JustPaste.it

আনসার গাজওয়াতুল হিন্দ

রবিউল আওয়াল - ১৪৪১হিজরী

নভেম্বর - ২০১৯ঈসায়ী

 

বাবরি মসজিদ নিয়ে ভারতীয় আদালতের রায়ের ব্যাপারে

“আনসার গাযওয়াতুল হিন্দ”-এর বিবৃতি

 

وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّن مَّنَعَ مَسَاجِدَ اللَّهِ أَن يُذْكَرَ فِيهَا اسْمُهُ وَسَعَىٰ فِي خَرَابِهَا أُولَٰئِكَ مَا كَانَ لَهُمْ أَن يَدْخُلُوهَا إِلَّا خَائِفِينَ لَهُمْ فِي الدُّنْيَا خِزْيٌ وَلَهُمْ فِي الْآخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيمٌ ﴿البقرة: ١١٤﴾

“যে ব্যক্তি আল্লাহর মসজিদসমূহে তাঁর নাম উচ্চারণ করতে বাধা দেয় এবং সেগুলোকে উজাড় করতে চেষ্টা করে, তার চাইতে বড় যালেম আর কে? এদের পক্ষে মসজিদসমূহে প্রবেশ করা বিধেয় নয়, অবশ্য ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায়। ওদের জন্য ইহকালে লাঞ্ছনা এবং পরকালে কঠিন শাস্তি রয়েছে।”(সূরা বাকারাহ : ১১৪)

 

শেষ পর্যন্ত হিন্দের দুর্বল ও নিপীড়িত মুসলমানরা তাদের শহীদ বাবরি মসজিদ সম্পর্কে বাতিল আদালতের চূড়ান্ত রায় জানতে পেরেছে। এ রায় মুসলমানদের অন্তরে তীব্র বেদনা ও রক্তক্ষরণের সৃষ্টি করেছে।

 

তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র করছো, তার বিপরীতে আমাদের রবই আমাদের একমাত্র সাহায্যকারী।

 

বাবরি মসজিদের রায় সম্পর্কে এই মালাউন হিন্দু সরকার এবং এর আদালত থেকে এর বেশি কিছু আশা করা যায় না। তবে এই উপলক্ষে, যে সকল মুসলিম নেতারা নিপীড়ক মুশরিক সরকার ও এর অধিনস্ত বিভাগসমূহের উপর সুবিচারের আশা রেখেছিলেন এবং যারা মুসলিম সম্প্রদায়কে মুশরিকদের সাথে মিলেমিশে থাকার সবক শেখাতেন, তাদেরকে অবশ্যই তাদের অবস্থান নিয়ে নতুন করে চিন্তা-ভাবনা করা উচিত।

 

ইসলামের ইতিহাসে ইহুদীদের বাইতুল আকসা দখল, ফারাওদের (পাকিস্তান সেনাবাহিনী) দ্বারা লাল মসজিদের উপর আক্রমণ, শ্রীনগরের জামে মসজিদ নাপাক হিন্দু সেনাবাহিনীর দ্বারা অবরোধ, সাম্প্রতিককালের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার উদাহরণ। হিন্দুদের হাতে বাবরি মসজিদ শহীদ হওয়াও তেমনি গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা।

  

বাবরি মসজিদের জমি হিন্দু মুশরিকদের হাতে হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত একটি স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে যে, মু’মিনদের জন্য এই ব্যাথা ও অপমান থেকে উদ্ধারের পথ একটাই। সেটি হচ্ছে: নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দেখানো পথ। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ, গান্ধীবাদ, শান্তিবাদ বা কুফফারদের জিহাদ বিরোধী নানান মতবাদের কোন পথেই এই বিপর্যয় থেকে মুসলিম জাতি নিজেদেরকে উদ্ধার করতে পারবে না।

 

বাবরি মসজিদের শাহাদাত এবং তারপর এই পবিত্র ও বরকতময় ভূমি নোংরা মুশরিকদের হাতে তুলে দেওয়ার ঘটনা মুসলমানদের জন্য লাঞ্ছনার, লজ্জার ও অপমানের। আর এই বেইজ্জতির একমাত্র কারণ হল: আল্লাহর পথে জিহাদ ত্যাগ করা এবং জিহাদ বাদে অন্যান্য অপ্রাকৃতিক ও বাতিল পথে মুসলিমদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা ইরশাদ করেছেন-

 

الَّذِينَ أُخْرِجُوا مِن دِيَارِهِم بِغَيْرِ حَقٍّ إِلَّا أَن يَقُولُوا رَبُّنَا اللَّهُ وَلَوْلَا دَفْعُ اللَّهِ النَّاسَ بَعْضَهُم بِبَعْضٍ لَّهُدِّمَتْ صَوَامِعُ وَبِيَعٌ وَصَلَوَاتٌ وَمَسَاجِدُ يُذْكَرُ فِيهَا اسْمُ اللَّهِ كَثِيرًا وَلَيَنصُرَنَّ اللَّهُ مَن يَنصُرُهُ إِنَّ اللَّهَ لَقَوِيٌّ عَزِيزٌ ﴿الحج: ٤٠﴾

“যাদেরকে তাদের ঘর-বাড়ী থেকে অন্যায়ভাবে বহিস্কার করা হয়েছে শুধু এই অপরাধে যে, তারা বলে আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ। আল্লাহ যদি মানবজাতির একদলকে অপর দল দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তবে (খ্রীষ্টানদের) নির্জন গির্জা, ইবাদতখানা, (ইহুদীদের) উপাসনালয় এবং মসজিদসমূহ বিধ্বস্ত হয়ে যেত, যেগুলাতে আল্লাহর নাম অধিক স্মরণ করা হয়। আল্লাহ নিশ্চয়ই তাদেরকে সাহায্য করবেন, যারা আল্লাহর সাহায্য করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী শক্তিধর।”(সূরা হজ্জ্ব : ৪০)

 

মুহতারাম শাইখ তাকী উসমানী হাফি. এ আয়াতের তাফসীরে লিখেছেন:

“এই আয়াতে জিহাদের উপকারিতা ও প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের জিহাদের অনুমতি যদি না থাকতো, তবে কুফফাররা এই সকল ইবাদতস্থলগুলো ধ্বংস করে দিত।”

 

আমাদের পূর্বসূরীরা তাদের সময়কার আবু জাহাল, উতবাহ, শায়বাহ, রাজা দাহির এবং পৃথ্বীরাজকে যে পথে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন, সেই একই পথে আমাদের মাথার উপর চেপে বসা নোংরা মুশরিকরা আমাদের নিয়ন্ত্রণ করছে। আমরা আমাদের পূর্বসূরীদের দেখানো পথ অনুসরণ না করলেও মালাউন হিন্দুরা সে পথ অনুসরণ করে আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে যাচ্ছে। ভারতে, ইসলামের উত্থান ও প্রসার হয়েছিল জিহাদের মাধ্যমে। আর এখনো ইসলামের প্রসার ও প্রচার একমাত্র এই পথেই অর্থাৎ জিহাদের মাধ্যমেই সম্ভব।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা ইরশাদ করেছেন-

 

كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِتَالُ وَهُوَ كُرْهٌ لَّكُمْ وَعَسَىٰ أَن تَكْرَهُوا شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ وَعَسَىٰ أَن تُحِبُّوا شَيْئًا وَهُوَ شَرٌّ لَّكُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ ﴿البقرة: ٢١٦﴾

“তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরয করা হয়েছে, অথচ তা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়। পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তোবা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুতঃ আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না।”(সূরা বাকারাহ : ২১৬)

 

এই অন্যায় ও নিপীড়নমূলক রায় ভারতের মুসলমানদের সামনে একটা প্রশ্ন তুলে ধরছে। সেটি হচ্ছে: আর কতকাল ভারতের মুসলিমরা সম্মান ও মর্যাদার জিহাদের পথ থেকে বিমুখ হয়ে অন্যায় ও নিপীড়ন মুখ বুঝে সহ্য করে যাবে?!

 

 

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন-

 

وَلَيَنصُرَنَّ اللَّهُ مَن يَنصُرُهُ إِنَّ اللَّهَ لَقَوِيٌّ عَزِيزٌ ﴿الحج: ٤٠﴾

“…আল্লাহ নিশ্চয়ই তাদেরকে সাহায্য করবেন, যারা আল্লাহর সাহায্য করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী শক্তিধর(সূরা হজ্জ্ব : ৪০)

 

উম্মাহর অবস্থার পরিবর্তনের একটি মৌলিক নীতিমালা হলো: উম্মাহকে নিজের অবস্থা পরিবর্তনের জন্য প্রথমে নিজেকে চেষ্টা করতে হবেএই শর্ত পূরণ হবার পর আল্লাহর সাহায্য আসবেতাই আমরা ভারতবর্ষের মুসলিমদের উদাত্ত আহবান জানাচ্ছিআপনারা দুনিয়া ও আখিরাতে সম্মান ও মর্যাদা পেতে চাইলে জিহাদের পথ আঁকড়ে ধরুনএই পথ অনুসরণের দ্বারা প্রাথমিক শর্ত পূরণ হলে, তারপর আল্লাহর নুসরত তথা সাহায্য আমাদের পক্ষে আসবেই, ইনশা আল্লাহ

 

এখানে আমরা আনসার গাজওয়াতুল হিন্দ এর সমস্ত মুজাহিদীনের পক্ষ থেকে কাশ্মীর ও ভারতের সকল মুসলমানদের কাছে প্রতিজ্ঞা করছি যে–

আল্লাহর শপথ! আমরা বাবরি মসজিদের শাহাদাত এবং মসজিদের জমি মুশরিকদের দেবতার জন্য সমর্পণ করার বদলা অবশ্যই নিব, ইনশা আল্লাহমালাউন হিন্দুদের দ্বারা মুসলিমদের উপড় যে নিপীড়ন চালানো হয়েছে, তারও প্রতিশোধ নিব, ইনশা আল্লাহ

আল্লাহর শপথ! যারা বাবরি মসজিদকে রাম মন্দিরে পরিণত করার জন্য কাজ করছে, আমরা তাদের অন্তর থেকে শান্তি ও স্বস্তি বিদায় করে দিব, ইনশা আল্লাহএকমাত্র আল্লাহর সাহায্যেই আমরা বাবরী মসজিদের স্থানে যে সকল মন্দির তৈরি হবে, তার প্রত্যেকটাকে এক একটা কসাইখানায় পরিণত করবএই কসায়খানায় মালাউন হিন্দুদেরকেই জবাই করা হবে, ইনশা আল্লাহইনশা আল্লাহ, আমরা হিন্দুস্তানের ভূমিকে শিরকের অন্ধকার থেকে মুক্ত করে, তাওহীদের আলো এমনভাবে ছড়িয়ে দিব; যাতে মু’মিনদের অন্তর প্রশান্ত হয়ে যায়

 

قَاتِلُوهُمْ يُعَذِّبْهُمُ اللَّهُ بِأَيْدِيكُمْ وَيُخْزِهِمْ وَيَنصُرْكُمْ عَلَيْهِمْ وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُّؤْمِنِينَ ﴿التوبة: ١٤﴾

“যুদ্ধ কর ওদের সাথে, আল্লাহ তোমাদের হস্তে তাদের শাস্তি দেবেন। তাদের লাঞ্ছিত করবেন, তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের জয়ী করবেন এবং মুসলমানদের অন্তরসমূহ শান্ত করবেন।” (সূরা তাওবা : ১৪)

 

নিশ্চয় বিজয় কেবলমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকে।

আপনাদের নেক দু‘আয় আমাদের ভুলবেন না।

সমস্ত প্রশংসা উভয় জাহানের মালিক আল্লাহ তা’আলার জন্যই। ‍

******************