JustPaste.it

প্রশ্নোত্তর

===================================================================

 

  • খান মোহাম্মাদ জামাল
  • কাউখারলি, পিরোজপুর।

       প্রশ্নঃ আগেকার নবীদের উম্মতের ওপর নামাজ ফরয ছিল কি না?

 

       উত্তরঃ প্রত্যেক নবীর উম্মতের ওপরই নামায ফরয ছিল।

 

 

 

  • রফিকুল ইসলাম
  • খালিসপুর হাউজিং কলােনী খুলনা।

       প্রশ্নঃ বর্তমান যুগে আমরা মিলাদ মাহফিল করে আসছি। এই মিলাদ নবীজীর সময় ছিল কি? কোরআন ও হাদীসে মিলাদ সম্পর্কে কোন কথা আছে কি?

 

       উত্তরঃ বর্তমানে প্রচলিত মিলাদ অনুষ্ঠান রাসূলুল্লাহর (সাঃ) যুগে ছিল না। সাহাবীগণের যুগেও ছিল না। হিজরী ৬ষ্ঠ শতকে ইরানের কুর্দিস্তানের জনৈক শাসক এ অনুষ্ঠানটির প্রচলন করেন। পবিত্র কুরআন ও হাদীসে এ সম্পর্কিত কোন কথা নাই।

 

 

  • খােদাবক্স মৃধা
  • ঈদগাও, কক্সবাজার।

       প্রশ্নঃ হাঁটুর উপরে কাপড় তুললে অজু নষ্ট হয় কি? একা একজনে নামায পড়লে একামত বলতে হয় কি?

 

       উত্তরঃ হাঁটুর উপরে কাপড় উঠলে ছতর ঢাকার ফরয তরক হয় এবং এটা একটা কবীরা গােনাহ্। তবে এতে অজু ভঙ্গ হয় না। একা নামায পড়ার সময় তকবীর বলা জরুরী নয়।

 

 

 

  • মুজিবুর রহমান
  • দামপাড়া, চট্টগ্রাম।

 

প্রশ্নঃ ‘আত্তাহিয়্যাতু’ শব্দের অর্থ কি? টুপী ব্যবহার করা সুন্নত হওয়া সত্ত্বেও হজ্ব পালনের সময় মাথা খােলা রাখা হয় কেন?

 

উত্তরঃ ‘আত্তাহিয়াতু’ শব্দের অর্থ অভিবাদন, আন্তরিক ভক্তি নিবেদন। হজ্ব করার সময় হাজীগণকে এহরাম অবস্থায় থাকতে হয়। এ অবস্থায় সেলাই করা কাপড় পরা, মাথা বা মুখমণ্ডল আবৃত করা নিষিদ্ধ। এ কারণেই হজ্বের সময় সকল হাজীর মাথা খােলা থাকে। টুপী ব্যবহার করলে এহরামের বিধান লংঘন করা হয় বিধায় টুপী ব্যবহার করা যায় না।

 

 

 

  • হায়দার আলী
  • বীরগঞ্জ, দিনাজপুর।

       প্রশ্নঃ মালয়েশিয়াতে মুসলমান ছাড়া অন্য কোন ধর্মের লোক আছে কি? জানতে চাই।

 

       উত্তরঃ মালয়েশিয়ায় মােট জনসংখ্যার শতকরা ছাপ্পান্ন ভাগ মুসলমান। অবশিষ্ট শতকরা চুয়াল্লিশ ভাগ অমুসলমান। এদের মধ্যে চীনা, বৌদ্ধ, খৃস্টান এবং স্বল্প সংখ্যক শিখ, হিন্দু রয়েছে।

 

 

 

  • সৈয়দ কিরমানী
  • মুসলমান পাড়া রােড, খুলনা।

       প্রশ্নঃ হিন্দু বা খৃষ্টানের কোন মাল মসজিদ অথবা মাদরাসায় দান করলে তা উক্ত মসজিদ-মাদরাসায় লাগানাে যাবে কিনা?

 

       উত্তরঃ এ দানের পশ্চাতে যদি কোন কুমতলব না থাকে এবং নিছক ভক্তি ভরে দানকরে, তবে অমুসলমানের দানও মসজিদ মাদরাসায় ব্যবহার করা যায়। এতে কোন দোষ হয় না।

 

 

 

  • আওলাদ হােসাইন
  • বাজিতপুর, কিশােরগঞ্জ।

 

       প্রশ্নঃ সাহাবায়ে কেরামের সমালােচনা করা কি জায়েয?

 

       উত্তরঃ জায়েয নয়, কবিরা গােনাহ। কেননা, খােদ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাঁর সাহাবীগণকে সমালােচনার লক্ষ্যস্থলে পরিণত করতে নিষেধ করেছেন।

 

 

 

  • তােজাম্মেল হােসাইন
  • ফকিরহাট, বাগেরহাট।

       প্রশ্নঃ সর্বপ্রথম ডাক ব্যবস্থা কে চালু করেন এবং কি পদ্ধতি বা নিয়মে তা চালু করা হয় জানতে চাই।

 

       উত্তরঃ ইসলামের দ্বিতীয় খলীফা হযরত ওমর (রাঃ) সর্বপ্রথম নিয়মিত ডাক-ব্যবস্থার প্রচলন করেন। প্রথমে শুধুমাত্র বাণিজ্যিক পত্রাদি, জরুরী খবর এবং সরকারী খবরাখবর সম্বলিত পত্রাদি প্রতি জনপদের নির্ধারিত একটা স্থানে গ্রহণ করা হতাে। ডাক চলাচল করতাে ঘােড় সওয়ারের মাধ্যমে। প্রতি শহরেই এসব ডাক গ্রহণ করার জন্য লােক নিয়ােজিত থাকতাে, তারা ডাক গ্রহণ করে প্রাপকের নিকট পৌছে দিত।

 

 

 

  • হায়াত মাহমুদ
  • খালিসপুর, দৌলতপুর, খুলনা।

 

       প্রশ্নঃ কোন মহিলা যদি স্বামীর কাপড় পরিষ্কার করা, খানা পাকানাে ইত্যকার কাজ করতে রাজী না হয় সেজন্য স্ত্রীকে বাধ্য করা যাবে কি?

 

       উত্তরঃ একমাত্র দাম্পত্য জীবনের সততা বজায় রাখা এবং শরীয়তের অনুশাসন মেনে চলার ক্ষেত্র ছাড়া স্বামী তার স্ত্রীকে, অন্য কোন ব্যাপারেই জোর করতে পারে না। স্ত্রীর ভরণ-পোষণ এবং উপযুক্ত বাসস্থানের ব্যবস্থা করা স্বামীর দায়িত্ব। স্বামীর কাপড় পরিষ্কার করা, গৃহস্থালী কাজ কর্ম করা এমনকি সন্তান পালন করাও শরীয়ত মতে স্ত্রীর আবশ্যিক দায়িত্ব নয়। ঘর-সংসারের কাজ কর্মগুলি পারস্পরিক সহযােগিতা ও ভালবাসার তাগিদে যতটুকু হয়, ততটুকুতেই স্বামীকে সন্তুষ্ট থাকতে হবে। অবশ্য স্ত্রী স্বতঃপ্রণােদিত হয়ে যতটুকু করেন ততটুকুর জন্য তিনি সওয়াবের ভাগী হবেন।

 

        অন্যদিকে অসুস্থতার সময় স্ত্রীর চিকিৎসা ব্যয়, ভরণ-পােষণের অত্যাবশ্যকীয় বিষয়াদির বাইরে সখ-আহলাদ পূরণ করা ইত্যাদিও আইনের দৃষ্টিতে স্বামীর দায়িত্ব নয়। এমনকি স্ত্রীকে হজ্ব করানাের দায়িত্বও স্বামীর নয়। স্ত্রী যেহেতু তার মােহরের অর্থ, পিতৃ-সম্পত্তির উত্তরাধিকার থেকে প্রাপ্ত সম্পদ এবং নিজের রুজী-রােজগারের মালিক, আর দাম্পত্য জীবনের দায়িত্ব পালন করার পরও স্বাধীনভাবে নিজস্ব সম্পদাদি সংরক্ষণ ও প্রবৃদ্ধি সাধনের পূর্ণ অধিকার রাখেন, সুতরাং অতিরিক্ত খরচাদি তিনি তার নিজের সম্পদ থেকেই নির্বাহ করবেন। স্বামী গৃহের দায়িত্ব বহির্ভূত কাজকর্ম এমনকি সন্তান পালনের জন্যও স্ত্রী স্বামীর নিকট পারিশ্রমিক দাবী করতে পারেন। তাই, আইনতঃ নয়, পরস্পরের সমঝোতার মাধ্যমেই ঘর-সংসারের অতিরিক্ত দায়িত্ব স্ত্রীর উপর চাপানাে যেতে পারে। অনেকে মনে করেন, স্বামীর ঘরে দাসীবৃত্তি করাই বােধহয় স্ত্রীর সর্বাপেক্ষা বড় দায়িত্ব ও পূণ্যের কাজ। এ ধারণাটা কিন্তু মােটেও, শরীয়ত সম্মত নয়।

 

 

 

  • জামালুদ্দিন মাহমুদ বিল
  • ডুমুরিয়া, নাজিরপুর পিরােজপুর।

 

       প্রশ্নঃ কোরআনে উল্লেখিত আছে, তালাক দুইবার অথচ হানাফী মাজহাবে তিন তােহরে তিন তালাকের ব্যবস্থা আছে। এই তিন তালাকের ব্যবস্থা কিভাবে এলাে? একসঙ্গে তিন তালাক দিলে তা তিন তালাক হবে না, এক তালাক? হিলা কি ও কেন?

 

       উত্তরঃ ইসলামী আইন-বিধানে তালাক একটি দীর্ঘ আলােচনা সাপেক্ষ বিষয়। স্বল্প পরিসরে এ সম্পর্কিত পূর্ণ আলােচনা সম্ভব নয়। কোরআন শরীফের যে আয়াতে “তালাক দুইবার” বলা হয়েছে, তার অর্থ, প্রত্যাহারযােগ্য তালাক দুইটা দেওয়া চলে। তারপর হয় নিয়ম মাফিক তাকে রাখতে হবে, অন্যথায় চূড়ান্তভাবে ছাড়তে হবে। এই শেষ বা তৃতীয় সিদ্ধান্তটাই তৃতীয় তালাক হিসাবে গণ্য হয়। কোন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ অপরিহার্য হয়ে পড়লে তিন তোহরে তিনটি তালাক দিতে হবে, এটাই সুন্নত। কিন্তু যদি কেউ এক তােহরেই তালাক দিয়ে ফেলে বা এক সঙ্গেই তিন তালাক উচ্চারণ করে, তবে হানাফী ফেকাহর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ তিন তালাকই প্রযােজ্য হবে।

 

        তবে কাজটা যেহেতু সুন্নত তরিকার বিরােধী, তাই যে ব্যক্তি এভাবে তালাক দিলাে সে অপরাধী বলে গণ্য হবে। কেননা একই সাথে প্রদত্ত তিন তালাক চূড়ান্ত তিন তালাকরূপেই গণ্য হবে এবং এ সিদ্ধান্তের অনুকূলে হানাফী মাযহাবের দলীল-প্রমাণ কি আছে, তা দীর্ঘ আলােচনা সাপেক্ষ। বিষয়টি যেহেতু দেওয়ানী আইনের অন্তর্ভুক্ত এ জন্য সাহাবীগণ এবং তৎপরবর্তী যুগের নির্ভরযােগ্য আইনবিদ ও বিচারকগণের সিদ্ধান্তসমূহ এ ব্যাপারে নজীর হিসাবে বিচারযােগ্য। তবে বিরােধের প্রতিটি ঘটনাই যেহেতু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত, সুতরাং একসঙ্গে তিন তালাকের ঘটনাটা কিভাবে ঘটেছে, সংশ্লিষ্ট ঘটনায় অস্বাভাবিক কোন ব্যাপার ছিল কিনা চূড়ান্ত রায় দেওয়ার সময় মুফতীগণকে এ বিষয়টাও চিন্তা করতে হবে।

 

        ‘হিলা’ হচ্ছে আইনের বিধানকে পাশ কাটানাের কৌশল মাত্র। কোন কোন পরিস্থিতিতে হিলার সাহায্যে আইনকে পাশ কাটানাে যায়, এ সম্পর্কে কোন কোন আইনবিদ স্বতন্ত্র পুস্তিকা রচনা করেছেন। তবে আল্লাহর দেওয়া আইনের ক্ষেত্রে যেহেতু কৌশল অবলম্বন করা বাতুলতা মাত্র, সুতরাং বিবদমান দুপক্ষকেই স্ব স্ব বিবেকের ও ঈমানের তাগিদ অনুযায়ী কাজ করা কর্তব্য। কারণ, আল্লাহর চোখকে তাে ফাঁকি দেওয়া সম্ভব নয়।

 

 

 

  • সরফরাজ আহমদ
  • কাদিরগঞ্জ, হবিগঞ্জ।

       প্রশ্নঃ মসজিদ স্থানান্তর করে সেই মসজিদের ওপর ইমাম সাহেবের থাকার জায়গা নির্মাণ করা এবং পুরাতন মসজিদের জায়গা অত্র মসজিদের আঙ্গিণা হিসাবে রাখা কতটুকু ঠিক।

 

       উত্তরঃ সম্প্রসারণ কিংবা অন্য কোন যুক্তিসঙ্গত কারণে মসজিদটি স্থানান্তর করতঃ মসজিদের সাবেক স্থানকে নতুন মসজিদের প্রাঙ্গণ হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবুও খেয়াল রাখতে হবে যেন কোন অবস্থাতেই এই প্রাঙ্গণ নাপাক কিংবা অন্য কোনভাবে এর মর্যদাহানী না ঘটে। সাবেক মসজিদের স্থানে ইমামের জন্য বাসস্থান নির্মাণ করা যেতে পারে না। তবে নির্মিত মসজিদের উপর তলার কোন এক অংশে ইমাম সাহেবের বসবাসের কামরা নির্মাণ করাতে দোষ হবে না।

 

 

 

  • মুহাঃ ইকবাল হােসাইন
  • কাঁচপুর, সােনারগাঁও নারায়ণগঞ্জ।

 

        প্রশ্নঃ যদি কোন মুসলমান ইচ্ছাকৃতভাবে তাহার কন্যাকে কোন অমুসলমানের সহিত বিবাহ দেয়, তাহলে ইসলামের দৃষ্টিতে তার হুকুম কি?

 

       উত্তরঃ এরূপ বিবাহ শরীয়তের দৃষ্টিতে বাতিল এবং এ দম্পতির বিবাহিত জীবনকে প্রকাশ্য ব্যাভিচার রূপে গণ্য করা হবে। যে পিতা স্বেচ্ছায় এরূপ বিবাহ অনুষ্ঠান করেছে, তাকে প্রকাশ্য ব্যভিচার সংগঠনের জন্য প্রাপ্ত শাস্তি দেওয়া হবে।

 

 

 

  • ওবায়দুল হক
  • লালখান বাজার, চট্টগ্রাম।

       প্রশ্নঃ মুসলমান ব্যতীত অন্য কোন ধর্মাবলম্বীর নাবালক শিশু মৃত্যুবরণ করলে কি জান্নাতে যাবে? যদি হয় অথবা না হয়, তার কারণ কি?

 

       উত্তরঃ যেসব শিশু নাবালেগ অবস্থায় মারা যায়, তারা অমুসলিমের ঘরে জন্মগ্রহণ করলেও বেহেশতবাসী হবে। কারণ, আল্লাহর দ্বীন ও শরীয়তের বিধি-বিধান মান্য করার দায়িত্ব বালেগ হওয়ার পর বর্তে। নাবালেগ অবস্থায় মারা গেলে যেহেতু ঈমান আনার দায়িত্ব থেকেই মুক্ত থাকে, সেজন্য তার জন্য জাহান্নাম অবধারিত হয় না।

 

 

═──────────────═