JustPaste.it

প্রশ্নোত্তর

======================================================

 

হাঃ মোঃ ফারুকুজ্জামান,

শামছুল উলুম মাদ্রাসা,

পঃ খাবাসপুর,

ফরিদপুর।

 

        প্রশ্নঃ হযতর আদম (আঃ) ও হাওয়া (আঃ) বেহেশতের মধ্যে যে ‘গন্দম’ খেয়েছিলেন বস্তুত সেই ‘গন্দম’ কি?

 

        উত্তরঃ গন্দম (আটা) বলতে যা বুঝায় বেহেশতের মধ্যে তাঁরা তা খেয়েছিলেন বলে কোন নির্ভাযোগ্য দলীল পাওয়া যায় না। নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে জানা যায় যে, তাঁরা উভয়ে শয়তানের প্ররোচনায় যে গাছের ফল খেয়েছিলেন সেই গাছটির নাম ‘অমরবৃক্ষ’। এই গাছের ফল খাওয়া তাদের জন্য নিষিদ্ধ ছিল। আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করায় বেহেশত থেকে তৎক্ষণাৎ তাদেরকে পৃথিবী পৃষ্ঠে প্রেরণ করা হয়। এঁরাই পৃথিবীতে বসবাসকারী প্রথম মানব মানবী। তাঁরাই আমাদের সকলের আদি পিতা-মাতা। তাই পৃথিবীর মানুষকে বলা হয় আদম সন্তান।

 

 

মাহমুদুল হাসান রায়হান মজুমদার

সাং: হিলালনগর,

পোঃ কাশীনগর,

জিলাঃ কুমিল্লা।

 

        প্রশ্নঃ হযরত মুহাম্মাদ (সঃ)-এর জানাযা নামাজের ইমামতি কে করেছিলেন। তাঁর জানাযায় কত লোক শরীক হয়েছিল, কে কে তাঁর কবর খনন করেন এবং কে কে তাকে কবরে রাখেন?

 

        উত্তরঃ রাসূল (সাঃ) ছিলেন কুল কায়েনাতের ইমাম, তাঁর জানাযায় ইমামতি করার মত কে থাকতে পারে? তাই উম্মতের সদস্য তাবৎ পুরুষ, নারী ও শিশুগণ দলে দলে এসে পৃথকভাবে জানাযা আদায় করতে থাকেন। দীর্ঘ দেড়দিন ব্যাপী এ অনুষ্ঠান চলতে থাকে।

 

        তাঁর কবর খনন করেন হযরত আবু তালহা (রাঃ) এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ) -এর দেহ মোবারক কবরে রাখার জন্য হযরত আলী (রাঃ), হযরত ফজল ইবনে আব্বাস (রাঃ), উসামা ইবনে যায়েদ (রাঃ) এবং হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ নিচে অবতরণ করেন।

 

 

আতিকুল্লাহ জুলফিকার,

পাঁচলাইশ কলেজ, পাঁচলাইশ, চট্টগ্রাম।

 

        প্রশ্নঃ বহু বিজ্ঞ আলিমের মুখে শুনেছি যে, ইসলামে বৈরাগ্যতার স্থান নেই। ইদানিং জনৈক ব্যক্তি বল্লেন, ব্যক্তি বিশেষের জন্য বৈরাগ্যতা জায়িয। ইসলামের আলোকে এর সমাধান জানতে চাই।

 

        উত্তরঃ সংসার ত্যাগ করে বৈরাগ্যতা বরণ করা ইসলামের দাবী ও আদর্শ বিরোধী একটি কাজ। কুরআন ও হাদীসে এর সমর্থনে একটি কথাতো নেই-ই বরং এর থেকে মুসলমানদেরকে নিরুৎসাহিত করা ও তাদের মনে এর প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করণমূলক বহু হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

 

        একদিন কতিপয় সাহাবী শুধু এই উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বিবিগণের খেদমতে হাজির হলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর ইবাদাতের হালাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন। তাঁরা মনে করতেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) দিন-রাত আল্লাহর ইবাদাত ব্যতীত আর কিছুই করেন না। মূল ঘটনা সম্পর্কে তাদের বলা হলে তারা অবাক হন এবং বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর সাথে আমাদের তুলনা হয়? আল্লাহ্ পাক তাঁর পূর্ব-পরের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন।

 

        এরপর তাদের একজন বলতেছিলেন, আমি নিয়মিত রাতভর নামায আদায় করব। আর একজন বল্লেন, আমি সারা জীবন রোজা রাখব। তৃতীয় জন বল্লেন, আমি জীবনে বিবাহ করব না।

 

        তাদের মনভাব জানতে পেরে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাদেরকে লক্ষ্য করে বলেন, “আল্লাহর শপথ! আমি তোমাদের চেয়ে আল্লাহকে বেশী ভয় করি। তবু আমি রোজা রাখি, ইফতার করি, নামায পড়ি, নিদ্রা যাই, মহিলাদেরকে বিবাহ করি। তাই যে আমার তরীকার ওপর চলবে না, সে আমার দল থেকে খারিজ।”

 

        জনৈক সাহাবী রাসূলুল্লাহ (সাঃ) -এর খেদমতে হাজীর হয়ে আরজ করেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমি এমন একটি কুয়ার সন্ধান পেয়েছি (যাতে রয়েছে প্রচুর পানি এবং যার পাশে গড়ে উঠেছে ছোট ছোট পল্লী) সেখানে প্রয়োজনীয় সবকিছুই আছে। আমার মন চায়, সেখানে একাকী জীবন যাপন করে দুনিয়ার সম্পর্ক থেকে দূরে থাকি। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, “আমি ইয়াহুদিয়াত ও নাসারানীয়াত নিয়ে আগমন করিনি বরং আমি নিয়ে এসেছি সরল ও আরামপ্রদ মাজহাবে ইব্রাহীম।”

         এর দ্বারা কি প্রমাণিত হয় না যে, ইসলামে বৈরাগ্যতা বরণের সামান্যও দখল নেই?

 

 

মোঃ আবদুল হক আযাদী,

চাড়াখালী, বামনা, বরগুনা

 

        প্রশ্নঃ হক্কানী পীর চিনবার উপায় কি? ইসলামের দৃষ্টিতে পীরের মুরিদ হওয়া বাধ্যতামূলক কিনা?

 

        উত্তরঃ যে পীর সাহেব কুরআন হাদীস সম্পর্কে ব্যাপক জ্ঞান রাখেন, যিনি কোন মাধ্যম ও সহযোগী গ্রন্থ ব্যতীত মূল কুরআন ও হাদীস সরাসরি বুঝতে সক্ষম, ফরজ ওয়াজিব পালন সহ সুন্নাতের পাবন্দ এবং সীরাত ও সুরাতে যাকে দেখলে বা যার সংস্পর্শে আসলে আল্লাহ ও আখেরাতের কথা স্মরণ হয় এবং দ্বীনের পথে দৃঢ় হয়ে চলার আকাংখা ও আগ্রহ উদ্বেলিত হয়। এমন পীরকে হক্কানী পীর বলা যায়।

         হক্কানী পীরের মুরীদ হওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে কোন বাধ্যতা মূলক বিষয় না হলেও ইসলামী জ্ঞান যাদের কম, প্রয়োজনীয় বিষয়েও যারা ইসলামের দৃষ্টিতে ফয়সালা নির্ধারণে অক্ষম। তাদের জন্য যে কোন একজন হক্কানী পীরের সাথে সম্পর্ক রেখে তার অনুসরণ ও পরামর্শ অনুযায়ী জীবন পরিচালিত করা অপরিহার্য্য বলাই ঠিক। তাছাড়া সকল প্রকার লোকের বেলায় আত্মশুদ্ধির জন্য হক্কানী পীরের বায়আত গ্রহণ ও তাদের মজলিসে যোগদান ও তাদের বরকতময় সোহবাতে সময়দান খুবই জরুরী। তবে পীর হক্কানী হওয়া চাই এবং তাঁকে অবশ্যই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদায় বিশ্বাসী হতে হবে। তাঁর পক্ষে সমকালীন হক্কানী আলিমগণের সমর্থন থাকতে হবে।

 

 

এম, এ, ওয়াহিদ নোমানী

ছাত্র জামেয়া মাদানিয়া ইসলামিয়া,

কাজির বাজার, সিলেট।

 

        প্রশ্নঃ আমার মূল নাম “এম, এ, ওয়াহিদ”। দুটি কারণে আমি আমার নামের শেষে 'নোমানী’ সংযুক্ত করেছি। এক, বিশেষ একটি ট্রেনিং কোর্সে যোগদান করলে সেই ট্রেনিং কোর্সের ওস্তাদ যিনি আমার নিকট অগাধ শ্রদ্ধার পাত্র তিনি আমাকে নোমান বলে ডাকতেন। দুই, আমাদের মাযহাবের ইমাম সাহেবের নাম ছিলো নোমান ইবনে সাবেত। তাঁর রূহানী ফযেয় ও বরকত লাভের আশায় আমি আমার নামের শেষে ‘নোমানী’ লকব যুক্ত করেছি। শরীয়াতের দৃষ্টিতে এটা কোন পর্যায়ের, বিস্তাতির জানালে উপকৃত হব।

 

        উত্তরঃ আপনার উদ্দেশ্য ভালো হলেও এটা বাহুল্য। আমাদের অনুসরণীয় বুযুর্গগণ পিতৃদত্ত নামটি লিখেই ক্ষান্ত হন। এতে তাদের জীবন কম বরকতময় হয়নি। লোক এতেই তাদেরকে চিনে। এটাই সর্বাপেক্ষা বেশী প্রশংশনীয়। ইসলামের প্রথম যুগে মুসলমানদের যে সরলতা ও অকৃত্রিম জীবনাচরণ ছিল, আজও যদি আমরা সে আদর্শ কাজিরবাজার, অনুসরণ করতাম তাহলে কতই না ভালো হতো।

 

 

খান মোঃ মুজিবুর রহমান,

আল জামেয়াতুল আরাবিয়া দারুল উলুম,

দেওভোগ, নারায়ণগঞ্জ।

 

        প্রশ্নঃ (ক) পবিত্র রমান মাসে রোযাদারের সঙ্গে অমুসলিম হিন্দু ধর্মের লোকের ইফতার করা জায়িয কি?

 

        উত্তরঃ রোযা রেখে ইফতার করাও একটি ইবাদাত। ইবাদাতের মধ্যে অমুসলিমদের অংশগ্রহণ দোষনীয় এবং অপরাধ। তবে রোযার মত ইবাদাতের বেলায় ইফতারের সময় অমুসলিমদের অংশগ্রহণে রোযার ক্ষতি হবে না ঠিক। তবুও এ থেকে পরহেয করা চাই। অমুসলিমদের সাথে এক দস্তার খানায়ও খাওয়া যায় তবে তা কখনও বন্ধুত্ব মূলক নিমন্ত্রণ না হওয়া চাই। কেননা অমুসলমানদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করা হারাম। উল্লেখ্য যে, মুরতাদের সাথে কোন অবস্থায়ই এক দস্তারখানায় খাওয়া জায়িয নয়।

 

 

মোঃ গোলাম সাকলায়েন,

গ্রামঃ দৌলত দেয়াড় সরদার পাড়া,

চুয়াডাঙ্গা।

 

        প্রশ্নঃ (ক) একজন আলেম ব্যক্তি বল্লেন, কবর জিয়ারত করা বেদায়াত; আমাদের দেশে যে মিলাদ প্রচলিত আছে তাও নাকি বেদায়াত। তাঁর কথা কি ঠিক? সঠিক তথ্য জানালে উপকৃত হব।

(খ) জামাতে নামায পড়ার সময় মুক্তাদিগন তাকবীরে তাহরীমা বেধে ছানা পড়বে। তার পর নিরবে দাড়িয়ে থাকবে। কিন্তু যদি কোন মুক্তাদি ছানার পর নিরব না থেকে আউযুবিল্লাহ বিসমিল্লাহ পড়ে ফেলে তাতে নামাযের কোন ক্ষতি হবে কি?

 

        উত্তরঃ (ক) হ্যাঁ, কবর জিয়ারত করা বিদয়াত নয় সুন্নাত। আর প্রচলিত মিলাদ অনুষ্ঠান নিঃসন্দেহ বিদয়াত।

(খ) মুক্তাদির জানার পর নিরবে দাড়িয়ে না থেকে আউযু–বিসমিল্লাহ পড়া মাকরূহ তানজিহী। এতে নামাযের ক্ষতি হয় না।

 

 

মোঃ ইয়াকুব খান,

পোঃ রামকৃষ্ণপুর,

হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ, ঢাকা।

 

        প্রশ্নঃ (ক) কোন হিন্দু মহিলাকে ইসলামে দিক্ষীত করে বিবাহ করার পর তার সাথে বারবার দেখা সাক্ষাৎ করা জায়েয আছে?

(খ) নামাযের প্রত্যেক রাকাতে বড় এক আয়াত বা ছোট তিন আয়াত পড়তে হয়। কেউ যদি ‘রাব্বুল মাশরি কাইনি ওয়া রাব্বুল মাগরিবাইন ফাবি আইয়্যে আলা-ই রাব্বিকুমা তুকাযিযবান’ এতটুকু পড়ে তাতে নামায হবে?

(গ) ইসলামিক গানের সাথে বাজনা যোগ করা জায়েয আছে কি?

 

        উত্তরঃ (ক) বিবাহের পরও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পর্দার ব্যবধান বর্তমান থাকে বলে আপনি মনে করেন কি? বিবাহের পর স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কেবল ঘন ঘন সাক্ষাৎই নয় বরং তাদের উভয়কে সব সময়ের জন্য এক সাথেই থাকা উচিত। এতেই জীবন সুখের ও সুন্দর হয়।

(খ) হাঁ এতে নামায হয়ে যাবে। এতটুকু কেরাতই যথেষ্ট।

(গ) বাজনাসহ গান পরিবেশন করা হয় বলেই মুলত গান হারাম। তাই যে কোন সংগীত বাজনাসহ পরিবেশিত হবে তা হারাম হওয়ার ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। সে সংগীতের বিষয় যতই ভালো হোক না কেন- ইসলামের দৃষ্টিতে তার বিষয় নির্দোষ হলেও।

 

সামছুল আহমাদ,

দেওরাইল সিনিয়র মাদ্রাসা,

বদরপুর, করিমগঞ্জ, আসাম, ভারত।

 

        প্রশ্নঃ বাংলাদেশের বিগত সংসদ নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা আসনে বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্য জোট কোন মহিলা প্রার্থী দিয়েছিলো কি? আগামী সংসদ নির্বাচনে এই জোট নির্বাচনে লড়বে কি?

 

        উত্তরঃ না, গত সংসদ নির্বাচনে ইসলামী ঐক্য জোট সংরক্ষিত মহিলা আসনে কোন প্রার্থী দেয়নি। আগামী নির্বাচনে এরা লড়বে কিনা তা জোটের সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দই বলতে পারবেন। সংসদ নির্বাচনের এখনও অনেক বাকী। এ ব্যাপারে এখানে কোন গুঞ্জন নেই। মধ্যবর্তী কোন নির্বাচনের সম্ভাবনা আপাতত দেখা যাচ্ছে না। তবে ওপারের আপনারা এ ব্যাপারে আগাম কোন সংবাদ বা সংকেত পেয়ে থাকলে জানাতে পারেন। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব যে, এমন কিছু ঘটতে যাচ্ছে কি না!

 

 

মোঃ শরিফুল ইসলাম (শরীফ)

 

        প্রশ্নঃ (ক) শরীয়াত মতে তারাবিহ নামায পড়ায়ে টাকা নেওয়া বৈধ কি? (খ) চারজন পুরুষ একটি মহিলাকে বিবাহ করতে পারবে কি?

 

        উত্তরঃ (ক) বিজ্ঞ মুফতীগণের মতে চুক্তি ভিত্তিক তারাবিহ নামায পড়ায়ে টাকা নেয়া না জায়িয। টাকার বদলায় এই ধরণের ইবাদত খাটা জায়িয নয়। অন্তঃত এই ধরণের ইবাদত মূল্যে বিকায় না। (খ) চারজন নয় দশজন পুরুষও একজন মহিলাকে বিবাহ করতে পারবে। তবে এক সাথে নয় পর্যায়ক্রমে প্রথম স্বামী কর্তৃক তালাক প্রাপ্তা হলে বা তার মৃত্যু ঘটলে সে দ্বিতীয় স্বামী গ্রহণ করতে পারবে, দ্বিতীয় স্বামী কর্তৃক তালাক প্রাপ্ত হলে বা তার মৃত্যু ঘটলে সে তৃতীয় স্বামী গ্রহণ করতে পারবে। বা অন্য কোন পুরুষ তাকে বিবাহ করতে পারবে। এভাবে যতবার এরূপ দুর্ঘনা ঘটবে ততবার সে নির্দিষ্ট সময়ের বিরতিতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে।

 

 

মোছাম্মৎ আবেদা খাতুন।

গ্রাম ও পোঃ গওহরডাঙ্গা,

টুঙ্গিপাড়া,  গোপালগঞ্জ।

 

        প্রশ্নঃ (ক) মহিলাদের জন্য ছতর কতটুকু, কাদের সামনে ছতর ঢেকে রাখা ফরজ এবং কতক্ষণ পর্যন্ত ছতর ঢেকে রাখতে হবে?

(খ) যে পোষাকে ছতর ঢাকে না এবং ঢাকলেও গায়ে থাকে না এমন পোষাক মুসলিম মহিলাদের জন্য পরিধান করা জায়িয কি?

 

        উত্তরঃ গায়রে মুহরিমের বেলায় মহিলাদের সর্বশরীর ছতর। স্বামী বাদে মুহরিমের বেলায় মুখাবয়ব, হাতের কব্জি ও পাতাসহ টাখনু গিড়া পর্যন্ত ছতর। স্বামীর বেলায় স্ত্রী পর্দার বালাই থেকে মুক্ত।

(খ) সাধারণত মহিলাদের সর্বাবস্থায় এমন কাপড় বা পোশাক পরা উচিত যাতে তাদের চেহারা, হাতের কব্জি ও পায়ের পাতা উপরি অংশ বাদে সর্ব শরীর আবৃত থাকে। পরিধেয় কাপড় এর চেয়ে বেশী মসৃণ না হওয়া চাই যাতে শরীরের রং আন্দাজ করা যায়। আর এতটা আট-ষাট না হওয়া চাই যাতে বিশেষ অংগের উঁচু নিচুতা চোখে পড়ে। যে কাপড়, চাঁদর বা দোপাট্টা গায়ে থাকে না তা মহিলাদের জন্য ব্যবহারের উপযোগী নয়। তাই ছতর তরক করা যেমন হারাম তেমনি যে কাপড়ে ছতর ঢাকে না তা বা কাপড় পরিধানের স্বার্থকাত লাভ হয় না তা ব্যবহার করাও হারাম।

 

 

মোসাঃ তহমিনা মাহবুব,

সত্যপুর, মাগুরা,

 

        প্রশ্নঃ আমরা প্রায়ই পত্র-পত্রিকা ও বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে শুনতে পাই যে, কাশ্মীর ও বসনিয়ার মুসলিম মা বোনদের ওপর অনবরত ধর্ষণ ও নির্যাতন চালাচ্ছে কাশ্মীর ও সার্বীয়ান বর্বর বাহিনী। এ অবস্থায় তাদের ব্যাপারে আমাদের করণীয় কি?

 

        উত্তরঃ মুসলমান মাত্রই ভাই ভাই। এক মুসলমানের বিপদে অন্য মুসলমানের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া ঈমানের দাবী। এজন্য রাষ্ট্রীয় ভাবে কোন মুসলিম দেশ যদি অন্য কোন অমুসলিম রাষ্ট্র কতৃক আক্রান্ত হয় এবং মুসলমানদের ওপর নির্যাতন চালানো হয় তবে অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রের দায়িত্ব একযোগে আগ্রাসী রাষ্ট্রকে প্রতিহত করা। একজন মুসলমানও যদি বিধর্মীদের হাতে বন্দী থাকে তবে তাকে উদ্ধারের জন্য সকলকে এগিয়ে যাওয়া ইসলামেরই কথা। আর এই দায়িত্ব পালন করার জন্যই মুসলমানদের জন্য জিহাদ একটি ফরজ ইবাদত বলে ঘোষিত হয়েছে। সুতরাং বসনীয়া ও কাশ্মীরে যে হারে মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে তাতে প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব বর্বরদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করা। একক বা ব্যক্তিগতভাবে এখানে কিছুই করার নেই। এটাই বাস্তবতা আর বাস্তবতাকে অস্বীকার করা যায় না।

 

 

মোঃ ইউসুফ

উত্তর আবাসিক এলাকা, চট্টগ্রামবিশ্ববিদ্যালয়।

 

        প্রশ্নঃ আহমদিয়া কাদিয়ানী জামাত মুসলমান না কাফের? যদি কাফের হয় তাহলে তারা কেন কাফের তা জানতে চাই।

 

        উত্তরঃ আহমাদিয়া কাদিয়ানী জামাত বিশ্বের প্রখ্যাত সকল আলেমগণের দৃষ্টিতে অমুসলিম-কাফের। বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের প্রখ্যাত আলেমগণের মিলিত বোর্ড কাদিয়ানীদের অমুসলিম বলে মতামত প্রদান করায় সৌদী আরব, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মিশর, তুরস্ক প্রভৃতি দেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের অমুসলিম ঘোষণা করেছে। এছাড়া বিশ্ব মুসলিমের সর্বোচ্চ ধর্মীয় সংস্থা ওআইসিও সর্বসম্মতভাবে কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা করে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। কাদিয়ানীরা অমুসলিম এবং কাফের হওয়ার অন্যতম প্রধান কারনগুলি হলঃ কাদিয়ানী জামাতের প্রতিষ্ঠাতা ও মিথ্যা নবীর দাবীদার মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী তার লেখা বিভিন্ন বই পুস্তকে নিজেকে আল্লাহ, আবার কোথাও নিজেকে মরিয়ম (আঃ) -এর গর্ভে জন্মগ্রহণকারী ঈসা (আঃ) দাবী করেছেন। মির্জা কাদিয়ানী আরও দাবী করেছেন যে, অহির দরজা বন্ধ হয়ে যায়নি, আল্লাহ তাকে তার আপন রাসূল হিসেবে কাদিয়ানে প্রেরণ করেছেন। তার ধারণা মতে মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর কয়েকটি ইলহাম বোধগম্য নয়, তাঁর থেকে কয়েকটি ভুলও নাকি প্রকাশিত হয়েছে, মুহাম্মাদ (সাঃ) পরিপূর্ণভাবে ধর্ম প্রচার করতে পারেনি, তিনি সে কাজ পূর্ণ করতে রূপকভাবে মুহাম্মদ ও আহমাদ হিসাবে পুনরায় দুনিয়ায় আমন করেছেন। তিনি নিজেকে সকল নবীর সমকক্ষ বলেও দাবী করেছেন। গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর এসব দাবী ইসলামের আকীদা বিশ্বাসের পরিপন্থী এবং সাংঘর্ষিক। তাই এরা ইসলাম থেকে খারিজ এবং অমুসলিম বলে বিবেচিত। আপনি বিস্তারিত জানার জন্য ‘জাগো মুজাহিদ’ ১৯৯২ এর ডিসেম্বর সংখ্যা দেখুন।

 

 

মোঃ মতিউর রহমান

গওহর ডাঙ্গা মাদ্রাসা,

টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।

 

           প্রশ্নঃ শিয়া সম্প্রদায় কাকে বলে এবং তাদের আকীদা-বিশ্বাস কি?

 

        উত্তরঃ শিয়ারা একটা ভ্রান্ত ও গোমরাহ সম্প্রদায়। এরা ইসলামের কতগুলি মৌলিক বিশ্বাস নিয়ে চরম গোমরাহী প্রকাশ করে থাকে যা ইসলামের মূল বুনিয়াদের ওপর হস্তক্ষেপের সমান। শিয়া সম্প্রদায়ের বিভিন্ন দল-উপদলের প্রধান ‘ইছনা-আশারীয়া’ সম্প্রদায় বিশ্বাস করে যে, নবুয়াত প্রাপ্তির যোগ্য ছিলেন হযরত আলী (রাঃ), কিন্তু জিব্রাইল (আঃ) ভুল করে নবুয়াত হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) -এর নিকট পৌছান। শিয়াদের জন্য কিয়ামত পর্যন্ত বারজন ইমাম আল্লাহু নির্দিষ্ট করেছেন বলে তাদের বিশ্বাস। প্রথম ইমাম ছিলেন হযরত আলী (রাঃ)। পরবর্তিতে তাঁর বংশ থেকে আরও ১১ জন ইমাম আবির্ভূত হয়েছে এবং শেষ ইমাম (ইমাম মাহদী) এখনও আত্মপ্রকাশ করেননি। তাদের মতে এই ইমামতের ওপর বিশ্বাস রাখা ফরজ। তাঁরাও নবী রসূলগণের ন্যায় নিস্পাপ এবং যে কোন বিষয়ে হালাল হারাম সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষমতার অধিকারী। তারা দুনিয়া ও আখেরাতের মালিক, যাকে খুশী শাস্তি দেন ও যাকে খুশী ক্ষমা করেন। সৃষ্টি জগতের প্রতিটি কণার ওপর তাদের আধিপত্য। এই সম্প্রদায় প্রথম তিনজন খলিফাকে স্বীকার করেন না এবং তাদের কাফির ও প্রতারক বলে মনে করে। তারা বর্তমান পবিত্র কুরআন শরীফকে নকল কুরআন শরীফ বলে মনে করে। এ ধরণের আরও বহু আকীদা-বিশ্বাস তাদের মধ্যে প্রচলিত থাকায় একমাত্র জায়দী ফের্কা ছাড়া আর সকল শিয়া ফেরকাকে বিজ্ঞ আলেমগণ অমুসলিম, কাফের বলে মনে করেন।

 

 

মোঃ আঃ রাজ্জাক,

গ্রামঃ ফুলবাড়ী,

পোঃ গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধা।

 

        প্রশ্নঃ উত্তর পাড়া দক্ষিণ পাড়া মিলে উত্তর পাড়ায় অবস্থিত জামে মসজিদে আমরা জুমার নামায পড়ি। আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব এক বছর আগেও ফরজ নামায বাদ হাত তুলে মুনাজাত করতেন। কিন্তু এখন আর মুনাজাত করেন না। এ নিয়ে উত্তর পাড়া ও দক্ষিণ পাড়ার জনগণের মধ্যে ঝগড়া-ফাসাদ ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি উদ্ভব হয়েছে। এখন পৃথক ভাবে আর একটি মসজিদ তৈরীর পরিকল্পনা ও চেষ্টা চলছে। তাই সনির্বন্ধ অনুরোধ, কুরআন ও হাদীসের আলোকে প্রমাণ্য দলীলসহ এর জবাব দান করলে আমরা গ্রামবাসীসকলে উপকৃত হব।

 

        উত্তরঃ নামাজ বাদ মুনাজাত করা নামাযের অংশ নয়। এটা নামাযের বাইরের ব্যাপার। এর সাথে নামাযের এতটুকু সম্পর্কও নেই। এ ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণার অভাবই এই সব দ্বন্দ্বের মুল কারণ বলে মনে করি। এই দেশের অধিকাংশ মুসলমানই এই ভুলের শিকার। এ ব্যাপারে আপনাদের ইমাম সাহেবের দ্বন্দ্বে জড়ানো ঠিক হয়নি। তার উচিত ছিল বিষয়টি সম্পর্কে মুসল্লীদেরকে পরিষ্কার ধারণা দেওয়া। এতে তিনি ব্যর্থ হলেও দ্বন্দের পথ এড়িয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হত। মুসল্লীদের মধ্যে এইরূপ একটি সাধারণ বিষয় নিয়ে বিরোধ বা ফাসাদ সৃষ্টির ফলে যতটুকু লোকসমান হবে মুনাজাতের পক্ষে বিপক্ষে মযবুত থাকলে তা পোশাবে কি? কেননা মুনাজাত করে বা না করে আমরা যতটুকু উপকৃত হব তার চেয়ে বহুগুণ বেশী ক্ষতি ও অনিষ্টের সম্মুখীন হব এমন একটা সাধারণ বিষয় নিয়ে ফাসাদে জড়ালে-মুসলমানদের মধ্যে পরস্পরে ঘৃণা ও অনৈক্যর সৃষ্টি হলে। তাই বৃহৎ স্বার্থে ক্ষুদ্র বিরোধ পরিহার করাই বাঞ্চনীয়। এতে ভবিষ্যতে সকলকে বিষয়টা বুঝবার সুযোগ থাকবে। নতুবা যারা বিপক্ষীয় দলে অবস্থান নিবে তারা এটাকে সামাজিক বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত করে উত্তর উত্তর বিরোধের হাওয়া আরও গরম করতে থাকবে। তাই ইসলাম ও শরীয়াত সম্পর্কে অনভিজ্ঞ এই দেশের সরল মনা মুসলমানদের সত্য উপলব্ধির সুযোগ থেকে দূরে রেখে সমাজ সংস্কারের চিন্তা করা যা কি? তাই ইমাম-মুসল্লি সকলে দ্বীন ও ইত্তেহাদের স্বার্থে আরও সহনশীল ও আন্তরিক হবেন বলে আশা রাখি। আল্লাহ আমাদের সকলকে দ্বীনের সঠিক জ্ঞান দান করুন।

 

 

মোঃ কাছার রাব্বী,

সাদ্রাসা এমদাদিয়া দারুল উলুম,

১২-ডি, মিরপুর, ঢাকা -১২২১

 

        প্রশ্নঃ প্রচলিত জারী গানের ক্যাসেটে শুনা যায় যে, হুযুর (সাঃ) একদিন উপস্থিত সাহাবীগণকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “বেলাল (রাঃ) অমুক দিন রাত ১২ টার সময় মৃত্যুবরণ করবে।” অথচ বেলাল (রাঃ) তখনও বিবাহ করেন নি। তাই তরি ঘড়ি করে শেষ পর্যন্ত দ্রুত ঘনিয়ে আসা মৃত্যুর তারিখে তার বিবাহ হয়। প্রিয়তমা স্ত্রী মৃত্যুর দিন প্রাণ প্রিয় স্বামীর জন্য কিছু রুটি তৈরী করে কয়টি স্বামীকে খেতে দেন আর বাকীগুলো রেখে দেন স্বামী যদি পরে ক্ষুধার কথা বলেন এজন্য। এমন সময় এক ফকির এসে দরজায় উপস্থিত। স্ত্রী তার স্বামীর জন্য রাখা রুটিগুলো এনে ফকীরের হাতে তুলে দেয়। ফকির তার মলিন মুখ দেখে এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে তাকে বলে যে, আজ রাত বারটার সময় প্রথম বাসরে তার স্বামী ইন্তেকার করবে। এই মর্মন্তুত সংবাদ শুনে সে স্তম্ভিত হয় এবং রুটিগুলো নিয়ে দরজার ওপর বসে থাকে। ফকীর আজরাঈল (আঃ) এর আগমনের অপেক্ষা করছে। ঠিক রাত বারটার সময় বেলালের (রাঃ) ঘরের দরজার আজরাইল (আঃ)-এর সাথে ফকীরের সাক্ষাৎ। ফকীর তাঁকে বুঝায় যে, কীভাবে একটি লোকের বাসর রাতে আপনি জান কবয করবেন? একটুও দয়া নেই আপনার? ইত্যাদি কথা বলে বুঝিয়ে ফকীর আজরাঈল (আঃ) কে ফিরে যেত বাধ্য করে। আজরাঈল (আঃ) ফিরে গিয়ে এই ঘটনা আল্লাহ তাআলাকে জানালে তিনি ফকীরের অনুরোধে ১ দিন করে ৭ দিন এবং দয়ার আতিসয্যে এসে ৭-এর পিঠে শূন্য দিয়ে ৭০ বছর তার আয়ু বৃদ্ধি করে দেন। এই তথ্য কতটুকু সত্য তা জানালে কৃতজ্ঞ হব।

 

        উত্তরঃ এই তথ্যের সর্বাংশ বানানো ও অসত্য। সীরাত ও ইতিহাসের নির্ভরযোগ্য গ্রন্থে এর পক্ষে কোন প্রমান নেই। নবী ও সাহাবী তো বহু ওপরের কথা সাধারণ লোকের ব্যাপারেও বানিয়ে কথা বলা কোন ছোট অপরাধ নয়। জঘন্য অপরাধ। অতএব এসব মিথ্যায় ভরা ক্যাসেটগুলো সরকারের বাজেয়াপ্ত করা উচিত। আমাদের উচিত এসব ক্যাসেট শুনা থেকে বিরত থাকা।

 

 

মিসেস মোহসেনা,

গ্রামঃ চৌয়ারা,

পোঃ চৌয়ারা বাজার, কুমিল্লা সদর।

 

        প্রশ্নঃ আলিমদের নিকট শুনেছি, জন্ম নিয়ন্ত্রণ জায়িয নয়। কিন্তু আমাদের গ্রামের এক মহিলা আট সন্তানের মা হওয়ার পরেও লাইগেশন অপারেশন করে গর্ভাশয়ের মুখ বন্ধ করে নিয়েছে। তবে সে দ্বিতীয়বার অপরাশেরন করে গর্ভাশয়ের মুখ খুলে গর্ভধারণ করতেও সক্ষম হবে। এই পদ্ধতি গ্রহণ করা জায়িয কি? আর যদি জায়িয না হয় তাহলে এতে কিরূপ পাপ হবে এবং এই পাপ থেকে মুক্তির উপায়কি?

 

        উত্তরঃ স্থায়ী কালের জন্য লাইগেশন করা তো জায়িয নয়ই অস্থায়ী সময়ের জন্যও জায়িয নয়। আসলে খাদ্যাভাবের চিন্তা করে জন্মনিয়ন্ত্রণের কোন পদ্ধতি গ্রহণই জায়িয নয়। এ সব স্পষ্ট হারাম। এই সব পন্থা ও পদ্ধতি পরিহার করে আল্লাহর কাছে তওবা করা ছাড়া মুক্তি ও মাফ পাওয়ার কোন পথ নেই।

 

 

হাফেজ আবু তৈয়ব ইবনে সিরাজ,

মাদ্রাসায়ে হামিউসসুন্নাহ,

মেখল, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম

 

        প্রশ্নঃ জিহাদে আকবর ও জিহাদে আসগার সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে চাই। অনেকে নফসের সাথে জিহাদ করাকে জিহাদে আকবর আখ্যায়িত করে ময়দানে ইসলামের শত্রুদের মুকাবিলায় জীবন বাজি রেখে জিহাদ করাকে জিহাদে আসগার বলে বিদ্রুপ করে। বিষয়টি কি আসলেই তাই?

 

        উত্তরঃ আল্লাহর পথে বীরের মত শাহাদাত বরণ করার চেয়ে ভীরু জীবনকে যারা পছন্দ করে এসব কথা তারাই বলে। পবিত্র কুরআনে নামায সম্বন্ধে যত আলোচনা করা হয়েছে তার চেয়ে বহু (১৮ পৃঃ দেখুন) || ১৮তম পৃষ্ঠা থেকে ||

 

প্রশ্নোত্তর (৩৪ পৃঃ পর)

 

        বেশী বলা হয়েছে জিহাদর কথা। সে সব আয়াতের অধিকাংস স্থানে জিহাদ দ্বারা নফসের জিহাদকে বুঝান হয়নি। বুঝান হয়েছে ইসলাম বিরোধীদের মুকাবিলায় অস্ত্রহাতে সরাসরি ময়দানে অবতীর্ণ হওয়ার কথা। কুরআন ও হাদীসেরর পরিভাষায় জিহাদ বলতে কাফিরদের সাথে মুসলমানদের যুদ্ধের করার কথাই বুঝায়। এছাড়া অন্য কিছুকে অন্ততঃ কুরআন ও হাদীসের পরিভাষায় জিহাদ বলা হয় না। তাই আকবর ও আসগারের প্রশ্নই উঠে না। জিহাদ বলতে বহু বিষয়কে যদি বুঝত তাহলে তুলনা করার অবকাশ ছিল যে, কোনটি ছোট এবং কোনটি বড়। জিহাদ বলতে যেহেতু উপরোক্ত একটি বিষয় ছাড়া দ্বিতীয় কিছু বুঝায় না সেহেতু কোনটি ছোট এবং কোনটি বড় তা তুলনা করার অবকাশ কই? তবে শাব্দিক ভাবে যুদ্ধ ছাড়াও সংগ্রাম, সাধনা অর্থেও জিহাদ ব্যবহৃত হয়। তাই যেহেতু নফসের সাথে সংগ্রাম করে দ্বীনের পথে চলতে হয়, আত্মাকে পরিশুদ্ধ করতে হয় তাই শাব্দিক অর্থে একেও জেহাদ বলা যায় এবং বলা হয়ও! তবেতা কখনও জিহাদে আকবর নয়।