PR_114_AQS

তারিখ:  ১২ ই জিলহজ্জ, ১৪৪৪ হিজরি / ৩০ শে জুন, ২০২৩ ঈসায়ী

(যারা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অবমাননা করে) তাদের ঘাড় থেকে মাথা আলাদা করে দিন! এটাই কুরআনের নির্দেশ।
(১৪৪৪ হিজরির ঈদুল আযহার দিন সুইডেনে পবিত্র কুরআন অবমাননার ঘটনা বিষয়ক বিবৃতি)

الحمد لله رب العالمين والصلاة والسلام على سيد الأنبياء والمرسلين وعلى آله وصحبه ومن تبعهم بإحسان إلى يوم الدين، أما بعد

সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার, যিনি বিশ্ব জগতের পালনকর্তা। দুরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক নবী-রাসূলগণের সর্দার, তার পরিবার-পরিজন এবং কেয়ামত অবধি যারা তাঁর অনুসরণ করবেন  তাদের উপর।

১৪৪৪ হিজরির ঈদুল আজহার প্রথম দিনে সুইডেনে পবিত্র কুরআন পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই জঘন্য ঘটনায় সারা বিশ্বের মুসলিমরা ফুঁসে উঠেছেন। যারা আল্লাহর পবিত্র কালামকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে অসম্মানিত করেছে, তারা দুনিয়া ও আখিরাতে নিজেদের জন্য অপমান ও অপদস্থতাকে নিশ্চিত করে নিয়েছে। আমরা এখানে মুসলিম উম্মাহর সামনে কিছু বিষয় সংক্ষেপে তুলে ধরতে চাই -

১. 'নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার' নামক বিশ্বব্যবস্থার অধীনে 'বাক স্বাধীনতা' নামে নতুন এক ধারণার উৎপত্তি ঘটেছে। এটা স্বাধীনতার নামে একটা মিথ্যা ও ভ্রান্ত আকীদা ছাড়া আর কিছুই নয়। এর ব্যাবহার কোথায় এবং কাদের বিরুদ্ধে করা হচ্ছে পৃথিবীবাসী সেটা দেখছে। একমাত্র সত্য ও ঐশী ধর্ম ইসলামের অবমাননার জন্যই এই ধারণার উৎপত্তি ও বিস্তার ঘটানো হয়েছে। বাকস্বাধীনতার নামে তারা ইসলামের বিরুদ্ধে মৌখিক যুদ্ধে সামিল হয়েছে।

২. এই জঘন্য ঘটনা সুইডেনের মুখোশ খুলে দিয়েছে। একইসাথে ইউরোপের সকল দেশ ও আমেরিকার চেহারা প্রকাশিত হয়েছে। এরা নিজেদের ক্রুসেডার মনোবৃত্তিকে 'ধর্মনিরপেক্ষতা' নামক মুখোশ দিয়ে আড়াল করে রাখতে চায়। এই ঘটনার দ্বারা তাদের সকলের আসল চেহারা প্রকাশিত হয়েছে।

ইসলাম ও ক্রুসেডারদের মধ্যকার দ্বন্দ্বের ইতিহাস অনেক পুরনো। আজও বাকস্বাধীনতার মোড়কে ক্রুসেডাররা পুরনো সেই ধর্মযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। পূর্বে রোমের পোপরা এই ক্রুসেডের দিকেই মানুষকে আহ্বান করতো।

৩. পবিত্র কুরআন পুড়ানোর এই জঘন্য ঘটনা ঈমান ও কুফরের মধ্যে চলমান যুদ্ধের বহিঃপ্রকাশ। এই যুদ্ধের এক পক্ষে আছেন, তাওহীদ, রিসালাত ও আখিরাত বিশ্বাস স্থাপনকারীরা। বিপরীত পক্ষে অনেকেই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আল্লাহ বাদে দুনিয়ার বাকি সবকিছুকে যারা ইলাহ বানাতে প্রস্তুত, বাতিল ধর্মের অনুসারী, বিভিন্ন দর্শন ও মতবাদের অনুসারী এবং নফসকে যারা ইলাহ বানিয়ে নিয়েছে - এরা সকলেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে লড়ছে। যুদ্ধের ময়দানে কখনো আমেরিকার টেরি জোন্স বা ইরাকের নাস্তিক সালওয়ান মমিকাদের দেখা যায়। প্রকৃতপক্ষে এই যুদ্ধ ইসলামের বিরুদ্ধে পুরো বিশ্বের পৌত্তলিকদের ঐক্যবদ্ধ যুদ্ধ।

এই ধরনের জঘন্য ও অভিশাপের উপযুক্ত কাজ যারা করবে, তাদের জন্য ইসলামের শাস্তি নির্ধারিত আছে। এই নাস্তিক ও অবিশ্বাসীদের ঘাড় থেকে মাথা আলাদা করে দিতে হবে। এটাই ইসলামের নির্দেশ। যারা সরাসরি আল্লাহর নিদর্শনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামবে, তাদের জন্য এটাই ইসলামের নির্ধারণ করে দেয়া শাস্তি।

যে সকল সরকার ও আন্তর্জাতিক সংগঠন এ ধরনের কাজকে সমর্থন ও সহযোগিতা করবে, তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ ও কিতাল করা আবশ্যক। ধর্মনিরপেক্ষ ও ক্রুসেডার শত্রুরাই মূলত এধরনের জঘন্য কাজ নিজেরা করে এবং অন্য যারা করে তাদের সমর্থন ও সহযোগিতা প্রদান করে। এই ধর্মনিরপেক্ষ ও ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধেও জিহাদ ও কিতাল করা আবশ্যক। যারা এদের বিরুদ্ধে জিহাদ ও কিতাল করতে সক্ষম নন, তারা অন্যদের এই কাজ করার আহ্বান জানাবেন। আর যারা অন্যদের আহ্বানের কাজও করতে পারবেন না, তারা যেন জিহাদ ও কিতালের বিশ্বাস অন্তরে লালন করেন। এই জঘন্য অপরাধীদের প্রতিহত করার একমাত্র উপায় - আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ ও কিতাল করা এবং প্রকাশ্য অপরাধীদের ঘাড় থেকে মাথা আলাদা করে দেয়া। এই বিষয়গুলোতে আপনাদের যেন কোন সংশয় না থাকে।

এই জঘন্য অপরাধীদের বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে দুয়া করুন। আল্লাহর পথের মুজাহিদ ও ফিদায়ী সৈনিকদের জন্য দুয়া করুন। আল্লাহ যেন শত্রুদের বিরুদ্ধে তাদের সহায়তা করেন - এই দুয়া জারি রাখুন। এধরনের জঘন্য কাজের বিরুদ্ধে নিন্দা জানানোর এটাই উৎকৃষ্ট উপায়।

যারা নিজেদের সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে আল্লাহর কালাম, পবিত্র কুরআনের সম্মান রক্ষা করেন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদেরকেও তাদের দলে কবুল করে নিন, আমীন।

اللهم وفقنا لما تحب وترضى من القول والفعل والنية والهدى إنك على كل شيء قدير وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين وصلى الله تعالى على نبينا الأمين!

হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে আপনার পছন্দ ও সন্তুষ্ট মাফিক কথা, কাজ, নিয়ত ও সঠিক পথ অনুযায়ী চলার তাওফিক দান করুন। নিশ্চয়ই আপনি সকল বিষয়ে ক্ষমতাবান। ওয়া আখিরু দা’ওয়ানা আনিল হামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন। ওয়া সাল্লাল্লাহু তাআলা আলা নাবিয়্যিনাল আমীন। 

_____________________________