বর্তমান সময়ে ইবাদতকৃত একটি তাগুত : ত্বাগূত শাসক
.
শাইখ মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল ওয়াহহাব (রহ.) ত্বাগূতের প্রধান মাথা বলেছেন ৫ প্রকার ত্বাগুতকে। তার মধ্যে ঐ শাসকদের অন্তর্ভুক্ত আছে যারা আল্লাহর শরিয়াহ ব্যতিত অন্য কোনো বিধান দিয়ে শাসন করে। কিংবা নিজেরা মনগড়া আইন বানায় এবং তা দিয়ে শাসন করে।
.
শাইখ সালিহ আল ফাওযান হাফিজাহুল্লাহ বলেনঃ পঞ্চম প্রকার তাগুত হলো ঐ ব্যক্তি, যে আল্লাহর নাযিলকৃত আইন দিয়ে বিচার-ফায়সালা করে না। এদের অন্তর্ভুক্ত হলো ঐ সকল শাসক, যারা মনগড়া আইন-কানুন জারি করে, শরিয়াহকে অকেজো করে রাখে, তদস্থলে ঐ সকল মনগড়া আইন-কানুনকে প্রতিস্থাপিত করে, এরা সরাসরি কুরআনি দলিলেই প্রমাণিত তাগুত।
.
আল্লাহ তায়ালা বলেন: তুমি কি তাদেরকে দেখো নি যারা দাবি করে যে, অবশ্যই তারা ঈমান এনেছে তার উপর, যা নাযিল করা হয়েছে তোমার প্রতি এবং যা নাযিল করা হয়েছে তোমার পূর্বে। তারা তাগুতের কাছে বিচার নিয়ে যেতে চায়, অথচ তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাকে অস্বীকার করতে। আর শয়তান চায় তাদেরকে ঘোর বিভ্রান্তিতে বিভ্রান্ত করতে। [সূরা নিসা, আয়াত ৬০]
.
সুতরাং যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান ছাড়া অন্য কোনো বিধানে বিচার-ফায়সালা করে সে তাগুত হয়ে যায়। [শারহু মানাত তাগুত, পৃষ্ঠা ১২]
.
মুজাহিদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
“তাগুত হচ্ছে মানুষের ছদ্মবেশী শয়তান যার কাছে মানুষ বিচার- ফায়সালার জন্য যায় এবং তার অনুগত্য করে।’’ [তাফসীর ইবনে কাসীর]
.
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
.
“…এজন্য যে কেউ পবিত্র গ্রন্থ কোরআনের বিধান ছাড়া ফায়সালা করে সে হচ্ছে তাগুত।” [মাজমূ আল ফাতাওয়া, খণ্ডঃ২৮, পৃষ্টাঃ২০১]
.
ইবনুল কাইয়্যুম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
.
“এমন প্রত্যেকেই তাগুত যারা সীমা অতিক্রম করে যা হতে পারে ইবাদত, অনুসরণ কিংবা ইবাদতের ক্ষেত্রে। সুতরাং, যেকোনো মানবগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে তাগুত হচ্ছে সেই ব্যক্তি যাকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পরিবর্তে বিচারক হিসাবে মানা হয়, অথবা আল্লাহর পরিবর্তে যার ইবাদত করা হয়, অথবা আল্লাহর বিধানের পরিবর্তে যাকে অনুসরণ করা হয়, অথবা অজ্ঞতাবশত যার অনুগত্য করা হয় এমন বিষয়ে যেখানে অনুগত্য শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য নির্ধারিত।’’
.
তিনি আরো বলেন,
“আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিচার-ফায়সালা করার জন্য যে বিধ-বিধান নিয়ে এসেছেন তা অনুযায়ী যে ব্যক্তি বিচার-ফায়সালা করে না অথবা তার অনুসরণ করে না, সে নিশ্চিতভাবেই একটি তাগুতের অনুসরণ করছে।’’ [ইলাম আল মুওয়াকিঈন, খণ্ডঃ১,পৃষ্টাঃ৫০]
.
উপরের আলোচনা দ্বারা এটা স্পষ্ট যে শাসক যদি আল্লাহর শরিয়াহ দিয়ে শাসন না করে নিজের মনগড়া বিধান বানিয়ে শাসন করে তবে সে হয়ে যায় তাগুত।