চিন্তাশীলদের জন্য এতে রয়েছে ভাবনার খোরাক
যুবায়ের হোসাইন
যে ব্যাপারটা আমার অত্যন্ত দুঃখজনক মনে হয় সেটা হল কাফের বা ইসলামবিদ্বেষীদের সাথে কথা বলার ক্ষেত্রে আমরা কেন যেন ডিফেনসিভ হয়ে যাই। যেখানে স্বয়ং আল্লাহ আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি বলে স্বীকৃতি দিচ্ছেন, সেখানে আমরা কেন কুফফার শক্তির সামনে মাথা উঁচু করে চলতে পারি না, আমার বোধগম্য হয় না। I am a Muslim and I am not a terrorist. ‘বাক্যটা বহুল প্রচারিত। আমি এ কথাটাকে খুবই অপছন্দ করি। কারণ এর মাধ্যমে যেন আমরা কাফেরদের কাছে করজোরে বলছি ‘বিশ্বাস কর আমি টেররিস্ট নই। এরকম রক্ষণাত্মক আমরা কেন থাকব? টেররিসমের প্রশ্ন হলে ‘মুসলিমরা সন্ত্রাসী নয়’ বলে আত্মপক্ষ সমর্থন করে আমাদের উচিত কুফফারদের ধ্বংসযজ্ঞ ও হত্যার ইতিহাস, রাজনীতি তুলে ধরে বলা-‘সন্ত্রাসীর বাপ তো আপনারা, অন্যকে সন্ত্রাসী বলার আপনি কে?? আজকে হিজাব নিয়ে ইসলামবিদ্বেষীরা কটাক্ষ করলে মুসলিমরা ‘হিজাব একটি বিজ্ঞানসম্মত বিষয় জাতীয় প্রবন্ধ লেখাকে বুদ্ধিবৃত্তিক জবাব দেওয়া মনে করে। কিন্তু এটা কি কাফেরদের এন্টারটেইন করা হল না?? আমাদের বরং এসকল ইসলামবিদ্বেষীদের হিপোক্রেসি আর নারী-ব্যবসার চোখে আঙ্গুল তুলে বলা দরকার ‘যারা মেয়েদের উলঙ্গ করে রাস্তায় ছেড়ে দেয়, তীব্র শীতের মধ্যেও কাপড় ছোট না করলে যেখানে মেয়েরা দাম পায় না; সেই লোকেদের নারীর অধিকার নিয়ে কথা বলার সাহস কী করে হয়??
কাফেররা বিজ্ঞানের দোহাই দিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে বলার চেষ্টা করে। আমাদের ধর্মের কোন বিধানকে বিজ্ঞান দিয়ে তারা ‘অযৌক্তিক প্রমাণ করতে পারবে না সেটা তারাও জানে, আমরাও জানি। কিন্তু তারা আমাদের বিশ্বাসের ভিত্তিকে ‘কুরআন’ ও ‘রিসালাত’ থেকে সরিয়ে ‘বিজ্ঞান’ দিয়ে রিপ্লেস করতে চায় বিধায় সুকৌশলে কথায় কথায় বিজ্ঞান টেনে আনার প্রবণতা সৃষ্টি করার প্রয়াস পায়। অথচ তারা নিজেরাও কিন্তু বিজ্ঞানে বিশ্বাস করে না। তারা মদ খায় কেন? এটা কি বিজ্ঞানসম্মত? তারা যেসব যৌনাচার করে, সেসব কি বিজ্ঞান অনুমোদন দেয়? তারা হিজাবের ব্যাপারে ভিটামিন ডি এর প্রতিবন্ধকতার কথা বলে, কিন্তু শরীর খোলা রাখায় ক্যান্সারের সৃষ্টি নিয়ে যে লক্ষ লক্ষ জার্নাল প্রকাশিত হচ্ছে, সেই ব্যাপারে কথা বলে কি? আমরা কি এই ব্যাপারগুলো তুলে ধরতে পারি না? মোটকথা, আমাদের রক্ষণাত্মক মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। কাফেরদের কাছে মুসলিমদের ‘নির্দোষ’, ‘শান্তিপ্রিয়’ প্রমাণের চেষ্টা না করে আমরা যেন তাদের ভন্ডামি আর নরপশুত্ব তুলে ধরে ‘কাফেরদের প্রতি মুসলিমদের কেন এর চেয়েও কঠোর আচরণ করা উচিত’ - তা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি। মানসিক দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়ে কাফেরদের বিরুদ্ধে জয়ী হওয়া সম্ভব নয়।
আল বালাগ
ম্যাগাজিন ইস্যু-১