আন নাফির বুলেটিন
ইস্যু-১৭
আস সাহাব মিডিয়া
মুহাররম, ১৪৩৯ হিজরি
শাইখ মাহদি আকিফ রহঃ আল্লাহর কাছে চলে গেলেন!
শাইখ মাহদি আকিফ নয় দশক ধরে নানা ধরণের জুলুম ও পরীক্ষা ভোগ করেছেন। তাকে কারাগারে বন্দির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল (রাজা ফারুকের) ক্ষয়িষ্ণু রাজত্বের সময়কালে। অতঃপর ঘৃণিত জামাল নাসেরের শাসনকাল অতিবাহিত হয়, ধ্বংসপ্রাপ্ত আনোয়ার সাদাতের সময়কালও চলে যায়, এবং বিচ্যুত মুবারকের যুগও শেষ হয় (আল্লাহ তাআলা তাকে পাকড়াও করুন!), সর্বশেষ তাগুত সিসির যুগও চলে যায় (আল্লাহ তাআলা তাকে ধ্বংস করুন!), যে কিনা উনার বার্ধক্যেকেও গ্রাহ্য করেনি, গ্রাহ্য করেনি তার শারীরিক অসুস্থতা এবং তার খ্যাতির পরিমাণকেও। শাইখ মাহদি আকিফ রহঃ হকের উপর অটলতার দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন ক্ষমা ভিক্ষাকে প্রত্যাখ্যান করে, তিনি এই দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন এভাবে যে তিনি এমন কোন আবেদন করেননি যা তাকে নিরাপদ মুক্তি দিতে পারত। তিনি সজ্ঞানে একজন বন্দি হিসেবে নিজের জন্যে মৃত্যুকে বেছে নিয়েছেন। যেন আল্লাহ্ তায়ালার কাছে তার আত্মা পৌঁছে যেতে পারে। এমন এক স্থানে যেখানে কোন অন্যায় নেই, আল্লাহ্ শাইখ মাহদি আকিফ রহঃকে ক্ষমা করে দিন, এবং জান্নাতের উচ্চ স্থান তাকে দান করুন। আমীন।
শাইখ রহঃ এর সাথে আমাদের ইখতিলাফ সত্ত্বেও ইসলামী ভ্রাতৃত্ব অটুট রয়েছে, সুতরাং যে দুঃখজনক বাস্তবতার মাঝে উম্মাহ জীবন যাপন করছে, এবং যে জুলুম ও পশ্চিমাকরনের মধ্য দিয়ে উম্মাহ অতিবাহিত হচ্ছে, তা মুকাবিলা করার জন্যে দরকার সবার একতাবদ্ধ হয়ে প্রচেষ্টা এবং একে অপরকে সহযোগিতা করা, যাতে আমরা এই কঠিন শাস্তি ও বিপর্যয় অতিক্রম করতে পারি, এবং আমরা পৌঁছতে পারি সেই লক্ষ্যে, যেখানে আল্লাহর শরীয়ত ও তাঁর কিতাবের বাস্তবায়ন হয়েছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং তাঁর রজ্জুকে আঁকরে ধরার নির্দেশ দিয়েছেন-
وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا ۚ
“তোমরা এক যোগে আল্লাহর রজ্জুকে আঁকরে ধর এবং পৃথক হইয়ো না!” (সুরা আলে ইমরান-১০৩)
وَالْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ ۚ يَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ وَيُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَيُطِيعُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ ۚ أُولَٰئِكَ سَيَرْحَمُهُمُ اللَّهُ ۗ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ
“আর ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী একে অপরের সহায়ক। তারা ভাল কথার শিক্ষা দেয় এবং মন্দ থেকে বিরত রাখে। নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করে। এদেরই উপর আল্লাহ তাআলা দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশীল, সুকৌশলী। (সুরা তাওবা-৭১)”
বাতিল শক্তি বাতিল হওয়া সত্ত্বেও, ফাসাদ সৃষ্টিকারী হওয়া সত্ত্বেও তাদের কাতারগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করা, তাদের শক্তিগুলোকে একত্রিত করা এবং তাদের মতানৈক্য গুলোকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, যাতে তারা তাঁদের টার্গেট বাস্তবায়ন করতে পারে, এবং উদ্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে, তাই জিহাদের অপরিহার্যতার উপর গুরুত্ব/ তাকিদ প্রদানের পাশাপাশি আমাদের কাতারগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং মতানইক্যের বীজগুলোকে উপড়িয়ে ফেলার কাজ করা আমাদের কর্তব্য। এবং নিশ্চই শান্তিপূর্ণ পথগুলো/আন্দোলন গুলোতে কোন সমাধান নেই!
ধর্মনিরপেক্ষ সংগঠন/ প্রতিষ্ঠানের অধিনে নির্বাচনগুলোতের মাধ্যমে ইসলাম প্রতিষ্ঠার মুলনীতি হল শরিয়ত কর্তৃক বাতিল এবং আকল কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত একটি বিষয়।
হে আল্লাহ! আপনি আরব ও আজমের তাগুতদের ধ্বংস করুন! হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে তাদের ব্যাপারে আপনার আশ্চর্য কুদরত দেখান! নিশ্চই তারা আপনাকে অক্ষম করতে পারবে না হে শক্তিধর! হে প্রতাপ ও প্রতিপত্তির অধিকারী!
হে আল্লাহ! আমাদের সর্দার মুহাম্মাদ, তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবায়ে কেরামের উপর রহমত ও পরিপূর্ণ শান্তি বর্ষণ করুন! আমিন।