JustPaste.it

Shamer_poristhitite_kicho_kotha


مؤسسة الحكمة
আল হিকমাহ মিডিয়া
Al-Hikmah Media

 

تـُــقدم
পরিবেশিত
Presents

 

الترجمة البنغالية
বাংলা অনুবাদ
Bengali Translation

 

بعنوان:
শিরোনাম:
Titled


نقاط على حروف

 

শামের চলমান পরিস্থিতিতে কিছু কথা 

 

"A Few Words on the Ongoing Situation in Syria"

 

للشيخ اجملاهد إبراهيم القوصي"خبيب السوداين" حفظه الله
শায়খ ইবরাহীম আল-কুসি (খুবাইব আস-সুদানী) হাফিযাহুল্লাহ
By Sheikh Ibrahim Al-qusi (Khubaib As-sudani) Hafizahullah

 


 

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি

 সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর জন্য। তিনি আপন বান্দাকে সাহায্য করেছেন, আপন বাহিনীকে বিজয়ী করেছেন, শত্রুদের বাহিনীগুলোকে পরাজিত করেছেন! তিনি একত্ববাদী মুজাহিদ বান্দাদেরকে সম্মান দান করেন এবং তার শত্রু কাফের গোষ্ঠীকে লাঞ্ছিত অপমানিত করেন! তিনি আপন রাসূলকে হেদায়াত এবং সত্য দ্বীনসহ পাঠিয়েছেন, যেন তিনি অন্য সকল মতবাদের ওপর এই দ্বীনকে বিজয়ী করেন, যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে। তিনি ইরশাদ করেছেন:

فَلَمْ تَقْتُلُوهُمْ وَلَٰكِنَّ اللَّهَ قَتَلَهُمْ ۚ وَمَا رَمَيْتَ إِذْ رَمَيْتَ وَلَٰكِنَّ اللَّهَ رَمَىٰ ۚ وَلِيُبْلِيَ الْمُؤْمِنِينَ مِنْهُ بَلَاءً حَسَنًا ۚ إِنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ

অর্থ: “সুতরাং তোমরা তাদেরকে হত্যা করনি বরং আল্লাহই তাদেরকে হত্যা করেছেন। আর আপনি যখন নিক্ষেপ করেছিলেন তখন আপনি নিক্ষেপ করেননি বরং আল্লাহ্‌ই নিক্ষেপ করেছিলেন এবং এটা মুমিনদেরকে আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে উত্তমরূপে পরীক্ষার (মাধ্যমে উচ্চ মর্যাদার অসীন করার) জন্য; নিশ্চয় আল্লাহ্‌ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।” [সূরা আনফাল ০৮: ১৭]

রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক মহাযুদ্ধের নবী এবং মুজাহিদদের নেতা আমাদের সরদার মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর, তাঁর পরিবার-পরিজনের ওপর, তাঁর সকল সাহাবীর ওপর!

আল্লাহর প্রশংসা এবং দরূদের পর ..

যখন আমরা ফিলিস্তিনে ইহুদীবাদীদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের চলমান যুদ্ধে ঘটে চলা ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করছি, ব্যাপক ত্যাগ স্বীকার সত্ত্বেও গাজা, পশ্চিম তীর এবং বায়তুল মুকাদ্দাসের আকাশে বিজয়ের সূর্য তখনো উজ্জ্বল, ঠিক সেই সময়ে সিরিয়ার আকাশে আরেকটি সূর্য উদিত হয়েছে, যা আরেকটি বিজয়ের সুসংবাদ বহন করছে, যার মাধ্যমে আল্লাহ মুসলমানদের হৃদয় শীতল করবেন। সুতরাং আজ আমরা আল্লাহর দেয়া বিজয়ে আনন্দিত। যিনি যাকে ইচ্ছা সম্মানিত করেন এবং যাকে ইচ্ছা অপমানিত করেন; তাঁর হাতেই সমস্ত কল্যাণ এবং তিনি সমস্ত কিছুতে সর্বশক্তিমান।

আমি এই বক্তব্য শুরুতেই সকল মুসলমানকে, বিশেষত শাম (সিরিয়া) অঞ্চলের আমাদের প্রিয় ভাই-বোনদেরকে মহান আল্লাহ প্রদত্ত বিজয় ও সুস্পষ্ট সাফল্যের জন্য শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। এই বিজয় আল্লাহ তাঁর দুর্বল ও নির্যাতিত মুসলিম বন্দাদেরকে উপহার দিয়েছেন, যারা সিরিয়ায় বহু বছর ধরে নির্যাতন-নিপীড়ন, জুলুম, অন্যায়-অত্যাচার ও নিষ্ঠুরতার শিকার হয়েছে। লক্ষাধিক মুসলমানকে হত্যা, নির্যাতন ও অপমানিত করা হয়েছে।

হে আল্লাহ, সমস্ত প্রশংসা তোমারই জন্য। আমরা তোমার প্রশংসার সীমা নির্ধারণ করতে পারি না, তুমি যেমন নিজের প্রশংসা করেছো, তেমনি তুমি প্রশংসার যোগ্য।

আমাদের এই দ্রুত পরিবর্তনশীল ঘটনাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে কিছু কথা রয়েছে; সংক্ষিপ্ত এমন কিছু কথা, যেগুলো চিন্তা ও উপলব্ধির খোরাক জোগাবে। আমি চেয়েছিলাম শামে আমাদের মুজাহিদ ভাই-বোনদের জন্য কিছু বার্তা পাঠাবো। সেই বার্তায় তাদের প্রতি কিছু উপদেশ ও পরামর্শ থাকবে। এটি আল্লাহর রাসূল -এর এই বাণীর উপর আমল

করার জন্য:

الْمُؤْمِنُ لِلْمُؤْمِنِ كَالْبُنْيَانِ يَشُدُّ بَعْضُهُ بَعْضًا

অর্থ: “এক মুমিন আর এক মুমিনের জন্য ইমারত তুল্য, যার এক অংশ আর এক অংশকে সুদৃঢ় করে।” [সহীহ বুখারী - ৬০২৬] 

সুতরাং, আল্লাহর ওপর নির্ভর করে আমি শুরু করছি:

 

 

 

প্রথম কথা, আমরা আমাদের শাম ভূমির প্রিয় ভাই ও বোনদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলতে চাই: বাশার আল-আসাদ এবং তার মিত্রদের বিরুদ্ধে ২০১১ সালে শুরু হওয়া আপনাদের এই লড়াই হলো অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। আপনাদের পক্ষ থেকে বাশশারের পিতা তাগুত হাফেজ আল-আসাদের বিরুদ্ধে এ লড়াই শুরু করেছিলেন আপনাদেরই কিছু ভাই। এই নরাধম তাগুতের হাত রক্তাক্ত হয়েছিল বিখ্যাত হামা শহরের গণহত্যায়। সেই গণহত্যায় ২৭ দিনের মধ্যে চল্লিশ হাজারেরও বেশি মুসলিম ভাই-বোনকে হত্যা করা হয়েছিল। আপনারা যেমনটা জানেন, আপনারা এমন এক সাম্প্রদায়িক শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন, আধুনিক ইতিহাসে যার নিপীড়ন ও নৃশংসতার তুলনা নেই। তাদের স্লোগান হলো, ‘আসাদ থাকবে অথবা আমরা দেশ পুড়িয়ে দেবো।এরা এমন শত্রু যার কুফরী, অবিচার ও নিপীড়নে শিশুদেরও মাথার চুল সাদা হয়ে যায়। এ রক্তপিপাসু শত্রু ভয়ঙ্করতম নির্যাতন ও জাতিগত নিধনের পথ অবলম্বন করেছে শুধু এ কারণে যে, জনগণ রাস্তায় নেমে এসেছিল এবং অন্য অনেক জাতির মতো সামান্য স্বাধীনতার দাবি জানিয়েছিল। এ শত্রু জনগণের স্বাধীনতার দাবি ও আহ্বানে সাড়া দিয়েছিল রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে তাদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে, যারা বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়ে তাদের দমন করেছিল, বিমান ও ব্যারেল বোমার মাধ্যমে শহর ধ্বংস করেছিল, পুরো অঞ্চল বিষাক্ত সারিন গ্যাস দিয়ে ধ্বংস করেছিল। শেষে তারা বাধ্যতামূলক বাস্তুচ্যুতির নীতি গ্রহণ করে পুরো শহর এবং গ্রামের পর গ্রাম খালি করে দিয়েছিল। শহরবাসী ও গ্রামবাসীকে ইদলিবে পাড়ি জমাতে তারা বাধ্য করেছিল। আজ আল্লাহর রহমতে আপনারা আবারো যুদ্ধ শুরু করেছেন, যে যুদ্ধ দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বন্ধ ছিল। যতটা প্রস্তুতি ও সরঞ্জামের দরকার, ততটা প্রস্তুতি গ্রহণের স্বার্থে যুদ্ধ বন্ধ ছিল। এ পর্যায়ে আপনারা জেনে রাখুন, এবারের যুদ্ধ আগেরবারের মতো নয়। এবার হলো চূড়ান্ত যুদ্ধ। সুতরাং যারা আপনাদেরকে এই যুদ্ধ বন্ধ করতে বলবে তাদেরকে আপনারা বলে দিন: “এটা অসম্ভব, ইম্পসিবল; আমরা এমন দুই বিপরীত শক্তি যারা কখনো এক হতে পারে না। হয় আমরা থাকবো, নয়তো আসাদ থাকবে।” সুতরাং, আপনাদের শত্রুদেরকে দম ফেলার ফুরসত না দিয়ে আপনারা যাত্রা অব্যাহত রাখুন, অগ্রসর হতে থাকুন, যতক্ষণ না আল্লাহ আপনাদের এবং তাদের মধ্যে ফয়সালা করে দেন। জেনে রাখুন, যত দ্রুত আপনারা গ্রামীণ এলাকা ও শহর দখলের দিকে এগিয়ে যাবেন, ততই এই অগ্রযাত্রা আপনাদের যোদ্ধাদের মনোবল বাড়াবে এবং শত্রুর মনোবল কমিয়ে দেবে। তবে সতর্ক থাকুন! পার্শ্বীয় যুদ্ধে সময় নষ্ট করবেন না, কোনো জাতীয়তাবাদী ন্যাশনালিস্ট দল ও গ্রুপের সাথে বিবাদে জড়াবেন না। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও দিকনির্দেশনার সাথে আপনাদের মতপার্থক্য থাকবে বটে কিন্তু আপনাদের সকলের উপর চেপে বসা স্বৈরাচারী শত্রুকে প্রতিহত করার ক্ষেত্রে আপনারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবেন। আর সাবধান! শতভাগ সাবধান! রাজনৈতিক সমাধান এবং আঞ্চলিক চুক্তির নামে পিছনে ফিরে যাওয়া এবং মুখ ঘুরিয়ে নেয়া থেকে সাবধান! কারণ বিগত কষ্টদায়ক বছরগুলিতে এসবের তিক্ত অভিজ্ঞতা আপনাদের রয়েছে। আপনারাই বলুন, এসব আপনাদের জন্য কী ফায়দা বয়ে এনেছে?

আমি পুনরায় বলছি: পশ্চাদপসরণ এবং পেছনে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে শতভাগ সাবধান থাকুন! এ কাজ ভুলেও করবেন না! কারণ যদি আপনারা তা করেন, তবে এর পরিণতি আপনাদের নিজেদের, আপনাদের পরিবার-পরিজন ও সন্তান-সন্ততির জন্য ধ্বংসাত্মক হবে। এবার আর সবুজ বাসে করে আপনাদেরকে ইদলিবে পাঠানো হবে না। কারণ ইদলিব বা এই ধরনের কোনো কিছুই তো থাকবে না। সুতরাং সতর্ক থাকুন।

 

 

 

দ্বিতীয় কথা, আমরা আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, যখন আপনারা আপনাদের পবিত্র বিপ্লব শুরু করেছিলেন, তখন হৃদয় ও অন্তরগুলো সৃষ্টিকর্তার প্রতি মনোযোগী এবং আল্লাহর প্রতি আকুল ও ব্যাকুল ছিল। আপনারা একমাত্র আল্লাহর জন্য আন্তরিক নিয়ত করে বিপ্লবে নেমেছেন, সারিবদ্ধ হয়েছেন, এক কাতারে দাঁড়িয়েছেন। সে সময় আপনাদের সংগ্রামের স্লোগান ছিল: হে আল্লাহ, হে আল্লাহ, আপনি ছাড়া আমাদের আর কেউ নেই। ফলে আল্লাহ আপনাদের জন্য দেশ ও জাতির হৃদয় উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। আপনারা দামেস্কের কেন্দ্রে সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। এমনকি কুনেইত্রা পর্যন্ত আপনারা পদার্পণ করেছেন, যা ইহুদীদের থেকে এক পাথরের দূরত্বে ছিল। আপনারা বিজয়ের একেবারে দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিলেন। এরপর যখন আপনারা একে অপরের সাথে বিরোধ ও দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়লেন, তখন আল্লাহর নিয়ম অনুযায়ী আপনাদের পরাজয় ও ব্যর্থতা দেখা দেয়। ইদলিবে একটা সংকীর্ণ এলাকায় আপনারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়লেন, কাফের জাতিগুলি তাদের চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আপনাদের জিহাদ ও ত্যাগের বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করলো। অতএব, আমরা বিগতকাল থেকে আপনাদেরকে শিক্ষা নেয়ার উপদেশ দিচ্ছি, যাতে কাফেরদের কৌশল আবার আপনাদের বিরুদ্ধে কাজ না করে। আমরা আপনাদেরকে আহ্বান জানাচ্ছি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার, বিভাজন পরিহার করার এবং আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার। কারণ নানা ধর্ম ও মতাদর্শে বিভক্ত হওয়া সত্ত্বেও আপনাদের শত্রুরা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। তাই আপনাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া তাদের চেয়ে অধিক প্রয়োজন। জেনে রাখুন, আপনাদের শক্তি হলো আপনার ঐক্যের মাঝে; বিভাজন ও বিরোধ পরিহার করার মাঝে। আপনারা আল্লাহর আদেশ মেনে চলুন, যেমনটা তিনি বলেছেন:

وَٱعۡتَصِمُواْ بِحَبۡلِ ٱللَّهِ جَمِيعٗا وَلَا تَفَرَّقُواْۚ وَٱذۡكُرُواْ نِعۡمَتَ ٱللَّهِ عَلَيۡكُمۡ إِذۡ كُنتُمۡ أَعۡدَآءٗ فَأَلَّفَ بَيۡنَ قُلُوبِكُمۡ فَأَصۡبَحۡتُم بِنِعۡمَتِهِۦٓ إِخۡوَٰنٗا وَكُنتُمۡ عَلَىٰ شَفَا حُفۡرَةٖ مِّنَ ٱلنَّارِ فَأَنقَذَكُم مِّنۡهَاۗ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ لَكُمۡ ءَايَٰتِهِۦ لَعَلَّكُمۡ تَهۡتَدُونَ

“আর তোমরা সকলে আল্লাহ্‌র রশি দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। আর তোমাদের প্রতি আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ স্মরণ কর, তোমরা ছিলে পরস্পর শত্রু, অতঃপর তিনি তোমাদের হৃদয়ে প্রীতির সঞ্চার করেন, ফলে তাঁর অনুগ্রহে তোমরা পরস্পর ভাই হয়ে গেলে।” [সূরা আলে ইমরান ০৩:১০৩]

আপনারা আল্লাহ তাআলার এই বাণীও স্মরণ রাখুন:

 وَأَطِيعُواْ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَلَا تَنَٰزَعُواْ فَتَفۡشَلُواْ وَتَذۡهَبَ رِيحُكُمۡۖ وَٱصۡبِرُوٓاْۚ إِنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلصَّٰبِرِينَ

“আর তোমরা আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর এবং নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করবে না, করলে তোমরা সাহস হারাবে এবং তোমাদের শক্তি বিলুপ্ত হবে। আর ধৈর্য ধারণ কর; নিশ্চয় আল্লাহ্‌ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন।” [সূরা আনফাল ০৮: ৪৬]

আল্লাহপাক আরো বলেছেন:

وَإِن تَتَوَلَّوۡاْ يَسۡتَبۡدِلۡ قَوۡمًا غَيۡرَكُمۡ ثُمَّ لَا يَكُونُوٓاْ أَمۡثَٰلَكُم

“আর যদি তোমরা বিমুখ হও, তবে তিনি তোমাদের ছাড়া অন্য সম্প্রদায়কে তোমাদের স্থলবর্তী করবেন; তারপর তারা তোমাদের মতো হবে না।”  [সূরা মুহাম্মদ ৪৭:৩৮]

 

 

 

 

তৃতীয় কথা, আপনারা জেনে রাখুন যে, আল্লাহর ইচ্ছায় আপনাদের দেশটি জায়নিস্ট রাষ্ট্রকে বেষ্টনকারী দেশগুলির একটি। এর মানে হলো, আপনাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অনেক বড়ো। যদি আমেরিকা এবং তার পুতুল রাষ্ট্র ইসরাঈল নিজেদের ইচ্ছা ও প্রভাবের বিপরীতে কোনো বিদ্রোহী শাসন ব্যবস্থাকে গ্রহণ না করে, যারা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে ইসরাঈলের প্রতিবেশী হতে চায়, এমনকি সেই বিদ্রোহী সরকার যদি বাশার আল-আসাদের শাসন ব্যবস্থার মতো ইসলাম থেকে পুরোপুরি বিচ্যুতও হয়, আমেরিকা ও ইসরাঈল যদি সেটাই মেনে না নেয়,তবে তাদের শত্রু ইরানের শক্তিশালী বাহিনীর বিরুদ্ধে আপনাদের দারুণ বিজয়ের পর তাদের স্বার্থের সাথে আপনাদের স্বার্থের সংঘাত দেখা দিলে আমেরিকা ইসরাঈল নির্বিকার অবস্থানে থাকবে না। যতদিন আপনারা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এবং “ফী সাবীলিল্লাহ” এর জন্য যুদ্ধের পতাকা উঁচু করে রাখবেন, ততদিন আপনারা চান বা না চান, ইসরাঈলের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য আপনারা এক তীব্র হুমকি হয়ে থাকবেন। আমি আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে নেতানিয়াহু বলে আসছে: তারা মধ্যপ্রাচ্যের একটি নতুন মানচিত্র তৈরি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। অর্থাৎ, তাদের বৃহত্তর ইসরাঈল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে, যেমনটা তাদের স্বপ্ন। আপনাদের দেশ সিরিয়া তাদের কল্পিত রাষ্ট্র-সীমানার মধ্যে পড়ে। আর আপনারা যে বিজয়গুলি অর্জন করেছেন, তা আল্লাহর রহমতে হয়তো ইহুদীদের ও আমেরিকানদের পরিকল্পনা ও হিসাব উল্টে দিয়েছে। সুতরাং তারা হয়তো সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’-এর নামে আপনাদের বিরুদ্ধে প্রাক-প্রতিবাদী (অগ্রিম স্ট্রাইক) হামলা শুরু করে দেবে। যদি তা ঘটে, তবে প্রতিরক্ষার জন্য সর্বোত্তম উপায় হলো আগে বেড়ে আক্রমণ। সুতরাং আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন এবং ইহুদীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করুন। কারণ আল্লাহর শপথ করে বলছি, যিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই! যদি আপনারা এটা করতে পারেন, তাহলে এই পদক্ষেপটি হবে পুরো উম্মাহকে আপনাদের লড়াইয়ে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুত করার পদক্ষেপ। গোটা উম্মাহ যদি ইহুদীবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায় তাহলে আল্লাহর ইচ্ছায় মুসলিম উম্মাহর সংগ্রামী কাফেলা ইহুদীদের রাজ্যকে ধ্বংস করার জন্য এক বিশাল ঝড়ের মতো ধেয়ে আসবে। তখন পৃথিবীর সকল প্রান্ত থেকে বীর বাহাদুরেরা এবং বনের সিংহরা হামাগুড়ি দিয়ে হলেও আপনাদের কাছে পৌঁছে যাবে। অতএব এই সুযোগ যেন কিছুতেই আপনাদের হাতছাড়া না হয়। কিছুতেই এই মহান গৌরব ও সম্মান থেকে যেন আপনারা বঞ্চিত না হন সেই কামনা করি।  

 

 

 

 

চতুর্থ কথা, আপনারা জেনে রাখুন, বাশার আল-আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে আপনাদের যুদ্ধ জয় চূড়ান্ত গন্তব্য নয়। বরং এটা হলো আপনাদের দেশে জায়নবাদী ক্রুসেডার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এক দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের সূচনা। এই পর্যায়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট স্পষ্ট করে দেয়া জরুরি, যেন এই লড়াইয়ের প্রকৃতি আমাদের সামনে পরিষ্কার হয়ে যায়। 

 আমেরিকা ও তার আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা আপনাদের বিরুদ্ধে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়ার অভিযোগ তুলবে, যাতে তারা আপনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এবং আপনাদের ওপর হামলাকে বৈধতা ও আইনগত রূপ দিতে পারে। আল-কায়েদার সাথে আপনারা আট বছরেরও বেশি সময় আগে সম্পর্ক ছিন্ন করার পরেও তারা আপনাদের ব্যাপারে অভিযোগ তুলবে। যদি এমন কিছু ঘটেই যায়, তবে আপনারা দেখতে পাবেন, আল-কায়েদা তিন দশকেরও বেশি সময় আগে থেকে যা বলে আসছিল, তা সত্যি হয়ে উঠবে; আল-কায়েদা বলে আসছিল: আমেরিকা এবং তার মিত্রদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনা থেকে উদ্ভূত নয়, বরং এই যুদ্ধ প্রাচীন ক্রুসেড যুদ্ধগুলির ধারাবাহিকতা মাত্র। সত্য সঠিক ইসলামের সঙ্গে সম্পর্কিত সবকিছুর বিরুদ্ধেই তাদের এই যুদ্ধ। এটা ইসলাম ও কুফরের মধ্যকার যুদ্ধ, যদিও তারা এ যুদ্ধের নাম ও পরিভাষা পরিবর্তন করে দিয়েছে। আল্লাহ তাআলা সঠিক বলেছেন:

ولن ترضى عنك اليهود ولا النصارى حتى تتبع ملتهم

“..এবং ইহুদীরা এবং খ্রিস্টানরা কখনোই তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না তুমি তাদের ধর্ম অনুসরণ না করো।”  [সূরা বাকারা ২:১২০]

এরা আপনাদের প্রতি সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না আপনারা নিজেদের ধর্ম ও বিশ্বাসের মূল বিষয়গুলোতে তাদের সাথে আপস করেন। আল্লাহ সর্বশক্তিমান আমাদেরকে এবং আপনাদেরকে রক্ষা করুন। সর্ব জ্ঞানী ও প্রজ্ঞার অধিকারী মহান আল্লাহ তার বান্দাদেরকে যা বলেছেন সেদিকে আপনারা দৃষ্টি নিবদ্ধ করুন:

وَمَن يَرۡتَدِدۡ مِنكُمۡ عَن دِينِهِۦ فَيَمُتۡ وَهُوَ كَافِرٞ فَأُوْلَٰٓئِكَ حَبِطَتۡ أَعۡمَٰلُهُمۡ فِي ٱلدُّنۡيَا وَٱلۡأٓخِرَةِۖ وَأُوْلَٰٓئِكَ أَصۡحَٰبُ ٱلنَّارِۖ هُمۡ فِيهَا خَٰلِدُونَ

অর্থ: আর তারা সবসময় তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে, যে পর্যন্ত তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন থেকে ফিরিয়ে না দেয়, যদি তারা সক্ষম হয়। আর তোমাদের মধ্য থেকে যে কেউ নিজের দ্বীন থেকে ফিরে যাবে এবং কাফের হয়ে মারা যাবে, দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের আমলসমূহ নিষ্ফল হয়ে যাবে। আর এরাই আগুনের অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে’। [সূরা বাকারা ০২:২১৭]

 আল্লাহ পাক আরো ইরশাদ করেছেন:

إِنَّهُمۡ إِن يَظۡهَرُواْ عَلَيۡكُمۡ يَرۡجُمُوكُمۡ أَوۡ يُعِيدُوكُمۡ فِي مِلَّتِهِمۡ وَلَن تُفۡلِحُوٓاْ إِذًا أَبَدٗا

‘তারা যদি তোমাদের বিষয় জানতে পারে তবে তো তারা তোমাদেরকে পাথরের আঘাতে হত্যা করবে অথবা তোমাদেরকে তাদের মিল্লাতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। আর সে ক্ষেত্রে তোমরা কখনো সফল হবে না।” [সূরা কাহফ ১৮:২০]   

অতএব আমরা বুঝতে পারলাম এটা একটা বড়ো যুদ্ধ। এর পরিণতি ও প্রভাব মারাত্মক, যা আপনাদেরকে কুরআনে আল্লাহ কর্তৃক উল্লেখিত দুটো বিকল্পের কোনো একটার সম্মুখীন করতে পারে। আপনাদের যেন পতন না ঘটে এবং পিছনে ফিরে আসতে না হয়, সে লক্ষ্যে সামনের পরিস্থিতির জন্য আপনারা নিজেদেরকে প্রস্তুত করুন; একমাত্র আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তাআলার জন্য নিয়তকে একনিষ্ঠ করে নিন, শুধু তাঁর ওপর আপনারা উত্তম রূপে ভরসা করুন, এই আস্থা রাখুন যে, আল্লাহর পক্ষ থেকেই সাহায্য এসে থাকে। আল্লাহ যা চেয়েছেন তাই হয়েছে আর যা চাননি তা হয়নি। নিশ্চয়ই আগের পরের সমস্ত ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব আল্লাহ তাআলার। যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি মনোনিবেশ করবে আল্লাহ কিছুতেই তাকে ধ্বংস করবেন না। নিশ্চয়ই আল্লাহর দ্বীন সমস্ত কিছু থেকে অধিক মূল্যবান, অধিক মর্যাদাশীল ও দামি। রাজত্ব আল্লাহর হাতে তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে দান করেন এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা ছিনিয়ে নেন।

 

 

 

 

পঞ্চম কথা, ব্যথা বেদনা আঘাত ক্ষত দুঃখ-দুর্দশা, ইয়াতীম ও বিধবাদের অশ্রু যেন আপনাদেরকে আপনাদের দ্বীনের ব্যাপারে এক ইঞ্চিও ছাড় দেয়ার ব্যাপারে দ্বিধা দ্বন্দ্বে ফেলতে না পারে। সাবধান থাকুন, যেন বোমার আঘাত ও গর্জন, মিসাইলের আওয়াজ, জঙ্গি বিমানের ভয়াবহ আওয়াজ এবং ট্যাংকের ভয়ানক শব্দ আপনাদেরকে সংশয়ে ফেলে না দেয়, আপনাদেরকে যেন নমনীয় বানিয়ে না দেয়। এসবের কারণে আপনারা মনোবল হারিয়ে আমেরিকা ও মার্কিন চাপের সামনে লাঞ্ছনা গঞ্জনা যেন মেনে না নেন সেটাই আমাদের কামনা এবং আপনাদের প্রতি আহ্বান। এখানে আপনাদের অবস্থার চেয়েও আরও কঠিন অবস্থার উদাহরণ রয়েছে আপনাদের সামনে। আপনারা সেই যুদ্ধ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন, যা আপনাদের তালেবান ভাইয়েরা লড়েছেন। আফগানিস্তানে তারা চল্লিশের অধিক সবচেয়ে শক্তিশালী কাফের রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পূর্ণ ২০ বছর যাবৎ লড়াই চালিয়ে গেছেন। সে যুদ্ধে কয়েক লাখ মানুষ হতাহত হয়েছে। নারীরা বিধবা এবং শিশুরা ইয়াতীম হয়েছ। তাদের বাড়ি-ঘর ও গ্রাম ধ্বংস হয়েছে। তাদের চাষের জমিগুলো ধ্বংস হয়েছে। এতসব দুঃখ-দুর্দশা ব্যথা বেদনা সত্ত্বেও তারা আমেরিকান কুফরী শক্তিকে এক ইঞ্চিও ছাড় দেননি। লড়াইয়ের ময়দানে তারা ২০ বছর ধৈর্য ধারণ করেছেন। অবশেষে আল্লাহ তাদেরকে সাহায্য করেছেন। বিজয় দান করে তাদেরকে সম্মানিত করেছেন। যুগের হোবাল আমেরিকাকে সাম্রাজ্যবাদের সমাধিস্থলে সমাধিস্থ করার সৌভাগ্য ও গৌরব আল্লাহ তাদেরকে দান করেছেন। একগুচ্ছ শব্দ, যেগুলো শুনলেই শরীর কেঁপে ওঠে, যেই শব্দগুলোর মাহাত্ম্য ও গৌরবের সামনে হৃদয় প্রকম্পিত হয়ে ওঠে, তেমনি কিছু শব্দ উচ্চারণ করেছিলেন আমীরুল মুমিনীন মোল্লা উমর রহিমাহুল্লাহ। লোকজন যখন তাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশের এই হুমকির কথা বলেছে যে, ‘আমেরিকা তালেবানদেরকে ধ্বংস করতে আসছে’ তখন সেই হুমকির জবাবে মোল্লা উমর রহিমাহুল্লাহ বলেছেন: “আল্লাহ আমাদেরকে বিজয়ের ওয়াদা করেছেন আর আমেরিকা আমাদেরকে পরাজিত করার ওয়াদা করেছে। আমরা অচিরেই দেখবো, কার ওয়াদা সত্য!” এই কথাগুলোই যেন আপনাদের অটলতা অবিচলতা, কষ্ট সহিষ্ণুতার পথে এবং আপনাদের শত্রুদের ও আপনাদের মাঝে আল্লাহর পক্ষ থেকে চূড়ান্ত ফয়সালা আসার আগ পর্যন্ত ধৈর্য ধারণের পথে অন্যতম মাইল ফলক হয়ে থাকে, এই কামনা ব্যক্ত করছি। এছাড়াও, গাজায় আপনাদের ভাইদের ইতিহাস সৃষ্টিকারী অটলতা ও ধৈর্যের কথা আপনারা স্মরণ করুন, যারা হত্যা, আঘাত, ধ্বংস, ক্ষুধা ও পিপাসার ভিতরেও একটা ছোটো জায়গায় আজও পর্যন্ত ধৈর্য সহকারে বন্দুকের ট্রিগার টেনে ধরে আছেন। যারা তাদের পরিত্যাগ করেছে বা যারা তাদের বিরোধিতা করেছে, কেউই তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারেনি।

 

 

 

ষষ্ঠ কথা, আপনারা জেনে রাখুন, যদি আল্লাহর ইচ্ছায় আপনারা দেশের ক্ষমতা লাভ করেন, তবে ফিলিস্তিনে আমাদের ভাই-বোনদেরকে সাহায্য করা আপনাদের ওপর কর্তব্য হয়ে দাঁড়াবে। কারণ আপনারাই তাদের নিকটতম প্রতিবেশী। সুতরাং আপনাদের উচিত আপনাদের উপর আল্লাহর এ বিরাট অনুগ্রহের অনুভূতি নিজেদের মাঝে জাগ্রত রাখা। কারণ আল্লাহ তাআলার পর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা এবং আমাদের রাসূল -এর ইসরা ভূমিকে জবরদখলকারী ইহুদীদের হাত থেকে মুক্ত করার বিষয়টা আপনাদের উপর নির্ভর করছে।  এই সমস্ত কিছুর উপর ভিত্তি করে আপনারা সরকার ও তার মিত্রবাহিনীর বিরুদ্ধে আপনাদের চলমান লড়াইয়ে আত্মনিয়োগ করুন। বায়তুল মুকাদ্দাস বিজয়ের জন্য এবং তার প্রতিবেশী আমাদের দুর্বল ভাই-বোনদেরকে সাহায্যের জন্য ফিলিস্তিনের দিকে আপনারা নিজেদের দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখুন। কখনোই সাইকস-পিকোর অঙ্কিত সীমানায় আটকে যাওয়া যেন এই যুদ্ধে আপনাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য না হয়। আপনাদের ফিলিস্তিনি ভাইয়েরা সাহায্যের জন্য আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে। ইসলামের পুণ্যভূমি ও পবিত্র বিষয়গুলোকে মুক্ত করার জন্য এবং মুসলমানদের দেশগুলোতে ইহুদীবাদী, মার্কিন, ব্রিটিশ ও রাশিয়ান — যেকোনো অন্যায় আগ্রাসন মোকাবেলা করার জন্য মহাযুদ্ধ পরিচালনায় আপনারাই মুসলমানদের অগ্রদূত। হাসান সনদে ইমাম আবু দাউদ বর্ণিত সহীহ হাদীসে এসেছে এবং হাদীসটি আল-বানীর সহীহুল জামী গ্রন্থেও এসেছে: “কোনো ব্যক্তি যদি এমন কোনো স্থানে কোনো মুসলমানকে পরিত্যাগ করে, যেখানে তার সম্মান বিনষ্ট করা হচ্ছে, মানহানি করা হচ্ছে, ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলাও এমন জায়গায় পরিত্যাগ করেন যেখানে সে সাহায্যের আশা করে। আর কোনো ব্যক্তি যদি এমন কোনো স্থানে কোনো মুসলমানকে সাহায্য করে, যেখানে ওই মুসলমানের মানহানি করা হচ্ছে এবং সম্মান বিনষ্ট করা হচ্ছে, ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা এমন জায়গায় সাহায্য করেন যেখানে ওই ব্যক্তি আল্লাহর সাহায্যের আশা করে।” ইমাম আহমদ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।  

 

 

 

 

সপ্তম কথা, আপনাদের প্রতি আমার অসিয়ত ও পরামর্শ, কয়েক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে এমন দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের জন্য যতটুকু শক্তি ও উপকরণ সম্ভব, আপনারা প্রস্তুত করতে থাকুন। গাজা উপত্যকায় আল-কাসসাম ব্রিগেডের ভাইয়েরা যেই লড়াই পরিচালনা করছেন তাতে আপনাদের জন্য শিক্ষা ও উপদেশ রয়েছে। সহায় সরঞ্জামের অগ্রতুলতা, সাহায্যকারী ও সহায়তাকারীর অভাব, অবরোধ, নিষেধাজ্ঞা, ক্ষুধা, পিপাসা, দেশান্তর ও বোমা হামলার মধ্যেও তারা অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছেন। তারা এমন এক সংকীর্ণ অঞ্চলে প্রতিরোধ দাঁড় করিয়েছেন যার আয়তন আপনাদের দেশের পাঁচশত সাত ভাগের এক ভাগ থেকে বেশি নয়। তাই আপনাদের উচিত খাল বা সুড়ঙ্গ তৈরি করা, অন্তর্ঘাতমূলক ও গেরিলা যুদ্ধের জন্য উপযোগী অস্ত্র যেমন, মাইন, ড্রোন, স্নাইপার রাইফেল, সাইলেন্সার, এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, বিমান বিধ্বংসী অস্ত্র, বহনযোগ্য ও গাইডেড বর্ম ইত্যাদি অস্ত্রকে অত্যন্ত গোপন স্থানে মজুদ করা।   

 

 

অষ্টম কথা, সর্বতোভাবে সতর্ক থাকুন ওই সমস্ত গোয়েন্দা ও গুপ্তচরের ব্যাপারে যারা আপনাদের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়েছে।  তারা গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে আপনাদের মনোবল দুর্বল করার চেষ্টা করবে। আপনাদের মধ্যে যেন তাদের কথায় কান দেওয়া লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি না পায়, সে বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করুন। আপনারা যদি তাদের বিরুদ্ধে আপনাদের রবের কাছে সাহায্য কামনা করেন, তাহলে তাদের কথার সুরেই আপনারা তাদেরকে চিনতে পারবেন। তাদের ভণ্ডামি ও মুনাফেকি তাদের জিভের স্খলনে এবং তাদের মুখের বৈশিষ্ট্যে ঠিকই প্রকাশ পেয়ে যাবে। তবে, লোকদের সন্দেহবশত পাকড়াও করবেন না। তাবিঈ ইয়াহিয়া ইবনে ইয়াহিয়া আল-ঘাসানি যখন মসুলের শাসনভার গ্রহণ করেছিলেন, তখন কী বলেছিলেন তা আপনারা স্মরণ করুন। তিনি বলেছিলেন: “যখন উমর ইবনে আবদুল আজীজ আমাকে মসুলের শাসক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন, তখন আমি সেখানে গিয়ে দেখলাম, দেশের মধ্যে এই জায়গায় সবচেয়ে বেশি চুরি ও প্রতারণা হয়। আমি উমরকে দেশের পরিস্থিতি লিখে পাঠালাম এবং জিজ্ঞেস করলাম: ‘আমি লোকদেরকে সন্দেহের ভিত্তিতে শাস্তি দেব এবং নিছক অভিযোগের ভিত্তিতে তাদেরকে প্রহার করবো, না কি প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের বিচার করবো এবং সুন্নাহের নির্দেশনা অনুসরণ করবো?!’ তিনি আমাকে লিখে পাঠালেন যে, ‘লোকদেরকে প্রমাণের ভিত্তিতে বিচার করুন এবং সুন্নাহের নির্দেশনা অনুসরণ করুন। যদি সত্য তাদেরকে সংশোধন না করে তবে আল্লাহ তাদেরকে সংশোধন করবেন না।’ ইয়াহিয়া বললেন: ‘আমি তাই করলাম। মসুল ছেড়ে যাওয়ার আগেই এ জায়গাটা দেশের মধ্যে সবচেয়ে উন্নত স্থান হয়ে উঠল, যেখানে চুরি প্রতারণা সবচেয়ে কম ছিল। এছাড়াও আমি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, আজকাল আধুনিক প্রযুক্তির ব্যাপারে খুব বেশি সতর্ক থাকুন। ব্যাপকভাবে গোয়েন্দাগিরি এবং অবস্থান শনাক্তকরণের জন্য এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশেষত মোবাইল ফোন এবং ফিল্ড কমিউনিকেশন ডিভাইসগুলির ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক থাকা প্রয়োজন। লেবাননে হিজবুল্লাহ নামক সংগঠনের সাথে যা ঘটেছে, তাতে আপনাদের জন্য শিক্ষা ও সতর্কবার্তা রয়েছে।

 

 

 

নবম কথা, এই পয়েন্টের মধ্য দিয়ে আমি আমার আলোচনা শেষ করবো। এই পয়েন্টে আমি নিজেকে এবং আপনাদেরকে অসিয়ত করে বলবো, শরীয়তের মূলনীতির ওপর অটল অবিচল থাকার ব্যাপারে আমাদের আল্লাহকে ভয় করা উচিত। আল্লাহর মজবুত রজ্জু আঁকড়ে ধরার ব্যাপারে আল্লাহকে স্মরণ করা উচিত। সংঘবদ্ধতা, জামাত, সৌহার্দ্য সম্প্রীতি ভালোবাসা নিশ্চিত কারী প্রতিটি বিষয়ের দিকে আমাদের এগিয়ে আসা উচিত এবং বিভক্তি ও বিরোধ সৃষ্টিকারী সমস্ত বিষয় আমাদের পরিহার করা উচিত। ন্যায়পরায়ণতা ইনসাফ আমাদের অবলম্বন করতে হবে এবং জুলুম থেকে পুরোপুরি বেঁচে থাকতে হবে। দুর্বল ব্যক্তি দরিদ্র লোক ও ফকির মিসকিনদের প্রতি রহমত ভালোবাসা ও দয়া অনুগ্রহের ব্যাপারে আল্লাহকে স্মরণ করতে হবে। শত হাজার শহীদ ও আহতের রক্তের সাথে যেন আমরা বিশ্বাসঘাতকতা করে না বসি। লক্ষ লক্ষ বিধবা ও ইয়াতীমের ব্যাপারে আমরা যেন আল্লাহকে স্মরণ রাখি। ফিলিস্তিনে আপনাদের ভাইবোনদের সাহায্যের ব্যাপারে আল্লাহকে স্মরণ রাখুন। আপনাদের দৃঢ়তা ও প্রতিরোধের মাধ্যমে শান্তির শেয়াল, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীদের দোসর, ইহুদী রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্থাপনকারী, বিপ্লব ছিনতাইকারী এবং শহীদদের রক্ত দিয়ে বাণিজ্যকারী মহলের সুযোগ নষ্ট করে দিন।

শান্তির মিষ্টি কথা বলা এই লোকগুলো কাফের রাষ্ট্র এবং তাদের সমর্থক মুরতাদ শাসকগোষ্ঠীর কাছে নিজেদের নেতৃত্ব ও ইচ্ছাশক্তি বন্ধক দিয়ে রেখেছে। অতএব আপনারা তাদের হাতে আপনাদের লাগাম তুলে দেবেন না। যারা আল্লাহর দ্বীনের জন্য একনিষ্ঠভাবে কাজ করে, সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের ময়দানে যারা পরীক্ষিত, যারা শুধু আল্লাহর উপর ভরসা করে চলে, শুধু তাদেরকেই আপনারা অনুসরণ করুন। বিজয়ের নেশা যেন আপনাদেরকে সত্যের বিরুদ্ধে অহংকারে প্ররোচিত না করে। যেমনিভাবে আপনারা নিজেদের শত্রুদের বিরুদ্ধে আপনাদের কাঁধে অস্ত্র বহন করছেন, একইভাবে এই অস্ত্রের পাশাপাশি আপনারা দুর্দশা পীড়িত এই জাতির জন্য আপনাদের হৃদয়ে দয়া ভালোবাসা ও মমতা লালন করুন। একটি সম্মানজনক জীবনের দিকে পথ চলার জন্য আপনারা এই জাতির উত্তম সহযোগী হয়ে উঠুন। এই জাতির দ্বীন দুনিয়া যেন পরিশুদ্ধ হয়ে যায়, আপনারা সেই প্রচেষ্টা এই জাতিকে নিয়োজিত করুন। আপনারা শরীয়তের বিধান বাস্তবায়ন করুন, যেমনটা আমাদের রব চান এবং পছন্দ করেন। আপনারা আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে জিহাদের ভালোবাসা মুসলমানদের হৃদয়ে গেঁথে দিন।

 

হে আল্লাহ! ইসলাম এবং মুসলিমদের মর্যাদা বৃদ্ধি করুন। হে আল্লাহ, ফিলিস্তিন, গাজা এবং সিরিয়াতে আমাদের মুজাহিদ ভাইদেরকে সাহায্য করুন। হে আল্লাহ! সোমালিয়া, আফ্রিকা, ইসলামী মাগরিব এবং আরব উপদ্বীপে তাদেরকে সাহায্য করুন।

 আমাদের ভাই ও প্রিয় মুসলিম জাতি, বিশেষ করে সুদানের মুসলিমদেরকে এবং সারা পৃথিবীর মুসলিমদেরকে রক্ষা করুন। হে আল্লাহ, যারা আমাদের এবং মুসলিমদের ব্যাপারে মন্দ ইচ্ছা পোষণ করে, তাদের নিজেদের বিপদে তাদেরকে ব্যস্ত রাখুন। তাদের পরিকল্পনাকে তাদের ধ্বংসের কারণ বানিয়ে দিন। হে আল্লাহ, আমরা তাদের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আপনাকে আমাদের রক্ষাকর্তা হিসেবে গ্রহণ করি এবং তাদের অকল্যাণ থেকে আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করি।

আমাদের শেষ কথা হলো, সমস্ত প্রশংসা জগতসমূহের রব আল্লাহ তাআলার জন্য।

***** 

 

روابط بي دي اب
PDF (651 KB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৬৫১ কিলোবাইট]
https://archive.gnews.to/index.php/s/dSNcA9EYjK5o4pt


https://banglafiles.net/index.php/s/wSHYjFJrBFKpEyZ


https://archive.org/download/shamer-choloman-poristhitite-kichu-kotha/Shamer%20choloman%20poristhitite%20kichu%20kotha.pdf


https://workdrive.zohopublic.eu/file/8gioif1f4dc6a88c3429d8935a9abe74c9d79


https://secure.ue.internxt.com/d/sh/file/e8a16c37-9deb-42a6-822c-f687091de738/c4855e70041f585a0baedb88eecbeb17309400ec62302b1b61d06295f1842283


https://upload001.wordpress.com/wp-content/uploads/2024/12/shamer-choloman-poristhitite-kichu-kotha.pdf


https://jmp.sh/TvHlzAwD


https://mega.nz/file/OyxlEbZI#KJu2W2tEI_rq-uNivDzwdZReANuW5YNcOndbbyeKONQ


https://www.mediafire.com/file/gvhldfe1jgiu9zr/Shamer+choloman+poristhitite+kichu+kotha.pdf/file


https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=r4a1n6z5b5

 

 

روابط ورد
Word (457 KB)
ওয়ার্ড [৪৫৭ কিলোবাইট]
https://archive.gnews.to/index.php/s/W743bwy42zkKbz4


https://banglafiles.net/index.php/s/kJHZ2CTJTDFq9AJ


https://archive.org/download/shamer-choloman-poristhitite-kichu-kotha/Shamer%20choloman%20poristhitite%20kichu%20kotha.docx


https://workdrive.zohopublic.eu/file/8gioi0125698981f346c6af26fbf6ec8b8ac3


https://secure.ue.internxt.com/d/sh/file/1c894274-68ef-4816-91a3-5073b32091b1/df0ef53dcc94a0719978f3d859381ba833d63bdb7585c424a6ba25f556c56330


https://upload001.wordpress.com/wp-content/uploads/2024/12/shamer-choloman-poristhitite-kichu-kotha.docx


https://jmp.sh/oN76XYYV


https://mega.nz/file/iupyWaZD#UYDeRuoSFhjp8bvoTqr3W32GRvTQqiHhbSlnsrP1_V4


https://www.mediafire.com/file/o9oeiu4ochz5god/Shamer+choloman+poristhitite+kichu+kotha.docx/file


https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=o0o7f3r3v5

 


روابط الغلاف- ١
book Cover [268 KB]
বুক কভার ডাউনলোড করুন [২৬৮ কিলোবাইট]
https://archive.gnews.to/index.php/s/3CajG7EPPbKcBCX


https://banglafiles.net/index.php/s/sYdQnxfnqmQz85m


https://jpcdn.it/img/1b719796ac846b1cee3d1b66aef2db71.jpg


https://workdrive.zohopublic.eu/file/8gioi3c23c6205fa44cce8c4419f3fe2b7f4b


https://share.eu.internxt.com/d/sh/file/7e2b3599-b8cb-48c6-be88-8b99e3945480/ea90fa09b1ed62c6a3c56b32e6f02d413580140003fbaf6cf7f019232675c168


https://jpcdn.it/img/3227ae70ef4fd985ccb84d2e0f8510ef.jpg


https://jmp.sh/SLlFrokP


https://mega.nz/file/bywzBSCB#iUYLio1Rg1NdBXPjcf3fK9h3fdDVZYCOtZaJdPeyMTg


https://www.mediafire.com/file/50z0n9z4xni1vcr/Shamer+choloman+poristhitite+kichu+kotha+Cover.jpg/file


https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=j8v8n7v3z7

 

 

روابط الغلاف- ٢
Banner [144 KB]
ব্যানার ডাউনলোড করুন [১৪৪ কিলোবাইট]
https://archive.gnews.to/index.php/s/jEkcnX6rJDneL6e


https://banglafiles.net/index.php/s/2bsw6wZTNz276Ro


https://jpcdn.it/img/1e695ad910bf202fa79b96215771611c.jpg


https://workdrive.zohopublic.eu/file/8gioibefbe4150a454ee7ba6144cff628eab3


https://secure.eu.internxt.com/d/sh/file/2f235845-0a35-4554-a124-a7c62f1a6d1b/4683f18c069bd1c97a09347ec4f0dcdd9a627498f92b63121fe1b079cd396999


https://jpcdn.it/img/807b14f2bd27c1e58671dd40f24f3c61.jpg


https://jmp.sh/9LeQ1HMZ


https://mega.nz/file/r7QGHCBT#WVwUbpLiswz3dw_UiB2-9_F7Y9QfAntbUWLJ4R_WbQ8


https://www.mediafire.com/file/xp0obydo7rpw8j7/Shamer+choloman+poristhitite+kichu+kotha+WEB.jpg/file


https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=e0u9z5b1o0

 


مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة الحكمة للإنتاج الإعلامي
قاعدة الجهاد في شبه القارة الهندية
আপনাদের দোয়ায়
আল হিকমাহ মিডিয়ার ভাইদের স্মরণ রাখবেন!
আল কায়েদা উপমহাদেশ
In your dua remember your brothers of
Al Hikmah Media
Al-Qaidah in the Subcontinent