আচরণবিধি
আল-কায়েদা উপমহাদেশ
আস-সাহাব মিডিয়া উপমহাদেশ
শাওয়াল ১৪৩৮ হি । জুন ২০১৭ ঈ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
সকল প্রশংসা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য, সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর রাসূল, তাঁর পরিবার পরিজন ও সাহাবিদের প্রতি এবং কেয়ামত পর্যন্ত আগত তাঁর সকল অনুসারীর প্রতি।
প্রথম কথা
জুলুম, ফাসাদ এবং ফিতনার যে আঁধার রাত্রি সবদিক থেকে ছেয়ে আছে, তার পরিসমাপ্তি আল্লাহ একমাত্র জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহর মাঝে রেখেছেন এবং এজন্যই তিনি জিহাদের বিধান দান করেছেন। এই জিহাদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ফরজ এবং বর্তমান সময়েরও অপরিহার্য দাবি। আবার এটিও পরিষ্কার যে, যেমনিভাবে জিহাদের অন্যতম একটি লক্ষ্য হলো, কুফুরি শক্তি চূর্ণ করে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর শরীয়ত প্রতিষ্ঠিত করা, তেমনি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো, মুসলমানদের দ্বীন-ঈমান, ইজ্জত-আব্রু ও সহায়-সম্পদের প্রতিরক্ষা এবং তাদের কল্যাণকামনা। আর এদুটি লক্ষ্য পরস্পরে এমনভাবে ওতপ্রোতভাবে জড়িত যে, একটি উপেক্ষা করে অপরটিতে এগিয়ে যাওয়া আদৌ সম্ভব নয়।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে, এই ভূখণ্ডে এমন জিহাদি আন্দোলন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োজন, যা উল্লেখিত দুটি লক্ষ্যকে সমান গুরুত্ব দিয়ে অগ্রসর হবে। এমন আন্দোলন নিঃসন্দেহে উপমহাদেশের মুসলমানদের জন্য রহমত ও বরকতের কারণ হবে এবং জুলুম ও ফাসাদের এই কালো রাত্রিকে শরীয়তের আলোকিত ভোরে পরিণত করার মাধ্যম হবে ইনশাআল্লাহ। সুতরাং, সকল মুজাহিদ এবং জিহাদি জামাআতের শরঈ ফরিযা এটাই যে, তারা নিজেদের সকল জিহাদি কার্যক্রম এই দুই লক্ষ্যকে কেন্দ্র করেই পরিচালনা করবেন।
এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য জিহাদের কর্মপদ্ধতি কী হওয়া উচিৎ? তা সুস্পষ্ট করে তুলে ধরারই একটি প্রচেষ্টা- জামাআত কায়েদাতুল জিহাদ উপমহাদেশের এই ‘আচরণবিধি’।
আমরা এখানে উল্লেখ করা জরুরী মনে করছি যে, জিহাদ একটি সম্মিলিত ইবাদত। এখানে কোন ব্যক্তি বা জামাআতের কার্যক্রম এবং তার প্রভাব ও ফলাফল শুধু ঐ ব্যক্তি বা জামাআতের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং এটি ময়দানে থাকা সকল মুজাহিদ এবং পুরো উম্মতকে প্রভাবিত করে। এজন্য আমরা যেমনিভাবে জামাআতের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রত্যেক মুজাহিদকে এই আচরণবিধির পূর্ণ অধীন মনে করি, তেমনি ভ্রাতৃস্থানীয় অন্যান্য জিহাদি জামাআতগুলোর প্রতি বিনীত আবেদন করি, আসুন আমরা সকলেই জিহাদের লক্ষ্য অর্জনে আমাদের উপর আরোপিত শরঈ ফরিযা আদায় করি এবং এই বরকতময় কাজে আমরা একে অপরের সহযোগী হই। আমরা সকলে মিলে এমন বিষয়গুলোর দ্বার রুদ্ধ করি, যা এই পুরো ভুখণ্ডে জিহাদি আন্দোলনের জন্য ক্ষতিকর। যদি আমরা সততার সঙ্গে এই সম্মিলিত দায়িত্ব পালন করি, তাহলে নিঃসন্দেহে আমাদের এই জিহাদি সফর শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যমই হবে না; বরং এই ভূখণ্ডে নির্যাতিত উম্মতের নুসরত, মুসলমানদের হেদায়াত এবং কুফরি শাসনব্যবস্থা উচ্ছেদেরও কারণ হবে ইনশাআল্লাহ।
ভূমিকা
‘জামাআত কায়েদাতুল জিহাদ উপমহাদেশ’ হলো, ‘জামাআত কায়েদাতুল জিহাদ’ (যা ‘আল-কায়েদা’ নামে পরিচিত)-এর একটি শাখা, যা হিজরি ১৪৩৫ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এই জামাআত মূলত অনেকগুলো মাজমু্আর সমন্বিত ও পুনঃগঠিত রূপ, যেগুলো বহু আগে থেকেই এই উপমহাদেশে আল-কায়েদার অধীনে বিচ্ছিন্নভাবে জিহাদি কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। এই জামাআত কেন্দ্রীয় ‘জামাআত কায়েদাতুল জিহাদে’র আমীরের আনুগত্যের অধীন। এর পরিধি আরাকান (বার্মা)-সহ ভারত উপমহাদেশের সম্পূর্ণ ভূখণ্ড, বিশেষভাবে পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশ তার অন্তর্ভুক্ত। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এই জামাআত ‘জামাআত কায়েদাতুল জিহাদ’-এর সাধারণ দিক-নির্দেশিকা মোতাবেক জিহাদি কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। আল্লাহ তা’আলার তৌফিকে এখন ‘জামাআত কায়েদাতুল জিহাদ উপমহাদেশ’-এর বিস্তারিত আচরণবিধি প্রকাশ করা হচ্ছে।
‘জামাআত কায়েদাতুল জিহাদ’-এর আমীর শায়খ আইমান আয-যাওয়াহিরি (হাফিযাহুল্লাহ)-এর পক্ষ থেকে কার্যকর ‘জিহাদের সাধারণ দিক-নির্দেশিকা’ (توجيهات عامة للعمل الجهادي)-কে মূল ভিত্তি রেখেই এই আচরণবিধি প্রস্তুত করা হয়েছে। একইভাবে, অন্যান্য মুজাহিদ আলেমদের ফাতওয়া এবং অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময়কালের জিহাদের অভিজ্ঞতা থেকেও সাহায্য নেয়া হয়েছে।
এই আচরণবিধিতে (শরঈ) মূলনীতির পাশাপাশি কিছু ব্যবস্থাপনাগত বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যা প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তন পরিবর্ধনের অবকাশ রাখে। জামাআত কায়েদাতুল জিহাদ উপমহাদেশের আমীর, জামাআতের শুরা সদস্যদের পরামর্শক্রমে এই পরিবর্তন করতে পারবেন। জামাআতের সঙ্গে সংযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তি এই আচরণবিধি অনুযায়ী কাজ করতে বাধ্য থাকবেন। এর বিপরীত কোনো কার্যক্রম পরিলক্ষিত হলে, জামাআতের আমীর ও শুরা সদস্যগণ কৈফিয়ত তলবের অধিকার রাখবেন।
আচরণবিধিতে ব্যবহৃত পরিভাষা
জামা’আতঃ এই পরিভাষা দ্বারা এখানে উদ্দেশ্য ‘জামাআত কায়েদাতুল জিহাদ উপমহাদেশ’, যাকে সংক্ষেপে ‘আল-কায়েদা উপমহাদেশ’ও বলা হয়।
আমীর, নায়েবে আমীর ও শুরা-সদস্যঃ যেখানে জামাআতের আমীর, নায়েবে আমীর এবং শুরা সদস্য ব্যবহৃত হয়েছে, সেখানে জামাআত কায়েদাতুল জিহাদ উপমহাদেশের আমীর, নায়েবে আমীর এবং শুরা সদস্য উদ্দেশ্য।
‘আল-লাজনাতুশ শরঈয়্যাহ’ বা শরীয়া বিভাগঃ শরীয়া বিভাগ দ্বারা উদ্দেশ্য, জামাআত কায়েদাতুল জিহাদ উপমহাদেশের ঐ বিভাগ, যা উলামায়ে কেরামের সমন্বয়ে গঠিত। আল-কায়েদা উপমহাদেশকে শরঈ দিক-নির্দেশনা প্রদান এই বিভাগের দায়িত্ব।
আচরণবিধির উদ্দেশ্য
এই আচরণবিধির প্রধান উদ্দেশ্যগুলো হলোঃ
জামাআতের সাথে সংযুক্ত মুজাহিদদের জিহাদি কার্যক্রমের সীমানা নির্ধারণ করে দেয়া এবং তাদেরকে শরীয়ত পরিপন্থী কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা। একই সঙ্গে এমন কাজ থেকেও তাদের বিরত রাখা, যা শরীয়তের দৃষ্টিতে হয়তো জায়েয, কিন্তু চূড়ান্ত বিচারে জিহাদি আন্দোলনের জন্য ক্ষতিকর কিংবা অলাভজনক।
জিহাদের ময়দানে থাকা সকল মুজাহিদকে লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ ও বাছাইকরণ এবং পদ্ধতির ঐক্য সাধনের জন্য উন্মুক্ত আহ্বান জানানো।
সাধারণ মুসলমানদেরকে নিজেদের উদ্দেশ্য ও পদ্ধতি সম্পর্কে অবহিত করে জিহাদের দাওয়াত প্রদান।
প্রথম অনুচ্ছেদঃ জামাআতের লক্ষ্য
১। তাওহীদ ও একত্ববাদের দাওয়াত দেয়া। অর্থাৎ, ইবাদত থেকে শুরু করে শাসনব্যবস্থা পর্যন্ত সবকিছু একমাত্র আল্লাহ তা’আলার জন্য নির্দিষ্ট করার আহ্বান জানানো।
২। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনিত শরীয়ত এবং তাঁর নবুওয়্যাতী পদ্ধতির খেলাফত প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা। (ইসলামী ইমারাত আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা এবং তা শক্তিশালী করা এই লক্ষ্যেরই অংশ।)
৩। সকল অধিকৃত ইসলামী ভূখণ্ড এবং বায়তুল মুকাদ্দাসসহ সকল ইসলামী পবিত্র স্থান কাফেরদের দখল থেকে মুক্ত করা।
৪। অত্যাচার, অধিকার হরণ ও শোষণের পথ বন্ধ করা এবং এমন একটি ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে সর্বত্র শান্তি, শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা, কল্যাণ ও ন্যায়পরায়ণতা বিরাজ করবে।
৫। মুসলমানদের দ্বীন, জান, ইজ্জত ও সম্পদের হেফাজত ও প্রতিরক্ষা। একই সঙ্গে পুরো দুনিয়ার মাজলুমদের সাহায্য করা।
৬। কাফের ও তাগুতের জেলে বন্দী মুসলিম ভাই-বোনদের মুক্ত করা।
৭। উম্মতের ধনসম্পদ লুটেরা শক্তিগুলোর হাত থেকে মুক্ত করে ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে উম্মতের মাঝে বণ্টন করা।
৮। দেশ, জাতি ও ভাষার মূর্তি চূর্ণ করে মুসলিম উম্মাহ’র ঈমানী ভ্রাতৃত্বকে জাগ্রত করা এবং ‘এক উম্মত’-এর ধারণা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।
৯। পরকালের জীবনে জান্নাত লাভ করা, যাকে আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত জিহাদের রাস্তার উপর দৃঢ় থাকার সাথে জুড়ে দিয়েছেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা ইরশাদ করেনঃ
أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَعْلَمِ اللَّهُ الَّذِينَ جَاهَدُوا مِنكُمْ وَيَعْلَمَ الصَّابِرِينَ
“তোমাদের কি ধারণা, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ আল্লাহ এখনও দেখেননি তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদ করেছে এবং কারা ধৈর্যশীল!” (সূরা আলে ইমরানঃ ১৪২)
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদঃ জামাআতের কিছু গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি
১। জামাআত আল-কায়েদা উপমহাদেশ, বৈশ্বিক কুফরি ব্যবস্থা ধ্বংস করার জন্য এবং শরীয়ত কার্যকর করার জন্য কিতাল ফী সাবিলিল্লাহকে ফরজ মনে করে এবং এই কিতাল করতে গিয়ে কোনো নিন্দুকের নিন্দায় পরোয়া করে না।
২। জামাআত শরীয়ত প্রতিষ্ঠার জন্য দাওয়াত ও কিতালকে অত্যাবশ্যক মনে করে এবং চেষ্টা করে, যেন এই দুটির প্রত্যেকটি অপরটিকে এগিয়ে নেয় এবং শক্তিশালী করে।
৩। জিহাদের ফরজ আদায়ের জন্য জামাআত নিজেকে শরীয়তের ঐসব সুস্পষ্ট নীতির মাঝে সীমাবদ্ধ রাখে, যা সালাফে-সালেহীন কুরআন ও সুন্নাহ’র আলোকে লিপিবদ্ধ করেছেন।
i. ফলে জামাআত শত্রুদের হত্যা করা, ওদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া এবং ওদের সম্পদকে গনিমত বানানোর ক্ষেত্রে কোনো তা’উয়ীল বা অস্পষ্ট কোনো অভিব্যক্তিকে ভিত্তি বানায় না, বরং শরীয়তের সুস্পষ্ট ও প্রতিষ্ঠিত দলীলকে ভিত্তি বানায়।
ii. জামাআত নিজস্ব মুজাহিদদের এই সীমায় সীমাবদ্ধ রাখে যে, তারা যেন শত্রুর সাথে আচরণের ক্ষেত্রে, এমনকি রণাঙ্গনেও শরীয়তের মূলনীতি অনুসরণ করে এবং অসংগত ও অস্পষ্ট তা’উয়ীলের ভিত্তিতে কোনো সন্দেহজনক বিষয় অনুসরণ করা থেকে বিরত থাকে। কাজেই, কোনো ব্যক্তির জান ও মাল সন্দেহজনক অবস্থায় থাকলে, জামাআত নিজ সাথীদেরকে তা পরিহার করে উম্মতের ফকীহ আলেমগণের বিবৃত প্রতিষ্ঠিত নীতির মাঝে সীমাবদ্ধ থাকার আদেশ দেয়।
৪। জামাআত প্রত্যেক এমন লক্ষ্যবস্তুকে নিশানা বানানো অথবা হত্যা করা থেকে বিরত থাকে, যাকে হত্যা করা শরীয়ত অনুযায়ী হয়তো জায়েয, কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের ফলে জিহাদের লাভ অপেক্ষা ক্ষতি বেশি হয় অথবা যা মুসলিম উম্মতের উপলব্ধির বাইরে এবং মুসলিম উম্মতকে জিহাদ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।
৫। জামাআত প্রত্যেক এমন পন্থায় অর্থ-সম্পদ নেয়া থেকে বিরত থাকে, যার কারণে জিহাদ ও মুজাহিদদের বদনাম হয়।
i. ফলে জামাআত এমন কাফের ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ-সম্পদ (ছিনিয়ে) নেয়া থেকে বিরত থাকে, যা শরীয়ত অনুযায়ী জায়েয, কিন্তু ঐ ব্যক্তি গরীব অথবা মাজলুম শ্রেণীর মানুষ হওয়ায় তাতে ইসলাম ও জিহাদের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাছাড়া জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহর অন্যতম একটি উদ্দেশ্য হলো, গরীব, অভাবী ও মাজলুম শ্রেণীকে শাসক শ্রেণীর জুলুম থেকে মুক্ত করে ইসলামের ছায়ায় নিয়ে আসা।
ii. একই কারণে জামাআত গনিমতের তালিকায় এমন সুস্পষ্ট বস্তুকে নিশানা বানায়, যার ব্যাপারে কারও কোনো সন্দেহ না হয়।
৬। একইভাবে, মুখে কালিমা উচ্চারণ করা কোনো ব্যক্তিকে তাকফির করা, তার সাথে যুদ্ধ করা, তাকে হত্যা করার ব্যাপারে জামাআত নিজেকে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ’র সুস্পষ্ট ও প্রতিষ্ঠিত নীতির মাঝে সীমাবদ্ধ রাখে। পাশাপাশি প্রত্যেক এমন অনুপযুক্ত তা’উয়ীল থেকে নিজেকে বাঁচায়, যা শরীয়তের ভারসাম্যপূর্ণ রাস্তা থেকে মানুষকে বিচ্যুত করে। একইভাবে, জামাআতের সাধারণ সাথীদেরকেও এরকম স্পর্শকাতর বিষয়ের উপর কথা বলা থেকে বিরত রাখে এবং এসব বিষয়ে তাদেরকে হক্বপন্থী উলামায়ে কেরামের শরণাপন্ন হওয়ার নির্দেশ দেয় এবং তাদের দেয়া সীমারেখায় সীমাবদ্ধ রাখে।
৭। জামাআত শরঈ বিষয়গুলোতে এ অঞ্চলের হক্বপন্থী আলেমদের অনুসরণ করে এবং সমকালীন ঐসকল আলেম থেকে ‘মুস্তাফিদ’ ও উপকৃত হওয়াকে জরুরী মনে করে, যাদের তাকওয়া, ইলম ও অভিজ্ঞতা প্রতিষ্ঠিত ও স্বীকৃত। একইভাবে, নব-উদ্ভূত বিষয়গুলোতে তাঁদের রায়ের দিকে ফিরে যাওয়ার মত পোষণ করে।
৮। জামাআত আল-কায়েদা উপমহাদেশের নীতি হলো, সম্পূর্ণ মনযোগ কুফরি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যুদ্ধের উপর রাখা এবং অন্য কোনো পার্শ্বযুদ্ধে না জড়ানো।
৯। জামাআত যেসব লক্ষ্যবস্তুর উপর কাজ করে, প্রকাশ্যে তার দায় স্বীকার করে। যেসব লক্ষ্যবস্তুর উপর হামলা করাকে ভুল মনে করে, তার ঘোষণা এই আচরণবিধির মাধ্যমে জাতিকে অবগত করছে। এরপরও যদি কখনও জামাআতের পক্ষ থেকে ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়ে যায়, তাহলে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার কাছে এর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং জাতির সামনেও সেই ভুল স্বীকার করে ক্ষতিপূরণ ও সংশোধনের চেষ্টা করে। কারণ আখিরাতের পাকড়াও দুনিয়ার পাকড়াও থেকে অনেক গুণ বেশি কঠিন।
১০। উম্মতের কল্যাণকামী মুজাদ্দিদ শায়খ উসামা বিন লাদেন (রহিমাহুল্লাহ)-এর সময় থেকে আল-কায়েদা নিজেদের অপারেশনে সামরিক কৌশলের উপর বিশেষ মনযোগ দিয়ে আসছে। ফলে লক্ষ্যবস্তুর উপর হামলা করার ব্যাপারে স্থান নির্বাচন, সময় ও উপলক্ষ্যের যথার্থতার উপর বিশেষভাবে খেয়াল রাখা হয়। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সীরাত মোবারকের আলোকে, আমরা এমন কৌশল অবলম্বনের চেষ্টা করি, যাতে সীমিত সরঞ্জামের মাধ্যমে অধিক থেকে অধিকতর ভালো ফলাফল অর্জন করা যায়।
তৃতীয় অনুচ্ছেদঃ ইসলামী ইমারাত আফগানিস্তানের সাথে সম্পর্ক
১। জামাআত কায়েদাতুল জিহাদের প্রতিষ্ঠাতা, শায়খ উসামা বিন লাদেন (রহিমাহুল্লাহ), শ্রদ্ধাস্পদ আমীরুল মু’মিনীন মোল্লা মুহাম্মাদ উমর (রহিমাহুল্লাহ)-এর হাতে বাইআত দিয়েছিলেন। উসামা বিন লাদেন (রহিমাহুল্লাহ)-এর শাহাদাতের পর শায়খ আইমান আয-যাওয়াহিরি (হাফিযাহুল্লাহ) এই বাইআতের নবায়ন করেন এবং আমীরুল মু’মিনীন মোল্লা মুহাম্মাদ উমর (রহিমাহুল্লাহ)-এর ওফাতের পর আমীরুল মু’মিনীন মোল্লা আখতার মানসুর (রহিমাহুল্লাহ) এবং উনার পর আমীরুল মু’মিনীন শায়খ হেবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা (হাফিযাহুল্লাহ)-এর কাছে বাইআত প্রদান করেন।
২। জামাআত আল-কায়েদা উপমহাদেশের আমীর মাওলানা আসেম উমর (হাফিযাহুল্লাহ) শায়খ আইমান আয-যাওয়াহিরি (হাফিযাহুল্লাহ)-এর মাধ্যমে ইসলামী ইমারাত আফগানিস্তানের বর্তমান আমীর শ্রদ্ধাস্পদ আমীরুল মু’মিনীন, শায়খ হেবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা (নাসারাহুল্লাহ)-এর কাছে বাইআত প্রদান করেন। আল-কায়েদা উপমহাদেশ এই বাইআতের অধীনে পুরো ভারত উপমহাদেশে শরীয়ত প্রতিষ্ঠায় প্রচেষ্টারত।
৩। জামাআত আল-কায়েদা উপমহাদেশের লক্ষ্যসমূহের মধ্যে একটি বড় লক্ষ্য হলো, ইসলামী ইমারাত আফগানিস্তানকে শক্তিশালী করা এবং তার প্রতিরক্ষা ও স্থায়ীত্বের ভিত মজবুত করা। এ লক্ষ্যে জামাআত, আফগানিস্তানের বাইরে যেখানে ইসলামী ইমারাতের শত্রু আছে, সেখানে লড়াই করে এবং আফগানিস্তানের ভেতরেও ইমারাতের সাথে মিলে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করে। ভারত উপমহাদেশের মুসলমানদেরকে ইসলামী ইমারাতের বাইআত ও নুসরাতের দাওয়াত দেয়।
চতুর্থ অনুচ্ছেদঃ উম্মতে মুসলিমার সঙ্গে আমাদের আচরণবিধি
১। মুসলমান জনসাধারণ আমাদের ভাই। তাদের জান, মাল, ইজ্জত-আব্রুর হেফাজতকে আমরা আমাদের উপর ফরজ মনে করি। তাদের নেককার ও গোনাহগার সকলের ইজ্জত, আব্রু, জান, মাল ও ধনসম্পদ আমরা আমাদের জন্য হারাম মনে করি। তাদের সবার পরিপূর্ণ হক্ব আদায়ের ব্যাপারে আমরা বদ্ধপরিকর ইনশাআল্লাহ।
২। আমাদের কোনো সাথীর পক্ষ থেকে, আল্লাহ না করুন, যদি কোনো মুসলমানের উপর অবিচার হয়ে যায়, এক্ষেত্রে আমরা নিজেদেরকে শরঈ ফায়সালার সম্পূর্ণ অধীন মনে করি।
৩। ভারত উপমহাদেশের মুসলমানদেরকে সরকারি ও বেসরকারি জালেমদের হাত থেকে রক্ষা করা আমরা আমাদের দায়িত্ব মনে করি এবং মুজাহিদদেরকে সাধ্যমত এই দায়িত্ব পূরণ করার তাগিদ দেই।
৪। মুসলিম জনসাধারণের সাথে আমাদের সম্পর্ক ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্বের। দাওয়াত, ইসলাহ, আমর বিল মা’রুফ ও নাহি-আনিল মুনকারের মাধ্যমে আমরা তাদেরকে দ্বীনের পথে আগ্রহী করতে চেষ্টা করি। তাদের মাঝে বিদ্যমান শরীয়ত বিরোধী বিষয়গুলোর সংশোধন এবং তাদেরকে জিহাদি কাফেলার সাথে যুক্ত করার জন্যও আমরা সচেষ্ট।
৫। যেহেতু উলামায়ে কেরাম এই উম্মতের প্রকৃত ইমাম ও রাহবার, তাঁদের মাধ্যমেই সমাজের ইসলাহ ও সংশোধন, তা’লীম ও তারবিয়তের কাজ সম্পাদিত হয়, এজন্য তাঁদের চারপাশে জনসাধারণকে জড়ো করার মাধ্যমে আমরা সমাজে উলামায়ে কেরামের সম্মান ও গুরুত্ব বৃদ্ধি এবং তাঁদের ভূমিকাকে আরও কার্যকর করতে চাই।
৬। আমাদের প্রচেষ্টা হলো, থানা ও কোর্টের ফাসাদ এবং কুফরি ও অত্যাচারী শাসনব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন করে, মুসলিম জনসাধারণকে মসজিদ ও দারুল ইফতা এবং হক্বপন্থী আলেমদের সাথে সম্পৃক্ত করা এবং এখান থেকেই তাদের যাবতীয় সমস্যার সমাধানে উৎসাহিত করা।
৭। আমরা পাকিস্তান সীমান্তের কবিলাভুক্ত তথা গোত্রীয় শাসনাধীন জনপদকে, অত্যাচারী কালাকানুন এবং গণতান্ত্রিক কুফরি শাসনব্যবস্থা থেকে মুক্ত করে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনিত নিরাপদ ও ন্যায়পরায়ণ শাসনব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করতে চাই। এজন্য আমরা কাবায়েলী আলেম ও সর্দারদেরকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করি এবং তাঁদের মাধ্যমে এই জনপদের গোত্রগুলোকে ইসলামী বসন্তে নিয়ে আসার পদ্ধতিকেই উপযুক্ত মনে করি।
৮। احب الناس الى الله انفعهم للناس অর্থাৎ ‘মানবজাতির মাঝে আল্লাহর কাছে তাঁরাই সবচেয়ে প্রিয়, যারা মানবজাতির জন্য সবচেয়ে উপকারী’ এই নীতির ভিত্তিতে যেখানেই আল্লাহ আমাদের সামর্থ্য দেন, সেখানেই আমরা এমন সকল কাজে অংশগ্রহণের চেষ্টা করি, যাতে মুসলমানদের দ্বীনি ও দুনিয়াবি ফায়দা হয়।
৯। আল্লাহর দিকে আহ্বান, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধের ক্ষেত্রে আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শের প্রতি পূর্ণ লক্ষ্য রাখার চেষ্টা করি, যেন জনসাধারণকে দ্বীনের সাথে যুক্ত করা যায়। আমরা মনে করি এর মাধ্যমেই সকল ন্যায় ও কল্যাণের প্রসার এবং সকল অন্যায় ও পাপকাজের পথ বন্ধ হবে।
১০। জনসাধারণের কোনো দল বা গোত্র মুজাহিদদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হলে, আমরা নিজেদেরকে নিম্নবর্ণিত নীতিতে সীমাবদ্ধ রাখিঃ
প্রথমে দাওয়াত ও আপোষ মীমাংসার মাধ্যমে তাদেরকে যুদ্ধ থেকে বিরত রাখার সম্ভাব্য সকল প্রচেষ্টা চালাই। কারণ মূল যুদ্ধ ছেড়ে পার্শ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়া কুফরি শাসনব্যবস্থাকেই উপকৃত করে।
যদি দাওয়াত ও আপোষ মীমাংসার মাধ্যমে তাদেরকে যুদ্ধ থেকে বিরত রাখা সম্ভব না হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কেবল ততটুকুই শক্তি প্রয়োগ করি, যতটুকুতে তাদের জুলুম থেকে মুজাহিদদেরকে রক্ষা করা যায়।
উপরোল্লেখিত কোনো দলের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগের সময়, তাদের মাঝে যারা সরাসরি লড়াইয়ে জড়িত এবং যারা জড়িত নয়, তাদের মাঝে পর্থক্য করাকে জরুরী মনে করি। আর তাদের অর্থ-সম্পদের মীমাংসার দায়িত্ব জামাআতের শরীয়াহ বিভাগের উপর অর্পণ করি।
পঞ্চম অনুচ্ছেদঃ শত্রুর বিবরণ ও সামরিক কার্যক্রম
আমাদের যুদ্ধক্ষেত্র, লক্ষ্যবস্তু ও শত্রু তিনভাগে বিভক্তঃ
প্রথম ভাগঃ ইসলামী ইমারাতের প্রতিরক্ষার জন্য আফগানিস্তানে যুদ্ধ করা।
দ্বিতীয় ভাগঃ পাকিস্তানে আমাদের সামরিক লক্ষ্যবস্তু।
তৃতীয় ভাগঃ ভারত, বাংলাদেশ এবং আরাকানে (বার্মায়) আমাদের শত্রু ও লক্ষ্যবস্তু।
প্রথম ভাগঃ ইসলামী ইমারাতের প্রতিরক্ষা
শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, আল-কায়েদা উপমহাদেশ, ইসলামী ইমারাত আফগানিস্তানকে শক্তিশালী করা এবং তার প্রতিরক্ষাকে নিজেদের মৌলিক লক্ষ্য মনে করে। এই লক্ষ্যে আফগানিস্তানের ভূমিতে, যেখানে আমেরিকার নেতৃত্বে সমগ্র বিশ্বের কাফের শয়তানের দল একজোট হয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে লড়াইরত, সেখানে ইসলামী ইমারাতের অধীনে আর-রাহমানের সেনাবাহিনীও শরীয়তের এই শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াইরত। আল-কায়েদা উপমহাদেশের মুজাহিদরাও ইসলামী ইমারাতের পতাকাতলে যুদ্ধের ময়দানে তৎপর এবং শরীয়তের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পুরোপুরি অংশগ্রহণ করছেন। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, ইসলামী ইমারাতের হাতে আমেরিকা ও তার এজেন্টদের পরাজয় এই পুরো ভূখণ্ডে দ্বীনি শক্তিগুলোর বিজয় নিয়ে আসবে ইনশাআল্লাহ।
দ্বিতীয় ভাগঃ পাকিস্তানে আমাদের সামরিক লক্ষ্যবস্তু
শায়খ উসামা বিন লাদেন (রহিমাহুল্লাহ)-এর সময় থেকেই জামাআত কায়েদাতুল জিহাদ ইসলামের শত্রুদের ব্যাপারে কুরআনের এই নীতিঃ فقاتلوا ائمة الكفر ‘কুফর প্রধানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর’-কে ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করেছে। একে শায়খ উসামা বিন লাদেন (রহিমাহুল্লাহ) ‘সাপের মাথা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। সুতরাং সব ধরনের শত্রুদের ব্যাপারে জামাআতের প্রথম মনোনিবেশ হলো, তাদের ঊর্ধ্বতন নেতা এবং ঐসব মেধা, যা থেকে ইসলাম ও মুসলমানদের ধ্বংসের পরিকল্পনা তৈরি হয়। এই নীতি অনুযায়ী পাকিস্তানে ঐসব শক্তি জামাআতের প্রথম লক্ষ্যবস্তু, যারা সাপের মাথা আমেরিকা ও বৈশ্বিক কুফরি শক্তির প্রিয় ও আস্থাভাজন প্রতিনিধি এবং সবসময় বৈশ্বিক কুফরি শক্তির ফায়দার জন্য পাকিস্তানের মুসলমানদের সাথে ধোঁকাবাজি করে আসছে। কারণ স্থানীয় পর্যায়ে এদের শক্তি ধ্বংস করা ছাড়া পাকিস্তানের মুসলমানদেরকে আমেরিকা ও বৈশ্বিক কুফরের দাসত্ব থেকে মুক্ত করা এবং শরীয়ত প্রতিষ্ঠা করা শুধু একটি স্বপ্নই থেকে যাবে।
এই দৃষ্টিকোণ থেকে পাকিস্তানে জামাআতের লক্ষ্যবস্তুর অগ্রাধিকাভিত্তিক ক্রমান্বয় নিম্নরূপঃ
১। পাকিস্তানে উপস্থিত আমেরিকান কাফের এবং ওদের সরাসরি স্বার্থ আমাদের সবচেয়ে অগ্রগণ্য লক্ষ্যবস্তু, কারণঃ
আমেরিকা পুরো দুনিয়াতে মুসলমানদের উপর জুলুম ও বল প্রয়োগকারীদের সরাসরি সাহায্যকারী
বায়তুল মুকাদ্দাসকে মুক্ত করার পথে প্রথম অন্তরায়
বৈশ্বিক কুফরিব্যবস্থার সর্দার এবং
ইসলামী ও জিহাদি জাগরণের মোকাবেলায় সক্রিয় ও কেন্দ্রীয় শত্রু
২। পাকিস্তানে ২য় পর্যায়ের টার্গেট, অমুসলিম দেশের ঐসব কাফের কর্মকর্তা ও কর্মচারী, যারা পাকিস্তানের অধিবাসীদের লুটপাট করে এবং বৈশ্বিক কুফরি শক্তির দাস বানিয়ে রাখে। পাকিস্তানি মুসলমানদের গণহত্যার জন্য অর্থনৈতিক সাহায্য প্রদান করে। যারা আফগানিস্তান থেকে কাশ্মীর, সিরিয়া ও ফিলিস্তিন পর্যন্ত মুসলিম উম্মতের উপর হামলাকারী। যেমন ভারত ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো, যেগুলো মুসলমানদের বিরুদ্ধে পূর্ণশক্তিতে যুদ্ধে লিপ্ত।
৩। পাকিস্তানকে কব্জা করে থাকা অত্যাচারী বৃটিশ শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে যুদ্ধ আমাদের কাছে অত্যন্ত অগ্রগণ্য বিষয়, কারণঃ
- যতক্ষণ পর্যন্ত পাকিস্তানকে কব্জা করে থাকা জালেম শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে জিহাদ না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত না অত্যাচারী, সুদী ব্যবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব হবে; না কাশ্মীর এবং ভারতের মাজলুম মুসলমানদের সাহায্য করা সম্ভব হবে; আর না এই ভূখণ্ডে শরীয়ত প্রতিষ্ঠার স্বপ্নপূরণ সম্ভব হবে। পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর গোপন ষড়যন্ত্র এবং সশস্ত্রবাহিনীর খোলাখুলি যুদ্ধের মোকাবেলায়, দ্বীনের অনুসারীদের কাছে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা ছাড়া আর কোন পথ নেই। বরং বাস্তবতা হলো, শরীয়তের এই দুশমনদের বিরুদ্ধে জিহাদই আসলে ‘গাযওয়ায়ে হিন্দ’-এর দরজা। পাকিস্তানের উপর বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদীদের চাপিয়ে দেয়া এই সশস্ত্রবাহিনী, শরীয়তের প্রথম শত্রু এবং আমেরিকা ও বৈশ্বিক কুফরিব্যবস্থার উত্তম রক্ষক। এ কারণেই, এই সশস্ত্রবাহিনী সবসময় বৈশ্বিক কুফরের ফায়দার জন্য ইসলামী আন্দোলনের পিঠে ছুরি মারে এবং ইসলাম ও ইসলামের অনুসারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে, সম্মুখ বাহিনীর ভূমিকা পালন করে। আমেরিকার হাতে ইসলামী ইমারাত আফগানিস্তানের পতন এদের সহযোগিতার ফলেই সম্ভব হয়। জিহাদের নুসরত এবং শরীয়তের দাবি করার অপরাধে কাবায়েলী বা গোত্রীয় এলাকা, সোয়াত এবং জামিয়া হাফসার মাসুম ছাত্রীদের উপর এই সশস্ত্রবাহিনী আগুন ও বারুদ বর্ষণ করে। হাজার হাজার মুসলমানদের কারাগারে শহীদ করে এবং শত শত মুসলমানকে ফাঁসিতে ঝুলায়। কাজেই মুজাহিদদের কাছে এটি স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, শুধু পাকিস্তান নয়, পুরো এই ভূখণ্ডে ইসলামী আন্দোলনের সফলতার জন্য পাকিস্তানকে কব্জা করে রাখা এই শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে জিহাদ জরুরী।
কাজেই, উপরোল্লেখিত লক্ষ্যবস্তুর পরে পাকিস্তানে আমাদের লক্ষ্যবস্তুগুলো নিম্নরূপঃ
i. শরীয়ত প্রতিষ্ঠার পথে প্রতিবন্ধক এবং আমেরিকার আধিপত্য বজায় রাখা রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র শক্তি, যা গুরুত্বের ক্রমানুসারে নিম্নরূপঃ
ক. গোয়েন্দা সংস্থা, বিশেষভাবে আইএসআই, এমআই, এফআইএ, সিআইডি, আইবি প্রভৃতির অফিসার এবং কর্মী।
খ. সশস্ত্র বাহিনীর (সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, এফসি) উচ্চপর্যায়ের অফিসার।
গ. আইন প্রয়োগকারী সংস্থার (রেঞ্জার্স, কাউন্টার টেররিজম ডিপার্টমেন্ট, পুলিশ) উচ্চপর্যায়ের অফিসার।
ii. ঐসব মন্ত্রী ও উচ্চ পর্যায়ের ব্যুরোক্র্যাট অফিসার, যারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দ্বীনের বিরুদ্ধে আমেরিকার এই যুদ্ধে সরাসরি সম্পৃক্ত।
iii. ঐসব অবসরপ্রাপ্ত সশস্ত্রবাহিনীর অফিসার ও প্রাক্তন শাসক, যারা শরীয়ত প্রতিষ্ঠার এই যুদ্ধে ইসলামের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অংশ নিয়েছে।
iv. নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবমাননাকারী। আমাদের মা-বাবারা প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য কুরবান হোক! নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সম্মানের জন্য যদি নিজেদের সবকিছুও কুরবান করতে হয়, তাতেও আমরা দ্বিধা করবো না এবং সর্বমূল্যে হলেও আমরা আমাদের প্রিয় হাবীব মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সম্মান রক্ষা করবো ইনশাআল্লাহ।
v. আমাদের বন্দী ভাইবোনদেরকে মুক্ত করার জন্য–
ক. কারাগারে আক্রমণ করা
খ. জেলখানার আইজি, সামরিক প্রতিষ্ঠানের অফিসার এবং পশ্চিমা দেশের নাগরিকদের অপহরণ
vi. ভূখণ্ডে ধর্মহীনতার প্রচলনকারী মুলহিদ (ইসলামের বিরুদ্ধে অবতীর্ণ ঐসব ব্যক্তি, যারা নিজেদের মুসলমান বলে দাবি করে)। কেননা আমাদের সমাজকে ধর্মহীনতা থেকে বাঁচানো আমরা ফরজ মনে করি। তবে কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলদের অনুমতি ব্যতীত নিজ থেকে এমন অপারেশন করার অনুমতি আমরা আমাদের মুজাহিদদেরকে দেই না। তাছাড়া জামাআত এমন বিষয়ে হক্বপন্থী উলামায়ে কেরাম থেকে ফাতওয়া নেয়াকে আবশ্যক মনে করে এবং এরপর সকল মাসলাহা-মাফসাদা (লাভ-ক্ষতি) যাচাই করে লক্ষ্যবস্তুর ব্যাপারে ফয়সালা দেয়।
vii. দ্বীনদার শ্রেণীর মানুষদের হত্যাকারী। কেননা আমরা দ্বীনদার শ্রেণী ও হক্বপন্থী আলেমদেরকে রক্ষা করা আমাদের বিশেষ দায়িত্ব মনে করি এবং এক্ষেত্রেও লক্ষ্যবস্তু নির্ণয় করার জন্য জামাআতের আমীর এবং নায়েবে আমীরের অনুমতি নেয়া জরুরী।
বিশেষ দ্রষ্টব্য
১। সামরিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সকল সদস্য আমাদের লক্ষ্যবস্তু, তারা যুদ্ধরত এলাকায় থাকুক অথবা ব্যারাকে বা ছাউনিতে থাকুক। ছুটিতে থাকা সদস্যরাও এর ব্যতিক্রম নয়। কারণ শরীয়ত প্রতিষ্ঠার মোকাবেলায় যুদ্ধরত হওয়া এবং কুফরি শাসনব্যবস্থার রক্ষক হওয়ার বিচারে শরঈ দিক থেকে তাদের সবার হুকুম একই। তবে তাদের মাঝে যারা মুজাহিদদের কাছ থেকে নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি পেয়েছে, তাদের বিষয়টি ভিন্ন।
২। সাধারণ সিপাহীকে হত্যা করার চেয়ে আমরা অফিসারদেরকে হত্যা করার উপর অধিক গুরুত্ব দেই। এজন্য একশ সাধারণ সিপাহীর মোকাবেলায় একজন অফিসার হত্যা যদি আমাদেরকে আমাদের লক্ষ্যপানে এগিয়ে নেয়, তাহলে আমরা আল্লাহর তাওফীকে একজনকেই হত্যা করবো। শত্রু-অফিসার যত বড় পদাধিকারী হবে, তাকে হত্যা করা আমাদের কাছে তত বেশি অগ্রগণ্য হবে। সরকারি সশস্ত্র প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অফিসারদের নিশানা বানানো আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি অগ্রগণ্য; এরপর সশস্ত্রবাহিনী, এফসি, ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ বাহিনী, রেঞ্জার্স, পুলিশ ও অন্যান্য।
৩। যেসব রাজনীতিবিদ ও অফিসার জনসাধারণ, মুজাহিদ এবং দ্বীনদার শ্রেণীর পরিবারের উপর জুলুম করে, তারা আমাদের অগ্রগণ্য নিশানাসমূহের অন্তর্ভুক্ত।
তৃতীয় ভাগঃ ভারত, বাংলাদেশ এবং আরাকানে (বার্মায়) লক্ষ্যবস্তু
১। ভারত এবং বাংলাদেশে আমেরিকান ও ইসরায়েলী লক্ষ্যবস্তুর পর আমাদের অগ্রগণ্য লক্ষ্যবস্তু হলো, ভারতীয় সরকার। কারণঃ
ভারত সরকার অনবরত কাশ্মীর ও ভারতের মুসলমানদের উপর অত্যাচার, তাদের বসতবাড়ি ধ্বংস, সামাজিকভাবে তাদেরকে দুর্বল করা এবং তাদেরকে জোরপূর্বক হিন্দু বানানোর মতো জঘন্য কর্ম চালিয়ে আসছে। কাশ্মীর ও ভারতে মুসলমানদের উপর চলমান অত্যাচার-নির্যাতন এর সুস্পষ্ট প্রমাণ।
ভারতের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র নীতির একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে ইসলাম বিদ্বেষ ও ধর্মহীনতার প্রসার এবং ইসলামের শত্রুদের পৃষ্ঠপোষকতা। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলোতে ভারতের এই কৌশলের প্রভাব পরিষ্কারভাবে দৃশ্যমান।
ভারত এই পুরো ভূখণ্ডে (কাশ্মীর, ভারত, বাংলাদেশ ও বার্মায়) ইসলামী ও জিহাদি জাগরণের বিরুদ্ধে আমেরিকা, রাশিয়া ও ইসরাইলের বিশ্বস্ত বন্ধু।
বাংলাদেশের ধর্মহীন সরকার এবং ধর্মহীন আন্দোলনগুলোর সবচেয়ে বড় রক্ষক ভারত এবং এই ভারতই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবমাননাকারী ও মুলহিদদের সব ধরনের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে।
বাংলাদেশের মুসলমানদের বিরুদ্ধে তারা নানা অপরাধে জড়িত। পানি কব্জা করে তাদের চাষাবাদ ধ্বংস করা এবং তাদের শিল্প কারখানা ও ব্যবসা বাণিজ্য দখল করার মত অপরাধ করে যাচ্ছে ভারত। ইতিহাস সাক্ষী– ভারত সবসময় চায়, বাংলার মুসলমানরা তার দাস হয়ে থাকুক।
ভারতের রাষ্ট্রব্যবস্থা ইসলামী ভারত প্রতিষ্ঠার পথে মূল প্রতিবন্ধক। অথচ ইসলাম এই ভারতকে দীর্ঘ এক হাজার বছর শাসন করেছে। এদিক থেকে ইসলামের এই ভূখণ্ডকে আবার ইসলামের পতাকাতলে নিয়ে আসা এবং ইসলামী শাসনব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা আমাদের উপর ফরজ।
কাজেই ভারত ও বাংলাদেশে আমাদের সামরিক লক্ষ্যবস্তু নিম্নরূপঃ
i. সরাসরি আমেরিকা ও ইসরাইলের স্বার্থ।
ii. ভারতের ঐসব রাষ্ট্রীয় সংস্থা, যেগুলো ভারত বিভক্তির পর থেকে মুসলিম নিধনের কৌশলকে অব্যাহত রেখেছে, বিশেষভাবে ভারতীয় পুলিশ, সশস্ত্রবাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নেতৃত্ব।
iii. কট্টর হিন্দুপন্থী দলগুলোর ঐসব নেতা, যারা মসজিদ গুঁড়িয়ে দেয়া, মুসলমানদের হত্যা করা, তাদের সম্পদ লুণ্ঠন ও ধ্বংস করা এবং জোরপূর্বক হিন্দু বানানোর মতো জঘন্য কর্মে জড়িত।
iv. ভারতীয় সশস্ত্রবাহিনীর ঐসব অফিসার, যাদের হাত আমাদের কাশ্মীরি ভাইদের রক্তে রঞ্জিত।
v. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবমাননাকারী।
২। বার্মায় মুসলমানদের উপর নির্যাতনকারী সশস্ত্রবাহিনী এবং সশস্ত্র বৌদ্ধ গ্রুপগুলো আমাদের লক্ষ্যবস্তু। এর উদ্দেশ্য–
বার্মার মজলুম মুসলমানদের সাহায্য এবং তাদের প্রতিরক্ষা
মাজলুম মুসলমানদের পক্ষ থেকে বার্মার জালেম সরকারের উপর প্রতিশোধ নেয়া
ইসলামী আরাকানকে বার্মার সশস্ত্র বাহিনীর হাত থেকে উদ্ধার করা
৩। ভারত উপমহাদেশের কোনো জায়গায় হিন্দু, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য ধর্মীয় গোষ্ঠীর জনসাধারণ, তাদের বসতবাড়ি এবং উপাসনালয় আমাদের লক্ষ্যবস্তু নয়। কারণ আমাদের যুদ্ধ এসব ধর্মীয় গোষ্ঠীর সশস্ত্র গ্রুপগুলোর সাথে, যারা মুসলমানদের উপর নির্যাতন করছে।
ষষ্ঠ অনুচ্ছেদঃ যেসব অপারেশন থেকে বিরত থাকা জরুরী
১। আমরা প্রত্যেক এমন অপারেশন থেকে বিরত থাকি, যা মুসলিম জনসাধারণকে মুজাহিদদের থেকে দূরে সরিয়ে দেয় অথবা যেগুলো তাদের উপলব্ধির বাইরে। এ বিষয়ে আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঐ পন্থা অবলম্বন করি, যে কারণে তিনি মুনাফিকদের হত্যা করা থেকে বিরত থেকেছেন, যেন মানুষ ইসলামের দাওয়াত থেকে দূরে সরে না যায়।
২। আমরা সাধারণভাবে এমন লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা এবং তাদের ক্ষতিসাধন করা থেকে বিরত থাকি, যারা আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করে না এবং তাতে সাহায্যও করে না। আল্লাহর ইচ্ছায় আমাদের মনযোগ সম্পূর্ণভাবে শরীয়তের দুশমন এবং কুফরি শাসনব্যবস্থার রক্ষকদের উপর নিবিষ্ট।
৩। মসজিদ, জানাযা, বাজার এবং আদালতসহ জনসমাগমের জায়গায় বোমা বিষ্ফোরণ ঘটানোকে আমরা সম্পূর্ণ ভুল মনে করি। কারণ এতে মুসলিম জনসাধারণের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। এমন জায়গায় জায়েয লক্ষ্যবস্তুর উপর হামলা করা থেকেও আমরা বিরত থাকা আবশ্যক মনে করি। কারণ এধরনের অপারেশন থেকে সাধারণ মুসলিমরা ক্ষতির শিকার হতে পারেন, যা আল্লাহর আযাবকে অবধারিত করে। তাছাড়া এসব অপারেশনের কারণে মুজাহিদদের দাওয়াত কলুষিত হয় এবং ইসলামের ফায়দার পরিবর্তে কুফরি শাসনব্যবস্থা শক্তিশালী হয়।
৪। আমরা শত্রুদের সাথে সম্পৃক্ত নিরস্ত্র লোকদেরকে (অর্থাৎ ঐসব লোক, যারা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে না; যেমন নারী ও শিশু) নিশানা বানানো থেকে বিরত থাকি।
৫। আমরা পাকিস্তানের এবং বাংলাদেশের সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের স্ত্রী এবং প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের হত্যা করাকে শরীয়তের আলোকে ভুল মনে করি। কারণ কুফরি শাসনব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা এবং শরীয়ত প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে লড়াই করার কারণে সশস্ত্রবাহিনী মুরতাদ ও হারবি (যুদ্ধরত) এবং এ কারণেই তাদের সঙ্গে আমাদের যু্দ্ধ। কিন্তু তাদের স্ত্রী ও সন্তানেরা শুধু আত্মীয়তার কারণে মুরতাদ অথবা হারবি হিসেবে প্রমাণিত হয় না, বরং তারা মুসলমান। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণীঃ لا يُؤْخَذُ الرَّجُلُ بِجَرِيرَةِ أَخِيهِ وَلا بِجَرِيرَةِ أَبِيهِ (কোনো ব্যক্তিকে তার বাবার বা ভাইয়ের অপরাধের কারণে অভিযুক্ত করা যায় না। -সুনানে নাসাঈ, মুসনাদে আহমাদ)। তবে যদি প্রমাণিত হয়, তাদের কেউ মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জড়িত, তাহলে যুদ্ধে অংশ নেয়ার কারণে তাদের হুকুমও তাদের বাবা বা স্বামীর মত হবে।
৬। বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা দূষিত এবং কাফেরদের প্রণীত ও নিয়ন্ত্রিত, কিন্তু আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে হামলা করা অত্যন্ত বড় ভুল এবং শরীয়ত বিরোধী মনে করি। কারণ মুসলিম দেশগুলো এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলোতে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য লোক সাধারণভাবে মুসলমান। আমারা মনে করি শাসনব্যবস্থার সংশোধনের মাধ্যমেই কলুষিত শিক্ষাব্যবস্থার সংশোধন সম্ভব।
৭। মাজার এবং এ ধরনের অন্যান্য জায়গায় বোমা বিষ্ফোরণকে আমরা ভুল মনে করি। পবিত্র শরীয়তের আলোকে কবরের শিরক ও বিদ’আতের বিরুদ্ধে এখন আমরা দাওয়াত ও তারবিয়াতের মাধ্যমে সংশোধনের চেষ্টা করি। বিজয়ের পর উলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে এই বিষয়গুলোর সংশোধন ও তদারকির জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবো ইনশাআল্লাহ।
৮। জামাআতের কোনো অপারেশনের ভুলের কারণে যদি সাধারণ মুসলমানদের ক্ষতি হয়, তাহলেঃ
i. নিঃসংকোচে নিজেদের ভুল স্বীকার করা হবে এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা হবে। এরপর মুসলমানদের কাছেও ক্ষমা প্রার্থনা করা হবে।
ii. অপারেশন সম্পাদনকারী মুজাহিদদেরকে জবাবদেহিতার সম্মুখীন করা হবে। যদি এ বিষয়ে কারো পক্ষ থেকে ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়, তাহলে জামাআতের শরীয়াহ বিভাগের সামনে এই মামলাটি পেশ করা হবে এবং ত্রুটি প্রমাণিত হলে সম্পাদনকারীদের শাস্তি দেয়া হবে।
iii. যেসকল মুসলমান ভাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তাদের কাছে জামাআতের আবেদন থাকবে– তারা যেন ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত বিবরণ জামাআতের দায়িত্বশীলদের কাছে পৌঁছে দেন। যখনই জামাআতের সামর্থ্য হবে, তখনই রক্তপণ (دية) অথবা আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে ইনশাআল্লাহ।
৯। যেহেতু আমরা কুফরি শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ছাড়া অন্য পার্শ্বযুদ্ধ থেকে দূরে থাকি, এজন্য অন্যান্য ধর্ম; যেমন হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃস্টান ইত্যাদি যা শত বছর ধরে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশগুলোতে বসবাস করে আসছে, তাদের বিরুদ্ধে জামাআত যুদ্ধে জড়াতে চায় না। তবে কোথাও যদি এসব অমুসলিম মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে দাঁড়িয়ে যায় অথবা তাদের কেউ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কিংবা কুরআনের অবমাননা করে, তাহলে এসব নির্দিষ্ট বসতির অমুসলিমদের ক্ষতি থেকে মুসলমানদেরকে বাঁচানোর জন্য শুধু তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।
১০। জামাআত খৃস্টানদের গির্জা ও হিন্দুদের মন্দিরকে নিশানা বানায় না। আল্লাহর ইচ্ছায় বিজয়ের পর উলামায়ে কেরামের ফাতওয়ার আলোকে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে ইনশাআল্লাহ।
সপ্তম অনুচ্ছেদঃ
রাফেযী, কাদিয়ানী ও ইসমাইলীদের ব্যাপারে কর্মকৌশল
১। জামাআত শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে রাফেযী, কাদিয়ানী এবং ইসমাইলীদের কাফের মনে করে এবং মুসলমানদের মাঝে এসব ফিরকাগুলোর গোমরাহি স্পষ্টভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করে।
২। জামাআতের কৌশল হলো, জালেম কুফরি শাসনব্যবস্থা এবং তার রক্ষক সশস্ত্র শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ছাড়া অন্য কোনো পার্শ্বযুদ্ধে জড়িত না হওয়া। এজন্য রাফেযী, কাদিয়ানী কিংবা ইসমাইলীরা যদি আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ’র বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ না করে, তাদের বিরুদ্ধে জামাআতও যুদ্ধে জড়িত হয় না, বরং নিজেদের সম্পূর্ণ মনযোগ নিবিষ্ট করে কুফরি শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে, যা এসকল ফিরকাসহ দ্বীনের সকল দুশমনের প্রতিরক্ষা করে এবং তাদের প্রতিষ্ঠার জন্য পৃষ্ঠপোষকতা করে।
৩। রাফেযী, কাদিয়ানী এবং ইসমাইলীদের কেউ যদি আহলুস সুন্নাহ’র বিরুদ্ধে আগ্রাসনে লিপ্ত হয়, তাহলে এই আগ্রাসনকে বন্ধ করার জন্য তাদের নেতাদের ও যোদ্ধাদের পূর্ণ জবাব দেয়া হবে। যদিও এক্ষেত্রেও কুরআনের বাণী “فقاتلوا ائمة الكفر”-এর ভিত্তিতে এটিই অগ্রগণ্য বিবেচ্য হবে যে, প্রতিরক্ষা সংস্থা এবং ক্ষমতায় থাকা রাফেযী ও কাদিয়ানী নেতৃত্বকে দৃষ্টান্তমূলক জবাব দেয়া, যারা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ’র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
৪। যতক্ষণ পর্যন্ত কুফরি শাসনব্যবস্থার পরাজয় না হবে, এসব ফিরকাগুলোর ব্যাপারে আমরা উপরোল্লেখিত কৌশলের ভিত্তিতে কাজ করবো। বিজয়ের পর উম্মতের উলামায়ে কেরাম তাদের ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নিবেন, তার উপরই আমল করা হবে ইনশাআল্লাহ।
৫। রাফেযী, কাদিয়ানী এবং ইসমাইলীদের ঐসব লোক, যারা পঞ্চম অনুচ্ছেদে উল্লেখিত, জামাআতের মূল লক্ষ্যবস্তুর কোনো একটির অন্তর্ভুক্ত, তাদেরকে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ’র প্রতি বিদ্বেষের জন্য নিশানা বানানো হবে।
অষ্টম অনুচ্ছেদঃ ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোর সাথে আচরণবিধি
১। ব্যাখ্যাঃ ধর্মনিরপেক্ষ (ধর্মহীন) দল বলতে ঐসব দল উদ্দেশ্য, যারা নিজেদের আচরণবিধি ও মেনুফেষ্টোতে ইসলামকে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক বিষয়াদি থেকে বিচ্ছিন্ন করায় বিশ্বাসী বলে উল্লেখ করে। ধর্মনিরপেক্ষ দল ক্ষমতায়ও থাকতে পারে এবং ক্ষমতার বাইরেও থাকতে পারে। তাদের মাঝে কিছু দল মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, যুদ্ধে প্রেরণা দেয়। আবার কিছু দল যুদ্ধে অংশ নেয় না। একইভাবে কিছু দল রাজনৈতিক লক্ষ্য হাসিলের জন্য কখনও কখনও সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতাও করে। তাই এদের সবাইকে একই পাল্লায় মাপা সম্ভব নয়, বরং প্রত্যেক দলের সাথে তাদের কার্যকলাপ অনুযায়ী আচরণ করা হবে।
২। ধর্মনিরপেক্ষ (ধর্মহীন) দলগুলোর ঊর্ধ্বতন নেতা, যারা প্রকাশ্যে শরীয়তের প্রতি নিজেদের শত্রুতা প্রকাশ করে এবং কুরআনের আইনের পরিবর্তে কুফরি আইন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে, তাদেরকে আমরা সুস্পষ্ট শরঈ দলীলের ভিত্তিতে ‘তায়েফায়ে মুরতাদ্দাহ’ তথা মুরতাদ দলের অন্তর্ভুক্ত গণ্য করি এবং তাদেরকে হত্যা করা জায়েয মনে করি। তবে তাদের কাকে হত্যা করা হবে, কখন হত্যা করা হবে এবং কাকে হত্যা করা হবে না –এসব বিষয় জামাআতের ঊর্ধ্বতন দায়িত্বশীলদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হবে। জামাআতের নেতৃত্ব পরিবেশ পরিস্থিতি ও মাসলাহা-মাফসাদা (লাভ-ক্ষতি) বিবেচনা করে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিবেন।
৩। যেসব ধর্মনিরপেক্ষ দল মুজাহিদদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে অথবা লড়াইয়ে সহযোগিতা করছে, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে আমরা অগ্রাধিকার দেই।
৪। শরীয়ত প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে সশস্ত্রবাহিনীর সাথে থাকা ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোর নেতৃত্বকে লক্ষ্যবস্তু বানানো আমাদের কাছে অগ্রগণ্য, চাই তারা বর্তমান সরকারের মাঝে থাকুক কিংবা অতীতে।
৫। কোনো ধর্মনিরপেক্ষ দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে এমন ব্যাপক করা হবে না যে, তার প্রত্যেক ভোটার এবং ছোট কিংবা বড় প্রত্যেক কর্মীকে নিশানা বানানো হবে, বরং শুধু ঐসব নেতা এবং ব্যক্তিকে নিশানা বানানো হবে, যারা মুজাহিদদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। পক্ষান্তরে তাদের নারী, শিশু, আত্মীয় এবং সাধারণ কর্মীরা কখনই আমাদের লক্ষ্যবস্তু নয়।
৬। ধর্মনিরপেক্ষ দলের সাধারণ ভোটার, যারা ধোঁকায় পড়ে, রুটি-রুজি ইত্যাদির প্রলোভনে এসব ধর্মহীন দলগুলোর সঙ্গ দেয়, তাদেরকে আমরা তাকফিরও করি না, হত্যার চেষ্টাও করি না। তবে তাদের এসকল দলকে সহযোগিতা করা গুনাহ মনে করি। তাই আমরা সাধ্য অনুযায়ী তাদেরকে এটি বোঝানোর এবং সতর্ক করার চেষ্টা করি।
৭। আমরা আমাদের দাওয়াতে এটি সুস্পষ্ট করার চেষ্টা করি যে, ধর্মনিরপেক্ষ এই দলগুলোর সাথে আমাদের শত্রুতার কারণ ভাষা, জাতীয়তাবাদ বা অন্য কোনো বিষয় নয়, বরং ইসলামের প্রতি শত্রুতাই তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কারণ।
৮। যেসব ক্ষেত্রে এসব দলগুলোকে নিশানা বানানোর কারণে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হওয়ার আশঙ্কা থাকে অথবা মুসলিম জনসাধারণের সামনে এদের শত্রুতা অস্পষ্ট, সেসব ক্ষেত্রে আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুনাফিকদের ব্যাপারে যে কৌশল অবলম্বন করেছিলেন, তা অনুসরণ করে ততক্ষণ পর্যন্ত এই দলগুলোকে নিশানা বানানোর ব্যাপারে বিলম্ব করি, যতক্ষণ না এদের বিষয়গুলো পরিষ্কার হয়ে যায় এবং সম্ভাব্য ক্ষতির কারণ দূর হয়ে যায়।
নবম অনুচ্ছেদঃ
বন্দী ও আত্মসমর্পণকারী শত্রুদের বিষয়াদি
১। বন্দী ও আত্মসমর্পণকারী শত্রুদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা শুধু জামাআতের আমীর ও নায়েবে আমীরের। তাঁরা ব্যতীত অন্য কারো এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার নেই। তবে জামাআতের আমীর এবং নায়েবে আমীর সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে অবশ্যই শরীয়াহ বিভাগ এবং সামরিক বিভাগের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে মাশোয়ারা করবেন।
২। আছলি হারবি কাফেরদের (যেমন, হিন্দু, শিখ, খৃস্টান, ইহুদী ও অন্যান্য বিধর্মীদের) মধ্য থেকে যে ব্যক্তি কয়েদি হয়ে আসবে, তার ব্যাপারে জামাআতের নিম্নোক্ত চারটি অধিকার থাকবেঃ
i. এসব বন্দীর সাথে মুসলিম বন্দী বিনিময় করা যেতে পারে
ii. অথবা মুক্তিপণের বিনিময়ে তাদের ছেড়ে দেয়া যেতে পারে
iii. অথবা অনুগ্রহ করেও তাদের ছেড়ে দেয়া যেতে পারে
iv. অথবা তাদের হত্যা করা যেতে পারে
৩। হারবি আছলি কাফের বন্দী, যদি মুসলমান হয়ে যায়, তাকে হত্যা করা জায়েয নয়, বরং তার বিনিময় এই শর্তের উপর জায়েয যে, এই বিনিময়ে বন্দীর সম্মতি থাকবে এবং তার আবার কাফের হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না।
৪। মুরতাদদের মধ্য থেকে যারা গ্রেপ্তার হয়ে যায়, তাদের ব্যাপারে নিম্নে উল্লেখিত কোনো একটি ব্যবস্থা নেয়া হবেঃ
i. এই বন্দীকে মুসলমান বন্দীর সাথে বিনিময় করা যেতে পারে অথবা
ii. এই বন্দীকে শাস্তি (تعزير) বা দণ্ড (حَدّ) স্বরূপ হত্যা করা যেতে পারে। অথবা
iii. এই বন্দীর বিনিময়ে তার সম্পদ নেয়া যেতে পারে। শুধুমাত্র জামআতের আমীর বা নায়েবে আমীর শরীয়া বিভাগের রায়ের আলোকে এবিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন। অন্য কারও এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার নেই।
৫। জামাআত শত্রুদলে অন্তর্ভুক্ত লোকদেরকে শত্রুর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে জামাআতের কাছে আত্মসমর্পণে উৎসাহিত করে এবং মুসলমানদেরকে আহ্বান জানায়– “আপনারা শত্রুদের সারিতে থাকা আপনাদের কাছের মানুষদেরকে দাওয়াত দিন, যেন তারা শরীয়তের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ছেড়ে দেয়।” এরকম লোক যদি জামাআতের অন্তর্ভুক্ত হতে চায়, তাহলে জামাআত তাদেরকে জিহাদি কাজে শামিল করতে পারে।
৬। শত্রু দলের যারা জামাআতের কাছে আত্মসমর্পণ করার পরও শত্রুদের মাঝে অবস্থান করবে, তারা জামাআতের পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা পাবে এবং তাদের তথ্য গোপন রাখা হবে।
দশম অনুচ্ছেদঃ জিহাদি দলগুলোর ব্যাপারে আমাদের কর্মকৌশল
১। ঐসব দল বা জামাআত, যেগুলো উপমহাদেশে কুফরি শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে পুরোপুরি সক্রিয় এবং শরীয়ত প্রতিষ্ঠার জন্য জিহাদ করে যাচ্ছে, তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক হলো ভালোবাসা, ভ্রাতৃত্ব এবং تعاونوا على البر والتقوى অর্থাৎ সৎকাজ ও তাকওয়ায় সহযোগিতার। আমরা তাদেরকে আমাদের শরীরের অংশ মনে করি, তাদের দুঃখে আমরা দুঃখিত হই এবং তাদের সুখে আমরা খুশি হই।
২। জামাআতের প্রচেষ্টা হবে الدين النصيحة অর্থাৎ ‘কল্যাণ কামনাই দ্বীন’-এর আলোকে জিহাদি দলগুলোর পরস্পরে গঠনমূলক সমালোচনা ও সংশোধনের একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরী করা। এরই ধারাবাহিকতায় একে অন্যের গোপন দোষত্রুটি সংশোধনের জন্য গোপনে প্রচেষ্টা চালানো এবং প্রকাশ্য ভুলের বিষয়ে সব মুজাহিদ ও সাধারণ মুসলমানদের সামনে বিষয়টি পরিষ্কার করার জন্য প্রকাশ্যে আলোচনা করা হবে। একইভাবে শরীয়ত বিরোধী কর্মকাণ্ড অথবা এমন অপারেশন, যার ফায়দার চেয়ে ক্ষতি বেশি অথবা শরঈ সিয়াসাত ও কর্মকৌশলের সুস্পষ্ট বিপরীত– সেগুলো থেকে নিজেদের ‘বারাআত’ ও সম্পর্কহীনতার ঘোষণা দেয়া হবে।
৩। পাকিস্তানে সক্রিয় জিহাদি দলগুলো, সামরিক অপারেশনে, লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণের ক্ষেত্রে কিছু সুস্পষ্ট নীতির উপর একমত হলেই কেবল এখানকার জিহাদি কার্যক্রম ইতিবাচক গতিতে এগিয়ে নেয়া সম্ভব। কাঙ্ক্ষিত এই ঐক্যমত তৈরির জন্য, সংগঠন আলাদা হওয়া সত্ত্বেও একই কর্মকৌশলের উপর একত্র হওয়ার জন্য জামাআত তাদের প্রতি সবিনয় আবেদন করে। এরই ধারাবাহিকতায় জামাআত ভ্রাতৃস্থানীয় অন্য জিহাদি দলগুলোর সাথে সম্মত নীতিগুলোর উপর চুক্তির আওতায় জোট গঠন করতে চেষ্টারত এবং তাদেরকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
৪। বিবৃত ৩ নম্বর পয়েন্টের আওতায়, আমরা ভারত উপমহাদেশে কর্মরত জিহাদি জামাআতগুলোকে ইসলামী ইমারাত আফগানিস্তানের বাইআতের দাওয়াত দেই। কারণ এই ভূখণ্ডে ইসলামী ইমারাত আফগানিস্তানের বাইআত, জিহাদি বিষয়াদিতে শরীয়তের অনুসরণ এবং শরঈ রাজনীতির ভিত্তিতেই একটি ফলপ্রসূ ও সুসংগঠিত জোট গঠিত হওয়া সম্ভব।
৫। জামাআত ভ্রাতৃস্থানীয় অন্য জিহাদি সংগঠনগুলোকে উল্লেখিত ‘আচরণবিধি’ মোতাবেক, সম্মিলিত অপারেশনেরও দাওয়াত দেয়। দ্বীনের বিজয় ও জিহাদকে শক্তিশালী করার জন্য এই বিষয়ে জামাআত প্রত্যেক সংগঠনকে খোলামনে সাহায্য করে।
৬। জামাআত উল্লেখিত ৩ নম্বর পয়েন্টের আওতায়, সকল জামাআতের মাঝে দাওয়াতি, আদর্শিক, তারবিয়াতি, শরঈ এবং সামরিক বিষয়গুলোতে পারস্পরিক সাহায্য সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করে।
৭। বিপদসঙ্কুল ও প্রতিকুল পরিস্থিতিতে এসব জামাআতের সাথে সব ধরনের সহানুভূতি ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রাখে।
৮। সকল জামাআতকে সমানভাবে প্রভাবিত করে, এমন বিষয়ে আমাদের মাশোয়ারার দরজা সবার জন্য সর্বদা উম্মুক্ত এবং এধরনের প্রত্যেকটি সিদ্ধান্তে সকল জামাআতকে সঙ্গে নিয়ে এক নীতিতে চলার চেষ্টায় আমরা সদা সচেষ্ট ইনশাআল্লাহ।
৯। যদি কোনো দল বা সংগঠন, মানহায বা পদ্ধতিগত ঐক্যের ভিত্তিতে আল-কায়েদা উপমহাদেশের সাথে একত্রিত হতে চায়, তাহলে তাদের জন্যও আমাদের দরজা খোলা।
১০। পাকিস্তান, কাশ্মীর, ভারত, বাংলাদেশ ও আরাকানে (বার্মায়), (সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার প্রভাবমুক্ত) জিহাদি জামাআতগুলোর সাথে এসব নীতির ভিত্তিতেই কাজ করা হবে ইনশাআল্লাহ।
১১। ঐসকল জিহাদি জামাআত, যেগুলো শরীয়তের শত্রু - গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তত্ত্বাবধানে কোনো ভূখণ্ডে কর্মরত, আমরা তাদের দাওয়াত দেই– তারা যেন নিজেদেরকে এসব সংস্থার প্রভাব ও নির্ভরশীলতা থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত করে। যাতে মাজলুম জনতার সাহায্য এবং শরীয়ত প্রতিষ্ঠার জন্য যথার্থ পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব হয়। কারণ ইতিহাস সাক্ষী, তাগুতী সশস্ত্রবাহিনী এরকম জামাআতের জিহাদের ফলকে পরিশেষে ধ্বংস করে দেয়। কাশ্মীরের জিহাদ এর সুস্পষ্ট উদাহরণ।
একাদশ অনুচ্ছেদঃ গণতান্ত্রিক ইসলামী দলগুলোর ব্যাপারে আমাদের কর্মকৌশল
১। গণতন্ত্রকে আমরা শরীয়তের আলোকে কুফরি মনে করি। এতে যে কোনো দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে যে কোনো দলের অন্তর্ভুক্তি শরীয়ত প্রতিষ্ঠায় সাহায্যের পরিবর্তে কুফরি শাসনব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও স্থিতিশীল করে। তারপরও আমরা কখনোই গণতন্ত্রে অংশ নেয়া প্রত্যেক ব্যক্তিকে কাফের মনে করি না।
২। গণতন্ত্রে অংশ নেয়া ইসলামী দলগুলো ‘দ্বীনি ফায়দা’র জন্য গণতন্ত্রে অংশ নেয়ার অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দেয়। যেমন মাদরাসাগুলোর সুরক্ষা, পার্লামেন্টের মাধ্যমে ধর্মহীনতার বন্যাকে বাঁধ দেয়া অথবা গণতন্ত্রের মাধ্যমে ইসলামী শরীয়ত প্রতিষ্ঠা করা ইত্যাদি। দ্বীনের সেবা অথবা শরীয়ত প্রতিষ্ঠার জন্য পার্লামেন্টের সদস্য হওয়ার এসব ব্যাখ্যাকে আমরা বাতিল মনে করি। কিন্তু এসব কারণে না আমরা তাদের তাকফির করি, না তাদেরকে সামরিক টার্গেট বানানো জায়েয মনে করি। তবে যেহেতু তাদের এই কাজ কুফরি শাসনব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে, এজন্য আমরা দাওয়াতের মাধ্যমে তাদেরকে এই হারাম কাজ থেকে বিরত রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করি।
৩। এসব জামাআতের ‘সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ’-এর মত নেক কাজগুলোকে আমরা খোলাখুলি উৎসাহিত করি এবং গণতান্ত্রিক খেল-তামাশা ও অন্যান্য ভুলত্রুটির বিষয়ে প্রকাশ্য সমালোচনা ও নসিহত করি।
দ্বাদশ অনুচ্ছেদঃ
সাধারণ দ্বীনি সংগঠনগুলোর সাথে আচরণবিধি
১। যেসব জামাআত সমাজে দাওয়াত ও তাবলীগ এবং ইসলাহের কাজ করে, তাদেরকে আমরা নিজেদের ভাই এবং শরীয়ত প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আমাদের সাথী মনে করি।
২। আমরা তাদের সকল ভালো কাজের প্রশংসা করি এবং যখনই সামর্থ্য হয়, তাদের ভালো কাজে সহযোগিতা করার প্রত্যাশা রাখি।
৩। পাশাপাশি আমরা তাদেরকে জিহাদে সহযোগিতা ও নুসরতের দাওয়াত ও প্রেরণা দেই এবং শরীয়তের সকল ফরজ আদায় করার জন্য আহ্বান করি।
৪। আমাদের প্রচেষ্টা হলো– এই ভূখণ্ডে থাকা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ’র সকল আদর্শিক চিন্তাধারাকে, শরীয়ত প্রতিষ্ঠার জন্য শরীয়তের শত্রুদের বিরুদ্ধে, ইসলামী ইমারাত আফগানিস্তানের পতাকাতলে একত্র করা; তাদেরকে ফুরুয়ী ইখতিলাফ থেকে বের করে উম্মতের সামগ্রিক ও বুনিয়াদী বিষয়ের উপর ঐক্যবদ্ধ করা, যেন শরীয়তের শত্রুদের মোকাবেলায় এই উম্মাহ এক সীসাঢালা প্রাচীর হয়ে যায়।
ত্রয়োদশ অনুচ্ছেদঃ উলামায়ে দ্বীনের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান এবং আচরণবিধি
এই ভূখণ্ডের উলামায়ে কেরাম ও মাদ্রাসাগুলোকে জামাআত কুফরি শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন এবং খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য জিহাদের মূল শক্তি মনে করে এবং তাদের ব্যাপারে নিম্নে বর্ণিত পদক্ষেপগুলো নিজেদের জন্য আবশ্যক মনে করেঃ
১। উলামায়ে কেরাম ইসলামী সমাজের মুক্তাদা ও পথপ্রদর্শক। তাঁদের আনুগত্য ও নির্দেশনার মাধ্যমেই শরীয়ত এবং ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। তাঁদের সম্মান করা এবং সমাজে তাদের সম্মান ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও তা রক্ষা করা, আমরা নিজেদের দায়িত্ব মনে করি। যেন তারা আল্লাহর শরীয়ত প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হন এবং আল্লাহর কিতাবকে পার্লামেন্টের মুখাপেক্ষী না বানান।
২। আল-কায়েদা উপমহাদেশ, বিশেষভাবে হক্বপন্থী আলেমদের এবং দ্বীনি মাদ্রাসাগুলোর প্রতিরক্ষা নিজেদের অগ্রগণ্য দায়িত্ব মনে করে। এরই ধারাবাহিকতায় জামাআত নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী তাঁদের উপর সরকারি অথবা বেসরকারি সব ধরনের আগ্রাসন বন্ধে এবং তাঁদের উপর আসা যে কোনো ধরনের নির্যাতনের প্রতিশোধ গ্রহণে বদ্ধপরিকর ইনশাআল্লাহ।
৩। আমরা আমাদের সমস্ত জিহাদি সফর হক্বপন্থী উলামায়ে কেরামের নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে পরিচালনা করবো। এজন্য উলামায়ে কেরামের সাথে মজবুত যোগাযোগ রক্ষা করার এবং ইলমী সমস্যায় তাঁদের দিকনির্দেশনা গ্রহণ করার সর্বাত্মক চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
৪। জামাআত উলামা ও মাদ্রাসাগুলোর শক্তির উৎস হয়ে তাঁদেরকে বৃটিশ শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে মজবুত হওয়ার জন্য শক্তি যোগাবে ইনশাআল্লাহ।
৫। যেসব আলেম সমাজে কোনো ধরনের ইসলাহ ও তারবিয়াতের কাজ সম্পাদন করছেন, জামাআত সামর্থ্য অনুযায়ী তাঁদের সম্ভাব্য সবরকম সহযোগিতা করবে এবং কোনো এলাকা বিজয় করলে, এজাতীয় কাজের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা করবে ইনশাআল্লাহ।
৬। জামাআত আলেম ও তালিবুল ইলমদেরকে জিহাদের সারিতে শামিল করার ইচ্ছা পোষণ করে, যেন তাঁরা এই জিহাদকে দ্বীনি ও দুনিয়াবি সফলতার দিকে নিয়ে যেতে পারেন।
৭। ‘উলামায়ে সূ’ হলো ঐসব আলেম, যারা দুনিয়ার তুচ্ছ পদমর্যাদা ও ধনসম্পদের জন্য ইলমকে বিক্রি করে নিজেদের পেট জাহান্নামের আগুন দিয়ে ভরে এবং মানুষকে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরীয়ত থেকে দূরে রাখে। এদের বাস্তবতা আমরা মানুষের সামনে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরবো এবং এদের সরকারি ফাতওয়ার জবাব আমরা শরীয়তের ইলমের আলোকে প্রদান করার চেষ্টা করবো। যদিও আল্লাহর রাস্তার মুজাহিদদের অন্তর কাফের ও মুরতাদদের থেকে এরাই বেশি জখম করে, তবুও তাদের হত্যা বা বন্দী করা থেকে আমরা বিরত থাকবো, যতক্ষণ না আমাদের কাছে এমন কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থিত হয় যে, তারা শরীয়ত প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে।
চতুর্দশ অনুচ্ছেদঃ
মাযহাবী ও ফিকহী পার্থক্যের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান
১। মাযহাবী ‘তাআস-সুব’ ও সঙ্কীর্ণতা (হানাফী ও সালাফী অথবা হায়াতি ও মামাতি ইত্যাদি) এবং এর উপর ভিত্তি করে অহেতুক তর্ক-বিতর্ক ও দলাদলিকে আমরা মুসলিম উম্মতের ঐক্যের জন্য ক্ষতিকর মনে করি। এজন্য আমাদের প্রচেষ্টা হলো, উম্মতকে ফুরুয়ী ইখতিলাফের বাড়াবাড়ি থেকে বের করে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ’র সামগ্রিক ও বুনিয়াদী বিষয়ের উপর ঐক্যবদ্ধ করা, যেন শরীয়তের শত্রুদের মোকাবেলায় এই উম্মত সীসাঢালা প্রাচীর হয়ে যায়।
২। এই বিষয়ে প্রত্যেক মাযহাবের অনুসারীদেরকে নিজ মাযহাবের হক্বপন্থী ও ভারসাম্যপূর্ণ উলামায়ে কেরামের সাথে লেগে থাকা, তাঁদের নির্দেশনা নেয়া এবং তাঁদের রচনা ও ফাতওয়া ইত্যাদি থেকে ফায়দা নেয়াকে আমরা জরুরী মনে করি। যেন ইলমী বিষয়ে নিজেই ইজতিহাদ করা, নিজের ইজতিহাদের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়া এবং শরীয়তকে প্রবৃত্তির খেয়াল খুশির অনুগামী বানানোর মত ধ্বংসাত্মক ব্যাধি থেকে বাঁচা যায়।
আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে জিহাদের হক্ব আদায় করার তৌফিক দিন, আমাদেরকে এবং আমাদের জিহাদকে দ্বীনের দুশমনদের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির কারণ এবং মুসলমানদের জন্য কল্যাণ ও রহমতের কারণ বানিয়ে দিন। আমীন।
আল্লাহই সকল কল্যাণের তৌফিকদাতা।
আমাদের সর্বশেষ কথা হলো, সকল প্রশংসা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য এবং সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক নবী করীম ও তাঁর বংশধর এবং সাহাবিদের উপর।
জামাআত কায়েদাতুল জিহাদ উপমহাদেশ।
শাওয়াল ১৪৩৮ হিজরী মোতাবেক জুন ২০১৭ ঈসায়ী।
-------------------------
যারা আমাদের ব্যাপারে সন্দেহ করেন- আমরা কী করছি? তাদের কাছে আমাদের সবিনয় নিবেদন, এখানে আসুন এবং কাছ থেকে আমাদের ও আমাদের প্রচেষ্টাগুলো দেখুন। এরপর আমাদের প্রয়াসকে কুরআন ও সুন্নাহ’র আলোকে যাচাই করুন। আমরা যদি কুরআন ও সুন্নাহ পরিপন্থী কাজ করি, তাহলে তাদের অধিকার থাকবে- আমাদের বিরোধিতা করার। আর যদি আমরা ইসলামী শরীয়তের প্রতিষ্ঠিত সরল পথের উপর থাকি, তাহলে তারা জেনে রাখুক, এটিই আমাদের পথ এবং আমরা কখনই এই পথ থেকে বিচ্যুত হবো না। যদি আমরা এই পথ থেকে একটুও বিচ্যুত হই, তাহলে আমরা সত্যিকার মুসলমান হবো না বরং শুধু নাম সর্বস্ব মুসলমান হবো।
শ্রদ্ধাস্পদ আমীরুল মু’মিনীন
মোল্লা মুহাম্মাদ উমর মুজাহিদ (রহিমাহুল্লাহ)
----------------------------
আজ আমরা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার অনুগ্রহে ইসলামী বিশ্বের মানচিত্র পুনর্জীবিত করতে যাচ্ছি, যাতে সকল ইসলামী দেশ আল্লাহ তা’আলার অনুমতিক্রমে খিলাফতের ঝাণ্ডাতলে এক রাষ্ট্রে পরিণত হয়। আজ আমরা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার অনুগ্রহে ঈমানের অনুসারীদের ইতিহাসে এক পবিত্র অধ্যায় রচনা করতে যাচ্ছি এমন এক সময়ে, যখন জুলুম, কুফর, ও ফাসাদ পূর্ব থেকে পশ্চিমের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় ভাগ্যবান কেবল ঐ ব্যক্তি, যাকে আল্লাহ তা’আলা তাঁর তৌহিদের উপর অবিচল রেখেছেন।
উম্মতের কল্যাণকামী মুজাদ্দিদে জিহাদ
শায়খ উসামা বিন লাদেন (রহিমাহুল্লাহ)
----------------------------