JustPaste.it

ফাঁসির কাষ্ঠে ঈমানের দ্যুতিতে ঝলসে ওঠা এক যুবক
-শহীদ ইলমুদ্দীন


শাহ জালাল, শাহ পরানের পূণ্য ভূমি, খান জাহানের ধুলিধন্য, শাহ মাখদুমের বরকতের পরশে বিমোহিত, বারো আউলিয়ার দেশ, এই সোনার বাংলাদেশ। এদেশের শতকরা ৮৫ ভাগ মানুষ ধর্মপ্রাণ মুসলমান। 
এমনি একটি পুন্য ভূমিতে আজ ইহুদী নাসারাদের দালাল, ব্রাহ্মণ্যচক্রের দোসর, পাশ্চাত্য প্রভুদের স্বার্থের বশবর্তী হয়ে এক দল স্বার্থান্বেষী ঈমান ও ইসলামকে অস্বীকার করছে। পবিত্র কুরআনকে সংস্কার করার কথা বলছে, ইসলামকে এই পূন্য ভূমি থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার পায়তারা চালাচ্ছে। প্রগতিশীল যুগে এই পবিত্র কুরআন অচল বলে দেশী ৰিদেশী পত্র-পত্রিকায় বিবৃতি দিচ্ছে। কুলাঙ্গার, দৃশ্চরিত্রা, জরায়ুর স্বাধীনতার দাবীদার একজন মহিলা বিদেশী প্রভুদের কাছে বলে বেড়াচ্ছে যে, পবিত্র মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে নাকি অনেক ভুল।এটি একটি অবৈজ্ঞানিক গ্রন্থ। বৈজ্ঞানিক যুগে এই গ্রন্থ অচল, অপ্রয়োজনীয়। কুরআন অগ্রগতি ও নারী স্বাধীনতার প্রতিবন্ধক। ইসলাম ও ধর্মদ্রোহী নাস্তিক্যবাদী কুলাঙ্গার ডঃ আহমদ শরীফ বলে বেড়াচ্ছেন যে, “মূর্খতা ও মুসলমানিত্ব নাকি অভিন্নার্থক। যে লোক জ্ঞানী সে ধর্ম পালন করে না--সে নাস্তিক। একজন আস্তিকের চেয়ে একজন নাস্তিক অনেক গুণে ভাল” ইত্যাদি।
এমনি একটি ঘটনা ঘটেছিল গত ত্রিশ দশকে। ভারত উপমহাদেশের সিপাহী বিপ্লব পরবর্তি গণহত্যা এবং পরিকল্পিত নির্যাতনের সয়লাব অতিক্রম করে মুসলমানরা হাটি হাটি পা পা করে অগ্রসর হচ্ছিল মাত্র। ঠিক সে সসয়ে “দয়ানন্দ স্বরস্থতী” নামক মুসলিম বিদ্বেষী এক হিন্দু ধর্মগুরু কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত "আর্য সমাজ সংগঠনের" পক্ষ থেকে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর পুতঃ পবিত্র ও সুন্দরতম চরিত্রের উপর একের পর এক আঘাত হানা হতে থাকে। 
এরই অংশ বিশেষের আলোকে লাহোরের রাজপাল নামক এক আর্য সমাজ পন্ডিত “রঙিলা রাসুল” নামে একটি জঘন্য বই প্রকাশ করে। পুস্তকটির মধ্যে প্রিয় নবী সন্বন্ধে এমন সব মিথ্যা কাল্পনিক ও জঘন্য কথা লিখে যা তার নিষ্কলুষ পুতঃ চরিত্রের উপর মারাত্মক আঘাত হানে। এর প্রতিবাদে সারা বিশ্বের মুসলিম জনতা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। 
রাসূল (সাঃ)-এর সম্মানে এ আঘাতে এক বলিষ্ঠ আশেক রাসূল, তরুণ যুবক উত্তেজিত হয়ে উঠে। গাজী ইলমুদ্দিন নামক সেই আশেকে রাসূল বীর যুবক প্রকাশ্য দিবালোকে সেই পাপিষ্ঠ, নরাধম, পামর রাজপালের বুকে ছোরা বসিয়ে দিয়ে এই নাপাকী অস্তিত্বকে দুনিয়া হতে চির বিদায় করে সারা বিশ্বের মুসলিম জনতার কলিজাকে ঠাণ্ডা করেন। ফলে আদালতে ইংরেজ জজ গাজী ইলমুদ্দিনকে ফাসীর আদেশ দেন। মুসলিম জনগণ সম্মিলিত ভাবে নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেন। 
মুসলিম মনিষীবর্গ একদিন জেলখানায় গিয়ে গাজী ইলমুদ্দিনের সাথে সাক্ষাত করেন এবং এই মর্মে অনুরোধ করেন যে, তিনি যেন নিম্ন আদালতে তার দেয়া জবান বন্দি অস্বীকার করেন এবং আরো যেন বলেন যে, আমি রাজপালকে হত্যা করিনি। কিন্ত প্রিয় হাবীবের সেই আশেকে রাসূল তাদের অনুরোধ এই বলে প্রত্যাখ্যান করেন, যে, 'আমি স্বপ্পে দেখেছি “হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) মদীনা থেকে আমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছেন এবং আমি তার পবিত্র কদমে লুটিয়ে পড়ার জন্য উন্মাদ হয়ে গেছি।” 
অতএব আপনারা আমাকে সেই পবিত্র কদম মোবারকে লুটিয়ে পড়ার অপেক্ষার প্রহরকে দির্ঘায়িত করবেন না! অবশেষে সেই আশেকে রাসূল গাজী ইলমুদ্দিন সেচ্ছায় ফাসী কাষ্ঠে ঝুলে অভিষ্ট লক্ষ্যে শাহাদাত বরণ করেন। (ইন্না লিল্লাহে ... রাজেউন)। লক্ষ কোটি মুসলিম জনতা নামাজে জানাজা আদায় করে লাহোরের অমর সাধক মিয়া মিরের মাজারের পার্শে সমাহিত করেন। আজ বাংলার জমিনে ইসলামকে ধ্বংস করার জন্য রাজপাল, রুশদী ও দাউদ হায়দারের চেলারা আদা জল খেয়ে লেগেছে। আজ বাংলার তাওহিদী জনতা সবাই ব্যথা-বেদনায় বিমর্ষ অপ্রতিভ। কিন্তু শরীফ গংরা দিব্যি আরামে এই পবিত্র ভূমিতে চলাফেরা করছে এবং সোনার বাংলার বিসমিল্লাহর সরকার নিরব, নিথর, নির্বিকার হয়ে আছে। তাই আজ ১০ কোটি মুসলমানের আর্তচিৎকারঃ বাংলার ইলমুদ্দীনরা কোথায়! যারা দ্বীন ইসলামের মান মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে প্রয়োজনে শহীদ হতেও কুন্ঠিত হবে না? 

হাফেজ আলম হারুন
 বি, বাড়ীয়া