JustPaste.it
User avatar
Safwan @Safwan313 · Mar 30, 2023

যারা বেসিক ইলম অর্জনের পরামর্শ চান, তাদের জন্য মুস্তাফা মহসিন ভাইয়ের যুগান্তকারী নাসিহা ও দিকনির্দেশনা—

উপকারী ইলম, উপকারী বই!

দীনে আসার পর ইলম অর্জন কিভাবে করা হবে? একটি বহুল প্রচলিত অনুসন্ধিৎসা! এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণও বটে।
সাধারণত, জিজ্ঞাসু ব্যাক্তিদের এপ্রশ্নের ক্ষেত্রে- উত্তরদাতারা নিজ নিজ মাসলাক, দল বা মুরুব্বীর চিন্তার আলোকে সাধারণত পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন। আলহামদুলিল্লাহ।
.
তবে, ইসলামের প্রভাব ও বিজয়ের জন্য মেহনতকারী, আত্মত্যাগী দাঈ ও উলামায়ে কেরামের অবস্থান থেকে জানা যায় যে- কিতাবুল্লাহ ও নবী সা. এর সুন্নাহর আলোকে এটাই সাব্যস্ত হয় যে, ব্যাক্তি নিজেকে আগে চিরস্থায়ী জাহান্নাম থেকে হেফাজতের চেষ্টা করবে এবং সবার আগে এসংক্রান্ত ইলম হাসিল করবে।
অতঃপর, নূন্যতম সময়ের জন্যও জাহান্নামে না যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় আকিদা ও আমলের ইলম হাসিল করবে।
এবং সবশেষে, জান্নাতে উঁচু স্তরে পৌঁছাতে প্রয়োজনীয় ইলম হাসিল করবে।
.
তাই, প্রথমত তাওহিদের ও কুফরের ইলম। দ্বিতীয়ত, ফর‍য-ওয়াজিব ইবাদাত এবং হারাম চিন্তা ও কাজের ইলম এবং পরিশেষে মুস্তাহাব ইবাদাত এবং মাকরুহ চিন্তা ও কাজের ইলম অর্জন করার চেষ্টা করা হবে।
উদাহরণত, কোনো ক্ষেত্রে আরবী শেখা ছাড়া যদি ওয়াযিব আদায় না হয়, তবে আরবী শেখা ওয়াযিব। যদি, মুস্তাহাব আদায় না হয়, তবে মুস্তাহাব। তাই ব্যাক্তি নিজের জন্য নির্ধারণ করবে তার হাল কি, এবং হাল অনুযায়ী কাংখিত ইলম কি?
.
আর সকল ক্ষেত্রেই নেককার উলামা ও দাঈদের থেকে পরামর্শ, সাহায্য ও দিকনির্দেশনা নেয়া উত্তম হবে। কাউকে না পাওয়া গেলে নিজে নিজে পড়া যাবে না; এমন কথাও অবশ্য আমাদের উলামায়ে কেরাম বলেন না। উত্তম না পাওয়া গেলে, ভালো ছেড়ে দিতে হবে- এমন ঢালাও চিন্তা কাম্য নয়। বরং মূলনীতি হলো- সম্পূর্ণ অর্জন না হলেও, পূর্ণ বর্জন যেন না হয়।
অনেক ক্ষেত্রে সহবত তত্ত্বটি সুনির্দিষ্ট মাসলাকে আবদ্ধ করার একটি চেষ্টা হয়ে থাকে, যার ফলাফল সুন্দর হয়না অনেকাংশেই। আল্লাহ তা আলা সবার জন্য সঠিক বিষয় নির্ধারণ করেন।
.
সবশেষে, সতর্কতার সাথে নিজের নফসের দিকে লক্ষ্য রাখা উচিৎ যে, ইলম বাড়ার সাথে সাথে ইবাদতের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে, অন্তর বিনয়ী হবে। অন্যথায়, বুঝতে হবে কাংখিত ফলাফল থেকে ব্যাক্তি সরে গেছে। আল্লাহই ভালো জানেন।
এখন কাংখিত ইলম হাসিলে আলহামদুলিল্লাহ যথেষ্ট রচনা উম্মতের সামনে রয়েছে। ব্যক্তি নিজ পরিস্থিতি অনুযায়ী নেককারদের পরামর্শক্রমে নিজের পাঠ্যক্রম ঠিক করে নিতে পারে। নিম্নে অবশ্য এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত চিন্তা আমি পেশ করার চেষ্টা করেছি।
.
“উপকারী কিতাব কোনগুলো?”, এমন প্রশ্নকারী এক ব্যক্তির জবাবে শাইখ ইমাম তাকিউদ্দিন ইবনে তাইমিয়্যাহ রহিমাহুল্লাহ বলেন:
“উম্মাহ ইলমের প্রতিটি শাখায় এবং সবকটি শাস্ত্রে প্রয়োজনাতিরিক্ত মেধা ব্যয় করেছে। এখন আল্লাহ যার অন্তরকে আলোকিত করতে চান, তাকে তন্মধ্যে উপকারী বিষয়গুলো বেছে নেয়ার তাওফিক দান করেন। আর যাকে অন্ধ করেন, এত এত কিতাব তার জন্য পেরেশানি ও বিভ্রান্তি ছাড়া আর কিছুই বয়ে আনে না।
তাইতো নবীজি ﷺ লাবিদ আনসারীকে বলেছিলেন: ‘ইহুদী-নাসারাদের কাছে কি তাওরাত এবং ইঞ্জিল নেই? এতে তাদের কি উপকার হয়েছে?”
.
যে কোনো কারণেই হোক, দীর্ঘদিন সালাফদের মানহাজের দিকে আহবানকারী উলামাদের কিতাবাদি কিছুটা দূর্লভ ছিল। আল্লাহ তা আলার বিশেষ অনুগ্রহে, এখন কিছুটা সহজ হয়েছে। এতালিকাটি নববী মানহাজের উলামায়ে কেরাম ও দাঈদের চিন্তাধারা, পরামর্শকে সামনে রেখেই বিন্যস্ত করার চেষ্টা হয়েছে। আল্লাহই তাওফিকদাতা।
.
মারহালা ০ঃ
০) মডার্নিটি ও ইসলামের সংঘাত - ড্যানিয়েল হাকিকাতজু (প্রবন্ধ)
১) তাওহিদের কালিমা - শায়খ হারিস আন নাজ্জারি
২) আল ওয়ালা ওয়াল বা'রা - শায়খ সালিহ আল ফাওযান
৩) হাদিসে জিবরিল ও ব্যাখ্যা - শায়খ সালিহ আল উসাইমিন
৪) পরকালের প্রস্তুতি - শায়খ খালিদ আল হুসাইনান
.
মারহালা ১ঃ
১) আকিদার সহজ পাঠ - শায়খ হামুদ বিন উকলা আশ শুয়াইবি
২) ঈমানের দুর্বলতা - শায়খ সালিহ আল মুনাজ্জিদ
৩) তাজবিদ সহিহ করা+শেষ ১৪ সূরা হিফয+ সুরা হুজুরাত থেকে সূরা নাসের (তথা, মুফাসসাল সূরাসমূহের) তরজমা ও সংক্ষিপ্ত তাফসির অধ্যায়ন।
৪) চিন্তাপরাধ - ভাই আসিফ আদনান
.
মারহালা ২ঃ
১) ইমাম নববীর ৪০ হাদিস ও তার ব্যাখ্যা - ইমাম ইবন দাকিকুল ঈদ
২) যেসব গুনাহকে তুচ্ছ মনে করা হয় - শায়খ সালিহ আল মুনাজ্জিদ
অথবা, কিতাবুল কাবায়ের - ইমাম যাহাবি
৩) ফিকহুল মুয়াসসার - শায়খ সালিহ আস সাদলান
অথবা, ফিকহুল মুয়াসসার- আরবের ইরশাদ, দাওয়াহ, ওয়াকফ ও ইসলাম ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্বাচিত উলামা
অথবা, ফিকহুল মুয়াসসার - মাওলানা শফিকুর রহমান নদভি
৪) তাকলিদ - শায়খ আবু কাতাদা আল ফিলিস্তিনি (প্রবন্ধ)
৫) নবীজির (সা.) গুণাবলী - শায়খ আহমাদ মোস্তফা তাহতাভি
.
মারহালা ৩ঃ
১) আমরা যেন মৌমাছির মতো হই - শায়খ আহমাদ ফারুক
২) রিয়াদুস সলিহীন - প্রথম অধ্যায় ও কিতাবুল ফাযায়েল
৩) আহলুস সুন্নাহর মানহাজ - শায়খ আতিয়াতুল্লাহ রহ. (প্রবন্ধ)
৪) কিভাবে আল্লাহর প্রিয় হবো - শায়খ খালিদ আল হুসাইনান
৫) আর রাহিকুল মাখতুম/ রাসুলে আরাবি (সা.)/ রউফুর রহিম/ সীরাহ (রেইনড্রপস)
৬) সংযত জবান, সংহত জীবন - শায়খ আব্দুল মালিক আল কাসিম
.
মারহালা ৪ঃ
১) আম্মাপারা হিফয + সুরা ফাতিহা থেকে সূরা ইউনুসের তরজমা ও সংক্ষিপ্ত তাফসির অধ্যায়ন।
২) What Is To Be Done - ভাই আসিফ আদনান
৩) মতপার্থক্যের মূলনীতি - শায়খ খালিদ বাতারফি
৪) অন্তরের রোগ - শায়খ সালিহ আল মুনাজ্জিদ
৫) অন্তরের আমল - শায়খ সালিহ আল মুনাজ্জিদ
৬) উত্তম নাসিহা - শায়খ হারিস আন নাজ্জারি
৭) যেমন ছিলেন তিনি সা. - শায়খ সালিহ আল মুনাজ্জিদ
৮) হায়াতুস সাহাবা - মাওলানা ইউসুফ কান্ধলভি
.
মারহালা ৫ঃ
১) আকিদাতুত তাওহিদ - শায়খ সালিহ আল ফাওযান
২) বাইনা মানহাজাইন - শায়খ আবু কাতাদা আল ফিলিস্তিনি
৩) মুসলিম উম্মাহর পতনে বিশ্ব কি হারালো - শায়খ আবুল হাসান আল নদভি
৪) ইসলামী ব্যাংক - উস্তাদ জাহিদ সিদ্দিকী মুঘল
৫) ঈমান ভঙ্গের কারণ - শায়খ সুলাইমান আল উলওয়ান
৬) সিরাতুন নবী সা. - শায়খ ইব্রাহিম আলি
৭) সংশয়বাদী - ড্যানিয়েল হাকিকাতজু
৮) শারহু কাওয়াইদিল ফিকহিইয়্যা - আল্লামা আব্দুর রহমান আস সা'দি
.
* কিতাবুল্লাহর সংক্ষিপ্ত তাফসির হিসেবে ড. আবু বকর জাকারিয়ার সংকলিত তাফসিরটি উপযোগী হবে। আরো উত্তম হয় তাফসিরে সাদি অধ্যায়ন করা গেলে।
** অন্তত মারহালা ০ ও ১ প্রত্যেক মুসলিম ভাই-বোনের অতিক্রম করা কাম্য। চাই, উক্ত ইলম বই পড়ে বা লেকচার শুনে বা প্রাতিষ্ঠানিক, সাংগঠনিক তরবিয়তের মাধ্যমেই হাসিল হোক না কেন।
*** প্রত্যেক ভাই/বোন ইলম অনুপাতে সামর্থ্যানুযায়ী মানুষকে সঠিক পন্থায়, ধারাবাহিকতা বজায় রেখে কোমলতার সাথে দাওয়াহ দিতে সচেষ্ট হবেন; এটাও কাম্য।