JustPaste.it

বিশ্বব্যাপী মুজাহিদদের তৎপরতা

 

চেচনিয়ায় মাত্র ৫৭টি মসজিদ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে

রুশ আগ্রাসনের ফলে চেচনিয়ার বিভিন্ন স্থানের তিনশত মসজিদ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। পুরো দেশে মাত্র ৫৭টি মসজিদ অক্ষুণ্ন রয়েছে। এখন সেখানে নতুন করে মসজিদ নির্মাণ শুরু হয়েছে। এর জন্য তারা সাহায্যের আবেদন করেছে ধনী দেশ ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কাছে। এই রুশ আগ্রাসনের ফলে রাজধানী গ্রোজনীর সব ক’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শতকরা ৮০ ভাগ হাসপাতালও ধ্বংস হয়েছে।

 

৪৫টি দেশের ১শতটি প্রতিষ্ঠানে বিনা সুদে হাজার কোটি ডলার পুঁজি বিনিয়োগ

সমগ্র বিশ্বের ৪৫টি দেশের ১শতটিরও বেশী আর্থ সামাজিক প্রতিষ্ঠান ইসলামী অর্থব্যবস্থা অনুযায়ী কাজ করছে। গত পাচঁ বছরের হিসাবে প্রতি বছরে এ ধরনের কার্যক্রম ১৫ শতাংশেরও বেশী প্রসার লাভ হচ্ছে। বর্তমানে এ ব্যবস্থার অধীনে যে পরিমাণ ‍পুঁজি বিনিয়োগ হচ্ছে, তার আনুমানিক পরিমাণ ৭ হাজার কোটি ডলার। পক্ষান্তরে ১৯৮৫ সালে এর পরিমাণ ছিল মাত্র পাঁচ শত কোটি ডলার। আশা করা যায়, শতাব্দীর শেষ নাগাদ এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ১০ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত হবে। বিশ্ব ব্যাংকে কর্মরত পাকিস্তানী অর্থনীতিবিদ জমির ইকবাল আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের তত্তাবধানে প্রকাশিত ত্রৈমাসিক পত্রিকা ফাইন্যান্স এ্যান্ড ডিপ্রোম্যাট-এ তথ্যটি প্রকাশ করেছেন। জমির ইকবাল অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে, মুসলিম দেশগুলো যদি তাদের উদ্বৃত্ত অর্থ উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর অধীনে কাজে লাগায়, তাহলে তাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আরো গতি লাভ করতে পারে।

 

ইসলামপন্থীদের উত্থানে আতঙ্কিত মরোক্কঃ

শুরু হয়েছে ব্যাপক সাফাই অভিযান

উত্তর আফ্রিকার মরোক্কতে শুরু হয়েছে ইসলামপন্থীদের ব্যাপক উত্থান। এই উত্থানে আতঙ্কিত হয়ে উঠেছে সে দেশের কায়েমী স্বার্থবাদী শাসকগোষ্ঠী। তারা এই উত্থানকে ঠেকাতে মরিয়া হয়ে সাফাই অভিযানে নেমেছে। ইসলামপন্থীদের নামে কাসাব্লাঙ্কার মোহাম্মদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উপর অকাতরে রাষ্টীয় নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। তাতেও তারা ক্ষ্যান্ত হতে পারছে না। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের লোক দেখান বিচার করে জেলে পুরছে এবং সেখানে নির্মম পৈশাচিক নির্যাতন চালাচ্ছে। পশ্চিমী মদদপুষ্ট এই সরকার তাদের কায়েমী স্বার্থে আঘাত লাগার কারণে ইসলামপন্থীদের উপর আঘাত হানতে শুরু করেছে।

আলজিরিয়ার অনুকরণে মরোক্কয়ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষানবীস মুসলিম ছাত্রদের মধ্যে বাতিল রাজশক্তিকে উৎখাত করে সেই জায়গায় ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার জন্যে ইসলামী বিপ্লব শুরু হয়েছে। বিশেষ করে সে দেশের মুহাম্মদ বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে এই নবউত্থিত ইসলামী জাগরণের জোয়ার দেখা দিয়েছে। তারা সরকারের জুলুম-অত্যাচার ও নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সরব হলে পুলিশী তৎপরতা চালান হয়। তারা এই পুলিশী সন্ত্রাসের প্রতিবাদ স্বরূপ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস বয়কট করে। এর প্রতিক্রিয়া হিসাবে সরকার গত কয়েকদিনে প্রায় ত্রিশ হাজার ছাত্রকে গ্রেফতার ও বন্দি করে। এ ছাত্ররা সে দেশের নিষিদ্ধ ঘোষিত আল-আদল-ওয়াল ইহসান (ন্যায় বিচার ও আধ্যাত্মিকতা) দলের সদস্য। সরকার পক্ষ তাদের বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা অভিযোগ এনে বিচারের নামে প্রহসন করে অকাতরে জেলে পুরছে। সরকার পক্ষ অভিযোগ তোলে, এসব ছাত্র নাকি সরকারী আদেশ লংঘন করার হুমকি দিয়েছে, পুলিশদেরকে আক্রমণ করেছে এবং সরকারী সম্পত্তি নষ্ট করেছে। ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকারের আনীত এই অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তারা মরোক্কয় আবাসন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি সাধন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার কথা বলেছে। বলেছে মুসলিম অধ্যুষিত এদেশে সরকার মুসলমানদের ভাবাবেগ ও বিশ্বাসকে মূল্য না দিয়ে পাশ্চাত্য প্রভুদের সন্তুষ্টি বিধানে জাতীয় মূল্যবোধ বিরোধী নীতিমালার অনুসরণ করে চলেছে।

অপরদিকে সরকারের পক্ষ থেকে আশংকা ব্যক্ত করা হয়েছে যে, অতি দ্রুত ইসলামপন্থীদের জোরদার প্রয়াস শুরু হয়ে যাবে। দেশের যুব সমাজ এই মানসিক প্রবণতা বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নতুন শিক্ষিত প্রজন্ম পশ্চিমী ধ্যানধারণায় উদ্বুদ্ধ হওয়ার পরিবর্তে ক্রমশ ইসলামের দিকে ঝুঁকছে। সরকার এই অবস্থা আঁচ করে আগেভাগে সতর্কতামূলক বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহন করছে। তারই অঙ্গ হিসাবে এই গ্রেফতারী অভিযান চালান হচ্ছে।

 

 

ঝিংঝিয়াং-এর মজলুম মুসলমানঃ

পাকিস্তান সরকারের নির্মম আচরণ

চীন সরকার দাবি করেছে যে, ঝিংঝিয়াং এর মুসলমানদের স্বাধীনতার দাবীর বিরুদ্ধে পরিচালিত যুদ্ধে তারা বিজয় লাভ করেছে। কিন্তু, বাস্তব সত্য হলো, ঝিংঝিয়াং এ পরিচালিত চীন সরকারের এ দমন অভিযান বিশ্বব্যাপী পরিচালিত মুসলিম নির্যাতনের-ই এক কালো অধ্যায় মাত্র। এদতসংক্রান্ত একটি লোমহর্ষক ঘটনায় যে কোনো আত্মসচেতন মুসলমানের হৃদয়ে নিশ্চিত রক্তক্ষরিত হবে। ঘটনাটি নিম্নরূপঃ

চীনা সরকারের আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে গত বছরের ডিসেম্বরে ঝিংঝিয়াং এর কয়েকজন ছাত্র হিজরত করে পাকিস্তান আসে এবং বিভিন্ন মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে পড়াশুনা করতে শুরু করে। কিন্তু পাকিস্তান সরকার তাদের ১২ জনকে গ্রেফতার করে চীনের হাতে তুলে দেয়। গ্রেফতারের সময় তারা করজোড় অনুরোধ করে পাক প্রশাসনকে বলেছিল যে, যদি আমাদেরকে চীনা সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয়, তাহলে দেশদ্রোহীতার অভিযোগ এনে সরকার আমাদের মেরে ফেলবে। পাকিস্তানের একটি মাদ্রাসা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। অবশেষে যা আশংকা ছিল তা-ই ঘটেছে। চীনা সরকার অল্পবয়স্ক এ ছাত্রদের মৃত্যুদন্ড প্রদান করে।

পাকিস্তানের আদালত প্রথমে তাদেরকে মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে লেখা-পড়া করার অনুমতি প্রদান করেছিল। কিন্তু চীনা সরকারের আবেদনের প্রেক্ষিতে অল্প কিছুদিন পর-ই গ্রেফতার করে তাদেরকে চীনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। চীন সীমান্ত অতিক্রম করে চীনের মাটিতে পা রাখার পরেই তাদের সকলকে গুলি করে হত্যা করা হয়৷ আরো ১৩০ জন ছাত্রের তালিকা চীনা সরকার পাক সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছে, যাতে তাদেরকেও ধরে চীনের হাতে তুলে দেওয়া হয় ।

অপর এক খবর মোতাবেক চীনা সরকার আরো আটজন মুসলমানকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করেছে। কারাদন্ড দেয়া হয়েছে ৪জন মুসলমানকে। চীনা সরকারের দাবি মোতাবেক তারা ঝিংঝিয়াং প্রদেশের বিভিন্ন বাসে পাঁচটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। যার ফলে ৯ ব্যক্তি নিহত এবং ৫৮ জন্য আহত হয়েছিল।

(সূত্রঃ বেদার ডাইজেস্ট)