রজব মাসের বিশেষ দুআ : বিশ্লেষণ ও বিধান
ওয়ার্ড ফাইল লিংক: https://files.fm/u/e67vnafkn
আমাদের দেশে রজব মাস আসলে সাধারণত “আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবান ওয়া বাল্লিগনা রমাজান” দুআটি নিয়মিত পড়া হয় এবং অন্যদেরকেও পড়তে উৎসাহিত করা হয়।
আমরা সংক্ষিপ্ত এ প্রবন্ধটিতে রজব ও শাবান মাসে পঠিত প্রসিদ্ধ দুআটি নিয়ে বিশ্লেষণ করে দেখব যে, এ দুআটি আদৌ আমাদের পড়া উচিত নাকি উচিত নয়।
আলোচনার প্রথমে আমরা এ দুআ সংবলিত হাদিসটির নস (ভাষ্য) ও তার তাখরিজ (বর্ণনাসূত্র) উল্লেখ করব।
দ্বিতীয় পর্যায়ে হাদিসটির শুদ্ধতা-অশুদ্ধতার মান নিয়ে কথা বলব যে, হাদিসটি গ্রহণযোগ্য নাকি অগ্রহণযোগ্য।
তৃতীয় পর্যায়ে আমাদের আলোচনা হবে এ দুআটি পড়ার বিধান নিয়ে।
ক্রমধারানুসারে আমরা আলোচনা তিনটি পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করছি।
হাদিসটির তাখরিজ : এ হাদিসটি ইমাম আহমাদ রহ., ইমাম বাইহাকি রহ., ইমাম বাজ্জার রহ.-সহ অনেক ইমাম স্ব স্ব গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। তবে একাধিক কিতাবে উল্লেখ থাকলেও সবাই এক সনদেই হাদিসটি উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ হাদিসটির বর্ণনাকারী সাহাবি হলেন আনাস রা.। তাঁর থেকে বর্ণনা করেছেন জিয়াদ এবং জিয়াদ থেকে বর্ণনা করেছেন জায়িদা। এ হাদিসটির সব সনদেই এ দুজন রাবি আছে; অথচ এ দুজনকেই নিয়ে যত সমস্যা। রাবি দুজনের সমস্যা নিয়ে আমরা দ্বিতীয় পর্বে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।
রজবের দুআসংবলিত হাদিসটির ভাষ্য :
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ سَعِيدٍ الرَّازِيُّ قَالَ: نا عَبْدُ السَّلَامِ بْنُ عُمَرَ الْجِنِّيُّ قَالَ: نا زَائِدَةُ بْنُ أَبِي الرُّقَادِ قَالَ: نا زِيَادٌ النُّمَيْرِيُّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا دَخَلَ رَجَبٌ قَالَ: «اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي رَجَبٍ، وَشَعْبَانَ، وَبَلِّغْنَا رَمَضَانَ
‘আনাস বিন মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন রজব মাস আসত তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন “আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবান ওয়া বাল্লিগনা রমাজান” অর্থাৎ হে আল্লাহ, আপনি রজব ও শাবান মাসে আমাদের বারাকাহ দান করুন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন।’
(আল-মুজামুল আওসাত, তাবারানি : ৪/১৮৯, হা. নং ৩৯৩৯, প্রকাশনী : দারুল হারামাইন, কায়রো) আরও যেসব কিতাবে হাদিসটি সনদসহ বর্ণিত হয়েছে : (১) মুসনাদু আহমাদ : ৪/১৮০, হা. নং ২৩৪৬, প্রকাশনী : মুআসসাসাতুর রিসালা, বৈরুত (২) মুসনাদুল বাজ্জার : ১৩/১১৭, হা. নং ৬৪৯৬, প্রকাশনী : মাকতাবাতুল উলুমি ওয়াল হিকাম, মদিনা (৩) আমালুল ইয়াওমি ওয়াল-লাইলা, ইবনুস সুন্নি : ১/৬১০, হা. নং ৬৫৯, প্রকাশনী : দারুল কিবলা, জিদ্দা (৪) শুআবুল ইমান, বাইহাকি : ৫/৩৪৮, হা. নং ৩৫৩৪, প্রকাশনী : মাকতাবাতুর রুশদ, রিয়াদ (৫) আদ-দাওয়াতুল কাবির, বাইহাকি : ২/১৪২, হা. নং ৫২৯, প্রকাশনী : গিরাস, কুয়েত (৬) আমালি ইবনি বিশরান : পৃ. নং ২৮২, হা. নং ১৫১০, প্রকাশনী : দারুল ওয়াতন, রিয়াদ) (৭) আদ-দুআ, তাবারানি : ১/২৮৪, হা. নং ৯১১, প্রকাশনী : দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা, বৈরুত (৮) হিলইয়াতুল আওলিয়া, আবু নুআইম : ৬/২৬৯, প্রকাশনী : দারুল কিতাবিল আরাবি, বৈরুত (৯) মুজামু ইবনি আসাকির : ১/২৬৪, হা. নং ৩০৯, প্রকাশনী : দারুল বাশাইর, দিমাশক (১০) ফাজাইলুল আওকাত, বাইহাকি : ১/১০৪, হা. নং ১৪, প্রকাশনী : মাকতাবাতুল মানারা, মক্কা)
হাদিসটির মান : হাদিসটি মুনকার বা অত্যাধিক দুর্বল। কেননা, এ হাদিসে তিনটি সমস্যা রয়েছে।
এক : একজন মুনকার রাবি আছে।
দুই : একজন দুর্বল রাবি আছে।
তিন : হাদিসটি গরিব বা এককভাবে বর্ণিত হয়েছে।
বিস্তারিত বলছি-
এক : হাদিসটির সনদে জায়িদা বিন আবু রাক্কাদ নামক মুনকার পর্যায়ের একজন রাবি আছে, যার বর্ণিত হাদিস অগ্রহণযোগ্য হয়। তার ব্যাপারে মুহাদ্দিসদের মন্তব্য দেখুন : ‘ইমাম আবু হাতিম রহ. বলেন, সে জিয়াদ বিন নামিরি সূত্রে আনাস রা. থেকে অনেক মুনকার (প্রত্যাখ্যাত) মারফু হাদিস বর্ণনা করে।’ (আল-জারহু ওয়াত-তাদিল : ৩/৬১৩, জীবনী নং ২৭৭৮, প্রকাশনী : দারু ইহইয়াইত তুরাসিল আরাবিয়্যি, বৈরুত)
ইমাম ইবনে হিব্বান রহ. বলেন, জায়িদা বিন আবু রাক্কাদ প্রথিতযশা (খ্যাতিমান) মুহাদ্দিসদের থেকে মুনকার হাদিস বর্ণনা করে, তার বর্ণিত হাদিস দলিলযোগ্য নয়। (কিতাবুল মাজরুহিন : ১/৩০৮, জীবনী নং ৩৬৭, প্রকাশনী : দারুল ওয়ায়ি, হালব)
ইমাম বুখারি রহ. বলেন, সে মুনকারুল হাদিস (যার হাদিস প্রত্যাখ্যাত হয়)। ইমাম আবু দাউদ রহ. বলেন, তার হাদিসের ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।
ইমাম নাসায়ি রহ. বলেন, সে মুনকারুল হাদিস। ইমাম আবু আহমাদ হাকিম রহ. বলেন, সে সুদৃঢ় নয়।’ (তাহজিবুল কামাল : ৯/২৭১-২৭২, জীবনী নং ১৯৪৯, প্রকাশনী : মুআসসাসাতুর রিসালা, বৈরুত- তাহজিবুত তাহজিব : ৩/৩০৫-৩০৬, জীবনী নং ৫৭০, প্রকাশনী : দায়িরাতুল মাআরিফ, ভারত)
হাফিজ জাহাবি রহ. ইমাম বুখারি রহ.-এর উক্তি নকল করে বলেন, সে মুনকারুল হাদিস অর্থাৎ যার বর্ণিত হাদিস প্রত্যাখ্যাত হয়। (আল-কাশিফ : পৃষ্ঠা নং ৪০০, জীবনী নং ১৬০৩, প্রকাশনী : দারুল কিবলা, জিদ্দা)
হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানি রহ. বলেন, সে মুনকারুল হাদিস অর্থাৎ যার বর্ণিত হাদিস প্রত্যাখ্যাত হয়। (তাকরিবুত তাহজিব : পৃ. নং ২১৩, জীবনী নং ১৯৭৬, প্রকাশনী : দারুর রশিদ, সিরিয়া)
প্রমাণ হলো যে, এ রাবি মুনকারুল হাদিস ।
আর হাদিস শাস্ত্রবিদদের মতে এ ধরনের রাবির বর্ণিত হাদিস জইফে শাদিদ বা মারাত্মক দুর্বল বলে বিবেচিত হয়।
দুই : জিয়াদ বিন আব্দুল্লাহ নামিরি নামক একজন দুর্বল রাবি আছে। তার ব্যাপারে ইমামদের মন্তব্য দেখুন : ‘ইমাম ইয়াহইয়া বিন মাইন রহ. বলেন, সে দুর্বল রাবি। ইমাম আবু হাতিম রহ. বলেন, তার হাদিস লেখা যাবে, তবে তা দলিলযোগ্য নয়। ইমাম আবু দাউদ রহ. তাকে দুর্বল রাবি বলে আখ্যায়িত করেছেন। ইমাম ইবনে হিব্বান রহ. বলেন, সে মুনকারুল হাদিস, তার বর্ণিত হাদিস দ্বারা দলিল দেওয়া যাবে না।’(দেখুন : তাহজিবুল কামাল : ৯/৪৯২, জীবনী নং ২০৫৫, প্রকাশনী : মুআসসাসাতুর রিসালা, বৈরুত- তাহজিবুত তাহজিব : ৩/৩৭৮, জীবনী নং ৬৮৭, প্রকাশনী : দায়িরাতুল মাআরিফ, ভারত)
হাফিজ জাহাবি রহ. বলেন, সে দুর্বল রাবি। (আল-কাশিফ : পৃষ্ঠা নং ৪০০, জীবনী নং ১৬০৩, প্রকাশনী : দারুল কিবলা, জিদ্দা)
হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানি রহ. বলেন, সে মুনকারুল হাদিস। (তাকরিবুত তাহজিব : পৃ. নং ২২০, জীবনী নং ২০৮৭, প্রকাশনী : দারুর রশিদ, সিরিয়া)
সাব্যস্ত হলো যে, এ রাবিও দুর্বল। যদিও কেউ কেউ তাকে মুনকারুল হাদিস বলেও অভিহিত করেছেন। তবে অধিকাংশ মুহাদ্দিস তাকে শুধু দুর্বল বলেই ক্ষান্ত হয়েছেন; তাই আমরা তাকে মুনকার রাবি না বললেও ন্যূনতম দুর্বল রাবি বলে গণ্য করছি। আর হাদিস দুর্বল হওয়ার জন্য এমন একজন রাবি থাকাই যথেষ্ট।
তিন : হাদিসের বর্ণনাকারীদের মধ্যে দুজনের সমস্যা থাকার পাশাপাশি এটা আবার গরিবও বটে। অর্থাৎ হাদিসটি এক সনদে বর্ণিত হয়েছে। এ হাদিসটির যতগুলো সনদ আছে, সব সনদেই জায়িদা ও জিয়াদ নামক উক্ত দুই রাবি আছে। আর উভয়ের অবস্থা কেমন, তা তো পূর্বে গত হয়েছে। তাই এমন দুর্বল রাবির এককভাবে বর্ণিত হাদিস যে মারাত্মক দুর্বল হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। হাদিসটি গরিব হওয়ার ব্যাপারে ইমামদের মন্তব্য দেখুন :
ইমাম তাবারানি রহ. বলেন :
لَا يُرْوَى هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَّا بِهَذَا الْإِسْنَادِ، تَفَرَّدَ بِهِ: زَائِدَةُ بْنُ أَبِي الرُّقَادِ
‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে এ হাদিসটি শুধু এই সনদেই বর্ণিত হয়েছে। জায়িদা বিন আবু রাক্কাদ এককভাবে হাদিসটি বর্ণনা করেছে।’
(আল-মুজামুল আওসাত, তাবারানি : ৪/১৮৯, হা. নং ৩৯৩৯, প্রকাশনী : দারুল হারামাইন, কায়রো)
ইমাম বাইহাকি রহ. বলেন :
تَفَرَّدَ بِهِ زِيَادٌ النُّمَيْرِيُّ، وَعَنْهُ زَائِدَةُ بْنُ أَبِي الرُّقَادِ “، قَالَ الْبُخَارِيُّ: زَائِدَةُ بْنُ أَبِي الرُّقَادِ، عَنْ زِيَادٍ النُّمَيْرِيِّ مُنْكَرُ الْحَدِيثِ ‘জিয়াদ নামিরি এককভাবে হাদিসটি বর্ণনা করেছে। আর তার থেকে জায়িদা বিন আবু রাক্কাদও এককাভাবে বর্ণনা করেছে। ইমাম বুখারি রহ. বলেন, জায়িদা বিন আবু রাক্কাদ, যে জিয়াদ নামিরি থেকে বর্ণনা করে থাকে। আর সে (জায়িদা বিন আবু রাক্কাদ) একজন মুনকারুল হাদিস রাবি।’ (শুআবুল ইমান, বাইহাকি : ৫/৩৪৯, হা. নং ৩৫৩৪, প্রকাশনী : মাকতাবাতুর রুশদ, রিয়াদ)
সুতরাং প্রমাণ হলো যে, হাদিসটি মুনকার বা অত্যাধিক দুর্বল। আর এ ধরনের হাদিস না আকাইদের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য, না আহকামের ক্ষেত্রে আর না ফাজায়িলের ক্ষেত্রে। তাই এ ধরনের হাদিস দ্বারা ইতিবাচক বা নেতিবাচক কোনো কিছুই সাব্যস্ত হবে না।
দুআটি পড়ার বিধান : এ দুআটি পড়ার বিষয়ে বিধান হলো, হুবহু এ দুআকে নির্দিষ্ট মনে করা যাবে না, অনুরূপ শুধু রজব ও শাবান মাসে পড়াকেই ফজিলতপূর্ণ মনে করা যাবে না। অর্থাৎ এটাকে রজব ও শাবান মাসের বিশেষ দুআ মনে করা এবং এটাকে সুন্নাত বা মুসতাহাব বলে পড়া ঠিক নয়। তবে দুআটিকে নির্দিষ্ট মনে না করে এবং এর কোনো বিশেষ ফজিলতের আকিদা না রেখে এমনিতেই রমজান পর্যন্ত হায়াত দারাজ করার জন্য আল্লাহর কাছে এ দুআটির মাধ্যমে প্রার্থনা করা যাবে। শুধু এ দুআটিই নয়; বরং ভিন্ন বাক্যে এ জাতীয় অন্য কোনো দুআও করা যাবে। সালাফে সালিহিন থেকে এক্ষেত্রে বিভিন্ন বাক্যে দুআ করার কথা বর্ণিত হয়েছে।
ইমাম মুআল্লা বিন ফজল রহ. বলেন :
كانوا يدعون الله تعالى ستة أشهر أن يبلغهم رمضان يدعونه ستة أشهر أن يتقبل منهم
‘ছয় মাস পর্যন্ত সালাফে সালিহিন আল্লাহর কাছে এ দুআ করতেন যে, তিনি যেন তাদেরকে রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দেন। আর ছয় মাস তাঁর কাছে এ প্রার্থনা করতেন যে, তিনি যেন তাদের পক্ষ থেকে রমজান মাস কবুল করেন।’ (লাতাইফুল মাআরিফ : পৃ. নং ১৪৮, প্রকাশনী : দারু ইবনি হাজাম)
ইমাম ইয়াহইয়া বিন আবু কাসির রহ. বলেন :
كان من دعائهم: اللهم سلمني إلى رمضان وسلم لي رمضان وتسلمه مني متقبلا. ‘
সালাফদের একটি দুআ এরূপ ছিল, হে আল্লাহ, আমাকে রমজান পর্যন্ত নিরাপদ রাখুন, আমার জন্য রমজানকে নিরাপদ করুন এবং আমার পক্ষ থেকে এটাকে কবুল করে নেবেন।’ (লাতাইফুল মাআরিফ : পৃ. নং ১৪৮, প্রকাশনী : দারু ইবনি হাজাম)
হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানি রহ. বলেন :
لم يرد في فضل شهر رجب، ولا في صيام شيء
منه معين، ولا في قيام ليلة مخصوصة فيه حديث صحيح يصلح للحجة
‘রজব মাসের ফজিলত, এ মাসে নির্দিষ্ট রোজা ও নির্দিষ্ট রাতের নামাজ সম্পর্কে এমন কোনো বিশুদ্ধ হাদিস বর্ণিত হয়নি, যা দলিলের উপযুক্ত হতে পারে।’ (তাবয়িনুল আজব বিমা ওরাদা ফি শাহরি রজব : পৃ. নং ২৩ )
শাইখ আব্দুল কারিম খুজাইর বলেন :
هذا حديث لا يثبت لكن إن دعا المسلم بأن يبلغه الله -عز وجل- رمضان، وأن يوفقه لصيامه وقيامه، وأن يوفقه لإدراك ليلة القدر أي بأن يدعو أدعية مطلقة فهذا إن شاء الله لا بأس به.
‘এ হাদিস বিশুদ্ধ সূত্রে প্রমাণিত নয়। কিন্তু মুসলমানের এভাবে দুআ করা যে, আল্লাহ যেন তাকে রমজান পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দেন, তাকে রমজানের রোজা ও তারাবিহ পড়ার তাওফিক দেন এবং লাইলাতুল কদর পাওয়ার সৌভাগ্য দান করেন, এতে কোনো সমস্যা নেই। অর্থাৎ (দিন, মাস বা দুআ নির্দিষ্ট না করে) এমন সাধারণভাবে দুআ করতে কোনো অসুবিধা নেই ইনশাআল্লাহ।’ (শাইখ খুজাইরডটকম : ফতোয়া নং ১৫৮২, দেখুন : https://shkhudheir.com/fatawa/224855973
সারকথা : এসব বর্ণনা ও ফতোয়া থেকে অনুমেয় হয় যে, এ দুআটি মাসুর (হাদিসে বর্ণিত দুআ) হিসাবে নয়; বরং সাধারণ দুআ হিসাবে পড়া যাবে। শাস্ত্রীয় নিয়মানুসারে মুনকার হাদিসের ওপর আমল করার অনুমোদন না থাকলেও হাদিসে বর্ণিত উক্ত দুআটি যেহেতু সাধারণ দুআ হিসাবে পড়ারও সুযোগ আছে, তাই অন্তরে এ দুআ পড়াকে সুন্নাত বা মুসতাহাব বিশ্বাস না রেখে পড়লে বস্তুত তা মুনকার হাদিসের ওপর আমল বলা যায় না; বরং রমজান পাওয়ার জন্য অন্যান্য সাধারণ দুআ করার মতোই এটাও একটি দুআ হয়। আর এজন্যই এ দুআটির মধ্যে কোনো শব্দ বা বাক্য বৃদ্ধি করা বা দুআটি রজব মাস আসার আগেই পড়া; সবই অনুমোদিত। মোটকথা, স্বাভাবিকভাবে আমরা দুআটি পড়তে পারব। তবে এটাকে বিশেষ ফজিলতপূর্ণ বা কোনো মাসের সাথে নির্দিষ্ট মনে করা যাবে না।
Collected