JustPaste.it

মহিলা বিভাগ

 

স্বভাবসম্মত নারী জীবন

নারী অর্ধেক মানবতা। পুরুষ মানবতার মাত্র একাংশের প্রতিনিধি। অপর অংশের প্রতিনিধিত্ব করে নারী। তাই নারী সমাজকে বাদ দিয়ে মানব জাতির জন্যে যে-পরিকল্পনাই রচিত হবে, তা অনিবার্যভাবে হবে অসম্পূর্ণ ও ক্রটিপূর্ণ। কেবল পুরুষ সমন্বয়ে গঠিত কোন মানব সমাজের-যেখানে নারীর প্রয়োজনই নেই এ সমাজ কল্পনাও করা যায় না। কেননা নর ও নারী পরস্পর সম্পূরক, পরস্পর নির্ভরশীল। না নারী পুরুষ ছাড়া চলতে পারে, না পুরুষ পারে নারীবিহীন হয়ে থাকতে। এই মুখাপেক্ষিতা ও নির্ভরতা সামাজিক জৈবিক ও মনস্তাত্ত্বিক সর্বদিক দিয়ে। সামষ্টিক জীবনের দাবি ও স্বভাবগত যৌন স্পৃহার চাহিদা হচ্ছে, নারী ও পুরুষ পরস্পরের নিকট থেকে শান্তি, স্বস্তি, তৃপ্তি ও সার্থকতা লাভ করবে।

বস্তুতঃ সামষ্টিক জীবনের সুষ্ঠুতা ও উন্নতি একান্তভাবে নির্ভর করে নারী-পুরুষের মাঝে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্ক যথার্থ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যৌন সম্পর্কও যথার্থ পবিত্র হওয়ার ওপর। নারীর চেষ্টা-সাধানায় যে ক্রটি ও অপূর্ণতা থেকে যাবে, পুরুষ তা’ কানায় কানায় পূর্ণ করে দেবে। পক্ষান্তরে, যে ত্রুটি-বিচ্যুতি ও অপূর্ণতা থাকবে পুরুষের দায়িত্ব পালনে, তার পরিপূরণে এগিয়ে আসবে নারী। নারী-পুরুষের যৌন সম্পর্ক তার স্বভাবসম্মত সীমার মধ্যে সীমিত থাকবে। এবং নিছক স্বাদ-আস্বাদন ও লালসা চরিতার্থকরণের উপায় হিসেবেই তা গ্রহণ করা হবে না। এটাই সর্বতোভাবে যথার্থ ও যুক্তিযুক্ত।

নারী-পুরুষের সামাজিক সম্পর্ক যদি ভারসাম্যহীন হয় এবং তাদের পারস্পরিক যৌন সম্পর্ক উচ্ছৃঙ্খলতায় আকীর্ণ হয়ে উঠে, তাহলে গোটা মানব সমাজই সর্বাত্মক ভাঙন ও বিপর্যয়ের মুখে এসে দাঁড়াবে। কেননা, এই ভারসাম্যহীনতার পরিণামে সামষ্টিক জীবনের অনেকগুলো দিক শূণ্য থেকে যাবে, আর অনেকগুলো দিকের ওপর অস্বাভাবিক ও অপ্রয়োজনীয় গুরুত্ব আরোপিত হবে। এই দুটো অবস্থাই সুষ্ঠু সমাজ জীবনের পক্ষে অত্যন্ত মারাত্মক। অনুরূপভাবে, যৌন সম্পর্ক শৃঙ্খলাহীন হয়ে গেলে সমাজ-সংস্থা ভাঙ্গন ও বিপর্যয়ের শিকার হবে অথবা যৌন সম্পর্ক সম্পূর্ণ পরিহার করার প্রবণতা সমাজে সাধারণভাবে প্রবল হয়ে দেখা দেবে। যে-সব জাতির জীবনে যৌন-উজ্জ্বলতা ব্যাপক ও মারাত্মক হয়ে দেখা দেয় সে সব জাতি বেশী দিন পৃথিবীর বুকে টিকে থাকতে পারে না। পক্ষান্তরে, যৌন-বিমুখতা মানব সভ্যতা গড়ে তোলার পথে বিরাট অন্তরায়। মানুষের ইতিহাস এ কথার যথার্থতা অকাট্যভাবে প্রমাণ করে।

আধুনিক সভ্যতা নারী ও পুরুষের মাঝে স্বভাবসম্মত সামাজিক সম্পর্ক স্থাপনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। আর যৌন সমস্যার সমাধান করা তো তার সাধ্যেরও অতীত। কেননা আধুনিক সভ্যতা নারীর জন্যে তার আসল ও স্বভাবসম্মত স্থান নির্ধারণ করতে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে; বরং তার আসল ও স্বভাবসম্মত স্থান থেকে টেনে নিয়ে তাকে পুরুষদের কাতারে দাঁড় করিয়ে দিয়ে এক জটিল অবস্থার সৃষ্টি করেছে। ফলে নারী আজ পুরুষদের জন্যে নির্দিষ্ট বিশাল কর্মক্ষেত্রে সদা কর্মতৎপর; অথচ তার সৃষ্টি হয়েছে যে  কাজের জন্যে, সেখানে সে অনুপস্থিত। আধুনিক সভ্যতা যৌন ভাবাবেগকে এতটা প্রবল, সুতীব্র ও উচ্ছ্বসিত করে তুলেছে যে, মানুষের মন ও মগজের ওপর তার সর্বাত্মক আধিপত্য সংস্থাপিত হয়ে গেছে। ফলে মানুষ আসল করণীয় বিষয়কে উপেক্ষা করে চলেছে এবং চারদিকে যৌন স্বাদ-আস্বাদনের এক প্রচন্ড বন্যা বইছে।

এ কথায় কোনই সন্দেহ নেই যে, নারী ও পুরুষের পারস্পরিক সম্পর্ক সম্পূর্ণ ভুল ও ভ্রান্ত কাঠামোর ওপর গড়ে উঠেছে বলে বর্তমান সভ্যতা এক কঠিন বিপর্যয়ের সম্মুখীন। এক্ষণে মানুষ এমন এক স্থানে দাঁড়িয়ে, যেখানে শান্তি, স্বস্তি ও নিরাপত্তার অশেষ উপায়-উপকরণ থাকা সত্ত্বেও মানুষ তা থেকে বঞ্চিত। তার এ বঞ্চনা কিছুমাত্র ঘুচবে-তাও সুদূর পরাহত বলে মনে হয়।

আধুনিক সভ্যতা ও সামাজিক অবস্থা যারা অনাবিল, অনাসক্ত ও সূক্ষ দৃষ্টিতে বিচার-বিবেচনা করছেন, তারা আমাদের উপরোক্ত কথার সত্যতা অবশ্যই স্বীকার করবেন। এ কথায়ও তাদের কোন সন্দেহ থাকবে না যে, সামান্য ও গণ্য ধরনের সংশোধন চেষ্টা-প্রচেষ্টা দ্বারা এ সমাজকে রক্ষা করা যাবে না। তাকে নিরোগ ও সমস্যামুক্ত করা কোন উপায়ে সম্ভব হবে না। এক্ষণে নারী ও পুরুষ সমন্বয়ে সুষ্ঠু  সমাজ-সংস্থা গড়ে তোলার জন্যে সম্পূর্ণ নতুনভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করা একান্তই অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। সেজন্যে বর্তমান ঘুণেধরা সমাজ কাঠামোকে ভেঙ্গে ফেলে তাকে নতুনভাবে সুদৃঢ় করে সংস্থাপন করতে হবে।

আমাদের বিশ্বাস, ইসলামী আদর্শই নারী-পুরুষের সামাজিক ও যৌন জীবনের জন্যে নির্ভূল ভিত্তি উপস্থাপন করেছে। এই ভিত্তির উপর যে সম্পর্ক কাঠামো গড়ে উঠবে, তা সর্বপ্রকার ভাঙ্গন, বিপর্যয় ও উচ্ছৃঙ্খলতার আবিলতা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত থেকে সর্বতোভাবে সাফল্যমন্ডিত হবে। পাশ্চাত্য সভ্যতার সংস্থাপিত কাঠামো চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে নবতর সমাজ-কাঠামো গড়ে তোলা ছাড়া আধুনিক মানুষের জন্যে অন্য কোন উপায় নেই। একথা আমরা বলিষ্ঠ কণ্ঠে বলতে চাই । (সংকলিত)

 

সংসারের টুকিটাকি

* রুটি বা চাপাতি তৈরির ময়দা মাখাবার আগে হাতে সামান্য তেল মেখে নিন। এতে ময়দা মাখাবার পর হাত পরিষ্কার করা সহজ হবে।

* তরকারিতে লবণ বেশী হয়ে গেছে? দুশ্চিন্তা না করে একটু লেবুর রস মিশিয়ে দিন।

* লেবু কাটার আগে ঘন্টাখানেক পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এতে লেবুর রস বেশী পাওয়া সহজ হবে।

* কাটার পর বেগুন, আলু, কাচা কলার রং যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য এগুলো লবণ মেশানো পানিতে রাখুন।

* অনেকেরই পা ঘামে এবং দুর্গন্ধ বের হয়, সেই ঘামে পা ভেজা থাকে! পা ধোয়ার পর পায়ে বরিক এসিড পাউডার মাখুন। এভাবে একটানা ১৫ দিন করুন। পায়ের গন্ধ নিয়ে কোন ভোগান্তি হবে না

* হট ওয়াটার ব্যাগের পানি বেশিক্ষণ গরম রাখতে এ পানিতে একটু লবণ মিশিয়ে দিন।

* জং ধরা তালা খুলতে তালাতে তেল না দিয়ে চাবিতে তেল দিন, তালা সহজে খুলবে।

* চাল রাখা পাত্রের তলদেশে কয়েকটি শুকনো নিমপাতা রেখে দিন; পাত্রের চাল পোকামুক্ত থাকবে

* ঘরের কোথাও পিপড়া লেগেছে? একটু হলুদ ছিটিয়ে দিন, পিপড়া দূর হবে।

 

‘সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে

* যখন আপনার প্রিয়তম স্বামী বাড়ী থেকে দূরে কোথাও যাচ্ছেন তখন হয়ত আপনি কোন কাজে ব্যস্ত রয়েছেন এবং ব্যস্ততার মাঝে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, কখন বা কবে ফিরছেন? অথচ তখন উচিত হলো, সব কাজ ছেড়ে তার কাছে থাকা। খুব বেশী নয়-মাত্র কয়েক মিনিট সময়। ঘর থেকে তার সাথে হেঁটে দরজায় এসে দাঁড়ান । মিষ্টি মুচকি হেসে আল্লাহ হাফেয বলে তাকে বিদায় জানান। কত সুন্দর এই নিয়ম।

এই হৃদ্যতাপূর্ণ কয়েকটি মিনিট আপনার জীবনব্যাপী পরিবারিক জীবনে সুখ, গভীর আস্থা ও নিঃসীম আনন্দ বয়ে আনতে পারে। এই সুখকর স্মৃতি আনন্দময় করে তুলবে আপনার স্বামী-সংসারকে। বিশ্বাস নাহলে পরীক্ষা করে দেখুন। এই নিয়ম আপনার উপকারে আসবে নিশ্চয়ই।

* আপনার প্রিয় স্বামী দূর কোথাও থেকে নির্দিষ্ট সময়ে আগমন করার পূর্বে সব কাজ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুন। কর্মমুক্ত অখন্ড কিছু সময় একান্তভাবে স্বামীর জন্য বরাদ্দ করুন। হাত মুখ ধুয়ে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হোন। মাথার অবাধ্য চুলগুলো চিরুনী দিয়ে পরিপাটি করুন। শরীর ও কাপড়ে হালকা সুগন্ধী মেখে নিন। স্বামী এসে দরজার কড়া নাড়লে আলতোভাবে দরজা খুলে দিন। মিষ্টি হাসি দিয়ে তাকে খোশ আমদেদ জানান। রুচি মত হালকা নাস্তা দিয়ে তাকে আপ্যায়িত করুন। চা-পানের অভ্যাস থাকলে অত্যন্ত আগ্রহের সাথে তা পরিবেশন করুন। কুশল জিজ্ঞেস করুন। কিছুক্ষণ একান্তভাবে তার নিকট বসুন। যদি কোন জরুরী কাজ থাকে তবে অনুমিত নিয়ে উঠে গিয়ে দ্রুত তা শেষ করুন।

নিয়মিত আপনার এ আচরণ স্বামীকে আপনার প্রতি দারুণ আস্থাশীল করে তুলবে। প্রীতিময় হয়ে উঠবে আপনাদের সংসার জীবন। এই ছোট্ট ছোট্ট কাজগুলো আপনার জীবনে সুখের চাবিকাঠি হতে পারে। এ নিয়ম আন্তরিকতার সাথে পালন করুন। নিশ্চয় উপকৃত হবেন।

* আপনার প্রাণাধিক প্রিয় স্বামীকে কোন পেরেশানী-দুশ্চিন্তাগ্রস্ত দেখলে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে তার দুশ্চিন্তার কারণ জেনে নেয়ার চেষ্টা করুন। পেশাগত কাজের একঘেয়ের জন্যও এমনটা হতে পারে, হতে পারে অন্য কোন কারণে।

এই মুহূর্তে আপনি খুব মধুর ভাষায় কথা বলুন, ফুলের পাপড়ির সৌরভ ও সৌন্দর্য ছড়িয়ে মিষ্টি করে হাসুন, তাকেও হাসানোর চেষ্টা করুন। এই সময় আপনাকে অত্যন্ত সতর্ক হতে হবে। গভীর আন্তরিকতার সাথে তার কষ্ট অনুভব করতে হবে। তার কষ্ট ও দুঃশ্চিন্তা দু'জনে সমান ভাগে ভাগ করে নিন। এই সময় আপনার তার প্রতি সামান্য অবহেলা করা হবে চরম বোকামী। কখনও যেন এমন না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এ সবই হলো সুখময় দাম্পত্য জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ, পূর্বশর্ত।

* আরেকটি কথা। কারো উপকার করার সুযোগ পেলে সেই সুযোগ হাত ছাড়া করা উচিত নয়। সাধ্য ও সামর্থ্য অনুযায়ী দুঃস্থের সেবা করা জরুরী।

            সাধ্যমত ইয়াতীম, বিধবা ও দুঃস্থের সেবা করা মানবতার দাবী। শুধু তাই নয়, এই ধরনের সুযোগ খুঁজে নেয়া দরকার ।কখনও মানুষের সেবা করার সুযোগ পেলে তা লুফে নিতে হয়। এর দ্বারা কল্যাণ লাভ করা যায়। মানুষের উপকার করার কথা কখনো মানুষের সামনে এভাবে ব্যক্ত করা উচিত নয়, যার দ্বারা অহংকার প্রকাশ পায়। এতে উপকার করার মহামূল্যবান পূণ্য নষ্ট হয়ে যায় ! এরূপ যারা করে তাদেরকে অহংকারী বলে। তাই যেকোন ভালো কাজের ভালো ফলাফল পেতে হলে সতর্ক থাকা দরকার। নতুবা এ রূপ নফল কাজ থেকে বিরত থাকাই ভালো।

-জান্নাত কাওনাইন