مؤسسة النصر
আন নাসর মিডিয়া
An Nasr Media
تـُــقدم
পরিবেশিত
Presents
الترجمة البنغالية
বাংলা অনুবাদ
Bengali Translation
بعنوان:
শিরোনাম:
Titled
بيان من القيادة العامة :
بيان القيادة العامة بشأن الزحف الإباحي لجزيرة محمد – صلى الله عليه وسلم- عبر كأس العالم قطر ٢٠٢٢
জামাআত কায়িদাতুল জিহাদ - কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব
কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২ - এর মধ্য দিয়ে মুহাম্মাদ ﷺ - এর পুণ্যভূমি জাযিরাতুল আরবে নর্তকীদের আস্ফালন সম্পর্কে বিবৃতি
new statement from al qaidahs general command
“Regarding the Pornographic Invasion through Qatar World Cup 2022 in the Peninsula of Muhammad (SAW) ”
روابط بي دي اب
PDF (806 KB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৮০৬ কিলোবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/z7EYKzbfN4sMzYq
https://archive.org/download/aqc-qatar-world-cup-2022/AQC%20-%20Qatar%20World%20Cup%20-%202022.pdf
https://aqc8.files.wordpress.com/2022/11/aqc-qatar-world-cup-2022.pdf
https://www.mediafire.com/file/ynkubzbqloexkpm/AQC+-+Qatar+World+Cup+-+2022.pdf/file
https://mega.nz/file/sPEyXYAY#G0-yG4e53lgC2m86JIsTuP9XZrWRygyHicA-dlfKWGI
https://top4top.io/downloadf-2518lab493-pdf.html
روابط ورد
Word (1 MB)
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন [১ মেগাবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/SSbwWcgTWTzRLRc
https://archive.org/download/aqc-qatar-world-cup-2022
/AQC%20-%20Qatar%20World%20Cup%20-%202022.docx
https://aqc8.files.wordpress.com/2022/11/aqc-qatar-world-cup-2022.docx
https://www.mediafire.com/file/s1ddipzmt1yi7jx/AQC+-+Qatar+World+Cup+-+2022.docx/file
https://mega.nz/file/xaNCyJwA#6g5fmGGO29B-XL8fIqhAJtil8nwWlhZBe1SCNpDPCbc
https://top4top.io/downloadf-2518btbkx2-docx.html
روابط الغلاف
Banner [500 KB]
ব্যানার ডাউনলোড করুন [৫০০ কিলোবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/oJTQB3o6jgkBzHL
https://justpaste.it/img/e6151d8f8090f2034614dd7f9d503f6b.jpg
https://aqc8.files.wordpress.com/2022/11/aqc-qatar-world-cup-2022-banner-.jpg
https://www.mediafire.com/file/vnzu72br1qzqfy0/AQC-Qatar-World-Cup-2022-Banner-.jpg/file
https://mega.nz/file/Rf8hXTgK#Nosh2TEUB_7GHt2wH_woPvODxbCnnSIwTCbsshTHkjs
https://justpaste.it/img/e6151d8f8090f2034614dd7f9d503f6b.jpg
=-=-=-=-=
জামাআত কায়িদাতুল জিহাদ - কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব
কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২ - এর মধ্য দিয়ে মুহাম্মাদ ﷺ - এর পুণ্যভূমি জাযিরাতুল আরবে নর্তকীদের আস্ফালন সম্পর্কে বিবৃতি
আলহামদু লিল্লাহ। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য; যিনি ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র দুর্বল করেন ও খেয়ানতকারীদের অবিশ্বস্ততা ধ্বংস করেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আপন কিতাবে এরশাদ করেছেন:
أُولَٰئِكَ يَدْعُونَ إِلَى النَّارِ ۖ وَاللَّهُ يَدْعُو إِلَى الْجَنَّةِ وَالْمَغْفِرَةِ بِإِذْنِهِ ۖ وَيُبَيِّنُ آيَاتِهِ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَذَكَّرُونَ ﴿٢٢١﴾
অর্থ: "ওরা অগ্নির দিকে আহবান করে আর আল্লাহ নিজের অনুগ্রহে জান্নাত ও ক্ষমার দিকে আহবান করেন। তিনি মানুষদের জন্য নিজের হুকুমগুলো বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করছেন যাতে তারা শিক্ষা গ্রহণ করে”। (সূরা বাকারা ২:২২১)
আলহামদু লিল্লাহ। সমস্ত প্রশংসা ঐ আল্লাহর জন্য; যিনি অক্ষমদের দোয়া কবুল করেন, আপদগ্রস্তদের বিপদাপদ দূর করেন ও নিজ মুজাহিদ বান্দাদেরকে সাহায্য করেন।
রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক; আমাদের প্রিয়ভাজন, রাসূল এবং আমাদের আদর্শ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর, তাঁর পরিবার পরিজনের উপর, মানুষের মাঝে নির্বাচিত তাঁর সকল সাহাবীর উপর!
হামদ ও সালাতের পর...
ষড়যন্ত্র ও বিশৃঙ্খলার তরবারি মুসলিমদের ঘাড়ে আজও পর্যন্ত লটকে আছে। সমকালীন ক্রুসেড যুদ্ধ প্রতিদিন নতুন নতুন রঙে, নতুন নতুন ঢঙে তার শাখা-প্রশাখা বিস্তার করছে। মানুষের ফিতরতি স্বভাব, সুস্থ প্রকৃতি ও মানবজাতিকে দেয়া আল্লাহর ঐশী রং মুছে দেওয়ার জন্য চক্রান্ত চলছে। বিশেষ করে ওহীর অবতরণস্থল, উত্তম আখলাকের ভূমি, ঈমানের নূরে ঝলমল জাযিরাতুল আরবে ক্রুসেডাররা তাদের ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করছে। এইতো আজ তারা মুসলিমদেরকে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের শিকার বানিয়ে যথেচ্ছা নাচাচ্ছে। ধ্বংসাত্মক মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের নতুন এক ময়দান তারা খুলে বসেছে।
তাদের এই যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো - এতদঞ্চলে কওমে লুতের নির্লজ্জ ঐতিহ্যকে প্রতিষ্ঠা করা। পর্নোগ্রাফি ও বিকৃত যৌনাচারী সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের মাধ্যমে তারা এসব করতে চাইছে। মক্কায় যে সমস্ত ব্যভিচারিণী নারী তাবুতে কালো পতাকা টানিয়ে জাহেলিয়াতের যুগে যিনার বাজার খুলেছিল, তাদের পদাঙ্ক অনুসরণের যথাসম্ভব বড় সুযোগ তৈরি করার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। যে গোত্রের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন:
فَأَخَذَتْهُمُ الصَّيْحَةُ مُصْبِحِينَ ﴿٨٣﴾
অর্থ: "অতঃপর এক সকালে প্রচণ্ড ধ্বনি তাদের উপর আঘাত হানল”। (সুরা হিজর ১৫:৮৩)
তাদের ঘৃণ্য ঐতিহ্য পুনর্জীবিত করার জন্য এরা প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
ক্রুসেডারদের তাবেদার, ইহুদীবাদের অনুসারী সৌদি তাগুত সরকার আজ ইসলামী পরিচয়কে ধ্বংস করার মিশন পরিচালনা করছে। সাংস্কৃতিক এই যুদ্ধে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র আরব উপত্যকায় বসবাসকারী মুসলিমদের ইসলামী নীতি-নৈতিকতাকে বিভিন্ন আনন্দ, বিনোদন, মৌসুমি উৎসব ইত্যাদির নামে ধ্বংস করে দিচ্ছে। ক্রুসেডারদেরকে তারা নিজেরাই এই কাজে সহায়তা করছে।
একই সময়ে আরব আমিরাত ও বাহরাইন সরকারের ইহুদীবাদীরা জাযিরাতুল আরবের অধিবাসীদের ইসলামী আকীদা-বিশ্বাস ও ভাবধারার উপর ধ্বংসের ছায়া বিস্তারের জন্য আব্রাহামিক রিলিজিয়নের দাওয়াত এবং উন্মুক্ত নাস্তিকতা প্রচারের সুযোগ করে দিয়েছে। মানবতাবাদী ভ্রাতৃত্ব বন্ধন স্থাপনের ‘উদার দৃষ্টিভঙ্গি’র নামে তারা মূলত মুসলিমদের মৌলিক আকীদা-বিশ্বাসগত পার্থক্য উঠিয়ে দেয়ার খেলায় মেতে উঠেছে।
সৌদি রাজ পরিবার, আলে যায়েদ, আলে খলিফা সকলে মিলে আসমানী বিষয়াদি ও ঐতিহ্য তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে। বিশুদ্ধ দ্বীন, সুস্থ মস্তিষ্ক, নীতি-নৈতিকতা, চরিত্র ও মানুষের প্রাণ নিয়ে অবহেলা করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এমনই এক সময়ে কাতার সরকারের জায়নবাদী চেহারার মুখোশ ধীরে ধীরে খসে পড়ছে। তাদের কর্মকাণ্ডের উপর থেকে কুয়াশা সরে যাচ্ছে।
এক সময় মনে করা হতো - কাতার কখনোই ইসলামী আন্দোলন ও ইসলামী স্কলারদের দলকে গৃহপালিত বানাবার মিশনে পা বাড়াবে না। স্কলারদের শিকড় ঘিরে ফেলা, তাদের মেধা-মস্তিষ্ক মুছে দেয়া, তাদের স্মৃতিশক্তি নিয়ে খেলা করা, তাদের ক্ষতস্থানে আঘাত করা এবং ইসলামী আন্দোলনের দন্ত-নখর ভেঙে দেওয়ার মতো কাজ অন্তত কাতারকে দিয়ে হতে পারে না - এমনটাই এক শ্রেণীর ধারণা ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেল - কাতার রাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ গুণে, মানে ও পরিমাণে - সবদিক দিয়েই অন্যদের থেকেও বেশি নিকৃষ্ট কাজ করতে পারে।
কাতার সমস্ত ইহুদীবাদী আরব সংস্থা এবং সেগুলোতে কর্মরত ব্যক্তিদেরকে এই ক্রুসেড যুদ্ধে একত্রিত করেছে। বংশধারা, অর্থ-সম্পদ, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র জাযিরাতুল আরবের অধিবাসীদের মর্যাদা ও সম্পদ বিনষ্ট করার ক্ষেত্রে কাতার এখন চ্যাম্পিয়ন।
তারা স্বেচ্ছায় এমন অপচয়ের দ্বার উন্মোচন করেছে - যা মানব ইতিহাস কখনোই দেখেনি। মুসলিম উম্মাহর ধনভাণ্ডার ও অর্থ-সম্পদকে ওয়ার্ল্ড কাপ ২০২২-এর প্রতিযোগীদের পেছনে খরচ করে ‘অতিথি পরায়ণতা’র এক অন্ধকার ইতিহাস জন্ম দিচ্ছে। ইজরাইলের বিকৃত যৌনাচারে অভ্যস্ত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীকে এবং আল্লাহর জমিনের আগাছার দলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছে। এ বিষয়ে কাতার সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ গণমাধ্যমে বিষয়টা স্পষ্ট করেছে।
সমকামী গোষ্ঠীকে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র উপত্যকায় বিচরণ করার সুযোগ করে দিয়েছে। তাদের পাপাচার, বেহায়াপনা ও নির্লজ্জতাকে মুসলিম উম্মাহর যুবক-যুবতীদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেছে।
আল্লাহর কসম! এটা এমন এক বিপর্যয় - যা হারামাইন শারীফাইনের নিকটে এবং তাওহীদের আঁতুড়ঘরের খুবই কাছে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জাযিরাতুল আরবে সংগঠিত হচ্ছে।
আল্লাহর কসম! এসব মুসলিম উম্মাহর ব্যাপক উদাসীনতা ও অবহেলার ফসল। এসব কিছুর পর গোটা উম্মাহকে এমনটাই বলার উপযুক্ত, যেমনটা হাদিসের বর্ণনায় এসেছে—
اصْنَعُوا لِآلِ جَعْفَرٍ طَعَامًا
“তোমরা জাফরের পরিবারের জন্য খাবার তৈরি করো।”
[আবদুল্লাহ ইবনে জাফর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, যখন জাফর রাদিয়াল্লাহু আনহু’র শাহাদাতের খবর এলো, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘জাফরের পরিবারের জন্য খাবার তৈরি করো। কেননা তাদের কাছে এমন দুঃসংবাদ এসেছে, যা তাদের ব্যস্ত করে রাখবে। ’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৩১৩২) -অনুবাদক]
এই অভিযোগ আল্লাহ ছাড়া আর কার কাছে দায়ের করবো!?
কবি বলেন:
فجائع الدهر أنواعٌ منوعةُ وللزمان مسراتُ وأجزانُ
যুগের বিপর্যয় ও দুঃখ-কষ্ট বিভিন্ন প্রকার
সময়ের আবর্তনে কখনো আনন্দের বিষয় ঘটে, কখনো বেদনার
وللحوادث سلوان يسهلها وما لما حلَّ بالإسلام سُلْوانُ
দুর্ঘটনার পিছে এমন সান্ত্বনা থাকে, যা দুর্ঘটনার বেদনা প্রশমিত করে দেয়
কিন্তু সেই দুর্ঘটনা ইসলামের ক্ষেত্রে হলে তখন সান্ত্বনার থাকে না কিছুই
دَهَي الجزيرة أمرٌ لا عزاء له هَوَي لَهُ أحُدُ و انهدَّ ثَهْلان
জাজিরাতুল আরবের অন্ধকার এমন বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার ব্যাপারে নেই কোন সান্ত্বনা,
এই বিপদে উহুদ পর্বত নড়ে গিয়েছে আর সাহালান পর্বত ধ্বসে গিয়েছে।
أصابها العين في الإسلام فارتزأتْ حتي خلت منه أقطارُ وبلدانُ
ইসলামের জ্যোতির্ময় চক্ষু আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে দৃষ্টির প্রখরতা হারিয়ে ফেলেছে
ফলে দেশের পর দেশ অঞ্চলের পর অঞ্চল ইসলামের ছায়া হারিয়ে ফেলেছে।
হে আমাদের প্রিয় মর্যাদাবান মুসলিম উম্মাহ!
নিশ্চয়ই সকল জাতি-গোষ্ঠী, রাষ্ট্র ও সাম্রাজ্যের একটা নির্ধারিত সময় আছে। উত্থান যেমন আছে, তেমন পতনও আছে। জাতি-গোষ্ঠীর অধঃপতনের শুরু হয় তখনই, যখন সেই জাতি-গোষ্ঠীর মাঝে আমোদ-প্রমোদ ও বিলাসিতা ছড়িয়ে পড়ে। ইবনে খালদুন রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বিখ্যাত ইতিহাস গ্রন্থে এদিকেই ইঙ্গিত করেছেন।
আমাদের মনে রাখতে হবে - ফিফা ‘ফুটবল বিশ্বকাপ’ শুধুমাত্র ‘শরীর চর্চা’ বা অন্য কোন ভাল উদ্দেশ্যে আয়োজন করা হয়নি। বরং মনস্তাত্ত্বিক ও আকীদাগত অন্যান্য বিভিন্ন উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য, শারীরিক চর্চার মোড়কে মুড়িয়ে একে উপস্থাপন করা হচ্ছে।
বাস্তবসম্মত যুগচিন্তার দৃষ্টিকোণ থেকে এটি সাংস্কৃতিক যুদ্ধের একটা উপকরণ। মনস্তাত্ত্বিক আগ্রাসন এবং ধর্মীয় পরিচয় মুছে ফেলার লক্ষ্যে মূল্যহীন বিষয়ে সময় ব্যয়ের এক চটকদার ব্যবস্থা এই ফুটবল বিশ্বকাপ। বেহায়াপনা ও নির্লজ্জ ব্যভিচারের চিন্তা-ভাবনা মনে-মস্তিষ্কে ঢুকিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এগুলো করা হচ্ছে।
ষড়যন্ত্রমূলক, নিকৃষ্ট, চিন্তাগত যে যুদ্ধের আগুন ক্রুসেডার শক্তি জাযিরাতুল আরবে আজ প্রজ্বলিত করেছে, তা এমন এক নির্মম যুদ্ধ, ভয়াবহ অগ্নিকুণ্ড, গোপন তরবারি ও এমন শক্তিশালী বর্শা - যা মুসলিমদের হৃদয়কে ঝাঁঝরা করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। এই যুদ্ধের মধ্যে যত ধ্বংসাত্মক বিষয় রয়েছে, তাদের এই পরিকল্পনার মাঝে যত পাপাচার ও অনিষ্টতা রয়েছে, যত রকমের নির্লজ্জতা, বেহায়াপনা ও পাশবিকতা রয়েছে, যে সকল মন্দ, নিকৃষ্ট কথাবার্তা ও কাজকর্ম রয়েছে - এসবকিছু ইসলাম এবং মুসলিমদের জন্য ভয়ানক ক্ষতিকর, তা আর খুলে বলার অপেক্ষা রাখে না।
এ বিষয়ে দলীল-প্রমাণ হাজির করার কোন প্রয়োজন নেই। শুধু এই কথাই বলতে হবে - আল্লাহ তায়ালা এই উম্মাহর তাকদীরে লিখেছেন বলেই এমনটা হচ্ছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা মর্যাদাশালী এই উম্মাহকে ক্রুসেডারদের হস্তক্ষেপ এবং বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর আস্ফালনের দ্বারা পরীক্ষা করছেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা চাইছেন - জাযিরাতুল আরবে কাফের ও নাস্তিক গোষ্ঠীর উপস্থিতির দ্বারা মর্যাদাশীল এই উম্মাহর বোধোদয় ঘটুক।
এভাবেই এই বিরাট বিপর্যয়, মহাপাপ ও ফেতনা আরব উপত্যকায় নেমে এসেছে। এর বাহ্যিক রূপ হল - শারীরিক প্রতিযোগিতা। আর তার অভ্যন্তরে রয়েছে আজাব ও মহা শাস্তি। এই আয়োজনের ভাঁজে ভাঁজে নীতি-নৈতিকতার অধঃপতন, চারিত্রিক অবক্ষয়, বেহায়াপনা এবং মুমিনদের পথ ভিন্ন অমুসলিমদের পথে আহ্বানের মত ভয়াবহ উপাদান রয়েছে। কোন সন্দেহ নেই যে, এ বিষয়গুলো মুসলিমদেরকে ক্ষুব্ধ করবে। তাদের মূল্যবোধে আঘাত করবে। আমরা আশ্চর্য হবো না যদি এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে মুসলিমদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জাযিরাতুল আরবে নতুন কোন যুদ্ধের ছক আঁকা হয়ে যায়!
এ জাতীয় কোনও আয়োজনের সঙ্গে মুহাম্মাদী জাযিরাতুল আরবের কোন সম্পর্ক নেই। যাদের ঈমানী মর্যাদাবোধ রয়েছে তাদের জন্য আমাদের এই আলোচনা ও বিবৃতি - জাযিরাতুল আরবের মুসলিমদের উপর আপতিত বিপর্যয়ের ভয়াবহতার বয়ান হবে।
আমাদের এই বিবৃতি – মর্যাদাবোধ সম্পন্ন লোকদের উদাসীনতার লাগাম টেনে ধরবে। মুসলিমদের আকীদা, নীতি-নৈতিকতা, চিন্তা-চেতনা ও স্বকীয়তার মাঝে এই নিকৃষ্ট ঘটনা কিরূপ মন্দ প্রভাব বিস্তার করেছে - তা কিছুটা উপলব্ধি করতে পারবে। আশা করা যায় - এই বয়ানের মাধ্যমে উপলব্ধির এমন কোন পথ পাওয়া যাবে বা মুক্তির এমন কোন পন্থা উঠে আসবে - যা কিছুটা হলেও এই ফেতনার ভয়াবহতা কমিয়ে দিবে ও উত্তপ্ততা হ্রাস করবে।
এটা আমাদের জন্য ‘সুবর্ণ সুযোগ’। এই সুযোগে আমরা আমাদের মুসলিম ভাইদেরকে সত্যের বাণী শুনাতে পারবো। এই আয়োজনের ব্যাপারে ইসলামের হুকুম কি, এর পরিণতি কি - সবকিছু আমরা তাদের সামনে তুলে ধরবো। তাদের জন্য উপদেশমালা উপস্থাপন করবো। আমরা এসব বিষয় মুসলিম ভাইদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করবো। নসিহত ও উপদেশের সওয়াবের আশায় আমরা তাদের দিকে ভালোবাসার হাত প্রসারিত করবো। কারণ উপস্থিত প্রয়োজনের সময় উদ্ভূত বিষয়ে দিক-নির্দেশনা প্রদান ও কথা বলতে দেরি করা বৈধ নয়। যখন প্রয়োজন দেখা দিবে, তখন প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে নীরব থাকা উচিত নয়। উম্মতের মাঝে দলাদলি, ভাঙ্গন ও বিভক্তি অনেক আগেই সৃষ্টি হয়ে গিয়েছে। এখন আমাদের বক্তব্য প্রদানের উদ্দেশ্য হল - ঐ সমস্ত লোকদের কানে আমাদের বাণী পৌঁছে দেয়া, যারা মনোযোগের সাথে আলোচনা শুনে এবং উৎকৃষ্ট অংশের উপর আমল করার চেষ্টা করে।
তাই আমরা আল্লাহ তায়ালার তাওফীক নিয়ে বলতে চাই - এক দুর্ভাগ্যের মেঘ আমাদেরকে আচ্ছাদিত করে রেখেছে। মুসলিম উম্মাহর জন্য এ কথা ভুলে থাকার কোন সুযোগ নেই যে - ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ শুধুমাত্র শারীরিক কসরত ও দৈহিক চর্চার উদ্দেশ্যে আয়োজন করা হচ্ছে না; বরং এই বিশ্বকাপ সুদূর প্রসারী একটি পরিকল্পনার অংশ।
মনস্তাত্ত্বিকভাবে পৃথিবীবাসীকে নির্লজ্জতা, যিনা-ব্যভিচার, পর্নোগ্রাফি এবং আসমানী সুস্থ রুচি প্রকৃতি বিরোধী কার্যকলাপে অভ্যস্ত করে দেয়ার জন্য তাদের এই ব্যবস্থা। নিঃসন্দেহে এটা কুফর লালন-পালনের নিয়ামক শক্তি। আত্মপরিচয় মুছে দেয়া এবং শ্লীলতাহানির এক নিকৃষ্ট উপমা - এই আয়োজন।
এই আয়োজনের পরতে পরতে রয়েছে বিধ্বংসী আকীদা-বিশ্বাস, ভ্রান্ত ধারণা আর কদাকার সংস্কৃতি। কোন অবস্থাতেই এমন নিকৃষ্ট সংস্কৃতি মেনে নেয়া অথবা মুসলিম বিশ্বের কোন একটি দেশে এগুলো প্রচার-প্রসার করা - সমীচীন হতে পারে না। এ সমস্ত ভ্রান্ত চিন্তাধারা আর অপসংস্কৃতিকে আমদানি করা - কখনোই মুসলিম উম্মাহ ও বর্তমান প্রজন্মের মুক্তির পথ হতে পারে না।
ইবাদতের উদ্দেশ্য ছাড়া জাযিরাতুল আরবে কোন আন্তর্জাতিক সম্মেলন সমীচীন নয়। হজের মাসসমূহে বড় হজ পালনের উদ্দেশ্যে সারা বিশ্ব থেকে পবিত্র এই ভূমিতে লোক আসতে পারে শুধু। এর বাইরে অন্যান্য ধর্মের-মতবাদের মানুষদের এখানে আসার কোন অনুমতি নেই। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন – আমরা যেন জাযিরাতুল আরব থেকে মুশরিকদের বের করে দেই। তিনি পবিত্র এই ভূমিকে মুশরিক গোষ্ঠীর অপবিত্রতা এবং তাদের অপসংস্কৃতির কলুষতা থেকে মুক্ত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তাদের অধঃপতিত চরিত্র আর তাদের পাশবিক রুচি প্রকৃতি থেকে হারামাইন শারীফাইন এবং এর আশপাশকে হেফাযতের আদেশ দিয়েছেন। কারণ এই ভূমি হল ঈমানের আঁতুড়ঘর, কুরআনের অবতরণ ভূমি; ইসলামের মহানবীর গৃহ এখানে অবস্থিত। সে জায়গায় কেমন করে জাযিরাতুল আরবের মত স্থানে এ কাজগুলোর যৌক্তিকতা থাকতে পারে?
সাহাবায়ে কেরামের আবাসস্থল এই ভূমি। মুসলিমদের কেবলা এই ভূমিতে। এই ভূমির প্রকৃত অধিবাসী আদি আরব গোষ্ঠী - যাদের রক্ত মাংসের সঙ্গে মিশে আছে ইসলাম। তারা নেতৃত্ব ও বিশ্বকে পরিচালনার দিক-নির্দেশনা দেবার হকদার। মুসলিম বিশ্বের কেন্দ্রস্থলে ও শীর্ষে তারাই। আল্লাহর পথে দাওয়াত, আল্লাহর সীমারেখা হেফাযত এবং তাঁর একত্ববাদের সংরক্ষণের দুর্গ তারা। উত্তম আদর্শ ও সঠিক পথের মশাল তারা।
ইসলামের সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি, সুস্থ রুচি ও বিশুদ্ধ বিবেচনাবোধ সম্পন্ন লোকদের এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই যে - বরকতময় এ জাযিরাতুল আরবে ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপের অনুষ্ঠান এবং এই আয়োজনের মাঝে বেদনাদায়ক যত পাপাচার, অসভ্যতা ও মহাপাপ রয়েছে, এসব কিছুই আমাদের সর্দার মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তাঁর পবিত্র কবরের মাঝে ব্যথিত করছে। আল্লাহর দ্বীন, সীরাতে মুস্তাকীম ও নবীজির পবিত্র সুন্নাহের ব্যাপারে যে সমস্ত মুসলিমের মর্যাদাবোধ রয়েছে, প্রত্যেকেই এই আয়োজনের কারণে বেদনাক্রান্ত হয়ে আছেন। যারা নবীজি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর অনুসারীদেরকে কষ্ট দিবে; তাদের এ কাজ - বিরাট পাপ, মহা অন্যায় ও নাফরমানী হওয়ার জন্য যথেষ্ট। জ্ঞানী ব্যক্তিদের জন্য আল্লাহ তায়ালার নিম্নোক্ত বাণী ধমকি হিসেবে যথেষ্ট -
اِنَّ الَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ اللّٰهَ وَرَسُوْلَهٗ لَعَنَهُمُ اللّٰهُ فِى الدُّنْيَا وَا لْاٰ خِرَةِ وَاَ عَدَّ لَهُمْ عَذَا بًا مُّهِيْنًا وَا لَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ الْمُؤْمِنِيْنَ وَا لْمُؤْمِنٰتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوْا فَقَدِ احْتَمَلُوْا بُهْتَا نًا وَّاِثْمًا مُّبِيْنًا
অর্থ:"যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাদের প্রতি ইহকালে ও পরকালে অভিসম্পাত করেন এবং তাদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছেন অবমাননাকর শাস্তি। যারা বিনা অপরাধে মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে”। (সূরা আল আহযাব ৩৩: ৫৭-৫৮)
ইয়া উম্মাতা মুহাম্মাদ! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আমরা বিশেষভাবে কাতারের এবং সাধারণভাবে গোটা জাযিরাতুল আরবের আমাদের সম্মানিত ভাইদেরকে আহ্বান করছি –
হে মুররা, বনু তামিম ও কাহতান গোত্রের উত্তরসূরিরা! হে কা’ব, যুহল ও গাতফান গোত্রের সন্তানেরা! হে গর্বিত অন্তঃকরণের অধিকারীরা!! হে উত্তম চরিত্রের অধিকারীরা!! হে সম্ভ্রান্ত বংশ-লতিকা সংরক্ষণকারীরা! হে দানশীলতা ও পূর্ণ আত্মমর্যাদার নমুনা স্থাপনকারীরা!!
আপনারা এই বিশ্বকাপের আয়োজনে বহু অন্যায় বিষয় দেখতে পাবেন। এগুলো আপনাদের অপছন্দ করতে হবে। আপনারা এই আয়োজনে অনেক পাপাচার ও বড় বড় নাফরমানী দেখতে পাবেন, সেগুলোর শিকড় আপনাদেরই উপড়ে ফেলতে হবে। কাতার সরকার মুসলিমদের অনুভূতি নিয়ে খেলতে চেষ্টা করছে। রাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ দাবি করছে যে, অতিথিসহ সকলের উপর ইসলামী আইন-কানুন প্রয়োগ করা হবে। তাদের এসব দাবি সত্ত্বেও আপনারা বেহায়া নারীদের শারীরিক অঙ্গভঙ্গি ও নাচ দেখতে পাবেন। চরিত্রহীন লোকদের লাম্পট্য দেখতে পাবেন। পাপাচারীদের উদ্দেশ্যমূলক শিস শুনতে পাবেন। আয়োজকদের দাবীকৃত শুধুমাত্র বিনোদন ও শরীরচর্চামূলক আয়োজনের মধ্য দিয়ে ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ প্রক্রিয়ার বাস্তবায়ন দেখতে পাবেন।
এমতাবস্থায় কিছুতেই আপনারা থেমে যাবেন না। আপনারা উদাত্ত কণ্ঠে আমর বিল মারুফ এবং নাহি আনিল মুনকার করতে থাকুন। হেকমত ও উত্তম উপদেশের মাধ্যমে দাওয়াতের কাজ করতে থাকুন, যেমনটা আমাদের প্রিয়নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন। আপনারা জেনে রাখুন - জাযিরাতুল আরবের উপর চাপিয়ে দেয়া এই মহাযুদ্ধ নিঃসন্দেহে একটা ‘ক্রুসেড’। যা পরিকল্পিত ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে আরোপিত করা হয়েছে। মুসলিমদের অনাগত প্রজন্ম এবং মুসলিম উম্মাহর ভবিষ্যতের উপর এই আয়োজন এক মহা অন্যায় ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসন। পশ্চিমা সংস্কৃতিকে মুসলিমদের উপর চাপিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র এটা।
ভবিষ্যৎ মুসলিম প্রজন্মকে তাদের সুস্থ ইসলামিক রুচি-প্রকৃতি থেকে সরিয়ে এনে ভ্রষ্টতা, বিভ্রান্তি, পর্নোগ্রাফি, সমকামিতা ও নাস্তিকতার চোরাবালিতে টেনে আনার আয়োজন এগুলো। সামগ্রিকভাবে না মুসলিম উম্মাহ, আর না জাযিরাতুল আরব - তাদের এতদিনের ইতিহাসে দ্বীনের মৌলিক পাঁচটি বিষয়ের উপর এমন আগ্রাসন কখনো প্রত্যক্ষ করেছে।
ক্রুসেডারদের তাবেদার গোষ্ঠী দেখতে ঠিক আমাদের মতই। তাদের হাতে বর্তমান সময়ে ধর্মীয় সীমারেখা, প্রাণসম্পদ, মেধা-মস্তিষ্ক, অর্থ-সম্পদ এবং ইজ্জত-সম্মান - এই মৌলিক বিষয়গুলো যেভাবে লঙ্ঘিত ও পদদলিত হচ্ছে, তা এর আগে কখনোই দেখা যায়নি। বিশেষত সাম্প্রতিক সময়ে জাযিরাতুল আরবে ‘কওমে লুতের’ সমকামী আচরণকে যেভাবে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে, তা চিন্তাই করা যায় না। ‘কওমে লুতের’ উত্তরসূরিরা আজ বিশ্বের সকল প্রান্ত হতে জাযিরাতুল আরব পানে ধেয়ে আসছে।
এখন আপনারাই বলুন - এই বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন উপলক্ষ কি এমন কাবা হবার যোগ্য; যার হজ করার উদ্দেশ্যে বিশ্বের সকল প্রান্ত থেকে নানা বর্ণের মানুষ উপস্থিত হয়ে আমাদের ইসলামী মূল্যবোধকে খাটো করবে? মুসলিম প্রধান দেশের নিয়ম-কানুন লঙ্ঘন করবে মাত্র ৩০ দিনের জন্য হলেও? এই উম্মত এতটাই অসহায় হয়ে গেল? নাকি মুসলিমদের জাতীয় সম্পদ ও মূল্যবান অর্থ ভাণ্ডারকে অনর্থক ও একইসাথে ভয়ানক আনন্দ বিনোদন ও অযথা কাজের মাঝে খরচ করে মুসলিম জাতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হচ্ছে!!?
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হচ্ছে - জাহেলিয়াতের হজ পালনকারী এই হাজীরা - যাদের স্বভাব হচ্ছে কৃত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা - তারা অচিরেই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জাযিরাতুল আরবকে তাদের চরিত্রহীনতা, অধঃপতিত নিকৃষ্ট সংস্কৃতি ও পাশবিক আচার-আচরণ দিয়ে পরিপূর্ণ করবে। তারা কখনোই যেখান থেকে এসেছে, সেখানে ফিরে যাবে না। তারা অল্প সময়ের জন্য এসেছে ঠিক, কিন্তু যা সাথে করে নিয়ে এসেছে; তার সবকিছু নিয়ে তারা আবার চলে যাবে - এমনটা ভেবে থাকলে ভুল হবে। তারা নিজেদের পশ্চাতে এই জাযিরাতুল আরবে যুগের সমস্ত অনিষ্টের বীজ বপন করে যাবে। তাদের চারিত্রিক অবক্ষয় আর অপসংস্কৃতির বিষাক্ত চারা তারা এখানে রোপণ করে যাবে। আমাদের সুশৃঙ্খল মুসলিম সমাজ আর ইসলামিক পরিবেশের উপর তারা তাদের নোংরা ছোবল বসাবে। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জাযিরাতুল আরবের নতুন প্রজন্মের মাঝে তাদের অপবিত্রতা আর কলুষতা ছড়িয়ে দেয়ার জন্য তারা এসব করবে। যে পরিস্থিতি আসতে চলেছে, তা অন্ধকারাচ্ছন্ন আর খুবই তিক্ত।
নির্বোধ বিন সালমান আরেক নির্বোধ তামিম ইবনে হাম্মাদের সঙ্গে অনিষ্ট সাধনের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এবারের বিশ্বকাপ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাকে আমন্ত্রণ জানানোর কারণে, কাতার আমির এবং তার দেশের জনগণের প্রতি শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেছে।
কাতার বিশ্বকাপে আরও একটা নতুন বিষয় হলো - রেফারি হিসেবে এবার দায়িত্ব পালন করবে নারীরা। এ বিরাট বিপর্যয়ের অভিযোগ একমাত্র আল্লাহর কাছে দায়ের করি। এ সময়ে শুধু কবি আবুল বাকা আর-রন্দির এই কবিতাই মুখে চলে আসে—
ألا نفوسُ أبيَّاتُ لها هممُ أما على الخير أنصارُ وأعوانُ
হে আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন উচ্চ মনোবলের অধিকারী গর্বিত আত্মা!
কল্যাণের ব্যাপারে কি কোন সাহায্যকারী আর সহযোগী নেই?
لمثل هذا يذوبُ القلبُ من كمدٍ إن كان في القلب إسلامُ وإيمانُ
বিষণ্ণতার কারণে এমন ঘটনায় অন্তর হয়ে যায় বিগলিত
যদি সেই অন্তরে ইসলাম আর ঈমানের দৌলত থাকে।
ইয়া উম্মাতা মুহাম্মাদ! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
কাতারে আয়োজিত ‘ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২’ এমন একটি জঘন্য পদক্ষেপ - যার মাধ্যমে বর্তমান যুগের মুসলিম প্রজন্মের ব্যক্তিত্ব ম্লান হয়ে যাচ্ছে। এই বিশ্বকাপ আয়োজন - চিন্তার বিকৃতি ও চরিত্র হরণের একটি উৎস। এটি নাস্তিকতা, কুফর-শিরকের বীজ বপন, চরম অশ্লীলতা ও নৈতিক অবক্ষয়ের অন্যতম মাধ্যম। আমাদের উচিত হবে - নিজেদের ও সন্তানদের ধার্মিকতার প্রতি যত্নশীল হওয়া। মুসলিমদের সংস্কৃতি ও ইসলামের মৌলিক আদর্শের প্রতি আরও বেশি গুরুত্বারোপ করা।
আমাদের এই বিষয়টিও অনুধাবন করতে হবে যে - আমরা আজ ভয়াবহ এক বিপর্যয়ের সম্মুখীন। কাতারে বিশ্বকাপের আয়োজন - জায়নিষ্ট-ক্রুসেডারদের এক ধ্বংসাত্মক আক্রমণ। এর লক্ষ্য হচ্ছে - মুসলিমদের আকীদা-বিশ্বাস ও ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি ভিত্তিকে ধ্বংস করা। আর কাতার জাযিরাতুল আরবে প্রথমবারের মতো এই বিশ্বকাপের আয়োজন করার মাধ্যমে, অর্থ অপচয়ের মধ্য দিয়ে মুসলিম উম্মাহর দেহে ক্রুসেডের নগ্ন থাবা বসাতে সহযোগিতা করছে।
আমাদের এই পবিত্র ভূমিগুলোতে ক্রুসেডারদের সহযোগীরা মুসলিমদের চরিত্র হরণকারী দুর্গ তৈরি করতে শুরু করেছে। যা ক্রুসেডারদের জন্য মুসলিমদের আকীদা-বিশ্বাস, চিন্তা-চেতনা, সভ্যতা-সংস্কৃতিতে হস্তক্ষেপ করার দুয়ার খুলে দেয়। এরা ইসলামী আত্মমর্যাদাবোধ এবং ধর্মীয় পরিচয় নষ্ট করে মুসলিম সন্তানদেরকে ইসলাম বিরোধী কর্মকাণ্ডে অভ্যস্ত করে তুলতে চায়। আর এভাবেই কাতার ক্রুসেডার, নাস্তিক ও সমকামীদেরকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুগের ক্রুসেড হামলায় সরাসরি সহযোগিতা করছে। এর ফলে যে রিদ্দাহকে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু জাযিরাতুল আরব থেকে বিতাড়িত করেছিলেন, তা আবার সেখানে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ইসলামকে জাযিরাতুল আরব থেকে বিতাড়িত করা ও মুসলিমদেরকে ধর্মহীন করে তোলার ক্ষেত্রেও কাতার অংশ নিয়েছে।
দুঃখের বিষয় হচ্ছে: যে জাতি এক সময় আল্লাহর সাথে ওয়াদাবদ্ধ হয়েছিলো যে, তারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে না, তাদের অধিকাংশই আজ ইসলামের পক্ষে প্রতিরোধ থেকে পলায়ন করছে। অথচ তারা তাদের এই ওয়াদা সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে! দেশের যারা প্রথম সারির উলামায়ে কেরাম ও দাঈ, তারাও আজ কাতারের কবীরা গুনাহের ধ্বংসাত্মক আয়োজনের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন না। নিজেদেরকে ‘হক্ক লুকানো’র লাঞ্ছনাকর অপরাধ থেকে বাঁচানোর কি এখনো সময় হয়নি? সময় হয়নি কি মুসলিম উম্মাহকে এই ভয়াবহ আয়োজনে অংশ গ্রহণ করা থেকে সতর্ক করার? অথচ তাদের চোখের সামনেই ভয়াবহ অশ্লীলতায় সয়লাব হয়ে যাচ্ছে কাতার। সেই অশ্লীলতায় আজ উম্মাহ ভেসে যাচ্ছে।
আপনারা আল্লাহকে ভয় করুন! সত্য প্রকাশের মাধ্যমে অশ্লীলতার প্রচারকারীদেরকে দাঁতভাঙ্গা জবাব দিন। এই প্রতিরোধের মাধ্যমে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, কিতাবুল্লাহ-সুন্নাহ এবং মুসলিম উম্মাহর শাসক ও সাধারণ জনগণের কল্যাণ কামনা করুন! এর সাথে সাথে অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা প্রচারকারী চ্যানেল ‘আল জাজিরা’কে বয়কট করুন। কেননা ‘আল জাজিরা’ সংবাদ প্রচারের পরিবর্তে অশ্লীলতা প্রচারের ঠিকাদারি নিয়েছে। অশ্লীল চ্যানেলগুলোর মত আল জাযিরাও যিনা-ব্যভিচার, অশ্লীল প্রদর্শনীসহ উলঙ্গ নৃত্য প্রচার করে যাচ্ছে। এভাবেই তাদের অশ্লীলতার স্রোত ব্যাপকতা লাভ করছে।
এখন দাঈ ও আলেমদের উচিৎ - এই আয়োজনে অংশগ্রহণকারীদেরকে ইসলামের দিকে দাওয়াত দেয়া। অশ্লীলতা প্রচারকারী ও দেহ ব্যবসায়ীদের সামনে ইসলামী জীবনব্যবস্থার সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা। তাদের আরও উচিৎ হবে - আরব উপদ্বীপে ‘অশ্লীলতা বিস্তারের ভয়াবহতা’ মানুষের সামনে তুলে ধরাকে আল্লাহর পথে আহ্বানের একটি মাধ্যম বানানো। যাতে এই মহা বিপদের ভয়াবহতা ও অশ্লীলতার সয়লাব কিছুটা হলেও লাঘব হয়। তাছাড়া তাদের তো এটা অজানা নয় যে, উলামা ও উম্মাহর আবশ্যকীয় কর্তব্য - এই দাওয়াতি কাজ আঞ্জাম দেয়া। এটিকে ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে একটি জিহাদি কার্যক্রম হিসেবে বিবেচনা করা।
ইয়া উম্মাতা মুহাম্মাদ! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
এই ভয়াবহ ফিতনার বিরুদ্ধে শুধু শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ, কান্নাকাটি ও অভিযোগই যথেষ্ট নয়। বরং সময় হয়েছে জিহাদে ঝাঁপিয়ে পড়ার। আমাদের মধ্যে যাদের সক্ষমতা রয়েছে, তারা যেন হাত দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে। যদি তা না পারে, তবে যেন তারা জবানের মাধ্যমে তার প্রতিবাদ করে। আর যদি তাও না পারে, তাহলে অন্তত হৃদয় দিয়ে যেন এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পরিকল্পনা করে। আর এটিই হলো ঈমানের সর্বনিম্ন স্তর।
হৃদয় দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার পন্থা হলো - এ সকল অনুষ্ঠানকে ঘৃণা করা। এই আয়োজনগুলো হোক বিনোদনমুলক কিংবা খৃষ্টানদের গির্জা ও হিন্দুদের মন্দির উদ্বোধনের শিরকী অনুষ্ঠান। হারামাইনের ভূমিতে অনুষ্ঠিত এই বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানগুলো মুসলিমদের চরিত্র হরণ করছে। আর আরব আমিরাত ও বাহরাইনে আয়োজিত গির্জা-মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানগুলো তো মুসলিমদের মৌলিক বিশ্বাসেই আঘাত হানছে।
কাতারে আয়োজিত বিশ্বকাপ 2022 এর অনুষ্ঠান হারামাইন ও বাহরাইনে আয়োজিত অনুষ্ঠানগুলোর চেয়েও বেশী জঘন্য। কেননা এই অনুষ্ঠানটি মুসলিমদের আকীদা-বিশ্বাস, ধন-সম্পদ, চিন্তা-চেতনা ও নীতি-নৈতিকতাকে সমানভাবে ধ্বংস করছে। তাই আমাদের উচিৎ হবে - কাতারকে বয়কট করা। তাদের সম্পর্কে সাধারণ মুসলিমদেরকে সতর্ক করা এবং আরব উপদ্বীপের নতুন প্রজন্ম ভবিষ্যতে যে হুমকির মুখোমুখি হবে, সে বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করা। প্রকৃত মুসলিম কখনও মুসলিম সন্তানদেরকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে পারে না।
পরিশেষে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি - তিনি যেন মুসলিম ভূখণ্ডগুলোকে কাফেরদের আধিপত্য বিস্তার থেকে রক্ষা করেন। কাফেরদেরকে জাযিরাতুল আরবসহ সমগ্র মুসলিম বিশ্ব থেকে বিতাড়িত করেন।
হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে হেফাযত করুন, যেন আমরা অশ্লীলতার এই মহা স্রোতকে সমর্থন না করি।
হে আল্লাহ! আমরা কি উম্মাহর কাছে ইসলামের বার্তা পৌঁছাতে পেরেছি? হে আল্লাহ, আপনি সাক্ষী থাকুন!
হে আল্লাহ! আমরা কি উম্মাহর কাছে ইসলামের বার্তা পৌঁছাতে পেরেছি? হে আল্লাহ, আপনি সাক্ষী থাকুন!
হে আল্লাহ! আমরা কি উম্মাহর কাছে ইসলামের বার্তা পৌঁছাতে পেরেছি? হে আল্লাহ, আপনি সাক্ষী থাকুন!
আর আমাদের তো কর্তব্য হচ্ছে সুস্পষ্ট বার্তা পৌঁছে দেয়া।
وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين
রবিউল আখিরাহ, ১৪৪৪ হিজরি নভেম্বর, ২০২২ ইংরেজি |
مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة النصر للإنتاج الإعلامي
قاعدة الجهاد في شبه القارة الهندية
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!
আন নাসর মিডিয়া
আল কায়েদা উপমহাদেশ
In your dua remember your brothers of
An Nasr Media
Al-Qaidah in the Subcontinent