JustPaste.it

হাদীসের আলোকে হজ্ব ও ওমরার ফজিলত

==================================================

 

        হজ্ব কার ওপর ফরজঃ হযরত আলী (রাঃ) এর বর্ণনা, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, যার কাছে হজ্বে সফর করার জন্য প্রয়োজনীয় পাথেয় আছে এবং বায়তুল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে এমন যানবাহনেরও ব্যবস্থা আছে, সে যদি হজ্ব না করে তবে তার ইহুদী হয়ে মৃত্যু বরণ করা ও খৃস্টান হয়ে মৃত্যু বরণ করার মধ্যে কোন তফাৎ নেই। কারণ আল্লাহ্ তাআলা এরশাদ করেছেনঃ “আল্লাহর জন্য বায়তুল্লাহর হজ্ব ফরজ তাদের ওপর যারা সে পর্বত যাওয়ার রাখে।” (তিরমীযি, মাআরেফ)

 

        ওমরার স্বরূপঃ হজ্বের মতই অন্য একটি এবাদত হল ওমরাহ। এটা সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। এর স্বরূপ হজ্বের কতক প্রেমিক সূলভ ক্রিয়াকর্ম। তাই একে হবে আসগর (ছোট হজ্ব) বলা হয়।

 

        হজ্ব ও ওমরার ফজিলতঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, 'হজ্ব ও ওমরা একসাথে কর। উভয় এবাদত দারিদ্র ও গোনাহকে এমনভাবে দূর করে, যেমন কর্মকার ও স্বর্ণকারের গরম পানিপূর্ণ পাত্র লোহা ও সোনারূপার আবর্জনা দূর করে দেয়। আর হজ্বে মাবরুর তথা মকবুল হক্কের প্রতিদান ও ছওয়াব তো জান্নাতই।” (তিরমিযী, নাসায়ী, মা'আরেফ)

 

        নবী করীম (সাঃ) এরশাদ করেছেন, “হজ্ব ও ওমরার জন্যে গমণকারী ব্যক্তি আল্লাহর বিশেষ মেহমান। সে দোয়া করলে আল্লাহ কবুল করেন, ক্ষমা চাইলে ক্ষমা করেন।” তিরমিযী, মা’আরেফ) 

 

        নবী করীম (সাঃ) আরও বলেন, “আল্লাহ তায়ালা প্রত্যহ তাঁর হাজী বান্দাদের জন্যে ১২০টি রহমত নাজিল করেন। তন্মধ্যে ৬০টি রহমত তাদের জন্য যারা বায়তুল্লাহর তওয়াফ করে, ৪০টি তাদের জন্য যারা সেখানে নামাজ পড়ে এবং ২০টি তাদের জন্য যারা কেবল কাবাকে দেখতে থাকে।” (বায়হাকী)

 

        অন্য এক হাদীসে আরও বলা হয়েছে যে, “যে ব্যক্তি ৫০ বার বায়তুল্লাহর তওয়াফ করে নেয়, সে গোনাহ থেকে এমন পাক হয়ে যায়, যেন আজই ভূমিষ্ট হয়েছে।” (তিরমিযী)

 

        এক দীর্ঘ রেওয়ায়েতে হযরত যাবের (রাঃ) বর্ণনা করেনঃ রাসূল (সাঃ) বলেন, আরাফার দিনে যখন হাজিগণ আরাফাতের। ময়দানে একত্রিত হয়, তখন আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতাদেরকে গর্ব করে বলেন, আমার বান্দাদেরকে দেখ, দূর-দূরান্ত থেকে তারা আমার কাছে এসেছে। তাদের কেশ বিক্ষিপ্ত এবং দেহ ধূলি ধূসরিত, তারা রৌদ্রের মধ্যে চলাফেরা করছে তোমরা সাক্ষী থেক, আমি তাদের ক্ষমা করলাম।' (বায়হাকী, ইবনে খুযায়মা)

 

        হযরত বিবি উম্মে ছালমা (রাঃ) বলেনঃ - আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, “যে ব্যক্তি বায়তুল মাকদাছ হতে (মক্কার) বায়তুল হারামের দিকে হজ্ব বা উমরাহর এহরাম বাঁধবে তার পূর্বাপরের গোনাহ মাফ করা হবে অথবা তিনি বলণেঃ তাহার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হবে।” (আবু দাউদ, ইবনু মাজা)

 

        হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "হজ্ব ও উমরা সাথে সাথে কর। কেননা তা দারিদ্র ও গোনাহ দূর করে যেভাবে হাপর লোহা এবং সোনারূপার ময়লা দূর করে। কবুল করা হজ্বের হওয়াব জান্নাত ব্যতীত কিছুই নয়। (তিরমিযী ও নাসায়ী) 

 

        হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, “একদা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করা হলঃ কোন আমল শ্রেষ্ঠ? তিনি বললেন, “আল্লাহ ও তার রাসূলের ওপর বিশ্বাস রাখা।” অতপর জিজ্ঞাসা করা হল, তারপর কি? তিনি বললেন, “আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা।” পুনরায় জিজ্ঞাসা করা হলঃ তারপর কি? তিনি উত্তরে বললেন, “কবুল করা হজ্ব।” (তিরমিযী)

 

        হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্ব করেছে এবং তাতে অশ্লীল

        কথা বলেনি বা অশ্লীল কার্য করেনি সে হজ্ব হতে ফিরবে সেই দিনের ন্যায় যেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছে।” (তিরমিযী)

        হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, আমি  রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, “আল্লাহর যাত্রী হল তিন ব্যক্তি হাজী, গাজী ও উমরাহকারী। (নাসায়ী, বায়হাকী, তিরমিযী) 

 

        হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি হজ্ব, উমরা অথবা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের নিয়মে বাহির হয়েছে অতঃপর ঐ পথে সে মারা গিয়েছে তার জন্য গাজী, হাজী বা উমরাকারীর সওয়াব লেখা হবে।” (বায়হাকী, তিরমিযী)  

 

*****