JustPaste.it

সম্পাদকীয়

 

পেছনের জানালা কেটে তৈরী থাকো, ওরা আসছে!

=================================================

        বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন নতুন একটি সুর শোনা যাচ্ছে। নাস্তিক্যবাদী বামপন্থী থেকে শুরু করে ধর্ম নিরপেক্ষ দল হয়ে ধর্মীয় মূল্যবোধ রক্ষায় অঙ্গীকারাবদ্ধ জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী সমস্বরে এখন চিৎকার করছে ধর্মীয় রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে। ওদের ভাষায় বাংলাদেশে সন্ত্রাস ও ছাত্ররাজনীতির অঙ্গনে হানাহানির জন্য নাকি ধমীয় রাজনীতিই দায়ী। বলি, এরা কি সব পাগল হয়ে গেলাে?

 

        বাংলাদেশে নৈতিক চরিত্রের চরম অবক্ষয়, সীমাহীন দুর্নীতি, ক্ষুধা-দারিদ্র্য, কুশিক্ষা ও বেকারত্ব যদি কোন সমস্যা না হয়, তাহলেই কেবল এদেশে নতুন সমস্যার সন্ধান করা প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু স্বাধীনতার ২৩ বছরেও এদেশের ক্ষমতায় আগমন-নির্গমনকারী গোষ্ঠী এ দেশের মূল সমস্যাগুলাে চিহ্নিত করতে পারেনি। পারেনি কোন একটা সংকটও নিরসন করতে। গণমানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও কাজের কোন ব্যবস্থা কি স্বাধীন বাংলাদেশের কোন সরকার, কোন নীতি আদর্শ বা পদ্ধতির মাধ্যমে করতে পেরেছে?

 

        এর জবাব যদি নেতিবাচক হয়, তাহলে এ দেশের বিগত ও বর্তমান সরকারগুলাের এবং ছাগলের তৃতীয় বাচ্চা সদৃশ, বামপন্থী দলগুলাের কোনই অধিকার নেই ধর্মীয় রাজনীতি বা ইসলামী রাজনীতির বিরুদ্ধে টু শব্দটি উচ্চারণ করার। আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় রাসূলর নির্দেশিত জীবন বিধান ইসলাম একটি নির্জলা ধর্ম মাত্র নয়। এটি বিশ্বের একমাত্র ধর্ম যার সাথে অপর কোন ধর্মের তুলনাই করা উচিত হবে না। ইসলাম, একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা তথা Complete Code of Life ; এতে আত্মা, দেহ, মন-মস্তিষ্ক, চিন্তা ও তৎপরতার সকল দিক-ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও মানববিশ্ব সংক্রান্ত সকল বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা রয়েছে। রাজনীতি, দেশ, জাতি, সংসদ, সংবিধান ইত্যাদি ইসলামের আওতামুক্ত কোন ব্যাপার নয়। অতএব রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে ইসলামের অংশগ্রহণ রোধ করার প্রয়াসের অর্থই হলাে ইসলামের অঙ্গহানি।

 

        ইসলামের দেহের কোন একটি অংশকে কেটে বাদ দিয়ে একে অপূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়ার কোন অধিকার কোন মানুষকে দেয়া হয়নি। অন্ততঃ ইসলামের দেহের কোন একটি অংশকে কেটে বাদ দিয়ে একে অপূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়ার কোন অধিকার কোন মানুষকে দেয়া হয়নি। অন্ততঃ বাংলাদেশে এমনটি হতে দেয়া হবে না। আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে, শরীয়তের বিধি বিধান সম্পর্কে, ইসলামী অনুশাসনের প্রসঙ্গে কোনরূপ বৈরী উচ্চারণ বা বিদ্বেষী কথা এ দেশের সংসদে, রাজপথে বা কাঁচে ঘেরা প্রাসাদে বসে কেউ করলে তা সে সম্পূর্ণ নিজ দায়িত্বেই করবে। আল্লাহ্, রাসূল বা তাঁদের অনুগত প্রেমিকের দল এদের নিরাপত্তা বা মান ইজ্জতের কোন দায় দায়িত্ব বহন করবে না। দশ কোটি উম্মতে মোহাম্মদীর স্বাধীন ভূখণ্ডে ইসলামকে বন্ধ করে দেয়ার কান চক্রান্তই সফল হতে দেয়া হবে না। ইসলামী রাজনীতি বা এর একটি ছোট্ট সুন্নতকেও নিষিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না। ইসলাম, কুরআন, আল্লাহ, রাসূল ও সাহাবায়ে কেরামের প্রতি বিষােদগারকারীর জিহবা কেটে নিতে বা মুসলমানদের স্বাধীনতা, অস্তিত্ব ও ইসলামী আন্দোলনের প্রতি হুমকি স্বরূপ উত্থিত অংগুলি গুড়িয়ে দিতেও কুণ্ঠিত হবেনা এ দেশের ইসলামপ্রিয় তাওহীদী জনতা।

 

        নির্বাচিত জাতীয় সংসদ যদি ইসলাম বিরোধী কোন আইন পাস করতে আগ্রহী হয় তাহলে সংসদকেও জনতার মুখোমুখি হতে হবে। সরকার যদি কোন চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে এহেন আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে তাকেও রাজপথে মুখোমুখি হতে হবে রোষায়িত জনতার রুদ্র মিছিলের। বাংলাদেশের সবুজ-শ্যামল জমিনে আল্লাহর সৈনিকদের তাজা তপ্ত খুনে লাল জায়নামাজের মতো জমকালাে আলপনা অংকিত হবে কিন্তু ইসলামের অঙ্গচ্ছেদ মেনে নেয়া হবে না। মহানবী ﷺ -এর ইন্তেকালের পর প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) যখন যাকাতের বিধান নিষিদ্ধকারী তথাকথিত প্রগতিবাদী গোষ্ঠীর বিষদাঁত ভেঙ্গে দেয়ার জন্যে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন, তখন তিনি হৃদয়ের গভীর থেকে উচ্চারণ করেছিলেন ; “দ্বীনের অঙ্গহানি করা হবে আর আমি জীবিত থাকব?” সেই সিদ্দীকী উচ্চারণের রেশ ধরে আজ বাংলাদেশের মুসলমানদেরও বলতে হবে, “ইসলামের অঙ্গচ্ছেদ হবে আর আমরা দশকোটি জনতা বেঁচে থাকবো?” এটা কি কল্পনা করা যায়?

 

        আমরা সুস্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই। হে পচাত্যের দালালগোষ্ঠি! হে সাম্রাজ্যবাদ ও সম্প্রসারণবাদের পদলেহী গোলামের দল! হে ইহুদী-খৃস্টান ও নাস্তিক্যবাদের উচ্ছিষ্টভোগী বন্য বরাহের পাল! এ দেশে ইসলামী রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়েছে দেড়হাজার বছর আগে। আজ থেকে আটশ বছর আগে এ দেশে হয়েছে ইসলামী রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন। ১২০১ খৃস্টাব্দের এক শুভক্ষণে মাত্র সতেরজন বীর মুজাহিদ ইসলামী রাষ্ট্র, রাজনীতি ও জীবন ব্যবস্থার সওগাত নিয়ে বাংলার বুকে দ্বীনের বিজয় পতাকা উড্ডীন করে ছিলেন, আর কুফর, শিরক, অপসংস্কৃতি ও বেলেল্লাপনার পতাকাবাহী, ধর্মহীন শাসনের প্রতীক রূপে বাংলার শাসক লক্ষণ সেন ঘরের পেছনের জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়ে পালিয়ে গিয়েছিল। এর পর থেকে আর কোন শক্তিই এ দেশ থেকে ইসলামী রাজনীতি বা রাষ্ট্রব্যবস্থা উৎখাতের স্বপ্ন দেখে সুখ পায়নি। এক নিমিষে সমূলে উৎখাত হয়ে চির দিনের জন্য বিস্মৃতির গহবরে হারিয়ে গেছে। অতএব, ইসলামের কোন অংশকে কেটে বাদ দেয়ার বা এর নাম মুছে দেয়ার চেষ্টায় পা বাড়ানোর আগেই নিজের নাম পাতা ঝড়ে যাওয়ার খাতায় লিখিয়ে নেয়াই উত্তম। কেবল ইতিহাসের আস্তাকুড়েই নয় বরং জাহান্নামের অতল গহবরে আসন সংরক্ষণ করে নেয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

 

        ইদানীংকার হৈ হুলস্থূলটি মনে হয় কোন বিদেশী প্রভুর ইংগিত ও নগদ নারায়ণের বলে শুরু হয়েছে। তাওহীদী জনতার পয়সায় চলা সংসদের পবিত্র অঙ্গনে লক্ষণ সেন, কৃষ্ণ রায় চন্দ্রের প্রেতাত্মা এসে ভর করেছে তাদের কতিপয় বংশধরের ঘাড়ে। আমরা সুস্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, ইখতিয়ারুদ্দীন মুহাম্মদ ইবনে বখতিয়ার খিলজীর উত্তরপুরুষেরা এগিয়ে আসছে। বেশী নয়, অল্প সংখ্যায়ই তারা আসবে। মুজাহিদের বেশে। জীবন বাজি রেখে। শাহাদতের অপার নেশায় রঙিন চোখ নিয়ে। মাত্র সতেরজন নয় সতের শত বা সহস্রের সংখ্যায় এরা আসবে। অতএব, লক্ষণ সেনের প্রেতাত্মার বাহক, নিষ্প্রাণ দেহসম্পন্ন জীবিত লাশগুলাের প্রতি আমাদের করুণাপূর্ণ নিবেদন, ‘তোমরা সংসদ বা সুরক্ষিত প্রাসাদের পেছনের জানালা খোলা রেখেই কেবল ইসলামের গায়ে হাত দিও। যাদের বাড়ীর পেছনে দরজা বা জানালা নেই তারা চট জলদি করে জানালা কাটিয়ে নাও। কেননা, মুজাহিদরা জাগছে। বিন বখতিয়ারের ঘোড়ার পায়ের আওয়াজ কেবলই স্পষ্ট হয়ে উঠছে! ওরা আসছে!!’

 

*****