কাতারে তালিবানদের দূতাবাস,আইএস ও তার সমর্থকদের মিথ্যাচার ও গোমরাহীর প্রামাণ্য দলীল !!
(আইএসের অফিসিয়াল বক্তব্যের মাধ্যমে জেনে নিন,তারা মুরতাদ কিংবা খাওয়ারিজ ও চরমপন্থী এবং আহলুস সুন্নাহর মানহাজে নেই । )
আল-কায়েদা এবং তালিবান মুজাহিদদের বিরুদ্ধে মুসলিমদের রক্ত হালালকারী আইএস নামক দলটি কতটা স্ববিরোধী ও মিথ্যাচারী এবং সীমালঙ্ঘনকারী তা ইতোপূর্বে বহু অকাট্য প্রমাণের মাধ্যমে উপস্থাপন করেছি। কিন্তু তারপরও আইএস নামক বাতিল দলটি এবং তাদের নিরেট মূর্খ সমর্থকরা তাদের অজ্ঞতা ও মিথ্যাচারের আবর্জনা ছড়ানো থেকে বিরত হচ্ছে না।
আইএস ও তার সমর্থকদের অসংখ্য মিথ্যাচারের ভীড়ে একটি মিথ্যাচার হচ্ছে তালিবান মুজাহিদদের কাতারে অফিস খোলা নিয়ে। এই দলটি এবং তার সমর্থকরা গ্লোবাল জিহাদের সঠিক মানহাজের উপর প্রতিষ্ঠিত হক্ব জামা’আত আল-কায়েদা ও তালিবানদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও তাকফীর করতে গিয়ে নিজেদের বাতিল ও কুৎসিত চেহারা এতোটা নির্মমভাবে প্রকাশিত হয়ে পড়েছে যে, তা দেখে শয়তানও লজ্জ্বা পাওয়ার কথা ! যদিও শয়তান সবচেয়ে নির্লজ্জ্ব।
কাতারে তালিবানদের অফিস কবে খোলা হয়েছে ?
২০১২ সালে জানুয়ারি মাসের শুরুতে আমেরিকার সাথে বন্দী বিনিময় এবং অন্যান্য বিষয়ে আলোচনার জন্য কাতারে তালিবান মুজাহিদরা একটি দূতাবাস/অফিস খোলার সিদ্ধান্ত নেন।
দেখুন মিডিয়ায়..... দি গার্ডিয়ান..... http://tinyurl.com/j7slfpk
নিউইয়র্ক টাইমস..... http://tinyurl.com/7pqflrv
অতঃপর ২০১৩ সালের জুন মাসের মাঝামাঝি কাতারের রাজধানী দোহায় তালিবানদের সেই দূতাবাসটি খোলা হয়।
দেখুন..... http://tinyurl.com/jfvbbc4
তালিবানদের এই দূতাবাস নিয়ে আইএসের তাকফীরের ধরণঃ
২০১৫ সালের মে মাসে আইএস নামক দলটি তাদের অফিসিয়াল ম্যাগাজিন দাবিক্ব এর ৯ম সংখ্যার ৬২ পৃষ্ঠায় তালিবানদের সেই দূতাবাস উদ্বোধনের ছবি দিয়ে তাতে লিখেছে,
“The Taliban under the shade of the tawāghīt .” অর্থাৎ ত্বগুতের ছত্রছায়ায় তালিবান।
আইএসের মতবাদের আলোকে এর মাধ্যমে যে সুস্পষ্টভাবে তাকফীর বুঝানো হয়েছে,তাতে আগে কারো সন্দেহ থাকলেও এখন থাকার কোনো সুযোগ নেই। দাওলা/আইএসের সমর্থকরাও এই ছবি এবং তার ভিডিও উপস্থাপন করে এর মাধ্যমে তালিবানদেরকে তাকফীর(মুরতাদ আখ্যা দেয়া) করে থাকে।
অর্থাৎ আইএসের সুস্পষ্ট বক্তব্যের আলোকে তালিবানরা তাহলে ২০১৩ সালের জুন মাস থেকেই ত্বগুতের ছত্রছায়ায় থাকার মাধ্যমে বাতিল/মুরতাদ হয়ে গেছে !! এব্যাপারে আইএসের কারো দ্বিমত করার কোনো সুযোগ নেই আশা করি।
২০১৪ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত তালিবানদের ব্যাপারে আইএসের বক্তব্যঃ
আইএসের বিরুদ্ধে তালিবান মুজাহিদদেরকে তাকফীর করার অভিযোগ উঠলে ২০১৪ সালের ০১ মার্চ আইএসের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে একটি বার্তা দেয়া হয়। সরাসরি সেই বার্তাটির অনুবাদ দেখি.......
বার্তায় বলা হয়......... “فقد نُسبت للدّولة الإسلاميّة مقالة مُفتراة زعم فيها مروّجوها أنها تقول بكفر الطالبان أو أمراء الجماعات الجهادية كالدّكتور الظواهري حفظه الله والشيخ أسامة بن لادن تقبله الله، ............................ أو تقولُ أن الأصل في المنتسبين إلى الإسلام الكفر، أو ما قيل مؤخراً بأنّها تُكفّرُ المجاهدين -أمراءهم وجنودهم- في خراسان أو غيرها والعياذ بالله”.
“ইসলামিক স্টেইটের প্রতি এমন একটি অভিযোগমূলক বক্তব্যকে সম্পর্কিত করে প্রচার করা হচ্ছে,যাতে বলা হচ্ছে, উক্ত বক্তব্যের বক্তা বলছেন যে, তা (দাওলা) তালিবান, জিহাদী জামা’আতের উমারা যেমনঃ শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এবং শাইখ উসামা বিন লাদেন (তাক্বাব্বালাহুল্লাহ) কে তাকফীর করে। এই গুরুতর সংশয় শামের এক প্রদেশে আমাদের ভাইয়ের অডিও কথাবার্তাকে কেন্দ্র করে যুক্ত করা হচ্ছে, যারা অন্য জামা’আতের সদস্যদের সাথে তর্কে লিপ্ত ছিলেন।
আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করে আমরা বলি, নিশ্চয়ই আমরা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা’আতের মানহাজ পরিপন্থী প্রত্যেক বক্তব্য থেকে আল্লাহর কাছে নিজেদের সম্পর্কহীনতা ঘোষণা করছি। আর ইসলামিক স্টেইটের মানহাজ তার উমারাদের বক্তব্যে একেবারে সুপরিচিত ও সুস্পষ্ট। আমরা জিহাদী প্রজেক্টের শত্রু ও বিরোধিতাকারীদের বলবো, তোমরা তোমাদের বিকৃত প্রোপাগান্ডা নিয়ে খুশি হয়ো না। কারণ, দাওলার মানহাজ দিনের মধ্যভাগের সূর্যের চেয়েও অধিক স্পষ্ট এবং এধরণের পরিস্থিতি তাকে মেঘে ঢেকে ফেললেও তা অত্যন্ত পরিষ্কার হয়ে দেখা দিবে,যা থেকে আমরা মজবুতি অর্জন করবো ইনশাআল্লাহ্।
আর যদি প্রমাণিত হয় যে, ইসলামিক স্টেইটের কোনো মুজাহিদ এমন কথা বলেছে,তাহলে আল্লাহর কসম ! সে যেই হোকনা কেনো, তাকে এমনভাবে পাকড়াও করা হবে (বিচারের মুখোমুখি) , যাতে আল্লাহর ইচ্ছায় সে ব্যতীত অন্যদের জন্য তা উপযুক্ত শিক্ষা হয়ে যায়। আর যদি আমরা তা না করি,তাহলে আমাদের মাঝে কোনো কল্যাণ নেই।
আর শামে জিহাদী প্রকল্পের বিরুদ্ধে সাহাওয়াতদের চক্রান্তের মিলনমেলায় ব্যাপক অপপ্রচার ও গুজব ছড়ানো হচ্ছে দাওলার চেহারাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন এবং দাওলার বিরুদ্ধে যুদ্ধকে বৈধ করার জন্যে। আর তাকে কেন্দ্র করে ইসলামিক স্টেইটকে এমনভাবে উপস্থাপন করা যাতে মনে হবে যে,দাওলা খাওয়ারিজ ও চরমপন্থীদের মানহাজ ধারণ করে,যারা কবীরা গুণাহ, সন্দেহ, ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের দাবী রাখে এমন কথার মাধ্যমে তাকফীর করে। অথবা বলে ইসলামের সাথে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে মূলনীতি হচ্ছে কুফর । অথবা সবশেষে যা বলা হয় যে, দাওলা খোরাসান এবং অন্যত্র থাকা মুজাহিদ উমারা(দায়িত্বশীল বা আমীরগণ) ও সৈন্যদেরকে তাকফীর করে। আল্লাহর কাছে (এসব থেকে) আশ্রয় প্রার্থনা করছি।”
দাওলার উপরোক্ত অফিসিয়াল বার্তাটির লিংক......... https://goo.gl/SRz99v
আরবী বার্তা+ইংরেজি অনুবাদের লিংক.... https://justpaste.it/hcg4
বার্তাটির ইংরেজি অনুবাদের আরেকটি লিংক..... https://goo.gl/ms1R7M
আইএসের মিথ্যাচার ও বাতিল মতবাদের একটি পোস্টমর্টেমঃ
একনজরে তারিখগুলো খেয়াল করুন....
২০১২ সালের শুরুতে দূতাবাস খোলার সিদ্ধান্ত। ২০১৩ সালের জুন মাসে দূতাবাস খোলা হলো।
২০১৪ সালের ০১ মার্চ আইএসের পক্ষ থেকে বলা হলো, তালিবানরা মুজাহিদ ! যে তাদেরকে তাকফীর করবে,সে আহলুস সুন্নাহর মানহাজে নেই !!!
আর ২০১৫ সালের মে মাসে ২০১৩ সালের সেই ছবি এবং বিষয়কে উল্লেখ করে দাবিক্ব-৯ তে বলা হচ্ছে, তালিবানরা ত্বগুতের ছত্রছায়ায় !!!
আচ্ছা, এবার নিজেকে প্রশ্ন করুন ! ২০১৩ সালের জুন মাস থেকেই যেই তালিবানরা ত্বগুতের ছত্রছায়ায় ছিলো,তারা ২০১৪ সালের মার্চ মাসে মুজাহিদ থাকে কী করে !!!
তাহলে দাওলার অফিসিয়াল বক্তব্য অনুযায়ী কাতারে অফিস খোলার পরও তালিবানরা মুজাহিদ ছিলো এবং তাদেরকে এই কারণে যারা তাকফীর করবে তারা আহলুস সুন্নাহর মানহাজে নেই !!!
অর্থাৎ ২০১৫ সালের মে মাসে এসে আইএসের নিজেদের অফিসিয়াল বক্তব্য অনুযায়ী তারা আহলুস সুন্নাহর মানহাজে নেই এবং তারা খাওয়ারিজ ও চরমপন্থী। (দুনিয়াতে জন্ম নেওয়া কোনো বনী আদম পারলে যেনো আমার এই বক্তব্যের চ্যালেঞ্জ করে ! )
আচ্ছা, আরেকটি দিকে নজর দেই ! তালিবানদের কাতারে দূতাবাস খোলা যদি তাকফীরের কারণ হয়(যা দাবিক্ব-৯ তে স্পষ্ট), তাহলে কাতারে অফিস খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ২ বছর ২ মাস এবং অফিস খোলার ৯ মাস পরেও তালিবানরা মুজাহিদ থাকে কী করে ????
বর্তমানে আইএস আল-কায়েদা ও তালিবানদের প্রত্যেক মুজাহিদকে মুরতাদ আখ্যা দিয়েছে !!! (না’উযুবিল্লাহ)
আর আইএসের ম্যাগাজিন রুমিয়া-২ এর ৬ পৃষ্ঠায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, যারা আল-কায়েদার শাখা জাবহাতুন নুসরার মুজাহিদদের প্রত্যেককে মুরতাদ না বলবে তারাও মুরতাদ। এই নীতি তারা সবক্ষেত্রেই প্রয়োগ করে,যার ভুড়িভুড়ি অফিসিয়াল প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে।
তাহলে ত্বগুতের ছত্রছায়ায় দূতাবাস খোলার পরও আইএস ২০১৪ সালের মার্চ পর্যন্ত তালিবানদেরকে তাকফীর না করে বরং মুজাহিদ বলার কারণে আইএস মুরতাদ দল হওয়ার কথা ????
কেনো হবে না,তা প্রমাণের জন্য আবু বকর বাগদাদী পর্যন্ত চ্যালেঞ্জ দিয়ে রাখলাম !
আইএস কেনো খারিজী তাদের অফিসিয়াল বক্তব্যের মাধ্যমে প্রমাণ দিলাম। যদি খারিজী না হয় এবং তাদের বর্তমান আকীদা ঠিক হয়,তাহলে ২০১৪ সালের মার্চ এবং যতদিন পর্যন্ত তারা তালিবানদেরকে তাকফীর করেনি ততোদিন পর্যন্ত তারা মুরতাদ ছিলো !!
এভাবেই আল্লাহ তা’আলা এই বাতিল দলটির বাতিল আকীদা ও মিথ্যাচারে মুখোশ তাদের নিজেদের বক্তব্যের মাধ্যমেই উন্মোচন ও প্রমাণ করে দেন,আলহামদুলিল্লাহ।
এছাড়া এই নোটটি পড়ুন..... “আইএস/দাওলার মতবাদের আলোকে যেসব কারণে আইএস নিজেরাই ইসলাম থেকে বের হয়ে যায় !! (অকাট্য প্রমাণসহ)”
লিংক..... http://tinyurl.com/batil-is
বিঃদ্রঃ এই বাতিল দলটির ভ্রষ্ট আকীদা এবং তাদের খাওয়ারিজ হওয়ার অকাট্য প্রমাণ নিয়ে যত লেখা লিখেছি,তার একটির সঠিক জবাব পাইনি। বরং গালাগালি ও নতুন নতুন মিথ্যাচার পেয়েছি। সুতরাং আমার উপরোক্ত প্রমাণগুলো খণ্ডন করা ব্যাতীত কমেন্টে তাদের নতুন গালাগালি ও মিথ্যাচার দেখলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।