JustPaste.it

পাঠকের কলাম

 

এই কি স্বাধীনতার প্রাপ্য?

স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী উপলক্ষে পুরো বাংলাদেশেই অনুষ্ঠিত হয়েছে ব্রাহ্মণদের ন্যায় রঙ্গের হোলিখেলা, খ্রিষ্টানদের ন্যায় আতশবাজির ছড়াছড়ি। আমরা শিক্ষিত সমাজের লোকেরাই ঐ সকল হোলিখেলার আয়োজক, অংশ গ্রহণকারী ও পৃষ্ঠপোষক। সিলেট পৌরসভা পার্কেও ৩ দিন ব্যাপী মেলা হয়েছে প্রশাসনের কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে। প্রচুর নারী-পুরুষের মিলিত স্রোতে আশেপশের রাস্তায় নজীরবিহীন যানজট লেগেই ছিল। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতেই নারীরা মেলা থেকে যেই মাত্র বেরুবার জন্য গেইটের কাছে আসে হাজারো পুরুষের ঢলে নারীকুল হয়ে গেল শত পুরুষের হাতের খোরাক। ভিড় থেকে বের হবার পর নারীর কাপড় বলতে যা ছিল তা অনেকাংশেই বিচ্ছিন্ন হল, পাগলীনি এক নারীর মত তাকে দিগম্বর করে ছাড়ল। এভাবে যতবারই নারীরা বের হল, ততবারই ঘটল একই ঘটনা, চিৎকার, কান্নার রোল। অথচ নিরাপত্তা কর্মীরা হরিণ শাবকের মত তা অবলোকন করল। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, মেলার মাঝে এরূপ অপ্রীতিকর ঘটনা আরো ঘটেছিল। তথাপি কমতি নেই আমাদের নারীকুলের আসা-যাওয়া। যেন এরই লক্ষ্যে মেলায় আসা। এতকিছু সত্ত্বেও যারা মেলায় আসছে তাদের শিক্ষার ঝুলি কিন্তু কম বড় নয়।

স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী পেরিয়ে গেল কিন্তু আমরা কী পেয়েছি? আমরা পাইনি সততা, সুশিক্ষা, সভ্যতা, নৈতিকতা। এই পঁচিশ বছরে আমরা পঁচিশ বছরের যুবক-যুবতীরা এতই মহান চরিত্রের অধিকারী হয়েছি য়ে, টানবাজারের পতিতাদের আর পাকিস্তানীরা যুদ্ধের সময় যে ধর্ষণ আর অপহরণ করেছে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশে তাদেরও হার মানিয়েছি। মহান বিজয় দিবসে কি মহান চরিত্র আর উৎসবই না আমরা জাতিকে উপহার দিয়েছি। এই পঁচিশ বছরে দেশের শিক্ষার হার, অর্থনীতি, সামাজিক পরিস্থিতি, রাজনীতির অঙ্গণ, সবকিছুই কি উন্নতির দিকে? ভিক্ষার ঝুলি হাতে করে নমস্কার দিয়ে দেশে দেশে ঘুরে বেড়ানোর যোগ্যতা ছাড়া আমাদের কি পরিচয় আছে? স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে আমাদের দেশে কতই না হানাহানি। অথচ এটি একটি তুচ্ছ বিষয়। যেখানে লক্ষ লক্ষ লোক গৃহহীন, অনাহারে অর্ধাহারে, যেখানে এখনও ভারতীয় বি এস এফ ও শান্তিবাহিনীর হাতে নিত্যদিন এদেশের মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে, যেখানে এখনও আমরা ভারতীয় নেংটিপরা ঠাকুরগোষ্ঠীর শোষণের শিকার! যদি এটাই স্বাধীনতার লক্ষ্য হয়ে থাকে এবং আমাদের ভারতপন্থী ও রামপন্থী মিয়া সাহেবদের এটাই যদি কাম্য হয়ে থাকে, তবে আমি বলব, সাবাশ বাংলাদেশ! এত অল্পসময়ে সংস্কৃতির মহা প্রকাশ কিসের ইংগিত করে। সেদিন খুব বেশী দূরে নয়, যেদিন কাসা আর ঢোলডুপকির শব্দে আমাদের ঘুম ভাঙবে।

শরীফ সাহেদুল আলম

 

সময় থাকতে সতর্ক হোন!

বিশ্বব্যাপী যখন জানবাজ মুজাহিদদের তৎপরতা ক্রমেই বর্ধিত হচ্ছে, ঠিক তখনি এ দেশের এক শ্রেণীর বকধার্মীক বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রবাহমান উষ্ণ রক্তকে স্থিমিত করার ব্যর্থ প্রয়াস চালাচ্ছে। তারা শীর্ষস্থানীয় মুজাহিদ ও মুজাহিদ পরিচালিত রাষ্ট্র সমূহের উপর রটাচ্ছে কাল্পনিক দুর্নাম। তথাকথিত এই ডিগ্রীধারীরা দ্বীনের দুর্গ মাদ্রাসাগুলোকে চিরতরে বন্ধ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। ষড়যন্ত্রের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে নোংরা পত্রিকা। এই পত্রিকা গুলো এতই জঘন্য যে, এ গুলোতে অহরহ ছাপানো হচ্ছে আলেম সমাজ ও মুজাহিদদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন লোমহর্ষক কুৎসা। এমনকি পবিত্র কুরআন হাদীসের অপব্যাখ্যা করতেও পত্রিকাগুলো দ্বিধাবোধ করেনা। ঐ সকল কুচক্রীমহল ধর্মপ্রাণ মুজাহিদদেরকে বর্বর, লম্পট ও ধর্ম বিদ্বেষী গুন্ডা হিসেবে আখ্যায়িত করছে। মুজাহিদরা নাকি আফগানিস্তানের বালিকাদের উপর চালাচ্ছে চরম নিযার্তন। ভাবতেও অবাক লাগে, শৃগালের রসনায় আমানতের দোহাই! আসলে ঐ সকল কুচক্রীমহল জানে, অর্থের বিনিময়ে সকলকে খরীদ করা গেলেও কেবল যায়না মুজাহিদদেরকে। তাই তারা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে অবলম্বন করেছে এই জঘন্য পন্থা। আমি ঐ সকল মহলকে বলব, আপনাদের কাজ আপনারা কারে যান, আমরা বাঁধা দেবনা! কিন্তু মনে রাখবেন, যারা ধর্মের জন্য বুকের রক্ত দিতে পারে, তারা সকল বাঁধার প্রাচীর পদধ্বলিত করতে জানে৷ কোন বাঁধাই এদেরকে রুখতে পারবে না। ইনশাল্লাহ।

মোঃ শহিদূল ইসলাম

কেমন শ্রদ্ধা জ্ঞাপন?

আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ)-এর আবির্ভাবের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সকল শিরকের মূল উৎপাটন করে আল্লাহর একাত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করা। এ কারণে তিনি সকল মূর্তি পূজা পৌন্তলিকতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান গ্রহণ করেন। রাসূল (সাঃ) এর এ আপোষহীন ভূমিকায় মূর্তি পুজারী মক্কার কুরাইশরা বিচলিত হয়ে রাসূল (সাঃ) কে একটি অদ্ভুত আপোষ ফর্মূলাও দিয়েছিল যা' পবিত্র কুনআনের সূরা কাফিরুনে বর্ণিত হয়েছে। এ আপোষ ফর্মূলার প্রতিউত্তরে সেদিন রাসূল (সাঃ) ততোধিক আপোষহীন কন্ঠে পৌত্তলিকদের জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, আমার এক হাতে সূর্য আর এক হাতে চন্দ্র এনে দিলেও একত্ববাদের দাবী থেকে এক চুলও পিছপা হবো না। পৌত্তলিকতার সাথে আপোষহীন নবী (সাঃ) মন্ধা বিজয়ের পরক্ষণেই পবিত্র কাবা ঘর থেকে ৩৬০ টি মূর্তিকে অপসারিত করেছিলেন।

মক্কা বিজয়ের পর তিনি তাঁর প্রকাশ্যে দুষমনদেরও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিলেন, কিন্তু পৌত্তলিকতার ব্যাপারে ক্ষণিকের জন্যও কোন ছাড় প্রদান করেননি। মূর্তি পূজার প্রতি আজীবন যে নবী (সাঃ) সংগ্রাম করে গেছেন সেই নবী (সাঃ) এর মূর্তি তৈরি করে জনসাধারণ্যে প্রদর্শন করা হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। মার্কিনীরা নাকী রাসুল (সাঃ) এর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য এ মহৎ (?) কান্ডটি ঘটিয়েছে। সুত্রিম কোর্ট ভবনে তার যে ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে, তা' নাকি রাসূল (সাঃ) কে আইন প্রণেতার স্বীকৃতির স্বাক্ষর স্বরূপ স্থাপন করা হয়েছে। শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের কী সুন্দর মার্কিনী স্টাইল! বিশ্ব মুসলিমের সাথে মার্কিনীদের এ জঘন্য উপহাসের যোগ্য জবাব দানে ঈমানদার মুসলমানদের আহব্বান জানাচ্ছি।

মোঃ আতিকুল্লাহ

ওরা পুড়বে, ছাই হবে না

গুজব রটাতে রটাতে একসময় তা সত্য হয়ে যায়। যেমনটা শুনা যাচ্ছে, গ্রামীণ ব্যাংক নোবেল পুরষ্কার পাবার দারপ্রান্তে প্রায় পৌঁছে গেছে। পুঁজিবাদী বিশ্ব প্রশংসা করেছে, আমেরিকা সাবাস দিয়েছে, অতএব নোবেল পুরষ্কার প্রাপ্তি সংবাদের শুধু অপেক্ষা মাত্র। দুনিয়ার মুসলমানের পুরষ্কারের দ্বার অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে অবশেষে উন্মুক্ত হয়েছে। মিশরকে সম্প্রতি নোবেলের জয়টিকা পরানো হয়েছে। পরমানু বিজ্ঞানে যিনি নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন তার দেশের মুসলমানরা তাতে গর্ববোধ তো করেনই না বরং এই পুরষ্কার তাদের শক্রতা ও উস্কানিমূলক জুটে থাকে। আন্তর্জাতিক পুরষ্কারে ভূষিত হয়ে আমরাও লজ্জায় কোনো কোনো সময় মাথা হেট করে থাকি। সম্প্রতি প্যারিস থেকে সমাজকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ একটি পুরষ্কার আমাদের দেশে পাঠানো হয়েছে। এমন সমাজকর্মীকে দেয়া হয়েছে, যিনি তার সমাজকে ত্যাগ করেছেন, যে সমাজে তিনি এখন অবৈধ।

ইসলাম যা কিছু অবৈধ করে অন্যে তা বৈধ করবে এটাই তো স্বাভাবিক। মুসলমান যাকে ত্যাগ করবে অন্যে তাকে স্বাগতম জানাবে এটাতো এতিহাসিক সত্য। তাবুকের ঘটনাই তার প্রমাণ। বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ গরীব মা-বোনকে চক্রবৃদ্ধি সুদে জর্জরিত করে গ্রামীণ ব্যাংক নোবেল পুরস্কার পাবে এতে আর বিচিত্র কী? কোটি কোটি মুখে হারাম জুগিয়ে নামের আগে মুহাম্মদ লিখার স্বার্থকতা আছে কি নেই সেই বিচার তো অন্যত্র হবে, তবে আপাততঃ নোবেল প্রাপ্তির সংবাদে এ দেশের মুসলমানরা কেমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবেন সেটাই হবে জাতির বিবেক।

আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে কেউ স্বীকৃতি দেয়নি। মুসলিম রাষ্টরগুলিও দেয়নি। দেয়নি এই জন্য যে, তারা এখনো বুঝেনি, মুসলিম রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি পেতে একদিন তাদেরকেই তালেবানের দ্বারস্ত হতে হবে। কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংকের বুদ্ধি-সুদ্ধিই আলাদা। মায়ের চেয়ে মাসীর দরদ অধিক বিধায় তারা ইতিমধ্যে তালেবানের ঘরে গিয়ে তাদেরকে কোলে তুলে নিতে চেয়েছিল। জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় তালেবানের দুই উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি গ্রামীণ ব্যাংকের জন্মভূমি জিয়ারত করতে এসেছিলেন। এসে কী দেখলেন তারা? জন্মভূমিকে যে বধ্যভূমিতে পরিণত করে ফেলছে পাপিষ্ঠরা! দস্তর খানায় গ্রামীণ ব্যাংকের আখনি পোলাও বাসি হতে চললো, মেহমানরা ছুটে গেলেন ওলামাদের দরবারে। এটাই স্বাভাবিক। সারা পৃথিবীকে যারা দ্বীনের আলোতে উদ্ভাসিত করবেন, মুসলমান যাদের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, তারা কী করে গ্রামীণ ব্যাংকের মায়ার জালে আটকা পড়বেন? যে চক্রবৃদ্ধির বিষকে বাংলাদেশের গরীব হজম করতে পারেনি, আলিমরা যে হারামের উপর থু থু নিক্ষেপ করেছেন, তাকে কী আজ তালেবানের দ্বারা ইস্তেমাল করিয়ে নতুন কোনো ফতোয়া আদায়ের চেষ্টা করছে জ্ঞানপাপীরা?

‘ভিক্ষা চাইনা মা তোর কুত্তা সামলা’ অবস্থার সৃষ্টি হলো আফগানদের। অবশেষে ‘আলবিদা, হে গ্রামীণ ব্যাংক আলবিদা’ বলে স্বদেশে ফিরে গেলেন দূরদর্শী তালিবান নিতৃবৃন্দ।

আহা! দীর্ঘদিনের পরিকল্পিত একটি সুযোগ শেষ পর্যন্ত মোল্লাদের পাল্লায় পড়ে ভেস্তে গেলো। তালেবানরাও নিজেদের বলে মোল্লা। আজকাল মোল্লাদের বড় বেশী ইজ্জত দিচ্ছে দুনিয়ার মানুষ। তাজ্জব ব্যাপার! আসলে তাজ্জবের কিছু নেই। মোল্লা মানে মাল্লা। মনে নেই ছোট্টকালের সেই শিশুতোষ কবিতা? ‘ছিপখান তিন দাড়, তিনজন মাল্লা।’ এই মাল্লারাই এখন হাল ধরেছে। নোবেলের ছিদ্র দিয়ে অনেক পানি প্রবেশ করেছে, তবু আশা করা যায় নৌকা তীরে ভিড়বে।

দুনিয়াতে পুরষ্কার পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছো যে আমলের বিনিময়ে, সেই একই আমলের বিনিময়ে আধিরাতেও পুরষ্কৃত করবেন আল্লাহ তায়ালা দ্বিতীয়বার, জাহান্নামের আগুন দিয়ে। যে আগুনে ওরা পুড়বে, ছাই হবে না বটে।

 

আবু লুবাবা