জীবন পাথেয়
রোযার সওয়াব, বরকত, গুরুত্ব এবং না রাখার ক্ষতি
====================================================================
রােযার ফযীলতঃ হযরত সালমান ফারসী (রাঃ) বর্ণনা করেন, শা'বান মাসের শেষ তারিখে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাদের উদ্দেশ্যে একটি ভাষণ দান করেন। তাতে তিনি বলেনঃ মুসলমানগণ! তােমাদের উপর একটি মাহাত্মপূর্ণ ও বরকতময় মাস ছায়াপাত করছে। এ মাসের একটি রাত্রি (শবে-কদর) হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। আল্লাহ তা'আলা এ মাসের রােযা ফরয করেছেন এবং এর রাত্রিগুলােতে আল্লাহর দরবারে দণ্ডায়মান হওয়াকে (অর্থাৎ তারাবীর নামায পড়াকে) নফল এবাদত সাব্যস্ত করেছেন। এর সওয়াব অপরিসীম। যে ব্যক্তি এ মাসে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশ্যে ফরয নয় এমন কোন এবাদত (অর্থাৎ, সুন্নত অথবা নফল) আদায় করবে, সে অন্য মাসের ফরয এবাদতের সমান সওয়াব পাবে। এ মাসের ফরয আদায় করার সওয়াব অন্য মাসের সত্তর ফরযের সমান সওয়াব পাওয়া যাবে!
এটা ছবরের মাস। ছবরের প্রতিদান হচ্ছে জান্নাত। এটা সহানুভূতি ও সহমর্মিতার মাস। এ মাসেই মুমিন বান্দার রিযিক বৃদ্ধি করা হয়। যে ব্যক্তি এ মাসে কোন রােযাদারকে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও সওয়াব হাছিল করার নিয়তে ইফতার করাবে, এটা তার জন্যে গােনাহের মাগফেরাত ও দোযখের আগুন থেকে মুক্তির উপায় হবে এবং সে রােযাদারের সমান সওয়াব পাবে। এ কারণে রােযাদারের সওয়াব হ্রাস করা হবে না।
আরয করা হলঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমাদের প্রত্যেকেরই তাে ইফতার করানাের সামর্থ্য নেই। অতএব, গরীবরা কি এ সওয়াব থেকে বঞ্চিত হবে? তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা'আলা এ সওয়াব তাকেও দিবেন, যে দুধের সমান ঘােল দিয়ে অথবা এক চুমুক পানি দিয়ে কোন রােযাদারকে ইফতার করাবে। আর যে ব্যক্তি কোন রােযাদারকে ভরপেট খাওয়াবে, আল্লাহ তা'আলা তাকে আমার হাওযে কাওছার থেকে এমন তৃপ্তি সহকারে পান করাবেন যে, জান্নাতে পৌঁছা পর্যন্ত তার পিপাসা লাগবে না।
অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেনঃ এ মাসের প্রথম দশক রহমতের, মধ্যের দশক মাগফেরাতের এবং শেষ দশক দোযখের আগুন থেকে পরিত্রাণের। যে ব্যক্তি এ মাসে তার গােলাম ও চাকর নওকরের কাজ হালকা করে দিবে, আল্লাহ তা'আলা তাকে ক্ষমা করবেন এবং তাকে দোযখ থেকে মুক্তি দিবেন। -(বায়হাকীর শােয়াবুল ঈমান, মা'আরেফ)।
রােযায় সওয়াব আশা করাঃ হযরত আবু হােরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেনঃ রাসূলে করীম (সাঃ) বলেনঃ যারা রমযানের রােযা ঈমান ও সওয়াবের আশা সহকারে রাখবে, তাদের সকল অতীত গােনাহ ক্ষমা করা হবে; অনুরূপভাবে যারা ঈমান ও সওয়াবের আশায় রমযানের রাত্রিসমূহে নফল (তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ) পড়বে, তাদেরও সমস্ত অতীত গােনাহ মাফ করা হবে। এমনিভাবে যারা শবে-কদরে ঈমান ও সওয়াবের আশায় নফল পড়বে, তাদেরও সমস্ত পূর্ববর্তী গােনাহ মাফ করা হবে। -(বুখারী, মুসলিম, মা'আরেফ)
রােযার বরকতঃ হযরত আবু হােরায়রার (রাঃ) বর্ণনা; রসূলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেনঃ রােযা রাখ, স্বাস্থ্যবান থাকবে। -(তিবরানী).
রােযা দ্বারা যেমন যাহেরী বাতেনী ক্ষতি দূর হয়, তেমনি যাহেরী এবং বাতেনী আনন্দও অর্জিত হয়।
রােযার গুরুত্বঃ হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেনঃ যখন রমযানুল মােবারকের শেষ দশক শুরু হত তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কোমর কষে নিতেন, সমগ্র রাত্রি এবাদত, যিকর ও দোয়ায় মশগুল থাকতেন এবং ঘরের লােকজনকেও জাগিয়ে দিতেন, যাতে তারাও এসব রাত্রির বরকত লাভ করতে পারে। - (বুখারী, মুসলিম, মা'আরেফ)।
রােযা না রাখার ক্ষতিঃ হযরত আবু হােরায়রার (রাঃ) বর্ণনায় রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ যে ব্যক্তি সফর ইত্যাদি শরীয়তসম্মত ওযর ছাড়া রমযানে একটি রােযাও তরক করে, সে যদি এর বদলে সারা জীবনও রােযা রাখে তবুও যা ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ হবে। -(মসনদে আহমদ)
চাঁদ দেখাঃ চাঁদ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত অথবা কোন চাক্ষুষ সাক্ষী না পাওয়া পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) রােযা শুরু করতেন না; এটাই ছিল তার সুন্নত। একবার হযরত ইবনে ওমর (রাঃ)-এর সাক্ষ্য কবুল করে তিনি রােযা রাখেন। -(যাদুল-মা’আদ)
শাবানের ২৯ তারিখে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে তিনি রােযা রাখতেন না। এরূপ ক্ষেত্রে শাবানের ৩০ দিন পূর্ণ করার কথা বলতেন। -(যাদুল-মা’আদ)।
হযরত আবু হোরায়রার (রাঃ) বর্ণনাঃ রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ চাঁদ দেখে রােযা রাখ এবং চাঁদ দেখে রােযা ভঙ্গ কর। (২৯ তারিখে) চাঁদ দেখা না দিলে শা'বানের ৩০ দিন পূর্ণ কর।-(বুখারী, মুসলিম, মা'আরেফ)।
সেহরীঃ হুযুর (সাঃ) এরশাদ করেনঃ সেহরীতে বরকত রয়েছে। কাজেই সেহরী কখনও ত্যাগ করাে না। কিছু পাওয়া না গেলে এক চুমুক পানি হলেও পান করে নাও। কেননা, যারা সেহরী খায় ও পান করে, তাদের প্রতি আল্লাহ রহমত করেন এবং ফেরেশতারা তাদের জন্যে উত্তম দোয়া করেন। -(মসনদে আহমদ, মা'আরেফ)।
ইফতারঃ হযরত আবু হােরায়রা (রাঃ) বর্ণনা; রসূলুল্লাহ (সাঃ) আল্লাহ তা'আলার এই এরশাদ বর্ণনা করেনঃ সেই বান্দা আমার অধিক প্রিয়, যে যথাশীঘ্র ইফতার করে (অর্থাৎ সূর্যাস্তের পর মােটেই দেরী করে না।). -(তিরমিযী)
হযরত সালমান ইবনে আমেরের (রাঃ) বর্ণনা; রসূলে আকরাম (সাঃ) বলেনঃ রােযাদার ব্যক্তি যেন খেজুর দ্বারা ইফতার করে। খেজুর না পেলে পানি দ্বারাই ইফতার করবে। কেননা, আল্লাহ তা'আলা পানিকে পাক-পবিত্র করে সৃষ্টি করেছেন। - (মুসনাদে-আহমদ, আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজা, মা'আরেফ)।
হযরত আনাস (রাঃ) বর্ণনা করেন, রসূলে করীম (সাঃ) মাগরিবের নামায আদায় করার আগে কয়েকটি খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। পাকা খেজুর যথাসময়ে উপস্থিত না থাকলে শুকনা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। শুকনা খেজুরও না থাকলে কয়েক চুমুক পানি পান করে নিতেন। -(তিরমিযী, মা'আরেফ)
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ (সাঃ) ইফতার করার সময় বলতেনঃ
ﺫَﻫَـﺐَ ﺍﻟﻈَّﻤَـﺄُ، ﻭَﺍﺑْﺘَﻠَّـﺖِ ﺍﻟﻌُـﺮﻭﻕ، ﻭَﺛَﺒَـﺖَ ﺍﻷﺟْـﺮُ ﺇِﻥْ ﺷـﺎﺀَ ﺍﻟﻠﻪ
-(আবু দাউদ, মা'আরেফ)
মুয়ায ইবনে যুহায়রা তাবেয়ী (রাহঃ) বর্ণনা করেন, একথা আমার কাছে পৌছেছে যে, রসূলুল্লাহ (সাঃ) ইফতার করার সময় এই দোয়া পড়তেন,
اَللّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَعَلي رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ
অর্থাৎ, হে আল্লাহ, আমি আপনার জন্য রােযা রেখেছি এবং আপনার রিযিক দ্বারা ইফতার করলাম। -(আবু দাউদ, মা'আরেফ)।
হযরত ওমরের (রাঃ) বর্ণনা, রসূলে করীম (সাঃ) বলেনঃ ইফতারের সময় রােযাদারের একটি দোয়াও প্রত্যাখ্যাত হয় না। -(ইবনে মাজা, মা'আরেফ)
তারাবীহঃ অধিকাংশ আলেম তারাবীহকে সুন্নত বলেছেন এবং এ বিষয়ে আহলে সুন্নত ওয়াল-জামায়তের ইজমা তথা ঐকমত্য বর্ণনা করেছেন। ইমাম চতুষ্টয়ের মধ্যে ইমাম, আযম আবু হানীফা, ইমাম শাফেয়ী ও ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রাহঃ)-এর ফেকাহ গ্রন্থসমূহে এ বিষয়ে পরিস্কার উল্লেখ রয়েছে যে, তারাবীহের বিশ রাকা'আত নামায সুন্নতে- মুয়াক্কাদাহ্।-(খাছায়েলে-নববী)।
কোরআন মজীদ পাঠঃ রমযান শরীফে একবার কোরআন পাক ধারাবাহিকভাবে তারাবীহের নামাযে পাঠ করা (অথবা শােনা) সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ্। যদি কোন ওযরের কারণে আশংকা হয় যে, মুসল্লীরা সহ্য করতে সক্ষম হবেনা,তবে আলাম তারা কাইফা সূরা থেকে শেষ পর্যন্ত দশটি সূরা পাঠ করলেও চলে। প্রতি রাকআতে এক সূরা পাঠ করে দশ রাক'আত পূর্ণ হলে পুনরায় এসব সূরী দ্বারাই অবশিষ্ট দশ রাকআত পড়বে। এছাড়া অন্য যে কোন সূরা দিয়েও তারাবীহের নামায পড়া যায়। -(বেহেশতী-গওহর)
তারাবীহ পূর্ণ মাস পড়াঃ রমযানুল মোবারকে পূর্ণ মাস তারাবিহ পড়া সুন্নত। যদি মাস শেষ হওয়ার পূর্বেই কোরআন মজীদ খতম হয়ে যায়, তবে, অবশিষ্ট দিনগুলােতে ও তারাবীহ পড়া সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ্।
তারাবীহের নামাযে জামাআতঃ তারাবীহের নামায জামাআতে কেফায়ারূপে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ, যদিও জামাআত সহকারে কোরআন মজীদের এক খতম হয়ে যায়।
দু' দু'রাক'আত করে তারাবীহ পড়াঃ তারাবীহ দু' দু' রাক'আত করে পড়া উচিত। চার রাক'আত নামায পড়তে যতটুকু সময় ব্যয় হয়, প্রতি চার রাকআতের পর ততটুকু সময় বিরতি দেওয়া উচিত। কিন্তু মুক্তাদীদের প্রতি লক্ষ্য রেখে এ সময়সীমা কমও করা যায়। -(বেহেশতী-গওহর)।
তারাবীহ নামাযের গুরুত্বঃ রমযানুল মােবারকে তারাবীহের সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ বর্জন করা ও না পড়া গােনাহ। (মহিলারা প্রায়ই তারাবীহ ছেড়ে দেয়) কখনও এরূপ করা উচিত নয়।
এশার ফরয ও সুন্নতের পর বিশ রাক'আত তারাবীহ পড়বে। এরপর বেতের পড়বে। -(বেহেশতী যেওর)
বিশ রাক'আত তারাবীহ সম্পর্কে হাদীসঃ হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী করীম (সাঃ) রমযানে বিশ রাক'আত (তারাবীহ) ও বেতের পড়তেন। -(তিবরানী, মজমাউয-যাওয়ায়েদ)
এ হাদীসের সনদে একজন বর্ননাকারী দুর্বল হলেও সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীন সব সময় এরূপ আমলই করেছেন। তাই ফেকাহর নীতি অনুযায়ী হাদীসটি গ্রহণযােগ্য।
হযরত সায়েব ইবনে ইয়াযীদ ও ইয়াযীদ ইবনে রােমান (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, হযরত ওমর (রাঃ)-এর খেলাফতকালে সাহাবায়ে কেরাম বিশ রাক'আত তারাবীহ পড়তেন।-(মুয়াত্তা মালেক, বায়হাকী, আছারুসসুনান)।
তারাবীহের মাঝখানে যিকরঃ তারাবীহের প্রতি চার রাকআতের পর যে প্রসিদ্ধ যিকর রয়েছে তা কোন রেওয়ায়েতে পাওয়া যায়।
তবে আল্লামা শামী কাহেস্তানী মানহাজুল ইবাদের বরাত দিয়ে বর্ণনা করেন যে, নবী করীম (সাঃ) প্রতি চার রাক'আতের পর পড়তেন,
অর্থাৎ আমি পবিত্রতা বর্ণনা করি বস্তুগত ও আত্মজগতের মালিকের, পবিত্রতা বর্ণনা করি ইযযত, মাহাত্ম, বড়ত্ব ও প্রাবল্য ও প্রাবল্য ওয়ালার, পবিত্রতা ঘােষণা করি রাজ্যাধিপতির, চিরঞ্জীবীর, যিনি মৃত্যুবরণ করেন না। তিনি অত্যধিক পাক-পবিত্র, ফেরেশতা ও রূহের পালনকর্তা। আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করি। হে আল্লাহ, আমরা আপনার কাছে জান্নাতের আবেদন করি এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাই।
রমযানুল মােবারকের রাত্রিতে নফল নামাযঃ রসূলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেনঃ আল্লাহ তা'আলা রমযানের রােযা ফরয করেছেন। আর আমি রমযানের রাত্রি জাগরণ (তারাবী হতে কুরআন তেলাওয়াত শুনার জন্যে) তােমাদের জন্যে (আল্লাহর আদেশে) সুন্নত করছি। (মুয়াক্কাদাহ বিধায় এটাও জরুরী।) যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের বিশ্বাস নিয়ে রমযানের রােযা রাখবে এবং রাত্রি জাগরণ করবে, সে গোনাহ থেকে সে দিনের মতই পবিত্র হয়ে যাবে, যেদিন সে ভূমিষ্ট হয়েছিল। -(নাসায়ী, হায়াতুল-মুসলিমীন)
এ'তেকাফঃ সহীহ্ হাদীসসমূহে বর্ণিত আছে যে, রমযানুল মােবারকের শেষ দশকে নবী করীম (সাঃ)-এর জন্যে মসজিদে একটি জায়গা নির্দিষ্ট করে দেয়া হত এবং সেখানে মাদুর ইত্যাদির পর্দা করা হত অথবা ক্ষুদ্র তাঁবু লাগিয়ে দেয়া হত। রমযানের ২০ তারিখে ফজরের নামায পড়ার জন্যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মসজিদে তশরীফ নিতেন এবং ঈদের চাঁদ দেখার পর সেখান থেকে বের হতেন। -(মা'আরেফ)
রমযানের শেষ দশ দিনের এ'তেকাফে দু'হজ্ব ও দু’ওমরার সমান সওয়াব হয়। - (হাকী, মা’আরেফ)
এ'তেকাফে কি কি বিষয় মুস্তাহাবঃ ০ সৎ ও ভাল কথাবার্তা বলা। ০ কুরআন তেলাওয়াত করা। ০ দরূদ শরীফ পড়া। ০ ধর্মীয় কিতাবাদি পড়া ও পড়ানাে। ০ ওয়ায-নসীহত করা। ০ পাঞ্জেগানা জামাআত হয়, এরূপ মসজিদে এ'তেকাফ করা। -(বেহেশতী যেওর)।
হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রাঃ) বলেনঃ শরীয়তের নিয়মানুযায়ী এ'তেকাফকারী ব্যক্তি কোন রুগ্ন ব্যক্তিকে দেখার জন্য অথবা জানাযার নামাযে শরীক হওয়ার জন্যে মসজিদের বাইরে যেতে পারে না। স্ত্রী সহবাস করবে না এবং অপরিহার্য প্রয়ােজন। যেমন প্রস্রাব-পায়খানা ইত্যাদি ছাড়া অন্য কোন প্রয়ােজনে বাইরে যাবে না। এ'তেকাফ রােযার সাথে হবে-রােযা ছাড়া নয়। -(আবু দাউদ, মা'আরেফ)
এ'তেকাফ সুন্নতঃ রাসূলে আকরাম (সাঃ) থেকে নিয়মিতভাবে রমযানের শেষ দৃশকে এ'তেকাফ করা সহীহ হাদীসসমূহে বর্ণিত আছে। সুতরাং এটা কেফায়া হিসাবে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ অর্থাৎ কতক লােকের এতেকাফ সকলের পক্ষ থেকে যথেষ্ট হয়ে যায়।
এতেকাফ ও এ'তেকাফকারীর সুন্নত আমলসমূহঃ দশ দিনের এ'তেকাফ সুন্নত। এর কম হলে নফল। মহিলার জন্যে তার ঘরে এ'তেকাফ করা সুন্নত। এ'তেকাফের অবস্থায় কুরআন পাকের তেলাওয়াত অথবা ধর্মীয় কিতাবাদি অধ্যয়ন করাও পছন্দনীয়। -(বেহেশতী যেওর)।
শবে-কদরঃ হযরত আয়েশা সিদ্দীকার (রাঃ) বর্ণনা; রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ তােমরা শবে-কদর তালাশ কর রমযানের শেষ বেজোড় রাত্রিগুলােতে। -(বুখারী, মা’আরেফ)
শবে কদরের দোয়াঃ হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রাঃ) বর্ণনা করেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর কাছে আরয করলামঃ কোন্ রাত্রিটি শবে-কদর, তা যদি আমি জানতে পারি, তবে সেই রাত্রিতে আমি আল্লাহ তা'আলার দরবারে কি আর করব এবং কি দোয়া করব? তিনি বললেন এই আরজি পেশ, কর- হে আল্লাহ আপনি ক্ষমাকারী, পরম দয়াময়, ক্ষমা আপনার পছন্দনীয়, অতএব আমাকে ক্ষমা করুন। -(মা'আরেফ)।
রমযানের শেষ রাত্রিঃ হযরত আবু হােরায়রা (রাঃ) বর্ণনা; রাসূলে করীম (সাঃ) বলেনঃ রমযানের শেষ রাত্রিতে আমার উম্মতের জন্যে ক্ষমা ও মার্জনা ফয়সালা করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলঃ সে রাত্রিটি কি শবে-কদর? তিনি বললেনঃ শবে-কদর নয় তবে ব্যাপার এই যে, আমলকারী যখন তার আমল পূর্ণ করে ফেলে, তখন সে পূর্ণ পারিশ্রমিক পেয়ে যায়। -(মুসনাদে আহমদ, মা'আরেফ)
সদকায়ে ফিতরঃ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এক ব্যক্তিকে মক্কার অলি- গলিতে একথা ঘােষণা করতে পাঠালেন যে, সদকায়ে ফিতর প্রত্যেক মুসলমানের ওপর ওয়াজেব-পুরুষ হােক কিংবা নারী, মুক্ত হােক কিংবা গােলাম, ছােট হােক কিংবা বড়। এই সকায়ে-ফিতরের পরিমাণ দু’মুদ (প্রায় দু'সের) গম অথবা এক ছা (সাড়ে তিন সেরের কিছু বেশী খাদ্যশস্য।) -(তিরমিযী)
আনন্দ উদযাপন করাঃ রসুলে আকরাম (সাঃ) এরশাদ করেনঃ তােমরা বছরে দুদিন আনন্দ উদ্যাপন করতে। এখন আল্লাহ তা'আলা তদপেক্ষা উত্তম দু'দিন দান করেছেন- ঈদুল- ফিতর ও ঈদুল-আযহা। তিনি আরও বলেনঃ এ দিনগুলাে পানাহার ও পারস্পরিক আনন্দ উপভােগ করা এবং আল্লাহকে স্মরণ করার দিন। -(শরহে মাআনিলআছার)
যে যে কারণে রােযা ভঙ্গ হয় বা হয় না
-----------------------------------------------------------------
মাসআলাঃ রােযা রেখে যদি রােযার কথা ভুলে যেয়ে কিছু খেয়ে ফেলে, কিংবা ভুলে সহবাস হয়ে যায়, রােযার কথা মাত্রই মনে না আসে, তবে তাতে রােযা ভঙ্গ হয় না। যদি ভুলে পেট ভরেও পানাহার করে, কিংবা ভুলে কয়েক বার পাহানার করে, তবুও রােযা ভঙ্গ হয় না। (কিন্তু খাওয়া শুরু করার পর স্মরণ হলে তৎক্ষণাৎ খাওয়া বন্ধ করতে হবে। কিছু জিনিস গিলে ফেললেও রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে।)
মাসআলাঃ কোন রােযাদারকে ভুলবশতঃ খেতে দেখলে যদি রােযাদার সবল হয় এবং রােযা রাখতে কষ্ট না হয় তবে তাকে স্মরণ করিয়ে দেয়া ওয়াজিব। কিন্তু যদি রােযা রাখার মত শক্তি তার না থাকে, তবে স্মরণ করাবে না; তাকে খেতে দিবে।
মাসআলাঃ রােযা রেখে দিনে ঘুমালে ও স্বপ্নদোষ হলে (বা স্বপ্নে কিছু খেলে) রােযা ভঙ্গ হয় না।
মাসআলাঃ রােযা রেখে সুরমা বা তেল লাগান অথবা খুশবুর ঘ্রাণ লওয়া দুরুস্ত আছে। এমনকি চোখে সুমরা লাগালে যদি থুথু কিংবা শ্লেষ্মায় সুরমার রং দেখা যায়, তবুও রােযা ভঙ্গ হয় না, মকরূহও হয় না।
মাসআলাঃ রােযা রেখে দিনের বেলায় স্বামী-স্ত্রী এক সঙ্গে শােয়া, হাত লাগান বা আদর করা সমস্তই দুরুস্ত, কিন্তু যদি কামভাব প্রবল হয়ে স্ত্রী সহবাসের আশংকা হয়, তবে এরূপ করা মকরূহ। (এই জন্যই জওয়ান স্বামী-স্ত্রীর জন্য রােযা রেখে চুম্বন অথবা কোলাকুলি করা মাকরূহ্। কিন্তু যে সব বৃদ্ধের মনে চাঞ্চল্য আসে না তাদের জন্য মাকরূহ নয়।)
মাসআলাঃ আপনা আপনি যদি হলকুমের মধ্যে মাছি, ধোয়া বা ধুলা চলে যায়, তবে তাতে রােযা ভঙ্গ হয় না; কিন্তু ইচ্ছাপূর্বক এরূপ করলে রােযা ভঙ্গ হবে।
মাসআলাঃ লােবান বা আগরবাতি জ্বলিয়ে তার ধােয়া গ্রহণ করলে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। কিন্তু গােলাপ, কেওড়া ফুল, আতর ইত্যাদি যে সব খােশবুতে ধোঁয়া নেই। তার ঘ্রাণ নেয়া দুরুস্ত আছে।
মাসআলাঃ দাঁতের ফাকে যদি কোন খাদ্যদ্রব্য আটকে থাকে এবং খেলাল বা জিহ্বার দ্বারা তা বের করে গিলে ফেলে, মুখের বের না করে এবং এ খাদ্যদ্রব্য একটি বুটের পরিমাণ অথবা তদপেক্ষা অধিক হয়, তবে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। আর যদি একটি বুট অপেক্ষা কম হয় তবে রােযা ভঙ্গ হবে। না; কিন্তু যদি মুখ হতে বাইরে এনে তারপর গিলে, তবেও তা একটি বুট হতে, কম হলে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
মাসআলাঃ মুখের থুথু যত বেশীই হােকনা কেন তা গিললে রােযার কোনই ক্ষতি হয় না।
মাসআলাঃ শেষ রাত্রে সেহরী খাওয়ার পর যদি কেউ পান খায়, তবে সােবহে সাদেকের পূর্বেই উত্তমরূপে, কুলি করে মুখ ছাফ করে নেয়া উচিত। উত্তমরূপে কুলি করার পরও যদি সকালে থুথু কিছু লাল দেখায়, তবে তাতে রােযা ভঙ্গ হবে না। রােযা অবস্থায় ইনজেকশন নিলেও রােযা নষ্ট হয় না।
মাসআলাঃ রাত্রে যদি গােসল ফরয হয়, তবে সােবহে সাদেকের পূর্বেই গােসল করে নেয়া উচিত; কিন্তু যদি কেউ গােসল করতে দেরী করে, কিংবা সারাদিন গােসল নাও করে, তবে তাতে রােযা ভঙ্গ হবে না। অবশ্য ফরয গােসল অকারণে দেরীতে করলে তজ্জন্য পৃথক গোনাহ হবে।
মাসআলাঃ নাকের শ্লেষ্মা জোরে টানার কারণে যদি হলকুমে চলে যায়, তবে তাতে রােযা নষ্ট হয় না। এইরূপ মুখের লালা টেনে গিলেও রােযা নষ্ট হয় না।
মাসআলাঃ যদি কেউ সেহরী খেয়ে পান মুখে দিয়ে চিবাতে চিবাতে ঘুমিয়ে পড়ে এবং পান মুখে থাকা অবস্থাতেই রাত্রি প্রভাত হয়ে যায়, তবে তার রােযা শুদ্ধ হবে না। এই রােযা ভাঙ্গতে পারবে না বটে, কিন্তু তার পরিবর্তে একটি রােযা ক্বাযা রাখতে হবে, কাফফারা ওয়াজিব হবে না।
মাসআলাঃ কুলি করার সময় যদি (অসতর্কতাবশতঃ রােযার কথা স্মরণ থাকা সত্ত্বেও) হলকুমের মধ্যে পানি চলে যায়, (অথবা ডুব দিয়ে গােসল করার সময় হঠাৎ নাক বা মুখ দিয়ে পানি হলকুমের ভিতর চলে। যায়) তবে রােযা ভঙ্গ হবে। (কিন্তু পানাহার করতে পারবে না।) এই রােযা কাযা করা ওয়াজিব, কাফফারা ওয়জিব নয়।
মাসআলাঃ আপনা আপনি যদি বমি হয়ে যায়, তবে বেশী হােক কি কম হােক, তাতে রােযা নষ্ট হয় না। কিন্তু যদি ইচ্ছা করে মুখ ভরে বমি করে, তবে রােযা নষ্ট হয়ে যায়। অল্প বমি করলে রােযা নষ্ট হয় না।
মাসআলাঃ যদি আপনা আপনিই সামান্য বমি হয় এবং আপনা আপনিই হলকুমের ভিতর চলে যায়, তাতে রােযা নষ্ট হবে না। অবশ্য যদি ইচ্ছাপূর্বক গিলে, তবে কম হলেও রােযা নষ্ট হয়ে যাবে। (অথবা যদি বেশী পরিমাণ আপনা আপনিই হলকুমের নীচে চলে যায়, তবে রােযা নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু পানাহার করবে না।)
মাসআলাঃ যদি কেউ একটি কঙ্কর অথবা একটি লােহার (বা সীসার) গুলি অথবা একটি পয়সা গিলে ফেলে অর্থাৎ, এমন কোন জিনিস গিলে ফেলে যা লােকে সাধারণতঃ খাদ্যরূপেও খায় না বা ঔষধরূপেও সেবন করে না, তবে তাতে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে বটে, কিন্তু কাফফারা দিতে হবে না; শুধু একটি রােয়ার পবির্তে একটি রােযা কাযা করতে হবে। আর যদি এমন কোন জিনিস গিলে ফেলে, যা লােকেরা খাদ্যরূপে খায়, অথবা পানীয়রূপে, পান কের, বা ঔষধরূপে সেবন করে, তবে তাকে কাযাও রাখতে হবে এবং কাফফারাও দিতে হবে।
মাসআলাঃ রােযা রেখে দিনের বেলায় স্ত্রী-সহবাস করলে এমন কি পুরুষের খৎনা স্থান স্ত্রীর যােনি দ্বারে প্রবেশ করলে বীর্যপাত হােক বা না হােক রােযা ভঙ্গ হবে, কাযা এবং কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে।
মাসআলাঃ স্বামী যদি স্ত্রীর গুহ্যদ্বারে পুরুষাঙ্গের খনা স্থান পর্যন্ত প্রবেশ করায়, তবুও উভয়ের রােযা ভঙ্গ হয়। কাফফারা, কাযা উভয়ই ওয়াজিব হবে।
মাসআলাঃ রমযান শরীফের রােযা রেখে ভাঙ্গলে কাফফারা ওয়াজিব হয়। রমযান ছাড়া অন্য কোন রােযা ভাঙ্গলে কাফফারা ওয়াজিব হয় না, যেরূপেই ভাঙ্গুক, যদিও রমযানের কাযা রােযা রেখে ভাঙ্গে। অবশ্য যদি রাত্রে রােযার নিয়্যত না করে কিংবা রােযা ভাঙ্গার পর ঐ দিনেই হায়েয আসে, তবে ঐ ভাঙ্গার কারণে কাফফারা ওয়াজিব হবে না।
মাসআলাঃ নাকে নস্য টানলে বা কানে তেল ঢাললে, অথবা পায়খানার জন্য ডুস দিলে রােযা ভঙ্গ হয়ে যায়, কিন্তু এইরূপ করলে কাফফারা ওয়াজিব হবে না, শুধু কাযা করতে হবে। কানে পানি টপকালে তাতে রােযা ভঙ্গ হয় না।
মাসআলাঃ রােযা রাখার অবস্থায় পেশাবের রাস্তায় কোন ঔষধ রাখা অথবা তেল ইত্যাদি কিছু টপকান দুরুস্ত নেই। যদি কেউ ঔষধ রাখে, তবে রােযা ভঙ্গ হবে এবং কাযা ওয়াজিব হবে। কাফফারা ওয়াজিব হবে না।
মাসআলাঃ দাঁত দিয়ে রক্ত বের হলে যদি থুথুর সঙ্গে রক্ত গিলে ফেলে, তবে রােযা ভঙ্গ হবে, কিন্তু যদি থুথুর চেয়ে কম হয়-যাতে রক্তের স্বাদ পাওয়া না যায়, তবে রােযা ভঙ্গ হবে না!
মাসআলাঃ কোন জিনিস জিহ্বার অগ্রভাগ দিয়ে শুধু একটু স্বাদ দেখে থুথু ফেলে দিলে রােযা ভঙ্গ হয় না; কিন্তু বিনা দরকারে এরূপ করা মাকরুহ। অবশ্য যদি কারও স্বামী এত বড় যালেম এবং পাষাণ হৃদয় হয় যে, ছালুনে নুন একটু বেশী- কম। হলে যুলুম করা শুরু করে, তার জন্য ছালুনের নুন দেখে থুথু ফেলে দেয়া দুরুস্ত আছে, মকরূহ নয়।
মাসআলাঃ রােযা অবস্থায় শিশু সন্তানের খাওয়ার জন্য কোন জিনিস চিবিয়ে দেয়া মকরূহ। অবশ্য শিশুর জীবন ওষ্ঠাগত হলে এবং কেউ চিবিয়ে দেয়ার না থাকলে, এরূপ অবস্থায় চিবিয়ে দিয়ে মুখ পরিস্কার করে ফেলা জায়েয আছে।
মাসআলাঃ রােযা রেখে দিনের বেলায় কয়লা বা মাজন (বা বালুর) দ্বারা দাঁত মাজা মাকরূহ্ এবং এর কিছু অংশ যদি হলকুমের নীচে চলে যায়, তবে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে।। কাচা বা শুকনা মেস্ওয়াক দ্বারা দাঁত মাজা দুরুস্ত আছে। এমন কি, যদি নিমের কাঁচা ডালের মেস্ওয়াক দ্বারা মেস্ওয়াক করে এবং তার তিক্ততার স্বাদ মুখে অনুজ করে তাতেও রােযার কোন ক্ষতি হবে না, মাকরূহও হবে
মাসআলাঃ কোন স্ত্রীলােক অসতর্ক। অবস্থায় ঘুমিয়েছে, কিংবা অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে এ অবস্থায় কেউ তার সাথে সহবাস করলে তার রােযা ভঙ্গ হবে এবং কাযা ওয়াজিব হবে। কিন্তু পুরুষের কাফফারাও ওয়াজিব হবে।
মাসআলাঃ ভুলে পানাহার করলে রােযা যায় না, কিন্তু এরূপ করার পর তার রােযা ভঙ্গ হয়ে গিয়েছে মনে করে যদি কিছু খায় তবে তার রােযা অবশ্য ভঙ্গ হয়ে যাবে; কিন্তু শুধু কাযা করতে হবে, কাফফারা দিতে হবে না।
মাসআলাঃ কারও যদি আপনা আপনি বমি হয়, তাতে রােযা ভঙ্গ হয় না, কিন্তু রােযা ভঙ্গ হয়ে গিয়েছে মনে করে যদি পরে কিছু খায়, তবে তার রােযা অবশ্য ভেঙ্গে যাবে; কিন্তু শুধু কাযা করতে হবে, কাফফারা দিতে হবে না।
মাসআলাঃ যদি কেউ সুরমা অথবা তেল লাগিয়ে অজ্ঞতাবশতঃ মনে করে যে, তার রােযা ভেঙ্গে গিয়েছে এবং এই কারণে ইচ্ছা করে কিছু খাওয়া-দাওয়া করে, তবে কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে।
মাসআলাঃ রমযান মাসে কোন কারণবশতঃ যদি কারও রােযা ভেঙ্গে যায়, তবুও দিনের বেলায় তার জন্য কিছু খাওয়া-দাওয়া দুরুস্ত নয়, সমস্ত দিন রােযাদারের ন্যায় না খেয়ে থাকা তার উপর ওয়াজিব।
মাসআলাঃ যদি কেউ রমযানে রােযার নিয়্যতই করে নি বলে খাওয়া-দাওয়া করতে থাকে, তার উপর কাফফারা ওয়াজিব হবে না। রােযার নিয়্যত করে ভাঙ্গলে কাফফারা ওয়াজিব হয়। (সংকলিত)
═──────────────═