JustPaste.it

UM-4-manobadikarer name pascima kusederder protarona

 fc3c3e19deb8ef5873ce16a24cefd7b1.png

মানবাধিকারের নামে পশ্চিমা ক্রুসেডারদের প্রতারণা!

 

(উম্মাতুন ওয়াহিদাহ ম্যাগাজিনের ১ম সংখ্যা থেকে অনূদিত)

 

 

আবু সালাহ

 

 

 

 

 

 

আমেরিকানরা নির্বুদ্ধিতা ও অপরিণামদর্শিতার মাঝে বসবাস করছে। আমেরিকা হচ্ছে বিশ্বের এক নম্বর সন্ত্রাসী বাহিনী। এরা বিশ্বব্যাপী গণবিপ্লবের শেকড় কাটতে ব্যস্ত। অথচ তাদের জানা নেই, নিজেদেরই মৃত্যুর পথে তারা হাঁটছে। নিজেদের জন্যেই গর্ত খুঁড়ছে তারা।যখন ফেরাউনী প্রাসাদ হোয়াইট হাউস ধ্বসে যাবে, তখন এ জাতিকে রক্ষা করার মত আর কিছুই থাকবে না। অচিরেই তারা সমূলে ধ্বংস হয়ে যাবে।

إنهم كانوا قوما كافرين

‘তারা সকলেই হচ্ছে এক কাফের সম্প্রদায়’

“মানবাধিকার”পরিভাষাটি বাস্তবিকপক্ষে দুর্বল রাষ্ট্র ও জাতিগুলোকে নিজেদের অনুগত করে রাখার জন্য ব্যবহৃত একটি শব্দওমাধ্যম। এই “মানবাধিকার” কথাটার ভেতর যে কত কিছু লুকিয়ে আছে, বিশ্লেষকদের পক্ষে এক বাক্যে সেটাকে উঠিয়ে আনা অথবা অলঙ্ঘনীয় স্বয়ংসম্পূর্ণ কোনো মূলনীতি দিয়ে সেটাকে সংজ্ঞায়িত করা আসলেই দুষ্কর। আর এ কারণেই বড় বড় রাষ্ট্রগুলো নিজেদের ইচ্ছে ও সুবিধামতো এই পরিভাষার ব্যাখ্যাকরেছে। এখন যে রাষ্ট্র, জোট থেকে বেরিয়ে পড়বে, মানবাধিকারের দোহাই দিয়ে তার সর্বস্ব লুটে নেয়ার পায়তারা শুরু হয়ে যাবে। অবর্ণনীয় নির্যাতন-নিপীড়নে তার সার্বভৌমত্ব প্রকৃত অর্থে বিলীন হয়ে যাবে।

বস্তুত; আমেরিকা এবং পশ্চিমা বিশ্বের বড় বড় দেশগুলো মানবাধিকারের সবচেয়ে বড় লঙ্ঘনকারী। অপরদিকে, তারাই আবার নিজেদের জনগণ ও স্বজাতির ক্ষেত্রে মানবাধিকারের পক্ষে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার। বাস্তবতা এরকম, অন্যরা যেন মানুষই নয়! তারা যেন মানবসম্প্রদায়ের কাতারেই পড়ে না! পশ্চিমা নেতৃবৃন্দের হাতে মানবাধিকার যতই লঙ্ঘন হোক, তাদেরকেকিছুবলা যাবে না! অন্যদের যেন অধিকার বলে কিছুই নেই!

শুধু পরিচয়কে কেন্দ্র করে রুয়ান্ডায় ১০ লক্ষ মানুষ হত্যা এবং ইরাকে প্রায় একই সংখ্যক শিশু হত্যাসহ ন্যক্কারজনক বহু মানবতা-বিরোধী অপরাধের ঘটনার দিকে তাকাবার সময় নেই বিশ্বের কথিত মানবাধিকার সংস্থাগুলোর। সারাবিশ্ব তখন অন্যান্য বিষয় নিয়ে ব্যস্ত।ইরাক অবরোধ করে লাখ লাখ শিশু মারার পরমার্কিনযুক্তরাষ্ট্রেরপ্রাক্তনপররাষ্ট্রমন্ত্রীম্যাডেলিনঅলব্রাইটবলেছিল, ‘এমনটাই ঘটবার ছিল। এটা ঠিকই হয়েছে’।[1]

পূর্ব তুর্কিস্তানে হাজার হাজার মুসলিমদের হত্যা করছেকমিউনিস্ট চীনারা।৩০ লক্ষ মুসলিমকে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে। মদ খেতে,শূকরের মাংস খেতে বাধ্য করা হচ্ছে। মুসলিম নারী-পুরুষদেরকে গনধর্ষণ করা হচ্ছে। শিশুদের মায়ের বুক থেকে কেড়ে নিয়ে বোর্ডিং স্কুলে পাঠানো হচ্ছে। ব্রেইন ওয়াশ করে কমিউনিস্ট বানানো হচ্ছে। মুসলিমদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে নিয়ে ব্ল্যাক মার্কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। মুসলিমদেরকে রোজার দিনে রোজা ভাঙ্গতে বাধ্য করা হচ্ছে। মসজিদগুলোকে মদের বারে পরিণত করা হচ্ছে।কিন্তু এদের অধিকারের কথা বলার কেউ নেই। জাতিসংঘের পঞ্চপাণ্ডবের দৃষ্টিতে এরা মানুষ নয়।

বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে নির্যাতিত নিপীড়িত সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠী - রোহিঙ্গারা। কিন্তু এখানে মানবাধিকারের পতাকা তোলার মতো কেউ নেই। কারণ বিশ্ব মোড়লদের দৃষ্টিতে এরা মানুষ নয়। শুধু কিছু খাবারের প্যাকেট আর কিছু তাঁবু পাঠিয়ে দেয়াটাই যথেষ্ট মনে করা হচ্ছে, আদতে যা - কি শীতে কি গরমে -তাদের তেমন কোনো কাজেই আসছে না।

ককেশাস, বুলগেরিয়া আর ক্রিমিয়া উপকূলের মুসলমানদের ওপর অত্যাচারের সময় কোথায় থাকে মানবাধিকার?ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার হরণ, গুয়ানতানামোবে আর আবু গারিব কারাগারের নির্মমতার সময় কোথায় থাকে মানবাধিকার? গাজা অবরোধ ও চতুর্থবারের মতো সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের সময় কোথায় থাকে মানবাধিকার?

আমাদের মা বোনদের কাফির মুশরিকরা ধর্ষণ করছে, ভাইদের জবাই করছে তবুও আমাদের মুখ বুজে সব সয়ে নিতে হবে, সহ্য করে যেতে হবে, ঘুরে দাঁড়ানো যাবে না, পাছে না আমাদের শত্রুদের চোখে আমরা বর্বর অসভ্য হয়ে যাই!

এ কেমন পরাজিত মানসিকতা!

মুসলমানদের কি অনুভব অনুভূতি বলে কিছু নেই? সুখ-দুঃখ নির্ণয় করতে পারা এবং উত্তেজিত হতে পারার নিজস্ব ক্ষমতা কি তাদের নেই? না শুধু আমেরিকা এবং ইউরোপই উত্তেজিত হতে পারে? তাদের নাগরিকদের কিছু হলে শুধু তারাই প্রতিশোধ নিতে পারে? দুর্বলদের সন্তানেরা যখন নিহত হতে থাকে, তাদের নারীরা যখন বিধবা হতে থাকে, তাদের সম্মান-সম্ভ্রম যখন ভূলুণ্ঠিত হতে থাকে, তখন উত্তেজিত হবার অধিকার কি দুর্বলদের নেই?

ফাঁসির দড়িতে যখন তারা ঝুলতে থাকে, তখন প্রাণ বায়ু বের হওয়ার সময় দেহ কাঁপতে থাকাটা বীরত্ব, আভিজাত্য ও শিষ্টাচারের লক্ষণ নয়। অথচ শিষ্টাচার এমন একটি বিষয়, যার দরুন কখনো কখনো অন্যদের চেতনালোকে আলোড়ন সৃষ্টি হয় এবং প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও প্রতিশোধের স্পৃহা জাগ্রত হয়।

উসমানী খিলাফতের পতনের পর এ যাবত, আরব অঞ্চল এবং মুসলিম দেশগুলো যতটা লাঞ্ছনার শিকার হয়েছে, সেটা প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজিতদের লাঞ্ছনাকেও হার মানায়।

জাতিসংঘ,সাধারণ পরিষদ কিংবা নিরাপত্তা পরিষদের কাছে করুণা ভিক্ষা চেয়ে অধিকার ফিরে পাওয়া যাবে না। বরং শক্তি লাগবে। ক্ষমতা লাগবে। তার আগে লাগবে এসমস্ত কুফুরি সংগঠনের সাথে সম্পূর্ণ সম্পর্কচ্ছেদ।

وَقَٰتِلُوهُمْ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ ٱلدِّينُ كُلُّه لله

‘আর তোমরা তাদের সাথে লড়াই কর, যে পর্যন্ত না ফেতনার অবসান হয় এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়’।[সূরা বাকারাহ২:১৯৩]

وَلَوْلَا دَفْعُ ٱللَّهِ ٱلنَّاسَ بَعْضَهُم بِبَعْضٍ لَّفَسَدَتِ ٱلْأَرْضُ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ ذُو فَضْلٍ عَلَى ٱلْعَٰلَمِينَ

‘আল্লাহ যদি একজনকে অপরজনের দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তাহলে গোটা দুনিয়া বিধ্বস্ত হয়ে যেতো। কিন্তু বিশ্ববাসীর প্রতি আল্লাহ একান্তই দয়ালু, করুণাময়’। [সূরা বাকারাহ২:২৫১]

 

**************

 

[1] Albright: Iraq Sanctions "Worth It" (Full Context)- https://tinyurl.com/jsxqogm