JustPaste.it
User avatar
Ishrak Abid @Ishrak_Abid · Feb 14, 2023

ইতিহাসের মানদন্ড বনাম আল্লাহর মানদন্ড।

20230214_112334.jpg


আচ্ছা, ইমাম বুখারীর নাম কতজন জানে ? নিশ্চয় প্রত্যেক মুসলিমই তাঁর নাম জানে, এমনকি অনেক সাহাবীর নামও লোকদের কাছে এতটা পরিচিত নয়। তাঁর সংকলিত গ্রন্থের মর্যাদা কুরআনের পরে এটা সবাই মানে। কিন্তু একটা হাদীসকে সাহাবী থেকে ইমাম বুখারী পর্যন্ত আসতে নিশ্চয়ই অনেক দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হয়েছে, যে পথ ছিল অনেক দুর্গম কন্টকাকীর্ণ। আচ্ছা যারা তাদের সমগ্র জীবন বিসর্জন দিয়ে রাসূলের বাণীগুলো বহন করেছে সেইসব রাবীদের কয়জনের নাম আমরা জানি? না, আমরা সাধারণ মানুষেরা তাদের নাম জানি না বললেই চলে। আপনার কি কখনও মনে হয়েছে যে আল্লাহর কাছে এই লোকগুলির মর্যাদা ইমাম বুখারীর তুলনায় কম? অবশ্যই নয়, বরং হয়তোবা কারো কারো মর্যাদা ইমাম বুখারীর থেকেও বেশি।
কিন্তু ইতিহাস কেন ইমাম বুখারীকে বেশি মনে রেখেছে জানেন? কারন উম্মাহর প্রতি ইমাম বুখারীর APPARENT CONTRIBUTION অনেক বেশি। আসলে ইতিহাস AMOUNT চিনে, এর ভিত্তিতেই সে নির্ধারণ করে কার কি পজিশন। আর এখান থেকেই ইতিহাসের মানদন্ডের সাথে আল্লাহর মানদন্ডের পার্থক্য সূচিত হয়। আল্লাহপাক AMOUNT থেকে পজিশন নির্ধারণ করেন না, কেননা সকলকে তিনি সমান সামর্থ বা যোগ্যতা দেন নি। তাহলে আল্লাহ কি দেখেন বা আল্লাহর মানদন্ড কি?? আল্লাহ যেটা দেখবেন সেটা হল PERCENTAGE OF SACRIFICE. যে তার পুরো জীবন আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে দিয়েছে আর যে কিছুটা অংশ ব্যয় করেছে আল্লাহর কাছে তাদের মর্যাদায় অনেক পার্থক্য যদিও অনেকক্ষেত্রে এমন হয় যে একটা ব্যক্তির জীবনের কিছুটা অংশের CONTRIBUTION অপর ব্যক্তির পুরো জীবনের CONTRIBUTION এর চেয়ে বেশি।
আরো সহজভাবে বলি ধরুন এক ব্যক্তির ১০ কোটি টাকা আছে আর এক ব্যক্তির আছে ১০ লক্ষ টাকা। এখন ইসলাম প্রচারে ১ম ব্যক্তি ব্যয় করলো ২ লক্ষ টাকা আর দ্বিতীয় ব্যক্তি ব্যয় করলো ৫০ হাজার টাকা। AMOUNT গত দিক থেকে ১ম ব্যক্তির ব্যয় অবশ্যই বেশি, এবং ইতিহাস এটাকেই হাইলাইট করবে। কিন্তু ১ম ব্যক্তি তার মোট সম্পদের মাত্র ১% ব্যয় করেছে ইসলাম প্রচারে, বাকি টাকা অন্য খাতে। অন্যদিকে ২য় ব্যক্তি ইসলাম প্রচারে ব্যয় করেছে তার সমস্ত সম্পদের ৫০%. অবশ্যই আল্লাহর কাছে দ্বিতীয় ব্যক্তির মর্যাদাই বেশি কেননা ১ম ব্যক্তির তুলনায় তার PERCENTAGE OF SACRIFICE অনেক বেশি। কিন্তু ১ম ব্যক্তি তার AMOUNT OF CONTRIBUTION এর কারনে ঠিকই ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিবে।
এবার আসুন আসল কথায়। আমাদের সমাজে অনেক আছে যারা ইসলামকে ভালোবাসে কিন্তু মনে করে ইসলামের জন্য কাজ করার আগে তাদেরকে অবশ্যই ভালো একটা পজিশনে যেতে হবে কিংবা প্রচুর ধনসম্পদ উপার্জন করতে হবে। আসলে তারাও ইতিহাসের মানদন্ড AMOUNT কেই বিবেচনা করে, আল্লাহর মানদন্ড PERCENTAGE OF SACRIFICE কে বিবেচনা করে না। আর পিছনে এক ধরনের বস্তুবাদী মানুষিকতা খুব সূক্ষ্মভাবে কাজ করে। ফলে সে সেই পজিশনের পিছনে দৌড়াতে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তার পৌঁছতে পৌঁছতে অনেক দেরী হয়ে যায়। অনেকক্ষেত্রে পৌঁছার পূর্বেই জীবন তাকে GOOD BYE জানায়। অল্প কিছু পৌঁছতে পারে সেই মনজিলে ততদিনে তাদের সূক্ষ্ম বস্তুবাদী মানুষিকতার বীজ কালের আবর্তনে বিশাল বটবৃক্ষে পরিণত হয়। কাজেই সে লোক দেখানোকেই প্রাধান্য দেয়, সংঘটিত হয় ছোট শির্ক। আর একেবারে হাতে গোণা কিছু যাদের অন্তরে তখনো ইসলামের প্রতি ভালোবাসা থাকে তারা Contribute করে কিন্তু তাদের পুরো জীবন সংগ্রামের অনুপাতে ইসলামের জন্য সংগ্রাম হয় খুবই নগণ্য। কাজেই তারা কখনই তাদের মর্যাদা পায় না যারা তাদের পুরো জীবনটাকে ইসলামের সংগ্রামে ব্যয় করে।
আল্লাহ এই অধমকে হেফাযত করুন এবং অবিচলিত রাখুন। আমীন