JustPaste.it

বাঙালি জাতি ও বাংলা ভাষার প্রকৃত ইতিহাস

-ফজলুল করিম যশোরী

==============================================================

          ভাষা মানবীয় স্বত্তার সহজাত বৈশিষ্ট্য। ভাষার কারণেই মানুষ অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় শ্রেষ্ঠ। এককথায় মুখ্যত ভাষার কারণে মানুষকে মানুষ বলা হয়।

          আর ভাষা হচ্ছে মানুষের পারস্পরিক মনের ভাব আদান প্রদানের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত মুখ নিঃসৃত শব্দসমৃহের প্রয়োগ পদ্ধতির নাম মাত্র। তাই যে জনগোষ্ঠীর মানুষ যে ধরনের শব্দ প্রয়োগের মাধ্যমে নিজেদের মনের ভাব আদান প্রদান করে থাকে সে জনগোষ্ঠীর নামেই সে ভাষা পরিচিত লাভ করে।

          সে দিকে লক্ষ্য করলে বাংলা ভাষাটাও বাঙালির জাতির শত সহস্র বছরের মুখ নিঃসৃত শব্দ সমূহের বিশেষ রূপ মাত্র।

          সুতরাং বাংলা ভাষার জন্ম ইতিহাস জানতে হলে আমাদেরকে প্রথমে জানতে হবে বাঙালি জাতির জন্ম ও বিকাশের সঠিক ইতিহাস।

          বস্তুতঃ বঙ্গ শব্দ থেকেই বাঙালি বা বাংলা ইত্যাদি শব্দ সমূহের উৎপত্তি ঘটে। অতি প্রাচীনকাল থেকেই এই বঙ্গ শব্দটি বঙ্গদেশে বা বাঙালি জাতি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, খ্রীষ্ট পূর্ব ৫ অথবা ৬ হাজার বছর আগে বঙ্গদেশ বলতে শিলং থেকে চাটগাঁও পর্যন্ত বিস্তীর্ণ ভূ-ভাগকে বুঝাতো। অর্থাৎ সরন্দ্বীপ (সিংহল) কনোজ ও কাশ্মীরের পূর্ব হিমালয়ের উত্তঙ্গ শৃঙ্গমালার দক্ষিণ,  শিলং,কামরু (কামরূপ) কুমিল্লা (ত্রিপুরা) এবং চাটগাঁও ও আরাকানের কতকাংশ সহ সমুদ্র পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল বাংলাদেশের সীমানা।

          ভূ-তাত্ত্বিক গবেষণায় জানা গেছে তখন এদেশে বর্তমানের ন্যয় নদ নদী ও খাল বিলের এত আধিক্য ছিল না। পরবর্তীতে সামুদ্রিক ভাঙ্গন ও ভাঙ্গন পরবর্তী উৎক্ষেপণ জনিত কারণে সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশের ভূমি ভাঙ্গা। তৎকালে বাংলাদেশের পশ্চিমে হিমালয়ের প্রাস্তবর্তি শিলং থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত সমভূমির ছাড়া সব টুকুই ছিল সমুদ্র এবং তা বঙ্গোপসাগর বলেই খ্যাত ছিল।

          বিখ্যাত চীনা পরিব্রাযক হই,ইন,চুয়াং, বাংলাদেশকে সমুদ্র উপকূলবর্তী দেশ বলে উল্লেখ করেছেন। হিন্দু ধর্মগ্রন্থ পুরানো উল্লেখ আছে আর্যাবর্তের পূর্ব সীমায় যবনদেশ অবস্থিত। এককালে কমলাঙ্ক-কামরাঙ্কা-কুমিল্লা ইত্যাদি জনপদ সমূহ সমুদ্রের অঙ্কশায়ী ছিল [রাজমালা পৃঃ৮৩-৮৮]

          যবন বলতে তারা সে আরব জনগোষ্ঠী বিশেষ করে বিদেশাগত মুসলিমের বুঝিয়ে থাকা তা বলা বাহুল্য।

          বিখ্যাত ঐতিহাসিক প্লিনি তার ফেরিপ্লার্স আরসি নামক গ্রন্থে লিখেছেন গঙ্গা নদীর শেষভাগ যে এলাকার মধ্য দিয়ে দক্ষিণে প্রবাহিত হয় সাগরে গিয়ে পড়েছে সে এলাকাই গংরিড়ীর বঙ্গরাজ্য।

          হাজার হাজার বছর পূর্বের গ্রীক পন্ডিত গোমাস্তিনিস লিখেছেন বহুজাতির বাসভূমি ভারতে গংবিড়ীরাই ছিল সর্বশ্রেষ্ঠ তারা এতই শক্তিশালী ছিল যে কোন রাজশক্তিই তাদের কে আক্রমণ করতে সাহস পেত না। এছাড়া প্লাতর্ক ও টলেমি প্রমুখের রচনাতেও এর স্বপক্ষে বলিষ্ঠ প্রমাণ পাওয়া যায়। এখানে যে গংবিড়ী জাতির কথা হয়েছে তা মূলত বংদ্রাবিডি শব্দেরই বিকৃত রূপ ছাড়া আর কিছু নয়।

          বস্তুতঃ বঙ্গ ও  দ্রাবিড় সভ্যতা যে একই বৃক্ষের দুটি শাখার ন্যায়, একই জনগোষ্ঠীর দুটি অভিন্ন শাখা। তার স্বপক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে একথা ঐতিহাসিক ভাবে প্রমানিত যে এই উভয় জনগোষ্ঠীর হযরত নূহ আলাইহিস সালাতু সালামের দু'সন্তান হাম ও শামের বংশধর।

          বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত গোলাম হোসেন সেলিম এর ফার্সি রিয়াজ-আস-সালাতিন এবং ইংরেজি অনুবাদ থেকে আকবরউদ্দিন কর্তৃক বঙ্গানুবাদকৃত বাংলার ইতিহাস নামক গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে নূহ আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম এর পুত্র হাম ও তার পিতার অনুমতি অনুযায়ী পৃথিবীর দক্ষিণ দিকে মানববসতির জন্য মনস্থ করেন। সেই উদ্দেশ্যে কার্যকরী করার জন্য তিনি তার পুত্রদের দিকে দিকে মানুষের বসতি স্থাপনের জন্য প্রেরণ করেন। হামের প্রথম পুত্র হিন্দু, দ্বিতীয় পত্র সিন্ধ, তৃতীয় পুত্র হাবাম, চতুর্থ সূত্র জানায, পঞ্চম বার্বার ও ষষ্ঠ নিউবাহ প্রমূখ যে সব অঞ্চলে উপনিবেশ স্থাপন করে সেসব অঞ্চলের নাম তাদের নাম অনুসারে রাখা হয়। জেষ্ঠপুত্র হিন্দু হিন্দুস্থানের আসার ধরুন এই অঞ্চলের নাম তার নাম অনুসারে রাখা হয়। হিন্দের চার পুত্রঃ বঙ্গ,বীর,নাহার ও দল, হিন্দের সন্তানরা বাংলায় উপনিবেশ স্থাপন করেন। আদিতে বাংলা নাম ছিল বং। এর সাথে "আল" যোগ হওয়ায় এর নাম হলো বাঙাল বা বাংলা হয়। [বাংলা ভাষার ইতিহাস -আব্দুল আউয়াল, পৃঃ৩]

          আইন-ই আকবরীতে আবুল ফজল লিখেছেন বঙ্গ ও বঙ্গালা একই অর্থবহন করে। মূলে নামটি ছিল বঙ্গ। এর শাসনকর্তারা ১০ ফুট উঁচু ২০ ফুট উঁচু চৌড়া বাঁধ তৈরি করেছিলেন। এ থেকে বঙ্গাল বা বাংলা নামটির প্রচলিত হয়। [ঐ]

          উপরোক্ত আলোচনা থেকে বাঙালী জনগোষ্ঠীর উৎস এবং বাংলা নামকরণের মোটামুটি পরিচয় পাওয়া গেলো। এবার দ্রাবিড় জনগোষ্ঠীর আলোচনা করা যাক তাহলে বংদ্রাবিড় ঐক্যের সূত্র বের করা সহজ হবে।

          হযরত নূহ আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম এর পুত্র সাম, সামের পুত্র আলফাখশাজের। আলফাখশাজের পুত্র সালেখ। সালেখের পুত্র আবির। আবিরের পুত্র য়্যাকতান। য়্যাকতানের পূত্র আবুফীর।

          ইতিহাস থেকে জানা যায় এই আবুফীর প্রথমে সিন্ধু তীরে বসবাস শুরু করেন। তার বংশ থেকেই সিন্ধু এলাকা সর্বপ্রথম জনবসতি গড়ে ওঠে। আবুফীর প্রচলিত রীতি অনুসারে নিজ এলাকার ও গোষ্ঠীর নাম নির্ধারণ করেছিলেন। আবুফীরের ভাই "য়্যারব" সুমের অঞ্চলে গিয়ে সেখানে আরব গোষ্ঠী ও আরবি ভাষাযর ভিত্তি রচনা করেন। আর এ য়্যারবই হলেন সুমের সভ্যতা ও আরবি ভাষার জন্মদাতা।

          সুতরাং আবুফীরের ভাইয য়্যারবের ভাষার সাথে তার ভাষার সাদৃশ্য থাকবে তা আর খুলে বলার প্রয়োজন হয় না। অবশ্য পরে ভৌগলিক পার্থক্যের ফলে উভয়ের ভাষার মধ্যে স্বাভাবিক কারণে কিছুটা হেরফের হয়েছে বটে, তবে প্রাথমিককালে যে উভয়ের ভাষা প্রায় একই ছিল তা বলাই বাহুল্য। এ বিষয়ে পরে আলোচনা কর।

          আরবীতে দার অর্থ ঘর বা আবাসস্থল। আবুফীর ভারতে এসে তার নিজের নাম অথবা তার দাদা আবিরের নাম নিজ এলাকার নাম দিলেন ধার আবুফীর অথবা নিজের নাম দারআবির। আর দার আবুফীর অথবা দার আবির শব্দটি পরে বিবর্তনের মাধ্যমে দ্রাবিড় শব্দে রূপান্তরিত হয়। এই দ্রাবিড়রাই হরপ্পা মহেনজোদারোসহ ভারতের বিভিন্ন এলাকায় এক উন্নত সভ্যতা গড়ে তোলে।       ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্তিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলে এই পর্যন্ত যে ফলাফল পাওয়া গেছে তাতে এই হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সভ্যতা বিশ্বের আদিতম জনবসতি এবং প্রথমিক কালের শেষ্টতম সভ্যতা বলে প্রমাণিত হয়।

          এই দ্রাবিড় সভ্যতা সম্পর্কে আলোচনার পূর্বে উক্ত অঞ্চল তথা ভারতবর্ষের মানব জাতির আদি নিবাস সম্পর্কে কিছু আলোচনা করা যাক। প্রচলিত ধারণা মতে মধ্যপ্রাচ্যকেই মানব জাতির আদি নিবাস বলে উল্লেখ করা হয়। তৎকালীন ভৌগলিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করার পর আজ একথা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে বর্তমান মধ্যপ্রাচ্যের সাথে তৎকালীন ভারত বর্ষ ওতপ্রোতভাবে একই ভৌগলিক এলাকার অন্তর্ভুক্ত ছিল। আর হযরত আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম এর বেহেশ্ত থেকে অবতরণের পরবর্তী ইতিহাস প্রচ্ছন্নভাবে একথাই সাক্ষ্য দেয়।

          হযরত আদম আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম যে বেহেশ্ত থেকে সর্বপ্রথম এই ভারতবর্ষে সরদ্ধিপ অঞ্চলে অবতরণ করেছিলেন তা একপ্রকার সর্বজনস্বীকৃত সত্য এবং সরদ্ধিপ এককালে আমাদের এই বঙ্গদেশেরই অন্তর্ভুক্ত ছিল।

          পাঠকের অবগতির জন্য ভারতের বিখ্যাত ঐতিহাসিক ও গবেষক মাওলানা শামসনবীদ ওসমানী সাহেবের গ্রন্থ থেকে কিছু উদ্ধৃতি তুলে ধরা হলো। হযরত আদম আলাই সালাম এর ভারতবর্ষে অবতরণ সম্পর্কে তিনি লিখেছেন শ্রীলংকার সরন্ধিপ পর্বতে বহু দীর্ঘ এক পদ চিহ্নের অস্তিত্ব বিদ্যমান রয়েছে। মুসলমান ও খ্রিস্টানরা ওটাকে হযরত আদম আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম এর পদচিহ্ন বলে ধারণা করে থাকে। এবং হিন্দুরা ওটাকে তাদের দেবতা শিও জীর পদচিহ্ন বলে ধারণা করে। আর বৌদ্ধদের ধারণা ওটা গৌতম বুদ্ধের পদচিহ্ন।

          হাদীস ও তাফসীরের বিভিন্ন বর্ণনা থেকে জানা যায় হযরত আদম আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম বেহেশ্ত থেকে সরাসরি হিন্দুস্তানে অবতরণ করেন। ইবনে জারীর, ইবনে আবু হাতেম, এবং হাকিম এর বর্ণনা থেকে জানা যায় হযরত আদম আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম হিন্দুস্তানের যে স্থানটিতে পদার্পণ করেন তার নাম হচ্ছে "দাজনা"। সম্ভবতঃ এ দাজনাই হচ্ছে দখিনা অথবা দক্ষিণ যা বর্তমানে দক্ষিণ ভারত নামে প্রসিদ্ধ। [আরব হিন্দ কে তায়াল্লুকাত -সৈয়দ সুলাইমান নদবী, পৃঃ১-২]

            এছাড়া হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু এর বর্ণনা থেকে জানা যায় হযরত আদম আলাই সালাম এর ঐতিহাসিক চুটিও ছিল হিন্দুস্তান অবস্থিত। [তাফসীর ফাতহুল কাদীর ২য় খণ্ড, পৃঃ ৪৭৪। আগার আবভী না জাগোতো, পৃঃ ৫১]

হযরত নূহ আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম হিন্দুস্তানে:

          কোরআন মাজীদ থেকে আমরা জানতে পারি যে তুফান এর পর হযরত নূহ আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম এর কিস্তি ইরাকের কুর্দিস্তানের অন্তর্গত জুদি পাহাড়ে আটকে যায়। বাইবেল থেকে জানা যায় ইরারাত পাহাড়ের তার কিস্তি আটকে যায়। মূলত যুদি পাহাড় ও ইরারাত একই পাহাড়ের দুই শীর্ষের নাম। কিন্তু তুফানের পূর্বে ৬০০ বছর পর্যন্ত এবং তুফানের পরবর্তী সময়ে তিনি কোনো কোনো এলাকায় দ্বীন প্রচার করেছিলেন। এ সম্পর্কে তাফসীর কারগণ সম্পূর্ণ নীরব। তাওরাত থেকে শুধু এতটুকু জানা যায় তুফানের পর সাথীদের নিয়ে তিনি বাবেল শহরে একত্রিত হন এবং সেখান থেকে তারা দুনিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েন।

          বাবেলকে বাবেল এজন্য বলা হয় যে খোদাপাক সেখানে সমস্ত ভাষাভাষীকে মিলিত করেছিলেন। [তাওলার কিতাব পয়দায়েম ৯/১১]

          পবিত্র কোরআনের ঘোষণা হচ্ছে যখন আমার হুকুম আসলো এবং তন্দুর থেকে পানি উত্থিত হওয়া শুরু করল তখন আমি বললাম যে এই কিস্তিতে প্রত্যেক প্রজাতি থেকে এক এক জোড়া তুলে নাও। [সূরা হুদ -৪০]

          তন্দুর শব্দটি আরবি শব্দ নয় ফার্সি। যার অর্থ উনুন আবার কেউ কেউ তন্দুর অর্থ ভূ-পৃষ্ঠ বলে উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ ভূ-পৃষ্ঠ থেকে পানি উত্থিত হয়েছিল। কিন্তু এ তন্দুর শব্দটির প্রথমে কোরআন মাজিদে আলিফ লাম যোগ করা হয়েছে। যার অর্থ বিশেষ কোনো তন্দুর। এ সম্পর্কে উলামাগণের ব্যাখ্যা হলো হয়তো উক্ত তন্দুরটি সম্পর্কে হযরত নূহ (আঃ)ই অবগত ছিলেন। হযরত হাসান বছরী বর্ণনা করেন উক্ত তন্দুর'টি পাথরের নির্মিত ছিল এবং হযরত হাওয়া আসসালাতু আসসালাম উক্ত তন্দুরে রুটি ইত্যাদি পাক করতেন। পরে ঐটি নূহ আঃ এর হস্তগত হয়। এবং তাকে বলা হয় যে যখন তন্দুর থেকে পানি উঠতে দেখবে তখন তুমি সাথীদের নিয়ে কিস্তিতে আরোহন করবে। [লুবাতু তাবিল, তৃতীয় খণ্ড পৃষ্ঠা ১৮৯] 

          হযরত মাওলানা মোঃ নয়ীম মুরাদাবাদী সাহেবও স্বীয় তাফসীর গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে উক্ত তন্দুরটি ছিল মূলত হযরত আদম আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালামের। তন্দুর শব্দটি সম্পর্কে বহু বর্ণনা একত্রিত করেন আল্লাহ শাওকানি র. লিখেছেন তন্দুর হিন্দুস্তানের একটি জায়গার নাম। [ফাতহুল কাবির তৃতীয় খণ্ড পৃষ্ঠা ৪৭৪]

          মূলতঃ হিন্দুস্থানের মোল্লাপুর জেলার সমুদ্র উপকূলে তন্দুর অবস্থিত। এটা হল হিন্দুস্থানের পশ্চিম সীমান্তে অবস্থিত যা আরব সাগরের কারণে আরব থেকে পৃথক হয়ে আছে।

          সুতরাং এ কথা অনুমান করা অযৌক্তিক হবে না যে উক্ত স্থান থেকে নূহ আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম এর গণনা শুরু হয়। এর ফলে অন্যান্য কথারও উত্তর মিলে যায়। অর্থাৎ এসব কথা থেকে অনুমিত হয় যে বন্যার পূর্বে হযরত নূহ আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম এই ভারতবর্ষে বসবাস করতেন। [আগার আপ ভী না আগেতো, পৃঃ৫১]

          উপরোক্ত বর্ণনা থেকে একথা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে প্রকৃতপক্ষে ভারতবর্ষেই ছিল মানব জাতির আদি নিবাস। [...অসমাপ্ত]