JustPaste.it

“আমি তাদেরকে হত্যা করব যেভাবে আদ জাতিকে হত্যা করা হয়েছিল”- হাদিসের ব্যাখ্যা -শাইখ আবু কাতাদা আল-ফিলিস্তিনি (হাফিজাহুল্লাহ)

 

কিভাবে আমরা রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এর (খাওয়ারিজদের ব্যপারে দেয়া) এ বক্তব্যটি বুঝতে পারিঃ আমি তাদেরকে (খাওয়ারিজদেরকে) হত্যা করব যেভাবে আদ জাতিকে হত্যা করা হয়েছিল (যাদেরকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করা হয়েছিল)। এটি এ জন্য নয় যে খাওরাজিদের আকিদা ইহুদি-খ্রিস্টানদের থেকেও নিকৃষ্ট, তবে বিষয়টি তা নাহলেও রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) তাদের সম্পর্কে এমন কথা বলেছেন যা তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) অন্য কারও সম্পর্কে বলেন নি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) ইহুদি-খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদেরকে একদম নিশ্চিহ্ন করে দিতে বলেন নি যেভাবে তিনি খাওয়ারিজদের ব্যাপারে বলেছেন। কেন এই পার্থক্য? কারন, মুসলিমদের মাঝে তাদের বিরোধীদেরকে হত্যা করাই হচ্ছে খাওয়ারিজদের দ্বীন, আর কিছুই নয়, আর তাদের এই হত্যালীলার কারন হচ্ছে সেই সকল লোকদের কুফরি (তাদের মতে)। সবসময়েই খাওয়ারিজদের দ্বীন হচ্ছে মুসলিমদেরকে হত্যা করা, কিন্তু ইহুদি-খ্রিস্টানদের দ্বীন সব ক্ষেত্রে এরকম নয়। বরঞ্চ, কিছু পরিস্থিতিতে তারা জিযিয়া দিতে সম্মত হয়, কিন্তু খাওয়ারিজরা আপনার ব্যপারে তলোয়ার ছাড়া আর কিছুই দেখে না।

 

এই যদি কারও অবস্থা হয়, তাহলে তলোয়ার এবং নিশ্চিহ্ন করাই হচ্ছে তার ব্যপারে একমাত্র সমাধান। কারন তার অনিষ্ঠ বন্ধ করার এছাড়া আর কোন উপায় নেই। এইজন্য যদি কেউ বলে আমি তাদের একজন, তাহলে আপনি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করুন যদি সে আপনার বিরুদ্ধে সীমালঙ্ঘন করে (আক্রমণ করে)। আর এই যুদ্ধ এভাবেই হবে যেভাবে আদ জাতিকে হত্যা (নিশ্চিহ্ন) করা হয়েছিল। কারন তারা সবসময়ই সীমালঙ্ঘনের এই পর্যায়ে আবদ্ধ, আর তারা এর বাইরে কিছুই বোঝে না (অত্যাচার আর আক্রমণ করা)। এমন কি, যেসব খাওয়ারিজ বসে আছে (যারা যুদ্ধ করছেনা) তাদের বৈশিষ্টও একই, কারন তারা তো বসে আছে আর অপেক্ষা করছে এই পরিকল্পনা মাথায় নিয়েই যে কখন তাদের হাতে ক্ষমতা আসবে। যদি কেউ বলে এখানে বক্তব্যটি সঠিক হয়নি তাহলে আমি বলব আসলে বিষয়টি এখানে একই। যদি আমি বলি যে তাদেরকে হত্যা করতে হবে তাদের অত্যাচার-সীমালঙ্ঘনের জন্য, অথবা যদি বলি যে তাদেরকে হত্যা করতে হবে যেভাবে আদ জাতিকে হত্যা করা হয়েছিল, এর অর্থ আসলে একই দাঁড়ায়। কারন খাওয়ারিজরা সবসময়েই আপনার বিরুদ্ধে অত্যাচারে সীমালঙ্ঘন করে।

 

খাওয়ারিজদের চরমপন্থার বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে (তাদের অত্যাচার বন্ধের উদ্দেশ্যে) যখনই আমাকে আহবান করা হয়েছে একটি বিবৃতিতে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য যেখানে কেউ দ্বিমত পোষণ করবে না, আমি বলি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করুন উপরের ব্যাখ্যা অনুসরণে। এরপর যদি কেউ আমার মতের ভিন্নমতে অসঙ্গতি প্রকাশ করতে আসে এবং বলে যেঃ তাহলে কেন তাদেরকে আদ জাতির মত হত্যা করতে বলা হয়েছে?, সে আসলে ভাবছে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে হত্যা করতে বলেছেন তাদের আকিদা-বিশ্বাসের জন্য, মুসলিমদের বিরুদ্ধে তাদের হত্যাকান্ড এবং কুপরিকল্পনার সব সময়কার অবস্থানের কারনে নয়।

 

আমি উপসংহার টানছি এই বলে যে, আসলে সমস্যা তাদের ভেতর যারা তাদের (খাওয়ারিজদের) বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরতে রাজি নয় যতক্ষন না তারা (খাওয়ারিজরা) তাদের বা তাদের গোষ্ঠীর উপর আক্রমণ করে। তাদেরকে যদি বলা হয়, যে আপনি যদি চিন্তা করেন তাহলে দেখবেন যে আপনি ওদের তালিকায় আছেন, আপনার উপর তাকফির করা তাদের (খাওয়ারিজদের) জন্য তেমন কিছু নয়। আমরা একবার তাদেরকে এ কথা বলেছিলাম, আর তারা উত্তর দিয়েছিলেনঃ আমরা আপনার সাথে দ্বিমত পোষণ করি, আমরা এবং তারা (খাওয়ারিজরা) তো ভালর জন্যই কাজ করছি, দয়া করে আমাদের ভেতর ফিতনা ছড়াবেন না। আসলে পরিস্থিতি কি এখনও এরকমই আছে যেসব জায়গাগুলোতে আপনি খাওয়ারিজদেরকে দেখতে পাচ্ছেন?

 

আজ আমি মুজাহিদদের উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে বলতে চাই, আপনারা যদি দ্রুততার সাথে নিজেদেরকে প্রস্তুত না করেন চরমপন্থিদের (খাওয়ারিজদের) দখলকৃত ভূমি অধিগ্রহণ করার জন্য, তাহলে এই ভূমিগুলো ধর্মদ্রোহীদের (নাস্তিক, মুরতাদ, কাফির) হাতে চলে যাবে যা আপনারা ভাল করেই জানেন, কারন শামে তাদের (খাওয়ারিজদের) রাষ্ট্র (STATE) এখন বিলুপ্তপ্রায়। যদি তাদের (খাওয়ারিজদের) দখলকৃত ভূমি অধিগ্রহণ করা আপনাদেরকে অনুপ্রাণিত না করে, তাহলে নিজেদেরকে অনুপ্রাণিত করুন মুসলিম উম্মাহের উপর সেই সকল ধর্মদ্রোহীদের অত্যাচারের কথা ভেবে যা তারা ঐ ভূমিগুলোতে চালাবে যদি আপনারা ভূমিগুলো অধিগ্রহণ না করেন। খাওয়ারিজরা এতদিন পর্যন্ত টিকে থাকতে পারবে না যতদিনে তারা (ধর্মদ্রোহীরা) কোন উপায় বের করে ফেলে। এটাই তাদের (ধর্মদ্রোহীদের) কাজের ধরন এবং পদ্ধতি, তাদের এ ধরনের কাজের দলিল আছে যা আপনারা দেখেছেন।

 

ইয়া আল্লাহ, ইয়া আল্লাহ, এ আপনার দ্বীন এবং সম্মান! আমি কি পৌছুতে পারলাম? ইয়া আল্লাহ, আপনিই সাক্ষি!