JustPaste.it

তালেবান পরিক্রমা

আমিরুল মুমিনীন মোল্লা ওমরের ঈমানদীপ্ত ভাষণঃ

ঈমানদার মুসলমানদের রিজিক কেউ রুদ্ধ করতে পারে না

            তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর তথাকথিত মানবাধিকার লংঘনের ধুয়া তুলে পাশ্চাত্য হৈচৈ করে বেড়াচ্ছে। কোন কোন দেশ আফগানিস্তানে তথাকথিত মানবাধিকার লংঘন বন্ধ না করলে অর্থনৈতিক অবরোধের হুমকিও প্রদান করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমিরুল মুমিনীন মোল্লা ওমর তার দফতর থেকে এক বিবৃতি প্রদান করে এ হুমকির প্রতি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, “ঈমানদার মুসলমানদের রিজিক বন্ধ করার কোন ক্ষমতা মানুষের নেই, যদি না তা আল্লাহর পক্ষ থেকে বন্ধ করা হয়। তিনি দৃপ্ত কণ্ঠে আরও বলেন, আল্লাহ মুসা (আঃ) এর উম্মতদের ‘মান্না সালওয়া’র মাধ্যমে রিজিক প্রদান করেছিলেন। আমরা তো উম্মতে মুহাম্মদী, শ্রেষ্ঠ নবীর উম্মত। আল্লাহ ইচ্ছা করলে মান্না সালওয়ার চেয়েও আমাদের উত্তম রিজিক প্রদান করতে পারেন। সুতরাং রিজিকের জন্য আমাদের আল্লাহদ্রোহীদের হুমকিতে ভয় পাবার কোন কারণ নেই, আল্লাহর সন্তুষ্টিই আমাদের জন্য যথেষ্ট।”

 

তথাকথিত মানবাধিকারকে আমরা ধূলায় মেশাতেই থাকবো

-মোল্লা মুহাম্মদ হাসান

            আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে যে, কাবুল সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও তালেবানের সর্বোচ্চ পরিষদের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক মোল্লা মুহাম্মদ হাসান একটি ইউরোপিয়ান প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলাপ কালে বলেছেন, সারা বিশ্বে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয়েছে যে, তালেবানরা মানবাধিকার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে। এ অপপ্রচারে ইউরোপের ভূমিকা সবচেয়ে বেশী। আমি আপনাদের কাছে জানতে চাই যে, আপনাদের ভাষায় মানবাধিকার কাকে বলে? মানবাধিকার অর্থ যদি এই হয় যে, মানুষের জান মাল ও ইজ্জত সংরক্ষণ, সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং সব রকম অনাচার দূর করা, তা হলে এ কাজটি তো তালেবানরাই করছে। তালিবানের পক্ষের বিপক্ষে প্রচার মাধ্যম সমূহ তো আছে-ই আপনাদের এই প্রতিনিধি দলকেও একথা নির্দ্বিধায় স্বীকার করতে হবে যে তালেবানের শাসনাধীন অঞ্চল সমূহে শান্তি ও নিরাপত্তার যে চিত্র বিরাজ করছে, বর্তমান বিশ্বে তার কোনো নজীর নেই। সর্বত্র ন্যায়-নীতির জয়জয়কার। দেশ পূনর্গঠনের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। তা সত্ত্বেও কেন এই অপপ্রচার?

             মোল্লা হাসান আরো বলেন, আমরা ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক ভাবে ইউরোপের এই ভিত্তিহীন অপপ্রচারের কারণ পর্যালোচনা করে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, হয়তো বা পশ্চিমাদের কাছে মানবাধিকারের অর্থ-ই ভিন্ন। তারা হয়তো যৌন বিপথগামীতা, বে-পর্দায় চলাফেরা করা ও বেহায়াপনাকেই মানবাধিকার মনে করে থাকবে। ইচ্ছে হলে কোনো কূলবধু নারীর সম্ভ্রম লুটে নেওয়া, অবাধে চুরি, ডাকাতি খুন ও লুটতরাজ ইত্যাদি করে বেড়ানোর অধিকার-ই বোধ হয় তাদের কাছে মানবাধিকার।

             মোল্লা হাসান ইউরোপিয়ান প্রতিনিধি দলকে আরো বলেছেন, এটাই যদি আপনাদের কাছে মানবাধিকারের ব্যাখ্যা হয়ে থাকে, তা হলে আমাদের পরিস্কার কথা, এ ধরনের মানবাধিকারকে আমরা ধূলোয় মেশাতেই থাকবো। পরবর্তীতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোল্লা হাসান জানান যে, আমার এ কথার পর ইউরোপিয়ান প্রতিনিধি দলটি সম্পূর্ণ নিরুত্তর হয়ে দেশে ফিরে যায়।

            মোল্লা হাসান অত্যন্ত দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, আফগানিস্তানে এভাবে পুরোদমে ইসলাম প্রতিষ্ঠার কাজ অব্যাহত থাকবে। এতদ সংক্রান্ত কোনো গুজব ও প্রোপাগান্ডায় কান দেওয়া যাবে না। গুজব অপপ্রচারে ইসলামের অগ্রযাত্রা ঠেকানো যায় না।

 

লাগমান কাবুলে রজমের শাস্তি বাস্তবায়নঃ

জন সম্মুখে ব্যভিচারের অপরাধীদের

পাথর ছুড়ে হত্যার ঐতিহাসিক রায়

           জালালাবাদের গভর্ণর মৌলভী আব্দুল কবির এবং তালেবান প্রাদেশিক তথ্য সচিব সাইয়্যেদ মোহাম্মাদ হাক্কানীর সূত্রে জানা গেছে, পূর্বাঞ্চলীয় লাগমান ও ভারদাক প্রদেশের দুটি পৃথক ঘটনায় একজন মহিলা ও একজন পুরুষের ব্যভিচার সংঘটনের অপরাধে হুদুদ-ই-রজমের শাস্তি দেয়া হয়েছে।

            লাগমান প্রদেশে জামিলা নামক একজন বিবাহিতা মহিলা আব্দুল্লাহ নামক এক কুচক্রী দলের দলনায়কের সাথে ব্যভিচারের সময় হাতে নাতে ধরা পড়ে। এতে মহিলার স্বামী কোন বিচারের আগেই আব্দুল্লাহকে হত্যা করে ফেলে। ইসলামী আদালত এ হত্যাকান্ডের জন্য জামিলার স্বামীকে ১২ বছরের কারাদন্ড প্রদান করে। ইসলামী আদালতের কাজী ব্যভিচারের জন্য আটককৃত মহিলাকে বিভিন্ন সময়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মহিলা (জামিলা) প্রত্যেক বারই তার অপরাধ স্বীকার করে। ইসলামী বিধান অনুযায়ী, ব্যভিচারী মহিলা বিবাহিত হওয়ায় কাজী এ মহিলাকে পাথর মেরে মৃত্যুদন্ডের ঐতিহাসিক দণ্ড প্রদান করেন। লাগমান প্রদেশের গভর্ণর কাউন্সিল আমিরুল মুমিনীনের কাছে জন সম্মুখে এ দণ্ডাদেশ বাস্তবায়ন করার অনুরোধ জানায়, যাতে জনগণ এ অপরাধ সম্পর্কে সতর্ক হয়ে যায়। আমিরুল মুমিনীন এ অনুরোধে সাড়া দিলে ২৮ মার্চ হাজার হাজার জনগণের উপস্থিতিতে মহিলার দণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়।

             দণ্ড কার্যকরের পর প্রাদেশিক গভর্ণর এক বক্তৃতায় উপস্থিত জনগণকে সতর্ক করে বলেন, কেউ যদি আল্লাহর আইন লংঘন বা আল্লাহর আইনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার চেষ্টা করে তাকেও ইহকাল ও পরকালে একই পরিণতি বরণ করতে হবে।

           কাবুল থেকে প্রাপ্ত আর এক সূত্রে জানা গেছে যে, অনুরূপ এক ব্যাভিচারের ঘটনায় একজন বিবাহিত পুরুষকে হুদুদ-ই রজমের শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। তবে বিস্তারিত জানা যায়নি। ব্যভিচারের এ শাস্তি প্রদানের পর রেডিও শরিয়ত এক মন্তব্যে বলেছে, এ রজমের ঘটনা লাখো মহিলার গর্বের ধন সতীত্ব রক্ষা করতে সমর্থ হবে। এজন্য মুসলিম বিশ্ব তালিবানদের অভিনন্দন জানাতে পারে, বিশেষ করে যারা রজম ও অন্যান্য ইসলামী বিধানকে ইসলাম বিরোধী মনে করতে অভ্যস্ত।

 

পানসিরের জনগণের জিজ্ঞাসা

এরা কোন ধরনের আমেরিকান, যারা তাহাজ্জুদ পড়ে এবং

নামাজ ইসলামী আদর্শের প্রতি অবিচল একনিষ্ঠ?

            এরা কোন ধরনের আমেরিকান এজেন্ট ও আইএসআইয়ের সদস্য যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ে, কুরআন তেলাওয়াত ও আল্লাহর জিকিরে অধিকাংশ সময় ব্যয় করেন? তালিবান বন্দীদের সাথে কিছু সময় কাটানোর পর পানসিরের জনগণ বিস্ময় বিমুগ্ধ চিত্তে এ প্রশ্ন রাখেন তাদের নেতৃবৃন্দের নিকট।

            তালেবানদের সাথে মাসুদ বাহিনীর যুদ্ধের সময় ৫ জন তালেবান সৈন্য বন্দী হন এবং তাদের পানসিরের জেলে বন্দী করে রাখা হয়। আহমদ শাহ মাসুদের অব্যাহত প্রচারণার কারণে পানসিরের লোকজন সকল তালেবানকে আমেরিকার এজেন্ট ও পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর সদস্য বলে মনে করতো। তাই প্রতিদিন জেলখানায় তারা আমেরিকান এজেন্টদের একনজর দেখার জন্য ভীড় জমাত। কিন্তু তালেবানদের সব সময় আল্লাহর জিকির, তাহাজ্জুদ ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ে একনিষ্ঠ দেখে বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে যায় পানসিরবাসী। তারা তাদের ভুল উপলব্ধি করে তালেবান বন্দীদের জেল থেকে মুক্তি দেয় এবং তালেবান কর্তৃপক্ষের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তালেবানদের সম্পর্কিত মিথ্যা ধারণা দূর হয়ে গেলে পানসিরবাসী পক্ষ ত্যাগ করে তালিবানদের সাথে যোগ দেয়, যার ফলে আহমদ শাহ মাসুদ পানসিরের একাংশ থেকে বিতাড়িত হন।

 

পশ্চিম আফগানিস্তানের প্রাদেশিক রাজধানী হেরাতে

 আমর বিল মারূফ মন্ত্রণালয়ের কর্মতৎপরতা

শরীয়াত পরিপন্থী চুল রাখার দায়ে ১৫০ ব্যক্তি গ্রেফতার ঘরে ঘরে তল্লাশী চালিয়ে বিপুল সংখ্যক বাদ্যযন্ত্র টেলিভিশন বাজেয়াপ্ত

                 পশ্চিম আফগানিস্তানের প্রাদেশিক রাজধানী হেরাত থেকে বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে, আমর বিল মারূফ মন্ত্রণালয় আদেশ জারী করেছে কোনো দোকানী যেন বে-পর্দা মহিলাদের সাথে বেচাকেনা ও লেনদেন না করে। দাড়ির ব্যাপারে আগেই কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছিল। গান বাজনা ও আপত্তিকর বিনোদনসহ সর্ব প্রকার শরীয়াত বিরোধী কার্যকলাপের উপর পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। শরীয়াত পরিপন্থী উপায়ে চুল রাখাও নিষিদ্ধ। মন্ত্রণালয়ের কর্মীরা সরকারী গাড়ীতে করে মাইকে জনসাধারণকে এসব বিষয়ে অবহিত করছে বলে খবরে জানা গেছে। শরীয়াত পরিপন্থী চুল রাখার অপরাধে ১৫০ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার খবর পাওয়া গেছে।

            তালেবানদের মতে বিজাতীয়দের মত পোষাক ব্যবহার করা ও চুল রাখা ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এ ব্যাপারে কঠোর শাস্তির হুমকি দেওয়া হয়েছে। হাদীসে আছে, যে লোক যে জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করবে, সে ব্যক্তি সে জাতির লোক বলেই গণ্য হবে। এ কারণে তালেবানরা চুল রাখার ব্যাপারেও বিজাতির অনুসরণ নিষিদ্ধ করেছে। আমর বিল মারূফ মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক তৎপরতা সম্পর্কে জানা গেছে যে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় গোপন সূত্রে প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে ঘরে লুকিয়ে রাখা বিপুল সংখ্যক বাদ্যযন্ত্র, টেলিভিশন এবং ভিসিআরসহ বিভিন্ন নাজায়েয সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। উদ্ধারকৃত অবৈধ সরঞ্জামের স্তুপ স্বচক্ষে দেখে এক সাংবাদিক মন্তব্য করেছেন, এতে সুস্পষ্ট প্রতীয়মান হচ্ছে তালেবানদের গোয়েন্দা ব্যবস্থা অত্যন্ত শক্তিশালী ও সুসংহত।

 

উসামা বিন লাদেন সন্ত্রাসী নন,

আমেরিকার প্রচারণা মিথ্যা

মোল্লা মুত্তাকী

             আফগানিস্তানের তালেবান সরকার আরব দেশগুলোকে উসামা বিন লাদেনের বিরুদ্ধে আমেরিকার মিথ্যা প্রচারণা সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছে। আমেরিকা লাদেনকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করে সৌদি কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আফগানিস্তানের তথ্যমন্ত্রী এবং শূরার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য মোল্লা আমির মুত্তাকী দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এক বিবৃতিতে বলেন, আমেরিকার এ প্রচারণার কোন ভিত্তি নেই। লাদেন একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুজাহিদ ব্যক্তিত্ব।

             তিনি আরও বলেন, মার্কিনীদের এ প্রচারণার মূল উদ্দেশ্য হলো আরব দেশগুলোকে ভীত সন্ত্রস্ত করে আরব বিশ্বে মার্কিন সামরিক ঘাটি প্রতিষ্ঠা করার অপপ্রয়াস।

              তিনি আরব নেতৃবৃন্দকে এ সম্পর্কে সচেতন হবার আহ্বান জানান। একই সাথে তিনি অঙ্গীকারও করেন যে, আফগানিস্তান সরকার কোন ব্যক্তিকে অন্য কোন দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কাজে আফগান ভূমি ব্যবহারে অনুমতি দেবে না।

 

আফগান ইসলামী সরকারের নতুন ফরমানঃ

আফগানিস্তানে কোন ইংরেজী শব্দের স্থান নেই

আফগান ইসলামী সরকার এক নতুন ফরমান জারি করেছে। আফগান মজলিসে শূরার উচ্চ পদস্থ ব্যক্তি মোল্লা নুরুদ্দীন আফগান সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করেছেন যে, আফগানিস্তানের সকল প্রদেশ থেকে ইংরেজী ভাষার শব্দ এবং নাম সমূলে উৎখাত করা হবে। এসব শব্দের স্থানে আরবী, ফারসী এবং পশতু শব্দ প্রচলন করা হবে। আফগান ইসলামী সরকারের আরেক জন মুখপাত্র মৌলভী হামিদুল্লাহ বলেন, আফগানিস্তানে ইংরেজী শব্দের প্রয়োজন নেই। প্রায়ই ইংরেজী শব্দের কারণে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। সাধারণ জনগণকে নিয়ে পেরেশান পোহাতে হয়। তিনি বলেন, আমাদের কাছে কুরআন ও হাদীসের ভাষার পর পশতু ও ফারসী ভাষাও বিদ্যমান, এরপর ইংরেজি ভাষার কী প্রয়োজন আছে?

 

প্রতিবেশী দেশ ইরান, ভারত, রাশিয়া

 তাজিকিস্তানের প্রতি তালেবানদের হুশিয়ারীঃ

তালেবান বিদ্রোহীদেরকে আশ্রয় দেবেন না,

অন্যথায় কড়ায় গন্ডায় এর মাশুল গুনতে হবে

কান্দাহার প্রদেশের গভর্ণর মোল্লা মুহাম্মদ হাসান রাহমানী এক বক্তৃতায় বলেছেন, ইরান, তাজিকিস্তান, ভারত ও রাশিয়া তালেবান বিদ্রোহীদের সহযোগিতা দিয়ে আমাদের অভ্যন্তরীন ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছে। এই অন্যায় থেকে বিরত হওয়া উচিত। দেশ গঠনের কাজে অংশ গ্রহণ না করে যারা প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিতে চায় এবং ইসলামী সরকারের বিদ্রোহীদের সহযোগিতা দেয়, তারা দেশদ্রোহী। দেশদ্রোহীকে আশ্রয় দেয়া কোনো রাষ্ট্রের পক্ষে উচিত নয়। মোল্লা রাহমানী বলেন, ইসলামী জীবন ব্যবস্থার আলোকে আমরা সকল প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতে চাই, কারো সঙ্গে বিবাদে লিপ্ত হওয়া আমাদের কাম্য নয়। আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠাই আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। তবে এরপরও যদি কেউ আমাদের নিজস্ব ব্যাপারে অবাঞ্চিত হস্তক্ষেপ করতে চায়, তাহলে তাদেরকে কড়ায় গন্ডায় এর মাশুল গুনতে হবে।

 

তালেবানদের ইসলামী আইনের সফল প্রয়োগে

 বিবিসি প্রতিনিধি বিস্মিত

           আফগানিস্তানে তালেবানদের ইসলামের কঠিন আইনগুলোও সফল বাস্তবায়নে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিবিসির একজন প্রতিনিধি।

             বিবিসির পশতু প্রতিনিধি ও একটি ইংরেজী দৈনিকের সম্পাদক জনাব রহিমুল্লাহ তালেবান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সফর করে বিবিসিকে তার সফর অভিজ্ঞতা এ ভাবে বর্ণনা করেন, “আমি ছিলাম তালেবান নিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তানে একমাত্র দাড়িবিহীন লোক। আমি যেখানেই গিয়েছি সর্বত্র শান্ত পরিস্থিতি অবলোকন করেছি। তালেবান পুলিশ আমার দাড়ি না থাকার কারণে বিভিন্ন সময়ে আমাকে থামিয়েছে এবং একই কারণে আরও বহু বিড়ম্বনার সম্মুখীন হয়েছি। তালেবানরা তাদের কথা রেখেছে এবং তাদের ঘোষণা অনুযায়ী ইসলামের কঠিনতম বিধি বিধানও বাস্তবায়ন করেছে। তারা ইসলামী বিধান বাস্তবায়নের পথে অন্তরায়গুলো এত সাফল্যের সাথে দূর করেছে যে, আমি একমাত্র নিজেকে তালিবান এলাকায় দাড়িবিহীন অবস্থায় দেখেছি এবং তালিবানদের সাথে অধিকাংশ সাক্ষাৎকারেই এ জন্যে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি।”

               বিবিসির এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিনিধি বলেন যে, আমি দাড়ি না রাখার জন্য তালেবানদের দ্বারা সর্তকিত হয়েছি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, তালেবানরা তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছে। আপনি এখন নিরাপদে দিনের মত রাত্রেও যে কোন স্থানে একাকী সফর করতে পারেন। জনগণ তালেবানদের ওপর সন্তুষ্ট।

 

আল্লাহর আইন কার্যকর করলে আল্লাহর মদদ

 পাওয়া যায়

-আমীরুল মুমিনীন

            আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের প্রধান আমিরুল মুমিনীন মোল্লা মোহাম্মদ ওমর সম্প্রতি এক জনসভায় বক্তৃতায় বলেন যে, তালেবানরা আল্লাহর আইন কঠোরভাবে অনুসরণ ও কার্যকর করার ফলেই আল্লাহর নুসরতে ধন্য হয়েছে এবং যুদ্ধক্ষেত্রে একের পর এক বিজয় লাভ করেছে। তিনি বলেন যে, তিনি দৃঢ় বিশ্বাসী, তালেবানরা সঠিক পথেই রয়েছে এবং এ জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর সাহায্য লাভ করছে। তিনি আরো বলেন, তিনি দৃঢ় আত্মবিশ্বাসী যে, নিকট ভবিষ্যতে কোন বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই তালিবানরা দোস্তামের মাজারই শরিফ দখল করে নেবে এবং এই শহীদের পূন্যভূমিতে সকল ফাসেকের ধ্বংস বা ক্ষমতাচ্যুত না হওয়া পর্যন্ত জিহাদ চলতে থাকবে। সমগ্র দেশে শান্তি ও পূর্ণ ইসলামী আইন প্রতিষ্ঠা করা হবে। ফাসেকরা তাদের দুষ্কর্মের জন্য অবশ্যই শাস্তিভোগ করবে। তিনি আরও বলেন যে, তালেবানরা অন্য কোন দেশের অভ্যন্তরীন ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে না এবং আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীন ব্যপারে কোন হস্তক্ষেপকেও সহ্য করবে না।

 

তালেবান আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন চায়

            জালালাবাদের গণস্বাস্থ্য বিভাগের কেন্দ্রীয় হাসপাতালের প্রধান মোল্লা লাল সেলীম বলেছেন, তালেবান খাঁটি মুসলমান, তারা আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন চায়। ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধাচারণ মূলত দেশে ইসলামী হুকুমত বাস্তবায়নের বিরুদ্ধাচারণ। প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরজ, শান্তির পতাকাবাহী ইসলামী আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করা। তিনি আরো বলেন যে, তালেবান কথায় কাজে এক, যা বলে তাই তারা করে, তালেবানের সকল কাজের উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জনগণের সেবা। তিনি তালেবান বিরোধী সকল দলকে লক্ষ্য করে বলেন, তারা যেন তালেবানের সাথে আর যুদ্ধে লিপ্ত না হয়, ইসলামী হুকুমতের সামনে, তালিবানের সামনে অবনত হয়।

 

কাবুলে সাহায্য সংস্থাগুলো তাদের অফিস

 বন্ধ করে দিয়েছে

            এক খবরে জানা গেছে যে, কাবুলে সাহায্য সংস্থাগুলো তাদের অফিস সমূহ বন্ধ করে দিয়েছে। তারা তালেবানদের ইসলামী করণের কারণে দারুণ ক্ষুব্ধ। ঐ অফিসগুলোতে নারী পুরুষ এক সাথে কাজ করতো, ইসলামী আইন যার অনুমতি দেয়না।

             এদিকে তালেবানরা এর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমারা কোন সৃষ্টির সন্তুষ্টি কামনায় আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করতে পারিনা, শরীয়ত যার অনুমতি দেয়নি আমরা কি ভাবে তার অনুমতি দিতে পারি। এ আইন আমাদের নয়, আল্লাহর আইন। অস্থায়ী দুনিয়ার মোহে তা পরিবর্তন করা যায় না। গোটা দুনিয়া আমাদের শত্রু হয়ে গেলেও কোন পরোয়া নেই, আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট।

 

দুজন ফরাসীকে

আফগানিস্তান থেকে বহিষ্কার

            আফগান রাজধানী কাবুল থেকে পাওয়া এক বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে যে, ইসলাম পরিপন্থী কাজে জড়িত হওয়ার অপরাধে একমাস পূর্বে গ্রেফতারকৃত দুই ফরাসী নাগরিককে আফগান সুপ্রিম কোর্ট বহিস্কারের নির্দেশ দিয়েছে। তালেবান মজলিসে শূরার উচ্চ পদস্থ সদস্য এবং রাজধানী কাবুলের সহকারী প্রশাসক মোল্লা মুহাম্মদ হাসান সুপ্রিম কোর্টের এ ফয়সালার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, একমাস সশ্রম কারাদন্ড ও শরীরী শাস্তির পর আদালত এ ফায়সালা করেছে। কাবুলের গভর্ণর আব্দুল মান্নান নিয়াজী বলেছেন, দুজন ফরাসীকে চিরতরে আফগানিস্তান থেকে বহিস্কারের ফয়সালা করা হয়েছে। তিনি বলেছেন যে, শহীদদের স্মৃতি বিজড়িত এই আফগানের পবিত্র ভূমিতে তারা আর দ্বিতীয় বার পা ফেলতে পারবেনা। তিনি বিদেশীদের প্রতি হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, আইনের পরিপন্থী কেউ কোন কাজ করলে তাকে অবশ্যই ইসলামী দন্ডবিধি, সশ্রম কারাদন্ড, এমন কি বহিস্কারের নির্দেশেরও সম্মুখীন হতে হবে।

 

কাবুলে আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়

প্রতিষ্ঠার চিন্তা-ভাবনা চলছে

            আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে আধুনিক পদ্ধতির আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় খোলার চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে। এতে কুরআন হাদীস ছাড়া সর্বপ্রকার আধুনিক শিক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। তালেবানের সর্বোচ্চ পরিষদের সদস্য ও তথ্যমন্ত্রী মোল্লা আমীরখান বলেন, ইসলামী জীবন ব্যবস্থা বাস্তবায়নের বরকতে আফগানিস্তানে অর্জিত শান্তি ও ন্যায় নীতির যে চিত্র বিরাজ করছে, তাতে আশা করা যায় যে, অদূর ভবিষ্যতে দেশের সর্বত্র আমরা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি লাভ করতে পারব। এ দৃষ্টিকোন থেকে আমরা আশা করছি যে, পরিকল্পনাধীন বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিঃরাষ্ট্রের ছাত্রদেরকে আমরা ফ্রি শিক্ষা প্রদান করতে পারবো।

            তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, পরিকল্পনাধীন বিশ্ববিদ্যালয়টি বাস্তবায়িত হতে একটু সময় লেগে যেতে পারে। তবে নিশ্চয়তার সাথে আমরা একথা বলতে পারি যে, আমাদের এই পরিকল্পনা দ্বারা গোটা মুসলিম বিশ্ব তাদের হারানো ঐতিহ্য ও সভ্যতা সংস্কৃতি ফিরে পাবে এবং বিজাতির নাগপাশ থেকে মুক্তি লাভ করবে।

            মোল্লা আমীর খান বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা কারিগরিবিদ্যাসহ অন্যান্য আধুনিক শিক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা নেব।

 

পর নির্ভর নয় নিজেদের সমস্যার সমাধান

নিজেরাই খুঁজে বের করতে হবে

-মোল্লা মুহাম্মদ রব্বানী

             ইসলামী আফগানিস্তানের অভিভাবক কাউন্সিলের অন্যতম সদস্য মোল্লা রাব্বানী বলেছেন, তালেবানের সামরিক শক্তি আল্লাহর মেহেরবানীতে অত্যন্ত মজবুত ও শক্তিশালী। অদূর ভবিষ্যতে আমরা পূর্ণ বিজয়ের অপেক্ষায় আছি। আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীন ব্যাপারে বাইরের হস্তক্ষেপ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে মোল্লা রাব্বানী বলেন, রাশিয়া, ভারত, ইরান ও মধ্য এশিয়ার কম্যুনিষ্ট সরকারগুলো তালিবান বিরোধীদের পৃষ্ঠপোষকতা, সামরিক সহযোগিতা করে আসছে। একদিন এর মাশুল তাদের দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, আফগান সমস্যার ফলপ্রসূ সমাধান আমাদের নিজেদের-ই করতে হবে। বাইরের হস্তক্ষেপে সমস্যা আরো বাড়বে বই কমবে না। অবশেষে তিনি অত্যন্ত দীপ্ত কণ্ঠে এ কথা জানিয়ে দেন যে, যে যা-ই বলুক তালেবান বিরোধীদের ইসলামী সরকারের হাতে আত্মসমর্পন করা ব্যতীত আফগান সমস্যার দ্বিতীয় কোনো সমাধান নেই।

 

আমাদের কেউ নছিহত করবেন না,

আমরা ইসলামী হুকুমত বাস্তবায়িত করেছি

            তালেবান বিমান বাহিনীর প্রধান মোল্লা আখতার মনসুর এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, বহির্বিশ্বের কেউ আমাদের নছিহত করবেন না, আমরা খালেস ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠিত করেছি। তিনি বলেন, এই ফিতনার যুগে তালেবানকে আল্লাহ তায়ালা তার দ্বীনকে বিশুদ্ধভাবে প্রতিষ্ঠিত করার তৌফিক দিয়ে একথা প্রমাণ করেছেন যে, ইসলাম ধর্ম-ই সকল ধর্মের ওপর বিজয়ী। ইসলামী হুকুমতের বাস্তবায়নের কারণেই দুনিয়ার সকল কুফুরী শক্তি আমাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। তারা সাদাসিধে মুসলমানদের মাধ্যমে ফিতনা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। আমাদের নছিহত করছে আমরা যেন কঠোরতা আরোপ না করি, কোমলতা অবলম্বন করি। কিন্তু আল্লাহর হুকুমের মোকাবেলায় আমরা কিভাবে মানুষের কথা শুনতে পারি। তিনি বলেন, কাবুলে সহশিক্ষা বন্ধ করে দেয়ার কারণে জাতিসংঘ হুমকি দিয়েছে যে, সকল সাহায্য বন্ধ করে দেবে, কিন্তু আমরা সে হুমকিকে কোন পরোয়াই করিনি। তারা এখন আবার সাহায্য প্রদান শুরু করেছে। তিনি বলেন, আসল বিষয় হলো দৃঢ়তা, তালেবান তাদের কাজে দৃঢ় প্রত্যয়ী, তাই গোটা দুনিয়া তাদের পায়ের তলায় এসে পড়ছে। কুফুরী শক্তি আজ নতশীর।

 

ঘুষ প্রদানের চেষ্টার অভিযোগে কারাবাস

            জালালাবাদ প্রদেশের নানগাহার শহরের সিকিউরিটি ফোর্স চার ব্যক্তিকে ঘুষ প্রদানের অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে। জানা যায় যে, চারজন ব্যবসায়ী ট্রাকে অবৈধ মালামাল বোঝাই করে জালালাবাদ থেকে তুরখম আসছিলো। ইতিমধ্যে গোপন সূত্রে সংবাদ পেয়ে জালালাবাদে তালেবান সিকিউরিটি ফোর্স তাদের পথ রোধ করে ট্রাকে তল্লাশি চালায়। ধরা পরার ভয়ে তারা মোহাম্মদ জামান নামক এক তালেবানকে তিন লাখ আফগানী দিতে চেষ্টা করে। কিন্তু তালেবানরা তাকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হাতে সোপর্দ করে।

 

দোস্তামের সামরিক বিপর্যয়ঃ

তালেবানরা দুটি প্রদেশ দখল করে নিয়েছে

             আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে তালেবানদের নতুন করে বিজয় অভিযান শুরু হয়েছে। সর্বশেষ অভিযানে তালেবানরা দোস্তামের বাহিনীর নিকট থেকে দু'টি প্রদেশ দখল করে নিয়েছে এবং পাঁচ হাজারের মতো উজবেক সৈন্যকে গ্রেফতার করে নিরস্ত্র করেছে। তালেবান তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী আমির খান মুত্তাকী ২১ শে মে সাংবাদিকদের জানান যে, দোস্তাম নিয়ন্ত্রিত ফারিয়াব ও জাওজিয়ান প্রদেশ দু’টি তালেবানদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। উক্ত প্রদেশ দুটির দোস্তামের সকল সৈন্যকে নিরস্ত্র করা হয়েছে।

              এর আগে আব্দুর রশিদ দোস্তামের প্রধান সহযোগী ও অন্যতম সেনা কমান্ডার আব্দুল মালিক পাহলোয়ান পক্ষ ত্যাগ করে তালেবান বাহিনীতে যোগ দেন এবং পূর্ণ আনুগত্য স্বীকার করেন। তিনি স্বপক্ষ ত্যাগের পাশাপাশি ফারিয়াব প্রদেশের দোস্তামের অনুগত সকল সৈন্যকে গ্রেফতার করেন। তার স্বপক্ষ ত্যাগের পর তালেবান বাহিনী ফারিয়াবে ঢুকে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে এবং রাজধানী মায়মানায় তালেবান পতাকা উড্ডয়ন করে।

              আব্দুল মালিকের এ স্বপক্ষ ত্যাগের ফলে মাসুদ-দোস্তাম জোট বড় ধরনের এক সংকটে নিপতিত হয়েছে এবং উত্তরাঞ্চলে তালেবান বিরোধী জোটের প্রতিরোধ ব্যুহ ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে। তালেবানরা গুরুত্বপূর্ণ এ প্রদেশ দু’টিতে নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে এখন দোস্তামের শক্ত ঘাঁটি মাজার-ই শরীফের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে এখানেই দোস্তামের ভাগ্য নির্ধারিত হবে। মাজার-ই শরিফের পতন হলে দোস্তামের পাশাপাশি আহমদ শাহ মাসুদের ভাগ্যও প্রায় নির্ধারিত হয়ে যাবে।

              অপরদিকে তালেবান ইসলামী বাহিনীর এ অগ্রাভিযানের মুখে বিরোধী জোটের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বের খবর পাওয়া গেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমিরুল মুমিনীন মোল্লা ওমর সকল বিরোধী নেতার প্রতি আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বিরোধী নেতাদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, যারা স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করবে তাদের কোন ক্ষতি করা হবে না এবং তাদের জানমালের হেফাজত করা হবে। পক্ষান্তরে, তালেবান বাহিনী যাদের আত্মসমর্পনে বাধ্য করবে তাদের ইসলামী আদালতে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।

 

মোল্লা ওমরের দিনকাল

             তালেবান ইসলামী সরকার প্রধান মোল্লা ওমর এখনও কান্দাহারে অবস্থান করছেন। তালেবানরা কাবুলে সরকার গঠনের পর এখনও তিনি কাবুলে জাননি, কান্দাহারে থেকেই তার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তিনি তার হাতে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও রাখেননি, শুধুমাত্র শূরা ও মন্ত্রী পরিষদের সদস্যদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সরকার পরিচালনায় ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন। কান্দাহারে থেকে তিনি শহীদ মুজাহিদ পরিবারের খোঁজ-খবর নেয়া, শহীদদের দাফন, আহতদের চিকিৎসা, এতিমদের শিক্ষা ও লালন-পালন, অসহায় গরীবদের খোঁজ নেয়া এবং নতুন নতুন হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা প্রভৃতি তদারকির মাধ্যমে দিনাতিপাত করছেন। তাঁর ভাষায় এ সব কিছুই ইসলামী সরকারের প্রধান দায়িত্ব।

 

সর্বশেষ সংবাদ

              আফগানিস্তানের উত্তর অঞ্চলের যুদ্ধবাজ নেতা রশিদ দোস্তাম তালেবানদের সাড়াশী আক্রমণের মুখে পালিয়ে তুৱঙ্ক আশ্রয় নিয়েছেন। এর সাথে সাথে দোস্তাম নিয়ন্ত্রিত উত্তর আফগানিস্তান সম্পূর্ণরূপে তালেবানদের নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। আর এক খবরে জানা গেছে, দোস্তামের এ পতনের পর প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বোরহানুদ্দিন রব্বানী দেশ ছেড়ে ইরানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। এদিকে মাসুদ নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশের গুরুত্বপূর্ণ সালাং গিরিপথে নিরাপত্তায় নিয়োজিত মাসুদ বাহিনীর কমান্ডারও স্বপক্ষ ত্যাগ করে তালেবান বাহিনীতে যোগ দিয়েছে, ফলে মাসুদেৱ পতনও এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

যরবে মুমিনের সৌজন্যে

সংকলন অনুবাদঃ

মুহাম্মাদ মুহিউদ্দীন

নাসীম আরাফাত

ফারুক হোসাইন