। আমি এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আমার দায়িত্ব পালন করলাম। আপনিও আপনার দায়িত্ব পালন করুন।

 

পোস্ট কপি করতে পারেন কার্টেসি ছাড়াই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ষোল

 

কাঠমোল্লা শব্দ ব্যবহার নিয়ে আমার মতামতঃ আরিফ আজাদ একবার তেতুল হুজুর শব্দের ব্যবহার নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন। বলেছিলেন, ইসলামপন্থীরা নিজেরা একটা শব্দও তৈরি করতে পারে না যে সেকুলারদের থেকে শব্দ ধার আনতে হয়? একই কথা আমারও, এই কাঠমোল্লা শব্দের ব্যাপারে। এই শব্দটা দিয়ে সমস্ত ধার্মিক মানুষকে বুঝিয়ে থাকে সেকুলাঙ্গাররা। তাদের কাছে আমরা সবাই কাঠমোল্লা অর্থাৎ যারাই ধর্ম পূর্ণভাবে মানি। আর সেকুলারদের কাছে ভালো মোল্লা হক ফ্রড মাসুদরা। সুতরাং কাঠমোল্লা শব্দ যদি আমরাই ব্যবহার করি, এর মানে দাঁড়ায়, আমরা নিজেরা নিজেদেরকে গালি দিচ্ছি। এইটা হচ্ছে আমাদের ক্রিয়েটিভ না হওয়ার ফল। আমাদের পছন্দ না হওয়া মোল্লাদের গালি দিতে সেকুলারদের শব্দ নিয়ে আসি। আর নিজেদের পছন্দ না হওয়া মোল্লাকে কেন কাঠমোল্লা বলব, এমনও তো হতে পারে যাকে কাঠমোল্লা বলছি তার অবস্থান সঠিক, আমারটা ভুল। তাই না শামসি সাহেব?

 

নোটঃ ১- কওমি সনদ লাভের পর যখন আহমাদ শফী সাহেবের আওয়ামী লীগ ও হাসিনার সাথে সম্পর্ক ভালো হল তখন ইসলামপন্থীরা তাকে নিয়ে নানান বাজে কথা শুরু করল, বিশেষ করে তখন তাকে তেতুল হুজুর বলে গাল দেয়া হচ্ছিল। এই শব্দটা তৈরি করেছিল শাহবাগি সেকুলার হারামজাদারা। তখন আরিফ আজাদ পোস্ট করে এই শব্দ ব্যাবহার না করতে বলেছিলেন।

 

নোট ২- এই লেখাটা মুনাওয়ার শামসি সাখাওয়াত সাহেবের কাঠমোল্লা বলে গাল দেয়া একটা পোস্টের জবাব। তিনি যে প্রেক্ষাপটে এটা করেছিলেন সেটা হচ্ছে- মীর সালমান কারদাওয়িকে কুত্তা বলে গালি দেয়। আসলে মীর সালমান গালি দিয়েছিলেন যেন কারদাওয়ির ইমেজ নষ্ট হয়। পরে এর ব্যাখ্যাও তিনি দিয়েছিলেন, কারদাওয়ি মোডারেট ইসলাম এর একজন গুরুতুল্য ব্যক্তি। আর তার কারণে মুসলিম বিশ্বে নানা বিকৃত ছড়িয়েছে। তাই সম্পূর্ণ সুস্থ মস্তিষ্কে মীর সালমান শাহ হান্নান এবং কারদাওয়িকে (মীরের ভাষায় দুই বুড়াকে) গালাগালি করেন। এই গালাগালের কারণেই শামসি সাহেব মীরকে কাঠমোল্লা ইঙ্গিত করে পোস্টটি দেন। অবশ্য কমেন্টে তিনি এটা না জানালে বোঝার উপায় ছিল না মীরকে তিনি কাঠমোল্লা বলেছেন। কারণ মীরকে মাদ্রাসার না, বরং ভার্সিটির মাল বলেই মনে হয়। সে খুব জ্ঞানী ও বিচক্ষণ, ফেসবুক তার প্রতিভাকে নষ্ট করে ফেলেছে, ঘণ্টায় ঘণ্টায় সে পোস্ট করে এর লুঙ্গি উচা করে, ওর লুঙ্গি খুলে, এভাবেই তার দিনাতিপাত হয়। এটা অবশ্যই মীরের জন্য সঠিক স্থান নয়, সে আরও বড় কিছু করতে পারতো, তার চিন্তা ও কর্ম দ্বারা, তার একটিভিটি ও শ্রম দ্বারা অনেক ভূমিকা রাখতে পারতো। কিন্তু সে ফাইজলামির জন্য ফেসবুক্কেই বেছে নিল। হায় সালমন! হায় সালমন!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সতেরো

 

 

মুল্লাহ মুহাম্মাদ উমার (১৯৫৯-২০১৩)। আমিরুল মু'মিনিন (১৯৯৬-২০১৩)। তালিবানের প্রতিষ্ঠাতা, আফগান জিহাদের অনন্য বীর, মুজাহিদ নেতা। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেন, যুদ্ধে চারবার আহত হন, এক চোখ হারান। ১৯৯২ সালের পরে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে খুবই সাধারণ এক মাদ্রাসা শিক্ষক যিনি মুল্লা নামে পরিচিত ছিলেন, তিনি তালিবান গঠন করেন। ১৯৯৪ সালে কান্দাহার ও হেরাত এবং ১৯৯৬ সালে কাবুল জয় করেন। ১৯৯৭ সালে ইমারাহ ঘোষণা করেন। পৃথিবীর অন্যতম প্রধান মুজাহিদ সংগঠন আল-কায়দা মুল্লার কাছে বাইয়াত দেয়। ২০০১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সাথে তালিবানের যুদ্ধ শুরু হয়। তিনি আত্মগোপনে চলে যান এবং আমৃত্যু জিহাদে লিপ্ত থাকেন। প্রথমে সোভিয়েত বিরোধী, অতঃপর মার্কিন বিরোধী জিহাদ করেছেন, আফগানিস্তানে শরিয়াহ কায়েম করেছিলেন, ২০১৩ সালে স্বাভাবিক মৃত্যু বরণ করেন।

 

 

 

 

 

 

 

আঠারো

 

সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, আপনি বিদ্বেষবশত মুসলিমদের বিভিন্ন দল মতের বিরুদ্ধে লেখেন, সমালোচনা করেন। আর তারা আপনার আইডি হ্যাক করে, আপনাকেও নিয়ে তারা আক্রমণাত্মক পোস্ট দেয়। হায়! আপনার আইডি যদি নাস্তিকরা হ্যাক করত, বা সেকুলাররা হ্যাক করত। আপনি মুসলমানদের এক দলের চক্ষু শূল হওয়ার চাইতে যদি এক দল কাফিরের চক্ষু শূল হতেন, আপান্র সময়গুলো গৃহ বিবাদে ব্যয় না হয়ে যদি ভালো কাজে ব্যয় হত, তবে কতই না ভালো হত।

 

 

 

 

 

 

উনিশ

 

 

ফারিস আয-যাহরানি রঃ (১৯৭৭-২০১৬)

 

* সৌদি আরবের আলিম, কাজি, হাফিজে হাদিস এবং শহীদ।

 

* পূর্ণ নাম ও কুনিয়াঃ ফারিস আহমাদ জামান আল-শুহাইল আয-যাহরানি, আবু জান্দাল আল আযদি ।

 

* ইমাম মুহাম্মাদ বিন সাউদ ও কিং খালিদ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। ২০০০ সালে কিং খালেদ থেকে ফারেগ হন।

 

* আবহা শহরে তিনি কাজির দায়িত্ব লাভ করেন।

 

* সহিহ বুখারি, মুসলিম ছাড়াও আরও কয়েকটি গ্রন্থের হাফিজ ছিলেন।

 

* হকের পক্ষে এবং সৌদি জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে কথা বলায় ২০০৪ সালে সৌদি সরকার তাকে গ্রেফতার করে।

 

* শাহাদাৎ - দীর্ঘ এক যুগ বন্দী থাকার পর সৌদি সরকারের হাতে ২০১৬ সালে শাহাদাৎ বরণ করেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বিশ

 

যখন দাসপ্রথা ছিল তখন দাসীর সাথে মনিবের সম্পর্ক স্বামী স্ত্রীর মতন, এটাকে ইসলাম জায়েজ করেছে। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পড়ুন ডাবল স্ট্যান্ডার্ড বইটি। আর ইসলাম নিয়ে এতো অশিক্ষিত থাকলে সমস্যা। এটা সবার জন্যই বলা। কারণ মুসলিমদের ৯৫ ভাগ মানুষ অনেক মাসআলা, অনেক মৌলিক বিষয় জানে না, যখন হঠাৎ জানতে পায় তখন তাদের ঈমান দুর্বল হয়ে যায়। নাউযুবিল্লাহ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

একুশ

 

ইহুদীদের আল্লাহ তা'আলা অভিশপ্ত ঘোষণা করেছেন, নাছারাদের পথভ্রষ্ট ঘোষণা করেছেন। ইসলাম কাউকে অকারণে ঘৃণা করতে শিখায় না, তবে বারা করতে শিখায়। মুসলিমরা কাফিরদের প্রতি বারা রাখে, তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে না। তবে এই শতাব্দীতে ইহুদীদের প্রতি মুসলমানদের ঘৃণা রাখার অন্যতম কারণ ইসরাইল ইস্যু।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বাইশ

 

 

 

সাহাবিরা আমাদের হিরো। সাহাবিরা আমাদের আকাবির। সাহাবিরা আমাদের সালাফ। অথচ আজকাল আমরা সালাফ বলতে বুঝি আমাদের প্রিয় আলেমদের যারা কিছু বছর আগে মারা গেছেন। আমরা আকাবির বলতে বুঝি আমাদের মাযহাব বা মানহাজের প্রতিষ্ঠাতা ও মুরুব্বিদের। আমরা আমাদের হিরো বানিয়ে নিয়েছি এমন কিছু আলেমকে যারা বক্তৃতা দিয়ে থাকেন, এবং ইউটিউব ঘেঁটে আমরা তাদের ফ্যান হয়ে গেছি, এমন কিছু লেখকদের আমরা আদর্শ মনে করছি, যাদের সম্পর্কে কিছুই জানি না, শুধু তার লেখা ছাড়া। এমনকি অনেকে তো ফেসবুক আইডির ফ্যান। অথচ আইডির আড়ালে লোকটার ব্যক্তিজীবন সম্পর্কে কিছুই জানি না।

 

এমন না এ যুগের মানুষদের বা সাহাবিদের বাদে বাকি মুমিনদের ভালবাসতে মানা। কিন্তু সত্য কথা হচ্ছে আমরা সাহাবিদের হিরো মানি না, সালাফ মানি না, আকাবির মানি না। নয়তো আমরা বারবার বলতাম না অমুক আমাদের সালাফ, অমুক আমাদের আকাবির, অথচ সত্যিকারের আকাবির আসলাফ হচ্ছেন সাহাবারা। হতে পারে যারা সাহাবিদের অনুসরণ করেন তারা আকাবিরদের অনুসারী। কিন্তু তারা কখনোই আমাদের আদর্শ নয়। সাহাবাদের মত পুণ্যময় জামাত থাকতে, আমরা কিভাবে এক হাজার, ১২০০, ১৪০০ বছর পরের এক মহাফিত্নার সময়ের মানুষকে আদর্শ মানতে পারি?

 

অথচ সাহাবাদের জামাতের অনুসরণ করলে মুসলিমদের মধ্যে এতো ভ্রান্তি প্রবেশ করত না, এতো দল মত তৈরি হত না, এত ভাগে বিভক্ত হত না। কারণ মুসলিম বিশ্বের যত বিভক্তি তা সব এই জমানায় তৈরি হয়েছে। একদল জামাত সমর্থক মওদুদির মত একজন নন-আলিম ইসলামী চিন্তাবিদকে আদর্শ ধরে, স্ট্যান্ডার্ড ধরে অনেক ভালো জিনিসের সাথে মন্দকে গ্রহণ করেছে, ফলে ভ্রান্তি তাদের মধ্যে ব্যাপক হয়ে গেছে। রেজভিরা আহমাদ রেজা খানের অনুসরণ করে নানা রকম বিদ'আতের অনুসরণ করে। দেওবন্দিরা শুধুমাত্র উপমহাদেশীয় হানাফি আলিমদের অনুসরণ করে, এবং তাদেরকেই আকাবির মানে। সালাফিরা ইবনু আব্দিল ওয়াহহাবকে সালাফ মানে এবং অনুসরণ করে যার মাধ্যমে বেরেল্ভিদের মুশরিক দেওবন্দিদের বিদাতি বলার প্রথা সৃষ্টি হয়, তাসাউফের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করে, এদের একদল আবার প্রচণ্ড রকমের সৌদিপ্রেমি, যাদের মানহাজের কেন্দ্র ইসলাম নয় বরং খাদেমুল হারামাইন, আলেসউদ শাসক। জিহাদিদের মধ্যে যারা বিভ্রান্ত হয়েছে তারাও তাকফিরি মুজাহিদ নেতাদের মানার কারণে আইএস অনুসরণ করেছে। আর পৃথিবীতে বিভিন্ন অঞ্চলে জিহাদ চালিয়ে যাওয়া কায়েদা-তালেবানের অনেক সমর্থক তাদের জিহাদী মতের প্রধানকে আকাবির মানায় অনেক রকম বাড়াবাড়িতে লিপ্ত হয়। এই যতগুলো উদাহরণ দিলাম, সবগুলোর মূল হচ্ছে সাহাবিদের আকাবির আসলাফ না মেনে এই বর্তমান কালের মানুষদের আকাবির বানিয়ে পূজা করা। এমন কয়জন মানুষ আছে, যে নিজের দলের ভুলের সমালোচনা করতে পারে? কেউ কি আছে? এটা যদি ব্যক্তিপূজা, দলপূজা না হয় তাহলে কোনটাকে ব্যক্তিপূজা, দলপূজা বলে? সালাফিদের কখনো দেখেছেন নিজেদের কোনো ভুল স্বীকার করে? আর দেওবন্দি? আর জামাতি? আর এরদোগানি? আর জিহাদি? কাউকে না। কারণ তারা ইসলামকে দল মানার পরিবর্তে নিজেরা ইসলামের ভিতর উপদল বানিয়ে নিয়েছে। সাহাবিদের আকাবির মানার পরিবর্তে নিজের পছন্দের আলেমকে আকাবির বানিয়ে নিয়েছে।

 

আল্লাহ আমাদেরকে আকাবির আসলাফ সম্মানিত সাহাবিদের অনুসরণের তৌফিক দিন। আমি আরেকটা বিষয় দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছিলাম, সেটা হচ্ছে সাহাবাদের জীবনে যেভাবে জিহাদ, দাওয়াত, ইলম, হিকমাহ সবকিছুর সম্মীলন হয়েছিল এ যুগে কোনো দলে আপনি তা পাবেন না। কারো মধ্যে জিহাদ আছে তো হিকমাহ আর দাওয়াত নেই, কারো মধ্যে হিকমাহ আছে তো ইলম আর জিহাদ নাই, কারো মধ্যে ইলম আছে তো জিহাদ ও দাওয়াত নেই। এভাবে আমরা ইসলামকে অঙ্গহানি করে কিছু বিষয়ের অনুসরণ করে বাকিসব ছুড়ে ফেলছি। সুতরাং আপনাকে যদি সাহাবাদের অনুসরণ করতে হয় তবে প্রথমেই দলের অন্ধ অনুসরণ বাদ দিতে হবে, নতুবা উপায় নেই। সাহাবাদের জীবনে যেভাবে সবকিছুর সম্মীলন ঘটেছিল, আপনার জীবনেও যদি তা ঘটাতে চান তবে সকল মুমিন ভাইয়ের প্রতি ভালো সম্পর্ক রাখবেন, সব দলের সাথে মিশবেন, জিহাদিদের থেকে জিহাদ নিবেন, দেওবন্দি ও সালাফিদের থেকে ইলম নিবেন, বেরেল্ভিদের থেকে নবীপ্রেম নিবেন, ইমরান নজর থেকে দাজ্জালের প্রতি ঘৃণার সবক নিবেন, জামাত থেকে দুনিয়ার বাস্তবতা অনুযায়ী কর্মপন্থা সাজানোর পাঠ নিবেন, তাবলীগ জামাত থেকে দাওয়াতি আকাঙ্ক্ষা নিবেন। তবেই আপনি সাহাবিদের অনুসরণ করতে পারবেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তেইশ

 

কিছু ভাই উলামাদের অসম্মান করে নিজেদের মানহাজের অপমান করে আর শত্রু বাড়ায়। আবার অনেকে দেখি কোনো আলেম যদি পজেটিভ একটা কথা বলে তারেই নিজেদের মানহাজের আলেম হিসেবে ধরে নেয়, পরে সেই আলেমের কোনো নেগেটিভ কথা পাইলে তখন হুঁশ ফিরে। আমার কথা হচ্ছে আব্দুল মালিক সাহেবকে এখন তাগুতের দালাল বলা হচ্ছে কিন্তু যখন গ্রহণ করেছিল তখন কি জেনে বুঝে গ্রহণ করে নাই? আমার তো মনে হয় না কখনোই আব্দুল মালেক সাহেব জিহাদি মানহাজের সাথে একমত ছিল। জিহাদ নিয়ে দুয়েকটা ভালো কথা বললেই মানহাজি হয় না এটা তো অনেক ভাই বুঝে না। একসময় দেখতাম রেজাউল করিম ভুঁইয়া মানহাজিদের খুব প্রিয় ছিল, কিন্তু পরে দেখা গেল তিনি মানহাজি না, আর এখন তো পুরা মানহাজি-বিরোধী।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চব্বিশ

 

(আলাদিন নামে একটি হালাল সোশ্যাল মিডিয়ার কর্তৃপক্ষের প্রতি আমার বার্তা)

 

সালাহুদ্দিন ভাই, কিছু বিষয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি

 

১- হিজাব পড়া কিন্তু মুখ খোলা মেয়েদের ছবি দেয়া হয়েছে হোমপেজেই। এটার পরিবর্তে পুরুষদের দিলে ভালো হয় বা অন্য ইসলামিক পিকচার। কারণ নারীদেরটা পর্দার খেলাফ।

 

২- অনৈসলামি কোনো কিছু প্রমোট না করা।

 

৩- আলাদিন জিতলে জিতবে গোটা বাংলাদেশ । শ্লোগানটা পছন্দ হল না। মনে হচ্ছে প্রচলিত জাহেলি শ্লোগানগুলো থেকে আইডিয়া নেয়া। যদিও এটা ব্যক্তিগত মতামত। যেমন ক্রিকেটে এবং প্রথমালু এরকম শ্লোগান দিয়েছিল।

 

৪- এটাকে আপনার প্রথম ইসলামিক সোশ্যাল মিডিয়া বলছেন, কিন্তু আমার জানামতে এর আগেও এরকম অনেক ইসলামিক সোশ্যাল মিডিয়া তৈরি হয়েছে, কিন্তু সেগুলো একটিভ থাকে নি , জনপ্রিয় হয় নি। কিন্তু আলাদিন যদি একটিভ থাকে, তবে তো ভালোই হয়। টিকে থাকাটাই বড় কথা। আপনারা ব্যাপক ভাবে প্রচারণা চালান, বিজ্ঞাপন দিন। নতুবা অন্যগুলার মত ব্যার্থ হবে। আশা থাকবে ফেসবুকের মত এটা জনপ্রিয় হবে ইনশাআল্লাহ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পঁচিশ

 

ফেসবুকের বিখ্যাত জোকার সালাহুদ্দিন আইয়ুবি (আইডির নাম)-কে অনেকেই চিনেন। যে এরদোগান ও সালমানের বড় ফ্যান এবং এরদোয়ানের প্রসংসায় অদ্ভুত সব কথাবার্তা ছড়াত। কয়েক মাস আগে ক্রাইস্ট চার্চ হামলার ভিডিও ফেসবুক সরিয়ে দিতে থাকলে তিনি নাকি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন মুসলিমদের জন্য আলাদা সোশ্যাল মিডিয়া তৈরি করবেন। ঠিকই ৩ মাস পর আলাদিন নামে সোশ্যাল মিডিয়া তৈরি করলেন এবং এখন এটা সবার জন্য উন্মুক্ত। ব্যাপক সাড়া ফেলেছে, এমনিতেও তার ফ্যান অনেক। যাকে আমি জোকার বলছি তার এই অসাধারণ কাজের জন্য আমি তার প্রশংসা করছি। অদ্ভুত ব্যাপার থার্ড ক্লাসের একটা জোকার যে দারুণ কাজটা করল, আমরা স্বঘোষিত বুদ্ধিমান মানুষরাও সেটা করতে পারলাম না (আমরা যারা তাকে নিয়ে ট্রল করতাম)। করলে অনেক আগেই এমন কিছু আসতো। এর পূর্বে উম্মাল্যান্ড এর নাম শুনেছিলাম। আইডি খুলেছিলাম, কিন্তু চালিয়ে মজা পাই নি। আপাতত আমার কাছে ফেসবুকের বিকল্প হিসেবে আলাদিনকে মনে ভালো হচ্ছে। আমি চাই আলাদিন অনেক বড় প্লাটফর্ম হোক, অন্তত ফেসবুকের মত ওদের তৈরি কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড এর বাইরে গেলে রিমুভ করবে না। যারা ফেসবুকে মুজাহিদদের ছবি দিতে পারছেন না, তারা আলাদিনে যেতে পারেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ছাব্বিশ

 

https://aladdin.social এ একাউন্ট খুল্লাম। এমন কিছুই চাচ্ছিলাম যা ফেসবুকের বিকল্প হবে। যদিও দাবি করা হচ্ছে প্রথম হালাল সোশ্যাল মিডিয়া। যদিও প্রথম না, তবু উৎসাহ দিচ্ছি যেহেতু মুসলিম ভাইয়েরা শুরু করেছেন। আপনারা একাউন্ট খুলতে পারেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সাতাশ

 

 

 

এমন দিনে এই কথাটা বলা উচিৎ হবে কিনা জানি না, মোহাম্মদ মুরসি র. এর মৃত্যুতে সারা বিশ্বের মুসলিমরা দল মত নির্বিশেষে যেভাবে শোকাহত হয়েছি, ময়দানের মুজাহিদরা শহীদ হলে কেন এভাবে সবাইকে দল মতের গণ্ডি পেরিয়ে শোকাহত হতে দেখা যায় না! কিছুদিন আগে কমান্ডার জাকির মুসা শহিদ (ইনশাআল্লাহ) হলেন, এর আগে সামিউল হক, এর আগে জালালুদ্দিন হাক্কানি মৃত্যু বরণ করলেন। তখন তো তাদের দলীয় গন্দির বাইরে কাউকে শোকাহত হতে দেখি নি। মুজাহিদদের প্রতি এই অবিচার কেনো?

 

 

 

 

 

 

 

 

আঠাশ

 

ইসলামে রেসিজম নাই। কারো চেহারার জন্য, কারো কণ্ঠ কিংবা অবয়বের জন্য, কারো গাঁয়ের রঙের জন্য ঘৃণা করা ইসলাম শেখায় না। হলিউড বলিউডের হিরোরা অভিনয়, নাচ গান করতে পারলে হিরো আলম কি দোষ করল? হিরো আলমরে নিয়ে তো সবাই এইজন্যই মজা করত যে তার সুরত ভালো না ইত্যাদি। রেসিস্টরাই শুধুমাত্র হিরো আলমরে দেখতে পারে না অথচ হলিউড বলিউড আরও কি কি উড আছে, সেইসব নায়কদের ফ্যান। মুসলিম কখনো কারো চেহারার জন্য সমালোচনা করে না। তবে হিরো আলম যেমন গুনাহর কাজ করতেছে এইজন্য তার সমালোচনা করা যায় ঠিক যেভাবে বিভিন্ন উডের অভিনেতাদের সমালোচনা করা উচিৎ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ঊনত্রিশ

 

কিছু মানুষকে আল্লাহ ভালোবাসেন, তাই সবাই তাকে ভালোবাসে। সকাল থেকে জাভেদ ভাইকে নিয়ে শত খানেক বা এর বেশি পোস্ট দেখা হয়েছে। সবাই তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করছে।

 

মনে হচ্ছে তিনি সবার কত আপন। সবাই তার সাথে ম্যাসেঞ্জারে শেষ কথা বলার স্ক্রিনশট দিচ্ছে, এতো মানুষের সাথে তিনি যোগাযোগ রাখতেন, সবাই তাকে আপন ভাবতো। তিনি জীবিত অবস্থায় যেমন নিজের আমল আখলাকের কারণে সকলের ঈর্ষার পাত্র ছিলেন, তার মৃত্যুও সবাইকে ঈর্ষান্বিত করছে। এমন মৃত্যু সবাই চায়, আল্লাহর ঘরের মেহমান অবস্থায়, ক্বাবার সামনে, তাওহিদের কালিমা পড়া অবস্থায়।

 

মৃত্যুর পর তার জন্য কত মানুষ দুয়া করছে। এক ভাইকে দেখলাম পোস্ট দিয়ে তার জন্য কুরআন খতমের উৎসাহ দিচ্ছে। চিনে না জানে না এমন মানুষেরা তার জন্য কুরআনের ১ পারা, ২ পারা, ৫ পারা তিলাওয়াত করছে। ইতোমধ্যে সবাই মিলে ৪ খতমের মত পড়ার জন্য নির্ধারণ করে ফেলেছে।

 

এমন ভাগ্যবান মানুষ, যার জানাযা বাইতুল্লাহয় হচ্ছে, মক্কার পবিত্র ভূমিতে দাফন হবেন, বাংলাদেশে তার গায়েবানা জানাযা হয়েছে। একজন সাবেক আর্মি অফিসার, ফেসবুকের একজন বিখ্যাত স্যাটায়ার লেখক, হিদায়াতের মাধ্যমে আল্লাহ যার হৃদয়কে ইসলামের দিকে ঝুঁকিয়ে দেন। এবং এরপর তিনি নিজেকে আল্লাহর পথে উৎসর্গ করেন। ২০১৫ থেকে প্রতি বছর হজ আদায় করা তার নেশা হয়ে যায়। হজের প্রতি তার এমন ভালোবাসা আমার মত ফাসিককে হজ আদায়ের প্রতি ব্যাপক অনুপ্রেরণা দেয়।

 

তার হিদায়াত পরবর্তী জীবন যেমন দাওয়াতে কেটেছে তেমনি তার মৃত্যুও এক প্রকার দাওয়াতি বার্তা হয়ে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি তার পরিচিত সেকুলারদেরকেও তার স্মৃতিচারণ করে পোস্ট দিতে দেখছি, তার জন্য দুয়া করতে দেখছি। তার মৃত্যু কত মানুষকে ইসলামের দিকে অনুপ্রাণিত করছে, দাইদের জীবন এমনই, তাদের মৃত্যুও হয় এক প্রকার দাওয়াতি বার্তা।

 

আমরা জাভেদ ভাইয়ের জন্য দুয়া করতে পারি, কিছু টাকা সাদকা করতে পারি, তার রেখে যাওয়া পোস্টগুলো শেয়ার করতে পারি। এর দ্বারা তিনি উপকৃত হবেন।

 

রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যখন মানুষ মৃত্যুবরণ করে তখন তার তিনটি আমল ব্যতীত সবগুলি আমল বন্ধ হয়ে যায় (১) ছাদাক্বায়ে জারিয়াহ (২) এমন জ্ঞান, যার দ্বারা অন্যরা উপকৃত হয় (৩) নেক সন্তান, যে পিতার জন্য দো‘আ করে’।

 

(২৮ আগস্ট, ২০১৯)

 

 

 

 

 

 

 

 

ত্রিশ

 

 

কওমি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অনেকগুলো ব্যর্থতার মধ্যে 'সমকামিতা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া' যদি অন্যতম একটি ব্যর্থতা হয় তবে সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হচ্ছে নেহাল বেহালদের মত ইউজফুল ইডিয়ট তৈরি করা। নেহাল বেহালের সংখ্যা খুব কম তা নয়। এদের সবার মধ্যে একটা কমন বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এরা সাহিত্যপূজারী। গত কয়েক দশক আগে মাদ্রাসা অঙ্গনে বাংলা সাহিত্য চর্চার যেই জোয়ার শুরু হয়েছিল এর দ্বারা অনেক বড় বড় ইসলামি সাহিত্যিকের যেমন জন্ম হয় তেমনি একদল বিভ্রান্তও হয়। আল্লাহ তার কালামে মাজিদে কবিদের প্রসঙ্গ বলতে গিয়ে প্রথম বিভ্রান্তদের কথা বলেছেন, এরপর বলেছেন কবিদের মধ্যে মুমিনও আছে। অর্থাৎ কবি সাহিত্যিকদের মূলধারা সবসময়ই পথভ্রষ্টরা হয়। সাহিত্যপূজারী নেহাল বেহালরা সেকুলার সাহিত্য দ্বারা এতো বেশি প্রভাবিত হয় যে এরাই ইসলামকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ না করে সেকুলারিজমকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে। আবার অনেকে এমন আছে যাদের মন মগজে সেকুলারিজমের মলমুত্রে ভরা কিন্তু দেহে সুন্নতি লেবাস পরিধান করে মুনাফিকের ন্যায় কওমি অঙ্গনে মিশে আছে। এরা আরও বেশি ভয়াবহ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

একত্রিশ

 

অনেক কিছুই করতে ইচ্ছে করে, কিন্তু করা হয়ে ওঠে না। দীনী কাজ করতেও ভাগ্য লাগে সবাই পারে না, চাইলেও কেউ এই পথে কাজ করতে পারে না, বরং আল্লাহ যাকে তৌফিক দেন সে-ই শুধু পারে।

 

 

 

 

 

 

 

বত্রিশ

 

অনলাইনে যেসব এক্টিভিস্ট ব্যাপক এক্টিভ এবং চিন্তক হিসেবেও অনেক উচু মানের তাদের মধ্যে হিসাব মুযাইয়্যাফ ওরফে যামান আসাদুয, নয়ন চ্যাটার্জি, মীর সালমান, খোমেনী এহসান অন্যতম। প্রত্যেকেই অন্যদের থেকে অনেক বেশি আলাদা, এই চারজনকে চার মেরুর বললে ভুল হবে না। কিন্তু অনলাইনে এদের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। এই চারজনের মধ্যে খোমেনীই একমাত্র আসল আইডি চালায়, বাকিরা ফেক। নয়ন চ্যাটার্জি একজন প্রোপ্যাগান্ডিস্ট, তার ফলোয়ার সংখ্যাও প্রচুর। যামান আসাদুযের ফিল্ড অনেকটা জ্ঞানকেন্দ্রিক। মীর সালমান গালিবাজ হিসেবে খ্যাত, কিন্তু সে চিন্তক হিসেবে উচুমানের। আর খোমেনী একজন সাংবাদিক, এবং তার ফিল্ড রাজনীতি বিশ্লেষণ।

 

অনেকেই লেখালেখি করে, সামান্য একটা বিষয় বোঝাতে বড় বড় প্রবন্ধ, পুস্তক রচনা করে। বর্তমানে ফেসবুক স্ট্যাটাস বইয়ের পাতার বিকল্প হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। যাদের কথা বললাম, তারা বড় বড় পুস্তক লেখেন না ঠিকই তবে আগের কালের পুস্তক রচয়িতা চিন্তক ও দার্শনিকদের উত্তরাধিকারী হয়েছেন। এটাকে আমি ভালোই মনে করি যে সামান্য একটা বিষয়ের উপর বিশাল পুস্তক রচনার চেয়ে ছোট খাটো একটা স্ট্যাটাস এ তা পরিষ্কার করা।

 

অনেকেই লেখে, কিন্তু চিন্তা ট্রান্সফার করতে পারে না, চিন্তা ছড়িয়ে দিতে পারা খুব গুরুত্বপূর্ণ গুণ। একজন লেখককে এই গুণ অর্জন করতে হয়। আমি মনে করি ফেসবুক স্ট্যাটাস হচ্ছে গরীবের প্রবন্ধ। সাধারণের কাছে পৌঁছতে এটাই সবচেয়ে উপযুক্ত মাধ্যম হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। যাদের মুরাদ টাকলা বলে ভেঙ্গানো হয় সেই সরল সিধা বিশাল জনগোষ্ঠী বই পড়ে না, বই ধরে না, অথচ ঠিকই নয়ন চ্যাটার্জির পোস্ট শেয়ার করে। এটাই হচ্ছে একজন লেখকের সাফল্য, মানুষ তার চিন্তা গ্রহণ করছে, তার চিন্তার পক্ষে যুক্তি তর্ক করছে, এটাই লেখকের সফলতা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তেত্রিশ

 

কেমন হতে পারে মুসলিম জনগোষ্ঠীর শিশুদের বর্ণমালার বই? একটা উদাহরণ নিম্নে দেয়া হলঃ

 

ক তে - কালেমা, কুরআন (কালামুল্লাহ, কিতাবুল্লাহ), কলম, কানাআত, কাদির, কাসিদা, কমার।

 

১- কালেমাঃ কালেমা (তায়্যিবা, শাহাদাহ, তাওহীদ, তামজীদ)।

 

২- কুরআন (কিতাবুল্লাহ, কালামুল্লাহ)। আল্লাহর কিতাব, আল্লাহর বাণী।

 

৩- কলমঃ

الَّذِي عَلَّمَ بِالْقَلَمِ

যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন (সূরা আলাকঃ ৩)

 

৪- কানাআহঃ অল্পে সন্তুষ্ট হওয়া বা স্বল্পেতুষ্টি। (ইসলামী পরিভাষায় কানাআত হলো হালালভাবে আল্লাহ যা দিয়েছেন, তাতে সন্তুষ্ট থাকা)।

 

৫- কাদিরঃ শক্তিশালী। আল্লাহর অন্যতম একটি গুণবাচক নাম।

 

৬- কাসিদাঃ গীত।

 

৭- কমারঃ চাঁদ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চৌত্রিশ

 

হাদিসে অন্যের বাবাকে নিজের বাবা বলে পরিচয় দেয়া নিষেধ করা হয়েছে। সা'দ ও আবু বাকরা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদীসে রাসুলুল্লুাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন- "জেনে শুনে যে নিজ পিতা ব্যতীত অন্যকে পিতা বলে পরিচয় দেয়, তার উপর জান্নাত হারাম।"

 

এই হাদিসের পিছনে হিকমাহ হল আপন পিতা মাতা ব্যাতীত আর কেউই আপন পিতা মাতার স্থান নিতে পারে না। কারণ পুরুষের জন্য মায়ের সাথে আর মহিলাদের জন্য পিতার সাথে পর্দা করতে হয় না। কিন্তু কেউ যদি অন্য কাউকে তাদের স্থলে বসায় এবং আপন পিতা মাতার মত আচরণ করতে যায় তখন পর্দার লঙ্ঘন হয়। দত্তক পুত্রকেও নিজের নামে পরিচিত করানো নিষেধ। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দত্তক পুত্র যাইদ বিন মুহাম্মাদ নামে পরিচিত ছিল, কিন্তু আল্লাহর আদেশে রসুল তার দত্তক পুত্রের নাম পরিবর্তন করে প্রকৃত পিতার নাম যুক্ত করে দেন।

 

হাদীসে এসেছে, من ادعى إلى غير أبيه وهو يعلم أنه غير أبيه فالجنة عليه حرام “যে ব্যক্তি পরের বাবাকে নিজের বাবা বলে, অথচ সে জানে যে, সে তার বাবা নয়, সে ব্যক্তির জন্য জান্নাত হারাম।” (বুখারী, ৬৩৮৫)— এ জাতীয় হাদীস দ্বারা উদ্দেশ্য হল, বংশপরিচয় প্রকাশ করার ক্ষেত্রে আসল পরিচয় গোপন রেখে নিজের বাবার নাম উল্লেখ না করে, অন্যের নাম উল্লেখ করা। যেমন-আইডি কার্ড, পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন অথবা এমন কোনো দলিল বা স্থান যেখানে কোনো ব্যক্তির জন্মদাতা বাবার নাম উল্লেখ করা জরুরি হয়, সেখানে যদি অন্য কারো নাম উল্লেখ করা হয় তাহলে তা হারাম হয়। (সুত্রঃ উমায়ের কোব্বাদি)

 

তবে কাউকে সম্মানার্থে মা কিংবা বাবা ডাকাতে সমস্যা নেই। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার চাচিকে (আলি রাঃ এর মাকে) মা বলে ডাকতেন। শ্বশুর শাশুড়িকেও মা বাবা বলতে সমস্যা নেই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পঁয়ত্রিশ

 

হালাল যেই কোনো লাভ জনক ব্যবসারে সমর্থন দেই। কারণ মুসলমানদের ধন সম্পদের দরকার আছে। কারণ একদল যুহদ অবলম্বন করবে, আরেক দলের ধনী হইতে হবে। এইভাবে মুসলমান সমাজের ভারসাম্য রক্ষা হবে, যেই ভাবে উমার রাঃ ছিলেন গরীব, উসমান রাঃ ছিলেন ধনী। যুহদ অবলম্বনকারী একদল সব জামানাতেই থাকে, যেহেতু এটা উৎসাহিত করা হয়। এখন বিপরীতটা দরকার আছে।

 

আর ইসলাম অনুযায়ী ধন সম্পদ অর্জনের উদ্দেশ্য এইটা না প্রাসাদ তৈরি কইরা বিলাস বহুল জীবন যাপন করা। বরং মুসলমানদের উন্নতির জন্য যদি ধনী দীনী মুসলমান কাজ না করে তাহলে সেই সম্পদ দিয়া কোনো লাভ নাই, বরং সে নামাজ রোজা করবে ঠিকই, অনেক ধন সম্পদও অর্জন করবে, ঐ টাকা তার মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশ ভোগ করবে, কিন্তু এর দ্বারা ইসলাম, মুসলমান কারোই কোনো উপকার হবে না।

 

কিন্তু ইসলামের শিআরযুক্ত ব্যবসাগুলাতে একটা লাভ আছে। এতে এগুলার প্রচার বাড়ে। মানুষ দশ হাজার টাকা সরাসরি দান করতে পারে না, সাহস লাগে। কিন্তু দীনী কাজে অংশ নেয়া সহজ। যেমন ইসলামি বইয়ের কোটি টাকার ব্যবসা করা যায়, কিন্তু সেই ব্যক্তি দশ হাজার টাকা দান করার সাহস রাখে না। সুতরাং যেইটা সহজ ওইটাই করা উচিৎ।

 

 

 

 

 

 

 

ছত্রিশ

 

রসুল সাঃ এর দুয়ালাভের ১৮ টি আমলঃ

 

১- আছরের সালাতের ব্যাপারে যত্নশীল হওয়া। (বিশেষ করে ফরজের পূর্বে ৪ রাকাত সুন্নাত আদায় করা)।

 

২- হজ সম্পাদন করা।

 

৩- ইমামতি করা, আজান দেয়া।

 

৪- যারা হজ করে তাদের কাছে দুয়া চাওয়া।

 

৫- হজের পর চুল মুন্ডন করা (৩) বা খাটো করা (১)।

 

(চুল মুন্ডনকারীর জন্য আল্লাহর রাসুল দুয়া করেছেন ৩ বার এবং চুল খাটোকারীর জন্য ১ বার)

 

৬- রসুল সাঃ যাদের জন্য শাফায়াত করবেন- যেমনঃ আজানের পর দুয়া পাঠকারীর জন্য, বেশি বেশি নফল সালাত আদায় কারীর জন্য, মদিনায় মৃত্যুবরণকারীর জন্য।

 

৭- রসুল সাঃ এর প্রতি বেশি বেশি দুরুদ পাঠ করা।

 

৮- কিয়ামুল লাইলের ব্যাপারে স্বামী বা স্ত্রীকে সহযোগিতা করা (অর্থাৎ তাহাজ্জুদের জন্য উঠা এবং জীবনসঙ্গীকেও ডেকে দেয়া)।

 

৯- ক্রয়, বিক্রয় কিংবা পাওনাদারের ব্যাপারে সহনশীল হওয়া অর্থাৎ বেশি বেশি দামাদামি না করা বা পাওনাদারকে সুযোগ দেয়া।

 

১০- ভালো কথা বলা নতুবা চুপ থাকা। অহেতুক কথা না বলা।

 

১১- অধীনস্থদের প্রতি সহনশীল হওয়া।

 

১২- সকালবেলাকে কল্যাণকর কাজে লাগানো (অর্থাৎ যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ সকালবেলা করা, ব্যবসা কিংবা দীনী কাজ যেটাই হোক, কারণ সকালবেলা হচ্ছে বরকতময় সময়)।

 

১৩- যার প্রতি জুলুম করা হয়েছে তার সাথে মিটমাট করে নেয়া।

 

(শারীরিক বা মানসিক বা গীবত করে যেভাবেই অন্য ভাইয়ের প্রতি জুলুম করা হয়েছে তার কাছে বিচারদিবসের পূর্বেই ক্ষমা চেয়ে নেয়া)।

 

১৪- আল্লাহর রাসুলের হাদিস মুখস্ত করা এবং তা প্রচার করা।

 

১৫- রসুল সাঃ এর যুগে ব্যবহৃত ওজন পরিমাপক (বাটখারা) ব্যবহার করা।

 

১৬- পবিত্র অবস্থায় ঘুমানো (অজু অবস্থায়)।

 

১৭- জামায়াতে প্রথম (৩) অথবা দ্বিতীয় কাতারে সালাত আদায় করা (১)।

 

(প্রথম কাতারে নামাজ আদায়কারীর জন্য ৩ বার এবং দ্বিতীয় কাতারে আদায়কারীর জন্য ১ বার দুয়া করা হয়েছে)।

 

১৮- জান্নাতী যুবকদের সর্দার হাসান ও হুসাইন রাঃ-কে ভালোবাসা।

 

বিস্তারিত জানতে - https://www.youtube.com/watch?v=l40u1W5FwJ4

 

(১৮ টি আমলের তালিকা শুনতে ৪২-৪৪ মিনিট থেকে শুনতে পারেন)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সাইত্রিশ

 

মওদুদি রঃ ছিলেন একজন মহান গবেষক, চিন্তক এবং লেখক। আমি ব্যক্তিগত ভাবে তাকে শ্রদ্ধা করি ভালোবাসি। তাকে আমি আলিম মনে করে নি। তবে তিনি গবেষক, চিন্তক ও লেখক ছিলেন, এতোটুকুই। তার লেখা বহু মানুষকে হেদায়েতের পথে এনেছে। বহু আধুনিকমনা মানুষকে ইসলামের দিকে আগ্রহী করে তুলেছেন।

 

তার সাথে মতপার্থক্য সত্ত্বেও তাকে শ্রদ্ধা করেছে দেওবন্দের উলামাগণ, আহলে হাদিস উলামাগণ, আরবের সালাফি উলামাগণ।

 

যেখানে বড় বড় উলামাগণের অসংখ্য ভুল আছে, সেখানে মওদুদির ভুল থাকবে না, এটা কিভাবে সম্ভব? অথচ, সুবহানাল্লাহ, তার অনুসারী ভাইয়েরা তার একটি এবং একটি মাত্র ভুলকেও স্বীকার করতে রাজি না।

 

উপরে আহাদ উম্মাহ (নুরুল আহাদ) ভাইয়ের কমেন্ট দেখে মনে হল।

 

 

এমন অন্ধ অনুসারী আহলে হাদিস কিংবা দেওবন্দিদের মধ্যেও নাই। আহলে হাদিসরাও আলবানী রঃ কিছু মত মানে না। দেওবন্দিরাও নিজেদের অনেক আকাবিরের অনেক মত মানে না। এবং যেসব আকাবির ভুল করেছে তাদের ভুল তারা স্বীকার করে। হাজী এমদাদুল্লাহ মাক্কী মিলাদ কিয়াম করতেন, এটা দেওবন্দিরা মানে না।

 

কিন্তু জামায়াতের ভাইদের এখন পর্যন্ত দেখলাম না মওদুদি রঃ এর কোনো ভুল স্বীকার করেছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আটত্রিশ

 

ইমরা রাইহান ভাই, একটা কথা বলি। আপনার মত ইতিহাসমনা একদল তরুণকে নিয়ে একটা ইতিহাস গবেষণা সংস্থা শুরু করেন, আপনার নেতৃত্বে। মুসলিম ইতিহাসের উপর অনেক কাজ বাকি।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামের ইতিহাস নামে একটা সাবজেক্ট আছে যেইটার মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে পশ্চিমা ও প্রাচ্যবিদরা ভুলভাল ইতিহাস ছড়াইতেছে। এর কাউন্টার দরকার।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

উনচল্লিশ

 

আজকে সকলের হাতে হাতে মোবাইল। তাবলীগের ভালো ভালো বয়ানগুলো চাইলেই কেউ রেকর্ড/ভিডিও করতে পারে। কিন্তু কাউকে এমন দেখি নি করতে। মুশফিক স্যার রঃ এর বয়ান রেকর্ড হয় নি দেখে আফসোস করে অবশ্য লাভ নেই এখন, ভবিষ্যতের মুশফিক স্যাররা আজকে জীবিত, তাদেরটা অন্তত করা উচিৎ। অথচ ওয়াজের নামে চিল্লাপাল্লা ভিডিও হয়ে ইউটিউবে লাখ লাখ ভিউ হয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চল্লিশ

 

হেজবুত তৌহিদ নাম ভ্রান্ত ফিরকার প্রচারক ফেসবুকের ওমর ফারুকের প্রতি আমার আহবান-

 

আমরা ইসলামের অনুসারী, আমরা "শুনলাম এবং মানলাম" এর উপর আমল করি। আমরা নিজেদের নফসের গোলামি করি না আর যুক্তিকে ওহীর উপর প্রাধান্য দেই না। আল্লাহ ইবলিশকে বলেছিল সিজদাহ করতে, সে যুক্তি দেখিয়েছিল সে আগুনের তৈরি। আর আপনারা হেজবুতি ধর্মের লোকেরাও যুক্তি দেখাচ্ছেন হজে সৌদিরা টাকা মেরে খায়। শয়তান যে যুক্তি দেখিয়ে আল্লাহর বিধান অমান্য করে পথভ্রষ্ট হয়েছে আর আপনারাও যুক্তি দ্দেখিয়ে আল্লাহর বিধান অমান্য করছেন। আমাদের রাসুল মুহাম্মাদ সাঃ এবং আপনাদের ইমাম ভন্ড পন্নি। সুতরাং দুই ধর্মের পথ আলাদা। আল্লাহ সত্য থেকে মিথ্যাকে আলাদা করেন। ইসলামের সাথে টক্কর দিতে যুগে যুগে কত নতুন নতুন মতবাদ তৈরি হয়েছে, কিন্তু ইসলাম ১৪০০ বছর পরেও টিকে আছে, হারিয়ে গেছে ইসলামের বিধান নিয়ে প্রশ্ন তোলা সেইসব মুতাজিলা, জাহমিয়া, কাদরিয়া, খারেজিরা। কয়েকশ বছর আগে কাদিয়ানি, আহলে কুরআন ইত্যাদি ধর্ম তৈরি হয়েছে, আর আজ তৈরি হয়েছে হেজবুত তৌহিদ নামে নতুন ধর্ম। এইসব ইসলামের নাম দিয়ে তৈরি নতুন নতুন ধর্মগুলোর মধ্যে একটা মিল খুঁজে পাওয়া যায়, প্রত্যেকেই ১৪০০ বছর ধরে চলে আসা ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রত। ইসলাম ১০০ না, কিয়ামাত পর্যন্ত জারি থাকবে যতদিন আল্লাহ চান, আর মাঝের এই সময়ের এসব ভ্রান্ত মতবাদ তো আবু জাহাল ও আবু লাহাবের রোল প্লে করছে মাত্র।

 

ইসলামে ফিরে আসুন, মুক্তি পাবেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

একচল্লিশ

 

বিপ্লবের জন্য পীর মুরিদির দরকার আছে, মীর সালমান ভাইয়ের সাথে এ ব্যাপারে একমত। শরিয়তুল্লাহ চরম লেভেলের ওয়াহাবি ছিলেন, কিন্তু উনার আন্দোলনরে সফল করার জন্য উনার ছেলে দুদু মিয়া নিজেই পীর মুরিদি শুরু করছিলেন। তিতুমীরও ওয়াহাবি হওয়া সত্ত্বেও পীর মুরিদি করতেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বিয়াল্লিশ

 

কোনো অর্থ খরচ না করেও দানের সওয়াব পাবেন এমন ২৩ টি আমল।

 

১- সালাতুদ দুহা আদায়।

 

২- কাউকে সাহায্য করা।

 

৩- ভালো কথা বলা।

 

৪- পানি পান করানো।

 

৫- রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে দেয়া।

 

৬- পরিবারের লোকদের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করা।

 

৭- ঋণ দেয়া।

 

৮- গরিব ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিকে ঋণ পরিশোধের জন্য সময় দেয়া, সুযোগ দেয়া।

 

৯- মুসলিম ভাইকে (পরিচিতি/অপরিচিত) সালাম দেয়া।

 

১০- তাহলীল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) পাঠ ।

 

১১- তাকবীর (আল্লাহু আকবার) পাঠ।

 

১২- তাহমীদ (আলহামদুলিল্লাহ) পাঠ।

 

১৩- সুবহানাল্লাহ পাঠ।

 

১৪- সৎ কাজের আদেশ দেয়া।

 

১৫- অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করা।

 

১৬- স্ত্রীর সাথে সহবাস করা।

 

১৭- মুসলিমদের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা।

 

১৮- পথ হারা মুসাফিরকে পথ বলে দেয়া।

 

১৯- অন্ধ ব্যক্তিকে সাহায্য করা।

 

২০- নিজের পানির পাত্র থেকে অন্যকে খাওয়ানো।

 

২১- দাস/ কাজের লোকের সাথে বসে একই মানের খাওয়া একসাথে খাওয়া।

 

২২- মেহমানকে ৩ দিনের বেশি মেহমানদারি। (মেহমানকে সর্বোচ্চ ৩ দিন মেহমানদারি করতে মেজবান বাধ্য, ৩ দিনের পর জরুরী নয়, কিন্তু কেউ যদি করে তবে সে সাদাকার সাওয়াব পাবে।)

 

২৩- ফলের গাছ লাগানো। (সেই ফলের গাছ থেকে যদি চোর চুরি করলে, চতুষ্পদ জন্তু খেলে, পথচারী ছায়ায় বসলে বা গরিব কেউ সেখান থেকে খেলে সাদাকার সাওয়াব লাভ করা যাবে)।

 

 

শাইখ আহমাদুল্লাহর লেকচার অবলম্বনে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তেতাল্লিশ

 

একটা বিষয় খেয়াল করে দেখলাম, কাদিয়ানি, আহলে কুরআন, হেজবুত তৌহিদ এই কাফের ফিরকাগুলোর মধ্যে ব্যাপক মিল। এরা প্রত্যেকেই ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলে যেভাবে ইহুদী-খ্রিস্টান, হিন্দু-নাস্তিকরা বলে থাকে। এইসব ইসলামের নাম ব্যবহারকারী কাফের ফিরকার মধ্যে মিল হচ্ছে এরা প্রত্যেকেই উলামাদের উপর আক্রমণ করে থাকে। কারণ ওহীর সঠিক জ্ঞান উলামারাই বহন করছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চোচল্লিশ

           

কওমি ও জামায়াত উভয়ের মধ্যেই দলীয় অহঙ্কার প্রচুর। কওমিদের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির সাথে জোট করতে পারে, জামায়াতও বিএনপির সাথে জোট করতে পারে, অথচ নিজেরা জোট করতে পারে না। জামায়াতের কেউ কেউ ঐক্য চায়, চেয়েছিল, গোলাম আজম রঃ এ নিয়ে চেষ্টা ফিকির করেছিলেন। কিন্তু কওমিরা অবাস্তব শর্ত দিয়ে মিলতে দেয় নি। সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে হাফেজ্জী হুজুর রঃ ইরান ভ্রমণ করে এসে শিয়াদের মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত বলে ঘোষণা দিয়েছেন অথচ গোলাম আজম তার কাছে ঐক্যের জন্য আসলে মওদুদি-প্রশ্নে এক হতে চান নি। অর্থাৎ তার কাছে জামায়াত ছিল শিয়াদের চেয়েও অধম। এটাই হচ্ছে বিদ্বেষ যখন ইনসাফের উপর বিজয়ী হয়।

 

এজন্যই জামায়াত আর কওমিরা সেকুলার দলের সাথে জোট করতে পারে, কিন্তু নিজেদের মধ্যে জোট করতে রাজি না। গত নির্বাচনের সময় দেখা গেল কওমিরা বিএনপিকে ভোট দিতে রাজি, তবু ইআবাকে দিতে রাজি না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পঁয়তাল্লিশ

 

২০০ কোটি অথর্ব মুসলিম দিয়ে কি লাভ, বদরের জয়ের জন্য ৩১৩ জনই যথেষ্ট হয়েছিল।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ছেচল্লিশ

 

ড. আলী বিন আব্দুর রহমান আল হুজাইফি হাঃ এর মৃত্যুর সংবাদটি গুজব। আলী হাসান তৈয়ব ভাই এই বিষয়ে লিখেছেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সাতচল্লিশ

 

মেজাজ চড়া হওয়ার জন্য পিস ফ্রিডম এন্ড সলিডারিটি গ্রুপের কয়েকটা পোস্টই যথেষ্ট। এইখানে বাতিল ফিরকার লোকজন আর বলদদের আড্ডাখানা। আর গালিবাজ হিসেবে খ্যাত মীর সালমানের দাওয়াতে এই গ্রুপে কিছু বিখ্যাত ব্যক্তি এসে জুড়ছেন। তবে এই গ্রুপের মূল পরিচালক বুদ্ধিমান মানুষ। খুব ভালোভাবেই গ্রুপ হ্যান্ডলিং করেন। নতুন নতুন এদমিন মোডারেটর নিয়োগ দিয়ে গ্রুপকে চাঙ্গা রাখেন।

 

এই গ্রুপে জামায়াত সমর্থক অধিকাংশ। অধিকাংশ পোস্ট তারাই করে, এদের কাজ হচ্ছে নিজেদের বাদে অন্য সবার সমালোচনা করা। এইখানে শিয়াদেরও উপস্থিতি আছে। আর এক হেজবুতি আঙ্কেলের দেখা পাওয়া যায়। এটাই হচ্ছে জামায়াতিদের সমস্যা, এরা বাতিল ফিরকা চিনতে পারে না। হেজবুতি সেই প্রচারকের পোস্টগুলো এপ্রুভ করছে অথচ হেজবুতিরা যে শুধু কওমি উলামাদের না বরং জামায়াতিদেরও বিরুদ্ধে, এই ঘিলুটুকু জামায়াতিদের নাই, তাই তো সেই হেজবুতির পোস্টে লাইক কমেন্ট করে পাশে থাকে। শিয়া, হেজবুতি, সেকুলার, মোডারেট সব মিলে একাকার, আর এদের বন্ধু জামায়াত। হায়রে জামায়াতিরা, এখনো বন্ধু শত্রু চিনলা না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আটচল্লিশ

 

ইমরান খানকে নিয়েও অতি উৎসাহী একদল ইসলামিস্ট আছে। অথচ সে একজন সেকুলার। ইমরান খান ধর্ম নিয়ে যেটা করে সেটা হচ্ছে রাজনীতির জন্য ব্যবহার। মাহাথিরও তাই। এরদোয়ানের কথা ভিন্ন। শেখ হাসিনা আর ইমরানের সাথে তফাৎ এতোটুকুই, ইমরান ইসলামের নাম ব্যবহার করে যতটা বিশ্বস্ত হতে পেরেছে, শেখ হাসিনা ইসলামের নাম ব্যবহার করে ততটা বিশ্বস্ত হতে পারে নি, তবে হাসিনা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইমরান ভক্তরা (জামায়াতি+কওমি) কোনোদিন যদি শেখ হাসিনার ভক্ত হয়ে যায় বুঝতে হবে শেখ হাসিনা সফল হয়ে গেছেন, বোকা মুসলিমদের বোকা বানাতে সক্ষম হয়েছেন। অবশ্য একদল কওমি হাসিনা-ভক্ত তো আছেই, শুধু বাকি জামাতি হাসিনা-ভক্ত।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ঊনপঞ্চাশ

 

অনেক সময় দেখা যায় বাতিলদের সাথে আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্ট করি। ফাও তর্ক বিতর্ক করি। এগুলোর দ্বারা আমাদের মূল্যবান সময় নষ্ট হয়। কাদিয়ানী, হেজবুতি, শিয়া, আহলে কুরআন এসব ফিরকা ছাড়াও, নাস্তিক, সেকুলার, মোডারেট এদের সাথে তর্ক বিতর্ক করে সময় নষ্ট না করে সেই সময়টা বিতর্কের চেয়েও উত্তম কাজে লাগানো যায়। যার সাথে তর্ক বিতর্ক হয় তাকে ব্লক দিয়ে এমন একটা কাজ হাতে নেন যেন বাতিলের পিত্তি জ্বলে যায়। বিচ্ছিন্ন কাজ করে লাভ নেই। এতে সময়ই শুধু নষ্ট হয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পঞ্চাশ

 

জামায়াতী ভাইদের এই বিষয়টা বুঝলাম না, তারা ইমরানের মত সেকুলারকে সাপোর্ট কেন করে? ইমরান যদি সত্যিকার অর্থেই ইসলামপ্রেমি হত তবে ইসলামি রাজনীতি করত। সে যেটা করে সেটা হচ্ছে মুসলিম জাতীয়তাবাদী রাজনীতি। অর্থাৎ তার রাষ্ট্রের জন্য যতটুকু ইসলাম দরকার ঠিক ততটুকুই, এর বেশি না। সে তার অবস্থানে যেমন আমাদের শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়াও তেমন। তারা ইসলামী রাজনীতি করে না ঠিকই কিন্তু ইসলামের পক্ষে মাঝেমধ্যেই গলাবাজি করে।

 

ইমরান হইল আমাদের শায়খার মত, রাজনীতির জন্য ধর্মকে ব্যবহার করে। ইমরান ভক্তরা এই সত্য যত তাড়াতাড়ি বুঝবে ততই ভালো।

 

পাকিস্তান একটি মুসলিম জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্র। তাদের মূল শত্রুই ভারত। সুতরাং ভারতের বিরুদ্ধে বলবে এটাই তো স্বাভাবিক। ইমরানের জায়গায় যদি আমাদের শেখ হাসিনাও থাকতো সেও ভারতের বিরুদ্ধে বক্তৃতা দিত। আইয়ুব, ভুট্টো, পারভেজের মত সেকুলাররাও ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে।

 

ইমরান ভক্তরা কয়দিন পরেই ইমরানরে গালাগাল করবে। কারণ ইমরান তো নিজের স্বার্থে ইসলামরে ব্যবহার করতেছে, কয়দিন পর যখন স্বার্থের জন্য ইসলাম/মুসলিম বিরোধী পদক্ষেপ নিবে তখন তৌহিদি জনতা তারে গালাগালি শুরু করবে।

 

রাজনীতি হল এমন একটা বিষয় যেটার জন্য এরদোয়ানের মত একজন ইসলামী নেতা সিরিয়ার খুনী রাশিয়া-ইরানের সাথে বন্ধুত্ব করে, ইমরান উইঘুর নিধনকারী চীনের সাথে বন্ধুত্ব করে, সৌদির ইবনে সালমান মার্কিনিদের অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করে আর আমাদের শেখ হাসিনা কওমিদের সনদ দিয়ে তাদের মন জয় করে নেয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এক

 

সাম্প্রতিক প্রতিটা ইস্যু মুসলমানদের অনুকূলে ছিল, অথচ আমাদের দূরদর্শিতা ও সক্রিয়তার অভাবে, সেকুলার বুদ্ধিজীবী, মিডিয়া এবং সরকারের কারসাজিতে এগুলো মুসলমানদের প্রতিকুলে চলে গিয়েছে।

 

আমরা ১৪০০ বছরের ইতিহাসে উম্মাহর সবচেয়ে অযোগ্য প্রজন্ম। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের ছি ছি করবে। আমরা এতই অযোগ্য, আমরা চাপাতি হাতে কোপাতে পারি না, আবার কলম হাতে লিখতেও পারি না, আমরা জিহাদ করি না, আমরা মিছিলও করি না, কেউ জিহাদ করলে বলি 'জঙ্গি', মিছিল করলে বলি 'বোকা'।

 

আমরা নিজেরা নিজেরা ঝগড়া করি। নিজেরা নিজেরা মারামারি করি। আর কিছু হলে তাগুতের কাছে বিচার চাই। অথচ উচিৎ ছিল মুসলিম ভাইদের সাথে ঐক্য মজবুত করে সবার মূল শত্রু ইসলামের দুশমনদের শেষ করা। অথচ আমরা করছি ভিন্ন কাজ। আমাদের বাবা, দাদা, নানা ডাকতেও লজ্জা পাবে পরবর্তী প্রজন্ম। কারণ তাদের জন্য আমরা একটা সুন্দর পৃথিবী নয় বরং উত্তপ্ত এক পৃথিবী রেখে যাচ্ছি, যেখানে তাদের অস্তিত্বই হবে অপরাধ, যাদের হত্যা করাকে বৈধ ভাবা হবে, আর বিরোধিতা ও বিদ্বেষকে দায়িত্ব মনে করা হবে, তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করা হবে সকল কাফের মুশরিকদের মিশন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

দুই

 

কোনো নায়ক-গায়ক আওয়ামীলীগ সমর্থন করায় আপনি তাকে বয়কট করেন। অথচ একজন নায়ক-গায়ক ফাসেক হওয়া সত্ত্বেও আপনি কিভাবে তাকে ভালোবাসেন?

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তিন

 

শহীদ তিতুর উচিৎ ছিল গেরিলা পদ্ধতি গ্রহণ করা। মীর সালমান ভাই যা বললেন, তিতুমীরের বাঁশেরকেল্লার যুদ্ধের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল, আমি এর সাথে একমত। কিন্তু তাই বইলা কারামত আলি রঃ এর পদ্ধতিকে সমর্থন জানাইতে পারি না। কারামত আলি রঃ এর পথ তো ছিল বর্তমান ফরিদ মাসুদের পথ। আমি কারামত আলি রঃ এর অবদানকে অস্বীকার করি না, আমি তাকে সম্মান করি, কিন্তু তার পদ্ধতি ছিল ভুল। শহীদ তিতু প্রত্যক্ষ যুদ্ধে না জড়াইলেই ভালো করতেন, প্রত্যক্ষ যুদ্ধের ফলাফল কখনোই ভালো আসে নাই, না বালাকোটে, না সিপাহি বিদ্রোহে, এমনকি বর্তমানেও প্রত্যক্ষ যুদ্ধে না জড়ানো উচিৎ। অতীত থেকে শিক্ষা নেয়ার আছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চার

 

যেই ধর্মান্ধতা, উগ্রবাদ তাগুতের মনে আতঙ্ক ঢুকায় সেই উগ্রবাদ এখন জরুরী হয়ে পড়ছে,

 

কারণ আপনার শান্তিবাদী প্রতিবাদ জালিম পুছে না।

 

(দ্রষ্টব্যঃ মিছিল করা, পুলিশের সাথে সংঘর্ষ লাগাকে অনেকে উগ্রতা, ধর্মান্ধতা বলতেছে, যারা এরুপ বলতেছে তারা মূলত ঘুরায় ফিরায় জালিমের পক্ষ নিতেছে। যেই প্রতিবাদে জালিম-বাহিনী গুলি করে সেইটারে প্রতিবাদ বলে, আন্দোলন বলে। মিছিল ও সংঘর্ষের ঘটনায় তৌহিদি জনতাকে যারা মূর্খ, অপরিপক্ব বলতেছে জালিম তাদের ডরায় না, জালিম ডরায় এই তৌহিদি জনতারেই।)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পাঁচ

 

মীর সালমান বলতেছেন, মিছিল মিটিং, প্রতিবাদ এইসব বাদ দিয়া আমরা দাওয়াত ও তাযকিয়াহ নিয়া ব্যস্ত হইলে ভালো ফল আসবে। তিনি প্রস্তাব দিলেন সীরাতের আলোচনায় মনোযোগ দিতে। আমি বল্লামঃ সীরাতের আলোচনা তো থাকবেই, আপনি যে কাজে মনোযোগ দিতে বলতেছেন এইটার আমল হাজার বছর ধইরা চলতেছে। কিন্তু আন্দোলন, বিপ্লব এইসব হইল দুর্লভ বিষয়, প্রতিক্রিয়াশীলতা। সবসময় এগুলা হয় না, যখন হয় তখন বড় পরিবর্তন আনে।

 

আমরা প্রতিক্রিয়াপ্রবণ না হইলে জজবা শেষ হয়ে যাবে। উস্কানি দেয়াও একটা দ্বীনের কাজ। পৃথিবীর সবকিছুতেই হুজুগ লাগে, মুক্তিযুদ্ধ একটা হুজুগ ছিল, পাকিস্তান আন্দোলনও একটা হুজুগ ছিল, এই হুজুগ না থাকলে আর উস্কানি না দিলে পাকিস্তানও হইত না, বাংলাদেশও হত না। উস্কানি থেকে ভালো কিছু হইলে উস্কানিই ভালো। আর কিছু রিস্ক যে থাকে এইটা সব কাজেই থাকে। বিবির ডেলিভারির সময়েও রিস্ক থাকে, তাই বইলা তো বাচ্চা নেয়া বন্ধ কইরা দিবেন না? আপনে ছক কাইটা আগাইতে পারবেন না। বরং পরিস্থিতি যেইভাবে আগায় সেইখানে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়াটাই বড় বিষয়।

 

(মীর সালমান ভাইয়ের কথাবার্তা আহলে হাদিসদের মত হয়ে গেছে, তারাও বলে শুধু দাওয়াতের কথা। ইকামতে দ্বীন এর জন্য কোনোরুপ প্রচেষ্টা করাও তারা অন্যায় মনে করে।)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ছয়

 

শামসুল আরেফীন শক্তি ভাইয়ের একটি পোস্ট এবং আমার জবাব।

 

শক্তি ভাই ভোলার ঘটনার প্রেক্ষিতে ২১ অক্টোবর পোস্ট দিলেনঃ

 

"আমার মাথায় খুব একটা জব্বর চিন্তা এসেছে।

এইসব দীর্ঘদিন অসফল প্রমাণিত বিক্ষোভ সমাবেশ, বিচারের দাবি, জবাব চাই জবাব চাই কোরাসে প্রথাগত দাবি পেশ। ইসলামী নেতৃবৃন্দ এগুলা বাদ দিক। সিস্টেমের মধ্যে প্রতিবাদ, অনুমতি নিয়ে বিক্ষোভ, অনুমতি নিয়ে সমাবেশ, ছকে বাঁধা মিছিল। ছকের বাইরে যে যেতে পারছেন না, আমার কাছেই বিচার চাইতে আসছেন ঘুরেফিরে, এটা ছকওয়ালাদের প্রতিনিয়ত শক্তিশালী করে। আপনার প্রত্যেক মৃদু বিক্ষোভ, প্রত্যেক গোল্ডফিশ প্রতিবাদ তাকে আরও আত্মবিশ্বাসী করে, শক্তি যোগায়। এন্টিবায়োটিকের ডোজ কম হলে, কম সময়ের জন্য হলে তাতে জীবাণু আরও শক্তিশালী হতে থাকে।

 

এর চেয়ে বরং আসেন সবাই চুপ হয়ে যাই। কারও কাছে বিচার চাইব না। সিস্টেমটাই আসামী। সিস্টেমকে বুঝিয়ে দেন, তুমি নিজেই আসামী। তোমার কাছে কীসের বিচার চাইব। আমার ধারণা এই নিঃশব্দ বিক্ষোভ আপনাদের গলাবাজির চেয়ে বেশি কাজ হবে। কুরাইশসমর্থিত গোত্র যখন মুসলিম-সমর্থিত গোত্রকে হামলা করে হতাহত করল, তখন মদীনায় আবু সুফিয়ান এলেন মিউচুয়াল করতে। কেউ তার সাথে কোনো কথা বললো না, কোনো পাত্তা দিল না। নিজের মেয়ে আম্মাজান উম্মে হাবিবা পর্যন্ত বসতে দিলেন না। আপনে নিজেই তো আসামী, আপনার কাছে কীসের বিচার চাইব, কীসের চুক্তি আপনার সাথে। প্রত্যেক উপেক্ষা তাকে একটু একটু করে আরও সন্ত্রস্ত করে দিল। আপনারাও এরকম করতে পারেন। ওপক্ষের কেউ মিউচুয়াল বা আলোচনার জন্য ডাকলে যাবেন না। বয়কট টাইপ। অবশ্য এটা এখন আর হবে না, পারবেন না। আগে হলে পারতেন। এমনি বললাম, জানি হবে না।

 

এই কাজটা তালেবান করে আফগান পুতুল সরকারের সাথে। আলোচনায়ই বসে না। দায়িত্বশীল হিসেবে স্বীকারই করে না। এই নীরব হয়ে যাওয়া, অভিভাবক না মানা, মোড়ল হিসেবে অস্বীকার-- এটা একটা দারুণ স্ট্র্যাটেজি। নবীনরা অবশ্য এটা করতে পারেন। মিউচুয়ালকারী মুরব্বিদেরও তাহলে বয়কট করা লাগে আবার। সেটাও পারবেন না অবশ্য। তাহলে? তাহলে কী আর। কিছুই না। ফালতু স্ট্যাটাস। ইগনোর করেন।

 

আমার মতে সলুশন হল, চুপ হয়ে যাওয়া। আশ্চর্য রকম চুপ। সরকার প্রশাসনের কাছে বিচার চাই না। প্রতিটা থাপ্পড়ে আশ্চর্যরকম নীরব হয়ে যাওয়া। হুদাইবিয়ার মত ১০টা বছর টাইম নেয়া উচিত উলামায়ে কিরামের। এই ১০ বছর চুপটি করে কর্মসূচি না দিয়ে প্রান্তিক পর্যায়ে কেবল দাওয়াহ, কেবলই দাওয়াহ। মাহফিল না করতে দিলে নাই, ছোট ছোট করে দাওয়াহ চলবে। শোরগোল না করে। হুদাইবিয়ার পরের ১০ বছর যেভাবে কাজে লাগানো হয়েছে, সেভাবে।

 

সীরাতের ছাঁচে ফেলে কর্মসূচি দেয়া দরকার।"

 

 

আমার জবাবঃ

 

"নীরব থাকাটা কোনো সমাধান না, যদি ১০ বছর আমরা চুপ থাকি তাহলে সরকার আরও বেপরোয়া হবে, মিডিয়া আরও বিরোধিতা করবে। শাতিমরাও ইসলামের কটূক্তি দ্বিগুণ উৎসাহে করবে, ইসকন মসজিদ মাদ্রাসায় ঢুকে যাবে, কিন্তু কেউ কিছু বলবে না, তাহলে পরিস্থিতি অনুকূলে যাবে, নাকি প্রতিকুলে?

 

এটা একটা স্বাভাবিক বিষয় যে আমর বিল মারুফ, নাহি আনিল মুনকার বন্ধ করে দিলে অন্যায় অনাচার আরও কয়েক গুণ বাড়বে।

 

আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করতে, আমাদেরকে জালিম শাসকের সামনে হক কথা বলতে বলা হয়েছে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে বলা হয়েছে, কৌশলের নামে নীরব থাকতে বলা হয় নাই।

 

১০ বছর নীরব থাকার পর ১১ তম বছরে আমরা কি করব? জিহাদের ডাক দিব? শক্তি ভাইয়ের এই চিন্তাকে জব্বর চিন্তা একেবারেই বলা যায় না।"

 

 

আমার জবাবে শক্তি ভাইয়ের উত্তরঃ

 

"আমরা রাস্তায় মিছিল করলেও এগুলো ঘটবেই। ১০ বছর উপরে কী হচ্ছে, মিডিয়ায় কী আসছে, ব্লগে কি লিখছে এগুলো দেখা যাবে না। স্রেফ নিচে কাজ হবে। মুসলিমরা সামাজিকভাবে মুরতাদ হয়ে গেছে। সমাজ লেভেলে কাজ হবে। ১১ তম বছর থেকে রাষ্ট্র লেভেলের কাজ শুরু। সব ঘরানা মাঠে কাজ করবে, রাজপথ একটা পুঁজিবাদের সাজেশন। য়ুরোপীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলো থেকে এসেছে রাজপথে মিছিল। এটা আমাদের তরীকা না। রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরানো আমাদের তরীকা, রাস্তায় কষ্ট দেয়া আমাদের স্টাইল ছিল না।

১০ বছর ওদের সব করতে দেব। গুম হব, খুন হব। কিন্তু ১০ বছরে আমাদের একটা বিভবশক্তি অর্জন হবে। খুচরা খুচরা শক্তি খরচ বন্ধ করে এবার পাইকারী।"

 

 

আমার পুনরায় উত্তরঃ

 

"যেভাবে বললেন ১০ বছর পর রাষ্ট্র লেভেলে কাজ শুরু করতে হবে, এটা পরিকল্পনাভিত্তিক কাজ, এমন না আমরা বসে থাকলে আপনাআপনি এটা ঘটবে। বরং ঘটাতে হবে কাউকে। আর যারা এই কাজটা করবে তাদের ১০ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে করতে হবে।

 

আর রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরানোর ব্যাপারে যা বললেন শুনে ভালো লাগলো। কিন্তু এভাবে বলাটাও ভুল যে রাস্তায় কষ্ট দেয়াটা আমাদের স্টাইল ছিল না। কারণ জিহাদ হলে কিন্তু ফিকহ ভিন্ন হয়।"

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সাত

 

প্রতিটা জেলার আন্দোলন, প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, মিছিল, মানববন্ধনকে সমর্থন জানাচ্ছি। জালেমের বিরুদ্ধে মজলুমের আন্দোলনকে সফল করুন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আট

 

প্রজন্ম পাবলিকেশন থেকে প্রকাশিত মুহাম্মাদ নাফিস নাওয়ার ভাই কর্তৃক অনূদিত "আজাদীর লড়াই" বইটির ব্যাপারে আমার মন্তব্যঃ

 

"বইটির ব্যাপারে একটি কথা বলি, অনুবাদক ভাই কষ্ট পেলে মাফ করবেন। এই বইয়ে যাদের লেখা আছে প্রত্যেকেই তো কাফের মুশরিক, তারিক আলি তো মুরতাদ সম্ভবত। আজাদির লড়াই এদের থেকে জানাটা কি খুব দরকার? শুধু জানার জন্য প্রশ্ন।"

 

 

মুহাম্মাদ নাফিস নাওয়ার ভাইয়ের জবাবঃ "হাহা! ভাই, প্রশ্নটা কেমন হয়ে গেল না! আপনি যখন কোন বিষয়ে পড়াশোনা করবেন তখন রিলেটেড সব বিষয়েই টাচ থাকা চাই৷ এটা অনুবাদ করা বা পড়া মানে আপনি মুরতাদদের অনুসারী হয়ে গেলেন, এমনটা না। এদের কাছ থেকে আযাদির লড়াই জানার প্রয়োজন নেই। কিন্তু বইয়ের মধ্যে কি আছে, সেটা জানাটা আগে জরুরি।"

  

 

আমার পুনরায় মন্তব্যঃ

 

"জী ভাই বুঝলাম। তবে আমি ব্যক্তিগত ভাবে কাফের মুশরিকদের প্রমোট করা পছন্দ করি না। প্রাচ্যবিদদের থেকে ইসলামের ইতিহাস জানা আর কাফেরদের থেকে কাশ্মীরের আজাদী নিয়ে বিশ্লেষণ জানা অনেকটা কাছাকাছি মনে হয়। নবপ্রকাশের মত প্রজন্ম যে কাজটা করছে এটা আমার ঠিক মনে হচ্ছে না। নবপ্রকাশ জুরজি জায়দানদের বই অনুবাদ করছে, প্রজন্মের কাজগুলো একই ধাঁচের হয়ে যাচ্ছে। সমস্যা হচ্ছে এগুলো ইসলামী বই নামে বিক্রি হবে। কাফের মুশরিকদের চিন্তাধারা এভাবে আস্তে আস্তে প্রবেশ করবে বলে আমার মনে হল।

 

কারণ অরুন্ধতী কিংবা তারিক আলীদের চিন্তা ইসলামের সাথে মিলবে না। তারা তাদের চিন্তাধারা তাদের লেখার মধ্যে সুকৌশলে ঢুকিয়ে দিবে। কাশ্মীর সেন্সিটিভ বিষয়, এখানে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ জড়িত। যাদের লেখা এসেছে এরা কি এই জিহাদকে সমর্থন করে নাকি বিরোধিতা করে? এই বিষয়টা জানার জন্য কেন কাফের মুশরিকদের কাছে যেতে হবে? প্রাচ্যবিদরা নিজেদের চিন্তাধারায় ইসলামের ইতিহাসকে বয়ান করার জন্য ইসলাম গবেষণা করত, ইসলামের উপকার করতে না। তাদের বই পুস্তক পড়ে যতটা জানা যায় সেগুলো সব তাদের চিন্তা চেতনার গার্বেজ, তাহলে কাশ্মীরের ব্যাপারেও কাফেরদের থেকে জানাটা একই রকম না?

 

সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার কাশ্মীর সম্পর্কে জানা উচিৎ ছিল কাশ্মীরি মুসলিম কিংবা ইসলামপন্থী লেখকদের থেকে। অথচ বাছাই করা হল এমন ব্যক্তিদের, যাদের থেকে বিকৃতি ছাড়া অন্য কিছু আশা করা যায় না। তসরীমা যদি ফিলিস্তিনের পক্ষে বই লিখে সেই বই কি অনুবাদ করবেন?

 

কাফের মুশরিকরা ইসলাম কিংবা মুসলমানদের পক্ষে দুইটা কথা বললেই তাদের বন্ধু ভেবে নিতে হয়? তাদের বই প্রমোট করতে হয়? নাকি কাটতির জন্য এমন করা হয়?

 

আমাকে সংকীর্ণ চিন্তার বলতে পারেন। আমি কখনো দেখি নি কাফের, সেকুলাররা মুসলিমদের চিন্তাকে প্রমোট করছে। বরং মুসলিমদের চিন্তাকে তারা নিজেদের মত ব্যাখ্যা করে। আদর্শের ব্যাপারে উদারতা দেখাতে হয় না তারা সেটা জানে।"

 

 

প্রজন্ম পাবলিকেশনের মুসা বিন মোস্তফা ভাইয়ের মন্তব্যঃ "এখানে একটা বিষয় বলে রাখা উচিত ভাই সেটা হলো প্রজন্ম আগাগোড়াই সৃজনশীল প্রকাশনী। কোন ইসলামিক প্রকাশনী নয়। (প্রজন্মের কাজগুলো নবপ্রকাশের মতো হয়ে যাচ্ছে এই বিষয়ে)"

 

 

আমি রিপ্লাই দিলামঃ "ঠিক আছে। তবে সৃজনশীলতার জন্য মৌলিক বই প্রকাশ করা উচিৎ। যাদের বই অনুবাদ করা হচ্ছে তাদের মত চিন্তাবিদ দেশ থেকে বের করা আনার কাজটা আপনাদের আঞ্জাম দেয়া দরকার।"

 

 

মুসা বিন মোস্তফা জবাবে বল্লেনঃ "পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু প্রচুর চ্যালেঞ্জিং একটা সেক্টর প্রকাশনা ব্যবসা। ইদানীং ইসলামী প্রকাশনা গুলোর অবস্থা একটু ভালো হলেও সৃজনশীল প্রকাশনা গুলো একটু অন্য ধাচের। খুবই চ্যালেঞ্জিং যেটা বাহির থেকে আসলে সেভাবে বুঝানো যায়না। আর অনেক পান্ডুলিপিই আসে। দুঃখিত বলে ছেড়ে দিতে হয় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই।"

 

 

 

 

 

 

 

 

 

নয়

 

ফররুখ আহমদ হচ্ছেন বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠ কবি। কিন্তু তিনি অবহেলিত হয়েছিলেন তার বিশ্বাসের কারণে। ইসলামী আদর্শে বিশ্বাসী হওয়ার কারণে সেকুলাঙ্গারদের কাছে তিনি ছিলেন অচ্ছুৎ, সেকুলাঙ্গাররা যে কত সংকীর্ণ মনের অধিকারী তার প্রমাণ হিসেবে এটা একটা বড় দলিল। এমনকি আল মাহমুদকেও সেকুলাঙ্গাররা বর্জন করেছিল তার বিশ্বাসের কারণে।

 

আরজু আহমেদ ভাই কবি ফররুখের শেষ জীবন নিয়ে লিখেছেন। লেখাটা পড়ে একটা কথাই ভাবছি। বাংলাদেশে সেকুলাররা যেভাবে সিন্ডিকেট তৈরি করে রেখেছে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে, মিডিয়া এবং বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী মহলে, এই সিন্ডিকেট না ভাংতে পারলে পুরো বাঙালী জাতির ব্রেইন ওয়াশ করেই যাবে এই হারামজাদারা।

 

আল্লাহ তা'আলা তার বান্দা ফররুখকে ক্ষমা করে দিন। এবং আল মাহমুদকেও।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

দশ

 

ঈমানের হেফাজত করতে, গুনাহ থেকে বাঁচতে, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে এবং যিনা থেকে রক্ষা পেতে যুবকদের জন্য বিয়ে অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। তবু সমাজ বিভিন্ন অজুহাতে এটাকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। যার ফলশ্রুতিতে ব্যভিচার, ধর্ষণ, ইভটিজিং ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রেম সংক্রান্ত অপরাধের সংখ্যা অন্য যে কোনো বিষয়ের চেয়ে বেশি হচ্ছে। যুবকরা বিয়ে করতে পারছে না, আর তাদেরকে বিকল্প হিসেবে শেখানো হচ্ছে প্রেম করতে, পর্ণ দেখতে, হস্তমৈথুন করে ঠাণ্ডা হতে।

 

কম বয়সে প্রেম করলে, যিনা করলে, গর্ভপাত করলে কেউ কিছু বলবে না, কিন্তু বিয়ে করলেই বাল্যবিবাহ বলে দেশীয় আইন তেড়ে আসবে, সমাজ উল্টা পাল্টা কথা বলবে, পরিবার বিরোধিতা করবে।

 

এইসব সামাজিক জাহেলিয়াতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে যুবকদেরকে বিয়ে করার হিম্মত করতে হবে। সমাজের চোখ রাঙ্গানির পরোয়া না করে বিয়ে করতে হবে। এই ব্যাপারে মিনমিনে হলে কখনোই এই কঠিন কাজটি করতে পারবেন না। আল্লাহর উপর ভরসা রেখে বিয়ে করে ফেলুন, আল্লাহ রিজিকের ব্যবস্থা করবেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

এগারো

 

নিরীহ ৪ জন দাড়ি-টুপিওয়ালাকে জঙ্গি বলে র‍্যাব গ্রেফতার করেছে। হাসান শুয়াইব ভাই এবং ইবনে হাসান সাহেবের থেকে জানতে পারলাম তারা নিরীহ। তাদেরকে অনেকদিন আগেই ধরেছে, অথচ র‍্যাব বলতেছে তাদেরকে গতকালকে ধরছে। এছাড়াও সাজিয়েছে তাদের নামে মিথ্যা নাটক।

 

এইভাবে কত যে নিরীহ মানুষের জীবন ধ্বংস করে দিছে জালিমের দল! আপনি প্রতিবাদ করুন! হয়তো তাদের পরবর্তী টার্গেট আমি কিংবা আপনি!

 

আমাদের সবার শোনা এবং দেখা এমন অনেক ঘটনা আছে যেখানে নিরীহ মানুষদের ফাঁসানো হইছে, দাড়িটুপি ওয়ালা কিংবা হুজুরদের জঙ্গি, শিবির নানারকম ট্যাগ দিয়া গ্রেফতার করা হইছে। সন্দেহের উপর ভিত্তি করে জীবন ধ্বংস করে দেয়া হইছে। ইসলামী বইকে জিহাদী বই বলে জব্দ করা হইছে। এরপর জঙ্গিবাদের মিথ্যা নাটক সাজানো হইছে।

 

আমাদের শাইখ আতিকুল্লাহ সহ কত ব্যক্তিকে তাগুতের গোলামরা ক্ষতি করেছে! শাইখ কোথায় আছেন আমরা জানি না। আল্লাহ তাকে হেফাজত করুন। আপাতত যে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এর প্রতিবাদ করুন। নইলে আপনি যেভাবে চুপ করে আছেন, একদিন আপনি বিপদে পড়লেও সবাই আপনার মতই চুপ করে থাকবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

বারো

 

মাসজিদে এসে যে আমার পাশে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ে সে-ই আমার ভাই, তাকেই আমি উম্মাহর সদস্য মনে করি। সে কোন মাজহাব বা মানহাজ বা মাসলাক তা আমি খুঁজতে যাই না। আহলে হাদিস, বেরেলভি, জামায়াত কিংবা দায়েশ যে-ই হোক সে যদি মসজিদে এসে আমার পাশে দাঁড়াতে পারে, আমি তাকে ভাই হিসেবে মেনে নিতে দ্বিধা করব না। তবে যারা মুনাফিক, তাদেরকে ভাই মনে করি না। বিশেষ করে জুমু'আর নামাজে এমন মুনাফিকদের আনাগোনা বেশি হয়। মুনাফিক বলতে বোঝাচ্ছি যাদের ভেতরে ইসলামের প্রতি কোনো চেতনা নাই, ভালোবাসা নাই, বরং ইসলাম ও ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে কিংবা বিরুদ্ধে সহযোগিতা করে, এরাই হচ্ছে মুনাফিক। এক কথায় মুনাফিক বলতে সেকুলারদের বুঝি। সেকুলার বাদে যে কাউকে মসজিদে নামাজ পড়তে দেখলে আমি তাকে ভাই ভাবি। সে যদি আওয়ামীলীগও করে কিন্তু সেকুলার না হয় তবে আমি তাকে মুসলিম ভাই মনে করব।

 

যেসব দল মসজিদে এসে নামাজ পড়ে না এবং তাদেরকেও আমরা মুসলমান মনে করি না - কাদিয়ানী, হেজবুত তৌহিদ, আহলে কুরআন, মর্ডানিস্ট (সেকুলার) ইত্যাদি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তেরো

 

আমি সকল আলেমদের শ্রদ্ধা করি। কিন্তু অনেককে দেখা যায় সামান্য কিছু হলেই আলেমদের প্রতি আস্থাহীন হয়ে যায়, বিদ্বেষী হয়ে যায়। আমি বলি, যে আলেম ভুল করে তার ভুল আপনি গ্রহণ করবেন না, কিন্তু তার ইলম থেকে নিজেকে বঞ্চিত করলে ক্ষতি আপনার হবে। যেমন মতিউর রহমান মাদানী প্রতিটা লেকচারে মাজহাবীদের ব্যাপারে বিদ্বেষ ছড়ায়, সালাফি বাদে সবাইকেই একদম ধুয়ে দেয়। তবু তার থেকে ইলম নিতে আমি সমস্যা মনে করি না। পূর্ববর্তিদের আমলে আলেম ব্যক্তি মুতাজিলা হলেও তার থেকে ভালো জিনিসটা নেয়া হত, আল্লামা যামাখশারী হচ্ছেন এমনি একজন। সুতরাং কোনো মুতাজিলা আলেমের তাফসির থেকে উম্মাহ উপকৃত হতে পারলে কেন মাদখালী, জামায়াতী, বেরেলভী, মোডারেটদের থেকে আমরা মাহরুম হব? মুতাজিলাদের তুলনায় মাদখালী কিংবা বেরেলভী তো কিছুই না।

 

আরেকটা কথা, আলেমদের কোনো অবস্থান ভুল মনে হলে আপনি মতপ্রকাশ করবেন, খণ্ডন করবেন, কিন্তু গালাগালি করা কোনো মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়। সে তার আমল নিয়ে আল্লাহর সামনে দাঁড়াবে, আপনি তাকে গালাগালি করে তার গুনাহ কমিয়ে দিচ্ছেন আর নিজের উপর তার গুনাহগুলো নিয়ে আসছেন! এই ভুলটা করবেন না দয়া করে! সবাইকে সম্মান দিন। সম্মান বজায় রেখে কারো সমালোচনা করুন। আপনি আল্লাহর জন্য তার বিরোধিতা করছেন, যে কাজ আল্লাহর জন্য করা হয় সে কাজ উত্তম পন্থায় করতে হয়, আল্লাহর কাজ গালাগালি দিয়ে করলে সেটা আল্লাহর কাছে গ্রহণীয় তো হবেই না, বরং আপনিই বিপদে পড়ে যাবেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চৌদ্দ

 

'জনতা'র সাথে 'তৌহিদি' শব্দ যুক্ত করে সেকুলাররা একটি আন্দোলনকে দলীয় বানিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। তারা জনতার আন্দোলনকে জাতীয় আন্দোলন হিসেবে স্বীকার করতে চায় না। তাই তারা তৌহিদি, ইসলামী ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে মানুষের সামনে উপস্থাপন করে যেন এই আন্দোলন ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা না পায়।

 

অথচ নাস্তিক সেকুলাররা অল্প সংখ্যক ব্যক্তিও যদি আন্দোলন করে সেটাকে মিডিয়া জাতীয় আন্দোলন বলে প্রচার করে। তৌহিদিদেরকে জনতার থেকে আলাদা রাখার ক্ষেত্রে মিডিয়া বড় ভূমিকা পালন করে। কিন্তু সেকুলাররা যদি আন্দোলন করে মিডিয়া কিন্তু তাদের সেকুলার জনতা বলে অভিহিত করে না।

 

দাড়িটুপিওয়ালা ব্যক্তিরা আন্দোলন করলে তা জাতীয় আন্দোলন না কিন্তু দাড়িটুপি ছাড়া হলে সেই আন্দোলন জাতীয়, এইটাকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে সেকুলার মিডিয়া। যাদের তৌহিদি জনতা বলা হয় তাদের মধ্যেও কিন্তু প্রচুর ক্লিনশেভড, শার্ট প্যান্ট পড়া লোকজন থাকে। তবু সেকুলাররা এটাকে ইসলামী লেবেলযুক্ত করে অগ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টির প্রয়াস চালায়। এই দেশের বেশিরভাগ মুসলিম কিন্তু তৌহিদি জনতা নামে যাদের অভিহিত করা হয় তাদের সমর্থন দেয়। তবু এই বিশাল জনতার আদর্শকে জাতীয় আদর্শ হিসেবে সেকুলার মিডিয়াগুলো স্বীকার করতে রাজি হয় না। এটা সেকুলারদের স্পষ্ট দ্বিমুখীতা। তারা নিজেদের যতই নিরপেক্ষ মনে করুক না কেন, তারা সর্বদাই মুসলিমদের বিপরীতে কাফেরদের তাঁবুতে অবস্থান গ্রহণ করে। প্রতিটা ইস্যুতে এ কথা প্রমাণিত হওয়ার পর সন্দেহের অবকাশ থাকার কথা নয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

পনেরো

 

আবরার ইস্যু বনাম ভোলা ইস্যু।

 

একটা ইস্যু যতদিন আলোচনায় তাকে সেই ঘটনা তত বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়। দুঃখজনক যে আবরার হত্যার ঘটনার চেয়ে ভোলায় ৫ জনকে শহীদ করার ঘটনা বেশি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এর আলোচনাকে বাধাগ্রস্ত করে গিয়ে সেকুলার মিডিয়া, নানারকম অপ্রাসঙ্গিক আলাপ এনে ঢেকে দিতে চেয়েছে মুনাফিকরা। সরকার বাহাদুর সহ সেকুলাররা এই ইস্যুকে মাত্র ২-৩ দিনের মধ্যে মানুষের মন থেকে ভুলিয়ে দিতে পেরেছে।

 

মানুষকে এই টপিকে ২ ভাগে বিভক্ত করে দেয়া হয়েছে, অথচ আবরার ইস্যু আর এই ইস্যু ভিন্ন নয়। হ্যাকিং, তৃতীয় পক্ষ ইত্যাদি নানান আলাপ টেনে জনতার ঘাড়েই দোষ ফালানো হয়েছে। গুলি চালিয়ে মানুষ মারার বৈধতা সৃষ্টি করা হয়েছে। শাতিমদের ব্যাপারে আলোচনা এড়িয়ে ঘটনা অন্যদিকে নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

 

শেষ পর্যন্ত ফলাফল হচ্ছে, কটূক্তি করল হিন্দু শাতিম, গুলি চালাল পুলিশ, আহত নিহত হল তৌহিদি জনতা, আর আসামী করা হল সেই তৌহিদি জনতাকেই, ৫ হাজার মানুষের নামে মামলা দেয়া হয়েছে, কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।

 

এইসব জালেমদের থেকে এ ভূখণ্ডের মানুষকে রক্ষা কর মাবুদ!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ষোল

 

আখিরুজ্জামান নিয়ে অত্যুৎসাহী, ইমরান নজরের ভক্তবৃন্দের উপর একটি সাধারণ ও সংক্ষিপ্ত পর্যবেক্ষণঃ

 

শেষ জমানা নিয়ে অতিরিক্ত আগ্রহ যে একটা সমস্যা হতে পারে তা ইমরান নজর সাহেবের ভক্তবৃন্দের দিকে না তাকালে বোঝা সম্ভব হত না। তাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে তারা দলিলভিত্তিক অবস্থানের চেয়ে নিজেরাই মনমত গবেষণাকে প্রাধান্য দেয়। এই গবেষণা তাদের ভ্রান্তিকে আরও গভীর করে তুলে। ইমরান নজর নিজের গবেষণা থেকে যেমন বহু নতুন নতুন থিওরি পেশ করেছেন, তার ভক্তবৃন্দের অবস্থাও একই, তারাও নিজেদের মতমত গবেষণা করে এবং সিদ্ধান্ত পেশ করে। এটা স্পষ্ট ভ্রান্তি।

 

ইমরান নজরের এরকম কয়েকটি বড় বড় ভুল হচ্ছে, রাশিয়াকে মুসলমানদের বন্ধু মনে করা। হাদিসে যে মুসলমানদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের খ্রিস্টানদের কথা বলা হয়েছে তাদেরকে ইমরান নজর রাশিয়া মনে করেন। অথচ রাশিয়া হচ্ছে সিরিয়ায় মুসলমানদের খুনী। ইমরান নজর ও তার ভক্তবৃন্দ যখন রাশিয়ার পক্ষপাতিত্ব করে তখন আর কিছু বলার থাকে না।

 

ইমরান নজরের আরেকটা ভ্রান্ত থিওরি হচ্ছে অ্যামেরিকানরা হচ্ছে ইয়াজুজ মাজুজ, আর তারা বাহির হয়ে গেছে। এইটাও খুবই হাস্যকর থিওরি।

 

এছাড়া আরও কত মনগড়া গবেষণা তিনি ও তারা পেশ করেছেন তার ইয়ত্তা নেই। আখিরুজ্জামান নিয়ে তারা দলিলের চেয়ে মনগড়া গবেষণার দিকে বেশি আগ্রহী। তবে অর্থনীতি নিয়ে ইমরান নজরের কাজ ভালো বলা চলে। কাগজের মুদ্রার বিরুদ্ধে তার সংগ্রামকে সমর্থন জানাই।

 

ইমরান নজর সাহেবের ভক্তবৃন্দও তার মতোই নিজ গবেষণা করে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত পেশ করে থাকেন। এমনকি কিছু নতুন দীক্ষিত আহলে হাদীসদের মত নিজেরা নিজেরাই একটা হাদীস পড়ে তার নতুন কিন্তু বিকৃত ব্যাখ্যা প্রদান করে। এরকম এক ব্যক্তি একবার লিখেছিল, তার কাছে মনে হয়েছে নূহ আঃ প্রথম নবী, আদম আঃ নন। এরকম বহু নতুন গবেষণা করে এবং সালাফদের পথের তোয়াক্কা করে না যা একদম গর্হিত কাজ।

 

আখিরুজ্জামানের ব্যাপারে মানুষকে সতর্ক করা ভালো, কিন্তু সব কিছুকে টেনে আখিরুজ্জামানের আলোচনায় নিয়ে আসাকে ভালো বলতে পারি না। এই নতুন নতুন গবেষণা আর থিওরি অনেক বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। ইতোমধ্যে কাজি ইব্রাহিমের মত বিখ্যাত মুহাদ্দিস বক্তাও তাদের পাল্লায় পড়ে খুৎবার মধ্যে আবোল তাবোল বকে বিতর্কিত হয়েছেন।

 

আল্লাহ আমাদেরকে ইমরান নজর সাহেবের ভুল ক্রুটির ফিতনা থেকে রক্ষা করুন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সতেরো

 

শহরের প্রতিটা বাসার ছাদে গাছ লাগানো উচিৎ। এমনকি আমি মনে করি কোনো ফলের বীজ নষ্ট করা উচিৎ না, যেভাবে এগুলো মানুষ ফেলে দেয়। আমরা জানি, শুক্রানু অপচয় করা অপছন্দনীয়। আজল করার চেয়ে আজল না করাকে উৎসাহিত করা হয়, আর হস্তমৈথুন তো হারামই। এটার সাথে তুলনা করলে বোঝা যাবে বীজ নষ্ট করাও একটা অনুচিত কাজ।

 

অপ্রয়োজনে গাছ কাঁটা এটা একেবারেই উচিৎ না। আমাদের ঘরের শাক সব্জির জৈব বর্জ্যগুলো সার হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে। আমাদের শহর থেকে মাটি উঠে যাচ্ছে। পুরো শহর ঢেকে যাচ্ছে পিচঢালা রাস্তায়, এতটুকু মাটি কোথাও দেখতে পাওয়া যায় না। আমাদের ছাদগুলো বাগান করলে সেখান থেকে পরবর্তী প্রজন্ম অন্তত মাটি দেখার, মাটি ধরার এবং মাটি নিয়ে খেলার সৌভাগ্য লাভ করবে!

 

গাছ লাগানোর ব্যাপারে দ্বীনদাররা অসচেতন অথচ এটা অফুরন্ত সাওয়াবের একটি কাজ। ফুল গাছের চেয়ে ফল গাছকে প্রাধান্য দেয়াও ইসলামী বৈশিষ্ট্য। তবে প্রয়োজনের খাতিরে গাছ কাঁটা, গাছ থেকে উপকৃত হতে হবে। কিন্তু কারণ ছাড়াই গাছ কাটাকে ইসলাম অনুৎসাহিত করে।

 

আপনি একটি গাছ লাগাবেন, আর অসংখ্য মানুষ এর অক্সিজেন গ্রহণ করে উপকৃত হবে, অথচ আপনি সাওয়াব পাবেন না তা কি হয়? তাই আসুন গাছ লাগাই, গাছ লাগানোকে সমর্থন জানাই। আমার জানামতে অনেক বাসাতেই ছাদে গাছ লাগানো নিয়ে অনেকের সাথে মতবিরোধ দেখা দেয়। কিছু রোবটমানব এটাকে মনে করে "ছাদের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে"। অথচ পরিবেশ নষ্ট হয় গাছ না থাকলে।

 

যাদের বাসার ব্যালকনি কিংবা বারান্দা আছে তারা সেখানে ছোট ছোট গাছ লাগাতে পারেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আঠারো

 

এইভাবে অন্যের গাছ কাটা নৈতিকভাবে উচিৎ হয় নাই, কিন্তু তাকে গালাগালির ক্ষেত্রে সীমাঅতিক্রম হচ্ছে, যেই দেশে মানুষ হত্যাকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করা হয় (কয়েকদিন আগের ঘটনা), সেই দেশে গাছ হত্যা(!)র দায়ে ফাঁসি চাওয়া অস্বাভাবিক না।

 

(প্রসঙ্গঃ এক মহিলা তার প্রতিবেশীর গাছ কেটে দিয়েছে, যার গাছ কাঁটা হয়েছে সে ভিডিও করেছে আর তা ভাইরাল। আর সবাই সেই মহিলার উপর ঝাপিয়ে পড়েছে, জঘন্যভাবে সম্মানহানী করা হচ্ছে। গাছ কাঁটা তো অবশ্যই ঠিক হয় নি, কিন্তু গাছপন্থীদের আচরণে বদলা নেয়া হয়ে গেছে।)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

উনিশ

 

আপনি আসলে আপনার না! আপনার মালিক আল্লাহ। আপনি শুধু আমানত হিসেবে আপনার দেহটা পেয়েছেন। সুতরাং আমানত রক্ষা করা আপনার উপর ফরজ। নিজের যত্ন নেয়া ইবাদতের অংশ। এজন্যই আত্মহত্যা করা মারাত্মক কবীরা গুনাহ।

 

নিজের সর্বপ্রকার যত্ন নেয়ার মাধ্যমে এই আমানত রক্ষা পাবে। চোখের যত্ন, পায়ের যত্ন, হাত ও কানের যত্ন, সবকিছুর যত্ন। নিজেকে অপরিচ্ছন্নতা থেকে রক্ষা সহ যাবতীয় যত্ন নিতে হবে। ইসলাম তো এমন ধর্ম যেখানে ২৪ ঘণ্টাই ইবাদত করা লাগে। ঘুম ইবাদত, খাওয়া ইবাদত, গুসল করা ইবাদত।

 

অনেকে যুহদের নামে নিজের যত্ন নেয় না। ভ্রান্ত সুফীদের মাধ্যমে এই বিশ্বাস মুসলিম সমাজে প্রচার হত যে যুহদ অবলম্বন করতে গেলে অপরিষ্কার জামা কাপড় পড়তে হয়, নিজেকে সুন্দর রাখতে হয় না ইত্যাদি। এগুলো ইসলামী বৈশিষ্ট্যের পরিপন্থী কাজ।

 

আপনাকে টিকে থাকতে হবে আল্লাহর জন্য। আপনি হতাশ হবেন না। নিজের প্রতি অবহেলা করবেন না। আপনার সাথে জড়িত আছে বহু মানুষের হক। আপনার বাবা-মার হক, স্ত্রীর হক, সন্তানের হক ইত্যাদি। সুতরাং নিজের যত্ন নিন। যুহদ মানে বাসি পচা খাবার খাওয়া না, ছেড়া ফাটা অপরিষ্কার কাপড় পড়া না, বরং সুন্দর ছিমছাম হয়ে চলেও যুহদ এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ের যুহদ অবলম্বন সম্ভব। রাসুলের জীবন থেকে আমরা এই শিক্ষাই পাই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বিশ

 

রুকইয়াহ নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের জন্য কুরআনের মুজিযা প্রচার করার একটা বড় সুযোগ থাকে। এই সুযোগগুলোর সদ্ব্যবহার করা উচিৎ। মানুষ নিদর্শন দেখতে বেশি পছন্দ করে। সরাসরি নিদর্শন তো আরও বেশি পছন্দ করে। দুর্বল ঈমানের লোকদেরও ঈমান মজবুত হয় নিদর্শন দেখলে। রাকী ভাইদের জন্য রুকইয়াহ এর মাধ্যমে দাঈ হওয়ার যে সুযোগটা তারা যেন হেলায় না হারান।

 

আমি বলব, রুকইয়াহএর কেস স্টাডি লেখা ছাড়াও অডিও ভিডিও করা উচিৎ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

একুশ

 

পুলিশ ভাইটি যা করতেছিল, মেয়েটি যদি স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণ করে থাকে (স্বেচ্ছায় বলেই মনে হচ্ছে) তবে দেশীয় আইনে এটাকে কোনো ভাবেই অপরাধ বলা যায় না। বিবাহবহির্ভূত ব্যভিচার এদেশে নিষিদ্ধ নয় অর্থাৎ অনুমোদিত। জিএফ-বিএফ রিলেশন, লিভ টুগেদার, পতিতাপল্লী, সমকাম এইসবগুলোই দেশে দেদারসে চলে, নিষিদ্ধ তো নয়ই বরং বিবাহবহির্ভূত প্রেমকে উৎসাহ দিতে গল্প, উপন্যাস, নাটক, সিনেমা, গান সবই হয়। এমনকি সমকামকেও উৎসাহ দেয়া হয় প্রকাশ্যে।

 

সুতরাং ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টি থেকে পুলিশ ভাইটির আকামকে 'আকাম' বলা যায় না। ধর্মপ্রাণ মানুষেরা এটার সমালোচনা করতে পারে (যেহেতু এখানে আল্লাহর বিধান অমান্য করা হয়েছে), কিন্তু যারা গফ-বফ সংস্কৃতিতে বিশ্বাস রাখে, লিভটুগেদার অপরাধ মনে করে না কিংবা দেশীয় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তারা পুলিশ ভাইটার কাজের সমালোচনা করার অধিকার রাখে না, বরং করলে তা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড হবে। কারণ প্রেমিকার সাথে সেক্স করা আধুনিকতা হইলে পুলিশ ভাইয়ের কাজটাও একটা আধুনিকতা। বিবাহবহির্ভূত প্রেমের সেক্সকে কিংবা পতিতাপল্লীর আকামকে যদি আপনি অপরাধ মনে না করেন এবং ব্যক্তিস্বাধীনতার নামে এসবে ঈমান রাখেন তাহলে পুলিশ ভাইটি যে কাজ করল সেটাও অপরাধ না, প্রেমের সেক্স পবিত্র হলে, পুলিশ সদস্যের কাজ অপবিত্র হবে কেন?

 

আমাদের সমালোচনার লক্ষ্যবস্তু যদি পুলিশ সদস্য হয় তাহলে মূল সমস্যা গোড়াতে থেকে যাবে। সমালোচনা করা উচিৎ সেই ব্যক্তিস্বাধীনতাকে যেটা আল্লাহর দেয়া স্বাধীনতার সীমা অতিক্রম করে। পুলিশ সদস্যের কাজটি যেমন অন্যায়, গুনাহে কবীরা, তেমনি ভাবে যারা প্রেমের নামে ব্যভিচার করে, লিভটুগেদার করে এগুলোও অন্যায়, হারাম। এই হারাম, অপরাধ ও অন্যায়ের সহযোগিতা করে প্রেমের গল্প, উপন্যাস, কবিতা লেখকরা, নাটক সিনেমার পরিচালকরা, এর বৈধতাদানকারীরা, এর অর্থায়নকারীরা এবং এর সমর্থনকারীরা। তাহলে সব দোষ কেন পুলিশ সদস্যটির হবে?

 

 

 

 

 

 

 

 

বাইশ

 

আসুন দুইয়ে দুইয়ে চার মিলাই।

 

বিষয়ঃ জনসংখ্যা

 

জনসংখ্যা বিষয়ে ইসলামের বিধান এবং এটাকে যেভাবে সেকুলার, বস্তুবাদীরা মোকাবেলা করে।

 

ইসলামের বিধানঃ মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি করতে উৎসাহ প্রদান। উদ্দেশ্যঃ গুনাহ/পাপ/অপরাধ থেকে বিরত রাখা।

 

এর পিছনে যে তত্ত্ব কাজ করে তা হচ্ছেঃ আল্লাহ রিজিকদাতা। সুতরাং আল্লাহর বান্দাকে খাওয়ানোর মালিক আল্লাহ, মানুষকে এই নিয়ে চিন্তা করতে বলা হয় নাই।

 

অন্যদিকে সেকুলার বস্তুবাদী তত্ত্ব হচ্ছেঃ পরিবারে যদি একজন সদস্য বৃদ্ধি পায়, তাহলে আমার ভাগে কম পড়বে। অর্থাৎ এখানে আত্মকেন্দ্রিকতা কাজ করে।

 

ইসলামে জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য যেসব বিধান দিয়েছে তা হচ্ছেঃ

 

১- বালেগ/বালেগা হলেই বিয়ে করা। সামর্থ্য থাকলে যত তাড়াতাড়ি বিয়ে করা যায় ততই ভালো। সামর্থ্য না থাকলে রোজা রাখা। নিজের পরিবারের কেউ বালেগ/বালেগা হলে পরিবারের কর্তার উপর দায়িত্ব হচ্ছে বিয়ে করিয়ে দেয়া, আল্লাহ আদেশ করেছেন।

 

২- বিয়েকে সহজ করা হয়েছে। ইজাব, কবুল, সাক্ষী, মোহরানা, ওয়ালিমা; বিয়ে শেষ। যে বিয়েতে যত কম খরচ সেই বিয়েকে বেশি ভালো বলা হয়েছে। কেউ যদি গরীব হয় তবে তার কাছে যা আছে সেটাকে মোহর বানিয়ে বিয়ে করতে পারবে, এক সাহাবী সূরা শেখানোকে মোহর বানিয়ে বিয়ে করেছিলেন। অর্থাৎ বিয়েতে পাত্রীপক্ষের কোনো খরচ নাই, যৌতুক নাই। পাত্র মোহরানা পরিশোধ করবে, ছোট করে ওয়ালিমা অর্থাৎ খাওয়ানোর ব্যবস্থা করবে; ব্যস, বিয়ে শেষ।

 

৩- বেশি বেশি সন্তান নিতে বলা হয়েছে। এইজন্য কুমারী নারী বিয়ে করতে বলা হয়েছে যেন বেশি বাচ্চা জন্ম দিতে পারে। আজল করাকে অনুৎসাহিত করা হয়েছে। বীর্যের অপচয় অনুৎসাহিত করা হয়েছে।

 

৪- একাধিক বিবাহ এবং ৪ পর্যন্ত বিয়েকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য কেউ যদি ৪ পর্যন্ত বিয়ে করে এটাকে ইসলাম উৎসাহিত করে।

 

৫- সব রকম যৌনতা বিষয়ক পাপ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। যেমন নারীদের দিকে কুদৃষ্টি, সমকাম, যিনা ব্যভিচার, ধর্ষণ, বিবাহবহির্ভূত প্রেম, যৌনতা (প্রেম) উস্কে দেয়া গান সিনেমা নাটক গল্প উপন্যাস, পরকীয়া, লিভটুগেদার, বেপর্দা থাকা, পর্নোগ্রাফী, হস্তমৈথুন, মুখমৈথুন, পায়ুমৈথুন, গ্রুপসেক্স, যৌনতাবিকৃতি ইত্যাদি সমস্ত কিছু হারাম করা হয়েছে। এগুলোর পরিবর্তে হালাল করা হয়েছে এক বা একাধিক স্ত্রী, তাদের হায়েজের সময় ব্যাতীত। মাহরাম - গাইরে মাহরাম মেইন্টেইন করতে বলা হয়েছে। নারীদের পর্দা করতে বলা হয়েছে। পুরুষদের দৃষ্টি সংযত রাখতে বলা হয়েছে।

 

 

ইসলামের এই বিধানগুলো মোকাবেলায় দাজ্জালী সভ্যতার তথা সেকুলার, বস্তুবাদীদের কার্যক্রমসমুহঃ

 

১- বালেগ/বালেগা হওয়ার পরও যেন বিয়ে করতে না পারে এইজন্য রাখা হয়েছে বাল্যবিবাহ নামে আইন। বালেগ/বালেগা হওয়ার পরেও ৭/৮ বছর বিয়ে করতে না দেয়া হচ্ছে এর মূল উদ্দেশ্য (যদিও প্রেম করা যাবে, সেক্স করা যাবে, পতিতাবৃত্তি করা যাবে কিন্তু বিয়ে করা যাবে না)। বিয়ে করলে আইনের হাতে সোপর্দ করা হবে। শুধু আইন না, দালাল বুদ্ধিজীবীরা এবং নারীবাদীরা বালেগ/বালেগার বিয়েকে বাল্যবিবাহ নাম দিয়ে এর বিরুদ্ধে একটা নৈতিক অবস্থান সৃষ্টি করার চেষ্টা চালায়। তারা মানুষের ব্রেইন ওয়াশ করে, বাল্যবিবাহের নানা কুফল বলে, যেন কোনো ভাবেই যৌন-ক্ষুধার্ত বালেগ/বালেগারা তাদের চাহিদা হালাল ভাবে সম্পন্ন করতে না পারে।

 

২- বালেগ/বালেগার যৌন চাহিদা মেটানোর হালাল পথ বন্ধ করে হারাম বিকল্প প্রদান করে সেগুলো হচ্ছে, প্রেম করা, সেক্স করা, লিভটুগেদার করা ইত্যাদিকে উৎসাহ দেয়া হয়। এমনকি এজন্য পতিতালয়কে বৈধতা দেয়া হয়, সমকামকেও নিষিদ্ধ করা হয় না। (আমি আমার এক বন্ধুর কাছে শুনছিলাম তার এক ফ্রেন্ড যৌন চাহিদা মেটাতে গার্লফ্রেন্ড না পাওয়ায় সমকামের দিকে আকৃষ্ট হয়েছে)। এভাবেই হালালের বিপরীতে হারামকে নিয়ে আসা হয়। নারীদের পর্দাকে নারী-প্রগতির অন্তরায় বলে বুদ্ধিজীবী ও নারীবাদীরা প্রোপ্যাগান্ডা চালায়। ফলে নারীরা পর্দার শৃঙ্খল ছেড়ে বেরিয়ে আসে। পর্নোগ্রাফীকে নিষিদ্ধ করা হয় না। হস্তমৈথুনের নানা উপকারিতা বয়ান করা হয়। গল্প, উপন্যাস, নাটক সিনেমা সর্বত্র প্রেম আর প্রেম। প্রেম শব্দকে এমনভাবে ব্যবহার করা হয়েছে যেন বিয়ের আগেরটা প্রেম, বিয়ের পরেরটা প্রেম নয়। মিডিয়া ও সাহিত্য প্রেমকে উস্কে দেয়। গফ-বফ সংস্কৃতিকে প্রোমট করে। ফলে আজকে দেখা যায় ক্লাস সিক্স এর বাচ্চা থেকে শুরু করে ভার্সিটির বড় ভাই পর্যন্ত প্রেম করে। কেউ তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে চায় না, কারণ বিয়ে করলে নাকি ঝামেলা, প্যারা। বিয়ে করলে বাচ্চা হবে, সংসার করা লাগবে, অনেক ঝামেলা।

 

৩- সমাজে বিয়েকে কঠিন করে দেয়া হয়েছে। আমাদের সমাজে মোহর কম দিলে মানুষ ছি ছি করে, বিয়েতে খরচ কম করলে নানান কথা বলে। এছাড়া বিয়ের নামে আছে বহু অপসংস্কৃতি, এঙ্গেজমেন্ট, গায়ে হলুদ, নানান আবর্জনা। ফলে সামাজিক নিয়মে বিয়ে করা একজন যুবকের পক্ষে বেশ কঠিন।

 

৪- মেয়েরা যেন তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে না পারে এই বিষয়টা খেয়াল রাখে নারীবাদীরা। তারা বিয়ের পক্ষে নৈতিক ভিত্তি তৈরি করার চেষ্টা করে। ক্যারিয়ারের মূলা দেখিয়ে মেয়েদের বিয়েকে দেরি করায়। কারণ বিয়ে যত দেরি হবে বাচ্চা তত কম হবে। আর কেউ চাকরি করলে তার বাচ্চা তো আরও কম হবে। একদিকে মেয়েদেরকে বেপর্দা করা অন্যদিকে বিয়েকে দেরি করাতে নারীবাদী ও সেকুলাররা প্রোপ্যাগান্ডা চালায়। তারা আজ সফল। আজকে মেয়েরা ২৮-৩০ হয়েও বিয়ে করতে পারছে না। বিয়ে হচ্ছে না। কারণ বিয়ের বয়সটা ছিল ১৬-১৮ তে। কোনো ছেলেই ৩০-৩৫ বয়স্কা মেয়ে বিয়ে করতে চায় না। ৩০-৩৫ এর মেয়েকে ৪৫-৫০ এর টাকপড়া লোকই বিয়ে করতে রাজি হয়।

 

৫- বেশি বেশি সন্তান যেন নিতে না পারে এইজন্য সেকুলাররা চালায় আরেক ধরণের প্রোপ্যাগান্ডা। দুই সন্তানের বেশি নয়, এক হলে ভালো হয়, এই নীতি প্রচার প্রসার ঘটায়। ইচ্ছাকৃত সিজার অপারেশন বৃদ্ধি পায়। জন্ম নিয়ন্ত্রণের নানান সুফল বর্ণনা করা হয়। পিল, বড়ি, আর কন্ডমকে স্বামী ও স্ত্রীর মাঝখানে রাখা হয়। আর নারীরা চাকুরি করলে কিংবা দেরি করে বিয়ে করলে বাচ্চা এমনিতেই কম হয়, অনেকের তো দেরিতে বিয়ের কারণে বাচ্চাই হয় না।

 

৬- ইসলাম যেখানে একাধিক বিবাহকে অনুমতি দিয়েছে এর বিপরীতে দাজ্জালি সভ্যতার কাছে এটাকে বর্বর মনে হয়। সেকুলাররা নিজেরাই যৌন-বিকৃতি প্রমোট করে কিন্তু একাধিক বিয়েকে তারা কোনো ভাবেই সমর্থন দেয় না। ১০ টা গার্লফ্রেন্ড রাখা, ১০ জনের সাথে সেক্স করা তাদের কাছে ভালো কাজ হলেও সামাজিক ভাবে বৈধ ৪ জন স্ত্রী রাখা, তাদের ভরণপোষণ দেয়াকে বর্বর, নারীবিরোধী মনে করা হয়।

 

৭- ইসলাম যতগুলো নেগেটিভ যৌনতা হারাম করেছে তার সবগুলোই দাজ্জালী সভ্যতা বৈধ মনে করে। আর ইসলাম যে বিয়েকে হালাল করেছে সেটার বিরুদ্ধে শয়তানের অনুসারীরা সব রকম ষড়যন্ত্র চালায়।

 

মুসলিমদের প্রতি আহবান জানাবো সব রকম হারাম থেকে নিজেদের পবিত্র রেখে সাহস করে বিয়ে করুন, কম খরচে বিয়ে করুন, বেশি বেশি সন্তান নিন, ছেলে-মেয়েরা বড় হলে বালেগ-বালেগা হলেই বিয়ে করিয়ে দিন। ইসলামের বিধান মেনে চলুন, দাজ্জালী সভ্যতার মোকাবেলা করুন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তেইশ

 

প্রতিটা মুসলিম ভূমিতে অ্যামেরিকা, রাশিয়া, ন্যাটো, ইসরাইল মুহুর্মুহু বোমা ফেলে নিষ্পাপ শিশুদের হত্যা করছে। এভাবে তারা একটা পঙ্গু মুসলিম প্রজন্ম তৈরি করছে।

 

মুসলিম বিশ্ব এই কাজের সাধ্যমত প্রতিবাদ করছে। আমরা সব দেশের মুসলিমরা এই নিয়ে চিন্তা করি, দোয়া করি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বিশ্বমোড়ল যদি নিজেই জালেম হয়, কার কাছে বিচার চাইব, আর কে সমাধান করবে? সাম্রাজ্যবাদীরা প্রতিটা মুসলিমদেশে দালাল সরকার বসিয়ে রেখেছে। তারা এভাবে পুরো পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। যারাই তাদের পথে বাধা হবে তাদেরকে তারা শেষ করে দিতে কুণ্ঠাবোধ করে না। প্রতিটা মুসলিম দেশে যখন এই সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শুরু হল তখনই ওয়ার অন টেররের নাম দিয়ে মুসলিম দেশগুলোতে তারা যুদ্ধ চাপিয়ে দিচ্ছে। মিডিয়ার মাধ্যমে তারা পৃথিবীর মানুষের মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ করছে। মানুষকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছে এই সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিরোধ করলেই সে সন্ত্রাসী। অথচ সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হচ্ছে এইসব আধিপত্যবাদী রাষ্ট্র। তাদের অনুগত থাকলে তাদের ভাষায় ভালো মুসলিম, আর প্রতিরোধ করলেই জঙ্গি, সন্ত্রাসী।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চব্বিশ

 

আমাদেরকে দুনিয়া ছেড়ে দিতে বলা হয় নাই, দুনিয়া জয় করতে বলা হয়েছে। দুনিয়াকে ভোগ করতে বলা হয় নাই, দুনিয়াকে পায়ের নিচে রেখে শাসন করতে বলা হয়েছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পঁচিশ

 

চারজন দাড়িটুপিওয়ালাকে র‍্যাব গ্রেফতার করেছে এই বিষয়ে প্রতিবাদ করা জরুরী। বেশি বেশি কপি পেস্ট করে ছড়িয়ে দিন। এভাবে কত নিরীহ মানুষের জীবন ধ্বংস করে দিচ্ছে জালিমের দল! হতে পারে তাদের পরবর্তী টার্গেট আমি বা আপনি!

 

সিয়ানের হাসান শুয়াইব ভাই এবং সিলেটের ইবনে হাসান ভাইয়ের বর্ণনা উল্লেখ করছি।

 

হাসান শুয়াইব ভাই লিখেছেনঃ

 

" টার্গেট যখন নিরীহ হুজুররা।

 

হে জালিমরা এভাবে তোমরা কত নাটক সাজিয়ে নিরীহ প্রাণ গুলোকে নিস্তব্ধ করে দিবে।

 

সব থেকে বাম পাশের হুজুর আমাদের মাদ্রাসার একজন পুরনো শিক্ষক। প্রায় দশ বছর ধরে এখানে শিক্ষকতা করে আসছেন। রাজনীতির সাথে কোন সম্পর্ক নেই তার।

কিন্তু হঠাৎ সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেল। আমাদের সামনেই ডিবি পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায় প্রায় ২ সপ্তাহ আগে। উত্তর বাড্ডা থেকে। ঘটনাটি ঘটে ক্লাস শুরু হওয়ার আগে আগে। এরপর দুই সপ্তাহ তার কোন খোঁজ নেই।

 

কাল হঠাৎ সংবাদ প্রচারিত হলো, "তাকে ধরা হয়েছে গাজীপুর থেকে। তিনি নাকি বান্দরবান থেকে ঢাকায় এসেছেন নাশকতা চালাতে। আমার স্পষ্ট মনে আছে, তাকে যখন ধরে নিয়ে যায়, তার পরনে ছিল ঠিক এই লুঙ্গি। একদম রিক্তহস্ত। অথচ সংবাদমাধ্যমের সামনে আনার সময় মঞ্চায়ন করা হয় নাটক। দেশীয় কমন কিছু ছোরা- চাকু তাদের সামনে রাখা হয়। শুধু তিনিই নন, তার পাশের প্রতিটি চেহারা এ মিথ্যা কলঙ্ক থেকে মুক্ত।

 

জালিমরা, যত পারো জুলুম করে নাও। তোমাদের ধ্বংসের খসড়া লেখা হয়ে গেছে। নিরীহ হুজুরদেরকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে তোমরা বরং নিজেদের ধ্বংসকেই ত্বরান্বিত করছ। তোমরা আল্লাহকে অক্ষম করতে পারবে না। তিনি যাকে ধ্বংসের ইচ্ছা করেন, তাকে কেউ রক্ষা করতে পারে না। "

 

ইবনে হাসান ভাই লিখেছেনঃ

 

" সবুজ টুপি পরিহিতের পাশেরজন সিলেট রেঙ্গা মাদ্রাসার ছাত্র উনাকে প্রায় দুই তিন সপ্তাহ আগে নিজ প্রতিষ্ঠান হতে ধরে নিয়ে যায় গোয়েন্দা টিম। এখন বলছে ওকেও নাকি গতকাল ঢাকায় গ্রেফতার করেছে। আফসোস! "

 

হাসান শুয়াইব ভাইয়ের মূল পোস্টের লিঙ্ক - https://www.facebook.com/100022816181209/posts/561109937992874/?app=fbl&hc_location=ufi (পোস্ট অনলি ফ্রেন্ডস করা, তাই দেখা যাচ্ছে না)

 

হাসান শুয়াইব ভাইয়ের আইডি লিঙ্ক - https://www.facebook.com/hasan.shuaib.509

 

র‍্যাব ৪ এর সাজানো নাটকের স্ক্রিপ্ট -https://bit.ly/2BtT3AB

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ছাব্বিশ

 

হানাফী-সালাফী এক হও, মানহাজী-মোডারেট এক হও, এতায়াতী-ওয়াজহাতি এক হও, জামাত-দেওবন্দ এক হও, বেরেলভি-দেওবন্দি এক হও, চরমোনাই-কওমি এক হও, দায়েশ-কায়দা এক হও, আসারি-আশআরি এক হও, জমিয়ত-জামায়াত এক হও, তাহরীর, শিবির এক হও। সব মুসলমান এক হও।

 

এক হও, নেক হও।

 

পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন শ্লোগান। শ্লোগানদাতার প্রতি কারো গালিই মাটিতে পড়বে না। আমাকে যে বুঝতে চায়, উপরের এই কথাগুলো যথেষ্ট।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সাতাইশ

 

কেউ ফরজ পালন না করে একটা সুন্নাত পালন করলে আমরা যে বলি, "ফরজ আদায় করে না, অথচ সুন্নাত নিয়ে লাফালাফি", এটা বলা একেবারেই উচিৎ না।

 

কেউ যদি সত্যি মন থেকে সুন্নাহ পালন করে অবশ্যই আল্লাহ তাকে ফরজ আদায়ের তৌফিকও দিবেন। কিন্তু আমরা যখন একটাকে গুরুত্ব দিয়ে অন্যটাকে গুরুত্বহীন করে দিই, এটা ঠিক নয়।

 

কেউ হিজাব করলে (শুধু চুল ঢাকা) তার এই আধা-পর্দাকে ব্যাঙ্গ করবেন না। হয়তো এটা তার পুরা-পর্দার কাছে যাওয়ার একটা পদক্ষেপ ছিল।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আঠাইশ

 

হানাফী হওয়ার একটা সুবিধা হইতেছে পালায়া বিয়া করা যায় (বউয়ের বাপের অনুমতি ছাড়া), আর সালাফী হওয়ার সুবিধা হইতেছে ভুলবশত তিন তালাক দিলে তালাক একটাই হবে। আর সুবিধাবাদীরা দুই খান থেকেই সুবিধা লাভ করে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ঊনত্রিশ

 

এটা একটা ভুল ধারণা, বড় কোনো পদে গেলে ইসলামের অনেক খেদমত করা যাবে। আপনি যদি কোনো ভাবে প্রধানমন্ত্রীও হন, এবং ইসলাম কায়েমের চেষ্টা করেন আপনাকে কুফফাররা টিকে থাকতে দিবে না। আবার আপনি যদি কিছু নাও হন, আপনার ভিতরে যদি আগুন থাকে তবে আপনি চাটাইয়ে বসে দুনিয়াকে হেলাতে পারবেন। মোল্লা উমরের উদাহরণ নেন। সে ছিল একটা মাদ্রাসার তালিবুল ইলম। প্রথমে সোভিয়েতের বিরুদ্ধে জিহাদে অংশ নেন। যুদ্ধের পর আবার মাদ্রাসায় পড়াতেন। তখন আফগানে মার্কিনদের পাপেট ক্ষমতায় বসা। সারা আফগানে বিশৃঙ্খলা। কেউ কাউকে মানে না, রাস্তায় ডাকাতি, ছিনতাই হয়। জীবনের নিরাপত্তা নাই। তিনি ভাবতে থাকলেন কিভাবে দেশের পরিস্থিতি ঠিক করা যায়। এজন্য তিনি বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্রদের সাথে যোগাযোগ করতেন। তিনি এভাবেই ছাত্র অর্থাৎ তালিবদের নিয়ে তালিবান গঠন করলেন। এরপর তা ইতিহাস, এই তালিবান সুপারপাওয়ার অ্যামেরিকাকে পরাজিত করল। মোল্লা উমর কিছুই ছিলেন না। তবু তার মধ্যে আগুন ছিল।

 

প্রধানমন্ত্রী হলেও ইসলাম কায়েম সম্ভব না। কারণ সারা পৃথিবীতে প্রধানমন্ত্রী তারাই হয় যারা কোনো একটা ব্লকের মধ্যে থাকে, কারো দালাল হয়ে থাকে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী কিংবা এরদোয়ানের মত অনেকে আবার ডাবল গেইম খেলে টিকে থাকে। কিন্তু সত্য হচ্ছে কোনো প্রেসিডেন্ট যদি আজকে ইসলাম কায়েমের ঘোষণা দেয় তবে কালকেই কুফফাররা একজোট হয়ে দেশে সেনা নামাবে।

 

আপনি যত বড় পদেই যান না কেন, হুকুমের গোলাম হয়েই থাকতে হবে আপনাকে। জাতিসংঘের আন্ডারে কোনো একটা দেশও স্বাধীন না। সত্যিকারের স্বাধীনতা হচ্ছে জাতিসংঘ থেকে যারা স্বাধীন হতে পারে।

 

আমাদের অবস্থান যেখানে সেখান থেকেই আমাদেরকে কাজ করতে হবে। আমাদেরকে আল্লাহ কখনোই জিজ্ঞেস করবেন না, "তুমি কেন প্রধানমন্ত্রী হও নি, বড় পদে যাও নি"। আমাদের যতটুক সামর্থ্য ততটুকু নিয়ে কাজ করতে হবে। যেটা বাস্তবতা সেটাকে বুঝতে হবে। অবাস্তব পরিকল্পনা করে লাভ নেই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ত্রিশ

 

শুক্রবারের সহজ ২০ টি কাজ যা আপনি করতে পারেনঃ

 

১- জুমু'আর নামাজে যাওয়ার আগে গুসল করা।

 

২- সূরা কাহফ পুরোটা না পারলে অন্তত প্রথম ১০ আয়াত পড়া।

 

৩- মিসওয়াক করা।

 

৪- আতর মাখা।

 

৫- নখ কাঁটা।

 

৬- খুৎবা শুরু হওয়ার আগেই মাসজিদে চলে আসা। (প্রথম ৫ কাতার ফিলআপ হওয়ার আগেই এসে পড়ে উচিৎ)

 

৭- মাসজিদে প্রবেশ করে দুই রাকাত দুখুলুল মসজিদ আদায় করা।

 

৮- দুখুলুল মসজিদ আদায়ের পরও খুৎবা শুরু না হলে, খুৎবা শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত হালকা করে নফল নামাজ পড়া।

 

৯- চুপচাপ খুৎবা শোনা, পূর্ণ মনোযোগের সাথে।

 

১০- জুমু'আর নামাজের পর জায়গা পরিবর্তন করে ৪ রাকাত বা'দাল জুমু'আ আদায় করা।

 

১১- সারাদিন বেশি বেশি দুরুদ পড়া। (আল্লাহুম্মা সল্লি 'আলা মুহাম্মাদিউ ওয়া 'আলা আলি মুহাম্মাদ)

 

১২- বেশি বেশি দুয়া-মুনাজাত করা, এই দিনে (মাগরিব পর্যন্ত) এমন একটি মুহূর্ত আছে যখন দুয়া কবুল হয়।

 

১৩- জুমু'আর নামাজে মসজিদে হেঁটে যাওয়া।

 

১৪- চল্লিশ দিন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে অবাঞ্ছিত লোম কাঁটা, গোঁফ ছাঁটা।

 

১৫- অন্যান্য দিনের চেয়ে একটু ভিন্নভাবে দিনটি কাটানো, যেহেতু এই দিনকে সাপ্তাহিক ঈদ বলা হয়েছে। (ভালো কিছু রান্না, বেড়ানো, আনন্দ করা ইত্যাদি)।

 

১৬- সুন্দর কাপড় পড়ে জুমু'আর নামাজে যাওয়া।

 

১৭- খুৎবার সময় তন্দ্রাচ্ছন্ন হলে জায়গা পরিবর্তন করে বসা।

 

১৮- খুৎবার সময় দুই হাটু উঠিয়ে না বসা।

 

১৯- মসজিদে কারো ঘাড় ডিঙিয়ে, মানুষকে কষ্ট দিয়ে সামনে না যাওয়া।

 

২০- খুৎবার সময় কেউ কথা বললে তাকে "চুপ কর" এতটুকুও বলা যাবে না, এতই মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শুনতে হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

একত্রিশ

 

আলেমদের মধ্যে মুজাহিদের সংখ্যা কম কেন?

 

আগের যুগের দিকে তাকালে দেখতে পাবো আলেমদের মধ্যে মুজাহিদদের সংখ্যা কম। এটা তাবেঈ জামানা থেকেই শুরু হয়েছে। এরপরের হাজার বছরের বেশি সময় ধরে এই ঘটনা চলমান ছিল। মুসলমানরা যতদিন দুনিয়া শাসন করেছে ততদিন আলেমরা জিহাদের তরবারি আবদ্ধ করে নিশ্চিন্ত মনে দারস তাদরীসে ব্যস্ত ছিলেন। এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। সাহাবিদের সময়ে যেমন সকল সাহাবি মুজাহিদ ছিলেন, পরবর্তী যুগগুলোতে মুসলিমরা শক্তিশালী হওয়াতে আলেমরা ইলম, দাওয়াত, তাজকিয়াহতে মনোযোগ দেন। ইসলামী খিলাফত যত বিস্তৃত হয়েছে আলেম মুজাহিদের সংখ্যা ততই কমেছে।

 

কিন্তু এখন আবার মুসলিমরা ক্ষমতাহীন হয়ে পড়েছি। আবার আমাদেরকে সাহাবিওয়ালা চরিত্র নিজেদের মধ্যে আনয়ন করতে হবে। আলেমদের হতে হবে ইবনে তাইমিয়াহ, ইসলামের দুশমনদের বিরুদ্ধে ফতোয়া দিয়ে নিজেই তরবারি হাতে বেরিয়ে পড়তে হবে।

 

 

 

 

 

 

 

বত্রিশ

 

যাদের কোনো ভাই-বোন নাই তাদের জীবন অনেক মজার মনে হলেও তারা আসলে অনেক 'মজা' থেকে বঞ্চিত।

 

পিঠাপিঠি দুই ভাই হলে, তাদের মধ্যে প্রতিদিনই ডব্লিউ ডব্লিউ ই হয়।

 

দুই ভাইয়ের মধ্যে বয়সের গ্যাপ বেশি হলে বড়টা ছোটটাকে বেশি শাসন করে। অবশ্য ছোটটা মা-বাবার আদর বেশি পায়, কিন্তু বড়টার সাথে তার বনে না, অবশ্য মারামারিও করতে পারে না। দু'জনের মধ্যে একটু দূরত্ব, একটু দ্বন্দ্ব আর একটু ভালোবাসা থাকে।

 

তিন ভাই হলে, মাইজঝাটার কপাল খারাপ। বড় আর ছোট ভাই তখন এক হয়ে যায়। কারণ মেজোটার সাথে কারোই বনে না। বাপ-মাও ছোটটারে আদর করে বেশি, ফলে ছোটটারে কিছু বললেই মেজোটার কপালে দুঃখ আছে।

 

চার ভাই হলে, ছোটটা বড় তিন ভাইয়ের শাসনে আর আদরে অতিষ্ঠ হয়ে যায়। ছোটটা বেশি চালাক চতুর হয়, মাস্তানও হইতে পারে। কিছু হইলেই ভাইরে ডাকবে। পাঁচ, ছয় আরও বেশি ভাই হইলেও ছোটটার অনেক সুবিধা। আদর, শাসন সব ও পায়।

 

এক ভাই এক বোন হইলে ঝগড়া বেশি, আনন্দ বেশি। দুইজনের প্রতিদিনই লাগবে। অবশ্য এই ঝগড়া সিরিয়াস ঝগড়া না, ভালোবাসার ঝগড়া, খুনসুটি যেইটারে বলে। দুইজনের মধ্যে ভালোবাসাও অনেক থাকে।

 

দুই ভাইয়ের এক বোন কিংবা দুই বোনের এক ভাই হলে অনেক মজা। সেই একজনরে অন্য দুইজন অনেক আদর করে। শাসন কম, আদর বেশি।

 

বোন বেশি হইলে আর ভাই একটা হইলে ভাইটার অনেক যন্ত্রণা। সবগুলা বোন ছোট হইলে বোনদের জন্য অনেক কিছু করতে হয়। আর বোনগুলা বড় হইলে ছোটটার মধ্যে অনেক মেয়েলি স্বভাব আসে (প্রাকৃতিক ভাবে না, বড় হইলে ঠিক হয়ে যায়)।

 

ভাই বেশি হইলে, আর বোন মাত্র একটা হইলে বোন অনেক আদর পায়। কোনো ছেলে লাইন মারার সাহস পায় না। ভাইদের কারণে তার মধ্যেও একটু কঠোর (ছেলে ছেলে) ভাব আসে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তেত্রিশ

 

সালাতে দুই স্থানে দুয়া করা যায়। একটা হল সিজদার সময়। অন্যটা হল শেষ বৈঠকে। সিজদার দুয়ায় কুরআনের আয়াত থেকে দুয়া পড়া যাবে না (যেমন রব্বি জিদনি ইলমা, এরকম যেসব দুয়া কুরআনে আসছে)। আরেকটা বিষয় হচ্ছে বাংলাতে দুয়া করা যাবে না, আরবিতে করতে হবে। শেষ বৈঠকে সালাম ফিরানোর আগে যে কোনো দুয়া করা যাবে, কুরআনের আয়াত থেকেও করা যাবে। নামাজে দুয়া করার জন্য হাদিসে বর্ণিত দুয়াগুলো শেখা যায়।

 

ফরজ সালাত বাদে বাংলায় দুয়া করা যাবে, এটাও কোনো কোনো আলেম বলেন। কিন্তু আমি সতর্কতাবশত করতে মানা করি, অনেক উলামাও মানা করেন। কারণ পুরো নামাজটাই আরবিতে। ফরজ সালাতেও করতে নিষেধ করার কারণ সতর্কতা। সুতরাং ফরজ নামাজ টিকাতে যদি বাংলায় দুয়া করা থেকে বিরত থাকতে হয় তাহলে নফল নামাজ বাঁচাতেও বাংলায় দুয়া করা থেকে বিরত থাকা উচিৎ। এটা আমার যুক্তি। বাংলায় দুয়া করতেই হবে এমন না, কিন্তু সতর্কতা থেকে বেঁচে থাকা ভালো।

 

আরেকটা কথা হচ্ছে অনেকের ভুল ধারণা, আমরা যে দুয়া করব তা তো কুরআন হাদিসে হুবহু নাই। কিন্তু আমি বল আমরা যা চাই সেইসব কথা হাদিস ও কুরআনের দুয়ার মধ্যেই পাবেন, বিশ্বাস না হলে অর্থগুলো চেক করে দেখেন। আমাদের মনের সবরকম দুয়া সেখানে পাবেন। বাংলায় দুয়া করার জন্য বহুত স্থান আছে যেখানে আপনি মন খুলে স্পেসিফিক দুয়া করতে পারবেন, নামাজে সেটা না করাই ভালো। রব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানা... এই একটা দুয়ার মধ্যেই আপনার সব কল্যাণের দুয়া এসে পড়ে, আল্লাহ তো জানেন আপনার মনের খবর।

 

আর আপনি যদি চান একবারে হুবহু আপনার মনের কথাটা বলতে, আমি বলব আপনার বাংলা দুয়াটার কারো থেকে আরবি অনুবাদ করে এরপর নামাজে আরবিতে মুখস্ত পড়বেন, তাও বাংলা থেকে বেঁচে থাকা উচিৎ বলে মনে করি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চৌত্রিশ

 

যারা আত্মহত্যা করে তারা জানে না জীবনের উদ্দেশ্য। যদি বুঝতো জীবনের উদ্দেশ্য, তবে কখনোই আত্মহত্যা করতে পারতো না। জীবনের সামান্য বিষয় নিয়ে হতাশ হয়ে অনেকে আত্মহত্যা করে। হতাশা আসে শয়তানের পক্ষ থেকে। দুনিয়ার বিষয়টি সামান্য হলেও কিংবা সামান্য কিছু না পেলে সেটা তার কাছে অনেক বড় বিষয় মনে হয়।

 

জীবনের কোনো উদ্দেশ্য না থাকায় সে জীবনের মূল্য বোঝে না। সে ভুলে যায় জীবন হচ্ছে আল্লাহর দেয়া আমানত। এটাকে সে যাচ্ছেতাই ভাবে ব্যবহার করার অধিকার রাখে না, ইচ্ছে হলেই এটাকে নষ্ট করার অধিকার রাখে না! এই বস্তুবাদী সভ্যতায় আমাদের এই ধারণা বদ্ধমূল হয়ে গেছে যে, এই জীবনটাই একমাত্র জীবন, যেমন ইচ্ছা তেমন চল, ভালো না লাগলে সুইসাইড কর। কুরআন কি বলে তার তোয়াক্কা না করে বস্তুবাদীদের অনুসরণ করার ফলে দুনিয়া আখিরাত সব হারাচ্ছি। বস্তুবাদ শিখাচ্ছে খাও দাও ফুর্তি কর, যা মন চায় তাই কর, এই বস্তুবাদই হতাশ ব্যক্তিকে সুইসাইড করতে প্রলুব্ধ করে।

 

আল্লাহ আমাদেরকে, আমাদের তরুণ প্রজন্মকে আত্মহত্যার মত কবীরা গুনাহ থেকে হেফাজত করুন, দুনিয়া ও আখিরাতে সফল করুন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পঁয়ত্রিশ

 

কিছু ব্যক্তি এই কথা বলে বেড়াচ্ছে ফেসবুকে যেসব হাসি, কান্না কিংবা ওয়াও রিয়েক্ট আছে বা স্টিকার, ইমোটিকন আছে এগুলো নাকি মূর্তিসদৃশ এবং এগুলো ব্যবহার করা শিরক। পাকিস্তানে রহমানী স্বপ্ন দেখার দাবীদার মুহাম্মাদ কাসিমের মাধ্যমে এসব ছড়িয়েছে, স্টিকার মাধ্যমে অনুভূতি প্রকাশ করলে নাকি শিরক হবে। আমার তো মনে হচ্ছে শিরকের সংজ্ঞাই জানেন না যারা এসব ছড়াচ্ছেন। এগুলোকে মূর্তি বলা যায় না। মানুষের ছবি স্পষ্ট না। তবে হ্যাঁ, কেউ যদি তাকওয়ার কারণ এগুলো থেকে বিরত থাকেন তবে সমস্যা নেই। কিন্তু এটাকে শিরক বলাটা কোনো ভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ছত্রিশ

 

সেইসব পিতামাতাদেরকে আল্লাহর কাছে জবাব দিতে হবে, যারা সন্তানদের বিয়ে করতে বাধা দেয়। ৩০ পর্যন্ত বিয়ে করতে না দিয়ে ছেলের যৌবন নষ্ট করে। ছেলে হয়ে হয়তো মা-বাবাকে সে মাফ করে দিবে। কিন্তু ছেলের ১৫ বছর ব্যচেলর যৌবনের পাপ প্রতিটায় বাবা-মা ভাগ পাবে ইনশাআল্লাহ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সাইত্রিশ

 

হুজুরদের গোশ্ত খাইতে অনেক মজা লাগে কিছু (হাফ-সেকুলার) ব্যক্তির। সবকিছুতে হুজুরদের দোষ ধরা তাদের স্বভাবে পরিণত হইছে। সবকিছুর দায় হুজুরদের ঘাড়ে দিয়ে দেয়, অথচ এই হুজুরদের মাধ্যমেই ইসলাম টিকে আছে। যারা হুজুরদের গোস্ত খায় তাদের দিকে তাকিয়ে দেখুন, তারা নিজেরা দ্বীন পালন করে না, ফরজ ওয়াজিবের তোয়াক্কা করে না, প্রকাশ্য গুনাহর কাজ করে, গান বাজনা শুনে, দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকে, দ্বীনের কথা শুনতে নারাজ এমন লোকেরাই দ্বীন মেনে চলা হুজুরদের উপর মহাখ্যাপা, সবকিছুতে হুজুরদের দোষ খুঁজবে। সেকুলারদের সাথে গলা মিলিয়ে মুনাফিকি করবে। দাড়িটুপিওয়ালা দেখলেই যেন এদের গাজ্বালা করে। অথচ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ ছিলেন একজন হুজুর, আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সেই মানুষটির দাড়িও ছিল, টুপিও ছিল।

 

আল্লাহ যেন হাফ-মুনাফিকদের হাত ও জবান থেকে নবীর উত্তরশুরি আলেম উলামা এবং হুজুরদের রক্ষা করেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আটত্রিশ

 

দাড়ি রাখলে সুন্দর দেখা যায়, এটা যদিও অনেকে বলে থাকে, কিন্তু এই কথাটা জাহেরি ভাবে নিলে ভুল হবে। কারণ সুন্দরের সংজ্ঞা হচ্ছে যা দেখতে ভালো লাগে। অনেক দাড়িওয়ালা ব্যক্তিকে সুন্দর দেখায় না। অনেককে দেখায়। তাই দাড়ি রাখলে সুন্দর দেখাবে এই কথাটা ভুল, অনেকের দাড়ি এলোমেলো ভাবে হয়, অনেকের গালে কিছু জায়গা ফাঁকা থাকে। অনেককে দাড়ির কারণে প্রচলিত অর্থে স্মার্ট মনে হয় না। তাই দাড়ি রাখলে সুন্দর দেখায় এই কথা সঠিক নয়। তবে সুন্দরের সংজ্ঞা যদি ইসলাম থেকে নেয়া হয় তাহলে অবশ্যই দাড়িওয়ালা মুমিনদের সুন্দর লাগে। এই সুন্দর লাগাটা কোনো মুনাফিক, কাফির অনুভব করতে পারবে না। একজন মুমিন এটা অনুভব করতে পারে। কারণ মুমিন ব্যক্তি সৌন্দর্যের সংজ্ঞা শিখে আল্লাহর কাছ থেকে। তাই সব দাড়িওয়ালা মুমিনকেই তার ভালো লাগে।

 

অনেককে আবার সুন্দর লাগলে বলি নূরানী চেহারা। নূর বলতে আমরা এখানেও সৌন্দর্য বুঝাই। অথচ নূর মানে চেহারার সাদাত্ব নয়। বরং একজন মুমিন যখন তার ভেতরের সৌন্দর্যের সাথে সাথে বাহিরটাও ইসলাম দিয়ে রাঙ্গায়, অর্থাৎ দাড়ি রাখে, টুপি পাগড়ি পড়ে, সুন্নতি পোশাক পড়ে, ঢিলা পোশাক পড়ে, টাখনুর উপরে কাপড় পড়ে, তখন সে যতই কালো হোক তার চেহারায় নূর দেখা যায়। নূর মানে দেখে ভালো লাগা না, বরং আল্লাহর জন্য তাকে ভালোবাসার ফলে তার চেহারায় যে নূর ফুটে ওঠে সে যতো কালো মুমিনই হোক, এর নাম নূর।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ঊনচল্লিশ

 

আমাদের পূর্বসুরীদের অনেকে অজু ছাড়া হাদিস বর্ণনা করতেন না, কেউ অজু না করে হাদিস লিখতেন না, কেউ আবার শুয়ে শুয়ে হাদিস বর্ণনাকে আদবের পরিপন্থী মনে করতেন। এটা আদব। এইখানে কুরআনের সঙ্গে তুলনা আনা সঠিক হবে না।

 

(অনেকে তুলনা এনে বলবে, কুরআন শুয়ে পাঠ করা যায়, অজু ছাড়া মুখস্ত পড়া যায়, তাহলে হাদিসে সমস্যা কই? এজন্যই বললাম, এখানে কুরআনের সাথে তুলনা আনা উচিৎ না। পূর্বসুরীরা তাকওয়া-বশত এরুপ করতেন, কুরআনের ব্যাপারে তাদের তাকওয়া আরও বেশি ছিল। হাদিসের প্রতি ভালোবাসার ফলে তারা যা করতেন, এটাকে আপনি কুরআনের সাথে তুলনা করে সমালোচনা করলে ভুল হবে।)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চল্লিশ

           

মাশাল্লাহ বা ইনশাল্লাহ না বলে মাশাআল্লাহ, ইনশাআল্লাহ বলা উচিৎ। কারণ মাশাল্লা কিংবা ইনশাল্লা উচ্চারণ সঠিক নয়। আল্লা বলাটাও সঠিক নয়। অনেকে আরবির বাংলায়নের জন্য এরুপ করেন, তারা মনে করেন আরবি শব্দ বিকৃত করে বাংলায়ন করলে অনেক বেশি 'চেতনা' হবে। সেকুলারদের এরুপ করতে দেখা যায় বেশি, তাদের এই কাজ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনে হয়। আমরা মুসলিমরা আরবি উচ্চারণ ঠিক রেখে লিখার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

একচল্লিশ

 

আমরা আমাদের বড়দের কোনো ভুল পেলে সম্মানের সাথে সমালোচনা করব। কারো সম্মানহানী করা উচিৎ না,কোনো মুসলিমের ইজ্জত নষ্ট করার অধিকার আমাদের নাই। আলেমদের ব্যাপার কথা বলতে গেলে থাকতে হবে অনেক বেশি সাবধান। সুতরাং আসুন জবানের হেফাজত করি। এটা যেন আজকের ফেসবুকযুগে অসম্ভব কাজ হয়ে পড়েছে। সবাই সবাইকে যা ইচ্ছা বলছে, যা ইচ্ছা করছে। কোনো অমুসলিমকেও অন্যায় বশত ক্ষতি করা গুনাহ, অথচ আমরা ভিন্নমতের মুসলিমদের মানহানী করি, আলেম উলামাদের কটূ কথা বলি। বিচার দিবসে আটকে যাওয়ার ভয় কেনো আমাদের মধ্যে আসে না?

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বিয়াল্লিশ

 

মায়েরা স্বার্থপর হয় না, এটা ভুল কথা। মায়েরাও স্বার্থপর হয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

তেতাল্লিশ

 

এক ব্যক্তি বললেন, "আল্লাহকে ভালোবাসতে হবে, ভয় কেন করতে হবে? যিনি বানিয়েছেন, তাকে কেন ভয় করা লাগবে?"

 

আমি তার প্রশ্নের উত্তর লিখলাম। তা নিচে হুবহু তুলে দিলাম।

 

"আপনি গুনাহ করলে আল্লাহ শাস্তি দিবেন। আল্লাহ মানুষের জন্যই জাহান্নাম তৈরি করে রেখেছেন। এইজন্য তাকে ভয় করবেন।

 

একটা সহজ কথা বুঝেন, আল্লাহ বলছেন ভয় করতে, তাই আল্লাহকে ভয় করতে হবে। আল্লাহকে যদি বিশ্বাস করেন তবে তার কথা কেন শুনবেন না? আপনি আল্লাহকে ভালোবাসার দাবী করছেন অথচ আল্লাহর কথা অমান্য করছেন, এই বুঝি ভালোবাসা?

 

আল্লাহ শুধু রহমান, রহীম, গফুর, গাফফার না; আল্লাহ কাহহার (কঠোর), আদ দর (যন্ত্রণাদানকারী), আল মুযিল্লু (সম্মানহরণকারী), আল খফিদ (অপমানকারী)। আল্লাহ ন্যায়বিচারক, সকল সীমালঙ্ঘনকারীকে তিনি কঠোর শাস্তি দিবেন। মানুষ যদি আল্লাহকে ভয় না করে তবেই সে পাপ করতে পারে। আপনি তাকে ভয় করেন না বলেই এই ভয়াবহ পাপে লিপ্ত আছেন, "আমি আল্লাহকে ভয় করি না" এটা কত ভয়াবহ আকিদা আপনার ধারণার বাইরে। "ভালোবাসলে পাপ করা যায় না", এটাও ভুল কথা, আপনি ভালোবাসেন কিন্তু ভয় করেন না বলেই এই ভয়াবহ আকিদার উপর অটল রয়েছেন যা ঈমানের জন্য খতরা।

 

মুসলিম ভাই হিসেবে নসিহত করছি। ওহীর সুস্পষ্ট বিধান থাকা সত্ত্বেও 'কেন?' আর 'যুক্তি'কে অবলম্বন করা হচ্ছে শয়তানের ধোঁকা। শয়তানও যুক্তি দিয়েছিল, "আমি কেন মাটির তৈরি আদমকে সিজদাহ করব?" শয়তানের কথাতেও 'কেন' আর 'যুক্তি' দুটাই ছিল। মনে রাখতে হবে আল্লাহ যখন আদেশ করেন তখন সেখানে 'কেন' বলতে হয় না, বলতে হয় "শুনলাম এবং মানলাম"। মুসলিম হওয়া মানে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করা। নিজের নফসের অনুসরণ করা না। আপনার নফস বলছে "ভালোবাসতে কিন্তু ভয় না করতে", শয়তানও ধোঁকা দিচ্ছে। কিন্তু মুসলিম হিসেবে আপনার উচিৎ আল্লাহর কথা শোনা, যদি আল্লাহর কথা না শুনেন তবে এটা কেমন আত্মসমর্পণ!

 

আর এইটা নাস্তিকদের বহুকাল আগের যুক্তি, ওরা মুসলিমদেরকে বলত, "ভালোবাসলে কেন ভয় করতে হবে?" হয়তো আপনি তাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন। এটা তো সুস্পষ্ট বিষয়, নাস্তিকরা আপনার ঈমান দুর্বল করার জন্য এসব আপনার মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছে। তবু আপনি বিশ্বাসী হয়ে অবিশ্বাসীদের পথ অবলম্বন করছেন?

 

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন নিষ্পাপ মানুষ, তবু তিনি আল্লাহকে ভয় করতেন। আল্লাহকে ভয় করতেন বলেই তিনি জীবনে কোনো পাপ করার সাহস পান নি। রসুল আমাদের আদর্শ, তাকে রোল মডেল করা হয়েছে। কোনো নাস্তিকের কথায় ঈমান হারাবেন না ভাই!

 

আল্লাহকে ভয় করার আদেশ করেছেন, এ সংক্রান্ত কিছু আয়াত উল্লেখ করা হলঃ

 

আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। [সুরা মাইদা-- ০২]

 

আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।" [সুরা হাশর-- ০৭]

 

"সে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা কর, যার জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর।" [সুরা বাকারা-- ২৪]

 

"হে মানব জাতি! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর এবং ভয় কর এমন এক দিবসকে, যখন পিতা পুত্রের কোন কাজে আসবে না এবং পুত্রও তার পিতার কোন উপকার করতে পারবে না। নিঃসন্দেহে আল্লাহর ওয়াদা সত্য। অতএব, পার্থিব জীবন যেন তোমাদেরকে ধোঁকা না দেয় এবং আল্লাহ সম্পর্কে প্রতারক শয়তানও যেন তোমাদেরকে প্রতারিত না করে। " [সুরা লোকমান --৩৩]

 

"আর সে দিনের ভয় কর, যখন কেউ কারও সামান্য উপকারে আসবে না এবং তার পক্ষে কোন সুপারিশও কবুল হবে না; কারও কাছ থেকে ক্ষতিপূরণও নেয়া হবে না এবং তারা কোন রকম সাহায্যও পাবে না। [সুরা বাকারা-- ৪৮]

 

 

"হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।" [সুরা ইমরান --১০২]

 

"হে মানুষ,তোমরা তোমাদের মালিককে ভয় কর, অবশ্যই কেয়ামতের কম্পন হবে একটি ভয়ংকর ঘটনা।" [সুরা হাজ্জ--০১]

 

মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহ তা’আলাকে ভয় কর। প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত, আগামীকালের জন্যে সে কি প্রেরণ করে, তা চিন্তা করা। আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করতে থাক। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা’আলা সে সম্পর্কে খবর রাখেন। [সুরা হাশর-- ১৮]

 

"হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক।" [সুরা তাওবাহ-- ১১৯]

 

"যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে আল্লাহ তার কাজকে সহজ করে দেন।" [সুরা ত্বালাক-৪]

 

"যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে নিস্কৃতির পথ করে দেবেন। এবং তাকে ধারনাতীত জায়গা থেকে রিজিক দিবেন।" [সুরা তালাক-২,৩]

 

"তার বান্দাদের মধ্যে কেবল জ্ঞানীরাই আল্লাহকে ভয় করে।" [সুরা ফাতির--২৮]

 

"নিঃসন্দেহে সর্বোত্তম পাথেয় হচ্ছে আল্লাহর ভয়। অতএব হে বুদ্ধিমানগন! তোমরা আল্লাহকে ভয় করতে থাকো।" [সুরা বাকারাহ--১৯৭]

 

"যারা সত্য নিয়ে আগমন করছে এবং সত্যকে সত্য মেনে নিয়েছে; তারাই তো আল্লাহভীরু। " [সুরা যুমার--৩৩]

 

 

আল্লাহকে ভয় করার পুরস্কার--

 

"তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে তাদের প্রতিদান চিরকাল বসবাসের জান্নাত, যার তলদেশে নির্ঝরিণী প্রবাহিত। তারা সেখানে থাকবে অনন্তকাল। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। এটা তার জন্যে, যে তার পালনকর্তাকে ভয় করে।" [সুরা বায়্যিনাহ--৮]

 

"দয়াময় আল্লাহকে না দেখে ভয় করে। অতএব আপনি তাদেরকে সুসংবাদ দিয়ে দিন ক্ষমা ও সম্মানজনক পুরস্কারের।" [সুরা ইয়াসীন --১১]

 

"যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার পাপ মোচন করেন এবং তাকে মহাপুরস্কার দেন।" [সুরা ত্বালাক--৫]

 

"যে ব্যক্তি তার রবের সামনে উপস্থিত হওয়াকে ভয় করে তার জন্য রয়েছে দু'টি জান্নাত।" [সুরা রহমান--৪৬]

 

"নিশ্চয় যারা তাদের পালনকর্তাকে না দেখে ভয় করে, তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার। [সুরা রহমান--১২]

 

আল্লাহকে যদি সত্যিই ভালোবেসে থাকেন, তবে তাকে আজ থেকে ভয় করুন। কারণ ভালোবাসার দাবি অনুযায়ী আল্লাহর কথা আপনার মান্য করা উচিৎ। নয়তো আপনার ভালোবাসার দাবি মিথ্যা। মুসলিম হিসেবে আমাদের জন্য এটাই যথেষ্ট যে আল্লাহ আমাদের আদেশ করেছেন তাকে ভয় করতে! শয়তান যেখানে যুক্তি দেখায় "কেন?", আর বিপরীতে মুসলিম বলে, "আল্লাহ বলেছেন, তাই"।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চোচল্লিশ

 

আবিরুজ্জামান মোল্লা ভাই, চালায় যান। ভিডিও বানানো অব্যাহত রাখুন। আলী আব্দুল্লাহ, মুহাম্মাদ ইব্রাহিম ভাইয়ের পর আরেকজন ইউটিউবার পাচ্ছি আমরা।

 

(যে ৩ জনের নাম উল্লেখ করলাম প্রত্যেকেই বাংলাদেশি ইসলামিক ইউটিউবার)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পঁয়তাল্লিশ

 

আমি আমার প্রতিটা পোস্ট এবং কমেন্ট (যদি বেশি বড় হয়) সেইভ করে রাখি। কারো কাছে মূল্য না থাকলেও আমার কাছে আমার মতামতের মূল্য আছে। আমি সবাইকেই বলি লেখার ব্যাকআপ রাখতে। ফেসবুক লেখার কোনো স্থায়ী মাধ্যম না। সাথে সাথে সেভ না করলে ১ বছর আগের লেখাও খুঁজে বের করা অনেক ঝামেলা।

 

সবাই লেখার ব্যাকআপ রাখার চেষ্টা করেন। যেন আইডি হারাইলেও লেখাগুলো থাকে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ছেচল্লিশ

 

সন্ত্রাসী মারার নামে সিভিলিয়ান মারার নাম সন্ত্রাস-দমন!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সাতচল্লিশ

 

মুজাদ্দিদ বলতে যুগসংস্কারক বোঝায়, সমাজসংস্কারক বোঝায়। ধর্মসংস্কারক নয়। ইসলাম সংস্কার করা যায় না। এক শ্রেণীর মানুষ মনে করে মুজাদ্দিদরা ধর্ম সংস্কার করে। আসলে মুজাদ্দিদরা ধর্ম নয়, বরং ধর্মের নামে যা সমাজে প্রচলিত, কিংবা সমাজের অপসংস্কৃতি, এসবের সংস্কার করে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আটচল্লিশ

 

আমার সবচেয়ে বেশি বিরক্ত লাগে কনস্পিরেসি থিওরিওয়ালাদের। আজগুবি সব কথাবার্তার আমদানি তারা করে থাকে। একেবারে কল্পনার ভিত্তিতে, অনুমানের ভিত্তিতে তারা কথা ছড়ায়। শিশুদের টিকার বিরুদ্ধে তাদের কনস্পিরেসি নির্ভরযোগ্য মনে হয়নি, আর এগুলো প্রচার করাও সঠিক মনে হচ্ছে না। আমি এক্ষেত্রে দীনদার ডাক্তারদের উপর নির্ভর করতে রাজি আছি। যে যেই বিষয়ে দক্ষ, সেই বিষয়ে তার মত গ্রহণযোগ্য। আমার কাছে এই ক্ষেত্রে মুসলমান ডাক্তারদের নির্ভরযোগ্য মনে হয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ঊনপঞ্চাশ

 

ব্যভিচারী ব্যভিচারীর জন্য। কোনো ব্যভিচারীর অধিকার নাই কোনো সতী মুমিনার সাথে থাকার। যেহেতু এই দেশে যিনাকারের শরঈ শাস্তি দেয়া হয় না, তাই আমি মনে করি পতিতার সাথে তার কাস্টমারের বিয়ে দেয়া উচিৎ। তাহলে বাংলাদেশের সব পতিতার বিয়ে হয়ে যাবে এবং সব পতিতালয় বন্ধ হয়ে যাবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পঞ্চাশ

           

তাহেরীকে নিয়ে ট্রল করা আমি পছন্দ করি না। কারণ এর কারণে ইসলামী লেবাস অপমানিত হয়। সে এমন কোনো অপরাধ করে নাই যে তার এভাবে সম্মানহানী করা লাগবে। সে যেসব বিদআত করে, এগুলো ধর্মতাত্ত্বিক সমালোচনা হতে পারে। সেকুলাঙ্গারীয় ট্রল মুসলমানরা কেন গ্রহণ করল জানি না!

 

 

 

 

 

 

 

 

একান্ন

 

ইউরোপাম্রিকা > ভারত, পাকিস্তান > বাংলাদেশ

 

যেটা পশ্চিমে শুরু হয়, এটা পাক-ভারত হয়ে এরপর বাংলাদেশে ঢুকে। যে কোনো বিষয়ের দিকে তাকালে এটা দেখতে পাবেন। আধুনিকতার নামে মেয়েদের ছোটখাটো পোশাক পশ্চিম থেকে প্রথমে ভারতে ঢুকেছে এরপর পাকিস্তান আর বাংলাদেশেও ঢুকছে। ভারত থেকে তার প্রতিবেশী দেশগুলোতে ছড়ানোর কারণ বলিউড। এছাড়াও অন্যান্য পশ্চিমী অপসংস্কৃতি ভারত হয়ে আমাদের দেশে ঢুকে। ২০ বছর আগে আমাদের দেশে এতো ধর্ষণ ছিল না। ভারতে শুরু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশেও শুরু হইছে। এগুলোর পিছনে সিনেমার প্রভাব অনেক। সিনেমায় আস্তে আস্তে অশ্লীল দৃশ্য ঢুকিয়ে আমাদের সফটপর্নে অভ্যস্ত করা হচ্ছে। যেন ইন্টারনেটের (অ)কল্যানে আমরা নিজেরাই পর্ন খুঁজে নেই। আর বিয়ে করতে না পেরে যিনা/ধর্ষণ করি (কারণ বিয়ে তো আটকে রাখা হয়েছে)। আল্লাহ তরুণ প্রজন্মকে হেফাজত করুন।

 

 

 

 

 

 

 

 

বায়ান্ন

 

আসিফ আকবরের এটা কঠিন সিদ্ধান্ত, টিকে থাকতে পারবেন কিনা সন্দেহ। (তিনি বাদ্যযুক্ত গান গাওয়া ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন)। যদি টিকে থাকতে পারেন তবে তো ভালো। আমি তার পূর্ণ হেদায়েতের জন্য দুয়া করি। অনন্ত জলিলকেও এরকম ঘোষণা দিতে দেখা গেছে। কিন্তু তিনি তো আবার আগের মতোই হয়ে গেলেন। পথ পেয়েও আবার হারিয়ে ফেলা, খুব ভয়ানক। আসিফ এবং অনন্ত দুইজনের হেদায়েতের জন্যই দুয়া রইল।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তিপ্পান্ন

 

মানহাজী ভাইদের এতো করে বলি, জঙ্গি মুজাহিদদের ছবি দিয়েন না। আইডি চইলা যাবে। মুজাহিদদের ছবি কিংবা ব্ল্যাক ফ্ল্যাগের ছবি দেয়া তো জরুরী কিছু না। আপনার কাজ হচ্ছে ফেসবুকে টিকে থাকা। নরমাল ছবি প্রোপিকে দিয়ে কি জিহাদী চেতনা প্রচার করা যায় না?

 

এজন্য দুইদিন পর পর ভাইদের আইডি চলে যায়। কুফফাররা তো মৃত মুজাহিদের ছবিকেও ভয় পায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চুয়ান্ন

 

মুফাসসিলরে মোডারেট বল্লেও মোডারেটদের অপমান। মোডারেটরা অন্তত মুসলিম। কিন্তু মুফাসসিলের ঈমান আনা আমার বিশ্বাস হয় না। তারে মুনাফিক মনে হয়। আগে করত ইসলামবিদ্বেষ, এখন শুরু করছে হিন্দুবিদ্বেষ। (তবু তার সত্যিকারের হেদায়েতের জন্য দুয়া রইল)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পঞ্চান্ন

 

ইসলামিক গল্প লেখার ধারা বৃদ্ধি পাক। এরকম ইসলামিক গল্প ভাইরাল হলে অনেকে সত্য ঘটনা মনে করে। এক্ষেত্রে লিখে দেয়া উচিৎ গল্পগুলো আসলেই গল্প। গল্প সত্য মিথ্যা বড় বিষয় না, শিক্ষাটাই আসল।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ছাপ্পান্ন

 

কারো অপরাধের জন্য তার ধর্মকে আগে দায়ী করাটা আমি পছন্দ করি না। কেউ অপরাধ করলে তার হিন্দু পরিচয় আগে টেনে আনা এক প্রকার হিন্দুবিদ্বেষ। মুমিন কখনো হিন্দুবিদ্বেষী হয় না। সাধারণ হিন্দুদের দিকে তীর না ছুড়ে হিন্দুত্ববাদের দিকে তীর ছুড়ুন। অযথা হিন্দু বিদ্বেষ ছড়ানোর কি দরকার? হয় দাওয়াত দিন, নয়তো জিহাদ করুন (বা জিহাদ সমর্থন করুন)। একজন হিন্দু শিরক করার কারণে যথেষ্ট অপরাধী। তাদেরকে অপবাদ দিয়ে কিংবা অন্য কোনো উপায়ে অপরাধী প্রমাণের প্রয়োজন নেই। অপবাদ দিয়ে কিংবা ধর্ম পরিচয় টেনে এনে খারাপ প্রমাণ করা হচ্ছে সেকুলাঙ্গারীয় চর্চা (মুসলিমদের ব্যাপারে সেকুলাররা যা করে থাকে)। আমরা এর চর্চা করব না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সাতান্ন

 

লগি বৈঠার হত্যাকান্ড, আজ ২৮ অক্টোবর, ১৩ বছর পূর্ণ হল। আল্লাহ শহীদদের ক্ষমা করুন। জালেমদের কঠোর থেকে কঠোরতর আজাব দিয়ে পাকড়াও করুন। লগি বৈঠার খুনীরা আজও খোলা আকাশের নিচে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেকুলাঙ্গার, নাস্তিক এবং আওয়ামীলীগ সবাই মিলে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। ৫ ই মার্চের শাপলা গনহত্যার প্রতিক্রিয়ার তুলনায় লগি বৈঠার হত্যাকান্ডের প্রতিক্রিয়া চোখে পড়ার মত নয়, জামায়াতের ভাই ব্রাদার কয়েকজনের লেখা ছাড়া কাউকে এ ব্যাপারে লিখতে দেখলাম না। আমরা খুব দলীয় হয়ে গেছি। শহীদদেরকেও দলের ভিত্তিতে ভাগ করি। আফসোস!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আটান্ন

 

পৃথিবীতে এখনো গোত্র সিস্টেম টিকে থাকলে ভালো হত। গোত্র সিস্টেমের মাধ্যমে আমাদের প্রকৃত পরিচয় ও ইতিহাস মওজুদ থাকে। অথচ এমন যুগে উপনীত হয়েছি যে আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতম ৪ পুরুষের নাম পর্যন্ত জানি না। অনেকে তো নিজেদের পূর্ব পুরুষ সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানি না। নিজের বংশের নামও অনেকে জানি না। গোত্র সিস্টেম টিকে থাকলে আত্মীয়তার রশিও চেনা যেত। এখনো সুযোগ আছে গোত্র সিস্টেম পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার। আমরা নিজেদের বংশধরকে গোত্র সিস্টেম রক্ষার পাঠ দিয়ে যেতে পারি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ঊনষাট

 

সবাই যদি ইসলামী জিন্দেগী গ্রহণ করত কেমন হত?

 

রাস্তায় সবাই সবাইকে সালাম দিত। বুড়োরা যেমন ছোটদেরকেও আগে দেয়ার চেষ্টা করত, ধ্নীরাও গরীবদের আগে সালাম দেয়ার চেষ্টা করত।

 

মসজিদ ভরপুর থাকতো। জুমু'আর দিনের মতই প্রতি ওয়াক্তে মসজিদের ৫ তোলা কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যেত, অনেকে জায়গা না পেয়ে মাসজিদে বাইরে নামাজ পড়তো।

 

জামা'আতের সময় হলেই সবাই দোকান খোলা রেখে নামাজ পড়তে চলে যেত। নামাজের সময় রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যেত।

 

খুৎবা কিংবা বয়ানে নবীর নাম উচ্চারণ হলেই সবাই উচ্চ স্বরে দুরুদ পড়তো, পুরো মসজিদ গম গম করে উঠত।

 

সবাই পর্দা করত, দাড়ি রাখতো। রাস্তাঘাটে কেউ সিগারেট খেত না। গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরতো না।

 

মহিলারা দূরবর্তী সফরে মাহরাম ছাড়া যেত না। পুরুষরাও ঘরের নারীদের নিরাপত্তার জন্য তাদের সাথে থাকতো। ফলে ধর্ষণ, যৌন-হয়রানি, ইভটিজিং এর মাত্রা একদম কমে আসতো।

 

সিনেমা, নাটকগুলো দেখার কেউ থাকতো না। ফলে এইসব হারাম পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা পেট চালাতে হালাল পেশা অবলম্বন করত।

 

সবাই যদি ইসলাম পালন করত, একটা সুন্দর সমাজ তৈরি হত।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ষাট

 

কেউ করছে দেওবন্দপূজা, কেউ সাদপূজা করে, পার্থক্য কি? তাবলীগ শিখায় একরামে মুসলিম। আজ তাবলীগের দুই দল ভালো মতোই একরামে মুসলিম করতেছে। (দুই দলের মারামারিতে বিরক্ত হয়ে গেছি ভাই, আর নিতে পারতেছি না!)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

একষট্টি

 

 

একটা ইসলামী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সেখানে অমুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতা থাকে। রাষ্ট্র জিযিয়ার বিনিময়ে তাদের জীবনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিবে, সুযোগ সুবিধা দিবে। আর একটি সেকুলার রাষ্ট্রে কারো জীবনের নিরাপত্তা থাকে না। বিশ্বজিত উদাহরণ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বাষট্টি

 

অবিবাহিতদের জন্য ওষুধঃ দাউদী রোজা, রাত না জাগা, তাহাজ্জুদ, ফেসবুকে বিয়াইত্তা ভাইদের আনফ্লো দেয়া।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তেষট্টি

 

মা বাবার ক্ষেত্রে আপনি ডাকটাই প্রেফার করি। তুমি ডাকটারে বেশি আপন মনে হয়। কিন্তু আপনির সাথে কোনো কিছুর তুলনা হয় না। আপ্নির মধ্যেই সম্মান, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা সব মওজুদ থাকে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চৌষট্টি

 

যারা প্রতি শুক্রবার জুম্মা মোবারক বলে ছবি আপ দেয় এটাকে ট্রল করা পছন্দ করি না। তারা তো অন্তত জুম্মা মোবারক বলে। অনেকে তো নামাজও পড়ে না। এটা একটা সহজ কথা, যারা জুমুআ পড়ে না তাদের থেকে জুমুআওয়ালারা উত্তম।

           

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পঁয়ষট্টি

 

অর্ধেক দ্বীন পূর্ণ করার জন্য শীত একটা দারুণ ওয়েদার।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ছেষট্টি

 

শেখ নজরুল ভাইয়ের পোস্ট পড়ে বোঝা যাচ্ছে, সাদাদের 'কালোমি'। এরাই আমাদের সভ্যতা শেখায়! অথচ এরা নিজেরাই অসভ্য।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সাতষট্টি

 

আতীকুল্লাহ হুজুরের জন্য কি করতে পারি? অথচ আমি তার কত বড় ভক্ত। দুয়া ছাড়া আর কিছু করতে পারছি না। হে আল্লাহ, হুজুরকে আপনি সহী সালামতে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আটষট্টি

 

তুফায়েল খান ভাই, আপনি পেইজে চলে যান। আর সেখানে বেশি বেশি পোস্ট দিবেন। নাইলে নাস্তিকরা রিপোর্ট মেরে আপনার আইডি উড়িয়ে দিবে। কুরআনের মুজিযা নাস্তিকরা সহ্য করবে কেন?

 

আপনি তো নাস্তিকদের বিরুদ্ধে কখনোই কিছু লেখেন নি, শুধু রুকইয়া বিষয়ে লিখেছেন, এতেই নাস্তিকদের হাওয়া টাইট হয়ে গেছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ঊনসত্তর

 

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সবসময় পূর্ণ দুরুদ লেখা উচিৎ। আমি কখনো লেখার সময় লিখতে হলে দুরুদ কপি করে রাখি, জায়গামত পেস্ট দেই খালি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সত্তর

 

আমার ধারণা, পিনাকী তার আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। এতদিন সে ভক্ত জোগাড় করছে। মুসলিমবিরোধী কোনো মত দেয় নাই। আস্তে আস্তে দিতে থাকবে হয়তো। সরাসরিই বলবে সে মুসলমানদের পক্ষে নয়।

           

 

 

 

 

 

 

 

একাত্তর

 

আলি হাসান ওসামা সাহেবের আলোচনা শুনছি। মাশাআল্লাহ। লেখার মত বক্তৃতাতেও তিনি অনন্য।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বাহাত্তর

 

জাফর বিপি ভাই কহিলেন,

 

স্ত্রীকে গিফট করার মতো সবচেয়ে ভালো জিনিস কী হতে পারে?

 

উত্তর- পরনারী থেকে নিজের নিয়ন্ত্রণ। এই জিনিসটা তাকে গিফট করুন। সে আপনাকে তার পুরো সত্তা সঁপে দেবে।

 

আমি কমেন্ট করিলাম-

 

প্রশ্নঃ স্ত্রীকে গিফট করার মতো সবচেয়ে ভালো জিনিস কী হতে পারে?

 

আমিঃ সতীন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তেহাত্তর

 

হুজুর হয়ের লেটেস্ট গল্পটা হ্যাক নিয়া, খুব ভালো লিখেছে। হুজুর হয়ে টিমকে ধন্যবাদ।

 

সেকুলাররা এইভাবে গল্প উপন্যাসের লাইনে লাইনে মোসলমানদের বাঁশ দেয়। এবার মোশলমানরাও বাঁশ দেয়া শুরু করছে আলহামদুলিল্লাহ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চুহাত্তর

           

পাকিস্তানের এক ব্যক্তি যে দাবি করে সে রহমানী স্বপ্ন দেখে। স্বপ্নগুলো শেষ জামানা বিষয়ক। সে তার স্বপ্ন প্রচার করে বেড়ায়। বাংলাদেশেও তার প্রচারক বাড়ছে। স্বপ্ন পর্যন্ত বড় কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু তার অনুসারীরা তাকে মাহদি মনে করে। সম্ভবত এই অস্থির সময়ে এই ফিতনাও ব্যাপক ভাবে ছড়াবে যদি এখনি মানুষকে সতর্ক না করা যায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পঁচাত্তর

 

আমি প্রাকৃতিক খাবার প্রমোট করি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ছিয়াত্তর

 

সালাফিদের উচিৎ ফাজায়েলে আমল এবং ফাজায়েলে সাদাকাত বই দু'টা পড়া। অনেকে না পড়েই শোনার ভিত্তিতে বইটার বিরোধিতা করে। পড়লে চিন্তার অনেক পরিবর্তন আসবে। তখন বুঝবে শোনা আর দেখা কখনো সমান হতে পারে না।

 

জাল যইফ বড় বড় ইমামদের কিতাবেও আছে। তাই বলে সালাফদের আমরা পরিত্যাগ করি নি। শুধু জাল যইফ গ্রহণ না করলেই হয়। যেখানে পূর্ব যুগের সালাফদের বইতেও জাল যইফ আছে, এই খালাফদের যুগের আলিমদের বইতে থাকাও স্বাভাবিক। এর ধর্মতাত্ত্বিক ক্রিটিক হবে, কিন্তু আহলে হাদিসদের মত সস্তা মানের বিরোধিতা না।

 

 

 

 

 

 

 

 

সাতাত্তর

 

বাঙালী হয়ে বাঙালীরা অন্য বাঙ্গালিকে মারে, ধর্ষণ করে, ডাকাতি করে। কিন্তু সুযোগ পাইলে রোহিঙ্গা, পাকিস্তানী, আরবদের গালি দেয়ার সুযোগ হাতছাড়া করে না। (প্রতিটা জাতির মধ্যেই ভালো খারাপ আছে, কিন্তু জাতি ধরে গালাগালি এক প্রকার জঘন্য রেসিজম, তাও আবার যদি সেই রেসজিম শুধু মুসলিম জাতিগুলোর প্রতি হয়)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আটাত্তর

 

মাঝেমধ্যে আপনার গান বাজনা নিয়ে পড়ে থাকা বন্ধু, চুটিয়ে প্রেম করা ক্লাসমেট, নামাজ-হজের তোয়াক্কা না করা আত্মীয়, দাড়িহীন সাপ্তাহিক মুসুল্লি, ফুটবল ক্রিকেট নিয়ে পড়ে থাকা ছোটভাই এবং পরিচিত সেকুলার আঙ্কেলও দ্বীন-মানা আপনাকে ইসলাম শেখাতে আসবে। তাদের ইসলাম শেখানোর কিছু নমুনা-

 

১- গণতন্ত্র ইসলামের সঙ্গে সাঙ্ঘর্ষিক নয়।

 

২- প্রেম পবিত্র, তাই প্রেম করলে গুনাহ হবে না।

 

৩- দাড়ি রাখা জরুরী না। দাড়ি না রেখেও ইসলাম পালন করা যায়।

 

৪- পাঞ্জাবি, পায়জামা, জুব্বা, টুপি এইসব আরবীয় পোশাক। বাঙালী পোশাক পড়েও ইসলাম পালন করা যায়, তাই না?

 

৫- হিজাব, নিকাব জরুরী না। শালীনভাবে চললেই হল।

 

৬- জিহাদ এই যুগে সম্ভব না। তাই জিহাদ যারা করে কিংবা সমর্থন করে তারা জঙ্গি, সন্ত্রাসী।

 

৭- মাদ্রাসায় জঙ্গি তৈরি হয় (তাই সব মাদ্রাসা বন্ধ করা উচিৎ)।

 

৮- আইএস, আল কায়েদা, ওসামা বিন লাদেন এরা সব আম্রিকার তৈরি।

 

৯- মাদ্রাসায় শিশু বলাৎকার হয়, সমকামী তৈরি হয় (তাই মাদ্রাসায় পড়ানো যাবে না)

 

১০- তালেবানরা জঙ্গি। আম্রিকা তাদের দমন করে মানবতার উপকার করছে।

 

১১- হুজুররা ভন্ড। (আর আমরা গান, সিনেমা, ফুটবল ক্রিকেট, প্রেম পিরীতি নিয়ে পড়ে থাকলেও আমরা আসল মুসলিম)

 

১২- দাড়িটুপিওয়ালারা খুব খারাপ, লেবাসধারী।

 

১৩- ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ধ করা উচিৎ।

 

১৪- ইসলাম নিয়ে জবরদস্তি করা যাবে না। (মানে ইসলাম পরিপূর্ণভাবে পালন করা যাবে না, প্রচারও করা যাবে না)

 

১৫- সৌদিরা, পাকিরা, তুর্কিরা কত্ত খারাপ। রোহিঙ্গারাও খারাপ। (তবে আম্রিকা, রাশিয়া, ভারত এরা অনেক ভালো)

 

১৬- জামায়াত, হেফাজত মৌলবাদী শক্তি।

 

১৭- ব্যাংকে চাকরী করা হারাম না।

 

১৮- হুজুররা ধর্মব্যবসায়ী। (তবে আমরা নিজেদের প্রয়োজনের সময় টুপি, পাঞ্জাবী পড়ে দ্বীনদার ভাব নিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতেই পারি)

 

১৯- হুজুররা খালি বিয়া বিয়া করে। হুজুররা চার বিয়া করে/করতে চায়। (আমি যে সাতটা গার্লফ্রেন্ড বদলাইছি সেইটা কিন্তু কইলাম না)।

 

২০- জিহাদীরা হুরের লোভে জিহাদ করে। (আর আমরা নারীদেহের বর্ণনা নিয়া বড় বড় সাহিত্য রচনা করলে আমাদের মন পবিত্র, আমরা পার্টনার/বউ/গার্লফ্রেন্ডকে চুদি না, দরজা আটকায়া সারা রাত গল্প করি)

 

২১- বাউলরা গাঞ্জা টানলেও তাদের মন খুব সাদা, তারাই প্রকৃত মোসলমান।

 

২২- পশ্চিমের মানুষ খুব ভালো, মুসলমানরা খুব খারাপ।

 

২৩- হুজুররা শুধু দাওয়াত খাইয়া বেড়ায়। (আমরা দাওয়াত পাই না, তাই দাওয়াত খাইতেও পারি না)।

 

এরকম আরও অনেক আছে, বলে শেষ করা যাবে না।

 

 

 

 

 

 

 

 

ঊনআশি

 

বাগদাদীকে শহীদ করার ঘটনা সত্য কিনা অপেক্ষা করতে হবে। এর আগেও অনেক বার তাকে মারার দাবি করা হইছিল। আইএসের অফিসিয়াল দাবি আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধরি ভাইয়েরা।

 

 

 

 

 

 

 

 

আশি

 

তাসজিদ আহসানি ভাইয়ের সাথে একটি ছোট্ট বিতর্ক (আমি একবার বেরেলভী ঘরানার একটা কার্টুনের ছোট্ট একটা ক্লিপ শেয়ার দিয়েছিলাম, সেই কার্টুনটা মূলত রসুলের সুন্নত নিয়ে ছিল।)

 

তাসজিদ আহসানি - ভাই,এসকল বেদআতি সংগঠনগুলো দ্বীনের জন্য উপকারী নয় বরং ক্ষতিকর। আর এমন কার্টুন বানানোর মাধ্যমে দ্বীন শিখা-শিখানো নিরাপদ নয়।কারণ,এভাবে শিশুদের একটা নামমাত্র ভালাইয়ের সন্ধান দিতে গিয়ে তাদের হাজারো খারাবির মধ্যে প্রবেশ করানো হবে। বেদআতিদের কথা বা কাজ পছন্দ করার উপর নিষেধ আছে ওলামাদের। বেদআতিরা ছদ্মবেশী শত্রু ইসলামের।বিশেষ করে এই সবুজ পাগড়িধারী দাওয়াতে ইসলামী চরম বিভ্রান্ত সংগঠন।

যাহোক, ভাই সতর্ক করার জন্য বলা। মনে কষ্ট নিবেন না

 

আমি - না কষ্ট নেই নাই। আমি জেনেশুনেই এদের ভালোবাসি। এদের বিদাতের শক্ত বিরোধিতা আমিও করি। আমি দেওবন্দী না, বেরেলভীও না। আমার বাবার সাথে আমার অনেক মত মিলে না, ভাইয়ের সাথেও মিলে না, কিন্তু আমি তাদের ত্যাগ করতে পারি না। তাদের মতের বিরোধী হওয়া সত্ত্বেও তাদের ভালোবাসি। বেরেলভীরা মুসলমান, তাদের ঈমান আছে এটাই তাদেরকে ভালোবাসার জন্য যথেষ্ট। বেরেলভীরা বিদআত করলেও আমি তাদের ত্যাগ করতে পারি না। বিদাতের বিরোধিতার জন্য ওদের কাছেও খারাপ হই, আবার ওদের ভালোবাসলেও অন্যরা নারাজ হয়। তবু এই পথটাকেই আমার হক পথ মনে হয়। আমার মতাদর্শ সংক্ষেপে বললাম।

আমিও কার্টুনের মাধ্যমে ইসলাম শেখাকে পছন্দ করি না। তবে শেয়ার দেয়ার কারণ ফেসবুকের অনেকে যেন এই কয়েকটা সুন্নত জানতে পারে।

 

তাসজিদ আহসানি - আমি আপনার সাথে কোনো তর্কে যাবো না।ইমানের কারণে গুনাহগার মুসলিমকে ভালোবাসা ইমানেরই দাবী।

আর সুন্নাত জানানোর জন্য আরো পন্থা আছে,আপনি নিজেই সেই দুআগুলো উল্লেখ করে শেয়ার করতে পারেন।

আর ভাই,আপনি কি দেওবন্দি এবং বেরলভীদের এক ক্যাটাগরির মনে করেন?আপনার ইলম শিখার ক্ষেত্রে কোন পদ্ধতি অনুসরণ করে থাকেন ?আপনাকে প্রশ্ন করলাম জাস্ট আপনাকে বোঝার জন্য।আর নিজের অবলম্বিত পন্থাটা সঠিক না বেঠিক তা কিভাবে যাচাই করলেন?আপনি কেমন ওলামাদের প্রতি আস্থা রাখেন?

প্রশ্নগুলো কঠিন এবং হিটমূলক মনে হতে পারে।তবে আপনাকে হিট করার জন্য নয়,কেবল আপনাকে বোঝার জন্য।

প্রশ্নগুলে ইনবক্সে করলে ভালো হত।কিন্তু এখানেই করে ফেললাম।আপনি যদি উত্তরগুলো ইনবক্সে দিত চান,কোনো সমস্যা নাই।

 

 

আমি - সমস্যা নাই, এখানেই বলা যায়।

দেওবন্দী আর বেরেলভীদের এক ক্যাটগরির মনে করি না। বেরেলভীর মধ্যে অনেক ভ্রান্তি আছে। দেওবন্দীদের সাথে তাদের তুলনা আকাশ পাতাল, কিন্তু দুইটা দুই পথ। এইজন্য আলাদা করে বলেছি। আমি দেওবন্দীও নই। কিন্তু দেওবন্দীদের মধ্যেও ভুলক্রুটি আছে, কেউই ভুলের উর্দ্ধে নয়।

আমি ইলম সবার থেকে শিখি। হানাফি, সালাফি, তাবলীগী, দেওবন্দী, এতায়াতী, ওয়াজহাতী, মোডারেট, জিহাদী, মানহাজী (কায়দা), দায়েশী, ইমরান নজরী, জামায়াতী, তাহরীরী, বেরেলভী; যাদের মুসলমান মনে করি সবার থেকে ইলম নেই। আলহামদুলিল্লাহ, আমি যাচাই বাছাই করতে জানি কাদের কোনটা ভুল বা ঠিক। আমি ব্যক্তিগত ভাগে নির্দিষ্ট একটা ফিকহ ফলো করি, তবে এটা প্রকাশ করা পছন্দ করি না, কারণ বললেই সেই ফিকহের বিরোধীরা আমার শত্রু হয়ে যাবে। ফিকহ ফলো করি কিন্তু কোনো দল করি না। নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করি।

তৃতীয় প্রশ্ন ছিল - "নিজের অবলম্বিত পন্থাটা সঠিক না বেঠিক তা কিভাবে যাচাই করলেন?"

আমার পন্থা সঠিক তা আমি সকল উলামার থেকে যাচাই বাছাই করে গ্রহণ করি। যে বিষয়গুলা সব দলের উলামাদের মধ্যে কমন এগুলো আমি অনুসরণ করি, এই ক্ষেত্রে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম। সালাফি দেওবন্দী অনেক বিষয় কমন। আবার দেওবন্দী বেরেলভী অনেক বিষয় কমন। আবার মানহাজী তাহরীরী কিছু বিষয় কমন। বিচ্ছিন্ন মত অনুসরণ না করার চেষ্টা করি।

এরপরের প্রশ্ন হচ্ছে "আপনি কেমন ওলামাদের প্রতি আস্থা রাখেন?"

আমি আব্দুল্লাহ আজ্জাম রঃ এবং এই টাইপের আলেমদের উপর পূর্ণ আস্থা রাখি। আজ্জাম রঃ সালাফি হওয়া সত্ত্বেও আফগানিস্তানে নাভিতে হাত রেখে নামাজকে অনুমোদন দিয়েছিলেন, তাবিজ ব্যবহারের বিরুদ্ধে কড়া হন নি, যুদ্ধ বাদ দিয়ে মাজার ভাঙ্গার কাজে ব্যস্ত হন নি। তিনি জিহাদী হওয়া সত্ত্বেও গণতান্ত্রিকদের গণতাকফীর করেন নি, প্রয়োজনে নির্বাচনে অংশ নেয়াকেও সমস্যা মনে করতেন না। তিনি সকল দল মতকে ভালোবাসতেন। আজ্জাম রঃকে বুঝলে আমাকে বুঝবেন।

না ভাই, প্রশ্নগুলো হিটমূলক মনে হয় নি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

একাশি

 

আগামীকাল রোজা আছে, সোমবারের। দীনী ভাইরা এই প্র্যাকটিসটা যদি করতে পারেন, তবে রোজা রাখা আপনার জন্য অনেক সহজ হয়ে যাবে। এইটা রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সারাজীবনের সুন্নত। ওইদিন দেখলাম এক ডায়েটেশিয়ান বললেন, সপ্তাহে ২/৩ টা করে রোজা রাখতে। ডায়েটের জন্য না করে সুন্নত পালন করুন, দেখবেন দুনিয়া-আখিরাত দুইটাই পাবেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বিরাশি

 

অনেকেই আরবি শেখার অভিজ্ঞতা শেয়ার করছেন। যারা আরবি পারেন, তারা শেখার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন, আমরা অনুপ্রেরণা পাবো।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তিরাশি

 

বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ের উপর রিসার্চগুলো দেখলে আপনি কনফিউসড হয়ে যাবেন কোনটা সঠিক। একটা রিসার্চ যদি বলে এক কথা, আরেকটা রিসার্চ বলে এর বিপরীত কথা। বিজ্ঞান দিয়ে অনেকে কুরআন যাচাই করতে যায় যা সম্পূর্ণ ভুল। বরং বিজ্ঞান কখনো বিপরীতমুখী কথা বললে আমি কুরআন দিয়ে বিজ্ঞান যাচাই করি, এবং কোনটা সত্য তা সহজেই নির্ধারণ করতে পারি। ডারউইনবাদের কথাই বলা যাক। এর পক্ষে বিপক্ষে প্রচুর তর্ক বিতর্ক আছে। একজন নিরপেক্ষ মানুষ (যদি অমুসলিম হয়) সেও কনফিউসড হয়ে যাবে কোনটা সঠিক। অথচ আমরা কুরআন দিয়ে সঠিকটা যাচাই করতে পারি।

 

কুরআন আমাদের জন্য এন্সারপেপারের মত। গণিত বইয়ের শেষ পৃষ্ঠায় প্রতিটা অঙ্কের উত্তর দেয়া থাকে। ছাত্ররা নিয়ামানুযায়ী অঙ্ক করে এরপর উত্তর মিলিয়ে দেখে। আল্লাহ আমাদেরকে এন্সারগুলো বলে দিয়েছেন, কিন্তু পুরো অঙ্কটা করার দায়িত্ব আমাদের।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চুরাশি

 

দুই মাজহাবের দুই মত, দুই মাজহাবের সৌন্দর্য। যে যেই মাজহাবের সে সেইটা মানবে। দুই মাজহাবেই যথেষ্ট দলিল আছে।

 

তাই ভাই বাড়াবাড়ি না করি। কেউ যদি হানাফি হয় তাহলে অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া বিয়ে করুক, তার মাজহাব মতে বিয়ে হয়ে যাবে। আবার কেউ সালাফি বা হাম্বলী হলে সে পাত্রীর অভিভাবকের অনুমতি নিয়ে বিয়ে করুক। এভাবে আমরা নিজ নিজ ফিকহ মেনে চলি। অন্য ফিকহের অবস্থানকে সম্মান করি।

 

হানাফি ছেলে সালাফি মেয়েরে ভাগায়া বিয়ে না করলেই হয়!

 

 

 

 

 

 

 

পচাশি

 

হিন্দু ধর্মের অপচয়নামা।

 

এই ধর্মে যে পরিমাণ অপচয় হয় আমার অবাক লাগে। এদের পূজার পিছনে কত ফাও খরচ হয়। কত দুধ নষ্ট করে। এদের মৃতকে পোড়াতেও কাঠ নষ্ট করে, পরিবেশ নষ্ট করে। এই বিষয়ে ইনশাআল্লাহ বিস্তারিত লেখার ইচ্ছা। লেখার শিরোনাম হবে হিন্দু ধর্মের অপচয়নামা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ছিয়াশি

 

ছোট বাচ্চাদের পিক দেখলে কিংবা সরাসরি দেখলে মাশাআল্লাহ বলুন। নজর লাগা খুব ভয়ঙ্কর।

 

 

 

 

 

 

 

 

সাতাশি

 

যেভাবে আমরা নিজেদের অবস্থান থেকে দীনী কাজ করতে পারি- (এক ছোটভাইকে আমার পরামর্শ)

 

১- দ্বীন মানার চারটা ধাপ আছে। ইলম, আমল, দাওয়াত এবং জিহাদ। দ্বীনের খেদমত বলতে এই ৩ টা, ইলম, দাওয়াত আর জিহাদ। আমল তো ব্যক্তিগত বিষয়।  আমরা যেই বিষয়ে দক্ষ সেই বিষয়ে ইসলামের জন্য কাজ করব। প্রথমে ইলম অর্জন। এরপর আমল, এরপর দাওয়াত। ইলম অর্জন বলতে ইসলামের বেসিক জানলেই হবে।

 

২- দাওয়াতি কাজ মুসলমানদের কর্তব্য। আমরা যেই বিষয়ে দক্ষ সেই বিষয়ে ইসলামের জন্য কাজ করব। ধর, তুমি ভালো লিখতে জানো, তুমি লেখালেখির মাধ্যমে দাওয়াতি কাজ করবা। ভালো কণ্ঠ হলে বক্তৃতা কিংবা নাশীদ গাওয়ার মাধ্যমে, কবিতা লিখতে জানলে ইসলামের জন্য কবিতা লিখে ইত্যাদি।

 

৩- এমনকি আমাদের পেশাকেও দ্বীনের সাথে সংশ্লিষ্ট করতে পারি। ব্যবসায়ী হলে ব্যবসাকে ইসলামাইজেশন করতে পারো। সরোবর একটা উৎকৃষ্ট উদাহরণ। (সরোবর প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে না জানলে জিজ্ঞেস কইর)

হ্যাকিং পারলে মিডিয়া জিহাদে অংশ নিতে পারো। তুমি ধনী হলে ইসলামের পথে ডোনেট করতে পারো। এরকম অনেক ভাবে পেশার ইসলামাইজেশন করা যায়। আমি খুব তাড়াহুড়ার মধ্যে লিখতেছি। গুছায় লিখতে পারতেছি না। একটু কষ্ট হলেও বুঝে নিও।

 

৪- তাবলীগের সাথে যুক্ত থাকার চেষ্টা কইর। প্রতিদিন মসজিদে তালিম হয়। বসার চেষ্টা কইর। পারলে মাঝেমধ্যে গাশ্তে যাইয়ো। তাবলীগ ছাড়া সরাসরি দাওয়াতি কাজ করার মত কেউ নাই। তুমি ওইখান থেকে দাওয়াত শিখতে পারবা।

 

৫- শিবিরের ভাইদের সাথে পরিচিত হইতে পারলে ভালো। এলাকায় আওয়ামীলীগ থাকলে তারা যেন না জানে ব্যাপারটা।

 

৬- ইসলামী নানা দল মত আছে। কখনো কোনো দলে যোগ দিবা না। এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা। কোনো দলে যোগ দিলেও সেই দলকে একমাত্র হক মনে করবা না। সব দলের সাথে মিশবা। সবাইকে দীনী ভাই ভাব্বা। একদলে যোগ দিয়ে বাকি দলগুলোর বিরোধী হবা না।

 

৭- দাওয়াতের অনেক পথ ও পন্থা আছে। সবগুলাতে ট্রাই মারবা। যেটা বেশি ফলপ্রসূ হয় সেটা তো করবাই, কিন্তু অন্যান্য পন্থাগুলাও ছেড়ে দিবা না। আমি ফেসবুক চালাই মূলত দাওয়াতি কাজ করার জন্য। অনলাইন দাওয়াত হইতেছে এই জামানার সবচেয়ে ফলপ্রসূ মাধ্যম। বাস্তবে এতো মানুষের কাছে পৌঁছা সম্ভব না যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সম্ভব। তাই এটাকে কাজে লাগাবা।

 

৮- আমি বলব আরবিটা শেখার চেষ্টা কইর। ইংরেজি তো শেখা হবেই, সেটার স্কিল বাড়াইয়ো। আর আরবিটারে গুরুত্বের সাথে শিইখো। ইংরেজি পারলে তোমার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে দাওয়াতের পথ খুলে যাবে। আর আরবি পারলে বিশাল জ্ঞানের দ্বার উন্মুক্ত হবে। আরবি না জানলে পৃথিবীর ৫০ ভাগ জ্ঞান অজানা থেকে যাবে, আমি মনে করি।

 

৯- লেখালেখির চর্চা করবা। মাঝেমধ্যে ছোট ছোট লেখা লিখে আমাকে দেখাতে পারো। তোমার প্রাক্টিসে আমি সহযোগিতা করতে পারব। লেখার মাধ্যমেও অনেক বড় কাজ করা যায়।

 

১০- ঘরে বক্তৃতার চর্চা করবা। বক্তব্য দিয়ে মোবাইলে রেকর্ড করে নিজেই শুনবা। এভাবে বক্তৃতার স্কিল বাড়াবা। অনেকজনের সামনে কথা বলার অভ্যাস যদি করা যায় সবচেয়ে ভালো। বন্ধুদের মধ্যে এটা চর্চা করা যায়।

 

১১- আলতু ফালতু কাজে সময় নষ্ট করবা না। মুমিনের জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান। আমাদের অবস্থান থেকে আমরা যেন ১০০ ভাগ কাজ করতে পারি সেই চেষ্টা করব। ১০০ ভাগ তো হবে না, কিন্তু ১০০ ভাগ চেষ্টা করলে ৫০ ভাগ অন্তত হবে, এটাই যথেষ্ট।

 

১২- আলতু ফালতু কাজের মধ্যে আছে টিভি দেখা, সিনেমা নাটক দেখা, গেইম খেলা, ফাও ব্রাউজিং, ফাও আড্ডাবাজী ইত্যাদি। ৩ কাজে লেগে থাকো, এই ৩ কাজ বাদে সব কাজ অপচয়। ইলম অর্জন বা স্কিল ডেভেলপ করতে, অর্থ উপার্জন, সাওয়াব অর্জন।

 

১৩- টাকা অপচয় থেকে বেঁচে থাকো। টাকা জমানোর চেষ্টা কর। আমি তো অনেক পরে এর মর্ম বুঝেছি, তোমাদের বয়সে যদি বুঝতাম আমার অনেক উপকার হত। ফাও খরচ করে কত টাকা নষ্ট করছি, আফসোস হয়। নিজের চাহিদা সীমিত করতে পারলে এটা তোমার সারা জীবনের জন্য কাজে লাগবে। মানুষ কোটি কোটি টাকা কেন ইনকাম করতে চায়? কারণ যেন খরচ বেশি করতে পারে। তুমি যদি কম খরচে চলা শিখতে পারো, তবে তুমি যত গরীব হও না কেন, তুমি হবা পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ, কারণ তোমার চাহিদা কম থাকায় অল্পতেই সুখে থাকবা।

 

১৪- টাকা জমাবা কিন্তু জমায় কি করবা? কিছু টাকা রাখবা জরুরী কাজের জন্য (অসুখ বিসুখ ইত্যাদি), কিছু টাকা দান করতে চাইলে করবা। আর বড় টাকাটা পরিচিত আত্মীয় ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় ইনভেস্ট করবা। ছোটবেলা থেকে ব্যবসা বুঝার চেষ্টা করলে সামনে অনেক কাজে লাগবে। যেই পেশাতেই যাও, ব্যবসার চেয়ে বরকতময় পেশা আর নাই।

 

১৫- শরীরের যত্ন নিবা। নিজে ভালো না থাকলে দ্বীনের কাজ করা যাবে না। চাপ নিবা না। টেনশন একদম ভুলে যাবা। টেনশন ফ্রি থাকলে সবচেয়ে সুখি মানুষ হইতে পারবা। যদিও এগুলা কাট্টাখোট্টা উপদেশ মনে হইতেছে, কিন্তু এগুলা মানতে পারলে জীবনটা অনেক সুখের হবে।

 

১৬- ব্যায়াম/জিম করবা। পারলে মার্শাল আর্ট শিখে নিবা। সাঁতার শিখবা। ড্রাইভিংটা শিখবা। কারণ একদিন এগুলা কাজে লাগবেই। নিজেরে প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করতে হবে।

 

১৭- যদি সামর্থ্য থাকে ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিয়ে বিয়ে করে ফেইলো। যত তাড়াতাড়ি বিয়ে করবা, তত তাড়াতাড়ি ম্যাচিউর হবা। মনে হইতে পারে আমি কুবুদ্ধি দিছি। কিন্তু এইটাই সত্য যে একটু কষ্ট হইলেও বিয়ে যদি কম বয়সে না করা যায় তবে পুরা যৌবন নষ্ট হবে। অবশ্য সামর্থ্য না থাকলে আগে উপার্জন এরপর বিয়ে কইর।

 

১৮- প্রতিটা সময়কে কাজে লাগানোর চেষ্টা কর। কম প্রয়োজনীয় কাজ বাদ দিয়ে বেশি প্রয়োজনীয় কাজে মনোযোগ দেও। ভারসাম্য রাখো সব কাজে।

 

১৯- ফ্রিল্যান্সিংটা পারলে শিখে রাইখ। এখন তোমাদের হাতে অনেক সময়। এই সময়গুলা এখল স্কিল ডেভেলপে কাজে লাগাইলে ভবিষ্যৎ-এ কাজে লাগবে।

 

আরও অনেক কিছু বলার ছিল, অন্যদিন বলব।

 

 

 

 

 

 

আটাশি

 

সরকার থেকে হিজড়া (আসল হিজড়া)দের ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে। আর রাস্তাঘাটে চাঁদাবাজি নিষিদ্ধ করতে হবে। আর যদি এদের কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে হিজরা-বান্ধব প্রতিষ্ঠানে কাজ দেয়া যায় তাহলেও ভালো। এগুলোই আপাতত হিজরাদের অত্যাচার থেকে মুক্তির পথ।

 

 

 

 

 

 

ঊননব্বই

 

দাড়ি রাখার একটা সুবিধা হইতেছে কোনো ফাসিক নারী আপনাকে বিয়ে করতে চাইবে না। আলহামদুলিল্লাহ।

 

 

 

 

 

 

 

 

নব্বই

 

হুজুর হয়ের গল্পগুলা অনেকটা সাহিত্য টাইপের, কার্টুন/এনিমেশন বানাইলে ভালো ভাবে ফুটায় তুলা সম্ভব হবে না।

 

 

 

 

 

 

 

একানব্বই

 

পশ্চিমে এটা একটা সমস্যা নানা ক্যাটাগরির মুসলিম থাকে। কত ভয়ঙ্কর ভয়ঙ্কর আকিদার মুসলিম যে আছে। এলজিবিটি মসজিদ, এলজিবিটি ইমাম এসবও আছে। একটা ইসলামী রাষ্ট্র বা খিলাফাহ বা শরীয়াহ শাসনের গুরুত্ব পশ্চিমের মুসলমানদের দিকে তাকালে বোঝা যায়। কোনো সীমা নেই, যে যার ইচ্ছামত ধর্মরে বিকৃত করতেছে। যদি ফাসিক খলিফা এবং কিংবা আমীরও থাকতো, এগুলো হতে পারতো না। খলীফাদের যুগে নানান রকম বাতিল মতবাদ আর চিন্তার উৎপত্তি হয়েছিল, তারা সেগুলো না দমন করলে আজকে আহলে সুন্নাত বা সুন্নিরাই সবচেয়ে সংখ্যালঘু থাকতাম।

 

 

 

 

 

 

 

বিরানব্বই

 

আমাদের উপমহাদেশের আলেমদের এটা অনেক বড় অবদান যে দাড়ি রাখার চর্চা শিখাইছে। একটা সাধারণ তালেবুল ইলমও যত্নের সাথে এইটা পালন করে। আযহারের বড় বড় উলামারা পর্যন্ত দাড়ি রাখে না, রাখলেও একদম ছোট করে রাখে। মিশর, তুরস্ক এসব অঞ্চলে কামাল-জামালরা থাকায় হয়তো এর চর্চা বন্ধ হয়ে গেছে।

 

 

 

 

 

 

তিরানব্বই

 

আমাদের কাছে হেতার (হেজবুত তাওহীদ) নেতা সেলিমের কথাবার্তা বিনোদন মনে হলেও কত সরল সিধা মহিলা পুরুষকে এরা বিভ্রান্ত করছে !

 

 

 

 

 

 

 

চুরানব্বই

 

এক ওয়াজহাতি ভাইকে দেখলাম তিনি ইজহারুল ইসলামের সাদপন্থীদের সাথে দহরম মহরমের জন্য তার ছেলে হারুন ইজহারের ব্যাপারে নানা রকম কথা বলে বেড়াচ্ছে। হারুন ইজহার সাহেব আমাদের একজন রত্নতুল্য আলেম। তাকে সামান্য তাবলীগী ইস্যু নিয়ে বিতর্কে ফেলে অগ্রহণযোগ্য করার প্রয়াসকে কোনোভাবেই সাপোর্ট করা যায় না। তাই বাধ্য হয়ে তার পক্ষ নিয়ে উত্তর দিলাম-

 

আব্বার দোষ ছেলের ঘাড়ে চাপাইয়েন না। (এইটা আসলে কতটা দোষের সেইটাও একটা প্রশ্ন)। উনি নিজেই ইশারা ইঙ্গিতে বলছেন, উনার বাবা মানসিকভাবে অসুস্থ। কেউ কি তার বাপকে ফেলে দিতে পারে? আর হারুন ইজহার সাহেব এবং তার বাবার পথ আলাদা। আপনি যেমন তাবলীগকেন্দ্রিক চিন্তা করছেন, হারুন ইজহার সাহেব সেইদিক থেকে চিন্তা করছেন না। হারুন ইজহারকে নিয়মিত পড়লে জানার কথা উনি কোনদিকের মানুষ।

 

 

 

 

 

 

 

 

পঁচানব্বই

 

সেলিম বিয়ে করছিলেন চেঙ্গিস খানের বংশে। তাছাড়া উসমানীরা তো মধ্য এশিয়া থেকে আসছে, এই কারণে তাদের চেহারায় হালকা হালকা মঙ্গোলীয় ভাব লক্ষ্য করা যায়।

 

 

 

 

 

 

 

ছিয়ানব্বই

 

উসমানীরা যে খুব ভালো মুসলমান ছিল তা বলা যায় না। আমাদের দেশীয় মুসলমানদের মতোই। হাজার আকাম কুকাম করলেও ধর্মটাকে ভালোবাসত। তাদের পাপের ফিরিস্তি তো অনেক বড়। সেলিমের যত ছবি দেখছি সবগুলাতে মোচ দেখছি, একটাতে দাড়ি দেখছি। দাড়ি মনে হয় শেষ জীবনে রাখছিলেন। তৎকালীন সময়ে উসমানীদের মধ্যে মোচ রাখার ফ্যাশন ছিল মনে হয়।

           

 

 

 

 

 

 

সাতানব্বই

 

পার্থক্য।

 

বাশার আল আসাদ সিভিলিয়ান হত্যা করেছে ১ লক্ষ ৯৯ হাজার ৪৫৫ জন। বাগদাদী মেরেছে মোটে ৫ হাজার ৪ জন। আসাদ শিশু মেরেছে ২২ হাজার ৭৩৭ জন। বাগদাদীর হাতে মরেছে ৯৫২ জন। আসাদ মহিলা মেরেছে ১১ হাজার ৮৫৭ জন। আর বাগদাদী মেরেছে ৫৮৪ জন।

 

তবু বাশার আল আসাদকে সভ্য(!) পৃথিবী স্বীকৃতি দেয়, আর বাগদাদীকে দানব রুপে চেনানো হয়।

 

 

 

 

 

 

 

আটানব্বই

 

ইসরাইলী ট্যাঙ্কের বিপরীতে ফিলিস্তিনীদের পাথর ছুড়তে দেখলে খুব ভালো লাগে। একটা জোশ আসে। (মজলুম হওয়ার মধ্যে একটা আনন্দ আছে না!) সেই ফিলিস্তিনীদের হাতে অস্ত্র উঠে আসলে অনেকে বলবে, "ইসলামের মান সম্মান ডুবায় দিলো রে!"

 

 

 

 

 

 

নিরানব্বই

 

অনেক ভাই ইস্যুর পর ইস্যু কেন আসে তা নিয়ে বিরক্ত। ইস্যু তো ভালো। পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকেই ইস্যু চলে আসতেছে। সব দেশেই তো সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনা হয়। এটাকে খারাপ মনে হয় না। ভালোই।

           

 

 

 

 

 

একশ

 

দেশের বাইরে কাউরে আউলা ঝাউলা কথা বলতে শুনলে বুঝবেন তিনি বাংলাদেশের কোনো মন্ত্রীর শিষ্যত্ব নিছেন। নয়তো এমন আজগুবি কথাবার্তা অন্য কেউ শিক্ষা দিতে পারবে না আমাদের মন্ত্রীরা ছাড়া।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এক

 

'ফাসিক' শব্দের ব্যবহার বাড়ান, 'কাফির' এর উপর চাপ কমান

 

আমাদের মুসলিম ভাইরা একে অপরকে যেভাবে কাফির আর কাফিরের দালাল বলে বক্তৃতার ময়দান, ফেসবুক ময়দান গরম করেন, যেভাবে পানির মত ফতোয়া বিলি করেন, সবাই যদি সঠিক বলে থাকেন তাহলে বলতে হয় পৃথিবীতে কোনো মুসলিম নাই। কারণ একে অপরের ফতোয়ায় সবাই কাফের।

 

যে ফতোয়া ছিল সবচেয়ে স্পর্শকাতর, সেটাই হয়ে গেছে চায়ের দোকানে আলোচনার বিষয়। অনেক ওয়ায়েজ যাকে তাকে ইহুদী খ্রিস্টানের দালাল বানাচ্ছেন, অথচ এটা এতো সহজে বলা উচিৎ ছিল না। এটা খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। আর আব্বাসীর মত লোকেরা তো হরহামেশা কাফের হওয়ার ফতোয়া দিয়ে বেড়াচ্ছে। এটা খুব ভয়ঙ্কর ব্যাপার। পরোক্ষ তাকফীর তো আরও অনেক বেশি। আহলে হাদীসরা যেখানে বিদাতী ট্যাগ দিয়ে থামতে পারতো সেখানে তারা মুশরিক হওয়ার ফতোয়াও বোনাসে ঝেড়ে দেয়। জাকির নায়েককে যেখানে সর্বোচ্চ মোডারেট বলা যেত সেখানে কিছু বক্তা ইহুদী খ্রিস্টানের দালাল বানিয়ে দেয়। বড় অদ্ভুত ব্যাপার এরকম অনেক মুসলিমই ইহুদী খ্রিস্টানের দালাল না হয়েও প্রতিপক্ষের কারণে দালাল হয়ে গেছে।

 

এইসব প্রত্যক্ষ আর পরোক্ষ তাকফীর বন্ধ করতে হবে। আর কারো যদি জিহ্বা বেশি চুলকায় তাকে পরামর্শ দিব ফাসিক শব্দের ব্যবহার বাড়াতে। ফাসেক বলতে কাফের বোঝায় না, তবে এটাই প্রতিপক্ষের জন্য সবচেয়ে ইনসাফপূর্ণ ট্যাগ। কারণ প্রতিটা মানুষই পাপী, প্রতিটা মানুষই ফাসিক, আল্লাহ ক্ষমা না করলে।

 

সেই হিসেবে ফাসেক শব্দটাই সবচেয়ে কম ভারী এবং উপযুক্ত। কাফের কিংবা কাফেরের দালাল বলার আগে দশবার ভাবুন, কারণ রাসুল সাঃ বলেছেন, যখন কেউ তার মুসলিম ভাইকে কাফের বলে, তখন তাদের উভয়ের মধ্যে একজনের উপর তা বর্তায়, যা বলেছে তা যদি সঠিক হয়, তাহলে তো ভাল। নচেৎ (যে বলেছে) তার উপর ঐ কথা ফিরে যায় (অর্থাৎ সে কাফের হয়)। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ৬০)

 

সুতরাং সাবধান ভাইয়েরা। বেশি কে বেশি ফাসেক শব্দ ব্যবহার করুন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

দুই

 

আপনার প্রতিটি পোস্ট, প্রতিটি লাইক, কমেন্ট শেয়ার এক একটি দাওয়াত। এগুলোকে যতই তুচ্ছ মনে করি, এগুলো আমাদের বাহ্যিক ঈমান-আমলকে উপস্থাপন করে। আমরা দাওয়াতি কাজে একটা পোস্ট শেয়ার দিতে যে পরিমাণ কৃপণতা করি, এটাকেই হয়তো আল্লাহর প্রতি অকৃতজ্ঞতা বলে। অথচ সারাদিন ট্রল পোস্ট শেয়ার করে বেড়াচ্ছি। আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ বান্দা সারাদিন ট্রল করে বেড়ায় না।

 

ট্রল মিমে ভরে গেছে সোশ্যাল মিডিয়া, এটাই যেন জাতে উঠার একটা বিকল্পহীন মাধ্যম। হাহার রিয়েক্টের ছড়াছড়ি সর্বদা। একটা লোক তার আবেগ দিয়ে কিছু কথা বলেছে, সেটা নিয়েও হাসাহাসি। ইসলামের ব্যাপারে কেউ গালাগালি করেছে, সেখানেও হাসাহাসি, এসব কি ভাই? ইসলামের ব্যাপারে উল্টা পালটা কথায় হাহা রিয়েক্ট কিভাবে দেন? এটা হাসির কিছু? এটা তো রাগের বিষয়, এর মানে এই না এংরি রিয়েক্ট দিবেন। বরং আপনার কোনো কিছুই দেয়া উচিৎ না, কারণ যেটাই দিবেন সেটাই আপনার বন্ধুদের টাইমলাইনে চলে যাবে। এজন্যই প্রতিটা লাইক আর রিয়েক্টও এক প্রকার দাওয়াত।

 

বেশি বেশি হাসাহাসির কারণে অন্তর মরে যায়। সব কিছু নিয়ে হাসাহাসি আজকের প্রজন্মের জন্য অভিশাপ হয়ে গেছে। আল্লাহ এই জাতিকে হাসাহাসি থেকে হেফাজত কর। একটু কাঁদার মত ভাবনা দাও, একটু ভাবার মত অন্তর দাও।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তিন

 

এক ভাই অভিযোগ করলেন আলেম সমাজ হেজবুত তওহিদ নিয়ে সচেতন না। আসলে আলেম সমাজের ভুল ধরলে অনেক ধরা যাবে। কিন্তু সেদিকে যাব না। তাদের এ ব্যাপারে ওজর আছে বলে মনে করি। আমিও আগে এই অভিযোগটা করেছি, পরে ভেবে দেখলাম আসলে এভাবে দোষারোপ করে লাভ নাই।

 

সত্যি বলতে এখন পর্যন্ত আলেম সমাজের অর্ধেকের বেশি হেজবুতি সম্পর্কে ভালো করে জানে না। আর তাদের অনেক কাজ আছে। ইলম অর্জন, দাওয়াত, পড়ানো ইত্যাদি। কেউ কেউ রাজনৈতিক আন্দোলনে যুক্ত থাকে।

 

কথায় আছে সর্ব অঙ্গে ব্যাথা, ওষুধ দেব কথা। সবদিক থেকে ইসলামের উপর আক্রমণ আসছে। একদিকে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, নাস্তিক, সেকুলারদের আক্রমণ অন্যদিকে কাদিয়ানি, হেজবুতি, শিয়া, আহলে কুরআন আর মোডারেটদের আক্রমণ। যেন ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সকল ধর্ম মতবাদ একমত হয়েছে। এজন্যই দেখা যায় হেজবুতিরা প্রয়োজনে কাদিয়ানি, বিধর্মী সেকুলারদেরকেও সাপোর্ট দেয়। অর্থাৎ ইসলাম সর্ব যুগের মতই একা এবং একাই যথেষ্ট হবে। আসলে আলেম সমাজ এখনো সচেতন হয় নাই। আমরা যেহেতু সচেতন আমাদেরকেই কাজ করতে হবে।

 

আলেম সমাজকে সেনাপতি হতে হবে , এটাকে আমি ঠিক মনে করি না। বরং যে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা রাখে সেই সেনাপতি হতে পারে। আপনি যদি পারেন আপনি হতে পারবেন। আলেম সমাজের উপর অতি নির্ভরতা উচিৎ নয়। এরকম অতি নির্ভরতার কারণে মানুষ শুধু তাদের উপর দোষারোপ করে, তারা কেন দুনিয়া শাসন করে না, তারা কেন এটা করে না, ওটা করে না ইত্যাদি। সালাহুদ্দিন আইয়ুবি কিংবা বাইবার্স কেউই আলেম ছিলেন না, ওরা যদি ভেবে বসে থাকতেন জেরুজালেম জয় করার দায়িত্ব আলেমদের, আমরা বসে থাকবো তবে কোনোদিনই জেরুজালেম জয় হত না। এরকম বলে লাভ নাই আসলে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চার

 

ইমরান খানকে সাপোর্ট এবং বাংলাদেশের তৌহিদি জনতা।

 

ইমরান খান সাবেক ক্রিকেটার এবং বর্তমানে একজন রাজনীতিবিদ। রাজনীতি হল গেইম। এটা যেমন হাসিনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, এরদোয়ান কিংবা ইমরানের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। গণতান্ত্রিক রাজনীতি শুধু গেইম না বরং এটা একটা পরাধীনতা। ইসলামে যেমন একজন মুসলিম শাসক অর্থাৎ খলীফা কিংবা রাজা, বাদশাহ, সুলতানকে স্বাধীন থাকতে হয় আর স্বাধীন না হলেও কোনো স্বাধীন ইসলামী রাষ্ট্রের আন্ডারে থাকতে হয়। অথচ বর্তমানে জাতিসংঘের সব দেশ হচ্ছে কুফফারদের জাতিসংঘের সদস্য। মূলত পৃথিবীর কোনো দেশ স্বাধীন নয়, তাদেরকে কুফফার নেতৃত্ব অর্থাৎ জাতিসংঘ মেনে চলতে হয়, তারা কুফফার ও তগুতের কথার বাইরে এক পা চলতে পারে না। এই গেল এক বিষয় যে পৃথিবীর কোনো দেশই স্বাধীন না। সেটা হোক তুরস্ক, পাকিস্তান কিংবা বাংলাদেশ।

 

দ্বিতীয় বিষয় হল রাজনীতি পুরাই গেইম। এইখানে উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য কখনো ধর্মকে, কখনো নাস্তিকতাকে আবার কখনো অন্য কিছু ব্যবহার করা হয়। রাজনীতির সবচেয়ে ভালো খেলোয়াড় এখানে টিকে থাকে। মুরসি সৎ মানুষ ছিলেন, তিনি ভালো খেলোয়াড় না হওয়ায় টিকতে পারেন নি। আবার এরদোয়ান কিংবা হাসিনা এখনো টিকে আছে। এই গেইমে যেটা হয়, এখানে ব্যক্তিগত ভাবে ব্যক্তি যে মতবাদ লালন করুক, স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে তাদের ভিন্ন ভেক ধরতে হয়। যেমন আমাদের হাসিনা হচ্ছেন সেকুলার মুসলিম, অর্থাৎ তার মতবাদ হচ্ছে উগ্র সেকুলারও না (আমাদের ষাঁড় কিংবা মুরগির মত), আবার ভালো মুসলিমও না। এইটা হচ্ছে তার মতাদর্শ। কিন্তু রাজনীতির জন্য সে যেমন নাস্তিকদের সাপোর্ট দিছে, কখনো আবার ইসলামপন্থীদের পক্ষ নিছে, সে নিজেই হেফাজতের মানুষ মারছে, নিজেই আবার তাদের সনদ দিয়ে তাদের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করছে, সে পূজার সময় হিন্দুদের দেবীর গুণ গায়, আবার ভোটের সময় হিজাব, তসবী নিয়ে ব্যস্ত হয়, এভাবে রাজনীতিবিদদের এক অঙ্গে বহু রুপ দেখা যায়, কখনো তাহাজ্জুদগুজার আবার কখনো বানায় বেশ্যার বাজার।

 

সুতরাং আমাদের বোঝা প্রয়োজন রাজনীতিবিদদের আসল রুপটা কি। এই আসল রুপ না জানলে ধোঁকা খেতেই হবে বারবার। একসময় যে নাস্তিকরা শেখ হাসিনার গুণগান গাইত তারাই আজ তাকে গালাগাল দেয়। আমাদের দেশের আরেকটা উদাহরণ দেই। বিএনপির ফখরুল কিন্তু পাড় সেকুলার। নাস্তিক কিনা শিউর না। কিন্তু সে বিএনপির রাজনীতির কারণে সবসময় একটা মুসলিমপন্থী ভাবমূর্তি রক্ষা করে আসছে। কখনো ইসলাম বা মুসলমান নিয়ে উল্টা পালটা কিছু বলে নাই। কিন্তু গত নির্বাচনে দেখা গেল তার আসল রুপ বেরিয়ে গেছে, সে বল্ল তারা শরীয়াহ শাসন চায় না। এটা ঠিক বিএনপি শরীয়াহ শাসন চায় না, কিন্তু এভাবে মিডিয়ার সামনে সরাসরি বলাটায় তার অন্য উদ্দেশ্যে ছিল। তাকে বোকা মনে হতে পারে যে এভাবে সরাসরি বলে এদেশের তৌহিদি জনতার গালি খাইল, সে এই বিষয়টা এভাবে না বল্লেও পারতো। আসলে তার উদ্দেশ্য ছিল বাইরের সুদৃষ্টি কামনা। জামাতের সাথে বহু বছর একসঙ্গে থাকার তাদের গায়ে যে ইসলামী গন্ধ ছিল সেটা দূর করা তার উদ্দেশ্য ছিল,তাছারা তারা তখন ঐক্যফ্রন্টের সাথে ছিল, আর ঐক্যফ্রন্ট হল পাড় সেকুলার। হঠাৎ যদি আবার ফখরুল ইসলাম আর মুসলমান নিয়ে আবেগী বক্তব্য দেয় অবাক হওয়ার কিছু নাই।

 

এভাবেই রাজনীতিবিদরা ভোল পাল্টায়, জনগণকে বোকা বানায়, আর নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে। সুতরাং আমাদের বোঝা উচিৎ রাজনীতিবিদদের আসল রুপ কোনটা। জামাত নেতা যখন শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দেয় কিংবা স্বাধীনতা দিবসে র‍্যালী বের করে কিংবা হিন্দুদের পূজায় গিয়ে অংশ নেয় এটা আসলে তাদের একটা কৌশল। এটাকেই বলে রাজনীতি। এরদোয়ানকেও এমন করতে হয়, তাকে গির্জা উদ্বোধনে দাওয়াত দেয়া হয়। সুতরাং কারো বাহ্যিক অবস্থা দেখে সিদ্ধান্ত নিলে তার সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান লাভ করা সম্ভব না। জামাত কিংবা এরদোয়ান, কেউই মন থেকে এসব শরীয়াহ-বিরুদ্ধ কাজ করে না, এটা তাদের আদর্শের বিপরীত, তবু নিজেদের টিকিয়ে রাখার জন্য করতে হয়, এই অভিনয়টা তাদের টিকে থাকার জন্য জরুরী।

 

ইমরানের আসল অবস্থা কি? তার মতাদর্শ কি? আমি মনে করি সে হচ্ছে সেকুলার। আমাদের হাসিনার মত ঠিক, উগ্র না। আবার নিজেকে মুসলমানও দাবি করে। যাদের মতাদর্শ এইরুপ তারা রাজনীতির ময়দানে বেশি সফলতা পায়। কারণ দরকারে তারা তাদের ভোল পাল্টায়, আর এই ভোল পাল্টানোতে তাদের মনে কষ্ট হয় না, কারণ তাদের কোনো নির্দিষ্ট আদর্শ নেই। কিন্তু একজন আদর্শ মুসলিমের জন্য পূজা কিংবা শহীদ মিনারে ফুল দেয়া যত কষ্টকর, সেকুলারের জন্য নামাজ পড়ার অভিনয় করা যত কষ্টকর, সেই কষ্ট ইমরান বা হাসিনার হয় না। তারা স্বাচ্ছন্দ্যে এগুলো করতে পারে, কারণ তারা রাজনৈতিক বেশ্যা।

 

আপনি বিশ্বাস করুন, ইমরান আগে যেমন অনেক ইসলাম ও মুসলিমবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সামনেও নিবে। সুতরাং এখন তাকে মুসলিমদের কান্ডারী মনে করার কারণ নাই।

 

তৃতীয় পয়েন্ট হচ্ছে জাতিসংঘে এরকম হুংকারের বাস্তবতা যেই লাউ সেই কদু। জাতিসংঘ চায় না ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হোক। পাকিস্তানও চায় না। আর চাইলে এভাবে জাতিসংঘে কুফফার মোড়লদের কাছে ফিয়ে নালিশ করতো না। পৃথিবীর কোনো যুদ্ধই জাতিসংঘ থেকে অনুমতি নিয়ে করা হয় নি। পাকিস্তান যদি কাশ্মীরের জন্য ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেও সেটা হবে নিজের জন্য। কাশ্মীর সে নিজে চায়। ধরুন যুদ্ধ করল, কাশ্মীর নিজের দখলে আনল, কিন্তু সে কি শরীয়াহ কায়েম করবে? তখন কি হবে জানেন? যারা কাশ্মীরে শরীয়াহ কায়েমের জন্য যুদ্ধ করছে তাদের সাথে পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু করবে। অর্থাৎ মুজাহিদদের বিরুদ্ধে। এটাই বাস্তবতা আপনি বিশ্বাস করুন বা না করুন। কাশ্মীরের মুজাহিদরা আন্তর্জাতিক মুজাহিদ/সন্ত্রাসীদের সাথে সম্পর্কযুক্ত, কিছুদিন আগে জাকির মুসার শাহাদাত হল, সেও কায়েদার বায়াতে ছিল। আর তার মৃত্যুর পর এবং বর্তমানে ভারতের নিপীড়নে মুজাহিদ দল বড় হচ্ছে। আমরা বরং তাদের দিকেই তাকিয়ে থাকি। কুফফারদের গোলামের দিকে না তাকিয়ে আল্লাহর সৈনিকদের দিকে তাকানো উচিৎ।

 

আসলে পাকিস্তানের কাশ্মীর বিজয়, আর বাংলাদেশের আরাকান বিজয় একই রকম বিষয়। কাশ্মীরি বা রোহিঙ্গারা তাদের ভূমিতে একটু সুখে থাকবে এর বেশি কিছু না, বরং একই অবস্থা চলবে। শরীয়াহ কায়েম হবে না। বাংলাদেশে যেমন উন্নয়নের বন্যা বয়, একই উন্নয়ন তখন আরাকানে বইবে, এতোটুকুই। এটাকে প্রকৃত স্বাধীনতা বা মুক্তি বলে না, এটাকে বলে জাতিসংঘের এক দাস থেকে অন্য দাসের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর।

 

আমি মনে করি পাকিস্তান বা জাতিসংঘ কাশ্মীরের জন্য কিছুই করতে পারবে না। পাকিস্তান আগে কয়েকবার ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। কোনোবারই ভালো ফল পায় নি, তাই তারা আর যুদ্ধে জড়াবে না, অন্তত পাকিস্তান চাইবে না। আপাতত তাদের দ্বন্দ্ব গরম গরম হুংকার ছাড়ার মধ্যেই আবদ্ধ থাকবে। হুংকার হচ্ছে এই শতাব্দীর রাজনীতির সর্বোচ্চ পর্যায়। ইরান আম্রিকা, ইসরাইলের বিরুদ্ধে হুংকার ছাড়ে, কিন্তু কখনো যুদ্ধ করে না, উত্তর কোরিয়া আম্রিকার বিরুদ্ধে হুংকার ছাড়ে, যুদ্ধ করবে করবে করেও করে না, তেমনি পাকিস্তানও ভারতের বিরুদ্ধে ফাও হুংকার ছাড়বে। এতে তেমন লাভ নাই।

 

অনেকে বলে ইমরানের এই বক্তব্যের প্রশংসা করলে সমস্যা কি? আমি মনে করি এটাও সমস্যা। কারণ ইমরানের এই বক্তব্য হচ্ছে রাজনীতির খেলা। এটাকে প্রশংসা করে ধোঁকা খাওয়ার মানে হয় না। ইমরানের এই নিখুত অভিনয়ের পিছনে তার মতাদর্শ কাজ করেছে। কারণ সে নিজেকে মুসলিম মনে করে, ফলে তার আবেগকে সে কাজে লাগাতে পেরেছে। এরকম আবেগ একজন উগ্র সেকুলার অভিনয় করেও আনতে পারবে না। তবে আমি তার হেদায়েত কামনা করি। সে অন্তত বুঝুক তার এই ধোঁকাপূর্ণ বক্তব্য শুনেই মুসলিম উম্মাহর মনে কিভাবে আশার সঞ্চার হয়েছে। সাদ্দামের মত সত্যিকারের স্বাধীনচেতা মনোভাব তার মধ্যে আসুক। অবশ্য বোকারাই সাদ্দামের পথ ধরে। রাজনীতি বোকাদের জন্য না।

 

আমি চাই না কাশ্মীর পাকিস্তানের আন্ডারে যাক অথবা সেকুলাররা স্বাধীন করুক। সেকুলারদের শাসন থাকার চেয়ে যুদ্ধ করে যাওয়া উত্তম। যে ইমরান তার নিজের দেশে ইসলাম কায়েম করে না তার কাছে কি আশা করা যায়? আল্লাহ আমাদের সুবুদ্ধি দিক।

 

যারা সত্যিকারের ইসলামপন্থী তাদের উচিৎ কোনো রাজনৈতিক বেশ্যা কাম জাতিসংঘের গোলামের কাছে কোনো আশা না করে ইসলামপন্থীদের উপর আশা করা। কাশ্মীরে মুজাহিদরা আছে, ইমরানের এই বক্তব্য যদি এতো অনুবাদ আর বিশ্লেষণ হয় তাহলে কাশ্মীরের মুজাহিদদের বক্তব্যগুলো কেন অনুবাদ হয় না, বিশ্লেষণ হয় না, আলোচনা হয় না? যে হুংকার ছাড়ে তার যদি এত দাম হয়, তাহলে যারা যুদ্ধ করছে তাদের কেন দাম দেয়া হচ্ছে না? নাকি তাদের নাম মুখে নিলে কুফফাররা রাগ করবে, তাদের প্রশংসা করলে নিজের অস্তিত্ব নিয়ে টানাটানি লেগে যাবে? এটাই হচ্ছে প্রকৃত পরাধীনতা। এটাই প্রমাণ করে আমরা মনস্তাত্ত্বিকভাবে পরাধীন, আর এজন্যই আমরা কিছু পরাধীন রাষ্ট্রনায়কের উপর নির্ভর করি, তাদেরকে উম্মাহর মুক্তির অগ্রদূত মনে করি। অথচ তারা নিজেরাও নিজেদের সেটা মনে করে না, সেই সামর্থ্য তাদের নাই। বিশ্বমোড়লদের চোখ রাঙ্গানির সাহস তাদের নাই। তাদের দৌড় হচ্ছে এক তাগুতের বিরুদ্ধে অন্য তাগুতের কাছে গিয়ে নালিশ করা, হাত কচলানো আর ফিরে আসা। যারা কাজের কাজী তারা অস্ত্র নিয়ে মাঠে ময়দানে আছে।

 

আমি এরদোয়ানের উপর বিশ্বাস করতে পারি, কারণ সে মোডারেট ইসলামপন্থী, কিন্তু ইমরান, মাহাথিরদের কখনোই না। তবে যদি কারো হেদায়েত হয় সেটা ভিন্ন কথা। আমি চাই তারা হেদায়েত লাভ করুক। কুফফারদের গোলামি ত্যাগ করুক, আর উম্মাহকে ধোঁকা দেয়া বন্ধ করুক।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পাঁচ

 

দীনী মহলে অনেক রকম প্রান্তিকতা, সমস্যা, ভুলচুক, সংশয় ও ভুল ধারণা রয়েছে। দীনদাররাই মূলত সমাজ পরিবর্তনের কান্ডারী। এই ভুলচুক, সংশয় আর ভুল ধারণা পুরো মুসলিম সমাজকে আগাতে দিচ্ছে না। এটা তো শুধু দীনদার কিংবা আলেম সমাজের অবস্থা। সাধারণ মুসলিম সমাজের অবস্থা তো আরও খারাপ। কিছু হাতে গণা ভুল আর সমস্যা দীনদারদের মধ্যে, কিন্তু সাধারণ জনগণের মধ্যে কত যে ভুল, কত সংশয়, কত সমস্যা, কত ভুল ধারণা তা গুণে কিংবা গবেষণা করে শেষ করা যাবে না। সমাজের ভুলগুলো দূর করার চেষ্টা করে থাকেন আলেম সমাজ ও দীনদাররা। এটা খুব ভালো কাজ। বহু ভুলকে 'ভুল' বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। দীনদাররা এ ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু নিজেদের মধ্যে যে কয়েকটি ভুল রয়েছে সেগুলো ঠিক করার মত কেউ নাই।

 

আমার যতগুলা এই মুহূর্তে স্মরণে আসবে আমি সেগুলো বলব, দীনদারদের মধ্যে যেসব সমস্যা, ভুলচুক বা প্রান্তিকতা আছে।

 

প্রথম যেটা বলব সেটা হচ্ছে, দলান্ধতা এবং মতান্ধতা। কেউ নির্দিষ্ট একটা দলকে দ্বীন বানিয়ে নেয়। এটা খুব বড় সমস্যা। আপনি একটা নির্দিষ্ট দলে থাকেন ভালো কথা, এটাকে দ্বীন কেন বানাচ্ছেন? দ্বীন আপনার দল, সুতরাং আপনি যে মানহাজ, মাজহাব বা সংগঠনে আছেন সেটাকে দল বানানোর কি দরকার? এই সমস্যা দেওবন্দী, বেরেলভি, সালাফি, জামায়াতি, জিহাদী, মোডারেট, তাবলীগ সবার মধ্যেই বিদ্যমান। একটি দলকে উপস্থাপন করে তার অনুসারীরা। আমি তাদের মাজহাব, মানহাজের সমালোচনা করছি না, বরং সেটার অনুসারীদের সমালোচনা করছি। সবার দ্বীন ইসলাম, সবার নিয়াত ভালো, সবার উদ্দেশ্য এক, শুধু কর্মপন্থার ভিতিত্তে এতো দল, এতো মত। সুতরাং সেই কর্মপন্থা মেনে আপনি আপনার কাজ করুন, এই কর্মপন্থাকে দ্বীন বানাচ্ছেন কেন? এরকম দলান্ধতা, মতান্ধতা আমাদের দীনান্ধ, ধর্মান্ধ হওয়ার পথে বাধা দিচ্ছে। আমরা দ্বীনের অন্ধ অনুসারী হওয়ার পরিবর্তে কোনো নির্দিষ্ট দলের বা মতের অন্ধ অনুসারী হয়ে যাচ্ছি।

 

এটা হচ্ছে দীনী সমাজে সবচেয়ে বড় সমস্যা। এর থেকে উত্তরণের উপায় হচ্ছে অন্য মুসলিমদের ব্যাপারে সহনশীল হওয়া। সমালোচনা করারও আদব আছে। আপনি যে মাজহাব বা মানহাজ কিংবা যে মত বা যে শায়খের অনুসারী হন না কেন, নিজেকে যদি একমাত্র সহীহ মনে করে থাকেন, তবু উচিৎ হচ্ছে অন্য মুসলিমদের সাথে সদ্ভাব বজায় রাখা। আহলে হাদিস ও সালাফিরা যে শুধু উগ্র তা নয়, বরং দেওবন্দী, বেরেলভি, জিহাদী, জামায়াতিরাও একই রকম উগ্র। সব দলেই কম বেশি এমন আছে। অবশ্য ভালো লোকও সব দলে আছে।

 

আজকে মুসলমানদের এক দল অন্য দলকে কাফের বলছে। এতোটুকু বিরোধিতা বা সমালোচনা সহ্য করতে পারে না। নিজের দলের ভুলকে ভুল মনে করে না, অথচ অন্য দলের অতি সামান্য বিষয়কেও বড় করে তুলে ধরে সমালোচনা করে। এভাবে একে অন্যে মারামারি কাটাকাটিতে লিপ্ত। একটু সহনশীল হন, একটু উদার হন। আদাবুল মুফরাদ বেশি বেশি পাঠ করেন। এতো আকীদার বই পড়ে কি হবে যদি বান্দার হক নষ্ট করে কিয়ামাতের দিন আটকে যান? এগুলো এতো সহজ বিষয় না যে, অন্যকে মুনাফিক, কাফির যা মন চায় বলে দিলেন, গীবত করলেন, মিথ্যা অপবাদ দিলেন, ভ্রান্ত কিংবা জাহান্নামী বলে দিলেন।

 

দীনী মহলে আরও যে সমস্যা আছে সেটা হচ্ছে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ তাকফীর। এটাকে প্রথম বিষয়ের সাথে সংযুক্ত করা যেতে পারে। কারণ তাকফীর প্রবণতা তৈরি হয় নিজেকে একমাত্র জান্নাতী, একমাত্র সহীহ আর বাকি সবাইকে ভ্রান্ত মনে করা থেকে। তাকফীর যে কত স্পর্শকাতর বিষয় তা অনেকে জানেও না। অথচ হরহামেশা সরাসরি আবার কখনো ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে তাকফীর করা হচ্ছে। তাকফীর করা এতো সস্তা হয়ে গেছে যে কারো মন চাইলেই তাকফীর করে দেয়া হচ্ছে। আহলে হাদিস ও জিহাদীদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি।

 

দীনী মহলে আরও যে সমস্যাগুলো আছে এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে দুনিয়ার বাস্তবতা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না রাখা। মিডিয়ার দ্বারা তো পুরো বিশ্বই প্রভাবিত হয়, এমনকি দীনী মহলেও প্রভাবিত হয় অনেকে। এসব ব্যাপারে জিহাদীরা বাদে কেউই সচেতন না। কত বড় বড় আলেম পর্যন্ত মিডিয়া দ্বারা প্রভাবিত, দ্বীনদ্বার হয়েও যদি কুফফারদের দ্বারা প্রভাবিত হতে হয় তাহলে সমাজ পরিবর্তনের আশা দূরে থাক, নিজেই পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

 

মিডিয়ার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মানুষ মুজাহিদদেরকে সন্ত্রাসী আর প্রকৃত সন্ত্রাসী হারবীদের মানবতার অগ্রদূত মানছে। আর পশ্চিমাদের নির্লজ্জ অনুসরণ তো দীনী সমাজে আছেই। গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ এসবের চর্চা জামায়াত, হানাফী, মোডারেট অনেকের মধ্যেই আছে। শরীয়াহ কায়েমের পক্ষে আর গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে বললেই তারা হাজার যুক্তি এনে দেখাবে। আর একদল তো মনে করে বসেছে গণতন্ত্র, সেকুলারিজম ছাড়া উপায় নাই, মোডারেট এবং জামায়াতীরাই এসব মনে করে থাকে, তাদের বিশ্বাস হয় না যে আল্লাহ চাইলে শরীয়াহ কায়েম সম্ভব। গণতন্ত্র কিংবা পশ্চিমাদের অনুকরণ এসব কিছু লাগে না।

 

মিডিয়ার চেয়ে ক্ষতিকর কিছু নাই।

 

পশ্চিমাদের অনেক কিছুই দীনী মহলে এখনো বর্জন করা হয় নি। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিজ্ঞানান্ধতা। বিজ্ঞান বর্জন করতে বলছি না, তবে বলছি বিজ্ঞানান্ধতা দূর করা জরুরী। বিজ্ঞান ভুল হতে পারে এটা যেন কেউ বিশ্বাস করতে রাজী না। সবাই বিজ্ঞান দিয়ে কুরআন মাপে, ইসলাম মাপে। অথচ আমি মনে করি ইসলাম দিয়ে বিজ্ঞান মাপা উচিৎ। বিজ্ঞানের কোনটা ভুল, কোনটা সঠিক তা ইসলাম দিয়ে সহজেই নির্ণয় করা যায়। কেউ যদি ইসলামে বিশ্বাস করে থাকে সে এতো সহজ ফর্মুলা বাদ দিয়ে কিসের পিছনে ছুটে আমি বুঝি না। রসুল সাঃ সপ্তাহে দুই রোজা রাখতেন এটা জেনেও অনেকে সুন্নাহ পালন করত না, অথচ যখন জানল বিজ্ঞান এটাকে সাপোর্ট করেছে তখন এটার চর্চা শুরু করল। এই হল অবস্থা। বিজ্ঞানান্ধতা কোন পর্যায়ে চলে গিয়েছে!

 

আরও অনেক সমস্যা দীনী সমাজে শিকড় গেড়ে রেখেছে। এখন আরেকটা মনে পড়ল। এটা একটা ভুল ধারণা যে দীনদার হলে নিষ্পাপ হতে হবে। কোনো দীনী ভাই পাপ কাজ করতে পারে, এমনকি প্রকাশ্যেও, এটা শুনে আকাশ থেকে পড়ার কিছু নাই। কেউ পাপ করলেই অচ্ছুৎ হয়ে যায় না। আর তার থেকে দীনী তকমাও খসে পড়ে না। মানুষ মাত্রই পাপ করবে, সে দীনী হোক কিংবা না হোক। দীনী মুসলিমরাও মানুষ, ফেরেস্তা না। কিছুদিন আগেও একটা ভুল ধারণা ছিল কোনো প্রাক্টিসিং মুসলিম সুইসাইড করতে পারে না। এটা আসলেই ভুল ধারণা। তবে এক ভাইয়ের এই ঘটনার পর আশা করা যায় এই ভুল ধারণা ভেঙ্গেছে। কিন্তু সেই ভাই সুইসাইডের পর যেভাবে সবাই হা-হুতাশ করছিল মনে হচ্ছে তাদের ঈমান বুঝি দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। দুর্বল হওয়ারই কথা, কারণ সারা জীবন এই ফালতু কথাটা তারা প্রচার করে এসেছে যে কোনো ভালো মুসলিম আত্মহত্যা করতে পারে না। অথচ পাপ মানুষই করে। ফেরেস্তারা পাপ করতে পারে না।

 

দীনী সমাজে একটা খারাপ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মডেল, নায়িকা বা আল্ট্রা মর্ডান মেয়েদের পতিতা বলা বা এই টাইপ। পতিতা মানে জিনাকারী, আর কাউকে জিনাকারী প্রমাণ করতে সাক্ষী লাগে। আপনি জিনার সাক্ষী উপস্থাপন করতে পারবেন? যদি না পারেন তাহলে কেন পতিতা বলছেন? অবশ্য এটা সবার জানা কথা মডেল বা নায়িকাদের কি কি করতে হয়। কিন্তু কোনো প্রমাণ ছাড়াই পতিতা, জিনাকারী এসব বলা যায় না।

 

দীনী সমাজে একটা সমস্যা হচ্ছে ইহুদী খ্রিস্টানের দালাল টার্মটা ব্যবহার করা। এটাও মূলত পরোক্ষ তাকফীর। এটা অনুচিত।

 

ওয়ায়েজদের ভুলগুলো হচ্ছে ওয়াজে চিল্লাপাল্লা করা, অসংলগ্ন কথাবার্তা বলা, হাসানোর জন্য যা তা বলা। আমি খেয়াল করেছি দীনী বিষয় বাদে সাধারণ বিষয়েও তারা একটা কথা ভালোভাবে বলতে পারে না, কোনো না কোনো একটা ভুল করবেই। যে বিষয়ে জ্ঞান নাই সে বিষয় বলতে যাওয়ার কি দরকার?

 

এইসব ওয়াজকে চটুল শিরোনাম দিয়ে ইউটিউবে ব্যবসা করার জন্য একদল হারাম ব্যবসায়ী তো আছেই। এরা ইসলামের যে ক্ষতি করছে তা বলার মত না। এইসব শিরোনাম মানুষকে হাসির খোঁড়াক যোগায়। আল্লাহ এদের হেদায়েত দিক।

 

ফেসবুকে প্রচুর তৃণমূল পর্যায়ের সাধারণ মুসলিম ফ্রেন্ড লিস্টে থাকায় যে বিষয়টা খেয়াল করলাম, তারা প্রচুর নিউজ শেয়ার করে অনির্ভরযোগ্য পোর্টাল থেকে এবং এমন সব নিউজ যা সত্য নয়। এরকম সংবাদগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে কারো ইসলাম গ্রহণের সংবাদ কিংবা বিজ্ঞান আর ইসলামের মিলে যাওয়া কোনো একটা বিষয় নিয়ে রিপোর্ট। এইসব পোর্টালগুলোর মালিকের টাকাও হারাম। তারা ব্যবসার জন্য ধর্মকে খারাপ ভাবে ব্যবহার করে। আর দীনদার দাবি করে কিভাবে একটা লোক এরকম অনির্ভরযোগ্য নিউজ শেয়ার করতে পারে? এটা মুমিনের বৈশিষ্ট্য না।

 

এরকম আরও বিষয় আছে। সব বিষয় এখন মনে পড়ছে না। তাই লেখা এখানেই শেষ করছি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ছয়

 

আমি মনে করি এই দেশের মানুষ অতি জাতীয়তাবাদী। আর এই দেশের সাধারণ মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে সেকুলার মিডিয়া। অতি জাতীয়তাবাদী এই জন্য যে অনেকেই বরিশালের লোক দেখতে পারে না, কেউ নোয়াখালী দেখতে পারে না (কিছুদিন আগেই নোয়াখালী বিভাগ চাই বলে যে ট্রলে ভেসে গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়া সেটা একটা বাস্তব উদাহরণ), কেউ বলে কুমিল্লার লোক ইতর, কেউ চাটগাইয়া দেখতে পারে না। এগুলো জাতিবিদ্বেষের উদাহরণ। পাকিস্তান আর ভারতের সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে বিদ্বেষের যেই চর্চা সেখান থেকেও ধারণা পাওয়া যায় এদেশের মানুষ কতটা উগ্র জাতীয়তাবাদী, কথিত দেশপ্রেমী, এবং পরজাতিবিদ্বেষী।

 

নিজেদের দেশের অন্য অঞ্চলের মানুষকেই তারা দেখতে পারে না, সুতরাং পাক, ভারত কিংবা রোহিঙ্গাদের দেখতে পারবে সেটা অবাস্তবই বটে। আশ্রয় দেয়া বা না দেয়া এগুলো মূল বিষয় নয়, জাতিবিদ্বেষটাই মূল বিষয়।

 

এটা যে শুধু বাঙালির সমস্যা তা না। অনেক জাতির মধ্যেই এই সমস্যা আছে। উপনিবেশের পর থেকেই এই সমস্যা তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে লক্ষণীয়।

 

দুই নাম্বার হচ্ছে, এই দেশের মানুষের মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ করে সেকুলার মিডিয়া। শহর এবং গ্রামের সকল শিক্ষিত, আধা শিক্ষিত পরিবারগুলোতে টিভি অবশ্যই থাকে। মিডিয়ার রোহিঙ্গাবিরোধী প্রোপ্যাগান্ডা অনেক আগে থেকেই শুরু হয়ে গেছে। বরং মানুষ বায়াস হতে অন্য বিষয়ের চেয়ে একটু বেশি সময় নিয়েছে, এর মূল কারণ সম্ভবত ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট এবং মানবতা। তবু অনেক পরে হলেও মানুষের মধ্যে রোহিঙ্গাবিরোধী অবস্থান তৈরি হয়েছে এটাই মিডিয়ার সফলতা। মিডিয়া মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ শাহবাগ আন্দোলন। একদল নাস্তিকের আন্দোলনকে মিডিয়া কিভাবে অল্প সময়ে পুরো জাতির চাওয়া পাওয়ায় পরিণত করেছে, এটা কারোই অজানা নয়। অথচ আজ দেখুন, শাহবাগী একটা গালি হয়ে গেছে। এর মানে যারা ১৩ তে শাহবাগ আন্দোলন সমর্থন করেছে মিডিয়ার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, তাদের এই ভুল ভাঙতে কয়েক বছর সময় লেগেছে, আজ শাহবাগে নাস্তিকরা চাইলেও আগের মত জনতা সমাবেশ করতে সক্ষম নয়। মিডিয়া যে মানুষের মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ করে বিশেষ করে শিক্ষিত সমাজের, এটা আশা করি অনেক ইস্যুতেই বোঝা যায়।

 

আর অশিক্ষিত (কৃষক, মজুর, দেশের শ্রমজীবী মানুষ যাদের সাধারণ অর্থে অশিক্ষিত ধরা হয় যদিও আমি তাদের অশিক্ষিত মনে করি না, তবে প্রচলিত অর্থে অশিক্ষিত ধরা হয় তাই বললাম) সমাজ রোহিঙ্গা-বিরোধী হয়ে উঠেছে অভ্যাসগত কারণে, যেটা প্রথমে বলেছি পর-জাতিবিদ্বেষের কারণে। একই বিদ্বেষ কিন্তু নোয়াখালী, বরিশালের প্রতিও আছে। এই শ্রমজীবীরাই রোহিঙ্গা নামক গালির প্রবর্তন করে। আমি এদেরকেই এই গালিটা বেশি ইউস করতে দেখেছি, তাও অনেক আগে থেকে। অর্থাৎ তারা মিডিয়া দ্বারা প্রভাবিত হয় নি ঠিকই কিন্তু ভিন্ন কারণে রোহিঙ্গাবিদ্বেষী।

 

শেষ পর্যন্ত মিডিয়া পেরেছে দেশের অধিকাংশ মানুষকে রোহিঙ্গাবিরোধিতার ব্যাপারে একমত করতে। শিক্ষিত সমাজে রোহিঙ্গাবিদ্বেষ যে সেকুলাররা কয়েক বছর আগে ছড়াত, সেই বিদ্বেষ এখন সাধারণ শিক্ষিত, আধা-শিক্ষিত সমাজে সাধারণ হয়ে গেছে। এমনকি একদল হুজুর (মুমিন, মুসলিম)-ও শেষ পর্যন্ত এদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। যদিও হুজুরদের অধিকাংশই এখনো রোহিঙ্গাদের পক্ষে আছে।

 

রোহিঙ্গাদের পক্ষে সবচেয়ে বড় সমর্থক হচ্ছে হুজুর (মুমিন) গোষ্ঠী। আমি নিজেকে মুমিন দাবি করি, এবং আমিও রোহিঙ্গা বিদ্বেষ থেকে নিজেকে মুক্ত মনে করি। হুজুর গোষ্ঠীর কাছে বাঙালী পরিচয়টা যেমন মুখ্য নয়, ফলে রোহিঙ্গাবিদ্বেষও তেমন আসে না, আমার ব্যাপারও তাই। আমি বাঙালী হিসেবে গর্বিত না, কিংবা গর্বের কারণ নেই, ফলে বাঙালী বাদে অন্য সব জাতিকে নিজের থেকে আলাদা করে দেখার যৌক্তিকতা পাই না। আমার ধারণা সকল মুমিন একইভাবে ভাবে। মুমিনরা ইসলামকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে ফলে ইসলামি চিন্তাধারা তারা গ্রহণ করে। ইসলামে জাতীয়তাবাদকে বাপের লিঙ্গ কামড়ে ধরা বলা হয়েছে। জাতীয়তাবাদ নিষিদ্ধ করে ইসলামে উম্মাহ ধারণা দেয়া হয়েছে। আর মুমিন মাত্রই উম্মাহ ধারণায় বিশ্বাসী। ইসলাম যেভাবে মাদিনার দুই (পরস্পর) শত্রু জাতি আউস ও খাজরাজকে এক করেছিল, ইসলাম যেভাবে মক্কার মুহাজির ও মাদিনার আনসারদের এক করেছিল, সেই ইসলামে বিশ্বাসী মুমিনরা (হুজুর ও মোল্লা গোষ্ঠী) বিশ্বাস করে ইসলামের ছায়াতলে যে জাতির, যে বর্ণের আর যে পেশার মানুষই আসুক, সবাই আমাদের ভাই।

 

রোহিঙ্গারা মুসলিম হওয়াতে মুমিনরা তাদের মুহাজির বলে সম্বোধন করে। এদেশের হুজুর (সাধারণ অর্থে হুজুর বলতে শুধু আলেম বোঝায় না, দাড়ি টুপি রাখলে সবাই তাদের হুজুর, মোল্লা বলে থাকে) গোষ্ঠী প্রথম থেকেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয়, সাহায্য, সমর্থন ইত্যাদি দিয়ে আসছে। এর পেছনে উম্মাহ ধারণাই প্রবল।

 

আর সেকুলাররা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বহু আগে থেকেই উঠে পড়ে লেগেছে। সেকুলারদের হাতে মিডিয়া থাকায় তারাও মানুষকে এর দিকে প্রভাবিত করেছে। সেকুলার, নাস্তিক এরা যদিও নিজেদের মানবতাবাদী দাবি করে, কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যু আসলেই তারা প্রথম যে কথা বলে তা হচ্ছে, "মানবতার আগে দেশ"। তারা দেশ রক্ষায় রোহিঙ্গাদের বর্মিজদের চাপাতির তলে ঠেলে দিতেও কুণ্ঠাবোধ করছে না। আসলে দেশ রক্ষা (রোহিঙ্গারা নাকি বন জঙ্গল সাফ করে ফেলছে, অপরাধ জগতে জড়িয়ে পড়ছে) একটা অজুহাত, আসল কাহিনী হচ্ছে ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষ। নতুবা সংখ্যালঘুদের পক্ষে এদের এত তৎপরতা, সংখ্যালঘুরা অমুসলিম হওয়ায় এরা মানুষ, আর রোহিঙ্গারা মুসলিম হওয়ায় এরা কি মানুষ না? সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধি প্রিয়া সাহার দেশবিরোধী চক্রান্তে এদের চেতনা দাঁড়ায় না, অথচ রোহিঙ্গাদের অপরাধ জগতে জড়িয়ে পড়া (যাদেরকে কিনা বাঙ্গালি মাফিয়ারা এসব কাজে ব্যাবহার করে) তাদের কাছে গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়েছে, এতে তারা জেনে বুঝে বর্মিজদের চাপাতির তলে ঠেলে দিতে চাচ্ছে। যে বর্মিজরা প্রকাশ্যে, সারা পৃথিবীর মানুষের চোখের সামনে হত্যাযজ্ঞ চালাল, তাদের ফিরিয়ে নেয়ার পর আবারও অত্যাচার নির্জাতন চালাবে এটাই বাস্তব না?

 

এই দেশ দেশপ্রেমের চেতনার খুব উর্বর ভূমি, শিক্ষিত এবং আধা শিক্ষিত অধিকাংশ মানুষ (হুজুররা ছাড়া) জাতীয়তাবাদী। আমি মনে করি কোনো মুমিন জেনে বুঝে জাতীয়তাবাদী হতে পারে না। ইসলামে ইলম ফরজ, আর ইলমওয়ালা মুমিন মাত্রই জানে উম্মাহ হচ্ছে এক দেহের মত, এখানে জাতিভেদ, বর্ণভেদ নাই। কুরাইশি আবু জাহেল থেকে হাবশি কৃষ্ণাঙ্গ বেলাল উত্তম, এটা এমন এক সময়ের কথা যখন গোত্রপ্রীতিকে ধর্মের পর্যায়ে নেয়া হয়েছিল, ইসলাম এর উৎখাত করে ঘোষণা করল তাকওয়ার ভিত্তিতে উত্তমরাই প্রকৃত উত্তম, আর অন্য কোনো বিষয়ই মানুষের ভেদাভেদের ভিত্তি হতে পারে না। ভেদাভেদের একমাত্র ভিত্তি হবে ইসলাম। আমার নৃতাত্ত্বিক জাতির (বাঙালী) কাফিরের চেয়ে অন্য কোনো দেশের, অন্য কোনো জাতির মুসলিম ভাই আমার অধিক প্রিয়, আমার অধিক আপন।

 

সাধারণ যুক্তিতেও জাতীয়তাবাদ গ্রহণের কোনো যুক্তি দেখি না। আল্লাহ আমাকে বাঙালী হিসেবে সৃষ্টি করেছেন, এর জন্য গর্বের কিছু দেখি না। আল্লাহ আমাকে পুরুষ করে সৃষ্টি করেছেন, তাই বলে লিঙ্গ নিয়ে গর্ব করব, অন্য লিঙ্গ (স্ত্রীলিঙ্গ) থেকে নিজেকে উত্তম মনে করব, এটা যেমন অযৌক্তিক, জাতি, আঞ্চলিকতা ও বংশ নিয়ে গর্ব করাও একই রকম। এই বুঝটা সাধারণ মানুষ যত তাড়াতাড়ি বুঝবে, ততই উত্তম। আজ থেকে ১০০ বছর আগে এখানকার মানুষ ভারতীয় বলে গর্ব করত, এর পর ৪৭ এর পর মানুষ নিজেকে পাকিস্তানী বলে গর্ব করত, এখন বাংলাদেশী হিসেবে গর্ব করবে। কিছুদিন পরে সিলেট, রাজশাহী এসব অঞ্চলের মানুষ স্বাধীনতার দাবিতে নেমে পড়লে এবং নিজেদের আঞ্চলিকতার উপর ভিত্তি করে রাষ্ট্র গঠন করতে চাইলে এবং করেও ফেললে সেখানকার মানুষ নিজেদের পরিচয় দিবে সিলেটী বলে, সিলেটী জাতীয়তাবাদীরা তখন আর ঢাকার মানুষকে আপন মনে করবে না, পরদেশ মনে করবে। তখন তাদের অঞ্চলের একটা কুকুরের চেয়ে অন্য দেশের মানুষকে অধম মনে করবে। একই অবস্থা এখন দেখা যাচ্ছে, এদেশের মানুষ বর্ডারের ঐ পাড়ের মানুষকে পর মনে করে, অথচ ১০০ বছর আগেও একসাথে থেকেছে। রোহিঙ্গারা নাকি বন জঙ্গল সাফ করে ফেলছে, এর জন্য তাদের বের করে দিতে হবে, এটাকেই বলে নিজ দেশের গাছপালা জীব জন্তুর চেয়ে পরদেশের মানুষ অধম।

 

এই সেই জাতীয়তাবাদ যে বর্ডার এক ব্রিটিশ লোক এসে কেটে দিয়ে গেছে। ফলে মানুষের চিন্তাভাবনা কাঁটাতারের বেড়ার মধ্যেই সীমিত হয়ে গেছে।

 

দ্বিতীয় ব্যাপার হচ্ছে রোহিঙ্গারা অপরাধ জগতে জড়িয়ে পড়ছে, তারা উগ্র, খারাপ ইত্যাদি। প্রত্যেক জাতির মধ্যেই ভালো খারাপ মিলিয়ে থাকে। কোনো জাতিরম মধ্যে শতভাগ বদলোক থাকে না আবার শতভাগ ভালোও থাকে না। এটা খুব মৌলিক কথা। সবাই জানি বুঝি, কিন্তু মানি না। তাই তো বাঙালির মধ্যে আন্তঃজাতি বিদ্বেষ, অন্তঃজাতি বিদ্বেষ দুটাই প্রবল। বাঙালির জাতিবিদ্বেষের তালিকায়, আরব, পাকিস্তানি, ভারতী, রোহিঙ্গা ইত্যাদি রয়েছে। আবার নিজের দেশের ভিন্ন অঞ্চলের মানুষের প্রতিও বিদ্বেষ রয়েছে (বিএনসিসি ইত্যাদি)।

 

বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ বিএনসিসিকে খারাপ মনে করে, তাহলে কি তাদের দেশ থেকে বের করে দেয়া উচিৎ? আসল কথা হচ্ছে বরিশাল, নোয়াখালী যেটাই হোক, কোনো অঞ্চলের মানুষই সবাই খারাপ না, খারাপ হওয়াটা জিনএর মাধ্যমে আসে না। জিন এর মাধ্যমে যদি আসতো তাহলে পাপের শাস্তি দেয়া হত না, না দুনিয়ার আদালতে আর না আখিরাতে।

 

একটা জাতিতে অনেক ভালো মানুষ যেমন থাকে, অনেক খারাপ মানুষও থাকে। বাঙালী জাতির মধ্যে যেমন অনেক নেককার বান্দার আবির্ভাব হয়েছে তেমনি এরশাদ শিকদারও এই জাতির একজন। রোহিঙ্গাদের মধ্যেও অনেক নেককার বান্দা আছেন, আবার অনেক বদলোকও আছে। এরশাদ শিকদারের জন্য পুরো বাঙালী জাতিকে গালি দেয়া যেমন উচিৎ না তেমনি কোনো খুনি, অপরাধী রোহিঙ্গার জন্য পুরো রোহিঙ্গা জাতিকে গালি দেয়াও উচিৎ না। রোহিঙ্গাদের পক্ষে বলা মানে এই না এইসব অপরাধী রোহিঙ্গাকে সমর্থন দেয়া হচ্ছে। বরং একটা জাতিতে অপরাধী থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক, না থাকাই বরং অস্বাভাবিক। বাঙালী জাতির মধ্যেও রোহিঙ্গাদের চেয়ে বেশি অপরাধী আছে। প্রতিদিন ধর্ষণ, হত্যা, রাষ্ট্রীয় জুলুম এগুলো কোনোটাই রোহিঙ্গাদের দ্বারা হচ্ছে না, এই বাঙ্গালিরাই করছে।

 

বাঙালিদের মধ্যেও অপরাধী আছে, রোহিঙ্গাদের মধ্যে আছে, দুটাই একই হলে রোহিঙ্গাদের কেন বের করে দিতে হবে। আসল কথা হচ্ছে রোহিঙ্গারা অপরাধে জড়িত এটাও মূল বিষয় না, মূল বিষয় হচ্ছে ওরা ভিনদেশী, এইজন্য বের করে দিতে হবে। অপরাধী প্রমাণ করাটাও একটা অজুহাত।

 

যারা রোহিঙ্গাদের বের করে দিতে চাচ্ছে, তারা যদি রোহিঙ্গা কোনো পিতা-মাতার সন্তান হত এবং রোহিঙ্গা পরিচয়ের কারণে নিজে কোনো দোষ না করেও মানুষের গালি খেতে হত, মায়ানমারে হত্যা থেকে বেঁচে ফিরে এদেশে এসে মানসিক নির্যাতনের শিকার হত তবে তাদের কেমন লাগতো আমি জানি না, তবে আমি সেই জায়গায় নিজেকে চিন্তা করলে ভয়ে আটকে উঠি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া, তিনি আমাকে ও আমাদের অনেক ভালো রেখেছেন। শুধু এতোটুকু চিন্তাই আমার রোহিঙ্গাদের পক্ষে অবস্থানের জন্য যথেষ্ট।

 

সেকুলার ও জাতীয়তাবাদীদের রোহিঙ্গাবিরোধিতার মূল কারণ "তারা ভিনদেশী"। অথচ শ্বেত ভিনদেশীরা এই দেশে বেড়াতে আসলে তাদের জন্য থাকে পাঁচ তারকা হোটেল। তাদের সাথে খারাপ কিছু না হয় যেন দেশের নাম ক্ষুণ্ণ না হয় সেদিকে থাকে সজাগ দৃষ্টি। আর অন্যদিকে রাষ্ট্রহীন মানুষগুলোকে আশ্রয় দিয়ে সাথে দুই বেলা গালি দিয়ে অতঃপর দেশ থেকে বের করে দেয়ার তোরজোড় করার না হচ্ছে দেশপ্রেম।

 

একজন মুমিনের কাছে দেশের চাইতে দ্বীন বড়, উম্মাহর প্রতি ভালোবাসা বড়। রোহিঙ্গারা উম্মাহর সদস্য। উম্মাহ একটি দেহের মত আর দেহের এক অঙ্গ অসুস্থ হলে সব অঙ্গই তা ভোগ করে, বাঙালী মুসলিমরা একইভাবে রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য কষ্ট পাচ্ছে। এটাকেই মুসলিম ভ্রাতৃত্ব বলে। এই ভ্রাতৃত্ব আল্লাহর জন্য।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সাত

 

এক ছোট ভাই জানতে চাইল কোন ক্যারিয়ার নিলে ভালো হবে, তার ইচ্ছা, ডিসি ওসি এসবের দিকে। আমি তো বড় কেউ না, তাও নিজের অভিজ্ঞতা থেকে সামান্য কিছু বলার চেষ্টা করলাম।

 

তুমি তো নাইনে পড়। পুরা ২ বছর ভাবো কি হতে চাও। ইন্টারে উঠে গেলে ভাবার সুযোগ শেষ। আর এসএসসির রেজাল্ট ভালো করার চেষ্টা কর। কারণ ইন্টারে রেজাল্ট ভালো করা কঠিন। সুতরাং এসএসসিতে ভালো পয়েন্ট পেতে হবে।

 

ডিসি, ওসি এগুলো হতে বিসিএস দেয়া লাগে। আমি বিস্তারিত জানি না। তবে আমি বলব, আগে সিদ্ধান্ত নেও তুমি কি হতে চাও। যেটা নিয়ে ক্যারিয়ার গড়তে চাও ওইটা সম্পর্কে আগে জানো। একবার ভুল হলে পরে ব্যাক করতে সমস্যা। অনেকে আছে ম্যাট্রিক ইন্টার সাইন্সে পড়ে পরে অন্য সাব্জেক্টে চলে যায়। আর এই বয়সটায় তোমার কখনো মনে হবে এইটা ভালো, আবার কখনো মনে হবে ওইটা ভালো। নাইন থেকে এডমিশন পর্যন্ত ৪ বছরে অনেকের ৪০ বারও মত পরিবর্তন হয়। ভুল সিদ্ধান্ত নিলে লাইফ হেল হয়ে যাবে। অনেকে বিএসসি, এমএসসি কমপ্লিট করে কিছু করতে পারে না তখন আবার অন্য বিষয়ে পড়া শুরু করে। তাই বুঝে শুনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

 

তুমি ডিসি হবে না ওসি হবে সেটা তো পরে, আগে সিদ্ধান্ত নেও, এটাই কি তুমি হতে চাও কিনা? আর অন্য কোনো পছন্দ থাকলে সেগুলাও বিবেচনা কর, এরপর দেখ কোনটা তোমার জন্য ভালো হবে।

 

যে বিষয়গুলা খেয়াল রাখতে হবে, প্রথমত এটা হালাল নাকি হারাম; এই পেশায় হারামের সম্ভাবনা আছে কিনা। সবার প্রথমে এটা দেখতে হবে। কারণ এটা না জানার কারণে বহু মানুষ হারামে লিপ্ত হচ্ছে। আর হারাম আয়ের পরিণতি তো জানই। সুতরাং এটা জানতে হবে সবার আগে। তুমি যে ক্যারিয়ার নিতে চাও সেগুলো সম্পর্কে আলেমদের সাথে কথা বল। বহু মানুষ ব্যাংকের চাকরী নেয় কিন্তু জানে না ব্যাংকের চাকরী হারাম। তাই আগে সেই পেশাগুলো সম্পর্কে জানো।

 

দ্বিতীয়ত যেটা নিয়ে ক্যারিয়ার গড়তে চাও, ওইটাতে ফোকাস থাকো। আমার অভিজ্ঞতা বলে, ৯০ ভাগ ছাত্র এই ৪ বছরে কতবার যে মত পরিবর্তন করে, আমিও করছি, কখনো মন হইত, এটা পড়ি, কখনো মনে হইত এইটা। এইজন্য আমি বলি, যেটা ভালো লাগে সেটা পড়। অনেকে হতে চায় ডাক্তার, কিন্তু পড়া তার ভালো লাগে না, তাহলে সে কিভাবে পড়বে? ডাক্তারি পড়তে ভালো রেজাল্ট লাগে। এজন্য যেটা করতে চাও, যেটা পড়তে চাও, সেটাতে ভালো লাগা থাকতে হবে।

 

তৃতীয়ত ইনকামের বিষয়টা। এটাই মূল বিষয়। সত্যি বলতে সবাই ইনকামের জন্য পড়ে। কেউ জ্ঞান অর্জনের জন্য পড়ে না। তাই তোমাকে দেখতে হবে কিসে বেশি লাভ। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়লে নাকি ডাক্তারি পড়লে, কোনটাতে কষ্ট কম, কিন্তু লাভ বেশি, এগুলা তুলনা করা শিখতে হবে, তাহলে তোমার জন্য গন্তব্য নির্ধারণ করা সহজ হবে।

 

এবার আসল কথা বলি। তোমার ইচ্ছাগুলো সম্পর্কে অভিজ্ঞ লোকদের পরামর্শ নেও। আমি অভিজ্ঞ কেউ না। যারা যে বিষয়ের, সেই বিষয়ে জানো। আর যে বিষয়টা সিলেক্টরা করবা, সেটার সাথে লেগে থাকবে।

 

আরেকটা বিষয় হচ্ছে একাধিক প্ল্যান রাখা। কারণ ধর, তুমি বিসিএস দিতে চাও, সেখানে যে টিকবা এর নিশ্চয়তা নাই। তাই প্ল্যান বি, সি রাখো তুমি না টিকলে কি করবা সেটাও মাথায় রাখো।

 

আর যে বিষয়টাকে তুমি নির্ধারণ করবা ওইটাতে ধ্যান জ্ঞান সব লাগায় দেও। বিসিএস দিতে চাইলে এখন থেকে প্রিপারেশন নিতে শুরু কর। যে বিষয়কে চাও সেই বিষয় ছাড়া সব ভুলে যাও। ব্যবসা শেখার জন্য যেমন ব্যবসায়ীদের সঙ্গ লাগে তেমনি তুমি যেটাতে সফলতা চাও সেখানকার মানুষের সঙ্গ লাগবে। পরিচিতি তৈরি করা এবং তাদের সাথে মেশার মাধ্যমে অনেক কিছু আয়ত্ব করা সম্ভব। পরিচিতি তৈরি করার জন্য বেশি বেশি মেশা লাগবে। তবে একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে ভালো মানুষ বাছাই করা। ভালো বন্ধু জীবনে যেমন দরকার তেমনি একটা খারাপ বন্ধু তোমার জীবনকে শেষ করে দিতে পারে।

 

সময়কে প্রডাক্টিভ কাজে লাগাও। প্রডাক্টিভ বিষয় হচ্ছে ৩ টা,

১- ইবাদাতে সময় ব্যয়

২- টাকা ইনকামে সময় ব্যয়

৩- জ্ঞান অর্জনে সময় ব্যয়।

 

এই ৩ টা বাদে যা করবা তা মূলত দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য লস। তাই ফাও আড্ডাবাজী, সময় নষ্ট এগুলা বাদ দিতে হবে। আমি তোমাকে একবার বলছিলাম জাহেল ফ্রেন্ডদের এড়িয়ে চলতে, কিন্তু তুমি আমার কথা বুঝ নাই এজন্য বলছিলা "তাদেরকেও দাওয়াত দেয়া প্রয়োজন"। আমি অভিজ্ঞতা থেকে বলি, মুখের দাওয়াত যতটা কঠিন, চরিত্র দিয়ে দাওয়াত দেয়া অনেক সহজ। তুমি যদি তাদের দাওয়াত দিতে গিয়ে কম্প্রোমাইজ কর, তখন তোমাকে ফাও আড্ডাবাজীতে নিয়া আসবে। নিজে একা যেমন পাপ করা কঠিন, বন্ধুরা সাথে থাকলে পাপ করা সহজ হয়ে যায়, ধর তোমারে সিগারেট খাওয়া শিখায় দিল, বা জোর করে অন্য কোনো পাপে জড়িত করল। এজন্য এদের এড়িয়ে চললে তোমার অনেক সময় বেঁচে যাবে।

 

আমি দাঈ হিসেবে আরেকটা কথা বলি। শুধু দুনিয়ার গন্তব্য নির্ধারণ নয়, বরং আখিরাতের জন্যও কিছু কাজ করতে হবে। এজন্য নিজেকে দাঈ বানাতে হবে। নিজেকে সবসময় বলবা পার্ট টাইম দাঈ। জীবনে যা কিছু কর বা না কর, দাওয়াতের কাজের সাথে লেগে থাকবা। ইসলাম প্র্যাকটিস করা।

 

এতোটুকুই। আমার ছোটভাই থাকলে যা বলতাম, সব তোমাকে বললাম। অনেক বড় ম্যাসেজ। কিন্তু যা বললাম সব অভিজ্ঞতা থেকে। আমার বয়সী যারা, এবং জীবনে বড় কিছু হতে পারি নাই, তাদের সবচেয়ে বড় ইচ্ছা হচ্ছে তোমাদের এই বয়সটা যদি ফিরে পেতাম। এটাই জীবন গড়ার সময়। এটাকে নষ্ট করেই অনেকে সারা জীবন হা হুতাশ করে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আট

 

দোরা কাউয়া কবিতা পড়ে রাইসু এবং একদল পাঠকের ধারণা জন্মেছে সাহিত্যের একটা নতুন ধারা জন্মেছে। কিন্তু এই কবিতা পড়ে আমার ধারণা জন্মেছে এইসব কবিতা পাঠ করলে মুমূর্ষু রোগীর মৃত্যু অনিবার্য। এমন কবি জন্ম নেবেই না কেন? এক সময় কবিতা লিখতেন নজরুল, জসীমরা, তাদের কবিতা পড়লেই মনে হয় "একটা কবিতা পড়ছি"। এমনকি সেই সময়কার সব লেখকরাই একই ধারায় লিখতেন। এরপর একটা নতুন পাগলা ধারার জন্ম হইল, যত ছাগল পাগল আছে এরা কবি হইতে শুরু করল। এইসব ছাগল পাগল কবিদের কবিতা পড়তে পড়তে নতুন যেই প্রজন্ম হইছে সেইখানে এসব কবিতা পাওয়া যায়।

 

আবোল তাবোল, অর্থহীন কবিতা। না আছে শেখার কিছু, না আছে গভীরতা, না আছে ভাব বা সৌন্দর্য। রাস্তাঘাটের পাগলরাও যে উলটা পালটা কথা বার্তা বলে ওগুলারেও তাইলে কবিতা বলতে হবে।

 

জাতির জন্য এসব আবোল তাবোল কবিতা হইল অভিশাপ, এইরকম আবোল তাবোল কবি যদি কয়েকশ হয় আর সারাজীবন বালছাল লিখা যায় তাইলে পুরা জাতির এসব পড়ে কত সময় নষ্ট হবে। অথচ এই সময়গুলা ভালো লাজে লাগান যাইত।

 

ধরেন আমিই কিছু আবোল তাবোল কথা বললাম, আর এইটারে কবিতা বইলা চালায় দিলাম। যেমন

আজকে দেখছি ঐ রাস্তার ধারে এক কুত্তা

গাছের মইদ্ধ্যে ঠ্যাং উচাইয়া দিছে মুইত্তা।

 

তো এইটা কি কবিতা হইয়া গেল?

 

এইসব আবোল তাবোল অর্থহীন কথা প্রসব করে বুদ্ধিজীবীতা দেখাইলে জাতির কোনো উপকার হয় না। বরং পড়তে গিয়ে সময় নষ্ট হয়ে জাতির ক্ষতি হয়।

 

ব্রাত্য রাইসুর দোরা কাউয়ার অনুকরণে একটা কবিতা লেখলাম, এইটা রাইসুরে উৎসর্গ করা হইল।

 

রাইসু মিয়া ফেসবুকেতে পক পক করে রে

রাইসু মিয়া ফেসবুকেতে কক কক করে রে

লাইক পড়ে শেয়ার বাড়ে ফেসবুকেতে কমেন্ট ঝরে রে

রাইসু হালা ফেসবুকেতে বক বক করে রে

রাইসু মিয়া কবিতার গোয়া মারে রে

ফেসবুকেতে কবিতার গোয়া মারে রে

 

ওরে আমার রাইসু মিয়া, রাইসু মিয়া রে,

ফেসবুকেতে ফেসবুকের গোয়া মারে রে

 

ওরে আমার কবিতা, বালের কবিতা রে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

নয়

 

আমাদের ভাই ফাহাদ আবরারকে ভারতবিরোধী একটা লেখার কারণে জীবন দিতে হল।

 

শুধু ছাত্রলীগ না, শাহবাগীরা এবং তাদের মিডিয়া সমান দোষে দোষী। ছাত্রলীগ যদি শয়তানের ঠ্যাঙ হয়, তাহলে শাহবাগী সেকুলার গোষ্ঠী হইতেছে শয়তানের মাথা। ঠ্যাঙ ধইরা টানাটানি করতে গিয়া মাথারে যেন ভুলে না যাই।

 

এই দেশে জামাত-শিবির বিরোধী, ইসলাম বিরোধী প্রোপ্যাগান্ডা চালিয়ে এইসব হত্যাকান্ডের পথরে সহজ করছে এই শাহবাগীরা। ছাএলীক হাতুড়ি চালাইতে জানে, প্রোপ্যাগান্ডা চালানোর মত মাথা তাদের নাই। বরং দালাল বুদ্ধিজীবীরাই বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে এই কাজটা বছরের পর বছর আঞ্জাম দিয়ে আসছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

দশ

 

ঈমান আনার কারণে, ঈমানের উপর অটল থাকার কারণে, দ্বীন চর্চা করার কারণে, জালেমের বিরুদ্ধে এবং মাজলুমের পক্ষে থাকার কারণে, কাফির তাগুত ও সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে এবং মুসলমান জনগোষ্ঠীর পক্ষে থাকার কারণে, তিতা-সত্য বলার কারণে, তাগুতের সাথে এবং ইসলামের দুশমন কাফির মুশরিকদের সাথে আপোষ না করার কারণে, নিজের আদর্শ না বিকিয়ে সত্যের উপর অধিষ্ঠিত থাকার কারণে, দাওয়াতি কাজ করার কারণে, ইসলামী আন্দোলন কিংবা ইসলামী রাজনীতি করার কারণে, জিহাদ কিংবা মুজাহিদদের সমর্থন ও সহযোগিতা করার কারণে, উম্মাহর প্রতি দরদ রাখার কারণে, সামান্য একটি ইসলামিক পোস্ট দেয়ার কারণে, অথবা দাড়ি টুপি ও সুন্নতি পোশাক পড়ে চলাফেরার কারণে, অথবা কোনো একটা ইসলামিক পোস্টে লাইক দেয়ার কারণে একজন মুসলিমের উপর যেসব অত্যাচার নির্যাতন ও বিপদ আপদ ধেয়ে আসবে তা হচ্ছে

 

 প্রথম স্টেজে কাছের মানুষরা ঠাট্টা বিদ্রুপ করবে, উপহাস করবে।

 

আত্মীয় স্বজনরা নানা কথা বলাবলি করবে।

 

কাছের বন্ধুরা দূরে সরে যাবে।

 

এলাকার প্রভাবশালীরা প্রথম প্রথম বাঁকা চোখে দেখবে।

 

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজী, হাজী, প্রথম কাতারে নামাজ পড়া মুরুব্বিরা বলবে, "এই বয়সে দাড়ি?"

 

সবাই বিদ্রুপ করে ডাকবে হুজুর আর মোল্লা বলে।

 

মা-বাবা বোঝাবে দ্বীনকে যেন দুনিয়ার উপর প্রাধান্য না দেই, আমার চিন্তায় তারা অস্থির হবে।

 

কিছু আত্মীয় "বিপদে পড়বা" বলে ভয় দেখাবে।

 

দাওয়াতি কাজের কারণে লাঞ্ছিত হতে হবে, অপমানিত হতে হবে।

 

নির্জাতিত, নিপীড়িত হতে হবে।

 

মার খেতে হবে, গালি খেতে হবে।

 

অতঃপর যদি আগের মতোই অটল থাকা যায়

 

তাহলে কারাবন্দী হতে হবে, গুম-খুন হতে হবে, নিখোঁজ হতে হবে।

 

তবে কেউ যদি এগুলো এড়াতে পারে এবং হিজরত করতে পারে তাহলে মানবতার ফেরিওয়ালাদের ড্রোন হামলায় শহীদ হতে হবে।

 

আর বেঁচে থাকলে এভাবেই মার খেতে খেতে বাঁচতে হবে।

 

এটাই হচ্ছে হাজার হাজার বছরের মুমিন মুত্তাকীদের ইতিহাস, একই ঘটনা, ফিরে আসে বারবার, হাদিসের ভাষায় "দুনিয়া মুমিনের জন্য কারাগার"।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এগারো

 

মওদুদি রঃ এবং জামায়াতের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর জবাব দিয়ে জনাম আসলাম সাঈদী একটি বই লিখেছেন। এর পাল্টা খণ্ডনে জনাব আতাউল করীম মাকসুদও কয়েক পর্বে লিখেছেন। মাকসুদ সাহেবের লেখা পড়ে মনে হল তিনি খুবই সুন্দর আলোচনা করেছেন। যদিও আহলে হাদীস বা লা-মাজহাবীদের বিরুদ্ধে এবং বেরেলভীদের বিরুদ্ধেও তার লেখাগুলো অনেক বেশি আক্রমণাত্মক। সেই হিসেবে মওদুদি রঃ বিরুদ্ধে এই লেখাটা খুব ভারসাম্যপূর্ণ ছিল, এতো সুন্দর ভাবে লিখতে জানেন তিনি, এটা জানা ছিল না। খুব সুন্দর ভাবে আসলাম সাহেবের লেখার জবাব দিয়েছেন। আল্লাহ আমাদের ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান এবং ইনসাফ রক্ষা করার তৌফিক দিন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বারো

 

আবরার ফাহাদের মৃত্যু আমাদের সামনে গাজওয়ায়ে হিন্দের বার্তাকে সত্যায়ন করছে। এই বিষয়টাকে এখনো যারা গুরুত্ব দিচ্ছেন না, তারা সাম্প্রতিক বিন্দুগুলোকে সংযুক্ত করুন, নিজেই দেখুন বিষয়টা। কাশ্মীরের ভয়াবহ পরিস্থিতি, ভারতে মুসলিম নির্যাতন, হিন্দুত্ববাদীদের আস্ফালন, ইলিশ পেয়াজ ফারাক্কা একেকটি ইস্যু ভয়ানক বার্তা দিচ্ছে, সম্প্রতি হাসিনা ভারতে গিয়ে দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি করে এসেছে, সারা দেশে সব জায়গায় হিন্দু প্রাধান্য লাভ করেছে; এই সবগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন তথ্য নয়। বছর কয়েক আগে মাওলানা ইসহাক খানকে গ্রেফতার করা হয়েছে শুধুমাত্র গাজওয়ায়ে হিন্দ এ বিশ্বাসী বলে। ইদানিং তো আলেম উলামা, ইসলামপন্থীদের নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ বেড়ে গিয়েছে। আর শেষে আবরার ফাহাদের মৃত্যু এবং তার হত্যাকারীদের অন্যতম আসামী ইসকন সদস্যকে গ্রেফতার না করা এবং বহিস্কারও না করার ঘটনা আমাদের সামনে একটা বার্তা স্পষ্ট করছে যে এটা গাজওয়ায়ে হিন্দ হোক বা না হোক, একটা যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছে। মুসলিমদের সাথে হিন্দুস্তানী মুশরিকদের এই দ্বন্দ্ব ধীরে ধীরে যুদ্ধের দিকে গড়াবে বলেই মনে হচ্ছে। আল্লাহ আমাদেরকে জাতীয়তাবাদের বিষাক্ত জাল থেকে হেফাজত করুন এবং মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদে অংশ নেয়ার তৌফিক দিন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তেরো

 

শিবির শব্দটা বাংলাদেশে মুসলিমদের জন্য রাজনৈতিক ইসলামের প্রতিনিধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা এখন ইসলামপন্থীদের আত্মপরিচয়। সুতরাং শিবির হওয়া কিংবা কেউ শিবির ডাকলে হীনমন্যতার কিছু নাই। বরং গর্ব করে বলুন "আমি শিবির।" এইজন্য সত্যিকার অর্থে শিবিরের সদস্যপদ নিতে হবে তা না। এই দেশের চেতনাবাদীদের কারণে রাজাকার শব্দটাও মহিমান্বিত হয়ে উঠেছে যা গত ছাত্র আন্দোলনগুলোতে আমরা দেখেছি।

 

শিবিরের ব্যাপারে সেকুলারদের সাথে আপনার চিন্তাধারা মিলে গেলে বুঝতে হবে আপনি মিডিয়া দ্বারা প্রভাবিত, রাজনৈতিক ইসলাম বোঝেন না অর্থাৎ খণ্ডিত ইসলামের চর্চা করেন, জীবনে শিবিরের কারো সাথে পরিচয় হয় নি (আমার কাছ থেকে দেখামতে, শিবির খুব ভদ্র আর মেধাবী ছেলেরা করে, যারা তাদের সম্পর্কে এতোটুকু জানেন তারা বুঝবেন শিবিরের ছেলেরা রগকাটার মত সাহস রাখে না কিংবা এমন অপরাধ করার প্রবনতাও তাদের মধ্যে নাই), মোট কথা, আপনি দুনিয়াকে একটা বাক্সের মধ্য থেকে দেখেন যার নাম টেলিভিশন, তাই আপনার চিন্তাভাবনাও যারা এসব প্রোপ্যাগান্ডা ছড়ায় তাদের মতোই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চৌদ্দ

 

 শিবিরের ব্যাপারে যতদিন মানুষের চিন্তাচেতনা পরিবর্তন না হবে ততদিন 'শিবির' সন্দেহে, শিবির ট্যাগ দিয়ে ছাত্রলীগের মারধোর চলবে, আর সেকুলাঙ্গারদের সেগুলোতে সাপোর্ট করাও চলবে।

 

 সেকুলার ও বামপন্থীদের প্রোপ্যাগান্ডায় আমরা বিশ্বাস করে নিয়েছি ছাত্রশিবির রগ কাটতে পারে, গুন্ডামি করতে পারে, ধর্ষণ করতে পারে। অথচ যারা ছাত্রশিবিরের কারো সাথে মিশেছেন, তাদেরকে কাছ থেকে দেখেছে তারা বুঝতে পারবেন কত হাস্যকর অপবাদ, এমনকি এটা দেশের অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাসও করে।

 

 কোনো কোনো লীগারের পোস্ট দেখলাম, শিবিরের হাত থেকে দেশের মানুষকে বাঁচাতে নাকি ছাত্রলীগ কাজ করছে। শিবিরের বিরুদ্ধে এক সময় ব্যাপক প্রোপ্যাগান্ডা চলত, তাই তাদের নামই হয়ে গেছে রগ কাটা শিবির। আফসোস যদি সত্যিই তারা রগ কাটতে পারতো ছাত্রলীগের, তাহলে আজ এইদিন দেখা লাগতো না।

 

 কুষ্টিয়ার পুলিশ যে আবরারের পরিবারের উপর হামলা চালিয়ে তাদেরকে জামাত-শিবির নাম দিল এটাই হচ্ছে ছাত্রলীগ, পুলিশলীগ এবং সেকুলারদের কর্মপদ্ধতি। জামাত শিবির হওয়াটা যতদিন অপরাধ মনে করা হবে ততদিন শিবির ট্যাগ দিয়ে মারধোর চলবেই।

 

 শিবির এখন আর কোনো দল নেই। বরং ফ্যাসিবাদবিরোধী একটি শব্দে পরিণত হয়েছে। সুতরাং যাকেই শিবির বলা হবে, শিবির বলে ধরা হবে, শিবির সন্দেহ করা হবে বুঝতে হবে সে আ'লীগ বা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে, জালেম সরকারের বিরুদ্ধে, জুলুমের বিরুদ্ধে রয়েছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পনেরো

 

মাদখালীদের সাথে সবচেয়ে ভালো তুলনা চলে ছাত্রলীগের। আমি তো বলি, মাদখালীরা হচ্ছে দীনী মহলের ছাত্রলীগ। তারা ছাত্রলীগের মতোই নির্লজ্জ। ছাত্রলীগ যেমন তাদের দলের শত অপরাধের কত জেনেও দল ছাড়তে পারে না, মাদখালীরাও এমবিএস আর আলে সাউদের দোষগুলো দেখেও পাচাটা ছাড়তে পারে না।

 

এক মাদখালী ভাই মেহেদী লোহানী শেয়ার দিয়েছেন মুনিরুল ইসলাম ভাইয়ের পোস্টটার স্ক্রিনশট। মুনির ভাইয়ের পোস্টটা ছিল - আবরারের সাথে উনার দেখা হয়েছিল একবার।

 

তো এই যোগসূত্রে মেহেদী লোহানী আল মাদখালী আবিষ্কার করে ফেললেন আবরারের ভারতবিরোধী লেখার পিছনে মুনির ভাইয়ের প্রভাব আছে। আর মুনির ভাইকে তিনি খারেজী মনে করেন। তাই মাদখালী বলছে, এই মুনির ভাইয়ের কারণেই এক মায়ের বুক খালি হল।

 

অর্থাৎ অন্যায়ের প্রতিবাদ করাটা আবরারের উচিৎ হয় নি, পোস্ট দেয়া উচিৎ হয় নি। এগুলাই মেহেদী সাহেব বলতে চাচ্ছেন। তো এই হচ্ছে মাদখালীদের অবস্থা।

 

আরেক মাদখালী মাসুদ আসারী, তার ভাতিজার পক্ষ হয়ে কয়েকটা পোস্ট দিয়েছে। অথচ সে নিজেই বিএনপির সাপোর্টার, বিএনপির পক্ষে আগেও অনেক পোস্ট দিয়েছে, আর আজকে নিজের ভাতিজা বিপদে পড়ায় ভাতিজার পক্ষে পোস্ট দিচ্ছে। এই হচ্ছে মাদখালীদের আকীদার অবস্থা। মাসুদ আসারীর ভাতিজা হচ্ছে বুয়েট ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। তার নির্দোষ হওয়ার পক্ষে সে সাফাই গাচ্ছে। ছাত্রলীগ তো শুয়োরের দল, বরং শুয়োরের দল বললে শুয়োরও অপমান হয়। সেই শুয়োরের দলের সদস্য শুয়োর হবে এটাই স্বাভাবিক, শুধু সদস্য না, সে হচ্ছে সহ-সভাপতি, অথচ তার পক্ষে সাফাই গেয়ে মাসুদ আসারী তার মাদখালীত্বের প্রকাশ ঘটাচ্ছে, মনে হচ্ছে যেন তার ভাতিজা মায়ের পেট থেকে পড়েই সহ-সভাপতি হয়ে গেছে, নিষ্পাপ, দুদু খায়।

 

এজন্যই বলি, বাংলাদেশের জাতীয় ডাকাত দরবেশ বাবাকেও আহলে হাদীসরা কেন এতো সম্মান করে। আসলে সারাদিন সহীহ আকীদা সহীহ আকীদা করলেও এদের আকীদাতেই বড় সমস্যা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ষোল

 

ছাত্রলীগ শুধু আজকের সন্ত্রাসী সংগঠন নয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এটা একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। মুজিব সাহেব নিজেই একটা গুন্ডা ছিলেন। প্রচলিত গণতান্ত্রিক সেকুলার রাজনীতিতে গুন্ডামি হচ্ছে রাজনীতিতে টিকে থাকার উপায়।

 

আরেকটা বিষয় খেয়াল করলে দেখা যাবে অনেক হিন্দুই ছাত্রলীগ করে অথবা ছাত্রলীগ সাপোর্ট করে। ভারতের মদদে সেকুলাঙ্গারদের সাথে মিলে আ'লীগ পাকিস্তানকে দুই টুকরা করেছে। আজো বাংলাদেশে ভারতপন্থী ছাত্রলীগ গুন্ডামি করে বেড়াচ্ছে। হিন্দুদের ক্ষমতায়নে আ'লীগ কাজ করছে। এজন্যই দেশদ্রোহী প্রিয়া সাহাদের কিছু হয় না আর দেশপ্রেমিক আবরাররা খুন হয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সতেরো

 

তালেবানের পদ্ধতি, জামাতের পদ্ধতি, তাবলীগের পদ্ধতি, কওমিদের পদ্ধতি, সালাফিদের পদ্ধতি, তাহরীরের পদ্ধতি সব মিক্সড করলে যেটা পাওয়া যাবে তার নাম হচ্ছে দ্বীন কায়েমের সঠিক ইসলামী পদ্ধতি।

 

মনে হতে পারে একটা অন্যটার সাংঘর্ষিক, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা নয়।

 

তালেবান-মানহাযী থেকে নিব জিহাদের চেতনা, জিহাদের প্রেরণা, অস্ত্র হাতে নেয়ার প্রস্তুতি।

 

জামাত থেকে নিব ইসলামী স্বার্থরক্ষায় গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে নামকাওয়াস্তে অংশগ্রহণ। এইটা ব্যাকআপ হিসেবে।

 

তাবলীগের মত দ্বীনের দাওয়াত।

 

কওমিদের মত ইলমচর্চা ও প্রচার প্রসার।

 

সালাফিদের মত আকীদার ব্যাপারে সতর্ক হওয়া, আকীদার প্রচার প্রসার।

 

তাহরীরের মত খিলাফাহ-চিন্তা জাগ্রত করা। শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার দাওয়াত দেয়া।

 

বেরেলভির মত আশিকে রসুল হওয়া।

 

এ সবগুলো আমাদের মাঝে একত্র হলে বুঝতে হবে দলের চেয়ে দ্বীন আমাদের কাছে বড়, ঝগড়ার চেয়ে ভ্রাতৃত্ব আমাদের প্রিয়, উম্মাহকে আমরা ভালোবাসি, আমরা ভাগ নয়, এক হতে চাই। আমরা উম্মাহর পরাজয় না, বিজয় চাই।

 

এই আলোকে কর্মপদ্ধতি প্রণয়ন করতে হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আঠারো

 

আমরা যা যা করতে পারি-

 

১- গুম হওয়া, নিখোঁজ হওয়া, ডিবি পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া কিংবা দীনী কাজের কারণে কারাবন্দী আলেম, মজলুম দীনী ভাইদের পক্ষে কণ্ঠ উচ্চকিত করা কর্তব্য। যাদের ফেসবুক আছে তারা এই বিষয়ে পোস্ট করবেন। যারা লেখক আছেন তারা প্রবন্ধ/নিবন্ধ/কলাম লিখবেন। যারা বক্তা আছেন, বক্তৃতার মাধ্যমে মানুষকে জানাবেন। যাদের সাথে মিডিয়ার কারো পরিচিত আছে তাদেরকে অনুরোধ জানাবেন এই বিষয়ে নিউজ করতে।

 

২- আমরা ভাইরাল হওয়া বিষয় নিয়া লাফালাফি করতে জানি। কিন্তু কোনো বিষয় ভাইরাল করতে জানি না। আমাদের আলেম ওলামাগণ দীনী কাজের কারণে গ্রেফতার হন, গুম হন, খুন হন, নিখোঁজ হন; অথচ এসব নিয়ে সারা দেশে কখনো আলোড়ন সৃষ্টি হয় নি। কারণ আমরা আলোড়ন সৃষ্টি করতে জানি না।

 

৩- মনে রাখবেন অন্য কেউ দীনী কাজের কারণে বিপদে পড়েছে অথচ আপনি চুপ, তাহলে আপনিও বিপদে পড়লে সবাই চুপ থাকবে। চুপ থাকার সংস্কৃতিটা কি শেষ হওয়ার সময় আসে নি?

 

৪- এখন আমাদের কর্তব্য বেশি বেশি পোস্ট করা। গ্রুপে গ্রুপে এসব ছড়িয়ে দেয়া। অবশ্যই মানসম্মত লেখা লিখবেন।

 

৫- আব্দুল্লাহ মায়মুন, নাজমুদ্দীন, আতিকুল্লাহ, রেজওয়ান রফিকী। এরপরের নামটা আপনারও হতে পারে। সুতরাং এখনই জাগুন। জাগার মানে এই না শুধু রফিকী সাহেবের ব্যাপারে লিখবেন। বরং আগে যারা নিখোঁজ বা গুম হয়েছে হোক সে যে কোনো ঘরানার দীনী ভাই, তাদের সম্পর্কেও বলবেন। আর জাগা মানে এই না আতিকুল্লাহ বা রফিকী সাহেব সহি সালামতে ফিরে আসলে আমরা আবারও ঘুমিয়ে যাব। বরং ভবিষ্যতে যেন কারো এমন না হয় সেটার জন্য আমাদের সবসময় থাকতে হবে জাগ্রত।

 

৬- হেজবুত তৌহিদের বিরুদ্ধে কাজ করছিলেন রফিকী সাহেব। অতএব এদের সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করুন। এরাই হয়তো প্রশাসনকে উস্কানির মাধ্যমে রফিকী সাহেবকে বিপদে ফেলেছে। এদের সমালোচনা যদি এখন না করতে পারেন, তবে কখনোই পারবেন না।

 

৭- সমালোচনা করুন সাদা পোশাকী ডিবিদের এই পদ্ধতির। এটা গ্রেফতার করার কেমন পদ্ধতি যার কোনো নিয়ম নীতির বালাই নাই।

 

৮- হেজবুত তৌহিদ নিষিদ্ধ এবং এদের নেতা সেলিমকে গ্রেফতার করার জন্য আন্দোলন শুরু হোক। মাঠে আন্দোলনের আগে মিডিয়াযুদ্ধ শুরু করুন।

 

৯- কেউ পারলে পূর্বে হক্কানি যেসব আলেমগণ দীনী কারণে গ্রেফতার হয়েছেন, জেল জুলুম ভোগ করেছেন, গুম কিংবা খুন হয়েছেন তাদের সম্পর্কে একটা বিস্তারিত লেখা লিখেন। তাদেরকে মানুষের সাথে পরিচিত করাতে হবে, জানাতে হবে তারা কেন উম্মাহর জন্য দরকার? তাদেরকে গুম খুন গ্রেফতারের মাধ্যমে থামিয়ে দিতে পারলে কারা লাভবান হবে?

 

১০- আমরা সংখ্যায় অনেক। কিন্তু আমাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব নাই। আমরা বিভক্ত। আর আমরা নিজেদের আরও বেশি বিভক্ত করতে আগ্রহী, অথচ উচিৎ ছিল এক থাকা এবং বাতিলের মোকাবিলা করা। আজকে হেজবুত তৌহিদের মত ছোট একটা বাতিল ফিরকাও আমাদের আলেমদের হুমকি ধামকি দিচ্ছে, চ্যালেঞ্জ করছে। দুর্বল সিংহের মাথায় আজ ইদুর খেলা করছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

উনিশ

 

শহীদ আবরার ভাইরাল হয়েছেন, শহীদ রেহান আহসান হন নি।

 

রেহান আহসানও বুয়েটে পড়তেন, মেধাবী ছিলেন, ইসলামকে ভালোবাসতেন।

 

ইসলামের টানে হেফাজতের আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। ৫ই মার্চ রাতে গনহত্যায় শহীদ হন।

 

তিনি ভাইরাল হন নি, সেকুলাঙ্গার পত্রিকাগুলো তাকে 'শিবিরকর্মী' বলে নিউজ করে। শিবির মরলে জাফর ইকবালরা খুশি হয়। প্রথম আলো খুশি হয়। ছাত্রলীগ ও মানবতার আম্মু খুশি হয়। আর সেটা যদি হেফাজতের আন্দোলনে হয় তাহলে তো সোনায় সোহাগা।

 

রেহান ভাইকে আল্লাহ তার রহমতের চাদরে আবৃত রাখুন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বিশ

 

এক ব্যক্তি কমেন্ট করলেন জিহাদী বই পড়ে নাকি মগজ ধোলাই হয়। এদের প্রতিহত করা দরকার। আমি বল্লামঃ

"জিহাদী বই কি ভাই? কুরআনেও কয়েকশত জিহাদের আয়াত আছে, তো কুরআনও কি জিহাদী বই না? আর জিহাদ ইসলামের সুস্পষ্ট বিধান, যা অস্বীকারকারী কাফির হয়ে যাবে।"

 

তখন সেই ব্যক্তি প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে চলে গেলেন বাংলা ভাই আর হলি আর্টিজানে। আমি তখন এই কমেন্ট করলামঃ

 

সেকুলার লেন্সে জিহাদী বই কোনগুলোকে বলা হয় জানা আছে ভাই। কিছুদিন আগেই ফাজায়েলে আমলকে জিহাদী বই বলা হয়েছিল, অথচ এটা হচ্ছে নিরীহ তাবলীগীদের একটি কিতাব। এর আগে জিহাদী বই বলা হয়েছিল হিসনুল মুসলিমকে, এটা হচ্ছে দোয়ার একটা বই।

 

যখন জিহাদী বই সহ জঙ্গি আটকের নিউজ টিভিতে দেখি তখন বইগুলোর দিকে চোখ দিলেই বুঝতে পারি সেকুলারদের মাথার ঘিলু। কখনো জামায়াতের বই, কখনো সাধারণ ইসলামী বইকে জিহাদী বই হিসেবে চালিয়ে দেয়। আসলে ইচ্ছে করেই এমন করে। জিহাদ ইসলামের সাথে এমনভাবে জড়িত, ইসলামের নাম শুনলেই সেকুলারদের গা জ্বালা করে। কারণ ইসলাম যতদিন আছে, জিহাদ থাকবে।

 

আপনি বলছিলেন জিহাদী বই নিয়ে, কিন্তু প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে চলে গেলেন বাংলা ভাই আর হলি আর্টিজানে। আপনি বললেন মগজ ধোলাইয়ের কথা। মগজ সবারই ধোলাই হয়। কেউ হয় সেকুলার এবং তাদের মিডিয়ার দ্বারা মগজ ধোলাই আর কেউ হয় ইসলামের দ্বারা মগজ ধোলাই। যারা মিডিয়ার দ্বারা হয় তারা এর বাইরে চিন্তা করতে পারে না। যেমন আপনি, এজন্যই জিহাদী বই কি সেটাই জানেন না। ইসলামের অনেক বিধান রয়েছে, যেমন নামাজ রোজা ইত্যাদি। নামাজ বিষয়ক যেমন বই আছে, জিহাদ বিষয়ও আছে। নামাজ শেখার জন্য যেমন নামাজ সংক্রান্ত বই পড়তে হয়, জিহাদ সম্পর্কে জানার জন্য ঐ বিষয়ের বই পড়তে হয়। জিহাদ যেহেতু ইসলামের বিধান, ইলম অর্জন যেহেতু ফরজ, সুতরাং জিহাদী বই পড়াও ফরজ।

 

ইসলামে অনেক দল মত আছে। এই সব দল মত নিয়েই ইসলাম। এরকমই বাংলা ভাই, আর নিব্রাসরাও একটা দলের অংশ। তাদের উদ্দেশ্য ভালো, কিন্তু পদ্ধতি ভুল ছিল। আপনি পদ্ধতির সমালোচনা করতে পারেন কিন্তু উদ্দেশ্য-র সমালোচনা করা মূলত ইসলামের সমালোচনা করার নামান্তর। আর মরলেই জান্নাতী, এটাও সঠিক। যদি কেউ সঠিক পন্থায় জিহাদ করে, তবে মরলে শহীদ হবে।

 

ইসলামকেন্দ্রিক চিন্তা করুন, তাহলে বুঝবেন আপনারা সেকুলার, পাশ্চাত্য আর মিডিয়ার দ্বারা কি পরিমাণ মগজ ধোলাই। আমরাও মগজ ধোলাই, তবে সেটা ইসলামের দ্বারা।

 

 

 

 

 

 

 

 

একুশ

 

জামায়াতের গর্ভ থেকে বের হওয়া মোডারেট এইচ আল বান্না সাহেব কইতেছেন, আবরার মরাতে সবাই প্রতিবাদ করছে, কোনো নাস্তিক মরলে এতো প্রতিবাদ হইত না।

 

তো আমিও কমেন্ট করলামঃ

 

মুরতাদ মরলে খুশি হওয়ায় খারাপ কি? বরং এটা খুশি হওয়ারই বিষয়।

 

আবরারের শাহাদাতে সবাই প্রতিবাদ করতেছে কারণ এটা কোনো একভাবে জাতীয় ইস্যুতে পরিণত হইছে। এর আগে তো শত শত শিবির, জামায়াত মারা হইছে, তখন সবার প্রতিবাদ কই ছিল?

 

এইটা আদর্শিক দ্বন্দ্ব। নাস্তিক মরলে ঈমানদাররা খুশি হবে, আর ঈমানদার মরলে নাস্তিকরা খুশি হবে। আর আপনাদের মত কিছু মুনাফিক আছে যারা ফেরাউন, আবু লাহাব মরলেও দুঃখ প্রকাশ করে আবার হামজা ও জাফর রাঃ এর শাহাদাতেও কান্না করে। পুরাই উবাই সাহেবের চরিত্র।

 

বান্না সাহেব, ইসলামে লগে একটুখানি লিবারেলিজম, একটু খানি ফেমিনিজম মিশায়া দিলে কি অনেক বেশি বুদ্ধিজীবিতা হয়?

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বাইশ

 

আমি সবসময় এভাবে ভাবি, ইসলামকে সবসময় যুক্তি দিয়ে বোঝা সম্ভব না। হ্যাঁ, জেনে বুঝেই আমি ইসলামে এসেছি, ইসলামকে একমাত্র সত্য দ্বীন মনে করি, কিন্তু ইসলামের সব বিষয়কে যুক্তি দিয়ে বোঝা যায় না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ইসলাম যুক্তির উর্দ্ধে।

 

এর সবচেয়ে বড় শিক্ষাটা মুসা আঃ এর জীবনে পাওয়া যায়, খিজির আঃ এর সাথে যখন তার সাক্ষাৎ হল তখন খিজির আঃ এমন কিছু অযৌক্তিক কাজ করলেন যা কিনা মুসা আঃ এর কাছে ভুল মনে হয়েছিল। অর্থাৎ ইসলাম এখানে যুক্তির উর্দ্ধে। এটা কখনোই যুক্তি দ্বারা বোঝা সম্ভব ছিল না যতক্ষণ না খিজির আঃ ব্যাপারটা ক্লিয়ার করেন। আমাদের জীবনেও মাঝেমাঝে ইসলামের কিছু বিষয় সম্পর্কে সন্দেহ সংশয় আসতে পারে যা মূলত শয়তানের ওয়াসওয়াসা, এমতাবস্থায় আমাদেরকে মুসা নবীর মত অপেক্ষা করতে হবে যতক্ষণ না ক্লিয়ার হয়। মুসা আঃ-কে ক্লিয়ার করার জন্য খিজির ছিলেন, আমাদেরকে ক্লিয়ার করার মত কেউ নাই। তাই বলে অযৌক্তিক মনে করে ইসলামের প্রতি বিশ্বাস হারাবো তা হতে পারে না। মুসা আঃ নবী হওয়া সত্ত্বেও তার কাছে খিজিরের কাজকারবার ভুল মনে হয়েছিল, আর আমরা তো সাধারণ মানুষ, আমাদের কাছে একটা অযৌক্তিক মনে হলেই সেজন্য ইসলামের ব্যাপারে সন্দিহান হব, এটা কেমন কথা? এটা তো হচ্ছে সেইসব নাস্তিকদের মত চিন্তা যারা বলে দেখি না বলে বিশ্বাসও করি না।

 

ইসলামে অনেক বিষয় আছে যা আমাদের ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে ধরবে না, আর এইসব বিষয় নিয়েই শয়তান বেশি ওয়াসওয়াসা দেয়। আর আল্লাহ তো বলেছেন, অস্পষ্ট বিষয় নিয়ে পড়ে না থাকতে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তেইশ

 

এমন কিছু সুন্নাতের তালিকা করলাম যা অবহেলিত সুন্নাহ। আল্লাহ আমাদেরকে পালন করার তৌফিক দিন।

 

১- সুন্নাত নামাজ বাসায় পড়া। ফরজ মসজিদে কিন্তু সুন্নাহ বাসায় পড়া উত্তম।

 

২- বিতরের নামাজ শেষ রাতে পড়া, ফজরের আগে।

 

৩- প্রথম বা দ্বিতীয় কাতারে পড়া এবং ডানদিকে দাঁড়ানো। কিছু বোকা মানব আছেন যারা সামনে খালি দেখলে অন্যরে আগায় দেয়, নিজে যাইতে চায় না।

 

৪- তাহিয়াতুল মসজিদ এবং তাহিয়াতুল অজু আদায়ের চেষ্টা।

 

৫- শুক্রবার দিন বেশি বেশি দুরুদ আর কম কম ইস্তিগফার পাঠ, অন্যান্য দিন বেশি বেশি ইস্তিগফার এবং কম কম দুরুদ পাঠ। গুনাহগারদের জন্য সবচেয়ে বড় জিকির ইস্তিগফার, সেই জন্য।

 

৬- দুয়া কবুলের সময়গুলা ধরার চেষ্টা, যেমন বৃষ্টির সময়, আজান ও ইকামতের মাঝের সময়, নামাজে শেষ বৈঠকে এবং সেজদায়, ফরজ নামাজ শেষে, তাহাজ্জুদে ইত্যাদি।

 

৭- উপরে উঠতে আল্লাহু আকবার, নিচে সুবহানাল্লাহ এবং চলতে চলতে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।

 

৮- সকালে না ঘুমানো, রাতে ঘুমানো এবং দুপুরে কাইলুলা।

 

৯- পরিচিত অপরিচিত সবাইকে সালাম দেয়া।

 

১০- ফজরের নামাজের পর যিকির আযকার করে সূর্যোদয়ের ১৫-২০ মিনিট পর সালাতুদ দুহা আদায় করা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চব্বিশ

 

প্রতি রাতে পুরা সমাজের জন্য আমার মন ঘৃণায় ভরে উঠে, অভিশাপে ভরে উঠে। সমাজের সেই মানুষগুলোর প্রতি প্রচণ্ড জিদ চেপে বসে যারা বিয়েকে কঠিন করে দিয়েছে, কঠিন বিয়েকে সমর্থন করে, অথচ যৌনতাকে স্বাভাবিক বিষয় হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে কিংবা এসবের বিরোধিতা করে না।

 

আল্লাহ এমন মানুষদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে আমাকে ও আমার পরিবারকে হেফাজত কর যাদের প্রতি সমাজের যুবক যুবতীরা নিজেদের যৌন চাহিদা হালালভাবে মেটাতে না পারার দুঃখে সমাজের কঠিন-বিয়ে সমর্থনকারীদের প্রতি মন থেকে অভিশাপ দেয় ও ঘৃণা করে।

 

আমার সন্তানদের আমি ১৪-১৫ বছর বয়সে বিয়ে দিয়ে দিব ইনশাআল্লাহ।

 

 

 

 

 

 

 

 

পঁচিশ

 

নাস্তিকদের কাছেই প্রথম শুনেছিলাম মুসলিমরা নাকি উটের ইউরিন খায়, অথচ এর আগে জীবনে শুনিও নি, দেখিও নি। নাস্তিকরা এমন ভাবে বলে যেন আমরা পানির মত উটের ইউরিন খাই অথবা বরকতের উদ্দেশ্যে খাই। অথচ আমাদের নবী কিংবা সাহাবিদের কেউ এগুলো খান নি। শুধু রোগের জন্যই খেতে বলেছেন এবং যারা খেয়েছে তারা সুস্থ হয়েছে।

 

ইসলামী আইনশাস্ত্র অনুযায়ী মানে হানাফি ও শাফেয়ী ফিকহ অনুযায়ী উটের পেশাব অপবিত্র এবং হারাম । এটা শুদুমাত্র ঐ সময়ের হালাল হবে যখন এটি কোন রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যাবহার করা হবে এবং যখন সেই রোগের অন্য কোন হালাল ঔষধ থাকবে না । বিখ্যাত হানাফি ফকিহ আল্লামা বাদরুদ্দিন আল আইনি (রহ) তাঁর বিখ্যাত সহিহ বুখারির ব্যাখ্যা গ্রন্থ উমদাতুল কারী গ্রন্থে ঐ হাদিসের ব্যাখ্যায় লিখেছেন , হারাম জিনিস দিয়ে চিকিৎসা তখনই হালাল হবে যখন তার মধ্যে আরোগ্য আছে । এটা জানা যাবে এবং অন্য ঔষধ থাকবে না । এটি সেই অবস্থার মত , যখন খাবারের এবং পানির অভাবে মৃত্যু সময় যথাক্রমে হারাম মাংস হালাল এবং মদ পান করা হালাল হয়ে যায়।

 

হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানি (রহ) তাঁর বিখ্যাত সহিহ বুখারির ব্যাখ্যা গ্রন্থ ফাতহুল বারি গ্রন্থে ঐ হাদিসের ব্যাখ্যায় লিখেছেন, এরকম ঔষধের ব্যাবহার শুদুমাত্র তখনই হালাল হবে যখন অন্য কোন চিকিৎসা থাকবে না । উপরোক্ত বিখ্যাত হাদিস ব্যাখ্যাকারদের থেকে জানতে পারলাম । উটের পেশাব হারাম তবে শুদুমাত্র তখনই হালাল হবে যখন ব্যক্তির রোগের জন্য অন্য কোন ঔষধ পাওয়া যাবে না । ঐ হাদিসেই কিন্তু আছে যে উটের দুধ ও পেশাব পান করে তারা সুস্থ হয়েছিল । এ থেকে পরিস্কার বুঝা যায় উটের পেশাব ছিল ঔষধ স্বরূপ । এ ছাড়া রাসুল (সা) জীবনেও কখনোই কাউকে উটের পেশাব খেতে বলেননি ।বর্তমানে অনেক পশুর পেশাব হতে ঔষধ তৈরি করা হয় । গর্ববতী ঘোটকীর পেশাব থেকে ইষ্টোজেন আলাদা করা হয় এবং সেটা ক্যান্সার সব বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে ব্যাবহার করা হয় । সেটা ট্যাবলেট হিসেবে আমরা মুখে দিয়েই কিন্তু খাই বাজারে যেটা প্রিমারিন নামে পাওয়া যায় । উটের দুধ ও মুত্র দিয়েও ঔষধ তৈরি করা হচ্ছে ।

 

তথ্য গুলো লিয়াকত ভাই থেকে নেয়া। উপরের প্রথম প্যারাটা শুধু আমার।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ছাব্বিশ

 

জুবায়ের ভাই যা বলছেন তা সঠিক। আসলেই ফেবুতে যারা লেখালেখি করেন তারা অনেক জ্ঞানী না। কিন্তু যদি বলা হয় জ্ঞানীরা ছাড়া কেউ লিখতে পারবে না। তাইলে সমস্যা হয়ে যাবে। এই ব্যাপারটার সাথে একমত না। জ্ঞানী, অজ্ঞানী, অল্প-জ্ঞানী, বেশি-জ্ঞানী সবারই লেখার দরকার আছে।

 

কারণ হচ্ছে, অনেক জ্ঞানী মানুষ নিজেকে জ্ঞানী মনে করে না। অনেক বড় বড় আলিম আছে যারা জীবনে কোনো বই লিখে যান নি। তারা লিখেন নি কারণ তারা নিজেদের জ্ঞানী মনে করতেন না, এছাড়া রিয়ার ভয়ে লেখেন নি, অনেকে খ্যাতির ভয়ে লেখেন নি। অনেকে আবার অনেক জ্ঞানী, কিন্তু তারা ভালো লেখক ছিলেন না। তাফসির ইবনে কাসির সবচেয়ে বিখ্যাত মানে এই না ইবনে কাসির রঃ শ্রেষ্ঠ মুফাসসির ছিলেন। প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ বেশি বিখ্যাত মানে এই না এই বিষয়ে আরিফ আজাদ এই বিষয়ে সবচেয়ে বেশি জ্ঞানী।

 

জ্ঞানচর্চা কিংবা বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নতির জন্য চিন্তার প্রকাশ জরুরী। চিন্তার আদান প্রদান করতে হয়। মীর সালমান গালাগালি করে, অশ্লীল কথাবার্তা বলে, তবু তাকে আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়। কারণ তার অনেক চিন্তা মানুষের জন্য উপকারী।

 

আমি মনে করি শরিয়াহর সীমার মধ্যে থেকে যে কোনো চিন্তার প্রকাশকে সাধুবাদ জানানো উচিৎ। আর ক্রুটি বিচ্যুতিরও গঠনমূলক সমালোচনা করা উচিৎ। জুবায়ের ভাইয়ের এই লেখাটার সাথে শতভাগ একমত না হয়েও শেয়ার দিয়েছি, কারণ তার চিন্তাটা মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার দরকার আছে। সবরকম মতামত সমাজে মউজুদ থাকা চাই যেন মানুষ তুলনা করা শিখতে পারে। বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে জ্ঞানের চর্চা করতে পারে। চারটা মাজহাব না হয়ে একটা হলে সমস্যা হয়ে যেত, সালাফদের যে বুঝের ভিন্নতা, এটাই আমাদের জন্য ইসলামকে সহজ করে দিয়েছে।

 

জুবায়ের ভাই এতো সরলভাবে যে বলে দিলেন, অল্পজ্ঞানী বা কমজ্ঞানীদের লেখার অধিকার নাই, কারণ তারা এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ না, এটা খুবই স্থুল চিন্তা। রাদারফোর্ড মডেলে ভুল ছিল বলেই বোর মডেল এসে তা সংশোধন করে। আরিফ আজাদের প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ অনেক বিখ্যাত, কিন্তু যারা এই বিষয়ে অভিজ্ঞ তারা জানেন এটা কত নিম্নমানের বই। কিন্তু আরিফ আজাদ যদি এই বই না লিখতেন তবে এই বিষয়ের আরও ভালো ভালো বইগুলো আসতো না।

 

সুতরাং অজ্ঞ, বিশেষজ্ঞ সবাই লিখবে। শরিয়াহ এর সীমার মধ্যে থাকলে সবার লেখার অধিকার আছে। বাঙালী মুসলমানদের চিন্তার চর্চা বেশিদিন হয় নি। সময়ের সাথে সাথে উন্নতি হবে। কিন্তু যদি থামিয়ে দেয়া হয় তাহলে সমস্যা।

 

খাওয়ার কিছু না থাকলে আর মরণ নিশ্চিত হলে মদও হালাল হয়ে যায়। এখন আমাদের অবস্থা এমন মদ খাওয়া জায়েজ, অর্থাৎ প্যরাডক্সিক্যাল সাজিদ টাইপের বইগুলাই আপাতত গিলতে হবে যতদিন না বিশেষজ্ঞদের বই আসে। সাজিদকে ছোট করছি না, শুধু বোঝানোর জন্য বলছি। সাজিদ যেমন জরুরী তেমনি যারা ফেমিনিজম নিয়া বেশি না জাইনা না পইড়াও লিখতেছে তারাও আমাদের জন্য জরুরী। অন্তত কিছু তো লিখতেছে, লেখার ধারা তো অন্তত তৈরি করতেছে। এটাকেই সাধুবাদ জানাতে হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সাতাইশ

 

কলরবের এই পোস্টারটা (safar) আসলেই অসাধারণ। সুন্দর। সবাই এটার সমালোচনা করতেছে কেন বুঝলাম না। চলচ্চিত্রের পোস্টারের মত লাগে, এই কারণেই কি সমালোচনা হচ্ছে? কিন্তু পোস্টারে তো কোনো শরিয়ত-বহির্ভূত কিছু দেখতে পাচ্ছি না। আর মুভির পোস্টারের মত হলেই বা কি সমস্যা? নাশীদের সুরও তো গানের মত, তাই বলে কি নাশীদ শোনাও হারাম নাকি? আসলে যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা। কলরবের অনেক রকম ফাউলামির সমালোচনা করা যায়, কিন্তু এই পোস্টারটায় সমস্যা দেখি না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আঠাইশ

 

দুরুদ

 

কাহফ

 

গুসল

 

মিসওয়াক

 

আতর

 

খুৎবা

 

দুয়া

 

#জুমু'আ

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ঊনত্রিশ

 

সেকুলারদের সমস্যা হচ্ছে তারা ইসলাম ধর্মকে অন্যান্য ধর্মের মত একটি ধর্ম মনে করে। অর্থাৎ ইসলাম যে সত্য দ্বীন এটা তারা মানে না। ফলে তাদের বক্তব্যগুলো তেমনই হয়। উল্লেখ্য ইসলামকে অন্যান্য ধর্ম থেকে কেউ আলাদা না মনে করলে সেটা কুফর হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ত্রিশ

 

এক বোন বললেন ফেসবুকে মেয়েদের ছবি দেয়া দোষ হলে ছেলেদেরটা কেন দোষ নয়। আমি এর উত্তরে বলব, এই ক্ষেত্রে তুলনা করাটা ঠিক হল না। তুলনা করলে আলোচনা অন্য দিকে চলে যায়। হ্যাঁ, ছেলেরা ফেসবুকে ছবি দিবে না, এটা আল্লাহভীরুতার নিদর্শন, ভালো। কিন্তু ছেলে আর মেয়েদের বিধান তো আলাদা, ছেলেদের চেহারার পর্দা করতে হয় না, মেয়েদের করতে হয়। অবশ্য মেয়েরাও ছেলেদের দিকে তাকাবে না, কিন্তু এর মানে এই না ছেলেদের জন্য নিকাবের বিধান দেয়া হয়েছে। যেমন রাস্তায় আমরা চলাফেরা করি, রাস্তায় পুরুষরা মুখ ঢেকে বের হই না। ফেসবুককে আমরা এমন একটা পাবলিক প্লেইস ধরতে পারি। তাই ছেলেদের জন্য ছবি দেয়া মেয়েদের ছবি দেয়ার মতই হারাম, এটা বলা যায় না। কিন্তু যেভাবে সেই বোন তুলনা করলেন আর দুটাকে এক করে দেখাতে চাইলেন এই কথা নারীবাদীদের মত হয়ে গেল। দুইটা আলোচনা দুই দিকের। হ্যাঁ, কেউ যদি ছবি তোলা থেকে বিরত থাকে সেটা ভালো। কিন্তু ছেলেদের ছবি দেয়া মেয়েদের মত হারাম না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

একত্রিশ

 

আদম আঃ জান্নাতে ছিলেন। তবু আদম আঃ এর একাকীত্ব দূর করার জন্য আল্লাহ তা'আলা হাওয়া আঃ-কে সৃষ্টি করলেন এবং তাদের বিবাহ দিলেন। জান্নাতের মত পবিত্র জায়গায় যদি সঙ্গী দরকার হয় তাহলে দুনিয়ার মত নোংরা জায়গায় একা থাকা কিভাবে সম্ভব?

 

জান্নাতেও জান্নাতীরা বিবাহিত থাকবে। অথচ জান্নাত হচ্ছে এমন স্থান যেখানে কুচিন্তা, কুকর্ম, কুদৃষ্টি, লালসা সব নেগেটিভ যৌনতা থেকে মুক্ত। এমন একটি জায়গাতেও সবাই বিবাহিত থাকবে। অথচ দুনিয়া কত নোংরা জায়গা, সব রকম নেগেটিভ যৌনতা মওজুদ আছে, এই পরিবেশে অবিবাহিত থাকা গুনাহকে আমন্ত্রণ জানানোর মত।

 

 

 

 

 

 

 

 

বত্রিশ

 

পুরুষবাদ!

 

পুরুষবাদ হচ্ছে নারীবাদের প্রতিক্রিয়ায় তৈরি একটি অবস্থান। নারীবাদও আবার পুরুষতন্ত্রের প্রতিক্রিয়ায় তৈরি একটি মতবাদ। অনেক সময় নারীবাদীরা ইসলামকে পুরুষতান্ত্রিক ধর্ম বলে আখ্যায়িত করে। তবে তারা যাই বলুক, ইসলাম যেমন তেমনি। ইসলামকে যদি পুরুষতান্ত্রিক ধর্ম মনে হয়, তাহলে ইসলাম তেমনি। ইসলাম আল্লাহর মনোনীত দ্বীন। আল্লাহ যদি পুরুষদের অধিকার বেশিও দিয়ে থাকেন তবু ইসলাম সত্যধর্মই থাকে। কারণ তা আল্লাহ পাঠিয়েছেন, আর নারীবাদ যতই যুক্তিযুক্ত মনে হোক না কেন, এটা তৈরি হয়েছে কিছু মানুষের মস্তিষ্ক থেকে।

 

ইসলাম পুরুষদেরকে অধিকার বেশি দিয়েছে এই কথা আমি বলি না, এটা নারীবাদীরা বলে। তারা ইসলাম সম্পর্কে না জেনে নিজেরাই একটা মনগড়া কথা ইসলামের উপর আরোপ করে যার কোনো প্রমাণ নেই। বরং ইসলাম নারীকে পুরুষের জন্য এবং পুরুষকে নারীর জন্য সৃষ্টি করেছেন। একজন ছাড়া অন্যজন শুন্য, কারণ পৃথিবীর সব নারী যদি নাই হয়ে যায় তবে পৃথিবীর মানুষ সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হতে ১০০ বছরের বেশি সময় লাগবে না। পুরুষ ছাড়াও নারীর অবস্থা একই হবে। তাহলে উভয়ের এই সম্পর্ককে কেন তিক্ত করা হচ্ছে নারীবাদের নামে?

 

ইসলামে পুরুষ ও নারীকে আলাদা আলাদা অধিকার দিয়েছে। সমান অধিকার দেয় নি, আর সমান অধিকার দেয়াটাও নারীদের জন্য কল্যাণকর না। আমাদের মাঝে অনেকে বেটে মানুষ আছেন, অনেকে আছেন লম্বা। লম্বা ব্যক্তিকে একটা টুলে দাড় করালে এবং একই সাইজের আরেকটি টুলে খাটো ব্যক্তিকে দাড় করালে তফাৎ আগের মতোই থাকবে। অথচ তাদেরকে সমান অধিকার দেয়া হয়েছে। বেটে হওয়া লজ্জার কিছু না, আর লম্বা হওয়াও গৌরবের কিছু না। একইভাবে নারীত্বকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। সেই লম্বা এবং বেটে ব্যক্তির মত নারী ও পুরুষকে সমান অধিকার দিলেও পার্থক্য আগের মতোই থাকবে। বরং বেটে ব্যক্তিকে একটু লম্বা টুল আর লম্বা ব্যক্তিকে ছোট টুল দিলে দুজনের উচ্চতা সমান হবে, এটাকেই বলে প্রকৃত অধিকার দেয়া। নারীদেরকেও ইসলাম দিয়েছে সত্যিকারের অধিকার। নারীদের পুরো পৃথিবীর মানুষের মা বানানো হয়েছে, মায়ের চেয়ে পৃথিবীতে সম্মানজনক কিছুই নাই। যেই রাজা বিশাল রাজ্য পরিচালনা করে সেই রাজাও একজন নারীর জরায়ু থেকে বের হয়েছে। অথচ মা হওয়ার সম্মানজনক অবস্থানকে আজ দুনিয়ার মানুষ হেয় মনে করে। মা হতে চায় না, দেরি করে মা হতে চায়, দুইয়ের বেশি সন্তানের মা হতে চায় না। অথচ মায়েরা আছে বলেই পৃথিবী টিকে আছে। মায়েদের মা হওয়াকে যারা বন্ধ করতে চায়, এর গতিকে যারা থামাতে চায় তারাতো পুরো মানবজাতিকে ধ্বংস করতে চায়।

 

শুধু করেছিলাম পুরুষবাদের আলোচনা দিয়ে। অনেক সময় দেখা যায় নারীবাদের সমালোচনায় অনেকে পুরুষবাদী হয়ে উঠে। আমি একজন পুরুষ হিসেবে পুরুষবাদের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান ঘোষণা করছি। ইসলামের মধ্যে এতো বাদ-মতবাদের স্থান নেই। নারীবাদ যেমন হারাম, পুরুষবাদও। যারা নারীবাদের বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে নারীদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ায় তারা তো নারীবাদীদের মতোই নিকৃষ্ট। আল্লাহ নারী-পুরুষকে সৃষ্টি করেছেন মিলে মিশে থাকতে, একে অপরকে মোহাব্বত করতে। কিন্তু এই সম্পর্ককে তিক্ত করার জন্য নারীবাদ এবং এর প্রতিক্রিয়ায় পুরুষবাদ তৈরি হয়ে মানবজাতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।

 

আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন এইসব বাতিল চিন্তা ও মতবাদ থেকে।

 

 

 

 

 

 

 

 

তেত্রিশ

 

একাকীত্ব দূর করার জন্য বিয়ের বিকল্প নাই। এই একাকীত্ব হচ্ছে একটা স্পেশাল একাকীত্ব। এই স্পেশাল একাকীত্ব শুধুমাত্র হালাল সঙ্গীর মাধ্যমেই দূর হয়। আমাদের জীবনে তো অনেক মানুষই আছে, মা আছে, বাবা আছে, ভাই বোন, বন্ধু বান্ধব, আত্মীয়, প্রতিবেশী অনেকেই আছে। তাদের সাহচর্যে সাধারণ একাকীত্ব দূর হয়। কিন্তু স্পেশাল একাকীত্ব যেটা কিনা স্পেশাল লাভের সাথে সম্পর্কিত সেটা দূর হয় না স্ত্রী/সঙ্গী ছাড়া।

 

প্রেম-ভালোবাসা এগুলোকে আমরা অনেক সময় আম করে ফেলি। যদিও শব্দগুলো খাসভাবে স্ত্রী/সঙ্গীর সাথে সম্পর্কিত কিন্তু ব্যবহারের ক্ষেত্রে এগুলো আম। তবে বাস্তবতা হচ্ছে সেই স্পেশাল লাভ বাবা-মা কিংবা বন্ধু বান্ধব কারো সাথেই সম্ভব না যেটা স্ত্রী কিংবা জীবনসঙ্গীর সাথে সম্ভব।

 

আল্লাহ আমাদের স্পেশাল একাকীত্বকে স্পেশাল লাভের মাধ্যমে দূরীভূত করে দিন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চৌত্রিশ

 

জুমু'আর নামাজে গেলেই কয়েকটা ভুল চোখে পড়ে। এগুলো এমন ভুল যে ভুলকারীর ব্যাপারে নেগেটিভ ধারণা মনে চলে আসে। তাই শেয়ার করছি যদি কেউ এসব ভুল করে থাকেন তবে ভুল সংশোধন করে নিবেন ইনশাআল্লাহ।

 

১- সুতরা সামনে না দিয়ে নফল নামাজে দাঁড়িয়ে দাওয়া। এটা এমন ভুল যে বিরক্তিকর। ফলে মানুষ আসা যাওয়া করতে পারে না। নিয়মিত নামাজীরা অর্থাৎ যারা ৫ ওয়াক্ত মসজিদে আসে, তাদের দ্বারা এসব হওয়ার কথা না। ৫ ওয়াক্ত নামাজে এগুলো তেমন দেখা যায় না। শুধু জুমু'আর দিনই সাপ্তাহিক মুসল্লী ভাইদেরকে এই কাজটা বেশি করতে দেখা যায়।

 

তারা হয়তো জানে না। আমার মাঝেমধ্যে ইচ্ছে করে তাদের কাছে গিয়ে এই ব্যাপারটা জানাই। এই ব্যাপারটা সবার জানা উচিৎ যে সুতরা না থাকলে নামাজরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে আসা যাওয়া করা নিষেধ।

 

২- মানুষকে ডিঙ্গিয়ে কষ্ট দিয়ে সামনে যাওয়া। এটা শুধু অনুচিত নয় বরং গুনাহর কাজ। অথচ কিছু লোক কাছ থেকে বয়ান, খুৎবা শোনার জন্য এই কাজটা করে থাকে। অর্থাৎ সাওয়াব কামানোর জন্য যায় কিন্তু পথ দিয়ে গুনাহ কামাতে কামাতে যাচ্ছে।

 

৩- খুৎবার সময় কথা বলা। এই কাজটা করে কম বয়সী ছেলেরা, কিশোর ও তরুণরা, তারা মসজিদের সবার উপরের ২ তলা দখল করে এবং গল্প গুজব করে। অথচ খুৎবা মনোযোগ দিয়ে শোনা ওয়াজিব।

 

৪- চেয়ারে বসা নামাজী। মসজিদে সারি সারি চেয়ার দেখে অবাক হতে হয় এটা মসজিদ নাকি চার্চ। অথচ হানাফী উলামাদের মতে কোনো অবস্থাতেই চেয়ারে বসে নামাজ জায়েজ নেই, দরকার হলে শুয়ে শুয়ে পড়বে। অনেকে খুৎবা শোনার জন্যও চেয়ার দখল করে।

 

৫- খুৎবা শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে কিংবা নামাজ শুরু হওয়ার মুহূর্তে উপস্থিত হন সাপ্তাহিক মুসল্লীরা। ওজর থাকলে ভিন্ন কথা। কিন্তু বেশিরভাগ ইচ্ছাকৃত ভাবে এরুপ করে। তারা কি জানে না খুৎবা শোনা ওয়াজিব?

 

আরও অনেক ভুল ক্রুটি দেখা যায়। আল্লাহ আমাদেরকে এসব ক্রুটি থেকে হেফাজত রাখুন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পঁয়ত্রিশ

 

গুজব, মিথ্যা নিউজ, ভুল তথ্য এই যতকিছু দেশে ছড়ায় এর জন্য দায়ী আলতু ফালতু মার্কা নিউজপোর্টালগুলা। বহু সরল সোজা মানুষ এদের নিউজগুলো শেয়ার দেয়। অথচ অধিকাংশ নিউজ মিথ্যা থাকে, ভুল থাকে। অনেক সময় শিরোনামে থাকে এক, ভিতরে আরেক। এভাবে মানুষের সাথে প্রতারণা করে চলছে দেশের হাজারো অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এসব বন্ধ করে দেয়া উচিৎ।

 

আমার ফেসবুকের অনেক ফ্রেন্ডকে হাবি-জাবি নিউজ পোর্টালের সংবাদ শেয়ার দিতে দেখি, আমি খুব বিরক্ত হই। ইচ্ছে করে আনফ্রেন্ড করে দিই, পরক্ষনেই ভাবি এরা সহজ সরল বলেই এতো কিছু বুঝে না।

 

কিন্তু মুমিন হলে কি এতো বোকা হওয়া চলে! যেখানে ইসলাম কিনা বলছে কোনো নিউজ পেলে যাচাই বাছাই না করে প্রচার না করতে। জাতীয় পত্রিকাগুলো যদিও সেকুলার কিন্তু ভুল তথ্য কম থাকে, অনেক প্রোপ্যাগান্ডাও থাকে তাদের। কিন্তু এর চেয়ে বেশি খারাপ হচ্ছে অনলাইন নিউজপোর্টালগুলো, এগুলো এমন আকর্ষণীয় শিরোনাম দেয় যেন সরল সোজা মানুষদের বোকা বানিয়ে ব্যবসা করতে পারে।

 

আল্লাহ আমাদের বুঝ দিক।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ছত্রিশ

 

আলহামদুলিল্লাহ। ভারতীয় এক শাতিমের জাহান্নাম-যাত্রার সংবাদ শুনে দিল ঠাণ্ডা হয়েছে। কিন্তু বাঙ্গালদেশে বহুদিন যাবত জানোয়ার শাতিমদের কুত্তা-মউতের সুসংবাদ পাচ্ছি না! হে আল্লাহ, ভারতীয় মুমিনদের ন্যায় বাংলাদেশী মুমিনদের অন্তরকেও ঠাণ্ডা করে দাও।

 

যেসব বীর সিংহ তাদের প্রিয় নেতা রসুলুল্লাহ সাঃ এর ভালোবাসায় শাতিমকে নরকে পাঠায় সেইসব বীর সিংহকে আল্লাহ তা'আলা ঈমানের সাথে বেঁচে থাকা, ঈমানের সাথে মরার তৌফিক দান করুন। তাদেরকে জেল জুলুম ও অত্যাচার নির্যাতনে সবর করার তৌফিক দিন, তাদেরকে আপনার কুদরতের মাধ্যমে নিরাপত্তা দান করুন, হে আল্লাহ।

 

 

 

 

 

 

 

 

সাইত্রিশ

 

জুহায়মান আল উতাইবির ঘটনা থেকে আমরা এই শিক্ষাটাই পাই দুনিয়াবী ব্যাপারে যেমন হুটহাট সিদ্ধান্ত নিতে হয় না, তেমনি দ্বীনী ব্যাপারেও। না ভেবে, যাচাই না করে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ নয়। জুহায়মান খুব আল্লাহওয়ালা মানুষ ছিলেন। কিন্তু শয়তানের ধোঁকায় পড়ে যান। তিনি ভেবেছিলেন মাহদি এসে গেছেন, তার ভগ্নীপতি আব্দুল্লাহ আল কাহতানীকে তিনি ইমাম ভেবে বসেছিলেন। জুহায়মান ও তার অনুসারীরা তাকে মাহদি ভেবে তাড়াহুড়ার ভেতর নিজেদের কার্যক্রম শুরু করে। ১৯৭৯ সালের ঘটনা। তারা মাসজিদুল হারাম অবরোধ করে। পরের ঘটনা সবারই জানা। এক দুঃখজনক পতন তাদের ঘটে। দুঃখজনক এই জন্য না যে তারা বিজয়ী হলে ভালো হত, বরং তাদের এই ছোট ফিতনা আরও বড় আকার লাভ করত। দুঃখজনক এই জন্য যে একটা সম্ভাবনাময় মুসলিম দল নিজেদের ভুল সিদ্ধান্তে হারিয়ে গেল। তাদের মধ্যে ইখলাস ছিল। তারাও মাহদীর সৈনিক হতে চাইত। তারা অন্য কোনো ভ্রান্ত দলের মুসলিম ছিল না, বরং সালাফদের পথ থেকে উঠে আসা একদল আলিম-উলামা এবং তালিব ছিলেন।

 

এই ঘটনা থেকে আমরা এই শিক্ষাই পাই মাহদি তো আসবেন কিন্তু ভুল মাহদি বাছাই করলে ঈমান আমল সব শেষ হবে। মাহদিকে চিনতে হবে কুরআন হাদিসের মাধ্যমে। নিজের বুঝ দিয়ে নয়। সবাই মাহদির সৈনিক হতে চায়, সবাই তার প্রথমদিককার অনুসারী হতে চায়। কিন্তু ভুল জানা, আর কুরআন হাদিস দিয়ে মাহদী-দাবীদারকে যাচাই না করার ফলে অসংখ্য মাহদী দাবীদারের ফিতনা দুনিয়ার বুকে বিশৃঙ্খলা ঘটিয়েছে, ঘটিয়ে যাচ্ছে। কাদীয়ানী নামের যেই ধর্ম আজ ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে গেছে, সেই ফিতনার শুধু হয়েছিল মাহদী দাবীর থেকে, ভন্ড গোলাম আহমদ নিজেকে মাহদী দাবি করেছিল। এরকম বহু মাহদী দাবীদারের প্রথম অনুসারীরা যাচাই না করেই তার সাথে যোগ দিয়ে ভ্রান্ত হয়েছে, পথভ্রষ্ট হয়েছে। হতে পারে তাদের ভালো উদ্দেশ্য ছিল। বাংলাদেশেও ভণ্ড পন্নী নিজেকে এমাম দাবী করে, তারও অনেক অনুসারী। যে নিজেকে ইমাম কিংবা মাহদী দাবি করে তারই কিছু না কিছু অনুসারী জুটে যায়। কারণ ইসলামে বলাই আছে, মাহদী আসবেন। কিন্তু মাহদী কেমন হবেন, কিভাবে আসবেন, কি করবেন, এসব সম্পর্কে মানুষ জানে না, পড়ে না। ফলে না জেনে না ভেবে ভন্ড মাহদীর সহযোগী হয়ে নিজে পথভ্রষ্ট হয়, অন্যদেরও করে।

 

জুহায়মান আল উতায়বীকে পন্নী কিংবা কাদিয়ানীর সাথে তুলনা করলে ভুল হবে। এটা বিস্তারিত আলাপ, অন্যদিক করব। শুধু বলব, তাদের এক করে দেখলে ভুল হবে। পন্নী কিংবা কাদিয়ানী উভয় ব্যক্তি কাফির বা মুরতাদ। আর জুয়ায়মান মুসলিম, কিন্তু ভুল অবস্থানের কারণে হতে পারে তিনি ফাসেক। কিন্তু পন্নীদের মত এতো পথভ্রষ্ট না। জুহায়মানের মাগফিরাত কামনা করি যেহেতু তাকে আমি মুসলিম মনে করি।

 

বর্তমান যুগে শেষ জমানার আলোচনা ব্যাপক হয়ে গেছে। কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর মধ্যে এগুলো ব্যাপকভাবে ছড়াচ্ছে। একটা ভালো দিক হচ্ছে মানুষ এতে মাহদীর ব্যাপারে জানছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সবাই মাহদীর জন্য বসে আছে। যারা প্রচার করে তারা এমন ভাবে বলে যেন কালকেই মাহদী আত্মপ্রকাশ করবেন, ২০২০ সালেই আসবেন, ২০২১ সালে আসবেন। এগুলো ভুল কাজ। মাহদীর জন্য অপেক্ষা করে কাজ বন্ধ করে রাখাও একটা ভুল। যদি হঠাৎ করে কেউ মাহদী দাবী করে বসে আগে কুরআন হাদিস দিয়ে যাচাই করুন তাকে। এই পর্যন্ত যত ভন্ড মাহদীর আগমন ঘটেছে তাদের যদি ওহীর কষ্টিপাথরে যাচাই করা হত তবে পন্নী আর কাদিয়ানীর ফিতনা এতো ছড়াত না। মুসলিম সমাজের অধিকাংশ মানুষ জাহেল, ইলম নাই। ফলে সুযোগসন্ধানী কিংবা মানুষ-শয়তানরা সহজেই মানুষকে ধোঁকায় ফেলতে পারে। পথভ্রষ্ট করতে পারে।

 

সুতরাং ঈমান বাঁচাতে হলে জানতে হবে, বুঝতে হবে। বোকা হওয়া চলবে না।

 

 

 

 

 

 

 

 

আটত্রিশ

 

মাইনুদ্দীন আহমাদ ভাই বললেন ইসলামী বই নিয়ে মানুষ যে গ্রুপে আলোচনা করে, এতে রিয়া হয়। এই কথা অবশ্য আগেও কয়েকজন দীনী ভাই বলছিলেন। কিন্তু আমি এর তীব্র বিরোধিতা করি। এভাবে বিবেচনা করলে রিয়ার ভয়ে ইলম চর্চাও ছেড়ে দিতে হবে। কারণ ইলম চর্চা করলে, কিংবা দাওয়াত দিলে অথবা বই লিখলে, বক্তৃতা দিলে তাকে জ্ঞানী মনে হয়, আলিম মনে হয়। সুতরাং ইলম চর্চা দাওয়াত এসবই রিয়া হয়ে যাওয়ার কথা। রিয়ার অস্তিত্ব অস্বীকার করি না। তবে সব কিছুকে রিয়া মনে করা ঠিক না। যেমন আপনি তাহাজ্জুদ পড়েন, এটা আপনি একাই পড়েন, এটা প্রচারের দরকার নাই। কিন্তু বই নিয়ে আলোচনা, এগুলো ইলম চর্চা ও ইলম প্রচারের অংশ, এটাকে রিয়া বললে পুরো ইলমচর্চাকে একই হিসেবে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়। রিয়াভীতি একটা লেভেল পর্যন্ত ঠিক আছে, এর বেশি হলে সমস্যা। বাংলাদেশের প্রথম ইসলামিক ইউটিউবার আলী আব্দুল্লাহ ভাই তার একটা ভিডিওতে দেখিয়েছিলে নেক সুরতে কিভাবে শয়তান মানুষ ধোঁকা দেয়। এক ব্যক্তি বাসে যাচ্ছিলেন, সে খুব আল্লাহওয়ালা মানুষ। তো, বাসে একজন গরীব মানুষ সাহায্য চাইল। বাস ভর্তি মানুষ, তো সেই আল্লাহওয়ালা লোকটি দান করতে যেয়েও রিয়ার ভয়ে দান করলেন না। অতিরিক্ত রিয়াভীতির ফলে শয়তান নেক সুরতে ধোঁকা দিয়ে গেল। মাইনুদ্দীন ভাইয়ের পোস্টটা ঠিক তেমনি ছিল। বই নিয়ে আলোচনাকে রিয়া বলার কোনো যৌক্তিকতা নাই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ঊনচল্লিশ

 

মানহাজীরা ৩ ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। চরমপন্থী, নরমপন্থী, মধ্যমপন্থী। মুরসীর মৃত্যুর পর থেকে এদের মধ্যে স্পষ্ট বিভক্তি দেখা যাচ্ছে। আমি আপাতত মধ্যমপন্থী আছি। হারুন ইজহার সাহেব এবং একটু তালেবান-মনারা নরমপন্থী, আর অনেকে আছে দায়েশীদের মত চেইন-তাকফীরী।

 

যদিও মানহাজীরা শুধুমাত্র সমর্থক, সমর্থক না হয়ে ময়দানের মুজাহিদ হলে দায়েশ-কায়দার মত বিভক্ত হয়ে যেত। মানহাজীদের সাথে মুজাহিদ জামা'আতগুলোর সরাসরি সম্পর্ক না থাকায় এই বিভক্তি কোনো প্রভাব ফেলবে না কেন্দ্রে। আমার ধারণা কেন্দ্রের নেতারা মধ্যমপন্থী।

 

মানহাজী ভাইদের আরেকটা সমস্যা হচ্ছে তারা শুধু মানহাজী আলেম ছাড়া আর কাউকে মানতে রাজি না। সুলাইমান উলওয়ান, আবু কাতাদা এবং মাকদিসী সহ আরও কয়েকজন বাদে কাউকেই মানতে রাজি না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চল্লিশ

 

মসজিদ থেকে চেয়ার উঠিয়ে দেয়া দরকার। চার্চের মত মসজিদেও চেয়ার ঢুকছে, এটা কেমন কথা? অথচ অধিকাংশ মাসজিদ হানাফী এবং হানাফীরাই দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ। আমার জানামতে সালাফীরা বা সালাফীদের একদল চেয়ারে বসে নামাজকে জায়েজ বলেছেন। কিন্তু হানাফী মাজহাবওয়ালা হয়েও কেন চেয়ারে নামাজ পড়বে। নামাজ পড়ার সময় তো বুকে হাত বাধা, রফুল ইয়াদাইন করে না। সুতরাং হানাফী মাজহাবের হয়েও কেউ হানাফী ফতোয়া মেনে না চললে সেটা তার ভ্রান্তির লক্ষণ। আমি নিজেও হানাফীদের এই মতের সাথে একমত যে চেয়ারে বসে নামাজ পড়া জায়েজ নেই। এজন্যই বলছি মসজিদ থেকে সব চেয়ার সরিয়ে নিতে হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

একচল্লিশ

 

মায়ের সামনে বউয়ের প্রশংসা/আদর/কেয়ার করবেন না।

 

যদিও সব মা এক না। তবু কারো মনের খবর তো আপনি জানেন না। তাই এটা না করাই ভালো। এটা হচ্ছে সংসারে সুখী থাকার মূলমন্ত্র।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বিয়াল্লিশ

 

ভারতীয় এক হিন্দু পরিবারে জন্ম নেয়া নাস্তিক ব্যক্তি বললেন, হিন্দু-মুসলিম বিভেদ কমানোর জন্য হিন্দু-মুসলিম বিবাহ দিতে হবে। তাহলে নাকি সম্প্রীতি তৈরি হবে, ভেদাভেদ কমবে।

 

আমি বল্লামঃ

"ভেদাভেদ কমানোর জন্য বিবাহের প্রয়োজন নেই। কারণ মুসলমানদের জন্য মুশরিক বা হিন্দু বিয়ে জায়েজ নেই (তবে একত্ববাদী আহলে কিতাব নারী বিবাহ করা যাবে)। আর যেসব মুসলমান ব্যক্তি হিন্দুদের বিয়ে করে তারা ভালো মুসলমান নয়, তারা ইসলামী বিশ্বাসের পরিপন্থী কাজ করে। ভেদাভেদ কমানোর জন্য ইসলাম একটা নীতি দিয়েছে মুসলিমরা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করবে না। অর্থাৎ জোর করে কাউকে ধর্মান্তর কিংবা আক্রমণ করবে না ইত্যাদি।"

 

তিনি এর জবাবে বল্লেনঃ

"আপনি তো জাকির নায়েক মার্কা লেকচার দিলেন, কখনো ভেবে দেখেছেন এই দুই জনগোষ্ঠী হাজার বছরের উপরে এক সাথে থেকেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি হলো না কেন? এর উত্তর হচ্ছে ধর্ম। আজ্ঞে হ্যাঁ ধর্ম, ধর্ম টাকে উপড়ে ফেললেই সম্প্রীতি সম্ভব। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে পরে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিবাহ। কোনো পরিবারে এমন হলে কয়েক পুরুষ পর সেই পরিবার থেকে ধর্ম উচ্ছেদ হতে বাধ্য। আমাদের এখানে চারটি পরিবার কে দেখে বুঝেছি। আর উন্নত দেশগুলোকে দেখুন ওখানে ধর্মের ভিত্তিতে বিবাহ হয়না। ধর্মান্ধতা বাদ দিয়ে মানব ধর্মে ফিরে আসুন।"

 

 

আমি পুনরায় জবাব দিলামঃ

 

"যেসব ধর্ম মানুষ তৈরি করে আর যে ধর্ম আল্লাহ (ঈশ্বর) প্রেরণ করেছেন তার মধ্যে কনফ্লিক্ট তো থাকবেই। এটাই স্বাভাবিক যে ইসলাম ধর্মের সাথে পৃথিবীর যে কোনো ধর্মের পার্থক্য থাকবে, এবং মুসলিম ও অমুসলিমে পার্থক্য থাকবে।

 

আপনি যে কথাটা বললেন, আমিও একই কথা বলি শুধু দুইটি শব্দ বাড়িয়ে। আপনি বললেন পৃথিবীর সব ধর্ম উচ্ছেদ করে ফেলতে হবে। আমিও বলি ইসলাম ছাড়া পৃথিবীর সব ধর্ম উচ্ছেদ করা উচিৎ। তবে ইসলামের উচ্ছেদনীতি শান্তিপূর্ণ। কাউকে আক্রমণ করে নয়, বরং ইসলামিক পদ্ধতিতে সকল বাতিল মাবুদ (যার ইবাদত করা হয়) বাদ দিয়ে এক আল্লাহ, এক মাবুদের দিকে মানুষকে ফিরিয়ে আনাই ইসলামের মূল উদ্দেশ্য। মানুষ, বস্তু, মূর্তি, গাছ, মাছ, সূর্য, গরু, নবী, ফেরেস্তা (হিন্দুরা যাকে বলে দেবতা) সকল কিছুর পূজা থেকে, দাসত্ব থেকে মুক্ত করাই ইসলামের উদ্দেশ্য।

 

আপনি বললেন আসুন আমরা সবাই মানবধর্ম গ্রহণ করি। আপনিও একটা ধর্মের দিকেই ডাকছেন। ধর্মের বিরোধিতা করে নতুন একটা ধর্ম তৈরি করে নাম দিয়েছেন মানবধর্ম। আমিও একটা ধর্মের দিকে ডাকছি, তবে সেটা হচ্ছে আল্লাহর মনোনীত ধর্ম।

 

এটাও একটা ভুল কথা ধর্মের উচ্ছেদ করলেই দ্বন্দ্ব, ঝগড়া, যুদ্ধ সব থেমে যাবে। নাস্তিকদের মধ্যেও অনেক বিভক্তি আছে। ঝগড়া, দ্বন্দ্ব এগুলো মানুষের ফিতরাত বা বৈশিষ্ট্য। এগুলো দূর করা সম্ভব না। যারা আজকে হিন্দু - মুসলিম নামে লড়ছে, ধর্ম না থাকলে অন্য নামে লড়বে। মানুষ লড়বেই।

 

আপনি বললেন সম্প্রীতির কথা। মুসলিমরাও সম্প্রীতির কথাই বলে। আপনি বললেন মানবধর্মে সবাইকে দীক্ষিত হতে। আমি বলছি ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হতে। আমরাও মানুষকে একত্রিত করার জন্য ইসলামের দিকে দাওয়াত দিই। এভাবেই একদিন আমরা পৃথিবীর সব মানুষকে মুসলিম বানিয়ে এক ধর্ম রেখে বাকি সকল ধর্মের উচ্ছেদ ঘটাব ইনশাআল্লাহ। অর্থাৎ আপনার ইচ্ছাটাই আমরা পূরণ করার জন্য কাজ করছি। ঐক্য ও সম্প্রীতির জন্য যদি একত্রিত হতেই হয় তবে স্রষ্টার মনোনীত ধর্ম বাদ দিয়ে কেন মানুষের তৈরি ধর্মে দীক্ষিত হতে হবে!

 

আমরা মুসলিমরা বিশ্বাস করি, ইসলাম সত্য ধর্ম। মুসলিম হওয়া মানে আল্লাহর আইনের কাছে নিজেকে আত্মসমর্পণ করা। আমাদের এমন সুযোগ নেই যে আমরা আল্লাহর মনোনীত মতবাদ বাদ দিয়ে অন্য মতবাদে দীক্ষিত হব। আমাদের বিশ্বাস যে ইসলাম সত্য, আল্লাহ সত্য এবং আমরা মনে করি সকল অমুসলিমের ইসলাম গ্রহণ করা উচিৎ, নয়তো জাহান্নামে অর্থাৎ নরকে যাবে। তাই আমি আপনাকে আহবান জানাবো ইসলামের মূল সোর্স থেকে ইসলামকে জানতে, যদি জাকির নায়েককে আপনার পছন্দ না হয়। আহমাদ দিদাত একটা কথা বলতেন, তিনি বলতেন, হে অমুসলিম ভাইয়েরা আপনারা যদি ইসলামের সমালোচনাও করতে চান তবুও কুরআন পড়ুন। আমিও আপনাকে বলছি ইসলামের সমালোচনা করতে চাইলেও কুরআন ও হাদিস পড়ুন জানুন। আমরা কয়েকশত কোটি মুসলিম তো বলছি ইসলাম সত্য ধর্ম, একবার চেক করে দেখুন আমরা আসলেই সঠিক কিনা।

 

আর মুসলিমরা ধর্মান্ধ না। আমরা জেনে বুঝে ইসলাম গ্রহণ করি, ইসলাম মানি। বাবা মুসলিম বলেই আমি মুসলিম এমন না। বরং আমাদের সকল মুসলিমের বিশ্বাস ইসলাম সত্য দ্বীন। আপনি কি জানেন মুসলিমের সন্তান হলেই মুসলিম হওয়া যায় না? কোনো মুসলিম পিতার সন্তান যদি নাস্তিক হয় তাহলে তাকে মুসলিম বলা যায় না?

 

ইসলাম একমাত্র ধর্ম যেখানে ধর্মান্ধতা নেই। এই ধর্ম সবাই বুঝে শুনে গ্রহণ করে এবং মানে।"

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তেতাল্লিশ

 

হে আল্লাহ জিহাদ করার মত শক্তি, সাহস, সামর্থ্য কোনোটাই নাই; এমনি এক নবী প্রেমীদের মিছিলে আমার শাহাদাৎ যেন হয়! হে আল্লাহ, শহীদদের রক্তের বিনিময়ে ভোলার জমিনকে ভোলানাথদের থেকে পবিত্র কর!

 

(ভোলায় এক হিন্দু শাতিমের বিরুদ্ধে নবীপ্রেমীদের মিছিলে পুলিশের গুলি, নিহত ৪ {এ পর্যন্ত}, আহত শতাধিক)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চুয়াল্লিশ

 

এমন সময়গুলাতে কিছু মুনাফিকের আনাগোনা দেখা যাবে যারা বিভিন্ন আলাপ তুইলা ভোলার হত্যাকাণ্ডের ঘটনারে হালকা করতে চাইবে।

 

এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে, যেমন কেউ কেউ বলতেছে শাতিমটার আইডি হ্যাক হইছিল, কেউ কেউ আবার বলতেছে, আইডি হ্যাক কিনা শিউর না হয়ে কেন মিছিল করতে গেছিল, কেউ বলতেছে, নবীরে গালি দিলে কি হইছে? ইসলাম কি শেষ হয়ে গেছে! অর্থাৎ নবীরে গালি দিলেও আমরা চুপ কইরা বইসা থাকবো। আরেকজনরে বলতে শুনলাম, কোনো জাতীয় ইস্যুতে আলেম ওলামারা নাই, ধর্মীয় ইস্যুতেই শুধু লাফালাফি। কেউ বলতেছে, তৌহিদি জনতা মাথামোটা মূর্খ।

 

এইসব মুনাফিক কি জানে শহীদের মর্যাদা কি? যদি সাধারণ ভাবেও চিন্তা করি, ৪-৫ টা মানুষ মাইরা ফেলা কি যে সে কথা! মিছিল হইলে গুলি করতে হয়?

 

অথচ শাতিমটারে পুলিশি হেফাজতে রাখা হইছে। আইডি হ্যাক হইছে বলে শাতিমটারে বাঁচানোর চেষ্টা করা হইতেছে। যারা একটা মিছিলে গুলি চালাইতে পারে তারা আইডি হ্যাকের নাটকও বানাইতে পারে।

 

এই কয়েকদিনের মধ্যে হিন্দুত্ববাদ এতোটা প্রাসঙ্গিক হবে ২ বছর আগেও ভাবা যায় নাই। অর্থাৎ সচেতন হওয়ার সময় হইছে।

 

শাতিম ও মুরতাদের একমাত্র শাস্তি হত্যা করা। এই হত্যার অনুমতি ১৪০০ বছর আগে দেয়া হইছে। এর জন্য রাষ্ট্র লাগে না, কোনো ইমাম বা আমীরের অনুমতি লাগে না, শুধু একটা চাপাতি লাগে। এক শাতিম পুলিশি হেফাজতে, কিন্তু হাজার হাজার শাতিম খোলা আকাশের নিচে ঘুরে বেড়াইতেছে। এদের প্রাপ্য এদের বুঝিয়ে দেয়া দরকার।

 

অধিকাংশ মুসলিম জানে না শাতিম ও মুরতাদের রক্ত হালাল। সুতরাং এই বিষয়টা ব্যাপকভাবে মানুষকে জানানো দরকার। মানুষ তো গালাগালি করে, অথচ কাউকেই গালি দেয়া জায়েজ না হোক সে মুরতাদ বা শাতিম, বরং তার যা প্রাপ্য অর্থাৎ চাপাতির কোপ, সেইটাই তাকে দেয়া উচিৎ। মুসলিমরা কারো হক নষ্ট করে না, শাতিমদের হকও নষ্ট করা উচিৎ হবে না।

 

 

 

 

 

 

 

 

পঁয়তাল্লিশ

 

ভোলার ঘটনা থেকে ফোকাস হারাবেন না। আলোচনা ভিন্ন খাতে নিবেন না।

 

১- আইডি হ্যাক ছিল নাকি ছিল না এইটা মূল বিষয় না; যারাই ইসলাম, ইসলামের নবী, কুরআন নিয়ে কটূক্তি করবে, অবমাননা করবে সেইসব শাতিম, মুরতাদকে হত্যা করতে হবে। সরকার বিচার করুক কিংবা না করুক, বৈধতা দিক বা না দিক, ইসলামে এর বৈধতা দেয়া হয়েছে। সুতরাং যারা রিয়াল আইডি থেকে ইসলাম অবমাননা করে তাদেরকে ভাইরাল করুন।

 

২- সরকারের সব দোষ তৃতীয় পক্ষের উপর দিয়ে দেয়া হচ্ছে। তৃতীয় পক্ষ যেই হোক, পুলিশের গুলি চালানোর বৈধতা তৈরি হবে না। বরং তৃতীয় পক্ষের আলাপ এনে পুলিশের আক্রমণ ও হিংস্রতাকে স্বাভাবিক দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

 

আবার বলছি, মূল বিষয় থেকে সরে না যাই। এক, শাতিম ও মুরতাদ বিরোধী আন্দোলন এবং জনমত তৈরি; দুই, হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন। ইসলাম অবমাননা করে কারো বেঁচে থাকার অধিকার নাই, এবং মুসলমানদের হত্যা করার অধিকার সরকারের নাই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ছেচল্লিশ

 

ইসলামী অনলাইন পোর্টালগুলোর সাম্প্রতিক ইস্যুগুলোতে অসক্রিয়তার বা স্বল্প-সক্রিয়তা বা নাম-মাত্র সক্রিয়তার ব্যাপারে আমার মন্তব্যঃ

 

তারা সাধ্যমত যা করছে এটাকে সাধুবাদ জানিয়ে বলতে চাই, এসব ইসলামী লেবেলযুক্ত পোর্টাল কেন যেন জাতীয় সেকুলার পত্রিকাগুলোর ছক থেকে বের হতে পারে না। ফাতেহ সম্ভবত বুদ্ধিবৃত্তিক কাজের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। তবে সাম্প্রতিক ইস্যুগুলোতে সেকুলারদের প্রোপাগান্ডার কাউন্টার দেয়া প্রয়োজন যা অধিকাংশ পত্রিকা-পোর্টাল আঞ্জাম দিচ্ছে না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সাতচল্লিশ

 

কটূক্তি করল এক হিন্দু, গুলি চালাইল পুলিশ; আর দোষ হইল সব জনতার।

 

পৃথিবীতে দাড়ি টুপি ওয়ালাদের মারা সবচেয়ে সহজ। কারণ কেই কিছু বলবে না। মাইরের পাল্টা আঘাত আসবে না। তাই তো ইসলামের দুশমনরা সুযোগ পাইলেই মারে, কারণে মারে, অকারণে মারে, ইচ্ছা হইলে মারে, ইচ্ছা না হইলেও মারে, বিরোধিতা করলে মারে, বিরোধিতা না করলেও মারে, কথা বললে মারে, চুপচাপ বইসা থাকলেও মারে। ভোলার মিছিলে না মারলেও চলত, তবু মারছে। শাপলা চত্বরে রাতের অন্ধকারে মারছে। সুযোগ পাইলেই হইছে।

 

তৌহিদি জনতা রাস্তায় নামলে জালিমের বুকে কাপন ধরে। তৌহিদি জনতা ছাড়া আর কাউকেই ভয় পায় না জালিমরা। তাই তাদের মেরে সাফ করতে হয়। এবং মারার পরে সব দোষ তৌহিদি জনতার উপর দিয়ে দেয়া হবে। শাপলা চত্বরের গণহত্যার কথা ভুলে আলোচনায় আনা হবে তারা নাকি কুরআন পুড়িয়েছে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে, কুরআন নিয়ে যাদের জীবন কাটে তারা নাকি কুরআন পুড়াতে পারে! ভোলার হত্যাকান্ডের আলোচনা থেকে দৃষ্টি সরাতে আনা হয় আইডি হ্যাক আর তৃতীয় পক্ষের আলোচনা, দোষ দেয়া হয় সব জনতার উপর, বিচার হয় না শাতিমদের আর নিন্দিত হয় না গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যাকারী পুলিশের। প্রতিটা ইস্যুতে আলাদা হয়ে যায় মুমিনরা কাফের মুশরিক ও মুনাফিকদের থেকে। কারণ দুই তাঁবু আলাদা।

 

ইসলামকে কটূক্তি করা এবং পুলিশের মানুষ হত্যার বৈধতা সৃষ্টির জন্য উঠে পড়ে লাগে সেকুলার মিডিয়া ও বুদ্ধিজীবীরা। একজন হিন্দু শাতিমকে বাঁচাতে শতাধিক মানুষের উপর গুলি চালাতে দ্বিধা করে না সরকার। সব মুনাফিক মুশরিক আজ একদলে। তাই তো সুযোগ পেলেই গুলি ছুড়ে, হত্যা করে, গ্রেফতার করে। জঙ্গি বা শিবির বলে ধরে নিয়ে যায়, গুম করে। বুদ্ধিজীবীরা বিশ্রী ভাষায় সম্মানহানি করে। অ্যামেরিকা, রাশিয়া, ইউরোপ মুসলমান হত্যা করবে, দোষ দেয়া হবে মুসলমানদের। প্রতিবাদ করলে, সশস্ত্র প্রতিরোধ করলেও হত্যা করা হবে, বোমা ফেলা হবে, চুপচাপ বসে থাকলেও ছাড় দেয়া হবে না। ভারতের মুসলমানরা এতো দেশপ্রেমিক হওয়া সত্ত্বেও বাঁচতে পারছে?

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আটচল্লিশ

 

আলি হাসান ওসামা এবং আইনুল হক কাসেমী উভয় ভাইয়ের শহীদ ইলমুদ্দীন রঃ সম্পর্কে লেখাদ্বয় পড়লাম। কিন্তু উভয় লেখার মধ্যে তথ্যে একটু গড়মিল দেখা যাচ্ছে। আমি তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

 

আলি হাসান ভাই লিখেছেন ইলমুদ্দীন ছিলেন কাঠমিস্ত্রী, আর আইনুল কাসীমী ভাই লিখেছে তিনি নাকি কাঠুরে ছিলেন।

আলি ভাই লিখেছেন ইলমুদ্দীনের বন্ধুর নাম ছিল শেদা। কিন্তু আইনুল ভাই লিখেছেন রশিদ।

 

জানি না কোনটা সঠিক। তবে মনে হচ্ছে কাঠমিস্ত্রী আর রশিদ সঠিক।

 

আলি ভাইয়ের লেখাটা এসেছে তার রচিত 'ফিতনার বজ্রধ্বনি' বইয়ে। আইনুল ভাইয়ের লেখাটা এসেছে 'শাতিমে রাসুলদের ভয়ঙ্কর পরিণতি' বইয়ে। দুটা তুলনা করলে আলি ভাইয়ের লেখা একটু বিস্তারিত এবং তুলনামূলক ভালো লেখা। আইনুল ভাইয়ের লেখা সংক্ষিপ্ত হলেও ভালো।

 

আলি হাসান ওসামা ভাইয়ের লেখাটা পড়ে আবেগী হয়ে গিয়েছিলাম। ইলমুদ্দীন রঃ এর শাহাদাৎ আল্লাহ তা'আলা যেন কবুল করেন, তাকে মাফ করেন, তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করেন। লেখক ভাইদেরকেও আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দিন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ঊনপঞ্চাশ

 

সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য কিছু টিপসঃ

 

ভাইদের জন্যঃ

 

১- স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করুন। 'ভালোবাসি' কথাটা প্রতিদিন একবার হলেও বলুন।

 

২- স্ত্রীর সৌন্দর্যের প্রশংসা করুন, রান্নার প্রশংসা করুন। রান্না খারাপ হলেও খাওয়ার দোষ ধরবেন না।

 

৩- আপনার স্ত্রী ঘরের সব কাজ করেন, এর জন্য তিনি আপনার কাছে ভালোবাসা ছাড়া কিছুই চান না। তাই স্ত্রীকে সময় দিন। আপনি বাহিরে থাকেন, আপনার অনেকের সাথে সাক্ষাৎ হয়, কথা হয়। কিন্তু আপনার স্ত্রী ঘরে একা থাকেন, তিনি যে একাকীত্ব বোধ করেন, সেই একাকীত্ব দূর করতে আপনাকে অনেক বেশি রোমান্টিক হতে হবে। আমাদের নবী (সাঃ) নিজেও ছিলেন রোমান্টিক স্বামী।

 

৪- স্ত্রীকে বুঝুন, তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে শিখুন। তার প্রতিটি কাজের জন্য তাকে জাযাকাল্লাহ, ধন্যবাদ বলুন। এতে তার কাজ করার কষ্ট একদম দূরীভূত হয়ে যাবে।

 

৫- স্ত্রীকে বেড়াতে নিয়ে যান। ছুটির দিনটা স্ত্রীর সাথে কাটান।

 

৬- স্ত্রীকে কখনো আঘাত করবেন না। তবে এক্সট্রিম পর্যায়ে আঘাতের ভয় দেখানো মন্দ কিছু না। কিন্তু তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মারধোর তো দূরের কথা, ধমক দেয়াও উচিৎ না। ভুল করলে তাকে সুন্দর করে বুঝিয়ে দিন। মেয়েদের মন এমনিতেই নরম, অল্পতেই কষ্ট পায়। হয়তো ভুল সে করবে, ধমক দিবেন আপনি, অথচ সে এতো বেশি কষ্ট পাবে যেন ভুলটা আপনার ছিল। শেষ পর্যন্ত তার চোখের পানি দূর করতেই আপনার দিন শেষ হয়ে যাবে। তাই আগেই সাবধান ভাই। অতিরিক্ত কঠোরতা ভালো নয়।

 

 

বোনদের জন্যঃ

 

১- স্বামীর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকুন। এটা নাই, ওটা নাই, এটা দেও নি, ওটা দেও নি, এসব বলে তাকে বিরক্ত করবেন না। সারাদিন অফিস করে এসে তাদের মন মেজাজ ভালো থাকে না। কিন্তু মন মেজাজ ভালো করে দেয়ার দায়িত্ব আপনাদের। কিন্তু তা না করে যদি ঘ্যানর ঘ্যানর করেন তাহলে তো ঝগড়া লাগাই স্বাভাবিক।

 

২- স্বামীর মন জয় করার জন্য তার সাথে হাসি মুখে কথা বলুন, এটাই তাকে কুপোকাত করার জন্য যথেষ্ট। কিছু দম্পতিকে দেখি তারা সবার সাথে হাসি মুখে কথা বলে, কিন্তু একে অন্যের সাথে কথা বলে না যেন ঝগড়া করে।

 

৩- স্বামীকে ভালো ভালো রান্না করে খাওয়ান। আমি বলছি, আপনার স্বামী আপনাকে ভালো না বাসলেও আপনি শুধু ভালো রান্না খাইয়ে স্বামীর মন জয় করতে পারবেন। যখনই ফ্রি থাকবেন নতুন নতুন রান্না শিখুন। আমরা ৩০ বছর চাকরি করার জন্য ২০ বছর পড়াশোনা করি, কিন্তু কেন আমরা সারা জীবন সংসার করার জন্য জীবনসঙ্গীর মন জয় করার সুত্রগুলো রপ্ত করতে পারি না? বোনেরা, রান্না তো সারা জীবন করতে হয়, তাই এটা এমন ভালো ভাবে শিখুন যেন আপনার স্বামী আপনার রান্না ছাড়া এক বেলা না থাকতে পারে। রাগ করে আপনি বাপের বাড়ি চলে গেলে আপনার স্বামী যেন আপনার রাগ ভাঙিয়ে নিয়ে আসে।

 

৪- স্বামীকে কাজের সময় বিরক্ত করবেন না। স্বামীরা রোমান্স পছন্দ করে। কিন্তু কাজের সময় বিরক্ত করা কেউই পছন্দ করে না। হতে পারে সে আপনার পাশে বসে ল্যাপটপে কাজ করছে। কিন্তু আপনি তার মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছেন, কিংবা কথা বলে যাচ্ছেন, তিনি উত্তর দিচ্ছেন না। এমন অবস্থায় তার মনোযোগ আকর্ষণ তো করতে পারবেনই না, উপরন্তু তাকে বিরক্ত করে ছাড়বেন। এর চেয়ে আপনার স্বামীকে কাজের সময় এক কাপ কফি বানিয়ে দিন, এটাই তার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য যথেষ্ট হবে।

 

৫- স্বামীকে আনন্দে রাখুন, হাসি খুশি রাখুন। একজন স্ত্রী পারে স্বামীকে হাসি খুশী রাখতে অথবা দুঃখী রাখতে। কোনটা করতে চান সেটা আপনি ভেবে দেখুন। কোনো স্বামী রাশভারী, গম্ভীর মেয়ে পছন্দ করে না। স্বামীরা নিজেরা গম্ভীর হলেও তারা একটু দুরন্ত আর দুষ্ট মেয়েই চান স্ত্রী হিসেবে। সুতরাং পুরুষের মন বুঝার চেষ্টা করুন। (স্ত্রীর মন বোঝা যত কঠিন স্বামীকে বোঝা ততই সহজ, তাও যদি কোনো স্ত্রী তার স্বামীকে বুঝতে না পারে তাহলে সেই সংসারে সুখ আসবে কি করে?)

 

৬- স্বামী সারাদিন অফিস করে বাসায় আসে। এই সময়টা তাকে দিন। যদি এমন হয় তিনি সারাদিন পর আসলেন, আর আপনি অন্য কাজে ব্যস্ত। তাহলে স্বামী বেচারা আরও বেশি হতাশ হবেন, যদিও মুখে কিছু বলবেন না। পুরুষরা অনেক চাপা শভাবের হয়, কখনোই দুঃখ প্রকাশ করে না। কিন্তু দুঃখ তো ঠিকই পায়। তাই স্বামী অফিস থেকে আসার আগেই কাজ সব শেষ করে নেন, সেজেগুজে নিন। এমন আচরণ করুন যেন অফিস থেকে ফিরেই তার মন ভালো হয়ে যায়।

 

সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য দু'জনকেই ত্যাগ করতে হবে রাগ, ইগো, আর নেগেটিভ সব বৈশিষ্ট্য। সংসারকে টিকিয়ে রাখার জন্য একজন অপরজনের সহযোগী হবে, প্রতিযোগি নয়। ঝগড়া একজন শুরু করলে অন্যজন চুপ থেকে ঝগড়া থামিয়ে দিবে। একজন রাগলে অন্যজন রাগ ভাঙাবে। এর নামই সংসার, এর নামই দাম্পত্য।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পঞ্চাশ

 

প্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা, কখনো গালি দিবেন না, মুখ থেকে অশ্লীল কথা বের করবেন না। একজন মুসলিম হিসেবে আপনার এই আচরণ সমগ্র মুসলিম উম্মাহ এবং ইসলামের জন্য লজ্জাজনক। শাতিম মুরতাদকেও গালি দিবেন না, তাদের রক্ত হালাল, পারলে তাদের রক্ত প্রবাহিত করেন, তবু গালি দিবেন না। তাদের বাহিত করা জায়েজ, কিন্তু গালি দেয়া জায়েজ নয়।

 

রসুল (সাঃ) এবং সাহাবীরা গালিচর্চা করেন নি। গালি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কাউকে গালি দেয়াকে প্রকারান্তে নিজের বাপ-মাকে গালি দেয়া বলা হয়েছে। কাফের মুশরিকদের কখনো গালি দেয়া হয় নি, তাদের ব্যাপারে অশ্লীল কথাবার্তা বলা হয়নি। এটা জায়েজও নয় কাফের মুশরিকদের আমরা গালি দিব, কটু কথা বলব, এবং আমাদের জন্য তা শোভনীয় নয়। আমরা তাদের ঘৃণা করি ঠিক আছে, কিন্তু এর জন্য রসুলের দেখানো পদ্ধতি রয়েছে, নিজেদের মনগড়া পদ্ধতিতে ঘৃণা করলে তো হবে না। আপনি যখন মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও অন্য কোনো ধর্ম কিংবা মতবাদের অনুসারীকে গালি দেন তখন তার কাছে ভুল ম্যাসেজ যায়, সে হয়তো ভাবে পুরো মুসলিম উম্মাহই বুঝি এমন। সে আপনাকে দিয়ে মুসলিম উম্মাহর উদাহরণ দিবে যে তারা কত গালিবাজ। নাউজুবিল্লাহ। আপনার সামান্য আচরণের কারণে পুরো উম্মাহকে আপনি গালি খাওয়াচ্ছেন।

 

আপনি নিজেকে যতই ক্ষুদ্র মনে করুন বা হন না কেন, আপনি কিন্তু পুরো উম্মাহর প্রতিনিধিত্ব করছেন। আপনাকে দিয়ে মানুষ ইসলাম ও মুসলমানদের বিচার করবে। তাই ভাই একটু সাবধান হই। রসুল (সাঃ) নিজেও কাফের-মুশরিকদের ঘৃণা করতেন, ঘৃণা করা শিখিয়েছেন, তবে এই ঘৃণা হচ্ছে সবচেয়ে সুন্দর উপায়ে। ঘৃণা সবাই করে, শুধুমাত্র মুমিনরা সুন্দর উপায়ে করে। এটা এমন ঘৃণা যে কাফের মুশরিকরা পর্যন্ত এক পর্যায়ে এসে ইসলাম গ্রহণ করেছিল। রসুল (সাঃ)-কে আমাদের জন্য আদর্শ করা হয়েছে। আমরাও তার পথ অবলম্বন করব, তার দেখানো পদ্ধতিতে কাফেরদের সাথে বারা করব, কিন্তু গালি দেয়া বারাচর্চার মধ্যে পড়ে না।

 

এবার আসি আরেকটা দিকে। যেখানে কিনা কাফেরদের গালি দেয়াও হারাম সেখানে কিভাবে আমরা আমাদের মুসলিম ভাইকে গালি দেই? মুসলিম হওয়ার মর্যাদা কি জানা আছে? মুসলিম ভাইয়ের যে হক আছে সে হকগুলো নষ্ট করার অধিকার কি আমাদের আছে? মুসলিম ভাইকে ভালোবাসা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। আমরা কেন এই বিষয়টা নিয়ে সবচেয়ে বেশি অসচেতন?

 

আল্লাহ আমাদের বুঝ দান করুন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ারের পোস্টঃ

 

সর্বাধিক বিক্রিত বই,জানাজায় বহুত মানুষ এসব কোন কিছুই বিজয়ের লক্ষণ না। এগুলো তৃপ্তির ঢেকুর তোলার বিষয়ও নয়। আমি আরিফ আজাদের বই একটাও পুরো পড়িনি। তবে কাশেম বিন আবু বকরের বই পড়েছি। কাশেম বিন আবু বকর একজন বেস্ট সেলার লেখক। সেই ধারণা থেকে বলবো- বাংলাদেশের মানুষ বই কেনার ক্ষেত্রে এখনো সুবিবেচক নয়। এই কথা প্রযোজ্য মারজুক রাসেলের ক্ষেত্রেও।

 

বাংলাদেশ বর্তমানে প্রায় ২০ কোটি লোকের একটা দেশ। এখানে কেউ পীর/নেতাগিরি শুরু করলেই ৫-৬ লাখ ভক্ত পায়। সেখানে একটা মাঠে ১ লাখ লোক জড়ো হলেই সবাই দেখি তৃপ্তির ঢেকুর তুলে। সেটা জানাজা, মাহফিল বা রাজনৈতিক সমাবেশ যাই হোক না কেন। অথচ ২০-৩০ লাখ ২০ কোটির মাঝে কত পার্সেন্ট?

 

সবচেয়ে বড় কথা জ্ঞানগত আন্দোলন, আদর্শিক যুদ্ধ এসবে সংখ্যা খুব বেশি গুরত্বপূর্ণ নয়।

 

হাসান মির্জা - তৃপ্তির ঢেকুর না তুলি, তবে আরিফ আজাদের দাওয়াতি পদ্ধতিটা ভালো লাগছে। একটা আহবান আছে তার মিশনে। তার অস্তিত্বই যেন একটা দাওয়াত। এটা একটা ভালো দিক।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বান্দারেজা ভাই ইন্তেকাল করেছেন। আল্লাহ্‌ তাকে ক্ষমা করে দিন। ১৯-২-২০।

 

কিছুদিন আগে চলে গেলেন সাহিত্যিক নাসিম আরাফাত সাহেবের ছেলে মুহাম্মাদ ভাই। পূর্বে জাভেদ কাইসার ভাই ও শাহাদাৎ ফয়সাল ভাই মারা গেলেন। নাদভি নাফিউ জামান ভাইয়ের দুঃখজনক আত্মহত্যাও মনে আছে। কয়েক বছর আগে হত্যা করা হয়েছিল সিফাত ভাইকে। আল্লাহ্‌ সবাইকে মাফ করে দিন।

 

 

 

 

 

 

এতায়াতী বা সাদপন্থীদেরকে কাফেরদের চেয়েও অধম মনে করা হয় মূলধারা থেকে। ফলে কাউকে সাদপন্থী প্রমাণ করা গেলেই হইছে, আর কিছু লাগে না। জিহাদ শুরু হয়ে যায়। ইসলামের আসল শত্রুদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নাই, পরিকল্পনা নাই। জামায়াত, সালাফি, দেওবন্দী, বেরেলভী, চরমোনাই, এতায়াতী, মোডারেট, জিহাদী সবাই নিজেরা নিজেদের মাথা ফাটা ফাটি করে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

রাজনীতির ক্ষেত্রে জামায়াত একটি ইসলামী দল যেরকম ভাবে চরমোনাই একটা ইসলামী দল। চরমোনাইদের রাজনীতি ছাড়াও তাসাউফভিত্তিক একটা ভিত্তি আছে। অর্থাৎ চরমোনাই রাজনীতির বাইরেও একটা ইসলামী দল, বর্তমানে এটা একটা ঘরানা হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে কওমিদের সাথে তাদের নানান মতপার্থক্যের কারণে।

 

আবার জামায়াতের কিন্তু রাজনীতির বাইরে কোনো ভিত্তি নাই। তাদের নিজস্ব বা মৌলিক মাযহাব বা মানহাজ নাই, আমলী দিক থেকে তাদের হয়তো আহলে হাদিস হতে হচ্ছে, আর প্রাচীনপন্থীরা হানাফী আছে। তাদের নিজস্ব আকীদাভিত্তিক ভিত্তিও নাই। তাদের কেউ হয়তো আছারী কেউ আশারী মাতুরিদি ইত্যাদি। জামায়াত কেন্দ্র থেকে তার কর্মী ও সমর্থকদের রাজনীতি বাদে অন্যান্য ক্ষেত্রে একটা স্বাধীনতা দিয়েছে। ফলে একজন জামায়াত সমর্থক বা কর্মী কিন্তু জামায়াতের রাজনীতি করেও চরমোনাইয়ের পীরের মুরিদ হতে পারবে। এমনকি জামায়াতের কোনো কর্মী চাইলে সেকুলারও হতে পারবে। এই স্বাধীনতা দেয়াটা একদিক থেকে ভালো আবার অন্যদিক থেকে খারাপ। কারণ জামায়াতের অধিকাংশ কিন্তু শৃঙ্খলে আবদ্ধ না থাকায় মোডারেট হয়েছে।

 

জামায়াতকে ফিরকা কোনো ভাবেই বলা যায় না। রাজনৈতিক দলই বলা যায় শুধু। ফিরকা হওয়ার জন্য তাদের আলাদা আকীদা, মাজহাব এসবের ভিত্তি থাকা প্রয়োজন ছিল।

 

 

 

 

 

 

 

 

ফালাসাফা বা তাসাউফের চাইতে হাদিসের চর্চা ও প্রচার বেশি হওয়া উচিৎ। এই উপমহাদেশসহ তুর্কি, আফগান, ইরান, আফ্রিকা এবং পৃথিবীর বহু মুসলিম অঞ্চলে তাসাউফ এবং এসবের চর্চা বেশ হয় যা একটা সমস্যা। এর চেয়ে হাদিসের চর্চা বেশি হওয়া উচিৎ।

 

 

 

 

 

 

 

সালাফিরা ইসরাইলের ধ্বংস কামনা হারাম বলে কোন প্রেক্ষিতে তা বোঝা উচিৎ। এটাকে আক্ষরিক ভাবে নেয়া যাবে না। আসলে এইখানে শব্দগত প্যাঁচ আছে। ইসরাইল একজন নবীর নাম হওয়ায় তারা এরুপ বলে। সালাফিরাও কিন্তু ইহুদী ও ইহুদী রাষ্ট্রের বিরোধী। এইখানে আমরা সকল মুসলিম একমত আছি। কিন্তু সিয়াসতী দিক থেকে আবার সৌদির সাথে ইসরাইলের পরোক্ষ সুসম্পর্ক। তাই এই হিসেবে সালাফিরা ইহুদীদের বিরোধিতা করতে গেলে সালাফিদের সিয়াসতী নীতির খেলাফ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

সামান্য বানান নিয়েও আমাদের মধ্যে ঝগড়া! হায় উম্মাহ! যে যেই নিয়ম ফলো করে করুক না। কেউ মনে করে আরবির উচ্চারণ বজায় রেখে বানান লিখলে অধিক সঠিক হয়, আবার কেউ মনে করে বাংলা ভাষায় যেহেতু আরবি শব্দগুলো এসে বাংলা হয়ে গেছে তাই বাংলায় যেভাবে প্রচলিত সেভাবেই লেখা উচিৎ। এই দুইটাই দুই দিক থেকে সঠিক। এগুলো বুঝের ভিন্নতা। এগুলো তো বৈচিত্র্যতা। বৈচিত্র্যতা সুন্দর হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সামান্য ইখতিলাফকেও আমরা মেনে নিতে পারি না আ-কার ই-কারের ইখতিলাফও। হায়!

 

 

 

 

 

 

 

 

আমরা ভুলেও হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে যাই না, এমবিবিএস ডাক্তার থেকে চিকিৎসা নেই। আবার ইঞ্জিনিয়ারের কাজ ইঞ্জিনিয়ারকে দিয়েই করাই, নিজেরা মাতব্বরি করতে যাই না। কে কোন বিষয়ের মানুষ, কে কোন বিষয়ে দক্ষ, আমরা তা ভালোভাবে খোঁজ খবর নিয়ে এরপর যাই। সবাই সবার ক্ষেত্র বুঝি। শুধু দ্বীনের ক্ষেত্রে আমরা সবাই কেমন আল্লামা হয়ে যাই। দুই দিন হল নামাজ শুরু করেছে, ফতোয়া দেয়াও শুরু করে দিয়েছে। কোনো মুফতীর ফতোয়া নকল করে বয়ান করলে সমস্যা না, কিন্তু নিজের থেকে ফতোয়া ঝাড়াটা সমস্যা। আল্লাহ্‌ রক্ষা কর।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

জানি না ব্যাপারটাকে কিভাবে দেখবেন, যাকে দাওয়াত দেয়ার সুযোগ ছিল কিন্তু আমি না দেয়ায় অন্য কারো মাধ্যমে সে হেদায়েত পায় তখন খুব ঈর্ষা হয়। হিংসাও বলতে পারেন। হয়তো এই কারণে যে, যে সাওয়াবটা আমার পাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু অন্যজনে নিয়ে গেল। এটা ভালো নাকি খারাপ জানি না। তবে এমন একটা অনুভূতি হয়। আল্লাহ্‌ এই অনুভূতি থেকে রক্ষা করুন যদি তা কল্যাণকর না হয়ে থাকে।

 

 

 

 

 

 

 

 

এমন কিছু কাজ করুন, এমন কাজ রেখে যান যেন আপনি ভিন্নমত হওয়া সত্ত্বেও মানুষ আপনাকে ফেলতে না পারে। এজন্য বেশি বেশি কাজ করতে হবে ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে। ইখতেলাফি বিষয় নিয়ে ঝগড়ায় কম জড়াতে হবে। একটা উদাহরণ দেয়া যায়, শাইখ আওলাকি রঃ কিন্তু কায়দার সদস্য ছিলেন, কিন্তু সীরাত নিয়ে তার অডিও সিরিজ, পরকাল নিয়ে তার অডিও সিরিজ তাকে অমর করে রেখেছে (অমর শব্দে আবার কেউ শিরক খুঁজেন না, যা বুঝাতে চেয়েছি বুঝা গেলেই হল)। তার এই কাজগুলোর কারণে অন্য ঘরানার মুসলিমরাও তাকে ফেলতে পারবে না। আবার যেমন আর রাহীকুল মাখতুমের লেখক হচ্ছে আহলে হাদীস, অথচ তার বই হানাফি-সালাফি নির্বিশেষে পড়ে।

 

ইয়াসির কাজির কথাও বলা যেতে পারে। তার এমন অনেক কাজ আছে যেগুলোর কারণে তার বিরোধী হওয়া সত্ত্বেও অনেকে তার লেকচার শুনতে বাধ্য হয়। সুতরাং এমন কাজ করুন যা আপনার দলের উপকার নয় বরং পুরো উম্মাহর উপকার করবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সাধারণ কাফিরদের অসম্মান বা অপমান করাটা দাওয়াতের পথে একটা বাধা। জায়েজ না-জায়েজের কথা বলছি না, তবে এসব কাজ থেকে বেঁচে থাকাই উত্তম। তবে মুরতাদ আর ইসলামের দুশমন হলে ভিন্ন কথা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ধরুন, সরকার ঘোষণা করল, জনগণকে এমন একটা সুযোগ দেয়া হবে যে, সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে কোনো কিছু চাইতে পারবে। এবং এই চাওয়ার কোনো লিমিট নির্দিষ্ট করে দেয়া থাকবে না। যত ইচ্ছা তত চাওয়া যাবে। তবে সব চাওয়া তাৎক্ষণিক ভাবে পূরণ হবে না। সব উইশের সাথে তিনভাবে ট্রিট করা হবে। কিছু চাওয়া, চাওয়ার সাথে সাথে পাওয়া যাবে। কিছু চাওয়া পূরণ করা হবে ১০ বছর পর বা ২০ বছর পর। আর কিছু চাওয়ার বদলে কয়েক বছর পর সেই চাওয়ার ভারের উপর ভিত্তি করে একটা এমাউন্টের টাকা দেয়া হবে।

 

এই ঘোষণার পর আমাদের প্রতিক্রিয়া কেমন হবে? আমরা সবাই ভাববো, চাওয়া তৎক্ষণাৎ পূরণ হোক বা নাহোক, কিছু বছর তো টাকা পাবই, তাই যত ইচ্ছা চাইতে থাকি।

 

উদাহরণটা দিলাম একটা বিষয় বোঝাতে। সেটা হচ্ছে আল্লাহর কাছে দুয়া। আল্লাহ্‌ অনেক বেশি খুশি হন বান্দা যদি তার কাছে চায়, হাত পাতে।

 

আল্লাহ্‌ সব দুয়া কবুল করেন, কিছু দুয়া তৎক্ষণাৎ, কিছু দুয়া পরে, আর কিছু দুয়ার বদলে আখিরাতে নেকি দেয়া হবে। এমন দারুণ একটা অফার তো আমাদের লুফে নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমরা কি রবের দরবারে আসলেই হাত পাতি? আমাদের তো উচিৎ ছিল যত রকমের চাওয়া সব রবের দরবারে খুলে বলা, তুচ্ছ থেকে বড়, বাস্তব অবাস্তব সব দুয়াই করা উচিৎ ছিল। আমরা এই অফারটাকে কেন গুরুত্বের সাথে নিচ্ছি না?

 

সৃষ্টির কাছে বেশি চাইলে বিরক্ত হয়, রাগ করে, কিন্তু আমার রবের কাছে বেশি চাইলে তিনি খুশি হন, বিরক্ত তো হন না, বরং সন্তুষ্ট হন।

 

তাই বেশি বেশি দুয়া করুন, যত রকমের দুয়া মনে আসে, করতে থাকেন। এটা এমন এক ব্যবসা যাতে লস নেই। তৎক্ষণাৎ বা পরে দুয়া কবুল হলে তো ভালোই, কিন্তু কবুল না হলেও আখিরাতে এর প্রতিদান পাওয়া যাবে। আলহামদুলিল্লাহ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রশ্নঃ ধর্ম বড় না মানুষ বড়?

 

- মানুষ আল্লাহর সৃষ্টি, যাদেরকে ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। আর ইবাদত করার পথটাকে বলে দ্বীন, যদি ধর্ম বলে ইসলামকে নির্দেশ করে থাকেন তাহলে।

 

তাহলে, দ্বীন হচ্ছে উদ্দেশ্য, আর মানুষ হচ্ছে উদ্দেশ্য বাস্তবায়নকারী। দুইটাই এমন বিষয় যার মধ্যে তুলনা চলে না, তুলনা সম্ভবও না।

 

কিন্তু যদি বলা হয় মানবতা বড় না ইসলাম বড়, আপনি বোধহয় মানুষ বলতে মানবতা বোঝাচ্ছেন, তাহলে বলতে হবে মানবতা বলতে প্রচলিত অর্থে যা বোঝায় সেটা একটা সেকুলার পরিভাষা বৈ কিছু না। এই শব্দটা যত সুন্দর, পরিভাষাটা ততই কুৎসিত। তবে আপনি মানবতা বলতে যদি এমন কিছু বোঝান যেটা সত্যিকারের মানবতাকে নির্দেশ করে তাহলে বলতে হবে, এমন মানবতার খোঁজ তো ইসলামেই রয়েছে। মানবতাই যেহেতু ইসলাম সেহেতু মানবতা আর ইসলামের মধ্যে বড় ছোট তুলনা সম্ভব না।

 

সেকুলার পরিভাষার মানবতার সাথে যদি ইসলামকে তুলনা করা হয় তাহলে বলতে হবে ইসলাম হচ্ছে আল্লাহ প্রদত্ত জীবনব্যবস্থা, আর মানবতাবাদ বা মানবধর্ম হচ্ছে একটা স্বতন্ত্র মতবাদ বা ধর্ম যা পরিত্যাজ্য।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আলেমদের কটু কথা বলা, গালি দেয়া, বিদ্বেষপোষণ করা এক বিষয়। আর গঠনমূলক সমালোচনা করা, তাদের কর্মকাণ্ডের উপর শরঈ দৃষ্টিতে পর্যালোচনা করা ভিন্ন বিষয়। প্রথমটা পরিত্যাজ্য, দ্বিতীয়তা গ্রহণযোগ্য। সেই আলেম যে-ই হোক, বা যত ভণ্ডই হোক। তাহেরী তো আলেম না, তবু তাকেও গালি দিব না, বা বিদ্বেষপোষণ করব না, দ্বিতীয়টা করা যায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

যখন কারো কথাবার্তা শুনে মনে হয় লোকটা সেকুলার নাকি, কিংবা নাস্তিক নাকি। কিংবা ইসলামে বিশ্বাসী কিনা? কিন্তু যখন শিউর হই লোকটা নিজেকে ইসলামের মধ্যে গণ্য করে, হোক দুই একটা সেকুলার ধ্যান ধারণায় প্রভাবিত, তখন ভেতরে অনেক শান্তি পাই। আর যাই হোক, কাফের তো না! হোক না কবীরা গুনাহগার। চিরস্থায়ী জাহান্নামী তো না। জানি না, আমার মতো কেউ ভাবে কিনা! এক ব্যক্তিকে সেকুলার বা নাস্তিক মনে করতাম। কিন্তু একদিন জানলাম সে কোনো একটা পীরের মুরিদ। তখন নিজেকে একটু হলেও প্রবোধ দিতে পেরেছি, আর যাই হোক ইসলামের ভেতরেই আছে, হোক না ভণ্ড পীর। (তবে কোনো কাফের পীর হলে ভিন্ন কথা)।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

দুরুদ

 

১- রসুলের নাম শুনলে বা পড়লে বা বললে দুরুদ পাঠ করা ওয়াজিব বা এর কাছাকাছি।

 

২- রসুলের প্রতি দুরুদ প্রেরণ করলে প্রেরকের উপর ১০ বার আল্লাহর রহমত নাজিল হয়।

 

৩- দুয়া তৎক্ষণাৎ কবুল নাও হতে পারে, কিন্তু দুরুদ তৎক্ষণাৎ কবুল হয়।

 

৪- দুরুদ পূর্ণতা পায় যখন আলে মুহাম্মাদ তথা নাবির পরিবারের উপরও দুরুদ প্রেরণ করা হয়।

 

৫- অধিক দুরুদ পাঠ হচ্ছে নাবির প্রতি ভালোবাসার প্রমাণ।

 

৬- জুমার দিনের তাৎপর্যময় আমল হচ্ছে দুরুদ পাঠ।

 

৭- শ্রেষ্ঠ দুরুদ হচ্ছে আমরা যেটা নামাজের মধ্যে পড়ি, দুরুদে ইব্রাহিম।

 

আল্লাহুম্মা সল্লি 'আলা মুহাম্মাদ, ওয়া 'আলা আলি মুহাম্মাদ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আল্লাহকে মা-বাবার চেয়েও বেশি ভালোবাসা ছাড়া মুমিন হওয়া যাবে না। এর মানে কি? এর মানে হচ্ছে আপনি যে আল্লাহকে মা-বাবার চেয়ে বেশি ভালোবাসবেন, তিনি আপনাকে ভালোবাসবে আপনার মা-বাবার চাইতেও বেশি। আপনার সেই মায়ের চেয়ে বেশি যিনি নিজে না খেয়ে আপনার মুখে খাওয়া তুলে দেয়। আপনার সেই বাবার চেয়ে বেশি যিনি সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে আপনার একটা ভালো ভবিষ্যতের জন্য।

 

মা-বাবার মমতার বর্ণনা তো আর বলে শেষ করা যায় না, পাতার পর পাতা চলে যাবে, শেষ হবে না, সাহিত্যিকদের কলম শত শত বছর ধরে সন্তানের প্রতি মা-বাবার ভালোবাসার বর্ণনা লিখে গেছে, তবু যেন কত অসম্পূর্ণ সেই বর্ণনা, সেই বর্ণনার চেয়ে আমাদের বাস্তব জীবনের বাবা-মা যেন আরও অনেক উর্দ্ধে। এই সেই বাবা-মা যাদের আপনি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন, আর তারা আপনাকে ভালোবাসে আপনার ভালোবাসাকে কয়েকশত গুণ করলে যা হয় সেরুপ।

 

কিন্তু আল্লাহ বলছেন আল্লাহকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতে। মা-বাবাকে যদি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসলে কয়েকশত গুণ বেশি ভালোবাসা ব্যাক পাওয়া যায়, সেই মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রব্বুল আলামীনকে মা-বাবার চাইতে বেশি ভালোবাসলে তিনি আমাকে কতটা ভালোবাসবেন? তিনি তো আমার জন্য বিশাল জান্নাত সাজিয়ে রেখেছেন, শুধু একটাই শর্ত, আল্লাহকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতে হবে, ভালোবাসার দাবিগুলো পূরণ করতে হবে। আপনার বাবা-মাকে আপনি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসলে আপনি এর শতগুণ বেশি ভালোবাসা ব্যাক পাবেন কিনা এর নিশ্চয়তা আমি দিতে পারব না, তবে আমার আল্লাহ যে ইনফিনিটিগুণ ভালোবাসা ব্যাক দিবেন তা আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি। আল্লাহ কারো প্রতি বিন্দুমাত্র বেইন্সাফী করেন না। আল্লাহ তার শান অনুযায়ী আপনাকে ভালোবাসা ব্যাক দিবেন। সেই আল্লাহকে ভালোবাসো হে আল্লাহর বান্দারা। এই ভালোবাসায় ঠকবেন না একেবারেই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

দুনিয়ার মহব্বতের কারণে মানুষ যেমন অন্যকে খুন করতে দ্বিধা করে না আবার এই দুনিয়াপ্রীতির কারণেই আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। দুনিয়ার লোভ মানুষকে পশু বানায়। বস্তুবাদী চিন্তা চেতনা আমাদেরকে এমন দুনিয়ামুখী করে তুলে, আমাদের যে দ্বিতীয় আরেকটা জীবন আছে তা ভুলে যাই। এজন্য দুনিয়াকে আল্লাহর রসুল বিভিন্ন তুচ্ছ বিষয়ের সাথে তুলনা করে উম্মাতকে দুনিয়ার মহব্বত থেকে বেঁচে থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। কখনো দুনিয়াকে বলেছেন কারাগার, কখনো মরা গাধা, কখনো আবর্জনায় পড়ে থাকা মরা ছাগলের কানের সাথে তুলনা করেছেন, কখনো আখিরাতের জিন্দেগীর তুলনায় দুনিয়ার জিন্দেগীকে বলেছেন সমুদ্র থেকে একটি আঙ্গুল ডুবিয়ে উঠিয়ে নিলে যতটুকু পানি আসে তার সমান।

 

আল্লাহর হাবিব আমাদের দুনিয়ায় থাকতে বলেছেন মুসাফিরের ন্যায়। এমন মুসাফির যে সফরের সময় গাছের নিচে একটু সময় জিরিয়ে নেয়, সেই সময়টুকু হচ্ছে দুনিয়ার জীবন। এতই অল্প, এতই তুচ্ছ। অথচ এই সংক্ষিপ্ত জীবনের পরীক্ষার উপর নির্ভর করে অনন্ত জীবনের ফলাফল। দুনিয়াকে কারাগার বলা হয়েছে এই কারণে, কারাগারে মানুষ আরাম আয়েশ করে না, এখানে কষ্ট আছে,  দুনিয়া এরুপ বলেই তো মুমিনের জন্য আখিরাত জান্নাত হবে। জান্নাতের পথকে সাজানো হয়েছে কষ্ট দুঃখ বিপদ মুসিবতের নানাবিধ পরীক্ষা দিয়ে। আর জাহান্নামের পথ সাজানো হয়েছে খেল তামাশা, ফুর্তি উল্লাসের চিজ দিয়ে।

 

উম্মাত যখন দুনিয়ার পিছনে পড়ে থাকে, দুনিয়ার মহব্বতে অন্ধ হয় তখন সব হারায়। আখিরাতই তো সব। যখন শুনি কেউ দুনিয়ার সামান্য একটা বিষয়ের কারণে আত্মহত্যা করেছে তখন বাকরুদ্ধ হই। আত্মহত্যাকারীর প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই। আমার অভিযোগ সেসব দুনিয়ার গোলামদের প্রতি যাদের কারণে সেই ব্যক্তি আত্মহত্যা করে। এসব গোলামরা চায় তাদের সন্তানও তাদের মত দুনিয়ার গোলাম হোক, বরং আরও বেশি রকমের হোক। কম হতে চাইলেই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যে সেই ছেলের আত্মহত্যা ছাড়া আর পথ থাকে না। এসব দুনিয়ার গোলামেরা ধ্বংস হোক। আল্লাহ আমাদের যুবসমাজকে দুনিয়ার গোলাম বাপ-মাদের হাত থেকে রক্ষা করুক।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ঝগড়াটে হুজুরদেরকে নিজের পীর বানাবেন না। এসব ঝগড়াটে লোকদের থেকে দূরে থাকবেন। যারা অন্যের পিছে লেগে থাকে, অন্যের ছিদ্রান্বেষণকে পছন্দনীয় কাজ বানিয়ে নেয়, হিংসা হাসাদে ভরপুর যাদের হৃদয় তাদেরকে আদর্শ মানবেন না, আকাবির মানবেন না, মুরুব্বি মানবেন না। আপনার যতই প্রিয় হোক; এরা এদের গীবত, হিংসা, পরচর্চা, গালিগালাজ, ঘৃণার চাষ, এবং অন্য মুসলিমদের ছিদ্রান্বেষণ করার কারণে হয়তো কিয়ামতের দিন সবচেয়ে হতভাগাদের অন্তর্ভুক্ত হবে যারা বহুত আমল জমা করে নিয়ে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হবে, কিন্তু নিজেদের এসব ঝগড়াটে বৈশিষ্ট্যের কারণে অন্য মুসলমানদের সব আমল দিয়ে দিয়ে শুন্য হয়ে যেতে হবে। আল্লাহ আমাদের ঝগড়াটে লোকদের মধ্যে শামিল না করুন এবং তাদের অনুসারীদের মধ্যেও না করুন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

স্কলার কইলে একটা ভাব আসে, মাওলানা কইলে ক্ষ্যাত লাগে। না?

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমার একটা নীতি হচ্ছে আমি জাহিলদের থেকে হুজুরদের সমালোচনা গ্রহণ করি না। সেটা যেই হুজুরই হোক না কেন। কোনো জাহিল যদি তাহেরীর সমালোচনাও করে, সেটা যদি সঠিকও হয় তবে আমি তাহেরীর পক্ষালম্বন করব। কারণ আমার নীতি হচ্ছে, কোনো জাহিল থেকে তাহেরী, জিহাদী, আফসারি উত্তম। আমাদের অনেকেই এই ভুলটা করে থাকে, কোনো জাহিল যদি কোনো ভন্ড হুজুরের সমালোচনা করে আমরা খুশি হয়ে যাই, আবার যখন হকপন্থী কারো সমালোচনা করে তখন চেতে যাই। আসলে এটা আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক দৈন্যতার প্রমাণ। যেই জাহিল সমালোচনা করছে সে মূলত ইসলামের জন্য করছে। তার ভণ্ডামির জন্য না। একজন জাহিল কিংবা সেকুলারের কাছে তাহেরী যা, আফসারিও তা, আযহারীও তা, ওলিপুরীও তা, আব্দুর রাজ্জাকও তা।

 

আমি মনে করি কোনো জাহিল কিংবা কাফির, কিংবা ইসলামের বাইরের কারো অধিকার নেই আমাদের আভ্যন্তরীণ কোনো ব্যাপারে নাক গলানোর। নাক গলাতে আসলে আমরা সম্মিলিত ভাবে তাদের নাক কেটে দিব। কারো সমালোচনা করার জন্য আপনাকে ইসলামের ভেতর থাকতে হবে। অন্য কোনো ঘরানার হন সমস্যা নেই। এটাই আমার নীতি। আমাদের ওয়ালা বারাটা ভালো করে শেখা উচিৎ।

 

 

 

 

 

 

 

 

কাফিরদের প্রকারভেদঃ (আমার নিজের জ্ঞান অনুযায়ী কুরআন হাদিসের ভিত্তিতে লেখা)

 

১- মুসলিম দাবি করে এবং মেনেও চলে কিন্তু কাফির। (জিন্দিক)

 

২- মুসলিম দাবি করে, কিন্তু ভেতরে ভেতরে কাফির। (মুনাফিক)

 

৩- ইসলাম ত্যাগ করেছে। (মুরতাদ)

 

৪- নিজেকে মুসলিম দাবি করে না এবং জন্মগত কাফির। (কাফিরে আসলি)

 

কাফিররা আবার স্তরভেদে কয়েকপ্রকার হতে পারে-

 

ক- কাফির কিন্তু ইসলামের পক্ষে (আবু তালিব টাইপ)

 

খ- কাফির কিন্তু ইসলামের দুশমন না। (সাধারণ কাফির)

 

গ- কাফির এবং ইসলামের দুশমন।

 

ঘ- শাতিম। (যার রক্ত হালাল)

 

আসলি কাফেরদের আবার দুই প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়ঃ

 

i- আহলে কিতাব (ইহুদী, খ্রিস্টান)

 

ii- মুশরিক (হিন্দু, মাজুসি ইত্যাদি)

 

সিয়াসতী দৃষ্টিকোন থেকে আবার কাফির দুই প্রকারঃ হারবী এবং জিম্মী।

 

 

সব কাফিরই জাহান্নামে যাবে এবং সবার সাথে বারা করতে হবে কিন্তু আমাদের আচরণ কাফিরদের প্রকারভেদে পরিবর্তনশীল হবে। যেমন, যারা ইসলামের প্রতি সহানুভূতিশীল, তাদেরকে আমরা দাওয়াত দিব, এবং ভালো আচরণ করব। বন্ধুত্ব করা নয় তবে তাদের সাহায্য সমর্থন গ্রহণ করা দোষনীয় হবে না। আবু তালিব উদাহরণ। আশা করা যায় এই টাইপ কাফিরদের শাস্তি জাহান্নামে সবচেয়ে কম ভয়াবহ হবে। এছাড়া যারা সাধারণ কাফির অর্থাৎ ইসলামের দুশমন নয়, কিন্তু শিরক কুফর করে থাকে, তাদের ইসলাম গ্রহণ করার অনেক বেশি সম্ভাবনা থাকে। কাফিরদের মধ্যে সাধারণ কাফিরের সংখ্যাই বেশি। তাদেরকে দাওয়াত দিতে হবে। মুরতাদ আর ইসলামের দুশমন কাফিরদের সাথে আমাদের আচরণ হবে শত্রুর ন্যায়। সাধারণ কাফিরদের থেকে পণ্য কেনা জায়েজ হলেও ইসলামের দুশমনদের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক তৈরি করা থেকেও বিরত থাকা উচিৎ। সর্বশেষে আসে শাতিম। এরা নিকৃষ্ট পশু, বা পশুর চেয়েও অধম। মুসলমানদের পক্ষ থেকে এদের হক বা অধিকার হচ্ছে এদের রক্ত প্রবাহিত করা।

 

জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে থাকবে মুনাফিকরা। আমাদের দেশের সেকুলারদের এই ক্যাটাগরিতে ফেলা যায়। জিন্দিকদের তওবা করিয়ে ইসলামে ফেরানোর চেষ্টা করতে হবে, যেমন শিয়া, কাদিয়ানী। জিন্দিকরা হচ্ছে মুলহিদ। মুলহিদ বলতে ধর্মত্যাগী বোঝায়। মুরতাদ আর মুলহিদ অনেকটা সমার্থক।

 

জিন্দিক ও মুনাফিকের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে জিন্দিক তার ভ্রষ্টতার ব্যাপারে ওয়াকিবহাল নয় এবং নামাজ রোজাও হয়তো করে। কিন্তু মুনাফিক তার ভ্রষ্টতার ব্যাপারে ওয়াকিবহাল এবং যে নামাজ রোযা করে সেটা লোক দেখানোর জন্য করে যাতে মানুষ তাকে মুসলিম ভাবে।

 

আহলে কিতাব ও মুশরিকদের মধ্যে মুশরিকরা বেশি ঘৃণিত। কারণ শিরক সবচেয়ে বড় অপরাধ। আবার অন্যদিকে ইহুদীরা সবচেয়ে বেশি ঘৃণিত, কারণ তারা অভিশপ্ত, যারা সত্য জেনেও সত্য মানতে চায় না। আহলে কিতাবদের মধ্যে শিরক করে নি এমন সতী নারীকে বিয়ে করা জায়েজ কিন্তু কোনো মুশরিক নারীকেও বিয়ে করা জায়েজ নাই। এই হল কাফিরদের প্রকারভেদের সংক্ষিপ্ত আলোচনা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কিছুদিন আগে যখন চীন নতুন কুরআন লেখার ঘোষণা দিল তখন কাফির ও মুনাফিকরা হয়তো মনে মনে খুশি হয়েছিল। তারা ভেবেছিল, এইবার বুঝি মুসলমানদের অহঙ্কার ভেঙ্গে যাবে। অথচ এর পরপরই যখন চীনের উপর করোনার আজাব আসলো তখন আশ্চর্য মুনাফিক ও কাফিররা এটাকে প্রাকৃতিক ব্যাখ্যা করতে চাচ্ছে। অথচ আল্লাহর আজাব সত্য।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কুরআনের ১৯ সংখ্যাতত্ত্ব নিয়ে প্রচলিত ধারায় অনেক লেখালেখি আছে। যদিও আমি বিষয়টাকে সমস্যাযুক্ত মনে করি। আর আগেই বলেছি, এগুলো বিশ্বাসের বিষয় না। গবেষণার বিষয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

কওমি নতুন প্রজন্মের মধ্যে ভালো ভালো আলেমের আনাগোনা লক্ষ্য করা যায়। আগের প্রজন্মগুলোর সাথে নতুন প্রজন্মের একটা পার্থক্য হচ্ছে এখনের আলেমরা বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে অনেকটা সচেতন। আর এটাই একজন আলেমের জন্য খুব জরুরী।

 

 

 

 

 

 

 

 

আমি জীবনেও ইউটিউবের টশটশে শিরোনামের ওয়াজ দেখে লোভে পড়ে শুনতে যাই নি। এতো রুচিহীন হইনি আমি। যারা ওয়াজ জগতের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে পোস্ট দেন তারা জীবনের মূল্যবান সময়গুলো এসব ফালতু জিনিসে নষ্ট করছেন।

 

 

 

 

 

 

 

আহলে হাদিস ইজতেমা একটা পজেটিভ বিষয়। আশা রাখবো ভবিষ্যতে আহলে হাদিসরা সহীহ চিল্লা, সহীহ তিন দিন, সহীহ এক সাল এর উদ্ভব ঘটাবে। সহীহ ফাজায়েলে আমল তো অনেক আগেই বের হইছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

যে জাতির পিতা ইব্রাহিম আঃ মূর্তি ভেঙ্গেছিলেন, সেই জাতির দেশ বাংলাদেশের মোড়ে মোড়ে মূর্তি, আর আলেম উলামা দ্বীনদাররা ব্যস্ত নিজেদের মধ্যে মারামারিতে। আফসোস!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সেকুলারদের যেহেতু ধর্ম নেই অর্থাৎ আদর্শিক ভাবে, এক্ষেত্রে তাদের বিভিন্ন বিষয়কে ধর্মের পর্যায়ে নিয়ে যেতে হয়। কারণ মানুষের বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে কোনো না কোনো কিছুকে মানা, ধর্ম যখন কেউ মানে না তখন ধর্মের জায়গায় স্থান দিতে হয় নাস্তিকতাকে, অথবা দেশকে অথবা অন্য কিছুকে।

 

দেশপ্রেম নিয়ে বলি। সেকুলারদের কাছে দেশ হচ্ছে ধর্মের মতই। ফলে দেশপ্রেম তাদের কাছে ইবাদত। যে দেশপ্রেমী নয় তার সাথে তারা বারা করে, আর দেশপ্রেমীদের সাথে ওয়ালা করে। অর্থাৎ একদম ধর্মের মতোই বিষয়টাকে মানে। তারা বাংলাদেশী হয়ে পাকিস্তানীদের গালি দেয়, অথচ এতোটুকু কমনসেন্স নাই, তার জন্ম যদি পাকিস্তানে হত তবে পাকিস্তানিজম হত তার কাছে ধর্ম।

 

ইসলামের দৃষ্টিতে দেশপ্রেম কেমন সেটা আমাদের আলোচ্য বিষয় না। তবে এতোটুকু বলে রাখি, দেশ বা রাষ্ট্র হচ্ছে একটা সিস্টেম। এই সিস্টেম যারা চালাবে যেভাবে চালাবে সেভাবেই চলবে, আর সেই অনুযায়ী পক্ষ বিপক্ষ নির্ধারণ করতে হবে। যদি রাষ্ট্র কাফেররা চালায় এমন সিস্টেম ইসলামের বিরুদ্ধ, আর যদি ইসলামের পক্ষের শক্তি চালায় তবে সেটা ইসলামের পক্ষে। কিন্তু সেকুলাররা যে দেশপ্রেমের কথা বলে সেটা বড় আজব। কারণ দেশ যদি ইসলামের পক্ষের শক্তির লোক চালায় তখন কিন্তু তারা সেই সিস্টেমকে সাপোর্ট করবে না। যা স্রেফ ভন্ডামি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

জুমু'আর দিনের ১৫ সুন্নাতঃ

 

ফজরের নামাজ জামাআতে পড়া।

 

মিসওয়াক করা।

 

তেল লাগানো। (যাইতুনের তেল)

 

সুগন্ধি লাগানো।

 

সুন্দর পোশাক পরিধান করা।

 

নবীর উপর বেশি বেশি দুরুদ পাঠ করা।

 

সূরা কাহফ পাঠ।

 

মাসজিদে আগে আগে যাওয়া।

 

মাসজিদে হেঁটে যাওয়া।

 

মানুষের ঘাড় ডিঙিয়ে সামনে না যাওয়া।

 

মাসজিদে প্রবেশ করে দুই রাকাত নামাজ পড়া।

 

চুপ করে খুৎবা শোনা।

 

ঘুম আসলে জায়গা পরিবর্তন করে বসা।

 

বা'দাল জুমু'আ চার রাকাত আর বাসায় গিয়ে পড়লে দুই রাকাত। কাবলাল জুমু'আর রাকাআত সংখ্যা নির্ধারিত নয়, খুৎবা শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত যত পড়া যায়।

 

দুয়া করা। আসর থেকে মাগরিব দুয়া কবুলের গুরুত্বপূর্ণ সময়।

 

মিজানুর রহমান আজহারীর ওয়াজ থেকে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

অস্ট্রেলিয়ার বন্যা কিংবা চীনের করোনা ভাইরাসকে অনেকে কাকতালীয় ব্যাপার ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করছেন। যুক্তি দিচ্ছেন, অস্ট্রেলিয়া এবং চীনে মুসলিমও আছে, তারাও তো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তাহলে এটা আল্লাহর আজাব হয় কিভাবে? এই অপযুক্তি দেয়ার কারণ অধিকাংশ মানুষ আজাবের সংজ্ঞা জানে না। অথচ রসুল সাঃ এর স্পষ্ট হাদিস আছে, আজাব যখন আসে তখন সবাইকে গ্রাস করে, কে নেক আর কে বদ তা দেখে না। এবং যে যেই অবস্থায় মরেছে সেই অবস্থাতেই পুনুরুথিত হবে, অর্থাৎ কেউ যদি মুসলিম হয়ে মরে তবে সে সেই অবস্থাতে পুনুরুথিত হবে। আর যাদের কারণে আজাব এসেছিল তারাও জাহান্নামের হকদার অবস্থায় পুনুরুথিত হবে।

 

যে পানি খাওয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়া উট হত্যা করেছিল, এখন সেই পানি দিয়েই আল্লাহ তাদের শাস্তি দিচ্ছেন। মুসলিমদের নির্যাতনকারী চীনাদের উপর এই ভয়ঙ্কর মহামারী আল্লাহর ওয়াদাকে সত্যায়ন করে। অবশ্যই দুনিয়ায় লাঞ্ছনাকর এই আজাবেই শেষ নয়, আখিরাতেও আছে হতভাগ্য পরিণতি।

 

আরেকটা পয়েন্ট মনে রাখা দরকার। এগুলো হচ্ছে ইসলামিক ইলমের একেবারে মৌলিক ফ্যাক্ট, যা আমাদের জেনে রাখা প্রয়োজন। একই রোগ, একই কষ্ট, কাফিরদের জন্য আজাব আর মুমিনদের জন্য পরীক্ষা। কাফির ও মুনাফিকদের জন্য রোগ কষ্ট দুঃখ বিপদ হচ্ছে আজাব, এই আজাব তাদের কর্মফলের কারণে, আখিরাতে তো নিশ্চিত শাস্তি আছেই, দুনিয়াতেও শাস্তি পেয়ে মরছে। কিন্তু মুমিন মুসলিমদের জন্য দুনিয়ায় কষ্ট দুঃখ যন্ত্রণা বিপদ মুসিবৎ হচ্ছে পরীক্ষা, এসব কারণে মুমিনের গুনাহ মাফ হয়, ধৈর্য ধরে আল্লাহর উপর ভরসা রাখলে আল্লাহ সন্তুষ্ট হন, সাওয়াব লাভ হয়। অর্থাৎ কাফিরদের দুনিয়ায় এই কষ্টলাভে কোনো লাভ হয় না, কারণ আখিরাতে তাদের আজাব কিন্তু কমে না। কিন্তু মুমিন ব্যক্তি দুনিয়ায় কষ্ট পেলে আখিরাতের শাস্তি কিছু মাইনাস হয়। এই বিষয়টা আমাদের মনে রাখা দরকার, বিপদ মুসিবত দুঃখ কষ্ট আমাদের জন্য পরীক্ষা আর কাফিরদের জন্য আজাব।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

শাইখ মুজাফফার বিন মুহসিন বললেন, হাসবি রব্বি জাল্লাল্লাহ গানে নাকি শিরক আছে। মাফি কলবি গইরুল্লাহ নাকি শিরকি কথা। এই বাক্যের অর্থ আমার কলবে বা মনে আল্লাহ ছাড়া কেউ নাই। তো, এইটাকে মুজাফফার সাহেব "আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান" থিওরিতে ফেলে শিরকি বলে আখ্যা দিয়েছেন। আফসোস যে আমাদের আলেমরা কতটা আকলহীন। আর আহলে হাদিসদের শভাব হচ্ছে সবকিছুর মধ্যে শিরক ও বিদআত খুঁজে পাওয়া। এ ভয়ঙ্কর রোগ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বাংলা একাডেমী হচ্ছে সেকুলারদের মন্দির, আর বইমেলা হচ্ছে তাদের ধর্মীয় উৎসব। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাস আসলেই সেকুলারদের মস্তিষ্কের যত আবর্জনা আছে সমস্ত মলাটবদ্ধ হয়ে বইমেলায় চলে আসে। এসব আবর্জনা আবার মানুষ কিনে, এভাবেই এসব আবর্জনা এক মস্তিষ্ক থেকে অন্য মস্তিষ্কে ছড়াচ্ছে।

 

বইমেলায় একেকটা বইয়ের দিকে নজর দিলেই বোঝা যায় দেশে কি পরিমাণ বুদ্ধি-বিকলাঙ্গ রয়েছে। মন যা চায় লিখে নাম দিলাম কবিতা, এমন ৩০-৪০ টা কবিতা নিয়ে বই বের হয়েছে, বইয়ের দাম ১০০ টাকা। এমন কবি, লেখকে ভরপুর বইমেলা। পাঠকের চেয়ে লেখক বেশি। আর বইমেলায় অর্ধেক মানুষ বোধহয় ঘুরতে যায়, খুব কম মানুষের হাতেই বই দেখা যায়।

 

বইমেলায় যে আরিফ আজাদের বই বিক্রি হতে দেয় না বা বাধা দেয়া হয় এটা আসলে একটা স্বাভাবিক ব্যাপার। ইসলামী প্রকাশনীগুলোকে স্টল দেয় না অথচ ছাইপাঁশ কবিতার প্রকাশকদের স্টল দেয়া হয়, এমন সব প্রকাশনীও দেখা যায় যারা ১০ টা বইও প্রকাশ করেনি এখন পর্যন্ত।

 

এতো বড় জায়গাজুড়ে মেলার আয়োজন করা হয়েছে, অথচ ৫০০ জন একসাথে নামাজ পড়তে পারে এতোটুক জায়গার ব্যবস্থা এরা করতে পারে না। পারে কিন্তু চায় না। ৫০০ জনকে নামাজ পড়তে ৫ বার জামাআত করতে হয়, মাগরিবের সংক্ষিপ্ত সময়ে ৫ বার জামাআত করলে ওয়াক্ত শেষ যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে সেকুলারদের মন্দিরের ভেতর নামাজের জায়গা থাকবে এটাই অনেক বেশি।

 

বইমেলার বই দেখার পর দুধ চা খেয়ে নিজেকে গুলি করে দিতে ইচ্ছা করে। আমাদের দ্বীনদাররা যখন অযোগ্যতার অজুহাতে লেখালেখি থেকে দূরে থাকেন তখন সাহিত্যাঙ্গন দখল করে রাখে যতসব বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ভবিষ্যৎ-বুদ্ধিজীবী। দ্বীনদারদের ব্যাপক ভাবে লেখালেখির ময়দানে আসতে হবে।

 

ছাইপাঁশ লেখা সম্পর্কে আরও কিছু কথা, ইসলামের সৌন্দর্য হচ্ছে অনর্থক ও অপ্রয়োজনীয় কথা ও কাজ থেকে বেঁচে থাকা। সেকুলার সাহিত্যের পুরো অঙ্গনটাই অনর্থক আর বস্তাপচা কথাবার্তার সংগ্রহশালা। কুরআনে এমন সব কবিতাকে নিন্দনীয় বলা হয়েছে যা অনর্থক, যা থেকে শেখার কিছু নেই, যেখানে নৈতিকতা নেই, ইসলামের কথা নেই, শরীয়তবিরোধী কথা আছে। প্রাচীন আরবের কবিতা তো তাও বাস্তবতার অনেক কাছাকাছি ছিল, এখনকার বাঙালী সেকুলারদের কবিতা তো হচ্ছে গরু আকাশে উড়ে, মাছ রাস্তায় হাঁটে টাইপ।

 

চর্চা গ্রন্থ প্রকাশে আরিফ আজাদের বই কিনতে মানুষের ভিড় দেখে ভালো লেগেছে। লেখক আনিসুল হক উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও যত ভিড়, চর্চা গ্রন্থ প্রকাশে আরিফ আজাদের বই কিনতে এর চেয়ে বেশি ভিড়। আলহামদুলিল্লাহ।

 

অনেকে শুধু ইসলামী বই কিনতে বইমেলা যাচ্ছেন, তাদের বলব শুধু ইসলামী বই কিনতে যদি যেয়ে থাকেন, অন্য উদ্দেশ্য না থাকে তাহলে কাঁটাবন কিংবা নীলক্ষেতে যান, বইমেলার চাইতে বেশি ইসলামী বই পাবেন। কাঁটাবনে প্রচুর ইসলামী বই পাওয়া যায়। বইমেলায় কিছু কিছু স্টলে দেখলাম মোক্সুদুল মোমেনীন টাইপ বই। সেকুলাররা বোধহয় মোকসুদুল মোমেনীন ছাড়া অন্য কোনো বই সহ্য করতে পারে না।

 

কেউ কেউ বলছে বইমেলায় যেহেতু ইসলামী স্টল দিতে দেয়া হয় না, তাই বয়কট করতে হবে, আবার অনেকে বলছে স্টলে স্টলে গিয়ে ইসলামী বই কি কি এসেছে তা জানতে। এই দুইটা মন্তব্যই ইসলামী সাহিত্যের শুভাকাঙ্ক্ষী হয়ে বল্লেও প্রান্তিক মন্তব্য। এর চেয়ে বইমেলার বিকল্প হিসেবে ইসলামী বইমেলাকে প্রমোট করা উচিৎ, এবং পাশাপাশি বইমেলাতেও সুযোগ পেলে ইসলামী বই ঢুকিয়ে দেয়া যায়, সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে তো সমস্যা নেই। বাইতুল মুকাররামে বছরে দুইটা ইসলামী বই মেলা হয়, রবিউল আউয়ালে এবং রমজানে। সামনে রমজানে বাইতুল মুকাররামের বইমেলার জন্য আমরা প্রস্তুত হই ইনশাআল্লাহ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

একটা প্যাটার্ন লক্ষ্য করেছেন? আয়াতুল কুরসি, সূরা ইখলাস এবং ৩৩ বার করে তাসবীহ, তাকবীর, তাহমীদ; এই তিনটা আমলই করতে উৎসাহিত করা হয়েছে প্রতি ফরজ নামাজের পর এবং ঘুমের আগে। অর্থাৎ দিনে প্রায় ৬ বার। তবে সূরা ইখলাস হচ্ছে ফজর ও মাগরিবে ৩ বার করে ৬ বার, বাকি ৩ নামাজে ৩ বার, ঘুমের আগে ১ বার, মোট ১০ বার।

 

সূরা ইখলাস এবং আয়াতুল কুরসীর রয়েছে বিশাল তাৎপর্য। একটা হচ্ছে শ্রেষ্ঠতম আয়াত, অন্যটি শ্রেষ্ঠ সূরাগুলোর মধ্যে অন্যতম, এই দুইয়ের শ্রেষ্ঠত্বের মূল কারণ এই দুইয়ে রয়েছে আল্লাহর পরিচয়, তাওহীদের মূল কথা। ইখলাস ৩ বার পাঠ করলে কুরআন ১ খতমের সাওয়াব। আয়াতুল কুরসি নামাজের পর পড়লে মৃত্যু বাদে কোনো বাধাই থাকে না জান্নাতী হওয়ার জন্য। আর ৩৩ বার করে তাসবীহ, তাকবীর ও তাহমীদের আমল নামাজের পর করলে ধন সম্পদ সাদাকা না করা সত্ত্বেও সাদাকা করার সাওয়াব (হাদিসানুযায়ী) অর্থাৎ আমলে এগিয়ে যাওয়ার সাওয়াব, আর ঘুমের আগে করলে কোনো খাদেম বা কাজের লোক ছাড়াই ঘরের কাজ করার জন্য এই আমল যথেষ্ট হয়ে যাবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সুইসাইড কেন করে?

 

সুইসাইডের মূল কারণ আখিরাতকে গুরুত্ব না দেয়া। যদিও সেকুলার এবং সাধারণ্যে প্রচলিত যে মূল কারণ হচ্ছে হতাশা। কিন্তু হতাশা একটা গৌণ কারণ। আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস দুর্বল থাকলেই, এবং দুনিয়ার প্রতি অধিক মহব্বত, অধিক পাওয়ার আশা থাকাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সুইসাইডের কারণ।

 

অধিকাংশ সুইসাইড যারা করে, খোঁজ নিলে দেখা যাবে কয়েক প্রকৃতির মানুষ এসব করে থাকে।

 

১- দুনিয়ার জীবনে ব্যার্থতা। যারা দুনিয়াতে সফল হতে পারে না, তাদের মধ্যেই সুইসাইড করার আশঙ্কা বেশি থাকে যদি সে সিরিয়াস টাইপের মানুষ হয়। সফল বলতে প্রচলিত অর্থে যা বোঝায়। তারা মনে করে দুনিয়ার জীবনটাই একমাত্র জীবন। ফলে এখানে ব্যর্থতা মানে সব শেষ। তাই তারা আশা হারায়, জীবনের আশা হারিয়ে ফেলে।

 

অনেক সময় তারা পারিপার্শ্বিক কারণে সুইসাইড করতে বাধ্য হয়। জীবনে সফল হতে না পারায় মানুষের কটু কথা শুনতে শুনতে শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয় সুইসাইড করতে। ছাত্রদের এমন সুইসাইড বর্তমান বস্তুবাদী চেতনার সমাজে ভালো করেই দেখা যায়। এ প্লাস পায় নি তাই সুইসাইড করে, ফেইল করেছে তাই সুইসাইড, ভালো জায়গায় ভর্তি হতে পারে নি তাই সুইসাইড, চাকরি পায় না তাই সুইসাইড, বিশাল অঙ্কের টাকা মাইর খেয়েছে তাই সুইসাইড, টাকার অভাব বা অনেক ঋণ তাই সুইসাইড, অপমানিত হয়েছে তাই সুইসাইড।

 

অবশ্য সুইসাইড যারা করে তাদের সবার দুনিয়ার প্রতি মহব্বত ও আশা এতে বেশি ছিল যে আশা ভঙ্গ হওয়ার পর বেঁচে থাকার মানেই তারা খুঁজে পায় নি। তবে সবাই যে আখিরাতে অবিশ্বাসী তা নয়। বেশিরভাগই আখিরাতে বিশ্বাস রাখে এবং কবীরা গুনাহ জেনেও করে থাকে। এর কারণ হচ্ছে, তারা ভাবে এই দুনিয়ার জিন্দেগী থেকে তো অন্তত মুক্তি পাওয়া যাবে। আখিরাতে কি হবে তা পরে দেখা যাবে। এই চিন্তা থেকে তারা দুনিয়ার সামান্য ও তুচ্ছ বিষয়ের কারণে সুইসাইড করে জাহান্নামের ভয়ানক আগুনের কাছে নিজেকে সপে দেয়। অথচ দুনিয়ার এই তুচ্ছ কারণের চেয়ে সেই আগুন অনেক অনেক এবং অনেক বেশি ভয়ঙ্কর।

 

২- প্রেমে ব্যর্থতা। এটাও দুনিয়ার অতি মহব্বতের একটা নমুনা। প্রেমে ব্যর্থ হয়েও সুইসাইডের অনেক উদাহরণ রয়েছে। নারীর প্রেম এমন ভাবে অন্ধ করে দেয় যে সেই নারীর জন্য অন্য মানুষ খুন করতেও যেমন সে দ্বিধা করবে না তেমনি নিজেকে হত্যা করতেও তার হাত কাপে না। দুনিয়ার মহব্বতই হচ্ছে অর্থের প্রেম, নারীর প্রেম, স্ট্যাটাস এর প্রেম। অর্থ আর সম্মান স্ট্যাটাস এই দুইটা না পেয়ে যারা সুইসাইড করে তাদেরটা প্রথম পয়েন্টে বলেছি। এই পয়েন্ট হচ্ছে নারীর প্রেমে ব্যর্থতা। (আর নারীর ক্ষেত্রে পুরুষের প্রেম)

 

৩- মানসিক অস্থিরতা, বিষণ্ণতা। এটা হচ্ছে একটা মানসিক অবস্থা যা মানুষকে সুইসাইড করতে বাধ্য করে। এরকম অনেক উদাহরণ আছে যাদের সুইসাইডের নির্দিষ্ট কোনো যুক্তি বা কারণ নাই। একাকীত্ব কিংবা অন্য কোনো অবস্থায় তারা বাধ্য হয় সুইসাইড করতে। মনোবিজ্ঞান সংশ্লিষ্টরা ভালো বলতে পারবে।

 

এই ক্যাটাগরিতে পড়বে পৃথিবীর অনেক বিখ্যাত সেলিব্রেটি, যাদের টাকার অভাব নাই, নারী কিংবা প্রেমের অভাব নাই, সম্মান স্ট্যাটাস এগুলোও কম নাই, তবু সব কিছু থেকেও যেন কিছু একটা নাই, কিছু একটার যেন অভাব। সুকুন নাই, শান্তি নাই, দুনিয়ার মানুষ যেটাকে সুখ বলে, যেটা মানুষের কাছে অধরা, সেটা পেয়েও তাদের যেন এমন কিছু একটার অভাব যা তাকে শান্তি দিচ্ছে না। স্রষ্টার শৃঙ্খলহীন উচ্ছ্রিখল জীবন তাদের শান্তি দেয় না। এমন অনেক সেলিব্রেটির কথা আমরা জানি, আমি নাম উল্লেখ করছি না।

 

আমি যে ৩ টা কারণ উল্লেখ করলাম এগুলো বেশিরভাগ সুইসাইডের ক্ষেত্রে ঘটে থাকে। আর এর মূলে রয়েছে আল্লাহকে না মানা। আল্লাহকে না জানা। আল্লাহর দেয়া সুখের (ইসলামী) জিন্দেগীকে না বুঝা। আখিরাতের চিরস্থায়ী সুখকে ভুলে গিয়ে দুনিয়ার তুচ্ছ জিন্দেগীর সুখকে প্রাধান্য দেয়া, দুনিয়ার মহব্বতে অন্ধ হয়ে যাওয়া, দুনিয়ার প্রতি এবং এর ভেতরকার বস্তুর প্রতি এতো বেশি আশা রাখা যা ছিল অবাস্তব এবং যখন সেটা তাকে হতাশ করে তখন সুইসাইড ছাড়া আর পথ থাকে না। দুনিয়া তো এমন চিজ যাকে ভালোবাসলে এর বিনিময়ে সে লাঞ্ছনা উপহার দেয়। দুনিয়াকে ভালোবেসে কেউ জিতে নি। আল্লাহকে ভালোবেসে কেউ ঠকে নি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

জ্ঞান কি?

 

- জ্ঞান হচ্ছে অল্প কথায় অনেক কিছু বোঝানো। যেটা বোঝাতে শত শত পৃষ্ঠা লেগে যেত সেটা সংক্ষেপে বুঝিয়ে দেয়াটা জ্ঞান। যে সংক্ষিপ্ত কথা বুঝতে শত শত বইয়ের জ্ঞান লাগে, শত শত রেফারেন্স যে সংক্ষিপ্ত কথায় এসে যায়, সেটাই হচ্ছে জ্ঞান। ঘুরিয়ে বললে, যে সংক্ষিপ্ত কথার ব্যাখ্যা করতে হাজার হাজার পৃষ্ঠা লেগে যাবে সেটাই হচ্ছে জ্ঞান।

 

(এতো ছোট একটা কথা বুঝাতে কতগুলা লাইন লেখা লাগলো, এর মানে আমার নিজের কথাই জ্ঞান না)।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

একটা জরুরী বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ্‌। পেশা বনাম দ্বীনের খেদমত।

 

আমাদের অনেকেই দ্বীনের খেদমত করতে আগ্রহী। কিন্তু দেখা যায় পেশা এক মেরুর, দ্বীন অন্য মেরুতে। তখন কোনো ভাবেই সুবিধা করতে পারে না, ফলে দেখা যায় শেষ পর্যন্ত পেশাতেই যেতে হয়, দ্বীনের খেদমত ছাড়তে হয়।

 

আমি মনে করি যারা দ্বীনের খেদমত করতে চান, তাদের যে কোনো একটা পথ বেছে নেয়া উচিৎ। কারণ দুই পথে একটু একটু কাজ করার চেয়ে, এক জায়গায় ভালো কাজ করাই ভালো। যেমন ধরি একজন ডাক্তার ইসলামী বই অনুবাদ করেন, দ্বীনের খেদমত মনে করে, অবসরে বই অনুবাদ করেন। বই অনুবাদ ছোট কাজ নয়, কিন্তু তার পড়াশোনা ছিল মেডিক্যাল সাইন্সে কিন্তু কাজ হচ্ছে সাহিত্যে। ফলে সাহিত্যে যেমন তাকে দক্ষ হতে সময় লাগবে তেমনি ডাক্তারি প্র্যাকটিসেও ব্যাঘাত ঘটবে, যেহেতু প্র্যাকটিস জারি রাখতে পড়াশোনা করতে হয়, কিন্তু সময় যেহেতু অনুবাদে চলে যায় সেহেতু ডাক্তার আর আপডেটেড থাকতে পারছেন না, পিছিয়ে পড়ছেন।

 

তার উচিৎ ছিল মেডিক্যাল সাইন্সের এমন সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যা দিয়ে দ্বীন প্রচার করা যায়। আমাদের ভেতরে আল্লাহর হাজার হাজার নেয়ামতের যে কোনো একটার আলোচনা নিয়েই মানুষকে দ্বীনের দিকে আগ্রহী করা সম্ভব। এছাড়াও এমন বহু উদাহরণ আছে। আসলে আমাদের এখানে জ্ঞানের ইসলামাইজেশন তেমন ভাবে হয় নি, আর কিভাবে করতে হবে সেটাও জানা নাই। জ্ঞানের ইসলামাইজেশন জরুরী।

 

যদিও একজন ডাক্তারকে দিয়ে উদাহরণ দিলাম, তবে এটা যে কোনো পেশার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আবার ধরেন, আপনি হচ্ছেন শিক্ষক, পড়ান বাংলা, বাংলা সাহিত্যে রয়েছে আপনার উচ্চতর ডিগ্রী, অথচ আপনি আপনার পুরো সময় লাগান তাবলীগে দ্বীনের খেদমতে। তাবলীগও দ্বীনের খেদমত, কিন্তু আপনার ময়দান হওয়া উচিৎ ছিল সাহিত্য। সাহিত্য দিয়ে আপনি তাবলীগের দাওয়াতের চেয়ে বেশি মেহনত করতে পারতেন। এভাবে আমাদের প্রায়োরিটি ঠিক করতে হবে।

 

কেউ যদি একাধিক কাজ দক্ষতার সাথে করতে পারে তবে তো ভালো। কিন্তু একমুখী থাকার জন্য এক কাজে লেগে থাকাই ভালো এবং সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ডাঃ জাকির নায়েকের কথা বলা যায়। তিনি কিন্তু দাওয়াহর কাজ করতে গিয়ে ডাক্তারি ছেড়ে দিয়েছিলেন। তিনি আসলে একমুখী থাকতে চেয়েছিলেন। আমি এটাকে সাপোর্ট করি। লেকচার চেয়ার জন্য তাকে দীর্ঘসময় তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব নিয়ে পড়তে হত, তিনি যদি ডাক্তারি প্র্যাকটিস জারি রাখতেন তাহলে ডাক্তার হিসেবে সফল হতে পারতেন না। তিনি একটা প্রায়োরিটি ঠিক করে সেটাকে বেছে নিয়েছেন। আপনারও উচিৎ একটা প্রায়োরিটি ঠিক করা।

 

যাদের জীববিজ্ঞানে উচ্চতর ডিগ্রী আছে তাদের কিন্তু ডারউইনবাদকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে গবেষণার একটা সুযোগ আছে। কিন্তু এই উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে আপনি যদি সাহিত্য রচনা করে দ্বীনের খেদমত করতে চান বুঝতে হবে আপনি প্রায়োরিটি ঠিক করতে পারেন নি। যে কোনো একটা করুন, ভালো করে করুন।

 

দ্বীনের খেদমত নাকি পেশা কোনটাকে বেছে নিব, কিসের ভিত্তিতে নিব? সার্বিক বিবেচনায় যেটা এগিয়ে থাকবে সেটাই নিবেন। যদি এমন হয় পরিবারের (মা-বাবা, ভাই-বোন) হাল ধরতে হবে, দ্বীনের খেদমত করতে গেলে সেটা ব্যাঘাত ঘটবে এক্ষেত্রে পেশাকে বেছে নেয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। যদি এই সমস্যা না থাকে তখন দেখতে হবে দ্বীনের খেদমত করতে গেলে অর্থনৈতিক সমস্যার মোকাবিলা করতে পারবেন কিনা, যদি পারেন তাহলে এই সংগ্রামী লাইফে স্বাগতম। আর নাহলে তো পেশাকেই বেছে নিতে হবে।

 

শেষে দেখতে হবে কোনটার প্রতি আপনার আগ্রহ। যেটায় আগ্রহ সেটায় যান। আর যদি বারবার আগ্রহ বদলায়, মন চেইঞ্জ হয়, তাহলে দুইটাই ধরে রাখেন। দুইটা একসাথে করা দোষের না, আমি শুধু দক্ষতার কথা চিন্তা করে এই টপিকে আলোচনা করছি। কাউকে নিজের পেশায় অনুৎসাহিত করা কিংবা যে কোনো একটাকে বেছে নিতেই হবে এমন জোর জবরদস্তি চিন্তা চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছি না। নিজের অবস্থান থেকে দ্বীনের খেদমত করাকে উৎসাহিত করছি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমরা যখন ভ্রান্ত কারো সমালোচনা করি, আমরা একটা ভুল ভিত্তিকে সামনে রেখে আগাই যা আমাদের আর্গুমেন্টকে দুর্বল করে দেয়। সংক্ষেপে বলি। আমরা মনে করি ডারউইনের তত্ত্ব হচ্ছে বানর থেকে মানুষ* এসেছে, এটাকে ভিত্তি করে আমরা বিতর্কে লিপ্ত হই অথচ যে বিষয়ে জ্ঞান নাই সে বিষয়ে কথা না বলাই উত্তম ছিল। আবার আমরা শিয়াদেরকে নানা রকম অপবাদ দিয়ে থাকি যেগুলো সত্য নয়। এগুলাও একটা সমস্যা। যেমন শিয়াদের নাকি কুরআন আলাদা। শিয়ারা নাকি আলি রাঃকে নবী মনে করে, কিন্তু এটা মূলধারার শিয়াদের মত নয়। বেরেলভীদের ব্যাপারেও আমরা ভুল ধারণা রাখি। আমরা ভাবি সব বেরেলভি বুঝি কবর মাজারে সিজদা দেয়, পীরকে সিজদাহ দেয়। এটাও সঠিক নয়। আসুন সঠিকটা আগে জানি। ভুল কিছুকে ভিত্তি করে তর্কে লিপ্ত না হই।

 

* বলে রাখা ভালো, বানর থেকে মানুষ এসেছে এটা ডারউইনের থিওরি না। ডারউইনের থিওরি হচ্ছে বানর এবং মানুষ একই পূর্বপুরুষ থেকে আগত।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

রাস্তা পার হওয়ার আমলসমুহঃ

 

১- দেখে পার হন।

 

২- গাড়ি চলাচল অবস্থায় পার হবেন না, থামার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

 

৩- পার হওয়ার আগে হাত দেখান।

 

৪- বাচ্চাদের নিয়ে পার হওয়ার সময় বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করুন।

 

৫- ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার করুন।

 

৬- আল্লাহর নাম নিয়ে পার হন, হতে পারে এটাই আপনার শেষবারের মত আল্লাহর নাম নেয়া।

 

৭- পার হয়ে আলহামদুলিল্লাহ বলুন।

 

৮- চলন্ত গাড়ির সামনে দিয়ে দৌড় দিবেন না। নিজেকে খুন করবেন না, অন্যকেও বিপদে ফেলবেন না। আপনার ভুলে আপনার পরিবার হারাতে পারে অভিভাবক, একজন নির্দোষ ড্রাইভারও পড়তে পারেন আইনী বিপদে। আর আপনি তো নিজের উপর জুলুম করলেনই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কওমিদের তুলনায় জেনারেল থেকে হেদায়েতপ্রাপ্তরা জ্ঞানের দিক থেকে হয়তো অনেক নিচে কিন্তু বুঝের দিক থেকে, তাকওয়ার দিক থেকে অনেক উপরে। যারা হেদায়েত পায় তাদের বুঝটা মজবুত। জ্ঞান এত বেশি না, কিন্তু পুরো ইসলামের বুঝ তার মধ্যে আছে, বাস্তবতার সাথে সবকিছু রিলেট করতে পারে। কওমিদের মধ্যে এটা খুব কম দেখা যায়। কওমিরা অনেক জানে, কিন্তু জেনারেল হেদায়েতপ্রাপ্তদের জ্ঞানটা গভীর। আল্লাহ্‌ কওমিদেরকেও ইলমের সাথে সাথে ইসলামের বুঝ ও হেদায়েত দিক।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আহলে হাদিস কিংবা জামায়াতকে যদি বাতিল ফিরকা বলা হয় তাহলে দেওবন্দীদেরকেও বলতে হবে। আসলে বাতিল ফিরকা কাকে বলে এটাই আমরা বুঝি না। মাসআলায় না মিল্লেই বাতিল বানিয়ে দেয়া হয়। আহলে হাদিস, বেরেলভি, দেওবন্দী, জামায়াত এগুলো হচ্ছে আহলে সুন্নাতের একেকটা মাজহাব, মানহাজ, মাসলাক, তরীকা কিংবা মতপথ, আহলে সুন্নাহ এর নানা রকম ব্যাখ্যাকে কেন্দ্র করে এগুলোর উৎপত্তি।

 

জামায়াত যেমন রাজনৈতিক মত, তাদেরকে আমলী দিক থেকে হয় সালাফি নয়তো অন্য কোনো মাজহাব মানতে হয়। আবার আহলে হাদিস হচ্ছে হাম্বলী মাজহাব থেকে বিবর্তিত সালাফি মানহাজের উপমহাদেশীয় রুপ। বেরেলভিয়াত হচ্ছে দেওবন্দী ঘরানার চাচাতো ভাই, তাদের উভয়ের দাদা একই মানুষ, কিছু বিষয়কে কেন্দ্র করে উভয়ে আলাদা হয়ে গেছে। এখন যদি আহলে হাদিস, বেরেলভি, জামায়াতকে ফিরকা বলা হয় তাহলে তো দেওবন্দীদেরও বলতে হবে। কি এমন পার্থক্য আছে দেওবন্দের সাথে অন্যদের? আহলে হাদিসরা নিজেদের বাদে সবাইকে ফিরকা বলে, বেরেলভিরা নিজেদের বাদে সবাইকে ফিরকা বলে, দেওবন্দীরাও নিজেদের বাদে সবাইকে ফিরকা বলে। পার্থক্যটা কথায়? আর হকের ঠিকাদারি দাবি তো সবাই করে।

 

খেয়াল করলে দেখা যাবে জামায়াত, সালাফি, বেরেলভি, দেওবন্দী সবার শিকড় এক জায়গায়। এরপর কেউ কেউ হয়তো কিছুটা ভ্রান্তি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। যেমন বেরেলভীরা বিদআত দ্বারা, জামায়াত শিয়া ও মর্ডানিস্টদের দ্বারা ইত্যাদি। তো এখনো এমন হয় নাই পুরো জামায়াত কিংবা বেরলভী আহলে সুন্নাহর বাইরে চলে গেছে। হাতে গুণে কাউকে কাউকে বলা যায়। যেমন বেরলভীদের কবরপূজারীরা বিশেষ করে যারা সিজদা দেয়াকে জায়েজ মনে করে তারা তো নিশ্চিতভাবে আহলে সুন্নাহর বাইরে, আবার জামায়াতের কিছু কিছু লোক আছে যারা পুরো সেকুলার টাইপ, এরাও আহলে সুন্নাহের বাইরে। কিন্তু আপনি ব্যাপকভাবে পুরো দলকে আহলে সুন্নাতের বাইরে বলতে পারবেন না।

 

আল্লাহ্‌ আমাদেরকে মাস্লাকবাজি থেকে রক্ষা করুন। এই ভয়ঙ্কর সমস্যা মুসলিমদের মধ্যে ছড়িয়ে গেছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

৬ দিন অপেক্ষা করি কবে জুমার দিন আসবে আর আমি বেশি বেশি দুরুদ পাঠাতে পারবো রসুলুল্লাহর কাছে। আল্লাহুম্মা সল্লি 'আলা মুহাম্মাদ, ওয়া 'আলা আলি মুহাম্মাদ। আমাদের একটা টার্গেট থাকা উচিৎ, আগের জুমাবারের চাইতে এইবার যেন বেশি দুরুদ পাঠ করতে পারি। আল্লাহ্‌ তাউফিকদাতা।

 

 

 

 

 

 

 

 


ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি, একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। আফগানিস্তান, বসনিয়া, চেচনিয়া, গাজা, সিরিয়া, ইয়েমেন, কাশ্মীর, আরাকান, নিউজিল্যান্ড, গুজরাট, দিল্লী, শাপলা চত্বর। এই পুনরাবৃত্তি থামানোর একটাই পথ "জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ"।

 

 

 

 

দিল্লীতে যখন মুসলিম হত্যা চলছে, তখন বাংলাদেশে সাদপন্থী আর জুবায়েরপন্থীরা মারামারি করছে। আল্লাহ এসব ঝগড়াটে জুবায়েরপন্থী আর সাদপন্থীদেরকে উচিৎ দুনিয়াবি সাজা দিন যারা সামান্য মতভেদকে কেন্দ্র করে দলকে দ্বীন বানায়, এ নিয়ে ঝগড়া করে, করায়, লাগায়। এ নিয়ে লিপ্ত থাকে আর কাফেরদের ছেড়ে দেয়। আর সেইসব সাধারণ তাবলীগীদের এই দলাদলি থেকে মুক্ত রাখুন যারা খালেস দিলে তাবলীগ করে মানুষকে দীনে আনার জন্য, বের করে দেয়ার জন্য না।

 

 

 


যোগ্য ও ফিকিরবান আলেমগণ ও দীনী ভাইরা অনেক আগে থেকেই এই প্রচারণা চালাচ্ছেন, কুফফারদের দেশ থেকে হিজরত করা উচিৎ মুসলিমদের। কিন্তু তা না করে মাটি কামড়ে পড়ে থেকে নিজেদের উপর যুলুম করছে কাফের দেশে বাস করা মুসলিমরা। আল্লাহ এদের বুঝ দিক। দিল্লীর মুসলমানদের জন্য দোয়া।

 

 

 

 


সেকুলারদের সবার চিন্তার মধ্যেই বেশ মিল পাওয়া যায়, সেটা কট্টর সেকুলারই হোক কিংবা হাফ সেকুলার। সালমান মুক্তাদির, তাহসিনেশন, ইলিয়াস হোসাইন কিংবা নাহিদ রেইন্স, এদের প্রত্যেকের সেকুলারিজম হয়তো মাত্রার দিকে বেশ-কম আছে, কিন্তু মৌলিক চিন্তায় কোনো পার্থক্য নাই। আবার ইসলামিস্টরা যে ঘরানারই হোক, তাদের চিন্তার মধ্যেও একটা মিল পাওয়া যায়। এটাই হয়তো কুফর আর ইসলাম যার যার মধ্যে প্রবেশ করে তাদের মধ্যকার পার্থক্য।

 

 

 


সালমান মুক্তাদিরের মত প্রকাশ্যে গুনাহের দিকে আহ্বানকারী ব্যক্তিরা যখন বই লিখে আর সেটা হাজার হাজার কপি বিক্রিও হয়, তখন বুঝতে বাকি থাকে না আমাদের মুসলিমদের বই লেখাটা কত জরুরী হয়ে গেছে। হে ইসলামিস্ট ভাইয়েরা, আপনারা ইসলামের পক্ষে বই লিখুন, কলমযুদ্ধে যোগ দিন। প্লিজ।

রকমারির সোহাগ ভাই নাকি ইসলামিক বিষয়ে নানা উদ্যোগ নেন। আমি বলব, ভাই, আপনার প্রতিষ্ঠান রকমারি থেকে শুধু ইসলামের সাথে সাঙ্ঘর্ষিক বইগুলো বিক্রি বন্ধ করেন, এটাই আপনার জন্য সবচেয়ে বড় ইসলামের খেদমত হবে।

 

 

 

 


অনেকেই স্টাইলিশ বোরখা, হিজাব এসব দেখে বিরক্ত হন, রাগ করেন। কিন্তু আমি মনে করি, এতে রাগ করার কিছু নাই, বরং এটা আনন্দের বিষয়। যারা স্টাইলিশ বোরখা পড়ে তারা হয়তো আগে পশ্চিমা ধাঁচের পোশাক পড়ত, তাই এই স্টাইলিশ বোরখার ট্রেন্ড আসাটা তার জন্য ভালো হয়েছে। কারণ ওইসব পোশাক থেকে স্টাইলিশ বোরখা তো অনেক ভালো। যে পড়ে সে নিজেও পর্দা রক্ষার জন্য পড়ে না। বরং সাধারণ পোশাক হিসেবে পড়ছে।

কিন্তু যারা কিনা শরীয়াহসম্মত পর্দা করতে চান। তারা অনেক সময় এই ফিতনায় পড়ে যান, এটা খারাপ। অবশ্যই এ ব্যাপারে বোনদের সতর্ক থাকতে হবে।

আপনার কাছে স্টাইলিশ বোরখা বা মাথায় প্যাঁচানো এক খণ্ড কাপড় হয়তো শরীয়াহসম্মত পর্দা নয় কিন্তু সেকুলারদের পিত্তি জ্বলে যাওয়ার জন্য এতোটুকুই যথেষ্ট। সেকুলাররা এসব পোশাককে মুসলমানদের চিহ্ন মনে করে। তাই তাদের পিত্তি জ্বলে যায়। আর শরীয়াহসম্মত পর্দা হলে তো কথাই নাই!

 

 

 

 

ফেসবুক দাওয়াতের কয়েকটা পদ্ধতি আপনাদের সাথে শেয়ার করব।

১- টার্গেট করে অল্প সংখ্যক অমুসলিমকে ফ্রেন্ডলিস্টে নেই, এরপর পোস্ট দিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করি। এরপর ইনবক্সে কথা হয়। দাওয়াত দেয়ার চেষ্টা করি। এখানে খেয়াল রাখতে হবে একদিনে সব দাওয়াত না দিয়ে ফেলা। ধীরে ধীরে দেয়া। যেন দীর্ঘ সময় কথা বার্তা বলা যায়।

২- অল্প সংখ্যক বে-আমল মুসলমানকে ফ্রেন্ডলিস্টে ঢুকাই। উদ্দেশ্য হচ্ছে আমার ইসলামিক পোস্ট পড়ে যদি এদের হেদায়েত হয়।

৩- ফ্রেন্ডলিস্টের বেশিরভাগই দীনী ভাই, সব ঘরানার থাকে। তাই উদ্দেশ্য থাকে সবাইকে তাওহীদের পতাকার নিচে এক করা। দল মত নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার প্রতি দাওয়াত দেয়ার চেষ্টা করি।

৪- আরেক প্রকার দাওয়াত হচ্ছে ভালো ইসলামিক লেখা কপি করে পোস্ট দেয়া।

৫- পেইজ খুলেও দাওয়াতি কাজ করা যায়।

৬- বিভিন্ন ইসলামিক পেইজ বা গ্রুপে ইনভাইট করাও একটা দাওয়াতি কাজ।

৭- এছাড়া কমেন্ট, শেয়ার, লাইক এ সবগুলোই দাওয়াতি কাজ হতে পারে।

৮- অনেক সময় কাফের বা ইসলামবিদ্বেষী ও সেকুলারদের আইডি কিংবা পেইজে রিপোর্ট করার মাধ্যমেও দাওয়াতি কাজ হয়।

 

 

 

 

 

শাইখ আহমাদুল্লাহ এই উদ্যোগের জন্য একটা ধন্যবাদ পাওয়ার হকদার। বইমেলায় আলেমদের নিয়ে এসেছেন ভালো লাগলো। সবার সংক্ষিপ্ত মতামত নিয়েছেন, ভিডিও করেছেন, ভালো। কিন্তু কয়েকজন আলেমকে দেখলাম এখনও এক প্রকার হীনমন্যতায় ভোগেন। একজন বললেন, আমাদের নাকি সব ধরণের বই কেনা উচিৎ, নাস্তিকদের বইও। আরেকজন বললেন, হিন্দুরা আমাদের ভাই, বৌদ্ধরা আমাদের ভাই, অর্থাৎ তিনি বলতে চাচ্ছেন নাস্তিকরাও আমাদের ভাই। এইসব আলেমরা কবে শুধরাবে জানি না। ইসলামী আদর্শ তারা এখনো কি বুঝতে পারে নি? তবে আব্দুল হাই মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ সাহেব একটা সুন্দর কথা বলেছেন, তিনি বলেছেন, আগামী বইমেলায় উপস্থিত সকল আলেমের কম পক্ষে ২ টা করে বই চাই। এটা একটা দারুণ কথা ছিল।

 

 

 

 

ইসলামী বইকথন গ্রুপে আরিফ আজাদের ভক্ত অনেক, তাই সেখানে এই পোস্টটা করেছি।

আসসালামু আলাইকুম। এক আরিফ আজাদ জনপ্রিয় হওয়ায় সেকুলারদের কি হাল হয়েছে তা আমরা দেখতেই পাচ্ছি। সকল মুসলিম পাঠকের প্রতি আহবান জানাই, আমরা অন্যান্য ইসলামী লেখকদেরকেও জনপ্রিয় করার চেষ্টা করি। আরিফ আজাদের মত অনেক ভালো লেখক ইসলামী অঙ্গনে রয়েছে। আপনারা তাদের বইগুলোও কেনার চেষ্টা করবেন ইনশাআল্লাহ্‌। আমি বর্তমানে কয়েকজন ভালো ইসলামী লেখকের নামের তালিকা দিলাম। (ইয়াংস্টারদের নাম উপরে দিলাম, সিনিয়রদের নাম নিচে দিলাম।)

আরিফ আজাদ

ডাঃ শামসুল আরেফীন

শরীফ আবু হায়াত অপু

আব্দুল্লাহ মাহমুদ নজীব

আসিফ আদনান

মুশফিকুর রহমান মিনার

জাকারিয়া মাসুদ

হুজুর হয়ে টিম

শিহাব আহমেদ তুহিন

রাফান আহমেদ

আশরাফুল আলম সাকিফ

ইমরান রাইহান

আরিফুল ইসলাম

রেহনুমা বিনতে আনিস

ওমর আল জাবির

আতিকুল্লাহ হুজুর

শামসুর রহমান ওমর

সাজিদ ইসলাম

আলি হাসান ওসামা

আব্দুল্লাহ আল মাসউদ

হামিদা মুবাশশেরা

আকরাম হোসাইন

মাসুদ শরীফ

রৌদ্রময়ী টিম

প্রিন্স মুহাম্মাদ সজল

জাফর বিপি

রাজীব হাসান

সিহিন্তাহ শরীফাহ ও নাইলাহ আমাতুল্লাহ

মুনীরুল ইসলাম ইবনু যাকির

আইনুল হক কাসেমী

তারেকুজ্জামান তারেক

আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ

আলী আব্দুল্লাহ

শুয়াইব আহমাদ

জোজন আরিফ

লস্ট মোডেস্টি

আব্দুল্লাহ আল ফারুক

মুহিব খান

উবায়দুর রহমান খান নাদভী

মুসা আল হাফিজ

আব্দুস সাত্তার আইনী

আলী আহমাদ মাবরুর

ইরফান হাওলাদার

সালাহুদ্দীন জাহাঙ্গীর

আব্দুল্লাহ মজুমদার

মাসউদ আলিমী

আফিফা আবেদীন সাওদা

আফরোজা হাসান

উম্মে বুশরা সুমনা

জীম তানভীর

কাজী আবুল কালাম সিদ্দিক

এস এম নাহিদ হাসান

আরজু আহমেদ

মুহাম্মাদ জাভেদ কায়সার রঃ

ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গির রঃ

আবুল আসাদ

আব্দুশ শহীদ নাসিম

আসাদুল্লাহ আল গালিব

যাইনুল আবিদীন

আবু তাহির মিসবাহ

মুহাম্মাদ মফিজুল ইসলাম

আব্দুল হামিদ ফাইযী

আমির জামান ও নাজমা জামান

আসাদ বিন হাফিজ

নাসির হেলাল

ডঃ মুহাম্মাদ আব্দুল মা'বুদ

আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ

যুবায়ের হোসাইন

গোলাম আহমদ মোর্তজা

লাবীব আব্দুল্লাহ

আবুল হোসেন ভট্টাচার্য রঃ

আব্দুল্লাহ শাহেদ আল মাদানী

(সিনিয়রদের সংখ্যা অনেক, সবার নাম উল্লেখ সম্ভব না, ইয়াংস্টার কেউ বাদ গেলে বলবেন)

 

 

 

 

 

ইসলামে যেমন গোপনে দান করতে বেশি উৎসাহিত করা হয়েছে তেমনি প্রকাশ্যেও দান করতে বলা হয়েছে। শো-অফের উদ্দেশ্যে হলেও পাঞ্জাবী, কাবলী, জুব্বা, পাগড়ি পড়ে একবার বইমেলায় যান। ওটাতো সেকুলারদের মন্দির, তাদের মন্দিরকে মসজিদ বানানোর আগে তাদের অন্তরের জ্বালা বৃদ্ধি করার সুযোগকে কাজে লাগান।

 

 

 

 

একজন ভাই বললেন, মানহাজীরা নাকি মূলধারাকে তাগুতী বলে আর এতায়াতীদের আপন মনে করে। আমি জবাবে কিছু বলার চেষ্টা করেছি-

এটা যার যার মানহাজের ভিত্তিতে বিবেচ্য। মানহাজীদের দৃষ্টিতে এতায়াতী যা, ওয়াজহাতিও তা। তারা যখন তাবলীগের সমালোচনা করবে তখন দুই দলের প্রতি নির্দেশিত হবে, তাই আলাদা করে কারো নাম নিতে হয় না। মানহাজীরা তাবলীগের ব্যাপক সমালোচনা করে। জিহাদের ব্যাপারে নিষ্ক্রিয় থাকায় তাদের সমালোচনা করেছে। এখানে কিন্তু এতায়াতী, ওয়াজহাতি দুই দলের দিকেই সমালোচনার তীর নিক্ষেপ করা হয়েছে।

এবার আরেকটা বিষয় বলি, একজন ব্যক্তি মানহাজী দেওবন্দী যেমন হতে পারে তেমনি মানহাজী এতায়াতীও হতে পারে। অনেকে যেমন মানহাজী কিন্তু শক্ত রকমের শূরাপন্থী। যেমন আলি হাসান উসামা সহ অনেকেই। আবার এমন কয়েকজনকেও দেখেছি যারা এতায়াতী আবার মানহাজীও। সুতরাং দুইটা একসাথে হওয়াও সম্ভব। আপনি যাদের কথা বলছেন তারা মূলত মানহাজি এতায়াতী।

 

 

 

 

এক আরিফ আজাদেই সেকুলারদের যেভাবে ছুছু নিকলাচ্ছে, শামসুল আরেফীন, রাফান আহমেদ, মুশফিকুর রহমান মিনার, আব্দুল্লাহ মাহমুদ নজীব, আসিফ আদনান ভাইরা যদি জাতীয়ভাবে জনপ্রিয় হয়ে যায় তাহলে সেকুলারদের যে কি হাল হবে! আরিফ আজাদ বাদে আজ পর্যন্ত কোনো ইসলামী লেখকই ইসলামী ঘরানার বাইরে জনপ্রিয়তা পায় নি।

 

 

 

 

এতায়াতীদের ব্যাপারে আমার মত হচ্ছেঃ এতায়াতী হওয়া কোনো কুফরি না। এরা ভ্রান্ত কোনো দল না, ভ্রান্ত আকীদার লোক না। মুসলমানদের মধ্যেই গণ্য হবে। তবে তাদের কর্মপন্থায় ভুল, অনেক বিষয়ে বোঝার ভুল রয়েছে। আলেমদের গালিগালাজ করাটা সবচেয়ে বিশ্রী। আর এরা এক্ষেত্রে সেকুলারদের ফাঁদে পা দিচ্ছে।

তারা কেন গালাগালি করে সেটাও বোঝা উচিৎ। একজন দেওবন্দী কেন সালাফি আলেমদের গালি দেয়? কারণ সালাফি আলেমকে সে আলেম মনে করে না। আবার সালাফি আলেমও হানাফী আলেমকে গালি দেয়, কারণ তার মতে হানাফীরা মুশরিক, বিদাতি। তো, এটা বুঝা উচিৎ, আমরা যাদের আলেম বলছি এতায়াতীদের কাছে তারা আলেম নয়। তারা আবার তাদের কিছু দলীয় আলেমকে মানে। কেউ জেনেবুঝে আলেম তথা নায়েবে নবীকে গালি দিবে এমনটা কোনো মুসলমানের পক্ষে সম্ভব না।

এতায়াতীদের স্পেস দিতে হবে। যেভাবে দিতে হবে সালাফিদের, বেরেলভিদের। ইলমী তর্ক বিতর্ক হবে। মুনাযারা বাহাস হবে। আবার একই দস্তরখানে খানাপিনাও হবে। কাদীয়ানীদের মত ট্রিট করলে হবে না। কাদিয়ানীদের মসজিদ আমরা করতে দিব না, কিন্তু এতায়াতীদের ইজতিমা করার সুযোগ দিতে হবে। এটা হচ্ছে কাফির আর ভিন্ন মতের মুসলিমদের সাথে আমাদের আচরণ।
বেশিরভাগ মুসলিমদের অবস্থা হচ্ছে এরকম, কাফের সাথে যেই আচরণ, শিয়া, কাদিয়ানীর সাথে একই আচরণ, আর সালাফি, এতায়াতী, জামায়াতীদের সাথে এর চেয়ে কয়েক গুণ বেশি কঠোর আচরণ। কাফির আর ভিন্ন মতের মুসলিমের মধ্যে পার্থক্য বোঝা উচিৎ।

 

 

 

 

বান্দারেজা ভাইয়ের মৃত্যু থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়ার মত আছে। আমাদের কাজ করে যেতে হবে। মৃত্যুর আগেই কিছু কাজ রেখে যেতে হবে। তিনি আমৃত্যু কাজের সাথে লেগে ছিলেন। এজন্য তাকে বহুবার কারাগারে যেতে হয়েছে, নির্যাতিত হতে হয়েছে। আল্লাহ্‌ তাকে মাফ করুন।

 

 

 

ঈদ এর ঈ রক্ষা করতে হবে।

 

 

 

কোটি টাকা কামিয়েও যুহদ অবলম্বন করা যায়, আবার নিম্নবিত্ত অনেককেও অপচয়কারী হিসেবে পাওয়া যায়। গরীব হওয়াটা যুহদ না। যুহদ হচ্ছে দুনিয়ার প্রতি মহব্বত না থাকা। কোটি টাকা কামিয়েও যার অর্থের প্রতি আকর্ষণ নাই, দুনিয়ার প্রতি মহব্বত নাই সে যাহিদ বান্দা হতে পারে, কিন্তু গরিবি হালতে থেকেও অনেকের অর্থের প্রতি দুনির্বার আকর্ষণ ও ভালোবাসা।

 

 

 

 

 

ভাষা, দেশ-ভূমি, বংশ-গোত্র, লিঙ্গ, পেশা, বর্ণ এগুলোর কোনোটাই মর্যাদার মাপকাঠি নয়। মর্যাদার মাপকাঠি হচ্ছে তাকওয়া। আরবে যখন গোত্রবাদ বা আসাবিয়্যাহ প্রচলিত ছিল ইসলাম এসে গোত্রবাদ হারাম করেছে।

বর্তমান জমানায় গোত্রবাদ এতো প্রকট না, তবে গোত্রবাদের আদলে এসেছে জাতীয়তাবাদ, ভাষাবাদ, দেশপূজা। এছাড়া আছে লিঙ্গবাদ (পুরুষ ও নারীবাদ), পেশাবাদ (যাদের চিন্তা চেতনা গর্ব অহঙ্কার সব পেশাকেন্দ্রিক), বর্ণবাদ ইত্যাদি। ইসলাম অনুযায়ী এসব নিয়ে অহঙ্কার করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

তবে কারো নিজের পেশার প্রতি, বংশের প্রতি, ভূমির প্রতি, ভাষার প্রতি পরিমিত ভালোবাসা থাকলে সেটা সমস্যা না। ইসলাম কোনো অযৌক্তিক প্রস্তাব করে না। রসুল সাঃ মক্কাকে ভালোবাসতেন, মদীনায় যাওয়ার পর মদীনাকে ভালোবাসতে শুরু করেন।

আমাদের ভূমিকেও আমরা ভালোবাসতে পারি, কিন্তু এর জন্য কুফরী রাষ্ট্রযন্ত্রকে ভালোবাসার প্রয়োজন নেই। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ভালোবাসা আর ভূমিকে ভালোবাসা এক বিষয় না। আমরা যেমন জেরুসালেমের ভূমি ভালোবাসি, ঐ ভূমি আমাদের, আন্দালুসের ভূমি নিয়ে স্মৃতিচারণ করি। আমরা কিন্তু বর্তমান দখলদার ইসরাইল কিংবা স্পেনকে ভালোবাসি না। এই পার্থক্য বোঝা জরুরী।

দেশপ্রেম মানে বাংলাদেশ প্রেম বোঝানোর চেষ্টা করার এই নীতি হচ্ছে ক্ষমতাবানের উপনিবেশ টিকিয়ে রাখার একটা কৌশল। যে ভারত দেশপ্রেমের সবক দিয়ে বেড়ায় সেই ভারতেই বহু প্রদেশ স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে। স্বাধীনতা হচ্ছে আরেক হাওয়াই মিঠাই, যা সম্পূর্ণ রুপে অযৌক্তিক আর ক্ষমতা দখলের লড়াই। (বাংলাদেশের স্বাধীনতাও এক প্রকার ক্ষমতা দখলের লড়াই ছিল)

মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা দোষ না, আপনার ভূমি কতটুক হবে সেটাও একটা কথা। হতে পারে একটা গ্রাম, একটা শহর, একটা জেলা কিংবা একটা বিভাগ, কারো কাছে একটা দেশ।

ভূমি নিয়ে গর্ব করার কিছু নাই, জাতীয়তা নিয়েও নয়, আমার ইখতিয়ারে আমি এই ভূমিতে জন্ম নেই নি, আমার ইখতিয়ারে বাংলা আমার ভাষা না। আল্লাহ্‌ যদি চাইতেন তবে পাকিস্তানে আমার জন্ম হতে পারতো, উর্দু আমার ভাষা হতে পারতো। ভাষাপ্রেমের শিরক ত্যাগ করতে হবে বাঙ্গালিকে।

 

 

 

 

 

 


গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ারের পোস্টঃ

সর্বাধিক বিক্রিত বই,জানাজায় বহুত মানুষ এসব কোন কিছুই বিজয়ের লক্ষণ না। এগুলো তৃপ্তির ঢেকুর তোলার বিষয়ও নয়। আমি আরিফ আজাদের বই একটাও পুরো পড়িনি। তবে কাশেম বিন আবু বকরের বই পড়েছি। কাশেম বিন আবু বকর একজন বেস্ট সেলার লেখক। সেই ধারণা থেকে বলবো- বাংলাদেশের মানুষ বই কেনার ক্ষেত্রে এখনো সুবিবেচক নয়। এই কথা প্রযোজ্য মারজুক রাসেলের ক্ষেত্রেও।

বাংলাদেশ বর্তমানে প্রায় ২০ কোটি লোকের একটা দেশ। এখানে কেউ পীর/নেতাগিরি শুরু করলেই ৫-৬ লাখ ভক্ত পায়। সেখানে একটা মাঠে ১ লাখ লোক জড়ো হলেই সবাই দেখি তৃপ্তির ঢেকুর তুলে। সেটা জানাজা, মাহফিল বা রাজনৈতিক সমাবেশ যাই হোক না কেন। অথচ ২০-৩০ লাখ ২০ কোটির মাঝে কত পার্সেন্ট?

সবচেয়ে বড় কথা জ্ঞানগত আন্দোলন, আদর্শিক যুদ্ধ এসবে সংখ্যা খুব বেশি গুরত্বপূর্ণ নয়।

হাসান মির্জা - তৃপ্তির ঢেকুর না তুলি, তবে আরিফ আজাদের দাওয়াতি পদ্ধতিটা ভালো লাগছে। একটা আহবান আছে তার মিশনে। তার অস্তিত্বই যেন একটা দাওয়াত। এটা একটা ভালো দিক।

 

 

 

 


বান্দারেজা ভাই ইন্তেকাল করেছেন। আল্লাহ্‌ তাকে ক্ষমা করে দিন। ১৯-২-২০।

কিছুদিন আগে চলে গেলেন সাহিত্যিক নাসিম আরাফাত সাহেবের ছেলে মুহাম্মাদ ভাই। পূর্বে জাভেদ কাইসার ভাই ও শাহাদাৎ ফয়সাল ভাই মারা গেলেন। নাদভি নাফিউ জামান ভাইয়ের দুঃখজনক আত্মহত্যাও মনে আছে। কয়েক বছর আগে হত্যা করা হয়েছিল সিফাত ভাইকে। আল্লাহ্‌ সবাইকে মাফ করে দিন।

 

 


এতায়াতী বা সাদপন্থীদেরকে কাফেরদের চেয়েও অধম মনে করা হয় মূলধারা থেকে। ফলে কাউকে সাদপন্থী প্রমাণ করা গেলেই হইছে, আর কিছু লাগে না। জিহাদ শুরু হয়ে যায়। ইসলামের আসল শত্রুদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নাই, পরিকল্পনা নাই। জামায়াত, সালাফি, দেওবন্দী, বেরেলভী, চরমোনাই, এতায়াতী, মোডারেট, জিহাদী সবাই নিজেরা নিজেদের মাথা ফাটা ফাটি করে।

 

 

 

 

রাজনীতির ক্ষেত্রে জামায়াত একটি ইসলামী দল যেরকম ভাবে চরমোনাই একটা ইসলামী দল। চরমোনাইদের রাজনীতি ছাড়াও তাসাউফভিত্তিক একটা ভিত্তি আছে। অর্থাৎ চরমোনাই রাজনীতির বাইরেও একটা ইসলামী দল, বর্তমানে এটা একটা ঘরানা হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে কওমিদের সাথে তাদের নানান মতপার্থক্যের কারণে।

আবার জামায়াতের কিন্তু রাজনীতির বাইরে কোনো ভিত্তি নাই। তাদের নিজস্ব বা মৌলিক মাযহাব বা মানহাজ নাই, আমলী দিক থেকে তাদের হয়তো আহলে হাদিস হতে হচ্ছে, আর প্রাচীনপন্থীরা হানাফী আছে। তাদের নিজস্ব আকীদাভিত্তিক ভিত্তিও নাই। তাদের কেউ হয়তো আছারী কেউ আশারী মাতুরিদি ইত্যাদি। জামায়াত কেন্দ্র থেকে তার কর্মী ও সমর্থকদের রাজনীতি বাদে অন্যান্য ক্ষেত্রে একটা স্বাধীনতা দিয়েছে। ফলে একজন জামায়াত সমর্থক বা কর্মী কিন্তু জামায়াতের রাজনীতি করেও চরমোনাইয়ের পীরের মুরিদ হতে পারবে। এমনকি জামায়াতের কোনো কর্মী চাইলে সেকুলারও হতে পারবে। এই স্বাধীনতা দেয়াটা একদিক থেকে ভালো আবার অন্যদিক থেকে খারাপ। কারণ জামায়াতের অধিকাংশ কিন্তু শৃঙ্খলে আবদ্ধ না থাকায় মোডারেট হয়েছে।

জামায়াতকে ফিরকা কোনো ভাবেই বলা যায় না। রাজনৈতিক দলই বলা যায় শুধু। ফিরকা হওয়ার জন্য তাদের আলাদা আকীদা, মাজহাব এসবের ভিত্তি থাকা প্রয়োজন ছিল।

 

 

 


ফালাসাফা বা তাসাউফের চাইতে হাদিসের চর্চা ও প্রচার বেশি হওয়া উচিৎ। এই উপমহাদেশসহ তুর্কি, আফগান, ইরান, আফ্রিকা এবং পৃথিবীর বহু মুসলিম অঞ্চলে তাসাউফ এবং এসবের চর্চা বেশ হয় যা একটা সমস্যা। এর চেয়ে হাদিসের চর্চা বেশি হওয়া উচিৎ।

 

 

 

সালাফিরা ইসরাইলের ধ্বংস কামনা হারাম বলে কোন প্রেক্ষিতে তা বোঝা উচিৎ। এটাকে আক্ষরিক ভাবে নেয়া যাবে না। আসলে এইখানে শব্দগত প্যাঁচ আছে। ইসরাইল একজন নবীর নাম হওয়ায় তারা এরুপ বলে। সালাফিরাও কিন্তু ইহুদী ও ইহুদী রাষ্ট্রের বিরোধী। এইখানে আমরা সকল মুসলিম একমত আছি। কিন্তু সিয়াসতী দিক থেকে আবার সৌদির সাথে ইসরাইলের পরোক্ষ সুসম্পর্ক। তাই এই হিসেবে সালাফিরা ইহুদীদের বিরোধিতা করতে গেলে সালাফিদের সিয়াসতী নীতির খেলাফ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

 

 

 


সামান্য বানান নিয়েও আমাদের মধ্যে ঝগড়া! হায় উম্মাহ! যে যেই নিয়ম ফলো করে করুক না। কেউ মনে করে আরবির উচ্চারণ বজায় রেখে বানান লিখলে অধিক সঠিক হয়, আবার কেউ মনে করে বাংলা ভাষায় যেহেতু আরবি শব্দগুলো এসে বাংলা হয়ে গেছে তাই বাংলায় যেভাবে প্রচলিত সেভাবেই লেখা উচিৎ। এই দুইটাই দুই দিক থেকে সঠিক। এগুলো বুঝের ভিন্নতা। এগুলো তো বৈচিত্র্যতা। বৈচিত্র্যতা সুন্দর হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সামান্য ইখতিলাফকেও আমরা মেনে নিতে পারি না আ-কার ই-কারের ইখতিলাফও। হায়!

 

 

 


আমরা ভুলেও হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে যাই না, এমবিবিএস ডাক্তার থেকে চিকিৎসা নেই। আবার ইঞ্জিনিয়ারের কাজ ইঞ্জিনিয়ারকে দিয়েই করাই, নিজেরা মাতব্বরি করতে যাই না। কে কোন বিষয়ের মানুষ, কে কোন বিষয়ে দক্ষ, আমরা তা ভালোভাবে খোঁজ খবর নিয়ে এরপর যাই। সবাই সবার ক্ষেত্র বুঝি। শুধু দ্বীনের ক্ষেত্রে আমরা সবাই কেমন আল্লামা হয়ে যাই। দুই দিন হল নামাজ শুরু করেছে, ফতোয়া দেয়াও শুরু করে দিয়েছে। কোনো মুফতীর ফতোয়া নকল করে বয়ান করলে সমস্যা না, কিন্তু নিজের থেকে ফতোয়া ঝাড়াটা সমস্যা। আল্লাহ্‌ রক্ষা কর।

 

 

 

 


জানি না ব্যাপারটাকে কিভাবে দেখবেন, যাকে দাওয়াত দেয়ার সুযোগ ছিল কিন্তু আমি না দেয়ায় অন্য কারো মাধ্যমে সে হেদায়েত পায় তখন খুব ঈর্ষা হয়। হিংসাও বলতে পারেন। হয়তো এই কারণে যে, যে সাওয়াবটা আমার পাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু অন্যজনে নিয়ে গেল। এটা ভালো নাকি খারাপ জানি না। তবে এমন একটা অনুভূতি হয়। আল্লাহ্‌ এই অনুভূতি থেকে রক্ষা করুন যদি তা কল্যাণকর না হয়ে থাকে।

 

 

 


এমন কিছু কাজ করুন, এমন কাজ রেখে যান যেন আপনি ভিন্নমত হওয়া সত্ত্বেও মানুষ আপনাকে ফেলতে না পারে। এজন্য বেশি বেশি কাজ করতে হবে ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে। ইখতেলাফি বিষয় নিয়ে ঝগড়ায় কম জড়াতে হবে। একটা উদাহরণ দেয়া যায়, শাইখ আওলাকি রঃ কিন্তু কায়দার সদস্য ছিলেন, কিন্তু সীরাত নিয়ে তার অডিও সিরিজ, পরকাল নিয়ে তার অডিও সিরিজ তাকে অমর করে রেখেছে (অমর শব্দে আবার কেউ শিরক খুঁজেন না, যা বুঝাতে চেয়েছি বুঝা গেলেই হল)। তার এই কাজগুলোর কারণে অন্য ঘরানার মুসলিমরাও তাকে ফেলতে পারবে না। আবার যেমন আর রাহীকুল মাখতুমের লেখক হচ্ছে আহলে হাদীস, অথচ তার বই হানাফি-সালাফি নির্বিশেষে পড়ে।

ইয়াসির কাজির কথাও বলা যেতে পারে। তার এমন অনেক কাজ আছে যেগুলোর কারণে তার বিরোধী হওয়া সত্ত্বেও অনেকে তার লেকচার শুনতে বাধ্য হয়। সুতরাং এমন কাজ করুন যা আপনার দলের উপকার নয় বরং পুরো উম্মাহর উপকার করবে।

 

 

 

 


সাধারণ কাফিরদের অসম্মান বা অপমান করাটা দাওয়াতের পথে একটা বাধা। জায়েজ না-জায়েজের কথা বলছি না, তবে এসব কাজ থেকে বেঁচে থাকাই উত্তম। তবে মুরতাদ আর ইসলামের দুশমন হলে ভিন্ন কথা।

 

 

 

 

ধরুন, সরকার ঘোষণা করল, জনগণকে এমন একটা সুযোগ দেয়া হবে যে, সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে কোনো কিছু চাইতে পারবে। এবং এই চাওয়ার কোনো লিমিট নির্দিষ্ট করে দেয়া থাকবে না। যত ইচ্ছা তত চাওয়া যাবে। তবে সব চাওয়া তাৎক্ষণিক ভাবে পূরণ হবে না। সব উইশের সাথে তিনভাবে ট্রিট করা হবে। কিছু চাওয়া, চাওয়ার সাথে সাথে পাওয়া যাবে। কিছু চাওয়া পূরণ করা হবে ১০ বছর পর বা ২০ বছর পর। আর কিছু চাওয়ার বদলে কয়েক বছর পর সেই চাওয়ার ভারের উপর ভিত্তি করে একটা এমাউন্টের টাকা দেয়া হবে।

এই ঘোষণার পর আমাদের প্রতিক্রিয়া কেমন হবে? আমরা সবাই ভাববো, চাওয়া তৎক্ষণাৎ পূরণ হোক বা নাহোক, কিছু বছর তো টাকা পাবই, তাই যত ইচ্ছা চাইতে থাকি।

উদাহরণটা দিলাম একটা বিষয় বোঝাতে। সেটা হচ্ছে আল্লাহর কাছে দুয়া। আল্লাহ্‌ অনেক বেশি খুশি হন বান্দা যদি তার কাছে চায়, হাত পাতে।

আল্লাহ্‌ সব দুয়া কবুল করেন, কিছু দুয়া তৎক্ষণাৎ, কিছু দুয়া পরে, আর কিছু দুয়ার বদলে আখিরাতে নেকি দেয়া হবে। এমন দারুণ একটা অফার তো আমাদের লুফে নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমরা কি রবের দরবারে আসলেই হাত পাতি? আমাদের তো উচিৎ ছিল যত রকমের চাওয়া সব রবের দরবারে খুলে বলা, তুচ্ছ থেকে বড়, বাস্তব অবাস্তব সব দুয়াই করা উচিৎ ছিল। আমরা এই অফারটাকে কেন গুরুত্বের সাথে নিচ্ছি না?

সৃষ্টির কাছে বেশি চাইলে বিরক্ত হয়, রাগ করে, কিন্তু আমার রবের কাছে বেশি চাইলে তিনি খুশি হন, বিরক্ত তো হন না, বরং সন্তুষ্ট হন।

তাই বেশি বেশি দুয়া করুন, যত রকমের দুয়া মনে আসে, করতে থাকেন। এটা এমন এক ব্যবসা যাতে লস নেই। তৎক্ষণাৎ বা পরে দুয়া কবুল হলে তো ভালোই, কিন্তু কবুল না হলেও আখিরাতে এর প্রতিদান পাওয়া যাবে। আলহামদুলিল্লাহ।

 

 

 

 

 

প্রশ্নঃ ধর্ম বড় না মানুষ বড়?

- মানুষ আল্লাহর সৃষ্টি, যাদেরকে ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। আর ইবাদত করার পথটাকে বলে দ্বীন, যদি ধর্ম বলে ইসলামকে নির্দেশ করে থাকেন তাহলে।

তাহলে, দ্বীন হচ্ছে উদ্দেশ্য, আর মানুষ হচ্ছে উদ্দেশ্য বাস্তবায়নকারী। দুইটাই এমন বিষয় যার মধ্যে তুলনা চলে না, তুলনা সম্ভবও না।

কিন্তু যদি বলা হয় মানবতা বড় না ইসলাম বড়, আপনি বোধহয় মানুষ বলতে মানবতা বোঝাচ্ছেন, তাহলে বলতে হবে মানবতা বলতে প্রচলিত অর্থে যা বোঝায় সেটা একটা সেকুলার পরিভাষা বৈ কিছু না। এই শব্দটা যত সুন্দর, পরিভাষাটা ততই কুৎসিত। তবে আপনি মানবতা বলতে যদি এমন কিছু বোঝান যেটা সত্যিকারের মানবতাকে নির্দেশ করে তাহলে বলতে হবে, এমন মানবতার খোঁজ তো ইসলামেই রয়েছে। মানবতাই যেহেতু ইসলাম সেহেতু মানবতা আর ইসলামের মধ্যে বড় ছোট তুলনা সম্ভব না।

সেকুলার পরিভাষার মানবতার সাথে যদি ইসলামকে তুলনা করা হয় তাহলে বলতে হবে ইসলাম হচ্ছে আল্লাহ প্রদত্ত জীবনব্যবস্থা, আর মানবতাবাদ বা মানবধর্ম হচ্ছে একটা স্বতন্ত্র মতবাদ বা ধর্ম যা পরিত্যাজ্য।

 

 

 

 

 

আলেমদের কটু কথা বলা, গালি দেয়া, বিদ্বেষপোষণ করা এক বিষয়। আর গঠনমূলক সমালোচনা করা, তাদের কর্মকাণ্ডের উপর শরঈ দৃষ্টিতে পর্যালোচনা করা ভিন্ন বিষয়। প্রথমটা পরিত্যাজ্য, দ্বিতীয়তা গ্রহণযোগ্য। সেই আলেম যে-ই হোক, বা যত ভণ্ডই হোক। তাহেরী তো আলেম না, তবু তাকেও গালি দিব না, বা বিদ্বেষপোষণ করব না, দ্বিতীয়টা করা যায়।

 

 

 


যখন কারো কথাবার্তা শুনে মনে হয় লোকটা সেকুলার নাকি, কিংবা নাস্তিক নাকি। কিংবা ইসলামে বিশ্বাসী কিনা? কিন্তু যখন শিউর হই লোকটা নিজেকে ইসলামের মধ্যে গণ্য করে, হোক দুই একটা সেকুলার ধ্যান ধারণায় প্রভাবিত, তখন ভেতরে অনেক শান্তি পাই। আর যাই হোক, কাফের তো না! হোক না কবীরা গুনাহগার। চিরস্থায়ী জাহান্নামী তো না। জানি না, আমার মতো কেউ ভাবে কিনা! এক ব্যক্তিকে সেকুলার বা নাস্তিক মনে করতাম। কিন্তু একদিন জানলাম সে কোনো একটা পীরের মুরিদ। তখন নিজেকে একটু হলেও প্রবোধ দিতে পেরেছি, আর যাই হোক ইসলামের ভেতরেই আছে, হোক না ভণ্ড পীর। (তবে কোনো কাফের পীর হলে ভিন্ন কথা)।

 

 

 

 

দুরুদ

১- রসুলের নাম শুনলে বা পড়লে বা বললে দুরুদ পাঠ করা ওয়াজিব বা এর কাছাকাছি।

২- রসুলের প্রতি দুরুদ প্রেরণ করলে প্রেরকের উপর ১০ বার আল্লাহর রহমত নাজিল হয়।

৩- দুয়া তৎক্ষণাৎ কবুল নাও হতে পারে, কিন্তু দুরুদ তৎক্ষণাৎ কবুল হয়।

৪- দুরুদ পূর্ণতা পায় যখন আলে মুহাম্মাদ তথা নাবির পরিবারের উপরও দুরুদ প্রেরণ করা হয়।

৫- অধিক দুরুদ পাঠ হচ্ছে নাবির প্রতি ভালোবাসার প্রমাণ।

৬- জুমার দিনের তাৎপর্যময় আমল হচ্ছে দুরুদ পাঠ।

৭- শ্রেষ্ঠ দুরুদ হচ্ছে আমরা যেটা নামাজের মধ্যে পড়ি, দুরুদে ইব্রাহিম।

আল্লাহুম্মা সল্লি 'আলা মুহাম্মাদ, ওয়া 'আলা আলি মুহাম্মাদ।

 

 

 

 

 

আল্লাহকে মা-বাবার চেয়েও বেশি ভালোবাসা ছাড়া মুমিন হওয়া যাবে না। এর মানে কি? এর মানে হচ্ছে আপনি যে আল্লাহকে মা-বাবার চেয়ে বেশি ভালোবাসবেন, তিনি আপনাকে ভালোবাসবে আপনার মা-বাবার চাইতেও বেশি। আপনার সেই মায়ের চেয়ে বেশি যিনি নিজে না খেয়ে আপনার মুখে খাওয়া তুলে দেয়। আপনার সেই বাবার চেয়ে বেশি যিনি সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে আপনার একটা ভালো ভবিষ্যতের জন্য।

মা-বাবার মমতার বর্ণনা তো আর বলে শেষ করা যায় না, পাতার পর পাতা চলে যাবে, শেষ হবে না, সাহিত্যিকদের কলম শত শত বছর ধরে সন্তানের প্রতি মা-বাবার ভালোবাসার বর্ণনা লিখে গেছে, তবু যেন কত অসম্পূর্ণ সেই বর্ণনা, সেই বর্ণনার চেয়ে আমাদের বাস্তব জীবনের বাবা-মা যেন আরও অনেক উর্দ্ধে। এই সেই বাবা-মা যাদের আপনি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন, আর তারা আপনাকে ভালোবাসে আপনার ভালোবাসাকে কয়েকশত গুণ করলে যা হয় সেরুপ।

কিন্তু আল্লাহ বলছেন আল্লাহকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতে। মা-বাবাকে যদি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসলে কয়েকশত গুণ বেশি ভালোবাসা ব্যাক পাওয়া যায়, সেই মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রব্বুল আলামীনকে মা-বাবার চাইতে বেশি ভালোবাসলে তিনি আমাকে কতটা ভালোবাসবেন? তিনি তো আমার জন্য বিশাল জান্নাত সাজিয়ে রেখেছেন, শুধু একটাই শর্ত, আল্লাহকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতে হবে, ভালোবাসার দাবিগুলো পূরণ করতে হবে। আপনার বাবা-মাকে আপনি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসলে আপনি এর শতগুণ বেশি ভালোবাসা ব্যাক পাবেন কিনা এর নিশ্চয়তা আমি দিতে পারব না, তবে আমার আল্লাহ যে ইনফিনিটিগুণ ভালোবাসা ব্যাক দিবেন তা আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি। আল্লাহ কারো প্রতি বিন্দুমাত্র বেইন্সাফী করেন না। আল্লাহ তার শান অনুযায়ী আপনাকে ভালোবাসা ব্যাক দিবেন। সেই আল্লাহকে ভালোবাসো হে আল্লাহর বান্দারা। এই ভালোবাসায় ঠকবেন না একেবারেই।

 

 

 

 

 


দুনিয়ার মহব্বতের কারণে মানুষ যেমন অন্যকে খুন করতে দ্বিধা করে না আবার এই দুনিয়াপ্রীতির কারণেই আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। দুনিয়ার লোভ মানুষকে পশু বানায়। বস্তুবাদী চিন্তা চেতনা আমাদেরকে এমন দুনিয়ামুখী করে তুলে, আমাদের যে দ্বিতীয় আরেকটা জীবন আছে তা ভুলে যাই। এজন্য দুনিয়াকে আল্লাহর রসুল বিভিন্ন তুচ্ছ বিষয়ের সাথে তুলনা করে উম্মাতকে দুনিয়ার মহব্বত থেকে বেঁচে থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। কখনো দুনিয়াকে বলেছেন কারাগার, কখনো মরা গাধা, কখনো আবর্জনায় পড়ে থাকা মরা ছাগলের কানের সাথে তুলনা করেছেন, কখনো আখিরাতের জিন্দেগীর তুলনায় দুনিয়ার জিন্দেগীকে বলেছেন সমুদ্র থেকে একটি আঙ্গুল ডুবিয়ে উঠিয়ে নিলে যতটুকু পানি আসে তার সমান।

আল্লাহর হাবিব আমাদের দুনিয়ায় থাকতে বলেছেন মুসাফিরের ন্যায়। এমন মুসাফির যে সফরের সময় গাছের নিচে একটু সময় জিরিয়ে নেয়, সেই সময়টুকু হচ্ছে দুনিয়ার জীবন। এতই অল্প, এতই তুচ্ছ। অথচ এই সংক্ষিপ্ত জীবনের পরীক্ষার উপর নির্ভর করে অনন্ত জীবনের ফলাফল। দুনিয়াকে কারাগার বলা হয়েছে এই কারণে, কারাগারে মানুষ আরাম আয়েশ করে না, এখানে কষ্ট আছে, দুনিয়া এরুপ বলেই তো মুমিনের জন্য আখিরাত জান্নাত হবে। জান্নাতের পথকে সাজানো হয়েছে কষ্ট দুঃখ বিপদ মুসিবতের নানাবিধ পরীক্ষা দিয়ে। আর জাহান্নামের পথ সাজানো হয়েছে খেল তামাশা, ফুর্তি উল্লাসের চিজ দিয়ে।

উম্মাত যখন দুনিয়ার পিছনে পড়ে থাকে, দুনিয়ার মহব্বতে অন্ধ হয় তখন সব হারায়। আখিরাতই তো সব। যখন শুনি কেউ দুনিয়ার সামান্য একটা বিষয়ের কারণে আত্মহত্যা করেছে তখন বাকরুদ্ধ হই। আত্মহত্যাকারীর প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই। আমার অভিযোগ সেসব দুনিয়ার গোলামদের প্রতি যাদের কারণে সেই ব্যক্তি আত্মহত্যা করে। এসব গোলামরা চায় তাদের সন্তানও তাদের মত দুনিয়ার গোলাম হোক, বরং আরও বেশি রকমের হোক। কম হতে চাইলেই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যে সেই ছেলের আত্মহত্যা ছাড়া আর পথ থাকে না। এসব দুনিয়ার গোলামেরা ধ্বংস হোক। আল্লাহ আমাদের যুবসমাজকে দুনিয়ার গোলাম বাপ-মাদের হাত থেকে রক্ষা করুক।

 

 

 

 

ঝগড়াটে হুজুরদেরকে নিজের পীর বানাবেন না। এসব ঝগড়াটে লোকদের থেকে দূরে থাকবেন। যারা অন্যের পিছে লেগে থাকে, অন্যের ছিদ্রান্বেষণকে পছন্দনীয় কাজ বানিয়ে নেয়, হিংসা হাসাদে ভরপুর যাদের হৃদয় তাদেরকে আদর্শ মানবেন না, আকাবির মানবেন না, মুরুব্বি মানবেন না। আপনার যতই প্রিয় হোক; এরা এদের গীবত, হিংসা, পরচর্চা, গালিগালাজ, ঘৃণার চাষ, এবং অন্য মুসলিমদের ছিদ্রান্বেষণ করার কারণে হয়তো কিয়ামতের দিন সবচেয়ে হতভাগাদের অন্তর্ভুক্ত হবে যারা বহুত আমল জমা করে নিয়ে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হবে, কিন্তু নিজেদের এসব ঝগড়াটে বৈশিষ্ট্যের কারণে অন্য মুসলমানদের সব আমল দিয়ে দিয়ে শুন্য হয়ে যেতে হবে। আল্লাহ আমাদের ঝগড়াটে লোকদের মধ্যে শামিল না করুন এবং তাদের অনুসারীদের মধ্যেও না করুন।

 

 

 

 

স্কলার কইলে একটা ভাব আসে, মাওলানা কইলে ক্ষ্যাত লাগে। না?

 

 

 

 

আমার একটা নীতি হচ্ছে আমি জাহিলদের থেকে হুজুরদের সমালোচনা গ্রহণ করি না। সেটা যেই হুজুরই হোক না কেন। কোনো জাহিল যদি তাহেরীর সমালোচনাও করে, সেটা যদি সঠিকও হয় তবে আমি তাহেরীর পক্ষালম্বন করব। কারণ আমার নীতি হচ্ছে, কোনো জাহিল থেকে তাহেরী, জিহাদী, আফসারি উত্তম। আমাদের অনেকেই এই ভুলটা করে থাকে, কোনো জাহিল যদি কোনো ভন্ড হুজুরের সমালোচনা করে আমরা খুশি হয়ে যাই, আবার যখন হকপন্থী কারো সমালোচনা করে তখন চেতে যাই। আসলে এটা আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক দৈন্যতার প্রমাণ। যেই জাহিল সমালোচনা করছে সে মূলত ইসলামের জন্য করছে। তার ভণ্ডামির জন্য না। একজন জাহিল কিংবা সেকুলারের কাছে তাহেরী যা, আফসারিও তা, আযহারীও তা, ওলিপুরীও তা, আব্দুর রাজ্জাকও তা।

আমি মনে করি কোনো জাহিল কিংবা কাফির, কিংবা ইসলামের বাইরের কারো অধিকার নেই আমাদের আভ্যন্তরীণ কোনো ব্যাপারে নাক গলানোর। নাক গলাতে আসলে আমরা সম্মিলিত ভাবে তাদের নাক কেটে দিব। কারো সমালোচনা করার জন্য আপনাকে ইসলামের ভেতর থাকতে হবে। অন্য কোনো ঘরানার হন সমস্যা নেই। এটাই আমার নীতি। আমাদের ওয়ালা বারাটা ভালো করে শেখা উচিৎ।

 

 

 


কাফিরদের প্রকারভেদঃ (আমার নিজের জ্ঞান অনুযায়ী কুরআন হাদিসের ভিত্তিতে লেখা)

১- মুসলিম দাবি করে এবং মেনেও চলে কিন্তু কাফির। (জিন্দিক)

২- মুসলিম দাবি করে, কিন্তু ভেতরে ভেতরে কাফির। (মুনাফিক)

৩- ইসলাম ত্যাগ করেছে। (মুরতাদ)

৪- নিজেকে মুসলিম দাবি করে না এবং জন্মগত কাফির। (কাফিরে আসলি)

কাফিররা আবার স্তরভেদে কয়েকপ্রকার হতে পারে-

ক- কাফির কিন্তু ইসলামের পক্ষে (আবু তালিব টাইপ)

খ- কাফির কিন্তু ইসলামের দুশমন না। (সাধারণ কাফির)

গ- কাফির এবং ইসলামের দুশমন।

ঘ- শাতিম। (যার রক্ত হালাল)

আসলি কাফেরদের আবার দুই প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়ঃ

i- আহলে কিতাব (ইহুদী, খ্রিস্টান)

ii- মুশরিক (হিন্দু, মাজুসি ইত্যাদি)

সিয়াসতী দৃষ্টিকোন থেকে আবার কাফির দুই প্রকারঃ হারবী এবং জিম্মী।


সব কাফিরই জাহান্নামে যাবে এবং সবার সাথে বারা করতে হবে কিন্তু আমাদের আচরণ কাফিরদের প্রকারভেদে পরিবর্তনশীল হবে। যেমন, যারা ইসলামের প্রতি সহানুভূতিশীল, তাদেরকে আমরা দাওয়াত দিব, এবং ভালো আচরণ করব। বন্ধুত্ব করা নয় তবে তাদের সাহায্য সমর্থন গ্রহণ করা দোষনীয় হবে না। আবু তালিব উদাহরণ। আশা করা যায় এই টাইপ কাফিরদের শাস্তি জাহান্নামে সবচেয়ে কম ভয়াবহ হবে। এছাড়া যারা সাধারণ কাফির অর্থাৎ ইসলামের দুশমন নয়, কিন্তু শিরক কুফর করে থাকে, তাদের ইসলাম গ্রহণ করার অনেক বেশি সম্ভাবনা থাকে। কাফিরদের মধ্যে সাধারণ কাফিরের সংখ্যাই বেশি। তাদেরকে দাওয়াত দিতে হবে। মুরতাদ আর ইসলামের দুশমন কাফিরদের সাথে আমাদের আচরণ হবে শত্রুর ন্যায়। সাধারণ কাফিরদের থেকে পণ্য কেনা জায়েজ হলেও ইসলামের দুশমনদের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক তৈরি করা থেকেও বিরত থাকা উচিৎ। সর্বশেষে আসে শাতিম। এরা নিকৃষ্ট পশু, বা পশুর চেয়েও অধম। মুসলমানদের পক্ষ থেকে এদের হক বা অধিকার হচ্ছে এদের রক্ত প্রবাহিত করা।

জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে থাকবে মুনাফিকরা। আমাদের দেশের সেকুলারদের এই ক্যাটাগরিতে ফেলা যায়। জিন্দিকদের তওবা করিয়ে ইসলামে ফেরানোর চেষ্টা করতে হবে, যেমন শিয়া, কাদিয়ানী। জিন্দিকরা হচ্ছে মুলহিদ। মুলহিদ বলতে ধর্মত্যাগী বোঝায়। মুরতাদ আর মুলহিদ অনেকটা সমার্থক।

জিন্দিক ও মুনাফিকের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে জিন্দিক তার ভ্রষ্টতার ব্যাপারে ওয়াকিবহাল নয় এবং নামাজ রোজাও হয়তো করে। কিন্তু মুনাফিক তার ভ্রষ্টতার ব্যাপারে ওয়াকিবহাল এবং যে নামাজ রোযা করে সেটা লোক দেখানোর জন্য করে যাতে মানুষ তাকে মুসলিম ভাবে।

আহলে কিতাব ও মুশরিকদের মধ্যে মুশরিকরা বেশি ঘৃণিত। কারণ শিরক সবচেয়ে বড় অপরাধ। আবার অন্যদিকে ইহুদীরা সবচেয়ে বেশি ঘৃণিত, কারণ তারা অভিশপ্ত, যারা সত্য জেনেও সত্য মানতে চায় না। আহলে কিতাবদের মধ্যে শিরক করে নি এমন সতী নারীকে বিয়ে করা জায়েজ কিন্তু কোনো মুশরিক নারীকেও বিয়ে করা জায়েজ নাই। এই হল কাফিরদের প্রকারভেদের সংক্ষিপ্ত আলোচনা।

 

 

 

 

 

কিছুদিন আগে যখন চীন নতুন কুরআন লেখার ঘোষণা দিল তখন কাফির ও মুনাফিকরা হয়তো মনে মনে খুশি হয়েছিল। তারা ভেবেছিল, এইবার বুঝি মুসলমানদের অহঙ্কার ভেঙ্গে যাবে। অথচ এর পরপরই যখন চীনের উপর করোনার আজাব আসলো তখন আশ্চর্য মুনাফিক ও কাফিররা এটাকে প্রাকৃতিক ব্যাখ্যা করতে চাচ্ছে। অথচ আল্লাহর আজাব সত্য।

 

 

 

 


কুরআনের ১৯ সংখ্যাতত্ত্ব নিয়ে প্রচলিত ধারায় অনেক লেখালেখি আছে। যদিও আমি বিষয়টাকে সমস্যাযুক্ত মনে করি। আর আগেই বলেছি, এগুলো বিশ্বাসের বিষয় না। গবেষণার বিষয়।

 

 

 


কওমি নতুন প্রজন্মের মধ্যে ভালো ভালো আলেমের আনাগোনা লক্ষ্য করা যায়। আগের প্রজন্মগুলোর সাথে নতুন প্রজন্মের একটা পার্থক্য হচ্ছে এখনের আলেমরা বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে অনেকটা সচেতন। আর এটাই একজন আলেমের জন্য খুব জরুরী।

 

 

 


আমি জীবনেও ইউটিউবের টশটশে শিরোনামের ওয়াজ দেখে লোভে পড়ে শুনতে যাই নি। এতো রুচিহীন হইনি আমি। যারা ওয়াজ জগতের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে পোস্ট দেন তারা জীবনের মূল্যবান সময়গুলো এসব ফালতু জিনিসে নষ্ট করছেন।

 

 

 

আহলে হাদিস ইজতেমা একটা পজেটিভ বিষয়। আশা রাখবো ভবিষ্যতে আহলে হাদিসরা সহীহ চিল্লা, সহীহ তিন দিন, সহীহ এক সাল এর উদ্ভব ঘটাবে। সহীহ ফাজায়েলে আমল তো অনেক আগেই বের হইছে।

 

 

 


যে জাতির পিতা ইব্রাহিম আঃ মূর্তি ভেঙ্গেছিলেন, সেই জাতির দেশ বাংলাদেশের মোড়ে মোড়ে মূর্তি, আর আলেম উলামা দ্বীনদাররা ব্যস্ত নিজেদের মধ্যে মারামারিতে। আফসোস!

 

 

 

 

সেকুলারদের যেহেতু ধর্ম নেই অর্থাৎ আদর্শিক ভাবে, এক্ষেত্রে তাদের বিভিন্ন বিষয়কে ধর্মের পর্যায়ে নিয়ে যেতে হয়। কারণ মানুষের বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে কোনো না কোনো কিছুকে মানা, ধর্ম যখন কেউ মানে না তখন ধর্মের জায়গায় স্থান দিতে হয় নাস্তিকতাকে, অথবা দেশকে অথবা অন্য কিছুকে।

দেশপ্রেম নিয়ে বলি। সেকুলারদের কাছে দেশ হচ্ছে ধর্মের মতই। ফলে দেশপ্রেম তাদের কাছে ইবাদত। যে দেশপ্রেমী নয় তার সাথে তারা বারা করে, আর দেশপ্রেমীদের সাথে ওয়ালা করে। অর্থাৎ একদম ধর্মের মতোই বিষয়টাকে মানে। তারা বাংলাদেশী হয়ে পাকিস্তানীদের গালি দেয়, অথচ এতোটুকু কমনসেন্স নাই, তার জন্ম যদি পাকিস্তানে হত তবে পাকিস্তানিজম হত তার কাছে ধর্ম।

ইসলামের দৃষ্টিতে দেশপ্রেম কেমন সেটা আমাদের আলোচ্য বিষয় না। তবে এতোটুকু বলে রাখি, দেশ বা রাষ্ট্র হচ্ছে একটা সিস্টেম। এই সিস্টেম যারা চালাবে যেভাবে চালাবে সেভাবেই চলবে, আর সেই অনুযায়ী পক্ষ বিপক্ষ নির্ধারণ করতে হবে। যদি রাষ্ট্র কাফেররা চালায় এমন সিস্টেম ইসলামের বিরুদ্ধ, আর যদি ইসলামের পক্ষের শক্তি চালায় তবে সেটা ইসলামের পক্ষে। কিন্তু সেকুলাররা যে দেশপ্রেমের কথা বলে সেটা বড় আজব। কারণ দেশ যদি ইসলামের পক্ষের শক্তির লোক চালায় তখন কিন্তু তারা সেই সিস্টেমকে সাপোর্ট করবে না। যা স্রেফ ভন্ডামি।

 

 

 

 


জুমু'আর দিনের ১৫ সুন্নাতঃ

ফজরের নামাজ জামাআতে পড়া।

মিসওয়াক করা।

তেল লাগানো। (যাইতুনের তেল)

সুগন্ধি লাগানো।

সুন্দর পোশাক পরিধান করা।

নবীর উপর বেশি বেশি দুরুদ পাঠ করা।

সূরা কাহফ পাঠ।

মাসজিদে আগে আগে যাওয়া।

মাসজিদে হেঁটে যাওয়া।

মানুষের ঘাড় ডিঙিয়ে সামনে না যাওয়া।

মাসজিদে প্রবেশ করে দুই রাকাত নামাজ পড়া।

চুপ করে খুৎবা শোনা।

ঘুম আসলে জায়গা পরিবর্তন করে বসা।

বা'দাল জুমু'আ চার রাকাত আর বাসায় গিয়ে পড়লে দুই রাকাত। কাবলাল জুমু'আর রাকাআত সংখ্যা নির্ধারিত নয়, খুৎবা শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত যত পড়া যায়।

দুয়া করা। আসর থেকে মাগরিব দুয়া কবুলের গুরুত্বপূর্ণ সময়।

মিজানুর রহমান আজহারীর ওয়াজ থেকে।

 

 

 

 

 


অস্ট্রেলিয়ার বন্যা কিংবা চীনের করোনা ভাইরাসকে অনেকে কাকতালীয় ব্যাপার ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করছেন। যুক্তি দিচ্ছেন, অস্ট্রেলিয়া এবং চীনে মুসলিমও আছে, তারাও তো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তাহলে এটা আল্লাহর আজাব হয় কিভাবে? এই অপযুক্তি দেয়ার কারণ অধিকাংশ মানুষ আজাবের সংজ্ঞা জানে না। অথচ রসুল সাঃ এর স্পষ্ট হাদিস আছে, আজাব যখন আসে তখন সবাইকে গ্রাস করে, কে নেক আর কে বদ তা দেখে না। এবং যে যেই অবস্থায় মরেছে সেই অবস্থাতেই পুনুরুথিত হবে, অর্থাৎ কেউ যদি মুসলিম হয়ে মরে তবে সে সেই অবস্থাতে পুনুরুথিত হবে। আর যাদের কারণে আজাব এসেছিল তারাও জাহান্নামের হকদার অবস্থায় পুনুরুথিত হবে।

যে পানি খাওয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়া উট হত্যা করেছিল, এখন সেই পানি দিয়েই আল্লাহ তাদের শাস্তি দিচ্ছেন। মুসলিমদের নির্যাতনকারী চীনাদের উপর এই ভয়ঙ্কর মহামারী আল্লাহর ওয়াদাকে সত্যায়ন করে। অবশ্যই দুনিয়ায় লাঞ্ছনাকর এই আজাবেই শেষ নয়, আখিরাতেও আছে হতভাগ্য পরিণতি।

আরেকটা পয়েন্ট মনে রাখা দরকার। এগুলো হচ্ছে ইসলামিক ইলমের একেবারে মৌলিক ফ্যাক্ট, যা আমাদের জেনে রাখা প্রয়োজন। একই রোগ, একই কষ্ট, কাফিরদের জন্য আজাব আর মুমিনদের জন্য পরীক্ষা। কাফির ও মুনাফিকদের জন্য রোগ কষ্ট দুঃখ বিপদ হচ্ছে আজাব, এই আজাব তাদের কর্মফলের কারণে, আখিরাতে তো নিশ্চিত শাস্তি আছেই, দুনিয়াতেও শাস্তি পেয়ে মরছে। কিন্তু মুমিন মুসলিমদের জন্য দুনিয়ায় কষ্ট দুঃখ যন্ত্রণা বিপদ মুসিবৎ হচ্ছে পরীক্ষা, এসব কারণে মুমিনের গুনাহ মাফ হয়, ধৈর্য ধরে আল্লাহর উপর ভরসা রাখলে আল্লাহ সন্তুষ্ট হন, সাওয়াব লাভ হয়। অর্থাৎ কাফিরদের দুনিয়ায় এই কষ্টলাভে কোনো লাভ হয় না, কারণ আখিরাতে তাদের আজাব কিন্তু কমে না। কিন্তু মুমিন ব্যক্তি দুনিয়ায় কষ্ট পেলে আখিরাতের শাস্তি কিছু মাইনাস হয়। এই বিষয়টা আমাদের মনে রাখা দরকার, বিপদ মুসিবত দুঃখ কষ্ট আমাদের জন্য পরীক্ষা আর কাফিরদের জন্য আজাব।

 

 

 

 


শাইখ মুজাফফার বিন মুহসিন বললেন, হাসবি রব্বি জাল্লাল্লাহ গানে নাকি শিরক আছে। মাফি কলবি গইরুল্লাহ নাকি শিরকি কথা। এই বাক্যের অর্থ আমার কলবে বা মনে আল্লাহ ছাড়া কেউ নাই। তো, এইটাকে মুজাফফার সাহেব "আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান" থিওরিতে ফেলে শিরকি বলে আখ্যা দিয়েছেন। আফসোস যে আমাদের আলেমরা কতটা আকলহীন। আর আহলে হাদিসদের শভাব হচ্ছে সবকিছুর মধ্যে শিরক ও বিদআত খুঁজে পাওয়া। এ ভয়ঙ্কর রোগ।

 

 

 

 

 

বাংলা একাডেমী হচ্ছে সেকুলারদের মন্দির, আর বইমেলা হচ্ছে তাদের ধর্মীয় উৎসব। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাস আসলেই সেকুলারদের মস্তিষ্কের যত আবর্জনা আছে সমস্ত মলাটবদ্ধ হয়ে বইমেলায় চলে আসে। এসব আবর্জনা আবার মানুষ কিনে, এভাবেই এসব আবর্জনা এক মস্তিষ্ক থেকে অন্য মস্তিষ্কে ছড়াচ্ছে।

বইমেলায় একেকটা বইয়ের দিকে নজর দিলেই বোঝা যায় দেশে কি পরিমাণ বুদ্ধি-বিকলাঙ্গ রয়েছে। মন যা চায় লিখে নাম দিলাম কবিতা, এমন ৩০-৪০ টা কবিতা নিয়ে বই বের হয়েছে, বইয়ের দাম ১০০ টাকা। এমন কবি, লেখকে ভরপুর বইমেলা। পাঠকের চেয়ে লেখক বেশি। আর বইমেলায় অর্ধেক মানুষ বোধহয় ঘুরতে যায়, খুব কম মানুষের হাতেই বই দেখা যায়।

বইমেলায় যে আরিফ আজাদের বই বিক্রি হতে দেয় না বা বাধা দেয়া হয় এটা আসলে একটা স্বাভাবিক ব্যাপার। ইসলামী প্রকাশনীগুলোকে স্টল দেয় না অথচ ছাইপাঁশ কবিতার প্রকাশকদের স্টল দেয়া হয়, এমন সব প্রকাশনীও দেখা যায় যারা ১০ টা বইও প্রকাশ করেনি এখন পর্যন্ত।

এতো বড় জায়গাজুড়ে মেলার আয়োজন করা হয়েছে, অথচ ৫০০ জন একসাথে নামাজ পড়তে পারে এতোটুক জায়গার ব্যবস্থা এরা করতে পারে না। পারে কিন্তু চায় না। ৫০০ জনকে নামাজ পড়তে ৫ বার জামাআত করতে হয়, মাগরিবের সংক্ষিপ্ত সময়ে ৫ বার জামাআত করলে ওয়াক্ত শেষ যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে সেকুলারদের মন্দিরের ভেতর নামাজের জায়গা থাকবে এটাই অনেক বেশি।

বইমেলার বই দেখার পর দুধ চা খেয়ে নিজেকে গুলি করে দিতে ইচ্ছা করে। আমাদের দ্বীনদাররা যখন অযোগ্যতার অজুহাতে লেখালেখি থেকে দূরে থাকেন তখন সাহিত্যাঙ্গন দখল করে রাখে যতসব বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ভবিষ্যৎ-বুদ্ধিজীবী। দ্বীনদারদের ব্যাপক ভাবে লেখালেখির ময়দানে আসতে হবে।

ছাইপাঁশ লেখা সম্পর্কে আরও কিছু কথা, ইসলামের সৌন্দর্য হচ্ছে অনর্থক ও অপ্রয়োজনীয় কথা ও কাজ থেকে বেঁচে থাকা। সেকুলার সাহিত্যের পুরো অঙ্গনটাই অনর্থক আর বস্তাপচা কথাবার্তার সংগ্রহশালা। কুরআনে এমন সব কবিতাকে নিন্দনীয় বলা হয়েছে যা অনর্থক, যা থেকে শেখার কিছু নেই, যেখানে নৈতিকতা নেই, ইসলামের কথা নেই, শরীয়তবিরোধী কথা আছে। প্রাচীন আরবের কবিতা তো তাও বাস্তবতার অনেক কাছাকাছি ছিল, এখনকার বাঙালী সেকুলারদের কবিতা তো হচ্ছে গরু আকাশে উড়ে, মাছ রাস্তায় হাঁটে টাইপ।

চর্চা গ্রন্থ প্রকাশে আরিফ আজাদের বই কিনতে মানুষের ভিড় দেখে ভালো লেগেছে। লেখক আনিসুল হক উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও যত ভিড়, চর্চা গ্রন্থ প্রকাশে আরিফ আজাদের বই কিনতে এর চেয়ে বেশি ভিড়। আলহামদুলিল্লাহ।

অনেকে শুধু ইসলামী বই কিনতে বইমেলা যাচ্ছেন, তাদের বলব শুধু ইসলামী বই কিনতে যদি যেয়ে থাকেন, অন্য উদ্দেশ্য না থাকে তাহলে কাঁটাবন কিংবা নীলক্ষেতে যান, বইমেলার চাইতে বেশি ইসলামী বই পাবেন। কাঁটাবনে প্রচুর ইসলামী বই পাওয়া যায়। বইমেলায় কিছু কিছু স্টলে দেখলাম মোক্সুদুল মোমেনীন টাইপ বই। সেকুলাররা বোধহয় মোকসুদুল মোমেনীন ছাড়া অন্য কোনো বই সহ্য করতে পারে না।

কেউ কেউ বলছে বইমেলায় যেহেতু ইসলামী স্টল দিতে দেয়া হয় না, তাই বয়কট করতে হবে, আবার অনেকে বলছে স্টলে স্টলে গিয়ে ইসলামী বই কি কি এসেছে তা জানতে। এই দুইটা মন্তব্যই ইসলামী সাহিত্যের শুভাকাঙ্ক্ষী হয়ে বল্লেও প্রান্তিক মন্তব্য। এর চেয়ে বইমেলার বিকল্প হিসেবে ইসলামী বইমেলাকে প্রমোট করা উচিৎ, এবং পাশাপাশি বইমেলাতেও সুযোগ পেলে ইসলামী বই ঢুকিয়ে দেয়া যায়, সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে তো সমস্যা নেই। বাইতুল মুকাররামে বছরে দুইটা ইসলামী বই মেলা হয়, রবিউল আউয়ালে এবং রমজানে। সামনে রমজানে বাইতুল মুকাররামের বইমেলার জন্য আমরা প্রস্তুত হই ইনশাআল্লাহ।

 

 

 

 

 

একটা প্যাটার্ন লক্ষ্য করেছেন? আয়াতুল কুরসি, সূরা ইখলাস এবং ৩৩ বার করে তাসবীহ, তাকবীর, তাহমীদ; এই তিনটা আমলই করতে উৎসাহিত করা হয়েছে প্রতি ফরজ নামাজের পর এবং ঘুমের আগে। অর্থাৎ দিনে প্রায় ৬ বার। তবে সূরা ইখলাস হচ্ছে ফজর ও মাগরিবে ৩ বার করে ৬ বার, বাকি ৩ নামাজে ৩ বার, ঘুমের আগে ১ বার, মোট ১০ বার।

সূরা ইখলাস এবং আয়াতুল কুরসীর রয়েছে বিশাল তাৎপর্য। একটা হচ্ছে শ্রেষ্ঠতম আয়াত, অন্যটি শ্রেষ্ঠ সূরাগুলোর মধ্যে অন্যতম, এই দুইয়ের শ্রেষ্ঠত্বের মূল কারণ এই দুইয়ে রয়েছে আল্লাহর পরিচয়, তাওহীদের মূল কথা। ইখলাস ৩ বার পাঠ করলে কুরআন ১ খতমের সাওয়াব। আয়াতুল কুরসি নামাজের পর পড়লে মৃত্যু বাদে কোনো বাধাই থাকে না জান্নাতী হওয়ার জন্য। আর ৩৩ বার করে তাসবীহ, তাকবীর ও তাহমীদের আমল নামাজের পর করলে ধন সম্পদ সাদাকা না করা সত্ত্বেও সাদাকা করার সাওয়াব (হাদিসানুযায়ী) অর্থাৎ আমলে এগিয়ে যাওয়ার সাওয়াব, আর ঘুমের আগে করলে কোনো খাদেম বা কাজের লোক ছাড়াই ঘরের কাজ করার জন্য এই আমল যথেষ্ট হয়ে যাবে।

 

 

 

 


সুইসাইড কেন করে?

সুইসাইডের মূল কারণ আখিরাতকে গুরুত্ব না দেয়া। যদিও সেকুলার এবং সাধারণ্যে প্রচলিত যে মূল কারণ হচ্ছে হতাশা। কিন্তু হতাশা একটা গৌণ কারণ। আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস দুর্বল থাকলেই, এবং দুনিয়ার প্রতি অধিক মহব্বত, অধিক পাওয়ার আশা থাকাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সুইসাইডের কারণ।

অধিকাংশ সুইসাইড যারা করে, খোঁজ নিলে দেখা যাবে কয়েক প্রকৃতির মানুষ এসব করে থাকে।

১- দুনিয়ার জীবনে ব্যার্থতা। যারা দুনিয়াতে সফল হতে পারে না, তাদের মধ্যেই সুইসাইড করার আশঙ্কা বেশি থাকে যদি সে সিরিয়াস টাইপের মানুষ হয়। সফল বলতে প্রচলিত অর্থে যা বোঝায়। তারা মনে করে দুনিয়ার জীবনটাই একমাত্র জীবন। ফলে এখানে ব্যর্থতা মানে সব শেষ। তাই তারা আশা হারায়, জীবনের আশা হারিয়ে ফেলে।

অনেক সময় তারা পারিপার্শ্বিক কারণে সুইসাইড করতে বাধ্য হয়। জীবনে সফল হতে না পারায় মানুষের কটু কথা শুনতে শুনতে শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয় সুইসাইড করতে। ছাত্রদের এমন সুইসাইড বর্তমান বস্তুবাদী চেতনার সমাজে ভালো করেই দেখা যায়। এ প্লাস পায় নি তাই সুইসাইড করে, ফেইল করেছে তাই সুইসাইড, ভালো জায়গায় ভর্তি হতে পারে নি তাই সুইসাইড, চাকরি পায় না তাই সুইসাইড, বিশাল অঙ্কের টাকা মাইর খেয়েছে তাই সুইসাইড, টাকার অভাব বা অনেক ঋণ তাই সুইসাইড, অপমানিত হয়েছে তাই সুইসাইড।

অবশ্য সুইসাইড যারা করে তাদের সবার দুনিয়ার প্রতি মহব্বত ও আশা এতে বেশি ছিল যে আশা ভঙ্গ হওয়ার পর বেঁচে থাকার মানেই তারা খুঁজে পায় নি। তবে সবাই যে আখিরাতে অবিশ্বাসী তা নয়। বেশিরভাগই আখিরাতে বিশ্বাস রাখে এবং কবীরা গুনাহ জেনেও করে থাকে। এর কারণ হচ্ছে, তারা ভাবে এই দুনিয়ার জিন্দেগী থেকে তো অন্তত মুক্তি পাওয়া যাবে। আখিরাতে কি হবে তা পরে দেখা যাবে। এই চিন্তা থেকে তারা দুনিয়ার সামান্য ও তুচ্ছ বিষয়ের কারণে সুইসাইড করে জাহান্নামের ভয়ানক আগুনের কাছে নিজেকে সপে দেয়। অথচ দুনিয়ার এই তুচ্ছ কারণের চেয়ে সেই আগুন অনেক অনেক এবং অনেক বেশি ভয়ঙ্কর।

২- প্রেমে ব্যর্থতা। এটাও দুনিয়ার অতি মহব্বতের একটা নমুনা। প্রেমে ব্যর্থ হয়েও সুইসাইডের অনেক উদাহরণ রয়েছে। নারীর প্রেম এমন ভাবে অন্ধ করে দেয় যে সেই নারীর জন্য অন্য মানুষ খুন করতেও যেমন সে দ্বিধা করবে না তেমনি নিজেকে হত্যা করতেও তার হাত কাপে না। দুনিয়ার মহব্বতই হচ্ছে অর্থের প্রেম, নারীর প্রেম, স্ট্যাটাস এর প্রেম। অর্থ আর সম্মান স্ট্যাটাস এই দুইটা না পেয়ে যারা সুইসাইড করে তাদেরটা প্রথম পয়েন্টে বলেছি। এই পয়েন্ট হচ্ছে নারীর প্রেমে ব্যর্থতা। (আর নারীর ক্ষেত্রে পুরুষের প্রেম)

৩- মানসিক অস্থিরতা, বিষণ্ণতা। এটা হচ্ছে একটা মানসিক অবস্থা যা মানুষকে সুইসাইড করতে বাধ্য করে। এরকম অনেক উদাহরণ আছে যাদের সুইসাইডের নির্দিষ্ট কোনো যুক্তি বা কারণ নাই। একাকীত্ব কিংবা অন্য কোনো অবস্থায় তারা বাধ্য হয় সুইসাইড করতে। মনোবিজ্ঞান সংশ্লিষ্টরা ভালো বলতে পারবে।

এই ক্যাটাগরিতে পড়বে পৃথিবীর অনেক বিখ্যাত সেলিব্রেটি, যাদের টাকার অভাব নাই, নারী কিংবা প্রেমের অভাব নাই, সম্মান স্ট্যাটাস এগুলোও কম নাই, তবু সব কিছু থেকেও যেন কিছু একটা নাই, কিছু একটার যেন অভাব। সুকুন নাই, শান্তি নাই, দুনিয়ার মানুষ যেটাকে সুখ বলে, যেটা মানুষের কাছে অধরা, সেটা পেয়েও তাদের যেন এমন কিছু একটার অভাব যা তাকে শান্তি দিচ্ছে না। স্রষ্টার শৃঙ্খলহীন উচ্ছ্রিখল জীবন তাদের শান্তি দেয় না। এমন অনেক সেলিব্রেটির কথা আমরা জানি, আমি নাম উল্লেখ করছি না।

আমি যে ৩ টা কারণ উল্লেখ করলাম এগুলো বেশিরভাগ সুইসাইডের ক্ষেত্রে ঘটে থাকে। আর এর মূলে রয়েছে আল্লাহকে না মানা। আল্লাহকে না জানা। আল্লাহর দেয়া সুখের (ইসলামী) জিন্দেগীকে না বুঝা। আখিরাতের চিরস্থায়ী সুখকে ভুলে গিয়ে দুনিয়ার তুচ্ছ জিন্দেগীর সুখকে প্রাধান্য দেয়া, দুনিয়ার মহব্বতে অন্ধ হয়ে যাওয়া, দুনিয়ার প্রতি এবং এর ভেতরকার বস্তুর প্রতি এতো বেশি আশা রাখা যা ছিল অবাস্তব এবং যখন সেটা তাকে হতাশ করে তখন সুইসাইড ছাড়া আর পথ থাকে না। দুনিয়া তো এমন চিজ যাকে ভালোবাসলে এর বিনিময়ে সে লাঞ্ছনা উপহার দেয়। দুনিয়াকে ভালোবেসে কেউ জিতে নি। আল্লাহকে ভালোবেসে কেউ ঠকে নি।

 

 

 

 

 


জ্ঞান কি?

- জ্ঞান হচ্ছে অল্প কথায় অনেক কিছু বোঝানো। যেটা বোঝাতে শত শত পৃষ্ঠা লেগে যেত সেটা সংক্ষেপে বুঝিয়ে দেয়াটা জ্ঞান। যে সংক্ষিপ্ত কথা বুঝতে শত শত বইয়ের জ্ঞান লাগে, শত শত রেফারেন্স যে সংক্ষিপ্ত কথায় এসে যায়, সেটাই হচ্ছে জ্ঞান। ঘুরিয়ে বললে, যে সংক্ষিপ্ত কথার ব্যাখ্যা করতে হাজার হাজার পৃষ্ঠা লেগে যাবে সেটাই হচ্ছে জ্ঞান।

(এতো ছোট একটা কথা বুঝাতে কতগুলা লাইন লেখা লাগলো, এর মানে আমার নিজের কথাই জ্ঞান না)।

 

 

 

 


একটা জরুরী বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ্‌। পেশা বনাম দ্বীনের খেদমত।

আমাদের অনেকেই দ্বীনের খেদমত করতে আগ্রহী। কিন্তু দেখা যায় পেশা এক মেরুর, দ্বীন অন্য মেরুতে। তখন কোনো ভাবেই সুবিধা করতে পারে না, ফলে দেখা যায় শেষ পর্যন্ত পেশাতেই যেতে হয়, দ্বীনের খেদমত ছাড়তে হয়।

আমি মনে করি যারা দ্বীনের খেদমত করতে চান, তাদের যে কোনো একটা পথ বেছে নেয়া উচিৎ। কারণ দুই পথে একটু একটু কাজ করার চেয়ে, এক জায়গায় ভালো কাজ করাই ভালো। যেমন ধরি একজন ডাক্তার ইসলামী বই অনুবাদ করেন, দ্বীনের খেদমত মনে করে, অবসরে বই অনুবাদ করেন। বই অনুবাদ ছোট কাজ নয়, কিন্তু তার পড়াশোনা ছিল মেডিক্যাল সাইন্সে কিন্তু কাজ হচ্ছে সাহিত্যে। ফলে সাহিত্যে যেমন তাকে দক্ষ হতে সময় লাগবে তেমনি ডাক্তারি প্র্যাকটিসেও ব্যাঘাত ঘটবে, যেহেতু প্র্যাকটিস জারি রাখতে পড়াশোনা করতে হয়, কিন্তু সময় যেহেতু অনুবাদে চলে যায় সেহেতু ডাক্তার আর আপডেটেড থাকতে পারছেন না, পিছিয়ে পড়ছেন।

তার উচিৎ ছিল মেডিক্যাল সাইন্সের এমন সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যা দিয়ে দ্বীন প্রচার করা যায়। আমাদের ভেতরে আল্লাহর হাজার হাজার নেয়ামতের যে কোনো একটার আলোচনা নিয়েই মানুষকে দ্বীনের দিকে আগ্রহী করা সম্ভব। এছাড়াও এমন বহু উদাহরণ আছে। আসলে আমাদের এখানে জ্ঞানের ইসলামাইজেশন তেমন ভাবে হয় নি, আর কিভাবে করতে হবে সেটাও জানা নাই। জ্ঞানের ইসলামাইজেশন জরুরী।

যদিও একজন ডাক্তারকে দিয়ে উদাহরণ দিলাম, তবে এটা যে কোনো পেশার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আবার ধরেন, আপনি হচ্ছেন শিক্ষক, পড়ান বাংলা, বাংলা সাহিত্যে রয়েছে আপনার উচ্চতর ডিগ্রী, অথচ আপনি আপনার পুরো সময় লাগান তাবলীগে দ্বীনের খেদমতে। তাবলীগও দ্বীনের খেদমত, কিন্তু আপনার ময়দান হওয়া উচিৎ ছিল সাহিত্য। সাহিত্য দিয়ে আপনি তাবলীগের দাওয়াতের চেয়ে বেশি মেহনত করতে পারতেন। এভাবে আমাদের প্রায়োরিটি ঠিক করতে হবে।

কেউ যদি একাধিক কাজ দক্ষতার সাথে করতে পারে তবে তো ভালো। কিন্তু একমুখী থাকার জন্য এক কাজে লেগে থাকাই ভালো এবং সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ডাঃ জাকির নায়েকের কথা বলা যায়। তিনি কিন্তু দাওয়াহর কাজ করতে গিয়ে ডাক্তারি ছেড়ে দিয়েছিলেন। তিনি আসলে একমুখী থাকতে চেয়েছিলেন। আমি এটাকে সাপোর্ট করি। লেকচার চেয়ার জন্য তাকে দীর্ঘসময় তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব নিয়ে পড়তে হত, তিনি যদি ডাক্তারি প্র্যাকটিস জারি রাখতেন তাহলে ডাক্তার হিসেবে সফল হতে পারতেন না। তিনি একটা প্রায়োরিটি ঠিক করে সেটাকে বেছে নিয়েছেন। আপনারও উচিৎ একটা প্রায়োরিটি ঠিক করা।

যাদের জীববিজ্ঞানে উচ্চতর ডিগ্রী আছে তাদের কিন্তু ডারউইনবাদকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে গবেষণার একটা সুযোগ আছে। কিন্তু এই উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে আপনি যদি সাহিত্য রচনা করে দ্বীনের খেদমত করতে চান বুঝতে হবে আপনি প্রায়োরিটি ঠিক করতে পারেন নি। যে কোনো একটা করুন, ভালো করে করুন।

দ্বীনের খেদমত নাকি পেশা কোনটাকে বেছে নিব, কিসের ভিত্তিতে নিব? সার্বিক বিবেচনায় যেটা এগিয়ে থাকবে সেটাই নিবেন। যদি এমন হয় পরিবারের (মা-বাবা, ভাই-বোন) হাল ধরতে হবে, দ্বীনের খেদমত করতে গেলে সেটা ব্যাঘাত ঘটবে এক্ষেত্রে পেশাকে বেছে নেয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। যদি এই সমস্যা না থাকে তখন দেখতে হবে দ্বীনের খেদমত করতে গেলে অর্থনৈতিক সমস্যার মোকাবিলা করতে পারবেন কিনা, যদি পারেন তাহলে এই সংগ্রামী লাইফে স্বাগতম। আর নাহলে তো পেশাকেই বেছে নিতে হবে।

শেষে দেখতে হবে কোনটার প্রতি আপনার আগ্রহ। যেটায় আগ্রহ সেটায় যান। আর যদি বারবার আগ্রহ বদলায়, মন চেইঞ্জ হয়, তাহলে দুইটাই ধরে রাখেন। দুইটা একসাথে করা দোষের না, আমি শুধু দক্ষতার কথা চিন্তা করে এই টপিকে আলোচনা করছি। কাউকে নিজের পেশায় অনুৎসাহিত করা কিংবা যে কোনো একটাকে বেছে নিতেই হবে এমন জোর জবরদস্তি চিন্তা চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছি না। নিজের অবস্থান থেকে দ্বীনের খেদমত করাকে উৎসাহিত করছি।

 

 

 

 

 

 


আমরা যখন ভ্রান্ত কারো সমালোচনা করি, আমরা একটা ভুল ভিত্তিকে সামনে রেখে আগাই যা আমাদের আর্গুমেন্টকে দুর্বল করে দেয়। সংক্ষেপে বলি। আমরা মনে করি ডারউইনের তত্ত্ব হচ্ছে বানর থেকে মানুষ* এসেছে, এটাকে ভিত্তি করে আমরা বিতর্কে লিপ্ত হই অথচ যে বিষয়ে জ্ঞান নাই সে বিষয়ে কথা না বলাই উত্তম ছিল। আবার আমরা শিয়াদেরকে নানা রকম অপবাদ দিয়ে থাকি যেগুলো সত্য নয়। এগুলাও একটা সমস্যা। যেমন শিয়াদের নাকি কুরআন আলাদা। শিয়ারা নাকি আলি রাঃকে নবী মনে করে, কিন্তু এটা মূলধারার শিয়াদের মত নয়। বেরেলভীদের ব্যাপারেও আমরা ভুল ধারণা রাখি। আমরা ভাবি সব বেরেলভি বুঝি কবর মাজারে সিজদা দেয়, পীরকে সিজদাহ দেয়। এটাও সঠিক নয়। আসুন সঠিকটা আগে জানি। ভুল কিছুকে ভিত্তি করে তর্কে লিপ্ত না হই।

* বলে রাখা ভালো, বানর থেকে মানুষ এসেছে এটা ডারউইনের থিওরি না। ডারউইনের থিওরি হচ্ছে বানর এবং মানুষ একই পূর্বপুরুষ থেকে আগত।

 

 

 

 


রাস্তা পার হওয়ার আমলসমুহঃ

১- দেখে পার হন।

২- গাড়ি চলাচল অবস্থায় পার হবেন না, থামার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

৩- পার হওয়ার আগে হাত দেখান।

৪- বাচ্চাদের নিয়ে পার হওয়ার সময় বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করুন।

৫- ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার করুন।

৬- আল্লাহর নাম নিয়ে পার হন, হতে পারে এটাই আপনার শেষবারের মত আল্লাহর নাম নেয়া।

৭- পার হয়ে আলহামদুলিল্লাহ বলুন।

৮- চলন্ত গাড়ির সামনে দিয়ে দৌড় দিবেন না। নিজেকে খুন করবেন না, অন্যকেও বিপদে ফেলবেন না। আপনার ভুলে আপনার পরিবার হারাতে পারে অভিভাবক, একজন নির্দোষ ড্রাইভারও পড়তে পারেন আইনী বিপদে। আর আপনি তো নিজের উপর জুলুম করলেনই।