JustPaste.it

6e4613a8a9f80f95cec8961818819c98.jpg

 

হামাসের ব্যাপারে আল কায়েদার অবস্থান

শাইখ মুস্তফা আবুল ইয়াযীদ রহ.

 

 

 

মাওলানা হামিদুর রহমান অনূদিত


 

9e689201fb27d649cebab2d02676f428.png

**********

 

 

بسم الله والحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله وآله وصحبه ومن والاه

 

আল জাজিরার সাংবাদিক আহমেদ জিদানের সাথে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাস আন্দোলন ও হামাস মুজাহিদদের সম্পর্কিত আমার বক্তব্যের মর্মার্থটি বর্ণনা করার জন্য এবং ভাইদের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার করে ভাইদের সংশয় দূর করার জন্য আমি বলছিঃ

নিম্নের দু’প্রকার হামাসের মধ্যকার পার্থক্যকে আমরা বারবার স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে চেষ্টা করেছি৷ এক তো হচ্ছে এমন দল বা সংগঠন সম্বলিত হামাস, যাদের একটি সুপরিচিত চিন্তাধারা ও মানহাজ রয়েছে এবং যাদের একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক অবস্থান রয়েছে৷ তাদের প্রতি আমাদের অবস্থান ও তাদের প্রতি আমাদের অভিযোগসমূহ বিভিন্ন প্রসঙ্গে আমরা স্পষ্ট করে দিয়েছি৷ আরেক হচ্ছে এমন হামাস, ফিলিস্তিনে জিহাদরত হামাস ও অন্যান্য মুজাহিদীনগণ, যারা কিছুতেই সংগঠন, সংগঠনের পরিচালনা ও রাজনৈতিক অবস্থানগত দুর্নীতি সাধন করে না৷ তবে অটল-অবিচল থাকা এবং পদ্ধতি ও চিন্তাধারার বিশুদ্ধতার ভিত্তিতে তারাও আবার কয়েক শ্রেণীতে বিভক্ত৷

শাইখ আইমান হাফিজাহুল্লাহ একাধিক প্রসঙ্গে এ মর্মার্থটি উল্লেখ করেছেন৷ যেমন তিনি তার এক উন্মুক্ত সভায় বলেনঃ “আমি সর্বদাই আমার বক্তব্য সমূহে হামাসের রাজনৈতিক নেতাদের এবং হামাসের মুজাহিদীন সহ ফিলিস্তিনে জিহাদরত অন্যান্য মুজাহিদীনদের মাঝে পার্থক্য করে থাকি৷ কেননা হামাস নেতাদের আমি সমালোচনা করেছি এবং আজীবনই তাদের সমালোচনা করে যাবো, যে পর্যন্ত তারা ধর্মনিরপেক্ষ ফিলিস্তিনি সংবিধান মেনে চলবে ও মক্কায় অনুষ্ঠিত ফাতহের সাথে তাদের কৃত চুক্তি প্রত্যাহারের ঘোষণা না দিবে৷ আর হামাসের মুজাহিদীন সহ ফিলিস্তিনে জিহাদরত অন্যান্য মুজাহিদীনদের আমি সমর্থন করি ও সর্বদাই তাদের সমর্থন করে যাবো৷ এবং উম্মতে মুসলিমাহকেও আমি আহবান জানাবো তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসার জন্য, বিশেষকরে সিনাই উপজাতিদের৷”

অতএব, আমি মনে করি হামাস সংগঠনের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও অবস্থান দিবালোকের ন্যয় সুস্পষ্ট যে, হামাস অনেক বড় শরীয়ত বিরোধী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত৷ উদাহরণস্বরূপ আমি অধমও দু’বৎসর পূর্বে ১৪২৮ হিজরীর রবিউস সানী মাসে আস-সাহাব ম্যাগাজিনে দেওয়া আমার প্রথম সাক্ষাৎকারটিতে তাদেরকে এ সকল শরীয়ত বিরোধী কর্মকাণ্ড পরিত্যাগ করতে উপদেশ দিয়েছিলাম৷ যেখানে আমি তাদেরকে বলেছিলামঃ “আমরা তাদেরকে উপদেশ দিচ্ছি শিরকী সভাসমূহে অংশগ্রহণ করা থেকে ফিরে আসার জন্য এবং রাষ্ট্রীয় ও আরবদের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা ও তা মেনে চলা থেকে বিরত থাকার জন্য এবং ফিলিস্তিনী কর্তৃপক্ষের মধ্যে যারা বিশ্বাসঘাতক ও মুরতাদ তারা যেন তাদের হাতে হাত না রাখে ও মুরতাদ শাসনব্যবস্থার নেতাদের প্রতি বন্ধুত্ব ও সম্মান প্রদর্শন না করে৷ এবং তাদের জন্য উচিত হচ্ছে নিজেদের ‘আল ওয়ালা ওয়াল বারা’ এর আকীদাকে বিশুদ্ধ করে নেওয়া ও তথাকথিত মাসলাহাতের মূর্তির সামনে নিজেদের ইসলামের বিধি-বিধান সমূহকে বলি না দেয়া৷” সুতরাং আলহামদুলিল্লাহ হামাস সম্বন্ধে আমাদের অবস্থান সুস্পষ্ট৷ আর এটা কিভাবে সম্ভব, অথচ হামাস গাজায় আল কায়েদার মতাদর্শেরই বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে?

পক্ষান্তরে আল জাজিরার সাক্ষাৎকারে আমি যা বলেছিলাম যে, “আমরা ও হামাস মুজাহিদীনরা একই মতাদর্শের” সেই বাক্যটি কোন জটিল কিছু ছিল না; বরং তা হচ্ছে পূর্ব প্রস্তুতি ব্যতিত উপস্থিত সাক্ষাৎকারের ক্ষেত্রে অনাকাঙ্খিতভাবে মুখ থেকে বেরিয়ে যাওয়া কথার মত৷ তবে কথা বলার সময়ও সেই মর্মার্থটিকেই কেন্দ্রীভূত করা আমার মাথায় ছিল, যা আমি ওপরে উল্লেখ করেছি৷ আর তা হচ্ছে সৎকর্মশীল নেককার মুজাহিদীন ও রাজনৈতিক সংগঠনের হামাসের মাঝে পার্থক্য করা৷ সে হিসেবে উল্লেখিত কথাটি কোন কিছুর নির্দেশ করছে না এবং আমরা যা বুঝাতে চাচ্ছি তা বুঝাচ্ছে না৷ বরং এ ধরণের স্থানে এমন কারো থেকে ব্যাখ্যা জেনে নেওয়া জরুরী, যিনি সাধারণত ভুল করেন না৷

যদি কেউ প্রশ্ন করে যে, হামাসের মুজাহিদীনদের মাঝে কি এমন কাউকে পাওয়া যাবে, যারা মানহাজ ও চিন্তাধারাগতভাবে হামাস থেকে ভিন্নমত পোষণ করে থাকে? তাহলে আমরা বলব যে, হ্যাঁ, কম হলেও পাওয়া যাবে৷ আমরা মনে করি সে সমস্ত ভাইদের দায়িত্ব হচ্ছে নিজেদের সাধ্যানুযায়ী হামাস ও হামাসের সাধারণ মুজাহিদীনদের (অর্থাৎ হামাসের যে সকল মুজাহিদীন মানহাজ ও চিন্তাধারাগতভাবে হামাস থেকে ভিন্নমত পোষণ করে না তাদেরকে) নসিহত করা৷ আর যদি তাদের জন্য এখন বড় ধরণের কোন ঝামেলার সম্মুখীন হওয়া ব্যতিত খাঁটি সুন্নত ও তাওহীদের পতাকাতলে কাজ করা সম্ভব হয়, তাহলে তাদের উচিত হামাসকে বর্জন করে সেটারই অধীনে কাজ করা৷

জ্ঞাতব্যঃ সম্ভবত প্রোগ্রামের সময় সীমিত হওয়ার অজুহাতে বা অন্য কোন কারণে আল জাজিরা চ্যানেল সাক্ষাৎকারটির কিছু কিছু অংশ বিয়োজন করে ফেলেছে৷ যেমন সৌদি আরব সংক্রান্ত সমস্ত কথা, জাজিরাতুল আরবের কাজ, সিরিয়া প্রসঙ্গে কথা ও অন্যান্য আরো কিছু বিষয়৷

আমি ঐ সমস্ত ভাইদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি, যারা আমাদেরকে এ বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করেছেন ও আমাদের প্রতি সুধারণা পোষণ করেছেন৷ এবং ঐ সমস্ত ভাইদের প্রতিও আমি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি, যারা লেখালেখি বা পত্রযোগে বা আলোচনার মাধ্যমে আমাদের কাছে সন্দেহপূর্ণ কথাটির ব্যাখ্যা চেয়েছেন৷ সুতরাং তাদের এ হিতোপদেশের কারণে আল্লাহ তা‘আলা তাদের সকলকে উত্তম বিনিময় প্রদান করুন ও তাদের এ প্রচেষ্টাকে কবুল করুন৷

আমি বিশেষভাবে উল্লেখ করছি প্রখ্যাত শাইখ আবু মুহাম্মাদ আল মাক্বদিসীর কথা৷ আমি তার প্রবন্ধ ও জ্ঞানগর্ভ বিশ্লেষণ পড়েছি৷

ভাইদের প্রতি আমাদের আবেদন থাকবে; যুদ্ধের পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে বিবৃতি ও উত্তর প্রদানে কখনও কখনও আমাদের বিলম্ব হয়ে যাওয়াকে আপনারা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন৷

আমি আল্লাহ তা‘আলার কাছে আমাদের জন্য ও সকলের জন্য সে কাজের তাওফিক কামনা করছি, যে কাজ আমাদের পালনকর্তা পছন্দ করেন ও যে কাজে তিনি সন্তুষ্ট৷

 

 

ওয়াস সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ৷

 

 

 

আপনাদের ভাই মুস্তফা আবু ইয়াযীদ

৩ শাবান ১৪৩০ হিজরী

আল-কায়েদাঃ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব

 

 

 

**********

 

c460269a63263eee2492a1409bf98f12.gif