বিয়ের বয়স নিয়ে উল্টো চিন্তা...
বিয়ের বয়স কত হবে এটা নিয়ে ভাবনাগুলো
যেন এক রকম। মানে বলা হয়,
‘বিয়ের পর সন্তান হলে কী হবে’, ‘কম বয়সে সন্তানধারণ ভালো না মন্দ হবে’ ইত্যাদি। না আমি ঐ দিকে যাবো না, উল্টোভাবে চিন্তা করবো। ধরুন, একজন পুরুষ বিয়ে করলো ২০ বছর বয়সে, সে বাবা হলো ২২ বছর বয়সে। আরেকজন পুরুষ বিয়ে করলো ৩৫ বছর বয়সে, সে বাবা হলো ৩৭ বছর বয়সে। প্রথম পুরুষ যখন বৃদ্ধ হলো মানে বয়স ৬০ হলো, তখন তার বড় সন্তানের বয়স ৩৮।
দ্বিতীয় পুরুষ যখন বৃদ্ধ হলো, মানে বয়স ৬০ হলো, তখন তার বড় সন্তানের বয়স মাত্র ২৩ (ছেলেও হতে পারে, মেয়েও হতে পারে) । প্রথম পুরুষকে তার বড় সন্তান মোটামুটি কর্মক্ষম অবস্থায় পাবে ৩৮ বছর । দ্বিতীয় পুরুষকে তার বড় সন্তান (ছোটরা আরো কম পাবে) মোটামুটি কর্মক্ষম অবস্থায় পাবে ২৩ বছর (অনেক সময় এর মধ্যেও বাবা মারা যায়)।
অর্থাৎ কম বয়সে বিয়ে করলে-
১. একজন সন্তান তার পিতা/মাতাকে সুস্থ/জীবিত অবস্থায় অনেক দিন পায়।
২. বৃদ্ধ বয়সে সন্তানদের বয়স মোটামুটি বেশি থাকে, ফলে বৃদ্ধ বাবা/মার সামাজিক নিরাপত্তা থাকে।
৩. পিতা/মাতা ৫৫-৬০ বছর বয়সে হঠাৎ মারা গেলে সন্তানদের অবস্থা একেবারে সঙ্গীন হয় না।
অপরপক্ষে অধিক বয়সে বিয়ে করলে-
১. একজন সন্তান তার পিতা/মাতাকে সুস্থ/জীবিত অবস্থায় খুব কম সময় পায়।
২. বৃদ্ধ বয়সে সন্তানদের বয়সও কম থাকে, ফলে বৃদ্ধ পিতা-মাতার সামাজিক নিরাপত্তা সঙ্কটাপন্ন হয়।
৩. পিতা/মাতা ৫৫-৬০ বছর বয়সে হঠাৎ মারা গেলে সন্তানদের অবস্থা একেবারে সঙ্গীন হয়ে ওঠে। অনেকের পড়ালেখা শেষ হওয়ার আগেই বাবা মারা গেলে অবস্থা বেগতিক হয়।
৪. অনেক বৃদ্ধ লোকের বয়স হয়ে যায়, কিন্তু সন্তান ছোট দেখে খুব কষ্ট করেও চাকরি চালিয়ে যেতে হয়, যা অত্যন্ত অমানবিক। আমি আবারও বলছি, সমাজ হচ্ছে একটি চক্র বা সাইকেলের মত। এর একটি অংশ যদি বাধাপ্রাপ্ত হয়, তবে পুরো সিস্টেমটা নষ্ট হয়ে যায়। যারা আজকে অধিক বয়সে বিয়ে করার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছে, তারা আসলে চাইছে সমাজের সেই সাইকেলটা ভেঙে দিতে, এতে আলটিমেট ক্ষতিগ্রস্ত হবে অনেকগুলো দিক; সন্তান বঞ্চিত হবে পিতা-মাতার স্নেহ থেকে, বৃদ্ধ বাবা-মা পাবে না সামাজিক নিরাপত্তা।