পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে
আন-নাফির বুলেটিন
ইস্যু ৮
জুমাদা আল-উলা ১৪৩৮ হিজরী
“তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না।”
প্রায় প্রত্যেকে- এমনকি ধর্মদ্রোহী পশ্চিমারাও সিআইএ[১] (CIA) এর নাম শুনে বিরক্ত হয়, কেননা এই সংগঠনটির জঘন্য অপরাধ ও হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সকলেই অবহিত। এবং ঈমানদার বান্দারা যখন তাদের দ্বারা বাঁধার সম্মুখীন হতে লাগল, মুরতাদ আল সাউদ পরিবার[২] এযুগের হুবাল (মিথ্যা ইলাহ) আমেরিকার প্রতি তাদের আনুগত্য প্রকাশ করল ও তাদের হয়ে কাজ করতে লাগল। এবং ইসলাম ও মুসলিম এবং জিহাদ ও মুজাহিদিনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিশাল ভুমিকা রাখার কারণে, এর প্রশংসাস্বরূপ সি আইএ তাদের যুবরাজকে[৩] অপমান ও লাঞ্ছনার এক মেডেল প্রদানপূর্বক সম্মানিত করেছে। সি আইএর নতুন প্রধান, মাইক (Mike Pompeo) তাকে এই মেডেল প্রদান করে। এই ঘৃণ্য ক্রুসেডার কর্মক্ষেত্রে যোগদানের পূর্বেই মুসলিম ও ইসলামবিরোধী বিবৃতির মধ্য দিয়ে তার ক্যারিয়ার পূর্ণ করে।
আমরা এসকল মুরতাদ প্রশাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ক্ষেত্রে শাইখ উসামা বিন লাদেনের (রহিমাহুল্লাহ) দেখানো পথের অনুসরণ করি, যেমনটা তিনি বলেছেন যে,
“এবং আমরা নিশ্চিত যে, মুসলিমদের মধ্যে যারা একনিষ্ঠ ও ন্যায়পরায়ণ, তারা অবশ্যই অগ্রসর হবে ও ঝাঁপিয়ে পড়বে এবং এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে উম্মাহকে অস্ত্রে সজ্জিত করবে, যাতে তারা আমেরিকার দাসত্বে বন্দী এই মুরতাদ প্রশাসনের দাসত্বের কবল থেকে উম্মাহকে মুক্ত করতে পারে, এবং এই যমীনে আল্লাহর আইনকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে...”
وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ
তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না। সুরা মায়িদাহ (৫:৫১)
_____________________________________________________
[১] সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (ইংরেজি: Central Intelligence Agency) (CIA), যা সিআইএ নামেও পরিচিত, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের আওতাধীন একটি বেসামরিক গোয়েন্দা সংস্থা।
এই গোয়েন্দা সংস্থার দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং উচ্চপদস্থ নীতিনির্ধারকদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে গঠিত অফিস অফ স্ট্র্যাটেজিক সার্ভিসেস (OSS)-এর উত্তরসূরী হিসেবে সিআইএ’র জন্ম। এর কাজ ছিলো যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন শাখা-প্রশাখার মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করা। ১৯৪৭ সালে অনুমোদিত হওয়া ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বা জাতীয় নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে সিআইএ গঠন করা হয়, যাতে বলা হয় ‘এটি কোনো পুলিশ বা আইন রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান নয়, দেশে কিংবা বিদেশে যেখানেই কাজ করুক না কেনো’।
সিআইএ’র প্রাথমিক কাজ হচ্ছে বিদেশি সরকার, সংস্থা ও ব্যক্তিদের বিশেষ করে মুসলিম ব্যক্তিত্ব, মুজাহিদিন ও উলামায়ে কেরামদের সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করা এবং তা যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের কাছে তা সরবরাহ ও পরামর্শ প্রদান করা। সিআইএ এবং এর দায়বদ্ধতা ২০০৪ সালে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। ২০০৪-এর ডিসেম্বরের পূর্বে সিআইএ ছিলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা; এটি শুধু নিজের কর্মকাণ্ডই নয়, বরং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কর্মকাণ্ডও দেখাশোনা করতো। কিন্তু ২০০৪ সালে অনুমোদিত ইন্টেলিজেন্স রিফর্ম অ্যান্ড টেররিজম প্রিভেনশন অ্যাক্ট, ২০০৪ দ্বারা তা পরিবর্তিত
[২] আল সাউদ পরিবার হল সৌদি আরব শাসনকারী রাজবংশ। এতে হাজারেরও বেশি সদস্য রয়েছে। মুহাম্মদ বিন সাউদ ও তার ভাইদের বংশধরদের নিয়ে এই পরিবার গঠিত। বর্তমানে মূলত আবদুল আজিজ ইবনে সাউদের বংশধররা এই রাজবংশের নেতৃত্ব দিয়ে থাকে।
রাজ পরিবারের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি হচ্ছে সৌদি আরবের বাদশাহ। প্রথম বাদশাহ ইবনে সাউদের এক ছেলে থেকে অন্য ছেলের হাতে বাদশাহর ক্ষমতা হস্তান্তরিত হয়ে আসছে। হিসাব অনুযায়ী রাজপরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ১৫,০০০ তবে অধিকাংশ ক্ষমতা ২,০০০ জনের হাতে ন্যস্ত রয়েছে।
আল সাউদ তিনটি পর্যায়ের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। এগুলো যথাক্রমে প্রথম সৌদি রাষ্ট্র, দ্বিতীয় সৌদি রাষ্ট্র ও আধুনিক সৌদি আরব।
প্রথম সৌদি রাষ্ট্রকে শায়েখ আব্দুল ওয়াহাব নজদি রহঃ এর সমর্থক বলা হলেও আসলে তারা মুলত শায়েখ রহঃকে ধোঁকা দিয়েছে এবং তারা উসমানী খেলাফতের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। দ্বিতীয় সৌদি রাষ্ট্র অভ্যন্তরীণ লড়াইয়ের কারণে চিহ্নিত হয়। আধুনিক সৌদি আরব মধ্য প্রাচ্যে প্রভাবশালী। পূর্বে আল সাউদ পরিবার মুসলিমদের একমাত্র ভরসা উসমানীয় খিলাফত ও কিছু হকপন্থী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দেশের ভেতরে ও বাইরে লড়াই করেছে,
এছাড়াও বর্তমান আল সাউদ পরিবার মুসলিমদের ধোঁকা দিয়ে মুজাহিদদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়েছে। এবং অসংখ্য সত্যবাদী উলামায়ে কেরামকে হত্যা করেছে এবং আমেরিকার পক্ষে গোয়েন্দা বৃত্তি করেছে। আমেরিকান সেনাবাহিনীকে পবিত্র ভূমিতে ঘাঁটি স্থাপনে অনুমতি ও সাহায্য করেছে।
সৌদি শাসকবর্গের ইসলাম বিরোধী তৎপরতা ও আকিদা বিশ্বাস জানতে দেখুন আল কায়েদা আমীর শায়েখ আইমান আয যাওয়াহিরি হাফিজাহুল্লাহর বয়ান- হত্যাকারী সৌদি রাজপরিবার
(
)শায়খ ফারিস আয-যাহরানি (রহঃ) এর বয়ান “সৌদি জাতীয়তাবাদ আমার পদতলে” (
)উল্লেখ্য সৌদি তাগুতের বিরুদ্ধে হক কথা বলায় ২০১৫ সালের ২রা মার্চে শায়খ ফারিস(রহ) সহ ৪০এর অধিক স্বনামধন্য আরব আলেমকে হত্যা করে আমেরিকা-ইজরায়েলের গোলাম সৌদি সরকার।
আমেরিকানদের গোলামি করায় সৌদি শাসকদের সমালোচনায় বলছেন প্রখ্যাত সালাফি আলেম নাসিরুদ্দিন আলবানি (রহঃ) (https://www.youtube.com/watch?v=33lzKiDNFPk)
[৩] গত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ইংরেজি জিহাদ ও মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফকে জর্জ টেনেট মেডেল দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএসের প্রধান মাইক পম্পেও।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, সিআইএর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম বিদেশ সফরে সৌদি আরবে আসেন মাইক পম্পেও।
২০১২ সাল থেকে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফ।
আল-কায়েদা মুজাহিদদের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করেছে। ২০০৯ সালে আল-কায়েদার মুজাহিদদের এক গুপ্তহামলা থেকে বেঁচে যায় সে।
‘কথিত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তার গোয়েন্দা তৎপরতা এবং বিশ্ব নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য তার অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে’ বিশ্বসন্ত্রাসী আমেরিকার জর্জ টেনেট পুরস্কারে দেওয়া হয়েছে তাকে।
জর্জ টেনেট সিআইএর সবচেয়ে বেশি সময় দায়িত্ব পালনকারী পরিচালক ছিল। ১৯৯৬-২০০৪ সাল পর্যন্ত তার দায়িত্বের আমলে আফগানিস্তান ও ইরাকে আগ্রাসন চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র লক্ষ লক্ষ মুসলমানদের হত্যা করেছে। এবং এখনো করে যাচ্ছে।
PDF
https://archive.org/details/an_nafir-8BN
https://archive.org/download/an_nafir-8BN/an_nafir-8BN.pdf
http://pc.cd/mBmotalK
WORD
https://archive.org/details/an_nafir-8BN_doc
https://archive.org/download/an_nafir-8BN_doc/an_nafir-8BN.docx
http://pc.cd/0smotalK